Skip to main content

Full text of "1347-48 B. (paush - Jaishthya)"

See other formats




.এ মামিঝান 
পি নল 
অজ্লীন্বিৎস্ণ শ্বহ্ 
দ্বিতীয় খণ্ড 
শীষ ১৩৪৭-__জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৮ 


০৯ পাল 
০০০০০০০০৫৯০ 





ভনম্পপী দি 
অফণীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় 


খা ভ-স্্_ 


গুরুদাস চট্ট শিপ নিন 


» কর্ণওয়ালিস্‌ ফ্ীট, কলিকাতা 





“্পর্পগুলীস্পভ্ 
অটাবিংশ বর্ষ_দিতীয়ঙ; পৌঁয )১81_ছৈঠ)৬$৮ 
লেখ-চী-_ বর্ণানুক্রমিক 


আজয়ের চর ( কবিতা )৫ীকু্যরঞ্জন মলিক 

“অতীত, বন্ধমান ও ভবিষ্যৎ (কবিতা )--প্রীদেধনারায়* গুপ্ত 
অন্ধের প্রতি (কবিত|)-- শ্রীমতী উন্দূরাণী দেবী 

মদ্ধের বৌ গল্প )__প্রীমাণিক বন্দোপাধায 

অরসিকেধু (নক )--শ/বীরেক্রমে।হন আচাধা 


আকাশ প্রদীপ ( কবতা। )--শ্রীনিত্যানন্দ সেনগুপ্ত 

আচাধা উমেশ্চগ্জ দত্ত_-প্রীমন্থনাথ ঘোৰ । 
আচাধিদের বট (গল্প --শ্রীপ্রবোধকুমার সান্যাল 

আধুনিক ভারতীয় চিত্রাঙ্কনপদ্ধহ- প্রমাণিকলাল | পাধায় 
আবোল ভাবোল ( কাঁবত! )- ঞদিল'পকুমার রায়! 

আমর। (কবিত!)--মআপুল ভোসেন 

আমিই শুধু চুলছি হেখ,। (কবিত। )--আবছুর 
আধ্য পৃজাপদ্ধতিতে বিশ্রটান__প্রীদাশরথি মাং 
আলোক ও আলোকচিত্র গ্রহণ -শ্রীছিেন্দনাপ |শ€পু 
আহ্বান (কবিত। )-প্রীীনেশচন্র গঙ্গোপাধা 


ইউরোপীয় ও ভারতীয় সঙ্গীতকলা_ শ্রবীবে 
পক নিমেমে (কবিঠ। )-ড" হরেকুনাথ দা 
একই (গল্প )-_প্ীপৃীশচন্ত্র ভট্টাচাযা 

ট মায় (কবিতা )--প্ীমতী সাহান! দেবী 


ক্যযাকুমারী ( কবিত! )- রায় খগেক্নাথ 07র বাহাছত 

( কবিত্ি__প্রীহবোধ রায় 

| ('কবিত। )--্রীভায়। বন্দযোপাধ,্ 

ফন্ৃ্িনীর খাল ( উপস্যান )- শ্রীরা ধিকারণন গঙ্গোপাধায় 









গু 






গু + ১৭ 5৫৮, নিন ৩, ১৮৭, 
কলিকাতাষ্টক | কবিত। )--শ্রীইন্দ রায় 
কালিম্পঙ, ( সচিত্র )_- শ্টকালনগে'পাল হবাগচা 
কীর্তন ও হুরকার (স্বরলিপি )-ঞদির্পকুমান বায় 
টি তুমি (করিত) প্রিনানকুমারী রঃ 
'কুত্তিবাস (কবি )--প্লকাললদাস রা 
কৃষধামালীর গান-্রীভারা প্রসন্ন মুখেপাধ্যায় 
্ষণ-বমন্ত ঈবিতা)__ঈপ্রসুতকির বত 
সা আনন্দ ( কবিতা )- ঞ্লীদৌরীকভট্টাচাধ্য 
শ্রান্চ ও পরিপাক সম্বন্ধে আলোচন--প্রীকালিদাস মিত্র 
খুলে দেবে দ্বার (কবিতা! )--প্রতিনা দেবা 
খেলা ধুল৷। (সচিত্র) _ক্ষত্রনাথ রয় ১৯৯, ১৬১, 6০১, ৫৩৯, ৬৭৯, 
গাণদেবভা ( উপস্াম 1--প্লীতারানঙ্কর বন্দোপাধ্যা 
, রি ৮১, ২১৮, ৩২৯, 8৩১, ৬৩৯, 
শণনীয় নন্দকিশের (গল্প )-স্্ীগদীশ ৩প্ত 
অরণ্যে, একটি রাত্রি (সি )--£ঁদেবীপ্রসাদ রায় চৌধুরী 


পি 


শোর রাধ 'চীপুবী এ 


১৬২ 
১৫৯ 

হি৫ে 
১০৪ 
৭৩৭ 


৭৫৩ 


৭৭ 


৩৮ 


৭১ 


৫৭৮ 


1 
গল্প লোর বিপদ (গল্প রি রায় চৌধুরী 
গান (কবিত। )-হ্লীমতা সাহান। দে 


গাদ্ধার-শিল্পে কয়েকটি জাতৰ কাহি চিত্র-_ছ্ীগরদাস মরকার 


গ্রচ্দীপ ( করিত] 1--হ্রীকানিদাস ॥ 
(গাবিন্দচন্দ ও মযনামচা--0বিজনাভারী ভটাচামা 
গোবিন্দপাসের ধীগাধান মঠিদার -ধীহভরত রাখ চৌধুরী 


চগীদাস (ক্বত।)--শ্লীচোলাপ দেনগুু 
চণ্তীদান । কবি) শ্ীকানর্ণলরায় 
১গ্ডাদাস--নানুর ৷ সচির )- প্ল্রকুষঃ মুখোপাধগায় 
চলতি উতিচাস । সচিত্র )-&।তলকডি চটোপাধণয় 


৭৮৭, ৬৮৭, ৫১৫, ৩৬০, 


চাক্ষকলার ক্রুমান্নতি ( সি । -্ীনরেন্দনাথ বছ 
সচরশেষে । কবিতা) হ্রীদবশ বিশাস 


চাবি (করিত )--ঠনঠ্যত মজুমদার 


জ্বক্গরম (৯পন্যাস )-বনধু 8৯, ০৯১, ২৮১, প৭৮, 


জানালার ধাপে (কবিত।) শ্রববেকানন্দ মুখোপাধাগ 
জাপান । মচিন )--্ীধীদেনাণ দুগোপাধায 

হল /প্রমের $জল শভ বত কবিতা )--হাগনুরা দেবা 
ভায়াবিটিস ব| বহুমুত্র+ প্রবোধকুনার বন্দ্যোপাধায 


তানের এল। ( সচিন ।-ধাছুকপ্ন পিসি সরকার 
তীর ও তরঙ্গ (উপগ্ভান শ্রীন্ণকমল ভটাচানা 
তুমি আর আমি (কবিত।শ্রীমরেছ। দু রায় 
তোমার কবিতা । কবিহ)--প্রারামেন্টু দন 

তোমারে পৃজিব শুধু (বাতা ) -প্রাদুগাদাস ঘোলল 


ছিয়াশলাই-এর ক।-হীবরদ। দর রায় 

দ্বিজেন্দ্রলাল ( কবিত। _&শ্রবোধ রায় ০ 

দীনবন্ধ গ্যাগরুজ ( কাত) ঞীকালাকিস্কর সেনগুপ্ত 
চ'খ বাথ! কুন্ত্রম হয়ে করিত )--প্রীলতিকা ঘোঁন 
দুখের নিবৃ্ডি ও স্ব পালন_ প্রীবৃপেন্্রনারায়ণ দাস 
দেবতার মুক্তি ( কঞ্ি।)-_-প্রনরেশচন্ধ চ্দবর্তী 
দাললীল! ( কবিতা - শ্রীমধুদন চট্টোপাধ্যায় 

ব।রার অবস্থাত্রয়-- হানা 

নিু"্ প্রেমেরি দায় কবিহ1)--গ্রীকালীকিস্কর সেনগপ্ত 
নিশিশেষে$ কবিগ্া।-_শ্রীকমুদরপ্জন মল্লিক 

নিশীথ আকাশে ডু যায় টাদ (কবিহা)--বন্দে আলী মিয় 


পতিতার দীক্ষা (কিত। )-ঃ্রীনীলরতন দ্বাশ 


৫৯৫, 


১৭২ 
৪৭৬ 
৬৭ 
৪5৮ 


৫৫১ 


৮৭ 
৩১৭ 
৮৮ 


৮% 


শব 


৩০২ 
৩২ 
৪৩ 
৩৪ 


৩১ 


পথ বেঁধে দিল (চি?নাট্য)-_প্রীশরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় ১৪,১৭৩, ২৯৭,৪ 


পথহারা (কবিহ)- গ্রীনীলাদ্বর চট]পাধ্যায় 


১ 











1) শ্রীভালানাথ সেনগুপ্ত 
গবিষাৎ_হী মমিলবরণ রায় 
|লন-_প্রীহরলাল বন 

-_শ্রীমাশ্ঠতোষ সান্যাল 
বত )--্লীকালিদাস রায় 
_প্র-নাবি 


৪6৬৩৩ 
'্রীশা্রি এ ৯৩৬ 
[ভিন ন্ট 
“উ লেখ উন্দ ্রকার ন৬৮ 
ত|)--8 
সে 8৮ 
-ধ্লীপরিন ৫ 
_-হীরঃ পাব 
শ্রী 
১৫২ 
7) ১ 
দি ।এচ৯* ছা 
্ ৮5৩৪ 
(ক ত|) ই 
৬১৮৬ 
_ষ্ীগোপাল হে নব রি 
কাজী চা রর 
চিবিতা )- কাজা পাকুউনন পম রর 
লনাগের উপস্যার্টক : 
রা | শা লব 2 "চীবূর্ধশ ৫5৫ 
হন্দু সম্মেপন (স্‌. ৭. মা রর 
রর (64417 ৯: 
ণ্গ। বিল প্রতিবাদ ৭ শা 
রি চি 
| _শ্রীম'নলকূমাণ-*দা রি 
০) দৈ 
শ্রীাব্য়র£ মছুমদাণ 
৯৯৬. রি 
বুদ্ধ,পব ভটাচাগা 
এর পাদ স্ মা 
ফ্লার (কবিঠা ।--ঞ্ীঃ হেন্দন মণ ।পাধাম ৭.৮ 
রর নান লন__ইীনলন ণঞ্চন চৌকি 
পা -ঞ্লাবিনোদলাল বন্দোপাধা য় রঃ 
৪1 )-- গর হারাশঙ্কর বন্দে পাবার ্ 
। - বনফুল টু 
£( অচিন )-ছা গোরাচাদ নর্দা রহ 
ম- ইঈঃদানেশচন্দ ভটাচাণা 
চাকমা গন গ্বীক(লীচরণ -শাণ ৩৩ 
দি) শ্লীকেশবচন্দ্র গপ্ত ূ 
খয়াম প্রাজুবোধ রায় ৬ 
৪ শ্ীমুতাঞ্জয় রায় চৌধুরা চর 
1 হ্ীকমলেশ রায় যা 
--: বিমলাচরণ লাহ। হর 
_-হ্ীকনক ভূধণ্নুখোপাধায় হাত 
_গ্রীগীরোদগোপাল ভটটাচাণ। নু 
1 ভরগন্নাথানন্ন ১ 
)__হীলৌরীন্মমোভন মুখোপাধ্ায় টা 
1)--কাদের নওয়াজ £ 
|চারুচন্দ দত এ 


৫৬৩ 


বা রক্তলেহী বাদুড় (সচিত্র )__ হ্ীজ্ঞানেন্টলাল ভাছুদী 


11)--ভাঙ্কর, 
-প্ীকুমুদরঞন ঈ মগ্লিক 


ও সি, ভাছুড়ী 









, স্বরাপ ' করিত!) 
স্বাধীন বঞ্ঃবরাজা সণপুর (সচিত্র) প্রীনিতানারায়ণ বন্দোপাধায় «৪,১৭৯ 


স্নাইকেল মধুহদন ( কবিতা )__প্রীভোলানাথ সেনগুপ্ত 
মাদ্রাজ শিল্প প্রদর্শনী (সচিন )__ প্রীহবশীলকুমার মুখোপাধ্যায় 
মানুষের মুন্তিচিত্র.( সচিত্র)-_প্রীমর্ধেন্ত্রকুমার গঙ্গোপাধায় 
মাংসের মনন্তত্ব ( গল্প )--প্রীশটীন্্রলাল রায় 

মুক্তি । গল্প )--ডঃ শ্রীনবগোপাল দাস - ্ 
মৃত জ্ঞান ও পরমপদ--ম; মঃ প্রীগোগীনাথ কবিরাজ 
মাক্সিম গোকীঁ_ধ্বীঅমল সেন 

অক্ষের মিনতি (কবিতা )- শ্রীনীলরতন দাশ 

যন্ত্রবর্জিত শিল্পবাণজা কি সম্ভব ?-_প্লীমনোরগ্রন গুপ্ত 
যাত্রী ( কাবত। )--ক্ীঅশ্বনীকুমার পাল 

যাদ্ুকরের ফাঁক ( কবিত। )-- শ্রীবিমলাশঙ্কর দাশ 

যে কথ বলিতে চাই (করিত। )-গ্রীরবীন্জনাথ চক্ররত্তী 
যে জন চলিয়। যাবে (কবিত। )-__প্লীঅপুববকৃ্ণ ভটাচাধ্য 


বঙে রািয়ে তোল ( কাবতা )--প্রীদেবনারায়ণ গুপ্ত 
রাজবল্লভের গয়ায় ভূমি দান _-শ্রীযোগেন্দ্রনাথ গুপ্ত 
রাজা পারামোহন মুখোপাধায় (জাবনী ) 

রিক্ত গাথক ( কবিত। )-শ্রী মপূর্বাকৃষ্ ভট্টাচাধ্য 
রাপ (কাবত। )--স্ীশেলদেব চটোপাধ্যায় 

রাপৰতী (কবত।)--লরাম ছদ্দীন 

রূপ-মমুদ্র ( কবি )- ্রারামেন্দু দত্ত 

রেফুি মণ্যর্গের ম্মতি (সচিত্র )- শ্রীচিন্তামণি কর 
লাঙ্কাচরর মাঠ (গল্প )-শ্রীরবীন্্রনাণ ঘোন 

হত মযুর (গল্প) ৫ লি মুখোপাধায় 
শদ্দাঞ্জলি (কবিত।)--ঞানরেন্নাথ মের 
শ্ীনিকেতন ( সচিত্র) শ্রীস্থধীরঞীন মুখোপাধ্যায় 


খা 
৬ ৫ 
স্র্গাত 


৫২৯ 
৭২9 
২৩৮ 
১৬০ 
১৪৩ 


৩৩৭ 


১১৩ 


৬৩১ 
৪৬৭ 
৪৫ 
৫৬১ 


৬৪২ 


৮৩, ২০৫, ৩৪১, 8৭৪) ৬৯১ 


কথ|--প্রীপ্রভাতসমীর রায়, নিশিকান্ত রায়চৌধুরী, রামেন্দু দত্ত, 


নজরুল ইসলাম, জগন্নাথ বন্দোপাধ্যায়, 


ইন-_দিলীপকুমার রায়, নজকল উসলাম, নিতাই ঘটক, ' 


প্র লপিুদিলাপকূমার রায়, জগৎ ঘটক, জগন্নাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, 


কুমারী বিজলী ধর 
সী প্রয়াণে (কবি) শ্রীযোগীন্দ্রনাথ রায় 
চভত। ৪ আামাদের মো শ্রীগাবোধকুমার বন্দোপাধ্যায় 
সা্গ (গল্প) প্ীধাংশুকুমার ঘোম 
সাধন'র ফল (গল্প )- গ্রীআশালতা তহ। 
নামযিক] (সাঁচব্র) 
সাভিতা-নবাদ 
সুধা" শ্শ্পের 
স্থির সাধানত। ও ইচ্ছ।এক্তি--ড* সুরেশ দেব 
সবপ্ভ্জ ( করিত। )- শ্রীকমলাপ্রসাদ বন্দোপাধায় 
সু মকুমা ষ্্টারকার 


/ 
১১৮, ২৫০, 


সি 


খুরণ ( কবিত। ) -ছ্ীগ এতো সান্যাল 
বণে (কাবতা )--স্রশোভেন্দমোহন সেন 
ভরতে বিধান (গঞ্জ | _শ্রীইলারাণী মুখোপাধ্যায় ) 


রনির প্রাণ ( ( হাবতা) 


_- ছি অপূর্ববকৃষঃ ভটাচাধা , 


১৬৭5 ছি মুচলমান_.এস, ওয়াজেদ আলি 


৩৪৬৩ 


৫০ পরী হস 


্কৃতি_লহরেরুষ . বদ 


হিস ৮.8. 


দুপা... জী মেরী হার্ধা্ট 


ক ৬/ 
৩৮৫, ৫২১, ৬৬৩, ৭৯৩ 


উর সির কারিক! ( আলোচনা )--ড রমেশচন্্র মঞুমদাত """ 


১৩৬, ১৭২, ৪০৮, ৫৯৪, ৬৮০, ৮১৬ 
২৬১ 


৩৪ 


সি সত 
চি 


চিত্র-সূচী-_মাসানুক্রমিক 


প্রোষ--১৩৪৭ 


হোটেল হিল ভিউ হতে পাহাড়ের দৃশ্থ 
পাহাড়ের গা কেটে সি'ড়ির মত ক'রে চাষের জন্য 
ক্ষেত তৈজ়ি হয় 
পাহাড়ীদের একটি কুটার 
কালিম্পঙ্য়ের বাজারে তিব্বতীর! কার্পেট বিক্রয় 


করছে 
পাহার়ী মেয়েরা হাটে পশমের কাপড় বিক্রয় 
করতে এনেছে 
আমাদের নেপালী অনুচর 
নেপালী মেয়ে, পিঠে ভার বইবার ঝোলা 
দার্জিলিংবাসিনী তিব্বততী রমণী 
দাঞ্রিলিংবাসিনী নেপালী রমণী 
তিব্ব্তী লেপচা পরিবার 
ইচ্ষালের প্রধান উচ্চ ইংরেজী বিস্তালয় 
মহারাজার প্রেস-গৃহ 
টেলিগ্রাফ অফিস 
মহারাজার আদালত 
কৃষ্ণনগরে সমবেত হিন্দু নেতৃবৃন্দ 


শ্তার শ্রীযূত মন্মথনাথ মুখোপাধ্যায় 
হিন্দ-পতাকাবহনকারী হ্তী 
বিভ। মজুমদার 

পান্নালাল মুখোপাধ্যায় 
প্রীমান বিধু মোদক 

আসাম গভর্ণর 
রজনীমোহন কর 

কার্তিক পৃজ 

যোগমায়! দেবী 

পাঁনের মসলার বাড়ী 
প্রমধনাথ চট্োপাধ্যায় 


.স্কুটবল প্রতিযোগিতায় বিজিত হিন্দুদল 


ভাগারকার 
দেওধর 
মার্চেন্ট 


ভাবধর 
"চট্টোপাধ্যায় 


গিণদেবতা (, 


৪৪৫ ॥ 
6৪৪ | | 


/ 


ৰং 
5৩ 
৩৪ 


১৮ 


১১৯ 


১৩০ রি ও.ফুজিয়ানা 
১৩১তসমে! আগ্নেয়গিরি 
১৩'ওসাকার একটি রাস্তা 
১৫ ছেহেপদর পুতুল-উৎসব রঃ 
১ টোকিও রাজপ্রাসাদের প্রবেশ-পথ রঃ ১৫৯ 


ব্ছব্ঠচিত্র 


/ 


১। পৌষ পার্বণ ২ পাহাড়ী পথ ৩। জহর ব্রত 
বিষ চিত্র 


১। দিল্লীতে সম্পাদক শ্মিলনে ট্রিবিউনের মিঃ সন্ী, লীডারের 
মি; বিশ্বনাথ প্রনাদ, অমুতবার পত্রিকার শ্রীতুষারকাস্তি ঘোষ ও কেন্ত্রীয় 
পরিষদের ডেপুটা স্পীকার ধ্লখিলচন্র দত্ত 

২। কলিকাতা শ্র্দ পার্কে সাধারণের জগ বিমান-আক্রমণ- 
প্রতিরোধ কেন্গ।। বালী থলিয়া দিয়া প্রস্তুত করা হইয়াছে 

৩। বাকিংমহাম (দাদের উদ্যানে সম্রাট ষষ্ঠ জর্জ, সাআাজ্জী ও মিঃ 
উইনসটন চার্চিল_-ইঈ্ঠাই এখন বুটাশ সাম্রাজ্য রক্ষা! করিতেছেন 

৪1 বিলাতের 1দ্‌ সভার উপর বোমা পড়ার পর তাহার বাবস্থা । 

৪ হনব 
একাংশ ভায়া গছ 

ভোর্ঠের নানকের জন্মদিনে বহু লোক তথায় গমন করে 
কিংহাম প্রাসাদে বোম! পড়ার অবস্থা২--এক দিকের 





৮। কর্িচার গঙ্গায় (বাগবাজারে ) খড়ের নৌকাসমূহে রি 
কাণ্ডের দৃগ্গা। হাতে কয়েক লক্ষ টাকার খড় নষ্ট হইয়াছে 

৯1 রখালক-_(রাচীর একটি দৃশ্ঠ) 

১০। সঁপারের ছেলের দল 


/! 
এ 


মাঘ--১৩৪৭ 


কামাগ বৃদধমহ্ি 

নাগেছ্গ 

আরমামার একটি মনোরম স্থান 
ম্টির ভিতরের কারুকার্ধা 

« পার্কের দৃষ্ঠ 

টোর বিশ্ববিখ্যাত মন্দির 

এন বা রথ-উৎসব 
কাল ও একাল 


৯১৫৬ 


রক্তুশোষক বাছুড় ০ ১৬৮ 


রতশোষক বাছুড়ের মস্তক মহ ১৭ 
বিদ্যুৎ সরবরাহের জলপ্রপাত ৪৬৪ ১৩৪ 
,, নাগাপল্লীতে একজন আধুনিকা নাগাধাত্রী *** ১৮১ 


৩৫  উতসববেশে নাগা! ও ং 5৮২ 
নাগ! ও নাগিনী ৪৬ ১৮৩ 


রায় বাহাছুর জলধর সেন 
প্রীকরুণানিধান বন্দ্যোপাধ্যায় 
শ্ীতর্েন্রকুমার গঙ্গোপাধ্যায় 
প্রনন্দলাল বন 
প্রীঅবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর 
প্রীহীরেন্জনাথ দত্ত 
প্রীন্মভাবচন্ বন্ধ 
প্ীশর ৎচন্দ্র বন 
উধারাণী মুখোপাধ্যায় 
ডঃ বীরেশচন্দ্র গুহ 
রায় 

নিখিলবঙ্গ সঙ্গীত প্রতিযোগিতা (ক) বিভাগের রাগ 

মহিলাবৃন্দ 

থ) বিভাগের মহিলাবৃন্দ 

উ গৌরী গঙ্গোপাধ্যায় 
নলিনীরগ্রন পণ্ডিত 
গোষ্ঠবিহারী বিশ্বাস 
জ্ঞানেন্র বন্দ্যোপাধ্যায় 
মনোহর দে 
প্রভাতনাথ মুখোপাধ্যায় 
সুধাংজুশেখর চটোপাধ্যায় 
পালিয়ার অধিনায়কত্ব ইউ পি দল ০০" 
ইউ পি ও বাঙ্গাল। প্রদেশের সম্মিলিত খেলোয়াডবুন্দ "* 
অল ইগ্ডিয়া ও সিলোন দলের খেলোয়াড় বৃন্দ 
এস্‌ ব্যানার্জি 
বেনারস হিন্দু বিশ্বধিগ্ভালয়ের ক্রিকেট দল 
কলিকাত। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিকেট দল 


নিখিল ভার ব্যাডমিণ্টন প্রতিযোগিতায় বোম্বাউয়ের জলা 


এস্‌ আর বাহারী ও নির্ল চাটার্জি 


নিখিল ভারত ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতায় পাগ্তাবের খেলোয়াড়গণ 


এ দিল্লীর খেলোয়াড়গণ 

মালয়ের খাতনাম৷ ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় চু চুন কেং *** 
এইচ বস্তু রঃ 
ড্রাণ্ড কাপ বিজয়ী মহমেডান দলের খেলোয়াড়গণ 

এ খেলায় মহমেডান দল ২-_-১ গোলে জয়ী হয়েছে 


ইষ্ট ইগ্ডিয়া টেনিস প্রতিযোগিতায় যোগদানকারী! সি ও 


সাউথ ক্লাবের পরিচালকগণ 
বন্তবর্ণ চিত্র 


১। ধৃতরাষ্ট্ ও গান্ধারী 
৩। রাজা প্যারীমোহন মুখোপাধায় 


বিশেষ চিত্র 
১। আচাধ্য সার প্রফুল্পচ্্র রায় 


২। বাহরণের সমাধি 


২৩৮ 
২৩৮ 
২৩৮ 
২৩৯ 
২৩৯ 
৩৯ 
২৪৩ 
২৪০ 
৩৫৪ 


৫৫ 


২৫৬ 


৫৬ 


২৫৭ 
২৫৮ 


২৬২ 


২৬৬ 


২৬৯ 


সম্প্রতি আচার্য্য রায়ের বয়ম অশীতি বৎসর হওয়ায় তাহার সধ্ধদ্ধনার 


আয়োজন চলিতেছে 


২। কলিকাতায় নারী শিক্ষা সমিতির প্রদশনীতে সার এস-রাধাকৃষ্ণন 


ও মযুররতগ্জের,রাজমাতা সুচারু দেবী 


৩। কলিকাতা গভর্ণমেন্ট আট স্কুলের চিত্র-প্রদর্শনীতে ্রযুত 


ভবানীচরণ লাহা ( দক্ষিণ দিক হইতে তঁতীয় ) . 


৪। কলিকাত৷ মেডিকেল কলেজে প্রাক্তন ছাত্র-মিলন-উৎসব 


[018 41. 


€। মিশতে ভারতীয় মহিণী সম্মিলনে নখেত জিবাস্ুরের মহারাণী, 


লেডি প্রতিমা মিত্র প্রভৃতি 


৬। কংগ্রেস নেত্রী শ্রীযুক্ত কমলা দেবী চট্টোপাধ্যায়: আমেরিকার্জ 


কালিফোমিয়ায় ভ্রমণে গিয়াছেন 


৭| কারমাইকেল মেডিকেল কলেজে প্রান্তন ছাঁ্র-মিলন-উৎদব 


৮। লগুনে দরিগ্র ব্যক্তিগণের বাসগৃহ- বোম! প্ৃড়িয়! ভাঙগিয়া 


গিয়াছে 


৯। লগুনে কারর্টি কাউন্দিল হলের সু বোম পড়ি এমা গর্ভ 


৮ 


হইয়াছে 


১*। রাজকীয় ভারতীয় নৌবাহিনীন্ডে গৃহীত নুতন শিক্ষানবীশ দল 


ব্যায়াম করিতেছে 


ফাস্তন--১৩৪৭ 


রায় বাহাছুর শ্রীন্কুমার চট্যোপাধ্যায় 

স্বর্গীয় কালীমোহন ঘোষ 

পল্লীসংস্কার প্রতিষ্ঠান ও তাহার কতিপয় কল্মী 
প্রীনিকেতনে তাত-শিল্প 

গ্রামে সবজী চাষ 


তাড়ি ও ডি ধন হইতে সু ইডে রত াছুকর 


পি, সি, সরকার 
রবারের সুতার সাহাষ্যে প্রস্তত-প্রণালী 
আঠ৷ দ্বার৷ প্রপ্লুতের প্রণালী 
আঠা দ্বার! প্রস্তুতের অপর একটি প্রণালী 
বিশেষ প্রস্তুত প্যাকেটের সমন্ুখের দৃশ্ঠ 
বিশেষ প্রস্তুত প্যাকেটের পেছনের দৃষ্ত 
বাপের পেশা (শিলী- হেমেন্্রনাথ মজুমদার ) 
রামধনু (শিল্পী-_কুমার রবীন রায়) 
হুড় প্রপাত (শিলপী-__বিমল মজুমদার ) 
শকুস্তল! ( ভাঙ্কর-_কে, সি, রায়) 


চিন্তাত্রোত ( শিল্পী পূর্ণচন্দ্র চক্রবর্তী ) 5০৮৭ 


তিব্বতী তরুণী ( শিল্পী-_শৈলজ মুখাজি ) 

প্রীকৃষ্ণের দেহতাাগ ( শিল্পী_ন্বগঁয় সারদা উকীল ) 
কৈকেয়ীর বর প্রার্থনা (শিলপী-_রমেন্দ্র চক্রবর্তী ) 
যাত্র! ( ভাষ্খর--প্রমথ মল্লিক ) 

সঞাট ষষ্ঠ জর্জ সৈশ্যদল পরিদর্শন করিতেছেন 


ডিউক অফ. হাহ টিন | 


পুরস্কার বিতরণ করিতেছেন 

দক্ষিণ আমেরিকায় লর্ড ও লেড়ী উইলিংডন 

ভারতে আনীত ইটালীয় বন্দী ” 

১৯৪০-এর অক্টোবরে লগ্ডনের দৃশ্য 

পশ্চিম মরুভূমিতে ভারতীয় সৈশ্তদল 

আসানসোলে কুষ্ঠাশ্রমে বাঙ্গীলার গভর্ণর ৯৯৯ 

গত ১৭ই ডিসেম্বর ফলিকাতায সি গার্ড পনীতে 
বাঙ্গালার গভর্ণর 


ভারতীয় বিমান বাহিনীতে একদল যুবক বিমান-চ্লক *** 


ভারতীয় পদাতিক সৈম্ভগণ ইবিত্রীয়ার সীমান্ত. 
আটবার! নদী পার হইতেছে - 


থুলন। বালিক। বিভ্ালরে গভ্ণর-পত্তী লেডী (মবী ভার্বা 


ভারতীয় রাজকীয় (নৌবাহিনীতে নবনিধুক্ত যুবকবৃদ্দ :+.. 


মাত্রাজে বাঙ্গালার ব্রতচারী দ্যা 
জামদেরপুর পরবাসী বল সাহিতা সশ্মিলনে দমবেত_নূল সভাপতি 
€ জীগুরুসদয় দত্ত, রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় প্রসৃতি :*. 

কবত। মিত্র রঃ 

অমল সাহ৷ 4 

ঈশানচন্ত্র দাশএপ্ত 

মধুহুদন ভট্টাচাধ্য . 

স্বামী প্রণবানন্দ' 

গঙ্গীনাগর মেলার সেবাকাধ্যে রত কলিকাত৷ নিযে 
মেডিকেল কলেজের ছাত্রবুন্দ 

দি?ম্বর চট্টোপাধ্যায় 

সরম্বতী ইন্ষ্টিটিউসনের সরম্বতী প্রতিমা 

টাল৷ স্পোর্টং ক্লাবের সরন্বতী প্রতিম! ** 

প্রতিমা দেবী / 

শৈলেশকুমার বন্ধ 

8৮ এর বহু ্ 

..প নাইডু, এস ব্যানাজি, মস্তাক আলি. 4 

ঘমরনাথ, জাহাঙ্গীর খাঁ, দিলওয়ার হোসেন, হিন্দেলকার *. 

পাতিয়ালার মহারাজা 


গছ 
গত 





৪০৩২ 


মেজর নাইডুর একাদশ ও মোহনবাগান ক্লাবের দিরিরি রা ৪০৩ 


রামক্ণ ইনৃষ্টিটিউটের উদ্োগে সিভিক গার্ডসদের সাত মাইল 

"7. সাইকেল রেসে প্রতিযোগিগণ ও উপস্থিত ঝক্তিগণ 

ঢাকুরিয়! 'জুনিয়ার ফোস” বিজয়ী কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের “ক্র 
টেনিস প্রতিযোগিতায় উৎসাহী 2508 রী 

এলিস মাধূল, আনন্দ মুখাঞ্জি, মাকনিল 

পিডি দত্ত, দিলীপ বন 


ত্রিবর্ণ চিত্র 


বসন্তের জাগরণ ৩। 


বিশেষ চিত্র 


ও 
১। গায়েরবৌ ২। 


১। অনস্স্তর ভূর 


প্রালাভন 


৪৩৪ 


২। মাদ্রাজ ডা; বিধানচক্জ রায়-_মাজাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস 


চ্যান্সেলার কর্তৃক সম্থদ্ধন। 
৩।. সাগর-সঙ্গমে কাকন্বীপের স্ুবৃহৎ বালুচরে তীর্ঘযাত্রীবৃন্দ 


৪। কলিকাতায় নিগিল ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের নেতৃবৃন্দ 


৫ 'কলিকাতা যাদুঘরে ফাইন আটস্‌ 
গভরপরীক্ষাী লেভী হাবার্ট 


৬! গঙ্গাসাগরের একটি মন্দির- দুরে সমু বহু যাত্রীপূরণ ষ্টীমার 
৭। কলিকাতা টাল! পাকে মাধ্যমিক-শিক্ষাবিলের প্রতিবাদ সভ। 


একাডেমীর প্রদর্শনীতে 


৮। বাঙ্গালোরে প্রবাসী বাঙ্গালীদের 'দীপালী সশ্মিলনী"র বার্ধিক উৎসব 


4" ৯। নিখিল ব্রহ্ম বঙ্গ সাহিত্য সম্মিলন 


চৈত্র--১৩৪৭ 
১১৯* সালের দলিলের প্রথমাতুশ 
» * শেধাংশ 
তবকষ্ধ আন্মণৈর পথে বৃটিশ সৈচ্কগণ কাটাতারের রি 
ফীঁকের. মধ্য দিক! যাইতেছে *** 
ভার্নার পতন ২ 


* ভার্ন৷ আক্রমণের দৃত্ঠ রর 


৮৬4 


৪৬৭ 
৪৬৭ 


৫১৫ 
] 
৫১৭ 
৫১৯ 


ডক্টর সুশীলকুমার মুখোপাধ্যায় ১ ৫২৫ 


হরিদান মুখোপাধ্যায় ৫২৫ 
বাজিতপুর হিন্দু সম্মেলনের সভাপতি শ্রীযুক্ত যোগেন্দ্রনাথ গুপ্ত ) ৫২৭ 
কবিরাজ শ্রীরামকৃষ্ণ শাস্ত্রী ৫২৮ 
চট্টগ্রামে নূতন মন্দিরে রিট ঠা রামের ৫২৯ 
চট্টগ্রামে ডক্টর গ্ঠামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ৫২৯ 


কলিকাতা ধন্মৃতলা ্ীটস্থ ইপ্ডিয়ান আর্ট স্কুলের পতী ্ধ ৫৩৪ 
সম্ভোষের মহারাজকুমার গ্রীরবীন্দনাথ রায় চৌধুরী পরিকল্পিত 


দক্ষিণ কলিকাতার সুবৃহৎ স্বর্ণ সরন্বতী  *** ৫৩৪ 
রাজ! জানকীনাথ রায় ৫৩১ 
ইন্টার কলেজ ক্রিকেট লীগ বিজয়ী বিদ্যাসাগর কলেজ রং ৫৩২ 
প্রফেসর দেওধর ৫৩৩ 
ইণ্টার কলেজ ক্রিকেট লীগের ফাইনালে পরাজিত 

প্রেসিডেন্সি কলেজ টীম রড ৫৩৩ 
কুচবিহার কাপ বিজয়ী কাষ্টমস দল ৫৩৪ 
কুচবিহার কাপের ফাইনালে পরাজিত ট্রপিকাল স্কুল ৫৩৪ 
গোপালম ০০, ৫৩৫ 
মেভার নাইড়ু ৯০৭ ৫৩৬ 
বেঙ্গল এখলেটিক স্পোর্টসের ১৫০০ মিটার সাইকেল রেস ৫৩৬ 
ভারত স্ত্রী শিক্ষা সদনের বালিকাগণ কর্তৃক পিরামিড দৃশ্য ৫৩৭ 
মহিলাদের ইপ্টার কলেজ স্পো্টসের টাম চাম্পিয়ানশীপ বিজয়িনী 

ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউটের ছাত্রিগণ পর ৫৩৮ 
মহিলাদের উন্টার কলেজ ম্পোর্টসের রীলে রেস 25 

বেখুন কলেজের ছাত্রীগণ ৫৩৯ 
টেবল টেনিস চ্যাম্পিয়ানশীপ বিজয়ী অরুণ গুহ '" ৫৪৯ 
এস কে পিংহ পচ, ৫৪৯ 
মহিলাদের ইণ্টার কলেজিয়েট স্পো্টসের ব্যালেন্স রেস ৫৪০ 
কুমারী তপত্তী ভট্টাচাধ্য , ০ ৫৪১ 
রবিন সরকার ০০ ৫৪১ 
মিস বিবিক ৭০৪ ৫৪১ 
ওলিভ ক্রেজ রি ৫৪২ 
হেলেন জ্যাকব ০০ ৫৪২ 
এনিট! লিজান! ৮০ ৫৪২ 
এন স্পার্কলিং ০** ৫৪২ 
এস হেনরোতি পু 2 ৫৪৩ 
এলিস মাষেবল র *** ৫৪৩ 
নানসি ওয়ানি *** ৫8৩ 
মিসেস সারহ! ফেবিয়ান *** ৫৪৩ 

বিশেষ চিত্র 


১। যাদবপুর যল্ষ্র! হাসপাতালে রোগীদের বাধিক খেল! উৎসবে 
সভাপতি সার নৃপেন্দ্রনাথ সরকার (মম্যস্থলে ) ও ডাক্তার কুমুদশস্কর 
রায় (বামে) 

২। যাদবপুর যঙ্গ্া হাসপাতালের রোগীদের খেলার একটি দৃষ্ঠ-_- 
(বাম হইতে দ্বিতীয় ) সুশীল সেন প্রথম হইয়াছেন 

৩। কলিকাত| বেহালায় ডায়মণ্হারবার রোডে ব্রতচারী গ্রামে 
ব্রতচারীদের বাধধিক উৎসব_-সভাপতি কাশিমবাজারের মভারাজ। বক্তৃতা 
করিতেছেন ও প্রতিষ্ঠাত। শ্রীগুরুসদয় দত্ত পার্থে বসিয়া আছেন 

৪1 যশোরে কৃষি শিল্প প্রদর্শনীতে উৎসবুমধ্যস্থলে (বাম দিক 
হইতে চতুর্থ ) জেলা ম্যাজিষ্টেট মিঃ এন, এম, খান উপবিষ্ট 


৫1 বোম্বায়ে বেঙ্গল ক্লীবের খেলা উৎসবে সমবেত প্রবাসী বাঙ্গালীবৃন্দ 
_বোম্বাই হাইকোর্টের বিচারপতি শ্রীযুক্ত ক্ষিতীশচন্ত্র সেন পুরস্কার 
বিতরণ করিতেছেন 

৬ এলাহাবাদে কমল| নেহর প্রস্থৃতি হাসপাতাল-_প্ডিত জহরলাল 
নেহরুর পরলোকগত। পত্বীর স্মৃতি রক্ষার্থ নিশ্মিত 

ণ। কলিকাতা ইউনিভাঙিটা ইনষ্রিটিউটের আন্তর্কলেজীয় ১৬ মাইল 
ভ্রমণ প্রতিযোগিতায় পুর্কার বিতরণ উৎসব-_স্বটাশচার্চ কলেজের নিতাই 
বসাক (ছবির নীচের দিকে বাম দিক হইতে দ্বিতীয় ) প্রথম, কে সি শীল 
(বাম দিকে প্রথম) দ্বিতীয় ও ডি মেঞ্জিস (দক্ষিণ দিকে ) তৃতীয় হইয়াছেন। 

৮। ডক্টর রাধাবিনোদ পাল কলিকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি নিযুক্ত 
হওয়ায় তাহার সম্বদ্ধনা-_মধ্যে মাল! গলায় বিচারপতি পাল, তাহার দক্ষিণে 
বিচারপতি বিজনকুমার মুখোপাধ্যায় ও বামে বিচারপতি রূপেন্দ্রন্্র মির 

৯। গড়ের মাঠে ক্যালকাট। ফুটবল গ্রাউণ্ডে কুস্তী কানিভালের দৃষ্ঠ 

১০ হইতে ১৩। এলাহাবাদে নিখিল ভারত ফট প্রতিযোগিত।--ক 
_-প্রথম- এন, সি, চট্টোপাধ্ায় ; খ- ছ্িতীয়--দেবেন্দ্রনাণ বন্দ্যোপাধ্যায়; 
গ--তৃতীয়- শ্রীমতী পূর্ণিম। ঘোষ ; ঘ-_চতুর্থ__ শ্রীমতী ইলা বন্দ্যোপাধ্যায় 


বুবর্ণ চিত্র 


১। শিকারী ১। বালীকি ৩। উমশ দত্ত 


বৈশাখ--১৩৪৮ 
আমিও গাড়োয়ানের ভাষায় গান ধরয়! দিলাম ৫৬৯ 
এমন মময় দেখিলাম গাড়ীর ছাউনির উপর নেই মিরা ভয়ঙ্কর আজগর ৫৭১ 
এন্কাবনার চিঠি « ৫৮২ 
বৃত্যরতঠ। এন্কার্ন। 
আধুনিক নৃশারতা পেপিতা 
মাতৃম্নেহ নৃত্যে ললিতা 
ললিত। 
সকন্য! মাদাম মারিয়। 
রেখুজি ছেলেরা ও আমি 
চণ্ীদাস- নান্ুরে সাধারণ পাঠাগার ও বিদ্যামন্দির 
চণ্তীদাসের ভিউ! ও বিশালাক্ষী মন্দিরের ধ্বংসম্তপ 
দেবখাত পু্ষরিণা ও রামীর কাপড় কাচিবার পাট! 
বাশুলী দেবা 
কনভোকেশনে ভিক্টোরিয়! কলেজের ছাত্রিবুন্দ 
কনভোকেশনে বেখুন কলেজের ছাত্রিবৃন্দ 
প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্রিবৃন্দ 
বিদ্কাসাগর কলেজের ছাত্রিবৃন্দ 
কনভোকেশনে চ্যান্সলার বাঙ্গালার গভর্ণর ও ভাইস চ্যান্দেলার 
আজিজুল হক 
শিবপুর ইঞ্জিনীয়ারিং কলেজের ছাত্রবৃন্দ 
বর্ধমানে রবিবাসর * 
শ্যামাচরণ কবিরত্ব 
মণিকুমার মুখোপাধণায় 
এস সোহনী 
প্রফেসর দেওধর 
সি. টি সারবাতে 
[ভ. এন. হাজারী & 
আশুতোষ কলেজের ছর্দত্রগণ 


৬৭২ 


৬৭৫ 
৬৭৬ 


ভারোভলদ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী প্রতিযোগিগণপহ পানি 
কুমারী নিভ। সেন 

আশুতোষ কলেজের ছা[ুব্রগণ 

ভারোত্োলন প্রতিযোগিতার বিশিষ্ট কর্ধাক ব্রিগণ 

প্রণব ঘোষ ও অনিল সেন *** 
সাউথ এও পার্কইন দল সখ **, 
মিস একা . ত 


৬৭৬ 
৬ 
৬ 
৬৭৯ 
৬৮০ 


» বিশেষ চিত্র 


১। লাহোরের হিন্দু সম্মেলন-সভাপততি ড্র শ্যামাপ্রনাদ গাথা 
সঙ্গে ভাই পরমানন্দ ও রাজ! নরেন্দ্রনাথ প্রভৃতি 

২। ভারতীয় বণিক-সম্মিতি সঙ্ঘবের বাধিক সভা সরি 
অমুৃতলাল ওঝা! প্রভৃতি 

৩। দ্বিতীয় কলিকাত। বয়স্কাউট সমিতি 


৪। -খিদিরপুরে বঙ্গীয় গো-রক্ষা সমিতির সভা--প্রধান অতিথি 


তাওয়ালের কুমার রমেন্দ্রনারায়ণ রায় 

৫| তিশ্ত! নদীর উপর নিন্মিত নৃতন পুল 

৬। হুগলি শ্রীরামপুরে শিবশঙ্কর জিউ প্রদর্শনীর উদ্বোধন- 

৭ ট্রেনিং জাহাজ ডফরিন-- 

৮। যুদ্ধে যে সকল ভারতীয় ধন্দী হইয়াছে তাহাদের জন্য লগ্ডনস্থ 
ভারতীয় মহিলার! খাদ্য পাঠাইতেছেন 

৯। কলিকাতা বিশ্ববিগ্ভালয়ের সমাবর্তন উৎসবে সার তেজবাহীটুক্ট--শ 
সপ্রু বক্তৃত। করিতেছেন 

১০ চট্টগ্রামের রায় বাহাদুর উপেন্দ্রলাল রায় মহাশয়ের 
এত বৎসরের পুরাতন তৈলচিত্র সন্ীর্ভনাননে মহাপ্রভু | 

১১। ২৪ পরগণা পাণিহাটাতে গঞ্জাতীরে মহারাজ চকন্্রকেতু নাগ্মত 
৭ শত বৎসরের প্রাচীন ঘাট ও তদুপরি বটবৃক্ষ 


বুবর্ণ-চিত্রা £ 


১। চিত্র দশন ( উষা-অনিরুদ্ধ ) 


২। বুলবুল ৩। মাছধরা 
1 


জ্যৈষ্ট ১৩৪৮ 


মাঞ্াজ গব্ণমেপ্ট আট স্কুলের শিল্প প্রদর্শনীতে গবণর-পত্ী লেডী 
হোপ ও তাহার কন্তা ও অধাক্ষ দেবীপ্রলাদ ই 

আনমন! (শিলী- শ্রীন্শীল মুখাজি ) 

ড্রইরম আসবাব-পত্র ( শিল্পী-_প্রীদেবী প্রসাদ ) 

ূর্ববরাগ ( শিল্পী শ্রীহূশীল মুখাজি) 8 নি 

শীতের সন্ধ্যা (শি্পী-__প্রী কে-সি-এস প্লানিকর ) 

বর ( শিল্পী-_শ্রীরাজম ) 

শেষ বিদায় ( শিল্পী শ্রীদামোদর ) 

প্রসাধন (শিল্পী-_শ্রীশ মুখাজি) 

বাদ্ধক্য ( শিল্পী-_-অমলরাজ ) 

দি রোড মেকার ৪ 

ভূমধ্য সাগরের প্রধান সেনাপতি স্তার এণুরু ব্বাউন কান ৪ 

বৃটিশ সাঞ্রাজ্যের সাধারণ সেনার কর্থা_সার জন ডিল ***৯, 

বৃটিশ বিমান ব্ডটাগের নবনিযুক্ত চিফ মার্শাল সার চার্লস্‌ লা 

গ্রেট বৃটেনের সেনাবিভাগের প্রধান কর্দ্কর্তী স্তর এলান ক্রক 


৭২৯ 


প৩৬ 
৭৩১ 


৭৩১, 


৭৮৩ 


৭৮৪ 


: ভি মস্্রিসভায় ম*সিয়ে লাভালের স্থানে নবনিযুক্ত 
পররাষ্ট্র'সচিব-_ম'সিয়ে ফ্লার্জী” 


ওনার রানি বিলেত 


ঘরডগ্রাম-বিদ্তাসাগর বাণীভবনে লেডী রীডের পাঠাগার বোধন ৮৯১ 


শলির্সহরে রামপ্রসাদ সাহিত্য সম্মেলন 


উনারা গরীনাহিটালজেরনেরনউ নাভির ৮*৩ 


পুরে আগমনী সাহিত্য সংঘের সাহিত্য সম্মিলন 


0৮558507185 


7” প্রদান 
দরল জীযুক্ত ফণীক্রনাথ ব্রহ্ম 
) মেয়র এম, এ, এইচ, ইন্পাহানি 
তীন্দ্রকিশোর চৌধুরী 
বিরাজ প্রীারিকানাথ সেন তর্কতীর্থ 
বিরাজ শ্রীঅমিয়ানন্দ ঠাকুর 
পাল ওয়াঙার্স 
[লিদ- এ বংসরে প্রথম বিভাগের হকি লীগ ধিঝনী .. 


লাাবাদ এইচএ_বাইটন কাগের তৃতীর রাউণডে ০২ গোলে 


নী ইরংস 
ক্ষ ওয়াই-এ 
জল! নববর্ধ উৎসবে ব্যাওবাস্ত দলের কুচকাওয়াজ 


জা নববর্ উৎমবে বালকবালিকাদের দ্যা চাচার একটি দৃষ্ ৮১২ 


সমল! বি এদ' কুস্তি প্রতিযোগিতায় 
ক বন্দ্যোপাধ্যায় 


- শদিল্লী ইয়ংস দলের নিকট পরাজিত হয়েছে *** 


৮১৩ 
৮১১ 
৮১১ 
৮১২ 


৮১৫ 
৮১৫ 


বহুবর্ণ চির 
১। মমতাজের মৃত্যু ২। গৃহাভিমুখে ৩। ভিক্ষু 


বিশেষ চিত্র 


১। ঢাকা জেলা হইতে দাঙ্গার জন্য পলারনকারী মহিলারা 
আগরতলার দুর্গবাড়ীতে আশ্রয় লইয়াছে 

২। আগরতলায় বালিকা বিদ্ভালয়ে আর এক দল মহিলা আশ্রয় 
লাভ করিয়াছে 

৩। ঢাকা দাঙ্গার ভয়ে গ্রামের লোকজন পলাইয়া আগরতলায় 
শাসন-বিভাগের প্রাসাদে আশ্রয় লইয়াছে 

৪। রামগড়ে ইটালীর যুদ্ধবন্দীর৷ কাজ করিতেছে__সাধারণ দৈনিক- 
দিগকে জীবিকার্জনের জন্য এইরাপ কাজ করিতে হয় 

৫। রামগড়ে ইটালীয় যুদ্ধবন্দীদের ফুটবল খেলার দল-_-সময় কাটাই- 
বার জন্য তাহাদের আমোদপ্রমোদের ব্যবস্থা আছে 

৬। রামগড়ে বন্দীদের জগ্য হাসপাতাল--একজন ইংরেজ ডাক্তার 
একজন ইটালীয় বন্দী-রোগীকে দেখিতেছেন 

৭। কৃষ্ঃসাগরস্থ বুলগেরিয়ার প্রধান বন্দর-_বার্না-_সালোনিকার 
মধ্য দিয়া বুলগেরিয়ার সৈম্যদল ভূমধ্যসাগরে গিয়াছিল 

৮। বলকানের প্রধান নদী-_দানিউব-দক্ষিণ দোবরুজার দৃ্ 

৯। বুলগেরিয়ার প্রধান ধর্ঘযাজক সেণ্ট জমের বাসন্থান__রিলাস্থ মঠ 
ও মন্দির 

১*। বুলগেরিয়ার প্রধান সহর সোফিয়ার একটি রাজপথ-_এইন্থানেও 
বোম! ফেলা হইয়াছে 

১১। মাটাপান যুদ্ধের পর ইটালীয়গণকে উদ্ধার করা হুইতেছে-_- 
৪ধানি নৌকায় তাহাদিগকে তোল! হইয়াছে 

১২। যুদ্ধে এই সকল জান্ানকে বন্দী করিয়! লগ্নে আন! হইয়াছে 

১৩। বড়লাট লর্ড লিংলিধগো দিল্লীতে শিক্ষানবীশ ভারতীয় 
সৈম্চদের পরিদর্শন করিতেছেন 

১৪। সাহার ও লিবিয়ার মরুভূমিতে প্রহরী দল-_ইহারাই 
শক্রদিগকে বিপন্ন করিয়াছে 


1০৯,১০0 
4 
277 
্‌ 
সা নি 4 ু 
এ 
ক্ষ 


্ 


শে 


৮0 
এ 


নী 


ভার৩বম প্রিষ্টিং ওয়।ব 








০*্পীহ্ন_-3255 


অষ্টাবিংশ বর 


দ্বিতীয় খণ্ড | 


প্রথম সংখ্যা 


সৃষ্টির স্বাধীনতা ও ইচ্ছাশক্তি 
ডক্টর শ্রীস্থরেশ দেব ডি-এস-সি 


৯ 

বর্তমান বিজ্ঞান “কার্য্যকারণতত্ব”কে অস্বীকার করতে 
চলেছে । যাঁকে আমরা কাধ্য বলি আর সেই কাঁধ্য যা 
থেকে উৎপন্ন হয়েছে বলে মনে করি-_এই উভয়ের মধ্যে সে 
আজকাল কোনও স্পষ্ট কারণিক সম্পর্ক খুঁজে পাচ্ছে না। 
তাই তাকে এই সিদ্ধান্ত করতে হয়েছে যে, যা ভূতকালে 
সংঘটিত হয়েছে কেবলমাত্র তারই ওপরে সমস্ত ভবিস্ুৎ 
নির্ভর করে না_ভবিষ্ততের মধ্যে তৃতকালের সঙ্গে এমন 
একটা কিছু জড়িত রয়েছে যার অস্তিত্ব সমস্ত ভূতকালের 
মধ্যে পাওয়া! যায় না। হুফী'কবি ওমরের সেই প্রসিদ্ধ লাইন 
"সষ্টির প্রথম উধার মধ্যেই তার শেষ সন্ধ্যাও লুকিয়ে আছে” 
আজকালকার বিজ্ঞান অত্রাস্ত বলে গ্রহণ করে না। 

এই কাধ্যকাঁরণতত্ব শুধু যে বিজ্ঞানের মূল ভিত্তি ছিল 
ভাই নয়, তার গ্রকাঁওড ইমারতের প্রত্যেকটি ইট এই কার্ধ্য- 
কারণের সীমেন্ট দিয়ে গাঁথা ছিল। তাই যদি বলা যায়ু যে, 


এই কাধ্্যকারণতত্ব বিজ্ঞানের প্রাণস্বরূপ ছিল তা হলে 
বোঁধ হয় থুব বেণী বলা হবে না । জীবস্ত শরীরে প্রাণশক্তি 
থাকে তার প্রত্যেক কণার মধ্যে। তেমনিই কাধ্যকারণ 
ছিল গত শতাবীর বিজ্ঞানের প্রত্যেক ক্ষুদ্রতম বিভাগের 
মধ্যে। তাই থে তত্বের ওপর সে তার সমস্ত ইমারতকে 
দাড় করিয়েছিল, গ্রথিত করেছিল, বোধ হয় অকিকিতফ?? 
সামান্ত একটা ইলেক্টুনের স্বেচ্ছাচারিতায় তা যখন স্বপ্নবৎ 
অলীক ব'লে প্রতীয়মান হ'ল*তথন তাঁর অবস্থা কল্পনা করা 
ছুরহ। তার মধ্যে স্থানে স্থানে গোলমার দেখা দিতে 
লাগল, আর হয়ত কিছুক্ষণের জন্যে সে অভিভূত হয়ে 
পড়েছিল। আর তাকে দেখে কেউ কেউ হয়ত বলেছিল, 
এইবার তাঁর শেষ। কিন্তু সত্যের আকর্ষণ দিয়ে যার শরীর 
তৈরি, অজ্ঞানের বা মিথ্যার অন্তর্ধানে, তাঁকে কতদূর কি: 
করতে পারে! দেষেক্ষণিকের জন্তেও অভিভূত হয়েছিল 
এই তার পক্ষে ছি অশোভন, 


ভান্পভন্রশ্র 


মিথ্যার আবরণ তার চোধের ওপর থেকে সরে গেলে সে 
নিজের অস্তরে এই তত্বাটি অনুভব করল, জগৎ-ব্যাপারের 
সব কিছুই নিজের স্বভাবের গুণেই হয়” (138129075 )। 
সমস্তকে এক সঙ্গে ক'রে বৃহত্ভাবে ষখন দেখি তখন এই 
স্বভাব প্রতীয়মান হয় “আকম্মিকতা”র (০1791০6 ) রূপে । 
আর যখন কোনও একটিকে বা ক্ষুএ্রকে অবলম্বন ক'রে তা 
দেখতে যাই তথন তাকেই পাই যেরূপে তার নাম দেওয়া 
চলতে পারে “71২7 %]],.”, আর তার সেই পুরাতন 
কাধ্যকারণতত্ব_সেও এখন তার ধার করা দীপ্চি ফেলে 
দিয়ে নিজের সত্যিকারের স্থানটিতে দেখা দেয়-_তাঁকে 
দেখতে পাওয়া যায় ত্যন্ত অগভীরভাবে সকলের সঙ্গে শুধু 
-ওপর ওপর ভাবে মিশে থাকতে । একটু সামান্য নাঁড়া- 
চাঁড়াতেই এখন তার শূন্য গর্ভ প্রকট হয়ে পড়ে। 

. স্বল্প কথার বলতে গেলে এই দীড়ায় বে, কার্যকাঁরণের 
জায়গায় বিজ্ঞান এখন পেয়েছে ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে পচ 
খা.” কে_-আর সমষ্টিগত ক্ষেত্রে পেয়েছে 011480% বা 
আকিম্মকতাকে। আর এই আকম্মিকতার উত্তরফলম্বরূপ 
কার্যকারণকে সে আবাঁর ফিরে এনেছে । সে বলে আমর যে 
সর্বত্র কার্যকারণতত্বকে অনুভব করি-_-তা৷ 074৭ ০৮-এরই 
একবিশেষ প্রকাশ, ঘাং012 1], এরই বাহিরের পরিসমাপ্তি । 

0০ন৬০ছশকে নিয়ে যতটা না হোক, এই “ণিংছ 
৮117,,”-কে নিয়ে বিজ্ঞানের বিশেষ গণ্ডগোল আরম্ত হয়েছে । 
এই গাা.-ব্যাপারটা একে ত আগাগোড়া অবিজ্ঞান-ঘে যা, 
তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে 7:1:71১0%৫ অর্থাৎ স্বাধীনতা । অর্থাৎ 
বিদ্ঞান তার প্রত্যেক কণাকে শুধু ইচ্ছা দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, 
সঙ্গে সঙ্গে দিয়েছে স্বাতন্তয। বিজ্ঞানের এ করবার ক্ষমতা 
ঘধাছে কি-না এই হ'ল সমস্যা । “ভারতবর্ষ-এর পাঠক- 
পাঠিকাদের আমরা বর্তমানে এই সমস্াটি উপহার দিতে চাই। 


[277 %/]1., কথাটি মানুষ অনেক কাল থেকেই 
বলতে শিখে 'এসেছে। কিন্ত সে এতদিন যে ক্ষেত্রে 
একে ব্যবহার করে এসেছে ত। একেবায়ে বিজ্ঞানের বিপ- 
গ্লীত।. এর স্থান ছিল প্রধানত স্বাধীন ধর্মশাস্ত্ের মধ্যে। 
ধর্মশান্ত্রের মধ্যে যুক্তিবাদকে অপ্রধান করা হয়-_-আর 
ভগবানের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ককে প্রধান করা হয়ে থাকে। 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় থণ্ড-১ম সংখ্যা 


অথচ সেই শাস্ত্রের অন্তর্গত এই মং 11, কথাটি 
বিজ্ঞান আত্মসাঁৎ ক'রে নিল। ধর্শশাস্ত্রে হাত এান.-এর 
একটা সত্যিকারের তাৎপর্য আছে, একট সংশ্বীর বা 
০ম আছে। এই ভাবধারাকে বাদ দিয়ে শুধু 
শব্দটিকে গ্রহণ করার কোন অর্থ হয় না। তাই বিজ্ঞানকে 
শব্দ দুইটির সঙ্গে সঙ্গে তার পিছনে ?7017101ধ-কেও 
গ্রহণ করতে হয়েছে। কাজেকাজেই ধর্মশান্কারের! একে 
যেভাবে দেখে এসেছেন, আমাদেরও সেইথাঁন থেকেই এর 
আলোচনা আরম্ভ করতে হবে। 

ইচ্ছা বা ইচ্ছা করা প্রধানত মান্গষের বা মনের ব্যাপার । 
আমাদের প্রত্যেকের ইচ্ছা বলে একটা জিনিষ আছে, আমর! 
প্রত্যেকেই যে ইচ্ছা ক'রে থাকি এ একটা অত্যন্ত সাধারণ 
কথা। আমার নিজের অন্তিত্বের সম্বন্ধে ধেমন আমরা 
নিঃসন্দেহঠ আমাদের মধ্যে ইচ্ছা বলে কিছু যে একটা 
আছে সে সম্বন্ধেও তেমনই অসন্দিপ্ধ। কিন্তু এই ইচ্ছা কি 
স্বাধীন, না এর অন্তরালে কোনও কারণ আছে? একটা 
ডাল! ভণ্তি ক'রে নান! রঙের অনেকগুলি গোলাপ আমার 
সামনে রাখা আছে। তাঁর মধ্যে থেকে একট! নিতে ইচ্ছে 
হ'ল। তুলে নিলাম হলুদ রঙের মার্শাল নীলটা। অনেক- 
গুলোর মধ্যে এই মার্শাল নীলটাকেই বেছে নেবার মধ্যে বলা 
হয় যে, এর মূলে রয়েছে আমার ইচ্ছার স্বাধীনতা । যেখানে 
অনেকগুলো! জিনিষ সমান অবস্থায় রয়েছে সেখান থেকে 
একটাঁকে ধেছে নেবার মধ্যে আমীর ইচ্ছার স্বাধীনতা বর্তমান ; 
কিন্ত ব্যবহারিক মনোবিজ্ঞান (1:519611071691 79550100- 
102 ) বলে যে, এই বেছে নেওয়ার ব্যাপারটার মধ্যেও 
আমার স্বাধীনতা নেই। এখানে আমর! আমাদের পুর্বব- 
সংস্কারের অধীন । আমাদের ভাল লাগ! বা মন্দ লাগা, ইচ্ছা 
বা অনিচ্ছার অন্তরালে রয়েছে নানা সময়ের নান! ঘটনার 
ভাব-সমষ্টি। এর! আমানের মনের মধ্যে অলক্ষিতে জমা 
হয়ে »সে আমাদের ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রিত করে। এখানেও 
আমাদের কোনও সত্যিকারের স্বাধীনতা নেই। তাই 
এখানেও চা] %/]1.[.-সমস্যা এসে উপস্থিত হয় না। 

ধর্মশান্ত্রকারের! বলে থাকেন যে, আমাদের পাপের মূলে 
ইচ্ছার এই স্বাধীনতা রয়েছে। বাস্তবিক পক্ষে আমার 
কর্মের দায়িত্ব আমার না থাকলে পাপের কোনও অর্থ 
পাওয়া! যায় না। কিন্তু আমার কর্মের জন্তে আমি দায়ী 


পৌধ--১৩৪৭ ] 


বললেই কথা সম্পূর্ণ হয় না__বলতে হয় কার কাছে দায়ী? 
শাত্রকািদের (:1116019518175 ) কাছে এর উত্তর অবশ্য 
আছে তারা বলেন, আমার কর্শের জন্যে আমি দায়ী__ 
(১) ভগবানের কাছে, (২) সমাজের কাছেও (৩) আমার 
নিজের কাছে । এর মধ্যে পাপের জন্যে আমরা দায়ী 
প্রধানত তগবানের কাছে। প্রশ্ন হয়, “ভগবানের কাছেই-ব 
দায়ী হ'তে যাঁব কেন?” উত্তরে ধর্শশান্ত্কীরেরা এই রকম 
যুক্তি দেখান-_-(১) ভগবান আমাদের স্থষ্টি করেছেন (২) তাই 
আমাদের কর্মের হিসাব তার প্রাপ্য, কাঁরণ (৩) আমার 
পাঁপের জন্যে তাঁর হাতে শাস্তি পেতে হবে। তাদের কাছে 
তগবৎ ইচ্ছার বিপরীত কোনও ইচ্ছাঁর উত্তরফলই হ+ল অন্ঠায়- 
কর্ম» পাপ। এইভাবে তারা অন্যায় আর পাপের সঙ্গে 
স্বাধীনতার সংযোগ স্থাপন করেন। 

স্বাধীনতার মূল এইভাবে একটা পাওয়া! গেলেও তা 
মোঁটেই যুক্তিসহ্ হয় না। ভগবান যদি আমাকে সৃষ্টি করেই 
থাকেন তবে আমার ভিতরকার তার ইচ্ছার বিপরীত ইচ্ছ। 
প্রকাশ করার চেষ্টাও তিনিই সৃষ্টি করেছেন। অতএব 
এখানেও এর জন্যে আমি প্রধানত দয়ী নই। তা ছাড়া, ধর্ম- 
শীন্নকারের! ভগবানকে বলেন তিনি পরিপূর্ণ ভাল। যে পরি- 
পূর্ণ ভাল, তাঁর সৃষ্টির মধ্য থেকে মন্দ বের হবে কেমন ক'রে? 
ভগবানকে পরিপূর্ণ ভালও হতে হবে,আর সঙ্গে সঙ্গে আমার 
পাঁপ করার ইচ্ছাও থাকবে_-এ দুটো এক সঙ্গে হতে 
পারে না। একাঁসনে তগবান সৃষ্টিকর্তা আর বিচারক হলে 
তাঁর মধ্যে বিরোধ এসে পড়ে। অতএব ধর্মশশাস্ত্রকাঁরদের 
এ কথা এ ভাবে স্বীকার করা চলে না৷ 

বাস্তবিক কথ! এই যে, খৃষ্টান ধর্শশাস্ত্রকারেরা স্বাধীনত৷ 
বা £০০0010-কে আবিষ্কার করলেও তারা এর যথার্থ 
স্থানটি খুঁজে পাননি। তাঁরা ভগবানকে পরিপূর্ণ ভাল 
বলেই যত বিরোধের স্থষ্টি করেছিলেন। ভগবান 
পরিপূর্ণভাবে স্বাধীন। এই স্থাধীনতাই তিনি তার 
হাষ্্রকে দিয়েছেন। তাই সে ভগবমুখী বা ভগবৎ- 
বিরোধী দু-ই হ'তে পারে। এইখানেই আছে তার 
ইচ্ছার স্বাধীনতা । ভগবানের আছে শুধুমাত্র স্বাধীনতা 
_ স্থাষ্টির মধ্যে এসে তাই হয়েছে ইচ্ছার স্বাধীনতা-_ 
দাত ৬111. 


হী দত গধুনা, ড় লা ও অনু এই 


স্টিল বযাশ্রীনতা ও. ইচ্াস্পতিৎ 


তিনটি তত্বকে অঙ্গাঙ্গীভাবে এক ক'রে নিয়ে সচেতনভাবে 
অবস্থিত। মনের সুরে এই স্বাধীনতা দেখা দেয় ইচ্ছার 
স্বাধীনতাঁরপে, প্রাণের স্তরে দেখা দেয় জীবনের উৎশৃঙ্খল 
স্পনদনের ভিতর, আর -জড়ের স্তরে সে দেখা দেয় সেই 
গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে যাকে আজকাল, কৈজ্ঞানিকের 
জড়জগতের সর্বত্র বিরাজমান দেখছেন । * 

সথষ্টির মধ্যে এই তত্বগুলি অবশ্ঠ এইভাঁবে বিভাজিত 
হ'য়ে নেই--সেখানে তার! পরস্পরের সঙ্গে এক হঃক্পে 
মিলে মিশে বর্তমান। বিজ্ঞান এর ভিতরকার চৈতন্- 
সত্তাকে স্বীকার করতে চায় না। এর সচেতনত্বকে 
বাদ দিয়ে যা বর্তমান থাকে তার নাম সে দেয় প্ররুত্তি। 
তাই প্রকৃত্তিকে সে অচেতন জড়রূপা বলেই পাঁয়। 
প্রকৃতিকে অনুধাবন করবার এই পথ সে বেছে নিয়েছে 
বলেই প্ররুতির যাক্ত্রিক ভাবই তার কাছে শুধু প্রকাশ 
পায়। যান্ত্রিকতার প্রথম করোলারি (০০1:01121 ) হল. 
কার্যযকারণতত্ব। তাই তার সামনে কার্য্যকারণতত্ব 
এত সত্যরূপ নিয়ে উপস্থিত হয়, আর তারই সঙ্গে সঙ্গে 
দেশ ও কাল বেরিয়ে আসে সম্পূর্ণ পৃথক্‌ অবস্থায় এক 
অপরের অসম্পকিতভাবে। তার জগৎ তখন জড়রূপ 
নেয় খণ্ড খণ্ড অবস্থায় পরস্পরের সঙ্গে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থেকে । 
অথচ তার সমস্ত নিয়ম সে গড়ে-_এক অবিচ্ছিন্নতা 
অথগও্তাকে কল্পনা করে । 


৩ 


বিজ্ঞান যে প্রকৃতিকে এইরকম জড়রূপ! যন্ত্রভাবাপক্ন- 
ভাবে দেখতে পায় তার মূলে একটা বিশেষ কারণ আছে, 
মানুষ আর প্রকৃতি এই দুইয়ের মধ্যে যা সম্বন্ধ তা মাষের 
কাছে প্রকাশ পাঁয_ জানের আকারে । তাই সমস্ত 
জ্ঞানের মূলে রয়েছে বিষয়ী'আর বিষয়ের সম্পর্ক। মানুষ 
এখানে হল বিষয়ী অর্থাৎ 9991৩০5 আর প্রকৃতি হস্ল. 
বিষয় অর্থাৎ 091০০ বিষয়ী বা 501০0) অর্থাৎ 
মানুষ, বিষয় বা ০১০০৮ অর্থাৎ জগৎকে তার বাইরের 
জিনিষ বলে মেনে নিয়ে তার মধ্যে তারই অন্তনিহিত 
সম্পর্কগুলি অনুসন্ধান করে- সম্পূর্ণ নিজের প্রয়োজনাুসায়ে 
বা ইচ্ছার অনুর । যে সম্পর্ক সে খুঁজে বার করে, তা 
তার কাছে জিনিষেরই ভিতরক্কার সম্পর্ক 


৪ ভ্ঞান্্ভল্বঞ্র 


[ ২৮শ বর্ব-_ ২য় খণ্ড--১ম সংখ্যা 


বলেই প্রকাশ ' পায়। এই সম্পর্কের মূলে যে তার তার পট-পরিবর্তন ক'রে চলে--“অনাগত মহা ভবিষ্যৎ 


নিজেরই ইচ্ছা ছিল বা তারই প্রয়োজনের খাতিরে এই 
সম্পর্ক বা! নিয়ম সে খুজে পেয়েছে ত! তার কাছে একেবারেই 
অপ্রকাশ থেকে যায়। কাজে কাজেই, তার কাছে বিষয় 
আর বিষয়ী একেবারে পৃথক থেকে যায়। প্রকৃতি আর 
মানুষ হঃয়ে ওঠে ছুটি সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র সতা। 
এই সঙ্ত! দুটির মধ্যে একটির অর্থাৎ মানুষের অধিকার 
ইচ্ছা' করা, কাঁজ করা, আর অন্ুতব করা । আর অপরটির 
অধিকার ০৮1৩০ বা মানুষের ইচ্ছার তৃমি হওয়! বা তাঁর 
কাজের উপকরণ-স্বরূপ হয়ে ওঠা। প্রকৃতিকে তাই 
মান্য যে ভাবে দেখতে চায় সে তাকে ঠিক সেই ভাবেই 
ফিরে পায়। যখন সে যন্ত্র দিয়ে তাঁকে অনুসন্ধান করে 
তখন প্রকৃতির মূল রহস্তও যাস্ত্রিকতাঁবেই ধরা পড়ে। যন্ত্র 
জিনিষটা মানুষের হাতের তৈরি জিনিষ, আর একে সে 
তৈরি করেছে “নিশ্চিতের তত্ব দিয়ে । তাই যন্ত্রের ভিতর 
দিয়ে যে প্রকৃতিকে সে খুঁজে বার করে, তাকেও মনে হয় 
যেন অতি স্তবএনিশ্চিত। কঠিন নিয়মশৃঙ্খলে ত| যেন আষ্টে 
পৃষ্ঠে বাধা । এই নিয়মগুলি জানা থাকলে আর জগতের 
যেকোনও জায়গার যে-কোনও সময়ের অবস্থার খবর 
পেলে বিশ্বত্্ধাণ্ডের সব কিছুই অন্ক কষে বার ক'রে ফেলতে 
পার! যাবে। জগতের মধ্যে অনিশ্চিত অজানিত বলে 
কোনও কিছুর অস্তিত্ব বিদ্যমান থাকতে পারে না এই 
তার দৃঢ় ধারণা । 
কিন্ত আমরা আমাদের অন্তরের অন্তরে ভাল ক'রেই 
জানি যে, জগৎ অত স্ত-নিশ্চিত ব্যাপার নয়। আমরা 
নন যে জগতকে আমরা কখনও সম্পূর্ণভাবে সব দিক দিয়ে 
পারি না। জগতের একটা ব্যাপ্ারের খবর জানলে 
তাত আন্ুষঙ্গিক ব্যাপারটি তেমনিই গোঁপন হ/য়ে পড়ে। 
জগৎ পরিবর্তনশীল, সে যন্ত্রের মত স্থির নিশ্চল নয়। প্রমাণ 
না দিতে পারলেও আমরা জানি যে, জগৎ শুধু পরি- 
বর্তনীল তাই নয়, এ পরিবর্তনের মধ্যে প্রগতি বা পরিণতিও 
বর্তমান। এখানে সৌর জগৎ হৃষ্ট হয়ে ধ্বংসের দিকে 
অগ্রসর হয়। ছড়াঁন নীহারিক! পুঞ্জীভৃত হয়ে শীতলতায় 
পর্যবলিত হয়। এখানে জীবন অবিভূতি হয়ে বোধ ও 
সাড়াকে উদ্ধদ্ধ করে। মন জন্ম নেয়ন-নিরাশার গভীর 
অন্ধকারে আশার ক্ষণদীপ্তি'দেখ! ে়। সৃষ্টির নাটক 


লাগি”। 
“তর্ক তারে পরিহাসে, মর্ম তারে সত্য বলি জামে * 
সহশ্র ব্যাধাত ম।ঝে তবুও সে নঙ্গেহ না মানে।” 
বিগত যুগের বিজ্ঞান পরিপূর্ণ যাস্ত্রিকতাকে চোখের 
সামনে জোর ক'রে ধরে রেখেছিল বলে াষ্টির এই সব 
অশান্ত্রীয় উৎশৃঙ্খলতাকে দেখতে পেলেও জোর ক'রে 
অস্বীকার করত। তার কাছে এ সব ছিল বিষয়ী অর্থাৎ 
9৫০-এর গণ্তীর ব্যাপার, আর কাঁজে কাজেই অলীক। 
আজকাল বৈজ্ঞানিকের! তাদের পূর্ববজগণের গড়া যাস্ত্রিকতার 
কঠিন নিগড় থেকে পরিত্রাণ পাবার চেষ্টায় প্রাণপণে 
ব্যাপূত আছেন। কাজে কাঁজেই, তাঁরা এমন সব কথা 
আজকাল বলতে স্থুরু করেছেন প্রীীনপন্থী বৈজ্ঞানিকেরা 
যা! স্তনলে বোধ হয় কানে আঙুল দিতেন। 


৪ 


জগতকে বোঝবাঁর চেষ্টায় তাকে বিষয়ী আর বিষয় 
অর্থাৎ 581১)9০6-০9)০০-হিসাবে ভাগ ক'রে নেওয়া যে 
বাস্তবিক একট! কৃত্রিম কাজ, তা সহজেই বোঝা যায়। 
বিষয়ী বা 50)5০% বলতে মানুষ অর্থাৎ তাঁর মনকে 
বোঝায়। জগতকে মানুষের মনের ব চিন্তার স্থষ্টি, এইভাবে 
ব্যাখ্যা করতে গিয়ে যে দর্শনের উদ্ভব তাকে 10581151 বা 
আদর্শবাদী দর্শন বল! হয়। অপর পক্ষে, জগৎ সম্পূর্ণভাবে 
5010)90% বা মানুষের বাইরের বস্তঃ বিষয়ী থেকে একেবারে 
স্বতন্ত্র এইরূপ ভাব মূলে রেখে যে দর্শনের উদ্ভব তাঁকে 
[62119 দর্শন বলে। এর মধ্যে যারা আরও বলে-_ 
বিষয়ী ষে, সে নিজেও বিষয়েরই অন্তর্গত একট ব্যাপার-__ 
তাকে 77906119119 দর্শন বলে। কাজে কাজেই আদর্শবাদী 
দর্শন ও বাস্তব বা জড়বাদী দর্শন মূলগতভাবে পরস্পরের 
বিরোধী । অর্থাৎ আদর্শের মধ্যে বস্তর কণামাত্রও নেই, 
অপরপক্ষে বস্তু জিনিষটাঁর মধ্যে 1069 বা আদর্শ বা চেতনার 
চিন্ধও থাকতে পারে না। 

পরিপূর্ণ বাস্তবতা বা জড়কে নিয়ে যে শাস্ত্র একেবারে 
মগ্, তাকে আমরা বলি জড়বিজ্ঞান। এশান্স মনকে বা 
তার কাজকে যে একেবারে অস্বীকার করে ভা অতি গ্রসিদ্ধ। 
এ ৰৃলে যে দ্রষটা বা. 9১1০০ জগতের সত্যকারের জ্ঞানকে 


পৌষ--১৩৪৭ ] 


পাওয়ার পথে এত ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়ে আসে যে তাঁকে 
একেবারেই বাদ দিতে হয়। বিজ্ঞানের জ্ঞান তাই আদর্শ 
ও বাঁক্তিনিরপেক্ষ জ্ঞান। কাজেকাজেই, বিষয়ী ঝ দরষ্টার 
সঙ্গে সম্পকিত অবস্থায় জগতের যে রূপ ও গুণ গড়ে ওঠে 
তার! পুরোপুরি অলীক বলে বিজ্ঞান তার রাজ্য থেকে 
তাদের নির্বাসন দেবার পক্ষপাতী । মানুষের কাছে জগতের 
রংটাই প্রধান, তাই বিজ্ঞান রং-জিনিষটাকে স্বীকার না 
ক'রে তার জায়গায় কম্পন-সংখ্যা নিয়ে এসেছে । শ্লীতলতা 
বা উত্তাপবোধের স্থান নিয়েছে টেম্পারেচারের ডিগ্রী। 
শব্দানভূতিকে অস্বীকার ক'রে তা'র স্থানে বাতাসের কম্পন- 
সংখ্যা এসে জুড়ে বসেছে । এইভাবে জগতের 091107010 
০100701)1-গুলিকে সরিয়ে রেখে তাকে সর্বাংশে 00270- 
[901৮৩ করবার চেষ্টা হয়েছে সংখ্যার সাহাষ্যে। ফলে 
দাড়িয়েছে এই যে, বিজ্ঞানের আলোচনায় সংখ্যা ছাড়া 
বাস্তবতামূলক অপর কোনও গুণ ঝা ধর্শের স্থান নেই। 
কিন্তু সংখ্যা ত সত্যকারের বাস্তব জিনিষ কিছু নয়, বরং 
একে আদর্শ (168 )-জাতীয় কিছু বলাই বেশী চলে। 
কাঁজেকাজেই, পরিপূর্ণ বাস্তবতা করতে গিয়ে বিজ্ঞান 
বাস্তবতাকে হারিয়ে ফেলেছে । তাই বলতে হয়, বিজ্ঞান 
যে-জগতকে নিয়ে আলোচনা করে তা যে-জগতকে আমর! 
ধরি, ছু'ই, সব রকমে আমাদের অভিজ্ঞতার মধ্যে নিয়ে 
আসি- তা থেকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র । বিজ্ঞানের জড় বা [08161 
তাই 0101070%/21)10) আর সঙ্গে সঙ্গে 1702-5515021)0, 
অপরপক্ষে আদর্শবাদীদের গোড়া অনুসন্ধান করে 
দেখলে সেখানেও ঠিক এই রকমেরই যুক্তিহীনতা প্রকাশ 
পায়। বাস্তববাদী যেমন আদর্শবাদীতে পর্যবসিত হয়, 
তেমনি আদর্শবাদী হয়ে ওঠে বাস্তববাদী । আঁদর্শবাদীর মতে 
বিষয়ী বা 51১1০ ব! তাঁর 106৪-র বাইরে কিছুরই অস্তিত্ব 
থাকতে পারে না । এই 1969 বা আদর্শের স্থান কোথায়? 
নিশ্চয়ই মানুষের বস্তময় মন্তিফের ভিতর নয়ই) যদি তাই 
হয় তবে 196৪-কেও বস্তর' সঙ্গে একাসনে বসতে হবে, আর 
তা স্বীকার করলেই আদর্শবাদ সম্পর্কে গোড়াতে যা মেনে 
নিয়েছি, তার বিপরীত কথা স্বীকার করতে হবে। কাজে 
কাজেই স্বীকার করতে হয় যে আদর্শবাদীদের 1469 তাদের 
বাইরে কোথাও আছে । ' আদর্শবাদী গিয়ে নিজের জায়গ৷ 


ক'রে নিচ্ছে বাস্তববার্দীদের পাশে। 





সরি ব্াম্রীন্মক্ঞ। ও. ইস্ছাম্পত্তি রি 








বাস্তবিক কথা এই যে+জগতকে শুধু বন্তময বা! শুধু মাত্র 
1096 দিয়ে তৈরি এমন কোনও %/861081) বিভাগ 
করতে গেলে তা ভুল হবে। জগৎ সর্ব! বস্তময় বা পরিপুণৎ 
1068 দিয়ে তৈরি নুয়। জগতের মধ্যে বস্তু বা জড়ত্ব ও 
1৫৩৭ আদর্শ বা চেতন! অঙ্গাঙ্গীতাবে মিশে .রয়েছে, তাই 
বিষরী আর তার র্রিষয়কে জোর ক'রে পৃথক ক'রে এদের 
জট ছাঁড়ানর চেষ্টা করলে আমাদের জ্ঞানের জায়গায় 
অজ্ঞানের গভীরতর জটিলতা এসে দেখ! দেবে। 'জগতে 
বস্ত ও চেতনা দু-ই রয়েছে একেবারে একসঙ্গে মেশে 
অদ্বৈত অবস্থায়। স্ষ্টির এই ্বৈতাদ্বৈত রূপকে স্বীকার 
না করে যে জ্ঞানই লাঁভ করা যাক না! কেন, তা হবে 
প্রধানত অজ্ঞান। আধুনিক বিজ্ঞান নিজের দৃষ্টি জগতের 
এই দ্বৈতাদ্বৈত ভাবের ওপর নিবদ্ধ ক'রে নিজেকে নতুন 
ক'রে গড়ে তোলবার অসাধ্য লীধনে ব্যাপৃত। শুধু পদার্থ 
বিজ্ঞানই নয়_ বিজ্ঞানের অন্য সব ক্ষেত্রেও অর্থাৎ জীব- 
বিজ্ঞানে আর মনোবিজ্ঞানেও এই রকম দৃষ্টিভঙ্গী আবির্ভাব- 
দেখা দিচ্ছে । কিন্তু আমাদের আলোঁচন। পদার্থবিজ্ঞান আর 
তার অন্তরনিহিত দর্শনতত্ব নিয়ে সমাকৃত বলে আমর! গ্রধান্ত 
আমাদের সেই সীমার মধ্যেই নিবদ্ধ রাখতে চেষ্টা করব। 


ঙ 
€ 


বিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গীকে এইভাবে সম্পূর্ণ অভিনব দিকে 
নিয়ে গিয়ে জগতকে দেখতে যাবার প্রধান কল হ'ল এই, 
সমস্ত দর্শনই যে পরিপূর্ণ নিশ্চিততীকে এই জগতের সর্বত্র 
মূলগতভাবে বর্তমান বলে নিয়েছিল তা একেবারে 'শুন্তে 
মিলিয়ে গেল। আর সঙ্গে সঙ্গে এর সঙ্গে সংযুক্ত প্ীকায় 
কা্যকাঁরণের যেরূপ ছিল তাও পরিবপ্তিত হয়ে গেট | 
কাধ্যকারণ এখন আর নিশ্চিততাকে অবলম্বন করল না, বরং 
অবলম্বন করল অনিশ্চয়স্তা বা আকশ্মিকতাকে। এই যে 
অনিশ্যয়তা-তত্বের কথা এইমাত্র উল্লেখ করলাম তা! বৈজ্ঞানিক- 
দের একট! মনগড়া কথা নয়। এই অনিশ্চয়তার অন্তিত 
তাঁরা জগতের সর্বত্রই লক্ষ্য করেছেন- জগতের অস্তনিহিত 
গভীর সত্যরূপে। জগতের এই অনিশ্চয়তার প্রকাশ পাবার 
মূলে রয়েছে কর্মমজগতের স্বাভাবিক আণবিক বা পরমাধুভাব। 
জড়কে ত অনেকদিন থেকেই আণবিক কলে আবিষ্কার 
করা হয়েছিল! বৈজ্ঞানিক্রা! এখন এই জড়ের আপবিকতা 


৯৬ 


সম্বন্ধে তেমন স্পষ্টাক্ষরে কোনও কথা বলতে চান না_-বরং 
বলেন যে, তীদের পরীক্ষণের সামনে শক্তি বা কার্ধ্য 
«আপবিক রূপ নেয়। বৈজ্ঞানিকের সমম্ত পরীক্ষা ঝা 
প্রয়োগের প্রধান সিদ্ধান্ত এই যে. জগতের সমস্ত কাজ 
চলে খণ্ড খণ্ড ভাবে--১০:1017)125. 

কর্মজগতের এই সর্ব রকমের, আণবিকত! জগতকে 
অনিশ্চিত ক'রে তুলেছে । জগতকে যতক্ষণ আঁমর! জানবার 
চেষ্টা 'করছি না বা অনিশ্চিততার মধ্যে তাঁকে পাবার 
প্রয়াসী হচ্ছি না, ততক্ষণ এর নিশ্চিততা বা অনিশ্চিততার 
কোনও প্রশ্ন ওঠে না। যেমুহুর্তে একে জানবার জদ্যে 
এর আণবিক অস্তিত্বের সঙ্গে সম্পকিত হচ্ছি, সঙ্গে সঙ্গে 
এর মধ্যে বৈলক্ষণ্য এনে ফেলছি । আর এই বৈলক্ষণ্যই 
জগতের আণবিক রূপের ওপর প্রতিফলিত হয়ে এসে 
আমাদের কাছে জান হয়ে প্রকাশ পাচ্ছে। কাঁজে 
কাজেই, এই জান হয়ে উঠছে অনিশ্চিত বা অর্দ- 
নিশ্চিত জান। হাইসেনবার্গ দেখিয়েছেন যে, জগতের 
গঠনই এমন যে, জ্ঞানের এই অনিশ্চিত রূপ ছাড়া 
অন্ত কোনও রূপ পাওয়ার সম্ভাবনাও নেই। জগতের 
নিজের মধ্যেই এই অনিশ্চয়তা বা স্বাধীনতা বিদ্যমান 
থাকার দরুণ জগতান্তর্গত যাবতীয় ঘটনা বা কাজের মূলেও 
এই অনিশ্চয়ত| বা! স্বাধীনতা স্বীকার করতে হয়। 

জগতের কার্য্যের আণবিকত! কি ভাবে নিজের মধ্যের 
অনিশ্চয়তাকে প্রকাশ করে দেয় তা আগের একটা লেখায় 
দেখাবার চেষ্টা করেছি । এখানে তার মোটা মোট! 
দু-একটা তথ্য দিলেই বোধ হয় যথেষ্ট হবে। ধরা যাক একটা 
কাঁচের টুকরার ওপর কতকটা আলো! এসে পড়েছে । এই 
আলোটার কতক অংশ কাঁচটাঁর মধ্যে প্রবেশ করবে, 
আর কতক অংশ তার গায়ে লেগে প্রতিফলিত হ'য়ে যাবে। 
মনে করা যাঁক, আঁলোটার 'তিন-চতুর্থাংশ প্রতিফলিত 
হচ্ছে, আর এক-চতুর্ধাংশ ভেতরে ঢুকছে। আলোর 
কাচের মধ্যে প্রবেশ করবার আর প্রতিফলিত হবার এই 
বে সম্বন্ধ (14০) তা আলোর জোর বা 17157515-র 
ওপর নির্ভর করে না। মনে করা যাক, আলোর জোর 
কমতে কমতে একটা আলোর কণায় গিয়ে দীড়াল। তখন 
প্রশ্ন এই যে, সে কি করবে, গ্রতিফলিত হবে? ন! কাঁচের 
ভিতর ঢুকে প্রতিসরিত হবে? এ প্রশ্নের উত্তর সম্পূর্ণ 


. ভাবল 


[২৮শ বর্-_২য় খণ্ড--১স সংখ্যা 


অনিশ্চিত। আলো! যদি কণা-রূপ না হ'ত তবে বলতাম 
যে,বত ইচ্ছা সে বিভাজিত হ'তে থাকবে তত তাঁর প্রতিফলন 
আঁর প্রতিসরণের সম্বন্ধ বজীয় থাকবে । কিন্তু কণাকে ত 
বিভাগ করা চলে নাঁ। কাঁজেকাজেই, কণাটার আচরণ 
থেকে যায় একেবারে অনিশ্চিত--তার আচরণ তখন বলতে 
হয় দেবা ন জানাতি কুতো! বৈজ্ঞানিক । 

ইলেক্‌টিকের কণ! ব! ইলেকুনকে নিয়েও ঠিক এই রকম 
অনিশ্চিতের মধ্যে গিয়ে পড়তে হয়। ইলেক্ট নটা কোথায় 
আছে জানবার প্রয়োজন হ'লে তাকে দেখতে হবে তার 
ওপর আলো ফেলে । আলোটা যদি স্কুল হয় তবে দেখাটাও 
স্থল হবে। কাজেকাজেই, আলোটাকেও শুক্্ম ক'রে নিতে 
হয়। আলো! যতই নুল্্ম হয় ততই ইলেক্টনটাকে অবস্থ 
দেখতে পাঁওয়া যাঁয় ভাল করে। কিন্ত হুক্স আলোর 
শক্তি বেণী বলে সে তত বেশী ইলেইনটাকে সরিয়ে দেয় 
নিজের অবস্থান থেকে । অর্থাৎ তার অবস্থানের মধ্যে 
ততথানি অনিশ্চয়ত৷ এসে জোটে! ফলে এই গ্রাড়াঁয় ফে, 
ইলেক্ট নটার অবস্থান যত ভাল ক'রে দেখতে যাই, তার 
গতির মধ্যে তত বেশী ত্রাস্তি এনে ফেলি; আবার 
অপর পক্ষে তাঁর গতি যত ভাল করে জানি তার 
অবস্থান তত অনিশ্চিত থেকে যায়। তথ্য দুইটাই যুগপৎ 
সমানভাবে কিছুতেই জানতে পারি না। 

জগৎ সম্পর্কে জ্ঞানের সর্ধত্রই এই অনিশ্চয়তা রয়েছে। 
এই অনিশ্চয়তাঁকে লক্ষ্য ক'রে স্যার জেম্স্‌ জীম্স বলেছেন, 
জগৎ ষেন একটা মরুভূমি । এর আকাশে উড়তে উড়তে 
দুর উপর থেকে একে একভাবে স্পষ্ট দেখা যায়, কিন্তু সে 
দেখায় আমাদের জ্ঞানের ক্ষুধার তৃণ্ডি হয় না। তাই কাছে 
এসে ভাল ক'রে দেখতে যাই, কিন্তু নিজেরই পাখার 
বাতাদ্ে এত ধুলোর স্থাষ্টি করি যে তাতেই সে গা-ঢাকা 
দিয়ে নেবার সুবিধে পেয়ে যায়। তার যত কাছে 
আসি সে তত নিজেকে গোপন ক'রে দেয় আমারই 
নৈকট্যের অন্তরালে । | 

জগতের মধ্যে একটা অন্তনিহিত অনিশ্চয়তা বিষ্যমান। 
যাকে আমরা জড় বলে সাধারণত নির্দেশ ক'রে থাকি 
সেখানে এই অনিশ্চয়তা প্রকাঁশ পায় আকশ্মিকতার 
আকারে। বৈজ্ঞানিকেরা দেখিয়েছেন যে, এই আকশ্মিকতার 
উত্তরফলম্বরূপ কা্যকারণতত্ব জগতে আবার জন্ম লাভ 


পৌবধ--১৩৪৭ ] 


করে। পূর্তেই বলেছি জগতের সব কর্মহি একটা 
90/5001701701005  [)99685 অর্থাৎ কাঁটা কাটা ভাবে 
হ/য়ে চলে-_অথগুভাবে হয় না। কর্মের অস্তিত্ব তাই 
ক্ষণিকের-__খণ্ড থণ্ড ভাবেন এই ক্ষণস্থায়ী জগতকে 
চিরস্থায়ী অবস্থায় কিভাবে পাই তা বর্তমান বিজ্ঞানের একটি 
অতি মনোজ্ঞ আবিষ্কার। এ সম্বন্ধে ভবিষ্যতে আরও 
ভাল ক'রে বলবার ইচ্ছ! থাকাতে এ নিয়ে এখন আর 
আলোচনা করলাম না। একে এইথানে উল্লেখ করবার 
উদ্দেস্ট এই যে, জগতের মূল অনিশ্চয়তার সঙ্গে জগতের এই 
মূল ক্ষণিকতার নিবিড় সম্বন্ধ রয়েছে। অনিশ্চয়তা এর 
ক্ষণিকতাঁকে জন্ম দিয়েছে, বা ক্ষণিকতা আছে বলে সব 
অনিশ্চিত তা বলা কঠিন, তবে এটুকু বলা! যাঁয় যে এই 
ছুয়েরই মূলে রয়েছে জগতের মূল স্বাধীনতা! বা 0০০00] । 


৬ 


' আমরা দেখলাম যে, বিজ্ঞান তার পরীক্ষণ ও প্রয়োগের 
ভিতর দিয়ে আবিষ্কার করল যে সমস্ত কাঁজের মূলে 
আকন্মিকতা বর্তমান। জগতের সমস্ত কিছুই যদি 
আকস্মিক হয় তবে তা হয়ে ওঠে অনিশ্চিত। 
অনিশ্চিত হলেই তাঁকে ন্বাধীনী কেমন করে 
বলি? আমার এই কলমটার গতিবিধি অন্তত এই 
কলমটার নিজের কাছে অনিশ্চিত। কিন্তু গতিবিধি যতই 
অনিশ্চিত হোক না! কেন, তাঁর মধ্যে কলমটার স্বাধীনতা 
একটুও নেই। অতএব জগতের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা থাকলেও 
তাঁর মধ্যে স্বাধীনতা না থাকতেও পারে। জগৎ-ব্যাপারের 
মধ্যে স্বাধীনতার অস্তিত্বের দাবী করতে গিয়ে অনিশ্চয়তা 
আর স্বাধীনতাকে সমার্থ বৌধ করা হয় কোন্‌ যুক্তি অনুসারে 
বা কিরপ বিশ্লেষণের ভিতর দিয়ে? আমরা এখন এই 
সমস্যাটির ওপর দু-একটি কথা বলেই আমাদের বর্তমান 
আলোচনার উপসংহার করতে চাই। এখানে একটা কথা 
জানিয়ে রাখা ভাল যে, এ সম্বন্ধে বৈজ্ঞানিকদের মধ্যে 
যথেষ্ট মতভেদ এখনও রয়েছে । অনেকেই আকম্মিকতাকে 
স্বীকার করলেও ম্বাধীনতাকে শ্বীকার করতে চান 
না। আকশ্মিকতার মধ্যে সচেতনত্ব থাকলেই তাকে 
্বাধীনত। বলা হয়। তাই স্বাধীনতাকে একটু নাড়াচাড়া 
দিলেই তার মধ্যে ইচ্ছার ' স্বাধীনতা বার হয়ে অূ্সে। 


সুভিল্প ব্যান্রীন্মভা ও ইচ্ছাম্পতিঃ 


বৈজ্ঞানিকেরা সাধারণভাঁবে বহিজগতের ভিতর, তাই 
এখনও সচেতনত্বের অস্তিত্ব স্বীকার করতে স্পষ্টভাবে 
রাজী নন। বদ্দিও খুব নাম করা কেউ কেউ তা করতে, 
দ্বিধা বোধ করেন না ।. 

পূর্বেই বলেছি যে, আকস্মিতাঁর সঙ্গে চেতন! সংযুক্ত 
থাকলে তাকে স্বাধীনতা বলা হয়। আমার বিক্লেষণের 

গোঁড়াতেই জড় ও চৈতন্যের বা ০০1০০ ও 90)5০৮ 
এঁর মধ্যে এক অঙ্গাঙ্গী ও অটুট সম্বন্ধ স্বীকার করা হয়েছিল। 
012০0 বা চৈতন্টের একট। অংশ € কতটা তা একেবারে 
অনিশ্চিত) জড়ের সঙ্গে সদাসর্ববদ! যুক্ত হ'য়ে থাঁকায় জড়ের 
মধ্যেও সচেতনত্ের ভাব বর্তমান তা স্বীকার করতে হয়। 
কাজে কাজেই, বহিঃসত্তার মধ্যে আকশ্মিকতা আর মচেতনত্ব 
দু-ই বর্তমান, আর এই ছুটি একীভূত অবস্থায় থেকে 
তাকে ক'রে তোলে স্বাধীন । ফলে দাড়ায় এই যে, নিউটন 
আর দেকার্ত বহিঃসত্ার মধ্যে যে পরিপূর্ণ জড়ত্ব ঝ 
চিরন্তনের ও অপরিবর্তনের ধর্ম আরোপ করেছিলেন তা 
বদলে গিয়ে তাঁকে শুধু যে পরিবর্তনশীল করে গেছে তাই নয়, 
তার মধ্যে পরিণাঁমশীলতাও এনে হাজির করে। সে 
উজ্জীবিত হ/য়ে দেখা দেয় । 

যে পরিণামশীলতা৷ স্বাধীনতা বা চেতনাকে আশ্রয় 
ক'রে আত্মপ্রকাশ করে, তার মধ্যে একটি চমৎকার বৈশিষ্ট্য 
থাকে। এ বৈশিষ্ট্য তার প্রতিমুহূর্তের অভিনবত্ব। 
অনাগত স্ষ্টি তার ভূতকালের সংগুপ্ত অবস্থাকেই শুধু 
যে ফুটিয়ে তোলে তাই নয়, সে সঙ্গে সঙ্গে তাকে নবীনত। 
দান করে। হ্ষ্টির বিগত ইতিহাস তার অনাঁগতকে 
সম্পূর্ণ উপলব্ধি করতে পারে না। স্থষ্টি তাই “তিলে তিলে 
নৃতন হয়” এখানে তাই 95 £9010176 ০£ ০:9911011 
০21) 176৮517 115 1086 005 1855 ৫98৬1 0£ 
15010017112 91781] 1580. 

সুষ্টির পরিণামশীলতা আর তার প্রতিমুহূর্তের অভি- 
নবত্ব তাই সোজাস্ুজিভাবে তার মধ্যে ইচ্ছার অস্তিত্বকে 
জাহির ক'রে দেখাচ্ছে। সৃষ্টি প্রতি মুহূর্তে এমন একটি 
রূপ পায় যার অস্তিত্ব তার বিগত অবস্থার , মধ্যে একেবারেই 
নাই। আবার এ অভিনবত্ব পুরোপুরি তাঁর চেতনার 
মধ্যেও নাই, কারণ এই চেতনাই তার এই অভিনবত্বকে 
অভিনব বলে কার করছে। এর মুলে রয়েছে ইচ্ছা। 


৮ ভ্ডাস্রশজহ্খ 


সচেতনের ইচ্ছা, কাঁজে কাজেই তা স্বাধীন, শ্তদ্ধ জড়ের 
ক্ষেত্রে সে হয়ে ওঠে আকশ্মিক। এই আকম্মিকতা আবার 
শ্বনীভৃত অবস্থায় কাধ্যকারণকে জন্ম দান করে, আর তখন 
আমার হাঁতের কলম তার সব স্বাধীনতাকে বিসর্জন দিয়ে 
নিরেট জড় হয়ে সম্পূর্ণ আমার ইচ্ছার অধীনে চালিত হয়। 


৭ 


যে ইচ্ছার অস্তিত্বকে জগতের মধ্যে আমরা এইমাত্র 
আবিফার করলাম তাকে শুধু মাত্র ইচ্ছা বললে তুল হবে। 
তার সত্য পরিচয় তখনই নেওয়া হবে যদি তাকে বল! 
হয়__-“ইচ্ছা শক্তি” । স্বাধীন ইচ্ছাকে এইভাবে শক্তিমন্তার 
সঙ্গে বিজড়িত করলে “ম্বাধীন ইচ্ছা”্র বাস্তবিক কোনও 
অর্থ হয় না। এই জন্তেই আমাদের মনে অনবরত ষে 
ইচ্ছার উদয় হয়ে তৎক্ষণাৎ মিলিয়ে যাচ্ছে, বা নির্বাচন 
করবার সময় ৪৮1১০ ০০0£011০--এর অধীন হয়ে ষে 
ইচ্ছ। কাজ করছে তা থেকে এ সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। আমাদের 
ইচ্ছা তার শ্বাভাবিক কার্য কারিত! হারিয়েছে, ইচ্ছা! করলেই 
সে ইচ্ছা কার্যে পরিণত হয় না, মনোজগতের তরঙ্গ হ'য়ে 
মনৌজগতেই মিলিয়ে বায়। থে জগতে বা যে ক্ষেত্রে 
এই ইচ্ছাগুলি উৎপন্ন হয় প্রথমত তাদের তাতে স্বাধীনতা 
থাকে না, আর দ্বিতীয়ত যে-জড়জগতে এই ইচ্ছাগুলি 
নিজেকে সফল করবে সে-জগতের সঙ্গে তাদের যোগ বিচ্ছিন্ন 
হয়ে থাকে । কাজেকাজেই আমার নিঞ্জের অংশ বলে আমার 
হাঁতকেই আমি চালনা করতে পারি, কিন্তু আমার শরীরের 
বাইরের কিছুর প্রতি আমার কর্তৃত্ব একেবারে থাকে না। 


[ ২৮শ বর্-_-২য খণঁ--১ম সংখ্যা 


কিন্তু গ্রকৃতির মধ্যে ধে ইচ্ছা তার পরিণামশীলতা আর 
চিরনবীনতার মুল ভাঁবে বর্তমান রয়েছে, তার মধ্যে এই 
দোষ ছুটি নাই। একে ত সে পরিপূর্ণ ম্বাধীন ও শ্বতন্ত্ 
তারপর তার স্বাধীনতা জড়ত্ব পর্্যস্ত পরিব্যাপ্ত হ'য়ে আছে 
বলে তার ইচ্ছা সর্বত্র তাঁর কার্য্যকারিতাঁকে অনুভব করতে 
পারে, কোথাও সে প্রতিহত হয় না। ইচ্ছাশক্তি আর 
কর্মশক্কি সৃষ্টির ক্ষেত্রে এক হয়ে দীড়ায়। হৃষ্টির মধ্যে 
এইথানে তাই একটা নিশ্চয়তা রয়েছে। তবে এই 
নিশ্চয়তা তার স্বাধীনতারই রূপান্তর মাত্র। স্ষ্টি স্বাধীন 
বলেই তার নিজের কাছে সে নিশ্চিত। কিন্তু এ নিশ্চিতত 
কর্মজগতের- বর্তমানের । জ্ঞান জগতের নয়। তাই 
একে আগে থেকে জান। যায় না, হিসাবের মধ্যে ধরা 
পড়ে না। 

আমরা এবার আর একটি গভীরতর তত্বের সামনে এসে 
দাড়িয়েছি। কর্ধ্জগৎ নিশ্চিতরূপ পেয়েছে শক্তির সাহাষে 
_যে শক্তি ইচ্ছাশক্তিরূপে সমস্ত জগৎ-ব্যাপারের মধ্যে ক্রয়] 
ক'রে চলেছে। জ্ঞানজগতকেও সেই ভাবে নিশ্চিতরূপ 
পেতে হ'লে তাকেও আশ্রয় করতে হবে ওই ভাবে একটি 
শক্তিকে । বিজ্ঞান এই শক্তিকে আবিষ্কার করতে না পারলে 
জ্ঞানের ক্ষেত্রে তার দরজা চিরকালই অর্গলবদ্ধই থাকবে। 
আর যখন সে এই শক্তিকে জড়ের ক্ষেত্রে আবিষ্কার 
করবে, কালের অতীত কর্মের ষে চিরন্তন রূপ মে উপলন্ধি 
করেছে, জানেরও তেমনি কালাতীত চিরন্তন রূপ তাঁর 
কাছে আবরণ উন্মোচন করে আত্মপ্রকাশ করবে। জ্ঞান- 
জগতও তার কাছে আবার নিশ্চিত হয়ে ওঠবে। 


র্প 
প্রীশৈলদেব চট্টোপাধ্যায় 
কুন্ুম সেচিয়৷ রূপ গঞ্ধহীন রূপ সে তো 
যে বিধি দিয়েছে তোমা, আখির বিলাস শুধু, 
্বপ্নসম মিলাবে মাটিতে । 


ভুলেছে কি গন্ধটুকু দিতে? 








ব্রা 


সিল 





কৃতিত্বের বিধান 
প্রীইলারাণী মুখোপাধ্যায় 


এক 
হিন্দুর ঘরে বালবিধবার ভাগ্যে সাধারণতঃ যাহ ঘটে, তাহার 
ভাগ্যেও ঘটিরাছে তাই । সকাল হইতে রাত বাঁরটা পর্য্যন্ত 


কাজ আর ফুরায় না। কাঁপড়-কাঁচা বাসন-মাজা হইতে 
আরস্ত করিয়া রধা-বাঁড়া-এটোপাঁড়া-ঝাড়ামোছ!৷ সবই 
তাহার ঘাড়ে। 

মা নাম দিয়াছেন “হতভাগী” পিতা ডাঁকেন “উষা মা? । 


মায়ের দেওয়া নানটায় তাহার দুঃখ হয় না। ভাবে, যাহার . 


স্বামী অল্প লইয়া অনেক কিছু দাঁন করিয়া চলিয়া যায় 
তাহারাই বস্ততঃ হতভাগী। কিন্তু সে ধেমন কিছুই দেয় 
নাই, পায় নাইও কিছু। তাহার হাসি পায় আহা, 
সেই লোক্টার আসা-যাওয়া হর্ষ-বিযাঁদও প্রাণে জাগাইবার 
স্থুযোগ হয় নাই। 

তথাপি সে বিধবা । শান্ত্রজ্ঞরা তাহার পানে চাহিয়া 
মাথা নাঁড়িয়! ব্রহ্মচর্য শিক্ষা দেন। প্রবীণাঁরা ধামিকা হইতে 
উপদেশ দেন। সে শুধু অভিজ্ঞতাহীন দৃষ্টিতে তাঁহাদের 
পানে চাহিয়া থাকে । বিলাস তাহার প্রতি বিমুখ হইলেও 
বিলাসের প্রতি সে কিন্ত বিমুখ নয়। কাজ সারিয়৷ 
পরিপাটি করিয়া চুল বাঁধিয়া যথন পুকুর ঘাটে গা ধুইতে 
যাঁয়, পাড়ার মেয়ের মুখ টিপিয় হাসিয়া পরস্পর ইঙ্গিত 
করে। সে সবে তাহার একটুও লক্ষ্য নাই। রঙীণ 
সেমিজের উপর একখান! চওড়া কালাপাড় শাড়ি পরিয়া 
তানুল রাগরঞ্রিত অধরে যখন আয্শির সুমুখে দীড়ায়, 
তখন সে নিজের অর্ধ চন্ত্রাকৃতি শাদা কপালখানার পানে 
চাহিয়। ভাবে__এমনি কপালেই সি'ছুর মানায় । 

যৌবনের তটভাঙ্গ| বাসনা রোধ করা৷ কঠিন। আডলের 
ডগার একটু 1সঁছুর লইয়া সংগোঁপনে ত্রযুগের মাঝথানে 
একটি টিপ দিয়া যখন দর্পণে মুখের শোভা দেখে তখন 
লজ্জা ও হর্ষের সংমিশ্রণে মুখখানা লাল হইয়! উঠে। হঠাৎ 


মা আসিয়া দরজার কাছে দীড়াইয়া বলেন, ওরে হতভাগী, 


উন্ধন যে জোলে গেল। তাহার পরই একটা চাপা 
চীৎকাঁরের সঙ্গে সঙ্গে বলিয়! উঠিল; কি সর্বনাশ করেছিস, 
ও হতঙাগী পোড়ারমুখী ! মুছে ফ্যাঁল্‌, মুছে ফ্যাল্‌। ্‌ 
তাহার বৌবনোদ্দীপ্ত লাল মুখখানা অমনি শাদা হইয়া 
যায়। তাড়াতাড়ি আচল তুলিয়৷ টিপ মুছিতে মুছিতে 
উচ্ছ্ুদিতভাবে ফু'পাইয়! কাদে । মায়ের পানে চাহিয়া 
দেখে__তাঁরও চোখে জল, তিনি দ্রুত পলাইতেছেন। 


দুই , 


দ্রিন এমনিভাবেই কাটে, কিন্তু ব্যতিক্রম হইল সেইদিন--* 
যেদিন স্তৃতিরত্ব মহাশয়ের পুত্র বিভূতি ফিরিয়া আসিল 
বিদেশ হইতে । ছেলেবেলায় উধার সহিত তাহার বিবাহের 
কথা হয়, কিন্তু কোনে! কারণে তাহা ঘটিয়! উঠে নাই। 

অতীতের মধুর স্বৃতি মনে উদয় হইয়া উভয়কে আজ 
যেন আরও কাছাকাছি করিয়া দিল।  * 

সবে সন্ধ্যার আগমনী স্থুরু হইয়াছে । বাড়ির পিছনে 
একটুখানি বাগান। দু-একটা জবা, দোপাটি, কৃষ্ণকলির 
গাছে ফুল ফোটে । শিবরাম চক্রবন্তীর ফুল আবশ্তক হয় 
নিত্য পৃজার জন্য, তাই ফুল গাছগুলি ঘত্বে বর্ধিত। 
উষ! মাঝে মাঝে বৈকালে এখানে আসে, কারণ স্থানটি 
তার বড় ভাল লাগে। এ 

এ পুষ্ধরিণীর ওপারে, যেখানে আম জাম নারিকেল 
গাছের মাথার উপর দিয়া আকাশ দিক্‌ চক্রবালে হারাইয়া 
গিয়াছে-_সন্ধ্যা-ধুসর আকাশের কোলে গাঢ় সবুজ গাছের 
মাথাগুনা স্থির ছবির মত নিম্পন্দ-তৃষ্টি যেখানে স্বতঃই 
যেন হারাইয়। যাঁয়ব_উষা আপনমনে সেইদিকে তাকাহিয়া 
গুন্‌ গুন্‌ করিয়া গান ধরে--“তারই কথা আসে স্থতি- 
সজল শ্বাসে। 

সেদিনও সে একটা গন্ধরাঁজ ফুল নাকের কাছে' ধরিয়া 
গুন্‌ গুন্‌ করিয়া গাহিতেছে--“দেখা দিলে না হে অকরণগ, | 


৫ 


৯৪ 


এমন সময় সেইখানে বাগানের আগড় ঠেলিয়া কে 
প্রবেশ করিল । 

ফিরিয়া চাহিয়াই উধা আদা কণ্ঠে বলিয়া! ই 
বিভু-দা তুমি? 

-ষ্ট্যা” অনেকদিন পরে ফিরেছি । তোমার সঙ্গে 
দেখা করতে এনুম । কেমন আছ, উষা? 

উষা হাসিয়া উত্তর দিল, ভালই। তুমি কেমন ছিলে 
সব বিদেশী বন্ধু-টদ্ধু নিয়ে? 

কথার সহিত একটা অর্থপূর্ণ কটাক্ষ হানিয়া উষ! 
হাসিল । 'বিভূতি সেদিকে লক্ষ্য না করিয়া! কহিল, 


কথা বাধিয়! গেল, কিন্তু তৎক্ষণাৎ উষা পাদপূরণ 
করিল-_ বিধবা? তাহার পর একটা হাসির উৎস খুলিয়া 
কহিল, তোমার দুঃখ হচ্ছে, বিভূ-দা? কিন্তু আমার ভারী 


“আমোদ লাগে সেই লোকটির কথা ভেবে। আহা, বেচারার 


কষ্ট কোরে আসা যাওয়াই সার। না পারলে সংসারের 
বুকে একটা রেখা টানতে, না পারলে একটাঁও মানব- 
আত্মার ওপর একটু প্রভাব বিস্তার করতে । 

বিভূতি ভীত নেত্রে তাহার পানে চাহিয়া দীড়াইয়া 
রহিল । মুখে কথা নাই। উষার যেন চৈতন্য হইল। সে 
বিভৃতির হাতে একটা হ্ব্যাচ্কা টান দিয়া কহিল, হাবা 
হোয়ে দাঁড়িয়ে রইলে কেন, বিভৃ-দা? বোদ। 

সে তাহাকে নিজের অতি সন্নিকটে বসাইয়া দিল। 
উদার উষ্ণ শ্বাস মাঝে মাঝে বিভূতির অঙ্গ স্পর্শ করিতেছে। 
তাছাতে বুকের রক্ত চঞ্চল হইয়া তাহার দেহ স্পন্দিত 
ঞ্করিয়া তুলিতে লাগিল। 


তিন 


পাড়ায় একটা বিপ্রী আন্দোলন সুরু হইতে বেশী বিলম্ব 
ঘটিল নাঁ। তবু শ্বয়ং স্বতিরত্ব মহাশয়ের পুত্র যাহাতে 
সংশ্লিষ্ট সে আলোচন! চাপিয়া করাই দরকার | শিবরাঁম 
চক্রবর্তী আপনভোল৷ সরল প্রকৃতির । স্ত্রী বন্ুমতীর ইঙ্গিত 
ধরিয়াও ধরিতে পারেন না । সেদিন সন্ধ্যার সময় বাড়িতে 
প্রবেশ করিয়াই ডাকিলেন, উধা মা, কৈ রে? 

বঙ্গমতী রান্নাঘর হইতে বাহির হইয়া! ,কহিলেন, আহা, 
চিরদিন সমান রইলেন, ভাজ! মাছখানি উপ্টে খেতে 


[ ২৮শ বর্--২য় খণ্ড -১ম সংখ্যা 


জানেন না। আবিখ্যেতা দেখলে গা জালা! করে। বলি 
উধা তোমার এমন সময় বাড়ি থাকে? সে তো! সেজেগুজে 
বিকেল থেকেই বাগানে গিয়ে বসে। 

শিবরাঁম যেন আকাঁশ হইতে পড়িলেন। 

_কেন বাগানে কি জন্যে? 

বন্থুমতী হাত নাড়িয়া গর্জন করিয়া উঠিলেন, কেন 
আর, তোমার আর আমার শ্রাদ্ধ করতে! তবে রোজ 
তোমায় কি বলি? স্বতিরত্ব মশাইয়ের ছেলের সঙ্গে 
গল্প করতে যায়। 

_ত্যাঃ বলকি? এই সন্ধ্যেবেল! বাগানে গল্প? সাপ- 
খোপের ভয় আছে। বাড়িতে গল্প করলেই তো পারে । 
তুমি বারণ করতে পার না? 

বস্থুমতী অসহায়ার ভঙ্গীতে কপালে করাঘাত করিয়া 
কহিলেন, হাঁয় রে অদৃষ্ঠ ! বলি একি তোমার-আমার গল্প 
করা? নিন্দেয গ্রাম যে ভোরে গেল! আর কাঁণ 
পাতা যাঁয় না। তুমি ঘুমিয়ে আছ? আমার বারণ কি 
তোমার মেয়ে শোনে? না, আজ পর্যন্ত শুনেছে 
কোনে দিন? 

শিবরাম বস্থুমতীর কথায় আর কাণ না দিয়! কহিলেন, 
যাই, ডেকে আনি। এই উঠোনে তক্তাপোশে বোসে 
গল্প করুক যত খুশি । 

তিনি খিড়কির দরজার পানে অগ্রসর হইলেন। বন্থুমতী 
কিছুক্ষণ ত্তন্তভাবে থাকিয়া হারিকেন হাতে ত্বরিতপদে 
স্বামীর অনুবতিনী হইলেন । 

বাগানে প্রবেশ করিয়া স্বামিব্ত্রী উভয়েই স্তম্ভিত ! 
গন্ধরাজ গাছের তলায় বিভৃতির কোলে মাথা রাখিয়া 
উধা গল্পে মশগুল! বন্থমতীর দেহ বেতস পত্রের মত 
কাপিতে লাগিল। শিবরাম নিতান্ত অগ্রতিভ। বিভৃতি 
ও উষার চোখে আলো! পড়িতেই তাহারা চমকাইয়া মুখ 
ফিরাইল। সেইক্ষণেই সকলের কাপে একটা জলদগন্তীর 
কণ্ঠস্বর আঘাত করিল-_“বিভূতি” । 

তড়িৎ-স্পৃষ্টের মত উষা ও বিভূতি সোজা হইয়া দাড়াইয়া 
মাথা নীচু করিল। শিবরাম ও বন্থুমতী আশ্চর্য হইয়া 
দেখিলেন- হ্বয়ং স্বতিরত্ব মহাঁশয় জবা গাছের তলা হইতে 
বাহির হইয়া আসিতেছেন। গস্ভীব্রভাবে বিভূতির পানে 
চা তিনি হস্ত দ্বার! পথ নির্দেশ করিয়া কহিলেন, চল । 


পৌব--১৩৪৭ ] 


বিভূতি নতশিরে প্রস্তভাবে পিতার পম্চাৎ পশ্চাৎ 
চলিল। বন্থমতী তাহার পানে তাঁকাইয়া দেখিলেন-_ 
তাহাঞ্জ অশ্প্রত্যঙ্গ থর থর করিয়া কাপিতেছে* যেন 
বুঝিয়াছে মৃত্যু সন্নিকট। 


চাঁর 


যে গুঞ্জনটা এতদিন অস্পষ্ট ছিল, ক্রমে তাহা স্পষ্ট হইতে 
স্পষ্টতর হইয়! উঠিল। চণ্ডীমণ্ডপে প্রবীণের দল, দুপুরে 
সেলাইয়ের কাজ হাতে তরুণীর দল; আখড়ার আড্ডায় 
তরুণের দল এবং পুকুর ঘাঁটে প্রবীণার দল চক্রবর্তীকে 
লইয়া জল্পনা-কল্পনায় এমন মাঁতিয়! উঠিলেন যে এই বিষযটিই 
যেন সকলের একমাত্র অন্তধ্যান। ইহার আলোচনা গ্রাম- 
বাঁসীদের নিত্য নৈমিত্তিক জীবনধারাঁর মাঝখানে বাঁধা 
হ্বরূপ ফ্ীড়াইয়া যেন একট! বিষম আবর্তের সৃষ্টি করিল। 
উষা-বিভূতির ব্যাভিচাঁর সম্বন্ধে যতটুকু সত্য, তাহার শত গুণ 
মিথ্য। চাক্ষুষ প্রমাণ দ্বার! প্রতিপন্ন করিতে অনেকেই ব্যগ্র। 
এমন জিনিস চোখে না-দেথার হীনতা স্বীকার করিতে 
কেহই প্রস্তত নয়। এমন কি অঘোর ঘোষ জাহির 
করিলেন যে তিনি দেখিয়ছেন_উষাকে লইয়া বিভৃতি 
পলায়ন করিতেছে, শুধু তাহার চোখের সামনে পড়ায় 
তাহারা ফিরিয়! যাইতে বাধ্য হয়। তাঁহা না হইলে *.... 

কথাটা তিনি চোখের ইঙ্গিতেই শেষ করেন। 

যাঁহাী হউক আলোচনা! এবং বিতর্কের পর গ্রামবাসীরা 
একমত হইলেন যে চক্রবর্তীকে একঘরে করা একান্ত 
আবশ্যক । কেহ তাহার সহিত কোনপ্রকার বাধ্যবাধকতাঁয় 
আর নাআসে।. 

এরূপ সিদ্ধান্তের পর কার্যারন্ত . করিতে উ্যমণীল 
গ্রামবাসীদের বিলম্ব ঘটে নাই। ধোঁপা-নাপিত হইতে আর্ত 
করিয়া গুরু-পুরোহিত পর্যন্ত সকলকেই চত্রবর্তীর সহিত 
অসহযোগিতাঁর বিজ্ঞাপন জারি করা হইল। ধর্ের দোহাই 
দিয়া পরনি্যাতনস্পৃহা চরিতার্থ করিয়ালইতে লোলুপ হইয়া 
উঠিল সমস্ত গ্রামখানি। 

রমণীর! বন্গুমততী ও উষাঁর পানে চাহিয়া জয়োল্লাসে 
হুঙ্কার ছাঁড়িল। শিবরাম দুয়ারে দুয়ারে ঘুরিয়া মাথা 
ফাটাইলেন, কিন্তু পাষাঁণে গীযুষের আশা করা বৃথা। 
শিবরামের একটা বদ অভ্যাস ছিল, তিনি অনেক কষ্ট সহা 


স্মৃভিরাজেন্প নিশান 


খ 


করিতে পারিতেন খানিকটা, গল্প গুজবের . খাতিরে । : কিন্তু 
তাহার সহিত সকলে বাক্যালাপও বন্ধ করিয়াছে। 

অগত্যা প্রথর রৌড্রে তাহাকে গ্রামাস্তর হইতে বাজার, 
করিয়া আনিতে হয়। গ্রামের ঘাটসরা বন্ধ হওয়ায় 
দূর নদী হইতে জল তুলিয়া আনেন। তাহাতেও তত: 
কষ্ট নাই-যত কাহারও সহিত গল্পগুজব করিতে না 
পাওয়ায় । 

বৈকাল হইলেই অভ্যাসবশতঃ কাধে চাদরখানা ফেলিয়া 
বাহির হইয়! পড়েন দাবার আড্ডার উদ্দেশে । কিন্তু যেই 
মনে পড়ে কেহ আর তাহাকে লইয়া খেলে না, এমন কি 
ডাকিলেও সাঁড়া দেয়না, অমনি বিপরীত পথ ধরিয়া ঘুরিতে 
নদীর ধারে আসিয়া পড়েন। অশ্তাঁচলগামী হুর্যের আভায় 
চক্চকু করে নদীর বুকের নরনশীল ঢেউগুলি। নদীর 
ওপারে তাল-খজুর-বনের পিছুনেঃ যেখানে আকাশ 
পৃথিবীর কোলে ঢলিয়া৷ পড়িয়াছে, সেইখানে যেন একট! 
অগ্থি গোলক ধকৃ ধকৃ করিয়া! জলিতে জলিতে আঁপন মহিম 
বিকাশ করিতেছে । গাছের মাথায়ঃ নদীর জলে, 
আকাশের টুকরা টুকরা মেঘে রাঙা রশ্মি ছর়ানে!। 
শিবরাঁম ব্যথিত নয়নে সেইদিকে তাকাইয়া ভাবেন, এই 
জগৎ একখানা নিয়মের চাঁকা। অনন্তকাল ধরিয়া এই 
চাঁকা ঘুরিতেছে। সেই চক্রমধ্যবর্তী স্থষ্ট জীব মানবও 


' যথানিয়মে স্থথ-ছুঃখ-জন্ম-মূত্যু ভোগ করিতেছে । যাহারা 


চিরন্তন নিয়ম লঙ্ঘন করিয়া চক্রের বাহিরে আসিতে চায়, 
তাহারাই বুঝি কাঁলের চাঁকায় চূর্মবিচুর্ণ হইয়া অস্তিত্ব 
হারাঁয়। তীঁহাঁর মনে হয়, তিনিও যেন কি একটা নিয়ম 
লঙ্ঘন করিয়াছেন, তাই কাঁলের চাকায় আজ তাঁর” 
অস্থিপঞ্জর চূর্ণ হইতে বসিয়াছে। ৯ 


»পাঁচ 


কিন্ত তিনি কি একলাই দোষী? স্থৃতিরত্ব মহাশয়ও 
কি ইহার সহিত জড়িত নহেন? কেন, তিনি ছেলের 
পিতা বলিয়া? ্‌ 

তাঁর মন আপত্তি করিয়! উঠিল-_ না, তা হবে না। 
আমার সঙ্গে স্বৃতিরদ্ব মশাইকেও শাস্তি ভোগ করতে হবঝে। 
এত ছুঃখ আমি একলা সইব না, তাঁকেও ভাগ নিতে হবে। 
আঁমি এখনি যাই তাঁর কাছে। 


রে 


তিনি চলিলেন। স্বতিরত্ব মহাশয়ের দরজায় 'াড়াইিয়া 
ডাকিলেন, স্বতিরত্ব মশাই বাঁড়ি আছেন? 

ভিতর হইতে উত্তর আসিল, আছি। 

শিবরাম প্রবেশ করিয়া দেখিলেন-_স্ৃতা-বাঁধা-চশমা- 
চোখে স্ব্বতিরত্ব মহাশয় পাণিনির পাতা উপ্টাইতেছেন। 
শিবরামকে দেখিয়া বই রাখিয়া চখমা খুলিতে খুলিতে 
তাহার পানে গভীর ছুঃখব্যঞ্ক দৃষ্টিতে চাহিলেন। 

অদূরে একখানা আঁসন দেখাইয়া গন্ভীরকণ্ঠে কহিলেন, 
বোস, শিবরাম। 

শিবরাম বসিয়া দ্বিধাভরে ঘামিতে লাগিলেনঃ যেন সব 
বাক্য তাহার কে হরণ করিয়া লইয়াছে। অনেকক্ষণ 
অপেক্ষার পর অবশেষে স্থৃতিরত্ব মহাশয় নিজেই কথা আরম্ত 
করিলেন, আমি মনে করছিলুম তোমার বাঁড়িতে আজ 
সন্ধ্যার পর যাব। তোমার অবস্থা আমি সব শুনেছি। 

শিবরাম উত্তেজিতভাবে বাধা দিয়া কহিলেন, কি রকম 
অন্তাঁয় একবার ভাবুন দেখি! ছেলেমান্ুষ যদি একটা 
অন্তায় কোরে ফেলে থাকে, তার কি এমনিভাবেই 
প্রাণবধ করতে হবে? 

স্মতিরত্ব মহাশয় হাঁসিলেন। হাত তুলিয়া শিবরামকে 
বাধা দিয়া কহিলেন, থামো। অন্তায় বল্ছ কাকে? 
এটা কখনে! অন্ঠায় হোতে পারে না । তুমি নিয়ম লঙ্ঘন 
করেছ অতএব তোমার শাস্তি অনিবার্ম ; 

--আমি কি-নিয়ম লঙ্ঘন করলুম ? 

--তোমাঁর যুবতী বিধবা কন্যাকে তুমি রক্ষা করতে 
পারনি। সে বিপথে গিয়ে পড়েছে, অতএব তুমি নিয়ম 
লঙ্ঘন করেছ। 

“ -আপনিও তো আপনার ছেলেকে রক্ষা করতে 
পারেন নি। 

__ঠিক, সেজন্যে আমি নিজের শান্তির ব্যবস্থা নিজেই 
করব । তোমার শাস্তি গ্রামের লোক দিয়েছে, কাজেই আমার 
দেবার দরকার নেই। তবে তোমার মেয়েকে দেব। 

তিনি' অন্যমনস্কের মত চাহিয়া রহিলেন। কিছুক্ষণ পরে 
গম্ভীরক্ঠে কহিলেন, আমার শাস্তি আমার এ একমাত্র ছেলে 
বিভূতির চির-নির্বালন। পৈতৃক বিষয় থেকে সে বঞ্চিত হোল। 

শিবরাম চমকা ইয়া উঠিলেন। কিন্তু স্বতিরত্ব মহাশয়ের 
মুখখানা ভাব-সংস্পর্শ-বজিত। তিনি কহিতে লাগিলেন 


[২৮শ বর্-_৯য় খণ্ড-১ম সংখ্যা 


এমন কি, আমার মৃত্যুকালেও সে এখানে এসে আমায় দেখে 

যেতে পাঁরবে না । ওকে আমরণ কৌমার্য নিয়ে ব্রহ্মচর্য পালন 

করতে হবে এবং ওর গুরু হবেন যে সন্গ্যাসী তিনিই ওকে "সংযম 

শিক্ষা! দেবেন । আর তোমার মেয়েকে কালই প্রায়শ্চিত্ত কোরে 

কঠোর ব্রহ্মচর্য নিতে হবে। তাঁর শিক্ষাদদীতা হব আমি। 
শিবরাম আতঙ্কে শিহরিয়া উঠিলেন। 

-_-এ যে বড় কঠিন ব্যবস্থা করলেন দুজনেরই ! 

স্বৃতিরত্র মহাশয় হাসিলেন । 

-শিবরাঁম। আমরা হিছু। . সব নিয়ম কঠোরভাবেই 
পালন কোরে আসছি সেই সনাতিন যুগ থেকে । তা্ট সব 
ধর্মের চেয়ে হিন্দু ধর্ম এত কঠোর হয়ে শীড়িয়েছে। এই 
হিন্দশান্ত্র হি'ুর কাছে মৃত্যুর মতই সত্য । 


ছয় 


পরদিন প্রাতে একখানা আসনে গম্ভীরমুখে স্মতিরতব 
মহাশয় বসিয়া এবং তাহার সম্মৃথে একথানা কম্ছলের 
আঁসনে উষা! উপবিষ্টা। বস্থমতী ও শিবরাম ব্যতীত আরও 
একজন এক কোণে মাথা নীচু করিয়া বসিয়া আছে, সে 
বিভূতি। স্থতির্র মহাশয় তাহাকে জোর করিয়া 
আনাইয়াছেন, কি করিতে তাচা তিনিই জানেন । 

উষাকে আর চেন! যাঁয় না। তাহার মস্তক ক্ষৌরমুণ্তিত, 
হস্ত আভরণশূন্ত, পরিধানে পট্বন্ত্র গলায় রুদ্রাক্ষ। 
হোমাগ্সির উজ্জল বিভায় তাহাকে দেখাইতেছিল যেন 
লাবণ্যময়ী খধি-কন্তা | যেন তপশ্চর্যার প্রভাবে অঙ্গ হইতে 
একটা দৈবী প্রভা বিচ্ছুরিত হইতেছে । 

প্রায়শ্চিত্ত হইয়া গেল। 

স্বতিরত্ব মহাঁশয় বিভৃতিকে নিকটে ডাকিয়া! কহিলেন 
বোস। অগ্রিকুণ্ডে আহুতি দিয়ে প্রতিজ্ঞা কর দুজনেই--আজ 
থেকে সমস্ত বিলাঁস বর্জন করলে । বল, সংস্পর্শজ সুখের সকল 
লিগ্ষা দগ্ধ হোক্‌, হে অগ্নি, তোমার এ লেলিহান শিখায় ! 

বিভূতি একবার চাহিল পিতার পানে। কিন্তু ওকি? 
যমের মত নিষ্টুর, ধর্মের মত যে পিতা, আজ তার চোখে 
জল! বশিষ্ঠ-গৌতমের মত ধার বর্তব্যবুদ্ধি নিয়ত সজাগ, 
বরঙ্ষচর্য পালনে ধার আশ্চর্য অবিচলিত নিষ্ঠা, আজ তার দুই 
চোঁথে দুইটি জলধা'র! নামিয়া গণ্ডছয় প্লাবিত করিয়াছে ! 

বিভূতি বিহ্বলভাবে পিতার প্রানে,চাহিয়া রহিল। 


ভক্তিযোগ 


স্বামী জগন্ীথানন্দ 


উদ্রীঠাকুর বলতেন--জ্ঞান ও ভক্তি ছুইই এক সঙ্গে বর্তমান থাকা! নাধারগ 
জীবের পক্ষে খুবই ভাগ্যের কখ|। শ্রীচৈতন্যের ন্যায় ঈশ্বর.কোটীরই 
পক্ষে এ সমুদয় সম্ভব । 

সাধারণ জীব ঝ! জীবকোটার কথা সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র (****" 

“কখন কথন দেখা যায় হুর্ধ্যঠাকুরের অন্ত যাবার পূর্বেই চাদামাম! 
আকাশে উঠে হাজির হন। ভক্তি হল চন্তর, জ্ঞান হল সূর্য্য । ভগবানের 
অবত।রের হদয়-আকাশেই ভক্তিচন্দ্র ও জ্ঞান শুর্ধা একত্র উদ্দিত হন।” 
জ্ঞানপথ ও ভক্তিপথ যেকি সে সম্বন্ধে ব্যাখ্যা আমর! এখানে করিতে 
চাহিন1--তাহা' আমাদের বর্তসান প্রবন্ধের আলোচা বস্তু নহে, এখানে 
শুধু ভক্তি নন্বন্ধেই আলোচনা করিব। জ্ঞ/নে অগ্রসর হওয়া ব! তক্তিতে 
অগ্রসর হওয়া কোনটাই সহজ-সাধ্য নহে । মনে হয়, বুঝি জ্ঞান অপেক্ষা 
ভক্তিই সহ, কিন্তু বর্তমান প্রবন্ধ আলোচনা করিলে বুঝ! যাইবে ঠিক 
ভক্তি কি এবং তাহার কতটুকু আমাদের অর্থাৎ সাধারণের আছে ব! 
হওয়। সম্ভব । 

ভক্তিতন্বের পরাকাষ্ঠাই বৈষঃবশান্ধ্ের প্রাণ। তাই আমরা বৈষব 
শান্ত্রকেই মূল রাখিয়া ইহার আলোচনা করিয়া যাইব। বৈষবশাস্ত 
বিষুকে লইয়া-_বিষুর-মুত্তি শ্ীকৃঞঃ। “কৃধন্ত ভগবান স্বয়ং”__াহাকে 
সইয়াই বা াহার জীবনী আলে/চনা৷ করিলেই এ সম্বন্ধে বু আভায 
মিলিবে। 

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ক্যা আলোচনা করিলে দেখ! যায়--প্রধানভাবে 
কিরপে ভগবানকে ভালবান। যাঁয়, তাহাই বৃন্দাবনে গোপগোগীদিগকে 
শিখাইয়াছিলেন। একাদশ স্বন্ধে দ্বাদশ অধ্যায়ে প্রীকৃষ্ং উদ্ধাবকে 
বলিতেছেন--“গোপীদের প্রেম অতুলনীয়, তাহারা আমারই কিছু জীনিত 
না, তাহার। শান্তর জানিত না; কিছু ব্রত উপাসনা করিত না) সর্ব- 
শক্তিমান সৃষ্টিকর্তা পরমেশ্বরকে বুঝিতে চাহিত না, কেবল আমাকেই 
ভালবাসিয়াছিল। যে সময় অক্ুর বলরামের সহিত আমাকে মথুরায় লইয়া 
আসে, তখন আমাতে অত্যন্ত প্রেম ও অনুরাগ বশতঃ আমার বিয়োগ- 
জনিত ঢুঃখে সংসারের অন্য কোন বন্ত তাহাদের কাছে হুথগ্রদ হয় নাই। 
আমাতেই তাহারা ধন, মন, প্রাণ, যৌবন সমস্ত অর্পণ করিয়াছিল। 
বুন্দাবনে গোচারণের সময় ও রাস-ত্রীড়। রাত্রিতে আমার নঙ্গলাভে ক্ষণার্দ 
বলিয়! মনে করিত, দিন, মাস, বৎসর আম বিহনে কল্পের সমান হইয়া 
গিয়াছে। 

যেমন সমাধিমগ্ন মুনিগণ ও সমুদ্রে নদ-নদী মিলিত হইলে গর 
নামরপ পরিত্যাগ করে মেই্রনাপ তাহাদের আমাতে অতিশয় আসক্তি ও 
প্রেমানুরাগের জন্য নিজের শরীর যে এত প্রিয় তাহাও তুলিয়া গিয়াছিল 
এবং শরীর-বুদ্ধিরহিত হইয়! পরমাত্মাতে লীন হইয়াছিল। ইহ! হইতে 


বেশ স্পষ্ট বুঝা যায়--শুদ্বজ্ঞান যেখানে পৌঁছায় শুদ্ধাতভিও সেইখানে 
লইয়া যায়। ওুদ্ধজান ও শদ্ধাতক্তি এক। 

্ীকৃফ মথুর! হইতে উদ্ধুবকে পাঠাইয়াছিজেন-_গোগীদেরে সংবাদ 
আনিবার জন্ত। উদ্ধবকে বলিয়াছিলেন 'আমি অত্যন্ত কার্যো-কর্ে বান্ত 
থাকাতে তাহাদের খবর লইতে পারি নাই। আমার যখন কোন এশ্ব্যা 
ছিলনা তখন তাহার! আমাকে সমন্ত মন-প্রাণ দিয় ভালবানিয়াছিল। এখন 
আমি বড়লোক (1170-1)8761), নকল মানবে প্রণাম করবে, এ আর 
আশ্চর্য্য কি?” এইরূপ বলিয়। কাদিতে লাগিলেন--“হে উদ্ধাব, তাদের 
ধণ আমি পরিশোধ করতে পারিব ন|। তিনি জরাসন্ধাদি বধ এবং কুরুক্ষেত্র 
যুদ্ধে অত্যাচারী রাজন্যবর্গকে নিধন ও সমরক্ষেত্রে অঞ্জুনকে গীতা-সহায়ে 
উপদেশ প্রদান করিয়াছিলেন। স্বামী বিবেকানন্দ বলিয্লাছিজেন 'গীতাই 
শ্তির একমাত্র প্রামাণিক ভান্ত। এমযন কোন উপদেশ নাই গীতাতে 
যাহা আলোচন| হয় নাই । কি কর্দুযোগ, কি রাজযোগ, ক্রি জ্ঞানযোগ ও 
ভক্তিযোগ, পুরুষ-প্রকৃতিযোগ, সমস্ব়যোগাদি সমন্তই আলোচিত রা 
হইয়াছে। স্বামীজি বলিতেন- শ্রুতি বা উপনিধদের মধ্যে অনেক 
অগ্রাসঙ্রিক কথা চলিতে চলিতে হঠাৎ এক মহা! সত্যের অবতারণা । 
যেমন জঙ্গলের মধ্যে থকে কোথাও কোথাও অপূর্ব হুন্দর গোলাপ তাহার 
শিকড় কাটাপাত| সব সমেত। আর গীতার মধ্যে এই সতাগুলি লইয়া 
অতি হুন্দররণপে সাজান যেন ফুলের মাল! বা হুন্দর ফুলের তোড়া। প্রীকৃফ 
বলিয়াছেন -এই কর্মমকাগুয়প বেদ ত্রিগুণান্িত সকাম পুরুষদের জা, হে 
অর্জুন তুমি নি্ষাম হও। এই গীতাতেও পুনঃ পুনঃ ভক্তির কথ! উল্লেখ 
করিয়াছেন এবং ভক্তিই সহজ সরল উপায় বলিয়! নির্দেশ করিয়াছেন। 
কাম-গন্ধহীন নিশ্বার্থ গোপী-প্রেম আজও ভারতীয় জনসমাজে আদর্শ 
স্বরাপ হইয়] রহিয়াছে । তাহাদের প্রেমোনত্তা পরিক্ষট করিবার জঙ 
এলেন জ্রীপ্রীচেত্ন্য মহীগ্রভু। তিনি ২৪ বৎসর বয়সে সন্ন্যাস গ্রহণ 
করিয়া ৬পুরীধামে যান এবং তিন বৎসর দাক্ষিধাত্য তীর্থ ভ্রমণ ওপতিন, 
বৎসর বৃন্দাবনাদি পরিভ্রমণ করিয়! ১৮ বংসর নীলাচলে অবস্থিতি 
করেন। তাহার শেষ অবস্থায় গন্তীরাতে স্বরূপ দামোদরের সহিত মধূর 
ভাবালাপনে দিন কাঁটাইতেন। ভীহার হৃদয়ে রাঁধাকৃঞ্ণ যুগলমুষ্ঠি সর্বদা 
বিরাজমান থাকিত। অহরহ: প্রকৃষ্ণপ্রেমে মগ্র থাকিতেন। কখন 
কখন কৃষ্ণের বিরহে ছটফট করিতেন। কথন বা স্বরাগ দামোদর 
হস্ত ধারণ করিয়া কাদিয়! বলিতেন--এখনও প্রাণনাথ এলেন না। 

শী প্রেমে তাহার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সন্কুচিত হইয়া যাইত। তাহার 
উচ্চ নীচ বোধ ধাকিত না, জগৎও ঠাহার কাছে ভুল হইয়। বাইত 1, 
সমুদ্ধ দেখিয়া যমুনা, চটক পর্বতকে গোৌধর্ধনা মনে করিতেন। 
একদিন চটক পর্বত হইতে সাগর-জলে বশ্প-প্রদাদ করিয়াছিলেন। 


১৩ 


«১৯3 





এই মধুর ভাব অত্যন্ত কঠিন ও দুরহ বলিয়া সফলের সমস্ষে প্রকাশ 
করিতেন না। দেহ বুদ্ধি রহিত ও বিষয়াদিত়ে আসব্িশৃন্ক ন! হইলে 
মধুরতাব বুঝা জীবের পক্ষে ওতন্ত কঠিন। তাই মহাপ্রভু বহিরঙ্গ 
সঙ্গে সংকীর্তন ও অস্তরঙগ সঙ্গে মধুর আলাপন করিতেন। তিনিও এই 
উক্তির কখু! বলিয়া গিয়াছেন ও নিষ্বোক্ত ক্লৌক পাঠ করিয়! ৬ স্গম্নাথের 
কাছে প্রার্থনা করিতেন। 


ঈ 


পন ধনং ন জনং ন কবিতাং হন্দরীং বা জগদীশ কাময়ে 
মম জগ্মনি জন্মনীশ্বরে তবতু তক্তিরহৈতুকী ত্বয়ি।” 


ছে জগদীশ, আমি ধন, জন, কবিতা বা হুন্দরী কিছুই প্রার্ঘন! করি ন।, 
ছে ঈশ্বর তোমার প্রতি জন্মে জঙ্মে যেন আমার অহৈতুকী ভক্তি হয়। 

সার্ধ উনবিংশ শতার্ধীতে এক মহাপুরুষ জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন-_ 
একাধারে শঙ্করের অদ্ভুত মন্তিক এবং চৈতচ্য মহাপ্রভুর অদ্ভুত বিশাল 
হৃদরবতা! লইয়! ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংস তারতান্তগৃত ভারতবহিভূত 
বিরোধী সম্প্রদায় মতে সাধন করিয়! সকলকে বুঝাইলেন- একই ঈশ্বরের 
কাছে যাইবার নান! পথ অধিকারী ও কচিভেদে। তিনি বলিতেন--হও 
ধৃান, হও মুসলমান, হও বৈষ্ণব, হও শান্ত, হও সাকার ব| নিরাকারবাদী 
তাহাতে ক্ষতি নাই। ঈশ্বরের প্রতি অনুরাগ বা ব্যাকুলত। চাই, যেমন 
সতীর পতির প্রতি টান, কৃপণের ধনের প্রতি, মাতার পুত্রের প্রতি টান, 
এই তিন টান একব্রিত করিলে যতখানি ততখানি ঈশ্বরে ভালবাস! 
আসিলে তাহাকে পাওয়া ঘায়। তিনি ওমায়ের কাছে শুদ্ধ! ভক্তি 
চেয়েছিলেন । 

লত্যবাদী রঘুষুল-তিলক রামচন্ত্রও শবরীকে এই কথাই বলিয়াছিলেন। 
শবরী যখন রামচন্জ্রের চরণে প্রণত হইয়। ভক্তি গদগদ চিত্তে বলিয়াছিল-- 
প্রভু আমি অধম, আমি নীচবংশজাত, আমার কি গতি হইবে? 
তাহার উত্তরে রামচন্ত্র বলিলেন, জাতি, পাতি, কুল, ধর্ম বড়াই। ধন, 
বল, পরিজন, গণ চতুরাই। 


ভকতি হীন নর সে! হই কৈস|। 
রি বিনু জল বারিদ দেখিও দেখিও জৈস]। 


উচ্চবংশে জন্ম, উচ্চ জাতি, ধনী, বলিষ্ঠ, গুণী, মানী হইয়া! যদি তাহাতে 
ভক্তি না থাকে ত| হইলে উক্ত গু৭ সবই বৃথা, যেমন জলধয়পটল মেঘ 
বারি বর্মণ ন! করিয়া আকাশে শোভা পাইয়! থাকে। এই ভক্তি 
আচার্য্যগণ বহু প্রকার বর্ণনা করিয়াছেন। ন্বন্ধাজ্িকা, অনুরাগাক্িকা, 
জানমিশ্রা, সাধারণী প্রস্থুতি তেদে বহুবিধ খাকিলেও নবধা ভক্তির কথা 
জালোচন! করব। 


নিন ৮ 5০৭4) 


চি শর রসে শক রিনি ॥ র্ বু শিপ 
চি ঞ্ পি শা. পে শর পার 4 পা পি //0 ৭ টি নু 
রি 2৫৭ উই ক, ০ ০০ নহি টি? স্টার পি 
। 7৮৯৮৮117৮93 
রে 2 5 ॥ 180, 4০ র্‌ 
এ 


ভ্াক্রভন্রষ্ 


[ ২৮ বর্ষ-»২য় খণ্ড সংখ্যা 





সংকীর্তনং যৎল্মরণং যদীক্ষণং বন্দ্দনং হচ্ছ বং হদীক্ষণম্‌ 
লোকস্ত সন্ত! বিধোনোতি কলঘং তশ্মৈ নুস্ত্র শ্রবসে নমে! নমঃ। 


ফাহার কীর্তন, যাচার শ্মরণ, দর্শন, বঙ্গন, শ্রবণ, পুজার পুরুষের পাপ 
সদাই নষ্ট হইয়। থাকে নেই মঙ্গলরণী ভগবানকে নমন্ব।র করি। 


শ্রবণং কীর্তনং বিষোঃ শ্রণং পাদসেবনম্‌ 
অর্চনং বন্দনং দান্তং সধ্যমাত্মনিবেদনমূ। 


বিষুর নাম শ্রবণ, কীর্তন, মন, বাকা দ্বার! লীলা শ্মরণ, হরির পাদপন্স 
সেবা, বিগ্রহাদি মুষ্তিতে স্তবস্ততি দ্বার! বিষুর বদনা, দাস্তরপে মখ্যভাবে 
যজ্ঞ, দান, তপস্তা, পুত্রকলত্রাদি বিষ্ণুর চরণে অর্পণরূপ আত্ম-নিবেদন 
প্রভৃতি নবধা ভক্তির লক্ষণ উল্লেখ করিয়াছেন। যেমন দান্তে হনুমান, সত্যে 
শ্রীদামাদি, সেবায় আত্মনিবেদন বলি প্রভৃতি ভক্তগণ এক এক ভাবের 
উজ্জ্বল দৃষ্টাতম্বরূপ। 

যে কোনরপে তাহাতে ভক্তি হলেই ঠাহাকে পাওয়া যায়, ছেষ করেই 
হউক কিংবা ভয়ে অথব| স্্েহে অথব| কামে যে প্রকারে হোক--যদি 
ঈশ্বরে সমগ্র মন দিতে পারে তাহলে পরম গতি লাভ হয়। 


কামাদ্‌ দ্বেষাৎ ভয়াৎ ম্নেহাৎ যথ! ভক্তে্বরে মন 
আবেন্ঠ তদর্থং হিত্ব!। বহবন্তদ্‌গতিং গতাঃ। 


কামে গোগীগণ, ভয়ে কংস, দ্বেষে শিশুপাল, ম্নেহে বুঞ্নিয়পালগণ 
মুক্তি পাইয়াছিলেন। 

তখন শ্রীকৃষ্ণ উদ্ধবকে পূর্বেবে অবধূত উপাখ্যান, সংসার মিধ্যাত্, 
সংনঙ্গ মাহাত্ম্য, কন্মত্যাগ প্রস্তুতি উপদেশ দিয়! চতুর্দশ অধ্যায়ে ভভভি- 
যোগের কথা বলিয়াছেন। 

হে উদ্ধাব, যেমন প্রত্থলিত অগ্নি কাষ্ঠকে দগ্ধ করিয়া ভশ্মসাৎ করিয়া 
থাকে, সেইরূপ আমার ভক্তি সমুদয় পাপরাণীকে ন্ট করিয়া থাকে। 
হে উদ্ধব আমাকে লোভ করিবার সুগম উপায়-_দৃঢ়ভুক্কিতুল্য যোগ, 
সাংখ্া, স্বাধ্যায়, তপন্ত। অথব! দান কোনটাই সমর্থ নহে। 


ন সাধয়তি মাং যোগে! ন সাংখ্যং ধর্ম উদ্ধব 
ন স্বাধ্যায় গুপন্তযাগে। যখ| ভক্তি্মোজিতা| ॥ 


তগবান ্রকৃষ। যে জন্য অবতীর্ণ হইয়াছিলেন তাহা সমন্ত সম্পন্ন 
করিয়াছেন। এখন তিনি ম্বধামে যাইবেন তাই ভাছার অন্তরঙ্গ পারি 
উদ্ধবকে ডাকিয়া! বলিলেন- “হে উদ্ধব, ব্রহ্মণাপে সপ্তদিনের মধ্যে ছ্বারকা 
সমুদ্রের জলে প্লাবিত হইবে এবং যছুবংশ ধ্বংস হইবে। তুমি আমার 
আদেশে লোকাঁশক্ষার জন্য কিছুদিন ধরাধামে থাক এবং বস্িকা শ্রমে 
বাইয়! সাধুসঙ্গ ও ভগবানের ধ্যান ভজন কর।' 





পুণ্ডরীক 


শ্রীপরিমলু মুখোপাধ্যায় এম-এ ্‌ 


পুণ্তরীকের বাঁড়ি ছিল আমাদের পাশের গ্রামে। গ্রাম্য 
পাঠশালায় যখন পড়িতাম, দুইজনে তখন কত ভাবই না 
ছিল। প্রকৃতির তাঁগবকে উপেক্ষা করিয়া কি গ্রীষ্মে কি 
বর্ধায় মাঠে মাঠে ঘুরিয়া বেড়াইয়াছি, বিপক্ষের সহিত 
মারামারি করিয়াছি, ঘণ্টার পর ঘণ্টা পুকুরে সাতার 
কাটিয়া চক্ষু জবাফুল করিয়াছি । কিন্তু এই বন্ধুত্ব বেশি 
দিন উপভোগ করিতে পাঁরি নাই। বাবা কলিকাতায় 
চাঁকুরী করিতেন। শনিবার শনিবার বাঁড়ি আসিতেন, 
আবাঁর সোমবাঁর ভোরে চলিয়া যাইতেন। গ্রামের স্কুল 
হইতে মাইনর পাশ করিবার পরই আমাকে বাবা 
কলিকাতায় রাখিয়া! পড়াইবার জন্য লইয়া গেলেন। 
পুগুরীকের সহিত ছাড়াছাড়ি হল। 

কলিকাতায় থাকিয়া ম্যাঁটিক পাঁশ করিলাম। আই- 
এক্লাশেও ভর্তি হইলাম। এমন সময় একদিন বাবার মুখে 
শুনিলাঁম যে পুগুরীক আসিতেছে, আমরা দুইজনে একত্রে 
থাকিয়। পড়াশুনা করিব। পুগুরীকও যে গ্রামের হহিস্কুল 
হইতে ম্যাঁটি ক পাঁশ করিয়াছে, আমি আগেই তাহা গেজেটে 
দেখিয়াছিলাম। পুগুরীকের আগমনের সংবাদে মনে মনে 
কত আনন্দই যে হইতে লাগিল! 

আসিল পুগ্তরীক। একসঙ্গে পড়াশুনা করা; কলেজে 
যাওয়া- পুরাতন বন্ধুত্ব পুনর্জীবিত হইয়! উঠিল। 

কিন্তু এবার থেন পুণগ্তরীকের মধ্যে একটা পরিবর্তন 
অনুভব করিতে লাঁগিলাম।' শৈশবের দে চাপল্য আর 
নাই, একটু যেন অস্বাভাবিক রকমের গম্ভীর হইয়া গেছে 
সে, একটা বিবেকানন্দীয় তেজন্িতাঁর সৃষ্টি হইয়াছে তাহার 
মুখে-চোখে। আমার ছিল গান-বাজনা খেলাধুলার দিকে 
বেক; কিন্ত পুগ্রীককে দেখিতাম খবরের কাগজ পড়িতে 
পড়িতে কি রকম চিন্তামগ্ন হইয় যাইত) কোথায় কিসের 
সভাঃ কে কোথায় দুঃখে পড়িল, কেবল এই সবের অনমন্ধান 
করিত ও। সন্ধ্যার সময় একত্র হইলে মাঝে মাঝে আমায় 
বলিত, *গ্রতুল, তুই তো গেলি নে? বেলুড় মঠে সন্ধ্যের 
সময় কী যে চমতকার লাগে ভাই, মনটা যে কোথায় উড়ে 


যায়!” এ.কথা গুনিয়া' আমি একটু বিস্মিত হই়াই ওর 
মুখের দিকে চাহিয়! থাকিতাঁম। মাঝে মাঝে; সন্দেহ হইত-_ 
তাহা হইলে কি পুগুরীকের মনে প্রেমের বিষ ঢুকিয়াছে? 
কখনে!৷ কখনো পরিহাস করিয়া এ সম্বন্ধে ওকে জিজ্ঞাসা 
করিতাম। কিন্তু সে সময় ওর মুখের মধ্যে এমন একটা 
ভাব দেখিতে পাইতাঁম যাহাতে আমি স্পষ্ট বুঝিতে 
পারিতাম যে ওর এই পরিবর্তনের মূলে কোনি প্রেমের 
কুহকিনীর স্থান নাই, জীবনের পথে নারীর আকর্ষণকে 
পদদলিত করিয়] চলিবার শক্তি ওর আছে। 

দেখিতে দেখিতে ছুই বৎসর কাটিয়! গেল। দুইজনেই 
আই-এ পরীক্ষা দিয়া গ্রামে গেলাম। পরীক্ষার ফল 
বাহির হইলে দেখা গেল, দুইজনেই প্রথম বিভাগে পাঁশ* 
করিয়াছি। কলিকাতায় আসিয়া আবাঁর দুইজনে বি-এ 
পড়িব, সমন্ত ঠিকঠাক; হঠাৎ একদিন খবর পাইলাম, 
পুগ্তরীক নিরুদ্দেশ । 

ছুটিলাম পুগুরীকর্দের বাঁড়িতে। পুগুরীকের মা-বাঝ! 
আঁসিয়! কীর্দিতে লাগিলেন। জিজ্ঞাসা করিলেন আমি 
কিছু জানি কি-না । কিছুই জানিতাম না, চুপ করিয়া 
রহিলাম। কিন্ত একটা কথা মনে পড়িল । পুগুরীক আমায় 
মাঝে মাঝে বলিত বটে, “গ্যাঁখ, প্রভুলঃ ঘরের কোণে আর 
আবদ্ধ হয়ে থাকতে ভাল লাগে না। ইচ্ছে হয়ঃ চোখ- 
কাণ বুজে বাইরের জগতে বেরিয়ে পড়ি।” কথাটা 
বলিলাম। শুনিয়া পুণুরীকের ম! কাদিতে কাদিতে বলিলেন, 
“একথা আমায় আগে বলিস নি কেনবাবা? কে ওকে 
আমার এমন করলে? এবার এলে ওকে আঁগে আমি বিয়ে 
দৌব তবে ছাড়ব ।৮ বয়স্ক ছেলে, বাইবে কোথায়, শীস্বই 
ফিরিবে_ ইত্যাদি কথা বলিয়া তাহাদিগকে সাত্বনা দিয়! 
আমি ফিরিলাম। ও 

কিন্ত দিনের পর দিন, মাসের পর মাস করিয়া ছুই 
বৎসর কাটিয়া গেল, পুণ্তরীক তো ফিরিল, নাঁ। একমাত্ব 
পুত্রের আশায় পথ চাহিয়া বৃদ্ধ পিতী-মাতার দ্দিন কাটিতে 
লাগিল নোঙর-ছেঁড়া নৌকার স্ভায়। 


১ 


১৯৬ 


ইতিমধ্যে আমার জীবনে অনেক পরিবর্তন হইয়াছে । 
অন্থথের জন্য কিছুদিনের ছুটি লইয়া বাঁবা গ্রামে গিয়াছিলেন। 
হঠাঁৎ একদিন তাঁর পাইলাম, তার অবস্থা থাঁরাঁপ, আমি 
যত শীত পারি যেন বাড়ি যাই।- আমি তৎক্ষণাৎ রওনা 
হইয়া পড়িলাম। গ্রামে আসিয়! দেখি, সত্যই বাবার অবস্থা 
থারাঁপণ এক মনে ভগবাঁনকে ডাকিয়া যথাসাধ্য চেষ্টা 
করিতে লাগিলাম বাবাকে বাঁচাইতে । ভগবান বোধ হয় 
সে যাত্র! আমাদের প্রাণের ডাক শুনিতে পাঁইলেন। বাঁবা 
সারিয়া! উঠিলেন। কিন্তু কিছুদিন পরে আমায় ডাঁকিয়া 
বলিলেন, .পবাঁবা, সেরে উঠেছি বটে, কিন্তু শরীরের তো 
জোর পাচ্ছি না। তাই বলি, এবার একটা বিয়ে-থা কষ্‌। 
পড়ে লিখে আর কি হবে? গ্রামে ঝসে জায়গা-জমি 
ছ্যাখ |” বাবার শেষ বয়সের আদেশ অমান্য করিতে 
পারিলাম না। বহু সাধের লেখাপড়া ছাঁড়িয়| বিবাহ করিয়া 
গ্রামে স্থায়ী হইয়া বসিলাম। 

দিনের পর দিন যাইতে লাগিল । হঠাৎ একদিন সকালে 

শুনিতে পাইলাম, পুগুরীক ফিরিয়াছে। গেলাম পুণগুরীককে 
দেখিতে ৷ গিয়! দেখি, গ্রাম যেন ভাতিযা পড়িয়াছে সেখানে 
পুগ্ডরীককে দেখিবার জন্য | ভিড় ঠেলিয়া ভিতরে একটা 
ঘরে প্রবেশ করিতেই পুণডরীক আমায় হাসি মুখে ডাকিল, 
“আয় 1” পুগুরীকের মা-বাবা তখন কীদিতেছিলেন, আর 
পুগ্ডরীক তাহাদিগকে সান্বনা দিতেছিল। চাহিয়া চাহিয়া 
দেখিলাম, পুগুরীকের পরণে আগের মত সেই খন্দরই আছে, 
গাম্ভীধ্যও সেইরূপ । তবে চেহারা বোধ হয় আরও লম্বা- 
চওড়া হইয়াছে । কিছুক্ষণ বাদে পুগুরীককে লইয়! বাড়ির 
বাহির হইয়া কিছুদূরে মাঠের মাঝথানে আমাদের শৈশবের 
প্রিয় একটি বটগাঁছ-তলাঁয় গিয়া বসিলাম । 

জিজ্ঞাসা করিলাম, “কোথায় ছিলি এদ্দিন ?” 

হাসিয়া উত্তর দিল ও) “ক-_তো জায়গায়, তার কি 
ঠিক আছে ?”" 

বপ্সিলাম, “বিনা পয়সায় তে আর দেশ-ভ্রমণ হয় না, 
বেরিয়েছিলি তো! একবস্ত্রে |” 

“আরে ভাই” হাসিতে লাগিল পুগুরীক ; “যেখানেই 
বাই, আমার মধ্যে সকলে যেন কি দেখতে পায়। বড়বড় 
শিক্ষিত লোকের! পর্যন্ত বাড়িতে টেনে নিয়ে গিয়ে আমাঁয় 
পুজো করতে চায় যেন। কৌন জায়গায়! পনের দিন এক 


£ 


[ ২৮শ বর্-*ই ঘণ্ড ১ম সংখ্যা 


মাসের কমে ছাড়া পাই নি। তারপর নিজেরাই সঙ্গে 
এসে টিকিট কিনে গাড়িতে তুলে দেয়। এই হচ্ছে আমার 
দেশ-ভ্রমণের ইতিহাস ।৮ | 

ওর হাসি দেখিয়া আমার গা-টা যেন জলিতে লাগিল; 
বলিলাম “খুব করেছ ! বুড় বাঁপ-মার মনে কষ্ট দিযে 'এক 
যুগ বাদে ফেরা !” 

তাঁরপরে থামিয়া নরম গলায় বলিলাম, “এইবার একটা 
বিয়ে ক'রে গ্রামে বস্‌। আর কোথাও যাস নি। বাপ-মার 
শেষ বয়সে সুখী কর্‌ তাদের ।” 

বিবাহের কথায় পুগুরীক হঠাৎ অস্বাভাবিক রকমের 
গম্ভীর হইয়া গেল। বুঝিলাম, মনের ওর পরিবর্তন হয় 
নাই একটুও । উদাসীন প্ররৃতিটা এখনও বীচিয়া৷ আছে 
ওর মধ্যে। তখনকার মত কথাটা চাঁপা দিয়া উঠিয়া 
পড়িলামি। 

সুখের বিষয়, পুণ্ডরীক গ্রামেই রহিয়! গেল। কিছুদিন 
পরে ছায়ার ( আমার স্ত্রী) মুখে শুনিলাম, পুগুরীকের 
নাকি আমাদেরই গ্রামের স্থষমার সহিত বিবাহ হইতেছে । 
মাতৃপিতৃহীনা শ্ষমা! ম|মাঁর স্বন্ধের ভার লাঘব করিবে 
শুনিয়া আমার কী যেআনন্দ হইতে লাগিল! স্থযমারা 
খুব গরীব ছিল। সুষমার পিতা বৎসর দুই পূর্বের মারা 
যাঁন। কন্তার বিবাহের জন্য তিনি এক পয়সাও রাখিয়া 
যাইতে পারেন নাই। তাই সুন্দরী হইলেও সুষমার বয়স 
গ্রাম দেশের পক্ষে বড় কম হয় নাই। যোল পার হইয়া 
গিয়াছিল সে। সুষমার মামা যখন শুনিলেন যে পুগুরীক 
গ্রামে আসিয়াছে, তখন তিনি গিয়া পুগ্ডরীকের হাতে-পায়ে 
কাদিয়া পড়িলেন। পুগুরীকের পিতামাতাও তখন তাহাকে 
সংসার-বন্ধনে বাঁধিতে চাহিতেছিলেন। সকলের অনুরোধে 
উত্যক্ত হইয়া অবশেষে পুণুরীক রাঁজি হইল। কিন্ত 
সকলকে প্রতিজ্ঞা করাইয়া লইল যে বিবাহ-কধ্য যত সামান্ত- 
ভাবে হয় সম্পন্ন করিতে হইবে এবং বিবাহের পরদিন হইতেই 
স্বষমাদের সহিত তাহার কোন সম্পর্ক থাকিবে না। 
আপাতত সকলেই তাহাতে স্বীকৃত হইল । 

গুভদিন দেখিয়া বিবাহ হইয়া! গেল। বাহিরের লোক 
বলিতে একমাত্র আমি বিবাহ-বাঁটিতে উপস্থিত ছিলাম । না 
হইল কোন আনন্দ-কোলাহল, না হইল কোন সঙগীত-বাগ্ছের 
আয়োজন। রাত্রি বারটার সময় বাঁড়ি ফিরিয়া আসিলাম। 


'দিসী১০৪৭ 


“চিজ 


টন, 





পিছনে বালর-্গৃহে পড়িয়া রছিল এক অংলাক্ষ-বিক্লাগী পুরুষ- 
সিংহ আয় এক বরল। ভীত! হরিদী | 

করুক, বিবাহের পর স্ত্রীর গ্রতি আসন্ত হইবেই। কিন্ত 
ছাষার নিকট হইতে সংবাদ পাইলাম যে পুগুরীক নাকি 
শ্বগুরবাড়ীর ধাবে-কাছেও আসে না। সুষমা বেচাবি 
বাড়ির বাহিব হয না, মনের দুঃখে নাকি আধ-মরা ইইয। 
গিয়াছে সে। 

আমি আর সহ কবিতে পাবিলাম না। একদিন গিষা 
পুণ্তবীককে ধরিলাম । বিবাহ কবিষ1া একটা মেয়ের জীবন 
ন্ট কর! পৌরুষেব কাজ নহে ইত্যাদি বলিযা ভৎসন 
করিতে লাঁগিলাঁম। কিন্তু পুগুরীক অচল মটশ। মুখে 
তার একমাত্র কথাঃ সে তো বিবাহেব পূর্ধে সকলকে এরূপ 
প্রতিজ্ঞাই কবাইয! লইযাঁছিল। আশি হাঁব মানিযা ফিবিযা 
আসিলাম। ৃ 

কিছুদিন পবে কিন্ত আমার ভূল ভাঙিা। পুগুবীফেব 
মধ্যে একটু পবিবন্তন লক্ষ্য কবিযা আনন্দিত হইলাম। 
সেদিন অপরাহ্ন হাট হইতে ফিবিতেছিলাম। 'আঁগাদেব 
গ্রামে প্রবেশ কবিতেই দেখি, দৃব হইতে পুণ্তরীক 'আসিতেছে। 
বোধ হইল, সুধ্মাদেব বাঁড়িব দিক হইতেই আসিতেছে ও। 
কাছাকাছি হইতে হাসিযা জিজ্ঞাসা কবিলাম, “কি হে 
ভীম্মাদব, এদিক থেকে যে বড ? 

ও একটু বাঙা হইযা গেল। সলক্জতাবে কহিন; 
“ঘণ্টাথানেক আগে একটি ছেলে গিযে আমাঁয চিঠি দিলে । 
তাঁতে লিখেছে, কদিন ধবে বড অস্খ। বাঁচি কিনা, 
ঠিক.নেই। যদি দেখতে চাও তো একবাঁবটি এস। ওমা, 
গিষে দেখি, কিচ্ছু নয, সব চালাকি ।” 

হুষম! মরিবে ুনিযাই ভয় পাইযা গিযাঁছিল'ম। 
ছোটবেল! হইতেই উহাকে আমি ভগিনীব ন্াঁষ দেখি। 
পুগুরীকের শেষ কথাগুলিতে আশ্বম্ত হইলাম। 

মৃদু হাসিয়। বলিলাম” “তা, থেকে এলেই পাবতিস 
আজ?” 

প্ুয়। তা কি হয?” মাথা নীচু করিখা বলিল 
গুণ্ুরীক, “তা ছাঁড।; ডেকে মিযে গেল এত কণবে। কিন্ত 
একঘন্টা ধরে এটি কণাও বলাতে পাবনুম না, ঠাষ 
ঈাড়িযে রইল ঘরের একধেণণে 1৮ 


কপ." ক্্ধ্যাফলপপ্ু্ষ্যানযা্িল্পপ্ঞ্হা 
মনে গলে হালিলাম, এতদিন পরে তাহ হইলে উল্লালীনের 
মনে অত্যসত্যট রঙ. ধরিয়াছে। 


কিছুদ্দিন বাদে একটা জরুরী কাজে পুণুদীকদের 
গ্রামে একজনের সহিত দেখা করিতে গিয়াছিলাম। 
ফিরিবার সময পুণক্সীকদের বাড়ির সন্ধুখের মাঠ দিষা 
আমিতেছিলাম। সহস! উহাদের বাঁড়ির দিকে নজর পল়্ায 
সেখানে খুব ভিড দেখিলাম। মনে ব্ড কৌতুহল ভুইল। 
ছুটিলাম। গিয! দেখি, ভিড়ুটা জষিয়াছে দেশিবিপাতি 
কযেকজন পুলিশকে ধিরিযা। মধ্যস্থঙে পুণুয়ীক, সুখে 
একট অবর্ণনীয বঠিন ভাঁব। অনুসন্ধান করিষ! জাঁনিলাম, 
কি একটা রাঁজ-ড্রোহী দলেঘ সহিত পুগুরীক জভিত আছে 
সন্দেহ করিষা পুলিশ তাহাকে গ্রেপ্তার করিয়। লইযা 
যাইতেছে । বাড়ি খানাতল্লাসী করিধাও নাকি বগ্নেফটা 
নিষিদ্ধ পুস্তক পাওয়া গিযাছে। জমি কিছু বলিতে 
পাবিলাম না, নিশ্চপ ভইযা| ধীড়াইযা রহিলাম। বজ্গ ভেদিযা 
একটা দীর্ঘ-নিশ্বীস পড়িল, ভাবিলাঁষ, “যাঁও পুওরীক, 
স*সাবেব পস্কিল আবর্তে সত্যই তুমি নিজেকে মিশ্বাইতে 
পারিবে না।৮ পুলিশের! যখন পুগুরীককে লইযা চলিতে 
আরম্ভ কবিযাছে, তখন সুষমার দে কী কানা । সংবাঁদটা 
পাইযাই নাকি সে পাগলেব মত ছুটিয়া" আসিষাছিলি। 
নুষমাকে কাঁদিতে দেখিয! চকিতে ফিরি! দাডাইল পুগুর়ীক, 
কঠিন স্ববে বলিল, “কাদতে বাঁবণ কর প্রতুল, নইলে এক 
একটাকে খুন কব ফেলব আমি ।৮ 

পুণ্ডবীকেব তখনকাঁব মূর্তি আমি আজও ভুলিতে 
পাবি নাই। 


তাবপব আব কি-_পুণ্ডবীক ফিবিষ! আঁসাঁষ তাঁহার 
বৃদ্ধ পিতামাতা যেমন একুদিন ছুঃখ-শোক ভূলিযা খাঁডা 
হইযা উঠিযাঁছিলেন, এই অপ্রত্যাশিত আঘাতে তীহ্থারা 
আবাব তেমনি করিযাই ভাঁডিযা পড়িলেন। মাঁসণানেকের 
মধ্যেই মাত্র তিনদিনেৰ আগে-পাছে তাহারা! অজানার পথে 
পাঁড়ি দিলেন । 

এদিকে আব এক সংবাদ গুন্লাস, সুষমা নাকি 
অন্তঃসবা । সে খাষ না, ্নান করেনা, অনাহারে জছিক্রায় 
নাকি জীর্ণ কুটিরের এককোণে প্রভিনা পদ্থিঘ! শুকাইযা 


৯৯৬৮ 


মরিতেছে। ছায়া আসিয়া বলিল, 'গ্াঁধো না জেলের 
লোকেদের কাছে চিঠি লিধে, যাতে ওরা স্বামী-্ত্রীতে 
অন্তত চিঠি-পত্রটাও লিখতে পাঁয়। বেচারির যা অবস্থা, 
দেখলে চোঁথে জল রাখা যাঁয় না । ভয় হয়, কোন্‌ দিন না 
একটা 'কিছু করে বসে। বললে তো যে, পেটেরট৷ না 
থাকলে নাকি ও এক্ষুণি সংসারের .আলা! মিটিয়ে ফেলত ।” 
গুনিয়া আমি আর অশ্র-সংবরণ করিতে পারিলাম না) 
বলিরলাম, আচ্ছা, দেখিতেছি জেলের কর্তৃপক্ষদের কাছে 
চিঠি লিখিয়া। কিন্তু কোনই সুবিধা করিতে পারিলাম না । 
কোনমতেও জানিতে পারিলাম না, পুগুরীক কোথায় কোন্‌ 
জেলে আছে। 

এদিকে সকলের ন্নেহতিরস্কারে সুষমা তাহার শরীরের 
প্রতি যত্ব লইতে লাগিল। স্বামী তাহার যেখানেই থাকুক 
সময়ে ফিরিয়া! আসিবে, পুত্র-কন্তা লইয়া সে তাহার স্থুখের 
সংসার পাতিবে-_-এই সমস্ত কল্পনা করিয়াই বুঝি সুষমা 
তাহার স্বামীর ভিটায় আসিয়া দিন-যাঁপন করিতে লাগিল । 
কিন্ত নিয়তি নিষ্টুর। বৎসর খানেক পরে একটি সুন্দর 
শিশু-পুত্র প্রসব করিয়া! অভাগিনী তাহার সকল জালাঁর 
অবসান করিল। যাইবার সময় ছায়ার হাতে তাহার 
সাঁধের ধনকে তুলিয়! দিয় বলিয়। গেল, “এ ঝঞ্চাট তোমার 
"হাতে দিতুম না বৌদি। কিন্তু এ সময আমার আপনার 
বলতে কেউ তো বে. নেই । তাই, ওটাকে তুমি ফেলো 
নাঃ দেখো |” 


. দেখিতে দেখিতে পাঁচ বৎসর কাটিয়া গেল। পুণ্রীকের 
আশা! প্রায় ছাড়িয়াই দিয়াছিলাম। এমন সময় এক উজ্জল 
,বসন্ত-প্রভাতে গে আসিয়া! উপস্থিত। গলায় কদ্রাক্ষের 
মালা, পরণে গৈরিক বসন, শ্বস্রু-গুম্ফ-জটা-সমদ্থিত 
সন্যাসোচিত পরিবেশ। সংরাদটা পাইয়াই দলে দলে 
লোক আসিতে লাগিল উহাকে দেখিতে । বহুক্ষণ পরে 
ভিড় কমিলে জিজ্ঞাসা করিলাম, “জেল থেকে বেরোলি 
কবে ?” | 

“বহুদিন” উত্তর দিল ও। 

* বলিলাম, “ছিঃ, সংসার ফেলে গেছিস, এদিকে আসতে 
নেই? কোথায় ছিলি এদ্দিন ?” 

“মঠে মঠে ঘুরে বেড়িয়েছি ।” 


জ্ডান্রন্বঞ্ঘ 


[ ২৮শ বর্--২য় খশ--১ম সং্যা 


কথাটা শুনিয়া কিছুক্ষণ চুপ করিয়া রহিলাঁম। তারপর 
দেবব্রতকে ওর সম্মুথে আনিয়া বলিলাম, “চিনতে পারিস ?” 

'উদত্রান্ত দৃষ্টিতে ও উত্তর দিল, “না 1” 

“তা চিনবি কি করে? তুই তো আর জানতিস না, 
হঠাৎ জেলে চলে গেলি।” বলিয়া ওকে আমি এই কয় 
বৎসরের কাহিনী একে একে সব খুপিয়া বলিলাম । 

ও পাষাণ-পুত্তলীর মত নিশ্চল হইয়া বসিয়া সব শুনিতে 
লাগিল। শেষে আমি ওকে সংসারে বাধিবার উদ্দেশ্যে 
কহিলাঁম, “এইবার তোর প্রতিনিধি তুই নিয়ে যাঁ ভাই |, 

ছায়া আসিয়া কাঁদিতে লাগিল, “ওগো+ আমার দেবুকে 
ওর হাতে দিও না। তা হ'লে দেবুকে ও সঙ্স্যেী ক'রে 
ছাড়বে” 

কিন্তু আশ্চধ্য হইলাম পুগুরীকের দৃঢ়তা দেখিয়া । 
তাহার ধেন নেশা চাপিয়া গিয়াছে, পুত্রকে সে লইয়া 
যাইবেই। নিঃসন্তান ছায়ার কোল হইতে অজ্ঞান অবোধ 
শিশুকে ছিনাইয়া লইয়া! সেইদিনই অপরাহে নিষ্টুর সন্ধ্যাসী 
চলিয়া গেল। 

ঁ ৬ স খং 

গল্পের যবনিকা 'এইখানেই টানিয়া দিতে পারিতাম। 
কিন্তু বহুদিন পরে পুণগ্ডরীকের সভিত হঠাৎ একবার দেখ! 
হইয়া গিযাঁছিল। সে কাহিনাটা না বলিয়৷ থাকিতে 
পারিতেছি না! । 

দশ-বার বর পরের কথা। কি-একটা| বিশেষ প্রয়োজনে 
কলিকাতায় গিয়াছিলাম। চৌরঙ্গী-পল্লীর একটি প্রশস্ত 
রাস্তা দিয়া ব্যস্তভাবে চলিযাঁছিলাম। সহসা পিছন হইতে 
কে জামা ধরিয়া টানিয়া আমার নাম ধরিয়া ডাকিল। 
চমকিয়! উঠিয়া ফিরিযা চাঁহিতেই দ্েখি-_পুগুরীক। তাহার 
রূপ-সঙ্জা দেখিয়] প্রথমে একটু বিশ্মিতই হইয়া গেলাম। 
সে সন্নণসীর বেশ আর নাই। পরণে মিলের ধুতি-পাঞ্জাবি। 
চেহারার মধ্যে বিলাসিতা না থাঁকিলেও সৌধখীনতার 
আভাস পরিস্ফুট। 

আমাকে হা করিয়া! তাঁকাইয়া থাকিতে দেখিয়া মৃদু 
হাসিয়া ও বলিল; “কি দেখছিস ? চল্।” 

_ বলিলাম, “কোথায় ? তুই যে এদিকে বড়, এই বেশে ? 

“দোকানে ঢুকছিলামঃ লাগিল ও, “তা, তোর 
দিকে নজর পড়তেই কেমন সন্দেহ হ'ল। পেছনে পেছনে 


পৌধ---১৬৪৭ ] 


খানিকটা গিয়ে তবে বুঝলুম, সু করি নি, তুই ্রতুলই।' 
তাঁর পরেই তোর জাম! ধরে টান দিলুম 1 

“তী এদিকে কিসের দোকানে যাচ্ছিলি ?” 

“আমার দোকান রে, ব্যবসা । চল্‌ দেখবি।” 

আাঁমাকে ধরিয়া লইয়া গেল ও | দেখিলাম ওর ব্যবসা । 
ফানিচারের (আবাব-পত্র) দোকান, নেহাৎ ছোট-খাঁট নছে। 
চার-পাঁচজন কর্মচারি খাঁটিতেছে, ক্রেতার সংখ্যাও বেশ। 

'দোকান দেখা হইলে ও আমাকে ওর বাড়িতে লইয়া 
চলিলঃ বলিল, পচ, আজ আমার ওখানে থাঁকবি। রাত্তিরে 
বায়স্কোপ-টায়গ্কোপ দেখা! ধাবে। কাল যাঁবি।” 

পথে যাইতে যাইতে জিজ্ঞাসা করিলাম, “তোকে এ বেশে 
দেখতে পাৰ, আশাই করতে পারি নি। কি ক'রে এলি 
এ লাইনে ?” 

পুণ্ডরীক বলিয়া চলিলঃ “গ্রাম ছেড়ে চলে আসবার 
সময় তোর. মুখে আমার সংসারের সব ঘটনা শুনে মনে 
একট! ধিকার হ'ল । সন্সযাসীর বেশ যেন কামড়াতে লাগল। 
খুলে ফেললুম সে বেশ। কলকাতায় এসে এক দুরসম্পর্কীয় 
পিসীর বাড়িতে উঠলুম। তারপর মোটে পাঁচ টাকার 
মাল নিয়ে ফিরি সুরু করে আজ এই অবস্থায় এসে 
দাড়িয়ে্ছি।” বলিয়া হাসিতে লাগিল ও । 


শুতে তরীজিবগ .. 


০০ 


“বাঁড়িতে 'আসিলাম। পুণুরীকের স্ত্রীরসহিত আলাপ 
ু গুটি তিন-চার ছেলেমেয়ে দেখিলাম । কিন্ত 
বহক্ষণের' মধ্যেও 'দেবুকে কোথাও দেখিতে না পাইয়া 
জিজাস! করিলাম, “ষ্য রে, দেবু কোথায় রে?” 

এ কথায় পুগুরীকের মুখখানা যেন একটু স্নান হইয়া 
গেল) কহিল, “ও বোধ ঘুয় জামার মতই হতচ্ছাড়া হ'বে রে। 
এই তে! মোটে যোল-সতর বছর বয়েস" ওর---এর ধ্যেই . 
কোথায় মিটিং কোথায় কে দুঃখে পড়া, খালি সেই.লব 
খোজ। পড়াঁগুনোর দিকে একটু, ্ন মে) ভোর 
বেলায় পাড়ারই কার সা পোড়া গেছে; এখনো: 
ফেরে নি।”৮" 

কথাটা শুনিয়া! কিছুক্ষণ টপ করিয়া লাম তারপরে 
আরও কিছুক্ষণ গল্প-গুজব করিয়া বাহির হইয়া পড়িলাম। 
পুণতরীক ও তাহার স্ত্রী অনেক ক্রিয়া সেঙ্গিনট! থাকিয়া 
যাইতে বলিয়াছিল। কিন্তু কার্যের অনুরোধে তাঁছাদের 
সে অন্থরোধ রাখিতে পারি নাই+ যাহা হ্, 'পথে বাহির 
হইয়া আমার মনে কেন যেন শুধু এই কথাটাই উকি 
মারিতে লাগিল ধে, পুরাতন পুণ্তরীকের মৃত্যু হইয়া এই যে 
নৃতন পুণরীকের সৃষ্টি হইয়াছে, তাহাতে ওর উত্থান হইয়াছে, 
না পতন? 


ক্ষুদ্র আনন্দ 
শ্ীশৌরীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য্য 
এ চিত্ত চলেছে ছুটে” মুগ হয়ে যুগযুগ ধরি+; লুন্ধ মনে প্রতিদিন তৃঙ্গসম সেবি? মধু তার, 
শত সুন্দরের পিছে চিরন্তন বাঞ্ছিতে মাগিয়া, সহম্্ সুন্দর মাঝে ভরিল না তবু এই মন।' 
নুনার ফুরাঁয়ে যায় ক্ষণে ক্ষণে যৌবনের কুলে-_ 
আবার বাঙ্ছিত লাগি দধীড়ায় এ চিত থমকিয়া। সিন্ধুপানে শূন্যে চাহি? চন্তে সুর্ষ্ে গ্রহে তারকায় 
রচে সে আনন্দ গীত ভরে যাঁয় রূপমুগ্ধ প্রাণ; 
কামিনীকাঁঞ্চন ভোগ মণিরত্ব এ মধুসংসার, কিন্তু ওরে কোন্‌ ক্ষণে গুপ্ত কোন্‌ ছিদ্র পথ দিয়া 
সঙ্গীত কবিত। ছন্দ প্রেয়সীর সুন্দর বদন, লুকাইয়! ঝরে যায় সাধের এ আনন্দসন্ধীন। 
লুদ্ধ মন ছোটে তবু ছোট ছোট সুন্দরের পিছে, 


ঝরে যাবে? যাক্‌ ঝরে» ক্ষণিকের সত্য নহে মিছে। 


০ 


কালিম্পঙ্ 
প্রীকাননগোপাল বাগচী এম-এসসি 


প্রেসিডেশ্মি কলেজ হ'তে আমরা কয়েকজন ভৃতত্বের ছাত্র 
একবার কালিষ্পঙ সফরে গেছিলাম শিক্ষাত্রমণে | 
আমাদের উদ্দেস্ট ছিল এ অঞ্চলের ভূতবের সঙ্গে পরিচয করা। 
কিন্ত সেই উপলক্ষে এখাঁনের তৃপ্র্কতি ও অধিবাসীদেরও 





হোটেল হিল ভিউ হতে পাহাড়ের দৃশ্ঠ ছবি- দিব্যজ্যোতি 


সংস্পর্শে অল্প বিস্তর আসতে হ্যেছিল। কালিম্প$, মহকুমা 
নাঁজিলিট জেলারই পূর্নাংশ ৷ দাঁজিলিঙের গুরুজ্ব যেমন 
বঙ্গাল। সরকাঁণরর গ্রীপ্মাবাঁস হিসাবে, কাঁলিম্পঙের গুরুত্ব 
তেমনি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্র বলে । ভারতের সঙ্গে 
তিব্বত সিকিম ইত্যাদির যে সব বিনিময় হয়ঃ তাঁ সবই 
যাতায়াত করে কালিম্প$ শহরের মধ্য দিয়ে। এ ছাড়া 
দাঁজিলিডের মত কালিম্পউও অধুনা ব্যবন্ৃত হচ্চে শৈল-বিহাঁর 
হিসাবে। কালিম্পঙে যে কয়দিন আমরা ছিলাঁম তার 
অধিকাংশ সময়টাই কেটেছে নদীনালা অন্ঠসরণ করে এর 
বনে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে । আমরা কখনও উপভোগ 
করেছি গহন বনের স্তব্ধ নীরবতা, আবার কথনও ভ্রগণ 
কয়েছি এদের জনবিরল, স্তব্ধ পল্লীগুলোতে । কালিম্পওের 
নিসর্গে এমন এক মাঁধূর্ আছে এত বেণী সজীবতা রয়েছে 
এর প্রকৃতিতে, যে অত্যধিক পর্যটন সব্বেও একঘেয়ে 
লাগেনি, পরিশ্রান্ত বোধ করিনি কখনও । এর অনাবিল 
'আকাঁশে রয়েছে পুলকের শিহরণ, এর বাতাসে রয়েছে মৃছু- 
উত্তেজনা, এর প্রকৃতিতে রয়েছে বৈচিত্র্যের পরিবেশ। 


স্বাধীন। কিন্তু এই বৎসর ভুটান যুদ্ধের পর, সন্ধির 
সর্ভানুযায়ী, পরাজয়ের কালিম! বুকে নিয়ে সে এসে যোগ 
দেয় ব্রিটাশ সাআজ্যের এলাকায়। এখন দার্জিলিঙ, 
জেলারই পূর্বাংশরূণে কালিম্পউ, আমাদের কাছে পরিচিত | 
কালিম্পঙ, মহকুমার পূর্ব সীমানা সক্ষেত করে জাঁলদৌোকা 
নদী, আর পশ্চিমে দাঁজিলিঙের সঙ্গে এর বিচ্ছেদ খরঝ্োতা 
তিস্তার সাহাঁষ্যে। কালিম্পঙের উত্তরে হ'ল সিকিম রাজ্য 
ও দক্ষিণে সমতলভূমিতে জলপাইগুড়ি জেলা। 
উত্তরে ইঃ বিঃ আরের শেষ বিশ্রাম, শিলিগুড়ি পর্যন্ত 
ট্রেণে এসে কালিম্পও ছুভাবে পৌছুন যাঁয়। ডিঃ এচঃ 
আরের লঘুভার স্রেণে গিয়েলখোলা অবধি অগ্রসর হয়ে বাঁকী 
১২ মাইল পথ বাসে, আর নয়ত বরাবর ৪২ মাঁইল সমস্ত 
পথটাই মোটরে। দাঁজিলিও হতেও ঘুম হ'য়ে কালিম্প 
আপার ব্যবস্থা রয়েছে তিশ্তা পুলের উপর দিয়ে। ব্যবস! 
তাদির জঙ্য তিব্বতের রাজধানী লাঁসার সঙ্গে কালিম্পঙ্ের 
যোগ রয়েছে মিউল ট্র্যাকের সাহাষ্যে। এ ছাড়া ভ্রমণা- 
মোদিরা কালিম্প9 হ'তে সিকিমের রাজধানী গ্যাটং যেতে 
পারেন সুদৃশ্য মোটর পথে । 
কাঁলিম্প$ হিমালয় পবতের থে প্রদেশে অবস্থিত, তাকে 


'ভুগোলের বিভাগ অন্তধায়ী বহিহিমীলয় বলা বেতে পারে। 





এ সর অঞ্চলে”্পাহাড়ের গা ফেটে লি'ড়ির 
মত ক'রে চাষের জন্য ক্ষেত তৈরী হয় 


কালিম্পঙের ভূ-প্রক্কতি বিচিত্র । এর প্রারুতিক দৃশ্ঠের মূলে 


১৮৬৬ গৃঃঅন্দ। এর পূর্ন পর্যন্তও কালিম্পঙ ছিপ রয়েছে এ অঞ্চলের প্রস্তরসয্ছের বিভিন্নতাঁ। নাইস্‌। 
নু ঁ € 


০ 


পৌহ--৯৩৪৭ ] 


৮ 








রগ জিজ্ষপ, ৯৬ 





কোয়ার্টজাইট ইত্যাদি যে সব পাঁখর কঠিন তাঁরা হূর্যের তাপ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল সেঁ হচ্চে এখানের অতি বনু 


বৃষ্টি ও তুষারের প্রভাব সহা করেও এখনও উচু আছে; 
দেওলোঁ দুরবীণভাগ ইত্যাদি চুড়ার আকারে । অন্যদিকে 
বালুপাথর শেল ইত্যাদি কোঁধল প্রকৃতির পাথর ক্ষয়প্রাপ্ধ 
হ'য়ে নীচু ভূমিতে পরিণত হয়েছে। এখানের প্রস্তরাদির 
বয়স হিলেব করতে গেলে জান যাঁয় যে অনুমান পঞ্চাশ কোটী 
হতে আরম্ভ করে ত্রিশ চল্লিশ লক্ষ বছরের পুরাণ পাথর 
এখানে রয়েছে । পাথর গঠিত হওয়ার সময় যে সমস্ত 
প্রাণী তাদের গর্ভে সমাধিস্থ হয়েছিল সেই সব আস্তর 
জীবাশ্ম হতেই এই বয়স নিরূপণে অনেক সাহাষ্য হয়। 
কালিম্পডের অন্তীত ইতিহাসে সব চেয়ে আশ্চর্মা ঘটন৷ 
এই যে, প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ বছর পূর্বেও নাঁকি এ অঞ্চল, শুধু 
তাই কেন, সমন্ত হিমালয় জুড়েই বিরাঁজ করত টেথিস্‌ নামে 
একট! বিরাট সমুদ্র। তারই গে যুগ যুগ ধরে হিমালয়ের 
পাথরের স্তরগুলি সঞ্চিত হয়। পরে ভৃত্রকের ভীষণ এক 
আলোড়নের ফলে এই সব সঞ্চিত পাথর উখ্িত হয়ে 
'আবেলুচিস্থান-_ আসাম পর্যন্ত বিশাল এক পনতমালার সৃষ্টি 
হয়। এই সব আলোঁড়নের নিদর্শনন্বরূপ আজও আমর! 
কালিম্প্ের পাথর কুঞ্চিত ও বিপর্মন্ত অবস্থায় দেখি। 
কালিম্পডে যে কযলার স্তর পাওয়া যাঁয় তাঁও এট 





ছবি--ভবানী 


পাহাড়ীদের একটি কুটার 


আলোড়নের ফলে এতই বিধ্বস্ত হ'য়ে গেছে যে উৎকৃষ্ট কয়লা 
থাক! লবেও সেগুলো উদ্ধার (করা সমন্াঁয় ঈাঁড়িয়েছে। 
সমতলতৃমি হতে সগ্-আঁগত বলে আমাদের ঘা প্রথমেই 


তৃপ্রকৃতি। কালিম্পঙের কঠিন শিলারাজি, প্রন্কৃতির 
তাড়নে কিভাবে বছরের পর বছর ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্চে ও সেই 
সঙ্গে নৈসর্গিক দৃশ্ঠও চলেছে রূপ বদ্লিয়ে, তা কিছুদিন 





কালিম্পঙ্য়ের বাঁজারে তির্বতীর! কার্পেট বিক্লু় করছে 


'অন্ুধাঁবন করলেই উপলদ্ধি করা যায়। দিনে হুর্ষের প্রথর 
রশ্মিতে এ অঞ্চলের পাথর আগুন হয়ে তেতে যায় ১ তখন 
সেগুলো আয়তনেও বুদ্ধি পায়। তার পরই আসে রাঁতির 
গীতলতা, বার ফলে ঘটে" পাথরগুলোর অপরিহার্য সম্থুচন। 
অনবরত সগ্কচন ও প্রসারণের ফলে পাথব্রের গায়ে ধরে 
অসংখ্য ফাটল। বৃষ্টির জল ঢুকে ঢুকে দেয় সেই সব ফাটলের- 
পরিমাণ বাড়িয়ে । এর উপর রয়েছে তুযারের দৌরাস্ময। 
সমতলভূমির থেকে জলীয় বাস্প বিমিশ্র বাতাস উপরের 
দিকে উঠলেই আয়তনে বুদ্ধি পায় । তাঁর মধ্যেকার জলকণা- 
গুলো তখন আর মিশে থাকতে পারেনা; বাতাসের ভিতর । 
সেগুলে! গিয়ে তখন আশ্রয় নেয় পাথরের অসংখ্য ছিদ্রের 
মধ্যে, ফাঁটলগুলোতেও । রাত্রে ঠাগ্ডার প্রকোপ বৃদ্ধি 
পেলেই এই সব জলকণা পরিণত হয় বরফে, আয়তনে যাক 
তারা বেড়ে। এর শক্তি তখন এত বেণী হয় যে পাথরের 
বিভিন্ন অংশ ফেটে বিচ্ছিন্ন হ'য়ে যায়, বড় বড় চাক্‌লা খুলে 
মাসে পাঁথরের গা থেকে । নাঁনান্‌ উপদ্রবের তাড়নে যখন 
পাথরগুলো৷ এইভাবে বিপর্যস্ত হ'য়ে থাকে, তখন আসে বৃষ্টি 
তার উদ্দাম বেগ নিয়ে, ধুয়ে চলে যায় সমস্ত ক্খলিত পাথরের 
টুকরো । কত পাঁথরই যে বছরের পর বছর, মাসের পর 
মাঁস এইভাবে অপন্থত হচ্চে তার ইয়ন্তা নাই। তিস্তার জল 
অন্য সময় দেখায় সবুজ, কিন্তু 'বর্যার সময় পাথরের গুঁড়োয় 


তীর বর্ন উঠে কুলির । ই টাই পাধর ধবলে -গিে 


০৮474 এইজন্ত যে 





পাহাড়ী মেয়েরা ঝুড়িতে করে হাটে পশমের 
কাপড় বিক্রন্ন কর্তে এনেছে 


কযমীস বারিপাত হয়, অনবরত লোক নিযুক্ত থাকে ধ্বসে- 
'মীওয়া পাথরের আবর্জন৷ সরিয়ে পথ পরিষ্কার রাখতে । 
কিন্ত আশ্চর্যের বিষয়, পাথরের এই অপরিমেয় ক্ষতি 
সত্বেও পাহাড়ের চুড়াগুলো এখনও রয়েছে মাথা জাগিয়ে 
বরের টোঁপরের মত। আদম্য শক্তি নিয়ে তারা প্রতিহত 
করছে ক্ষয় সাধনে নিযুক্ত অরিকুলফে । এর মূলে রয়েছে 
অবশ্ঠ, পর্বতের অল্প বয়স ও অবিরত উদ্দীপনী শক্তি | যখনই 
অত্যধিক পাথর অপসারণের জন্য পাহাঁড়ের ভার যায় লব্ঘু 
হ'য়ে, নীচু হ'য়ে আসতে ধাকে তাদের মাথা, ভূতবকের আসন্তর 
শক্তির প্রভাবে তাঁরা আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। 
কিছুদিন আগে কোয়েটা বা বিহারে যে প্রবল ভৃকম্প 


হয়েছিল তার কারণই হ'ল হিমালয়ের উদ্দীপনী শক্তির: 


প্রেরুণা। এইজন্যই আজ বয়সে নবীন হলেও হিমালয় 
আমাদের শ্রদ্ধা আকর্ষণ করে তার বিশাল উচ্চতায় । দক্ষিণ 
ভারতের পর্বতগুলো বা আরাবল্লী পর্ণতও একদিন উচ্চতার 
গৌরব রাখত, কিন্তু বয়সের প্রকোপে আজ তাঁরা সে শক্তি 
হারিয়েছে । এ কথাঁও সত্যি যে হিমালয়ও একদিন প্রাপ্ত 
হ'বে এদের অবস্থ? তবে সে বহু পরে। 

পার্বত্য অঞ্চল কি প্রভাব বিস্তার করতে পারে আমাদের 
সমাজ, সংসার বা দৈনন্দিন জীবনে, তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ 
পাঁওয়া. যাঁয় কালিম্পঙডে | ঘন জঙ্গল, অত্যধিক ঢাঁল 


ফলে বিভিন্ন স্থানের ভিতর ভাবের আদান প্রদান চলে 


অভি অল্পই। ' এমন কি প্রকই "গ্রামের পল অধিবাসীও 
পরম্পয়ের সহায়তা করবার ' হুযোগ- পাঁয় না। কাঁধেই 
পাঁহাড়ীনেন্ জীবন হয়ে উঠে ব্যক্তিসরব্ব, আত্মনির্ভরশীল । 
তাদের চরিত্রে গড়ে উঠে রক্ষণশীলভা, মন থেকে যায় 
অনগ্রসারী। কুসংস্কার তো এদের মজ্জাগত। প্রতি ঘরে, 
মাঠে ঘাটে সর্বত্রই দেখা যায় তত তাড়াবার ব্যবস্থা । লক 
লম্বা বাঁশের ডগাঁয় তার! ঝুলিয়ে দেয় পাতলা নিশান, আর 
তাতে লেখা থাকে কত কিমন্ত্র। পথে ঘাঁটে যত তিব্বর্তী 
বুড়োবুড়ি দেখেছি তাদের অধিকাংশই মাল! জপছিল, 
লাটাইয়ের মত একটা যন্ত্র প্রেয়ার হুইল্‌-_ঘুরিয়ে। 
তাদের একটা মন্ত্র হ'ল “ওম্‌ ম'ণি পল্লে হুম”, উহা জপ 
করলে অমর ভবনে স্থান পাওয়া যায়। দৈনন্দিন অভিযাঁনে 
বেরিয়ে একদিন এক কুটারের সামনে দেখি, তিববতী ওঝা 
ভূত তাড়াচ্ছে গৃহকন্ত্রীর ঘাড় হ'তে । লামা বসে" রয়েছেন 
একটি কেদারাঁর উপর, তার একহাতে চামর ও অন্াহাতে 
একথাল চাল। বিড় বিড় করে কি সবমন্ত্র পড়ছেন ও 
চাল ছুড়ে দিচ্ছেন সেই ভূতে-পাওয়া নারীর গায়ে। 
ভূতটা শান্তপ্রকৃতিরই ছিল বলতে হবেঃ কেননা অল্প 
আঁয়াসেই নেমে গেল। 

এখানে প্রধানতঃ নেপালী, লেপচা ও ভুটিয়! এই কয় 





আমাদের নেপালী অনুচর 


জাতি দেখা ষায়। এদের মধ্যে লেপচাঁরাই সবচেয়ে আদিম 
(5109 ) ও বদ্ধুরতার জন্থ গমনাগমন তে! ছুঃসাধ্য। ও অসংস্কত। এরা দেখতে মধারণত; কাল, বেঁটে ও ও 





১০8৩7৪থ1 0190161 058016675--00511551178 0196, 


পৌর--১৩৪৭ ] 


কূপ।. গড়ে পাচ ফুটের বেশী লম্বা! দেখিনি । এদের 
অধিকাঁংশেরই হলদে দাত ও অপরিচ্ছন্ন পোষাক। লেপচার৷ 
পূর্বে ্বাযাবর বৃত্তিরই অন্ুদরণ করত, লাঙ্গলের ব্যবহার 
এদের জানা ছিল না। জঙ্গল পুড়িয়ে যে ক্ষার হত, তারই 
উপর বীজ ছড়িয়ে শম্ত উৎপাদন করত। এখন কিন্ত 
এরাও পাহাড়ের গায়ে চাষ দিয়ে শন্য উৎপন্ন করে। 
লেপচারা অত্যন্ত প্ররুতি-প্রিয়, বনে জঙ্গলে ঘুরে অনেক 
সময় কাটিয়ে দেয়। বিভিন্ন ফুল, গাঁছ বা প্রজাপতির জন্য 
পৃথক্‌ পৃথক নাম যাঁরা দেয় তারা প্রকৃতির অনুরাগী ছাড়া 
আর কি বলব? এরা খুব সরল ও ধীর প্রকৃতির । 
নেপালীরা লেপচাদের মত প্রাচীন না হলেও সংখ্যা- 
গরিষ্ঠ ও অপেক্ষাকৃত উন্নত। এরাই লেপচাদের ঝুম 
প্রথার পরিবর্তে পাঞাড়ের গ। কেটে সিঁড়ির মত ক্ষেত 
তৈয়ারী করে চাষ করার ব্যবস্থার প্রবর্তন করে। আকার, 
দেহের গঠন গাঁয়ের রং সমস্ত বিষয়েই নেপালীরা লেপচাঁদের 
অগ্রবর্তী । নেপালী-৮রিচ্রের বিশেষত হ'ল, প্রতিহিংসা- 
পরায়ণতা ও শঙ্খলাভরন্ততা। এরা বলে “মৃত্যুকে 
ঠেকানোর ঘেমন নেই কোন ওষুধ) আদেশের ওপরও 
তেমনি চলে না কেন ওজর ।”৮১ নেপালীরা সাধারণত; 
তিনভ।ছে বিভক্ত - গুর্ধা9 অনেকেই সৈন্যের কাধ করে 





» নেপালী মেয়ে, পিঠে ভার বইবার ঝোলা 


নেওয়ার_রাঁজমিক্ত্রি ও ছুতোরের কাযে দক্ষ ও লিম্ব- 
সাধারণতঃ চাঁষবাঁস করেই খায়। 


এখানে যে সব ভুটিয়া আছে তারা সাধারণতঃ দুই শ্রেণীর । 


শি পপিপশী ৩ শী সি সতত 


১8608281 10150101 উদ িনিি 0181. 


॥ 
রর 
হা পে 


সস ০০০8৯ 


৬ । 
॥ 
॥ 
ন্‌ 
॥ 
॥ 


একশ্রেনী: স্থারীভাবে বসবাস করে, অপরশেণী ভিত হাতে 
কয়েক মার্স কার্যোপলক্ষে এখানে কাটিয়ে যায়। "শেষোক্ত 
শ্রেণী “তিব্বতী-ভুটিয়া* বলেই চলিত । ভুটিয়ায়৷ অন্ঠায 





দাঞ্জিলিঙ্বাসীতিববতী রুমণী 


দুই জাঁতির চেয়ে সাধারণতঃ দীর্ঘাকৃতি । দেহ সুগঠিত ও 
সহনশীল । এই ঠাগাঁর ভিতর তিব্বত হ'তে কাঁলিম্পঙ্‌ 
ইটা পথে যাঁরা ব্যবসা করতে আসে তরী কি কর্মঠ না 
হ'য়ে পারে! লেপচা ও ভুটিয়ারা অধিকাঁশই বুদ্ধের 
উপাসক, নেপালীরা হিন্দু। উভয়েই অপর ধর্মের দ্বারা 
প্রভাবিত । শিব ও বুদ্ধের উপাসনা পাশাপাশিই চলতে 
থাকে । তবে ধর্ম তাঁদের যায়ই হৌক্‌ না কেন, এর! সবাই 
অত্যন্ত কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও মাংসাশী। শ্রীষ্ট ধর্মও আজকাল 
ধীরে ধীরে এসব অঞ্চলে প্রসার লাভ করছে এবং এরই 
ভিতর বেশ খানিকটা প্রভাঁধ বিস্তার করেছে । এরা সবাই' 
অত্যন্ত দরিদ্র, রোগ শোঁকের সঙ্গে বুদ্ধ করে কোন রকমে 
টিকে থাকে । অশিক্ষার কথা! নাইই বা বললাম । 

এই সব পাহাড়ীদের বসবাসের রীতিতেও পার্বত্য 
অঞ্চলের ছাঁপ সথপরিস্ফুট। যাতায়াতের অন্গৃবিধা ও সমতল 
ভূমির অপ্রাচুর্য সঙ্ববন্ধ জীবন গড়ে তুলতে দেয় না। 
জীবিকা-গত শ্রেণী বিভাঁগ, যা সমতল প্রদেশের সমাজে 
বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে, এ অঞ্চলে তা সম্ভব নয়। 
প্রত্যেক কুটিরকেই ধোপা-নাপিত চাষী সমস্তেরই কাঁষ 
করে নিতে হয়, লোকাভাব মলটলে একই ব্যক্তিকে করতে 


+ ইহ 


হুষয একাধিক কাষ। এক একটা গ্রাম গড়ে উঠে চাব 
পাঁচ ঘর অধ্িবাসীকে অব্লস্থন করে কুটিরগুলি আবাঁব 
। অনেক ক্ষেত্রেই থাকে দূবে দুরে, নিজ নিজ চাষেব জমিব 
মধ্যে অবস্থিত । মানুষ যখন সবে গ্রাম ও সমাজ গডে 
তুলছে সেই প্রাচীনকাঁলেব জীবনযাপনের কতকটা ধাবণা 
পাঁই আমরা এদেব অনগ্রসাবী আত্মস্থ জীবনেব ধাঁবা হ'তে। 

জীবিকানির্বাছেব উপাযস্বরপ এরা কবে কৃষিকার্য, 
শাঁকসক্ধি উৎপাদন ও ফলেব চাঁষ। ৪০০০ ফিট উচ্চতা 
পর্যন্ত নাকি ধানেব চাঁষ কবা চলে। চা ও লেবুর চাঁষও 
এ অঞ্চলে একটি লাভজনক ব্যবসা । এছাড়া কাঠেব 
ব্যবসা, পশমেব পোষাক ও কার্পেট প্রস্তৃত এব* স্থানীষ 
পাথর ভতে তামা গালানতেও কিছু লোক নিযুক্ত থাক। 
এখানে কষলাব প্রযোজন হ'লে তা আমদানী কবতে হয 
ঝবিষা, বাণীগঞ্জ হ'তে-.কেননা এখানেব কষলাঁব স্তবপগুণি 
গেছে বিধবস্ত হয | 

এ অঞ্চলেব দুর্গমতা নিবাঁবণকল্পে যে সন পথ নিমিত 
হযেছে সেগুলিব ড"লথ প্রথদ্ছে কবেছি । মাঁঞগাষৰ সাঁধা 








দাজ্জিলিঙবাসী নেপ।লী রমলি 


নই বে বন্ধুব ভূমিব উপব পিষে ইচ্ছামত পথ প্রস্বত কববে। 
তাই, এসব অঞ্চলে পথ প্রস্তুত হয নদীনালার পাঁড 


৯৯-$ 

২, ২ 
চি 

রঃ 


102৫ 
2৮4), হি 
৮3১৯ টা ক 


4৪) 


হাত ঞ 


| ২৮শ বর্ষ--২য় খও্ড--১ম গংখ্যা 
৩০স্স্থস্ষপ্স্থ্টীক্ষপ্পটালসিব্ররসস্্িপাপস্্প্গ্থস 


অরন্থনে। কালিম্পও, হ'তে শিলিগুড়ি যে রাস্তাটা রয়েছে 
তার সমন্তটাই তিস্তাব গর্জ অবলম্থনে গড়া । এছাড় 





ভিন্নতা লেপচা পরিব।র 


জিনিবপত্রেব দ্রুত বধাঁচেব গন্য বজ্জু পাথব শবণ নাত 
হথ। এব প্রধান শ্রবাধ এই যে নদীনালাব উপব দ্রামও 
অবাধে লাইন নিমে থাঁওয়া যায ইচ্ছামত, যদ্দি ঠিকমত ঢাল 
(১1০১০) প|ওযা খাঁ । কালিম্প হতে ঠিষ্পেখোল। 
পযন্ত এইরূপ একটা বজ্ছু পথ বযেছে। বজ্জ্বর উপব স্থাঁনে 
স্ঠানে ভাবসমেত খালতী বসিষে দেওযা হয ও বজ্জুব 
অ।বত নেব সঙ্গে সেগুলো গন্তব্য স্থানে নীত হয। অত্যন্ 
সম্কীর্ণ? পায়ে চলার পথে ভাব ব ত হলে একমাত্র অব শন 


হ'ল টা, ও খচ্চব। 
কালিম্পঙেব সৌন্দর্য-বৈচিত্র্যের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে নাতি- 
শাতোষ্ আবহাওযা। গ্রীষ্মের সজীবতাঘাঁতী অসহা গবমেব 


তাড়ন। এড়াতে বহু বাঙ্গালী এর বুকে আশ্রঘ নেযে। আবাব 
শীতের সমযও উত্তব থেকে পাহাডীবা এসে শরণণপন্ন হয 
কালিম্পঙেব স্লেহণীল ক্রোডে, অত্যধিক শীতেব হাত এডাঁতে। 
কালিম্পডেব সবচেষে অস্বিধাঁজনক সময হল বর্ষা, তাব 
দাঞ্জিপিওের বর্ধাব মত অত পীভাদাযক নয় । 





লী ০০৮ ০৬০5 ১০৪৪] 
সে ০2 হর - % রি 7 
রি নিবে রা $1% 


ঙ+ কি 
২৭০0০ 1557371 ৫ 
পে, £ ০ ০৮ ৬২7% 
লে মাত 605৮ ১১] এরি 


আধুনিক ভারতীয় চিত্রাঙ্কন পদ্ধতি 
শ্রীমাণিকলাল বন্দ্যোপাধ্যায় 


ভারতীয় চিত্রশিল্প সন্বদ্ধে পধাশ বদর পূর্বেও আমাদের দেশের লোকের 
ধারণ! ছিল অন্ভুত। প্রাচীন ও মধাযুগের ভারতীয় চিত্রশিল্ল যে-কোন 
দেশের উৎকৃষ্ট চিত্রশিল্পের মমপর্যযায়ে স্থান লাভ করিতে পারে, এরূপ 
কেহ ভাবিতে পারিত না। অবগ্ত তাহ|র অনেক ক|রণও ছিল। 
পঞ্চাশ বতনর পুর্ধে দেশে উৎকৃষ্ট চিত্রাঙ্কনের প্রচলনও ছিল ন। 
দেশে তখন নিকৃষ্টধরণের হউরোপী॥ পদ্ধতিতে মন্কিত কিছু ছবির 
আমদনি ছিল। বাঙ্গালাদেশে মহাআ্স। চৈতন্যের পরবর্তী মময়ে হাহার 
ধর্মের দ্বারা একদল পটু অনুপ্রাণিত হইয়াছিল ; তাহাদের অস্কিত 
গৌপাঙ্গণীল। প্রতির যে ছবি পাওয়। যায়, তাহা দেপিলে হাদয়ে ভক্তির 
মঞ্চর হয়। উহাদের রেখা এণং বাবিস্তাসেও যথেঃ শিশা এবং 
সংযমের প্রচ পাওথ| মায়। কিন্তু তাপের পরবগ্া যে পটচিত্রের 
নিদর্শন আমপ| কার্গাঘাঢের পটুয়াদের চিএ পাই, তাহ! তত উন্নত 
নহে; উহাদের মধ্যে তামনিক চিত্রও অনেক দেখা যায়; কিন্তু অঙ্কন 
দক্ষত। ও তত্পরঠ| উহাদেরও মধ্যেও ছিল। [কন্ত হহাও ক্রমে রমে 
ুপ্ু হইয় আ|দিঠেছিল। 

বাঙ্গালাদেশের মত উড়িযায়ও একদল পটুয়া গট অঙ্কিত করিত। 
উড়িগ্ত।য় অধিবাসীদের বিদেশী শিক্ষ।র অভাবের জন্য অনেকদিন পথান্ত 
এ পটুয়ার। প্রাচীন রীতির অনুসরণ করিয়া অঙ্কন করিয়া আসিতেছিল। 
কিন্তু তাঠারাও অনাাভাবে ক্রমে ত্রমে স্বন্থ ব্যবসায় পারহ্যাগ করিয়! 
জীবিকার্জনের নিমিও ভিন্ন ব্যবনয় মবলম্বন কারতে বাধ্য হইয়।ছিল। 

মোঘলযুশে যে সমপ্ত শিপ্পা রাজা কিংবা নবাববাদশ।হদের 
পৃষ্ঠপোষকতায় ডতৎ্সাহিত ইইয়া চিএ্রাঙ্থন করিত, মোথলরাজত্বের 
পতনের মঙ্গে সঙ্গে তাহাদের বংশধরের। রাজপুতানার পাব্ত্য প্রদেশে 
গরোয়।ণ, স্বানে আশ্রয় লইয়াছিন। 
তাহাদের মধ্যে কতক ইউরে|গীয় নিকৃষ্ট পদ্ধত অন্ুনরণ করিয়া 
চিত্রাঙ্কন নুরু করিয়াছিল। আর. কতকাংণ পিভৃপিতামহের অনুম্থত 
প্রাচীন রীতিনীতি অবলম্বনে চিত্রাঙ্কন করিতে লাগিল; কিন্তু দেশীয় 
লে।কের এবং নূতন মনিব, রাজ। ও জমিদ|রংদর পৃষ্ঠপে।মকতার অভাবে 
ক্লুমশ তাহারাও এই ব্যবদপায় পরিত্য।গ করিয়া অন্সংস্থনের নিমিত্ত 
অন্য ব্যবসায় অবলম্বন করিশে বাধ্য হইল । যগন আচ।ধ্য অবনীন্দ্রনাথ 
নৃতন ভারতীয় চিত্রাঙ্কন পদ্ধতি প্রবর্তূনের চেষ্টা! করিতেছিলেন, তখন 
দেশীয় চিন্রশিল্প গ্রায় লুপ্ত হইব।র উপক্রম হইয়াছিল । দেশের লোক 
শিক্ষাপ্রাপ্ত হইত বিদেশী ভাষ। এবং ভাবধারার আশ্রয়ে। তাহার 
ফলেই আমাদের দেশের মানসলগ্রী বিদেশী মনস-গ্রতিমার হুবহু 
প্রতিরপে অঙ্কিত না হইলে তাহারা ইহার মধ্যে সৌন্দধ্য অনুভব 
করিতে পারিতেন না। বিদেশী ভ|যায় বিদেশী শিল্পের গৌরবের কথা 


কাঙরা, কাঞ্খার প্রস্তুতি 


শুনিতে শুনিতে মনও দেশী শিল্পের প্রতি বিরাপ হইতেছিল। তাই 
যখন নূতন ভারতীয় পদ্ধতিতে চিত্রাঙ্থনের হৃত্রপাত হইল, তখন 
একশ্রেণীর লোকের কাছ্ছে' ইহ! বিরুদ্ধ সমালোচনার কারণ হইয়া 
উঠিল । আমাদের দেশে যদ্দে অজন্তা, বাঘ প্রভৃতির প্রাচীন চিত্র, 
বরভৃধরের মুষ্ঠি প্রস্ততি দেশীয় শিল্পদম্পদ সন্ধে শিক্ষাদানের কোনরূপ 
ব্যবগ্থ! থাকিত, তাহা হইলে বিদেশী চোখ লইয়া দেশীয় শিল্পের বিচার 
কাপতে কেহ অগ্রসর হইত ন|। 

শ(ধুনিক ভারতীয় চিত্রাঙ্কন পদ্ধতি প্রবর্তন করিয়াছেন শিল্প।চাধ্য 
অবনীন্রনাথ ঠাকুর। আচার্য অবনীন্দ্রনাথের পুর্বে রবি বর্মা, বিশ্বনাথ 
ধুরদ্ধর প্রত একশ্রেণীর চিত্রকর দেণীয় বিষয়বস্তু অবলম্বনে ইউরোগীয় 
পদ্ধতিতে চিত্রাঙ্কনের প্রচলন করিয়াছিলেন এবং উহাদের অস্কিত ছবি 
সেই সময় দেশে খুব সমাদর লাশ করিয়ছিল। ভাবগভীরতার অভাব 
উহ।দের মধ্যে বেশী পরিমাণে লঙ্গিত হয়। অঙ্কনপন্ধতি এবং বর্ণ- 
বিগমের অওদবন্ধের নৃতন মহিমা! কিছু পরিলক্ষিত হয় না। তাহা” 
ছিল ইডরে।পায় অনুকরণ মাত্র। এহ জন্য সেই পদ্ধতি বেশী দিন স্থায়ী 
হয় নাই । 

অবনীঞ্চনাথের চিত্রাঙ্কন হুর হইয়াছিল ইউরোপীয় রীতি-নীতি 
অবলম্বনে । বিলাতা অঙ্কনর্গাতিতে তিনি দবিশেষ দক্ষতাও লাভ 
করিয়ছিলেন। কিন্তু ভাহাগ মান্ন-চক্ষের সন্ুখে যে সমণ্ড দৃশ্ঠ ভাসিয়া 
বেড়াইত, ইউরোপীয় পদ্ধাত আশ্রয় করিয়া তাহ! প্রকাশ কর! অসম্ত্রব 
হইত। বিগাতী পদ্ধাতর ধরাবাধা গণ্তীও শরীরগঠনতত্বের মাপকাঠি 
তাহার মনের ৬বপ্রকাশের শখকে সীমার করিয়। তুলিত। ফলে 
তিনি এ পদ্ধতি ছাড়ি॥া দিলেন এবং প্রাচীন ও মধ্যযুগের ভারতীয় 
চিত্রাঙ্কন গাতির গাএয়ে ভ্াহার প্রকাশভঙ্গীর পথ খু'জিয়া লইলেন। 
ইহা হার ভাবপ্রকাশের সহায়ক হইল এবং এই প্রাচীন নীতির 
আশ্রয়ে এক নুঠন চিত্রাঙ্কনপদ্ধতির স্ষ্টি করিলেন। সেই সময় 
ই, বি, হ্াাভেল মাহেব কলিকাত| সরকারী কল।-বিগ্ভালয়ের অধ্ক্ষ* 
ভিলেন। অবনীর্্নাথের অদাধারণ প্রতিভার পরিচয় পাইয়া তিনি 
তাহাকে উত্ত বিগ্াণয়ের সহক্ী অধ্যক্ষের পদে নিযুক্ত করেন। 
তখন নৃহন উদ্ামের সহিত নৃতন পদ্ধতিতে শিল্পচ্চ চলিতে থাকে । 

কিন্তু অবনীন্রনাথের এই নব প্রচেট! দেশে নানারপ বিরুদ্ধ. 
সমালোচনার স্থষ্টি করিল। দেশের একশ্রেণীর লোকের বন্ধমুল ধারণ! 
ছিল যে, ইউরোপীয় পদ্ধতি ছাড়া অন্ত কোন গদ্ধতিতে চিত্তাঙ্কনের 
গ্রচলন হইলে দেশীয় চিত্রকলার অধঃপতন অবশ্ভাবী ) ভাহার। দেশে 
মহ! হৈচৈ হুর করিয়। দিলেন। কিন্তু কিছুনিন পরে যখন পাশ্চাত্য 
দেশেরই বড় বড় চিত্রদমালোচকগণ অবনীন্ত্রনাথের প্রবর্তিত আধুনিক 


৫ 


€ 


২৬ 


ভারতীয় চিত্রাঙ্কনপদ্ধতির ভুরসী প্রশংসাব।দ করিতে লাগিলেন, তখন 
ঠাহার। বিশ্বয়ে স্বন্ধ হইয়। রহিলেন। 

স্থাডেল সাহেব, ওকাকুরা, ভগ্রী নিবেদিতা প্রমুখ কয়েকজন বিশিষ্ট 
লোক তখন প্রাচীন ভারতীয় শিল্পসংস্কৃতি সন্থন্ধে পুস্তক এব' প্রবন্ধাদি 
রচনা করিয়া দেশীয় শিল্পসংস্কৃতি সন্ধে বিদেশীর দৃষ্টি আকন্ণ 
করিতেছিলেন। শ্ঠার জন উডরফ, লর্ড কিচনার প্রমুখ তৎকালীন 
বিশিষ্ট ব্যিগরপের নিকট নূতন পদ্ুত্তি যথেষ্ট সমাদর অর্জন 
করিতেছিল । 

আমাদের দেশীয় মাসিক সংবাদপত্রের মধ্যে কয়েকখানি ছিল 
অবনীন্্রনাথের পৃষ্ঠপোষক । অবনীন্দ্রনাথের নুতন পদ্ধাতিতে অস্কিত ছবি 
প্রকাশিত করিবার জন্য এই সমস্ত সংবাদপত্রের তখন অনেক বিরুদ্ধ এবং 
সময় সময় 'অত্যন্ত কুী। মমালোচনাও সহা করিতে হইয়াছে; নানারকম 
হান্তজনক লেখা! এবং ব্যক্জচিত্র তখন অবনীন্রনাথের নব প্রবর্তিত 
পদ্ধতিকে হীন্ত।স্পন এবং হেয় প্রতিপন্ন করিবার জন্য বিপুল উদ্যোগের 
সহিত কাগঞ্জে কাগজে বাহির হইত। 

কিন্তু এই ম।লোচনার ফলে উচ্চশিক্ষিত সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাচীন 
এবং আধুনিক ভারতী শিল্প সম্বন্ধে জান আহরণের আকাঙ্জর বৃদ্ধিপ্রাপ্ত 


হইল মধ্যযুগের বিভিন্ন শিল্প, মোঘলযুগের শিল্প, অতস্তা, ইলোর।, 


বাধ প্রন্তুতি প্রাচীন গুহ! এবং মন্দিরাদিতে প্রাপ্ত চিত্র এবং ভাঙ্ষমা 
নৃতন আগ্রহের সহিত আলোচিত হইতে লাগিল এবং শিল্পে স্বজাতীয়তার 
ভাবও লোকের মনে উদিত হইল । বহু বিদেশীয় এবং কতিপয় দেশায় 
বিশিষ্ট লোকের সহায়তায় নবপ্রবর্তিত পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা লাভ করিল। 
এই নময় ১৯*৭ মালে কলিকাতায় “প্রঃচ্কল! সমিতি” প্রতিষ্ঠিত হইল । 
এই সমিতি গঠিত হইবার পর অবনীন্রনাথের গুণমুগ্ধ বছ ছাত্রছাত্রী 
তাহার কাছে শিক্ষালাভ করিতে লাগিল এবং নৃতন নৃতন রূপে ও 
রসে ভারতীয় চিত্রকঙ্লাকে সমৃদ্ধ করিয়া অপরূপ বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করিয়। 
তুলিল। 

এই সময় অবনীন্দ্রনাথের ভ্রাত! গগনেক্্নাথ ঠাকুর আধুনিকতম 
ইউরোপীয় পদ্ধতির সহিত দেশীয় পদ্ধতির সংমিশ্রণে এক নৃতন পদ্ধতির 
থর করিলেন। ইহাদের কলাকুশলতার কথা দেশে দেশে ছড়াইয়! 


“ পড়িল। জাপান হইতে ওকাকুরা, টেইকান, হিসিডা, কাত হৃতা, 


আরাই প্রমুখ বিপ্যাত শিল্পীরা অবনীন্দ্রনাথের চিত্রাঙ্কনপঞ্জতির 
সহিত পরিচিত হইবার জন্য এদেশে৯আদিলেন এবং এদেশীয় ছাত্রদের 
জাপানী চিত্র]ঙ্কনপদ্ধতিতে অন্কন শিক্ষায় সহায়ত! করিলেন। 

ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানে নুতন পদ্ধতিতে অঙ্কিত ছবির প্রদর্শনী 
হইতে ল[গিল। জাভা, জাপান, ইউরোপ, আমেরিকা প্রন্তুতি স্থানে 





[ ২৮শ বর্--২য় থণ্-১ম সংখ্যা 


এই সকল ছবি প্রেরিত হইল এবং যথেষ্ট সমাদর অঞ্জন করিল। বিভিন্ন 
বি্া/লয়ে এই পদ্ধতিতে অস্কন শিক্ষা! দিবার প্রচলন হইল । অবনীন্ত্রনাথের 
প্রবর্থিত পদ্ধশিতে চিত্রাঙ্কন দেশে স্থায়ীডাংবই প্রচলিত হইল। 

এক্ষণে এই অস্কনপদ্ধতি এবং ইহার ভাবধার| সপ্ধ কিছু 
আলোচন! কর! যাউক। ইহ।র অঙ্কন পদ্ধতিতে বিশেষ কোন গণ্তীবন্ধ 
নিয়ম নাই। এই শিল্পের সঙ্গে চীনা ও জাপানের শিল্পের বন্স্থানে 
একত| লক্ষিত হয়। দেশের প্রকৃতিগত বিশেষত্ব বজায় রাপিয়৷ শিল্পী 
তাহার মনের ভাবধার| প্রকাশ করেন। সুতরাং এদেশীয় চিত্রের 
রস উপলবি করিতে গিয়া বাহিরের দিকট| দেখিলে চলিবে ন|। শিপপীর 
অন্তরের প্রকাশই তার ছবি । হৃতরাং ছবিকে বুঝিতে হইলে কোথা 
হইতে ইহা উৎনারিত হইয়াছে, তাহার সন্ধান লইতে হইবে। ইউরোপীয় 
শিল্পীর! তাহাদের “মডেল” সন্ুখে রাখিয়া! হব তাহার নকল করিয়াই 
ক্ষান্ত হন। কিন্তু এদেশীয় শিল্পীর! প্রকৃতির অন্তর হইতে প্রকাশের 
উপযোগী রদ এবং সৌন্দর্য্য উপলব্ধি করিয়! চিত্রে প্রকাশ করেন। তাই 
ভারতীয় চিত্রের রস গ্রহ করিতে গিয়। শিল্পীর অন্তরের অনুসন্ধান 
করিতে হইবে। ইহাদের অঙ্কনকার্যয ও বণবিস্ভানে রেখা! এবং জল- 
রঙের “4৭5)*-এর বেশী প্রচলন দেখা যায়। শিল্পীর মানসচক্গের 
স্মুখে যে ভাবের উদয় হয়, তাহাই তাহারা রঙ. এবং রেখায় ছবিতে 
ফুটাইয়৷ ঠোলেন। শুধু ছবিটিকে রাগ দিতে রঙ, এবং বর্ণবিস্তামের 
দক্ষতা ((01077140৩ ) প্রকাশ করা যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকুই ঠাহার! 
ব্যবহার করেন । অন্কনপদ্ধতির বাহাছুরী দেখাইবার জন্য ঠাঙারা বান্ত 
নন-_-ভাবপ্রকাশই উহাদের মুখ্য উদ্দেশ্য । তাই বলিয়া ইহার! যে 
প্রাচীন কালটাকে আকড়াইয়! ধরিয়। আছেন, এরাপ ভাবিলে ভুল কর! 
হইবে। এদেশের বিশেষ রাতি অবগন্থন করিয়। উহারা নুতন নুতন 
সৃষ্টির পথে অবসর হইয়। চলিয়াছেন। বিদেশী শিক্ষার অভিজ্ঞতাকেও 
ইহারা বর্জন করেন নাই । আবার ইউরোপীয় পদ্ধতিতে যেমন শারীর- 
তত্বের হৃগ্ম[তিশৃগ্্র নিয়ম, পারিপ্রেক্ষিক প্রহৃতি নানারকম ঝ।ধন আছে, 
উহার! দেই সমস্ত বাধন হইতে নিজ্জেদিগকে মুক্ত রাখিয়াছেন। ফলে 
ইছাদের প্রকাশভঙ্গীর ক্ষেত্র অনেক প্রদার লাভ করিয়াছে। টু 

এই পদ্ধতিকে আশ্রয় করিয়! খাহার! চিত্রাঙ্কন করিতেছেন এবং 
নৃতন নৃতন ভাবধারা, অন্বন ও বর্ণবিষ্তাপের অভিনবত্বের স্বার। ইহাকে 
আরও জীব করিয়া! তুলিয়াছেন, তাহাদের মধ্যে »ন্থরেন্্নাথ গাঙ্গুলী, 
নন্দলাল বনু, ক্ষিতীন্দ্রনাথ মজুমদার, শৈলেন্ত্রনাথ দে, অপিতকুমার 
হালদার, মুকুল দে, রমেক্ত চক্রবর্তী প্রত্ৃতির নাম সবিশেষ উল্লেখযোগ্য । 
ইহাদের প্রতিভ! নব নব কৃষ্টির পথে অগ্রসর হইয়াছে। ইছাদের লৃষি 
ভারতীয় শিল্পকলার ইতিহাসে এক নূতন যুগ আনয়ন করিয়াছে । 


- 
চি 


সি 
৮১ 
আহ +ং 
2815, 
08৯5. 30 
দিযেস্ক্ ৪ 


০ নি 
নীদ্লালা 7. 
বি ৭ ০৮৮11 চটি 





৪ 







আঁচাধিদের বউ 
প্রবোধকুমার সান্যাল 


ভূমিকা ফেঁদে আচার্য মহাশয়ের পরিবারের পরিচয় দেবাঁর 


কিছু দরকাঁর নেই | কিন্তু একথা যদি বলি, এই নাক্তিণঠ সভজ) সাবলীল, : 


বাদ, অশ্রদ্ধা আর সংশদের যুগে এমন একটি পরির্ধার 
অভিনব, তাঁহঠলে অনেকেই হয়ত অবাক হবেন। মাঁচষ 
আজ আত্মরচিত বিজ্ঞান-সভ্যতাঁয় উতৎপাড়িত হচ্ছে, নিজের 
হষ্টি-কর| মারণাঙ্ত্ের ভয়ে মাটির তলার গিয়ে প্রবেশ 
করছে। অশান্ত জীবনের একমাত্র স্বন্তি ছিল শৃন্ধময় 
ঈশ্বর, কিন্তু সেখানেও অসংখ্য যন্ত্রশকুনের পাল ঈশ্বরকে 
ডানা দিযে টেকে মান্যকে মারছে ভাঁওুব-দাঁচনে | 
মেঘলে।ক থেকে বিদ্বাৎকে ছিনিয়ে যে-পভাতার আলো! সে 
জালিয়েছিল ঘরে ঘরে, দেশ-দেশান্থরে-সেই আলো 
প্রাণভযে নিবিষে সে ঢুকলো স্ুড়ঙ্গপথে। বিশ্ববিধানের 
ভাঁর ঘাঁদের হাতে, আত্মদলনে আর আম্মাবমাননাষ তার! 
মূর্যু। এই অশান্থ জীবনে ঘদি কোঁনো ব্যতিক্রম দেখি, 
চমকে উঠি। 

জানি, আচার্ন পরিবারের আলোচনায় একথার দাম 
নেই? তবু এই বিংশ শতাব্দীর বিমে জগরিত কল্কাতি! 
নগরের ঠিক মাঝখানে এমন একটি নিরুদিগ্ন সন্থান্ত 
পরিবার বিশ্মষের বিষয় বৈ ফি। ধাংলার একটি অতি 
প্রাচীন গুরুবংশের ধারা তাঁরা বজায় রোখে চলেছেন-_ 
যেমন ভগীরথ শখ বাঁজিযে যাঁন্‌ গঙ্গার আগে আগে 
যর জনপদ আর প্রান্তর পেরিয়ে। পৃথিবী প্রগতিশীল 

“89844 
১ এ-সংবাদ ভাদের জানা নেই? সংস্কৃত ছাড়া আর কোনো 
উশ্বর্ষশালিনী ভাষা আছে এ তাঁরা বিশ্বাস করেন না। 
আশ্র্য বৈ কি। সকাঁপ সন্ধা পুজাঁপাঠ, গঙ্গান্গন। 
বেদমন্ত্রধ্বনিত। আরতি, নারামণসেবা, 17৮71 
আলোচনা--এ পরিবারের এইটিই নিতাম বশানকরমা্ম। ? | 
এর মধ্যে কোনো ভান নেই, ব্যতিক্রম নেই, সংশয় অথবা 
আলশ্ত ঢুকে কোনোদিন এখানে প্রশ্রয় পায়নি। কঠিন, 
নিরেট, নিরুদ্ধ দেওয়াল এই পরিবারকে পৃথিবীর কলরোল 
থেকে চিরকালের জন্ত আড়াল ক'রে রেখেছে । এখানকার 
সর্বশেষ শিশুটি অবধি এই শিক্ষায় আর এই দীক্ষায় 


বনবল্লীর মতো নিভৃতে 'বেড়ে উঠেছে। অথচ স্মন্তটাই 
প্রসম্ন- কোথাও শাসন নেই, সতর্কতা 
নেই। যেন কল্কাতার তৃষাদগ্ধ মরুভূমির মাঝখানে 
অরণা ছায়াময় একটি প্রাচীন সরোবর । 

এমন একটি পরিবাঁরে সেদিন যে বিবাহটা! ঘটলো! সেটা 
কিছু অভিনব । বিবাহের ইতিহাসটুকু সাঁমান্তই । আচার্য 
মহ]শয়ের ছাত্র দ্েবগ্রামের কেশবচন্দ্রের কন্তা মল্লিকাঁর সঙ্গে 
আঁচার্ধ তাঁর নাতির বিয়ে দিতে প্রতিশ্রুত ছিলেন। কি 
কাঁরণে এই প্রতিশ্রুতি সেকথা এখানে ওঠেনা । প্রতিশ্রতি-_ 
এই ঘথেষ্ট। কিন্তু এই সত্য আচার্কে রক্গ! করতে 
ভোঁলো বহুমূলো_ কারণ তার পরিবাঁরে বাল্যবিবাহ যেমন 


চিরকালীন প্রথা, তেমনি পাত্রীর পক্ষে লেখাপড়া শেখাও ' 


তাদের বশের সংস্কার-বিরুদ্ধ। সত্যাঅয়ী ত্রাহ্ষণ কিন্ত 
দ্বিরুক্তি না ক'রে শিক্ষিত মেয়ের সঙ্গে নাতি হরিমোহনের 
বিয়ে দিলেন । মল্লিকার বয়স তখন বাইশ পেরিয়ে গেছে। 
হরিমোহনের পচিশ। সমগ্র পরিবার উৎকট অস্বন্তিতে 
স্তন্ধ হয়ে রইলো। ০ 

বল| বাহুলা, যৌথ পরিবার হলেও আচার্ধদের অবস্থা 
খুবই স্বচ্ছল। দাঁসদাসী সমেত দুবেলায় প্রায় দেড়শো 
পাঁত পড়ে। আগেকার আমলের গৃহসজ্জার সমস্ত বাঁড়ীটা 
পরিপূর্ণ । পুরণো! কালের পিতল-কামাঁর বাঁসনপত্রগুলে! 
দেখলে বাঙ্গালীর আদি ইতিহাস মনে পড়ে। বাড়ীতে 
সবন্থুদ্ধ কতজন স্ত্রী-পুরুষ এবং কার সঙ্গে কি সম্পর্ক- 
মল্লিকা আঁজ অবধি থৈ পাঁয়নি। কয়েকদিন সে ঘুরে ঘুরে 
ঘরে ঘরে বেড়িয়ে বেড়াতে লাগলো । তাকে দেখে বৌ-ঝিরা 
অনেকেই মাথার কাপড় টেনে 'দিল, ছেলেরা আড়ালে চলে 


? গেল এবং কুমারী মেয়েরা চেয়ে রইলো অবাক হয়ে। 


প্রথমটা 'ল্লিকা কৌতুক বোধ করলো, কারণ কেউ তার 
সঙ্গে কথা বলতে এগিয়ে আসে না! পরে অনেকক্ষণ 


বাণে, সে নিজের মহলে এসে আবিফার করলো, পায়ে তার, 


চটিজুতো ছিল-_ওরা তাই শিউরে উঠে'গা-ঢাকা দিয়েছে। 
মল্লিকা অন্বত্তিবোধ করতে লাগলো । 


৭ 


৮ 


নতুন স্বামী-স্ত্রীর আলাপ কি ভীবে আরম্ভ হয়, সে 
তারা নিজেরাই শেখে । সে অবস্থাটা ছুজনেই পেরিয়ে 
এসেছে,। স্বল্লভাষী বিনয়ী হরিমোহন সেদিন ঘরে ঢুকতেই 
মল্লিক! বললে, ন্নান ক'রে আসা হোলো, মাথা আচড়ানো 
হোলো না? . 

হরিমোহনের মুখখানি নধর, স্বন্দর। এই পরিবারে 
প্রিয়দর্শন কলে তার খ্যাতি। হাসিমুখ তুলে তাড়াতাড়ি 
সে হাত দিয়ে মাথার চুল বার বার নিচের দিকে নামিয়ে 
দোরভ্ত করতে লাগলো । 

মল্লিকা বললে, ওকি, হাত দিয়ে কি মাথা জ্বাচড়ানো 
যায় ?--এই বলে নিজের আলমারির ড্রয়ার থেকে চিরুণী 
আর ব্রাশ বা+র করে দিল। 

হরিমোহন হেসেই ' অস্থির । বললে, না না, এখন 
আহ্বিকের সময়, চিরুণী ছু'তে পারবো না। আমাদের 
বাড়ীর ছেলেরা কেউ চিরুণী ছোয়না। তুমি জানোনা 
বোধহয়-না? 

মল্লিকা বললে, সেইজন্ে বুঝি সকলের কদমফুলের 
মতন চুল-ছাটা? 

হ্যা, তাই* বটে ।--বঝ'লে হরিমোহন গরদের ধুতিখানা 
কোমরে জড়িয়ে মাথার টিকিটায় একটা ফাস বেঁধে নিল। 
মল্লিক হাসবে কিম্বা হাত-পা ছড়িয়ে চীৎকার ক'রে 
কাদতে বসবে, ঠিক ঠাহর করতে পারলোনা । 

ঘরে স্ত্রীর কাছে বেশিক্ষণ থাকতে হরিমোহনের সাহস 
নেই, গভীর রাত্রি ভিন্ন স্ামীন্ত্রীতে দেখাশোনা এবাড়ীর 
বিধিবহিভূতি। কোনো রকমে কাজ সেরে হরিমোহন 
চুপি চুপি পালিয়ে যাচ্ছিল মল্লিকা তাঁকে ডাকলো । বললে, 
সকালবেলা কি যে বল্বে বলেছিলে ? 

হরিমোহন ফিরে * দাঁড়ালো! । বললে; হ্যা, বলছিলুম 
কি_মানে, কিছু মনে কারো না. ওরাই বলাবলি 
করছিল, তোমাকে নাঁকি বই পড়তে দেখেছে ওরা। 

বই পড়া কি বারণ ? 

হরিমৌহন হেসেই অস্থির, হাসতে হাসতেই সে বেরিয়ে 
চলে 'গেল এবং মল্লিক! জানেঃ সমঘ্যদিনে তার সঙগগে 
দেখা হবার আর কোনো সম্তাঁবন! নেই। 

আমীবরান্নার বিন্দুসাত্র' সংশ্রব এ বাড়ীতে খুজে 


ভ্ঞান্রন্ডশ্র 


| ২৮শ বর্--২য় খণ্--১ম সংখ্যা 


পাওয়া যাঁয় না) তরকারীগুলো মধুর রসে একপ্রকার 
অথাত্য। শাড়ির সঙ্গে আটপৌরে জামা পরা এখানে 
মেয়েদের পক্ষে নিন্দার কথা। শেষরাত্রে উঠে প্লান না 
করলে সামাজিক অপরাধ । মল্লিকা দিনে দিনে যেন 
হাঁপিয়ে ওঠে। এমন আবহাওয়ায় সে মানুষ হয়নি, সে 
দোষ তার নয়। প্রতিদিনই সে নিশ্চিত বিশ্বাস করতে 
লাগলো, তার ওপর একটা প্রকাঁড অন্যায় করা হয়েছে। 
আলো আর বাতাস থেকে তাকে ছিনিয়ে ফেলা হয়েছে 
এক অন্ধকূপে। এইরূপ অদ্ভুত সংসারে চিরদিন তাকে 
বাস করতে হবে এই কল্পনা করতে গিয়ে মল্লিকাঁর নিশ্বাস 
রুদ্ধ হয়ে এলো । 

হরিমোহন একদিন পা! টিপে টিপে এসে পিছন থেকে 
দুহাতে স্ত্রীর ছুই চোঁখ টিপে ধরলো । হরিমোহনের বলিষ্ঠ 
স্থন্দর দুই হাতে ফুল-ব্লেপাতা৷ আর চন্দনের মৃদু মধুর গন্ধ। 
মল্লিকা গন্ভীরভাবে তাঁর হাত দুখানা সরিয়ে দিয়ে বললে; 
জনি, ছাঁড়ো। | 

হরিমোহনের ভাসি আর ধরে না। কিন্তু পলকের 
মধো আয়নার ভিতরে চোঁথ পড়তেই দেখা গেল, স্বামীর 
পাঁশ(পাশি। 'একজনের সঙ্গে আরেক জনের কী বিচিত্র 
পার্কা। মল্লিকার মুখে রোঁজ-পাউডারের আভা, 
দুই আঁয়ত চোখে সুর্মা টানা, কপালে চুলের আট 
ঝুমকো-লতার মতো নামানো । আর তার পাশে 
আচাধ্যিদের নাতি, মাথায় টিকি, ছোটি ছোট ছাটা 
চুল, গলায় সাঁম বেদী পৈতার গোছা চোখে মুখে বিদ্যা 
বুদ্ধি অপেক্গা সারল্য আর আত্মিক ভাব। রূসবোধ 
অপেক্ষা কৌতুকবোধের দিকে ঝৌক বেশি। সুশ্রী যুবক 
সন্দেহ নেই, একে ভালোবাসাও সহজ-_কিন্ত শিক্ষার 
পালিশ আর বুদ্ধির তীক্ষতা না! থাকলে মল্লিকার কেমন 
করে চলবে? এর সঙ্গে পারিবারিক জীবন অচল, কারণ 
যৌথ-পরিবারের আওতায় থেকে এর কোনে স্বকীয়তা 
জল্মায়নি। এর সঙ্গে সামাজিক জীবনও অসম্ভব, কারণ 
বাইরের জীবনযাত্রার গতিরহস্ত এর সম্পূর্ণ জ্ঞাত। 

হরিমোহন আন্তে আস্তে বললে, বৌ, রাগ করলে? 

মল্লিকা বললে, বৌ বলে ডাকো কেন? আমার 
নাম রাণী। 

*নাঁম ধরতে নেহ যে। 


পৌধ-_-১৩৪৭ ] 


সেকি, তাহ'লে বলে! আমিও তোমার নাম ধরে 
ডাকতে পারবো না? 

হুরিমোহন অবাক হয়ে গেল। স্ত্রী স্বামীকে নাম" ধরে 
ডাকতে চায় এ তার কল্পনাতীত। পরিহাঁস মনে ক'রে 
সে হাঁসিমুখে বললে, ওকথা কি বলতে আছে? 

বলতে আছে কিনা সে আমি জানি । বলো যে এখানে 
সে-্রীতি চলবে না। যাক গে। তুমি হাত-কাটা ফতুয়া! আর 
উড়নি গায়ে দিয়ে পথে বেরোও কেন, বলো দেখি? 

তাঁর গলার আওয়াজে এমন একটা কঠিন নির্দেশের 
চিহ্ন যে হরিমোহন সহসা উদৃত্রান্ত ভয়ে স্ত্রীর মুখের দিকে 
তাকালো । তারপর বললে, ওটাই বে আমাদের অভ্যেস । 
শীতকালে কেবল বালাপোষ গায়ে দ্িই। 

তীক্ষকঠে মল্লিকা বললে, বগলে পুরণো ছাঁতি, 
কাধে উড়,নি, গাঁয়ে ফতুয়া_তোমার সঙ্গে নাপতের 
তফাৎ কি? 

' রমলিকতা ক'রে হরিমোহন বললে, তফাৎ কেবল আমার 

মাথায় টিকি? 

না, ও-অভ্যেমটা তোমাকে ছাড়তে হবে। উড়্ুনি 
নাও ক্ষতি নেই, কিন্তু পরণে ধুতি আর পাঞ্জাবী--আর 
পায়ে বিদ্যেসীগরী চটি ছেড়ে ধ্যালবা্ট । 

কিন্তু দাছু যে রাগ করবেন? 

মল্লিকা বললে, এতেই যদি তিনি রাগ করেন তবে 
ঘুমের ঘোরে কাঁচি দিয়ে একদিন তোমার টিকিও কেটে 
দেবো । ছি ছি, আমার বন্ধুরা কোনোদিন তোমাকে দেখলে 
আমাকে গলায় দড়ি দিতে হবে। 

হরিমোহনের মুখের হাঁসি মিলিয়ে গেল ভয়ার্ত মুখে 
সে চুপ ক'রে রইলো। বৃদ্ধ আচার্য মহাশয়ের প্রতি যে 
অশোভন কটাক্ষ উচ্চারিত হোলো; সে-আঘাত হরিমোহনের 
মর্মে গিয়েই বিধলো| | 

কিন্তু মল্লিকা সেথানেই থামলো নাঁ। স্বামীর নতমুখের 
দিকে চেয়ে বললে, তুমি না কল্কাতার ছেলে? আজকাল 
কত রকমের চাঁলচলন, কিছুই কি চোঁখে পড়েন! তোমাদের ? 
ইংরিজি লেখাপড়া শেখেনিঃ এমন একজন ছেলেও তুমি, & 
দেখাতে পারো? না শিখেছ ম্যানার্) না এটিকেট। 
হাতে রুদ্রাক্ষের তাঁগা বেঁধেছে কেন? ওতে তোমার কি 
লাভ বলতে পারে? 


২ 


অপরাধীর মতে! মুখ ক'রে হরিমোহন বললে, আমরা 
শৈব কিনা, তাই । *. 

ছাই আর পাশ! ধর্মে মতি খুব ভালো, ভণ্ডামি কেন? 
তুমি আশা করছ আমি তোমার মতন হবোঃ আমিও ত 
আশা করতে পারি, তুমি হবে আমার মতন? ঘণ্টা নাড়া 
আর পুজো আর চাঁল:কলা বাধা--লোকের কাছে আমার 


মুখ দেখাতেও লজ্জা! করে ! 

হরিমোঁহন সবিনয়ে বললে, আমি কি তোমার যোগ্য 
নই, বৌ? 

সে-কথা হচ্ছে না মল্লিক! চাঁপা বক্ষার দিয়ে উঠলো) 
তোমাদের রুচি আর শিক্ষা নিয়ে কথা হচ্ছে । মানুষ আর 
বনমানুষের প্রভেদ নিয়ে কথা হচ্ছে। 

হরিমোঁহন ফ্যাল ফ্যাল ক'রে তাঁকালো । তারপর 


মৃদুক্ঠে_-ঘরের বাইরে কেউ নাগুনতে পায়--এম্নি ভাবে 
বললেঃ আমাকে তুমি কি করতে বলো ? ' 

বলবো কাকে, আমার কথা ষে বুঝতেই পারবে না? 
তুমি কি কোনোদিন আমাকে চেনবার চেষ্টা করেছ? 

না। ৃ 

চেষ্টা করলে বুঝতে, এখানকার ছাঁচ আজকের দিনে 
কেউ সহ করতে পারবে না। চারিদিকে উচু পাঁচিল, সদর 
দরজা বন্ধ__বাঁইরের হাঁওয়৷ আঁসে না, খবর আসে না কথা 
আসে না। কেউ বাঁচতে পারে এখানে? 

হরিমোহন বললে, তুমি কি চাও? 

মল্লিকা বললে, তোমাকে বুঝে নিতে হবে। আমি হি 
ডিবেটিং ক্লাবের প্রধান বক্তা 

তা বুঝতে পারছি ।- হরিমোহন একটু হাসলো । , 

যতই হাসো, সত্যিটা মিথ্যে হয়ে যায় না। অল্‌ ইত্ডিয়া 
লেডিম্‌ কন্ফারেম্মের আমি ব্রাঞ্চ সেক্রেটারী, পর্দানিবারণী 
সমিতির আমি মেম্বর_তুঁমি বলতে চাও সমগুই ত্যাগ 
ক'রে ভট চাষ্যিদের পূজো নিয়ে থাকবো"? তুমি জানোঃ 
ভবানীপুর “মহিলাঁসমাজ আমারই হাতের তৈরি? তুমি 
এও বোধ হয় শোনোনি, আমার একটা পলিটিক্যাল 
হক্যারিয়বও, আছে !-_এক নিশ্বাসে কথাগুলো বলে 
মল্লিকা হাপাতে লাগলো । 

ওদিকে নারাঁয়ণের ঘরে সন্ধ্যারতির লগ্ন প্রায় আসন্ন। 
আসছি।--ব'লে হরিযমাহন"ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। যেতে 


৬১৫ 


যেতে ভাবতে লাগলো, সর্বনাশ, এ কা”র সঙ্গে তার বিয়ে 
হয়েছে? একে নিয়ে তার ভবিষ্যৎ ?. 
** জানবার ধারে মল্লিকা কঠিন হয়ে +সে রইলো | চারি- 
দিকের এই অবরোধী আবহাওয়ার. মধ্যে বসে তার মনে 
হোলো বাইরেটাও যেন রুক্ষ, যেন তৃষ্ণার জিহ্বা মেলে ধরা। 
সহুস* যতদুর দেখা গেল, তার জীবনট! ভয়ানক বিপন্ন। এ 
বিয়েতে বিন্দুমাত্রও তার তৃপ্তি হয়নি। সনেহ নেই, 
হরিমোঁহনের চেহারা আর প্রকৃতি ভালোবাসবারই মঙো।, 
কিন্ত সে অন্ধগুহাবাঁসী। মল্লিকার বয়স কম হয়নি, সে 
জানে অগ্নিল্নাবী যৌবনের মাদক সহজেই একদিন ফুরিয়ে 
যাঁবে- কিন্ত তারপরে সর্বপ্রকারে তার জীবন হবে 
বিডস্বিত। এই পারিপার্থিক সহা করা হবে তার পক্ষে 
কঠিনতম সমস্তা। একটু আগে নিজের আন্মাভিমান 
হরিমোহনের কাছে সে প্রকাশ ক'রে ফেললো । জানে, 
এ প্রবৃত্তি অশোভন; নিতান্তই বাধ্য হয়ে তাকে এই 
আত্মহত্যা করতে হোলো । কিন্তু তাঁর নিজের পরিচয় 
যাই হোক, তার প্রাথমিক দাঁবিগুলি যদি পূর্ণ না হয় 
তবে কি তাঁর জীবন ব্যর্থ নয়? তার কচি আর শিক্ষামতো 
কিছুই বদি সেনা পায় তবে নিজেকে দৃঢ় কারে দাঁড় 
করানো কি তাঁর এত বড় সামাজিক অপরাধ? অনুকুল 
অবস্থা না পেলে মেহ ভালোবাসা আসবে কোন্‌ পথ দিয়ে? 

মাসতিনেক এমনি ক'রেই কাটলো । 

কয়েকদিন আগে থেকেই মল্লিকাঁর মন ভালো ছিলনা । 
বেশ বোঝা বাধ, পারিবারিক এক চক্রান্ত চলেছে তাঁর 
বিপক্ষে, এ বাড়ীতে সে প্রি নয় । ফলে, সকলের মাঝণাঁনে 
থেকেও সে একা । তার ন্নানাহার, তাঁর সাজসজ্জা; তার 
চ্দনধরণ সমস্ত গুলোই এ পরিবারের এঁক্য প্রণালী থেকে 
বিচ্ছিন্ন একটা চড়া সুরঃ এখানকার হাওয়ায় সে যেন 
বিরূপতা অনুভব করে । . 

এই এক 'ঘেয়ে অন্বস্তির ওপর একদিন 'একট্রখাঁনি 
বৈচিত্র্যর ধাক্কা পড়লো । 

দুপুরে এই সময়টায় রোজই হরিমোহন পুরাণপা1ঠ, 
শিশ্তসেবকের বিলিব্যবস্থা ইত্যাদি নিয়ে বাড়ীতেই ব্যস্ত থাকে, 
কিন্ত সেদিন সে বাঁড়ী ছিল না। তাদের টোলের পরীক্ষায় 
আচার্ষের সঙ্গে তাকেও উপস্থিত গাকতে হয়েছিল, তাছাড়া 
উপাধি বিতরণ সভার কাজকর্মও' কিছু ছিল। এমন সময় 


ভ্াান্সভবম্ 


[ ২৮শ বর্--২য় খণ্ড --১ম সংখ্যা 


একদল অভ্যাগত স্ত্র-পুর্ুষ বাগান পেরিয়ে বাড়ীতে এসে 
ঢুকলো । . খবর পাওয়া! গেল, তাঁরা মল্লিকাঁর সাক্ষাৎ, 
প্রার্ধী। এ বাঁড়ীর নিয়ম হোলো, মেয়ের! নিচের তলাকাঁর 
বৈঠকখানার দিকে কখনোই অগ্রসর হবে না। কিস্ত 
আজ অল্লানব্দনে মল্লিকা সেই বিধি লঙ্ঘন ক'রে নিচের 
তলায় নেমে সৌজ। বৈঠকখানায় এসে হাজির হোলো । 

তিনটি যুবকের সঙ্গে চার পাঁচটি তরুণী তাকে দেখে 
একসঙ্গে সোল্লাসে কলরব ক'রে সারা বাড়ী মুখর ক'রে 
তুললো । তাদের সেই সমগ্র মিলিত কঠম্বর এই প্রাচীন 
বনেদী এবং রক্ষণণীল বাড়ীর সমন্ত ভিতগুলোর সন্ধিস্থানে 
হাতুড়ি মেরে মেরে যেন ধরাশায়ী ক'রে দিতে লাগলো! । 
কাছাকাছি কারুকে দেখা গেশ না বটে, কিন্তু মল্লিকাঁর 
মনে হোলো আতঙ্কে, উতৎকগ্ঠায়। উদ্বেগে সারা বাড়ীর 
মানুষরা একটি মুহূর্তেই স্তম্ভিত হয়ে গেছে। 

একটি পলক মাত্র, তারপরই হাসিমুখে এগিয়ে গিয়ে 
মিসেস রেবা রাঁষ আর অলকা মিত্রের হাত ধ'রে অভ্যর্থনা 
জানিয়ে মল্লিকা বললেঃ এসো আনুন অরিন্দমবাবু, 
'আস্থন বিজনবাব । তারপর? হঠাৎ যে? কি মনে 
ক'রে ?-_-চলো ওপরে, আমার শোবার ঘরে। রতীনবাবু, 
আপনি সেই যে শীলং গেলেন, তারপর আর কোনো খোঁজ 
পেলুম না কেন বলুন ত? 

অরিন্দম হাসি টিপে বললে, ও কি আর আমাদের 
মতন গরীবদের খবর রাখে? 
৩158৬/1)1:6 ! 

সিড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে রেবাঅলকা-বিজনর1 উচ্চ 
হাঁসতে ঘরবাড়ী ভরিয়ে দিল । 

আপ্যায়ন আর অভ্যর্থনার ত্রুটি হওয়া ত দুরের কথাঃ 
আজ বরং তারই একটা চেষ্টাকুত অতিশয়তা দেখা গেল। 
কোথাও স্থলন নেই, কোনে৷ বিচ্যুতি নেই__আস্ঘোঁপাস্ত 
হিসাব নিকাঁশে একেবারে স্থসমগ্িত । মল্লিক! চঞ্চল হয়ে, 
উত্তেজিত হয়ে, উচ্চূসিত হয়ে গা ঢেলে দিল এই কোলাহল- 
মুখর আসরে । ওরা কেউ বোধ হয় বুঝতে পারলো না, 
মল্লিকা নানা কথার কৌশলে শ্বশুরবাড়ীর আসল চেহারাটা 
ওদের কাছে ঢেকে রাখতে চায়, নানাবিধ ছলনায় 
হরিমোহনের প্রসঙ্গটা এড়িয়ে পালিয়ে চলে। ওরা বখন 
বললে, মল্লিকা, একটা গান গাও, তোমার চমৎকার গলা 


[725 75 0058060 


পৌষ--১৩৪৭ ] 


অনেকর্দিন গুনিনি। মল্লিক তৎক্ষণাৎ রাজি হয়ে গেল । 
বাবার দেওয়! যৌতুকের হারমোনিয়মটা ভ্রুত হস্তে বার 
ক'রে সে ধরলো '"গীতবিতানের” একখানা গাঁন।. তাঁর 
সেই দীর্ঘ মধুর মহ্ুণ কণ্ঠম্বরে শরৎ-শেষের মধ্যাহ্নের 
উজ্জল নীলাকাশ ক্ষণে ক্ষণে শিউরে উঠতে লাগলো । 
হাস্তে, লান্ে, কটাক্ষে আগেকার সেই মল্লিকাঁকে নতুন 
করে দেখে বিজন, অরিন্দম আর রতীন সমাধিস্থ 
হয়ে রইলো । 

রেবা-অলকাঁরা ধরে বসলো, আজ বেলা তিনটার শোতে 
মেট্রোম্ যেতে হবে । অনেক কাল পরে আজ এই সুযোগ । 

এইমাত্র! প্রস্তাব শোঁনামাত্রই মল্লিকা নেচে উঠলো, 
বর্ধার মেঘের কটাঁক্ষে যেমন মযুরী নৃত্য ক'রে ওঠে। সত্যি 
বলতে কি, পাঁচ মিনিটের মধোই সে তার কুমারীকাঁলের 
মতো সুরুচিসম্পন্ন সজ্জাঁয় এসে ফ্রড়ালো । যেন দীর্ঘকাল 
থেকে সে উপবাসী, তৃক্চার্ত__সমস্ত প্রাণ, সমন্ত মন অদ্ভুত 
অধীর ক্ষুধা তৃষ্ণার চঞ্চলিত। তাঁর দিকে তাকিয়ে তিনটি 
যুবকের ইহকাল ঝরঝরে হয়ে গেল। 

মল্লিকা বললে, যাচ্ছি, কিন্তু একটি সর্ঠে। তোমরা 
আজ আনার অতিথি, আঁজকের সব খরচ আমার । 

স্বাই বললে; বেশ বেশ, খুব ভালো ।-_এই বলে তাঁরা 
আঁবার সিড়ি দিয়ে বাঁড়ীময় সাঁড়াশব্দ জাগিয়ে নেমে 
চললো । 

মল্লিকাও নামবে, এমন সময় ধীরপদে দিদিশীশুড়ী এসে 
দাড়ালেন । বললেন, নাঁৎ-বৌ, গুরা কে? 

ওরা ?- মল্লিকা থমকে দীড়ালো । বললে, গুরা সবাই 
আমার কলেজের বন্ধু। 

তুমি যাচ্ছ কোথায়? 

একটু বেড়াতে-_সিনেমায়_ 

ওঁদের সঙ্গে? 

্া। 

কর্তার মত নিয়েছ কি? 

তিনি ত বাড়ী নেই, আপনাকেই জানিয়ে যাচ্ছি। 
দের বলবেন, সন্ধ্যে নাগাৎ ফিরবো। 

গট্‌ গট ক'রে সিড়ি দিয়ে নেমে মঙ্লিক! ক্রুতপদে বন্ধুদের 
সঙ্গে চলে গেল। তার প্রতি পদক্ষেপে এই বংশের শিক্ষা- 
দীক্ষার ধারা দলিত মথিত হতে লাগলো । বিমূঢ় নিষ্পন্দ 


আচ্ান্িন্্প বউ 


দিদিশাপ্ডড়ী নির্ণাক চেয়ে রইরেন। * মেয়েটার অনু 
স্পর্ধা বটে ! 


সিনেমা থেকে বোরয়ে মাল্লকার৷ গিয়েছিল ইম্প্রীয়লে, 
সেখান থেকে হগ মার্কেট ঘুরে ময়দানের হাঁওয়! থেয়ে যখন 
তারা যে-ার বাড়ীর দ্রিকে চললো, মল্লিক! বিজনকে এস্কর্ট, 
নিয়ে ট্রামে উঠে বসলো । অতঃপর শ্বশ্তরবাড়ীর ফটকের ৰ 
কাছে এসে সে যখন হাত তুলে বিজনকে “চিয়ারো” বলে” 
বিদায় দিয়ে ভিতরে ঢুকলো, আচার্য মহাশয় গীতার পৃষ্ঠা 
থেকে মুখ তুলে তার দিকে তাকালেন। সন্ধ্যা তখন সাড়ে 
সাতটা । " ী 

ভ্াক্ষেপ না ক'রে মল্লিক! অগ্রসর হচ্ছিল, আচার্য গম্ভীর 
প্রশান্ত কণ্ঠে তাকে ডাক দিলেন-_ নাৎ-বৌ দিণি আপনি 
একটু অপেক্ষা করুন বৈঠকথাঁনায়, ! 

বৈঠকথানায়! বিম্মরজনক নির্দেশ বটে। মঙ্লিকা, 
থমকে সেইখানেই ধীড়ালো । আচার্য ভিতর থেকে উঠে 
বাইরে এসে দীড়ালেন-_ এবং অপ্রত্যাশিত, হরিমোহন এলো 
তার পিছনে পিছনে । 

দৃঢ় শ্মিতকঠে আচার্য বললেন, ভেতরে কিন্বা ওপরে 
আপনার আর যাবার দরকার নেই। আমি ইতিমধ্যেই সব 
ব্যবস্থ৷ ক'রে দিয়েছি । আপনার আসবাবপত্র সবই ধর্মতলার 
বাসায় চলে গেছে। স্বামীন্ত্রীতে সাবধানে ভন্্রভাবে 
থাকবেন। হ্যা, খরচপত্র সমস্তই নিয়মিত যাবে__মাঁনে, 
মাসে দুশো টাকা । আমার কর্তব্য থেকে কখনো পশ্চাদ্পদ 
হবোনা। অগ্ঠান্ত সকল কথাই হরিমোহনকে আমি বলে 
দিয়েছি, অন্থবিধে কিছু হবেনা । আপনার আর কিছু 
বলবার আছে কি? * 

ছুই পাঁ থর থর করে মল্লিকাঁর কীপছিল। ভূমিকম্পের 
একটা প্রচণ্ড নাড়ীয় সে ঘেন কেমন বিকল হয়ে গেছে। 
নিজেকেই সে একটা চাবুক মেরে সজাগ .বরে তুললো। 
বললে, না। 

ফটকের কাছে একথানা৷ মোটর গাড়ী এসে দীড়ালো। 
আচার্য বললেন, দেরি হয়ে যাচ্ছে, আর কিছু তোমার বক্তব্য 
আছে, হরিমোহন ? 

অশ্রকম্পিত কে হরিমোৌহুন জবাব দিল; আজে না। 

স্ত্রীর প্রতি তোমার কর্তব্য বিবেচনা, প্সেহ__এগুলোর 


সি, 


অভাব যেন কোনোদিন না হয় তোমাদের প্রতি আমার 
নিত্য আশীর্বাদ রইলো । আচ্ছা, এবার তা হলে দুর্গা বলে 
বাতা করো। সেখানে গিয়ে আবারি রান্নাবান্না করতে 
হবে। 

মল্লিা ছেট হয়ে তার পায়ের ধূলো নেবার চেষ্টা করতেই 
আচার্য বললেন, থাক্‌ ছোঁবেননা আমাকে নাং-বৌ দিদি? 
আমি আশীর্বাদ করছি। | 

ছুজনে অগ্রসর হোলো । হরিমোহন বোধ করি দ্রুত 
আত্মগোঁপন করার জন্য গাড়ীতে উঠে গিয়ে বসলো । মল্লিকা 
এতক্ষণ পরে সহসা তার গ্রীবা হেলিয়ে নিঃসঙ্কোচ পরিচ্ছন্ন 
কণ্ঠে বললে, দা'দামশায়, পায়ের ধুলৌও নিতে দিলেন না? 
দ্বেখছি এটা তাড়িয়ে দেওয়া ছাড়া আর কিছু নয়__কিন্ত 
আমি এ বাড়ীর বৌ__ 

ঘাড় নেড়ে বাধ! দিয়ে আচার্য বললেন, এ বাড়ীর বৌ 
আপনি নন্‌ নাৎ-বৌ দিদি, আপনি হরিমোহনের স্ত্রী, এই 
'মাত্র। হ্যা, কি বলছেন বলুন ? 

অপমানিত মুখ তুলে ফস ক'রে মল্লিকা ঝলে বসলো, 
ওঁর ত্ত্রী না হলেও আমি ছুঃখিত হতুমনা । এ বাঁড়ীর বৌ 
আমি নয়-_-একথা শুনেও আমি আনন্দ পেলুম ।__থাকগে। 
আমার বক্তব্য হচ্ছে, আপনি যা খরচের বরাদ্দ করেছেন, 
কল্কাতা৷ শহরে তা নিয়ে চলবেনা । 

চলবে ।-_-আচার্য বললেন, ধর্মতলার বাঁড়ীটা আমার, 
সেখানে ভাড়। লাগবেনা! । আপনারা মাত্র দুজন, ওতেই 
চলবে । তবুঃ আপনার শেষ দাবি যুক্তিহীন হ'লেও আমি 
পূর্ণ করব। আঁড়াইশো৷ টাকা ক'রে আপনাদের মাসিক 
খরচ বরাদ্দ রইলো] । 
* মল্লিকা নীরবে গিয়ে গাড়ীতে উঠলো! । গাড়ী ছেড়ে 
দিল। আচার্য উপর দিকে একবার চেয়ে নিজের মনে 
বললেন, তোমারই নির্দেশ, প্রতু। 

মিনিট দ্তিনন চার ধ'রে ভ্রুতবেগে গাড়ী ছুটে চললে! । 
আঘাতটা সামলে নিতে মল্লিকার দেরি হয়নি । শ্বশুরবাড়ীর 
প্রতি মমত্ববৌধ কিছু থাকলে একটু কষ্ট হোতে৷ বৈকি। তবু 
কয়েদখাঁন! থেকে মুক্তি পেয়ে বাইরের আলোয় এসে 
দাড়ালেও পরিত্যক্ত কুয়েদখাঁনার জন্ত ছোট একটি নিশ্বাস 
পড়ে। মাত্র সেইটুকু, তার বেশি নয়। তার পাশে 
হরিমোহন বিষগ বালকের মতো! বাইরের দিকে চেয়ে বসে 


স্ব ভন্ম 


[ ২৮শ বর্--২য় খণ্ড ১ম সংখ্যা 


রয়েছে। পুরুষ সে নয়--কিশোরী বালিক! যেমন গ্রামের 
শ্নেহশৃঙ্খলিত জীবন ত্যাগ ক'রে অজান! শ্বগুরবাড়ীর পথে 
প্রথমণবাত্রা করে, তেমনি নিঃশব্ব ব্যাকুল করুণ তাঁর চাঁহনি। 
পথ, ঘাট, জনতা, নগরের অশ্রীন্ত মুখরতা-_-ওদের কোনো 
অর্থনেই। শত সহস্র লক্ষ্যবস্তর দিকে অর্থহীন দৃষ্টিতে চেয়ে 
থাকলেও চোখ দুটি তার ছিল আচার্ষের দিকে । প্রিয়তম 
পৌত্র সে, পিতামাতার একমাত্র পুত্র সে, পারিবারিক 
সংস্কতির সে-ই ধোগ্যতম প্রতিনিধি, তাঁকে নিয়ে কত আশা, 
কত আশ্বাস। 

তার হাতের উপর একটা বাঁকুনি দিয়ে সহসা মল্লিকা 
বললে, মোজা হয়ে +সো। কেমন করে গাড়ীতে চড়তে 
হয় তাও জানোনা? 

হরিমোহন সোজা হয়ে বসলো । রাঙা দুটো চোখ 
ফিরিয়ে পরে সে বললে, আগে আমি কখনো মোটরে 
চড়িনি। 

সহসা ঝড়ের মতো! মল্লিকা হেসে উঠলো-_-কি যে 
করবো তোমাকে নিয়ে! চলোঃ খুব তোমাকে মোটরে 
চড়াবো এখন থেকে । আমার কথার বাধ্য থাকবে ত? 

অবাধ্যতা কাকে বলে, হরিমোহন জীবনেও জানেন! । 
সে কেবল ঘাড় নেড়ে একান্ত নির্ভরতার সঙ্গে তাঁর সম্মতি 
জানালো । মল্লিকা হঠাৎ খুশি হয়ে উঠলো । হরিমোহনের 
গলাটা জড়িয়ে ধ'রে তার মাথায় হাত বুলিয়ে পুরুষের পাওনা 
বকৃশিস চুকিয়ে দিল। 

বাচলুম_হাপ ছেড়ে বাচলুম__মল্লিকা ফুকুরে উঠলো, 
আর কিছু না হোক আমীষ রায়না খেয়ে বাচবো» অথাগ্ঘ আর 
পেটে যাবেনা । আড়াইশে! টারায় আমাদের যা হোক চলে 
যাঁবে। বাড়া ভাড়া লাগবেনা । 

হরিয়োহন গলাটা ছাড়িয়ে মুখ তুলে তাঁর দিকে 
তাকালো । ফ্যাল ফ্যাল ক'রে চেয়ে বললে, তুমি কি মাছ, 
মাংস, পিয়াজ, ডিমের কথা বলছ? ওসব ত আমাদের 
থেতে নেই, বৌ? 

দুরস্ত বালকের প্রতি বর্ষীয়সী নারী যেমন সঙ্েহে চেয়ে 
থাকে, তেমনিভাবে কিয়ৎক্ষণ হরিমোহনের দিকে স্মিতমুখে 
তাকিয়ে সহস! মল্লিকা পুনরায় চলন্ত গাড়ীর মধ্যে উচ্চ দীর্ঘ 
উল্লোলে হেসে উঠলে! । তারপর বললে, কী বংশেরই মানুষ 
তোমরা, সব এক একটি পরমহংস! জীবে দয়া, অহিংসা 


'পৌব--১৩৪৭ ] 


এতই ষদি ছিলঃ বনে যেতে পারোনি? বিয়ে করেছিলে 
'কেন:? ' একথা শেখোনি, ষড়রিপুর প্রথমটা থেকেই আর 
সবগুলোর উৎপত্তি? 
কিন্তু তাঁর সঙ্গে শান্্র আলোচনায় হরিমোহনের কী 
না দেখে মল্লিকা পুনরায় বললে, আচ্ছা, থাক্‌, এসব কথা 
পরে হবে। আগে নিজের ইচ্ছে মতন ঘরকন্পা পাতিগে । 
ধর্মতলার বাড়ীতে ঢুকে মল্লিকা দেখলো-_আাশ্চ্, উপর 
তলাকার ছুটে! ঘরে তাঁদের সমস্ত আঁদবাবপত্র পুঙ্থানুপুঙ্খ 
গোঁছানো। পাঁচক, দাসী এবং একটি ছোকরা চাকর 
তাদের জন্য অপেক্ষা করছিল । আচার্য মহাঁশয় চার পাঁচ 
ঘণ্টার মধ্যে একেবারে নতুন রাজ্য প্রতিষ্ঠা ক'রে দিয়েছেন। 
মল্লিকা শোবার দুটো ঘর এবং বৈঠকখানাঁয় বেড়িয়ে বেড়িয়ে 
তদারক করতে লাগলো । রান্না, ভাড়ার, বাঁথরুম__সমস্তই 
ছাল ফ্যাশনের । লোকটার রুচি আছে বটে। 
পাচক এসে দাঁড়ালো । বললে, কি রানা হবে মা? 
মল্লিকা অলক্ষো একবার হরিমোহনের দিকে তাকালো । 
তার পর বললে, তুমি যাঁও ঠাকুর, আমি পরে রান্নাঘরে গিয়ে 
দেখছি। 
সেদিনকার আহারা্ির ব্যবস্থা কতদূর কি হোলো বলা 
কঠিন, কিন্তু মল্লিকা সারাদিনের উত্তেজনার পর ঘুমিয়ে 
পড়তেই হরিমোহন সারারাত পথে-হারানো শিশুর মতো 
কেঁদেই ভাসাতে লাগলো । 
পরদিন সকালে মল্লিকা বাইরে বেরোতেই চাঁকর খবর 
দিল, ব্রাহ্মণ পচক তাঁর ।”াকৃরি ছেড়ে দিয়ে ভোর রাঁত্রেই 
চ'লে গেছে। 
কোনে! ক্ষতি নেই_ ব'লে মল্লিকা! কোমর বেঁধে কাজে লেগে 
গেল। চাঁকরকে বাঁজারে পাঠিয়ে সে স্নান সেরে এলো । হরি- 
মোহন ই তিমধো তাঁর পূজা অর্চনা! সেরে বইপত্র নিয়ে +সে গেছে। 
প্রথম অবস্থায় একেবারে বিপ্রব বাঁধালে চলবেন! । 
মল্লিকা স্থির করলো, তার দরকার মতো কিছু কিছু আহার্য 
ধর্মতলার হোটেল থেকে আনিয়ে নিলেই চলবে। চাঁকরটার 
মাইনে গে বাড়িয়ে দেবে। তারপর ধীরে স্থুন্থে দেখা যাঁক্‌, 
হরিমোহনের টিকির সঙ্গে তার আহারের সঙ্গতি থাকে কিন! । 
সেও 'কেশব মুখুজ্যের মেয়ে, ছাড়বার পাত্রী সে নয়। 
_ হাতীবাগানে কোন এক টোলে হরিমোহন ছাত্রক্ষের 
পড়াঁতে যায়। সপ্তাহে 'এঁকদিন করে যায় ভাটগাঁড়ায-_ 


আঙ্গার্িনেন্ অউ 


স্তরাং মল্লিকার অবমর অথ, স্বাধীনতা অবাঁধ। এর 
'উপর স্বামী যদি বাধা, হয়, নিয়মাহুবর্তী হয়, তবে সুখ এবং 
স্বস্তি ছু-ই। মল্লিকা "যে-হাওয়ায় মান্য, যে-শিক্ষায় তাক 
বিগ্যা, তাঁতে পুরুষকে সন্দেহ করা তার পক্ষে স্বাভাবিক.। 
কিন্ত নীতিবিদ্‌ হরিমোহন সম্পর্কে তার কোনো উন্বেগ নেই, 
জ্বালা নেই। আর তার যে স্বামী__টিকি, নামাবী, চাদর, 
চটি এসব বাদ দিলে অবশ্ঠই ভদ্রসমাঁজের যোগ্য কিছু 
ইংরেজি শিক্ষা থাকলে অবশ্য ভালে! হোতো, কিন্তু সংস্কৃতই 
বাকম কিসে? মেঘদূত আর শকুস্তলা আর কুমারসম্ভব 
আবৃত্তি সে যদি করতে বসে, তাঁর উদাত্ত কণ্ঠে অন্তত রেঝা” 
অলকার দলকে নিশ্চয়ই চমকে দেওয়া! যেতে পারবে । আর 
ইংরেজি? মল্লিক! তাঁর হাতখরচের জন্ ছু-চারবার টুইশনি 
করেছে, স্বামীকে কাঁজ -চালানো৷ ইংরেজি শেখাতে তার 
অস্থুবিধে হবেনা । সেদিন সে কয়েকখান! ইংরেজি রীডার 
নিজেই কিনে নিয়ে এলো । হাঁয় অজ্ঞানাচার্য, তুমি.নাতিকে 
পণ্ডিত করেছ, মানুষ করোনি ! 

অবসর যখন তাঁর অখণ্চ, তখন তার বিগত কুমারী- 
জীবনকে পুনরুজ্জীবিত ক'রে তুল্সতে বাধা কি? *ম্বামী 
যখন তার করতলগত, স্বামী যখন নিরাপদ, তখন তার 
মনের গতিকে বিভিন্ন ধারায় পরিচালিত করা অস্ুবিধাজনক 
নয়। মল্লিকা অল্‌ ইগ্ডিয়৷ লেডিস কন্ফাঁরেন্দের আগামী 
অধিবেশনের জন্ত প্রস্তাব রচনা করতে বসলো, “পর্দা 
নিবারণী'তে খবর পাঠালো এবং ভবান পুরের যে “মহিল! 
সমাজের, আপিসে এখন আর বাতি দেবার কেউ নেই, সেই 
ঘরটায় নতুন আপিস বসাঁবার জন্ত সে একদিন গিয়ে ঝাঁড়া- 
মোছার বন্দোবস্ত ক'রে এলো। বিয়ের পর যে-মেয়ের 
আঁল্মারীতে বইপত্র তুলে রেখে কেবল মাত্র প্রস্থতি-কল্যাণ 
মুখস্থ করতে বসে, মল্লিকা সে-দলের মেয়ে নয়। স্বামী তার 
জীবনের মোপান, সেই ভিন্ভির উপর দীড়িয়ে সে নতুন কিছু 
সৃষ্টি করবে। কে বলেছে, পুরুষকে খুশি ক্রজতই মেয়েদের 
জন্ম? কে বলেছে পায়ে পড়ে কা! ছাড়া মেয়েরা আর 
কিছু জানে না? কে বলেছে, স্বামীর আদর্শ আর মতবাদ 
অনুকরণ ক'রে চলাই স্ত্রীর ধর্ম? সত্যকারের প্রতিভাকে 
চিনতে দেরি লাগে, সেইজন্য শক্তিশালী শ্রষ্টা যখন জন্ম, 
সমসামধিক কাল তাকে -বিজ্রপ করে, গালাগাতি দেয়। 
প্রতিভার পথ চিরকালই কণ্টকাকীর্থ । . 


মল্লিকার অনেক কাজ। বিয়ের পরে তাকে অহেতুক 
জবরোধ করা হয়েছিল। অপরাধ ছিলনা, শাস্তি ছিল। 
তার আধুনিক শিক্ষা প্রগতিবাদী “মন, তার কষ্টার্জিত 
বিদ্যা__-সবগুলিকে অবমাননায় উপেক্ষা করাই ছিল তার 
স্বগুরবাড়ীর কাজ। ভ্ত্রালোককে ওরা মানুষ বলেনি, বলেছে 
দেবী_কারণ পদদলিত হয়েও তারা- মার্জনা করবে এই 
স্থুবিধা। দেবীর সিংহাসনে বসিয়ে তাঁকে চলৎশক্তিহীন 
করে রাখলে সম্ভোগ-চক্রাস্তের তৃপ্তি! পুরুষ লেলিয়ে দিয়ে 
তাকে মোহাচ্ছ্ধ ক'রে রাখলে তার ধাত্রীবিগ্যাকে কাজে 
লাগানো যায়! ধন্তঃ হে রক্ষক! 

একদিন সন্ধ্যার পর কোথা থেকে ঘুরে এসে মল্লিকা 
হাঁপাতে হাঁপাতে বললে এই যে, কখন্‌ এলে তুমি? 
সন্ধ্যাহ্নিক সেরেছ? 

হরিমোহন বললে, হ্যা। বেড়িয়ে এলে বুঝি? 

না গোঃ বেড়াবার সময় নেই, অনেক কাজ । তোমাকে 
'একটা খবর দিই। আসছে সতেরোই তারিখে আমার 
এখানে মহিলা-সমাজের একটা জরুরী সভা-_অবশ্ রাত্রের 
দিকে। সেদিন ডিনারের ব্যবস্থাও করতে হবে। কিন্ত 
তোমাকে নিয়ে আমার যে ভয় করে ! 

শান্তকণ্ঠে হরিমোহন বললে, ভয় কেন? 

তুমি যা জবু-থবু, লোকে না নিন্দে করে। 

কি করতে হবে বলো! ? 

করতে কিছুই হবেনা, কেবল আমি যা বলবো তাই 
গুনবে। শুনবে ত? 

আমি ত কখনো তোমার অবাধ্য হইনি, বৌ। 

আবার বৌ! একটুও স্মরণশক্তি যদি তোমার থাকে! 
'বলোঃ বৌরাণী ।-_সহাহ্য তিরস্কারে আর বিলোল চাহনিতে 
মল্লিক! পুরুষের আসক্তিকে খুচিয়ে তুলতে চাইলো] । 

হরিমোহন বললে, বলে! তোমার কি হুকুম, বৌরাণী ! 

মল্লিক। স্তীর পাশে এসে বমলো। আজ হরিমোঁহনের 
মুখের উপরে বিষাদের কোনো! রেখা নেই, কেমন যেন নির্মল 
প্রসন্নত। | প্রসাধন নে কখনো করেনি, আয়নায় সে কখনো 
মুখ দেখেনি, সে স্বল্লাহারী ও ধামিক-__কিস্ত আজ মল্লিকা 
তালে ক'রে চেয়ে দ্েখলো--ঘন পেশীসন্গিঝিষ্ট দৃঢ় চোয়াল, 
মুখের উপরে স্বাস্থ্যের রক্তাভা, উদ্নত কপাল, আয়ত শান্ত 
দুটি চোখ। হরিমোহুন সত্যকার রূপবান । 


জা 


ভার ভলম্ম 


[ ২৮শ বর্ধ--২য় খণী---১ব নংখ্যা 


কাণের মুক্তোর দুল দুলিয়ে মল্লিকা স্বামীর গল! জড়িয়ে 
বললে, তুমি নিজের ধর্ম রক্ষাতেই ব্যত্ত রইলে; কিন্তু তুমি 
দেখলেনা, যে তোমার আশ্রিত, তারে! আছে কিছু সাধ; 
কিছু ব! কামনা । 

কথাটা খুবই সত্য। আচার্য ঝলে দিয়েছিলেন, স্ত্রীর 
প্রতি বিন্দুমাত্র অবিচার করবে না, কর্তব্য ভুলবেনা। স্ত্রী 
সহধর্মিণী, জীবনসঙ্গিনী। মল্লিকা এবাড়ীতে আসার পর 
থেকে হরিমোহন মনে মনে তার প্রতি বিরক্তিবোধ করেছে। 
সে তার আজীবনের আত্মীয়বন্ধন ছিন্ন ক'রে এক নারীর 
হঠকাঁরিতায় ঘর ছেড়ে এলো» এই অদ্ভুত অন্ধতার জন্ 
কয়েকদিন অবধি, সত্য বলতে কি, মল্লিকাকে সে ত্বণা 
করেছে। কিন্তু এর ত কোনে! কারণ নেই, স্বচ্ছন্দ পরিচ্ছন্ন 
জীবন যাপন করার জন্তই ত মল্লিকা ছেড়ে এলে! সব। 
হরিমোহন আজ স্ত্রীর আলিঙ্গনে নূতন আস্বাদ গেলো। 
চোখ ভ'রে তার নেশা লাগলো । 

মদকঠে সে বললে, অনেক রকমের তুল আমার ঘ'টে 
গেছে, আমি তার জন্যে লজ্জিত! এবার তুমি ঝা বলবে 
তাই শুনবো। 

কথা দিচ্ছ? 

ছ্যা। 

আমি যদি তোমার চাঁল-চলন আর খাওয়া দাওয়ার 
চেহারা বদলাতে চাই ? 

স্পন্দিত নিশ্বাসে হরিমোহন বললে, আমিষ ? 

স্বামীর গলায় জড়ানো হাতখানায় আর একটু জোর 
দিয়ে মল্লিকা বললে, যদি ধরো৷ তাই হয়? 

তুমি তাতে স্থখী হবে? | 

আমি সুখী হবার চেয়ে তুমি এ-কালের যোগ্য হবে, সে-ই 
আমার আনন্দ। আমি ভাসতে চাই তোমাকে নিয়ে। 
এযুগের নেশায় আচ্ছন্ন হ'তে চাই। তোমাকে আমি 
অনেক শেখাবে! । 

হরিমোহুন চুপ ক'রে রইলো । মল্লিকা তার গলা ছেড়ে 
দিয়ে উঠে যাবার পর তাঁর চমক ভাঙলো, কেমন যেন ভয়- 
ভয় করতে লাগলো। এই নারীর সান্নিধ্য যেন ভাঙনের 
নুরে ভরা__কাছে এলে সম্তরহঃ সতর্ক থাকতে হয়। কি 
যে সে বলতে চায়, জান! কঠিন। কিসে খুশি হয় তাও 
অজ্ঞাত। কিন্তু তার দুরন্ত গতির 'সঙ্গে পদক্ষেপ মিলিয়ে 


পৌঁধ--১৩৪৭ ] 


না! চলতে পারলে তাকে যেন হারাতে হবে। ভালোবাসা 
বড় নয়, সংসারধর্ম প্রয়োজন নয়--কেবঙ্প একটা দুর্বার গতি, 
একটা অন্ধ ভবিষ্তের দিকে নিরুদ্দেশ যাত্রা, অকুলের*দিকে 
অজানায় ভেসে চপা। এ মেয়ে কাছে এলে সবততুলিয়ে 
দেয়। তার আক্রমণ থেকে নিজের দুর্গ রক্ষা ক'রে থাকা 
বড় কঠিন। 


' ধর্মতলার ধারে বাসা বাঁধলে কল্কাত৷ নগরকে হুকুমের 
মধ্যে পাওয়া যাঁয়। মল্লিকাঁর বাড়ীর নিচের তলায় নানাবিধ 
বিপনি বেসাতি। হবিমোহনকে সেদিন সঙ্গে নিয়ে সে এক 
“সেলুনে” গিয়ে উঠলো । অভিজাত নাপিত কাঁচি হাতে 
নিয়ে তাঁদের বসতে জায়গা দিল। মল্লিকা বললে, এ'র 
চুলটা কেটে দাও ভালো ক'রে। ক্লিপ লাগিয়ো সাবধানে, 
_নিউ আমেরিকান্‌ কাট হবে। 

বড় একখানা আয়নার সামনে চেয়ারে হরিমোহন 
বসলো। দোকানের অড়ুত সাজ আসবাব। নাঁপিতের 
কাছে সে মাথা পেতে দিল। নাপিত হরিমোহনের টিকির 
দিকে মল্লিকার দৃষ্টি আকর্ষণ ক'রে বললে, এটা ? 

ওট! কেটে দাও। 

নাপিত তার কাজ আরম্ত ক'রে দিল। মল্লিকা সকাল 
বেলাকার সংবাদপত্র নিয়ে »সে রইলো দোকানের 
এক পাশে। 

সমস্ত সকালটা সেদিন মল্লিকাঁর বিশ্রীম রইলো না । 
এগারোটার পর স্বামীব্ত্রীতে যখন ফিরলো, তাঁদের সঙ্গে 
মুটের মাথায় একরাশি জিনিসপত্র। তিনজোড়া জুতো; 
তার সঙ্গে মোজা । খান পাঁচেক শাস্তিপুরের ধুতি। অছেল 
মোল্লার দোকান থেকে কেন! হরিমোহনের জন্য ট্রাউজার, 
গেঞ্জি, শার্ট) কোট, নেকটাই_-কি নয়? জুয়েলারের 
দোকান থেকে সোনার বোঁতাম। হগমার্কেট থেকে 
আইভরি সিগারেট কেস । মণিহারি থেকে সুগন্ধী সম্ভার। 

সতেরোই তারিখের বিশ্ব বেশি নেই। স্বামীকে ভ্র- 
সমাজের উপযোগী করে তোলার জন্য মঙ্লিকা অবিশ্রাস্ত 
পরিশ্রম করতে লাগলো । মল্লিকাকে যারা জানে তারা 
হ্বীকার করবে, বু বিষয়ে দে অভিজ্ঞ। কেবল মাত্র বই 
মুখস্থ করা কলেজী তরুণী সে নয়; ফ্যাঁশনেবল্‌ পল্লীর সব 
খবর সে র়াখে। নাঁচ গাঁন শিখিয়েছে সে বই মেয়েকে, 


আগামি বউ 


টিপি পারনি! অলঙ্কার 


নির্বাচনে তার জুড়ি 'কম__মণিপুরী কাণের ঝুঁদ্‌কো। থেকে 


গুজরাটি চুড়ির ডিজাইন তার করতলগত। জাপানী 
মেয়েদের পারিবারিক কুসংস্কার আর আমেরিকান্‌ তন্লশীদের 
প্রণয়ালাপের বিশেষ ঢং অবধি তার কগ্ন্থ। প্রণয়-প্রশ্য়িণী 
“সোসায়েটি-গার্লরাঃ 'কেমন সরল যুবকদের দ্যাকমেল্‌ঠ 
করে সেও তার অজানা নয়। সেজানে, এটিকেটু শিখতে 
হলে ইংলা'গ, উপন্তাঁস পড়তে হ/লে ফ্রেঞ্চ আর রাষ্্ব্যবস্থা 
জানতে হ'লে রাশ্বা। ন্ুতরাং হরিমোহনের মতে ছাজ 
তার কাছে অতি সামান্য । ৃ 

সতেরোই তারিখ নিকটবর্তী। তাদের “মহিল! 
সমাজের” জরুরী অধিবেশনের সংবাদ কল্কাঁতাঁর কাঁগজ* 
গুলোতে ছাপ! হয়ে বেরিয়ে গেছে। রবিঠাকুরের ছু'লাইন 
ফিকে আশীর্বাদ তার সেক্রেটারীর মারফত ডাকে মঙ্লিকার 
হাতে এসে পৌচেছে। আঁমন্ত্রণলিপি চলে গেছে সত্যদের. 
কাছে। বাঙ্গালায় মহিলাবনেতা নেই, সুতরাং মল্লিকাঁর 
ভবিষ্ৎ উজ্জ্বল । অল্-ইশ্ডিয়া থেকে বহু নেত্রীর তকানা 
এসেছে পত্রযোগে । 

& ইংলিশ এটিকেট” নামক বইখানা আদগ্যোপাস্ত মুখে 
মুখে অন্তবাদ ক'রে মল্লিকা হরিমোহনকে শোনালো । উৎসাহ 
ও উদ্যম কেবল নয়-_ প্রাণের অজন্মত! মল্লিকার অসামান্ত । 
দীর্ঘ সাতদিন ধরে সে ইংরেজি রীভারখানা হরি- 
মোঁহনকে দিয়ে মুখস্থ করালো । শেষ দিন শেষ রাত্রের 
দিকে ঘুমে হরিমোহনের চোথ জড়িয়ে এলেও মল্লিকা 
তাকে ছাড়লো না। তার স্মরণশক্তির পরীক্ষা করতে 
লাগলো। | 

--আচ্ছ! বলো, আঃ ঘুমিয়োন! বলছি 1? বলো) ফুল্‌" 
মানে কি? 

হরিমোহন বললে, বোকা 

ডগ্মানে কি? 

কুকুর। 

হাঁসব্যাণ্ড মানে কি? 

চাষা! | 

হোলোনা, হোলোনা-ঠিক করে বলো। 

মানে? 

গাঁধা 1 


হাব্যাশু, 


২৬১৬ 


এ 





_ আঃ কিচ্ছু মনে রাঁখতে পারো না তুমি। হাঁসব্যা্ড 
মানে, স্বামী। মনে থাকবে ত? আচ্ছা। উইচ মানে কি? 
্্ী। 

মল্লিকা খিল খিল ক'রে হেসে উঠলো। বললে, ভাগ্যিস 
এখাঁনে কেউ নেই? সব ভুলে মেরে দিয়েছ? উইচ. মানে 
ডাইনী, ওয়াইফ. মানে স্ত্রী। মনে থাকবে? আচ্ছা, 
এবার ঘুমোতে পারো । রাত চারটে বাঁজে। 

এর পরে সাজসজ্জা শেখানোর পালা । ভূতপূর্ব 
“মহিলা-সমাঁজের” কল্যাণে বহু সমাজে আঁর পার্টিতে মল্লিকাঁর 
যাতায়াত ছিল। তার মামার বিলাত যাওয়া উপলক্ষে 
সে পোষাক পরিচ্ছদ সম্বন্ধে অনেক জ্ঞানলাভ করেছিল । 
দেখেছে, পাশ্চাতা সঙ্জার সঙ্গে ওরিয়েপ্টাল্‌ রং মেশালে 
আদর পাওয়া যায়। ফ্যাঁশন বস্তটার বনেদী ভিত্তি কম, 
প্রগতিশীল কল্পনার সঙ্গে. ওটা আসে, নতুন ধাক্কায় 
আবার সে মার খেয়ে পালায়। মোট কথাঃ দৃশ্ত 
আকর্ষণীয় হওয়! চাই, চল্তি যুগের সঙ্গে সঙ্গতি রাখতে 
পারলেই হোলো। মল্লিকা হরিমোহনকে সাহেবী পোষাকে 
ছুরস্ত ক'রে তুললো । বী হাতে কাটা ধরতে শেখালো, 
ডাঁন হাতে চামচ । থাবার সময় (প্রথম দফায় খেতে হবে 
স্থপ__ তারপরে যাকিছু। ফল-পাকড় যদি খেতে হয় তবে 
শেষকালে। চুমূক দিয়ে যেন সুপ খেয়ে! না মক্লিকা সতর্ক 
ক'রে দিল-টেবল্‌ স্পূন্‌ াকবে, ভান হাতে থেয়ো। 
আচ্ছা, স্পুন্‌ মানে কি? 

চাম্চে। 

'মগ্লিক! সোল্লাসে হেসে উঠলো__বাঁঃ এবার ত ঠিক 
হয়েছে! এবার ঠিক পারবে তুমি । আর ভয় নেই, আমার 
ঠিক মুখ রক্ষে হবে। খুব সাবধান, আমার পুরুম বন্ধুরা 
আসবে, তারা যেন হাসাহাঁসি না করে। তারা সব-_ 

হরিমোহন বিন্রিত হয়ে বললে, পুরুষ-বন্ধু? 

হ্যা, ভারী লহপাঠগী ছিল। তা ছাড়া দু চারজনের 
সঙ্গে এমনি ভাব আছে। মিটিং ভাঙলে রাত্রে ত, আর 
মেয়ের একলা যেতো না--অনেকের এস্কর্ট থাকতো; 
অনেকের বন্ধুও থাকতো । 
|] কে নিন্দে করতো না? 

লোকনিনে ?-_ হাসিমুখে 
করতে! কে? 


মল্লিকা বললে, গ্রাহা 


ভাল্পভন্বঞ্ 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় থণ্ড--"১ম সংখ্যা 





পাপ মনে,হোতো না? রা 

আ, কি যে বলো তুমি। ছেলেমেয়ে একসঙ্গে থাকলেই 
কি মন্দটা ভাবতে হবে? মন্দ আছে মাম্ুষের মনে, বাইরে 
সবটাই সুন্দর। এই ত বিজনের সঙ্গে আমি কতদিন কত 
জায়গায় বেড়িয়েছি, বলো আমার চরিত্র নষ্ট হয়েছে? নীতি 
আর দুর্নীতির সীমারেখা কেউ টানতে পারে? তা ছাড় 
ভালোবাসা বদি হয়ই, মেয়েদের সতীত্ব কি এতই ঠন্কো ? 
__উজ্জলন্ত কটাক্ষে শরিমোহনের প্রাণের দিগন্তব্যাপী 
বিছ্যুদ্দাম ছুটিয়ে মল্লিক! চ*লে গেল। 

বিমুঢ় হরিমোহন আতঙ্কে অন্বন্তিতেঃ লজ্জায় আর 
অপমানে বসে বসে কাপতে লাগলো | 

সতেরোই তারিখ সকালেও মল্লিকার ছুটি ছিল না। 
ছুটি না থ(কলেও তাঁর আনন্দ ছিল। হরিমোহন তার 
সকল পরীন্মা উত্তীর্ন হয়েছে । 'দখন আর বিশেষ ভয় 
নেই, সভাসদাজে তাকে নিয়ে অন্তত মানহানি আর 
ঘটবে না। আচার্ষকে ধরে এনে আজকে ঘি সে হরি- 
মোহনের উন্নতিটা দেখাতে পারতে ! 

সকালবেলা উঠে চা খেয়েই মল্লিকাকে ছুটতে ভোলো। 
ভব|নীপুরের এক ম!ঠে পাগাল্‌ তৈরি করে সেখানেই 
আয়োজন করা হয়েছে । মফস্বল থেকে বহু মহিলা- 
ডেলিগেট এসে উপস্থিত হয়েছেন । হাজার ছই টাকা চাদ 
তুলতে মল্লিকার দলকে অনেক বেগ পেতে হয়েছিল । সনন্ত 
বন্দোবস্ত নিখতভীবে সম্পন্ন ক'রে মল্লিকা যখন ফিরলো, 


বেলা তখন বারোটা বাজে । সন্ধ্যা সাতটায় সভার 
উদ্বোধন। সভাঁপতিনী হুবেন_মহীশুরের : বিখ্যাত 
মহিলা নেত্রী | 


আজ তার একটা একা সৌভাগ্যের সথচনা | লতা- 
পতিনীকে দিয়ে প্রকাস্টে স্বীকার করিয়ে নিতে হবে, বাস্বণলা- 
দেশের নেত্রীত্বের মুকুট মল্লিকা মুখুক্যের মাথায় পরাণো 
ভোঁক। বাঁপের বাঁড়ীর মুখুজ্যে পদবীটাই ভা”র বহাল থাক্‌, 
বদলে দিলে নতুন নামে পরিচিত হ'তে সময় লাগবে । 
সমাঁজসেবায় আর জাতীয়তা প্রচারে বর্তমানে মল্লিকাঁর 
দ্বিতীয় নেই। আজ সবসমক্ষে হরিমোহনকে শ্বীকার ক'রে 
আসতে হবে, স্ত্রীর গৌরবে সে গৌরবাদ্বিত। | 

পাঁচটার পরে মল্লিকা নিজের হাতেই হরিমোহনকে 
সাজাতে বদলে! ।: ক্নকাপ, রুঙের বিলেতী ইউদবা 


পৌধ--১৩৪৭] 


পরালো ভিতরে শাদা রেশমের হাঁফ, শাঁট, গলায় কু 
নেকটা্রুঁ চোখে পাওয়ারলেস্‌ পাঁস-নে, পায়ে চকোলেট 
রডের ফিতে বাঁধা স্থ। বুক-পকেটে রেশনী রুমাল (দিল 
দু ইঞ্চি তুলে। মাথায় ব্যারিষ্টরী হাট। তারপর বললে, 
নাম জিজ্ঞেম করলে কি বলবে মনে আছে? বলো, মিস্টার 

হারি বোনারজি। চমৎকার মানিয়েছে আজ তোমাঁকে। 
চলো না, অনেক স্ন্দরী মেয়ের সঙ্গে তোমার আলাপ 
করিয়ে দেবো । ঈর্ষায় তারা জলতে থাকবে, আর সেই 
ঈর্ধার বুকের ওপর দিয়ে তোমাকে তুলে নিষে আসবো 
সগৌরবে। কেমন, ভালো লাগবে না? দেখো, আমার 
মাথা খেয়ো না যেন ।--এই কলে নিজে সাজগোজ করতে 
বাবার আগে মগ্সিক। বার বর আত্মচত্য।র শুর দেখিয়ে 
হরিমোহনকে হোঁটেলের রানা গেয়াজ-রস্থন ভরা চপ, 


কাটলেট, মাংস ইত্যাদি খেতে রাজি করালো । আর কিছু 
নয়, তাঁর কুসংস্কার ভেছে দিতে হবে । 
'যেন একটা কঠিন অগ্নিপরীক্ষা আগমন । ভয়ে ভথে 


হরিমোহন চুপ ক'রে রইলো । তার অস্থির বুকের ভিতরটা 
আজ সকাঁপ থেকেই ধকধক করছিল। কিন্ত গ্রতিভ্ঞা 
তাকে পালন করতেই হোলো সে সতাবাদী । 

মল্লিকা আজ পরলো গৈরিকবণের খদরের শাড়ী, 
ভিতরে রেশমী জামা-রক্তলেখাঙ্িত । চোখে স্ুমাট।নাঃ 
মুখমণ্ডল গোলাগী পরাগে মোহমদির; ছুই কাঁণে হীরার 
কুগুল, হাতে আলপনা ডিজাইনের কম্মনঃ ঝলকে ঝলকে 
মাথার রু্ চুল হাওয়ায় ওড়ানো, পয়ে হীল্-তোলা লেডিস 
স্। বয়সের ভারে সনার্শ কিছু আনত, ভঙ্গিটি কিছু 
ক্লাস্তির । বাঙ্গালার নেত্রী মু্িকা। 

ঘণ্টাখানেক পরে সে যখন ঘর থেকে বেরিয়ে এলো, 
একটি যুবক তাঁকে সোৎসাহে অভিনন্দন জানালো । বললে, 
আধঘণ্টা থেকে বসে আছি তোমার জন্যে, মল্লিকা । 

'মল্লিকা হাসিমুখে বললেঃ কেন+ মিস্টার ব্যানাজিকে 
দেখোনি ? 

দেখেছি, তিনি আমাকে বসিয়ে ওঘরে গেলেন। আঃ 
অদ্ভুত মানিয়েছে আজ তোঁমাঁকে। সপ্রেশ্ডিড ! 

এমন সময় প্রশান্ত গম্ভীর মুখে হরিমোহন এসে দীড়ালো। 
তখন তাঁর গা বমি-বমি করছে। হাত বাড়িয়ে একটি ছোট 
চিঠি মঞ্কিকার ছাতে দিয়ে বললে, এটা পড়ো এক ডীময়ে। 


কিসের চিঠি? 

কিছু নাঃ এমনি ॥ 

আচ্ছা, পড়বো পরে । ওগো শোনো, জীচ্ধীমার একটি 
বধু, বন্ধুদের মধ্যে অন্তরঙগ--এর নাম সুব্রত সেন। আচ্ছা, 
বলো ত স্ুত্রত, গুকে এই পোষাকে কেমন 0 ?-4মল্লিকা 
অধীর হয়ে উঠলো । ২. 

উচ্ছ্বসিত সুব্রত বললে, 01), 1765 1০01 117৩, 
কিন্ত তুমি--তুমি বে আঁজ এঞ্জেল, মল্লিকা? কেবল. কি 
মিস্টার ব্যানাজি? আজ অনেকের মাঁণা ঘুরে যাঁবে। 

বমির বেগ সামলে হরিমোহন মনে মনে আঁওড়ালো, 
এঞ্জেল, এঞ্জেন মানে শ্বরবাঁসিনী পরী, দেবদূত । এমন' সময়, 
নিচে ধর্মতলাঁর রাস্তাব মোটরের শব্দ হতেই হরিমৌহন' 


ছড়িটা হাতে নিয়ে নিচে নেমে গেল। মলিক! সন্দি্থ 
দৃষ্টিতে তার দিকে একবার তাকালো । আঙ্গ যেন 
হরিমোহনকে কেমন ভন্তময মনে হচ্ছে। কিন্তু ফতই 


চোঁক, সুব্রত আর একটু তার সমাদর করা উচিৎ ছিল 
বৈকি। সাঁণাজিক সৌলন্তটা তাকে শেখানো হয়নি বটে । 
সুব্রত ণললে, উনি যাঁবেন না সভায়, মল্লিকা 2? * 
যাবেন বৈ কি, নতুন পোষাক পরার আনন্দে গায়ে 
হাদিয়া লাগাচ্ছেন একটু । মাষটি একটু সেকেলে, স্থুব্রত । 
এমন সময় নিচে থেকে চাঁকর উঠে এঁলো। মল্লিক৷ 
তার বিরক্তি চেপে প্রশ্ন করলে বাবু কোথায় গেলেন রে? 
চাঁকর বললে, তিনি মোটরে উঠে চ'লে গেলেন। 
কোথায়? 
তা জানিনে, না । 
সস! চিঠির টুকরো কথা মনে পড়তেই মল্লিকা হাতের 
মুঠো থেকে চিঠি খুলে পড়তে লাগলো । সুব্রত রইলো, 
সামনে বসে, সে কিছু বুঝতেই পারলে! ন!। 
“কল্যাণীয়াজু। 
তোমাকে চিরকাঁলৈর -জন্র পরিত্যাগ 
করিতে বাধা হইলাম। আমাকে ক্ষমা 
করিয়ো । আমার খোঁজ-খবর লইয়ে! না। 
আমার সামাজিক ক্ষতি হইলেও তোমার 
হইবে না, এই আশা লইয়াই দুরে থাকিব। . 
ইতি... ৯ 
হরিমোহন 


ভান্পভন্ব 


আসছি স্ব্রত? তুমি একটু বসো ।-এই ঝলে মল্লিকা 
তার সকল গ্রকার উত্তেজনা দমন ক'রে, নিচে নেমে গেল৷ 
কিন্তু পথে "কমি দূরস্ত অধীর উত্তেজনায় সে একখানা 
ট্যাক্সির ক'রে তার ভিতরে উঠে বসলো । বললে, 
চোরবাগান। ্‌ | 

প্রতিটি মুহূর্ত অগ্রিপ্ফুলিঙ্গে নিবিড় জীবন্ত । উক্কাপিণ্ডের 
মতো মল্লিকা ক্ষিপ্তোন্মত্ত ক্রোধে ছুটে চললো! । ওদিকে 
সভা উদ্বোধনের সময় আসম্ন, এদিকে তার সমগ্র জীবনকে 
ধরে ভাগ্যদেবতা একটি কঠিন মোঁচড় দিলেন। দেখতে 
দেখতে পাচ মিনিট--পাচ মিনিটের মধ্যেই মল্লিকার 
মোটর চৌরবাগানের আচার্ধদের বাড়ীর ফটকে এসে 
ধাড়ালো। 

গাড়ীর ভিতর থেকে ছিটকে পড়লো মল্লিকা, তার পর 
সোজ! বাগান পার হয়ে আচার্য মহাশয়ের বৈঠেকথানার 
দরজায় এসে দাড়ালো। স্তম্ভিত মূঢ়ের ন্তাঁয় দেখলো, সাহেবী 
পোষাক পরা হরিমোহন আচার্য মহাশয়ের কোলে মাথা 
রেখে ডুকরে ডুকরে কাদছে__বিছানার চাদরের উপর 
একরাশি বমি। দুর্গন্ধে ঘর ভরে গেছে। 

কঠোর কে মল্লিকা বললে, জানোয়ার মাঁনুম হয় না, 
আমার সব চেষ্টা ব্যর্থ। আমাকে তুমি ত্যাগ করবে এত 
বড় স্পধ1? ত্যাগ আমি তোমাকেই ক'রে যাঝে। 

. হরিমোহন অশ্ররুদ্ধকণ্ঠে বললে, দাছুঃ ওকে চ*লে যেতে 
বলুন। 


[ ২৮শ বর ২য় খণ্ড--১ম সংখ্যা 


আচার্য বললেন, না হরিমোহন, তোমার স্ত্রী। স্ত্রীর সকল 
ব্যবস্থা তোমারই হাতে । 

বিদীর্ণ কণ্ঠে মল্লিকা বললে, আপনাদের হাত তুলে দেওয়া 
কোনো ব্যবস্থা আমি স্বীকার করবো না। কিন্ত আচার্য 
পরিবারকে আমি দেশের মাঝখানে অপমানে টেনে নামাবো, 
তবেই আমার নাঁম। 

আশপাশে দেখতে দেখতে মল্লিকার চীৎকারে লোক 
জমে গেল । আচার্য মহাশয় হাত জোড় ক'রে মল্লিকাঁর 
সামনে এসে গড়িয়ে বললেন, ক্ষমা করুন নাঁং-বৌ দিদি':' 

ক্ষমা !__ মল্লিকা চেঁচিয়ে উঠলো), আপনিই সব চেয়ে 
অপরাধী । নিরপরাধ একজন মেয়ের জীবনকে নিয়ে 
আপনি ছিনিমিনি খেলেছেন, মনে নেই ? 

বিপন্ন অপমানিত আচার্ধ ব্যস্ত হয়ে বললেনঃ আপনি চুপ 
করুন, ঝগড়া আমি মিটিয়ে দেবো । হরিমোহন, যাও তুমি 
তোমার জ্ীর সঙ্গে । 

না।-_মল্লিকা তিরস্কার ক'রে বললে,ম্বামীস্ত্রীর সম্পর্ক মুছে 
দেবার জন্যই আমি ছুটে এসেছিলুম | ক্ষমা আমি আপনাদের 
করব না। আদালতে আপনাদের যেতে হবে, সেখানে গিয়ে 
আমার উপযুক্ত পাওন! আপনারা দিতে বাধ্য হবেন। এই 
চিঠি আমার কাছে রইলো! | 

আগুনের শিথার মতো জলতে জলতে মল্লিকা যেমন 
এসেছিল, তেমনি আবার ছুটে গিয়ে গাড়ীতে উঠে 


চগলে গেল। 


কলিকাতাষ্টক 


শ্ীইন্দু রায় 


নমো! নজ্ন এস; অপরূপ মম বিমাতা কলিকাতা, 
গঙ্গার জল; স্লিগ্ধ শীতল, ঠাণ্ডা করিলে মাথা । 


টীম্‌-বাস্ঘন পথে অগণন ট্যাক্সি উড়ায় ধুলি, 
ধেয়ে এসে পৃড়ে ঘাড়ের উপরে বড় বড় লরীগুলি ; 


দীঘি-লেক-ধারঃ রেস্তোর বার, হাঁয়া-বাণী-নাটগেহ ] 
নিতুই নূতন পড়শী সুজন, কাঁর তরে কার লেহ? 


য্যারিষ্টোক্রাটিক বাবু সন্ত্রীক সিনেমা দেখিয়া ফিরে ;-_ 
মা'র কেখল তরে ঘরে ফেঁদে মরে, ঝি ভূলায় শিশুটিরে। 





যন্ত্রজ্জিত শিপ্পবাণিজ্য কি সম্ভব?' 


প্রীমনোরঞ্জন গুণ্ড বি-এসসি 


পৃথ্ধিবীব্যাগী এই মহাযুদ্ধে ভারতবাসীর মনে এই প্রশ্ন উিত হইয়াছে 
যে যন্ত্রভাত। যখন বর্তমান কালের সকল অশাস্তির হেতু, তখন য্ত্র্জন 
করিয়! মহাত্মা গান্ধী প্রচারিত কুটীরশিল্প অনুসরণ কি যুক্তিযুক্ত ও 
সম্ভব নহে? 

এই প্রশ্ন বর্তমান কালের প্রত্যেক মানুষের জীবনের সহিত জড়িত। 
সভ্যতার সংজ্ঞার্থ লইয়াই এখন সংশয় উঠিয়াছে। একদা যন্ত্রভ্যতার 
ক্রমোন্নতিকেই সভ্যতার বিকাশরূপে গ্রহণ কর হইত। কিন্তু বর্তমানে 
উহ্ছাতে মানুষের মন বিরূপ হইয়া! উঠিয়াছে। মানুষ বিজ্ঞানের বলে 
তুচ্ছ তৃণধণ্ড হইতে অমিত তেজ সংগ্রহ করিয়৷ তাহা ভ্রাতৃহননে 
নিয়োজিত করিয়াছে, মানব মনের সকল ছন্দের নিয়মাবলী উদঘাটন 
করিয়! স্নেহ, প্রেম ও ভক্তির তাৎপর্য নির্ণয় করিয়াছে। কিন্তু হখ 
পার নাই, শান্তি দূরে চলিয়া গিয়াছে, কেবল সভ্যতার স্বরচিত আবর্তের 
মধ্যে কেন্্রচুত নক্ষত্রের মত মানুষ সহস! প্রজ্ছবলিত হইয়। নিশ্চিহ্ন 
ইইয়াছে। 

কিন্ত ইহা হইতে নিষ্কৃতি কোথায়! যে অবতার পৃথিবীর সমন্ত 
জীবিত বস্ত মুছিয়। ফেলিয়! নূতন জীবিত বস্তু স্বজন করিবেন তাহার জন্য 
কি অপেক্ষা করিয়া রহছিব? যদি সে কর্জান৷ নিরর্৫থক হয়, অথবা অপেক্ষা 
ন৷ সহ, তবে বর্তমান পৃথিবী লইয়াই আলোচন1 করিতে হইবে । আমর! 
তাহাতেই প্রবৃত্ত হইলাম। 

আমাদের সন্থুখে প্রশ্ন এই যে কি উপায়ে যন্ত্রশিল্প বর্জন করিয়া 
কুটীর শিল্পকে গ্রহণ করিতে পারি? এই প্রগ্নের সম্মুখীন হইবার 
পর্বে প্রথমে ইহাই স্থির করিয়! লওয়া সঙ্গত যে কুটারশিঞ্প কাহাকে 
বলে? 

গান্ধিজী প্রভাবান্বিত গ্রাম-উদ্ভোগ-সংঘ কাগজ তৈরী, তৈল 
নিষ্ধাষণ, চামড়া, সাবান, মধু, গুড় ইত্যাদি কে কুটার শিল্পা বলিয়! 
অনুসরণ করেন। দেশীয় মাটির' খেলন|. ঢাকার ঝিনুকের বোতাম, 
টাঙ্গাইলের তাতের সাড়ী, কৃষ্নগরের পুতুল, বর্ধমানের সোল! ও 
রঙের সাজ, বাগমারীর ঢাকাই সাবান, উপ্টাডাঙ্গার কেরোসিনের 
কুপী ও নারিকেলডাঙ্গার কাটা-পাল্প। তৈরীকে অনেকে কুটার শিল্প আখ্যা 
দবেন। কেহ কেহ বিদেশী হুতার লাছি হইতে গুলিহৃতা ও সালফিউরিক 
এমিডের সাহায্যে হাঁড়িতে করিয়া! নাইটিক এসিড তৈরীকেও কুটার 
শিল্প বলিতে প্রন্তত। এখন এই সকল বস্তর উপাদান বিষয় কিঞ্চিৎ 
আলোচন! কর! যাকৃ। 

কাগজ তৈরী করার জন্ক প্রয়োজনয় ক্ষারবস্ত ও ব্লিচিং পাউডার, 
তৈল নিষ্কাবণ যন্ত্রের জগ্ কয়েকটি ধাতব অংশ, চামড়া পাকা করার জস্ক 
কয়েকটি রামায়নিক ভ্রবা, সাবানের জন্ক ক্গারবস্ত ( সাজিমাটি হইতে এই 


ক্ষার তৈরীর যন চলিতেছে), গৃহপালিত মৌমাছিব কৃতিম দ্রুকের জন্ত 
খনিজ মোম, গুড়ের জন্ত প্রয়োজনীয় রাসায়নিক বস্তু বৃহৎ যন্ত্রশিল্প 
হইতেই উদ্ভুত। দ্বেশীয় খেলুনার রং, টাকার ঝিনুকের (বত্য্তেরীর 
যন্ত্র, উহ প্যাক করার হৃতা, রাংতা ও বাক এবং লেবেল, 
টাঙ্গাইলের ভাতের সাড়ীর সুতা ও প্যাটার্ণ কার্ড, কৃষ্ণনগরের পুতুলের 
রং, বর্ধমানের সাজের রাং, ঢাকাই সাবানের ক্ষারবন্ত, কেরে (সিনের 
কুণীর সমন্ত উপকরণ, কাটা-গাল্লার ধাতু সবই বৃহৎ যন্ত্রশিল্প হইতে 
পাওয়া বায়। লাছি সুতা ও দালফিউরিক এসিড তৈরীর বস্ত্রের মূল্য 
অন্তত লক্ষ টাক1। 

সুতরাং ন্ত্শিল্পবর্জিত কুটার শিল্প কোথায়? কি উপায়ে, অলক্ষে, 
কোন্‌ প্রলোভনে বা প্রয়োজনে এমনি করিয়! কুটার শিল্পের জাতি নষ্ট 
হইল? নষ্ট যখন হইয়াছেই তখন ইহা স্বীকার ফির! লওয়া কর্তব্য যে 
ইহা কালধর্ম। নুতনতম অভাব সৃষ্টি, তাহা পূরণের বাধা! ও তজ্জন্ত, 
চেষ্টা, বাস্তব-জীবন অনুসরণকারী মানুষের পক্ষে ইহাই তাস্বার জীবন। 
সেই স্বাতাবিক পরিণতির সুত্র ধরিয়াই কুটার শিল্প ও বন্ত্রশিল্প অঙ্গাজি- 
ভাবে মিশিয়! গিয়্াছে। বাস্তব জীবনে ও শিল্পক্ষেত্রে বন্ততই কুটার 
শিল্পের যস্তরশিল্প বঞঙ্জিত কোন পৃথক সত্ব। নাই। 

তবে কোন উপায়ে এই দ্বিবিধ শিল্পের সংজ্ঞার্থ নির্ণয় করা হাইবে? 
আমাদের মনে হয় যে, যে কারণে আধুনিক মানুষ, বন্তরশিল্পকে বর্জন 
করিয়া কুটার শিল্পের পক্ষপাতী হইতে চাহিতেছে তাহাতে কুটীর শিল্পের 
নুতনতম সংজ্ঞার্থ হওয়া! আবশ্তক। এই নংজার্থ এইরূপ বে, যে শিল্পে 
বছ শ্রমিক ও বছ অর্থ নিয়োজিত নহে এবং বহু দ্রব্য যন্ত্রবলে প্রত 
হইতেছে না৷ তাহাই কুটার শিল্প। এইরপ ভ্রবা বে শিক্গীর স্বকীয় 
দক্ষত| ও নৈপুণ্যের উপরই অনেকখানি নির্ভর করিবে তাহা! স্পটই দেখ 
যাইতেছে। সুতরাং এই সব বস্ত ক্রেতাসাধারণের পণ্য হইবার যোগত| 
অর্জন নাও করিতে পারে। উহ! পটুয়। বা শিল্পীর রচন! হইলে, 
(85 27) ৮০1৮ ০1811) অপেক্ষাকৃত কম ক্রেতার পণ্য হইবে মাজ। 
উহা দ্বার! ব্যক্তিগত ভাবে বা বিশেষ বিশেষ ব্যক্তির গ্রাসাচ্ছাদন চলিতে 
পারে বটে, কিন্তু ব্যবসায় হিসাবে স্উহার প্রচলন প্রবল প্রতিযোগিতার 
মুখে অতীব কঠিন। ছুই চারিজনের পরিবারের যেমন তেমন 
করিয়া চলিয়া! যায়। কিন্তু বৃহৎ যজ্ে লাগে বৃহৎ ব্যবসথ! 
(07£5101521101)) | ঠিক তেমনি অল্প পরিমর বিচ্ছিয স্থানে ( যেষন 
মত্যতার জাদিযুগে ছিল) কুটার শিল্পই প্রয়োজনীয় দ্রব্য যোগাইতে 
পারে, কিন্তু বিচ্ছিন্ন অংশগুলি সংযুক্ত হইয়! ভারতের স্তায় বৃহৎ দেশে: 
পরিণত হইলে অপেক্ষাকৃত, বড় ব্যবসায়িক ব্যবস্থাই (0188111890৩) ) 
যে প্রয়োজন তাহাতে আয় সংশয় কি 


ওটি 


বটি 
৮ ্া ০ স্ব্হ্ ০ 


আসি _. ৪ ৃ্‌ 
সুপনর আলোচনা লইয়! আমরা অগ্রযর হইয়া আসিয়াছি তাহার 


একাংশের সমস্যা এই যে, যস্ত্রকে যদি মানুষের মঙ্গলের জন্য গ্রয়োশ 
করিতে না পারা যায় তবে কি যন্ত্পূর্বধুগে ফিরিয়! যাওয়া সম্ভব? 
সাধারণ চবন যাপনের (11011) 11108700101) ঠাযআতাগিঘ) 
গুণ[বলীঞ বর্ণন! করিয়া একটা আলোচনা, লেখা ও অনুশীলন একদা 
এই জগতে প্রচলিত ছিল । দে আলোচনা এখন কচিৎ দেখিতে পাওয়। 
যায়। ভেঈশিশু যেমন খেলার নূতন পুতুল ভাঙিয়! তখনি আবার 
নুতনতর পুতুল "থজে, তেমনি করিয়া! প্রকৃতির বড় শিশু এই মানুব 
নৃতনতর খেলার সামগ্রীতে এখন মন সমর্পণ করিয়।ছে। এই খেলা 
অনুসরণ করিয়াই মানুষ যন্তরপূর্ধযুগ হইতে যন্ত্রগে আঙিয়াছে। 
আবার এই খেল! অনুনরণ করিয়াই মানুষ আধুনিক য্ত্র্গকে পশ্চাতে 
'ফেলিয়া যাইবে। 
উল্লিখিত কল্পনাবিলামী বাকা ছাড়িয়া দিয়া উহাকে বাস্তব ক্ষেত্রে 
প্রয়োগ করিয়। দেখা যাক্‌। যন্ত্রসভ্যতার মাপকাঠিতে ভারত পশ্চাতে 
এবং যুদ্ধরত দেশগুলি উহাতে অগ্রবন্তী। যুদ্ধশেষে ইহ।র! যন্ত্র লইয়া! কি 
করিবেন, পরিত্যাগ করিবেন-_কিম্বা অধিকতর যত্ব করিবেন ভবিষ্যত 
তাহা নির্ণয় করিবে। তাহাদের মত আমরা যন্ত্রের শিক্ষা বা শাসন 
ততখানি মনে প্রাণে গ্রহণ করিতে পারিব না। তবু আমর! কি যুদ্ধরত 
দেশগুলির অনুসরণ করিব? ইচ্ছ! করিলেও সর্বতোভাবে তাহাদের 
জনুগরশ আমরা করিতে পারিব না| সুতরাং এই প্রশ্ন অমীমাংসিত 
রহিলে ক্ষতি নাই। 
কিন্ত সমগ্র ভারতবর্ষের প্রায় সমগ্র যুবক সম্প্রদায়ের বৃত্তিহীনত। 
দ্বারণ ক্ষতি ও জনহনীয় অপচয়। পৃথিবীর অন্যান্য যন্ত্রশি্গী ও জাতির 
সহিত সম্পর্কযুক্ত এই ভারতে যন্ত্রশিল্প ভিন্ন অন্ত কোন কার্য কি এত 
'অধিক সংখ্যক ভারতবাসীকে বৃৰি প্রদান করিতে পারে? গ্রাসাচ্ছাদনের 
অভাব, ততৎকলে সমাজ বন্ধনের শিখিলত| এবং অফুরস্ত অবসরের 
ছুশ্চেষ্টতা সমগ্র জাতির সর্বনাশ সাধন করিতেছে । কন্দমীর দেহ, মন ও 
“অনুভূতি অন্তুছিত হইয়া অতি ধীরে, গোপনে ভারতবাসীর কর্ণাশন্ডি ও 
চরিত্র তমা আচ্ছন্ন হইতেছে। নান! প্রশ্ন ও বিচিত্র সমস্তায় আমাদের চিত্ত 
বিক্ষিপ্ত, মন উদ্ভ্রান্ত এবং দৃষ্টি যেন আচ্ছন্ন না হয়। আমর আমাদের 


০ ০ 








ভ্ঞান্লভন্ব্ 





[ ২৮শ বর্ধ---২য় খণ্ড---১ম সংখ্যা 





ম্যাপস 


দুর্দশা 'খুচাইব। এজম্য বিদেশের স্বার্থে স্থার্থাতিত রাজশক্তির 
প্রজর বর্জিত স্বাধীনতাই যে'আমাদের অত্যাবশ্যক তাহ! যেন আমরা 
বিস্বত না হই। 

বস্তুত যন্ত্র শিল্প্নবোর প্রতি আমাদের বিরূপতা নহে । আমাঙ্ের 
বিরূপত। যন্ত্রশিল্পীদের ক্রমবর্দামান অর্থলোভের বিকদ্ধে। ' এই 'লোভ 
শিল্পঙ্রব্যের বিনিময়ে বন্তরশি্পহীন দেশগুলির ধন, কর্ধশ্তি ও চারিত্রিক 
বল হরণ করিয়! লয় এবং দৃষ্টি অন্যত্র ধিক্ষিণ্-করিয়! দেয়। সুতরাং যে 
সকল দেশে যন্ত্রশিল্প প্রপার লাভ করে নাই এবং বিদেশীর লোলুপতা 
রোধ করিতে অনমর্থ সে নকল দেশ পরোক্ষে মানব সত্যতার অনিষ্টই 
করিতেছে। 





“অত্যাচার যে করে আর অত্যাচার যে সহে, 
তব ঘ্বণা তারে যেন তৃণসম দহে ॥” 


এই যুক্তি ভারতবর্ষ সম্বন্ধে প্রয়োগ করিলে ইহাই প্রতিষ্ঠাত হয় যে 
এদেশে যন্ত্শিল্পের প্রসার অচিরে আবগ্াক এবং তজ্জগ্য অতিপ্রয়োজনীয় 
রাজশক্তির রশ্মি আমাদিগকে অতি সত্বর শ্বহন্তে গ্রহণ করিতে হইবে। 

সকল দিক হইতে বিচার করির়| ক্ষমতাশীল প্রত্যেক ভারতবাসীর 
নিকট উপরোক্ত যুক্তি প্রতিভাত হইলে এবং আত্মন্বার্থ, দলের স্থার্থ ও 
মতবাদের স্বার্থ সমুদয় বিসর্জন দিয়! সকলে সম্মিলিত হইলে জনচেতনার 
দৃঢ়তায় শৃঙ্খল মোচিত হইবে। অন্যথ| দেশের নিরম্ভগণ তমসাবৃত 
দৃষ্টিতে দেখিয়া! এমন সকল আইন ও ব্যবস্থ! রচনায়ই সমর, বুদ্ধি, অর্থ 
ও উৎসাহ ব্য করিবেন যন্ার! বিদেশী যৃ্শিল্লীর লোলুপ স্বার্থ কিছুমাত্র 
ম্পশিত না হয়। 

বস্তত স্পঃই দেখ! যাইতেছে যে এদেশের বিদেশী শাসকগণ এমন 
সকল রকম আইন গ্রহণ করিতেই প্রস্তুত যাহা তাহাদের স্বার্থকে স্পর্শ 
করে না। এই ভাবে আমাদের দেশের লোকের চিত্ত বিক্ষিপ্ত ও 
শ্রেণাত বৈষম্য হই হওয়তে যে আত্মবিরোধ উৎপন্ন হইতেছে তাহ! 
আমাদের জাতীয় জীবনের তখা মানব সত্যতার অন্তরায়। বাহিক 
মনোহত্-দর্শন এই মুখোস খুলিয়া! আমর। সকলে সভ্যতার এই মগ 


, বীভৎ্সত। যেল চিনিতে পারি। 


স্ 
টি 
পুন 





অগোচর 


( গান) 
শ্রীপ্রভাতসমীর রায় 


চোখে তোমার পাই না দেখা, . 
ঘুমিয়ে থাকে! বুকের তলে । 

দিই না সাড়া তোমার ডাঁকে 
শুনি তবু পলে পলে। 


ভোরের আলোয় তোমার ছবি 
নিত্য আকে অরুণ রবি, 
বেলা-শেষে জাঁগে বনে 
সবুজ শোভা ফুলে ফলে 
দিই না সাড়া তোমার ডাকে 
শুনি তবু পলে পলে। 


দিন ফুরালে ধূসর সীঝে 
তোমার প্রেমের বাশি বাঁজে 
হাসির মাঝে পাই না তোমায় 
পাব বুঝি চোখের জলে! 


৬ 
চি £ 
৮. ্ ৪ 
? রঙ £ পর 

রা মা 

রর ১ ১- 

এরা! : ৩. 

ফিট ও লা ৪ 

8০৭ ৭87 % ১3 চি ্ মা, . 
ন্‌ এ, নু এ 
খন দস ্ ন্‌ টম 
$ পি. তই মাছি 1 
রঃ । পি তে 3 ১ ক ৮৮৮ পর 
সি রর রি কী, রা রা 
€ রর 
১৬ 4টি! . এ. রব উীী স্টপ 
্ রন ) লা রা পটে রগ ১ 

এ £ি ক »* ববিপ্রীি..১.. পর 

ঈ ঢা 

খ ॥ বৃ ৮ রি 

্ ৩ শারদ 7৭ প্র ৪ ৮ 

১5 


8 ১.০) 
ধা 


টা & 
চস ১১০ 7 


১ সই, রি সদ রে নি টি 
0৮১-স্ণি এ 
নে চি চি 


্ 
রে 
॥/ তি 


ু 


অন্তঃশীল। 


( গান”) 


জি 


অস্ক আমার গোপন গতির. 
নদীর নীরব লীলায় চলে। 
নয়ন শাখের ফুল ঝরে মোর 
একলা মায়ের পায়ে হলে : 
ব্যথার ৬০ 
রতন হ'ল আখি যখন 
বিন্দু বিদ্বু দলিলে তার 
তখন অমল মুক্তা ফলে 
সেই মুকুতাঁর মালায় মায়ের 
অর্থ সাজাই পলে পলে 


কাঁদন আমার মায়ের কোলের 
বাধনহ্ পেয়ে 
স্থদূর সান আভা 
পাঁখির মতন উঠল গেয়ে । 
কাল-ভোল মোর কান্নাধারায় 
দিন-রজনী কখন হারায় 


ুর্ঘ তাঁরা কথন ওঠে 
কথন যেঞ্জায় অন্তাচলে ! 


৪১ 


চল" “অহ স্রাব ৮” সদ বা “্্ট __স্্রা ব্স্- -স্হা ব- স্চ 


নু ভ্াল্পভন্বর্শী [ ২৮শ বর্ধ-_২য় খণ্ড--১ম সংখ্যা ' 


বট? ৮ 








স্ব বা” “ব্রা? খ্র - "স্চ ব্ প্র আ  স্পইীদ 


] "স্তর ও স্বরলিপি £ ৰ ্রীদিলীপকুমার রায়, 


রণ 


7 একতালা .. 


০ ১ এ ৪ ১ 
[] রা(নরামা|পাসনাসা] দ্দা'দাপা|দা পদাক্ষপা| মগাপমা পা] গ্দা "পা 
চোখে - তোমা র পা ই না দে থা - ঘুমিয়ে থা - কো 
ঘমূ- শর আমা র,." গখ্বোপন গতির নদীর নী র বৰ 


 . 


৫.) 


+ € ১২২ ৩ ॥ 
ন্ধা গা মা] গথা গা সা]সান্যর্সা| থা ধাণা|সা রা গা] মা পদাক্গপা 
বু কের তত - লে দিই- না সা - ড়া তোমার ডাকে - 

লী লা য় চু - লে নয় ন শা - খের ফু ল ঝ রে যা ঘন 

পাসণাদদা] পা মা মসা | থা ণধা ণা| দা পা সা ]] 

গু নি - তত বু - প লে - প লে - 

এ ক লা মা য়ে র পায়ের তত লে - 

মমা -- | 7 মগ! মা |পপা--া। - পন্গা পা | ণা "শা ণা |] "শা দপা দা 
ভোরে - - র আ লোয় তোমা- - রছ বি নি - ত্য আ কে 
প্যথা - -.. ক সিন্‌ ধু তলে - - - ম গন বু তত ন হো লো 


পম! পা ক্গপা | দ্ষপা মগা মা | মা ধাঁ-। | মধা পর সা! ধা সণাসণ। | দপা গদা পদ] | 
শা রু ণণ্‌ - র বি বেলা - শে - যে জা - গে ব নে - 
আখি - - য খন বি ন্ছু বিন এ ছু স লি - লে তা র 


পম! পা হ্গপা | গমা পণ! দা | সণ দপা মপা | ণদা পম গমা | গমা পদা পা | পদা ণসা ৭1! 
স বু জ শো- ভা ফু - লে ফ - লে দিই - না সা - ড়া 
তত খন অ - মল মুকু - সা ফ - লে সেই - মু কু - তার 


র? সণ ধণ। | ৭ ণদা পম! | গা পমা পম | মা "দা পদা | পা মগা মগ | মা গা গস | 


তো না *্র ডা কে - শু নি - ত বু. - প্র. হেত হি এ-ও 
দালা ত্য মায়ের অ যু ঘ সা ভাই প লে - প লে - 
এটি নি 

পা দাংগাশাপাণাণা] পাস | খাসা [জ্ঞারা 71 সণা ধাপা। 
দি ন ফু রা - লে ধুসর সী ঝে-': তোমা র প্রে - মের 
কা ল ভো লা নদের কান্না ধা রায় দিন র জজ - নী 
পার্ট তত ৯ রর পর রে 

র'স৭7.| ণদাপাদা|মাধা শা] ণা 7, সঁ |] রণ 1 ণা। দা "1 পাঁ। 
রর ক 

বাশি - ঝু২- (্ হাদি র মা -ধর্বে পাই না তো - মম 
বি. গু রয় তা? রা কথ ন ' ও - ঠ, 


পৌষ-_১৩৪৭ ] 


০ 





দা] পাশামা | পা গা মা 
1 বু - ঝি চো থে র 4 
কখন যে - যায় অ স্‌ তা। চ 






সা - ড়া 


- লে 
- লে আ  - 


দিই - ন| 
মার 


রণ সণা ধণা | সণ পদ পমা | গা পমা পমা | মা খ্দা খদা | পা গগা মগী | মা গা *সা ] 


তোমা ত*র ডাকে - শু নি - 
ম বর ০1 ডু বা ই আ মা র 
দা পা এ] | মগা 1 মা | সাগর! 

কাদ ন আ - মার মা য়ে - 


ধা দধা দধা | ণধপা মগা মা | মা ধা 


প র '* ০০শা পে য়ে স্ব রূ র 


রে 


-প পামগামা |জ্ঞা রাজ্ঞা | সাণা ণা | 


1 থি রর ম - তন উঠ ল 


গা | শাপামা | মা ধা 


| ণারণসা | ণা ধা সণ | দা 


তত. তু ই 
চো থে র 


টির ২ ই 72. “টি 
গ ভী র জ -:লে 


57 
দধা | দধণা াপা | 


র কোলের বা ধ - ০৩ন ভা বা 


পাঁ দম! | 


নী- লে মিলি য়ে যা ও য়! 
পদ| ণদা পা | 
গে” য়ে 1 


১১১১১১১১১১১ ১ 


শ্রীমান প্রভাত সমীরের গানটিতে ভৈরবী জৌনপুরি ও বাণেশ্ীর তান।দি লাগানে। চলবে ভাবের সঙ্গে মিলিয়ে। কবি নিশিকান্ত এ গানটির 
হর নে একটি গান বাধেন সেট'ও দেওয়া হ'ল--এ হরেই গাওয়া! চলবে, কেবল মাঝে চাঁরটি নতুন চরণ জুড়ে দিয়েছেন তিনি তার, স্বরলিপি শেষে 


দেওয়া হ'ল আলাদ| ক'রে । ইতি শ্লীদিলীপকুমার রায়। 


ভূলের জীবন 


কবিশেখর প্রীকালিদাস রায় 


কাজ নেই আজ হাতে 
অবসর পেয়ে স্বতিগুলি জাগে মানসের আখিপাতে । 
আজি সন্ধ্যায় বসে কসে ভাবি গত জীবনের কথা, 
যতদুর আখি যাঁয় তত,দেখি বার্তা, ব্যর্থতা ! 
ভুলে ভুলে সাঁর। জীবন শাহাঁরা ক'রে ওঠে হাহাকার, 
ফুলে ফুলে ওঠে উষ্ণ বাতাসে বুকখানি বারবার । 
শৈশবে ভুল করিয় ভূগেছি যৌবনে অভিশাপ, 
অলকার তুলে রাঁমগিরিশিরে করিয়াছি অন্ুতাঁপ। 
যৌবনে পুন ঘুরিয়! মরেছি নৃতন নৃতন ভুলে, 
তরে গেল শির ভুল ঘোরে মোর ভোলার ধুতুরা ফুলে। 
এমমি করিয়া কাঁটিয়। যাঁইল আয়ুর অদ্দশত, 
আজি ভোলানাথে গুধাই কেবল এ ভূল করিব কত? 
ভুলে ভুলে ঠেকে ঠেকে; 
শুনি লোকে কয়, সাবধান হয় কতই না হি শেখে। 


কোন্‌ অভিশাপ শিরে ধরি পাপ জনম লভেছি আমি, 

ত্রমের ভূধর হইতে চেতনা-ধারাঁটি এলো না নামি? | 

একতুল হ'তে জনমে হাঁজার রক্তবীজের মত; 

বত বাড়ে কাঁজ, তত পাই লাঁজ, ভূল বেড়ে যায় তত। 
আজি সন্ধ্যায় বসি, 

ভাঁবি এ জীবনে তলের কাঁরণেঃ মার কেহ নয় দোষী । 

ভুল ধারণায় অভ্যাস বশে মিছে দূষি বিধাতীয়। 


আপনারে আজি গা | 
আজি ভাবি হায় ভুল ক'রে মি বন্বশদয়াছি দোষ; 
কাঁরো”পরে আজ নাই অভিযোগ; কারে প্রতি নাই রোষ। 


সবার নিকটে আজি এ জীবন বার বার ক্ষমা চাঁয়, 
ধিক্রৃত প্রাণ ধুলায় লুটায় আজি এই সন্ধ্যায় |... 
শত ব্যথ তাঁপ সকল দম্ভ এ শিরে আসুক নামি । 
সকলি সহিব, নহি বিধাতার ক্ষম্ঠর পাত্র আমি 


শজি সগ্ধ্যায় ভাঁবি 


টিটি 


ছি নে্ই্ক ক রেহাই পাওয়ার দা, 


স্বাধীন বৈষ্ণবরাজ্য মণিপুর 


্রীনিত্যনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় 


ভেতরের যাযাবর চঞ্চল হোয়ে উঠল।, কর্ণমুখর সহরে 
আবহাঁ*ম তার শ্বাসরৌধের উপক্রম * হোয়েছিল, তাই 
সাতার [খন ছি'ড়ে প্রকৃতির শ্যামল কোলে কিছুদিন 
ও জন্ত সে অস্থির হোয়ে উঠেছিল। কিন্ত সভ্য 
কর্মী তার লভি-লোঁকসানের খাতা সামনে ফেলে পথরোঁধ 
কোরে দাড়াল। শেষে রফা হোল লম্বা নয়-- ছোট্র ছুটা। 

বন্ধু একদিন ঠাট্টা কোরে বোলেছিল «11117815785 
17 2170 20055 ত লিখেছ, কিন্তু মণিপুর গেছ ?” 

লজ্জার সঙ্গে স্বীকার কোরেছিলুম “না” 

“কেন আসামের পর্বত মাল! কি হিমালয়ের সামিল নয় ? 
মণিপুরের এত নাম শোনা যায়, এ নাকি দ্বিতীয় কাশ্মীর ; 
এখানে যাও নি, আর হিমালয় ভ্রমণের দস্ত” | খোঁচাটা মনে 
বিধেছিল। তাছাড়া সম্প্রতি নানাভাবে মণিপুরের নিপুণ 
নৃত্যকলা ও সংস্কাতির যে সব আলোচনা চোঁলেছেঃ তাতে 
প্রথমেই মন মণিপুরের দিকে আকুষ্ট হ'ল। 

মণিপুর রোড রেল স্টেশন থেকে ১৩৩২ মাইল পাহাড় 
ভেঙ্গে বাসে মণিপুরের রাঁজধানী ইন্ফাল পৌছুতে হয়। 
কোলকাতা থেকে ই. বি. আর-এর পাঞ্ড স্টেশন হোয়ে 
মণিপুর রোড পৌছন যায় আবার এ. বি. আর-এর 
আধাউিরা স্টেশন থেকে লামভিং পর্যন্ত যে পার্বত্য রেলপথ 
গিয়েছে সেখান দিয়েও যাওয়া যায়। এই পার্বত্য পথের 
প্রাক্কতিক সৌন্দর্য সুন্দর বোলে এই পথটাই 'বেছে নিলাম । 
আমি ও বন্ধু বেণু জুলাই (১৯৪০ ) মাসে যাত্র! কোরলাম। 


বারা পথ না ছেঁটে স্মারামে পার্বত্য দৃশ্য উপভোগ. 


'কোরতে চান তাদিগকে./এই প্রেলপথটুকু বেড়াতে অনুরোধ 
করি। চ্্রনর্ণিুর্ন থেকে লাংটিং পধ্যস্ত সুদীর্ঘ ৭৮ মাইল 
রেলপথ পাহাড়ের বেড়াজালের মধ্যে একে বেঁকে সপিল 
গতিতে চোলেছে_-কথনও পাহাড় ভেদ কোরে, কখনও 
পাড়ের কোলে কোর্পে, কোথায় খরস্োতস্থিনীর বুকের 
4 ওপর দিয়ে। দুধারে নিবিড় জঙ্গল, বর্ষায় তার ভেতরে 
সত্যিই রৌদ্র মাথা গলাতে 4*রে না] সুচীভেস্ক অন্ধকার । 


৪8৪ 


কোথাও ছুধারে খাঁড়া পাহাড় উচু হোয়ে দাড়িয়ে, মনে হয়, 
হয়ত এখুনি হুড়মুড় কোরে গাঁড়ীথানা পিষে ফেলবে। 
এই দীর্ঘ পথের দুধারের ঘন জঙ্গল শ্বাপদসন্কুল। বাঁঘের 
সংখ্যা এখানে বেশ; তবে আসামের জঙ্গলের বাঁঘ মাঁচ্ষ- 
থেকো নয়, কিন্তু সুবিধামত পেলে বৈরাগ্য নেই। 
জঙ্গলে সব চেয়ে ভয়ের জিনিষ হাতী। কয়েক বৎসর 
পূর্বেও দলবদ্ধ হাঁতী লাইনের ওপর ফড়িয়ে ট্রেণের 
গতিরোধ কোরেছে, মাঝে মাঝে স্টেশনের ঘরবাড়ী ভেঙ্গে 
দিয়েছে, ট্রেণের পেছনের লাল আলো শু'ড় দ্রিয়ে ছ/ডিয়ে 
নিয়েছে । ভাতীর উৎপাতের জন্যই এদিকে লাইনের 
পাশের দূরত্বজ্ঞাপক চিহুগুলির গাঁয়ে লোহার কাটা দেওয়া. 
যাতে শু দিয়ে সহজে না তুলে ফেলতে পারে। এই সব 
জঙ্গলের মাঁঝে মাঝে পাহাড়ের গাঁয়ে নাঁগা"দের বস্তী। এরা 
স্টেশন বা নীচের বাঁজার থেকে দ্লবদ্ধভাঁবে নিজেদের গ্রামে 
যাওয়। আসা করে, আত্মরক্ষার জন্য ধারাল অন্্ কাছে 
রাখে আর পধ্যারক্রমে “ম ভম” কোরে একরকম শব 
কোরতে কোরতে চলে, যাতে বাঘও ওদের কাছে ঘেঁষতে 
সাহস করে না; ওরাও বাঘকে বিশেষ গ্রাহা করে না। 
কিন্ত পাাড়ী সরু রাত্তার সামনে হাতী দীড়ালেই এরা 
প্রমাদ গণে। নিজেদের দল বা হাতীয়ার সবই হাতীর 
কাছে অকেজো, এরা তখন হাটু গেড়ে করজোড়ে হাতীরূপী 
গণেশ দেবতাকে শ্তবস্তরতি করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এতে 
হাতী নাকি পথ ছেড়ে দেয়, কারণ হাত্তী স্ততি বা গালাগাল 
অতি সহজে বুঝতে পারে। গুণ্ডা হাতীগুলো অবস্ঠ 
গুগ্ডামীই ভাল বোঝে । মাঝখানে সর্ধাঙ্গ কালো এক 
রকমের হনুমান দেখলাম। কয়েকটা জায়গায় লাইন এমন 
এঁকে বেঁকে গেছে যে; যে স্টেশন পাহাড়ের ওপরে বা নীচে 
পেছনে ফেলে এল, আবার ঘুরে সেখানেই এসে গাড়ী 
দাড়াল। এত সপিলগতিতে রেলপথ. এই দুর্গম 
পর্বতশ্রেণী অতিক্রম কোরেছে যে অধিকাংশ জায়গাতেই 
গাড়ীর £ঠছিনে বোসলে .বাঁকের পারে সামনের: ইঞ্জিন 


এই 


শু 


লবান্ীনন £ 


দেখা যায় না। ভারতের পশ্চিম প্রান্তের পাহাঁড়ের সঙ্গে পূর্বব 
প্রীস্তের এই পাহাড়গুলির বিচিত্র বৈষম্য। পশ্চ্টির 
পাহাঁড়গুলি তাদের কোলের অধিবাসীদের মতই নিক্ষরুণ, 
রক্মঃ রসলেশহীন, উন্নতবপু, আর পূর্বের পাহাড়গুলি 
লোকগুলির মতই সরস; অপেক্ষাকৃত খর্ব, এদের তরুলতার 
আচ্ছাদনে যেন সংসারের মায়! জড়ান, জীবজন্কর আশ্রয়স্থল, 
অতিথিবৎফল। 

সারাদিন রাত্রি ট্রেণে বনজঙ্গল পাহাড়পর্বতের মাঁঝ 
দিয়ে ৩৭টা সুড়ঙ্গ ফুঁড়ে হাপাতে হাঁপাতে পরদিন বেলা 
প্রায় ১১॥০টায় গাঁড়ী লাঁমডিং জংসনে পৌছল। এই 
সুড়জগ্ডলির মধ্যে সর্বাপেক্ষা লম্বা স্ুড়ঙ্গটার (২২ নম্বর) 
উর্ধ্য ১৯০০ ফিট। লামডিং থেকে গাড়ী বল কোরে 
বেলা-/প্রায় তিনটের সময় মণিপুর রোড পৌছলাম। 


পৌধ--১৩৪৭ ] 


-স্টেশনটার নাম মণিপুর রোড, কিন্ত আসলে জায়গাটার 
-ল্মাম্‌ ডিমাপুর। এটা একটা ছোট বাবসাকেন্্র। বখন 


মণিপুর থেকে চাল, লঙ্কা প্রভৃতি রপ্তানী হয় তখন জ্াররগাটা 
একটু কর্মচঞ্চল ভোষে ওঠে, এখন যেন নিজীব। কয়েকটা 
দোকান আছে, অধিকাংশই মা]ড়োয়রীর ; মাত্র দুএকটা 
ছোট্ট বাঙ্গালীর দৌকান আছে। মাঁড়োয়াঁরী ও মণিপুরী 
হোটেল আছে, তবে তা খুব উচু ধরণের নয়। এখাঁনে 
ডাক্তারথানা, থাঁনা, পোষ্ট ও টেলিগ্রাফ অফিস, ডাকবাংলা 
আছে; স্টেশনে কেলনারের একটী অচল ষ্টল আছে। 
আঁমর! ডাঁকবাংলায় উঠলাম । দক্ষিণ] বেশ-_মাঁথ। পিড় 
চব্বিশ ঘণ্টায় দেড় টাঁকা» (বিবাহিত যুগলের জন্য একজনেরই 
ভাঁড়া দিতে হয়ঃ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে বেরসিক নন 1); ছাপা 
ফদ্দমত এক পেয়ালা চায়ের “দাম চার আনা। একজনের 
একদিনের থাকা খাওয়া অন্ততঃ পাঁচ টাকা। তবে থাকা 
ও খাঁওয়া ছুয়েরই বন্দোবস্ত চমৎকাঁর। বিছানা মশারী 
ডাকবংলা থেকে দেবার ব্যবস্থা আছে। ডিমাঁপুরের স্বাস্থ্য 
মোটেই ভাল নয়, খুব ম্যালেরিয়া-- মশীগুলি সংখ্যাতে 
যেমন, অভদ্রও তেমনি | এদের উৎপাতে সন্ধ্যার পর বাইরে 
বৌসে থাকা দুর । এখানেই থানার গিয়ে পূর্বে 
পলিটিক্যাল এজেন্টের ছাড় নেওয়া থাঁকলে সেটা পাণ্টে 
একট! ছাড়পত্র নিতে হয়, আর থারা পূর্বব থেকো ছাড়পত্র 
জোগাড় /কিরেন নাই, তাঁদিগকে এখানে জামির 


হ্য়। “উত্তরের খরচ দিয়ে তার কোরলে চব্বিশ ঞ্কটায় 


জক্য সপিপুুক্ল ৪৫ 


পত্র আঙে। পূর্ধে মঞ্গিগুর থেকে এঁখানে দৈনিক 
৭০ থেকে ১** খাঁনা ভ্বীল-বোঝাই লরি মাল নিয়ে রোজ 
যাওয়া আসা কোরত। এখন ৭।৮ খানি মাত্র ₹আসেঃ 
তাও সব সময় মাল পায় নাঁ। 

ডিমাপুরের থানাধ মাথা পিছু আট আনা হিসেবে দিয়ে 
পাশপোট নিলাম । , এই আট আনা বুটিশ সনের 
প্রাপ্য । মণিপুর যাবার বাসভাড়া বাধাধরু!,4+ট্‌ নেই, 
একট।কা থেকে আড়াই টাকা ( কখনও ৫1৬২ টাকা) 
যার কাছে যেমন পারে নেয়। ফেরার ভাড়া প্রায় 
অর্ধেক, কাঁরণ মাল নেবার জন্যে বাঁসকে ডিমাপুর আসতেই 
হয়) কাঁজেই 'যা যাত্রী পাওয়া যায় তাই লাভ। 
মাইল পাহাড়ী পথের পক্ষে এই ভাড়া বেশ কম। 

সকাল ৭॥০টাঁয় বাস ছণড়ল। দুধারে বেশ ঘন জর্গল। 
মাঝে মাঝে রাস্তার ধারে ও ঁপিরে বাঘ দেখা যাঁয় 


১৩৩২ 








ইশাগলের প্রধান উচ্চ ইংরাজি বিস্তালয় 


ড্রাইভার গল্প কোরলে। জঙ্গলের ভেতরে বাঘ, হাতী, 
বন্যবরাঙ বন্যকুকুর প্রভৃতি যথেষ্ট আছে। কয়েক বৎসর 
আগে এরই কাছাকাছি হাতীর খেদ! করা হোয়েছিল। 
৯ মাইল সোজা সমতল পথ এসে নীচু গারোদ নামে 
একজাঁয়গায় বাস দ্রীড়ায়। এখানে পাঁশপোর্ট ও মালপত্র 
পরীক্ষা করে। মালপত্র তরী মং পিছ কর আদায়ের 
জন্য, অন্য উদ্দেশ্তে নয়। এর পর থেকেইনপীহাড়ী রাস্তা 
সথুরু। রাস্তা ক্রমাগত একে বেঁকে পাহাড়ের বেড়াজালে 
মাথা গলিয়েছে। এদ্িকের পাহাড় জঙ্গলাকীর্ণ, কাজেই 
পাহাড়, জঙ্গল, নদী ঝর্ণা, প্রকৃতির সমন্ত শ্বধ্যই প্রায় একট 
সম্িবেশিত। কাশ্মীরের পথেও এমসি লক! পাী সোটরে 
পাড়ি দিতে হয়, কিন্তুক! পথের চেয়েও এ রাস্তা 
আরও সপিল গহ্যামল/?তীহি্ন্দর । এক ফার্ম: রাহণও 


৪৬ 


কোথাও সোজ! চোখে পঞ্ঠে না। পাহাড়ের ধারে চাষ্রে”" 


ক্ষেত বা গ্রাম কদাচিৎ চোখে পড়ে/ পথে দুএকটা বড় গ্রাম 
পেরিয়ে ৪৬ মাইল এসে নাগা পর্বত অঞ্চলের হেডকোয়াটার্স 
“কোর্িমা'্য পৌছলাম, সকাল থকেই টিপ, টিপ কোরে 
বৃষ্টি পোড়ছিল। “কোহিমা”তে আমাদের গায়ের ওপর 
দিতে, পের তলা দিয়ে মেঘ তেলে" বেড়াতে লাগল। এর 
চারপা১, -গ্রাম জঙ্গল মেঘের আবরণে ঢাকা ছিল, এমন 
কি-সধ্যদৈ৭ও পর্দানশীন হোয়ে উঠেছিলেন। কোহিমার 
উচ্চতা প্রায় পাঁচ হাজার ফিট। এখানে থাকতে গেলে 
পথক পাশ নিতে হয়, অথবা এখানে ভি. সির কাছে 
গিয়ে অনুমতি আনতে হয়; তাঁও শুনলাম তিন দিনের বেশী 
পাওয়া যাঁয় না । এটী একটা সামরিক ঘণ1টী, তাই এই কড়া- 
কড়ি। এখানকার ডাঁকবাংল! বেশ সুন্দর | প্রত্যেক পাহাড়ী 
জাতির মত ( কাশ্মীরী ছাড়া) নাগাদের গড়ন বেঁটে চোখ 





মহারাজার প্রেস গৃহ 


ফুলো ফুলো, নাঁক থ্যাঁবড়া, রং অপেক্ষাকৃত ফস, বলিষ্ঠ 
দেহ' পোষাক পরিচ্ছদ? দারিদ্রাহেতু স্বল্প ও নোংরা । বাঁস 
এখানে কিছুক্ষণ জিরিয়ে আবার চোল্লো। পথ যে 
ক্রমাগত উড হোয়েই $চোলেছে তা গাড়ীর এঞ্জিনের 
গোডানীতেই বোঝা বঠিছিলখণ 

পথের রধস্থাঁরে উচু পাহাড়, অন্য ধারে গভীর খাদ) 
কিন্তু চলমান ঘন মেঘের জন্য খাদের দিকটা অনন্ত শূন্য 
বোলে মনে হোচ্ছিল। কয়েকটী বড় গ্রাম পেরিয়ে আরঙ 
€- মাইল এসে মাও; পৌছলাম। এখান থেকেই মণিপুর 
রাড সীমানা । পাহাড়ী শকাবাকা রাস্তায় দুর্দিক থেকে 
গাড়ী যাওয়া আসা করা)বিপজ্জনবুঁ+ এজন্য ছুদিকের গাড়ী 
মধ্যস্থল্‌/পণওতে এসে দাড়া ি গাড়ী তি আগেই এসে 


ভ্ঞান্সস্কনশ্য 


[ ২৮শ বর্--২য় খণ্ড--১ম সংখ্যা 


''্বাকুক” এখানকার ফটকের সামনে এসে সবার গতিরোধ 


হত্তে। ১২॥০টাঁয় ফটক খোল! হয়ঃ তখন যে যাঁর গন্তব্য 
পথে যায়, কিন্তু ১২০টার পর নীছু গারোদ থেকে কোন 
গাড়ীকে আর মণিপুর মুখে আসতে দেবে না, কিন্ব! মণিপুর 
থেকেও কোন গাড়ীকে 'মাও' আসতে দেবে না। মোওঃ 
একটা বড় পাহাড়ী গ্রাম, ডাকবাংলা, পোষ্ট ও টেলিগ্রাফ 
অফিস আছে। একটা মণিপুরী ও নেপালী হোটেল 
আছে; খাওয়৷ দাওয়া বিশেষ ভাল নয়। এখান থেকেই 
মণিপুরী মেয়ে পুরুষ চোখে পোঁড়তে লাগল । “মাও'এর 
উচ্চত| ৫৭১২৬ ফিট, এ পথের সর্ব্বোচ্চ জায়গা । ডিমাঁপুর 
থেকে এর দূরত্ব ৬৬ মাইল, আর এখান থেকে ইন্ফাল 
৬৭২ মাইল, কাঁজেই এট! ঠিক মধ্যস্থল। আমাদের পাঁশপো্ট 
এখাঁনে একবার পরীক্ষিত হোল । এখানে একজন. মণিপুরী 
একটা টেবিলের ওপর কয়েকটা কাঁচের ও পেতলের গেল।॥। 
সাজিয়ে চায়ের দোকান কোরেছিল, আমরা তাঁর টেবিলের 
ধারে গিয়ে চা চাইতেই, সে হাত নেড়ে অঙ্গভঙ্গী কোরে 
“ফাদরে ফাদরে” কোরে উঠল । তাঁর খিচুনী দেখে আমরা 
সতয়ে সরে এলাম । পরে দেখলাম তার টেবিলের তিনধারে 
মাঁটীর ওপর তিনটে বাঁশের কঞ্চি পোড়ে আছে, তার মধ্যে 
কারু যাঁওয়া নিষেধ | “মায়াং, ( বিদেশীদের ) স্পর্শে জাত 
যাওয়ার আশঙ্কা আছে। চা খাওয়ার পর গেলাম মাটীতে 
নামিয়ে দিলাম, একটা ছেলে সেটা মেজে ধুয়ে নিল, ১২॥০্টার 
পর বাস ছাঁড়ল। এর পর ক্রমাগত ঘুরপাক খেতে খেতে 
গাড়ী নামতে লাগলো প্রায় বিনা তেলখরচেই | প্রায় ৪০ 
মাইল 'এসে “কানকপিঃতে ফটকের সামনে এসে আবার 
গাড়ী দাড়াল। এখানে গাড়ীর মালপত্র পরীক্ষিত হবার পর 
আবার গাড়ী ছাড়ল। এই রাস্তায় মাল চলাচলের কর 
বাবদ মণিপুরের মহারাঁজ বাৎসরিক প্রায় ৮২ হাজার টাকা 
পান। একজন মাড়োয়ারী মহারাজকে এ সেলামী দিয়ে 
রাস্তা বন্দোবস্ত নিয়েছে । সে আবার যাওয়! আসা মণ পিছু 
1» আনা কর আদায় করে; লাভলোকসাঁন তার। এই. 
রাস্তায় যত বাঁস চলে, তাঁদের কাছ থেকে ইংরেজ সরকারে 
1১. ৮৮. ]). বিভাগ বাসপিছু ২০০২ টাঁকা নেন, রাস্তা 
মেরামতেতর.খরচ বাবদ । মণিপুর থেকে ডিমাপুর পধ্যস্ত যে 
বাসে /ঠাক আসে, তাও এক মাড়োয়ারী মাসিক ১২০০২ 
টাকার [ঠিকে নিয়েছে । এই দুর্গম পাহাড়ী রাস্তার শৈখানেই 


পৌষ_-১৩৪৭ 1 ল্বাহ্ৰীন্ন টবল্সীভ্্য স্পিস্ু্  শুজ, 


কোন বড় গ্রাম আছে সেখানেই মাড়োয়ারীর কোন ন..এদের পোঁষাক পরিচ্ছদ, সামজিক আচার; পৃজাপদ্ধতি, 
কোন ব্যবসা আছে; বন্ধ মাড়োয়াপী ঘরবাড়ী তৈরী কোরে কীর্তন সবই সাক্ষ্য দেয় ভুবজয়ী বাঙ্গালার । একদিন বাঙ্জালার 
এ অঞ্চলের বাসিন্দা বনে গিয়েছে । প্রতিভা ভৌগলিক গণ্তী ছাড়িয়ে ট্রেণ বাসের সুবিধা না 
“কানকপির+ কিড় পরেই রাস্তা পাহাড়ের বেড়াজাল থাকা সব্ষেও যে এই ছুর্গর্/পর্বতঘেরা অঞ্চলেও ব্যাগ 
ছেড়ে সমতলে এসে পোঁড়ল। আশেপাঁশে ছোটখাট পাহাড় হোয়েছিল, একথা মনে/হোলে আজও প্রত্যেক বাঞঙ্গীলীর 
কিছুদূর পর্যন্ত চৌলেছে, তাঁর পর একবারে সমতল । ধারে আনন্দ হয়। অতীব গৌরবময় ইতিহাঁসি বর্তদানকে 
অনেকথানি সমতল অন।বাঁদে অকেজো হোঁয়ে পড়ে আছে, প্রেরণা দেয়, ভবিষ্তকে প্রস্তুত করে, তাই এর ১মুলাচনা 
বসতিত্ত নে । এরও অনেক পরে ছুধারে ধানের ক্ষেতে প্রয়ৌজন। ইন্ফাল মণিপুরের রাজধানী - এবং এসমান 
কচি সবুজ ধাঁনগাছ মাঁথ। ঢুলিযে নবাগত সম্ভাষণ জাঁনাল। সহর। এর মাঝে যে অঞ্চলটুকু ব্যবসা বাণিজোর কেক 
ইন্কালের প্রা ৭ মাল দূর থেকে জলপ্রপাতের সাহায্যে সেটুকু হংরেজ সরকারের সংরক্ষিত (1০7 1২০১:৮০ 
বিচ্যুত সরবরাহ করা ভোঁচ্ছে। রাস্তার ধারে ধারে বিদ্যুতের ৪1০ )1 এই অঞ্চলের শাসনব্যবস্থার জন্য এখানকার 
তার ও টেলিগ্রাফের তার পাশাপাশি গিয়েছে । ইম্ফাল পলিটিক্যাল এজেণ্ট সর্বতোভাবে দায়ী, মহারাঁজার কোন 
ঢকবার কয়েকমাইল আঁগে থেকে রাস্তার ছুধারে কাঁশ্ীরের দায়িত্ব নাই। 'এরই সংলগ্ন ইম্ফাল নদীর অপর তীরে 
৭ পপারািস্তার “স'ফদা গাছের নত একরকম ঝাঁউ সমাজ্জর- মহাঁরাজার এলাকায় সবহ ছোট ,বড় গ্রাম। ইং.রজের 
ভাঁবে সোজা উঠে গেছে । বিকেল প্রায় €টায় বাঁস এসে 
ম্কীল পৌছল । 
হম্কাশে ীকবাঁল। আছে, দৈনিক থাকা খাওয়] 
গ্রার ৫২ পড়ে । ছুভ1গাক্রমে ডাকবাংল! তখন ভন্তি ছিল, 
দ্বিতীয় আশ্রপ্ন করের হোটেল (বাঙ্গালী) এবং তৃতীয় ও 
শেন নাশ্রর় মাড়োবারীদের একটা ধর্শশালা । আমরা 
করের ভোঁটেলেই উঠলাম । পর্সবন্তী কোন কোন যাত্রী 
মণিপুরের দৈনিক খাগ্চ খরচ মাত্র ছ*পরসা বোলে 
লিখেছিলেন, কিছ্ত গিয়ে দেখি হোটলের খরচ ১।১।০-এর 
কম নয়। অবশ্য গ্রিনিষপত্র অনেক সস্তা, কাঁজেই টেলিগ্রাফ অফিস 
, নিজেরা রান্নার ব্যবস্তা কোরতভে পারলে বোধহয় অনেক সংরক্ষিত এলাকার ব্যবসাঁদারদের আঁরকর, ব্যবসার অনুমতি: 
কম খরচ পড়ে। এখানকার উচ্চত। দুস্হাঁজীর ফিটের পত্রের আয় মহাঁরাঁজা পাঁন, কিন্ত জমির খাঁজনা ইংরেজ 
কিছু বেখা। সরকার পান। বিচার ও শাসন ব্যাপারেও কোন 
মণিপুর বৈষ্ণব রাজ্য । ১৫৭৭ সালে কামাখ্যা পাঠের কোন ক্ষেত্রে এইরকম জাল ধৈত, ব্যবস্থা আছে । ইংরেজ 
পুনরদ্ধারক পূর্ণীনন্দ মণিপুরে তন্ত্র উপাসনা প্রচলিত করেন; এলাকার বাসিন্দারা বাড়ীঘর প্শল্বুও, নিজেদের ঘরবাড়ী 
সেই সময় অদ্বৈত শাখার নরৌত্বম অধিকারী সদলে মণিপুরে তৈরী করা--এমন কি নিজেদের এখেস্পাছ পর্যন্ত 
এসে বহারাজা চিংভোমাখোশ্বাকে বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষিত পলিটিক্যাল এজেণ্টের বিনা হুকুমে কাটতে পাঁরে না। 
করেন। তাঁহার পর থেকেই বৈষ্ণবধন্মহই এখানকার ইনিযে কোন লোককে (ইংরেজ প্রজা ) প্রয়োজন হোলে 
হন্দুদের একমাত্র ধর্ম হয়ে ওঠে । নবদ্বীপ মণিপুরীদের শ্রেষ্ঠ চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে মণিপুর এলাঁকা থেকে বহিষ্কৃত কোরঝে 
তীর্থ। বৈষ্কবশেষ্ঠ শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রীগৌরাঙ্ঈই যণিপুরীদের পারেন বা আটক বাখতে পারেন জ্থাং পলিটিক্যাল 
মারাধ্য টা; এদের বার মাসে, তের পার্বণ ১$আরও এজেপ্টই এখানকার ময় কা এখানকার শাসন 





। ভ্ 
।.. আনুব্ম 


| ২৮শ বষ--২য় থণ্ড--১ম সংখ্যা 


লস্ট“ ২ নল “সহ ৮- -ব্ - -স্হালা _স্চ্ -স্য ব্বহ স্থ্ে হাগ ব্আ বা ্ ব্পা- -ব্জা ব্ -বআবাগা সা 


(কোন সাধারণ স্থানে) কোরতে হোলেও এর অমি. ধহানীয় ব্যবসাদারদের শ্বাসরোধে কোরে ফেলে। এখানেও 


প্রয়োজন । ইন্ফাঁলের প্রধাঁন ব্যবসা কেন্্র “সদর বাজার । 


“সদর বাজার” রান্তাটী বেশ প্রশস্ত, এর ছুধারে দোকানপাট ; 
ব্যবসবাণিজ্যের প্রায় সবটুকুই ম্লাড়োয়ারীদের করতলগত। 





হারাজার আদ।লত 


বিস্তৃতিতে ও অনিষ্টকা'রিতায় এরা কচুরিপানাঁকেও হার 


মানিয়েছে । ব্যবসাকেন্দ্রের স্বচ্ছ জলে একজন মান্ডোয়ারী 
কোনমতে মাথা গলাতে পারলে অবিলম্বে কাকে বাঁকে 
বিগ্তার লাভ কোরে সমস্ত কেন্দ্রটিকে ছেয়ে ফেলে এরা 


আর বাতিক্রম ঘটে নি এবং এরই ফলে মণিপুর রাজ্যে 
প্রসাআনো লন আজ এত ব্যাপক ও শক্তিমান হোয়ে 
উঠেছে । সহরের একদিকে সৈম্তদের ছাউনী, তারই 
কাছাকাছি ডাকবাংলা, থানা, ডাকঘর, পলিটিক্যাল 
এজেপ্টের অফিস বাড়ী ইত্যাদি । যে রাস্তার ওপর এইগুলি 
সেই রাঁপ্তাটা ঘুরে নদী পেরিয়ে মহারাজের প্রাসাদের দিকে 
চোলে গেছে। সমস্ত ইম্ফাল সহরটার আয়তন -আন্দাজ্‌ 
৪ বর্গমাইল। এখানে ঘোড়ার গাড়ী, মোটর বা কোন 
যানবাহন পাওয়া যাঁয় না, মাঝে মাঝে ২।১টা মালবাহী 
গরুর গাড়ী চোখে পড়ে। সাইকেলের প্রচলন বেশ 
আছে, ব্যক্তিগত মোটরের সংখ্যা খুব কম। সংরক্ষিত 
অঞ্চলের রাস্তাঘাট পরিচ্ছন্ন ও পিচ দেওয়া এব এই অংশের 
অধিকাংশ বাড়ীবর পাকা ও গ্রীসম্পন্ন এবং বেনার' এগ 
বিদেশাদের | দেণীয় রাজ্যেব বাঁড়ীঘর অধিকাংশই খড়েন 
বা টানের, তবে এদেশীয় লোকেদের বাড়ীঘর খুব পরিকর 
পরিচ্ছন্্। 

( 'আগামীবারে সমাঁপ্য ) 


পাঠশালায় 
শ্রীকুমুদরগ্জীন মল্লিক 


আপিয়াছে বুচ্বাবু পাঠশালে পড়িতে 
মুখে বলে ক খ আর লিখে তাহা খড়িতে । 
কি করুণা কাতরত! মাথ! তার ঘরে রে, 
বিশ্বের বাথা যেন এক সাথে ঝরে রে। 
হাঁসিছেন পণ্ডিত খুসী তারে রাখিতে 
গোমুখীর ধার! তবু উকি মারে আখিতে। 


কণ্ঠের স্বরে ও | কাকৃতি ছাঁপিয়া, 
নাশ যেন ক্লান্ত রে পাপিয়!। 
এ থে দেখি রাঙা হয়ে উঠিয়াছে গণ্ড, 

'বিষ পান করিছেন যেন নীলকণ্। 
গাত্র রোমাঞ্চিত একেবারে মুখ চুণ 


ঈময় বিমুখ যেন গাণ্তীবী অর্জুন । 


হয়নি ত এত ক্লেশ এত বড় কাণ্ড 
গরুড়েও আনিত বে অনুতের ভাগু। 
দেখ এসে করিও না এ সুবিধা নষ্ট 
ম্প্ গোবদ্ধিন-ধারণের কষ্ট | 

বাণীপদ কোঁকনদে বল দেখি তোমরা 
এত কি কোমল স্থরে গুপ্ধরে ভোনরা ? 
এ ধেন রে বনে ধ্ুব নারায়ণে ডাকছে 
সঙ্কটে প্রহলাদ হরিকৃপা মাগছে। 
করেছিল এমনি কি?. বসে দেখি রঙ্গ 
্রযস্ত অগস্ত্য কে সাগর তরজ | 
কাদিছে এবং বাহ! কাদাইছে সবারে 
বালক বাসব হেরি উচ্ৈঃক্্বারে । 


বুঁচুকে এমন দেখি হাসিবে না 3% কে 
রত 
লকর্ধাধা লাগার্ষেছে,গোলকে। 








১০ 

রাজমহলে মুকুজ্যে মশাই তাহার স্বাভাবিক রীতি-অনুষায়ী 
একদল ছেলে জুটাইয়া খেলায় মন্ত ছিলেন। এ খেলাটা 
অবশ্ঠ বাঁঘ-বকৃরি নয়, কলসি-ভাঁঙা খেলা । বাঁঘ-বকরি 
অপেক্ষা অধিক উত্তেজনাঁজনক | মাঠের মাঁঝে একটা খালি 
কলসি উপুড় করিয়া রাঁখা হইয়াছে । এক একটি বালকের 
চোখ কাপড় দিয়া বাঁধিয়া, তাঁহাকে বেশ ছুই-চারি পাঁক 
ঘুরাইয়! তাহার হাতে একটি লাঠি দেওয়! হইতেছে । চোখ- 
বাধা অবস্থায় যদি সে কলসিটিকে গিয়া! লাঠির ঘায়ে ভাঙিতে 
পার্রে তাহাকে নগদ একটাঁকা পুরস্কার দেওয়া হইবে, মুকুজ্যে 
মশাই ঘোষণা করিয়। ধিয়াছেন। স্ুতরাং বেশ একদল 
বালক জুটিয়া জটলা করিতেছে । মুকুজ্যে মশাই এক এক- 
জনের চোথ বাধিয়৷ ছাঁড়িতেছেন এবং বসিয়া বসিয়া মজ৷ 
দেখিতেছেন। কেহ ঠিক বিপরীত মুখে চলিয়া যাইতেছে, 
কেহ থমকাইয়৷ দীড়াইয়! পড়িয়া কেবল ইতন্তত করিতেছে, 
কেহ কলসীর পাশ ঘে'ষিয়া চলিয়৷ যাইতেছে, কেহ বারশ্বার 
দিক পরিবর্তন করিতেছে, কেহ অভিযোগ করিতেছে যে 
চোখ বড় বেণী জোরে বীধা হইয়াছে, নান! বালক নানা রকম 
করিতেছে, কিন্তু কেহই কলসী ভাঙিতে পারিতেছে ন৷। 
মুকুজ্যে মশাই হাঁসিতেছেন। | 

একে একে অনেকগুলি বালকই চেষ্টা করিল, কিন্ত 
কেহই লক্ষ্যভেরদর করিতে,পারিল না। পারিলে মুকুজ্যে 
মশায়ের পক্ষে ভাল হইত, একটাকার বেশী খরচ হইত না। 
কিন্ত সকলেই ব্যর্থমনোরথ হওয়াতে সকলকে সাত্বন! দেওয়ার 
প্রয়োজন মুকুজ্যে মশাই অনুভব করিলেন এবং নিকটেই 
একটি ময়রার দোকান থাকায় তাহা অসম্ভবও হইল না। 

মোট কথা, মহাঁনন্দে খেলা-পর্বব শেষ হইয়া! গেল। 

মুকুজ্যে মশাই যে বাঁড়িটাতে অবস্থান করিতেছিলেন 
সেই বাঁড়িরই সম্মুথে অবস্থিত খোল! মাঠটাতে এই সব 
হইতেছিল। মুকুজ্যে মশাই বাসায় ঢুকিতে বন এন 


কিছুতেই তাঁহার যাও] হইবেনা। গতকল্য ক্লিওপেট্রার যে 
গল্পটা রাত্রে তিনি আঙ্ঈম্ত করিয়াছিলেন সেট! শেষ করিয়া 
যাইতে হইবে। | 

মুকুজ্যে মশাই হাঁসিয়। বলিলেন, “আর্জি আমাকে যেতেই 
হবে, উপায় নেই__» 

“তবে আপনি গল্প আরম্ভ করলেন কেন !” . 

অত্যন্ত অভিমান-ভরে আটননয় বছরের একটি বালক 
ঠোঁট ফুলাইল । মুকুজ্যে মশাই ভারী বিপদে পড়িয়! গেলেন। 
অবশেষে বলিলেন, “আচ্ছা, আমি গিয়েই একট! ভালো বই 
পাঠিয়ে দেব তোমাদের | তান রিওপেষ্টার গল্প আছে, 
আরও অনেক ভাল গল্প আছে-_-” , 

“পরগ্ড দিন সেই যে জাহাজডুবির গল্পট1 বললেন, সেটাও 
আছে?” 

“ওটা তো গল্প নর, সত্যি কথা-_” 

“না, আপনি আজকের দিনটি খালি থেকে যান-_» 

“কলকাতায় আমার বড্ড দরকার অ]ুছে যে কাল। 
ন গিয়ে উপায় নেই। তানা হলে তোমাদের ছেড়ে কি 
আমার যেতে ইচ্ছে করছে কলকাতার সেই ভিড়ে !” 

“আবার কবে আসবেন আপনি ?” 

“আবার শিগগিরই আসব” 

কথাটা বলিয়াই মুকুজ্যে মশায়ের মনে পড়িল সেরার 
অর্থাত প্রায় বৎসরখাঁনেক পূর্ব্বে তিনি সাহেবগঞ্জে গিয়া- 
ছিলেন, তখনও একদল বালক সঙ্গী তীহাঁর জুটিয়াছিল এবং 
আসিবার সময় তাহাঁদেরও আশ্বাস দিয়! আসিয়া- 
ছিলেন যে শীঘ্রই ফিরিককো। “কর্মের আবর্তে পড়িয়া 
তাহাদেরও তিনি বিশ্বতই হইয়াছেন যাতনীদুরের কথা। 

তথাপি তিনি হাসিয়া আবার বলিলেন, “শিগগিরই 
আসব আবাঁর--” 

ছেলের দল ক্ষুধ মনে চলিয়া গেল। ৰ 

মুকুজ্যে মশাই বাসায় ঢুকিতেই মনোরম! আসি ফ্লাড়াইল 


সময় দুই-তিনটি বালক আসিয়া .তীহাকে ধরিল ধ্য, আজ এবং শীস্ত কঠে প্রশ্ন রিল, “তৃপ্জই তে। আপনি যাবেন?” 


৪৯ 


স্তাবাতনর্ত্ 


মুকুজ্যে মশাই শ্মিতমুখে তাহার পানে একবার চাহিয়া 
ঘরের ভিতর ঢুকিয় পড়িলেন। মনোরম! মুকুজ্যে মশায়ের 
1 এ হাসি চেনে, বুঝিল আজই তিনি,যাইবেন। 
মনোরমার বয়স যদিও চল্লিশের কাছাকাছি, কিন্ত 
দেখিয়া তাহা মনে হয় না। ছিপঠিপে-গড়নের চেহারা । 
এই বয়সে মেয়েরা সাধারণত একটু মোটা হয়, কিন্ত মনোরম 
তাহাও হয় নাই, এখনও সে তথ্বা আছে। হ্ষ্টিকর্তা 
মনোরমা-নির্ধাীণে অন্ুত সংযমের পরিচয় দিয়াছেন । মনো- 
রমার অঙ্গে কোথাও এতটুকু বাহুলা নাই। ঠোঁট ছুটি এত 
পাতলা, দাতগুলি এত ছোট ছোট, নাকটি এত ক্ষুদ্র এবং 
সুক্মা গ্র, চোখ দুটি বড় বড় না হইয়াও এমন শ্রীসম্পন্ন, চিবুকটি 
ছোট হইয়াও এমন মানানসই, সমস্ত দেহটা লঘু হইয়াও এত 
লালিত্যময় যে বিধাতাকে তারিফ না করিয়া পারা যায় না। 
কিন্ত এই তথ্বী নারীটির সর্পাঙ্গ ঘিরিয়া অদৃশ্য কি ষেন একটা 
আছে, তাহার মুখের দিকে বেশীক্ষণ চাহিয়া থাকা যায় না, 
দৃষ্টি আপনিই ব্যাহত হইয়া! ফিরিয়া আসে । সমস্ত মুখচ্ছবিতে 
যেন একটা নীরব নিষেধ লেখা রহিয়াছে, থেন বলিতেছে 
এদিকে চাহিও না। তাহার পরিমিত আলাপে, শান্ত কণম্বরে, 
ধীরে গমন-ভঙ্গিমায় তাহার সম্বন্ধে যে ধারণা হয় সে ধারণার 
প্রতিবাদ তাহার কঠিন মুখভাবে, সুঙ্ম নাসার সুক্সতর কম্পনে, 
দু়নিবদ্ধ পাঁতল! ঠোট ছুটিতে এবং সর্ববোপরি তাহার কালো 
চোখের দৃষ্টিতে যেন মূর্ত হইয়া রহিয়াছে । শান্তকে তাহার 
মু কথাগুলি শুনিলে মনে হয় তাহার মনে কোন ক্ষোভ বা 
অশাস্তি নাই, কিন্তু তাহার মুখের দিকে চাহিলেই বুঝিতে 
দেরী হয় নাষে, প্রাণপণ শক্তিতে সে একটা বিরাট আর্ত- 
নাদের ক্-রোঁধ করিয়া রাখিয়াছে এবং অন্তরের এই নিদারুণ 
- স্বদ্ঘকে গোপন করিতে গিয়াই তাহার সমস্ত শক্তি যেন 
নিঃশেষিত হইয়া গিয়াছে ॥ জোরে কথা কহিবার অথবা 
চলিবাঁর ক্ষমতাও যেন অ এ অব।শষ্ট নাই । দৈনন্দিন জীবন- 
াত্রার অনিবার্ধা প্রয়োজনে যদি বলিতে অথবা চলিতে না 
হইত সে নির্বাক নিশ্চল হইয়! নির্জনে বসিয়া থাকিত। কিন্ত 
সমান্ছে,বাস করিতে হয়, সমাজ তো নির্জন নয় । 
বালব্যিব! মনোরমাঁকে তাই চলিতে হয়, বলিতে হয়, 
কর্ম করিতে হয়'। কিন্তু সে এত সংক্ষিপ্ততার সহিত 
এগুলি করে যে দেখিলে তি জন্মে! তাহাকে দেখিলেই 
দনে হয় সঙ্গোপনে কি একটা (গাপন বেদনামক সে সর্বদা 


[ ২৮শ বর্-_২য খণ্--১ম সংখ্যা 


শান করিতেছে এবং পাছে কেহ তাহা বুঝিতে পারে এই 
আশষায়নিরুদেগের একটা মুখোস পরিয়া আছে। তাই 
কেহ ঠাহাকে নিরীক্ষণ করিলে সে কেমন যেন অস্বস্তি বোধ 
করে, তাহার চোকে মুখে এমন একটা জ্বালা প্রকটিত হইয়া 
ওঠে, দর্শককে দৃষ্টি ফিরাইয়! লইতে হয়। 

মনোরমার জীবন দুঃখময়। সেই কবে, কতদিন আগে 
বাল্যকালে তাহার বিবাহ হইয়াছিল । বিবাহের রাজ শুঁভ- 
দৃষ্টির সময় সে কুণ্টিত দৃষ্টি তুলিয়া স্বামীর মুখের পানে চাহিতে 
পারে নাই, ফুলশধ্যার রাত্রেও লজ্জায় বালিশে মুখ গু'জিয়া 
শ্ুইয়াছিল, তাহার পর আর স্বামীর সহিত দেখা হইবার 
সুযোগই হয় নাই। তিনি ব্যারিস্টারি পড়িতে বিলাতে 
চলিয়া গিয়াছিলেন, ফিরিবাঁর পথে জাহাজ-ডুবি হইয়া মারা 
গিয়াছেন। স্বামীর মুখ মনোরমার মনে নাই। যখন 
বিবাহ হইয়াছিল, কতই-বা তখন তাহার বয়স । দশ বংসরও 
নয়। হিন্দু-বিধবা-জীবনের নিষ্ঠুর নিষ্ঠার চাপেও কিন্ধ 
মনোরমাঁর যৌবন নিপ্পিষ্ট হইয়া! যায় নাঠ এবং যাঁয় নাই 
বলিয়াই সমাজের চক্ষে সে পতিতা । কিন্তু কাগজে যাহা 
বাহির হইয়াছিল তাহা ঠিক নয। গুগ্ায় তাহাকে হরণ 
করে নাই। সে স্বেচ্ছায় তারাপদর সঙ্গে বাহির হইয়া 
গিয়াছিল | মনোঁরমা তারাপদকে সত্যই ভালবাসিয়াছিল 
এবং আত্মীয়ম্বজনেলা যদি পুলিশের হাঙ্গামা না তুলিতেন 
হয়তো তারাপদর সঙ্গেই তাঁহার জীবনটা স্বচ্ছন্দে কাটিয়া 
যাইত (যাইত কি? মাঝে মাঝে এখন তাহার নিজেরই 
সন্দেহ হয়! )) পুলিশের ভয়ে তারাঁপদ অন্তর্ধান করিল। 
আত্মীয়-স্বজনের! মনোরমাকে উদ্ধার করিয়া আনিলেন । 
কিন্ত ক্ষম! করিলেন না। পদস্খলিতাঁকে ক্ষমা করা আমাদের 
স্বভাঁববিরুদ্ধ। তবু বাঁপ মা যতদিন বাঁচিয়াছিলেন ততদিন 
মনোরম! সংসারের মধ্যে কোনরকমে টিকিয়া থাকিতে 
পারিয়াছিল। বাপ মার মৃত্যুর পর তাহাঁও অসম্ভব হইয়া 
উঠিল। ভাইদের সংসারে ভ্রাতৃজায়াদের গঞ্জনা সহ করিয়াও 
হয়তো মনোরম! ভিটা আকড়াইয়া কোনক্রমে পড়িয়া থাকিতে 
পারিত কিন্তু যখন সে শুনিল যে সে থাকাতে তাহার 
ভাইঝিদের বিবাহ হইতেছে না, তাহার অতীত কলম্কটা 
তাহাকে দিত্তিয়া এখনও সজীব হইয়া আছে এবং তাহাদের 
বিবাহে %ি় স্ষ্টি করিতেছে তখন মে আবার পথে বাহ্র 
হইয়া এঁড়িল। ঠিক করিল, দু চক্ষু যেখানে লইয়া যায় সেই- 


পৌষ---১৩৪৭ ] 


. প্র 
খানেই মে চলিয়া যাইবে,দাসীবৃত্তি করিয়া জীবনযাপনকঠিখে"৬ . “এ-বেলা আর খাব না/ খিদে নেই, ওবেলহি ঝা খাওয়া 


ভাইদের সংসারে আর থাকিবে না। যৌবন তখনও! অটুট 
ছিপ? দৃষ্টি আকর্ষণ করিবার মত রূপও ছিল, কাঁশীধামে 
উপনীত হইয়া মনোরম! সবিম্ময়ে লক্ষ্য করিল ত্রাহাকে আশ্রয় 
দিবার জন্ত একাধিক ব্যক্তি আগ্রহ প্রকাশ করিতেছেন । 
দুইজন গুণ্ডা গোছের লোক একটি বিপত্বীক কাশীবাসী 
প্রো এবং গুটিচারেক ছোকরার বল-বিক্রম-দরদ-অন্ুরোধ- 
ইঙ্গিতের আবর্তে পড়িয়া সে যখন কিংকর্তব্যবিমূঢ় হইয়া 
পড়িয়াছিল তখন সহসা মুকুজো মশাই আসিয়া দেখা দিলেন । 
মুকুজ্যে মশাই লোকাট কে, কেন তাহার উদ্ধার সাধন 
করিতে চাহিতেছেন। কি করিয়া তাহার খবর পাইলেন, 
মনোরম! কিছুই জানিতনা। তিনি আসিয়া বলিলেন, 
পশ্ুনলাঁম তুমি বিপদে পড়েছ, যদি আমার সঙ্গে আসতে চাঁও 
আসতে পারো__» 

মুকুজ্যে মশায়ের চোখে মুখে কথায় বার্তীয় মনোরমা 
কি দেখিল তাহা মনোঁরমাই জানে, সে নির্ভয়ে রাঁজি 
হইয়া গেল। 

কেবল বলিল, “আমাকে নিয়ে আপনি কোথায় যাঁবেন?” 

প্তা এখনও ঠিক করিনি । আমি কোথাও বেশী দিন 
থাঁকি না, তৰে তোমাকে ভালভাবে রাখবার বন্দোবস্ত 
করব কোথাও না! কোথা ও--” 

সেই হইতে মনোরম! মুকুজ্যে মশায়ের আশ্রয়ে আছে 
এবং এ যাঁবৎ যত পুরুষের সংশ্রবে তাহাকে আসিতে হইয়াছে 
তাহাদ্দের মধ্যে এই মুকুজ্যে মশাইই একমাত্র লোক যিনি 
তাহার রূপ-যৌবন সম্বন্ধে সম্পূর্ণ নিব্বিকার। তাহার 
ভরণ-পোষণের সমস্ত ব্যয়ভার বহন করিতেছেন, ভদ্রপরিবারে 
তাহার থাকিবার ব্যবস্থা করিয়া দিয়াছেন, তাহার সর্বপ্রকার 
অসুবিধা দুর করিবার জন্য সর্বদাই সচেষ্ট কিন্তু কখনও 
তাহার দিকে ভাল করিয়া চাহিয়৷ দেখিয়াছেন বলিয়া 
মনোরমার মনে পড়ে না। প্রায় বারো-তেরো বখ্সর 
মুকুজ্যে মশায়ের আশ্রয়ে কাটিল-_কিন্ত মুকুজ্যে মশাই 
সেই একরকম। সৌম্যমুত্তি, সদাহান্তমুখ, কর্তব্যপরাঁয়ণ, 
পরোঁপকারী, সদাঁচঞ্ল ব্যক্তি। 

ধীরপদে ঘরে প্রবেশ করিয়া মনোরম! (খিল মুকুজ্যে 
মশাই নিজের জিনিসপত্র গুছা ইয়া,লইতেছেন। 

শান্ত স্বরে প্রশ্ন করিল, “খাবার এনে/দি তা ডি 


হয়েছে.তা হজম হয়নি,এখনও-_” 

মুকুজ্যে মশায়ের মুখখানি হাসিতে উদ্ভাসিত হইল । | 
ক্ষণকাল নীরব থাবির্া মনোরম! পুনরায় প্রশ্ন করিল, 
“মকোর্দীমার কি বুঝর্ঠীন? ভবেশবাবুর স্ত্রী জিগ্যেস করতে 
বললেন ।” 

“ভবেশ ছাড়া পাবে |” 

মুকুজ্যে মশাই পুটুলি বাধিতে লাগিলেন, মনোরমা 
নীরবে দ্লাড়াইয়া রহিল। একটু পরে ইতস্তত করিয়া : 
মনোরম! পুনরায় আঁর একটি প্রশ্ন করিল, “আচ্ছা, ওঘরে 
কাল যে জাহাজডুবির গল্পটা বলছিলেন সেটা কি সত্যি?” 

মুকুজ্যে মশাই চকিত দৃষ্টিতে মনোরমার মুখের পানে 
চাহিয়! বিস্মিত কে বলিলেন, “তুমি কি ক'রে শুনলে ?” 

“আমি বারান্বীয় ছিলাম । ওটা গল্পঃ না সত্যি ?” 

মুকুজ্যে মশাই ক্ষণকাঁল নীরবে মনোরমার দিক চাহিয়া 
রহিলেন। তাহার পর বলিলেন, “সে কথা জেনে 
তোমার লাভ ?” 

মনোরম! কিছু না বলিয়া আনতচক্ষে দীড়াইয়া রহিল। 
মুকুজ্যে মশাই হাসিয়া প্রশ্ন করিলেন “কেন জানতে 
চাঁইছ, বল না!” 

“এমনি |” 

উত্তর ন! দিয়া! মুকুজ্যে মশাই আর একটু হাসিলেন। 
বলিলেন, “এবারে যেতে হবে, ট্রেনের আর বেশী সময় নেই, 
ভবেশের স্ত্রীকে ডাক 1” 

মনোরমার ছুরনিবদ্ধ ওঞ্ঠাধর সামান্ত ষেন একটু কম্পিত 
হইল, সে কিন্তু কিছু বলিল না । মুকুজ্যে মশাইকে প্রণীম 
করিয়! বাহির হইয়! গেল। একটু পরে অবগুষ্ঠনবতী একট “ 
বধূ আসিয়৷ অনেকক্ষণ ধরিয়া মুকুজ্যে মশাইকে প্রণাম 
করিল। হু 
“কোঁন ভয় নেই মা__ভবেশ ঠিক ছি পীবে ৮ 
মুকুজ্যে মশাই বাহির হুইয়! গেলেন। 


। 


৯১ 


গতকল্য শঙ্করের নামে যে মাসিক, পত্রিকাটি অসিয়াছিল 
তাহাই সে একা বায় পড়িততছিল। নিজের লেখাঁটাই 
বারবার কত্ধিয়া৷ পাঁড়তোট়্া। ছাপার অক্ষরে নিজের 


২. 


প্রথম রচনা! অনেক দিন আঁগের লেখা একট! কবিতা । 
সোনাদিদির কথা মনে পড়িল, সোনাদিদিই লেখাটা কাগজে 
পাঠাইয়াছিললেন। কবিতাটি রিণির উদ্দেশে লেখা, কিন্ত 
লাইনগুলোর ফাঁকে ফাঁকে সোনাঁদিদির মুখখানা যেন উকি 
দিয়া যাইতেছে । সেদিনের কথাটা শঙ্করের মনে পড়িল_ 
যেদিন সে বিবাহের প্রস্তাব লইয়া মিষ্টিদিদি এবং সোনাদিদির 
শরণাপন্ন হইয়াছিল। সলঙ্জ ক্গিপ্ধ সংযতশ্রী রিণির 
মুখখানি এখনও মনে আকা রহিয়াছে, একটুও মলিন 
হয় নাই। মনের যে স্বনিভূত মণিকোটায় বহুমূল্য দুশ্পাপ্য 
ছবিগুলি টাঁগানে৷ থাকে, রিণির ছবিও সেইখানে টাডানে। 
রহিয়াছে । রিণির নিকট হইতে কতটুকুই বা সে পাইয়াছে, 
বিস্ত অজ্ঞাতসারে সেইটুকুই স্বন্দর করিয়া কখন যে 
তাহার মন সাজাইয়৷ রাখিয়াছে তাহা সে এতদিন জানিতেই 
পারে নাই। স্মতিপটে অঙ্কিত রিণির আলেখোর পানে 
চাহিয়া শঙ্কর একটু অন্তমনস্ক হইয়া পড়িল। রিণির 
জন্ত মন আর উন্মুখ নহে, উন্মুখ হইবার অধিকার তাহার 
নাই এবং সেজন্ত দুঃখও আর নাই। মাঝে মাঝে তাহার 
মনে হয় ভালই হইয়াছে । নিজের যে পরিচয় সে ক্রমশ 
পাইতেছে তাহাতে মনে হয় রিণিকে সে স্তুধী করিতে 
পারিত না। ,.তাহার মনের কলুষ একদিন না একদিন 
আত্মপ্রকাশ করিয়া সমস্ত গ্লানিময় করিয়া তুলিতই। 
কলুষ তাহারই মলের মধ্যে ছিল, এখনও আছে । মিষ্টিদিদি 
উপলক্ষ মাত্র। তিনি না থাকিলেও অন্ত উপায়ে ইহা 
ঘটিত। রিণি ন& হইয়া যাইত, রিণির সম্বন্ধে তাহার 
স্বপ্লটাঁও ভাঁডিয়া যাইত, বাস্তবের রূঢ় আঘাত সে সহ 
করিতে পারিত ন1। 

বাস্তবের রূঢ় আঘাত সহা করিয়াও আনন্দের তরজে 
তরজে ভাসিয়া থাকিতে |পারে মুক্তো। শক্গরের মাংস- 
লোলুপ অথচ স্বপ্রবিলাস্ট মনকে আশ্রয় দিতে পারে সেই । 
অপর কাহারও 'পক্ষে, বিশেষত ভদ্রবরের সুনীতি-শঙ্খলিত 
সভ্য রমণীর পক্ষে তাহা অসম্ভব। কোন ভদ্রমনা নারীই 
পণুটাকে সা করিতে পারে না, অন্তত না পারার ভাণ 
করে। মুক্তোর পণ্ড লইয়াই কারবার, স্থৃতরাং সে বিষয়ে 
কোনরর্প ভণ্ডামি ব। ছ্মবেশ তাহার নাই। পঞ্ুদের হাঁটে 
নিজেকে সে নিলামে চড়াইয়া দিয়াঙ্ছে, যে ক্রেতা সর্বোচ্চ 
মূল্য দিবে সে বিন! দ্বিধায় (তাহাই নিক আত্মসমর্পণ 


ভান্লক-বধ 


| ২৮শ বর্--_২য় থণ্ঁ-১ম সংখা। 


কাধবে। এই নিছক কেনা-বেচার অন্তরালেও কিন্ত 
আর' একজন আছে যাহাকে টাকা দিয়া কেন! যায় না, 
কথা দিয়! মুগ্ধ করা যায় না, যাহাকে অনুভব করা যায় কিন্ত 
ধর! যায় না) তাহাকে ঘিরিয়াই শঙ্করের স্বপ্ন রডীণ হইয়া 
উঠিয়াছে। শঙ্কর অন্যমনঞ্ক হইয়া পুনরায় চিন্তা করিতে 
লাগিল কি করিয়া বেশ কিছু টাকা জোগাড় করা যায়। 
এক-মাধ শ টাঁকা নয়, বেশ কিছু মোটা টাকা যাহার 
বিনিময়ে সে মুক্তোকে পাইতে পারিবে । নিজের দৈন্তে 
নিজের উপরই তাহার দ্বণা হইতে লাগিল । সামান্ঠ টাকার 
জগ্ভ এই অপমান, এই বঞ্চনা, এই আত্ম-অসনম্মান। যেমন 
করিয়! হোক উপার্জন করিতে হইবে, বড়লোক হইতে হইবে। 
অকারণে ফিজিকৃস্‌ মুখস্থ করিয়া এম, এস-সি পাশ করার 
কোন সার্থকতা নাই। ওরিজিন্তাল মূর্খ কিন্তু ধনী: সেই 
জন্যই মক্তোর উপর তাহার স্াষ্য অধিকার বেশী । 

'** সহসা! শঙ্করের মনে হইল মুক্তো কি পড়িতে পারে? 
এই মাসিক পত্রিকাটা তাঁহাকে দিয়া আমিলে কেমন হয় । 
এ কবিত। কি মুক্তো বুঝিতে পারিবে? 

পিওন আসিয়া প্রবেশ করিল এবং ছুইথানি চিঠি দিয়া 
গেল। দুই্টখাঁনিই খামের চিঠি। একটি বেশ মোটা, 
হাতের লেখা দেখিয়াই শঙ্কর বুঝিল সুরমার চিঠি । ইদানীং 
অনেক দিন ,সে সুরমার কোন পত্র পায় নাই। দ্বিতীয় 
চিঠিখানি বাবার । বাবার চিঠিখানি খুলিয়া পড়িল। 
সংক্ষিপ্ত চিঠি, প্রয়োজনীয় কথার বেণী আর কিছু নাই। 
লিখিয়াছেন_-মা ভাল আছেন আজকাল, শঙ্কর আগামী 
মাসে যেন একবার বাড়ি আসে, তাহার বিবাঁহ-সংক্রান্ত কথা- 
বার্তা তিনি শেষ করিয়া ফেলিতে চান। লিখিয়াছেন, তুমি 
এ বিষয়ে চিন্তা করিয়া দেখিবে বলিয়াছিলে। আশ! করি 
এতদিন চিন্তা করিয়! 'একটা সিদ্ধান্তে পৌছিয়াছ এবং 
তাহা অসাধারণ কিছু নহে। আমাদের দূর সম্পর্কের 
আত্মীয় শিরিষবাবুর কন্তার সহিত কথাবার্তা অনেকটা 
অগ্রসর হইয়াছে । দেনা-পাওনার কথা এখনও অবস্ঠ 
কিছুই ঠিক হয় নাই। সেদিক দিয়া তাহাদের তরফে যদি 
কোন বাধা না ওঠে তাহা হইলে অন্ত কোন আপত্তির কারণ 
দেখিতে ছনা। যতদূর গুনিয়াছি এবং ফোটোতে 
লহ মেয়েটি স্ুুত্ী। তুমি, যদি ইচ্ছা ফর 


পূ দেখিয়া আসিতে পার। কলিকাতাতেই 


পোঁষ-১৩৪৭ ] 


ক 





তাহারা থাকে। তোমার পত্র পাইলে শিরিষবাবুকে লিখির 


তোমার সহিত দেখা করিয়| মেয়ে দেখাইবার বন্দোবস্ত 
করিতে । তুমি আগামী মাসে নিশ্চয়ই একবার আসিবে। 

শঙ্বর ড্রয়ার খুলিয়া একখানা পোস্টকার্ড বাহির করিল 
এবং তৎক্ষণাৎ লিখিয়া দিল যে সে ঠিক করিয়াছে বিবাহ 
করিবে না। ইহা লইয়া তাহাকে যেন আর অনুরোধ 
করা নাহয়। বিবাহ করা তাহার পক্ষে 'এখন অসম্ভব । 
চিঠিখানা লিখিয়! চাঁকরটাঁকে ডাকিয়া তৎক্ষণাৎ সেটা 
রাস্তার ডাকবাকৃসে ফেলিয়া দিয় আসিতে বলিল। এক 
কাপ চা-ও ফরমাঁস করিল । 

সুরমার চিঠিটা খুলিতেই কতকগুলি ফোঁটো বাহির 
হইয়া পড়িল। নানারকম ফোঁটো। একটা কুকুরের, 
একটা কুলের, একটা ক্রন্দনাকুল একটি শিশুর, একটা 
মেঘের, একট! সমুদেরঃ আরও কয়েকটা নানারকম 
প্রাকৃতিক দৃশ্ঠ | গুরমা লিখিতেছে__ 
শঙ্করবাবু, 

অনেকদিন পরে আপনাকে চিঠি লিখছি। অর্থাৎ 
আপনার চিঠিখাঁনা পাওয়ার পর এতদিন কেটে গেছে যে, 
চিঠিথানাও আর খুঁজে পাচ্ছি না । খুঁজে পাচ্ছি না বলে 
যেন মনে করবেন না যেখানে সেখানে অবহেলাভরে ফেলে 
রেখেছিলাম এবং অবশেষে তা ওয়েস্ট-পেপারবাস্কেটে 
বাহির হয়ে নিরুদ্দেশ যাত্রা করেছে । মোঁটেই তা নয়। 
বরং পাছে হারিয়ে যাঁয় এই ওয়ে অত্যধিক যত্ব ক'রে সেটা 
রেখে দিয়েছিলাম । কিন্তু কোন্‌ ফ্যাটাচি কেসের কোন্‌ 
পকেটে, কোন্‌ টেবিলের কোন দ্রয়ারে অথবা কোন্‌ বাক্সের 
কোন্‌ খোপে যে সেই সধগ্ররক্ষিত চিঠিটি আত্মগোঁপন 
করে রইলো উত্তর দেবার সময় কিছুতেই আবিষ্ষীর করা 
গেল না। তাতে অবশ্ত কিছু আসে যায় না। চিঠির 
উত্তরে আমর! যখন চিঠি লিখি তখন সব সময়ে আমরা যে 
চিঠির 'উত্তর/ই লিখি তা নয়; উত্তর দেবার উপলক্ষ ক'রে 
নিজের লিপিকুশলত! প্রকাশ করবার চেষ্টা করি। সব 
সময়ে তাতে প্রশ্নের উত্তর থাকে না, আবার অনেক সময় 
অজিজ্ঞাসিত প্রশ্নেরও অযাচিত উত্তর থাকে । কারো চিঠি 
পেলে মনে যে সাড়া জাগে তাঁরই প্রতিক্রিয়া স্ববপ। আমরা 
যা করি তাঁই তার উত্তর। অনেক সময় নীরব্ত!ই হয় 
শ্রেষ্ঠ উত্তম, অনেক সময় আবাঁর আঁসল উত্তরটাকে 


১১০০] 





6.১ 





সব গ খপ সহ ক স্পা তডিপ 


'করবাঁর জন্যেই অবাস্তর বাঁগবিস্তার করতে হয়; অনেক 
সময় পাঁতার পর পাঁতা লিখলেও উত্তরটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে না, 
আবার অনেক সময়--কিস্ত এ আমি করছি কি! আপনি 
কবি মান্ষ। .আপনাঁকে এ বিষয়ে বক্তৃতা দেওয়া যে নিউ- 
কাঁস্ল্‌ শহরে কয়লা বহন করার চেয়েও হাস্তকর। আপনি 
নিশ্চয়ই এতক্ষণ মুচকি মুটকি হাঁসছেন। ভাবছেন বোধ হয় 
এতদিন পরে চিঠির উত্তর এলো-_তাঁও আবোল তাবোল! 
সুতরাং আর নয়, ও প্রসঙ্গ এইখানেই “চাঁপা দিলাম। 
এতদিন আপনার চিঠির যে উত্তর দিই নি তার প্রধান এবং 
একমাত্র কারণ এতক্ষণে বোধ হয় বুঝতে পেরেছেন। 
ফোঁটোগ্রাফিতে আমাকে পেয়ে বসেছে। দিনরাত ওই 
নিয়েই আছি। দিনে ফোঁটো তুলি, রাত্রে ডেভেলাপ 
করি। কয়েকটা নমুনা পাঠালাম, কেমন লাগল সত্যি 
ক'রে জানাবেন তো! খুব কঠোর "হয়ে বিচার করবেন না 
তা বলে! এই আমার প্রথম হাতেখড়ি, সেটা মনে ' 
রাখবেন। ছোট ছেলেটির কান্নার ছবিটা খুব মিষ্টি, নয়? 
একটি পাঁশি ভদ্রমহিলার ছেলেটি । ভদ্রমহিলার সঙ্গে 
সম্প্রতি ভাব হয়েছে, বেশ মেয়েটি । রবীন্দ্রনাথের একজন 
গৌড়া ভক্ত । ইংরেজী গীতাঞ্জলি প্রায় কণ্ঠস্থ। আঁপনাঁর 
সেই কবিতাটাঁও ওঁকে অন্তবাঁদ ক'রে শুনিয়েছি, খুব ভাল 
লেগেছে গুর। ভাল কথা, আপনি কি কবিতা লেখা ছেড়েই 
দিলেন নাকি! কই, কোন লক্ষণই তো! দেখতে পাই না। 
লিখলে নিশ্চয় কোথাও না কোথাও দেখতে পেতাম । 
আপনার বন্ধুর কোন খবর কি পেয়েছেন ইদানীং ? 
আমি অনেকদিন কোন খবর পাঁইনি। পত্রলেখক-হিসেবে 
বোধ হয় কোনকাঁলেই ওঁর প্রসিদ্ধি ছিল না। আপনিই 
ভাল বলতে পারবেন, কারণ আপনারা বাল্যবন্ধু। আমার? 
সঙ্গে পরিচয় যদিও অল্পদিনের (আমি তো আগন্তক 
বললেই হয়), কিন্তু এই স্বপ্ল পরি সত্বেও এ কথাটা 
নিঃসংশয়ে বলতে পারি, পত্রলেথক-হিসেহে গুকে প্রথম 
শ্রেণীতে দুরের কথ দ্বিতীয় শ্রেণীতে স্থান দিতেও ইতম্তত 
করা উচিত। অত্যন্ত কাজের মানুষ অর্থাৎ প্র্যাকটিকাল 
লোক ধীর! শুনেছি অপব্যয় করবার মূতো৷ সময় নেই 
তাদের এবং যে চিঠি দু কথায় লেখা যাঁয় তাঁর জন্তে ছ'শো 
কথা লেখাটা ততস্তঅঙটায় বলে মনে করেন তীরা। ছুশো 
কথা একসঙ্গে বার ক্ষমতা আছে কিনা সে প্রশ্নন! 


০, 


তুলেও এট! বোঁধ হয় নিঃসন্ষোচে বলা যায় যে দুঃশো কথা 
লেখবাঁর ধৈর্য ওদের নেই। আপনার বন্ধুটির প্রথম প্রথম 
যা-ও বা একটু ধৈর্য্য ছিল, আজকাল তার থেকেও চ্যুত 
হয়েছেন তিনি। হয় তো পড়ার চাঁপ, নয়তো বা আর 
কিছু। অনেক সময় প্রহেলিক৷ বলে মনে হয়। 

কবিরা এখনও নারীদেরই গ্রহেলিকা বলে থাকেন, 
আমার মনে হয় খুব সম্ভবত সেটা প্রথার খাতিরে । 
এককালে হয় তো নারীরা সতাই প্রহেলিকা ছিল এবং 
বিশ্মিত পুরুষের মন একদা তাঁর সমাধানেই ব্যস্ত ছিল 
বলেই কাঁব্যে তাঁর এত উল্লেখ দেখ! যাঁয়। যুগ যুগ ধরে' 
পুরুষদের সম্মিলিত চেষ্টার ফলে নারী কিন্তু আর গহেলিকা 
নেই, নারী-সংক্রান্ত সমস্ত সমস্তারই তীরা সমাধান 
করেছেন। নারীদের ছলা-কলা হাঁব-ভাঁব লীলা-চাপল্য 
অর্থাৎ নাঁড়ি-নক্ষত্র আকাল পুরুষ জাতির নখদর্পণে । তবু 
কিন্তু পুরুষদের দৃষ্টির সম্মুখে এখনও নারীরা নিজেদের 
রহস্তময়ীরপে প্রকট রাখবার চেষ্টা করেন এবং আমার 
বিশ্বাস, পুরুষরা সব জেনে গুনেও দুগ্ধ হবার ভাঁণ করেন। 
অর্থাৎ আঙ্জকাল বিজ্ঞান-মহিমার প্রহেলিকা হয়ে দীড়িয়েছে 
প্রহসন । আপনারা তা দেখে যে হেসে লুটিয়ে পড়েন না 
সেটা আপনাদেরই ও্দাধ্য, ভগ্ডামি বাঁ শিভাল্রি যাই 
বলুন। আমার বরং পুরুষণেরই প্রহেলিকা বলে মনে হয়? 
যদ্দিও বিজ্ঞানের প্রকোপ আপনারাও এড়াতে পারেন নি 
এবং যদিও আমাদের ধারণা আপনাদের চরিত্রের অনেক- 
থানিই আমরা বুঝে ফেলেছি । আপনাদের আমরা সমন্ত 
বুঝে ফেলেছি এই ধারণাই আরও বিভ্রান্ত করেছে 
আমাদের । আমাদের সম্পর্কে আপনাদের বতটুকু আমরা 
"পাই আপনাদের ততটুকুই হয়তো কিছু কিছু বুঝি আমরা 
কিন্ত আমাদের আয়ত্ের বাইরে আপনাদের যে সত্তা তার 
সঙ্গে আমাদের কিছুই ॥ারিচ নেই এবং সেই অপরিচয়ের 
অন্ধকারে সবজান্তার মতো চলতে যাই বলে পদে পদে 
চট থেতে হয় এবং সেই হ্োঁচটের নানামুষ্ঠি নানারূপে 
দেখা দেয়। কথনো মুচ্ছ! যাই, কখনো আত্মহত্যা করি, 
কখনো! কবিতা লিখি কখনো বা কোনো আন্দোলনে 
যোগদান করি। '.আমি ফোটোগ্রাফ নিয়ে মেতেছি। 
কিন্ত ওই অপরিচয়ের অন্ধকারটাই যৈ লোভনীয় । 

যাক। নিজের কথা নিয়েই অনেকক্ষণ বাগবিস্তার 


ভ্ডাক্রম্ডন্বন্ 
' ফিরলাম, আপনার কথা কিছুই জিগ্যেস কর! হয় নি। 


[ ২৮শ বর্-_২র ধণ্ড---১ম সংখ্যা 


মিষ্টদিদির খবর অনেকদিন পাইনি। শৈল ঠাকুরবিও 
কৌন চিঠিপত্র দেন না। কেমন আছেন তীরা? রিণি 
দেবী কেমন আছেন? এখনও কি আপনি তার পাঠীভ্যাসে 
সহায়তা করছেন না কি? পুরুষদের মধ্যে যে অংশটুকু 
প্রহেলিকা নয়, কাচের মত শ্বচ্ছ এবং ভঙ্গুর যেটুকু- সেটুকুর 
সম্বন্ধে সচেতন করা বৃথা বলেই কিছু বললাম না। আশা 
করি আপনি এবং রিণি উভয়েই নিরাপদে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ 
হবেন। অনেকক্ষণ ধরে বকছি, বিরক্ত হয়ে উঠেছেন 
বোধ হয় এতক্ষণ । আমারও নতুন প্রিন্টগুলো শুকিয়েছে। 
তুলতে হবে এইবাঁর। ফোঁটোগুলো কেমন লাগল জানাবেন। 
গ্রীতি সম্ভাষণ নিন্। ইতি 
-স্থুরমা 

ভৃত্য চ৷ দিয়া গেল এবং বলিল যে নীচে কমন রূমে এক 
ভদ্রলোক শঙ্করের সহিত দেখা করিবার জন্য আসিয়াছেন। 

শঙ্কর বলিল, “এইথানেই নিয়ে আয় ডেকে _” 

একটু পরেই রুমালে মুখ মুছিতে মুছিতে অপূর্ববরুষ্ণ 
পাঁপিত আগিয়৷ ছবারপ্রান্তে দর্শন দিলেন। বিনীত নমস্কার 
করিয়া অপ্রস্তত মুখে রুমাঁলটা পকেটে পুরিতে পুরিতে একটু 
হাসিয়া বলিলেন “আশা করি আপনার কাজের কোন 
ব্যাধাত করে বিরক্ত; মানে” 

“কিছু নাঃ বন্থন । চা খাবেন ?” 

“না ৷ অনেক ধন্যবাদ, এইমাত্র চা খেয়ে আসছি আঁমি-_” 

“কোন দরকার আছে নাকি আমার সজে ? 

অপূর্বববাবু পুনরায় রুমাল বাহির করিলেন এবং গলা, 
ঘাড় কানের পিছন প্রভৃতি মুছিয়া যেন কিছু শক্িসংগ্রহ 
করিলেন। তাহার পর মরিয় হইয়া শঙ্করের চোখের পানে 
চাঁহিয়া বলিয়া ফেলিলেন, “মিস্‌ মল্লিকের সঙ্গে কি দেখা হয় 
আজকাল আপনার ?” 

“দেখা না হওয়ার কি কারণ থাকতে পারে ?-_বিশ্মিত 
শঙ্কর প্রশ্ন করিল। অপূর্বরবাবু কেমন যেন থতমত খাইয়া 
গেলেন। সত্যই তো, শঙ্করবাবুর সহিত বেলা মল্লিকের দেখা 
ন! হওয়ার কোন সঙ্গত বাঁধা থাকিবার কথা নয়। এ প্রশ্ন 
করার কোন অর্থ হয় না। অকারণে অনর্থক একট প্রশ্ন 
করিয়াছেন এবং সেটা, ধরা পড়িয়া গিয়াছে এই ভাবিয়া 
অপুষধ্ববাধু মনে মনে অতিশয় লঙ্জিত হইলেন এবং তাহার 


পৌষ ১৩৪৭] 


মুখভাবেও সেটা সুস্পষ্ট হইয়া উঠিল। আবার রুমাল বাহির 
করিতে হইল। শঙ্করই পুনরায় প্রশ্ন করিল, “বেপার সঙ্গে 
আপনার দেখ! হয়েছে কতদিন আগে ?” ও 

“আমার? আমার তো দেখা করার তেমন সুযোগ 
য় না, রবিবার ছাড়া আমার ছুটি তে তেমন, মাঁনে__ 
তাছাড়া আপিন আজকাল বড় স্টিক্ট, রবার্টসন সায়েব-_” 

প্রবিবার তো মাসে চারটে করে আছে__” বলিয়া শঙ্কর 
মু মৃদু হাসিতে লাগিল । 

“মিস্‌ মল্লিক রবিবারে বাড়ি থাকেন না, আমি গিষে- 
ছিলাম দু*দিন। অথচ পিয়ানোর ভাল ভাল গৎ জোগাড় 
করেছি কয়েকটা, মানে শুনলাম উনি আজকাল পিয়ানোও-_» 

শঙ্কর বলিল, “পিয়ানো! পিয়ানো পেলে কোথা? 
শুনিনি তে! |” 

“মিস্টার বোসের একটা পিয়ানো আছে, উনি মিসেস 
বোসকে এশ্রাজ শেখাতে যাঁন, সেই সময় পিয়ানোটাঁও 
বাজান শুনেছি । মানে, ওদের বেয়ারাটা ব্লছিল-_” 

শঙ্কর ত্রকুপ্চিত করিয়! বলিল, “বেশ তো, আপনি কি 
করতে চাঁন ?” 

অপূর্বববাঁবু একটা টৌঁক গিলিযা বলিলেন, “কয়েকটা 
ভাল গৎ পেয়েছিলাম, খুব ভাঁল বিলিতি গণ সেই গুলো 
গুঁকে,আর কি, মানে 85 8 £16110-% 

“উপহার দিতে চাঁন ?% 

অপূর্বববাবু একটু হাঁসিলেন, চক্ষু দুইটি একটু নত 
করিলেন এবং সমস্ত মুখভাবে নারী-ম্ুলভ ' কমনীয়ত! প্রকাশ 


৫৫ 


৮ সর ব্রা 


নির্ধবিকারভাবে শঙ্কর বলির, “বেশ তে! ডাকে পাঠিয়ে 
দিন নাঁ।. দেখা যখন হচ্ছে না” 

“ডাকে? তা বেশ বলেছেন, শিওর পাবেন তা হলে, কি 
বলুন। আমি আপনার কাছে এসেছিলাম এই ভেবে যে, 
আপনি হয়ভো বলতে পারবেন কখন উনি বাড়িতে থাকেন, 
তা হলে আপনার সঙ্গে আমিও একদিন, মাঁনে-_» 

“উনি কখন বাঁড়িতে থাকেন তা আমিও ঠিক জানি ন। 
প্রায়ই অবশ্য থাকেন না, অনেকগুলো! টিউশনি নিয়েছেন 
কিনা__ 

“তা শুনেছি আমি । তা হলে» | 

অপূর্বববাবু আর কি বলিবেন, ভাবিয়া! পাইলেননা। একটু 
ইতস্তত করিয়া উঠিয়া দাঁড়াইলেন এবং বলিলেন, পডাকেই 


তা হলে পাঠিয়ে দেব। $র নাম্বারটা কি বলুন তো, টুকে 


নি, ঠিক মনে নেই-_» 

পাঞ্জাবির পকেট হইতে পকেট -বুক বাহির করিতে গিয়া 
কতকগুলি মেয়েদের মাথার কাঁটা বাহির হইয়া মেজেতে 
পড়িয়া গেল। কুষ্ঠিত অপূর্ববাবু চাদর সামলাইতে 
সামলাইতে সেগুলি কুড়াইতে লাগিলেন। 

শঙ্কর প্রশ্ন করিল, “ওগুলো আবার কি ?» 

“ওগুলো, মানে, আমাদের পাড়ারই একটি মেয়ে কিনতে 
দিয়েছিল আমাঁকে-” 

কাটাগুলি কুড়াইয়৷ গিস বেলা মন্িকের ঠিকানাটা টুকিয়া 
লইয়া অপূর্ররুষ্ণ পালিত চলিয়া গেলেন। শশ্কর মৃদু হাসিয়া 
চাটুকু পান করিয়া ফেলিল। 





করিয়া বলিলেন, “নাঃ না, উপহার ঠিক নয়, আমি অর্থ” ক্রমশঃ 
অন্ধের প্রতি 
শ্রীমতী ইন্দুরাণী দেবী 
ধরণীর শশ্ব্য ভাঁগারে আজ, ধরণীর বুকে হাঁসি খেলা 
হে মানব রিক্ত তুমি, ব্থ-হত পরাণের 7" 
রিক্ত তুমি, অতি ক্ষুদ্র, দীন, সুধু ছলভরাঃ শুধু রূপহীন। 
পৃথিবীর এই আলো ছায়া চাহনিতে তব কালোছায়া, 
তব চক্ষে আজ শুধু ব্যর্থতায় ভর! শুধু, 
ছায়ারপঃ শুধু ভাষাহীন। যেন জীবনের শেষ গণ দিম, 
নয়নের মাঝে ছুটি কালে৷ তার! জাগে নাকো বাণী, দুটী আঁখি কোলে 
নাচে না চন্‌ চল্‌্__ অন্তরের মৌন ভাঁষ! 


ছন্দ মাঝে যেন উদ্দাসীন, 


স্তন্ধ চির তরে, শুধু অর্থ হীন ॥ 


পদকর্ত! নয়নানন্দ 
শ্ীহরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সাহিত্যরত্ব 


পদাবলী সাহিত্যে আমরা আজ পর্যন্ত তিনজন নয়নানন্দের 
সন্ধান পাইয়াছি। তিনজনই প্রসিদ্ধ পদকর্তা। অথচ 
বৈষব-পদকর্তীগণের জীবনী-লেখক মহাশয়ের অপর 
দুইজন নয়নানন্দের নাম পর্য্যন্ত উল্লেখ করিতেও বিশ্বৃত 
হন। বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাঁস-লেখকগণের এই 
অনবধানত| ভবিষ্যতে অকুতজ্ঞতারূপে অভিহিত হইতে পারে; 
এই আশঙ্কায় আমরা সংক্ষেপে তিনজন নয়নানন্দের পরিচয়ই 
লিপিবদ্ধ করিয়া রাখিতেছি। 


(১) 


পদাবিলী সাঁহিত্যে স্থপরিচিত নয়নানন্দ মিশ্র, শ্রীগৌরাজ- 
প্রভুর প্রিয়সহচর গদাধর পর্ডিতের ভ্রাতুষ্প,ত্র এবং শিশ্ব। 
পণ্ডিত গোম্বামীর তিরোভাবের পর রাঢদেশে ভরতপুর 
গ্রামে বাস করেন। ন্বর্গগত যশোদানন্দন তালুকদার 
গ্রকাশিত প্রেমবিলাসের দ্বাবিংশ এবং চতুব্বিংশ বিলাসে 
ইহার নিম্নরূপ পরিচয় আছে। “টট্ুগ্রীমে চিত্রসেন নামে 
এক রাজা ছিলেন, তিনি বিলাস আচার্যকে সভাপত্ডিত 
নিযুক্ত করেন এবং (চট্টগ্রাম) বেলেটী গ্রামে বাসের 
বাবস্থ৷ করিয়া দেন। বিলাস মিএ্রের পুত্রের নাম মাঁধব। 
চট্টগ্রাম চত্রশালার সুগ্রসিদ্ধ বৈষ্ণব জমিদার পুণগুরীক 
বিষ্ভানিধির সঙ্গে মাঁধবের বন্ধুত্ব হয়। চট্টগ্রামে মাধবের 
এক পুত্র জন্মে তাহার নাম বাণীনাথ, বাণীনাথের অপর 
* এক নাম জগন্নাথ । অতঃপর মাধব মিশ্র নবদ্বীপে আসিয়া 
বাস করেন। নবদ্ীপে মাধবের কনিষ্ঠ পুত্রের জন্ম হয়, 
এই পুত্রই স্গ্রসিদ্ধ, গণ্ধাণর পণ্ডিত । মাধব মিশ্র শ্রীপা? 
মাধবেন্্রপুরীর-নিকট দীক্ষা গ্রহণ করিয়াছিলেন। মাধব 
মিশ্রের কনিষ্ঠ পুত্র গদাধর আকুমার ব্রহ্ধচারী ছিলেন। 
জ্যেষ্ঠ বাণীনাঁথ বিবাহ করেন, এই বাণীনাথ বা জগন্নাথ 
মিশ্রের পুত্রই পদকর্তা নয়নানন্দ। আমাদের মনে হয় গৌর- 
গণোনেশ দীঁপিকায়__“বাণীনাথ দ্বিজশ্চম্পাহট্রবাসী গ্রভো: 
'প্রিয়* বলিয়া এই বারীনাথের নামই উল্লিখিত হইয়াছে । 
নরোত্তমবিলাসে . নরহরি চক্রবর্তী মহাশয় অত্যন্ত সম্রমের 


সঙ্গে ইহার নাম উল্লেখ করিয়াছেন। খেতরীতে নরোত্তম 
ঠাকুর মহাশয় বাঁণীনাথকে বিশেষ সম্মানের সঙ্গে 
গ্রহণ করিয়াছিলেন। 

তালুকদারের প্রেমবিলাসে উল্লিখিত আছে, শ্রীল 
গদাঁধর পগ্ডিত গোপাল মন্তে দীক্ষা দিয়! নয়নানন্দকে স্বপৃজিত 
গোপীনাথ বিগ্রহের সেবার ভার দিয়াছিলেন। 


পণ্ডিত গোসাঞীর বড় ভাই বাঁণীনাথ হয়। 
জগন্নাথ বলি তারে কেহো৷ কেহে৷ কয় ॥ 
বাণীনাথের পুত্র নয়নানন্দ গোসাঞ্চি। 

তাহার যতেক গুণ তার অন্ত নাই ॥ 

তারে শিম করি গোসাঞী শক্তি সঞ্চারিল! । 
পণ্ডিত গোসাঁঞীর সেবা নয়ন পাইলা ॥ 
পর্ডিত গোসাঞী গ্রভূর অপ্রকট সময় । 
নয়নানন্দেরে ডাকি এই কথ! কয় ॥ 

মোর গলদেশে ছিল এই কৃষ্ণ মৃন্তি। 

সেবন করিহ সদা করি অতি প্রীতি ॥ 

তোমারে অপিল এই গোপীনাথের সেবা । 
তক্তিভাবে পূজিবে, না৷ পৃজিবে অন্ত দেবীদেবা ॥ 
স্বহত্য লিখিত এই গীতা তোমায় দিলা । 
মহাপ্রভূ এক শ্লোক ইহাতে লিখিলা! ॥ 
তক্তিভাবে ইহা তুমি করিবে পুজন। 

এত কহি পণ্ডিত গোসাঞ্ি হইলা অন্তর্ধান | 
দেখি শ্রীনয়ন গোসাঞ্ি বু থেদ কৈলা।। 
প্রভুর ইচ্ছামতে তবে স্ুস্থির হইলা ॥ 

নয়ন পণ্ডিত গোসাঞ্চির অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া করি। 
রা়দেশ ভরতপুরে করিলেন বাড়ি॥ (২২শ বিলাস) 


প্রেমবিলাসের এই কাহিনী কতখানি বিশ্বাসযোগ্য জানি না। 
ভরতপুর মুশিদাবাদ জেলার কান্দী মহকুমার অন্তর্গত । 
ন্য়নানন্দ গৌর-গনাধরের উপাদক। এই সম্পর্কে 
শ্রীথণ্ডের সরকার-ঠাকুর বংশের সহিত তাহার অন্তরঙ্গতা 
জন্ে। . কারণ শ্রীথণ্ডের নরহি সরকার ঠাকুর মহাশয়ই 


১৪১ 


পৌঁষ-_-১৩৪৭ 1 


প্র -স্চ তল- স্হ - বন্হ দি “স্  -্হা্ ্্দ 


গৌর-গদাধর উপাসনার প্রবর্তক। নয়নানন্দের কোন 
কোন পদের ভণিতা৷ এইরূপ-_ 





“কহয়ে নয়নানন্দ মনের উল্লাসে। 
'আর কি দেখিব গোরা গদাধর পাশে ॥! 
“নাচে শচীর নন্দন ছুলালিয়। 
সকল রসের সিন্ধু গদাধর প্রাণবন্ধু 
নিরবধি বিনোন রঙ্গিয়? ॥ 


পদকল্পতরতে নয়নানন্দ ভণিতার ২৬-টি পদ আছে। 
সমজ্ত পদই এই মিশ্র নয়নানন্দের রচিত কি-না, সে বিষয়ে 
আমাদের সন্দেহ রহিয়াছে । কারণ ইহার প্রায় সম-সময়েই 
শ্রীথণ্ডে নয়নাঁনন্দ কবিরাঁজ নামে অপর একজন পদকর্তা 
ছিলেন । ইনি গ্রীল রথুনন্দন ঠাকুরের শিশু, সুতরাং গৌর- 
গদাধরের উপাসক। ইহার কথ। পরে বলিতেছি। মিশ্র 
নয়নানপের একটি পদ উদ্ধীত করিলাম । 


রূপাঁচ্রাগের গৌরচন্্র ॥ ধানত্রী॥ 

গৌরাঙ্গ লাবণ্যর্ূপে কি কহিব একমুখে 
আর তাঁহে ফুলের কাঁচনি। 

ও চান্দ মুখের হাসি জীব না গো৷ হেন বাসি 
আর তাহে ভাতিয়া চাহনি ॥ 

বিছি গড়ল কত ছান্দে। 

কেমন কেমন করে মন সব লাগে উচাঁটন 
পরাঁণ পুতলি মোর কান্দে। 

বিধিরে বণিব কি করিলে কুলের খি 
আর তাঁহে নহি সতন্তরি॥ 

গেল কুল লাজ ভয় পরাঁণ রহিবার নয় 
মনের অনলে পুড়্যা মরি। 

কহিব কাহার আগে কহিলে পিরীতি ভাজে 
চিত মোর ধৈরজ না| বান্ধে। 

নয়নানন্দের বাণী শুন শুন ঠাকুরাণী 
ঠেকিলে গৌরাঙ্গ প্রেম ফান ॥ 


(২) 


পদকর্তা নয়নানন্দ কবিরাজ শ্রীথণ্ডের শ্রীল রঘুনন্দনের 
সাক্ষাৎ শিল্প। শ্রীথগুনিবাণী “রসকল্পবন্লী”-প্রণেতা 
ও পদকর্ত। গোপালদাস শ্রী্রহরি ও শ্রনরঘুনন্দনের শাখা- 


৯1 ্ী নম্র 





এ 


স্য্হ ্ স্ব ভু “৮ সেচ বসব” - বড ও সহ ০ স্ 


নির্ণয়ে অনেক কবি ও ভক্তের নাম উল্লেখ করিয়াছেন। 


রঘুনন্দন শাখায় প্রথমেই তিনি নয়নানন্দ কবিরাজের নাম 
উল্লেখ করিয়া লিখিতেছেন-_ 


“রঘুনন্দনের শাখা নয়নানন্দ কবিরাজ । 
যাঁর শাখা উপশাখায় ভরিল ভবমাঝ ॥ 
বয়ঃসন্ধি রসে হয় যাহার বর্ণন | 

ভাগ্যবান যেই সেই করয়ে স্মরণ । 
শ্রীনিকেতন আদি কবিরাঁজের শাখা । 
সংক্ষেপে কহিল নাম নাহি লেখা! জোঁথ! ॥৮ 


এই কবিতাঁংশ হইতে জানা যায়__পনয়নানন্দ কবিরাজ 
প্রসিদ্ধ ব্যক্তি ছিলেন। শ্রীনিকেতন-আদি বহু ব্যক্তি 
তাহার শিষ্যত্ব স্বীকার করিয়াছিলেন। নয়নানন্দ কৰি 
ছিলেন, তাহার রচিত বয়ঃসন্ধি রসের পদ ছিল। এই 
পদগুলি ভাগ্যবান ভজনপরাঁয়ণ বৈষবগণ নিত্য ম্মরণ 
করিতেন” ইহার অধিক কবিরাজের আর কোন 
পরিচয় পাওয়া যায় না। নয়নানন্দ কবিরাজ শ্রীখগ্ডের 
অধিবাসী ছিলেন বলিয়া মনে হয় । 

আমি যখন “বীরভূম অন্সন্ধান সমিতি”্র সহকারী 
সম্পাদকের কার্যে নিযুক্ত ছিলাম, সেই সময় সমিতির 
্রস্থশালাঁয় হাতের লেখা বহু পুরাতন পুথি সংগ্রহ করিয়া- 
ছিলাম। তাহার মধ্যে পদসংগ্রহের পুঁথিও ছিল। সেই 
সমস্ত পুঁথি হইতে এথাঁনে সেথানে ছুই-চাঁরিটা পদ সংগ্রহ 
করিয়া রাখিয়াছিলাম। এইরূপে নয়নানন্দ ভণিতার 
দুইটি পদ সংগৃহীত ছিল । তখন নয়ন মিশ্র ও মঙ্গলডিহির 
কবি নয়নানন্দ ঠাকুর ভিন্ন কবিরাজ নয়নানন্দের নাম 
জানিতাঁম না। সুতরাং পদ দুইটি আমি মঙ্গলডিহির 
নয়নানন্দ কবির পদ বলিয়াই সংগ্রহ করিয়াছিলাম। কিন্ত 
শ্রথণ্ডের নয়নানন্দ কবিরাজের এ্ররিচয় আবিষ্কৃত হওয়ার 
পর আমার দৃঢ় বিশ্বাস জন্মিয়াছে, এই পদ ছুইটি' তাহারই 
রচিত। পদ দুইটি পাঠ করিয়া তাহার সঙ্গে গোপাল- 
দাসের পূর্বোক্ত কবিতীংশ মিলাইলেই নিরপেক্ষ পাঠকগণও 
আমাদের উক্তি সমর্থন করিবেন। ভাগ্যক্রমে দুইটি পদৃই 
বয়ঃসন্ধি সন্থন্ধেঃ একটি গৌরচন্ত্র, অপরটি শশ্রীমতীর রূপ। 
পদ ঢুইটি তুলিয়া দিলাম.। পদ দুইটি ইতিপূর্বে কোথাও 
প্রকাঁশিত হয় নাই। পদাবলী সাহিত্যে গৌরচন্ত্রের 


৮ 


ভান ভস্বম্ 


[ ২৮শ বর্ধ-_২য় খণ্ড--১ম সংখ্যা 


বয়ঃসদ্ধি-বিষয়ক পদের সংখ্যা খুবই কম। সেদিক দিয়াও নয়নের আনন্দ সেইরূপে চির বন্দিত্ব প্রাপ্ত হইয়াছে । অপর 


গদ দুইটির মূল্য স্বীকার করিতে হয় 


স্ুহই ॥ বিমল স্রধুনী তীর। 
কালিন্দি ভরমে অধীর ॥ 
বিহরই গৌর কিশোর । 
পূরব পিরিতি রসে ভোর ॥ 
রাজপথে নরহরি সঙ্গে । 
ক্ষণে হেরি গঙ্গ তরঙ্গে ॥ 
গদাধর লাজে তেজে পাশ। 
মুরারি এ কর পরিহাস ॥ 
কৈশোর যৌবনে সন্ধি । 
নয়নানন্দ চির বন্দি ॥ 


অল্পের মধ্যে শ্রমহাপ্রতুর বয়ঃসন্ধির একটি অতি সুন্দর 
আলেখ্য । এই নবদ্বীপের রাজপথে প্রিয়বন্ধু নরহ্থরির কণ্ঠ 
বাহুঝেষ্টনে বান্ধিয়া চলিয়াছেন, পরক্ষণেই দেখি তিনি অপর 
বয়স্তগণ সঙ্গে গঙ্গাতরঙ্গে সম্তরণ করিতেছেন। এই 
এখনই মুরারীগুধকে দেখিয়া পরিহাস সহকারে বলিতেছেন 


__পব্যাকরণ শান্ত্র এ বিষম অবধি । 
কৃফ পিত্ত অজীর্ণ ব্যবস্থা নাহি ইথি”। 


আবার হয়তে। গদাধরকে দেখিয়া 


“বাহ পসারিয়৷ প্রভু রাখিল ধরিয়া । 
ন্যায় পড় তুমি আমা যাঁও প্রবোধিযা ॥” 


মুরারীকে দেখিয়া! পরিহাস করেন-__তুমি বাড়ী গিয়া 

গাছগাছড়া লইয়া রোগীর ব্যবস্থা কর, ব্যাকরণ পড়িয়া 
কি হইবে?” গদাঁধরকে মুক্তির লক্ষণ জিজ্ঞাসা করেন, 
কূটতর্ক উত্থাপন করেন। মুরারী প্রকে দেখিয়া দূরে 
পরিহার করিয়! চলেন, গদাধর যেন প্রহুর হাত ছাঁড়াইয়া 
পলাইতে পারিলেই বাঁচেন। সুতরাং পদকর্তা সত্য কথাই 
বলিয়াছেন_ 

“গদাধর লাজে তেজে পাশ।. 

মুর্রারীকে করু পরিহাস ।” 


ভণিতাটিও চমৎকার । মহাপ্রভু কৈশোর-যৌবনের 
সন্ধিস্থলে উপনীত হুইয়াছেন। (ত্রিপোকের লোকের ) 


পক্ষে পদকর্তা নয়নানন্দ সেইরূপে চিরবন্দী হইয়া রহিলেন। 
অপর পদটি এইরূপ- শ্রীকৃষ্ণের প্রতি দূতীর উক্তি) 
ধানশী ॥ 


মাধব পেখলু' সো! নব বালা 
বরজ রাজপথ চাদ উজালা ॥ 
অধরক হাম নয়নযুগে মেলি। 

হেম কমল পর চঞ্চরী থেলি ॥ 
হেরি তরুণী কোই করু পরিহাস । 
অন্তরে সমুঝয়ে বাহিরে উদাস। 
শুনিয়৷ না গুনে জন রসপরসঙ্গ | 
চরণ চলন গতি মরাল স্ুুরঙ্গ ॥ 
বক্ষ জখন গুরু কটি ভেল ক্ষীণ । 
নয়নাননগ দরশ শুভ দিন ॥ 


মাধব ব্রজের রাজপথের উজ্জল ঠাদ সেই নবীন 
বালাকে দেখিলাম । (তাহার ) অধরের হাসি নয়নযুগলে 
মিলিত হইয়াছে । যেন সোনার কমলে ( বদনমগুলে দুইটি 
চক্ষুরূপ ) ভ্রমর থেলিতেছে। (তাহাকে ) দেখিয়া কোন 
তরুণী ঘদি পরিহাস করে, অন্তরে বুঝিতে পারে, (কিন্তু না 
বুঝার ভাঁশে) বাহিরে গুদাশ্ত দেখায়। রসপ্রসঙ্গ যেন 
শুনিয়াও শুনে না, মরাঁলগতিতে চলিয়া যাঁয়। জঘন ও 
বন্স্থল এবং কটি ক্ষীণ হইল। (আমার পক্ষে আজ) 
স্ঁভদিন, সেই নয়নানিন্দদায়িনীকে দেখিলাম । অপর পক্ষে 
পদকর্তী নয়নানন্দ সেইরূপে শুভদিনের দর্শন পাইলেন। 
অর্থাৎ শ্রীমতীর এই রূপ শ্রীুষ্ণকে আকর্ষণ করিবে, এইবার 
ভক্তগণের মুগলমিলন দর্শনের শুভদিনের'উদয় হইবে। 

গদাধর পণ্ডিতের ত্রাতু্পত্র নয়নানন্দ মিশ্রকে প্রায় 
মহাপ্রভুর সম-সাঁময়িক বলিতে পারা যাঁয়। মহাপ্রভুর 
তিরোধাঁনের পর নয়নমিশ্র বহুদিন জীবিত ছিলেন, কারণ 
খেতরীর মহোৎসবে তিনি উপস্থিত হইয়াছিলেন। ঠাকুর 
রঘুনন্দন এবং নয়নমিশ্র প্রায় সমবয়স্ক । স্তরাঁং নয়নানন্দ 
কবিরাজ নয়নানন্দ মিশ্রের অব্যবহিত পরবত্তী ব্যক্তি। 
আমরা উভয় কবিকে সম-সাঁময়িক বলিয়াই ধরিয়া 
লইয়াছি। উভয় কবিই খুষ্ীয় ষোড়শ শতাবীতে বর্তমান 
ছিলেন.। বিদ্যাপতি ভণিভার "বয়ঃসন্ধির পদগুলি ভাষার 


পৌধ_-১৩৪৭ ] 


দিক দিয়া সন্দেহজনক । আমার মনে হয়, নয়নানন্দ 
কবিরাজের বয়ঃসদ্ধির পদগুলি বিগ্যাঁপতির নামে চলিয়া 
গিয়াছে। এদিকে ভাষাতাত্বিকগণের দৃষ্টি আবর্ষণ 
করিতেছি । 
(৩) 

ঠাকুর নয়নানন্দ পূর্বোক্ত ছুই নয়নানন্দ অপেক্ষা প্রায় 
শতাধিক বৎসরের পরবত্তী ব্যক্তি । ইনি বাঙ্গাল! ১১৪০ 
সালের ৫ই জ্যেষ্ঠ ( খুঃ অঃ ১৭৩৩ ) মঙ্গলবার শ্রীরুষ্ণভক্তি- 
রসকদস্বগ্রস্থ সম্পূর্ণ করেন। ইহার দুই বংসর পূর্বে 
১৬৩ শকাব্াাঁয় গ্রেয়োভক্তিরসার্ণৰ রচনা সমাপ্ত হয়। 
আমরা কবির স্বহস্ত লিখিত গ্রন্থ হইতে এই সন তারিখ উদ্ধত 
করিতেছি । বীরভূম জেলার ইলামবাজার থানায় মঙ্গলডিঠি 
অতি প্রসিদ্ধ গ্রাম। এই গ্রামের চাঁরিশত বৎসরের 
ধারাধাহিক ইতিহাস আছে। মহাপ্রভুর পার্ষণ ঠাকুর 
স্থন্দরানিন্দ মঙ্গলডাহর গোপাল ঠাকুরকে মন্ত্রদীক্ষা দন 
করেন। গোপাল পান বিক্রয় করিয়৷ জীবিকা নির্বাহ 
করিতেন বলিয় পর্ণগোপাল বা পাশ্য়া ঠাকুর নামে বিখ্যাত 
হন। সেকালে হিন্দু-মুসলমানে মিলন স্থাপনের জন্য ধাহারা 
অন্তরের সঙ্গে চেষ্টা করিতেন, তাহাদের মধ্যে পর্ণগোপাঁল 
অগ্রবর্তী ছিলেন। তাঁহার সম্বন্ধে বহু অলৌকিক গল্প 
প্রচলিত আছে। পর্ণগোপাল এক সন্নাসীর নিকট গ্রহণ 
করিয! স্বগৃহে শ্টামটাদ ও বলরাম বিগ্রহের সেবা প্রতিষ্ঠা 
করেন। পূর্ণগোপাল খুষ্টীয় ষোড়শ শতকের মধ্যভাগে 
বর্তমান ছিলেন । 

নয়নানন্দের পিতার নাম গোঁপাঁলচরণ জ্যেষ্ঠ সহোঁদরের 
নাম গোকুলচন্ত্র । ছুই ভ্রাতাই পণ্ডিত এবং কবি ছিলেন। 
বৈষ্বগ্রস্থ অধ্যয়ন এবং সঙ্গীত শিক্ষার জন্ত ইহাদের 
চতুষ্পাঠীতে নানাস্ান হইতে ছাত্রের দল আসিয়া উৎস্থিত 
হইত। কবি নয়নানন্দ এবং বীরভূম জেফলাই গ্রামের 
কবি জগদানন্দ উভয়েই সম-যাময়িক। নয়নাঁননের কৃ্ণ- 
ভক্তিরসকদ্ব গ্রন্থের অনুক্রমণিকা এইরূপ-_ 


এবে কহি গ্রন্থের অনুক্রম সুত্র । 
ষেব! যেই প্রকরণে হয়াছেন উক্ত ॥ 
প্রথম প্রকরণে হৈলাম মঙ্গলৃচরণ। 
গুরু কৃষ্ণ বৈষ্ণব বন্দনারূপ হন ॥ 


কক সন্মান 


৫ ৪২ 


সর্ব আরাধন! পর কুষ্ের অর্চচন। 
মনে সন্োধিয়ে প্রশ্ন প্রথম প্রকরণ ॥১ 

শ্রীকষণসেবায় হয় জগতের গ্রীতি। 

ভক্তবশ ভগবান অভক্ত নিন্দাঁতথি ॥ 
কষ্ণাশ্রয় বিনে ভবসিদ্ধু নহে পার। 

দ্বিতীয় প্রকরণে হৈল তাহার বিচাঁর ॥২ 
বাল্যাঁরভ্য কৃষ্ণসেবা বিষয়াঝিষ্ট ত্যাগ | 
অনাশ্রিত পশুতুল্য ইত্যাদি বিভাগ ॥ 
ইন্দ্রিয় থাকিতে যে ইন্দ্রিয়হীন জন । 
ভক্তিত্রেষ্ঠ তৃতীয়ে হৈল নিরূপণ ॥ 

অকাম! সকামা ভক্তি কৃষ্ণভক্তি ফল। 
'অবিনাণী কষ্*দাস তৃতীয়ে সকল ॥৩ 
চতুর্থে সাঁধন ভক্তি বৈধীর কথন। 

উত্তম মধ্যম ভক্ত তটস্থ লক্ষণ ॥৪ 

পঞ্চমে চতুঃযষ্টি ভক্তীঙ্গ লক্ষণ! | 

ষষ্ঠে সেবা নাম আদি অপরাধ বর্ণন1 0৫1৬ 
সপ্তমে রাঁগভক্তি প্রকটা প্রকট লীলা । 
অষ্টমে ভাব ভক্তি বর্ণন হইল| ॥৭।৮ 

নবম বিভাগ স্থত্র পূর্ণতরতম। 
ধবীরোদ্দাতাদি তথা নায়ক কথন ॥৯ 
নিত্যসিদ্ধাি ভক্তি লক্ষণ! নবমে। 

দশমে অন্ুভাঁব তথা সান্বিক কথনে ॥১০ 
ব্যভিচারী কহিলাম প্রকরণ একাদশে । 
স্থায়ীভাব কখন হইয়াছেন দ্বাদশে ॥১-।১২ 
ত্রয়োদশে মুখ্য ভক্তি রস নিরূপণ । 
শান্ত দাস্ত পর্য্যন্ত তাহাতে লিখন ॥১৬ 
চতুর্দশে সখ্য ভক্তি রসের বিচার । 
পঞ্চদশ গ্রকরণে বাৎসল্যের সার ॥১৪1১৭ 
ষোড়শ সঞ্ডদশে উজ্জ্বল বর্ণন। 
এই তে কহিল ইতি শাস্ত্র অনুক্রম ।১৬।১৭ 


গ্রন্থখানি শ্রীপাদ রূপ গোস্বামীর ভক্তিরসামৃত সিন্ধুর 
মন্দ্বামসরণে লিখিত'। অনুবাদ প্রাঞ্জল, পাত্ডিত্যপূর্ণ এবং 
কবিত্বময়। গ্রন্থ সমাপ্তি প্রসঙ্গে কবি লিখিয়াছেন-_ 


যুগ্মবাঁণ খাতুচন্দ্র শকে পরিগণি | 
বুষরাশি গত ভাণু মা তাহে জানি ॥ 


তৃমিপুত্র করে তথা কুহতিথি শেষে। 
হইলেন গ্রন্থ সাঙ্গ পঞ্চম দিবসে ॥ 
সেনভূম মধ্যে মঙ্গলডিহি গ্রাম । 
শ্রীপরিগোপালের যাহাতে বিশ্রাম ॥ 
ঠাকুর পায়ার সেবা শ্রীশ্যামসুন্নর | 
বলরামচন্ত্র গ্রভূ রসিক নাগর ॥ 

সে মৃত্তি দেখিতে ভক্তের বাঁড়ে প্রেমরঙ । 
সেই স্থানে রহি এই গ্রন্থ হইল সাঙ্গ ॥ 
রুষ্ণভক্তি রসকদন্থ শ্রবণে উল্লাস | 
কাতরে বধিল! এ নয়নানন্ন দাস ॥ 


কবি প্রেয়োভক্তি রসার্ঁব সমাপ্তি-প্রসঙ্গে লিখিয়াছেন-_ 


এ দাস নয়নানন্দ গোপালের কিন্কর। 
শ্রীযৃত গোকুলচন্ত্র জোষ্ঠ সহোদর | 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় থণ্ডঁ_-১ম সংখ্যা 


তাহার আশয় হৃত্র কথক দেখিয়া । 
এই গ্রন্থ লিখিলাম গ্রচার করিয়া ॥ 


নয়নানন্দের একটি পদ তুলিয়! দিলাম । 


উঠ গোপাল প্রাতঃকাল মুখ নেহারি তের । 
রজনী অবসান ভই কাম ভই মের ॥ 

উঠতো ভা দেখতো কান রনি গেই দূর । 
বালক সঙ্গে মেলত রঙ্গে রোহিণেয় বলবীর ॥ 
এই শ্রীদাম দাম সদাম সঙ্গীগণ তের। 

পুরতো বেণু ধাওত ধেন আঙিনা ভরল মের ॥ 
নন্দরাণী পসারি পানি বালক সেই মোর । 

দুখ নেহাঁরি দুখ বিসরি কিরে স্থখ জানি ওর ॥ 
শ্যামচন্্র চন্দ্র উদিত নামাঁল হৃদি ঘোর। 

ঠেরিযা বয়ান কহিছে নয়ান উঠ কানাই মোর ॥ 


ভাই-ফৌট! 


কাদের নওয়াজ 


'আমায় দিল ভাই-ফৌটা কে 
জান্তে তুমি চাও আলেয়া ? 
তবে শুন কালিন্দী নয়, 
দিয়েছে মোর বোন্‌ সে কেয়া। 
ভাব্ছ সিঁখির সি'ছুর তোমার, 
রইবে চিরকাল যে এবার, 
মিথ্যা কথা, ভাই-ফ্োঁটা মোর 
নয়রে প্রিয়ে তাহার তরে । 
তবে এবার খুলেই বলি, 
শুন্বে যদি ধৈর্যা ধরে, 
বৈতরণার বহ্বীপেরি-_ 
মতই পৃত মায়ের ক্রোড়ে_ 
ছিলেম্‌ মোরা পারুল-টাপাঁয়। 
বুস্তে যেন তরুর শাখায়__ 
ছাঁড়াছাড়ি হতেই ক্রমে 
ভুলে গেলাম পরম্পরে | 
এমনি ক'রেই দিন যে গৌয়ায়, 
ৃ হঠাৎ এলে তুমিই প্রিয়া ! 
নিলে আমার হুদ্‌-কাননের 
' কুস্থুমগ্ডলি সব তুলিয়া । 


ভুলে গেলাম বোনের স্থৃতি, 
ভূলিল সে ভায়ের শ্রীতি, 
হারিয়ে গেল অন্কুরী কার-__ 

যেন বা পুক্ষরার সরে। 
পারুলেরে হুল্ল ঠাপ! 

তুলিল যে পারুল চাপায় 
ফিরে 'এল সব স্থতি আজ 

যেন রে এই ভাইদ্বিতীয়ায়। 


বোনেরি, ভাই-ফোটার সনে- 
জননীরেও পড়ল মনে, 
নেমে এল ক্ষণিক স্বরগ 
ৃ যেন বা এঠ ধরার 'পরে। 
আমায় দিল ভাই-ফৌঁটা৷ কে 
এখনও কি শুধাও পরিয়ে? 
কালিদহের কমল-কাঁনর 
দেখেছে যে নযন দিয়ে, 
সরে না তার মুখেই বাণী, 
প্রশ্ন কর! বৃথাই রাণি ! 
'আ্জি যে এক-বৃস্তে-ফোটা 
, কুলুমেরি পরাগ ঝরে !' 


বিছ্ভালয়ে মধ্যাহ্ন জলযোগ 
প্রীকালীচরণ ঘোষ 


ইংরেজ আমলে পড়িয়া আমাদের পাঠশাল! ও বিস্তালয়গুলি বেল! 
সাড়ে দশট1 হইতে বিকাল চাঁরট| পর্যাস্ত চালাইতে হয়। সরকারী নিয়মে 
ইহার কোনও ব্যতিক্রম করিবার উপায় নাই। এমন কি কিশেরদিগের 
জগ্ত যে নিম্ন বা উচ্চ প্রাথমিক পাঠশালাগুলি পরিচালিত হয়, তাহাতেও 
১*-৩* হইতে ৪টা (নিতান্ত বালক পক্ষে ১*-৩* হইতে ২টা) 
স্কুল বসে। 

এই কারণে সাধারণতঃ সকাল »॥ হইতে ১*টার মধ্যে বিস্তাধি- 
দিগকে আহার সমাপন করিতে হয়। পল্লীর দিকে এই সকল স্কুলগুলি 
প্রায়ই অতি দুরে দুরে অবস্থিত ; মে কারণে অনেক ছাত্রকে কয়েক 
মাইল অতিক্রম করিয়া পড়িতে আমিতে হয়। তাহাদের আহার শেষ 
করিতে হয় আরও আগে । ছুটা হয় চারটার পরে ; সে কারণে অধিকাংশ 
পড়,য়াকে সাড়ে চারটার পর হইতে বাড়ী পৌছিতে হয়; যাহাদের 
বাড়ী যন্ঠ দূরে তাহাদের তত বেশী সময় লাগিয়! যায়! ইহার উপর 
যাহাদের বিদ্যালয়ে ছুটির পর ব্যায়ামের বাবস্থা আছে, তাহাদের আরও 
অন্ততঃ আধঘণ্টা আটক থ!কিতে হয়। 

ধাভার। ক শ্বীকার করিয়! এই প্রবন্ধ পাঠ করিতেছেন, তাহার! 
সকলেই জানেন পাঠগৃহে এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে দ্বিগ্রহরে বিশেষ ক্ষুধার 
উদ্রেক হয়। এই সময় কিছু খাইতে না পাইয়। শরীরের বিশেষ ক্ষতি 
এবং ৰিকালের দিকে পাঠগুহে বদ্ধ থাকিয়া! বিদ্যাচচ্চ৷ কর! ছাত্রদিগের 
পক্ষে অত্যাচারের নাম|স্তর মাত্র হয়। হয়ত কয়েকটা বালক বাটা 
হইতে নামান ছুই একটা পয়স। আনিয়া স্থানীয় দোকান হইতে কিছু 
কিনিয়া খায়। অধিকা'শ গ্গেত্রেই এই খাস্ছা স্বাস্থাগ্রদ নহে। শাহ! ছাড়া, 
অনেক বালকই কিছু না থাইয়। টিফিনের সময় ছুটাছুটা, পরের ছুই ঘণ্টা 
পাঠ এবং ব্যবস্থা থাকিলে চুটার পর ব্যায়াম করিয়! ঘরে ফেরে। অত্যান্ত 
কুধার্ত অবস্থায় বাধাতামুলক ব্য।য়াম ছাত্রদের স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতি- 
জনক হইয়! থাকে। তখনকার 'ক্লান্তি অপেক্ষা সন্ধ্যার ক্লান্তি আরও 
গুরুতর হয় এবং রাত্রে পাঠকালে দারুণ অবনাদ আসে। 

এরূপ ক্ষেত্রে প্রতি বিষ্ভালয়েই নিজশক্তিমত মধ্যাহ্নে বালকদিগকে 
কিছু জলযোগের ব্যবস্থা কর! প্রয়োজন। ইহাতে যে কেবলমাত্র 
তাহাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি হইবে তাহ। নহে, মধ্যাহ্নের পর হইতে তাহাদের 
পাঠের রুচি ও বৃদ্ধি পাইবে। * 

আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় মধ্য জলযোগের ব্যবস্থা কর! অতি ছুঃসাধ্য 
ব্যাগার। অনেক স্থলে যে বিশেষ অসুবিধা আছে তাহ! অস্বীকার 
করিবার উপায় নাই। কিন্তু সামান্য যত্ব ও চেষ্টা করিলে যে ইহ! সম্ভব 
হয়, তাহ! নিঃনন্দেহে বল! যাইতে পারে। বর্তমানে 'বাঙ্গালাদেশে 
কয়েকটা বিস্তালয়ে ইছা। প্রবর্তিত হইয়াছে তাহার মধ্যে দূর পল্লীতে ছুটা 


একটা আছে। স্তরাং পলীর দিকে একেবারে চলে না, একথা! বলা 
যুক্তিসঙ্গত নহে। 

প্রথমেই থরচের কথা আসিয়া পড়ে । আমি এই বিষয় প্রবন্ধের শেষ 
ভাগে আলোচন! করিতেছি । ইতিমধ্যে কত খরচ পড়িতে পারে তাহার 
একটা আলোচন। কর! যাক্‌। 

প্রথমতঃ সমস্ত বৎসরেই শনিবার ও রবিবার টিফিন দিবার প্রয়োজন 
নাই ; ছাত্রের| বাড়ী গিয়। জলযোগ করিতে পারিবে । তাহার গর 
গ্রীম্মাবকাশ, পুজা ও বড়দিন লইয়। দীর্ঘ বন্ধ থাকে। ঈদ উপলক্ষে ছুটা 
দীর্ঘ হইতে দীর্ঘতর হইতেছে। প্রাতঃকালীন (গ্রীষ্ম) বিভ্ভালয়ে এবং 
ছাত্রদের পরীক্ষার সময় টিফিন দেওয়ায় নান! অন্বিধ! আছে। তাহার 
উপর খরচের দিক দরিয়া বিবেচনা করিতে হইলেও টিফিন বন্ধ রাখা 
প্রয়োজন । 

সমন্ত বন্ধগুলি বিবেচনা করিলে বর্তমানে বিদ্তালয়গুলিতে ১** 
দিন হিনাব করিয়। টিফিনের ব্যবস্থা করিলেই যথেষ্ট হয়। | 

পল্লীর দিকে জলযেগে কি খাস দেওয়া |াইতে পারে তাহ! লইয়া 
এক সমন্তার কথা। সামান্ত কিছু স্বান্থাগ্রদ থাস্ভ দেওয়াই উদ্দেন্ঠ ; 
সুতরাং সকল ছাত্রকে দেওয়া যায় এমন কোনও জলযোগের ব্যবস্থ! 
করিতে পারিলেই কাজ চলে। 

অন্ত কিছু পাওয়া না গেলেও আটা এবং ছোলার ডাল পাইলেই 
চলিবে। অভিজ্ঞতা হইতে বলতে পার! যায়, প্রকৃতপক্ষে ইহাই সর্বাপেক্ষা 
স্বাস্থাপ্রদ খাগ্চ এবং নকল বিস্তালয়েই ইহার ব্যবস্থ! অতি সহজেই কর! 
যায়। রুটা এবং ডাল, তাহাতে সামান্থ নারিকেল কুগি বা জালু পড়িলে 
থুব ভালই হয়। 

ষদি একটী বিষ্ালয়ে ২৫* পড়ুয়। থাকে, তাহাদের লইয়৷ একটা 
হিসাব করিয়া দেখ যাইতে পারে! যেস্থলে ২৫* ছাত্র থাকে 'গড়ে 
তাহাদের উপস্থিতি সংখ্যা দিনে ২১*।২১৫ জনের অধিক নহে। ইহার 
মধ্যে অন্ততঃ ১*।১৫ জন ছাত্র কোনও ন|! কোনও কারণে দিনের সাধারণ 
টিফিন গ্রহণ করিবে না । বাকী খাকে ছুই শত। প্রতি ছাত্রকে 
দুইখানি রুটা ও মাঝারি এক চাষ ব৷ হাতা ডাল দিতে হয়। 

প্রতি পোয়া আটায় দশখানি রুটা ( প্রতি ছাত্রের ২ধ'নি এবং ২৯* 
ছেলের) হইলে ৪** রুটাতে ৪* পোয়! বা ১, সের আট৷ লাগে-_ 
আনুমানিক মুল্য ১৫ 

প্রতি ১** শত ছাত্রের জনক ছোলার ডাল আড়াই সের হইতে তিন 
সের লাগে, অর্থাৎ বেলী পক্ষে ছয় সের-_মুদ্য।/৯৮-1* | 

মশল! গ্রস্থৃতি তিন আন! ও কয়ল| তিন 'আনা। সাধারণতঃ এরূপ 
ক্ষেত্রে ঘৃত দেওয়া হয় নাঁ। ইচ্ছ! হইলে সামান্য দেওয়। যাইতে পারে; 


৬১ 


৬২ 


সর্ধপ্রকারে কোনওরপে মোট আড়াই টাকার অধিক হয় না। ইহা 
ছাড়! তৈয়ারী করিবার মজুরি আছে। 

রুটা ডাল ব্যতীত (১) মুড়ি, নারিকেল, ঘ্বৃত, চিনি (২) মুড়ি, 
মুড়কী, নারিকেল (৩) চি'ড়ে, দই, কলা, চিনি (৪) ডাল ভিঙ্গানো, 
চিনি, শশা প্রভৃতি (৫) আম, আনারস, কলা, ফুট প্রভৃতি ফল 
(৬) ছোল! গুড় বাচিনি (৭) মটর ভিজাইরা ঘুগনী (৮) হালুয়া, 
(৯) মোরা বা খইচুর প্রভৃতি নানা প্রকার অদল বদল করা যাইতে 
পারে। একই প্রকার টিফিন ভাল নহে; সুতরাং যত পরিবর্তন কর! 
যায় ততই মঙ্গল। 

মুড়ি, নারিকেল (কুর1), চিনি দিয়া যে জলপান হয়, তাহ! অতি 
উপাদেয় ও স্বাস্থাপ্রদ। পল্লীর দিকে টাকায় ১৪ হইতে ৩২ খুঁচি মুড়ি 
সচরাচর পাওয়| যায়। প্রণম হিলাবেও দেখা যায়, এক খু'চিতে আট 
জন ছাত্র খাইলে, এক টাক1 ব! এক টাক। ছুই আনার মুড়ি হইলেই 
যথেষ্ট হইবে। তাহার সহিত চার আনার নারিকেল (কুর!1), বারে 
আনার । মাখন জ্বালানো! ) ঘৃত এবং আট আনার চিনি পর্যযাপ্ত হইবে। 
ইহাতেও মোট দৈনিক খরচ আড়াই টাকার বেশী হয় না। 

এইতাবে অন্তগুলিরও হিনাব করা যাইতে পারে। যদি 'টাক! বেশী 
থাকে, তাহা হইলে পরিমাণ বৃদ্ধি করা যাইতে পারে; সুতরাং এ বিষয়ে 
বিরুদ্ধ আলোচনার কোনও সুযোগ নাই। 

কাহার! এই সকল খাস্ধ সরবরাহ করিবে বা কাহাদের তত্বাবধানে 
হইবে, ইহাই পল্লীর দিকে মহা! সমস্তার কথা। যদি অর্থানুকুল্য থাকে, 
তবে বিস্তালয়ের নিজের তন্বাবধানে এই সকল মাল প্রস্তুত করাইয়! 
বিতরণ করাই মঙ্গল। গ্রামে বু বেকার সমর্থ লোক বাস করে। 
উহাদের মধ্যে যাহার! এই সকল কাজ জানে, তাহাদের কাহাকেও 
দৈনিক মজজুরিতে নির্বাচিত করিলেই চলে। ইহাতে কোনও [বিশেষ 
অহুবিধা নাই। ইহাতে মোট খরচ দৈনিক বারে! আন হইতে এক 
টাকার বেশী হয় না; অস্ত: হইতে দেওয়া উচিত নয়। 

ইহাতে অন্থবিধা থাকিলে স্থানীয় ভাল ময়রার দোক।নের সহিত 
বন্দোবস্ত করিতে হয়। ইহ! অপেক্ষাকৃত অনেক সহজ এবং হবল্প- 
বায়সাধ্য। পল্লীর দিকে জীবদ্ম'ত একটী দোকানও নির্দিষ্ট হারে টাক। 
পাইয়। বাচিয়। উঠিতে পারে। 

পূর্বে বল! হইয়াছে ১০1১৫ বা ততোধিক ছাত্র সাধারণ টিফিন 
গ্রহণ করে না। তাহাদের লইয়! "একটু সমন্ত।। মিছরি, বাতানা, 
কল, ডাব প্রস্ততি ফল, বিস্কুট, সোয়া, খইচুর প্রভৃতি স্বতন্ত্র ব্যবস্থা 
কর! দরকার। ইহাতে দৈনিক চার আনার অধিক থরচ করিতে দেওয়া 
যায় না। 

বাহিরের দোকান হইতে লইলে সর্বপ্রকারে মোট খরচ তিন টাকা; 
আর তাহ। নিজেদের ,লোক দ্বার তৈয়ারী কর।ইতে হইলে চার টাক! 
দৈনিক পড়ে। এই হিনাবে বৎসরে ১১ দিনে ৩৩০২ হইতে ৪৪৯২ 
জর্থাৎ ৩৫০২ অথব। ৪৭*২ টাক। গ্াড়িবে । 

আমল কথা টাকা আমিবে কোঁথ। হইতে? বাঙ্গাল! দেশে খুব 


জ্ঞাল্পভ-্বশ্ব 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় থণ্ডঁ--১ম সংখ্যা 


কম বিস্ভালয়ই আছে যাহারা নিজেদের আয় হইতে বৎসরে এতগুলি 
টাক! বায় করিতে পারে। হুতরাং ছাত্রদের নিকট হইতে লওয়! 
দরকার। 

প্রতি ছাত্রের নিকট মাসিক চার আনা করিয়। লইলে বৎসরে 
তিন টাকা হিসাবে ২৫* জন ছাত্রে ৭৫*২ টাকা! পাওয়! যায়। পল্লীর 
বিদ্তালয়ের পক্ষে এই হার থুব বেণী এবং উপরে যে হিসাব দেওয়া 
হইয়াছে, তাহাতে ইহার প্রয়োজন নাই। 

প্রতি ছাত্রের নিকট মানিক তিন আন! হিদাবে লইলে বৎসরে 
প্রতি ছাত্র দুই টাক। চার আন! করিয়া ৫৬২1 হয়। যদি এই টাকা 
আদায় করা যায়, তাহ! হইলে স্বচ্ছনোই জলযোগের পরিমাণ বুদ্ধি করিয়! 
দেওয়! যাইতে পারে এবং হাতে কিছু উত্বত্বও থাকে । মাঝে মাঝে এক 
দিন মাংস প্রভৃতি দেওয়া যায়। 

প্রতি ছাত্রের নিকট মাসিক দুই আন! হিসাবে লইলে বৎসরে দেড় 
টাক! হিসাবে ২৫* জন ছাত্রে ৩৭৫২ টাকা পাওয়। যায়। এই টাকা 
পাইলে নিজেদের কারিগর ন। রাখিয়া! আমর! শ্বচ্ছনে ২৫* ছেলের 
জলযোগের ব্যবস্থা করিতে পারি। প্রতি ছাত্রের নিকট ছুই আন 
লইলে থুব বেশী লওয়া হইল না এবং অভিভাবকেরা ইহা! বিনা কষ্টে দিতে 
পারেন। কিন্তু ইনার বিপদ আছে; যদি কোনও মাসে কম আদায় 
হয়, তাহ! হইলে বিছ্থালয়ের কর্তৃপক্ষের উপর দেনার দায় আসিয়া 
পড়িতে পারে। 

সকল দিক বিবেচন! করিয়া পুতি ছাত্রের নিকট তিন আনা লইলে 
সহজেই কাজ চলিয়! যায়। 

এইখানে আরও একটা কথা আছে, তাহ! সাধারণের জান! নই । 
বাঙ্গাল! সরক।র হইতে এই জলযোগের জন্য আথিক সাহায্য দিবার ব্যবস্থা 
আছে। কোনও বিদ্যালয়ে 101750101 ০€ 117) 5102] 15000071101) 
অনুমোদিত একজন শিক্ষক নিযুক্ত থাকিলে এই টাকা দেওয়! হয়। 
প্রতি ছাত্রের নিকট হইতে মানিক ছয় পয়সা লইলে সরকার হইতে প্রতি 
ছাত্রের জন্য মাসিক তিন আন! পাওয়া যায়। উক্ত শিক্ষক যে কেবলমান্্ 
ব্যায়াম ্বাস্থ্যচচ্চার কাজই পরিদর্শন করেন তাহা নহে, তাহার হবার! 
ছাত্রদের অন্য শিক্ষার কাজ পরিচালনা! কর] চলে। সুতরাং এই 
হিসাবে বিগ্তালয়ের পক্ষ হইতে কোনও ক্ষতি নাই। উপরস্ত সরকারী 
টাকায় জলযোগের খরচ চালাইয়া, ছাত্রদের নিকট আদায়ী মাসিক 
ছয় পয়স! হইতে তাহাদের স্বাস্থ্যের উন্নতির অপর চেষ্ট! করা যাইতে 
পারে। 

ছাত্রদের মধ্যে জলপান বাটিয়া দিবার জন্ভ কতকগুলি তৈজসপত্জের 
দ্রকার। তাহার উপর যদি বিজ্ভালয়ের মধ্যেই থানদ্রব্যাদি তৈয়ারীর 
ব্যবস্থা! করিতে হয়, তাহ! হইলে বড় চাটু বা তাওয়া! একখানি, বড় 
কড়াই, হাত, খস্তি, চিমটা, রুটী দিবার জন্য ডেকৃচি, ভাল দিবার জন্য 
গামলা, ময়দা মাখিবার কেটুকে, বারকোব, চাকী ও বেলন, বাটনার 
জগ্ত হামানদিস্তা, মালপত্র ওজনের জন্ বাটখার! ধীড়িপাল্া প্রসৃতি 
লাগিবে। ছাত্রের! যাহাতে হাত ধুইতে পারে, তাহার জন্ক জলের 


পৌঁষ--১৩৪৭ ] 








ব্যবস্থা থাকা চাই ; ইহার আনুমানিক বায় ( বর্তমান সময়ে) এককালীন 
১০০২ হইতে ১২৫২ টাক] । 

টিফিনের পূর্বে প্রতি দের নিকট প্রস্তুত খান্ধত্রব্যাদি ঢাকা দিয়া 
রাখিয়। আদিলে, টিফিন হইবামাত্র ছাত্রের! হাত ধুইয়া ্রেণীবন্ধভাবে 
ধাড়াইলে র।শের নির্বাচিত ছুইটী ছাত্র (109701075 ) খাগ্ভ বিতরণ 
করিবে। পাত্রাদি যহাতে প্রতিদিন ভালরপে পরিস্কৃত হন্, তাহার 
দিকে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। যাহার! খাস্যাদি প্রস্তুত করিবার ভার 
গ্রহণ করিবে এবং যাহাদের জন্য দৈনিক এক টাকা মজুরি ধর! হইয়াছে, 
তাহাদের লোক দ্বার ইহা! পরিস্কৃত কর! হইয়া থাকে । 


আহবান 





৬৩ 


সহ্য বড বড” 


প্রতি বিভ্তালয়ে এই নিয়ম প্রবর্তিত হওয়! দরকার ; নান। অনুবিধার 
অহেতুক চিন্তাই ইহার পরিপর্ঠী ; তাহা ছাড়! অন্ত বালাই নাই। 
ভরসা করিয়! অগ্রসর হইতে পারিলে দেখ! যায়, অনেক বিষয় সহজ 
হইয়া গিয়াছে । বিশেষতঃ স্থানীর দোকানদার প্রভৃতি মাল সংগ্রহ ও 
সরবরাহ করিয়া নানা প্রকারে সহায়তা করে এবং কর্তৃপক্ষের অনেক 
অসুবিধা সহজেই দূর হইয়! যায়। বাঙ্গালার ছাত্রদের এইযাপ জলযোগ 
বিশেষ প্রয়োজন, হৃতরাং আর কালবিলম্ব না করিয়া সকল 
বিদ্াালয়ের কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষকমণ্ডলী অবছিত হন, ইহাই আমার 
অনুরোধ । 





আহ্বান 


স্্রীদীনেশ গঙ্গোপাধ্যায় 


সম্মুখে নিরদ্ধ মেঘ, কৃষ্ণপক্ষ স্তিমিত রজনী, 

স্চিভেগ্য অন্ধকারে শঙ্কাতুরা নিস্তব্ধ ধরণী, 

অশনি চমকে শূন্যে; ক্ষণপ্রভা অগ্রির গোঁলকে 
বিদীর্ণ বিক্ষত বক্ষ চরাঁচর কাদে সে আলোকে । 
দিগন্তে এসেছে নামি? কালরাত্রি কুটিল করাল 

উলঙ্গ উদ্দাম ঝঞ্চা মুক্ত করি দীর্ঘ জটাজাঁল 

ডাকে কোন্‌ উন্মত্ত ভৈরবে !_ মত্ত বাযুবেগে কম্পমান 
ভয়ভীত স্থাবর-জঙ্গম, এরই মাঝে এসেছে আহ্বান !- 


বজের নিঘোষ নহে, স্বপ্ন নহেঃ নহে মরীচিকা 

নহে ভ্রম, নহে মিথ্যা_-এই তোর ললাটের লিখা । 
আজিকে তামসী রাতে তমিন্রার পরপার হতে 
আধার মন্থন করি এ মেঘ-সংঘাঁতের পথে 

দুরন্ত চঞ্চল বাঁয়ে স্ুদুমস্তর অমানিশা ভেদি' 

এসেছে নৃতন বাণী, স্থির লক্ষ; বক্ষচ্ছে্দী 

স্তীক্ষ শায়ক সম 7-_অকন্মাৎ তাহার প্রকাঁশ 
তড়িৎ শলাঁক! সম ছিন্ন করে মর্ম্ের আকাশ । 


যাত্রী তুই, যাত্র! তোর শঙ্কাঘন দুর্য্যোগ লগনে 

পথহীন পথমাঝে সঙ্গীহীন একান্ত বিজনে 3 

- আজিকে নাহি রে আলো, নাহি আশা নাই তর আশ্বীস 
অন্তরের কোণে আর একতিল নাহি ক বিশ্বাস। 


বিপদ সম্কুল পথ, জনহীন শ্বশানের প্রায় 
বিক্ষুব্ধ হৃদয় মাঝে কাদে প্রাণ রিক্ত অসহায় 
মৃতের কঙ্কাল সম শুষ্ক অস্থি রস মজ্জাহীন 
শঙ্কিত নিখিল বিএ মহাত্রীসে নিঝুম বিলীন । 


এই ত লগন তোর, সুনিশ্চয় স্থির যাত্রাকাল 

অন্তর আলোকে জালি' অনির্ববাণ বীধ্যের মশাল, 
অক্ষম শঙ্কা রে জিনি” অফুরাঁণ শক্তির সংগ্রামে: 
একাগ্র তপস্যা ঘিরি” উর্ধে অধেঃ দক্ষিণে ও বামে, 
সকল মুঢ়ত৷ আর ক্রীবাত্মক ভীরু প্রতীক্ষায় 
উপেক্ষিয়! উল্লজ্ঘিয়। অবিচল ধৈর্য্য তিতিক্ষীয় 
বাহিরিয়া আয় তুই আগে--সকলে রহুক পড়ি? 
জীর্দালস্তে কশ্রবুকে দুরু দুরু হৃৎপিও ধরি/ । 


নিরুদ্ধ চরণ পাতে অমারাতে তুই চল আগে 

উজলি, আ্বাধার রাশি তোরই আলে! জাল্‌ পুরোভাগে 
অতি কণ্টকিত পথ, অতি দীর্ঘ অতীব দুস্তর-_ 

লক্ষ কোটি শ্লান মুখ তোরই পরে একান্ত নির্ভর ; 
__ভয় তোর কণ্মালা» বিভীষিকা খেলার পুতুল 
পথগ্রান্তে ফুটে আছে মরণের মরীচিকা ফুল 

ঝঞ্ধা রাগে বন্রশঙ্খ বৌধনের বাজায় .বিষাঁণ 

চল্‌ পান্থ শ্রাস্তিহীন প্রভঞ্জনে উড়ায়ে নিশান ! 


পথ বেঁধে দিল 
( চিত্রনাট্য ) 
শ্ীশরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় 


ফেড. ইন্‌। 

বাধায় একটি বাড়ীর সন্দুথস্থ ঢাকা বারান্না। একটি 
ডেক্‌ চেয়ারে অঙ্গ প্রসারিত করিয়া একটি টুলের উপর পা! 
তুলিয়া দিয়া! ইন্ু নতেল পড়িতেছে । তাহার বেশবাশ ও 
কেশপাশ অবিন্তন্ত। 

নভেল পড়িতে পড়িতে পাশের একটি বেতের টেবিলের 
উপর হইতে চকোলেট লইয়া মুখে পুরিয়া ইন্দু চিবাইতে 
লাগিল। ইন্দুর মাত আসিয়া ইতিমধ্যে একটি বেতের 
চেয়ারের মাথা ধরিয়] দীঁড়াইয়াছিলেন এবং মুখে ভৎ সনা ও 
বিরক্তি মিশাইয় মেয়ের দ্রিকে তাঁকাইঘ্া ছিলেন। ইনি 
আমাদের পূর্বপরিচিতা স্থলাঙ্গী গৃহকত্রী । 

কর্ত্রীঃ কেদারায় গা এলিয়ে নভেল পড়লেই চল্বে? 
এই জন্তেই বুঝি এখানে আসা হয়েছে ? 

ইনু মুখ তুলিয়া মায়ের পানে চাঁহিল; তাগার মুখেও 
বিরক্তি ও বিদ্রোহ স্থুপরিস্ফুট | 

ইন্দুঃ তামার কী করব বলে দাও-__ 

হৃদয়ভারাক্রান্ত নিশ্বাস ফেলিয়া গৃহকত্রী বেতের চেয়ারে 
বসিয়া পড়িলেন। 

কর্রী: তোকে নিয়ে আমিযেকি করি ইন্ুঃ ভেবে 
পাইনা । একটু গা নাড়বি না- কেবল আলিম্তি আর নভেল 
পড়া-। ' বলি, দায় কি শুধু আমারই? বিয়ে করবে কে? 
তুই__ন! আমি? 

ইনু রুক্ষম্বরে উত্তর দিল। 

ইন্দুঃ তাকিজানি-_তুমিই বল্তে পার। 

কর্ী: ইন্দু_! পু 

ইনু মাতার বিমূঢ় বিশ্মিত মুখের পানে চাহিয়া আর 
থাকিতে পারিল না, খিলখিল করিয়! হাসিয়া মুখে বই চাঁপা 
দিল। রাগের মাথায় সে যাহা বলিয়াছিল তাহার যে একটা 
হান্তকর দিক আছে তাহা সে পূর্বে খেয়াল করে নাই। 

কর্্রী: আবার হাসি! আজকালকার মেয়েরা সত্যি 
বেহায়া বাপু । ও কথা বল্‌তে তোর মুখে বাঁধ্ল না? 


(৪ 


৬৪ 


) 


ইন্দু আবার উদ্ধত স্বরে জবাব দিল । 

ইন্দুঃ বাঁধবে কোন্‌ দুঃখে! তোঁমরাই তো আমাদের 
বেহীয়া করে তুলেছ ; নইলে একটা পুরুষ মান্তষের পেছনে 
ছুটে বেড়ীতে আমার কি লজ্জা হয়না ? 

কত্রীঃ বোকার মত কথা বলিস নি ইন্দু। ছুটে 
বেড়াতে বলি কি সাধে । ওর বাঁপের যে লক্ষ লক্ষ টাঁকা; 
বিয়ে হলে সব যে তোঁর হবে। এতটুকু নিজের ইষ্ট বুঝতে 
পারিস নে? 

ইন্দু সশব্দে বই বন্ধ করিল। 

ইন্দুঃ খুবপারি। কিন্তঘে লোক পালিয়ে বেড়ায়, 
তার পেছনে ছুটে বেড়াতে নিজের ওপর ঘেন্না হয়__ 

কত্রীঃ (ধমক দিয়া) ঘেন্না আবার কিসের! সবাই 
করছে । এই যে মীরার মা, মলিনার মা, সলিলার মা, 
সবাই এসে জুটেছে_সে কি হাওয়া বদ্লাবার জন্তে? 
সকলের মতলব রঞ্জনকে হাত করা 

ইন্দু বই খুলিয়া! বমিল। 

ইন্দু ঃ যা ইচ্ছা করুক তারা; আমি পারব না। 

কর্তরী: আবার বই থুললি?--পারিনে বাপু! 
(মিনতির সুরে ) নে ওঠ- লক্ষমীটি, তাড়াতাড়ি সাজ গোঁজ 
করে বের হ। কী হয়ে রয়েছিস বল্‌ দেখি? চুলগুলো 
একমাথা-_ মাগো মা! 

ইন্দুঃ কোথায় যেতে হবে গুনি? 

কত্রীঃ: তা-_বেড়াতে বেড়াতে না হয় রঞ্জনের বাড়ীর 
দিকেই যা নাহয় তো সে 

ইন্দুঃ বলেছি তো বাড়ীতে থাকেনা-_ছুবার গিয়ে 
ফিরে এসেছি। 

গৃহকত্রী ইন্দুর হাত ধরিয়া একটু নাড়া দিলেন। 

কত্রী: তা হোক; তুই এখন ওঠ তো ।-_কে বলতে 
পারে হয় তো রাঁন্তাতেই দেখা হয়ে যাঁবে__ 

ইন্দু * (মুখ বিকৃত করিয়া) হ্যা হয়তো দেখবে 
মীরা কি মলিন! আগে থাকতেই তাকে গ্রেপ্তার করেছে। 


পৌষ--১৩৪৭ ] 


কন্্রীঃ তাহলে তুইও সেই সঙ্গে জুটে যাঁবি।--আর 
কিছু না হোক, ওর! তে৷ কিছু করতে পারবে না; সেটাই 
কি কম লাঁভ ?-_-নে, আর দেরী করিস নি। 

ইন্দু বইথান! বিরক্তিভরে দূরে ফেলিয়া দিয়া উঠিয়া 
দাড়াইল। 

ইন্দু ঃ 
রইল না-_ 

সে রাগে গাল ফুলাইয়! ভিতরের দিকে চপিয়া গেল! 
গৃহকর্্রী তাহার দিকে চাহিয়া থাকিয়া শেষে নিজমনেই 
বলিলেন__ 

কর্রীঃ মান ইজ্জৎ! কথা শোনো 
মান ইজ্জৎ_-! 

কাট। 

ঝাঁঝাঁর বাঁজারের পাশে একটা আম বাগান। মিচির 
এই বাঁগানের একটা মাটির টিবির উপর বসিয়া! একান্তমনে 
কাঠ-বিড়ালীদের গতিবিধি লক্ষ্য করিতেছিল; বোধ হয় 
ফটো তুলিবার ইচ্ছা । 

একটি যুবতী মিহিরের পিছন দিকে 'প্রবেশ করিলেন। 
ইনি মলিন । পা টিপিয়া টিপিয়া আসিয়া তিনি পিছন হইতে 
মিহিরের চোঁখ টিপিয়া ধরিলেন। মুখ টিপিযা ভাঁসিয়! 
বলিলেন__ 

মলিনা £ বলুন তো আমি কে? 

মিহির ত্বরিতে নিজের চোখের উপর হইতে মলিনাঁর 
হাত সরাইয়া ঘাড় ফিরাইয়া তাঁকাইল; তারপর তাহার 
সন্তস্ত মুখে হাঁসি দেখা দিল। সে মলিনার দিকে ঘুরিয়া 
বসিল। 

মলিনার মুখের হাঁসি মিলাইয়া গিয়াছিল; সে থতমত 
থাইয়া বলিল__ 

মলিন! £ 
রঞ্জনবাবু-_! 

মিহিরের আনন্দ কিছুমাত্র প্রশমিত হইল না! । মলিন! 
পিছু হটিতে ল'গিল। 

মিহির ঃ 
বাবু এখানে নাই। 

মলিনা£ মাফ, করবেন-_ 

চলিয়া যাইতে যাইতে'মলিন! দ্বিধীভরে দীড়াইল। 


বেশ) যা বল করছি।--মান ইজ্জৎ আঁর 


না, টাকার কাছে 


ওঃ মাফ করবেন। আমি ভেবেছিলুম আপনি 


সাধ ৫ঁঞ্সে ক্িতশ . 


না--আমার নাম মিহির নাথ মগ্ডল- রঞ্জন- 


১ 


মলিন! £ আপনি-_রঞজনবাবুকে চেনেন? 
মিহির উঠিয়া মলিনার কাছ আসিয়া দড়াইল। 
মিহির £ চিনি বৈকি আপনি কি তাঁর__কেউ ? 


মলিনা £ বান্ধবী । তাঁকে কোথায় পাঁওয় যায় 
বলতে পারেন ?' 
মিহির £ এই তো খানিকক্ষণ হল তিনি ফট্ফটু করে 


এদিক দিয়ে নদীর দিকে বেড়াতে গেলেন । 
মলিন; ও! তাঁর সঙ্গে কেউ ছিল বুঝি ? 
মিহিরঃ কেউ না_একল1।--কী ব্যাপার বলুন 
দেখি? কালকেও একটি অপরিচিত তরুণী আমাকে এই 
কথাই জিগ্যেস করছিলেন__ ্‌ 


মলিন! সচকিতে মিহিরের পাঁনে তাকাইল। 

মলিন! £ তাই নাকি? 

মিহির £ হ্যা। তাকেও বললুম | রঞ্জনবাবু তো 
প্রায়ই নদীর ধারে বেড়াতে যাঁন-_- 

মলিনা একটু চিন্তা করিল। 

মলিন! £ হু" নদীর ধারটা কোন দিকে ? 


মিহির সোৎসাহে অঙ্গুলি নির্দেশ করিয়া দেখাইল। * 

মিহির ঃ এদিকে । এই যে রাস্তাটা এ দিকেই 
গিয়েছে । ভারি সুন্দর যায়গা; পাহাড়, বন, নরদী--- 
যাবেন সেখানে? বেশ তো চলুন না- .. 

মলিনা £ ধন্যবাদ । আমি একাই যেতে পারব। 

মিহিরের দিকে আর লাক্ষেপ না করিয়া মলিন! চলিয়া 
গেল। মিহির একটু নিরাঁশ ভাবে তাকাইয়! রহিল। 

ডিজল্ভ্‌। 

ঝাঁঝার উপকণ্স্থ পার্বত্য ভূমি। মঞ্ত্ুর মোটর পূর্বে 
যেখানে ধ্াড়াইয়। থাকিতে দেখা গিয়াছিল সেইখানে 
দাড়াইয়।। গাড়ী শূন্য; কাছে পিঠে কেহ নাই। 

ফট্ফট্‌ শব্ধ হইল ) রঞ্জনের মোটর বাইক আসিয়া মঞ্জুর 
মোটরের পাশে প্লীড়াইল। রঞ্জন অবতরণ করিয়া উৎসুক 
ভাবে চারিদিকে তাকাইল, কিন্তু ঈপ্সিত মুগ্তিটিকে দেখিতে 
পাইল না। রঞ্জন মনে মনে একটু হাসিল; তারপর মুখে 
আঙুল দিয়া দীর্ঘ শিস্‌ দিল। শিস্‌ দিয়া উৎকঠ হইয়া 
রহিল--কোন্‌ দিক হইতে উত্তর আলে ! 

[ ছুইটি মানুষ যখন পরস্পর ভালবামিয়া ফেলে তখন 
তাহাদের মধ্যে আদৌ খেলার অভিনয় চলিতে থাকে। এই 


৯১৯১০ 


জন্তই বোধ হয় “রস” ক্রীড়া” “কেলি, প্রভৃতি শবগুলি উভয় 
অর্থে ব্যবন্ধত হয়। ] | 

মঞ্জু কিছু দুরে একটা বড় পাথরের চ্যাঙড়ের আড়ালে 
লুকাইয়া মুখ টিপিয়! হাসিতেছিল ; এখন একবার সতরর্ভাবে 
ওধারে উঁকি মারিবাঁর চেষ্টী করিল। তাঁরপর ছুই করতল 
শব্ধের আকারে মুখের কাছে লইয়া গিয়া দীর্ঘ টু দিল। 

মঞ্তুঃ টুউউউ-_! 

টু দিয়াই সে দেহ ঝুঁকাইয়! ক্ষি প্রচরণে পাথরের আশ্রয় 
ছাঁড়িয়! সম্মুখ দিকে পলায়ন করিল। 

কয়েক মুহুর্ত পরে রঞ্জন আসিয়া! প্রবেশ করিল) কিন্ত 
কেহ কোথাও নাই। রঞ্জন একটু ভ্যাবাচাকা খাইয়া এদিক 
ওদিক চাহিতেছে এমন সময় দূর হইতে আবার মঞ্জুর টু 
আসিল। রঞ্জনের মুখে ধীরে ধীরে হাসি ফুটিয়া উঠিল। 
সে একটু চিন্তা করিল; তারপর পা টিপিয়! টিপিয়৷ যে পথে 
, আসিয়াছিল সেই পথে ফিরিয়া গেল। 

মঞ্জু আর একটা পাঁথরের তলায় গিয়া লুকাইয়া 
বসিয়াছিল। হাটু পধ্যস্ত উলু বন; পাথরটাও বেশী উঠ 
নয়, সোজা হইয়! ফ্লীড়াইলে মাথা দেখা যাইবে। মু 
রপ্রনের পদধধবনি গুনিবার চেষ্টা করিতেছিল; কিন্তু কিছু 
সুমিতে না পাইয়া সে উপ্টা দিকে ফিরিয়া অবনতভাবে চলিতে 
আরম্ভ করিল। পাথরের আড়ালে আড়ালে কিছুদূর গিয়া যেই 
সে উঠিয়া দীড়াইয়াছে__দেখিল ঠিক সম্মুথেই পাথরে ঠেস্‌ 
দিয় দাড়াইয়া রঞ্জন গ্ভীরভাবে সিগারেট ধরাইতেছে । 

মঞ্ু চমকিয়া চীৎকাঁর করিয়! উঠিল, তারপর উচ্চৈঃস্বরে 
হাসিতে হাসিতে ছুটিয়া৷ পলাইল । 
... রঞ্জন সিগারেট ধরাইয়া ধীরে-্স্থে তাহার অন্থসরণ 

করিল। 

নদীর বালুর উপর ' দিয়! মঞ্জু ক্রীড়া-চপলা বালিকার 
মত হাসিতে হাসিতে পিছু ফিরিয়া চাহিতে চাহিতে 
ছুটিতেছে। অবশেষে জলের নিকটবর্তী ভিজা বালুর উপর 
পৌছিয়! সে বসিয়া পড়িল; তাঁরপর দুহাত দিয়া ভিজা 
বাঁলু খু'ড়িয়! বালির ঘর তৈয়ার করিতে প্রবৃত্ত হইল। 

এইথানে নর্দীটি প্রায় বিশ হাত চওড়া, জলের উপর 
সম-ব্যবধানে কয়েকটি বড় রড় পাথরের চাই বসহিযা 
পারাপারের ব্যবস্থা হইয়াছে। জল অবশ্ত গভীর নয়) 
কিন্ত জলে না নামিয়া তাহা অগ্নমান করা! যায় না। 


ভাব 


[ ২৮শ বর্--২য় খত -১ম সংখ্য। 
রঞ্জন 'মাসিয়া মধুর পিছনে দীড়াইল; কিছুক্ষণ 
নিরীক্ষণ করিয়া! বলিল-__ 
রঞ্জন: ওটা কি হচ্চে? 


" মঞ্ত্রু একবার উপর দিকে ঘাড় ফিরাইয়! আবার বাঁলু- 

খনন কার্যে মনোনিবেশ করিয়া বলিল-_ 

মপ্তুঃ ঘর তৈরি হচ্চে। আপনিও আম্থন না, দেখি 
কেমন ঘর তৈরি করতে পারেন। 

রঞ্জন ঘুরিয়! গিয়! মগুর সম্মুখে বালুর উপর পা৷ ছড়াইয়া 
বসিল; বিজ্ঞের মত মাথা নাঁড়িয়া বলিল-__ 

রঞ্জন £ মেয়েদের এ এক কাঁজ--ঘর তৈরি করা, 
আঁর ঘর তৈরি করা। 

মঞ্ত্ুর ঘর তখন প্রায় শেষ হইয়াছে; সে ত্র ঈষৎ 
তুলিয়া বলিল-_ 

মঞ্জুঃ আর পুরুষদের কাজ বুঝি ঘর ভাঙা, আর 
ঘর ভাঙা? 

রঞ্জন উত্তর দিল না) সিগারেট টালিয়া আকাশের 
দ্রিকে ধোয়া ছাঁড়িতে লাগিল । তাহার চোখে ও অধর- 
কোণে দুষ্টামি ঝিলিক মারিয়া উঠিল। সে সরলতাবে 
মঞ্জুর দিকে দৃষ্টি নাঁনাইয়া প্রশ্ন করিল 

রঞ্জন £ তোমার বাড়ীতে ক+টি ঘর? 

মঞ্তুঃ একটি ।-কেন? 

রঞ্জন দুষ্টামি-ভর! চক্ষু আবাঁর আকাশের দিকে তুলিয়! 
বলিল-_ 

রঞ্জন $ না কিছু না-_এম্নি জিগোস করছিলুম। 

মঞ্জু কিছুক্ষণ স্থিরদৃষ্টিতে তাহার ভাবভঙ্গী লক্ষ্য করিল। 

ম্ুঃ কী কথাটা, শুনিই না। 

রঞ্জন £ না: কিচ্ছু না 

বলিয়াই ফিক্‌ করিয়া হাসিয়া ফেলিল। 

মঞ্কু দ্রুত একমুঠি ভিজ) বালি তুলিয়া লইয়! রঞ্জনকে 
ছুঁড়িয়া মারিল। রঞ্জন টপ. করিয়া মাথা সরাইয়া 
আত্মরক্ষা করিল; তারপর উচ্ৈঃম্বরে হাসিতে লাগিল। 

ম্চু চোখ পাকাইয়া বলিল__ 

মঞ্জু ঃ হাসি হচ্চে কেন? নিজে বাড়ী তৈরি করতে 
পারেন না তাই আমার বাড়ী দেখে ঠাট্টা হচ্চে? 

হাস্য সন্থরণ করিয়া, রঞ্জন মাঁথা নাড়িল। 

রঞ্জন; উদ্-- 


পৌষ--১৩৪৭ ] 


মঞ্জুঃ তবে ?--দেখি না* কেমন ঘর তৈরি করতে 
পারেন। আমার চেয়ে ভাল ঘর তৈরি করুন তবে বুঝব | 

রঞ্জনঃ আমি আলাদা ঘর তৈরি করছি না_ 

মু; তবে? 

রঞ্জন ঃ তোমার ঘর তৈরি হলে তাইতে ঢুকে পড়ব। 

খেলাঘরের ঝগড়ার ভিতর দিয়া রপ্জনের কথার ধাঁরা 
কোন্‌ দিকে চলিয়াছে তাহা মঞ্থু বুঝিতে পারে নাই। কপট 
যুযুৎ্সায় সেও আর এক মুঠি বালি তুলিয়া লইয়া বলিল-_ 

মঞ্জুঃ ই:_! আন্মন নাদেখি! আমি ঢুকতে দিলে 
তো! আমার দুর্গ আমি প্রাণপণে রক্ষা! করব-- 

রঞ্জন কিন্তু দুর্গ আক্রমণের কোনও চেষ্টা করিল না; 
হঠাৎ গম্ভীর হইয়! মঞ্ুর দিকে একটু ঝু'কিয়া প্রশ্ন করিল-_ 

রঞ্জন £ মঞ্ু, মনে কর আমার বাড়ী নেই; আমার 
সঙ্গে এক বাড়ীতে থাকতে তোমার কি আপত্তি হবে ? 

মঞ্জু বালুমুষ্টি নিক্ষেপ করিবার জন্য উর্ধে তুলিয়াছিল। 
সেগুলি ঝরিয়া তাহার কাপড়ের উপর পড়িল। তাহার গাল 
ছুটি তপ্ত হইয়! উঠিল ) সে মাঁথা হেট করিয়া কাপড় হইতে 
বালি ঝাড়িয়া ফেলিয় দিতে লাগিল । 

রঞ্জন উঠিয়া দীড়াইল। 

রঞ্জন £ মঞ্ত্ঁ_ 

মঞ্জুও উঠিয়া ঘাঁড় হেট করিয়া দাড়াইল। রঞ্জন কাছে 
আসিয়া তাহার ছুই হাত নিজের হাঁতে তুলিয়া লইল। 

রঞ্জন £ কিছুদিন থেকে তোমাকে একটা কথ! বলবার 
চেষ্টা করছি-_ 

মধু তাহার সলজ্জ চোখ দুটি রঞ্জনের বুক পর্য্যন্ত তুলিয়াই 
আবার নত করিয়া ফেলিল; চুপি চুপি বলিল__ 

মঞ্জু; খুব গৌপনীয় কথা বুঝি? 

রঞ্জন; হ্যা। বলব? 

মঞ্জু ভালমানুষের মত বলিল-_ 

মঞ্জু বলুন নাঁ-এখানে তো কেউ নেই 

বলিয়৷ স্থানটির জনশৃন্ততার প্রতি রঞ্জনের দৃষ্টি আকর্ষণের 
জন্যই যেন পাঁশের দিকে চোখ ফিরাইল। সঙ্গে সঙ্গে 
বিছ্যুদাহতের মত হাত ছাঁড়াইযা সে পিছু হটিয়া ৪ | 
রঞ্জনও ঘাড় ফিরাইল। 

যেখানে নদীর বালু শৈষ হইছে তাঁহারই কিনারায় 
একটি গাছে আঁদস্তভরে ঠেন্‌ দিয়া একটি তরুণী দীড়াইয়া 


সঙ বেত চিন 


১১৪ 


তাহাদের দিকেই তাঁকাইয়৷ আছেন। এখন তিমি একটি 
কষুত্র গাছের শাখা বা হাতে ঘুরাইতে মগ ও রঞ্জনের 
দিকে অগ্রসর হইলেন। 

মঞ্জু ও রঞ্জন পাশাপাশি দীড়াইয়া। রঞ্জনের মুখে 
অস্বস্তি ও বিরক্তি সপরিস্ফুট ; তরুণীটি যে তাহার পূর্বব- 
পরিচিত তাহাতে সন্দেহ নাই । মঞ্জু চকিতের' স্তায় তাহার 
দিকে একবার দৃষ্টি নিক্ষেপ করিয়া সম্মুখ দিকে চাহিয়া! 
রহিল। 

মূ মৃছু হাসিতে হাসিতে তরুণী আসিয়া উপস্থিত 
হইলেন) রঞ্ধনের প্রতি একটি কুটীল ভ্রবিস্াস করিয়া 
বলিলেন-_ 


মীরা; কী বঞ্জনবাবু? আমাকে চিনতে পারছে 
নানাকি? 
রঞ্জন ঃ ( চমকিয় ) না না, চিন্তে পারছি বৈকি মীর! 


দেবী। আশ্চর্য্য হয়ে গিয়েছিলুম আপনাকে দেখে ।--ইয়ে . 
_-( পরিচয় করাইয়া দিল ) ইনি মগ্তু দেবী-_মীরা দেবী-- 

যুবতীদ্বয় কিছুমাত্র আগ্রহ না দেখাইয়া শুধু একবার 
ঘাড় ঝুঁকাইলেন। মীরা একটু বাকা স্থুরে রঞ্জনকে উদ্দেশ 
করিয়া ঝলিল-_ | 

মীরা ঃ আমিও কম আশ্ম্য্য হইনি আপনাকে দেখে_ 

রঞ্জন লাল হইয়া উঠিয়া কাশিল। 

মীরা; --কে ভেবেছিল যে কলকাতা থেকে পালিয়ে 
এসে আপনি এখানে লুকিয়ে আছেন-- 

রঞ্জন £ না না, লুকিয়ে আর কি-_ 

মঞ্জুর মুখ গাঁতীর্য্যে রাহ্গ্রন্ত। সে রঞ্জনকে বলিল--.. 

মগ্তুঃ দেরী হয়ে যাচ্ছে) এবার বাড়ী ফের! উচিত। 

রঞ্জন যেন কুল পাইল; সোৎসাহে বলিল-_ 

রঞ্জন £ হ্যা হ্যা, নিশ্চয় বাড়ী ফেরা দরকার । কেদার- 
বাবু হয় তো কত ভাবছেন।-_-( মীরাঁকে ) আচ্ছা তাঁহলে-_ 

মীরা আকাশের পানে দৃষ্টিপাত করিল। 

মীরাঃ কৈ, এখনও তো দিব্যি আলো! রয়েছে) 
ছটাঁও বাঁজে নি বোধ হয়। এত শিগগির বাড়ী ফেরা তো 
আপনার অভ্যেস নয় রঞ্জনবাবু-_ 

মীর] মুচকি হাঁসিল, তারপর মঞ্জুর পানে নিরুতসক 
ভাঁবে তাকাইয়। বলিল__ 

নীরা; কিন্ত আপনার যদি দেরী হয়ে গিয়ে থাকে 


৬৮ 


তাহলে আপনাকে আটুকাবো! না।-_আম্বন রঞঙ্নবাবু, এ 
দিকটা খানিক বেড়ানো যাঁক | কী স্বন্দর যায়গা! 
মঞ্ু'র মুখ রাঙা হইয়া উঠিল; কিন্তু সে মনের ভাব 
জোর করিয়া চাঁপিয় শুক্ষস্বরে বলিল - 
মঞ্ীঃ আচ্ছা চললুম-_ 
মঞ্জু ভ্রুতপদে চলিয়া গেল। রঞ্জনের মুখ দেখিয়া মনে 
হইল সে বুঝি তাহার অনুসরণ করিবে; কিন্তু মীরার 
মধুটানা কণ্ম্বর তাহাঁকে পা বাড়াইতে দিল না । দে কেবল 
ছুই চক্ষে আকাক্ষা ভরিয় যেদিকে মঞ্জু গিয়াছে সেইদিকে 
তাকাইয়া রহিল। 
মীরা £ কলকাতার কত যায়গা আমরা একসঙ্গে 
বেড়িয়েছি, কিন্তু এমন রোমা্টিক যাঁয়গা কোথাও 
পাই নি-_ 
মীরা রপ্জনের বাম. বাহুর সহিত নিজ দর্গিণ বাহু 
শৃঙ্খলিত করিয়! তাহাকে একটা নাড়া দিল। 
মীরা £-_না রঞ্জনবাবু? 
রঞ্জন চমকিয়! মীরার দিকে মুখ ফিরাইল। 
' বর্জন £ হ্যা না মানে-_- 
গ্রুত ডিজল্ভ। 
মঞ্জু মোটর চালাইয়া ফিরিয়া চলিয়াছে। গাড়ী প্রচণ্ড 
বেগে চলিয়াছে। মঞ্জুর চোখের দৃষ্টি স্থির, ঠোট দুটি 
চাপা) সে প্রয়োজন মত গাড়ীর কলকজ! নাড়িতেছে, 
কখনও হর্ণ বাজাইতেছে; কিন্তু তাহার মন বে আজিকার 
ঘটনায় একেবারে বিকল হইয়া গিয়াছে তাহা তাহার মুখ 
দেখিয়া বেশ বোঝা বায়। 
ফেড. আউট্‌। 
ফেড. ইন্‌। 
কেদারবাবুর দ্য়িং রুম। মঞ্জু পিয়ানোয় বসিয়া উদাস 
কে গান গাহিতেছে ; তাহার দৃষ্টি জানালার দিকে যাইতে 
যাইতে পথে রঞ্জনের ছবিটার কাছে আট্কাইয়! যাইতেছে, 
কিন্তু মুখের বিষগ্নতা দূর হইতেছে না। 
মধুঃ “ঘন বাদল আসে কেন গগন ঘিরে? 
কেন নয়ন তাসে সখি নয়ন নীরে ! 
ছিল উজল.শণী মেঘে পড়িল ঢাকা-_. 
কালো কাজল মসী এল মেলিয়! পাখা 
মোর তরণীথানি বুঝি ডুবি তীরে ।” 


ভ্ডাপ্পভিন্বম্ব 


| ২৮শ বর্ষ--২য় খণ্ড--১ম সংখ্যা 


এতক্ষণ আমরা মঞ্জুকেই দেখিতেছিলাম ; কেদারবাবু, 
যে ঘরে আছেন তাহা লক্ষ্য করি নাই। কেদারবাবু চোখে 
চশমা লাগাইয়া একটা মোট! বই পড়িতেছিলেন এবং মাঝে 
মাঝে ঘাড় তুলিয়া! চশমার উপর দিয় মঞ্জুর প্রতি সপ্রশ্ন 
দৃষ্টিপাত করিতেছিলেন। মঞ্জুর মনে যে একটা ভাবাস্তর 
উপস্থিত হইয়াছে তাহা বোধ হয় তিনি সন্দেহ করিতে 
আরম্ভ করিয়াছিলেন । 

গান শেষ হইলে মঞ্জু পিয়ানোর দিকে পাশ ফিরিয়া 
গালে ভাত দিয়া বসিল। কেদারবাবু লক্ষ্য করিতেছিলেন, 
সহস৷ প্রশ্ন করিলেন-_- 

কেদার : আজ বেড়াতে যাবি না? 

মঞ্জু হাত হইতে মুখ তুলিল। 

মণ্ডুঃ (নিরুতস্বক ) বেড়াতে? কি জানি-_ 

কেদার হাতের বই বন্ধ করিরা চশমার উপর দিয়। 
তীক্ষ দৃষ্টিতে ঢাঞিলেন-_- 

কেদার; কাহয়েছে? শরার খারাপ? 

মঞ্জু উঠিয়া জানালার সম্মুথে গিয়া ঈীড়াইল। 

মঞ্জুঃ না-কিছু নয-- 

কেদাঁর গলার মধ্যে হ্ষ্কার করিলেন । ৯ 

কেদার ; ইঃ তবে বেড়িয়ে এসো- 

বই খুলিয়া পড়িতে গিয়া তিনি আবার মুখ তুলিলেন। 

কেদার£ সে ছোকরাঁকি নাম? রঞ্জন!--কৈ 
আজকাল তো আর আসে না। চলে গেছে নাকি? 

মঞ্জু বাহিরের দিকে তাকাইয়া থাকিয়া মাথা নাড়িল। 

মঞ্ুঃ না 

কেদার : তবে আসে ন! কেন? 

মঞ্জু ঃ ( পূর্বববৎ ) জানি না 

রেদার এবার তাহার চশমা কপালের উপর তুলিয়া 
দিলেন; ভাল করিয়া মঞ্জুকে নিরীক্ষণ করিয়৷ আবার চশমা 
নাকের উপর নামাইয়! দিয়া একটি শ্ুদ্র হুঙ্কার দিলেন। 

কেদার £ হ'ঃ। তুমি এখন একটু বেড়িয়ে এসো। 
আর, যদ্দি “দেবা সে ছোকরার সঙ্গে দেখা হয়, তাঁকে 
আসতে বোলে! ? তাঁকে আমার বেশ লাগে- ইঃ । 

কেদার পুন্তকে মনোনিবেশ করিলেন। মঞ্চ একটু 
ইতভ্তত করিয়। পিতৃ আজ্ঞা পালনের জন্য গমনোগ্ঠত হইল। 

ডিজল্ভ। 


পৌধ_-১৩৪৭ ] 


পার্বত্য ভূমির যে-স্থানে মঞ্জু ও রঞ্জনের গাড়ী আসিয়া 
বিশ্রাম লাভ করিত, সেখানে কেব্ল রঞ্জনের মোটর বাইক 
নিঃসঙ্গভাবে দ্াড়াইয়া আছে। 

রঞ্জন কিছু দূরে দাঁড়াইয়া সপ্রশ্ন নেত্রে এদিক ওদিক 
তাকাইতেছিল, কিন্তু কাহাকেও দেখিতে না পাইয়া শেষে 
মুখের মধ্যে আঙুল দিয়া সাঙ্কেতিক শিষ্‌ দিল। কিন্ত 
কোনও দিক হইতেই উত্তর আঁসিল না । 

রঞ্জন প্রথম দিন যে পাথরের স্তস্তের মাঁথাঁয় উঠিয়াছিল 
সেইদিকে দৃষ্টি তুলিল কিন্তু সেখাঁনে কেহ নাই। রঞ্জন 
নদীর দিকে চলিল। 

নদীতীর জনশূন্য ; সেখানে মঞ্জু নাই। 

রঞ্জন চিন্তিত মুখে সেখান হইতে ফিরিল। যে পাথরের 
টিবির পশ্চাতে মগ লুকাইয়া লুকোচুরি খেলার অভিনয় 
করিয়াছিল তাহাতে কনুই রাঁখিয়া গালে হাঁত দিয়া রঞ্জন 
ভাবিতে লাগিল। 

কিছু দূরে একটা ঝৌপের মত ছিল; ঘন আগাছা ও 
কাটা গাছ মিলিয়৷ খানিকটা স্থান বেড়ার মত আড়াল 


করিয়া রাখিয়ছে। সেই বেড়া ফাঁক করিয়া একটি বুবতী 
উকি মারিল। যুবতীটি মলিনা। ক্ষণেক নিঃশবে 


রঞ্জনকে নিরীক্ষণ করিয়া মুচকি হাঁসিয়া মলিনা অন্তহিত 
হইয়া গেল। 

রঞ্জনের মুখে উদ্বেগের ছায়া পড়িয়াছে। কী হইল? 
মণ্ডু আজ আসিল না কেন? সহসা! তাঁচার দুশ্চিন্তা জাল 
ছিন্ন করিযা ঝোঁপের অন্তরাল হইতে রমণী কণ্ঠের উহ 
কাতরোক্তি কর্ণে প্রবেশ করিল। চমকিয়া রঞ্জন মুখ 
তুলিল। তারপর দ্রুত ঝোপের কাছে গিয়া! কাঁটা গাছ 
ছু'হাঁতে সরাইয়া সে ভিতরে প্রবেশ করিল। 

কাট। 

যেখানে রঞ্জনের মোটর-বাইক দীড়াইয়াছিল, মঞ্জুর 
গাড়ী সেখানে আসিয়া প্রবেশ করিল। একটু দূরে গাড়ী 
দাড় করাইয়া মগ্তু গাড়ী হইতে নাঁমিল, নিরুতন্ুকভাঁবে 
এদিক ওদিক তাকাইল, তারপর মন্করপদে নদীর 
দিকে চলিল। 

কাট। | 

ঝোপের মধ্যে প্রবেশ্‌ করিয়া রঞ্জন দেখিল অদূরে একটি 
গাছের তলায় একটি যুবতী পা ছড়াইয়৷ বসিয়া আছেন। 


সি এতে চিলি 


৬৪২ 


সে তাড়াতাড়ি তাহার | নিকটস্থ হইয়াই থমকিয়া 
দাড়াইন্া পড়িল। 

রঞ্জন £ একি! মলিন! দেবী-! 

মলিনা কাতরভাবে মুখখানা বিরূত করিয়া বলিল-_ 

মলিনাঃ রঞ্জনবাবু! আপনি! উ-ঃ! 

রঞ্জন একটু ইতস্তত করিয়া মলিনার পায়ের কাছে 
হাটু গাঁড়িয়া বসিল । 

রঞ্জন; কিহয়েছে? 

মলিন £ বেড়াতে এসেছিলুম-_হঠাঁৎ 
পা মচকে গেছে 

যেন বন্ত্রণ! চাঁপিবার জন্য মলিনা অধর দংশন করিল। 

রঞ্জন £ তাই তো-_কোনথাঁনটা- দেখি? 

পাঁয়ের গোছের উপর হইতে শাড়ীর প্রান্ত সরাইয়া রঞ্জন 
চরণ ছুটি পধ্যবেক্গণ করিল, কিন্তু কোথাও স্ফীতির লক্ষণ 
দেখিতে পাইল না । | 

রগ্ষন£ কোন্‌ পাঁষে? 

মলিন! ঃ (মৃহূর্তকাঁল দ্বিধা করিয়া তাড়াতাড়ি) ঝা পায়ে। 

রঞ্জন; এইখাঁনে ?-_লাগছে? 

তর্জনী দিয়া রঞ্জন পায়ের আহত স্থাঁনটা টিপিয়া দিতেই 
মলিন! জোরে চীৎকার করিয়া উঠিল। রঞ্জন, ক্রুত আঙুল 
টানিয়! লইল। 

কাট,। 

মঞ্জু ইতিমধ্যে বেড়াইতে বেড়াইতে ঝোপের কাছাকাছি 
আসিয়া পৌছিয়াছিল; ঝোপের অভ্যন্তরে চীৎকার শুনিয়া 
সে থমকিয়া দাঁড়াইয়া পড়িল; বিস্মিতভাবে সেইদিকে 
তাকাইয়৷ থাঁকিয়। মঞ্জু দবিধা-শঙ্ষিত ভাবে ঝৌপের অভিমুখে 
অগ্রসর হইল। 

কাঁট,। 

ওদিকে রঞ্জন রুমাল বাহির করিয়া মলিনার পায়ের 
গোঁছ বীধিয়া দিতেছে ; মলিন! সময়োচিত ক্রি মুখতঙ্গী 
করিয়। যেন যন্ত্রণা অব্যক্ত রাখিবাঁর চেষ্টা করিতেছে । বীধা 
শেষ করিয়া রঞ্জন বলিল-_ 

রঞ্জন : এবার দেখুন তো উঠতে পারেন কিনা 

মলিন! উগ্ঠিবার চেষ্টা করিয়া আবার'বসিয়! পড়িল। 

মলিনাঃ আপনি সাহায্য করুন, নইলে উঠতে 
পারব না--. 


পড়ে গিয়ে 


০ 


রঞ্জন উদ্বিগ্নভাবে উঠিয়া দ1ঢ়াইল। 
রঞ্জন: আমি- সাহায্য! আচ্ছা-_ 
রঞ্জন মলিনার একটা বাহু ধরিয়া টাঁনিয়া তুলিবার 


চেষ্টা করিল । ূ 
মলিনা £ না, না) ও রকম করে নয়।_আপনি হাটু 
গেড়ে বন্ুন_ এইথানে-_ 


মলিনা নিজের পাশে হাটু গাড়িবার স্থান নির্দেশ 
করিল। ঘাতকের খঞ্োর সম্মুথে আসামীকে হাটু গাড়িতে 
বলিলে তাহার মুখের ভাব যেরূপ হয়, সেইরূপ মুখ লইয়! 
রঞ্জন মলিনার পাশে নতজানু হইল। 

মলিনা তাহার বাম বাহুটি রঞ্জনের কণ্ঠে দৃঢ়ভাবে 
জড়াইয়! বলিল__ 

মলিনা ; এইবার আপনি উঠন-__ 

রঞ্জন উঠিল; সেইসঙ্ধে মলিনাঁও দীঁড়াইল। 

একজন ঝোপ ফাক করিয়া যে এই পরম ঘনিষ্ঠ দৃশ্যটি 
লক্ষ্য করিতেছে তাহা ইহারা দেখিতে পাইল না। মঞ্ুর 
মুখ শক্ত হইয়! উঠিয়াছে চোখের দৃষ্টি কঠিন। সে আর 
দাড়াইল না; হাত সরাইয়া লইতেই ঝোপের ডালপালা 


তাহাকে আড়াল করিয়! দিল। 

এদিকে বপন গলা ছাঁড়াইবাঁর চেষ্টা করিতেছে; 
টানাটানি করিয়া নয়। বিনীত শিষ্টতার সহিত। 

রঞ্জন: এবার বোঁধ হয় আপনি দাড়াতে পাঁরবেন_ 

মলিনা ; পাড়াতে হম তো পারি, কিন্তু একলা হাটতে 
পারব না। বাড়ী যেতে হবে তো। ভাগ্যিস আপনি 
ছিলেন নৈলে কি করে বে বাঁড়ী যেতুম__ 

এইভাবে বাড়ী যাইতে হইবে গুনিয়া রঞ্জন ঘামিয়া 
উঠিল? ক্ষীণস্বরে বলিল-- | 

রঞ্জন £ আআ বাড়ী! কিন্ত-_ 

কিন্ত মলিনার বাঁহবন্ধন শিথিল হইল না। হ্তাঁশভ।বে 
রঞ্জন তদবস্থায় সন্দুখ দিকে পা বাড়াইল। 

কাট্‌। 


পূর্বোক্ত স্থানে মঞ্জুর মোটর ও রঞ্জনের বাইক দীড়াইয়। 


ভ্ডান্সভন্বশ্ 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় খণ্ড--১ম সংখ্যা 


আছে। মঞ্জু ভ্রুতপদে, প্রায় দৌড়িতে দৌড়িতে, প্রবেশ 
করিল; গাড়ীর চালকের আসনে বসিয়। গাড়ী ঘুরাইয়া 
লইয়।'যে পথে আসিয়াছিল সেই পথে ফিরিয়া গেল । 
কিছুক্ষণ পরে রঞ্জন ও তাহার কণ্লগ্ন মলিনাকে 
আসিতে দেখা গেল। দূর হইতে মোটর-বাইক দেখিতে 
পাইয়া মলিন! বলিল-_ 
মলিনা : ওটা বুঝি আপনার মোটর বাইক? 


রঞ্জন £ হ্যা 
মণিনা £ ভালই হল। আপনি গাঁড়ী চালাবেন, আর 
আমি আপনার কোঁমর ধরে পেছনে বস্ব__ 


চিত্রটি মানসচক্ষে দেখিতে পাইয়া রঞ্জনের হাত-পা 
শিথিল হইয়া গেল। মলিনা আর একটু হইলেই পড়িয়া 
গিয়াছিল; কিন্তু সে দ্বিগুণ দৃঢ়তার সহিত রঞ্জনের গলা 
চাঁপিয়৷ ধরিয়া পতন হইতে আত্মরক্ষা করিল । 


ডিজল্ভ,। : 
ঝাঝার একটি পথ। মিহির পথের মাঝখান দিয়া 
চলিযাঁছে। তাহার অবিচ্ছেগ্য ক্যামেরাটি 'অবশ্ট সঙ্গে 


আছে। 

পিছনে মোটর বাইকের ফট ফটু শব গুনিয়া মিহির 
পিছু ফিরিয়া তাকাইল;) তারপর তাড়াতাড়ি ক্যামের৷ 
বাহির করিতে করিতে রাস্তার একপাশে আসিয়া দাড়াইল। 

রঞ্জনের মোটর বাইক আসিতেছে দেখা গেল। রঞ্জন 
গাঁড়ী চালাইতেছে ; মলিনা তাহার কোমর জড়াইয়া পিছনে 
বসিয়া আছে। মলিনীর মুখ মিহিরের দিকে । মোটর 
বাইক সম্মুখ দিয় চলিয়া বাইতেই মিহির টক্‌ করিয়া ফটো 
তুলিয়৷ লইল | 

মোটর বাইক চলিয়া গেল। মিহির কামের! হইতে 
মুখ তুলিল। তাহার মুখে সার্কতার হাসি ক্রীড়া 
করিতেছে। 

ফেড্‌ আউট । 


ফেড, ইন্‌। 


ক্রমশঃ 





আর্ধ্য পুজাপদ্ধতিতে বিজ্ঞান 
(২) 
শীদাশরথি সাংখ্যতীর্ঘ 


বিধিমত আচমনের পরে বিঞুম্মরণ কর্তব্য। বিষু। ম্মরণান্তে (কাম্য 
নৈমিত্তিক কর্মস্থলে সস্তিবাচন, পুজার সংকল্প, সংকল্পুক্ত পাঠ ও ঘট- 
স্থ(পনাদি ) গদ্ধাদির অর্চনা, নারায়ণাদির অচ্চনা, সামান্তার্ধা, জল শুদ্ধি, 
আসনশুদ্ি, দ্বারদেবত| পূজা, গুরুপংক্তি প্রণ!ম, পুষ্পশুদ্ধি, করশুদ্ধি, 
ভূতাপসারণ, দিথন্ধন, তৃতশুদ্ধি, মাতৃকান্যাস, প্রাণায়াম, গীঠন্তাদ, 
ধধ্ু[[দিহাস, করন্যাস, অঙ্গময[স, গণেশাদি পঞ্চদেবতার পুজা, মববদেব- 
দেবীর নংক্ষেপ পুজা, ধ্যান, মানসপুজ| বিশেষার্থাস্থাপন, পীঠদেবতাপৃজ! 
( চক্ু্দান, প্রাণপ্রতিষ্ঠা ) পুনধযান, আবাহন ও পূজা করিতে হয়। এই 
সকল বিধি ক্রমণ£ বণিত হইতেছে । 


বিষুম্মরণ 


যথ| বিধি আচমনের ছারা হৃদয়াদিশুদ্ধি ঘটলে পুজককে বাহ ভ্যন্তর 
গুদ্ধি নিমিত্ত বিঞুম্মরণ করিতে হইবে । বিজ্ুম্মরণের মন্ত্র যথা :--“ও 
বিফুঃ। ও বিষুঃ, ও বিষ, ও তদ্বিষেঃ পরমং পদং সদ1 পথ্ঠন্তি 
রয়ে! দ্িবীব চক্ষুরাততম্।” অর্থাৎ প্িশুগণ পরমাত্মরপী বিষ) বা 
ব্যাপনণীল ব্রদ্ষের পরম পদ আকাশে বিস্বৃত চক্ষুর মত সর্বদা দেখিয়! 
থাকেন। বিষ, ধাতুর উত্তর নুক্‌ প্রত্যায করিয়া বিষ শব্দ বুাৎপন্ন হয়। 
বিষ, ধাতুর অর্থ ব্যাপ্তি। অতএব বিঝুণকের অর্থ ব্যাপনণীল। তৎণবে 
পরব্রক্মকে বুঝয়। গীতায় আছে “ও তত্দদিতি নির্দেণোত্রঙ্গণ প্রিবিধঃ 
স্মৃতঃ। “অতএব “তদ্বিষ্ণ” শব্দের অর্থ ব্যাপনশীল পরমাত্ম।। এই 
ব্যাপনশীল পরমাত্ম।র শ্রেষ্টপদ জগচ্চক্ষুঃ। সৃয্যের অবস্থান আকাশে। 
শাস্ত্রে আছে “হাদব্োস্রিভপতি হোষ বাহে হূর্ঘ্যঃ ম চান্তরে। অর্থাৎ এই 
ভর্গ হৃদয় ও আকাশে উভয়ত্রই বিছ্ম।ন। আকাশে সুর্ধারূপে এবং 
অন্তরে পরমাআআরূপে। পগ্ডিতগণ এই ভর্গ অর্থাৎ ঠেজকে সর্্দ| হাদয় 
ও বাহিরে দেখিয়া থাকেন। বহির্জগতে ইনি জগচ্চন্ষুঃ সূরয্যরূপে 
প্রতিভাত হন। শ্রুতিতে পাওয়। যায় “পাদোহস্ত বিশ্বতৃভানি তিপাদগ্ত।- 
মৃতং দিবি।” অখিল ভূতদকল বিষ্কুর একচরণে অবস্থিত এবং তাহার 
পরমাননমুষ্তি যাহ। স্বর্গ ব আকাশে অবস্থিত ত।হ! সেই বিষুর ত্রিপাদে। 

পূরাণকার এই শ্রুতিবাক্যের অর্থ এইরাপ করিয়াহেন, যথা-স্বর্গে 
ক্সীরোদসমূতে অনন্তণয্যায় চতুতূ'জ মহাবিষু। শায়িত। তাহার চতুহস্তে 
শঙা, চন্তু, গদা ও পদ্ম । তাহার বাহন গরুড় এবং লক্ষী তাহার বক্ষঃ- 
স্থিতা। তিনি সর্বদা! আননাময়। এই আননাময় বিষ হইতেই জগৎ 
সঙ হুইয়াছে। ইহাতেই জগতের স্থিতি এবং ই'হাতেই লয়। পুরাণ 
কারের মতে বিষু শ্মরণের মন্দার! এইরূপ দেব বিশেষই স্বৃতিপুথে উদ্দিত 
ইন। যাহা হউক এই পুরাপ বচনের বৈজ্ঞানিক অর্থ অনুসন্ধান করিতে 


হইবে। মনুম্থৃষ্ঠিতে দেখিতে পাওয়া যায়--“অপ এব সমর্জাদৌ তাহ 
বীজমবস্থজৎ | তদন্থ মভবদ্‌ হৈমং সহম্াংগুসমপ্রস্তম।” অর্থাৎ সেই 
ব্রহ্ম প্রথমে জল সৃষ্টি করিয়! তাহাতে বীজ নিক্ষেপ করিলেন। তাহ! 
শর্যোর মত উদ্্বল হবর্ণবর্ণ অণ্ডে পরিণত হইল। এই অগ্ডের নাম 
বরঙ্গাণ্ড। শ্মৃতিকথিত এই জলকে নর্ধব্যাগী ব্যোম বলিয়াই মনে হয়। 
ইহার ইংরাজী মাম “ঈথার”--এই ব্যোম বা আকাশ জগতের সর্বত্রই 
বিগ্কমান। ইহারই নাম কারণ নপ্সিল। এই সলিল হইতেই ত্রহ্গাণ্ডের 
উৎপত্তি। শ্রতিও এই মনুবাক্যের সমর্থন ফরিয়াছেন যথ! +--“তত্মানা 
এত স্নাদজুন আকাশ; সম্তৃত আকাশাদ্ধায়ুরিত্যাদি।” আকাশই পুরাণ- 
বণিত ক্ষীরোদ সমুদ্র ও মনুবধিত কারণদলিল। হুর্যামগ্ল সেই সমুদ্র 
স্থিত অনন্তশয্যা/। অনেকেই জানেন হুর্য্যের এক নাম অনপ্ত। শৃর্য্ের 
মহম্র কিরণ অনন্ত নাগের সহম্ব মন্তক। 'কিরণ 'যেয়প আলোক্ার! 
বিশ্বের প্রকাশক, মন্তকও মেইরাপ চক্চুরাদি পঞ্চজ্ঞানেজিয়ের আধারভূত ' 
হওয়ায় বিশ্বজ্ঞানের প্রযোজক । তাই গুধ্যের ফিয়ণকে অনন্তের মস্তক 
বলিয়| বর্ণন! কর! হইয়।ছে। সেই জন্যই ত শাস্ত্রে কথিত আছে-_“সহন্র- 
নী পুরুষ” ইত্যাদি । আবার গরুড় সেই পুরাণবধিত বিষুর বাঁহন। 
ইহারও এক বৈজ্ঞানিক অর্থ আছে। গরুড়ের এফ নাম খগ। খ শব্দের 
অর্থ আকাণ। থকে অর্থাৎ আকাশকে অবলম্বন করিয়। ষে গমন করে 
তাহাকে খগ বলে। অতএব খগ শব্দের অর্থ আকাশম্থ'বিচরণ পথ বা 
গ্রহ কঙ্গ। সুর্য এই আকাশপথ অবলগ্ধন করিয়া বিচরণ করেন। কেই 
কেহ বলেন সুর্য স্থির এবং গ্রহগণই হুর্ধ্যকে কেন্দ্র করিয়া নিজ নিঙ্গ 
কক্ষে আবর্তন করে। তাহা হইলেও পৃথিবীবাসী জীবগণের নিকটে 
হুর্ধ্য আকাখপথে বিচরণ করেন বলিয়া মনে হয়। সেই জন্যই হৃর্যের 
কক্মকে অনন্তশায়ী-বিষ্ঝর বাহন গরড় বল! হইয়াছে। ক্ষীরোদুস্থ 
অনন্তশ|ী বিধুঃ সেই হয্য মগডলমধ্যবন্তী ভর্গ বা নারায়ণ। তিনিই নরের 
আশ্রয়। তাই, বিষুর ধ্যানে জানি-ধ্যেয়ঃ নদ! সবিতৃমগ্ডল মধ্যবর্তী 
নারায়ণঃ। এই আকাশস্থ সবিতৃমণ্ল মধ্যবত্তী নারায়ণই অনভ্তশায়ী 
বিষ, বিরাট, আকাশ তার অপার ক্ষীরোদধি, শূর্য্যমণ্ডুল তার অনন্ত 
নাগশযা।, এবং হুর্য্যের সহ কিরণ নেই নাগের সহশ্র মস্তক আকাশঙ্ 
বিচরণপথ সেই ঝিষুরাপী হৃর্য্ের বাহন খগ অর্থাৎ গরুড়। করমু শখ্ধের 
ধ্বনিতে তিনি নামরপাত্মক জগত্-স্থষ্টি করিয়াছেন, তাহার হন্তস্থিত চক্র 
অর্থাৎ গ্রহগণের অবিরত চন্রভ্রমণ সথষ্টির চিরস্তন আবর্তন হুচন! করিতেছে, 
উাহার পাণিস্থ গদ! সংসার নিয়ম ভঙ্গে পাগীর ত্রাসের-হুচক ( গদ্‌ ধাতৃর 
অর্থ প্রাস), তার করস্থু পদ্প প্রেমপুষ্পের নিদর্শন, তার বক্ষ; স্থিতা লক্ষ্মী 
তার হলদিনীশক্তি। এইরূপ বিষ্ুরই পরমপদ পঞ্ডিতগণ সর্বদা আকাশে 


পট 


২. 


বিস্তৃত জগচ্চক্ষুর মত দেখিয়৷ থাকেন। এই বিষুর পরষ-পদ্-দর্শমে 
পুজক অন্তরধহিঃগুদ্ধ হইয়! খাকেন। সী ও শৃত্রের বিছুম্মরণ সন্ত্রও এইরপ 
অর্থেরই হুচনা করে। যথা £__নমঃ অপকিপ্রঃ পবিত্রো বা সর্বাবস্থাং 
গতোইপিবা । যঃ ম্মরেৎ পুগুরীকাক্ষং স বাহাভ্যন্তর শুচি:। এইরূপ 
বিষুম্মরণ দ্বার! অন্তর্হিঃশুদ্ধ হইয়! পৃজককে কামা নৈমিত্তিকাদি কর্মস্থলে 
্ব্তিবাচন, সংকল্প ও ঘটস্থাপনাদি করিতে হইবে। নিত্যপূজায় স্বস্তিবাচ- 
নাদির প্রয়োজন নাই। যাহা হউক, অতঃপর স্বস্তিবাচন বিবৃত হইতেছে। 
স্বস্তিবাচন 
্স্তিবাচনের বিস্তৃত বিবরণ পাঠকগণ পুরোহিত দর্পণাদি পুস্তকে 
পাইবেন। এস্থলে আমর! কেবল সেই সকল মন্ত্রের বৈজ্ঞানিক অর্থ- 
প্রদর্শন করিতে চেষ্টা কয়িব। স্বস্তিবাচন বিধিতে প্রথমে পুণণাহবাচন 
তৎপরে শুদ্ধিবাচন এবং পরিশেষে স্বস্তিবাচন মন্ত্রসনকল দেখিতে পাওয়া 
যায়। কোন কাম্য কর্ম করিতে হইলে প্রথমত পুণ্যদিন দেখিয়া করিতে 
হয়। কারণ কাল, দেশ ও পাত্রের প্রভাব জীবে বিশেষরপে লক্ষিত 
হয়। পুখ্যকালে, পুণাদেশে এবং পুণ্য চিন্তে কর্ন করিলে তাহ! স্থসিদ্ধ 
হয়। শুভতিখিনঙ্গত্রাদির গ্রভাবে এবং তাহাদের সন্ভীবজ্ঞানে জীবের 
হৃদয়ে একট! বিমল আনন্দের আবেশ হয়। এই আনন্দ তাহাকে কর্তব্য- 
কর্থে হদূঢ়রূপে চালিত করে। সেই জগ্াই প্রতি কর্ণের প্রারস্তে পুণ্যাহ 
বাচন আবগ্ভক। তারপরে খধদ্ধিবাচন। খদ্ধিবাচনের ছার! পুজাস্থান 
সমৃদ্ধ হয় এবং সর্বশেষে স্বস্তিবাচন। গ্বস্তিবাচনের দ্বার পাত্র অর্থাৎ 
পূজকের চিত্ত পবিত্র হয়। অতএব দেখ! গেল-_পুণ্যাহবাচন, ধদ্ধিবাচন 
এবং স্বস্তিবাচন যণাক্রমে কালগুদ্ধি, দেশশুদ্ধি ও পাত্রশুদ্ধির নিয়ামক । 
এই পুণ্যাহাদিব|চন ব্রাঙ্গণগণ দ্বারাই বর্তব্য। ন্বন্তিবাচনের সর্ব সাধারণ 
মন্ত্র আমর1 এইরাপ দেখিতে পাই যথ| ৮- 
“ও স্বস্তি ন ইন্দ্র! বৃদ্ধশ্রবা স্বস্তিনঃ পৃষ| বিশ্ববেদ।2। 
স্বস্তি ন স্তাঙ্গ্য অরিষ্টনেমি; স্বস্তি নো বৃহপ্পতির্ধাতু ॥” 
অর্থাৎ বৃদ্ধশ্রব৷ ইন্দ্র বিশ্ববেদা হুরধ্য নরিষ্টনেমি গরুড় এবং বৃহস্পতি 
আমাদের মঙ্গল বিধান কর'ন। 'ইন্দা' ধাতুর উত্তর 'র' প্রত্যয় করিলে ইন্দ্র 
শব্দ.ব্যুৎপন্ন হয়। "ইন ধাতুর অর্থ রশবর্্য বা আধিপত্য | অতএব যিনি 
আধিপত্য করেন ঝ| উশ্বর্ব্যশালী হন, তিনি ইন্্র। জীবের অহংকারতত্ব 
শ্বর্যশালী ব! অধিপতি । কারণ অহংকার হইনেই জীবের ভে।গ। 
নিত্যশুদ্ধ নিত্যযুক্ত স্বভাব আত্মার প্রকৃত কোন ভোগ নাই। অহংকার 
হুইতে একাদশেক্দ্রিয় ও পঞ্চ তন্মাত্রের উৎপত্তি হয় তাহারাই ভোগের 
উপাদান সুতি করিয়। জীবেয় সন্পুখে ধরে। জীব অভিমানবশত 
আপন।কে এই নকল উপাদানের অধিপতি মনে করে। অতএব ইন্ত 
শব্দে জীবের এ্রশর্ধ্যশালী অহংকার তন্থকে বুঝায়। আবার 'বৃদ্ধশ্রবা$ 
পদের ব্যুৎপত্তিগন্ত অর্থ করিতে গেলে বলিতে হয়-_বৃদ্ধ শ্রবঃ যার অর্থাৎ 
বহুদিন হইতে যার শুতি ব!খ্যাতি আছে তিনিই বৃদ্ধশ্রবাঃ। অতএব 
দেখ। যাইতেছে-_বৃদ্ধশরবা$ ইন্দ্রঃ'--অর্থে-বহজন্ম ধরিয়। জগতে গমন- 
গমনপূর্বক সংসার ভোগী অহংকারত্ত্ব। এই অহংকার আমাদিগের 
মঙ্গলবিধান করুন অর্থাৎ জড়ভোগের '্বায়া আমাদিগকে বন্ধ না করিয়া 


ভ্াব্ুভব্শ্র 


[ ২৮শ বর্ষ-_২য় থণ্-১ম সংখ্যা 


আত্মতত্ব নিয়োগে আমাদের শ্রেয়; সাধন করুন--ইছাই 'হ্বস্তিন ইন্ত্রো- 
বৃ্ধশ্রব!' বাক্যের তাৎপর্য । তৎপরে "বস্তি নঃ পুষ! বিশ্ববেদ1” বাকোর 
বিচার । পুষা শবের অর্থ হুরধ্য এবং বিশ্ববেদ! (বিশ্বান্‌ সকল।ন্‌ বেত্তি) 
অর্থে সর্বজ। সূর্য্যই বিশ্ব প্রকাশক বলিয়া হুর্ধযকে সর্বজ্ঞ বা বিখবেদ| 
বল! যাইতে পারে। আবার অন্তর্জগগতে এই হুর্ধ্য জীবাত্ম! বা বুদ্ধিস্থ 
চৈতন্য । অতএব ব্বস্তি নঃ পুষা বিশ্ববেদা'-্-বাকোর দ্বারা আমর! 
বুঝিব-_ বিশ্বজ্ঞ হূর্ধয অর্থ।ৎ ব্যাবহারিক জীব আমাদের মঙ্গল বিধান 
করুন অর্থাৎ বুদ্ধিস্থ চৈতন্য বিচার দ্বারা তত্ব নিরূপণ পূর্বক তল্লাভের 
হবার! আমাদের শ্রেয়ঃসাধন করুন। তারপর বাক্য আছে-__শ্বস্তিনস্তাক্ষ 
অরিষ্টনেমিঃ।” অরিষ্টনেমি ও তার্গ7 উভয়শবের অর্থই বিষুর বাহন 
গরুড়। অরিষ্টবে শুভাশুভ অদৃষ্ট বুঝায় এবং নেমির অর্থ চক্রধার]। 
অতএব অরিষ্টনেমি পদে গুভা শুভা দৃষ্টবাহিক। চক্রধ।রা! ব| চক্রবৎপরিবর্তন- 
শীল শুভাশুভ অদৃষ্ট বুঝ।য়। আবার তাক্ষয শবের অর্থ গরুড় এই গরুড় 
আকাশচারী এবং সর্াপেক্গ! ক্ষিপ্রগামী। ইহা বিধুঃ বা নারায়ণের 
বাহন। এই বঝাহনে আরোহণ করিয়! নারায়ণ পলমধ্যে ত্রিতুবন ভ্রমণ 
করিয়া থাকেন। পরমাস্মকে নারায়ণ ভাবিলে গরুড় হইবে জীবের 
মনঃ। কারণ, মনের গতি গরুড়ের মতই ক্ষিপ্র এবং মনঃ সঙ্কললবিবেক বৃত্তির 
দ্বার] শুভাশুভ অতৃষ্ট-স্ষ্টি করিয়া অরিঈনেমি হইয়া থাকে । এই মনোরূপ 
গরুড়ের নায়কত্বে জীবরূপে বদ্ধ পরমাম্মার সংসারে গমনাগমন 
হয়। “স্তিনস্তাক্ষাা অরিষ্টনেমি।” এই বাক্যে আমাদের বুঝিতে 
হইবে-_শুভা শু।দৃষ্ট বাহক মনঃ আমাদের মঙ্গল বিধান করুন অর্থাৎ 
মনঃ সান্বৎ কর্ষলাভ দ্বারা শুভাগুভ অদৃই না জন্সাইয়। আত্মস্থিতিপূর্ববক 
পরমাজ্মধ্যানোপযোগী হইয়! আমাদের শ্রেয়; সাধন করুন। সর্বশেষে 
আমর! বাক্য দেখিতে পাই-শ্িত্তি নো বৃহস্পতির্ধাতু |” অর্থাৎ 
বৃহস্পতি আমাদের মঙ্গল বিধান করুন। এই বৃহম্পতি পরমান্মা। 
বৃহৎ ও পতি শকের সন্ধি হইয়া নিপাতনে বৃহস্পতি শব্দ সিদ্ধ]হয়। 
যিনি সর্বাপেক্ষা! মহৎ পঠি বাপালন কর্ত! তিনি পরমাত্মা ভিন্ন কি 
হইবেন? অতএব বৃহস্পতি শবে পরমাত্বাই লক্ষিত হয়। এই 
পরমাত্মার অধ্যাসেই জীবদেহ রক্ষিত হয়। অথবা বৃহস্পতি শব্দের অর্থ 
বৃহভের পতি ব। বাক্যের পতি। জীব কোন কার্য করিবার সময়ে 
আদেশ বাক্য পরমাত্মার নিকট হইতে পাইয়া! থাকে। কোন কোন 
সময়ে অবিদ্থার প্রভাবে জীবেব বুদ্ধি সত্ব এরপ প্রচ্ছন্ন থাকে যে, সে 
পরমায্মার বাণী শুনিতে পায়না । এরূপ স্থলে নিত্যমুক্ত জীব ইচ্ছা 
করিয়াই বন্ধনকে বরণ করিয়া লয়। ইহার নাম জীবের এক প্রকার 
আন্মহত্যা। এই আত্মহত্য! হইতে রক্ষ'পাইবার নিমিত্ত জীবকে অর্থাৎ 
বুদ্ধিস্থ চৈতচ্যকে পরমায্মার বাণী শুনিতে হইবে। এই সমস্ত বিচার 
করিলে জান! বায়_ন্স্তি নো বৃহম্পতির্ধাতু। এই বাক্যের অর্থ 
বৃহম্পতি আমাদের মঙ্গল বিধান করুন অর্থাৎ পরমাত্মা আমাদের প্রতি 
কার্যে এরাপ আদেশ বাগ! দিন যাহা আমরা সর্ধদাই শুনিতে পাই। 
তাহা হইলে আমর! অশ্রেয় ত্যাগ করিয়া! শ্রের; পথে অগ্রসর হইতে 


' পারিব। এই গেল বস্তিবাচন। 


বাঙ্গীলায় সমবায় আন্দোলন 
অধ্যাপক প্রীননলিনীরগ্রন চৌধুরী এম-এ 


বাঙ্গালার সমবায় আন্দোলনের অগ্রগতির অন্তরায় 
এবং বর্তমান অবস্থার প্রকৃত কারণ 


১৯০৪ সালের সমবায় আইন বিধিবদ্ধ হওয়ার পর হইতেই 
বাঙ্গালায় সমবাঁয় খণ দান সমিতি স্তাঁপিত হইতে থাঁকে। 
১৯১২ সালে যে দ্বিতীয় সমবায় আইন বিধিবদ্ধ হয় তাহার 
ফলে খণদান ব্যতীত অন্য ভাবে স্বল্প আয়বিশি্ট লোকের 
আথিক অবস্থার উন্নতি করিবার উদ্দেশ্যে সমবায় নীতির 
ভিত্তিতে বাঙ্গালায় নান! শ্রেণীর সমবায় সমিতি প্রতিঠিত 
হইয়াছে এবং গত পরন্রিশ বখমরের মধ্যে বাঙ্গালায় 
সমবায় আন্দোলনের যে প্রসার ও ব্যাপ্তি হইয়াছে তাহা 
একেবারে উপেক্ষণীয় নহে। ১৯৩৮ সালের ৩০শে জুন 
পর্যন্ত সার! বাঁঙ্গালায় সর্ধশ্রেণীর সমবায় মমিতির মোট 
সংখ্যা দীড়াইয়াছিল ২৪,২৫৬। আলোচ্য বর্ষে সমিতির 
সদন্য সংখ্যা ছিল ৮৬৮১৫৪০ ; ইহাদের মোট কার্যকরী 
মূলধন ছিল ১৯ কোটি ৪৮ লক্ষ টাঁকা। কিন্তু সমবায় 
আন্দোলনের প্রসার বাঙ্গালার লোকসংখ্যা ও প্রয়োজনের 
তুলনায় বে খুব উল্লেখযোগ্য হয় নাই তাহা সহজেই 
অনুমেয় । দীর্ঘ ৩৫ বৎসরের মধ্যে এই প্রদেশের সমবায় 
আন্দোলনে হাজার করা ১৫৭ জনের বেণী লোক ধোগদান 
করিয়া সভ্যশ্রেণীভুক্ত হয় নাই। বঙ্গীয় ব্যাঙ্ষিং কমিটির 
হিসাঁব মত বাঙ্গালার কৃষকের কৃষিকা্ধ্য চালাইবার উদ্দেশ্যে 
অল্প সময়ের জন্য ( 51016 2100 17091076018 10215 ) 
যে টাকার প্রয়োজন তাহা প্রায় ৯৬ কোটি টাঁকা। 
ইহার মধ্যে সমবায় সমিতিগুপি মাত্র চারি কোটি টাকার 
মত ধণ দান করিয়! কৃষককে সাহায্য করিতেছে ।* 


_শশশীশশিশিস্ীটিট ৮ পেপসি পেশী সপ পলাশী সন ্ 


* অবন্ঠ কৃষকদের আধিক অবস্থার সর্ববাঙ্গীণ উন্নতি সাধন করিতে 
হইলে তাহাদিগকে দীর্ঘ মেয়াদী খণ দানের ও পুরাতন ধণ পরিশোধের 


বনপোবন্তও করিতে হইবে। এই বিষয়ে সকলেই একমত যে, 


যথে্টসংখ্যক শক্তিশালী জমি-বন্ধকী ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠা বাতীত কৃষকদের 
এই অভাব দুরীভূত হইবে না এবং সাধারণ সমবায় মমিতিসমুহের পক্ষে 


শা শী? পাশশাাপিস্পীিপিশিশিস্পিলিশ জি 


বাঙ্গালায় সমবায় আন্দোলনের এই প্রকার সামান্ 
অগ্রগতির বাহ্‌ কারণসমূহ ( ০৫57721 12170108095 ) . 
প্রথমে উল্লেখ কর! যাইতে পারে। সমবায় আন্দোলন ' 
বিশেষভাবে দরিদ্র ও অশিক্ষিত জনসাধারণের আধিক 
অবস্থার উন্নতির প্রয়াসে ব্যাপূত। কিন্তু নিরক্ষর জন- 
সাধারণ সমবায় আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা ও ইহার মূলনীতি- 
সমূহ সম্যক উপলব্ধি করিতে অনেক ক্ষেত্রে অক্ষম হওয়ায় 
তাহাদের মধ্যে আন্দে।লনের বিস্তার বহুলা'শে বাধাপ্রাঞ্ধ 
হইতেছে । আবার প্রত্যেক গ্রামেই কতকসংখ্যক লোক 
রঠিয়াছে-বাঁহাদের মধ্যে সাধারণ ব্যবসা-বুদ্ধির অভাব 
পরিলক্ষিত হয়। জনসাধারণ যদ্দি বিশেষভাবে মিতব্যয়ী 
এবং স্ব স্ব আয়-ব্যয়ের তুলনায় দূরদর্শী না হয় তবে 
সমবায় আন্দোলন কোন ক্ষেত্রেই বিস্তার লাভ করিতে 
এবং দরিদ্র জনসাধারণের পক্ষে কল্যাণকর" হইতে 
পারে না। এক সময় মহাজন সম্প্রদায়ের প্রতিষোগিতাও 
অনেক ক্ষেত্রে সমবায় আন্দোলনের বিষ্বন্ববূপ হ্ইয়! 
উঠিত দেখা গিয়াছিল। মহাঁজনদিগের নিকট হইতে 
ধান্যোপাদন ব্যতীত অন্ত উদ্দেশ্যের জন্তও সহজে ও অল্প 
সমযে ধার পাওয়া সম্ভব ছিল বলিয়া অনেকে তাহাদের 
নিকট হইতেই টাঁকা ধার করা স্থবিধাজনক মনে করিত। 
এই জন্যও কৃষকদিগকে ব্যাপকভাবে সমবায় আন্দোলনে 
যোগদান করিতে দ্রেখা যায় নাই। 

আর সব চাইতে বড় কথা হইতেছে এই যে, সমবায় 
আন্দোলন যে সমস্া সমাধানে ব্যাপৃত রহিয়াছে তাহা এত 
গুরুত্বপূর্ণ ও জটিলতাময় যে, এই ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য 
উন্নতিলাভ করা সময়সাপেক্ষ। কৃষককে কৃষিকাধ্য 
চাঁলাইবার জন্য অল্প স্থদে টাকা ধার দিবার ব্যবস্থা 


এই শ্রেণীর খণদান করা সম্ভব নহে। 'ভারতবর্ধ'এর পূর্বের এক 
সংখ্যায় দীর্ঘ মেয়াদি খণ ও জমি-বন্ধকী ব্যাঙ্ক সম্বন্ধে আলোচন! 
করিয়াছি। 


৭৩ 


১, 


৪৮ 


করায় সঙ্গে সঙ্গে তাহার পুরাতন খণ শোধের বন্দোবস্ত 
করিতে হইবে। ইহার সঙ্গে সঙ্গে তাহার আয় বৃদ্ধির 
ব্যবস্থা করিতে ন| পারিলে রুষকের যথার্থ উন্নতি অসম্ভব । 
গ্রই উদ্দেশ্টে বিশেষভাবে কৃষকের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিভক্ত, 
ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অবস্থিত জমি একত্রিত করিতে হইবে; 
জল সেচ ও জল নিকাশের এবং উন্নততর প্রণালীতে কৃষি- 
ব্যবস্থা চালাইবাঁর বন্দোবস্ত করিতে হইবে। সঙ্গে সঙ্গে 
উৎপাদিত পণ্য বিক্রয়ের বন্দোবস্ত করাও একান্ত আবশ্তক। 
গোটা সমস্যাটাকে শত-দিক হইতে সমাধান করিবার জন্য 
চেষ্টিত না হইলে দরিদ্র জনসাধারণের প্রকৃত আখিক উন্নতি 
অসম্ভব এবং এই দৃষ্টিকোণ হইতে বিবেচনা করিলে 
স্বীকার করিতেই হইবে যে, সমস্তাটার জটিলতার জন্য সমবাঁর 
আন্দোলনের প্রসার মন্দগতিতে অগ্রসর হইতে বাধ্য । 

কিন্তু তাই বলিয়া! বাঙ্গালার সমবায় সমিতিসমূহের 
পরিচালনা, কাধ্্যপ্রণালী ও গঠননীতি প্রভৃতি সম্পর্কে 
কোনই দৌষক্রটি ও গলদ নাই এই কথা কেহই বলিবেন না। 
পক্ষান্তরে নান! প্রকার আভ্যন্তরীণ দুর্নীতি ও দৌষক্রটির 
জন্যও বাঙ্গালার সমবায় আন্দোলনের অগ্রগতি বাধাপ্রাপ্ত 
হইতেছে এবং এই সকল কারণে বর্তমানে সমবায় সমিতি- 
গুলির এক গুরুতপূর্ণ সঙ্কটকাল উপস্থিত হইয়াছে। 

বাঙ্গালায় তথা ভারতে সমবায় সমিতি গঠন ব্যাপারে 
প্রথন হইতেই জনসাধারণের দিক হইতে আশান্রূপ 
স্বতপ্রণোদিত ইচ্ছা ও উৎসাহ পরিলক্ষিত হয় নাই। এই 
ব্যাপারে সরকারী চেষ্টা ও উৎসাহের উপর নির্ভর করিয়া 
থাকিলে যে সমবায় আন্দোলন জনসাধারণের মধ্যে সজীব- 
ভাঁবে জাগিয! উঠিতে পারে না তাহা সহজেই অন্মেয়। 
জনসাধারণের মধ্যে সমবায় সমিতি গঠন ও ইহাদের পরিপূর্ণ 
স্থযোগ নেওয়ার ব্যাপারে যে নিরুৎসাহতার ও নিরুগ্যমতার 
ভাব দেখা গিয়াছে তাহার ফলে আন্দোলনের প্রাণপূর্ণতা ও 
সজীবতা অনেকাংশে বিনষ্ট হইতে বসিয়াছে । 'আমরা ইচা 
বলি না যে বর্তমাঁন অবস্থায় গভর্ণমে্টের হস্তক্ষেপ আরও 
কম হওয়া দরকার। বরং নাঁনা ব্যাপারে বিশেষভাবে 
সমিতির হিসাব-নিকাশ ও কার্য্যপরিচালনা সম্পর্কে সরকারী 
তত্বাবধান আরও অনেকদিন পর্যন্ত অত্যন্ত প্রয়োজনীয় 
হইবে। আমাদের বক্তব্য হইতেছে এই যে, জনসাধারণ যদি 
আন্দোলনের প্রতি উৎসাহী ও সহানুভূতিসম্পন্ন না! হয়, 





ভ্ঞান্রভব্শ্ 





[ ২৮শ বর্ষ-_২য় খণ্--১ম সংখ্যা 





৮৮ সহ 


তাহারা এই ব্যাপারে যদি আত্মনির্ভরশীল হইয়৷ না দীড়ায় 
তাহা হইলে শুধু সরকারী উৎসাহে ও প্রচেষ্টায় আন্দোলনকে 
সজীব রাঁথা যাইবে না। ইহাকে বাঙ্গালার সমবায় 
আন্দোলনের একটা প্রধান আভ্যন্তরীণ দুর্ববলতা৷ বলা যাইতে 
পারে। 

সমবায় আন্দোলনের উদ্দেশ্ঠ, কার্য্যগ্রণালী ও সমস্যা 
সম্বন্ধে যে শুধু জনসাধারণই অজ্ঞ এই কথা বলিলে তাহাঁদের 
প্রতি কিছু অবিচার কর! হয়। কারণ দেখা গিয়াছে যে, 
সমবায় বিভাগের কর্মমচারীবুন্দও অনেক ক্ষেত্রে আন্দোলনের 
সাধারণ নীতি ও কার্যক্রম সম্বন্ধে ভ্রান্ত ধারণ! পোষণ করিয়া 
থাকেন। সমবায় সমিতির সভ্যদের সম্পর্কে এই উক্তি 
আরও বিশেষভাবে প্রযোজ্য । সমবায় আন্দোলনের সহিত 
ধাঁহীর! জড়িত আছেন তাদের মধ্যে সমবায় নীতি ও 
কাধ্যপ্রণালী সম্বন্ধে পরিষ্ষীর ধারণ] ও প্রকৃত শিক্ষার বিস্তার 
না হইলে আন্দোলন কিছুতেই অগ্রসর লাভ করিতে পারে 
না। বঙ্গীয় ব্যাঙ্কিং কমিটী সত্যই বলিয়াছেন যে, এই 
প্রদেশের সমবায় আন্দোলনের আভ্যন্তরীণ গলদসমূচ্ের 
উৎস-সন্ধান এই স্থানেই পাওয়া ঘাইবে | 

সমবায় সনিতির দাদনী টাঁকার সুদ 'ও আসল টাঁক। 
যদি সভ্যগণ নির্দিষ্ট সময়ে পরিশোধ না করে তাহ! হইলে 
আন্দোলনের আথিক অবস্থা কিছুতেই সুস্থ ও সবল হইতে 
পারে না। অনিয়মিতভাবে সভ্যগণ কর্তক খণ 
পরিশোধের জন্যই বিশেষভাবে সমবায় সমিতিগুলি নিজ্জীব 
হইয়া পড়িয়াছে । ইহ বলাই বাহুল্য যে, যথাঁসময়ে এবং 
পূর্ব পরিকল্পনা অন্তযায়ী খণ পরিশোধিত না হইলে 
লোকশিক্ষার ও আথিক উন্নতির দিক হইতে সমবায় 
আন্দোলনের কোনই সার্থকতা নাই । দক্ষ তদ্বির-তদারকের 
অভাব, প্রাথমিক সমিতির পরিচালকদের 'দাসীষ্ঠ, 
পুরাতন খণভার, সদশ্তদের খণশোধ-ব্যাপারে স্বাভাবিক 
আলম্ত, শশ্তছানি ও স্বল্প পণ্যমূল্য ইত্যাদি ঘটনা এই 
গলদের প্রধান কারণ বলিয়া! নির্দেশ কর! যাইতে পারে। 
এই প্রসঙ্গে ইহাও উল্লেখ করা যাইতে পারে যে, অনেক 
সময় দেখ! যায় যে, পরিচালক-সাস্তগণ নিয়মিত খণ 
পরিশোধ না করিলেও তাহাদিগকে আইনত খণ শোধ 
করিতে অন্ত কেন বাধ্য করিতে পারে না। ফলে, 
পরিচালক-সদস্যদের মধ্যে এই ব্যাধি বিশেষভাবে দৃষ্ট 


পৌষ_-১৩৪৭ ] 


হয় এবং তাহা ক্রমে অন্য সভ্যদের স্বভাব প্রভাবান্িত 
করিতে দেখা যাঁয়। 

পূর্বেই বলা হইয়াছে যে, বাঙ্গালার অধিকাংশ সমবায় 
সমিতিসমূহ কেবল টাঁকা দাঁদন কার্যেই তাহাদের কাঁজ 
সীমাবদ্ধ রাখিয়াছে। ফলে জনসাধারণের মধ্যে সমবায় 
আন্দোলন সম্পর্কে একটা ভ্রান্ত ধারণ প্রসার লাভ 
করিয়াছে । সমবায় সমিতিগুলির স্বল্প সুদে খণদান করাই 
একমাত্র উদ্দেশ্য বলিয়! অনেকে ধরিয়! লইয়খছেন। অথচ 
সভ্যদের মধ্যে “সঙ্ঘশক্তির ভাব সৃষ্টি করিয়া! তাহাদের 
মিলিত চেষ্টায় ও সাহাঁধ্ে নিছ্ধেদের বর্তমান ছুরবস্থার 
উন্নতি করাই যে আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্ট্ তাহ নিজেরাও 
বুঝিতে পাঁরে নাই এবং সরকারী ও বেসরকারী কর্মচারী 
ও নেতৃবৃন্দও তাহ! পরিষারভাবে বুঝাইয়া দেন নাই। 
বাঙ্গালার সমবায় আন্দোলনের ইহাঁও একট আভান্তরীণ 
দুর্বলতা বপিষ! উল্লেখ করা যাইতে পারে । 

অনেকের মতে সমবায় প্রতিষ্ঠানগুলির গঠনের দিক 
হইতে একটা গুরুত্বপূর্ণ চর্ববলতা হইতেছে এই যে, প্রত্যেক 
সমিতি শুধু এক একটা উদ্দেশ্য সাধনের জন্য স্কাপিত 
হইয়াছে । যথা, কোন সমিতি কেবলগাত্র খণদানের জন্তঃ 
কোন সমিতি শুধু পণ্য বিক্রয়ের জন্ক প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। 
এই অবস্থায় সকল শ্রেণীর সমিতির সভ্য না হইলে কোন 
গ্রামবাসীর পক্ষে সমবায় "আন্দোলনের সর্ঝপ্রকাঁর স্থবিধা 
ভোগ করা সম্ভব নহে । তাই অনেকে প্রস্তাব করিয়াছেন 
যে, প্রতোকটি প্রাথমিক সমিতি যদি সভ্যগণকে টাঁকা ধার 
দিবার, তাহাদের উৎপন্ন পণ্য বিক্রয় করিবার, তাহাদের 
দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় পণ্যদ্রবাঁদি উৎকষ্ট 
ফনলের বীজ, যন্ত্রপাতি ও কাচা মাল সরবরাহ করিবার, 
তাহাদের জমিতে সেচ ইত্যাদি নান! শ্রেণীর কার্য করিবার 
ব্যবস্থা করে তাহা হইলে সমিতির কাঁজ ও সভ্যদের সহিত 
সমিতির সম্পর্ক শুধু ঘে ব্যাপক হইবে তাহা নহে, গ্রাম- 
বাসীদের সম্পূর্ণ আথিক' জীবন সমিতির কাজ দ্বারা 
প্রভাবাদ্িত হইবে ; সমিতির সহিত সভাদের সম্পর্ক সুদৃঢ় 
ও সর্বক্ষণস্থায়ী হইবে, জনসাধারণ এই ধরণের সমিতির 
প্রতি বিশেষভাবে আকৃষ্ট হইয়া উৎসাহের সহিত সভ্য 
শ্রেণীভূক্ত.হইবে এবং ফলে সমগ্র আন্দোলন সজীব, বদ্ধিষুঃ 
ও প্রগতিশীল হইয়া উঠিবে। : অবশ বহু উদ্দেস্ঠূলক নীতির 


লাঁঙ্চালামস সমবাক্স আন্্ষোক্লন্ন 


এ 


ভিত্তিতে প্রাথমিক সমিতি গঠিত হইলে সভ্যদের দায়িত্ব 
সীম হওয়। আবশ্যক | 

কিন্তু যে গলদের ফলে এই প্রদেশের সমবায় সমিতিসমূহ 
বিশেষভাবে বিপন্ন হইয়া পড়িয়াছে এবং বে সমবায় সমিতি- 
সমূহের পূর্ববক্কত দাঁদনী টাঁকাঁর বেশীর ভাগ একেবারে বা 
আংশিকভাবে অনাদায়ী হইয়া পড়িয়াছে, বিগত কয়েক 
বৎসরের কৃষি-সন্কটের ফলে রুষিজাত পণ্যের যে মূল্য হাস 
হয় সেইজন্য এবং সমবাঁয় সমিতির খণদান ব্যাপারে ক্রটিপূর্ণ 
কার্যনীতির দরুণ এই অবস্থার স্থষ্টি হইয়াছে । 

সমিতি হইতে টাকা ধার লইবার সময় যদিও খণ গ্রহণ 
করিবার উদ্দেশ্টের উল্লেখ করিতে হয়ঃ তবু কেন্দ্রীয় ও 
প্রাথমিক সমিতি, সভ্য অন্য উদ্দেশ্টে টাক! ব্যয় করিতেছে 
কি না, তাহার উপর তীক্কু দৃষ্টি রাখে নাই। অনেক ক্ষেত্রে 
সমবায় সমিতি আবার দীর্ঘ ও অল্পকণল মেযাঁদী দাদনের 
মধ্যে কোন পার্থক্য করে নাই। এমনও দেখা গিয়াছে 
যে, খণ-পরিশৌধের কাল বাঁড়াইয়া দিয়া ও কোন সভোর 
খণ যথাসময়ে পরিশোধিত হইয়াছে বলিয়া! কাগজপত্রে 
উল্লেখ করিয়া সেই সভ্যকেই আবার নূতন খণ দ্রেওয়া 
হইয|ছে; এইভাবে হিসাব দেখাইয়া মল্প মেয়াদী খণ কার্যত 
সমিতির পরিচালনার ব্রটিতে দীর্ঘ মেয়াদী দাঁদনে পরিণত 
হইয়াছে । এই সব নানা কারণে এবং অনেক স্থলে সভ্যের 
পরিশোধ করিবাঁর শক্তির অতিরিক্ত খণদান করাঁর ফলে 
প্রাথমিক সমিতির দাঁদনী টাকার একটা অংশ একেবারে 
অনাদায়ী হইয়! পড়িয়াছে এবং অন্ত অংশও দীর্ঘ ও অল্পকাল- 
ব্যাপী ছোট ছোট কিন্তির সাহায্য ব্যতীত আদায় করা 
অসম্ভব হইয়া উঠিয়াছে। এই অবস্থায় প্রাথমিক 
সমিতিগুলি আমানতকারীদের প্রাপ্য টাকা ও কেন্দ্রীয় 
ব্যাঙ্ক হইতে গৃহীত খণের টাকা পরিশোধ করিতে 
পারিতেছে না । ইহার দরুণ কেন্দ্রীয় বাঙ্কগুলি আবাঁর 
আমানতকারীদের প্রাপ্য টাক! ও প্রাদেশিক ব্যাঙ্ক হইতে 
গৃহীত খণের টাকা পরিশোধ করিতে অক্ষম হইয়া পড়িয়াছে। 
এইভাবে সমিতিসমূহ নৃতন খণ দেওয়া বহুলাংশে স্থগিত 
করিয়া ফেলিয়াছে, অনেক সমিতির পক্ষে তাঁহাদের সঞ্চিত 
তহবিল ও আদায়ী টাকা হইতে আমানতকারীদের প্রাপ্য 
সুদ ও সমিতির আবশ্যকীয় খরচপত্র নির্বাহ করাই এক 
সমস্যা হইয়া দাড়াইয়াছে এই সব নানা কারণে 


৯১ 


সমবায় আন্দোলন জনসাধারণের আন্থাও হীরাইতে 
বসিয়াছে। এইভাবে বিকৃত খণদান-নীতির, পরিচালনা 
সম্পর্কে নানা প্রকার দুর্নীতি ও অধ্যবস্থার এবং বিগত 
কৃষি-সন্কটের ফলে সমবায় আন্দোলন এক বিষম 
সঙ্কটে পতিত হইয়াছে এবং এই সকল ঘটনার 
ঘাত-প্রতিঘাতে 'যে পাপচক্রের সৃষ্টি হইয়াছে তাহার 
দরুণ বাঙ্গালার সমগ্র সমবায় আন্দোলন একটি অচল 
অবস্থায় উপনীত হইয়াছে । এই অবস্থায় সহিষু ও ধীরবুদধি 
সহযোগে সমবায় সমিতিসমূহের পুনরুজ্জীবিত করিবার 
আস্ত ব্যবস্থ! না করিলে এই প্রদেশের আন্দোলনের ভবিষ্যত 
চিরতরে বিনষ্ট হইতে পারে। এই দৃষ্টিকোপ হইতে 
প্রাথমিক ও কেন্দ্রীয় সমিতিসমূহকে বিচ্ছিন্ন অবস্থার 
প্রতিকারার্ধে যে সকল প্রস্তাব করা হইয়াছে তাহার উল্লেখ 
করিয়া এবং ভবিষ্বতে যাহাতে অতীতের তুল ক্রটির 
পুনরভিনয় না হয় সেই উদ্দেশ্টে যে সমবাঁয় আইন প্রস্তত 
চইতেছে তাহার আলোচনা করিয়া! বর্তমান প্রবন্ধ 
শষ করিব। 


সমবায় আন্দোলনের বর্তমান দুরবস্থার প্রতিকার 
এবং প্রস্তাবিত সমবায় আইন 


বাঙ্গালার সমবার আন্দোলনকে পুনরুজ্জীবিত করিতে 
£ইলে ছুই ভাবে সমবায় সম্পর্কে জড়িত সমস্যাসমূের 
পমাঁধানের চেষ্টা করিতে হইবে । অতীতের অবাবস্থার ফলে 
বর্তমানে সমবায় সমিতিসমূহ যে সন্কটে পতিত হইয়াছে 
তার প্রতিকার করিতে হইবে। পুরাতন ও 
নব-প্রতিষ্ঠিত সমিতিগুলি যাহাতে আবার বিপন্ন হুইয়। না 
পড়ে 'এব যাহাতে তাহাদের অগ্রগতির পথ প্রশস্ত ও স্থগম 
য় তাহার জন্ত আইন দ্বারা ও অন্য উপায়ে যথোপযুক্ত 
ব্যবস্থা করিতে হইবে। 

সমবায়সমিতিসমূহের বর্তমান দুরবস্থা দুরীকরণার্থ 
প্রাথমিক সমিতি তথা কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের দাদনী টাকার থে 
অংশ প্রকৃতই অনাদায়ী হইয়। পড়িয়াছে সেই পরিমাণ টাকা 
প্রাথমিক এবং কেন্দ্রীয় সমিতির আমানতকারীদের প্রাপ্য 
টাকা হইতে একেবারে বাদ দিতে হইবে। আন্দোলনের 
ভবিষ্যত উন্নতির দিকে লক্ষ্য রাখিয়া! এবং বর্তমান দুরবস্থা 
কথা বিবেচনা করিয়া 'আমানতকারীদের এই থাতে কিছুটা 


, ভ্ডান্রভব্বশ্ 


[ ২৮শ বর্--২য় খণ্ড--১ম সংখ্যা 


ক্ষতি স্বীকার করা ভিন্ন উপায় নাই। কিন্তু আশার কথা 
এই যে, দাঁদনী টাকার বেশীর ভাগ একেবারে অনাদায়ী নছে। 
যদি খণকারকদের জমি-জমা ও আয়-ব্যয়ের হিসাব পরীক্ষা 
করিয়া তাহাদের আথিক সামর্থ্যানুযায়ী প্রয়োজনমত খণের 
স্থদ ও সভ্যবিশেষে আসলের পরিমাণ হাস করিয়া যথাযোগ্য 
কিন্তি নির্ধারণ করা যাঁয় তাহা হইলে অধিকাংশ সভ্যই 
পনের-বিশ বৎসরের মধ্যে সব টাকা পরিশোধ করিয়া দিতে 
পারিবে । এই শ্রেণীর দাদনী টাকার হিসাব প্রাথমিক ও 
কেন্দ্রীয় সমিতির হিসাব হইতে একেবারে ভিন্ন করিয়া জমি- 
বন্ধকী ব্যাঙ্কের হাতে তুলিয়া দিলে এই প্রকার খণ কিস্তি- 
ক্রমে আদায় করা সহজ হইয়া আসিবে। সঙ্গে সঙ্গে 
খণকারকদের সম্পত্তির মূলে প্রাদেশিক ব্যাঙ্কের মারফতে 
প্রাথমিক ও কেন্দ্রীয সমিতির আমানতকারীদিগকে দেয় 
টাকার পরিমাণ ডিবেঞ্চার বাহির করিয়া অল্প স্থুদে টাকা 
ধার লইয়া গভর্ণমেণ্ট কেন্দ্রীয় ও প্রাথমিক সমিতিদিগকে 
তাঁহাদের আমানতকারীদের দাবী মিটাঈয়! ফেলিতে সাহাবা 
করিবেন এবং জমি-বন্ধকী ব্যাঙ্কের মারফতে খণকারকদের 
নিকট হইতে কিস্তিক্রমে তাহা আদায় করিয়া লইবেন। 
এইভাবে যদি আমানতকারীগণ তাহাদের প্রাপ্য টাকার 
অধিকাঁংশ একসঙ্গে ফিরাইয়া পান তাহা হইলে সমিতি- 
সমূহের দাদনী টাকার ঘে কতকাঁশ একেবারে অনাদায়ী 
হইয়া পড়িযাছে সেই পরিমাণ টাকার দাঁবী ত্যাগ করিয়া 
এবং খণের স্থ্দ ও আলণ কমান সন্ধে সমিতিসমূহের 
সহিত একটা আপোষ করিতে রাজী হইয়া কতকটা ক্ষতি 
স্বীকার করিতে তাহার! হয়ত সহজেই স্বীকৃত হইবেন । 

এইবপ প্রণালীতে কাঁধ্যে অগ্রসর হইলে কেন্জ্রীয় ব্যাস্ক- 
সমূহের বর্তমান সঙ্কটের অবসান হইবে এবং তাহারা ও 
প্রাথমিক সমিতিসমূহ সভ্যদিগকে মাবার অল্পকালের 
মেয়াদে টাকা ধার দিয়া তাহাদের কার্যে প্রবৃত্ত হইতে 
পারিবে । আমানতকারীদের প্রাপ্য টাক! শোধ করিয়া 
দেওয়াতে সমবায় সমিতিগুলি আবার জনসাধারণের আস্থা 
অর্জন করিয়। আমানত সংগ্রহ করিতে সমর্থ হইবে। 
প্রাদেশিক ব্যাঙ্ক ও কেন্দ্রীয় সমিতিসমূহকে পুনঃ টাকা 
ধার দিয়! তাহাদের কাধ্যে সহায়তা করিষে। অবশ্থ 
কিছুকালের জন্য আমানতকারীদের নিকট হইতে প্রচুর 
পরিমাণে টাকা ধার পাওয়া হয়ত সম্ভব নাও হইতে পারে। 


পৌষ---১৩৩৭ ] 


এই অবস্থায় গভর্ণমেপ্টকে প্রাদেশিক ব্যাঙ্কের মারফতে 
কতক সময়ের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কদিগকে টাঁকা ধার দিয়া 
তাহাদের কার্যকরী মূলধন সংগ্রহ করিবার ব্যাপারে সাহায্য 
কর! দরকার হইতে পারে। ৃ 

গভর্ণমেণ্ট যদি এইভাবে ডিবেঞ্ার বাহির করিয়া 
আমানতকারীদের টাঁকা পরিশোধ করিবার ও অল্পসময়ের 
জন্য কার্যকরী মূলধন হিসাবে কেন্দ্রীয় ব্যাঁ্কসমূহকে টাকা 
ধার দিবার ব্যবস্থা করেন তাহা হইলে অতীতের পুঞ্জীভূত 
আবর্জজন] দূর হইবে, সমবায় আন্দোলনের বর্তমান অল ও 
সঙ্কটময় অবস্থার অবসান হইবে এব সমগ্র আন্দোলনের 
সজীব ও প্রাণপূর্ণভাব আবার ফিরিঘ়া আসিবে। কিন্তু 
এই প্রকার ব্যবস্থা করিয়া থামিলেই চলিবে না। নূতন 
সমবায় আইন প্রণয়ন করিয়া অতীতের গলদ ও তুলত্রান্তি 
পুনরাঁয় যাহাতে আন্দোলনের প্রগতি বন্ধ করিতে না পারে 
তাহার বন্দোবস্ত এবং আন্দোলনকে শক্তিশালী করিবার 
উদ্দেশ্তে অন্তপ্রকার ব্যবস্থা অবলম্বন করিতে হইবে । 

প্রধানত প্রথমেণক্ত উদ্দেশ্যেই বাঙ্গীলার গভর্ণমেণ্ট একটা 
নৃতন সমবায় আইন বিধিবদ্ধ করিতেছেন । নূতন আইনে 
সমবায় সমিতিসমূহের উপর সরকারী (প্রভাব প্রতিপত্তি 
বুদ্ধি পাইবে বলিয়া কেহ কেন প্রস্তাবিত আইন সম্পকে 
আপত্তি তুলিয়াছেন। ইহা অতি সাধারণ কথা বে সমবায়ের 
মূল নীতি হইল সমিতিসমুহের আত্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা বৃদ্ধি 
করা এবং তাহাদিগকে আত্মনির্ভরশল ও স্বাবলম্বী করিয়। 
গড়িয়া তোলা । কাজেই নীতির দিক হইতে তাহাদের 
উপর সরকারী হস্তক্ষেপ যতই হস পার ততই মঙ্গলজনক। 
আন্দোলন যে পরিমাণে সরকারী কর্তৃত্ব ব্যতীত 
কৃতিত্বের সহিত অগ্রসর হইতে পারিবে সেই পরিমাণে 
আন্দোলনের সাফল্য ও সুস্থতা স্ুচিত হইবে। কিন্তু সমস্থ] 
হইতেছে এই যে, আন্দোলনের বর্তমান অবস্থায় সরকারী 
তদ্বির ও তদারক একেবারে শিথিল করিয়া! ফেলিলে 
আন্দোলনের অনিষ্ট হওয়ার অস্তাবনাই অধিক। বিশেষত 
সমিতির হিসাব-নিকাশ ও কার্য্য পরিচালন! এবং নানা শ্রেণীর 
সমিতি প্রতিষ্টা, তাহাদের মূলধন সরবরাহ, আন্দোলনের 
কর্মচারীদের উপযুক্ত শিক্ষা ইত্যাদি সম্পর্কে সরকারী 
তত্বাবধান আরও অনেকদিন পর্যন্ত অত্যাবশ্তক হইবে 
বলিয়। আমাদের ধারণ ॥ সমুবায়' আন্দোলন যে বর্মা 


লাঙ্চালাল্প সমসায় আনে্ক্কালন্ন 


থ্স্‌ঞ 


প্রদেশে একেবারে ভাঙ্গিয়া পড়িয়াছিল সেই জন্য অলময়ে 
সরকারী তদ্বিরতদারক শিথিল করা কতকাঁংশে দায়ী 
বলিয়া অর্নেকে মত প্রকাশ .করিয়াছিলেন। এই সব কথা 
বিবেচনা! করিলে এবং সমিতির কার্য্প্রণালী ও পরিচালনা 
সম্পর্কে যে সকল গলদ ও দুনীতি প্রকাঁশ লাভ করিয়াছে 
ও যাহা অন্তত কতকাংশে বাঙ্গালার সমবায় আন্দোলনের 
বর্তমান দুরবস্থার জন্য দায়ী তাহ! মনে রাখিলে প্রন্তাৰিত 
আইন সম্পর্কে এই শ্রেণীর আপত্তি খুব সমীচীন .বলিয়! বোধ 
হয় না। বরং বর্তমান অশিক্ষা! ও অজ্ঞতার দরুণ সরকারী 
অভিভাবকত্বে জনসাধারণকে সমবায় নীতি সম্পর্কে 
সর্বতো ভাবে উৎসাহিত করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় । বাঙ্গালার 
বর্তমান সমিতিসমূহ পুনবজ্জীবিত হইলে নৃতন আইন দ্বারা 
তাহাদের কাঁধ্যপ্রণালী ও পরিচালনার উন্নতি এবং ধনবৃদ্ধিকর 
নানা শ্রেণীর সমিতি প্রতিষ্ঠিত হইলে সমগ্র আন্দোলনের 
অগ্রগতির পথ প্রশস্ত ও সুদৃঢ় হইবে । তখন ক্রমে ক্রমে 
সরকারী কর্ভুত্রের প্রয়োজনীয়তা হাঁস পাইবে এবং সরকারী 
অভিভাঁবকত্ব শিথিল করা সম্ভবপর ও মঙ্গলজনক হইবে। 

এই দৃষ্টিকোণ হইতে প্রস্তাবিত আইনের মুলধারাসমূহ 
সাধারণভাবে সমর্থন কর! যাইতে পারে। বঙ্গীয় সমবায় 
আইনের কয়েকটি অঙি-প্রয়োজনীয় বিধানের উল্লেখ করিলে 
উক্ত আইন সম্পর্কে আমাদের মন্তব্যের তাত্পধ্য পরিফার 
হইবে। অনেক ক্ষেত্রে দ্রেখা গিয়াছে যে, ছুই-একজন 
প্রভাবশালী কর্মকর্তার অন্তায় ব্যবহারের দরুণ সমিতির 
অবস্থার অবনতি ঘটিয়াছে। ১৯১২ সালের আইনে এই 
শ্রেণীর মদস্তের প্রতি কোন প্রকার শান্তি বিধানের ব্যবস্থ! 
নাই। ফলে রেজিষ্টারের পক্ষে সমিতি লিকুইডেশনস্এ 
দেওয়া ব্যতীত অন্ত কোন পন্থ। থাকে না। এই ভাবে 
দুই-এক জন জবস্তের অন্তাঁয় ব্যবহারের জন্ত সমস্ত সভ্য 
ও সমিতিসমুহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নূতন আইনে রীতিমত ও 
আইনের নির্দেশ অনুযায়ী হিসাব-নিকাশ না রাখা, ইচ্ছা" 
পূর্বক দময়মত খণ পরিশোধ না করা, সদস্য ব্যতীত অন্ত 
কাহাকেও টাক ধার দেওয়া, খণগ্রহণেচ্ছু সদস্যের পক্ষে 
তাঁহার সম্পত্তি ও দেনাঁর যথার্থ পরিচয় প্রদান না৷ করা, 
এক উদ্দেস্তে খণ গ্রহণ করিয়া তাহা অন্ত উদ্দেপ্ে ব্যয় করা, 
হিসাব-পরীক্ষকের নির্দেশ মানিয়া না টলা অথবা! তাহার 
গ্রদশিত দৌঁষক্রটির যথাসম্ভব হুত্বর সংশোধন না করা 


৬ 


ইত্যাদি নানা শ্রেণীর গলদ, ক্রটিপূর্ণ কার্য্প্রণালী ও 
ব্যবহারের প্রতিকারের এবং প্রতিবিধানের উদ্দেশ্যে নৃতন 
আইনে যথোপযুক্ত বিধান ও শ্বান্তির ব্যবস্থা রহিয়াছে । 
আশা করা যায় যে এই ভাবে বাঙ্গালার সমবায় 
আন্দোলনের যে সকল আভ্যন্তরীণ দুর্বলতার উল্লেখ করা 
হইয়াছে তাহা দূর করিয়া অবস্থার উন্নতি করিতে নৃতন 
আইন প্রয়োজনীয় হইবে । 

অবশ্য আইনে কম্মর্চারীদ্দিগকে যে সকল ক্ষমতা দেওয়! 
হইয়াছে তাঁভার যদি তাহারা অপব্যবহার করেন তবে 
তাহাদের কার্যের বিরুদ্ধে আপত্তি উখাপন করাও আবশ্ট ক- 
মত অন্তাঁয় আদেশের পরিবর্তন করারও ব্যবস্থা রহিয়াছে । 
খণকারকদিগের নিকট হইতে সমিতিগুলি যাহাতে যথারীতি 
খণ আদায় করিতে পারে, প্রস্তাবিত আইনে সেই সম্বন্ধেও 
নানাপ্রকার বিধান রহিযাছে। তদ্বির-তদারক ও হিসাব 
পরীক্ষার ব্যবস্থার নৃতন আইনে যথেষ্ট উন্নতি করিবার 
প্রচেষ্টা করা হইয়াছে এবং এই বিধানগুলি সমিতির কার্যা- 
প্রণালীর ব্যাপারে যাহাতে নানাপ্রকার গলদ আত্মপ্রকাশ 
না করিতে পারে সেই উদ্দেশে বিশে প্রয়োজনীয় হইতে 
পারে। অক্ষম ও অসাধু পরিচালনা সমিতি সরাইয়া দিযা 
সমিতি যাহাতে লিকুষ্ডেশন-এ না যায় তাহার জন্য 
সামধিকভাবে দায়িত্বশীল কর্মচারী নিয়োগ করিয়া এই 
শ্রেণীর সমিতিকে ও ইহার সভ্য্দিগকে অবস্থার উন্নতি 
করিবার স্থযোগ দিবার ব্যবস্থাও করা হয়াছে। 

কো-অপারেটিভ সোসাইটিগুলির আত্যন্তরীণ দৌ যন্ত্রটি 
দুরীকরণার্থে নে এই শ্রেণীর বিধান ও ব্যবস্থার প্রয়োজন 
আছে তাহা হয়ত অনেকেই স্বীকার করিবেন। নূতন 
আইনে আন্দোলনের উপর রেজিস্ীরের ক্ষমতা বৃদ্ধি 
পাইবে এবং সরকারী কর্তৃত্ব অক্ষুপ্র থাকিবে বলিয়া সমবায় 
নীতির দিক হইতে ক্ষোভ করিয়া লাভ নাই। কারণ 
বর্তমান অবস্থায় আভ্যন্তরীণ দৌষ ভ্রটি ও অব্যবস্থা দূর 
করিতে হইলে এবং আন্দোলনের দুর্গতি ও সঙ্কটের অবসান 
করিতে হইলে সরকারী সা্চাধ্য, সরকারী অভিভাবকত্ব ও 
নেতৃত্ব, রকারী নির্দেশ ও সরকারী তদ্বির-তদারক এক 
প্রকার অপরিহার্য বলিয়াই আমাদের মনে হয়। তবে 
উপযুক্ত ও দক্ষ রেজিষ্্রার যাহাতে নিযুক্ত হয় সেই দিকে 
গভর্ণমেপ্টকে বিশেষভাবে , সতর্ক থাকিতে ভইবে। 


ভ্াবভবশ্ব 


[ ২৮শ বর্ষ-_-২য় খণ্ড--১ম সংখা 


আমাদের মনে হয় যে, রেজিষ্্রীরকে তাহার কার্ষ্য 
সাহায্য করিবার জন্ত কয়েকজন যোগ্য ও উপযুক্ত বেসরকারী 
ও সরকারী বাক্তিদ্বারা একটা পরামর্শদাতৃুসংঘ গঠিত 
হইলে আন্দোলনের কাজ নুচারুরূপে চালিত হইবে ও 
বিভাগের কাধ্যপরিচালনাঁয় ক্রটি-বিচ্যুতির আবির্ভাবের 
আশঙ্কা হাস পাইবে। বর্তমান আইনে এই প্রকার 
পরামর্শদাতিসংঘ গঠনের পক্ষে কোন বাঁধা নাই। 

অবশ্ঠ সঙ্গে সঙ্গে নান! গ্রেণীর সমিতি প্রতিষ্ঠা করিয়া ও 
অন্যভাবে কৃষকের আয় বুদ্ধির ব্যবস্থা ও পণ্য বিক্রয়ের 
স্থবন্দোবস্ত না করিলে শুধু সমথায় আইনের সাহায্যে বাঙ্গালার 
রুষক ও স্বল্প আয়-বিশি্ লৌকের আধিক অবস্থার 
উল্লেখধযোগা উন্নতি সম্ভবপর হইবে না । অর্থাৎ একমাত্র 
খণদান সমিতি স্থাপন করিলেই চলিবে না। আযবুদ্ধিকর 
নানা শ্রেণীর সমিতি প্রতিষ্ঠা ব্যাপারেও জনসাধারণকে 
উৎসাহিত করিমা তুলিতে হইবে এব" এই ব্যাপারে 

গভর্ণমেটেকে একটা স্থপরিকল্পিত কার্্যস্থচী ও কর্মপদ্থা 

গ্রহণ করিতে হইবে । এইস্থলে ইহাও উল্লেণ করা যাইতে 
পারে বে? নিদ্দিষ্ট এলাকায় কয়েকটি 100100015-001190৭- 
500161 স্থাপন করিয়া ইভাদের উপবোগিতা ও শ্রেষ্ঠতা 
পরীদ্গী করিয়৷ দেখা যাইতে পারে। এই ধরণের সমিতির 
প্রতি অনেকেরই মনোযোগ আরুষ্ট হইতেছে । 

কিন্ধু ভাত বলিঘ়া উপযুক্ত আইন প্রণয়ন করিযা 
'আন্দোলনের ভিছ্ডি দৃঢ় করিবার প্রগ্নাসকে অনাবশ্যক বলিয়া 
মনে করা যাতে পারে না। মোট কথা? সমবায় নীতির 
পরিপূর্ণ প্রকাশ ও সুদৃঢ় প্রতিষ্ঠার উপর বাঙ্গালার আধিক 
জীবনের উন্নতি বহুলাংশে নির্ভর করিতেছে । তাই নানা 
শ্রেণীর সমিতি প্রতিষ্ঠা ও সমবায নীতির ভিত্তিতে কষকের 
'আধিক জীবনের পুনগঠন ব্যাপারে বাজালার গভর্ণমেণ্টের ও 
জনসাধারণের সমবেত মনোযোগ আকৃষ্ট হওয়া একান্ত 
আবশ্ক-__এই কথাটা দেশের গভর্ণমেণ্ট ও দেশবাসীকে 
08 স্মরণ করাইয়া দিতে চাট |* 


৮ শনি শি শী শি তি শি - পাশ শিশীশিত ৮ শিশ স্পীপি শ শীতল তি 


* এই প্রবন্ধের শেষ অং শট প্রস্তুত জরিমানা ব্যাপারে সী নলিনী- 
রঞ্জন সরকার মহাশয়ের /& 016 007) 11) 1201010]া) 011২01851 
01501 নামক মুগগাবান তথ্যপূর্ণ পুস্তিকা এবং ডক্টর হীরেন্ লাল দে 
নহাশয়ের 'আধিক জগত'-এ প্রকাশিত একটি কুচিস্তিত ও হুলিখিত 
প্রবন্ধ হইতে যথেষ্ট সাহাধা পাইয়াছি। 


বেতিয়ার পুরাকীর্তি 


রায় বাহাছুর স্রীসৃত্যু্জয় রায় চৌধুরী 


এই বিশাল বিস্তৃত ভারততূমির চতুদ্দিকে অতীত যুগের কত এ্রতিষ্থাসিক 
নিদর্শন ইতস্তত বিহ্গিপ্ত আছে তাহার ইয়ত্ত। নাই। এ সকল পুরাতত্ব 
অনুসন্ধান করিয়া লুণ্ত রত উদ্ধার করিতে লর্ড কর্জান ভারতের বড়লাট 
থ।কাকালীন প্রত্বুতত্ব বিভাগের প্রতিষ্ঠা করিয়। দেশের সধীবুনের 
কৃতজ্ঞতাভাজন হইয়াছেন। ভারত সরকার এই প্রত্বতত্ব অনুসন্ধান ও 
খননকার্ধযাদির জঙ্থা উপযুক্ত কর্ণচারী নিযুক্ত করিয়! গ্রতি বৎসর অজস্র 
অর্থবায় করিয়া এ যাবৎ বন্ধ লুপ্ত কান্তির উদ্ধারসাধন করিলেও 
এখনও পর্য্যন্ত অনেক পরিমাণে এ সকল স্তুপ, ভগ্র দুর্গ, পরিখা, 
প্রাচীর তৃস্তাদির অবশেষ রহিয়া গিয়াছে । আমাদের দেশবাসীর মধ্যে 
কয়েকজন বিদ্বান বড়লোক অর্থ দাহাধ্য করিয়া প্রাচীন ভ্তপাদির খনন- 
কার্ধা করাইয়াছেন, তাহারা দেশবাসীর ধন্যবাদার্ত। এই সকল স্তুপ 
ইত্যাদির উদ্ধারসাধন হইলে এই সুপ্রাচীন দেশের পুরাকালের ইতিহাসের 
চেহারা! বদলাইয়। যাইবে । এ পর্যন্ত যে সকল খননকাধ্য সরকারী 
প্রতুতত্ব বিভাগ হইতে হইয়াছে এবং তাহা হইতে যে সকল অমূলা বস্তু ও 
বিবিধ স্কাপতা-শিলের নিদর্শন আবিষ্কৃত হইয়াছে তাহার সাহাযো ভারত- 
ইতিহাসের যথ্ষ্টে সমৃদ্ধি সংগৃহীত হইয়াছে। গুত্ুতত্ব বিভাগের বায় 
হ্রাস করায় খননাদি কার্ষযযের অনেক বিলম্ব ও বিদ্ধ হুচিত হইতেছে 
সনোেহ নাই। ওুজ্রাপি আমরা প্রতি বৎসর এ বিভাগের সহায়তায় 
পুরাতৰ সন্বদ্ধে যে সকল নিদশনাদি পাইতেছি তাহার মূল্য যথেষ্ট। 
আমি নম্প্রতি উত্তর বিহারের বেতিয়। মহকুমায় আমার 
বৈবাহিক বেতিয়া-রাজের ইঞ্জিনীয়ার শ্রীযুক্ত পবিভ্রকুমার চট্টোপাধ্যায়ের 
নিকট দিন কত্তক আতিথ্য গ্রহণ করিয়াছিলাম। পবিত্রবাবু আমাকে 
মংবাদ দিলেন যে, বেতিয়| হইতে পনর-যোল মাইল দূরে আমার খোরাক 
কিছু মিলিবে এবং বেতিয়! হইতে প্রায় চল্লিশ মাইল দূরেও তাদুশ পদার্থ 
আছে। আমি এ সংবাদে বিশেষ আনন্দিত হইয়া এ ছুইটি স্থান পরিদর্শন 
জন্য আগ্রহ প্রকাশ করিলে পবিভ্রবাবুর মোটরযোগে লৌরিয়! নন্দনগড় 
দর্শন করার ব্যবস্থা হইল । আমার গাইড বা পথপ্রদর্শক ছিলেন 
পবিত্রবাবুর জ্যেষ্ঠ ভ্রাতুপ্ুত্র প্রীমান প্রকৃতিকুমার। আমরা প্রাতে 
যাত্রা করিলাম । পূর্বদিন বুষি হওয়ায় রাস্তা বেশ পরিষ্কার এবং ধুলি- 
 শুন্ত ছিল। প্রথম আমর! বেতিয়৷ হইতে উত্তর দিকে যোল মাইল দূরবর্তী 
| লৌরিয়া পৌঁছিলাম। গ্রামের নিকটবর্তী হইতেই একটা ছোট মাঠের 
ৃ মধ্যে অশো কন্তস্ত দৃষ্টিগোচর হইল। মোটর গাড়ী ট্ স্তস্তের পাদমুলে 
পৌছ্ছিলে আমর গাড়ী হইতে অবতরণ করিয়া এ স্থানটি পর্যবেক্ষণ নুরু 
করিলাম। অশোকন্তপ্তটি মামুলি মতই প্রন্তরনির্িত এবং ইহাতে 
'মহারাজ অশোকের শিলালিপি উৎকীর্দ আছে। স্তস্টি দেখিলে মনে হয, 
মানত ছুই-চারি বংসর পূর্ব বোধ হয ইহা নির্শিত হইয়াছে। কি চমৎকার 


উহার স্থাপত্যশিল্প এবং নেই পুরাকালের প্রন্তরশিল্পীর হুনিপুণ অন্েয 
কৌশলপুর্ণ ধোদকারি। শ্তত্তশীর্বে অবস্থিত সিংহমুর্তি মুখখানির কিয়দংশ 
ভগ্র আছে। প্রবাদ যে, মুলমান রাজের কামানের গোলার আঘাতে 

উহা প্রত্রষ্ট হইয়াছে। কিন্তু স্তগ্তটির গাত্রে অন্য কোথাও কোন ক্ষত 
চিহ্, দেখিলাম না। জনৈক চীন পরিব্রাজকের স্বাক্ষর শ্ন্তগাত্রে 

থোদিত আছে। আমি চীনে ভাষায় অনভিজ্ঞের জন্ত বুঝিলাম না উহা 

কোন্‌ মহাত্মা পর্যটকের ম্মৃতিচিহ । একজন ইংরেজ পরিব্রাজক আর 

ব্যারো (1২ 1300৭ ) ১৭০২ধৃষ্টাধে এই স্তস্ত পরিদর্শন করিয়াছিলেন, 

তাহার নাম স্তস্তগাত্রে উৎকীর্প আছে। সম্ভবত ইনিই প্রথম ইংরেজ 

পরিদর্শক । এই ্তস্তের অনতিদ্‌রে চতুর্দিকে দাত-আটটি গ্তপ রহিয়াছে 

একটি স্তুপের কিয়দংশ খনিত হইয়াছে। ইষ্টকনির্শিত গাথনি দেখা 

যায়, কিন্তু উহ! সম্পূর্ণ থনিত ন| হওয়ায় ব্যাপার কি ছিল তাহা বুঝ! 

যায় না। অশোকন্তপ্তটি এবং এ সকল স্তুপ সরকারী প্রত্ততত্ব বিভাগ 

কর্তৃক আইন-মত রক্ষিত হইতেছে । অশোকন্তন্তটি লৌহ বেড় দিয়া 

ঘিরিয় রাখ! হইয়াছে। এই,দ্তম্ত এবং উহার সন্গিকটস্থ স্তপের নিকট 

প্রতি বদর একটি মেল! বন্িয়৷ থাকে । উৎসবাদির অনুষ্ঠান এ মেলায় 

হইয়া থাকে শুনিলাম। এই অশোকন্তস্তের শীর্দদেশে সিংহমুস্তির 

গাদপীঠের চতুদ্দিকে হংস মস্তি খোদিত আছে। যে সকলন্তপ এই 

সতস্তের চতুদ্দিকে দৃষ্টিগোচর হয় তাহার মধ্যে ত্রিশ চল্লিশ ফুটের অধিক 

উচ্চ কোনটি নহে। ৃ 

লৌরিয়া৷ হইতে আমরা মোটরযোগে ননানগড় দর্শনার্থে রওন| 

হইলাম। এই গ্রাম্য পথটি কীচা এবং কর্দিমান্ত। একটি সাকোর, 
নিকটব্তী হইলে আমাদের 'রথচক্র গ্রাসিল! মেদিনী' ! মাট-গার্ড পর্য্যন্ত 
কর্দমপুরিত পথে তৃগর্ভস্থ হইল। এইবার বুঝি “গাড়িকা উপর লাউ' 
হয়! স্থানটি ছিল একটি ন্ষুদ্র পল্লীর মধ্যে। আমাদের দুর্দশ| দর্শনে 
গ্রামবাসিগণ সমবেত হইয়া! কয়েকজন যুবকের সাহায্যে অতি কষ্টে 
রথচক্র উদ্ধার করিয়া দেওয়ায় আমরা গন্তব্য পথে মন্থর গতিতে চলিলাম। 
বৈবাহিকের মারথির রী পথ-ঘাট জান! ছিল--সে খুব হুসিয়ার হইয়া 
গাড়ী চালাইতেছিল। দুর হইতে নন্দনগড় স্তুপের উচ্চ শীর্ষ দর্শনপধে 
পড়িল । স্তুপ হইতে তিন রশি দুরে আমর মোটর ছাড়িয়া পদক্রজে অপ. 
মীপে আসিলাম। এই ত,পটি বিশালায়তন, অনেকটা রাজসাহী জিলার 
অন্তর্গত পাহাড়পুরের স্তপের মতই। ইহার খননকার্ধ্য গত বৎসর 
হইতে মরকারী প্রত্ুতত্ব বিভাগ হইতে আরম্ত হইয়াছে। জু.পটির মাত্র 
পাদগীঠ খনিত হইয়্াছে। এ কাধ্য সমাধ * করিতে সময় 
এবং বায়দাপেক্ষ। ভুুপের উচ্চত। ১৭৫ ফিট হইবে। উপরটা বৃক্ষলতা-. 
পূর্ণ ভীষণ জঙ্গলে আচ্ছাদিত । ভুংপের উত্তর এবং পূর্বা দিকে নি 


৭৪8 








৮০ জ্ঞান্রব্ন্বশ্ব [ ২৮শ বর্--২র খণ্ড_১ম সংখ্যা 
ভূমি। দেখিলে মনে হয্ উহা! জলাশয় ছিল। খননকার্ধ্য স্ুপের স্তপ দৃষ্টিগোচর হইল না। তবে ইহার এক পার্থর ভূমিখও (দক্ষিণ 
চতুর্দিকের দাওয়! বাহির হুইয়াছে। কি চমৎকার গাথনি। বৃষ্টিজলে দিকের ) কিছু উচ্চ বলিয়! অনুমান হয়। 


ধৌত হওয়ায় মনে হইতেছে যেন অতি সামান্ঠ দিন পূর্বে এই স্ুুবৃহৎ 
মনির নিশ্মিত হইয়াছিল। এই ধ্বংসাবশেষ একটি অতি প্রাচীন সুবৃহৎ 
হিন্দু মন্দিরের বলিয়! অনুমান কর! যায়। মন্দিরের পাদগীঠের গাথনি 
ইষ্টক এবং মন্দিরের আকার দেখিলে পাহাড়পুরের আবিষ্কৃত মদ্দিরের 
অনেকটা অন্ুরাপ মনে হয়। মন্দিরের পূর্বদিকে বিশাল সোপানশ্রেণী 
বিষ্ঞমান এবং উত্তর পার্থে বারান্দার নিম্নে তিনটি পাক1 ইন্দার। এবং 
ন্নানের ঘর, জলের চৌবাচ্চা, ভ্ল নির্গমনের নালি ইত্যাদির ধ্বংসাবশেষ 
রহিয়াছে। ্রস্থানের নিশ্বাণ জন্য ১৫৮১২ মাপের ইষ্টক ব্যবহৃত 
হইয়াছিল। মন্দিরের দাওয়া নিশ্নীণে আধগোল! এবং কানিশের টেড়চ 
কাটা ইষ্টকগুলি কি হুন্দর এবং পরিষ্কার তাহ! বর্ণনাতীত। এই মন্দিরটি 
ঠিক যেন তাস্ত্রিক যন্ত্রের আকারে নিশ্মিত। পাহাড়পুর মন্দিরের পাদগীঠ 
ষে প্রকার স্থাপত্যকৌশলে এবং নক্সায় প্রস্তুত এই মন্দিরও অনেকট। 
তদ্রপ-_কিস্তু ইহার নকা। এবং নিন্নীণকৌশল কিছু অন্য রকমের। 
এখন খননকা ধ্য শেষ হয় নাই এইজন্য এই ধ্বংসাবশেষের কোন আলোক- 
চিত্র বা নক্সা প্রস্তুত করিয়া আন! কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিধিদ্ধ। কাজেই 
আমি লরকারী আদেশ অমান্য করিয়। তদ্ধপ কোন প্রচে্ট। করি নাই। 
মনিরটির অন্যান্তরে যে কি পদার্থ বিষ্তমান আছে, খননকাধ্য শেষ ন| 
₹ওয়! পর্যাস্ত তাহা! জানা অসম্ভব । যতদূর থনিত হইয়াছে তন্মধ্যে 
কারুক।ধ্যখচিত ইগুকাদি বা প্রস্তর ফলক এধাবৎ পাওয়। যায় নাই। 
কিন্বা কোন মুর্তিও মন্দিরের নিয় দেশে দাওয়ার নীচে পাওয়। যায় নাই। 
পাহাড়পুরের নিয় দেশে দাওয়ার নীচে বছ দেবদেবীর মায় রাধাকৃ্ণ 
র্তি পর্য্যন্ত পাওয়। গিয়াছে । খননকার্ধয বর্তমান বর্ষের শীত খতুতে 
পুনরায় আরম্ভ হওয়ার সম্ভাবনা । খননকাধ্য আরও অগ্রসর হইলে 
ইহার মধ্যে কি আছে তাহার নিদর্শন পাওয়ার আশ! কর! যায়। 
মন্দিরটির স্থাপত্যশিল্প এবং নক্সাদি যতদুর বাহির হইয়াছে তাহাতে 
হিন্টু কীর্তি বলিয়াই যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়! যার়। বেতিয়া সহর হইতে 
এই নন্দনগড় ১৭ মাইল দুরে অবস্থিত। এই মন্দিরের আয়তন 
পাহাড়পুর অপেক্ষা অনেক বৃহৎ । এত বড় প্রকাণ্ড মন্দির বোধ 
হয় খুব অল্পই আবিষ্কৃত হইয়াছে। এই স্থানের সম্মিকটে আর কোন 


বেতিয়ার অপর দিকে যে পুরাকীর্ডির ধ্বংসাবশেষ আছে তাহা বধ! 
আরম্ত হওয়ায় পথ দুর্গম জগ্ত দেখিব(র সুযোগ পাইলাম ন|। নন্দনগড়ের 
ইসস্তুপ খননকারধ্য শেষ হইলে ইহা হইতে ভারতৈর ইতিহাসে আরও 
অনেক কিছু নুতন অংশ সংযোগ হইবে আশা! কর! যায়। 
বেতিয়ার রাজভবনে পুরাতন্বের নিদর্শন বহু দ্রব্যাদি আছে। তন্মধ্যে 
যুদ্ধোপকরণই অধিক। রাজকোষে প্রচীন স্বর্ণমুদ্রাও যথেষ্ট আছে বটে, 
কিন্তু তাহ! দেখার উপায় আমাদের নাই। মালথানার এবং নিন্দুকের 
চাবি ম্যানে্ার ও কমিশনারের নিকট থাকে । উভয়ে একত্রিত ন! হইলে 
শ্ কোবাগার খুলিবার উপায় নাই। রাজ এষ্টেট বহুদিন যাবৎ কোর্ট 
অব ওয়ার্ডের অধীনে আছে। রাজা কেহ নাই। ধুদ্ধা মহারাণী 
প্রয়াগে বাম করেন । এক সময়ে বেতিয়ার রাঙ্জাগণ স্বাধীন 
ভাবেই ছিলেন এবং মোগল সম্রাটের সহিত বন্ধুত্ব হুত্রেও আবদ্ধ 


ছিলেন। পরবস্তীকালে ইংরেজ যে মময় স্ুবা বাংল। বিহারের 
ইঞ্জার গ্রহণ করেন সেই সময় ইহার! ইংরাজের সহিত 
বিরুদ্ধত করিয়াছিলেন, করদানে অন্বীকার করিয়। পরে বেতিয়। 


রাজ্য জমিদারী স্বত্ব করিয়া লয়েন। বেতিয়া রাজার জমিদারী চম্পারণ 
জিলা ও মজ:ফরপুর জিপায় বিস্তৃতি ভূখণ্ডে অবস্থিত। এই 
র৷জবাড়ীতে বহু প্রকার কামান, বন্দুক (নালিক অস্ত্র), তলয়ার, বল্লম, 
বর্ষা, বর্ম, চর্ম, ধনুক, তীর পু্ীকৃত হইয়া হতযত্বে ছিল। এষ্টেটের অনেক 
শ্বেতাঙ্গ ম্যানেঞ্জারের আদেশে এ সকল তাঙ্গ! মরিচা-ধর! এবং অকর্মণ্য 
আম়ুধ তৃগণ্ভে প্রে।খিত হইয়াছে। এক্ষণে লৌহ ও পিত্তলের কতকগুলি 
সেকালের কামান আছে । সেগুলি এমন হুতযত্বে রক্ষিত যে তাহাতে 
কোন থোদিত লিপি আছে কি-না তাহা আবিষ্কার কর! দ্ুক্ধর। আমি 
বৈবাহিক ইঞ্জিনীয়ার মহাশযনকে যে নকল পিত্তল নিম্মিত কামান আছে 
এগুলি একটু তদস্ত কারয়৷ খোদিতলিপি পাওয়া হায় কি-না! তাহা 
দেখিতে অনুরোধ করিয়াছি। 

এই বিশাল ভারতভূমির কোন-প্রান্তে কোথায় কি বসন্ত নিহিত আছে 
এবং তাহ! অতীতের কোন্‌ ইতিহাসের অকাট্য প্রমাণের সাক্ষা দিতে 
পারে, তাহ! খু'জিয়৷ বাহির কর! সহজনাধ্য নহে। 


দেবতার মুক্তি 


প্রীনরেশচন্দ্র চক্রবী 
মন্দির মাঝে বন্দী দেবতা সাধক কহিল-_-“মুক্তি লতিয়া 
. কাদিছে আকুল স্বরে, কোথায় পালাবে হায়, 
কে আছ কোথায়, মুক্তি দাও গো, ভক্তির ডোরে বাঁধিয়া রাখিব 
মুক্তি দাও গো মোরে; মনের. গোপন ঠায় । 


গাণ-দেবতা 
শ্রীতারাশস্কর বন্দ্যোপাধ্যায় 


এক 


কারণ সাঁমান্ত। সামান্ত কারণেই একটা বিপর্য্যয় ঘটিয়া 
গেল। গ্রামের কামার অনিরুদ্ধ কর্মকার এবং ছুতাঁর 
গিরীশ স্ুত্রধর নদীর ও-পারে বাজারে সহরটায় গিয়া একটা 
করিয়া দোকান ফাঁদিয়াছে। খুব ভোরে উঠিয়া যায়, আসে 
রাত্রি দশটায়। ফলে গ্রামের লোকের অস্থবিধার আর 
শেষ নাই । এবার চাষের সময় বে কি নাঁকাল তাহাদের 
গিয়াছে সে তগারাই জানে। লালের ফাল পাঁজানো) 
গাড়ীর হাল বাধার জন্য চাষীদের অন্গুবিধার আঁর শেষ 
ছিল না। গিরীশ ছুতাঁরের বাঁড়ীতে গ্রামের লোকের 
বাবলা কাঠের গুড়ি স্তপীকৃত হইয়া পড়িয়া আছে গত 
, বৎসরের ফাল্গুন চৈত্র হইতে--কিন্তু আজও তাহারা নৃতন 
, লাগল পাইল না। এই ব্যাপার লইরা অনিরুদ্ধ এবং 
গ্রীশের বিরুদ্ধে অসন্তোষের সীঘা ছিল না। কিন্তু চাঁষের 
সময় এই লইয়া একটা! জটলা করিবার কাহারও সময় হর 
নাই। প্রয়োজনের তাঁগিবে তাহাদিগকে মিষ্ট কথায় তুষ্ট 
করিয়৷ কার্যোদ্ধার করা হইয়াছে; রাত্রি থাকিতে উঠিয়। 
অনিরুদ্ধের বাঁড়ীর দরজায় বসিয়! থাকিয়া__তাহাকে আটক 
করিয়া লোকে আপন আপন কাজ সারিয়! লইয়াছে; জরুরা 
দরকার থাকিলে ফাল লইয়া-_-গাঁড়ীর চাকা ও হাল গড়াহয়! 
গড়াইয়া--সেই সহরের বাজার পর্যন্তও লোকে ছুটিয়াছে। 
দুরত্ব প্রায় দুই মাইল-_কিন্তু মধ্যে মযূরাক্ষী নদীটাই একা 
বিশ ক্রোশ অর্থাৎ চল্লিশ মাইলের সমান। বর্ষার সময় 
ভরা নদীর খেয়া-ঘাটেই যাইতে-আঁসিতে দুই ঘণ্টা কাটিয়া 
যাঁয়। গুকৃনার সময়েও আধ মাইল বালি ঠেলিয়৷ গাড়ীর 
চাকা গড়ায়! লইয়! যাওয়! সোজা কথা নয়। নদীর উপর 
ব্রীজ অবশ্ত আছে, কিন্ত সে রেলওয়ে ব্রীজ - পাশের মানুষ 
যাইবার রান্তাটাও এমন পরিসর নয় যে, গাড়ীর চাক। 
গড়াইয়া যাওয়া যায়। চাষ শেষ হইয়। ফসল পাকিয়া 
উঠিয়াছে_এখন কাস্তে চাই। কামার চিরকাল লোহা 


লাগাইয়া দেয়; ছুতাঁর বাঁট লাগাইয়া দেয়; কিন্তু অনিরুদ্ধ 
সেই একই চালে চলিয়াছে; যে অনিরুদ্ধের হাত পার 
হইয়াছে সে গিরীশের হাতে দুঃখ ভোগ করিতেছে । শেষ 
পর্যন্ত গ্রামের লোঁকে এক হইয়া পঞ্চায়েৎ মজলিস ডাকিয়া 
বসিল। কেবল একখানা গ্রাম নয়, পাশাপাশি দুইখান! 
গ্রামের লোক একত্র হইয়া গিরীশ এবং অনিকুদ্ধকে একটি 
নিদিষ্ট দিন জানাইয়! ডাকিয়! পাঠাইল। গ্রামের শিবতলান 
বারোয়ারী চণ্তীমণ্ডপের মধ্যে মজলিস বসিল। অনাদি লিগ 
মমুরেশ্বর শিব, পাশেই জমিদার-প্রতিষ্ঠিতি ভাঙগা-কালীর 
বেদী; কালীণায়ের ঘর নাকি যতবার তৈয়ারী হইয়াছে 
ততনার ভাঙ্গিয়াছে-_সেই হেতু কালীর নাম ভাঙ্গা-কালী । 
চণ্ডীমণ্পটিও বহুকালের-_হাতীস্ত'ড-ষড়দল-তীরসাা প্রভৃতি 
হরেক রকমের অজন্র কাঠ দিয়া চাল কাঠামোটি যেন অক্ষয় 
অমর করিধার উদ্দেশ্তে গড়া হইয়াছিল । নীচের মেঝেও 
পুরাণো আমলের পদ্ধতিতে খোয়! দিয়া বীধানো। এই 
চণ্ডীমগ্ুপে শতরঞ্জিঃ চ্যাটাই, চট প্রভৃতি বিছাইয়া 
মজলিস বসিল। 

গিরীশ এবং অনিরুদ্ধ না আসিয়া পারিল না তাহারা 
দু'জনেই আদিয়! উপস্থিত হইল । মজলিসে দুইখাঁনা গ্রামের 
মাতব্বর লোক একত্র হইয়াছিল; হরিশ মণ্ডল, ভবেশ পাল, 
মুকুন্দ ঘোঁষ, কীত্তিবাস মণ্ডল, নটবর পাল-_ইহারা সব 
ভারিক্কী লৌক--গ্রামের প্রাচীন মাতব্বর চাষী সদেগাপ 
বাগ্ীদের মাতব্বর রাঁজকিশোর লোহার--সেও প্রাচীন 
লোক, অবস্থাপন্ন চাষী--জমিদারের নগ্দী; পাশের গ্রামের 
দ্বারকা চৌধুরীও প্রাচীন ব্যক্তি, ইহাদেরই পূর্ববপুরুষেরা 
এককালে এই দুইখাঁনি গ্রামের জমিদার ছিলেন-__ এখন 
অবশ্য সম্পন্ন চাধীরূপেই গণ্য ; দোঁকানী বৃন্দাবন দত্ত-_সেও 
মাতব্বর লোক; ইহা! ছাঁড়া গ্রামের সর্বাপেক্ষা সম্পন্ন চাষী 
“ছিরে, ওরফে শ্রীহরি ঘোষ, গ্রাম্য পাঠশালার পণ্ডিত 
রামনারায়ণ ঘোষ, দেবদীস ঘোষ প্রভৃতিও উপস্থিত ছিল। 


* ইস্পাত লইয়! কান্তে গড়িয়৷ দেয়__পুরাণো কান্তেতে সান এ গ্রামের একমাত্র ত্রাঙ্গণ বাসিনা! হরেন্্র ঘোষাল-_-ও 
৮১ 
১১ 


০০ 


গ্রামের নিশি মুখুজ্জে, পিয়ারী বাড়,জ্জে-_ইহারাঁও একদিকে 
বমিয়াছিল। আসে নাই কেবল ও গ্রামের কৃপণ মহাজন 
মৃত রাখহরি চক্রবর্তীর পোষ্সপুত্র হেলারাম চাটুজ্জে 
ও গ্রাম্য ডাক্তার জগন্নাথ ঘোষ। গ্রামের চৌকীদার 
ভূপাল লোহারও উপস্থিত ছিল। আশেপাঁশে ছেলেদের 
দল, তাহারও অদূরে গ্রামের হরিজন চাঁধীরাঁও শ্লাড়াইয়া- 
ছিল। ইহারাই গ্রামের শ্রমিক চাধী__অস্থবিধার প্রায় 
বারো আনা ভোগ করে ইহারাই । 

অনিরুদ্ধ এবং গিরীশ আসিয়া মজলিসে বসিল। বেশ- 
ভূষা বেশ পরিচ্ছন্ন ফিটফাঁট _তাহার মধ্যে সুরে ফ্যাশনের 
ছাঁপ সুম্পষ্ট ; দু'জনেই তাহারা সিগারেট টানিতে টানিতে 
আসিতেছিল-__মজলিসের অনতিদূরেই ফেলিয়া দিয়া 
মজলিসের মধ্যে আসিয়া বসিল। 

অনিরুদ্ধ কথা আরম্ভ করিল--বপিয়াই হাত দিয়া 
একবার মুখটা বেশ করিয়া মুছিয়৷ লইয়া বলিল--কই 
গোঃ কি বলছেন বলুন। আমরা খাটি-খুটি খাই; 
আমাদের আজ এ বেলাটাই মাটি । 
, কথার ভঙ্গিমায় সরে সকলেই একটু চকিত হইয়া 
উঠিল; প্রবীণের দলের মধ্যে সকলেই একবার সশব্দে গলা 
ঝাঁড়িয়া লইল। অল্পবয়সীদের ভিতর হইতে একটা গুঞ্জন 
উঠিল-ছিরে ওরফে শ্রীহরি বলিযা উঠিল__মাটিই যদি 
মনে কর-_তবে আসবাঁরই বা কি দরকার ছিল? 

দেবদাস স্পষ্টবন্তাী লোক--সে বলিল_সে মনে হ'লে 
' এখনও উঠে যেতে পাঁর তোমরা । কেউ বেঁধে ধরে নিয়েও 
আঁসে নাই, তোমাদিগে বেধে রাখেও নাই কেউ। 
_. হরিশ মণ্ডল এবার বলিল_চুপ কর তোমরা । এখন 
যখন ডাক! হয়েছে তখন আসতেই হবে; তা তোমর৷ 
এসেছ । বেশ কথা ভাঁল কথা_উত্তম কথা। তারপর 
এখন-_কথাবার্তা হবে) আমাদের যা বলবার তা বলব__ 
তোগাদের জবাঁব তোমর! দেবে; তারপর তার বিচার হবে। 
এত তাড়াতাড়ি করলে হবে কেন? 

গিরীশ বলিল-_তা, কথা আপনাদের আমার্দিগে নিয়েই! 

অনিরুদ্ধ বলিল-_তা, আমরা আচ করেছিলাম। তা 
বেশ, কি কথা আপনাদের বলুন। আমাদের জবাঁৰ আমরা 
.দোব। কিন্ত কথা হচ্ছে কি জানেন_ আপনারা সবাই 
যখন একজোট হয়েছেন, তখন এ কথার বিচার করবে কে? 


জ্ঞান্লভন্ব্ব 


[ ২৮শ বর্ষ-_২য় থণ্ড--১ম সংখ্যা 


নালিশ যখন আপনাদের--তখন বিচার আপনারা কি ক'রে 
করবেন--এ তো আমরা বুঝতে পারছি না। 

_ও-গ্রামের দ্বারকা চৌধুরীর পূর্বপুরুষের! এককালে 
জমিদার ছিলেন; চৌধুরীর চেহারায় এবং ভঙ্গিমায় একটা 
স্বাতন্ত্য আছে । গৌরবর্ণ রং পাঁকা-ধবধবে-গৌঁফ, আসরের 
মধ্যে মানুষটি বিশিষ্ট হইয়! বসিয়াছিল। চৌধুরী এবার 
মুখ খুলিল_ দেখ কর্মকার, কিছু মনে কর না বাপুঃ আমি 
একটা কথা বলব। গোঁড়া থেকেই তোমাদের কথাবার্তার 
স্বর শুনে মনে হচ্ছে যেন তোমরা বিবাদ করবার 
জন্তে প্রস্তুত হয়ে এসেছ । এটা তো ভাল নয় বাঁবা। 
ব'স- স্থির হয়ে +স। 

অনিরুদ্ধ এবার সবিনয়ে ঘাঁড় ছেট করিয়া বলিল-__বেশ 
_-বলুন-_কি বলছেন। 

ভরিশ মগ্ডুলই আরম্ভ করিল_দেখ বাপুঁখুলে বলতে 
গেলে মহাভারত বলতে হয়। সংক্ষেপেই বলছি-তোনরা 
ছুজনে সহরে গিয়ে আপন 'আপন ব্যবস1 করতে বসেছ। 
বেশ করেছ । বেখানে মানৃষ ছুটে! পয়সা পাবে সেইথানেই 
যাবে। তাবাও। কিন্তু এখানকার পাট যে একবারে 
তুলে দেবে--আর আমরা যে এই এক কোশ রাস্তা 
জিনিষপত্র ঘাঁড়ে ক'রে ছুটব-_ এই নদী পার হয়ে--তা তো 
হবে না বাপু। এবার যে তোমরা কি নাকাল করেন 
আমাদের--ভেবে দেখ দেখে মনে মনে । 

অনিরুদ্ধ বলিল__-আজ্ে তা-_অস্বিধে 
আপনাদর হয়েছে । 

£ছিরে? বা শ্রীহরি গজ্জিয়া উঠিল-_একটুকু? একটুকু 
কিহে? জান, জমিতে জল থাঁকতে ফাল পাঁজানোর 
অভাবে চাষ বন্ধ রাখতে হযেছে? তোমারও তো জমি 
আছে,-জমির মাথায় মাঁথায় একবার ঘুরে দেখে এস দেখি, 
“পটপটি, ঘাসের ধুমটা। ফাঁলের অভাবে_ চাষের সময় 
একটা পটপটির শেকড় ওঠে নাই। বছর-সাল তোমর! 
ধানের সময় ধানের জন্যে বস্তা হাতে ক'রে এসে দাড়াবে। 
আর কাজের সময় তখন সহরে গিয়ে সে থাকবে-তা৷ 
বললে হবে কেন? 

দেবদাস এবার সায় দিয়া উঠিল__এই কথ! । 

মজলিস সুদ্ধ সকলেই প্রায় সমম্বরে বলিল-_এই | 

প্রবীণের! ঘাড় নাঁড়িয়া-ঘায় দিল। 


একটুকু 


পৌধ--১৩৪৭ ] 


অনিরুদ্ধ এবার খুব সগ্রতিভ ভঙ্গিতে নড়িয়া চড়িয়! 
টাকিয়া বসিয়া বলিল-_এই তো আপনাদের কথা । এইবার 
আমাদের জবাব গুছন। আপনাদের ফাল পাজিয়ে দিই, 
হাল লাগিয়ে দিই চাঁকায়, কান্ডে গড়ে দিই -পাঁজিয়ে দিই, 
আপনারা আমাকে ধান দেন হাল-পিছু কীচি পাঁচ শলি 
ধান। আমাদের গিরীশ সুত্রধর__ 

বাধা দিয়া ছিরে ঘোষ বলিল-_গিরীশের কথায় তোমার 
কাজ কি হে বাপু? 

কিন্ত ছিরেও কথা শেষ করিতে পারিল না; দ্বারকা 
চৌধুরী বলিল-_বাঁবা শ্রীহরি, অনিরুদ্ধ তো অন্তাঁয় কিছু 
বলে নাই। ওদের দুজনের একই কথা। একজনা বললেও 
তো ক্ষতি নাই কিছু। 

শ্রি চুপ করিয়া গেল। অনিরুদ্ধ বলিল-_চৌধুরী মশায় 
না থাকলে কি মজলিসের শোভা হয়._-উচিত-কথা বলে কে? 

--বল অনিরগ্ধ, কি বলছিলে বল! 

_আজ্ঞে-হ্যা। আমি, শানে কম্মকারের হাল পিছু 
পাঁচ শলি, আর সুত্রধরের হাল-পিছু চার শলি ক'রে ধান 
বরাদ্দ আছে। আমরা কাজও ক'রে এসেছি, কিন্তু চৌধুরী 
মশায়__ধান আমর! হিসেব মত প্রায়ই পাঠ না। 

_-পাঁও না? 

-আজে না। 

গিরীশও সঙ্গে সঙ্গে সায় দিল-_আঁজ্ঞে না। প্রায়- 
ঘরেই ছু আড়ি চার আড়ি ক'রে বাকী রাঁখে-_বলে ছু দিন 
পরে দোব-কি আসছে বছর দোব_ তার পর আর সে 
ধান আমরা পাই না| 

শ্রঃরিই সাপের মত গঞ্জিয়া উঠিল-_-পাঁও না? কে 
দেয় না শুনি? মুখে পাই না বললে তো হবে না। বল, 
কার কাছে পাবে তোমরা? 

অনিরুদ্ধ দুরন্ত ক্রোধে বিদ্যুৎ গতিতে ঘাড় ফিরাইয়া 
শ্রঘরির দিকে চাহিয়া বলিল-_কাঁর কাঁছে পাব? নাম 
করতে হবে? তোমার কাছেই পাঁব। 

মাথার কাছে? 

_স্ঠ্যা তোমার কাছে। দিয়েছ ধান তুমি দু বছর? 

--আার আমি যে তোমার কাছে হাগুনোটে টাঁকা পাব! 
তাতেই উত্তলের কথা বলি নাই? মজলিসের মধ্যে তুমি যে 
এত বড় কথাটা বলছ? 


গিশ-ে্িভা। 


উল স্খত্ _্লিস স্কিপ সহ ব্রা গে হব স্ব -্হ ব্যল--স্প -ব্হন্ষিপা স্ভা্িগ- ব্হচন্পা স্স্যস্িপ -স্গন্কপা স্চানিপা -স্ন্কপ স্ন্যপ- 


১৫৮০ 








_কিন্ত তার তো একটা হিসেব নিকেস আছে হে! 
ধানের দামটা তে! তোমার হাগনোটের পিঠে উত্তল দিতে 
হবে! নাকি? বলুন চৌধুরী মশায় মগ্ুল মশাইরাও 
তো রয়েছেন, বলুন। 

চৌধুরী বলিল_-শোন, চুপ কর একটু। শ্রীহরি, তুমি 
বাবা__হ্যাগুনোটের পিঠে টাকাটা উত্তল ক'রে. নিয়ে!। 
আর অনিরুদ্ধ তোমরা একট! বাকীর ফার্দ তুলে-_হরিশ 
মণ্ডল মশায়কে দাও । এনিয়ে মঞ্জলিসে গোল করাটা তো 
ভাল নয়। ওরাই সব আদায়-পত্র ক'রে দেবেন। আর 
তোমরাও গায়ে একটা ক'রে পাট রাখ । যেমন কাঁজবর্্ম 
করছিলে কর। 

মজলিস স্ুদ্ধ সকলেই এ কথায় সায় দিল। কিন্ত 
অনিরদ্ধ এবং গিরীশ চুপ করিয়া রহিল, তাঁবে ভঙ্গিতেও 
সম্মতি অসম্মতির কোন লক্ষণ প্রকাশ করিল ন1। 

দেবদাস ঘোষ প্রশ্ন করিল-কি গো চুপ ক'রে রইলে 
যে? হ্্যটা-না একটা কিছু বল। মাথার ফুলটাই 
পড়,ক। 

চৌধুরী প্রশ্ন করিল _ অনিরুদ্ধ ! 

- আজে ? 

কি বলছ বল? 

এবার হাত যোড় করিয়। অনিরুদ্ধ বলিল_-মাজ্ঞে আমা- 
দিগে মাপ করুন আপনারা । আমর! আর পারছি ন!। 

মজলিসে এবার কলরব উঠিযা গেল। 

_ কেন? 

--না পারবার কারণ? 

--পাঁরব না বললে হবে কেন? 

_ চালাকী নাকি? 

-গীয়ে বাস কর না তুমি? 

চৌধুরী দীর্ঘ হাতখানি তুলিয়া ইঙ্গিতে প্রকাশ করিল-_ 
চুপ কর, থাম। ৰ 

হরিশ বিরক্তিভরে বলিল_-থাম রে বাপু ছোঁড়ারা; 
আমর! এখনও মরি নাই। 

এ গ্রামের একমাত্র ব্রাহ্মণ বাসিন্দা হরেন্্র ঘোষাল অল্প- 
বয়সী ছোকরা, ম্যাটিংক পাঁশ__সে প্রচ একটা চীৎকার 
করিয়া উঠিল-_গ্যা-ও ৷ সাইলেম্স__সাইলেক্স ! 

অবশেষে দ্বারকা চৌধুরী উঠি! দীড়াইল। এবার ফল 


১৪০. 


হইল। চৌধুরী বলিল- চীৎকার ক'রে গোলমাল বাঁধিয়ে 
তো! ফল হবেনা । বেশ তো, কর্মকার কেন পারবে না 
বনুক। বলতে দেন ওকে ।' 

সকলে এবার নীরব হইল। চৌধুরী আবার বসিয়া 
বলিল-_কর্মকার, পারবে না বললে তো হবে না বাবা। কেন 
পারবে নাঃ বল। তোমরা পুরুষাচক্রমে ক'রে আসছ। আজ 
পাঁরব না বললে, গ্রামের ব্যবস্থা কি হবে? 

হরিশ বলিল-__তোমার পূর্বপুরুষের বাস হ'ল গিয়ে 
মহাগ্রামে ; গ্রামে কামার ছিলন! বলেই তোমার পিতাঁমহকে 
গাঁয়ে এনে বাস করানো হয়েছিল। সে তোতুমিও শুনেছ 
হে বাপু। এখন না বললে চলবে কেন? 

অনিরুদ্ধ বলিল--আজেে, মোড়ল জ্যাঠা, তা হ'লে 
শুচুন। চৌধুরী মশায়, আপনি বিচার করুন। এ গায়ে 
আগে কত হাল ছিল ভেবে দেখুন। কত ঘরের হাল উঠে 
গিয়েছে তা দেখুন। এই ধরুন গদাই, শ্রীনিবাস, মহন্ত 
আমি হিসেব ক'রে দেখেছি-_আমাঁর চোঁখের ওপর এগার 
ঘরের হাল উঠে গিয়েছে । জমি গিয়ে ঢুকেছে কঙ্কনায়-_ 
ভদ্রলোকের ঘরে । কন্কনার কামার আলাদ।; আমাদের 
এগারখানা হালের ধান কমে গিয়েছে । তাঁর পরে ধরুন-- 
আমরা চাঁষের সময় কাজ করতাম লাঁ$লের-গাড়ীর-_-অন্ 
সময়ে গায়ের ঘর দোর হ'ত--আমর! পেরেক-গজাঁল গড়ে 
দিতাম_বটি কোঁদাল-কুড়ল গড়তাম। গায়ের লোকে 
কিনত। এখন গাঁয়ের লোক সে সব কিনছেন বাজার 
থেকে । সস্তা পাচ্ছেন-_-কিনছেন । আমাঁদের গিরীশ গাড়ী 
গড়ত, দরজা তৈরী করত--ঘরের চাল কাঠামো করতে 
গিরীশকেই ডাকত । এখন অন্ত জায়গার সস্তা মিশ্ত্রী এনে 
কাঁজ হচ্ছে। তাঁর পরে ধরুন_ ধানের দর এখন পাঁচ সিকে 
_ দেড় টাকা_-আঁর অন্ত জিনিষপত্র আক্র৷ । এতে মামাদের 
এই নিয়ে পড়ে থাকলে কি ক'রে চলে বলুন? কাচ্চা-বাচ্চা 
নিয়ে সংসার-_তাদের মুখে তো ছুটো দিতে হবে। তাঁর 
ওপর ধরুন আজকালকার হালচাল সে রকম নাই-_ 

ছিরে এতক্ষণ ধরিয়! মনে মনে ফুলিতেছিল-_সে স্থযোগ 
পাইয়া বাঁধা দিয়া কথার মাঁবখানেই বলিয়া উঠিল__ 
তা বটে_-আজকাল বাণিশ করা৷ জুতো চাই, লম্ব! লম্বা! জাম! 
চাই, সিগারেট চাঁই-__পরিবারদের শেমিজ চাই, বডিজ 
চাই 


ভ্ঞাব্রভন্ব 


[ ২৮শ বর্ষ_২য় থণ্ড--১ম সংখ্যা 


-_ এই দেখ ছিরু মোড়ল, তুমি একটু হিসেব ক'রে কথা 
বলবে। অনিরুদ্ধ এবার কঠিন স্বরে প্রতিবাদ করিয়া! উঠিল । 

শ্রীহরি বারকতক হেলিয়! ছুলিয়! বলিয়া! উঠিল-_হিসেব 
আমার করাই আছে রে। পঁচিশ টাকা ন আনা তিন 
পয়সা । আসল দশ টাকা, স্থদ পনের টাক! ন আন! তিন 
পয়সা । তুই বরং কষে দেখতে পারিস। শুভস্করী 
জানিস তো? 

হিসাবটা অনিরদ্ধের নিকট পাওনা হাওনোটের হিসাঁব। 
অনিরুদ্ধ কয়েক মুহূর্ত স্তব্ধ হইয়া রহিল-_সমত্ত মজলিসের 
দিকে একবার সে চাহিয়। দেখিল। সমস্ত মজলিসটাঁও এই 
আকম্মিক অপ্রত্যাশিত রূঢ়তাঁয় স্তব্ধ হইয়া! গিয়াছিল। 
অনিরুদ্ধ মজলিস হইতে উঠিয়া পড়িল। 

শ্রীহরিই ধমক দিয়! উঠিল__যাবে কোথা হে তুমি? 
বস ওইথানে। 

অনিরুদ্ধ গ্রাহা করিলনা, সে চলিয়া গেল। 

চৌধুরী এতক্ষণে বলিল-শ্রীহরি ! 

ছিরু বলিল__ আমাকে চোখ রাাবেন না চৌধুরী মশায়। 
ছু তিনবার আপনি আমাকে থামিয়ে দিয়েছেন আমি সহা 
করেছি । আর কিন্ত আমি সহা করব না! 

চৌধুরী এবার চাদরখানি ঘাঁড়ে ফেলিয়৷ বাশের লাঠিটি 
লইয়া উঠিল ; বলিল'_ চললাম গো তা হ'লে । ব্রান্মণগণকে 
প্রণাম_ আপনাদিগে নমস্কার | 

এই সময়েই গ্রামের পাতুলাল মুচি যোড়হাত করিয়া 
আগাইয়া আসিয়া বলিল_ চৌধুরী মশায়, আমার একটুকুন 
বিচার ক'রে দিতে হবে। 

চৌধুরী সন্তর্পণে মজলিস হইতে বাহির হুইবার উদ্যোগ 
করিয়া বলিল--বল বাব এর! সব রয়েছেনঃ বল! 

_চৌধুরী মশায় ! 

চৌধুরী এবার চাহিয়া দেখিল-_অনিরুদ্ধ আবার ফিরিয়া 
আসিয়াছে । 

__-একবার বসতে হবে চৌধুরী মশায়! ছিরু পালের 
টাকাটা আমি এনেছি--আপনারা থেকে আমার 
হাঁগনোটটা-_ফেরতের ব্যবস্থা করে দিন। 

: মজলিস-ন্ুদ্ধ লোক এতক্ষণে সচেতন হুইয়া-_চৌধুরীকে 
ধরিয়া বসিল-_কিন্তু চৌধুরী কিছুতেই নিরস্ত হুইল না). 
বীরে ধীরে বাহির হইয়া গেল। 


পৌষ-_-১৩৪৭ ] 


বি সস বন 


অনিরুদ্ধ পঁচিশ টাঁকা দশ আন! মজলিসের সম্মুথে রাখিয়া 
বলিল-_ হ্যাগুনোট নিয়ে এস ছিরু পাঁল। 
হাঁগুনোটখানি লইয়া বলিল-_-একট৷ পয়সা আমাকে 


সস স্ব “আব সস 





আর ফেরৎ দিতে হবে না। পান খেয়ো। এস হে 
গিরীশ, এস। 

হরিশ বলিল-_ওহে কম্মকার, চললে যে। বার জন্যে 
মজলিস বসল-_ 

অনিরুদ্ধ বলিল_ আজ্ঞে হ্যা। আমরা আর ওকাজ 
করব না মশায় । জবাঁব দিলাম । আর যে মজলিস ছিরে 


মোড়লকে শাসন করতে পারে না_-তাকে আমরাও 
মানি না। 

তাহারা হন হন করিয়] চলিয়া গেল । মজলিস ভাঁডিয! 
গেল। পরদিন 'প্রাতেই শোনা গেল অনিরুদ্ধের ছুই বিঘা 
বাকুড়ির আধ-পাঁকা ধান কে বা কাভাঁরা নিঃশেষে কাটিয়া 
তুলিয়া লইয়াছে। 


৮ 


দুই 


অনিরুদ্ধ ফসলশূন্য ক্ষেতখানার আইলের উপর স্থির 
দৃষ্টিতে দাড়াইয়া কিছুঙ্গণ দেখিল। নিক্ষল আক্রোশে 
তাহার লোহা-পেটা হাত ছু*খানায় মুঠা বাঁধিয়া ভাইস-যন্ত্রের 
মত কঠোর করিয়া তুলিল। অত্যন্ত ভ্রুতপদে সে বাড়ী 
ফিরিয়া! হাতকাটা জামাটা টানিয়া সেটার মধ্যে মাথা 
গলাইতে গলাইতে বাহির দরজার দিকে অগ্রসর হইল। 

অনিরদ্ধের স্ত্রীর নাম পদ্মমণি-_দীর্ঘাঙ্গী পরিপূর্ণ-যৌবনা 
কাঁলো মেয়েটি, টিকাঁলে! নাক, টাঁন! টানা বেশ ডাঁগর ছুটি 
চোখ; পদ্মের রূপ না.থাক, শ্রী আছে। পদ্মের দেহে অদ্ভুত 
শক্তি, পরিশ্রম করে সে উদয়াস্ত। তেমনি তীক্ষ তাহার 
সাংসারিক বুদ্ধি। অনিরুদ্ধকে এইভাঁবে বাহির হইতে 
দেখিয়। সে স্বামী অপেক্গাও ভ্রুতপদে আসিয়া সম্মুখে 
দাড়াইয়! বলিল-_চললে কোথায়? 

রঢ দৃষ্টিতে চাহিয়া অনিরুদ্ধ বলিল-_ফিডের মত পেছনে 
লাগলি কেন? যেখানে যাইনা -তোর সে খোজে 
কাজ কি? 

হাঁসিয়া পল্ম বলিল-_-পেছনে লাগি নাই"। তার জন্টে 
সামনে এসে দীড়িয়েছি। কার খোজে আমার দরকার 
আছে বই কি। মারামারি করতে যেতে পাবে না তুমি 





গ্লিশসদেক্বিভা। ্ 


স্্ল 


অনিরুদ্ধ বলিল-_মাঁরামারি করতে যাই নাই, « 
যাচ্ছি, পথ ছাঁড়। 

_থানা? পদ্মর কণ্ম্বরের মধ্যে «অনিচ্ছা পরি 
হইয়া উঠিল। 

_হ্যাঃ থানা | শাল! ছিরে চাঁষার নামে আমি ডা 
ক'রে আসব । রাগে অনিরুদ্ধের কণ্ঠম্বর-_রণ-রণ করিতেছি 

পদ্ম স্থিরভাবে ঘাঁড় নাঁড়িয়া বলিল__না। 7 
মোঁড়ল তোমার ধান চুরি করেছে -এ চাঁকলায় কে এ 
বিশ্বাস করবে ? 

অনিরুদ্ধের কিন্ত তখন এমন পরামর্শ শুনিবার 
অবস্থা নয়, সে ঠেলিয়া পদ্মকে সরাইয়া দিয়া বা 
হইবাঁর উদ্যোগ করিল। 





কথাটা মিথ্যা হইলেও নিষ্টুরভাবে সত্য | 

এ চাকলায় কাছাকাছি তিনখানা গ্রাম কালী? 
শিবপুর ও কর্কনা--এ তিনখানা গ্রামে ছিরু মোড়ল 
শ্রীহরি ঘোষের ধনের খ্যাতি যথেষ্ট । কালীপুর ও শিব 
সরকারী সেরেন্তায় ছু'খান! ভিন্ন গ্রাম__বিভিন্ন জমিদা; 
অধীন স্বতন্ মৌজা হইলেও কাঁধ্যত একখানা গ্র! 
একটা দীঘির এপাঁর ওপার মাত্র। শ্রীহরির বাস 
কালীপুরে। এ ছুইখানা গ্রামের মধ্যে শ্রীহরির সমব 
ব্যক্তি কেহ নাই। শিবপুরের হেলা চাটুজ্জেরও ট' 
এবং ধান যথেষ্ট_তবে শ্রীহরির ঘরে সোনার ইট, আ! 
টাকা ধানও প্রচুর। ক্রোশখানেক দূরবর্তী কঙ্কনা ত 
সমৃদ্ধ গ্রাম । বহু সন্তান্ত ব্রাঙ্গণ পরিবারের বাঁস-সেখ 
কার মুখুজ্জেবাবুর৷ লক্ষ লক্ষ টাকাঁর অধিকাঁরী-_এ অঞ্চ, 
প্রায় গ্রামই এখন তাহাদের কুক্সীগত- মহাজন হই 
তাহারা প্রবল প্রতাঁপান্বিত জমিদার হইয়া উঠ্ঠিতে 
শিবপুর কালীপুর গ্রাম ছু'খানাও ধীরে ধীরে তাহা 
গ্রাসের আকর্ষণে সপিল জিহ্বার দিকে আগাইয়া চলিয়া 
কিন্তু কল্কনাতেও শ্রীহরি ঘোঁষের নাঁমডাঁক আ 
মযুরাক্ষীর ওপারে আধা! সহর- রেলওয়ে জংশন ; সেখ 
বু ধনী মাড়োয়ারীর গদী আছে__দশ-বারোটা রাইস ? 
গোটা ছুয়েক অয়েল মিল; একটা ফ্লাওয়ার মিল আ. 
_-সেখানে শ্রীহরি ঘেষকে ঘোষ মশায় বলিয়াই সম্থ 
করা হয়। ওই জংশন সহরেই এ অঞ্চলের থানা অবস্থিত 


৮৬ 


পদ্মের অনুমান মিথ্যা নয়__কঙ্কনায় অথবা জংশন সহরে 
কেহ এ কথা বিশ্বাস করিবে না, কিন্তু শিব-কালীপুরের কেহ 
এ কথা অবিশ্বাস করে না । ছিরু ভয়ঙ্কর ব্যক্তি-_এ সংসারে 
তাহার অসাধ্য কিছু নাই। এধান কাটিয়া লওয়া তাহার 
অনিরুদ্ধের উপর প্রতিশোধ লইবার জন্যই নয়__চুরীও 
তাহার অন্যতম উদ্দেশ্য -_এ কথা শিব-কাঁলীপুরের আবালবুদধ- 
বনিতা বিশ্বাস করে। কিন্ত সে কথা মুখ ফুটিয়া৷ বলিবাঁর 
সাহস কাহারও নাই। 

শ্রীহরির খুড়। ভবেশ পাল ইহার জন্য লজ্জ! পায়, কিন্ত 
ভয়ে সে লজ্জার কথা প্রকাশ করিতে পারে না। জ্ঞাতি- 
গোাও লজ্জিত। তাহীদের বংশ এ অঞ্চলে স্বজাতির মধ্যে 
বন্থ-প্রশংসিত সদ্বশ | সকলেই অল্পবিস্তর শিক্ষিত__শ্রীহরির 
একজন জ্ঞাতিভাই এম-এ+ বি-এল পাঁসপ করিয়া উকীল 
হইয়াছে । ইহা ছাড়া এই সদেগাপ বংশটি রূপের জন্তও 
বিখ্যাত। রূপ থেন বাগ বাধিয়াছে ইহাদের ঘরে। কিন্ত 
শ্রীহরি সব দিক দিয়াই বংশের ব্যতিক্রম । সে দেখিতে 
হইয়াছে মাতামহের মত। এই সোনার ইট-_নগদ টাকা 
এসবও শ্রাহরির মাতাঁমহের সঞ্চয়। লোকে বলে শ্রীহরির 
মাঁতামহের ব্যবসা ছিল-_-চুরী-ডাকাতির মাল সামাল-দেওয়া। 
সোনা রূপার গহনা গলা ইয়া_সে সোনার বাঁট, রূপার বাট, 
পরিশেষে সথ করিয়! সোনার ইট তৈয়ারী করিয়াছিল । সেই 
সোনার ইট পাইয়াছে শ্হরি । শ্রীহরি নয়, শ্রারির মা। প্রাপ্য 
অবপ্ত শ্রীহরিদের নয়, শ্রীহরির মাঁতীমহ দান করিয়াও 
যাঁয় নাই, কিন্ত শ্রাহরির মা এবং এহরির মাঁতানহের 
মেয়ে । শ্রীহরির মামা এমন বাঁপের সন্তান হইয়াও সংগপ্রকৃতির 
লোৌক। মাধের মৃত্যুর পর শ্ত্লী লয়! ঘরে বাস করা তাহার 
পক্ষে দুঃসাধ্য হয়া উঠিয়াছিল। শ্রীহরির গাতামঞের 
দৃষ্টির লোলুপভা কেবল গাত্র ধন সম্পদের উপরেই আবদ্ধ 
ছিল নাঃ এ পৃথিবীর ভোগ্য বাহা কিছু সমস্ত কিছুর উপর 
প্রসারিত ছিল এবং আপন পুত্রের মুখের গ্রাসের মধ্যে 
উপাদেয় কিছু থাকিলে তাহাও আত্মসাৎ করিতে বৃদ্ধের 
দ্বিধা ছিল না। শ্রাহরির মামা লক্জায় ভযে দূরান্তরে গিয়া 
বাস করিতেছিলু। বৃদ্ধের মৃত্যু-রোগের সদয় যথাসময়ে 
পুত্র আসিয়া পৌছিতে পারে নাই--শ্যা পার্থে ছিল কন্তাঃ 
শ্রীহরির মা। প্রলাপের বোরে বৃদ্ধ কেবল গুপ্রধনের কথাই 
বলিতেছিল--সোনার ইট, আমার সোঁণার ইট-_ঘরের 


ভ্ডান্রলশ্খব 


[ ২৮শ বর্ষ-_-খ্য় খণ্ডঁ--১ম সংখ্যা 


নার্দামায় ইটের নীচে ছিল যে, কেনিলে? কেনিলে? 
রূপোর বাট-_ রূপোর বাট-_ 

শ্রীহরির মা স্থির হইয়া গুনিতেছিল-__চোঁখে তাহার 
বিচিত্র দৃষ্টি । 

_কে? তুই কে? আমার রূপোর বাট ছিলযে 
ওই কোণে? 

রাত্রি তখন গভীর; গ্রামের কাহারও একবিন্টু করুণা 
ছিল ন! বৃদ্ধের উপর, কেহ আসে নাই। প্রলাপপ্রন্ত 
রোগীর শধ্যাঁপার্থে কেবল শ্রীহরির মা, আর একখানা ঘরে 
চৌদ্দ পনের বছরের শ্রীহরি ঘুমাইতেছিল। শ্রীহুরির মা 
একরাশি বিছানা আনিয়! বৃদ্ধের মুখের উপর চাপাইয়া 
দিল। 

তারপর নব্দামার ইট তুলিয়া খু'ড়িয়া সৌঁণার ইট রূপার 
বাট তুলিয়া প্লীগরিকে সেই রাত্রে ডাকিয়া তুলিয়া নিজে 
তাভীকে বহুদূর আগাইয়া বলিল__মাঠে মাঠে চ'লে ঘাঁবি। 
খবরদার পথ ধরবি না। যা দিলাম কাউকে দেখাঁবি নাঃ 
বলবি নাঁ_বুঝলি ? 

শ্চরি বুঝিয়াছিল এবং মায়ের উপদেশ অঙ্গরে 'অঙ্ষরে 
পালন করিয়াছিল। বুৰিবাঁর এবং 'এ কাজ পারিবার 
শক্তি মা তাহার রক্কে রক্তে সঞ্চারিত করিয়! রাঁখিয়াছিল। 

দ্বিগ্রচর রাত্রে ফিরিয়া বিছানাগুলি সরাইয়া-থোড়। 
জাঁয়গাঁগুলি সমতল করি দিয়] বুকফাটা কান্না তাহার মা 
কাদিয়াছিল। 

শ্রী5রির রক্ত-বূপ- সব মতৃদও। বিশাল দেহ-_কিন্ত 
স্থূল নয়-একবিন্দু মেদশৈথিল্য নাই--বাঁশের মত মোটা হাত, 
পাযের হাড়_-তাহার উপর কঠিন পেণা- প্রকাণ্ড চওড়া 
দু'খানা পাঞ্জা প্রকাণ্ড বড় মাঁথা--বড় বড় চোখ-_আাকর্ণ- 
বিস্তার'মুখগহবর, কৌকড়া ঝীকড়া চুল) এত বড় দেহ লইয়া 
সে কিন্তু নিঃশন্দপদসঞ্চারে চলিতে পারে। পরের ঝাড়ের 
বাশ কাটিয়া! সে রাত্রে রাত্রে আনিয়া আপনার পুকুরে 
ফেলিয়া রাখে, শব নিবারণের জন্ত সে করাত দিয়া 
বাশ কাটে । থেপলা জাল ফেলিয়া রাত্রে সে পরের 
পুকুরের পোনামাছ আনিয়া নিজের পুকুর বোঝাই 
করে। “অন্যের দুগ্ধবতী গাভী বা ভাল হেলে 
থাকিলে-_রাত্রে সে .জাবের সহিত বিষ মিশ।ইয়া 
দিয়া আসে। প্রতিবংসর তাহার বাড়ীর পাঁচিল 


পৌষ--১৩৪৭ ] 


সে নিজেই বর্ধার সময় কোদাল চালাইয়া ফেলিয়া! দেয়, নৃতন 
পাঁচিল দিবার সময় অপরের সীমানা-_অথবা রাস্তা খানিকটা 
চাপাইয়া লয়। কেহ প্রতিবাদ বড় করে না' কিন্তু ব্যক্তিগত 
দীমানা আত্মসাৎ করিলে প্রতিবাদ না করিয়া উপায় থাকে 
না? শ্রীহরি কোদালি হাতেই উঠিয়! দাড়ায়; দন্তহীন মুখে 
কি বলে বুঝা যাঁয় না, মনে হয় একটা পণ্ড গর্জন করিতেছে । 
এই ত্রিশ পয়ত্রিশ বংসর বয়সেই সে দন্তহীন ; যৌনব্যাধির 
আক্রমণে তাহার দাতগুলা প্রায় পড়িয়া গিয়াছে । হরিজন 
পল্লীতে সন্ধ্যায় খন পুরুষের! মদে ভোর হইয়া থাকে--তথন 
শ্রীহরি নিঃশব্দ পদসঞ্চারে পল্লীতে গিয়া প্রবেশ করে। তবুও 
কতবার তাহার! তাড়া করিয়া ধরিবার চেষ্ট| করিয়াছে _কিন্তু 
শ্রীভরি ছুটিয়া চলে অন্ধকার-চাঁরী হিংশ্র শ্বাপদের মত। 

এন শ্রীহরি ঘোষ__ছিরু পাল । 

শ্রীহরিকে ভাঁশ করিয়া চিনিয়াও অনিরুদ্ধ স্ত্রীর কথ! বিবে- 
চনা করা দূরে থাক তাহাকে ঠেলিয়া সরাইয়া দিয়া বাড়ী 
হতে রাস্তায় নাঁমিয়া পড়িল । পদ্ম বুদ্ধিমতী মেয়ে, সে অভিমান 
করিল নাঁ_সে আবার ডাঁকিল--শোন- শোন-_ ফেরো। 

অনিরুদ্ধ গ্রাহ করিল না। 

অতি ন্সীণ হাসিয়া পন্ম এবার বলিল-__পেছন ডাঁকছি! 

অনিরুদ্ধ লাঙ্গুলম্পৃষ্ট কেউটের মত এবার ফিরিল। 

পল্ম হাঁমিয়। বলিল-_-একটু জল খেয়ে যাঁও। 

অনিরুদ্ধ ফিরিয়া আসিয়। পন্মের গালে সজোরে এক চড় 
বসাইয় দিয়া বশিল-_ডাকবি আর পেছনে? 

পদ্মের মাথাটা ঝিম ঝিম করিয়া! উঠিল-_অনিরুদ্ধের 
লোহাঁপেটা হাতের চড়-সে বড় ভয়ঙ্কর আঘাত। পপ 
বাবা রে? বলির! হাতে মুখ ঢাঁকিরা বসিয়! পড়িল। 


চ্কীন্ম-ন্ত যাও ল্রতভক 


৮৭ 


অনিরুদ্ধ এবার অপ্রস্তত হইয়া পড়িল) সঙ্গে সঙ্গে 
একটু তয়ও হইল। যেখানে সেখানে চড় মারিলে মানুষ 
মরিয়া যায়? সে ব্যস্ত হইয়া ডাকিল-_ পদ্ম ! পদ্ম ! বউ! 

পন্মের শরীর থর থর করিয়া কাঁপিতেছে- সে ফুলিয়া 
ফুলিয়! কাদিতেছে। 

অনিরুদ্ধ বলিল-_এই নে বাঁপুত এই নে-*জাম! খুললাম। 
থানায় যাৰ না। ওঠ! কীাদিস না। ও পদ্ম! সে 
পদ্মের মুখ-টাঁকা হাতখানি ধরিয়া! টাঁনিল--ও পদ্ম! প্প 
মুখ হইতে হাত ছাড়িয়া দিয়া_খিল-খিল করিয়! হাঁসিয়! 
উঠিল । মুখ ঢাঁকা দিয় পদ্ম কাঁদে নাই, নিশবে হাসিতেছিল। 
অদ্ভুত শক্তি পন্মের--আর অনিরুদ্ধের অনেক কিল চড় 
খাওয়! তাঁহার অভ্যাস আছে-_-এক চড়ে কি হইবে ! 

কিন্তু অনিরুদ্ধের পৌরুষে বোধ হয় ঘ| লাঁগিল--সে গুম 
হইয়া বসিঘ! রহিল। পদ্মা খানিকটা গুড় আর প্রকাণ্ড 
একটা বাটিতে একবাটি মুড়ি ও টুকনি ঘটির এক ঘটি জল 
আনিয়া নামাইয়! দিয় বপিল--তৃমি যে ছিরু মোড়লকে স্থুবে 
ক'রে এজাহার করবে গাঁয়ের নোক কে তোমার হয়ে 
সাক্ষী দেবে বল তো? কাল তো গাঁয়ের নোৌক সবাই 
তোমার ওপর বিরূপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

কাল সন্ধার পর আবার মজলিস বসিয়াছিল; 
অনিরুদ্ধের ওই “মজশিপকে মানি না” কথাট| সকলকে বড় 
আবাত দিরাছে। অনিরুদ্ধ এবং গিরীশের বিরুদ্ধে 
জমিদারের কাছে নাশিশ জানানো স্থির হইয়া গিয়াছে । 

কথাটা অনিরুদ্ধের মনে পড়িল; কিন্তু তবু তাহার মন 
মানিল না। 

( ক্রমশঃ ) 


দীন-বন্ধু গ্যাগুক্রজ 
শ্ীকালীকিস্কর সেনগুপ্ত 


হে প্রিয় ঈশার শুভ মণীষাঁর ভগীরথ সত্ভম 
শঙ্খ বাঁজায়ে আনিলে জালায়ে প্রসন্ন দীপশিখা 


হে দীনবন্ধু, এ দীনভূমির মাঁটীতে শয়ন মেলে 
“সুরুচিঃ-মাতারে ফেলিয়া চাহিলে ছুখিনী সুমতি-মায়ে 


পশ্চিম হ'তে সিন্ধুর পথে ত্রিবেণী প্রবাহ সম হে ঞ্ব সাধক উত্তানপাদ রাজসম্প্দ ফেলে 
তোমারে নিখিল ভারত লিখিল স্থুস্বাগত লিখ।। মুক্তি লভিলে বন্ধন-মাঝে শাস্তিকেতন-ছায়ে । 
বিশ্ব যখন ভীম্ম রবির রশ্মিতে হল আলো 


সে রবি কিরণে স্নিগ্ধ করিলে তাহারে বাসিয়া ভালো । . 


ঃখের নিবৃত্তি ও স্বধর্মপালন 


শ্রীনৃপেন্দ্রনারায়ণ দাস এম-এ, বি-এল 


(খের নিবৃত্তি সকলেরই কামা। ছুঃখ নিবৃত্তির উপায় কি? এই 

-শর আলে!৪না করিতে হইলে প্রথমে স্থির করা প্রয়োজন, ছুঃখ কি? 

ক বলেন, "প্রতিকৃল-বেদনীয়ং ছুঃখং |" সকল প্রকার প্রতিকূল 

ই ছুঃখের। এই প্রতিকূল বেদনা ছুই প্রকারের হইতে পারে, 

| ঘা, শারীরিক ও মানসিক। (১) কেহ কেহ হয়ত বলিবেন,“এরাপ বিভাগ 

ক নহে। সকল ছুঃখই শারীরিক। শরীরাদিতে যে ছুঃখের কারণ 

এমন দুঃখ নাই। যাহাকে ম[নপিক ছুংখ বলি, বাহা পদার্থের সহিত 

পীরের মংযোগই তাহার মুল। আমার রূঢ় বাক্যে তুমি ছঃখ বোধ 

রলে, আমার বাঁকা প্রাকৃতিক পনার্থ। তাহ! শ্রবণেন্রিয়ের দ্বার! 

ণ করিলে তাহাতেই তোমার দুঃখ ।” একপ আপত্তি উত্থাপন কর! 

টীসঙ্গহ নহে। তবে মানসিক দুঃখ বলিতে কি বুঝিব? শারীরিক দুঃখ 

বাঁকি বুঝিব? শরীরের স্বাভাবিক নিরোগ অবস্থার ব্যতিক্রম- 

ষে ছুঃগ ঠাহাই শারীরিক দুঃগ । অপর সকল দুঃখ মানদিক 

ইখ। তোমার বাকো আমি ছুঃখ বোধ করিলাম তাহা মানসিক দুঃখ 

ণ উহা! শরীরের স্বাভাবিক নিরোগ অবস্থার বাতিক্রমজনিত নহে । 

ই ছুই প্রকারের দ্বঃখ নিরোধ করিবার পন্থাসকলও এক নহে এবং এই 
এইরূপ বিভাগের প্রয়োজন হয়। 

শারীরিক দুঃখ দুর করিবার বিষয় চিন্তা করিলে প্রথমেই মনে হয়, 

র নিয়মদকল যথাবথরূপে পালন করিয়! শরীরকে সুস্থ ও নিরোগ 

য়! রাখিতে পারিলেই শারীরিক ছুঃ£খ ভোগ করিতে হয় না। কিন্ত 

প্রকার শারীরিক দুঃখ কেবলমাত্র স্বাস্থারক্ষার নিয়মনকল পালন 

রশ দূর করা যায় না। কারণ, এই সকল নিয়ম পালন কর! সবেও 

দিরীর ল্ীড়িত হইতে পারে কিংবা! আকনম্মিক দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্ত হইতে 

বারে ৷ এরপ স্থলে দুঃখকে দুঃখ বলিয়া বোধ ন! করাই ছুঃখ দূর করার 

পায়। ভৈবজ্যমেতদ্‌ ছু'খন্ত যদেতন্নামুচিন্তয়েৎ অর্থাৎ দুঃখের বিষয় 

| না করাই দুঃখ নিবারণের মহৌবধ। এ ভিন্ন এরাপ ছূঃখ দূর 

অন্ত উপায় নাই। 


তা 


(১) হিন্দুদিগের প্রাচীন দার্শনিক গ্রস্থ।দিতে দুঃখ তিন প্রকারের 
লিয়া উল্লেখ কর! হইয়াছে, যথা, আধিদৈবিক, আধিভৌতিক, ও 
জাধ্যাত্বিক। কিন্তু আধুনিক পণ্ডিতগণ সকল প্রকার দুঃথকে শারীরিক ও 
ঘ্বানসিক এই ঢুইভাগে ভাগ করেন। দেশপুজ্য তিলক তাঁহার “গ্রমস্তাগ- 
গীতারহস্তে” ও পঙ্ডিত বিধুশেখর শাস্ত্রী “হিনুদ্থান ্্াতার্ড' পত্রিকায় 
প্রফাশিত এক প্রবন্ধে দুঃখকে এইরূপ ছুইভাগে ভাগ করিয়াছেন। কিন্ত 
ষাহার| কেহই ছুই প্রকার দুঃখের সংজ্ঞ। দেন নাই, কিন্বা এই দুই প্রকার 
চঃখের মধ্য প্রতেদ কি তাহ! নির্দেশ করেন নাই। 


এখন দেখ! যাউক, মানদিক ছুঃখ কিরূপে দুর কর| যাইতে পারে। 
সক্গ প্রকার মানসিক ছুঃখের মুল হইতেছে, বাসনা, কামন! বা! তৃফ]। 
তোমার নিকট হইতে প্রিয় বাক্যই কামনা করি, রূঢ় বাক্য কামন| করি 
না। আমার কামনা পূর্ণ হইল না, তাহাতেই আমি দুঃখ বোধ করিলাম। 
অতএব বাসন! বা কামনার নিবৃত্তি হইলেই ছুঃখের নিবৃত্তি হইল । বাসনা 
বা! কামনার নিবৃত্তি ছুই প্রকারে হইতে পারে, (ক) বাসন! পূর্ণ হইলে 
কিংব। (খ) বাপন! ত্যাগ করিলে। বাসনা পূর্ণ করা নম্বন্ধে এই 
আপত্তি কপ! যাইতে পারে যে, বাদন! পূর্ণ করিয়া কখনও ব।সনার 
একান্তিক ও আত্যন্তিক নিবৃত্তি হইতে পারে না। অধিকন্তু কাহারও 
কাহারও মতে অগ্নিতে ঘুত সংযোগ করিলে যেরাপ অগ্রি বৃদ্ধি পায়, 
সেইরূপ বানা পূর্ণ করিলে আরও বাসন! বৃদ্ধি পায়। একথ| সা যে 
একটা বাসনা পূর্ণ করিলে অন্য বাসনার কিংব| যে বাসনা পূর্ণ করা 
হইগ়ছে কিছুকাল পরে তা্কারই উদ্রেক হয়। মহাভারতে যযাতি 
রাজার উপাখ্যানে এই কথাটাই বুঝাইতে চেষ্টা করা হইয়াছে । এইজন্য 
আমাদের দেশের মনীষীগণ বামন! ত্য।গ করিবার পরামশ দিয়।ছেন। 
কিন্ত কিরূপে বাসন| ত্যাগ করিব? প্রতিদিন সহম্র সহম্র বাপন! মনে 
উদয় হয়, কিরূপে তাহাদের ত্যাগ করিব? সন্যাস মার্গের লোকের 
বলেন, মানুষের সাংসারিক সমন্থ প্রবৃত্তিই বাসনাম্্ক বা তৃষ্চাম্সমক। যে 
পর্যান্ত সমন্ত সংলারিক কর্মত্যাগ করা না যায়, সে পর্যন্ত বাসনা বা তৃষ্ণা 
নির্মল হয় না। অতএব দুঃখের এ্কান্তিক ও আত্াস্তিক নিবৃত্তি করিতে 
হইলে সংসার ত্যাগ করিয়া কন্ম ত্যাগ করিয়! মন্ন্যাসী হইতে হইবে। 
সাংখ্য দর্শনে ও হিন্দুদিগের অন্যান্য বহু ধর্মগ্রন্থে এই মত প্রতিপন্ন করা 
হ্টয়াছে। বৌদ্ধ ধশ্মেও এই মত সমর্থিত হইয়ছে। বুদ্ধদেব স্পষ্টই 
বলিয়াছেন গৃহীর পক্ষে নির্বাণ লা কর! অনস্ভব। একথা কিন্ত ম্মরণ 
রাখিতে হইবে যে যদিও ইহার! সংসার ত্যাগ করিয়! কর্মত্যাগ দ্বারা 
সন্যাপী হইবার পরামর্শ দিয়াংছন, তথাপি কেহই বলেন নাই যে 
কেবলমাত্র সন্ন্যাস গ্রহণ করিলেই ছুঃখের নিবৃত্তি হইবে। সন্ধ্যান গ্রহণ 
করিবার পরেও সাধনার প্রয়োজন হইতে পারে। 
আর একদল ধশ্মবেত্তারা বান! বা কামন| ত্যাগ করিবার 
প্রয়ে জনীয়ত। স্বীকার করেন; কিন্তু বাসনা বা কামনা ত্যাগ করিবার জঙ্য 
ংসার ত্যাগ করিবার প্রয়োজনীয়তা শ্বীকার করেন ন1। তাহার] বলেন 
'দারে থাকিয়া নিষ্কাম ভাবে কর্ম কর! সম্ভব ও তাহাই উচ্চতর আদর্শ । 
গীতায় এই কন্মযোগের কথ! বল! হইয়াছে এবং গীতা ই কর্্পযোগশাস্ত্রে 
প্রধান গ্রন্থ । নিষ্কামভাবে কর্ণ করিতে হইযে-কিরপ কর্ণ আমাদের 
করা উচিৎ? গীতায় বল! হইয়াছে তোমার ম্বধর্ম ভূমি পালন ফর। এই 
স্বধর্ম কথাটা গীতায় ছ্িতীয় অধ্যায়ে ৩১ গ্লোকে, তৃতীয় অধ্যায়ে ৩৫ প্লোকে 


পৌষ--১৩৪৭ ]. 


ও অ্টাদশ অধ্যায়ে ৪৭ ্লৌকে ব্যবহৃত হইয়াছে । (২) কিস্ত এই তিন 
জায়গযর কোথাও খ্বধর্থ বলিতে ঠিক কি বুঝায় তাহা'সাধারপের কোধগম্য 
করিয়া স্পষ্টভাষায় বল! হয় নাই। বক্ষিমচন্্র প্রমুখ পণ্ডিতগণ বলেম, 
ধর্ম অর্থে 1906) অথর| কর্তৃধ্য বুঝিতে হইবে । (৩) ' কিন্ত স্ব 
শব্দের ছুটী প্রতিশব জামিলেই ত সফল সমন্তার সমাধান হয় ন'। 
[000 অথবা কর্তব্য বলিতে কি বুঝিব? কর্মযোগশাস্ডের ইন্থা একটা 
বড় প্রশ্ন। প্রত্যেক কন্মীর মনে কর্তব্যাকর্তষ্যের সংশয় উদয় হয় এবং 
এই সংশয় দূর করিতে না পারিলে সুচাক্ষরাপে কর্দযোগ সাধন সম্ভব 
নহে। (৪) এই সংশয় দূর করিব।র জন্যই কর্তব্য ফি জানা! প্রয়োজন। 

এখন দেখা যউক কর্তব্যাকর্তব্যের কিরূপ সংশয় বর্তমান যুগে 
সাধারণত; উদয় হয় এবং কর্মযোগ শাস্ত্রের ব্যাখ্যাকারদিগের মতে কিরূপে 
কর্তব্য নির্ণয় করিতে হইবে। মহাভারতের ঘুগে জাতিভেদ প্রথা যেরপ- 
ভাবে প্রচলিত ছিল এখন সেরপভাবে উহ! প্রচলিত না থাকিলেও 
উহা! এখনও সম্পূর্ণ লুপ্ত হয় নাই। এইজন্য প্রথমেই প্রশ্ন উঠে, কর্তব্য 
কন্মকি বংশামুক্রমিক হইবে অর্থাৎ পূর্ববপুর্ষগণ ঘে কার্ধ্য করিতেন 
সেই কার্ধ্যে নিযুক্ত হওয়াই কি কর্তব্য কন বলিয়া! বিবেচিত হইবে। 
কেহ কেহ বলেন পূর্ববপুকুষেরা যে কার্য করিতেন সেই কার্য্য করাই 
আমাদের ন্বধন্প্ন। মুচির ছেলের মুচি ও ডাক্তারের ছেলের ডাক্তার 
হওয়ই উচিৎ্। শ্রীম্মরবিন্দ প্রন্ততি মণীধীগ্রণ কিন্তু বলেন যে ম্বধর্মের 
এরূপ ব্যাখ্যা কর! উচিত নহে । তাহার! বলেন, কর্ম হওয়। চাই 
মানুষের স্বক্নীপতঃ নিজন্ব, ভিতর হইতে বিবর্তিত সত্তার সত্যের সহিত 
হুসমপ্র্ত স্বভাবের ছার! নিয়ন্ত্রিত অর্থাৎ মুচির ছেলের পক্ষে ডাক্তারী 
করাট! ন্বধর্মবিরুদ্ধ হইবে না, যদ্দি উহ তাহার স্থরাপতঃ নিজস্ব হয়,। (৫) 
সতীশচন্্র দাসগুপ্ত প্রমুখ আর একদল মণীষী বলেন, অর্োপার্জনের 
জন্য পিতৃপুরুষগণ যে কাধ্য করিতেন সেই কাধ্যই করিতে হইবে ; কিন্ত 


সপ শিলা শা স্পাাপাস্পিশাশটটি ও পপািসিসশাশিশীসপি শি টি পা সপ | পিপাসা 4 পিপি পিট আপা জিত | ববি আচ পিক ৯ প৭ জাপা শফী 


(২) ম্বধন্মমপি চাবেক্ষ্য ন বিকম্পিতুমর্থসি |. 
ধর্মাদ্ি যুদ্ধাচ্ছে য়োঃন্যৎ জত্রিয়স্ত ন বিদ্ভাতে ॥২৩১। 
শ্রেয়ান্‌ স্বধন্মো! বিগুণঃ পরধর্মৎ শ্বনুষ্ঠিতাৎ। 
স্বধন্মে নিধনং শ্রেয় পরধর্থো! ভয়াবহ; ॥৩।৩৫। 
শ্রেয়ান্‌ হ্বধন্্ো বিগুণ; পরধন্মাৎ স্বমুষ্ঠিতাৎ। 
স্বভাবনিয়তং কর্ম কুর্বান্াপ্রোতি কিলিষম্‌ ॥১৮৪৭॥ 
(৩) শ্রীমস্তাগবদগীতা--প্রীবস্থিমচন্ত্র চট্টোপাধ্যায়। 
সাহিত্য মনদির। পাত! *৮ 


(৪) 5৮%210)1 ৬1551202200 58১5, [6 15 100605558175 
|) 116 51007 01 12177) ০ঠ% [0 1000%7 1720 9011 15 
8200 110) 0020 0010605 0710115115 1036 00651101) ৮1১5 0019 
ূ রর 12] 07250 10 00 50100110106, 1 00051 ঠা 1000৮ 079 

লট 10176681096 200 06010150811 1] ১০ 21715 
$9 0০1 ত৩11.” 

06800025085 


বন্মতী 


চু০15৭ রি ইমানের 7886 65. 
(৫) ভারতবর্ষ--শ্রাবণ, ১৩৪৬। 
৯২ 


হুঞছ্খেল নিন্বন্তি ও বশ্রশ্রর্পীলন্ন 


৮৮৪০ 


পরোপকাদ করিবার জন্য অন্য কার্য্যও করা যাইতে পারে, ' অর্থাৎ মুচি 
ছেলে পঞ্লোপকার করিবার জন্ ভান্তনন্নী করিতে পান্ে-_কিন্ত ডাক্তান্ী 
করিয়া! অর্থোপীর্জঙ কলা তাহার, উচিৎ হইবে লা, মুচিগিতরি কগ্িয়াই 


কাহাকে অর্থোপার্জন করিতে হইষে। মহাক্জী গার্ধীও নাকি বধর্ের 


এইরপধ ব্যাখ্যা করিয়া ধাকেম 10৬) ' অতএব দেখা গে, ধর্ছ 
বংশাহুক্রমিক হইবে কি ন! ভাহা লইয়া, বথেষ্ট মতভেদ ' আছে। দবধর্ণ 
কি তাহ! নির্ণয় 'ফরিতে আর এক প্রকারের সমস্তার উউ্তব হয়, ধাহার 
উল্লেখ করা এখানে প্রয়োজন। দেশপূজ্য তিলক তাহার শ্রীসন্ভাগ বাদগীতী- 
রহন্তে ও বিখ্যাত মমন্তত্ববষিদ পিরীন্্রশেখর বন মহাশয় 'ভাহার শীতার 
ব্যাখ্যায় 'এইরাপ সমস্তার উল্লেখ করিয়াছেন 10৭) সমস্তার্টী ফি তাহা 
দুই একটা উদ্ধাহরণ দ্বারা স্পট করা হইতেছে। শর্ধালক' নামে এক 
ব্রাহ্মণ, দিবাতাগে পৃজা, অগ্চনা, অধ্যাপনা, দান প্রভৃতি সৎকার্ধ্য করিত 
এবং রাত্রিকালে দহ্াধৃত্তি কয়িত। *তাঙ্থার পূর্বরপুরুষগণও নাকি 
এইরূপ করিত। এইরাপ দন্লযুবৃত্তি সে কোন কুকার্ধ্য বলিয়! মমে করিত 
না) বরঞ্চ সে মনে করিত যে সে তাহার কুলধন্ধ ও ম্বধন্দ পালন 
করিতেছে ।(৮) বাস্তবিকই কি ত্রাঙ্গণ তাহার ম্বধর্্শ প।লন করিতেছিল ? 
ঠগীদন্থাগণ মনে করিত নর়হত্যা করিয়া অর্থোপার্জন করাই তাহাদের 
স্বধন্প এবং এইরাপ নরহত্যায় তাহাদের ফোন পাপ হইত না। 
বাস্তবিকই কি তাহাদের কোন পাঁপম্পর্শ করে নাই? কেহ কেহ হয়ত 
বলিবেন, এরূপ মসগড়া সমস্যার আলোচনা “করিয়া লাভ কি? বর্তমান 
ঘুগে এক়প সমন্তার উদয়' হয় ন! অতএব "এরূপ সমন্তার 'আলোচম! 
নিশ্রয়োজন। ঘর্তমান যুগে ঠিক এইরূপ গমন্তার় উদয় 'না হইলেও 
এই প্রকারের অন্তান্য সমস্যার উদয় হয় ; যেমন মনে করুন, এক ব্যদ্ধি 
দেখিল ঘে সময় বিশেষে মিথ্যা কখা না বলিলে কিংবা উতৎ্কোঁট প্রদান 
না করিলে নিজ ব্যবসায়ে কৃতকার্য হওয়া যায় লাঁ। ” তাহার সমব্যবসারী 
সকলেই এইরাপ করিয়! থাকে । এরীপ স্থলে যদি সে মনে করেযে 
মিথ্যা কথা খঘলা-ও উৎকোচ প্রদান কর! তাহার কর্তব্য কর্ণ, তথে ফি 
ধলিখ যে তাহার এ ধারণ! ভ্রান্ত । এখন দেখ! যাউক আমাদের দেশের 
মনীষীগণ এই সকল প্রশ্নের কিরাপ উত্তর দিয়াছেন। শিরীন্দ্রশেখর বাবু 
বলেন--গীতার দ্বিতীয় অধ্যায়ের বধ্মাকথাটির অর্থ সামাজিক কর্তব্য 
বা সমাজ নির্দিষ্ট ধর্ম এবং ইহ! ।ভঙ্ন অন্য অর্থ হইতে পারে না। 
অষ্টাদশ অধ্যায়ের স্বধর্ম কথাটার অর্থ স্বভাবনিয়ত ধর্দ'। এই ছুইটা 


'অর্থের সমধয় করিয়া তিনি ন্বধন্মের অর্থ করিয়াছেন, যৈ'কর্খু নিজ 


প্রবৃত্তি বিরোধী নহে ও .যাহা৷ সমাজ দ্বারা অনুমোদিত । ভীহার মতে 


(৬ তারতবব-_বৈশীখ, ১৩৩৫ | 
(৭) (ক) শ্রীমস্ভাগবদশীতারহন্ত বা কর্দুযোগশান্ত্র--বালগঙ্গাধর 
তিলক! ক 4 
(খ) শীতা-্রীগিরীশেখর. বঙু। . প্রবাসী, বাসা ধারা- 
যাহিক ভাবে প্রকাশিত। . ৰা 
(০ উদদাহরণটা গিরীন্রাশেখর বাবুর তার ব যাধ্য হইতে গৃহীত । 


3২০ 


দশ্থাবৃত্তি করিয়া! অর্থোপার্জন কর! পাপ, কারণ দস্থাবৃত্তি সাজ-সন্মত 
কাধ্য নছে। দশ্্যবৃত্তি যে সমাজসম্মত কার্ধয নহে তাহা! না হয় 
বুঝিলাম ; কিন্তু যখন সমাজের অধিকাংশ লোকই কাধ্যসিদ্ষির জন্য 
মিথ্যা কথ! বলে ও উৎকোচ প্রদান করে, তন মিথা। কথ বলা ও 
উৎকোচ প্রদান করা কি সমাজ-সম্মত কার্ধয বলিয়া! বিবেচিত হইবে? 
সমাজের অধিকাংশ লোক যাহা! করে তাহাই কি সমাজসম্মত কার্য 
বলিয়! বিবোচিত হইবে? ছুঃখের বিষয় গিবীন্রশেপরবাবু এই সকল 
প্রশ্নের আলোচন! করেন নাই। 

অনুশীলন ধর্মের প্রচারক বহ্ছিমচলা বলেন, কর্ম আমাদের জীবনের 
নিয়ম। কর্ম না করিয়। কেহ ক্ষণকাল তিষ্ঠিতে পারে না, কর্ম ন! 
করিলে শরীরযাত্র। নির্বাহ হয় না। কাজেই কর্ম করিতে হইবে। 
কিন্ত সকল কর্মাই কি করিতে হইবে? আমর! কতকগুলিকে সৎবন্খব 
বলি, ষথা-পরোপকারাদি--আর কতকগুলিকে অসৎকর্দ বলি, যথ! 
পরদারগমনাদি--আর কতকগুলিকে সদসৎ কিছুই বলি না, যথ৷ 
শয়ন-ভোজনাদি। তৃতীয় শ্রেণীর কর্মগুলি না! করিলেই নয়, সুতরাং 
করিতে হইবে। সৎকন্মকল মনুষ্যত্বের উপাদান, অতএব উহা আমাদের 
কর্তব্য কর্্প। অসৎ কর্মী না করিলে শরীরযাত্র! নির্ববাহের বিদ্ব হয় না, 
উহ! আমাদের জীবন নির্বাহের নিয়ম নহে। চুরি বা পরদার ন| করিয়া 
কেহ বাচে না এমন নহে ।(৯) সুতরাং অসতৎকম্ম আমাদের করা উচিৎ 
নহে। চুরি ও পরদারগমন যে অসৎকন্ম তাহা ন1 হয় বুঝিলাম। কিন্ত 
মিধ্যাকখন ও উৎকোচপ্রদান করাও কি অসৎকণ্ম বলিয়া! বিবেচিত 
হইবে? বর্তমান যুগে এমন ব্যবস। বা! কার্ধ্য খুব কমই আছে যাহাতে 
মিথ্যার আশ্রয় লইতে না হয়। মিথ্যার আশ্রয় লওয়া যদ্দি অসৎকর্ম 
হয় তাহা ,হইলে বলিতে হয় যে অনৎকন্্ আমাদের জীবননির্্বাছের 
নিয়ম নহে এ সিদ্ধান্ত সর্ববাংশে সত নহে ।(১০) 

দেশপুজ্য তিলক কিন্তু কত্বব্যাকর্তব্য নির্ণয়ের জঙ্ক অন্য প্রকার 
মানের নির্দেশ করিয়াছেন। তিনি বলেন, যে কোন কর্দ করিবার 
সময় সেই কর্প করিবার বুদ্ধি প্রথমে আবগ্ঠক হয় বলিয়! কর্মে 
ওচিত্যানৌচিত্যের বিচারও সর্ববাংশে বুদ্ধির শুদ্ধাগুত্বতার উপর নির্ভর 
করে। বুদ্ধি পারাপ হইলে কর্ম পারাপ হইবে, কিন্তু কেবলমাত্র বাহ 
কর্ম খারাপ হইলে তাহা হইতেই বুদ্ধিও খারাপ হইবেই হইবে এরূপ 
অনুমান কর যায় না। গীতা নিছক কর্মের বিচারকে কনিষ্ঠ মনে 
করিয়া কর্মের প্রেরকবুদ্ধিকে শ্রেষ্ঠ বলিয়া মানেন। বুদ্ধিকে শুদ্ধ 
করিতে হইলে পরমেস্বরের স্বরাপ অবগত হইয়া! মস্ত মানুষের মধ্যেই 
এক আত্মা আছে এই তত্ব বুদ্ধির মধ্যে বন্ধযূল হওয়! আবগ্ঠক | বুদ্ধি 








পীস্িপপ্পসপপশ | শাশাদ্পাসী সপ ০০ পপপপপ্পাাাটাশা স্পা পাপী সী ৩ শী 
ক 


(৭) শ্রীমস্তাগবধগীত।-্ীবন্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় । বস্থুমতী সাহিত্য 
মন্দির হইতে প্রকাশিত । পাতা, ৯৩। 

(১১) অবস্থা বিশেষে জীবনধারণের জন্য চুরি করার প্রয়োজন 
হয়। ছুত্িক্ষের সময় বিশ্বামিত্র, মুনি চুরি করিয়া কুকুর মাংস ভঙ্গণ 
করিয়াছিলেম। 


জ্ঞান্রভন্বশ্ 


[ ২৮শ বর্_-২য় থণ্ডঁ_-১ম সংখ্যা 


এইরাগে শুদ্ধ হইলে এবং মনোনিগ্রহের দ্বারা মম ও ইন্জিয় তাহায় 
অধীনে কাজ করতে শিখিলে, ইচ্ছা! বাসন! প্রভৃতি মনোধর্ঘম তই শুদ্ধ 
ও পবিত্র হয়। অতএব বাহায় বুদ্ধি শুদ্ধ কেবলমাত্র সেই ব্যক্তি এই 
সকল নমন্তার সমাধান করিতে পারে। যাহার বৃদ্ধি শুদ্ধহয় নাই 
তাহার পঙ্ষে বিশেষ কঠিন সমস্তার স্থলে শুদ্ধবুদ্ধিসম্পন্ন সাধুপুরুষদিগের 
শরণাপন্ন হওয়। উচিৎ ।(১১) 

এখন দেখ! যাউক বর্তমান যুগের আর একজন বিখ্যাত মণীষী 
এ বিষয়ে কি বলেন। ম্বামী বিবেকানন্দ আমেরিকায় প্রদত্ত বক্তৃষ্চায় 


এই কর্মযোগশাস্্রের ব্যাখা। করেন। তিনি বলেন-_ 


"07910810015 162 [70178095000 11010 11)6 51061 210 
51)0015 001) 21001191107, 1) 15 80১1০ 16€1 5019 0০: 
10101000178 00501091084 0010 ৬7010 01 01720116175 
1701 00199 1315 0111. 10111 01)0 ৮০1 5:117)6 11021) 51717011706 
852. 361)111)8501016]7 10 01)0 15715060015 16807700101, 
1115 001 0105 10171), 001 (56100910101) 199 51)001111 1006) 
001), 1)6 15 00110717117 056] ঠ100 270 11110101102 100 
910 1)15 09019 161777৮2015 ৮911, 01061600716 1015 675৮ 
(0 506 11711115100 100 11)11)5 0016 11180 0611105 & 
990. 10 51৮6 হা 0))0001৮6 0671011101) 01 0019, 
176€160010 15 [10015 €111161 117) 0)5১]1)16, [1)0600 11)015 
1500 50101) 01115 25 71) 01১10015019 01€01060 001. %০1 
(1)615 15 001৮ 0010) 0106 501))5011৮6 5021101)0110, 4100 
209 801101) 01)201777105 05 80৮ 0৮০90507015 450০0 70001) 
270 109 00 11070 15 017 081) 8101 5111)11.)11 21) 01100 
10211000065 05 ৮০9 010৮1) 214 0] 2৮ 0011) (50015 হা) 
€ড1] 20110) 200 10 00 0131 15 201 001 01015. 17017) 1106 
501001500৮5 5070010১011) 21916, 5 5০৩ 11) 06107110705 
1১7৮০ 21615001709 0 63071] 8700 61010019162 05---/1)116 0৫1:1211) 
011)615 107৮6 2 161)09170% 10 061706 01 1)101181156 05. 
[30011015701 00955016 (0 170706 000 ৮101) 06171811019 1010] 
206 ৮/111 10755 ৮1)101 10170 06 1610001709 1) 16171010010 
061501)5 017050 10 01661510007 ৪৮৫০ 10 591101121 
০0190111075,” 


উদ্ধৃত অংশের শেষ লাইনটার প্রতি আমি বিশেষভাবে পাঠকদিগের 
দৃষ্টি আকর্ষণ করিতেছি। স্বামিজী ম্পটই বলিতেছেন, একই অবস্থার 
মধ্যে অবস্থিত কম্মীগণ একই কর্দ করিয়া! বিভিন্ন প্রকারে প্রভাবাম্বিত 
হইতে পারে । অতএব কেবলমাত্র অবস্থ। ও কর্ম বিচার করিয়া 
কর্তব্য নির্ণয় কর| যায় না। তবে কিরাপ কন্ম আমাদের কর্তব্য কম্ম? 


স্বামীজী তাহ।ও নির্দেশ করিয়াছেন, “71.6107170 00 [90100111710 
11001965001 041 81011119101) 700101)5 (170 91)07671 19 1) 
0117 001) 71219 19811100111 01106515006 0119 11111160771 
৬৮০ ৫%1) 00 11) 11015 ৬0110.” (১২) যাহ! আমাদের কর্তব্য 


বলিয়! মনে হইবে তাহাই সুচারুরূপে সম্পন্ন করাই আমাদের উচিত । 
চ|রিজন বিখ্যা মনীষীর মত উদ্ধৃত করিলাম। ইহাদের প্রত্যেকেরই 
মত বিঁভন্ন। বঙ্কিমবাবু ও গ্িরীন্্রশেখরবাবু উভয়েই বাহ কর্শের 


বিচার দ্বার। কর্তব্যাকর্তব্য নিদ্ধারণের পক্ষপাতী । তিলক ও স্বামীজী 


(১১) ্নতাগবদগীতারহ্ত ঝ| কর্দমযোগশান্ত্র বালগঞ্গাধর তিলক। 
অনুবাদক গ্রুজ্যোতিরিক্্রনাথ ঠাকুর । যষ্ঠ ও দ্বাদশ গুরকরণ। 

(১২) কর্মযোগ নামক বাঙ্গল! পুস্তকে মুল বর্তীতার বহু অংশ বাদ 
দেওয়| হইয়াছে ও স্থানে স্থানে অনুবাদও তাল হয় নাই। এই জস্ 
আমি মুল ইংরাজী বস্তৃতাই উদ্ধৃত করিলাম । 


পৌষ-_-১৩৪৭ ] 


বলেন, কর্ধের প্রেরক বৃদ্ধি কিংবা কমার মন কিরাপ গ্রভাবাধিত 
হইয়াছিল তাহার দ্বারাই কল্ীর বিচার করিতে হইবে। বস্কিমবাব্‌ ও 
গিরীন্ত্রশেখরবাবুর মতে শব্ধালক ও ঠগীদস্্যাগণ পাপ কার্যে লিপ্ত ছিল, 
কারণ দহ্যতা ও নরহত্যা সমাজসম্মত কাধ্য নহে--বরং অসৎ কর্ম বলিয়া 
বিবেচিত হয়। উহা আমাদের জীবিকানির্ববাহের নিয়মও নহে। 
ব্যবসাদারের কাজ সম্বদ্ধে ইহাদের মত কি তাহা! আমাদের জান! নাই। 
দেশপুজ্য তিলকের মতে শববীলক, ঠগীদহ্থাগণ কিংবা উল্লিখিত 
ব্যবণাদারের কাধ্যের বিচার করিতে হইলে প্রথমে বিচার করিতে 
হইবে তাহাদের বুদ্ধি-শুদ্ধ ছিল কিন|। বুদ্ধি-গুদ্ধ হইলে তাহাদের 
কোন পপ হয় নাই। স্বামী বিবেকানন্দের মতে উহার যদি সত্য সত্যই 
মনে করিয়! থাকিও যে এ্ররুপ কাধ্যের দ্বারা উহারা ভগবানের নিকটবন্ভী 
হইতেছে তাহ! হইলে উহাদের কোন পাপ হয়নাই। ইহাদের মধ্যে 
কাহার মত অধিকতর যুক্তিযুক্ত তাহ| নির্ণয় কর! আমার সাধ্যাতীত। 
স্বধর্শের ব্যাখ্যা লইয়! পগ্ডিতগণের মধ্যে কিরূপ মতভেদ আছে তাহাই 
অমি নির্দেশ করিলাম । 

এখন দেখা যাউক এই আলোচনার ফলে আমর! কি কি সিদ্ধান্তে 
উপনীত হইলাম $- 








(১) প্রতিকূল বেদনার নাই ছুঃখ। 
শারীরিক ও মানসিক । 

(২) স্বাস্থ্যরক্ষার নিয়মনকল যথাযথরূপে পালন করিলে শারীরিক 
ছুঃখ বহুল পরিমাণে দূর হয়; কিন্তু ইহা সত্বেও যদি শারীরিক ছুঃখ উপস্থিত 
হয় তাহ। হইলে দুঃখকে দুঃখ বলিয়া! বোধ না করাই দুঃখ দূর করার উপায়। 


দুঃখ ছুই প্রকারের, 


ষ্পদা 


স্ব ২৮- “বড ব্য. সস ক্ষ 


তি 





(৩) সকষ্গ প্রকার মানসিক হুঃথের মূল হইতেছে, বাসনা, কামনা 
বা তৃফা। অতএব বাসনার নিবৃত্তি হইলেই ছুঃখের নিবৃত্ধি হইল। 
বাসনার নিবৃত্তি ছুই প্রকারে হইতে পারে, (ক ) বাসন! পুর্ণ করিয়! 
কিংবা (থ) বাসন! ত্যাগ করিয়া । 

(8) বাসনা পূর্ণ করিয়। কখনও বাসনার প্রকাস্তিক ও আত্যন্তিক 
নিবৃত্তি হইতে পারে না; কারণ বাসনা! পূর্ণ করিলে অন্য বাসনার কিংবা 
কিছুকাল পরে সেই বাসনারই পুনরুদ্রেক হয় । | 

(৫) সন্ধ্যা মার্গের লোকের! বলেন, সংসার ত্যাগ করিয়া, 
সন্ন্যাসী ন! হইলে বাদন! বা তৃষ্ণ! সম্পূর্ণরূপে নির্মল হয় না। বাসনার 
প্রকাস্তিক ও আত্যন্তিক নিবৃত্তি করিতে হইলে সন্ন্যানী হইতে 
হইবে। 

(৬) আর একদল ধর্ম(বতারর1 বলেন, বাসনা ত্য।গ করিবার জন্য 
সংসার ত্যাগ করিবার প্রয়োজন নাই। সংসারে থাকিয়াই [নষ্কাস 
ভাবে কর্মী কর! যায় ও তাহাই উচ্চতর আদর্শ । 

(৭) নিষ্কাম ভাবে কর্্প করিতে হইবে, কিন্তু কিরাপ কর্ম আমাদের 
কর! উচিৎ। গীতায় বল! হইয়াছে, স্বধর্পা পালন কর। শ্বধর্ম অর্থে 
0815 অথব! কর্তব্য বুঝিতে হইবে। 

(৮) কর্তব্যকি? কেহকেহ কর্ণের ওচিত্যানৌচিত্যের বিচার 
করিতে কর্ণের প্রেরক বুদ্ধির বিচীর করেন, কিংবা কর্ম করিয়। কম্মা 
কিরূপ ভাবে প্রভাবাম্বিত হয় তাহাই বিচার করেন; কেহ কেহবাহয 
কর্মের দ্বারা কর্মের উচিত্যানৌচিত্যের বিচার করেন। আবার কর্তবা- 
কর্ম বংশানুক্রমিক হইবে কিনা, তাহা লইয়াও মতভেদ আছে। 





পদ্মা 
শ্রীশান্তি পাল 


পান্মা? পদ্মা 
বক্ষে লয়ে তরঙ্গ-উচ্ছাস 
ঘন ঘন শ্বাস, 
উন্মত্ত আবেগ ভরে 
কল কল স্বরে 
কোথা যাও উন্মািনী বৈরাগিনী বেশে 
দিগন্তের শেষে, 
দুই কুল এক হ/য়ে যাঁয় 
অবসন্ন জীবনের শেষ মোহানায় ! 
পদ্মা, পল্মী,-- 
ও কি ব্যথা বাজে তব প্রাণে 
কল্লোলের গানে? 
নাহি শ্রীস্তি, নাহি ক্লান্তি, নাহি অবসাদ 
ভাঙি দীর্ঘ দৃঢ় বাধ 
চলিয়াছ আপনার সব কিছু দিয়া 
মর্মমাঝে গুধু ঘোর খ্যাকুলতা নিয়া ! 


যেথা, 


পদ্মা, পদ্মা 
এ সজ্জা কি সাজে তব, 
অভিনব ! 
আজি এই উচ্ছলিত বরষার দিনে 
চেয়ে দেখে ছুই কূলে নবশ্ঠাম বিপিনে বিপিনে, 
পন্ধলে পন্থলে 
সরোবর-জলে, 
সরসিয়! উঠিতেছে কত শত কুমুদকহলার, 
শুধু একবার 
অঙ্গে মাথ মদ-গন্ধ তার; 
ক্ষণেকের তরে 
ভুলে যাঁও অবিশ্রান্ত চঙ্গার ছন্দ রে। 
গতি তব হোয়ে যাক লয়-_ 
সুষ্টির সৌন্দর্য্য মুগ্ধ স্তব্ধ হোক অনন্ত প্রলয় ! 
উচ্ছলিত গতির প্রপাঁতে 
নিবিড় করিয়া! বাঁধ মিলনের রাঁঙীরাথী হাতে। 


বান প্রস্থ 
বনফুল 
( নাটিকা ) 


একটি পোড়ে নীলকুঠির একটি কক্ষ। ঘরটিতে ছুইটি বড় দরজা 
এবং কয়েকটি জানালা রহিয়াছে । আসবাব-পত্র কিছুই নাই। দরজা 
ঠেলিয়া বরদা! ও জগমোহন প্রবেশ করিলেন। জগমোহনের হাতে ছুইটি 
মুগ্ডর, বরদার হাতে কিছু নাই। উভয়েই স্বাস্থ্যবান, যদিও উভয়েরই 
বয়স পঞ্চাশের কাছ।কাছি। জগমোহনের গৌফ দাড়ি কামানো, চোখে 
মুখে এমন একটি ভাব আছে যে দেখিলেই মনে হয় লোকটি রমিক। 
বরদার বেশ জমকালে। কাচাপাকা এক জোড়! গোঁফ আছে, গোঁফের 
্রান্তদ্বয় উর্ধমুখী। বরদার চোথে-মুখেও এমন একটা ভাব আছে যে, 
দেখিলে মনে হয় লোকটি রাশভারী এবং চট! মেজাজের | বরদার রঙ, 
কালে! এবং বড় বড় চোথ ছুটি লাল। তাহার! প্রবেশ করিবার সঙ্গে 
সঙ্গেই একটি তৃত্য-জাতীয় ব্যক্তি একটি শতরঞ্জি বগলে করিয়! প্রবেশ 
করিল। 


জগমোহন। শতরপ্রিটা পেতে ফেল। বরদা, একটু 
সর তো ভাই, শতরঙ্জিটা বেশ চৌরস ক'রে পাতুক। 


বরদ| একটু সরিয়| ঈড়াইলেন। চাকরটি শতরঞ্জ বিছাইতে 
লাগিল। জগমোহন ঘরের কোণে গিয়া মুর দুইটি রাখিয়! দিলেন। 


ভৃত্য। (শতরঞ্জি পাতা শেষ করিয়া) আমি এবার 
বাই হুজুর? 
জগমোহন ৷ বেশ, যা-_ভাড়া পেয়ে গেছিন তো? 
ভুত্য। আজে হ্যা হুজুর ! 
নমন্বার করিয়! ভৃত্য প্রস্থান করিল 


জগমোহন। ওরে শোন্‌! 


ভুত পুনরায় প্রবেশ করিল 


আমাদের সেই মালের নৌকোটার সঙ্গে যদি দেখা হয়, ঝলে 
দিস তাড়াতাড়ি আসে যেন। 
ভৃত্য। যে আজ্ঞে হুভুর। 
চলিয়া গেল 
জগমোহন। যাক এসে তে পড়া গেল। ওপারের 
জমিদা বাবুদের এবর পাঠিয়েছিলাম, তারাও ঘরটা সাঁফ- 
সতরো করিয়ে রেখেছেন দেখছি । বাপরে বাপ- রাস্তা 


৯৭ 


কি সহজ, স্টেশন চার ক্রোশ থেকে বারো ক্রোশ__গরুর 
গাঁড়ি, তারপর নৌকো--ওকি তৃরু কুঁচকে আছ কেন? 
এর মধ্যেই ঘাবড়াচ্ছ! তখুনি বলেছিলাদ তোমার দ্বার! 
এসব হবে না। 

বরদা। ঘাঁবড়াই নি। আমি আশ্চর্য হচ্ছি তোমার 
বুদ্ধি দেখে। 

জগমোহন। কি রকম? 

বরদা। এত জিনিস থাকতে তুমি কেবল মুগ্ডর ছুটো 
নিয়ে এলে। ফলের বাস্থেটু পড়ে রইলো ওই নৌকোটাতে, 
মুণ্ডর নিয়ে কি করব এখন ! 

জগমোহন। ব্যস্তহও কেন! ও নৌকোটাঁও এসে 
পড়ল বলে। পাঁন্সির মাঝিটাকে তো বলেও দিলুম শুনলে; 
যদি দেখা পাঁয় তাড়াতাড়ি পাঠিয়ে দিতে । আসবেও তারা 
তাঁড়াতাড়ি। আগাম ভাড়া দিয়ে দিয়েছি। খিদে 
পেয়েছে নাকি? 

বরদা। খুব বেশী নয়, একটু একটু । 


জগমেহন হ।সিলেন 


জগমোহন। তোমার পালায় পড়ে এলাম তো । আমল 
ব্যাপারটা এইবার খুলে বল দিকি। এমন তাবে পালিয়ে 
আসার অর্থটি কি-- 

বরদা। অর্থ আবার কি, অর্থ তো আগে বলেইছি। 

জগমোহন। আমি কিস্ক শুনতে চাইছি নির্গলিতা্থ। 
মানে-- 

বরদা। মানে টানে কিছু নেই__মালগষের ওপর ঘেরা 
জন্মে গেছে আমার। এই রকম স্থানই আমার পক্ষে 
ঠিক স্থান। এ বয়সে শান্তিতে থাকতে হলে বানগ্রন্থ 
নেওয়া ছাড়া গতি নেই। 

জগমোহন। এ সব তো প্রাচীন কথা। হঠাৎ এ্যাদ্ছিন 
পরে তোমার এ খেয়াল হ'ল কেন? 

বরদা। (উদ্দীপ্ত কণ্ঠে) খেয়াল! কিছুমাত্র আত্ম- 


পৌষ ১৩৪৭ ] 


সম্মান জ্ঞান থাঁকলে বুড়ো! বয়সে সংসারে থাকা উচিত নয়। 
একটা বুড়ো সংসারের অলঙ্কার নয়, ভাঁর। তার মানে 
মাঁনে সরে যাওয়াই উচিত। 

জগমোহন। (হাসিয়া) অর্থাৎ পরিবারের সঙ্গে 
ঝগড়া হয়েছে? 

বরদা। পরিবারের সঙ্গে আবার সপ্তাব থাকে কার 
কোন্‌ দিন! তুমি ব্যাঁচিলার মানুষ, পরিবারের স্বাঁদ 
পাঁওনি কখনও, তাই ইডিয়টের মতো এ কথাটা বললে। 
কোন ভদ্রলোকের কথন কোন দিন কম্মিন্কালে পরিবারের 
সঙ্গে সন্ভাব থাকে নি--থাঁকতে পারে না। 








জগমোহন কিছু ন! বলিয়। হাসিলেন 


শুধু পরিবারের সঙ্গে নয়, কারে! সঙ্গে আমার সাব নেই। 
এ যুগের কারো সঙ্গে আমার মেলে না। 
জগমোহন। কাবো সঙ্গে মেলে না! 
বরদা। মিলবে কি ক'রে! আঁমার্দের পছন্দ বালা 
পোঁধ ওদের পছন্দ চেস্টারফিল্ড ; আমাদের জামা 
গলা-বন্ধঃ ওদের জাম গলা খোলা ; আমর! মুণ্ডর ভীজি,ওরা 
তাস ভাজে ; আমরা কুত্তি করি পালোয়ানের সঙ্গে__ওরা 
ব্যাডমিন্টন্‌ থেলে মেয়েদের সঙ্গে । 'আমরা দামী গড়গড়ীয় 
তাওয়া দিয়ে অন্বুরি তামাক খাই, ওরা ফোকে সিগারেট । 
ওদের সঙ্গে আমাদের মিলতে পারে না__পাঁরে না পারেনা । 


বলকি! 


প্রত্যেক “পারে না'র নহিত তিনি প্রসারিত বাম করতলে মুষ্টিবন্ধ 
দক্ষিণ করতল দিয়া আঘাত করিলেন 


জগমোহন। তোমার গিল্িটি তো সেকেলে, তার সঙ্গে 
অন্তত তোমাঁর ভাঁব থাকা উচিত ছিল। 

বরদাঁ। তুমি হ'লে আইবুড়ো কাণ্িক, তুমি গিশ্নি-ফিনির 
কিছু বোঝ কি! ওরা হ'ল ঝড়ের আগে এটো পাতের 
জাঁত। যেদিকে হাঁওয়! বয়, সেইদিকেই চলে। 

জগমোহন । তার মানে? 

বরদা। তার মানে--নির্বিচারে গ্রবলের পক্ষ নেয়। 
আমার এখন বয়স গেছে, উপণর্জন করি না; সুতরাং গিঙ্লি 
এখন ছেলেদের দলে যোগ দিয়েছে । ভাবছে__ও বুড়োটার 
আর কি পদার্থ আছে-_ওটাকে তো আমসি-চোঁষা,করে শেষ 
ক'রে এনেছি । ( সহসা উদীপ্ত কণ্ঠে) তা না ভাঁবলে__ 

সহসা আবার খামিয় গেলেন 


আআম্মপ্রস্থ 





৪০ 





সস স্ব _ ব্গা্ল- 


জগষোহন। তা না ভাবলে? 

বরদা। তা না ভাবলে কখনও আমার কথার ওপর 
কথা কইতে আঁসে। অমন সুন্দরী সদ্বংশের মেয়ে পছন্দ 
করলাম, তা কারুর মনে ধরল না। নানান বায়না । 
দুর্গার নাম ছেলের পছন্দ নয়, মেয়ে গান গাইতে জানে না। 
আরে মোলো, গান শুনতে চাস তো! ভাল, একটা বাঈজী ' 
ডেকে গান শোন্‌ না। শুনে তৃপ্তি পাবি। তারা রুটির 
জন্যে গান শিখেছে_ হার্মোনিয়াম প্যাঁপে ক'রে ন্াকামি 
করবাঁর জগ্যে নয়। তা ছাড়া, বউ গান গাইবে কখন বল 
তো হ্যা-এসেই তো ঢুকবে রান্নাঘরে, তারপর আতুড়ে। 
সারাটা! জীবন রান্নীঘর-আ্ীতুড়ঘর করতে হবে যাকে, সে 
গান গাইবে কখন! 





জগমোহন। তোম।র বড় ছেলের বিয়ের কথা বলছ? 
কোথায় ঠিক হল? 

বর্দা। কে জানে! কোন এক ধূসরা বলে 
মেয়ের সঙ্গে । 

জগমোহন । ধূসর ! 


বরদা। হ্থ্যা ধূসরা। ধূসর! ফোয়ারা! জর্জেট মর্ভিনা-_ 
যার সঙ্গে খুশি ছেলের বিয়ে দিক-__আমি ওসবের মধ্যে 
নেই। আমি জীবনের বাকী দিন কটা শান্তিতে কাটিয়ে 
দিতে চাই, বাঁস্‌ এবং এই রকম নির্জন স্থানই আমার পছন্দ | 
পদচারণ করিয়া জানলার নিকট গিয়। বাহিরের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ 


করিলেন। জগমোহন ন্মিতমুখে বরদার দিকে তাকাইয়। রহিলেন। 
বরদা সহমা থুরিয়া প্রশ্ন করিলেন 


হুধ পাওয়া যাবে এখানে ? 

জগমোহন। এখানে কিছু পাওয়া যায় না) তবে 
এখানে যদি থাঁকো। ওপারের গোয়ালাদের কাছ থেকে 
দুধের ব্যবস্থা হতে পারে । 

বরদা। খেয়া নৌকো নেই বলছ, তারা পাঁর হবে 
কিকরে? 

জগমোহন। তাঁরা মৌষের পিঠে চড়ে পার হয় 
সাধারণত । 


বরদা। ও। 


পুনরায় জানলার দিকে ফিরিলেন, 
জগমোছন। বাঁড়িতে কি কলে এসেছ? 


ইত 


বরদা। জমিদারী দেখতে বেরুচ্ছি। এক তুমি ছাড়া 
আর কেউ জানে না আমি কোথায় এসেছি। 

জগমোহন। থাঁকতে পারবে ডো, দেখ__ 

বরদা। ন|। থাকতে পারার কি হেতু আছে? তুমি 
যদি পারো, আমি পারবো না কেন? 

জগমোহন | আমার কথা ছেড়ে দাও, অনেক ঘাটের 
জল খাওয়া অভ্যেস আছে আমার । চিরটা কাল ভিগ্রিক্ট 
বোর্ডের ওভারশিয়ারি ক'রে কাটিয়েছি, তাছাড়া আমার 
তিন কুলে কেউ নেইও যে বুক চাঁপড়ে কাদবে। তোমারি 
নানান্‌ বখেড়া-_ 

বরদা। বখেড়া কি রকম ? 

জগমোহন | (হাঁসিয়! ) বখেড়া বই কি! তোমার 
ঢালা ফরাস চাই, তাকিয়া চাই, বই চাই, ঘন ঘন থাঁবার 
চাই, তামাক চাই, মুণ্ডর চাই-_মুগ্ডর না ভাজলে খিদেই 
হয় না। তোমার মতো লোকের এসব জায়গায় থাকা 
শক্ত বই কি। 

বরদা। কিছু শক্ত নয়। তাছাড়া ফরাস, তাকিয়াঃ 
বই, খাবার সবই তে! আসচে। নৌকোটা কতক্ষণে এসে 
পৌছবে বল তো! তুমি নিয়ে এলে মুগুর ছুটো-_-ফলের 
বাস্কেটটা ফেলে । আশ্চর্য্য বুদ্ধি তোমার! 

জগমোহন। মুগুর দুটো হাতে ছিল, নিয়ে এলাম। 
আমাদের এ ছেট পানসিতে কি তোমার ওই বিরাট বড় 
বড় দুটো ফলের বাস্কেট আঁটতো৷? ও দুটোকে বাস্কেট বল 
কি'হিসেবে, দুটো তো প্রকাণ্ড বড় বড় প্য।কিং কেস। কি 
ফল এনেছ এত ? 

বরদা। সমস্ত ড্রাই ফ্রুট্স্। দু*জনের স্বচ্ছন্দে মাস- 
থানেক চলে যাবে। তার পর ঠিক করেছি, কলকাতা থেকে 
রেগুলার বাস্কেট আনাব। নিজেদের একটা নৌকাও রাখতে 
হবে, বুঝলে ? চমতকার নির্জন জায়গাঁটি-_ 


সহসা শুষে করতালি দিয়! 


বেশ মশা আছে দেখছি এখানে । 

জগমোহন। মশ! তো হবেই, বুনো জায়গা। 

বরদা। তুমি নিধেটাকেও ওই নৌকোটাতে রেখে 
এলে । সে থাকলে তবু 

জগমোহন। বাঃ__-অত থাবারটাবার, কাপড়চোপড়, 


ভান্সতভন্শ্ব 


[ ২৮শ বর্ব--২য় খণ্ড--১ম সংখ্যা 


হোল্ড অল্‌, স্থ্যট কেস, ট্রাঙ্ক, ফ্যাটাচি--সব ওই অচেনা 
মাঁঝি ব্যাটাদের হাতে ছেড়ে দিয়ে আসব! নিধে পুরোনো 
চাকর, সব সামলে-ম্বমলে আনতে পারবে। 

বরদা। [ সক্ষোভে ] তুমি যদি মুণ্তর দুটো না এনে 
তামাকের সরগ্রামটা আর মহাঁভারতটা আনতে, তা হলে 
আরাম ক'রে বসে একটু পড়া যেত। 

জগমোহন। সব এসে পড়বে এক্ষুণিঃ ঘাবড়াচ্ছে! কেন? 
তুমি বস না। 

বরদা। শতরঞ্রির উপর ছু*জনে মুখোমুখি হয়ে বসে 
থাকব! তাঁর চেয়ে চল বাইরে একটু ঘুরে বেড়ানো 
যাক। 

জগমোহন । বাইরে স্রেফ শেযাল কাটা আর কর্টিকারির 
বন ছাড়া আর কিচ্ছু নেই। এইখানেই বস-_ 

বরদা। এই জঙ্গলে সায়েবগুলো কেমন বাংলোটা 


বানিয়েছে দেখেছ ! 
ঘুরিয় ফিরিয়া দেখিতে লাগিলেন 


জগমোহন । আগে যে এখানে নীল চাষ হ'ত। 

বরদা। [আর একটি দরজায় উকি দিয়া] এদিকেও 
আর একট! ছোট রুম রয়েছে হে। 

জগমোহন। এ বাঁড়িটাতে অনেকগুলো! রুম। পুবদিকে 
একটা চমৎকার বারান্দাও আছে । 

বরদা। [ সহসা জানালার দ্রিকে চাহিয়া )] ওহে, দেখ 
দেখ, আর একখানা কাদের নৌকো! যেন ভিড়েছে এসে। 
কে একজন যেন নেবে আসছেও- বেশ হুনহন ক'রে 
আঁসছে। ভটচাধ্যি-ভটচাষ্যি চেহারা । 

জগমোহন। এই পোড়ে বাংলোটার লোভে অনেকে 
পিকনিক করতে আসে এখানে । শিকারও মেলে 
শীতকালে-__ 

বরদা। তুমি ওপারের জমিদারবাবুদের ঝলে সব ঠিক 
ক'রে ফেলেছ তো? 

জগমোহন । সমন্ত-_মাঁয় ভাড়া পথ্যস্ত। 

বরদা। ভদ্রলোক আমাকে দেখতে পেয়েছেন, এই- 
দিকেই ঘুরলেন । 

জগমোহন। বেশ তোঃ আন্গুন নাঃ গল্প ক'রে সময় 
কাটবে। | 


পৌষ ১৩৪৭ ] 


হু স্পস্ট - “হব” _ স্পস্ট” সি. -্্স্থ্ত স্ব ব্প 


বদ । উঃ, কি ভয়ানক মশা হে-_ 
চটাৎ করিয়! মারিলেন 


( নেপথ্যে ) আসতে পারি ? 
বরদা। [আগাইয়া গেলেন] আকন্মুন॥ আহ্বন__ 
নমস্কার ! ৃ 
শিরোমণি মহাশয় প্রবেশ করিলেন 
আপনারা বুঝি বেড়াতে এসেছেন? 
শিরোমণি । ওনারা হয়তো বেড়ীতে এসেছেন, আমি 
এসেছি অনৃষ্টের ফেরে। পূর্বা্জন্মার্জিত কোন পাপের ফলেই 
সম্ভবত দুষিত সংসর্গ করতে হচ্ছে, তা না হ'লে আমি অস্বথিকা 
শিরোমণি স্বেচ্ছায় এদের সঙ্গে বেড়াতে মাসি না। 
জগমোহন। আন্বন আসুন, বস্থন ! 
বরদা। ভালই হয়েছেঃ কথ! কষে বাঁচা যাবে, বস্থুন। 
জগমোহন। [হাঁসিযা] তুমি এইমাত্র মহাভারতের 
খোঁজ করছিলে স্বযং শিরোমণি মশায় এসে হাঁজির হয়ে 
গেছেন। কত শাস্ত্রচচ্চা করবে কর এখন বসে বসে। 
বরদা। যা বয়স হ'ল এখন শাস্ত্রচর্চাই করতে হবে 
ভাই। তা ছাড়া, শাস্ত্রচ্চা আমার ভালও লাগে খুব। 
শিরোমণি মশায় চটে আছেন বলে মনে হচ্ছে_ বস্থুন। 


সকলে উপবেশন করিলেন 


শিরোমণি । চটব কার ওপরে বলুন, নিজের 'ৃষ্টের 
ওপরে? তবে ক্ষুব্ধ হতে তো বাঁধা নেই। ক্ষুব্ধ হয়েছিও। 
বরদা। ঠিকই বলেছেন, অনৃষ্ট ছাড়া পথ নেই। 
শিরোমণি | যথার্থ কথা, কিন্তু পুরুষকার বলেও একটা! 
জিনিস আছে। কঠোপনিধদ বলেছেন_ 
অন্থচ্ছে যোহম্যছুতৈব প্রেয়- 
স্তে উভে নানার্থে পুরুষং সিনীতঃ 
তয়োঃ শ্রেয় আদাদানস্ত সাধু 
ভবতি হীয়তেহর্ঘদ্‌ য উ প্রেয়ো বৃণীতে ॥ ৩*॥১। 


জগমোহন। আপনারা ততক্ষণ শান্্রালাপ করুন, আমি 
বাইরে থেকে ঘুরে আসি একটু । দেখি আমাদের নৌকাটা 
আসছে কি-না । 

শিয়োমণি। কিসের নৌকো? 

বরদা। আমাদের" ঝ্িমিদপর যে নৌকাটায় আছে 


বান 





5২৫ 











সেটা এখনও এসে পৌছয়নি। হ্যা, তুমি একটু খোঁজ 
নাও গিয়ে 
, জগমোহন বাহির হইয়া! গেলেন 
আপনি যে শ্লোকটি বললেন তার অর্থ কি? 
শিরোমণি । তাঁর অর্থ হচ্ছে গিয়ে-_শ্রেয় আর প্রেয় 
পরস্পর বিভিন্ন জিনিস এবং দু-ই জীবকে বিভিন্নরূপে আবদ্ধ 
করে। যিনি শ্রেয়কে গ্রহণ করেন তার মঙ্গল হয়ঃ আর 
যিনি শ্রেয়কে ছেড়ে প্রেয়তে অর্থাৎ স্বখকরকে বরণ করলেন 
তিনিই মলেন, পরমার্থ থেকে বিচ্যুত হলেন । 
ট্যাক হইতে নশ্তদানি বাহির করিয়া! নয লইলেন 
আমি এখন প্রেয়-বিলাসী পরমার্থ-ব্চ্যিত এক ছোকরার 
কবলে কবলিত। ছুরদৃ্ আর কি। 
বরদা। তাইনাকি! মান? 
শিরোমণি । মানে, বিপথগামী এক শিল্পের পাল্লায় 
পড়েছি এবং সে বিপথগামী বলেই তাকে ছেড়ে যেতে 
পারছি না। কারণ স্বয়ং ভগবান গীতায় বলছেন-_ 
যদ! ষদাহি ধর্স্ত গ্লান্ভবতি ভারত 
অভ্যুখানমধর্মস্ত তদাত্মানং স্থজাম্যহম্‌। 
পরিজ্রাণায় সাধুন।ম বিনাশায় চ ছুষ্কতাম 
ধন্দ সংস্থা পনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে । ৪1৮1 
ধর্মের পুনঃ স্থাপনের জন্যই ধার্মিককে অধার্লিকের সঙ্গ 
করতে হয়, উপায় নেই। তা ছাড়া বেতনও দেয়, স্থতরাং 
অধিকতর নিরুপায় ! 
বরদা। (উচ্ছ্বসিত) আপনার সঙ্গে আলাপ হয়ে ভারি 
আনন্দিত হলাম। চমতকার! সময়ট। ভাল ভাৰেই কাটবে 
মনে হচ্ছে। আপনার সেই বিপথগামী শিল্ভটি কোথায়? 
শিরোমণি । ওই যে নৌকাবিহার করছেন তিনি। 
আমার আর বরদাস্ত হ'ল না) নৌকো! থেকে নেমে পড়লাম 
আমি। ছোকরার এদিকে সংস্কতের দিকে ঝোক আছে, 
সংস্কৃত চচ্চার জন্তে আমাকে বেতন দিয়ে রেখেছে-_কিস্ত 
হ'লে কি হবে-_-অবিদ্ায়ামস্তরে বর্তমাঁনাঃ । ওই অবিদ্যাতেই 
সব মাটি করেছে। 
বরদা। যা বলেছেন। এ টি অবিষ্ভার যুগ। 
যে ভারতে একদিন-_ 
জগমোহন ফিকিয়! আসিলেন 


কি হল হে, নৌকোর কোন পাত্তা পেলে? 


৯ 


লস্ট -স্স্া 


জগ্রমোহন। কই, কিছু তে! দেখতে পেলাম না'। একটু 
পরেই এসে পড়বে । শিরোমণি মশায়ের সঙ্গে ততক্ষণ 
শান্্রালাপ কর! যাক-- র 
শিরোমণি । আমি শাস্ত্রের কতটুকুই বা জানি! তা 
ছাড়া, শাস্্-যার অর্থ হচ্ছে প্রাচীন অন্নুশাসন--যাঁ দেবগণ 
ক্মধিগণ বেদ-তন্র-স্থতি-পূরাণাদিতে লিপিবদ্ধ ক'রে গেছেন 
সে শাস্ত্র আজকাল কে জানছে বলুন। শ্াস্্রচচ্চা আজকাল 
একটা অবান্তর ব্যাপার । এই ধরুন নাঃ যে জমিদারপুত্রটির 
সঙ্গে আমি এসেছি সে কি মন্গসংহিতোক্ত রাজার ধন 
পালন করে ? 
বকবচ্চিন্তয়েদর্থান্‌ সিংহবচ্চ পরাক্রমেৎ 
বৃকবচ্চানুলম্পেত শশবচ্চ বিনিষ্পতেৎ। 





ও বকও নয়, সিংহও নয়, বৃকও নয় শশও নয়_-ও একটা 


ছাগল । 
বরদা। ( সমব্দারের মত ভঙ্গী করিয! ) ঠিক বলেছেন, 
আজকাল ব্যাপারই ওই রকম। 


জগমোহন। (হাসিয়া) নাঃ সেকথা বললে শুনব 
কেন! ধর্মশাস্ত্ের প্রভীব এখনও কিছু কিছু আছে বই 
কি। প্রত্যক্ষ প্রমাণ তো আপনার সামনেই বর্তমান ) ইনি 
সংসারে বীতরাগ হয়ে বানপ্রস্থ অবলন্ধন ক'রে এখানে 
এসেছেন । 

বরদা। তুমি থামে দিকি। 

জগমোহন | থাঁমবো কি রকম, যা সতা-_ 

শিরোমণি । বানপ্রস্থ! তাই নাকি, এ যুগের পক্ষে 
বিশ্ম়কর বটে। বানপ্রস্থ ক'রকম তা জানেন? 

বরদা। কিছুই জানি না। (হাসিলেন ) 

জগমোহন । শিরোমণি মশায় নিশ্য় সব জাঁনেন। 
বানপ্রস্থের বিষয় আপনি বলুন তো একটু শিরোমণি মশায় | 
কিঞ্চিৎ জ্ঞান লাভ করা যাক। 

বরদা। (সাগ্রহে ) আজে হ্যা বলুন তো। 

শিরোমণি | ব্রঙ্মচর্যা। গাহস্থা, বানপ্রস্থ, ভৈক্গা-_. 
শান্ত্রোক্তি এই চতুব্বিধ আশ্রম । মহানির্ববাণতত্থ কিন্ত 
বলছেন কলিষুগে গাহস্থ্য ও ভৈক্ষ্য ভিন্ন অন্ত কোন আশ্রমই 
নেই। ও বিষয়ে'কিন্তু মতভেদ আছে, ব্যাঁসদেব বলেন-_ 
“হুক সে সব--এখন বানপ্রস্থের কথা গুন । 

নন্ত লইলেন 


জ্ঞাদ্পভহহ্ঘ 





 ২৮শ বর্ষ-_২য় খণ্--১* সংখ্যা 


সহ্য স্থ্্্্হ্া 


বানগ্রস্থ হচ্ছে তৃতীয় আশ্রম । অদ্্রোছে বা অল্পদ্রোহে 
জীবিক! নির্বাহ করে অর্থাৎ শাস্ত্রীয় বিধি অযাঁয়ী দার- 
পরিগ্রহ অপত্যোৎপাদনারি সমাধানাস্তে বনবাসগমন পূর্বক 
অকুষ্ট পচ্য ফলাদি তক্ষণ ক'রে যে ঈশ্বরারাঁধনা তাঁকেই বলে 
বানপ্রস্থ । বানপ্রস্থ দ্বিবিধ__ 

বরদা। (মুগ্ধ) আপনার জ্ঞানের গভীরত| দেখে সত্যিই 
আশ্শর্য্য হয়ে যাঁছছি ক্রমশ । আপনারাই হলেন ভারতের গৌরব। 

জগমোহন। ( সোৎসাহে) সে কথা আর বলতে ! 

বরদা। বলুন বলুন শুনি। 

শিরোমণি । বানপ্রস্থ দ্বিবিধ-_অশ্বকুট্য ও দন্তদুখলিক | 

বরদা। সেআবার কি! দত্তদুখপিক ! 

শিরোমণি । যারা পঙ্গান্তে বা মাসান্তে ভোজন করে 
তাদেরই দন্তুদুখলিক বলে। 

বরদা। বানগ্রস্থে থেতেও মানা না কি? 

জগমোহন। (অপাঁে বরদার পানে চাহিয়া) তবেই 
সেরেছে! 

শিরোমণি | নাঃ নাঃ খেতে মানা নেই, তবে আহার 
বিষয়ে সধ্যত হবার নানা বিধান আছে। ফালকুষ্ট 
আহার্যই নিষিদ্ধ। অন্তান্ত বিধানও আছে, তার মধ্যে 
তিনবার ক্লান করা, জটাবন্ধল ধারণ করা, প্রতি গ্রহনিকৃত্ত 
হওয়া, স্বাধ্যায়বান হওয়া, দান্ত আত্মবান হওয়া-_এইগুলোই 
প্রধান। 

বরদা। এসব করবার মানে? 

জগমোহন। ভীষণ আইন,কান্চন দেখছি! 

শিরোমণি । ভোঁগলিগ্পাকে নিপ্পিষ্ট ক'রে অবলুপ্ত 
করতে পারাই বানপ্রস্থের উদ্দেশ্য । গার্সথ্যাশ্রমে প্রবেশ 
করবার পূর্বে যেমন ব্রহ্মচর্যযাশ্রমে শরীর'মনকে প্রস্তত ক'রে 
নিতে হয়, তেমনি ভৈক্ষ্য আশ্রমে প্রবেশ করবণর জন্যে 
বানপ্রস্থে সমস্ত বাঁসনাকে নিশ্চিহ্ন করে ফেগগতে হয়। 
সেইজন্তে গ্রীষ্মকালে পঞ্চাগ্নির মধ্যে, বর্ষাকালে তৃতলশায়ী 
হয়ে 'এবং হেমন্তকালে আর্দবন্ত্রধীরী হয়ে থাকার নিয়ম 
আছে। আসল কথা কি জানেন? 

বরদা বিপ্রান্ত হইয়! পড়িয়াছিলেন, লেযোঞ্ত বাক্যে উৎবুল 

হইয়! উঠিলেন পা" 

বরদা। আজে হ্যা আমল কথাটাই বলুন সহজ 

করে। 





পৌষ--১৩৪৭ ] 


ঘি” ব্্- স্উস্িস স্প” ব্ 


শিরোমণি । আসল কথা উপনিষদে পাবেন । ছান্দোগ্যে 





আছে-_অদ্ধা নিষ্ঠীসাপেক্ষ, নিষ্ঠা কর্মসাঁপেক্ষ এবং কর্ণ 
সথসাপেক্ষ- 
নস্ত লইলেন 
বরদা। একট। ভারি অভাব বোঁধ করছি, জগমোহন । 


জগমোহন। কিসের? 

বরদা। তামাকের। তুমি খালি মুগ্ডর ছুটো নিয়ে 
এলে-__ 

জগমোহন | নৌকো এই এসে পড়ল বলে” একটু 
ধৈর্য ধর না। 

বরদা। তুমি আঁর একবার বেরিয়ে দেখ না হয়। 

জগমোঁহন। হা যাঁই। পণ্ডিত মশাষের কথাটা 
শেষ হয়ে যাক। এমন উপদেশাঘ্মক ভাল কথা তো চট 
ক'রে শোনা যায় না । 

বরদা। হ্থ্যা হা] বলুন বলুন__ছান্দোগো- 

শিরোমণি । ছাঁন্দোগ্য বলছেন, শ্রদ্ধা নিষ্ঠাসাপেক্ষ। 
নিষ্ঠা কর্মসাপেক্ষ, কর্ম জুখসাপেক্ষ । এখন প্রশ্ন হচ্ছে, 
স্থথ কি? 

জগমোহন। ঠিক কথা, ওই স্থখের খোঁজেই তো 
এখানে আসা । 

বরদা। ওইটেই তো আসল প্রশ্ন । 

শিরোমণি । তাঁর আসল উত্তরও ওই ছান্দোগ্যেই 
পাঁবেন। যে! বৈ ভূম! তৎ স্থখং নাল্লে স্থথমন্তি, ভূমৈব 
সুখং তূমাত্বেব বিজিজ্ঞাঁসিতব্য । তূমাঁই চরম স্ব । এখন 
তমা হচ্ছে_ 

বরদা। (সহসা অগ্রাসঙ্গিকভাবে) মাঝি ব্যাটার 
আবার এ নীলকুঠি চিনতে পারবে তো হে? 

জগমোহন। তা পারবে। 

বরদা। তুমিআর একবার দেখ । খিদে পাচ্ছেআমার। 

জগমোঁহন। দেখছি, দেখছি । থাম না, শিরোমণি 
মশায়ের কথাটা শেষ হতে দাও না। বলুন শিরোমণি 
মশায়, ভূমা হচ্ছে__ 

বরদা। হ্থ্যা বলুন, বলুন । 

শিরোমণি। তৃমা হচ্ছে সেই জিনিস, যা লাভ করলে 
অন্ত কোন বনস্তব দেখা যায় না; শোঁনা যায় না, জানা যায় 


বাসন 





ঠা 


ভন্ড স্কিল সৎ ইল” সস স্্হা্ স্প্রীচ 


না। যত্্র 'নান্তৎ পশ্ঠতি, নান্তচ্ছণোতি, নান্ৎ বিজঞানাতি 
_লভূমা। যা অল্প, যা সীমাবদ্ধ তাই মরণশীল, তাই 
দুঃখজনক । অর্থাৎ সমস্ত বাঁসনা-কামনা-বর্জিত না হ'লে 
তুমা লাভ হয় না। বৃহদারণ্যকে যাঁকে বলেছে এষণা_ 
সেই এষণা মুক্ত হতে হবে। 





বরদা চটাৎ করিয়! একটা মশ| মারিলেন 


বরদা। ঠিক বলেছেন, মায়াই হল আসল বখেড়া। 
ওইতেই তো ডুবেছি আমরা । 

( নেপথ্যে ) শিরোমণি মশীয় আছেন না কি? 

শিরোমণি । আমার শিল্প প্রবর এসে হাজির হয়েছেন। 
এসো হে রঙ্গলাল-_ঠিতরে এসো। 
রঙ্গলাল আসিয়! ভিতরে প্রবেশ করিলেন। চোথে প্যাশনে, পরিধানে 


সিক্ষের পাঞ্জাবী, হ।তে জলন্ত সিগারেট । মুখে মৃদু হাসি, 
ধু বুদ্ধিদীপ্ত । সগ্রতিভ নুদর্শন ব্যক্তি। 


বয়স আন্দাজ চলিশ হইবে 
বর্দা। আসম্ুন, আম্ুন, নমস্কার । 
জগমোহন। (হাসিয়া) আপনার শিরোমণি মশায়ের 


সঙ্গে শান্ত্রালোচন৷ করছিলাম । আসম্মন, বন্থুন। 


রঙ্গলাল প্রতিনমস্কার করিয়া হাস্তদীপ্তচক্ষে সকলের মুখপানে 
একবার চাহিয়! দেখিলেন। তাহার পর দিগারেটটায় 
শেষ টান দিয়া সেট! জানালা দিয়া ছু'ড়িয়া 
বাহিরে ফেলিয়া! দিলেন 


রঙ্গলাল। এই রবিদ্নন ক্রুশো-মার্কা দ্বীপে যে শিরোমণি 
মশায় শান্ত্রালাপ করবার মতো! লোক আবিষ্কার করতে 
পারবেন ত! আম ধারণীই করতে পারি নি! আর্য 
ব্যাপার! ঠিক পেয়ে গেছেন তে৷ ! 

জগমোহন। আপনাদের পেয়ে বেঁচে গেছি আমরা । 
বন্ুন। ূ 

রঙ্গলাল। ( উপবেশনান্তে ) শিরোমণি মশায়, থেমে 
গেলেন কেন-কি আলাপ করছিলেন করুন, আমিও 
একটু শুনি। 

বরদা। ভূমা সঙ্থন্ধে বলছিলেন উনি। 

রঙজলাল। আহা তৃমা কথাটা বড় ভাঁল, চুমার সঙ্গে 
প্রথম শ্রেণীর মিল হয় ! 


বরদা! হো! হো করিয়| হাসিয়! উঠিলেন 





৯২৬৮ 


৮ 


শিরোমণি । .এসেই ফাজলামি স্বর করলে তো বাব! ! 

রঙ্গলাল। আমি আর একটি কথাও বলব না আপনি 
যা বলছিলেন বলুন। 

বরদা। আমার দিকে অমন ক'রে চেয়ে আছেন যে 
রঙ্গলালবাবু ? 

রঙ্গলাল। আপনার শরীর দ্েখছি। বাঃ, এই বয়সেও 
তো! চমৎকার শরীর রেখেছেন। ফাইন্‌! 

বরদা। কুস্তি-লড়া শরীর, এখনও মুণ্ডর ভাজি। 

রঙ্গলাল। ও তাঁই। 

জগমোহন। শিরোমণি মশায়, থেমে গেলেন যে? 

রঙ্গলাল। কি বলছিলেন বলুন না শুনি। 

বরদা। হ্্যাষ্্যা বলুন বলুন। 


শিরোমণি নম্ক লইলেন 


শিরোমণি । বলছিলাম, বৃহদারণ্যকের উপদেশ হচ্ছে__ 
এষণামুক্ত হতে হবে। পু্রেষণা, বিভ্ৈণা লোকৈষণা__ 
সর্ধগ্রকার এণামুক্ত হয়ে পরমার স্বরূপ উপলব্ধি করলেই 
পরমাঁনন্দে লীন হবার আশা করা যাঁয়। তৎপূর্বেন নয়। 

রঙ্গলাল। মাপ করুন শিরোমণি মশীয় আমি কিন্তু 
পরমানন্দ লাভ করতে চাই অন্ত উপায়ে। 


বৈরাগা সাধনে যুক্তি সে আমার নয় 
অসংখ্য বন্ধন মাঝে মহাননাময় 
লভিব মুক্তির ম্বাদ। 


শিরোমণি । বন্ধন নিয়ে মুক্ষির স্বাদ মেলে না বাঁবা, 
-কবিতাতেই ও সব শুনতে ভাল। মুক্তি পেতে হলে রীতিমত 
সাঁধনা করতে হয়, নিরাসক্ত হয়ে পূজা করতে হয়। 
রঙ্গলাল। রবীন্দ্রনাথ কিন্ত বলছেন__ 


প্রতিদিন নদীন্রোতে পুষ্পপত্র করি অর্থযদান 
পৃজারীর পুজা অবসান। 

আমিও তেমনি যত্বে মোর ডালি ভরি 
গানের অঞ্রলি দান করি 
প্রাণের জাহবী জল-ধারে 
পৃজি আহি তারে। 

বিগালিত প্রেমের আনন্দ বারি সে যে 
এসেছে বৈকৃষ্ঠধাম তোজে। 


বরদা। (উচ্চুসিত )' বা, আপনিও তো গুণী লোক 


ভ্ডাব্রভন্ব 





[ ২৮শ বর্ব ২য় খণ্ড--১ম সংখ্যা 








"্্স্্ক 


মশায়! (তাহার পর মহস! ) জগমোহন, নৌকোর গতিক 
কিন্তু খারাপ মনে হচ্ছে। 

জগমোহন। আরে ব্যস্ত হও কেন, এখনি এসে 
পড়বে নৌকো। 

রঙ্গলীল। নৌকোর কথা শুনলেই আমার রবীন্দ্রনাথের 
দিন শেষে কবিতাটা মনে পড়ে__ 


দিন শেষ হয়ে এল আধারিল ধরণী 
আর বেয়ে কাজ নাই তরণী। 
“হগো এ কাদের দেশে বিদেশী নামিনু এসে,” 
তাহারে শুধানু হেসে ধেমনি-- 
অমনি কথ! না বলি ভর! ঘট ছলছলি 
নতমুখে গেল চলি তরুণী 
এ ত্বাটে বাধিব মোর তরণী। 
নামিছে নীরব ছায়া! ঘন বল শয়নে 
এদেশ লেগেছে ভাল নয়নে-_ 
সহসা থাময়! গেলেন 


না, এটা ঠিক হচ্ছে না। আপনাদের মুক্তি-টুক্কি নিয়ে 
স্দালোচনা হচ্ছিল, আশার এ রকম ভাঁবে বাধা দেওয়াটা 

বরদা। না না বন আপনি, চমতকার লাগছে। 

রঙ্গলাল। (হাসিয়া) আমিও মুক্তিকামী লোক; 
শিরোমণি মশায়ও তাই। আমাদের দুজনের পথ খালি 
বিচ্ছিন্ন । 

শিরোমণি । দেখ রঙ্গলাল, ইতিপূর্বে তোমাকে পুনঃপুনঃ 
বলেছি, এখন আবার বলছি এবং যতদিন বাঁচব বলব-_মুক্তি 
নিয়ে কবিত্ব করা এক জিনিষ এবং সত্যি সত্যি মুক্তি 
পাওয়া আর এক জিনিস। কহোল-যাজবঙ্কা সংবাদের 
যা বাঁণী-_ 

' রঙ্গলাল। মাফ করুন শিরোমণি মশায় কহোল 
যাঁজ্ঞবন্ক্য সংবাদের বাণী বহুবার শুনেছি আপনার মুখ থেকে, 
কিন্তু কবির বাণীও কি তার চেয়ে কোন অংশে কম? 


আবৃতি স্বর করিলেন 


যেদিন আমার গান মিলে যাবে তোমার গানের 
সুরের ভঙ্গীতে 

মুক্তির মঙগম-তীর্থ পাবো আমি আমারি প্রাণের 
আপন সঙ্গীতে 

সে্জিন বুঝিব মনে, নাই নাই বস্তুর বন্ধন 











পৌধ--১৩৪৭ ] াম্প্রস্থ ৯১৬২ 
শৃহ্ঠে শূহ্যে রাপ ধরে তোমারি এ বীণার স্পন্দন শিরোমণি । আমি ওসব ইংরিজি মিংরিজি বুঝি নাঃ 
নেমে যাবে সব বোঝা, থেমে যাবে সকল ক্রন্দন কিন্ত ছান্দোগ্যের সর্ধং খবিদং ব্রহ্ম তজ্জালানিতি 


ছন্দ তালে তুলিব আপন! 
বিশ্বসীত পদ্মদলে স্তব্ধ হবে অশান্ত ভাবন। 

আপনি কি বলতে চান, রবান্ত্রনাথের এ কবিতায় মুক্তির 
বার্তা নেই? 

শিরোমণি । বারী থাকতে পারে, কিন্তু কেবল বার্তা 
পেলেই মুক্তি পাওয়া যায় না। প্রাচীন খধিগণ মুক্তিল|ভের 
জন্যে যে সব বিধি-বিধান বেধে দিয়েছেন তা বর্ণে বর্ণে 
প্রতিপালন করতে হবে। প্রাচীন বিধানের প্রতি এই যে 
তোঁমাঁদের অশ্রদ্ধ এটা মোটেই ঠিক নয় । তোমাদের সর্বাগ্রে 
চিত্তশুদ্ধি করা দরকার। অন্তপ্র চিত্তে আত্মান্*শীসন ন| 
করলে কখনও চিত্তপুদ্ধি তয় না! 'এবং চিতগুদ্ধি না হলে_ 

রঙ্গলাল। 'মাপনারা তা হলে চিত্তশুদ্ধি করতে থাকুন, 
আমি কেটে পড়ি। 

বরদা। (ব্যাকুল ভাবে) না, নাঃ না- মে কি কথা, আপনি 
বন্থন। আপনার আবৃত্তি শোনা যাঁক আরও ঢ-চাঁরটে। 


জগমোহন | সত চমতকার আবৃত্তি করেন আপনি । 
রঙ্গলাল। শিরোমণি মশায় চটে যাঁবেন। 
বরদা । না না চটবেন কেন? 


শিরোমণি । ও যত না কেন কবিতা আওড়াঁক, 
একথা মানতেই হবে যেঃ আসক্তি ত্যাগ না করলে ব্রহ্গলাভ 
হয়না এবং আসক্তি তাঁগ করতে হলে তৃষ্ণ এবং আঁসঙ্গ 
তাঁগ কর! চাই। শ্রীভগবান গীতা বলেছেন-- 


রজো রাগাত্মকং বিদ্ধি তৃষ্টাসঙ্গ নমুদ্তবম্‌ 
তন্নিবস্নাতি কৌন্তেয় ! কর্মজেন দেহিনম্‌। ১৪।৭| 


কর্দে আসক্তি জগ্মে তৃষ্ণা এবং আনন্দ দ্বারা__ এই তৃষ্ণ এবং 
আনন্দ ত্যাগ না করলে তুমালাভি অসম্ভব। তৃষ্ণা এবং আসঙ্গ 
ত্যাগ কর! সহজ নয় মানি, কিন্তু তাঁর জন্তে অনুতপ্ত হও । 


ধঙ্গলাল। [স্মিতহান্তে] আমার কি মনে পড়ছে জানেন? 
শিরোমণি । কি? 
রঙ্গলাল। রুবাইয়াঁৎ। 


আবৃত্তি সুরু করিলেন 


[12108 115066015 1076 ৮৮110) 2111151২056 
4100. 0717517505 56৮07111860 001) 11610 20 0176 10705 
801 51111 1)5 176 1051 270016106 [২01)5 ১16105  * 

4100 5011] & 07106170901) ৮06] 0105, 


বরদা। চমৎকার, অনেক দিন পরে ফিট্জেরাল্ড বেশ 
লাগলো-_বাঃ। 


বরদা। আপনি একটু চুপ করুন শিরোমণি মশাই, 
দোহাই আপনার । রঙ্গলালবাবুঃ আপনি আরও থানিকটা 
বলুন রুবাইয়াঁৎ থেকে । চমৎকার লাগছে । 


শিরোমণি কিছু ন! বলিয়া! নম্ত লইলেন। জগমোহন সন্মিতমুখে 
বরদার দিকে চাহিলেন, রঙ্গলালবাবু 
আবৃত্তি নুরু করিলেন 

400. 08৮10511105 216 10010, ১৪610) 1015106 
[11611-10101151261)151 510] ৮106, “1106, 1176 
[60 176--/10116 11617008216 00165 10 000৪ [২056 
0721 96110 01186] 01 1)615 (0 11002108011)6, 
০01716, 91] (01)6 00), 81১0 11) 616 17176 ০৫ 90110% 
11)6 ড10121 £71076171 04 তি910800006 2106 : 
05 10110 0107776 0875 00681101010 ৯৪9 
0 87--8100 10, 11761011015 017. 006 11100, 
11616 111) 71,076 011316980 1961)6211) 0176 10108 
£৯ 805 01 চ100) & 19001 01 ৮6156 2170 (10616 
1)65100 70৩ 51108110611) 1076 ৮/1106171695, 
/500. 51106100655 15 15120156100. 


বরদ!। &১%:০61197%, চমৎকার । [সহসা ] জগমোহন, 
তুমি কিন্তু ভাই দ্রেখ একবার বেরিযে__ 

জগমোহন। যাচ্ছি যাচ্ছি, ব্যস্ত হও কেন? শোন না 
রঙ্গললবাঁবুর আবৃত্তি খানিকক্ষণ । ু 

বরদা। [ রঙ্গলালবাঁবুর দিকে ফিরিয়া ] সত্যি চমৎকার 
আপনার আবৃন্তি। শিরোমণি মশায়ের সংস্কৃতের অং 
বং-এর পর কর্ণে যেন একেবারে মধু বর্ষণ করলেন। 
শিরোমণি মশায় রাগ করবেন নাষেন__ আমরা মানে একটু 
ই+য়ে ধরণের, মানে-_[ হাঁসিলেন ] 

শিরোমণি । [সজোরে নস্তের টিপ টানিয়া ] রাগ 
করবার আর কি আছে এতে । ও ভাঁষা বুঝিও না, ওর 
রসও পাই না। 

রঙ্গলাল। ভাঁষা বোঁঝবাঁর তে। কিছু নেই, স্থুরটা কানে 
লাগলেই হল! স্থুরটাই আসল, অমন যে ব্যাকরণের উপসর্গ, 
তাঁও স্ুর-সংযোগে উপভোগ্য হয়ে উঠেছে । 


গ্রলরাপ সমস্বব নিরহুরভি 
ব্যধি সদতি নিপ পতি পর্ধ্যপন্ঃ 


শিরোমণি । [ উচ্চভীবে | আমি সব স্থুরই বুঝি, বুঝলে 
বাবা। টোলে কাব্য অলঙ্কার পড়তে হয়েছিল আমাকে) 
কিন্ত তোমরা, আজকালকার ছেলেরা কেবল একটি স্ুরই 
বোঝ, আর সব বিষয়ে তোমরা অসুর | * 
রঙ্গলাল কোন উত্তর ন| দিক! ন্মিতমুখে চাহিয়া রঠিলেন 
(আগামীবারে সমাপ্য 





ও তত 


স্বর্ণকমল ভট্টাচার্য্য 


বার 

পরদিন সারাসকাল মন্দাকিনীর এতটুকু ফুরসৎ নাই। 
ছেলের বাক্স সাজাইয়াছেন, বিছানাপত্তর বাধিয়া রাখিয়- 
ছেন- লুচি, হালুয়া আর পাতক্ষীর দিয়াছেন পথের 
খাবার; টিফিন-ক্যারিয়ারে নারকেলের খাবারগুলি কলি- 
কাতা গিয়৷ দুদিন রাখিয়া খাইবার মত; আমসত্ত, চাঁল্‌তে- 
পিঠা, মুড়ির হাঁড়িতে রাখা শীতকালের নতুন খেজুর গুড়__ 
এমন অনেক কিছুর গুটি তিনেক ছোট পৌটলা । 

বেলা যত বাড়ে, মন্দাকিনীর বুকের মধ্যটা কেবলি হু-হু 
করিতে থাকে । আর ঘণ্টা চারেক--তার পর পুত্র আর 
এখানে নয়। আবার দেখা পাইবেন এক বংসর পরে-_ 
বড়দিনের ছুটিতে আসিবে তাহার ভরসা কি! শেষকালে 
বাড়ী হইতে ছেলেকে তিনি তাড়াইয়া দিলেন নাঁকি? 
মন্দীকিনী কথাগুলি ভাঁবেন, আর মাঝে মাঝে আড়ালে গিয়া 
থানিক নিঃশবে কাদিয়া লন__ পরক্ষণেই এক হাতে চোখ 
মোঁছেন, আর এক হাতে কাজ সারিতে থাকেন ।.. 

পুত্র 'কাল রাত্রে যে-কথাটা বলিয়াছেঃ সে কি তবে 
সত্য? মিথ্যা হইবার তো কথা নয়। চিঠি পর্য্যন্ত 
দেখাইয়াছে_-মাকে পড়িয়া দেখিতেও দিয়াছে । প্রত্যক্ষ 
প্রমাণ | 

প্রথমটায় মন্দাকিনী কিন্তু কথাটায় তেমন গুরুতত 
দেন নাই । এই কয়দিনের অবিরাম অভিবোগ ও 'অভি- 
দানের সঘন বাঁম্পবেদনার মধ্য সহসা! আর একটা উৎপাত 
পথ করিয়! লইতে পারে নাই । কিন্তু কাল সাঁরা রাত আর 
আজ এই বেলা এগাঁরটার মধ্যে-_ এই ঘণ্টা পনের বাইতে না 
যাইতেই অণিমা ধীরে ধীরে 'মআাড়ালে সরিয়! পড়িতেছে এবং 
একটি 'অপরিচিত যুবতি মেয়ের একখানি কল্পিত মুখ মন্না- 
কিনীর শাস্কিত মন জুড়িয়া বসিতে চাঁয় |... 

আর ঘণ্টা পাঁচেক 1... 

তারপর ছেলে তার সতর্ক দৃষ্টির আড়ালে-__তার 
নাগালের বাহিরে- সুদূর কলিকাতাঁয়। ছেলের যাত্রার 
সময যতই 'আগাইয়া আসে, মন্দাকিনী ততই অজানা 
“শঙ্কায় উতলা! হইতে থাকেন। কাছে থাকিয়া যাহাকে 
লইয়া এই সাতটা দিন এত দুর্ভোগ ভূগিতে হইল, সেই 


ছেলের কলিকাতাঁর দিনগুলি কল্পনা করিতেও মন্দাকিনীর 
বুক টিপটিপ করে। শত হক তবু তে ছেলে কাছেই। 
অণিমাঁও তো বকুলতলারই মেয়ে। এ যে শত সহমত 
যোঁজন দূরের, সব বাধানিষেধের বাহিরের, অজান! অদেখা 
অপরিচিতা৷ একটি সন্ুরে মেয়ে । ... 

মন্দাকিনী নিঃশবে কাদেন । রাগে না দুঃখে, ভয়ে না 
অভিমানে-_কে জানে । এই এক সপ্জাহ অণিমার সঙ্গে 
যুঝিতে গিয়া শঙ্কায় কীপিয়াছেন, অভিমানে ফুলিয়াছেন, 
রাগে দুঃখে ফাটিয়া পড়িয়াছেন-__করিয়াছেন ও দেখাইয়াছেন 
এমন অনেক কাও! কিন্ধ কলিকাতায় তো মন্দাকিনী নাই ! 
মন্দাকিনীর ঘত শক্তি, যত উপায়, বত কলাকৌশল শুধু 
এখানেই-__এই বকুলতলায়--এই অণিমাঁর বেলায় । 

মন্দাকিনীর বুকের মধ্যে তোলপাড় স্থুরু হয়। চোখ 
বুজিয়৷ ভগবানের কাছে বার বার ব্যাকুল প্রার্থনা 
জাঁনান।.. ছেলের স্থমতি হউক্‌। নিশ্চয় তাহার ছেলের 
মন্তিফ বিকৃতি ঘটিয়াছে । নইলে অমন নির্লজ্জের মত নিজের 
মাঁষের কাছে কখনো বলিতে পারে__-“আমি মেয়েটিকে 
ভালোবাসি । তার সঙ্গে এক স্টমারে কলকাতি। যাচ্ছি ।৮... 
নিশ্চয় তাহার চরিত্র নষ্ট হইয়াছে । মিথ্যা বলিতে মুখে 
আটকায় না। পাপপুণ্যের বাছবিচার নাই! অণিমার 
সঙ্গে এ কয়দিনের ব্যাপারটা তো! প্রায় তার চোখের 
উপর দিয়াই ঘটিয়া গেল। আর কত?" কাল তারই 
চোখের উপর অণিমা! অমন শক্ত করিয়! তাঁরই ছেলের 
কৌচার খুট ধরিয়] রাখিল বেহায়ার মত, তার পরেও 
ছেলের কথাকে তিনি বিশ্বাস করিবেন নাকি ! কলিকাতায় 
ন৷ জানি সে আরো কত অনাহষ্টি করিয়া বসিয়াছে। কত 
নমিতা আছে তাহার ঠিককি! কিনোংরা প্রবৃত্তি! পুত্র 
তাগর পাপের পথে পা বাড়াইয়াছে। শঙ্কিত জননী 
ভগবানের কাছে ছেলের কল্যাঁণ কামনা করেন বারবার |: 
পুত্রের মনের এই কুশ্রী ব্যাধি_ন্ুস্থ হ'কঃ স্বাভাবিক 
হক্‌ সে, মানুষের মত মানুষ হক- তাহার বাঁপ ঠাকুরদার 
নাঁম যেন ডোবায় না শেষকালে ! হে ভগবান। .. 

সুনীলের সারা 'সকাল কাটিয়াছে এ-বাড়ী ও- 
বাড়ী, এপাড়া ওপাড়া_-সকলের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ 


পৌষ--১৩৪৭ ] 


দারিতে। যায় নাই শুধু অণিমাদের বাড়ীতেই। 
অণিমার চোঁথের জলকেই সে ভয় করে এখন । কাদিবে 
সে, ভীষণ কাঁদিবে। এ-কান্না আগের ও-সব ভালকা! 
কানা নয়। এক্রন্দন অপমানের, চূড়ীস্ত উপহাসের ! 
ঠাকুরদার সঙ্গে প্রয়োজনীয় সাংসারিক কথাবার্তা শেষ 
করিয়াছে । সুনীল যেন আসামী, আর ব্রজনীথ বিচারক__ 
এমনি ভারাক্রান্ত ব্যবধান আঁজ। নীলুকে কাঁছে ডাকিয়া 
আদর করিতে গিয়া লজ্জিত হইয়াছে । বোনের মুখে-চোখে 
কেমন যেন সলজ্জ ভাব। তার দাদ| যেন আর সে দাদা 
নাই_-পর না হইলেও আর তেমন আপন নয় যেন। এমন 
কি, বাঁবলুও আগের মত গলা জড়াইরা ধরিয়া দৌরাত্ম্য 





করে না। ডাঁকিতেই কাছে আমে__ধেন না 'আঁসিলে নয় 
এমনি ভাঁব। 
অন্যায় কি! সে বে আঁজ সত্যই অপরিচিত _ 


অপরিচিত ভাইয়ের কাছে, বোনের কাঁছে, নিজের মায়ের 
কাছে। অপরিচিত সে অণিমার কাছেও । নহিলে মেয়েটা 
তাহাকে অতথানি বিশ্বাস করিযা এমন ভুলও করে! 
বাঁদলদা! কি চিরকাল একই বাঁদলদ1 থাঁকিবে নাঁকি। 
যে তাঁর অনস্বীকার্য বয়স, অবিশ্বীস্ত মন !-.. 

বকুলতলা সত্যই তাহাকে ভাল করিয়! চিনে না আর। 
তাঁর একট! দিক--তার সব চেয়ে বড় দিকটাই এখানে 
একেবারে অজ্ঞাতি, অবজ্ঞাত ! নিজের সংসারে আপন জনের 
কাছেও সে আজ অনেকখানি পর-বৎসরান্তে দিন 
কয়েকের এক বিদেশী অতিথি যেন। এক কালে পরিচয় 
ছিল, পনিষ্ঠত! ছিল-_-এই যা ভরসা, এই যা দাঁবি। 

সে আজ বকুলতলার কতথখাঁনি? তার মধ্যে বকুলতলাই 
বা কতটুকু? বাঁর মাঁস থাকে সে বিদেশে । তিন শ পয়ধি 
দিনের তিন শ পর্চান্ন দিনই কাঁটে তাঁর কলিকাতীয়-_ 
মহানগরীতে কাটে তার সকাল সন্ধা, বর্ষা বসন্ত, প্রতি ঘণ্টা, 
প্রতিটি মুহূর্ত--সমগ্র 'অন্তিত্ব! জীবনের শেষ দিন 
পর্য্যন্ত এ কলিকাতা! গুধু তাঁর কন্মস্থলই নয়, জীবনের 
লীলাস্থল। মৃত্যুর পরেও তাঁহাকে দাহ করিতে পদ্মাপারে 
লইয়। আসিবে না কেহ-__নিবে নিমতলায়) না হয় কেওড়া- 
তলায়। কলিকাতাই তাহার দেশ, বকুলতলা বিদেশ 
এখানে দুদিন বেড়াইতে আসে, বেড়ায়! যায়, ভালই 
লাগে, একটু বৈচিত্র্য হয়, ব্যস! ভাঁববিলাঁসের আশ্রয় না 


আজ 


ভীল্ল ও ভল্ত্ 


১১০ 





নিলে, এই তো! সম্বন্ধ তাহার বকুলতলার সঙ্গে-_মন্দাকিনীর 
সঙ্গে, অণ্মার সঙ্গে, সকলের সঙ্গে !.''".. 

আজো! হয় তো কিছুটা আকর্ষণ অবশিষ্ট আছে। বকুল- 
তলার রক্তের খণ একেবারে শোঁধ হয় নাই হয় তো! 
তাঁহ]ও বলিষ্ঠ যৌবনের কাছে সুদূর শৈশবের মত-_ফিরিয়। 
পাইবার আকাজ্কা নয় আর, একটুখানি ' এঁতিহাসিক 
স্থথস্থৃতি মাত্র ! 

তবু নাঁকি বকুলতলাকে সর্বক্ষণ মনে রাখিতে হইবে-_ 
সরল বিশ্বাসে মানিতে হইবে তার সহন্ম খণ, তার অসংখা 
দাবী। তাঁহয় না। এই ছুধারার দ্বন্দ অসহা, এই দোটানার 
দোলন প্রাণান্ত। তাই মে কলিকাতায় বেখাঁপ, বকুল- 
তলাঁয়ও বেমানান । যেন সে ঘরেও নয়, পারেও নয় 
আছে শুধু মাঁঝখানে-_এপাঁর একদিন ভাঙ্গিবেই__ভাঙ্গিবে 
বকুলতল!। ওপারে জাগিবে চড়-_নৃতন সৃষ্টি) স্পষ্ট স্ৃষ্টি। 

বসিয়! বসিয় ভাবে সুনীল । যুক্তির পর যুক্তি আসে, 
আবেগের পর আবেগ। কুযুক্তি? হয় তো তা-ই, হয় 
তো নয়। শুধুই বাপ? ক্ষতি নাই। এখন দে 
গোটা দুনিয়াকে ঢালির! সাঁজিতে পারে । আজকের 
সর্বাপেক্ষা কঠিন কাঁজটাকে সহজ করিবার জঙ্ই 
অপিমার কাঁছে আর খানিক বাদেই বিদায় লইতে হইবে। 
বাকী আছে সেই পরিচ্ছেদটাই । দেখিতে হইবে আর এক 
পালা ক্রন্দন । তারই জন্ত প্রস্তুত হইতেছে সুনীল ! মনে 
মনে শানাইতে থাকে অন্ত্র__খাড়া করে 'চিত্যের পাহাড়, 
দাড় করায় পর্বত-গ্রমাণ সমর্থন! নমিতা হক, যে-কেহ 
হক-_অণিনা নয। তার মনের সঙ্গে বকুলতল! তাল 
রাখিয়া চলিতে পারিবে না ছ্রোঁচিট খাইবে পদে পদে-- 
অনৈক্য আর অনর্থের বোঝায় জীবন হইবে ভারাক্রান্ত-_ 
অনড়, আড়ষ্ট, পঙ্গু !... 

ডাঁক দিয়াছে নমিতা । তার চিঠির মধ্য দিয়া ডাক 
দিয়াছে মহানগরী_-তাঁর জীবনের, যৌবনের ডাঁক। 
কলিকাতা 1...... প্রতি প্রাতে ঘুম ভাঙগিতেই যেখানে তার 
মুঠার মধ্যে গোটা ছুনিয়।। মস্কো থেকে মান্দালয়_- 
হংকং থেকে হনোলুলু উর্ধশ্বীসে ঘুরিয়া আসে আধ 
ঘণ্টায়।__ইতালীর হুমকি, জন্দীণীর' শক্তিসঞ্চয়, 
রাশিয়ার হালচাল... গোল টেবিলের তোড়জোড়, গান্ধী» 
লাট সাক্ষাৎকার, বোস্বাই পুলিশের নিবিবিচার লাঠিচালনা, 


১০২ 


ন্ত্রাগার লুন মামলার গুনানী, চুরি ডাঁকাঁতি, ব্যাভিচার, 
নারীহরণ, দুভিক্ষঃ জলপ্লাবন, মহামারী, মহোঁৎসব--এক 
নিঃশ্বাসে স্পন্দিত হয় সঙ বর্তমান! বেগ আর বেগ, গতি 
আর গতি--জীবনের সঙ্গেই যাঁর ছন্দ, যৌবনেরই সঙ্গে 
যার যতি! শতলক্ষ ঘটনার উপলথণ্ডে উচ্ছলিত হইয়া 
চলে স্থবিপুল 'কর্ম-প্রবাহ ! 

তবু সেই মহানগরীর সঙ্গে সে পুরাপুরি মিলিতে পারিল 
কৈ! আবার বকুলতলার মনের সঙ্গে জলের উপর তেলের 
মত ভাঁসিয়৷ থাকে_-মিশ খায় না। তাঁর প্রবহমান মনের 
এপারের তীরই শুধু ভাঙ্গিয়াছে__ভাঙ্গিতেছে। ওপারে 
আজে! চর জাগে নাই। সে যেন ভাঙ্গা আর গড়ার 
মাঝখানের প্রাণাস্ত “ইতিমধ্যঠ | ছুদিকের টান মানিয়! 
নিজের মধ্যে নিজেকে শুধুই গুটাইয়া রাখিতে চায় নিক্ষল 
ভারসাম্যের নিরাকার দূরাশীয়। সে প্রজাপতি নয়, গুয়ো 
পোঁকা তেমনি অদ্ভুত উত্ভট উৎকট তাঁর মনের খেলা 1." 

এই সাতটা দিন সে যেন ফিরিয়া 'আসিয়াছিল 
অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে । আজ আবার বিংশ 
শতাবী ডাক দিয়াছে তার কর্মক্ষেত্রে। উঃ। এই 
সাত দিন খবরের কাগজ পড়িতে না পাইয়া স্থনীলের 
যেন দম বন্ধ হইবার উপক্রম ! এই চলম্ত মনের সঙ্গে পাল্লা 
ছ্লিয়া চলিবে অণিমা? তা-ও কি সম্ভব? যদি সম্ভবও হয়, 
অণিমাঁর সেই সাহস কোথায়? সুনীল তাহাকে কলিকাতা 
লইয়! যাইতে প্রস্তুত । সেখানে থাকিয়! লেখাপড়া করিবে, 
মানুষ হইবে, নিজের পায়ে নিজে দ্রাড়াইবার পথ মিলিবে, 
স্বনীলকে বাদ দিয়াও নিজের জীবন-_যেমন খুশিঃ যেখানে 
খুশি-_গড়িয়া৷ তুলিতে পারিবে । সুনীল তো তাহাকে 
মুক্তি দিতেই চায়। কিন্তু অণিমার যে পায়ে শিকল! 
বিদ্রোহ করিয়া শিকল ছি'ড়িবে সেই শিক্ষা বা সেই 


“বাদলদা।” 

সুনীল চমক ভাঙ্গিয়া চাহিয়! দেখে, অণিমার ছোট 
ভাইাটি আসিয়া পাশে দাড়াইয়াছে। হাতে একখানি 
ছোট চিঠি--ভাজ করা। 

“বাদলদা, ম! আঁপনায় একবার যেতে বলেছেঃ” বলিয়াই 
চিঠি দিয়া ছেলেটা চোরের মত চলিয়া যায়। 

চিঠি দিয়াছে অণিমা : 


ভ্ঞাঞ্রভ্ন্যন্্ 


[ ২৮শ ব্য--২য় খণ্-১ম সংখ্যা 


বাঁদলদা, শুনিলাম আজই আপনি চলিয়া যাইতেছেন। 
যাইবার আগে অবশ্ত অবশ্ঠ একবার দেখ! করিবেন। 

, অণিমা 

স্থুনীলের সারা শরীরের রক্ত আবার নাচিয়া ওঠে। 
অণিমা ভাকিয়াছে। অণিমার হাতের লেখা । অণিমার 
অনুরোধ । দেখা না করিয়া সে যাইবে নাঁ__এখনই যাঁইবে। 


অণিমাঁদের ঘরে ঢুকিয়াই সুনীলের চক্ষু স্থির। একি 
কাণ্ড! অণিম! একট! ট্রাঙ্কের মধো তাহার জামা-কাপড় 
পুঁথিপত্র সব গুছাইয়৷ প্রস্তুত হইয়া আছে। 

“বাদলদা, আপনার সঙ্গে আমিও আজ কলকাতা 
যাঁচ্ছি।” 

“সে কি!” 

“আপনিই তে কাল নিরে যাঁবেন বলেছেন। আঁমি 
মেয়েদের বোঁডিংএ থেক পড়ব 1” 

কোথা সেই রোরুগ্যমানা অসহাঁয়া অণিমা। স্থির 
সহজ দৃষ্টি_দৃঢ়সঙ্ল্পের স্পষ্ট ছাঁপ মুখ চোখে। গম্ভীর 
কণেই প্রশ্ন করে? “কী ভাবছেন ?” 

“তা-স্া-তবে, আগে থেকে_* 

“আমার পড়ার খরচ চালাতে কাল না আপনি রাজি 
হয়েছেন ! আমি চাঁকরি করে একদিন 'আপনার সব টাকা 
শোধ করে দেব বাঁদলদা।__ধুবড়ী ছেড়ে চলে না এলে এদ্দিন 
আমারো একটা পথ হত--আনাদের বিজয়াদি তো আমায় 
রেখে দিতেই চেয়েছিলেন, বাঁবা কিছুতেই রাজি হল না। 
আমার সর্বনাশ করতে ওর! বাঁকি রাখেনি কিছ ।” একটা 
দীর্ঘনিঃশ্বাস চাপিয়া গিয়া অণিমা গড়গড় করিয়! বলিয়া 
যায়, “কাল রাত্তিরে মার সঙ্গে ভীষণ ঝগড়া হয়ে গেছে। 
আপনার সঙ্গে আমায় কিছুতেই যেতে দেবে না। জাঁত 
যাবে। নিন্দায় পৃথিবী রসাতলে যাবে । আমি কিন্তু যাঁবই। 
এখন আমার একটা পথ করে দিন, বাদলদা। আপনার 
ধণ আমি কড়ায় গণ্ডায় শোধ করে দেব, শপথ করছি ।” 

সুনীল হতবাক্‌। অণিমা এ-সব বলে কি। কাল 
ঝেণকের মাথায় একটা কথার কথা বলিয়াছে মাত্র। 
অণিমা" তারই উপর ভরসা করিয়া বাক্সবিছান! 
গুছাইয়৷ একেবারে রুলিকাতা যাইবার জন্ট প্রস্তুত! 
পাগল নাকি ! | 


পৌষ--১৩৪৭ ] 








দকথা বলুন” 

“কিন্তু অগিমা-_” 

«কিন্ত-টিন্ত শুনব নাঃ আমি যাবই। এখানে থাকলে 
ওরা আমাকে ধরে বেঁধে যার তার হাতে গছিয়ে দিয়ে হাঁফ 
ছেড়ে বীচবে। তাঁর আগে আমার পথ আমিই খুঁজে 
নেব। আপনিই তো কাল বলেছেন, অণিমা তোর সাহস 
আছে?--পারবি যেতে ? সাহস আমার আছে বাঁদলদ1।” 

“ন-কাঁকা আর কাকীমার অমতে কী করে তোকে 
নিয়ে যাব?” 


“আমি তো আর কচি খুকী নই |” 

“কিন্ত এর মধ্যে অনেক কিছু ভাববার আছে অণিমা |” 

“কিসের ভাঁবন! ?” 

“অনেক কিছু |” 

“সমাজ ?” 

“না, সমাজের আইনের চেয়েও বড় আইন আছে 
অণিমা । ন-কাঁকা ইচ্ছে করলেই আমাঁষ বিপদে 
ফেলতে পারেন ।” 


“কিসের বিপদ? আমি তো খুকীটি নেই আর-- 
আমায় ভাড়াবেন না| বাদলদা। আপনারই নিয়ে যেতে 
সাহস নেই বলুন ।” 

“হঠীৎ_আগেভাগে ববস্থা না করে-তোকে'"' 
কলকাতায় কোথায় নিয়ে তুলব? মেসে তো আর মেয়েছেলে 
নিয়ে ওঠা যাঁয় না|” 

_ *ছুদিন নমিতাদের বাড়ীও থাঁকা যাবে না ?” 

"দুর থেকে কলকাতা সহরটাকে যে কী ভাবিদ্‌ 
তোরা । সেখানে আতিথ্য মেলে না অনু। আমি আগে 
কলকাতা যাই, গিয়ে সব ব্যবস্থা করি, তখন তুই রওয়ানা 
 হবি_আমি চিঠি দেব |” 

“সে আপনি দেবেন না তাবেশ জানি ।” “এ সন্দেহ 
কেন তোর?” “আপনার কোনে! কথায় আর আমি 
বিশ্বাস করতে পারি না। "এ ক'দিন তো মিথ্যার ওপর 
দিয়েই চলে এসেছেন । আজ একটু সত্যি কথা বলুন। 
আপনার সাহস আছে আমার ভার নেবার? পারবেন? 

“কলকাতা গিয়ে কার ভরসায় থাকবি জিগগেস করি ?” 

“আপনার ।” 

“তাহলে আমায় এত অবিশ্বাস 'করে লাভ কী শুনি? 


ভীল্প ও অন্যত্র 





১৯০, 





মিথ্যাই যদি. ব্যবসা আমার, তোকে আমি তো সর্ধনাশের 
পথেও টেনে নিয়ে যেতে পারি-আমার সঙ্গে যেতে চাঁস্‌ 
তবে কোন্‌ সাহসে 1” , 

অণিমা এবার চুপ করিয়া থাকে। খানিক বাদে 
করুণ কণে প্রশ্ন করে, “পরে আমি কার সঙ্গে যাব? 
কে আমায় দিয়ে আসবে--কার অত দায় ঠেকেছে ?” 

এবার সুনীল চুপ করিয়া যায়। ্‌ 

অণিমা তাঁহার ছলনা ধরিয়া! ফেলিয়াছে। বুঝিতে 
পারিয়াছে, অণিমাকে লই যাইবার ক্ষমতা তাহার নাই-_ 
অথবা সেই ইচ্ছাও তাহার নাই। তবে তাহাকে লইয়া 
এমন মাছ খেলাইবার কি প্রয়োজন ছিল? 

“বলুন বাদলদা, আপনারই সাহম নেই। মুখে অনেক 
বড় বড় কথাই বলতে পারেন, মনে ভাবেন আর ।” 

“অন্ধু, তুই সব কথা ভালো করে ভেবে দেখিস্‌ নি। 
তোর মাথা এখন ঠিক নেই ।” 

“কাল তবে অত করে বললেন কেন?” অণিম|! হুতাঁশ 
দৃষ্টি মেলিয়া চাহিয়া থাকে সুনীলের মুখের দিকে ! এ যেন 
সেই বাঁদলদা নয়__ প্রথমদিনের সেই দীর্ঘ বলিষ্ঠ সহান্ত 
বাদলদা আর নাই !__ভীর, দুর্বল, কাপুরুষ ! ৃ 

“অঙ্গ, আমার সঙ্গে কলকাতা যাবার অর্থ বুঝিস ?” 


“বুঝি 1”-_স্পষ্ট উত্তর | 
“বাপ-মার অমতে একাজের পরিণাম কী হবে 
তা জানিস্‌?” 


“জানি”__ দৃঢ়কণ্ঠের জবাব । 

“তোর বাবা-মা গায়ে আর টিকতে পাঁরবে ড় 
ভেবে দেখেছিস ?” 

“দেখেছি । গায়ের এ-সব শেয়াল-কুকুরের চিৎকার 
আমি গ্রাহ্‌ করিনা ।” স্তুনীলের কালকের উক্তিটাই অণিম। 
আজ পাল্টা জবাবে ফিরাইয়! দেয় । 

“তুই এত বড় স্বার্থপর অনু ?__বাঁবা, মাঃ ভাই, ধোন 
এদের কী গতি হবে সে সব ভাবনার মধ্যেই ধরছিস্‌ 
না। লোকনিন্দায় তাঁদের যে গ্রাম ছেড়ে পালাতে হবে। 
যাবে কোথায় তারা? গীয়ের মেয়ের! নকাকীমার ইন্কুলে 
আর পড়তে আসবে ভেবেছিস? থাঁবে কী?” 

“লোকনিন্দার আরো বাকি আছে' ভেবেছেন !- সারা 
গায়ে আমাদের নিয়ে কী যে সব রটন! হচ্ছে তা যদি' 


১৯০৪৪ 





টন্তেন”-_-এতক্ষণের তেজন্বিনী অণিমা এবার কীদিয়া 
ফেলে। নিরুপায় সুনীল চুপ করিয়! চাহিয় থাকে শুধু। 

“আপনাদের পয়সা! আছেঃ লোকে মুখের উপর বলতে 
ভয় পায়।” অণিম! ফোপাইয়া কাদিতে থাকে, “আমাদের 
গরিব পেয়ে তারা অপমান করতে ছাঁড়বে কেন ?” 

সুনীলকে এই মহা বিপদের হাত হইতে উদ্ধার করিলেন 
সুলতা । পুকুর ঘাঁট হইতে ফিরিয়া আসিয়৷ স্থনীলের 
গলার আওয়াজ পাইয়াই ঘরে ঢুকিলেন। 


অণিমার্দের বাড়ীর বাহিরে আসিয়া সুনীল স্বস্তির 
নিঃশ্বাম ফেলিয়া বচে। মেয়েটা সত্যই পাঁগল !... 

সত্যই, স্থনীলের শক্তি নাই, সাহস নাই__সাহস নাই 
গ্রামের পচজনকে অন্বীকার করিবার, সাহস নাই 
মন্দাকিনীর চোখের জল অগ্রাহ্য করিবার । অপণিমাঁর পায়ে 
শিকল, স্থনীলের শিকল মনে | 

সত্যই সে ভীরু। অস্প8 বলিয়াই কপট, ছূর্ব্বোধ 
বলিয়াই অক্ষম । তার এতদিনের অহঙ্কৃত আত্মপরিচয়ের 
তলে যে এতবড় ফাঁক ছিল তাহা টের পাইল সে আজ। 

বাড়ীর উঠানে পা দিতে মার গলার আওয়াজ 
পাওয়া যায়। রান্নাঘর হইতে নীলুকে ডাকিরা কি যেন 
বলিতেছেন । . সেই কণম্বর। সেই মা! এক মুহূর্তে 
মনে পড়িয়া যায় বাল্যের আর কৈশোরের খণ্ড অথগ্ড 
অসংখ্য কহিনী_মার আদর, মার উৎ্কা, মার সন্গেহ 
শাসন। সব চেয়ে বেণী করিয়া কি জানি কেন সহসা 
আজ মনে পড়িয়া গেল--বহুকাল আগের একটা 
তুচ্ছ ঘটনা । বাবার কাছ হইতে তাড়া খাইয়া ভয়ে 
ভয়ে ছয়-সাঁত বছরের থোকা গিয়া মার নিশ্চিন্ত কোলে 
আশ্রয় নিয়াছে__সেই সিদু'র-পরা সি'থির উপর আচলের 
চওড়া পাড়, এক দোহার! দেহকাঁও, শ্যামল সুন্দর একখানি 
মুখ, সহাশ্ত সলজ্জ একজোড়া চোখ! মনের পটে এক 
নিমেষে জাগিয়! মিলাইয়। যায় সেই ছবিখানি ! মনে পড়ে 
পিতার চোখ রাঙানো, আর জননীর পুত্রপক্ষ সমর্থন | 
মনে পড়ে কতদিনের কত কপা! সেই মার জন্ত স্থনীল 
প্রয়োজন হইলেআরো৷ কিছু ত্যাগ করিতে পারে। যেন 
_ন্ুনীল নিজেকে এখন বারবার বুঝাইতে চাঁয়__সেই মার 
'জন্ঠই সে এতখানি সহ করিয় গেল! 


ভ্ডান্রভবহ্ব 


[ ২৮শ বর্--২য় খণ্ড-_-১ম সংখ্যা 


“থোকা! এসেছিস ?” 

গ্ঠ্যামা! ডাকছে আমায় ?” 

"মাইতে যা এবার” বলিতে বলিতে মন্দাঁকিনী বাহির 
হইয়! পুত্রের সম্মুখে আসিয়া দাড়ান । সুনীলের কল্পনার রাঙা 
বেলুনটা ফাটিয়া যায় এক মুহূর্তে। মার দিকে থানিক নিম্পলক 
চাহিয়া থাকিয়া চোখ ফিরাইয়৷ নেয়। কোথায় সেই 
ন্নেহসর্ববস্ব বধূ-মা ! স্থনীলের সন্মুথে এখন দাড়াইয়। আছে 
অভিমানী রাঁশভারী এক প্রৌট়া বিধবা, ধীর দুর্দমনীয় 
জেদের মুখে পুত্রের নিভৃত মনের দৃঢ়সঙ্কল্ল সব খসিয়া ভাসিয়া 
যায়! তবু তার মনস্কামনাই পূর্ণ হউক্‌। 

“মা, তোমার সেই ফোটোখান! কোথায গো ?” 

“কোন্‌ ফোটো ?” 

“সেই ঘে আমার ছোটিবেলায় তোমার সঙ্গে তোল! ।” 

“বাক্সে রেখে দিয়েছি__নষ্ট হযে গেছে, ভালো বোঝা 
যাঁয় না আর ।” 

“আমার সঙ্গে দিয়ে দাও--কলকাতাঁয় ওর থেকে নতুন 
করে একটা ফোটো তুলিয়ে নেকখন।- এখনো সময় 
আছেঃ পরে একদম নষ্ট হয়ে যাবে। ফোঁটোটা কাগজে 
জড়িয়ে আমার বাক্সের মধ্যে মনে করে রেখো! কিন্তু 1৮ 


তের 


মন্দাকিনী, মানদা, নীলু আর বাবলু আসিয়া! নদীর 
পাঁড়ে দাড়াইয়াছে। আর খানিক পরেই তাহাদের গ্রামের 
কাছ দিয়া ঢাঁকা-মেল্‌ যাত্রী লইয়া! চলিয়া! যাইবে স্দূর 
গোয়ালন্দে- তারপর কলিকাতায় । 

বা দিকে গ্রামের শেষে মাঠের ওপারে বুক্ষশ্রেণীর 
ওপিঠেই তারপাশ। স্টেশন । ঘণ্টাখানেক হয় সুনীল 
বিদায় 'লইয়া চলিয়া গিয়াছে-_সঙ্গে গিয়াছেন ব্রজনাথ 
আর নন্দ দাস। বহুদূরে গাছপালার মাথায় রাশি 
রাঁশি ধোঁয়া উঠিতেছে উর্মা আকাশে_স্টামার এখনো 
তারপাশা স্টেশন ছাড়ে নাই । 

নিকারীপাড়ার গুটিকয়েক ছেলেমেয়ে আসিয়া 
দাড়াইয়াছে জাহাজ দেখিবে বলিয়া। মন্দাকিনীদের 
কুকুরটাও আসিয়! দলে ভিড়িয়াছে--একটা জাম গাছের 
তলায় শুইয়া লেজ নাড়ছে। 

এবারের মত বর্ষা বিদায় নিয়াছে। আর সেই রুদ্র 





স্ম্চ-ব স্হচ সস 


রূপ নাঁই। শীতল পাটির মত নিন্তরঙগ পল্মা। যেন . 


একটা প্রবল উত্তেজনার পর প্রতিক্রিয়ার ক্লাস্তি-ন্ুখ 
উপভোগ করিতেছে। হৃরধ্য পশ্চিমে হেলিয়াছে বহুক্ষণ। 
গ্রামের মধ্যে এখন অপরাহের ম্নানাভ ছাঁয়; কিন্ত গাঙের 
পাড়ে এখনো ডগ্ডগে রোদ । ৃ 
মন্দাকিনী আচলে চোখ মোছেন, আর ঘন ঘন তাঁকাঁন 
নদীপথে- দূরের বাকটার দিকে । পুত্র চোঁথের অন্তরাঁল 
হইবাঁর সঙ্গে সঙ্গে মনে এখন তাঁর ঘত রাঁজোর ভয়-ভাঁবনা__ 
এ-কয়দিন তবু তো সে চোখের সামনেই ছিল । আজ- এই 
এতক্ষণেঃ এই বিচ্ছেদবেদনার মধ্যে মন্দাকিনী এতকাঁলের 
অস্পষ্ট সত্যটাই স্পষ্ট করিয়া বুঝিলেন : ছেলে তাহার 
সত্যই পর হইয়াছে । আর সে ছোট নাই। আর তাহাকে 
নাগালের মধ্যে পাইতে চাওয়া! নিক্ষল প্রয়াস। সে এখন 
বাহিরের, সে দূরের, সে সবার--সে বকুলতলার অতি-আপন 
হুইয়াও আর বকুলতলার নয়। সে অচেনা? সে অজানা, 
হিমালয়ের চুড়ার মতই অনতিক্রমনীয় তাঁর মনের 


তবু এই রূঢ় কথাটা তিনি বুঝিতে চাঁন না যে! মন 
মানে না কোন সতো। কেন ছেলে দূরের হইবে? 
কোথায় যাইবে সে? মন্দাকিনী তাহাকে এখনো ধরিয়া 
রাখিতে পাঁরেন। বকুলতলার ছেলেকে বকুলতলায়ই 
বাঁধিতে পাঁরেন__ অন্ততঃ পাঁরিতেন। এ ক'দিন ভুল 
করিয়া আসিয়াছেন আগাঁগোড়া। আর মানয়। অণিমা 
পারে__অণিমাই পারিত। তুল-মস্ত বড় ভুল করিয়া 
বসিয়াছেন।... 

দুরে স্টীমারের বংশীধবনি শোনা যাঁয_ এই বুঝি 
তারপাশা স্টেশন ছাড়িয়া গেল। গাছের মাথায় অজস্র 


মেঘায়িত ধোঁয়া সরিযী আসিতেছে সামনের দিকে 
ক্রমে ক্রমে । 

কখন সবাঁর অলক্ষ্যে অণিমা আসিয়া একটু দূরে 
দাড়াইয়। আছে একট! গাছের আড়ালে। 


মান্দা লক্ষ্য করিন সবার আগে। মন্দাকিনীকে 
উস্কাইয়! তুলিতে পারিবে এই আশায় ফিশফিশ করিয়া 
কহিল, “বৌমাদিদি ! এ দ্যাখো, এসে দীড়িয়েছে।” 
কে?” 
“কে আর কে !-_এ্ী যে বকুল গাছটার ওপাশেই ।” 
১৪ 





এ পপি আপ 


গলা ছাঁড়িয়াই কথাটা 





“কে, . অঙ্ক ?* মন্দাকিনী 
কহিলেন ।, 

চোখাচোখি হইতেই অণিমা মুখ ফিরাইয়। নেয়। 
মন্দাকিনী কিন্তু আগাইয়া যান “অণুঃ ওথানে দীড়িয়ে 
কেন ?_আয় না এখানে ।* 

খানিক . ইতস্তত করিয়! অণিমা আর সকলের কাছে 
আসিয়া দীড়ায়। মন্দাকিনী যেন এক সমালোচকের নুক্ষ 
দৃষ্টি দিয়া তাঁহাকে আঁপাঁদ-শির দেখিয়া লইলেন। মেয়েটার 
সত্যই কপাল মন্দ। এই বয়স আর এই ভরা যৌবন 
লইয়াঁও একটা পুরুষের মনকে জয় করিতে পারিল না! 
ঠাঁর ছেলে কি এতই কঠিন, এতই বিরাট ?"-.-*. 

“অপু” 

অণিমা মাথা হেট করিয়াই আছে । 

“অণু১ নমিতা কে রে?” 

ম্মণিমা বিস্মিত তইয়া 
তাকায়। 

“বল না মা» আমায় আর লুকোস্‌ নে। তুই তো সবই 
জানিস্‌!” 

অণিমা যে সব কথা জানে বড়মা তাহা জানিল কি 
করিয়া ? 

“কথা৷ বল না অণু ।” 

“কী ?” 

“নমিতাকে খোকা বিয়ে করতে চায়?” 

“তার মনের কথা আমি কী করে জানব ?” 

“মেয়েটি কেমন রে ?” 

“আমি তার কী জানি বড়মা !” 

“তবু-_তুই তো শুনেছিস্‌ সব।” অসহিষু, মন্দুকিনী ৰ 
প্রশ্ন করিতে থাকেন, “নমিতা দেখতে কেমন ?” 

“আমি বুঝি দেখেছি তাঁকে ?_ শুনেছি, দেখতে দে. 
কালো |” 

“আঃ! তাই ছেলে কালো! মেয়ে বিয়ে করতে চায়'। : 
বলে কিনা মা আমার কাঁলো, আমিও কালো! মেয়েই বিয়ে. 
করব। এয!” এই সগ্ঘ বিচ্ছেদ-ব্যথার মধ্যেও মন্দাকিনী 
কোথায় যেন গর্ব অনুভব করেন অপরিসীম । “তা দেশে 
কি আর কালে! মেয়ে মেলে না রে অণুং শহুরে মেমসাহেব 
নিয়ে আসতে হবে?” 


মন্দাকিনীর মুখের দিকে 


১৯০৬০ 


এ-কথার জবাব দিবে কি অণিমা! পায়ের বুড়ো 
আঙ,লের নখ দিয়া নিঃশবে মাটি খু'টিতে থাকে । 
বিশ্মিত মাঁনদা হা করিয়। চাহিয়া! আছে। আসলে মাথা 
থারাপ এই ঠাক্রুণেরই । ঘটনা এতদূর গড়াইবার পরেও 
আজ হঠাৎ এ কেমন ধারা মাখামাখি ! 
স্টামার স্টেসন ছাড়িয়া রওয়ানা হইয়াছে। ধোঁয়ার 
কুণগুলী ক্রমে ক্রমে আগাইয়া আসিতেছে মাঠের শেষের 
দিগন্তরেখা ধরিয়া_আর একটু আঁসিলেই ঝাউগঞ্জের 
বাঁকটা ঘুরিয়া জাহাজ বকুলতলার একটানা দৃষ্টিপথে আসিয়া 
পড়িবে। 
মোঁড়ের মুখে এবার স্টীমার দেখা গেল। অজন্্ ধোঁয়া 
ছাড়িয়া পাড় ঘেধিয়া আসিতেছে । এই এক মাইল নদী 
পথ অতিক্রম করিয়া আসিতে বড় জোর আর দশ-বার 
মিনিট। শেষবারের মত সুনীলকে দূর হইতে মন্দাঁকিনী 
একবার শুধু দেখিয়া লইবেন_হুয় তো দেখিতে পাইবেন 
সেই মেয়েটিকেও । বিচিত্র কি! হয় তো! দেখিবেন তার 
ছেলের পাশেই নমিতাও দীড়াইয়া আছে। যেদুঃসাহসী 
ছেলে তার। মন্দাকিনীর বুকটা ধড়াঁশ ধড়াশ করিতে 
থাকে। 
“অণু (৮ 
অপিমা সাঁড়া দেয় না । 
"অণু, আমার ওপর রাগ করিস্‌ নে মা।--আজকাল 
আমার বুঝি মাথার ঠিক আছে ! কী বলতে কী সব বলি।” 
' অণিমা, অবীক হইয়। উৎকর্ণ হইয়। থাকে শুধু _বথ। 
বলে ন। এই আকস্মিক ভাঁবাস্তরের কারণটা তলাইয়া 
বুঝিতে চায় । 
“অণুঃ ছেলে বড় হলে পর হয়ে যায় নারে? 
«এ সব কী বলছ বড়মা ?” 
পরে অণু নমিত| কি আমীয় মীনবে কখনে। তোদের 
মতে।। শহরের লেখাপড়া জান! মেয়ে, সে বুঝি এক 
রাত্তির এ গায়ে এসে বাস করবে ভেবেছিস ?” 
অণিমা ওৎসুক্য আর চাপিয়। রাখিতে পারে ন!। 
জিজ্ঞাসা করে, প্ড়মাঃ নমিতার কথা বাদলদা সব বলেছে 
তোমায় ?” 
“তাঁর চিঠিও দেখিয়েছে ।” 
পচিঠি 11 


.ভ্ভান্সভন্বশ্ব 


[ ২৮শ বর্ব- ২য় খণ্ডঁ-১ম সংখ্যা 


প্ঠারে। চার-পাঁচ পৃষ্ঠার এক লম্বা চিঠি দিয়েছে 
খোকার কাছে। ছেলে আমায় আবার তা পড়তে 
দিয়েছিল কাল ।” 

“পড়েছ ?” প্রশ্ন করে অণিমা । 

"আমি বুঝি ও-চিঠি পড়ে বুঝতে পারি সব।-_-আর 
আজকাল ভালো করে দেখতেও পাই না চোখে। তুই 
আমায় পড়ে দিস্‌ তো চিঠিথানি।” 

«সে চিঠি তোমার কাছেই আছে ?” 

মন্দাকিনী চুপ করিয়া যান। ছেলের স্ুটকেশ হইতে 
জামা-কাঁপড় ভাজ করিয়া রািবার ছলে আজ চিঠিখানি 
তিনি চুরি করিয়া রাখিয়াছেন। 

“অণু তোর ছেলে বড় হলে বেশি লেখাপড়া শেখাস্‌ 
নেমা!” 

অণিমা শুধু চুপ করিয়া গুনিয়াই যায়। 

“লেখাপড়া শিখেও যদ্দি” মন্দাকিনী একটু ঢোক 
গিলিয়া৷ বলিয়! গেলেন, “তার চেয়ে মুখ্যু হয়ে থাকাও 
ভালো রে!” 

বড়মার উপর অন্কম্পাই হয় অণিমার | 

নীলু হা করিয়া গিলিয়া চলিয়াছে মার প্রতিটি বাক্য । 
কেবল বাবলু সোৎসাহে বলে “অগুদি? দাঁদা যেই হাত দেখাবে, 
পাড় থেকে আমিও অমনি রোমাল দেখাব !” 

৪ 

“দিদি আচল ওড়াঁবে বলেছে । তুমিও আঁচল উড়িয়ে 
দেখীবে অঞ্ু্দ। কেমন?” 

স্টীমার অনেকদূর আগাইয়া আসিয়াছে । সামনে 
থানকয়েক জেলে-নৌকা৷ পাইয়া বাশী ফুঁকিয়া ধমক দিল 
বার কয়েক । আদেশ মানিভেই হয়। এ তো আর যা-তা 
ব্যাপার'নয়। কলিকাতার ডাক আর যাত্রী লইয়া চলিয়াছে 
সুন্দর দুর্দম ভাসমান লৌহ্‌-দীনব । 

অস্পষ্ট দাঁপাদাপি ক্রমেই স্পষ্ট হইয়। আসিতেছে । আর 
কয়েক মিনিট শুধু ! 

“অণু” 

“কী ?” 

“নমিতাকে তুই চিনতে পারবি ?” 

অণিমা তার বড়মাঁর মুখের দিকে তাঁকাইয়া থাকে 
জিজান্থ চোধে। 


পৌষ--১৩৪৭ ] 


খল এপ বড ব্? বসব ৮ বট বড -স্হ বা” - সর ব্ভ- স্ব সে বা” 


“সে কি! তুই কিছু জানিস না?-_নমিতাও যে 
এই স্শীমারেই কলকাতা যাচ্ছে আজ।” 

“কে বললে ?” গুরুগন্ভীর কে প্রশ্ন করে অণিমা |. 

“এই তো চিঠি, এতেই লেখা আছে ।” 

অণিমার বুকটা একবার ছুলিয়া ওঠে । বাদলদা কেবল 
ভীরুই নয়, সে শঠ, সে মিথ্যাবাদী! কথাটা! তার কাছ 
হইতে লুকাইবাঁর কি প্রয়োজন ছিল? 

দেখিতে দেখিতে স্টীমার বকুলতলার কাছাকাছি 
আসিয়! পড়িয়াছে। নিস্তরঙ্গ নদীবক্ষে অসহা আলোড়ন 
সৃষ্টি বরিয়া, উৎক্ষিপ্ত ফেনাঁয় ফেনাঁয় সম্মুখের অবাঁধ বিস্তার 
কাটিয়! কাটিয়া, স্পঞ্ধিত যন্ত্রশক্তি রুষিয়া ফুসিয় ছুটিয়া 
যায় আসে-_ পেছনে রাখিয়া! যায় ভাঙ্গনের খেলা-_ প্রচণ্ড 
বেগে ঢেউএর পর ঢেউ আসিয়া কূলে কুলে আছাড় খাইয়া 
পড়ে। এ গতি রোধ করিবে সাধ্য কার! 

স্টীমার এবার বকুলতলার মুখোমুখী । মন্দাকিনীর 
বুকে কে বেন টে'কির পাড় দিতে থাকে । অণিমা চুপ 
করিয়া দীঁড়াইযা আছে নিশ্চল পাথরের মূর্তির মত। 

নীলু আর বাবলু প্রায় এক সঙ্গেই চীৎকার করিয়া! ওঠে, 
“মা, এ দ্যাখো দাদা__দৌতলায়, এ যে।৮ 


এক ন্মিস্সেম্মে 





১৯০? 


নিরুদ্ধ নিঃশ্বাসে চাহিয়া! আছে মন্দাকিনী ও অণিমা । 
তীরের দৃষ্টি নিবন্ধ শুধু স্থনীলের উপরই নয়, ছু'জোড়া সজল 
চোখ দেখিতেছিল স্থনী্লরই পাশে রেলিঙে ভর দিয়া 
যে আর একজন দীড়াইয়। আছে সেই মেয়েটিকেও ।--ষে 
মেয়েটি এই সাতদিন বকুলতলা হইতে বহু দূরে থাকিয়াও 
দুইটি পরিবারের প্রাত্যহিক জীবনযাত্রার মধ্যে প্রভাব বিস্তার 
বড় কম করে নাই।-_চশমা-পরা একটি কৃশাঙ্গী তরুণী। 
অণিমার চেয়েও লক্া, মন্দাকিনীর চেয়েও কালো। দুর 
হইতে আর কিছু বোঝা যায় না--আঁর কিছু ধরা যায় না। 
এই নমিতা! 

বাবলু প্রাণপণে রুমাল দেখাইতেছে। নীলুরও আচল 
ওড়ানো থামে নাই। স্টীমার কিন্ত অনেকথানি দূরে চলিয়! 
গিয়াছে । স্থুনীলকে আর দেখা যাঁয় না। বকুলতলা 
পিছনে পড়িয়া থাঁকে। 

মন্দাকিনীর জলভরা চোখের সঙ্গে দৃষ্টি বিনিময় হইল 
আর একজোড়া ছল-ছল চোখের । এদিকে আর এক 
দফা প্রচণ্ড ঢেউ আসিয়া গর্জিঘা লাফাইয়া ওঠে টার 
ভাঁউনধরা কুলে কূলে ! 


শেষ 
এক নিমেষে 
প্রিন্সিপাল শ্রীস্বরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত 
কণ্ঠে যে গান গাইতে নাঁরি, যাদের আমি পর ভেবেছি, 
সে কেন দেয় মাড়া। দাড়ায় কাছে এসে; 
বক্ষে যে ভাব রাখতে নাঁরি শিশুর মত সরল প্রাণে 
সে কেন দেয় নাড়া! চিত্ত ওঠে হেসে । 
উপচে হঠাৎ ব্যথার ভারে ভোরের আলো স্বচ্ছবুকের 
'কি যেন যায় বেড়ে, আধার ফেলে টুটে, 
ভাবের শোতে ডুবি তখন, দীঘির কালো জলে যেন 
কথা কে নেয় কেড়ে? পল্প ওঠে ফুটে। 
অহঙ্কারের পঙ্ক মলিন এক নিমেষের একটি সাড়ায় 
এক নিমেষে হারা একটি নমস্কারে। 
আকাশ ভেঙ্গে হঠাঁৎ নামে প্রভু তোমায় চেনাঁও তুমি 
| শ্রা্কা জলধারা। একটি আবিষ্কারে ] 





. সভ্যতা ও আমাদের মোহ 
শ্তীপ্রবোধচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় 


মানুষ যে আজ পৃথিবীর বুকে শ্রেষ্ঠ আসন লইয়া! বসিয়৷ আছে 
তাহার কারণ জিজ্ঞাসা করিলে সহজেই এক কথায় উত্তর 
পাওয়া যাইবে-'সভাত।' । অবশ্য ইহাও মানিতে হইবে যে, 
অন্ান্ক জীব-জন্তর তুলনায় মানুষের শারীরিক ক্রমোম্নতি তাহাকে 
শ্রেষ্ঠত্বের আসনে আগাইরা দিয়াছে। মাছের মাথার সঙ্গে মানুষের 
মন্তিক্ষের তুলনা করিলে তাহার সুব্যবহার করাটা যে অবশ্ঠ কর্তব্য 
তাহা বুঝাইবার দরকার হইবে মা। মানুষের এই মন্তিফের সঙ্গে 
খুব নিকট সম্বন্ধ স্থাপন করিয়া মানুষের মন বলিয়া! একটা জিনিষ 
আছে; মন কোন একটা স্থূল বন্ত নয় কিন্তু ইহ|ই সভ্যতার 
ধারাকে বাচাইয়। আসিতেছে। মানুমের শরীরের উন্নত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ 
ঘেমন তাহার খাইবার ও শরীর বাচাইবার অনেক সুবিধা করিয়াছে সেই 
সঙ্গে মন ও মস্তিষ্ধ তাহাকে খাওয়া পরার হাঙ্জাম কমাইয়া অন্য দিকে 
ফিরাইয়াছে। বন জঙ্গল ছাড়িয়া নদীর ধারে থাকিয়া চাষ-বাস কর! এই 
সহজ উপায় মানুষের মাথাই বাহির করিয়াছে। প্রথম মানুষ হইতে 
আমরা দৈহিক উন্নতি কিছু লাভ করি নাই। বোধ হয় একটু চৌখস 
হইয়াছি এই মাত্র! কিন্তু আজ যে অবস্থায় আসিয়াছি তাহ! সমুদ্রের 
ঢেউয়ের মত অশ্রান্তভাবে সভ্যতার স্তরে স্তরে ভাসিয়৷ আসিয়াছি। 
কিন্তু পুরাতন জীবন ভুলি নাই । সে সব অভিজ্ঞতার উপরে নুতন দেখা- 
শুনার ফলে জ্ঞান জমাইয়] আমরা পাড়ি দিতে আরম্ভ করিয়াছি । ইহার 
শেষ নাই। কারণ যদি পূর্ণত1 আসিয়। যায় তখন আর উদ্ভামের প্রয়োজন 
হ্ইবে না। তখন হিম-শীতল পাহাড় হইয়া দাড়াইর| থাকিব কি গুড়া 
হইয়] যাইব জনি না। মনে হয় সেই পাহাড়ের মাথার বরফ আবার 
সর্ধ্যহাপে গলিয়। সমুদ্রের দিকে বহিয়! যাইবে। 

পৃথিবীতে প্রায় ২১, কোটি লোকের বাস। ইহার! প্রত্যেকেই যে সভ্য 
তাহা নহে। এখনও বর্তমান সভ্যতার শেষের ধাপের দুই-তিন ধাপ 
পিছনের লোক থাইয়! নাচিয়া আছে । জগতের সব লোক যতদুর সম্ভব 
সমান তালে ন! চলিলে স্থানে স্থানে বিড়ম্বনা আসে এবং বিশেষ 
ভাবে আসে, বখন লোকচলাচলের ফুলে বৈষম্যটা বেশী প্রকাশ 
হইয়া পড়ে। 

কিন্তু এই ভাবে সমগ্র মানবসমাজকে এক সুরে বাধা এখনও সম্ভব 
হয় নাই। ভাবের আদানপ্রদানের রীতি ও বাহন বন্য ক্রমশঃ উন্নত 
হইতেছে। কিন্তু সত্যতার যে সব দান আমর] ভোগ করিতেছি সেই 
সবের প্রথম প্রচেষ্টার মূলে প্রয়োজনীয়তাই মুখ্য ছিল। এই প্রয়োজন- 
, বোধের তারতম্য এখন আছ্ে। যতদিন পর্যান্ত না এক উদ্দেশ্টে ও 
ব্যবস্থ(র মধ্যে সকলকে আনা সম্ভব নয় ততদিন মানুষের ভিন্ন ভিন্ন দলকে 
আগাইয়! যাইতে হইবে। পিছনের লোক টানেও খানিকটা সামনে 


চলিয়া আসিতে পারে। এই টান পুরাক!লে বাণিজ্য ও রাজ্যজয়ের 
ফলে হইত। 

সভা/তার ইতিহাসে মূল এক কেন্দ্র হইতে সভ্যতার দেশে দেশে 
বিস্তারের কাহিনীর বদলে স্থান বিশেষের উপযোগী ও প্রাকৃতিক 
অবস্থানুষায়ী বিভিন্ন প্রকারের সভ্যতার খোঁজ এখন পড়িয়া! যাইতেছে। 
এই সব ভিন্ন ভিন্ন দেশের সভ্যতার বাইরের আবরণটা আলাদ। হইতে 
পারে কিন্তু তাহার জন্মকথা এক। একই প্রেরণ! মানুষের মাথাকে 
থাটাইয়াছে। ভূমৈব হৃথম্‌, নাল্লে সুখমন্তি। এই শখের সংজ্ঞা বা 
বিবরণ আপাতত সভ্যতার শ্োতকে আকা-নাকা পথে চালাইতেছে। 
হথ-ছুঃখ ও পাপ-পুণা বিচারের জন্য আজ পর্য্য্ত বৈজ্ঞানিক মাপকাঠি 
বাহির করা সম্ভব হয় নাই। সেই জন্যই লড়াইয়ে ন্যায়ের ধনজা দুই 
পক্ষই তুলিয়! ধরে । 

সভ্যত1 শরেয়স্কর। কিন্তু সব মঙ্গলের উপায় বা হিহব্যবস্থ! সভ্যতা- 
প্রহ্ত নহে । সম্পত্তিভোগের ব্যবস্থা, অকপটতা, সারল্য, পরিচ্ছন্ত, 
ঈশ্বরে বিশ্বাস, শৌর্য, একত্রবাসের কতগুলি নীতির উত্চাবন ইত্যামি 
মঙ্গলপ্রহ্নধ গুণরাজি মানুষকে জীবন রক্ষা! করিবার জন্চ খুব সহজ অবস্থায় 
আনিয়াছে। কিন্তু আরও উ“চু ধাপে উঠিতে গেলে কেবল চারিপাশের 
অবস্থাকে স্বায়ত্তে আনা ছাড়া খোজ অন্য দিকে করিতে হইবে। এইযে 
নানারকমের বৈশিষ্ট্যের কথা বলা হইল, তাহার মধ্যে অনেকগুলি 
বর্ধমানের বর্ধার আদিম প্রকৃতির মানুষের মধ্যেও দেগ1 যায়। ইহার 
সবগুলিই প্রতিদিনের জীবনে ব্যবহার করা যায় ও ইহাতে দৈহিক শ্রান্তি 
দূর করে। জিনিমের কদর বোঝ! এবং জিনিষ বিচার করার ও তাহার 
উপযুক্ত ম্ধ্যাদ। দেওয়ার যে মনের অবস্থা! তাহার উপরেই সভ্যতার বিকাশ 
নিষ্ভর করে। 

মানুষের জীবনকে নদীর সহিত তুলন! করিলে তিনটি বিভিন্ন ধারার 
মিশ্রণ দেখা যায়। সাধারণ জানোয়ারের মত উদরপূত্তি ছাড়া দ্বিতীয় 
ধারা আমাদের ভাবপ্রবণতা। ইহার বিকাশ আমাদের পরিবার পালনে 
ও সমাজহ্ষ্টিতে। স্েহ, প্রেম ও সহানুভূতি আমাদের পরম্পরকে 
টানিয়। রাখে এবং এক স্থানে বহুলোকের সমাবেশে সাহাযা করে। 
জঙ্গলে জন্তরাও শাবক পালন করে বটে, কিন্তু তাহ! শাবকদের নিজের 
শক্তির উন্মেষণ পধ্যস্ত। তাহারাও দলবন্ধতাবে থুরিয়। বেড়ায় কিন্ত 
তাহাও জীবনের প্রধান ও প্রাথমিক ধন্ন আত্মরক্ষার প্রেরণায় । মানুষের 
শিক্ষায় ও বংশপরম্পরায়, জ্ঞানচ্চার দীক্ষায়, তাহার বুদ্ধিবৃত্তিতে, 
চিন্তাশভিতে, মুল্যবিচারে ও মর্ধ্যাদাজনে তৃতীয় ধারার সপ্ধান পাওয়া 
যায়। এই জানের বিষাশ ও পুষ্টি মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের প্রধান মহায়ক। 
ইহাই মানুষকে সভা করিয়! তুলিয়াছে। 


১০৮ 


পৌষ--১৩৪৭ 


আমাদের মধ্যে এই তৃতীয় ধারা--কিরপভাবে বহিতেছে তাহা 
এখন আলোচন! করিব। সভ্যতার মূলে আছে জ্ঞানসঞ্চয়। এই জ্ঞান- 
সঞ্চয় অন্যান্য অনেক গুণের মত সহজ-সংস্কীর নহে। ইহা শিক্ষার 
আয়ত্তাধীন। শিক্ষার প্রথম সৌপান অ, আ, ক, খ, গ, হ, য,ব, র, ল 
প্রভৃতি মুখস্থ করিয়! বিছ্যা। অঞ্জন কর1। কিন্তু যে বিদ্যার্নের প্রয়োজন 
একমাত্র অর্থোপাজ্জন কর তাহার জে।রে আমরা কোন জিনিষের সম্যক 
আলোচনা এবং যোগাত| বিচার করিতে অঙ্গম। আত্মগরিমা ব| 
আত্মপ্রতিষ্ঠার ভিত্তিও স্থাপন করিতে পারি না। এই বি্া কেবল 
ব্যক্তিগত দেহের সুখ ও সুবিধার খাতিরে আমর! অর্জন করি । 

যুগযুগান্তরের সভ্যতার সহিত মানুষের পরিচয় ঘটে বিদ্যার 
মধ্যস্থতায়। আমদের কাবা, সাহিহ্য, দর্শন, বিজ্ঞন, শিল্পকলা, সঙ্গীত 
কিছুই নিজেদের আজসৌষ্টবের অন্ত ক্ত হইয়। যুগে যুগে জীবদেহের 
বিকাশের সঙ্গে স্বতঃশ্বরিত হয় না। আবার এক যুগে মানুষ যন 
কোন বিষয়ে কিছু অভিজ্ঞত1 লাভ করে বা প্রয়োজনবোধে সৃষ্টি করে 
তাহা সেই যুগের মানুষের মৃত্যুর দঙ্গে সঙ্গে শেষ হইয়া যায় না। বুদ্ধির 


দৌলতে ঠাহা পরবণ্ীকালের মামুধের জন্য পুরাকাল হইতে 
সঞ্চিত হইয়া আনিঙেছে। নানাবিধ শিলা ও প্রস্তরলিপি ইহার 
প্রথম সাক্ষী । স্মরণশক্তির সাহ।!যো বিভিন্ন গল্চ্ছলে সমসাময়িক 


ইতিহাদ আজ পর্যাস্ত ছন্দোবদ্ধভাবে পিতৃ-পরম্পরায় কলের গতির 
সঙ্গে সঙ্গে ভাসিয়া আসিয়াছে । এই জ্ঞান সঞ্চয়ের উপায় ক্রমশ 
সহজ হইয়া আসিয়াছে । এই সঞ্চিত কৃষ্টির উপর যখন আবার 
স্টির আমদানি হয় তখনই সভ্যতার আর এক ধাপ বাড়ে। বিগত যুগের 
রাশীকৃত সথষ্টিকে আমর! আয়ত্ব করি এখন বই পড়িয়া, কিন্তু নুতন 
স্টির জন্য অনুপ্রেরণা আসা চাই মনের ভিতর হইতে। মনকে জাগাইয়া 
তুলিবে কেতাবী বিদ্াার জ্ঞানের ভ।গার, বিস্ত এই পু'খিগত বিদ্যায় 
ফলে জ্ঞানের স্পৃহা মনে কতট| জাগ্রত হইয়াছে, কতটা চিন্তাশক্তি ও 
কল্পনশক্তির খোরাক জোগাড় হইয়াছে তাহার সম্মিলিত চাপে 
মনের ধেলা সুরু হয়। এই ভাবে কপিকলের মত আমরা পশুবৃত্তি 
ছাড়াইয়| উপরে উঠিতে আরম্ত রূুরি এবং আমাদের জ্ঞন সভ্যতার 
অগ্রগতির পথে রনদ জোগায়। 

আমাদের দেহের ক্ুধাট। জন্মগত কিন্তু মনের ক্কুধাট! অর্জন করিতে 
হয়। দেখিবার, শুনিবার ও জানিবার ইচ্ছাই আমাদের জীবনকে সভ্য 
করিয়া তুলিয়াছে। উদরপুরণের জন্য ও গাত্রাচ্ছাদনের জন্য যেটুকু শক্তি 
ক্ষয় ও কালক্ষেপন কর দরকার তাহ! ক্রমশঃ সংক্ষেপ করিয়। আনিয়া 
অবসর সময়ে মানুষ স্বপ্ন দেখিয়া! আমিতেছে। এই স্বপ্ন রাজ্যই কালক্রমে 
জীবনের শত কার্য ছৌয়। দেয় ও ক্রমশঃ আমাদের দৈনিক জীবনে 
মিশিয়! গিয়াছে। প্রাণের ঘরকন্নার জিনিষগুলেকে মনের বিলাসের 
আয়োজনে বায় করিয়া মানুষ সভ্যতার' স্টি করিয়! চলিয়াছেণ 

সঞ্চিত 'ধনের মত গতযুগের পুজীতৃত অভিজ্ঞত| থাটাইয়। মানুষ 
জ্ঞান বাড়াইয়! চলিয়াছে। : আমরা প্রতিবারই পুরুষানুক্রমে চকৃমকি 
পাথর দিয়া জীবন আরম্ভ করি না। আমাদের পূর্ববপুরুষর! চক্মকি 


সভ্যতা ও আছাকেক্র মোহ 


৯6৬) 


পাঁথরকে অনেক সহঙ্জ করিয়৷ আনিয়াছেন। তাহাই আমর! ব্যবহার 
করি। কিন্তু আমাদের নিজেদের জীবনে কি করিয়া! আসিয়াছি। সভ্যতার 
আলোক একদিন এইথানেও জ্বলিয়াছিল। কিন্তু গ্রদীপে তেল আর পড়িল 
না তাই শিখ! অন্ধকারে বিলীন হইয়া গেল। বনকাল আগে যখন 
আমর! তখনকার সভ্যতার শীর্ষে ছিলাম তখন জীবনের নানা প্রয়োজনে 
এই জাল সময় মত মাটিতে বিছান গেল না। গ্লোকসমাজ বহু দুরে দূরে 
ছিল। নির্ধন্দ জীবনে কল্পনার জাল হাওয়ায় অনেক উপরে উড়িতেছিল। 
লোকসমাজ ক্রমশঃ ঘনীভূত হইয়া আসিল। খাদ্যের প্রয়োজন হইল 
দলে দলে মানুষ পাহাড়ের নীচে মীর তীরে নামিয়। আমিতে লাগিল 
আমা/দর পূর্রবপুরুমদের হবন্দ্রহীন জীবনে আঘাত ভীষণ হইয়! দাডাইল; 
কল্পনার জাল ছি*ডিয়া গেল। ধান চালের পুজি ভাগাভাগি হইতে 
লাগিল। মনের খেলার জাল ছি'ড়ি্। গেল। তাহাকে জোড়া দিবার 
কথ! কাহারও মনে হইল না। যখন মনে হইল তথন সুতা জড়াইয়! 
গিয়াছে । 

খাওয়ার জন্য যখন মারামারি থামিয়। গেল তখন আমরা বলহীন 
অবস্থায় রকমে বাচিবার চেষ্টা করিতেছি । এই সময় 
অন্যের আশ্রয়ে জীবনের সখের যেন এক নূতন পথ আমরা খু'জিয়া 
পাইল'ম। নিজের অন্তরে খোজ করিলাম ন1। নিজের পুঁজির ও 
খোজ লওয়৷ দরকার হইল না। যখন কেহ আমাদিগকে বিশেষ 
হীন প্রতিপন্ন করিতে চাহিল তখন প্রাচীন পু'থি দেখাইয়া পূর্ববগৌরবে 
আত্মপ্রসাদ লাভ করিলাম | সিন্দুকের কোণায় জড় কর! টাকার 
মত আমাদের সভ্যতার পুঁজি অলক্ষ্যে পড়িক্না রহিল। তাহার উপর 
সময়মত আর কিছু জোগাড় দিতে পারিলাম না ক্রমে উহা! অফেডো 
হইয়। পড়িল । ধার করিয়া যে চল] নুরু করিলাম সেই চলা আজও 
চলিতেছে । 

নানা দেশ হইতে টানিয়া আনিয়া রাশীকৃত করাটাই দেশের সম্পদ 
বৃদ্ধিকর! নয়। দেশের দৈন্ঘটাই তাহাতে প্রকাশ হয় বেশি। যথার্থ 
সম্পদ দেশের প্রয়োজনের তাঁগিদে গড়িয়। উঠে। আমর সভ্য হইবার 
জন্য যে বিভা অর্জন করি বিজেত1| জাতি নিজের ব্যবসা ও বাণিজ্যে 
সহায়তা পাইবার জন্য তাহার বন্দোবস্ত করিয়াছে। শিক্ষার জন্য 
আমাদের গরজ নাই। আমরা দেহের প্রধান দাবীট। যিটাইতেছি 
এবং তাহার জন্য সব কিছু দাবাইয়৷ রাখিয়াছি। আমাদের মন বাহিয়ের 
জণাকজমকটাই বেশী দেখিয়াছে। ক্রমশঃ আমরা যে বর্বর 
তাহ! মানিয়। নিলাম। নিকেদের সব কিছুতেই অভ্রদ্ধা! জন্মাইলাম। 
তাহ! মনকে বুঝাইল।ম যে অন্তকে বড় আসনে বসাইলে আমাদের 
প্রেমের পরিচয় লোকে পাইবে। এই ভাবে অন্তরের রস শুক্াইয় 
গেল, বাহিরের বৃত্তচ্যুত ফুল রসহীন অবস্থায় এখন মরিয়া দাইতেছে। 
জাতির গৌরব বার্ডা নানা হাটগোলে বিলীন, হই গিয়াছে । দেশের 
লাঞ্ন! বাড়িয়া চলিয়াছে ৷ ও 

জীবনের এই গন্গুভাব প্রতিকার করা ফেধল স্কুল কলেজ, 
খুলিয়া হইবে না। নিয়মিত কয়েক ঘণ্টার অক্ষর পরিচয়ের 


কোন 


২৯১০ 


মধ্য দিয়া কোন ভাবধার| ঘরে ঘরে বহান যাইতে পারে, না। বইয়ের 
পাতার বাহিরে পরিজনের সংস্পর্শে জীবনযাত্রার ষে প্রণালী আমর! শিখি 
এবং সমাজের আচার ব্যবহারে যে সব বৃত্তি আমাদের কাজে লাগাই 
তাহাই শেষে আমাদের জীবনে পাথের হইয়। দাড়ায়। মানুষের যাহাকে 
চরিত্র বলি তাহার ভিত্তি করে এই সব। এই চরিত্র আমাদের তৈয়ারী 
হয় না। ইহাকে গড়িয়। তুলিতে হয়। খাওয়া পরার ভাবন! খানিকটা! 
কম করিয়াও আজ পর্যাস্ত জন্তর মত কেবল হাত পায়ের 
কলকজাগুলি ঠিক রাখিয়া চলি+ছি। দেহের শ্রীবৃদ্ধি করিবার 
বাসনাকে জাগাইয় রাখিয়াছি কিন্তু সেই সঙ্গে নিজেকে শ্রেয়ঃ করিবার 
কোন চেষ্টা নাই। 

কিছু ভাবিবার বালাই আমাদের নাই। লোহা জলে ডোবে ইহ! 
একটা সত্য, কিন্তু এই সত্যকে চরম জ্ঞ/ন করিলে লোহার জাহাজ 
গাজ সমুদ্রে ভাদিত না। এইযে জলের উপর দিয়া যাইবার 
প্রয়োজন এই রকমের প্রয়োজন আমাদের একেবারেই বোধ হয়ন! 
কেন? বাহির হইতে শক্তি না পাইলে আমর! চলিতে পরি না, অন্যের 
তুলনায় দৈহিক বা মানসিক গঠনে আমর হীন নহি কিন্ত তফাৎটা কেবল 
উদ্ধামের। বিজ্ঞান চচ্চার ফলে দুরের দেশকে নিকটে পাওয়াতে অন্য 
জায়গার সভ্যতার দান হইতে আনাদের বঞ্চিত হইবার কোন হেতু 
নাই। সেই জন্তই কি আমরা নিবীরধ্য? কারণট। বোধ হয় আমাদের 
জীবনের আপাততঃ স্বচ্ছন্দ গতিজনিত অবসাদ । আমাদের কোন বিষয়েই 
অগ্থ্াগ নাই । আমরা অনুকরণ করিতেই ব্যস্ত, শ্রদ্ধার আদানপ্রদান 


ভ্ডান্রভন্ব্ 


[ ২৮শ বর্ষ-_-২য় খণ্ড-১ম সংখ্যা 


নাই। শ্রদ্ধাকে বেশী করিয়! বাহিরেই বিলাই! দিয়াছি। 
আমাদের বিচারবুদ্ধির অভাব। কোন ব্যাপারই বিশ্লেষণ করিয়! 
দেখি না। মানুষের মনের অবস্থার সংস্কারের উপর লোকসমাজের 
সভ্যত| গড়িয়। উঠে। আমাদের সংস্করর বহুজিন বন্ধ। পুরাতন অন্ধ 
অবস্থা এমন আমাদের বুকে চাপিয়। বসিয়ান্ছে যে আমাদের সমাজে 
সভ্যতার ছাপ পাইতে হইলে অনুকরণের বৃত্িকে একেবারে পূর্ণমাত্রায় 
তুলিয়। ফেলিতে হইবে। ভৌগলিক ও দামাজিক কারণে সষ্যতার 
গ্রকাশ বিভিন্ন রূপে । কিন্তু সেই সঙ্গে মনের বিলাদ সভাতাকে বৈশিষ্ট্য 
দেয়। ইহারই রাপ ও মাপ আমাদের জীবনকে নিরলস, শাস্ত ও 
মহিমাময় করিয়। তেলে। আমরা যখন আবার আলো জ্বালিব 
মনের প্রদীপ শিখা আমাদের অন্ধ মোহকে দূর করিয়া 
দিবে। অন্তরের প্রেম ও শ্রদ্ধা এই শিখাকে জালাইবে। প্রেম 
যখন অন্তরে জাগিয়! উঠিবে তখন সেই প্রেমের সাধনায় যে ভোগ 
করিব তাহার মধ্যে উচ্ছংহ্থলা থাকিবে না। অতি শীঘ্রই তালহীন 
হইয়! জীবন একদিকের ভারে নুইয়! পড়িবে না। তাহাতে মৃতার কামন৷ 
জাগিবে না। বাচিবার আনন্পটাই সব শ্রম, র্লেশ ও হুঃখকে তুলাইয়! 
দিবে। এই আনন্দের বাণ আমাদের সমাজে ডাকিয়া আনিতে 
হইবে 1% 


প্রখানেই 


* এই প্রবন্ধের মুল বিষয়টির উপর ভিত্তি করিয়া 'সংস্কৃতি 
পরিষদে'র এক সাধারণ বৈঠকে একটি প্রবন্ধ পঠিত হইয়াছিল। 


যাদুকরের ফাঁকি 
শ্ীবিমলাশঙ্কর দাশ 


আমি যাদুকর যাছুবিগ্ঠায় পেয়েছি সিদ্ধি মোর 
যাঁদু-বলে আমি বনু আখি পরে এনেছি তন্জ্রা ঘোঁর। 


সার্থক আমি, সাঁপনায় তবু কিছু আছে মোর বাঁকি 
দিয়েছি, পেয়েছি, নানান নকল, আঁসলে জমেছে ফাঁকি । 


যে মায়া-পরশে মাটি হয় সোন, নির্জীব পায় 'প্রাণ, 
সীব। বিশ্বের সৃষ্টিতে থাকে যে মহামায়ার দান, 


সে মায়ার আমি জানি নাই কিছু, শিথি নাই কিছু ভাই ! 
সকল খেলার শেষের কথাটি তাই ক/য়ে যেতে চাই-_ 


চি%/77 ূ রর /4/3 25551 
রঃ রন টর্ 9০০ 
পর তে টি 


ঠা পৃ ) ধর্ 


ফির 





০ ৩০৫৭ 


1৩ 


রে ১৮, /87 


5: 2, ধু শ পিসির নি পু এ টি 


যে ছলনা করি” নাঁনা কৌশলে ঢাকিয়াছি বু আখি 
তাহার চেয়েও নিবিড় ছলনে নিজেও আধারে থাঁকি। 


দেখায়েছি যত নব নব খেল! করি” নব আযোঁজন 
অন্তর-মাঝে সে সবারে মোর নাহি কিছু প্রয়োজন । 


তার তরে আমি ধরে দিতে পারি শ্রেষ্ঠ রূপের কায়া 
যে পারিবে গুধু ধরে দিতে সেই মোর অন্তর-মায়া। 


সি বসি 
কর্পি বি 


এ সর ভিন : 9 | 


নো 1? রি 


“লী হা ৃ ধু 


বধ 
শরবুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্য 


পৌষ মাসের এক সুন্দর প্রভাত। পাঁধীরা কলরব করি- 
তেছে। হুর্য্ের প্রথম কিরণ জানালার ফাঁক দিয়া শয়ন- 
কক্ষে গ্রবেশ করিতেছে । অণিমা দেবী ও তাহার স্বামী 
অপ্ত। 

ঘুম ভাঙ্কিতেই অণিমা দেখিলেন ত্রীহার পার্থে ভূপেন 
(তাহীর পুত্র) নাই; তিনি ডাঁকিলেন, প্ভূপাঃ ও ভূপা, 
কোথায় গেলি রে?” স্পেন (দুর হইতে ) “মা, এই যে 
আমি ছাগল ছানাটার কাঁছে বসে |%. 

অণিমা (তাহার স্বামীকে ডাকিয়া) “দেখ্ছ ভূপার 
দুষ্টামি! এই শীতে ঘর থেকে বেরিয়ে চলে গেছে ছাঁগলটাঁর 
কাছে?” 

দিলীপবাবুঃ “এ ছাগলটার জন্যই তো! ভূপা বেঁচে গেল। 
কত বড় একটা রোগ হ'ল ! ডাক্তারে বললে-_ছাঁগলটাগলের 
সঙ্গে থাকতে হবে তবে যর্দি বীচে। মানুষ যদি কোন লোক 
বা পশ্তর কাছে কিছুদ্দিন থাকে সে সহজে তাকে ছাড়তে 
পারে ন|; তাতে আবার সেটি ছোট ছাগল ছান1।” 

অণিমা, “তবে কি একটা রোগ থেকে আর একটা 
রোগে পড়লে ভাল হয় ।” 

দিলীপ, “না আমি তা বলিনি । ( ভূপেনকে ডাঁকিলেন ) 
এই তৃপা, ভূপা !” 

ভূপেন (দূর হইতে ) “যাই বাঁবা।” 

দিলীপ, “কি করছিস, চলে আয়।” 

ভূপেন দূরের একটি কক্ষে ছাঁগল ছানাটি কোলে করিয়া 
বসিয়াছিল। বাপের ডাক শুনিয়া ধীরে ধীরে ছ'গলের 
মীথাটি ক্রোড় হইতে নীনাইয় ছুটিয়া৷ আঁসিল। 

দিলীপ, “কি কয্ছিলি ?” 

ভূপেন, “ছাগণ ছানাটা কীদ্ছিলঃ আমার ঘুম ভেলে 
গেল। তাই দৌড়ে গেলাম দেখতে ।” 

দিলীপ, “ছাঁগলটা কেমন আছে ?” 

তপেন “গলাটা কেমন বেঁকে যাচ্ছে। আর আগেকার 
মত দাড় করালে, পড়ে যাচ্ছে» বলিয়! মুখটি স্নান করিয়া 
পিতার পানে চাহিল। 


অণিমা, প্ঠাড়াও, আজই ওটাকে আমি কাউকে দিয়ে 
দিচ্ছি। তোমার ছাগল নিয়ে থাকা বার করছি ।” 

দিলীপ, “আহা কেন সকালে ওকে কাদাচ্ছি? ছেলে- 
মান্ষ, যদি ছাগল নিয়ে খেল! করে তাতে ক্ষতি কি?” 

অণিমা» “দিনরাতই কি এ নিয়ে থাকৃবে ?” 

দিলীপ, “না, না, সব সময়ে থাকবে না; তবে সময়ে 
সময়ে যাবে বই-কি ।” 

বিশেষ ক'রে ওর বন্ধু যখন বিপদে পড়েছে, আর যদ্দিই-বা 
না বাচে। বন্ধু থাক না একটু |” বন্ধু না বাচে শুনিয়া 
ভূপাঁর চোখে জল আসিল । এমন সময় হঠাৎ আবার ছাঁগ 
শিশুটি চীৎকার করিয়া উঠিল। ভূপেন ছুটিয়া চলিয়া গেল। 

অণিমা, “এ ছাগলটা যেন ভূপেনের প্রাণ, ওকে ছেড়ে 
এক মুহূর্তও ওর চলে না । বড্ড বাড়াবাড়ি করছে ।” 

দিলীপ, “কি কমুব বল; বাঙ্গাল! দেশ ছেড়ে পড়ে আছ। 
তেমন সঙ্গী সাথী নেই। কোথায় বন্ধু পাবে বল। তবু তো 
বন্ধুর ক্ষুধা ছাগ শিশুটা মেটাচ্ছে কতকটা। এটাও তো 
দরকার ।” 

অণিমা, “তোঁমার যেমন কথা 1৮ 

ভূপেন পুনর্বার 'আসিয়া বলিল, “বাবা, ছগল ছানাটা 
কি করুছে একবার দেখবে চল ।” এবার তার চোখ দিয়া, 
ঝর ঝর করিয়া! জল পড়িতে লাগিল । 

দিলীপবাবু তাঁহার স্ত্রীকে বলিলেন, “চল না একবার দেখে, 
আসি, যদি কিছু উপায় করা যাঁয়।” 

তাহারা চলিয়া গেলেন। 

ছাগ শিশু গ্রীয় মাটিতে লুটাইয়া পড়িয়াছে, ঘাড়টা ফেন 
ঈষৎ আড়ষ্ট হইয়া গিয়াছে । 

অণিমা, “আর এ বীছবে না ।” 

ভূপা ইহা শুনিয়া আরও কীদিতে লাগিল। 

দিলীপ, “চুপ কন ভূপ।, কীদিসনে । ও ভাল হযে ষাঁবে। 
( তীহীর স্ত্রীকে ) চাকরটাকে ডেকে বল একটু আগুন কৰে 
দিক্‌; জায়গাটা গরম হয়ে যাঁক। তীর .পর হাঁসপাতালে 
পাঠিয়ে ধিলেই হবে । এ কেবল ঠাণ্ডার জন্তে ।” 


১১১ 





শা স্পন্পা সিক্স নিজ ব্চ্প অিাগাপা বক্প আপা ব্যাং 
অনিম। ( ভূৃত্যকে ) “কৈলাস ! ও কৈলাস !” 
ভৃত্য ( অর্ধ সুপ্ত স্বরে ) “কি মা?” 
অণিমা, “শোন্‌ শীগগির ক'রে ।” 
ভৃত্যটি আসিয়! বলিল, “কি বলুন ?” 
দিলীপবাবূ, “যা, একটু আগুন ক'রে দে।” 
ভৃত্য, “কোথায়-_উনানে ?” 
অণিমা দেবী হাসিয়া উঠিলেন। 
দিলীপবাবৃ, “তোর মাথায়। বেটা ঘুমুচ্ছিম তা গুনবি 
কি? এই ছাগলটার কাছে একটু আগুন ক'রে দে।” 
তাহার! দুইজনে চলিয়া গেলেন। সে স্থানে রইল শুধু 
ভূপেন আর কৈলাঁদ। কৈলাস তাহার প্রহর আদেশ 
পালনে ব্যস্ত । 


(২) 


ছাগলটি হাসপাতালে ৷ হাঁসপাতালের ডাক্তার দিলীপ- 
বাবুর বন্ধু, সেই জন্যই ছাঁগলটির দিকে তিনি বিশেষ দৃষ্টি 
রাখিয়াছেন। এধারে কিন্তু ভূপেন ছাঁগ শিশ্তর জন্ত বড়ই বাস্ত 
ও উদ্বিগ্ন। প্রতি মুহূর্তই সে ছাগ শিশুটির কথা ভাবিতেছে। 
আজ চঞ্চল ভূপেন যেন গম্ভীর ! সুন্দর নীল আকাশে হঠাৎ 
কোথা হতে বাদল আসিয়া দেখা! দিল ! তখন প্রায় এগারটা, 
তোজনাদি সমাপ্ত হইয়াছে । দিলীপবাবু কাঁছারী গিয়াছেন। 
অণিমা আপন কার্য্যে ব্যন্ত। ভূপেন তাহার কাছে গিয়া 
বলিল, “মা, একবার ছাঁগলটাকে দেখে আম্ছি।” 

অণিমা, “কি কমবে ? 

ভূপেন “একটু দেখে আম্ব 1” 

অণিমা, “ন11” 

ভূপেন, “এই কাছেই তো হাসপাতাল ।” 

অপিমা+ “থাক্‌, তবু তুমি যাবে না 1” 

ভূপেন ক্ষু্ মনে মায়ের নিকট হইতে ফিরিয়া গেল ! আজ 
আর সে একটিবার মায়ের অবাধ্য না হইয়া কোন প্রকারে 





চি) 
11111107184 ॥ 
11001111011 ৪ 
1৬ 





থাকিতে পারিল না। কাহাঁকেও না বলিয়৷ একটিবার ছুটিয়া 
হাসপাতালে চলিয়া গেল। কিছুক্ষণ পরে আবার ফিরিয়া 
আঁসিল। তাহার মা এ সকল কথা কিছুই জানিতে 
পারিলেন না। 

পাঁচটা বাজিয়! গিয়াছে । দিলীপবাবু কাছারি হইতে 
ফিরিয়াছেন এবং ভিতরে বসিয়া আছেন। হাসপাতালের 
ডাক্তার আসিয়া ডাকিলেন, “দিলীপবাবু !” 

দিলীপবাবুঃ “আম্ুন” বলিয়া বাহিরে চলিয়৷ গেলেন। 
পরে দুইজনে ফিরিয়া কক্ষমধ্যে উপবিষ্ট হইলেন । 

ভূুপেনও তাহার বন্ধুর সংবাদ শুনিবার জন্য ছুটিয়া 
আসিল। 

দিলীপবাবু ভূপেনকে দেখিয়া ডাক্তারবাঁবুকে জিজ্ঞাসা 
করিলেন, “আচ্ছা, ছাঁগলটা কি রকম আছে?” 

ডাক্তার, “ভালই আছে। কাঁল সকালে লোক 
পাঠাবেন আমি পাঠিয়ে দিব 1” 

দিলীপ, “কি হয়েছিল ?” 

ডাক্তার, “কিছু না, কেবল ঠাঁগাঁর জন্য 1” 

দিলীপ, “আজ ভূপেন তো সমস্ত দিন বদ্ধুহীন হয়ে 
আছে। বন্ধুকে দেখবার জন্য বড়ই অস্থির হযে পড়েছে। 
তা এখন ভাল আছে তো?” 

ডাক্তার “হ্যা । তারপর আমাদের ভূপেনবাবু তার 
কম্কাটারটাও কোন্‌ ফাকে ছাগলটার গলায় জড়িয়ে 
দিয়ে এসেছে 1” 

দিলীপ, “তই নাকি! ভূপেন তুমি কক্ফাঁটারটা 
জড়িয়ে এসেছো ?” 

ভূপেন কিছু বলিল না। সে তাহার মায়ের নিকট 
হয়তো ইহার জন্য বকুনি খাইতে পারে; কিন্ত ছাগলটি 
ভাল আছে এবং সকালে আসিবে শুনিয়৷ সেজন্য বিদ্ুমাত্র 
বিচলিত হইল-না । বন্ধুর কুশল সংবাদের আনন্দ তাহার 
ভত্সনার ভয় দূর হইয়া! গেল। 


পশ্চিম রাজাল্ায়, দুতিক্ষ 


পঙ্চিম বাঙ্গালা উপরে অননকষ্ট ও ছুর্শশার. করাল ছায়া গড়িয়াছে। 
মেদিনীপুর জেলার কাধি ও ওমলুক মহকুমা ভীষণ বন্তায় বিধ্বস্ত । এই 
অঞ্চলের অধিবাসীন্বন্দের ছুঃখকষ্টের কাহিনী সংবাদপত্রের পাঠকদের 
অগোচর.নাই।  জাচার্য প্রকুল্লচন্র প্রমুখ নেতৃগণ এই নকল হতভাগোর 
দর্শশা মোচনের জন্ত সহৃদয় জনসাধারণের নিকট অর্থগাহাধ্য প্রার্থনা 
করিয়াছেন। 

ধাকুড়! ও বীরভূমে এবার সময়ে বৃষ্টি হয় নাই এবং যে রা হইছে, 
তাহাও পরিমাণে বড় কম। ইহার ফলে, সময় মত ধান্ত রোপণ হয় 
নাই। তবুও আশ্বিন কাকে বৃটি হইলে, ধান্ত কতক পরিমাণে বাচিত 
এবং ইক্ষু আলু ইত্যাদি রবিশস্তের আবাদ হইত। কিন্তু ছর্ভাগাক্রমে, 
এই সময়েও বৃষ্টির অভাব হইয়াছে। | 

এই মকল অঞ্চলে কৃযিক্ষেত্রে জলদেচনের জন্ত যে মকল অসংখ্য 
বাধ পুকুর আছে, তাহার অধিকাংশই সংস্কারের অভাবে মঞজিয়। অকর্ণ্য 
হইয়াছে। এই সকল জলাশয়ে অন্য।ন্ত বৎসরে যে পরিমাণ জল থাকে, 
এই বৎমর বৃষ্টির অভাবে তাহাও নাই। হুতরাং সেচন করিয়! ফসলের 
কিরদংশ রক্ষ! করিবে, নে উপায় নাই। 

যে ভীষণ দুদিন কালমেঘের মত ঘনাইয়! আসিতেছে, তাহাতে যে 
কেবল অন্নাভ।বঙ্জনিত কষ্ট হইবে, তাহা নহে। রা গগন ভ্ 
জল দুষ্পর/প্য হইবে । খাপ্তক ও পানীয়ের অভাবে, কুষকের প্রধান মনল” 
গরু মহিধকে বচান কঠিন হইয়| উঠিবে। 

মরকারের তরফ হইতে ম|টি কাটার কাজ আরম্ত কর! হইয়াছে। 
তাহাতে দলে দলে লোক আসিতেছে । ফেমিন কোডের বিধান 
অনুসারে যে মাষান্ত পারিশ্রমিক নির্দিষ্ট আছে তাহাতে হয়ত ইহাদের 
নুন-ভাতের ব্যবস্থা হইতে পারে। কিন্ত যে সকল কৃষক সম্প্রদায় 
মাটিকাটার কাজে অভ্যন্্ নহে, তাহাদের কেমন করিয়া চলিবে? 
চাবী-খাতক আইন ও ধণনালিশী বোর্ডের কৃপায় কর্জ পাওয়া! কঠিন 
হইয়াছে। সম্প্রতি যে মহাজনী আইন প্রবতিত হইয়।ছে, তাহাতে 
অচল অবস্থার সৃষ্টি হইয়াছে বলিলে অতুযুক্তি হইবে ন|। 

এই সকল চুর্দশাগ্রন্ত লোকদ্দিগকে আসন্ন বিপদ হইতে উদ্ধার 
করিবার অন্ত সহদ্ বা্তিমাত্রকেই মুক্তহন্তে অর্থনাহীঘা করিতে হইবে। 
আগচার্ধ প্রফুললচন্র বাভীত, কংগ্রেদকর্মীদের তরফ হইতে তীর 
্রফুলপচন্ত্র ঘোষ সাহাবা প্রীর্ঘনা করিয়াছেন। রবীন্দ্রনাথের প্রতিষ্ঠিত 
নিকেতনের কর্মীগণ দক্ষিণ বীরভূম নানাস্থানে গীহাষা-কেন স্থাপন 


করিবার ব্যবস্থা করিতেছেন। কিন্তু দেশবাসীগণের বখেই হাতি 
নাপাইলে ইছাদের চেষ্টা! সম্পূর্ণ ফলবতী হইবে নাঁ। | 
বিপদের বমর অস্থির হইতে নাই, শাস্ত্রে এই প্রকার বিধান আছে। 


বিকার বৃপানের উপর নির্ভর করে। কিছ" বান বন হবে হরি 
হজ না এবং মম হত হৃষ্টিখাত হয় নাঃ: এই. ৃ 
. 'নিবারণকয়েই: এই অঞ্চলে প্রাচীনকাল হইতে হর কান 


্ 










জাছে। তাহার সংস্কার হওগা প্রয়োজর, ৷ ফেিন কতের যে টাকা 
অনাবস্ঠাক মাটার কাজে অপবায় হয়, তাহা এই নিক গাগা 
পদ্বদ্ধার ও সংস্কার কার্ধে বার হইলে দেশের প্রতৃত ফল্যাণ হয়। 

অনাবৃষ্টজনিত শশ্তহানি গ্চিম বাজালার অভুতপূ্ব -ঈহে। কিন্ত 
প্রতি বারেই রাস্তাধাটের কাজে বেশী ব্যর হইয়াছে, টির 
গুলিয প্রতি যথেষ্ট মনোযোগ করা হয় জাই । 

কিছুদিন হইল এই সবল বাধ পুকুরের উরি উর আইন 
পাশ হইয়াছে। এই আইনের বিধান যাহাতে জনগানাহা। হয 
প্রচারিত হয় এবং বর্তমান ছূর্বৎসরে এই আইনে খানা জার 
করা হর, তাহার বাবস্থা হওয়া উচিত। ন্ভুহা এবারেও সান্ধাখাঁটে 
টাক! খর? হইয়! যাইবে, ছুঙিক্ষ মিবাপের ব্যবসথ। হইবে না। “এ 

ভারতবর্ষের কৃষকদের বিষয় ছারা আলোচনা করিয়াছেন, উর 
সকলেই এই সিদ্ধান্তে উপনীত হইরাছেন যে, সর্ব কৃষকগণ বরের 
মধ্যে প্রায় ছয় মাল চাষের কাজ করে না। হুতরাং তাহাদের: 
অবস্থার উন্নতি করিতে হইলে. তাহাদিগকে এমন কোনও নহজ শিল্পকার্ 
শিক্ষা দিতে হইবে যাহাতে তাহার! অবসর সময়ে সামান্ত কিছু উপাঞন 
করিতে পারে। এইজন্ই মহাত্মা গান্ধী তাহার পরিকলিত কার্ধ- 
পদ্ধতিতে চরকা ও বয়নশিল্পের ব্যবস্থা করিয়াছেন। বিশেষত 
ভারতবর্ষের কৃষি বৃষ্টিপাতের উপর নির্ভর করে এবং সেইজচ্ কৃষির 
ফলাফল অনিশ্চিত। 

দুর্ভাগ্যবশত, আমাদের দেশে নুতন ফোনও কুটিরপিক্ের প্রধর্ডন 
হয় নাই। যাহা ছিল, তাহাও হগ্রশিলপের প্রতিযোগিতায়, .মৃতঞ্জান়। 
ছুতিক্ষপীড়িত জনদাধারণের দুর্দশ। মোচন কার্ষে ইহাই প্রধান অন্তরায় 
তিক্ষাবৃত্তির দ্বার ছুই-একজন লোকের ছুই-চারি দিন প্রতিপালন হয়, 
কিন্তু ছুই-ডিনটি জেলার সমন্তক লোককে কেমন করিয়া! বাচান বায়। 
বাহার, দেশের প্রনৃত মঙ্গলাকাজ্জী, আব ছিরে 'এই সকল কথা 
তাহাদিগকে চিন্তা করিতে হইটধ। | 





কি সা 


১৫ 


১৫৯, : 2, + চা ৬১ : ্ ২ হিং 
১১৩ 


 ইলগীয় প্রাদেশিক হিন্দু সম্মেলন 
তুল্যচরণ দে পুরাপর 


বর্তমানে হিন্মুসমাজ নানাভাবে দলিত ও বিপধ্যন্ত। 


নভেম্বর) বঙ্গীয় প্রানেশিক হিন্দুসভীর নবম অধিবেশন 


০ সংঘর্ষ আজ ০০ এক শোচনীয় রানির নগদ? ইহার অভ্যর্থনা সমিতির 





কুফনগরে সমবেত হিন্দু নেতৃবৃন্দ-_ডাঃ মুঞ্জে, ডাঃ স্কামা প্রসাদ, নরেন্রকুমার, 


শৈলেন্্রনাথ, স্তার মন্থন।থ প্রস্থুতি 
অবস্থার কৃষি করিয়াছে। বাঙ্গালার আকাঁশবাতাস আজ 
'অপহৃতা ও উতৎপীড়িতা হিন্দুনারীর আর্ভস্বরে মুখরিত। তাই 
সমগ্র বঙ্গদেশে হিন্দুসংগঠনের জন্ত একটা সাড়া পড়িয়া 
"গিয়াছে । বাঙ্গাপী হিন্দু আজ বুঝিয়াঁছে যে সংগঠন ব্যতীত 
তাহার উপায়াস্তর নাই। সম্প্রদায়বিশেষের সাশ্পরদায়িকতার 
ফলে তাহার গুস্থ দেহে জীবনধারণ করা ছুঃসাধ্য হইয়। 
উঠিয়াছে। তাঁহার চারিদিকেই বিপদ | 
এই বিপৎসাগয়ে নিমগ্ন অবস্থা হইতে কূল পাইতে হইলে 
সংঘবন্ধভাবে. কোনি... বিহিত চেষ্ট! করা উচিত--বাঙ্গালার 
হিন্দুরা ইহা যে সম্যক উপলব্ধি করিয়াছে তাহা কফনগরে 
অনুঠিত হিন্দুসভার বিগত অধিবেশনের সাফল্যে সহজেই 
অন্গমান করিতে পারা বায়।. 
নদীয়া জেলায় অন্গ্ত ভফনগরে (গত ১৬ই ও ১৭ই 


সভাপতি হুইয়াছিলেন এড- 
ভোকেট শ্রীযুক্ত নরেন্ত্রকুমার 
বন্থ এবং সভাপতি হুইয়া- 
ছিলেন প্রসিদ্ধ হিন্দুনেতা স্যার 
শ্রীযুক্ত মন্মথনাঁথ মুখো- 
পাধ্যায়। হিল্গুসমাজের 
বিভিন্ন জাতির পঞ্চশতাঁধিক 
প্রতিনিধি সভায় যোগদান 
করিয়াছিলেন এবং দশক 
হিসাবে ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণীর প্রায় 
পঞ্চ সহস্র ব্যক্তি উপস্থিত 
ছিলেন । এই সভার বিশেষত্ব 
এই যে তথাকথিত অস্পৃষ্ঠ, 
অনাচরণীয় ও অনুন্নত সম্প্র- 
দায়ের লোকদিগকে সভাস্থলে 
উপস্থিত থাকিতে এবং কোন- 





ৰা 


£ 
হিন্ু জাগরণ আন্দোলনে নিবেদিতপ্রাণ ডক্টর হীনুত ভাষাগ্রগাদ মুখোপাধ্যায় 


১১৪ 


পৌধ--১৩৪৭ ] অজ্জীকস অত্িস্পিকি জিল্দু, তস্েমলজ্ সি, 


জি 
রূপ উদ্মা প্রকাশ না করিয়া তাহাদের ' প্রতি অবিটারের হইতে থাকে এব মধ্য মধ্যে কুলবধূগণ গৃহের বাহিরে আসিরা 
উচ্ছেদ ও সুবিচারের দাবী করিতে দেখা ঘায়। পরখ ও উপুঞ্বনির সহিত তাহাকে হিনুপ্রধায় বরণ করিতে 


১৬ই নভেম্বর সকালে নির্বাচিত সভাপতি শ্ঠার মন্মধনাথ থাঁকেন। . . " 
10761587587 2 | ্‌ | ১... ঃ া 
হিশু মহাঁসভার অস্থায়ী সভা- ৮ চা ছু লি কত তি 
পতি ডাঃ বি, এস, মুঞ্জে; ডাঃ 
শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, 
শৈলেন্্রনাথ বন্দোপাধ্যায়, 
সনৎকুমার রায়চৌধুরী, 
হেমেন্জ্র প্রসাদ ঘোষ, নির্মল 
চন্্র চট্টোপাধ্যায়, ডাক্তার 
স্থনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, 
আশুতোষ লাহিড়ী প্রমুখ 
হিন্দুনেতৃবৃন্দ ও ছুই শত গ্রতি- 
নিধি কলিকাতা হইতে কৃষ্ণ- 
নগরে পৌছেন। ষ্রেশনে 
ম্বেচ্ছাসেবকগণসহ বিশিষ্ট 
হিন্দু নাগরিকবৃন্দ তাহাদের রি 
অভার্থনা করেন। ততঃ কৃষ্নগরে সভাপতি গ্রভৃতিকে লইয়া এক মাইল দীর্ঘ শোনডাবাত্রার একাংশ 
সহ সহম্্র লোক তাহাদের 
দর্শন প্রতীক্ষায় আগ্রহাঁকুল 
চিত্তে সমবেত হয় । অতঃ- 
পর বেল! ২।০ ঘটিকার সময়ে 
নির্বাচিত স ভা পতি, ডাঃ 
মুঞ্জে ও আন্থান্ নেতৃবৃন্দকে 
লইয়৷ এক বিরাট শোভাধাত্রা 
বাহির হয়। শোভাধাত্রার 
পুরোভাগে ছিল হিন্দু পতাকা 
শোভিত সুসজ্জিত হম্তীঃ 
তৎপরে ছিল শত শত সাই- 
কেল আরোহী স্বেচ্ছাসেবক? 
সর্বশেষে অনুষত সম্রদায়ের 
গমন ফরিতেছিল। * একপে : কৃষ্ণ হিল. সশ্িলনে 'হঙ্েমাতরম' মীতের পাকা 
শৌভাবাতরা পত্রপষ্প ভুসজ্জিত দ্াজপথু দিবা ধীরে ধীরে অগ্র- 'অপরাছু ৪-১৫ মিনিটের সময় পাবলিক লিরেরী প্রাণ 
সর হইবার কালে সভাপতির মন্তকোপরি অত্র পুষ্প বধিত . সহ চসহশর দর্শকের উপযোর্গী নির্পিতি' বিশ্বাট মণ্ডপে সভার 








৯৯ ৬০ 
স্থরাস্য 


অধিবেশন আঁরস্ত হুয়। রভাপতি স্যার ময্সধনাথের পাসে 
বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দ মঞ্চোঁপরি উপরিষ্ট থাকেন। মঞ্চের সম্মুখ- 
ভাগে প্রতিনিধিরা তাহাদের আসন গ্রহণ করেন। . প্রথমে 
অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতি তাহার অভিভাষণে সকলকে 


॥ 
ঘ 





শ্তার শ্ীধৃত মন্মখনাথ মুখোপাধ্যায় 
সাদর সম্ভাষণ জ্ঞাপন করিয়া ও পাকিস্থান পরিকল্পনাদলনে 


সন্ধর ব্রতী হওয়ার প্রয়োজ্জনীক্পতা উল্লেখ করিয়া সাম্প্রদায়িক 
বাটোরারা ওপুনাচুকতির তীব্রভাবে নিন্দ! কেন এবংববাদিপায় 
নারী নির্ধ্যাতন ও কুলটার গুলী চালনা! প্রভৃতির প্রতিকার 
উদ্দেশ্টে হিন্দুঘাত্রকেই সুজ্ঘবদ্ধ হইতে আহ্বান করেন। 
চাঁরিদিকে শুনা যাইতেছে যে আগামী লোকগণনায় 
মুসলমানের সংখ্যাই বেশী হইবে; কিন্ত তিনি তাহার 
সমালোচনায় হিন্দুর সংখ্যাই ঘে বেশী হুইবে তাহা সকপকে 
ৃ্রভাবে জানাইয়া দেন। 

* বাঙ্গালী হিন্দুর বর্তমান অবস্থা উল্লেখ করিয়া সভাপতি 
মহোগয় বলেন--“হিন্ুর ধর্মানুষ্ঠান, প্রতিমা বিসর্জন ও 
গারুয়ারা এখন আর অবাধে নিষ্পক্ হয় না। . মুসলমান- 
করিতে পায়ে না। হিন্দুগণ সর্ধদাইি নানা দৃঃখকন্ট-য়ে রন 
হইয়া লাঞ্িভ ক্গীবন যাপন করিতেছে । আর এই দুঃস্থ 
.ক্রেণীর ছুঃখ মোচনের নামে .এমন' জাইন প্রবিত মুইয়াছে 
4৪. হইন্চেছে যে তাহার ফলে এই জাতি হয়ত পরবর্তীকালে 





জন্ম ভলক 


[ ২৮শ বর্-_২য় খণ্ড--১ম নংখ্যা 


আচ 


নৃণ্ত। হইয়া যাইবে । ন্নে নীতিতে আজ বাজালাদেশ পরিচালিত 
হইতেছে তাহার মূলভিত্তি সাশ্্রদায়িকতায় বর্তমান । সম্প্রতি 
যে শিক্ষাবিল বা আইনের কৃষ্টি হইতেছে তাহার মূলেও 
সাম্প্রদায়িক মনোভাব রহিয়াছ্ছে। ইহার ফল আপাত- 


স্থাইটতে সেন্গপ ভীষণ না হইলেও পরে ক্ষতিকর মূর্তিতে 


আকাশ পাঁইবে।* অভঃপর ডাঃ মুগ্জে হিন্দুসংগঠন সঙ্ন্ধে 
"এক বক্তৃতা দেন এবং হিন্দুগণকে আশু সঙ্ঘবন্ধ হইতে 
অনুরোধ করেন। সভায় উপবিষ্ট সকলেই নিঝিষ্টচিত্তে 
তাহাদের বন্তৃতা ও অভিভাষণ শ্রবণ করেন। 

পরদিন প্রাতে কৃষ্ণনগর মোমিন পার্কে ডাঃ মুগ্জে হিন্দু 
মহাসভার পতাকা উত্তোলন করেন এবং প্রত্যেক হিন্দুবে 
প্র পতাকাতলে সমবেত হইতে আহ্বান করেন । বেলা ১টার 
সময়ে দ্বিতীয় দিবসের অধিবেশন আরম্ভ হয়। এই অধিবেশন 
ছয়ঘণ্টাব্যাপী চলে। এই সভার অন্যতম বক্তা ডাঃ 
শ্যামাপ্রসাদের বক্তৃত! শ্রবণ করিয়া সকলেই তাঁহার ওজন্থিনী 
ভাষায়, তাহার দৃঢ়চিত্ততায় ও ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হন। শ্রাযুত 
রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের মাধ্যমিক শিক্ষাবিলের সমালোচনা 


৪ 


ণ 
৯5 
সি 
বং ০, 











উহ  হিনুপতাক| বহনকারী হস্তী--মিছিলের ' 
. নহিত এই হন্ও ছিল 


1 
১2:12 


পৌষ ১৩৪৭] | 
স্থাপন 
বেশ যুক্তিযুক্ত হয়। শ্রীধৃত নির্দলচন্ চট্টোপাধ্যায়ের পু 
গুলী চাঁলনার বর্ণনা এমনই মর্শাস্তদ হয় যে অনেকে অশ্রু: 
বিসর্জন করিয়। সমবেদনা গ্রকাশ করেন. 1 

অধিবেশনে গৃহীত বহু প্রস্তাবের মধ্যে রাজনৈতিক : 
বন্দীমুক্তি, মাধ্যমিক শিক্ষাঁবিল প্রতিরোধ, দ্বিতীয় কর্পোরেশন 
বিল, ধর্মচর্চায় বাধাস্থষ্টির প্রতিবাদ, গীতবাগ্যসহ 
শোভাযাত্রার অবাধ অধিকাঁর ও কুলটী গুলীচালনার তদন্তের 
দাবী, হিন্দুসমাজে বেকার সমস্যার প্রতিকারের উপায় 
ইত্যাদি প্রস্তাঁবগুলি বিশেষ উল্লেখযোগ্য । 

এক্ষণে জঙ্ববদ্চভাবে হিন্দুগণ উক্ত প্রস্তাবসমূহ যথার্থ 
ক্যকরী করিতে গ্রয়াসী হইলে সত্যই সাফল্যের সম্ভাবনা 
মাছে । বিগত প্রাদেশিক অধিবেশন দেখিয়া মনে হয় যে 
হিন্দু আঁ সচেতন হইয়াছে । সে হিন্দ সংগঠনের আবশ্যকতা 
মম্ম মান্ম উপলব্ধি করিযাছে । সে আর অন্তায় অতভ্যাচাখ 
ও অবিচার সহ করিতে রাগী নহে। সে এক্ষণে মনে 


খল 








ব্যতীত রাজনৈতিক 


১০১৮৬ 


স্হা ব্ভাস আন ব্--্হাট 








করিতে না যে রাজনৈতিক আন্দোলন করিতে 


(হইলেও, সংঘবদ্ধ হওয়া আবস্ঠক৭ বস্ততঃ জাতির সংগঠন 
স্বতন্ত্র আসিতে পারে না, কিংবা 
আপিলেও তাহার পরিণাম, জুথপ্রধ হইতে পারে না। এই 
সম্মিলন হইতে আঁমরা আর একটা জিনিষ দেখিতে পাই। 
অনুন্নত ও অন্পৃশ্ত জাঁতির ভিতরেও জার্সিবার আভাষ 
পাওয়া! যাইতেছে। বিপন্ন অবস্থা হইতে উদ্ধার পাইতে 
হইলে উন্নত সম্প্রদায়ের সহিত বন্ধুভাঁবে মিশিতে হইবে 
তাহা তাহারা বুঝিতে পারিয়াছে এবং উন্নত সম্প্রদায়েরাও 
অচন্নতদের সাহাধোর আবশ্যকতা স্বীকার করিতেছে । 
এই মিলিত বন্ুতাঁব দেখিয়! মনে হয় যে এই তাঁব হৃদয়ে 
্প্রতিঠঠিত হইলে সকলের সম্মিলিত চেষ্টায় বাঙ্গালী হিন্দুর 
সকল বিপদ অচিরেই বিদুরীত হইবে। তাহাঁদের একাস্তিক 
আগ্রহ দেখিয়। আশা হয় যে এই ভাবের বন্তাঁয় ভাটা 'পড়িৰে 
না । উহার পরমার হইবে যেমনি অব্যয়, তেমনি অক্ষয়। 


জানালার ধারে 
শ্রীবিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায় 


আলোছাঁয়া অন্ধকারে দীড়াইলে জানালার ধারে, 
দ্বাদনীর চাদ বুঝি দেখ! দিল মেঘের ওপার? 
অথব! স্বপন এলো যেন কোন্‌ নদীর কিনারে 
ব্লাঝার পাঁখে থেন নেমে এলো! ছায়া-অঞ্চকার। 


এলে তুমি ত্রস্ত পদে, দেখে নিলে গেছি কতদুর- 
ফিরিয়া চাঁহিয়। দেখি চোখ ছুটি তারার মতন; 
মলিন হাঁসির রেখা গোধূলির বেদনা বিধুর 
অতীত দিনের ছাঁয়া মুখে তব মধুর এমন ! 


বহু দূরে গেছি বুঝি ?--তবু দেখি জানালার ধারে 
ফিরে এলো! দিনগুলি, শরতের শিশির সকাল, 
নির্জন মধাহ যত লু পাঁয়ে এলো বারে বারে 
চকিত চুম্ধন কত বাহুডোরে কত ইন্ত্রজাল! 
হয়তে! গভীর রাঁতে বাঁতীয়নে নাই তুমি আর 
আমার মনের পথে ছাঁয়ামুন্তি এলে! যে তোমার! 





শোনা 


' উ্ভাক্ঞসহ্মাভক ও দ্কম্মম্মীত্ডি-_ 


পণ্ডিত জহরলাল নেহরুকে কারারুদ্ধ করায় ভারত- 
ব্যাপী যে বিক্ষোভের সঞ্চার হইয়াছিল তাহারই ঢেউ ছাত্র- 
মহলকেও যে উদ্বেলিত করিয়া তুলিয়াছে তাহাতে বিস্মিত হইবার 
কিছু নাই। কিন্তু কয়েকটি প্রাদেশিক সরকার ছাত্রদের এই 
মনোবুত্তিবরদাস্ত করিতে রাঁজী নহেন ; বরং তাহার ছাত্রদের 
এই বিক্ষোভ প্রদর্শনকে অমার্জনীয় অপরাধ বলিয়। গণ্য 
করিয়াছেন। মাদ্রাজ ও যুক্তপ্রদেশেই ছাত্রদের প্রতি 
কঠোর দমননীতি প্রদশিত হইয়ছে। দিল্লীর খবরে 
প্রকাশ, দিল্লীর ছাত্রসমাজের সভাপতি মিঃ ফারোকির এমএ 
ডিগ্রী ও সম্পাদক মিঃ সিংঘির বি-এ ডিগ্রী কাড়িয়া লওয়া 
হইয়াছে । দ্বিলী বিশ্ববিদ্ঠালয়ের ভাইস-্যাঙন্দেলর শুর 
ম্যপিস গয়ারও এই দণ্ড অনুমোদন করিয়াছেন। যে 
অপরাধের জন্য এই দগ্াদেশ প্রদত্ত হইয়াছে তাহা এমন 
কিছু মারাত্মক অপরাধ নহে ; আর শান্তিটাও গুরুতর বলিয়া 
মনে করা চলে; কিন্তু স্থান কাল পাত্র-ভেদে সহজ জিনিষই 
যে জটিল. হইযা পড়ে, ইতিহাসে তাহার নজির ভূরি ভূরি 
পাওয়া! বাষ। 


ভঞ শ্যামা অ্রসাত্ন্দ ভ্ঞমঞ 


সম্প্রতি আগ্র! বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন উৎসব উপলক্ষে 
ভক্টর শ্রাধুক্ত শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় যে অভিভাষণ 
দিয়াছেন তাহাতে তাহার ভারতীয় সংস্কৃতিবোধের পরিপূর্ণ 
প্রমাণ পাওয়া গিয়াছে । তিনি এ প্রসঙ্গ বলিয়াছেন যে, পৃথিবীর 
মানব সমাজ আজ অতি ছুর্দৈবের মধ্য দিয় চলিতেছে ; উদার 
ও বিচক্ষণ দৃষ্টি আজ সব চেয়ে বে আবশ্তক হইয়া 
পড়িয়াছে। আজিকার সর্বব্যাপী বিচ্ছেদ, হতাশাঃ অজ্ঞতা, 
অন্ধতার মধ্য দিয়া ভারতবামীকে তাহাদের সত্যিকারের 
কল্যাণের পথ থুজিয়া বাহির করিতে হইবে। হিন্দু ও 
মুসলমানকে ভারতের আবশ্ঠক এঁক্য প্রতিষ্ঠা করিয়। জীবনকে 


সকল দিক দিয়া উদার ও সহিষু করিয়া তুলিতে হইবে । ধে 
উদ্দার মনোভাব ও দৃষ্টিতে ডঃ 'শ্থামাপ্রসাদ এই কথাগুলি 
বলিয়াছেন, আজিকার দিনে যাহার! বিভেদ স্থষ্টি করিয়াই 
চলিয়াছে, তাহারা তাহার কথাগুলি ধীরভাবে শুনিতে 
চাহিবে বলিয়া মনে হয় না। কিন্তু আমাদের বিশ্বাস, 
শুনিলে দেশের ও জাতির অশেষ কল্যাণই সাধিত হইবে। 


ন্বিহাল্রে প্রাঞ্থনিক্ শ্পশিল্ষ। ও লাত্চালা 


ভারতের প্রত্যেক প্রদেশেই নিরক্ষরতা দুর করিবার জন্থ 
আগ্রহ ও প্রচেষ্টা লক্ষিত হইতেছে । সম্প্রতি অধ্যাপক 
কে, টি, শাহের সভাপতিত্ে বিহারের শিক্ষা-সংস্কার সাঁমতি 
বাধিক আড়াই কোঁটি টাঁকা ব্যয়ে বিহারের দশ বৎসরের 
নিয় বয়সের ৫২ লক্ষ ৫* হাজার বালক-বালিকার 
বাধ্যতামূক প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার জন্ত সুপারিশ 
করিয়াছেন। গঠনমূলক কাজে বিহার সরকার কংগ্রেসী 
মস্ত্রীমগুলের আমল হইতে যেরূপ আগ্রহ দেখাইতেছেন 
তাহাতে মনে হয়, বিহার সরকার এই স্থপারিশ মানিয়া 
লই্বেন। অথচ বাঙ্গালা এ বিষয়ে যে কতট। শশ্চাতে পড়িয়া 
মাঁছে তাহা বল! যায় না। একদিন বে বাঙ্গাল! শিক্ষা, সভ্যতা 
ও সংস্কৃতির গর্ধে সমগ্র ভারতের নিকট হইতে মর্যাদা লাভ 
করিয়াছিল, আজ সাম্প্রদায়িকতা লইয়া! সেই বাঙ্গালাই 
নিজেদের মধ্যে খাওয়া-খাঁওয়ি করিয়া মরিতেছে। 
অজ্ঞানতাই আমাদের দেশে সকল বিরোধের প্রধান কারণ; 
সেই জন্যই বাঙ্গালাঁয় বিহারের ন্তাঁয় ব্যাপকভাবে বাধ্যতামূলক 
প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা অবিলম্বে হওয়া একান্ত প্রয়োজন । 


হিন্ুনল্ীক্র দ্াআজাশ্রিক্ষান্র 


হিন্দুনারীর দায়াধিকাঁর বিল সম্পর্কে কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা পরিষদে 
শ্রীযুক্ত অখিল চন্দ্র দত্ত মহাশয় যে প্রস্তাবটি আনেন, সেটি 
অগ্রাহ/হইয়! গিয়াছে । হিন্দুর প্রচলিত আঁইনে পিতা অথবা 
স্ার্মীর সম্পত্তিতে ম্যেরদের ভরণপোঁষণের ব্যবস্থা ভিন্ন আর 


১৯৮ 


পৌধ--১৩৪৭ 1 


থু” “হা সস খু. 








ফলে হিন্দুসমাজে নানা অন্থুবিধা, অশান্তি ও সাপ 


দিয়াছে । সুতরাং দেশের কল্যাণকামীর্দের আমরা এবিষয়ে 


সস্তোষজনক মীমাংসার জন্ঠ চেষ্টা করিতে বলি। 
তদ্কমশ্পীজঅল্লাত্ভিত্য লমাাভ্-্নহক্কান্- | 


ইংরেজ-শাসিত ভারতের মত দেশীয় রাজ্যগুলিতেও 
সমাজসংস্কার আন্দোলন সুরু হইয়া গিয়াছে । সম্প্রতি 
দক্ষিণাপথের কোচিন রাজ্যের আইন-সভায় বাল্যবিবাহ 
নিয়ন্ত্রণ বিল গৃহীত হইয়াছে । শাঁরদা আইনে ইংরেজ- 
শাসিত ভারতে যে ফলের প্রত্যাশা করা গিয়াছে, অনুরূপ 
উদ্দেশ্ঠ সাধনের জন্ভই কোঁচিনের এ বিবাহ-নিয়ন্ত্রণ আইন 
রচিত। এই আইনের দ্বারা স্থির হইয়াছে যে, বিবাহযোগ্য 
পাত্রের বয়স অন্যন আঠার, আর কন্তাঁর চৌদ্দ বৎসরের 
কম হইতে পারিবে না। আইনের ব্যবস্থায় কোন গোল 
নাই; কিন্ত আইনের প্রয়োগে তাহা যদি শারদ আইনের 
প্রয়োগ ব্যবস্থার মতই হয় তাহা হইতে উদ্েশ্ট যত সাঁধুই 
চোঁক না, বাল্যবিবাহ-নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্য সিদ্ধ হইবে না । 


সলিভ্ভালা। সন্কলেনে সল্রন্কাল্রী অ্রচ্ভ্ো_ 


ভারতের শিক্ষা সম্বন্ধীয় কেন্দীয পরামর্শ দাতা বোর্ড 
_ এদেশে বৈজ্ঞানিক পরিভাষা রচনার জন্য একটি কমিটি 
নিযুক্ত করিয়াছেন বলিয়া প্রকাশ । এই কমিটির ধাহারা 
সদন্ত হইয়াছেন তাহাদের মধ্যে একজনও বাঙ্গালীর নাম 
দেখিলাম না। স্থুধু তাই নহে, যে বিষয়ে ভারতের সকল 
প্রদেশের পণ্ডিত সমাজের পরামর্শ অপরিহার্য, সে বিষয়ে 
পণ্ডিতসমাঁজের সঙ্গে কোন পরামর্শই করা হয় নাই। 
মহারাষ্ট্র হইতেও কাহারও নাম এই কমিটিতে নাই। 
অথচ ভারতীয় ভাষাগুলির মধ্যে বাঙ্গালা, হিন্দী, মারাঠী ও 
২গুজরাটাই সর্ববাপেক্ষা:উন্নত। , বাঙ্গালা ও মাঁরাঠী ভাষায় 
অনেক দিনু হইতেই পরিভাষ সঙ্কলনের কার্ধ্য আরম্ভ হইয়া 
গিয়াছে এবং এ বিষয়ে খানকয়েক গ্রন্থও রচিত হইয়াছে। 
এমতাবস্থায় সরকাঁর-মনোনীত সদস্য দিয়া ইংরেজী ভাষার 
সাহায্যে পরিভাষা সঙ্কলন যে ভস্মে ঘি ঢালা-গোঁছ একটা 
কিছু হইবে, এ বিষয়ে আম্রা নিঃসন্ছ। 


সাজ 


কোনও স্বাভাবিক অধিকার নাই; থাকা উচিত ছিল কি-না সপ লত্ে অথ ম্সিস্সোঙগ__ 
আলোচনা এখ 
রি এখন নিক্ষল। তবে এইরূপ বিধিব্বস্থা | স্খুতি এক সরকারী ইন্তাহারে প্রকাশ, গত 


২৯৯১১ 


স্মস্ রা . 





গত ২৭শে 
অক্টোবর যে সপ্তাহ শেফ হইয়াছে তাহাতে ৩ টাকা মদের 
ডিফেন্স ফণ্ডে ৬২ লক্ষ 9৪ হাজার টাকা সংগৃহীত হইয়াছে। 
গত ২৬শে অত্টৌবয় পর্যন্ত হুদবিহীন ডিফেন্স ফণ্ডে প্রাপ্ত 
খণের পরিমাণ মোট ২ কোটি ১৬ লক্ষ ৮৭ শাজাঁর টাকা 
দাড়াইয়াছে। ৩ টাকা স্থদের ডিফেন্স ফণ্ডে মোট ২৭ কোটি 
৬ লক্ষ ৫৪ হাজার টাঁকা (ইহার মধ্যে নগদ ১৩ কোটি 
৬১ লক্ষ ৮ হাজার টাকা ও খগপত্র পরিবর্তন দ্বারা 
১৩. কোটি ৪৪ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা ) এবং ডিফেন্স সেভিংস 
সার্টিফিকেট বিক্রয় করিয়া ১ কোটি ২৩ লক্ষ ৪৯ হাজার 
টাকা সংগৃহীত হইয়াছে। উক্ত ২৬শে অক্টোবর 
তারিখ পর্য্যন্ত বিভিন্ন প্রকার ডিফেন্স বণ দ্বারা সমস্ত 
ভারতবর্ষে মোট ৩০ কোটি ৪৬ লক্ষ ৯* হাজার টাকা 
সংগৃহীত হইয়াছে । 


হসলন্বাভ্িন্নীভি লোক প্রত 


জরুরী অবস্থার জগ্ত ভারতবর্ষে যে নূতন সেনাবাহিনী 
গঠিত হইয়াছে তাহাতে এ পধ্যন্ত প্রায় ১ লক্ষ লোকের 
নাম গৃহীত হইয়াছে । ইহা ছাড়া, ভারতীয় ও ইউরোপীয় 
প্রায় ২ হাঁজার লোককে সানরিক শিক্ষা দেওয়া হইতেছে। 
উক্ত লক্ষ লোকের মধ্যে মাদ্রাজ হইতে ৪৮ হাজার, 
বোন্ধাই সাড়ে সাত হাজার, রাজপুতানা ও মধ্যভারত 
হইতে ৫ হাজার ৩শত ৫০ এবং নেপাল হইতে ৩ হাঁজার 
৩শতের উপর লোক ভর্তি হুইয়াছে। এই নূতন সেনা" 
বাহিনীতে যে সকল লোক ভদ্তি হইয়াছে তাহাদের মধ্যে 
শতকরা ২৫জন পাঞ্জাবী মুসলমান । এই সৈন্তবাহিনী 
গঠনের জন্য এককালীন ১৭ কোটি টাকা এবং বাধিক 
১২ কোটি টাক! ব্যয় হইবে বলিয়া জানা যাঁয়। 


সলল্নোক্ে পৌর গোপাল হেবা _ 


বিশ্বভারতীর আর একজন একনিষ্ঠ সেবক, শ্রীনিকেতনের 
কর্মী গৌরগোপাল ঘোষের অকাঁলবিয়োগে আমর! 
ব্ঘিত। এক সময়ে তিনি প্রসিদ্ধ ফুটবল খেলোয়াড় 
বলিয়াই প্রসিদ্ধি অর্জন করিয়াছিলেন 1+কিছ্ত কর্মক্ষেত্র 
হিসাবে বাছিয়! লইয়াছিলেন রাঁল্যের শিক্ষা-মন্দির শাস্তি, 


৯৯২২৬ 


রর 


[ ২৮শ বর্ষ-_২য় খণ্ড--১ম সংখ 


শন্থ” --স্ ব্য” _স্থ্৬ স্বস্থিপ স্পা স্স্ল -খটে ব্য. গু অপসারিত স্ম্হা্্য আনিস সা প্রত পা ব্রেল সহি বত সা বহার” “গস” -সস্য্ ্ডচ দে বর” সহ বা ক থা 


নিকেতনকে এবং বিশ্বভারতীর শ্রীনিকেতনের * মঙ্গল 
কার্যে আত্মনিয়োগ করিয়াছিলেন। তীহার অভাবে 
বিশ্বভারতী সত্যকাঁর নিষ্ঠাবান একজনকে হারাইয়া বিশেষ' 
ক্ষতিগ্রস্ত হইল। আমরা গৌরগোপাজের শোকমন্তপ্ত 
পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করিতেছি । 


আঁমেল্রিলান্স ল্রাস্ট্রস্পত্ডি নিশর্াভন্ঘ_ 


আমেরিকার ঘুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ নির্বাচনে মিঃ রুজভেল্ট 
বু ভোটের জোরে তৃতীয় বারের জন্ত আমেরিকার রাষ্ট্রপতি 
নির্বাচিত হইয়াছেন। রিপাব্রিকাঁন দলের মিঃ উইলকি 
এই নির্বাচনে মিং রুজভেপ্টের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন । 
রুজভেপ্টের এই নির্বাচন তাহার জনাদরের প্রকুষ্ট প্রমাণ 
সন্দেহ নাই, কিন্ত জগতব্যাপী এই সঙ্কটের মুখে তাহার 
নীতি আমেরিকার পক্ষে সর্বাংশে কল্যাণপ্রদ কি-না, 
এ বিষয়েও অনেকের মনে সন্দেহের অবকাশ আছে 
বলিয়া! শুনা যাইতেছে । 


বক্রেন্লেল্র আদ্কানুঠা। 

লগ্ডনে একটি মসজিদ ও ইসলামীয় সংস্কৃতির কেন্দ্র 
স্বাপনের জন্য বুটিশ সরকার এক লক্ষ পাঁউও্ড ব্যয় মর্থুর 
করিয়াছেন। ইসলাম ধর্ম ও ইসলাম সংস্কৃতির প্রতি 
বৃটিশ সরকারের শ্রদ্ধার পরিচয পাইয়া মুসলিম জগং 
বৃটেনের প্রতি অবশ্যই সহাম্ভূতিসম্পন্ন হইবেন। ভারত, 
পূর্ব ও পশ্চিম আফ্রিকা? বৃটিশ অধিরুৃত আরব এব” মালগে 
কৃটিশ সম[টের প্রায় বার কোটি মুসপিম প্রজা আছে। 
সরকারের 'এই বদান্যতায় বর্তমান বুদ্ধে সেই বিরাট সম্প্রদায়ের 
নৈতিক ও অন্বিধ সাহায্যের মূল্য স্বীকার করিয়! 
লওয়া হইল । 


আন্না উত্লভ্ভল শ্লিজদ হাতে 


ভারত সরকারের নূতন ভারত শাসন আইনের ফলে 
বিভিন্ন প্রদেশে দুইটি করিয়া আইন পরিষদের ব্যবস্থা হয 
এবং তাহাতে যে ব্যয়বানুল্য দেখ দিয়াছে তাহা কোন 
কোন প্রদেশের পক্ষে বহন করা অসম্ভব হইয়া দাঁড়াইয়াছে। 
সম্প্রতি আসাম ব্যবস্থা পরিষদ আসামের উচ্চতর মাইন 
সভাটি তুলিয়া ধার জন্ত একুপরস্তাব গ্রহণ করিয়াছেন। 
সরকার পক্ষ ( অর্থাৎ মন্ত্রী্ূল) ও কংগ্রেস পক্ষ মিগিয়া 


প্রস্তাবটি পাঁশ করিয়াছেন, ইউরোপীয় দল যথারীতি ইহার 
বিরোধিতা করিয়াছিলেন। অবশ্ত ভারত শাসন আইন 
সংয্বৌধন করিবার অধিকার কোন প্রাদেশিক আইন সভার 
নাই। না হউক, আসামের মত দরিদ্র প্রদেশের পক্ষে 
ওরকম একটি প্রতিষ্ঠান জিয়াইয়! রাখা যে সম্ভব ও সঙ্গত 
নয়, তাহাই প্রকাশ পাইয়াছে। 


সপল্র্লোক্ছে স্রভিস্ি-প্রন্ধান্ন জর 


ভূতপূর্বব প্রধান মন্ত্রী মিঃ নেভিল চেম্বারলেন ভশ্বাস্থা 
ও ভগ্রমনোরথ হইয়া তাঁহার পল্লীভবনে কিছুদিন 'আঁগে 
পরলোকগমন করিয়াছেন। মিউনিক প্যান্ট তার 
প্রতিষ্ঠাকে লোকচক্ষে হেয় করিয়া দেঘ, তাই এই সঙ্কট 
সময়েও দেশের কল্যাণ হইবে মনে করিয়া নীরবে তিনি 
পদত্যাগ করিয়াছিলেন । আজ তিনি সকল সমালে|চনাব 
উর্দে; কিন্তু তাহার রাজনৈতিক জীবন হইতে আমবা ইহাই 
দেখতে পাই যে, দেশের কল্যাণ কামনা তাহার সকল 
কন্মপ্রচেষ্টার মধ্যে ওতঃপ্রোতভাবে নিহিত রহিয়াছে এবং 
দেশের স্থাধী কল্যাণও তাঁচাঁর দ্বারা সাধিত হইয়াছে । তিণি 
এই লোক ও জাতিধবংসকর সর্বনাশা শড়াইকে এড়াইয়া 
চলিতেই চাহিয়াছিলেনঃ কেন না তিনি ছিলেন মআাপলে 
শান্তিকামী । মানরা তাহার আম্মার শান্তি কামনা 
করি। 


তললুক্ক্হান্মে হত প্রতেসন্ল ও্সাল- 


বেলুচিস্থানের জাতীয়তাবাদীগণ ভারতীয় কংগ্রেসে যোগ 
দিবেন বলিয়া প্রচারিত হইয়াছে । বেলুচিদের মধ্যে 
অধিকাংশই মুসলমান । সাম্প্রদায়িক আবগাওয়ায় ভারত 
আজ বিপর্ধত্ত, তাই এই সংবাদ জাতীয়কল্যাণকামীদের 
মনে স্বস্তি আনিয়! দিবে বলিয়াই মনে হয়। ইহাও প্রকাশ 
বে, তাহারা শীঘ্বঠ নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটির অন্বভূক্ত 
হইবার জন্ত আবেদন করিবেন |; এতদিন সেখানে কোনরূপ 
কংগ্রেস কমিটি ছিল না । তাই আমাদের বিশ্বাস, নিখিল 
ভারত কংগ্রেস কমিটি সঙ্গে সঙ্গেই তাহাদের আবেদন গ্রহণ 
করিবেন। সান্প্রদায়িকতা যখন দেশের স্বাধীনতা লাঁভকে 
সুদুর্ঠ/ ঠেলিয়া দিতেছে সেই সময় বেলুচিদের এই প্রত্তাব 

হচনার মতই মনে হইতেছে । 





টিপ £ কা ০৯৮5 ৭. 5 

সিনে 1 সতত পতিত নিও, ৭ 

নাকিংভাম প্রামাদের উদ্যানে সম।ট যষ্ঠ জজ্জ, সামাজ্ঞী ও মি; উঠনষ্টন বিনাতের লঙদ ভার উপর বোম! পড়ার পর তাহার ব্যবস্থা । 
চাচ্চিল-_উহারা্ এখন বুটাশ সামাজা রন্দা করিতেছেন আনেক স্থানে বাড়ী ধ্বলিয়া পড়িয়! গিয়াছে 


চে 


চ 








লাহোরে গুক্ নানকের জন্বস্থ[নে/অবন্থিত গুরুদ্বার,। নানকের 


০ ১ 


০টি শিপ 


বিলাতে গাওয়ার ট্রাটের ভারতীয় ছাত্রাবামে বোমা পড়িয়া 





দিল্লীতে সম্পাদক সম্মিলনে টিবিউনের মিঃ সন্ধী, লীডারের মিঃ বিশ্বনাথ প্রসাদ, 
অমৃতবাজার পত্রিকার শ্রীতুমারকাস্তি ঘোষ ও কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা পরিষদের 
ডেপুটী স্পীকার প্রঅখিলচন্দ্র দত্ত 


' | ০ বা 
1 ঠা গ রি খ । বা রর 


81 





|র্লকাতা শ্রদ্ধানন্দ পার্কে সাধারণের ্র্নিযান-মারণ প্রতিরোহ কেন্ত্রা। 


৬. 


স্পীজ্জাদ পরলোকগমন করিয়াছেন। 
জাতীয়তাবাদী মুসলিম নেতা ও জম|য়েখউল-উলেম] হিন্দ 


পোঁষ-_-১৩৪৭ ] 


৬-্য বগা স্যান্ডি পস্য্চ ব্প স্গা্রপা স্ব পা” স্ান্ড স্দান্রাগ - স্ব" -স্য্চান্ডিলা সস সন্ত বপন 


ত্ষীন্স ভি লাভ ল কসিম্পন্ম_ 


বঙ্গীয় ভূমিরাঁজস্ব কমিশনের স্থপারিশসমূহ 

রিবার জন্ঠ বাঙ্গালা সরকার যে স্পেশাল অফিসার নিযুক্ত 
করিয়াছিলেন, সম্প্রতি তিনি তাহার রিপোর্ট দাঁখিল 
করিয়াছেন। স্পেশাল অফিসার তাহার রিপোর্টে 
কমিশনের সুপারিশ অপেক্ষা অধিক হারে গ্রতিপুরণসহ 
স্বেচ্ছামলকভাঁবে জমিদারী ক্রয় ব্যবস্থার স্থপারিশ 
করিঘাছেন। কমিশনের গ্রন্তাব অনুসারে বাধ্যতামূলক 
জমিদারী ক্রযের 'অস্ত্রবিধাগুলিও তিনি তাহার রিপোটে 
উলগ করিয়ু।ছেন | প্রকাশ, রিপোট পেশ করিবার আগে 
তিনি প্র জমিদারা কাধ্য সম্পর্কে সকল বিষয় জানিবার 
জন্ মফ:ম্থল কেন্দ্রগুলি পরিদশন করিধানেন। স্বেচ্ছামূলক 
অথবা বাধ্যতামূলক জমিদারী ক্রযের পরিকল্পনা সম্পর্কে 
শাসনতাপ্ত্রিক সমস্ত থাকায় সম্ভবত বাখাল। মরকার বর্তমান 
আইন সভার আঁমলে এরূপ কোন জমিদারী ক্র বিল 
উপস্থিত করিবেন ন|। 


সল্লিআক্ে লবন্কাক্রেল্র শা ভ্কল্স_ 


কেন্দ্রীয় ব্যবস্থপরিষদে অতিরিক্ত রাঁজন্ব বিলে সরকারের 
ঘে পর1জঘ ঘটিল তাগা পূর্ব পূর্ব পরাজয় হইতে স্বতন্ত্র 
শ্রেণীর । শন্তান্ক বারের পরাজয় শাসনতন্ত্র পরিচালনার 

ভূত সাধারণ ঘটনা মাত্র । কিন্তু এবারকার পরাজয়ের 
স্বতন্ন গুরুত্ব 'এবং নিয়মতান্ধিক 'মগ 'আছে। ভারতবর্ষের 
বর্তমান শাসননীতির পরিবর্ভন যে নিতান্ত প্রযোজন হইয়া 
পড়িয়াছে এই পরাজয়ের মধ্যে সুরকাঁরের জন্ক সেই শিক্ষাই 
নিহিত রঠিয়াছে। সরকারের পরাঁজন হইলেও বড়লাট যে 
সার্টিফিকেট করিবেন তাহাতে কোন সন্দেহ নাই। 


সল্পল্নোক্কে সীললানা। সীভঙ্কাদত_ 


ইল পস্ত্প্রদিদ্ধ মুসলিম ধর্মগুরু মৌলানা 


তিনি ছিলেন একজন 


নামক নুপ্রতিষ্টিত মুলিম জাতীয়তাবাদী প্রতিষ্ঠানের অদ্ভুত 


সংস্থাপক | দেশের জন্য *কংগ্রুমের* ডাকে তিনি আ 


দুঃখবরণ করিয়া দেশবাসীর গ্রীতিভাজন হ্ইয়াছিলেন। 









য়া জাতীয় কগ্রেসের অত অশেষ ক্ষতি হইল। 


সমভ্িল। ছাত্রী ক্রুভিত্ব- 


্রহবক্ষত্রাির উপাদান (য়্যাস্ট্শিফিজিকস ) সম্পর্কে, 
গবেষণা করিয়া কলিকাতার ভিক্টোরিয়া ইনিস্টিটিউশনের 
গণিতশান্বের অধ্যাপিকা শ্রীযুক্ত! বিভা মজুমদারকে কলিকাতা! 
বিশ্ববিদ্ভালয় মোয়াট মেডেল দিয়া পুরস্কত করিয়াছেন? 
১৯৩৭ সালে প্রেমটাদ রাঁয়ঠাদ বৃন্তিলাভের পর তিনি গত 
দুই বৎসর কাল উপরোক্ত বিষয়ে গবেষণা করিতেছিলেন। 
মহিলাদের মধ্যে তিনিই সর্বপ্রথম কলিকাত! বিশ্ববিষ্ঠাঁলয়ে 





পরীধুক্তা বিভাঃমজুমদ।র 
বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য উক্ত মেডেল পাইলেন। 
্ীযৃক্তা মজুমদারের জীবনে উত্তরোত্তর সাঁফল্য কামনা! করি। 


ভাল .্ষ।(-_ 


অধ্যাপক ল্যরেন্স “সাইক্লোন, যন্ত্র আবিষ্কার করেন। 
এই যন্ত্রের সাহাধ্যে প্রতি মৌলিক পদার্থের অথুগুলিকে 


ভাঙ্গিয়৷ তাহার গড়ন পরিবর্তন সহজসাঁধ্য হুইয়াছে। এই 
যঙ্্রের সাহায্যে নব ন ঘের হৃষ্টি তাহার 
সাহায্যে রসায়ন। পদার্থকিান ও জীববি ৃ 
মজান। রহস্যের আবিষ্কার ঝীঁভ্ভব হইয়াছে এবং 


৯২২ 


নৃতন নৃতন জ্ঞান সঞ্চয় হইতেছে । এই যন্ত্রটি বু মূল্যবাঁ? 
কাজেই সকল শিক্ষায়তনের পক্ষে ইহা রয় করা সন্ত 
নহে। এই কারণে কলিকাতা বিশ্বরিষ্ভালয়ও এতদিন 
এই যন্ত্র ক্রয় করিতে পারেন নাই। সম্প্রতি খবর পাওয়া 
গেল যে, স্যর দোরাঁবজী টাটা চ্যারিটির ট্রাস্টিগণ কলিকাতা 
বিশ্ববিষ্ঠালয়কে উক্ত যন্ত্র ক্রয় করিবার জন্য যন্ত্রের মূল্যের 
অর্ধেক অর্থাৎ বাট হাঁজার টাকা এই সর্তে দিতে সম্মত 
হইয়াছেন যে বিশ্ববিদ্ভালয় আরও ষাট হাজার টাকা সংগ্রহ 
করিলে টাটাঁর দান পাইবেন। অধ্যাপক ল্যরেম্সের নিকট 
তিন বৎসর কাঁজ করিয়া অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করিয়াছেন এমন 
একজন ভাঞ্তীয়ের উপর এই যন্ত্রের ভার অর্পণ কর! হইবে 
এবং বিশ্ববিষ্ালয়ের ছাত্রদিগকে এই যন্ত্র সাহায্যে গবেষণা 
করিবার পদ্ধতি শিখাইবার ভার দেওয়া হইবে। মহামতি 
টাটার দাঁন ষে এক্ষেত্রে সার্থক হইবে; তাহা বলাই বাহুল্য । 


ভ্ডাক্কা ওভাল ম্শিঞন্মিদ্িস্পননি-_ 


পশ্চিম ভারতের অন্তর্গত ভাজাগুহাসমূহে দুই হাঁজার 
বত্মর পূর্বেকার পুরাকীর্তি ও ভাস্কর্য নিদর্শন এতদিন ধরিয়া 
অস্তিত্ব বজায় রাখিয়া আসিতেছে । এগুলিকে সংরক্ষিত 
না করিলে মূল্যবান এঁতিাসিক তথ্য নষ্ট হইবে। প্রকাশ, 
এগুলিকে রক্ষা করিতে মাত্র নয় হাজার টাকা আপাতত 
আবশ্তঠক। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এ সকল ব্যাপারে 
অর্থব্যয় করিতে বর্তমানে সমর্থ নহেন বলিয়া জানাইয়াঁছেন। 
পুাতববিশারদেরা বলেন, ভাজাগুহাসমূহের প্রস্তর ভাঙ্্য 
বীশুধৃস্টের জন্মেরও অনেক আগে খোদিত এবং এইগুলি 
হইতে ভবিষ্যৎ ছাত্রের! প্রাচীন ভারতের ভাস্কর-শিল্পের বহু 
প্রয়োজনীয় নিদর্শন পাইতে পারিবেন। সরকার যদি এই 


সব মূল্যবান পুরাঁতন্ব সংরক্ষণে এখন সম্মত না হন তাহ! 
হইলে ভারতে এমন কোন মুসন্তান কি নাই-_ধিনি বা 
ধাহারা সামান্ চেষ্টা করিলেই এই মূল্যবান শিল্প-নিদর্শন 
সুরক্ষিত হইতে পারে ? 





)ঁ 1 ভার ভ্রাতা লর্ড নখ্বরিফের সহযোগিতায় তিনি 


সণল্সভ্বম্য 


1 ২৮শ বর্ধ- ২য় খণ্ড---১ম সংখ্যা 


সংবাদপত্র ব্যবসায় আরম্ভ করেন এবং অসাধারণ ব্যবসায়- 

জোরে বিলাতের অনেকগুলি শক্তিশালী সংবাদপত্রের 
স্বত্বাধিকারী হইয়াছিলেন। ঠ্ডেলি মেল+, “ডেলি মিরর» 
লগ্ুন ইভিনিং নিউজ প্রভৃতি বিখ্যাত শক্তিশালী সংবাদ- 
পত্রগুলি গোঁড়া রক্ষণশীল দলের পক্ষে থাকিয়া বৃটিশ 
সরকারকে যে ভাবে শাসনকাধ্যে ও পররাষ্ট্রনীতি নিয়ন্ত্রণে 
সাহায্য করিয়াছিল তাহা অনন্তসাধারণ। ইংলগ্ডের এই 
সন্কটমুহর্তে তাহার মত একজন প্রবীণ শক্তিমান সাংবাদিকের 
মৃত্যুতে ইংলণ্ড বিশেষ ক্ষতিগ্রস্ত বোধ করিবেন বলিয়াই 
আমাদের বিশ্বীস। 


শচ্মা হবো পুশ সহ গ্রহ- 


কলিকাতা ভবানীপুর নিবাসী শ্রীযুত জ্যোভিষচন্্র দোঁষ 
মহাশয তাহার কন্যা উমারাণী ঘোষের স্বৃতিরক্ষা কল্পে 'একটি 
অদ্ভুত পুস্তকসং গ্রহ কলিকাতা বিশ্ববি্যালয়ে দান করিয়াছেন। 
ও সংগ্রে শুধু বাঙ্গালী মহিলাদের লিখিত পাচ শত গ্রন্থ 
আছে। সম্প্রতি এ সংগ্রহে আরও ২৬খাঁনা গ্রন্থ দেওয়া 
হইমাছে। বাঙ্গালার সকল মহিলা-গ্রন্থকার বদি ভাহাদের 
পুস্তকপুলি এ “সঃ গ্রহণ মপো দান করেন, তবে উ সংগ্রহ 
পূর্ণাগ হইতে পাবে । এই ভাবের সংগহ আমাদের 
দেশে ছুলড | 


ত্লভ্ডাল্রে ভাজতে ভভ্ান্ন নিভ্রঞী_ 


আমরা জানিয়া আনন্দিত হইলাম অল ইপগ্ডিদা 
রেডিও'র কলিকাতা স্টেশনের পরিচালকগণ সম্প্রতি ছাদের 
জন্ত বেতারে জ্ঞান বিতরণের বিশেষ ব্যবস্থা করিমাছেন। 
বাঙ্গালা দেশে ৭৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ নিজ নিজ 
বিগ্ভালযে বেতার যস্ত্র বসাইয়া উহা গ্র্ণেরও ্তযোগ 
লয়াছেন। বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্গণের দ্বারা “স্ল 
ব্রডকাষ্ঠ, বিভাগে বক্তৃতা দেওয়ান হইতেছে । 


ভাল্লভীক্স ০েনাদল্লে 


বাঙ্গাল সরকার এক ইন্তাহারে জানাইয়াছেন যে, 
বাঙ্গালার যুবকেরা যুদ্ধ বিভাগে যতগুলি এমার্জেন্সী কমিশন 
পাইয়টছ তাহাতে বাঙ্গালী শ্বতই গর্ব অনুভব করিবে। 
দ্ধ“বিভাগে প্রতিদিন কয়টি করিয়া এমার্জেক্দী কমিশন 


ঞ্ালি হর তাহা কাহারও অজানা নাই। সেনাগলে 


পৌঁধ--১৩৪৭ ] 


নিয়োগের ব্যাপারে বাঙ্গালীদের যে এখনও 

ফেলিয়া! রাখা হইয়াছে তাহা সরকার অবশ্ঠই জানেন । 
কেন্জীয় পরিষদের প্রঙ্নোত্তরেও তাহা প্রকাশিত হইয়া 
পড়িয়াছে। সম্প্রতি বিভিন্ন প্রদেশের দৈন্ঠ নিয়োগের 
যে বিবরণ প্রকাশিত হইয়াছে তাহাতে জানা যায় 


সাসন্সিজী পু 


২৯টি 


শু না, কিন্ত আঁসলে বিলটির উদ্দেশ্য 
সংবাদপত্রের উপন্ব এক আর দফা! কর্তৃতস্থাপন। বিলের 
কতকগুলি ধারায় বলা হইয়াছে যেঃ আইন সভার 
কার্যাবলীর যে সমন্ত রিপোর্ট মভাঁপতি কর্তৃক নিষিদ্ধ 
হইবে সেগুলি ছাপা যাইবে নাঁ। দ্বিতীয়ত, সভাপতির 


কার্য পরিচালন, চরিত্র এবং নিরপেক্ষতা সম্পর্কে কোন 
ভুল বা মানহানিকর মন্তব্য করা যাইবে না। তৃতীয়ত, যে 
সমস্ত দলিলপত্র সরকার কর্তৃক প্রকাশিত হয় নাই সেগুলি 
আগে প্রকাশ করিয়! দিলে আইন অন্থসারে দণ্ডনীয় হইতে 
হইবে। এই সব অপরাধের বিচারের জন্যও হয় ত স্বতন্ত্র 
আদালত গঠন করিতে হইবে। বাঙ্গালা সরকারের তৃণে আরও 
কত অস্ত্র আছে জানিতে পারিলে বাঙ্গালী নিশ্চিন্ত হইত। 
শল্লল্লোক্ষে অশ্যাশক শাক্ষাক্নাজ্প-- 
উত্তরপাড়া কলেজের রসায়ন শাস্ত্রের অধ্যাপক পান্নালাল 
মুখোপাধ্যায় সম্প্রতি পরলোৌকগমন করিয়াছেন। কলেজে 


পাঠান পাঞ্জাবী মুসলমান 
শিখ ১১৬০৫) ডোঁগর। ৪১৪৬৪) গুর্খা ৩,২০৯ 
গাড়ওয়ালী ২১৫৯৮) কুমাওনী ১১৫৭৪ ) রাজপুত ৩,৯৯৭ 
জাট ৫৩০৭7) আহীর মারাঠা 
খৃষ্টান ২১৪০১) হজার ৮৫৩) অন্যান্য হিন্দু ১৫, ৯৫২ 
অন্তান্কা মুসলমান ৭১৯৮ এবং কুর্গী ৯৯। বাঙ্গালী হিন্দু 
বা মুসলমান নামক কোন জাতি বা সম্প্রদায় হইতে সৈন্য 
নিয়োগের কোনি উল্লেখই উপরোক্ত তালিকায় নাই। হয়ত 
তাহাদের সংখ্যা এতই নগণ্য যে তাহাদের সংখ্যাটা 
“বিবিধ'এর মধ্যে গিয়া পড়িয়াছে। অথচ বাঙ্গালা সরকার 
আমাদের গর্ধধিত হইতে বলিয়! দিয়াছেন ! 


৪১৭৬১ ) ২৪১৪৮ 


১১৫৭৪ ৫,১৬৪ 


নিক্রল্ল ক্ল্র- 


খুচরা পণা বিক্রুয়ের উপর কর ধার্য করিয়া দুই কোটি 

টাকা রাঁজস্ব বৃদ্ধি করিবার জন্য বাঙ্ালা সরকারের পক্ষ 
হইতে যে বিল উত্থাপিত হইয়াছে তাহার বিরুদ্ধে দেশব্যাপী 
[* শরতিবাদেও কর্তৃপক্ষ কিছুমাত্র বিচলিত হন নাই। বিলটি 
সিলেক্ট কমিটিতে পেশ করা হইয়াছে । বলা বাহুল্য, ভোটের 
জোরে সরকার ঘে এই বিলটিও পাশ করাইয়া লইবেন 
তাহাতে কোন সন্দেহ নাই।  অনীবশ্যক ব্যয়বহুল শাঁদন 
ব্যবস্থার খাতিরে দেশের নিরন্ন অসহায় অধিবাসীদের উপর 
বার বার ট্যাক্সের উপদ্রব করিয়া সরকার যে খুব স্থুবুদ্ধির 
পরিচয় দিতেছেন তাহ! ত মনে হয় না। এই আইনটি যে 
দরিদ্রদের বিপক্ষেই নিক্ষিপ্ত হইবে এবং তাহারাই যে বিরত 

সন বেশী, তাহা অন্বীকার করিবার উপায় নাই। 





আব্র একটি নুভ্ন্ন বিকল 







বাঙ্গাল সরকারের পক্ষ হইতে আর একটি উত মুখোপাধ্যা় | 
বিলের নমূন! সরকারী গেজেটে একাস্সিত হইয়াছে। ০১ তিনি ১৭ বংসর অ করিয়াছেন। গত ছুই' 
সালের বঙ্গীয় আইন সভার অধিকার ও ক্ষমতা! রক্ষা বিল উবৎসর যাবৎ তিমি হা ভূগিতেছিলেন এবং স্বানি-. 


নামে ইহা পরিচিত। বিলের নাম হইতে হঠাৎ তাহার জনত কিছুদিন হইতে [পুরে বাস কর্িছিলেন 


২৯85 


ব্রা রহ স্পা 
পাক্সালালবাবু বহুমুখী প্রতিভাসম্পন্ন অধ্যাপন্ধ ছিলে) 
চিন্কুমার থাকিয়া! আজীবন বিভাচর্চায় কুল কাটাইগ়াছেন। 
বিজ্ঞান, দর্শন, সাহিত্য, সঙ্গাত ইত্াদি বিষয়ে তাহার 
বথে্ জান ছিল। তিনি ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট ও 
ক্যালকাটা, ওল্ড ক্লাবের উৎসাহী সদস্ত ছিলেন। স্থ্ীয় 
চরিত্রের মাধূর্য্যে ছাত্র,বন্ুবান্ধব এবং পরিচিত সকলেরই তিনি 
প্রিয়তাজন হইয়া! উঠ্ঠিয়াছিলেন। তাহার মৃত্যুতে বাঙ্গালা 
একজন খাঁটি অধ্যাপক হারাইল। আমর! তাহার শৌক- 
সম্তপ্ত পরিজন ও গুণমুঞ্ধদিগকে আমাদের অন্তরের সমবেদনা 
জানাইতেছি। 


ুহ্ছে স্রটেন্েল্্ ত্ষন্বিক্ক ব্যস 


যুদ্ধের জন্ত বুটেনের বর্তমানে দৈনিক প্রায় সতর কোটি 
টাকা ব্যয় হইতেছে। ইতিপূর্বে নাকি এরপ ব্যয় আর হয় 
নাই। একপ ব্যয়াধিক্য হইলে যে ধার ছাড়া গত্যন্তর নাই, 
তাহা বলাই বাহুল্য । আমেরিকার নিকট ৮3৪ কোটি টাক! 
খণের প্রস্তাব করা হইয়াছে, এই টাকায় দিন পঞ্চাশেকের 
কাজ চলিবে। সমগ্র বুটিশ সাম্রাজ্যের উৎপর কর্ণ বন্ধক 
রাখিয়া এই খণ দেওয়া হইবে বলিয়া আমেরিক! প্রস্তাব 
করিয়াছে । কিন্তু লড়াই যে রকম গজগমমে চলিয়া ছে 
তাহাতে পঞ্চাশ দিনে তাঁহার কোন সুরাহা হইবে বলিয়া ত 
মনে হয় না। ততঃ কিম্‌? 


ভিক্কিশুসাপঙ্মনা সমাশ্বান্দের ইতি 


বাঙ্গালার প্রার্দেশিক চিকিৎসক সঙ্গিলনের খুলনা 
অধিবেশনের সভাপতি ডাঃ স্থবোধ দত্ত মহাশয় যে অভিভাষণ 
দিয়াছেন ..তাহা নান! দিক দিয়া উল্লেখযোগ্য তিনি 
প্রবীণ, চিকিৎসকদের গ্রামে ফিরিয়া যাইবার “অন্ভরোঁধ 
করিয়া বলিয়াছেন যে, উদীয়মান চিকিৎসকদের হাতে শহরের 
ব্যবস! ক্ষেত্র ছাড়িয়া দিয়! ধাহার! ইতিমধ্যেই প্রতিষ্ঠালাভ 
করিয়াছেন তাহা্গিংগর পল্লী গ্রামে যাওয়া কর্তবা। তাহাতে 
পল্ীগ্রাের ছাছুড়ে চিকিৎসকের উপজ্রব কমিবে, পল্লী- 
বাসীরাপ্জযবাযে প্রতি্ঠাপর চিকিৎসকদের দ্বারা চিকিৎসা 
করাইতে প্রতব ॥ অপর 
এমসহরে শর্তিদান তরুণ 

গমিলিবে। ইহা! 
যেনপ বুদ্ধি পাইতেছে তাহা 


গলকগণের যোগ্যত। প্রশ্নাণের 


জ্ঞান্জজ্ঞম্ 





প্রতিষ্ঠীপন্দের অভাবে . 


[ ২৮শ বর্ষ-_২য় থ৩্ড--১ম সংখ্যা 


- 


কৃতী সন্তানের! ব্যয়ব্লতার জন্য চিফিৎসাশান্ত্র পাঠে যোগ 

পারিতেছে না । ইহাও দেশের পক্ষে ক্ষতির কারণ । 
সভাপতি ডাঃ দত্ত যে সব সমন্তার ও তাহাঁর সমাধানের 
ইঙ্গিত করিয়াছেন তাহার মীমাংসাঁয় মনোযোগী হইতে বিলম্ব 
কর! চিকিৎসকগণের পক্ষে উচিত হইবে না। 





এব্রাল্রেল্র আদকসস্মমান্ি- 
রাজনৈতিক কারণে গত আদমন্থুমারীতে হিন্দু 
জনসাধারণ সহযোগিতা করে নাই। ফলে হিন্দুরা 


বাঙ্গালায় সংখ্যালঘিষ্ঠ হইয়া যে অবিচার ও কুবিচার লাভ 
করিতেছে তাহাতে এই প্রদেশে তাহাদের অবস্থাটা দ্রিন 
দিনই করুণ হইয়া উঠিয়াছে। এবারের আদমন্তমারীতেও 
অন্গরূপ ব্যবস্থা অবলদ্বিত হইবে বলিয়া জনসাধারণের মনে যে 
সকল আশঙ্কার উদ্রেক হইয়!ছে তাহা সংবাদপত্রের পাঠক- 
মাত্রই অবগত আছেন। সম্প্রতি বঙ্গীয়ব্যবস্থাপরিষদে 
স্বায়ন্তশাসন-প্রতিষ্ঠানগুলিকে আদমস্ুমারির কতকগুলি 
ব্যয় নির্ববাহের অধিকার প্রদানের জন্য একটি বিল উত্থাপিত 
হইয়াছিল, ভোটের জোরে গৃহীতও হইয়াছে। মন্ত্রীপক্ষ 
হইতে যে সব যুক্তি গ্রদশিত হইয়াছে তাহাতে হিন্দুদের মনের 
সন্দেহ নিঃশেষে দূরীভূত হইবে বলিয়া মনে হয় না। মন্ত্রীপক্ষ 
হইতে বলা হইয়াছে যে, লোকগণনা কার্যে প্র্ত্যেক ক্ষেত্রে 
একজন হিন্দু ও একজন মুসলমান গণক নিযুক্ত করিবার 
জন্য বাঙ্গালা সরকার কেন্ত্রীয় সরকারকে অন্থুরোঁধ করিবেন । 
হয়ত বাঙ্গালা সরকারের অন্গরোধ রক্ষিতও হইবে, কিন্ত 
তাহাতেই যে সমস্তার সমাধান হইবে তাহা আমরা মনে 
করি না। 


জ্ঞাল্পভীল্স সিভিক সাভ্ডিসেন্ এ্বম্ন্ম - 


ভারতীয় সিভিল সাঙিসে যে রকম মোটা বেতনের 
বরাদ্দ, পৃথিবীর কোন দেশেই ওই পদমর্ধ্যাদার অন্রূপ 
কর্মচারীর এত মোটা বেতন নাই । অঞ্চট আমরা স-লেই 
জানি যে, ভারতবর্ষ দরিদ্র দেশ,*তাই এখানে দর্কল্যণ্র 
অনেক অনুষ্ঠানই অর্থাভাবে করা যায় না। ভারতের 
যা অধিকাংশই ক্ষুধিত দরিগ্র কষক শ্রমিককে বঞ্চিত 
1 আদায় কর! হয়! অথচ এই রাসস্থের প্রায় এক- 


চিকিৎদাশান্্র অধ্যয়নের ব্যয়" চতুর্থাংশ যায় ভারতীয় খণের সুদ জোগাইতে, আর এক- 
মাধারণ মধ্যবিত্ত সদর চতুর্থাংশ সামগ্রিক বিভাগে । বাকী য। থাকে .ত/হার ।চছিশ 


পৌষ-_১৩৪৭ 


ভাগ ব্যরিত হয় রাজস্ব আদায় এবং শান্তি-শৃঙ্খলা উরক্ষার 
জন্ত ) পাঁচ ভাগ শিক্ষা, আর যাহা! তলানি পড়িয়া! থাকে [তাহ 
দিয়! কৃষি, শিল্প, স্বাস্থ্য ইত্যাদির হাশ্তকর উন্নতি বিধানের 
চেষ্টা হয়। ভারতে জেলা-হাঁকিমরা সাধারণতঃ বারশ হইতে 
তিন হাজার টাঁক মাসিক বেতন পাঁন। বিভাগীয় 
কমিশনরর! চারি হাজার পাইয়। থাকেন। ইংবণ্ডের জন- 
কয়েক স্থায়ী আগার সেক্রেটারী মাসিক তিন হাজার টাকা 
বেতন পান। জাপানের প্রধান মন্ত্রীর মাসিক বেতন ৬২২২+ 
অন্ঠান্ মন্ত্রীরা ৪৪০২ এবং সেক্রেটারীর! ৩৭৫২ টাঁকা পান। 
জাপানে ভারতীয় সিভিলিয়ানের তুল্য চাকুরিয়াদের বেতন 
৩৪২ টাঁকা। আর গ্রেটবুটেনে এ শ্রেণীর চাঁকুরিয়াদের 
বেতন ৭৭০২ হইতে ১১০০২ টাকাঁর মধ্যে । ভারতে ইংরেজ 
চাঁকুরিয়াদের বেতনই সব নহে । তাঁহার! বু প্রকার ভাতা 
পাইয়া! থাকেন- ছুটিতে বিলাত যাওয়া-আসার খরচা ও 
ভাতা, বাড়ী ভাড়া, সদরে থাকিবার ভাতী। স্থানীয় ভাতা 
ইত্যাঁদি। ইহাঁর উপর ছুটি 'ও পেন্সনের দরুণ ব্যবস্থা ত 
আছেই। তাহাদের এই ব্যবস্থা আইন করিয়া পাশ 
করিয়! লওয়! হইয়াছে । সুতরাং ভারতবাসীকে না খাইয়াও 
রাঁজন্ব জোগাইতে হইবে ইংরেজ সিভিলিয়ানদের 
প্রতিপালনের জন্য | 


ভ্ডাল্লভেল্লস ইন্ভিহাস সঙ্কলেন্ন কনা 


আমাদের দেশের স্কুল কলেজে ভারতবর্ষের যে ইতিহাঁস 
পঠনপাঠন চলে তাহা এতিহাসিকদের মতে ভ্রান্তিপূর্ণ তথ্যে 
সমাকীর্ণ ) বহু ্রতিহাঁসিক তত্বই নতুন গবেষণার ফলে মিথ্যায় 
পরিণত হইয়াছে । সম্প্রতি ভারতীয় কংগ্রেপ ভারত- 
ইতিহাসের ত্রাস্তিপূর্ণ অংশ বজ্জন করিয়া! একখানি নৃতন 
ইতিহাস রচনার উপধে।গিতা শ্বীকার করিয়া কাধ্য আরম্ভ 
করিয়। দিয়াছেন। স্যর ষছুনাথ সরকার প্রণুখ প্রায় 
ই জন শ্রেষ্ঠ এতিহাধিকের তত্বাবধানে উক্ত ইতিহাসখানি 
হইতে আরম্তস্হইয়াছে। বিদেশী এতিহাসিকগণ 
ইচ্ছাপূর্বধক সত্যগোঁপন করিয়াছেন। আজ তাহাদের 
দৌঁষ উ্া-। করিতে গিয়া কোন বিশেষ জর ৰা 
সম্প্রদায়ের মনস্তষট করিতে বম্লে তাহা! হইবে 
ভয়াননক। জাতির উত্থান-পতনের ইতিহাসে বু কাম 







+দ্বাকে। : নকল দেশেরই আছে এবং হা ক ব্য থা কার 


নাস 


০ 


জনোরতি বা অবনতির পরিমাণ বুঝিতে: 
বা ফায়। সিঢকর নিকট সত্যের স্থান সকলের 
উপরে; ক্ষুতরাঁ& যে 'লব মনীষীর উপর.ভারত-ইতবিছাগ- 
রচনার ভার 'পড়িয়াছে তাহারা কখনই সত্যের 'অপকাইপ 
হইতে দিবেন না ইহাই আমাদের কাঁমল|।. 


ছা ভি তদ্ত কুবি 


তৃতীয় কলিকাতা ধয়:স্কাউট .এসোসিয়েসনের প্রৎম 
গ্ুপের রোভার স্কাউট গ্রীম়ান বিধু ঘোদক কিছুদিন পূর্বে 
শিবপুরে বোটানিকাল গার্ডেন্সে একজন মহিলা! ও একজন 
পুরুষকে নিমজ্জিত হইতে দেখিয়! তাহাদের প্রাণরক্ষা 








প্ীম/ন বিধু মোদক ৃ 
করিয়াছিলেন। তাহার এ কার্য্ের জন্য বাঙ্গালার গভর্ণর 
তাহাকে একটি পদক উপহার দিয়াছেন । 


প্রন্লাসী ন্বাল্চালী ছাক্রচ্ন্র ক্রভিত্ব_ 


পাটনা বিশ্ববিদ্তালয়ের উপাধি বিতরণ উৎসবে এমএ, 1 
ও এম্‌-এস্-সি পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীর প্রথম স্থান অপ্বিকার 


করার কন ধাহার সন্মানিত হইয়াছেন, তাহাদের. অনেককেই £ 


বাঙ্গালী, 'এ মংবাদে বাজালী 'মাত্রেরই, সপ হইবার 
ইংরেজী, শীযুক্ক 






কথা। প্রকাশ, শ্রীযুক্ত শিশিরকুমার । 
স্মীরকুমার ঘোষ ইতিহীঘ, তত . 'গঞ& কাচ 
কর্থনীতি ও শ্রীযুক্ত বল।ই (বিরকার রমায়লে 

ছন।। , রানি মানি 


খাই 
বিচারে শিক্ষা বীক্ষা ও সংস্কৃতিতে যে এখনও খুরোভাগে 
বিদ্তমান, ইহাতে বাঙ্গালী ভাতির বিশেষ গর্বিত হওয়ার 
'হাখা সন্দেহ নাই। আমর! এই চারিজন “বাঙ্গালীর ক্কৃতিত্বে 
ক্টানথা্দিগকে আন্তরিক অভিনন্দন জাপন এবং তাহাদের 
জীবনের সর্বাজীণ সাফল্য কান! করিতেছি । 


উহভনত্জে সম্যন্সিভ স্ঞপরঙল্গন্সের সংগুয- 


বিগন্ত ১৯২৭ হইতে ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত দশ বৎসরে 
ইজ্পণ্ডের মধ্যবিত্ত জনগণের সঞ্চয়ের পরিমাণ ১৬৬ কোটি 
'»১৩ লক্ষ পাউও বুদ্ধি পাইয়া ৩৮১ ফোটি ১২ লক্ষ পাউণ্ডে 





আসামের গতর্ণর সহ নিখিল আসাম ফটো গ্রাফিক প্রদর্শনীর সত্যগণ ফটে1--বি, ব্যানাজ্জা, শিলং 


পরিণত হইয়াছে । বিল্ডিং সোসাইটিগুলির মারফত ৭৪ 
কোটি ৬£ লক্ষ পাউণ্ড, শিল্পে নিযুক্ত শ্রমিকদের জন্ত যে 
'মকপ কোম্পানী বীমার কার্য্য করিয়া থাকে তাহাদের 
মারফত ২০ কোটি ১ লক্ষ পাউও্, সাধারণ জীবনবীমা 
“ফোম্পানীগুলি দ্বারা ১৯ কোটি ৭ লক্ষ পাউণ্ড, পোস্ট 
বধ্জফিস সেভিংস ব্যাঙ্কের মারফত ১৮ কোটি ৫৯ লক্ষ পাউওড 


বং রি প্রভিডেন্ট সোঁসাইটিগুলির মারফত 
1 কোটি ৫ লক্ষ পাঁউও বৃর্মি পাইয়াছে। 'লগুন চেম্বার 
২৯৮ ধর্মাসি” জার্নেল। মতে এই সঞ্চিত অর্থের 


শ বর্তর্ীনে ৪** কোটি 


ভ্ডাব্রজন্বয্ 


৮০ ক ক সা দু স্ব স্যর সস স্ব ্” স্য স্কুল স্ম্ স্ডল স্তন স্ সস স্ল স্ ব্য সস স্ স্য্ সম স্ব স্ব বল স্সা স্ব কা বা ব্য স্তর পি না সত 
রঙ 


[২৮শ বর্- ২য় খও্ডঁ-"১ম সংখ্যা 


দশ রংসরের শেষ ভাগে ইংলগ্ডের যে পরিমাণ জাতীয় খণ 
তাহার প্রায় অর্দেক হইয়াছে । ভারতের মধ্যবিত্ত 
সম্প্রদায়ের সঞ্চয় কত? 


তাাাস-ভ্ডাল্রভ আাশিভ্ক-__ 


সম্প্রতি “ইস্টার্ন ইকনমিস্ট পত্র ১৯৩৯ লালে জাপানের 
বহির্বাণিজ্য সম্পর্কে যে তালিকা দিয়াছেন তাহাতে দেখা 
যায় উক্ত বংসরে জাপান হইতে বুটিশ ভারতে মোট ১৮ 
কোটি ৮* লক্ষ ৪* হাঁজার ইয়েন মূল্যের পণা আমদানি 
হইয়াছে । অপর পক্ষে জাপান বুটিশ ভারত হইতে ১৮ 
কোটি ২২ লক্ষ ৬৩ হাজার 
ইয়েনের পণ্য ক্রয় করিয়াছে । 
কাজেই প্র বখসর জাঁপ-ভারত 
বাণিজ্যে মূল্যের দিক দিয়া 
ভারতের প্রতিকূল বাণিজ্যের 
পরিমাণ দাড়াইযাছে ৫৭ লক্ষ 
৭৭ হাজার ইয়েন। 


জ্ঞান্লত্ঞজে 
ডাস্কমাত্ঙলেেন্র 
হাল্রব্রন্ি_ 


ভারতে অর্থসন্কটে জনগণ 
যখন বিশেষভাবে উৎগীড়িত, 
ঠিক সেই সময় ইউরোপে যুদ্ধ 
বাধিয়াছে ; সুতরাং আমাদের 
অর্থসঙ্কট যে শেষ ধাপে গিয়া 
পৌছিয়াছে তাহাতে ফোন সন্দেহ নাই। কিন্তু ভারত 
সরকার অত সব ভাবিতে প্রস্তুত নহেন ) তীহায়া অতি- 
রিক্ত বাজেটে উপস্থাপিত গ্রন্তাব অনুযায়ী গত ১লা! ডিসেম্বর 
হইতে ভায়তে ভ্ডাঁকমাগুলের হার নিুরূপতাবে বন্দি€ 
করিয়াছেন। রি 
/ 
(১) ভারতে ডাক টিকিট ও ব্যবসায় 
প প্রথম তোলায় এক আনা হইতে পাঁচ/ পরসা । 
পর ্রতি তোলা পূর্বের সায় দুই য়দাই রহিরাছে 
৫ (২) বুক-পোস্ট-এর হার প্রথম আড়াই তোলা ছুই 


অতিক্রম করিয়া গর্ভ পয়লার শ্বানে প্রথম পাচ তোল! তিন পয়সার রঞ্জিত 


পৌষ-_-১৩৪৭ ] সামির ৮০ 


হইয়াছে। পরবর্তী প্রতি আড়াই তোলা পূর্বের নার কাণ্ড পুজা 


পয়সা আছে । ' কলিকাতা ইং ওয়ার্চের সীঝের মজলিসের উদ্ভোগে, 


সহ), প্যালেস্টাইন, ট্রাঙ্সজর্ডন ও অল্নান্য বৃটিশ অধিকৃত দেশে , ূ রা 


প্রেরিত পত্রার্দির ডাকমাগুলের হার প্রথম এক আউন্স দশ 
পয়সা হইতে চৌদ্দ পয়সা । পরবর্তী প্রত্যেক আউন্দের হার 
পূর্বের ম্যায় চারি আনাই আছে। . 

(৪) ব্রহ্গদেশে প্রেরিতব্য পঞ্রা্দির মাশুলের হার 
প্রথম তোল! ছয় পয়সা! হইতে দুই আনা হইয়াছে । অতিরিক্ত 
প্রত্যেক তোলার হাঁর পূর্বের স্তায় এক আনাই 'আছে। 

ভারতের যে-কোন স্থানে ব্রন্বেঃ সিংহলেঃ আফগানি- 
স্থানে ও তিব্বত-লাঁসাঁয় প্রেরিত সাধারণ তার এক আনা 
ও জরুরি তারে ছুই আনা অতিরিক্ত মাগুল ধার্ধা 
হইয়াছে । 


ল্রভু-লবীমোহন কল 


আসামের পূর্ত বিভাঁগের অবসরপ্রাপ্ত একজিকিউটিভ 
এঞ্জিনিয়!র বাঁধসাহেব রজনীমোহন কর গত ৮ই নভেম্বর 





কান্ডিক পৃজ| 


এবারকার বিশেষত্ব এই ছিল যে স্থুগ্রসিদ্ধ নি 
ডক্টর শ্রীযুত শ্ঠামা প্রসাদ মুখোপাধ্যায় মহাঁশয় প্রতিমার 
উদ্বোধন করিয়াছিলেন । 
প্রবাসী শ্বঙ্ছ-সীহিভ্য সশ্মেযেলন্ন- 

আগামী ২৮শে ও ২৯শে ডিসেম্বর জামসেদপুরে প্রবাসী- 
বঙ্গ-দাহিত্য-সন্মেলনের পরবর্তী অধিবেশন হইবে। 
মাত্র তিনটি শাখার অধিবেশন হইবে-_সাহিত্য, বৃহতর-বঙ্জ 
ও বিজ্ঞান। মূল সভাপতি নির্বাচিত হইয়াছেন-__বরোদার 
রাজন্ব-সচিব রাজরতব শ্রীযুক্ত সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়; সাহিত্য 
শাখায় শ্রীবুক্ত অন্নদাশক্কর রায় ও বৃহত্তরব্গ শাখায় ডক্টর 









*রঙগনীমোহন কর | কালিদাস নাগমহাশয় সভাপতি নির্বাচিত সস 
৭ ংরামনারায়ণ মতিলাল লেনন্থ বাসাবাটীষজ ৫৮ দুইদিন পি ই খু 
বব ব্যসেপরলোক গমন করিয়াছেন। প্রীহট জোষ্টুর এই 'যে, তথায় ১৯৪, চস ২ প্রকা 


ুটীভুরী গ্রামে তাহার বাসভমি। আমরা তাহার শোকসন্ত 
পরিবারব্গকে আন্তরিক সমবেদন! জ্ঞাপন করিতেছি । 


সই শপক্রব্ড্যঞ্ | ২৮শ বর্ধ_২য় খণ্ড--১ম সংখা 


স্প্রে স্স্স্্স্্তত্রা -এ চে খাস বল স্স্য্চ খা বহে বগা ্ খালা স্পট টপস খপ _স্ খাডশ- ্চ খটল -স্স্থচ বস বাপ সস্তা খারাপ অন্য বত সস ব্য 


শ্রীমভী োগসাক্সা দেবী; রর "1 পূর্বে, আমাদের দেশের মহিলাদের মধ্যে নানীয়প শিক্পকার্ধ্য 

বিহার সংস্কৃত ছাত্রী সম্মিলনের সভানেত্রী শ্রীমতী প্রচপিত ছিল; এখন সেগুলি প্রায় লোপ পাইতে বসিয়াছে। 
ষোঁগমায়া দেবী বিহারে সংস্কৃত শিক্ষার গগার, ' মহিলাদের 
জন্ত পৃথক পাঠ্য নির্বাচন, সংস্কৃত এর্সোসিয়েসনে মহিলা 
প্রতিনিধি গ্রহণ প্রভৃতি বিষয়ে, আন্দোবন করিয়।, সাফল্য 


+৯ বি 








পানের মনলার বাড়ী 


এ যুগে শ্রীমতী মিত্র বু পরিশ্রম করিয়া যে পানের মসলার 
বাগান বাড়ী প্রস্তত করেন, তজ্জন্ত তিনি সকলের ধন্টাবাদা । 
শ্রসঞ্থন্বাঞ্জগতুক্রীশাধ্যান্স-- 

অবসরপ্রাপ্ত স্কুলইব্সপেক্টার ও পাহিত্যসেবী বাকুড়া- 
নিবানী প্রমথনাথ চট্টোপাধ্যায় মহাশয় গত ২৮শে সেপেম্বর 


হীমতী যোগমারা দেবী 


লাভ ঝরিঘাছেন। সংস্কত . শিক্ষার ইতিহাসে এপ 
দৃষ্টান্ত খই প্রথম! | 
পুসুভ্ভ চ্ত্রেকনল সুতি 
বাঙ্গাল সরকারের ইস্তাহারে প্রকাশ, গত অক্টোবর ও 
ন্ভেঙ্বর মাসে রাজবন্দীরা বিশেষ ব্যবহার পাওয়ার জন্গ 
ফতকগুলি দবী জানান এবং দাঁবী পূরণ না করিলে অনশন 
ধর্ঘট করিবেন বলিয়াও জানান । সরকার তীহাঁদের দাবী 
সম্পর্কে যে ব্যবস্থা অবলম্বন করেন তাহাতে সন্ত্ট না হইয়া 
পাত ২৫শে নভেম্বর পনর জন রাঁজবন্দী অনশন ধর্ম্যট 
করিয়াছেন। গত ২৯শে নভেম্বর হইতে স্ত্ীযুক্ত সুভাষচন্দ্র 
বস্থ অনশন ধন্দ্ঘট করেন এবং পূর্ধব হইতেই তিনি অনুস্থ 
থাকায় অনশনে. তাহার শ্বান্থ্য আশঙ্কাজনক মনে করিয়া 
বাঙ্গাল! সরকার সম্প্রতি স্থভাষচন্দ্রকে বিনা সর্তে মুক্তি 
দিয়াছেন । তাহার আকস্মিক মুক্তিতে বিস্মিত না হইলেও 
হার স্বাস্থ্য আমাদের চিত্তকে চিন্তিত্ত করিয়াছে । তিনি- 
পীর নিরাময় হইয়। দেশের কাজে যোগঙগান করুন .ইছাই 
আমাদের কাম্ছঃ | - 
জ্বর ৫৪ | ফিস 
কলিকাতা ঈনং' গৌর মুখার্জি দ্রীটের প্রীমতী  ৮প্রমধনা॥ চটোপাধ্যায় 
ন্দরী মিত্র পানের মর্স্ী দিয়া যে বাগান বাড়ী তৈয়ার (38 বৎসর বয়সে পরলো কগমন করিয়াছেন । স্থমধুর ব্যবহার 
ন/তাহার চিত্র আম] এখানে প্রকাশ কক্সিলাঘ ও চরিত্র-মাধুর্ষের জন্ প্রদথবাবু সর্বজনপ্রিয় ছিলেন। 








| শি সপপেপপীশ শি সপ পপকপপপ ০, ০পপ্্ প 





০. শিপ এ সপ 


রাচি লেক-_-( রচীর একটি দৃশ্য ) 


পপ শি শশিদিাসপস্পীশপাশতা না 


ফালি পরখ ও ॥ পে এলাকা ১71 


সাগর-ঈক্ষত্বুর ছেলের দল 
স 


ফটো-_জমর বন্দ্যোপাধ্যায়, ক্ষশাচী 





ফটো] -প্ুণীলকুমার মুখো পাধীসরতি 


ঙ 
১ ০১._ 1 ৭ 
মী 1 ৪৭ 


শি 


এই 
চি 
০০, হি “ 


চর 
১ বে 


নি আয মাখন এ ০৮ পেরি 


১:০০ 
১ ঢা 
»৭ক জার ৬৩০৫ 
ক ্পেস্শা শনি নল 





"কীলকাতার গঙ্গায় ( বাগ্ীজারে ) গড়ের নৌকা সমূহে অশ্িকাণ্ডের্/্ | ইহাতে কয়েক লক্ষ টাকার খড় নট হইয়াছে 








জ্ীক্ষেত্রনাথ রায় 


ক্কোস্াড্রাক্কুলান্স হ্ুটিবল £€ 


আই এফ এ পরিচালিত কোয়াদ্রানুলার ফুটবল খেলার 
ফাইনালে মুসলিমদল অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে ১-০ 
গোলে হিন্দুদদলকে পরাজিত করে বিজয়ীর সম্মান অর্জন 
করেছে। প্রতিযোগিতার কোন দিনের খেলাঁতেই 


ইত্ডিয়ানদের চারদিন ব্যাপী খেলার মধ্যে যা কিছু 
প্রতিদ্বন্দিতার আভাঁদ পাওয়া যাঁয়। তিনদিনের থেল! 
অমীমাংসিতভাবে শেষ হয় এবং চতুর্থ দিনে হিন্দু ২৪ 
গোলে খ্যাংলে। ইত্ডিয়ানদের পরাজিত করে। ্ 

বুচি (বোস্বাই) ও সোমানা নিজদলের পক্ষ থেকে, 
গোল করেন। এক গ্যাংলো ইত্য়ানদের বিরদ্ধে চার 





) 


এ দর্শক লমাগম হয় নাই। অপদময় হ'লেও 
এই গিতার যে গুরুত্ব ছিল তা অধিক ,সংখ্যক 
ক্রীড়ামোছ্দের অন্থপস্থিতিতে যথেষ্ট পরিমাণে হাঁস পৌঁ ছ। 
সারা প্রতিযোগিতায় একমাঝ। হিন্দু বনাম ্যাং 


চু 
স্্টি 


ক্ষোয়াড্রাঙুলার ফুটবল গুতিষেগিতায় বিজিত হিন্দু দল 


দিনের খেলাতে এতিদিন হিন্দুদলের খেলোয়াড়দের পরিবর্তন 
করতে রেখা যাঁয়। হিন্ুদলে গোলরক্ষক কে দত্ত অনুস্থ 
থাকায় প্রথম থেকেই খেলা যোগান কর$২ হন নি। 
মনোনয়ন রুমিটি শী উঠ মনোইয়নে - ঘে 


[ ২৮শ বর্--২য় খণ্ড--১ম সংখ্যা 








হলার ফুটবল প্রতিযোগিতা এ বৎসর প্রথম আরম্ত-_ 
সুচনাতেই যে সব ঘটনার অবতাঁরণ হয়েছে তাতে ক্রীড়া 
মোদির! এর' ভবিষৎ খুব বেশী আশাগ্রদ ঝলে মনে 
করছেন না। 

রেফাঁরীর খেলা পরিচালনার অক্ষমতায় গ্যাঁংলো 
ইত্ডিরান থেলোয়াঁড়দের কয়েকজন অযথা বলপ্রয়োগে, 
খেলার বিধি আইন সম্পূর্ণ উপেক্ষা ক'রে খেলার মাঠে 
নিজেদের আধিপত্য স্থাপনে সর্বদাই সচেষ্ট ছিলেন। তাদের 
খেলোয়াড় সুলভ লৌজন্যের অভাবের ফলে হিন্দুদলের 
কয়েকজন জখম হন। জয়রাম গুরুতর আঘাত পাওয়ার 
ফলে হাসপাতালের সাহায্য লন। এ সমস্ত ব্যাপারের 
প্রতিকারের জন্ত রেফারী নিজের ক্ষমতা এতটুকুও প্রয়োগ 
করেন নি। রেফারীর হূর্বলতা এবং শীতের মরসুমের 
সুযোগই বোধ হয় এযাংলো ইত্ডিয়ান খেলোয়াড়দের এতখানি 
উৎসাহিত করেছিল। 

মুদলিম দল ১-* গোলে ইউয়োপীনদের পরাধিত ক'রে 
কাইিনালে উঠে। ফাইনাল খেলায় হিন্দু ও মুসলিমধলের 
কোন পক্ষই নিষ্ধারিত সময়ের মধ্যে গোল করতে অক্ষম 
হওয়ায় এ দিনই শেষ মীমাংসায় জন্ট অতিরিক্ত সময় 
5 খেলান হয়। অতিরিক্ত ষয়ের দ্বিতীয়ার্ধে সাবু দলের 
 বিষীঃছচক গোলটি করেন। | 
' কা'লকাতার প্রথম শ্রেণীর ফুটবল খেলার ফাইনালের 
শেষ নীমাংসার জগ্চ প্রথম দিনেই অতিরিক্ত সময় 
খেঞগাঁনর ব্যবস্থা ইতিপূর্বে আই এফ এ বোধহয় কোনদিন 
করেন নি। খেলার গুরুত্ব বক্ষার জন্ত ফাইনাল খেলার 
প্রথম দিনে অতিরিক নগরের আমরা যেষন পক্ষপাতী নই, 
দর্শক এবং, সমর্থকরাও তেমনি নন্‌। কিন্তু কর্তার ইচ্ছায় 
কর্ম যেখানে সেখানে এরূপ ঘটনা! যে একটা ঘটবে তাতে 
আর আশ্চর্ঘ কি! কোয়ানরাঙ্গুলার ফুটবল প্রতিযোগিতার 
যথেষ্ট গুরু ছে। যেখানে জাতিগত ক্রীড়াচাতু্যের 
বিচার ( “তনুর সম্তহব্যব্থা হওয়াই উচিত। 
১ ্ি্ধ কঠোর হলেও (তা যদি যখাযথ ভাবে পালনে 
কর্ুক্ষ পক্ষপাতিত্বের আধ্রিয় না লন তাহলে খেলার 


পরাঞ্জয় স্বীকার করেও কোন টি “অগৌরব মনে 
করে না। | 
প্রতিযোগিতাটি এদিনেই অতিষ্ঠ কারন যে 
অমীমাংসিত রাখলে বোধহয় কোন পক্ষের কোনর়প বজবার 
থাকত না। সিন্ধুর পেন্টাঞ্কুলার এবার জীঘাংলিতভাবে 
শেব হ'য়েছে অথচ এই প্রতিযোগিতা বহুদিনের? যে ক্কারণে 
একদল ভিন্নদিনে খেলায় যোগদান করতে অক্ষম এবং 
একমাত্র প্রশংসাপত্র ছাড়া খেলার জয়পরাজয়ের উপর 
কোনরূপ দ্রপি প্রাপ্তির সম্ভাবনা ছিল না সে কারণে 
কর্তুপক্ষ অনায়াসেই এরূপ ব্যবস্থা অব্লঙ্ছনা করতে 
পারতেন। এতদিনের প্রচলিত ব্যবস্থার তাহলে অপমৃত্যু 
ঘটত না। 

মুসলিম__আলীহোসেন ; দিরাজুদ্দিন, জুন্মার্থা; বাচচিখা, 
রসিদরখা ও মাস্থম ) নূরমহম্মণঠ করিম, রসিদ, সাবু ও 
আব্বাম। 

হিঙ্ব-_ডি সেন; পি চক্রবর্তী, আর মন্জুষদায $ এ নন্দী, 
প্রেমলাল ও জয়রাম); এস গু'ই, স্বামীনাথম। সোমানা। 
বুচি ও এস নন্দী । 


রেফারী-_সি এস সি লা 


জ্ি্কেউ £ 


মহারাই্র_ ৬৭৫ 
বোদ্ছাই- 
সুদীর্ঘ সাড়ে চারদিনব্যাপী খেলার পর গতবারের রি- 
ইউপি বিজয়ী মহারাষ্ট্র মাত্র 5৫ রানে বোশ্বাইকে পরাজিত 
ক'রেছে। প্রথম ইনিংস শেষ 
হ'তেই সাড়ে চারদিন নজর 
লাগে তাই স্থিতীয় ইনিংস 
খেলার প্র্জোজন হয়নি। ভার- 
তের ক্রিকেট ইতিহাসে এই 
খেলাটি বহু পুরাতন রেকর্ড 
নূতন রেকর্ড স্থাপন 
মহারাঁ&ু টসে 





ভাঙার কা? 
টিতে গ্রথমে ব্যাট কণ্যতে দামে ৷ সুচনা খুব ভাল হয়েছে। 
মহারাছের ওপনিং বাটিসমান ভাঙারকার ও সোভানী 


ফ'যেছে। 


টপীৰ--১৩৪৭ ] 





২০৪ ক'রে জিপি ম্যাচে প্রথম উইকেটের রেকর্ড স্থাপন . প্রাপ্য। দুঃদিন ফিল্ডিং করার পর কোন টীম 


'ব্যাটিতর্রে প্রা সমান প্রত্যুত্তর দেবার ক্ষমতা থাকে না 


করেন। গত বছর এরাই ইউ পির বিরুদ্ধে ১৮৩ রানপক/রে 
ৰ রেকর্ড ক'রেছিলেন। ৯১ "রান 
ক'রে ভাগ্ডারকার হাভেওয়ালার 
'বলে তাঁরই হাতে ধরা দিলেন আর 
সোহানী ১২০ রান ক'রে হাকিমের 
বলে এল বি উরু হলেস। তার 
খেলায় চার স্থিল ১৩টা। হাজারে 
যখন ৭৬ রান করেছেন হিন্দেলকার 
তাকে উইকেটের পিছনে লুফলেন। 
প্রবীণ অধিনায়ক দেওধর দিনের 
শেষে ৮* রান ক'রে নট আউট বইলেন। মহারাষ্ট্রের চার 
উইকেটে রান উঠল ৩৮৫ । বোস্বায়ের ফিল্ডিং অত্যন্ত খারাপ 
হয়েছে, তার! চারটে ক্যাচ নিতে পারেনি। 
দ্বিতীয় দিনে ক্যাপ্টেন দেওধর়ের খেলা আর সকলকে 
মান ক'রে বিয়েছে ) উনপঞ্চাশ কসর বয়দ্ক প্রো সংস্কতের 
অধ্যাপক দেওধর এখনও তরুণের মত শক্তি রাখেন। উই- 
কেটের চতুর্দিকে পিটিয়ে চমৎকারভাবে খেলে তিনি নিজস্ব 
২৪৬ রানের মাথা ্বর্নেকারের বলে হিন্দেলকারের হাতে 
ধর! দিলেন। তাঁর খেপার আর এক বিশেষত্ব সহযোঁগিদের 
যতদুর সন্তব দূরে রেখে নিজে সমস্ত দায়িত্ব নেওয়া । তিনি 
এউট হবার সঙ্গে সঙ্গেই মহারাষ্ট্রের গ্রথম ইনিংস শেষ হয় 
৬৭৫ রাঁনে। গত বৎসর মহারাষ্ট্র বরোদার বিরুদ্ধে ৬৫১ রান 
ক'রে এক ইনিংসের রেকর্ড করেছিলে! ৷ বোম্বায়ের ফিল্ডিং 
প্রথম দিনের চেয়েও খারাপ হয়েছে । হিন্দেলকার ও হাকিম 
উভয়ে ৩টি. ক'রে ক্যাচ ফসুকেছেন) আরো ছুটি ক্যাচ 
অপর লোকে । . | 
মহারাক্ত্রের এই অত্যধিক রানসংখ্যার রিরুদ্ধে বোদ্ধাই 
ব্যাট ক'রতে, নাঁমাল। আয় কোন রান না হবার আগেই 
হিন্দেলকার জট হলেন। | হিনেলকারের আর একটু 
ধৈর্মুধারণ কর! উচিত. ছিলো । রোর্ডে কোন রাঁন উঠবার 
শাঈীনের মত খেলা শেষ হুল। তৃতীয়দিনে 
বৌধাই € উইকেট হারিয়ে রান্‌ ভুললে_২১৫। কেনী আর 
দ্বিজয় যখারুমে ৬৭ ও ৬৯ ক'রে. সেদিনের মত নট আউট 
সইলেন। খ্লোর (গতি এই তাবে ঘুর 





দেওধর 


নাসা হি কারে! কৃতিত্ব গ্লাকে তালে তা কেলীর 


এ এ 





বিশেষত ভারতধর্ষে যেখানে দীর্ঘদিনব্যাপী খেলা খুব কমই 
হয়ে খাঁকে।, কেনীর অদ্ভুত ধৈর্য) তাকে যতরকম 
লোতনীয় বল দেওয়! যেতে পার! যায় তা দেওয়া হয়েছে 
কিন্তু ধৈ্চ্যুত করা যায় নি। নব্বই মিনিটে মাত্র ছু বান 
করেছেন। মার্চেপ্ট তার স্বাভাবিক থেল! দেখিয়েছেন 
চতুর্থ দিনের খেলায় ৬ উইকেটে বোস্বায়ের রান সংখ্যা 
উঠলো ৫০১। ২*৩ মিনিট নির্ভাকভাবে খেলে মার্চেন্ট 
নিজন্ব সেঞচুরী করলেন ) চার ছিলো ৮টা। আর ৯ রান 
ক'রে মার্চেন্ট হাজারের বলে আউট হ/লেন। ইব্রাহিদের 
৬১ রানও উল্লেখযোগ্য । তরুণ খেলোয়াড় রঙ্গনেকার 
উইকেটের চতুর্দিকে চমৎকার পিটিয়ে খেলে ১৬০ রান 
ক'রে নটআউট রইলেন। বোম্বাই অদ্ভুত দৃঢ়তার সঙ্গে 
খেলেছে । পরদিন বোগ্াই সব উইকেট হারিয়ে ৬৫* রানি 
তুললে । বহারাষ্ী ২৫ রানে জরী হছ'ল। উদীয়মাজ 
খেলোয়াড় রঙ্গনেকারের খেলা এই ম্যাঁচেন্ন ভিতর সবেন্লে 
উল্লেখযোগ্য । রঙগনেকার ৬৬৫ মিনিট খেলে ২*২ রাদের 
মাথায় ধারবাটের বলে সোহানীর কাছে. ধর! দিবেন ভার 
খেলায় চার ছিলো ২২টা। এই খেলাটিতে যোস্থায়ের 





মার্চেন্ট 
ছি 


খেছোয়াক্কদ্দের [ঁড়তার উচ্চগ্রশংসা ন: ক'রে পাকসাব.া! 
হিনেনকাক একট ধৈর্যের সঙ্ছে! খ্লেলে বোকাছের জরলা 


7 কত ও 
5৩ 
5 7. 5%৭ 








হয় ভাবতেই পারেনি যে বোগ্াই তাঁদের ষ্ঠ বেশী রানের 
বিরুদ্ধে প্রায় সান সংখাক রান তুলতে পারবে? কিন্তু 
পঞ্চমদিনের খেলায় মহাবাষ্্রের পরাজয়ের সম্ভাবনাও কম 
ছিলো না। মহারাষ্ট্রের ফিল্ডিং বোস্বায়ের চেয়ে ভাল। 
প্রথম শ্রেণীর বোলারের অভাব খেলাঁটিতে বিশেষভাঁবে 
অনভূত হয়। 

বাঙ্গলা £--২৫৭ ও ২৬২ (৩উই £) 

বিহার £-২১৭ ও ৫৮ (৬ উই 2) 

বাঙ্গলা প্রথম ইনিংসে অগ্রগামী থাকার ফলে 
জয়লাভ করেছে । বাঙ্গলা টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করে 
২৫৭ রান করে । রামচজ্জ ৫১, বেরেগড ৫০১ সুশীল ৩৭, 
গণেশ ৩* এবং কাঠিক ৩১ রাঁন করেন। বিহারের এস 
ব্যানার্জি মাত্র ৭ রানে ভিন উইকেট পান। বিহার প্রথম 
ইনিশসে ২১৭ রান করে। সানজানা ৫৪, বি সেন ও 
বাগচী উন্ভয়ের ৩১ রান উল্লেখযোগা । বেরেণু ৫ 


উইকেট পেয়েছেন ৬৮ রানে। তৃতীয় দিনে বাঙ্গলার ৩ 
উইকেটে ২৬২ রান উঠবার পর ক্যাপ্টেন ইনিংস ডি্িয়া্ড 
করেন। জধবর ৬৮ টি ভট্টাচার্য্য ৬২১ নির্মল ৬১ রান। 
টি তটাচাধ্য ছুর্তাগ্যবশতঃ রান আউট ভয়ে যাঁন। 
নির্শলের খেলা! বেশ-ভাঁল হয়েছিলো । জব্বর ৬৮ রান 
, করলেও এক|ধিকৰাঁর আউট হবার সুযোগ দিয়েছিলেন। 





শ্ছ্‌ 

) দর্সেত ৪ ০৮৫ কাত্তিক বন্ধ 
-রিহারের-্বিতীয় ইনিংসে 1 উইকেটে ৫৮ রান হদার 
পয 'সঙগয়াভাবে খেলা শেষ হয়| বেরেওড চাঁর উইকেট 


ভান ভঙবঙ্ 


₹ তা কপি স্কিপ বিপিন ক্ষ কক স্িব্পাব্কিন্পী স্কিপ কা বক্ষ 


করার আশা ছিলো। শেষের দল 
বিশেষ অস্থির হয়ে পড়েন। মহারাষ্ট্রের সশর্ঘকরা বোধ ' 


[ ২৮শ বর্ষ-"২য খণ্ড+-১ম সংখ্যা 


পান ২৪ বরানে। বিহার ফাষ্ট বলের বিরুদ্ধে মোটেই 
খেলর্চে পারেনি যদিও বেরেগের বিল ততো ফাষ্ট 'ময়। 
বাঙ্গগা টীম থেকে গাবিস এবং কে রায় 'উভয়ক্ষেই বাদ 





মির্দল চটোপাধ্যায 
দেওয়ার প্রবরোজন, গনভবাঁর ইউ পির কাছে বাঙ্গলা হেবে 


জব্বর 


যায়। ক্লাব অথবা জাতি বিশেষকে প্রাধান্য না দিয়ে 
নিরপেক্ষ টীম মনোয়ন করা উচিত । উপরোক্ত ভুটি 
খেলোয়াড়কে বাদ দিয়ে মহমেডান স্পোটি'য়ের কামাল 
এবং নোহনবাঁগাঁনের এ দেবকে মনোনয়ন কমিটি শ্বচ্ছন্দে 
স্কান দিতে পারেন। ফে রায়ের, উইকেট কিপিং নিরুট 
এবং ব্যাটিং নিকুইভম। একাধিক বার এর প্রমাগ পাওয়া 
গেছে। সুতরাঁ"' মনোনয়ন কমিটির উচিত একজন ভাল 


ব্যটস্ম্যানকে এর স্থীনে নেওয়া। 
০শণ্টাক্ষুলানল ত্রিন্কেত ৪ 

এবৎসর বোঁায়ে পেন্টান্ুলার ক্রিকেট প্রতিযোগিতা 
যাতে অনুষ্ঠিত না হয় তাঁর জন্ত একশ্রেণীর 'জনসাধারণ 
বিশেষ চেষ্টিত হয়েছেন । তাঁদের মতে দেশের বর্তমান অবস্থায় 
যখন নাকি দেশের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিয়া কাঁরাবরখ ক'চ্ছেন 
সেই সময় এই শ্রেণীর আমোদ (প্রমোদ করা উচিত থে না। 
বোশ্বাই কংগ্রেসও এই মত পো্ঞ ক্রচ্ছেন এবং পরোক্ষ 
ভাবে চেষ্টাও কচ্ছেম যাতে খেলা অনুঠঠিত না হন ।- টা 
কংগ্রেস. কমিটির :প্রেলিডেণ্ট বর্দিও বঙ্গেচেন যে «ই সময় 
এইরূপ আমে প্রমোদ করা উচিত নয় তবে তারা 
জরপাধারণের আমোদ প্রযোদে বাধা,দিতে চাঁন না এবং এই 
প্রতিযোগিতা! চলা উচিত “কি, সা, তাঁ-কর্ডপক্ষ' এবং জন” 


সাধারণের উপর ছেড়ে দিচ্ছেন। বোঙ্বায়ের একজন . 
'পক্ষপার্তী 


ভূতপূর্বব মন্ত্রী এবং কতকগুলি প্রভাবশালী -ব্যক্তি *এবং 
তাদের সমর্থকরা খেল! বন্ধ করবার জন্য বিশেষ মনোঁধোগী 
হয়েছেন । 

আমরা যতদূর জানি বোস্বায়ে সিনেমা এবং অন্যান্য 
সকল আমোদ প্রমোদই বেশ পূর্ণ উদ্যমে চলছে। 
একশ্রেণীর জনসাধারণ এবং কংগ্রেস কর্তৃপক্ষের ক্রিকেটের 
উপর এইরূপ অহেতুক করুণার কারণ আমরা' বুঝতে 
পারলাম না। ক্রিকেট অন্যান্য আমোদ প্রমোদ অপেক্ষা 
মোটেই ব্যয় বহুল নয় অথবা ইহা আমেদ প্রমোদের 





টার র (কমিটি ূর্ববারের ন্যায় এবারও খেল চালানোর 
ত্ববে হিন্দু জিমখানাকে তাদের সদন্তদের 
মতামত জানবার১জন্গ সময় দিয়েছেন। 

আমরা বোশ্বায়ের আমোদ প্রমোদের বাবসারীদিগকে 
সাবধান হ'তে বলি। হুজুগের তো মাত্রাজ্ঞান কিছু 
নাই । রি 
স্বন্কশ্রতাদ্ক শীল্ড ক্কাইন্ম।জ্ন £ 


বাকুড়া ফুটবল এসোসিয়েশন কর্তৃক 'পরিচালিত 
নন্দপ্রদাদ শন্ডের ফাইনালে মেদিনীপুর কলেজ টীম ২-১ 





কোয়াডাঙ্ুলার ফুটবল প্রতিযোগিতায় এযাংলো ইণ্ডিয়ান দল ২-* গেলে হিন্দু দলের নিকট পরাজিত হয়েছে . 


চূড়ান্ত নয়। বীহারা এবারের পেশ্টাঙ্গুলার বন্ধ করার 
পক্ষপাতী তাহারাও ইহার বিরুদ্ধে আমোদ প্রমোদ করা 
উচিত নয় ছাড়া আর ক্লোন যুক্তিই দেখান নাই। 
পিকেটিং করবার ভয়ও নাকি দেখান হয়েছে। জাঁনিন! 
ইক্লই- হয়ত সত্যাগ্রহের নবতম টেকৃনিক। হিন্দু 
জিমথানীর ৭* জন সাস্ত নাকি নোটিশ দিয়েছেন যে, 
যাঁদি পেন্টাঙ্গুলার' কমিটি খেঙ্সা 'বন্ধ না করেন তাহা হলে 
হিন্দুরা খেলায় যোগান, কররে না। ১৩ই ডিসে 
হিপদ জিমখানার' সদস্যর! তানের মন্ামত ব্যক্ত করবেন। 


গোলে চন্দননগর বয়েজ ক্লাবকে পরাজিত করেছেও 
খেলাটি বেশ প্রতিযোগিতামূলক হয়েছিল। শ্রাতি- 
যোগিতায় বিভিন্ন স্কান থেকে যোট ৩৩টি টীম যোগদা 
করে। 


সলীভিক্রণা ল্যাত্লেওঞ হলাম £ 


* উক্ত কাপের ফাইনাঙ্গে হিমারহাটা, ক্লীব- ৪-১ গোলে 
এন ক্লাবকে পরাঁজিত,ক/রে 'কাঁপ বিজয়ের ইম্মান 
লাঁভ করেছে। 








উকি. হ্যারন্দ্ৰ [২৮শ বর্ষ--২র ভিড সাী 
এ নিট রাহ্র্যার ১০৫ রান করেন।, আমীর ইলাহী ৩? রানে € বং 
অহারাঁজ। ২৫ রানে ৩ উইকেট পান। 


পশ্চিম ভারত রাজ্য-_৫৭ ও ২৭৫ (৮ উইকেট) 
.. পশ্চিম ভারতরাজ্য দুই উইকেটে নওনগর দলকে 

গয্াজিত করেছে। 

নওনগরের প্রথম ইনিংসে কোলা ৩৫ ও এস ব্যানার্জি 
১৩ রান করেন। নেহাল টাদ ৩৮ রানে ৭টি উইকেট 
লাভ করেন। 

ছিতীয় ইনিংসের খেলাতেও পশ্চিম ভারতরাজ্য দলের 
আকবার খ| ৩ রানে ৩টি, নেহাল চাদ ৪৬ রানে ৩টি ও 
পৃথ্বিরাজ ৩৬ রানে ৩টি উইকেট লাভ করেন। 

পশ্চিম ভারতরাজ্যের প্রথম ইনিংসে এস ব্যানার্জি 





কোয়াডরাজুলার ফুটধল বিজয়ী মূসলিম দল 
২৬ রানে ৫১ ও বিশ্ন, মাঁনকদ ১৮ রানে ৩ উইকেট 
পান। 
_শশ্চিম ভারতরাজ্যের দ্বিতীয় ইনিংসে ৮ উইকেটে রান 
হয় ২০৫ । পৃদ্থিরাজ ৬৩ ঠাকুর সাহেব ৪২ 


দিল্লী--১১১ ও ১০৬ 
দক্ষিণ পণজাব_ ২৭৫ 


দক্ির্শ-পাঁজাব এক ইনিংস ও ৫৮ রানে দিল্লী ৪৩ 
ডিতিকে পয্াজিত করেছে। দক্ষিণ পাঞ্জারেয অমরনাথ 


দি্ধু_২৩১ ও ১৬৮ (৭ উইকেট ) 
পশ্চিম ভারত রাজ্য-_২৫* ও ১৫৯ (৪ উইকেট ) 


পশ্চিম ভারত রাজ্য রঞ্জি ক্রিকেট প্রতিযোগিতার 
পশ্চিমাঞ্চলের থেলাঁয় ছয় উইকেটে সিন্ধু ক্রিকেট দলকে 
পরাজিত করেছে। 
প্রথম ইনিংসে সিন্ধুর দাউদ খা ৬১৪ কিষেণ চাদ ৫* ও 
আব্বাস খা ৪৭ রান করেন। প্রশ্চিম ভারত রাজ্যের 
সৈয়দ আমেদ ৭৮ রানে ৫টা ও নেহাল চীদ ৭১ রানে 
৪টা উইকেট পান। 
দ্বিতীয় ইনিংসে কুমারুদ্দী- 
নের ৬৬ গিরি ধারী র৩৪ 
রান উল্লেখযোগ্য । 
পশ্চিম ভারভ রাজ্য দলের 
প্রথম ইনিংসে পৃথবিরাজ ৫১, 
উমার ৫*, সৈয়দ আমেদ 
নট আউট ২৪ রান করেন। 
সিদ্ধুর গিরিধারী ৩৭ রানে 
৩, মোবেদ ৪৮ রাঁনে ৩ উই- 
কেট পান। 
দ্বিতীয় ইনিংসে ম্বানা- 
ভাদায়ের নবাব ৬ন, 
উমায় নট, আউট ৪* রান 
, করেন। 


৫উিন্নিস £ 


উত্তর ভারত টেনিস চ্যাম্পিয়ানসীপের সিঙ্গলস ফাইনালে 
গাঁউস মহম্মদ বুগোক্লোভিয়ার বিখ্যাত খেলোয়াড় 
কুকুলজেভিককে ৭-৯, ৬:" ৬-১? ৬৩ গেমে পরাজিত 
কঃরেছেন। 

ভবলসে সোহানী ও সোনী ১২১৪১ ৪-৬) ৭:৫9 ৭-৫ 
গেমে কুকুলদেভিক ও ইফতিকার সালারে পরাজিত 
করেন। 

মিচ ডবলসে বুকুবদেতির ও হিনেম কোদেনস ৭? 


পৌর্-+১৩৪৭ ] 








২০৬১ ৬-৪ গেমে রণারাঁও ও মিসেস কাওও্যালাকে 
পরাজিত ক'রে বিত্রয়ী হন। 
মহিলাদের সিঙ্গলসে কুমীরী কাণ্টোইসোম্ধী, ডা 





কলিকাতার নান! প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পরিচালিত সন্তরণ প্রতিযোগিতার 
বিভিন্ন ব্মিয়ে বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র শ্রীসন্তেষকুম।র চট্টো- 
পাঁধ্যায় বিশেম কৃতি:তবর পরিচয় দিয়েছেন। তিনি কলি- 
কাঠার ৬নং ওয়ার্ডের কর্পোরেশন কাউন্সিলর 
জীযুক্ত হুধীরকুমার চটোপাধ্যায়ের ভ্রাতুষ্পুর 

শ্যামা কেশরকে ৭-৫১ ৬-৩ গেমে পরাজিত ক'রে বিজয়িনী 
হযেছেন। 

পুরুষদের সিঙ্গলসে বাঙ্গলার একনম্বর খেলোয়াড় দিলীপ 
বস্থ পাঞ্জাবের একনম্বর খেলোয়াড় ইফতিকাঁর আমেদকে 
ট্রেট সেটে পরাজিত ক'রে সেমি-ফাইনালে উঠেন। এই 
খেলার কিছুদ্দিন আগে ইফতিকার গাউসকে পরাজিত ক'রে 
বিশেষ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি ক+রেছিলেন। দিলীপ সেমি-ফাইনাঁলে 
কুকুলজেভিকের কাছে পরাজিত হন। 


সিন্স ভীম £ 

নিন্নলিখিত থেলোঁয়াড়গুলি সিলোন টীমের হয়ে 
ভাঁরতবর্ষে খেলতে আসছেন । জয়! উইকরেম! ( ক্যাপ্টেন ), 
পোরিট, ফার্নেণ্ডো, এ গুণরত্বে, এম গুণরত্নে, হুবাট, 
জয়াঙন্দেরা, জিলা, নবরত্বে+ রবার্ট, নোলোমনস্‌ঃ ওয়াহিদ, 
ওয়ালবেঅফ.। বোদ্ায়ে যে অল-ইত্ডিয়া টীম সিলোনের 


ক্লান্ত 


লা 
০৭ 


চস সাপ সফি স্াখিল সখ বাগ সনদ রাশি 


বিরুদ্ধে থেলবেন তাদের নাম প্রকাশিত হয়েছে ॥ জোগধর 


'( ক্যাপ্টেন), ইঞ্জিনিয়ার, ব্যানার্জি, সি এস. . নাইডু, 


হাঁজারে, সৈয়দ, আমেদ, ভি এম মার্চেন্ট, সাঁনকগ, 
রঙগনেকার, ইব্বাহিম এবং মান্তক আলি। টীম মনোনয়ন 
কমিটি তরুণ খেলোয়াড়দের টামে অন্তর্ভূক্ত ক'রেচেন খুব 
আশার কথা । তবে ইঞ্জিনিয়ারের মত একেবারে নৃতন 
খেলোয়াড়কে স্থান না দিয়ে ভাগারকার কিছ্বা সোঁহনীকে 
দেওয়া! উচিত ছিলে! । 


মিস্‌ এল্নিস মার্সেল £ 


উইম্থিলডন ও আমেরিকান লন্‌ টেনিস সিঙ্গলস বিজয়িনী 
মিস্‌ এলিস মার্বেবেল পেশাদার টেনিস খেলোয়াড়ের তালিকায় 
নাম লিখিয়েছেন। আগামী জানুয়ারী মাসে নিউইয়র্থ 
ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনে বিশ্ববিখ্যাত টেনিস খেলোপাঁড় 
ডোনাল্ড বাজ ও বিল টিলডেনের সঙ্গে তিনি প্রদর্শনী ম্যাচ 
খেলবেন । এ সংবাদ টেনিস মহলে বিশেষ চাঁঞ্ল্যের কৃষি 
করেছে। বাঁজ, পেরী এবং অপরাপর টেনিস খেলোয়াড়দের 
মতই মিদ্‌ মার্বেল যে পেশাদার খেলোয়াড় শ্রেণীভুক্ত হ্ববেন 
এ গুজব কিছুদিন পূর্বে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড্ডে। সে সময়ে 

বাদ ভিত্বিহীন বলেই অস্বীকার কর! হয়েছিল । 

মিস মার্বেলের শারীরিক গঠন, খেলার.নিখু'ত. ভঙ্গিমা 

ও ক্রীড়াচাতুরধ্য সত্যই থে নারীজাতির আদর্শনীয় তা. সকলেই 





মিস্‌ এলিস মার্কেল ৬ 
| পানে স্বীকার করেন * পুরুষের পক্ষে আদ হবলোক়াড় 
ব যতখানি গুণ থাকা প্রয়োজন তা৷ মিস্‌ মাঝলের মধ্যে 


রে লি সান | 


তত 


৫রজ্চতন' িজকশ উন্নিস জ্যাম্পিম়ামসীম্প ৪. 
“বেঙ্গল টেবল টেনিস চ্যাম্পিয়ামসীপের ফাইনাল খেলা 

শেষ হুয়েছে। বিভিন্ন বিভাগের ফলাফল নিয়ে দেওয়। হ'ল । 

পুক্ুষ সিজলস : | 

ইতিয়ান ইণ্টার ভ্যাশানাল এবং বোশ্াইয়ের ১নং খেলো- 
বাঁড় কে এইচ কাঁপাডিয়া ২১-১০১১৮-২১১ ২১-১১ ১২-২১) 
২-১৮ গেমে তৃতপূর্ব্ব ইংলিশ ইন্টার ন্ঠাশানাল বোস্বাইয়ের 
ষ্টার খেলোয়াড় আর ই মরিটনকে পরাজিত করেছেন। 

মহিলাদের সিঙ্গলস £ 

মিস্‌ এ দাঁস ১৯-২১ ২১০৭১ ২১-১৮ গেমে আর 
নাঁগকে পরাজিত করেছেন । 

পুরুষদের ভবলম্‌ : 

এগ ব্যানাজ্জি ও আর হোসেন ২১-২* 
গেলে মরিটন ও ভাসিনকে পরাজিত করেন। 


২১-১৯১ ২১০১৯ 


ভান 


[ ২৮শ বর্-_২য় খ্ড--১ম সংখা! 





সিল্ক পেপ্টাঙ্গুলার £ 


'সিন্ধু পেশ্টাঙ্ুলার ফাইনাল সময়াঁভাবে কমনীমাংসিত 
ভাবে শেষ হয়েছে । হিন্দুরা টসে জিতে প্রথমে ব্যাট ক'রে 
৩৩২ রান তোলে। ক্যাপ্টেন নওমল করেন ১৭৭ আর 
গোপাল দাদ ৫৯1 মুসলীমর! এর উত্তরে ২৪১ রান করে। 
আব্দান খা ১ রানের জন্ত সেঞ্চুরী করতে পারেন নি। 
দ্বিতীয় ইনিংসে হিন্দুদের ৭ উইকেটে ২০৪ হবার পর নওমল 
ইনিংস ডিক্রিয়ার্ড করেন। কিষেন চাদ করেন ৮৪। খেলা 
শেষ হবার ২১০ মিনিট আগে ২৯৬ রান পিছনে পড়ে 
মুসলীমরা ব্যাট করতে নাঁনলো। ৭ উইকেটে রান উঠলো 
১৫৮। মুসলীমরা নিশ্চিত পরাজয় থেকে রক্ষা পেলো। 
একমাত্র উইকেট কিপার ছাড়া হিন্দুদের বাকী দশজন 
খেলোয়াড়ই বল কঃরেছেন। ৫1১২1৪০ 


্‌ মাহিত্য-মতবাঁদ 


লন্ব-৩ান্কাম্পি পুস্ডল্চাললী 


কেদীরবাথ হন্দো পাধ্যা় প্রধীত “সন্ধটা পঙ্থ"--২২ 
পরফুল্পকূর্ম।র সরকার প্রণীত “ক্ষয়িকু ছিন্দু"-_-১।০ 
বুরোরারী উপস্াস “কো1-এডুকেশন”-_-২২ 

পৃষ্ঠ জট পরনিত “পতিত ধরি 
ন্ট্নাথ লাহা প্রণীত “হবর্বশিক কথা ও কীনঠি'_-৬২ 
সভীশচন্ত্র চটোপাধ্যায় প্রণীত “মুক্তবেগা”- ১৫০ 
দীনেশচন্্র চৌধুরী প্রণীত “নীলবমূনা"-_॥* 

ইন্দুমাধব ভট্ট চার্ঘয প্রণীত নাটক "ভারত সমাট”--১২ 
সর্ধবর পুন বরাট প্রণীত নাটক “বড়বাবু”-- ১1 

কুরেশচন্ত্র পাল প্রশ্ীত “জাগরণী"-_-২২ 

প্রীজিতেন্্রলাল মৈত প্রণীত “মেধনগরের মন্ধকারা”--১২ 


আবছুল কাদের প্রণীত "ক্রুসেডের ইতিহাস ১8, 

কুঙ্জবিহারী গুপ্ত প্রণীত "গীতাঞ্রলির ভানধারা”--১২ 

নরেন্জরন।থ চট্টরেপাধ্যায় প্রণীত “পথের ধুলোর পন্সরাগ”--২২ 

স্থকুমার ভট্টাচ(ম্য নম্পাদিত “জ্ঞানদান রচিত যশে!দার ব!ত্সল্য লীল।”--/* 

মহম্মদ মনহুর উদ্দীন প্রগাত “শিরোপ।"- |, 

রাধারমণ দাস প্রণাত “মৃত্যু রণ”--৪* 

শিবরাম চক্রবর্কী ও ধুধেশচন্দ্র অধিকারী প্রীত “এক রোমাঞ্চকর 
এ্যাডভেঞ্কার”-71৮৯ 

পরী অপূর্রবকৃক ভটাচ।না প্রগাত কবিত/| পুস্তক “সাফ়গ্ুনী”--২২ 

লীপান্তিহধা ঘে।ষ প্রণীত “নর” ১২ 

প্রীবীরেন্দ্রনাথ মু.গ।পাধ্যায় প্রণাত "দেহালী”--১২ 


সম্পীদকক- শ্রীফণীন্্নাথ মুখোপাধ্যায় এম-এ 


7758051 ৪ 28015196000 00101715755 1010200182159 17 ঠ16ব৭ € 11070178 €010/,660715চ ইউ খি15, 
৮৮ 609 ৮৮০০২৮০৪ এও ডা0%+, 209-1-1। 000%01115 ০0৪৪৮ (8165587 


ঘি 
৮ 


বে 
ক 








হ্বাদ্ম--১৩০৪৩। 


অষ্টাবিংশ বর্ষ 


মৃত্যুবিজ্ঞান ও পরমপদ 
মহামহোপাধ্যায় শ্রীগোগীনাথ কবিরাজ এম-এ 


১ 
একটি প্রচলিত কথ আছে--“জপে তপে কি ফল 
ভাই, মরতে জানলে হয়” । কথাটি সরল হইলেও অত্যন্ত 
সারগর্ভ। জপ, তপস্যা, স্দাচাঁর, জীবনের সকল প্রকার 
সাঁধন!-_সবই বিফল হয়, যদি মানুষ মরিতে না জানে । আর 
যে মরিতে জানে তাহার পক্ষে পৃথক ভাবে কোন সাধনাই 
আবশ্ঠক হয় না। এমন কত সাধকের ইতিবৃত্ত পুরাণাদি 
হইতে অবগত হওয়া যাষ__ধীহাঁরা সমগ্র জীবন কঠোর 
নিয়ম ও উগ্র সাধনায় অতিবাহিত করিয়াও মৃত্যুকালে 
লৌকিক ভাবনার প্রভাবে মরণান্তে & ভাবনার অনুরূপ 
অপেক্ষাকৃত নিকুষ্টগতি লাভ করিয়াছেন । পক্ষান্তরে এমন 
লোকের কথাও শুনিতে পাওয়া যাঁয় ধীহাঁরা জীবিতকালে 
অতি সাঁধাঁরণভাবে অবস্থান করিয়াও প্রাণত্যাগের সময় 
দূ ভাবনাদিক্ঈ-ফাল তদহুরূপ উৎকষ্ট গৃতি প্রাপ্ত হইয়াছেন । 


৯৮ 


মরণোত্তর গতি মরণকালীন ভাবনার উপর নির্ভর করে। 
শ্রীভগবান্‌ বলিয়াছেন__ 


যং যং বাপি ম্মরন্‌ ভাঁবং ত্যজত্যন্তে কলেবরম্‌ । 
তং তমেবৈতি কৌন্তেয় সদাতদ্ভাবভাবিতঃ ॥ 


--গীতা-৮।৬ 


মনুষ্য যে ভাব ম্মরণ করিতে করিতে অন্তকাঁলে দেহত্যাগ 
করে, সেই ভাবে ভাবিত হইয়া সদ! সেই ভাঁবকেই গ্রাপ্ত 
হয়। রাঁজ! ভরত মৃত্যুকালে মৃগশিশুকে ভাঁবিতে ভাবিতে 
দেহত্যাগ করিয়া হরিণ যোনি প্রার্থ হইয়াছিলেন, ইহা 
পুরাণে প্রসিদ্ধ আছে। এইজন্ত সকল দেশেই আস্তিক 
সম্প্রদায়ে মুমৃযুর সান্বিক ভাব উদ্ধ্ধ করিয়া সংরক্ষিত 
রাখিবার জন্ত মরণকাঁলে নানাপ্রকাঁর কৃত্রিম ব্যবস্থার 
উন হুইয়াছে। মুমূর্ুর দেহকে অগ্তদ্ধ ও অপবিত্র 


৯৩৭ 


৯২৩৮ 


স্পর্শ হইতে মুক্ত রাঁথা, ভগবদ্ভাঁব ও অন্ত প্রকার সদ্ভাঁবের 
উদ্দীপক বচনাঁবলী উচ্চারণ করিয়! তাহাকে শ্রবণ করান, 
সাধুজনের সংস্পর্শ, সদ্ভাবে পূর্ণ হইয়া তাহার সমীপে 
সাধারণ লোকের অবস্থান_-এই সকল উপায় এক উদ্দেশ্ত- 
সাধনের জন্যই অবলম্থিত হইয়া থাকে। 

মৃত্যুকালীন ভাবনার এই প্রকার অসাধারণ প্রভাব 
আঁছে বলিয়াই যাহাতে এ সময়ে শুদ্ধ তাবন! আয়ত করা 
যায় তাহা প্রত্যেক কল্যাণকামীর শিক্ষা করা আবশ্তক। 
সমস্ত জীবনের সমগ্র চেষ্টা যোগ্য উপদেষ্টার নির্দেশ 
অন্কসারে এ এক উদ্দেস্টে প্রযুক্ত হইলে মন্তম্ত নিশ্চয়ই মরণের 
সময় ভগবৎ-কপায় ইষ্ট ভাবনা আয়ন্ত করিতে পারে এবং 
মরণের পর তদন্গরূপ গতিলাভ করিতে সমর্থ হয়। উপাসকের 
গতি ও কর্তার গতি পৃথক্‌ হইলেও দুই-ই এক মূল- 
বিজ্ঞানেরই আলোচ্য বিষয়। স্ৃতরাং মৃত্যু-বিজ্ঞানের মূল* 
ত্র বুঝিতে পারিলে সকল প্রকার গতিই স্পষ্টভাবে 
বুঝিতে পারা যাঁয়। 

মৃত্যু-বিজ্ঞানের মাহাজ্সা বর্ণনা করা হইল বলিয়! কেহ 
যেন মনে না করেন জীবনে সাধনার প্রয়োজন নাই । 
সাধনার খুবই প্রযোজন আছে। বন্ততঃ এমনভাবে সাধনার 
অভ্যাস করিতে হইবে যেন জীবিত-দশাতেই মৃত্যু-সময়ের 
অভিজ্ঞতা লাভ করা যায় এবং মৃত্যুর মধ্য দিযা নিত্য- 
জীবনের সন্ধান পাওয়া যায়। যে জীবস্তে মরিতে জানে 
সে মৃত্যুকে ভয় করে না। মৃত্যুকে অতিক্রম না করিলে 
অতিমৃত্যুদশার লাভ হয় না এবং পূর্ণ সত্তাকে মতাভাবে 
টাও করিতে না পাঁরিলে মৃত্যুকে অতিক্রম করাও 
যায়না । বিনি জীবদ্দশাতে এই উপলব্ধি লাঁভ করিতে 
পারেন মৃত্যুকালে ভগবতকপাম ত্ঠান্গার সেই উপলব্ধি 
আপনা হইতে অনায়াসেই আবিভু্তি হর । 

গতি অস্তিম ভাবের উপর নির্ভর করে, ইহা বলা 
হইয়াছে। ইহা পরা ও অপরা ভেদে সাধারণত: 
দুই প্রকার। যে গতিতে পুনরাবর্তন নাই তাহাই পরা 
গতি। আর বে গতিতে উদ্ধ অথবা অধোলোঁকে কর্মফল 
তোগের পর মর্ত্যলোকে পুনর্বার জন্মগ্রহণ করিতে হয় 
তাহা অপরা গতি । অপরাগতির অবান্তর ভেদ অনেক 
আছে । দেবতা মন্গুষ্গঃ প্রেত, নরক, তির্ধ্যক প্রতি 
যোনির ভেদবশতঃ অপরা৷ গতি ভিন্ন হইয়া থাকে। অর্থাৎ 


ভ্ভাল্রভহ্বশ্ত্ 


জলা ক্ষ সচল স্কিন স্কিপ এ, পল বন্ড "্উগ্থিপ স্নান _স্ান্ডাশ বহাল স্াক্ডল 


[২৮শবর্- ২য় খণ্ড-২য় সংখ্যা 


স্্্ 











স্যরি” 


কর্মমবশতঃ কেহ দেবলোকে গমন করে ও দেবদেহ প্রাপ্ত হইয়া 
নাঁনাঁবিধ দিব্ভোৌগ আম্বাদন করে। সেইরূপ কেহ যাঁতনা- 
দেহে নরক যন্ত্রণা ভোগ করিয়া থাকে। বিভিন্ন লোকে 
এই সকল ভোগের দ্বারা কর্ম ক্ষীণ হইলে অবশিষ্ট কর্মের 
ভোগের জন্য মন্গস্ত দেহ গ্রহণ করিতে হয়। পরাগতি এক 
হইলেও ইহাতেও ভেদ আছে। তবে ভেদ থাকিলেও 
সর্বত্রই তাহার বৈশিষ্ট্য এই যে, এই গতি প্রাঞ্ত হইলে মনুম্যকে 
পুনর্ববার মর্ত্যলোকে আবর্তন করিতে হয় না) অর্থাৎ 
মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে ভগবানের পরমধামে প্রবেশ হয় অথবা 
অবস্থা ভেদে মরণের পর স্তর-বিশেষের ভিতর দিয়াঁও কাহারও 
কাহারও গতি হইয়া! থাকে । বলা বাহুল্য, এই দ্বিতীয় 
গতিও পরম গতি, কারণ এ স্তর হঈতে অধোগতি হয় না, 
ক্রমশঃ উর্ধগতি হয ও চংমে পরমপদদের প্রাপ্তি হয়। তবে 
ই! পরাগতি হঈলেও অপেক্ষাকৃত নিম্নাধিক1রীর জন্য | 
ইহার প্রথমটি মরণোত্তর সগ্যোমুক্তি, ছিতীয়টি ক্রমমুক্তি। 
আর এক অবস্থা আছে-তখন গতি মোটেই থাকে না। 
এই অবস্থায় মৃত্যুর পূর্বের অর্থাৎ জীবদ্দশাতেই পরমপনদের 
সাক্ষাৎকার হইয়া থাকে। ইভা জীবিতকালে সচ্যোমুক্তি। 
সাধারণতঃ ইহাকেহ জীবনুক্তি বলা হয়। যাহারা এই 
অবস্থ! লাঁভ করিয়া থাকেন তাহাদের আগ কিছু প্রাপ্তব্য 
থাকে না। শুধু প্রারৰ কল্মবশে দেহ চলিতে থাকে-এ 
কর্মের ক্ষয়ে দেহপাত হয়, তথন অন্তঃকরণ? বাহা ইন্দ্রিয়, 
প্রাণ প্রভৃতি সব এখান হইতেই অব্যক্তে লীন হইয়া যাঁয়। 
লিঙ্গের নিবৃদ্তি হয় উতক্রান্তি হয় না। দেত্যাগের সঙ্গে 
সঙ্গেই বিদেহ-কৈবল্য হয়। ভীবন্ুক্তি ও বিদেহ মুক্তির 
ভেদ শুধু উপাধিগতঃ বান্তবিক নচে। 

জন্মান্তর বা দেগান্র পরিগ্রহ নিবৃত্ত হইলেই যে জীবের 
পরমপদ লাভ হয় তাহা নহে । পরমপদে যাইবার পথে 
ক্রমমুক্তিতে মধ্যমাধিকারীর সাধারণতঃ বিশুদ্ধ উর্দালোকে 
গতিলাভ হইয়া থাকে । বে সকল স্তর অথবা ধাম অতিক্রম 
করিয়া ভগবদ্ধামে পৌছিতে হয় সেগুলি বিশুদ্ধ, তাহাতে 
বাসনা থাকিলেও উহা শুদ্ধ বাঁসনা। তন্ত্রমতে এ সকল 
স্তর মায়াতীত হইলেও মহামায়ার অন্তর্গত বলিয়া পরিগণিত 
হইয়৷ থাকে। অশুদ্ধ বাসন! থাকে ন! বলিয়া অশুদ্ধ স্তরের 
অধ-আকর্ষণ এ সকল স্থানে কার্য করিতে পারে না। 
বিশুদ্ধ সাধন-তত্তির আস্বাদন এ সকল স্তরেই হইয়া থাঁকে। 


মাঘ--১৩৪৭ ] 


এইগুলি শুদ্ধ ধাঁম হইলেও ভগবানের পরম ধাঁম নহে। 
কর্ম ও মায়ার অভাববশতঃ এই সব স্থান হইতে অধোগতি 
হয় না বটে, কিন্তু এখানে থাকিতে অপূর্ণতা-বোধ কাটে না; 
_ এখানে মিলন-বিরহ আছে, উদয়-অন্ত আছে, আবির্াব- 
তিরোভাব আছেঃ এখানে ভগবানের নিত্যোদিত সত্তার 
সাক্ষাৎকার পাওয়া যাঁয় না। 

মানুষের জন্ম হয় কেন? মলিন ভোগ-বাঁসনাই জন্মের 
কারণ। বর্তৃত্বাভিমান লইয়া, সকাম ভাঁবে কর্ম করাতেই 
চিত্তে নূতন নৃতন বাঁসনাঁর উদ্রেক হইতেছে এবং তাহার 
প্রভাবে সজাতীয় প্রাচীন সংস্কার সকল উদ্বদ্ধ হইয়া! তাহাকে 
পুষ্ট করিতেছে । কাঁলভেদে বিভিন্ন বাসনা ক্রিয়মাণ 
কম্মের প্রভাবে উৎপন্ন ভওয়াঁর দরুণ এবং সাধারণতঃ 
বিক্ষিগুচিন্তে পূর্বক্ষণবন্তী ও পরক্ষণবর্তী বাসন! পরম্পর 
বিজাতীয় হওয়ার দরুণ কোন বাসনাই প্রবলাকার ধারণ 
করিয়! ফলোনুখ হইতে পারে না। যে-কোন পূর্বা বাসনা 
পরবর্তী বিজাতীয় বাসনার দ্বারা অভিভূত হইয়! যোগ্য 
উদ্দীপক-কারণের অবসর প্রতীক্ষায় অবাক্ত ভূমিতে 
সঞ্চিত থাকে । মনের ক্রিয়ার সঙ্গে বাসনা-ভাবনাঁদির 
স্বাভাবিক সম্বন্ধ রহিয়াছে, কিন্ত মনের ক্রিয়া প্রাণের 
ক্রিয়ার সঠিত সংশ্রিষ্ট। প্রাণ নিশ্চল হইলে মন কার্য 
করিতে পারে নাও প্রাণ সুক্ম ভাব ধারণ করিলে মনের 
ক্রিয়াও অপেক্ষাকৃত সুঙ্মভাঁবেই সম্পন্ন হয়। তাহার ফলে 
যে সকল বাঁসন! ব্যক্ত হয় অথবা! ভাবনা উদিত হয় তাঁহাও 
হুক্ধ ্তরের। দেহস্থ প্রাণ গ্রাণবাহিনী শিরাঁকে আশ্রয় 
করিয়া কাধ্য করে। তন্রপ মনও মনোৌবহা' নাড়ীকে 
আশ্রয় করিয়। ক্রিয়া করে। স্তৃতরাঁং বাঁসনাঁর বা ভাবনার 
তারতম্য অনুসারে বিভিন্ন নাঁড়ীর কার্যকারিতা দেখা 
যাঁয়। মনুষ্য মরণের পূর্বক্ষণে যে চিন্তা করে অর্থাৎ এ 
সময় তাহার চিত্তে যে ভাবের উদয় হয় তাাই তাহার শেষ 
চিন্ত।। তাহার পর দেহগত প্রাণের ক্রিয়া নিরুদ্ধ হয় 
বলিয়! কোন নৃতন চিন্তা উদ্দিত হইয়া এ শেষ চিন্তাকে 
অভিভূত করার সম্ভীবন! থাকে না। তাই এ শেষ 
চিন্তাই একা গ্র হইয়! প্রবলাকার ধারণ করে। দ্েহাশ্রিত 
বিক্ষিপ্ত করণ-শক্তির মৃত্যুকালীন স্বাভাবিক একাগ্রতা! 
হইতে প্র ভুয়া আরও পুষ্টিলাভ করে। একাগ্রতার 
ফলে হৃদয়ে একটি দিব্যপ্রকাশের উদয় হয়_মুমুর্ুর 


সভ্যন্িভ্তত্তান্ন ও শন্রমশদ্ 


১২০২ 


অস্তিমভাঁব এ জ্যোতির্য় প্রকাশে স্পষ্ট ফুটিয়! উঠে ও 
তাহার দৃষ্টিগোচর হয়। তদনস্তর এ অতিব্যন্ত তাঁবই 
জীবকে অনুরূপ নাড়ীমার্গ ও দ্বারপথ দিয়! চালনা করিয়া 
বাহিরে লইয়! যাঁয় এবং কর্ম অনুসারে ভোগায়তন দেহ 
গ্রহণ করাইয়! নির্দিষ্ট কালের জন্ত স্ুখ-ছুঃখ ভোগ করাইতে 
থাকে। 

মরণ কালে যে ভাবের উদয় হয় তাঁহার তত্ব বিশ্লেষণ 
করিলে কতকগুপি বিষয় জানিতে পারা যাঁয়। উচ্চাধিকার- 
বিশিষ্ট পুরুষ সাধারণতঃ নিজের পুরুষকারের বলে ভাঁব- 
বিশেষকে আয়ত্ত রাখিতে পারে। মধ্যমাধিকারী পুরুষের 
স্বাতন্ত্য পরিচ্ছিন্ন বলিয়া মৃত্যুকালে এ ভাঁববিশেষকে 
খদয়ে জাগাইবার জন্য অথবা যাহাতে উহা! পূর্ব হইতেই 
অবিচ্ছিন্ন ভাবে জাগিয়া থাকে সেই আশায় তাহাকে 
সমস্ত জীবন নির্দিষ্ট উপায়ে চেষ্টা করিতে হয়। এই চেষ্টা, 
প্রতিকূল দৈব না থাকিলে, ভগবানের মঙ্গল বিধানে সফল 
হইয়া থাকে । দৈবশক্তি অথব| মহাঁজনদ্িগের অনুগ্রহ 
থাকিলে তৎ্কালে নিজের কোনও প্রকার বিশিষ্ট চেষ্টার 
অভাঁবেও অবশ্যই সদ্ভাব জাগিয়! উঠিতে পারে। প্রবল 
আধ্যাত্মিক শক্তি-সম্পন্ন পুরুষের অথব! ইষ্টদেবতা, সদ্‌গুরু 
কিংবা ঈশ্বরের দয়! এঁ অনুকুল দৈবশক্তির অন্তর্গত বলিয়! 
বুঝিতে হইবে। নিয়স্তরের পুরুষ অধিকাংশ স্থলে পূর্ব 
কর্মের অধীন বলিয়া! জড়ের ন্যায় স্রোতে ভাসিয়৷ যাঁয়। 

তাঁবের উদ্বোধন যে প্রকারেই হউক, ভাবের বৈশিষ্ট্য 
হইতেই মরণের পরে জীবের গতি নিষ্দিষ্ট হয়। যেমন ভাব 
তেমনিই গতি। যিনি জীবৎকণলে ভাবের অতীত হইয়াছে, 
বিনি সত্যই জীবন্ুত্ত, তাহার কোনই গতি নাই।' 
বাঁসনাশৃন্ত হইলে গতি থাকে না। গীতাতে (৮৫) 
শ্রীভগবান্‌ বলিয়াছেন__ 

অন্তকালে চ মামেব স্মরন্‌ মুক্ত। কলেবরম্‌। 
যঃ গ্রধাঁতি স মন্তাঁবং যাতি নাস্তযত্র সংশয় ॥ 

সুতরাং অন্তকাঁলে ভগবদ্ভাঁব ম্মর্ণ করিয়! দেহত্যাগ করিলে 
যে তাহার সাঁধুজ্য লাভ কর! যায় তাহাতে সন্দেহ নাই। 


এখানে একটি রহস্যের কথা বলা আবস্াক মনে হইতেছে। 
পূর্বেই বলিয়াছি, এক একটি ভাবের উদয়ের "সহিত মন 


১৪৪০ 


প্রাণ প্রভৃতির অবস্থা ও নাড়ী বিশেষের ক্রিয়ার সম্বন্ধ 
আছে। তেমনিই মন প্রাণ প্রভৃতিকে নির্দিষ্ট প্রকারে 
স্পন্দিত করিতে পাঁরিলে এবং নাড়ী-বিশেষকে চালন৷ 
করিতে পারিলে তদন্রূপ ভাবের উদয় হইয়া থাকে । ফলত: 
গতির উপর তাহার প্রভাব কার্ধ্য করে। আসন, মুদ্রা, 
প্রাণায়াম প্রভৃতি দৈহিক ও প্রাণিক ব্যাপারের দ্বারা মনের 
ক্রিয়া ও ভাবাদি যে নিয়ন্ত্রিত হয় তাহা সকলের পরিজ্ঞাত 
বিষয়। এই মৃত্যু-বিজ্ঞানটি এখনও তিব্বতে অনেকেই 
জানে এবং কাধ্যতঃ তাহ প্রয়োগ করিয়া থাকে । (১) কিন্তু 
আমাদের দেশে তাহার জ্ঞান শাস্ত্রে এবং মহাঁজনদের মধ্যেই 
নিব্দ আছে-_সাঁধারণ লোকে তাহার সন্ধান রাখে না 
এবং তাহার দ্বারা উপকৃত হইতে পারে না । 

গীতার অষ্টম অধ্যায়ের ছুই স্থানে এই বিজ্ঞানের সুন্দর 
পরিচয় পাওয়া যায়। যথী__ 

কবিং পুরাণমন্থশাসিতারং অণোরণীয়াংসমনুম্মরেদ্‌ যঃ | 

সর্বশ্যধাতারমচিন্ত্যরপমাদিত্যবর্ণং তমসঃ পরস্তাৎ ॥ 

প্রয়াণকালে মনসাহচলেন ভক্ত্যাযুক্তো যোগবলেন চৈব। 
. ক্রবো্নধ্যে প্রাণমাবেহয সম্যক স তং পরং 

পুরুষমূপৈতি দ্িব্যম্‌ ॥ ৮1৯১১*। 


অর্থাৎ যদি কেহ মরণ সময়ে ভক্তিযুক্ত হইয়া স্থিরচিত্তে 
যোগবলের দ্বারা সম্যক প্রকারে ভ্র-মধ্যে প্রাণ আবিষ্ট করিয়া 
সেই তমোহতীত পরম পুরুষকে স্মরণ করিতে পারে তাহা 
হইলে সে তাহাকে অবশ্ঠই প্রাপ্ত হয়। পরে আছে__ 


“পর্বদ্ধারাণি সংযম্য মনো হৃদি নিরুধ্য চ। 
মরধযাধায়াত্মনঃ প্রাণানাস্থিতো৷ ফোগধারণাম্‌ ॥ 
ওমিত্যেকাক্ষরং ব্রন ব্যাহরন্‌ মামনুম্মরন্‌। 
যঃ প্রযাতি ত্যজন্‌ দেহং স যাতি পরমাং গতিম্‌ ॥ 


৮1১২১১৩ 


অর্থাৎ সকল দ্বার সংযত করিয়৷ মনকে হৃদয়ে নিরুদ্ধ করিয়। 
যোগধারণার আশ্রয়ে প্রাণ সকলকে মন্তকে স্থাপন করিয়! 
একাক্ষর শবব্রহ্গ ওঁকার উচ্চারণ করিতে করিতে ও 


পো ক শশা 


(১) ডষ্টব্--৮|11) 11551105 280 11528101075 10 10061 
১7 £16%270018 199510--8 961,790. 29-33 (108217 
8006 1,066, 11511702005 ড/০111), 10110016559, 0615170 ). 

॥ 


ভ্ডাব্রভবহ্ধ 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় খণ্ঁ--২য সংখ্যা 


ভগবান্‌্কে ম্মরণ করিতে করিতে যে দেহত্যাগ করিয়া 
প্রয়াণ করে সে পরম গতি লাভ করিয়া থাকে । 

কি প্রকারে দেহত্যাগ করিলে সাক্ষাদ্ভাবে ভগবং- 
স্বূপ লাভ করা যায় তাহাই গীতার গ্লোকগুলিতে বণিত 
হইয়াছে । চিন্তাণীল পাঠক দেখিতে পাইবেন যে ইহাতে 
সংক্ষেপে অষ্টাঙ্গ যোগ, মন্ত্র ভক্তি, জ্ঞান প্রভৃতি ভগবৎ- 
প্রাপক সকল সাধনারই সার উপদেশ সন্গিঝিষ্ট হইয়াছে। 
আমরা গুরুরুপায় এই বিজ্ঞান-রহম্তয যতটুকু বুঝিতে 
পারিয়াছি তাহারই কিঞ্চিৎ আভাস অল্প কথায় এই ক্ষুন্ 
প্রবন্ধে প্রদান করিতে চেষ্টা করিব। নিজের বুদ্ধিগত 
জড়তা-নিবন্ধন যে সব ক্রটি লক্ষিত হইবে স্থুবীগণ দয়া 
করিয়া তাহা মার্জনা! করিবেন। 


৩ 


গীত! বাঁক্য হইতে স্পষ্ট প্রতীত হয় যে ওকারের উচ্চারণের 
পূর্বের সর্বব দ্বারের সংযম, হৃদয়ে মনের নিরোধ ও প্রাণের 
ভ্র-মধ্য প্রভৃতি দেশপ্রাপ্ডি নি্পন্ন হওয়া আবশ্ক | দ্বার- 
সংযম অবশ্য নবদ্বারের নিয়ন্ত্রণ । মান্ষষের দেহ নবদ্ধার- 
বিশিষ্ট মরণকালে সাধারণতঃ এই নবদ্বারের মধ্যে কোন 
এক দ্বারকে আশ্রয় করিয়াই তাহার প্রাণ বহির্গত হয়। 
কর্মানুসারে পুণ্যবান্‌ পুরুষ উপর দিকের দ্বার দিয়া, পাপী 
অধোদ্ধার দিয়া এবং মধ্য ব্যক্তি মধ্য দ্বার পথে গতি লাভ 
করে (মহাভারত--শাস্তিপর্ব, অধ্যায় ২৯৮)। জীব 
যে প্রকার দ্বারপথে বাহির হয় তাহার উত্তরকালীন গতিও 
তদমুর্ূপই হইয়া থাকে । অথবা যে জীব যেপ্রকার গতি 
লাভ করিবে তাহাকে বাধ্য হইয়া কর্ম দেবতার প্রেরণায় 
তদুকৃল দ্বার দিয়াই বাহির হইতে হয়। কিন্তু পুণ্যবান্‌ 
অথবা পাপী. কেহই দশম দ্বার অর্থাৎ ব্রহ্গরঙ্ধ হইয়! নির্গত 
হইতে পারে না। ব্রঙ্গরঙ্ধ উৎক্রমণের মার্গ। এই পথে 
বাহির হইলে আর পুনরাবৃত্তি হয় না। যে সকল পথে 
চলিলে পুনরাবর্তন ঘটে সেইগুলিকে বন্ধ করাই মরণকালে 
নবদার রোধের প্রধান উদ্দেশ্টা। এইগুলিকে বন্ধ করিলে 
অপুনরাবৃত্তির দ্বার বা ব্রহ্ষপথ সহজেই উন্মুক্ত হয়। কল- 


সের ছিদ্র বন্ধ না করিয়া জল ভরিতে গেলে যেমন 


জল ভরা যায় না, তেমনিই এ সকল বাহ দ্বার রোধ 
ন|৷ করিয়া অন্তত্বীর উন্মুক্ত করার চেষ্টা বিফল হয়। 


মাঘ-_-১৩৪৭ ] 


বাহ দ্বার নিরুদ্ধ হইলে নিশ্চিন্ত হইয়া! ভিতরের পথ বাহির 
করা যাঁয়। 


কিন্ত কি প্রকারে এই সকল দ্বার রোধ করিতে হয় 


তাহার উপদেশ গীতাতে নাই। যোগিগণ বলেন, যদিও 
নবদ্ধারের কোন একটি দ্বারকে আশ্রয় করিয়া ক্রিয়া-কৌশলে 
এই সংযম ব্যাপার সম্পন্ন হইতে পারে, তথাপি সুদ্রা- 
বিশেষের দ্বারা গুহদ্বারকে রোধ করিতে পারিলে ফললাভ 
অপেক্ষাকৃত সহজ হয়। কিছুক্ষণ এ বিশিষ্ট মুদ্রার অভ্যাঁস 
করিলেই একটি আবেশ-ভাবের উদয় হয়_তখন বাহজ্ঞান 
লুপ্ত হয় ও সর্ব দ্বাপথ অর্গল-বদ্ধ হইয়া! যায়। ইহা 
ইন্ছ্িয়ের প্রত্যাহার । কিন্তু মনে রাখিতে হইবে যে এ 
মুদ্রার কর্ম করিবার পূর্বে পূরক ও তদনস্তর কুস্তক করিয়া 
লওয়া আবশ্যক । বাধুকে স্তস্তিত করিয়াই এ মুদ্রা সাঁধনে 
প্রবৃত্ত হইতে হয়। ভাল করিয়া কুস্তক করিতে পারিলে 
সমান বায়ুর তেজোবৃদ্ধি হয় তখন প্রবল সমানের দ্বারা 
সমাকষ্ট হইয়া! তির্য্যক্‌, উর্ধ ও অধ:স্থিত সকল নাড়ী স্থুযুয্নাতে 
আসিয়া একীভূত হয় এবং বিভিন্ন নাঁড়ীতে সঞ্চরণশীল 
বাঁযুসকল সমরসীভূত হইযা1 একমাত্র প্রাণরূপে পরিণত হয়। 
ইহাই নাড়ী-সামরন্ত। ইহার পর মধ্য নাঁড়ী অথবা সুযুয্া- 
নাড়ীকে উর্দন্ত্রোতা অর্থাৎ উপরের দিকে প্রবহনশীল বলিয়া 
ভাবনা করিতে হয়। ন্ুযুন্না দেহস্থ বাবতীয় নাড়ীর মধ্যবর্তী 
_ইহা নাভি হইতে মস্তবস্থ ্রহ্মরন্ধ তেদ করিয়া শক্তি স্থান 
পর্য্স্ত বিস্তৃত রহিয়াছে । এই ত্রিবিধ সাধনের ফলে সকল 
নাড়ী এবং হৃদয় প্রভৃতি সকল গ্রন্থিপথ (কুস্তক ও মুদ্রা 
প্রভাবে) রুদ্ধ হইয়া ( ভাঁবনাঁবলে ) সর্বতোভাবে বিকশিত 
হয় অর্থাৎ উর্ঘ প্রবাহের উন্মুখতা লাভ করে। এতদিন 
অপান শক্তির প্রাধান্তবশত; এইগুলি অধোমুখ ও সঙ্কুচিত 
ছিল। হায়, ক তালু; ভ্রমধ্য প্রভৃতি স্থানে প্রাণশক্তি 
সরল গতি হারাইয়! কুটিলতা বা বক্রতা প্রাপ্ত হইয়াছে, তাই 
এর সকল স্থানকে গ্রন্থি বলে। এইগুলি সক্কোচ-বিকাঁশশীল 
বলিয়। পদ্ম নামেও অভিহিত হয় । 

এই দ্বারগুলি ইন্দ্রিয়ের ্ঠায় প্রাণের দ্বারও বটে। 
স্থতরাং এই দ্বাররোধ ব্যাপার ইন্দ্রিয় ও প্রাণবৃত্তির প্রত্যাহার 
বলিয়া বুঝিতে হইবে। ইন্দ্রিয় ও প্রাণই বাহ জগতের সহিত 
মনের সন্থন্ধ-স্থাপক_ ইন্দ্রিয় ও প্রাণ প্রত্যাহত হইলে 
মনের বহিন্ম প্রেরণা বা আকর্ষণ নিবৃত্ত হয়। এইভাবে 


মৃত্ত্যন্বিভস্তান্ম ও শল্লমস্পদ 


১৪৬৬ 


প্রত্যাহার বা দ্বার-সংযম দ্বারা অষ্টাঙ্গ যোগের বহিরঙ্গ অংশ 

সিদ্ধ হইয়া থাকে। 

কিন্ত অন্তরঙ্গ অংশ তখনও বাকী থাকে। তাহা 
মনোনিরোধের ব্যাপার। ধারণা, ধ্যান ও সমাধি নামক 
অন্তরঙ্গ যোগ বস্ততঃ মনোনিরোধেরই ক্রমিক উৎকর্ষ মান্র। 
মনের নিরোঁধস্থান হদয়। দ্বার-সংযমের পর ইন্দ্রিয় পথ 
রুদ্ধ হওয়ার দরুণ মন যদ্দিও বাহা জগতে গমন করিতে সমথ 
হয় না, তথাপি দেহান্তস্থ প্রাণময় রাজ্যে উহা অবাধে সঞ্চরণ 
করিতে থাকে। প্র সঞ্চরণের ফলে সুপ্ত সংস্কাররাশি 
উদ্দীপিত হইয়া স্বপ্রবৎ দৃশ্ঠ-দর্শনের কারণ হইয়া থাকে। 
স্থৈ্যলাঁভের পক্ষে ইহা! এক বিপুল প্রতিবন্ধক । আমরা 
পূর্ব্বেই বলিয়াছি মনের সঞ্চরণ-মার্গ মনোবহা নাড়ী 
নামে প্রসিদ্ধ । সমস্ত দেহব্যাগী অতি হুম্ম আধ্যাত্মিক 
বাযুকে আশ্রয় করিয়া লুতাতন্ত-নির্িতি জালের শ্ঠায় 
একটি অতি জটিল নাড়ীজাল বিস্তৃত রহিয়াছে । ইহা দেখিতে 
অনেকাংশে একটি মংম্যজালের ন্যায় এবং তাহারই ন্তায় মধ্যে 
মধ্যে কুট গ্রন্থি দ্বারা সংযোজিত । মানীবহা নাড়ীর নানাবিধ 
শাখা প্রশাখার দ্বারা এই জাল গঠিত। মনের এক ,এক 
প্রকার বৃত্তি বা ভাব এক এক প্রকার নাড়ীপথে ক্রিয়া করে» 
অর্থাৎ এক এক প্রকার ভাবের উদয় কালে মন এক এক * 
প্রকার নাঁড়ী পথে ঘোরাফেরা করে। এই পথগুলি 
সামান্ততঃ সবই মনোব্হা নাঁড়ী হইলেও ইহাদের পরস্পরের 
মধ্যে অনেক অবান্তর পার্থক্য লক্ষিত হয়। রূপবাহিনী শব্দ- 
বাহিনী প্রভৃতি নাড়ীর সহিত মনোবহা নাঁড়ীর যোগ আছে। 
পঞ্চভৃতের সার তেজ লইয়াই মনের প্রকাশ । মনের বৃতি- 
ভেদেও পর্চভৃতের সন্গিবেশগত তারতম্য আছেঃ ক্রোধে 
তেজ, কামে জল ইত্যাদি প্রধানভাঁবে থাকে ( যদিও প্রতি 
বৃত্তিতেই পঞ্চভৃতের অংশ আছে)। পূর্বব জন্মের বাসনা- 
রূগী হুম্ বায়ু বা! রেণুর দ্বারা এই জাল পরিপূর্ণ । এইগুলি 
মনকে কম্পিত করে । হৃদয়ের বহিঃগ্রদেশে এইরূপ একটি 
বিরাট জাল রহিয়াছে। সমস্ত দেহ এই প্রাণজালে ব্যাপ্ত। 
ইহাই বারুমণগ্ডল ও মনের সঞ্চার ক্ষেত্রে-__যাহার মধ্যে যথাস্থানে 
সমস্ত লোক-লোকাস্তর ভাসিতেছে । চঞ্চল মন ইহার সর্বত্র 
সঞ্চরণ করিয়া থাকে ।, ব্যষ্টি দেহের স্তায় ব্রহ্ধাণ্ডেও স্ধ্য- 
মণ্ডলের বহিঃগ্রদেশে বিশ্ব ব্যাপিয়া এইরূপ একটি জাল 
রহিয়াছে। এক একটি নাঁড়ী এক একটি রশ্মি । এই রশি ( 


১২ 


পথেই প্রাণ বা মন সঞ্চরণ করিয়া! থাঁকে_দেহাস্তরস্থ 
লোঁকেও করে, দেহের বাহিরেও করে । 


মন সুক্্ প্রাণের সাহায্যে বাসনাম্কসারে এই জলে ভ্রমণ 


করিয়া যে সকল দৃশ্য দর্শন করে ও তক্জন্য তাহাতে যে সকল 
ভাবের উদয় হয় তাহা পূর্ব সংস্কারের পুনরভিনয়মূলক | 
ইন্দ্রিয়পথে যে আত্মতেজ এতদিন বাহ জগতে ছড়াইয় 
গিয়াছিল তাহাই ইক্দ্রিয়রোধের সঙ্গে সঙ্গে উপসংহত হইয়া 
সংস্কার রাঁজো ছড়াইয়! পড়িযাছে। এই অবস্থায় বাহ অনু 
ভব, এমন কি বাহস্ৃতি পর্যান্ত লুপ্ত হইয়! যাঁয় বলিয়াই এই 
সংস্কার দর্শনগুলি খুব স্পষ্ট ও জীবন্ত বলিয়া অনুভূত হয়-_ 
প্রত্যক্ষ বলিযাই তখন মনে হয়। সাধারণতঃ এ গুলিকে 
অনেকে ধ্যাঁনজ দর্শন বলিয়া থাকেন । কিন্ত বাস্তবিক ইহাদের 
মূল্য খুব বেণী নহে। ইহা বিক্ষিপ্ত চিত্তে হইয়া থাকে । 
বাহ্জ্ঞান হারাইবার সঙ্গে সঙ্গেই এই সকল দর্শনের উদয় 


ভ্ান্রভ্্বখ 


স্য্যৃ্ 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় থণ্ঁ--২য় সংখ্যা 


হইয়া থাকে। সত্যলিগ্গ, যোগীকে এই প্রকার দর্শনা 


, হইতে যথাসম্ভব নিজেকে বাঁচাইয়! চলিতে হইবে । মনের 


চঞ্চলতা! বা চলনশক্তি রুদ্ধ না! হইলে ইহা সম্ভবপর হয়ন!। 
কিন্ত গ্রাণকে স্থির করিতে না পারিলে মনের এই চঞ্চলতা 
পরিহার করিবার উপায়ান্তর নাই। এই জন্ত ঘ্বার সং্যমের 
পরে ও মনোনিরোধের পূর্বে প্রাণস্থৈর্যের আবশ্যকতা 
অনুভূত হয়। যোগধারণা অবলঙ্গন করিয়া দেহাস্তবর্থী 
নানাপ্রকীর কার্যসাধক প্রাণশক্তিকে ভ্র-মধ্যে- ভ্র-মধ্য হইতে 
মস্তক পর্যন্ত স্থাপন করিতে হয়। প্রাণশক্তির সঞ্চার ক্ষেত্র 
অসংখ্য নাড়ীকে এক নাড়ীতে পরিণত করিতে না পারিলে 
অসংখ্য প্রাণধারাকে একপথে চালনা করা ও একস্থানে সমস্ত 
প্রাণের সমাবেশ করা সহজ হয় না। শ্রীভগবাঁন্‌ “যোঁগবল+ ও 
“যোগধারণা” এই দুইটি শব্দের দ্বার এই যোজন! ব্যাপারেরই 
ইঙ্গিত দিয়াছেন । ( আগামীবারে সমাপ্য ) 


যে কথা বলিতে চাই হে বন্ধু আমার ! 


শ্রীরবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী 

দিনে দিনে পলে পলে যেদিকে ফিরাই আখি 

জীবনের আরু হয় শেষ, বন্ধু মোর ! দেখিবারে পাই 
বুথাই কোরো না৷ বন্ধু আয়ু যার যতটুকু-_ 

নিরর্থক তাহারে নিঃশেষ । যায় সে যে সেটুকু দিয়াই। 
নিজেরে বিকাশ কর গোলাপের আরক্তিমা 

হদয়ের প্রতিবিন্দু দিয়া, ক্ষণে ক্ষণে হয়ে আসে ম্লান 
প্রতি পত্র প্রতি পুষ্প স্বল্লাধু গোলাপ সেও 

সবাকারে দেয় যে বলিয়া । গন্ধ তার ক/রে যায় দান। 
নিজেরে ভেবন। তুচ্ছ আধুর স্বল্পতা দিয়ে 

বন্ধু মোর প্রতি দীর্ঘশ্বাসে; কোন কিছু মাপা নাহি যায়, 
সঞ্চয় করিয়! যাও যে মাপে মাপুক বন্ধু! 

আপনার মহিম। বিকাশে । তুমি যেন গপিও না তায়। 








মু 


প্রীনবগোপাল দান পি-এচ.ডি, আই-পি-এস্‌ 


নন্দিনী স্তব্ধভাঁবে বাহিরের দিকে তাঁকাইয়াছিল। মেঘমেছুর 
আকাশের শ্াগলিমা, আলোছারাঁর লুকোচুরি, বর্ষ আবাহনের 
স্থর_ প্রকৃতির এই বৈচিত্র্যগুলি তাহার সর্ধবদেহে মনে এক 
নৃতন ঝঙ্ঈ1র তুলিতেছিল। 

তাহার বিবাহ স্থির হইয়া গিয়াছে । ভাবী স্বামী 
সমরেশ এম্এতে ফাঁ্টরাশ ফাস্ট, জন্ীন বিশ্ববিদ্যালয়ের 
গবেষণা-উপাঁধিধারী, কলিকাঁতীর একটা বড় কলেজের 
নামজাদা অধ্যাপক । তাহার পাত্ডিত্য সুধীসমাঁজে 
স্থুবিদিত, তাহার আড়ম্বরহীন ব্যবহার সর্বত্র প্রশংসিত, 
তাহার অমাঁয়িকতাঁয় ছাত্রসম্প্রদায় মুগ্ধ। বয়স তাহার 
বত্রিশ হইলে কি হয়, তারুণ্যের উচ্দ্ুলতা এখনও ফন্তুক্োতের 
মত নীরবে নিতৃতে মাঝে মাঁঝে প্রকাশ হইয়া পড়ে এবং 
তাহার আভাস পায় তাহার অন্তরঙ্গ বন্ধুমণ্ডণী। 

নন্দিনীর আত্মীয় বাঞ্ধবী সকলেই তাহার সৌভাগ্যের 
প্রশংসা করিতেছিল, দু-একজনের যে ঈর্যাও হইতেছিল না 
এমন নয়। স্থচিত্রাঃ বাহাকে সে সবচেয়ে বেশা ভালবাসে, 
বলিয়া! গিয়াছিল, তুই একটু সাবধানে থাকিস্‌ নন্দিনী, 
এ বিয়েতে অনেকেরই বুকে শেল বাঁজছে, খেব পর্য্যন্ত 
মঙ্গলমত ব্যাপারটা চুকে গেলে রক্ষা পাওয়া যাঁয়। 

ইহার উত্তরে নন্দিনী শুধু হাঁসিয়াছিল। 

সমরেশকে তাহার পছন্দ হয় নাই একথা বলিলে সত্যের 
অপলাপ কর! হইবে। নন্দিনী অন্ধ নয় সমরেশের যেসব 
গুণ তাঁহাকে সকলের কাছে প্রিয় করিয়া! তুলিয়াছিল 
তাহার উপযুক্ত মর্যাদা দিতে নন্দিনী জানে। তাহা ছাড়া 
তাহাঁর নারীত্ব তৃপ্ত হইয়াছিল আর একটি কারণে, মা বাবা 
বনধুবান্ধবদের অনুরোধ উপরোধ সুদীর্ঘ সাতটি বসর উপেক্ষা 
করার পর হঠাৎ এক সতীর্ঘের বাড়ীতে নন্দিনীকে দেখিয়া 
সমরেশের ভয়ানক ভাললাগে এবং তিনি তাহার চির- 
কৌমার্যব্রত ভাঙ্গিতে রাজী হন, সমরেশের এই সাদর 


আহ্বান নন্দিনীর জীবনের শুষ্কতা অনেকখানি দূর করিয়া 
দরিয়াছিল, অভাঁব বেশ খানিকটা ভরিয়া! দিয়াছিল। 

তবু বলিষ্ঠ দুইটি সবল বাহুর নিবিড় আলিঙ্গনলাভের 
সম্ভাবনায় তাহার মন পুলকিত হয় নাই। কোথায় যেন 
একটা তার বেহ্থরো! বাঁজিতেছিল; সে অন্থভব করিতেছিল 
ঠিক যেমনটি হইলে সব সুষ্ঠ এবং সুন্দর হইয়া উঠিত তেমনটি 
যেন হইল না । 


অলককে নন্দিনী যথার্থই ভালবাদিয়াছিল। যৌবনের 
প্রথম আহ্বানে সমস্ত দেহে যখন সে অনির্ধচনীয়ের বাণী 
শুনিতে পাইতেছিল তখন অলকের সঙ্গে তাহার দেখা হয়। 
অলক ছিল তাহার চেয়ে বছর চারেকের বড়-_তাহারই “মত 
প্রাণবন্ত সজীব । 
অলক নন্দিনীকে প্রিপারূপে গ্রহণ করিতে পারে নাই। 
তাহার সঙ্গে নন্দিনীর সন্বন্ধ ছিল অনেকটা সখ্যভাবের। 
তাহার ন্নেহ ছিল গুভসাঁধনের, প্রনাধনের নয়। 
প্রথমে নন্দিনী এতটুকুও ক্ষুব্ধ হয় নাই। অলকের 
হৃদয়ের বৈশিষ্ট্যই ছিল একট! বিরাঁট উদারতা, যাহাঁর মধ্যে 
বিশ্বের অসংখ্য নরনারী নিঃসঙ্কোঁচে আসিয়া আশ্রয় নিতে 
পারে, অথচ বিদ্দুমাত্রও ঈর্ঘ্যা্বিত হইবার কারণ খু'জিয়া 
পায় না। অলক যখন তাহার স্বাভাবিক বেপরোয়াভাবে 
নন্দিনীকে বলিত-_নন্দিনী, তোমার বিয়ে হয়ে গেলে তোমার 
বর কিন্তু তোমাকে আমাদের বন্ধুগোীতে মিশতে 
দেবেন না নন্দিনী কোঁন প্রতিবাদ করিত না বা বলিত 
না যে সে কখনও বিবাহ করিবে না। শুধু বলিত, সে 
দেখা যাবে। 
তাহার পর অলকের জীবনে সত্যসত্যই একটি নারীর 
আঁবি3তাঁব হইল-_বন্ধু নয়, প্রিয়া। ন্ুকৃতির মধ্যে অলব 
এমন কতকগুলি বৈশিষ্ট্য পাইল যে, অনায়ালে সে তাহাকে 
১৪৩ 


৯৪৪ 





সহ স্ স্থ্া০. বস 


তাহার পরিচিত মেয়ে-বন্ধুদের দল হইতে আলাদা করিয়া 
, কোথায় আছে, কে দেখছে? 


দেখিতে স্থুরু করিল । 

নন্দিনী ব্যথা পাইল। প্রথমটাঁয় সে স্থকৃতির সঙ্গে 
রীতিমত প্রতিযোগিতা করিয়া চলিল, অলকের ভালবাস! 
আকর্ষণ করার উদ্দেশ্টে । স্ুকৃতির চপল চঞ্চলতা, তাহার 
বিলাসিতাঁ_স্মন্তই সে অলকের সম্মুখে উপস্থাপিত করিয়া 
প্রমাণ করিতে চেষ্টা করিল-_স্ুকৃতি অলকের ভালবাসার 
যোগ্যা নহে। 

কিন্ত ফল হইল বিপরীত। কোনপ্রকার বাধা না 
পাইলে অলক হযত ধীরে ধীরে স্ুকতির আকর্ষণ কাটাইযা 
উঠিতে পারিত, কিন্তু এই গায়েপড়া স্থকৃতি-চরিত্র বিশ্লেষণে 
'সে নন্দিনীর উপর রীতিমত বিরক্ত হইয়া উঠিল এবং 
নন্দিনীর প্রতি তাহার যে স্লেহটুকু ছিল তাহাও সে তুলিয়া 
লইয়া স্বরূতির কাঁছে উৎসর্গ করিল। 

ইহার বংসরখানেক পরে সমরেশের সঙ্গে নন্দিনীর 
বিবাহ স্থির হইল | 


নন্দিনী অন্যমনস্কভাবে বাহিরের দিকে তাকাইয়া 
বসিয়া ছিল, হঠাৎ স্কৃতি আসিয়া উপস্থিত। বেশ একটু 
ঈর্বাহুচকম্বরে বলিল, খুব বর জুটিয়েছিস্‌ যাহোক্‌, এবার 
তোকে আর পায় কে? 

স্বৃতির প্রতি প্রীতি নন্দিনীর কোন দিনই ছিল না। 
সেও উম্মাসুচকম্বরে জবাব দিল, কলেজেপড়া ভবঘুরে 
ছোকরার বদলে ধীমান্‌ প্রোফেসারের গলায় মাল। দিতে 
কোন মেয়েরই আপত্তি হবে না আশা করি। 

স্নুকৃতি শ্লেষটা বুঝিল, কিন্তু সেটা গায়ে না মাখিয়া 
বলিয়৷ চলিল, সেট! খুবই সত্যি, নন্দিনী । '"* একজাতের 
পুরুষের সাথে প্রেম করা চলে, কিন্তু বিয়ে চলে না। বিয়ে__ 
সেষে সারাজীবনের বন্ধন--তখন একটু শান্তভাবে 
ভাবতে হয় বই-কি! 

তাহার পর সে বলিয়া চলিলঃ অলককে তোর বরের 
কথ বল্লাম, সেও ন্ুর্থী হয়েছে। ও নিজেই তোকে 
কন্গ্রযাচুলেট কন্মুতে আস্ত, কিন্তু বেচারী আজ দিনদশেক 
ধরে অরে বিছানায় পড়ে আছেঃ আমাকেই বার্তাবহু 
ক'রে পাঠাল। 

নন্দিনী উদ্ধিষ্ন হইয়া উঠিল। 


ভ্াাপ্লভবশ্র 








[ ২৮শ বর্ষ--২র খ্ড--২য সংখ্যা 


বব 


কপ সা স্নান স্থপ্পা্িনিস্প্িন্ফপা স্পা 
_অলকের জর হয়েছে? কই, কিছু শুনিনি ত! 


--আছে ওদের বাড়ীতেই। বুড়ী পিসীমা আছেন, 
যতদূর সম্ভব দেখছেন। ডাক্তার বল্ছিলেন-_জ্বর যদি 
এরকম চল্তেই থাকে তা হলে একজন নার্স রাখতে হবে। 
আমি ত রোজ বিকেলবেল। একবারটি অলকের খোঁজ নিয়ে 
আমি; তবে জানিন্‌ ত, আমার অদংখ্ কাজ, সবদ্দিন একটু 
বসে কথা বলাও হয়ে ওঠে না! 

সুুকৃর্তির কথার মধ্যে একটা উদ্ণাসীনতার স্থুর নন্দিনী 
লক্ষ্য করিল। মে আরও চিন্তিত হইয়া প্রশ্ন করিল, 
সীরিয়াস্‌ কিছু নয় ত, স্থুকৃতি? 

_না সীরিয়ান কেন হবে? তবে অনেক দিন ধরে 
জর চল্ছে, বেচারী বড় রোগা আর দুর্ধল হয়ে পড়েছে, 
বিছানা ছেড়ে উঠতে পারছে না। 

মুহূর্তের জন্য অলকের চেহারাখানা নন্দিনীর চোখের 
সম্মুখে ভাসিয়া উঠিল। দীর্ঘ খজু দেহ, বপিষ্ঠ বাহু, আত্ম- 
প্রতিষ্ঠ মুখশ্রী। কতদিন সে বক্সি-এ বাছাই-করা গোঁরা 
বন্মারকে হারাইয়া দিয়াছে অবলীলাক্রমে। সেই অলক 
আজ রোগশব্যায় এত কাতর যে বিছানা ছাড়িয়া উঠিবাঁর 
ক্ষমতাটুকু পথ্যন্ত নাই ! 

কিন্ত তাহার নিজের হাত পা যে একেবারে বীধা। 
বাগ্দত্তা বধৃ--সে কেমন করিয়া অলকের গৃছে যাইবে? 
তাহার মা ত কিছুতেই রাজী হইবেন না, তাহা ছাড়া 
সমরেশ যদি শুনিতে পাঁয় ?__শক্রর ত অভাব নাই, সুচিত্র' 
একটু আগেই সাবধান করিয়া দিয়া গিয়াছে ! 

তাহা ছাড়া সে অলকের কাছে যাইবে কোন্‌ অহমিকাঁয়? 
অলক ত তাহাকে চায় না_কোন দিন চায় নাই। সে 
চায় স্থৃতিকে- চঞ্চলা স্ুকৃতিকে, যাহার অলকের প্রতি 
এতটুকু দরদ নাই! ... তাহার বুক ফাটিয়া লাল অশ্রু উদগত 
হইতে চাহিতেছিল। | 

সংক্ষেপে স্থরৃতিকে বলিল, তোরা ত ভাই রোজই 
যাস, আমাকে মাঝে মাঝে খবর দিস্‌ঃ কেমন থাকে । 


সন্ধ্যায় সমরেশ আসিল। বিবাহ স্থির হইয়া যাওয়ার 
পর সে প্রায়ই নন্দিনীকে-দেখিতে আসে । নন্দিনী তাহার 
কাছে বিরাট একটা কৌতুছল। এতদিন সে অধ্যয়ন 


মাধ--১৩৪৭ ] 


অধ্যাপনায়ই ডুবিয়াঁছিল; এখন যেন একটু ছুটি পাইয়া হাফ 
ছাড়িয়া বাচিয়াছে। তরুণ বয়সের রোম্যান্মের উদ্দীপনা 
ছয়ত তাহার নাই, কিন্তু অগ্রসন্ধিংসা আছে গ্রচুর | 

নন্দিনী রোজই সহজভাবে সমরেশের সঙ্গে কথা বলে; 
তাহার সঙ্গে সাহিত্য, আর্ট, বিজ্ঞান সম্পর্কে তর্ক করে। 
সমরেশ বেশ প্রৌঢ় গান্তীর্য্যে তাঁঠাঁর ভাবী বধূর মানসিক 
কষ্টির উন্নতিসাঁধনে বত্রবান্‌ হয়। তাহার পর হাঁসিগল্প, 
 বন্ধুবান্ধবীদের কাহিনী ইত্যাদির মপা দিয়া কখন যে দুই-তিন 
বণ্টা কাঁটিয়! যার তাহা মনরেশ টেরই পার না। 

সমরেশের সভ্য যে নন্দিশী উপভোগ করে না এমন 
নয়। মনে মনে সে সমবেশের পাশভির প্রশণ্সা করে, 
হার শান্ত চাঞ্চলাহীন চরিন্রের শগ্রথে মাথা নত করে। 
ময় সময় অনন্ঠভূতপন্দ একটা গর্দে তাঁভার বৃকও বুঝি 
ভরিয়া ওঠে । 

কিন্তু সেদিন সান্ধ্য মিলনটা অন্ঠান্ত দিনের মত জমিল 
না। অলকের অনস্থুখের সংবাদ পাইখা তাহার সংবত- 
করিয়া-লইযা-আ1স! গ্্দয়তন্ী আবার যেন কেমন বেস্ুরো 
বাঁজিতেছিল ; কথোপকথনের শোতে সে কিছুতেই নিজেকে 
ঢালিয়। দিতে পারিতেছিল না । 

অবশেষে সমরে প্রশ্ন করিলঃ তোমার শরীরটা কি 
ভাল নেই আজ? 

__না, বেজায় মাথা ধরেছে । ."" নন্দিনী বলিল । 

উদ্বিগ্ন হইয়! সমরেশ বলিল, তা হলে তোমায় আজ আর 
আটুকে রাখব না, তুমি বাঁও, থরে গিনে বিশ্রাম করো । 

নন্দিনী জীবনে বোধ হয় কখনও কাহারও কাছে 
এতখানি কৃতজ্ঞ বোধ করে নাই; আজ সমরেশের এই নিষ্কৃতি 
দওয়াঁতে সে একটা বড় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলিয়া ব|চিল। 


রাত্রিবেলা খোল! ছাদে শুইয়া শুইয়া! নন্দিনী অলকের 
চথা ভাঁবিতে লাগিল। তাহার কেবলই মনে হইতেছিল, 
রাগশয্যায় পড়িয়া অলকের চোখের অন্ধকার নিশ্চয়ই 
চাটিয়াছে, সে স্ুুকৃতির অন্তঃসারশুন্তত। উপলব্ধি করিতে 
[ারিয়াছে, অন্তরে অন্তরে সে হয়ত নন্দিনীকেই কামনা 
ঈরিতেছে কিন্তু ভবিতব্যের নিষুর বিধানের সঙ্গে 
প্রতিযোগিতায় পরাজয় স্বীকার করিতে বাধ্য হইয়াছে। 

তাহার অদম্য আকাজঙ্ষা হইতেছিল একবার চুপি চুপি 


১৯ 


হযুত্তিভ 


১১ব্রহ 


অলককে দেখিয়া আসে। নিভৃতে অলককে দেখিয়া 
আসে। নিভৃতে অলককে প্রশ্ন করেঃ এখনও তোমার 
ভূল ভাজ.ল না, অলক? 

কিন্ত চারিদিকে জোড়া জোড়া চোখ তাহাকে পাহারা 
দিতেছে। অলকের অস্থথের সংবাদ নন্দিনীর মা জানেন 
এবং ইহাও জানেন যে, এতটুকু সুযোগ পাইলে নন্দিনী 
অলকের রোঁগশয্যার কাছে ছূটিয়া যাইবে। তাই তিনি 
সব সময় নশ্দিনীকে চোখে চোখে রাখিতেছিলেন। 

তাহা ছাড়া সমরেশদের বাঁড়ীও ত বেশী দুরে নয়। 
মায়ের তীক্ষ চোখ এড়াইয়! যদিও বা নন্দিনী বাহির হইয়। 
পড়ে, কে জানে পথের মাঝখানে তাহার সঙ্গে সমরেশেরই 
দেখা হইয়া যাইবে কি-না! সমরেশ যদি প্রশ্ন করে, 
এত রাত্রে সে কোথায় যাইতেছে, তাহা হইলে সেকি. 
জবাব দিবে? 

এই শৃঙ্খলিত জীবনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা! করিবার 
একটা তীত্র আগ্রহ নন্দিনীর মনে গুম্রাইয়! গুম্রাইয়া 
মরিতেছিল। অবসন্ধ বন্ধন এবং তাহার সঙ্গে আরও 
বিধিবদ্ধ জীবনযাত্রার সঙ্কেত তাহাকে হয়ত িপরোয়ু 
করিয়া তুলিত, কিন্তু স্রুতিকে পাইয়া অলক 
কি নির্মমভাবে উপেক্ষা করিয়াছিল তাহা মনে পড়িতেই 
সে খানিকটা আত্মস্থ হইল। 


পরের দিন অলকের কোন খবরই নন্দিনী পাইল না। 
তাহার একমাত্র বার্তাবহ সুকৃতি, কিন্তু স্ুকৃতিকে সেদিন 
রাত আটটা পর্যন্ত দেখাই গেল না । 

সমরেশ নন্দিনীর ক্রিষ্ট মুখথান| দেখিয়া বেশ একটু 
সকালে সকালেই বিদায় লইতে ছল, এমন সময় স্ুকৃতি 
আসিয়! ঘরে ঢুকিল। 

নন্দিনী স্থানকালপাত্র ভুলিয়া উৎসুক কণ্ঠে প্রশ্ন করিল, 
স্থুকৃতি, অলকের খবর কি? 

হাফাইতে হাফাইতে স্ুক্কৃতি বলিল, ত্র কথাই ত বল্তে 
এসেছি, নন্দিনী। আজ বড় ডাক্তার এসেছিলেন, উনি ত 
দেখে টাইফয়েড বলে সন্দেহ প্রকাশ ক'রে গেলেন। বিকাল 
থেকে ছু'জন নার্সের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। 

নন্দিনীর মুখ মুহুর্তের মধ্যে শাদা হইয়া গেল । পরক্ষণেই 
দমরেশের কৌতুহলী চোখ তাহার দিকে নিবন্ধ দেখিয়া 


৪৩৬ 


সে গুকঠে বলিল, অলক আমাদের খুব পুরাতন এক 
বন্ধু। আজ কদিন থেকে জর-ম্নকৃতি বল্ছে, সম্ভবত 
টাইফয়েড. । ... ছেলেটি বড় ভাল। 

সমরেশ স্বভাবতই সহানুভূতিসম্পন্ন । বলিল” তা হ'লে 
ত তোমার তাকে একবার দেখ তে যাওয়া উচিত ! 

পলকের জঙন্ক নন্দিনীর মন নাচিয়া উঠিল। কিন্ত 
মায়ের কথা মনে হইতেই শ্লানমুখে বলিল, আজ বাঁদে কাল 
বিয়ে, মা যেতে দেবেন্‌ না। 

-_বিয়ে তাতে কি হয়েছে? বিয়ে হবে ঝলে আম্মীয়- 
বন্ধুদের অস্থখবিস্তথে যেতে নেই নাকি? .'" বিস্মিত স্থরে 
সমরেশ প্রশ্ন করিল । 

স্থকৃতি এবার নন্দিনীকে উদ্ধার করিল। বলিল, না, 
তা নয়, তবে হিন্দ্ঘরের কতকগুলো সংস্কার আছে, জানেন 
ত সমরেশবাবু! নিতান্ত বাধ্য না হলে বাগদত্তা বধৃকে 
অবিবাহিত পুরুষের রোগশয্যায় যেতে নেই, লোকে বলে 
তাতে অকল্যাণ হয়। 

-আমি এসব সংস্কারের মধ্যে কোন যুক্তি খুঁজে 
পাই না) ... এই মন্তব্য প্রকাশ-করিয়া সমরেশ সেদিনের 
ঈন্য বিদায় লইল। 


সারারাত ন পন ঘুমাইতে পারিল মা! । তাহার মনের 
মধ্যে প্রকাণ্ড একটা ঘন্দ, একটা আলোড়ন চলিতেছিল | 
অলকের প্রতি তাহার ভালবাসা কোন দিনই সম্পূর্ণভাবে 
নিভিয়। যায় নাই, আজ তাহার অসহায় অবস্থার কথা 
শুনিয়। তাহা সুপ্তোখিত হইয়া উঠিল। তাহার মনে পড়িতে 
লাগিল তুচ্ছ সব ঘটনা, খুটিনাটির সমাবেশ। রাত্রির 
অন্ধকাঁরময় স্তব্ধতার মধ্যেও সে শুনিতে পাইল তার 
রক্তের ত্রুত তাগুবনৃত্য, ধখন সে ভাবিতে লাগিল একদিন 
সে কি নিরভিমাঁন হইয়া নিজেকে অলকের কাছে বিলাইয়া 
দিতে প্রস্তুত হইয়াছিল, কিন্তু অলক তাহার উপচার গ্রহণ 
করে নাই। একদিকে মমরেশের ভাবী বধু হিসাবে 
তাহার কর্তব্য এবং, আত্মসম্মানবোধ তাহাকে বারবার 
প্রতিহত করিতেছিল, কিন্ত সমরেশের তাহার প্রতি প্রগ|ঢ় 
বিশ্বাস ভাহার অতীত জীবন সম্পর্কে কৌতুহুলের অভাব 
তাহাকে অত্যন্ত পীড়া দিতেছিল। 

নন্দিনী স্থির করিল, দে সাহস সঞ্চয় করিয়া সমরেশের 


ভ্ডাব্রতন্শ্ব 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় খণ্ড--২য় সংখ্যা 


কাছে সমস্ত কথা খুলিয়া বলিবে। সমরেশের বুদ্ধি ও 
বিচারশক্তির উপর তাহার বেশ শ্রদ্ধা জগ্মিয়াছিল, সে 
আশা করিল সমরেশ তাহাকে পথনির্দেশ করিয়া! দিতে 
পারিবে । সংগ্রামক্ষত মনটার উপর হাসির আলিম্পন 
আকিয়' সহজভাবে চলিয়া! বেড়ান তাহার পক্ষে একপ্রকার 
অসম্ভব হইয়া উঠিতেছিল। 


সেদিন সমরেশ যখন আসিল তখন সে নিজেই প্রস্তাব 
করিল তাহার সঙ্গে একটু বেড়া্ঈটতে বাহির হইবে । নন্দিনীর 
শরীর গত কয়েকটা দ্রিন ধরিয়াই অসুস্থ যাইতেছে এই 
ধারণার বশবত্তী হইয়া! সমরেশ আর কোন প্রশ্ন না করিয়! 
সানন্দে রাজী হইল । 

জীবনের গোপনতম ইতিহাস-_যাঁহা ভাবী স্বামী হয়ত 
কিছুতেই দরদ দিয়! বুঝিতে পারিবে না__খুলিয়া বলিব এই 
সাধু সংকল্প করা সহজ, কিন্তু স:কল্পকে কার্যে পরিণত করা 
সহজ নয়। কথা পাড়িতে গি বারবার নন্দিনীর জিহ্বার 
আগায় আট্কাইয়! গেল। 

অবশেষে সমরেশেরই এক প্রশ্নে নন্দিনী সুযোগ 
পাইল । সমরেশ জিজ্ঞাসা করিল? হ্যা তোমাদের সেই 
অলক ছেলেটির আর কোন খবর পেয়েছ? কেমন আছে? 

_-নাঃ আজ কোনই খবর পাইনি” বোধ হয় আগের 
মতই আছে। 

_ তোমাদের বাড়ীর অদ্ভুত সব সংস্কার আমি কিছুতেই 
বুঝতে পারিনা । একজন অতি-নিকট আত্মীয় বা বন্ধু 
অন্ুস্থ হয়ে পড়ে আছে, তুমি বিয়ের কনে বলে তোমার 
যাবার অধিকার নেই, এ আমার কাছে অত্যন্ত বাড়াবাড়ি 
মনে হয়। | 

একটু চুপ করিয়া থাকিয়া নন্দিনী বলিল, আমার 
ভয়ানক ইচ্ছা করে একবার দেখ তে যেতে, কিন্তু কুসংস্কার যে 
আমারও নেই তা জোর ক'রে বল্তে পারি না! 

তাহার পর একটু ইতন্তত করিয়া নন্দিনী বলিতে সুরু 
করিল, স্ুকা চর কাছে কাল যা শুন্লাম তাে মনে হ'ল 
অস্থখে ভুগে ভুগে বেচারী একেবারে বদলে গেছে । নুস্থ- 
শরীরে ওকে যারা দেখেছে তারা ওকে প্রশংসা না ক'রে 
পারেনি |... বাংলাদেশে এরকম বলিষ্ঠ, সাহসী, সুদর্শন ছেলে 
খুব কম মেলে। 


মাঘ--১৩৪৭ ] 


মুক্তি 


শ৭% 


্ ব্রাস্্্যাস্্র গ্যাস 





বলিতে বলিতে নিজেরই অজান্তে নন্দিনীর মুখচোখ 
উৎসাহদীপ্ত হইয়া উঠিতেছিল। সে বলিয়া চলিল, আমরা 
ওকে জানি ছেলেবেলা থেকে, খেলার সাথী হিসাবে আমাদের 
পরিচয়। তারপর দেখতে দেখতে ও বড় হ'য়ে উঠল ..: 

সমরেশ তাহার কথার মধ্যে বাঁধা দিয়! বলিল, তোমরাও 
ত বড় হয়ে উঠলে ... 

হ্যা, সেত ঠিকই | ..' বলিয়া নন্দিন আবার তাঁহার 
কাহিনী সুরু করিতে যাইতেছিল, হঠাৎ তাহার সন্দেহ 
হইল, সমরেশের এই মন্তব্যের মধ্যে গ্রচ্ছন্ন শ্রেষ নাই ত? 

সে সমরেশের দিকে তাঁকাইল। .*. নাঃ নিতাস্ত 
সাধারণ-ভাঁবেই কথাটা! বলিয়াছে। তাহার বিগত জীবন 
সম্পর্কে সমরেশের এই বিরাটু 'ঈদাঁসীন্ত তাহাকে 
ব্যথিত করিল । সমরেশ কি চিরকালই ধরাছৌয়ার বাহিরে 
থাঁকিয়া যাইবে? তাহার ল্নেহভালবাঁস! কি সমস্ত বিবাভিত 
জীবন ধরিয়া নিপ্নগামীই রহিবে? নন্দিনীকে প্রিয়াভাবে 
সেকি কোন দিনই গ্রহণ করিতে পারিবে না? সমপ্রাণ 
সখা-সথীর মধুর সম্পর্ক কি তাহাদের দপ্যে কোন দিনই 
গড়িয়া! উঠিবে না? 

যেস্থতা ধরিয়া নন্দিনী তাঁহার ইতিবৃন্ত বলিযা চলিয়াছিল 
তাহা যেন রূঢ় অনম্র একটা আঘাতে হঠাৎ ছি'ড়িয়া গেল। 
নন্দিনী স্থির করিল, সমরেশের কাছে অলকের কথ! আর 
বলিবে না। সমপ্রাণতাঁর যেখানে অভাব, সেখানে সন্দেহের 
অবকাশ আছে প্রচুর । আজ যদি অলক সমরেশের স্থানে 
আসীন থাকিত তাল হইলে নন্দিনী তাহার কাছে তাহার 
পূর্বরাগের কথা হয়ত অবলীলাক্রমে বলিয়৷ যাইতে পারিত। 
অলকের ঈর্ষা, অলকের অভিযোগের মধ্যে সে বিচিত্র একটা 
সাস্বনা খুঁজিয় পাইত। কিন্তু সমরেশ অলক হইতে সম্পূর্ণ 
বিভিন্ন_দুর্ভেগ্চ একটা প্রাচীর দরিয়া তাহার অন্তঃকরণ 
স্থরক্ষিত, সে প্রাচীর লঙ্ঘন কর! নন্দিনীর ক্ষমতাবহিভূতি। 

_ নন্দিনী তাহার বন্ধু স্থচিশ্রার একটা কথার অন্ত্রনিহিত 

সত্য আজ উপলব্ধি করিল। 'ত্রিশোর্দে যাহারা বিবাহ করে 
তাহারা স্নেহ করিতে পারে, ভালবাঁসে না। 


ইহার তিন দ্দিন পরে যথারীতি সমরেশের সঙ্গে নন্দিনীর 
বিবাহ হইয়া! গেল। বিবাহের মধ্যে মালাবদলের সময় 
নন্দিনীর হাতটা কীঁপিয়! উঠিয়াছিল;"আঁশু একটা দুর্ঘটনার 


চন! সে তাহার ল্লাঘুতে ল্লায়ুতে অনুভব করিয়াছিল । কিন্ত 
দুর্জয় সাহস সঞ্চয় করিয়া সব অন্ুষ্ঠানই সে সহজভাবে 
পালন করিল। শান্তভাবে নিজের পথ সে বাছিয়া লইয়াছে, 
প্রত্যাবর্তন করিবার সময়'ও সুযোগ সে যথেষ্ট পাইয়াছিল, 
কিন্ত তাহা সে. গ্রহণ করে নাই। এখন পরাজয় স্বীকার 
করিলে ছলিবে কেন? 

সুকৃতির কল্যাণে এ কয়দিন অলকের খবর সে নিয়মিত- 
ভাঁবে পাইয়াছিল। একই ভাবে আছে- টাইফয়েড, 
শক্ত অনুখ, দু-এক দিনে আরোগ্য হইবার সম্ভাবনা নাই, 
তবে ডাক্তার বলিয়াছেন ভয়ের কোন কারণ নাই। নার্সের 
নিপুণ সেবা চলিতেছে, এ অন্তুখে সেবানৈপুণ্যই নাকি বেশী 
দরকার সেবান্সেহের চেয়ে । 

বিবাহের রাত্রিতে মমরেশের সঙ্গে এই প্রথম এক শয্যায় 
শুইতে সে কোনই সঙ্কোচ বা দ্বিধা বোধ করে নাই। যাহা! 
অশ্ান্তাবী তাহাঁর কাছে হাসিমুখে আত্মসমর্পণ করাই 
বুদ্ধিমানের কাঁজ, ইহ। সে মর্থে মর্মে বুঝিয়াছিল এবং স্বীকার 
করিয়াছিল। 

তাহার অশান্তি হইতেছিল একটি কারণে । অলকের 
স্বৃতি সে কিছুতেই মন হইতে মুছিয়! ফেলিতে 
না। তাঁহাকে সবচেয়ে বেশী গীড়া দিতেছিল অলকের 
মৃত্যুর সাথে সংগ্রাম। অলক যেন কিছুতেই তাহার পরাজয় 
স্বীকার করিতে চায় না; এতদ্দিন সে সমস্ত বিষয়ে প্রতৃত্ব 
করিয়া আসিয়াছে, মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে উপনীত হইয়াঁও সে যেন 
মৃত্যুকে উপহাস করিতে চাঁয়। যেন সে জোর গলায় পৃথিবীর 
কাছে প্রচার করিতে চায়, আমি অপরাজেয়, আমি নির্ভীক, 
আঁমি সত্য ।.. অলকের বলিষ্ঠ দেহমনের ছায়া নন্দিনী 
সর্বত্র দেখিতে পাইতেছিল। 


বিবাহের পরদিন নন্দিনীকে স্বামীগৃহে বাইতে হইবে। 
মা বারবার আচল দিয়া চোখের জল মুছিতেছিলেন। 
সমরেশের মত শান্ত, ধীর, ল্লেহপ্রবণ স্বামীর অঙ্কশায়িনী হইয়া 
নন্দিনী সুখীই হইবে তিনি জাঁনিতেন, তবু মাঝে মাঝে তাছার 
ক্নেহাশঙ্কিত মনে সন্দেহ খোঁচা দিয়া উঠিতেছিল। তাহা 
ছাড়া, অলক-সম্পকিত সংবাদটা--জরের ক্রাইসিসেও সে 
মৃত্যুর সঙ্গে আপ্রীণ যুদ্ধ করিতেছে__তিনি নন্দিনীর কাছে 
গোঁপন করিয়া রাখিলেও তাহার মনে হইতেছিল--বৌধ 


স১৬ 


হয় একবারটি নন্দিনীকে রোগীর কাছে পাঠাইয়া দিলে 
ভাল হইত! 

সানাই-এর করুণ রাগিণী বাজিয়৷ উঠিয়াছে। সমরেশ 
ও নন্দিনী মায়ের পায়ের ধূল! লইয়! বাহিরে আসিয়া গাঁড়ীতে 
উঠিবে, এমন সময় উর্দশ্বীসে পাশের বাড়ীর একটি ছেলে 
আসিয় খবর দিল, এইমাত্র অলক মারা গিয়াছে । 

নন্দিনীঘ মুখ ছাই-এর মত শাদা হইয়া! গেল। তাহার 
মা রুদ্ধ অস্র আর সংবরণ করিতে না পারিয়া কাদিয়া 
ফেলিলেন। 

সমরেশ বলিল- নন্দিনী, চলো, একবার ও বাড়ী হয়ে 


আসি। 
নন্দিনী কোন কথা বলিল না। অশ্রস্ীন বিবর্ণ মুখখানা 
তুলিয়া! ঘাড় নাড়িয়া জানাইল, সে যাইবে । 


একটু ইতস্তত করিয়া! সমরেশ প্রশ্ন করিল, আমি 
আস্ব, না তুমি একাই যাবে? 

সমরেশের এই প্রশ্নে নন্দিনীর মন গভীর কৃতঙজ্ঞার ভরিয়া 
উঠিল। সে অস্ফুটকঠ্ে বলিল, তুমি এখানেই থাকো, আগি 
আধ ঘণ্টার মধ্যেই ফিরে আস্ছি । 
০ ০০ 
তি প্রায় দৌড়াইতে দৌড়াউতে নন্দিনী অপকদের বাড়ীতে 
টুকিল। অলকের বৃদ্ধা পিসীমা অলকের বিছানার উপর 
লুটাইয়া হাউ-হাউ করিয়া কীাদিতেছেন। না জানালার 
কাছে চুপ করিয়া দাঁড়াইয়া! রহিয়াছে । রোগীর দেহে প্রাণ 
নাই-_-এই সিদ্ধান্ত জানাইয়! দিয় ডাক্তার চলিয়া গিয়াছেন। 
স্থকৃতি একটা চেয়ারে বসিয়া রুমাল দিয়া চোঁখের জল 
মুছিতেছে । পাশের বাড়ীর জানালা হইতে কৌতুহলী 
ছেলেমেয়ের দল ন্তাকাইয়া আছে-_তাশ্ার্দের মা তাহাদিগকে 
জানাল! হইতে সরিয়া আসিতে বলিতেছে | 


১৩৮ 

(2৮ ] 
4৮145 শি, 
০০: 6 





টি উচি,8 +3) 
57577 
(৫ টী । 2//51 রা ্র্ঠ 
রর ২ চর 71 রা 
ভিত /:28%% ৪ ৫ 


ভ্ান্রভবম্ব 


| ২৮শ বর্ষ--২য় থণ্ড-২য় সংখ্যা 


শুভ্র দুপ্ধফেননিভ বিছানার উপর নিমীলিতচচ্ষু অলক 
চিরনিদ্রায় নিত্রিত-_আঁজই সকালে বিছানার চাদর, তাহার 
গায়ের জামা-কাপড় বদ্লাইয়া দওয়া হইয়াছিল । আঠারো 
দিনের রোগে ভূগিয়া অলকের দেহ শীর্ণ হইয়! গিয়াছে, মৃত্যুর 
পাঁওরতা ছাঁপাইয়াও তাহার শরীরে ফুটিযা উঠিয়াছে যুদ্ধের 
শ্রান্তি। কিন্তু তাহার মুখের কোণে একটি অনির্বচনীয় 
হাঁসি; বেন মুক্তার কাছে সাময়িকভাবে পরাজয় স্বীকার 
করিয়। সে বপিতেছেঃ আমি যেখানে গেলাম তাহা জন্ম-মৃত্যুর 
বাহিরে, সেথানে আমি তোমাকে দন্দবুদ্ধে আহ্বান 
করিতেছি, তোমাকে পরাস্ত করিব। 
ননিদ্নী তুন্ধভাবে অপকের নখের দিকে তাকাইয়া রহিল 
গুরুতি তাঁহার বধবেশ আড়চোখে লক্গা করিযা দেখিল। 
বেক্গণ নয, মিনিট দশেক এ ভাবে পাড়াইয়া থাকিয়া 
নন্দিশী থেমন ৮টিঘা আসিয়া তেমনই ছুটিয়া বাহির 
হয়া গেল । 
মুক্তি, নুক্তি। আড় এস মুক্তি পাইয়াছে। যে 
বন্ছনের নাগপান তাগ!কে এতদ্নি বাধিয়। রাখিয়াছিল তাহা 
আফ অনাঁচিত5|:ণ 92 দাস্তিক অলক 
শেষ পর্ধান্থ তাহার এতটুকু ভর হয নাই। 


ঠা, কা? 
৬৯ পানি 
রঃ ॥ পা ৫ 1 


মহানহব তা তত 


সমরেখ নন্দিনীর জগ অপেক্গ। করিতেছিল । এত শী 
ভা্াকে ফিরিতে দেখিয়া সে একটু বিশ হইল । 
জিজ্ঞান্্রনেত্রে সে নন্দিনান দিকে ভাঁকাহল। 

_কি আব ভবে 9খীনে থেকেঃসব শেষ হয়ে গেছে । "*" 
শান্থ সহজ রে নশিনী বলিল। 

ভাহার পর মমরে,শর ডান হাতটি নিজের ছুই হাতের 
মধ্যে হয়া সে বলিল, মার দোঁর কর নাঃ সন্ধা হয়ে যাচ্ছেঃ 
বাড়ী চল। 






দিয়াশলাই-এর কথ! 


অধ্যাপক শ্রীবরদা "দত্ত রায় এম-এ 


"অগ্রিমীলে পুরোহিতম্” বলিয়া যে জাতির সর্বপ্রথম ও মর্বপ্রধান 
ধর্গ্রস্থের সর্বপ্রথম হস্ত রচিত হইয়াছিল মেই জাতি যে অগ্নি উৎপাদনের 
উপায় জানিতেন না, কিংবা অগ্নির ব্যবহার জানিতেন ন! এরপ সিদ্ধান্ত 
করিলে বোধ হয় সেই জাতির প্রতি অবিচার কর1 হইবে। আজও 
যে সেই আর্ধাজাতির এক বিশিষ্ট শাথ! অগ্নি-উপাসক। আজ ভারতের 
কে|নও স্থানে “সাগ্সিক ব্রাহ্মণ আছেন কি-না জানি না, কিন্তু এই 
ভারতেই এমন একদিন ছিল যখন ব্রাক্ষণ-সন্তান উপবীতী হইবার সঙ্গে 
সঙ্গেই যজ্ঞাগ্রিকে আজীবন রক্ষা করিবার নিমিত্ত কৃত-সংকল্প হইতেন। 
ব্রাহ্মণ সন্তানকে “দ্বিজ” করিবার জন্য যে অগ্রিকে আহবান করিয়। 
যক্ঞাগ্রি প্রজ্বলিত করা হইত, সেই হোম[গ্রির পূর্ণ আহুৃতি হইত ঠাহার 
চিতাগ্রিতে। বশ্তুত বেদে নীল-লোহিত, মিত্র, বরুণ, উত্তা, রড প্রভৃতি 
দেবতারা যে ভাবে তৎকালীন আধ্যসন্থানদের ভয় ও ভক্তি আকণণ 
করিতেন, অগ্নিও সেই ভিসাবে কোন দেবতা অপেক্ষা নান ছিলেন না। 
বরং সেই হিলাবে অগ্রিদেব অন্যাঙ্গ দেবা অপেক্ষা ভেষ্ঠ ছিলেন। 
অগ্নিহোত্রী ত্রঙ্গণ অগ্থঠিকে রঙ্গ! করিবার নিমিত্ত আজীবন গুধু সমিধউ 
সংগ্রহ করিতেন এবং ন্্াত্রয় রাজা পিংভামনে আরোঠণ করিবার সঙ্গে 
সঙ্গে দেবতা, অগ্রি ও ত্রাঙ্গণকে স।গী রাখিয়া প্রজনুরঞ্জন ও ধু রঙ্গ 
করিবার নিমিত্ত প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হইতেন। পক্ষান্তরে অবগা এ কথ|ও 
বল! যাইতে পারে যে তৎকালে অগ্নি-উৎপাদন করা অজ্ঞাত ন| হইলেও 
নিতান্ত মহজ ছিল না, কাজেই অগ্নিকে প্রাচীন আধ্যেরা শুধু রঙ্গ 
করিবার নিমিত্ত যে কৃতসঙ্কল্প হইতেন কেবল তাহাই নহে, নিতান্ত 
প্রয়োজনীয় বলিয়! দেবতা জ্ঞানে পূজাও করিতেন। 

মধ্য এসিয়াতে বাসকালীন যে জাতি আগ্রর উপাদনা আরন্ত 
করিয়াছিলেন, বহু জনবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে যখন তাহার! বনুধ! বিভন্ত' হইয়া 
পড়িলেন, তখনও সেই অগ্রিকে ত্যাগ করিতে পারিলেন না। একদা 
যে “দীকায় গৌরবর্ণ” জাতি হোম-ধেনু মাধ সাথী করিয়া হিন্দুকশ 
পর্বতের গির্লিবন্্র অতিক্রম করিয়! ভারতে পদাপণ করিয়াছি'লন, 
তাহার! যে পবিত্র হোম-ধেনুটির মতই পবিত্র অগ্রিও সঙ্গে করিয়া 
আনেন নাই একথা কে বলিতে পারে? উত্তর কালে দেখ! যাঁয়, 
যে পৌরাণিক যুগে অগ্নি ভারতের তেত্রিশ কোটা দেবতার মধ্যে 
এক কুলীন দেবত| হইয়া স্বীয় গৌরব অন্মু্ধ রাখিয়াছেন, তিনি 
দক্ষ-প্রজাপতির কন্যা! প্রীমতী স্বাহ! দেবীকে বিবাহ করিয়া সংসারী 
হইয়াছেন। 

দক্ষ-প্রজাপতি ব্র্গার পুত্র, সতরাং দেব-সমাজে মহাকুলীন। 
তাহার এক জামাত চন্ত্রদেব, অন্ত এক জামাত। মহাদেধ। এই 
মহাদেবের একটু আধটু নেখ্জ-ভাঙ, করিবার অভা'স খাকিলেও তিনি 


যে কত বড় কুলীন তাহার পরিচয় আমরা গাই স্বয়ং অন্পূ্ণার মুখে। 
পাট্নীর নিকট নিজের পরিচয় দিতে গিয়! অন্ন বলিতেছেন, 


“পরম কুলীন স্বামী বন্দ্য বংশ খ্যাত ।” , 
| -_-ভারতচ্ত্ 


কাজেই__-এই নেশা-খোর “অতি বড় বৃদ্ধ”ট যে কেবল কৌলীষ্ের 
জোরেই দক্ষ-প্রজাপতির কণ্ঠা বিবাহ করিয়াছিলেন, তাহা বল! 
নিশ্য়োজন। আগ্রদেব ম্বাহাকে বিবাহ করিয়া এই পরম কুলীন 
দেবতার সঙ্গে এক পংক্তিতে স্থান পাইয়াছেন। পরে তাহার আরও 
পদ বৃদ্ধি হইয়াছে এবং পদবৃদ্ধির সঙ্গে পদবীও মিলিয়াছে অনেক। 
তিনি অগবন্ধর এক বন, হ্বাদশ রূদ্রের এক রুদ্র, ইত্যাদি ইত্যার্দি। 
পদবী বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তাহার অন্যান্য দোষও যে আসিয়া জুটে নাই 
তাহাও নহে। দময়ন্তীর স্বয়ংবরে নলের মুখে শুনিতে পাই-_ 


“ইন্দ্র অগ্রি বরুণ শমন, 
চারি জন তব্‌ প্রেম করি অকিঞ্চন, 
পাঠাইলা হেথা মোরে ৷. -গিরিশচন্জ 


পৌরাণিক প্রনদ্ধাদি ঘণাটিয়! নিত1ণ্ অরদিক অমি 
প্রতিপন্ন কর! এ প্রবন্ধের উদ্দেন্ঠ নহে। কিন্তু এ কথা বোধ হয় সকলেই 
স্বীকার করিবেন ঘ্বে, অতি প্রাচীন কাল হইতেই অগ্নি চারতের জীবন 
যাত্রার সঙ্গে সঙ্গে একাঙ্গী হইয়। আছেন। জন্ম হইতে মৃত্যু পর্য্য্ত 
ভারতীয় সামাজিকজীবনে, ধন্দমরজীবনে, এমন কি, কর্মজীবনে পর্য্যন্ত 
অগ্নির প্রয়োজন। সুত্র।ং এহেন নিতা-প্রয়োজনীয় জিনিষটির উৎপার্ধন 
পন্থা যে প্রাচান ভরত জানিত না, এ কথা যেন বিশ্বাস করিতে প্রবৃদ্ধি 
হয়না। অরুণি কাষ্ঠ ঘনণে যে তাহার! অগ্রি-উৎপাঁদন করিতেন নে 
কথা সব্ববাদিসম্মত এবং সর্বজনজ্ঞাত। কিন্তু গ্ধকের ব্যবহার 
তৎকালে অগ্নি উৎপাদনে প্রচলিত ছিল কি-না এ কথা নিসংশরে বল! 
কঠিন। তবে এ পর্যান্ত বলা যাইতে পারে যে, আরণ্যক খধির! স্বচ্ছন্দ 
ব্নজাত ফলমুলে কষুমিবৃত্তি করিয়! হয়ত দার্শনিক চিন্তাতেই বিভোর 
থাকিতেন, যক্জাগ্রি গ্জ্ষলিত করিবার প্রয়োজনে অরুণি কাষ্ঠ ঘর্ষণ করিয়া! 
অগ্রি উৎপাদন করিয়া! লইতেন কিং! কোন অগ্নিহোত্রী প্রতিবেশী 
ব্রাঙ্গণকে ডাকিয়! আনিয়া অগ্রি উৎপাদন করিতেন | তখনকার দিনে 
আধুনিক ফ্যাসানের ঘণ্টায় ঘণ্টায় চা-পান কিংবা মূহমূ্ছ ধূম-পানের 
ব্যবস্থা ছিল না। গভীর দার্শনিক ধধির! হয়ত সর্ববক্ষণই ধ্যানমগ্ন 
থাকিতেন এবং দিনান্তে সামাহ্য ফলমুল দিয়! কুলপিবৃত্তি করিতেন 

ত)রপর আস্তে আস্তে বাতাস ভিত্মমুখী হইল মানুষ আন্তে আস্তে 


১৪৯ 


১৯৪৮০ 











অজানার ধ্যান ত্যাগ করিতে আরস্ত করিল। নূতনের আবিষ্কার, 
নৃতনের আস্বাদন এবং নুতনের মোহ মামুষকে পাইয়৷ বসিল। স্তার 
ওয়ান্টার রালে ষোড়শ শতাব্দীর লৌক। ইংলগ্ডের রাণী এলিজাবেখের 
আমলে স্তার ওয়া্টার, ড্রেক, হকিমি প্রভৃতি কয়েকজন ব্যক্তি সমুদ্রের 
বুকে জলদহ্যর মত ছুটেছুটি করিয়া বেড়াইতেন। হঠাৎ স্তার ওয়ান্টার 
রালে তামাক-পত৷ আবিষ্কার করিয়া ফেলিলেন। সঙ্গে সঙ্গে ধূমপানের 
ব্যবস্থা হইল। . আর ধুমপান এমনি নেশা যে দিনান্তে একবার খাওয়ার 
মত জিনিষ নয়। নেশা যখন বেশ পাকিয়া ওঠে তখন কতক্ষণ পরেই 
ধূমপান করিতে ইচ্ছা হয়। ঘন ঘন ধুমপান করিতে হইলেই অগ্নি 
চাই। অথচ সবব সময় অরুণি কাষ্ঠ ঘধণ করিয়! অগ্নি উৎপাদন করা 
সহজও নহে এবং সুচারুও নহে । 

অভাব বহু জিনিষের জন্মদাতা । তামাক আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে 
তামাক খাওয়ার আকাঙ্্ষ। যেমন মানুষকে পাইয়া বলিল, তেম্নি সহজ 
ও সরল ভাবে অগ্নি উৎপাদনের চেষ্টাও চলিতে লাগিল। নুতনের 
গ্রীতি মানুষের মনের চিরস্তনী বৃত্তি। ফস্ফরাম আবিষ্কৃত হইতে না 
হইতেই জান্মাণীর হামবুর্গ শহরে ত্রান্ত নামক এক ব্যত্তি' ফসূফোরাস 
দিয়াশলাই আবিষ্কার করিয়া ফেলিলেন। সেই দিয়াশলাই-এর আকার 
ও কার্য্যকারিতা থুব সুহী ও সুচঠু বলা যাইতে পারে না। কোন 
রকমে মাত্র কাজ চালান গোছের সর্বপ্রথম আধুনিক আকারের 
দিয়াশলাই তৈয়ারী হইল মাত্র । সামান্য ঘর্ণ ও বিনা ঘর্ণেই এই 
_., স্াশলাইল বলিতে লাগিল। আবার সামান্য মাত্র ঘণেই সমস্ত 
দিার্না জ্বলিয়! মানুষের হাত-পা পোড়াইতে লাগিল। ফলে, এই 
জাতীয় দিয়াশলাই ব্যবহারে বিশেষ কোন নিরাপত্। রহিল নাঁ। প্রায় 
দুইশত বৎসর পরে ১৮২৭ খৃষ্টান্জে জন্‌ ওয়াকার নামক জনৈক ইংরেজ 
সর্ব প্রথম “37 [১12101)65” বা নিরাপদ দিয়াশলাই আবিষ্ষার 
করিলেন। এই দিয়াশলাই কোন অংশেই ব্রাস্তের দিয়াশলাই হইতে 
খুব বিশেষ উন্নত হইল না সগ্য, কিন্ত খুব জোরে না মারিলে ইহা 
জ্বলিত না, ইহাই ছিল ইহার বিশেষত্ব । ১৮৫৫ থুঃ ই্টকৃহলম শহরের 
ল্যা্ড ষ্টর্ম আর এক প্রকার' নিরাপদ দিয়াশলাই” আবিষ্কার করিলেন । 
কেহ কেহ লেগুগুর্মের দিয়াশলাইকেই সর্বব প্রথম “নিরাপদ দিয়াশলাই” 
বলিয়া আখাত করিয়া ধাকেন এবং জন্‌ ওয়াকারের আবিষ্কৃত 
দিয়াশলাই-এর নামকরণ করেন “লুহিকার” | দে যাহ! হউক, লুহিকার 
ও ল্যাও ষ্টরমের আবিষ্কৃত দিয়াশলাই বাজারে চলিতে লাগিল এবং আস্তে 
আন্তে ইহ! আধুনিক বেশে সঞ্জিত হইয়! আধুনিক নিরাপদ দিয়াশল|ই-এ 
পরিণত হইল। 

পৃথিবীতে যখন তামাক ও অগ্রির নবীন বাহক দিয়াশলাই লইয়] 
নান! প্রকার গবেষণ| চলিতেছিল, চির-দাশনিক ভারতও তখন নিশ্চেষ্ট 
বঙিয়! ছিল না । ভারতে তথন মোগলের সাম্রাজ্য | আকবর বাদশাহের 
মিলন-নীতিতে ভারতের অগ্রি-গর্ভ বন্গ-ব্যথ! অনেকট! শান্ত হইয়া 
আসিয়াছে । হিন্দু-মুদলমানের রেযারেষি অনেকটা! কমিয়। আিয়াছে। 
বিশাল তার সাঞজাজ্যের প্রভৃত সম্পদ, অশেষ এক্বয, স্বর্ণপ্রহ্থ জমির 


ভ্ডান্সজ্ভ্শ্র 





[ ২৮শ বর্-_২য় থণ্ঁ-_ংয় সংখ্যা 


-স্খ্হ ্ -স্” 


থবর রূপকথার মত চারিদিকে ছড়াইয়! পড়িয়াছে। শ্যার টমাস রো! 
প্রভৃতি বিদেশী রাজদূত তখন ভারতে আসিয়। দেখা দিয়াছেন। সঙ্গে 
সঙ্গে দেখিতে পাওয়! যায় যে, ভারতের সামাজিক জীবনেরও অনেকটা 
পরিবর্তন আপিয়াছে। তামাকের ধুমপান আসিয় আন্তে আস্তে ভারতের 
সরল জীবন-যাব্র! প্রণালীতে প্রবেশ লাভ করিয়াছে । মোগল-যুগের 
প্রাচীন চিত্র হইতে দেখ! যায় যে, আকবর বাঁদশীহের সময় হইতেই 
গড়গড়া চলিতে আরম্ভ করিয়াছে । গন্ধ-প্রিয় বাদশাহ জাহাঙ্গীর 
আফিংখোর হইলেও যে তামাক সেবন করিতেন না এ কথা নিঃসন্দেহে 
বল! যায় না। তামাকের সঙ্গে সঙ্গে অগ্রি-রক্ষার উপায়ও ভারত আবিষ্ষীর 
করিতে বাধ্য হইল। কারণ তামাক সেবন ছিল তখনকার দিনের 
বিলাস-ব্যসন ; কাজেই একই তাম।ক নানাভাবে ন।ন1 নামে রাপায়িত ও 
অভিহিত হইতে লাগিল এবং সঙ্গে সঙ্গে সেবনের ব্যবস্থাও হইল । ঠাঁকুর- 
মার মুখে গল্প শুনিয়াছি যে, তখন প্রায় প্রতি গৃহস্থের বাঁড়ীতেই একটি 
মাটার পাত্রে হুষের আগুন কর1 হইত এবং কতকগুলি পাট-কাঠির অগ্রভাগে 
গদ্ধক মাথাইয়া রাখ! হইত | যখনই কাহারও তামাক দেবনের ইচ্ছ! 








হইত, তাহার! ধ আগুনের পাত্র ইইতে আগুন পাহতেন এবং অন্যান্ট 
কাগ্যে পাট-কাঠি ভালাইয়। দাপ-শলাকার অভাব পূণ করা হইত। 

তারপর কোম্পানীর রাজত্বের শেষ দিকে ভারতে দিয়াশলাই 
আমদানি হইল। মুদলমান আমলে ভারত এধোবস, বহিবাঁন, উত্তরীয় 
ইত্যাদি ছাড়িয়া চোগ1-চাপ.কান ধরিয়াছিল, কোম্পানীর রাজত্বে ভারত 
কোট-প্যাপ্ট পরিতে শিখিল, নেকৃটাই বাধিল, সিগারেট টানিতে আরন্ত 
করিল। মধ্য যুগের সভ্যতার শিখর হইতে গড়গড়া গড়াইয়া নীচে 
পড়িয়া গেল। সভ্য সাধারণের পকেটে সিগ।রেট ও দিয়াশলাই শোভা 
পাইত লাগিল । সঙ্গে সঙ্গে এ দেশেও যে দিয়াশলাই প্রস্তুতের প্রচেষ্টা 
আরম্ভ হইল না! তাহাও নহে | উনবিংশ শতাব্পীর শেষভাগে (১৮৮৬৭ 
৯* ) বাংল! দেশেই সর্বপ্রথম দিয়াশলাই-এর কারখানা স্থাপিত হইল। 
কিন্তু সেই কারখানা অস্ুরেই বিনষ্ট হইল, পধ্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ও 
ব্যাপারিক প্রেরণ।র অভাবে । তারপর ১৮৯৪-৯৫ থু; মধ্যভারতের 
বিল[সপুর অঞ্চলে কয়েকটি দিয়াশলাই-এর কারথানা স্থাপিত হইল, 
আমেদাবাদেও কয়েকটি কারণানা স্থাপিত হইল । কিন্তু তন্মধ্যে কেবল 
কোঠার অমৃত ম্য।চ ফ্যার্টুরী ও আমেদাবাদের ইস্লাম ম্যাচ, ফ্যাক্টরীই 
বাচিয় রহিল। অন্য সব কারগানা ভ।রতীয় শিপ্খর মত কেহ-ব! আতুড়ে, 
কেহ-বা| অন্্প্র।শনের সময়ই বিনষ্ট ইইল। মধ্যে ১৯*৫ সালে হ্বদেশী 
যুগের শুভ প্রভাতে এবং ১৯২* সালে শ্বরাজী যুগের পবিত্র উধায় বাংলা 
ও ভারতের নানাস্থানে দিয়াশলাইসএর কারখান! স্থাপিত হইয়াছিল। 
১৯*৫ ইং সালে দিয়াশলাই-এর কারখানাগুজি পুর্বেই নানা কারণে 
বন্ধ হইয়! গিয়াছিল | স্বদেশী যুগের কারখানাসমূহের মধ্যে আজও কয়েকটি 
বাচিয়! আছে এবং সগ্গৌরবে নিজের অস্তিত্ব বজায় রাখিয়াছে। স্বরাজী 
যুগের আবহাওয়ায় যে সব কারখানার জন্ম হইয়াছিল এবং বাহারা 
আজ পর্যন্তও বাঁচি্না আছে, তন্মধ্যে ইসাভি ম্যাচ, ফ্যাক্টরী, মহালগ্ী 
স্যচ ফ্যাক্টরী এবং বেরিলী ম্যাচ, ওয়াক গ্রতৃতিই প্রধান। 


মাঘ---১৩৪৭ ] 


এদ্দিকে জাপান ও হুইডেনও নিশ্চে্ট হইয়। বসিয়া রহিল না। ১৯২৬ইং 
সালে দেখা যায় যে, সুইডেন ভারতের স্থানে স্থানে কারখান! খুলিতে 
আরম্ভ করিয়াছে । সম্প্রতি সুইডেন কলিকাতা, অমরনাথ, প্যারেল, 
ধুবড়ী, রেঙ্ুন, মান্দালে প্রত্তুতি ছয়-নাতটি স্থানে কারখানা খুলিয়াছে এবং 
অল্প কয়েকদিন হইল মান্দ্রজেও একটি কারখান! খোল! হইয়াছে। 
জাপান কপিকাতার উপকণ্ঠে মেটিয়াবুরুজে একটি বিশাল ফ্যাক্টরি স্থাপিত 
করিয়াছে । ফলে দেশী ও বিদেশী দিয়াশলাই ফ্যাক্টরী মিলিয়া কোন 
রকমে ভারতের চাহিদ| মিটাইয়। চলিয়াছিল এবং সঙ্গে সঙ্গে ভারত- 
সরকারের ধন-গব্ষেণ। বিভাগের (10165 [২652%101)1151100105 ) 
দিয়াশলাই-এর কাঠির কাঠ লইয়। ন|না প্রকার গবেষণ| চগ্িতেছিল ; 
হঠ।ৎ এই যুদ্ধ বাঁধিয়া দিয়াশল।ই শিল্পের ব্রমোন্নতির পথে এক বিরাট 
অন্তরায় স্থষ্টি করিল। 

সমগ্র পৃথিবীর বাৎসরিক চাহিদ| গড় পড়ত প্রায় পনর কোটা গ্রোস্‌, 
তন্মধ্যে ভারত একাই শতকর। নয় ভাগ, প্রায় এক কে।টা পচাত্তর 
লক্ষ গ্রোন দিয়শলাই বাবহার করিয়া থাকে। এই এক কোটা 
পঁচাত্তর লক্ষ গ্রোম্‌ দিয়াশলাই প্রস্তুত করিতে যে সমস্ত জিনিবপত্রের 
প্রয়োজন হয় ভাহাও নিতান্ত অল্প নহে । এই সকল দিয়াশলাই প্রস্তত 
করিতে চাই-- 


৬৫,৯০৪,০০৪ লন টাকার, 


ঠঠ 


কাঠ 

রাসায়নিক দব্যাদি 
কাগজ 

অন্যান্য জিনিষ 


২৪১৪৬১৪০৬ 


১৬০,৩০৬ ঠা 


১১১০০১৬৬৬ ৫ 


এই সমস্ত সম্মিলিত দ্রব্যাদির বাবদার মুল্য ন্যুনাধিক সোয়| কোটি হইতে 
দেড় কোটি টাকার মধ্যে এবং ইহাও হিসাব করিয়া দেখা! গিয়াছে যে, 
ভারতকে ভারতের চাহিদ! মিটাইতে হইলে আধুনিক শ্রম-লাঘবকারী 
নানাবিধ যন্ত্রপাতি থাক। সত্বেও এই এক দিয়শলাই শিল্পেই দৈনিক 
দশ হাজার হইতে পনর হাজার লে।কের প্রয়োজন। অথচ দিয়াশলাই 
শিল্প চালাইবার মত যে সমন্ত দ্রব্যাদির প্রয়োজন, ভারতে তাহার 
কোনটারই অভাব নাই। বন-বিত।গের রিপোর্টে দেখ! যায় যে কেবল 
দিয়াশলাই শিল্প-উপযোগী কঠই ভারতের বনে-জঙ্গলে রহিয়াছে আঠাত্তর 
রকমের । এই সম্বন্ধে আরও গবেমণ| চলিয়া্টে, হয়ত অদূর ভবিষ্যতে 
আমর! আরও নানা জাঠীয় কাঠের সন্ধান পাইব | এতদ্ভিন্ন রাসায়নিক 
ড্রব্যাদিও এ দেশে কম নহে। ভারতের বনেও ভারতের খনি 
শিল্পোন্নতির প্রধান সহায়। সম্প্রতি শুধু দিয়াশলাই-আবরক কাগজ 
এদেশে প্রন্তত করিতে পার! যায় না বলিয়া দেখা যাইতেছে । তবে 
আশ! কর! যায় যে তাহাও অতি শীস্রই এ দেশে প্রস্তুত হইতে আরস্ত 
হইবে। 

বর্তমান সময়ে ভারত যে ভাবে চলিয়াছে, তাহাতে "দরিদ্রের মনোরথ', 
হইলেও ক্ষীণ আশার যে সঞ্চার হয় না তাহা নছে। এখন পর্য্যন্ত ভারতে 
আটবটিটি কারখানার সন্ধান পাওয়া গিয়াছে, তন্মধ্যে-_ 


ন্িমআাম্পকাাই-এক্স কুথ। 





১৯৫১ 

ংলা-. ২৩ 
মাদ্রাজ-- ১৯ 
বোসম্বাই-_ ১১ 
ব্রহ্ম. ৫ 
বিহার-_ ৩ 
মধ্যপ্রদেশ__ 

যুস্তপ্রদেশ-_ ২, 
আসাম-- ১ 
পাঞ্জাব ১ 
কাশীর-_- ১ 
৬৮ 


এতসিন্ন বনৃস্থানে কুটারশিল্প-হিসাবেও দিয়শলাই প্রস্তত করিবার চেষ্ট। 
চলিতেছে। খাদি প্রতিষ্ঠান কোন যন্ত্রপাতির সাহায্য ব্যতিরেকে শুধু 
কাগজ ও বাশের কাঠি দিয়! যে দিয়াশলাই প্রস্তুত করিয়াছে তাহা! সুদৃশ্য 
ন| হইলেও অকেজো! নহে। অথচ এই জাতীয় কুটারশিল্পীকে সরকার 
সামান্য সাহায্য করিলেই হয়ত ইহার দেখাদেখি আরও দশটা কুটারশিল্প 
গড়িয়! উঠিতে পারে। 

নিখিল ভারতীয় পল্লী-শিল্প-প্রতিষ্ঠান বা 4১11-[15017 511188৩ 
[170051165 /85500190017 দিয়াশলাই শিল্প-সংক্রাস্ত গবেষণার ফল 
প্রকাশিত করিয়াছেন। তাহাতে দেখা যায় ষে বাশের শল|, তাল ও 
নারিকেলের কাঠি দ্বার! দিয়াশলাই-এর কাঠি প্রস্তুত 
লেখক- পাট কাঠির প্রস্তত দিয়াশলাই নিজে ব্যবহার করিয়া | 
উক্ত দিয়াশলাই-এর কাঠি বাজার-চলন দিয়াশলাই-এর কাঠির মত সুদৃষ্ঠ 
ও সরল ন! হইলেও কার্ধ্যকারিত| হিসাবে মন্দ নহে। অকেজো কাগজ 
দিয়! খাদিপ্রতিষ্ঠানের মত বাকা তৈয়ারী করাও সহজ এবং দেশেও 
অকেজো কাগজের কোন অভাব নই । ময়দার আঠা প্রস্তুত করিতে 
অবশ্ঠ পয়সা খরচ হয়, কিন্তু ভারতের ঘত্রতত্র এমন অনেক 
গাছ আছে যাহার রস হইতে খুব ভাল আঠা প্রস্তুত হয়। অন্ত সব দেশ 
হইলে হয়ত এই সব গাছের আঠাই 0া। 08018 কিংবা 0910 
£১11)18 নামে ফার্মেকো পিয়ার উবধের তালিকায় স্থান পাইত। 
কিন্তু এত সব সুযোগ-স্থবিধা থাকা দতেও দিয়াশলাই-শিল্প কুটার-শিল্প 
হিমাবে চলিতে পারে না। তাহার প্রধান কারণ এই যে, হাতের তৈয়ারী 
(দিয়াশলাই কার্যকারিত। হিসাবে কলের তৈরী দিয়াশলাই-এর সমকক্ধ 
হইলেও কলের তৈরী দিয়াশলাই-এর মত হ্দৃস্ঠ নহে এবং মজবুতও নছে। 
কাঠিগুলির সংখ্যা কম না হইলেও কাঠিগুলিও তেমন সমান ও হগ্র 
নহে। অথচ সরকারী লাইসেন্সস্ট্যাম্প, আবগারী শুষ্ক ইত্যাদি দিয়া 
হাতের তৈয়ারী দিয়াশলাই-এর দাম কলের তৈয়ারী দিয়াশলাই অপেক্ষ! 
পড়তায় কম পড়েনা । ফলে ক্ষীণজীবী কুটার শিল্প প্রতিযোগিতার 
র্াবর্তে পড়ির! গাক খাইতে থাকে । ক্রেতা-সাধারণ সমান দামে সুদৃষ্ 
মজবুত দিয়াশলাই পাইলে হাতের তৈয়ারী কুরূপ দিয়াশলাই নিতে 
চায় না। 


২ 


অন্থদিকে সরকারী ট্যাক ও মাশুলাদি দিয়া কুটীর-জাত দিয়াশলাইও 
সন্তা দরে বিক্রী করা যায় না। সমান দামে হুপ্রী অথচ সমান কাধ্যকমী 
জিনিষ পাইলে কেহই কুরগ জিনিষ লইতে চায় ন!। সৌনধ্য-গ্রীতি 
মানবমনের জন্ঈগত তৃষ্কা। দেশ-গ্রীতি ও হব্জাতি-গ্রীতি নিতান্ত তীর 
না হইলে এই চিরন্তনী বৃত্তিকে অপসারিত করা সহজসাধ্য নহে। 
এমন কি এই পর্যন্ত দেখা গিয়াছে যে,সৌনর্য্যের মোহে পড়িয়া অনেকেই 
সদ্‌বৃত্তি পর্য্যন্ত বিদর্জন দিয়াছেন । সেযাক, বর্তমান দিয়াশলাই শিল্পের 
কথাই ধর! যাউক। 

ভারতীয় কিদ্কাল কমিশনের সুপারিশ-ক্রমে ভারতীয় ব!ণিজ্য শুন, 
সমিতি বিদেশজাত প্রতি গ্রোস্‌ দিয়াশলাই-এর উপর দেড়টাক। রক্া শুন 
ধার্য করিয়াছিলেন। এই রক্ষা-শুন্বের ছত্রচ্ছায়াতে ব্ছ শুতন 
কারথানাও গড়িয়। উঠিয়াছিল । তাহাদের বিশ্বাস ছিল যে. হয়ত তাহারা 
রক্ষা-শুক্ষের দেওয়ালের অন্তরালে আত্ম-গোপন করিয়। কোন রকমে 
বৈদেশিক প্রতিযোগিতা হইতে আত্মরক্স! করিতে পারিবে এবং মঙ্গে 
সঙ্গে এই সব শিশু-শিল্পের হুখুমার দেহও তাজা এবং মজবুত 


ভ্ডাল্পভব্রখ 


[২৮শবর্ষ--২য খণ্ড--২র সংখ্যা 


খুলিয়া বসিল এবং জাপানও নঙ্গে সঙ্গে হুইডেনের দৃষ্টান্ত অনুকরণ 
করিল। 

রক্ষা-গুক্ের ছায়ার অন্তরালে থাকিয়া প্রথর প্রতিযোগিতার ছাত 
হইতে আত্ম-রক্ষা করিবার আশায় যে কয়টি শিশু-প্রতিষ্ঠান গড়িয়া 
উঠিয়াছিল, তাহাদের প্রায় সকলেই আন্তে আস্তে শিশু-লীলা সাঙ্গ 
করিল। অবগ্ঠ তাহার পর যে আর নূতন প্রতিষ্ঠান গড়িয়া ওঠে নাই 
তাহা নহে, কিন্তু ছোট খাট ক্ষীণজীবী শীর্ণকায় প্রতিষ্ঠানগুলি 
প্রতিযোগিতার ঝড়-ঝাপ্টায় পড়ি! ছিন্নপত্রের মত উড়িয়। গেল। 
তারপর কুটার-শিল্লের প্রশ্ন আসিয়া দেখা দিল। খাদিপ্রতিষ্ঠানের দৃষ্টান্ত 
সন্বুখে রাখিয়। কুটার-শিল্পকে রঙ্গ! করিব।র জন্ত অনেক ঝদামুবাদই গত 
ফেব্রুয়ারী (15.2.39) মানে কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভায় হইয়া গেল, কিন্তু 
ফল হইল উল্ট।। কুঈীর-শিল্পের রক্ষাকারী দল ভোটে হারিয়া গেলেন। 
তারপর যুদ্ধ বাধিল--এক পয়দার দিয়াশলাই দেড় পয়মা .এবং দেড় 
পয়সার দিয়াশলাই দুই পয়সায় বিক্রয় হইতে আরম্ভ হইয়াছে। হয়ত 
সরকারের গ্ঠেন দৃষ্টি না থাকিলে দর আরও বাড়িয়া যাইত, কিংবা 


হইয়। উঠিবে। কিন্তু সাবধানী হুইডেন ও জাপানের শনির দৃষ্টি যুদ্ধ আরও কিছুকাল চলিলে হয়ত এই অত্যাবশ্যক নিত্য- 
ইহাদের পশ্চাতে লাগিয়াই রহিল। ফলে রক্গা-শুক্ক হইতে বাঁচিবার প্রয়োজনীয় জিনিষটি: দর চড়াইতে হইবে ; কিন্তু প্রতিকারের 
প্রত্যাশায় হুইডেন আসিয়৷ ভারতে একাদিক্রমে ছয়-সাতটি কারখানা উপায় ফি? 
প্রশ্ন 
শ্রীগিরিজা প্রসন্ন গঙ্গোপাধ্যায় 
আজ সখি মনে হয় যেদিকে তাকাই আজিকে দাড়াতে চাই আমরা দুজনে 
এই স্যাম ধরণীর আদিকাল হ'তে যৌবনের মধুলগ্নে মুখোমুখি হয়ে, 
তুমি আর আমি ছাড়া কোথা কেহ নাই; নীরবে কহিতে চাই যাহা আছে মনে 
শুধু মোরা ভ্রমিতেছি সীমাহীন পথে। নিস্তব্ধ গ্রহরগুলি যবে যাবে বয়ে। 
কি কহিবে তুমি মখিঃ কি কহিব আমি? 
সে কথা জানেন গুধু মূক অন্তর্যামী ? 
বাহিরে হাসিবে চাদ ঝরে? যাবে ফুল, 
হৃদয়ের সরোবরে নাহি রবে কুল, 
থেমে ধাবে হাসি-গাঁন, মরে যাঁবে ভাষা 
মাঝে রবে জীবনের অনন্ত জিজ্ঞাস! ? 


২. ০ 


্ 5, 





১০২, 
1718১ 


জীপার্ন 
শ্রীধীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় 


সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে নরনারীর আদর্শেরও পরিবর্তন 
হুওযা স্বাভাবিক । আবার পুরুষের আঁশা-আকাজ্ষা যেমন 
গ্রসারিত হয়, নারীরও তেমনি সময়োঁচিত শিক্ষার প্রয়োজন 
হয়ে পড়ে। তা যেখানে না হয়, সেখানে স্ত্ী-পুরুষেব সম্বন্ধ 
বিষময় হ'য়ে ওঠে, তাঁদের একত্র বাস দুঃসহ হয়ে ওঠে। 
পুকষ যেখানে শিক্ষায়) জ্ঞানে, অভ্যাসে, অধ্যবসাযে তাব 


শিরা এর “চা এহন 
টি, ১০০ 
টা ও 
পু ঘ 
চা 
্ 
শি ৯ 
৯ চর রা ন 
চন বু 
রি চা 
শব এ ১১ 
শি পর 
১ ০ 
রা 1 


পুরাতন গণ্ডভী থেকে বেরিষে 
এসে জগৎকে বড় কবে 
দেখতে আরম্ভ করে, নারীরও 
সেথানে সমানতালে পা ফেলে 
চলতে হয। জাপানের স্ত্রী- 
পুরুষ ঠিক তেম্নিভাবেই 
চলেছে । আগেকার দিনের 
সীমাবদ্ধ জীবন আর তাদের 
তৃণ্চি দিতে পারে না। 
গেই সাব্যবসাষের 
ক্রমাবনতিই তার জলন্ত 
প্রমাণ । ) 

গে ই সাঅনে কটা 
আমাদের দেশের বাঈজীদের 
মতো। খোলাখুলি গণিকাঁবৃত্তি 
তাঁদের ব্যবসা নয়; সামাজিক 
বা পারিবারিক উৎসবে তারা 
নাচে-গানে আনন্দ বর্ধন 
করে। প্রাচ্যের প্রায় সর্বত্রই এই সম্প্রদায় বনু 
পুরাতন কাল থেকে চলে? আঁস্ছে। জাপানেরও “গেইসা? 
বিশ্ববিদিত । জাপানের যে-কোন অনুষ্ঠানে “গেইসা। 
অপরিহাধ্য । আমাদের দেশের বাঈজীদের কেহ কেহ যেমন 
বিবাহ ক'রে সংসারী হয়ে থাকে, এদেরও অনেকে তাই 
ক'রে থাকে। বর্তমানে “গেইস/ন্ব্যবসায় প্রায় অচল 


ভু 





কামাপুরার বৃদ্ধমুসঠি 


(৪) 


হয়ে এসেছে। কারণ যর্দিও হান্তে লাশ্তে তাঁরা ষনো- 
রঞ্জন করে, তাদের কথাবার্তায় না আছে মার্জিত কচির 
পরিচয, না আছে কোঁন গুরুত্ব; তাঁদের অনু গ্রাহকদের কাছে 
তাই তারা যেন হয়ে উঠেছে অসহা-_বিরক্তিকয়। 

শিক্ষার প্রতি অগ্নুরাগ যেমন বেড়ে চলেছে, ভালে! 
কলেজের ডিপ্লোমাও তেম্নি মেয়েদের বিয়ের পক্ষে অপরি- 
হা্ধ্য হয়ে উঠছে। চীনদেশে 
একটা প্রথ! আছে যে ক'নেকে 
স্বামীর বাড়ী যাওয়ার সময় 
কোন নামজাদা চিত্রকরের 
একখানা ছবি নিয়ে যেতে 
হয় জাপানেও তেম্‌নি 
ডিপ্লোমা! নিষে স্থামীগৃহে 
যাওয়াটা যেন ফ্যাদা ভগ 
দাড়িয়েছে। 

ফলে নারী-আন্দোলন 
ক্রমশ:ই বিস্তার লাভ করছে । 
যে সকল স্থানে এতদিন 
নারীর প্রবেশ নিষেধ ছিল, 
সেখানেও ক্রমশ তারা 
অধিকাঁর স্থাপন ক়্ছে। 
সমাজ-সেবা; সাহিত্য, চিত্র- 
শিল্প, সঙ্গীত, অভিনয় 
শিক্ষ কতা, সাংবাদিকতা, 
বিজ্ঞান গ্রভৃতি সমস্ত ক্ষেত্রেই এখন নারীদের দেখ তে পাওয়া 
যায় এবং সর্ধন্রই তারা বেশ দক্ষতার পরিচয় দিতেছে । অর্থ- 
নৈতিক চাপের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ফলস্বরূপ অধিকসংখ্যক 
নারী এখন বাইরে এসে কর্মের সন্ধানে প্রবৃত্ত হয়েছে। 
অফিসের টেবিলে দোকানের কাউণ্টারে, টাম-বাসের 
কন্ডাক্টাপ্স-রূপে+ হোটেলের পরিচারিকীন্ধপে এখন হাজার 


১৫৩ 


| কিউ . আাব্তহ্য ূ রা 
হাঁজার নারী দেখা যায়। বন্তত: এমন কোন প্রতিষ্ঠান এখন পাওয়া শক্ত_ যে খায় কম শোনে কম এবং কথা বলে তা'র 


কম দেখ! যায়, যেখানে নারীশ্রমিকের সংখ্যা যথেষ্ট নয়. : চেয়েও কম। 
এই পরিবর্তনের ফলে স্ত্রী-পুরুষের “সম্বন্ধের ভিতরও 
অনেক গোলমালের কৃষ্টি হয়েছে । আগেকার আমলে বিয়ের 
উদ্দেস্যই ছিল বংশরক্ষা । “ভারতের মতো--পুভ্রার্থে ক্রিয়তে 
ভার্্যা' ছিল জাপানীদের রীতি ও নীতি । পুত্র না হ'লে দতক 
নেওয়ার ব্যবস্থা ছিল। একমাত্র কন্ঠা সন্তান থাকলে তাকে 
বিয়ে দিয়ে শ্বগুরবাড়ী না পাঠিয়ে জামাইকে এনে সংসারে 
রাখা হ'ত ঘর-জামাই ক'রে । তাকে শ্বশুর-বংশের পদবী 
পর্য্যন্ত গ্রহণ কন্বুতে হত। জ্োষ্ঠ পুল্র-_ছেলের তরফেই 
হৌক, আর মেয়ের তরফেই হৌক-_সে-ই হবে সম্পত্তির 
অধিকাঁরী। কনিষ্টদের কোন অধিকারই নাই। জ্ঞোষ্ঠই 
সংসারের সর্বময় কর্তা। এর ফলে যত পারিবারিক 
ট্রাজেডির সৃষ্টি হয়। আধুনিক জাপান তা আর বরদাস্ত করতে 
রাজি নয়। 
বিবাহ-আইনেও অনেক অসামঞ্জন্তের সৃষ্টি হয়েছে । 
নবদম্পতিকে নির্দিষ্ট সরকারি আফিসে তাদের বিয়ের 
নোটিস দিতে হয়। গিজ্জা বা মন্দিরে বিবাহের অনুষ্ঠান 
নাগোয় রগ সম্পূর্ণ ক'রে বহু লোকজন নিমন্ত্রণ ক'রে খাইয়েও আইনের 
পুরুষের সন্দে অবাধ 
মেলামেশার সুযোগও তেম্নি 
তাদের বেণী এসেছে। 
প্রক্কৃতি তাঁদের হয়ে উঠছে 
চঞ্চল এবং ঘর-কম্নার 
ব্যাপারে কমে যাচ্ছে তাদের 
সহিষুতা। ঝাঁটা হন্তে 
ধূমাবতী সাজতে এখন তার! 
আর ততট৷ রাজি নয়; 
ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের অভাব 
তারা. এখন অন্থতব করতে 
শিখে ছে। তারা এখন 
ধুতে. হয়ে উঠেছে। 
ঝি না রাখলে এখন আরান্িয়ামার একটি মনোরম স্থান 
তাদের আর 'চলে না। ভালো ঝি পাওয়াও খুব চোখে তাঁদের বিবাহ সিদ্ধ হবে না, যতক্ষণ না! এই নোটিশ 
সহজ নয় খরচ যদিও ধুব বেশী নয় কিন্ত এমন ঝি পেশ করা হয়। এমন কি,বছরের পর বছর ঘদি তাঁরা একদঙ্গে 








মা-”১৩৪৭ 3 হাম্পাজ্দ 








বে স্প্যাম 


বাস ক'রে থাফে, তাদের ছেলেপিলে হ/য়ে থাকে, তবুও এই সংসার পেতে বম্বে। এই নূতন সংসার পিঙাদাতায় 
নোটিস্‌ না-দেওয়া হ'লে তার! শ্বাসী-্রী বলে গণ্য নয়। সংসারের সংস্কার, ভাবধারা রীতি ও নীতি--কোন কিছুরই 
তাদের সন্তানকে জারজ বলে রেজেস্ি করা হবে এবং মায়ের ধার ধারে না। তাঁরা নিজের ইচ্ছামিত জীবন যাপন কুরে। 
কাছে তারা থাকবে তার 
অভিভাবকত্বে। অপর পক্ষে 
নোটিস্‌ দেওয়া হলে এক- 
দিনের জন্ভ একসঙ্গে বাস 
না করলেও তারা স্বামীস্ত্রী ! 
গির্জা বা মন্দিবে মন্ত্রপড়াঁব 
কোনই মূল্য নাই; লোকজন 
খাঁওযানো শুধু ভূততোজন ! 
জাপানে বিবাহ-বিচ্ছেদ 
আছে, কিন্তু তার জন্ত কোন 
স্বতশ্ত্র আদালত নাই। সাঁধাবণ 
আদাঁলতেই বিবাহ-বিচ্ছেদেব 
যতকিছু ব্যাপাবঃ জারজ- 
সন্তানের পিতৃত্বের দাবী- 


সংক্রান্ত যতকিছু মামলা মন্দিরের ভিতরের কাককার্ধ্য 
বিচাব হয়। ফলে বহু স্ত্রীলোকই লজঙ্জাফ ও উত্তবাধিকার-স্থত্রে পিতামাতার কাছ থেকে একমাত্র স্থাবর 


কেলেস্কারির ভয়ে পারিবাবিক অবিচাব ও অত্যাচারে ও অস্থাবর সম্পত্তি ছাডা আর কিছুই তারা পায় না। পিতা- 
প্রতিবিধান কষ্‌্তে আদালতে 
যেতে সাহস পাষ না। তা 
ছাড়া, থরচও সেখানে কম 
নয। আদালত সর্বত্রই 
সমান--যেমন বাংলায়, 
তেম্নি জাপানে। 

প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য পারি- 





প্‌ 
০ 
এঞ 2 ০ 
শক, এন 


একটু তফাৎ আছে। 
পাশ্চাত্যে স্বামীন্ত্রীকে নিয়েই 
ংসার। পুজ-কন্তার তাঁর 
ভিতরে বিশেধ একটা স্থান 

নাই। সন্তানের প্রতি একটি ার্কের দৃ্ 

পিতাঁদাতার প্লেছ যতই প্রবল হৌক, বড় হ'লে তারা৷ মাতার সংদারের ধর্শগত বাঁ নীতিগত প্রভাব তাদের উপর 
পিতামাতার সংসার থেকে পৃথক্‌ হয়ে যাঁবে এবং নূতন পড়ে না। স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যুর 'লজেই লেখানে পরিবারের 





| ভান্শুন্ন্র [২৮শ ব্যয় খ$--২ সত্যা 
পপর পাকা পালা পা সাকা পাতা পা পাতা কাপ কা কারা সা 
শেষ) তায় কোন পারম্পর্য নাই:। নূতন পরিবার যা গড়ে যাঁর একটা বাজার দর আছে, বংশগত সংস্বার ও খ্যনি- 


ওভার সঙ্গে গুরাভন পরিবারের কোন দেনা-পাওনা নাই। ধারণাকে বজায় রাখাও তার সবচেয়ে বড় উদ্দেশ্য । একটা 
বংশের প্রতিষ্ঠা হ'লে, তাকে 


যেরপেই হোক বাচিয়ে 
রাখতে হবে; তাতে রক্তের 
সম্বন্ধ না থাকলেও ক্ষতি 
নাই। পুত্র না থাকলে দত্তক 
দিলা ত্র গ্রহণে বাধা নাই। হিঙ্ু 
রে উজ আট টা প্র গার্হ্য বিধানের মতো 
ী 0 | - ৮ পির রিবা জাপানেও রক্তকে তত বড় 
পি. ১৫ 455 রুশ মি র্‌ : স্থান দেওয়া হয়নি, 

ক দেওয়া হয়েছে বংশগত সংস্থার 

ও গ্রতিহাকে। 
কাজেই জাপানী সংসারে 
স্ত্রীকে একেবারেই পরিবারের 
নিককোর বিশ্ববিখ্যাত মন্দির চিরাচরিত ভাঁবধারার ভিতর 
প্রাচ্যের ব্যবস্থা অগ্ঠরূপ। বহু পরিজন নিয়ে এখানে 
পরিবু4। বয়োজোষ্ঠ সংসারের কর্তা) তিনি কর্তব্য 
কঠোর, নিষ্ঠায় দৃঢ় এবং বংশের প্রকৃতি ও সংস্কার অব্যাহত 
রাখতে তিনি অতি সতর্ক। জাপানীরাও পরিবারকে দীর্ঘ- 








». গিওন বা রথ.উৎসব ও সেকাল ও একাল 
দিন বাঁচিতে রাখা অতি আবক মনে করে। উত্তরা- ডুবে যেতে হয়। ,যতই সে পতিপরারণা হোক না 
কারের মানে লেখানে, কেব্লমাঅ সেই সম্পভিলাতি নয় কেন, সংসারের এই ভাবধারার লঙ্গে বটি সে ম্পর্ব 





রূপে মিশে যেতে না! পারে, তা হলে সংসারের 
একজন বলেই সে গণ্য হবে না। তার জগ্ঠ বিবাহ-বিচ্ছেদ 
পর্য্যন্ত হতে পারে। জাপানে বিবাহ-বিচ্ছেদের একটা মস্ত 
বড় কারণ--এই ভাবগত অসঙ্গতি। বংশরক্ষার জন্ঠ পুত্রের 
জন্মদানও স্ত্রীর প্রধান কর্তব্য । অন্যায় বিবাহ-বিচ্ছেদ হতে 
পারে। বর্তমানে অবশ্ঠ এ অপরাধে বিবাহ-বিচ্ছে খুব কমই 
হ'য়ে থাকে; কিন্তু পূর্ববকালে এটা খুব গুরুতর অপরাধ বলেই 
গণ্য হত। | 
একান্নবন্তিতা জাপানে ক্রমশ:ই অচল হয়ে উঠেছে। 
সহজলভ্য গ্রাসাচ্ছাদনের যুগে, ভূমিজাত আঁয়ের নবাবীর 
আমলে যে একা ন্ববর্ঠিতা ছিল অশেষ গুণের আঁকর, বর্তমানের 





চেরি ও ফুজিয়ানা 


কষ্টার্জিত অর্থের যুগে ত৷ হ'য়ে উঠেছে বিড়ম্বনার উৎস। 
একান্নবর্ধিতাকে জাপান তাই অর্থনীতির ভিত্তির উপর স্থাপন 
কয়েছে। তাই সে দেশে এক পরিবারের লোকদের ভিতর 
সম্পর্ক আছে, কিন্তু সম্পর্কের জুলুম নাই; সহানুভূতি আছে, 
কিন্তু সমন্থা নাই। 

' একাক্রবর্তিতা অচল হওয়ায় অক্ন-সমন্তাও প্রবল হয়ে 
উঠেছে। তার ফলে, আগে লোকে ঘে বয়সে বিবাহ কম, 
ক্রমেই তা পিছিয়ে যেতে লাগ্ল। চীন-জাপান যুদ্ধের সময় 
কোন পচিশ বছরের ছেলে অবিবাহিত থাকৃত না, কিন্তু রুশ- 
জাপান যুদ্ধের পরে ত্রিশের এদিকে বিয়ে করাঁর কথা কারও 





ঙ শি 
্ে মম রা ন্‌ ্ ঠা 
্ নন ৮ রা 
কল্পনাতেই আস্ত নাঁ। বিয়ের দরজা  এম্দি কয়ে, বন্ধ 
4 ্ী 1 


হওয়ার ফুলে বহ নারী পুরুষের কর্মরক্ষেত্রে__ চাকরির বার্জায়ে 
এসে হানা দিতে লাগ্ল। , অবস্থা আরও ভয়ানক হয়ে, 
উঠল। জীবনযাত্রার সমস্যা যতই ঘোরালো হয়ে পড়তে 
লাগ, পুরুষের বিয়ের বয়স ততই পিছিয়ে যেতে লাগল 
এবং অতি অল্পদিনেই “আদর্শ গৃহিণী ও সেবা-পরারণা 
জননীর” যে-একটা! ধারণা জাঁপাঁনী পারিবারিক জীবনের 
ভিত্তি ছিল, অজ্ঞাতে কখন যে তা বিলুপ্ত হয়ে গেল 
কারে! ত। নজরেও পড়ল না৷। 

আজ, পুরুষের সঙ্গে সমান অধিকার দাবী করা নারীর 
পক্ষে খুব সাধারণ ব্যাপার হয়ে দীড়িয়েছে। তাঁদের 


* ১২৮ মা * ৪ 
4 ঘ কলা) লও ৪:০%) 
১১৭ 05 তি চেল । 81১৯ 
৭ ধ্ টিটি ১। পি 
রি * 1 বদি সতত পা ১৮1. / 
॥ ) ++ ৯৬৬ ৭৮৭ ২৯৭ 
7185055৪৯58 ৰ 
ন্‌ ০ 





81:১৮:21 3458. 
৮৪৭ নত 
তত 


তসমে! আগ্নেয়গিরি 


আস্মান্ুভৃতি জেগে উঠেছে এবং পুরুষের চেয়ে যে কোন 
অংশে তার! ছে'ট নয়, পুরুষের মতে! তারাও যে শিক্প- 


বিজ্ঞানে সমান শিক্ষা-লাভের অধিকারী, জোর ক:রে তারা 
একথা আজ বল্তে আরম্ভ করেছে। “আদর্শ গৃহিণী ও 
সেবাপরায়ণা জননীর ইডিয়োলজি সামাজিক ও পারি- 
বারিক বস্ততত্রতার সাঁম্নে অতি নিদারুণভাবেই হার 
থেনেছে।। 2. দহ নি, "8 
পাশ্চাত্য পোষাক মেয়েদের ভিতর যখন প্রথম গ্রচলিত 
হল, অনেকের কাছেই সে ছিল একটা ভয়ানক হাঁসির 
ব্যাপার।. রাজপথে মেয়েরা বখন স্কার্ট পরে কৌমর ভেঙে 


মহা ভ্ডান্সভব্বম্ব [২৮শ বর্--২য় খর সংখ্যা 
বেঁটে মোটা পায়ে বিচিত্র রংয়ের মোজ! প'রে সার্কাসের প্রবাহের সঙ্গে দীর্ঘপথে যে-সব কাদা"মাটি মিশেছেঃ এ 
মেয়েদের মতো ঘুরে বেড়াত, তখন তাদের দেখে হাশ্ঠু ফল তারই! 

সংবরণ করা! অনেকের কাছেই কঠিন হয়ে পড়ত! কিন্তু . শুধু মেয়েদের কথা কেন, জাপানের সমস্ত কিছুই গত 
তাদের এ চেষ্টার ভিতর ছিল সত্যিকারের নিষ্ঠা। আজ কয়েক বংসর যাবৎ যেন আমেরিকার ছাঁচে ঢালা হচ্ছে। 
ৃ জাপানের বাড়ীঘর, দোকানের 
সাজানো জানালা) নিওন- 
আলোর বাহার, জাজ বাজনা, 
নাচঘর প্রভৃতি দেখলে মনে 
হয়, মান্হাট্ানের সমস্ত 
বিলাস উশ্বরধ্য যেন সাঁগর 
ডিটিয়ে জাপানে এসে 


. ১ উ * ক ৯, দি কি চা হাদির হয়েছে । আধুনিক 
এ রঃ রি 355 চু 8৫১4১ | | | , ২৪ ছা ও ৯. শহরের রাস্তায় গাড়ালে 
"| বোঝা দৃষ্ধর হয়ে পড়ে 

যেকোথায় আছি-- 


নিউ ইয়র্কের ফিফথ 
এভিনিউ, না লগুনের 
ওসাকার একটি রাস্ত। পিকাডেলি ৰ 


ধারা টোকিয়োর গিন্জা-রান্তায় সন্ধাকালে বব্‌-চুলে! 
ক্র-ত্ীকা ঠোট-রাঙানো মেয়েদের দলে দলে ঘুযৃতে 
দেখেন, তীরা ঠিক বুঝতে পারবেন না যে, তখনকার 
দিনের সে মেয়েদের কি কঠোর সংগ্রামই কমতে 
হয়েছিল। 

পাহাড়ের বুক চিরে জলের শ্োত যখন প্রথম প্রবাহিত 
হয়ঃ তখন থাঁকে তা কাচের মত স্বচ্ছ; কিন্ক াগর-সঙ্গমে 
পৌছিবার পথে চারিপাঁশের ময়লা-আবর্জনার সঙ্গে মিলিত 
হ'য়ে সে হারিয়ে ফেলে তার শ্বচ্ছতাকে। মাঁন্ষের জীবনও 
ঠিক এইরূপ। কিন্তু তার শেষ দিককার ঘোঁলা 
জল দেখে প্রথম দিকৃকার পবিভ্রতাকে অশ্বীকার করা 
চলে না। 

আজ জাপানের রাস্তায় রাস্তায় যে-সব স্ত্রীলোক চোখে ঃ 
পড়ে, তাদের দেখে? মনে হয় যে অতি অসহায়ভাবেই ছেলেদের পুতুল উৎসব 
তারা হলি-উডডের প্রভাবের কবলে পড়েছে। নবীনাদের. বিশ'বছর আগে, জাপানে পাশ্চাত্যভাবের প্রসার 
ভিতর আমেরিকা-আনা দিন দিন যেন বেড়েই চলেছে। তার হয়েছিল গবর্ণমেষ্টের নির্দেশে ও চিন্তাশীল মণীবীগণের 
কারণ এ নয় যে জল চিরকালই ঘোলা ছিল, শ্রোত- প্রচেষ্টীয়। কিন্তু এই আমেরিকাআনার প্রচার কমতে 








মীধ--১৩৪৭1] . জশ্ীভ, শ্রপ্ীমান্ন ও ভত্তিন্ত, ৯১৫০২ 


কারও চেষ্টার দরকার হয়নি, কারও নির্দেশের সে অপেক্ষা : জাপান কি ভাঁবে চর্জণ করে হজম ক'রে এবং 
রাঁধেনি। এ যেন আপনা-মাঁপনি হয়ে চলেছে। জাতীয় স্বাস্থ্যের অনুকূল ক'রে তোলে) অথবা তার 





জ৭:১::311 8 

পা ৮ টিন 

শি তাল 0 নু 

4 চা 

॥ চিল রং ১: । 

এ. 5 

নি) 
$ 


রা হত 


রি 
পা 


এ সি. 





টোকিও রাজপ্রাসাদের প্রবেশ পথ 


এতিহাসিকের দৃষ্টিতে জাপানের পক্ষে এ একটা খুব কাছে নিজের সভভাঁকে বিসর্জন দেয়, এইট।ই 
বড় রকমের পরীক্ষা। এই আমেরিকার সভাতাঁকে কয়্বার বিষয়। 


অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ 
শ্রীদেবনারায়ণ গুপ্ত 


গরবিণী তোর গরব ঘুচিয়া গেল সকলের কাছে অপরাধী সম কত, 

সিথির সি'ছুর পায়ের আল্তা৷ সাথে ঝরিছে কেবল দুইটি নয়নে লোর ! 
শঙ্কা পরাণে শোন্‌-_গাহে হরিবোল চক্ষের জল সার হ'ল আজ হতে, 

আঁকাঁশ ভাডিয়৷ পড়িয়াছে তোর মাথে! বক্ষের মাঝে শঙ্কা ও স্মৃতি নিয়া 
দুঃখের ভাত নখে তুল্ছিলি মুখে এমনি করিয়া কাঁটাইবি কত কাল, 

মোটা লালপাড় শাড়ীতে বাহার কত; সেবিকার সম সকলেরে সেবা! দিয়! ! 
আজি ধব্ধবে সাদা থানে ঢাকা দেহ ভবিষ্তের ভাবনা! ঘুচিয়া গেছে__ 

শব যাত্রার ঠিক শবটিরই মত ! বর্তমানেতে চক্ষের জল সার__ 
এয়োতির নোয়া-চুড়ির সাথে না বাজে, | অতীতের শুধু উজ্জল স্মাতিটুকু 


মর্মে হেনেছে কঠিন বজ্র তোর-_ তোলে কম্পন হৃদয়েতে অনিবার ! 


মাংসর মনত 
্রীশটীন্রলাল রায় এম-এ 


আপনারা ডাক্তার নিখিলেশ চ্যাটাঙ্জির নাঁম নিশ্যাই 
স্রনিয়াছেন। কগিকাতার নামকরা ডাক্তার-_এন্‌, চ্যাটাজ্জি 
এম-এ।. এম-বি-মন্তত্ববিদ এবং হৃদ্রোগবিশারদ-_ 
বিডন্‌ রটে চারিতলা বাড়ীর সম্মুখের গেটে পিতলের 
ফলকে তাহার নাম ও টাইটেল নিশ্চয়ই আপনার চোখে 
পড়িয়াছে। আর ঘদি আপনার মাথার কোনও ছিট্‌ 
থাকে অথব! বুকের কোনও অন্খ হইয়াছে বলিয়া আপনার 
ধারণ! হইয়া থাকে-_তাহ! হইলে তাহাকে চাক্ষুষ দেখিবার 
ভাগ্য তো আপনার হইবারই কথা। 

আপনারা জানেন কি-না জানি না আমিও একজন 
এম-বি ডাক্তার- সম্প্রতি ভি-পি-এইচ টাইটেলটি 
নামের পিছনে লাগাইবার সৌভাগ্যও আমার হইয়াছে । 
তবুও আমার সঙ্গে ডাক্তার চ্যাটাজ্জির তফাঁং অনেক। 
কারণ আমার বয় তিরিশ, আর ডাক্তার চ্যাটাজ্জর বয়স 
পঞ্চাশের কাছাকাছি । তিনি ডাক্তারি করিয়া চারতল৷ 
বাড়ী তুলিয়াছেন, কাজের চাঁপে স্নানাহারের ফুরস্ৎ পান না 
কস্ট আমি আমার পৈত্রিক বাড়ীর দরজার সম্ুধ 
নামের ট্যাবলেট বসাইয়! দিবারাত্রি পাশবালিশ আঁকড়াইয়া 
পড়িয়া থাকিতে পারি-িবানিদ্রা অথবা রাত্রির বিলাস 
নষ্ট করিবার মত সাহস কাহারও হয় না। 

কিছুদিন হইল আমার সঙ্গে ডাক্তার চ্যাটাঙ্জির একটু 
বন্ধুতের মত ভাঁব হইয়াছে । অথচ মেডিক্যাল কলেজে 
পড়িবার সময় তাহার আমি ছাত্র ছিলাম। কলেজ 
ছাঁড়িবার পর তাঁহার অবশ্য বিশেষ খোজ খবর রাখি নাই-_ 
বছর খানেক আগে তাঁর সঙ্গে আমার এক বন্ধুর বাঁড়ীতে 
দ্েখা। বন্ধুটি বিবাহের পর প্যাল্পিটেশন্‌ অব্‌ দি হার্টে 
ভূগিতেছেন। তাহাকে পরামর্শ দিয়াছিলাম-ডাঁক্তার 
চ্যাটাঙ্জিকে কল্‌ দিতে । কারণ বিবাহের পর--বুকের অসুখ 
- সোজা কথ! নয়। একাধারে হৃদরোগ বিশারদ ও মনত্তত্ববিদ 
ডাক্তারের প্রয়োজন -_নহিলে আমি কিদোষ করিয়াছিলাম। 

ডাক্তার চ্যাটাঙ্জি আমাকে দেখিয়। কহিলেন-_কি হে, 
রাঙ্থু নাকি? এম-বি পাশ করে ফ্যা ফ্যা করছিস্‌ 


তো-_ন! প্র্যাকটিস কিছু জমেছে? 


_ _কই আর জমে স্তর । আপনারা যদ্দিন আছেন--জীম- 
দের-_আঁর মাথ! তোলবাঁর জো কি? ভগবান যদি দিন দোঁম__ 

মাথা নাড়িয়। ডা: চ্যাটাঙ্জি বলিলেন__-সে বুঝতে 
পেরেছি রাজু। কিন্তু যে আশা ক'রে রেখেছিস্‌্-_তার 
পূরণ হতে এখনও অনেক দেরী । আরও বছর তিরিশেক 
অপেক্ষা করতে পারিস্‌ তো তখন চেষ্টা দেখিস্‌। তোর 
বন্ধুর অন্ুখে যখন আমার ডাক পড়েছে-_তখনই বুঝেছি 
তোর কেমন জমজমাট পসার। ... তারপর আমার বন্ধুর 
দিকে তাকা ইয়া কহিলেন তোমার বুকের অন্ুখ? বুক 
তো বেশ চওড়াই দেখছি বাপু-_-অহ্নুখটা আবার কোথায় 
হলো! ."' তাঁরপর তাহার বুকের উপর সজোরে কয়েকটি 
টোকা! মারিয়া কহিলেন_-ই", বুঝেছি । অল্পদিন বিয়ে 
করেছ না তুমি? ছোট টেবিশটার ওপর ফটোথানি 
_-বউমাঁর না? এখন বাপের বাড়ী বুঝি? ছয়মাস 
কাছ ছাড়া? বাঁপস্‌্! যাক, ওঘুধ একটা দিচ্ছি__এঁটে 
নিয়ে একবার সোজা শ্বস্তর বাড়ী চলে যাও-_-বউমাকে 
নিয়ে এস। ছয়মাস কাছছাঁড়াবাপু-_বুকের আর অপরাধ 
কি! তিনি একটু মুচকি হাঁসিলেন। তারপর বত্রিশটি টাকা 
পকেটে পৃরিয়া কহিলেন-_রাছু, আমার ওখানে যাঁস্‌ মাঝে 
মাঝে। পসার কি করে হয় দেখতে পাঁবি। 

মনে মনে অত্যন্ত উংফুল্ল হইয়া ডাক্তার চ্যাটারঙ্জির বা়ী 
যাওয়া-মাসা সুরু করিল।ম। কিন্তু মুবিধা হয় না কিছুই-_ 
কেবল ডাক্তার চ্যাটাঙ্জির কাছে অনেক রসাল গল্প গুনি, 
আর মাঁঝে মাঝে মুখরে|চক খা খাই । 

সেদিন মনে মনে ঠিক করিয়া গেলাঁম__নিশ্চয় আঙ্ 
মনের কথা খুলিয়া বলিব। শুধু আড্ডা দিয়া আর সখা 
থাইয়া আর লাঁভ কি! তাহার য্যাসিষ্টা্ট করিয়া যদি 
মাঝে মাঝে কলে লইয়। যান-__তবুও কিছু প্রার্থিযোগ ঘটে । 

ঘরে ঢুকিয়াই দেখি ডাক্তরি চ্যাটাঞঙ্জি গুড়গুড়ি 
টানিতেছেন। আমাকে দেথিয়াই তিনি সোজা হইয়া 
বসিলেন এবং সহাস্তে কহিলেন_রাঁজু, এসেছিস্‌ ভালই 
হয়েছে। মাংস-পরেটা খাবি নাকি? 

_মাংস পরেটাখাঁব ন|--বলেন কি শ্যপ্ন। নিশ্চয় থাব। 


১৬৩ 


ন।খ--১০৪ শ এ 





ধে কাছের কথা বলিব ভাবিয়া আসিয়াছিলাম-_তাহা 
বিস্বত হইলাম। মাংস সংযোগে পরেটা গলাধঃকরণ 
করিতে করিতে মনে হইল-যেন অমৃত। সোৌল্লাসে 
€লিয়া উঠিলাম-চমতকার! আজকের রান্নাটা কে 
'রেছে স্যর? 

ডাক্তার চ্যাটাঁজ্জি হু'কার নল ছাড়িয়া ছুই ভাত নাঁড়িয়! 
বলিয়া উঠিলেন- আরে খেয়ে যা, খেয়ে যাঁবদি ভাল 
লাগে আর কিছু আগক। কিন্ক আহান্মক, কে রাহ 
করেছে ওকথা আর জিজ্ঞেস করিস না। আর 'আমি 
তো মাংস খাওয়া ছেড়েছি জানিস্নে বুঝি? থে 
রান্না করে করুক-সে ধোঁছে আগর আর দরকার 
বাকি! 

অবাঁক ভইলাম। ডাক্তার চাাটাঙ্জির মাংমে কোনও দিন 
অরুচি ছিল না ইহ! জ|শি-হঠাৎ্খ এমন রুচি পরিণর্ভনের 
কারণ কি? 

_-অবাঁক হচ্ছিদ্‌ রা? মাংস আমার প্রিয় খা, কিন্ত 
প্রিয় হলেই ঘে তাঁর জন্ত ঝকি সামলাতে হবে-তার কোনও 
মানে আছে? হ|স্ছিস ঘে? ছেলেমানষ এখনও তুই 
রাজু বুঝবি কি? তবে শোন্‌। সেদিন খেতে বসেছি 
গিনি ক|ছে বসে খাওয়াচ্ছেন । সংসারের নানা তালে 
ঘোরেন--আমার কাছে বমে খাওয়ার তন্বাবধান করার 
তাঁর ফুরম্থৎ কোথায় ধল্‌। বোধ করি সেদিন একটু 
ফরম্থুৎ পেয়েছিলেন । ব্ললেন_-নলি মালটা খাচ্ছ কেমন? 
মনে করলাম-_নিশ্চম় গিনির হাতের রানা । বাটি শুদ্ধ 
মুখের কাছে ধরে সুপে এক লঙ্গা টুক দিয়ে বললাম 
আহী যেন অনৃত। তুমি রানা করেছ বুঝি? সুন্দর হবেনা! 
গিনি বললেন_ পেড় সংসারের 'জলায় কি তোমার খ।ওমার 
দিকে নজর দেওয়ার সমন আছে। নইলে নিত্যি তোমাকে 
মাংস রেধে দিতে পারনে! তুমি যে কত মাংস ভালবাস 
_-আমার চেয়ে আর অন্যের ত| জানবার জোকি! না নাঃ 
একটুও রাখতে পারবে না__আমাঁর মাথা খাও । গিশ্সিকে 
পরিতুষ্ট করতে বাঁটিটা একদম সাফ ক'রে ফেলণাম। গৌরবে 
গি্নির মুখ উজ্জল হয়ে উঠলো । 

আমি হাসিতে লাগিলাম । 

ডাক্তার চ্যাটাজ্জি ধমক দিয়া বলিলেন_তুই শুধু 
হা হাঁ করে হাসতেই শিখেছিন্_অত হাসলে প্র্যাক্টিস্‌ 

২১ 


মহসেন্ল সনভ্ডজ্ 


সিটি ০ 





করবি কি ক'রে রে রাজু! তারপর শোন্। খাওয়া-দাওয়া 
শেষ ক'রে পান চিবোতে চিবোতে ওপরে যাচ্ছি-_-সিঁড়িতে 
ছেঁটি ভাইয়ের সঙ্গে দেখা । অত্যন্ত ব্যস্তসমন্ত ভাব। 
মোহনবাগানের খেলা ছিল কি-না। আমাকে দেখেই সে 
বলে উঠলো--এতক্ষণে খেয়ে এলে বুঝি? না, তোমার 
জালায় আর পারা গেল ন! দাঁদা__নিত্যি অবেলায় খাওয়া । 
তা! মাংদট! আঙ্গ কেমন থেলে? অবাক হয়ে ভাইয়ের মুখের 
দিকে তাঁকালুম | হঠ।ৎ এ প্রশ্ন! বললাম-বেশ | ভাইয়ের 
মুখ উচ্দল হয়ে উঠলো । বলল-_সতাই ভাল হয় নি দাদা? 
তাঁমাদের ছোঁটবৌমা আজ রে'ধেছেন কি-না! সত্যি ওর 
মাংস রানাটা মানার কাছে উপাদেয় লাগে । অবিশ্ঠি অন্ত 
রানাঁও মন্দ নঘ-_কিন্ত ওর মাপের মধোই একটা বিশেষত্ব 
আছে। ভাবনুঘ--ভ|ইটি আমার নতুন বিয়ে করেছে। 
মাসের মধ্যে তো বিশেষত্ব থাঁকবাঁরই কথা। ভাইয়ের 
তখনও বলা শেষ ভঘ নাই। ... দাদা, তোমার রোগীদের 
জালায় আর পারা ধাঁ না। নিত্যি যে অবেলায় খাওয়া 
তোঁমার। একসঙ্গে গাওয়ার একটা ইউটিলিটি আঁছে 
জান তো? বল্‌ দেখি রাজু, এমন ভাই ক'জনের 
আছে? 
আমার হাশ্তসম্বরণ করা আবার কঠিন হইয়া উঠিল। 
ডাক্তার ঢ্যাটাজ্জি পুনরায় স্ুক্ু করিলেন__ একটু গড়িয়ে 
নেব ভাঁবছি_-এমন মমন বোন এসে হাজির । এক গাল 
হেসে বললে_শুতে যাচ্ছ বুঝি ? মাংসটা আজ কেমন খেলে? 
'- মুখ দিয়ে বেরিযে গেল--চমংকার! একটু সলজ্জ হাঁসি 
হেসে যেন বললে -মাংসটা আজ আমিই রে'ধেছি দাঁদা। 
কেমন জব্দ এখন বল দেখি । আগে যে বলতে--অকন্মার 
ধাড়ি_কোঁনও কাজের আমি নয়-_-আঁর এখন? যাঁই না 
কেন বল দাঁদা, তোগাদের জামাইবাবুটির রান্না কিন্তু আরও 
সরেস--তবে তিনি তেল ঘি একটু বেশী ঢালেন। আমাকে 
ফতুর করবার ফিকির আর কি! আমি ওর কাছেই রান্না 
শিখেছি কি-না । এমনি বদ অভ্যেস গুর দাঁদা-বিকেল 
বেলা অফিস থেকে ফিরে মাংস আর লুচি চাই-ই। ন! 
দেখলেই মুখটা এতখানি। সাঁধে কি আর ভাল ক'রে রান্না 
শিখতে হয়। তাই ভাবলাম একবার তোমাকে অবাক করে 
দিই। আমার সত্যিই "ভাল লেগেছে" দাদা ?.. অবাক 
আমি সত্যিই হয়েছি-_অম্বীকাঁর করবাঁর জো৷ কি! বোনটির 


৬, 


আমার তিন বছর বিয়ে হয়েছে, প্রেম এখনও জমজমটি 


দেখতে পাচ্ছি। .*" যাক সেই দিনই মনস্থির ক+রে ফেললাম ।, 


রাত্রে স্ত্রীকে বললাম-_দেখ, মাঁংসটা খেয়ে পেটটা ষেন কেমন 
করছে । ভাবছি-_মাঁংস খাওয়াটা ছেড়েই দেব। আর 
ডাক্তারি শাস্ত্রে বলে- চল্লিশের ওপর ওটা না৷ থাওয়াই ভাল, 


ভ্ডাব্রভন্বশ্ 


[২৮শ বর্ব--২য় খণ্ড --ংয় সংখ্যা 


ব্লাড প্রেসারের ভয়টাই বেণী__দরাদ্দর কেমন লোকগুলো 
মরছে দেখছে! না। সাধবী স্ত্রী--আর আপত্তি করতে 
পারলেন না। সেই থেকে মাংস থাওয়৷ ছেড়েছি। তা 
তৌর ভয় নেই রাজু, মাংস এখনও মাঝে মাঝে হচ্ছে_ 
তোঁর ভাগ তুই ঠিক পাবি ।__ 


আমার তো পঞ্চাশ ঘেসে এসেছে । মাংসে লিভারের আশ্বস্ত হইলাম। পসাঁর না জমুকঃ মাঝে মাঝে মাংস 
দোষ হয়, ব্রা প্রেসার বাঁড়ে, কলিক পেন্ও হতে পারে। জুটিবে তো। 

অজয়ের চর 

শ্রীকুমুদরগ্ান মল্লিক 


আমি বসে দেখি অজয় নদের চর, 
নব নব রূপ ধরে সে নিরন্তর | 
দূরে বহে স্োত রজত রেখার মত 
শত জলচর কলরব করে কত, 
কাশ বনে তার যত চাতকের ঘর । 


সোনালী উষাঁয় প্রাতে তারে দিনমণি, 

করে “কোলারের” খাঁটি স্বর্ণের খনি । 
ক্ষণেক পরেই শুত্র রবির তেজে__ 
“গোলকুণ্ডারঃ হীরক আকর সে যে-- 

জগৎশেঠের বাঁদশাহী বন্দর | 


৩ 
বৈকালে তাঁর বুক দিয়া সারি সারি 
কুস্ত লইয়া আসে যায় নরনারী। 
তখন এ বেল। অপূর্ন মনোলোভা, 
ধরে এক নব কুম্তমেলার শোভা 
আলো! ও ছাঁয়ার হরিহর-ছত্তর | 
৪ 
যত দেখি তত তাতল ও সৈকত 
মোর কাছে রাঁজে ভূতলে গগনবৎ। 
পাই ও আকাশে হক্‌ না নেহাঁৎ নীচু, 
তাঁরা নয়, বটে মন-মালো-করা কিছু 
করে পবিত্র প্রদন্ন অন্তর । 


৫ 
ভূর্ধপর সম ওরে কহু দেখি 
অচেনা! আখরে কে গেছে কাব্য লেখি । 
হেরি কৌতুকে; উল্লাঙে বারবার 
হক এুলামেলে। তবুও চমৎকার 
খেয়ালী কবির ছড়ানো ও দপ্তর । 


৬ 
প্লাবন পুলক ওই সে চরের মাঝে 
জল-তরঙ্গ স্বরলিপি আকিরাছে। 
আঁমি আনমনে সে হর বাজাতে চাই, 
বুঝিয়া বুঝিনেঃ থেই খুঁজে নাহি পাই, 
খিল দেয় অকথিত উত্তর । 


অপরূপ হয় ঘে দাঁঘী পুণিমায় 
ধূলায় গঠিত দেহ তাঁর ঝরে যাঁয়। 
ভালে, শশী তার, পুণ্য শুভ্র দেহ 
ভুল করিবে না যদি শিব ভাঁবে কেহ__ 
মুক্ত আত্ম! অনিন্দ্য স্থন্দর । 
ঢা 


অজয়ের চর ভুলাঁয় আমার মন 
দর্শনীয়ের পাই সেথা দরশন | 
তীর্থের ফল সেই দেয় মোরে আনি, 
আমি ত তারেই কন্ঠ। কুমারী জানি। 
সেই মোর সেতুবন্ধ রামেশ্বর | 


বুদ্ধদেব ও ওমর-খৈয়াম 
শরীস্বোধ রায় 


্বগীয় বন্ধুবর রবীঞ্জনাথ মৈত্র তার “মানময়ী গার্মদ্‌ স্কুল'-এ মেয়েদের মুখে 
রদ্ধনশিক্ষার যে গান দিয়েছেন তাতে তিনি লিখেছেন £-_ 
“চিতল মাছে মেথির গুড়ো, ইলিশ মাছে আদা 
তুমি দিও ম1- দিও না।” 

বুদ্ধদেবের মতামতের সঙ্গে ওমর খৈয়ামের মত|মত আলোচন। 
উত্তরূপ নিষেধের গণ্তীর মধ্যে পড়ে, এ সঙ্দেহ অনেকের মনে উদ্নয় হওয়ায় 
আমার প্রাবন্ধিচ হুপ-কারিত্বের রুচি সন্ধে তার! হয়তো! মাসিক কুফ্ধিত 
করবেন; কারণ জন-সাধারণের মতে একজন ছিলেন বানন|জয়ী ত্য।গী 
গন্নযাসী, আর অন্জন বাসনাময় ভোগী কবি। অতএব এই ছুটো মত 
একপঙ্গে আলোচন! করলে হয়তো স্গশদোব ঘটতে পারে। 

কিন্তু এইপানেই হয়েছে গোড়ায় গলদ । ণোয়াজা ওমরু-ইবন 
ইবরাহিম অর্থাৎ ওমর খৈয়াম যে কবি ছিলেন একথা তিনি নিজেই 
জানতেন না এবং তার দেশবানীরাও কেউ মানতেন না। ভার দেশবসীর! 
অর্থাৎ ইর।ণবার্সীরা তাঁকে উচ্চেণীর দার্শনিক, অস্কশন্ত্রবিৎ, গণিত ও 
ফলিত জ্যোতিষী, সাহিত্যিক ও চিকিৎসক বলে জানত। অর্থাৎ, 
কাব্জগৎ বাদ দিয়ে তাকে বিজ্ঞান ও দর্শন-জগতের একজন শেঠ পণ্ডিত 
বলে মর্যাদা! দিত | তা হ'লে এই ফবাঙঈগুলি কি? এগুলি হচ্ছে, দর্শম 
সম্বন্ধে তার মত এবং তার সমসাময়িকদের প্রতি নীতি-উপদেশ। কিন্তু 
এগুপি গগ্যে না| লিখে তিনি পঞ্ঠে লিখলেন কেন? এই প্রশ্নের উত্তর 
পেতে হলে ইরাণের জাতীয় আদশ, উৎকধ ও চিরগ্রচলিত ভাবধ।রার 
কথ! বিবেচনা করতে হবে। 

ইরাণ একটা অপূর্ব কাব্যময় দেশ। মেদেশে সকলেই প্রাথমিক 
শিক্ষ! শেষ করেই নিজের একটা “তখলুম”--1)61) 121--বেছে নেন 
এবং কাব্যরচন| অভ্যান করেন। এমন কি, সেখানে অশির্ষিতদের 
মধ্যেও নত্যিকার কবির অভাব নেই। জেনারেল শ্যর জন্‌ ম্যাকম 
মামে এক জঙ্গী সাহেব ১৮** থেকে ১৮১০ থ্‌ঃ পর্যন্ত ইরাণে ছিলেন 
ভারতের ঈষ্ট ইগ্ডয়! কোম্পানীর দূত হিসাবে। তিনি নিজে 
থুব ভাল পার্ী জানতেন। তিনি লিখেছেন :--“ইরাণ পুস্পময়, কাব্যময়, 
কাবতার দেশ; ইরাণের কুলিমজুর ভিখারীরাও ভাল ভাল কবিদের 
বাছ। বাছা কবিত! অনর্গল আবৃত্তি করতে পারে। শিক্ষিত সম্প্রদায়ের 
সঙ্গে কথা বল্তে গেলে, পদে গদে কবির উক্তি, ওদেশের প্রচলিত কাহিনী 
থেকে উল্লেখ শুন্তে হয়। ও-দেশের কাব্যে ও সাহিত্যে, বিশেষ ক'রে 
লোক-মাহিত্যে, তাল জ্ঞান না থাকলে ভদ্র ও শিন্দত সম্প্রদ।য়ের সঙ্গে 
কথা কওয়া বিড়ম্বনা । ইরাণের শিক্ষিত সম্প্রদায় কে যে কবি নম, তা 
খুজে পাওয়! কষ্টকর ।” 

এ হেন দেশে জন্মে এবং দ্নেশের তদানীন্তন বিদ্বৎংসমাজের মধ্যমণি 


হ'য়ে ওমর যে নিজের দাঁশনিক মতামত প্রচারে রুবাঈ ব্যবহার করবেন, 
তাতে বিম্ময়ের কি আছে? এরকম উক্তি যে আমাদের সকপোলকল্লিত 
নয়, তার প্রমাণম্বরাপ সংক্ষেপে ওমর সম্বন্ধে যেটুকু এরতিহাসিক তথ্য 
পাওয়৷ গেছে তার আলোচন! কর! যেতে পারে। 

ইরাণের উত্তয়-পূর্বব অঞ্চলে খোরাপান্‌ প্রদেশ। নেশাপুর এ 
খোরানানেরই একটা বড় প্রাচীন নগর । এই নেশাপুর ছিল সে যুগের 
বিখ্যাত শিক্ষাকেন্দ্র- আমাদের আগেকার নবদ্বীপ বা! ভট্টপল্লীর মত। 
দূর দূরান্তর থেকে ছাত্রের! আসত এই নেশাপুরে শিক্ষালাভ করতে । 
কারণ এখানকার টোলের প্রদত্ত উপাধি পারস্তের নকল প্রদেশে তখন 
বিশেষ সম্মানিত ছিল। একাদশ খৃষ্টানদের শেষভাগে এই নেশাপুরে 
সাহিত্য ও ধর্মমাচার্ধয মহামহোপ।ধ্যায় ইমাম মওফিকের টোল অত্যন্ত 
প্রসিদ্ধিল।ভ করে। এই টোল থেকেই ওমর খৈয়াম “হকীম” 
(1)9010: 01 1১001105011) ) উপাধি লাভ করেন। তার আর যে 
দুজন অভিন্নহৃদয় বন্ধু তার সঙ্গে “হকীম” উপাধিতে ভূষিত হন, তার্দের 
নাম-মবু অলী অল হাসান ও হাসান বিন সাব্বাহ,। এই “ভিন বন্ধুর” 
সৃবিগ্যাত কাহিনী বর্তমানে অপ্রাসঙ্গিক হবে ব'লে সধিস্তারে বললাম ন|। 
তবে অবু অলীর প্রসঙ্গ ভবিষ্বতে আবার দেখ! দেবে ঝ'লে এখানে তীর 
নাম উল্লেখ ক'রে রাখলাম। 

বৈজ্ঞানিক এবং গণিত ও ফলিত জ্যোতিষীরাপে ওমর খৈয়ামের প্রধান 
কাজ পঞ্জিকা সংস্কার । ১ ৭২ থৃষ্টাবে জালাল উদ্দীন মালিক শাহ্‌ 
রাজ্যলাভ করেন। সেকালে ইরাণের পঞ্জিকাতে ভুল দেখ! যাচ্ছিল 
বলে' তিনি পঞ্জিক-নংস্কারের ব্যবস্থা করেন এবং বহু অর্থব্যয় ক'রে 
একটা ম|নমন্দির স্থাপন করেন। এই মানমন্দিরে তিনজন জ্যোতিষী 
নিধুক্ত হয়েছিলেন--ওমর খৈয়।ম ছিলেন তাদের মধ্যে প্রধান। ১০৭৪ 
ধুঃ থেকে ওমর এই গণনার ঝাঞ্জ আরম্ভ ক'রে শেষ করেন ১*৭৯ 
থৃটাবে। ১*৭৯ ধৃষ্টাব্বের ১*ই মাচ্চ মহাবিবুব সংক্রাস্তির দিনে প্র 
জলালী সন্বৎ প্রচলিত কর! হয়। 

মনীষী ওমর দেহরক্ষা করেন ১১২৩ খুষ্টাবে। ১১৫৬ খুষ্টাবে 
অর্থাৎ তার মৃত্যুর তেত্রিশ বৎসর পরে খৈয়ামের ছাত্র নিজামী উরাসী 
“চহার মকালা” [চারি পর্বব ] নামে এক পুন্তক রচনা করেন। গ্রস্থকর্তী 
নিজামী উরামী খৈয়ামের কাছে দর্শন শিক্ষা করেছিলেন। তিনি ও 
&ৈয়াম এক নগরবাসী, খৈয়ামকে বাল্যাবন্থ! থেকে তাল ক'রেই জানতেন 
এবং গুরু বলে সম্মান করতেন। 

খৈয়াম সন্থদ্ধে তিনি য| লিখেছেন, সবই নিজের অতিজতা! থেকে ; 
শোনা কথ। তিনি লেখেন নি। উত্ত পুস্তকের তৃতীয় পর্বের তিনি খৈয়ামকে 
একজন সমসাময়িক শ্রেষ্ট ফলিত-জ্যোতিযীন্কপে বর্ণনা করেছুদ। পরবস্তা 


৯৬৩ 


১৯৬ 


গ্রন্থ (১১৯৯ খৃঃ) শম্স্‌ উদ্দীন জোরীর অল-মুকুতদামীন ও অল- 
মুতাক্ষ্নীন (প্রাচীন ও পরবস্তীক।লের ঘর্শনিক পণ্ডিতদের ইতিহাস) ১ 
এতে গ্রন্থকার খৈয়ামকে উচ্চ শ্রেণীর দাশনিক বলে বর্ণনা করেছেন 
অতঃপর ১২২৩ ধৃষ্টাবে সুফী গ্রন্থকার শেখ নজম.উদ্দীন অবুবকর রাজী 
আপন গ্রন্থ “নসাদ-উল-আবা?”-এ খৈয়ামকে নিরীস্বর, অজেেয়বাদী ও 
জড়বাদী ব'লে নিন্দা করেছেন £-- 


“বিশ্বতুবনধানির কোলে কোথেকে বা কোন্‌ কারণে 

কিছুই নাহি বুঝ.তে পারি, আসছি ভেনে স্রোতের টানে ) 

শুহ্ত করি' এ-কোল আবার, দম্কা-হাওয়ার ঘৃর্মিবেগে 

বেরিয়ে যাৰ কোথায়, কেন? পাইনে যে তার কোনই মানে।” 


উপরোক্ত রুবাঈ উদ্ধৃত ক'রে তিনি খৈয়ামের অজ্ঞেয়বদের প্রম!ণ 
দিয়েছেন এবং নিরীশ্বরবাদের প্রম।ণ-ন্বরাপ নিয়লিখিত রুঝ।ঈটি 
উদ্ধৃত করেছেন £__ 


“শিল্পী ওগো, গড়লে যদি মর্তাতুমি মলিনতমা, 
নন্দনেরও গোপন বুকে সর্প ভীষণ রাখলে জমা, 
কলঙ্কিত মানব-জগৎ যে সব প।পে, তাহার লাগি' 
ক্ষম| কর মনুষ্যদের_মানুম তোমায় করছে ক্ষম| 1” 


এ-ছাড়াও প1চ-₹খানি প্রামাণ্য পানী কেতাব আছে, যাতে পৈয়ামের 
উল্লেখ পটিয়া যায়। কিন্তু সমস্ত পুস্তকেই তাকে হয় জ্যোতিষী বাঁ অঙ্ক- 
শীন্রবিৎ, না হয় দারশনিক বলে বর্ণনা কর! হয়েছে। কেবল লুৎফ, 
আলী বেগ, নামক জনৈক ইরাণবাসী ১৭৬৫ খুষ্টাব্ষে “অতশকদা আজর” 
নামক একটা প্রস্থ প্রণযন করেন; তাতে এক এক প্রদ্দেশের কবিদ্দের 
সংশ্িপ্ত বর্ণনা আছে। খোরানান প্রদেশের কবিদের মধ্যে পাচ ছয় 
লাইনে ওমর খৈয়াম্নের জীবনী ও কতকগুলি রুবাঙ্গ আছে। তা' হলে 
দেখা যাচ্ছে, তার দেশের ইতিহাসে তার মৃত্যুর ৬৪২ বৎসর পরে কবিরূপে 
তার উল্লেখ এই প্রথম ও শেষ। এই টিম্‌টিমে প্রদীপালোক যদি উর 
কবিজীবনীর উপর কিছু আলোকপাত করে থাকে, তা হলে তা ইরাণের 
বাইরে যায়নি। ইরাণের বাইরে বিশ্বের দরবারে তাকে কবি কয়ে 
তুললেন ফিটস্জিরন্ড সাহেব ১৮৫৭ খুষ্টাব্ে। তবে এর পরও একথা 
ভুললে চল্বে না যে এটা ইউরোপীয় মত--ইরাণের বিদ্বৎসমাজের 
স্থচিস্তিত মত নয়। 

জনেক ওমর-তক্ত হতে! মনে করবেন যে ওমর যে কবি ছিলেন না, 
এ-সদ্বদ্ধে নান। সাক্ষ্যপ্রমাণ এনে তাকে খাটো করবার চে হচ্ছে । 
কিন্ত জাসলে' ব্যাপার ঠিক উপ্টো। অর্থাৎ তিনি যে দাশনিক ও 
বৈঞ্জানিক ছিলেন, এর হ্বারা আমি বলতে ঢাই যে, থামখের়ালী বা 
ভাবাবেগে সহজেই বিচলিত হবার মত লোক তিনি ছিলেন না, 
কল্সনারাজ্যের রভীন বিলাস নিয়ে তার কারবার ছিল না। 
চিন্তাজগতে কৃঠিন নিয়ম-শৃঙ্ঘলা ও সংযমের মধ্যে দিয়ে তর মন সুগঠিত 
হয়েছিল, কাধ্যকারণ-সম্পর্ক অনুসন্ধিৎহ, বিগ্লেষণপটু, অতিশয় যুক্তিবাদী 


ভ্ঞন্্রভন্বখ 


| ২৮শ বর্ষ--২য় থণ্ড--২য় সংখ্যা 


ছিল তার মন; অপরের যুক্তি ও মতবাদ খণ্ডনে তৎপর হওয়াতে ঠায় 
বুদ্ধি হয়েছিল অশিশয় মাজ্জিত ও ক্ষিগ্রগতিসম্পন্ন। অতএব তায় 
দার্শনিক মতামত-_য। আমর! রুবাঙঈ-এর মধ্যে পাই--ত। কোন হাক্ধাবুদ্ধি- 
গ্রনূত নয় । বহু দুঃখ ও আয়াস, চিন্ত। ও যত্বলন্ধ তার এই মীতিজ্ঞান*- 
বুদ্ধের মত তাকেও এর জন্তে ছুশ্চর তপন্ত। করতে হয়েছিল ; তবে 
দুজনের আদশের পার্থক্যবশত তপস্ার প্রকৃতি হয়েছিল ভিন্ন। একথা 
তুললে চলবে না যে, দুরদূরাস্তর থেকে ইর।ণের নানা প্রদেশ থেকে শিল্প 
ও ছাত্র আসতে। ওমরের কাছে দশন ও বিজ্ঞানশাস্ত্রে শিক্মালাভ করতে । 
চিগ্তাজগতে ও বিছ্া।র রাজ্যে এরকম আকধণী-শক্তি ফাকি অথব! 
চালাকির দ্বারা লভ কর! যায় না। 

মানুষ ম।নুষের সম্বন্ধে কুৎস। যত সহজে বিশ্বাস করে, প্রশংসা তত 
সহজে করে না। বিদ্ায়, বুদ্ধিতে, চরিত্রে আমার চেয়ে আর কেউ বড়, 
একথা ভাবতেও সাধারণত মানুষের বাধে। তাই বিস্তায় ও বুদ্ধিতে 
যার মহন্ব অবিসংবাদিত, তার চরিত্রে খানিকটা কালিমা লেপন করতে 
পারলে মনট। স্বস্তির নিশ্বান ফেলে বীচে-যেমন তার চরিত্রে কালিমা 
দিয়ে নিজের কালিমার উপর একটা সাম্নার প্রলেপ টেনে দেওয়| হ'ল। 
তাই অনেক ওমর-ভক্তেক়্ ছুঃখের কারণ হবে জেনেও এতা্দন তায় চরিত্র 
সম্বন্ধে গ্রচলিত যে ধারণ! চলে আস্ছে তার প্রতিবাদ করতেই আমি বাধ্য 
হব। এদেশে এবং বিদেশে “কুবানয়।ৎ”এর যে সচিত্র সংস্করণগুলি 
এ যাবৎ প্রকাশ্তি হ'য়েছে এবং ঙার সম্বন্ধে সমসাময়িক নাহিত্যে যে সব 
টুকরো! আলোচনা চোখে পড়েছে তাতে তাকে ইহনুখীন, ভোগসব্বন্, 
লম্পটরূপেই জাহির কর! হয়েছে। কিন্তু বস্তুত তিনি তা ছিলেন ন1। 
উদ্দাম সম্ভোগ থেকে দূরে, শণড নিহ্শ দাশনিকের সুসম্স 
জীবন যাপন করতেই তিনে অভ্যস্ত ছিলেন। তার একটী বড় 
প্রমণ এখানে দিচ্ছি। যখন মমাট মালিক শহের প্রধান মন্ত্রী ও 
তার বাল্যবদ্ধ আবু আলী অনেক কষ্টে তাকে খুঁজে বার করলেন, তথন 
তিনি ওমরকে মেশাপুরের শাননকর্তা নিযুক্ত করতে চাইলেন। তার 
উত্তরে ওমর বললেন--সেই চাকরি করেই যদি খেতে হ'ল, তবে তোষার 
বন্ধু হওয়ার আর ফলকি হ'ল? আমি একান্তে যাতে আমার বিস্তাচচ্চা 
নিয়ে থাকতে পারি, সেই মত একটা ব্যবস্থা করে দাও মা। তদনুসারে 
আবু আলী ওমরকে রাগ্কোধ থেকে বাৎদরিক ১২**শত মিস্ক্যাল 
স্বরণবৃত্তি দেবার ব্যবস্থা ক'রে দিলেন। তখনকার দিনে এই জয়ে তিনি 
রাঁঞ্জার হালে থাকতে পারতেন, কারণ তিনি অবিবাহিত ছিলেন। কিন্ত 
ঠিনি তার কবিতার কয়েক স্থানে নিজেকে রিজহন্ত বলে বর্ণনা করেছেন। 
এর একমাত্র কারণ, তিনি মুক্তহন্ত "দাতা ছিলেন, অনেক দরিদ্র বিভ্তার্থীর 
সাহায্য করতেন; কিন্তু এমন ধীর স্বভাব, আত্ম-সম্মান জ্ঞানসম্পল্ 
মানুষ ছিলেন যে আপমার উদ্নারতম বন্ধুফেও কখনও নিজেয় 
অভাষের কথ! জামান মি। ভার আন্মসম্মাম জ্ঞামের আর 
একটী নিদর্শন, তিনি বিন! আহ্বানে কখনও কোমও বড়লোকের বাড়ী 
যেতেন না। একথা অবশ নিঃসংশয়ে বল! চলে যে, তিনি স্কুরাকে বিষ ও 
সাকীকে গেত্বী মনে ক'রে জাহায়মের ভয়ে নবদ্ার রুদ্ধ করে জীবম- 


মাথ__-১৩৪৭ এ 


ঘাপন করেন নি,কিস্তু তাই ব'লে লম্পটের উচ্ছল সস্ভোগ-প্রবণ জীবনও 
যে ভার ছিল না, একথাও জোর ক'রেই বল যায়। একট! নুস্থ সবল 
দেহ মন নিয়ে, অজ্ঞাত পরলোক সম্বন্ধে সমন্ত দুশ্চিন্তা পরিহার ক'রে, 
ইহলোক এবং ইহজীবনে তিনি একটী ভোগ ও ত্যাগের সুদমঞ্জস ও 
বিচারসহ মধ্যপন্থা খুঁজেছিলেন এবং তার রুবাঈ-এর উক্তি যদি বিশ্বাস 
করতে হয়, তা হলে মে পথ তিনি খুঁজেও পেয়েছিলেন। উদাহরণ- 
স্বরূপ তার এই রুবাঈটা দেখুন £-_ 


“বিজ্ঞের। সব থাকুন নিয়ে শাআ্রবিরোধ-মীম।ংন।-ভার 
তোমায় আমায় ভার নেব নই এই জীবনের বোঝাপড়ার 
নৈয়ায়িকের গগ্গোলের একটী কোণে সঙ্গোপনে 

খেলার ছলে তে।মার পরশ যেটুকু পাই, তাহাই আমার।” 


শেষ পংভ্তিটা পড়ে বুঝতে পারা যায়, কতটা নির|সভ্ত' মন নিয়ে তিনি 
জীবনকে ভোগ করতেন। এর পর £-- 


“এই দুনিয়ার উর্দে-মধে, ডাইনে বয়ে ঘেদিকে চাই 
আ।তসবাজির কারসাজি সব, আর কিছু নাই, আর কিছু নাই। 
ভপন-শিখায় কেন্দ্রে ধরি' ৮লেছে এই মজার ম্যাজিক 

আমর! তাগি রান ছবি আসা-যওয়।য় ঘুরছি সদাই ।” 


আর এই রহস্যময় বিশ্বন্থটি মন্ন্ধে বুদ্ধের “অনিবব।ণ আলো” যে আলোক- 
পাত কঠেছেন, তা হচ্ছে এই 2-- 

“যথেষ্ঠ এনিয়। রাথ। ইন্্রজাল দে।লে দৃশ্ঠম]ম 

বহধা ব্রহ্গাও গ্রহ চগ্র হুঘ্য গগন-মণ্ডল ; 

আঘাতে সংঘ।তে নিত্য থুরিতেছে শক্তিচন্রযন 

রোধিতে যাহার গতি, নাহি, নাহি__কারো| নাহি ৭প।” 


কিন্তু তা হলে এই বিরাট বিপুল বিষ্টি চালাচ্ছে কে? খেয়।মের মতে 
সেট! অ-দৃষ্ট। প্রা একজন আছেন, কিন্তু তিনি অ-দষ্ঠ অজ্ঞাত ও 
অ-জ্ঞেয়। তিনি মানুধের যে ভাগ্যলিগি লিখেছেন তাও অদৃষ্ঠ। 
মানুষ সেই শ্রষ্টার হ!তে খেলার পুতুলমাত্র । 


প্রাত্রিদিনের অশধার-আলোয় ছকক।টা এই ধরিত্রীটি 

অদৃষ্ট তায় খেলায় দাব! নিয়ে তাহার মামুষ-ঘু'টি ; 

এদিক ওদিক দিচ্ছে সে চাল, হরিছে বল, করছে বা মাৎ 
একে একে রাখছে আবার থলির ভেতর পাক্ড়ে টুটি। 
সম্মতি বা আপত্তিতে ঘুটির কোনে! নেই অধিকার 

ডাইনে বায়ে চল্ছে যেমন চালায় তারে চালকটি তার, 

ঠাই দিয়েছে ষেজন তোরে ঘরকাট| এই দাবার ছকে 

সে-ই জানে--সে-ই একল| জানে অর্থ কি এই দাবাখেলর।* 


এ সন্বন্ধে বুদ্ধবাণী দৃশ্ঠত সম্পূর্ণ মিরীশ্বরবাদী; ত্রষ্টার কথ! তিনি 
উল্লেখই করেন মি, বরং এ সথন্ধে যা বলেছেম তাঁর ভাষা আরও রঢ, 
মির্দেশ আরও কঠোর । যখ| £-- 


শত ও শুলল্-টখসাম 


১০৬৫ 


*প্রার্থন। কোরো না--তাহে আলোকিত হবে না আধার 
স্তব্ূতার কাছে কিছু চাহিও ন!--কারণ, সে যুক। 
ধর্দালু বেদন! বহি" ঝাড়ায়ো না অন্তরের ভার 

চাহিও না বন্ধুগণ করুণার কণ!। এতটুক্‌ 

অসহায় দেবতারে তুষ্ট করি' স্ব, অর্ধ্যদনে, 

রক্তের উৎকোচে কিম্বা! জোগাইয়া নৈবেগ্ত আহীর--” 


ওমর খৈয়াম মানুষের এই অসহায় অবস্থার কথা মন্মে মন্মে অনুভব 
করেছেন এবং তা সকরুণ ভাবায় লিপিবদ্ধ করে গেছেন। বুদ্ধদেবও 
তাই করেছেন। এ পধ্যন্ত দুঙ্জনের দর্শনই এক | কিন্ত তফাৎ হচ্ছে যে 
ওমর খৈয়াম এইখানেই থেমেছেন--এর ওদিকে আর পথ খু'জে পাননি, 
তাই বলেছেন__ 


“ভূবন থেকে বাজিয়ে সপ্ত স্বর্গতোরণ-বিজয়-ভেরী 
উদ্ধলোকে শনৈশ্চরের সিংহাননও এলুম ঘেরি' 
যাত্রাপথে কতই না সে রহস্য গিট পড়লে! খুলে 
থুললে। ন! কো গ্রন্থি শুধু মৃত্যু এবং অধৃষ্টেরি |” 


পক্ষান্তরে, বুদ্ধদেব এর পরেই শুনিয়েছেন অত্যন্ত আশার কথ|। মানুষকে 
এ অসহায় অবস্থার হাত থেকে পরিত্রাণের উপায় তিমি বলেছেন £-- 


“নিজেরি মাঝারে ডুবি, শুদ্ধ হ'তে হবে মুক্তিন্নানে 

প্রত্যেকে রচিছে নিজে আপনার কারাগার তার।” 
সং সং 

“চরম প্রতুত্বপদ প্রত্যেকের আছে অধিকারে 

উদ্ধে, অধে, চারিদিকে যত কিছু শক্তির বিক!শ 

এ জগতে যত জীব ঘোরে রভ্ত-মাংসের আকায়ে 

সবাই আপন কর্মে করে হনবেদনার চাষ ।” 


স্বীয় অনুভূতি-লন্ধ এই আশার ও শক্তির ব।গাই বুদ্ধকে করেছে মহামানব। 
যে মৃত্যু ও অদৃষ্টের রুদ্বধদুয়ার ওমরকে হতাশ করেছে, সেই মৃত্যু ও 
অদৃষ্টকে অতিক্রম করবার পথই বুদ্ধ ব্যাথ্যাত নির্ববাণ-পথ। 

ওমর খৈয়ামের দর্শন যতই সন্কীর্ণ ও একদেশদশী! হোক্‌, তর আত্ম- 
প্রত্যয় ও সত্যভাষণের সাহন ছিল অপরিসীম । ভার মতামত ও শিক্ষ! 
তদানীন্তন লোকাচার ও প্রচলিত ধন্মীচরণের ছিল অনেকাংশে বিরোধী । 
সেইজন্যে মোল্লার! ওমরকে ধর্মমজ্ঞানহীন বিকৃতসস্তিষ্ধ ও কাফের বল্তেন। 
একবার মোল্লাদের উত্তেজনায় নেশাপুর-বাদীর! ওমরকে হত্যা করতেও 
চেষ্টা করেছিল। সেই সময় তিনি মক্কার প্রধান মসজিদে গিয়ে আশ্রয় 
নিয়েছিলেন। উত্তেজন! কমে গেলে বাগদাদে গিয়ে কিছুকাল ছিলেন-- 
পরে আবার নেশাপুরে ফিরে এদেছিলেন। এই প্রদঙ্গে সবচেয়ে উল্লেখ- 
ষে।গ্য ব্যাপার হচ্ছে--যে সকল মোলল! তার বিরুদ্ধে সাধারণ লোকদের 
উত্তেজিত করত, তার মধ্যে অনেকেই প্রাতে ও সন্ধ্যার পর গোপনে 
ঠার ফাছে পাঠ নিতে আদ্ত। এই সময়ে বড় ছুঃখেই তিমি 
বলেছিলেন-_“ছু-তিন বুর্ এরূপ বিবেচন। করেম ও নিজের মুর্খতা-হেতু 


৯৬৬ 


ভাবেন যে তার! পৃথিবীর মধ্যে সর্বাপেক্ষা বুদ্ধিমান। গাধামিতে তাদের 
মত যে গাধা নয়, তাকে তারা কাফের ভাবেন।” ূ 
মনীষী ওমরের জীবনের আর একটা অপুর্ব ঘটনার কথা বলে ঠার 
জীবনী-আলোচনা শেষ করব। এই ঘটনার কথ! নিঙ্জামী তার পৃবেবাক্ত 
শ্ঙ্থার মকালা”তে উল্লেখ করেছেন। ভার জবানীতেই বলি £-- 

«৫৯৬ হিঃ তে (১১১১-১৩ খুঃ) বাহিলিক (3911,10) নগরে খোয়াজা 
ইম/ম ওমরের সঙ্গে আমীর আবু সায়াদের বাড়ীতে আমার সাক্ষাৎ 
হয়েছিল ; তখন দেখনে আরও কয়েকজন বিদ্বান বড়লোক ছিলেন। 
খোয়াজ! কথা-প্রদরঙ্গে বললেন--:এমন স্থানে আমার গোর হবে যে বৎসরে 
ছুবার আমার গোর পুপ্পরেণু দ্বার! ঢাকা গড়বে আমি এত বড় যুক্তি- 
বাদী বিশ্বানের মুখে এরকম অসম্ভব ও অস্ভুত কথা শুনে মনে মনে দুঃখিত 
হলাম কিন্তু কিছু বললাম না। এই ঘটনার বহুকাল পরে (৫৩১ ঠিঃ- 
১১৩৫-৩৬ খুঃ) খোয়াজার পরলোক-গমনের কয়েক বদর পরে 
জামাকে একবার নেশাপুর যেতে হয়েছিল । তখন তিনি আমার শিক্গা- 
গুরু ব'লে একবার ভার গোর-দরশশন (জিয়ারৎ) করবার ইচ্ছা প্রবল 
হ'ল। একজন পৎপ্রদর্শক নিযুক্ত ক'রে সেখানে গিয়ে দেখলাম, ঠার 
গ্রোরটী গোরস্থানের শেষ সীমাতে এক ফলবাগানের প।চিল ঘেষে 
আছে। সেই বাগানের একটা জর্দালু ও একটা অমরদের গাছ পাচিলের 
অপর দিক থেকে গোরের উপর ঝুকে রয়েছে এবং গোরটা পুপ্পরেণুর 
ছ।র! আচ্ছাদিত। তখন সেই চব্লিশ বতর পূর্বের কথা আমার মনে 
ঠাড়ল এবং সবিষ্ময় শ্রদ্ধার সঙ্গে মনে হ'ল ভার ভবিযদ্ধাণী সত্যই 
সফল হয়েছে ।” 

এই ঘটম! থেকে প্রমাশিত হয় যে, ওমরের এমন গভীর অন্তদৃ্টি 
ছিল--য| সাধারণ লোকের থাকে ন| এবং য! একনাত্র স্থগভীর মনন ও 


শান্ত সাধনার ঘারাই মানুষ লাভ করতে পারে। 


ভ্ডাল্রভন্যখ 


[ ২৮শ বর্ষ-_২য় খণ্- ২য় সংখ্যা 


এই প্রদঙ্গ বুদ্ধ ও ওমরের দার্শনিক দৃষ্টির তুলনামূলক আলোচনা 
নয়। বুদ্ধ ছিলেন মহ|মানব, যুগযুগান্তপ্রপারী ছিল ভার চিন্তা ও কর্ম- 
ধার।। ওমরের জীবনী আলোচন। করে আমি এইটুকু দেখাতে চেয়েছি 
যে,তিনিও ছিলেন একপ্ন অনাধ।রণ প্রতি ানপ্পন্ন মানব, জ্ঞানের ক্ষেত্রে 
তপ্বী, সত্যবাদী, সাহদী, চিন্ত/বীর, স্ব-কালের পরোপকারী, সম্পূর্ণ 
প্রতিষ্-লোভহীন লোক-শিক্ষক। বুদ্ধের বাণীর সঙ্গে একই বই-এ 
তার বাণীকে শুদ্ধ-বিবেক নিয়েই গেঁথে দেওয়! যেতে পারে এবং তা 
করল মহাভারত অশুদ্ধ হবেনা । একজন মহামানব ও একজন খাটি 
মানবকে পাশপাশি কেমন দেখায়, সেটা চোখ মেলে দেখলে কাউকে 
পাপম্পশ করবে না। 
উপনংহারে রুবাঈয়তের গ্লেকনংখা। সধ্দ্ধে যে মততেদ আছে তার 
উল্লেখ করছি। ওনর কত গদ্চ রচন| করেছিলেন তা সঠিক জান! নেই। 
প্রাচীনতম সংগ্রহ যা পাওয়। গিয়েছে, তা” ১৪৬* খৃষ্টাক্ষের লেখা এবং 
তাতে ১৫৮টা রুবাঈ মআাছে। কলিকাতা এশিয়াটিক মোসাইটীর সংগ্রহ 
পুগ্তক ৫১০__কিন্তু লক্ষৌর সংস্করণে আছে ৭৭*টি। তার মধ্যে তিনটি 
রুবাঈ দুবার করে লেখা; অথব। যেটুকু প্রভেদ আছে, তাকে নূতন 
রুবাঙগ না বলে পাঠান্তরই বল। যায়। অতএব লঙ্কৌ-সংখ্রণের রুবাঈ 
সংখা ৭৬৭টি বলাই সঙ্গত। এ সংগ্রহগুলি মন্পূর্ণ স্বাধীন; অর্থাৎ 
কলিকাত(র ৫১টি সংগ্রহে এমন রুবাগ আছে ঘা লক্ষ্ৌর ৭৬৭টির মধ্যে 
নেই । আবার এ ৭৬৭টির মধ্যে মার আটটিতে পৈয়ামের লাম বা 
ভণিত| আছে, বাকী ৭৫৯টা কার লেখ! নিশ্চয়পুববক বল! অপম্ভব ; কেন 
না, প্রথমে যে স"গ্রহ করেছিল দে দশজন লোকের মুখে শুনেই তা 
করেছিল। আজকাণকর অনুমন্ধানে তাতে এমন রুবাঈ পাওয়া যাচ্ছে, 
যা অন্ঠ কোন সংগ্রহে অন্ত কেন লেকের উক্তি ব'লে আর কেউ 


লিখে রেখেছেন । অতএব এখন সেগুলিকে সন্দেহাত্মক বল। হয়। 


আ্মরণে 
ক্রীশোভেক্দ্রমোহন সেন 


পশ্চাতের সব কিছু? তুচ্ছ অতি তুচ্ছ 

স্থ দুঃখ বত-- 
মুছে ফেলে; ভুলে গিয়ে, স্থৃতিকথ! তাঁর-_ 
চলিতে হবেই তোরে সম্ভুথের পানে, 

রে মোর অবুঝ মন আজি । 


ব্যথা ঘি জাগে মনে কল্পনারে দিতে বিসর্জন 
বিশ্বৃতির অন্তাচল পারে ;-- 
আসে যদি বাহিরিয়া বিদ্দু বিন্দু জল 
অবোঁধ ও আখি হতে, 
করিও শাসন তারে বাস্তবের কঠিন বিধানে । 


মনে রেখো, সংসারের কর্মময় দিনে ;-- 
অতীত কল্পনা আর স্থথস্বতি যত, 
পশ্চাতে টানিয়! লয় বার বার, তাই 
যাঁরা চায় আপন গৌরব-_ 
জীবনের পক্চিল প্রবাহে চলে শুধু পতঙ্গের মত.। 


ভ্যাম্পায়ার বাদুড় ৰা রক্তলেহী বাছুড় 
রীজ্ঞানেন্দ্রলাল ভাছুড়ী ও শ্রীজয়স্তকুমার ভাছুড়ী 


ঈশপের গল্পে আছে--একদ! পণ্ড (১) ও পাধীদের মধ্যে 
নাকি ভীষণ লড়াই বেধেছিল। সেই সুদীর্ঘকালস্থায়ী সংগ্রামে 
একটিন পাখীরা জয়লাভ করেছে, আবার আর একদিন 
পাঁখীদের হারিয়ে পণুরা জয়লাভ করেছে । কিন্তু সেই 
ভীষণ রক্তপাত ও প্রার্ণক্ষয়ের সময় একটি গ্রাণীর আচরণ 
বিবদমান উভয় পক্ষেরই বিস্মিত দৃষ্টি আকর্ষণ করে। কারণ 
সে- যখন পশুর! জয়লাভ করছিল তখন নিজেকে পশু বলে 
পরিচয় দিচ্ছিল, 'মাবার বখন পাখীদের জয়লাভের সম্ভাবনা 
দেখছিল তখন নিজেকে পাথী বলে গভীর আত্মপ্রসাদ লাভ 
করছিল। যুদ্ধান্তে পশ্ত ও পর্গী উভয় দলই শবাদি- 
মন্মতিক্রমে এই সুবিধাবাদী প্রাণাটিকে দল থেকে তাঁড়িয়ে দেয় 
এবং এইভাঁবে বিতাড়িত ভয়ে সে মেইদিন থেকে দিবালোকে 
ধর! পড়বার ভয়ে রাত্রির ঘনান্ধকারে গা ঢাকা দিগ্নে চন্তে 
বাধ্য হয়। 

এই অস্ভুত কুখ্যাত প্রাণীটি যে বাছুড় সে কথা বোধ হয় 
আর কাউকে নৃতন ক'রে বলে দিতে হবে না । পাথীদের মত 
ডাঁনা থাকা সত্বেও বাদুড় পাখী নয়_ আধার স্তন্যপায়ী 
( 1171012] ) গ্রাণীদের অন্ততুক্তি হয়েও উড্ডয়নক্ষম | এরা 
্তশ্টপায়ী-শ্রেণীর অন্তর্গত একটি বিশিষ্ট বর্গের (01৫07) 
প্রাণী-তাঁর বিজ্ঞানসম্মত নাঁম কাইরপ টের! ( 01)101)- 
(017 )। কোইরপ টেরা/র অর্থ 419110-110005 এবং 
সম্ভবতঃ এই কারণে এই ব্ান্তর্গত প্রাণীদের বাংলায় 
“কর-পক্ষ+ প্রাণী বলাহয়েছে। . এদের আধুনিক চলিত 
ইংরেজী নাম 1380 পূর্বে [7110001090১ বলেও অভিহিত 
করা হত। 

বাংল! ভাঁষাঁয় এদের দু'টো চলিত নাম আছে__“বাছুড়? 
ও “চামচিকা” । বৌধ হয় আকারে যাঁরা বড় তাঁদের নাম 
বাদুড়, আর যাঁরা ছোট তারা চাঁমচিক নামে প্রসিদ্ধ 
134 অর্থে আমরা “বাঁছুড়' এই প্রতিশব্ষ ব্যবহার ক'রে 


শপ শশী টীশাীশশ শশী 


১। স্তন্যপায়ী (177117121 ) প্রাণী অর্থে পণ্ড শব্দ প্রয়োগ কর! 
হয়েছে। 








থাকি। চাঁমচিকাঁর' ঠিক ইংরেজী প্রতিশব্ জানি না। 
গ্রাণিবিদ্যর পুস্তকে কাইরপটেরা অন্তভূক্ত প্রাণীদের ছুই 
দলে (11১০ ) ভাগ করা হয়েছে, যথা-_মেগা-কাইরপ টেরা 
(7107-007101617) ও মাইক্রো-কাইরপটেরা (1 1010” 
00710171577) অর্থাৎ বড় বাদুড় আর ছোট বাছুড়। 
আমরা বদের চাঁমচিকা বলে গাঁকি তারা যে মাইক্রো” 
কাইরপটেরা ন্তগত প্রাণী সেটা নিঃসংশয়ে বলা যেতে 
পারে। 137! অর্থে বাদুড় এই নামে যখন কারুর কোন 
অভিদোঁগ নেই তখন বড়-ঞেো1ট সব মিশিয়ে আমরাও “বাদুড় 
নাম বাঠাল রাঁগা ঠিক করলুম। চাঁমচিকার কি দশা হয় 
পরে দেখা যাবে। 

পথিবীতে বহু প্রকারের বাছুড় দেখা যায়। কেউ 
ফলাশী ([7010190৭ ) অর্থাৎ ফলমূল খেয়ে জীবনধারণ 
করে; ফলাণা বাছুড়গুলি সাধারণত বড় আকারের হয়। 
পল্লী গ্রামে এই সব বাছুড়ের উৎপাতে গৃহস্থের| উদ্বযস্ত । আবার 
কতকগুলি বাছুড় পতঙ্গাণী (1156011501005) এবং 
সাধারণত এরা ছোট আকারের । এদের দলই সর্বাপেক্ষা 
বেশী। এরা অনিষ্টকাঁরী পতঙ্গ বিনাশ করে সম্ভবত মানুষের. 
কিছু ইষ্ট সাধন করে। আবার কেউ-বা মাংসাশী 
( ০8171501005 ) অর্থাৎ অন্য প্রাণী মেরে আহার করাই 
হচ্চে এদের প্রধান উপজীবিকা | মাংসাণী বাঁছুড়ের মধ্যে বড় 
ও ছোট দু দলই আছে। বড়রা অনেক সময় ছোট বাদুড় 
ধরে খেতে ইতস্তত করে না। এদের মধ্যে একদল আছে 
যাঁরা ইদুর পাধী প্রভৃতি প্রাণী শিকার করে খায়; আবার 
আর এক দল আছে যাঁরা জলাশয় ও নদীর উপর উড়ে 
বেড়ায় এবং স্থবিধামত মাছ ধরে থায়। পৃথিবীতে সর্বত্র 
এই সকল বাছুড়ই সচরাচর দেখা যায়। কিন্তু এদের 
ছাড়াও আরও একপ্রকারের ছোট বাদুড় আছে যাঁর! 
রুধিরপাঁয়ী (58160110101) অর্থাৎ শুধু রক্ত পান 
ক'রে জীবনধারণ করে। এই খুনে দলের বাদুড় আমেরিকার 
বাসিন্দা, পৃথিবীর আর কোথাও এরকম প্ররূতিসম্পন্ন বাঁছুড় 
আজও পাওয়া যায়নি” । 


৯৬৭ 


৯১৬ 


বস্তত প্রাণিজগতে বাছুড় একটি চিরন্তন বিন্ময়। এরা 
নিশাচর বলে এদের হালচাল সম্বন্ধে নানা প্রকার অমূলক গল্প 
ও ভীতিপ্রদ কাহিনীর সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষত আমাদের 
আলোচ্য ভ্যাম্পায়ার বাঁদুড়কে নিয়ে। 
রক্তপাষী বাছুড়ের সাধারএ গ্রচলিত নাম ৬৪1১115| 
বাছুড়কে এ নামে অভিহিত করবার মধ্যে বেশ একটি মনোজ্ঞ 
ইতিহান পাওয়া যাঁয়। ভ্যাম্পায়ার একটি শ্লাভনিক 
(318৮01710) শব্ষ। ভ্যাম্পায়ার-বাছুড়ের অস্তিত্ব জানার 
ঢের পূর্বেই এ শব্দটি ইংরেজী ভাষায় প্রচলিত ছিল। বহুকাল 
পূর্নে ইউরোপে রক্তপাষী অশরীরী প্রেতাম্মাকে এ নামে 
অভিহিত করা হ'ত। তথনকার দিনে লে!কেদের ধারণ! 
ছিল যে মৃত ব্যক্তির আসশ্মা রাত্রিকালে কবর হ'তে উথিত 
হয়ে ঘুমন্ত প্রাণীর রক্ত পান করে। এদের আরুতি কিরূপ 
সে সম্বন্ধে কারুরই কোন সুস্পষ্ট ধারণ ছিল ন1। প্রত্যেকে 
নিজ নিজ অভিরুচি অনুযায়ী তার একটা বীভৎস রূপ কল্পনা 
ক'রে প্রচার করত। এমনকি “মায়'রা (198115 ) এই 
প্রকার একটি রক্তপিপাস্থ অশরীরী অপদেবতার পৃজা- 
অর্চনাও করত। আমেরিকা আবিষ্কারের পরে এঁ দেশে 
'ইউরোপীয়গণ যেতে সুরু করেন এবং তীরা সেখানে গিয়ে 
সত্যসত্যই রক্তপায়ী বাছুড়ের সন্ধান পান। তখন বাছুড়ের 
এঁ বৃত্তির সঙ্গে ইউরোপের তথাকথিত ভ্যাম্পায়ারের 
আচরণের অদ্ভুত সামঞ্রস্ত থাকায় রক্তপায়ী বাদুঙকে 
“ভ্যাম্পায়ার” নামে অভিহিত ক'রে প্রচার করা হয়। 
প্রকৃত ভ্যাম্পায়ার বাছুড়ের বিজ্ঞানসম্মত নাম ডেস্‌- 
মোঁড়াস রোটান্ডাস্‌( 4£)65779445 794%4:/%5 )। এদের 
' জীবনযাপন প্রণালী ও আচরণ সঙ্বন্ধে বন্থ প্রয়োজনীয় তথ্য 
সংগৃহীত হয়েছে । এর আকারে খুব ছোট-লত্বা্ন মাত্র 
চার ইঞ্চি এবং বিস্কৃত ডানার এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত 
পর্যন্ত মাপলে হয় দাত্র তের হঞ্চি। এর! রাত্রিকালে 
থান্ভাখেষণে বার হয়, আর দিনের বেলায় ভয়ঙ্কর দুর্গম 
পাহাড়ের গুহাকে।ণে ফাটালের মধ্যে অন্ত জাতীয় বাদুড়ের 
সঙ্গে একত্রে আত্মগোপন করে থাকে । এরা উপরের 
স্ৃতীক্ষ পাত দিয়ে সমস্ত প্রাণীর দেহে ক্ষত উৎপাদন করে 
এবং সেই ক্ষত স্থান হ'তে যখন প্রচুর রক্ত নির্গত হতে 
থাকে তখন জিত: দিয়ে সেই রক্ত পাঁন করে। এরা ঠিক 
কুকুর বেড়ালের মত রক পান করে না।_-এদের রক্ত 


ভা ভবন 


[ ২৮শ বর্--২য় খ্ড--২য় সংখ্যা 


লেহনের একট! বিশেষত্ব আছে। ডেসমোভাস বাছুড়ের 
তলাকার সামনের ছুদীতের মধ্যে ব্যবধান এরপ বিস্কৃত যে 





রক্তশোমক বাছড়-উচন্ত অবস্থায়। তিন শ্রেণীর এই প্রকার বাছুড় 
আছে-ব গুলিহ আমেরিকার শ্রী্ঘপ্রধান স্থানে ঝাস করে 


সেই ব্যবধানের নধা দিযে অনায়াসে জিভ ঢুকোতে ও বার 
করতে পারে। প্রাণীদেচ হ'তে রক্তমোক্ষণ কালে এই 
দাতের ফাঁক দিরে জিভের সাহায্যে এরা রক্ত পান করে। 
রক্তমোক্ষণ বেশী হলে এরা ক্ষতস্থান স্পর্শ না করেই রক্ত 
পনি করে, অল্প হলে ক্ষতস্থান স্পর্শ ক'রে লেহন করতে 
বাধ্য হয়। এরা এই কাছ এত দ্রুতগতিতে সম্পন্ন করে 
যে ভাবলে বিস্মিত হ'তে হয়। প্রত্যেক সেকেণ্ডে এরা 
অন্তত চারবার জিভ ভেতর-বার করতে পারে। মিনিট 
দশ-পনর/র মধ্যে ভরপেট রক্তপান করে গুহা নিবাসে ফিরে 
গিয়ে ফাটালের মধ্যে আত্মগোপন করে। 

ভ্যাম্পায়ার বাছুড় খন কোন প্রাণীকে আক্রমণ করে 
তখন সে কিছুই জানতে পারে না। ঘুমন্ত অবস্থায় ত 
কোন প্রকারই যন্ত্রণা অন্ভূত হয় না। পূর্বে বিশ্বাস ছিল 
যে ভ্যাম্পারার বাছুড় শিকাঁরকে আক্রমণ করবার পূর্বে 
ডানার হাওয়ায় গভীর ঘুমে তাকে আচ্ছন্ন ক'রে ফেলে। 
কিন্ত এ ধারণা সর্দৈব মিথ্যা ও অমূলক। এত 
ক্ষিপ্রকারিতার সঙ্গে এরা তীক্ষ দাতের দ্বারা ত্বকগভীর 
ক্ষত উৎপাদন করে বে আক্রান্ত ব্যক্তি কিছুই টের পায় ন!। 
কিন্তু শিশু ভ্যাম্পায়ার বাছুড় বাপ-মা,র মতন সুচতুরতাঁর 
সঙ্গে শিকারকে কোন প্রকার যন্ত্রণা না দিয়ে রক্ত পান 
করতে পারে না। একজন প্রাণীবিৎ নিজের দেহে একটি 


মাঘ---১৩৪৭ ] 





শিশুকে দাত দিয়ে বিদীর্ণ করতে দিয়ে দেখেছেন যে যথেষ্ট 
যন্ত্রণা অন্থভূত হয়। অবশ্ত অল্পকালের মধ্যেই এরা 
শিকারকে বাপমা”র মত আহত করবার নিপুণ কুশলচতা 
অর্জন করে। এর! সর্বপ্রকার স্তন্থপায়ী প্রাণীকে আক্রমণ 
করে-_-তবে কেশবিরল প্রাণীকে আক্রমণ করতে সুবিধা 
হয় বলে তাদেরই সর্বাগ্রে মনোনীত করে-_অভাবে 
পার্থীকেও আক্রমণ করতে দেখা গিয়েছে। স্তন্যপায়ী 
প্রাণীদের সাধারণত ঘাড়ে আক্রমণ করে, পাঁথীর পা 
এদের আক্রমণস্থল, কিন্তু গলাঁয়ও অনেক সময় আহত 
করে। সরীল্থপ বা উভচর প্রাণীকে আক্রমণ করতে 
এ-পর্যস্ত শোন! যায়নি। 

ভ্যাম্পায়ার বাদুড় ঘনীভূত রক্ত পান করে না। বন্দী 
অবস্থায় এদের ফাইব্রিন-বিষুক্ত (0০-?1971109690 ) রক্ত 
পান করান হয়। ১৯৩৫ সালের পূর্ব পর্ন্ত ধারণা ছিল 
যে এদের লালার মধ্যে অন্থান্ট রক্তপায়ী প্রাণীর মত 
একপ্রকার পদার্থ আছে যা ক্ষতের সংস্পর্শে আসাতে 
রক্তকে জমাট বাঁধতে দেয় না। এ ধারণা যে সর্বাংশে তুল 
তা দুজন আমেরিকান প্রাণীবিৎ বহু পরীক্ষা বার! প্রমাণ 
করে দিয়েছেন। রক্ত ফোঁটা ফোঁটা পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই 
এরা এত দ্রুত পান করে যে রক্ত জমাট বীধবারই অবসর 
পায় না। ঘরের মেঝেতে জমাট বাঁধা রক্ত দেখে বা 
ক্ষতস্থানি থেকে ছিট্‌ ছিট্‌ রক্ত পড়তে দেখে পুরে অনুমান 
কর! হয়েছিল যে ভ্যাম্পায়ার বাছুড়ের লালায় রক্ত জমাট 
না বীধবার কোন পদার্থ আছে। কিন্তু পূর্নোক্ত কর্মীদ্বয 
বলেন যে, এ রক্ত ওদের পাঁন কালেই মাটিতে গড়িয়ে 
গড়িয়ে পড়েছে । মেঘ থেকে বৃষ্টি যখন পড়ে তখন যেমন 
একটি ফোটার পর আর একটি ফোটা পড়ে এবং এত 
ক্রত পড়তে থাকে যে মনে হয় একটি ধাঁরাই অবিচ্ছে্ 
গতিতে পড়ছে--তেমনি ক্ষতস্থান থেকে নিঃস্থত রক্তও পড়তে 
থাকে এবং তা এত ভ্রতগতিতে ত্যাম্পায়ার তার জিভের 
সাহায্যে টেনে নেয় যে রক্ত জমাট বীধবারই অবসর পায় 
না-বরং মনে হয় ক্ষতস্থান থেকে রক্তের একটা ধারা 
চলে আস্ছে তার মুখের মধো। অনেক সময় মেঝে 
ও ক্ষতস্থানের চারি পাশ যে রক্তে ভিজে থাকতে দেখা 
গেছে, তার কারণ রক্ত এত অবিরল ধারে আসতে থাকে 
যে সেকেণ্ডে চারবার জিভ. প্রস রিত ক'রেও সব রক্ত 

২২ 


ভ্যাম্পান্সাল্ল বাছড় শা ল্লল্ডচক্লেহুণ বাত 


১৬৯ 





পাঁন করে উঠতে পারে না-_কাজেই উদ্বত্ত রক্ত ক্ষতস্থানে 
চাঁরি পাশে এমন কি মেঝেতে গড়িয়ে পড়ে যায়। 

এখানে উল্লেখ অগ্রালঙ্গিক হবে না যে, যে-সকল 
প্রাণী কঠিন পদার্থ ভক্ষণ করে তাদের পাকস্থলী (5:০10801) 
অনেকটা থলির মত দেখতে হয়, কিন্ত যারা একমাত্র 
তরল পদার্থ পান করে জীবনধারণ করে তাদের পাকস্থলী 
নলাকার ( 00০০-1115)1। ১৮৬৫ খঃ অবে টি-এইচ- 
হাক্সলী (খু. [নু 1705019% ) মহোদয় ডেসমোডাস 
বাছুড়ের দেহ ব্যবচ্ছেদ ক'রে দেখিয়েছেন যে এদের পাকস্থলী 
অন্ত্রাকার অর্থাৎ সরু নলের মতন। শুধু রক্ত পান করার 
ফলেই যে পাকস্থলী এ প্রকার আকার প্রাপ্ত হয়েছে সে 
বিষয়ে অন্মাত্র সন্দেহ নেই। 

বাঁছড়েরা সাধারণত মাটিতে হাটে না__সম্ভবত 
হাটতে পারে না, কিন্তু ভ্যাম্পায়ার বাঁছুড় অবলীলাক্রমে 
হেঁটে ঘেতে পারে। মানুষের নাকের ডগায় বা পাঁয়ের 
আঙ্গুলে যখন এরা ক্ষত উৎপাদন করে তখন এর! দেহের 
উপর উড়ে এসে বসে না__বরং হামাগুড়ি টেনে পাঁশে আসে 
-_এই সময় দূর থেকে তাদের দেখলে মনে হুৰে যেন 
প্রকাণ্ড একট! মাঁকড়শ! হেঁটে চলেছে । 

পুবে ধারণা ছিল ভ্যাম্পায়ার বাছুড় ছত্রিশ ঘণ্টার 
বেশী উপবাস সহা করতে পারে না। পরে পরীক্ষা ও 
পর্যবেক্ষণ দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে, এরা চারদিন পর্যস্ত 
অক্রেশে না খেয়ে কাটিয়ে দিতে পারে। 

শ্রীযুক্ত গোপালচন্ত্র ভট্টাচার্য মহাশয় এই বাছুড় সম্বন্ধে 
ইতিপূর্বেবে সবিস্তারে আলোচনা করেছেন। কিন্তু 
তিনি যে পরিভাষার সাহায্যে বিষয়টি বুঝাতে চেয়েছেন 
তাতে আমরা একমত হতে পারিনি। বস্তত ইংরেজীতে 
এই জাতীয় বাছুড়কে পূর্বে 1০০৭-5০০€ 1১9 বল্ত 
এবং সে-হিসেবে এদের বাঁংলায় ণরক্তচোষক বাদুড়” বলা 
অযৌক্তিক হয়নি। ব্লা বাহুল্য, জনপ্রিয় নামের সঙ্গে 
অনেক সময় প্রাণীদের প্রকৃত আচরণের ইঙ্গিত লুকান 
থাকে। ভ্যাম্পায়ার বাছুড় সম্বন্ধে পরে যে সকল নব 
তথ্য আবিষ্কৃত হয়েছে তারপর আর ওদের 1০০0-১01175 
আখ্যা দেওয় শোভন হয়না । গোপালবাবু 1১1০০-1৪0- 
0116 ঘটন সবিস্তারে বর্না করেছেন, কিন্তু পরিভাষা 
হিসেবে ব্যবহার করেছেন রক্তশোষক” বা “রক্তচোষক”। 


১2. 


খ্র-স্প্্ন্্পস্স্থ্যা 


আর একটু পরিষ্কার ক'রে বলা দরকার ৷ 59০1175 
অর্থে 'চোষক” ও “শোষক” দুটো শবই ব্যবহার না করার 
কারণ এই যে 5০61010এ ভ্যণকুয়াম (৬৪০০৪) ) তৃষ্টি 
হয় এবং তাতে দুটি অঙ্গ পরস্পর সংলগ্ন হওয়া দরকার । 
সে হিসেবে পরিভাষা চোঁষণ অর্থজ্ঞাপক । আবার 
81050101101 এর মধ্যে 95010915 ক্রিয়া লুকান আছে। 
স্থতরাঁং এ অর্থে বাংলায় “শোষণ” শব্দটি সুষ্ঠু মনে 
হয়।১ কিন্ত এছুটি শবই আমাদের আলোচ্য বাঁছুড়ের 
সম্বন্ধে প্রযুক্ত হতে পারে না, বরং রক্তলেহী কথাটাই 
বেশী যুক্তিযুক্ত ও অর্থগ্যোতক । ১৯৩২ সালে ডঃ ডান 
(7017. [90101 ) সর্বপ্রথম উল্লেখ করেন যে. ভ্যাম্পায়ার 
বাছুড় রক্ত চোষণ করে নাঁলেহন করে। পরে মিঃ 
ডিটমার (1010079) কতকগুলো ভ্যাম্পায়ার বাদুড় 
সংগ্রহ করে তাদের রক্তপাঁন-প্রণালী পর্যবেক্ষণ করে ডঃ 
ডানের মত প্রমাণিত করেন। 

অমূলক ঘটনার উপর নির্ভর ক'রে অনেক সময় 
প্রকৃতিবিৎ (1908:81150) বহু তথ্য লিপিবদ্ধ করে যাঁন 
এবং পরে সেগুলি পুস্তকের মধ্য দিয়ে প্রচারিত হয় দেশে 
দেশে । কাল্পনিক কাহিনীকে সত্যের আসনে বসিয়ে 
আমরা কি যে তৃপ্তি লাভ করি বলতে পারি না। এইভাবে 
বিজ্ঞান কাল্পনিক তথ্যে ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে । বস্তত 
বিজ্ঞানের জনই ভুলের মধ্যে_তুলব্রান্তির শীতল ছায়ায় 
বিজ্ঞান ধীরে ধীরে বর্ধিত হয়। কিন্তু বৈজ্ঞানিকগণের 
আজন্মের সাধনা__এই ভুলের শ্তুপীকৃত জঞ্জাল থেকে আসল 
সত্যের সন্ধান করা; কারণ বিজ্ঞানের আভিজাত্য সত্যের 
বিশুদ্ধতাঁয়। ফলে প্রকৃত সত্য বখন আবিষ্কৃত হয় তখন 
এতদিনের প্রচারিত স্প্রতিষঠিত মতোর মূলে লাগে নির্ম 
আঘাত- প্ররূত সত্যকেই তখন সত্য বলে মেনে নিতে 
কেমন যেন দ্বিধাবোধ হয় । 

অনেক প্রাণীর বিজ্ঞানসম্মত নামের সঙ্গে এমন দুরপনেয় 
কলঙ্কের ছাপ অক্কিত হ'য়ে গেছে__বা আর সহজে বিলুপ্ত 
হবার নয়। প্ররুতিবিদদের হাতে এই সব বাছুড় কি ভাবে 
নির্যাতিত হয়েছে তার একটু মনোরম ইতিহাস আছে । 
ভ্যাম্পায়ার বাছুড়ের প্রথম বিজ্ঞানসম্মত নাম দেওয়া হয় 

১। গ্রীজ্ঞানেন্্রলাল তাদুড়ী, প্র ণী-বিজ্ঞানের পরিভাষা, পৃঃ ১-৩ 


(১৩৪৩ )। 





ভ্াান্র ভব 


[ ২৮শবর্ব_ ২য় খও--ংয় সংখ্যা 





১৭৬৬ খুঃ অবে। প্রাণীর নামকরণের ধর্মপিতা সুইডিশ 
গ্রকৃতিবিৎ লিনীয়াস [[510179605--ইহাই কার্ল ফন্‌ 
বিনের (0০21 01) [11176 ) ল্যাটিন নাম ] আমেরিকার 
এক প্রকার বর্শা'নাসিকা (59291709920 ) বাছুড়ের নাম 





রক্তশোধক বাছুড়ের মস্তক 


দেন ত্যাম্পাইরাস স্পেক্টীম (:7/2177717%5 5/7%7% ) | 
প্রকৃতপক্ষে তখনকার দিনে আমেরিকাঁবাসীদের ধারণ! ছিল 
--এরাই প্রাণীর রক্তপান ক'রে জীবনধারণ করে। এই 
জনপ্রবাদের উপর ভিত্তি করেই যে পূর্বোক্ত নামকরণ করা 
হয়েছিল সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। 

একটি বিশিষ্ট গণ (2670১ ) ও জাতি (5[১৫০16৭ ) 
হিসেবে প্ররুত রন্তুলেহী বাদুড় আবিষ্কৃত হয় আরও ঢের 
পরে। তখন কিন্তু এদের রক্তপ্রিয়তাঁর কথ! কিছুই জানা 
যাঁয়নি। প্রিন্স, ম্যাক্সিমিলিয়ান (1711700 [75017111197 ) 
এই বাছুড়ের বিজ্ঞানসম্মত নাম দেন ডেসমোডাঁস্‌ রোটান্ডাঁস্‌ 
(2025%%925 ৮9%%%%5 ) | পরে মিঃ ওয়াটারহাউস 
(11. ৬/৪5:170856) এদের প্রকৃত ভ্যাম্পায়ার বাছুড় বলে 
সনাক্ত করেন। .সেই থেকে ডেসমোডাস রক্তলেহী অর্থাৎ 
একজাতীয় প্রকৃত ভ্যাম্পায়ার বাছুড় বলে প্রতিষ্টিত হয়। 
এদের সম্মুখ দন্ত বর্শাফলকের মত এবং ক্ষুরধার তীক্ষ। এই 
রকম দত্তবিশিষ্ট আর এক জাতীয় বাছুড় আছে, তাদের নাম 
দেওয়া হয় ডেস্মোডাস্‌ মিউরিনাস্‌ (7765%127%5 
পরে আরও ছুটি বিভিন্ন গণান্ততৃক্ত 
এইন্প দস্তবিশিষ্ট বাছড় আবিষ্কৃত হয়েছে__এদের বিজ্ঞান- 
সম্মত নাম ভিফাইলা সেপ্ট্শলিল্‌ (177/%7116 ০5%৮৫//5 ) 
এবং ভাইমাস্‌ ইউস্কি (77127%:%5 9০%%/)। এরা 
সকলেই প্রকৃত ভ্যাম্পায়ার বাছুড়। শেষোক্ত বাছুড়ের 


7%/72825 ) | 


মাঘ--১৩৪৭ ] 


ভ্যাম্পামাল বাছিড় ন্বা ব্রশ্তজল্লেহী আাছড় 


বি 





জীবনযাঁপনপ্রণাঁলী এ পর্ষস্ত পুঙ্থানুপুত্খরূপে অনুসন্ধান করা 
হয়নি বটে, তবে তাদের সম্মুখ দস্তের তীক্ষতা এবং ডেস- 
মোডাসের দস্তের সমাবেশের সঙ্গে এদের দন্তেরও সাৃশ্ঠ 
দেখে অনুমান করা হয়েছে যে, এরা রক্তলেহী বাছুড়ের 
অতি-নিকট আত্মীয়। 

এদিকে ভ্যাম্পাইরাঁস স্পেক্টামকে নিয়ে আবার গণ্ড- 
গোলের স্থত্রপাঁত হর । মিঃ বেট (111. 7330) এদের আচরণ 
সম্বন্ধে জানান যে, এর! ফলাশী এবং অতিনিরীহ গোবেচারী | 
এমন কি মিঃ ডিটমারও এইরূপ ধারণা পোষণ করতেন। 

কিন্ত টিনিদাদের ([1171050 ) প্রফেসর উরিক 
(00110) এমন কতকগুলো প্রমাণ সংগ্রহ করেন- যা 
থেকে তিনি নিঃসন্দেহে বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়েছিলেন যে 
ভ্যাম্পাইরাস স্পেক্টীম ফলাণী ত নয়ই, বরং এদের বেশ 
নিষ্ঠুর প্রকৃতির বাছুড় বলা চলতে পারে। প্রফেসর এদের 
প্রকৃত আচরণ সম্বন্ধে তথ্য জানবার জন্য এক জোড়া এ 
বাদুড় সংগ্রহ করে আনেন ৷ এদের খাঁচায় বন্দী করে রেখে 
প্রথমে ফলমূল থেতে দেওয়া হল। কিন্তু তারা সে-সব 
স্পর্শই করলে না। তখন তিনি তাদের আহারের জন্য 
কয়েকটি ইঁছুর ও পাখী খাঁচায় পুরে দেন। এইবার তাঁদের 
আসল মৃতি বেরিয়ে পড়ে। এরা যে কতদৃর ঠিংস্্র ও মাংস- 
লোলুপ তিনি তার হাতে হাতে প্রমাণ পেয়ে যান। অবশ্য 
তাঁর এই পর্মবেক্ষণ কোথাও তিনি লিপিবদ্ধ করেন নি। 
আমরা একথা মিঃ ডিটমারের এক প্রবন্ধ ভ'তে জাঁনতে 
পারি। 

এরপর মিঃ ডিটমারের সঙ্গে প্রফেসর উরিকের দেখা 
হয় এবং আলোঁচনা-প্রসঙ্গে ভ্যম্পাইরাস ম্পেইণমের কথা 
ওঠে। মিঃ ডিটমার ১৯৩৫ সালের প্রবন্ধে ভ্যাম্পাইরাস 
স্পেক্ট1মকে ফলাণী বাদুড় বলে উল্লেখ করেছেন। প্রফেসর 
উরিক এ বিষয়ে তার সঙ্গে একমত হ'তে পারেন নি। 
তিনি মিঃ ভিটমারকে তাঁর, পর্যবেক্ষণ ইতিহাস ও তাদের 
মাংসাশী আচরণের কথা সবিষ্তারে বর্ণনা করেন । মিঃ 
ডিটমার প্রথমে ভাবলেন, প্রফেসর সাহেব সম্ভবত ফাইলো- 
স্টোমা (42%/1/2579%% ) বাঁছুড়ের সঙ্গে ভ্যাম্পাইরাসকে 
গুলিয়ে ফেলেছেন অর্থাৎ প্রফেসর সাহেব যে বাছুড় নিয়ে 
পরীক্ষা করেছেন তারা নিশ্চয়ই ভ্যাম্পাইরাঁস নয়, 
কারণ আকারে আকৃতিতে ভ্যাম্পাইরাস ও ফাইলোস্টোম৷ 


দেখতে অনেকটা এক প্রকারের । প্রফেমর উরিক তখন 
তাকে জানান যে, তিনি যে ভ্যাম্পাইরাস বাদুড় নিয়ে 
পরীক্ষা করেছেন সে-বিষয়ে নিঃসনেহ। মিঃ ডিটমারের 
মনে সন্দেহের খোঁচা কাটার মত বি'ধে রইল। প্রকৃত 
বৈজ্ঞানিক শুধু সন্দেহের উপর নির্ভর করে থাকতে পারে 
না। মানুষ মাত্রেরই ভূল হওয়া আ্বীভাবিক. এবং দেই 
ভুলটাকেই ঞ্ুব সত্য বলে মেনে নেওয়া অবৈজ্ঞানিকের লক্ষণ । 
কাজেই প্রত্যক্ষগম্য প্রমাণ সংগ্রহের জন্য মিঃ ডিটমারকে 
বেরিয়ে পড়তে হয় ভ্যাম্পাইরাঁস স্পেক্টুণমের সন্ধানে । সঙ্গে 
নিয়ে যাঁন প্রফেসরের সহকাঁরীকে_কাঁরণ এই বাছুড়ের 
আস্তানা ও গতিবিধি তাঁর ভাল করেই জানা ছিল। 

যেসকল বৃক্ষকোটর থেকে তিনি এদের সংগ্রহ করে- 
ছিলেন সেখানে বহু ইঁদুরের লেজ ও পাখীর পালথ পড়ে 
থাকতে দেখতে পান। পরে তাঁদের বন্দী অবস্থায় হাঁলচাঁল 
পরীক্ষা করে তিনিও বলতে বাধ্য হয়েছেন বে, ভ্যাম্পাইরাঁ 
স্পেকুণম হিংম্র ও মাংসানা। এদের একট! প্রধান বৈশিষ্ট্য 
হচ্চে এই যে, এরা সব সময়ই নিজেদের স্বাতন্ধ্য বজায় রে খ 
চলে। এরা কথনও অন্ত কোন বাঁছুড়দলের সঙ্গে একত্র 
বাস করে না। অথবা এও হ'তে পারে যে অন্যের! সর্বদা 
এদের সান্নিধ্য পরিহার করে চলে। 

ভ্যাম্পাইরাম স্পেক্টম দেখতে বেশ বড়--প্রায় এক 
গজ হবে। বাজপাখীর মত এরা ছৌ মেরে শিকার ধরে। 
এদের দত বেশ তীক্ষ এবং চোয়ালের শক্তিও অসীম। 
দীতের সাহাব্যে এরা ছোটি ছোট প্রাণীর মস্তক অক্লেশে 
চর্ণকিচুর্ণ করে দিতে পারে। 

এখানে উল্লেখ অপ্রাসঙ্গিক হবে না যে, আমাদের দেশে 
মাংসাঁশী বাছুড় ছিল না বলেই জানা ছিল। কিন্তু খণ্ড খণ্ড 
পর্যবেক্ষণের ফলে জানা গিয়েছে যে অন্ততপক্ষে একজা শীয় 
বৃহদাকার বাছুড়_মেগাডারমালিরা 
1772 ) মাংসানী। ভ্যাম্পাইরাঁস বাছুড়ের বৃত্তির সঙ্গে এদের 
সাদৃশ্য দেখা যায়। শুধু ত|ই নয়; সম্প্রতি আরও জানা গেছে 
যে এরা ছোট বাদুড় অর্থাৎ যাঁদের আমর! চামচিকা বলি, 
স্থবিধা পেলে তাদের ধরেও খায়। এদের চলিত নাম 
দেওয়া হয়েছে ভারতীয় ভ্যাম্পায়ার বাছুড় (1176 [1701217 
%81000116 08) অনুসন্ধানের ফলে আন্ও কত কি 
আবিষ্কৃত হ'বে--কে জানে? 


( 12242274- 


০১২ 


স্্াস্হ 


সেষাক্‌। প্রাণীজগতে ভ্যাম্পায়ার বাছুড়ের মত অন্ত 
কোন প্রাণীর নামকরণ নিয়ে এমন বিভ্রাট ঘটেনি। 
প্রকৃত নাম হওয়! উচিত ছিল ভ্যাম্পাইরাস সে হ'ল ডেস- 
মোডাস। আর যাঁর নাম দেওয়া হ'ল ভ্যাম্পাইরাস-_প্রথমে 
জান! ছিল যে তারা রক্তপায়ী, পরে জানা গেল যে তারা 
নিরীহ প্রকৃতির ফলা বাছুড়--আরও পরে এবং আধুনিক 
অনুসন্ধানের ফলে জবান! গেল যে তার! ফলাশী ত নয়ই, বরং 
্রঙ্কর হিঅপরকৃতির মাদানী বাছড়।* 





৯ হইশ্র প্রবন্ধ লিখিতে নিয়্লিখিত ্রমাণগঞ্জী পুস্তক ও প্রবন্ধের 


সাহাধা লইয়াছি। 
ইংরেজী 
১1 4$11920) 0. 11, 825 (1939) 
| 10101207815, ১151 00716551075 ০04 ৪ 5০10111151, 
িতজ। ০77, 1934 (7776, 21010165 £ ৮2011)116” 2170 11176 
ড200015 [২68101)6275. 7010, 32-52 ৪170 191-203 ), 


ভান্পমভবশ্ 


[ ২৮শ বর্ষ-_২য় খণ্ড--২য় সংখ্যা 


ও। [0101215, [২১ [০ "ড8700115 255587009 2812 
291, 9০৫, টি. ৮. ৮০1 38 00. 2931, (1925) 

৪। [01007275 ) চি, [১০ 109116007£ 13980 1011100171020, 
7811. 70091. 9০০. টব. খু. ০1. 58 00. 213-218 (1935), 

৫1 10100815, 0২, 1,০01501708 065. 50167101515 

৬ [01170515, 2. 1০ & 01661010211, 41006 তা 7101116, 
920 209108:66, বৈ. ৯ ৬০1, 19, 0০, 63-70 (1935). 

৭. 1)6, 3, 0. & 9201017, 5 45016 0)5617৬800175 
010 1106 666116 10611)005 ০01 11)6 ৪7019 380 2990270 
টব. ৬, ৬০] 22190. 281-288 (1937 ). 
1002170. 0.,71)6 10012) % 210016 (91624007714 
170%700)। 1124, 7715. 5০০, ৬০1 37, 0. 479 


৮ | 
1774 0, )011/7. 
(7934), 

বাংল! 


াগোপালচন্দ্র ভট্টাচার্যা, 'রক্তশোষক ভ্যাম্পায়ার বাছুড়,” 
প্রবাসী, ৩৯শ ভাগ, ১ম খও, ৬ষ্ঠ সংখ্যা, পৃঃ ৮*৪-৮১* (১৩৪৬) 


ন্‌ | 


গান 
শ্রীমতী সাহানা দেবী 


নয় তো আধার নয় তো রাতি-_-দেখ ন চেয়ে দেখ না রে আয় 
আলোর পালেই বয় যে তরী তবু কেন উদাসী হায়! 

অপার ওই অনন্ত কোলে 

'আনন্দ সাগর উলে, 
দে ন! ঢেলে হৃদয় মেলে দেখবি পরাণ ভাসে সেথায়। 


আমর! আলোর শিশু চলি চির আপন হাতটি ধরে 

সমুখ দিয়ে কতই রঙে আলোর স্বপন খেলা করে। 
আঁজ আমাদের ভাসে ভালো 
চিরকালের আলোর আলো ! 

আজ সে তাঁর ওই আলোর গোঠে মোদের জীবন-ধেনু রায় । 


€টিও 65 ঠা 
«0 € 


0 টঃ 


২২ 


মাজ আমরা তারি সুরে বলব কথ! তারি ভাষায়, 
ফুটবে দূরের অচিন তারা আমাদের এই আখি তারায়। 
আজ যে নবীন লগ্ন ধ'রে 
বিছাবো প্রাণ পথের পরে ; 
আজ আমরা চলব সুধু, চলার এ পথ মেশে যেথায়। 


এলো সে আজ ধূলার জীবন ধূল! ঝেড়ে দিতে তুলে! 
এসেছি আজ সকল দিয়ে বিকাতে ওই চরণমূলে । 
এলাম কত জনম পরে 
আজ আমাদের আপন ঘরে; 


আজ আমাদের জীবন দিয়ে জালব জীবন অমর শিখায়! 





পথ বেঁধে দিল 
শ্ীশরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় 


ফেড, ইন্‌। 

কেদারিবাবুর বাড়ীর সদর । সিড়ির উপর মঞ্জু 
একাকিনী গালে হাত দিয়া বসিয়া আছে। মুখে গ্রফুললতা 
নাই; চোখের পাতা যেন একটু ফুলিয়াছে, দেখিলে সন্দেহ 
হয় লুকাইয়া কাদিয়াঁছে | 

সম্মুথে ফটকের দিকে উন্ননাঁভাবে তাকা ইয়া! মঞ্জু বসিয়া- 
ছিল। তাহার প্রকৃতি স্বভাবতই প্রফুল্প ও দৃঢ়; কিন্ত 
আজ তাহাকে কিছু বেশী রকম বিমর্ষ দেখাইতেছিল | 

চাহিয়া থাকিয়া ক্রমে তাহার চোখে সচেতনতা ফিরিয়া 
আসিল; যেন ফটক দিয়া কেহ প্রবেশ করিতেছে । সে 
চেষ্টা করিয়! মুখে একটু স্বাগত হাঁসি আনিয়া বলিল__ 

মঞ্জু ঃ আশ্থন মিহিরবাবু ! 

কবিংপ্ররুতি মিহির মঞ্জুর মুখের ভাবান্তর কিছুই দেখিতে 
পাইল না) এক গাল হাসিয়! মঞ্জুর পাশে সিঁড়ির উপর 
আসিয়া বসিল; পকেটে হাত পুরিয়া কয়েকখান৷ পোস্ট কার্ড 
আয়তনের ফটোগ্রাফ বাহির করিতে করিতে বলিল-_ 

মিহির £ কয়েকখানা ন্স্যাপ-শটু তুলেছি। 
দিকি, কার সাধ্য বলে জাপানী ছবি নয়__ 

ছবিগুলি হাতে লইয়া মঞ্জু একে একে দেখিতে লাঁগিল। 
প্রথম ছবিটি নৃত্যরত সীওতাল মিথুনের। ছবিটি উপর 
হইতে সরাইয়া নীচে রাখিয়া মঞ্জু দ্বিতীয় ছবির প্রতি দৃষ্টিপাত 
করিল। 

এটিতে রঞ্জন ও ইন্দু পাশাপাশি দড়াইয়া৷ নেপথ্যে 
সাওতাল-নৃত্য দেখিতেছে। মঞ্তু বেশ কিছুক্ষণ ছবিটার 
পানে তাঁকাইয়' রহিল, তারপর ইন্দুকে নির্দেশ করিয়া 
বলিল-_ 

মঞ্ুঃ ইনিকে? 

মিহির গল! বাড়াইয়! দেখিয়া! বলিল__ 

মিহির £ আমি চিনি না) বোধ হয় রঞ্জনবাবুর বান্ধবী-_. 

মঞ্জু তিক্ত হাঁসিল। 

মঞ্জু; রঞ্জনবাবুর অনেক বান্ধবী আছেন দেখছি__ 

ছবিটা! তলায় রাখিয়া! মঞ্চ তৃতীয় ছবি দেখিল। একটি 


দেখুন 


ছাগল দেয়ালে স্ম্ুখের ছুটি পা তুলিয়া দিয়া প্রাংগুলত্য 
লতার পানে গল! বাড়াইয়াছে। সেটি অপসারিত করিয়া 
পরবর্তী ছবির উপর দৃষ্টি পড়িতেই মঞ্জু শক্ত হইয়! উঠিল। 
মোটর বাইকে রঞ্জন ও মলিনা। দেখিতে দেখিতে মঞ্জুর 
চোখে বিদ্যুৎ স্কুরিত হইতে লাগিল ) সে দীতে দাত চাপিয়া 
বলিল-_ 

মঞ্জু: নিলঙ্জ! 

মিহির তুল বুঝিয়া বলিল__ 

মিহির £ ত্যা! হ্যা_নিলজ্জ বই-কি।- নির্লজ্জতাই 
হচ্ছে আর্টের লক্ষণ-- 

মঞ্জু: নিন্‌ আপনার আর্ট, আমি দেখতে চাই না- 

ছবিগুলি সক্রোধে ফিরাইয়া দিয়া মণ অন্যদিকে 
তাঁকাইয়া রহিল। তাহার ঠোঁট ছুটি হঠাৎ কাপিয়া 
উঠিল।__ 

এই সময় কেদারবাবু পিছনের দরজা দিয় বাহির হইয়া 
আসিলেন। হাতে লাঠি, বাহিরে যাইবার সাঁজ। মঞ্জু 
তাহার পদশব্ধ পাইয়! তাড়াতাড়ি উঠিয়া গ্লাড়াইল। মিহির 
ছবিগুলি হাতে লইয়া! বোকার মত বসিয়াছিল, সেও সেগুলি 
পকেটে পুরিতে পুরিতে দীড়াইয়া উঠিল। 

মঞ্জু : বাবা, বেরুচ্ছ নাকি? 

কেদার £ হ্যা, একবার ডাক্তারের বাঁড়িটা ঘুরে আমি। 
দাতের ব্যথাটাঁমাবাঁর যেন ধরব-ধরব করছে । 

মঞ্জুঃ তা হেঁটে যাবে কেন? দীড়াও না আমি গাড়ী 
ক'রে পৌছে দিচ্ছি 

কেদার £ হ'ঃ-_গাড়ী! আমি হেঁটেই যাব-_-এইটুকু 
তো রাস্তা 

সিড়ি দিয়া নামিতে উদ্যত হইয়! তিনি থামিলেন। 

কেদার £ তুই আজ বেড়াতে গেলি নে? 

মঞ্জু মুখ অন্ধকার করিয়! অন্য দিকে তাকাইল। তারপর 
হঠাঁৎ মিহিরের দিকে সচকিতে চাহিয়া সে চাপা উত্তেজনার 
কণ্ঠে বলিয়া উঠিল. * 


মঞ্জুঃ বেড়াতে! সারিন্রাধানিরের 


১৭৩ 


১৯৭) 


ভ্ডান্রত্ডজহ্থব 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় খণ্ড-- ২য় সংখ্যা 


হই. সস বস্_স্স্__বস_ -ব্হপ বসল স্স্স্ স্াপ _্যগাপ স্পা স্হান স্পা স্থা্ডশা স্পা স্থগিত পা স্থিচা্পা ব্চাপান্া 


একটু দাড়ান, আমি গাড়ী বের ক'রে নিয়ে আসি 
আপনিও আমার সঙ্গে বেড়াতে যাঁবেন-__ 

মঞ্জু ত্রুতপদে বাঁড়ীর ভিতর -চলিয়৷ গেল। কেদারধাবু 
বিশ্মিতভাবে কিছুক্ষণ সেইদ্দিকে তাঁকাইয়া রহিলেন, তারপর 
চিন্তিততাবে ঘাড় ছেট করিয়া সিড়ি নামিতে লাঁগিলেন। 
মিহির অবাক হইয়া বোকাটে মুখে একবার এদিক একবার 
ওদিক তাকাইতে লাগিল। 

স্ত ডিজল্ভ,। 

ফটকের সম্মুখে মোটর আসিয়া ধাঁড়াইয়াছে ; চালকের 
আসনে মঞ্তু। সে দরজা খুলিয়৷ দিয়া বলিল-_ 

মঞ্ুঃ আনুন মিহিরবাবু-_ 

মিহির বিহ্বলভাবে মঞ্্ুর পাঁশে গিয়া! বসিল। 

মঞ্জুর মুখ কঠিন সে গাড়ীতে স্টার্ট দিল। 

এমন সময় পিছনে ফট্ফট্‌ শব । পরক্ষণেই রঞ্জনের 
মোটর বাইক আপিয়া মঞ্জুর পাশে ফ্াড়াইল। রঞ্জন 
গাড়ী হইতে লাফা ইয়া নামিয়া রুদ্শ্বাসে বলিল-_ 

রঞ্জন: মঞ্জু! 

মাথা একটু নীচু করিতেই তাহার চোখে পড়িল মিহির 
মঞ্জুর পাশে বসিয়া আছে; রঞ্জন থামিয়া গেল। 

মঞ্জুর কোনও ভাবান্তর দেখা গেল না; সে উপেক্ষাভরে 
একবার রঞ্জনের দিকে তাঁকা ইয়া! গাড়ীর কলকজা নড়িয়া গাড়ী 
চাঁলাইবার উপক্রম করিল। রঞ্জন আগ্রহসংহতকণ্ঠে বলিল-_ 

রঞ্জন £ মঞ্জু, তোমার সঙ্গে একটা কথ ছিল ।-- 

নিঠুর তাচ্ছিল্যতরে মঞ্জু মুখ তুলিল। 

মণ্ুঃ আমার সঙ্গে আবার কি কথা! 

মঞ্জুর গাড়ী চলিয়া গেল। 

রঞ্জন বিস্মিত ও আহততাবে সেইদিকে তাকাহয়া গাড়াহিয়া 
রহিল। কিছুক্ষণ পরে কেদারবাবু আসিষ! তাহার পাশে 
_ প্রীড়াইলেন; রঞ্জন জানিতে পারিল না। কেদারবাবু তীক্ষ- 
চক্ষে তাহাকে নিরীক্ষণ করিলেন, যে পথে মঞ্জুর গাড়ী 
চলিয়া গিয়াছিল সেই পথে তাকাইলেন, তারপর গলার 
মধ্যে একটি হুঙ্কার ছাড়িলেন। 
কেদার ;£ হঃ-- 
রঞ্জন চমকিয়া'পাশের দিকে তাকাইল। 
কেদার £ ওরা চলে গেল? 
সুঙ্জন ২ আজে হ্যা 


গে নিজের মোটর বাইকের কাছে গিয়া আরোহণের 
উদ্যোগ করিল। কেদাঁরবাবু অত্যন্ত অভিনিবেশ সহকারে 
তাহার ভাবভঙ্গী নিরীক্ষণ করিতে লাগিলেন। 

রঞ্জন গাড়ীতে ট্টার্ট দিল । 

কেদার ঃ ওহে শোন-_ 

রঞ্জন ইঞ্জিন বন্ধ করিয়া! কেদারবাঁবুর কাছে ফিরিয়া 
আসিয়া দীড়াইল। সে যেন একটু অন্যমনস্ক । 

রঞ্জন £ আজ্ঞে? 

কেদার £ তোমার সঙ্গে একটা কথ! ছিল-_ 

রঞ্জন: আজে বলুন | 

কেদারবাবু বলিতে গিয়া থামিয়া গেলেন, একটু চিন্তা 
করিলেন । 

কেদার : আজ নয়_আজ আমি একটু ভাবতে চাই__ 

রঞ্জন; যে আজ্দে_ 

রঞ্জন ফিরিয়া! গিয়া নিজের গাড়ীর উপর বসিল। 

কেদার ঃ কাল তুমি এসো- বুঝলে ? 

রঞ্জন; আজে আচ্ছা নমস্কার-- 

রঞ্জনের গাড়ী চলিতে আরম্ভ করিল। যে দিকে মঞ্জুর 
গাড়ী গিয়াছিল সেইদিকে চলিল। 

ডিজল্ভ,। 

পার্বত্য ভূমি। রঞ্জনের মোটর বাইক ধীরে ধীরে 
চলিয়াছে; রঞ্জন সচকিতভাবে আশেপাশের ঝোপঝাড়ের 
দিকে তাকাইতে তাকাইতে চলিয়াছে। 

যে স্থানে তাহাদের গাড়ী গাড়াইত সেখানে আসিয়৷ 
দেখিল মঞ্জুর গাড়ী নাই। তারপর তাহার দৃষ্টি পড়িল, 
অদূরে একটি গাছের নীচু ডাল হইতে ছুটি ভ্কুতাপরা৷ পদ- 
পল্লব ঝুলিতেছে ।.গাছের পাতায় চরণ ছুটির হ্বত্বাধিকারিণীর 
উর্ধাঙ্গ দেখা যাইতেছে না৷ । 

রঞ্জন প ছুটি মঞ্জুর মনে করিয়! ক্রুত গাছের তলায় 
আসিয়া থমকিয়া দীড়াইয়া পড়িল। তাহার মুখের সাগ্রহ 
ভাব পরিবর্তিত হইয়া বিরক্তির আকার ধারণ করিল। 
বৃক্ষারূঢ়া তরুণী সাবলীল ভঙ্গীতে মাটিতে লাফা ইয়! পড়িয়া 
কলহাস্য করিল। 

কব্ধ হতাঁশ ভাবে তাহার দিকে চাহিয়া রঞ্জন বলিল-_ 

রঞ্জন £ সলিল! দেবী! আপনিও এসে পৌছে 
গেছেন ।- আচ্ছা? নমস্কার ! 


মাঁঘ---১৩৪৭ ] 


রঞ্জন পিছু ফিরির। চলিতে আরম্ভ করিল। কিন্তু অল্প 
দুর গিরাই পিছু ডাক শুনিয়া তাহাকে থামিতে হইল । 

সলিলা £ শুনুন _রঞ্জনবাবু ! 

সলিল! রঞ্জনের কাছে আসিয়া ধাড়াইল। 

সলিলা : এত দিন পরে দেখা; আর কোনও কথা না 
বলেই চলে যাচ্ছেন !--উ:, আপনি কি নিষ্ঠুর! 

রঞ্জন £ নিষ্ঠুর! দেখুন-মাফ করবেন। 
আমার মনটা ভাল নেই। 

সে আবার গমনোগ্যত হইল । এমন সময় পিছন হইতে 
মীরার কম্বর শোনা গেল । 

মীরা ; মন ভাল নেই! কী হয়েছে রঞ্জনবাবু? 

দৈবী আঁবি৩তাঁবের মত মীরা দেবী আনিযা উপস্থিত 
হইলেন ; কণ্ঠম্বরে উৎকণ্ঠা! মিশাইয়৷ বলিলেন__ 

মীরা ঃ শরীর ভাল নেই বুঝি? 

রঞ্জন £ (দৃঢন্বরে ) না, শরীর বেশ ভাল আছে-__ 
মন খারাপ। 

এইবার মলিন! দেবীর মধুর স্বর শোনা গেল? ভোজ- 
বাজির মত আবিভূর্তী হইয়া তিনিও এইদিকেই 
আসিতেছেন। 

মলিন! £ কেন মন খারাঁপ হল রঞ্জনবাবু? 

রঞ্জন প্রাণের আঁশ! ছাড়িয়া দিল) মলিনার আপাদ- 
মস্তক নিরীক্ষণ করিয়া প্রচ্ছন্ন গ্লেষের স্বরে বলিল-_ 

রঞ্জন £ আপনার পা তো৷ বেশ সেরে গেছে দেখছি-_ 

মলিন! কিছুমাত্র অপ্রতিভ না হুইয়া বষ্কিম কটাঁক্ষপাত 
করিয়া সহাস্তে বলিল-__ 

মলিনা £ তা সারবে না? আপনি কত যত্ব ক'রে রুমাল 
দিয়ে বেধে দিলেন ।-_জানিস ভাই, সেদিন কে এসেছিল-_ 

ইন্টুর ক্লান্ত কঠ শোনা গেল। 

ইন্দুঃ জানি-_ আমরা অনেকবার গুনেছি। 

তরণীত্রয় চমকিয়া সরিয়া 'দীড়াইতেই দেখা গেল ইন্দু 
কখন তাহাদের পিছনে আসিয়া গীড়াইয়াছে। 

রঞ্জন আকাশের দিকে চোখ তুলিয়া বোধ করি 
ভগবানের শ্রীচরণে নিজেকে সমর্পণ করিল । 

ইন্দু সহজ ভাবে বলিল-_- 

ইন্দুঃ সবাই দাড়িয়ে কেন? আসন্ন রগ্রনবাবু; 
ঘালের ওপর হন! যাঁক--- 


আজ 


শত বেত চিন 


. ১৫৬ 
.. ব্ঞজন £ বেশঃ যা বলেন। 
" সকলে উপবিষ্ট হইলেন। যুবতী-চতুইর প্রচ্ছন্নভাঁবে 
পরস্পর তাকাঁইতে লাগিলেন । 
রঞ্জন £ এবার কি করতে চান? 
মীরাঃ এবার? তাই তো 


সকলেই চিস্তিত। মলিনা উজ্জল চোখ তুলিয়! চাহিল। 

মলিনা ;: আমার মাথায় একটা আইডিয়া এসেছে ।_- 
আম্মুন, পাঁচজনে মিলে লুকোচুরি খেলা যাক- 

ইন্দুঃ ( ঠোঁট উল্টাইয়া ) লুকোচুরি । 

রঞ্জন £ লুকোচুরি 

হঠাৎ তাহার মাথায় কৃটবুদ্ধি খেলিয়া গেল। মেয়েরা 
তাহার মতামত অন্তধাবন করিবার জন্য তাহার দিকে 
চাহিতেই সে বলিল-_ 

রঞ্জন; তা মন্দ কি! আম্ুন না খেলা যাঁক। 
এখানে লুকোবার জায়গার অভাব নেই। 

রঞ্জনের মত আছে দেখিয়া সকলেই উৎসাহিত হইয়া 
উঠিল। মলিনার উত্তেজনা! সবচেয়ে বেশী। 

মলিনা ঃ বেশ। প্রথমে কে চোর হবে? 

রঞ্জন: আমি আঙুল মটকাচ্ছি। 

রঞ্জন পিছনে হাত লুকাইয়৷ আঙ,ল মট.কাইল; তারপর 
তরুণীদের সম্মুখে হাত প্রসারিত করিয়া ধরিল। তরুণীগণ 
নানাপ্রকার আশঙ্কার অভিনয় করিতে করিতে গলার 
মধ্যে চাঁপা হাসি হাসিতে হাসিতে এক একটি আঁঙল 
ধরিলেন। 

রঞ্জন বিষণ্ন স্বরে বলিল-_ 

রঞ্জন ঃ আমিই চোর হলাম । বুড়ো আঙ,ল মট্কেছিল। 

তরুণীগণ সকলেই খুশী হইয়া! উঠিয়া! দীড়াইলেন। 

মীরাঃ বেশ। আপনি তাহলে চোখ বুজে বস্ুন। 
কিন্ত বুড়ী হবে কে? 

রঞ্জন চট. করিয়া বলিল__ 

রঞ্জন ঃ এ যে আমার গাড়ীটা বুড়ী। 

মীরা £ আচ্ছা 

চারিটি যুবতী চারিদিকে চলিলেন। রঞ্জন ছুঃহাঁতে 
চোখ ঢাকিল। * , 

মলিনা ; (যাইতে যাইতে ) টু না ছিলে চোঁধ খুলবেন 


না যেন। 


সখ. 


রঞ্জন মাথা নাড়িল। তরশীগণ পা টিপিয়া টিপিয়া 
অনূষ্ঠ হইয়া! গেলেন। 

কিয়তক্ষণ পরে চারিদিক হইতে টু শষ আসিল। রঞ্জন 
চোখ হুইতে হাত সরাইয়া সন্তর্পণে চারিদিকে চাহিতে 
চাঁহিতে উঠিয়া াড়াইল। তারপর হঠাঁৎ তীরবেগে নিজের 
গাড়ী লক্ষ্য করিয়া ছুট দিল। 

তরুণীগণ কিছুই জাঁনিলেন না। রঞ্জন মোটরবাইক 
উপর চড়িয়! বসিয়া উর্ধশ্বীসে পলায়ন করিল । 

ফট্ফটু শবে আকৃষ্ট হইয়া তরুণীগণ বাহির হইয়া 
আসিয়া স্তম্ভিতবৎ দড়াইয়া রহিলেন। 

দিখ্বিদিকৃজ্ঞানশৃন্তভাবে পলাইতে পলাইতে রঞ্জন 
পাশের দিকে চোখ ফিরাইয়া হঠাৎ সবলে ব্রেক কশিল। 
এর একশত গজ দূরে অসমতল ভূমির উপর দিয়া 
বেড়াইতে বেড়াইতে মঞ্জু ও মিহির বিপরীত মুখে চলিয়াছে। 

গাড়ী ছাড়িয়া দিয়া রঞ্জন পদব্রজে তাহাদের অন্গসরণ 
করিল। ও 

মঞ্জু ও মিহির পাশীপাশি চলিয়াছে; পিছন দিক 
হইতে রঞ্জন যে দীর্ঘ পদক্ষেপে তাহাদের নিকটবর্তী হইতেছে 
তাহা তাহারা জানিতে পারে নাই। কাছাকাছি পৌছিয়া 
রঞ্জন গলা চড়াইয়া ডাকিল-_ 

প্রন: মঞ্জু! 

মঞ্জু ও মিহির থমকিয়া ফিরিয়া দ্রীড়াইল। মঞ্জুর মুখ 
অগ্রসন্ন। রঞ্জন কাছে গিয়া! পীড়াইতেই সে হঠাৎ পিছু 
ফিরিয়া আবার চলিতে আরম্ভ করিল। কয়েক পা গিয়া 
পাশের দিকে মুখ ফিরাইয়া ডাঁকিল-_ 

মঞ্জুঃ আনুন মিহিরবাবু ! 

মিহির ইতস্তত করিতেছিল ) আহ্বান গুনিয়৷ যেই পা 
বাড়াইয়াছে অমনি রঞ্জনের হস্ত কাধের উপর পড়িয়া তাহার 
গতিরোধ করিল। মিহির ভ্যাবাঁচাকা থাইয়া রঞ্জনের 
মুখের পানে তাকাইল। রঞ্জন গম্ভীরমুখে তাহার কানের 
কাছে মুখ লইয়! গিয়া বলিল-_ 

রঞ্জন; আপনি এদিকে াঁন-_- 

বলিয়। বিপরীন্ত দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করিল । 

মিহির; এদিকে? 

রঞ্জন: হ্যা, এদিকে | 





ভ্ান্তব্র 


[২৮শ বর্--২য় খণ্ড--২র সংখ্যা 





কাধের কামিজ দৃঢ়ভাবে ধরিয়া রঞ্জন মিহিরকে একটি 
অনুচ্চ টিবির উপর লইয়া গেল; দূরে অস্কুলি প্রসারিত 
করিয়া বলিল-_ 

রঞ্জন; দেখছেন? 

মিছির দেখিল-_দুরে চারিটি তরুণী একস্থানে দীড়াইয়া 
কুদ্ধ ভঙ্গীতে যে পথে রঞ্জন পলাইয়াছিল সেই দিকে 
তাকাইয়া আছেন। মিহিরের মুখ উজ্জল হইয়া উঠিল; 
সে একবার রঞ্জনের দিকে সহীস্তমুখে ঘাড় নাড়িয়া ভ্রতপদে 
টিবি হইতে নামিয়া তরুণীদের অভিমুখে চলিল। 

এইরূপে মিহিরকে বিদায় করিয়া রঞ্জন আবার মণ্তুর 
পশ্চান্ধাবন করিল। 

মঞ্জু ইতিমধ্যে খানিকদূর গিয়াছে । পিছন হইতে 
তাহার চলনভঙ্গী দেখিয়া মনে হয় সে অত্যন্ত রাগিয়াছে। 
সে একবার পিছু ফিরিয়া দেখিল, রঞ্জন আসিতেছে__ 
মিহির পলাতক । সে সক্রোধে আরও জোরে চলিতে 
লাগিল । 

পশ্চাৎ হইতে রঞ্জনের গল! আসিল-. 

রঞ্জন £ মঞ্ু! দাড়াও! 

মঞ্জু দাড়াইল না; একটা উচু চ্যাগড়ের পাশ দিয়া 
মোড় ফিরিয়া চলিতে লাগিল। 

কিছুক্ষণ পরে রঞ্জনও সেইখানে মোড় ফিরিয়া মঞ্জুর 
অনুসরণ করিল। 

ক্রমে মঞ্জু নদীর বালুর উপর গিয়া পড়িপ। অদূরে 
ছোট নদীর বুকের উপর মাঝে মাঝে পাঁথরের চাপ বসাইয়া 
পারাপারের সেতু রহিয়াছে; ইহা আমরা! পূর্বের দেখিয়াঁছি। 
মঞ্জু সেই সেতু লক্ষ্য করিয়া চলিতে লাগিল। 

পিছন হইতে রঞ্জন ডাকিল-_ 

রঞ্জন; মগ! শোনো 

কিন্তু শুনিবে কে? মধু তখন নদীর কিনারায় গিয়া 
পৌছিয়াছে। সে সেতুর প্রথম ধাপের উপর লাফাইয়া 
উঠিয়া! পিছু ফিরিয়া দেখিল-_রঞ্জন অনেকটা কাছে আসিয়া 
পড়িয়া্ছে। সে আর দ্বিধা না করিয়া দ্বিতীয় পাথরের 
উপর লাফাইয়া পড়িল। তাহার মনের অবস্থা এমন যে 
রঞ্জনের সঙ্গে কথা বলার চেয়ে নদী পার হইয়া যেখানে খুশী 
চলিয়া যাওয়াও তাহার পক্ষে বাছনীয়। 

নদীর ঠিক মাঝখানে যে পাথরটি বসানো আছে তাহা 


মাধ--১৩৪৭ 


সবচেয়ে বড়। সেটার উপর লাফাইয়া পড়িয়া মু চকিতের 
"ন্যায় পিছু ফিরিয়া দেখিল রঞ্জন নদীর কিনারায় প্রথম 
ধাপের উপর আসিয়া পড়িয়াছে। 

রঞ্জন উৎকন্তিত কণ্ঠে চেঁচাইয় বলিল-__ 

রঞ্জন £$ মঞ্ুঃ আর যেও না--জলে পড়ে যাবে-_ 

রঞ্জন তখন বাকি পাথরগুপি লঙ্ঘন করিবার উদ্যোগ 
করিতেছে । 

সেই দিকে তাঁকাইয়া থাকিয়া রঞ্জনের মুখে হঠাৎ একটা 
ুষ্ট(মির হাঁসি খেলিরা গেল। সেও নদী লঙ্ঘনে প্রবৃত্ত হইল । 

ওদিকে মঞ্ু তখন প্রায় পরপারে পৌছিয়াছে। শেষ 
ধাপে পৌছিতেই পিছন হইতে একটা ভয়ার্ত চীৎকার তাহার 


কানে আদিল; সে চমকিয়া পিছু ফিরিয়! ক্ষণকাল বিস্ফারিত 


নেত্রে চাহিয়া থাকিয়া বিছ্যুদ্বেগে ফিরিয়। চলিল। 

নদীর মাঝখানের পাথরটার ঠিক পাঁশে রঞ্জন জলে 
পড়িয়া গিয়া হাবুডুবু খাইতেছে ; তাহার অসহায় হাত পা 
আস্ফালন দেখিয়া মনে হয় সে ডুবিল বলিয়া, আর দেরী নাই। 

মগ্তর ছুটিতে ছুটিতে আসিয়া পাথরের কিনারায় হাঁটু 
গাড়িয়া বাসয়া পড়িল; হাপাইতে হাপাইতে রঞ্জনের দিকে 
হাত বাড়াইর়া দিয়া বলিল-_ 

মঞ্জুঃ এই যে-_রঞ্জনবাবু) আমার হাত ধরুন! 

রঞ্জন অনেক চেষ্টা করিয়া শেষে মগ্তুর প্রসারিত হাত- 
থাঁনা ধরিয়া ফেলিল। মঞ্জু প্রাণপণে টানিয়া তাহাকে 
পাথরের কিনারায় লইয়া আসিল। 

এখানেও গলা পর্য্যন্ত জল । মঞ্জু বলিল__ 

মঞ্তু এবার উঠে আস্থন__ 

রঞ্জন মুখের জল কুলকুচা করিয়! ফেলিয়া দিয়া বলিল__ 

রঞ্জন £ আগে বল আমার কথা শুনবে। 

মঞ্্ুর মুখ অমনি শক্ত হইয়া উঠিল, চোখের দৃষ্টি অগ্রসর 
হইল। বঞ্জন তাহা দেখিয়া বলিল-_ 

রঞ্জন £ শুনবে না? বেশ-তবে 

মঞ্জুর হাত ছাড়িয়া দিয়া সে আবার ডুবিবার উপক্রম 
করিল। তাহার মাথ! জলের তলায় অনৃষ্ঠ হইয়া গেল; 
একটা হাঁত যেন শুন্যে কিছু ধরিবার চেষ্টা করিয়৷ মন্তকের 
অন্বর্তী লইল। ভয় পাইয়া মঞ্চু চীৎকার করিয়া উঠিল_- 

মু ঃ ও রঞ্রনবাবু! 

রঞ্জনের মাথা আবার জাগিয়! উঠিল। 

২৩ 


সখ শে চিজ 


উপ 


রঞ্জন £ বল কথা শুনবে ?--শুমবে না? তবে 
. রঞ্জন আবার ডুবিতে উদ্যত হইল। 
মঞ্ু: শুনবো শুনবেো-_-অৰ্পনি আগে উঠে আনুন । 
মঞ্জু হাত বাড়াইয়া দিল) রঞ্জন হাঁত ধরিয়া পাথরের 
উপর উঠিয়া ধাড়াইল। 
গত কয়েক মিনিটের ব্যাপারে মঞ্জুর দেহের সমস্ত শক্তি 
যেন ফুরাইয়! গিয়াছিল ; সে পাথরের উপর বসিয়া পড়িল। 
রঞ্জনও সিক্ত বন্্রীর্দি সমেত তাহার পাশে বসিয়া পড়িয়া 
'একটা দীর্ঘনিশ্বাস মোচন করিয়। বলিল_- 
রঞ্জন; উ:! কীগভীরজল! 
শঞ্কিতমুখে মঞ্ু বলিল-_- 
মঞ্জুঃ কত জল? 
রঞ্জনের অধর কোণে একটি ক্ষণিক হাসি দেখ দিয়াই 
মিলাইয়া গেল ; সে গম্ভীর মুখে যেন হিসাব করিতে করিতে 
বলিল-__ 
রঞ্জন ঃ তা-প্রায়_ আমার কোমর পর্য্স্ত হবে! 
মঞ্জুর অধরোষ্ঠি খুলিয়া গেল; সে চক্ষু বিন্ফারিত করিয়! 
চাহিল। এতক্ষশে ব্যাপারটা বুঝিতে পারিয়া পুরুষ জাতির 
হীন প্রবঞ্চনায় অতিশয় রুদ্ধ হইয়া সে রঞ্জনের দিকে সম্পূর্ণ 
পিছন ফিরিয়৷ বসিল। 
রঞ্জন ঃ পিছু ফিরলে চলবে না; কথ! দিয়েছ, আমার 
কথা শুনতে হবে। 
ছুলজ্ব্য গান্তীর্য্ের সহিত মঞ্চু বলিল-- 
মঞ্জু ঃ কি বলবেন বলুন-__-আমি শুনতে পাচ্ছি। 
রঞ্জন তখন উঠিয়া মঞ্জুর পিছনে নতজান্ হইয়া বদিল) 
গল! পরিষ্ষার করিয়া যোৌড় হস্তে বলিল-_ 
রঞ্জন ঃ আপনার কাছে অধমের একটি আঙ্জি আছে-_ 
মঞ্জু আবার ঘাড় ফিরাইয়া দেখিল ) রঞ্জনের হাশ্যকর 
ভঙ্গিমা দেখিয়! হাঁসি পাইলেও সে মুখ গম্ভীর করিয়। রহিল। 
রঞ্জন দীনতা সহকারে বলিল-_ 
রঞ্জন ঃ আমার বিনীত আঙ্জি এই যে, আমি বড় বিপদে 
পড়েছি, আপনি দয়া করে আমাকে উদ্ধার করুন-_ 
মঞ্জু নিরুৎসুক স্বরে বলিল-_ 
মণ্তু: কি বিপদ? 
মর্শীস্তিক মুখ-ভঙ্গী করিয়া রঞ্জন আকাশেরপানে ডাঁকাইল। 
রঞ্জন: কিবিপদ! এমন বিপদ আজ পর্যস্ত মাঁচ্ষের 


বশ 


হয়নি ।--একটি নয় ছুটি নয়, চার চারটি তরুণী আমাকে 
তাড়া ক'রে নিয়ে বেড়াচ্ছে__আনাঁচে কানাচে ওৎ পেতে 
বসে আছে, সুবিধে পেলেই আমা ঘাড়ে লাফিয়ে পড়বে।-_ 


মেঘনাদবধ পড়েছ তো-- 
_-রক্তচন্ু ইর্যযক্ষ যেমতি 
কড়মড়ি ভীম দস্ত পড়ে লন্ষ দিয়া 
বৃষ স্বন্ধে 


শুনিতে শুনিতে মঞ্তুর মুখের মেঘ একেবারে কাটিয়া 
গিয়াছিল : অধরপ্রান্তে হাঁসি উছলিয়া উঠিতেছিল। তবু 





সে মুখ ফিরাইয়া বসিয়! বিভ্রপের ভঙ্গীতে বলিল__ 
মণ্ডুঃ এই বিপদ! 
রঞ্জন; এটা সামান্ত বিপদ হ'ল! রাত্রে দুশ্চিন্তায় 


আমার চোখে ঘুম নেই; দিনের বেলা বাঁড়ীতে থাকতে ভয় 
করে-_এখানে পালিয়ে আসি। কিন্ত তাতেই কি নিস্তার 
আছে? আজ তো চারঞ্জনে একপঙ্গে ধরেছিল-- 

মঞ্জু আর বুঝি হাসি চাপিয়া রাখিতে পারে না। চাপা 
বিকৃত স্বরে সে বলিল__ 

মঞ্ু ঃ তা আমি কি করব? 

রঞ্জন এবার তাহার উক্ত-হন্মানতঙ্গী ত্যাগ করিয়া 
বসিয়া পড়িল, সহজ মিনতির স্বরে বলিল-_ 

রঞ্জন £ মঞ্জু, কেউ যদি আমাকে উদ্ধার করতে পারে 
তোসেতুমি। সত্যি বলছিঃ তুখি যদি কিছু না কর; ওরা 
কেউ না কেউ জোর করে আমাকে বিয়ে করে ছাড়বে ! 

মঞ্জু; তা বেশ তো-_ভালই তো হবে। 

ভৎসনাপুর্ণ নেত্রে চাহিয়া রঞ্জন মঞ্জুর কাধ ধরিয়া 
তাহাকে নিজ্জের দিকে ফিরাইবার চেষ্টা করিল। মঞ্তু পুরা 
ফিরিল নাঃ আধাআধি ফিরিল। 

রঞ্জন : মঞ্জু তুমি এ কথ! বল্তে পারলে? মন থেকে? 

সঞ্জু হাসিয়া ফেলিল। 

মঞ্ুঃ তা আরকিবলব? আমিকি করতেপারি? 

রঞ্জন £ তুনি আমাকে বাচাতে পারো। 

মঞ্তু গরীব! বাকাইয়া হাসিল । 

মঞ্ুঃ কি ক'রে বাচাব? 

রঞ্জন মঞ্জুর একটা! হাত নিজের হাতের মধ্যে তুলিয়া 
লইয়! গাঁডম্বরে বলিল-_- 

রঞ্রন £* বুঝতে তো পেরেছ, তবে কেন দুষ্টমি করছ? 
সত্যি মঞ্জু বল আমাকে বিয়ে করবে ! 


ভবল্রভন্ব্থ 


1 ২৮শ বর্ষ-_-২য় খণ্ড ২য় সংখ্যা 


-্খ্্ 





মঞ্জু হাত টানিয়৷ লইবার চেষ্টা করিল। 
মঞ্ুঃ হাত ছেড়ে দাও। 
. রঞ্জন £ ছাড়ব না। আগে বল বিয়ে করবে। 

মগ্্ু ঘাড় নীচু করিয়া রহিল ; মুখ টিপিয়া বলিল-_ 

মঞ্জু; কেন? ওদের হাত থেকে উদ্ধার করবার জন্যে? 

রঞ্রন £ শুধু তাই নয়।__ 

রঞ্জন তাহাকে আর একটু কাছে টানিয়! আনিল। 

রঞ্জন £ মঞ্জু, এখনও মনের কথা স্পষ্ট করে বলতে হবে? 
বেশ বল্ছি--আমি তোমাকে ভালবাসি-ভালবাসি-_- 
ভালবাসি ।-_-এবার বল, বিয়ে করবে ? 

মঞ্জুর নত মুখ অরুণাভ হইয়া উঠিয়াছিল; সে উত্তর না 
দিয়া নথে পাথরের উপর আঁচড় কাটিতে লাগিল। 

রঞ্জন £ বল। না বললে ছাড়বো না। 

মঞ্জু এবার চোঁখ ছুটি একটু তুলিল । 

মঞ্জুঃ তুমি কিসায়েব? 

রঞ্জন কথাটা বুঝিতে পারিল না। 

রঞ্জন £ সায়েব? তার মানে? 

মগ্তডুঃ বাবাকে বলতে হবেনা? 

রঞ্জন £ (বুঝিতে পারিরা ) ও--£1! নাঃ সায়েব 
নই ।__ভীঁকেও বলবঃ আমার বাঁবাকেও বলব। কিন্থ তার 
আগে তোমার মনের কথাটা তুমি বল মঞ্তু-_ 

মঞ্ু ঃ সব কথা স্পষ্ট ক'রে বল্তে হবে? 

রঞ্জন ২ হ্যা। 

মঞ্ু হাঁসিয়া পাশের দিকে চোখ ফিরাইল; তারপর ঘাড় 
তুলিয়া সেই দিকে তাঁকাইয়া রহিল । 

রঞ্জন £ কই, বললে না? 

মঞ্জু অঙ্গুলি সঙ্কেত করিয়া বলিল-__ 

মঞ্জু; এ গাখো-- 

রঞ্জন চোখ তুলিয়া দেখিল, কিছু দূরে নর্দীর কিনারায় 
এক সারস-দম্পতি আসিয়া .বসিয়াছে। তাহারা পরস্পর 
চঞ্ট চুম্বন করিতেছে, গলায় গলা জড়াইয়া আদর করিতেছে। 

দুজনে পাশাপাশি বসিয়৷ পক্ষী-দম্পতির অন্রাগ- 
নিবেদন দেখিতে লগিল। তারপর রঞ্জন মঞ্জুর কাছে 
আরও ধেঁষিয়৷ বসিয়া এক হাত দিয়! তার স্বন্ধ ঝেষ্টন 
করিয়া লইল। 


ফেড্‌ আউট্‌। (আগামী বারে সমাপ্য ) 


স্বাধীন বৈষ্ববরাজ্য মণিপুর 


প্রীনিত্যনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় 
(২) 


যেদিন আমরা ইন্ফাল পৌছলাম সেদিন উল্টো রথ। পথে 
দু'একটা গ্রামে রথপুজা ও রথটান! দেখলাম। বাঙ্গীলার 
মত খোল-করতাল সহযোগে শোভাযাত্রার ব্যবস্থা আছে) 
কীর্তনসহ রাস্তার ওপব রথ পুজা হয়, রথের আকৃতি কিস্তৃ 
ভিন্ন রকমের । প্রধানতঃ কাঠ, বাশ ও কাপড় দিয়ে 
রথগুলি তৈরী । মহারাঁজার রথটা তার প্রাসাদের সামনে 
বিস্ৃত রাস্তায় টানা হয়। হাতীর ওপর রাজপরিবারের 
সকণে শোভাযাত্রায় যোগ দেন; প্রকাণ্ড রথ_ মোটা লঙ্বা 
রসার সঙ্গে লোহার তারের দড়ি রথে বীধা। মণিপুরীর! 
খুব উৎসবপ্রিয়, কাজেই এমন একটা উৎসবে গানবাজনা 
হৈ ঠৈ করা খুব স্বাভাবিক । ইন্ফালের সংরক্ষিত এলাকায় 
এক মাঁড়োয়ারীর ঠাকুরবাঁড়ীতে এবং মহারাঁজার এলাকায় 
প্রতি ৫।৭ মিনিট অন্তর নাটমণ্দিরে নাটমন্দিরে কীর্তনের 
আয়োজন ছিল। সাধারণতঃ একটু বেণা রাত্রে কীর্তন 
স্থুরু হয় ও রাত্রি ২টা ২॥০টা পর্য্যন্ত চলে। পুরুষেরা ও 
মেয়েরা পৃথক পৃথক দলে কীর্তন গাঁয়। একসঙ্গে গায় না। 
মেয়েদের মধ্যে কোন কোন দল মণিপুরী বেশে মণিপুরী 
ভাষায় কীর্তন গায়, আবার কোন কোন দল বাঙ্গালীর মত 
শাড়ী ব্লাউস পরে কীর্তন গায়। মণিপুরী বেশে যাঁরা গাঁয় 
তাদের নাচের মধ্যে মণিপুরী নৃত্যের নিজম্ব সংযম, ছন্দ 
এবং তাল আছে, নৃত্যের সঙ্গে সঙ্গে সকলে হাতে তালি 
দিয়ে তাল রাখে; একজন মূলগায়ক গান গায়, অন্থান্ত 
সকলে তার পুনরাবৃত্তি করে। যারা বাঙ্গালী পোষাকে 
গান গায়, "তাঁদের নৃত্যের মধ্যে আধুনিক বাঈজীর 
লাশ্যভঙ্গী বেশ সুস্পষ্ট; এর কিন্তু সুন্দর বাঙ্গীলায় চণ্ডীদাসের 
বিষ্যাপতির পদাবলী কীর্তন গায় অথচ তার একবর্পণেরও 
অর্থ বোঝে না । দুএকটী উচ্চারণ ছাড়! গ্রত্যেকটী উচ্চারণ 
ুম্পষ্ট ও যেখানে যেমন ঝেঁখিক দিয়ে বলা দরকাঁর ঠিক 
সেইমত উচ্চারণ করে। এখানে কীর্তনের আর এক মজা 
এই যে, একই আসরে বিভিন্ন দল পর পর গেয়ে যায়। 
শোতার দল একজায়গাঁয় বোসেই বিভিন্ন দলের গান শুনতে 


পাঁন। এক একটী গ্রামে একাধিক বিষুমন্দির এবং 
প্রত্যেক বিষুরমন্দিরের সঙ্গে নাটমণ্ডুপ। মালিকের 
অবস্থান্সাঁরে নাটমণ্ডপের আয়তন বা চাকচিক্যের পরিবর্তন 
ঘটে, তবে সাধারণতই নাটমগ্ুপগুলি বেশ প্রকাণ্ড । 
কতকগুলি নাঁটমণ্ডুপ বেশ সাজান দেখলাম। উৎসবের 
দিন বড় রাস্তার ওপর দিয়ে ঠ্টলে প্রতি ৫।৭ মিনিট অন্তর 
এক একটা মণ্ডপে কীর্তনের দল দেখ! যায়, ত৷ ছাড়া 
অনুরবর্তী বিভিন্ন মণ্ডপ থেকে গাঁনবাজনার আওয়াজ শোনা 
যায়। রাস্তায় দলে দলে মেয়েপুরুষ মণ্ডপ থেকে মণ্ডপাস্তরে 
চোঁলেছে। গানের অত্যন্ত কঠিন রাঁগ রাঁগিণী এদের 
অনেকেই বিশুদ্ধ শীন্্সম্মতভাবে আলাপ করে। কীর্তনের 


কটি, পু 2 1 রি 


১ টু 
2, 
ন্ব 


2 


১০ জী 

০০ 
ল্য 
ক 


ঈন:2) নল 
, দুদিতিও 
শু 


, রি 
চা « ৃ তে 





বিদ্যুৎ সরবরাহের জলপ্রপাত 


সময় অনেকেই পপেলা+ দেয়। “পেলা” দিতে আসরে 
ঢুকবার সময় প্রণাম কোরে ঢুকতে হয় এবং মূল গায়িকাদের 
হাতে “পেলাঃ দিয়ে আসর থেকে বেরুবার সময় আবার 
প্রণাম কোরতে হয়। সিকি, দুআনী এবং পয়সা পর্য্যস্ত 
দেবার প্রথা আছে। যার হাতে “গেলা” দেয় সে কিন্ত 
ফিরেও দেখে না যে কি দিল, সঙ্গে সঙ্গে সে মাঁটাতে ফেলে 
দেয় এবং গানের পর তা দলের লোক কুড়িয়ে নেয়। 
গান আরপ্তের পূর্বে মণ্ডুপের মালিক প্রত্যেক দলকে পান- 
সুপারী দিয়ে বরণ করে। যেখানে গান হয় সেখানে কিছু 


১৭৯ 


২১৮৮০. 


পাতা থাকে না; শ্রোতাদের জন্য একরকম সরু পুরু মাছুর 
অনেকগুলি পাতা থাকে । একদিন একটা আঁসরে 
আধুনিক ও প্রাচীন বিভিন্ন* রকমের প্রায় দশ বারটা 
যন্তররহযোগে পুরুষদের জয়দেবের গীতগোবিন্দের আবৃত্তি 
শুনলাম; বড় সুন্দর লাগল। এই ভাবে এখনও এখাঁনে 
অতীতের সংস্কৃতি ধর্ম্নের সঙ্গে জনসমাঁজের মাঝে বেঁচে আছে; 
লোকশিক্ষার পুরাতন ব্যবস্থা সচল রোয়েছে। একদিন 
এদের যাত্রা দেখলাম; সেও রাধাকুষ্ণের লীলাপ্রসঙ্গ 
নিয়েই । খুব সম্প্রতি “কর্ণীজ্ঞুন” 'ভীক্ষ” প্রভৃতি পৌরাণিক 
ও ছু'একখাঁনা সামাজিক বাঙ্গালা নাঁটকও এদের ভাষায় 
অনুদিত হোয়ে অভিনীত হোয়েছে। বাঙ্গালা সাহিতোর 
মারফতই এদেশের নৃতন সাহিত্য গোড়ে উঠছে । অভিনয়ে 
্ত্রীপুরুষ একসঙ্গেই অভিনয় করে। এখানে একটা সাধারণের 
রঙ্গালয় আছে । মাঝে মাঝে সেখানে অভিনয় হয়। 
এখানকার পুরুষের! ঠিক বাঙ্গালীর মত কাপড় ও পাঞ্জাবী 
বা শার্ট পরে। বাঙ্গালীর সঙ্গে পার্থক্য বোঝা যাঁয় ওদের 
উন্নত হন্থ ও ফোলা ফোলা চোখে এবং কপালের তিলকে । 
প্রায় প্রত্যেক মেয়ে পুরুষই রসকলি ও তিলক কাটে। 
মেয়েদের পোষাক কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন। সাধারণতঃ বগলের 
নীচে দিয়ে ঠিক বুকের ওপর থেকে নিজেদের হাতে বোনা 
৪ হাত লহ্বা রঙ্গীন “ফানেক” পরে, গায়ে জড়ান থাকে 
একখান! খুব পাতলা সাদা বা রঙ্গীন চাদর। চুলগুলি বেশ 
স্ববিন্তন্ত) কপালে তিলক । সাধারণতঃ এদের রং হলদেটে 
ফর্সা হু উন্নত, চোঁথ ফুলে! ফুলো, মুখ থ্যাবড়া? বেটে গড়ন) 
এদের অনেককে ফল মেঝেনের (সাঁওতাল রমণী) সঙ্গে তুলন! 
কর! যেতে পারে । তবে সকলেই যে ফসণ এমন নয়। স্কুলে- 
পড়া আধুনিক মেয়েরা গায়ে ব্লাউস ও চাদর নেয় আর 
“ফানেক” পরে কোমর থেকে পা পধ্যন্ত। এদের সাধারণ 
নিয়ম, অবিবাহিত মেয়েরা সামনের চুলগুলো সমান কোরে 
ছেঁটে কপালে ফেলে রাখে, আর বিবাহিতারা কপালের চুল 
উপ্টে পেছন দিকে বাধে। আধুনিক অবিবাহিতা মেয়েরা এই 
নিয়মও মানে না, তারা সামনের চুল দুধারে ফাঁপিয়ে 
ফুলিয়ে গুছিয়ে রাখে । আধুনিক মেয়েরা শাড়ীর ভক্ত । 
সাধারণতঃ বাঁজারে বা রান্ভাঘাটে বর্ধীয়সী এবং দরিদ্র 
কর্মী সেয়েদেরই দেখ! যায় কাঁজেই মণিপুরের সত্যকার 
সুন্দরী দেখতে হোলে গ্রামে যাওয়| প্রয়োজন । গ্রামের প্রতি 


ভ্ঞাল্রভবশ্ব 


[ ২৮শ বর্ষ_২য় খণ্ড--২য় সংখ্যা 


ঘরে তাত আছে, প্রত্যেক মেয়েই অবসর সময়ে তাত 
বোনে। যে মেয়ে তাঁত বুনতে জানে না তার বিয়ে হয় 
মা_-এমনি একটা কথা এখানে চলতি আছে। এখন 
মিলের স্থতো যথেষ্ট মাথা গলিয়েছে, তবুও চরকা একেবারে 
ওঠে নি। 

এদের বিয়ে সাধারণতঃ হুরকমের, প্রজাপতি ও গন্ধর্বব- 
মতে । মা বাঁপ দেখে পছন্দ কোরে পাঁচজন আত্মীয় স্বজনকে 
নিম্ন কোরে যাঁগষজ্ঞ কোরে যে বিয়ে দেন তা প্রজাপতি 
মতে; সাধারণতঃ বদ্ধিষু ভদ্র ঘরে প্রথম বিয়েটা এইভাবেই 
হয়। এ বিয়েতেও কিন্তু খাঁওয়৷ দাওয়ার কোন ব্যবস্থা 
নাই, শুধু পান স্থপারী দিয়েই বিদায় । দ্বিতীয় মতটা হোল 
এই যে,যদি কোন পুরুষ কোন কুমারী বা বিবাহিতা মেয়েকে 
নিয়ে পালিয়ে গিযে ধরা না পোড়ে একরাত্রি লুকিষে 
থাকতে পার তবে পরদিন সকাল থেকে গন্ধন্দ মতে 
সেএঁ নারীর স্বামী হবে। কিন্তু যদি '£ রাত্রিতে কন্তার 
আত্মীয় স্বজন তাকে খুঁজে বের কোরতে পারে তবে কন্থা- 
লাভ ত বরাতে ঘোটবেই না_উল্টে ইচ্ছামত উত্তম মধ্যম 
দিযে তার! কন্তাটা নিয়ে যাবে এবং তার ওপর জরিমানা 
দিতে হবে। তবে সাধারণতঃ কন্তার আশ্মীযস্বজন খুব 
বেণী খোঁজাখুজী করে না, কারণ একবার ফিরিয়ে নিষে 
এলেও পরদিন আবার পালাতে পারে | বর্তমানে খোৌজাটা 
একটা লৌকিক আচারে দাড়িয়ে গেছে। স্ত্বী বা কন্তা 
হারালে বাড়ীর লোকরা একবার আত্মীয়স্বজনের বাড়ী 
লাঠিসোটা নিয়ে ঘুরে খবর দিয়ে আসে এবং নেহাৎ 
আপত্তিকর সম্বন্ধ না হোলে আন্তরিক বাধা দেয় না। 
মণিপুরে হিন্দুদের মাত্র দুরকম জাত, ত্রাঙ্গণ ও ক্ষত্রিয়। 
নাগারা শৃদ্রদের-কাজ করে, আর আছে দেশী খৃষ্টান ও 
মুসলমান,তবে এদের সংখ্যা নগণ্য গত আদমস্মারী অনুযায়ী 
মণিপুরী হিন্দুদের সংখ্যা ২৫৭২৫৫ জন, খ্রীষ্টান ৯০৪০১, 
মুসলমান ২২৮৬৮ জন) । ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয়ের মেয়ে বিয়ে কোরলে 
তার ছেলে ব্রাহ্মণ হবে, তবে স্ত্রী পরিবারের মধ্যে জায়গা 
পাবে না ক্ষত্রিয় ব্রাহ্মণের মেয়ে বিয়ে কোরলে ছেলে ক্ষত্রিয় 
হবে এবং ব্রাহ্মণী ক্ষত্রিয় পরিবারে স্থান পাবে না। এখানে 
এক একজন পুরুষ সাধারণতই পাঁচ সাতটা বিয়ে করে। 
স্ত্রী এখানে দুর্বহ নয়.বরং তারাই ভারবাহী। সাধারণতঃ 
মেয়েরাই এখানে নানা গৃহশিল্প দ্বারা উপার্জন করে ও 


মাঘ-_-১৩৪৭ ] 


হলচালন! ছাড়া বাকী কৃষিকাঁজও করে, কাঁজেই এক একজন 
স্ত্রী উপার্জনের এক একটী অবলম্বন । যাঁর যত স্ত্রী তাঁর 
অর্থভাগ্য ততই স্থুপ্রসন্ন। সাধারণতঃ বয়োবৃদ্ধির সঙ্গে 
সেই এক এক স্ত্রী বাতিল হয় ও নৃতন স্ত্রী ঘরে আসে। 
ইহাই এখানকার প্রথা বোলে স্ত্রীদের মধ্যে এ নিয়ে খুব 
বেণী ঝগড়াঝাঁটি হয় না। বিবাহবিচ্ছেদ প্রথা প্রচলিত 
থাকায় এখানে বিধবা নামে কোন জিনিষ নাই, মণিপুর চির- 
সধবাঁর দেশ। স্বামীস্ত্রীর পরস্পরে মিল না হোলে উভযের যে 
কেউ অপরকে তাাগ কোরতে পারে; পাঁচজন সালিশী ডেকে 
বোঝাপড়া করে ছাড়াছাড়ি হয় । তবে স্বামী স্্ীকে ত্যাগ 
কোরলে স্বামীর পঞ্চাশ টাকা পর্য্যন্ত জরিমানা হয। টাকা 
দিয়ে বিচ্ছেদ হোলে স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে একটা নাদাবী 
লিখিয়ে নেয়, যাতে ভবিস্বৎ শ্বামীর কাছ থেকে পূর্বস্বামী 
পূর্বঅধিকারের জৌরে কোন টাকা আদায় না কোরতে 
পারে। কুমারী ও সধবা চুল বাঁধার রকমফেরে বোঝা যাঁয়, 
সধবারা সি"দুর পরে না। ত্রাঙ্গণ ও ক্ষত্রিয়দের মধ্যে 
ছুঁত্মার্গ খুব বেশা উতৎ্কট নয়, কিন্তু “মায়া” (আসামী 
ও বাঙ্গালীদিকে সাধারণতঃ বলে, বর্দিও সহজ অর্থ 
বিদেশী ) বাড়ীর ভেতর ঢুকলে ব| খাবার জিনিষ ছু'লেই 
সর্বনাশ । যদি কোন মেয়ে “মায়াংএর সঙ্গে বাস 
বা মায়াংকে বিবাহ করে, তবে সেই গ্রামের সমস্ত 
লোকের জাত যাঁবে। হিন্দুর আদর্শ মতে এখানে 
মহারাজ! সাক্ষাৎ নারা়ণের অবতার । মহারাঁজার 
পাটরাণী ছাড়া আরও অনেক রাণী আছেন। কেউ 
জাতিচ্যুত হোলে, মহারাজকে ডালি দিলে তিনি যদি 
তুষ্ট হন তাকে জাতে তুলে দিতে পারেন। বর্তমান প্রজা- 
আন্দোলনের ফলে সাধারণ প্রজার এই অন্ধ রাজভক্তির 
ব্যতিক্রম ঘটছে । 

বর্তমানে মহারাজ! শাসন করেন তাঁর নিজের মনোনীত 
একটা শাসন-পরিষদের সাহায্যে । বর্তমানে এই পরিষদের 
সদস্য সংখ্য। ৮ গন ) এর মধ্যে মহারাঁজকুমার মাসিক ৩০০২ 
এবং অন্যান্তি সদস্যরা ১৫০২ হিসাবে ভাতা পান শুনলাম । 
বর্তমান প্রজা-আন্দোলনের দাঁবী এই যে শাসন-পরিষদের 
সদস্য সংখ্যা আরও বাড়িয়ে একশত করা হোক এবং এর 
মধ্যে ৮* জন সদশ্য নির্বাচিত হুবেন। এই প্রজা- 
আন্দোলনের মূলে আছে মাড়োয়ারীদের নির্মম শোষণ। 


দ্বাশ্রীনন টষগুবল্লাভ্ক্য মপিপুল্ত 


১৮৮৬ 


কয়েকবৎসর পূর্বেও মাড়োয়ারীর! শতকরা মাসিক ৩২টাঁকা 
থেকে ৬২ সুদ নিয়েছে এখনও মাসিক ২২ টাঁকা ২।* সদ 
সাধারণ হার বোলে পরিগণিত । এখানকার চাষীকে ধানের 
মণ 1/১1%* দিয়ে নিজেরা বাইরে চালান দিয়ে প্রচুর লাভ 
কোরেছে, দেশের প্রায় সমস্ত ব্বসাই এরা হাত কোরেছে, 
তবু এরা মণিপুরীকে বেণী বেতন দেবে না ন্যায্য দাম দেবে 
না। ক্রমশঃ যখন লোকের চোখ ফুটল তখন যোগ্য নেতার 
সাহায্যে তারা প্রতিবাদ ঘোঁষণা করেছে । আন্দোলনের 
ফলে সংরক্ষিত এলাকায় প্রতিষ্ঠিত বাঁজারটা একেবারে উঠে 
গেছে । আমাদের ূ্বাগত যাত্রীরা এই বাজার সম্বন্ধে নান! 
লোভনীয় বর্ণনা কোরে গেছেন, কিন্তু হুর্ভাগ্যক্রমে এখন তা 
শ্শীনের মত পোড়ে আছে। মণিপুর স্ত্রী-প্রাধান্তের দেশ; 





নাগাপল্লীতে একজন আধুনিক| নাগা ধাত্রী 


রাজনৈতিক আন্দোলনের অগ্রদূতও এখানে নারী । এখান- 
কার যত কিছু রাজনৈতিক আন্দোলন--আজ পর্য্স্ত 
মেয়েদের নেতৃত্বে মেয়েরাই চালিয়ে এসেছে । সংরক্ষিত 
এলাকায় পুলিশে তাদের ওপর অসদ্ব্যবহার করায় তারা 
বাজারটীকে শ্মশান কোরে ইন্ষাল নদীর অপর তীরে 
মহাঁরাঁজার এলাকায় রৌদ্রবৃষ্টি মাথায় কোরে বাজার 
বসিয়েছে । ওপরে আচ্ছাদন নাই, বোজবাঁর উচ্চাসন নাই, 
আসনের শৃঙ্খল! নাই, তবু তারা রোজ বিকাল ৫টা ৬্টায় এসে 
রাস্তার ছুধারে পাঁশের মাঁঠে বাঁজার বসায়, কেনাবেচা চলে। 


০-ই 


স্থাপন 


বাজারের পূর্ববশ্ী নাই, তবে স্বাধীনতা আছে। সন্ধ্যায় 
যখন শত শত চীরকাঠ প্রদীপ শিখার মত এক একজন 
দোঁকানীর সামনে জলে, তখন দূর থেকে মনে হয় দেওয়ালীর 
উৎসব লেগেছে । রাত্রি ১১ট! ১২টা পর্য্যন্ত বাজার খোলা । 
এখানে বিক্রেতা সকলেই নারী, ক্রেতাও অধিকাংশ নারী । 
প্রকাণ্ড বড় বড় ডালা এবং থাল! এরা অবলীলাক্রমে হাত 
না দিয়ে মাথায় নিয়ে (জিনিষপত্র সহ) চলে। তরকারী- 
পত্র বেশ সন্তা, আলুর মণ %*১ অসময়ের বীধাকপি এক- 
পয়সায় একটা । ধানের মণ পাচ থেকে ছয় আনা । কিন্ত 
বিদেশী ব্যবসাঁদারদের শোষণ ও রপ্তানির ফলে ধানের দর 
দৃণ্টাকার ওপর ও চালের দর চাঁর টাকার ওপর উঠে গিয়ে- 





উত্সব বেশে নাগ! ও নাগিনী 


ছিল। তাঁর ফলে মান্দোলন স্থরু হয়_-“রপ্তানি বন্ধ কর। 
জীবনধারণের অবশ্য প্রয়োজনীয় জিনিষের দাম এমনি অসম্ভব 
বাড়ায় দেশের গরীবেরা অনাহারে রইল, ফলে আন্দোলন 
প্রাণ পেল। আন্দোলনের ফলে বর্তমানে রপ্তানি বন্ধ হোয়ে 
গিয়েছে এবং বিদেশী বণিকরা বিশেষ ক্ষতিগ্রস্ত হোঁয়েছে। 
চালের কলগুলি সবই বন্ধ দেখলাম । আন্দোলনের অগ্রদ্ুতেরা 
অনেকেই অবশ্য আজ কারাগারে আবদ্ধ। বর্তমানে এই নিয়ম 
শুনলাম যে ধানের দাম মণ পিছু ২২ বা ৩২ টাঁকাঁর বেশী 
উঠলে রপ্তানি বন্ধ হবে। বর্তমানে সাধারণতঃ রপ্তানি খুললে 
ধানেরদর দশ থেকে বার আনাঃ চালের মণ ২২ টাঁকা২।০ | 


ভ্ডান্রভন্ব্খ 


[ ২৮শ বর্ব-_২য় খণ্ড২য় সংখ্যা 


এই আন্দোলনের ফলে এখানের সিনেমা বন্ধ হোয়ে যায়, 
কারণ তার মালিক ছিল মাড়োয়ারী। বর্তমানে একজন 
'মণিপুরী সিনেম! ঘরটী ভাড়া নিয়ে চালাচ্ছেন। আলু, লঙ্কা, 
পাগড়ীর কাপড়; ধান ও চাল প্রধানতঃ মণিপুর থেকে রপ্তানি 
হয়। এখানে ব্যবসা বাণিজ্য কোরতে গেলে বৃটিশ প্রজাকে 
পলিটিক্যাল এজেণ্টের কাঁছে দরখাস্ত কোরতে হয়; তিনি 
তা মহারাজার দরবারে পাঠান । তাঁর এবং দরবারের 
মঞ্ুরী পেলে তবে বাণিজ্য করা যেতে পারে। এখানে 
১২।১৩ জন বাঙ্গালী ব্যবসাদার আছেন; এ ছাড়া স্কুলের 
শিক্ষকদের অধিকাংশই বার্গালী। পোষ্ট অফিস, থানা 
এবং পলিটিক্যাল এজেণ্টের অফিসের কর্মচারী রও অধিকাংশই 
বাঙ্গালী। বাঙ্গালীদের পাড়া এখানে “বাবুপাড়া” বোলে 
পরিচিত। এখানে বাঙ্গালীদের ছেলেমেয়েদের জন্য একটী 
বাঙ্গালী স্কুল আছে-_বয়স্কদের মিলন ক্ষেত্র ভিক্টোরিয়া ক্লাব 
আছে। এই সব প্রবাসী বাঙ্গালীদের ছেলেমেয়ের বিয়ে 
পৈতে দেওয়া এক সমস্তা। বিশেষ কোরে এদের 
বাড়ীর নববধূ বা নবাগতা আত্মীয়াদের অবস্থা কল্পনা 
কর] যেতে পারে । মাত্র ১০১২টী পরিবার, তাঁর বাইরের 
আকর্ষণ বিশেষ কিছু নাই। প্রায় পল্লীর মত শান্ত নীরব 
আবহাওয়ার মধ্যে ছোট্ট সহরের জীবন মন্থর গতিতে 
চোলেছে। বাঙ্গালীরা যেমন এখানে বাবু বোনেছে, তেমনি 
পাঞ্জাবীরা মোটরের ব্যবসা একচেটে কোরেছে, 'অন্তণন্ 
ব্যবসা মাড়োয়ারীদের করতলগত | 


ইন্ফাল থেকে ২৮ মাইল দূরে “লকটাক” হুদ এখানকার 
অন্যতম দ্রষ্টব্য । ইম্ফাল থেকে ১২।১৪ মাইল দূরে একটা 
জায়গাকে এরা অজ্ঞুনের ' বাসস্থান বোলে নির্দেশ করে। 
এখানে নাকি অনির্বাণ আগুণ জোঁলছে, এদের যাবতীয় 
শুঁভকাঁজের হোমাগ্রি সেখান থেকেই আনে। মণিপুরই 
হোল চিত্রাঙ্গদা দেশ, সেই শুত্রেই অর্জুনের সঙ্গে এখানকার 
সম্পর্ক । গুরুজনদিগকে মণিপুরীর সাগ্টাঙ্গে প্রণাম করে। 
রাস্তা ঘাটে দেখা হোলে কোমর থেকে নীচু হোয়ে মাটীতে 
দুই বা এক হাত ঠেকিয়ে প্রণাম জানায়। এখানকার 
শ্রেষ্ঠ উৎসব রাস এবং দোল। এ ছাড়া জন্মাষ্টমী, রাধাষ্টমী, 
হরি শয়ন, হরি উত্থান, বারুণী স্নান প্রভৃতি বার মাসে তের 
পার্বণ লেগেই আঁছে। প্রত্যেক উতৎসবেই কীর্তনের 
আয়োজন হয়। দৌলের সময় ইন্ফালের শ্রী ফিরে যায়। 


মাথ-১৩৪৭ | 


358 
দলে দলে স্ত্রী পুরুষ রঙ ও আবীর নিয়ে রাস্তায় উৎসব-উন্সনত 
£ হোয়ে ঘুরে বেড়ায়। যদ্দি কোন পুরুষ কোন মেয়ের মুখে 
আবীর দিয়ে দেয় তবে সেই দলে যত মেয়ে থাকবে সকলেই, 
তাঁর কাছ থেকে পয়সা! আদায় কোরবে, না দিলে গা থেকে 
চাদর, জামা; ছাতা কেড়ে নেবে। তবে সুবিধা এই যে 
এক পয়সাঃ আধ পয়সাও দেওয়া চলে। রাসোৎসব প্রায় 
৭ দিন ধোরে চলে। মণিপুরের উৎসব-জীবন দেখতে 
হোলে এই সময় আসা উচিত। বারুণীর ক্নানের সময় 
স্ীপুরুষ দল বেঁধে রাত্রি ২টা ২।০ টাঁয় বাড়ী থেকে যাত্রা 
ক'রে ৭ মাইল দুরে এক পাহাড়ের উপর নদীতে স্নান 
কোঁরবাঁর জন্তে যাঁষ। এর মধ্যে পুণ্যস্পৃহা যত থাক বা না 
থাক, উৎসবের নেশা যথেষ্ট আছে। শ্রাবণ মাসে হরিশয়ন, 
তার পর উৎসব ও সব শুভকাঁজ বন্ধ থাকে ; আবার কান্তিক 
অগ্রহায়ণ থেকে উৎসব সুরু হয়। অর্থাৎ কৃষি কাঁজের 
সময়টা উত্সব বন্ধ থাকে? আবাঁর ধাঁন ওঠার সঙ্গে সঙ্গে 


উৎসব স্তুরু হয়। হিন্দুরা মুতদেহ পোড়ায়, মুসলমানরা 
কবর দেয়। 
মহারাজার শাঁসন-ব্যবস্থার দরবার হোল উচ্চতম 


বিচারাঁলয়, তার নীচে “চেরাব” এবং তার নীচে পঞ্চায়েৎ | 
অবশ্ট দরবারের হুকুমও মহাঁরাঁজা নিজে রদ কোঁরতে 
পারেন। বৃটিশ প্রজার পক্ষে উচ্চতম বিচার-পরিষদ 
পলিটিক্যাল এজেন্ট । 

পোলো খেলার জন্মভূমি মণিপুর ৷ হিমালয়ের অন্ত:স্থলে 
অবস্থিত এই ছোট্র দেশ থেকে এই থেলা আজ সারা 
পৃথিবীতে ছড়িয়ে পৌঁড়েছে। এখনও এখানের পোলো! 
মাঠে সপ্তাহে তিন দিন পোলে! খেলা হয়। 

ইম্কালের মধ্যে দ্রষ্টব্য মহারাজার গোবিনজীর মন্দির | 
মন্দিরটা প্রাসাদের সংলগ্নঃ অবারিত দ্বার। কৌচা ঝুলিয়ে 
দেবদর্শন নিষেধ। মন্দিরের প্রহরীর অজ্ঞ দর্শকদিগকে 
নিষেধ করে। মন্দিরের চূড়াটী স্বর্মমপ্ডিত, সামনে প্রকাও 
নাটমগ্ুপ। মগ্ুপের একধারে আধুনিক ষ্টেজ। মন্দিরের 
ঠিক সামনেই দরবার-কক্ষ। প্রাসাদে সাধারণের প্রবেশ 
নিষেধ। প্রাসাদের কাছেই উচ্চ বালিকাবি্ালয়। 
ইন্কালে ছস্টী উচ্চ ইংরেজী বিষ্ালয় এবং আশে পাশে 
অনেক মধ্যইংরেজী বিদ্যালয় আছে ।, এগুলি কোলকাতা 
বিশ্ববিগ্ভালয়ের অধীন। প্রাথমিক বিষ্ভালয়গুলি মহারাজার 


আ্বান্দ্রীন চলঝ্ঞল্লাভল্য মণিপ্ুল্র 


৯৬৮২০ 


শিক্ষাবিতাঁগের অধীন। প্রায় শত বংসর পূর্বের কর্মীরা! 
আসাম, কাছাড় প্রভৃতি আক্রমণ করে, সে সময় মণিপুর- 
রাঁজ চন্ত্রকীর্তি সিং বৃটিশ গবর্ণমেপ্টকে যথেষ্ট সাহায্য করেন, 
তার ফলে উভয় রাজ্যের মধ্যে একটী সখ্য চুক্তি হয়। 
চন্দ্রকীত্তির পুত্র সুরচন্দ্রের দৌর্ববল্যের সুযোগে মণিপুরে 
ইংরেজ প্রতিপত্তি বেড়ে ওঠে । দেশের জনসাধারণ এবং 
মহারাঞজার অন্তান্তি ভাই ইংরেজের প্রতিপত্তি ভাল চোখে 
না দেখায় তাদের ষড়যন্ত্রে সুরচন্দ্রের ভাই কুলচন্দ্র সিংহাসন 
অধিকার করেন এবং স্থুরচন্ত্র সিংহাসনচ্যুত হোয়ে শিলচরে 
পালিয়ে যান। এর ফলে ইংরেজ সরকারের সঙ্গে রাজ" 





নাগ! ও নাগিনী 


ভ্রাতাদের খণ্ড যুদ্ধ হয়। কিন্তু শেষ পধ্যন্ত সুরচন্দ্রের 
কপালে আর সিহাঁসনপ্রাপ্তি ঘটে নি। বর্তমান 
মহারাজা সার চূড়াচন্দ সিং সিংহাসন লাভ করেন। এর 
সঙ্গে প্রাচীন রাজবংশের কোন সাক্ষাৎ সম্পর্ক নাই) 
শুনলাম মণিপুর রাজপরিবারের প্রাচীন প্রাসাদ বর্তমানে 
ক্যাণ্টনমেণ্টের সাঁমিল। বর্তমান প্রাসাদগুলি নবনিম্মিত। 
ইংরেজ অধিকারের পর প্রাচীন রাজবংশের সঙ্গে প্রাচীন 
প্রাসাদও নষ্ট হোয়ে গেছে। 

ইম্ফাল নদীর ধারে “মহাঁবলীর আশ্রম” আছে । এখানকার, 


১১৮৩ 


এই আশ্রমের বাগানে জীবন্ত মহাবীরের প্রাচ্য ও খুব। 


মণিপুরী ভাষায় একটা স্থানীয় সংবাদপত্র আছে। অক্ষর 
বাঙ্গালা, তবে ভাষা ভিন্ন। শিক্ষিত মণিপুরীরা বাঙ্গালা ও 
ইংরেজী জানে, বাঙ্গালার প্রাচীন সংস্কতিও কোলকাতা 
বিশ্ববিষ্ঠালয়ের কল্যাণে । মণিপুরী পুরুষদের বাইরে আসতে 
কোন ছাঁড়পত্রের প্রয়োজন হয় না-_কিন্ত নারীদের বাইরে 
যেতে দিতে স্টেটের যথেষ্ট আপত্তি আছে ; সাত দিনের বেশী 


বিদেশী মণিপুরে থাকলে ৫২ দিয়ে বিশেষ অনুমতি নিতে হয় । 
প্রত্যাবর্তনের পথে অধিকাংশ যাত্রীরই পাহাড়ী রাস্তার 
দরুণ মাথা ঘোরে ও বমি হয়। বাসের সামনের আসন- 


ভ্াল্রভন্খ 
ঠাকুর হম্থমান, বর্তমানে এর ভক্ত মাঁড়োয়ারীরাই বেশী। 


[ ২৮শ ব্ষ-_-২য় খণ্ডঁ--২য সংখ্যা 


বেরিয়ে আসে। ফেরার পথে “ঘাস পানি” নামে এক 
জায়গার আনারস খুব বিখ্যাত শুনে কিনলাম । আনারস- 
গুলো সত্যিই এত সুন্দর যে গুধু খোঁস! ছাড়িয়ে চিনি 
নূন না দিয়েও চমতকার খেতে লাগে, “চোখ প্রায় নাই 
বোল্লেই হয়। 

অল্লায়াসে ও ব্যয়ে ধারা প্রকৃতির পার্বত্য ও শ্ামল 
শোভা দেখতে চান এবং ভিন্নভাঁষাঁভাষী বিদেশের কৌতুকপ্রদ 
আবহাওয়ায় আনন্দ পেতে চান তাহাদিগকে পূর্বাঞ্চলের 
কাশ্ীর-_মণিপুর যেতে অন্গরোধ করি। তবে ভামানভিজ্ঞতাঁর 
জন্য জনসাধারণের সঙ্গে মিশতে বড় অন্থবিধা হয়, এজন্ে 


সম্ভব হোলে সামান্ত ভাষা শিখে গেলে ভ্রমণের পূর্ণ আনন্দ 


গুলিতে কম কষ্ট হয়, মাঝের বা পিছনের আসনে প্রাণ পাওয়া যায়। 
আবোল-তাবোল 
শ্রীিলীপকুমার রায় 
শ্রীমান্‌ জানপ্রকাশ ঘোষ 
কল্যাণীয়েষু ! 


সারাটা দিন তোমার রেকর্ড “আবোল-তাবোঁল” বাঁজিবে যখন 
সন্ধ্যা এল- মনে হ'ল : প্ছড়ায় ন| হয় লিখলামই বা 
ঘুরছে মনে যেসব খুশি । মান্ষ যখন মনের মতন-__ 

মনের কথা৷ ব'লে ছুটো৷ মনের বাণী শিখলামই বা! 


পয়লা নম্বর : “আবোল-তাবোল” লাগে আমার বরাবরই 
বেজায় ভালো | “কাঁর না লাগে ?”__বলবে টুকে হয়ত তুঁমি। 
কিন্তু উহ: ভুল তোমারই-_জানো না কি অনাদরই 

ওড়ায় আধি-__রসশ্যামল উঠতে যখন চায় কুস্থমি ? 


বিশেষ ক'রে আমাদের এই মন্মরাদের দেশে রে ভাই, 
মনের প্রাণের হোলিখেলায় পাঁওুরা সব তুগড নেড়ে 

বলেন নাকি : “গেল- গেল--জয়ী হ'ল প্রগল্ভরাই-_ 
পবিজ্ঞবচন আউড়ে ওদের ধ়্‌ ধয্‌ ধর্‌ টু'টি_-তেড়ে 1” 


এ কথাটা দিন যত যাঁয় ততই বুঝি ঠেকে শিখে । 

গন্তীরাত্মা বিরসতায় তাই তো আজো শিরপা তুলে 
উধাও ছুটি না মেনে হায় খানা পার দিস্বিদিকে : 
নীরসতার চেয়ে ভালে! বিষ খাওয়াও চায়ে গুলে। 


এই যে মনোভাব-_অথ, এর শুনতে কি চাও সাইকলছি ? 
মানে আহা শুনলেই বা! ব্যথা দিয়ে তুমিও যদি 

ন1 বোঝো ভাই ব্যথা--মকুল দ-য়ে যে হায় আমি মজি ! 
তাই তো! দোহাই দ্রিই_-হোয়ো! না তৃূমিও শেষে বেদরদী। 


ছেলেবেল! থেকেই আমার কেটেছে দিন গল্পে গানে 
কাব্য-হাসি-তর্ক-আলাঁপ-মজলিশের এ খোশ খেয়ালে । 
খেলাঘরেই পিতৃদেবের অষ্রহাসি বাজত কানে : 
হাটি-হাটি-পা-পা.হ/ল “হাসির গানের” তালে তালে। 


দেখতে দেখতে হ'লাম দোয়ার তাঁর সভা! আঁর গান-আসরে। 
আখর দিতাম রংদারি--সব তারই স্নেহের আকঙ্কারাতে | 
একদিকে স্থর রাঙল আলো ছায়ার মিড়ে প্রাণবাসরে : 
অশ্রমেঘে রচল হাঁসি ইন্দ্রধন্-_বূপ জাগাতে । 


তাই হ»ত ম্লান প্রায়ই এ-প্রাণ পরে যখন পড়ল চোঁথে :_- 
হাঁসির রসের গানের দোলায় হয় না উতল জনে জনে ! 
গানের মতন গাঁন গ]য় হায় কজন গভীর ব্যথায় শোকে? 
দিলদরিয়! হাসি হাসে কয়টা! বা দিল্‌ কল্বনে ? 





০ সি এ এ এপ ৩৮ শা পাস শা রা র্‌ এ 
্ চি ১. 
7 এর - টেপ ০ 
পিপিপি সপ পাপী উপ ( সপীপশিশীপি্ি এক পিস পল ৮০৭ দিউিলি লি জলি পদ পিসি দিবি রা 


মাঘ--১৩৪৭ ] 


৬রায় সুকুমার মোটের উপর পাননি তো তাই কন্কে তেমন 
হোমরাঁও চোমরাওরা! সবাই ঘনঘটা আনল হেঁকে, 

বলল : “এসব কী ফাজলামি করছে ওরা? বিছ্যে যেমন 
বুদ্ধিও তো তেম্নি হবে-_” ঢাঁক পিটোলো! বিষম রেগে। 


দবুদ্ধিমন্ত” কিন্তু তারাই-__নিজের মনে নেই তো শিখা, 
তাই দেখলেন ভগবানের নিরাকারেও দারুণ দাড়ি। 
পণ্ডিত যে! যুক্তি দিলেন : ঝরণাগুলোই মরী চিকা, 
সত্যি শুধু ধু ধূ মরু-_নেই যাঁর রস, শ্বশুরবাড়ি। 


স্বভাঁব-জামাই দুনিয়াটা হান্ন মানল না সে-পরোধ়ানা : 
তাই তো! মিলন-ফসল 'আঁজও ধুল।য় উহল ফুলে ফলে। 
কী অবাধ্য!-_-ধূগরেরা বতই বলেন : “না না না না” 
রঙিনরা গায় : “হা! হা হা হা”__হাঁসির ধুমে, জলে স্থলে ! 


ফাগুন দেখে তাঁই জললেন আগুনশমা । কেন ?-কারণ 
প্রবীণ যখন দাঁড়ি নাড়েন_নবীন করে মুখটা হাড়ি, 
আর, ওম ! যেই প্রবীণ করেন মুখটা হাঁড়ি-_নবীন বারণ 
না মেনে দেয় উড়িয়ে হেসে, বুথা করা শমন জারি । 


দেখ দেখি! বলে ওরা : “আকাশ৪ যে পড়ে গলে 
“মাটিতে মেঘ-মূঙ্ছনাতে হাওয়ার হাঁসির ছন্দ-ডাকে। 
“তুষার দিল জন্ম ঘারে সেই স্কটিকও পড়ে ঢলে 
“কালে মাটির ভালোবাসায় আলোক? সিন্ধুরাগে । 


“হাঁসির আলো৷ আছে বলেই তারই কোলে অশ্রু রাঙে, 
“তাই তে! জীবন-কীটাবনে গন্ধরাঁজের বসন্ত ছায়। 
“গতির নীলিম নৃপুরবোলেই পাঁষাঁণ কারা নিত্য ভাঙে : 
“অন্ধকারের গুমট কাটে দম্ক! হাঁওয়ার দুরন্ততাঁয়। 


“বলিসনেরে তাঁদের “জ্ঞানী” চায় না যাঁরা ফুলফোয়ারা । 
“রসিক যে নয়__নয় সে প্রেমিক, প্রেমিক যে নয় 

সে হায় শুধু 
“জ্ঞানগ্তীর আঘাটাতে খাবি খেয়েই আজো সারা! 
পছুর্তাগা হায়--থাঁকতে তরু করল বরণ মরু ধু ধু! 


২৪ 


আল্ম্রাজ-ভ্ডাকষাজ্ন 





১৯৮৮৫ 





- স্হ্চ্খ্  স্ 





খর ব্য 


“তাই তো পাগল বাজিয়ে মাঁদল ঢেউ তুলে ধায় শ্তামলতায় 
“রূপ রঙ রস গন্ধ ধ্বনির তরঙ্গিত আশীর্ববাণে | 

আধার বিমুখ হয়ই গানে : কিরণই চায় বন্যাঁধারাঁয়। 
“শিষ্ট গুহায় ফলে না ফল- লক্ষমীছাঁড়াই লক্ষ্মী সাধে” 


এম্নি যে-ছুরস্তপন! তারই রাজার রঙ্গ গুণী! 

ছড়িয়ে দিলে অর্কেস্টর ঝংকারের এঁ ফুলঝুরিতে 
নির্নলতার নর্মলীলায় বইয়ে স্থরের স্থরধুনী : 

বাচালতার ঘোড়শোয়ার আজ হ'ল পাঁখি গগন-গীতে। 


না না, এটার মানে আছে, ধেঁয়াটে নয় অর্থহারা । 
কি জানো ভাই? কথার পিঠে অর্থ চাঁপাও-_হবেই ভারি । 
ছন্দে হাঁজার হান্কা করো--করতে তাকে মাটিছাড়া 
স্থুর ছাড়া আর কেউ পারে না, তাই সুরেলা_বংশীধারী | 


ছন্দ ভাবের যদি থাঁকে ঢেউয়ের নেশা স্থরের সাথেই 

চলে শুধু অধর! এঁ বৈদেহীদের লেনাদেনা। 

কবি ফাকি দেয় খাঁচাকে-_ গুণীর সুরের সুখের ফাদেই 
তপন তার! দেয় ধরা-_তাই, সুর পারে যা কেউ পারে না। 


এই “ম্থরেরই” গুণী বলে বাসি তোমায় প্রথম ভালো 

ক্রমে তুমি দেখিয়ে দিলে তুমিও বহুরূপী ভোগে। 

তোমাঁকে তাই আদর তো ভাই করবই আজ আমরা _-আঁলে! 
জাঁললে ব'লে রকমারি রংমশালের যোগাযোগে । 


কেউ কেউ হাঁয় বলবেই : “এট! এমনই কী কাণ্ড হ'ল? 
“ননসেন্সের ছড়ায় কেবল ননসেন্সের বাছ্ি বাজে!” 

তবে সেটা বলবে তারাই বুদ্ধি যাঁদের নেহাঁৎ জোলো৷ 
5০90170 যদি হয় ১০175০এর ৩০1,০-রসিক মনেরময়ুর নাচে। 


“ওরিজিনাল” হয় প্রতিভা--মাঁপনার পথ নেয়ই কেটে : 
সুকুমারের আগ.লাতে পথ ধুন্ধুমারও তাঁই তো হারে । 
বিশেষ,“প্রাণের প্রেমিক” সাথে “গানের-গুণী” জুটলে-_.ফেটে 
পড়ে খুশির ফোয়ারা, বলে : “যে পারে সে আপনি পারে।”* 





সপ 





« জ্ঞানপ্রকাশ ৬ন্কুমার রায়ের আবোল-তাবোলের ছুটি ছড়। সুর 


দিয়ে গ্রামোফোৌনে গেয়েছেন--তাই গুনে। 


পুরাণ-পরিচয় 
প্ীকালীকিস্কর গঙ্গোপাধ্যায় 


(ক) পুরাণ কাহাকে বলে? 


পুরাণ অতীত ভারতের ইতিহাস গ্রন্থ। ইহ! যে ইতিহাস তাহ। পুরাণ 
নিজেই সাক্ষা দেয়। বায়ু পুরাণে আছে ; নৈমিষারণ্যবাদী ধষিগণ যখন 
লোমহ্ষণ-হৃতকে প্রাপ্ত হন, তখন তাহার নিকট হইতে বহুবিধ ইতিকথা 
শুনিতে ইচ্ছ| করিয়া ক্রমিক প্রশ্নমুখে সকল তন্ব অবগত হন। ভাগবতে 
আছে £ শুকদেব ধবিকে প্রাপ্ত হইয়। পরীক্ষিত মহারাজও এরূপ ক্রমিক 
বিভিন্ন প্রশ্মমুখে সমস্ত জিজ্ঞাসার অন্ত করেন। বিষুপুরাণে আছে ; 
মৈত্রেয় জিজ্ঞাহ হইয়া যে দকল ৩ুথ্া অবগত হইতে মানস করেন, ক্রম 
পরশ্ন-মুখে পরাশর খধি তাহা মৈত্রেয়কে উত্তর দিয়া বিদিত করেন। 
মতন্ত পুরাণে, কৃর্নপুরাণে, ব্রহ্মা পুরাণে "সর্বত্রই এইরূপ জিজ্ঞান্থর 
দল ক্রমিক-প্রশ্নের অবতারণ! করিয়! শুতাদদর নিকট জ্ঞাতব্য বিষয় 
অবগত হইতেন। যদিও দেশ আজ পুরাণকে আধ্যাত্মিক চর্চার আধার- 
রূপে বুঝিতেছেন, তধাপি পুরাণ সকল আলোচনা করিলে ম্পঠই প্রতীতি 
হয় যে, সেই সকল প্্রশ্নকারীর দল কেবলমাত্র আধ্যাত্মিক উন্নতির 
আশায় ব্রপ্গতত্বার্দি অবগত হইতে প্রশ্নসকল উপস্থাপন করিতেন না; 
জানিতেন, বিশ্বস্থটি ও লয়ের কথা ; জানিতেন, স্থার্টির পর হইতে তথা- 
কথিত কাল পর্য্যন্ত গণসানবের রাষ্ট্রনৈতিক, ধমনৈতিক, অর্থনৈতিক, 
সমাজনৈতিক আদির উথ্বান-পতনের কথা ; জানিতেন, দেশের প্রাকৃতিক 
বিপাঁয়াদি |". 
পুরাণ যে ইতিহাসই, তাহার প্রমাণ পুরাণ স্বয়ং আন্মলক্ষণ।কালে 

প্রকাশ করে_- 

সশ্চ প্রতিসর্গশ্চ বংশে! মন্বন্তরাণি চ। 

বংশানুচরিতং চেতি পুরাণং পঞ্চলক্ষণন্‌॥-_বায়ুপুর!ণ, ৪র্থ 
-_সর্গ অর্থাৎ বিশ্াদি সহি; প্রতিসর্গ অর্থাৎ প্রলয়াদি ; বংশে অর্থাৎ 
রাজ, খষি, অহথর, দেবত| আদির প্রথম পুরুম হইতে পর পরপুরুঘের নাম 
সারণী ; বংশানুচরিত অর্থাৎ দেই সকল জনগণের মধ্যে প্রধান প্রধান 
জনের জীবনের ছোট-বড় ইতিকথা, যাহ!কে ইতিহান 0917791/-সংবাদ 
বলে এবং মম্বন্তর অর্থাৎ মনুকাল ঘদ্দার! পূর্বোক্ত জনগণের সময়জ্ঞান 
হইতে পারে- এই সকলের সন্ধান পুরাণে পাওয়া যাইবে; যেহেতু 
পুরাণের এই পঞ্চলক্গণ। কাঙ্জেই পুরাণ যে অতীত ভারতের ইতিহাস 
তাহাতে আর দ্বি-মত থাকিতে পারে না। তথাপি যদি কেহ নিঃসন্দিগ্ধ 
হইতে না পারেন, তবে বলিতে হয় ঃ 

বশ্মাৎ পুরাহানিতীদং পুরাণং তেন তৎম্তৃতম্‌। 

নিরুক্তমন্ত যে! বেদ সর্বপাপৈঃ প্রমুচাতে 1- বাযুপুরাণ, ১ অঃ 


স্পবাস্তবিক “সর্ব পাপ হইতে পুরাণ শ্রবণে মুক্তি পাওয়া যায় কি-না, তাহ। 


লইয়া! মাথ! ঘামাইবার বিশেষ কারণ নাই ; তবে যে একটি পাপ হইতে 
মুক্তি পাওয়া যায় এবিষয়ে অন্য মত কাহারও থাকিতে পারে না, মনে 
হয়। অজ্ঞানতাও পাঁপ। 


(খ) পুরাণের এতিহাসিকত 

অনেকে মনে করেন-_ভারতের প্রাচীন ইতিহান জানিবার উপায় 
নাই, পুরাণ ঠিক ইতিহাস নহে। তদুত্তর এই £ 

পুরাণ ইঠিহাদই। কারণ, একখ| সত্য--মাঙ্গ আমর! যাহাকে 
যেরূপে অবগত হইতেছি, শত বৎসর পূর্বে বা পরে তাহাকে তদবস্থায় 
কেহ নিশ্চয়ই জানিভাম না ব| জানিব নাঁ। কালের পার্থক্য জ্ঞান, 
বিচার বা রুচির পার্থক্য হয়। ক।ছেই বর্তমানের বিচারে আমর! যাহাকে 
চ1510] বা ইতিহাস বলিয়া বুঝি, তাহার যে ক্রম ও রীতি আমর! 
লক্ষ্য করি, অতীতে বা ভবিষ্যতে তাহা! যে ভিন্নঈপে সংঘটিত হইডে পারে 
না, তাহা জোর করি! বলা চলে না। পুরাণ যেকালে প্রচলিত হয় 
সেকালে উহ! ইতিহাসরপেই প্রচ লত হইত। সেকালে ইতিহাসের 
লক্ষণ ছিল-_ 

ধর্গার্থকামমোক্ষাপামুপদেশ সমহ্িতম্‌। 
পুরাবৃত্তকথাযুক্তং ইতিহাসং প্রচঙ্ষতে ॥-_দেবী ভাগবত 
- ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষ এই চতুর্বগাশ্রিত আলোচনা-সমমিত পুরাবৃত্তই 
ইতিহ।স। ইহাই ছিল অভীত ভারতের ইতিহান-লক্ষণাজ্ঞান। তাহার! 
বলিতেন 
ইতিহেত্যবায়ম্‌ পারম্পর্যোপদেশাভিধাযি, 
তম্যাসনম্‌ আদঃ অবস্থান মোতধিতি। 
_-বিষুপুরাণে (১1১18) ্রীধর স্বামীধূত বচন 


'ইতিহ' শব্দ অবায়, ইহার অর্থ পরম্পর-সম্ন্ধযুক্ত উপদিষ্ট কাহিনী 
এইরাপ কাহিনী যাহাতে 'আ।স' অর্থাৎ অবস্থিত, তাহা ইতিহাস। 

অতীত ভারতের ইতিহান ( পুরাণ ) ও বর্তমান ভারতের 1319101/ 
অংশ-বিশেষে একার্থ প্রতিপাদক হইলেও সম্পূর্ণত এক নহে। 
অমরকোষে লক্ষিত হয়-_'পারম্পর্যোপ:দশেশ্তদৈতিহ/মিতিহাহযায়মূ', 
ইতিহাস; পুরাবৃত্তমূ* । পরম্পরা প্রাপ্ত প্রাচীন ঘটনার বিবরণ ইতিহাস। 
এই বিবৃতিকে অবশ্য ইতিবৃত্ত বা! 10150070165] ৪০০০০) বলা যায়। 
কিন্তু কাল যাপন! বা মন্বস্তরধও্ড ইতিহাসের অপরিহার্য অঙ্গ না হওয়ায় 
ইতিহাস আধুনিক অর্থে 111500179 ব! ইতিবৃত্ত নহে। পুরণই প্রকৃত 
1115007/ বা ইতিবৃত্ত । ইতিহাস পরম্পরাপ্রাপ্ত কাহিনী। এতিহা 
বা পুরাবৃত্ত ইতিহাসের অঙ্গ । 'ইতিহ' শব উতিহা শব হইতেই 
সাধিত হইয়াছে। 


১৮৬ 


নীর্ঘ-_১৩৪৭ | 


হ্যা ব্য বহি 


এধানে লক্ষ্য করিবার বিষয় এই $ ইতি+হ+ আস, যাহ! বর্তমান 

£ সধীগণের মতে ইতিহাস শব্দে সাধ্য, তদনুলারে [15007 অর্থে ইতিহাস 

নিরুক্তি হইলেও প্রাচীন মতে ইতি+হ+ আমম্মইতিহাস নহে, ইতিহ+ 

আদ.*ইভিহাস। কাজেই প্রাচীন নির্দেশে পুরাণই ইতিহাস শবের 
প্রকৃত নিরুক্তি। 


স্্হ সত্ব 





(গ) পুরাণের পুরাণত্ব 

ছু-একশত ব| ছু-পাচ শত বৎসরের মধ্যে কিম্বা! তদুর্ঘী কোন সম-সম 
কালে যে পুরাণগুলি রচিত হয় নাই, তাহ! সত্য । হুয়তে! কখাটি কেমন 
কেমন লাগিবে। কারণ পুরাণগুলির মধ্যে যে সকল বিবৃতি আমাদের 
দৃষ্টিগোচর হয় তাহাতে এমন অনেক বিষয় বিশেষ করিয়! ম্মর্তবিধানাদি 
যাহ! লক্ষিত হয় তদনুসারে পুরাণকে প্রাচীন কোন এক যুগের বলিয়। 
প্রত্যয় করা শক্ত হয়। ইহা সত্য । তাই বলিয়! পুরাণের প্রাচীনতার 
পক্ষে ইহা! কোন বাধক নহে। 

প্রায় প্রত্যেকথানি পুরাণই বারাহ মন্বস্তরের শেষভাগে অর্থাৎ স্বয়ব 
মুর পরে ও বৈবন্বত মন্বুর আরম্তকালে রচিত হইয়াছে । পুরাণদকল 
লক্ষ্য করিলে তাহা বুৰা। যায়। 


(ঘ) পুরাণ স্থষ্টির কাল 


পুরাণ যে ঠিক কবে, কোন্‌ সময় হইতে রচিত হইতে আরম্ত হয়, 
পুরাণ লক্ষ্য করিসে তাহাও স্পট জান! যায়। প্রত্যেক পুরাণে হত- 
বাদ কালে মুনিগণের কাছে কথিত হইয়াছে-_'অতীত ছয় মন্থর কথ! 
আপনাদের বলিলাম, এক্ষণে সপ্তম মন্ুর অধিকার কাল'-_অর্থাৎ স্বায়স্তুব, 
হ্রোচিষ, গতম, তামস, রৈবত, চাক্ষুষ--এই ছয় মনুকাল গত হইয়। সপ্তম 
যে বৈবন্থতমনু--তাহার অধিকার আরম্ভ হইয়াছে। এতদ্বাযতীত পুরাণ 
সুষ্টির মূলের কথা এই £ 
বেমপুত্র পৃথুরাজ প্রকৃত প্রজাপালক রাজা ছিলেন। ইনি রলাজহুয় 
যজ্ঞ, কৃষিকম, বয়নকর্ম আদির প্রবর্তক । 


রাজহুয়।ভিষিক্তানামাস্তঃ স বহুধাধিপঃ। 
তন্ত স্তবার্থমুৎপন্্রো। নৈপুণো হত মাগধো ॥ 
_জন্গাগুপুরাণ, ৬৮1৯৬ 
এ যন্েশালে অগ্তা্য রাজচ্যবর্গের সমক্ষে তাহার শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিপ।দন মানসে 
ও তদনুরূপ প্রজাহিতকামী সকল নৃপতিই হউন--এই বাসনায় খযিগণ 
কর্তৃক উপদিষ্ট হইয়া! তাহার স্তবাদি কর্মসাধনার্থে হত ও মগধগণের সৃষ্টি 
হয়। এই সত মাগধগণ কর্তৃক গবাদি কীর্তনের মূলে যে রাজশক্তি 
সমিত মুমিগণ ছিলেন, তাহার প্রমাণ-- 
তাবৃচুমূনরঃ সর্বে শ্য়তামেষ পাধিবঃ। 
কর্সৈতদনুরাপং বাং পাত্রং স্তোত্রন্য চ।প্যয়ষ্‌ ॥ 
_ ব্রঙ্গাণ্ড পুরাণ, ৬৮১৪৩ 
মুনিগণ যখন বলিলেম--ছে হত মাগধগণ | তোমরা এই নৃপতির 
শ্বতি গাম কর, ইমি পগুষের উপযুক্ত । তখন তাহায়। বলিল? 


গু্াপ-স্ক্িলক 





০ 
ন চান কর্ণ বৈবিশ্বঃ ন তথা লক্ষণং যশ;। 
স্তোত্রং যেনান্ কুর্ধযাবো রাজন্তেজন্বিনে দ্িজ| ॥ 

স্ব্রঙ্গাগ্ড পুরাণ, ৬৮১৪৪ 


হে দ্বিজগণ ! শক্তিশালী এই রাজার স্তোত্র সম্বন্ধে আমর! ষে কিছুই 
জানি না, তবে কি বর্ণনা করিব? তাহাতে খধিগণ বলিলেন -'ভবিষ্বেঃ 
স্তয়তামিতি'__ভবিতব্য কর্ণ স্বার! স্তব কর, পরে ভবিম্বতে শিখিয়া 
গাহিবে। তাহার! গাহিল-_ 

ততস্তবান্তে হুগ্রীতঃ পৃথুঃ গাদাৎ প্রজেশ্বরঃ | 

অনুপদেশং সুতায়, মগধং মাগধায় চ ॥- বরহ্গাওড পুরাণ, ৯৮১৪৭ 


- পৃথুরাজ তাহাতে সন্ত হইয়া সেই কৃত ও মাগধগণকে যথাঞ্রমে 
অনূপদেশ ও মগধ দেশ দান করিলেন। 

পুরাণের সৃচন! বা আরম্ত এইখানেই। কাজেই পুরাণ প্রাচীন 
গ্রন্থ । পৃথুরাজ বৈবস্বত মনুর প্রারন্তে ছিলেন! 


(উড) পুরাণ প্রচলন ও সংরক্ষণ নীতি 


পৃথুরাজার যঙ্ঞশালে যে হত ও মাগধগণ সুষ্ঠ হয়, তাহার! তৎকালে 
নিজেদের কর্তব্য ধর্মকর্মও মুমিগণের নিকট বিদিত হয়। পরে, 
মাগধগণ এক একজন রাজার রাজ-সভায় স্থান পায় ও তাহার কর্তবা 
হয়--সেই রাজার বংশানুক্রমিক চরিতাদি কণ্স্থ রাখা এবং হৃতগণের 
ধর্মনিদিই হয়-_-তাহারা ভ্রমণশীল হইবে ; যখন যে রাজ্যে উপস্থিত হইবে 
- রাজার সানন্দ আতিথ্য লাভ করিবে এবং সেইকালে মাগধগণের নিকট 
হইতে রাজার বংশান্ু১রিত শিক্ষ। করিয়! ইচ্ছানুরপ স্থানে প্রস্থান করিবে। 

এখানে লক্গায করিবার বিষয় £ 

বৈদেশিক ইতিবৃত্তকারগণেরও ভারতীয় পরিপন্থীগণের মধ্যে 
অনেকেরই মনে হয়-_-অতীত ভারতে লিখন-প্রণালী প্রচলিত ছিল ন|। 
তাহাদের ধারণা- প্রাচীন শ্রীক্গণ ও মিশরীয়গণ লিখিতে জানিতেন। 
তাহাদের এই প্রকার ধারণার অনুকূলে যুক্তি এই অতীত ভারতীয়গণ 
চিরদিনই শ্রুতি ও স্মৃতি সাহায্যে আলোচা বিষয়গুলি ধারণ! করিয়া 
আদিতেছেন। কিন্তু এ অনুমান সম্পূর্ণ যুক্তিহথীন। মনুসংহিতায় 
আছে--শ্রতিস্ত বেদবিজ্ঞেয়ো, ধর্মশান্্রস্ত বৈশ্থৃতি'--বেদশ্রুতি ও ধর্মশাস্ত 
স্মৃতি নামে পরিচিত। বেদাদি শ্রুতিশান্ত্র যুক্তির উপর স্থাপিত নহে-_. 
ধ্তিহা বা 1501001) ইহার ভিত্তি। কিন্ত স্থৃতিশান্ত্র যুক্তির উপর 
প্রতিষ্ঠিত। যাহ! যুক্তির উপর গড়িয়া উঠিয়াছে তাহা লিখনপদ্ধতি 
জানা না থাকিলে অধিগত করা ছুরাহ। 

এতত্ব্যতীত আরও একটি স্পষ্ট প্রমাণ মস্তপুরাণ, ২১৫।২৬-২৫ শ্লোক, 
ঘেখানে আছেঃ 


কার্ধান্তখাবিধান্তত্র দ্বিজমূখ্যাঃ সভাসদঃ। 
সর্বদেশাক্ষয়াতিজ্ঞ; সর্বশাস্ত্রবিশায়দ: ॥ * 
লেখক; কথিত! স্লাজঃ সর্বাধিকয়ণেধু বৈ। 
শীর্ষোপেতোন হুসম্পূর্ণীন্‌ সমশ্রেলীগতাম্‌ সমান । 


সখ 


সভা 





আন্তরাণ, বৈ লিখেদ্‌ যস্তব লেখকঃ স বর; স্ৃতঃ | 
উপায় বাকাকুশলঃ সর্বশান্ত্রবিশারদ: ॥ 

ব্হবর্থব্ত1 চাল্লেন লেখকঃ স্তাস্থপোত্তম। 
পুরুষান্তরতত্বজ্ঞাঃ প্রাংশবশ্চাপ্যলোলুপাঃ ॥ 


-এখানে এই যে উত্তম লেখকের কি কি গুণ থাকা চাই বগিত 
হইয়াছে-_ইহ! কি লিধন-প্রণালী অপ্রচলিত থাকার পরিচয় দিতেছে? 
ভবিষ্তপুরাণে ২।৭ অধ্যায়ে- পুরাণ লিখনের যে বিধিনিষেধের বাবস্থা আছে, 
ইছাতেও কি অতীত ভারতীয়গণ লিখন-প্রণালী জামিতেন না বুঝিতে 
হইবে? অন্তত্র £ পুরাপগুলি, উপনিষদারি গ্রস্থসকল লক্ষ্য করিলে 
আমর! যে দেখিতে পাই, পূরাকালে অনেকেই অষ্টাদশ বিস্তাশিক্ষা 
করিহেন এবং কালে দেই সকল বিদ্তা যথা-অধিগত হইত তেমনি 'ছব', 
অনেকদিন পরেও অপরকে বলিতে পারিতেন। লিখন বা পঠন ব্যতীত 
এ যুক্তি ভিত্তিহীন ও অসম্ভব বলিয়। মনে হয়না কি? ইহ! ছাড়া 
আরও অনেক প্রমাণ আছে, প্রতিটি পুরাণের শেষভাগে লক্ষ্য করিলেই 
দেখা যার, প্র পুরাণ লিখিয়া অপরকে দান করিলে দানের পুণ্য, 
হজ্জের পুপ্য*'আদি প্রাপ্তি হয়-_ইত্যাদি প্রেরণমূলক বিধি আছে। 
কাজেই মাগধ ব| হুতগণের পূর্বনির্দিষ্ট কর্মনাধন-ব্যাপারে শ্রুতিমাত্রই 
গ্রন্থের অভাবপূর্ণ করিত--ইহা! অনুমান করা যায় মা। তাহারা 
নিশ্চয়ই গ্রন্থ সংরক্ষণ করিত। বিষ্ুপুরাণে আছে__পরাশর-ধষি 
বিষ্ুপুরাণ রচনাকালে তিনখানি গ্রস্থের আশ্রয় লইয়াছিলেন। এ 
পরন্থ-ত্য় সংহিত! নামেবিদিত ছিল, লোমহর্ণ সংহিত| তন্মধ্যে মনে 
হয় একখানি। 

বিষুপুরাণ ব্যাধ্যায় প্রধর স্বামী যে বচম উদ্ধার করিয়াছেন, তাহাতে 
দেখা যায়. 


সতাঃ পৌরাণিকা প্রোক্তা সাগধা বংশবেদিমঃ। 
বন্দিনন্বমল প্র্ঞাঃ প্রস্তাব সদৃশোক্য়ঃ 


পুরাণ সংরক্ষপ-ব্যাগারে কয়েক শ্রেণীর মনই থাকিত। বন্দিগণ 
রাজোর প্রয়োজনীয় দিক লক্ষ রাখিত ও তাহ! রাজাকে সাধন করিবার 
জন্ত অনুরোধ জানাইত। নৃপতিগণও লোকপ্রিয় হইতে যথাসম্ভব 
তাহা সাধন করিতেন। মাগধগণ পরে রাজ-চরিত্র বর্ণন! প্রসঙ্গে 
তাহা উল্লেখ করিত। এই মাগধগপই 50915 17015007120 ছিল। 
ইন্ছার! যে রাজার আশ্রয়ে থাকিত নেই রাজার পুরুষানুক্রমিক রাজ-নাম 
বা বংশাবলী, শাসন-কার্ধ, চরিত্র, দেশের ভৌগলিক সংস্থিতি ও বিশেষ 
বিশেষ জনের ( দেব, গন্ধ, যক্ষ, রঙ্গ, মুনি বা মনুস্তাির ) জীবনী 
আদি গ্রস্থাকারে লিখিয় রাখিত। পরে যথাকালে হুতগণ তাহাদের 
মিকট উপস্থিত হইলে তাহ! পাঠ করিয়া শুনাইত ;--হৃতগণও স্ব খ্ব 
গ্রন্থে সেই মকল উপাখ্যান মকল করিয়া,লইত ও পরে মুমিগণের আশ্রয়ে 
( মনুষ্গণের আশ্রয়ে) আদিয়া তাহা পড়িয়া গুনাইত। এই মুমিগণ 
তাহা আবার নকল করিয়! লইতেন। 


ভা ন্রভন্বশ্ 


[ ২৮শ বর্--২য় খণ্ড-_২য় সংখ্যা 


স্ফ্স্দ্যা্প হট ৮ সহ বমি “সহ বব 


(চ) পুরাণের তথা স্বীকৃতি 

পৌরাণিক বিবৃতি সর্বেবভাবে গ্রাহা কি-না? প্রশ্ন স্বাতাবিক। 
উত্তরও তদ্রপ সহজ; কোন বস্তই কালিক সঙ্থদ্ধে 'ছবহ' ঠিক থাকিতে 
পারে নাঁ-ইহ! যেমন সত্য পৌরাণিক বার্তা সন্বন্ধেও এ অভিধা তন্রপ 
প্রযোজ্য । পুরাণ বলিলেই যে তাহা৷ সম্পূর্ণ সত্য হইবে, এমন কথা 
কেহই স্বীকার করিতে পারেম না বা এই অনুরোধ কেহ করে না। 
তবে পুরাণের ঘটনা! প্রায়শই সত্য--ইহা! মানিতে হয়। শ্রম-প্রমাদ, 
প্রকাশকালের অদাবধানতা-হেতু সামান্য বিশেষ ক্রটি-বিচ্যুতি, বর্ণনা 
বিশেষে অনুরাগ ব! দ্বেত্যু ভাব বোধে কোথাও অধিকোক্তি বা অতিরঞ্সিত 
করা, কোথাও ব| সংক্ষেপোক্তি স্বাভাবিক । এই ধুহুর্তের শ্রুত উপাখ্যান 
পর মুহূর্তে বথাশ্রুত বল! শক্ত। ইহা! প্রথমোক্ত বক্তার সম্বন্ধে যেমন 
প্রযোজ্য, দ্বিতীয়োক্ত শ্রোতার সদ্বন্ধেও তদ্ধপ। কাজেই পুরাণের 
বার্তাসকল অবিচারে গ্রহণ বা বর্জন করা চলে না। বিচার 
করিতেই হইবে। 

পূর্বেই বলিয়াছি ঃ হুতগণ পুরাণের বক্তা । কাজেই হৃত-প্রোক্ত 
ইতিকথাই পুরাঁণের যুলভিত্বি--06€181 508106 বলিতে হয়। 
যদিও পুরাণে আছে-_ 


মধ্যমে। হোষ শৃতন্ত ধর্ম: ক্ষত্রোপবীজনম্‌। 
রখনাগাশ্বচরিতং জঘস্যঞ্চ চিকিৎসিতম্‌॥ . -বায়ুপুয়াণ 
ক্ষত্রবৃত্তি হতের মধ্ামধর্ম ; রথ, নাগ, অন্থচালন! ৷ চিকিৎসা! আদি 
তাহাদের জঘন্য ধর্ ; তথাপি-- 

্বধর্ণ এব গৃতন্ত সস্তিৃষ্টঃ পুরাতনৈ: | 

দেবভানামৃষীণাঞ্চ রাজ্ঞাং চামিততেজসাম্‌ | 

বংশানাং ধারণং কার্ধং শ্রুতানাঞ্চ মহাজুনাম্‌। 

ইতিহাস পুরাণেষুদিষ্! যে ব্রহ্মবাদিভিঃ ॥ -_বাযুপুরাণ 


আমিততেজা দেব, খধি, গম্ধর্ণ, অস্থর, নৃপাদির বংশস্রম ও বংশানুচরিত 
কীর্তন করাই তাহাদের শ্রেষ্ঠ ধর্ম বলিয়া পৌরাধিকগণ কীর্তন করেন। 
নুতগণ তাহাদের এই উত্তম ধর্ম পালন করিতে সর্বদা সচেষ্ট থাকিত। 
মাগধগণের নিকট তাহার! যাহা গুনিত, বিনা বিচারে তাহা গ্রহণ 
করিত এবং কার্যকালে "হুবহ' বলিয়। যাইত। তাহার্দের এই হব" 
বলার পক্ষে পৌরাণিক সাক্ষ্য এই ঃ 

শৃণুধাদি পুরাণেধু যেদেত্যশ্চ বথাশ্রুতম্‌। 

ব্রাহ্মণানাঞ্চ বদতাং শ্রত্বা বৈ হমাত্বনাম্‌॥ 

ঙঃ চা 


তৎ তেহহং কথরিস্তামি যথাশক্তি বধা শ্রুতি । 
বধিজ্ঞাতুং ময়া শকামৃবিমান্ত্রেণ সন্তমাঃ ॥ 


(ছ) পুরাণে শতোক্তি, শ্রুতি গ্রমা? ও প্রমাদকার 


যদিও এ্রীতিহাসিকের দুটিতে পুরাণে সাধারণত তিনগ্রকার পরমা 
লক্ষিত হয়-_-অধিকোক্তি প্রমান, অনুক্ি প্রমাদ ও তি প্রমাদ। তথাপি 


স-মত্তপুরাণ 


মাঘ--১৩৪৭ ] 





মনে হর শত প্রমাদই ইহাদের যুল কারণ এবং এই সকল প্রমাদের 
মূলে-_পুরাণ.সক্ধলনকারী ধধিগণই অধিকতর দায়ী ও হুতগণ আংশিক- 
রূপে দায়ী। 

পুরাণকে ইতিহাসরূপে দেখিলে শ্মৃত্যাদি বিচার-বিধি (পুজা, ব্রত, 
উপবাস, শ্রাদ্ধ, প্রারশ্চি্ত আদি), যেখানে সেখানে দ্েবতাবিশেষের 
(বরন্ধা, বিষু, শিব, ইন্ত্র, কালী আদি) আত্ম সাক্ষাৎকার ও অলৌকিক 
ঘটনার সন্নিবেশসাধন, নৃপতিবিশেষের চরিত্রে অপ্রয়োজনীয় ও গাল্পিক 
উপগ্ঠাস নিবেশ করা! ''আদি--অধিকোক্তি কোথাও বা বর্ণনযোগ্য স্থলে 
বক্তব্য বিষয়ের সন্নিবেশ না করিয়া, কোথাও বা পত্রাদি বংশক্রমে 
'ক্ষেপার্থে নাম ব্যক্ত না করিয়া কাহিনীর সমাপ্তি কর! আদি--অনুক্তি 
প্রমাদ এবং শ্রুতি প্রমাদ অর্থাৎ কোন একটি নৃপতিবিশেষের নাম 
কোথাও বৃহদ্রথ, বৃহ৫ুথ, বৃহদুকৃথ ইত্য।কার প্রমাদ। 

মাগধগণের নিকট হইতে হৃতগণের এবং হৃতগণের নিকট হইতে 
খযিগণের শ্রুতিমুখে পুরাণ সংকলন প্রথায় মন:নংযোগের তারতম্যে ও 
কর্নকালে পটুতার ইভরবিশেষ তারতম্যে বাঁ শ্রুত কথ| দ্রতলেখাকালে 
অসাবধনত| হেতু ভ্রম হইত । ইহা! ছাড়া ভ্রমের অপর একটি কারণ 
অনুমান করা মায়, মুদ্্রযস্ত্র গ্রচলনের পূর্বে স্বদীর্ঘকাল যে নকলকর! প্রথা 
ছিল--তাহাও । 

হৃতগণ পুরাণেয় ধরতিহাসিক অঙ্গই শুধু বর্ণনা করিতেন, কিন্তু সেই 
মকল অংশে স্মৃতি অংশ সন্নিবেঠা যে 'ধধিগণ তাহ! মিম্নোক্ত পুরাণ- 
প্রমাণে বুঝিতে বাকী থাকে না। 


ববর্ন এয শৃতন্ত নদ্ধিদৃষ্টঃ পুরাতনৈঃ। 
দেবতানামৃযীণ|ঞ্ণ রাজ্ঞাং চামিততেজসাম্‌ | 
ংশানাং ধারণং কার্ধং শ্রতানাঞ্চ মহাত্মনাম্‌। 
ইতিহাস পুরাণেষু দিষ্টা যে রন্গাবাদিভিঃ | 
ম হি বেদেমু অধিকার: কশ্চিৎ হৃতশ্ত দৃষ্ঠতে। 
_ বাযুপুরাণ 


(জ) পুরাঁণকাঁর ও ব্যাসদেব 


মমন্ত পুরাণ বেদব্যাস রচিত বল! খাকিলেও মূলত তাহা ঠিক্‌ নহে। 
তবে বতদুর অনুমান কর! যায় তাহ! এই £ বেদব্যাস পুরাণের একজন 
সংক্কারক ও অধ্যাপক ছিলেন ; লোমহর্ষণ হৃত তাহার কাছে পুরাণ 
অধ্যয়ন করে। বিষুপুরাণখানি লক্ষ্য করিলে দেখা! খায়, উহাতে বেদ- 
বাযাসের কোন অধিকার নাই বা ছিল না; উহা পরাশর খধষির 
অধিকারে ছিল। বিধুঃপুরাণের গোড়াতেই আছে ঃ 


ইতিহাস পুরাণজ্ঞং 
ধর্শশান্ত্রাদিতত্বজ্ঞং 
পরাশরং মুনিবরং 
টনের পরিপপ্রচ্ছ 


বেদবেদাঙ্গপায়গম্‌ 
বশিতনয়াতুজম্‌ ॥ 
কৃতপূর্বাহিকক্রিয়ম্‌। 
প্রশিপত্যাতি বা চ॥ 


পুল্লাপ-পল্লিজ্ 


. ৯৮ 


স্প্রে ব- _স্হা বল “ব্য” স্ট “সদ ব্া ্ 


ইতিপূর্বং বশিষ্ঠেন পুলন্তোন চ ধীমতা।। 
যহুক্তং তৎ স্মৃতিং যাতং তৃৎ প্রশ্নাদখিলং মম । 
মোহহং বদাম্যশেষং তে মৈত্রেন্ন পরিপৃচ্ছতে। 
পুরাণ সংহিতাং মম্যক্‌ তাং নিবোধ যথাযথম্‌॥ 
_পরাশর ঝযিই মৈত্রেয়কে এই পুরাণ শ্রবণ করান। পরাশর ধবি 
আবার তাহ] বশিষ্ঠ ও পুলন্ত্য ধধির নিকট শ্রবণ করিয়াছিলেন । বিষুঃ- 
পুরাণের ৬৮1৪২ ক্লেকে দেখ! যায় £ ব্রঙ্গা-ধতু-প্রিয়ব্রত-ভাওারি-্তব- 
মিত্র-দধীচ-সারম্থত-ভূগু-পুরুকুন-নর্নদ1-ধৃতরাষ্ট্র ও পুরণ-বাহুকি-বৎস-অশ্বতর 
-কম্বল-এন্সাপত্র-বেদশিরা-প্রমতি-জ্াতুকর্ণ-পরাশর-মৈত্রেয়শমীক আদি 
ক্রমিক বিধুপুরাণের সংস্কারক (54056551৮6 6016075) ছিলেন। ইহার! 
নিজ নিজ কালানুযায়ী ও কা নিক যুগসীম! পর্যন্ত তখ্গ্রন্থথানিকে 
কালিক (০০-৫০-৫৪৫০) করিয়া রাখিতে চেষ্ঠা পাইয়াছেন। বায়ুপুরাণ 
মতগ্তপুরাণ আদিও এইরাপে কালিক সংহ্কারকগণের হস্তে রাপায়িত 
হইয়াছে। যদিও পুরাণে সুতগণের বর্ণনা কেবল ইহার ইতিহাস অংশই, 
তথাপি লোক-শিক্ষা দানের হুকর।র্থে ও সুখকরার্৫থে পুরাণের কালিক 
সংস্কারকগণ তাহাতে অনেক কিছু রাপক কল্পনা, অলৌকিক উপাখ্যান 
উপন্ভান, আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা, ম্মৃত্যাচারাদি সন্নিবেশ করিয়াছেন-- 
আযুবেদ শান্তর, জ্যোতিবশা আদিও এইয়পে পুরাণে স্থান পাইয়াছে- 
মনে হয়। 
নারদীয় পুরাণ লক্ষ্য করিলে দেখা যায়ঃ পূর্বকালে শতকোটি 
্লোকাত্মক একথামি মাত্র পুরাণ ছিল। পরে এ পুরাণ হইতেই সমুদয় 
পুরাণশাস্ত্রের উৎপত্তি হয়। পুরাণাস্তরে এই মতই সমধিত হইয়াছে। 
সেখানে আছে £ মহামতি বেদব্যাস কলিযুগাগত ব্রাহ্গণগণের অল্লমেধা 
ও অল্পপ্রতিভা হইতেছে ও হুইবে দর্শন করিয়া বেদরাপ দুশ্রবেগ্ত প্রস্থ- 
খানিকে সহজ বোধের নিমিত্ত যেমন বেদকে চতুধ? ভাগ করিয়! পৈলকে 
খথ্েদ, বৈশম্পায়নকে যহূর্বেদ, জৈমিনিকে সামবেদ ও সুমস্তকে অধর্ববেদ 
অধ্যয়ন করাইয়াছিলেন__ তেমনি নৃতনতর এক হুললিত ভাষায় উপাখ্যা- 
নারির সহিত বেদার্থ হৃদয়ঙ্গম করাইতে- আখ্যান, উপাখ্যান, গার্থা ও 
কল্পশুদ্ধির সহিত একখানি চতুর্লক্ষ প্লোকাস্রক পুরাণ-সংহিতাও প্রণয়ন 
করেন এবং তাহ! লোমহরণ নামক সৃতকে শিক্ষা দেন। লোমহর্ষণ 
আবার সেই ব্যাস-কৃত পুরাণ-সংহিতাখানি-_হুমতি, অগ্মিবর্চা, মিত্র 
শাংশপায়ন, অকৃতব্রণ ও সাবপি--নামক ছয় শিষ্কে শিক্ষা দেন। 
কালে এই চতুর্নক্ষক্লোকায্মক ব্যাস-সংহিতা পুরাণখানিই অষ্টাদশ 
ংশে বিভক্ত হয় এবং ধীহার! ইহ! বিতাগ করেন তাহার। নিজ নিজ 
নাম গোপন করিয়া--ব্যাস-কৃত মূল হেতু ব্যাসের মর্যাদা রক্ষা করিয়া 
ছিলেন। 





এই সকল পুরাণের নাম-- 

১। অ্রন্মপুরাণ'* র্‌ ১০,০৯১ গ্লোকবুক্ত 
২। গল্সপুরাণ'* ক ২৫,০০৪ চু 
৩। বিষ্ুপুরাপ.** ১০ 5১5, ৪ 
৪। বায়ুপুরাণ ৯৬৪ ২৪,৩৩৬ রি 


*১ ১৯০ শালবন | ২৮শ ব্__ংয় খঙ__ংয সংখ্যা 


৫ | ভাগবত পুরাণ (দেবী ভাগবত ্রমভ্ভাগবত নহে। উহ! ১১। লিঙ্গপুরাণ : ১১,৯৯৪ 
বোপদেবকৃত, উহার প্লোক-সংখ্যা অনেক বেশী প্রায় ৮*,***) ১২। বরাহপুরাণ ২৪,৯০০ 
০০৪ ১৮,০৩৩ ্ ১৩। হ্বন্দপুরাণ ৮*, ৮১,৪৩৪ 
৬। নারদীয়পুরাণ ্হ ২৫,০০৪ রর ১৪। বামনপুরাণ ১৭ ১০,০০০ 
৭। মার্কগেয়পুরাণ ০০৯ ৯,৩৩৬ রি ১৫ কৃর্গপুরাণ রঃ ১৭১০৩৩ 
৮) অগ্নিপুরাণ *** ১৫, ৪ ১৬। মৎস্কপুরাণ ৮০০ ১৪,৯০৯ 
৯। ভবিষ্যপুরাণ *** ১৪,৯০০ ১৭। গরুড়পুরাণ ১৯,৯০৪ 
১*। ব্রহ্মবৈবত'পুরাণ ও ১৮,০০৩ ্ ১৮। ব্রঙ্গাগুপুরাণ - ১২,১০৪ 
চগ্ীদাস 
শ্রীভোলানাথ সেনগুপ্ত 
কি রসে রসিয়া না্গরে বসিয়া গাহিলে কাছর গান, শ্রীমাধব পদ সাগরে মিলিতে বাঁসনা! হইল ব'লে, 
শ্রবণেতে পশি মরমে পরশি আকুল করিল প্রাণ; জীবন-তরণী ভাসাইয়া দিলে পীরিতি-নদীর জলে ; 
অন্তরে বধু; ছিল কত মধুঃ যে বুঝে পীরিতি-রীত পীরিতি-নদীর শ্াম ছুটি তীর শ্যামল তাহার জল, 
দলেই জন জানে হৃদে বহুমানে অমর তোমার গীত। করিতে সিনাঁন, পরশন, পান অমিয়-সমাঁন ফল ) 
হে দ্বিজ চণ্ডীদাস, নাবিক চণ্ডীদাস 
শীতল জানিয়া তেই ও চরণ চরণে হইনু দাস । তীরে উতরিল। কতজনে নিল শ্টাম-নগরীর পাশ। 
গীরিতি বলিয়া তিনটি আঁখর ভুবনে আঁনিল যেই, ধিক ধনিজনে, ধিক তার ধনে, ধিক এ দগধ দেশ, 
তোমার পীরিতি রসের সায়রে আপনি ডুবিল সেই; এমন পীরিতি-ম্মিরিতি রাখিতে নাকরে ঘতন-লেশ ) 
তব হিয়া ছাঁড়ি যেতে আঁন বাড়ী পরাণ নাহি যে চায়। নিলাজ-হৃদয় সব জন হয় নিপট-কপট-প্রাণ, 
দিয়ে নুরে স্থুর মুরলী মৃদুর মধুর মধুর গায়) কিছু নাহি দিয়া নিত-নিত গিয়া করিছে অমিয় পান) 
বসিক চণ্ডীদাসে অময় চণ্তীদাস, 
মজাতে আসিয়া, মজিয়। মজিল চতুর সে পীতবাসে ! গানে তুমি রাজা; চিরদিন তাঁজা; না কর কিছুর আশ। 
তব গীতিগুণ” ম্মরি পুন পুন হরষ-সাগরে ভামি, 
সাধনার রীত জানি বিপরীত পরিচ্গ প্রেমের ফাসি ) 
অতি নুণীতল তব পদতল অমেয় রসের ঠাই, 
তারি রসফল করি সম্থল, ভাবন! কিছুই নাই! 
হে কবি চণ্ডীদাস, 


ধুর জানিয়া সঙ্গীত তব হই মরম-দাস। 





ভঙ্গ 


১২ 

মানুষের সহিত পণুর প্ররুতিগত অনেক সাদৃশ্য ত আছেই, 
অনেক সময় আকৃতিগত সাদৃশ্তও থাকে। এক একজন 
লোকের সহিত এক একটা পশুর অদ্ভুত রকম মিল, 
দেখিলেই একটা বিশেষ পণ্ডর কথা মনে পড়ে। সেদিন 
সন্ধ্যায় যে লোঁকটি হাঁওড়াঁয় একটা মুদির দোঁকানের 
সম্ুথে দীড়াইয়ছিলেন তাহাকে দেখিলেই ঘোড়ার কথা 
মনে হয়। মুখটা ঠিক ঘোঁড়ার মুখের মত-__খানিকটা যেন 
লম্বা হইয়া! সামনের দিকে আগাইয়া গিয়াছে। মাথার 
সামনের দিকে লঙ্থা লম্বা চুল, দীতগুলাও লম্বা লহ্ব! এবং 
এব ডো-খেব্‌ড়ো; যেন একটা আর একটার ঘাড়ে চড়িবাঁর 
চেষ্টা করিতেছে। সমস্ত দাতেই বিশ্রী হলুদ রঙের ছোঁপ। 
গায়ে একটা আধময়ল! কামিজ, পাঁয়ে ছেঁড়া ক্যান্থিসের 
জুতা, পরনের কাপড়টাও ময়লা কিন্ত বেশ কায়দা করিয়া 
মালকৌচি মারিয়া পরা । দেখিলে দ্বণ! হয়। কিন্তু ভয় 
হয় ভদ্রলোকের চোঁখ ছুটি দেখিলে। খুব বড় বড় কিন্বা 
খুব ছোট ছোট নয়, মাঝারি ধরণের সাধারণ চোখ। 
এককালে হয় তো সাধারণ চোঁখের মতই খানিকটা সাদা 
এবং খানিকটা কাঁলো অংশ ছিল, এখন কিন্তু সাদা 
অংশটি গীতাঁভ এবং কালে! অংশটি ঈষৎ বাদামি গোছের 
হইয়া গিয়াছে। প্রথম দর্শনে ইহাতে হয় তো৷ ভীতিকর 
কিছু দেখ! যাইবে না, কিন্তু কিছুক্ষণ লক্ষ্য করিলেই ভয় 
হইবে। ভদ্রলোক যদিও জ্ঞাতসারে সর্বদাই চোখের 
দৃষ্টিতে একটা সহৃদয়তার সুন্দর পরদা 'টাঙা ইয়া! রাখিয়াছেন, 
কিন্ত একটু অন্তমনস্ক হইলেই পরদা] সরিয়া যাইতেছে এবং 
তাহার অন্তরালে যে দৃষ্টি দেখা যাইতেছে তাহা মানুষের 
নয়__পিশাচের। পকেট হইতে চিনাবাঁদাম বাহির করিয়া 
ভদ্রলোক খোলা ছাড়াইয়৷ ছাড়াইয়া মুখে ফেলিতেছেন 
এবং লক্ষ্য করিতেছেন মুদির দোকানে খরিদ্দারের ভিড় 
কথন কমিবে। মুদির দৌকান নির্জন না হইলে তাহার 
সওদ। থরিদ করা হইবে ন|। 


একটু পরই মুদির দৌকান নির্জন হইল এবং খগেশ্বর' 





বাবু ওরফে হাঁরাঁণবাবু ওরফে যতীনবাঁবু ওরফে কেন্ট- 
বাবু ওরফে তিন নম্বর আগাইয়। গেলেন এবং মুদিকে 
সম্বোধন করিয়। বলিলেন, “কর্তা, আমার সওদাট! এবার 
দাও দিকি।” 

“কি চাই বলুন ?” 

“বেশী কিছু নয়, আধ পোটাক স্থপুরি। সবগুলি কিন্তু 
কাণা হওয়! চাই-_» 

মুদি একটু বিন্ময়ের ভান করিল। 

বলিল, “সবগুলো কাণা? কি হবে কাণা স্পুরি দিয়ে !” 

হলুদ রঙের দন্তগুলি বিকশিত করিয়া! থগেন বলিল, 
“ওষুধ ৮ 

“কিসের ওষুধ ?” 

“চুলকানির |” 

মুদি বাছিয়া' বাছিয়া আধপোয়! কাণ! সুপারি ওজন 
করিয়! দিল এবং প্রসঙ্গত বলিল, “কারফরম! লেনের মোড়ে 
একটা বিড়িওয়ালা আছে টুলকাঁনির অব্যর্থ ওষধ সে 
জানে ।” খগেশ্বর ঠিকানাটা টুকিয়া লইলেন। এই 
ঠিকানাটারই প্রয়োজন। এই ঠিকানা জনৈক কাণা- 
স্থপাঁরি-ক্রেতাঁকে দিবার জন্য মুদিও পয়স! খাইয়া গ্রস্তত 
হইয়া বসিয়াছিল। 

কারফরম! লেন চিৎপুর অঞ্চলে । একটি ট্যাক্সি সহযোগে 
থগেশ্বর রওনা হইলেন। কারফরমা লেনের কাছাকাছি 
আপিয়! ট্যাক্সিটা ছাড়িয়া দিলেন এবং কিছুটা দূর হাটিয়। 
গিয়া দেখিলেন__কাঁরফরমা লেনের মোড়ে সত্যই একটা 
বিড়ির দোকান রহিয়াছে। থাকিবেই তাহা খগেশ্বরবাবু 
জানিতেন। জনৈক বৃদ্ধ মিঞা বসিয়! বিড়ি পাকাইতেছিল। 

থগেশ্বর আগাইয়! গিয়া বলিলেন, “মিঞানাহেব, ভাল 
গোলাগী বিড়ি চাই এক বাঁগ্ডিল-_” 

মিঞাঁসাহেব বিড়ি দিলেন। 

থগেশ্বর বলিলেন, “আর একটি মেহেরবানি করতে 
হবে। শুনেছি তুমি খুজলির ভাল দাবাই জানো-__বলে 
দিতে হবে সেটি আমাকে--” | 


৯৪৯১ 


ছি “সদ “স্যর স্্্া্যাপ- 


মিঞাঁসাহেব সবিশ্ময়ে বলিল, “খুজ.লির দাঁবাই ! আমি 
জানি তা কে বললে আপনাকে ?” 

এদিক ওদিক চাহিয়া নিয়ন্বরে থগেশ্বর বলিলেন, “যে 
মুদির কাছ থেকে কাণ! স্ুপুরি কিনলাম আঁধপোয়া, সে-ই 
তো! তোমার নাম বাঁতলালে মিঞ্াঁপাঁয়েব ।” 

নি্পলক দৃষ্টিতে মিঞাসাহেব একবার থগেশ্বরের পানে 
চাঁহিলেন। “দেখি স্পুরি-_” 

মিঞাসাহেব সুপারিগুলি একটি একটি করিয়া! নিরীক্ষণ 
করিলেন। হা, সবগুলিই কাঁণা বটে । 

বলিলেন, “দাঁবাই আমার কাছে নেই, আছে হাড়কাটা- 
গলির হীরেমন বিবির কাছে। তাকে গিয়ে বলুন আমার 
খুজলি হয়েছে, আপনার বা পায়ের ছেঁড়া পয়জারখানার 
ধুলে আমার একটু চাই। এই বললেই যাঁ চাইছেন 
তা পাবেন।” 

মিঞাসাহেব গম্ভীর মুখে পুনরায় বিড়ি পাকাইতে সুরু 
করিলেন । মিঞাঁসাহেব আর কোন কথা বলেন না দেখিয়া 
থগেশ্বর প্রশ্ন করিলেন, “ঠিকানাঁটা ?” 

“ঠিকানা নিতে হলে স্ুপুরিগুলি রেখে যেতে হবে|” 

প্বেশ 

স্থপারিগুলি হস্তগত করিয়! মিঞাঁসাহেব হীরেমন বিবির 
ঠিকানাটা দিলেন। 

হাড়কাটা গলিতে হীরেমন বিবির দ্বারস্থ হইয়া খগেশ্বর 
দেখিলেন যে, হীরেমন নামটা শুনিয়া অন্তর যেরূপ উন্মুখ 
হইয়। ওঠে বিবি আঁসলে সেরূপ কিছু নহেন। এককালে 
হয় তো৷ রূপসী ছিলেন, এখন কিন্তু কু্ী নানারোগগ্রন্ত 
জীর্ণ শীর্ণ বারাঙ্গনা । রুক্ষ কেশ) কোটরগত চক্ষু? কস্কীল- 
সার দেহ। একটা খাটের উপর বসিয়া আছেন, হাঁপানির 
টান উঠিয়াছে। 

বল্লান্ধকাঁর ঘরটাতে প্রবেশ করিতেই হীরেমন অতি 
কষ্টে গ্রশ্ন করিলেন, “কে, কি চাই ?” 

থগেশ্বর তীহার বা পায়ের ছেঁড়া পয়জারের ধূলি 
প্রার্থনা করিলেন । 

হাপাইতে হাপাইতে হীরেমন বিবি বলিলেন, "আপনি 
ক নঘর?” 

“তিন নম্বর ।” ও 

“কাকে কাকে চেনেন আপনি 


ভাব্রভবশ্ব 





[ ২৮শ বর্ষ--২য খণ্ড --২য় সংখ্যা 





“থগেশ্বরবাবুকে, হারাণবাঁবুকে, যতীনবাবুকে, কে্টবাঁবুকে 
আর ম্যানেজারবাবুকে-_” 

“তা হলে এই রসিদটায় সই করে দিন ।” 

হীরেমন অতি কষ্টে উঠিলেন এবং একটি তোরঙ্গের 
ভিতর হইতে একটি তালা লাগানো ছোট বাক্স এবং একটি 
কাগজ বাহির করিলেন। কাগজে লেখা ছিল-_“হীরেমন 
বিবির নিকট উষধ পাইলাম ।৮ 

“ওইটেতে সই ক'রে দিন--” 

থগেশ্বর পকেট হইতে একটি ছোট কপিং পেম্দিল 
বাহির করিয়া বা হাতে বাকা বাঁকা অক্ষরে লিখিলেন 
“তিন নম্বর |» এই স্বল্প পরিশ্রম করিয়াই হীরেমন বিবি 
পরিশ্রান্ত হইয়৷ পড়িয়াছিলেন। তাহার হাপানিটা বাড়িয়া 
উঠিয়াছিল। একটু সামলাইয়৷ লইয়া! থামিয়া থামিয়া তিনি 
বলিলেন, “এই বাক্সটা নিয়ে যান। ওর ভেতরে সব লেখ! 
আছে। বাঁকৃসে হরফওয়ালা তালা লাগানে৷ আছে। তাল! 
খোলবার কৌশল আপনি জানেন তো ?” 

দ্না।, 

“আমিও জানি না।” 

“তা হলে খুলবো কি ক'রে ?” 

“মির্জীপুর ই্বীটের মোড়ে যে অন্ধ ভিকিরিটা আচল পেতে 
বসে থাকে মেডিকেল কলেজের সামনে, তাকে গিয়ে 
জিগ্যেস করুন ক পয়সায় দিন চলে তোমার? সেষা 
উত্তর দেবে সেই কথাটি অক্ষর সাজিয়ে ঠিক করলেই 
তাল! খুলে যাবে। 

“আচ্ছা” 

থগেশ্বর বাঁক্সটা লইয় চলিয়! যাইতেছিলেন এমন সময় 
হীরেমন বিবি বলিলেন, “বলবেন ম্যানেজারবাবুকে, আমি 
মরছি, তাঁর কি একটুও দয়া হয় না আমার ওপর! মাসে 
মাত্র দশটাকায় কি চলে আমার ?” 

হীরেমন বিবি হঠাৎ কীদিয় ফেলিলেন। 

থগেশ্বর বলিলেন, “বলব আমি---* 

বলিয়া তিনি মুখ ফিরাইয়া একটু হাসিলেন। ম্যানেজার- 
বাবুকে বলিলেই যদি টাকা পাওয়া যাইত তাহ! হইলে আর 
ভাবনা ছিল না। খগেশ্বর সিজ্বিকে তাহ! হইলে দুর 
পল্লীগ্রাম হইতে নান! ঝঞ্চাট সহ করিয়া এখানে আসিতে 
হইত না। | 


মাঘ--১৩৪৭ ] 


রা স্চাব্ছপ স্পা স্থ বা -স্হচে বা হাল বগা সহ বগা সপ সহ লা 


মির্জাপুর স্বীটের মোড়ে মেডিকেল কলেজের সাঁমনে 
একটা অন্ধ ভিখারী তারম্বরে চীৎকার করিতেছিল-_“এক 
পয়সা দিলা দে রাম” 

থগেশ্বর তাহার নিকটে আসিয়া ধীড়াইলেন । 

মোঁড়টা অপেক্ষাকৃত জনবিরল হইতেই নিম্বম্বরে তাহাঁকে 
প্রশ্ন করিলেন-_-“ক পয়সায় দিন চলে তোমার ?” 

ভিক্ষুক খানিকক্ষণ নিস্তব্ধ হইয়া! রহিল । 

খগেশ্বর পুনরায় প্রশ্ন করিলেন । 

ভিক্ষুক মৃছুক্ঠে ঘেন আপন মনেই বলিল, “বাক্স! লায়া 
হাঁধ তো সেভেন নেই লাঁয়া হ্যায় তো ঢন্‌ ঢন্‌।” 

থগেশ্বর সরিয়া গিয়া একটা ল্যাম্পপোস্টের নিকটে 
দাঁড়াইয়া এলোমেলে| ইংরেজী অক্ষরগুলি ঘুরাইয়! 9০৬৩) 
কথাটি সাঁজাইয়৷ ফেপিলেন। তালা খুলিয়া গেল। 

বাক্সের ভিতর একটি ঠিকাঁনা ও একটি চাঁবি রহিয়াছে । 
চাঁবির গায়ে একটি কাগজে লেখা এখিড়কি দরজা” । 
ম্যানেজারবাঁবু যাহা লিখিয়াছেন তাহা বর্ণে বর্ণে মিলিয়া 
যাইতেছে । 


ঠিকানায় পৌঁছিতে রাত্রি দশটা বাজিয়া গেল । চাঁবি 
দিয়া থিড়কি দরজা খুলিয়া খগেশ্বর ভিতরে প্রবেশ করিলেন । 
প্রকাণ্ড বাড়ি। শ্চীভেগ্য অন্ধকার। অন্ধকার প্রাঙ্গণে 
খগেশ্বর কিছুক্ষণ চুপ করিয়া দীড়াইয়া রহিলেন। মনে হইল 
উপরের ঘর হইতে একটা চাপা গোঁগানির শব্দ বেন ভাসিয়া 
আসিতেছে । মিনিট খানেক নীরবে দ্ীড়াইয়া থাকিয়া 
খগেশ্বর পকেট হইতে একটা দিয়াশলাই কাঠি বাহির 
করিলেন এবং সেটা নাকে দিয়া খুব জোরে একবার 
ইাঁচিলেন। হইঁচির শব্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্বিতলের 
একটি কক্ষে আলে! জলিয়া উঠিল। উপরে উঠিবার 
সিঁড়িটাও আলোকিত হইল । খগেশ্বর দ্রতপদে সিড়ি 
দিয়া উপরে উঠিয়া গেলেন এবং গিয়াঁই বুদ্ধ ম্যানেজারবাঁবুর 
সহিত তাহার দেখা হইয়া গেল। সিঁড়ির ঠিক সামনের 
ঘরটাতেই তিনি ফরাসে পূর্ব্বৎ উপবিষ্ট ছিলেন। সর্ববাঙ্গে 
দামী শাল জড়ানো, মুখে প্রসন্ন হাস্য । বাঁড়িতে জনগ্রাণী 
আর কেহ নাই। 

“এই যে শ্রীগর্ড়, এসে পড়েছ দেখছি !” 

বিনীত নমস্কার করিয়া! খগেশ্বর বলিলেন? “আজে হ্যা ।” 

২৫ 


ভশ্ 





১৯৯৯৩ 





“বিশেষ বেগ পেতে হয় নি তো? মুদি; বিড়িওলা, 
হীর্মেণ আর অন্ধ ভিকিরি এই চারজনকে পার হয়ে এসেছ 
নিশ্চয় ।% 

সশ্রদ্ধকণে খগেশ্বর বলিলেন, “তাই এসেছি-_” 

ম্যানেজার স্মিতমুখে চাহিয়া আছেন দেখিয়া খগেশ্বর 
বলিলেন, “ব্যাপারটা ভাল বুঝতে পারলাম না ।” 

“কর্তীর কত বিচিত্র খেয়াল, আমিই কি ছাই সব বুঝতে 
পাঁরি। যা বলেন, হুকুম তামিল ক'রে যাই। তুমি আমার 
সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছ শুনে কর্তা বললেন, ওকে সোজা- 
স্থজিঠিকানা দিও না। মুর্দি, বিডিওলা আর হীরেমণের 
কাছে মুখটা চিনিয়ে তবে যেন আসে । সেই রকম ব্যবস্থাই 
করলাম। হ'ল অনর্থক কতকগুলো! অর্থব্যয় 1৮ 

তানার পর হাসিয়া বলিলেন, “তাতে আমারই বা কি, 
তোঁমাঁরই বাকি! লাগে টাঁকা দেবে গৌরীসেন !” 

খগেশ্বর বলিলেন, “উদ্দেশ্টাটা কি কিছু বুঝলেন ?” 

“ঠিক অবশ্য বুঝি নি। যতদূর আন্দাজ করছি সেটা 
এই ঘে, ওই মুদি ওই বিড়িওলা আর ওই হীরেমণ ইদানীং 
কর্তীকে কিছু মাল সাপ্লাই করেছে। ভবিষ্ঘতে তুমি যদি 
দেহাঁত থেকে কোন টাঁটকা মাল আমদানি ক'রে আনতে 
পার__ওদের কারো হেফাজতে এনে দিলেই মালটা ঠিক 
জায়গায় পৌছে যাঁবে। সেইজন্টেই সম্ভবত তোমার মুখটা 
চিনিয়ে দিলেন ওদের । কাঁজের লোক ওরা, মাল জোগান 
দেয়, পাহারা দেতঃ পাচার করে। এসব অবশ্য আমার 
আন্দাজ। কর্তার কথ খোদ কর্তাই জানেন। যাঁক ওসব 
কথা। তোমার কথ! শুনি। আমার সঙ্গে হঠাৎ দেখা 
করতে চেয়েছ কেন শুনি? সংক্ষেপে বল--» 

থগেশ্বর সংক্ষেপেই বলিল, টাকা” 

“টাকা? কত টাক! ?” 

“যা দেবেন । দিন চল! ভার হয়েছে আমার । চাকরি 
গেছে» পরিবার গেছে, মেয়ে গেছে, কিই বা আছে, সবই 
তে৷ জানেন আপনি । আপনার কর্তার সেবাতে জীবনটাই 
উছছুণ্ড করেছি বলতে গেলে !” 

ম্যানেজারবাৰু কিয়ৎকাঁল খগেশ্বরের মুখের পাঁনে চাহিয়া 
রহিলেন। তাহাঁর পর মৃদু হাসিয়া বলিলেন; প্গীঁজ৷ কতটা 
করে খাও আজকাল ?” 

“আজে দৈনিক চাঁর আনার |” 





১১৪১৪ 
“সৌদামিনীর কাছে পাও টাও কিছু ?” 
“একটি আধলা না । গেলে দেখাই করে না। নিজের 


মেয়ে-পরিবাঁর যে এমন দুশমনের মতো ব্যাভার করবে তা 
স্বপ্েও ভাবি নি। না থেতে পেয়ে মরছিল, লাথি বাঁটা 
খেয়ে দিন কাঁটতো, আপনার কাছে এনে দিলাম, আপনি 
বললেন কর্তার দুজনকেই পছন্দ হয়েছে । নিজের চোখেও 
দেখলাম। এখন বেশ সোনাদানা পরে দিব্যি জাকিয়ে 
ব্যবসা ফেঁদে বসেছে মশাই। আর বললে বিশ্বাস 
যাবেন না ম্যানেজারবাবুঃ আমাকে বাঁড়িতে ঢুকতে পর্য্যস্ত 
দেয় না!” 

উভয়েই কিছুক্ষণ নীরব। 

থগেশ্বরই পুনরায় কথ! কহিলেন, পকর্তী কি আজকাল 
যাঁন-টান ওদের কাছে ?” 

“রামোঃ কর্তার সখ ওই দু-এক দিনই । ছু দিনেই 
পুরোনো হয়ে যায় নতুন মালের জন্তে খেপে ওঠেন। নতুন 
মাল সন্ধানে থাকে তো বলো» ভাল দাম দিয়ে কিনবেন। 
হাজার টাকা পর্য্স্ত নগদ পেতে পারো ।” 

«একটা ভাল মালের চেষ্টায় আছি-_” 

“বয়স কত? বেশী বয়সের চলবে নাঃ সে সব 
দিন গেছে !” 

“বয়স চোদ্দ-পনেরো--” 

বৃদ্ধের চক্ষু দুইটি আগ্রহে প্রদীপ্ত হইয়া উঠিল । 

বলিলেন, “বেশ তো, জোগাড় কর-_” 

“আপাতত কিছু চাই আমার, বড় অভাঁবের মধ্যে 
আছি!” 

বৃদ্ধ পকেট হইতে ব্যাগ বাহির করিয়৷ কুড়িটি টাকা 
খগেশ্বরকে দিলেন এবং বলিলেন, “এখন এই নিয়ে যাও, দিন 
পনেরো পরে এসো আবার |” 

*এই বাঁড়িতেই ? 

“না, এ বাড়িতে নয়, এ বাড়ি বলাতে হবে। আর 
বলে! কেন, সাত দিন অন্তর অন্তর বাড়ি বদলাতে হচ্ছে। 
ঠিকানা ঠিক পাঁবে এবার যেমন ক'রে পেলে । এবার অবশ্য 
মুর্দি বিড়িওল! আর হীরেমণ থাকবে না। অন্ত লোকেদের 
মারফত আসবে। কর্তার হুকুম এই। প্রত্যেকবার নতুন 
রকম সঙ্কেতের তাল! দিতে হবে । এবারকার তালাটা ঠিক 


খুলেছিল তে! ? 


ভ্াব্রভন্বর 





[ ২৮শ বর্ষ--২য় খণ্ঁ--২য সংখ্যা 


স্্ 


"আজ্ঞে হ্যা, সেভেন কথাটা হতেই খুলে গেল তালা-_” 

“তালা চাবি আর বাক্স দিয়ে যাঁও সব। এবার অগ্থরকম 
তালা দিতে হবে-_* 

«এই যে__» 

থগেশ্বর তালা-সমেত কাঠের বাঁক্স ও খিড়কির চাবিট! 
ম্যানেজারবাবুর হাতে দিলেন । 

সহস! চাপা গোঁডাঁনিটা স্প্তর হইয়া উঠিল। 

থগেশ্বর প্রশ্ন করিলেন, “ওটা কিসের শব ?” 

“একজন আমলার জর হয়েছে, সে-ই ওরকম করছে 
ও ঘরে পড়ে পড়ে ।_-ও কিছু নয়।” 

দ্বিতলের অপর প্রান্তে অজ্ঞান বন্দিনীর কথ খগেশ্বরকে 
বলিবেন এমন কীচালোক বৃদ্ধ নহেন। কিছুক্ষণ চুপ করিয়া 
থাঁকিয়! খগেশ্বরকে বলিলেন, “আচ্ছা, তুমি যাও এখন। বড় 
ক্লান্ত আছি আজ, ঘুমুবো এবার |” 

খগেশ্বর হাত জোড় করিয়া বলিলেন, “কুড়ি টাকায় 
কুলোবে না আমার, আরও কিছু দয়া করুন|” 

ম্যানেজার হাসিয়া বলিলেন, “ওই তো তোমার দোষ 
শ্রীগরুড়, কিছুতেই তোমার খাই মেটানো যায় না !” 

আরও দশটি টাকা বাহির করিয়! দিলেন । 

থগেশ্বর ঝু'কিয়া প্রণাম করিয়া বলিয়া গেলেন-_যত শীঘ্র 
সম্ভব তিনি উক্ত মাঁলটি সরবরাহ করিবেন । 

খগেশ্বর চলিয়া গেলে ম্যানেজার ধীরে ধীরে উঠিলেন ও 
খিড়কির দরজাটা বন্ধ করিয়া আসিলেন। তাহাঁর পর 
কুজ দেহটা ঈষৎ উন্নমিত করিয়া খানিকক্ষণ উৎকর্ণ হইয়া 
রহিলেন। গোানিটা স্পট হইতে ম্পষ্টতর হইয়! ক্রমশ 
চীৎকারে পরিণত হইল। বৃদ্ধ বুঝিলেন_এইবার জ্ঞান 
হইয়াছে আর দেবি কর! অন্ৃচিত হইবে। 

বারান্দাটা পার হইয়া ওদিকের একটা ঘরের দিকে 
দ্রুতপদে তিনি অগ্রসর হইয়া গেলেন। সেই ঘরটার ভিতর 
হইতেই চীৎকার ভাপিয়া আসিতেছিল। ঘরের তালা 
খুলিয়া বৃদ্ধ ভিতরে গ্রবেশ করিলেন। 

হতবুদ্ধি মেয়েটির চীৎকার ক্ষণিকের জন্ত বন্ধ হইয়া 
গেল। কিন্তু তাহা ক্ষণিকের জন্যই । পর মুহুর্তেই আরও 
তীব্র তীক্ষ মর্্ান্তিকরূপে তাহ! অন্ধকারকে আকুল করিয়া 
তুলিল। বৃদ্ধ মি:শব্দে কপাট বন্ধ করিয়! দিলেন । 

আর কিছু শোন! গেল না । 


মাঘ--১৩৪৭ ] 


উস 


১৩ 


অচিনবাবুর কারখানি নিঃশব্বগতিতে আসিয়া! বেলার 
বাসার সম্মুথে থামিল। জনার্দন সিংহের মারফত নিজের 
কার্ডখানি পাঠাইয় দিয়া অচিনবাবু স্টিয়ারিংএর উপর ভর 
দিষা বসিয়া রহিলেন। একটু পরেই বেশবাসসন্থৃত করিয়া 
সখিতমুখে বেলা বাহির হইয়া আমিলেন ও নমস্কার করিয়! 
বগিলেন “আপনিই কার্ড পাঠিয়েছেন?” 

অচিনবাঁবু মোটর হইতে নামিয়া আমিলেন এবং সমস্ত 
মুখচ্ছবিতে নিখুত ভদ্রতা বিকীরণ করিয়া! অতিশয় সুষ্- 
ভঙ্গীতে একটি নমস্কার করিলেন । রাস্তায় দীড়াইয়া আলাপ 
করাটা অশোভন হইতেছে দেখিয়া বেলা! বলিলেন, “আস্গুন, 
ভেতরে আসহ্মথন--” 

উভয়ে আসিয়া! বাঁহিরের ঘরটাতে উপবেশন করিলেন। 
'অচিনবাঁবু ভাঁসিয়া হাঁত ছুটি জোড় করিয়া বলিলেন; “একটি 
র্যা করতে হবে মিস্‌ মল্লিক” 

মনে মনে একটু বিব্রত হইলেও বাহিরে তাহা প্রকাশ 
করিবার মেয়ে বেলা নহেন। ভ্রযুগল ঈষৎ উত্তোলিত করিয়া 
তিনি চাহিয়া রহিলেন। অচিনবাঁবু বলিলেন” “আপনার 
বাজনার খ্যাতি চারদিকে শুনতে পাই; আপনার নিশ্বাস 
ফেলবার ফুরসৎ নেই তা-ও জানি+ তবু এসেছি নিজের জন্তে 
নয়। পরের জন্তে |” 

ব্যাপারটা কি খুলেই বলুন না।” 

“লিলুয়ায় একটা বাগানবাড়ি ভাঁড় নিয়ে চ্যারিটি 
পারফর্মেন্স করছি আমরা । নাঁচ, গাঁন বাজনা! থাকবে 
সব রকমই। এর থেকে যা টাকা বাঁচবে সেটা ভাল কাঁজেই 
খরচ হবে, মেয়েদের একটা ইস্কুল করবার ইচ্ছে আছে 
আমাদের । আপনাকে একটা কিছু বাজাতে হবে সেখানে 
এশার সেতার-__য! হোক | আমি নিজে কারে ক'রে নিয়ে 
যাবো কারে পৌছে দিয়ে ষাবো। ঘণ্টা ছুয়েকের ব্যাপার !” 

“কখন হবে ?” 

“দিন দশেক পরে, সন্ধে সাতটা থেকে সরু” | 

“সন্ধেবেলায় আমার ছুটি তো নেই, বাঁজনা শেখাতে 
যেতে হয় একজায়গায় |” 

“বেশ তো কোথায় বলুন না, একদিনের জন্তে ছুটি মঞ্জুর 
করিয়ে নেব আমি। সে ভার আমি নিচ্ছি।” 


ভন 


১৪০ 





"সেটা ঠিক হয় না। 

“না নাঃ মিস্‌ মল্লিক; কাইগুলি আপত্তি করবেন না। 
আপনাকে আমাদের চাই-ই-_” 

“আমাকে মাপ করুনঃ আমার সময় কম।” 

বেলা উঠি! দাড়াইলেন। 

অচিনবাবুও সঙ্গে সঙ্গে উঠিয়! দাঁড়াইলেন এবং বলিলেন, 
"দেখুন, একটা সৎকার্য্যের জন্যে এটুকু ত্যাগম্বীকাঁর যদি না 
করেন তা হলে” 

“বেশ। আপনাদের স্কুলে আমি না হয় কিছু চীদা 
দেব__” 

“সে তো দিতেই হবে, এটা হল উপরি পাওনা । 
আপনি না থাকলে ফাঁংশানটা একেবারে মাটি হয়ে যাঁবে। 
আপনাকে যেতেই হবে__” | 

বেলা হাসিয়া বলিলেন “আমি কথা দিতে পারলাম 
ন! কিন্তু ।” 

“বেশ, আর একদিন আঁসব আঁমি, কথা আপনাকে 
দিতেই হবে।” 

বেলা শ্মিত মুখে দাঁড়াইয়া রহিলেন, কোন জবাব দিলেন 
না। অপ্রত্যাশিত এই বিপদটার হাত হইতে কি করিয়া 
উদ্ধার পাওয়া যাঁয় মনে মনে সেই চিন্তাই তিনি করিতে- 
ছিলেন। অচিনবাবু তাহাকে নীরব দেখিয়া বলিলেন, 
“আচ্ছা, আপনি একটু ভেবে দেখুন। সৎকার্যের জন্টে 
কিছু করা একটা মহাপুণ্য তো৷ বটেই, তা ছাড়া এর আর 
একট! দ্িকও আছে । অনেক বড় বড় লোকের কাছে 
টিকিট বিক্রি করছি আমরা, তাদের কাছেও আপনার 
গুণের পরিচয়টা দেওয়া হবে। যাঁই বলুন, মিড্ল্‌ ক্লাস 
পিপল তো আপনাদের গুণের যথোচিত মূল্য দিতে 
পারে না” 

অচিনবাবু আরও হয়তো কিছু বলিতেন কিন্তু বেল 
সহস! নমস্কার করিয়া বলিলেন, “আচ্ছা, ভেবে দেখবো । 
আমন তা হলে--” 

বেলা ভিতরে চলিয়া! গেলেন । 

অচিনবাবু কিছুক্ষণ স্তম্ভিত হইয়া দীড়াইয়৷ থাকিয়া 
বাহিরে আমিলেন। রাম্তার উপর ধ্রীড়াইয়া চিন্তাকুল- 
মুখে অত্যন্ত নিপুণভাবে একটি সিগারেট ধরাইলেন, আস্ত 
দিয়াশলাই কাঠিটা খানিকক্ষণ ধরিয়া থাকিয়া! তাহার 


৯২৩ 


পর সেটা নাঁড়িয়া নিবাইয়া ফেলিয়া দিলেন এবং একমুখ 
ধোঁয়া ছাড়িয়া গাঁড়িতে উঠিয়া বসিলেন। নিঃশবগতিতে 
গাঁড়ি গলি হইতে বাহির হইয়া গেল। 

অচিনবাবুর গাড়ি চলিয়া যাইবার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই 
প্রফেসর গুপ্তের গাড়িখানি আসিয়া! দীড়াইল। প্রফেসর 
গুপ্ত গাড়ি হইতে অবতরণ করিলেন এবং জনার্দন সিংহের 
সেলামের প্রত্যু্তরে মাথা নাড়িয়া বাহিরের ঘরটাতে আসিয়া 
প্রবেশ করিতে যাইবেন এমন সময় বেলার সহিত তাহার 
মুখোমুখি দেখা হইয়া গেল। উভয়ে উভয়ের মুখের পানে 
চাহিয়া কয়েক মুহুর্ত দীড়াইয়া রহিলেন। বেলার ওষ্ঠাধর 
নিমেষের জন্ কাপিয়া থাঁমিয়া গেল। আত্মসম্বরণ করিয়া 
বেলা সহজকণেই বলিলেন, “আমি বেরুচ্ছিলাম, আপনার 
কি বিশেষ কোন কাজ আছে?” 

“তোমাকে কিছু বলতে চাই”। 

প্রফেসার গুপ্ত কিছুদিন হইতে বেলাকে, অবশ্ট বেলার 
সম্মতিক্রমেই, “তুমি” বলিতে সুরু করিয়াছেন । 

“আমাকে? বেশ বলুন ।” 

“এখানে সে কথা বলা যাবে না, চল মাঠে যাই__” 

ভ্রকুঞ্চিত করিয়া! বেলা কয়েক মুহূর্ত নীরব বহিলেন। 
তাহার পর বলিলেন, ”বেশ, তাই চলুন, কিন্তু আমার একটি 
অন্থরোধ রাখতে হবে ।” 

“কি, বল?” 

“আপনার বলবার যত কথা আছে আজই শেষ করে 
ফেলতে হবে। এর জস্তে মাঠে যতক্ষণ বসে থাকতে 
বলেন আজ বসে থাকব। কাল থেকে কিন্ত আর নয় 1” 

প্রফেসর গুপ্ত অনেকক্ষণ নীরব হইয়া! রহিলেন। তাহার 
মনের ভিতর কিসের যেন একটা দ্বন্দ চলিতেছিল। 
নীরবতা ভঙ্গ করিয়া সহসা তিনি বলিলেন, “বেশ; 
তাই হবে।” 

“তাহলে একটু দাড়ান, এখুনি আসছি আমি-_” 

বেলা দেবী ভিতরে গেলেন ও মাঠে যাইবার উপযোগী 
পরিচ্ছদ পরিধান করিয়া ফিরিয়া আসিলেন। 

শচরুন-_* 
গী ৬ 

কিছুক্ষণ পূর্বে হুর্য্য অস্ত গিয়াছে, মাঠে অন্ধকার 
নামিতেছে। একটি নির্জন স্থান বাছিয়! বেলা ও গ্রফেসার 


ভ্ঞাব্রভবম্ব 


[২৮শবর্ব_ ২য় থণ্ড--২য় সংখ্যা 


গুপ্ত উপবেশন করিলেন। মোটরে যদিও উভয়ে পাশাপাশি 
বসিয়াছিলেন, কিন্তু একটিও বাক্য-বিনিময় হয় নাই। 

প্রফেসর গুপ্তই প্রথমে কথ! কহিলেন, “তুমি মান্তুকে 
কি সত্যিই আর বাজনা শেখাবে ন| ?” 

“ও ঘটনার পর আর তো আপনার বাড়িতে যাওয়া 
সম্ভব নয়। আপনার স্ত্রী আফিং খেয়েছিলেন আমার 
জন্তে, এ কথা শোনার পর আর কি আপনার বাড়িতে 
যাওয়া চলে, আপনিই বলুন। ভাগ্যিস বেচে গেছেন, 
না বাচলে কি হ'ত বলুন তো!” 

ণসেটা কি আমার দোষ ?” 

ক্ষণকাল নীরব থাকিয়! বেলা বলিলেন, “আপনার দৌঁষ 
সত্যি আছে কি-না, সে অপ্রিয় আলোচনা করবার 
অধিকার আমার নেই। আমার নিজের কোন দোষ 
নেই এইটুকুই আমি জানি-আর সেটা আপনিও 
জানেন। অথচ--” 

আমার দৌষ ক্ষালনের চেষ্টা আমি করছি না, কারণ 
এটাকে আমি দৌষ বলে মনে করি না। তোমাকে আমার 
ভাল লেগেছে এবং ভাবে ভঙ্গীতে সেটা হয়তো প্রকাশ 
করেছি, তাঁতে দোষের তো কিছু নেই ।” 

“আপনি যা বলছেন তা যদি সত্যি হয় তা হলে 
নিশ্চয় দোষের আছে। আপনি বিবাহিত, সমাজের নিয়ম 
মেনেই আপনার চলা উচিত। হঠাৎ আমাকে ভাল 
লাঁগবাঁর কারণই বা কি, তা তো আমি বুঝতে পারছি না 
আরও বুঝতে পারছি না সে কথা আপনি প্রকাশ 
করছেন কেন ?” 

প্রফেসার গুপ্ত ক্ষণকাল নীরব রহিলেন। তাহার পর 
বলিলেন, “ভালবাসা কোন দিন কোন আইন মেনে চলে নি। 
তোমাকে আমার খুব ভাল লেগেছে, এর বেশী আর আমার 
কিছু বলবার নেই। আমি জীবনে স্ৃ্থী নই বেলা__» 

প্রফেসার গুপ্তের একটি গভীর দীর্ঘশ্বাস পড়িল। 
“সী নন কেন? আপনার স্ত্রীকে আপনি ভালবাসতে 
পারেন নি ?” 

“পারলে আমার এ দুর্দিশা হত না! ।” 

“পারেন নি কেন, আপনার স্ত্রী চো লোক খারাপ নন।” 

“লোক থাঁরাপ কি ভালো তা বিচার করে কেউ 
কাউকে ভালবাসে না। মন্তর পড়ে বিয়ে করলেই ভালবাসা 


মাঘ--১৩৪৭ ] 





জন্মায় না। মনের মিল হওয়াটাই আসল। আমার স্ত্রীর 
সঙ্গে আমার এতটুকু মনের মিল নেই । কোন দিক থেকেই 
নেই। আমার মানসিক স্থুথদুঃখ আনন্দ অবসাঁদের 
সঙ্গে আমার স্ত্রীরা এতটুকু সম্পর্কই নেই। 
আমি উপার্জন করব তিনি খরচ করবেন, আমার চাঁল- 
চলনের প্রতি তীক্ষ নৈতিক দৃষ্টি রাখবেন, কোন মেয়ের 
সঙ্গে সামান্য ঘনিষ্ঠতা দেখলে তা নিয়ে কথায় কথায় শ্লেষ 
করবেনঃ কোন কারণে যদি তাঁর স্বার্থে একটুও আঘাত 
করি তা হলে তাই নিয়ে গঞ্জনা দেবেন, কথায় কথায় 
প্রকাশ করবেন যে তার মত মহিয়সী মহিলা আমার মত 
লোকের হাতে পড়ে নষ্ট হয়ে গেলেন__এই তাঁর সঙ্গে 
আমার সম্পর্ক । ঝগড়া অথবা! তর্ক ছাড়া তার সঙ্গে অন্য 
কোন প্রকার আলাপ বহুকাল হয়নি, হওয়া সম্ভবও নয়। 
রাস্তার একটা অশিক্ষিত কুলি অথবা অমার্জিত গাড়োযানের 
সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব হওয়া বরং সম্ভব, কিন্তু স্ত্রীর সঙ্গে 
সম্ভব নয়। কারণ আমাকে তিনি সর্বদাই তাঁর নিজের 
স্বার্থসিদ্ধির উপায়ন্বপ মনে করেন এবং সর্বদাই সন্দেহ 
করেন যে হয়তো আমি তাঁকে সে বিষয়ে ফাঁকি দিচ্ছি। 
আমি অবশ্য সে সন্দেহের শ্যাধ্য খোরাক যে সরবরাহ 
না করি তা নয়, করি-_কারণ আমার মন সর্ববদাই 
ক্ষুধিত |” 

একটু থামিয়া প্রফেসার গুপ্ত পুনরায় বলিলেন? 
“অনেকদিন পরে তোমাকে দেখে ভেবেছিলাম যে তোমার 
মধ্যে আমার মন হয়তে!। আশ্রয় পাবে। সব কথা শুনলে 
হয়তো তুমি আমার ছুঃখ বুঝবে, হয়তো একটু প্রশ্রয় 
পাঁবো। আমার স্ত্রী নাটকীয় ভঙ্গী ক'রে এক ডেলা 
আফিং খেয়েছেন বলেই তাঁর দুঃখটা তুমি বড় ক'রে 
দেখো না। আমার দুঃখ আরও গভীর ।” 

প্রফেসার গুপ্ত নীরব হইলেন। অনেকক্ষণ কেহই 
কোঁন কথা বলিলেন না। অনেকক্ষণ পরে প্রফেসর গুপ্তই 
পুনরায় নীরবতা! ভঙ্গ করিলেন । 

“তুমি কিছু বলছ না যে--” 

“বলবার কিছু নেই।» 

“কিছুই নেই ?” 

“না ।” * 

প্রফেসার গুপ্ত চুপ করিয়া চাহিয়া রহিলেন। 


ভক্চ্চম 





: ৯৯২ 


সস - * -্হ* ঝ- _স্হট খ্স্স্স্্হ 


সহসা নীরব্তা ভঙ্গ করিয়া বেলা বলিলেন, “আপনার 
আর কিছু কি বলবার আছে ?” 

“সবই তো বললাম ।” 

“তবে চলুন, এবার ওঠা যাঁক 1” 

বেল! উঠিয়া অগ্রসর হইতে লাগিলেন। 

“ওদিকে কোথাঃ আমার কার যে এদিকে। রাস্তা 
ভুলে গেলে না কি-__* 

“রাস্তা তুলি নি। আমি ট্যাক্সি করে ফিরব। 
আপনি বাঁড়ি যাঁন-_” 

বেলা ট্যাকিি স্ট্যা্ডের দিকে চলিয়া! গেলেন । 

প্রফেপার গুপ্ত চুপ করিয়। বসিয়া! রহিলেন। 





১৪ 


মূনায়কে আজকাল প্রায়ই বাহিরে যাইতে হইতেছে। 
কিযে এক ছাই কাজ জুটিয়াছে_বাঁড়িতে একদও 
থাকিবার উপায় নাই। এ রকম চাকরি করার চেয়ে 
অনাহারে থাকাঁও বরং ঢের ভাল। আজ এখানে, কাল 
সেখানে, একদিনও কি স্থস্থির হইয়া বাড়িতে বসিয়া 
থাকিবার জো আছে। যেন চরকির মতো! বেড়াইতেছে ! 
একটা মান্তষ কতই বা ঘুরিতে পারে; সকল জিনিসেরই 
তো! একটা সীমা আছে । হাঁজাঁর হোঁক, মানুষ তো, কল 
তো আর নয়। উপর-ওল! সাহেবদের জ্ঞান গম্যি, দয়া- 
মাঁয় বলিয়া কি কিছুই নাই! উনি না হয় ভাঁলমানষ 
লোক, মুখ ফুটিয়! কিছু বলিতে পারেন না, মুখ বুজিয়া 
সমঘ্ত সহা করিয়া যাঁন, তাই বলিয়া তাহারই উপর সব 
কাজের ভার চাপাইতে হইবে? আফ্কেলকে বলিহারি 
যাই! ইত্যাকার নানারূপ চিন্তা ও শ্বগতোক্তি করিতে 
করিতে হাসি হাতের লেখ! লিখিতেছিল। যদিও চিন্নু 
এখনও পর্য্যস্ত শ্বীকার করিতেছে নাঁ_কিন্তু প্রকাস্তিক 
চেষ্টার ফলে হাঁসির হাতের লেখা সত্যই অনেকটা উন্নতি 
লাভ করিয়াছে । থাঁনিকটা লিখিয়৷ হাসি সৌঁজ৷ হইয়' 
বসিল, খোঁপাট। এলাইয়া পড়িয়াছিল, ছুই হাত দিয়! সেটা 
ঠিক করিয়া লইল, তাহার পর খাতাথানাকে একটু দরে 
সরাইয়। নাঁনাভাবে নিজের লেখাঁটিকে" নিরীক্ষণ করিতে 
লাগিল । এই হাতের লেখায় স্বামীকে চিঠি লিখিলে তাহা 
কি খুব হাম্তকর হইবে? উনি হাদিবেন? ককৃখনো না। 


৪৮ 


বরং খুশিই হইবেন, আশ্র্্য হইয়া যাইবেন। কালই 


একথান! চিঠি লিখিতে হইবে। খুব লুকাইয়া কিন্তু! 


ঠাকুরপো যেন না জানিতে পারে। ঠাকুরপো জানিতে 
পারিলে কিন্তু লজ্জার সীমা পরিসীমা থাঁকিবে না। 
জালাইয়া মারিবে। এমনই তো ফাঁজিলের চুড়ামণি। 
চিঠিটা লিখিয়া ঝিয়ের মারফৎ রাস্তার ভাকবাক্সে ফেলিয়া 
দিলেই চলিয়! যাইবে। 

নীচে কড়া নাড়ার শব্ধ পাওয়া গেল । 
আসিল ! “বউদ্দি, কপাট খোলো-_" 

চিন্ময়ের গলার স্বর। ঠাঁকুরপো আজ এত সকাল 
সকাল কলেজ হইতে ফিরিল কেন! হাঁসি ঘড়ির দিকে 
চাহিয়া দেখিল মাত্র আড়াইটা বাঁজিয়াছে। এত সকাল 
সকাল আসিবাঁর মানে কি। অকারণ ভয়ে হাসির 
বুকটা কীপিয়া উঠিল। কোন খারাপ খবর-টবর পায় 
নাই তো! নীচে পুনরায় কড়া নাড়িয়া চিন্ময় ডাকিল, 
“বউদি 1” 

হাঁসি তাঁড়াতাড়ি নামিয়া গেল। 

কপাট খুলিতেই চিন্ময় বলিল, “দুমুচ্ছিলে তো ?” 

“আহা, ঘুমুবো কেন? লিখছিলাম। তুমি এখন 
এলে যে?” 

“রাস হ'ল না, প্রফেসারের অস্থথ করেছে” 

চিন্ময় উপরে চলিয়৷ গেল। কপাট বন্ধ করিয়। হাসিও 
উপরে আসিল। হাসির হাতের লেখা দেখিয়৷ চিন্ময় 
বলিল, “নুন্নর হচ্ছে তো লেখা তোমার বউদ্দি।” 

“যাও আর ঠাষ্টা করতে হবে না।” 

হাঁসি হাতের লেখার থাতাটা বন্ধ করিয়! দিল। 

“ঠাট্রা নয়ঃ সত্যি বেশ হচ্ছে। আচ্ছা তুমি ডিকৃটেশন 
লিখতে পারো ?” 

“ডিকূটেশন কি আবার ?” 


এমন সময় কে 







্ ৰ বর রর 
শব॥ 


& 








ভ্ডাল্রভনশ্ব 


', ৮104. 
+৫-/08- 


[ ২৮শ বর্_২য় থণ্ড--২য় সংখ্যা 


“আমি বলব, তুমি গুনে শুনে লিখবে ।৮ 

“তা আমি পারি বোধ হয়” 

«ঘোড়ার ডিম পারো 1” 

“নিশ্চয় পারি” 

“এরই নাও কাগজ, লেখো» 

“ভুল হলে ঠাট্টা করতে পারবে না কিন্তু, বলে দিচ্ছি” 
“ন! নাঃ ঠাট্টা করব কেন । লেখোই না আগে দেখি__” 
হাসি কাগজ কলম লইয়া বসিল। 

চিন্ময় বলিতে লাগিল-_- 


সব ঠিক হইয়া গিয়াছে। তুমি ন'টার সময় গোলদীঘির পূর্বব- 
দিকের একট! গেটে থাকিও। ইতি-কখগঘ 


লেখা হইয়া গেলে চিন্ময় বলিল, “কই দেখি, বাঃ 
চমৎকাঁর হয়েছে । থাক আমার কাঁছে এটা-_-» 

কাঁগজথাঁন! সে পকেটে পুরিয়া ফেলিল। 

হাঁসি প্রশ্ন করিল “ওর মানে কি ?” 

“মানে আবার কিঃ যাঁ মনে এল তাই বললাম-__” 

চিন্ময় একটু হাসিল; তাহার পর বলিল, “অমন ক'রে 
চেয়ে আছ যে! এ কাগজটা এখন থাক আমার কাছে। 
একমাস পরে আবার তোমাঁকে দিয়ে লেখাব খানিকটা, 
তারপর দুটো মিলিয়ে দেখব উন্নতি হয়েছে কি-না» এই 
বলিয়! সে বাহিরে যাঁইবাঁর উপক্রম করিল। 

“এসেই যাচ্ছো কোথায় আবার ?” 

“মাঠে । খুব ভাল ম্যাচ আছে একটা» দেখে আসি |” 

“থিদে পায় নি? খাবে না কিছু ?” 

দন” 

চিন্নয় বাহির হইয়া গেল। 

হাঁসি পুনরায় লিখিতে বসিল। 







আলো ও আলোক-চিত্র গ্রহণ 
অধ্যাপক ্রী/দ্বিজেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত এম্‌-এস্ি 


আলোক-চিত্র গ্রহণের রহস্ত সম্যক বুঝিতে হইলে আলোর স্বরূপ 
কিছুটা জান! দরকার। জ্বলস্ত গ্যাস ম্যান্টূল্‌, উদ্ধল বৈদ্যুতিক বাল্ৰ্‌ 
অথব! হূরধ্য--যাহ! হইতেই আলোক নির্গত হউক না কেন তাহার 
স্বরূপ একই। অর্থাৎ আলো! বিকীরণকারী উজ্জ্বল (উত্তপ্তও বটে) 
পদার্থ যে সমস্ত অণু-পরমাণু লইয়! গঠিত তাহার অভ্যান্তরস্থ বিছ্যাতিনগুলি 
(61601019 ) প্রবল বেগে আন্দোলিত হইতে থাকে--যেমন ঘড়ির 
দোলক (01700101)) দক্ষিণে এবং বামে ছুলিতে থাকে । এই 
কম্পনশীল বিছ্যুতিন চতুর্দিকে আলোক-তরঙ্গ প্রেরণ করিতে থাকে-_ 
যেমন কম্পমান ঘণ্টা চতুদ্দিকের বায়ুতে শব-তরঙ্গ প্রেরণ করে অথব| 
পুক্ধরিণীর মধ্যে একটা লোষ্ট্র নিক্ষেপ করিলে উহার নিস্তন্ধ জলতলের 
উপর দিয়! চতুদ্দিকে তরঙমালা প্রবাহিত হইয়া যায়--শব্দ-তরঙ্গের 
একস্থান হইতে অন্যস্থ।নে যাইতে হইলে বায়ুর শ্ঠায় একটা জড় মাধ্যমের 
(10816119] 1090101) ) প্রয়োঙ্গন হয়--তেমনি আলোক-তরঙ্গের ও 
একস্থান হইতে অন্তস্থানে যাইতে হইলে একটী মাধ্যমের প্রয়োজন 
হয়। আলোক-তরঙ্গ প্রেরিত হইবার জন্য ষে মাধ্যমের প্রয়োজন হয় 
বৈজ্ঞানিকগণ উহাকে “ঈথর” নাম দিয়াছেন। ইহা বিশ্বচরাচরের সর্ববত্র 
পরিব্যাপ্ত হইয়া আছে__এমন কি কঠিন বস্ত্র অভ্যন্তরেও ইহা 
বিদ্তমান। ঈথরের ম্বরপকি তাহা অগ্প কথায় বলা বড় শক্ত_ইহা! 
বলিলেই যথেষ্ট হইবে যে ইহা! অন্তত বাুর ম্যায় কোন জড় পদার্থ 
নহে। দোলনশীল বিছ্যতিন যে তরঙ্গের সৃষ্টি করে তাহ! প্রবাহিত 
হইয়া যাইবার জন্য ঈথরের যে সব গুণ থাক দরকার তাহা সমস্তই 
উহ্বাতে আরোপ কর! হুইয়। থাকে। উজ্জ্বল পদার্থের অসংখ্য বিদ্যুতিনের 
সমন্তগুলিই যে একইভাবে ছুলিতে থাকে তাহা নহে। উহাদের 
দোলন-সময় (70100 ০ ৮1878607 ) এক নহে। বিছ্যুতিনের 
দোলনকে ঘড়ির দোলকের দোলনের দঙ্গে পূর্বেই তুলন! কর! হইয়াছে। 
ঘড়ির দোলক বামদিকে যতটা যাইবার তাহা গেলে সেই মুহূর্ত থেকে 
আরম্ত করিয়! দক্ষিণ দিকে যতটা যাইবার গিয়! পুনরায় বামদ্দিকে 
ূর্ববাবস্থায় ফিরিয়া আদিতে যে সময় অতিবাহিত হয় তাহাকেই একটা 
পূর্ণ দোলনের নময় অথবা সংক্ষেপে দোলন-সময় বলা যাউক। বিভিন্ন 
বিছ্াতিনের দৌলন-সময় বিভিন্ন। এক সেকেও সময়ে যতবার এইরূপ 
পূর্ণ দোলন সাধিত হয় তাহাকে দোলন-সংখ্যা (01205 0? 
%11)780107 ) বলিব। এই এক সেকেও সময়ের মধ্যে আলোক-তরঙ্ 
বাছিরের দিকে অনেকদূর অগ্রসর হইয়া যায়--যতটা যায় তাহাকেই 
আলোর গতিবেগ বলা হয় (প্রতি মেকেণ্ডে ১,৮৬,*** মাইল) এবং 
দোলন-সময়ের মধ্যে ( যাহা এক সেকেণ্ড অপেক্ষাও অনেক কম সময় ) 
যতটা যায় তাহাকে এ তরঙ্গের দৈর্ঘ্য বা! তরঙ্গান্তর (/2/5-15081 ) 


১৯৯ 


বল! হয়। জলের ঢেউএর কথা বিবেচনা করিলে এই তরঙ্গ-দৈর্ঘ্য বা 
তরঙ্গান্তর হইবে একটা 'টেউ-এর শীর্ষ হইতে ঠিক পরবন্তী ঢেউ-এর 
শীর্ষদেশ পর্য্যন্ত যে দুরত্ব বা দৈর্ঘ্য তাহাই। ইহাকে একটা সম্পূর্ণ 
ঢেউও বলিতে পারি । যে সময়ের মধ্যে বিছ্যুতিন একটী পূর্ণ দোলন 
শেষ করে সেই সময়ের মধ্যে চতুর্দিকে এইরূপ একটা পূর্ণ তরলের স্থটটি 
হয়। অন্য তরঙ্গগুলি ইহারই পুনরাবৃত্তি বাতীত আর কিছুই নহে, 
যেমন পরবর্তী দোলনগুলিও পূর্বব-দোলনের পুনরাবৃতি মাত্র। হৃতরাং 
দেখ যাইতেছে যে, এক সেকেণ্ডে তরঙ্গ যতটা অগ্রসর হইবে তাহার 
মধ্যে ততগুলি পূর্ণ তরঙ্গ থাকিবে-_যত নাকি উহার দৌলন-সংখ্যা অর্থাৎ 
প্রতি সেকেণ্ডে বিছ্াতিন যতবার পূর্ণ দোলন শেষ করিতে পারিবে। 
অতএব দেলন-সংখ্যাকে তরঙ্গাস্তর দিয় পূরণ করিলে তরঙ্গের গতিবেগ 
পাওয়া যাইবে। 

যে-কোন পদার্থের সামান্য একটুর মধ্যেও অসংখ্য বিদ্রাতিন 
বিদ্ভমান। উহার বিভিন্ন বিদ্যুতিন বিভিন্নভাবে আম্দেলিত হয় 
বলিয়৷ (অর্থাৎ দে।লন-মংখ্যা বা দোলন-সময় বিভিন্ন বলিয়া) এ 
উজ্জ্বল পদার্থ হইতে যে বিকীরণ (78186107) চতু্দিক ছড়াইয়া 
পড়িবে তাহার মধ্যে ছোট-বড় নানা! আকৃতির ঢেউ থাকিবে অর্থাৎ 
এই বিকীরণ মিশ্র বিকীরণ হইবে। কিন্তু ঢেউ-এর দৈর্ঘ্য যাহাই হোক 
ন| কেন উহার গতিবেগ সর্বদাই এক। হুতরাং তরঙ্গাস্তর বড় হইলে 
ঢেউ-এর সংখ্যা অর্থাৎ দোলন-সংখ্যা। কম এবং তরঙ্গান্তর ছোট হইলে 
দোলন-নংখ্যা বেশী হইবে--কারণ উভয়ের পুরণদল একই অর্থাৎ 
গতিবেগের সমান। আলোর রং কি হইবে তাহ! নির্ভর করে এই 
তরঙ্গ-দৈর্যের উপর। লাল আলোর তরঙ্গাস্তর বেগুনি আলোর 
তরঙ্গান্তর অপেক্ষা! বড়। অন্তান্ত রংগুলির প্রত্যেকের নিজস্ব বিশিষ্ট 
তরঙ্গ-দৈর্ঘ্য থাকে। কোন কঠিন পদার্থ (যেমন হুর্ধ্য অথবা ইলেকটি,ক 
বাল্বের অভ্যন্তরস্থ তার) উত্তপ্ত হইয়। উজ্জ্বল আকার ধারণপূর্ব্বক 
আলোক বিকীরণ করিতে থাকিলে--এই বিকীরণ মিশ্রবিকীরণ হইবে 
অর্থাৎ এই বিকীরণের মধ্যে ছোট-বড় নানা! আকারের তরঙ্গ থাকিবে ; 
হুতরাং দেখ! যাইতেছে, শ্বেত আলোসমুদয় বিভিন্ন রংবিশিষ্ট আলোর 
সংমিশ্রণ ব্যতীত আর কিছুই নহে। ইহা! প্রমাণ করিতে হইলে এ 
সাদা আলে! ত্রিশিয় কাচখণ্ডের বা প্রিজমের (1)151)) ভিতর দিয়! 
চালন| করিলেই বুঝা যাইবে। শ্রিজ্মের ভিতর হইতে অপর দিকে 
বাহির হইয়। আমিয়। উহা আর সাদ! খাকে না। রামধনুর মধ্যে 
ধে সব রং দেখ! যায় অর্থাৎ বেগুনি, খননীল, নীল, সবুজ, গীত, কমলা, 
লাল প্রভৃতি সমস্ত রংই তখন উহার মধ্যে দেখা যাইবে। কুতগ্নাং বল! 
হায় যে প্রি্মের সাহীয্যে সাদা আলোর বিশ্লেষণ হয়। 


২০০ 


এখন কি প্রকারে আমর! একটী পদার্থ দেখিতে পাই তাঁহার 
আলোচন|! করা যাউক। কোন পদার্থের উপর সাদা আলে! পড়িলে 
উহ! হয় প্রতিফলিত (15100600) হইয়া একদিকে, না হয় বিঙ্গিপ্ত 
(7175560) হইয়া চতুদ্দিকে ছড়।ইয়া পড়িবে। আর পদার্থটা যদি 
হচ্ছ হয় (যেমন কাচ) তাহা হইলে এ আলো উহার ভিতর দিয়া 
গিয়! অপর দিকে বাহির হইয়া যাইবে। ইহা ছাড়া বন্তর উপর 
আপতিত আলো উহা ছ্বারা সম্পূর্ণ অথবা আংশিকভাবে শোধিতও 
হইতে পারে। কিন্ত যে আলো! প্রতিফলিত, বিক্ষিপ্ত অধবা ভিতর 
দিয় প্রবাহিত হইয়া যায় তাহাই আমাদের চোখের ভিতর প্রবেশ 
করিয়া! চোখের পরকলার (৪১৩-1215) সাহায্যে চক্ষুর পশ্চাতে 
অবস্থিত অক্ষিপটের (£০1172) উপর প্র বস্তুর একটা প্রতিচ্ছবি 
স্ষ্টিকরে। এই আলোময় প্রতিচ্ছবি অক্ষিপটের এ অংশে উত্তেজনার 
সৃষ্টি করে যাহা স্্াধুমণ্পী কর্তৃক মন্তিক্ষে নীত হইলেই-_-'আমরা 
ই বন্তুটী দেখিতেছি'--এই উপলব্ধি হয়। বস্তর উপর ষে সাদ! আলে! 
পড়ে তাহার মধ্যে সমস্ত রংই বিদ্যমান। যদি এ সমুদয় রংই বস্তুর 
গায়ে লাগিয়! বিক্ষিপ্ত হয়- কোনটাই শোধিত না হয়--তাহ! হইলে 
এ বস্তটাকে সাদ! দেখাইবে-_যেমন সাদা কাগজ, কাপড় ঝ| মার্বল। 
আর যদি সমুদয় রংগুলিই শোধিত হয়--কিছুই বিক্ষিগ্ত না হয়-_ 
তাহা হইলে উহাকে কালো দেখাইবে--যেমন কয়লা, চুল ইত্যাদি। 
বন্তত একটা জিনিস কালো! বলিয়! বোধ হয় শুধু এই জন্যই__যে উহা! 
হইতে কোন আলোই বিক্ষিপ্ত হইয়া আমাদের চোখের উপর আসিয়! 
পড়ে না। কোন একটা পদার্থের রং নীল বলিলে ইহাই বুঝাইবে 
যে, যখন সাদ! আলে! উহার উপর পড়ে তখন সাদা আলোর ভিতরে 
যে সব রং আছে তাহার নীল ব্যতীত অপর সকল রংই পদার্থ 
দ্বারা শোধিত হয় এবং শুধু নীল রংটাই বিক্ষিপ্ত হইয়া আমাদের 
চোখের ভিতর প্রবেশ করে। নীল বস্তুর উপর সাদ বা নীল ব্যতীত 
অন্ত কোন রং-বিশিষ্ট আলো পড়িলে উহা! কালে! দেখাইবে-_কারণ 
এ আলো উহাতে শোষিত হইবে । অতএব কোন বস্তু সাদা, কাল বঝ| 
অপর রং-বিশিষ্ট কেন দেখায় তাহার ব্যাখ্যা পাওয়া গেল। 

এই বিভিন্ন রং-বিশিষ্ট আলে।কতরঙ্গের দৈর্ঘ্য কতখানি তাহা একটু 
আলোচন! করা বাউক। প্রথমেই বল। দরকার যে, এই তরঙ্গ-দৈধ্য এক 
ইঞ্চি বা এক দের্টমিটর অপেক্ষাও এত অধিক ছোট যে মাপকাঠি ইঞ্চি 
অথব| সেপ্টিমিটর হইলে চলিবে না। ইহা অপেক্ষাও আনেক গুণ ছোট 
মাপকাঠির দরকার। এইরূপ একটা অতি ক্ষুদ্র মাপকাঠির নাম দেওয়া 
হইয়াছে--এভস্ট্রম | ইহার দৈর্ঘ্য এক সেপ্টিমিটরের দশ কোটি ভাগের 
এক ভাগ। সংক্ষেপে আমরা ইহাকে এ" বলিব। লাল আলোর 
তরঙ্গ-দৈর্ঘ্য ৮*০*এ৭। বেগুনি আলোর তরঙ্গ-দৈর্ঘ্য ৪**০এ*। পূর্বেই 
বল। হইয়াছে যে, উজ্জ্বল পদার্থের অন্যত্তরস্থ সংখ্যাতীত বিছ্যুতিনগুলি 
অসংখ্য প্রকারে আন্দোলিত হইতে পারে--সেই কারণেই নান! রং-এর 
( অর্থাৎ বিভিন্ন তরঙ্গ-দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট ) জালে! উহা হইতে নির্গত হুর যাহার 
একব্র সমাবেশে উহাকে সাদ বলিয়! মনে হয়। কিন্তু যত প্রকারের 


ভা ভন 


[ ২৮শ বর্-_ংয় খণ্ঁ-ংয় সংখ্যা 


তরঙ্গের উদ্ভব হইতে পারে তাহার ধৈর্য যে কেবল ৮*** হইতে 
৪৯** এ০-তেই সীম।বন্ধ তাহা! নহে; পরস্ত ৮***এ” অপেক্ষা! অনেক 
বড় এবং ৪***এ” অপেক্ষা অনেক ছোট তরঙ্গেরও স্যষ্টি হইতে পারে-_ 
কিন্ত সেগুলি আমাদের অক্ষিপটে কোন উত্তেজনার স্যষ্টি করিতে পারে না 
অর্থাৎ চোখের সাহায্যে আমরা তাহাদের উপস্থিতি উপলব্ধি করিতে 
পারি না। হুতরাং তাহাকে আমরা দৃশ্থমান আলে! বলি না। বস্তত 
তখাকখিত অন্ধকারের ভিতর এরাপ অনেক অদৃগ্ঠ বিকীরণ থাকিতে 
পারে। চোখে দেখিতে পাই ন! বলিয়াই অন্ধকার বলি। কিন্তু অন্থ 
যন্ত্রের সাহায্যে তাহাদের উপস্থিতি দেখান যায়। তরঙ্গ-দৈর্্য ৮***এ, 
অপেক্ষা অধিক হইলে তাহাদের বেতার-তরঙ্গ বলা হয়। আর যদি 
৪৯০০ এ অপেক্ষা! ছোট হয় তাহ! হইলে তাহাদের অতি-বেগুনি (1112- 
৮1016), আরও ছোট হইলে রঞ্ন-রশ্রি, আরও ছে।ট হইলে গামা-রশ্রি 
(যাহা রেডিয়ম প্রত্ততি ধাতু হইতে ম্বতঃবিস্ছুরিত হয় ) এবং সর্বাপেক্ষা 
ছোট যে তরঙ্গ তাহাকে কদ্মিক তরঙ্গ (005:010 ৬2৮৫) বলা হয়। 
এই কস্মিক রশ্মি অত্যন্ত শক্তিশালী এবং ইহা মহাব্যোম হইতে প্রতি- 
নিয়তই ধরাপৃষ্ঠে আপতিত হইতেছে। ইহার ব্যাখ্যাও অধুনা একপ্রকার 
পাওয়! গিয়।ছে। হতরাং দেখা যাইতেছে, কোন কঠিন পদার্থ অতত্তপ্ 
হইয়! উজ্জল আকার ধারণ করিলে উহার অন্যন্তরস্থ বিদ্যুতিনগুলি 
যত প্রকার তরঙ্গের সুষ্টি করিতে পারে এবং করে তাহার মধ্যে মাত্র 
অত্যল্প কয়েক প্রকারের তরঙ্গঈই আমাদের চোখের উপর ক্রিয়াশীল। 
উহাদের তরঙ্গান্তর ৮***এ” হইতে ৪***এ” হইলেই আমর! উহা উচ্ছল 
বলি অর্থাৎ উহ! আলো! বিকীরণ করে_বলি। ইহাঁকেই দুগ্তমান 
আলো ( 51510] 11৮01) বল! হয়। এই দৃষ্ঠমান আলোর উভয় দিকে 
_ অর্থাৎ ছোট এবং বড় তরঙ্গ-বিশিষ্ট আরও বিকীরণ আছে যাহ! 
চোখের উপর ক্রিয়াশীল ন| হইলেও অন্য এমন যন্ত্র আছে যাহার উপর 
উহ! ক্রিয়াশীল বলিয়! তাহার সাহায্যে উহাদের পস্থিতি প্রমাণ কর! 
যায়। উপরে যাহ! বল! হইয়াছে তাহা হইতে ইহাও পরিষ্কাররূপে 
বোঝা যাঁয় যে বেতার-তরঙ্গ, উত্তাপ, আলো, রঞ্জনরশ্মি, গামারশি 
প্রতৃতি মূলত 'একই অর্থাৎ ঈথরের তরঙ্গমাল! ব্যতীত আর কিছুই নহে 
__প্রভেদ শুধু উহাদের তরঙ্গ-দৈর্ধ্যে। একটী কঠিন পদার্থ উত্তপ্ত হইতে 
থাকিলে উহার অভ্যন্তরস্থ পরমাণু এবং বিছ্যুতিনগুলি আন্দোলিত হইতে 
থাকার দরুণ উহ! হইতে উত্তাপরশ্মি তরঙ্গাকারে চতুর্দিকে বিকীর্ণ হইতে 
আরম্ত করে। তাপমান বাড়িবার সঙ্গে সঙ্গে উহ! আলোকরশ্িও 
বিকীর্ণ করিতে থাকে--অর্থাৎ উহাকে আমর! উদ্বল বলিয়া দেখিতে 
পাই। তাপমান আরও বাড়িলে উহ! হইতে এমন অনেক ক্ষুদ্র তরঙ্গাত্তর- 
বিশিষ্ট বিকীরণ বাহির হইবে যাহা! আমর! দেখিতে পাই না-_অর্থাৎ 
অতি-বেগুনি রশ্মি । 

এক্ষণে মনে কর! যাঁউক, হৃচীভেস্ত অন্ধকার গৃহে একটী কেটুলীতে 
ফুটন্ত জল রাখ! হইল। উহার তাপমান এত অধিক নহে যে উহা হইতে 
আলোক-তরঙগ নিগতি হইবে--অর্থাৎ আমরা উহা! দেখিতে পাইব না। 
কিন্ত আমর! দেখিতে মা পাইলেও উহার তিতরের পরমাণুগ্ুলি 


মাধ-”-১৪৭ ] 


আন্দোলিত হইতে থাকার দকণ উত্তাপ-তরঙ্গ চতুর্দিকে ছড়াইয়৷ পড়িবে। 
এখন যদি এ ঘরে কোন কাল্ননিক জীব প্রবেশ করে যাহার চোখের 
গঠনপ্রণালী এইরূপ যে তাহার অক্ষিপটে উত্তীপ-তরঙ্গ পড়িলে উহা 
উত্তেজিত হয়, তাহা হইলে সেই জীব গাঢ় অন্ধকারের ভিতরও প্র 
কেটুলী অনারাসে' দেখিতে পাইবে। বাদুড়, পেচক, শৃগালাদি নিশাচর 
জীবজস্তর চোখের গঠনপ্রণালীতে হয়ত এইরাপ কোন বিভিন্নতা আছে 
যাহাতে উত্তাপ-তরঙ্গের সাহায্যে তাহার! দেখিতে পায়। দিনমানে যে 
সমস্ত বন্ত সুর্যোর আলো! এবং উত্তাপ শোষণ করিয়! লয়, রাত্রিকালে 
তাহার! উত্তাপ-তরঙ্গাকারে তাহা বিকীর্ণ করে-_-হয়ত বা! তাখারই 
সাহীযো এই নব নিশাচর রা ব্রকালে তথাকথিত অন্ধকারে চলাফের! 
করিয়া থাকে । আবার চামচিক! প্রভৃতি কোন বোন জীবের আচরণ 
লক্ষ্য করিলে মনে হয় যে, উহার! প্রথর দিবালোকে ভাল দেখিতে পায় 
না। বোধ হয় দিনের বেলার দৃগ্তমান আলোকের প্রাথধ্য হেতু এবং এ 
এ আলে! উহাদের অক্ষিপট উত্তেজিত করিতে পারে না৷ বলিয়া উহাব!| 
দেখিতে পায় না। 

আলোর সম্বত্ধে উপরে যাহ! বলা হইল তাহার সাহায্যে এইবার 
আলোকচিত্র গ্রহণ সমাক বোঝ! যাইবে । কোন বস্তু আমরা দেখিতেছি 
_ইহার অর্থই হইল এই যে, প্র বস্তুনির্গত নিজন্ব আলে! কিংবা অপর 
উদ্ধ্বল বস্ত্র হইতে প্রাপ্ত আলো বস্ত্র উপর পড়িয়া তাহা হইতে বিক্ষিপ্ত 
হইয়া আমাদের অক্ষিপটের উপর পড়িয়া তাহার সাময়িক রাপাস্তর 
ঘটাইয়ছে। অন্ধলোকের অ্ষিপটের এই রূপান্তর সাধনের ক্ষমত| নাই 
বলিয়াই সে দেখিতে পায় না। অবগ্ঠ যাহার চক্ষু একেবারেই নাই 
তাহার কথা স্বতস্ত্র। পৃথিবীতে জীবজন্তকর অক্ষিপট ব্যতীতও এমন 
জিনিস থাকিতে পারে এবং আছে যাহ! আলোর প্রভাবে রাপান্তরিত হয়। 
রঙিন ছবি, কাপড়, জামা ইত্যাদির রং আলে! লাগিয়। ক্রমে ক্রমে 
ফ্যাকাসে হইয়া! যায়--যাহাকে আমরা বলি যে রংহ্বলিয়া গিয়াছে-- 
ইহাও আলোকের প্রভাবে রূপান্তর ব্যতীত আর কিছু নহে। যদি এমন 
কোন জিনিসের সাক্ষাৎ মেলে যাহার উপর আলো! পড়িলে--তাহা যত 
অল্প সময়ের জন্যই হোক ন! কেন-_শুধু যে তাহার রূপান্তর হইবে তাহা 
নয়, পরস্ত রূপান্তরের পরিমাণ আলোকের গাঢ়ত্বের উপর নির্ভর করিবে 
--অর্থাৎ প্র বন্তর যে অংশে যত চড়! আলে। পড়িবে সেই অংশ তত বেশী 
রূপান্তরিত হইবে-তাহা হইলে সেই বস্তর সাহায্যে আলোক চিত্রগ্রহণ 
করা! সম্ভব হইবে। কাচপুটের সাহায্যে যাহার আলোকচিত্র গ্রহণ 
করিব তাহার একটী আলোময় প্রতিচ্ছবি (7521 177286 ) এ বস্তুটার 
উপর ফেলিলেই উহার খানিকটা! রূপান্তর হইবে-_প্রতিচ্ছবির দেই অংশে 
বেশী রূপাস্বর হইবে যে অংশে বেশী আলে! পড়িয়াছে এবং সেই অংশে 
কম রূপান্তর হইবে যেখানে কম আলে! পড়িয়াছে। কালো! চুলওয়াল। 
একজন যুবকের আলোকচিত্র গ্রহণ করিবার সময়ে দেখা যাইবে যে, 
গ্রতিচ্ছবির যে অংশে চুল সেই অংশে প্রায় কোন আলো! ন! পড়ায় 
ইকারণ চুল কালো, অতএব কোন আলে! বিক্ষিপ্ত করে না) সেখানে 
পদদার্থটার কোন রূপান্তর ঘটবে না; আর যে অংশে সাদ! পোষাক সেই 

২৬ 


আনেন! শু আক্শোক্ষ-জিজ্র প্রহুণ 


২০৯ 


ংশে সর্বাপেক্ষা বেশী রূপান্তর ঘটিবে, কারণ সাদা অর্থই এই যে এ অংশ 
হইতে সর্বাপেক্ষা অধিক আলে! বিক্ষিপ্ত হইয়া! বস্তুটার উপর পড়িনাত্ছ। 
সিলভার ব্রোমাইড. এমন একটা রাসায়নিক পদার্থ--যাহার উপর আলো 
পড়িলে--তাহা যত অল্প সময়ের জন্যই হউক ন! কেন--উহার রাসায়নিক 
রূপান্তর ঘটে। এই পদার্থটীর মধ্যে ছুইটী মৌলিক উপাদান বিস্তমান-_ 
সিলভার বা রৌপ্য এবং ব্রোমিন। সিলভার ব্রোমাইড, জিলাটান এবং 
জল একত্র করিয়া একটী ঘন আরক (6171115101 ) প্রস্তুত কর! হয় 
এবং কাচের প্লেট অথবা সেলুলয়েডের ফিলমের উপর উহার একটী 
পাতলা প্রলেপ দিয়া উহাকে শুকানো হয়। অবশ্য এই সমন্ত প্রক্রিয়াই 
অন্ধকারে অথবা কমলা রংএর আলোতে সমাধা করা হয়। কারণ 
কমলা রংএর আলো! এ ব্রোমাইডের কোন রূপাস্তর সাধন করিতে পারে 
না। ইহাই ফোটোগ্রাফিক প্লেট বা ফিল্ম। 
আলোকচিত্র গ্রহণ করিতে হইলে প্রথমেই একটী ক্যামেরার 
প্রয়োজন হয় । ইহা একটী অন্ধকার প্রকোষ্ঠ ব্যতীত আর কিছুই নহে। 
ইহার সন্দুখভাগে মাত্র একটা ছিত্র থাকে--যাহার ভিতর দিয় বাহিরের 
এ প্রকোষ্ঠে প্রবেশ করিতে পারে । অবন্ঠ এ ছিদ্রটা বন্ধ করিষার ব্যবস্থাও 
আছে এবং উহ! বদ্ধ করিলে বাহিরের কোন আলোই ভিতরে প্রবেশ 
করিতে পারে না। ছিদ্রের প্রবেশ-পথে কয়েকখানি কাচপুট (1505) 
আছে যাহার সাহায্যে ক্যামেরার সন্ুখভাগস্থ কোন পদার্থের প্রতিকৃতি 
ক্যামেরার পশ্চাৎ্ভাগের পর্দার উপর শিয়া পড়ে। কাচপুট হইতে 
পর্দার দুরত্ব বাড়ানো-কমান যায়। ইহার প্রয়োজন আছে, কারণ যে 
পদার্থের আলোক-চিত্র লওয়! হইবে, কাচপুট হইতে তাহার যে দূরত্ব 
উহ্হারই উপর নির্ভর করে--উহার প্রতিকৃতি সুস্পষ্টভাবে কাচপুটের 
পশ্চাতে কত দূরে পড়িবে-- তাহা । পর্দাটি ঠিক সেইখানে থাকা চাই। 
আলোকচিত্র তুলিতে প্রকৃতপক্ষে এক সেকেত্ডেরও কম সময় লাগে । 
অথচ ফোটোগ্রাফ তুলিতে গিয়া ফোটোগ্রাফার ষে অত্যধিক সময় নেন 
তাহার কারণ এই যে. তিনি পর্দাটি সম্মুখে এবং পশ্চাতে সরাইয়া কোন্‌ 
অবস্থানে সর্বাপেক্ষা সুম্পঃ প্রতিচ্ছবি পাওয়! ধায় তাহাই বাহির করেন। 
তাহা ছাড়া,কে কোন্‌ অবস্থায় থাকিলে সুন্দর ছবি উঠিবে তাহাও তাহাকে 
বিবেচন! করিতে হয়। কালে! কাপড়ে ঢাকা ফোটো গ্রাফিক প্লেটটা পর্দার 
জায়গায় বনান হয় এবং ক্যামেরা র-ছিদ্রপথটা বন্ধ করিয়া এ কালো! কাপড়- 
থান। মরাইয়! ফেল! হয়। এইবার [ছন্্রপথটা খুলিলে বস্তুর অথব! মানুষের 
(যাহার আলোকচিত্র লওয়া হইতেছে) প্রতিচ্ছবি এর প্লেটের উপর 
পড়িয়। উহার উপরিস্থিত যে ব্রোমাইডের প্রলেপ আছে তাহার রাপাস্তর 
সাধন করিবে। সাধারণত এক সেকেণ্ডেরও কম সময়ের অন্ক ছিদ্রটী 
থুলিয়! আবার বন্ধ করিয়! দেওয়া হয়। অবশ্ত ঠিক কতটুকু সময় খোল! 
রাখ! হইবে তাহা নির্ভর করে তখনকার দিনের আলোর প্রাখর্্যের 
উপর। আজকাল অবন্ ্রডিয়োতে কৃত্রিম আলোর সাহায্যেও 
ফোটোগ্রাফ তোলা! হয়। অনেক দোকানের সন্গুখে যে বড় বড় হরফে 
লেখা থাকে, “দিবারাত্র ফোটে৷ তোল! হয়” ইহার রছন্ত এই । আলো 
আলো! প্রথর হইলে কম সময় এবং মৃদু হইলে বেশী সময় খোল! রাখ৷ 


২০২. 


ভ্ডান্র ত্য 


[ ২৮শ বর্-_২য় খণ্ড--২ম সংখ্যা 





হয়। প্লেটের উপর প্রতিকৃতির যে ছাপ পড়িল তাহ! এই অবস্থার দেখ 
যায় না--সেইজগ্ই ইহাকে অদৃশ্ঠ প্রতিচ্ছবি (18661) 177)9885 ) 
বল! হয়। ইহাকে পরিশ্ষট করিয়৷ তুলিতে হইলে অন্ত প্রক্রিয়ার 
দরকার হয়। তাহাকেই ৫5৬192178 বা পরিশ্ক-উকরণ বলা হয়। 
এই কাধ্য কতগুলি রাসায়নিক পদার্থের াহাযো করা যায়। উহাদিগকে 
06%6101967 বাঁ পরিক্ষটকারক বল! হয়। ইহাদের কার্ধ্যই হইল, 
আলো! মুহুর্তের জন্ত প্লেটের উপর পড়িয়া যে রূপান্তর আরম্ত করিয়াছে 
তাহা সম্পূর্ণ করা। শুধু তাই নহে, যেখানে আলো! যত প্রথরভাবে 
পড়িয়াছে সেখানে এই 06%5107৩:এর কাধ্য তত বেশী পরিমাণ 
হইবে। ব্রোমাইডের উপর আলো পড়িলে উহা! হইতে ব্রোমিন নামক 
মৌলিক পদার্থটী বিযুক্ত হইয়া যায় এবং অবশিষ্ট থাকে রৌপ্য। যদিও 
একটুক্রা রূপার রং সাদা তথাপি প্লেটের উপর আলো এবং 
96/5106:এর সাহায্যে যে রাপ| উৎপন্ন হয় তাহার রং কালে।। 
কারণ কোন একটী জিনিসের রং উহার কণাগুলি কত সুঙ্গু তাহার 
উপর নির্ভর করে। রাপা অত্যন্ত হুস্মাকারে কালে! দেখ! যায়। 
যে সোনা “তপ্ত কাঞ্চন” রং বলিয়া আমর! তারিফ করি, তাহাও অতি 
সুজ কপাকারে প্রায় কালোই দেখায়। 1)৬০1০291 পদার্থটা 
জলে গুলিয়! উহার মধ্যে প্লেট ডুবাইয়! দেওয়! হয়। ইহা! অন্ধকারে অথব৷ 
এষন আলোতে করিতে হইবে যাহা ব্রোমাইডের উপর কোন ক্রিয়া 
করিতে পারে না। কিছুক্ষণ ডুবাইয়া রাখিলেই প্রতিকৃতিটা পরিস্ষ্ট 
হইয়! ওঠে । মনে কর! যাউক যে একটী মানুষের আলোকচিত্র গ্রহণ 
করা হইয়াছে । দেখা যাইবে যে প্রতিচ্ছবির যে অংশে চুল ছিল 
সেখানকার রং কতকট! ছাইয়ের মত অর্থাৎ অপরিবর্তিত প্লেটের রং। 
এইখানে ব্রোমাইড ব্রোমাইডই আছে, কারণ চুল কালো! বলিয়! সেখানে 
প্রায় কোন আলোই না পড়ার দরুণ কোন পরিবর্তন হয় নাই এবং 
06৮61067ও সেখানে কোন ক্রিয়া করিতে পারে নাই। আর 
প্রতিচ্ছবির যোনটায় সাদা কাপড়-চোপড় ছিল সেখানে বেশী আলো 
পড়ায় সর্ববাপেক্ষা বেশী পরিবর্তন হইয়াছে ; হৃতরাং 06৮610967ও 
সেখানে বেশ একটু পুরু আবরণের কালে! রূপা তৈয়ার করিয়াছে। 
হৃতরাং সে স্থানট। খুবই কালে।। প্রতিচ্ছবির অন্ঠান্য অংশে যে অগ্ুপাতে 
আলোক সম্পীত হইয়াছে সেই অনুপাতে পুরু অথবা পাতল! কালে। 
রূপার স্তর পড়িবে । অতএব দেখ! যাইতেছে, প্রতিকৃতিটী এইবার সাদায় 
কালোয় বেশ হুপরিস্কট হইয়া উঠিয়াছে। যেখানে অপরিবর্তিত ব্রোমাইড 
সেখানটা ছাইয়ের রং, আর যেখানটা| খুবই পরিবর্তিত হইয়াছে সেখানকার 
রং পুরুণ্তর রাপার দরুণ কালো--অর্থাৎ যুবকের মাধার কালো! চুল এবং 
গৌফ বুদ্ধের পাকা চুল এবং গোফের হ্যায় দেখাইবে। ইহাতে অবস্থা 
বৃদ্ধের খুণী হইবার কারণ থাকিলেও যুবকের মোটেই থুশী হইবার কথা 
নয়। এই যে প্রতিকৃতি পাওয়। গেল.যাহাতে সাদ! জিনিস কালে! এবং 
কীলে। জিনিস সাদ হইয়| উঠিয়াছে ইহাকেই নেগেটিভ, বল হয়। এই 
নেগেটিতকে এখনও আলোর মধ্যে বাহির করা চলে না, কারণ ইহার 
মধ্যে এখনো অপরিবর্তিত ব্রোমাইড জাছে--বাহার উপর আলো! পড়িলে 


পা, পপ, । (সান 


সমন্ত প্রতিকৃতিই নষ্ট হইয়! বিভ্রাট বাধাইবে। অতএব এই অপরিবর্তিত 
ব্রোমাইড এমনভাবে সরাইয়! ফেল! দরকার যাহাতে রাপার উপর কোম 
ক্রিয়া না হর়। ইহাকে 75178 (5 10885 বা “প্রতিকৃতির প্রতিষ্ঠা” 
বলা যাইতে পারে। ইহ! কর! হয় হাইপো! (১১০) নামক রাসায়নিক 
পদার্থটা জলে দ্রবীভূত করিয়া! তাহার সাহাযো । কারণ এই রস 
ব্রোমাইডকে দ্রবীভূত করিয়! সরাইয়! ফেলিবে, পরস্ত রূপার উপর ইহার 
কোনই ক্রিয়। নাই। হুতরাং যেখানে ছ।ই অপব! প্রায় সাদা রং-এর 
ব্রোমাইডের প্রলেপ ছিল সেখানে এখন আর কিছুই ন| থাকায় স্বচ্ছ এবং 
সাদ! কাচ বাহির হইয়৷ পড়িবে । সুতরাং নেগেটিভে এই যে সাদা- 
কালোর প্রতিকৃতি পাওয়৷ গেল-_ইহার গভীর কালো অংশ রৌপ্য 
নির্শিত, হুতরাং অন্থচ্ছ এবং একদম মাদ! অংশ ম্বচ্ছ, কারণ সেখানে ম্বচ্ছ 
কাচ বা মেলুলয়েড ( ফিল্মের পক্ষে) ব্যতীত আর কিছুই নাই এবং 
অন্যান্য জায়গায় আলোক-সম্পাতের অন্পাতানুষায়ী পাতল ঈষৎ কালো 
রূপার আবরণ থাকায় আংশিক শ্বচ্ছ। বিভিন্ন অংশের হ্বচ্ছতা সম্বন্ধে 
যাহ! বলা! হইল তাহা মনে রাখ প্রয়োজন, কারণ নেগেটিভ, হইতে 
পসিটিভ, ছবি (যাহাতে কালে! কালোভাবেই এবং সাদ! সাদাভাবেই 
ওঠে) কি প্রকারে করা সম্ভব তাহ! বুঝিবার পক্ষে ইহার আবগ্ককতা 
আছে। নেগেটিভকে অবশ্য অনেকক্ষণ পর্য্যন্ত উত্তমতাবে জলে ধোঁত 
কর! আবষ্ঠক যাহাতে উহার উপর হইতে সমস্ত অবাঞ্ছনীর় রাসায়নিক 
পদার্থ বিদুরিত হইতে গারে। তারপর উ্থাকে শুদ্ক করিতে হয়। 
অতএব দেখ! যাইতেছে, একটী আলোকচিত্রের নেগেটিভ তৈরী করিতে 
পরপর নিম্মলিখিত চারিটা প্রক্রিয়া করিতে হয় £--( ১) আলোক-সম্পাত 
অর্থাৎ আলোময় প্রতিচ্ছবি প্লেটের উপর পড়িতে দেওয়! ( 6%1905016 ), 
(২) পরিক্ষটকরণ (০6৮100108 ), ( ৩) প্রতিষ্ঠাকরণ (79106 ), 
ও ধৌতকরণ। এইবার পসিটিভ, ছবি প্রন্তত করার বিষয় আলো চন! 
কর! যাউক। সাধারণত এই ছবি কাগজে তোল! হয়। ফোটোগ্রাফিক 
প্লেটের মত ফটোগ্রাফিক কাগজ তৈরী করিতে কাগজের উপর 
ব্রোমাইডের একটি প্রলেপ লাগাইতে হয়। এইরূপ একখানি কাগজ 
নেগেটিভের পশ্চাতে লাগাইয়। কিছুক্ষণের জগ্য আলোতে ধরিতে হয়। 
নেগেটিভের যে সব জায়গা পুরুস্তরের রূপ থাকার দরুণ অশ্থচ্ছ তাহার 
ভিতর দিয়া কোন আলো] গিয়া কাগজের উপরে পড়িবে না--সুতরাং 
সেখানকার ব্রোমাইড রাপাস্তরিত হইবে না। কাজেই 06৮€101) এবং 
£% করিবার পর এ জায়গায় শুধু কাগজ থাকার দরুণ সাদা দেখাইবে। 
আর নেগেটিভের যে জায়গায় সাদা অর্থাৎ শুধু স্বচ্ছ কাচ বিভমান সেই 
জায়গার ভিতর দিয়া অনেক আলো! পশ্চাতে অবস্থিত কাগজের উপর 
পড়িয়া উহার বহুল পরিমাণ রূপান্তর ঘটাইবে। ছুতরাং 0৮61) 
করিবার সসয়ে সেইখানে ঘন হইয়া! কাল রূপার শুর পড়িবে। অতএব 
নেগেটিভের কালজায়গ।ছবিতে সাদ হুইয়! উঠিবে এবং সাদা জায়গ! কালো 
হইয়া! উঠিবে-_অর্থাৎ ছবিতে মূল বন্তর সাদ! সাদাই উঠিবে এবং কালো 
কালোই উঠিবে। হৃতরাং পন্ককেশ বৃদ্ধ এবং কৃফফেশ বুঝা কাহারও 
€কান আপশোষের কারণ থাকিবে না। অতএব দেখা বাইতেছে, 


মাঘ--১৩৪৭ ] 


নেগেটিভ হইতে ছবি তুলিতে হইলে ফোটোগ্রাফিক কাগজখানাকে পর 
পর এ চারিটি প্রক্রিয়ার ভিতর দিয়! লইয়া যাইতে হইবে । এই হইল 
আলোকচিত্র তুলিবার বৈজ্ঞানিক রহস্য ৷ অবগ্ঠ ইহার পরও ছবির উপরে 
শিল্পীর তুলি চালনার সাধন! আছে--তাহা আমাদের আলোচ্য বিষয় নহে। 

উপরে যাহা বল! হইল তাহাতে আলোকচিত্রগ্রহণের বৈজ্ঞানিক 
তত্বের অত্যন্ত সাধারণ ব্যাখ্যা পাওয়! যাইবে। উহার থু”্টিনাটি ব্যাপারের 
মধ্যে মোটেই প্রবেশ করা হইল ন|। কিন্ত বিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞান 
প্রত্যেক বিষয়ে, এমন কি আলোকচিত্র গ্রহণ ব্যাপারেও এতদূর অগ্রসর 
হইয়! গিয়াছে যে, শুধু মাত্র সাধারণ তত্বের ব্যাখ্য। করিলে উহার সম্বন্ধে 
প্রায়কিছুই বগলা হয়না। এমন কি, এমন কথাও নিবিষবাদে বল! 
যাইতে পারে যে “আলোকচিত্র” এই নামেরই অধুনা কোন উপযোগিত| 
নাই। বরঞ্চ ইহাকে “বিকীরণচিত্র” ঝলিলে তাহাই খুব উত্তম হইবে। 
ইংরেজীতেও ইহ[কে [71)01081808 না বলিয়া [২9010075190 বলাই 
সঙ্গত। ইহার কারণ বলিতেছি। যত প্রকারের বিকীরণ (80181100) 
সম্ভব তাহার মাত্র অত্যল্প অংশ অর্থাৎ যে অংশকে দৃশ্তমান আলোক 
( ৮1511)191181)---৮*** এ” হইতে ৪***এ* যাহার তরঙ্গাস্তর ) বল! 
হয় তাহ! দ্বারাই পূর্বে আলোকচিত্র গ্রহণ কর! হইত। অর্থাৎ ইহাও 
বল! যাইতে পারে-__যাহা চোখের সাহায্যে দেখা যায় এ পর্যন্ত তাহারই 
চিত্র গ্রহণ কর! সম্ভব হইত। কিন্তু অধুন! অদৃপ্ত বিকীরণের সাহায্যেও 
চিত্র গ্রহণ করা সম্ভব হইয়াছে। দৃষগ্তমান আলোক অপেক্ষা হন্বতর 
ওরঙ্সস্তের বিশিষ্ট বিকীরণ ( যেমন রঞ্রনরশ্মি) অথবা! উহাপেক্ষ। দীর্ঘতর 
তরঙ্গান্তর-বিশিষ্ট বিকীরণ (যেমন--উত্তাপ রশ্মি-170160 5019.01013)- 
এর সাহায্যও বপ্তর হুবহু চিত্র গ্রহণ আঙ্জকাল সম্তব। ইহা হ্বারা 
মানুষের অশেষবিধ কল্যাণও সাধিত হইয়াছে। ইহার জগ্ত শুধু 
প্রয়োজন এমন রাসায়নিক পদার্থ__যাহ! অবশ্থা সিলভার ব্রোমাইড 
হইতে বিতিম্ব-যাহা! প্রসব বিকীরণের সাহায্যে রূপান্তরিত হয়। 
এইরূপ বহু প্রকারের রাসায়নিক পদার্থের সন্ধান অধুন। পাওয়! গিযাছে। 
ফোটোগ্রাফিক প্লেট বা কাশজ্জের উপর ব্রোমাইডের প্রলেপ ন! লাগাইয়া 
পদার্থের প্রলেপ লাগাইতে হইবে । আজকাল সম্পূর্ণ অন্ধকার গৃহের 
ও যাবতীয় পদার্থের চিত্র এই ভাষে গ্রহণ করা যায় অর্থাৎ চোখে ন! 
দেখিতে পারিলেও ফোটোগ্রাফের সাহায্যে তাহ। দেখ! যায়। আলোক- 
চিত্র গ্রহণ ঘে কতভাবে মানুষের উপকার মাধন করিয়াছে এবং করিতেছে 
তাহার আভাষ মাত্র এখানে দেওয়া যাইতে পারে--উহাতেই স্তস্ভিত 
হইতে হয়। 

আলোকচিত্রের সাহায্যে পদার্থ বিস্তা, রসায়ন এবং জ্যোতিষ শীস্তের 
গ্রবেষণ! বছল পরিমাণে উন্নত হইয়াছে । আইনষ্টাইনের আপেক্ষিকতা- 
বাদের পরীক্ষামূলক প্রমাণ আলোকচিত্রের সাহায্যেই পাওয়! 
গিয়াছিল। রঞনরশ্ির সাহায্যে অস্ত্র, পাকাশয়, ফুস্ফুস্‌ প্রভৃতির 
চিত্রগ্রহণ রোগনির্ণ়ব্যাপারে অপরিহার্য হইয়া উঠিয়াছে। হাড় 
তাজিয়। গেলে চোখে দেখ! না গেলেও রপ্লনরশ্মির সাহায্যে চিত্র 
তুলিলে উহা! পরিষ্কার দেখা যায়--স্ৃতরাং অন্তর চিকিৎসায় ইহা 


আল্লো ও আক্লোক-জিজ্র গ্রহণ 


হ.2২$ 


বিশেষ স্থান অধিকার করিয়াছে। এই ত গেল অত্যন্ত হন্ব 
তরঙ্গাতস্তর-বিশিষ্ট বিকীরণের সাহায্যে গৃহীত চিত্র। উত্তাপ রশ্মির 
সহায়তায় চিত্র গ্রহণ (1029760. 01১060£151)9) সম্ভব হওয়ায় বিজ্ঞান 
জগতে যুগান্তর আিয়াছে। কত প্রকারে যে ইহাকে কাজে লাগান 
হইতেছে তাহার ইয়ন্ত। নাই। অন্ধকার গৃহে রক্ষিত ফুটভ্ত জল-বিপিষ্ট 
কেটুলী চোখে ন! দেখ! গেলেও উহার চিত্র গ্রহণ কর! সম্ভব হইয়াছে ইহা 
পূর্বেই বলা হইয়াছে । ইহা! ছাড়া, গঞ্জনরশ্ির ম্যায় উত্তাপরশ্ির 
সাহায্যে চিত্র গ্রহণ ও রোগনির্ণয়ব্যাপারে কোন কোন ক্ষেত্রে অনেক 
সুবিধা করিয়! দিয়াছে । ড%110056 6125 (রক্তবাহী শির! বাড়িগ্ন 
গিয়। কুগুলী পকাইয়! যায়) এবং 101985 ( চর্দ্দের নীচের এক প্রকার 
ক্ষয় রোগ) প্রভৃতি অস্থথে রোগাক্রান্ত স্থানের 1008160 10701081800 
তোল! হইয়াছে । ইহা অন্ত কোন আলো! দ্বার! সম্ভব নহে। জালিয়াতি 
ধরিতে এই প্রকার ফোটোগ্রাফের জোড়। নাই বলিলেও চলে। কোম 
সত্যিকারের দলিলের ভিতর পরবস্তী কালে প্রতারণাপূর্বক জাল করিয়া 
নৃতন কিছু সন্নিবেশিত হইলে যদি উহার চিপ্র উত্তাপরশ্মির সাহাষে) 
তোল! হয় তাহা৷ হইলে যে অংশ জাল কর! হইয়াছে তাহা! সঠিকভাবে 
ধর| পড়িবে । জালিয়াত অবশ্ঠ এমন কালি বাবহার করিবে যাহা 
দেখিতে মুল দলিলের কালির অনুরূপ । কিন্তু দৃশ্তমান আলোকের কাছে 
অর্থাৎ চক্ষুর সাহায্যে উহা একই প্রকার হইলেও উত্তাপরশ্ির কাছে 
উহার সামান্যতম প্রভেদ থাকিলেও তাহা ধরা পড়িবে। দেখিতে সম্পূর্ণ 
একই রকমের দুইটা কালির একটী হয়ত উত্তীপরশ্মির পক্ষে ম্বচ্ছ এবং 
অপরটী অশ্বচ্ছ--হুতরাং ভিন্ন;চিত্র উঠিবে। ঠিক এই ভাবেই সেঙ্গর 
(67501) কর্তৃক সম্পূর্ণভাবে নষ্ট করা! লেখার মূল অংশ উদ্ধার করা 
সম্ভব হইয়াছে । সেন্সরের কালি মূল কালির উপর এমন ভাবে লেপির়া 
দেওয়! হইয়াছে যে, মূল লেখ। ঢাকা পড়িয়। গিয়াছে এবং পড়! যায় না-- 
অর্থাৎ সাধারণ আলোতে । কিন্তু সেন্সরের কালি যদি উত্তাপরশ্থির 
কাছে স্বচ্ছ হয় এবং উহীর নীচেয় কাঁলি (মুল লেখার )-_খাহা। নিশ্চয়ই 
বিভিন্ন কালি-_যদি অশ্বচ্ছ হয় তাহা হইলে চিজ প্র মূল লেখাটি উঠিবে। 
যেমন স্বচ্ছ কাচের পশ্চাতে কোন বন্ত রাখিলে আমর! তাহা দেখিতে 
পাই। কুয়াসাচ্ছন্ন দিবসে দুরের বস্তু আমর! দেখিতে পাই না--হৃতয়াং 
উহার চিত্রগ্রহণও সম্ভব নহে, কিন্ত উত্তাপরশ্লির সাহায্যে উহার বেশ 
পরিষ্কার চিত্র তোল! সম্ভব হইয়াছে । এ একই কারণে যতদুর হইতে 
আলোকচিত্র তোলা সম্ভব, উত্তাপরশ্রির সাহায্যে তাহা অপেক্ষা 
অনেক বেশী দূরের জিনিসের চিত্র গ্রহণ কয়া সম্ভব হইয়াছে। আজকাল 
এরোপ্লেনে চড়িয়। শত্রু শিবিরের চিত্র গ্রহণ করিয়। উহার সমস্ত গুপ্ত তথ্য 
জানা একটা রেওয়াজের মধ্যে দীড়াইয়াছে। শুধু তীহাই মহে, বেতারে 
& সম্ত চিত্র বদুরে অবস্থিত মিত্রপক্ষের সামরিক ঘাঁটিতে পর্য্যন্ত প্রেরণ 


কর! হইয়! থাকে (816%85107)--কারণ চিত্র-গ্রহণকারী উড়ে। জাহাজটা 


যদি বিমামধ্বংসী গোলার কৃপায় ঘাটিতে প্রত্যাবর্তন করার সুযোগ নাই 
পায়! এ যাবৎ আলোকচিত্র শুধু সাদায় কালোর়ই উঠিত--হুতরাং 
মানাপ্রকার জমকালো রং-বিশিষ্ট কাপড়জাম! পরিধাম করিয়া ওষ্ে 


২০৪ 


রক্তবর্ণ এবং গণ্ডে গোলাপী রং মাখিয়। থে ছুঙগারীগণ ক্যামেরার সন্দুথে 
বসিতেন তাহার! যখন দেখিতেন চিত্রে সে সব কিছুই ওঠে নাই তখন 
তাহাদের ক্ষোভ হওয়া স্বাভাবিক । আল্লকাল কিন্তু ফোটো গ্রাফির 
এডদুর উন্নতি দাধিত হইয়াছে যে তাহাদের আর এ ক্ষোভ থাকিবে না 
জালোকচিত্রে ও সমন্ত রং প্রায় যথাযথ উঠিবে। ব্যাপারটা একটু জটিল 
সতয়াং তাহার আলোচনা এখানে কর! হইবে না। 

ইহা ছাড়াও লোকের অবসর বিনোদনের জন্য ফোটোগ্রাফাদির 
অবদানও নগণ্য নহে। এ যাবৎ শুধু নিশ্চল পদার্থের নিশ্চল চিত্র 
দেখিয়াই আমরা সস্তষ্ট থাকিতাম। কিন্তু উহাতে গতি আরোপ করিয়া 
উহাকে জীবন্ত করা হইয়াছে । এই ভাবেই চলচ্চিত্রের উত্তব। গুধু 
তাহাই নহে, ফিলের পাশে শব্-তরঙ্গের পর্যাস্ত চিন্ তোলা হইয়া থাকে 
এবং এইভাবে গতিশীল ছবির সঙ্গে বাক্য জুড়িয়া দিয়! সবাক্‌ চিত্রের স্থষট 
কর! হইয়াছে । যুদ্ধক্ষেত্রে কামান সশব্ধে অগ্রি উদগীরণ করিতেছে, 
জার্ান টর্পেডোর আঘাতে নিসজ্জমান ব্রিটিশ জাহাজের আরোহিবৃন্দ 
আকুল আর্তনাদ তুলিয়াছে, কমন্স, সভায় ব্রিটিশ প্রধান মন্ত্রী ইহার 


ঘ্ডা ব্রন 


[ ২৮শ বর্- ২য় খণড-২য় সংখ্যা 


প্রত্যুত্তর জার্নানীর বিরুদ্ধে প্রকেড” ঘোবণা করিতেছেন, পাণ্টা জবাব 
হিসাবে হিটলার সদস্ত আশ্ষালন পূর্বক বিশ্ববাসীকে তাহার নূতন 
উদ্ভাবিত মারণাস্ত্রের কথা শুনাইতেছেন, ডার্বি্ধ রেসে মাননীয় আগা খ' 
মহাশয়ের ঘোড়া প্রথম যাইতেছে--এই প্রকার কত না ঘটন! আময়। 
বহু যোজন মাইল দুরে থাকিয়াও নিকটবর্তী প্রেক্ষাগৃহে গেলেই শুধু 
দেখিতেই পাইব না, প্রত্যেকটি শব পর্য্যন্ত শুনিতে পাইব--বিজ্ঞানের 
কুপায় ইহাও সম্ভব হইয়াছে । কবি কাউপার তাহার মৃত। জপনীর এক - 
থানি নিশ্চল আলেখ্য পাইয়৷ কত আবেগভরে তাহার সেই অমর কবিতাটি 
লিখিয়! গিয়াছেন। কিন্তু তিনি ও তাহার মা যদি বিংশ শতাব্দীর মানুষ 
হইতেন তাহ! হইলে মাতার মৃত্যুর পর কবিকে শুধু নিশ্চল প্রতিকৃতি 
পাইয়াই সন্তঃ হইতে হইত না--অনায়াসে তাহাকে দেখান যাইত তাহার 
ম| রীতিমত চলিয়! ফিরিয়! বেড়াইতেছেন, এমন কি দোল্নার কাছে গিয়া 
পরম স্লেহভরে তাহাকে যে আদর করিয়াছেন, গণ্ডে যে চুম্বন আকিয়| 
দিয়াছেন_-তাহার প্রত্যেকটা শব পর্য্যন্ত তাহার মাতার মৃত্যুর পরেও 
তাহার পক্ষে শোনা সম্ভব হইত । 


স্মরণ 
কাব্যরপ্জীন শ্রীআশুতোধ সান্ন্যাল এম্‌-এ 


তুলতে পারি সকল কথা, 
পাঁরি না- সেই স্মতিটি, 
পালিয়ে গেছে কোকিল-_তবু 
কর্ণে বাজে গীতিটি! 
দগ্ধ হ'ল মাটির কায়া__ 
রইল বেচে এ কোন্‌ মায় 1 
স্মরণ সে বে মরণজয়ী-_ 
এই ধরণীর রীতি কি? 


সকল স্থৃতি ভূল্তে পারি, 

পারি না-_সেই লাবনী, 
নিত্য যাতে সুধার স্রোতে 

সিক্ত হত অবনী 1-- 


রে 
॥ 


ং। 42277 


রর ২২ টি এ 





দিবসরাঁতি ছনে গানে 

ফুটুত যাহা! আমার প্রাণে ১২ 

নীরস মরু করত সরস-- 
আন্ত রসের প্লাবনই ! 


তুল্‌তে পারি সকল স্মৃতি, 
পারি না__সেই হাসিটি, 
বিরহিণী রাধার হিয়ায় 
বাজে শ্তামের বাঁশিটি 
সে নয় হাসি-_মুক্তাঝরা, 
ভূবনজয়ী__পাঁগল-করা ;-- 
অধর থেকে পড়ত খসে 


কুন্দফুলের রাশি কি? 
২৩2১২ / ১: ১8 ০২ রি ঘর ৮ 
ক ডি, ০৮৭৬, মস্উপি রী 


৪১৫71, চিনির টিটি ৫ 0 





কথা শ্্রীরামেন্দ্ু দর্ত 


11 সা 
নী 


স্বরলিপি--ক্রীজগৎ ঘটক 


শ্যামল] জননী 


( “মার্চ» গীতি) 
নীল নির্মল সিন্ধু মথনে সুধার ভাগ সম 
কবে উঠেছিলে সুজলা, স্থফলা, শ্যামলা জননী মম? 
পিতা ভিমালয় ্নেহপাীরা ঢালি” সিক্ত করিল হিয়া, 
সিদ্ধ জননী কল-কল্পোলে উঠিল উল্লসিয়া ! 
অরুণ আসিয়া উজল হাসিয়! ঘুচাল গভীরতম, 
উঠিলে যে দিন স্ুজলা সুফলা শ্যামল! জননী মম ! 


শীতল পবন করিল ব্জন নামিল শ্রাবণ ধারা 
চন্দনা পিক পাপিয়া দোয়েল পুলকে আপন হারা ! 
ষড় খতু তা”র যৌতুক ভার আনিল তোমার দ্বারে, 
আমের মুকুল শিউলী বকুল ফুটিল পথের ধারে ! 
কুম্রম গন্ধে গীত-সুছন্দে মঞ্জুল মনোরম 

উঠিলে যে দিন সুজলা সফল! শ্রামলা জননী মম ! 


সুন্দর বনে শার্দূল সনে নাগেরা করিত খেলা 
তপোবন-ছায়ে শিখি-কুরঙ্গে বাত মোহন মেলা, 
অমৃত-লোকের শাস্তি মাধুরী পুণ্য-পূরিত প্রাণ 

সে দিনো আমরা ছিলাম সকলে “অমুতের সন্তান” ! 
আমর তোমার আঁশীষে জননী; ছিলাম অমরোপম ! 
উঠিলে যে দিন সুজলা স্থৃফলা শ্ঠামলা জননী মম ! 


মা মা|মা এমা মা চুরগা -মপা 7 পাপা পাপা শ | 


ল 


নি সু ম ল 'সিৎ ০০৩ ন্‌ ধু ম থ নে ০ 


২০৬ ৃ ভ্াান্রভ্বশ্খ [ ২৮শ বর্ষ--২য় খ্ড-ংয় সংখ্যা 





দহিপালি 


সক পা পি? আশ | তি ্ 
উজ 28 


২ স্পট থু এ সম 
পক প্রি 


সি ৯৬০ ০৮ ৭ 
শসার. ৮ ক তা পাস পা আনি ০৪ তল ডা 4 পিস 


স্লিপ সপন 


ইউএস 


স্শ্প লতি 


সা আ ০2 বি 
এসকল হি 


মা মপা-ধা "| ধা শা ধা "| ধ্সটা 7 পাশা! 77 শশ 
সু ধা ০১ ০ রয় ভা ন্‌ ড ০ স 9 মু ও ০. ০ ০ ও 


পা পধা -ণা 'ণ | ণাঁ ১ ণা ণ। হ ণ।| সা দধা 41 | ধা ণা ধ্পা-া ॥ 
ক বে* ০ উ ঠে * ছি লে স্ব জ লা ০ সম্তু ফ লা এ 


পা ধা পমা - | মা পামগা -" | রগা -মপা মা শা | শা "77 


সা সম ল] ০ জ ন্‌ নী ৩ মণ ০ ০ ম ৩ ০ ৩ ৩ 9 
মা মপা-ধা ধা! ধা শা ধা-পা ! পা পধা -ণা ণা | ণা "7 ণা ণা 
(১)পি তাৎ «০ হি মা ০ ল য় সনে হণ ০ ধা রা ০ ঢা লি? 
(২)ষ ডৎ * খু তু * তা ক যে ** ০ তু ক * ভা কু 
ধণা-্পা 7] াঁ|রসার্সা সা -রণছ ণর্সা-রা র৭ 7 | 7774 -71] 
(১)সিৎ *ৎ কৃ তত ক রি ল ০ হি* ০ য়া চি, এ ৭. & 
(২)আৎ * নি ল তো মা র ০ দ্বাথ ০ রে * ৪৮ ৮১ 8 
রর্মা মার্সা | শর্সা সা] সা -রা রাণা | ণা 4 ণা ণা ] 
(১)সি ন্‌ ধু * জ * ন নী ক ল ০ ক ল্‌ লো লে 
(২)আ ৭ মে রু মু * কু ল্‌ শি উ লী ৎ ব * কু ল্‌ 
1 ণার্সা সা ধা | ধা শা ধা শা? পধা -ণা ণা - | 77 771? 
(১)উ ঠি ল্ ভু উ ল্‌ ল ০ সিৎ গু ০ ০ ৪ ০ 
(২)ফু টি ল র্‌ পূ রি থে রূ ধা ৩ রে ৩ 9 ৩ গু ৬ 
1 ণাণাণা শা] ধণা-্সার্সা সা! সা র্সা সান | ণর্সা রা রারণ £ 
(১অ রু ৭ণ ০ আ* * সি য়া উ জজ ল হা* ০ সিয়া 
(২)কু স্থ ম * গণ ন্থধে ০ গী * ত স্ব ছ* ন্‌ ঘে * 
রা রা রণ ভ্ব)] জ্ঞা 1জ্ঞাজ্ঞ। [জ্মা বানা: আভা তা ও | 


(১)ঘু চা ল রি গ ও তী | তি ৩ মু ও ০ 9 ৪ ৩ 
(২)ম ন্‌ ভু ০ ল ০ ম নে র ০ মু ০ ০ 9 ৩ গু 


1 রাজ্ঞা ৭] ণাব্সারা শ[ু ধা ণার্সা 1 | পা ধা ণাশ4 
উ ঠিলে * যে * দি ন্‌ সবুজ লা * ম্ু কফ লা * 
| মা পাধা শ|খ্রাণারা গা] গপা শমা 1] শ শ শশা] 


হা ম লা তণ র্জ* ন নী ম ০ ম 5 ০ ০ ৪ * 


মাঘ--১৩৪৭ ] 


1 


ণা -1 


(৩)শী ৩ 


(৪)স্থ ন্‌ 


উর এ 


(৩)না 
(৪)না 


] "রা -1 


ঢু রা 


(৩) পু 
(৪) ব 


ঢু 


হযন্লাজ্শাম্শ হজ, 
৮ স্্স্ষিস্্স্ম্প্্ লা স্স্্্ সি ্স্স্্িপ্্্ম্স্প্স্্য ৬ স্হান স্প্রে স্্্্ি্স্স্যা পি স্্স্্” স্া্ স্্স্যস্্স্ক্ স্পা স্ ্হ্্স্ম্া্াস্স্ম্থ্ 
ণাণা]| ধাধাধাশাছুপা 1 পাপা | পধা শুরা রা 
ত ল প ব ন এ ক ০ রি ল ব্য জ ন 
দর ব ০ নে ০ শা বু দূ ল স. ০ নে * 
বারা | সনু ধাবা ধর্পা এ পাশ 7777 ] 
মি ল শা ও বৃ ৪ ধা 9 বা 9 গ গ গ ৩ 
গে রা ক ৩ বি তত থে 9 লা 9 9 ০ 9 9 
+1 রা | রা- রা 71] সরা-জ্ঞ জজ | জ্ঞ-া জর 
ন্‌ দ না ৎ পি কৃ পাণ * পি য়! দো ৎ য়ে ল্‌ 
পো ব ন ০ ছা য়ে শি ০ খি কু র ০ জঙ্গে ০ 
জ্বঁশা | রণশ র্সা না] নর 7] সানা | শশা শ শন] 
কে ৩ আ ৩০ প ন্‌ ভা ০ ব। ০ ০ ০ 9 € 
তি ০ মো ৪ হ্‌ ন্‌ মে ০ ল1 ৩ ৩ ৩ ০ ৩ 
্সাঁশা| পাশ্ধাণা 1 মা -পা -ধা ধা |] গা -মা মাপা হু 
ত * লো * কে স্ব শা «৭ নু তি মা * ধু রী 
মা 7 | সা -রাগা মাছ মা -ধা -পা -া | -ধা 7 "7 | 
ণয ০ র্‌ ০ রি তি গা ০ ০ ৩ ৩ ০ ০ প্‌. 
শরণ | রণ রণ রণ -্সা হরর জ্ঞণ "71 1 জ্ঞাজ্ঞ জ্ঞর- 
৭ নো আম রা ছিৎ লা ০ ম্‌ স ক লে ৎ 
সা শা] নাশ নাশ ছু না -রা শা 7 77 -7-7 
মু * তে ০ র « স ন্‌ তা ৪ ০ ০ ০ ন্‌ 
রা 7 | রজত সাঁ-ন] সা র্সারাণা | পা সা ধা - ঢু 
০ তো ০ মা যু আ পি ০ ষে জন নী * 
পাশ] মাপা ধারা ণা 7 77 1 7 শশশ 
লা ম্‌ অ ম রো প ম ০. ০ ০ ৪ 55 "১ 4৪ 
সাঁ- | পা-ধা ণা 1ঢু মা পা ধা-া | গা মাপা 7 
লে * যে * দ্দিন্ ন্থু জ লা ৎ স্ব ফ লা * 
মান] | সারা গাপা॥? মা "7 77 1 শ 774 -7111 
লা ০ জ ন নী টা ম্‌ ৩ 9 গু 5 ০, ৪ ৩ 


(৩) চ 
(৪) ত 


রর 


এর এং 
৪.4 


এ 9/2 9 শু এ এ 


2 ভা 2 


শা ম 


2 ৫১89---:-৬-- 
প্রথম কলির "পিত। হিমালয়" প্রভৃতির ও ছিতীয় কলির “ড় খডু তা'র" প্রভৃতির হ্বর একই প্রকার ছওর়ায় উহাদ্দিগকে (১) ও (২) চিহ্নিত 


স্থানে বসান হইল। সেইয়প, দিতীয় কলির “শীতল পবন" ইত্যাদির ও তৃতীয় কলিয় “সুগার বনে” ইত্যার্দির হর একই প্রকার হওয়ায় 
উহ্াদিগকে (৩) ও (8) চিহ্নিত স্থানে দেওয়! হইল। 


বাণার ঝঙ্কার 
জ্ীকেশবচন্দ্র গুপ্ত 


ঠ 

আড়ি-পেতে পরের কথা শোনা অশিষ্টতা। কিন্তু বাঁপ- 
খুড়াকে পর তাঁবা অশিষ্টতার চরম-সীমা। বিশেষ যুগল 
গুরু-জনের প্রসঙ্গের বিষয় যখন সে স্বয়ং। 

বাইসিকেলের টাঁয়ারে হাঁওয়া দেওয়। বন্ধ রেখে, চাকার 
দিকের ফাকে ফাকে শচীন্্রনাথ উপরের বারান্দায় তৃষ্টি- 
নিক্ষেপ কল্পে। তার পিতাঁর মাথার পিছনের তৈলাক্ত 
টাক উধার আলোয় চক্চক্‌ করছিল। পিতৃব্যেরও মুখ 
অন্ত দিকে ছিল। 

বিজনবাঁবু বল্লেন__দীঁদা, শচীর বিয়ের একটা বন্দোবস্ত 
কর। বৌদিদি একটু ব্যগ্র হয়ে পড়েছেন । 

বিপিনবাবু বল্লেন-_নবীন সমাজ স্থির করেছে যে বিবাহ 
নিবিড় ব্যক্তিগত ব্যাপার । যেমন আপরুচি থানা, তেমনি 
আপরুচি বিবাহ কর্ন] । 

বিজন অমন্তষ্ট হ'ল। বল্পে- আধুনিকতার ওপর 
অভিমান ক'রে নিজের ছেলের অনাগত কালকে জটিল 
ক'রে লাভ কি দাদা? বিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব চিরদিন 
বাপ-খুড়োর । 

_তুমিই না হয় সেই সনাতন দায়িতটুকু মাথায় নাও । 

বিজন বল্লে-_ন1 দাদা সত্যি বলছি। কবে একটা 
কাঁকে বিয়ে ক'রে বসবে_কিন্বা ওর নাম কি ক'রে বসবে 
--তখন সমস্ত সংসারটা খাপ ছাঁড়া হয়ে উঠবে। 

কনিষ্ঠের কাধে হাত রেখে অগ্রজ বল্লে--ভালই ত। 
ওর নাম কি করে বস্বে না। তবে নিজে দেখে যদি 
একটা কাকেও বিয়ে করে আনে, তোমার বৌদিদি আর 
আমার বৌ-মা লাল-পেড়ে সাঁড়ির আীচলে গাছ-কোমর 
বেঁধে, উলু দিয়ে তাঁকে ঘরে তুলে নেবে। সত্যি 
কথা, সে আমাদের না ছাড়াল আমরা তাকে ছাড়ব না। 

শচীন ভাবলে__সে অলক্ষিতে যথেষ্ট শুনেছে । এবার 
প্রবীণ-মুখ নবীন-রবির কিরণ-ল্লাত করার উদ্দেশ্তে কর্তার! 
কেহ বাগানের দিকে মুখ ফেরাতে পারেন। শচী উঠে 
দাড়ালো। সবর হাতে দু-চাকার গাড়ি-খানা তুলে নিয়ে, 


পা টিপে বাহিরে গেল। তারপর গ্রাম্য-পথে একেবারে 
বিজলী বাগানের পুকুরের চাঁতালে। 

সেখানে প্রকাণ্ড টাপা-গাছের ছায়ায় বসে শটীন্ত্রনাথ 
ভাবলে । একমাস পূর্বে বিবাহ সম্বন্ধে তার জননীর সঙ্গে 
যে কথাবার্তা হয়েছিল, শ্মরণ করলে। 

_পাঁশটাশ করলি বাবা, এবার ওঁকে বলি তোর 
বিয়ে দিতে । 

বিয়ে যে করব মা আমি। সে নিজের কাজের 
ভার বাবার ওপর চাঁপিয়ে তাকে বিরক্ত করব কেন? 

তার মা তার চুল ধরে টেনে দিয়েছিলেন। মার 
কানেঢটোকা সকল কথা সুড়মুড় করে বাবার কানে 
পৌছাঁয়। 

সে আবার ভাবলে । উহু! বাবার কথায় তো 
অভিমানের আমেজ ছিলনা । তার মনোনয়নের ফলে 
ঘরে-আন! জীবনসঙ্গিনীর অভ্যথন! সম্বন্ধে তাঁর কথায় 
আন্তরিকতার অভাব ছিল না। তার সারাজীবনের সৌনার্য্য- 
সাধনার যে ফল সে ঘরে আনবে-_তার মুখ নিশ্চয় উল্লসিত 
কর্ষে তার মা এবং খুড়িমাকে। 

একসঙ্গে এতথানি গভীর চিন্তা তার জীবনের ইতিবৃতে 
বিরল। তার বিচাঁর-শক্কি তখনও সক্রিয় ছিল। কিন্তু 
সে বাধ পেলে। কারণ, তাঁর বন্ধু নীলকমল তাঁর নয়ন-পথে 
পড়লো__অদূরে ছাতিম-গাছের ছায়ায় । 

অতঃপর মির্র-যুগল পূজার ছুটিতে দেশ-ভ্রমণের পরামশে 


আত্ম-নিয়োগ করলে । 
& 
২ 


তারা অন্ত ছুটি বন্ধু সমভিব্যাহারে গেল পুরী-তীর্থে। 
সাগর-কুলে বিপিনবাবুর বাল্যবন্ধু হর্ষবর্ধন চক্রবর্তীর 
সাঁজানো বাঁড়ি_-লোকালয়ের বাহিরে স্বরণন্বার পার হর 
আরও দক্ষিণে । এই “নিভৃত নিলয়*-এ চার বন্ধু কালধীয 
থেকে শ্রীমন্দিরের ছড়িদার অবধি সকল মানুষের অশীমাংসিত 
আলোচনায় দিন যাপন করছিল। 


৯৫% 


মাঘ--১৩৪৭ ] 


৬৮৮৮ সি 


_ম্ুলিয়ারা ন্থখী, বললে শৈলপতি । 

_কিন্ত-_-এ দেখ, বল্লে শচী। 

নীলকমল বল্লে__দেখো, শুনো, কহো৷ মাত. । 

পঞ্চানন বল্লে__শব্দ পেলে বন্কী চিড়িয়া ফমূ-রাং ক'রে 
উড়ে যাবে। কিন্ত লুকিয়ে দেখ। 

শৈলপতি বল্লে--কী হয়েছে? শাশ্বত-তত্বের আলোচনা 
চিন্ত-বৃত্তিকে প্রসারিত করে। স্থন্দর শাশ্বত__-অতএব 
অন্তশীলনের সামগ্রী । 

সৌন্দর্য্যের অধিকারিণী বাঙ্গালী তরণী সাগর-বেলার 
নিভৃতে, সাগরের দীপ্ত সুষমাঁয় পরিতুষ্টা। সে আপন মনে 
গান গাহিতেছিল। তার সুরের কুহক-জালকে ছিড়ে 
টকুরো টুকরো করছিল হিল্লোল । তাঁর বন্্ীঞ্চল পাঁগল- 
£ওয়ার যেন ক্রীড়নক। দুষ্ট মলয়ানিল পাগলের মত 
যখন তার অঙ্গের বসন নিয়ে টানাটানি করছিল-তরুণীর 
সরমজড়িত বাহুলত। দুষ্টের অপচেষ্টা বিফল করছিল । এ 
“বরোধ বিরক্ত করছিল বন্ধুদের কাচা মনকে । "অবশ্য তার! 
স্পষ্ট বুঝলে না! বিরক্তির কারণ। বাঁহুলতার সাফল্য, ন৷ 
পবনের পরাজয় ? 

কয়েকদিনই ঠিকু এই সময় দুবতী এসে এ স্থলে বসে 
নিজের মনে গাঁন গাইতেছিল। কিছুক্ষণ পরে আসছিল 
একটি ভদ্রলোৌক-_বয়স আন্দাজ ত্রিশ বসরের কিছু কম। 
মৃবতী কৃতজ্ঞ হাসিতে তাঁকে তুষ্ট কর্ত। 

আগ ভদ্রলোকের আগমনে শচী কয়েকিনের বিচার- 
ফল মনের মাঝে চেপে রাখ তে পারলে না। 

সে বল্লে- লোকটাকে ছাই দেখতে। 

এ বিষয়ে তর্ক উঠলো না-যেমন তাঁদের প্রত্যেক 
প্রসঙ্গে ওঠে । 

নীলকমল বল্লে-_-বিউটি এগু দি বীস্ট। 

শৈলপতি শিশুকাল থেকে অঙ্কের থাতায় কবিতা লেখে। 
সে বল্লে-_উষার আলোর কাঁজল-কালো৷ প্রচ্ছদ-পট । 

পধশনন বল্পে__অত কবিতার ভাষা বুঝিনা । লোকটাকে 
দেখলে মনে হয় মাখন-চোর!। 

তাদের ক্রমবর্ধমান অনথয়া এ সিদ্ধান্তে শাস্তি পেলে 
এবং যৌথ-গবেষণণর ফলে তার! সিদ্ধান্ত করলে যে, সুন্দরী 
কোনো৷ অচিন্দেশের রাজকুমারী কিছ্বা, প্ররকম কোনো 
একজন। আর লোকটা তার পিতার কর্মচারী । 

২৭ 





্রীপাল্সপ হজ 





হত" 





শচী বল্লে--রাজার| অবুঝ। এরকম একটা দুশমন- 
চেহারার সঙ্গে দিনের পর দিন কুমারীকে হাওয়া খেতে 
পাঠিয়ে অচিন্‌ দেশের রাজা স্থুরুচির পরিচয় দেননি । 


্‌ 


রাত্রে ঠাঁদের আলো মেখে সাগরের ঢেউগুলা ভীষণ 
হুটোপাটি করছিল। তাদের খেলা দেখতে দেখতে 
বিঘাঁদপুরের জমিদারের ছেলে শ্রীযুক্ত শচীন্্র মিত্র বি-এ 
নি্নলিখিতরূপ গিদ্ধান্তে উপনীত হল__ 

-যে সব যুবতী বালু-বেলায় বসে তরঙ্গের তালে না 
গান গাইতে পারে তারা কলিকাতার চিত্তরঞ্জন এভিনিউর 
ফুটপাথের মত একঘেয়ে এবং কঠোর । 

সে ভাবশে-_বাঁবা তো তাকে ক্ষমতা দিয়েছেন পাত্রী 
মনোনয়ন কর্বার। এই সাগরসেঁচা সুষমাঁকে দেশে নিয়ে 
থেতে পারলে বাব! নিশ্চঘ তাঁর রুচির সুখ্যাতি করবেন। 

সে টাদের আলোতে তাঁর জননীর ন্নেহের 
হাঁসি দেখলে। 

কিন্তু 

সাগর গঞ্জন করে বল্লে_বোকাটা ! গাছে কাঁঠাল-- 

ঢেউ বাকিটুকু বল্পে না। আবার গড়িয়ে ফিরে গেল 
সমুদ্রে । 

পরদিন প্রভাতে যখন অচিন্পুরের রাঁজকুমারীর সঙ্গী 
তাকে নিতে এলো, বন্ধু চতুষ্টয় স1তারের পোষাকে তাদের 
সম্মুখীন হ'ল। 

শচীন্রের পশমী পোঁষাক'_জাঙ্গিয়! গাঢ় সবুজ --বুক 
লাল__-পিঠে ছুটা এড়ো পটা মাত্র। তার বর্ণ গৌর, 
দেহ কোঁমল--অথচ চলবার সময় তার মাংস-পেশীগুলা আত্ম- 
প্রকাশে ব্যত্ত। 

নীলকমল শ্ঠামবর্ণ। দেহ স্থুগঠিত। মানুষটা একটু 
বেঁটে। 

শৈলপতির মুগডটা স্থগঠিত একটু মেয়েলি ধরণের । 
টাঁনাটানা চোখ, অপ্রশস্ত কপাল। দেহটি কিন্ত গণেশ- 
ঠাকুরের মত- লঙ্ঘোদর, সুন্দর | 

পঞ্চানন পাঁচফিট দশইঞ্চি উচু । গ্লৌরবর্ণ। কিন্ত 
অতি শিশুকাল থেকে গ্রামের মাঠে মালকৌচা বেঁধে ফুটব্ল 
খেলে সক্ষম পা দুটাকে ধনুক করে ফেলেছিল--আর 


২০ 


ধাবমান গোলার পিছনে ছুটে ছুটে একটু কোল-কুঁজো৷ 
হয়েছিল। 

মোটকথা তাদের মধ্যে শচীনের অর্ধা-নগ্র দেহই প্রষ্টব্-_ 
এ-কথা বিন! তর্কে বাকী তিনজনের স্থীকার্য্য | 

অকস্মাৎ এই নাইয়ে চতুষ্ট়কে দেখে চকিতা হরিণীর 
মত পালাবার সময় অপরিচিতার কুরঙ্গ আখি শচীন্র্রের দেহে 
ক্ষণকালের জন্ত সংবন্ধ হল। 

পঞ্চাননের পিতা বিপিন মিত্রের জমিদারীর খাঁজীঞ্চি। 
সে নিজে যাদবপুরে যন্ত্র-শিল্পের ছাত্র। অপরিচিত 
বাবুটিকে ধরে পাচু বলে ক্ষমা করবেন। আপনাদের 
বিরক্ত করলাম । আমরা অন্তর যাচ্চি। 

সে বল্লে-_বিলক্ষণ। এত বড় সমুদ্র কূল-__আমরা 
অন্তত্র যাচ্চি। 

পঞ্চাননের সাহস অবশিষ্ট মিত্রদের হৃদয়ে বলসঞ্চার 
করলে। 

শৈলপতি বল্লে--কী হাঁমজুলি! এই বালিয়াড়ির 
পিছনে মানুষ থাকৃতে পারে এ সন্দেহ আমাদের 
মনে জাগেনি । 

_-তাতে কি হয়েছে? 

বিষাদপুরে অমায়িকতার খ্যাতি আছে নীলকমলের । 
সে বল্পে-_এই অভদ্রতার দুশ্িন্তায় আমরা আজ নাইতে 
গিয়ে জলে ডুবে মরব। আপনারা বসুন। আমরা অন্ 
ঘাঁটে যাই। 

তখন শৈল ও পাচু- বসতে হবে, নিশ্চয় বসতে হবে 
বলে বায়না ধরলে । 

শচী নীরবকন্মী। ইত্যবসরে সে মহিলার প্রতি 
চোরাই দৃষ্টি নিক্ষেপ করছিল। মহিলার আ্রাথি ছুটিও 
নিক্ষিয় ছিল না। চোখোচোখি হলেই উভয়ে সমুদ্রের 
দিকে তাকাচ্ছিল। 

ওরা তিনজনে যখন ভদ্রলোককে সৌজন্ত-বরিষণে প্লাবিত 
করছিল--শটীন্দর মনে মনে ছুটা কবিতা আওড়ালে। একটা 
ইংরেজী-যার নির্দেশ, সাহসী ব্যতীত কারও লভ্য নয় 
সুন্দরী । অপরটি বাঙলা--পড়ে থাকা পিছে, মরে থাকা 
মিছে, আগে চল্‌, আগে চল্‌ ভাই। এই শবব্রদ্ের 
মদির-উত্তেজনায় সে সটান যুবতীর কাছে গিয়ে জোড়হাঁতে 
বন্ত্রে আমাদের অপরাধ হ'য়েছে। ক্ষমা করবেন। 


ভ্াাব্রভ্ন্বশ্র 


[ ২৮শ বর্--২য় খণ্ড--২য় সংখ্য। 


হাঁসলে, যুবতীর ছুই গাঁল টোল খায়। সে হেসে 
বল্লে--কী বলছেন! সাগরে নান কর্বার জন্যই তো 
পুরীতে আসা । 

শচীন সোৎসাহে জিজ্ঞাসা করলে- আপনি সাগরে 
শ্নান করেন? 

বাকীটুকু ভরসা করে জিজ্ঞাসা কর্তে পারলে না_ 
কখন, কোন্‌ ঘাটে? 

বন্ধুত্রয় বুঝলে শচীটা অকুতোভয় । তাঁরা ভদ্রলোককে 
একরকম ঠেলা দিয়ে নিয়ে এলো শচীর কাছে। 

শচী বল্লে- তোমরা শুনেছ? রাজকুমারী 
স্নানের পক্ষপাতী । 

অপরিচিতের! সমস্বরে বল্লে--রাঁজকুমারী ? 

শচী বল্লে-.আপনি। 

ভদ্রলোক বিকশিত-দশন হ/য়ে বল্পে-ওর নাম 
রাজকুমারী তো নয়। ওর নাম- মানে__ 

নিঃসক্কোচে উন্মিমালার দিকে তাকিয়ে যুবতী বল্লে_ 
আমার নাম সাগরিকা । 

ভদ্রলোক বল্লে-_-সাঁগরিকা' আমার ছোটো বোন। 
ও সমুদ্রকূলে ভিজাগাপটমে জন্মেছিল ব'লে আমার মা 
ওর নাম রেখেছিলেন-_ সাগরিকা । 

সাগরিকা একটু হেঁসে বলে আমাদের নাম সব এ 
রকম জন্ুস্থান ধরে হয়। দাদা এদেশে জন্মেছিলেন বলে 
গুর নাম জগন্নাথ। 

পঞ্চানন বল্লে-_কী সর্বনাশ । ভাগ্যিস আপনি সাক্ষী- 
গোপালে বা কুস্তকোনামে জন্মাননি। 

এতে আবহাওয়া ফিকে হ'ল। তাদের আরও পরিচয় 
হ'ল। জগন্নাথ মল্লিক পাঁরলাকীমেদী স্টেসনের পার্শেল 
ক্লার্ক । 

শৈলপতি মনে মনে কেবল আওড়াচ্ছিল-_সাগরিকার 
ভাই জগন্নাথ-_-কাকাতুয়ার ভাই রামছাগল। 

তাদের পিতা আউল-রাজ্যের দেওয়ান। 
আশ্বস্ত হল-_রাঁজকুমারী না হোক মন্ত্রী-নন্দিনী। 

নীলকমল ভাবলে- পুরীতে অন্নালেও লোকটা মান্ষ 
হয়েছিল আউলে--তাই পেচার মত মুখ। 

তারা কয়েকদিনের জন্ত পুরীতে এসে বাস করছিল-- 
বলরামপ্রসাদ হোটেলে । 


সমুদ্র- 


এতে শচী 


মাঘ--১৩৪৭ ] 


পি 





৩ 


তিনদিনের মধ্যে নিভৃত-নিলয়ের অধিবাসীদের সঙ্গে 
বলরামপ্রসাদনিবাঁসীদের ঘনিষ্ঠতা পেকে উঠ.লো। চতুর্থ 
দিনে সাগরিকা বালিয়াড়ির আড়ালে বসে আপন মনে 
গাহিতেছিল-_ | 
মরিব মরিব সখি-_ 
মনে মনে বাঁলাই যাঁট বলে শচীন্দত্র মির তার অব্যবচিত 
দরে অলক্ষ্যে বস্লো। 
সাগরিকা মধুর কণ্ঠে গাহিল-_ 
ন ভাসায়ে! রাধা-অঙ্গ 
ন| পুড়ায়ে৷ জলে-__ 
অতঃপর আঁখ্-গোঁপন অসম্ভব হ'ল। শচীকে দেখে 
সাগরিকা থতমত খেয়ে ধ্রীড়িয়ে উঠলো । হাওয়ার অভ 
গাক্রমণ হতে সম্ত্ররক্ষ/ ক'রে সাগরিকা বল্লে-আমি 
বুঝেছিল।ম, কে যেন বালির আড়ালে । 
শচী বল্লে-আমিও বুঝেছিলাম যে প্র রকম একটা 
দুর্ঘটনা আপনার গানের কথাগুলাঁকে উদ্টো-পাণ্টা ক'রে 
দিয়েছে । 
_-ওমা ! তাই নাকি? কী লজ্জার কথা । 
_-লজ্জীর কথা! মোটেই না । আদার তো মনে হয় 
ন! পুড়ায়ো জলে রাধার চরম বিহ্বলতার পরিচয় । কারণ 
শ্যামের নামটুকুই তার কামনার ধন। জল ভেজায় কি 
পোড়ায়-_-এ তুচ্ছ জড়ের অন্ধ-শক্তির বিচারে তাঁর 
আগ্রহ নাই। 
সাগরিক] পায়ের স্যাগডাল খুলে বালির উপর ব! পায়ের 
বুড়া আঙুলে পাতিহাসের মতো কি একটা পাখী 
আকছিল। সেলল্লেস্্যা। তা অব্য । 
শচীন্দর মু হল। সঙ্গীতকলার সাথে চিত্রকলা, আর 
তাদের পিছনে ক্ল্যাসিকাল রমণীস্থলভ লজ্জা! । 
শচী বল্লে-_মিস্‌ মল্লিক, যে সব কথ! মনে আসছে 
বল্তে পারছি ন1। 
তার! কি সব কথা? 
কাল রাত্রে যে সব কথা ভেবে রেখেছিলাম । আপনি 
কি রকম জানেন? যেমন সাগর। সমুদ্র অগাধ, মানুষকে 
ভয় দেখায়-_ 


হ্বীপাল বক্কর 


২০ 





_কী সর্বনাশ! আমি তো কাকেও তয় দেখাইনি 
মিঃ মিত্র । 

শচী খাই হারিয়ে ফেলেছিল। সে বল্লে-না। মানে 
ভয়ের দ্রিক নয়। সাগরের অন্তর রত্বে ভরা । মাত্র 
রত্ব কেন? সাগর সেচে সুধ! উঠেছিল। আপনিও 
তেমনি। 

_কী বলছেন? ছিঃ! ছিঃ !--বলে অপাঙ্গে তার 
মুখের দিকে তাঁকালে সাঁগরিকা । 

সে ক্ষণিক বিজলী চাহনী উত্তেজিত করলে শচীকে । 

সে বলে যদি অপরাধ করে থাকি-_ 

_-কী বলছেন। ছিঃ । 

এবার শচী একটু ঝঞ্চাটের মাঝে পড়লো-_-দোটান৷ 
পর পর ছুট! তরঙ্গের মাঁঝে পড়লে যেমন হয়। সাহস! 
তার মন বলে__সাহস। 

সে বল্পে-আপনার বিনয় এবং লজ্জা যাই বলুক--অমৃত- 
ভরা আপনার অন্তর । 

এবার সাগরিকা সোজীম্বজি হাসলে-_যেমন চাদ হাসে 
কুম্দের উপর । সে বলে_কি ক'রে সন্ধান পেলেন? 
আমি তো৷ নিজে জানি না। 

_খুঁজে বেড়ানো হল মাতষের ধর্ম। তা না হ'লে 
সে এত বড় হত না । যৌবনে সে খুঁজে বেড়ায়--এক স্থুরে 
বাধা প্রাণ। নিজের তারে ঝঙ্কার দিলে দরদে বেজে ওঠে, 
এমন বীণা । 

বীণা! নিশ্চয় আপনার সে বীণাকে খুঁজে পেয়েছেন। 
তাকে সঙ্গে আনেননি ? 

শচী বল্লে-তাকে সঙ্গে আনতে হয়নি। কি জানি 
কোন্‌ পুণ্য-ফলে বিধাতা! তাঁকে টেনে এনেছেন এই অশাস্ত 
সাগরকুলে। তাকে খুঁজে পেয়েছি। আমার সার্ক 
বীণা__অনাঁগত কালকে সঙ্গীত-মুখর করবার বাজনা, 
আমার অন্তরাত্মীর লুকানো! সুরে-্বাধা বীণা । 

-কীব্যাপার ! 

এ বে-তালা, বে-নুরো শবে শচী পিছনে চাইল। 
সাগরিকাঁর ভ্রাতা জগন্নাথ! সে সাগরিকাঁর মুখের দ্দিকে 
চাইল। তার চির-রক্তিম ঠোঁটে ফ্যাকাশে রঙের আমেজ 
দেখলে। তাঁর ভোমর! কালো চোখের তারা সরম-মলিন। 
সে আবার জগন্নাথ মল্লিকের দিকে চাইল। বিরক্তির 


২২১, 


পূর্ববাভাষ যে বিশ্ময়-_তাঁর ছাঁয়া দেখলে তার মুখে। 
সে সাগরের দিকে চাইল। সেই একভাঁব--উদ্বেল 
অশাস্তি। 

একটু কৈফিয়ত-চাঁওয়া স্থরে মল্লিক আবাঁর বল্লে-_ 
কী ব্যাপার? 

সত্যই তো ব্যাপার বোঝানো গুরুতর ব্যাপার। কি 
বল! উচিত? কিন্তু স্তম্ভিত শচীনের কানে বীণা বেজে 
উঠলো যখন সে শুন্লে-তুমি সবটা শুনতে পাঁওনি 
দাদা? শচীনবাবু কলেজে থিয়েটার করেন। তিনি পুজার 


ছুটির আগেবীণার বঙ্কার_নাটকে ফটিক্টাদের 
তূমিকা অভিনয় করেছেন। বীণ! নাটকের নায়িকা । 
ফটিকটাদ-_ 


_ বুঝেছি । আবার গোঁড়া থেকে হবে না শচীবাবু? 

শচীবাবু তখনও ষোঁল-আন ধাতস্থ হননি । তাঁর মনের 
বীণায় ঝড়ের রাগিণী বাঁজছিল। তাঁর ধুয়া হচ্ছে 
সাগরিকা, সাগরিকা, চত্ুরা মধুরা সাঁগরিকা-- এস 
তরঙ্গায়িত' এস প্রাণে । 

সাগরিকা বল্লে-এ কি বারোয়ারি তলার বাত্রা দাদা, 
যে এক একজন বড়লোক শ্রোতা এলে আবার গোর- 
শচন্দ্রিকা ফাদতে হ'বে? 

অদূরে হর্যবর্ধন চক্রবর্তীর নিভৃত-নিলয়ের বারান্দায় 
বসে মিত্র-ত্রয়__শচীনমিত্র-সাঁগরিকামল্লিক নাটকের মৃক 
অভিনয় দেখছিল। যথন জগন্নাথ এসে তাদের পিছনে 
দাড়ালো নাটকের ক্লাইম্যাক্স দেখবার আশায় তাদের প্রাণের 
তার ঝন্ঝনিয়ে উঠলো। 

শৈলপতি বল্লে-- কাকাতুয়ার ভাই রামছাগল যদি শচীর 
গায়ে হাত তোলে তো আমরা গিয়ে তাকে প্রহারেণ 
্যার্টি-্যাইম্যাক্সি সৃষ্টি করব। 

কিন্ত কিসে যে কি হ'ল তারা বুঝলে না। অভিনয় হ'ল 
মিলনাস্ত। শান্তি-শৃঙ্খলা অটুট রহিল। অতএব তার! 
ধীরে ধীরে চরের উপর গেল। 

তাদের পেয়ে জগন্নাথের রসবোঁধ বিকশিত হ'ল । সে 
বল্লে-__এই যে শৈলপতিবাবু, আপনি কি সেজেছিলেন ? 

শচীনের মৃহজ-ভাঁব ফিরে" এসেছিল। সে বললে 
আমাদের কলেজের সেই বীণার ঝঙ্কার অভিনয়ের কথ 
হচ্ছিল। 


ভ্ঞাভঞ্ব 


[২৮শবর্--তয় খণ্ড--২র সংখ্যা 


_-ওঃ! বীণার বঙ্কার! আমি সেজেছিলাম-__ 
তাকে উপস্থিত বিপদের হাত থেকে উদ্ধার কর্ণার জন্ত 
নীলকমল বল্লে-__তামাক। 


পরদিন প্রভাতে বন্ধুর বল্লে-শচীন, তুমি চালিয়ে যাঁও। 
সাঁগরিকার মত প্রত্যুতৎপন্নমতি নারী হিতোপদেশের বাইরে 
দেখতে পাওয়া যাঁয় না। 

শৈলপতি বল্লে-_আজ চমকদাঁর মাদ্রাজী সাঁড়ি। 

_-কাঁনে উড়িয়া মাকৃড়ি, ব্যাসর।-_বল্লে পাঁচু। 

-_ আজ আমরা রামছাঁগলকে ধরে ন্বর্গদারের ঘাঁটে গল্প 
করব--যতক্ষণ না তুমি এসে খবর দাঁও-_কেল্লা ফতে | 
বল্পে নীলু। 

তিনজনে সমস্বরে বল্লে- চালাও ফটিকচাদ ! 

আজ মুগ্ধ করলে সাঁগরিকার সঙ্গীত শচীনকে । অনেক 
ব্রমণ-বিলাসী পাণ্টি মেরে সে গান শুনলে । 

গানের শেষে শচী তার সাড়ির সুখ্যাতি করলে । তার 
জননীর আদেশে তাঁকে অনেক মাদ্রাজী ও কট্কী সাড়ি 
কিনতে হবে । বন্ধুদেরও অনেক জিনিস-পত্র কিন্তে হবে । 

সাগরিকা তাদের সহায়তা কর্তে সম্মত হল। সেপাড় 
পছন্দ করবে, তার দাদা দর-দাঁম ঠিক ক'রে দেবে। 

তার পর আসল কথা বলে শচী। 

_আপনিও কায়স্থঃ আমিও কায়স্থ। 

কথার প্রত্যুত্তর দিলে সাগরিকাঁর অমায়িক হাসি । 

শচী বল্লে-_ আমার: পিতা জমিদার । অতি-মাধুনিক 
তাঁর ঘনোবৃত্তি, আর তেমনি দারুণ উদার । 

সমাচারে কুমারীর হর্য হল।. 

_-তিনি আমাকে অনুমতি দিয়েছেন নিজের স্ত্রী 
মনোনয়ন করবার । 

আনমনে সাগরিকা 
খুঁজুন। নিশ্চয় পাবেন। 

একটু অসংযতভাবে শচীন্দ্নাথ বল্লে-_পেয়েছি 
সাগরিকা, পেয়েছি । গুভক্ষণে পুরী এসেছিলাম । 
সাগরিকা তার প্রতি একটু কঠোরভাবে তাকালে। 

-_সাঁগরিকা, *আমার অন্তরাত্মা শুনছে আশার উদাত্ত 
স্থুরঃ তোমার গানের স্বরে । 


বল্লে--ভাল কথা। ন্থুপাত্রী 


মাঘ--১৩৪৭ ] 


__কি সব বলছেন? 

সে নিজের মনে বলে গেল--আমাঁর যুগ-যুগান্তের 
জমাট-বাঁধা মূক কামনা! আজ ভাষা পেয়েছে । মে জন্ম- 
জন্নান্তর তোমাকে খু'জেছে। 

সাগরিকার কথায় বোঝা গেল-_জন্স-জন্মাস্তর যুগ- 
যুগান্তর বাজে । আসল বর্তমান কাঁল-যাঁর মধ্যে আরও 
আদল তার ভ্রাতার শুভাগমন । 

সে বলে- এত বেল। হলঃ দাদা এলেন না কেন? 

তার পর স্বর্গদ্বারের দিকে চলতে 'আরন্ত করলে । চাঁবুক- 
থাওয়! ফক্স-টেরিয়ারের মত শচী তাঁকে অনুসরণ করলে । 

কিছু দূর গিয়ে শঈীন্্র বল্লে-_মিস মল্লিক ! 

_-কি বলছেন মিঃ মিত্র? 

সে বল্লে-যদি আমার মনের কথা গুলা লিখে দি আপনি 
পড়বেন ? 

এবার সাগরিকা! হাসলে । সে বল্পে-বীণার নঙ্কারে 
ফটিকচাদের 'অভিনয় 'আঁপনি করেন ভাল। কেমন প্রেমের 
উপন্যাস লিখ তে পারেন দেখাতে চান। বেশ লিখবেন। 

সে 'মবার হাসলে-_-গালে টোল খাওয়া হাসি |; 

__তুমি বড় নিট্ুর সাগরিকা । 

_তুমি বড় ছেলেমানষ শচা। 

তুমি! শচী! 

শচী বিশ্বাস করতে পরলে না । বললে স্যা। 

স্পষ্ট স্পষ্ট প্রত্যেক কথা উচ্চারণ ক'রে বল্লে সাগরিকা 
তুমি বড় ছেলেমান্সষ শচী। আমার বাবা আছেন। তিনি 
পাত্র খু'জছেন। দাদাকে বল্লে তিনি বন্দোবস্ত করবেন। 
ছিঃ! আমার বড় লজ্জা করছে-_কি সব ছাইভম্ম বল্লাম । 

দু হাতে চোখ ঢেকে সাগরিকা কিছুদূর চল্‌্লো । শেষে 
একটা ঝিনুক কুড়িয়ে সাগরে ফেল্লে । 

শচীন প্রথমে ডাঁন পায়ে ভর দিয়ে ঘুরলে--তাঁর পর 
বাপায়ে। শেষে একটা তুড়িলাফ দিলে। 


€ 


বলরামপ্রসাদ সমুদ্রতীরে দেশী হোটেল। দেশী 
হোটেলের পাঁচ-সাত রকম গন্ধ এবং বনু কণ্ঠের শব্দবঙ্জিত। 
কারণ ম্যানেজার পরিশ্রমী এবং হোটেলের দৈনিক ভাড়া 
অন্ত পাস্থ-নিবাস হ'তে অধিক। 


্লীপান্স আজ্তাল্ 


ই ৯০ 


কাকাতুয়! এবং রামছাগল পাশাপাশি দুটি কক্ষে বাস 
করছিল। উভয়ের ঘরের মাঝের দরজা! খোলা_বাইরের 
দরজা বন্ধ। সমুদ্রের হাওয়া যুগল-ঘরের অবীধা জিনিষপত্র- 
গুলাকে যথাসম্ভব কাঁপাচ্ছিল। 

সাগরিকা ছিল জগন্নাথের বাহুবন্ধনে । 

জগন্নাথ বল্লে-_-মাই ডিয়ার পটলমণি, কাল উধাও হওয়া 
চাই। 

সাগরিকা বল্লে-_নরু আর দু-চাঁর দিন থাঁকলে হয় না । 
জায়গাটা বেশ লাগছে । 

নরু বল্লে-এঁ ছৌঁড়াটাকে ভাল লাগছে বুঝি । 

পটলমণি নরেন্রের কান ধরে টান দিলে। 

নরেন বল্লে_-মাইরি। তোর মা তোকে সার্থক লেখা- 
পড়া শিখিয়েছিল। সাঁগরিকা_বেশ নাম। এ নামে 
বোদ্বাই গিষে সিনেমা করলে কি হয? 

সে বল্পে--জগন্নীথ নামটা তোমারও কি মন হয়েছে? 
বি-এ কি ক'রে পাশ করেছিলে? 

নরেন ভাসলে। বল্ে-সে সব অতীতের কথা আর 
তোলো কেন অতি-প্রিয়। তাঁর পর চিটিও.বাজী ক'রে করে 
কলিকাতা ত্যাগ করলাম । তোমার মা তোমার মারফত 
বোকা রাজা-রাজড়া ধরবে খলে গান শেখালে, নাচ শেখালে, 
ম্যাটি.ক পাশ করালে । আমি হুমো৷ পাখির মত তোমাকে 
উধাও ক'রে-_ : 

পটলমণি সন্বেহে তার মুখ টিপে ধরলে। বল্লে-_ 
অতীতকে কবর দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। আজ যা 
বর্তমান কাল তা অতীত হবে। 

ঠিক বলেছ। এখানে চুরি-চামারি করে বোগাই 
পালিয়ে যাঁব। তুমি হবে সাগরিকা 

_তুমি বৌকাঁ। এই বল্ছ ছোড়া চারটের যা” কিছু 
আছে লুট্ট করবে । ও নামে যে ওরা ধরবে। 

নরেন হাসলে । হাঁদিতে পৈশাচিকতাঁর আমেজ । সে 
বলে_বোকা তুমি । সেয়ান! ঠকৃলে বাঁপকে বলে না । ওরা, 
কি বাপকে বল্বে__ছয্মবেশী জুয়াচোরের সঙ্গে প্রেম করতে 
গিয়ে 

_বুঝেছি। বল্লে পটলমণি। 

সে ভাঁবলে। তার জন্ম সন্ত্ান্ত নয়। কিন্ত সে 
একনিষ্ঠ । তার জম্ম-দোষ মাত্র এঁতিহ--কবরে গেছে। 


২:১৪ 


আজ সে জুয়াচোরের জীবনসঙ্গিনী। তারা অর্থসংগ্রহ 
করছে সন্থান্ততার ছাঁপ লাগিয়ে, বোম্বাই শহরে ফিল্ম তারকা 
হবার চেষ্টা করবে বলে। বোঁগাস চেক দিয়ে কাপড় 
কিনেছে । হোটেলওয়ালাকে বোগাঁস চেক দিয়ে টাকা 
নিয়েছে। ব্যাঙ্ক থেকে খবর আসবার পূর্বে পালাবে। 
পরে এ সব অতীতের মধ্যে ডুবে যাবে। 

এই দুস্তর নীতি-সাঁগরে ভাসতে ভাসতে সে শচীন্রুকে 
ম্মরণ করলে । নিরেট মূর্খথ। অজ্ঞাতকুলশীলকে বিবাহ 
করে ঘরে নিয়ে যাবার উচ্চাভিলাষ। কিন্তু সে নিজে 
খেলেছে ভাল । 

যেন তার মনের কথা বুঝে নরেন্দ্র ভট্টাচার্য্য বল্লে--আমি 
হঠাৎ ওদের কথা শুনে ফেলেছিলাম । বযণ্ডা ছৌঁড়াটা প্রেম- 
পাঁগলা। তাই তে৷ তোমায় বল্লাম পটল, ওদের কাছে 
মেনকার পার্ট করতে । তোমারও অভিনয-প্র্যার্টিস হ'ল; 
আর ছোড়াও কাল আরও শিক্ষা! পাবে_ প্রেমের আসল 
কাটা কি ভীষণ। 


ঙ 


প্রদিন ছোঁকরা-চতুষ্টয় শিক্ষা পেলে। 
বন্ধুরা রাত্রে ফিরে এলো বেড়িয়ে । উড়ে চাকর তাদের 


ভ্ডাল্রভন্বখ 


[২৮শ বর্ষ য় খণ্ড--২য় সংখ্যা 


হাঁতে পত্র দিলে । উপরে শচীন্দ্রের নাম। কোণে লেখা__ 
ফ্রম--সাগরিকা মল্লিক। 
লে বাব! তাঁরা এমন হর্ষ-ধ্বনি করলে যে সাগরের 
ঢেউ ভয়ে সাগরে পালিয়ে গেল। তাঁর পর পত্র পাঠের 
আগ্রহ । তার পর-- 
কারণ পত্রে লেখা ছিল। 
ফটিকচাদ, 
এই পত্র পাঠান্তে যখন বাকঝ্স-প্যাটর! খুলবে- বুঝবে পাঁপিষ্ঠা সাগ- 
রিক! ছলন! ক'রে বেয়ারাকে বাজারে পাঠিয়ে তোমাদের যথা সর্বস্ব 
চুরি ক'রে নিয়ে পালিয়েছে । মোট এক হাজার সাত টাক! তিন 
পয়সা । এ কথা উপলব্ধির পর তোম।দের হৃদয়-বীণার ঝস্কর সাগরের 
গর্জনের সঙ্গে মিলে ধঁক্তান বাজবে-_সে বিযাদ-বীণার সঙ্গীত অভা- 
গিনী সাগরিকা শুনতে পেলে না। নমক্কার ! অপরাধ নিও ন।। টাক! 
হাতের ময়লা, তার জন্য শোক ক'র না। ইতি-_ সাগরিকা 
এক ঘণ্টা পরে যখন তাঁদের কথা ফুটলো-_ 
কবি বল্লে-সোঁন! বলে জ্ঞান ছিল-- 
নীলু বল্লে-_গরীবের ছেলে-__মা”র কট্কি থালা কেনা 
হ'ল না। 
পাচু বললে দয়া ক'রে টিকিট কণথানা রেখে গেছে। 
শচী বল্লে__বাঁবাকে লেখ, তারে কিছু টাকা পাঠাতে-_ 
আর আমার জন্তে জানা-ঘরের শান্ত শিষ্ট পাত্রী দেখতে। 


হায় রে নিষ্ঠুর প্রাণ! তবু নাহি মোর পানে চায় 
কবিকম্কণ শ্রীঅপূর্ববকৃষ্ণ ভট্টাচার্য্য 


শৈশবের বেলাভূমে ওর! ছিল মোর নর্বসাথী, 

ওরা ছিল যৌবনের সহচরী-_পুষ্পমাল্য গাঁখি, 

বসন্তের সমীরণে গানে গানে আলোকধারাঁয় 

উহাদের সনে আমি হর্যভরে প্রভাতী তারায় 

প্রাণের চন্দন দন্ত | 

সেই কথা পড়ে মোর মনে__ 

* ওরা কি ফিরিবে কভু অনাগত কোনো গুভক্ষণে ? 

একান্ত আগ্রহভরে ডাঁকিতেছি--ওরে ফিরে আয়, 

হায়রে নিষ্টুর প্রাণ ! তবু নাহি মোর পানে চাঁয়। 

অবাধ্য চঞ্চল ওরা চলিয়াছে দিবস-তরণী 

দিগন্তের অন্তরালে, উন্মিনাচে জুনীলবরণী । 


অন্তরের পুষ্পপুগ্জ সাজাইয়া দিয়েছি আমার, 
বিনিময়ে দিয়ে গেছে স্থৃতিমাথা মালোক আধার । 
ফিরিবে কেমনে ওরা ? 

ধরণীতে ফিরেছে কি কেহ! 
ওরে তোরা ফিরে আয় তুলে নে রে মোর জীর্ণদেহ, 
সম্মুথে আসিবে দিন পাঁল তুলে জীবনের ঘাটে; 
কুড়ায়ে প্রাণের পণ্য ক্ষণে ক্ষণে ধরণীর হাটে 
উহাদের মত যাবে, চাহিবে না আমাদের পানে ! 
তার! কি দাড়াবে কতু ওর! সব মিশিবে যেখানে ! 
কালের বিহঙ্গ ওড়ে পক্ষ মেলি” বিশ্ব পারাবারে, 
সৈকতে দীড়ায়ে একা, কোল দাও, দেবতা! আমারে। 


বৌদ্ধধর্মের বিস্তার 


ডক্টর শ্রীবিমলাচরণ লাহা এম্‌-এ, বি-এল্‌, পি-এইচ-ডি, এফ.-আর-এ-এস্‌-বি, এফ -আর-জি-এস্‌ 


ভারতে ও ভারতের বাহিরে এক সময়ে বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাব 
যথেষ্ট ছিল । গৌতম বুদ্ধের সময়ে বর্তমান বিহার ও যুক্ত- 
গরদেশের বাহিরে তাঁহার ধর্ম বিশেষভাবে বিস্তৃত হয় নাই। 
এমন কি; যিশু খষ্টের পূর্বে তৃতীয় শতাব্দীর মধ্যভাগে মধ্য- 
প্রদেশ, মথুরা ও উজ্জয়িনীর মধ্যে বৌদ্ধধর্ম স্বিস্তত ছিল। 
কলিঙ্গ যুদ্ধের পরে সম্রাট অশোক বৌদ্ধধর্ম বিস্তারে নিযুক্ত 
ছিলেন। তিনি উত্তর বাঙ্গালা নেপাল ও কাশ্মীরে, 
গান্ধার ও কান্বোজে, স্ুরাষ্্র ও তাত্পর্ণিতে বৌদ্ধধর্খশ বিস্তার 
করেন। ইহা ব্যতীত মিশর, সিরিয়া ও ব্রন্মদেশ প্রন্ৃতি 
মদূর দেশে বৌদধন্্ম বিস্তারের জন্য প্রচারক পাঠাইসা- 
ছিলেন। কেবল থে আফগানিস্তানে বৌদ্ধধর্মের প্রভাব 
অন্ভূত হইয়াছিল তাহা নহে; মধ্য এশিয়ার মরুভূমিতেও 
এই ধর্ম বিস্তৃত ছিল। 

সম্রাট অশোক বৌন্বধর্্ম বিস্তারের জন্য যে সকল প্রচারক 
পাঁঠাইয়াছিলেন তাহাদের মধ্যে মহেন্দ্র ও সক্ঘমিত্রার নাম 
উল্লেখযোগ্য । মচ্ছন্ত্র এবং সঙ্তবনিত্র! সিংহলে বৌন্দধর্ম প্রচার 
করেন এবং গান্ধার ও কাশ্মীরে মধ্যন্তিক নামে একজন স্থবীর 
বৌদ্ধধন্্ম প্রচারে নিযুক্ত ছিলেন। মহীশূর এবং কাশ্মীরে 
মহাদেব নামে একজন প্রচারক ধর্মপ্রচারকার্যে ব্যাপত 
ছিলেন। ন্ুব্্ণভূমিতে সোণ-উত্তর ধর্ম প্রচার করেন। 

সুঙ্গদিগের ব্রাহ্মণ রাজ! পুম্যমিত্র বৌদ্ধধর্মের বিরোধী 
ছিলেন। মধ্যদেশ হইতে জীলান্ধর পর্যন্ত বু বিহার ধ্বংস 
করেন এবং বনু বৌদ্ধ ভিক্ষুর প্রাণনাশ করেন। পাটলিপুত্র 
নগরে অবস্থিত স্থপ্রসিদ্ধ কুকুট বিহীর তিনি ন্ট করেন এবং 
সাগল দেশের চতুদ্দিকস্থ দেশসমূহে বহুসংখ্যক বৌদ্ধ ভিক্ষুর 
প্রাণ নাশ করেন। কাহারও কাহারও মতে নাগাজ্জুন এবং 
অশ্বঘোঁষের মধ্যবর্তী সময়ে এই সকল ধ্বংদ সংঘটিত হইয়া- 
ছিল। স্ুঙ্গদিগের সময়ে মধ্যদেশে বৌদ্ধধর্মের বিরুদ্ধা- 
চরণের বিবরণ আমরা পাই) কিন্তু ব্যাক্টিয়াবাসী যবন- 
দিগের রাজ্যে উত্তর-পশ্চিম ভারতবর্ষে বৌদ্ধধর্ম উন্নত ছিল। 
রাজা মিনান্মর বৌদ্ধধর্মীবলম্ী ছিলেন। ব্যাক্টয়ার যবন- 
দিগের সময়ে বছ স্তুপ ও বিহার 'নির্মিত হইয়াছিল। 


সেকালের বহু বৌদ্ধ প্রতিষ্ঠানে গৌতম বুদ্ধের জীবনের ঘটনা- 
সকল প্রস্তরসমূহে খোদিত ছিল। যিস্ত খুষ্টের পূর্বে ও পরে 
একশত শতাব্দীর মধ্যে মধ্যদেশে ভাঁরুত ও সীচীতে বহু বৌদ্ধ 
প্রতিষ্টান স্থাপিত ছিল । 

সমাট কণিষ্কের পূর্বে বৌদ্ধসঙ্ঘ আঠারটা দলে বিভক্ত 
ছিল। তিনি বৌদ্ধধর্মের ইতিহাসে একটি নূতন যুগ আনয়ন 
করেন। তিনি বহু বিহার স্থাপন করেন এবং জালান্ধরে 
চতুর্থ বৌন্ধ সঙ্গীতি আহ্বান করেন | তাহাঁরই রাজ্যে অশ্ব- 
ঘোঁষ এবং নাগাঁজ্জুন ননে দুইজন স্থুপ্রসিদ্ধ বৌদ্ধ পণ্ডিত বাঁস 
করিতেন। বৌদ্ধসজ্বের কলহের নিষ্পত্তির জন্য সম্রাট কণিফ 
একটা সাধারণ মভা আহ্বান করেন এবং তিব্রতীদের মতে 
তিনি বৌদ্ধ সঙ্ঘের কলহ দূর করেন। নাগাক্জুন এবং অশ্ব- 
ঘোষের সাহায্যে মহাধাঁন বৌদ্ধধর্ম এই সময়ে উন্নতির দিকে 
অগ্রসর হয়। 

খৃষ্টীয় পঞ্চম শতাবীতে চীন পর্যটক ফা-হিয়ান ভারতবর্ষে 
আসেন । তাহার মতে বৌদ্ধধর্মের চারিটী সম্প্রদায় তখন 
এখানে অবস্থিত ছিল, যথা-_সৌত্রান্তিক, বৈভাঁসিক, 
যোগাচার এবং মাধ্যমিক। প্রথম দুইটা হীনযাঁন বৌদ্ধ 
ধর্মের এবং শেষ ছুইটা মহাঁধান বৌদ্ধ ধর্মের পোষকতা করে। 
মথুরাঁয় হীন্যান এবং মহাঁধান বৌদ্ধ প্রতিষ্ঠান ছিল এবং 
বৌদ্ধ ধর্মজ্ঞও বাঁস করিত। পাঁটলিপুত্রে একটা হীনযান 
এবং একটা মহাযান বৌদ্ধ বিহারের উল্লেখ পাওয়া যায়। 
ফা-হিয়ান নালন্দা বিশ্ববিষ্ঠালয় পরিদর্শন করেন এবং তাহার 
মতে উদ্যান, পাঞ্জাব মথুরা এবং প্রাচ্য দেশের সর্বত্র বৌদ্ধ 
ধর্ম উন্নত ছিল। ইহা ব্যতীত শ্রাবন্তী, সারনাথ, পাটলিপুত্র 
এবং আরও অনেক দেশে বৌদ্ধ ধর্মের উন্নতি পরিলক্ষিত 
হয়। রাজতরঙ্গিণীর মতে কাবুল, কাশ্মীর এবং উত্তর-পশ্চিম 
ভারতে বৌদ্ধধর্ম উন্নত ছিল। কালি, নাসিক, অমরাবতী, 
জগধ্যপেত, গোলি এবং নাঁগার্জুনিকোগ্ডের গহ্বর হইতে ধেশ 
বুঝা যায় যে, পশ্চিম ও দক্ষিণ ভারতে এই ধর্দ্বের বনু 
উপাসক ছিল। পূর্বে দক্ষিণাপথে সাতবাহন রাজাদের পরে 
ইক্ষাকুরা বৌদ্ধ ধর্মের পৃষ্টপৌষক ছিলেন। থুষটীয় চততরধ 


২১৫ 


২২১১৬ 
শতাব্দীতে পল্লব চোঁড় দেশে স্থ্প্রসিদ্ধ টাকাকার বুদ্ধঘোষের 
আবিতাঁব হয়। ব্রঙ্গদেশ ও মালয় দেশে বৌদ্ধ ধর্ম বিস্তারে 
পল্লব ও চোড়েরা বহু সাহাঁধ্য করিয়াছিল। 

ৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে আর একজন চৈনিক পর্যটক 
হুয়েন সাং নালন্দায় আসেন। এই সময়ে বৌদ্ধ ধর্মের 
একজন প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন কনৌজ দেশের রাঁজা হ্য- 
বর্ধন । এই চৈনিক পরিব্রাজকের মতে তক্ষশিলা হইতে 
পশ্চিমে পুণ্ডবদ্ধণ পর্যন্ত, পূর্বদিকে সমতট পর্যন্ত এবং 
দক্ষিণভাগে চোড় দেশ পর্যন্ত বৌদ্ধ ধর্ম সুবিস্তত ছিল। 
ব্রাহ্মণ এবং জৈন ধর্ম বৌদ্ধধর্মের সঙ্গে সঙ্গে উন্নতি লাভ 
করে। কাশ্বীর এবং দক্ষিণে বৌদ্ধ সঙ্ঘ প্রবল ছিল। 

খৃষ্টীয় অষ্টম শতাবীতে ত্রাঙ্ষণ ও বৌদ্ধ ধর্ম্মে তান্িক- 
দিগের প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। পাল রাজাদিগের সময়ে 
মহাঁধান বৌন্ধধর্ম্মের উপর তান্ত্রিক্দিগের প্রভাব বিস্ৃত হয়। 
মহাযাঁন বৌদ্ধসজ্ঘে তান্ত্রিকেরা অনেকগুলি সম্প্রদায়ের 
উৎপত্তিতে সাহাধ্য করিয়াছিলঃযথা-_যৌগাঁচাঁর,কালচক্রবাঁন। 
মন্ত্রযান, সহজযাঁন এবং বজ্ববানি। পাল রাজাদিগের পর 
সেন রাঁজারা বৌদ্ধ ধর্মের বিরোধী ছিলেন না। কিন্তু এই 
সময়ে বৌদ্ধ ধর্মের অবনতি হইতেছিল। বক্তিয়ার খিলিজির 
আক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে বৌদ্ধধর্মের ধবংস হয়। বিক্রমশিলা 
এবং ওদন্তপুরীর স্থপ্রসিন্ধ বিহারদ্বয় নষ্ট হয়, বহুসংখ্যক 
ভিক্ষুর মৃত্যু হয় এবং বহু লোক বৌদ্ধ পুথি সঙ্গে লইয়া 
নেপাল, তিব্বত, ব্রহ্গদেশ ও কর্বোজে পলায়ন করে। 
কেহ কেহ উতৎ্কল ও উত্তর ভারতে আশ্রয় লয়। মগধ দেশ 
হইতে যে সকল বোদ্ধধন্মীবলম্বী পলায়ন করে তাহারা 
কলিঙ্গ এবং কোসষ্কানে বৌদ্ধ শিক্ষাকেন্ত্র স্থাপন করে। 
খৃষ্টীয় চতুর্দশ শতাবীর মধ্যভাগে কাশ্ীরে বোদ্ধ ধর্শের স্থিতি 
পরিলক্ষিত হয়। খুষীয় ষোড়শ শতাব্দীর মধ্যভাগে 
উৎকলেও বৌন্ধর্্ম ছিল। নেপালে বৌদ্ধ সাহিত্য অনেক 
আছে এবং বহু বোদ্ধ স্তূপ ও চৈত্য আছে। তিব্বতে 
বর্তমানে যে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচলিত আছে তাহ! কাহারও কাহারও 
মতে তান্ত্রিকর্দিগের ধর্দের স্যায়। 

ভারতের বাহিরে বৌদ্ধধর্ম বিস্তারের জন্য সম্রাট অশোক 
বহু চেষ্টা করিয়াছিলেন। তাহার পর ধর্মগ্রচারকগণ, 
রাজন্তবর্গ এবং বণিকগণ এই কার্যে যথেষ্ট সহায়তা করেন। 
যবন দেশে স্থপ্রসিন্ধ ধর্শপ্রচারক মহারক্ষিত বৌদ্ধধর্ম প্রচার 


াব্রভম্ 


| ২৮শ বর্--২য় খণ্ড--২য সংখ্যা 


করেন। সম্রাট অশোঁকের চেষ্টায় যে সকল স্থানে বৌদ্ধধর্ম 
স্থাপিত হইয়াছিল তাহাদের মধ্যে পশ্চিম এশিয়া, সিংহল ও 
্রন্মদেশ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ৷ পশ্চিম এশিয়ার অন্তর্গত 
লান্কিও দেশে এক শত সঙ্ঘারাম ছিল এবং ছয় হাজার 
বৌদ্ধ তিক্ষু হীন্যান ও মহাঁধান অধায়নে নিযুক্ত ছিল। 
পার্থিয়ায় একজন যুবরাঁজ বৌদ্ধ শ্রমণ হইয়াছিলেন। স্ুপ্রসিদ্ধ 
আরবী পণ্ডিত আল্বেরুণী বলেন বে পুরাকালে খুরাসান 
পারগ্ঠঃ ইরাক, মুল এবং সিরিয়ার প্রত্যন্ত দেশ পর্য্যন্ত 
বৌদ্ধধন্ম বিস্তৃত ছিল । পরে বৌদ্ধদিগকে এই সকল দেশ 
পরিত্যাগ করিয়া বাল্খের পূর্বদিকস্থ কতকগুলি দেশে 
আশ্রয় গ্রহণ করিতে হয়। 

সম্রাট অশোকের ধর্ম গ্রচারকের চেষ্টায় আফগানিস্থানের 
অন্তর্গত কতকগুলি দেশে বৌদ্ধধন্ম্ বিস্তারিত হয় । গান্ধার, 
যবন এব. কান্থোজদিগের মধ্যে ধর্ম প্রচারের জন্থ সম্রাট 
তাহার ধন্ম্মহামাত্রদিগকে পাঠাইয়াছিলেন। স্থবীর মধ্যস্তিক 
কাশ্মীরে ও গান্ধারে বৌদ্ধধর্ম প্রচার করিতে সমর্থ হন্‌। 
কুশান রাজাদিগের সময়ে মধা ও পূর্ব এশিয়া এবং সিদ্ধ 
নদীর পশ্চিম দ্রিকম্থ উচ্চস্থানে বৌদ্ধধর্ম প্রচারিত ছিল । 
সিথিয়া-পার্থিয়া এবং কুশন রাজাদিগের মুদ্রা হইতে বেশ 
বুঝা যায় বে, বোন্ধ ধনের প্রভাব আফগানিস্থানের কতকগুলি 
দেশে বিশেষভাবে ছিল । সম্রাট কণিষ্ষ বস্ুমিত্র, অশ্বঘোষ, 
এব" নাগাজ্ুন প্রভৃতি বৌদ্ধপপ্ডিতগণের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। 
আফগানিস্থানের বু স্তান হইতে বহু স্তুপ ও মৃত্তিকাপাত্র 
পাওয়া গিয়াছে । এই সকল মৃত্তিকা পাত্রে কতকগুলি 
বৌদ্ধ প্রতিষ্ঠানের দাতার নামোল্লেখ আছে । এই দাঁতা- 
দিগের মধ্যে কেহ কেহ সিথিয়াঁবাসী, কেহ কেহ যবন এবং 
কেহ কেহ ব্যাক্‌ট্যাবাসী। আফগাঁনদেশ হইতে খরোগী 
ধর্্পদের পুথি পাওয়া গিয়াছে । জালালাবাদ এবং 
হেডডার নিকটে কাঁপিশার উপত্যকায় বহু বৌদ্ধ 
স্বৃতিস্তস্ভের তগ্নাবশেষ আছে। হেডডায় যে সমস্ত তগ্ন 
স্বৃতিন্তস্ত পাওয়া গিয়াছে তাহাদের মধ্যে কতকগুলি গান্ধার 
স্থাপত্যের সুন্দর নিদর্শন । কাবুলের অন্তর্গত কোহিষ্থানে 
একটী বৌদ্ধ নগরের স্মৃতি চিহ্ন দেখিতে পাওয়া যাঁয়। 

খৃ্ীয় পঞ্চম শতাবীতে যখন চৈনিক পর্যটক ফা-হিয়ান 
ভারত পরিদর্শন করেন, তখন গান্ধারে বৌদ্ধধন্্দ উন্নত 
ছিল। এখানে অনেকগুলি বৌদ্ধ প্রতিষ্ঠান ছিল; কিন্ত 


মাঁঘ---১৩৪৭ 


পঞ্চম শতাব্বীর শেষভাগে এবং ষষ্ঠ শতাবীর গ্রারস্তে 
হুনদিগের অত্যাচারে বৌদ্ধধর্শের যথেষ্ট ক্ষতি হইয়াছিল। 
খু্টীয় সপ্তম শতাবীর প্রারস্তে তুর্কার! বৌদ্ধধর্মের সহাঁয়ক 
ছিলেন। তুর্কীদিগের একজন নেতা প্রভাকর মিত্র নামে 
একজন বৌদ্ধ ভিক্ষুকে যথেষ্ট সমাদর করেন। বাল্থ দেশ 
বৌদ্ধশিক্ষার একটা প্রসিদ্ধ কেন্দ্র ছিল। এখানে বহু বিহার 
ছিল এবং বিহারের মধ্যে নববিহার উল্লেখযোগ্য । বামিয়ান 
দেশে অনেকগুলি বৌদ্ধবিহার ছিল এবং এই বিহাঁরে 
লোকোত্তরবাঁদ সম্প্রদায়ের ভিক্ষু বাঁস করিত। কনৌজের 
রাজ! হর্ষবন্ধনের সময়ে বামিয়ানের রাজা একজন প্রগাঢ় 
বৌদ্ধ ছিলেন। লম্পক দেশে কতকগুলি বিহার ছিল 
এবং এই সকল বিহারে মহাঁযাঁন বৌদ্ধতিক্ষুরা বাস 
করিত । 

ইৎসিং নামে একজন চৈনিক পর্যটক খ্ব্টীর সপ্তম 
শতাব্দীর শেষভাগে ভারতবর্ষে আসেন । তাহার নতে 
মমরকন্দের কোন একজন লোক মহাবোধি তীর্থে গমন 
করেন। তোখারিস্থানবাসীরা পূর্ব ভারতের কোন একটা 
স্থানে যাত্রীর বাসের জন্য আবাঁসগৃহ নিম্মাণ করেন। 
জগ্ুড়দেশের কতকগুলি বণিক যাত্রীর স্তববিধার জন্য 
মহাবোধিতে একটা গৃহ নির্মাণ করেন। এই সকল 
হইতে বেশ বুঝা যাঁয় যে, প্রায় ষষ্ঠ ও সপ্তম শতাব্দীতে পূর্বদ- 
ভারতের সহিত পশ্চিম-ভারতের বৌদ্ধদের একটা নিকট 


লশ্বন্ধ ছিল । 
মধ্য-এশিয়ার অন্তর্গত চীন তুর্কীস্থানের অধিকাংশ 
ন মরুভূমিময়। তালামাকান এবং লোপ মরুভূমি 


স্বিস্ৃত। খুষ্টীয় দ্বিতীয় শতাববীতে খাঁসগড়ে বৌদ্ধধর্মের 
প্রভাব ছিল। এই দেশের লোকরা বৌদ্ধ ছিল এবং 


সর্বান্তিবা্দ সম্প্রদায়ের অনেকগুলি ভিক্ষু এখানে বাঁস 


০ 


তবীক্প্রল্র্মে শরিভ্ঞাল্ল 


২৯, 





করিত। ইয়ারকন্দ এবং খোটানে বৌদ্বধর্ম উন্নতি লাভ 
করে। এখানে মহাযান বৌদ্ধধর্মের অনেক উপাসক 
ছিলেন। তোখারায় এবং সমরকন্দে বৌদ্ধধর্মের অনেক 
নিদর্শন পাওয়া যাঁয়। 

থাসগড় ও তুরকানের মধ্যভাগে কাচনগর অবস্থিত। 
এখানে স্থপ্রসিদ্ধ বৌদ্ধতিক্ষু কুমারজীব লালিত পালিত 
হইয়াছিলেন। এই স্থানে তিনি মহাযাঁন বৌদ্বধর্থে দীক্ষিত 
হন এবং পরে চীনভাষায় কতকগুলি বৌদ্ধগ্রস্থ অনুবাদ 
করেন। ক্রমে কাচ মহাঁষান বৌদ্ধধর্মের একটা কেন্দ্র 
হইয়াছিল। চৈনিক পর্যটক হুয়েন সাং-এর মতে 
এখানে বৌদ্ধধর্ম উন্নত ছিল এবং অনেক বিহার ও 
বৌদ্ধমূর্তিও ছিল। 

তুরকান নামে আর একটা স্থুপ্রসিদ্ধ বৌদ্ধ প্রতিষ্ঠান 
ছিল। এইস্থান হইতে সংস্কৃত, চীন ও অন্য ভাষায় লিখিত 
বৌদ্বপু'থি পাঁওয়া যায়। ফাহিয়ানের সময়ে খোটানে 
বহুসংখ্যক মহান বৌদ্ধধন্মাীবলম্বী ভিক্ষু ছিল। ফাহিয়ান 
এখানে কোন একটা বিহারে বাস করিতেন এবং এই 
বিহারে আরও তিন হাজার ভিক্ষু ছিল। এব-নর হদের 
নিকটে দুইটা স্থান স্যার অবেল স্টাইন আবিষ্কার করেন। 
এই স্থান ছুইটাতে এক সময়ে উন্নত বৌদ্ধ প্রতিষ্ঠান ছিল। 
এখানে অনেক তিব্বতীয় এবং প্রারুত ভাঁষায় লিখিত পুথি 
পাওয়া গিয়াছে । মধ্য-এশিয়ার মরুভূমি হইতে কতকগুলি 
বৌদ্ধ সংস্কৃত পুঁথি পাওয়া যায়, যথা-_খরোস্্রী অক্ষরে 
লিখিত প্রারৃত ধর্মপদের পুঁথি, সারিপুত্র-প্রকরণ 
অশ্বঘোঁষ বিরচিত সৌন্দরানন্দকাব্য, সংস্কৃত ভাষায় লিখিত 
উদ্ানবর্গের পুঁথি, সর্ব্বাস্তিবাদ সম্প্রদায়তৃক্ত ভিক্ষু ও 
ভিক্ষুণী প্রাতিমোক্ষের পুঁথি ইত্যাদি । 

আগামী বারে সমাপ্য 


32৮৫ 





পুন দেবতা 


্রীতারাশন্কর বন্দ্যোপাধ্যায় 


চণ্ডীমণ্ডপ 


তিন 


বেশ পরিপাটি করিয়া এক ছিলিম তাঁমাক সাজিয়! হু'কাঁতে 
নতুন জল সাজিয়া পদ্ম স্বামীর আহার-শেষের প্রতীক্ষা 
করিতেছিল। অনিরুদ্ধের খাওয়া শেষ হইতেই হাতে জল 
তুলিয়া দিয়! হু'কাটি তাহার হাতে দিল-_থাও। 

টানিয়া বেশ গল-গল করিয়া যখন অনিরুদ্ধ নাক মুখ দিয়া 
ধোঁয়া বাহির করিয়াছে, তখন সে বলিল-_-আঁমার কথাটা 
ভেবে দেখ। রাগ এখন একটু পড়েছে তো! 

_রাঁগ? অনিরুদ্ধ মুখ তুলিয়া চাহিল_ঠোঁট ছুইটা 
তাহার থর থর করিয়া! কাপিতেছে ;_এ রাগ আমার 
ভুষের আগুন, জনমে নিববে না। আমার দু-বিঘে বাকুড়ির 
ধান-_; কথা সে শেষ করিতে পারিল না, পদ্মের ডাগর চোখ 
ছুটি তখন নিরুদ্ধ অশ্রুতে উচ্দুসিত হইয়া! উঠিয়াছে_ মুহূর্তে 
ফোটা কয়েক জল টপ টপ করিয়া ঝরিয়া পড়িল। 

অনিরুদ্ধ এবার বলিল__কীদছিস কেন তুই? দু-বিঘে 
জমির ধান গিয়েছে বাকগে ! আমি তো আছি রে বাপু! 
আর দেখ না_কি করি আমি ! 

চোঁথ মুছিতে মুছিতে পদ্ম বলিল- কিন্তু থানা-পুলিস 
ক'রনা বাপু! তোমার দুটি পায়ে পড়ি আমি। ওরা 
সাপ হয়ে দংশায়ঃ রোজা হয়ে ঝাড়ে। আমার বাপের ঘরে 
ডাকাতি হ'ল-_বাঁবা চিনলে একজনাকে, কিন্তু পুলিস তাঁর 
গায়ে হাত দিলে না। অথচ মুঠো-মুঠো৷ টাকা খরচ হয়ে গেল 
বাবার। মেয়ে ছেলে গুষ্টি সমেত নিয়ে টানাটানি, একবার 
দারোগা আসে, এনক্বাঁর নেন্পেকটার আসে, একবাঁর সায়েব 
আসে--আর দাও এজাহার । তার পরে. ক'জনাকে কোথা 
হতে ধরলে; তাদিগে সনাক্ত করতে জেলখানা পর্য্যস্ত মেয়ে- 
ছেলে নিয়ে টানাটানি । তা ছাড়া গালমন্দ আর ধমক। 

নথ । চিন্তিতভাবে হ'কায় গোটা কয়েক টান দিয়া 
অনিরুদ্ধ বলিল-_কিস্তু এর একটা বিহিত করতে তে হুবে। 
আজ ন! হয় ছু-বিধে জমির ধান গেল। কাল আবার 
পুকুরের মাছ ধ'রে নেবে-_-পরণ ঘরে-_ 


_অনি ভাই রয়েছ নাকি? অনিরুদ্ধের কথ! শে 
হইবার পূর্বেবই বাহির হইতে গিরীশ ডাকিয়া সাড়া দিয়া 
বাড়ীর মধ্যে আসিয়া প্রবেশ করিল। পদ্ম আধ-ঘোঁমটা 
টানিয়৷ এটো বাঁসন কয়খানি তুলিয়া লইয়৷ খিড়কির ঘাটের 
দিকে চলিয়া গেল । 

অনিরুদ্ধ একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া বলিল-_ছু-বিঘে 
বাকুড়ির ধান একবারে শেষ ক'রে কেটে নিয়েছে, একটি 
শীষ পড়ে নাই। 

গিরীশও একটা দীর্ঘনিশ্বীন ফেলিয়া! বলিল-_গুনলাম। 

_থানায় ভাঁয়রী করব ঠিক করেছিলাম, কিন্তু বউ 
বারণ করছে। বলছে, ছিরু পাল চুরী করেছে-_এ কথা 
বিশ্বাস করবে কেন! আর গায়ের লোকও তো আমার হয়ে 
কেউ সাক্ষী দেবে না। 

_স্্যা। কাল সন্ধ্যেতে আবার নাকি চত্তীমণ্ডপে 
জটল! হযেছিল। আমরা নাকি অপমান করেছি গায়ের 
লোকদের । জমিদারের কাছে নালিশ করবে শুনছি । 

ঠোটের একদিক বাঁকাইয়| অনিরুদ্ধ এবার বলিয়া উঠিল 
_যা"্যা! জমিদার! জমিদার আমার কচু করবে! 

কথাটা গিরীশের খুব মনঃপুত হইল না, সে বলিল-_তাই 
বলেই বা আমাদের দরকার কি। জমিদারেরও তো বিচাঁর 
আছে, তিনিই বিচাঁরই করন কেন! 

অনিরুদ্ধ বারবার ঘাড় নাড়িয়া অস্বীকার করিয়! বলিল-_ 
উহু! ছাই বিচার করবে। জমিদার নিজেই আজ তিন 
বছর ধান দেয় নাই। জমিদার ঠিক ওদের রায়ে রায় দেবে; 
তুমি জান না। 

বিষগ্রভাবে গ্রিরীশ বলিল--আমি পাই নাই চার 
বছর। 

অনিরুদ্ধ বলিল-- এই দেখ ভাই, যখন বলেছি মুখ ফুটে-_ 
করব না, তখন আমার মরা-বাঁপ এলেও আমাকে করাতে 
পারবে না; তাতে আমার ভাগ্যে যাই থাক। তুমি ভাই 
এখনও বুঝে দেখ ।' | 


২৯৮ 


মাঁঘ--১৩৪৭ ] 


গিরীশ বলিল-_-সে তুমি নিশ্চিন্দি থাক। তুমি না 
মিটোলে আমি মি-টৌব-না ! 

অনিরুদ্ধ গ্লীত হইয়! কক্ষেটি তাহার হাতে দিল। গিরীশ 
হাতের ছাঁদের মধ্যে কক্কেটি পুরিয়া কয়েক টান দিয়! বলিল-_ 
এদিকে গোলমালও তোমার চরম লেগে গিয়েছে। শুধু 
মামর! ছু'জনা! নই, জমিদার ক'জনার বিচার করবে করুক 
না। নাপিত-বাঁয়েন-দাঁই-চৌকিদার নদীর ঘাটের মাঝি, 
মাঠ আগলদার_-সবাই ধুয়ো ধরেছে, ও ধান নিয়ে কাজ 
আমর! করতে পাঁরৰ না । তাঁরু নাপিত তো আজই বাঁড়ীর 
দোরে অজ্ভ্বনতলাঁয় এক ইট পেতে বসেছে- বলে, পয়সা আন, 
এনে কামিয়ে যাও । 

অনিরুদ্ধ কক্কেটি ঝাঁড়িয়া আবার নতুন করিয়া তামাক 
সাঁজিতে সাজিতে বলিল-_-তা৷ বইকি ! পয়স! ফেল, মোয়া 
থাও; আমি কি তোমার পর! 

গিরীশের কথাবার্তার মধ্যে বেশ একটি বিজ্ঞতা প্রচারের 
“ঙ্গি থাকে, এটা তাহার অভ্যাস হইয়া গেছে, সে বলিল-__ 
এই কথ । আগেকার কাল তোমার এক আলাদা কাল 
ছিপ । সম্তাগণ্ডার বাজার ছিল--তখন ধান নিয়ে কাজ 
ক'রে আমাদের পুষিয়েছে--আমরা করেছি; এখন যদি 
নাপোষায়! 

বাহিরে রাস্তায় ঠন-ঠন করিয়া বাইসিক্লের ঘণ্টা বাজিয়া 
উঠিল, সঙ্গে সঙ্গে ডাক আসিল _ অনিরুদ্ধ ! 

ডাক্তার জগন্নাথ ঘোষ। 

অনিরুদ্ধ গিরীশ দুজনেই বাহির হইয়া আদিল। 
মোটাসোটা খাটো লোকটি, মাথায় বাবরি চুল_ জগন্নাথ 
ঘোষ বাইসিরু ধরিয়! দাড়াইয়াছিল। ডাক্তার কোথাও 
পড়িয়া শুনিয়া পাস করে নাই, চিকিৎসাঁবিষ্া তাহাদের 
তিনপুরুষের বংশগত বিদ্যা; পিতামহ ছিলেন কবিরাজ, 
বাপ জেঠা ছিলেন কবিরাজ এবং ডাক্তার একাধারে ছুই; 
জগন্নাথ কেবলই ডাক্তার, তবে সঙ্গে ছুই-চারিট! মুষ্টিযোগের 
ব্যবস্থা দেয়-_তাহাতে চট করিয়। ফলও হয় ভাল। গ্রামের 
সকল লোকই তাহাকে দেখায়, কিন্তু পয়সা বড় কেহ 
দেয় না। ডাক্তার তাহাতে খুব গররাঁজী নয়, ডাকিলেই 
যায়, বাকীর উপরেই বাকী দেয়। ভিন্ন গ্রামেও তাহাদের 
পুরুষাহ্ক্রমিক পসার আছে- সেখানকার রোজগারেই 
তাহার দিন চলে । কোন দিন শাক ভাত, আবার কোন দিন 





গিপে-০ক্ম্বভ্ডা 


ই, 





যাহাকে বলে এক অন্ন পঞ্চাশব্যঞ্জন, যেদিন যেমন রোজগার । 
এককালে ঘোষেরা সম্পন্িবান প্রতিষ্ঠাশালী লোক ছিল। 
ধনীর গ্রাম কন্কনায় পর্যযস্ত যথেষ্ট সম্মান মর্যাদা পাইত) 
কিন্ত ওই কঙ্কনার লক্ষপতি মুখুজ্জেদের এক হাজার টাকা 
খণ ক্রমে চারি হাজারে পরিণত হইয়া! ঘোষেদের সমস্ত 
সম্পত্তি গ্রাস করিয়াছে । এই সম্পত্তি এবং সেকালের- 
সম্মানিত প্রবীণগণের অস্তের সঙ্গে সঙ্গে তাহাদের সে সম্মান 
মর্যাদা চলিয়া! গিয়াছে । জগন্নাথ অকাতরে চিকিৎসা 
এবং উষধ সাহায্য করিয়াঁও সে সম্মান ফিরিয়া পাঁয় নাই। 
সে কাহাকেও রেয়াত করে নাঃ রূঢুতম ভাষায় সে 
উচ্চকে বলে- চোরের দল সব, জানোয়ার! গোপনে 
নয়, সাক্ষাতেই বলে। তাহাদের ক্ষুদ্রতম অন্তায়েরও অতি 
কঠিন প্রতিবাদ সে করিয়! থাকে। 

অনিরুদ্ধ এবং গিরীশ বাহির হইয়া আসিতেই ডাক্তার 
বিনা ভূমিকায় বলিল__থানায় ডায়রী করলি? 

অনিরুদ্ধ বলিল--আজ্ঞে তাই 

_তাই আবার কিসের রে বাপু? যা+ডায়রী ক'রে আয়। 

_আজ্ডে, বারণ করছে সব; বলছে-_ছিরু পাঁল চুরী 
করেছে--.কে একথ৷ বিশ্বাস করবে। 

_কেন? ও বেটার টাকা আছে ঝলে? 

__ তাই তো সাত-পাঁচ ভাবছি ডাক্তারবাবু। 

বিভ্রপতীক্ষ হাঁসি হাসিয়া! জগন্নাথ বলিল-__তা হলে এ 
সংসারে যাদের টাকা আছে তাঁরাই সাধু-আর গরীব 
মাত্রেই অসাধু নাকি? কে বলছে এ কথা? 

অনিরুদ্ধ এবার চপ করিয়! রহিল, বাড়ীর ভিতরে 
বাসনের টুংটাং শব্দ উঠিতেছে। পন্স ফিরিয়াছে, সব 
শুনিতেছে। উত্তর দিল গিরীশ, গিরীশ বলিল-_আজে, 
ডায়রী করেই বা কি হবে ডাক্তারবাবু, ও এখুনি টাকা 
দিয়ে দারোগার মুখ বন্ধ করবে। তা ছাড়া থানার 


জমার্দারের সঙ্গে হিরুর বেশ ভাব। এক সঙ্গে ম-ভাং 
থায়--তারপর-_ 
ডাক্তার বলিল- জানি আমি। কিন্তু দারোগা টাক! 


খেলে-_তারও উপাঁয় আছে। বাঁবারও বাবা আছে। 
দারোগ! টাকা খায়__পুলিসসায়েব আছে;ম্যাজিষ্ট্রেট আছে। 
তার ওপরে কমিশনার আছে। তার ওপরে ছোটলাট, 
ছোটলাটের ওপরে বড়লাট আছে। 


২২০ 


অনিরুদ্ধ বলিল-_-তা তো বুঝলাম ভাক্তারবাবু, কিন্ত 
মেয়ে-ছেলেকে এজাহার ফেজাহার দিতে হবে, সেই হাঙ্গামার 
কথা আঁমি ভাবছি ! 

- মেয়েদের এজাহার? ডাক্তার আশ্র্য্য হইয়া গেল। 
মাঠে ধান চুরী হয়েছে তাতে মেয়ে-ছেলেকে এজাহার দিতে 
হবে কেন? কে বললে? এ কি মগের মুলুক নাকি? 

সঙ্গে সঙ্গে অনিরুদ্ধ উঠিয়। পড়িল ।-_তা হলে আমি 
আজ্ঞে এই এখুনি চললাম । 

ডাক্তারও বাইসিক্লে উঠিয়া বলিল-_যাঁ, তুই নির্ভাবনায় 
চলেষা। আমি ও-বেল! থানায় যাঁব। চুরী করবার জন্তে 
ধান কেটে নিয়েছে এ কথা বলবি না; বলবি- আক্রোশ, 
বশে আমার ক্ষতি করবার জন্তে চুরী করেছে । 

অনিরুদ্ধ আর বাড়ীর মধ্যে ঢুকিল না পর্য্স্ত, পাছে 
পল্প আবার বাঁধা দেয়। সে ডাক্তারের গাড়ীর সঙ্গে সঙ্গেই 
চলিতে আরম্ভ করিল, গিরীশকে বলিল-_গিরীশঃ কামার- 
শালের চাবীটা নিয়ে এস তো ভাই, চেয়ে । 

ও-পারের জংশনের কামারশালার চাবী। গিরীশকে 
ভিতরে ঢুকিয়া চাহিতে হইল না, দরজার আড়াল হইতে 
ঝনাৎ করিয়া চাবীটা! আসিয়! তাহার সম্মুখে পড়িল। গিরীশ 
হেট হইয়া চাবীট! তুলিতেছিল-_পদ্ম দরজার পাশ হইতে 
উকি মারিয়া দেখিল-_ডাক্তার ও অনিরুদ্ধ অনেকটা চলিয়া 
গিয়াছে । সে এবার আধ-ঘোঁমটা টানিয়া সামনে আসিয়া 
বলিল- একবার ডাক? ওকে । 

মুখ তুলিয়া! একবার পন্মের দিকে একবার অনিরুদ্ধের 
দিকে চাহিয়। গিরীশ বলিল- পেছন ডাকলে ক্ষেপে যাবে। 

--তা তো যাবে। কিন্তু ভাত, ভাত নিয়ে যাবে কে? 
আজ কি থেতে-দেতে হবে না! 

গিরীশ ও অনিরুদ্ধ সকালে উঠিয়া এ-পাঁরে যায়-- 
তাহার পূর্ধ্বেই তাহাদের ভাত হইয়া থাকে-_যাইবার সময় 
সেই ভাত তাহারা লইয়া যায়। সেই খাইয়াই তাহাদের 
দিনটা কাটে। রাত্রে বাড়ীতে ফিরিয়া খাঁয়। গিরীশ 

ক গা রা 
সংসারে পদ্প একা মানুষ । বৎসর দুয়েক পূর্বের শাশুড়ী 
মারা যাওয়ার পর হইতেই সমস্ত দিনটা তাহাকে একা 
কাটাইতে হয়। সে নিজে বন্ধ্যা। পল্লীগ্রামে এমন অবস্থায় 








ভ্ান্রভ্ডন্বম্ব 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় খণ্ড--২য় সংখ্য। 





একটি মনোহর কর্মাত্তর আছে-_পাড়া-বেড়ানো। কিন্ত 
পদ্মের স্বভাব যেন উর্ণনাঁভ-গৃহিণীর মত। সে সমস্ত দিন 
আপনার গৃহস্থালার জাল বুনিয়াই চলিয়াছে। ধান-কলাই 
রৌদ্বে দিতেছে, সেগুলি তুলিতেছে, মাঁটি ও কুড়ানো ইটে 
ঘরে বেদী বাধিতেছে; ছাই দিয়া মাজিয় তোল! বাঁসনের 
ময়লা তুলিতেছে-_-শীতের লেপ কাথাগুলি পাড়িয়া নতুন 
পাট করিতেছে; ইহা ছাঁড়া_নিয়মিত কাঁজ__ গোয়াল 
পরিষ্কার, জাব কাটা, খুঁটে দেওয়া, তিন-চারবার বাড়ী 
ঝট দেওয়া তো৷ আছেই। 

আজ তাহার কোন কাজ করিতে ইচ্ছা হইল না। সে 
খিড়কির ঘাটে গিয়া! পা-ছড়াইয়া বসিল। অনিরুদ্ধকে 
থানায় যাইতে বারণ করিয়াছে, হাসিমুখে রহস্য করিয়া 
তাহাকে শান্ত করিবার চেষ্টা করিয়াছে-_-সে কেবল ভবিষ্তৎ 
অশান্তি নিবারণের জন্ত | অন্য দিকে দু-বিঘা বাকুড়ির 
ধানের জন্য তাহার দুংখের সীমা ছিল না। আপন মনেই 
সে মৃদুস্বরে ছিরু পালকে অভিসম্পাত দিতে স্থুরু করিল। 

_কাঁণা হবেন__কাণা হবেন-_-অন্ধ হবেন তিনি )- 
হাতে কুষ্ঠ ভবে, সর্বস্ব যাবে-ভিক্ষে ক'রে ক'রে খাবেন। 

সহসা! কোথায় প্রচণ্ড কলবর উঠিতেছে মনে হইল । পদ্ম 
কান পাঁতিয়া শুনিল। গোলমালটা বায়েনপাড়ায় মনে 
হইতেছে । প্রচণ্ড রূঢ় কণ্ঠে অঙ্লীল ভাষায় কে তর্জজন-গর্জন 
করিতেছে । ওই ছৌয়াচটা যেন পদ্মকে লাগিয়া গেল। 
সেও এবার উচ্চকঠে পাড়া জানাইয়া শাপ-শাপান্ত 
আরম্ভ করিল-_ 

_জোঁড়া বেটা ধড়ফড় করে মরবে, এক বিছ(নাঁয় এক- 
সঙ্গে। আমার জমির ধানের চালে কলেরা হবে। নিব্বংশ 
হবেন- নিব্বংশ হবেন। নিজে মরবেন নাঃ কাণা হবেন-__ 
ছুটি চোখ যাবে, হাতে কুষ্ঠ হবে। যথাসব্বপ্ব উড়ে যাবে-_ 
পুড়ে যাবে। পথে পথে ভিক্ষে ক'রে বেড়াবে। 

বেশ হিসাব করিয়া__ছিরু পালের সহিত মিলাইয়া সে 
শাপ শাপাস্ত করিতেছিল। সহসা তাহার নজরে পড়িল 
খিড়কির পুকুরের ও-পারে রাস্তার উপর দীড়াইয়৷ ছিরু পাল 
গালি-গালাজগুলি বেশ উপভোগ করিয়া হাসিতেছে। ছিরু 
এইমাত্র পাতুবায়েনকে মারপিট করিয়া ফিরিতেছিল, 
বায়েনপাড়ার কলরবুটা তাহারই বিক্রমোষ্কৃত। ফিরিবার 
পথে অনিরুদ্ধের স্ত্রীর শাপ-শাপাস্ত গুনিয়৷ দাড়াইয়া 


মাঁঘ--১৩৪৭ ] 


হাসিতেছিল। সে হাঁসির মধ্যে অন্ত একটা ত্ররপ্রবৃত্তির 
প্রেরণা অথবা তাড়নাও ছিল। পদ্ম দেখিয়! উঠিয়া বাঁড়ীর 
মধ্যে ঢুকিয়া পড়িল। ছিরু ভাঁবিতেছিল, লাফ দিয়! বাড়ীর 
মধ্যে ঢুকিয়া পড়িবে নাকি? কিন্তু দ্িবাঁলোককে তাঁহার 
বড় ভয়। সে স্পন্দিত বক্ষে চিন্তা করিতেছিল। সহস৷ 
পদ্মর কথম্বর শুনিয়৷ আবার সে ফিরিয়! চাহিল। কিন্ত 
একটা কিসের প্রতিবিশ্বিত আলোকচ্ছটা তাার চোখে 
আসিয় পড়িতেই সে চোখ ফিরাইয়া লইঈল। 

_-ধাঁর পরীক্ষে করতে এক কোপে দুটো পাঁটা কেটে 


আমার কাজ বাড়িয়ে গেলেন পুরুষ। রক্তের দাঁগ 
ধোয়৷ নাই--ঘরে ভরে রেখে দিয়েছে । আমি এখন বসে 
বসে ঝাম| ঘষি ! 


পদ্মের হাতে একখানা বগি দা। রোদ পড়িয়া ঝকমক 
করিতেছে, তাহারই ছটা আসিয়া চোখে পড়িতেই ছির 
পাল চোঁখ ফিরাইয়া লইল। পরক্ষণেই সে ঢম ছুম শব্দে 
পা ফেলিয়া আপনার বাঁড়ীর দিকে পথ ধরিল। পদ্দের মুখে 
নিষ্ঠুর কৌতুকের একটি হাঁসি ফটিয়৷ উঠিল। 


চর 


কাঁলীপুরের চাষের মাঠ অধিকাংশই গ্রামের দক্ষিণ ও 
পূর্ব দিকে । শিবপুর, কাঁলীপুরের উত্তর গাঁয়েই একটি 
দীঘির ওপারে অবস্থিত--উ হ্বরের মাঠটা সমস্তটাই শিবপুরের 
সীমানা- পূর্বদিকে ও উত্তর দ্রকের অর্ধেকটা শিবপুরের 
সামিল। উত্তর-পশ্চিমে যে গ্রামের মাঠ, সে গ্রামে 
নাকি লক্ী বসতি করেন নাঃ গ্রামের দক্ষিণ ও পূর্বদিকে 
যে গ্রামের চাঁষের সীমানা_সেখাঁনে নাকি লক্ষমীর 
অপার করুণা । অন্তত প্রবীণের! তাই বলে। মাঠ উত্তর 
এবং পশ্চিম দিকে হইলে দেখা যায় গ্রাম অপেক্ষা মাঠ 
উচু । অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দক্ষিণ ও পূর্ব দিকে ক্রমনিয়তাঁর 
একটা একটানা! প্রবাহ চলিয়া! গিয়াছে । সেই জন্য 
দক্ষিণ ও পূর্ব দিকে কৃষিক্ষেত্র হইলে গ্রামের জলটুকু 
সমঘ্যই মাঠে গিয়া পড়ে; গ্রাম ধোঁয়া জলের উর্বরতা! প্রচুর । 
ইহা ছাড়াও গ্রামের পুকুরগুলির জলের সুবিধা ষোল আনা 
পাওয়া যায়। এই কারণে শিবপুর এবং কালীপুর 
পাশাপাশি গ্রাম হইলেও ছুই গ্রামের ভূমির দামের অনেক 
প্রভেদ। কালীপুরের লোকের অনেক অহঙ্কার__শিবপুরের 


গ-কেকল্রভ। 


২২০ 


লোঁকে সহা করিয়া থাকে । অথচ একদিন শিবপুরের 
অধিবাসী চৌধুরীদেরই জমিদারী ছিল কালীপুর। দ্বারকা 
চৌধুরী সেই বংশোদ্ভুত । চৌধুরীদের সমৃদ্ধি অনেক দিনের 
কথা। দ্বারকা চৌধুরীরও একপুরুষ পূর্বের ঘটনা। 
চৌধুরীরা দে কথা এখন ভুলিয়া! গিয়াছে, কোন দুঃখও 
হয় না__আভিজাত্যের কোন ভাণও নাই। এ অঞ্চলের 
চাঁধীদের সঙ্গে সমাঁন ভাঁবেই মেলামেশা করেন, এক মজলিসে 
বসিয়! তাঁগাক খান__ সুখ-দুঃখের গল্প করেন। তবে চৌধুরীর 
কথাবার্তার স্থুরের মধ্যে একটু পার্থক্য আছে। চৌধুরী কথা 
খুব কম বপেন, যেটুকু বলেন সেও অতি ধীর মৃছু স্বরে । কথার 
প্রতিবাদ করিলে চৌধুরী তাহার প্রতিবাদ আর করেন না। 
কোন কোন ক্ষেত্রে গ্রতিবাঁদকারীর কথা স্বীকার করিয়া 
লন, কোন ক্ষেত্রে চুপ করিয়া যাঁন, কোন ক্ষেত্রে মজলিস হইতে 
চলিয়া আসেন । মোট কথা চৌধুরী শাস্তভাবেই অবস্থান্তরের 
মধ্য দিঘা জীবন অতিবাহিত করিয়া চলিয়াছেন। তিনটি 
ছেলে। বড় ছেলেটি দন্তর হইয়াঁও মূর্খ । সে গাঁজা খায়-_ 
গরুবাছুর লইয়! থাকে, গদ্ধভের মত নির্ববীধি_-তবে 
তেমন করিয়া চীৎকার করে না; কেবল অতি সামান্ত 
কারণেই হাতের আড়াল দিয়া হি-হি করিয়া গ্রচুরেরও 
অতিরিক্ত পরিমানে হাসে । মেজ'টও দন্তর, আকারেও খুব 
দীঘ--সে চাষবাস দেখিতে বাঁপকে সাহায্য করে-_এবং দু-দশ 
টাঁক! লইয়া খুব গোপনে অতিদরিদ্রদের মধ্যে স্থ্দী কারবার 
করে; তাহার আশা অনেক-_তিল কুড়াইয়া তাল নয়-_পাহাড় 
গড়িবে-_তাহাঁদের পূর্ববসম্পদ ফিরাইয়া আনিবে। ছোটিটি 
দপ্তর নয-_স্ৃত্রী সবল তরুণ কিশোর, ম্যাটিক পাঁস করিয়া-_ 
নিজের উদ্যমে সাঁহাধ্য সংগ্রহ করিয়া আই-এ পড়িতেছে। 
বৃদ্ধ দ্বারকা চৌধুরী সকালেই ছাতাটি মাথায়-_-বীশের 
লাঠিটি হাতে করিয়! কালীপুরের দক্ষিণ মাঠে নদীর ধারে রবি- 
ফসলের চাঁষের তদ্ধিরে চলিয়াছিলেন। কালীপুরের জমিদারীর 
স্বত্ব চলিয়া গেলেও- সেখানে মোটা জোত এখনও আছে । 
কালীপুরের দক্ষিণ মাঠটির নাম “অমরকুগ্ডার মাঠ) অর্থাৎ 
এখানকার ফসল কখনও মরে না; এ মাঠের হাজা-শুক৷ 
নাই। মাঠটির মাথায় বেশ বিস্তৃত দুইটি ঝর্ণার জলা আছে; 
প্রশম্ত একটি অগতীর জলা হইতে নালা বাহিয়া' অবিরাম জল 
বহিয়া চলিয়াছে ; অথচ জলাঁটি কাঁণাঁয় কাণাঁয় অহরহই 
পরিপূর্ণ । জল কখনও শুকায় না; এই ধারাই অমরকুণ্ডার 


২২, 


মাঠের উপর ধরিত্রী মাতার বক্ষক্ষরিত ক্দীরধারা। নাল৷ 
ৰাহিয়া জল একেবারে নদীতে গিয়! পড়িয়াছে। জলাভাবের 
সময় নাপায় বীঁধ দিয়া যাহাঁর যেদিকে প্রয়োজন-__-জল- 
শতকে ঘুরাইয়া লইয়া যাঁয়। অগ্রহাঁয়ণের প্রথম, হৈমন্তী 
ধান পাকিতে স্বরু করিয়াছে, সবুজ রঙ হলুদ হইতে আরম্ত 
হইয়াছে । অমরকুণ্ডার মাঠের একপ্রান্ত হইতে শেষপ্রান্তে 
নদীর বাধের কোল পর্যন্ত স্থপ্রচুর ধানের সবুজ ও হলুদ 
রঙের সমদ্বয়ের অপূর্ব শোতা। ধানের প্রাচু্যে মাঠের 
আল পর্য্যন্ত কোথাও দেখা যায় না। কেবল ঝর্ণার নালার 
ছুই পাশের বিসপিল বাধের উপরের তাঁলগাছগুলি 
আাকাবীকা সারিতে উর্দালোকে মাথা তুলিয়া দীড়াইয়া 
আছে। হেমন্তের গপীতাভ রৌদ্রে মাঠখাঁনা৷ ঝলমল 
করিতেছে । আকাশে আজও শরতের নীলের আমেজ 
রহিষাছে; এখনও ধুলা উড়িতে আস্ত করে নাই। দূরে 
আবাদী মাঠের শেষ প্রান্তে নদীর বন্যারোধী বাঁধের 
উপর ঘন সবুজ শরধন একটা সবুজ রঙের স্থদীর্ঘ প্রাচীরের 
মত দাঁড়াইয়া আছে, মাথায় চুণকাম করা আলিসার মত 
চাপ বাঁধিয়া সাদ! ফুল দেখা দিয়াছে । কালীপুরের পশ্চিম 
দিকে- সন্ান্ত ধনীদের গ্রাম কক্কনা; গ্রামবনরেখার উপরে 
সাদা-লাল-হলুদ রঙের দালানগুলির মাথা দেখা বাইতেছে। 
একেবারে ফীকা প্রান্তরে ইস্কুল--হাসপাতাল-_বাবুদের 
থিয়েটারের ঘর-_পরিফাঁর আগাগোড়া দেখা যায়। বাবুরা 
হালে ঈশ্বরবৃত্তির প্রচলন করিয়াছেন টাকায় এক পরসা; 
টাকা দিতে গেলেও দিতে হইবে_টাঁকা পাইতে গেলেও 
দিতে হইবে। এঁটাকায় পার্বণ উপলক্ষে যাত্রা থিয়েটার 
হয়। চৌধুরী একটা নিশ্বাস ফেলিলেন_ দীর্ঘ নিশ্বাস । বৎসরে 
দেড় টাঁকা ছুই টাঁকা তাহাকে এ ঈশ্বরবুত্তি দিতে হয়। 
অনরকুণ্ডার ক্ষেতে এখনও জল রহিয়াছে, জলের মধ্যে মাঠে 
প্রচুর মাছ জন্মায়; আল কাটিয়া দিয়া কাটের মুখে ঝুড়ি 
পাতিয়৷ হাড়ী বাউড়ী ডোম ও বায়েনদের মেযেরা মাছ 
ধরিতেছে। ক্ষেতের মধ্যেও অনেকে ঘুরিয়া বেড়াইতেছে, 
তাহাদের দেখা বায় না-কেবল ঘন ধাঁনগাছগুলি চিরিয়া 
একটা চলস্ত রেখা দেখা যায়, যেমন অগভীর জলের ভিতর 
মাছ চলিয়া গেলে জলের উপর একটা রেখা জাগিয়া ওঠে। 
অনেকে ঘাস কাটিতেছে; কাহারও গরু আছে-_কেহ 
ঘাস বেচিয়া ছুই-চারি পয়সা রোজগার করে। 


ভ্াান্রভল্শ্ 


[২৮শবর্ধব--২য় খণ্ড--২য় সংখ্যা 


অমরকুণ্ডার মাঠের ঠিক মাঝামাঝি একটি প্রশস্ত 
আলের উপর দিয়া যাঁওয়া-মআসার পথ); প্রশস্ত অর্থে 
একজন বেশ স্বচ্ছন্দে চলিতে পারে, দুইজনে কণ্টেও চলিতে 
পারে; এই পথ ধরিয়া গ্রামের গরুবাছুর নদীর ধাঁরে চরিতে 
যাঁয়। ধান খাইবে বলিয়া! তখন তাহাদের মুখে একটি 
করিয়া দড়ির জাল বাঁধিয়া! দেওয়! হয় । 

প্রো চৌধুরী একটু হতাশার হাসি হাসিলেন__গর- 
গুলির মুখের জাল খুলিবার মত গো-্চরও আর রহিল না। 
বাঁধের ওপাঁশে নদীর চর ভাঙিয়া রবিফসলের চাষের ধুম 
পড়িয়া গিয়াছে । চাধীদের অবশ্য আর উপায়ও ছিল না। 
অমরকুগ্ডার মাঠের অর্ধেকের উপর জমি কঙ্কনার বিভিন্ন 
ভদ্রলোকের মধীনে চলিয়া গিয়াছে । অনেক চাষীর জমি 
আর একেবারেই নাই । তাহারাই গ্রথম নদীর ধারে গো-চর 
ভাঁঙিয়া রবিফসলের চাঁষ আরম্ভ করিয়াছিল। এখন দেখা- 
দেখি সবাই আরন্ত করিয়াছে । অবশ্ঠ চরের জমি খুবই 
উর্বর। সারা বর্ষাটাই নদীর জলে ডুবিয়া থাঁকিয়া_ 
পলিতে পলিতে মাঁটি বেন সোনা হইয়া থাকে । সেই সোনা 
ফসলের কা বাহিয়া শীষের মধ্যে ফলিয়া ওঠে । গম- 
সরিষ! প্রচুর হয়; সকলের চেয়ে ভাল হয় ছোলা। ওই 
চরটার নামই “ছোলাকুঁড়ি বা ছোলাকুণ্ড। এখন অবশ্য 
আলুর চাঁষেরই রেওয়াজ বেণী। আলু প্রচুর হয় এবং খুব 
মোটাঁও হয়। নদীর ওপারের জংশনে আলুর বাজারও 
ভাল। কলিকাতা হইতে মহাজনের! ওখানে আলু কিনিতে 
আসে। এ কয়মাসের জন্ত তাহাদের এক একজন লোক 
আড়ত খুলিয়া বসিয়াই আছে-_আলু লইয়া গেলেই টাকা। 
মোটা চাঁধী যাহারা, তাহারা বিশ-পঞ্চশ টাকা দাঁদনও পাঁয়। 
সকলের টানে চৌধুরীকেও গো-চর ভাঙিয়া আলু-গম-ছোলার 
চাষ করিতে হইতেছে । চারিপাশে ফসলের মধ্যে তাহার 
গো-চরে গরু চরানে! চলে না) অবুঝ অবোলা পণ্তু কখন যে 
ছুটিয়া গিয়া ফসলের উপর পড়িবে-সে কি বলা যায়! 
তাহার উপর অমরকুণ্ডার মাঠে দোয়েম জমিতে রবি ফসলের 
চাঁষও অনন্তব হইয়া উঠিয়াছে। কঙ্কনার ভদ্রলোকের জমি 
সব পড়িয়া থাকে, তাহার! রবিফদলের হাঙ্গামা' পোছাইতে 
চাঁয় না; আর খইল-সারেও টাঁকা খরচ তাহারা করিবে 
না। কাজেই তাহাদের জমি ধান কাটার পর পড়িয়াই 
থাকে । অধিকাংশ জমি চাষ হইলে- সেখানে জমি পতিত 


মাঘ--১৩৪৭ ] 


রাখিয়া গরু চরানো৷ যেমন অসম্ভব, অধিকাংশ জমি পতিত 
থাঁকিলে- সেখানে জমি চাঁষ করাঁও তেমনি অসম্ভব। গরু 
ছাগলকে আগলাইয়! পারা যায়; কিন্তু মানষ ও বাঁনরকে 
পারা যায় না। খাইয়াই শেষ করিয়া দ্রিবে। কিন্ত 
কাঁলীপুরের দোয়েম-_ সোনার দোয়েম ! 

কি কাল যুদ্ধই না ইংরেজরা করিল জশানদের সঙ্গে । 
সমস্ত একেবারে লণ্ত-ভণ্ড করিয়া দিল। দুঃখ ছুদ্দশা সব 
কালেই আছে, কিন্ত যুদ্ধের পর এই কালটির মত আর 
কখনও হয় নাই । কাপড়ের জোড়া ছ-টাঁকা, ওষুদ অগ্নিমূল্য 
মায় হুচের দাম চাঁর গুণ হইয়] গিয়াছে । ধান চালের 
দরও বাড়িয়াছে-_কিন্তু কাপড় চোপড়ের সমান কি? জমির 
নামও ডবল হইয়! গিয়াছে । দর পাইয়া হতভাগ! মূর্খের দল 
জমিগুলা কঙ্কনার বাবুদের পেটে ভরিযা দ্িল। আজ 
আপশোষ করিলে কি হইবে! মরুক হতভাঁগারা মরুক ! 
অ:-_-সেই তেরশো৷ একুশ সালে যুদ্ধ আরম্ভ হইয়াছিল, 
যুন্ধ শেষ হইয়া গিয়াছে কয়েক বছর আগে; আজ তেরশো। 
উনত্রিশ সাল আজও বাজারের আগুন নিবিল না। 
কঙ্কনার বাবুরা ধূলার মুঠা সোনার দরে বেচিয়া কাড়ি কাড়ি 
টাকা আনিতেছে--আর কালীপুরের জমি কিনিতেছে মোটা 
দামে । ধুলা বই কি। মাটি কাটিয়া কয়লা ওঠে 
সেই কয়ল! বেচিয়া পয়সা। নে কয়লার মণ ছিল তিন 
আনা চৌদ্দ পয়সা সেই কয়লার দর আজ চোদ আনা! 
গোঁদের উপর বিষ-ফোঁড়ার মত--এই বাজারে আবার 
পঞ্চায়েত বসাইয়! ট্যাক্স চড়াইয়া দিল। ইউনিয়ন বো! 
বাবুরা সব পঞ্চায়েত সাঁজিয়! দণ্মুণ্ডের মালিক হইয়া বসিল 
-আর তোমরা এখন দাঁও ট্যাক্স! টাঝ্স আদায়ের ধুম 
কি? চৌকিদার দফাদার সঙ্গে লইয়া বাঁধানো খাতা বদলে 
ছুগাই মিশ্রি যেন একট! লাটসাহেব! 

সহসা চৌধুরী চকিত হইয়া থমকিয়া ধীড়াইলেন। কে 
কোঁথায় তারম্বরে চীৎকার করিয়! কীঁদিতেছে না? লাঠিটি 
বগলে পুরিয়া রৌদ্রনিবারণের ভঙ্গিতে ভ্রর উপরে হাতের 
আড়াল দিয়া এপাশ ওপাশ দেখিয়া! চৌধুরী পিছন ফিরিয়া 
দাড়াইলেন। ই পিছনেই বটে। ওই গ্রামের মুখে কয়জন 
লোক আসিতেছে, উহ্াদদেরই ভিতর কেহ কাদিতেছে। থে 
কাদিতেছে__সে স্ত্রীলোক তাহাকে 'দেখা যাইতেছে নাঃ 
সামনের পুরুষ্টির আড়ালে ঢাক! পড়িয়াছে। আশ্ছা-হা ! 


গি-০ম্বজ্ডা 


২২২৪ 


পুরুষটা কেউটে সাঁপের মত ফিরিয়া মেয়েটার চুলের মুঠি 
ধরিয়া দুম-দাঁম করিয়া প্রহার আরম্ভ করিয়া দিল। 
চৌধুরী এখান হইতেই চীৎকার করিয়া বলিলেন এই, 
এই) আহা-হা! ওই! 

তাহারা শুনিতে পাইল কি না কে জানে, কিন্ত 
সত্রীলোকটি চীৎকার বন্ধ করিল; পুরুষটিও তাহাঁকে ছাড়িয়া 
দিয়াছে । চৌধুরী কিছুক্ষণ সেইদিকে চাহিয়া দাঁড়াইয়া থাকিয়া 
-_আঁবার রওন| হইলেন। ছোটলোঁক কি সাঁধে বলে ! লঙ্জা- 
সরম, রীত-করণ উহাদের হইলও না-_হইবেও ন1। স্ত্রীলোকের 
টুলে হাত দিলে শক্তি ক্ষয় হয় । রাবণ যে রাবণ, যাহার দশটা 
মুণ্ড, কুড়িটা হাত, এক লক্ষ ছেলে-_-একশ লক্ষ নাঁতি, সীতার 
চুলের মুঠি ধরিয়া_-একেবারে নির্ববংশ হইয়া গেল। 

বাধের কাছাকাছি চৌধুরী পৌছিয়াছেন_-এমন সময় 
পিছুনে পদশব্দ শুনিয়া চৌধুরী ফিরিয়া দেখিলেন। 
পাতু বাঁষেন হন হন করিয়া বুনো শুকরের মত গৌঁভরে 
চলিয়া আমিতেছে। পিছনে কিছুদূরে ধুপধুপ করিয়া 
ছুটিতে ছুটিতে আসিতেছে একটি স্ত্রীলোক । বোঁধ হয় 
পাতুর স্ত্রী। সে এখনও গুন গুন করিয়া কাদদিতেছে__ 
আর মধ্যে মধ্যে চোখ মুছিতেছে। চৌধুরী একটু সন্ত 
হইয়া উঠিল। পাতু যে গতিতে আসিতেছে, তাহাতে 
তাহাকে পথ ছাড়িয়া না দিলে উপায় নাই। উহার আগে 
আগে চলিবার শক্তি চৌধুরীর নাই। পাতু কিস্তু নিজেই 
পথ করিয়া! লইল, সে পাশের জমিতে নামিয়া পড়িয়া ধানের 
মধ্য দিয়া যাইবাঁর জন্য উদ্যত হইল। সহসা সে থমকিয়া 
দীড়াইয়া চৌধুরীকে একটি প্রণাম করিয়া বলিল-_দেখেন 
চৌধুরী মশায়, দেখেন! 

চৌধূরী পাত়ুর মুখের দিকে চাহিয়া শিহুরিয়া উঠিলেন। 
কপালে একটা সছ্য ঘাতিচিহ্ন হইতে রক্ত ঝরিয়া মুখখানা 
রক্তাক্ত করিয়৷ দিয়াছে । 

ওগো? বাবুমাশায় গো ! খুন করলে গো! সঙ্গে সঙ্গে 
পাতুর স্ত্রী ডাক ছাঁড়িয়া কীদিয়া উঠিল। 

_গ্যা-ও ! পাতু গর্জন করিয়া উঠিল। আবার 
চেচাতে লাগলি মাগী? 

সঙ্গে সঙ্গে পাতুর স্ত্রীর কণ্ঠস্বর নামিয়া গেল; সে 
গুন গুন করিয়া কাঁদিতে আরম্ভ করিল__গরীবের কি 
দশ! করেছে দেখেন গো) আপনার! বিচার করেন গে! 





২২৪ 


পাতু পিছন ফিরিয়া দীড়াইয়া পিঠ দেখাইয়া বলিল-_ 
দেখেন, পিঠ দেখেন। পাতুর পিঠে লঙ্গ! দড়ির মত নির্মম 
প্রহারচিন্ন রক্তমুখী হইয়া ফুটিয়া উঠিয়াছে। দাগ একটা 
দুইটা নয়-_দাগে দাগে পিঠটা একেবারে ক্ষতবিক্ষত ! 

প্রো চৌধুরী অকপট মমতাঁয় সহাম্গভূতিতে বিচলিত 
হইয়া উঠিলেন, আবেগবিগলিত স্বগেই বলিল__আব-হা-হা। 
পাতুঁ_? 

_-আজ্, ওই ছিরু পাল! রাগে গন-গন করিতে 
করিতে প্রশ্নের পূর্বেই পাতু উত্তর দিল_কথা নাই, বাত্তা 
নাই, এসেই একগাছা দড়ির বাঁড়িতে দেখেন কি ক'রে 
দিলে, দেখেন! সে আবার পিছন ফিরিয়া ক্ষতবিক্ষত 
পিঠখানা চৌধুরীর চোখের সামনে ধরিল। তারপর ঘুরিয়া 
দাড়াইয়া বলিল হাতখাঁনা চেপে ধরলাম তো-_একগাছা 
বাথারীর ঘায়ে কপাল একেবারে ফাঁটিয়ে দিলে! 

ছিরু পাল? শ্রীহরি ঘোষ? অবিশ্বাস করিবার 
কিছু নাই। নির্মম ভাবে প্রহার করিয়াছে! চৌধুরীর 
চোথে অকম্মাৎ জল আসিয়া গেল। এক এক সময় মািষের 
ুঃখ দুর্শায় মানুষ এমন বিচলিত হয় বে, তখন আপনার 
সকল সখ দুঃখকে অতিক্রম করিয়া নির্যাতিতের দুঃখ যেন 
প্রত্যক্ষভাবে অনুভব করে; চৌধুরী এমনই একটি অবস্থায় 
উপনীত হইয়া সঙ্গল চক্ষে পাতুর দিকে চাহিয়া রহিলেন, 
তাহার দস্তহীন মুখের শিথিল ঠোট দুইটি অত্যন্ত বিশ্র 
ভঙ্গিতে থরথর করিয়া কাপিতেছিল। 

পাতু বলিল-_মোড়লদের ফি-জনার কাছে গেলাম। তা 
কেউ রা কাড়লে না । শক্তর সব ছুয়োর মুক্ত! 

পাতুর ব্উ গুন গুন করিয়া কাদিতেছিল-_ওই সব্বনাণা 
কালামুখীর লেগে গো__ 

পাতু এক ধমক কষিয়া দিল__এ্যাই__-এযাই-_আবাঁর 
ঘ্যান ঘ্যান করে! 

চৌধুরী একটু আত্মসস্বরণ করিয়া! বলিলেন_-কেন এমন 
করে মারলে? কি এমন দৌষ তুমি করেছ যে__ 

অভিযোগ করিয়৷ পাতু কহিল-_সেদিন চণ্ডীমণ্ডপের 
মজলিসে বলতে গেলাম--তা তো আপুনি শুনলেন না 
চলে গেলেন। গোটা 'গেরামের লোকের “আঙোটস্কুতি' 
আমাকে সারা বছর যোগাতে হয়; অথচ আমি কিছুই 
পাই না। তা? কম্মকার যখন রব তুললে তখন আমিও 


ভ্ডান্রভন্বম্ 


[২৮শ বর্- ২য় খণ্ড-২য় সংখ্যা 


বলেছিলাম_যে আমি আর আঙোটজুতি জোগাতে 
লারব। কাঁল সনঝেতে পালের মুনিষফ এসেছিল--আমি 
বলেছিলাম__-পয়সা আন গিয়ে। তা আমার বলা বটে! 
আজ সকালে উঠে এসেই কথ! নাই বাত্তা নাই__আধথালি- 
পাঁথাঁলি দড়ি দিয়ে মার! 

চৌধুরী চুপ করিয়া রহিলেন। পাতুর বউ বাঁর বার ঘাড় 
নাড়িয়। মু বিলাপের সুরে বলিল-না' গো-_বাবুমাশায়__ 

পাতু তাহার কথা ঢাঁকিয়া দিয়া বলিল_ আমার পেট 
চলে কি করে---সেটা আঁপনকাঁরা বিচার করবেন না-_-আর 
এমুনি ক'রে মারবেন ? 

চৌধুরী কাঁসিয়! গলা পরিষ্কার করিয়া লইয়া বলিলেন__ 
শ্রীহরি তোমাকে এমন ক'রে মেরেছে-_মহা অন্তায় করেছে, 
অপরাধ করেছে, হাজার বার লক্ষ বার সে কথা সত্যি। 
কিন্ত “আঁগোটজুতির কথাট। তুমি জাঁন না বাঁবা পাতু। 
গায়ের ভাগাড় তোমরা যে দখল কর--তার জন্যেই 
তোমাদিগে_ গাঁয়ের “আডোটদ্ুতি যোগাতে হয়। এই 
নিয়ম । ভাগাড়ে মডি পড়লে-__-তোমরা চামড়া নাও, হাড় 
বিক্রী কর-_ তারই দরুণ তোমার ওই *আঙোটজুতি” | 
মাংস কাটিয়! লইয়! যাওয়ার কথাটা আর চৌধুরী দ্বণাবশে 
উচ্চারণ করিতে পারিলেন না। 

পাত অবাক হইয়া গেল; মে বলিল-_ভাগাড়ের দরুণ ? 

_স্ট্যা। তোমাদের প্রবীণের তো কেউ নাই, তারা 
সব জানত ! 

_শুধু তাই লয় মাঁশায়; ওই পোড়ামুখী কলস্কিনী 
গো।--পাতুর বউ আবার সুর তুলিল ! 

পাতু এবার সঙ্গে সঙ্গে বলিল-_ আজে হ্যা । শুধু তো 
“আডোটভুতি,ও লয়। আপনারা ভদ্দনোক যদি আমাদের 
মেয়ের পানে তাঁকান-তবে আমরা যাই কোথা বলুন? 

প্রৌঢ় প্রবীণ ধর্শ্পরায়ণ চৌধুরী বলিয়া উঠিলেন__রাম! 
রাম! রাম! রাধে! রাধে! 

পাতু বলিল_-আজে, রাম রাম লয়, চৌধুরী মাশায়। 
আমার ভগ্মী ছুগগা একটুকু বজ্জাত বটে; বিয়ে দেলাম 
তো পালিয়ে এল শ্বশ্তরঘর থেকে। সেই তারই সঙ্গে 
মাশায় ছিরু পাল ফষ্টি-নষ্টি করবে। যখন তথন পাড়ায় 
এসে ছুতো নাতা নিয়ে বাড়ীতে ঢুকে বসবে। আমার 
ম! হারামজাদীকে তো জানেন ! চিরকাল একভাবে গেল; 


মাঘ--১৩৪৭ ] 


পালকে বসতে দেবে-_ফুন ফাস করবে। ঘরে মশায় 
আমারও বউ রয়েছে, তাই মাকে আর দুগগাঁকে আমি 
ঘা কতক ক'রে দিয়েছিলাম! মোড়লকেও বলেছিলাম-_ 
ভাল ক'রেই বলেছিলাম__চৌধুরীমশাই যে--আমাদের 
জাত-জ্ঞেতে নিন্দে করে--আপুনি আর আসবেন না 
মশায় । আসল আক্কৌশটা হ'ল সেই। 

লাঠি ও ছাঁতীয় চৌধুরীর ছুই হাঁতই ছিল আবদ্ধ, কানে 
আঙুল দিবার উপায় ছিল না, সে দ্বণাভরে থুতু ফেলিয়া 
মুখ ফিরাইয়া বলিল-_রাধারুঞ্চ হে! থাঁক পাতু, থাঁক 
বাবা_-ওসব কথা আমাকে আর শুনিও না। আমার 
কি হাত আছে বল! রাধে রাধে হে। 

পাতু কিন্ত রুষ্ট হইল, সে কোন কথা ন! বলিয়া হন্‌ 
হন্‌ করিয়া অগ্রসর হইল । তাহার পিছন পিছন তাহার 
ন্লী আবার ছুটিতে আঁরস্ত করিল-_স্বামীর নীরবতা স্থুযোগ 
পাইয়া সে আবার সুর করিল-_হাঁরাঁণজাদী আবার ঢং করে 
ভাইয়ের দুখে ঘটা ক”রে কাঁদতে বসেছে গো ! ওগো আমি 
কি ক'রব গো! 

পাতু বিছ্যুৎ-গতিতে ফিরিল ; সঙ্গে সঙ্গে বউটি আতঙ্কে 
অস্মুট চীৎকার করিয়া উঠিল-_আ-! 

পাতু মুখ খিচাইয়া বলিল__চেল্লাস না বাবু! তোকে 
কিছু বলি নাই-তু থাঁম। ধাকা দিয়া ভ্ত্রীকে সরাইয়া 
দিয়া সে পশ্চাদ্গামী চৌধুরীর সম্মুথে আসিয়া বলিল-_আচ্ছা 
চৌধুরী মশায়, আলেপুরের রহমৎ স্তাখ যে কন্কনার রমন্দ 
চাঁটুজ্জের সঙ্গে ভাগাড় দখল করছে, তার কি? 


শুক দেশ হবার 


২২২০ 
_-আজ্ঞে হ্যা মশায়। ভাগাঁড়ের চামড়া তাদ্দিগে 
ছাঁড়া কাউকে বেচতে পাব না আমরা । বলে, জমিদার 


আমাদিগে বন্দোবস্ত করেছে। খালছাড়ানোর মুজুরী আর 
নূনের দাম-_-তার ওপর দু-চার আনা ছাড়া দেয় না । অথচ 
চামড়ার দাম এখন আগুন। 

চৌধুরী পাতুর মুখের দিকে চাহিয়া প্রশ্ন করিল-_সত্যি 
কথা পাতু? 

_আজ্ে ্যা। মিছে যদি হয় পঞ্চাশ জুতো খাব, 
নাকে খত দোব। | 

_তা হলে-_চৌধুরী ঘাড় নাঁড়িয়া বলিলেন-__তা| হলে 
হাজার বার তুমি বলতে পার ও কথা। গাঁয়ের লোক 
পয়সা দিতে বাঁধ্য! কিন্তু জমিদারের গমস্তা নগ্দীকে 
জিজ্ঞাস করেছ কথাটা ? 

পাতু বলিল--গমন্তা নগদী কেন, জমিদারের কাছেই 
যাব 'আমি। ডাক্তার ঘোষ মশায় বললে, থানায় যা। তা! 
থানা কেন জমিদীরের কাছেই যাই; ছুটো বিচারই 
হয়েযাক। দেখি জমিদার কি বলে! 

সে আবার ফিরিল এবং সোজা পথ-আলটা 
ছাড়িয়া দক্ষিণ দিকের একটা আল ধরিয়া কঙ্কনার দিকে 
মুখ করিল। বৃদ্ধ চৌধুরী ঠক ঠুক করিয়া নদীর চরের 
দিকে অগ্রসর হইল। নদীর ওপারের জংশনের কলগুলার 
চিমনি এইবার স্পষ্ট হইয়া উঠিয়াছে। আর চৌধুরী 
আসিয়া পড়িয়াছেন। বুদ্ধ হতভস্ হইয়! গিয়াছেন। সব 
করিয়া সব হইল-_চাঁমড়া বেচিয়া রমেন্দ্র চাটুজ্জে বড়লোক 





আশ্চর্য্য হইয়া চৌধুরী বলিলেন__সে কি ? হইবে? ব্রাঙ্ষণের ছেলে! (ক্রমশঃ) 
খুলে দেবে দ্বার 
ভ্রীমতী চিত্র! দেবী 

আমি খুলে দেবো দ্বার যদি এ পর্ণপুটে 
ওগে! বন্ধু আমার ফাগুন জাগিয়া ওঠে 
আসিবে যেদ্দিন তব সোহাগ প্রদীপ জালি 

পুণ্য পূজার লগন, - করিব বরণ তারে, 
মোর অনুরাগ আমি খুলে দেবে ছার 
যদি ছড়াইয়া ফাগ ওগো বন্ধু আমার 
বিরহ ব্যাকুল করে আসিবে যেদিন তব 

শুন্ধ মানস গগন ; বারতা কুঞ্জদ্বারে। 


ঘি 


বানপ্রস্থ 


নারটিক। 


বনফুল 


( পূর্ববপ্রকাশিতের পর ) 


বরদা। বেশ, খিদে পাচ্ছে কিন্তু ক্রমশ । জগমোহন 
( চটাঁৎ করিয়া একটা মশা! মারিলেন ) তুমি দিব্যি নিশিন্ত 
হয়ে বসে আছো! তো! 

জগমোহন। আচ্ছা এই উঠলাম। আমি গিয়েই 
বাকি করব, আমি নদীর পানে চেয়ে থাকলেই তো নৌকো 
বৌবৌকঃরে এসে পড়বে না। যাঁক-বার বার বলছ 
খন যাচ্ছি_ 


রাগের ভান করিয়৷ চলিয়া গেলেন 


রঙ্গলাল। আপনাদের সঙ্গে খাবার নেই না কি? 
আমাদের সঙ্গেও যা ছিল সব খতম হয়ে গেছে। থানিকটা 
মাস্টার্ড পড়ে আছে খালি। শিরোমণি মশায়, আপনার 
কথাগুলো আছে, না নিঃশেষ করেছেন? 

শিরোমণি । সে কোন্‌ কালে__ 


পুনরায় নস্ত লইলেন 


রঙ্গলাল। শিরোমণি মশায় আমাকে ছেড়ে থাকতেও 
পারবেন নাঃ যেখানে যাব আমার সঙ্গে যাঁওয়! চাই--অথচ 
আমার সঙ্গে মতের মোটে মিল নেই-_খালি ঝগড়া আর 
ঝগড়া 

শিরোমণি । ঝগড়া হবে না, এমন ছুল্লভ মানব- 
জন্ম পেয়েছ__সেটা! কেবল ভোগ-বিলাসেই কাটিয়ে 
দেবে? তোমাদের জীবনের উদ্দেশ্তটা কি, কেবল ভেসে 
চল? 

রঙ্গলাল। (হাসিয়া) তাই কি ছাই জানি। রবি 
ঠাকুরের ভাষায়__কী চাই কী চাই বচন না পাই মনের 
মতন রে-_ 


বেঠিক পথের পথিক আমার 
অচিন মে জন রে 

চকিত চলার কচিৎ হাওয়ায় 
মন কেমন করে 


নবীন চিক অশথ পাতায় 
আলোর চমক কানন মাতায় 
যেরূপ জাগায় চোখের আগায় 
কিসের স্বপন সে 
কী চাই কী চাই বচন না পাই 
মনের মতন রে। 
বরদা । বা: 
শিরোমণি | কিন্তু এ সমশ্তই হল দেহজ মোহের বিকার, 
কিন্তু দেহটা যেকিছু নয় একথা সর্বদা মনে রাখা উচিত। 
গীতাঁর কথা তুললে চলবে না! - বাসাংসি জীর্ণানি যথা বিহায়__ 
বরদা। দোহাই শিরোমণি মশায় সংস্কতের কচকচি 
একটু থামান। এবার একটু কাব্যালোচন! হোক। 


চমত্কার লাগছে রঙ্গলালবাবুর আবৃ্তি-_ 

শিরোমণি । বেশ তাই হোক-__আমি চললাম । 

সক্রোধে চলি! গেলেন 

রঙ্গলাল। (হাসিয়া) উনি যাবার জন্যে পা 

বাড়িয়েই দিলেন। নীহার একা রয়েছে__ 
গল! থাঁকারি দিলেন 
বরদা। নীহার কে? 
রঙ্গলাল। সে আছে একজন। 


বরদা। যাক্‌ সংস্কৃতের কচকচি থামলো-_ বাঁচা গেল। 
রঙ্গলাঁল। সংস্কতকে অশ্রদ্ধা করবেন না মশাই, 
সংস্কতে কালিদাস কাব্য লিখেছেন_ 


অশোকনির্ভৎসিতপন্নরাগ- 
মাকৃষ্টহেমছ্যুতিকর্ণিকারম্‌ 
মুক্তাকলাগীকৃতসিন্কুবারং 
বসস্ত পু্পাভরণং বহস্তী। 

আবর্জিতা কিঞ্িদিবন্তনাভ্যাং 

বাসে বসানা তরুণার্করাগম্‌ 
পর্য্যাপুপুষ্পস্তবকা বন 

সঞ্চারিনী পল্পবিনী লতেব। 


৩(৫৩-৫৪॥ 


২২৬ 


মাঘ--১৩৪৭ ] 


খপ গে ব্পপ্্  স্হ ০ “বস বসব” স্ব -স্ স্্হাচ বক ব্য 


বরদা। আহা চমতকার ! 

রঙ্গলাল। কালিদাস আপনার পড়া আছে? 

বরদা। এককালে বি-এ পাশ করেছিলুম-_সেই স্ত্রে 
কুমারসম্ভবের থানিকটা পড়তে হয়েছিল বই কি। 

রঙ্গলাল। মনে আছে সেখানটা আপনার, মদনের 
সঙ্গে বসন্ত যেখানে মহাদেবের কাছে আবিভূ্তি হয়েছেন 
সেখানের বর্ণনাটা-_ 


মধু দ্বিরেফঃ কুহ্‌মৈকপাত্রে 
পপো। প্রিয়াং স্বামনূবর্তমানঃ 
শৃঙ্গেগ চ ম্পর্শনিমীলিতাঙ্ষীং 
মৃগীমকণ্য়ত কৃষণনারঃ। 
দদে৷ রসাৎ পক্কজরেণুগন্ধি 
গজায় গণ্ষজলং করেণুঃ 
অর্জোপতুক্কেন বিসেন জায়াং 
সম্ভাবয়ামান রথাঙগ নামা । 


৫(৩৬-৩৭1 


বরদা। ( সোচ্ছাস ) আহা, কাঁণ যেন জুড়িয়ে গেল। 
সত্যি, সংস্কতের মত ভাষা নেই-__ 

রঙ্গলাল। যে কোন ভাষাতেই সুর লাগলে মিষ্টি হয়। 
ফারসী গজল কত মিষ্টি! একেবারে মাতিয়ে দেয়__ 


বুল্বুল জেতো৷ অমোণ্ত্হ, শীরি 
হুথনীর! স্থখনীর! সুখনীর! 
গুল অজ রুখৎ অমোগ্ত্হ, নাজুক্‌ 
বদনীর! বদনীর! বদ্দনীর1। * 


সুরই আসল, ছন্দই আঁসল-_ভাষ! কিছু নয়। এই স্থুর, 
এই ছন্দ এই নেশা--পাঁগল করে দেয় মানুষকে । এরই 
উন্মাদনায় রবীন্দ্রনাথ একদিন লিখেছিলেন বোঁধ হয়-_ 


পাগল হুইয়। বনে বনে ফিরি 
আপন গদ্ধে মম 
কম্তরী মৃগ সম 
ফাল্তুন রাতে দক্ষিণ বায়ে 
কোথ! দিশা খুঁজে পাই না 
যাহ। চাই তাহ! ভূল ক'রে চাই 
যাহা পাই তাহা,চাই না 


বরদা। (দ্বারের পানে চাহিয়া) কিন্তু জগমোহন 





*. ভ"2-এর মত উচ্চারণ, খ -” £001015] খহ,, শ-৮ 50, সম্দ5 


্বানশ্রস্থ 





২০ 








স্- ্হা 


এখনও ফিরল না, আজ না খেয়ে মরতে হবে দেখছি । 
তামাকের জন্ঠও প্রাণট! আইঢাই করছে। 

রঙ্গলাল। সিগারেট খাবেন? 

বরদা। না, সিগারেট আমি থেতে পারি না। 
তামাক না হলেও চলবে__কিন্তু থেতে না পেলে আমি 
মারা যাব। বেশ খিদে পেয়েছে মশাই-__ 

রঙ্গলাল। আপনি মরতে ভয় পান ? 

বরদা! তা! পাই বই কি, আপনি পান না? 

রঙ্গলাল। নাঁ। রবার্ট ব্রাউনিউ-এর সঙ্গে মিলিয়ে 
আমার বলতে ইচ্ছে করে-- 


[107 50061) 070 ৬0:51 10110519651 00 0) 10126 
1006 10170 00100107521 2170 

/100 006 61617061015 1706, 076 ?6110151) ৮01095 112 186 
৩1)9]] 0৮/17)016, 9108]] 01610, 

91791] 01)2108£6, 911911 95010600106 2 089.০৪ 00৫ 04 1১811) 
1760 81101), 00610 005 01৩251 

0, 0700, 500] 01 177% 50111) ] 51721] 0197510 0)6০ 25811) 
/00 এ10) 00006 106 16501 


নেপথ্যে মিষ্ট মেয়েলি গলায় গান ভাসিয়া আসিল-- 


“গানের সবরের আসনথানি পাতি পথের ধারে 
ওগো! পধিক, তুমি এসে বসবে বারে বারে” 


বরদা। (উৎকর্ণ) চমৎকার মিষ্টি গলা তো--কে 
গাইছে মশাই ? 
রঙ্গলাল। (হাসিয়া) নীহার পালিয়ে এসেছে । 


বরদা। নীহার মেয়েমাঙ্গুষ নাকি ? 
রঙ্গলাল। নিশ্চয়, রীতিমত মেয়েমানুষ ! 
উঠি! গেলেন এবং জানাল৷ দিয়! ডাকিলেন 
নীহার, ভেতরে এসো 
নীহার প্রবেশ করিল, সঙ্গে সঙ্গে বরদাবাবু চটাৎ 
করিয়া একটা মশ! মারিলেন 
তুমি পালিয়ে এলে যে? 
নীহার। শিরোমণি মশায়ের কাছে থাক! যায়! 
বরদ! ও রঙ্গলাল উভয়েই হাসিলেন 

বরদা। বন্গুন, বন্থুন (সরিয়া স্থান করিয়া দিলেন) 
রঙ্গলালবাবুঃ ইনি বুঝি আপনার 

রঙ্গলাল। না; কেউ হুন না ( একটু হাসিয়া) অথচ 

সব হন। অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথের ভাষায়-_ 


২২৮৮ ভ্ান্সভন্ব [ ২৮শ বর্ষ-_২য় খণ্ড--হক্নু শংব্যা 
আমারে যে ভাক দ্বেবে এ জীবনে তারে বারম্বার সংশয়ময় ঘন নীল নীর 
ফিরেছি ভাকিয়৷ কোনে! দিকে চেয়ে নাহি হেরি তীর 
সে নারী বিচিত্র বেশে, মহ হেসে খুলিয়াছে দ্বার অসীম রোদন জগৎ প্লীবিয়া 
থাকিয়া থাকিয়া ছুলিছে যেন_ 
দীপখানি তুলে ধরে, মুখে চেয়ে, ক্ষণকাল থামি ভার বান্না বায 
চিনেছে আমারে নীহারের নশ্ুধ রাখিল 
তারই সেই চাওয়া সেই চেনার আলোক দিয়ে আমি 
চিনি আপনারে । নীহার। (ঈষৎ নিম্নকঠে) তুই ওইথানে থাকিস 


বরদা। ইনি খুব ভাল গান গাইতে পারেন? 

রঙ্গলাল। চমতকার, একখানা শুনিয়ে দাও না নীহার ! 

নাহার । কোন্টা গাইব ? 

রঙ্গলাল। যা তোমার খুশি । 

নীহার। হার্মোনিয়মটা আনতে বলুন তা হলে 
হীরুকে । খালি গলায় আমি গাঁইতে পারব না। 

রঙ্গলাল। বেশ তো হারন্মোনিয়মটা আন্ক না। 
এইথান থেকে ডাকলেই শুনতে পাবে বোধ হয় হীর-_ 


জানালার কাছে উঠিয়া গেলেন ও উচ্চৈঃস্বরে ডাকিলেন 


হীরু! হীরু! 

( নেপথ্য হইতে হীরু ) আজ্ঞে হ্যা-_ 

রঙ্গলাল। হার্মোনিয়মটা আনো এখানে | 

( নেপথ্য হইতে হীরু ) যে আজ্ঞে। 

বরদা। আশ্চধ্য ব্যাপার, জগমোহনের কোন পাত্তা 
নেই ! 

রঙ্গলাল। শিরোমণির সঙ্গে আবার শান্ত্রালাপ সুরু 
করেছেন বোধ হয়। শিরোমণি মশায় লোক পেলে তো 
ছাড়বেন না। 

বরদা। কিন্তু নৌকোটার কি হল? হু হু ক”রে 
হাওয়াও উঠেছে একটা-_ 

রঙ্গলাল। এ রকম নির্জন স্থানে এরকম হুহু ক'রে 
হাওয়া! উঠলে কি রকম যেন অদ্ভুত লাগে আমার । সন্ধ্যার 
অন্ধকার ধীরে ধীরে ঘনিয়ে আসছে- রবীন্দ্রনাথের কবিতা 
মনে পড়ছে-_ 

হন ক'রে বায়ু ফেলিছে সতত 
দীর্ঘন্বাস 


অন্ধ আবেগে করে গর্জন 
জলোচ্ছণাস। 


যেন। আমার ওড়নাথানা বাইরেই আছে, উড়ে না যায় 
দেখিস-_ 
হীর। যে আজ্ঞে 
হীরু চলিয়া গেল। রঙ্গলালবাবু আবৃত্তি করিয়! চলিলেন 
তারি 'পরে ভাসে তরণী হিরণ 
তারি 'পরে পড়ে সন্ধ্যা কিরণ 
তারি মাঝে বসি এ নীরব হাসি 
হাসিছ কেন? 
আমি তো বুঝি না কি লাগি তোমার 
বিলাস হেন! 


বরদা। এইবার একখানা গান হোক । আপনি থামুন। 


রঙ্গলাল। এ কবিতার শেষটা আরো চমতকার, 
শুনুন না-_ 
আধার রজনী আমিবে এখনি 
মেলিয়! পাখা 
সন্ধা! আকাশে স্বর্ণ আলোক 
পড়িবে ঢাকা । 


শুধু ভাসে তব দেহসৌরভ 
শুধু কানে আমে জঙ কলরব 
গায়ে উড়ে পড়ে বায়ু ভরে তব 
, কেশের রাশি। 
বিকল হৃদয় বিবশ শরীর 
ডাকিয়। তোমারে কহিব অধীর 
“কোথা আছ, ওগো, করহু পরশ 
নিকটে আসি,” 
কহিবে না কথ! দেখিতে পাব না 
নীরব হাসি। 


বরদা। এইবার গান হোক--কবিতা থামান 
আপনার । | 

নীহার। কোন্টা গাইব। 

রঙ্গলাল। সেই গজলটা গাও না। 


মাঘ--১৩৪৭ ] 





নীহার হার্গোনিয়ম টানিয়া লইল এবং একটি উদ. গজল 
গাহিল। খুব দরদ দিয়া গাহিল 


বরদা। ( সোচ্ছাসে ) চমৎকার ! 

রঙ্গলাল। ভাল লাগল আপনার? 

বরদী। চমতকার? চমতৎকার-_খুব চমৎকার ! 
রঙ্গলাল। নীহাঁর আর একটা! শুনিয়ে দাও তা হলে। 


বরদা। হ্যা হ্যা-আর একটা হোক। বাইরে 
তখন যেটা গাইছিলেন-_ 

নীহার। গানের স্তরের আসনখাঁনি-টা ? 

বরদা। হ্যা। 

রঙ্গলাল। বেশ তো, শুনিয়ে দাও । 


রঙ্গলালবাবু পকেট হুইতে দিগারেট কেস বাহির করিয়া 
খুলিয়৷ দেখিলেন সিগারেট নাই 


আমার সিগারেটের টিনটা কি তোমার যাণটাচিতে আছে? 
নীহার। হ্যা। 
রঙ্গলাল। চাঁবিটা দাও তো নিয়ে আসি আমি। 
(বরদার দিকে ফিরিয়া) আপনি গান শুন্ন ততক্ষণ__ 
আমি সিগারেট নিযে আদি । ( চলিয়া গেলেন ) 


নীহার গান ধরিল-_-“গানের স্থরের আসনখানি”। গান শেষ 
হইয়! গেল, তবু রঙ্গলালবাবু ফিরিলেন না 


বরদা। (অভিভূত ) সন্তি আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি। 
( একটু ইতস্তত করিয়া ) 'আঁপনি, মানে রঙ্গলালবাবুর সঙ্গে 
আপনার-__ 

নীহার। না, সম্পর্ক কিছু নেই। 

বরদা। আপনি তা হ'লে 

নীহার। ( সলজ্জে) আমাকে “আপনি' বলে লজ্জা 
দেবেন না-- 

বরদা। (গল! থাঁকারি ) ও হ্থ্যা_আচ্ছা 

নীহার। আর একটা গান শুনবেন? 

বরদা। হ্থ্যা হ্যা নিশ্চয়ই ! (সহসা ) জগমোহন গেল ত 
গেলই! 

নীহার গান ধরিল--“ঘুম ঘোরে এলে মনোহর।' বরদ। 

দ্ধ দৃষ্টিতে নীহারের পানে চাহিয়া|রহিলেন 
নীহার। ( সলজ্জ কে) অমন ক'রে দেখছেন কি! 
বরদা। তোমাকে । মনে পড়ছে প্রথম যৌবনে যে 


ন্বাম্ম প্রন 


২৪২ 


মেয়েটিকে পাগলের মত ভালবেসেছিলাম সেও ঠিক 
যেন তোমারি মত দেখতে ছিল। আজ যেন অনেকর্দিন 
পরে তার সঙ্গে দেখা হ'ল এই নির্জনে । বড ভাল লাগছে! 
মুগ্ধভাব স্পষ্টতর হইয়! উঠিল 
নীহার। (কুন্তিত ) আর একটা গান গাইব? 
বরদা। গাও। 


নীহার ধরিল-_“বীধ ন! তরীখানি আমারি নদীকুলে”। বরদা 
উন্মুখ-দৃষ্টিতে নীহারের মুখের পানে চাহিয়া রহিলেন। 
গান চলিতে লাগিল। সহসা গানের 
মাঝখানেই বরদ| বাধ! দিলেন__ 


গান থাঁক-_চল আমরা দু'জনে বেড়াই গিয়ে_ 





নীহার। কোথায়? 

বরদা। নদীর ধারে। পুবদিকে একটা চমৎকার 
বারান্দাও আছে, চল সেইখানে বসি গিয়ে । চল আর গান 
ভাল লাগছে না। 


নীহার। ( একটু ইতন্তত করিয়া ) চলুন । 
পাশের দরজাটা! দিয়! উভয়ে চলিয়! গেলেন। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে 
জগমোহন ও রঙ্গলাল আসিয়! প্রবেশ করিলেন। 
রঙ্গলালের মুখে সিগারেট 

জগমোঁহন। বরদা আবার কোথা গেল? 

রঙ্গলাল। (জানালা দ্রিয়। গলা বাড়াইয়া৷ দেখিলেন ) 
নীহারের সঙ্গে ওই পুবদিকের বারান্দায় বসে গল্প করছেন। 
বেশ জমে গেছেন মনে হচ্ছে। থাক যতক্ষণ অন্থমনস্ক 
থাকেন ততই ভাঁল। আপনাদের নৌকার তো কোন 
পান্তাই নেই__ 

জগমোহন। আমি এখন বি করি বলুন তো? 

রঙ্গলাল। নৌকো না আসধার কি কারণ হতে 
পারে? 

জগমোহন ৷ যে কারণটা! আমার মনে হচ্ছে তা যদি হয়ে 
থাঁকে তা হ'লে তো ভয়ানক ব্যাপার । 

রঙ্গলাল। কি? 

জগমোহন। মাঝি ব্যাটাদের অগ্রিম ভাড়া দিয়ে এসে- 
ছিলাম, তাঁর! তাই নিয়ে যদি তাঁড়ি খেয়ে থাকে, তা হলেই 
তো সর্বনাশ । তাহলে আজ আর নৌকো! আসবেই না। 
আর না য্দি আসে তা হলে বরদা! আমাকে আর আস্ত 
রাখবে না! 


২২৪০ 


রঙ্গলাল। বেশ তো আমার নৌকোটা নিয়ে এগিয়ে 
দেখ! যাক। আোতের মুখে যেতে আর কতক্ষণ লাগবে । 
জগমোহন । আপনারা তা হলে এখানেই বসবেন 
বলছেন? 
রঙ্গলাল। চলুন না আমিও যাই। বেড়ীতেই তো 
বেরিয়েছি। বরদাবাবু ততক্ষণ একটু অন্যমনস্ক থাকুন_ 
হাসিলেন। তাহার পর জগমোহনের দৃষ্টিতে একটা 
প্রশ্ন লক্ষ্য করিয়া বলিলেন 
আরে না না মশাই, আমার ওসব কম্প্রেক্্‌ নেই। 
কাঁঙালের মতো কোন জিনিস আকড়ে থাকা আমার স্বভাঁবই 
নয়। তা ছাড়া, নীহার সন্দেশ নয় যে বরদাবাবু টপ করে 
গালে ফেলে দেবেন। যদি দেনও (হাসিয়। ) [ 0০97 
চলুন । 
জগমোহন | কিন্তু শিরোমণি মশায় ? 
রঙ্গলাল। হ্যা শিরোমণি মশীয় একটা! প্রবলেম্‌ বটে । 
এই যে শিরোমণি মশায় আসছেনও দেখছি-_ 
শিরোমণি প্রবেশ করিজেন। তাহার পরিধানে পটবস্ 


শিরোমণি মশায়, কাপড় বদলে এলেন যে__ 
শিরোমণি । আমাদের ফিরতে দেরি আছে তে? 
রঙ্গলাল। একটু দেরি আছে-_ 


17)100 1 


শিরোমণি । তাহলে আমি সন্ধ্যাহ্িকটা সেরেই নিই 
এখানে । 
রঙ্গলাল। বেশ তো; সন্ধ্যাহ্নিকের সরঞ্জাম তো 


আপন 1রসঙ্গেই আছে, মায় কুঁজোয় ক'রে গঙ্গাজল পর্য্যন্ত 
এনেছেন আপনি । আনতে বলব হীরুকে__? 
শিরোমণি । আমি বলেছি-_-ওই যে এসেও পড়েছে । 
হীরু প্রবেশ করিল। তাহার হাতে গঙ্গাজলের কুজো, 
কোশাকুশি, কুশাসন 
রঙ্গলাল। চলুন জগমোহনবাঁবুঃ আমরা যাই তা হ'লে। 
জগমোহন । চলুন। 
উতয়ে চলিয়া গেলেন। হীরুও আসন প্রনৃতি পাতিয়া দিয়! বাহির 
হইয়া গেল। শিরোমণি মহাশয় উচ্চৈংস্বরে গায়ত্রী আবৃত্তি 
করিতে করিতে সাড়ম্বরে আহ্বিক সুর করিলেন। 
খানিকক্ষণ পরে বরদ] আসিয়া প্রবেশ 
করিলেন । পিছু পিছু নীহার। 
বরদার দৃষ্টি উদ্ত্রান্ত-_ 


ভ্ান্রভন্বম্ব 


[ ২৮শ বর্ষ-_২য় খণ্ড--২য় সংখ্যা 


নীহার। আপনি অমন কঃরে হঠাঁৎ উঠে এলেন যে? 
বরদা। জগমোহনটা গেল কোথা! ভয়ামক খিদে 
পেয়েছে আমার__ 
জানালার কাছে গির! উচ্চৈ:স্বরে 
জগমোহন__-জগমোহন- জগমোহন- জগা_ 
শিরোমণি মহাশয় প্রাণায়াম করিতেছিলেন। তাহার মুখ জকুটি- 
কুটিন হইয়! উঠিল। হার প্রবেশ করিল 
হীর। আজে, ওনার! লৌকো ক'রে চ*লে গেলেন । 
বরদা। ( সবিম্ময়ে) নৌকো ক'রে চলে গেলেন ! 
কোথা গেলেন ! 
হীরু। আপনার নৌকোটার খোঁজেই বেরিয়েছেন। 
আপনাকে আর দিদিমণিকে এইথাঁনে অপিক্ষে করতে বলে 
গেলেন । 
বরদা। অপিক্ষে করতে বলে গেলেন! 
হীর। আজ্জে হ্থ্যা। 


চলিয়া গেল 
বরদা। উঃ, এমন ফ্যাসাদে মাজষে পড়ে! 
নীহার। চলুন, আমরা তা হ'লে একটু বসে গল্প করি ওই 
বারান্দায় গিয়ে । 
বরদা | চল-_ 
উভয়ে চলিয়া! গেলেন। শিরোমণি মহাশয় আরও খানিকক্ষণ পরে 
সন্ধ্যাহিক শেষ করিলেন এবং উচ্চৈঃন্বরে শিব-স্তোত্র আবৃত্তি করিতে 
লাগিলেন।  পপ্রভুমীশমণীশমশেবগুণম-_-” ইত্যাদি। থানিকক্ষণ 
পরে হীরু আসিয়! প্রবেশ করিল 
হীরু। ওই বাবুটি কোথা গেলেন ? 
শিরোমণি স্তোত্রপাঠ বন্ধ করিলেন 


শিরোমণি । (রাঁগতভাবে ) কেন? 

হীরু। ওনাদের লৌকোটা ডুবে গেইচে, তলার 
পাটাতন একখান! নাকি আলগা ছিল, সেটে হঠাৎ খুলে 
গিয়ে ডুবে গেইচে লৌকোটা। একটা মাঝি আইচে 
সতরে_- 

শিরোমণি । একটু নিঞ্কাটে পুজো করবারও জো৷ 
নেই। বাবু ওদিকের বারান্দায় আছে, বলগে যা-_ 
হীরু চলিয়া গেল। শিরোমণি পুনরায় স্তোত্র পাঠে মন দিলেন। ওষ্ঠাধর 


খানিকক্ষণ স্তোত্রপাঠ চলিল। বরদা! প্রযেশ করিলেন। 
দুঢ়-নিবন্ধ, নাসারন্ধ, প্ীত। পিচ পিছু নীহার 


মাঁঘ-_১৩৪৭ ] 


৮ 





নীহার। অমন অস্থির হচ্ছেন কেন? 
বরদাঁ। আমার মাথা ঘুরছে__ 
নীহার। মাথা ঘুরছে? একটু বস্থন না, বলেন তো 
(ইতস্তত করিয়া ) একটু বাতাস ক'রে দি-_ 
শিরোমণি সক্রোধে উঠিয়৷ পড়িলেন 
শিরোমণি । ওরে হীরু, এসব জিনিসপত্তর নিয়ে 
আর একট! ঘরে চল্‌্। কি পাপের ভোগেই পড়েছি 
আমি-_ 
পাশের ঘরে চলিয়া গেলেন। হীরুও আসিয়া জিনিস পত্র 
লইয়! তাহার অনুগমন করিল 
নীহার। বাতাস ক'রে দেব একটু? 
বরদা। (রুক্ষকঠে) না__ 
নীহার। তাতে ক্ষতি কি! দিই না একটু 
বরদা। (অধিকতর রুক্ষকণ্ঠে) না! জগ! বাঙ্কেলটা-_ 
উঠিয়! পড়িলেন এবং অধিকতর উত্তেজিতভাবে পরিক্রমণ 
করিতে লাগিলেন। তারপর সহসা! দাত 
কড়মড় করিয়া 
ওই মাঝি ব্যাটার হাঁড় ঠেডিয়ে গুঁড়ো করে দেব আমি। 
ব্যাটা, পাজি, হারামজাদা ! ( উচ্চৈঃস্বরে ) হীর; হীরু__ 


হীরুর প্রবেশ 


হীরু। আজঃ কি বলছেন? 

বরদা। (সক্রোধে ) ডাক মাঝি ব্যাটাকে, জুতিয়ে 
বাটার পিঠের চামড়া তুলে ফেলি। পাটাতন আলগা 
ছিল! ইয়াকি__ 

নীহার। নাঁ, নাঃ গরীবমামুষকে আর মারধোর ক'রে 


কাজ নেই। হীরু, তুই যা। 
হীরু চলিয়! গেল 


বরদা। ( অসংলগ্রভাবে ) স্কাউণ্ডেল, রোগ, রাঁসকেল্‌, 
সোয়াইন্‌-_ 
নীহার। (বরদার বাহুমূলে হাত দিয়া, সানুনয়ে ) 
একটু স্থির হোন্‌্__ 
বরদা! ঝটক! মারিয়া নীহারের হাত সরইয় দিলেন 


বামন 


"সস স্ব-স্ব সহ 


২২৩৯ 








বরদা। ( অপ্রত্যাশিতভাবে ধমক দিয়া) চুপ কর, 
ফাঁজিল কোথাকার । 
নীহার। ( অভিমান ক্ষুপ্রকে ) এতে আর ফাজলামির 
কি দেখলেন! 
বরদা কোন উত্তর দিলেন না। বার্থ আক্রোশে পিঞ্জরাবন্ধ 
ব্যাত্্রের হ্যায় পরিক্রমণ করিতে লাগিলেন। 
নীহার মুখ টিপিয়া একটু হাসিল 
নীহার। তা হ'লে ততক্ষণ একটা গান গাই, গুন্ুন__ 
বরদ| উত্তর দিলেন না। একটা হ্বলস্ত দৃষ্টি নিক্ষেপ করিয়! দেখিলেন 
নীহার হার্মোনিয়মটি টানিয়। লইয়া বলিল এবং গান ধরিল। বরদাঁ-_ 
পরিক্রমণ করিতে লাগিলেন 
আমার মনটি করিয়া চুরি 
আমার প্রাণটি করিয়! চুরি 
এই আদি বলে গিয়েছিলে চলে 
এতদিনে এলে ফিরি, হে সখা, 
এতদিনে এলে ফিরি । 
বরদা। (অপ্রত্যাশিতভাবে থামিয়া ও চীৎকার 
করিয়া ) গাঁন থামাও ! 


নীহার কিন্ত গান থামাইল ন1, আর একটু মুচকি হাসিয়! গাহিয়। চলিল-_ 
কত মরু গেছে কত সাগরে 
কত সাগর শুকাল বারি 
কত নদী গেছে পথ ভুলি, হে সখা, 
কাল গেছে কত গি-ই-রি 
বরদা। (ধ্রীতমুখ খিচাইয়া ক্ষিগুকে চীৎকার 
করিয়া! উঠিলেন ) একশো! বাঁর বলছি, আমার খিদে পেয়েছে 
__থিদে পেয়েছে, ভয়ঙ্কর খিদে পেয়েছে__গাঁন-টান কিচ্ছু 
ভাল লাগছে না_চুপ কর তুমি-_ 
নীহার তবু থামে না 
তবে রে তোর গানের নিকুচি করেছে ! 
তুদ্ধ বরদা কোণ হইতে একটা! মুণ্ডর ভুলিয়া সবেগে সেটা হাঞ্জোনিয়মের 
দিকে নিক্ষেপ করিলেন। আর্ত চীৎকার করিয়! নীহার সরিয়া 


ধাড়াইল। হার্জোনিয়মের পাশ দিয় গিয়া! মুগ্তরট! গঙ্গাজলের 
কুজোটাকে স-শবে চুরমার করিয়! দিল 





ক্রুলক্িনাল্র গাল 


শ্রীরাধিকারঞ্জন গঙ্গোপাধ্যায় 


এপারে শিখিপুচ্ছ--ওপাঁরে বনপলাশী-_মাঁঝ দিয়া বহিয়া 
গেছে কলঙ্কিনীর থাল। 

বর্ধার আগমনে খাঁলের রূপ বাঁড়িয়াছে, ছুই পাড়ে সে 
যেন হাঁসিয়৷ লুটাইয়া পড়িতেছে__নুরূপা! ষোঁড়শীর হাঁসির 
মতই সে হাসি যেন কল্‌ কল্‌ করিতেছে অন্তরের প্রশ্ব্ষযে 
এখনই যেন সে কৌতুকে খান্‌ খান্‌ হইয়া ভাঙ্গিয়া পড়িবে; 
কিন্ত গরবিনী কলঙ্কিনীর ভার আজ গরব বাঁড়িয়াছে, 
ভরা-রূপের ভারে সে আজ থম্‌ থম্‌ করিতেছে । অন্তরে 
তাঁহার রূপের চেতনা জাগিয়াছে, বাহিরে সেই বরূপ-চৈতন্থ 
চমতকাঁর বান ডাকাইয়াছে। 

বনপলাধীর ভৈরব দত্তের ছেলে সুন্দর অপরাহে তাহাদের 
বাড়ীর পিছুকার আমবাগানের পথ দিয়া ঘাটে আসিয়া 
নিনিমেষ নয়নে সেই কলঙ্কিনীর খালের রূপ দেখিতে 
লাগিল । বিস্ময় ও পরিতৃপ্তি ঘেন তাহার ছুই চোখ 
ভরিয়া তুলিল। খালের ঘাঁটে তাহাদের বাড়ীর নৌকাটি 
পাড়ের একটি গাছের সঙ্গে শিকল দিয়া বাধা ছিল। সুন্দর 
ভাঁবিতেছিল, নৌকা! লইয়া সে একবার খালে খালে একটু 
ঘুরিয়া আসিবে কি-না । এমন সময় তাহার নজরে পড়িল; 
ওপারে নিশি সজ্জনের বাঁড়ীর ঘাঁটের উচু পাঁড়ে ঠিক একটা 
বাতাবি লেবুর গাছের নীচে কে যেন চোখে কাপড়-চাঁপা 
দিয় প্লাড়াইয়া আছে। মুহূর্তেই সে চিনিল, এ সেই নিশি 
সঙ্জনের প্রথম পক্ষের মেয়ে টিয়া । টিয়াকে সুন্দর এযাবৎ 
এই ঘাটেই বহুদিন বাঁসন মাঁজিতে, কাপড় কাঁচিতে 
দেখিয়াছে; কিন্তু কোন দিনই সে ভাল করিয়৷ টিয়াকে 
লক্ষ্য করিয়া দেখে নাই। তবে লোকের মুখে সুন্বর টিয়ার 
রূপের প্রশংসা শুনিয়াছে ; আরও গুনিয়াছে, মা-মরা মেয়ে 
টিয়াকে নাকি নিশি সঙ্জনের দ্বিতীয় পক্ষ রূপসীর হাতে 
নিতান্ত নির্মমভাবে দিবারাত্র লাঞ্ছিত হইতে হয়। টিয়ার 
প্রতি তাই তাহার নিজ মনের অগোঁচরে কেমন যেন একটু 
সহাগুভূতি ছিল? কিন্তু টিয়ার পূর্ববপুরুষ__অর্থাৎ শিখিপুচ্ছ 
গায়ের সঙ্জন-বংশ যে বনপলাশীর দত্ত-বংশের চিরশক্র তাহাও 
নুন্দরের অবিদিত ছিল না; কাজেই সুন্দরের সে সহান্কভৃতি 


কোন দিনই তেমন মাথা তুলিতে পারে নাই। আজ সুন্দর 
জীবনে এই প্রথম টিয়ার সর্বাঙ্গে দৃষ্টি ফেলিয়া তাঁকাইল, 
অবশ্ঠ এতদিনে এই প্রথম অসস্কোচে তাঁকাইবার সুযোগও 
সে পাইয়াছিল-যেহেতু টিয়ার চোখ তাহার কাপড়ের 
আচল দিয়া চাঁপিয়। ধরা ছিল। টিয়া একবার ক্ষণিকের 
জন্য মুখের উপর হইতে কাপড়ের আচল সরাইয়া' লইল, 
সুন্দর সেই সুযোগে টিয়ার মুখ ভাল করিয়! দেখিয়া! লইল। 
টিয়া কাদিতেছে! স্থন্দরের অমনি মনে হইল, হয় ত 
টিয়ার সং-মা রূপসী আজ তাহাকে গঞ্জনা দিয়াছে, তাঁই 
হয়ত সে ঘাটে কাজের অছিলায় আসিয়া কাদিতেছে। 
টিয়ার ত তবে বড় ছুংখের জীবন! স্থন্দরের মনে আজ 
টিয়ার জন্য বড় ভাঁবন! ধরিয়া! গেল। টিয়ার জন্ত সে সত্যই 
ব্যথিত হইয়া উঠিল। মুহূর্তে আবার দুষ্টবুদ্ধি মাথায় চাপায় 
ছুঃংখবোধ তাহার তরল হইয়া আসিল । সুন্দর তাড়াতাড়ি 
পাড়ে উঠিয়া আঁমবাগাঁনের দ্রিকে চলিয়া গেল। অল্প পরেই 
আবার সে একটা ছাঁতির শিক ও হাতে চার-পাঁচটি পিটুলি 
ফল কোথা হইতে যেন সংগ্রহ করিয়া পূর্বস্থানে ফিরিয়া 
আসিয়া প্াড়াইল। টিয়া তখনও পূর্ব চোখে কাপড় 
চাঁপা দিয়া কাদিতেছিল। সুন্দর ক্ষণিকের জন্ত কি ষেন 
ভাঁবিলঃ তারপরে মুখে ছুষ্ট হানি খেলাইয়া শিকের মাথায় 
একটা পিটুলি গাথিয়া শিকের অপর মাথা ধরিয়া টিয়ার 
কপাল লঙ্গ্য করিয়াই শিকটাকে শুন্টে দোলাইয়া একটা 
ঝাঁকি দিয়! পিটুলি ফলটা ছু'ড়িয়া মারিল অতি ভয়ে ভয়ে 
_যাঁহাতে ফলট! গিয়া টিয়ার কপালে লাগিলেও খুব জোরে 
ন! লাগে। কিন্ত ফলট! ওপারের ঘাটের অতি কাছে 
জলের উপর গিয়া! পড়িয়া একটা টুপ করিয়া আস্তে শব্ধ 
করিল। টিয়া তাহা টেরও পাইল না। মুন্দর শিকে 
ফুঁড়িয়া আবার একটা পিটুলি ফল ছুড়িল। এবারও সে 
লক্গ্যত্রষ্ট হইল । ইহাতে সুন্দরের কেমন জিদ্‌ চাঁপিয়া গেল, 
সে আবার ছু'ড়িল॥ 

এবার ঠিক টিয়ার কপালে গিয়াই তাহা লাগিল এবং 
একটু জোরেই লাগিল, অথচ সুন্দর কিন্ত অত জোরে তাহ 


২৩২ 


সাঁব+-১০৪৭] 


লাগাইতে ভার নাই? টিয়া, মুহুর্তে চোখের উপর হইতে 
বাঁপড়ের আচল সরাইয়া লইয়া কগালে হাতি তুলিয়া দিয়া 
বলিল, উঃ 

তারপরেই, টিয়া সম্মুখে অপর পারের ঘাটের পানে 
দৃষ্টি ফেলিতেই দেখিতে পাইল, সুন্দর সেখানে দীড়াইয়া 
খিল্‌ খিল্‌ কক্রিয়া হাসিতেছে, আর তাহার হাতের শিকের 
মাথায় আর একটা পিটুলি ফল গাঁথা রহিয়াছে। টিয়া 
সকলই তখন বুঝিতে পারিল এবং লজ্জায় সে বেন একেবারে 
মরিয়া গেল। তাহার গোপন কান্ন। ত তবে বুঝি আর 
গোঁপন রহিল না, সুন্দর ত সকলই আজ দেখিয়! 
ফেলিয়াছে, জানিতে পারিয়াছে। কি্ত সেখানেও সে 
আর প্াড়াইয়। থাকিতে পারিল না? হঠাৎ ছুটিয়। সে বাঁড়ীর 
দিকে অনৃশ্ঠ হইয়। গেল। সুন্দর যত জোরে সম্ভব হাঁপিয়া 
গলায়ন-তৎপর টিয়াকে যেন অগ্রতিভ করিয়া তুলিতে 
চেষ্টা পাইল। 

টিয়! অদৃশ্য হইগ্া গেলে পর সুন্দরের চোখে নিজের 
বোকামি ধর! পড়িল। আজ এই প্রথম সুন্দরের মনে 
হইল, টিয়া যে দেখিতে স্থন্দর তাহাতে সন্দেহ করিবার আর 
কিছু নাই; কিন্ত কি ছুর্দুদ্ধিতে যে টিয়াকে সে আরও 
ভাল করিয়! আরও কিছুক্ষণের জন্ত এমন স্থযোগ সত্বেও 
না দেখিয়! লইগ্া! চলিয়! যাইতে বাধ্য করিল তাহা সে এখন 
আর ভাবিয়া পাইতেছিল না। আর তাহার এই অকারণ 
দর্ব্যবহারে টিয়া না! জানি কত ক্ষুপ্রই হইয়াছে, হয় ত জীবনে 
কোন দিনই টিয়া তাহার এই দুর্ব্যবহার আর তুলিতে 
পারিবে না। সত্যই একাজটা থে তাহার পক্ষে কত বড় 
ছেলেমাহুষি হইয়া! গিয়াছে তাহা সে এখন অন্তরে অন্তরে 
বুঝিতে পারিতেছিল। ইচ্ছা হইতেছিল, নৌকায় উঠিয়া 
ওপারে গিয়৷ নিশি সঙ্জনের বাড়ী হইতে টিয়াকে একান্তে 
ডাকিয়া আনিয়। ইহারই জন্য ক্ষমা ভিক্ষা চাঁয়--কিন্ 
বংশ-পরম্পরায় যে. শত্রুতা এই দুই পারের দুই বাড়ীতে 
এতকাল চলিয়া আসিতেছে তাঁহারই গ্লামি কেমন করিয়া 
যেন মুহূর্তে মাথা তুলিয়া পর্বতপ্রমাণ বাধা হইয়া দাড়াইল। 
তারপরে মমন্ত ভাব্ন৷ জলাঞলি দিয় নু্দর ছাঁতের পিটুলি 
ফল গীঁখা ছাতির শিকট! খালের মুলে ছুডিয়া ফেলিয়া 
দিয়. বলিয়া! উঠিলঃ বেশ করেচি ! আমার থুশ/ আমি 
পিটুলি .ফল ছুড়ে "ওকে মেরেচি। কেন ও ওখান 


নও 


হি 


দাড়িয়ে দাড়িয়ে কাঁদবে শুনি? মাঘের কারা আমার 
ভুণ্ক্ষেয়, বিষ! ও. আমি. কিছুতেই দেখতে পারি 
না, **.. 


টিয়ার কার! সহস! থামিয় গিয়াছিল। কিন্তু সুন্দরের 
এই অপ্রত্যাশিত আচরণের অর্থ সে কিছুতেই ভাবিয়। ঠিক 
করিতে পারিতেছিল নাঁ। ঘাটের পথ ধরিয়া ৰাগানের 
ভিতর দিয়া সে যখন বাড়ী ফিবিল তখন সে সুন্দরের কথা 
ভাবিতে ভাঁবিতেই ফিরিল। নুন্দরকে সে ইতিপূর্বে ঘাঁটেই 
ব্বার দেখিয়াছে, কখনও আবার হয় ত খালের জলে 
সাতরাইতেও দেখিয়াছে ; কিন্তু কোন দিনই এবাবৎ সে 
সুন্দরের সঙ্গে একটা কথাও কহে নাই, প্রয়োজনও হয় 
নাই। কাজেই সুন্দরের দিক হইতে আজিকার এই 
আচরণ যেন সম্পূর্ণ অভাবিত এবং অপ্রত্যাশিত । প্রথম 
তাই সে সুন্দরের প্রতি কেমন যেন রুট হইল, পরে একটু 
একটু করিয়া! সকল দিক ভাবিয়া দেখায় সে বুঝিল যে, 
সুন্দরের এ আচরণ সত্যই হাস্যকর! কাছেই ুন্দরের 
প্রতি কিছুমাত্র রাগ বা বিদ্বেষ আর. সে পোধর্ণ করিতে 
পাঁরিল না। শুধু কপালের উপর হাত বুলাইযা! মে একটু 
প্রচ্ছন্ন কৌতুকে মৃদু হাঁসিল। কিন্তু বাড়ীর উঠানে পদার্পণ 
করিতেই টিয়ার অন্তরের হাসি ও কৌতুকবোর মুহূর্তেই 
নিশ্চিহ্ন হইয়া গেল এবং অতি-নিকট তবিষ্কতে পিতার 
শাসনের জন্ত সে নিজের মনকে প্রস্বত করিতে লাগিল। 
কারণ বাঁড়ীর উঠানে পা দিয়াই লে দেখিল যে, তাহার 
সৎ-মা রূপসী পশ্চিমের ঘরের দাওয়ার উপর জ্ভিমানে 
ফাটিয়া পড়িয়া! সম্মুথে দণ্ডায়মান ছুশ্িন্তাগ্রস্ত নিশি সঙ্জনের 
কাছে বলিয়া চলিয়াছে-_না বাপু এখানে আর. ন্সামি 
একদওডও থাকতে পারব না, তার চেয়ে তুমি আমাকে 
বাপের বাড়ী রেখে এসো। এই অতটুকু মেয়ে-নাঁহয় 
গহ্বেই ধরিনি-_তা কলে এমন ক'রে মুখের ওপর যা-তা 
অপমান ক'রে যাবে? কেন, কিসের জন্তে আমি সে 
অপমান মুখ বুজে সইব শুনি? 

নিশি সজ্জন ইহাতে বিশেষ বিব্ত হইয়া বলিল, ₹ ছঃ 
অপমান যে তোমার হয়েচে সে ত অনেকক্ষণ অুঝেচি ;. 
কিন্তু কেন টিয়া তোমাকে অপমাঁদ করতে. গেল, কি 
হয়েছিল; তাই বল” না 1 


টি 


মানপন ক্ষ্িক ভু করি থাকিয়া লেখে বলিল। সবাক 
লৈ” আর. দলে : কাঁজ কি: বড় মেয়ে যখন: টিয়া 
তখন ত তাঁর দোষ তোমার চোখে পড়বে ন/ কেই 
কলেও কিছু লাভ নেই। 
, ১স্প্মিশি সজ্জন বলিল, হ'লই বা সে বড়র .মেয়েঃ কিন্তু 
ভাই. বলে মে যদি অন্যায়ভাবে তোমার. অপমান করে ত 
শাসন তাষে'আমার করতে .হবে রই কি! 
এ: স্ঈ্পসী তখন. বঙ্গিলঃ আমার অপরাধ-_টিয়াকে আমি 
আমার এ্রটো বাসনগুলো ঘাট থেকে ধুয়ে নিয়ে আসতে 
বলেছিলাম, কেন নাঃ ছুপুরবেল খেয়ে উঠলেই ঘুমে আমার 
চোখভরে- আদলে । আর একথা কেই বা না জানে যে, 
প্র আমার বছকাঁলের অভ্যাস । টিয়া তার উত্তরে মুখ 
ঘুরিয়ে চলে গেল এষনভাবে__যে বাড়ীর দাসদাসীকেও মাল্ষ 
জদন হেনস্থা করতে পারে না কিছুতে । 
- স্তারপরে কণ্ঠ আরও করুণ করিয়! রূপসী বলিল, আমার 
মেয়ে করবে আমার অপমান ! হায়! এতও আমার 
অনেট্টে লেখ! ছিল !: 

টিয়া এসব শুনিয়া একেবারে কাঠ মারিয়া উঠানের 
এক.পাশে দীড়াইয়। রহিল। নিশি সঙ্জন বা রূপসী কেহই 
জখনও টিয়ার আগমন টের পায় নাই। 

নিশি দজ্জন সহসা চীৎকার করিয়া! ডাঁকিল, টিয়া ! 
টিয়া! অটি্বা! 

. টিয়া নাথ! নীচু ররিয়। আসিয়া পিতার সম্মুখে প্াড়াইল ! 
এমন তাহাকে প্রায়ই দীড়াইতে হয় । 


নিশি সঙ গল্ভীর কঠে টিয়াকে প্রশ্ন করিল, টিয়া, 


তোর ছোটমা ধা বলে ত! সব সত্যি তা হলে? 

, ক্পশী এমন সময় চোথে কাপড় তুলির! দির বলিয়া 
উঠিল, ও মাগো! তৰে কি আমি মেয়ের নামে মিথ্যে 
বানিয়ে নালিশ. করতে গেলাম নাকি? এও আমাকে 
করতে হ'ল! 


“. টিয়া অতি টি লিল, না, চি মিথ্যে 


বলবেন কেন। 

“নিশি লঙ্জন পহল! রূঢ় হয় বলিল, এরকম রোজ 
রোগ-তোয় লাসে বদি আমাকে নালিশ শুনতে হয়ত সে 
বড় তাল কথা না। আঁজ বাদে কাধ যার বিয়ে হবে, তা 


একি বুদ্ধিও ত থাকা উচিত। নিজের মা না হলে 


্ু নু 
টি 


[ ২৬ বরং খর্্হর পংহ্টী . 


ঘা তত শদে রোজ: ঠোক্ষাঠুকি হওয়া আছি হক 
করিনে | এখন থেকে সাবধান ছে তত শেখা 
বলচি। 

. টিয়া অতি ভয়ে ভয়ে পাবার বলিল, আমার তখন:হাতে 

আঁর একটা কাঁজ ছিল--তাই ছোটমার কাঝ করতে একটু 
দেরী হয়ে গিচলো এই বা, নইলে সে বাসন' হর 
ধুয়ে এনেচি । . 

রূপসী সঙ্গে সঙ্গে অমনি ঝঙ্কার দিয়া বলিয়া উঃ 
বেশ বানিয়ে বানিয়ে কথা বলতে শিখেচিস্‌ ত টিন্না.। বি; 
মুখ ঝাম্ট! দিয়ে তখন ব'লে যাস্‌্নি যে, রোজ রোজ টার 
বাসন মাজতে পারব না? টি 

টিয়া তখন বলিল, কে তবে তোমার এ'টো ০৪ নাজ 
ধুয়ে-মেজে এনে দিলে শুনি? ৃ 

রূপসী ব্যঙ্গ-কঠিনকণ্ঠে উত্তরে বপিল, আহা! আমাকে 
কেতাথ” করেচো একেবারে! না ধুয়ে দিলেই পাঁরতিস্‌ 4 
আমার ষেন আর রথ নেই! বলি, সভীনের মেয়ে ঘরে না 
ধাকলে আমার আর এটো বাসন মাজা হ'ত না! মারে 
যাই মেয়েক্স ঠেস্‌ দের! কথা গুনে । 

টিয়া ফি যেন বলিতে যাইতেছিলঃ নিশি সঙ্জন সহসা 
তাহাকে বাধা দিয় বলিয়া উঠিল, না, আর একটা কথাও 
এ নিয়ে চলবে না। ছোঁটমা”র সঙ্গে মা বনে ত মামার 
বাড়ী গিয়ে থাক। কিন্ত এখানে থেকে অষ্টগ্রহ 
ছু'জনে পান থেকে চুন খসা নিয়ে যে প্রলয় ধাধাবে--সে 
হবে না। 
টিনার রী, 
আমাকে "গুনতে হ'ল !_বলিয়া ক্পসী সহসা লকলকে 
সস্তিত করিয়া দিয়া সরব কাঁ্সা জুড়িয়া দিল। . "৮ 

নিশি সঙ্জন মহা বিপদে পড়িয়া কি ধে করিবে ভাবিরী 
নাঁপাইয়া বলিল, ফেরু যদি কোন্‌ দিন আবার ছোটমা/র 
সঙ্গ তোর ঝগড়া বাঁধে টিয়া, ত সেই দিনই আমি' তোকে 
বাড়ী থেকে দূর ক'রে দেবো জানবি | রি 
' বলিয়া নিণি খান হইতে গড চলর কী 
উদ্দেষ্টে ফিরিতেই' উঠাঁনের একপাশে এরর 
নকিয়া ধড়াইযা গেনে। 2 বি 

“মোহর এক সুখ হাঁসি লইয়া বলিল, টি 
জাঁখিবাবু? এ গগাড়িয়ে বুঝি: টি] কাদিচে 1? ফেন) এ; 


মাক্যা-৯৫৪%$ 


আবৰার এত 'ংখু কিলের ?' 'আপনি বুঝি. কিছু রলেচেল 
তবে ওকে &, - 
টিয়া তখন সত্যই কাদিতেছিল। 


ছুদশ গাঁয়ের মধ্যে শিখিপুচ্ছের নিশি সঙ্জনের বেশ 
নামন্ডাক আছে। এককালে সঙ্জন*্বংশের প্রতাপ- 
গ্রতিপত্তিন্ব কথা হাটে-ঘাটে সর্বত্র আলোচিত হইত; এখন 
আর কেমনটি না হইলেও নিশি সঙ্জনকে অনেকেই বেশ 
সমীহ করিঘা চলে এবং ভয়ও করে। নিশি সঙ্জনের 
অবস্থা বেশ ভালই বলিতে হয়ঃ শরীরে তাহার অসীম শক্তিঃ 
সাহস তাহার দুর্জয়, কিন্ত সমস্তকিছু সত্বেও নিশি সজ্জন 
রূপসীর কাছে কেমন যেন একটু ছোট হইয! আছে। ইহার 
কারণট। অবশ্ত কোন দিনই সে ভাবিয়া দেখে নাই, কিন্ত 
বেণী সময়ই সে যেন অন্ঠায় করিতেছে জাঁনিযাও রূপসীব 
আবার-শাসন-খেয়াল সমন্তই অবিচাবে মানিযা লইতেছে। 
না মানিয়! লইয়া যেন তাহার আর উপায় নাই__কাজেই। 
রূপসীর মাত্রাক্জানহীন থেযালের প্রশ্রয দিতে গিষা কতদ্দিনই 
যেসে টিয়ার উপর অধথ৷ অন্যায আচরণ করিযাঁছে নিজের 
বিরেকের বিরুদ্ধে- তাহার আর হিসাব নাই। রূপসীর 
মনস্তর্ির জস্ত মাঝে মাঝে নিশি সঙ্জনকে এমন সব কাজ 
করিয়া বমিতে হয় যে পরে তাহারই জন্ত অন্তর তাহার 
অন্ুতাঁপানলে দগ্ধ হইতে থাকে । 

টিয়ার উপর আজিকাঁর ব্যবহারও যে তাহার নিতাস্ত 
নিন্দনীয় হইয়াছে তাহাতে তাহার নিজেবও আর সন্দেহ 
ছিল না এবং মনোহরের আগমনে সেই কথাটাই তাহার 
মনে ঝর বার জাগিতেছিল। আর রূপসীর বুদ্ধি-গুদ্ধির 
উপরে নিশি সজ্জনের কেমন যেন একটা অনাস্থা আসিয়া 
গিগ্লাছিল। কাঞন্ধেই রূপসী পাছে মনোহরের আগমনে 
আরও বেসামাল হই! ওঠে সেই ভযেই নিশি সঙ্জন কোনও 
রকমে আত্মীয়ত৷ বঙ্গায় রাখার মত দু-একটা কথা-_যাহ! 
নিতীস্ত না বলিলেই নয়--বলিয়া কাজের অছিলায় বাড়ী 
ছাড়ি! কোথায় যেন চলিয়া! গেল। 

নিশি সঙ্জগন চলিয়া! গেলে ঘ্ননোহ় বরাবর উঠানের 
অপরপ্রান্তে-বেখাঁনে গাড়াইয়! টি হোখের জল কাপড়ের 
ভালা বির! ভুছিতেছিল লেখানে আগাইয়াগিয়! টিয়ার 
অস্থি কাছে ধাড়াইয! বলিল, এই মে'-টিরাখানীর ঠোঁটটি 


হরির নাশ 


আটার 
লাব! বদি, কপাল তোথার ফুলল কেমন কারে? কেক 
কেঁদে ত মান্যের চোখই €ফালে আানতাম। 

টিয়া মুহুর্তে নিজেকে লাম্লাইয়! লইয়া! সংহত হইব 
দাড়াইল, কিন্ত কোন কথা ।কহিতে কিছুমাত্র প্রয়ান 
পাইল না। 

ওদিকে রূপসীও নিজেকে সাহ্লাইয়া লইয়া উঠানে 
নামিয়া আসিল এবং পূর্ববমুহূর্তের কারার কোনঙ আকাল 
কণ্ঠে প্রকাশ করিতে না দিয়া মনোহরকে লক্ষা করিয়! 
বলিল, হ্যা মনোহব, বলি, শিখিপুচ্ছে কি আসা হয় দিধির 
সঙ্গে দেখা করতে, ন! তাঁর সতীনের মেয়েটির সে ? 

মনোহর ইহাতে কিছুমাত্র অগ্রতিভ হইল না; কারখ 
অপ্রতিভ হইতে সে কোন অবস্থাতেই জানে না। আর 
রূপসীর কথ! সে কোন দিনই বড়-একটা গ্রাহের মধ্যে আনে 
না; যেহেতু রূুপলীর কাঁগুজ্ঞানহীনতা সম্বন্ধে সে লচেতন, 
আর রূপসীর সঙ্গে তাছ্ছার বয়সের পার্থক্যও খুব সাদাগ্চ 
এবং সর্ধোপরি রূপপী স্ত্রীলোক । স্ত্রীলোকের কথা গ্রানথে 
আনিবাঁর মত দুর্বল মনোবৃত্তি তাছার নাই বলিয়াই দে 
মনে করে। 

মনোহর অতি সহজকণ্ঠেই তাই তাহার দিদির অভি- 
যোগের উত্তবে বলিল, না দিদি, আমাকে তেমন স্বার্থপর 
তা ব'লে ভেবে! না--ষে আসব গুধু আপনার দিদদিটির সঙ্গে 
দেখা করতে। আসি আত্মীষ-্বজন সবার সঙ্গেই দেখা 
করতে । আর তা না করলে পর দশজনেই ব! তাবষে কি, 
আর বলবেই বা! কি? লোকের কথা আমার বড় গায়ে লাগে।। 
তাই সবার মন রেখে আমার কাঁজ। ক্রটি কিছুক্তে হবার 
জো-টি নেই। 

রূপসী মনোহরের কথায ভারি রিপদে পড়িয়া গেল। 
ইহাঁর পরে যে আর কি বলিয়া মনোহরকে আক্রমণ করা! 
যাইতে পারে এবং টিয়াকে সেই সঙ্গে একটু আধাত দেওয়া 
যাঁষ তাহা সে আর ভাবিয়া পাইতেছিল না। 

অগত্যা! রূপসী মনোহরের একটা হাত চাপিযা ধরিয়া 
তাহাতে টান দিয়া বলিল, আয়) আমার ধরে গিয়ে বসখি 
চল্‌, তারপরে, তোর খুখে বাড়ীর সধ কথা গুবব । 

টিয়। আন মেখানে এক মুহূর্তও ঠাভভাইল না, আবার 
খালের ঘাটের দিকেই €ল 'চলিয়া গেল। মনোহর দিদি 
সঙ্গে চলিতে ওলিতে 'একধায় পিছু ফিরি! বলিগ, অ টিয়া, 


ই 


চিরপাথী, বেও লা. বল্চি। গে কি আমার মাথার 
দিব্যি! দিদির ঘরে এসো, গপপো করর তোমার সঙ্গে, 
পপ্রেই, সেবার -নব-দুর্বাদলে যাত্রা আমাদের - জমল 
রমন .'. মেই সব গপ-পো'! পার্ট গুনতে চাও ত এন্তার 
পার্ট শোনাবো '-" মাইরি বলচি ! 

টিয়া ফিন্ত মমোহরের কথা শুনিয়াও ফিরিল না। 
ফনোহরকে ভাহার কেন জানি ভাল লাগে না, মনোহরকে 
সে জয়ের চক্ষে দেখে। 


টিয়া বখন তাহাদের খালের ঘাটের উচু পাড়ের বাতাবি- 
গ্লবুত্ব গাছটার একট। হেলানো৷ ডালের উপর বসিয়া মাটিতে 
পা রাখিয়! দত্তদের বাড়ীর ঘাটের দিকে দৃষ্টি তুলিয়া চাহিয়া 
রূৃহিন_-তখন বেল! একেবারে পড়িয়া আসিয়াছে, সন্ধ্যার 
আব বড়'বিল্থ নাই। টিয়া তাহার কপালের ফুলা 
আংশটুকুতে বার বার হাত বুলাইয়! ভাবিতেছিল, আবার 
মনোহর আসিয়াছে । যে কয়দিন মনোহর এখানে থাকিবে 
নে ক্র়দিন তাহার দুর্ভাবনার আর অন্ত থাকিবে না। 
--মনোহরের কথা-বার্ত। চাল-চলন তাহার একেবারেই ভাল 
লাগে না। আরও. বিশেষ করিয়া তাহার ভাল লাগে না 
যনোহরের গায়ে পড়িয়া আপনার লোক সাঙ্জিবার ভাবটি। 
এখানে ধখন সে থাকে তথন অগ্রগ্রহর সে যেন টিয়ার সন্ধান 
করিয়া ক্কেরে, আজে-বাজে বত. অকারণ কথা কহে, ভাব- 
ভূঙ্বীতে বড়, প্রিয়জন বলিয়া বুঝাইতে চেষ্টা পাঁয়, গৃহকর্মে 
অহেতুক বাধ! জগ্গায়) ফলে তাহার দিদির চক্ষে টিয়াকে সে 
আবার বিধ করিয়া তোলে। টিয়া মনোহ্ৃরকে একেবারেই 
দেখিতে পারে না! মনোহরের এখানে অবস্থানকালে কেবলই 
টিয়া কামনা! করে, তাহার সত্বর বিদায় গ্রহণের এবং বিদায় 
: গ্রন্প করিলে একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলিয়া সে বাঁচে । তবে 
মনোহর এককালে বেলী দিনের জন্ত এখানে থাকিতে পারে 
না) সে মহাকালের উমাপতি ঘটকের যাত্রা-পার্টিতে কাজ 
করে, পাঁপ গাহিতে তাছাকে যাত্রা-পাটির সঙ্গে সঙ্গে 
গ-প্রামে সে-গ্রামে ছুটাছুটি করিতে হয় এবং ইহাঁরই ফাঁকে 
ফাকে সে সময় করিয়া শিখিপুচ্ছে দিদির বাড়ী খ্বুরিয়! 
বা তই ছুই দিনের বেখী। একযোগে সে দিদির বাড়ীতে 
এ বড় একটা থাঁকিতে চাঁয, নাই ।. রর 

. এটি বসির। বসিয়া! এই যে.বিরক্তিকর 'মনোঁছর হি 


ূ রা বি 


[২৮শবর্ব _২য খণ্ড-হর সংখা 


কথা ভাবিতেছিল ১ কত্ত দি তাহার: সঙ্গাদ করি 
ফিরিতেছিল আর একজমকে-_যে খেলাচ্ছলে “আঁ 
পিটুলি ফল ছুণড়িয়া মারিয়' তাহার 'কপাল ফুপাইয়া 
দিয়াছিল-_সেই নিঠুর সুন্দরকেই। স্ন্দরের আচরণের 
অসঙ্গতি আর তাহাকে এখন গীড়া দিতেছিল না। সুদ্দরকে 
সেত কতদদিন কত ভাবে দেখিয়াছে, কিন্ত কোন দিই 
তাহার সহিত কথার আদান-প্রদান হয় নাই, যেহেু 
বংশানক্রমে তাহারা পরস্পরের শক্র। অথচ টিয়া ব 
সুন্দর কেহই কোন দিন স্বচক্ষে সে শক্রতার নিদর্শন কিছু 
দেখে নাই। কোনও এককালে নাকি এই দুই বংশের 
শক্রতার ফলে কলগ্কিনীর খালের জলও লাল হইয়া 
উঠিয়াছে। সে সব তাহাদের শোনা কথা-_গল্প-কাহিনীক্ক 
মতই মনে হইয়াছে । নিশি সঙ্জন ও ভৈরব দত্তের আমলে 
কিন্ত তেমন কোন উল্লেখযোগ্য ঘটনা! এযাঁবথকাঁল ঘটে 
নাই। আর না ঘটার জন্য যদি কেহ দায়ী য় ত সে 
ভৈরব দত্ত। কারণ ভৈরব দত্তকে তাহার ধান-চালের 
কারবার দেখিতে বৎসরের মধ্যে বেণী সময়ই শহরে ব্যবসা- 
স্থলে থাকিতে হয়। তাহার উপরে আবার সে একটু 
নিরীহ প্ররৃতির মানুষ কোনও দাজা-হাঙ্গামা বা গোলমালের 
মধ্যে কিছুতেই থাকিতে চাহে না । নিশি সঙ্জনের প্রকৃতি 
কিন্ত ভিন্পপ্রকার। সে চাহে, একটা দাঙগা-হাজামা 
উতয়পক্ষে বাধুক-সে একবার আঁপন শোর্য্য-বীরধ্য গ্রকাশ 
করিয়া বংশমর্য্যাদা কেমন করিয়া অন্ষুণ বাঁথিতে হয় তাহ! 
দেখাইয়া দিবে । কিন্তু এযাঁবৎ ভৈরব দত্ত তাহাকে সেরূপ 
কোনও সুযোগ দেয় নাই। এমন কি, ভৈরব দত্তের 
পূর্বপুরুষের! নিশি সজ্জনের পূর্বপুরুষের সহিত ছুূর্গীগ্রতিমা 
বিসর্জন দিবার নির্দিষ্ট একটা স্থান লইয়া কলঙ্কিনীর খালে 
ঘে একট! বাৎসরিক. দাক্গায় মাতিয়া উঠিত তাহাও এখন 
বন্ধ হইয়া গেছে । আর বন্ধও হইয়াছে ভৈরব দত্েরই 
জন্য । ভৈরব দত্ত খালের নির্দিষ্ট স্থানে প্রতিম! ডুবানে! 
লইয়া দাঙ্গা বাধাইতে রাঁজী হইতে পানে নাই এবং যেস্থান 
লইয়! এতকাল এত দাল্গা হইয়া গেছে সে স্থানে অনায়াসেই 
সঙ্জন-বাড়ীর প্রতিমা বিনা বাধায় ডূধাইতে দিয়া নিজে 
ডাহা হইতে কিছুদর প্রতিমা ভূবাইবার আয়োজন প্রতি 

র কপ্নিতেছেন। ভৈয়ব দত্তের এত সাঁরধাদির্জ 
সত্বেও দিখি'লজ্জন প্রতি বসরই দাঁজা বাধাইবায় চে 


মাঘ-:১৩৪৭ ] 


করে, কিন্তু কোন বৎসরই সে সফলকাম. হইয়া উঠিতে 
পারে ন!। | 

টিয়া ক্রমে সুন্দরের কথাই ভাঁবিতে লাগিল ৷ মনোহরের 
কথা সেই সঙ্গে তাহার মন হইতে মুছিয়! গেল। হুইলই 
বানুন্দর তাহার বংশ-পরম্পরাঁয় শত্রু, তথাপি স্ুন্দরকে 
তাহার কেন জানি ক্রমেই ভাল লাগিতে লাগিল। শক্রর 
তাহার অভাব কি! গৃছেই কি তাহার শক্রুর অভাব 
আছে যে সুন্দর শক্র বলিয়৷ তাহার সহিত সে আলাপ 
করিতে পারিবে না! আর তাহা ছাড়াও স্বন্দর নিজে 
ত তাহার শক্র নয় সে তাহার পূর্বপুরুষের শক্রর বংশধর 
মাত্র। নাঃ যেমন করিয়াই হউক সে সুন্দরের সঙ্গে 
আলাপ করিবে । কিসপ্তকি উপায়ে যে তাহা সম্ভব তাঁগ। 
সে আর ভাবিয়! পাইতেছিল ন1। 

টিয়ার চোখের সাম্‌নে দিয়া খাল ধরিয়। বহু নৌক। 
চলিয়! গেল; সে কিন্তু যে নৌকাটি সন্ধান করিতেছিল সে 
নৌকাঁটিকে আর খাল ধরিয়া চলিতে দেখিতেছিল না 
অর্থাৎ যে নৌকাটি তাহাদেরই ঘাঁটের অপর পারের ঘাটে 
বাঁদা থাকে । নুন্দরদের ঘাটে তাঁহাদের নৌকা বাঁধা নাই 
দেখিয়াই সে ঠিক করিয়াছিল যে, শ্বন্দর নিশ্চয় নৌকা 
লইয়৷ বৈকালের দিকে খালে বেড়াইতে বাহির হইয়াছে, কি 
কোথাও কাজে গেছে । 

সন্ধ্যার অন্ধকার ভাল করিয়া ঘনাইবার পূর্বেই 
খালের জলে টিয়৷ সহসা! একখানি নৌকা দেখিতে পাইল-_ 
সে নৌকা! বনপলাণীর দত্ত-বাঁড়ীর, আর নৌকায় দত্ত-বাড়ীর 
সুন্বর বৈঠা দিয় হাল ধরিয়া! বসিয়াছিল। টিয়ার অন্তর 
মুহুর্তে উল্লাসে নাচিয়া উঠিয়ই লজ্জায় যেন কেমন জড় 
হইয়া গেল। টিয়া কোনও রকমে উঠিয়া দীড়াইয়া ছুটিয়া 





করুশক্িন্বৌল্ল আভল 


হ ২৬৭. 


পলাইতে, যইতেছিল, এমন সময় পিছন হইতে কে যেন দুই 
হাত দিয়া তাহার দুই চোখ চাপিয়া ধরিয়া স্থুর করিয়া 
বলিয়া উঠিল-_. 
টিয়াপাখীর ঠোর্টটি লাল, 
পায়ে ধরি, পেড়ো না গাল। 

টিয়া কণ্ঠ শুমিয়াই এক্ষট! বটুকান দিয়া চোখ ছাড়াইয়া 
দূরে গিয়া দাড়াইল। মুখের চেহারা তাহার রে কেমন 
থেন ভয়-চকিত হইয়া উঠিল । 

মনোহর একটু হাসিয়া বলিল, আমি কি সাঁপ,না এ 
যে একেবারে আতকে উঠলে টিয়া? ই 

টিয়া তাগাতেও কথা কহিল না। ক্রোধে সে শুধু 
নীচেকার ঠোট দাত দিয়া চাঁপিগা ধরিয়! রহিল । বি 

মনোহর পথের মাঝে ভাল করিয়া নাঁষিয়!- টিয়ার “গৃহে 
ফেরার পথ আগলাইয়! দাঁড়াইয়া খুব একচোট হাসিয়া 
লইয়! বলিল, আমি যাত্রার দলের ছেলে ঝলে তুমি আমাকে 
দেখতে পাঁর না টিয়া, তাই নয় কি? 

টিয়। এইবার কথা কহিল, বলিল, না, তা মোটেই নয়। 
তোমার স্বভাব আমার ভাল লাগে না বলেই তোমাকে 
আমি দেখতে পারি না। কেন তুমি এখানে আসতে 
গেলে আমাকে বিরক্ত করবাঁর জন্তে গুনি ? " 

এমন সময় ওপারেক্ ঘাটে নৌকার শিফবটা । যেন 
অর্থযুক্ত ঝন্‌ ঝন্‌ শব্ধ করিয়া উঠিল । 

মনোহর তাড়াতাড়ি বলিল, ও আমি এতক্ষণ লক্ষ্যই 
করিনি টিয়া আমারই অন্যায় হয়ে গেচে। ওপারের 
নাও যে আজকাল এ-ঘাটে এসে লাগচে তা আমি 
জানতাম না । আচ্ছা, এই আমি চ+লে যাচ্ছি। 

ক্রমশ: 


ও ল ৬ ৭৩ 
সু নং রর ৫ ই 
টি স» ছু ্ টি 
এ রি মী রি 
নু ২৫ ্‌ রে 
পট ॥ 
১. 
২ 1551 রব 
* 
ঞ 
০০ ্ 
রত রর 
র্‌ - 
সি, 
রণ 
্ উর 
৮৫ 


চা 


মানুষের মুত্তিচিত্র 


শ্ীঅর্ধেন্দ্রকুমার গঙ্গোপাধ্যায় 


বাঙ্গালাদেশে শিক্ষিত সমাঁজ ঘটা করিয়া আধুনিক 
রাঙগালী সাহিত্যিক, কৰি বা ওপন্তাসিকদের আদর, পুজা 
বা জয়ন্তী সম্পাদন করেন। বাঙ্গালী শিল্পীদের ভাগ্যে 
পূজা সম্মান ত দূরের কথা, আধুনিক প্রতিভাশালী অনেক 
শিল্পীর ভাগ্যে তাহাদের শিল্প-স্থপ্টির যথার্থ গুণ-গ্রহণ 
বা সমালোচনা পর্য্স্ত আমরা করিতে প্রস্তুত নহি। অনেক 
সময়, আমরা এই শিল্পীর কলা-হৃষ্টির গু৭-গ্রহণে বিমুখ 
হইস্কা ওজর তুলি যে, আধুনিক বাঙ্গালী অতীন্দরিয় বাস্তব 












রায় বাহাদুর ৬ঠজলধর সেন 


হইতে বিচ্ছিন্ন আধ্যাত্মিকতার ধূমে আচ্ছন্ন যত সব প্রাচীন 
সেকেলে পৌরাণিক বস্ত অবলম্বন করিয়! শিল্প-হৃষ্টি করেন, 
যাার সহিত ইংরেজী শিক্ষিত যুরৌপের আধুনিক ধারায় 
পরিক্লাত বর্ডমান কালের বাঙ্গালী সমাজের মানসিকতার 
সহিত কোনও যোগ নাই। কথাটা সম্পূর্ণরূপে সত্য না 
হইলেও হয় ত আংশিকরূপে সত্য । কারণ আদমন্মারির 
সংখ্যা অঙ্সাঁরে এদেশে আন্দাজ শতকরা লাতঙ্গন লোক 
ইক জা এ) এ 





মাঘ---১৩৪৭ ] 


মানসে মুগ্চিজ্ত্র 


১৯০০] 





শিক্ষিত অর্থাৎ লিখিতে পড়িতে জানে । ইহার মধ্যে 
হন ত শতকরা চারজন লোক ই'রেজী বিষ্ভায পাবার্শা 
এবং সন্তবত আধুনিক যুরোপীয ভাবধারা পরিপৃ্ত ও 
উচ্চশিক্ষিত । শ্ুুতরাং বাকী শতকরা ৯৬ জন “যে তিমিবে 
ষে তিমিরেনর্ধাৎ প্রাচীন পোরাঁণিকতাঁর “পঞ্চিলে, 
আক নিমজ্জিত । এই প্রাচীন সেকেলে সংস্কাবে অন্ধ ও 
কুম'স্কারে নিমজ্জিত বাঙালীদের পদ্মে ববীন্দ্রনাথেব উক্তি, 
আমরা পৌরাণিকাঁর গণ্তী অতিক্রম কবিযা আসিাছি? 
একথা খাটে না। তথাপিঃ আধুনিক বাঙ্গালী শিল্পীদেব 





প্রীনন্লাল বনু 


মধ্যে এমন অনেক তুলি বা লেখনী-সেবক আছেন-__ 
ধাহার! প্রাহীন পৌবাণিক দেবতাদের উপেক্ষা করিয। 
আধুনিক কাঁলের বাস্তব জগতের মানুষের প্রতিকৃতি লিখিতে 
বিশেষ কৌশল ও কতিব্বেব দাবী কবিতে পাঁবেন। অনেকে 
এখন আপনাদের ঘবের দেওযাঁলে ব মুণ্ডিচিত্র না 
রাখিষা, নিজের বা আত্মীষদেব ছাঁযাঁচিত্র।(101)0102190218) 
বা ব্রোমাইড এনলার্জমেপ্ট__অর্থীৎ বাঁসাঁধনিক পদ্ধতিতে 
ছায়াচিত্রের পরিবদ্ধিত মূর্তিচিত্রার্দির দ্বারা গৃহসজ্জা কবিষা 


থাকেন। অনেক সময দেখা বায় যে, গ্রেই বৈজ্ঞানিক 
পদ্ধতির যন্ত্র ও রসাঁনের ছাঁধা-প্রতিক্কৃতি রস্হীন বাল্লিক 





প্র অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর 


প্রতিম্তি মাত্র । শিল্পীব কলমের বা তুলিকাব আধাতে 
উজ্জীবত চিত্র-রচনা বা রেখা-বচনাব (01851176) 





স্লীহীরেজ্রন।থ দত্ত 


ইহ হ2. 
প্রতিস্কৃতিতে যে 'ভীবন্ত রসের আশ্বাদ পাই--ক্যামেরার 


ষন্ত্রে নির্দিত প্রতিকৃতিতে সে রস. অনুসন্ধান কহিয়াও 


পাই.না। ফুরোপের রসিক সমাজ অনেক সময় এই 
ক্যামেরার যান্ত্রিক প্রতিমূর্তি ত্যাগ করিয়া শিল্পীর হাতে 
লেখ সজীব রসে সিক্ত জীবন্ত গ্রতিকৃতির আদর করেন। 
আমাদের দেশে, ছায়া-যস্ত্রের ফটোগ্রাফ ও ব্রোমাইড 


স্ঢান্্ত্ডর্ধ 


[ ২৮শ বর্ব--২য় খণ্ড--২র সংখা 


গাওয়া-ধায়। বাঙ্গালা . দেশে এইয়প সুমা, সরস..মুর্তি- 
চিত্র করিতে পারেন এইরূপ একাধিক প্রতিভাশানী, কৌশনী 
চিত্র-শিল্পী আছেন ধাহাদের সরস লেখনীর জীবন্ত মূর্তিচিতর 
কোনও ছায়া-যন্ত্র ফটো গ্রাফে ফুটাইয়। তুলিতে পায়ে না 

। কলিকাতা. কেশব একাডেমীর শিল্প-শিক্ষক যুক্ত ভূনাঁথ 
মুখোপাধ্যায় মহাশয়_-এইরূপ একজন প্রতিভাশালী মূর্তি-লেখক। 





' স্রীহৃভাষচন্জর বহু 
এন্লার্জমেপ্ট এখনও রাজত্ব করিতেছে । অথচ, অতি অল্প 


মূল্যে শিল্পীর হাতের লেখা সুন্দর রেখা-চিত্র (16101 
17%115 ) বা কালির চিত্র (171 018%170 ) যথেষ্ট 


শরৎচন্দ্র বনু 


(215 4৮524 ক এররারলারনে ০ ডি 
ইনি দেশের7গণ্যমান্ত অনেক মহাপুরুষের্ঃসন্দর রেখ! 


রচন! করিয়াছেন। তাহার সৌজন্টে এ রচিত কয়েকটি 
ুষ্টিচিত্রের নগুন! এই সণ্খ্যায় আমরা মুদ্রিত করিলাম। 





স্বরূপ 
শ্ীঅনন্তকুমার সরকার 


গুনিবে কি আমি কে? 
নাশিতে, শাসিত, প্রেম বিতরিতে আসি আমি-যুগে যুগে। 
আমি বিজ্ঞান, আমিই ভক্তি, নিষ্কাম আমি বন্ধ, 
সত্োর বাণী প্রচার করাই চিরকাল মম ধর্ম্ম। 
লীলার কারণে আমি করে থাকি হজন, পালনঃ লয়; 
মৃতু যে মোর পদানত দাস, আমারে মে করে ভয়। 
( আমি) কখনও উগ্র, কখনও শান্ত কখনও পুলক-গ্রাণ, 
( আমি) দৃষ্রের করি বিনাঁশ-সাধন, শিষ্টের পরিত্রাণ | 
ভক্ত যে মম প্রাণ-প্রিয়তম, হাদে মোঁর তার স্থান, 
অসস্ভবে সম্ভব করি রাখিতে তাহার মান। 


নিদাঘ-তপন-তাপিত মরুতে ছাড়ি আঁমি নিশ্বাস 
অরুণ-রঙ্গীন-প্রভাঁত-সমীরে বিলাই কুম্থম-বাস। 
তৃষিকম্পন মহামারীরপে আনি আঁমি হাহাকার, 
শীতলিতে আমি দগ্ধ-বন্ুধা ঢালি ধার! বরধার। 
শারদ নিশায় চান্ত্র গগনে হাসি জোছনার হাঁসি, 
মলয়-মথিত প্রেমিক-পরাণে ঢালি মধু রাশি রাশি। 
রুদ্ররূপেতে তাগবে। ছাড়ি প্রলয়-ডমরু-তান, 

্ামিরপে হরি বাশরীর স্বনে জগ-্জন-মন-গ্রাগ। 
দক্োলি-নাদে নিধি-কল্লোলে ছাড়ি আমি হৃষ্কারঃ 
(আমি ) মুরলীর গানে মধু-বৃন্দাবনে মোহি মল শ্ীরাধার | 


বঙ্গীয় মাধ্যমিক শিক্ষা-বিল প্রতিবাদ-সন্মিলন 


গত ৬ই পৌষ শনিবার বিকালে কলিকাতা কালীথাটের 
হাজরা! পার্কে এক প্রকাণ্ড মণ্ডপে বঙ্গীয় মাধ্যমিক শিক্ষা 
বিলের প্রতিবাদ সম্মিলন আরম্ভ হইয়া তিন দিন ধরিয়া তাহা 
চলিযাঁছিল। শিক্ষাকার্যে আজীবন ব্রতী দেশপূজ্য আচার্য্য 
শ্ীযূত প্রফুল্লচন্ত্র রাঁয় মহাশয় এই সম্মিলনে সভাপতিত্ 
করিয়াছিলেন। বাঞ্গালার মাধ্যমিক ব্দ্যালয়সমুহের প্রায় 
ভিন হাজার প্রতিনিধি এ সম্মিলনে সমবেত হইয়াছিলেন। 
গ্রায় ১২শত লোক সম্মিলনের অভ্যর্থনা! সমিতির সদস্য 
হইয়াছিলেন। বাঙ্গীলার বিভিন্ন স্থানের প্রায় «শত উচ্চ 
ইংরেজী বিগ্ভালয় হইতে এই সম্ষিলনে প্রতিনিধি প্রেরিত 
হইয়াছিল। পুরুষ শিক্ষক ছাড়াও বনু মহিলা এই সম্সিলনে 
যোগদান করিয়াছিলেন । 

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাঁকুর, পণ্ডিত মদনমোঠ*ন মালবা, 
শীত শরৎচন্দ্র বস্ু, শ্রীধৃত রামানন্দ চট্টোপাধ্যাঁধ প্রতি 
বহু দেশমান্য ব্যক্তি সম্মিলনে তীহদের বাণী প্রেরণ 
করিয়াছিলেন। মন্মিলনের অভ্র্থনা সমিদ্তির সাঁধার্ণ 
সম্পাদক অধ্যাপক শ্রামুত চারচন্ত্র ভষ্টাচাণ্য মহাশয়ের 
পরিশ্রম ও চেষ্টায় সম্মিলন সম্পূর্ণভাবে সাফল্যমগ্ডিত 
হইযাছে। 

রবীন্ধনাথ তীভার বাণীতে জানাইয়াছিলেন_- “মাত 
তাঁষার সেবাঁয় ও বাঙ্গালার শুভানুধ্যানে আমার জীবনের 
৭০ বংসর কালেরও অধিক অতিবাহিত করায় আদাঁর এই 
নিবেদন করার অধিকার জন্িয়াছে। আদার বার্ধক্য ও 
অন্ুস্থত৷ জনহিতকর কার্যকলাপে যোগদানের অন্তরাঁয় 
হইয়াছে । আমার মাতৃভূমির সংস্কতির নিজস্ব ধারার 
অস্তিত্ব বিপন্ন হইবার আশঙ্কা উপস্থিত হইয়াছে দেখিয়া 
আমি নিদারুণ মন্রপীড়া অনুভব করিতেছি এবং এমন 
কি রোগশয্যা হইতেও এই ক্ষুদ্র নিবেদন প্রেরণ না করিয়া 
থাঁকিতে পারিলাম না ।” 

বাঙ্গালার হিন্দু রক্ষা আন্দোলনের গ্রাণম্বরূপ সার শ্রীযুত 
মন্মথনাথ মুখোঁপাধ্যায় মহাশয় «ই প্রতিবাদ সম্মিলনের 
অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতিরূপে , তীহার অতিভাষণে 
গভর্ণমেণ্ট কর্তৃক উত্থাপিত মাধ্যমিক শিক্ষা বিলটিকে 


কতত্রতার দৃষ্টান্ত বলিয়৷ উল্লেখ করিয়াছেন। তিনি বক্তৃতা 
প্রসঙ্গে বলিয়াছেন-__বৃটাশ রাজত্ব ভারতবর্ষে আরম্ভ হওয়ার 
পর হইতে এতকাল পর্যন্ত দেশের লোককে শিক্ষা্দীনের 
দাঁয়িত্ব গভর্ণমেণ্ট গ্রহণ করেন নাই। গভর্ণমেণ্ট নান! 
আকারে কর আদায় করিয়াই চলিয়াছেন; কিন্ত শিক্ষার 
মত নিতান্ত প্রয়োজনীয় ব্যাপারেও লোকের প্রতি কর্তব্যের 
'অতি সামান্ত অংশই পালন করিরাছেন। জনসাধারণ ও 
জননায়কেরা মিলিয়াই আপনাদের শিক্ষাব্যবস্থা গড়িয়া 
তুলিয়াছে 'এবং তা দ্বারাই এতাবৎকাঁল দেশে শিক্ষা 
বিস্তারের কার্ধ্য চলিয়া আগিয়াছে। শিক্ষা গ্রচারে এই যে 
স্বাবলগ্ঘনের দৃষ্টান্ত বাঙ্গাল। দেশের লোক স্থাপন করিঞ্নাছে 
এবং গভর্ণমেন্টের কর্তব্যের দায় আপনারাই বহন করিয়াছে 
তজ্জন্য গভর্ণমেণ্টের রুতজ্ঞ হওয়াই উচিত ছিল। কিন্তু 
রুতজ্ঞ হওয়ার পরিবর্তে গভর্ণমেণ্ট বিপরীত পথ অবলম্বন 
করিয়ছেন। শিক্ষা নিয়ন্ত্রণের নাম দিয়া তাহারা প্রচলিত 
শিক্ষাব্যবস্থা উৎ্পাটন করিতে উদ্যত হইয়াছেন। 

সম্মিলনের সভাপতিরূপে আচার্য রায় মভাঁশয় যে 
অভিভাষণ দিয়াছেন, তাহার সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য অংশ 
হইল শিক্ষা পরিচালনা সম্বন্ধে নীতিনির্দেশ। বর্তমান 
ব্যবস্থায় উচ্চ ই'রেজী বিদ্যালয়ের পরিচালনা অংশত সরকারী 
শিক্ষা বিভাগের এবং অংশত কলিকাতা বিশ্ববিষ্ভালয়ের 
অধীন। পরিচালনার কর্তৃত্ব একীভূত করাই প্রস্তাবিত 
মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড গঠনের উদ্দেশ্তট এই বিলে বলা 
হইয়াছে । কিন্তু এক্যসাধনের নামে যে ব্যবস্থার প্রস্তাব 
করা হইয়াছে, তাহাতে এক্যের পরিবর্তে পরিচালন কর্তৃত্ব 
আরও বিভক্ত হইবে। গভর্ণমেণ্ট ও বিশ্ববিদ্ভালয় তো 
থাকিবেই, তাহার সহিত মাঁধামিক শিক্ষা বোর্ড জুটিবে। 
সমস্ত অবস্থা পর্য্যালোচনা! করিয়া আচার্য্য রায় এই বলিয়া 
এই বিষয়ে সকলের অবহিত হওয়ার প্রয়োজন জানাইয়াছেন 
“বাঙ্গালা দেশের বর্তমান অবস্থায় শিক্ষা পরিচালনার 
কর্তৃত্ব একীভূত করার উপযোগিতায় আমি সন্দিহান। 
বর্তমানে প্রচলিত গভর্ণমে্ট ও বিশ্ববিদ্ভালয়ের দ্বিধা কর্তৃত্ব 
মোটের উপর ভালই চলিয়াছে। কিছু কিছু সংস্কার করিয়! 


২৪৯ 


২২৪২, 


লইলে এবং মধ্যশিক্ষার উৎকর্ষ ও প্রসারের জন্ত যথেষ্ট অর্থ 
সাহায্য মিলিলে ইহা হইতে আরও উৎকুষ্টতর ফললাভ 
করা যাইতে পারে। বর্তমান শিক্ষ! ব্যবস্থার যে সকল ক্রুটি, 
তাহ! দ্বৈধ কর্তৃত্বের ফলে ঘটে নাই, অর্থাভাবে ঘটিয়াছে।” 
আচার্য রায়ের এই প্রস্তাব স্বীকার করিয়া লইলে 
মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার অনেক সহজসাধ্য হইয়া 
ওঠে, শ্বতন্্র শিক্ষা! বোর্ড গঠনেরই প্রয়োজন হয় না। আচার্য্য 
রায় প্রমাণ করিয়া দেখাইয়াছেন যে, অন্ান্য স্থানে এরূপ 
মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড গঠনে সফল পাওয়া যায় নাই। 
দ্বিতীয় দিনের অধিবেশনে ৮ ঘণ্টা আলোচনার পর ৪টি 
প্রধান প্রস্তাব গৃহীত হয়। এ দিনই সম্মিলন শেষ হইয়াছে। 
প্রথম প্রস্তাবে সম্মিলন এমন একটি পৃথক শিক্ষা বোর্ড 
স্থাপনের দাবী করেন যে, বোর্ড হিন্দু ও অন্যান্য অমুসলমান 
সম্প্রদায়ের শিক্ষার উন্নতির জন্য কার্য্য করিবে। বিলে 
প্রস্তাবিত মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডটি যদি বাঙ্গালা প্রদেশে 
স্থাপিত হয়, তাহা হইলে সেই ক্ষেত্রে সম্মিলন হিন্দু ও অন্যান্য 
অমুসলমান সম্প্রদায়কে উক্ত বোর্ডে কার্ধ্য না করিতে সনির্বন্ধ 
অনুরোধ জানান এবং সমস্ত বিগ্ভালয়ের ম্যানেজিং কমিটী- 
গুলিকে ও ছাত্রছাত্রীদের অভিভাঁবকবুন্দকে উক্ত বোর্ড ও 
উহার অন্গমোদনপ্রার্থী বিষ্ভালয়কে বয়কট করিতে আহ্বান 
জানান। এই প্রস্তাবে সম্মিলন যে অভিমত প্রকাশ করেন, 
এই প্রদেশের সকল দল ও উপদলের প্রতিনিধিবুন্দ একবাক্যে 
তাগতে পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করেন। (ক) বঙ্গীয় মাধ্যমিক 
শিক্ষা বিলটির তীব্র নিন্দা করিয়া ও অবিলম্কে উহার 
প্রত্যাহারের দাবী জানাইয়া (খ) সম্মিলনে গৃহীত প্রস্তাব- 
সমূহ কার্যে পরিণত করা উদ্দেশ্যে একটি ঙ্গীয় শিক্ষা অর্থ 
ভাগ্ার স্থাপন করার সিদ্ধান্ত করিয়া! ও (গ) সর্বদলের 
প্রতিনিধিসহ একটি শক্তিশালী কমিটা গঠন করিয়া_ 
সম্মিলনে ৩টি প্রস্তাব গৃহীত হইয়াছে । 
ডক্টর শ্রীযুত শ্ঠামাপ্রমান মুখোপাধ্যায়, রায় শ্রীযুত 
হরেন্্রনাথ চৌধুরী, শ্রীযুত তীন্ত্রনাথ বন, অধ্যাপক মেঘনাদ 
সাহা ডক্টর হরেন মুখোপাধ্যায়, শ্রীযূত কিরণশঙ্কর 
রায়, নলিনীরঞ্জন সরকার, নির্মলচন্ত্র চট্টোপাধ্যায়, রায় 
বাহাদুর থগেন্দ্রনাথ মিত্র, ডক্টর প্রমথনাঁথ বন্দ্যোপাধ্যায়, 
শ্রীধৃত হেমেন্্রপ্রসাঁদ ঘোষ প্রত্ৃতি দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় 
যোঁগদান করিয়াছিলেন। 


ভান্সভব্বশ্ 


| ২৮শ বর্ব-_-২য় খণ্ড ২য় সংখ্যা 


সম্মিলনের চতুর্থ প্রস্তাব অনুসারে যে কমিটা গঠিত 
হইয়াছে সেই কমিটার নাম দেওয়া হইয়াছে-_বনঙ্গীয় শিক্ষা 
কাউম্দিল। নিয়লিখিত ব্যক্তিগণ কাউক্ষিলের সদস্য 
হইয়াছেন__সভাপতি আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়। সম্পাদক 
_-অধ্যাপক চারুচন্দ্র ভট্টাচার্য । কোষাধ্যক্ষ-_কুমার 
বিমলচন্তর সিংহ। সহকারী সম্পাদক-_হরিচরণ ঘোঁষ। 
হিসাব পরীক্ষক-_ জি-বস্থু | 

কার্যকরী কমিটার সদশ্যগণ--ডক্টর শ্ঠামাপ্রসাদ 
মুখোপাধ্যায় (চেয়ারম্যান ) সার মন্মথনাথ মুখোপাধ্যায়। 
শরৎচন্দ্র বস্থ, নলিনীরঞ্জন সরকার, নির্ম্লচন্ত্র চট্টোপাধ্যায়, 
ডক্টর প্রমথনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডাঃ বিধানচন্দ্র রাঁয়, রায় 
বাহাদুর থগেন্দ্রনাথ মিত্রঃ ডাঃ হরেন্দ্রচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, যতীন্ত্র- 
নাথ বস, যোগীন্দরচন্দ্র চক্রবর্তী ( দিনাজপুর ), নৃপেক্দরচন্দর 
বন্দ্যোপাধ্যায়, কিরণশঙ্কর রায়, রায় হরেন্দ্রনাথ চৌধুরী, 
প্রশান্তকুমার বস্থ, প্রমথরঞ্ন ঠাকুর, নলিনীরঞ্জন মিত্র, 
মুণালকান্তি বস্ু, স্থরেশচন্দ্র মজুমদাঞ্ মনোরঞ্জন সেনগুপ্ত, 
কুমার বিমলচন্দ্র সিংহ, রমণীমোহন রায়, অধ্যাপক চারচন্ত্ 
ভট্টাচার্য্য, অধ্যাপক হুরিচরণ ঘোঁষ ও শ্রীযুক্তা ইলা সেন। 

যে সকল কারণে এই শিক্ষা বিলের গ্রতিবাঁদ করা 
হইয়াছে, সেই কারণগুলি নিম্নে প্রদত্ত হইল £-- 

(১) বিলটিতে শিক্ষার স্বার্থকে রাজনৈতিক ও 
সাম্প্রদায়িক বিচার বুদ্ধির অধীন কর! হইয়াছে এবং জাতীয় 
শিক্ষার একটি স্থদৃঢ় ব্যবস্থা গড়িয়া তুলিতে যে সম্কতিমূলক 
দৃষ্টিভঙ্গি ও বিচারবুদ্ধির প্রয়োজন বিলে তাহা সম্পূর্ণরূপে 
উপেক্ষা করা হইয়াছে । (২) মাধ্যমিক শিক্ষাকে 
সম্পূর্ণরূপে গবর্ণমেণ্টের নিযন্ত্রণাধীনে আনা বিলের উদ্দেশ্ত। 
প্রধানত ব্যক্তিগত দান ও উৎসাহের ফলে বাঙ্গালার 
মাধ্যমিক শিক্ষালয়গুলি গড়িয়া উঠিয়াছে ও মাধ্যমিক 
শিক্ষার উন্নতি সাধিত হইয়াছে; সেই ব্যক্তিগত দান ও 
উৎসাহকে সঙ্কুচিত করাই বিলের উদ্দেশ । (৩) মাধ্যমিক 
শিক্ষার সম্প্রসারণের জন্য কোনরূপ পরিকল্পনার আভাষই 
বিলে নাই এবং মাধ্যমিক শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে বাণিজ্য 
কৃষি প্রভৃতি সম্পকিত ব্যবহারিক শিক্ষার সংগঠন ও 
উন্নতিসাধনের যে প্রয়োজনীয়তা এত বেণী অন্থভূত হইয়াছে 
সেই ব্যবহারিক শিক্ষাদানের কোনরপ ব্যবস্থাই বিলে নাই। 
(৪) বিলে যে আথিক সংগ্ান করা হইয়াছে তাহ! মাধ্যমিক 


মাঁঘ__১৩৪৭ ] 


শিক্ষালয়গুলির সাধাষ্য দানের উদ্দেশে অত্যন্ত অগ্রচুর ; 
যথেষ্ট সাহাধ্য ছাড়া মাধ্যমিক শিক্ষার কোন উন্নতি বা 
সংস্কারই সম্ভব নহে। (৫) বিলে প্রস্তাবিত মাধ্যমিক 
শিক্ষা বোর্ডের গঠনতন্ত্বটি অত্যন্ত অসস্তোষজনক | স্বাধীন 
ও স্বতন্ত্র শিক্ষাবিশেষজ্ঞগণের সহায়তা লাভের 
প্রয়োজনীয়তা বিলে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হইয়াছে। 
বোওের কার্যকরী সমিতিতে শিক্ষকদের প্রতিনিধি গ্রহণের 
কোন ব্যবস্থাই নাই। বিগ্যালয়সমূহের ম্যানেজিং কমিটি- 
গলির বা অভিভাবকদের অথবা শিক্ষার সহিত সংশ্লিষ্ট 
সাপাঁরণের পক্ষ হইতে বোর্ডে কোন প্রতিনিধি গ্রহণের 
ব্যবস্থা নাই। বোর্ডে কলিকাঁত! বিশ্ববিদ্যালয়ের যে 
প্রতিনিধিত্ব দেওয়া হইয়াছে তাহা নিতান্ত অপ্রচুর; 
(৬) মাধামিক শির কার্্যপরিচালন ব্যবস্থাটা সহজ 
ও সরল করার পরিবর্তে বিলে শিক্ষার কার্য পরিচালন!র 
ঘন্্টি জটিল ও ঘোরালো করিধা তোলা হইয়াছে। 
(৭) বাঙ্গীলাঁয় মাধ্যমিক শিক্ষার ব্যাপারে বর্তমানে যে সব 
মযোগন্গবিণা আছে বিলের দ্বারা তাহা নিদারুণভাবে 
সঙ্কুচিত হইবে এবং দুই বৎসর পর বর্তমান সমস্ত বিদ্যালয়ের 
অনুমোদন স্বভাবতই প্রত্যাঙ্হত হইবে বলিয়া বিলে ঘে 
ব্যবস্থা করা হইাঁছে তাহার ফলে জনসাধারণের শিক্ষার 
উন্নতির মূলে কুঠারাঘাত হইবে। (৮) বাঙ্গীলার হিন্দুগণ 
বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মোট ছাত্রদের শতকরা ৭৫ ভাগ 
ছাত্র সরবরাহ করিয়া! থাকেন এবং তদপেক্ষাও অধিক ভারে 
নাঁধামিক শিক্ষালয়গুলির জন্য অর্থ সরবরাহ করেন) বিশেষ 
করিয়া সেই হিন্দুদের শিক্ষাবিষয়ক স্বার্থের সঙ্কৌচন করাই 
বিলের উদ্দেশ্য । প্রস্তাবিত বোর্ডে বহুসংখ্যক সদস্য 
শিক্ষাগত স্বার্থের গ্রতিনিধিরূপে বোর্ডে যাইবেন না; তাহারা 
মুসলমান সম্প্রদায়ের ব্যক্তি হিসাবে বোর্ডে বাইবেন 7; অথচ 
প্রকৃতপক্ষে অধিকাংশ মাধ্যমিক বিছ্যালয়ই হিন্দু সম্প্রদায়ের 


্ঃ |] 8৪2 5৮ হত 


171 -৭) 
্ প্র)” 


এরি ঃ 
8 গার 


লক্ষী মাধ্যমিক শ্িক্ষা-ন্বিল প্রতিবাদ-ম্িিলন্ন 


২৪ ০ 


ব্যক্তিগণ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত হইয়াছে । উপরোক্ত 
কারণে প্রস্তাবিত বোর্ড জনসাধারণের আস্থা লাভ করিতে 
পারিবে না। (৯) যদিও আইনের দ্বারা পৃথক একটি 
ইউরোপীয় ও গ্যাংলো-ইত্ডিয়ান শিক্ষা বোর্ড ইতিপূর্ব্বেই 
বহাল আছে তথাপি বোর্ডে অযৌক্তিক ও অধিক পরিমাণ 
ইউরোপীয় প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা কর! হইয়াছে। (১০) বিলে 
প্রবেশিকা পরীক্ষার পরিচালন ব্যবস্থাটি কলিকাতা বিশ্ব- 
বিদ্যালয়ের হাতে রাখা হইয়াছে; অথচ এ পরীক্ষার জন্য 
পাঠ্যবিষয় স্থির করার ও পাঠ্য পুস্তক নির্ণয় করিয়া! তাহা 
প্রকাশ করার অধিকার হইতে বিশ্ববিদ্ালয়কে বঞ্চিত কর! 
হইয়াছে । এতদ্দ্ারা একটি বিসদৃশ অবস্থার সৃষ্টি করাই 
বিলের উদ্দেশ্য । এই অবস্থায় আধিক দিক হইতে বিশ্ব- 
বিদ্যালয়কে সঙ্কুচিত করা হইবে ও তাহাতে উচ্চ শিক্ষার 
স্বার্থকে প্রবলভাবে আঘাত করা হইবে। (১১) পাঠ্য 
বইসমূহের নির্ারণ ও প্রস্তত করার ক্গমতা বিলে এমন 
কতকগুলি স্পেশ্তাল কমিটির হাঁতে দেওয়া হইয়াছে, যেগুলি 
বিশেষ করিয়া সাম্প্রদায়িক চরিত্রের হইবে। এই ব্যবস্থার 
ফলে যোগ্যতার দিক হইতে পাঠ্যপুস্তকগডলির অত্যন্ত 
অবনতি ঘটিবে। বিলটির দ্বার! বাঙ্গলাভাঁষা ও সাহিত্যের 
মৌলিকতা৷ বিশেষ ক্ষতি গ্রস্ত হইবে এবং এই প্রদেশের সম্ক্তি 
ধ্বংস হইবে । এইরূপ যে হইবে তাহার প্রমাণ ইতিমধ্যেই 
সাম্প্রদায়িক প্রভাবাঁধীন শিক্ষাবিভাগ কর্তক অগ্ুমোদিত 
পাঠ্য পুস্তকগুলিতে স্পষ্টত দেখ! যাইতেছে । (১২) 
স্তাডলার কমিশনের স্পারিশসমূহের ভিত্তিতে বিলটি প্রণীত 
বলিয়! গবর্ণমেণ্ট ঘোষণা করিতেছেন । কিন্তু প্রকতপক্ষে 
বিলটি সর্বববিষয়েই শ্যাডলার কমিশনের স্থপারিশগুলির 
বিপরীত এবং ম।ধ্যমিক বো গঠনের জন্ক যে সব সর্ত থাকা 
উচিত বলিয়া কমিশন উল্লেখ করিয়াছেন বিলে সেই সর্তগুলি 
পালনের কোন ব্যবস্থাই নাই। 


স্ব রদর্েচরততের 
১ ২ ৩ 





কন্যাকুমারী 


শ্রীখগেন্দ্রনাথ মিত্র রায় বাহাদুর এম-এ 


অয়ি শুচিম্মিতা সিন্ধুনাতা কন্ঠাকুমারী তুমি কি মাতা? 
তুমি সে সাধিকা চির আরাধিকা যৌগমগনা তপস্যারতা ! 


সীমাহীন মহা জলধির বুকে মুক্তি লভিল যেথায় ধরা 
একাঁকিনী সেই বিজনপ্রান্তে কি সাধনে রত আপনহারা ! 


কোথা গিরিরাঁজ জনক তোমার কোথায় জলধি অতলস্পর্শ ! 


কার তরে এই চির অভিসাঁর কে জাগালো গ্রাণে বিপুল হর্ষ? 


ত্রিজগৎ মাঝে আর কেবা আছে শিবের সমান যোগ্যবর ? 
তারি গলে বর মাল্য অপিতে মহাতপ যুগ যুগান্তর | 


ভাঙ্গিল ধেয়ান টলিল আসন মহাযোগীশ্বর করুণাকর, 
বরবেশে সাজি পরমোল্লামে বৃষভবাহনে চলিল! হর। 


পথ সুদুস্তর বুষভমন্থর বিবাহ-লগন হইল পাঁর, 
শ্তস্তিত পথে বরের যাত্র। নিয়তির গতি ছুনিবার। 


হেথায় বালিক৷ অধ্য সাঁজায় অক্ষত সিন্দুর কজ্জলে 


দিগ্বধৃগণ-নয়ন-অশ্রু শেফালি হইয়া ঝরিল পায়, 
অযুতকণ্ঠে জয়ধ্বনি উঠে কুমা'রী-পৃজার বেলা যে যায়! 


যুগুগান্ত বহি একান্তে বিরহের গুরু ছুঃখ-ভাঁর। 
মহাযোগিনী-বিগ্রহ রাঁজে চিরকুমারীর ব্যর্থতার । 


বরমাঁল! করে তেমনি রয়েছে মিলনের আশা অন্তহীন 
ধ্যান ধরি” বালা অপলক নেত্রে যাঁপিছে বিরলে রজনী দিন 


ভারতমাতাঁর চবণ পদ্ম চুমিছে সিন্ধু-সঙ্গমে? 
যেথা ছুখহীন অসীমশান্তি বিরাঁজে স্থাবর জঙ্গমে ) 


গগনে পবনে চির বসন্ত ৰহে ধরণীর বিজয়-বাঁণী 
যুগে যুগে সেথা ব্রতচারিণী পতি-আশে রাঁজে কুমারীর!ণী। 


যে বরণ ডালা মনোছুখে বালা ছড়ায়ে ফেলিল খাঁলুকীতিটে 
সেই অক্ষত সেই কজ্জল সে সিন্দুর আছে তেমনি বটে! 


আজিও সিন্ধু নিতিনিতি মালা গাথিয়া সাঁজায় তটের বুকে 


মল শহ্খ সঘনে বাজায় ললাটিফা শোভে উজ্জ্লে। বরুণ আলয়ে জলকন্যাগণ মঙ্গলশঙ্খ বাজায় সুখে । 
কুরুবক মাল! করে লয়ে বাঁলা অধীর প্রতীক্ষা-_ভেটিবে বর. 7. 777 - ্ 
রূপের ঝলকে চমকে বিজলি উজলিছে মহীমহাসাগর | [ ভারতের শেষপ্রান্তে কন্ঠাকুমারী (051১6 €0101611))1 তিন 

দিকে তিন বিশাল সমুদ্র- পূর্বে বঙ্গোপসাগর, দক্দিণে ভারত মহাসাগর, 
কোথা বর কোথা বিবাহবাসর নিরানন্দ সারা জগত্ময়! পশ্চিমে আরব সাগর-শাহারই সঙ্গমে যে গ্থলবিন্দু, তাহাতেই 
ব্যর্থ জীবন ব্যর্থ আরাধন স্ুকুমারী চিরকুমারী রয় ! 


কণ্যাকুমারীর মন্দির প্রতিষ্ঠিত। স্থলপুরাণে গিরিরাজকন্া উমার 
মলয়ে শ্বসিল দীর্ঘনিশ্বাস জলধি উঠিল উচ্ছুসি তপস্তার কাহিনী বিবৃত আছে। কণ্ঠাকুমারী হইতে আট কি দশ 
দূরে নটরাজ উর্ধ তাগুবে নাচে বাঘাম্বর পড়িল খসি। 


শপ - শশ্পশপীশ, শত ৮ শশ্শীশী তে 





মাইল দূরে গুচীন্দ্রম্‌ মন্দিরে শিবের মুক্তি আছে। প্রবাদ এই যে, শিব সেই 
পর্বস্ত আসিতে আসিতে কলিযুগ্ের আরম্ত হয়। কলিযুগে দেবতাদের 
বিবাহ নাই । চিদম্বরমে শিবের উদ্ধৃতাগুব নটরাজমুন্তি আছে । কল্ঠাকুমারীর 
বালুক1 দেখিতে আতপ চাউলের হ্যায়। সমুদ্রের কোলে লাল এবং কালে 
বালুও রহিয়াছে--উহ|ই বরণ ডালার সিন্দুর এবং কন্দ্বল।] 


বরমালা কন্তা ফেলিল সলিলে পুলিনে ছড়ালো অর্ধ্যথালি 
দাড়াইল যেন পাষাণ প্রতিমা আভরণ সব ফেলিল খুলি । 







1)11 ॥ 
ৃ 110800184 ৃঁ 
৭ ! 10001611081 ৪ 


ডি 
৯১. সপ 


|] 





0090038882৮ সতত 





ঞ্ 


১1০1 


রাজা প্যারীমোহন মুখোপাধ্যায় 


আগ আমরা “ভারতবর্ষ এ ধীহার স্বৃতিতর্পণ করিব) তিনি 
থে কত দিক দিয়া বাঙ্গালা দেশে আদশ পুরুষ ছিলেন, তান! 
বলিয়া শেষ করা বায় না। তিনি হুগলী জেলার উত্তর 
পাড়ার খ্যাতনামা জমিদার জয়নকপ্চ সুখোঁপাধ্যায় মহাশয়ের 
পূণরূপে জন্মগ্রহণ করিয়া কিন্তু কোন দিন জমিদারপুত্রের 
এত হন নাই ; যিনি তাহাকে দেখিয়াছেন। তিনিই তাহার 
রুল ও অমায়িক ব্যবহারে তৃপ্ত হইয়াছেন, তাহার অনাঁড়ম্বর 
টাবনযাত্রাপ্রণাণী দেখিয়া মুগ্ধ ভইয়াছেন এবং তার 
গঠিত ঘনিষ্ঠ পরিচরে তাঁহার অগাধ পাত্তত্যের পরিচর 
' 1য় উাগাকে অদ্ধার আসন দান কধিগীছেন। উাভাঁর 
'পাধাক দেগিযা বা ঠাহার সহিত কথা বলিয়া তিনিই যে 
বাঞজা প্যাপীমোহন খুখ্োেগাধ্যাধ এমাঞি বিল সি-এস 
মাই) ভারতরত্র তাহা বুঝিধার কোন উপায় ছিল না। 
'তনি সাধারণ থোটা থান ধুতি পরিপান করিতেন? মোটা 
[ইলের শাট পরিতেন। অতি অল্লদা,মর বোশ্রাই চাঁদর 
গায়ে দিতেন ও ততকাপে গ্চলিত পেনেলা ভূত পায়ে 
'পতেন | কি ধনী, কি দরিদ্র কি পণ্ডিত, কি মূর্খ” কি 
পালক, কি বৃদ্ব_বিনি যে কীজে রাভা পা1রীমোভনের নিকট 
বাইতেন) সকজকেই তিনি সাদরে আহ্বান করিয়া সকলের 
অভাব অভিবোঁগ শুনিতেন ও দুঃগীর ছুঃথ নিবারণে চেষ্টার 
কটি করিতেন না। এই সকল কারণে তিনি বহুদিন 
এব্নজনপ্রিয় হইয়া বাস করিয়া গিয়াছেন এবং আজিও 
হার কথা স্মরণ করিলে লোকের চক্ষু অশ্রুসিক্ত হইয়া 
থাকে । জয়ককষ্ণবাবু সারা জীবনে প্রায় দশ লগ্গ টাকা 
বায়ে যে কান্ড স্থাপন করিয়া গিয়াছিলেন, পুত্র প্যারীমোহন 
সেগুলিকে শুধু উপযুক্ত ভাবে রক্ষা করিয়া ও তাহাদের উন্নতি 
বিধান করিয়া ক্ষান্ত ছিলেন না-তিনি নিজেও বহু 
জনহিতকর এ্রতিষ্ঠান গঠন করিয়াছিলেন । 

১৮৪০ খুষ্টাব্বের ১৭ই সেপ্টেম্বর প্যারীমোহন জন্মগ্রহণ 
করেন। উত্তরপাড়া স্কুলে তিনি স্বনামধ্যাত রামতনু 
লাহিড়ী ও ডাক্তার গ্রান্টের ছাত্র ছিলেন। তিনি 
প্রেসিডেন্সি কলেজ হইতে ১৮৬৪ খুষ্টাে বি-এল ও ১৮৬৫ 
ু্টান্বে এম-এ উপাধি লাভ করেন। কলিকাতা 


বিশ্ববিষ্ভালয়ের বিজ্ঞান-শাজে তিনিই গ্রথম এম-এ ছিলেন। 
বিগ্যাশিক্গার পর পনর বংসরেরও অধিক কাল তিনি 
কলিকাত! হাঁই-কোর্টে ওকালতি করিয়াছিলেন। ধনী 
জমিদারের পুত্রের পক্ষে এইরূপ উচ্চশিক্ষা লাভ করা বা 
আইনের ব্যবসায়ে আত্মনিয়োগ করা সে দিনে অসাধারণ 
বলিয়াই বিবেচিত হইত। ১৮৭৯ সাল হইতে ১৯০৯ সালের 
মধ্যে তিনি কয়েকবার বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার সদস্য 
হইমছিলেন। ১৮৮৪ ও ১৮৮৬ সালে তিনি ভারতীয় 
ব্যবস্থা পরিযদেরও সাশ্য ছিলেন। সে সময়ে বঙ্গীয় 
গ্রজান্বতব আইনের আলোচনা হয় ও প্যারীমোহন সেই 
আলোচনায় ঘোগদাঁন করিমা নিজের প্রগাঢ় পাঙ্ডিত্যের 
পরিচয় দান করেন। এ আইনের আলোচনার মধ্যভাগে 
রায়বাহাদুর কষ্দান পালের ঘুত্যু হওয়ার বাঙ্গালার 
জমিদারগণ তাঁদের পক্ষ সদর্থনের লৌকের অভাব হইবে 
বলিয়া আশন্গা করিয়াছিলেন_কিন্ধ প্যারীমোহন এমন 
ধী1 ও স্থি্রতার সহিত রু্ধদাঁস পালের অসমাপ্ত কার্ধ্য 
সম্পাদন করিয়াছিলেন যে, সকলকেই তাহার প্রশংসায় 
পঞ্চমুখ হইতে হ্ইযাঁছিল। পারীমোভন এক দিকে যেমন 
জমিদারের স্বার্থ অক্ষু্ রাখিবাঁর চেষ্টা করিতেন, অঙ্ক দিকে 
তেমনই প্রজার যাহাতে কোনরূপ কই না হয সে বিষয়ে 
সর্বদা অবহিত থাকিতেন। তীন্ার এই পাণ্তিত্য ও 
বিচাঁরবুদ্ধির জঙ্কা ১৯০৭ সালে পুনরায় বখন কঙ্গীয় প্রজা ্বত্ব 
আইনের আলোচনা হয তখন গভর্ণমেণ্ট তীহাকে বঙ্গীয় 
ব্যবস্থাপক সভার সদস্য মনোনীত করেন। 

তিনি বহুদিন বুটিশ ইত্িয়ান এসোসিয়েশন নামক 
জমিদার-সমিতির সম্পাদক ও সভাপতির কার্য করিয়া- 
ছিলেন এবং তাহাঁর পরিচালনাঁধীনে এসোসিয়েশন নানাভাবে 
উন্নতি লাভ করিয়াছিল। প্যারীমোহন কলিকাতা বিশ্ব- 
বিদ্যালয়ের সম্মানিত ফেলো ছিলেন। ভারতীয় বিজ্ঞান 
আলোচনা সমিতির সভাপতি ছিলেন এবং বেঙ্গল 
গ্রভিন্সিমাল রেলওয়ে নামক বাঙ্গালী পরিচালিত রেলপথের 
অন্ততম গ্রতিষ্ঠীতা ও ডিরেক্টর বোর্ডের সভাপতি ছিলেন। 

পুস্তক পাঠে ত্বাহাঁর অসামান্য অনুরাগ ছিল এবং তিনি 


২6৫ 


২৪৬ 


প্রত্যহ নির্দিঈট কয়েক ঘণ্টা কাল বিজ্ঞান, আইন ও চিকিৎসা 
বিষয়ক পুস্তকার্দি পাঠে অতিবাহিত করিতেন । 

১৯২৩ সালের ১৬ই জান্গয়ারী অপরাহ্ন ৪টা ৪০ মিনিটের 
সময় ৮৩ বৎসর বয়সে প্যারীমোহন স্বর্গীরোহণ করেন। 

জীবনের শেষ পঞ্চাশ বংসর কাল তিনি সকল জনহিতকর 
প্রতিষ্ঠানের সভিত সংশ্লিষ্ট ছিলেন এবং সকল প্রতিষ্ঠানের 
কাঁজই উৎসাহের সহিত সম্পাদন করিতেন। ১৯১১ 
খষ্টাবে তাহার জ্যেষ্ঠ পুত্রের মৃত্যুর পর হইতে তিনি নির্ঞনে 
বাস করিবার চেষ্টা করিতেন বটে, কিন্তু কর্মের প্রতি 
তাহার আগ্রহ পূর্ণমাত্রায় বিদ্যমান ছিল। জনসেবা ও 
রাজসেবার পুরস্কার-ত্বরূপ ১৮৮৭ সালে মহাঁরাণী 
ভিকটোরিয়ার ম্বর্ণ জুবিলী উৎসব উপলক্ষে গভর্ণমেণ্ট তীহাকে 
রাঁজা ও সি, এস, আই উপাধিতে ভূষিত করেন। পঁচিশ 
হাজার টাকা ব্যয়ে প্যারীমোহন উদ্ভতরপাড়ার রেল স্টেশন 
খোলার ব্যবস্থা করেন এবং লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে উত্তরপাড় 
কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। এ কলেজ এখনও তাহার স্থৃতিবক্ষে 
ধারণ করিয়! দণ্ডায়মান আছে এবং তাহারই গুদত্ত অর্থে 
বহু দরিদ্র ছাত্র তথায় অতি অল্প ব্যয়ে উচ্চ শিক্ষা লাভের 
স্থযোগ লাভ করিতেছে। তাহার পিতা জয়কৃষ্ণ 
মুখোপাধ্যায় মহাশয় দুই লক্ষ টাঁকা ব্যয়ে উত্তরপাঁড়ায় যে 
পাঁবলিক লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন, তাহার সময়ে 
তাহা আরও উন্নতি লাভ করে। 

শিক্ষা বিস্তারে দান এই পরিবারের বৈশিষ্ট্য । পিতা 
একত্রিশটি উচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করিয়! যে কার্ধ্য 
আরম্ত করিয়াছিলেন, পুত্র এই কলেজ গুতিষ্ঠা দ্বারা তাহা 


ভ্ঞান্র ভন 


[২৮শবর্--২য় খণ্ড ২য় সংখ্যা 


পূর্ণাঙ্গ করেন। উত্তরপাড়ায় জলের কল, বেলগেছিয়া 
মেডিকেল কলেজ-সংলগ্ন কিংস হাসপাতাল, সেণ্ট জন্দ 
এম্বেলেন্স, ভিকটোরিয়! স্থৃতিসৌধ, রিপন কলেজ প্রভৃতির 
জন্যও তিনি গ্রচুর অর্থ দান করিয়াছিলেন। ভারতীয় 
বিজ্ঞান আলোচনা সমিতিতে তীহাঁর পচিশ হাঁজার টাকা 
দাঁন তাহাকে বিজ্ঞান জগতে চিরম্মরণীয় করিয়া! রাঁখিবে। 
তিনি আঘুর্ষেদীয় চিকিৎসার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন এবং 
আরুর্ক্েদের উন্নতি ও প্রচারের জন্ত প্রভূত অর্থ ব্যয় 
করিয়াছিলেন। 

্রাহ্মণ্য ধর্রক্ষার প্রতি তাহার বিশেষ আগ্রহ ছিল 
একং স্বাধীনচেতা! হইয়াও তিনি আচার ও নিষ্ঠা সারা- 
জীবন পালন করিয়! গিয়াছেন। তাহার মত কর্তব্য- 
পরায়ণ ও সময়নিষ্ঠ লোক এ যুগে অতি ভল্লই দৃষ্ট হইয়া 
থাকে। 

হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতির প্রতি অগ্টরাঁগ হওয়ায় 
তিনি নিজে ভোমিওপাথিক ওষধ দাঁন করিতেন ও বছ 
রোগীর চিকিৎসা করিতেন। 

১৩৩৮ সালের শ্রাবণ মাসে আমরা “ভারতবর্ষ'এ জয়কৃষণ 
মুখোপাধ্যায় মহাশয়ের ত্রিবর্ণ চিত্র ও সংক্ষিপ্ত জীবন কথা 
গ্রকাঁশ করিয়াছিলাম। প্রায় দশ বৎসর পৰে তাহার 
উপযুক্ত পুত্র রাজা প্যারীমোহনের স্থৃতির প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন 
করিয়া ধন্য হইলাম | 

উত্তরপাঁড়ার মুখোপাধ্যায় বংশ শুধু ধনে নয়, জ্ঞানেও 
বাঙ্গলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ বংশ। এই বংশে আরও বহু স্থধী 
ব্যক্তি জন্মগ্রহণ করিয়া বংশের গৌরব বুদ্ধি করিয়াছেন। 


আমরা 
আবুল হোসেন 

আমরা ডুবিয়া আছি মৃত্যুর অতল অন্ধকারে, 

কবর গহ্বরে আজি মনুষ্যত্ব লুকায়েছে মুখ ; 
আহার, বিহার, স্থৃপ্তি! শান্তির নিধিত্ব ছায়াতলে আমর! মরিয়া গেছি । আমাদের প্রাণহীন মমি 
কাটে দীর্ঘ রাত্রি দিন অবিচ্ছিন্ন অনায়াস সুখে; পাথরে খোদাই মুন্তি। অস্থিসার নির্বাক কঙ্কাল 
দগ্ধ হ'তে অগ্নি জালে কোথা সেই দুরন্ত ছুমু্খি? পুরাতনী ইতিহাস এঁতিহোর পিরামিডতলে 
গুনায়েছি যুগে যুগে শোণিত লোলুপ দেবতারে রয়েছে দীড়ায়ে আজো । দক্ষিণের পবন প্রণমি, 


আমর! ক্ষমায় বাণী। অহিংসার ক্সিগ্ধ ছত্রতলে 
টানিয়াছি বিশ্বে। ওরা হাঁসিয়াছে করুণা-কৌতুকে । 


বয়ে যায়। আমাদের স্পন্দন জাগে না মর্শমতলে 
অন্তঃসারশুন্ঠ ফাঁকা আমরা খোলস একতাল। 


চলতি ইতিহাস 


প্রীতিনকড়ি চট্টোপাধ্যায় 


মধ্য প্রাচী 

গ্রীস তাহার সমুদ্রাংশ ও ঘণটি বুটেনকে ব্যবহার করিতে দিয়াছে, এই 
অভিযোগে গত ২৮এ অক্টোবর ইটালী গ্রীস আক্রমণ করিয়াছে। 
আকমণের সপ্তাহকাল পরেও যুদ্ধের প্রচণ্ডত। বৃদ্ধি না পাওয়ায় অনেকে 
মনে করিয়াছিলেন যে, গ্রীন শীপ্রই আত্মসমর্পণ করিবে_ইটালী ইহাই 
আশ! করিতেছে । অথবা বোধ হয় জান্মান সৈশ্যও গ্রীসের উপর নিপতিত 
হইবে, ইহার জন্যই ইটালী প্রতীক্ষ। করিয়া আছে। কিন্তু বর্তমানে 
দেড় মাস কাল ধরিয়। যুদ্ধের গতি যে দিকে চলিয়াছে তাহাতে জনসাধারণ 
অতিরিক্ত বিস্মিত হইয়া পড়িয়াছে। 

গ্রীন আক্রমণের পূর্বে পুর্ণ তিন মান ইটালী প্রস্তুত হইয়াছে এবং 
শক্তি সঞ্চয় করিয়াছে । জল, স্ব এবং বিমান-__সর্বক্ষেত্রেই সে নিজেকে 
অঙ্জেয় করিবার ক্রটি করে নাই; সন্ত উক্তির দ্বার! মুসোলিনী ইহা! 
সাধারণকে জ।নাইতেও প্রয়াম পাইয়াছেন। শুধু ইহাই নহে, সামরিক 
অবস্থানের দিক দিয়াও ইটালীর অবস্থা আদৌ সুবিধাজনক ছিল না। 
ইটালীর ডোডেকানিজ, ঘণটি হইতে পোর্ট সৈয়দের দূরত্ব চারি শত 
মাইলের অনধিক, সুতরাং ইহা সহজ বিমান পাল্লার মধ্যে অবস্থিত। 
ভূমধ্যসাগরে অবস্থিত বৃটেনের যে কোন ঘণটি হইতে ত্রীটের দুরত্ব 
অপেক্ষা ডোডেকানিজ হইতে ত্রীটের দূরত্ব অনেক কম। মাণ্ট1 হইতে 
টিউনিসের দূরত্ব নব্বই মাইল, সিসিলি হইতে উহার ব্যবধান আরও 
অল্প। সৃতরাং যুদ্ধের প্রারস্তে সকল দিক দিয়াই ইটালীর অবস্থা যে 
অনুকূল ছিল ইহা! নিঃসনেহ। 

তবে ইটাদী হর! বুটিশ দোমালিল্যাণ্ড অধিকৃত হওয়ার পর হইতেই 
তৃমধ্যসাগরে বৃটেন যথেষ্ট সচেষ্ট হইয়া উঠিয়াছিল। যুদ্ধের অগ্নি ধুমায়িত 
হইয়! উঠিবার প্রারস্তেই সে ক্রীট দ্বীপে যথেষ্ট সৈন্য অবতরণ করাইয়াছে। 
গ্রীনকে সে যে নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়াছিল তাহার অগ্যথা হয় নাই। 
আজ গ্রীসের গুত্যেক বিমান ঘণাটি রাজকীয় বৃটিশ বিমানবাহিনীর 
কর্তৃত্বাধীন। গ্রীক বাহিনী প্রচণ্ড বিক্রমে যুদ্ধ করিয়া! ইটালীয় সৈন্ঠদিগকে 
গ্রীক অধিকৃত অঞ্চলের বাহিরে তাড়াইয়া আল্বেনিয়া পর্যন্ত তাহাদিগকে 
পশ্চাদপদরণ করিতে বাধা করিয়াছে। অসংখ্য ইটালীয় সৈম্থ আজ 
শ্বীকগণের হস্তে বন্দী, ইটালীর প্রতৃত রণসন্তার বর্তমানে গ্রীদের 
করতলগত। 

একদিকে ইটালীয় সৈম্তগণ যেমন গ্রীকদিগের হস্তে পযুযদত্ত হইতেছে, 
অপর দ্দিকে উত্তয় আফ্রিকার ইটালীকে তেমনই শোচনীয় পরাজয় স্বীকার 
- করিতে হইতেছে। মিশরের সীমান্তে ইটালীর অগ্রবর্তী ঘাটি এবং এ 
' অধ্জর প্রধান কেন্ত্র ছিল সিদিবারানী। মাস ল"গ্রযাৎসিয়ানী পরিচালিত 
লিবিয়া ইটালীয় সৈন্তগণ মিশরের সীমান্তে সিদিবারানী পরাস্ত অগ্রসর 


হইয়| উত্তর-পূর্ব আফ্রিকায় শক্তি প্রসারের চেষ্টায় কিছুদিন নিজ্ছিয়ভাবে 
অবস্থান করিতেছিল। বর্তমানে এই অগ্রবর্তী ইটালীয় ঘণটি মিত্রশক্তির 
প্রবল আক্রমণে ইটালীর হস্তচ্যুত হইয়াছে । রয়টারের সংবাদে প্রকাশ 
যে, ছুই ডিভিসন অর্থাৎ একত্রিশ হাজার সৈন্যের মধ্যে বিশ 
হাজার বন্দী হইয়াছে । হতাহতের সংখ্যাও নিশ্চয় এরাপ অবস্থায় সামান্য 
নয়। সুতরাং ইটালীর ছুই ডিভিসন সৈচ্চই এখানে নষ্ট হইয়াছে। 
মিত্রশ্তির প্রচণ্ড আক্রমণের তীব্রতার সন্দুখে ধ্াড়াইতে না পারিয়া 
ইটালীয় বাহিনী পশ্চাদপসরণ করিতে বাধ্য হইয়াছে। বর্তমানে বৃটিশ- 
বাহিনী ইটালীয় এলাকায় প্রবেশ করিয়৷ লিবিয়ায় সংগ্রাম করিতেছে। 
বান্দিয়া, টক্রক এবং সল্লামের চতুদ্দিকে বর্তমানে প্রবল যুদ্ধ চলিতেছে। 
রাজকীয় বিমানবাহিনীর আক্রমণে আদিস্আবাবা-জিবুতি রেলপথ 
ক্ষতিগ্রন্ত। ইটালীয় পূর্ব-আফ্রিক1 এবং আবিসিনিয়ায় বিদ্রোহ আসন্ন 
বলিয়া! আশঙ্কা করা যাইতেছে। 

সিদিবারানীর যুদ্ধে ইটালী প্রভূত ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হইলেও তাহাকে 
সম্পূর্ণভাবে শক্তিহীন করিতে হইলে লিবিয়াতেও প্রচণ্ড যুদ্ধ এবং মিত্র- 
শক্তির জয়লাভ প্রয়োজন। দিদিবারানীর সংগ্রাম এই বৃহৎ সমর-নাট্যের 
প্রথম অঙ্ক মাত্র। কিন্তু এই উভয় স্থানের শোচনীয় পরাজয়ে ইটালীর 
পরিকল্পনা মফল হইবার সম্তাবন| আর রহিল না। 

হিটলার ও মুসোলিনী ইহা সম্যক উপলব্ধি করিয়াছেম যে, আক্রিকা 
ও পূর্ব্ব এশিয়ায় বুটেনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করিতে হইলে তূমধ্যনাগরকে 
নাৎসি-ফ্যাসিন্ত হদে পরিণত করা! প্রয়োজন। পশ্চিম ভূমধ্যনাগরে 
বাবস্থা সন্ধে কোন্‌ পরিকল্পনা সম্ভব মে বিষয়ে আমরা পরে আলোচন! 
করিব। পূর্ব ভূমধ্যসাগর সধ্ন্ধে নিশ্চিন্ত হইবার জন্যই মুসোলিনীর 
গ্রীদ আক্রমণ ও উত্তর আফ্রিকার দাগরতীররতী স্থানসমূহ দখল করিবার 
চেষ্ট। বলিয়া আমর! ধরিয়া লইতে পারি। মুসোলিনী বুঝিয়াছিলেন যে, 
হয়ে পর্য্যস্ত নিজ নিয়ন্ত্রণাধীনে আনিতে হইলে একদিকে যেমন পোর্ট- 
সৈয়াদ অবধি ভূমধ্যসাগরের দক্গিগ উপকূল পর্য্যন্ত শক্তি বিস্তারের 
প্রয়োজন, অপর দিকে তেমনই গ্রীন পর্য্স্ত জয় করিয়া পুর্ব ভূমধ্য 
সাগরের উত্তর উপকূল আপন দখলে আন! একাস্ত আবগ্তক | ভূমধ্য- 
সাগরে ইটালীর যে নকল ঘটি আছে উহ! ব্যতীত যদি ভূমধ্য্াগরের 
উত্তর ও দক্ষিণ উপকূল নিঞ্জ অধীনে আন! যায় তাহ! হইলে ম্বতাবতই 
স্থানে বৃটিশ প্রভাব গ্রতৃত পরিমাণে ক্ষু্জ হইবে, এবং পল্চিম এশিয়ায় 
শক্তি বিস্তারের পক্ষেও ইহা! যথেষ্ট সাহায্যে আসিবে । কিন্ত গ্রীসের 
সহিত যুদ্ধে এবং উত্তর আফ্রিকায় মিত্রশক্তির বিরুদ্ধে শোচনীয় রূপে 
পরাজিত হওয়ায় বর্তমামে ইটালীর এই পরিকল্পন। হুদুরপরাহত। 

দুইটি ঘুদ্ধক্ষেত্রেই ইটালীর এই পরাভবের ফলে সাধারণের মধ্যে 


২৪৭ 


২৪৮ 


একটি মাত্র প্রশ্ন প্রবল ভাবে আত্মপ্রকাশ করিয়াছে-_জার্মানী এখন কি 
করিবে? ইয়োরোপের কয়েকটি রাষ্ট্র, বিশেষত ফ্রান্গকে অতি অল্প 
সময়ের সধোই পরাভূত করিতে পারায় হিটলার আশ! করিয়াছিলেন 
যে, বুটেনও জান্মানীর আঘাত সহ করিতে না পারিয়া অতি সহজেই 
ভাঙ্গিয়া৷ পড়িবে । সেইজন্য হিটলার অন্তরীক্ষ হইতে বুটেনের উপর 
প্রবল বিমান আক্রমণ চালাইয়াছিলেন। কারণ, বর্তমান যুগে আধুনিক 
রণ-বিজ্ঞানের প্রভূত উন্নতি সাধিত হওয়ায় বিমান শির গুরুত্ব এখন 
সর্বাপেক্ষা! অধিক । সেই জন্থই বৃটেনের উপর বেপরোয়াভাবে বোম! 
বধিত হইতেছে। বেনামরিক অঞ্চলের উপরই বোম! বধিত হইয়াছে 
অধিক । কারণ, জান্মীনী আশা করিয়াছিল যে তাহাতে বৃটেনের 
জনসাধারণের মধ্যে বিক্ষোভের সঞ্চার হইতে পারে এবং অন্তবিপ্নবের 
আশঙ্কায় ও জনসীধারণের চাপে বৃটেন সরকার নিজেকে বিপন্ন বোধ 
করিতে পারে। এদিকে বুটেন যাহাতে মাতৃভূমি রক্ষার জন্য তাহার 
সমগ্র শক্তি নিয়োজিত করিতে না পারে তজ্জন্য হিটলার ইটালীকে 
মধ্য প্রাচীতে নিয়োগ করিয়াছিলেন । কিন্তু নির্ব্বিচারে বোম! বর্ষণদ্বার! 
বুটেনকে পরাভূত করিবার এই শরৎকালীন প্রচেষ্টা আমরা! বার্থ হইতে 
দেখিয়াছি। বৃটেনের সামরিকশক্তি, বুটিশ বৈমানিকগণের কৃতিত্ব ও 
বুটিশ জনদাধারণের অনমনীয় দৃঢ় তাই হিট্লারের বিফলতার কারণ । 
সেইজন্য জার্দানী তাহার রণনীতির পরিবর্তন করিয়াছে । বুটেন 
আক্রমণের জঙ্য বিমানের সংখ্যা হাস করা হইয়াছে, মধ্য প্রাচীতে 
জার্মানী মনোনিয়োগ করিয়াছে । গ্রীস, রুমানিয়া, বুলগেরিয়! প্রস্ততি 
সকলের সহিত কূটনীতিক আলোচন| করা হইয়াছে । বিনাযুদ্ধে অথব৷ 
ভয় দেখাইয়া অনেক রাষ্ট্রকেই জার্মানী 'একিস'শক্তির অন্তভুক্জি 
করিয়াছে। কমানিয়া তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত হইয়াছে ; রাজ ক্যারল 
সিংহাসন ত্যাগ করিয়! রুমানিয়া পরিত্যাগ করিয়াছেন, এপ্টনেক্কুর 
ডিক্টেটরী শানন সেখানে প্রবর্তিত হইয়াছে। শ্রীদ বৃটেনের প্রতিঞ্তির 
উপরে নির্ভর করিয়! থাকায় তাহার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণ। কর! হইয়াছে। 
ফ্রাঙ্কো এবং মলোটভের সঙ্গেও গোপন আলোচন| বাদ যায় নাই। 
এদিকে বুটেনের উপর আবার কয়েকদিন যাবৎ প্রবলভাবে বোম! বর্ষণ 
কর হইতেছে। লগ্ন, বাসিংহাম ও শেফিন্ডের উপরই প্রধানত 
বোম! বধিত হয়। ইটন কলেজও বোমার আঘাতে হ্ষতিগ্রন্ত। 
তুরস্ককে হাত করিবার আশা! এখনও হিটলার পরিত্যাগ করেন নাই। 
তুরন্ধে এই মর্মে জান্ানী নাকি প্রচার কার্ধ্য চালাইতেছে যে, জান্মানীর 
সম্মতি ব্যতীতই ইটালী স্বেচ্ছায় বর্তমান যুদ্ধে যোগদান করিয়াছে। 
অর্থাৎ প্রচারের মর্ম বোধ হয় এই যে, এরূপ ক্ষেত্রে ইটালীকে সাহায্য 
করিবার জন্ত জার্মানীর কোন বাধ্য বাধকত| নাই। ইটালীর আভ্যন্তরীণ 
অবস্থা যে শোচনীয় ইহা নি£সন্বেহ। গ্রীসের সহিত যুদ্ধে কোরিটুজার 
পতনের পর হইতেই ইটালীতে উদ্বেগের সঞ্চার হইয়াছে । বালিন 
হইতে ফিরিয়া আগিয়াই মার্শাল ব্যাডগংলিও ইটালীয় সৈনিকদের প্রতি 
সামরিক শান্তি দানের ব্যবস্থা করিয়াছেন। কিন্তু ব্যাডগ.লিও তাহার 
পদ হইতে আজ অপদারিত। মঃ পিয়ারে লাভাল আর মন্ত্রিসভার 


ভ্ডাক্রভবশ্থ 


[ ২৮শ বর্ধ-_২য় থণ্ড--২য় সংঘ 


সদন্ত নহেন বলিয়া ঘোষণা কর] হইয়াছে । ম; ফ্রার্টী পররাষ্ট্রসচিবের 
পদে নিযুক্ত হইয়াছেন বলিয়! মঃ পেত্যা জানাইয়! দিয়াছেন। উপরস্ত 
ইটালীতে বিরুদ্ধমতবাদী একদলকে হত্যা কর! হইবে বলিয়া শুনা 
যাইতেছে । মুসোলিনীর সদন্ত উক্তির অন্তরালে ফ্যাসিস্তদল ও সমর 
বিভাগে যে গভীর গলদ ছিল, দূষিত ক্ষতের মতই আজ তাহা বাছির 
হইয়। পড়িয়াছে। 

কিন্তু তাহা হইলেও, জান্মীনী কি সত্যই ইটালীকে ত্যাগ করিবে? 
ইটালী এক্সিদ্‌-শক্তির এক প্রাচীন অঙ্গ । ইটালীর পরাজয়ে কি এক্স 
শক্তির পরাজয় ও অগৌরব নয়? আর, ইটালীকে পরিত্যাগ করিতে 
দেখিলেই কি বলকান রাষ্ট্রসকল বৈষ্বীভঙ্গীতে ছুই হাত মাথায় তুলিয়া 
“প্রভুর ইচ্ছা” বলিয়া জান্মানীর অস্কে ঝাপাইয়া পড়িবে? তবে? 

অনেকে আশঙ্ক। করিতেছেন যে, শীতকালে ঘন কুয়াসার আবরণের 
অন্তরালে সঙ্গেপনে জান্মীনী ইংলিস প্রণালী অতিক্রম করিয়! ইংলগ্ডে 
অবতরণ করিবে। কিন্তু এরপ আশঙ্কা নিশ্প্রয়োজন বলিয়াই বোধ হয়। 
যে ঘন কুয়াসার হৃবিধ! জান্মানী গ্রহণ করিবে, সেই কুয়।স! বৃটিশ ও 
জান্মানী উভয় পক্ষের সৈম্দেরই সমান অহ্বিধার স্ষ্টি করিবে। বৃটেন 
ও জান্নানীকে উপযুক্ত অভ্যর্থনা করিবার ব্যবস্থা না করিয়া বসিয়া! নাই। 
এতন্থ্যতীত ইংলিশ প্রণালীর অপর তীরে প্রেরিত জাশ্নীন সৈম্ভগণের 
সহিত সর্বক্ষণ সংযোগ রক্ষ| করার প্রন্ম আছে। উপরম্ত এইভাবে 
বুটেন আবুমণ করিলে ইটালীর হাহাতে হুবিধ! হইবার কোন আশ! 
নাই। বৃটেনের যে সকল মৈন্য মাতৃভূমির বাহিরে যুদ্ধ করিতেছে, তাহাদের 
প্রত্যাবর্তনের জন্য আহ্বান করার কোন প্রয়োজন বুটেনের নাই। 

তাহ! হইলে জাশ্মীনী কোন্‌ পন্থা অবলম্বন. করিবে? ইটালীর 
অন্তনিহিত দৌর্ধল্য প্রকাশিত হওয়ায় জার্মানীর কুটনৈতিক কাধ্যপন্থ 
কুন হওয়া! আদৌ অসম্ভব নয়। তবে জার্মানী কি বুলগেরিয়ার 
পথে তুরস্কের দিকে অগ্রপর হইবে? কিন্তু সোভিয়েট রুশিয়ার আপত্তি 
অগ্রাহা করিয়! জান্নানী এই পন্থা অবলদ্বন করিবে বলিয়! বোধ হয় না। 

স্পেনের সাহায্যে পশ্চিম ভূমধ্যসাগরে জার্মানীর তৎপর হওয়া এক্ষেত্রে 
সম্ভব বলিয়। অনুমান কর! যাইতে পারে। বিগত বৎসরে জার্মানী চুম্বক 
মাইন ব্যবহার করিলেও এ বৎসরে তাহ! দে ত্যাগ করিয়াছে বটে, কিন্ত 
তাহ! হইলেও সমুদ্রবক্ষে তাহার তৎপরত৷ বৃদ্ধি পাইয়াছে। ডুবো 
জাহাজ ও রণপোতের সাহায্যে সে যাত্রী জাহাজ ও বাণিজ্য জাহাজ 
ডুবাইতেছে। কিন্তু যাত্রী জাহাজ ও বাণিজ্য জাহাজ ডুবাইয়! খে যুদ্ধ 
জয় কর! যার না ইহা হিটলারের অজ্ঞাত নয়। তবে ইহার উদ্দেগ্ত কি? 
হিটলার বোধ হয় এতরদিনে বুঝিতে পারিয়াছেন যে, বর্তমান যুদ্ধ অধিক 
দিন স্থায়ী হওয়! সম্ভব । সেইজন্য অর্থনীতিক অবরোধের চেষ্ট]! তিনি 
করিতেছেন। এই কারণে স্পেনের সাহায্যে জ্িত্রাপ্টারের মধ্যস্থতায় 
ইয়োরোপের সহিত আফ্রিকার সংযোগ সাধনের চেষ্টা জার্মানী করিতে 
পারে এবং ভূমধাসাগরে শ্বীর প্রাধান্ট বৃদ্ধি করিবার চে! তাহাব ক্ষ 
থুবই সম্ভব । এতদ্্যততীত, এশিয়া ও আমেরিকা হইতে প্রেরিত মালবাহী 
বুটেন্গামী বাণিজ্যপোতগুলিকে মধ্যপথে অবরোধ করিবার উদ্দেশে 


মাধ--১৩৪৭ ] 


ার্নাণী পশ্চিমে আফ্রিকার কোন ুবিধাজনক বদারাদি দখলের চেষ্টা 
হয়ত করিবে। এদিকে রয়টার সংবাদ দিতেছেদ যে, ইটালীর এই 
অভ্যন্তরীণ অবন্থ। উন্নত করিবায় জন্ত জার্মানী হয়ত লাময়িকগাবে 
ইটালীর কর্তৃতভার স্বহক্ে গ্রহণ করিতে গাঁরে। জার্দাণী হইতে 
গোয়েন। ও নামরিক কর্মচারী আনিয়া! ইটালীর জনসাধারণের নৈতিক 
সাহসকে উদ্দীপ্ত করার জন্যই এই ব্যবস্থ। অবলন্বিত হইতে পারে । 
কিন্তু হিটলারের হ্যায় কুটরাজনীতিক কি এক্ষেত্রে শুধুই বেগার দেবেন? 
অথবা! এই কার্য্যের বিনিময়ে ইটালীর অধিকৃত ফ্রান্সের কয়েকটি 
স্থান ম্পেনকে দিয়! তাহার মনস্তৃষ্টি ও স্বকাধ্য সাধনের উদ্যোগ করিবেন? 
তবে যুগোষ্লোভিয়ার মধ্য দিয়া জার্মাণী পৃর্বাভিমুখে অগ্রনর হয় কিন] 
ইহাও লক্ষ্য করিবার বিষয় । 

বিগত ১৭ই জুলাই বুটেন ব্রহ্মচীন পথ সাময়িকভাবে তিন মাসের 
জন্য বন্ধ করিয়া দিয়াছিল। কিন্তু ২৭শে সেপ্টেম্বর বালিনে জান্মাণী, 
ইটালী ও জাপানের মধ্যে ব্রিশক্তি চুক্তি সম্পাদিত হওয়ার কয়েকদিন 
পরে ১৭ই অক্টোবর তিন মাস পুর্ণ হওয়ায় এর দিন চীনব্রঞ্গী পথ উনুক্ত 
হয়। পথ উন্মুক্ত হওয়র পর চীন জানায় শাহাদের মাল কানমিন্দে 
পৌছিয়াছে, পক্ষান্তরে বিমান আক্রমণ স্বারা মেকং নদীর সেতু বিধবস্ত 
করিয়া গমনাগমনের উপায় জাপান নষ্ট করিয়। দিয়াছে । জাপানের কথা 
সত্য হইলেও তাহা সামরিক অহ্বিধা ঘ্টাইত মাত্র । যাহাই হউক,জাপান 
ত্রিশক্তি চুক্তির ফলে অন্যদিকে মন:নংযোগ করিবার প্রয়োজন বোধ করায় 
চীনের উপর আক্রমণের তীব্রত! স্বাম করে। কিন্তু তাহা হইলেও হুদূর 
প্রাচী সে সময় নিন্তন্ধ হইয়া যায় নাই। জাপান ফরাসী ইন্দোচীনের 
প্রতি মনোনিবেশ করে। থাইল্যাণ্ড (শ্ঠামরাজ্য ) জাপানের ভাব্দার 








২৪৪৪২ 





হইয়া বাটি বা। ক্ষিছুদিন আগে খাইল্যা্ড ইন্দোচীনে হান! ঘেয়। 
ম্জরতি উহার প্রতিশোধ গ্রহণের জন্ত ফরাসী বিদান বাহিনী থাইল্যা্ডের 
বিমান খাটি জাক্তদণ করে। লীমান্ত বিরোধের শান্তিপূর্ণ অবসান 
ঘটাইবার জন্ত খইলা।গ-সয়কার ফরাসী ইন্দে চীনের নিকট “সীমান্ত 
কমিশন” নিয়োগের অনুরোধ জানাইয়াছেন। এদিকে জাপান কযেক- 
দিন পুর্বে নানকিং গভর্ণমেন্টের অধিনায়ক ওয়াং-চিঙগ-ওয়েইর সহিত 
চুক্তি করিয়াছেন। কিন্ত বিপদ হইয়াছে রাশিয়াকে ্ইয়। |. রাশিয়! 
স্পষ্টই বলিয়! দিয়াছে যে চীনের সহিত তাহার সম্বন্ধ অক্ষ আছে। 
জাপ-নানকিং চুক্তির মধ্যে কমিন্টার্ণ বিরোধী একটি ধার! আছে। 
জাপান সোভিয়েট রাশিয়াকে বুঝাইতে চাহিয়াছে যে, রাশিয়ার সহিত 
বিরোধিত| করিবার উদ্দেপ্ঠে উহ সন্নিবেশিত হয় নাই। কিন্তু রাশিয়া 
তাহাতে পুর্ধ্ধমতের কিছুই পরিবর্তন করে নাই। আমেরিক! চীনকে 
দ্রশ কোটী ডলার খণ দিবে বলিয়! জানা গিয়াছে । জাপান অবশ্ঠ এ 
কথ! জানাইয়। দিয়াছে ষেযদ্ি আমেরিকা বর্তমান সংগ্রামে লিপু হয় 
তাহ! হইলে জাপানও যুদ্ধ করিতে ছাড়িবে না। বৃটেনও চীনকে এক 
কোটী পাউণ্ড খণ দিবে বলিয়। নিস্ধান্ত করিয়াছে। সুতরাং চীনের 
অবস্থা! এখন ভালই। চীনযুদ্ধ স্থগিত রাখিয়া জাপান যে অন্ঠদিকে 
মনোনিবেশ করিবে সে হুবিধ! পাওয়। তাহার পক্ষে কঠিন হইর| 
উঠিতেছে। চীনের সহিত জাপান যদি এখন পূর্যধের সর্ডে সন্ধির প্রস্তাব 
করে, তাহ! হইলেও এতদিন প্রতিকূল অবস্থ! ও বহু বাধা বিদ্বের মধ্য 
দিয় সংগ্রাম চালাইয়া আসিয়া চিয়াং-কাই-শেক যে বর্তমানে এত হুষোগ 
ত্যাগ করিয়া সন্ধির প্রস্তাবে রাজী হইবেন ইহা! একপ্রকার অসম্ভব 
বলিলেই হয়। 





চণ্ীদাস 
কবিশেখর শ্রীকালিদ্াস রায় 


কোঁথা কবে জন্ম নিলে পণ্ডিতের! করিছে বিবাদ 
তাই নিয়ে। তব পদ-কমলের মাধুরীর স্বাদ 
দন্ব-কোঁলাহলে আজ দাঁছুরীর কলরবে হাঁয় 
কমল-মাধুরী-সম সরোবরে কোথায় হারার ! 


এ পৃথ্থী বিপুলা! বটে, তাই বলি অন্নজল দিয় 
রস্তমাংসময় তব একখানি শরীর গড়িয়া 

তোমারে করিবে বন্দী, হেন শক্তি আছে কি তাহার? 
কাল নিরবধি বটে, তাই বলি? জীবন তোমার 
পরিচ্ছি্ন পরিমিত করিবে সে বর্ষের গণ্ডীতে 

হেন স্পর্ধা আছে তার? যত ঘ্বন্ঘ করুক পণ্ডিতে 


সর্বদেশময় ভুমি হে বিরাট সর্ববযুগময়ঃ 
জুড়িয়! রয়েছ তুমি চিরদিন সকল হৃদয়। 


জন্ম তবু নিলে তুমি? বাঙ্গালীর মনো বৃন্দাবনে 
বিরহিণী শ্রীমতীর গৃুঢ়মর্্ম কুটীর-অঙ্গনে 

্বপ্নময়ী বেদনায় । স্কুল দেহ করনি ধারণ 

গীতিময় রূপ ধরিঃ বিশ্বময় আত্ম বিকিরণ 
করেছিলে একদিন । রসজ্ঞের স্বপ্নে তুমি আজো 
যেমন সেদিন ছিলে গীতদেছে তেমনি বিরাঁজো। 


কোথায় পরম সত্য সন্ধীনিব রূপে কিংব! ভাবে? 
নিজেই অসত্য ₹য়ে দেশকাল কি সত্য জানাবে? 


ভাবে আছ, রসে আছ। মধুগন্ধে তৃপ্ত যেইজন, 
পল্পের মৃণাল কোথা কতু সেকি করে অন্বেষণ ? 


গুহার 


স্ল্মুর্ডি-ভ্ডঞ্্পি- 

আজ হইতে এক বৎসর পূর্বের গত ১৩৪৬ সালের ২৪শে 
মাঘ ভারতবর্ষের কর্ণধার সুধাংশুশেখর চট্টোপাধ্যায় মহাশয় 
এই নশ্বর জগৎ ত্যাগ করিয়া! সাধনোচিত ধামে মহা প্রয়াণ 
করিয়াছেন । আমরা এই এক বতসরকাল আমাদের 
কর্শক্ষেত্রে মকল দিক দিয়া সর্বদা তাঁহার অভাব অনুভব 
করিতেছি । আমাদের এই অভাব কখনও পূর্ণ হইবার 
নহে-__তাহা জানিয়াও আমর! সকল সময়ে ইহা সহা করিতে 
সমর্থহই না। আজ এক বৎসর পরে তাহার পরলৌকগমন 
দিবসে আমরা তাহার কথ শ্রদ্ধার সহিত “মরণ করিতেছি 
এবং শ্রীভগবানের নিকট প্রার্থনা করি-_তিনি সুধাংশুবাবুর 
আত্মার চিরশাস্তি বিধান করুন এবং তাহার অসমাপ্ত কাঁ্ধ্য 
সম্পূর্ণ করিবার শক্তি ও প্রেরণা আমাদিগকে প্রদ্ধান 
করুন। 


ডঃ শ্টামাপ্রসাতে্র নুতন সম্সমীন্ম- 


আমরা জানিয়া অত্যন্ত আনন্দিত হইলাম যে পূর্ববঙ্গ 
সারস্বত সমাজ ডক্টর শ্ঠামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে €বিদ্যা- 
বাচম্পতি” উপাধিতে সম্মানিত করিয়াছেন। পূর্ববঙ্গ 
সাঁরন্বত সমাঁজ ভারতীয় প্রাচীন কৃষ্টির একটি বিশিষ্ট কেন্দ্র। 
বু মহাঁমহোপাধ্যায় ও স্থপপ্ডিত এই সমাজের পরিচালক । 
তাহার! শ্রীযুক্ত শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মত একজন 
বিশিষ্ট শিক্ষাত্রতীকে এই সম্মান প্রদর্শনে যোগ্য তারই সম্মান 
করিয়াছেন বলিয়৷ আমরা তাহাদের এই কাঁধ্যকে সাধুবাদ 
দিতেছি। 


ল্লাম্গড়ে নুতন ন্দ্ৰীন্নিজ্বাস-_ 


হাঁজারিবাগের রামগড়ে--যেখাঁনে রামগড় কংগ্রেসের অধি- 
বেশন হইয়াছিল সেখাঁনে--প্রায় তিনশত একরেরও অধিক 





হইতেছে । সমস্ত জায়গাটা! কাটা তার দিয়! ঘিরিয়া ফেল! 
হইয়াছে । বন্দীনিবাসের নির্ীণকার্ধ্য প্রায় শেষ হইয়া 
আসিয়াছে । ভারতে প্রেরিত ইতালীয় বন্দীদিগকে এই- 
খানেই রাখা হইবে । প্রথমত এই বন্দীনিবাসে সতের শত 
বন্দীর এবং এ সব বন্দীর রক্ষণাবেক্ষণে নিযুক্ত সৈন্যদের 
অবস্থানের উপযোগী ব্যবস্থা করা হইবে । এই বন্দীনিবাসের 
ব্যয় কোথা হইতে আসিবে ভারত সরকার, না বুটিশ 
সরকার-_তাঁহ৷ অবশ্য আমাদের জানিবার কথা নহে। 


০সাভিজ্েডউি আ্ভম্পিাল্র ক্রি 


সোভিয়েট রুশিয়ার প্রাকৃতিক সম্পদ অপরিমেয়। 
সেখানে সকল প্রকার খনিজ দ্রব্য পাঁওয় যায়। সারা 
পৃথিবীর মোট তৈল-সম্পদের মধ্যে শতকরা পঞ্চার ভাগ, 
সারা পৃথিবীর কয়লা-সম্পদের শতকরা! বিশ ভাগ এবং সারা 
পৃথিবীতে যত কাঠ পাওয়া যাঁয় তার শতকরা সাড়ে সতের 
ভাগ__এক রুশিয়ারই সম্পদ । পৌঁভিয়েট ইউনিয়নে লৌহ- 
পাথরের পরিমাণ খুব বেশী। তাহার আঙ্মানিক পরিমাণ 
দশ হাজার কোটা টন। ইহার শতকরা বাঁষটি ভাগ লোহা। 
এ ছাড়া বাকী যে নিকৃষ্ট ধরণের লৌহ-পাথর আছে তাহার 
পরিমাণ প্রায় ছুই লক্ষ পঞ্চাশ হাঁজার কোটি টন। লোহা 
ছাড়া তথায় তামা, দস্তা, সিসা ও আরও অনেক ধাতুর 
যোগান রহিয়াছে । এদেশে সোভিয়েটের সোনার খনি- 
গুলিতে সোন৷ প্রচুর মেলে ৷ রুশিয়ার চাঁষোঁপযোগী উর্বর 
ভূমির পরিমাণ পৃথিবীর যে-কোন দেশের চেয়ে বেশী। 
সেদেশে চাষোঁপষোগী জমি মোট সোয়৷ ছুই শত কোটি 
হেক্টর । গত-পূর্বব বংসর উহার মধ্যে দশ কোটি চব্বিশ 
লক্ষ হেক্টর আঁবাদ করা হইয়াছিল। আমাদের তারতবর্ষেরও 
প্রাকৃতিক সম্পদের অভাব নাই, কিন্ত আমরা সেই সব 
সম্পদকে জাতীয় সম্পদে রূপান্তরিত করিতে পারি ন1। 


জমি লইয়া যুদ্ধে বন্দীতদের জন্য একটি বন্দীনিবাস নির্দাণ করা অথচ বীচিয়া থাকিবায় জন্ত আমাদেরই সব চেয়ে কৌ! 


৫ 


মাঘ--১৩৪৭ ] 


-স্হচাস্- বস 


দরকার ওই সব প্রাকৃতিক সম্পকে জাতীয় সম্পদে 
রূপান্তরিত কর! । 


লিশ্রব্রিচ্ঠাতম্েক্র অ্রশহসনীম শচ্গম-_ 


প্রাচীনযুগের সাহিত্য এবং শিল্পকলার নিদর্শনসমূহ 
সংগ্রহের উদ্দেশ্থে কলিকাতা বিশ্ববিষ্ঠালয়ের সংস্কৃত বিভাগ 
হইতে একটি পুথি সংগ্রহশীল| খোলা হইয়াছে । অতি 
অল্পদিনের চেষ্টায় এই সংগ্রহশীলায় অন্যুন ২১৬২ খানি 
পুঁথি সংগৃহীত হুইয়াছে। ইহার মধ্যে বৈদিক যুগের 
বহু দুশ্রাপ্য এবং মূল্যবান নিদর্শনও আছে। ইহা ছাড়া 
এই সংগ্রহে বৈদিক যুগের অস্ত্রশস্ত্র, তৈজসপত্র প্রভৃতিও 
আছে। এই সমন্ত তৈজসপর্রের উপরে যজ্ঞবেদীর চিত্রারদি 
উৎকীর্ণ আছে । 


ভা ভুমাকল্ব্েক্স গোলা জপ্রন্েশ্শে লাশা 


পর্ত,গীজ অধিকৃত গোয়ার “পরম্বতী মন্দির সাহিত্য 
সমিতি” তাঁহাদের রজত জয়ন্তী অন্তষ্ঠানে সভাপতিত্ব 
করিবার জন্য বোশ্বায়ের খ্যাতনামা আইনজীবী শ্রীযৃত 
মুকুন্দ রামরাও জয়াঁকরকে মামন্ত্রণ করিয়াছিলেন। কিন্তু 
গোয়ার পর্ত,গীজ সরকার তাহার গোয়া-প্রবেশ নিষিদ্ধ 
করিয়াছেন। তাহারা প্রথমে বোগ্বাই ব্যবস্থা পরিষদের 
স্পীকার শ্রীযুত জি-ভি-মাঁবলঙ্কারকে আমন্ত্রণ করেন এবং 
কাহার প্রবেশও নিষিদ্ধ হয়। গোয়া সরকারের নিকট 
সঙ্গত কারণ প্রদর্শনের দাবী করিতে ডাঁ; জয়াকর ভাঁরত 
সরকারকে অনুরোধ করিয়াছেন। ডাঃ জয়াকর বুটিশ 
সাম্রাজ্যের প্রধানতম বিচাঁরালয়ের অন্যতম বিচারপতি) 
তবুও তাহার প্রতি ভারতের পর্ত,গীজ সরকারের এইরূপ 
মনোভাব ফেন কে বলিবে? 


সাউ ম্পিল্েল্স গনেষলা- 


ভারত সরকার তিন লক্ষ পচাশী হাজার টাঁকা ব্যয়ে 
কলিকাতার শিল্প রাসায়নিক পরীক্ষাগারগুলিতে পাটের 
নৃতন ব্যবহার আঁবিষষার করিবার জন্য গবেষণার প্রসার 
করিতে সংকল্প করিয়াছেনঃ এ সংকাদে আমরা সরকারকে 
ধুবাদ দিতেছি । নিয়লিখিত বিম্নয়ে গবেষণার ব্যবস্থা 
হই. :-€-১)স্ল্্ পাটের নুতা ধুনন (২)শন প্রভৃতি 
অন্তান্ত উদ্ভিজ্জ তগ্তর সংমিশ্রণে পাঁটের সত! বুনন (৩) 


সাসঙ্সিক্কী 


২৬৯ 


পাট ও অন্ান উতভিজ্জ তন্তর বারা সুষ্ঠ বস্ত্র নিষ্াণ (৪) 
বয়নপ্রণালী উন্নয়ন (৫) বিবিধ বিষয়ে পরীক্ষামূলক 
কাধ্য করা»: যথা--পাট হইতে ঘরের ছাদ নিম্ীণের গৃহ- 
সঙ্জার ও ইননুলেটিং উপকরণ প্রভৃতি তৈয়ারির ব্যবস্থা) 
পটবন্ত্র রঞ্জন, চাকচিক্য সম্পাদন এবং শৌধকরণ ব্যবস্থা। 
এই ব্যবস্থায় বাৎসরিক দশ হাজার টাকা থরচের বরাদ্দ 
করা লইবে। 


ডঃ অমিস্ জত্রনবস্ভীল্র লুভ্ভন্ম শদ্ক_ 


আমরা জানিয়। শ্রীত হইলাম যে অক্মফোর্ডের সিনিয়র 
গবেষক-সভ্য ডঃ অমিয় চক্রবর্তী কলিকাতা! বিশ্ববিদ্ঠালয়ের 
পোষ গ্রাজুয়েট বিভাগের ইংরেজীর অধ্যাপকের পদ গ্রহণের 
জন্য আমন্ত্রিত হইয়াছেন। ডঃ চক্রবর্তীর যোগ্যতা! সম্বন্ধে 
আমরা! আস্থাবান। আমর! তাহাকে এই সম্মানে আমাদের 
আন্তরিক প্রীতি ও গুভেচ্ছা জ্ঞাপন করিতেছি । 


সল্রলোক্কে ইজ্সাকুল্ল আর্লি ৌপ্রলী- 


বাঙ্গালা মুমলমান সমাজের স্থপ্রসিদ্ধ সাহিত্যিক মৌলবী 
মভন্মদ ইয়াকুব আলি চৌধুরী সাহেব সম্প্রতি তাহার স্বগ্রাম 
ফরিদপুর জেলার পাংশায় মাত্র চুয়াম় বংসর বয়নে 
পরলোকগমন করিয়াছেন জানিয়! আমরা দুঃখিত হইলাম । 
পরলোকগত চৌধুরী সাহেব ছিলেন সরল, বন্ধুবৎসল, 
নিরহঙ্কীর ও চিন্তাশীল লোক। তাহার প্রণীত “নূরনবী” 
শীস্তিধারা” ধর্ঘের কাহিনী” প্রভৃতি পুস্তকগুলি বঙ্গসাহিত্যে 
চিরকাল সমাদৃত হইবে । দেশের প্রতি তাহার মমতা কোন 
রাজনীতিকের অপেক্ষা কম ছিল না। সুবক্তা বলিয়াও 
তাহার প্রসিদ্ধিছিল। তাহার সম্পার্দিত “কোহিনূর? এক 
সময় মাসিকপত্র জগতে বিশিষ্ট সমাদর লাভ করিয়াছিল 
সাম্প্রদায়িকতার কোলাহুলে তিনি কখনও লিপ্ত হন নাই। 
আমরা তাহার শোৌকসন্তপ্ত পরিজনবর্গের প্রতি আমাদের 
আস্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করিতেছি । 


ল্রাপ্যভামুতক্ক ভীীব্রনন্বীমা শল্লিকঙ্পন্যা_ 


বাঙ্গলা সরকার সরকারী কর্মচারীদের বাধ্যতামূলক 
জীবনবীম! করার উদ্দেশ্যে একটি পরিকল্পনা করিয়াছেন। 
জীবন বীমা ' যেভাবে স্বেচ্ছামূলক প্রবৃত্তিতে বিস্তার পাওয়া 
উচিত ছিল, আমাদের দেশে দুর্তাগ্যক্রমে তাহা ঘটে নাই।, 


২.০ ২২ 


সে ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলকভাবে জীবন বীম! প্রবর্তন হওয়া. 


মন্দ নয়। তবে এই বীমা ভারতীয় বীমা কোম্পানীতে 
এবং যথাসম্ভব বাঙ্গালার বীমা কোম্পানীতে হওয়াই 
বাঞ্ছনীয় । বাধ্যতামূলক ব্যবস্থা অবলম্বন করিয়া বিদেশী 
বীমা! কোম্পানীগুলির পৃষ্ঠপোষকতা করিলে দেশের অর্থ 
শোষণেরই ব্যবস্থা হইবে । অপর পক্ষে দেশীয় ও বিশেষ- 
ভাবে বাঙ্গালার বীমা কোম্পানীগুলিরই যে শ্রীবৃদ্ধি হইবে 
তাহা নহে, বীমা-ভাগ্ারের অর্থে দেশের শিল্পবাণিজ্য 
গড়িয়। উঠারও সহায়তা করিবে। 


সাংবাদিকের সম্যান্ম- 


£ত্ডিয়ান সোশ্তাল রিফরমার, পত্রিকাঁর ভূতপূর্বব 
সম্পাদক ও অতি প্রবীণ সাংবাদিক শ্রীযুক্ত নটরাজনের 
সংবাদপত্রসেবাক্ষেত্রে কৃতিত্ব স্মরণীয় করিয়া রাখিবার 
উদ্দেশ্টে শ্রীযুক্ত জয়াকরের নেতৃত্বে একটি স্মারক সমিতি 
গঠিত হইয়াছে। এই সমিতির ইচ্ছা, অন্যুন দশ হাজার 
টাক! সংগ্রহ করিয়া তাঁহারা বোস্বাই বিশ্ববিগ্ভালয়ের অধীনে 
নটরাঁজন চেয়ার অফ জর্ণণলিজম্‌ নামে সাংবাদিকতা শিক্ষা! 
দিবার জন্তু একটি বক্তৃতার প্রতি বৎসর ব্যবস্থা 
করেন। নটরাঁজনের কর্্মশক্তিকে শ্বীকার করিয়া 
উহাকে স্মরণীয় করিয়! রাখিবার যে ব্যবস্থার আয়োজন 
বোস্বাই প্রদেশবাসীরা করিয়াছেন তাহা ভারতবাসী- 
মাত্রেরই সমর্থন লাভ করিবে। একজন সাংবাদিকের 
কাজের প্রতি জন্নাধারণের এই আস্থায় সকল সাঁংবাদিকই 
গৌরব অনুভব করিবেন। আমরা! শ্রীযুক্ত নটরান্নের এই 
গৌরবে আনন্দ প্রকাশ করিতেছি এবং তাহাকে আমাদের 
আন্তরিক অভিনন্দন জাপন করিতেছি। 


আছচগম্খ্য শ্রযুল5তর-ভক্ত্ভী- 


আমরা জানিয়া আনন্দিত হইলাম যে আচাধ্য 
প্রফুল্লচন্তর রায়ের অশতিতম জন্মতিথি উপলক্ষে তাহাকে 
সন্বপ্ধিত করার প্রাথমিক ব্যবস্থা অবলগ্বন সম্পর্কে আলোচনার 
জন্ধ সম্প্রতি কলিকাতার গণ্যমাগ্ঠ ব্যক্তিবর্গ ও বৈজ্ঞানিকগণ 
সমবেত হইয়াছিলেনু। প্রতিপতিশালী ব্যক্তিগণকে লইয়! 
একটি কার্যকরী সমিতি গঠিত হইয়াছে এবং ভারতের 
সকপস্থান হইতেই এই উদ্দেশ্তে অর্থসংগ্রহের জন্য আবেদন 


ভ্ঞান্সভন্ব্ 


[ ২৮শ বর্---খয় থণ্ড--২য় সংখ্যা 


প্রচারের সিন্ধান্ত কর! হইয়াছে । আচার্য্য রায় মহাশয়কে 
কিভাবে সম্বপ্ধিত করা হইবে তাহা! এখনও স্থির হয় নাই? 
তবে দেশের শিল্প ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি সাধনে উৎসাহ 
দিবার জন্য তাহার নামে কলিকাত বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি 
চেয়ার খুলিয়া শিক্ষাদানের ব্যবস্থার অনুকূলে অনেকেই মত 
দিবেন বলিয়া আমাদের বিশ্বাস। আমরা উদ্যোগীদের 
সাফল্য সর্বাস্তঃকরণে কামনা করি । 


ল্লোক গ্রশন্াম্ ভিন্দুল্প কুগুব্য- 


বঙ্গীয় প্রাদেশিক হিন্দু মহাঁসভা এবারের লোকগণনায় 
হিন্দুদের স্বার্থ যাহাতে যথাযথভাবে রক্ষিত হয় তাহার জদ্য 
নিখিলবঙ্গ লোকগণনা সমিতি নিযুক্ত করিয়াছেন শুনিয়া 
আমরা প্রীত হইলাম। এই সমিতি সমগ্র বঙ্গদেশকে পাঁচ 
বিভাগে ভাগ করিয়া জেলা কমিটিগুলি গঠন করিয়! দিবেন 
এবং তাহাদের কার্যাবলী যথাযথ হইতেছে কি-না তাহা 
পরিদর্শন করিবেন। জেলা কমিটিগুলি আবার থান! ও 
ইউনিয়ন বোর্ডে বিভক্ত হইয়! কাধ্যের সুবিধা করিয়া 
দিবে। আমাদের বিশ্বাস, এবার সমগ্র বাঙলার হিন্দ 
অধিবাসীরা লোকগণনাঁয় হিন্দু মহাঁসভার নিযুক্ত ব্যক্তি- 
দ্বিগকে আবশ্যক সাহাধ্য করিতে কুম্ঠিত হইবে না। কেন 
না, ইহারই উপর হিন্দু সাধারণের জীবন মরণ নিভর 
করিতেছে। 


ভীত হওক্সদ্স দত্- 


ভারতীয় সিবিল সাবিসের শ্রীযুক্ত গুরুসদয় দত্ত সম্প্রতি 
তাহার কর্মবহুল চ1করি-জীবন হইতে অবসর গ্রহণ করিয়া 
দেশের ও দশের সেবায় আত্মনিয়োগ করিয়াছেন জানিয়া 
আমরা আনন্দ প্রকাশ করিতেছি । চাঁকরি-জীবনে তিনি 
বহু জেলার ম্যাজিস্ট্রেটের পদে নিযুক্ত ছিলেন, কিন্তু পুরাদস্তর 
সিবিলিয়ানী মনোবৃত্তির অন্গদরণ করিতে পারেন নাই। 
তাহার নির্ভীক, স্বাধীন মন ও দুর্দমনীয় ত্বদেশগ্রীতিই 
তাহাকে চাকরি-জীবনে তাহার যোগ্যতান্ষায়ী উন্নতি 
লাভের অন্তরায় কৃষি করিয়াছে । পল্লী-উদ্নয়ন প্রসঙ্গে তাহার 
চেষ্টা দেশবাসী ম্বীকার করিয়া লইয়াছে। জেলাম্যাঁজিস্টে ট- 
হইয়াও তিনি ম্বহস্তেঁ কচুরীপাঁনা পরিষ্ষার অনিয়াছেন, 
জঙ্গল ও আগাছ। উৎপটিন করিয়াছেন, ক্কোদালহন্তে খাল ও 


মাঘ--১৩৪৭ ] 


"স্পট স্াস্হা” ব্যাথা -.. বাদ খ-- - ব্ব্যা- --স্স্্ 


পুকুর সংস্কারে কর্ট্ীলের অধিনায়ক হইয়াছেন। বাজালার 
লোকনৃত্যের পুনরুদ্ধার, নাঁরীশিক্ষার জন্য “সরোজনলিনী” 
আন্দোলন ও সর্বশেষে ব্রতচারী আন্দোলন তাহার অমর 
কীত্তি। শ্যোক্তটি ভারতের অনেক স্থানেই ছড়াইয়া 
পড়িয়াছে। জেলা ম্যাজিস্টে ট-হিসাঁবে গণ-আন্দোলন 
দনন করিয়! আমলাতান্ত্রিক মনোভাবের পরিচয় দেন নাই 
ণলিয়াই সরকার তাহাকে কোন প্রকার উপাধি বা সম্মান 
গদাঁন করেন নাই। তাহার প্রতি দেশবাসীর শ্রদ্ধা, 
হাঁণবাসা ও বিশ্বাসই হইবে সরকারী উপাধি অপেক্ষা 
অধিকতর মূল্যবান । 





তকীন্িকা। গ্রহশেল্র মনভ্ডতভর- 


কলিকাতা! বিজ্ঞান কলেজের গবেষক শ্রীযুক্ত সরোজেন্দ্র- 
নাঁণ রায় মহাঁশয় এ বৎসর “জীবিকা গ্রহণের মনস্তত্ব” সঙ্বন্ধে 
মৌলিক প্রবন্ধ রচনার জন্য কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হইতে 
'জুবিলি” পুরস্কার পাইয়াছেন। মনস্তত্ব বিভাঁগ হইতে 'জুবিলি' 
পুরস্কার ইতিপূর্ব্বে আর কেহই লাভ করেন নাই। বিষয়টিও 
বে সময়োপযোগী হইয়াছে তাহাতে সন্দেহ নাই। ছেলেরা 
পরীশ্গা পাশ করিয়া কর্মজীবন আরম্ভ করিতে গিয়া কোন্‌ 
দিকে যাইবে স্থির করিতে পারে না। ভাগ্যক্রমে 
বাচার যে কাঁজ জুটিয়! যাঁয়, তিনি তাহা লইয়াই সত্তষ্ট 
থাঁকিতে বাঁধ্য হন। আর ুর্ভাগ্যক্রমে যদি সে কাজ 
তাহার মনঃপৃত না হয় তাহ! হইলে দুঃখের সীমা থাকে না। 
কিন্ত সহজাঁত শক্তি ও মনোবৃতির ধারা অম্গসারে যিনি যে 
ক্ষেত্রের যোগ্য তিনি সেই ক্ষেত্র অধিকাংশ স্থলেই লাভ 
করেন না। সেইজগ্ভ তীহার যোগ্যতা ও কর্্মশক্তি 
মমাজ ও রাষ্ট্রের পক্ষে অনেক সময়ই কল্যাণজনক হয় না। 
কাঁজেই আমাদের দেশের বৈজ্ঞানিকগণ শিক্ষার সে ত্রুটি 
আবিষ্কারে মনোযোগী হইয়াছেন জানিয়! আমর! আনন্দ প্রকাশ 
করিতেছি। 


আদ্কসস্হজ্িল্স ব্যক্স ম্সিক্সাহ- 
বাঙ্গালায় লোক গণনার কাজে যে অতিরিক্ত ব্যয় 





করিবার ক্ষমতা দিয়া সম্প্রতি বাঙ্গালার ব্যবস্থা পরিষদে 


সাসন্গিক্ষী 





২.০ 9 


স্থল বা সস্স্হ- _-ব্্প্ড্হা -স্টি 


এক বিল পাশ হইয়াছে। ভারত সরকার আগামী 
আদমন্থমারি ব্যাপারে বিভিন্ন জাঁতিবর্ণ-হিসাবে হিন্দু 
সমাজের লোকগণন! করিতে অস্বীকৃত হইয়াছেন। অপর- 
পক্ষে বাঙ্গালা সরকার জাতিবর্ণ হিসাবে ভাগ করিয়া হিন্দু 
সমাজের লোক গণনার উপর জোর দিতেছেন। জাতি 
হিসাবে হিন্দুদিগকে গণন! করিতে হইলে যে অতিরিক্ত ব্যয় 
পড়িবে তাহ! মিটাইবার জন্যই বাঙ্গাল! সরকার বর্তমান 
বিলটি পাঁশ করিয়া! লইয়াছেন। মুসলমানদের সম্বন্ধে কি 
ব্যবস্থা হইয়াছে? 


লীব্রভতেে ভীম ভুভ্িল্ক্-_ 


বীরভূমে প্রায় এগার লক্ষ লোকের বাস) তাহাদের 
প্রায় সকলেই কৃষিজীবী। এ বৎসর অনাবৃষ্টির জন্য 
শতকরা! দশ ভাগ শশ্যও কৃষক পায় নাই; তাহার উপর 
পশুদের আহাধ্য নাই) পুষ্ধরিণী জলশৃম্ত। পানীয়ের 
অভাব ইতিমধ্যে লক্ষিত হইতেছে, বহু নরনারী ইতিমধ্যেই 
অদ্দাশনে ও অনশনে দিন কাটাইতে আরম্ভ করিয়াছে। 
দরকার পক্ষও ইহার ভয়ালতা বুঝিতে পারিয়৷ সজাগ 
হইয়াছেন ও ইতিমধ্যে ব্যবস্থা পরিষদে ইহা লইয়া আলোচনা! 
হইয়া গিয়াছে। বীরভূমের প্রতিষ্ঠাবান ব্যক্তিগণ 
সম্মিলিততাবে কিছুদিন পূর্ব এক যুক্ত বিবৃতিতে বীরভূমের 
অবস্থার কথা বর্ণন! করিয়াছেন। এ বিষয়ে কাঁজও আরস্ত 
কর! হইয়াছে । গত নভেম্বর মাসে কলিকাতায় বীরভূম 
দুতিক্ষ সাঁহীষ্য সমিতি” নামে একটা সমিতি বীরভূমের 
তরুণ ও ছাত্রদের দ্বার! প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে এবং তাহারা 
কাজ আরম্ত করিয়াছেন। কলিকাতায় বীরভূমবাসী- 
দের “বীরভূম সম্মেলন নামে যে বহু প্রাচীন প্রতিষ্ঠান 
আছে তীহারাঁও বীরভুমের ছুতিক্ষ নিবারণ কল্পে একটা 
সাহায্য সমিতি খুলিয়াছিলেন। গত ২০শে ডিসেম্বর 
হইতে দুইটা সমিতি একসঙ্গে যুক্ত হইয়া কাঁজ করিতেছেন 
_কারণ তাহাতে কাঁজের পরিমাণও বাঁড়িবে এবং কাজের 
স্থুবিধা হইবে বলিয়া আশা কর! যাঁয়। এ যুক্ত সমিতি 
“বীরভূম ভুঙিক্ষ সাহীষ্য সমিতি নামেই কাজ করিতেছে। 
সমিতির অফিস ১৫৯ এ বহুবাঁজার বাটে যুগ্ম-সম্পাদক 
শ্রীযূত ব্রঙ্মগোঁপাল মিত্রের নামে যে কোনো সাহায্য প্রেরণ 
কর! চলিবে। 





সি 





২ ৫ 


চালক । ল্িম্ক্সে স্পিজ্বভাল ব্যবসা 


বাঙ্গালা দেশের উচ্চ ইংরেজা স্থুলগুপির যে সকল শিক্ষক 
চারুকলা বিষয়ে শিক্ষ! দিবেন, তাহাদিগকে বিশেষ পরিক্ষা দিবার 
জগ্য কলিকাতা বিশ্ববিষ্তালয় আগামী বৎসরের গোড়াতেই 
একটি স্বল্পকাঁলব্যাপী শিক্ষাব্যবস্থা নির্ধারণ করিবেন। 
ম্যাটি.কুলেশন পরীক্ষার জন্ত যে নূতন পাঠ্য নির্দিষ্ট 
হইয়াছে তাহাতে ণচারুশিল্পের বোধ (রেখাঙ্কন ও 
চিত্রাঙ্কন ) অন্ততম অবশ্য শিক্ষণীয় বিষয় । এ বিষয়ে ধাহারা 
শিক্ষা! দিবেন তাহাদের সাহাধ্যকল্পে এই ব্যবস্থা করা হইবে। 
নির্দিষ্ট পাঠযতালিকায় শিক্ষা সম্বন্ধে সাধারণ নীতিবিষয়ক 
বন্তৃতা, চারুশিল্প মন্বন্ধে বিবিধ জ্ঞাতব্য তথ্য, চিত্রাঙ্কন, 





প্রীমতী উধারাণী মুখোপাধ্যায়-_স"াওতাল পরগণার কাখ্রেসকর্শা 
লম্বোদরবাবুর পত্থী। ইমিও সম্প্রতি কারাবরণ করিয়াছেন 
ভাস্কর্য, স্থপতিবিষ্তা সম্বন্ধে পরীক্ষালন্ধ অভিজ্ঞতা অর্জন 
প্রভৃতি বিষয় সন্নিঝিষ্ট হইবে। আমরা বিশ্ববিষ্তালয়ের এই 
প্রচেষ্টার প্রশংসা করিতেছি । 


ভ্ডাব্রভেল্স হাইক্ষসিম্ণনান্- 


দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতের এজেন্ট জেনামুল্‌ আছেন 
শ্রীযুক্ত রাম ক্কাও। সম্প্রতি এক সরকারী ঘোষণায় 
তাহার পদবী বদলাইয় তাহাকে ভারতের “হাইকমিশনার, 
বলিয়! ঘোষণ! করা হইয়াছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতের 


 ছচান্রব্তন্য্ 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় খণ-২য় সংখ্যা 


হাইকমিশনার অতঃপর অন্ঠান্ঠ বৃটিশ ওপনিবেশিক হাই- 
কমিশনারদের অনুরূপ পদমর্যাদা লাভ করিবেন। কিন্ত 
ইছাতে উল্লসিত হইবার কিছু আছে বলিয়া! মনে হয় না। 
যতদিন ভারত স্বাধীন রাষ্ট্রের মর্যাদা না পায় ততদিন বিদেশে 
তাহার প্রতিনিধিদের এজেপ্ট জেনাযূল্‌, হাইকমিশনর, কন্‌- 
সাল, য়্যান্েসেভার- যে-কোন নামই দেওয়া হোক নাঃ 
তীহার পদমর্যাদা বা সম্মান তাহাতে বাড়িবে না। 


সাল্ল ল্লাশ্বাক্যগ্ন্সেন্্র জ্ঞামণ- 


সম্প্রতি কলিকাতায় বছনিন্দিত মাধ্যমিক শিক্ষাবিলের 
প্রতিবাদে যে সম্মিলন হইয়! গিয়াছে তাহার শিক্ষা ও সংস্কৃতি 
প্রদর্শনীর উদ্বোধন প্রসঙ্গে স্তর সর্ধপল্লী রাঁধারুষ্ণন মাধ্যমিক 
শিক্ষাবিলের বিরুদ্ধে যে সারগর্ত মন্তব্য করিয়াছেন তাহা 
নানা কারণেই বাঙ্গালার মন্ত্রীমগুলীর মনোযোগ আকর্ষণের 
যোগ্য । স্যর রাধারুষ্খন বলিয়াছেন, সর্বক্ষেত্রে বিশেষভাবে 
শিক্ষাক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক নীতি প্রবর্তন করিয়া মন্ত্রীমগ্ডলী 
ভারতে মহাঁজাতিগঠনের বিরুদ্ধবাদীদের হাতে সম্পূর্ণ 
আত্মসমর্পণ করিয়াছেন। স্যর রাধারুষ্ণন রাজনীতিক 
নেতা নহেন, হিন্দু মহাসভার সাস্তও নহেনঃ তিনি 
শিক্ষাব্রতী ; স্থৃতরাং তাহার মতের গুরুত্ব কতথানি, তাহা 
আমাদের মন্ত্রীমণ্ডলী অনুধাবন করিলে উপরুত হইবেন । 


সলহহোগ্িক্ডাল্স ভআন্বেদিন্ম_ 


সম্প্রতি বুটিশ কমন্স সভার সকল দলের নয়জন সন্ত 
মিলিয়! ভারতবাসীদের প্রতি. সহযোগিতার আবেদন প্রকাশ 
করিয়াছেন। তাহাদের আবেদনে ভারতের সাম্প্রদায়িক 
সমন্তার উপর বথারীতি গুরুত্ব আরোপ কল্গিয়া বড়লাটের 
প্রত্যাখ্যাত প্রস্তাব গ্রহণের জনক সবি বন্ধ অনুরোধ জাপন 
কর! হইয়াছে। তাহাদের মুদীর্ঘ আবেদনে বৃটিশ্গুলভ 
সমস্যা সমাধানের আগ্রহ তেমন নাই। ভাষার হের-ফেরে 
বক্তব্য বিষয়ের ধে বিশেষ কোন পরিবর্ভন দেখা গিয়াছে 
তাহা নহে) বড়লাটি লিনলিখগো! যে সব যুক্তি গ্রার্শন করিয়া 
কংগ্রেসকে নিরাশ করিয়াছেন, এই তথাকথিত আবে 
সেই সব যুক্তিই ভাষার আবরূতে  আতমপেপনের্র ব্যর্থ 
চেষ্টা করিয়্াছে। ম্ুতরাং আমাদেন্ বিশ্বাস, যতক্ষণ না 


সি ] 





রশ রাজনীতিক র্রেরা সং সরল, সহজ ও স্পষ্টভীষায় 
ভারতের দাবী ভারতবাসীর দিক দিয়াই ভাবিয়া লইবেন 
বলিয়া আশ্বাস দিবেন, ততক্ষণ এ ধরণের মিলন চেষ্টা 
পণ্ুঅমে পর্যবসিত হইবে। 


প্রবাসী শ্রক্ষসাহ্িভ্য সম্মিিজ্পম- 


এবার বড়দিনের ছুটিতে জাঁমসেদপুরে প্রবাসী-বঙ্গ- 
সাহিত্য সম্মিলনের অষ্টাদশ অধিবেশন হইয়া! গিয়াছে । মূল- 
সভাপতি নির্বাচিত হুইয়াছিলেন বরোঁদা রাঁজ্যের সচিব 
রাঁজরত্ব শ্রীযুক্ত সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় । কিন্তু শেষ মুহূর্তে 
এনুস্থতা নিবন্ধন তিনি সন্মিলনীতে যোগদান করিতে না 
পারায় তাহার স্থানে শ্রীযুক্ত গুরুসদয় দত্ত মহাঁশয়কে মূল- 
সভাপতি নির্বাচিত করা হয় । সাহিত্যশাথাঁর সভাপতি হন 
শীযুক্ত অন্নদাশঙ্কর রায় আই-সি- এস মহাশয় । বিজ্ঞান শাখায় 
৮ঃ বীরেশচন্ত্র গুহ, বৃহত্তর বঙ্গশাখায় ডঃ কালিদাস নাগ ও 
ন্েলা-বিভাগে শ্রীমতী কুমুদিনী বন্থ সভানেত্রীত্ব করেন। 
প্রদর্শনীর থারোদ্ঘাঁটন করেন শ্রীযুক্ত রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় 
মহাশম । এবারের সম্মিলনীর বৈশিষ্ট্য এই প্রদর্শনী । এই 
প্রদশনীতে গত এক বৎসরের মধ্যে প্রকাশিত বাঙ্গালা পুস্তক 
ও পত্রিকাবলী প্রদশিত হইয়াছে । গুদর্শনীতে শিশুসাহিত্য 
বিষয়ক পুস্তকই বেশী প্রদশিত হইয়াছে । মোট সাত শত 








সাহিত্য শাখার সভাপতি--প্রযুত অন্নদাশঙ্কর রায় জাই-সি-এস 


পু ও ২৪খান! লাময়িক পৰ্ধ প্রাগিত হইয়াছে। 


তি রপনসিঞপবুদি 


সামন্িজ্ী 


স্ব” 


২০৪ 








তেমন সাফল্যলাভ করিতে পাঁরে নাই। গ্রন্থ প্রকাশকদের 
নিকট তেমনভাবে প্রদর্শনীর বিষয় অনুরোধ জ্ঞাপন করা 





বিজ্ঞান শাখার সভাপতি- ডক্টর বীরেশচন্ত্র গুহ 
হয় নাই বলিয়ই পুস্তক সংখ্যা এত কম হইয়াছে, তথাপি 
এ প্রচেষ্টা প্রশংসাঁষোগ্য সন্দেহ নাই। 
অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন প্রসিদ্ধ 


ব্যবসায়ী শ্রীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ রক্ষিত মহীশয়। টাটা 
কোম্পানীর প্রধান কর্মকর্তা শ্রীযুক্ত জে, জে, গান্বী মহাশয় 
সম্মিলনীর দ্বারোদঘাটন করেন। ূ 

মূল-সভাপতি শ্রীযুক্ত গুরুসদয় দত্ত মহাশয় তাহার 
মনোজ অভিভাষণে গ্রসঙ্গত বলেন- “জীবনযাত্রার সকল স্তরে 
বাঙ্গালী আজ পিছনে পড়িয়া রহিয়াছে । রাজনীতিক, 
আধথিক ও অন্ত সকলক্ষেত্রে বাঙ্গালা আজ পরাজয়ের সম্ভাবনায় 
বিব্রত হইয়া পড়িয়্াছে। কিন্তু তমিম্া রজনীর ঘোর 
অন্ধকারের মধোও ক্সীণতম আলোকরশ্ি দেখা যাইতেছে । 
অন্যদিকে যাহাই হউক না৷ কেন, বাঙ্গালী সাহিত্য প্রতিভায় 
সমুজ্ল হইয়া রহিয়াছে । পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম সাহিত্যগুলির 
সহিত সঙ্গতি রাখিয়া ইহার পুষ্টি ও প্রগতি ঘটিয়াছে।» 

সাহিত্য শাখার সাপতি শ্রীযুক্ত অন্নদাশঙ্ষর রায় মহাশয় 
তাহার সুচিস্তিত অভিভাষণে এদেশের সম্মিলনের চিরাচরিত 
রীতিকে ছাড়িয়া গিয়াছেন। তিনি অভিভাষণে একটি মনোজ 
গল্পের আকারে তীহার বক্তব্য প্রকাশ করিয়াছেন। তিনি 
প্রসঙ্গত বলিয়াছেন--'সাহিত্যিকের প্রধানত সাহিত্যের 


হ২৪৩৬ ভ্গান্পভ্বশ্র [ ২৮শ বর্ব_২য় থণ্ড-_-২য় সংখ্যা 


স্সল স্ব স্য বল স্আা ক্ষ সে স্ 


সৌন্দধ্য ও আর্ট লইয়া কারবার করিবেন, অথবা কলওয়ালার স্বেচ্ছাচার, জাগো কিষাণ-মজদুর+ ইত্যাদি লিখে 
জন মনোভাবের সামাঁজিক দিকটা লইয়াই বিশেষ শ্রেণীর শ্রেণী-সাহিত্য পরিবেষণ করা কঠিন নয়। কিছু গরম 
সাহিত্য হৃট্রি করিবেন? সাহিত্য কিসের জন্ত এবং সাহিত্য মসলার সঙ্গে মার্কস্‌ বাটা মিশিয়ে ওকে স্বাছ করতে পাঁরা 





নিখিলবঙ্গ সঙ্গীত প্রতিযোগিতার মহিল! (ক) বিভাগের পুরস্কারপ্রাপ্ত মহিলা বৃন্দ _-ফটে! গ্রীপান্না সেন 


কাদের 'জন্ত ?..-ততাঁকে সাহিত্য সৃষ্টি করতে হবে এমন সহজ। কিন্তু সাহিত্য বলে যদি তাহা গণ্য করা হয়, তবে 
ভাবে, যেন একদিন শিক্ষাবিস্তার হলে সব শ্রেণীর লোক সেই শ্রেণীসাঁহিত্য কেন নিয়শ্রেণীর সাহিত্য বলেই তা গণ্য হবে। 
স্থষ্টি উপভোগ করিতে পারে । এমন এক রস দিয়ে যাবে, কিন্তু আমার সোনার তরীতে যদি সোনার ধানই না থাকল, 
য! সমাজ-বিপ্রবের আগে বা রাষ্ট্র-বিপ্রবের আগে ফুরিয়ে যাবে তবে বাকী সব থেকে হবে কী। ও কিসাহিত্য হবে? 
না। এমন এক অমৃত পরিবেষণ করবে যা ইদানীস্তন যখন বলি-_-আর্ট ফু আর্টস্‌ সেক-_তখন শুধু এই কথাই বলি 





নিখিল বঙ্গ দঙ্গীত প্রতিষে।গিতার মহল! (থ) বিভাগে পুরস্ষাপ্নপ্রাণ্ড মহিলাবৃন্দ --ফটো! শ্রীপান্ন। সেন 


দেবতারা থেয়ে সেষ করে দেবেন না, ঘা তথাকথিত যে, সোনার ধানের জন্ঘই লোনার তরী। তা বেগ 
টভাদের অন্কও সভ্ভুত, থাকবে." আমিদারের অতাঁচার, জিনিষকে-বান দবিইলে, ওজন বুঝে জী নি 











শপ আপাীস শী ০ 


দির্লাতে ভারতীয় মহিল! সম্মেলনে সমবেত তরিবাহ্ুরের নহারাণী, কংঠেস নেও শ্রীযুক্ত কমলা দেবী চটোপাধ্যায় আমেরিকার 
লেডী প্রতিম! সিত্র প্রভৃতি কালিফো িয়ায় ভ্রমণে গিয়াছেন 





কারমাইকেল মেডিকেল কলেজে প্রাক্তন ছাত্র মিলন উৎসব 


ং 


০৮০ পপ ০৮ ০৯ পন কপ ০ ০৮ ০৯ পপ 





লরি রঃ «তত রি ম 
| ২ ও 
শর টা ০০০ ৮ 
. রা ী রর 
লগ্নে দরিজ্ ব্যক্তিগণের বাদগুহ--_বোম| পড়িয়া ভাঙ্গিয়। গিয়াছে লগুনে কাউন্টি কাউন্সিল হলের সন্ুখে বোমা পড়িয়া এরপ গর্ত হইয়াছে 





রাঞ্জকীয় ভারতীয় নৌবাহিনীতে গৃহীত নুতন শিক্ষানবীশদল ব্যায়াম করিতেছে 


মাঘ--১৩৪৭ ] 


সাহিত্য শাখায় শ্রীযুক্ত রাজশেখরবাবুর লিখিত বাংলা 
ভাষার আধুনিক রূপ অধ্যাপক বিজনবিহাঁরী ভট্টাচার্যের 
'বাংলাভাষার নীতি ও আদর্শ” মহামহোপাধ্যায় পণ্ডিত শ্রীযুক্ত 
প্রমথনাথ তর্কভৃষণের *বাংলাভাষাঁয় বিজাতীয় শব্ধ” ইত্যাদি 
কয়েকটি সারগঞ্ড প্রবন্ধ পঠিত হয়। 

বিজ্ঞান শাখার সভাপতি ডক্টর বীরেশচন্দ্র গুহ “বিজ্ঞান 
ও মানবতা” সম্পর্কে একটি সুচিন্তিত অভিভাষণ পাঠ করেন। 
'বৃহত্তর বঙ্গ” শাখায় সভাপতি ডক্টর কালিদাস নাগ তাহার 
অভিভাষণ পাঠ করেন। উভয় শাখাতেই বিশিষ্ট সুধীবৃন্দ 
বিজ্ঞান বনাম সাহিত্য এবং জাতি হিসাবে বাঙ্গালীর অখণ্ততা 
এবং প্রীক্য লাভের ও বজায় রাখার সমস্তা সম্পর্কে 
অনেকগুলি প্রবন্ধ পাঠ করেন । মহিলা বিভাগের সভানেত্রী 
আসন গ্রহণ করেন শ্রীষুক্তা কুমুদিনী বন্থ। মহিলা 
বিভাগেও বাঙ্গাল! ভাষায় মহিলার স্থান ও দাঁন সম্বন্ধে 
মনেকগুলি প্রবন্ধ পঠিত হয়। সম্মিলনীর আগামী 
মধিবেশন কাণীতে হইবে স্থির হইয়াছে । সম্মিলনীতে 
মনেকগুলি গ্তস্তাব গৃহীত হইয়াছে । তন্মধ্যে আগামী 
মাদমসুমারিতে প্রবাসী বাঙ্গালীদের মাতৃভাষা যে বাঙ্গালা 
_তাঁহা লিপিবন্ধ করার অনুরোধ অন্যতম। আর একটি প্রস্তাবে 
এইরূপ অভিমত ব্যক্ত করা হয় যে, বঙ্গের বাহিরে ভারতের 
সমস্ত প্রধান প্রধান রেডিও স্টেশনেই প্রতি সপ্তাহে 
বাঙ্গালা প্রোগ্রামের জন্ক উপযুক্ত বন্দোবস্ত হওয়! উচিত। 
কলিকাতা ও ঢাকার রেডিও স্টেশনে অবাঙ্গালী প্রো গ্রামের 
বেভাবে ব্বস্থা রুরা হয়ঃ সেই ধারায় বাঙ্গীলার বাহিরে 
ভারতের বেতারস্টেশনগুলির কর্মহচীতেও বাঙ্গালা 
প্রোগ্রামের অনুরূপ ব্যবস্থা করা কর্তব্য। রবীন্দ্রনাথের 
রোগমুক্তিতে আনন্দ প্রকাশ এবং সুস্থ দেহে আরও দীর্ঘকাল 
চীবন ধারণের কামনা এবং শ্রীযুক্ত দুভাষচন্দ্র বন, রাজরদ্ধ 
সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়, স্যর লালগোপাল মুখোপাধ্যায়ের 
সত্বর রোগম্ুক্ধির .প্রীর্ঘনা সম্মেলন করেন। গত কয়েক 
বৎসরে ঘে সব বিশ্দিট লাহিত্যিকের মৃত্যু হইয়াছে তাহাদের 
জন্য সম্মেলন শোকগ্রক্কাশও 'করেন। 
ব্রিভঙ্চ প্রতভিম্যোপসিভাক্ষ শ্ার্জাজী-_ 

এবারেও জববলপুয়ে আত্ম:বিশ্রিস্া্দর বিতর্ক গ্রতি- 
যোগিতায় শশ্ববিষ্াল়ের ছাত্র ্ীমান্‌, সাধনচজ 


৩৩ 


লামজিন্কী 


২.০ 
গপ্ত ও শ্রীমান্‌ পূর্ণেন্দু বন্য্োপাধ্যায় জয়লাভ করিয়াছেন । 
শ্রীমান্‌ সাধনচন্ত্র প্রথম স্থান অধিকার করিয়াছেন। গত 
বৎসরে তাহারা লাহোরে অনুষ্ঠিত আস্তঃবিশ্ববিষ্ঠালয় বিতর্ক 
প্রতিযোগিতায় জয়লাত করিয়া বাঙ্গালীর গৌরব বুদ্ধি 
করিয়াছিলেন। আমরা এই ছুইটি বশস্বী যুবকের সর্বাঙ্গীন 
কল্যাণ কামনা করি। | 
হাক্রীল্র ক্রভ্ডিত-- 

চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্রী কুমারী গৌরী গঙ্গোপাধ্যায় 
এ বৎসর বি-এন্‌-সি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া «পেডলার পদক, 
লাভ করিয়াছেন। ব্যবহারিক রসায়নে প্রথম স্থান 





কুমারী গৌরী গঙ্গোপাধ্যায় 


অধিকারীকে এই পদক দেওয়া হইয়া! থাকে । ছাত্রীদের 
মধ্যে কুমারী গোৌরীই সর্বপ্রথম এই পদক পাইলেন। ইনি 
চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যাপক শ্রীযুক্ত সতীশচন্দ্র গঙ্গোপাধ্যায়ের 
কন্তা। আনরা শ্রীমতীর উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি। 


ভ্রন্্ষে স্বক্ষলাহিভ্ড্য সম্মেেজ্ন্ন-_ 


কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শ্রীযুক্ত প্রিয়রঞ্জন 
সেনের সভাপতিত্বে এবারে “নিখিল ব্রহ্ম বাঙ্গালা সাহিত্য 
সম্মিলন? সুসম্পন্ন হইয়া গিয়াছে। শাসনকার্ধ্ের অজুহাতে 
রঙ্গ ভারত হইতে বিচ্ছিন্ন হইলেও এই ছুইটি দেশ রাজনীতি, 
অর্থনীতি ও সংস্কতির দিক হইতে নিবিড়ভাবে জড়িত। 
ওর ছুই দেশ আবার একত্র হুইবে তাহাতে 
সন্দেহ নাই। শ্বদেশের সঙ্গে মিলনসেতু হিসাবে প্রবাসী 
বাঙ্গালীদের এই প্রচেষ্টা' উত্তরোত্তর প্রীমণ্ডিত হইয়া উঠুক__ 


ইহাই আমরা কামন! করি । 


২২৫৮ 


্পলক্লোক্ষে মলিলিশীল্ওকন্ন শি 


নলিনীরঞজন পণ্ডিত মহাশয়ের অকালবিয়োগে এক- 
জন নিষ্ঠাবান অক্লান্ত কর্মী সাহিত্যসেবীর অভাব হইল। 
যে কয়জনের আপ্রাণ চেষ্টায় বঙ্গীয় সাহ্ত্যি পরিষদ গড়িয়। 
উঠিয়াছে নলিনীরঞ্জন তাহাদের মধ্যে একজন । তাহার রচিত 
“কান্তকবি রজনীকান্ত তাহার তথ্য সংগ্রহ, লিপিকুশলতা 
ও যোগ্যতার পরিচায়ক । বিগত পঁচিশ-ত্রিশ বৎসরের 
মধ্যে বাঙ্গালার যেখানেই কোন সাহিত্য সভা বা সম্মিলন 
আহত হইয়াছে, সেখানেই নলিনীরঞ্জন উৎসাহী কর্মীরূপে 
দেখা দিয়াছেন। ছোটশখড়, নবীন-প্রবীণ-_সকল শ্রেণীর 
সাহিত্যিকের তিনি আপনজন ছিলেন । দারিদ্র্য ও বহুবিধ 
সাংসারিক দুঃখ দুর্দশার মধ্যেও সাহিত্য বিষয়ে তাহার 
যে সদাজাগ্রত উৎসাহ ছিল তাহা অন্যের মনেও উৎসাহের 
সঞ্চার করিত। মৃত্যুকালে তাহার বয়স মাত্র আটান্ন বৎসর 





নলিনীরগ্রন প্ডিত 


হইয়াছিল । আমরা তাহার শোকনন্প্ত পরিজনবগ ও অগণিত 
বদ্ধুবর্গকে মামাদের আন্তরিক সনব্দেনা জাঁনাইতেছি। 


সল্লব্বোকে ৫গাইল্িহাল্ী ভিশ্রাস-- 


কলিকা তাঁর প্রসিদ্ধ মৎস্য ব্যবসায়ী, বাঙ্গালীর সুপরিচিত 
জেলেপাড়া সণের প্রবর্তক গোষ্ঠবিহারী বিশ্বাস ৬৯ বৎসর 
বয়সে পরলোকগমন করিয়াছেন। সাহস) সততা ও 
অধ্যবসায় সম্বল করিয়। সামান্ত অবস্থা হইতে অসামান্ঠি 
কর্মনিষ্ঠায় কর্মক্ষেত্রে বাহার গ্রতিষ্ঠালাভে সমর্থ হইয়াছেন, 
বিশ্বাস মহাশয় তাহাদেরই অন্যতম ছিলেন । ভারতের বছ 
ভাইস্রয় ও বিভিন্ন প্রদেশের গবর্ণর ইহাকে নিয়োগপত্র 
(৮%11676 901 8101501707)9176) দ্বারা সম্মানিত করেন। 
স্বীয় সমাঁজেরু ও জাতীয় ব্যবসায়ের শ্রীবৃদ্ধি সম্বন্ধে ইনি 
যেরূপ উদ্যোগী ছিলেন, সাধারণ প্রতিষ্ঠান ও জনহিতকর 


ভান্রতব্হ্ 


[ ২৮শ ব্ষ--২য় খণ্ড ২য় সংখ্যা 


অনুষ্ঠানগুলিকেও সেইরূপ আগ্রহ সহকারে সাহায্য 
করিতেন। বিশ্বাস মহাশয় দুই পুত্র ও চারিটি কন্তা রাখিয়া 





গেষ্টবিহারী বিশ্বাম 
গিয়াছেন। জ্যেষ্ট পুত্র শ্রীমান জ্যোতিশ্ন্ত্র উচ্চশিক্ষিত 


ও সুলেখক । আমরা তাহাদের পিঠশোকে সমবেদনা 
জ্ঞাপন করিতেছি । 


ভ্লীত্ডাক্ত জ্যামে পক্ষশীভিজ- 


তারতের উপকূণ বাণিজ্য সম্পর্কে দেশীয় ব্যবসায়ীদিগের 
স্বার্থলংরক্ষণের জন্ত ব্যবস্থা অবশদ্দন করিয়াছেন বলিয়া ভারত 
সরকার যে বিবুতি দিয়াছেন তাহার সমালোচনা করিয! 
পিপ্দিয়াস্টিম নেভিগেশন কোম্পানীর পরিচালক শ্রীধুক্ত শাস্তি- 
কুমার এন্‌ মোরারজী জানাইতেছেন যে, বৃটিশ মূলধনে পরি- 
পুষ্ট মোগল লাইনের জাহাজগুলি করাচী, কলিকাতা, বোশ্বাই 
ও লোহিতসাগরের বন্দরসমূছে যাতায়াত করিতেছে। 
আসলে তাহাদের গতিবিধি কোনমতেই নিয়ন্ত্রিত হয় নাই। 
ভারতের পশ্চিমভাগে বিভিন্ন বন্দরের দেশীয় বাণিজা- 
জাহাজের পরিচালনা সরকার গ্রহণ করিয়াছেন। বাঁর বার 
আবেদন নিবেদন ' করিয়াও ইহার একখানি জাহাজ 
দেশীয় লৌকদের হাতে দেওয়া হয় না। ইহা হইতে স্পষ্ট 
করিয়াই আমরা বুঝিতে পারিতেছি যে, বুঁটিশ মৃলধনে 
পুষ্ট বিদেশীয় কোম্পানীর জাহাজগুলিকে স্বাধীনভাবে ব্যবসায় 
চালাইবার অনুমতি দিয়! আসলে দেশীয় জাহাজ ব্যবসার ও 
নৌব|ণিজ্যের উচ্ছেদে সরকার সহায়ত! করিতেছেন । ভারতীয় 
বাড়াইবার অধিকার দেওয়া হয় নাই; অপরপক্ষে কিন্ত 
মোগল লাইনের বীসা-ব্যয় সরকার বহন করিতেছেন এবং 
তাহাদের ভাড়াও পঁচাত্তর টাকা বাড়াইবার অনুর, _. 
দিয়াছেন। এই সম্পর্কে আময়া ভারতু সরকারের 
দৃষ্টি আকর্ষণ করিতেছি । 


মাঘ--১৩৪৭ ] 





বাজ্চাজ্নাক্স। দতুনাচক্ি-_ 


বাঙ্গালার প্রাদেশিক কংগ্রেস ও কেন্দ্রীয় কংগ্রেসের সভা- 
পতির মধ্যে বিবাদের ফলে যে অবস্থার উত্তব হইয়াছে তাহা 
নিতান্তই অগ্লীতিকর। এই উপলক্ষে প্রাদেশিক কমিটির 
পক্ষ হইতে কেন্ত্রীয় কংগ্রেসের সভাপতি মৌলানা আবুল কালাম 
আজাদের প্রতি বিবৃতির আকারে যেসব অশোভন উদ্চি 
প্রচারিত হইতেছে তাহা সঙ্গত নহে, বরং তাহাতে 
বাঙ্গালী চরিত্রের দুর্ববলতাই প্রকাশিত হইতেছে । অপর পক্ষে 
বাঙ্গালায় ধাহার প্রকৃত নেতৃত্থানীয় তাহাঁদিগের বহিষ্কীরের 
ফলে বাঙ্জালার রাজনৈতিক আন্দোলন যে দুর্বল হইয়াই 
পড়িবে তাহাতে কোন সন্দেহ নাই । যেমন কোন প্রতিষ্ঠান 
পরিচালন করিতে হইলে সকলকেই নিয়মান্ঘবর্তিতা মানিয়া 
লইতে হয়, তেমনই তাহা কঠোরভাবে প্রযুক্ত না হইলেও সঙ্গত 
হয়। আমরা অবশ্য কোন পক্ষেরই ওকালতি করিব না; 
আমর] চাই যে "অবিলম্বে এই অগ্লীতিকর অবস্থার একটা 
সুমীনাংসা হইয়। দেশের রাজনৈতিক ক্ষেত্র স্বাস্থ্যকর আঁব- 
হাওয়ায় পরিণত হয়। 


ক্ুভী শবাজ্চানী স্ুুবক-_ 

গত বৎসর গৃহীত ভারতীয় অডিট ও একাউন্ট 
পরীক্ষায় সাঁফল্য লাভ করিয়া শ্রীবুস্ত জ্ঞানেন্্রমোহন 
বন্দ্যোপাধ্যায় ঈস্টইণ্ডিযা রেল কোম্পানীতে ট্রান্সপোর্টেশন 
অফিসারের পদে নিযুক্ত হইয়াছেন। তিনি কলিকাতা 
বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন রুতী-ছীত্র; জীবনে যত পরীক্ষা 
দিয়াছেন সকলগুলিতে তিনি বৃদ্ধি পাইয়াছেন। সাহিত্যের 





জানে বল্যোপাঞ্যায 
প্রতিও তাহা অনুরাগ আঁছে। তাহার বত। হুগলী ভদ্রকালী অগণ্য বন্ধুবান্ধবদের আমাদের আন্তরিক সমব্দনা জ্ঞাপন 


নিবাসী 


'সাফাক্ষিক্ষী 


হরি 


বিহার সরকারের পূর্তবিভাগে উচ্চপদে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। 
আমরা জ্ঞানেন্দ্রবাবুর জীবনে উত্তরোত্তর সাঁফল্য কামনা করি। 
শ্রব্রাসী ল্বাজ্গান্লীক্প শক্পলোক্কগ্গমন্ন- 


সাঁওতাল পরগণার রাঁজমহলের প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ী 
শীযুক্ত মনোহর দে মন্ুমদার মহাশয় ব্লাড-প্রেসারে ৭০ 








মনোহর 


বৎসর বয়সে সম্প্রতি পরলোৌকগমন করিয়াছেন । দে-মজুম্দার 
মহাঁশয়ের আদি নিবাস ঢাঁকা জেলার বিক্রমপুরের অন্তর্গত 
শেখরনগর গ্রামে । ১৮ বৎসর বয়সে তিনি পামান্ি 
বেতনে পুলিশে চাঁকরি লইয়! সা"ওতাঁল পরগণায় যাঁন। 
কিছুকাল চাঁকরি করার পর সামান্ত তিনশত টাকা মূলধন 
লইয়া! তিনি ব্যবসা স্ুরূ করেন। নিজের সততা ও 
অধাবসাঁয়ের ফলে তিনি বহু টাঁকা 'অঙ্জন করিয়া মনেক 
স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি রাখিয়া গিয়াছেন । 


-সাহবাছিিক্কেল্স শক্রতলাক্গ্গহঞজ্ম- 


ন্বাশনাল নিউজ পেপার্স লিমিটেডের পরিচালক 
অক্ষয়কুমার সরকার মাত্র পয়ত্রিশ বৎসর বয়সে দারুণ 
বপ্লারোগে পরলোকগমন করিয়াছেন । শিক্ষা শেষ করিয়া 
তিনি “ফরওয়ার্ড পত্রিকায় সাংবাদিক-জীবন আ'রস্ত 
করেন এবং মৃত্যুর কয়েকমাস পূর্বব পধ্যন্তও সংবাদপঞ্জের 
সহিত সংশ্রব রক্ষা করিয়াছিলেন । তিনি অবিবাহিত ছিলেন । 
ন্যাশনাল নিউজ পেপার্স লিঃএর তিনথানি পত্রিকা খেয়ালী, 
ভ্যারাইটিজ ও চিন্ালী তাহার দ্বারা পরিচালিত হইত। 
অমায়িক প্রকৃতির জন্ত অক্ষয়কুমার বন্ধুমহলে সকলের প্রিয় 
ছিলেন । আমর! তাহার শোকসন্তপ্ত। বৃদ্ধা জননী ও তাহার 


যুক্ত মগেন্দনাথ বন্যোপাধ্াায় (অবসরপ্রাপ্ত) করিতেছি 


২৩৩ 





শত্লোতক এজ্ঞাভিন্মান্থ আুষ্ধোম্পাত্যা্স 

কলিকাতা পুলিশের দক্ষিণ টাউন বিভাগের সহকারী 
কমিশনর রায় এ্রভাতনাথ মুখোপাধ্যায় বাছাছর গত 
১লা জানুয়ারী প্রাতে সন্ন্যাস রোগে পরলোকগমন 


করিয়াছেন। মৃত্যুকালে তাহার বয়স মাত্র ৫* বৎসর 
হইয়াছিল। ১৯১৪ সালে পুলিশ বিভাগে সামান্ত দারোগার 


মা 255৮: ০ রে টি 
দা ৩ 88 ঠ টু 
৮ 





প্রভাতনাথ মুখোপাধ্যায় 
পদে নিযুক্ত হইয়া কর্নিষ্ঠা ও অধ্যবসায় বলে তিনি 
উন্নতি লাত করেন। ১৯২৯ সালে তিনি সহকারী পুলিশ 
কমিশনার পদে উন্নীত হন। তিনবার তিনি অস্থায়ীভাবে 
ডেপুটি কমিশনরের পদে কাধ্য করেন। কর্ম- 
নৈপুণ্যের পুরস্কার স্বরূপ তাঁহাকে পুলিশ মেডল্‌, রায় 
সাহেব ও রায় বাহাঁছর উপাধি প্রদান করা হয়। ভাল 


ভাবসভবন্ 


[ ২৮শ বর্ষ-_ ২য় খণ্ড-২র সংখা 
খেলোয়াড় ও স্থঅভিনেতা বলিয়াও তাহার প্রসিদ্ধি ছিল। 
নিজের অমায়িক ব্যবহারে সহরের অসংখা ক্লাব ও বারোয়ারী 
প্রতিষ্ঠানের সহিত তিনি যুক্ত ছিলেন। আমরা তাহার 
মৃত্যুতে শ্বজনবিয়োগব্যথা অনুভব করিতেছি এবং তাহার 
শোকসস্তপ্ত পরিজনবর্গের প্রতি আমাদের আস্ধরিক স়বেদন! 
জ্ঞাপন করিতেছি । | 


সন্লল্লোক্ষে মশ্গিঅক্র্মান্থ ৪৩৪-- 


প্রবীণ সাংবাদিক ও প্রসিদ্ধ সাহিত্যসেবী প্রীষুক্ত 
নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত মহাশয় পরিণত বয়সে বোত্বাই শহরে 
সম্প্রতি পরলোকগমন করিয়াছেন। তাহার মৃত্যুতে 
ভারতীয় সংবাদপত্র জগতের বিশেষ ক্ষতি হুইল । যৌবনের 
প্রারস্তেই তিনি সাংবাদিকের কার্য গ্রহণ করেন এবং 
বিশেষ রুতিত্বের সহিত করাচীর “ফিনিক্স পত্রের সম্পাদনা 
করেন। স্যির স্ুরেন্ত্রনাথের প্রভাবে পাঞ্জাবের সর্দার 
দয়াল সিং মাজিথিয়া' যখন বাঙ্গালার জাতীয়তা আন্দোলনে 
আকৃষ্ট হইয়! পাঞ্জাবে সেই আন্দোলন প্রবর্তন করেন তখন 
তিনি সেখানে একখানি সংবাদপত্র ও একটি কলেজ 
স্থাপনা করেন। স্ুরেন্্রনাথের নির্বাচনে ডাঃ শীতলাকাস্ত 
চট্টোপাধ্যায় টি.বিউন-এর প্রধান সম্পাদক হুন। শীতলা- 
কান্তের অবর্তমানে নগেন্দ্রনাথ সম্পাদকের পদে থাকিয় 
টি.বিউন-এর প্রতিষ্ঠী বৃদ্ধি করেন। দীর্ঘকাল তিনি এই পদে 
কাধ্য করিয়া যোগ্যতার পরিচয় দেন। পরে এলাহাবাদে আসিয়া 
আর একখানি পত্রিক। প্রবর্তন করেন, তাহাই পরে 'লীডার, 
রূপে সুপরিচিত হয় । পরে বাঙশ্গালায় আনিয়৷ তিনি বেঙ্গলীর 
সহিত যুক্ত হন। বৈষ্ণব সাহিত্যে তাহার প্রগাঢ় পাণ্ডিত্য 
ছিল। তিনি অনেকগুলি উপচ্ভাস ও ছোটগল্প সাময়িক 
পত্রে প্রকাশ করিম়্াছেন। ইংরেজী ও বাঙ্গাল! সমানভাবে 
তিনি লিথিতে পারিতেন। “ভারতবর্ষ/-এরও তিনি লেখক 
ছিলেন। রবীন্দ্রনাথের কবিতার ইংরেজী অন্ুবার্ধ করিয়াও 
তিনি প্রসিদ্ধি অর্জন করেন। আমর! তাহার শোকসম্তণ 
পরিজনগণের গ্রতি সদঘেদন! জাপন করিতেছি। 
জ্র্মসহশ্পোশ্রন-_ 

আমরা অবগত হইলাম যে, গত অগ্রহায়ণ মাসে 
“ভারতবর্ধ-এ প্রকাশিত “পুলিশের আরাম' পীর্ধক মন্তব্য 
একটু ক্রটি আছে। উক্ত আরাম-নিবাস নির্দীণের যাব- 
তীয় ব্যয় কলিকাতা! পুলিশ-ক্লাব বহন করিয্াছেন, বাছাল। 
সরকারের নিকট হইতে কপর্দকও গ্রহণ কর! হয় নাই। 


নুধাংশুশেখর 
স্ীক্ষেত্রনাথ রায় 


মাত্র এক বছর হলে হুধাংশুশেখর মরজগতের বন্ধন 
কাঁটিযে সরে গেছেন। এমনি পৌষের একটা দিনে তার 
চলে যাবার ডাক আসে । দুঃখ এই যে এ ডাক অকালেই 
এসে তাকে আমাদের মাঝখান থেকে ছিনিযে নিষে যাষ। 
তাই আমাদের শোকের আঘাত একটু বেশী করেই 
বেজেছিল। শুধু আত্মীয় পরিজন বা ঘনিষ্ঠ ও পরিচিত 
বন্ধমণ্ডুলই শোকার্ত হন নি, ধার! সুধাংস্তশেখরের চবিত্রবন্তা 
কীর্তি ও কর্ম সাধনার সকল 
ইতিহাস জানতেন তারাও এ 
দুঃ খকর ঘটনার নিদারুণ 
আকম্মিকতাঁয অভিভূত হযে 
পড়েন। আজ বৎসর ঘুরে 
এসেছে কিন্তু স্থধাংগ্ুশেখবের 
অভাব যেমন ভাবে আমাদের 
বিধেছিল তার তীব্রতার 
আজও লাঘব হয নি। তার 
কারণ আমরা তার ওপর 
এমন কতগুলি ব্যাপাবে 
একান্ত নির্ভর ছিলাম, তার 





বিচার করছি। তিনি ব্যবসায়ী ছিলেন ব্যবসায় ক্ষেত্রে 
তার মত কৃতকর্শা আরও অনেককে পাওয়া যাবে। ব্যবসায় 
সাফল্য ও লাভের অন্কের পরিমাগ শুধু খতিযে দেখলে 
তার চরিত্রের বৃহত্তর দিকটা! আমাদের দৃষ্টি এড়িয়ে যাবে। 
তিনি যে ধরণের ব্যবসায়ে নিজের সমস্ত কর্মমশক্কি ও 
সাধনাকে নিযোজিত করেন সেইটের গুরুত্ব আগে 
বিবেচ্য । পুস্তক প্রকাশ ও পত্রিক! পরিচালনা মূলতঃ এসব 
টিটিনিিডি এর সমাজ ও জাতির বৃহত্তর 
সংস্কৃতির মেবা মাত্র। 
তার বাবসা প্রতিভাকে তিনি 
যে বিশেষ করে এই পথে 
উৎস গ করেন সেট! তার 
আদর্শ, উৎকষ্ট কুচি ও সমাজ 
ও সাহিত্য সেবকের চরিতো- 
শচিত নিষ্ঠার প্রমাণ। অন্ত 
ব্যবসায়ে তিনি পরিশ্রম 
করলে হয়তে সাঞ্চল্যের দিক 
দিষেঃ লাতের দিক দিয়ে 
আরও কৃতিত্ব দেখাতে পার- 


সহজ প্রতিভার কাছে আমর! তেন? প্রকাশকের সুকঠোর 
এমন কিছু বন্তর প্রত্যাশী দায়িত্ব গ্রহথ তিনি করে- 
ছিলাম যা মিটিযে দেবার ছিলেন এবং এই দাধিত্ত 
পক্ষে আজফের দিনে দ্বিতীষ পালনে তিনি যে ধৈর্য্য) অধ্য- 
কাউকে দেখছি ন!। বসায় ও নিষ্ঠার এতিহথ রেখে 


স্বধাংগুশেখরকে স্মরণ 
করতে বসে আজ এই সব অনেক কথাই স্মরণে আসছে। 
এট! পারিবারিক বিলাপ দয়) আত্মীয় অনাত্থীয় প্রতি 
বাঙালী ঠিক এই সত্যই অমভব. করবেন-যদি তারা 
স্বধাংগুশেখরেন গুকীর্তির পরিচয় পেয়ে থাকেন। 


দুখাংশুশেখর চট্টোপাধ্যায় 


গেছেন তার মুল্য আজ 
আমরা কতৃকটা উপন্ধি করে উঠতে পারছি। জাতির 
জীবনে ই্াগ্য প্রকাশকের দান কতখানি, আর তার 
মুল্য কত--তা একটু উদ্ধার স্থষ্ট নিয়ে তলিয়ে দেখলেই 
হুম্প্ট দৃষ্টিগোচর হবে। প্রকাঁশকের সাধনা যে বাণীর 


20৮1 1 ছিসাবে সুধাংগুশেখরের বে স্থান ছিল লাধ্নঠ সৌীনে টাকায় ঝনতকারই শ্রেষ্ট নক, প্রকাশকের 


আমর! আজ তাঁযাথপরিক ন্রগে যে ছাই সর্তাধ 


শীনাা কু ও লারিত্যের রবদীঠ রচনায় অন্ততম অর্ঘ্য, 


২৬২ 





এ সত্য স্থুধাংগুশেখরের কর্ম্বিচিত্র জীবনে বড় রি দেখা 
দিয়েছিল সঙ্গোহ নেই। 1:1৭ 

তার ব্যক্তিগত জীবনের সে ধার! ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত 
ছিলেন তারা! জানেন এই মৃহৃভাষী, সংযতবাক ও 
কর্মোৎসাহী  মানুষটীর অন্তঃকরণ কি কোমল ধাতুতে 
তৈরী ছিল। বাঁরা অল্প-পরিচিত, দূর থেকে তাঁকে বিচার 
করেছেন তারা, তার আন্তরিক গুণগ্রামের সবটুকু পরিচয় 
পান নি। ব্যবসায়ীর কর্তব্যের মধ্যেও তিনি নিজেকে, 
ব্যক্তিগত দৌর্বল্য বা অহমিকাকে রূঢ়ভাবে পশ্চাঁতে ঠেলে 
রেখেছিলেন । 'একমাত্র জাগ্রত নিরপেক্ষ কর্তব্যবোধের 
প্রেরণা সম্বল করে তিনি সকল দায়িত্ব পালন করেছেন। 
এমনও দুর্ভাগ্য; তাকে সহ করতে হয়েছে--যখন তার 
সরল আন্তরিকতাপ্রহ্তত মত অযথা বিরুদ্ধ ধারণার 
জটিলতা সৃষ্টি করেছে'। কিন্তু তার ব্যবসায় রীতি একটা 
বলিষ্ঠ আদর্শে পরিপুষ্ট ছিল এবং সে আদর্শের অবমাননা 
তিনি হতে দেন নি। সেজন্তে তাঁকে হয়তো কেউ কেউ 
ক্ষণিকেয় জন্ত তুল বুঝেছে এবং আমরা জানি এটা 
নুর্ধাংগুশেখরের . পক্ষে কতটা বেদনার কারণ হয়েছিল। 
“সবার মাঝারে থেকে সব! হতে দুরে' তিনি থাকতেন । 
কোন উৎকট আভিজাত্যের প্রকোঁপে তিনি তা করেন 
নি। তার নিজের প্রকান্তিক আদর্খ নিষ্ঠাকে কোন 
অবাঞ্চিত আবহাগুয়ার সংক্রামকত! থেকে বাঁচিয়ে রাখার 
অভীগ্দা থেকেই তার চরিত্র এই বৈশিষ্ট্য দেখা 
দিয়েছিল। 

রিবন হলোনা কিন্ত 


জ্ান্লসভ্ল্বঞ্ধ 


[২৮শবর্ধ-_২য় খণ্ড --২য় সংখ্যা 





আমাদের তুললে চলবে না আমর! এমন এক কর্মলাথকের 


“কথা বলছি ধার সাধনা একটা হুমহৎ পরিধতিয দিকে 


অগ্রসর হচ্ছিল শুধু এবং কালের ডাক এসে অকালে 'তার 
সাধনাকে ক্ষান্ত করে দেয়। মৃতরাং কোন প্রবীণ করিৎ- 


কশ্ধা সাধকের কথা আমরা আলোচনা করছি না। যা হতে 
পারতো তার অপ্রাপ্তির অনুশোচনা আজ আমাদের বিশেষ 
করে পীড়িত করছে। 


ধিনি চিরকাল নিজেকে আড়ালে রাখবার চেষ্টায় ব্রতী 
ছিলেন, সন্ত! যশের আকাঙ্ষা যাকে কোনদিন প্রলুন্ধ করে 
নি--তাকে আজ এই স্থতি বাৎসরিকী উপলক্ষে স্ততির মধ্যে 
টেনে এনে আমরা হয়তো আমাদের ত্বাভাবিক স্বজন- 
বাৎসল্যের, প্রীতি ও অন্থরাগের পরিচয় দিচ্ছি ; কিন্তু তাতে 
নুধাংশুশেখরের চারিত্রিক মহত্ব ও অনন্যসীধারণতার 
কতথানি পরিচয় দেওয়া হল তা! বলতে পারা যায় না। 

যাই হোক, আমরা তাঁকে ভুলতে পারি নি। তার 
তিরোধানে আমর! আত্মীয় বিয়োগের ছুঃথ অনুভব করছি। 
তার আরব্ধ ব্রত যদি সহন্ম দুবিপাক অতিক্রম করে সাফল্যের 
দিকে এগিয়ে যেতে থাকে তবে আমর! কতকটা আশ্বন্ত হব, 
খণ মুক্তির প্রস্নতা ফিরে পাব। 

ব্যবসায়ী, সাহ্ত্যসেবী ও কর্মসাধক সুধাংগুশেখর-_ 
সুখে দুঃখে ও ভাল মন্দে গড়া মানুষ সধাংশুশেখর-- 
নিরহঙ্কার ও বন্ধুবংসল- আঁজ তার কথা স্মরণ কলপতে 
গিয়ে শোকবেদনার মাঝেও থেকে থেকে ইংরাজ কবির 
উক্তি মনে পড়ে---10580) 1785 16 01 01005 01215 
(175 098001001 ! 








শ্ীক্ষেত্রনাথ রায় 


লতি ভ্রিক্কেউ ৪ অভিজ্ঞতা অর্জন ক'রেছেন। ক্রিকেটই হচ্ছে একমাত্র 
ইউ পিঃ_-১৯১ রর রা খেলা_যাঁতে অধিনায়কত্বের উপর খেলার অনেকথানি 
ভবিষ্যৎ নির্ভর করে। পালিয়ার অধিনায়কত্ব চমৎকার, 

সিরা 81558 তার থেকে আমাদের অনেক কিছু পেখবার আছে। 

' ইউ পি ১৪৪ রানে বিজয়ী । তার দলের খেলোয়াড়রাও তার ওপর হথে্ট আস্থা রাখেন 
ইউ পি গতবারের মত এবারও বাঙ্গলাকে পরাজিত এবং পালিয়াও উভয় ইনিংসে তীর প্রতি ক্ষাচ্থি রাখবার 
ক'রেছে। অনেকে আশা! করেছিলেন বাঙ্গল! হয়ত মত খেলা দেখিয়েছেন। বাঙলার ক্যাপ্টেন টসে জেতা 
গতবারের পরাজয়ের প্রতিশোধ নেবে কিন্তু তা সম্ভব ছাড়া আর সব বিবয়ে সুযোগ গেয়েছিলেন কিন্ধ ভাঁয় 





পালিয়ার অধিনায়কত্ব ইউ পি দল মাঠে (ফজ্ডিং করতে নামছে 


হয়নি। ধার! ইউ পির খেল! দেখেছেন তারা একবাক্যে সন্ধ্যবহার করতে পারেন মি। প্রথম ইনিংসে ইউপির 
তাদের প্রশংসা না ক'রে পারবেন না। পালিয়া ও রান ওঠে১৯১। এইবাঁন ষংখ্যাকে আমর! কোনমতেই 
দিলওয়ারকে বাঁদ দিলে ইউ পি. সম্পূর্ণভাবে .তরুখ . বেদী-বলতে। পারিনা বনধং রেশ কম। রানেই তাদের ইনিংস 
খেলোয়াড় ছা, গ্রঠিত; ছ*্বন খেয্োয়াড় আলিগড় ও শেষ হাতেছে ব্ঘতে হবে. একে: ভিট্টাচার্ত এর সম্পূর্ণ 
হিন্দু বিশ্ববিভারয়ের |; পালিয়ার অআিলাকসরদ্, নিধুত।. ₹ৃতিত দাদী: করতে পারেন). "তিনি , ৪১ রানে ডট 
তিনি শুধু বড় বড় ম্যাচ খেলেন নি: ত্কান থেকে যথেট উইকেউ, . পারছেন. ইউ .খরির ১ তরুশতম. খেলোরাড় 


২২৩ 


২৬০ 


জ্গান্নভ্ন্বন্ন 


[ ২৮শ ব্য থণ"-২য় সংখ্যা 


সা সস্তা সা বাপ পা বা তা স্পা স্পা পপ পোপ বপ্পান্পিা কপাল পাখা স্কিপ স্পা পাপ পাপা 


ফানসেলকার সর্কেচ্চি রান করেন ৫১) পালিয়া ৪৫। 
তারা উভয়েই আউট হবার যোগ দির়েছিলেন। ফিক্িং 
ভাল হ'লে আরও কম রানে তাঁদের ইনিংস শেষ হ'ত । 
বাঙ্গল! এক ঘণ্টার ওপর ব্যাট ক'রে ৯. উইকেটে ২৯ 
করার পর সেদিনের মত খেলা শেষ হ'ল। বাঙ্গলা 
এইথানে খুব ভুল ক'রেছে। এতবেশী সতর্কতা অবলম্বন 
করা মোটেই উচিত হয়নি। বোলারদের অযথা সম্মান 
দেখান হয়েছে; শ্বাভাবিক ভাবে খেলে যাওয়া উচিত 
ছিলে! ; তাতে রান সংখ্যাও বেণী উঠতো। দ্বিতীয় দিনের 
খেলায় মাত্র ১৪৭ রানে বাঙ্গলার প্রথম ইনিংস শেষ হ'লো। 


রান তোলে কিন্তু তৎসন্বেও ইউ পি প্রশ্ন: ইনিতগ্রগামী 
হতে সক্ষম হয়েছিলো । দিনের শেষ ইউ প্রি উইকেটে 
৯৭ রান তোলে। ৩ উইকেট পগড়ে যায় মা. উঠ রানে। 


বান .. প্রথম ইমিংসের মত এবারও পালিয়। ও ফানসেলকার 


খেলার গতি ঘুরিয়ে দিলেন। তরুণ খেলোয়াড় ফান- 
সেলকাঁরের খেলা সত্য সত্যই প্রশংসনীয় । তিনি রাঁন 
করেছিলেন ২৭ কিন্তু উইকেটে ছিলেন ৮৫ মিনিট এবং 
পালিয়াকে খুব চমৎকার ভাবে খেলিয়েছিলেন। ইউ পি- 
ব্যাট্সমানদের একটা! জিনিষ বিশেষ লক্ষ্য করবার--তারা 
প্রত্যেকে বেশ দায়িত্ব নিয়ে খেলেছেন । 





সুশীল ৩৮ রান ক'রে অত্যন্ত হুর্ভাগ্যবশতঃ গাউট হলেন; 
কাঁধাল নট আউট..রইলেন ৩১ রান ক'রে। রামচন্ত্রের 
২৫ রানও উল্লেখযোগ্য ৷ ধাক়্া রান তোলার, চেষ্টা 
করেছেন তাঁরাই অল্প বিত্ত সফল হ'য়েছেন। এ তিনজন 
খেলোয়াড় ছাড়! বাঁকী সকলেই “ডিফেলসিভ: খেল! খেলে 
এবং অবথ! বোলারদের সন্মান দেখিয়ে খেলা নষ্ট করেছেন । 


গতবার বাক্গল! প্রথম ইনিংসে ছু'শতোর অনেক বেশী' 


সি পলি গজ ₹ 


ইউ পি ও বাজলা! প্রদেশের সশ্মেলিত খেলোর়াড়বৃশ 


ইউ পির দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয় ২২৬ রানে । পালিয়া 
৬৫ রানি কারে নির্শলের বলে বোল্ড হ*ন। : গুরুদাচর, 
ফিরানৎ ও খাঁজ! যথাক্রমে ৩৯১ ৩* ও ২১ রান, করেন। 
কমল ৪টে উইকেট পান ৬* রাঁনে এবং বেরেণ্ড "১ রানে 
ওটে। বাছা ফিন্িং অত্যন্ত খারাপ হয়েছে। ২৭, 
রাম পিছনে থেকে বাঙাল! ছিতীয় ইনিংস জর করলে ) সময় 
আছে মাত্র আড়াই ঘণ্টার কিছু কম। ইউ পির বোলিং 


ভ্গাল্রভিশ্ত্ 





নর... উজ 
কলিকাতায় নারী-শিন্1 সমিতির প্রদশনীতে সার এস-রাধাবুলন কলিকাতা গভণমেন্ট আর্ট স্কুলের চিত্র প্রদশনীতে শ্রীযুত ভবানী 
ও ময়ুরভর্ভোর রাজ্না৩1 চর, দেবা ঢরণ লাহ! ( দক্ষিণ দিক হইতে তৃতীয়) 





কলিকাতা মেডিকেল কলেজে প্রার্তন ছাত্র মিলন উৎসব 


ভগ্ন 


তি & পোপ ৫) সম 2 )স্মপা্স্মি উস্চ 90 ৩06 2) 0) 3) থু 
| 


পাশ 


)স পাস &)সপশিস্ ৫0সপাশিস্সি এপাশ ৫১)৯পশিনত ৫) $)পরাসি 0৫0 পাম্পি এ রাস্সিতি বাসি পিরাস্ল৬ খাসি পাপ ১৬ সস পাস 





আচাঘ] সার প্ফুলচন্দ রায় 


সম্প্রভি আচার্য রায়ের বয়স অশাতি বৎসর ভয়ায় 
তাহ।র সন্বদ্ধনার আয়োজন চলিতেছে 


1 

ৃ 

ন্‌ 

৪ 

? 

ৃ 

? 

£ রি 
| |: 
| 

৯, 


ূ 
. 


স্টিম (8) (তি 2) (80 8১ স্টিপন ৫) 2 2) ও) ॥ & 


মাঁঘ১৩৪৭ ] 


রা ্ক্জপা কানা থে বা স্থগ বগা স্পা ্গ খা 


বাঙ্গণার ক্যাপ্টেনের যথে্টই জানা ছিলো । তাঁর কি ক'রে 
ধারণা হল এ রকম বোলিংয়ের বিরুদ্ধে আড়াই ঘণ্টায় 
২৭১ রান তোল! সম্ভব হ'তে পারে তা আমাদের বোধগম্য 
ন্য়। আর যাই হোক এটাকে আমরা সৎসাহস বলি না। 
অবশ্য নির্দ্ল ও জব্বর প্রথম জুটি রান খুব দ্রুত তুলে 
১৮ মিনিটে ৩৩ করে । কিন্তু ভ্রত রান তোলা মানে এই 
নয় যে, উইকেটের কথা চিন্তা না ক'রে প্রতিটি বল যে কোন 
উপায়ে মারতে হবে। ইউ পি বোলাররা এর যথেষ্ট সুযোগ 
গ্রহণ করেছেন আর তারাই শেষ পধ্যস্ত সফল হ/য়েছেন। 
একমাত্র কে ভট্টাচার্য্য ত্বাভাবিক ভাবে খেলে ৩* রান 
ক'রে নট আউট থাকেন। জোর ক'রে রান তোল! এক 
জিনিষ আর 7১০০11555 হওয়া আর এক । ক্রিকেট [২০০- 
1৩55 হয়ে খেলার নয়। খুব পিটিয়ে খেলতে গেলেও এখানে 
স্থির মস্তিষ্কে থেলতে হয় । আলেকজেগ্ডার ৬ ওভার বল দিয়ে 
২০ রানে চাঁরটে উইকেট পেয়েছেন ) ফিরাসাঁৎ ৩৯ রানে ৩। 
টাম মনোনয়ন কমিটি সম্বন্ধেও কিছু বল! দরকাঁর। 

বালীগঞ্জ ক্লাব থেকে বেরেগ্ড ছাড়া আর যে দুজন 
খেলোয়াড়কে নেওয়৷ হয়েছিল! তাঁদের খেল! দেখে মনে হয় 
তারা কোন প্রথম শ্রেণীর ক্লাব ম্যাচে খেলার উপযুক্ত নন। 
শুধু উইকেট কিপিংয়ের জন্ত একটি খেলোয়াড়কে টীমে 
নেওয়া ঘেতে পারে না তাও বেডওযষেলের উইকেট কিপিং 


ত্েবশাঞ্জুলা 





২৬১৫ 





এমন কিছু ভাল নয়। তার স্থানে এ দেবকে টীমে নেওয়া 
উচিত ছিলো। উইকেট কিপার হিসাবে তিনি মন্দ নন তবে 
ব্যাটিংয়ে চমৎকার । বালীগঞ্জ ক্লাবের অপর খেলোয়াড়টির 
স্থানে পি ডি দত্তকে সচ্ছন্দে নেওয়া যেত। ভাল টীম 
তৈরী কর! যাচ্ছে না অতএব একটা বড় ক্লাব থেকে 
ছুজন পুরাতন খেলোয়াড় নিয়ে কোনক্রমে ম্যাচ জেতা 
আন্তঃপ্রাদেশিক খেলার উদ্দেশ্ত নয়। আন্তঃপ্রাদেশিক 
প্রতিযোগিতা হয় যাতে প্রতি প্রদেশের উদ্দীয়মান 
খেলোয়াড়রা বড় বড় ম্যাচ থেলতে পান আর তাঁর.থেকে নতুন 
নতুন খেলোয়াড় তৈরী হয়। এতে নাম ক'রতে পারলে তবে 
অল্-ইত্ডিয়ায় তারা স্থযোঁগ পাবেন উদীয়মান থেলোয়াড়রাই 
স্থযোগ পেলে খেলার উন্নতি ক'রতে পারেন । ইউ পিএটা খুব 
তাল ক'রে বুঝেছে । বাঙ্গলা এবং আর দুএকটি প্রদেশই 
বোধ হয় এটা বুঝতে পারেনি । পরাঁজয়েরও একটা শিক্ষা 
আছে অবশ্য তাদেরই কাছে ধার! শিক্ষা কি তা জানেন। 


ভারতবর্ষ ৪২৫১ ও ২৯৩ (€ উইকেট ) 

সিলোন 2৩৭২ ও ৮২ (২ উইকেট) 

সময়াভাবে খেল৷ দ্র হয়েছে। 

ভারতবর্ষ প্রথমে ব্যাট ক'রে ২৫১ রান করে। সর্বোচ্চ 
রান করেন এস গাঙ্ুলী ৬৯; তারপরই নির্মল ৫৩। 





কলিকাতার ইডেন গার্ডেনে অল্‌ ইঙিম্! ও নিলোন দলের সম্মিলিত খেল্োয়াড়বৃন্দ 


৩৪ 


িরিজির রিরিিরতিররেররিরিত 


শ্াব্রত্ঞ্ঞ্ঘ 


সারি “হ্রাস, -স্্হ্্স্স্িস্রল্প্্প্্-্্ক্ি” সস্্রপ্হ্ সপ্ন 
আপা আল খপ  ব্ঙ লা প্খচান্ছপ পথ পা স্ ্হা স্হটগ খা পথ খা বটল 


গাক্চুলীর ওপনিং খুব ভাল হয়েছে। তার একটা ছৃষ্ভাগ্য 
ছিলো, কয়েক বছর তিনি ক্লাব ম্যাচে বেশ ভাল খেলেও 
বড় খেলায় ভাল ফল করতে পারছিলেন না। এবার 
সেটা হয়নি । নির্শুল বেশ চমৎকার খেলেছেন। সিলোনের 


কেলার্ট ও এম গুনরড্ব যথাক্রমে ৭ ও ৭৯ রান দিয়ে 
চারটি ক'রে উইকেট পেয়েছেন । 

সিলোন দিনের শেষে ৩ উইকেটে ৯৬ রান করে। নাইড়ু 
চমতকার ভাবে বোলার চেঞ্জ করে মাত্র ২৪ রানে তিনটে 
উইকেট ফেলে দিয়েছিলেন । 

দ্বিতীয় দিন সিলোনের ইনিংস শেষ হ'ল ৩৭২ রানে। 
তাদ্দের ক্যাপ্টেন জয়বিক্রম ১৩৮ রানে ব্যানাঞ্জির বলে 
মেজরের হাতে ধরা দেন। তিনি ১৮৯ মিনিট খেলে ৮৬ 
রানের মাথায় একবার মাত্র আউট হবার স্থযোগ দিয়ে- 





এদ্‌ ব্যানাজ্জি 

ছলৈন; চার ছিলো ১৫টা। সিলোনের ক্যাপ্টেন ছাড় 
পোরিট, জি গুণরত্ব এবং জয়নুন্বর বেশ ভাল ব্যাট 
ক'রেছেন। দলের শেষ থেলোয়াড় অয়সুন্দর ব্যানাঙ্জিকে 
অদ্ভুত ভাবে পিটিয়েছেন। ভারতবর্ষের ফিল্ডিং খারাপ 
হয়েছে; উইকেট কিপিং তৃতীয় শ্রেণীর। কে ভট্টাচার্য 
৪৯ রানে তিনটে উইকেট পেয়েছেন । ভারতবর্ষ ১২১ রান 
পিছিয়ে থেকে ছিতীয় ইনিং্া দুরু করলে আঁর দিনের শেষে 
এক উইকেট হারিয়ে রাখউঠলো ৪২1 

গা্গুলীর ওপনিং এবারও খুব ভাল হয়েছে। তিনি 
১৩৮ মিনিট খেলে ৬৪ রান করেছেন, চার ছিলো ৪ টো 


[ ২৮শ বর্ষ--২য খও-২ই সংখ্যা 


স্মাপখ -স্হা্ স্ ্ রি 


নাই ৫* রান ক'রে আউট হন? তিনি খুব দৃঢ়তার মন 
খেলেছিলেন + তার খেলা বেশ দর্শনীয় হয়েছিলো । নির্খলের 
খেলা খুব ভাল হয়েছে, উইকেটের চতুদ্দিকে চমৎকার 
ভাবে পিটিয়ে খেলে ৭৩ রান ক'রে নট আউট রইলেন। 
ব্যানাঙ্জিও আউট হননি রান ক'রেছেন ২৫। নাইডু নির্ধলের 
খেলার উচ্চুসিত গ্রশংসা করেছেন; গাঙ্গুলী ও 
ব্যানার্জিরও | ব্যানাঞ্জি সম্বন্ধে তিনি বলছেন, ভাঙ্গনের 
মুখে ব্যানার্জিকে পাঠিয়ে তিনি বন্থবার সুফল পেয়েছেন । 
ৃষ্টান্তস্বরূপ তিনি ভারতবর্ষের সঙ্গে লাঙ্কাঁসায়ার এবং 
ঝোন্বাইয়ে হিন্দু ও পা্শী দলের খেলার উল্লেখ করেন। এ 
ছাড়া সিলোনের খেলার কিছুদিন পরে অনুরূপ ক্ষেত্রে 
নাইডুর একাদশের সঙ্গে মোহনবাগানের খেলায় টীমকে 
রক্ষা ক'রেছেন। গাঙ্গুলী, মাঁনকদ, মান্তক আলি এবং মেজর 
নাইডুর মত চারটি উইকেট যখন মাত্র ৩৮ রানে চলে যাঁষ 
সেই সময় ব্যানাজ্জি এসে নিজন্ব ৮৯ রাঁন করার পর 
আউট হ'ন। 

নাইডু ৫ উইকেটে ২৯৩ রান ওঠার পর ইনি”স 
ডি্লিয়ার্ড ক'রলেন। সিলোন ছু* উইকেটে রান তুললো ৮২। 
সময়াতাবে থেলা ড্র হ'য়ে গেল। 

নির্শলের “ফুটওয়ার্ক” বেশ ভাল; ড্রাইভ, পুল এবং 
অন্তান্ট মারগুলিও দর্শনীয়। নাইড়ুর মতে নির্মল শীঘ্র অল্- 
ইপ্ডিয়। খেলোয়াড় হ'তে পাঁরবেন। ক্রিকেট খেলা সম্বন্ধে 
মেজর নাইডুর মত ব্যক্তির অভিমতের মূল্য যথেষ্ট । আমাদের 
মনে হয় নির্মল এবং আরও ছুএকজন উদীয়মান খেলোয়াড়ের 
নাইডুর মত বিচক্ষণ ও প্রবীণ খেলোয়াড়ের নিকট অন্তত: 
কিছুদিন নিভূ'ল .“ফুটওয়ার্ক এবং বিভিন্ন রকমের মার 
শিক্ষার প্রয়োজন । 

সিলোনের বিরুদ্ধে যে টীম গঠিত হয়েছে তাঁকে 
ভারতীয় একাদশ নাম দেওয়া! উচিত হয়নি। আমরা 
অবশ্তট একথা বলি ন| যে, এগার জন টেষ্ট থেলোকাড় নিয়ে 
ভারতবর্ষ সিলোনের বিরুদ্ধে থেল্বে ; তবে আমরা অবশ্য 
এটুকু আশা ক'রতে পারি যে, ধাঁদের দলে নৃতন নেওয়া 
'হবৈ তাঁরা উদীয়মান খেলোয়াড় হবেন, এবং বড় ম্যাচ খেলার 
স্থযোগ পেলে ভবিষ্কতে ভাল থেলোয়াড় হ'তে পারবেন। 
কিন্ত চীম মনোনাঁন ব্যাপারেও ব্রা্জনীতি গুরোমানরায় 
বর্তমান। বিভিন্ন সম্প্রদায় থেকে জোর ক'রে লোক নেওয়া 





না রর হহ্জকনান্ুক্যা 


খা স্ব 


হত 





»য়েছে তাও ভাল বাছাই হয় নি। মেজর নাইডুর .দত মেজর নাইডুর একাদশের বঙ্গে মোহনবাগানের খেলার 
একজন খেলোয়াড়কে ক্যাপ্টেন ক'রে ভারতীয় একাদশ নাম দেব অতি অল্প সময়ে নাইডূ, ব্যানার্জি ও মাস্তকের 
দিয়ে তারপর যেভাবে একটা জোড়াতালি দেওয়া ট্রাম তৈরী বলে উইকেটের চারিদিকে পিটিয়ে খেলে সমস্ত 
করা হয়েছে তাতে ক্যাপ্টেন এবং ভারতবর্ষের সন্মান রক্ষা দর্শকদের এবং মেজর নাইডুকে এত সুগ্ধ করেছিলেন যে; 
হযনি। এ দেব সিলোনে তাদের বিরুদ্ধে ভাল থেলেছিলেন। নাইডু খেলার শেষে বলেছিলেন, ণুন০ [99555565৪11 
গত বছর এবং এবছর স্থানীয় খেলোয়াড়দের মধ্যে তার ব্যাটিং 1০070 1710 2170 1785 036 [78210110501 27) 4117 


উপ 


-স্দেতিস্দ2573 ৯ 





. স্কলিকাত। বি্বিন্তালয়ের ক্রিকেট দল 





[17018 ০/1০1.651, কিন্তু টীমে স্থান 
পাঁন টাউফিক, নাটাল ও হাঁণ্ট। 
সত্যি সত্যিই যদি বাঙ্গল! দেশে এমন 
খেলোয়াড়ের অভাব হ'য়ে থাকে 


শুট ধাদের টামে নিলে ম্যাচ জেতার পক্ষে 


কিছু সুবিধা হয় অথবা, ব্যক্তিগত 
ভাঁবে প্রসব খেলোয়াড়দের উন্নতিরও 
কোন আশ থাকে তাহ'লে বাঙ্গল। 


ট্রি থেকে খেলোয়াড় না নেওয়াই উচিত। 
টি হাণ্টের মত উইকেটকিপার নেওয়ার 


চেয়ে বাইরের থেকে উইকেট কিপার 


প্র আননোই ভাল ছিলে । নাটাল ঝ 


টাউফিকের চেয়ে অনেক ভাল খেলো- 
যাড় বাঙলা! দেশেই আছেন । 


ক্লোড্ছিপ্উন্ম ন্ল্লিক্সা 
ভ্িন্ক্কেট টুর্পধত্প্উ & 


কলিকাত৷ বিশ্ববিস্ভীলয়-_ 
২০৬৩ ও ২০৩ 

বেনারস হিন্দু বিশ্ববিস্তালয় 
_২০৬ ও ১৫৩ (৫ উঃ) 

বেনা রস হিন্দু বিশ্ববিষ্ভালয় ৫ 
উইকেটে বিজয়ী হয়েছে । 

কলিকাত। বিশ্ববিষ্ভালয়ের প্রথম 
ইনিংসের ২০৬ রানের মধ্যে ডি সেন! 
৬৪ ও এস দাস ৩০ রান করেন। 
ডি. সেনা +৯ মিনিটে ৫€ট1 বাউ- 
গুাঁরী ও একটা ৬ করেছিলেন। 


এভারেজ বেশ ভাল অথচ তাকে ভাল দ্যা খেলবার স্থযোঁগ রঙ্গরাজ ৭২ রানে ং উইকেট এবং গুরুদাচার ৭৫ রানে 
দেওয়। হয় না। ন্িলোনের. খেলার কয়েক দিন, পরে ৫ উইকেট পান। হিন্দু বিশ্ববিসষ্ভালয়ের প্র ইনিংসে 


২৩৬৬৮ 








ভাম্তন্বঞ্দ 





[ ২৮শ বর্ব_-২য় খণ্ড ”-তয় সংখ্য। 





৬ উইকেটে মাত্র ১০& রাঁন উঠে। আঁটি উইকেটের জুটাতে ৫০্পণ্টীক্কুক্নাল্ল ভ্রিনক্কেউ স্কাইইন্নাক্ল ৪ 


পানসেলকার ও রেত্ী ৬৩ বান করে দলের শোচনীয় 
অবস্থার গতি পরিবর্তন করেন। পানসেলকারের যখন 
কোন রাঁনই উঠেনি তখন অনিল দত্তের বলে উইকেট কিপার 





শপ | পাস সাপ “০ পাস 


এস আর বাহারী নির্মল চ্যাটার্জি 

(ক্যাপটেন বেনারস হিন্দু বিশ্ববিস্তালয়) (ক্যাপটেন কলিকাত। বিশ্ববিস্তালয়) 
পানসেলকারের অতি দোঁজা। ক্যাচ ফেলে দেন। স্থানীয় 
দলের ফিল্ডিং মোটেই ভাল হয়নি। অধিনায়ক নির্্লের 
বল ভাল হয়েছিল, ৪১ রানে ২টা উইকেট পান। তার 
একই ওভারে ছু*টো ক্যাচ কেউ লুফতে পারেননি । এস 
ব্যানার্জি ৪৮ রানে €টা উইকেট পেয়েছিলেন । সাধুর বল 
ভাল হয়েছিল কিন্ত কোন উইকেট পড়েনি। রেণ্ডি ৫০, 
দাঁসতোর ৫৯ ও পাঁনসেলকাঁর ৪২ রাঁন করেন। কলিকাতা 
বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ইনিংসের স্চনা! ভাল হয়নি। খুব 
তীড়ীতাড়ি উইকেট পড়তে আরম্ভ করে। দলের এই সংস্কট 
অবস্থায় এন চ্যাটাজ্জি ও ডি সেন! খেলার শোচনীয় অবস্থার 
পরিবর্তন করেন । নির্মল চমৎকার ভাবে খেল ৪১ বান 
করেন। ডি সেনা প্রায় ৪* মিনিটে ৫* রান করে 
রঙ্গরাজের বলে খাজার হাতে ধরা দেন। তিনি কয়েকবার 
আউট হবার গুযোঁপ দিয়েছিলেন। এইচ সাধুর ৩২ ও 
বি ব্যানাজির ২৮ বাঁ উল্লেখবোগ্য । বি ব্যানার্জি উভয় 
ইনিংসেই লাষ্ট ত্যাঁন বেধে ভাল খেলেছিলেন । বেনারস 
দ'লর ফিল্ডিং ভাঁল হয়েছিল। রঙগরাজ ৬৮ রানে ৩ 
উইকেট ও গুরুদাচির ৮৩ রানে ও উইকেট পান ।। বেনারস 
দল দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেটে তাদের প্রয়োজনীয় ১৫৩ 
রাঁন তুলে নেয়। অনিল দত্ত মাত্র ৩১ রানে ৪টা উইকেট 
লাভ ূ 


ঘুসলীম- ৩৮১ ও ৪৮ (৩ উইকেট ) 

রেষ্ট ২২ ও ২২৬ 

মুসলীদদল ৭ উইকেটে পেপ্টা্গুলার ক্রিকেট ফাইনালে 
বিজয়ী হয়েছে। প্রতিযোগিতায় হিন্দুদল যোগদান করে নি। 

রেষ্টদল টসে জয়লাভ করে প্রথমে ব্যাট করতে নামে । 
ক্যাপ্টেন জে হারিস ৮২ রান করেন। এম কোছেনের 
৩৮ রানও উল্লেখযোগ্য । আমির ইলাহি ৮৮ রানে ৭টা 
উইকেট পান। মুসলীমদলের প্রথম ইনিংস শেষ হয় ৩৮১ 
রানে, মাস্তকআলী ১১ রান করেন। ওয়াজীর আলীর ৫৯, 
দিলওয়ার হোসেনের 8৪ ও নাঁসিরুদ্দিনের ৪৪ রান 
উল্লেখযোগ্য । মাম্তকের থেল| খুবই দর্শনীয় হয়েছিল । 
রেষ্টদলের ফিল্ডিং ভাল হয়নি; অনেকগুলি সহজ ক্যাচ নষ্ট 
হয়েছে । হারিস ৪* রানে ৪টা উইকেট পেয়েছেন । রেষ্ট 
দলের দ্বিতীয় ইনিংমে রাঁন উঠে ২২৬। মাসকারেনহাস 
দলের সর্বোচ্চ ৪৯ রান করেন। মুসলীমদ্দলের দ্বিতীয় 
ইনিংসে ৩ উইকেটে ৪৮ রাঁন উঠে; হাজারী মাত্র ১৫ 
রানে ২টি উইকেট পান। 


সিলোন :--২৩৪ ও ১৩৪ 

অল ইগ্ডিয়া :--৪৭৮ (৭ উইকেট ডিক্রিয়ার্ড) 
দিলোন এক ইনিংস ও ১১* রানে পরাজিত হয়েছে । 
কলকাতার চেয়ে বোদ্বায়ের টীম যথেষ্ট শক্তিশালী 





নিখিল ভারত ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতার 

' বোম্বাইয়ের ব্যাডমিন্টন খেলোর়াড়গণ 
হয়েছে । কলকাতার চীমে অল-ইতিয়! ব্যাটসমান কেউ 
ছিলেন না। অধিনায়ক হিসাবে নাইভ্ুর, খ্যাতি. হয়ত 


মাঘ---১৩৪৭ ] 





হ্থেকলা শুক 





১৯০ 





স্ব-স্ব 





পূর্ববাপেক্ষা বৃদ্ধি পেয়েছে কিন্তু ব্যাটসমাঁন হিসাবে নাইডুর মিনিট খেলে ১৩৭ রান দুর্ভাগ্যবশত রান আউট হয়ে বান.) 


বোধহয় আর ততথানি দক্ষতা নেই । বোশ্বাইয়ে ভারতবর্ষের 





নিখিল ভারত ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতায় পাঞ্জাবের ব্যাডমিপ্টন খেলোয়াড়গণ 


অন্ততম শ্রেষ্ঠ ব্যাটসমান বিজয় খেলছেন। যে সব 
উদীয়মান খেলোয়াড় টামে স্থান পেয়েছেন তাদের মধ্যে 
রঙ্গনৈকার, হাঁজারে এবং অধিকাঁরীর পরিচয় নিশ্রয়োজন । 
বিশেষত: রঙ্গনেকারের থেলা সমগ্র ভারতের ত্রীড়ামোদিদের 
দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে । এছাঁড়। প্রবীণ ক্যাপ্টেন দেওধর 
এখনও তরুণের মত উৎসীহ ও শক্তি নিয়ে খেলেন এবং 
সেদিনও বোস্বায়ের বিরুদ্ধে ডবলসেঞ্চুরী” ক'রেছেন। 

প্রথম দিনের খেলায় দর্শক সমাগম £য়েছে আটহাজার । 
সিলোন টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করে এবং তাদের প্রথম 
ইনিংস শেষ হয় ২৩৪ রানে। জি গুণরত্ম মাত্র ৪ রানের 
ন্ট সেঞ্চুরী করতে পেলেন নাঃ মেত্ডিস ৪২ রান 
করেছেন 'টিগ্পা ৩৮ রানে পাঁচটি আর সৈয়দ আমেদ 
৪৯ রানে তিন উইকেট পেয়েছেন। সি এস নাইডুর ভাগ্য 
ভয়ানক খারাপ তিনি খুব ভাল বল করেও ইঞ্জিনিয়ারের 
খারাপ উইকেট কিপিংয়ের জন্য বেশী উইকেট পান নি। 
বহুবার ইঞ্জিনিয়ার ষ্টাম্প করার হুযোগ অপব্যবহার করেছেন । 
ভারতবর্ষ দিনের শেষে ১ উইকেট হারিয়ে ৮২ রান করে ) 
বিজয় ৫২ রান ক'রে নট আউট থাকেন। 

ছিতীয় দিনের খেলায় ভারতবর্ষে ৭ উইকেটে ৪৭৮ 
হবার পর দেঞধর ইনিংস ডিক্লিয্ার্ড করেন। বিজয়. ১৬৫ 


তিনি মাত্র ৭৩ রানের সময় একবার স্থযোগ দিয়েছিলেন। . 
রঙ্গনৈকার ১০৭ মিনিট থেলে 
১১৭ রান ক'রে পোরিটের 
বলে মেগ্ডিসের হাতে ধরা 
দেন। তার খেলায় “গার 
ছিলো ১১টা। অধিকারীর . 
৯০ এবং দেওধরের ৬৯ রানও 
উল্লেখযোগ্য । 

তরুণ থেলোয়াড় বঙ্গনে- 
কার ও অধিকারীর সাঁফল্য 
ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ 
সমুজ্ছল ক+রবে »লেই আমা- 
দের বিশ্বাস । 

সিলোন ২৪৪ রানে 
পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস 
সুরু করলে। হাজারে এবং সি এস নাইডুর বলে কোন 
খেলোয়াড়ই স্থবিধা করতে পারেন নি। দলের সর্ব্বোচ্য 
রান করেন এ গুণরত্ম ৩৭! হাজারে ৩৪ রানে চার 
এবং নাইডু ৩২ রানে তিন উইকেট পান। 

সিলোনের খেলার ফলাফল ক্রমশঃ খারাপের দিকে 
ষাচ্ছে। প্রথম খেলায় তারা মাপ্রীজকঝে পরাজিত করে 
তারপর ক'লকাঁতীয় খেলা অমীমীংসিতভীবে শেষ হয় 
এবং বোম্বায়ের খেলায় তারা পরাজিত হ'লো। অবশ্য 





'- নিখিল ভারত ব্যাডবিন্টন প্রতিযোগিতায় 
| দিল্লীর ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়গণ 


তাদের খেলোয়াড়দের কৃতিত্বের প্রশংসা আমাদের করতেই 
হবে। সিলোনের লোক সংখ্যা পাঞ্জাবের, খক পঞ্চমাংশ 


২০ 


ক্কিন্ত তাঁদের দেশে ক্রিকেট খেলার চচ্চা আছে । আমরা যদি 
তাদের হারিয়ে দিই তাতে আমাদের গৌরবের কিছু নেই বরং 
হারাতে না পাঁরাটাই অগৌরবের। সিলোন এবং ভারতবর্ষ 
থেকে যদি এই রকম প্রতি বংসর টম পাঠানোর বন্দোবস্ত হয় 
তাতে. উভ্য়দেশের ক্রিকেট খেলার যথেষ্ট উন্নতি হ'তে পারে। 


.ক্বযাত্সিপ্উন্ ৪. 


ব্যাট মিণ্টন ক্রমশ: সব দেশেই বেশ জনপ্রিয় হঃয়ে উঠছে 
এমন কি টেনিসের ডেভিস কাপের অনুকরণে যাঁতে ব্যাড- 
মিণ্টন প্রতিযোগিতা হ"য় তার চেষ্টাও চলছে। 

সম্প্রতি ভবানীপুধ ওয়াই এম সিএ কোর্টে অল-ইগডয়া 
ইষট-ইত্তিয়া ও বেঙ্গল চ্যাম্পিয়ীনসীপের মত তিনটি বড় বড় 
প্রতিযোগিতা সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে । এবারের অল- 
ইপ্ডিয়ার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা পেপাংয়ের বিখ্যাত তরুণ 
খেলোয়াড় চী চুন কেংয়ের উক্ত প্রতিযোগিতায় যোগদান ও 
জয়লাভ। .কেং একজন খুব উচ্চ শ্রেণীর খেলোয়াড় । এখানে 
তাঁকে একমাত্র মাঁডগাঁউকারের সঙ্গে জোর দিয়ে খেলতে 
দেখা গিছলো আর তাকে তিনি ্রেট সেটে হারিয়ে দেন। 
অল-ইগিয়া ফাইনালে তিনি বোম্বাইয়ের পটবর্দনকে ১৫-৯ 





দায়ের খ্যাতনামা ব্যাডষিস্টন খেলোয়াড় চু চুন কেং নিখিল তারত 
কামি্টন প্রতিযোগিতায় যোগান রুরেদ 


শা বতন্হথণ 


[ ২৮শ বর্ষ- ২য় খণ্ড---২য় সংখ্যা 


১৮-১৫ গেমে হারিয়ে বিজয়ী হ/য়েছেন। কেং একটু 
জোর দিয়ে খেললে পটনবর্ধনকে অনেক কম পয়েণ্টে হারাতে 





তরুণ ব্যাডমিপ্টন খেলোয়াড় এইচ বস্তু এ বৎসর ইট্টইঙিয়! 
ও বেঙ্গল চ্যাম্পিয়নসীপ প্রতিযোগিতার পুরুষদের 
সিঙ্গল ফাইন।লে পরাজিত হয়েছেন 
পারতেন । কেং বিভিন্ন রকমের দর্শনীয় ট্রোক দিয়ে খেলেন ; 
স্মাসিংও চমতকার । ১৯৩৯ সালে তিনি সাতবার পেরাঁক 
চ্যাম্পিয়ান এবং তিনবার সামুয়েলের মত আস্তর্জাতিক 
খেলোয়াড়ের বিজয়ী টীম চোং ফোরকে পরাজিত করেন। 
পর পর চারবার অল-ইন্ডিয়! বিজয়ী লুইয়ের চেয়ে তার 
থেলার ষ্ট্যাপ্ডার্ড ভাল কিনা তা বলা শক্ত। লুই এবার 
প্রতিযোগিতার যোগদান কপ্রতে পারেন নি। 
বোস্বাইয়ের ম্যাগউ ত্রাতৃদ্বয় ভবললে পাঞ্জাবের 
হরনারায়ণ ও জন্ুরকে পরাজিত করে বিজয়ী হন । 
মহিলাদের খেলায় দুবছর পয়ে আবার কুমারী গস 
কুমারী কুককে পরাজিত ক'রে বিজয়িনী হয়েছেন । 
এবারের ইষ্ট ইণ্ডিয়। ও বেল চ্যাম্পিয়ানসীপ পেয়েছেন 
মাঁডগাউকার ৷ উভয় প্রতিষোগিতাতেই বাঙ্গলার উদ্দীয়মান 
খেলোপ্লাড় সুনীল বনু ফাইনালে পরাজিত হুন। ইষ্ট-ইগডিয়া 
চ্যাম্পিয়ানসীপের ফাইনালে উভয় খেলোয়াড়ের মধ্যে খুব 
প্রতিতবন্বিত1 চ'লেছিনো ; তৃতীয় গেমে. সুনীল একটু ভাল 
করে খেলতে পারলে মাডগাঁউকারকে পরাজিত কারে 


মীখ- ১৩৪৭ ] ৫খেক্শাঞুজ্লা ২১ 


শর” স্ব “রদ স্যর সহ বা” -. সে বব হাস... বস 








সে 


পারতেন । সেমিফাইনালে তিনি গতবারের বিজয়ী টি প্রথম ডুরাণ্ড কাঁপে যৌগদাঁন ক'রে তি কাঁপ বিজয়ী হ 
ব্যানার্জিকে সহজেই পরাজিত ক'রেছিলেন। টি ব্যানার্জির দলের সম্মান আরও বৃদ্ধি করেছে। দলের এ সাফল্যে ভা 
চেয়ে তার খেলা অনেকাংশে 
উন্নত এবং বর্তমান বৎসরে 
তাঁকে বাঙ্গালী খেলোয়াড়দের 
মধ্যে নিঃসন্দেহে সর্বশ্রেষ্ঠ বলা 
চলে। তিনি এবার সাউথ 
ক্যা লকাঁটা চ্যাম্পিয়ানসীপ 
বিজয়ী হয়েছেন। অল- 
ইত্ডিয়ায় তিনি বোথ্াইয়ের 
বিখ্যাত খেলোয়াড় ডি ম্যাগ- 
উকে সহজেই পরাজিত 
করেন। 





ডুল্লা ক্ষার্স 
স্কাইন্বাজ্ন £ 
ক্যালকাটা ফুটবল লীগ 
চ্যাম্পিয়ান ও বোঙ্ছে ডুরাও কাপ বিজয়ী মহামেডান দলের থেলোয়াড়গণ এবং মহামান্য বড়লাট বাহাদুর 


রোভার্দ কাঁপ বিজয়ী মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাব ভারত- তীয় ক্রীড়ামোদী মাত্রেই গর্ব অনুভব করবেন। ইতিপূর্বে 
বর্ষের ফুটবল খেলার ইতিহাসে পৃর্েই এক নূতন অধ্যায় হৃষ্টি বে-দীমরিক কোন ফুটব্ল ক্লাবই ভুরাঁণ্ড কাঁপ জয়ের সম্মান 








পপি সক এগ শত এ কাস | পা 


৯৮০ 
শা 





ডুরাণ্ড কাপ ফাইনাল খেলায় মহামেভান দলের গোলের সম্দুখের একটি দৃপ্ত ? মহামেডান দল ২-১ গোলে বিজয়ী হয়েছে 
করেছিল। ভারতবর্ষের খেলোয়াড় মহলে তাঁদের গৌরবের অর্জন করতে সক্ষম হয়নি। ফাইনালে রয়ের ওয়ার উইক 
বাদ আজ অবিদ্িজনয়। এবৎসর মহাঁমেডান স্পোটিং ক্লা₹ সায়ার দলকে ২-১ গৌলে তারা পরাজিত করে॥ 


হই ৃ | ভারাভন্্ 1 ২৮শ ব-_-ংয় খর্ড- ২ সংখ্যা 


হি স্যর” স্ব স্্ স্ল স্ব স্ব স্হ স্ব স্ব যত বল হত স্ফ স্য স্ব স্ব স্ল ফসল স্ব ন্ ব্ 


বিভিন্ন বিভাগের ফলাফল + 
ভইউ ০৮০৮৭ লী পুরুষদের সিঙ্ষলদ-_এস এল আর সোহানী ৬-১ ৬-৪, 
| £ ৬- গেমে জে মি মেটাঁকে পরাজিত করেন। 
কলিকাতা সাউথ ক্লাব কর্তৃক পরিচালিত ই ইিয়া পুরুষদের ডবলস-_এস এল আর সোহানী ও এইচ এল 
লন টেনিসের খেলা শেষ হয়েছে। ভারতের এক নম্বর সোঁনী__জেমি মেটা ও ওয়াই আর সাবুরকে পরাজিত 


টেনিস খেলোয়াড় গাউস মহম্মদ প্রতিযোগিতায় যোগদান করেন। 
করেন নি। ফলে পাঞ্জাবের এস এস আর সোহাঁনী মিক্সড ডবলস-_-এস আর সোঠানী ও মিসেস সি 
পুরুষের সিঙ্গলস ও মিক্সড ডবলসে সাফল্য লাভ করতে সক্ষম কারগিন ৬-৩, ৬-২ গেমে জি মি মেটা ও মিসেস ফুটিটকে 


হন। শ্রেষ্ঠ প্রতিযোগিতায় সোহানীর এই কৃতিত্ব এইবারই পরাজিত করেন। 





ইষ্ট ইত্ডিরা টেনিস প্রতিযোগিতায় যোগদানকারী খেলো য়াড়গণ ও সাউথ.ক্লাবের পরিচালকগণ 
প্রথম। সুইডিস ডেভিস কাপ থেলোয়াঁড় ম্যাক্স এলমারের মহিলাদের সিঙ্গলস- মিসেস মান্সি ৬-২ ৬-২ গেমে 
খেলা দর্শকদের মোটেই চমতরুত করতে পারেনি । ফাইনালে মিস ডিকৃ্সনকে পরাজিত করেন। 
যাওয়া ত দূরের কথা সিঙ্গলসের সেমি-ফাইনালেই তরুণ প্রবীণদের ডবলস-__এস ক্রক এডওয়ার্ডস ও এন আয়ার 





খেলোয়াড় জে মি মেটার কাছে ছেরে যান। ৮-৬ গেমে এইচ ক্রক ও এস মেয়ারকে পরাজিত করেন। 
মাহিত্য মতবাদ 
নন্র-শ্রক্কাশ্শিভ পুভ্ভক্কান্যক্লী 
নরেজ দেব প্রণীত “ওমর-খৈয়াম” ৭ম সং--৪২ মণিলাল বন্দ্যোপাধ্যায় প্রীত উপন্ভাস “আলো! ছায়ার থেল1”--২২ 
তা... - “বন্দ্যোপাধ্যায় প্রণীত উপন্যাস “হারাণে। হুর"--২৫* মতিলাল দাশ প্রণীত নাটক “নব্যা ও সবিতা”--১।, 
প্রভাস ঈ+.. গীত “হিটলারের পতন”--১1* ভবেশচজ রায় ও নয়েজমাথ সিংহ প্রণীত “আধুনিক যুদ্ধ'--২২ 
দেবেজরানাথ মিত্র এম-এ, বি-এল প্রণীত “কৌতুক কথা”-_-১২ ভক্টর সত্যনারায়ণ প্রণীত "রোমাধক রাশিয়ায়”--২।* 
সস্প্পীক্্-_ শ্রীফণীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় এম-এ 


কর্ণওয়ালিস্‌ সীট, কলিকাতা, ভারতবর্ধ প্রিন্টিং ওরা হইতে গাবিশাপদ ভা চারধ্য কর্তৃক দর ও প্রকাশিত 


শ্গাক-শ্ 





গর বো 


শিল্পী-শ্রধুক্ত কমলাকা& ৮টোপ!ধায় উ৭৩ধ প্রাণ ওয়ার, 





জঃর৪৪1888888888878888885888888885888)3888* 


দ্বিতীয় খণ্ড 


৭ 88688?878887888888 88888 


অষ্া 


10851858)888808885888588886858888885858898888185888885888888888)87-1588888888888888988888888288888889888888188888888888888888888868 


€? হঃচুর8888$ 80188888887 85777772622 


তৃতীয় সংখ্য। 


1 যয সাধার 


“্88888888887888888৫ 


হিন্দু-মুসলমান 


এস, ওয়াজেদ আলি বি-এ ( কেন্টাব ), বার-এট-ল 


এদেশে প্রপানভ দুই সম্প্রদায়ের বাস হিন্দু এবং 
মুসলমান । এ কথা একান্তভাবে স্থনিশ্চিত যে বাঙ্গলার 
দিন ততক্ষণ আসবে »1 যতদিন এই ছুই সম্প্রদাঁষ পরস্পরকে 
ভানবাসতে না শিখবে, আর উভয় সম্প্রদায়ের লোক 
নিজেদের প্রথমত বাঙ্গালী_-শার তারপর হিন্দু কিনা 
ঘুদলমান হিসাবে ভাবতে না শিখবে । এই মঙ্গলপ্রস্থ 
মানসিকতার স্থষ্টি কি ক'রে কর! যেতে পারে সেই হচ্ছে 
বাঙ্গালীর সবচেয়ে বড় সমস্যা । এ সমস্যার আলোচনায় 
তিনটি প্রশ্ন এসে দেখা দেয়; আর তাদের উত্তরের উপর 
সমস্যার মমাঁধান নির্ভর করে। প্রশ্নগুলি হচ্ছে__( ১) ছুই 
স্প্রদায়ের বর্তমান বিরোধের কারণ কি, (২) কি উপায় 
সবলম্থন করলে সে বিরোধ দূরীভূত হতে পারে এবং (৩) কি 
উপায়ে ছুই সম্প্রদায়ের মধ্যে নিবিড় একত্ববোধের কৃষ্টি করা 
খেতে পারে? 


বিরোধের কারণ কি সেই প্রশ্নেরই প্রথমত আলোচনা! 
কর! যাক; মানুষ কেন ব্যক্তিবিশেষকে ভালবাসে, আর 
ব্ক্তিবিশেষের গ্রতি বিদ্বেষের ভাব পোষণ করে? 
কেন সে সমাজবিশেষকে ভালবাসে আর সমাজবিশেষের 
প্রতি বিদ্বেষের ভাব পোষণ করে? পাঠক একটু ভেবে 
দেখলেই বুঝতে পারবেন আমাদের ভালবাসার কারণ হচ্ছে, 
যে সব জিনিসকে আমরা ভালবাসি, যে সব জিনিস আমরা 
চাই, সেইসব জিনিস ব্যক্তি এবং সমাজ-বিশেষের মধ্যে 
পাঁই বলেই তাঁদের আমরা ভালবাসি; পক্ষান্তরে বিরোধের 
কারণ হচ্ছে, যে সব জিনিসকে আমরা ভালবাঁসি-_ব্যক্তি 
কিম্বা সমাঁজ-বিশেষ থেকে সে সব জিনিসের বিপদের 
কারণ আছে বলেই তাঁদের প্রতি আমরা বিরোধের ভাব 
পোষণ করি । আর যখন ব্যক্তি কিন্বা সমাজ-বিশেষ থেকে 
আমাদের প্রিয় জিনিসের সুবিধার কিন্বা বিপদের কোনটিরই 


২৭৩ 


৩৫ 


২২০৩৪ 


ভ্াল্রভন্হ্ 


[ ২৮শ বর্-_২য় খণ্ড ৩য় সংখ্যা 


৪ হা ০ “সা প্যপ -স্হাড ব্হপ - ৮ বদ খপ - ডে ব্য -স্ম্াচ বসা -স্থ বহাল ব্য “স্রাব” পন্য ব্য -্যাচ বে বন্য বদ বচপ _ -ব্ ব্যাগ বদ ব্য “হে ব্য ব্যালে স্পা - সে  স্ ব্য - আল বস -্যাটগ বে স্ব সপ * 


সম্ভাবনা থাকে না তথন সেই ব্যন্তি এবং সমাজের প্রতি 
আমরা ওদাসীন্তের ভাব পোঁধণ করি। প্রতিবেশিক 
সমাবেশের দরুণ হিন্দু-মুসলমান উভয় সমাজের জীবন 
এমনই ঘনিষ্টভাবে সংশ্লিষ্ট যে, হয় তাঁরা পরস্পরের জীবনকে 
সুভাঁবে প্রভাবাদ্িত করবে, নয় কুভাবে প্রভাবাদ্বিত করবে ; 
এক সম্প্রদায় অন্ত সম্প্রদায়ের প্রভাব থেকে মুক্ত থাকতে 
পারে না। স্থৃতরাং হয় তার! পরস্পরকে ভালবামবে নয় 
ঘ্ণা করবে; ওগুদাসীন্ের ভাব পরস্পরের প্রতি তারা 
পোষণ করতে পারে না। 

আপাতত এই ছুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ঘ্বণা অর্থাৎ 
বিরোধের ভাঁবটাই প্রবল। তার কারণ কি? আমার 
মনে হয় নিন্ললিখিত কাঁরণগুলিই বর্তমান বিরোধের জন্য 
মুখাত দায়ী, যথা-(১) এ্রতিচাসিক শিক্ষার বর্তমান 


প্রণালী, (২) ধর্শগুরুদের অবাঞ্চট প্রভাব, (৩) 
সাম্প্রদায়িক মনোবৃত্তিসম্পন্ন স* প্রভাব (৪ " 
চাকুরীজীবী মধ্যবিত্ত. শ্রেণীর অং '৩ক প্রতিযোগিতা, 


(৫) বর্তমান রাজনীতিক জীবনে এই চাকুরী-জীবী 
মধ্যবিত্ত শ্রেণীর আধিপত্য; (৬) অতীতের সাম্প্রদায়িক 
রাষ্রকে ফিরিয়ে আনবার দুরাঁশা এবং দুঃস্বপ্ন, (৭) বিভিন্ন 
ধরণের জীবনধারণপ্রণালী, (৮) সম্মিলিত অন্তষ্ঠান 
প্রতিষ্ঠানাদির অভাব, (৯) ভবিষ্যতের বিষয় কোন সুস্পষ্ট 
ব্যাপকতর সামবায়িক আদর্শের অভাব এবং (১০) বাঙ্গালীর 
বর্তমান জীবনে অবাঙ্গালীর অতিরিক্ত প্রভাব । 

ছেলেবেলা থেকে আমরা পড়ে আসছি সুলতান মাহ মুদ 
ভারত আক্রমণ ক'রে হিন্দুদের অসংখ্য মন্দির ধ্বংস 
করেছিলেন* মন্দিরের বিগ্রহাদিকে ধুলিসাঁৎ করেছিলেন, 
পুরোহিতদের লাঞ্ছিত নির্যাতিত করেছিলেন, হিন্দু জন- 
সাধারণকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিলেন। তারপর 
আমরা পড়ি সুলতান আলাউদ্দীন কেমন ক'রে রাণী 
পদ্িনীর লোভে রিপুপরবশ হয়ে চিতোর রাজ্য আক্রমণ 
করেছিলেন । আমাদের বল! হয় চিতোরের বীর যোদ্ধার! 
অতুলনীয় বীরত্বের মঙ্গে যুদ্ধ ক'রে রণক্ষেত্রে প্রাণ-বিসর্জজন 
করেছিলেন, চিতোরের কুল-ললনার! রাণী পদ্মিনীর নেতৃত্বে 
প্রজ্জলিত চিতায় আত্মাহুতি দিয়েছিলেন। তারপর 
আমাদের পড়ান হয় আওরঙগজেবের গৌড়ামির কথা । তাঁর 
গৌঁড়ামির ফলে কি ভাবে মোগল সাম্রাজ্য ধ্বংস হয়েছিল, 


মহারাষ্ট্র বীরের কি ভাবে শিবাজীর নেতৃত্বে হিন্দুসাত্রাজ্য 
স্থাপনের চেষ্টা করেছিলেন, শিথেরা মহারাজ রণজিত সিংহের 
অধিনায়কত্বে কি ভাবে হিন্দু রাঁজ্যের পুনঃ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন 
ইত্যাদি ইত্যাদি। তারপর আমরা বাঙ্গালার শেষ নওয়াব 
হতভাগ্য সিরাজদ্দৌলাঁর অত্যাচার এবং শ্বৈরাঁচারের বিষয় 
কত কি পড়ি। এইসব অর্ধ-ীতিহাসিক, অর্দ-কাল্পনিক 
বিষয় এমন ভাবে লিখিত হয়ঃ এমনভাবে এ সবের শিক্ষা 
দেওয়া হয় যে হিন্দু ছেলেদের মনে মোস্লেম বিদ্বেষ আপনা 
থেকেই জেগে ওঠে । আর বাল্যজীবনের শিক্ষা এমন 
গভীর ভাবে ছাত্রের অন্তরে প্রবেশ করে যে, পরে তার 
বিষময় প্রভাব থেকে তার মনকে শত চেষ্টা সত্বেও মুক্ত 
করা যায় না। 

দেশে যদি নূতন আবহাওয়া ্টি আমরা করতে চাই, 
হিন্দ-মুসলমানের' সং্প্রীতিকে যি দৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত 
করতে চাই, তাহ'লে বিষ্ভালয়ের পাঠ্য প্রতিহাঁসিক 
পুস্তকাদির আমূল পরিবর্তন করতে হবে, ইতিহাস শিক্ষার 
প্রণালীও বদলে দিতে হবে। ইতিহাসের লেখক এবং 
শিক্ষকদের একথা সর্বদা স্মরণ রাখতে হবে যে অন্যায় 
এবং অত্যাচার মুসলমানেরও একচেটিয়া! জিনিস নয়-_-আর 
হিন্দুরও একচেটিয়া জিনিস নয়। ছু-একজন মুসলমান 
বাদশ! যদি প্রজাপীড়ন ক'রে থাকেন, তারা মুসলমান হিসাবে 
তা করেন নি, তাঁদের ম্বভাবেরই অনুসরণ করেছেন । 
তাদের স্বৈরাচারের সঙ্গে ইসলাম ধর্মের এবং মুসলমান 
জাতির কোন সম্পর্ক নেই। পক্ষান্তরে অসংখ্য মুসলমান 
বাদশা, নওয়াব সুব্দোর প্রভৃতি ন্যায়বিচার এবং 
উদারতার যে পরকাষ্ঠা দেখিয়ে গেছেন তার তৃরি তূরি 
প্রমাণ এবং দৃষ্টান্ত তো৷ ভারতবর্ষের ইতিহাঁসেই পাওয়া যায়। 
দু-একজন অত্যাচারী শাসনকর্তীর অনাচার অত্যাচারের 
পুঙ্াপুঙ্খ আলোচনার চেয়ে অসংখ্য মহাম্ুভব শাঁসন- 
কত্তাদের মহানুভবতার কথা স্মরণ করাই ভাল । 

ইতিহাসের লেখক এবং শিক্ষকদের ও শিক্ষা বিভাগের 
কর্তৃপক্ষদের সর্বদ! এ কথা মনে রাখা দরকার যে, এ দেশে 
হিন্দ-মুসলমানকে ' একসঙ্গে বাস করতে হবে। সুতরাং 
অতীতের সেই সব ঘটনার বিষয়ের আলোচনার দরকার-__ 
যা থেকে উভয় সম্প্রবায়ের মধ্যে শ্নেহ গ্রীতি এবং এ্ঁক্যের 
ভাব বাড়তে পারে। আর যে সব ঘটনার আলোচন! 


ফান্তুন--১৩৪৭ ] 


পুরাতন ক্ষতকে নৃতন ক'রে জাগিয়ে দেয়, সে সবের যত 
কম উল্লেখ হয়, যেখানে সে সবের উল্লেখ অপরিহার্য্য 
সেখাঁনে নিরপেক্ষ ভাবে যাতে ঘটনাবলীর আলোচনা হয়, 
কোঁন বিশেষ জাতিকে দোষী না ক'রে যাঁতে প্রকৃত 
অপরাধীর উপরই দোষারোপ করা হয়» অন্তাঁয় এবং 
অত্যাচার যে কোন বিশেষ জাতির কিন্বা সমাঁজের বিশেষত্ব 
নয়, বরং সর্বদেশেই এবং সর্ব সমাজেই এনূপ হয়ে থাঁকে, 
তাঁর প্রতিকার জাঁতিবিশেষের প্রতি বিদ্বেষের ভাব 
জাঁগিয়ে তোলায় নয়, বরং তাঁর প্রতিকার হচ্ছে, যে অজ্ঞতা 
এবং স্বেচ্ছাচারিতার দরুণ সেই সব অন্ঠায় এবং অত্যাচার 
সম্ভব হয়েছে সেই অজ্ঞতা এবং স্বেচ্ছাচারিতাঁকে সমাজ- 
জীবন থেকে বিদুরিত করা__-এই সব মূল্যবান নীতি সম্মুখে 
রেখেই এতিহাসিকদের ইতিহাস রচনা কর! দরকার; 
ধারা পাঠ্য নির্বাচন কিন্বা প্রকাশ করেন, তাদের কর্তব্য 
হচ্ছে এই সব নীতি অন্ুস্যত হয়েছে কি-না সেইদিকে লক্ষ্য 
রেখে গ্রন্থ নির্বাচন এবং প্রকাশ করা; শিক্ষকগণেরও এ বিষয়ে 
গুরুতর দায়িত্ব আছে। ইতিহাস পড়াবাঁর সময তাদের 
কর্তব্য হচ্ছে, ছাত্রদের এই সব সত্যের বিষয় অবহিত করা 
আর ইতিগাঁসের শিক্ষা যাতে তাদের মনে জাতি- 
বিদ্বেষের বীর বপন করতে না পারে তাঁর দিকে 
সতর্ক দৃষ্টি রাখা ! 

ধর্মব্যবসায়ী যাজক এবং পুরোহিত সমাঁজ-জীবনে 
অপরিহার্য । অথচ ধর্শ নিয়ে বারা ব্যবসা! করেন তাদের 
মধ্যে সর্বত্রই ভিন্ন ধন্মীবলম্বীদের, এমন কি সমধর্মীবলম্বী 
ভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকদের প্রতি অন্রদ্ার ভাব এবং তাদের 
মানসিকতা বোঁঝবাঁর ধৈর্য্য এবং ক্ষমতার অভাঁব সর্বত্রই 
পরিলক্ষিত হয়। এই অন্ুদারতা, অসহিষ্ণুতা এবং অজ্ঞতা 
কেবল ভারতীয় যাঁজক সম্প্রদায়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। 
পুরোহিত এবং ধর্মযাজকদের এই মানসিকতা সমাঁজ- 
জীবনে অশেষ অকল্যাণের সৃষ্টি করে। আর সেই জন্যই 
দেখতে পাই-_যেখানে মানুষ রাষ্ত্রীয় জীবনকে নৃতন ভিত্তিতে 
সৃষ্টি করবার চেষ্টা করেছে সেখানেই পুরোহিতদ্দের তরফ 
থেকে প্রচণ্ড বাধ! এসে দেখা দিয়েছে । রাষ্ট্র সংস্কারকদের 
তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে পুরোহিতদের কঠোরভাবে দমন 
করতে হয়েছে । ফরাসী বিপ্লব থেকে আরম্ত ক'রে আমাদের 
যুগের তুকি বিপ্লব পর্য্যন্ত সেই একই সত্যের পুনরভিনয় 


হিন্দু-মুসলমান 


লা পদ বালা বাপ স্পা স্স্হট সারা: সা পা ব্আগ বা আল ব্প -্হ ব্যালা ব্য খপ ম্ বশা স্ব স্থল _শ্হা বপ 


২০ 


পয হট. ব্য - হা -...স্ সহ ব্ সহ বব ০ ০ ও স্প্প্ইগ ০ .স্প্ব্্্্্্ « 


হয়েছে । ধারা বঙ্গদেশে জাতীয়তাঁবাদকে প্রতিষিত করতে 
চান, এক কথায় ধার! দেশে নৃতন কিছু করতে চান, তাদেরই 
যাঁজক সম্প্রদায়ের প্রচণ্ড বিরোধিতার জন্ত প্রস্তুত হতে হবে। 
তাদের সহযোগিতা কথনও তার! পাবেন না। 

পুরোহিতর! মানুষের অজ্ঞতাঁকে অবলম্বন ক'রে চিরকাল 
স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা ক'রে এসেছেন। অজ্ঞ অসহায় নরনারীর 
উপরই তাদের প্রভাব সবচেয়ে বেণী । বল! বাছল্য, অধিকাংশ 
ক্ষেত্রে এ প্রভাবের তারা অপব্যবহারই করেছেন। তাঁদের 
প্রভাবকে সংযত করতে হ'লে আধুনিক বৈজ্ঞানিক শিক্ষার 
যাতে সাধারণের মধ্যে সম্যক বিস্তার হয় তার জন্য 
'আামাঁদের সচেষ্ট হতে হবে। কেবল বিদ্যালয়ের উপর নির্ভর 
করলে চলবে না । সাময়িক এবং সাধারণ সাহিতোর সাহায্যে 
সে শিক্ষীকে জনসাধারণের মধ্যে পৌছে দিতে হবে। 
বক্তৃতার সাহাযো সিনেমা, থিষেটার। রেডিও প্রভৃতির 
সাহায্যে সে শিক্ষাকে প্রচার করতে হবে। আঁর সেই 
শিক্ষার সাহায্যে সাধারণের মধ্যে পরমতসহিষুণতা, পর- 
ধর্মের প্রতি, ভিন্ন সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভক্তির 
কৃষ্টি করতে হবে। সেই শিক্ষার সাহায্যে তাদের মনে 
দেশপ্রেম জাগিয়ে তুলতে হবে । আর সেই শিক্ষার সাহাফ্যে 
তাদের মধ্যে আর্ত মানবের এরতি প্রীতি এবং সমবেদনার 
ভাঁবকে সঞ্চারিত করতে হবে। 


ইংরেজ রাজত্বের স্চনার যুগেই আধুনিক বাঙ্গলা 
সাহিতা জন্মলাভ করে। ইংরেজের প্রভাব তখন বাঙ্গালীর 
জীবনে এবং মানসক্ষেত্রে অপ্রতিহত । বাঙ্গালী হিন্দু ইংরেজকে 
তখন আদর্শ মানব বলেই মনে করতঃ আর ইংরেজের 
প্রব্তিত শিক্ধীকে শিক্ষার আদর্শ-পন্থা বলেই বিশ্বাস 
করত। আর ইংরেজের বাক্যকে বেদবাক্যের মতই 
অকাট্য বলে তারা মেনে নিত। ইংরেজ মুসলমানদের 
কাছ থেকে ভারতবর্ষ ছলে বলে কৌশলে নিয়েছিলেন। 
স্বতাবতই তার! মুসলমানদের প্রতি এবং তাদের ধর্্ 
ইসলামের প্রতি বৈর ভাঁব পোঁষণ করতেন। নিজেদের 
স্বার্থসিদ্ধির জন্য এবং মনের স্বাভাবিক ভাব প্রকাঁশের জন্য 
মুসলমান জাতি এবং ইসলাম ধর্মকে তার! মসীবর্ণে চিত্রিত 
করতে তখনকার যুগে কোনরূপ কুগ্ঠীবোধ করতেন না। 
তাঁদের লেখ! পড়ে বাঙ্গালী হিন্দুর মনে মুসলমানদের গ্রতি 
দ্বণা এবং অবজ্ঞার ভাব স্বতই জেগে উঠত, আর সে ভাব 





০৬ 


প্রকাশ পেত তাদের সৃষ্ট বাঙ্গালা সাহিত্যে । সে যুগের 
বাঙ্গালা সাহিত্য তাই মোসেলম বিদ্বেষে ভারাক্রান্ত! সে 
সাহিত্য হিন্দু-মৌসলেম বিরোধ জাগিয়ে রাথতে বিশেষভাবে 
কা্যকরী হয়েছে। 

তখনকার যুগের ভারতীয়েরা আমলাতন্ত্রমলক ইংরেজ- 
শীসনকে চন্দ্র্্য গ্রহ-তারকার মতই চিরস্থায়ী নিসর্গের 
অস্তগ্তি বলে মনে করতেন, আর সেই শাসনের অধীনে 
হিন্দু-মুসলমানের নিবিড় মিলনের তাঁরা বিশেষ কোন 
প্রয়োজন অনুভব করতেন না; তাই তাঁদের স্ষ্ট 
সাহিত্যে সে মিলনের কোন উল্লেখযোগ্য প্রয়াস দেখতে 
পাঁওয়া যায় না। অবশ্য তখনকার যুগের কোন কোন 
কবি স্বাধীনতার বিষয় স্থন্দর স্থুন্দর কবিতা লিখেছেন । 
কিন্তু তাঁদের সেই সব রচনাঁকে নিছক ভাবাম্গশীলনের উর্দে 
স্থান দেওয়া যায় না। স্বাধীন আত্মনিয়ন্ত্রণণীল ভারতবর্ষের 
কোন স্থম্পষ্ট ছবি বা পরিকল্পনা তাঁদের মনে ছিল না। 
টড প্রভৃতি একদেশদর্শী গল্পমূলক এতিহাসিকদের লেখা 
পড়ে কবির স্বভাঁবস্থলভ ভাবের আতিশয্যে কাল্পনিক এক 
স্বর্ণ যুগের সুখন্বপ্র তাঁরা দেখেছিলেন এই পর্য্যন্ত ! 

এখন হিন্দু-মুসলমানের নিবিড় মিলনের প্রয়োজন 
আমরা হাঁড়ে হাড়ে অনুভব করি । এখন প্রত্যেক প্ররুতিস্থ 
বাঙ্গালী বোঝেন, হিন্দু-মুসলমানের আন্তরিক মিলন না হলে 
এদেশ রসাতলে যাবে, বাঙ্গালী নিজ দেশে পথের ভিখারী 
হবে। সুতরাং এখন আমাদের জাতীয় সাহিত্যকে সম্পূর্ণ 
নৃতন একটা রূপ দিতে হবে। হিন্দু বিদ্বেষ এবং মুসলমান 
বিদ্বেষ যাঁতে সাহিত্যে তিলমাত্র স্থান না পাঁয় তার জন্য 
সবিশেষ চেষ্টা করতে হবে। হিন্দু-মুসলমানের সম্প্রীতি 
এবং প্রক্যা্গভূতি যাঁতে সাহিত্যে সম্যকভাবে ফুটে ওঠে 
তার জন্ত চেষ্টা এবং সাধনা করতে হবে। আর বাঙ্গালার 
জাতীয়তার আদর্শ যাঁতে সাহিত্যে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়, তার 
জন্য সঙ্ঘবন্ধ হয়ে স্থনিয়ন্ত্রিতি ধারাবাহিক সাধনায় 
আত্মনিয়োগ করতে হবে। 

এষুগে সাময়িক সাহিত্যের প্রভাব খুব বেশী। দু-একটি 
দৈনিক এবং মাসিক পত্রিক1 যেখানে যায় না এমন একটি 
পল্লী গ্রাম খুঁজে পাওয়া কঠিন। ছুঃখের বিষয় এই পত্রিকা- 
সমূহের অধিকাংশ পরিচালকদের মধ্যে আদর্শের এবং দায়িত্ব- 
জ্ঞানের অভাব একাস্তভাবেই পরিদৃষ্ট হয়। তাদের অসংযত 


ভ্াান্রভন্বখ 


[ ২৮শ বর্ষ-_-২য় থণ্ঁ_-৩য় সংখ্যা 


লেখা সাম্প্রদায়িকতার মারাআঝক বিষ প্রত্যহ দেশময় 
ছড়িয়ে দিচ্ছে। এ অবশ লাভের ব্যবসা তা না হ'লে এমন 
অপকর্ম এত আগ্রহের সঙ্গে তারা কেন করতে যাবেন? 
ধারা বাঞ্গালার সত্যিকার মঙ্গল চান, আশা করি তারা 
সঙ্ববদ্ধভাঁবে এই ব্যাধির গ্রতিকারে আত্মনিঙ্জোগ করবেন । 
বারা মিথ্যাঁর প্রচার ক'রে লাভবান হচ্ছেন? তাদের বিরুদ্ধে 
সত্যের প্রচার ক'রে তদের লাভের বস্তায় ভাটি আনতে 
পাঁরা যায়। এসব লোক ব্যক্তিগত স্বার্থ ছাঁড়া আর কিছু 
বোঝেন না। বলাবাহুল্য; আথিক সঙ্কটের সম্ভাবনা দেখলেই 
এরা নৃতন সুরে গাইতে আস্ত করবেন। এঁদেরই লেখা 
তখন আমাদের উদ্দেশ্তকে সার্থকতার পথে আগিয়ে দেবে। 
ভাঁরতে তথা বঙ্গদেশে মধ্যবিত্ত শ্রেণীই প্রথম রাজনৈতিক 
সমস্তার আলোচনা আরম্ভ করেন এবং রাঁজনৈতিক 
সংস্কার এবং পরিবর্তনের প্রচেষ্টায় আত্মনিয়োগ করেন। 
তাদের মধ্যেই প্রথম পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবেশ লাভ করে- আর 
তারই প্রভাবে পড়ে তীরা ভারতের রাস্ত্ীয় জীবনকে নৃতন 
রূপ দেবার চেষ্টা করেন। বঙ্গদেশের মধ্যবিত্ত অেণীর 
শিক্ষিত লোকেরা অধিকাংশই হয় চাকুরীজীবী, অথবা 
তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সংঙ্লিষ্ট। ন্ুতরাং রাঁজনৈতিক 
আন্দোলন প্রথমত এই মধ্যবিস্ত শ্রেণীর চাকুরীজীবীদদের 
অর্থনৈতিক স্বার্থের আলোচনাঁকেই প্রাধান্য দিতে থাকে। 
বর্তমানে অবশ্য রাজনৈতিক আন্দোলন অনেকটা 
জনসাধারণের মধ্যেও পরিব্যাপ্ত হয়ে পড়েছে । বর্তমানেও 
কিন্ত রাজনৈতিক আন্দোলনের নেতা এবং কর্মীদের 
অধিকাংশই মধ্যবিত্ত শ্রেণীর লোক । স্থতরাঁং স্বভাবতই 
শ্রেণীগত স্বার্থ ই তাঁদের চক্ষে সবচেয়ে গুরুতর রাজনৈতিক 
সমস্যারপে দেখা দেয়। আর তাদের দৃষ্টিভঙ্গির একদেশ- 
দশিতার ফলে ভারতের রাজনৈতিক জীবনে চাকুরীর ভাগ- 
বাটোয়ারাই সবসমস্তাকে কোন্ঠাঁস! ক'রে দেশেররাজনীতিকে 
তিক্ত এবং বিষাক্ত ক'রে তোলে । কেন না চাকুরীর সংখ্যার 
একটা সীমা আছে। পক্ষান্তরে উমেদারদের সংখ্যার কোন 
সীমা পরিসীমা নাই। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের উমেদারদের মধ্যে 
চাকুরীর ভাগবণ্টন নিয়ে কাড়াকাড়ি ছেঁড়াছি'ড়ি হয়। 
উমেদারদের রাজনীতিক সমর্থকেরা উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্ত এই 
কাড়াকাড়ি ছেঁড়াছি"ড়িকে অনাবস্থক গুরুত্ব দিয়ে তাঁকে জটিল 
এক জাতীয় সমস্যায় পরিণত করেন। কলহ কোনলের 


ফান্ধুন-_-১৩৪৭ ] 


তাড়নায় প্রকৃত জাতীয় স্বার্থের কথা, দেশের প্রকৃত সমস্থ 
সমূহের কথা সকলে তুলে যান। চাকুরী সমস্যার 
উপর প্রতিষ্ঠিত সাম্প্রদায়িক সমস্যা জটিল ও মীমাংসার 
অতীত এক সমস্যারূপে দেখা দের । প্রকৃত রাঁজনীতি 
ব্যাহত হয়; প্রকৃত রাঁজনৈতিক সমস্যার কথা সকলে তুলে 
ঘায়। এর প্রতিকার কি? 

অবশ্য ধারা দৈনন্দিন রাজনীতি নিয়ে আছেন, তারা 
এ সমশ্যাঁর মীমাংসা ভাগ-বাটোয়ারার সাময়িক একটা হাঁর 
নির্দিষ্ট ক'রে কতক পরিমাণে করতে পারেন । কিন্ধ এভাবে 
এ সমক্যার স্থায়ী সমাধান হতে পারে না। কেন না, 
শিক্ষার হার শিক্ষিতের সংখ্যা প্র্ততি বিষস নিত্য পরিবর্তন- 
ণাল; সুতরাং দাবীর পরিবর্তন রোজই হতে থাকবে আর 
তাই নিয়ে নিত্য নৃতন কলহের নিত্য নৃতন তিক্ততাঁর 
স্গরপাত হবে । এখন উপায় কি? 

প্রথম উপায় হচ্ছে, রাজনৈতিক আলোচনাকে এত 
ব্যাপক করে ভোলা ঘে তার ফলে স্বাভাবিক ভাঁবে অর্থ- 
নৈতিক গণন্বার্ঘই রাঁজনৈতিক আন্দোলনের গ্রথম এবং 
প্রধান বিষ হয়ে দাড়াবে । দেশের লোকের মন যখন 
সত্যই এই বিরাট সমশ্যার গুরুত্ব উপলব্ধি করবে, তখন 
মধ্যবিত্ত শ্রেণীর চাকুরী সমস্যা স্বভাবতই রাষ্ট্রীয় জীবনের 
অন্যতম তুচ্ছতর ব্যাপার হয়ে দাড়াবে। সে সমস্যা তখন 
দেশের লোককে লক্ষাত্রষ্ট কিম্বা আদর্শল্রষ্ট করতে পারবে না । 
তবে এ পরিস্থিতির হৃষ্টির জন্ত দেশব্যাপী শিক্ষাবিস্তারের 
প্রয়োজন এবং শিক্ষার সাহাযো সাধারণের মনকে রা্টীয 
সমন্তার দিকে সম্যকভাবে আকুষ্ট করার প্রয়োজন । একাজ 
হিন্দুদের মধ্যে কতকটা অগ্রসর হয়েছে, কিন্তু মুসলমানদের 
মধ্যে মোটেই হযু নি। তাঁই মুসলমানদের মধ্যে হাতুড়ে 
রাজনীতিকদের প্রভাব এত বেশী । 

মুসলমানের শিক্ষার দৈন্ত এবং রাজনীতিক চেতনার 
অভাব আজ সমস্ত দেশকে বিপন্ন ক'রে তুলেছে । শিক্ষার 
দৈন্ঠ থেকেই আসে রাজনৈতিক চেতনার অভাব। সুতরাং 
মুসলমানদের মধ্যে যাতে শিক্ষার বিস্তার__মাধুনিক শিক্ষার 
বিস্তার, যতদূর সম্ভব ক্রুত হয় তাঁর জন্ত প্রত্যেক দেশ- 
প্রেমিকেরই সচেষ্ট হওয়া উচিত। এ বিষয়ে হিন্দুরা অনেক 
কিছু করতে পারেন। তারা যদি নি:ন্বার্থভাবে মুসলমান 
জনলাধারণের মধ্যে শিক্ষাবিস্তারের চেষ্টা করেন, মুসলমানদের 


হিন্দু-মুলজ্লমান্ন 


টি ৮ - সখ ব্য --্স্ট ব্রত ব্যাশ “সন” “আচ বব স্পা সা বল “ব্যাগ ব্রা খা বা সস স--স্ট ব্রা সহ সস ব্রা” “সা, 


এ 


প্রস্থ 








বর্তমান যুগের উপযোগী আদর্শে অনুপ্রাণিত করাঁর সাধনায় 
স্থসন্থদ্ধভাবে আত্মনিয়োগ করেন, মাতৃভাষার প্রতি তাদের 
মনে ভালবাসার ভাঁব জাগিয়ে তোলবার কাজে ব্রতী হন, 
তা হলে তাঁদের মেই মঙ্গল প্রচেষ্টা থেকে অদূর ভবিষ্যুতে 
আঁশাতীত ফল পাওয়া যেতে পারে। ইংরেজ মিশনারীর! 
এই ভাবেই বাঙ্গালা দেশে এক শতাবাী পূর্বের আধুনিক জীবন- 
ধারার প্রবর্তন করেছিলেন। করাসী এবং আমেরিকার 
মিশনারীরা এই ভাবেই উনবিংশ শতাব্দীতে তুরস্ক সাম্রাজ্যে 
আধুনিক জীবনের স্থত্রপাত করেছিলেন । বাঙ্গালা দেশে এ 
কাজ অপেক্ষারুত সহজসাঁধ্য বলেই আমার মনে হয়; মুসল- 
মানদের বিশিষ্ট এক দল নিশ্চয় এ বিষয় আন্তরিকতার সঙ্গে 
হিন্দুদে€ সহযোগিতা করবে । আর মঙ্গল সাধনায় উভয় 
সম্প্রদায়ের সহযোগিতা ভবিষ্ততের রাজনীতির জন্য সুদৃঢ় এক 
ভিত্তি রচনা করবে । 

এক শ্রেণীর মানুষ আছে, যাঁদের মন স্বভাবন্তই 
সংকীর্ণতার দ্রিকে যায়, উদারতার দিকে যায় না। তাঁর 
নিজের গ্রামের বিষয় এত পক্ষপাতিত্ব করে যে ভিন্ন গ্রামের 
লোকের সঙ্গে তাদের কলহ উপস্থিত হয়, নিজের শ্রেণীর 
প্রতি এত পক্ষপাতিত্ব করে যে ভিন্ন শ্রেণীর লোকের সঙ্গে 
তাদের কলহ উপস্থিত হয়। এই ভাবে তারা শ্রেণীগত 
স্বার্থ নিয়ে সর্বদাই বুহত্তর সামাজিক স্বার্থের সঙ্গে কলহে 
রত থাকে । এই শ্রেণীর লোক তাদের মনের ক্ষুদ্রতা এবং 
স্বার্পরতাঁকে সাম্প্রদায়িক আকার দিয়ে দেশের ভিন্ন 
সম্প্রদায়ের লোকেদের সঙ্গে কলহ করে, আর বিভিন্ন 
সম্প্রদায়ের মধ্যে বিদ্বেষ এবং মনোমালিন্তের স্থষ্টি করে । এই 
শ্রেণীর লোকই হিন্দু-মুসলমান বিরোধের জন্য প্রধানত দায়ী। 
হিন্দু সাম্প্রনায়িকতাঁবাদীর! হিন্দু রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখে-_আর 
মুসসমান সাম্প্রদায়িকতাবাদীর! মুসলিম রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখে । 
উভয় স্বপ্রই যে আঁকাঁশ-কুন্রমের মতই অলীক সে কথ! 
তাঁরা বোঁঝে নাঃ বুঝতে চাঁয় না এবং বৌঝবাঁর শক্তিও তাঁদের 
নাই। অজ্ঞ জনসাধারণ তাদের কথ! শুনে ক্ষি্ড হয়ে ওঠে; 
আর তার ফলম্বরূপ দেখা দেয় সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ আর 
কলহ ; মারামারি, কাটাকাটি আর খুনোখুনি ! 

সাহিত্যিকের কাজ হচ্ছে উদার সার্বজনীন মনোভাবের 
সৃষ্টি করা । সাধনার সাহায্যে নিজেদের মধ্যে উদার মনো” 
ভাবের সৃষ্টি করতে হবে আর সেই উদার মনোভাব সাহিত্যে 


২৮৮ 


প্রকাশ করতে হবে। তারা যদি তা করতে পারেন তা হলে 
তাদের সাহিত্যসাঁধনা সার্থক হবে; আর তাঁদের স্ষ্ট 
সাহিত্যের সাহায্যে তারা দেশের প্রভূত কল্যাণ সাধন 
করতে পারবেন। তবে একথা মনে রাখতে হবে যে 
কেবল কথার উদারতায় প্রকৃত কাঁজ হবে না; মানষের সঙ্গে 
ব্যবহারে, দৈনন্দিন জীবনযাত্রীতেও সেই উদারতা দেখাতে 
হবে। ভিন্ন ধর্মাবলম্বী মহাঁপুরুষদের সম্মান করতে হবে, 
তার্দের আদর্শের তাদের সাধনার সম্মান করতে হবে, 
তাঁদের জীবনে এবং সাধনায় যে সব প্রশংসনীয় জিনিস 
দেখতে পাওয়! যায়, মুক্তকণ্ঠে সে সব স্বীকার করতে হবে। 
তার পর পর-ধর্ম্বের প্রতি, ভিন্ন সংস্কৃতির প্রতি, ভিন্ন 
জাতির প্রতি অসংযত আক্রমণ যাঁতে বিচারালয়ে দণ্ডনীয় 
হয় তাঁর জন্য দেশব্যাপী আলোচনা ও আন্দোলন চালাতে 
হবে। আর যারা এই সব গহিত আচরণ করে তারা যাঁতে 
কোন সমাজে প্রশ্রয় না পায়, তার জন্য সচেষ্ট গাকতে হবে। 
আর তাদ্দের মতবাদের অসারতা সুযুক্তির সাহায্যে প্রমাণ 
করতে হবে। তারপর দৃষ্টাস্ত এবং প্রচারকার্যের দ্বারা 
উচ্চতর আদর্শের গৌরব দেশময় ঘোষণা করতে হবে। 
উচ্চতর আদর্শ সত্যই যদ্দি একবার মাথা তুলে দীড়ায় 
তা হ'লে নীচতাকে পরাভব স্বীকার করতেই হবে। আকাশে 
সূর্য্যোদয় হলে অন্ধকার কতক্ষণ টিকে থাকতে পারে? 
উচ্চতর আদর্শ মাথা তুলে দাড়ায় নি বলেই নীচতার এতটা 
আশক্ফালন। আমাদের সমস্ত চেষ্টা এবং সাধনাকে এই 
উচ্চতর আদর্শের প্রতিষ্ঠার কাজে নিয়োগ করতে হবে। 
সাফল্যের আসতে বিলম্ব হতে পারে বটে, কিন্ত সাফল্য 
সুনিশ্চিত | প্রয়োজন কেবল ধৈর্যের এবং একাস্তিক 
সাধনার । 

যা অপরিচিত, তাকেই মান্মষ ভয় করে সন্দেহের চক্ষে 
দেখে। আর যা পরিচিত, যত কুতসিৎ এবং অবাঞ্ছনীয়ই 
হোঁক, তাকে গ্রহণ করতে, তাঁকে নিয়ে ঘর করতে মানুষ 
দ্বিধাবোধ করে না। হিন্দু-মুসলমান বিরোধের অন্যতম 
প্রধান কারণ হচ্ছে, তাদের সামাজিক মিলনের বিরলতা, 
তাদের ভিন্ন ভিন্ন ধরণের জীবনধারণপ্রণালী, তাদের বিভিন্ন 
রীতিনীতি । সুখের বিষয় যে পাশ্চাত্য শিক্ষা এবং সভ্যতার 
প্রভাবে এই বিভিন্নতা এই দূরত্ব ক্রমেই কমে আসছে! 
বিশেষ করে এই বাঙ্গালা দেশে । তিরিশ-চল্লিশ বৎসর পূর্বে 


ভ্ঞান্সভন্বশ্ 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় খণ্ড--৩য় সংখ্যা 


কে হিন্দু আর কে মুসলমান তা তাদের দেখলেই চেন! যেত-_ 
তাদের কথা শুনলেই বোঝা যেত; আর তাদের আচার 
ব্যবহার অতি স্পষ্ট ভাবেই তা ঘোষণা! করত। কিন্ত 
এখনকার বাঙ্গালী হিন্দু-মুললমানের বিষয়ে সে কথা৷ বলা চলে 
না। তখনকার দিনে হিন্দু-মুসলমানের এক সঙ্গে বসে 
আহার বিহার করা অভাবনীয় ব্যাপার বলেই মনে হত। 
এখন কিন্তু তা নিত্যই ঘটছে । এইভাঁবে উভয় সম্প্রদায়ের 
আচার এবং সংস্কারগত বৈষম্য ক্রমেই কমে আসছে । যুগ- 
ধর্মের প্রভাবে এবং প্রকৃতির তাড়নাতেই এই পরিবর্তন 
হয়ে যাঁচ্ছে। আমরা যদ্দি এখন মিলনের আদর্শ সন্মুথে 
রেখে সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে স্থনিয়ন্ত্রিতভাবে যুগধর্ম্ের সাহায্য এবং 
সমর্থন করি, তা হলে সম্প্রদায়গত দূরত্ব আরও ভ্রুত 
কমে যাবে আর এঁক্যের বন্ধন ক্রমেই দৃঢ় থেকে 
দুঢ়তর হতে থাকবে । 

প্রাচীন হিন্দু এবং মুসলমান সমাঁজ ধর্মের ভিত্তিতে 
গঠিত হয়েছিল, আর তাই সমধন্াবলগ্ীদের মধ্যে এঁক্য 
এবং প্রীতির বন্ধন যাতে দৃঢ় হয় তার দিকে লক্ষ্য রেখে 
বিভিন্ন প্রকারের উৎসব অন্নষ্ঠান পৃজা-পার্বণ প্রভৃতির 
ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এই সব ধর্ম-অনুষ্ঠান প্রতিষ্ঠান 
প্রভৃতির বিষয় এখানে আমার কিছু বলবার নাই । তবে 
এখন আমর! আমাদের জীবনকে রাস্্রীয় ভিভ্তিতেও গড়তে 
চাই। স্ৃতরাং তাঁর উপযোগী অনুষ্ঠান প্রতিষ্ঠানাদির 
স্ষ্টি করা প্রয়োজন। বর্তমান যুগের অন্যতম রাষ্ট্র নেতা 
মুসলিনির সারগর্ভ বাক্য এক্ষেত্রে বিশেষভাবে প্রণিধান- 
যোগ্য । বিখ্যাত লেখক এমিন লুডবিন ইটালার রাষ্ট্র 


নেতাকে জিজ্ঞাসা করেন, [০ 5০0 00101 0616 
15 217 1012010 -016916105 09৮/691/ 01)9 
০0101)9516101) 0£ 8 0009611) 16৮০10001017156 2170 
78001 070 2811) 955 ?” 


জবাবে মুসোলিনী বলেন, 

[0110 00110 1125 01)9,0060, 0079 ০0170161017 
10595915185 10901) 16010195166 01010051) 211 005 
৪০০5---০০০17665 01055108185 ৮611 85 000121, 
মি 07615505521 16৬০0100101) 0168665 176৬ 
1010705526৬ 10179) 106৮7 11055 ) 8170 016 /০10- 
09 12501061017150 ড710119 05100 ০10 €4101025, 
00150 15689517101) (1061. 736 10050 016269 1)৩৮য 
65501%815, 190 82500159) 15৩ (01055 10101) ভা%1 


ফাল্তন_-১৩৪৭ ] 


(11010501595 11) (01171090010) (15010101021, 7016 
81101816 19961৮21 1] 16 1009. 117 17121 & 
06101110111 05 61)0105160 %/10) (176 102011)8 
06:620101017৮-71021105 161) 81 095501171-7151) 1] 
1.0051ঠি, 

মানুষকে যেমন ভাষার সাহায্যে মনের ভাব গ্রকাঁশ 
করতে হয়, প্রত্যেক আদর্শকে তেমনি আত্মপ্রকাঁশ করতে 
হয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান, প্রতিষ্ঠান, উৎসব সম্মেলন গ্রভৃতি 
51010] বা! অভিজ্ঞানের সাহায্যে । জাতীয়তার আঁদশকে 
এদেশে স্থগ্রতিষ্ঠিত করতে হলে এদিকে লক্ষ্য রেখে আমাদের 
কাজ করতে হবে। আর আমাদের সাঁধনাকে সার্থক 
করতে হলে; আমাদের আদর্শকে স্থপ্রতিঠিত করতে হলে, 
আমাদের ভুলে যেতে হবে আমরা হিন্দু কি মুসলমান, আঁধ্য 
কি অনার্য । এখন পর্য্যন্ত যে এ আদর্শ এদেশে স্থপ্রতিষ্ঠিত 
হয়নি তার প্রধান কারণ হচ্ছে, ধারা বাহৃত এ আদর্শের 
অন্তসরণ করেন তীদের অনেকেই বস্তুত এ আদর্শের 
আড়ালে ধর্ম কিন্বা গোঁচীমূলক আদর্শ প্রচার করতে চেষ্টা 
করেন। ধর্মের সঙ্গে আমার বিবাদ নাই, গোঠীর সঙ্গেও 
আমার বিবাদ নাই । তবে ভগ্তামির সঙ্গে সত্যই আমার 
বিবাদ আছে। যখন ধরন্মীর আদর্শের অনুসরণ করি তখন 
ধর্মের দিক থেকে কথা বলা দরকার । যখন গোষ্ীর 
আদর্শের অন্তসরণ করি তখন গোষীর দিক থেকে কথা 
বল! দরকাঁর। আর যখন জাঁতীয়তাঁর আদর্শের অন্সরণ 
করি, তখন নিছক জাতীয়তার দিক থেকেই কথা বলা 
দরকার। অন্যথায় ব্যর্থতা অনিবাঁ্য | 

জাতীয়তার আদর্শ দিয়ে বিচার করলে যে স্বনামধন্য 
মহাপুরুষের নাম সর্বাগ্রে আমার মনে আসে তিনি হচ্ছেন 
মোগল সম্রাট জালালুদ্দীন আকবর। হিন্দুঃ মোসলেম, 
খৃষ্টান, পারসিক প্রভৃতি বিভিন্ন ধর্ীবলম্বী ভারতবাসীর 
সম্মিলিত জাতীয়তার বিরাট স্বপ্র তিনিই সর্বপ্রথম 
দেখেছিলেন । ভারতীয় জাতীয়তাঁর তিনিই হলেন সত্যিকার 
রষ্টা। আমার মনে হয় তাঁর সেই স্বর্গীয় স্বপ্নকে ভারতবাসীর 
মনে চিরতরে জাগিয়ে রাখবার জন্য বৎসরের একটি দিনকে 
অন্তত তার উদ্দেশ্তটে উৎসর্গ করা, আমাদের কর্তব্য । 
দেশময় সেদিন আনন্দোৎসব হওয়া উচিত ) রাত্রে প্রত্যেক 
গৃহকে প্রত্যেক রাজপথকে আলোক “মালায় সঙ্জিত করা 
উচিত; সঙ্গীতে, নৃত্যে, আতসবাজীর এন্রজালিক মায়ার 


হিল্দু-সুসলমান 


৪৮ -্থ্চ সাল স্কট বকা ্ বল স্চ বসব সপ যদ ব্রত বট বু স্ব স্”- স্্গ ব্য সখ স্ব বল” সদ 





এ ২ 


স্স্্স্ক্- -ব্হ 





সহ 


সাহায্যে সেই প্রাতংম্মরণীয় মহাঁপুরুষের প্রতি আমাদের 
অন্তরের শ্রদ্ধ! নিবেদন করা উচিত। 

বাঙ্গালার জাতীয়তাঁর কথা ভাঁবতে গেলে প্রথম যে মহাঁ- 
পুরুষের কথা আমার মনে পড়ে তিনি হলেন শাহীদ নওয়াব 
সিরাঁজদ্দৌল]। আনন্দ এবং আশার বিষয় এই যেতার 
স্বৃতি রক্ষার বিষয় বাঙ্গালী এখন যথেষ্ট তৎপরতা দেখাচ্ছে। 

বর্তমান ঘুগে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাঁশই জর্বপ্রথম প্রকৃত 
বাঙ্গালী জাতীয়তার স্বপ্প দেখেছিলেন । তার স্বৃতি-উৎসবও 
উপযুক্তভাবে অনুষ্টিত হওয়া উচিত। 

ব্থসরের প্রথম দিনকে ধর্মনির্বশেষে প্রত্যেক জাতিই 
সাদর সম্ভাষণ জানিয়ে থাকে। দিল্লীর মোগল বাদশার! 
প্রাচীন ইরাণের নওরোজ পর্ধব কত ধৃমধাঁমের সঙ্গে সম্পন্ন 
করতেন । আমার মনে হয়) এই বাঙ্গালা দেশে হিন্দু 
মুসলমান-নির্বিশেষে ১লা বৈশাখে সকলেরই মহাঁসমারোহের 
সঙ্গে জাতীয় পর্ন রূপে নববর্ষের উৎসব সম্পন্ন করা উচিত। 
আঁর এই পর্ধবকে উপলক্ষ্য করে সমগ্র জাতির সেদিন 
পরস্পরের সঙ্গে বিভিন্ন অন্ষ্ঠানে মেলামেশা কর! উচিত । 
এই ক্ষুদ্র প্রবন্ধে এর অধিক কিছু বলবার কিন্বা দৃষ্টান্তের 
সংখ্যা বাঁড়াবার দরকাঁর নেই । জাতীয় আদর্শ সত্যই যদি 
কাম্য হয়, তা হলে মে আদর্শের প্রকাঁশ এবং প্রতিষ্ঠার 
উপযোগী উৎসব অন্ষ্ঠান আচার ব্যবহার প্রভৃতির প্রবর্তন 
অনিবার্ধ্য । এই সত্যটি মনে রেখে আমাদের কর্পদ্ধতি স্থির 
করতে হবে। আদর্শের প্রতি সত্যই যদি আমাদের নিষ্ঠা 
থাকে, ক্রিয়! কর্ম নিরূপণ করতে বেগ পেতে হবে না। 

বার্ড শ চিন্তাকে ছুই শ্রেণীতে বিভক্ত করেছেন; 
11৮15 07000170--জীবন্ত চিন্তা এবং 0০50. (170055 
মৃত বা প্রাণহীন চিন্তা। ভাষার মধ্যে যেমন জীবন্ত 
এবং মৃত ভাষা আছে- চিন্তার মধ্যে, আদর্শের মধ্যেও 
তেমনি জীবন্ত চিন্তা, জীবন্ত আদর্শ এবং মুত চিন্তা, মৃত 
আদর্শও আছে। মৃত ভাষায় কেউ কথা বলে না। কিন্তু 
মৃত চিন্তাকে নিয়ে অনেক ভাবুককেই ভাবের চচ্চা করতে 
দেখি; মৃত আদর্শকে নিয়ে অনেক তথাকথিত আঁদর্শবাদীকে 
ঘাটাঘাটি করতে দেখি। তবে মৃত ভাষায় যেমন প্রাণের 
সঞ্চার করা যায় না, তেমনি মৃত ভাবের মধ্যে মৃত আদর্শের 
মধ্যেও প্রাণের সঞ্চার করা যায় না। পাঠক গালিবারের 
ট্রীভল্দ-এ পড়ে থাকবেন বামনদের রাজ্যে, লিপিপুট 








২৮০৬ 


দেশে ডিঘ্বের সরু দিক থেকে ভাঙ্গা! উচিত কি চওড়া দিক 
থেকে ভাঙ্গা উচিত তাই নিয়ে কুরুক্ষেত্রের যত মহা এক 
গৃহযুদ্ধ বেধে গিয়েছিল । আমাদের কাছে ব্যাপারটি তুচ্ছ 
বলে মনে হয়, কিন্তু যার! এই নিয়ে বিষম সমরানলের সৃষ্টি 
করেছিল, তাদের কাছে বিষয়টি মোটেই তুচ্ছ ছিল না। 
সমস্যাটি তাদের কাছে জীবন্ত আকারে দেখা দিয়েছিল, 
আর আমাদের কাছে সেটি প্রাণহীন মৃত। কিছুকাল 
পূর্ব্বে বাঙ্গালী হিন্দুদের মধ্যে বিলাত প্রত্যাগত লোকেদের 
সঙ্গে কোন সামাজিক সম্পর্ক রাঁথা উচিত কি-না তাই নিয়ে 
মহা এক আন্দোলন চলেছিল । এখন কিন্তু সে বিষয় নিয়ে 
কেউ উচ্চবাচ্য করে না। বিষয়টি একদিন জীবন্ত সমস্যার 
আকারে দেখা দিয়েছিল, আঁর এখন সেটি মুত; তার মধ্যে 
প্রাণের সাড়া নাই । এই বাঙ্গীলী মুসলমানদের মধ্যে নামাজের 
“আমীম” শব জোরে বল! উচিত কিম্বা মৃছুভাবে মনে মনে 
বলা উচিত--তাই নিয়ে কত মারামারি, কাটাকাটি, এমন 
কি খুনোথুনি পর্যন্ত হয়ে গেছে । এখন কিন্ত সে নিয়ে 
কাউকে উচ্চবাঁচ্য করতে দেখি না । যে সমস্া একদিন জীবন্ত 
প্রাণবন্ত মমশ্যারূপে মানুষের মনে তুমুল আলোড়নের স্থ্ট 
করত, সে সমস্ত এখন প্রাণহীন, নিম্পন্দ, মৃত । তাকে নিয়ে 
মাথা ঘামাবার এখন কেউ প্রয়োজন অনুভব করে না। এখন 
সেটি 068 61701021765 06৪0 10685-এর অন্তর্গত | 
আমাদের দেশবাসীদের জড়তাঁর প্রধান কাঁরণ, হিন্দু 
মুসলমানের বিরোধের প্রধান কারণ_-আমাঁদের জীবনের 


তুচ্ছতার প্রধান কারণ-_-আমরা জীবন্ত চিন্তা এবংমৃত চিন্তার 


মধ্যে প্রভেদ করতে শিখিনি। কোন্‌ ভাব কোন্‌ আদর্শটি 
সত্যই জীরন্ত, আর কোন্‌ ভাব কোন্‌ আদর্শটা প্রকৃত পক্ষে 
মৃত মে বিষয় স্থির ধীর বুদ্ধির সাহাঁষ্যে ভাবতে শিখিনি। 
যেদিন মে ভাবে ভাবতে শিখব, সেদিন আমাদের 
ব্যার্ঘতারও শেষ হবে। আমাদের জীবন সাঁধনা সেদিন 
সত্যিকার সার্থকতার পথে এসে পৌছুবে। এ বিষয় 
প্রতিভাশালী সাহিত্যিকের! সত্যই দেশের যথেষ্ট উপকার 
করতে পারেন। মাজ্জিত বুদ্ধি এবং ধারালো বিশ্লেষণ 
শক্তির সাহায্যে তাঁর! বুঝতে পারবেন কোন্‌ চিন্তা আর 
কোন্‌ আদর্শ বর্তমান যুগে প্রাণহীন, অচল) কোন্‌ 
আদর্শ এবং চিন্তার মধ্যে প্রাণের স্পন্দন এখন পাওয়া 
বায়; তাতে নিপুণ লেখনীর সাহায্যে কৃত আদর্শের সৎকাঁরে 


ভ্ডার্রভন্বশ্ব 


| ২৮শ বর্ষ--২য় খণ্ঁ-৩ম় সংখ্যা 


আর জীবন্ত আদর্শের সম্প্রসারণে তীরা যথেষ্ট সাহায্য 
করতে পারবেন। আমি দেখে সখী হুলুম, সুসাহিত্যিক 
বন্ধুবর কাঁজী আব্,ল ওদুদ সাহেব এই শ্রেণীর সাহিত্য 
রচনায় অগ্রসর হয়েছেন। তাঁর রচিত “পথ ও বিপথ 
গ্রন্থে তিনি প্রমাণ করতে চেষ্টা করেছেন যে বর্তমান যুগের 
কর্ম প্রবাহের প্রকৃত উৎস হচ্ছে গণসেবা। “ইহাই দেশের 
গৌরব সংবাদ__দেশ যে মুতের দেশে পরিণত হয়নি তাঁর 
প্রমাণ এই গণচেতন1।৮ বাঙ্গলাদেশে অনেক প্রতিভাশালী 
সাহিত্যিক আছেন -তীরা যদি এইভাবে এক একটি 
জীবন্ত আদর্শকে প্রতিঠিত করতে কিন্বা মুত আদর্শের 
অন্ত্যে্টিক্রিয়া সম্পাদন করতে সচেষ্ট হন, তা হ'লে দেশ 
মঙ্গলের পথে করত আগিয়ে যাবে। সত্য নিজগুণে এবং 
নিজ শক্তিতে মানুষের মনে নিজেকে গ্রতিঠিত করে, 
আমাদের প্রধান কাঁজ হচ্ছেঃ সত্যকে মানুষের চোখের 
সামনে ফুটিয়ে তোল । বাঁকি কাঁজ সত্য নিজেই করে ঘাবে। 

বিদেশীর প্রভাব বাঙ্গীলীর জীবনে নিত্যই বেড়ে চলেছে, 
আর তার ফল মোটেই ভাল হচ্ছে না। বিদেশীর গোঁড়ামি 
বাঙ্গালীর জীবনে সংক্রামিত হচ্ছে, বিদেশীর পশ্চাদমুখিতা 
বাঙ্গালীর জীবনে সংক্রীমিত হচ্ছে, বিদেশীর সাম্প্রদায়িকতা 
বাঙ্গালীর জীবনে সংক্রামিত হচ্ছে, আর বিদেশীর অতীতমুখী 
মানসিকতা বাঙালীর জীবনে সংক্রামিত হচ্ছে। বিদেশীর 
কুটিল প্রভাবে বাঙ্গালী তাঁর জাতীয় স্বার্থের কথা ভূলে 
যাচ্ছে, বিদেশীর প্রভাবে বাঙ্গালী তার অতীতের কথা ভুলে 
যাচ্ছে তার ভবিষ্যতের কথা ভুলে যাচ্ছে । বিদেশীর প্রভাবে 
বাঙ্গালী তার আদর্শের কথা, তার 17155107-এর কণা তুলে 
যাচ্ছে। হিন্দু-মুসলমান নিব্বিশেষে এখন বাঙ্গালীর প্ররুত 
কাজ হচ্ছে, প্রৃত কর্তব্য হচ্ছে, বাঙ্গালীত্বের জীবনদায়িনী 
আদর্শকে সম্মুথে রেখে নিজদেশে আত্ম গ্রতিষ্ঠ হওয়া ; বিদেশী 
বিষাক্ত প্রভাব থেকে মাতৃভূমিকে মুক্ত করা। আমার 
বিশ্বাস, এই হচ্ছে বর্তমান যুগের বাঙ্গালীর সবচেয়ে জীবন্ত 
আঁদর্শ, এই আদর্শের সাধনাই তাকে মঙ্গলের পথে, সার্থকতা 
পথে নিয়ে যাবে; এই আদর্শের কল্যাণ-ম্পর্শই সাম্্রদায়িক- 
তার বিষ থেকে তার সমাজ-দেহকে মুক্ত করবে) এই 
আদর্শের সঞ্জীবনী-ন্ুধাই তাকে পূর্ণতর জীবনের সন্ধান 
দেবে। সব ছেড়ে এই আদর্শের সাধনাঁতে আত্মনিয়োগ, 
করাই হ'ল বাঙ্গালীর জীবন-সাঁধনার প্ররুষ্টতম পথ। 


অভহ্গহ 


১৫ 
যেমন করিয়া হউক রোজগার করিতে হইবে। উপার্জন 
করিতে না পারিলে মানুষের কোন মূলাই নাই। টাঁকা 
দিয়া প্রেম কিনিতে যাইবার প্রয়াস হাস্তকর সন্দেহ নাই, 
কিন্ত দরিদ্রের প্রেম করিতে যাইবার প্রয়াস অধিকতর 
হাম্তকর। যে নিঃস্ব তাঁহার এই মানসিক বিলাসের 
অধিকার নাই। তাহার অন্তরের তরশ্বণ্য না থাকিলে তাহা 
খনির তিমিরগর্ভে রত্বরাঁজীর মত চিরকালই লোকচক্ষুর 
অন্তরালে থাঁকিবে। অন্তরনিহিত শ্রশ্বর্য্যকে প্রকাশ করিবার 
জন্যই বাহিরের এতর্য্য প্রয়োজন । খনিকে খনন না করিলে 
মণির সন্ধান মিলিবে কিরপে? মণি আবিষ্কার করিবার 
পর খনিত্র অনাবস্কঃ কিন্তু আবিষ্কারের পূর্বে খনিত্র না 
হইলে চলে না। খনিত্র একটা চাই। কিছু টাকা না 
থাকিলে কিছুই করা যাঁয় না। টাঁকাটা যে অতি তুচ্ছ 
জিনিস তাহাঁও টাকা না থাকিলে প্রমাণ করা যায় না। 
অর্থ থাকিলে তবেই তাহা ত্যাগ করিয়৷ ত্যাগের মহ 
প্রকট করা সম্ভব কপর্দকহীন দরিদ্রের মুখে ত্যাগের 
মহিমার কথা মানায় না । অর্থের অপেক্ষা প্রেম বড় এ কথার 
মর্ম মুক্তোকে বুঝাইতে হইলে প্রথমেই মুক্তোকে পাওয়া 
দরকার এবং সেজন্ত টাকার প্রয়োজন । মুক্তোকে আয়তের 
মধ্যে পাইলে তাহার মনে নিজেকে শঙ্কর নিশ্চয়ই প্রতিষ্ঠিত 
করিতে পারিবে, এ বিশ্বাস নিজের উপর তাহার আছে। 
কিন্তু মুক্তোকে আয়ত্তের মধ্যে পাওয়াই যে দুন্ূহ। অত টাঁকা 
কোথায় পাইবে সে! অবিলম্বে উপার্জন করা দরকার । 
কিন্ত কি করিয়া তাহা সম্ভব? এই কলিকাতা! শহরে কে 
তাহাকে চেনে? চিনিলেও বা কত টাঁকাঁর চাকরি সে 
পাইতে পারে, বড় জোর মাসে পঞ্চাশ টাকাঁর। কিন্ত 
তাহাতে কি হইবে? অল্প টাকায় মুক্তোকে তো পাওয়া 
যাইবে না! '** কেহ কিছু টাকা ধার দেয় না? মাসে মাসে 
তাহাকে শোধ করিয়া দিলেই চলিবে । কিন্তু কে-ই বা ধার 
দিবে? সহসা শঙ্করের শৈলর কথা মনে পড়িল। সেবড় 
লোকের প্বী। তাহার হাতে কিছু টাকা! থাকিতে পারে, 


টিক 


তাহার নিকট হইতে কোন ছুতাঁয় ধার করিয়া আনাও 
শঙ্করের পক্ষে অসম্ভব হইবে না। তাহার পর ধীরে ধীরে 
টাকাটা পরিশোধ করিয়া দিলেই চলিবে । একটা চাঁকরি 
সংগ্রহ করিতে হইবে। প্রফেসার গুপ্ত চেষ্টা করিলে 
একটা টিউশনি হয় তো তাহাকে জোগাড় করিয়া দিতে 
পারেন। 

রবিবারের দুপুর । শঙ্কর বিছানায় শুইয়া! গুইয়। চিন্তা 
করিতেছিল, উঠিয়া বসিল। শৈলর সহিত আজই দেখা 
করিতে হইবে। প্রফেদার গুপ্ত চেষ্টা করিলে একটা 
টিউশনিও হয় তো তাহাকে জোগাড় করিয়া দিতে পারেন 
_-উ্াহার সহিতও দেখা করা দরকার | শঙ্কর তাড়াতাড়ি 
জামাটা গায়ে দিয়া পথে বাহির হইয়া পড়িল। শৈল 
একদিন যাঁইতেও বলিয়াছিল তাহাকে । এখন হয় তো 
সে একা আছে। 

রাস্তায় বাহির হইতেই অগ্রত্যাশিতভাঁবে গ্রকাশবাবুর 
সহিত দেখ! হইয়া গেল। শঙ্কর তাহীকে চিনিতে পারে 
নাই, তিনি কিন্ত শঙ্করকে চিনিয়াছিলেন। প্নমস্কার শঙ্কর- 
বাবুঃ চিনতে পারছেন ?” 

চিনিতে না! পারিলেও সব সময় সেটা বলা যায় না। 
শঙ্কর স্মিতমুখে চুপ করিয়া দাঁড়াইয়া রহিল। 

প্রকাশবাবুই পুনরায় বলিলেন “চেনবার কথা অবশ্ত নয়, 
একটিবার মাত্র তো দেখা । প্রফেসার মিত্রের বাড়িতে টি 
পার্টিতে হয়ে গেল অনেকর্দিন !” 

শঙ্করের মনে পড়িল। লোনাদিদি ইহাকে শক্করের 
সহিত আলাপ করাইয়া দিয়াছিলেন। ইহাঁও মনে পড়িল 
দোনাদিদি ইহার নাম দিয়াছিলো অগতির গতি। 
ভদ্রলোক নাকি ভারি পরোপকারী লোক। শঙ্কর আর 
একবার প্রকাশবাবুর দিকে ভাল করিয়া চাহিল। খন্দরের 
মোটা কোট ও মোটা চাঁদর গায়ে, কয়েক দিনের 
না-কামানো গৌফ দাড়ি মুখে, চক্ষুতে ম্বচ্ছ সরল দৃষ্টি। 
প্রকাশবাবু ঠিক তেমনি আছেন । 

প্রকাশবাবু হাসিয়া বলিলেন, “আপনার কবিতাটা 


২৮১ 


২১৮২, 


গু -ব্হ প্রা 





সহ 


পড়লাম কাগজে, তারি সুন্দর লাগলো । আমাদের একটা 
কাগজ বার হচ্ছে, তাতে আপনাকে লিখতে হবে কিন্ত-_” 

“আচ্ছা 

"সেই হস্টেলেই থাকেন তো৷ এখন ?” 

শ্থযা।” 

“আচ্ছা যাব একদিন। এখন চলি, নমস্কার |” 

“নমস্কার 1” 

প্রকাঁশবাবু চলিয়া গেলেন । শঙ্কর পুনরায় পথ চলিতে 
লাগিল। কিছুদূর অন্যঙ্গনস্কভাবে হাটিবার পর সহসা 
তাহার মনে হইল--এ সে কি করিতেছে! শৈলর কাছে 
হাত পাতিয়া টাকা! চাহিবে ! শৈলর টাকা লইয়া সে ... 
না, তাহা অনস্ভব। তাহা সে কিছুতেই পারিবে না। 

শঙ্কর ঘুরিয়া অন্ত পথ ধরিল। একেবারে বিপরীত 
দিকে চলিতে সুরু করিল। ক্রতবেগেই চলিতে লাগিল। 
কোথায় যাইবে ঠিক নাই । কেবল তাহার মনে হইতেছে 
অবিলঞ্ে একটা কিছু করিয়া ফেলিতে হইবে, অবিলম্বে একটা 
কিছু করিয়া ফেলিতে না পারিলে সে পাঁগল হইয়া যাইবে। 
ফ্রতবেগে পথ অতিবাহন করিতে করিতে সে ভাবিতে 
লাগিল--কি আশ্চর্য +টাঁকাটাই শেষে এত বড় হইয়! দাড়াইল ! 
মুক্ত তাহাকে চায় নাঁ_টাঁক! চাঁয়। আশ্চর্য্য ! 


কপাট ভেজানে! ছিল, ঠেলিতেই খুলিয়া গেল । 

শঙ্কর ভিতরে ঢুকিয়া দেখিল কেহ নাই। কি করিবে 
ভাৰিতেছে, এমন সময় হঠাৎ মুক্তো আসিয়া প্রবেশ করিল। 

“এ কি হঠাঁৎ আপনি যে এ সময়ে !” 

“এলাম”-__ 

মুক্তো একদৃষ্টে খানিকক্ষণ শঙ্করের মুখের - দিকে চাহিয়। 
রহিল। তাহার পর মুচকি হাসিয়া বলিল- “বসুন, 
আলচি এখুনি--” 

শঙ্করকে কোন কথা বলিবার অবকাশ না দিয়া মুক্তো 
বাহির হইয়া গেল। অবকাশ দিলেও যে শঙ্কর বিশেষ 
কিছু বলিতে পারিত তাহা নয়। বলিবার মত কোন 
বক্তব্য তাহার ওষ্ঠাগ্রে ছিল না। শঙ্কর চুপ করিয়া বসিয়া 
রহিল, ভাঁবিতে লাগিল মুক্তো ফিরিয়া আসিলে তাহাকে কি 
বলিবে। বলিবার তো কিছু 'নাই। সত্যই কি কিছু নাই? 
সত্যই কি মুক্তো! টাকা ছাড় আর কিছু বোঝেন? 


ভাব্রজ্ল্শঞ্র 








[ ২৮শ বর্ধ-_২য় খণ্ড ৩য় সংখ্যা 


বস সহ সহ সস 


মুক্তোর মুখ দেখিয়া কথাবার্তা 'শুনিয়া তাহা তো৷ 
মনে হয় না। | 
"আপনি এখানে হামেনা কি করতে আদেন মোশায় 
বলুন তো---” 
শঙ্কর চাহিয়া দেখিল- লুঙ্গিপর! গুণ্ডা গোছের একটা লোক 
আসিয়া! প্রবেশ করিয়াছে । ঘাড়ে একদম চুল নাই, সামনে 
ঘোড়ার মত চুল, মাঁংসল মুখে নিষ্ঠুর একজোড়া চোক, অধ- 
রোগ্ঠের নীচে এক গোছা মিশ কালো! নূর, দাঁড়ি নাই, গৌফ 
আছে বটে-_কিন্তৃপুরাপুরি নাই, মাঝথানে খানিকটা কা মাইয়া 
ফেগাতে মাত্র ঠোটের দুইপাশে খাঁনিকট৷ করিয়া ঝুলিতেছে। 
শঙ্কর সবিম্ময়ে লোকটার মুখের পানে চাহিয়! রহিল । 
“মোতলবখান! কি মোসায়ের-_” 
শঙ্কর নির্ববাক। 
“জোবাব দিচ্ছেন না যে বড়-_” 
*তোমাকে জবাব দেব কেন, তুমি কে?” 
“হামি তোমাবএবাপ! সালা হারামিকা বাচ্ছা, বেরিয়ে 
যাও এখান শন 


প্থবরদার 1” 

শঙ্কর হঠাৎ ঘুষি পাঁকাইয়! দাঁড়াইয়া উঠিতেই মুক্তো 
ছুটিয়া আসিয়া প্রবেশ করিল। 

"এ কি কাগ্, বাঘা এসব কি হচ্ছে» 

বাঘা বলিল, প্বাঃঃ তুমিই তো বিবিজান আসতে 
বললে হামাকে। আভি বলছে! এসব কি হচ্ছে? গরদনিয়া 
ন! দিলে কি এ হারাঁমির বাচ্ছা নিকল্বে--” 

“আচ্ছা, যা তুই__” 

বিনা বাক্যব্যয়ে বাঘা বাহির হইয়া গেল। ধেন পোষা 
কুকুর ! 

শঙ্কর প্রশ্ন করিল, “লোকটা কে?” 

«ও বাঘা । আমাদের আপনার লোক ।” 

“আপনার লোক মানে ? 

মুচকি হাসিয়া মুক্তো বলিল “আপনার লোঁক মানে 
কি তা জানেন না? যারা বিপদে আপদে রক্ষে করে 
তারাই আপনার লৌক। ওর! ছাড়া আমাদের আপনার 
লোক আর কে আছে বলুন--“ 

শঙ্কর বজ্জাহতের মত দীড়াইয়া রহিল। ধিগদে আগণে 
রক্ষা করে! 


ফাস্তুন__-১৩৪৭ ] 


আপা স্গ্ 


“অমন ক'রে গাড়িয়ে রইলেন কেন ? বসুন, চা আনতে 
দিয়েছি 1” 

শঙ্কর কোন কথা না বলিয়! বাহির হইয়] গেল। 

“শঙহ্বরবাবু, একটি কথা শুনে যাঁন, ছুটি পায়ে পড়ি 
আপনার-_শুন-_ শুনে যান-_” 

শঙ্কর আর ফিরিয়া চাহিল ন!। যতক্ষণ দেখা গেল 
মুক্তো শঙ্করের পানে চাহিয়! রহিল, কিন্তু বেশীক্ষণ দেখা 
গেল না। কতটুকুই বা গলি, শঙ্কর দেখিতে দেখিতে 
তাহা পার হইয়া! গেল। মুক্তে' তবু সেইদিকে চাহিয়া 
দীড়াইয়া রহিল। তাঁহার পুণ্যলেশহীন অন্ধকার পতিতা- 
জীবনে একটিমাত্র পুণ্য-প্রেরণার শিখা জলিয়াছিল। 
সেই শিখার ইন্ধন জোগাইতে গিয়াই সে নিঃস্ব হইয়া গেল। 
শঙ্করের মত ছেলেকে সে নষ্ট করিতে চাঁহে নাই। যেদিন 
তাহাকে প্রথম দেখিয়াছিল সেই দিনই মনে মনে গ্রতিজ্ঞ। 
করিয়াছিল__যেমন করিয়া! হোঁক পদ্ষিলতা হইতে ইহাঁকে সে 
রক্ষা করিবে। অন্ত্ধন্দে সে ক্ষত-বিক্ষত হইয়াছে, কিন্ত 
হার মানে নাই, শঙ্করকে পঙ্ককুণ্ড হইতে সত্যই রক্ষা 
করিয়াছে। 

কিন্তু এখন তাহার সমস্ত নারী-হৃদয় উন্মথিত করিয়] 
যে দীর্ঘনিশ্বাস বাহির হইল তাহা স্বস্তির নিশ্বাস নহে। 
তাহার অন্তরের অন্তস্থল হইতে অশ্ররুদ্ধ কণ্ঠস্বরে কে যেন 
বলিতেছিল-তুমি একি করিলে এ কি করিলে-_- ও যে 
চলিয়া গেল ! মুক্তে বুঝিয়াছিল শঙ্কর আর আসিবে না। 
শূন্য গলিটার পানে চাহিয়। তবু সে দাড়াইয়৷ রহিল। 


০.০ এ. ০.৪ 





জি 





অনেকক্ষণ হাটিবার পর শঙ্কর অন্যমনস্ক হইয়া এমন 
একটা গলিতে ঢুকিয়৷ পড়িয়াছিল যাহা তাহার সম্পূর্ণ 
অপরিচিত। কিছুদূর অগ্রসর হইয়া দেখিল ব্লাইগ্ড লেন, 
বাহির হইবার পথ নাই। ফিরিতে হইল। কিছুদূর 
আসিবার পর দেখিতে পাইল একটা বাড়ির দরজা খুলিয়া 
একটি মেয়ে বাহির হইয়া সামনের বাড়ির দরজার কড়া 
নাঁড়িতেছে। শঙ্কর দীড়াইয়! পড়িল । 

“এই গলি থেকে বেরোবার রাস্তাট্! কোন্‌ দিকে বলতে 
পারো, আমি রাস্তা হারিয়ে ফেলেছি ।” 

মেয়েটি বলিল, “আর একটু এগিয়ে গিয়ে ডান দিকে 
গেলেই রান্তা পাবেন।” 


ভন 





২৩ 


স্স্যগ 





সদ বব বা ব্রা ১ - -ন- সহ “বা” 


শঙ্কর আগাইয়! গেল। আগাইয়! গিয়া সত্যই দেখিল-_ 
ডান দিকে বাহির হইবার পথ রহিয়াছে । আরও খানিকটা 
গিয়া বউবাজারে পড়িল। সামনেই একটা ক্রীম পাইয়া 
তাহাতে উঠিয়া বসিল। একটু পরেই কিন্তু নামিয়া যাইতে 
হইল। সঙ্গে পয়সা ছিল না এবং সেকথা মনেও ছিল 
না। শঙ্কর আবার হাটিতে লাগিল। গলির সেই 
মেয়েটির মুখখানি মাঝে মাঝে মনে ভাসিয়া আসিতে 
লাগিল। ভারি হ্ন্দর ন্নিপ্ধ মুখখানি । মুক্তোর 
মুখখানিও মনে পড়িল। পড়,ক- কিন্ত মুক্তোর কাছে 
আর সে যাইবে না। যাইবার আর উপায় নাই। অত্যন্ত 
অপ্রত্যাশিতভাঁবে যবনিকাপতন হইয়া! গিয়াছে । ভালই 
হইয়াছে । একট! অস্বস্তিকর দুঃস্বপ্ন হইতে সে যেন সহসা 
জাগিয়া উঠিয়াছে। আরও কিছুদূর গিয়া শঙ্করের চোখে 
পড়িল--একটা পাগল! ডাস্টবিন হইতে এঁটোভাত তুলিয়। 
থাইতেছে। সুখময় খোঁচ। ধোঁচা গৌঁফদীড়ি, গাঁয়ে 'একটা 
ছেঁড়া কোট ছাড়া আর কিছু নাই। শঙ্করের মনে পড়িল__ 
এই লোকটাই কিছুদিন আগে সাকুর্লার রোডে মাথায় 
কাগজের টুপি পরিয়া সকলকে নিধ্বিকারচিতে সেলাম 
করিয়া বেড়াইতেছিল। এখনও নিব্বিকারচিত্তে ডাস্টবিন 
হইতে ভাত তুলিয়৷ খাইতেছে। ভগ্ট, অথবা বক্ষি 
মহাঁশয় দেখিলে মোস্তাককে চিনিতে পারিত। 

শঙ্কর ভাঁটিতে হ্াঁটিতে অবশেষে হস্টেলের দিকেই 
ফিরিতে লাগিল। মুক্তোর কাছে আর যাইবে না ইহা ঠিক 
করিবার পর হইতে শঙ্করের মন যেন অনেকটা হালকা 
হইয়া গিয়াছে । অনেক দিন কারাবাসের পর যেন সহসা 
মুক্তি পাইয়া বাঁচিয়াছে। হস্টেলে ফিরিয়! দেখিল তাহার 
নামে একটি জরুরি টেলিগ্রাম আসিয়াছে-_-বাবা অবিলছে 
বাঁড়ি যাইতে বলিতেছেন । 

অবিলম্বে কলিকাতা ত্যাগ করিবার একটা ওজুহাত 
পাইয়া সে যেন বাচিয়া গেল। 





১৬ 


যদিও সে মনে মনে এইরূপই কিছু একট! প্রত্যাশ। 
করিয়া আসিতেছিল, কিন্ত এতটা প্রত্যাশা করে নাই। 
আসিয়াই যে দুইজন কন্সাপক্ষীয় ভদ্রলোকের সম্মুখীন 
হইতে হইবে তাহা দে ভাবিতে পারে নাই। কিছুকাল 


ই 


পূর্বে যখন সে বাবাকে চিঠি লিখিয়াছিল যে তাহার এখন 
বিবাহ করিবার ইচ্ছা নাই তখন তাহাই তাহার সত্য 
মনোভাব ছিল। কিন্তু এখন তাহার আর সে মনোভাব 
নাই। ছুই দিনে সমন্ত বদলাইয়া গিয়াছে । তাহার সমস্ত 
দেহে মনে যে ক্ষুধা জাগিয়াছে তাহাকে নিবৃত্ত করিতে না 
পারিলে সে পাগল হইয়া যাইবে। মুক্তোকে সে পাইবে না, 
পাইতে পারে না এবং এখন পাইতে চাছেও না । তাহার 
পদ্ছিল স্পর্শ হইতে সে যে মানে মানে দূরে চলিয়া আসিতে 
পারিয়াছে এজন্ত সে আনন্দিত। পঙ্ষিল স্পর্শ! এখন 
মুক্তোর স্পর্শকে পন্ধিল স্পর্শ মনে হইতেছে! 


বাড়িতে আসিয়! দেখিল-_বৈঠকথানায় দুইজন অপরিচিত 
ব্যক্তি বসিয়া রহিয়াছেন। পুরাতন ভৃত্য ব্রজ সর্বাগ্রে চুপি 
চুপি সংবাদটি দিল__ইছারা তাঁহার বিবাহের সম্বন্ধে পাঁকা 
কথা কহিতে আসিয়াছেন। সাড়া পাইয়া! ম! বাহির হইয়া 
আসিলেন। মায়ের চেহারা দেখিয়া শঙ্কর স্তভিত হইয়া 
গেল। মা এত রোগ! হইয়া গিয়াছেন! তাহার শরীরের 
সমস্ত রস কে যেন শোঁধপ করিয়া! লইয়াছে, মুখের দিকে 
তাকানো যায় না। শু শীর্ণ পাওুর মুখচ্ছবি। চোঁথ- 
মুখের দীপ্তি নাই, কেমন যেন অসহায় অর্থহীনভাবে শঙ্করের 
মুখের দিকে চাহিয়া! রহিলেন--যেন দেখিয়াও দেখিতেছেন 
না। শঙ্কর প্রণাম করিল। যন্ত্রচালিতবৎ তিনি আশীর্ববাদ 
করিলেন। মস্তক চুস্কন করিয়া বলিলেন» “আয় 
ভেতরে আয়--” 

শঙ্কর ঘরের ভি্তর প্রবেশ করিল। শঙ্করকে বিছানায় 
বসাইয়া হাত দিয়! চিবুকটি তুলিয়৷ ধরিয়! মৃছু হাসিয়া মা 
বলিলেন, “একবারও মাঁকে মনে পড়ে না !” 

শঙ্কর এতদিন যে জগতে বিবরণ করিতেছিল সে অন্ত 
জগত । অনেকদিন পরে সহসা মায়ের কাছে আসিয়া 
সে ষেন নিজেকে ঠিক শ্বচ্ছন্দে প্রকাশ করিতে পারিতেছিল 
না। কেমন যেন খাপ খাইতেছিল না। মায়ের কথা 
গুনিয়া সে মনে মনে লজ্জিত হইল । মুখে বলিল, “কলেজের 
ছুটি ছিল না--” 

মা ক্ষণকাল, তাহার মুখের পানে চাহিয়া রহিলেন। 
তাহার পর বলিলেন, “্হাতমুখ ধোও, খাবার আনি ।” 

বাহির হইয়া গেলেন। 


ভ্ঞান্তত্ড 


[ ২৮শ বর্ষ--২র থণ্ড--৩য় সংখ্যা 


শঙ্করের মনে সহসা সেকালের মায়ের মুখখানা ফুটিয়! 
উঠিল__যখন মা টক্টকে লালপাড় শাড়ি পরিতেন, খন 
তাহার মুখখানি মহিমায় প্রদীপ্ত ছিল। পরক্ষণেই 
পাগলিনীর ছবিটাও মনে পড়িল। জানালার গরাদের সঙ্গে 
হাত বাধা, অসংলগ্ন আর্তচীৎকার ! এখন আবার এ কি 
চেহারা--সশঙক্কিত অসমর্থ, র্লাস্ত--সমস্ত জীবনীশত্তি কে 
যেন নিগুড়াইয়! বাহির করিয়া লইয়াছে। 

অশ্বিকাবাবু আসিয়! প্রবেশ করিলেন । 

“তুমি চা-টা খেয়ে বাইরে এসে! একবার, ওরা তোমার 
সঙ্গে আলাপ করবেন একটু” 

“ওরা কারা ?” 

“শিরিষবাবু আর মুকুজ্যে মশাই, শিরিষবাবুর বন্ধু । 

“শিরিষবাবুর মেয়ের সঙ্গে তোমার বিয়ের সম্বন্ধ হচ্ছে__” 

যদিও শঙ্করের মত বদলাইয়াছিল, তথাপি সে বলিল-_ 
“আমি তো বলেছিলাম-_-” 

“জানি, চিঠি পেয়েছি তোমার । কিন্তু তোমার মতের 
সঙ্গে আমার মতের মিল হল না, আঁই আযাম সরি। চা-টা 
খেয়ে বাইরে এসো” 

“আমার মতের কি কোন দাম নেই বলতে চান ?” 

“তোমার নিজের দামই যখন এখনও পর্যন্ত অনিশ্চিত, 
তখন তোমার মতের দাম স্নিশ্চিত হবে কি করে ?” 

“তার মানে ?” 

“এটা কি সত্যি কথা নয় যে আমার দামেই তুমি সমাজে 
এখনও পর্যন্ত বিকোচ্ছ? স্ুতরাং তোমার সম্বন্ধে আমার 
অভিরুচি এবং অভিমতই মানতে হবে তোমাকে । তোমার 
ত্বতন্ত্র মত তখনই সহা করব যখন শ্বতন্ত্রভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা 
করতে পারবে । যতক্ষণ তা না করতে পারছ ততক্ষণ 
আমার কথা গুনেই চলতে হবে তোমাকে !” 

শঙ্করের মাথার ভিতর যেন দপ. করিয়া আগুন জলিয়! 
উঠিল-_.কে যেন সজোরে তাহাকে কশাঘাত করিল। ইচ্ছা 
হুইল তখনই উঠিয়া বাহিরে চলিয়! যায়, কিন্তু সে পারিল 
না। কিছুই পারিল না। একটা কথা পর্য্যস্ত বলিতে 
পারিল না। বজ্জরাহতের মত চুপ করিয়া বলিয়া রহিল। 

অস্বিকাঁবাবু বাহিরে চলিয়া গেলেন। বলিয়! গেলেদ-_ 
পচা-টা থেয়ে এসো বাইরে--ভোন্ট বি.এ ফুল্‌-_” 

শঙ্কর ত্যন্ধ হইয়া বসিয়া রহিল। তাহার মাঁনসপটে 


ফাল্ভুন--১৩৪৭ ] 


মুক্তোর মুখচ্ছবি ফুটিয়া উঠিল, যেন শুনিতে পাইল মুক্তো 
বলিতেছে--“এ কণ্ট! টাকায় কি হবে, এই নিন আপনার 
টাকা, গরীবের ছেলের এসব ঘোড়ারোগ কেন বাপু ।__” 
টাকা, টাকা, টাকা! টাকা না থাকিলে পৃথিবীতে কেহ 
সম্মান করে না, এমন কি পিতাঁও না! শঙ্কর ভাঁবিতে 
লাগিল, কিন্তু উঠিয়! চলিয়া যাইতে পাঁরিল না, তাহার অন্তর- 
বাসী আত্মসম্মানহীন কাঙালটা বিবাহ করিবার লোভে 
এতবড় অপমাঁন সহা করিয়াও উন্দুখ হইয়া বসিয়া! রহিল। 





পাশের ঘরে কথাবার্তী চলিতেছে-_-শঙ্কর উৎকর্ণ 
হইয়া শুনিতেছিল। 

শিরিষবাবু মিনতি সহকারে বলিতেছিলেন__“দেখুন,আমি 
অতি দরিদ্র“ অত টাঁকা আমি দিতে পাঁরব না । একটু 
বিবেচনা! করতে হবে|” 

অশ্বিকাবাঁবু বলিলেন, পবিবেচন! ক/রেই বলছি । আড়াই 
হাজার টাকা এমন কিছু বেশী নয় ।» 

“আমার পক্ষে বেশৌ। আপনি দয়! না করলে-_” 

“দেখুন, যাঁরা কথায় কথায় দয়! প্রার্থনা করে সেই সব 
আত্মসম্মানহীন লোকের ওপর আমার কেমন যেন শ্রদ্ধা 
কমে যায়। যখন পড়তাম তখন করালিচরণ বলে একটি 
ছেলে আমাদের মেসে থাকত। তাঁর অনেক দোষ ছিল 
কিন্তু তার আত্মসম্মানের জন্তেই তাঁকে আমরা সবাই খাতির 
করতাম। আমাকে দাদা দাঁদা বলত, পড়াশোনায় খুব 
ভাল ছিল, কিন্তু তাকে শ্রদ্ধা করতাম তাঁর ওই আত্মসম্মান- 
বোধের জন্যে । সেদিন অনেকদিন পরে তার সঙ্গে দেখা। 
সে জ্যোতিষ চর্চা করছে গুনে তার কাছে আমার এক 
আত্মীয়ের কুষ্ঠি নিয়ে গেলাম দেখাতে । সে প্রথমেই বললে 
--অস্থিকদা, দশ টাকা দক্ষিণ! লাগবে কিন্ত। আমি তার 
মুখের দিকে চাইতেই সে বললে; দশ টাকা আপনার কাছে 
না নিলেও আমার চলে যাবে, কিন্ত আপনি শুধু শুধু আত্ম- 
সম্মানটা খোয়াবেন কেন? আমাদের দেশের লোক কিছুতে 
এ সামান্ঠ কথাটা মনে রাখে না। তারা সর্বদাই সকলের 
কাছে গলবস্ত্র হয়ে কৃপাতিক্ষা করুছ। আশা করি 
আপনি তাদের চেয়ে একটু স্বতন্ত্।” 

শিরিষবাবু এই তীক্ষ বন্তৃতাটি গুনিয়া একটু অগ্রতিভ 
হইয়া গেলেন। বলিলেন, “সত্যিই বড় দরিত্র আমি |” 


ভা্ছন্স 


হি ৩৫ 


মুকুজ্যে মশাই স্মিতমুখে বসিয়াছিলেন, বলিলেন-- 
“আচ্ছা! টাকার জোগাড় করা যাবে। উনি যা বলছেন 
তা ঠিকই__» 

শিরিষবাবু চুপ করিয়া রহিলেন। 

অশ্বিকাবাবু বলিলেন, “আড়াই হাজার টাকা এমন 
কিছু তো বেণী নয়-_-” 

শঙ্কর আর সহ করিতে পারিল না, দ্বার ঠেলিয়া ঘরের 
মধ্যে ঢুকিয়া পড়িল। 

বলিল, “আমি এক পয়সা পণ চাই না। আপনার! 
যদি আমার সঙ্গে বিয়ে দিতে চাঁন, বিনাপণেই আমি বিয়ে 
করে আসব। মেয়েও দেখতে চাই না! আমি |» 

সকলেই অবাক হইয়া গেলেন। 

অস্থিকবাবু শঙ্করের মুখের পানে চাহিয়া সিগারের 
ছাইটা ধীরে ধীরে ঝাঁড়িলেন। তাহার পর শিরিষবাবুক্ধ 
দিকে চাহিয়! বলিলেন, “তা হ'লে তো মামগ! মিটেই গেল। 
সংসার-সমুত্রে বিনা নৌকোতে পাড়ি দেবার সাহস বাঁবা- 
জীবনের আছে দেখছি; আপনাদেরও যর্দি ওর দুঃসাহসের 
ওপর ভরস! থাকে, দিন ওর সজ্জ“আপনার মেয়ের বিয়ে 
-_আই হাভ নে অবজেক্শন্। আমি ওদের সুবিধের 
জন্তেই নৌকোর চেষ্টায় ছিলাম 

চক্ষু বুজিয়৷ ভ্রকুষঞ্চিত করিয়া! তিনি সিগারে একটি মৃছুটান 
দিলেন । মুকুজ্যে মশাই এককৃষ্টে শঙ্করের দিকে চাহিয়াছিলেন। 

শঙ্কর আর দীড়াইল না, বাহির হইয়া গেল। 





১৭ 


অল্পদিনের মধ্যেই শঙ্করের বিবাহ হুইয়া গেল। 

বলাবাহুল্য অদ্িকাবাবু বিবাহে যোগদান করেন নাই। 
শঙ্কর বন্ধুবান্ধব কাহাকেও, এমন কি ভণ্টকেও খবর দেয় 
নাই। শিরিষবাবু অমিয়াকে গহনাপত্র ছাড়া নগদ এক 
হাজার টাকা দিতে চাহিয়াছিলেন, শঙ্কর সে টাকা গ্রহণ করে 
নাই। সত্যসত্যই বিনাপণে সে অমিয়াকে বিবাহ করিল। 
শুতদৃষ্টির সময় শঙ্কর সবিন্ময়ে লক্ষ্য করিল_ মেয়েটি তো 
অচেনা নয়, কোথায় ষেন ইহাকে. দেখিয়াছে। হঠাৎ মনে 
পড়িল কিছুদ্দিন আগে একটা ব্লাইগ্ত লেনে-ঢুকিয়৷ সে পথ 
খুঁজিয়া পাইতেছিল না। এই মেয়েটিই তাহাকে পথ 
দেখাইয়া দিয়াছিল। 


২৬৮৩ 





অমিয়াও জবিম্ময়ে দেখিল যে একাগ্রমনে শিব-পৃজা 
করা সত্তেও ক্যালেগ্ারের শিবের চেয়ে তাহার স্বামী ঢের 
বেশী সুন্দর হইয়াছে । শাস্তি, বিলুঃ কমলি, টগর, এমন কি 
রেণুদির বরের চেয়েও তাহার বর দেখিতে ভালো । 

কেমন চমতকার চোখ ছুটি! 


১৮ 


শঙ্কর হস্টেলে বিছানায় শুইয়| শুইয়া ভাঁবিতেছিল তাহার 
জীবনের এই প্রধান ঘটনাটি কত সহজে ঘটিয়া গেল। 
কিছুদিন পূর্বে সে স্বপ্নেও ভাবে নাই যে সে বিবাহ করিবে । 
সহসা সে আবিষ্কার করিল যে তাহার জীবনের গতিকে 
যতবার সে নিয়ন্ত্রিত করিবার চেষ্টা করিয়াছে ততবারই তাহা 
বার্থ হইয়া গিয়াছে । ম্যাট কুলেশন পাশ করিবার পর সে 
ঠিক করিয়াছিল অবিবাহিত থাকিয়া! আজীবন দেশ-সেব! 
করিবে। কংগ্রেসে ভলাটিয়ারি করিয়া, বন্যা-প্রপীড়িতদের 
জন্ট চাঁদা আদায় করিয়া? দ্বারে দ্বারে খন্দর ফেরি করিয়! 
এবং ঘরে ঘরে চরকা বিতরণ করিয়া অদ্ভুত একটা উন্মাদনার 
মধ্যে কিছুকাল তাহার কাটিয়াছিল। এ উন্মাদনা কিন্তু 
বেণী দিন রহিল নাঁ। আই. এস-সি. এবং বি. এস-সি. 
পড়িতে পড়িতে বিজ্ঞানের নেশায় তাহাকে পাইয়া বসিল। 
দৃঢ় প্রতীতি জন্মিল যে বিজ্ঞানের সেবা করিলেই প্রকৃত 
দেশ-সেবা কর! হইবে। অবৈজ্ঞানিক রীতিতে দেশ-সেবা 
অর্থহীন। এ যুগে চরকা চালাইবার চেষ্টা বাতুলতা। 
বৈজ্ঞানিক পন্থার দেশের অর্থনৈতিক সমস্তার সমাঁধান-চেষ্টাই 
সমীচীন । ন্ৃতরাং ঠিক করিয়াছিল আজীবন অবিবাহিত 
থাকিয়! বিজ্ঞান-চচ্চাই তাহাকে করিতে হইবে। কিন্তু এ 
সব মফ্েলীয় কল্পনা কলিকাতায় আসিয়া ধুলিসাঁৎ হইয়া 
গেল। কলিকাতায় আসিয়! শঙ্কর নিজেকে যেন পুনরায় 
আবিষ্ষার করিল। দেখিল তাহার মন অনিবার্ধ্য টানে যে 
দিকে আকষ্ট হইতেছে তাহা বিজ্ঞান নয় সাহিভ্য। আরও 
আবিষ্কার করিল যে নারী-সঙ্গ-বজ্জিত জীবন আর যেই ষাঁপন 


ভ্াব্রুভন্বশ্র 


[ ২৮শ বর্-_২য় খণ্ড--ওয় সংখ্যা 


স্্ 








স্ব স্স্িপ” 


করিতে পাঁরুক সে পারিবে না। তাহার একজন সঙ্গিনী 
চাই। তাহার এই অন্তনিহিত কামনাগ টানে মিষ্টিদিদি, 
রিণি, যুক্তো আকস্মিকভাবে আদিল ও চলিয়া গেল। 
অমিয়ার মুখখানি তাহার মনে পড়িল। কত ছেলেমামুষ 
এবং কত লাঁজুক। ফুলশয্যার রাত্রে লজ্জায় চোঁখই খুলিল 
ন|। কোথায় ছিল এই অমিয়া? কোন্‌ অজ্ঞাতলোঁক 
হইতে সহস! বাহির হইয়া আসিয়! তাহার জীবনে এমন 
কায়েমি আসন দখল করিয়া! বসিল। 

পিওন আসিয়া প্রবেশ করিল এবং চিঠি দিয়! গেল। 
বাবার চিঠি। শঙ্কর এইরূপই কিছু একটা প্রত্যাশা 
করিতেছিল, তবু সে পত্রথানি পড়িয়া স্তস্তিত হইয়! গেল। 
পত্রথানি এই_ 


কল্যাণবরেষু, 

বিবাহ-ব্যাপারে তোমার স্বাধীন মনোবুত্তির পরিচয় 
পাইয়! স্থথী হইয়াছি। অপরের টাকা না লইয়! স্বাবলম্বী 
হইবার সাহস তোমার আছে ইহার প্রমাণ তুমি দিয়াছ) 
শক্তিও যে আছে সে প্রমাণও আশা করি দিতে পারিবে। 
স্থতরাং আগামী মাস হইতে তোমার খরচ দেওয়া আমি 
বন্ধ করিলাম । যে সমর্থ তাহার অপরের সাহায্যের প্রয়োজন 
নাই। পৃথিবীতে অসমর্থ অসহায় লোক অসংখ্য ৷ নিজেদের 
আত্মীয় তোমার মামাতো ভাই নিত্যানন্দ টাকার অভাবে 
পড়াশোনা বন্ধ করিয়াছে । যে টাকাটা তোমাকে দিতাম 
তাহা তাহাকে দিলে সে বেচারা বোধ হয় এম. এ-টা পাশ 
করিতে পারিবে । টাঁকাঁটা তাহাকেই দিব গ্বির করিয়াঁছি। 
ভগবানের নিকট প্রার্থনা করি, তিনি তোমাকে তোমার 
স্গদ্দার অনুরূপ শক্তি ও আত্মসম্ান দান করুন। আমার 
আীর্বাদ জানিবে। ইতি 

আশীর্ববাদক 
শ্রীঅঘিকাচরণ রায় 


( ক্রমশঃ ) 


1088 ২ 


| 
শট 
সি 
ঃ 
নস 
£ 





188৮1 41 1 


বৈজ্ঞানিক পরিভাষা 


শ্ীকমলেশ রায় এমৃ-এস্‌-সি 


পদার্থ বিজ্ঞান আলোচনা 

বর্তমান সাহিত্যে বিজ্ঞানের স্থান বড় অল্প নহে। বিজ্ঞান শুধু 
বিজ্ঞানই নহে, ইহা জাতীয় ভাষ! সৌষ্ঠবেরও অঙ্গ । বহু সুলেখক বিদেশী 
বৈজ্ঞানিক শবের হুন্দর বাংল! প্রতিশব্দ প্রণয়ন করিয়া মাতৃভাষার 
ভাগ্ার পূর্ণ করিয়াছেন ও করিতেছেন। কয়েক বৎসর যাবৎ বিভিন্ন 
পত্রিকায় বাংল! বৈজ্ঞ/নিক প্রধন্ধাদি নিয়মিত প্রকাশিত হইতেছে এবং 
ইহার চাহিদ[ও দিন দিন বাড়িতেছে। 

কলিকাত! বিশ্ববিষ্ঠালয় বাংলা বৈজ্ঞানিক পরিভাষার আদর্শমান 
স্থাপনের ভার গ্রহণ করিয়াছেন। বিশ্ববিষ্তালয় হইতে প্রকাশিত 
পরিভাষা-পুন্তিকাবলী সকলের আদর্শ হইবে । বল! বালা ইহা! এখনও 
অসম্পূর্ণ, ক্রমে ক্রমে ইহাতে আরও শবোর সমাবেশ হইবে। কিন্তু এখন 
যাহ! আছে তাহাদেরও সমালোচনা ও প্রয়োজন মতো সংশোধন 
হওয়! আবাক। 

বর্তমান প্রবন্ধে পদার্থ বিজ্ঞানের (71)/5105 ) পরিভাষা! সম্বন্ধে 
কিঞ্চিৎ আলোচন|! করিব। কিছু সংশোধন ও কিছু নুতন শব্দের 
অবতারণা করিব ইহাই ইচ্ছা । অবন্ত এস্লে প্রদত্ত পরিভাষাই যে 
চরম হইবে তাহা নহে; ইহা লেখক, পাঠক ও বিগ্তংমগুলীর অনুমোদন- 
সাপেক্ষ রহিল বলিয়া মনে করি। 

পরিভাষ! প্রবর্তনে কী কী বিষয় লক্ষ্য রাখিতে হইবে তাহা প্রথমে 
বিচাধ্য। শ্রীযুত রাজশেখর বন্ধ তাহার চলস্তিকা অভিধানে লিখিয়াছেন 
“-**পদার্ঘ বিজ্ঞ।ন, রসায়ন, জীববিস্তা প্রভৃতি আধুনিক বিস্তার নব রচিত 











পরিভাষা যদি বস্তবাচক হয় তবে চলিবার পক্ষে বাধ! আছে, কিন্ত ধদি 
জাতি ব! ক্রিয়া বাচক হয় তবে বছ পরিমাণে চলিবে ।” (২য় লং 
৬২৬ পৃঃ)। 

পরিভাষা প্রবর্তন নিয্ললিখিত বিষয়গুলির প্রতি লক্ষ্য রাখা উচিত 
বলিয়া মনে করি ঃ 

(১) স্রপ্রগ্লত বিদেশী শবের পরিবর্তন নিপ্রয়োজন, বখা-. 
অক্সিজেন, রেডিরাম, ইলেক্ট্গ ইত্যারদি। এই শ্রেণীর মধ্যে বস্তবাচক 
শব্দই প্রধান। 

(২) প্রচলিত বাংলা শব্ধ অপরিবর্তিত রাখিতে হইবে, পরিবর্তন 
করিয়া নুতন শব্দ প্রচলন কর! অনুচিৎ ; যথ| £--91১6০৮01-- 
বর্ছত্র (প্রচলিত), বর্ণালি (নূতন) 018%181109 _মাধ্যাকর্ষণ 
( প্রচলিত ), মহাকর্ষণ (নুতন বা স্বল্প প্রচলিত ), ইত্যাদি । 

(৩) ব্যাখ্যামূলক বা অর্থনৃচক প্রতিশব পরিভাষ! গঠনের পক্ষে 
বিশেষ উপযোগী । 

(৪) একই শব্দের একাধিক প্রতিশব্দ চলিতে পারিবে, যদি 
হু হয়। 

(৫) যে পর্যন্ত হু প্রতিশব সঙ্কলিত না হয় তদবধি বিদেশী 
শব্দই ব্যবহার কর! সমীচীন । 

নিয়লিখিত তালিকার বাম পার্থে যে ক্রমিক সংখ্যা আছে 
সেই সংখ্যা অনুলারে তালিকার শেষে তাহাদের সমালোচন! প্রদত্ত 
হইল। 


স্পা সপ তা পট এ পা শনি ৬৫ 


বিদেশী শব কলিকাত। বিশ্ববিষ্ঠ।লয় প্রবস্তিত সংশোধিত, নুতন প্রবর্তক 
পরিভাবা ( অন্যান্য ) 

(১) 1১155105 পদার্থ বিস্তা পদার্থ বিজ্ঞান 

(২) £51651081117% পরিবর্তী দ্বিরাভিমুখী 

(৩) এ. ০1521 পরিবস্তি প্রবাহ তবিরাভিমুখী প্রবাহ 

(৪) 10108 1895 ] আলফ| কণ! আলফ! রশ্মি 

(৫) [087010155 আল্ফ। কণ! 

(৬) /১101160 50161009 ফলিত বিজ্ঞান ব্যবহারিক বিজ্ঞান 

(৭) 4515, 10601015] উদ্দাসীন অঙ্গ নিষ্্রিয়াক্ষ লেখক 
(৮) 4১15, 00009] আলোক অক্ষ কিরণাক্ষ 
(৯) 40102 আযনায়ন ধণানু 
(১০) &17701100৩ বিন্তার ক্ষেএ ৪ 
(১১) *06050018007 দৌরন ক্ষেত্র ৮ 
(২). 8 ড10191107 - কম্পন ক্ষেঅ .* 


৮৭ 


২১৮৮৮ 


(১৩) 


(১৪) 


(১৫) 
(১৬) 
(১৭) 
(১৮) 


(১৯) 
(২*) 
(২১) 
(২২) 
(২৩) 


(২৪) 
(২৫) 
(২৩) 
(২৭) 
(২৮) 
(২৯) 
(৩*) 
(৩১) 
(৩২) 
চিনি 
(৩৪) 
(৩৫) 
( ৩৬) 
( ৩৭) 
(৩৮) 
(৩৯) 
(৪*) 
(৪১) 
(৪২) 


(৪৩) 


(৪8৪) 
(৪৫) 
(৪৬) 
(৪৭) 
(৪৮) 


301161 


30700 08101170661 


85217 (01116176) 
(10011 
0072811 


0০858171101) 


(0. 0. 5, 9551617) 
08010 

0011, 11301100101) 
02101100611 


০৮718০, ০1০০0108] 


01515, 70০00170 

0০1১818626৩ 

(01721£6) 1000060 

০ ০008756 ৬10) €160011010 

00201100101) 

(017601102 
্ঃ ০011601 

60130100001 

08070906155 

0৩11 

0617005 01 £57701017 

0910010 9121076171 

0০075726201 

০07৮০ ( £150)1) ) 

[01516151017 (০01118100) 

[01506151525 10৬61 

10150158165, 05011181019 

11717706101 


[7018] 


0085 


০0০৪1 161)601) 

5০০5) 7621 

চ০০০৫৪,, ৮616৪] 
ঢ115061 (16515500106 ) 
ঢূ. 2১, 5. 5991617) 


শাল্রভন্বযব 
বয়লার ( শ্কটনাধার ) 
বন্ধ. ক্যালরিমিটার (বিক্ষোর তাপমান বা! বিশ্ফোর 
তাপমান বস্ত্র) 
রশি কিরণ, রশ্মিগুচ্ছ 
বর্তনী (চক্র) 
চিত্র তালিকা, তালিকা চিত্র, চিন্রতালিহ! 
তঞ্চন পিগুতাপত্তি 
পিগীয়ন 
সি, জি, এস্‌, মান সে, গ্রা সে, মান 
ক্যাটায়ণ খণানু 
আবেশ কুগুলী প্রপোদন কুগুলী 
ক্যালরিমিটার তাপমান, কলরিমান, 
তড়িৎ, বিছ্যুৎ, তড়িৎ পরিমাণ, ) 
বিদ্বাৎ পরিমাণ 
বন্ধ আধান বন্ধ তড়িৎ, বদ্ধ বিদ্যুৎ 
মুক্ত আধান মুক্ত তড়িৎ, মুক্ত বিদ্যুৎ 
আবিষ্ট আধান প্রণোদিত বিছ্যুৎ,_তড়িৎ 
বিছ্যতাধান করা. ভড়িতাধান কর! 
পরিবহন পরিচালন 
পরিচলন পরিবাহ্দ 
সস পরিবাহন শ্লোত 
পরিবাহী পরিচালক 
ক্যাখোড রশ্মি খণরশি 
সেল কোব, বিছ্যাংকোধ 
অমিকেন্ত্ আবর্তনকেন্ত্র, আবর্তকেন্্র, ঘু্যকেন্তা 
৮ অঙ্গার তস্ত 
০ অভিসারী 
সস" ছকচিত্র 
বিচ্ছুরণ বিস্তার, বর্ণবিস্তার 
- বিস্তার শক্তি, 
পরিবর্তি মোক্ষণ স্পদমোক্ষণ 
- তস্ত 
-- ধাতব তস্ত 
ফোকস কিরণকেন্ত্র, 
দছন বিল, 
ফোকস দুরত্ব কিরণকেন্জ্াস্তর 
সৎ ফোকস প্রত্যক্ষ কিরণকেন্দ্াত্তর 
অনৎ ফোকস পরোক্ষ কিরণকেন্্াত্তর 
৫ নির্দেশক, (-_দুরবীক্ষণ ) 
এফ: পি. এস্‌. পদ্ধতি ফু. পা. সে. মান 


[ ২৮শ বর্ষ--ংয় খণ্ডঁ--৬য় সা 


লেখক 


যোগেশচন্দ্র রায় 
লেখক 


জগদানন রায় 
লেখক 

রাজশেখর বনু 
লেখক 


ফান্তন--১৩৪৭ ] 


খা স্বস্তি - স্ব “স্ব. “০ এস... তস্য 
চপ 


(৪৯) 


(০৫) 
(৫৬) 
(৫৭) 
(৫৮) 
(৫৯) 
(৬*) 
(৬১) 
(৬২) 


(৬৩) 


(৬৭) 
(৬৫) 
(৬৬) 


(৬৭) 


(৬৮) 


(৬৯) 


(৭০) 


(৭১) 
(৭২) 
(৭৩) 
(৭৪) 
(৭৫) 
(৭৬) 
(৭৭) 
(৭৮) 
(৭৯) 
(৮*) 
(৮১) 
(৮২) 


0120) 0200575 508150 
09061 

01901) 

07551090101 

015005002 

[791159109 [921100 


[70156 1১০9৬/01 


7626 01211 
[00001192 
[00006৫. 
11700106107) 001] 
15011)61772] 
15000610) 
[70001709161 
1 01101 


1৬] 01709101017) 


1 01017 01 00109 
11 017)6170, 10020101751 
11017761701 0: 106102 
10601 (5শ০ 910০00০-, 
5০01)0---, ৪৫০.) 
০1121 
বি 00021] 7015551015 
( 27601)27105 ) 


০016115 


6£290৮6 

3০65 ( 25102] ) 
0019$1০81 £1955 
09001051 0৭119 
()911021 17756101706171 
চ১091015 
93105 299 
7১০1৩, 76£26155 
৮০1৩১ 0095101%5 
চ21215% 
72151522100 
৮১:০০০:002 


০ 


£ভভ্তান্নিক এ্পল্লিভ্ডাম্ম। 


ছককাটা কাগজ 


লেখ, চিত্র 
মহাকর্ষণ 
অংশাঙ্কন 


আশ্ব, হর্সপাওয়ায় 


আবেশ 
আবিষ্ট 
আবেশ কুগ্গ। 


ল্যাক্টোমিটার 
গতি 


_-মাপক 
উদাসীন 


নিউক্রিয়স 


নেগেটিভ 


কস 
শত 
পি 


পজিটিভ, পরা, পর 
পজিটিভ রশ্মি, পর রশ্মি 
নেগেটিভ মেরু 

পিরিত মেরু 

লখ্ঘন 


৪ 
রস 





সহ 


হক কাগজ 


ছক চিত্র 

( মাধ্যাকর্ষণ ) 
(ক্রমাঙ্কন) 

অর্দন্র।স কাল 
অশ্বসামর্থ, 

অশ্ববল, অশ্বশক্তি 
তাপমাত্রা, তাপ একক 
প্রণে।দন 

প্রণোদিত 

প্রণোদন কুগুলী 
সমোত্তাপ 

সমোত্তাপ রেখা, সমোত্তীপ চিত্র 
( ছদ্ধমান ) 

বেগ 

বেগভার, 


ঘাতমান 
পূ্ণযবল 
ঘর্ণ্য শক্তি 
ঘর্ণ্যজাড্য 


-মান,--মানযন্ত 


নিজ্ক্রিয় 


অভিলম্ব চাপ 

কেন্্রীণ, কেন্দ্রাণু, কেন্দ্রকবা, 
পরমাণুবীজ 

(খণাত্মক, ধণ-_) 

স্বর 

বীক্ষণ কাচ 

বীক্ষণ গুণ 

বীক্ষণ যন্ত্র 

ধনাজ্ক, ধন 

ধনরশ্মি 

ক্ষণমের 

ধনমের 

তীর্ধ্যকত!, তীর্যাতা 
তী্ধ্যকত। ভ্রম, তীর্য্যকবিভ্রম 
অনুপাত 


১২৬২ 





লেখক 


55 


রাজশেখর বন 


ঠঠ 


রাজশেখর বনু 


লেখক 


মেঘনাদ সাহ। 
লেখক 





২৯২০ 


(৮৩) 
(৮৪) 
(৮৫) 
(৮৬) 
(৮৭) 
(৮৮) 
(৮৯) 
(৯*) 
(৯১) 
(৯২) 
(৯৩) 
(৯৪) 


(৯৫) 
(৯৬) 
(৯৭) 
(৯৮) 
(৯৯) 
(১**) 
(১১) 


(১০২) 
(১০৩) 


(১৪) 
(১০৫) 


(১*৬) 


(১০৭) 
(১*৮) 
(১০৯) 
(১১০) 
(১১১) 
(১১২) 
(১১৩) 
(১১৪) 
(১১৫) 


(১১৬) 


€১১৭) 
(১১৮) 


(১১৯) 


(১২) 


71555106 
[1655016) 8.00005701)6210 


চ00859 

[00031017516 

[61011 01 1255 
0020101) 01 6106169 
08490000001 8011017 
00201017। 0)6০019 
ঢ৪01০ 

[২5301381706 1১০৯ 
[২2901021001 


521 (---110729,00 005,91০) 


২2010 2.061৮6 
1২8010800:৬10 
1২50105011515, 211180121 
[২7010920015 , 11)000০০0 
চ২6215612001 
[২70191107) 

7২010605617 125 


[২5501001017 (00001 ) 
[২650151106 7০৯61 


96012511156 

91191)01) 

5110]916 12201001010 

1106101) 

300706 

560061)09 
52,01)211176161 
১০1117010 
১06০০৫00 
90600017616] 
91১601050016 
১0606706151) 
৬৩1০০।০ | 
৬৪1121)16 


(--৮6109019, 17006101) ) 


০৫০ ৫]) 17196 
০1012] (09005, 6০) 
ভ10:21116 7506101) 


425 


জ্ঞাভন্্র 
প্রেষ, চাপ 
বায়ু প্রেষ, বায়ু চাপ 
দশা ( কল!) 
-- আলোকমণ্ডল 
০ রশ্মিশলাকা! 
টি শক্তিথও 
2 কর্মথণ্ড 
৮ শক্তিখণ্ড বাদ 
অনুপাত অনুপাতাস্ক 
অনুনাদীবাক্স তুম্ব, খোল, অনুনাদী তু্বী--খোল 
ক অন্ুনাদক 
সং মূর্ত 
প্রত্যক্ষ 
তেজসূক্রিয় (বিকীরক ) 
তেজসৃক্তিয়া (বিকীরকতা, বিকীরত1) 
টি কৃত্রিম-- 
44 প্রণোদিত-_ 
হিমায়ক হিমাধার 
৫ বিকীরণ 
রোন্জেন রশি (রঞ্জন রশ্মি) 
নি বিশ্লেষণ 
রি বিঙ্লেষণ শক্তি 
স্ুবেদী ( সচেতন) 
সাইফন শুণ্ডনল 
সরল দোল গতি সরল দোলন বেগ 
প্রভব ( উৎস, উৎসকেন্ত্রু, উৎসমূল ) 
টু প্ধ্যায়, ক্রমপর্ধ্যায় 
-_ শর্করামান 
সলিনয়েড সপিল ( সপিল কুগুলী ) 
বর্ণালি বর্ণছত্র 
বর্ণালিম।পক বর্ণমান 
বর্ণালিবীক্ষণ ব্বীক্ষণ 
বর্ণালি-লিক্‌ বরণছত্র গ্রাহক 
বেগ গতি 
বিষম-_ অসম-- 
টরিসেলীয় নল শুঙ্ নল, বায়ু শুন্ঠ নল 
অদৎ-- অনুর্ত-- ' 
( পরোক্ষ) 
কম্পগতি কম্পনবেগ 
এক্স-রন্মি এক্সাংরে 


[ ২৮শ বর্ষ-_-২য় খণ্ড--৩য় সংখ্যা 


লেখক 
যোগেশচন্দ্র রায় 
লেখক 


যোগেশচন্র রায় 


ফান্তন--১৩৪৭ ] 
জা স্কিল স্কান্কাস্গল স্হপ্ল স্াল সান্তা -স্ফ বক স্ 

(১) শাবিষ্ঞা শবটী ৪ [1160 5019705 ক্ষেত্রে 
এযোজা ; 1951০5 অর্থে 'পদার্থ বিজ্ঞান বহুকালাবধি চলিয়া 


আসিয়।ছে। 

(২, ৩) “ঘ্বিরাভিমুখী' কথাটি 'পরিবর্তী' অপেক্ষা সুন্দর ও 
আতিহ্থকর। কোনও প্রবন্ধ লেখককে এই শবটি ব্যবহার করিতে 
দেখিয়াছি, লেখকের নাম ম্মরণ না থাকায় উল্লেখ করিতে পারিলাম না 
বলিয়া হুঃখিত। 

($,৫) ইংরাজীতে 21001) 12 ও 21101270106 উভয়ই 
প্রচলিত। অতএব আলফা রশ্মি ও আল্ফা। কণ। উ্য়ই ব্যবহৃত হইতে 
প|রে। বিশ্ববিষ্ভালয় হইতে প্রকাশিত পরিভাষ পুস্তিকায় 7১, 061৪ 
_“বীটা রশ্মি" ও এই প্রসঙ্গে উল্লেখ যোগ্য । 

(৯) 1১09511150 ও [ব9/911৮9 যথাক্রমে ধন ও খণ অভিহিত 
হইয়া থাকে । এক্ষেত্রে 101) বা 10701260 &97)কে ধনানু ও খণানু 
বলা অসঙ্গত হইবেনা--শব্দ দুইটি সরলও | 

(১৫) রশি 125. 

(১৬) চক্র বা বিদ্যুৎচক্র পূর্বে প্রচলিত ছিস। 

(১৯) লিখিবার ও বলিবার সময় সেপ্টিমিটার-_-গ্র্যাম-_সেকেও 
ব্যধহৃত হইবে; ইহাদের সংক্ষেপ বা আগ্গক্ষর সে-গ্রাসে। গ্রযা বা 
গ্রা উভয়ই চলিতে পারে | বাংলা হরফে পি, জি, এস্‌ লেখ অর্থহীন । 
[7. 1১, 5. ১১৪৫০।7) ক্ষেত্রেও একই যুক্তি, ৪৮ ভ্রষ্টব্য। 

(২*) (৯) দ্রঠবা। 

(২১) আবেশ অর্থে ভাবাবেশ, বিহ্বলতা আসক্তি, অভিনিবেশ 
ইত্যাদি। প্রণোন শব্দটী 10000119070 এর প্রকৃত অর্থ। 

(২২) তাপমাত্রা পরিমাপ করিবার যন্ত্রকে 'তাপমান' বা 
'তাপমান যন্ত্র' বলা সঙ্গত। 'ক্যালরি' অথবা "থান উভয় এককেই 
তাপ পরিমাপ কর! যাইতে পারে এই যন্ত্রের সাহায্যে। সাধারণ অর্থে 
'ক্যালরিমান'ও চলিতে পারে। 1[)671700)6161-উত্তাপমান ব 
উষ্তামান য্ত্র। 

(২৪, ২৫, ২৬) এম্বলে 05186 অর্থে €16০01081] 0121851 
এক্ষেত্রে তড়িৎ বা বিছ্যাৎ শব্ধ 'আধান' অপেক্ষা অধিক প্রযোজ্য ও 
সুম্পষ্ট অর্থজ্ঞাপক। 

(২৮) ৭০ ০070001 অর্থ পরিচালনা কর! যেমন £ "০ 
০017000% 1010510, 0:01)5509, 01253 ইত্যাদি । তাপ বিদ্যুৎ 
ইত্যাদির ০০700007 ও 'পরিচাল" হইবে, ইহ! পূর্বেকার বাংলা 
বিজ্ঞান পুস্তকাদিতেও পাওয়া যাইবে। 

(২৯) (0০7$5০101,.* পরিবাহন, ইহাই পূর্বে ব্যবহৃত হইত। 
ইহাই ঠিক। তরল ও বায়বীয় পদার্থে তাপ এই উপায়ে প্রকৃতপক্ষে 
'বাহিত' হয়। 

(৩১) ২৮জষ্টব্য। 

(৩২) ৯জষ্ব্য। 


নতভ্তান্মিক্ক প্পল্রিভামা 


২৪৯৯ 





(৩৪) 'ভ্রমণ' অপেক্ষা 'ঘূর্নন' ও 'আবর্তন' শব 8)720107 
শব্দের অধিকতর উপযোগী । 

(৩৮) বিচ্ছুরণ শব্দটি 17301901017, বিশেষতঃ 
1201511020, অর্থে উপযোগী । 10157675101) সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যাপার, 
ইহার প্রতিশব্ধ বিচ্ছুরণ একেবারেই অচল। 

(৪*) 09501119101) শবে ম্পনান, কম্পন প্রস্তুতি সথপ্রযোজ্য। 

(৪৩) অধ্যাপক মেন 1০০95-এর জান্নান প্রতিশব 1376000- 
00005 (-8810017 0০170) হইতে দহনবিন্দু শব্দের পক্ষপাতী। 
তবে “দহন” শব্দটি তাপের সহিত অধিক সংশ্লিষ্ট, 'কিরপ' যে-কোনও 
রশ্মির পক্ষে প্রযোজ্য । 

(৪৮) ১৯ ভরষ্ট্ব্য। 

(৫১) 'মাধ্যাকর্ষণ' বুকাল হইতে প্রচলিত, উহাকে বাতিল 
করিবার প্রয়োজন নাই। 

(৫৪) ইহাদের মধ্যে 'অশ্বশক্তি' শব্দটি সর্বাধিক প্রচলিত। 

(৫৬) ২১উষ্টব্য। 

(৬২) 1109002 ও ৬০1০০11%"র প্রতিশব্দ উন্ট।পাণ্টা করা 
হইয়াছে বলিয়া মনে হয়। সাধারণ অর্থেও [10601 -বেগ। এততিন্ন 
স্কুলপাঠা অনুবাদ পুস্তকাদিতে ০৩1০০ -্গতি, [101107- বেগ 
(7121)08] 0£001551901017- বেণীমাধব গাঙ্গুলী ও অন্ঠান্ত অভিধান 
দর্টুব্য ) ছাত্রের! পড়িয়। আসিতেছে। 
প্রেষণ শবের অর্থ প্রেরণ। প্রেষ শবটি প্রেষণ শবের 
অপত্রংশ হইলে ছুষ্ট প্রয়োগ হইয়াছে । পেষণ শব্দের সহিত 1):55501- 
এর কিছু যোগ আছে। [91655076 হইতে 'প্রেষ' কর! নিরর্থক । 

(৯১) [২0০ ঠিক অনুপাত নহে, অনুপাত -* [01091110181 
[২700০ একটি সংখা। বা অঙ্ক। অবশ্ঠ 1১:010607) বা অনুপাতের 
সহিত ইহার বিশেষ যোগ আছে। এই সকল বিবেচনায় 'অনুপাতাঙ্ক' 
শব্দটি ৭11০0"র উপণুক্ত প্রতিশব্দ বলির! মনে হয়। 

(৯৯) হিমায়ক শব্দটি 1২6?1/61210:এর 79500 অর্থ, 
'হিমাধার' কথাটি 10710618101 [7807)10€টির কথাই যেন ম্মরণ 
করাইয়া দেয়। 

(১৭১) প্রকৃত উচ্চারণ 'রোয়েন্ট গেন', বানান £0101£67) 
(০'র মাথায় দুইটি বিন্দু হইবে )। ইংরাজীতে [২০০1১189173 লিখিত 
হয়। “রঞ্টনরশ্মি' কথাটি প্রচলিত হইয়! গিয়াছে। 

119007-" বেগ, ৬২ জুটব্য। 
'বর্ণছত্র' বহুকাল হইতে প্রচলিত। 
৬২ জুষ্টবা। 

(১১৭) 700061181 00106টি :%201000 বটে, কিন্তু ৬০017100) 
(09০ মাত্রেই টরিসেলীয় নল নামে অভিহিত হইবে, ইছ। নুযুক্তি নছে। 

(১১৭) ৬২ দ্রইব্য। 

বারাস্তে অন্তাস্ত প্রতিশব্দের অবতারণ! করিব ইচ্ছা রহি্ক। 


70910016 


(৮৩, ৮৪) 


(১৬) 
(১১১) 


(১১৫) 


বালিনে অলিম্পিক 


ডাঃ গোরা্টাদ নন্দী এমৃ-বি, এমৃ-সি-ও-জি 


গ্রীক সভ্যতার পতনের পরেও অলিম্পিক উৎসবের স্থতি 
এবং মাধুর্য নষ্ট হয়নি, গল্পে, কবিতায়, ইতিহাসে চলে 
আঁসছে। অলিম্পিয়ার ধ্বংসাঁবশেষের মধ্যে পুরাতন 
মন্দির আবার খুঁজে বার কর! হয়েছে । ১৮৯৪ শ্রীষ্টাবে 
ব্যারণ 01611061069 00019211011) এই ক্রীড়ার পুনরুদ্ধার 
করেন। তার চেষ্টায় প্যারিসে একটা আন্তর্জীতিক কংগ্রেস 
হয়-সেই থেকে পুরাতন অলিম্পিকের আদর্শ নিয়ে 
তাকে বর্তমান সভ্যতার ছণচে ঢেলে প্রতি চার বছর অন্তর 
ভিন্ন ভিন্ন দেশে এই উৎসব চলেছে এবং দিনে দিনে মানুষ 
যতই স্থান এবং কালকে জয় করছে, ততই এই উৎসবে 
লোক সমাগম এবং এর আনন্দ বাড়ছে । আরম্ত থেকে 
যথাক্রমে উৎসব হয়েছে এথেন্স্‌ ১৮৯৬, প্যারিস ১৯০০) 
সেপ্ট লুই ১৯০৪, লণ্ডন ১৯৮, স্টকৃহল্ম ১৯১২--১৯১৬ 
সালে বালিনে হবার কথা ছিল কিন্তু যুদ্ধের জন্ত 
হয়নি। এণ্টওয়ার্প ১৯২০, প্যারিস ১৯২৪, এমস্টারডাম 
১৯২৮ লস্‌ এঞ্জেল্স্‌ ১৯৩২, বালিন ১৯৩৬ -১৯৪০ সালে 
“টোকিও'তে হবার কথা! ছিল, কিন্তু যুদ্ধের জন্য বন্ধ 
রইল । 

অলিম্পিক ক্রীড়ায় যে শুধু শারীরিক শক্তির পরীক্ষা 
হয়, তাঁ নয় এর আসল উদ্দেশ হচ্ছে সারা পৃথিবীর 
যৌবনের উৎসব, আর তার মধ্য দিয়ে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন 
জাতির ভিতর যে এক মহামানব জাতি আছে তাঁর 
সন্ধান করা। এই রাজনৈতিক ছন্দ কোলাহলে এবং 
যুদ্ধের মধ্যে দেখা যায়, অন্তুঃত আমি যেটুকু দেখেছি তার 
থেকে ধারণ! হয়েছে-_-যে যৌবন তার আনন্দ আর খেলার 
'মধ্যে-যুদ্ধবিপদের ধার ধারে না। খেলায় হেরে গেলেও 
বিজেতার সঙ্গে এক সঙ্গে খেলে বেড়ায় তার জয়ে সুখ্যাতি 
এবং আনন্দ প্রকাশ করে । আর অলিম্পিক ক্রীড়া পল্লীতে 
( 0110110 11156 ) ভিন্ন জাতীয় ছেলেরা সবষে কি 
আনন্দে দিন কাটিয়েছে তা তারা কোনদিন ভুলবে না। 
প্রত্যেক জাতির মোড়লরাই হচ্ছে যত নষ্টের গোড়া । তাঁরাই 
জাতির স্বার্থ আর জাতীয় গৌরবের নামে যুবকদের নাচিয়ে 


তোলে-_যার ফলে জগতে বিরোধের স্ষ্টি হয়। যাঁক নব 
বড় বড় কথা ! 

সিটে ফিরে এসে দেখি গ্যালারি সবগুলিই প্রায় ভরে 
উঠেছে, ধারে কিছু কিছু খালি আছে। সেদিন সকালের 
প্রোগ্রাম ছিল 17512100611011)10৯--৩১ জন 
প্রতিযোগী । সময় লাগবে অনেক। প্রত্যেককে তিনবার 
করে ছুপ্ডতে দেওয়া হবে। ৩১ জন লোক সবাই ওভার- 
কোট পরে কম্ছলমুড়ি দিয়ে সারবন্দী হয়ে সেই সুড়ঙ্গ 
দর্জ! দিয়ে যখন মাঠে এসে পৌছিল তখন দর্শকদের মধ্যে 
সমবেত হাততালি এবং হর্ষধ্বনিতে ভীষণ শব্দ হল। 
ভিতরের মাঠের এক কোঁনে লাল মাটির একটা ছোট সার্কল্‌ 
বা গোলাকার গণ্ডি কাটা আছে, সেখান থেকে ছু'ড়তে হবে 
শিকে গাঁথা একটী ভারি লোহার বল। যে সবচেয়ে বেশী দূরে 
ছুড়তে পারবে সেই জিতবে । ছোঁড়বার জায়গা থেকে দূরত্ব 
মেপে তিনটে বৃত্ত কাঁটা আছে--8৫) ৫০১ ৫৫ মিটাঁর। 
৩১ জনের মধ্যে যাঁরা অন্তত ৪৬ মিটার ছুড়তে পারবে, তারা 
সেমি-ফাইনালে উঠবে । তারপর তারা আবার তিনবার করে 
ছুঁড়তে পাবে। এতে প্রথম হল একজন জান্ীণ, দ্বিতীয়ও হল 
একজন জাম্মাণ, আর তৃতীয় হল সুইডেন । জার্শীণরা যখন 
টু'ড়ছিল তখন সারা ষ্রেডিয়ম কাপিয়ে জয়ধ্বনি উঠছিল। 
ঘণ্টাখানেক এটা দেখে আমরা আবার বেকলাম। 
ষ্টেডিয়মের মধ্যেই একটা দোকানে “ফিল্ম” কিনতে পেলাম । 
অলিম্পিকের ছাপ দেওয়! কত জিনিষই বিক্রয় হচ্ছে, দেখলেই 
কিনতে ইচ্ছে করে। কিন্তু সঙ্গে রেস্ত কম-_কাজেই সম্তা 
দেখে ছু*একটী কিনলাম, একথানি অলিম্পিক রুমাল, 
একটী নোটকেস ইত্যাদি। তারপর জলযোগ করবার 
ইচ্ছায় বেরিয়ে পড়লাম। “টিউব স্টেশনের, এর ধারে 
কালকের সেই রেন্তেঁরাতে গিয়ে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে 
দেখিয়ে- ম্যানেজ” রুটা আর দুধ নিয়ে থেতে বসা গেল। 
খেতে থেতে একদল আমেরিকার টুরিস্টদের আর একজন 
ক্যানাডাবাসীর সঙ্গে খানিক আলাপ করা গেল। বিকেলের 
খেল! তিনটেয় আরম্ভ হল। এবেলা ভাল প্রোগ্রাম ছিল, 


৯২ 


ফাল্ন--১৩৪৭ ] 


খ -স্ফ্স্্্স্্থিগ 


কাজেই ষ্রেডিয়ম একেবারে ভত্তি | [72101001100 শেষ 
হলে ৪০০ মিটার €বেড়া-দৌড়ে”র (17711015786) হিট 
আরম্ভ হল। প্রত্যেক খেলার আগেই নাম ডাকা হচ্ছে মাঠ 
থেকে, আর আমর! সকলে লাউড স্পীকার দিয়ে খুব জোরে 
গুনতে পাচ্ছি। তারপর যথন বিজেতার এবং দেশের নাম 
ঘোষিত হল তখন আবার উত্তেজনা দেখা গেল দর্শকদের 
মধ্যে । : বেশীরভাগই জয়ী হ'ল জার্মাণ। প্রত্যেক 
থেলার পরে বিজেতাঁদের সম্মান প্রদর্শনের যে অনুষ্ঠান হয় 
সেটা বড় চমতকাঁর। মাঠের একধারে একটা 1১1406017 
বা উচু মঞ্চ আছে। তার উপরে উঠে মধ্যখানে বিজেতা 
দীড়ায়। তার দুপাশে আর দুজনখার! দ্বিতীয় ও তৃতীয় 
হয়েছে । তাদের সামনে এসে দীড়ায় তিনটি সাদা 
পোষাকপরা মেয়েঃ [7010] বা পু্পলতিকার মুকুট নিয়ে। 
প্রথমের নাম এবং দেশ ঘোধিত হলে প্রেসিডেন্ট 
তার সঙ্গে করমর্দন করেন এব" মাঝের মেয়েটা তার 
মাথায় পরিয়ে দেয় সেই “লারেল্‌্। আর হাতে দেয় 
একটী ওকৃ বুক্ষের চাঁরা__বিজেতা এটা নিজের দেশে 
নিয়ে গিয়ে পুতে দেবে-_গাছ বড় হয়ে তাকে এবং 
তার দেশের লোককে তার বিজয়ের কথা বহুদিন স্মরণ 
করিয়ে দেবে । দ্বিতীয় এবং তৃতীয়কে আর ছুটী মেয়ে 
ল্যরেল্‌। পরিয়ে দেয়। তারপর স্কোর বোর্ডের নীচের 
ব্যাগ্্ট্যাণ্ড থেকে বেজে ওঠে জান্মীণীর জাতীয় সঙ্গীত-_ 
তখন সকলে দীড়িয়ে ওঠে, আর জর্খীণরা নাজী স্তাল্যুটের 
ধরণে হাত উচু করে ধাড়িয়ে থাকে_-এর ছবি একটা 
তুলেছি। ঠিক এই অনুষ্ঠানের সময় স্কোর বোর্ডের উপরে 
তিনটা পতাকা ওড়ান হয়, বিজয়ীর দেশের জাতীয় 
পতাকা । যাদের দেশ জেতে তাদের মন গর্বে ভরে ওঠে । 

এর পর একশো মিটার ফ্লাট রেসের ছুটো “হিট, 
হল। এগুলোয় আমেরিকারই প্রাধান্ত দেখা গেল। 
আমাদের বেচারী গ্রেট বৃটেনের কোথাও পাত্তা পাওয়া 
গেল না! তারপর মেয়েদের এ রেসের ৬টা হিট হল। 
মেয়েরা ছেলেদের মতই সর্টস্‌ ঝ! জাঙ্গিয়া” পরে দৌড়ায়, 
গায়ে থাকে জাতীয় চিহ্নাঙ্ষিত একটা গেঞ্জী। মাঠে 
নামে অবশ্ত ফুলপ্যা্ট আর সোয়েটার পরে, কিন্ত 
দৌড়াবার আগে বড় পায়জামা খুলে ফেলে । কোনরকম 
লজ্জা নেই, কেউ কিছু মনেও করে না। ছেলেরাও 





০ -স্হািস্্ 


লাঞ্িন্মে অল্লিম্পিক 


২২৪১২ 





দৌড়াতে এসেছে মেয়েরাও এসেছে ; কোন তফাত 
নেই। দেখাগেল, যারা দৌড় দিচ্ছে__তাদের মধ্যে 
অনেককে মেয়ে বলে চিনতেই পারা যায় না__বৈশিষ্ট্যের 
মধ্যে একটু দীর্ঘতর কেশ, তাঁও সকলের নয় । আমেরিকার 
যে মেয়েটা খুব ভাঁল দৌড় দিল--এবং শেষ পধ্যন্ত “ফাস? 
হয়েছিল-_-সে যেমনি লম্বা তেমনি পৌরুষ ভাবাপন্ন | তাই 
খেলার বিষয়ে সে সবচেয়ে উত্কৃষ্ট। ফাইনালে উঠল । দুজন 
আমেরিকাঁন, তিনজন জান্মাণগণ আর একজন পোলাণ্ডের 
মেয়ে । পোঁলাঁণ্ডের এই মেয়েটাই গেলবারে প্রথম হয়েছিল । 

ছেলেদের একশত মিটার ফাইনালের সময় চারিদিকে 
ভীষণ চাঞ্চল্য । আমেরিকার তিনজন, আর জার্মানী 
হল্যাণ্ড সুইডেনের এক একজন করে দৌড়াচ্ছে। দৌড় দেখে 
সকলেই জানত-_-আমেরিকাঁর ওই কাল লোকটাই জিতবে। 
তার নাম হচ্ছে জেসি আওয়েন্স, (79551 ০৮/6115. ) 
আরম্ত থেকেই সার ্রেডিয়াম একেবারে গম্গম্‌ করতে 
লাগল। আমাদের যা উত্তেজনা হচ্ছিল- না জানি যার! 
দৌড়াঁবে তাদের কি অবস্থা হয়েছিল। দেখতে দেখতে 
দুটী কাল লোক এবং একটী সাদা লোক জিতল । শেষ 
সীমানার দুপাশে বিচারক এবং সময়রক্ষকরা সারবন্দি 
হয়ে ছুটো কাঠের ছোট গ্যালারীতে বসেছিল । “আওয়েম্স, 
খুব সহজেই প্রথম হল। আগে থেকেই ফটোগ্রাফার ও 
সিনেমা গ্রশহ্থীতাঁরা সব নিজন্ব জায়গায় মোতায়েন হয়ে 
বসে ছিল। টকাটক্‌ ছবি উঠতে লাগল, আর বন্দুকের 
শবের সঙ্গে সঙ্গে লক্ষ লক্ষ লোকের সপ্রশংস দৃষ্টি সেই 
দিকে । সমবেত জনসমুদ্রে সকলের মুখ থেকেই উত্বেজনার 
অন্ুট ধ্বনি বেরিয়ে এক মহীধ্বনির সৃষ্টির করছে। 
এ বিরাট দৃশ্ঠের মহানতা৷ না দেখলে বোঝা যায় না। 

পরের দিন আশাদের বন্ধু 7181) 9০1)৮/219র আসার 
কথা, স্টার সময় আমাদের গাড়ী করে খেলা দেখতে 
নিয়ে যাবে। ললর্ডলি স্টাইলে” অর্থাৎ জমিদারী চালে 
যাব আর “কার-পার্কে গাড়ী রাখব, এই সব ভাবতে 
আমাদের বেশ মজা লাগছিল। কিন্তু সাড়ে নটা 
বাজার পরও গাড়ী বা রঙিন মহিলা! কারও দেখা নেই, 
আমরা একটু উদ্বিগ্ন হয়ে উঠলাম--ভাব্লাম বোধ হয় 
ফম্কে গেল। ফোন করাতে শ্রীমতী বললেন, “আমার 
উঠতে দেরী হয়ে গেছে-আমি দশ মিনিটের ভেতর 


২২৪১০ 





আসছি ।, সত্যিই এলেন তিনি। বন্ধু্ধয় গাড়ীর পিছনের 
সিটে এবং আমি পাশে বসে রওনা দিলাম । যেতে যেতে 
এট ওটা টুকরো টুকরো গল্প হতে লাগল । থেলাঁর মাঝে 
বেরিয়ে কোথাও দূরে গিয়ে 'ল্যঞ্চ, কর! হবে ঠিক হল। 
বালিনের আশে পাশে কত জায়গা আছে । আমার মন্দ 
লাগছিল না, উৎসবে মন্ত বালিন সহর, তার মধ্যে আমাদের 
গাড়ী ছুটেছে, পাশে সুন্দরী মহিলা আর চাই কি? 
হুলই বা ক্ষণিক-_-তবু এই ক্ষণিকের আনন্দই বা ক'জনের 
ভাগ্যে ভোটে? মনে মনে বরাতের তারিফ করতে 
লাগলাম। কিন্তু মনের কোণে এই মায়াবিনীর উদ্দেশ্য 
সম্বন্ধে একটু সন্দেহ জাগতে লাগল। পরে বুঝেছিলাম 
যে শ্রীমতী তার নিসঙ্গ জীবনে--একটু বৈচিত্র্য খু'জছেন। 
গাঁড়ী থাকাতে অলিম্পিকের 081 7১৪11 বা “থান-কেয়ারি, 
দেখবার সৌভাগ্য হল। দেও এক বিরাট ব্যাপার । 
সেদিনও প্রোগ্রাম ভালই ছিল । লংজাম্প, ২০০ মিটারের 
হিট,আর মেয়েদের ডিস্ক-থো-_এই তিনটে সকালবেলা । লং 
জাম্প বহুকালব্যাপী, ছু'জাঁয়গায় হচ্ছিল--৬১জন প্রতিযোগী। 
একের গর একে ফাইনালে ওঠবার জন্য চেষ্টা করতে 
লাগপ--তাতে আমাদের তত মনোযোগ দেবার অবকাশ 
হয়নি, কারণ ওদের ফাইনালটাই হবে আকর্ষণীয়। ওদিকে 
[12751র1( জান্মীণ ভাষায় “মহিলা” ) ডিস্ক ছোঁড়া আস্ত 
করেছে । এই চাঁকৃতি ছোঁড়াটা খেলার মধ্যে সবচেয়ে 
মাধূরধ্যপূর্ণ। ছোড়বার আগে এর অঙ্গভঙ্গী এবং কায়দা 
দেখলেই শারীরিক গঠন, শক্তি ও ভঙ্গীর একত্র সমাবেশ 
বুঝতে পারা যায়। 80০৩ অর্থাৎ প্রতিমূর্তি কিংবা ছৰি 
দেখেও তেমন প্রতীয়মান হয় না। আর এই খেলাটি 
সেকালের অলিম্পিকেও ছিল । তাই পুরাতন গ্রীক ভাস্কর্য 
এর অনেক প্রতিমূতি পাওয়া যায়। পুরুষদের ডিস্ক ছোড়া 
দেখবার সৌভাগ্য হয়নি__শুধু পৃথিবীর বাছ বাছা! মেয়েদের 
এই চাকৃতি নিক্ষেপ কৌশল দেখেই অনেক আনন্দলাভ 
করেছি । প্রথম হ'ল জারন্মাণী, দ্বিতীয় পোলাগু এবং তৃতীয়ও 
জার্্দাণী _-২০* মিটারের আটটা! হিট. হ'ল। এই দৌড়ের জন্য 
৪৮জন প্রতিযোগী এসে ঢুকলেন_-তখন সারা স্টেডিয়ামে বেশ 
চাঞ্চল্য পড়ে গেল'-কারণ ২০* মিটার দৌড়ান নাকি খুব 
উত্তেজনাপূর্ণ । প্রত্যেক হিটের আগে ৬জনের নাম ডাক৷ 
হ,ল--সঙ্গে সঙ্গে দেশের নাম ত আছেই। ভার! ৬্জনেঃ 


ভ্ান্সভন্খ্ 





[ ২৮শ বর্ষ-_-২য় থণ্ড--৩য় সংখ্য। 


নি 


থানিক দৌড়ে এবং লাফালাফি করে শরীর গরম এবং 
পায়ের জড়তা ভেঙে নিল। তারপর শুরু দাগা অর্থাৎ 
9181076 £০100এর মাঁটী খুঁড়ে নিজেদের ন্থুবিধে মত 
করে নিল__-এ দৌড়ে 98 বা শুরু করার উপরই হার 
জিত অনেকটা নির্ভর করে। সব কজন প্রতিযোগীর দৌড়ের 
মধ্যে সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক হয়েছিল-_“আওয়েম্লের, দৌড়-__ 
থুব ক্রুত, চমতকার আর খুব সহজ ভরঙ্গী_দ্বিতীয় লোকের 
সঙ্গে ছিল তার শুরুতেই অনেকখানি তফাত। শেষেও 
জিতেছিল আওয়েম্সই এবং রেকর্ড সময়ে । এর খুব নাম 
বেরিয়ে গেছে এবং যে ছবি ছাঁপা হয়েছিল, ছুদিন পরে 
আর তা” পাওয়া যায়নি । এর নাম বেরিয়ে গেল__ 
10170 10217 আর 73180. চ270701 অর্থাৎ “উড়োবাঁজ, 
আর “কেলেচিতে ” এবার ওলিম্পিকে কাল নিগ্রোদেরই 
জয় জয়কাঁর বলে-_সাদা লোকেরা মনের ছুঃথে এবং হিংসাঁয় 
বলে ফেলেছে-_131801. 11215 01517010 ! নিগ্রোরা 
জিতেছে--১০০১২০০১৪০০ ও ৮০ মিটার দৌড়, হাই জাম্প, 
লং জাম্প__ আর সবগুলিতেই করেছে একেবারে নূতন 
রেকর্ড। তাঁর মধ্যে কাল আওয়েম্ন একাই তিনটিতে প্রথম 
হয়েছে, ১০০১ ২০০ মিটারে ও লং জাম্পে। 

সকালের খেলা শেষ হবার আগেই সাঁড়ে বারটায় 
বেরিয়ে পড়লাম-দূরে কোথাও গিয়ে, নৈসগিক সৌন্দর্যের 
মধ্যে কোন নিষ্জন হোটেলে একটু আরাম করে খাওয়া 
যাবে বলে। গাড়ী আছে আর ভাবনাকি? বালিনের 
জলাশয়ের সৌন্দর্য্য দেখবার সৌভাগ্য হল। আমাদের 
সঙ্গিনী ও পথপ্রর্ণশিকা যেতে যেতে পরিস্কার ইংরাঁজিতে 
সকল দ্রষ্টব্যের পরিচয় আমাদের দিলেন। একটা ব্রীজ 
পার হবার সময় গাড়ী থামিয়ে বালিনের সৌন্দধ্য দেখালেন । 
লগ্ডনের চেয়ে বাঁলিনের সৌন্দর্য্য অনেক বেণী, কারণ পাহাড়, 
বন আর জলাশয়ের একত্র সমাবেশ এদেশে দেখিনি__ 
বালিনের চারিদিকেই জলাশয় আর তাদের ভিন্ন ভিন্ন 
নামের শেষে আছে ১০০ তার মানে “লেক” । বড় রাস্তা ছেড়ে 
ছোট গ্রাম্য রাশ্াঁয় এসে পড়লাম। গ্রাম্য হলেও পিচের 
রাম্তা, মোটর চালাবাঁর থুব সুবিধা । মেমসাহেব বেশ জোরেই 
চালাচ্ছেন। ঘণ্টায় ৪০-৪৫ মাইল। একটা হোটেলে নাম! 
হল। ভেতরে গিয়ে দেখি মস্ত মাঠ ফুলের বাঁগান-_-লেকের 
ধারেই। টেবিল সব ভঙ্ি। লোকের ভিড় এবং দৃষ্টি এড়িয়ে 





ফাঁন্তুন-_-১৩৪৯ ] 


জলাশয়ের ধারে গেলাঁম__বেশ চমৎকার, বাঁধান ঘাট__ 
সেখানে ছোট ছোট মোটর বোট বাধা আছে। গ্রীষ্মকালে 
বোটে ঘুরে বেড়াতে বেশ মজা । খানিক ঘুরে বেড়ান গেল। 
এখানে জলযোগ করা মেমসাহেবের মনঃপুত না হওয়ায় 
(বোঁধ হয় ভিড়ের জন্য ) আমাদের আরও ভাল জায়গায় 
নিয়ে চললেন । আমাদের আপত্তি নেই, যত ঘোঁরা যায় 
ততই ভাল। আর পল্লীগ্রামের গাছের ফাঁকে ফাঁকে 
জলাশয় দেখতে দেখতে-__একটা ছোট নির্জন হোঁটেলে 
এসে পৌছলাম। এটী বেশ ভাল বলে মেমসাহেবের পছন্দ 
হল। খুব আরাম করে চোব্যচোস্বলেহপেয় খেতে খেতে 
আমাদের দেশের এবং এদেখের অনেক গল্প করা গেল। 
মেমসাহেব আমাদের কাছে তার দেশের অনেক কথা 
জানলেন--আমর! আমাদের দেশের অনেক কথা জানালাম__ 
মেম সাহেব বললেন-_অনেক ভেতরকার কথাঃ যা সাধারণ 
লোকের টের পাবার উপায় নেই। এখনকার গভর্ণমেণ্টের 
থারাপ দিকটা । আবার মেমসাহেব বলে দিলেন-_-কাঁউকে 
বলেো৷ না যেন, আমার গর্দান যাঁবে। আমরা আশ্বাস 
দিলম_-কোঁন ভয় নেই। এখানকার রান্না বেশ ভালই 
লাঁগল। চিংড়ি মাছের শ্যাল্যাড (১৭1 )-_-অনেকটা 
আমাদের দেশের রাঁয়তার মত টক্টক্‌, তারপর মাংস-_বেশ 
ভাল রাম্ম! সিদ্ধ এবং ভাঁজার মাঝামাঁঝি তারপর পিঠের মত 
একরকম জিনিষ, কম্লাঁসব (018106০ ৬17০) দিয়ে তৈরী 
করা-বেশ খেতে লাগল। আর পানীয় ছিল /১21১16 
৬17০. অর্থাৎ আপেলের সরব্ৎ ! 1 ও হলেও এতে মদ 
নেই। মেমসাহেব মদ খান না। এটা শেখা গেল। 
কোথাও থেতে গেলে এর পরে 20019 ৬/1172 খেতাম । 
জল পাওয়৷ যাঁয় না_-তার বদলে 'বীয়ার খাওয়াই রীতি-_ 
অনেক বাঙালীই খায়__এতে খুব অল্প পরিমীণ মদ আছে-_ 
একদিন খেয়েছিলাম একট! পার্টিতে -তিত বলে আমার 
একটুও ভাল লাগে নি। পেটভরে খেয়ে দেয়ে বেশ আরাম ও 
তৃপ্তি ছল, কারণ এখানে এসে অবধি সেই গুপ্ত সাহেবের 
“পেটেণ্ট» রাম্না আর মোটা ডাঁল-ভাতে অরুচি ধরে 
গিয়েছিল । “বিল” এল, আমাদের মধ্যে একজন 
(101. ড505151) টাকাট। দিলেন। কথা ছিল পরে 
ভাগাভাগি কর! হবে। এখনে! সময় ছে, প্রস্তাব হ'ল একটু 
বেড়িয়ে আসা যাক । গায়ের রাস্তা দিয়ে সুন্দর সুন্দর বাংলো 


শ্বাঞ্শিন্মে অন্িম্পিক 


ই২৪২৫ 
দেখতে দেখতে কীচা রাস্তায় পড়লাম। একটা অতি 
স্বন্দর ছবির মত বাড়ী দেখিয়ে মেমসাহেব বলল-_এটী হচ্ছে 
একজন 11100-900555এর সিনেমা অভিনেত্রীর বাড়ী-_ 
বাড়ীটা এত চমৎকার-_একেবারে পাহাড়ের গায়ে-__দেখে 
লোভ হতে লাগল। এখনে মাথায় বাড়ী করার সখ 
আঁছে, তাঁই ভাল বাড়ী দেখলে মনটা চঞ্চল হয়ে ওঠে। 
ছুধারে ঘন বনের মধ্য দিয়ে কীচা রাস্তা, ঠিক আমাদের 
বাংলাদেশের মত__একটা ছবি তোলার লোভ সংবরণ করতে 
পাঁরিনি। একেবারে জলের ধারে এসে এদের 5%1017105 
13811) “সীতার ঘাট” দেখলাম--বিলাতে যেমন সব 1100 
আছে-__অর্থাৎ বড় বড় চৌবাচ্ছা_-9/10010075 7০০1 
এখানে তার দরকার হয় না। এন্তার লেক পড়ে 
আছে-_খুব সাঁতার কাটে এরা । মেমসাহেবের সতারের 
বড় সখ, আমাদের নিমন্ত্রণ করেছিলেন--তবে আমরা তিন 
দিনের অতিথি, সময় করে উঠতে পারিনি_ বললাম--আবার 
ত আসছি তখন আপনার সঙ্গে সাঁতারে পাল্লা দেওয়। যাবে। 

ফিরবার পথে একবার গাড়ী বিগড়েছিল, মেমসাঁহেবের 
মুখ চুণ” ভাবটা যেন এখন কি করি !- আমর! সবাই 
ত গাড়ী সম্বন্ধে একেবারে বড় ওত্তাদ। কাজেই আমার 
যেমন স্বভাব বসে বসে মজা দেখতে লাগলাম, আর 
মেমসাহেবের মুখের চেহারার ঘনঘন পরিবর্তনটুকু বিঙ্লেষণ 
আরম্ভ করলাম । শর্শা একজন 17601127100] 17217017921 
অর্থাৎ ঘন্ত্রবিদ্” নিজের গাড়ীও আছে- একটু আধটু 
উপদেশ দিল-যাহোঁক একটু পরেই গাড়ী আবাঁর চলতে 
লাগল আপনা-থেকেই । কিছু না বললে খারাপ দেখায়-_. 
তাই বললাম-_-বোধ হয় কার্বরেটরে ময়লা পড়ছে-_পেট্রল 
অবাধে যেতে পাচ্ছেন! ; দেখলাম কথাটা মেমসাহেবের মনঃপুত 
হল- বললেন_ হ্যামাঝে মাঝে আটকে যাচ্ছে বটে! 
যাক, বরাতে ধাপ্পাটা খুব লেগে গেল। 

বিকেলের প্রোগ্রাম আরও ভাল ছিল। ২০০ মিটার 
দৌড়ের সেমিফাইন্তাল, মেয়েদের ১০০ মিটার দৌড়ের 
ফাইন্াল, লঙ্-জ্যম্পের ফাঁইন্যাল, ৮০* মিটার দৌড়ের 
ফাইন্তাল, আর ৫০০০ মিটারের-হিট্‌। তিনটে ফাইন্তালই খুব 
উপভোগ্য হয়েছিল। তার মধ্যে ৮** মিটারট। সবচেয়ে 
বেশী। কি স্বন্দর দৌড় দৌড়ায় ওই ছুজন কাল ভদ্রলৌক-_ 
সাদা চামড়ার কেউ তাদের ধরতেই পারে না। রেকর্ডএ 


২২৪২৩ 


আছে, গ্রেট ব্রিটেনএর আগে চার বার ফাস্ট হয়েছে 
অর্থাৎ ১৬ বছর ধরে সে অপ্রতিদন্দী_কিন্ত এবারে তার 
পাত্তাই পাওয়া গেল না। ফাস্ট হ'ল--আমেরিকা 
যুক্তপ্রদেশ, সেকেও্ড- ইটালি, থার্ড হল- ক্যানাডা। 
এত উত্তেজনার মধ্যেও দেখছিলাম মেমসাহেব বেজায় 
উস্থুন্‌ করছে এবং যাঁবার জন্তে অস্থির হয়ে উঠেছে। 
আমি ব্ললাম__তোমার কি ভাল লাগছে না? বল্লে-_খুবই 
ভাল লাগছে, কিন্তু আমার একটা বিশেষ জরুরি 
£এনগেজমেণ্ট* আছে-_বাড়ীতে একজন বন্ধু আসবেন, 
ঠিক বেলা ৫টার সময়। আমরা বললাম--এর পরেই 
যে সব ভাল ভাল খেলার [157 আছে-_-আর একটু বসে 
দেখে যাঁও। বলল-_-তাহলে আমি তাকে ফোন করে 
দেরীতে আসতে বলে দিয়ে আসি_বলে চলে গেল। 
একটী জিনিস লক্ষ্য করেছিলাম এবং চোখে বিসদৃশ 
ঠেকেছিল-_বিজেতাঁদের বিজ্য়মাল্য পরাবাঁর পর যখন 
জাতীয় সঙ্গীত হচ্ছিল, তখন মেমসাহেব একবারও হাতি 
তোলেননি-_যদিও ইনি জার্মান জিজ্ঞাসা করব 
ভেবেছিলাম, কিন্তু হয়ে ওঠেনি । আমার মনে হয় 
ইনি নাজিবিরোধী এবং পরে এঁর যেরূপ ইহুদীগ্রীতি দেখে- 
ছিলাম তাঁতে হয়ত ইহুদীর গন্ধও এ'র মধ্যে থাকতে পারে। 
খেল! চলতে লাগল,আমাঁদেরও সিগারেট নিঃশেষ হতে লাগল, 
মাথার উপর দিয়ে দারুণ রৌদ্রের পর কয়েক পসলা! বৃষ্টি 
হয়ে গেল_-তবে উৎসাহের চোটে সে সব গায়ে লাগল না। 
সবার শেষে ৫০০* মিটারের হিট আরম্ভ হল--১২ পাঁক 
দৌড়। প্রথম বারে একজন ভারতীয় ছিল, তার দৌড়টা 
দেপ্ধবার জন্তই বসেছিলাম। পাঞ্জাবী শিখ-_তার সুগঠিত 
চেহারা দেখে সকলেই আনন্দ পাচ্ছিল_-কিন্ত হতাঁশ হয়ে 
পড়ল তাঁর দৌড়ের বহর দেখে-_অনেক পেছিয়ে- প্রায় 
দেড়পাক পেছনে পড়ে যখন সে দৌড় শেষ করল-_-তখন 
তাঁর শেষ করার সাফল্যে খুবই হাততালি পড়েছিল-_-তবে 
ছুঃখের বিষয় সেটা উপহাসের। মেমসাহেবের মুখের চেহারায় 
পালাই পালাই ভাবটা বড়ই ধরা পড়ছিল-_কাজেই 
আমরাও তার সঙ্গে উঠে পড়লাম। শর্শা হকি দেখতে 
গেল_ আমর! দুজনে নিখরচায় মোটর চড়বার আশায় 
বান্ধবীর সঙ্গ নিলাম। মেমসাছেব বললেন- বড় ক্লান্ত 


স্ডান্সভন্বখ 


[ ২৮শ বর্--২য় খণ্--৩য় সংখা 


লাগছে । বললাম _আমাদের আর বাড়ী পৌঁছে দিতে হবে 
না__বরং চল আমরাই তোমায় বাড়ী পর্য্যস্ত পাছে দিয়ে যাই 
তারপর বাসে চলে যাব। গল্পের মাঝে মেমসাহেব নিজের 
বাড়ীর কথা অনেক বলেছিল-কেমন স্থন্দর ছোট্ট বাড়ী 
তৈরী করেছে, নিচে কটা ঘর, ওপরে কটা ঘর, ল্লানের ঘর, 
রান্নাঘর, ছোট বাঁগাঁন, সবই বলেছিল-_আঁমাদেরও দেখবার 
খুব সথ হয়েছিল। মেমসাহেব পথের পরিচয় দিতে দিতে 
আমাদের বাড়ী অবধি নিয়ে গেল। বাড়ীতে আর 
ঢুকলাম না। প্রবেশ দ্বারে *গুড্বাই” করে শ্রান্ত দেহে 
বিদায় নিলাম। ফিরে আবার আমাদের একটা পার্টিতে 
যেতে হবে। মেমসাহেব এর মধ্যে একদিন আমাদের নিমন্ত্রণ 
করলেন_-কবে সেটা ফোনে ঠিক্‌ হবে সাব্যস্ত হ'ল। সারাদিন 
খেলা দেখার পর নূতন রান্তায় পণ খুঁজে হাটতে বড়ই 
শান্তি লাগছিল, দেশলাইএর অভাবে সিগারেট ধরাতে 
পারিনি। সেও এক ট্র্যাজেডি! বন্ধু গাড়েকার যেন 
আমার চেয়ে আরও বেণী বিমর্ষ হয়ে পড়েছিল-_ভেবেছিলাঁম 
সারাদিনের ক্লান্তি--কিন্ত পরে বুঝতে পারলাম-__তা 
নয়__কাঁরণটা হচ্ছে অর্থনাশ । কথায় কথায় টের পেলাম 
যে আজকে আমার্দের মেমসাহেবকে নিয়ে খাবার বিল হয়েছে 
৩৪ মার্ক! শুনে ত চক্ষু চড়কগাছ! এইব্যাপার নিয়ে 
পরে অনেক হাসাহাসি করেছিলাম--সকলেই বলেছিলাম 
একবাক্যে যে এটা আমাদের ওলিম্পিকের আকেল 
সেলামী_-এত যে বিল হতে পারে_ ধারণা ছিল না। মনে 
মনে মেম-সাহেবের উপর অনেক রকম সন্দেহ হয়েছিল-_হয়ত 
হোটেলওয়ালার কাছে “কমিশন” মারবে কিংবা আরও 
কত কি; কিন্তু পরে সে সন্দেহ কমেছিল। মোট কথা, 
সেদিন ডিনার টেবিলে তিন জনে প্রাণ ভরে খুব 
হাসা গেল, আর প্রতিজ্ঞা করা গেল যে এ মায়াবিনীর সঙ্গ 
বর্জন করতেই হবে। ও বেচারীর হয় ত. কোন দোষ না 
থাকতে পারে-_তবে আমরা গরীব পরদেশী, বাঁধা পাথেয়ের 
পথিক- আমাদের কি এত দিলদরিয়! খরচ করা পোষায় ! 
গাড়েকার ডিনার টেবিলের প্রতিজ্ঞা রেখেছিল । শর্মা কিছু 
দিন পরেই চলে গেল । আমিই একা শেষ পর্য্যন্ত বিদেশিনীর 
বন্ধুত্ব রক্ষ/ করেছিলাম এবং ফেরবার আগে একদিন সুন্দরীর 
কাছে ব্দীয় নিয়ে এসেছিলাম । ক্রমশঃ 


পথ বেঁধে দিল 
শ্রীশরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় 


ফেড, ইন্‌। 

অপরাহ্‌। ঝাঝায় রঞ্জনের বাড়ীতে একটি ঘর। 
ড্রেসিং টেবিলের সামনে দীড়াইয়া রঞ্জন বেশভৃষ! করিতেছে ও 
মুদুকণ্ঠে স্থুর ভাজিতেছে। পার্জাবীর গলার বোঁতামটা 
খোঁলা রাঁখিয়া দিয়! চুলে বুরুশ ঘষিতে ঘষিতে রঞ্জন আয়নার 
মধ্যে দেখিতে পাইল-_তৃত্য রমাই একটি পোস্টকার্ড হাতে 
লইয়া প্রবেশ করিতেছে । 

রমাই মধ্যবয়স্ক কুশ ও বেঁটে, পুরুলিয়া জেলার আদিম 
অধিবাসী । রঞ্জন আয়নার ভিতরে রমাইধের প্রতিবিশ্বকে 
প্রন করিল 

রপ্ীনং কিরে রমাই? 

রমাই $ একটি পোস্টকাট আঁইছেন আজ্ে। 

রঞ্জন পোস্টকার্ড হাতে লইয়া বলিল-_ 

রঞ্জন : বাবা লিখেছেন__ 

পড়িতে পড়িতে তাহার মুখ হর্ষোৎফুল্ল হইয়া! উঠিল । 

রঞ্জন; বাঁবা আঁপছেন। রমাই--বাবা আসছেন ! 
ভালই হ'ল-_ 

রমাই ঃ কবে আসতেছেন কুর্তীবাবু আজ্ঞে? 

প্রন £ ত্্যা-_কবে? (চিঠির উপর আবার চোখ 
বুলাইয়া )-_-কই তা তো কিছু লেখেন নি। আঁজ কালের 
মধ্যেই আমবেন নিশ্চয়। ভালই হ'ল-_আমাকে আর 
কলকাত! যেতে হ'ল নাঁ_( রমাইয়ের পিঠে সন্গেহে একটি 
চাটি মারিয়া) কি চমতকার যোগাযোগ দেখেছিস রমাই ? 
বাবাও ঠিক এই সময় এসে পড়ছেন-_ 

রমাই £ যোগাঁষোগটা কিসের আজ্ঞে? 

রঞ্জন বিস্মিতভাবে তাহার পানে তাঁকাইল, তারপর 
হাসিয়! উঠিল । 

রঞ্জন £ ও-_তুই বুঝি জানিস না। শিগৃগিরি জানতে 
পাঁরবি।-_এখন যা, বাঁবার ঘর ঠিক ক'রে রাখ গে-_ 

রঞ্জন চেয়ারের পিঠ হইতে একটা কৌচানো চাদর 
তুলিয়া গায়ে জড়াইতে লাগিল। 


৮ 


রমাই £ আজ কি বাড়ীতে চা খাওয়া হবেন না আজ্ঞে ? 

মঞ্জন; না আজ্ঞে, আজ অন্ত কোথাও চা খাওয়! 
হবেন আজ্ঞে 

বলিয়৷ হাসিতে হাসিতে রঞ্জন বাহির হইয়া গেল। 
রমাই তাহার প্রবীণ বছুদর্শী চক্ষুছুটি একটু কুঞ্চিত করিয়া 
সেই দিকে তাঁকাইয়া রহিল । 


ডিজল্ভ,। 
কেদারবাবুর বাড়ীর সদর। সম্মুখের বন্ধ দরজা ভেদ 
করিয়া সঙ্গীতের চাঁপা আওয়াজ আসিতেছে । 


কেদারবাবু ডাক্তারের বাড়ী গিয়াছিলেন ; ফিরিয়া 
আসিয়। দরজা ঠেলিয়া খুলিয়া ফেলিলেন; অমনি সঙ্গীতের 
পূর্ণ আওয়াজ মেবভাঁঙা রোদ্রের মত চারিদিকে ছড়াইয়া 
পড়িল। 
কেদারবাবু ভিতরে প্রবেশ করিলেন। 
কাট্‌। 
মঞ্জু পিয়ানৌর সন্মুথে মিউজিক টুলে বসিয়া আপন 
মনে গান গাহিতেছে ; তাহার মন যেন কোন্‌ হ্বপ্নলোকে 
ভাদিরা গিয়াছে; অন্তরের মাধুর্য-রসে আবিষ্ট চোঁখছুটি 
ফিরিয়া ফিরিয়া দেয়ালে টাঙানো! রঞ্জনের ছবিটিকে স্পর্শ 
বুলাইয়! দিয়া যাইতেছে । 
মধু গাহিতেছে__ 
“নখিন হাওয়া 
আমার বুকের মাঝে পরশ দিয়ে যায়। 
- দখিন হাওয়!। 
কার নয়ন ছুটি মরম বিধে চায়__ 
দখিন হাওয়া । 


আমি মন হারালাম নদীর (কনারায়--- 
দখিন হাওয়া 1” 


গান শেষ হইবার পূর্বেই কেদারবাবু ঘরে প্রবেশ 
করিয়াছিলেন এবং নিঃশব্দে একটি সোফায় গিয়া বসিয়া- 
ছিলেন। মঞ্জু জানিতে পারে নাই। গান শেষ করিয়া 


২৯৭ 


২৪১৬৮ 


মঞ্জু যখন ফিরিয়া বসিল তখন সন্মুথেই পিতাকে দেখিয়া 
একটু যেন অপ্রতিভ হইয়া পড়িল; সলজ্জ ধরা-পড়িয়া- 
যাওয়া ভাব। তারপর সামলাইয়া লইয়া বলিল-__ 
মণ্ডু : বাবা__! ডাক্তারের বাড়ী থেকে কখন ফিরলে? 
কেদার ঃ এই খানিকক্ষণ। গাঁন শেষ হয়ে গেল? 
মঞ্জু হাসিতে হাসিতে উঠিয়া কেদারের পাশে আমিয়া 
বসিল। 
মঞ্জুঃ জাপানী গান কি-না? তাই তিন লাইনে শেষ 
হয়ে গেল ।- ডাক্তার কি বললেন? 
কেদা'র বিরক্তি ও বিদ্বেষপূর্ণ মুখভঙ্গী করিলেন । 
কেদারঃ কী আর বলবে! বত সব গো-বদ্ধি। 
রোগ আরাম করতে পারে না? বলে পীত তুলিযে ফেল। 
হুঃ! কিন্ত মরক গে ডাক্তার। তোমার সঙ্গে আমার 
একটা জরুরী কথা আছে । 
ক্দোর যেরূপ গম্ভীরকঞণ্ঠে কথাটা বলিলেন তাহাতে 
চকিত আশঙ্কায় মঞ্জু তাহার মুখের পানে চোখ তুলিল। 
মগ্তুঃ কি কথা বাবা? 
কেদাঁর পিঠ ঠেসান দিয়া বসিলেন; ফাসির হুকুম- 
জারি করার মত কঠোরকণ্ঠে বলিলেন__ 
কেদার £ আমি তোমাঁর বিয়ে ঠিক করেছি-_ 
মগ্তুর মুখ তপ্ত হইয়া উঠিল) কিন্তু উৎকণ্ঠা কমিল না। 
কেদার হাকিমীকণ্ঠে বলিয়৷ চলিলেন-__ 
কেদার ঃ 'আমি তোমাকে উচ্চশিক্ষা দিয়েছি-সব 
বিষয়ে স্বাধীনতা দিয়েছি । কিন্তু তুমি আমার ইচ্ছের 
বিরুদ্ধে বিয়ে করতে চাইবে 'মাশা করি এতটা স্বাধীন 
এখনও হওনি। 
' মঞ্্ুর উৎকণ্ঠা বাড়িয়া গেল : চোখে উদ্বেগের ছায়া 
পড়িল। ঢোঁক গিলিয়! সে ্গীণকণ্ঠে বলিল-_ 
মণ্রুঃ নাবাবা। 
কেদাঁর সন্থষ্ট হইয়া গলার মধ্যে একটি হুঙ্কার 
করিলেন। তাহার স্বর একটু নরম হইল। 
কেদার £ বেশ ।--এখন আমার কাছে সরে আয়। 
পূর্ববগামী কথোপকথনের মধ্যে মঞ্ু নিজের অজ্ঞাতসারে 


কেদার হইতে একটু দুরে সরিয়া গিয়াছিল; এখন আবুর , 


ভাব ভব 


[ ২৮শ বর্--_ ২য় খণ্ড--৩য় সংখ্যা 


কেদার £ এবার ছ্যাখ. দেখি, এ ছেলেটাকে পছন্দ হয়? 

কেদার মঞ্জুর পানে চোখ ফিরাইলেন। মঞ্জু চকিত 
কটাক্ষে ছবিটা দেখিয়া লইয়া ঘাড় নীচু করিয়া! ফেলিয়াছিল ) 
অস্পষ্ট লজ্জারুদ্বত্বরে বলিল-_ 

মণ্তুঃ আমি জানি না। 

কেদার কিন্তু এরূপ অ-সম্তভোষজনক কথায় তৃষ্ক হইবার 
পাত্র নয়; তিনি মঞ্জুর মুখের কাছে মুখ লইয়! গিয়া 
আবাঁর জিজ্ঞাসা করিলেন__ 

মঞ্জুঃ (নতচক্ষে )_ তুমি যা বলবে তাই হবে। 

বলিয়া লঙ্জারুণ মুখখানা কেদারবাঁবুর বগলের মধ্যে 
লুকাইিয়া ফেলিল। কেদারের মুখে এতক্ষণে সত্যসত্যই 
প্রসন্নতা জাগিয়া উঠিল; হয় তো তাহার অধরোষ্ঠের 
কোণ উর্ধ*ণী হইয়া একটু হাসির আভাসই প্রকাশ 
করিল। 

কেদাঁর ঃ বেশ- আমার মেয়ের মুখ থেকে আমি 
এই কথাই শুনতে চাই-__( রঞ্জনের ছবির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ 
করিয়া) ছোকরা সব দিক দিয়েই স্পাত্র! সায়েন্স, 
পড়েছে- দেখতে শুনতেও ভাল-_- এখন কেবল ওর বংশ 
পরিচয়টা পেলেই__ 

বহিদ্বারের কাছে গল! ঝাঁড়ার শব্ধ শুনিয়া কেদাঁর 
সেহদিকে ফিরিয়া দেখিলেন__রঞ্জন দ্বারের কাছে দাঁড়াইয়া 
ইতস্তত করিতেছে ; পিতা পুত্রীর ঘনিষ্ঠ ভঙ্গী দেখিয়া বোঁধ 
হয় তাহাদের বিশ্রস্তালাপে বিদ্ব করিতে সম্কৃচিত হইতেছে । 

কেদার : (প্রশান্তক্ঠে) এসো রঞ্জন_ তোমার 
অপেক্গা করছি-_ 

মঞ্জু পিতার কুক্ষি হইতে মুখ তুলিয়! রঞ্জনকে দেখিয়া 
উঠিয়া দীড়াইল। কেদারবাবু যতক্ষণে রঞ্জনকে সম্ভাষণ 
করিযা বসাইতেছিলেন মঞ্তু ততক্ষণে অলক্ষিতে ভিতরের 
দরজ| পথ্যন্ত পৌছিয়াছিল; কিন্তু তাহার ঘর ছাড়িয়া 
পলায়নের চেষ্টা সফল হইল না। কেদারবাঁবু ডাঁকিলেন__ 

কেদার ; মঞ্জুঃ তুই যাস নি-আনাঁদের কথা এমন 
কিছু গোপনীয় নয়__ 

দ্বারের কাছেই গ্রিয়ানোর সম্মুখে মিউজিক টুল ছিল, 

মঞ্জু সঙ্কুচিততাঁবে তাহারি উপর বসিয়া পড়িল। 


তাহার পাশে " ধেবিয়া বসিল। কেদার .সহষা ভক্ত... রঞ্জন ইতিমধ্যে, জীসন গ্রহণ করিয়াছিল; কেদারবাবু 
প্রসারিত করিয়া রঞ্জনের ছবির দিকে নির্দেপ করিলেন---3৫, আটকে সৌলান্মুজি বলিলেন-__ 


ফাস্তুন--১৩৪৭ ] 


কেদার£ তোমাকে ভেকেছিলুম ।-মগ্তুর এবার 
বিয়ে দেওয়া দরকার । আমার দাতের রোগ; কোন্‌ দিন 
আছি কোন্‌ দিন নেই-_ 

রঞ্জন ঃ আজ্ঞেসেকি কথা! 

কেদার £ না না, তোমরা ছেলেমান্গুষ বোঝ না_ 
দাত বড় ভয়ঙ্কর জিনিষ; কিন্তু সে যাঁক, তুমি কায়স্থ তো? 

রঞ্জন; আজে হ্যা উত্তর রাট়ী। 

কেদার £ বেশ বেশ। 

ওদিকে মঞ্জু চুপটি করিয়া বসিয়া শুনিতেছে 7 সে 
একবার চোখ তুলিয়া! আবার নামাইয়া ফেলিল। কেদার 
বলিতে লাগিলেন-__ 

কেদার ঃ এতদিন তুমি যাঁওয়া-মাসা করছ অথচ 
তোমার কোনও পরিচরই নেওয়। হরনি ।-- তোমার বাবার 
নামটি কি বল তো । 

রঞ্জন $ আজে আমার 
সিংহ। 

কেদারবাবু হাসিতে গিয়া হঠাঁৎ থামিয়া গেলেন; 
তারপর ধীরে ধীরে সোজা হইযা বসিলেন। তাহার 
চ্ষুদ্বয় চক্রারুতি হইয়া ঘুরিয়া উঠিল। 

কেদার : প্র! কি বললে তোমার বাপের নাম? 

রঞ্জন: আজে শ্রীগ্রতাপচন্ত্র সিংহ । 

কেদাঁর ধড়মড় করিয়। উঠিয়। দ্লাড়াইলেন। রঞ্জনও 


বাবার নাম ্রীপ্রতীপচন্দ্ 


হতবুদ্ধিভাবে দীড়াইল। কেদারের কণ্ঠে একটি অন্তগূণ্ট 
মেঘগর্জন হইল। 

কেদার : প্রতাপ সিংগি! তুমি- প্রতাপ সিগির 
ব্যাটা সা ! 

রঞ্জন আজে হ্্যা।__কিস্ত-_ 


কেদারবাবু রক্তনেত্রে তাহাঁকে বাঁধ! দিয়! বলিলেন_- 

কেদার $ তোমার বাপের গালে এতবড় আব আছে? 

বলিয়! হাতে কম্লালেবুর মত আকার দেখাইলেন। 
রঞ্জন বুদ্ধিভ্রষ্টের মত বলিল-_ 

রঞ্জন £ আজ্ঞে না, অতবড় নয়-_ এতটুকু 

বলিয়৷ স্পারির আকার দেখাইল। কেদার সহসা 
সিংহনাদ করিয়া উঠিলেন। 

কেদার : ব্যস্-আর সন্দেহে নেই। তুমি সেই 
ছুশমনের বাচ্ছা 


সহ -্রিখ্ে দিন 


৪২৪১ 


মঞ্তু কাঠ হইয়া বসিয়! এই দৃশ্য দেখিতে লাগিল ; রঞ্জন 
বিভ্রান্তভাবে এদিক ওদিক তাঁকাইতে লাগিল; কেদার 
তাহার মুখের সামনে তর্জনী আম্ফালন করিয়া গর্জন 
করিতে লাগিলেন । 

কেদার; তোমার আম্পর্দাতো কম নয় ছোকরা! 
প্রতাপ সিংগির ব্যাট হয়ে তুমি আমার বাড়ীতে ঢুকেছ? 
বেল্লিক বেয়াদপ ! 

হঠাঁৎ টেবিল হইতে একটি ফুলদানি তুলি! লইয়৷ তিনি 
ছ'হাতে সেটা মাটিতে আছাড় মারিয়া ভাঙিয়া ফেলিলেন। 
মঞ্জু চীৎকার করিয়া উঠিল । 

ম?ুঃ বাবা! 

আহত পিংহের মত কেদার কন্তার দিকে ফিরিলেন। 

কেদার £ খবরদার! যদি আমার মেয়ে হোস 
একটি কথ! কইবি নাঁ_ 

মঞ্ু উঠিয়া দাড়াইয়াঁছিল, অধর দংশন করিয়া! আবার 
বসিয়া পড়িল। কেদাঁর বঞ্জনের দিকে ফিরিলেন ; ভান 
হাঁতের মুষ্টি তাহার নাকের কাছে ধরিয়া এবং ৰা হাতের 
তচ্চনী বহ্চিদ্বারের দিকে নিদ্দেশ করিয়া তিনি সরি 


ছাঁড়িলেন__ 
কেদার ; এ দরজা দেখতে পাচ্ছ? সোজা বেরিয়ে 
যাঁও। আর যদি কখনও আমার বাড়ীতে মাথা গলিয়েছ-_ 


মাথা ফাটিয়ে দেব। যাও! 
রঞ্জন মোহাচ্ছন্সের মত কেদারবাবুর মুষ্টির দিকে 
তাকাইয়া দাড়াইয়াছিল, এখন মাথা ঝাঁড়া দিয়া নিজেকে 
কতকটা সচেতন করিয়া লইল, তারপর তন্দ্রাহতের মত 
বলিল__ 
রপগ্তরন £ আচ্ছা_আমি যাচ্ছি। 
সে দ্বারের দিকে ফিরিল। 
মঞ্জু মিউজিক টুলে বসিয়াছিল; তাহার নিসীডিত 
চক্ষু ছুটি এতক্ষণ ব্যাঁকুলভাবে এই দৃশ্ঠের মর্মান্ুসন্ধান 
করিতেছিল; রঞ্জন দ্বারের অভিমুখী হইতেই সে পিয়ানোর 
উপর হাত রাঁখিয়! ধড়মড় করিয়া উঠিয় দীড়াইল। পিয়ানো 
আর্ত বেস্থুরাক্ঠে আপত্তি জানাইল । 
_ কেদাঁর চীৎকার করিয়া চলিলেন-__ 
, কেবার£ যত সব ঠগ্গু জোচ্চোর দাগাবাজ! 
কাপ নিংগির ছেলে আমার দেক্সেকে বিয়ে করবে? 


২০6০ 


রঞ্জন দ্বার পর্য্স্ত পৌছিয়াছিল, একবার দীড়াইয়া 
পিছু ফিরিয়া চাহিল। অমনি কেদারবাবুর বভ্রনাদ 
আঁসিল-_ 

কেদার ; বেরোও ! 

রঞ্জন আর দীড়াইল না, ভ্রতপদে দৃষ্টির অন্তরালে 
চলিয়া গেল। 

মঞ্জু সেই দিকেই তাঁকাইয়া! ছিল, এখন পিতার দিকে 
ঘৃষ্টি ফিরাইয়! দেখিল তিনি আর কিছু না পাইর়! গট্গটু 
করিয়! দেয়ালে লম্ষিত রঞ্জনের ছবিটার পানে চলিয়াছেন। 
মঞ্জু অবরুদ্ধ কঠে বলিয়া উঠিল-_ 

মঞ্জু: বাবা! 

ছবির নিকটে পৌছিয়! কেদার কট্মট্‌ করিয়া একবার 
মঞ্জুর পাঁনে তাঁকাইলেন, তারপর ছু*হাঁতে হেঁচকা মারিয়া 
ছবিটাকে দেয়াল হইতে ছি"ড়িয়! লইয়! জানালার বাহিরে 
নিক্ষেপ করিলেন। 

অত:পর ঝড়ের শক্তি ফুরাইয়! গেলে প্রকৃতি যেমন 
ক্লান্ত নিঝুম হইয়া পড়ে, কেদারবাবুর কুদ্ধ আম্ফালনও 
তেমনি ধীরে ধীরে মন্দীভূৃত হইয়া আসিল; তিনি অবসন্ন- 
দেহে ফিরিয়া গিয়া একট! কৌচে বসিয়া! পড়িলেন। গালে 
হাত দিয়া একবার অনুভব করিলেন। যেন দস্তশূলের 
পূর্বাভাস পাইতেছেন। 

মঞ্জু পিয়ানোর পাশে শক্ত হইয়া দীড়াইয়াছিল; 
ফ্যাকাসে রক্তহীন মুখে ঠোটছুটি অল্প কাপিতেছিল। 
কেদার তাহার দিকে কিছুক্ষণ তাকাইয়! রহিলেন; তারপর 
ঈষৎ ভাঁঙ| গলায় ডাকিলেন_ 

কেদার : মঞ্জু, এদিকে এস। 

মঞ্জু একবাঁর চোখ তুলিল ; তারপর ধীরে ধীরে তাহার 
পাঁশে আসিয়া ঈাঁড়াইল। 

কেদার পাশে হাত রাখিয়া বলিলেন__ 

কেদার ঃ বোসে!। 

যন্ত্রের পুতুলের মত মঞ্জু নির্দিষ্ট স্থানে বসিল। কেদার 
একবার গলা-ধধাঁকারি দিলেন; যে জোর মনের মধ্যে নাই 
তাহাই যেন কে আনিবার চেষ্টা করিলেন; তারপর 
অন্যদিকে তাকাইয়! বলিলেন__ 

কেদারঃ ও আমার শতুরের ছেলে; ওর সঙ্গে 
তোমার বিয়ে হতে পারে না। 


ভ্ডা্স ভব 


[ ২৮শ বর্-_২য থণ্ড-_-৩য় সংখ্যা 


মণ প্রথমটা উত্তর দিল না, তারপর মনের ব্যাকুলতা 
যথাসম্ভব দমন করিয়! বলিল__ 

মঞ্ত্ুঃ শুকে কেন অপমান করলে বাবা? উনি তো 
কিছু করেন নি! 

কেদারবাঁবুর মুখ একগুঁয়ে ভাব ধারণ করিল । 

কেদার ; না করুক__ওর বাপ আমার তর ! 

মঞ্জু ঃ কিন্ত--কি নিয়ে এত শক্রতা ? 

কেদাঁর স্বৃতির ফুটন্ত জলে অবগাহন করিলেন, কিন্ত 
অগ্নভৃতিটা আরামদায়ক হইল না । ঝগড়ার কারণ অন্সন্ধান 
করিয়া! দেখিতে গেলে তাহা অনেক সময় এমন লঘু প্রতীয়মান 
হয় যে প্রকাশ করিতে সঙ্কোঁচ বোধ হয়। কেদাঁর প্রশ্নটা 
এড়াইয়া গেলেন । 

কেদার: তা এখন আমার মনে পড়ছে না-পচিশ 
বছরের কথা। কিন্ত সে যাই হোঁক, ওর সঙ্গে তোমার 
বিয়ে হতে পারে না। বুঝলে? 

মঞ্জু ঠেটমুখে নীরব হইয়া রহিল । কেদাঁর কন্যার মনের 
ভাবটা ঠিক বুঝিতে পারিলেন না) আশঙ্কায় ও উদ্বেগে 
তাহার মুখের আকৃতি হৃদয়বিদারক হইয়া! উঠিল। তিনি 
চাঁপা আবেগের স্বরে বলিলেন__ 

কেদার £ মধু, আমার আর কেউ নেই, ছেলে বলতে 
মেয়ে বলতে সব তুই। তোর বুড়ো বাপের মনে যাতে 
আঘাত লাঁগে এদন কাঁজ তুই বোধ হয় করবি না__ 

মঞ্জু আর পারিল না, কেদারবাবুর উরুর উপর মাথা 
রাখিয়া ফৌপাইয়! উঠিল ) তারপর বাশপরুদ্ধস্বরে বলিল_ 

মঞ্তুঃ না বাবাঃ সে ভয় তুমি কোরো নাঁ_ 

_ভিজল্ভ্‌। 

বাড়ীর পাশে জানালা হইতে কিছু দূরে রঞ্জনের 
ফটোখান1 ভাঙা অবস্থায় পড়িয়া আছে। জাপানী ফ্রেম 
কেদারবাবুর প্রচণ্ড দাপট সহ করিতে পারে নাই। 

মঞ্জু পাঁশের একটা দরজা দিয়া সম্তর্পণে প্রবেশ করিল। 
কেহ কোথাঁও নাই দেখিয় ছবিটি তুলিয়া ভাঁঙা ফ্রেম হইতে 
উদ্ধার করিল; তারপর বুকের মধ্যে লুকাইয়া যেমন স্তর্পণে 
আসিয়াঁছিল তেমনি বাঁড়ীর মধ্যে অন্তহিত হইয়া গেল। 

কাট, 

বাঝায় রঞ্জনের ৰাড়ীর সন্মুখস্থ খোলা বারান্না। বাড়ীটি 
রাস্তা হইতে খানিকটা পিছনে অবস্থিত ; ফটক পার হইয়া 


ফাস্তুন--১৩৪৭ ] 





স্থ্হ ---্াদ্্.স্স্্া "স্ব 


বড় বড় ঝাউয়ের শাস্্রী-রক্ষিত কাঁকরের সড়ক অর্দচন্ত্রাকারে 
ঘুরিয়! বাড়ীর সন্মুথে পৌছিয়াছে। ফটক হইতে বারান্দা 
দেখা যায় না। 

বারান্দার উপর টেবিল চেয়ার পাতা হইয়াছে ; টেবি- 
লের উপর চায়ের সরঞ্জাম, টোস্ট মাথন কেক্‌ ইত্যাদি । 
একটি চেয়ারে বসি! প্রতাপবাবু টোস্টে মাখন 
মাথাইয়া তাহাতে কামড় দিতেছেন এবং মাঝে মাঝে 
চাঁয়ের পেয়ালায় চুনুক দিয়া গল! ভিজাইয়া লইতেছেন। 
ভৃত্য রমাই আশেপাশে প্রতুর আদেশ প্রতীক্ষায় ঘুরিয়া 
বেড়াইতেছে। 

বারান্দার নীচে জুতার মশ মশ্‌ শব্ধ শুনা! গেল; প্রতাপ 
পেয়ালা হইতে মুখ তুলিয়! চাহিলেন । 

রঞ্জন বিষণ্ন অন্যমনস্কভাবে আসিতেছিল, পিতাকে 
বারান্দার উপর আসীন দেখিয়া! খমকিয়! দাঁড়াইয়া! পড়িল। 
তাঁর উদত্রান্ত মন এত শীঘ্র পিতৃদর্শনের জন্য প্রস্তত ছিল 
না; সে কতকটা বিন্মযভাবেই বলিয়! উঠিল-_ 

রঞ্জন £ বাবা ! 

তারপর আত্মসম্বরণ পূর্বক মুখে হাঁসি আনিয়া সে 
তাড়াতাড়ি বারান্দার উপর উঠিয়া গেল। 

প্রতাপও কামিজের হাতায় মুখ মুছিতে মুছিতে উঠিয়া 
দাঁড়াইয়াছিলেন ; রঞ্জন আসিয়! প্রণাম করিতেই তাহাকে 
সন্সেহে আলিঙ্গন করিলেন । পিতা পুত্রের মধ্যে সম্বন্ধটা ছিল 
প্রায় সমবয়স্ক বন্ধুর মত । 

প্রতাপ : কেমন আছিস? 

রঞ্জন; (মুখ প্রফুল্ল করিয়া) ভাল আছি বাবা। 
তুমি হঠাৎ চলে এলে যে! 

প্রতাপ ঃ এম্নি-অনেক দিন তুই কাছছাড়া_ 
ভাবলুম একবার দেখে আদি ! 

প্রতাপ স্বস্থানে ফিরিয়া গিয়া বসিলেন; রঞ্জন তাহার 
মুখোমুখি একট চেয়ারে বসিল। পিতার কথায় সে একটু 
কোমল হাসিল। 

রঞ্জন: ও । ভালই তো, তবু দুর্দিন বিশ্রীম করতে 
পারবে ।__রমাই, আর একটা পেয়ালা নিয়ে আয়-_ 

রমাই প্রস্থান করিল। রপ্রনের পক্ষে প্রফুল্লতার মাত্রা 
বজায় রাখা কঠিন হইয়! উঠিতেছিল ; প্রদীপে ষখন তৈলের 
অভাব তখন কেবল মাত্র মলতে উষ্কাইয়া৷ তাহাকে কতক্ষণ 


সহ্ধ খে চিল 





খঠি৯ 





বাঁচাইয়া রাধা যাঁয়! প্রতাপ চায়ের পেয়ালা মুখে তুলিতে 
তুলিতে তীক্ষচক্ষে তাহাকে লক্ষ্য করিতেছিলেন। 

রমাই পেয়ালা! লইয়া ফিরিল) রঞ্জনের সম্মুখে রাখিতে 
রাখিতে বলিল-- 

রমাই £ বাইরে চ1 খাঁওয়। হলেন না আজ্ঞে? 

রঞ্জন সচকিতে চোখ তুলিল ; তীহার মুখ উত্তপ্ত হইয়া 
উঠ্িল। ঘাড় হেট করিয়া পেয়ালায় চা ঢালিতে ঢালিতে 
বলিল-- 

রঞ্জন: না। 

প্রতাপ লক্ষ্য করিতেছিলেন; তাহার মুখ উদ্বিগ্ন হইয়া 
উঠিতেছিল। রঞ্জন একচুমক চা খাইয়া! বা হাত গালে দিয়া 
বসিল। প্রতাপ টোস্টের পাত্রটা তাহার দিকে ঠেলিয়া 
দিলেন, রঞ্জন মাথা নাঁড়িয়া সেটা তাহার দিকে ফেরত দিল। 
তখন প্রতাপ আর থাকিতে না পারিয়। বলিলেন__ 

প্রতাপ : কি হয়েছে রঞ্জন? 

রঞ্জন সোজা হইয়া বসিয়া! মুখে হাসি আনিয়া প্রশ্নটা 
এড়াইয়া বাইবার চেষ্টা করিল। 

রঞ্জন: কই-_কিছুই তে! হয়নি ! 

প্রতাপ ঃ তবে গালে হাত দিয়ে অমন ক'রে বসে 
আছিস কেন 1--( সহসা ) হারে, দাতের ব্যথা নয় তো? 

বলিতে বলিতে তিনি নিজের পকেটে হাত পুরিলেন। 

রগ্ন হাসিয়া ফেলিল। 

রঞ্জন £ না বাবা, ধ্লাত ঠিক আছে। 

প্রতাপ £ তবে? অমন করে বসে আছিস, কিছু 
খাঁচ্চিস না_এর মাঁনে কি? 

রঞ্জন চায়ের পেয়ালাটাও সরাইয়া দিয়াছিল। এখন 
আবার কাছে টানিয়া লইয়া! তাহাতে একবার চুম্ক দিল; 
মুখে হাঁসি আনিয়া! যথীসম্ভব সহজ সরে বলিল_ 

রঞ্জন £ বললুম তো বাবা, কিছু নয়-_ 

প্রতাপবাবুর ধৈর্য্য ক্রমশ ফুরাইয়া' আসিয়াছিল, তিনি 
হঠাৎ ঠেবিলের উপর একটা কিল মারিলেন। চায়ের 
বাসনগুলি সশৰে নাচিয়া উঠিল। 

প্রতাপ £ নিশ্চয় কিছু।__আমি শুনতে চাই। 

রঞ্জনের মুখ গম্ভীর হইল; সে কিছুক্ষণ প্রতাপের মুখের 
পানে চাহিয়া থাকিয়া ধীরে ধীরে প্রশ্ন করিল-_ 

রঞ্জন ; বাবাঃ বেদার রায় বলে কাউকে তুমি চেনো? 


২2০২২, 


প্রতাপ চেয়ার ছাড়িয়া গ্রায় লাঁফাইয়! উঠিলেন। 

প্রতাঁপ £ কেদার-_! সেই বেল্লিক হম্ুমানটা ?-- 

(তিনি আবার দৃঢ়ভাবে বসিলেন ) হ্যা, চিনতুম তাকে 
পচিশ বছর আগে । কিন্তু সে উল্লুকটার কথা কেন? 

রঞ্জন ক্লান্তভাবে উঠিয়া দাড়াইল। 

রঞ্জন; না কিছু নয়।-_এখানে তার মেয়ে মঞ্জুর সঙ্গে 
আমার আলাপ হয়েছিল-_ 

প্রতাপ গুন-ছেঁড়া ধনুকের মত ছিট্কাঁইয়৷ দঁড়াইয়া 
উঠিলেন। 

প্রতাপ £ কি বললি-_সেই ক্যাদার বো্ছেটের মেয়ের 
সঙ্গে তোর আলাপ! আম্পর্ছা কম নয় তো ক্যাদারের ! 
আমার ছেলেকে ফাঁসাতে চায়-_ 

কুক প্রতিবাদের স্বরে রঞ্জন বলিল-_ 

রঞ্জন £ বাবা, তুমি তুল করছ--তিনি-__ 

তাহার কথা শেষ হইবার পূর্বেই প্রতাপ গঙ্জিতে 
আরম্ভ করিলেন__ 

রঞ্জন: হ'তে পারে নাঃ হতে পারে না 

তিনি উন্মত্তবৎ হস্তদ্বয় আস্ফালন করিয়! দাপাদাপি করিয়া 
বেড়াইতে লাগিলেন; তারপর রঞ্জনের নিরীহ স্কন্ধে গদার 
মত বাহু সজোরে নিপাঁতিত করিয়। বজ্রনির্ধোষে কহিলেন-__ 

প্রতাপ; রঞ্জন, তুই যদি বাপের ব্যাটা হোস; আর 


ভ্ডাব্রতুন্ব 


[২৮শ বর্ষ-_২য় থণ্ড--৩য় সংখ্যা 


বলেছেন, তাঁর বাড়ীতে মাথা গলালেই তিনি আমার মাথা 
ফাটিয়ে দেবেন। 
প্রতাঁপ আবার দাপারাঁপি করিতে লাগিলেন । 
প্রতাপ £ কী! এতবড় আম্পর্ধা__ আমার ছেলের মাথা 
ফাটিয়ে দেবে। দেখে নেবো _পুলিসে দেবো হতভাগা নচ্ছারকে-_ 
দাড়াইয়। থাকিয়। কোনও লাভ নাই দেখিয়া রঞ্জন 


বাড়ীর ভিতর দিকে চলিল। প্রতাপ হাঁকিলেন__ 
প্রতাপ £ শোন্! 
রঞ্জন ফিরিল। 
প্রতাপ ঃ কাল রাত্রের গাড়ীতে আমরা কলকাতায় 
ফিরে যাঁব-_ 
রঞ্জন: (উদাস কে) বেশ! 


রঞ্জন আবার গমনোছ্যত হইল । 

প্রতাপ :- আমি রাজার বাড়ীতে তোর বিয়ের সম্বন্ধ 
ঠিক করেছি। 

রঞ্জন অধর দংশন করিল । 

রঞ্জন £ বিয়ে আমি করব না বাবা-_ 

প্রতাপ ঃ করবি না! (ক্ষণেক নীরব থাকিয়া ) 
আচ্ছা! সে দেখা যাঁবে। কলকাতায় চল্‌ তে৷ আগে । এ 
বুনো যায়গায় আর নয়, কালই রাত্রের গাড়ীতে । 

রঞ্জনের মুখে চোখে একটা চকিত চিন্তার ছায়! পড়িল । 


কখনও ওর বাড়ীতে মাথা গলাবি নে__ সে অস্দুটস্বরে আবৃত্তি করিল-__ 
রঞ্জন দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়া বলিল-_ রঞ্ধন : কাল রাত্রের গাড়ীতে-_ 
রঞ্জন'ঃ না বাবাঃ তুমি নিশ্চিন্ত থাকো । কেদারবাবু ফেড়্‌ আউটু। ( ক্রমশঃ) 
দোল-লীল৷ 
প্রীমধুসূদন চট্টোপাধ্যায় 


কুস্কুম-উৎসবে পড়ে” গেছে সাড়া আজ, ব্রজনারী ছুটে চলে রঙ্গে ; 
অরুণিত তরুশাখাঁ, অরুণিত শুকশারী, রক্তিম! যমুনা-তরঙে ! 
ফাগুয়ার ছড়াছড়ি__রঙ যায় গড়াগড়ি, ছোটে লাল মধুকরপুঞ্জী) 
অরুণিত লতাকুল-_-অরুণিত মধুষ্বর, অরুণিত কুনুম-নিকুঞ্জ ! 
নিদারুণ মন্মথ ফুলশরে জর্জরা কাঁমিনীরা রঙ-রসে মগ্না, 
পিচ্কারী বরষায়, রাধা আজ কানু-পাঁয় পিরীতির লালিমায় লগ্ন। ! 
সন্ধ্যার আকাশের আবীরের রঙ জিনি মধুবন যৌবনে মনত; 
মুকুলিত সরোরুহ অরুণিত সুরভিত, মাধবিকা রঙে রাঙা! সত্য! 
নির্মল জ্যোত্ঙ্গায় লাল রঙ গলে" যায় জেগে ওঠে লালিমায় চন্দ্র, 
আবরণ আভরণ লালে হল' সব লাল, বিকশিত হোলিয়ার ছন্দ ! 


নারীর অবস্থাত্রয় 
যতীন্দ্ 


বেদাস্তাচার্ধ্য মহা'মনীষী বিস্তারণ্যমুনি বলিয়াছেন- _মাংসময়ী নারী ঈশ্বরের 
সৃষ্টি, তাহাকে মাতা, পত্বী, কম্য।, ভগিনী প্রভৃতি কল্পনা মানবের স্ৃষ্টি। 
একই নারী মুর্তি কাহারও জননী কাহারও পত্তী কাহারও কন্া কাহারও 
ভগিনী হইয়া! বিভিন্নমনে বিভিন্রূপে ভোগের সাধন হইতেছে। 


কন্তারূপিণী 


কম্ঠাই পিতামাতার মেহের ছুলালীরূপে তাহাদিগকে নানাভাবে 
আনন দিয়া এই ঘাত-প্রতিঘাতময় বৈচিত্রযপূর্ণ সংসারে তাহাদের 
দাম্পত্য জীবনকে স্গধিক হবধী করিয়! গাগা জীবনকে মধুময় 
করিতেছে। মহামায়া! যেন স্বয়ং কন্যারপ ধারণ করিয়া পিতামাতাকে 
ভার এই সংসার-বন্ধনের মধ্যে রাখিয়া খেল! দেখিতেছে। সেই খেলা 
ধাহার। খেলিতেছেন তাহার। একেবারে মত্ত। আর তিনি এ খেলার 
মধ্যে জড়িত ন! হইয়! প্রফুললমনে নির্বিবিকারচিত্তে দেখিয়! যাইতেছেন। 
নবনীতকোমল অমল-ধধল মৃদুমন্দ গন্ধবিশিষ্ট--শেফালিকার মত 
শ্নেহবিজড়িত অতি পবিত্র এই আনন্দময়ী মুস্তিই নারী জীবনের নির্বিকার 
নিষ্ষপুষ অবস্থা । তাই শাস্ত্রে কুমারীকে সাক্ষাৎ জগদদ্বার প্রতিমুক্তি 
বলিয়াছে। রক্তমাংসনির্িত এই জীবন্ত প্রতিমায় দেবী বুদ্ধিতে 
কুমারী পূজার বিধান। কুমারীকে কুমারীজ্ঞানে নহে, সাক্ষাৎ জগদন্থ| 
জ্ঞানে মহামায়ার অঞ্চন! | 

পিতামাতার আদর্শ জীবনই কন্যার জীবনকে ধীরে ধীরে এমনভাবে 
গঠিত করে, যাহাতে নে ভবিস্ততে গৃহিণী জননী হইয়! সংসারে ঘাত- 
প্রতিধাতরাপ জীবন-দংগ্রামে জগ্লী হইতে পারে। কন্যার ভবিষ্যত 
জীবনের জন্য পিতামাতাই সম্পূর্ণ দায়ী। তাই কন্যাকেও পুত্রের মতই 
লালনপালন বা! শিক্ষ। দিবার বিধান। 


জায়ারূপিণী 


ংসারের বিভিন্ন রীতিনীতি পিতাম।তার নিকট হইতে শিক্ষা 
করিয়া কন্যা যখন অপরের কুললগ্ী গৃহিণীরপে পতিগৃহে প্রবেশ 
করেন, তখন তিনি পিতাম।তার নিকট হইতে আশৈশব যাহা শিক্ষ1 
করিয়াছেন তাঙ্কার সহায়ে নিজেকে সংসারের সমন্ত দায়িত্ব পালনের 
উপযুক্ত বিবেচন! করিয়! স্বেচ্ছায় পতির গৃছে পত্ী যা সহধর্শিণীরূপে 
প্রবেশ করেন। পতির সুখে সুখী ছুঃখে দুঃখী হইয়া তাহার ভাগোর 
সহিত নিজ ভাগাকে হেন একীভূত করিয়! দিয়া এই সংসার পথের 
যাত্রী হন। ছুইটি পৃধক প্রাণী ভাবে-প্রেমে আশাআকাঞ্জার় এক 
হইয়! বান বলিয়া জায়! পতি উতয়কে দম্পতি বলে। 

পদ্ধী পতির সর্রোতোভাবে অনুসরণকারিতী বলিয়! ঠাছাকে গতির 


অর্ধা্িনী বলিয়। সম্মানিত করা হইয়াছে। পতিই একমাত্র উপান্ঠ 
দেবতা, পতিই ধ্যান জ্ঞান, ইহলোক পরলোক, পতিই ত্তাহার একমাত্র 
গতি-_এ দৃষ্টান্ত হিন্ুসমাজেই খুব বেশী, তাই হিন্দুর পারিবারিক 
জীবন যত শান্তিপূর্ণ অন্য জাতির তত নয়। পতির সহধর্শিধীরপে হিন্দ- 
নারীই সর্বেধচ্চ শিখরে আরোহণ করিয়াছেন। হিন্দুধর্ের মহান্‌ 
আদর্শে অনুপ্রাণিত হইয়। কত পতিগ্রাণা সতী সাধ্বী নারী হিন্দু 
জাতিকে সতীত্বের শ্রেষ্ঠ গৌরবে ভূষিত করিয়া অমর হইয়াছেন। হিন্দু 
জাতির সেই চির-আরাধ্য| রমণীরত্ব সীতা, সাবিত্রী, সতী, দম, 
গাদ্ধারী প্রস্তুতি ধাহারা পতির জন্য সম্পূর্ণরূপে আত্মত্যাগ করিয়। 
চিরতরে হিন্দু জাতিকে ধন্য করিয়া গিয়াছেন ভাহাদের ত্যাগতিতিক্ষা 
আজ হিন্দুনারীর সম্পদ, জাতীয় জীবনের গৌরবের বন্তু। 

সেই জনকনন্দিনী সীতা, ধাহাকে প্রজ্ারঞনের নিমিত্ত আদর্শ 
রাজ! গ্রারামচন্ত্র ছলনাপূর্বক বনবাস দিয়াছিলেন, তিনি কিন্তু হ্বানী 
্ীরামচন্্র কর্তৃক পরিত্যক্ত হইয়াও স্বামীর প্রতি একটিও কট্বাক্য 
প্রয়োগ না করিয়! বরং রামানুজ লক্ষণকে বিদায় দিবার সময় লক্ষণের 
নিকট বলিয়াছিলেন, “ত এব ভর্তা/ ন চ বিপ্রয়োগঃ*--তিনিই যেন 
জন্মে জন্মে আমার স্বামী হন, তবে এই বিয়োগ ব্যথ! যেন আর আমার 
ম্ত করিতে না হয়। এই একটি মাত্র কথাতেই সতীকুলমণি জনক- 
নন্দিনী তাহার হাদয়ের ভাব অভিব্ক্ত করিয়! পতিতক্কির প্রকৃষ্ট পরিচয় 
দিয়াছেন। তাহার অতুলনীয় ক্ষমা চিরদিনের জন্য ডাহাকে দেবীদ্ের 
আসনে বমাইয়। গিয়াছে। তাহার এ অত্যুজ্জল আদর্শে অনুপ্রাণিত! 
আজও বহু হিন্দু ললন! রহিয়াছেন যাহার! ম্বামীর তুঁলক্রটি অন্যায়- 
অত্যাচার উপেক্ষাই করিয়! যান। তাহাদের এই সর্বংসহ। ধরিত্রীর 
হ্যায় ক্ষমা! গুণের সুযোগ লইয়! হিন্দুমাজ বছ প্রকারে তাহাদের 
উপর অন্যায় অত্যাচার করিলেও আজ তাহার! জননী জনকনন্দিনীর 
মতই উপেক্ষা করিয়! যাইতেছেন। এই অসীম ধৈর্য বা ক্ষমা গুণের 
অধিকারিণী বলিয়াই তাহার! 'দেবী' নামে অভিহিত । 

স বৈ নৈব রেমে, তন্মাদেকাকী ন রমতে, স দ্বিতীয়মৈচ্ছৎ।. স 
হৈতাবানাস-_যথা স্ত্রীপূমাংসৌ সম্পরিধক্কৌ ; নস ইমমেবাম্থানং দ্বেধা 
পাতয়ৎ ততঃ পতিশ্চ পত্রী চাভবতাং, তন্মাদিদং অর্ধবুগলমিব স্ব ইতি(১) 
ইত্যাদি মন্ত্রে শ্রুতি স্বয়ংই জগৎন্ষ্িকার্ধ্যে পুরুষ-প্রকৃতিকে সমান 
মর্যাদা দিয়াছে। বেদের এ ভাব অবলম্বনে পরবস্তীকালে পুরাণে 
শিবশক্তি অভেদ বা অর্ধ নারী্বরমূত্তি প্রভৃতির প্রচার বা কল্পন! 
দেখিতে পাওয়! যায়। 


(১) বৃহদারণ্যকোপনিষৎ। ১1৪1৩ 


৩৩৩ 


১9০ 


আদি দর্শনশান্ত্রকার মহামুনি কপিল দাংখ্যশান্ত্রে পুরুষ-গ্রকৃতি 
উভয়কেই অনাদি অনন্ত এবং এঁ ছইটিই চরমতত্ব বলিয়। স্বীকার 
করিয়াছেন। পুরুষ নির্ব্বিকার চৈতম্যত্বরাপ কিন্তু ভোভ1। প্রকৃতি 
জড় হইয়াও পুরুষের সাল্লিধ্যবশত পুরুষের ভোগাপবর্গ নিমিত্ত যেন 
চেতনের মত প্রবর্তিত হইতেছে। চুম্বক লৌহের নিকটে যেমন সাধারণ 
লৌছেরও গতি দেখা যায়--সেইরপ। অহৈতবেদান্তাচার্ধ)গণ একমাত্র 
পরমপুরুষ পরমাত্মারই সতত! স্বীকার করিলেও ব্যবহারিক জগতে ডারই 
অনির্ধ্বচনীয়! শক্তি মার! হ্বীকার করির়াছেন। পুরুষ জ্ঞান শক্তিব 
প্রজ্ঞা আর মায়! প্রাণশক্তি ক্রিয়াশক্তি ব| প্রকৃতিস্থানীয়া। জ্ঞানই 
একমাত্র পরমার্থ সত্য হইলেও প্রাণ বা ক্রিয়াশক্তির সহায়েই তাহার 
অনুভব সন্ভব। অতএব কোন কিছুর অনুভব করিতে হইলেই প্রকৃতি- 
স্থানীয় প্রাণের সাহচধ্য একান্ত আবশ্ঠক | 


জননীরূপিণী 


অবান্তর দার্শনিক বিষয় ত্যাগ করিয়া! এখন আবার প্রস্তাবিত বিষয়ের 
অনুবর্তন করিব। পত্ী সর্বতোভাবে স্বামীর মতানুবর্তন করেন বলিয়! 
তাহাকে সহধর্ষিণী বলে। কিন্তু উহাই তাহার সর্বশ্রেষ্ঠ অবস্থা নহে। 
ভাহাকে জননী হইতে হইবে। জননী হইয়া সন্তান পালন করিতে 
হইবে। সন্তান পালনে জননীকে যে কত কষ্ট সহ করিতে হয় তাহার 
ইয়তা নাই। মনু বলেন_-অপত্য-জননে পিতামাতা! যে কষ্ট সহা করেন, 
শত বর্ষেও সম্ভান তাহ! পরিশোধ করিতে পারে না। (২) সন্তানকে 
গর্ভে স্থান দিয়। অবধি মাতা নিজের রক্তে তাহাকে পোষণ করিতে 
থাকেন। তখন হইতে মাতার সমস্ত চেষ্ট। সন্তানের কল্যাণে নিয়োজিত 
হয়। সন্তান ভূমিষ্ঠ হইবামাত্র নিজ রক্তরপ স্তন্তদানে সন্তানের তুষ্ট 
পুষ্টি বর্ধন করেন। নম্ভান কিসে সুস্থ থাকিবে, কিসে সে ভাল হইবে, 
কিসে তাহার বুদ্ধি পরিমাঞ্জিত হইবে সতত সেই চিন্তা। এই কঠোর 
সাধনার মধ্য দিয়! লালনপালন করিলেও কিন্তু বিনিময়ে কোন কোন 
সম্তান সতত গুভাকাঞ্কিনী জননীর প্রতিও দুর্ব্যবহার করিতে কুঠিত 
হননা। তথাপি মাত। তাহাকে ক্ষমাই করেন। ন্বমা ভিন্ন ছুষ্ট 
সম্তানের প্রতিও ক্রোধ হয় না ; মাতার ন্নেহের ধার! সর্বদ! নিয়াভিমুখী, 
এই অহেতুক স্সেহ ধারায় একমাত্র মাতাই সন্তানের উর হৃদয়কে 
সুশীতল করিতে সমর্থ । ইহাই মাতার মাতৃত্ব। “য! দেবী সর্বভূতেষু 


মাতৃরূপেপ সংস্থিত|।” 
মাতৃত্বই নারী জাতির শ্রেষ্ঠ গৌরব। তাই ঠাহাদিগকে মাতৃজাতি 
বলিয়া অভিনন্দিত কর! হয়। তাহাদের মধ্যে উহাই সহজাত সংস্কারের 


স্তায় আশৈশব অনুল্যাত। একটু লক্ষ্য করিলেই দেখ! যায় প্র ভাবটি 
শিশুকাল হইতেই রহিয়াছে - চলন-বলন ত্রীড়া-কৌতুক আলাপ- 
আলোচন! প্রভৃতির মধ্য দিয়! এ ভাবটিই পরিশ্ষট। সৃষ্টিকর্তা 
তাহাদিগকে সৃষ্টি করিবার সময় এমন একটি দেহ দেন যাহা মাতা 


পাপী পাশপাশি শীশীশীশ্াশীশীশীশিশি 





পপ পা পল শি শিপ 





(২) মনুপংহিত। ২২২৭ 


জাব্রভ্্বশ্ 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় থণ্ড- ৩য় সংখ্যা 


হইবারই সম্পূর্ণ উপযোগী। রক্তমাংসপিও শরীর পুরুষ ও নারীর লমান 
হইলেও গর্ভধারণ ও সন্তান পালনের নিমিত্তই ভগবান তাহাদিগকে আরও 
কয়েকটি অবয়ব বেশী দিযলাছেন। জরায়ু গর্ভাশর স্তনের স্ুলত্ব প্রভৃতিও 
নারীর মাতৃত্বই সৃচিত করিতেছে। সৌনারধ্যবৃদ্ধির জন্য তরুণীর তুঙ্গ- 
স্তনের যতটুকু সার্থকত| তদপেক্ষ। স্তষ্দান করিয়া সন্তান পালনে গীবব- 
পূর্ণ গীনপয়োধরের সার্থকত| অনেক বেশী। গর্ভাশয় বা জরায়ু প্রস্তুতি 
বিশেষ অঙ্গ নকল গভধারণেই সার্থক হয়। যে অঙ্গ দ্বারা নারী 
পুরুষের আনন্দদায়িনী হন, সেই অঙ্গ সহায়ে সপ্ত।ন প্রসব করিয়! জননী 
হন বলিয়! শান্তর প্র অঙ্গকে সৃষ্টিকর্ত। “ব্রহ্মার দ্বিতীয় মুখ” বলিয়! সম্মানিত 
করিয়াছে এবং “গর্ভ ধেহি পিনীবালি” বলিয়! ধ অঙ্গের পৃজ! শান্্ুম্মত 
অনুষ্ঠান। নারী গর্ভধারণ ও সম্ভতানপালন করেন বলিয়াই বেদে 
পঞ্চামিবিদ্তা উপাসনার “যোধ! বাব গৌতমাগ্রিঃ” বলিয়! তাহাকে অগ্থি- 
রূপে কল্পনা করিতে উপদেশ দিয়াছে । নারীর শরীরই শুধু যে সন্তান 
ধারণ পালনের উপযোগী তাহ! নহে, পরস্ত তাহার মনও ন্নেহমমত। 
করুণ! প্রভৃতি এমন কতকগুলি জননীমনুলভ গুণমপ্ডিত যাহ! নারীর 
নিজন্ব। পুরুষের মধ্যে তাহ! নাই বলিলেই চলে । আজীবন মাতৃতাবে 
ভাবিত হইয়! নারী যখন সন্তানের জননী হন, তথন তিনি নিজেকে ধন্য 
মনে করেন এবং কুলকে পবিত্র করেন। তাহার দ্বারাই সেই বংশের 
ধার! অব্যাহত রহিল বলিয়া তাহার গর্ধব[নুভব কর! স্বাভাবিক । তাহার 
হৃদয়ের রক্তে সুষ্ঠ পুষ্ট সন্তান সেই বংশ রক্ষার জন্য গ্রদব কক্সিয়াছেন 
বলিয়! সকলের নিকট তিনি অধিকতর আদরিণী হন। তাই জননীত্বেই 
নারী জীবনের চরম পরিণতি । 

নারী নিজের রক্তে সুষ্ঠ পরিপুষ্ট সন্তান গ্রদব করিয়া বংশের ধার! 
অব্যাহত রখেন এবং পুন্নাম নরক ভোগ হইতে পুরুষকে রক্ষা করেন। 
নারী সন্তানের জননী হইলে তবেই শাস্্বাকোর মর্যাদা রক্ষা হয়। 
পুত্রলাভ করাই দাম্পত্য জীবনের উদ্দেশ্ঠ, ভাধ্যাগ্রহণ হইতেছে এ উদ্দেহ্া- 
লাভের ডউপায়। "পুত্ার্থে ক্রিয়তে ভার্ঘযা পুত্রপিও: প্রয়োজনম্” 
এবং ধর্মপত্ৰীতে যে পুর ব! প্রজা উৎপন্ন কর! তাহা শ্বামীর--পতির 
দ্বতীয় জন্ম। পতিই জগৎ উপভোগ করিবার জন্ঠ পুনরায় নিজেকে 
পুত্ররূপে উৎপন্ন করেন। “আত্ম বৈ জায়তে পুত্রঃ”। পতিই পত্বীর 
মধ্য দিয়! জন্মলাভ করেন বলিয়! পত্থীর অপর নাম জায় । 'জায়তে 
পুত্রক্ষপেণ আত্মাহস্ত।মিতি' এই অর্থে জায় শব্ধ প্রয়োশ হইয়াছে। 
অতএব জায়-_-( জন্+অক্‌ স্ত্রী আপ.) শের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ, যাহাতে 
বা যাহার দ্বার! নিজের জন্মলাভ হয় (ক)। ইহার হ্বারাও প্রমাণিত হুইল 
নারীকে জননী হইতে হইবে, মাত্র পুরুষের ভোগ্যবন্ত হইয়া উপতোগেচ্ছা- 
চরিতার্থ করিলেই চলিবে না। 

মনুম্মতি সমাজের এবং নারীজাতির কল্যাণের নিমিত্ত তাহাদের 


বিষয় অতিরিক্ত কঠোরত! অবলম্বন করিলেও সম্ভান লাতের বিষয়ে 


পপি শি শিশীীশিীশীসিশীসিসী পিপি শীট পপ ০ পপ পপ পপ পা পিস 


(ক) পতিভার্ধ্যাং সম্প্রবিগ্থ গর্ভোতৃত্বেহজায়তে ৷ জায়ায়ানতদ্ি 


জায়াত্বং যদন্তাং জায়তে পুনঃ | মনু, ৯৮ 


ফান্ভুন_১৩৪৭ ] 


ভাহাদের প্রতি যথেষ্ট উদারত| দেখাইয়াছে। বংশ নাশের সম্ভাবনার 
বা অপুত্রক অবস্থায় পতিবিয়োগ হইলে তাহাদিগকে সন্তান লাভে যথেষ্ট 
স্বাধীনত| দিয়াছেন। হ্বামী বিষ্তমানে বা অবিস্ঞমানে, স্বামীর আজ্ঞায় 
বা অন্ধ কোন গুরুজনের আজ্ঞায়, দেবর অথব| এঁ বংশের অপর কাহারও 
দ্বারায় সন্তান উৎপন্ন করাইয়। বংশধার! রক্ষা! করিবেন। (৩) মনু 
বংশলোপের সস্ভাবনায় বা নিজের অপত্যহীন অবস্থায় বিধবা হওয়ায় 
বিবাহিতা যুবতী নারীকে পূর্বোক্ত উপায় অবলম্বন করিবার নির্দেশ 
দিয়াছেন। কন্তা ব1 কুমারীর প্রতিও এ একই বিষয়ে মনু খুব উদার। 
তিনি বলিতেছেন, কন্যা! ধতুমতী হইলে তিন বৎসরের মধ্যে পিত। যদ্দি 
তাহাকে উপযুক্ত পাত্রে অর্পণ না করেন, তাহ! হইলে কুমারী নিজেই 
আপনার ইচ্ছান্থ্যাক়ী উপযুক্ত পতি গ্রহণ করিতে পারিবে ।(8) 
কগ্ঠার ধতুকালে তাহাকে উপযুক্ত পাত্রে অর্পণ করিতে না পারায় খতু- 
রোধে অপত্যরোধ করিয়াছেন বলিয়! সেই পিতা সেই কন্ঠার উপর 
আধিপত্যরহিত হইয়াছেন (৫) কারণ গর্ভধারণ করিয়! সস্তানের জননী 
হইবে বলিয়াই শ্ত্রীলে।কের স্থষ্টি ।(৬) এই সকল ক্লোকের দ্বারায় জান! যায়, 
মনু স্মৃতি প্রভৃতির নির্দেশে নারীর জীবন মাতৃত্বেই পরিপূর্ণ ত। লাভ করে। 

মহাত্মা! গান্ধী নিজে বিবাহিত হুইয়াও খুব সংযত জীবন যাপন 
করিয়াছেন এবং তিনি উপদেশ দিয়াছেন_-যদি তুমি বিবাহিত হও 
তবে স্মরণ রাখিও তোমার স্ত্রী কেবল তোমার বন্ধু, তোমার সাথী এবং 
তোমার সহধশ্মী মাত্র । তিনি তোমার বাসনা পরিতৃপ্তির যন্ত্র নহেন। 
তোমার শরীর ও মমের ধশ্ম আত্মসংযম সুতরাং যৌনদশ্মিলন তখনই 
হইতে পারে যখন এই কার্ধো উভয়েরই সম্মতি থাকে । পুষ্ব পূর্বব 
ধধিগণের ও বর্তমান কালের শ্রেষ্ঠ মানব মহাত্স! গান্ধীর এই বাক্যকে 
অবজ্ঞা করিয়! উপভোগের উদ্দ।ম লালসায় কেহ কেহ এমন সাংঘাতিক 
কথাও বলিয়াছেন--ন্ত্রী সহবাস সম্পূর্ণ বর্জন করিয়া! বিবাহিত ব্যক্তিদের 
বরহ্মচ্ধ্য পালন করাবার উপদেশ আমি দিতে চাই না। সে দেবেন 
মহাক্মা গান্ধী প্রমুখ ধর্মপ্রাণ পুরুষেরা-ধীর| গরভভনিরোধের কোন 
প্রকার বৈজ্ঞ(নিক উপায় অবলম্বন করাকে পাপাচরণ বলে মনে করেন।” 
ধর্মভূমি তারতমাতার হুসস্তানগণ-_যাহার! বিষ্তান্‌ বুদ্ধিমান্‌ চিন্তাশীল, 
তাহারাও যখন আমাদের সনাতন রীতিনীতিকে অবজ্ঞা করিয়া, 
পাশ্চাত্যের হুর্দমনীয় কামোপভোগ বানায় হিতাহিতরছিত হইয়া 
্বাস্থ্যরক্ষার মায়াবরণে নিজেদের বুদ্ধিবৃত্ির অবমাননা! করেন এবং 
পাশ্চাত্যের অবাধ মিলন প্রচারে ব্রতী হন, তখন তাহা দেখিয়া আধ্য 
ধষির বংশধর মাত্রই দুঃখে ক্ষোতে ও লজ্জায় জিয়মান হইবেন সনেহ 
নাই। কালের কুটিল গতিতে ধাহার তেগ করিয়াও তাহার অব্্ঠন্তাবী 
ফল গ্রহণে অনিচ্ছুক তাহারা! যতই বৈজ্ঞানিক উপায় দেখান, তাহাকে 
মন গ্রহণ করিতে জন্বীকারই করে। কারণ তাহ! জণ হত্যা ব৷ তাহীরই 





(৩) মনুনংহিতা, ৯৫৯ 

(৪) রঃ ৯1৯৪ 

(8) রি ৯।৯৩ 

(৬) রি 
৩৪৯) 


৯৯৬ 


২৮০৫ 


নামান্তর মাত্র । জন্মনিরোধের এই সকল উপায় দ্বার! নারীর হ্বাতাবিক 
নিয়মের বিরোধিত| করিয়া! তাহার স্বাস্থ্যের উন্নতি অপেক্ষা অবনতিই 
ঘটিতেছে। শ্রীযুক্ত চারচন্দ্র মিত্র মহাশয় নারী প্রবন্ধে ধারাবাহিক 
ভাবে তাহ! প্রকাশ করিতেছেন। তিনি এ প্রবন্ধে ভারতীয় মায়ী 
জীবনের মহত্ব এবং পাশ্চাত্য নারী ভোগের উদ্দাম প্রেরণায় 
কোথায় যাইতেছে তাহ! পাশ্চাত্য মণীধীগণের মতানুযায়ী দেখাইয়াছেন। 

পাশ্চাত্য নারী সমাজ পত্বীত্রকে আদর্শ করিয়! ব! ভোগকেই 
জীবনের উদ্দেস্ট করিয়! কিসে স্থিরযৌবন! থাকা যায় তাহার জন্ত প্রাণপণ 
চেষ্ট! করিতেছে ; আর ভারতীয় নারী সমজধন্মকেই জীবনের উদ্দেশ্ঠ 
করিয়া! সহধন্মিণীত্ব বা মাতৃত্কে আদর্শ করিয়া সমস্ত চেষ্টা সমস্ত 
অনুষ্ঠান করিয়া যাইতেছেন। প্রাচ্য ও প্রতীচ্য নারীর আদর্শ ও 
চিন্তাধারা তাই মম্পূর্ণ পূথক। যে সকল বিভ্ভান্‌ বুদ্ধিমান্‌ ব্যক্তি 
্বাস্থ্ারক্ষার নামে ভারতীয় নারীগণকে তাহাদের নিজস্ব আদর্শ ত্যাগ 
করিয়! পাশ্চাত্যের অন্থকরণ করিতে উপদেশ দেন ঠাহারা ভুলিয়া যান 
যে, পাশ্চাত্য নারীর আদর্শ ও ভারতীয় নারীর আদর্শ এক নহে । ভারতের 
জাতীয় আদর্শ ধশ্ম বা ত্যাগ, পাশ্চাত্যের জাতীয় আদর্শ ভোগ বা অন্য 
কিছু । হিন্দুর বিবাহ হুসংযত জীবন যাপন করিবার নিমিত্ত--পরম্পরের 
কামনা চরিতার্থ ই দাম্পত্য জীবনের উদ্দেশ্য নহে। 

সম্তান লাভের আশায় একদিন অনুর্যযম্পন্ত। রাজরাণী বশিষ্ঠ ধষির 
আশ্রমে নন্দিনী কামধেন্ুর সেবা করিতেও দ্বিধা বোধ করেন নাই। 
এখনও ভারতীয় নারী স্বাভাবিক মাতৃত্বের প্রেরণায় অপরের পুত্রকে 
পালিত পুত্র করিয়৷ তাহাদের মাতৃত্বের আকাজ্ষ! পূর্ণ করেন। ইহ! 
অব্য নিঃসন্তান ব! বন্ধ্যা রমণীগণের পক্ষেই প্রযোজ্য । মা হইবার প্রবল 
প্রেরণাই অপরের সন্তানকে নিজের সপ্তান বোধ করার । সন্তানের জননী 
হইবার আশায়, সমস্ত নুথ স্বাচ্ছন্দ্য উপেক্ষা করিয়! মান সম্মান ভুলিয়া 
এখনও হিন্দু রমণী বীরেশ্বর তারকেশ্বর প্রভৃতি দেবতার দ্বারে হত! 
দেয়। তাহার! এখনও মনে করেন নিঃসন্তান নারীর জীবন বৃথা । অতি 
অপরিচিত ব্যক্তির মুখ হইতেও ম1 শব্দ গুনিলে তাহাদের হৃদয়ে বাৎসল্য 
ভাবের উদ্দরেক হয়। তাই অপরিচিত ব্যক্তিকেও ক্ষণিকের 
মধ্যেই পুত্রবৎ ভাবিতে পারেন। আচার্য ম্বামী বিবেকানন্দ যখন 
পাশ্চাতাদেশে হিন্দু রমণীর আদর্শ সম্বন্ধে বর্তৃত। দিয়াছিলেন 
তখন তিনিও হিন্দুনারীর আদর্শ যে মাতৃত্ব তাহাই বলিয়াছিলেন-_ 
ভারতে যখন আমর! আদর্শ রমণীর কথা ভাবি, তখন একমাত্র 
মাতৃভাবের কথাই আমাদের মনে আদে-মাতৃত্বেই তাহার আরম্ত 
এবং মাতৃত্বেই তাহার পরিণতি । নারীশব্ধ উচ্চারণেই হিন্দুমনে 
মাতৃভাবের উদয় হয়। ভগবানকে তাহার! মা বলিয়। ডাকে ।' 


তপন্থিনী বা ব্রহ্মচারিণী মুত্তি 


পূর্ব্বোক্ত অবস্থাত্রয় ব্যতীত নারীর আর একটি অবস্থা আছে তাহ! 
বৈধব্য বা তপন্থিনী-ত্রঙ্গচান্সিণী অবস্থ।। নারীর মধুময় জীবনকে 
বিষময় করিবার জন্ত তাহাকে তিলে তিলে দগ্ধ করিবার জন্ত অদৃষ্টের 


টি 
০ 


কঠোর পরিহাসরূপে এই বৈধব্য দশা তাহার মিকট উপস্থিত হয়। যে 
নারী ভোগহুখের প্রাসাদ কল্পন! করিয়া! আননে আত্মহার! হইত 
তাহাকে বিধির বিধানে সমন্ত ভোগনুখের আশা-আকাঙ্ষায় জলাঞ্জলি 
দিয়া ত্যাগের পোষাক পরিধান কপ্সিয্না সংসারের নশ্বরত চিন্ত| করিতে 
হইতেছে। একমাত্র ভগবানই সত্য, আর সব মিথ্যা এই বুদ্ধি দৃঢ় 
করিতে হইতেছে। ভগবানই সংসারের সার ভাবিয়া তাহার শোকাকুল 
চিত্তে কথক্চি শাস্তি লাভ হইলেও হইতে পারে ভাবিয়! সকলেই ঠাহাকে 
জগৎপতিকে চিস্ত| করিবার উপদেশ দেন। বিধবার এই সকরুণ অবস্থা 
ভাবিলে মনে হয় তিতিক্ষা! যেন যুর্তিমতী হইয়া বিধবারণে আবিভূ তা 
হইয়াছেন। 

পতির স্কুল দেহ লোকলোচনের অন্তয়ালে চলিয়া গেলেও বিধবা 


জ্ডীল্রভ্্বঞ্ 





[ ২৮শ বর্ধ-_২য় থশ-_৬য় সংখ্যা 


বহর স্ব” “সহ 


পল্দীর মমমধ্যে তিনি সদ! অবস্থিত থাকেন। ধাহারা! পতির পরিবর্তে 
জগৎপতিকে হৃদয়াসনে বসাইয়! পৃজ! করেন, ভাহারাই জীবনে যথার্থ 
শাস্তিলাভ করিয়া ধন্ক হন। বিধবার জীবনসংগ্রাম অত্যন্ত ভীষণ, 
তাহাকে সমস্ত ভোগ্য বস্তর মধ্যে বান করিতে হইতেছে অথচ ভোগ্য 
বস্তুতে ভোগ্য বুদ্ধি না করিয়! ত্যাজ্য বুদ্ধি দৃঢ় করিতে হইতেছে। 
মহাকবি কালিদাসের ভাষায় 'বিকার হেতো৷ সতি বিক্রিতে, যেধাং ন 
চেতাংসি ত এব ধীরাঃ।' চিত্ত চাঞ্চল্যের হেতু থাক! সত্ত্বেও ধাহাদের 
চিত্ত চঞ্চল হয় না৷ তাহারাই ধীর ব্যক্তি। এই অবস্থা কুমারী অবস্থারই 
নামান্তর মাত্র । কুমারীর মন ভাবী ভোগ সুখের আকাঙ্থান্ন পরিপূর্ণ থাকে, 
বিধবার মন ভোগন্থথের আশা! আকাঙ্ঞা ত্যাগ করিয়! দিন দিন শুদ্ধ 
পবিত্র হইয়া যথার্থ আননালাভের অধিকারিণী হয়। ইহাই পার্থক্য। 








মজিদ 
শ্রীকুমুদরঞ্জন মল্লিক 
৫ 
লেখা-পড়া জান্ত অতি কম, যেমন কঠিন, তেমূনি ছিল নত-_ 
বিষয়-আশয় ছিলই না ক মোটে, তাল আমায় বাস্ত নিষপটে, 
নাই ক কিছুই কিন্ত মনোরম-_ অজয়ের সে বানের জলের মত 
এমন কুস্থম পথের ধারেই ফোটে । ময়লা ঘোলা তবু মধুর বটে। 
২ ৬ 
মিথ্যা কথা কইত সে যে ঢের ভৃত্য এবং বন্ধু ছিল দুইই-_- 
লেগেই ছিল অভাঁব অনটন, ব্যথার ব্যথী, না বল্লে হয় তুল, 
সাধু যে নয় নিত্য পেতাম টের। সত্য বটে নয় সে টগর যৃ'ই 
তবু তার কি ছিল আকর্ষণ ! কেয়া” সে তাঁর কাটাই যেন ফুল। 
৩ ৭ 
ঠকৃতে ভাল লাগত তাহার কাছে, তার কত দর-_কতই যে দরকার 
তাড়িয়ে দিলে আসত আবার ফিরে, বুঝত না ক মনুস্যমাজ 
পরমন মাঁচুষ কমই দেশে আছে ধাঁ; ত না যে ফুল কি ফলের ধার 
বক্লে যারে রাগতে দেখিনি রে। আনন্দের সে পাতাবাহার গাছ। 
৪ ৮ 
না এলে সে লাগত ফাঁকা ফাকা, রৌদ্রে মাঠের খেজুর গাছের প্রায় 
পুকুরধারে শহ্খচিলের মত, লাগত ভাল ছিন্ন তাহার ছায়া; 
ন! ডাফ্লেও ইচ্ছ হস্ত ডাঁকা নেই ক সে ত» আজকে কীদি হায় 
গুণ দেখিনি--দোঁষ দেখেছি শত । কোথায় ছিল এত গভীর মায়! ! 


মৃত্যুবিজ্ঞান ও পরমপদ 
(পূ্বানুবততি) 
মহামহোপাধ্যায় পণ্ডিত শ্রীগোগীনাথ কবিরাজ এমৃ-এ 


যোগধারণ! কি প্রকারে করিতে হয় তাহাঁর কিঞ্চিৎ আভাস 
আমরা পূর্বেই দিয়াছি। কুস্তকের প্রভাবে সমান বায়ু 
উত্তেজিত হইয়া ভিন্ন ভিন্ন সব নাড়ীকে এক নাড়ীতে পরিণত 
করে (নাড়ী-সাঁমরস্ত ) এবং সব বাধুকে প্রাণের ধারাতে 
পর্যবসিত করে। ইহাই যোজনা-ব্যাঁপারের রম্য । দ্বার- 
সংযম ঝা প্রত্যাহার দ্বারা যেমন মনের ইন্জিয়াভিমৃখবী-বহুমুখী- 
ধার! রুদ্ধ হয় সেই প্রকার এই যৌগধারণাঁর প্রভাবে প্রাণের 
বহুমুখী ধারা একত্র মিলিত হয়। প্রাণের বিভিন্ন ধার! ইড়া 
ও পিঙ্গলা পথে দ্বিধা বিভক্ত হইয়! সাক্ষাদ্ভাবে ভ্র-মধ্যে গুপ্ত- 
ধার! স্ুযুম্নার সহিত মিলিত হয় ও একত্ব লাঁভ করে। 
যোগিগণের উর্ধ ত্রিবেণী-সঙ্গম ইহারই নামান্তর । অথবা 
প্রথমে মূলাঁধারে অধ: ত্রিবেণী-ক্ষেত্রে এ ছুই ধারা স্থুযুয্নার 
সঙ্গে সঙ্গত হয়, তাঁর পর & একীকৃত ধাঁরা ক্রমশঃ উপরে 
উঠিয়া! ভ্র-মধ্যে আনীত হয় ও স্থির হয়। এদিকে বিক্ষিপ্ত 
মন:শক্তিও চঞ্চলতা পরিহার করিয়া হৃদয়-প্রদেশে ঘুমাইয়া 
পড়ে । মন স্থির হইলে উঠা আর নাড়ী পথে থাকে না? কারণ 
নাঁড়ীসকল মনের সঞ্চরণ মা্গ মাত্র। মন যতই স্থির হইতে 
থাকে ততই উহা! নাড়ীচক্রস্থ বাযুমণ্ডল হইতে সম্কৃচিত হইয়া 
হৃদয়াঁকাঁশে প্রবিষ্ট হইতে থাকে । তখন মনের চঞ্চলতা শান্ত 
হয়-_মন নিরুত্ববৃত্তিক হইয়া অবস্থান করে। 
এই হৃদয় বা দহরাকাঁশই স্থির মনের আবাস 


যতো নির্যাতি বিষয়ো যন্সিংশ্চৈর প্রলীয়তে । 
হৃদয়ং তদ্‌ বিজানীয়ন্মনসঃ স্থিতিকারণম্‌ ॥ 


হৃদয় পুরীতৎ নাঁড়ী দ্বারা বেষ্টিত শূন্যময় অবকাশ। যখন 
মন এই অবকাশ প্রাপ্ত হয় তখন তাহা নির্বাত প্রদেশে 
অবস্থিত হয় বলিয়া অচল হয়। ইহাই মনের নিরোধ । মন 
নিক্ষিয় হইলে বৃত্তিজ্ঞান থাকে না। এই জন্যই স্ুযুপ্তিতে 
মানসিক বৃত্তিবপ জ্ঞানের অভাব হয়। দ্বারসংযম ও 
মনোরোধ হইতে বুঝিতে পারা যাঁয় যে এ অবস্থাটি কিয়দংশে 
নুুপ্তির সৃশ। দ্বারসংঘম বশতঃ ইন্জরিয়ধর্গের সহিত বিষয়ের 


সন্বন্ধ নিবৃত্ত হয় বলিয়া জাগ্রৎ জ্ঞান জন্মিতে পারেনা এবং 
মনের বৃত্তি স্তম্ভিত হওয়ার ফলে স্বপ্র-জ্ঞানও উদিত হয়ন|। 
সুতরাং ইহা জাগ্রত ও স্বপ্ন নামক অবস্থাঘয়ের অতীত 
সুযুপ্তিবৎ অবস্থা তাহাতে সন্দেহ নাই। 

ধু ্থযুপ্তি বলিলেও ঠিক ইহার পরিচয় দেওয়া হয় না-_ 
বন্ততঃ ইহা একপ্রকার জড়বৎ অবস্থা । কারণ স্ুযুপ্তিতে মনের 
কার্ধ্য না থাঁকিলেও প্রাণ স্থির থাকেনা । মমুম্য অজ্ঞানে মগ্ন 
থাকিতে পারে, জ্ঞান ও জ্ঞানমূলক কোনও বৃত্তি তাহার ন! 
থাকিতে পারে, কিন্ত তখনও দেহরক্ষার উপযোগী শ্বাস- 
প্শ্বাসাদি নানাবিধ প্রীণক্রিয়। বর্তমান থাকে । কিন্তু এই 
ক্ষেত্রে গ্রাণ সকলও আপন আপন কাঁধ্য হইতে অবসর গ্রহণ 
করিয়া স্থান বিশেষে স্থির হইয়। থাকে । স্থৃতরাং জ্ঞানে্দিয় 
ও কর্মেন্দিয়ের স্তাঁয়। মন ও প্রাণ উভয়ই নিস্তব্ধ হওয়ার দর্শ 
মনুষ্য একপ্রকার শব-অবস্থায় উপনীত হয়। 

কিন্তু মনের এই নুযুপ্তিবৎ স্থিরতা প্ররুত স্থের্যে নহে। 
ইহা তমোঁগুণের আঁবরণ-_ ইহাকে ঠিক নিরোঁধ বলা চলে না। 
কারণ একাগ্রতার পরই নিরোঁধের স্থান। একাগ্রতার 
ক্রমবদ্ধ হুক্ন ভূমি সকল অতিক্রম করিলে নিরোধ আপনিই 
উপস্থিত হয়। এই জন্য যোগিগণ সম্প্রজ্ঞাত সমাধির পরই 
নিরোধাত্মক অসম্প্রজ্ঞাত সমাধিকে যোগপদে বরণ করেন। 
তাহা উপায়প্রত্যয় সমাধি। সম্প্রজ্ঞাত সমাধির আবিরাব 
ন1 হইয়াও যদি প্রাকৃতিক কারণ বশতঃ মনের নিরোধ হয় 
তাহা হইলে উহ! অসম্প্রজ্ঞাত হইলেও ভবপ্রত্যয় মাত্র, যোগ- 
পদ্বাচ্য নহে । মনকে শুদ্ধ না করিতে পারিলে তাহাকে 
স্থায়ী ভাবে নিরুদ্ধ করা যায়না, কারণ বীজসংস্কার এ প্রকার 
নিরোধেও অক্ষুপ্নভাবেই বর্তমান থাকে। মগ্রবস্তর পুনরু- 
খানের স্তায় আবার তাহার বুখান হয় বা পুনরাবৃত্তি হয়। 
প্রজ্ঞার উদয় হইয়! ক্রমশঃ উহার নিরোধ হওয়! আবশ্তক। 
যেমন পূর্ণিমার পর চন্দ্রকলার ক্রমিক ক্ষয় নিবন্ধন একেবারে 
কলাহীন অমাবস্যার উদয় হয়, ইহাঁও ঠিক সেই প্রকার। 

এই জন্ত হৃদয় হইতে মনকে চেতন করিয়! উঠাইতে হয়। 


৩৩০৭ 


২9৫ 


বন্ততঃ চেতন কর! ও উঠান একই ব্যাঁপার। সুযুন্নার 
শোতই চৈতন্ের ধারা__মনকে জাগাইয়! উর্দমুখী স্ুযুঘনার 
ধারায় ফেলিতে হয়। এই জাগ্রৎ মনকে মন্ত্ররূপে বর্ণনা করা 
হইয়া থাকে-_-এক হিসাবে ইহা প্রবুদ্ধ কুগুলিনীর মৃত্তিরপেও 
বর্ণিত হইতে পারে । শিবহত্রে “চিত্তং মন্ত্রঃ” এই সুত্রে চিত্ত 
বা মনকেই মন্ত্র বলিয়া বর্ণনা করা হইয়াছে । প্রাণ স্ুযুযা 
স্রোত বাহিয়! উর্ধে উখিত হইয়াছে, এখন মনকেও এ 
শ্লোতের আশ্রয় গ্রহণ করিতে হইবে । তবেই প্রাণ ও মনের 
পূর্ণ মিলন সম্ভবপর হইবে । এই মিলন সংঘটিত না হওয়া 
পর্য্যন্ত দিব্য জ্ঞানের উদয় হইতে পারে ন1। স্ুুতরীং হৃদয়ে যে 
মনোরোধের কথা পূর্বের বল! হইয়াছে তাহা অষ্টদ্ধ মনের 
রোধ বলিয়াই বুঝিতে হইবে। ইহার পর বিশুদ্ধ সত্বরূপী 
মনের বিকাশ ও উর্ধারোহণ পথে ক্রমিক নিবৃত্তি গীতা- 
বণিত গুকারের উচ্চারণান্তর্গত ব্যাপার বলিয়া গণনা 
করিতে হইবে । 


৪ 


আর এক কথা । .্ষ্বয়রূপ শূন্যে যেমন অসংখ্য নাড়ীর 
পর্য্বসাঁন হয়, তেমনি এই অসংখ্য নাড়ী একীভূত হইয়া 
যে উর্ধম্রোতা মহানাড়ীর বিকাঁশ হয় তাহারও পর্যবসাঁন 
এক মহাশুন্তে হইয়া থাকে । হৃদয়াকাশে যেমন সঞ্চার 
নাই, তেমনি সেই মহাকাশেও সঞ্চার নাই। হ্ৃ'য়াকাঁশ 
গতাগতির অতীত নহে-_-কারণ বনুমুখে চলনশীল মন এখাঁনে 
আসিয়৷ লীন হইলেও ব্যুখিত হইয়৷ আবার বহুমুখেই চলিতে 
থাকে । তেমনি এ মহাশৃন্ঠও গতাগতির অতীত নহে, কারণ 
ওখানে একীতৃত মন বিলীন হইলেও আবার জাগিয়া উঠিয়া 
এক মুখেই ধাবিত হয় । বহ্ুমুখীগতি চিরতরে নিরুদ্ধ হইয়! 
গিয়াছে কিন্ত চিরদিন নিব্বিকাঁর অবস্থা লাভ হয় নাই, 
সেই জন্য এ মহাশৃন্ত হইতেও মনকে উঠাইয়া লইতে হয়। 
ইহার পর উঠিলে আর নাড়ী নাই, গতিও নাই। উহাই 
বাস্তবিক নিরোধ। তবে গতি না থাকিলেও ওখানেও 
মনের কিঞ্চিৎ স্পন্দন থাকে। উহা বিকল্পন্বরূপ, 
যাহাকে শান্ত্রকারগণ মনের স্বভাব বলিয়া বর্ণনা করিয়া 
থাকেন। কিন্ত এই বিকল্পেরও উদয়ান্ত আছে। যখন 
এই কম্পনের পর্যবসান হয় তখনই বিকল্পহীন চৈতন্ত-সথর্য্যের 
সাক্ষাৎকার হয়। ইহা মনের অতীত ভূমি। ইহার উদয়াত্ত 


ভ্ডান্রভঞ্খস্থ 


[ ২৮শ বর্--২য় খণ্ঁ-৩য় সংখ্যা 


নাই বলিয়! ইহা নিত্য উদ্দিত ও চির প্রকাঁশমান। ইহাই 
ূর্ণপ্রকাশ স্বরূপ আত্মা বা ব্রক্দ। মন তখন এ প্রকাশের 
সঙ্গে অভিন্ন হইয়া বিমর্শ রূপে অথবা! চিদানন্দময়ী ম্বরূপশক্কি- 
রূপে অবস্থান করে। এই স্বরূপ বিমর্শ ই ব্রন্ষবিদ্াঃ পরা বাক্‌ 
অথবা শবাবদ্ধ স্বরূপ ওঁকার। ইহা নিল হইয়াও 
সর্ববিদ্যাস্বূপ | 

অতএব হৃদয় হইতে মূল মন্ত্রূপ এই গুঁকারের উচ্চারণই 
পূর্ণ ্রন্ষবিদ প্রাপ্তির সোপাঁন। নিষ্ধল গুকাররূপী জ্যোতিতে 
উহার এগারটি কলার প্রকাশ হয়। উচ্চারণের প্রভাবে 
উহার এক একটি পর-পর বিকাশ প্রাপ্ত হয় ও সঙ্গে সঙ্গে 
তত অনুভূতির উদয় হয়। ক্রম-বিকাঁশের মার্গে নিয়স্থ 
কলার অনুভূতি উর্দস্থ কলার অনুভূতিতে অঙ্গীভূত হয়। 
যোগিগণ এই এগারটি কলার অনুভব পর-পর করিয়া 
থাঁকেন। ইহাদের নাম_অঃ উ, ম বিদুঃ অর্ধচন্দ্র 
নিরোঁধিকা নাঁদ, নাদান্ত, শক্তি, ব্যাপিনী ও সমনা। ওঁকার 
উচ্চারণ করিতে হইলে মন্ত্রের অবয়ব ক্রমশঃ এই এগারটি 
অবস্থাতে উপনীত হয়। ওঁকারের এই এগার কলার 
অন্ভভবের পরই ইহার নিফল অনুভব উদিত হয়-_তাহাই 
পরম অন্তভৃতি। এই উভয় অন্তভূতি এক সঙ্গে অদ্বৈত 
পূর্ণ ব্রহ্মবিদ্যারূপে বণিত হইয়া থাকে। হৃদয় হইতে 
ব্গরদ্ধের দিকে ঘে পথ গিয়াছে উহাকে আশ্রয় করিয়াই 
সাধককে অগ্রসর হইতে হয়__প্রণবের যাবতীয় কলার ও 
তৎসংক্লিষ্ট দেবতা এবং স্তর প্রভৃতির অন্গভব এ পথেই হইয়া 
থাকে। মূলাধার অথবা নাঁভি হইতে যে গতির কথা 
হঠযোগাদি গ্রন্থে পাওয়া যায় তাহ! জাগরণের পূর্ববকালীন 
আনুষঙ্গিক ব্যাপার। মন্ত্র চেতন হইলে হৃদয়াকাশে 
আদিত্যবৎ তাহার উদয় লক্ষিত হয়। হৃদয় ক ও 
তালুমূল--এই স্থানত্রয় অ, উ ও ম এই তিন কলার কেন্ত্র। 
তালুটি মায়া-গ্রন্থির স্থান। হৃদয় ও কেও দুইটি গ্র্থ 
আছে। ভ্র-মধ্য বিন্ুগ্রন্থির স্থান এখানে জ্যোতির 
দর্শন পাওয়া যায়। এই জ্যোতিটি অউ এবং ম এই 
তিনটি মাত্রার মন্থন-জনিত উহাদেরই সারভূত তেজোবিশেষ। 
এই তিন মাত্রাতে জগতের যাবতীয় ভেদ অন্তর্গত এবং 
বিন্দু উহাদের পিগাকার অভিব্যক্ত স্বরূপ । এই স্বন্বপ্ 
অবিভক্ত জ্ঞানাত্বক। অ, উ এবং ম-এই তিন কলাতে 
সমস্ত মায়িক জগৎ অবস্থিত। স্কুল পূষ্যষ্টক (লিঙ্গ) ও 


ফাস্তুন--১৩৪৭ ] 


শুন্য অথবা জাঁগ্রৎ স্বপ্ন ও স্ুযুপ্তি-_ এই তিনভাগে বিভক্ত 
সমগ্র দ্বৈত জগৎ গুঁকারের এই প্রথম তিন কলাতে প্রতিষ্ঠিত। 
চতুর্দশ ভূবনাত্মক ব্রহ্গাণ্ড ইহারই একদেশ মাত্র । মাঁয়া- 
গ্রন্থি ভেদ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মায়িক জগৎ ও তৎকারণ- 
স্বব্ূপিণী মায়া অতিক্রান্ত হইয়া যাঁয়। মায়িক জগতে 
মন্ত্র ও দেবতা অথবা বাঁচক ও বাঁচে ভেদ থাকে । এই 
জগতে দ্রষ্া দৃশ্ঠমাত্রকে আপনা হইতে ভিন্ন ভাবে দর্শন করে। 
এই ভেদ-দর্শন মায়ার কার্য, ইহা মায়িক ব্তরের সর্বত্রই 
উপলব্ধ হয়। বিন্দুতে এই বৈচিত্র্যের অনুগত অভেদ মাত্র 
দেখিতে পাঁওয়া যাঁয়। ইহা অনন্ত ভেদের একীভূত ভাবের 
অর্থাৎ অভিব্যস্ত রূপে দর্শন। অনন্ত জ্ঞেয় পদার্থ এখানে 
একটি জ্ঞানের আকারে প্রতিভাসনান হয়__ইহাই 
জ্যোতীরূপে দৃষ্টিগোচর হয় । এই জ্যোতিংস্বরূপ বিন্দুই ঈশ্বর- 
তত্বের অধিষ্ঠান ভূমি। ঈশ্বর যোগীশ্বর । যে সাধক বিন্দু 
সাক্ষাৎকার করেন তিনি এক হিসাবে নিখিল স্ুুলপ্রপঞ্চেরই 
দর্শন করেন । বিন্দু ধ্যান করিলে যে ত্রিকালদর্শী হওয়া যায় 
ইাই তাহার কাঁরণ। ধ্যানের উৎকর্ষ বশতঃ ঈশ্বর-সাঁযুজ্য 
পর্য্যন্ত উপলব্ধ হইতে পারে। এই বিন্দুসিদ্ধিই লৌকিক 
দৃষ্টিতে দিব্যচক্ষু অথবা তৃতীষ নেত্রের বিকাশ বলিয়া 
বণিত হয়। 

ষোগিগণ বিন্দু হইতে সমন পর্যন্ত আটটি পদের সন্ধান 
পাঁন। এইগুলি সবই আজ্ঞাচক্র হইতে সহআ্ারের 
কণিকা পর্য্যন্ত বিস্তৃত বিশাল মার্গের অন্তরগত-_-এই মার্গ 
মায়ার অতীত হইলেও মহামায়ার সীমামধ্যে অবস্থিত। 
ধাহারা অশুদ্ধ বিকল্পজালরূপী মায়িক বা ভেদময় জগৎ হইতে 
বিশ্রামলাঁভ করাকেই প্রার্থনীয় বলিয়া মনে করেন তাহারা 
আজ্ঞাচক্র ভেদ করিয়া মহামায়ার রাঁজ্যে প্রবেশ করাকেই 
মুক্তিলাভ বলিয়! বর্ণনা করিয়া থাকেন, কিন্তু বস্ততঃ ইহা! 
মুক্তিপদ নহে। যদিও এখানে কর্মজাল উপসংহৃত ও মায়া 
ক্ষীণ তথাপি বিশুদ্ধ বিকল্প আছে। পরমপদের যাত্রীর পক্ষে 
তাহাও বন্ধ-্যরূপ | মহামায়ার রাজ্য তেদাভেদময়__অভেদ- 
দর্শন আছে বলিয়া ইহা উপাদেয় হইলেও চরম উপাদেয় নহে। 
কারণ ভেদ-দর্শন সম্যক্রূপে অন্তমিত না হইলে অর্থাৎ 
নিধ্বিকল্পক পদে আরূঢ় না হইতে পারিলে পূর্ণতার আস্বাদন 
পাওয়া যায় না। 

মায়িক জগতে যেমন বিবিধ লোক আছে, মহামায়ার শুদ্ধ 


হৃক্ড্যন্বিভন্তান্ম ও খাল্রমপ্পদ 


খঠিঠিভধ 


রাজ্যেও তেমনি অনেক ধাম আছে। প্রত্যেক স্তরে সেই 
স্তরের উপযোগী জীব আছে, ভোগ্য বন্ত আছে, ভোগের 
উপকরণ আছে। প্রত্যেক স্তরের অনুভূতি পৃথক্‌ পৃথক্‌। 
যতই উর্ধে আরোহণ করা যায় ততই অভেদান্ুভব বাড়িতে 
থাকে, এশ্বর্্য গু শক্তি প্রবলতা লাভ করে, ব্যাপ্তি 
অধিক হইতে থাকে এবং দেশ ও কালগত পরিচ্ছেদ 
কমিতে থাকে । 

অকারের মাত্র! এক, উকাঁরের দুই এবং মকারের তিন, 
সাঁকল্যের ছয় মাঁত্রা। বিন্দু অর্ধ-মাত্রা। অর্ধচন্ত্র গ্রভৃতির 
মাত্রা ক্রমশঃ আরও কম। বিন্দু হইতে সমন! পর্যযস্ত মাত্রাংশ 
যোজনা করিলে এক মাত্রা হয়।* মাঁয়াজগতে মন্ত্রের 
ছয় মাত্র! হইলেও মায়াতীত পদে উহ! এক মাত্রা মাত্র। 
প্র এক মাত্রাও হুক্ম হুক্মতর হইতে হইতে সর্বত্র ব্যাপ্ত 
হইয়! কার্ধ্য করে। 

আমরা পূর্ব্রেই বলিয়াছি বিন্দুতে জ্ঞেয় ও জ্ঞান অথবা 
বাচ্য এবং বাঁচক অভিন্নরূপে জ্যোতির আকারে স্ফুরিত 
হয়। এই অভিন্নতা উপরে আরও পরিস্ফুট হয়। এদিকে 
যতই উর্ধে আরোহণ করা যায় ততই জ্ঞানাত্মক জ্ঞেয়ভাঁব 
ক্রমশঃ শান্ত হইয়া আঁসিতে থাকে । অর্থাৎ জ্ঞাতা, জ্ঞান 
এবং জ্ঞেয় এই তিনের মধ্যে প্রথম অবস্থায় বা মায়ার ভূমিতে 
পরম্পর পার্থক্য খুব স্পষ্ট অনুভূত হয়। পরে অনস্ত বিভিন্ন 
জ্ছেয় রাশি এক বিশাল জ্ঞানে পিগ্ডিত হইয়া তাহার সহিত 
অভিন্নভাবে প্রকাশমান হয়। এক অভেদ জ্ঞান তখন 
থাকে, তাহার গর্ভে যাবতীয় ভেদ নিহিত থাঁকে ৷ এই জান 
ও প্রাথমিক জ্ঞান এক প্রকার নহে। প্রাথমিক জ্ঞান 
অশুদ্ধ বিকল্পরূপ ছিল, কিন্তু এই জ্ঞান বিকল্পরূপ হইলেও 


পিপিপি পানিও পর ৮ কা 


* মাত্রাংশ এইরাপ-_ 
বিন্দু--অর্ধামাত্রা 
অর্ধচন্দ্র--8 মাত্রা 
নিরোধিকা_$ * 
নাদ--১ 
নাদাস্ত--তছ » 
শক্তি-_ভ্চ 
ব্যাপিনী- 5২চ মাক! 
সমনা--চই 
সম্টি--১ মাত] । 


২2৯১০ 


বিশুদ্ধ। ইহার পর ক্রমশঃ এই বিশুদ্ধ বিকল্প শান্ত হইতে 
থাঁকে। মহামায়ার উর্ধসীমা অতিক্রম করার সঙ্গে সঙ্গে 
এই বিশ্তুদ্ধ বিকল্প একেবারে শান্ত হইয়া যায়। তখন 
উহা জ্ঞাতাতে অস্তমিত হয়--একমাত্র জ্ঞাতাই তখন 
থাঁকে। ইহাই শুদ্ধ আত্মার জরষ্টারূপে স্বরূপ-অবস্থিত। 
বলা বাহুল্য, পূর্বাবস্থার জ্ঞাতা আর এখনকার জ্ঞাতা৷ বা দ্রষট 
ঠিক এক নহে। পূর্বের জাঁতা বিকল্প স্পৃষ্ট ছিল, কারণ 
তাহার জ্ঞান হইতে বিকল্প বিদূরিত হয় নাই। কিন্তু এট 
জ্ঞাতা বিকল্পের অতীত। এই অবস্থায় দ্রঙ্টা আত্মা সমগ্র 
মনোরাঁজ্য বা বিকল্পময় বিশ্ব হইতে উত্তীর্ণ হইয়া আপন 
বৌধমাত্র রূপে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই বিশ্বাতীত আত্মা 
নিব্বিকল্প জ্ঞানের প্রভাবে সমনা ভূমি লঙ্ঘন করিয়া নিজেকে 
নির্শল ও নিব্বিকল্পরূপে চিনিতে পারে । 

কিন্তু ইহা পূর্ণতা নহে। কারণ এই অবস্থায় বিশ্ব বা 
বিকল্প হইতে নিজ নিব্বিকল্লন্বপ্ূপের ভেদ প্রকাঁশমান থাকে । 
ইহা অক্ষর অবস্থা বটে, কিন্ধ বস্ততঃ ইহাতে পূর্ণতার সঙ্ষোচ 
রহিয়াছে । ইহার পর পরাশক্তি বাঁ উন্মনা শক্তির আশ্রয়ে 
কেবলী পুরুষ পরমাবস্থা বা পূর্ণবরঙ্গরূপে স্থিতি লাভ করে । 
তখন বিকল্প ও নিব্বিকল্পের ভেদও তিরোহিত হইয়া যায়। 
পূর্ণ ব্রদ্ধ সেই জন্য নিব্বিকল্প হইয়াও বিশ্বীতীত হইযাও 
বিশ্বময় । উহা যুগপৎ নিরাকার ও সাকাঁর এবং সাঁকার 
দৃষ্টিতিও যুগপৎ অভিন্ন একাকার ও ভিন্ন অনন্ত আকার- 
ময়। তখন বুঝা বায় এক পূর্ণই স্ব-স্বাতত্ত্য বলে বা 
আপন স্বরূপ-মহিমায় আপন নিরঞ্জন স্বূপ হইতে অচ্যুত 
থাকিয়াও বিশ্বর্ূপে ভাসমান হয়। 

প্রাণের সুঙ্ম কলার বিকাঁশের সঙ্গে সঙ্গে প্র সকল 
কলার প্রতিপাগ্ভ তত্ব, লোক ও পদার্থরাশি ফুটিয়া উঠে ও 
অন্ুভূতিগোচর হয়। ক্রমে নিয়কলার অন্ুভূতি উর্ধকলার 
অনুভূতির অঙগীভূত হইয়া যাঁয়। সুতরাং বিকল্প ভূমির 
যাহা অন্তিম অন্মভূতি তাহা অবশ্তই জাগতিক অন্ু- 
ভূতির চরম--সেই অশ্ঠভূতিতে অধস্তন সকল স্তরের অঙ্গ- 
ভূতিই অঙ্গীভূতরূপে বর্তমান থাকে । কাজেই মহামায়া 
স্তরে সর্বজ্ঞত গ্রভৃতি এ স্তরের উপযোগী সকল গুণের 
বিকাঁশই থাঁকে। ইহাই ভ্রষ্টী আত্মার ভিন্নাভিন্ন ভাবে 
বিশ্বরূপ দর্শন। পূর্ণ নিব্বিকল্প জ্ঞানের পূর্বের ইহা অবশ্ঠই 
উদিত হয়। 


ভ্াাব্রভন্বশ্ 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় খণ্ড--৩য় সংখ্যা 


€ 


কিন্ত ইহাও সর্বাত্মভাব নহে। কারণ এই অবস্থায় 
আত্মা বিশুদ্ধ বা অনাত্মবিবিক্ত নহে এবং বিশ্বকে অভিন্নকূপে 
দর্শন করে না। এই বিশ্বদ্শন শুদ্ধ বিকল্পময়__হুতরাং 
মনোময়, ইহা মহামায়ার বিলাস মাত্র। বন্ততঃ ইহাও 
অনাত্মবস্ত। নিব্বিকল্পবোঁধের দ্বারা ইহার পরিহার হইলে 
আত্মার গুদ্ধতা ও কেব্লত্ব প্রতিঠিত হয়_তথন বিশ্বদর্শন 
থাকে না। তারপর স্বরূপভৃতা চিদানন্দময়ী পরাশক্তির 
অন্গ্রহে-_যে শক্তি স্বাতন্থারূপে সদাঁকাল ভগবানের স্বরূপের 
অবিনাভূত-_আত্মা ভগবানের সহিত নিজের একাত্মতা 
বুঝিতে পারিলে যে নিতা দর্শন লাভ করে তাহা আত্মার 
স্বরূপেরই দর্শন, অনাত্মদর্শন বা ভেদদর্শন নহে । কারণ 
তখন আত্মা বিশ্বীতীত হইয়! স্বরূপ শক্তির উল্লাসে বিশ্বকে 
নিজের সহিত অভিন্নরূপে অর্থাৎ স্বাতক্্রাশক্তির বিকাঁশরূপে 
দর্শন করে। ইহা ব্রাঙ্গীস্থিতি । এই অবস্থায় যে সর্বজ্ঞতাদি 
নিত্য ষড়গুণের অভিব্যক্তি হয় তাহা মগামায়া স্তরের 
সর্মজ্ঞতাদি হইতে পৃথক, কারণ ইহা অভেদমূলক | 

আমরা একাক্ষর ব্রঙ্গের বা মুলমন্ত্রের উর্দপ্রবাহে বিদ্দু 
অবস্থার আভাস কিঞ্চিৎ বর্ণনা করিয়াছি । জ্র-মধাস্থ বিন্দু- 
গ্রন্থি ভেদ করিয়া এ প্রবাহ অর্দচন্ত্র ও নিরোধিকাঁতে গন 
করে। বিন্দু ভেদ হইলেই এক হিসাবে ভেদময় সংসার 
উল্লজ্বিত হয় বলা চলে। বিন্দু ভেদ করিতে পারিলেই সাধক 
সূলদেহ ও হুমম দেহের বন্ধন হইতে মুক্তি লাভ করে। স্ুলদেহ 
পাঞ্চভৌতিক প্রপিদ্ধ দেহ। শুক্মাদেহ ছুই প্রকার। একটি 
ুরধয্টক স্বরূপ__ইভা পঞ্চ তন্সাত্রা এবং মনঃ বুদ্ধি ও অহস্কাঁর 
এই আট অবয়ব বিশিষ্ট । (২) পূর্যযষ্টক ছাড়াও আর একটি 
সুঙ্মু দেহ আছে । তাহাকে শূন্যদেহ বলে । তাহা নিরবয়ব । 
বিন্দু অতিক্রান্ত হইলেই জীব এই তিন প্রকার দেহের অতীত 


শাপিশি ৭ পেশা াপাপীটী 





পপি িসশীশি এ এপি পিপিপীসপিপীল সপ পিসি শশী শীর্পা পপি 


(২) সাংখ্য মতে লিঙ্গশরীরে মতের অথবা আঠার অবয়ব স্বীকৃত 
হইলেও বস্তুতঃ ইহার সহিত তাহার বিশেষ কোনও পার্থক্য নাই । কারণ 
এই আটটি অবয়বের সহিত পাচটি জ্নেন্ত্রিয় ও পাচটি কর্েন্ত্িয় মিলিলেই 
অষ্টাদশ সংখ্য| পূর্ণ হইতে পারে। হুরেশ্বরাচার্যোর মতে পূর্য্য্টকের 
অবয়ব ৮টা পুরী এই :-_জ্ঞানেন্দরিয-সমষ্টি, কর্শেন্্িয়-সমহি, প্রাপ-সমষ্টি, 
অন্তঃকরণ-সমষ্টি, ভূত-সমষ্টি, বিদ্ধ! ( বাসনা ), কাম ও কর্ম। জাগ্রৎ, 
স্বগ্র ও সুযুপ্তি এই তিন অবস্থাতে প্রাণ স্থল দেহ, পূর্যযষ্টক এবং শৃঙ্য 
দ্নেহকে আশ্রয় করিয়! থাকে । 


ফাঁনতন--১৩৪৭ ] 


হইয়] যাঁয়। সুতরাং বিন্দু লঙ্ঘন করা এবং জাগ্রত স্বপ্ন ও 
থযুপ্তি এই তিনটি ভেদময় অবস্থা ছাড়াইয়া যাওয়া একই 
কথা। বিন্দু শশ্বরবাচক ও স্বয়ং ঈশ্বর-স্বূপ। ইহার 
উপরে ললাটদেশে অর্দচন্দ্র ও তাঁহার কিঞ্চিৎ উর্ে নিরোধিকার 
স্থান। শ্রেষ্ঠ যোগী ভিন্ন অন্ত সাধকের উর্ধগতি রোধ করে 
বলিয়া কারের এই কলাঁকে আঁচাধ্যগণ নিরোধিকা বলিয়! 
বর্ণনা করেন। অর্দচন্ত্র ভেদ করিয়া ইভাকেও ভেদ করিতে 
হয়। এক বিন্দু-জ্যোতিই এ দুই স্থান পথ্যন্ত ব্যাপ্ত রহিয়াছে । 
বিন্দুতে জ্ঞেয়ের প্রাধান্য থাঁকে, তবে এই জ্ঞেয় অভিব্যক্ত 
একাকার জ্যোতি মাত্র। অর্দচন্ত্রে জ্ঞেয়ের প্রাঁধান্ত 
কতকটা কমিয়া যায় এবং নিরোধিকাঁতে উহা মোঁটেই থাঁকে 
না। সেইজন্য নিরোধিকা কল! উর্দমুখ স্পষ্ট রেখারূপে 
অভিব্যক্ত হয়। বিন অর্দচন্ত্র ও নিরোধিকা__ ইহাদের 
গ্রত্যেকটিতে পাঁচটি কলা আছে। স্বতরাং বিন্ুজ্যোতিতে 
পনেরটি কলা ভাসিতেছে। এই বিন্দু আঁবরণই প্রথম 
আবরণ-_ ইহার মধ্যে শান্ত্যতীত ভুবন, অর্দচন্ত্র ভুবন ও নিরো- 
ধিকা ভুবন নামে পরিচিত তিনটি ভুবন রহিয়াছে । ইহার পর 
মন্ত্রশ্নোত ব্রহ্গরদ্ধ ও শক্তিস্থানের দিকে প্রবাহিত হয়। ইহা 
প্রথমে নাঁদ ও নাদীন্ত ভূমি আশ্রয় করে। ললাট হইতে 
মর্ধা পধ্যন্ত এই ভূমি বিস্তৃত। বিদ্দুতত্বে যে জ্ঞয়-প্রীধান্টের 
পরিচয় পাই তাহা ক্রমশঃ নিরোঁধিকাঁতে শীস্ত হইয়া যাঁয়। 
তাই এখানে সমস্ত বাচকের অভিন্নতাঁর অনুভূতি প্রধান- 
ভাবে হইয়া থাকে । বিন্দুতে বাচ্য ও বাচকের ভিন্নতা 
তিরোহিত হয়; কিন্তু বিভিন্ন বাঁচকের পরস্পর ভিন্নতা 
তিরোহিত হয় না। নাদ ও নাদান্তে তাহাও তিরোহিত 
হয়। এই ভূমিতে সমস্ত বাঁচকের অতেদ বিমর্শপ্রধান 
ভাবে থাকে । পাঁচটি ভুবন নাদ-আবরণের অন্তর্গত এবং 
নাঁদাস্তের ভুবন-সংখ্যা মাত্র একটি । নাঁদাস্তে যে তৃবনটি 
আছে তাহা স্ুযুন্না নাঁড়ীর অধিষ্ঠাতা পরত্রদ্ধ কর্তৃক অধিষ্ঠিত । 
এই নারদ ও নাদীন্ত ভূমির সাধারণ অধিষ্ঠাতা_সদাশিব। 
ইনি ত্ববাঁচক নাঁদ হইতে অভিন্ন ও শব্দাত্মক | নাদান্ত স্থান 
বঙ্গরঙ্ধ__-এখানে নাদের বিশ্রীম হয়। ইহা দেহের উর্ধা- 
কপাট-ছিদ্র। ইহা ভেদ করা অত্যন্ত কঠিন। মূর্দার 
মধ্যদেশ শত্তিস্থান। এখানে শ্বাস-প্রশ্বাস বাঁ প্রাণাপাঁনের 
মিলন বশতঃ একট! অনির্বচনীয় ম্পর্শময় তীব্র আনন্দের 
আম্বাদন পাওয়! যায়। ন্মুযুয্নার ক্রিয়া! ভিন্ন অন্ত ক্রিয়া 


আুভ্যন্রিতভ্তান্ন ও শ্রম 


২১৯ 


এখানে থাকে না। শববৃত্তি এখানে শান্ত হইয়! আনন্াম্পর্শ- 
রূপে পরিণত হয়। এখানে আসিলে স্থষ্টি ও গ্রলয়ের মধ্যে 
কোঁনও প্রকার ভেদ থাকে না নিত্যস্থষ্টি মাত্র থাকে, 
দিন ও রাত্রি একাকার হইয়া দিনমাত্রে পর্যবসিত হয়। 
স্থল প্রাণের সঞ্চরণ হাদয় হইতে এই পর্য্যস্তই হইতে পাবে। 
শক্তির আবরণে সুক্মাদি শক্তি চতুষটয় যুক্ত পরাশক্তির একটি 
ভুবন আছে। অতি ছুর্ভেদ্চ এই শক্তিকলা ভেদ করিয়! 
উর্দপ্রবেশযোগে ব্যাপিনীকলা বা মহাশূন্যে প্রবেশ করিতে 
হয়। মহাশূন্যে প্রাণের সঞ্চরণ নাই, সুষুক্নার ক্রিয়াও 
অস্তমিত, নিত্যসষ্টি সেখানে তিরোহিত এবং পূর্বববরিত 
নিরবচ্ছিন্ন মহাদিনের আভাসও সেখানে পাওয়া যায় না। 
কলনা্মক কাঁল সেখানে সাম্যরূপে অবস্থিত। এই মহাশৃন্ 
শক্তি পর্যন্ত নিক্বর্তী সমগ্র বিশ্বের ব্যাপক ও ধারক। 
ব্যাপিনীতে পাঁচ কলার পাঁচটি ভুবন আছে। “দিব্যকরণ” 
ধাঁরাঁরূপ উপায় বিশেষের আশ্রয় ন! করিলে ব্যাপিনীকে ভে 
করা ও পরাগতি লাভ করা অসম্তব। ব্যাপিনীর পরেই 
সমন! বা মহাঁসমনাঁর বিকাঁশ অনুভব করা যাঁয়। ইহার 
অধিষ্ঠাতা পঞ্চকৃত্যকণরী শিব। মহামায়া মন বিকল্প অথবা 
ইচ্ছাশক্তি নাঁমে বিখ্যাত। মহামায়! অবস্থায় যে মননাত্মক 
বোঁধটি অবস্থিত থাকে তাহাতে স্পর্শ পর্য্যন্ত কোন বিষয়ই থাকে 
না। কারণ এ সকল পূর্বের ক্ষীণ হইয়া গিয়াছে। উহা 
মন্তব্যহীন মনন । তাই উহা বস্তুত: নিব্বিকল্প বোধ-্বরূপ। 
মনঃ অথবা মহাঁমীয়ার ম্বরূপভূত এই মননকেও 
ত্যাগ করিতে হইবে। বলা বাহুল্য; এই মনের ত্যাঁগও 
মনের দ্বারাই সম্ভবপর। অবিকল্প মনের ছারা 
অবিকল্প শুদ্ধ মনকে পরিহার করিতে হয়। শুদ্ধ মন 
একা গ্রতার গ্রকর্ষ লাভ করিলে আপনিই অব্যক্ত হইয়া যাঁয়। 
ইহাকেই মনের ত্যাগ বলে। আত্মা বা জীব কর্তৃক স্বকীয় 
সঙ্কোচাত্মক জ্ঞানের প্রশমন এবং প্রকৃত মনোনিরোধ 
একই ব্যাপার। এই সঙ্কোচাত্মক স্বকীয় জ্ঞানের স্বরূপ 
জ্েয়াভীসের ইচ্ছা! ভিন্ন অপর কিছু নহে। এই ইচ্ছা 
পরিত্যক্ত হইলেই আত্মা শুদ্ধ জ্ঞাতৃমা ত্ররূপে, সত্তামাত্র স্বরূপে 
বা চিন্মাত্র স্বরূপে প্রতিষিত হয়। ইহাই বিশুদ্ধ কৈবল্য-ভরষ্টার 
স্বরূপাবস্থিতিরপ অবস্থা । এই অবস্থায় আত্মার আপন 
জ্ঞান-ক্রিয়। বাঁ চৈতন্ত উনুক্ত হয়। সকল প্রকার বন্ধন 
কাটিয়। যাওয়ার জন্য এই অবস্থাকে মুক্তি বলিয়া বর্ণনা করা 


২০৯২ 


হইয়া থাকে। ইহ! মনের অতীত মননহীন বা! ইচ্ছাহীন 
বিশুদ্ধ অবস্থা । কিন্তু বস্ততঃ ইহাও পরমপদ নহে ও গীতোক্ত 
ভগবৎ-সাধন্দ্য নহে। পূর্ণহস্তা ও চিদানন্দরসঘন স্বাতন্ত্যময় 
রূপ ইহার নাই। সুতরাং আত্মা বিশ্বোভীর্ণ (712175- 
০670671) হইয়া! শ্বচ্ছ ও চিদ্রূপ হইলেও পূর্ণ হয় না। 
তাই উহা মুক্ত হইলেও ভগবদ্ধর্ম্র বঞ্চিত থাকে । এইখানে 
ভগবানের স্বাতন্তযময়ী নিত্যসমবেতা স্বরূপশক্তির বা উন্মন! 
শক্তির উল্লাসরূপিণী পরাভক্তির আবশ্তকতা আছে। ভগবান্‌ 
গীতাতে (৮1১০) পভক্ত্যা যুক্ত: এই বাক্যাঁংশে পরা- 
ভক্তিকেই লক্ষ্য করিয়াছেন। (৩) 

উন্মনা শক্তি যুগপৎ অশেষ বিশ্বের অভেদ দর্শনরূপে 
শ্কুরিত হয়। আত্মা এ শক্তির আশ্রিত হইয়! ভগবানের 
সঙ্গে একাত্মতা বা পূর্ণত্ব লাভ করে। তখন আর চলন 
থাকে না, সঙ্কোচ একেবারে কাটিয়া যায় আত্মা 
ব্যাপকতা লাভ করিয়া সমগ্র বিশ্বর্ূপে এবং তদুতীর্ণরূপে 
একসঙ্গেই প্রকাশ পাঁয়। প্রথমতঃ আত্ম! বিশ্বকে অতিক্রম 
করিয়া স্বীয় নিবিকল্প পদে স্থিতি লাভ করে। পরে 
ভগবানের পরম! শক্তির অনু গ্রহে নিজের পূর্ণত্ব উপলব্ধি করে 
-_-ভগবদভিন্ন বলিয়া নিজেকে অনুভব করে । তখন বুঝিতে 
পারে এ পূর্ণ সামরম্তময় স্বরূপে একদিকে যেমন অনন্ত 


(৩ কারণ অন্যত্র ভগবান্‌ পরাভক্তিকে ব্রহ্মতৃত প্রসন্নাত্মক রাগন্েষ 


প্রনৃতির অতীত অবস্থার পরবন্তী এবং ভগবানের তস্বজ্ঞান ও তাদাক্ঝয 
( প্রবেশ ) লাভের পূর্ববর্তী বলিয়া নির্দেশ করিয়াছেন। 


ভ্ডাব্র ভব 


[ ২৮শ বর্ধ--২য় খণ্ডঁ--৩য় সংখ্যা 


শক্তির সাময়শ্য, অপর দিকে তেমনি শক্তি ও শক্তিমানেরও 
সামরস্য | উহাঁতে বিশ্ব ও বিশ্বাতীত, এক অখণ্ড বোধ বা 
প্রকাশরূপেই স্কুরিত হয়__বন্ধন-মোক্ষের ভে” সবিকল্পক ও 
নিবিকল্লের ভেদ, মনঃ ও আত্মার ভেদ, দৃশ্য ও ভষ্টার ভেদ 
চিরতরে বিগলিত হইয়া যায় । উহাই পুরুষোতম স্বরূপ বা 
ভগবৎ-ন্বরূপ অথবা অব্যক্ত । এ অবস্থাতীত অবস্থা উপলব্ধি 
করাই পরাগতি । 
গীতাতে আছে (৮।২২)__ 
পুরুষঃ স পর: পার্থ ভক্ত্যা লভ্যন্নন্তয়া 
যস্যান্তঃস্থানি ভৃতানি যেন সর্বমিদং ততম্‌ ॥ 
পরম পুরুষই যে সমগ্র বিশ্বের ব্যাপক, তাহার অন্তরেই 
যে সর্বভূত (বিশ্ব) স্থিত রহিয়াছে, তাহা এখানে স্পষ্ট 
উল্লিখিত হইয়াছে। অনন্তা ভক্তি ভিন্ন তাহার এই 
স্বরূপ প্রাপ্ত হইবার দ্বিতীয় উপায় নাই। (৪) এই বিশ্বরূপই 
যে তাহার “পরমরূপ” তাহা ভগবান্‌ 'অজ্জুনকে স্পষ্ট বুঝাইয়া- 
ছেন (গীতা ১১.৪৭ )। (৫) ইহা “তেজোময়”-_শুদ্ধ চিন্ময- 
রূপ। “বেত্তা” ও “বেছ্য”__জ্ঞাতা ও জ্ঞেয_ ইহার অন্তর্গত 
(গীতা ১১৩৮)--ইহাই গীতোক্ত “পরম ধাম” ( গীতা 
১১৩৮) বা বিষ্ণুর পরম পদ । 





শি ০ পাশপাশি শিশি চিন 


(৪) বিশ্বরূপদর্শন যে “অনন্তভক্তি” ভিন্ন অন্ত উপায়ে হয় না তাহ! 
অগ্ঠত্রও বলা হইয়াছে (গীত! ১১, ৫৪ )-- 
ভক্ত্যা ত্বনন্যয়! শক্য অহমেবংবিধোইজ্ভুন। 
জ্ঞাতুং রষ্টং চ তন্বেন প্রবেষ্টং চ পরন্তপ।॥ 


(৫) রূপং পরং দণিতমাজযোগাৎ”। 


৪খ-ব্যথা কুসুম হ'য়ে_ 
প্রীলতিক। ঘোষ 

দুঃখ-ব্যথা কুসুম হয়ে বেদনা-কেেশ-__ছুঃখ-গ্লীনি 
ফুটুক মম অন্তরে-_ পথ চলার ছন্দ রে__ 
সকলি যে গো তোমার বরাভয় ! কাহার কাছে না মানি পরাজয় ! 
আঘাতে তৰ ধন্ত হব নিবিড়ভাবে তোমারে প্রিয় 
জপিব মধু মন্ত্রে পৃজিব হিয়া কন্দরে-_. 
বিপদে যেন না করি কতু ভয়। সকঙ্প দুঃখে করিব আমি জয়। 


৯৫৮1৩, 151516 ৮৮:৯৮ 81:29 155) ০ 78০১ 





ই ০ নু রি 

০4 ৬:৫০ 
শা সতত সে 

ও .. 


এ 
ম্ 








০ 


শা 
প্ঠ 


একট 
পপ 
রি রা 
চা 11. 


॥ 


৯৮০০ ৪৫৮ 
18111 
৪ ওর ৪ 
কঃ ১ 
০৯ 
২০ টপ সপ ০৬ 


০০ রঙ স্ 
্জ সি ্ঃ নি 
ত নর ্ 
সণ এ 
তি রি 
নে 
১1758 ৰং 
৮৫ সম 
হন নব রর 
৮ কচ 
০ এ শশা 
পু খা নু 
এ লাস 
আহ না লে শরণ ॥ 
টি ন 
উদ ২ 
ক টু 
৯৮০. ্ 
ছু ৮৩৬৯, 
৪৫০৭ 
এই 
রঙ শি 
” শব 
রঙ 
্ ] 
4 শত 
৯৯১ 
০৭ 
৯২ রঃ 
৪৯ কত রি 
পাখার হি স্ব শ্হ - 4 
কা টি মি সি ৫ 
-্ি হ ১,25৩ পো রর 
শ টু রর 
5 ৰৈ ষ্ শ 
চে রেনৃত্রিবে চি 
বিএ র্‌ 
১ হ ১টি নিশিশী ৪ 4 
নি শহর ন্‌ 
র্‌ পি ক প্র 
হু রি পু 5 রি শি 
[7০ সু ৬ হত ২০ টে 
চি স্টিক রী পর্ 
্ী ১৮ বি ০ % 
ক ০৭ ৯১ রী ক 
নু শি কস শো 
কে ক সি ৮ রঙ 
রি ২ টা এটি তত লে 
হল রঃ টি ৯, শু রি 
বুক রর পরি হ শর 
সা পা রি রা মি 


এ 
র্‌ 
নং 
রা 
চকে 
ক 
0 
তে 
$ 1 
7 
নি শা 
তাঁচি 
।»1% 





) 


/ 


লঙ্কাচরের মাঠ 
ভ্রীরবীন্দ্রনাথ ঘোষ 


হাঁড়েমাসে মিলিয়া দোহার! লম্বা! দেহ। প্রশস্ত বুকের ছাঁতি 
ও লোহার মতই শক্ত কঠিন হাতের কব্জি। মাথাতর্তি 
একরাশ কোঁকড়ানো! চুলের গোছা! কাধের উপর লুটাইয়া 
পড়িয়াছে। একখানা লাঠির সাহাঁষ্যে ছু-এক শ লোকের 
মহড়া লইবার শক্তি সে রাখে । লাঠিখেলায় বিশখানা 
গ্রামের ওন্তাঁদ, তাই সে অঞ্চলের সকলেই তাঁহাকে সর্দার 
বলিয়া ডাকিত। 

সর্দার হইলেও কাঁলুর অন্তঃকরণটা ছিল শিশুর মত 
স্বচ্ছ ও কোমল। বাবরি চুল উড়াইয়া সে যখন সর্দারী 
মেজাজে হাঁক ছাঁড়িতে ছাড়িতে আগাইয়া চলে, তখন কে 
বলিবে যে এ পাথরের মত শক্ত দেহটির ভিতরে ভিতরে 
সঙ্গোপনে অন্তঃসলিলা ফণ্্তর মত ন্নেহের উৎস লুকাইয়া 
'আছে। প্রত্যক্ষভাবে তখন মানুষ টের পাষ যখন শ্রীস্ত 
ক্লান্ত কালু স্দীর বাহির হইতে ফিরিয়া আসিয়া বাড়ীর 
উঠানে মাদুর বিছাইয়! বসিষা! পড়ে_আর পঙ্গপালের মত 
ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা কোথা হইতে ছুটিয়া আসিয়া 
কেহ তাহার ঘাড়ে চড়িয়া বসে, কেহ বা পিঠে, কেহ বা 
বাবরি চুলের মুঠি ধরিয়া তাহাকে আদর করিতে স্থুরু 
করিয়া দেয়। কালুর ক্পেহশীলতা তখন উপচাইয়া পড়ে 
ওই কচি কচি নিঘলঙ্ক অবোধ শিশুগুলির উপর । লোক 
তখন চিনিতে পারে পাড়ার ছেলে মেয়েদের এই খেলার 
সাথীটির ভিতরের মাঁচষটিকে। 

সংসারটি মতি ক্ষুদ্র । একমাত্র বিধবা ভগ্নী ও ছোট্ট 
ছেলেটি । আর আপন বলিতে সংসারে তাহার কোথাও 
কেহ নাই। ছুই বৎসর পূর্বেও সংসারের এমন শ্রী তাহার 
ছিল না। দেহ ও মন ঢালিয়! দিয়! যাহাঁকে একান্ত 
তালবাসিয়াছিল সেই স্ত্রী অকম্মাৎ মারা গিয়া কাঁলুকে 
দিশেহার। করিয়! দিয়া গিয়'ছে। কিন্তু তাহাতেও ভগবান 
স্খী হইলেন নাঁ। মাতৃহারা শিশুটিকে যাহার হেপাজতে 
রাখিয়া কালু নিশ্চিন্তে চলাফের! করিত সেবার মহামারীর 
এক দম্কা হাওয়ায় সেই একমাত্র ভম্মীটির জীবনপ্রদীপও 
নিভিয়া গেল। সেইদিন হইতে ক্ষুদ্র শিশুপুত্র হারাধনকে 


ছাড়িয়া সর্দার এক পা-ও নড়িতে পারে না। অষ্টগ্রহর 
তাহাকে বুকে পিঠে করিয়া মানুষ করিতে হয় । 

ছোট্ট দুইটি কচি বাহু বাড়াইয়৷ দিয়া কালাটাদের 
গলাটি জড়াইয়া হার ডাকে-_বাঁব-_বাঁ_বাঁ! কম্পিত 
আগ্রহে শিশুর শুভ্র গণ্ড অশ্রাস্ত চুম্বনে রাঙাইয়া দিয়! 
সর্দার তাহার উত্তর দেয়__বাব-__-বা॥ ছোট্টি ছেলেটিকে 
সম্মুখে বসাইয়া একটা রবারের বল গড়াইয়া দিয়া ছেলেকে 
লইয়া সর্দার খেলা করে। বলের মুছু আঘাঁতে হার খিল্‌ 
খিল্‌ করিয়া হাসিয়া ওঠে । নাচিয়! নাঁচিয়া ছোট্ট ছুইটি 
কচি হাঁতে শব্ষহীন হাততালি দেয় । 

এমনি করিয়াই এ মা-মরা ছেলেটি পিতার ন্নেহ- 
কোমল পক্ষপুটে বাড়িয়া উঠিতে লাগিল । কালু তুলিয়। 
গেল তাহার জীবনের নিঃসঙ্গতা ও বিগত দিনের 
স্পীকৃত ব্যথা। 

ছোট্ট ছেলেকে ঘরে রাখিয়া আগের মত দেশবিদেশে 
গিয়া আর রোজগারের স্থবিধা নাই, তাই সর্দার নিকটেই 
নড়াইলের জমিদার বাড়ীতে চাকুরী লইল। অতি অল্পদিনের 
মধ্যে তাহাঁর কাধ্যের তৎপরতা ও বিশ্বম্ততা বড়বাবুর দৃষ্টি 
এমন আকর্ষণ করিল যে, নিয়তম সকল কম্মচারীর মধ্যে 
কালুই হইয়া উঠিল সবচেয়ে প্রিয় বরকন্দাজ। ব্যাক্কে 
যাইতে কালুঃ সদর খাজনা দিয়া আসিতে কালু চেক্‌ 
ভাঙাইতে কালু । কালু সর্দার না হইলে যেন বড়বাবুর কোন 
কাঁজই হয় না। 

সেবার লাটের খাজনা সদরে পৌছাইয়। দিতে হইবে। 

বড়বাবু ডাকিলেন, কালু! 

তৈলপন্ক বাঁশের লাঠিটা হাতে তুলিয়। লইয়া 
হাঁরুর হাত ধরিয়। গিয়া কালু সেলাম ঠুকিয়া বলিল-_ 
হুজুর! 

বড়বাঁবু বলিলেন, আগামী কাল লাটের খাজন! দেবার 
শেষ দিন। তোম।র আজকেই যশোর যেতে হবে। 
শীগগির তৈরি হয়ে নাও গে। | 

ছোট্ট ছেলে হারাধনকে কাঁধের উপর তুলিয়া সর্দার 


৩১৩ 


৪8৪9 


 স্থ 


২০ 


ভ্ালসভনয 


[ ২৮শ বর্-_২য় খণ-_-ওয় সংখ্যা 





বলিল, কালুর আর তৈরি হওয়৷ কি কর্তা? সে-_ অই 
প্রহর তৈরি হয়েই থাঁকে! তবে অন্ুবিধা যা-একটু এই 
ছেলেটাকে নিয়ে । 

সর্দারের কথায় জমিদার একটু হাঁসিয়া কহিলেন, কিন্ত 
কালুঃ তোমাকে ছাড়া! এমন একটা দািত্বপূর্ণ কাঁজে নির্ভর 
করা চলে তেমন আর একজনও কর্মচারীদের মধ্যে আছে 
বলে আমার জানা নেই। তা ছাঁড়া, এত সময়ও এখন আর 
নেই যে ভেবে চিন্তে কাউকে পাঠাব। 

বলিতে বলিতে আল্মারি খুলিয়া জমিদার টাকার 
তোড়া ও কাগজ-পত্র বাহির করিয়া টেবিলের উপর 
রাখিলেন। সদরে গিয়! কাহার নিকটে কি কাজ করিতে 
হইবে বুঝাইয়! দিয়! দেরাজ টানিয়া বড়বাবু আরও পাঁচটা 
টাকা তাহার হাতে তুলিয়৷ দিয়া বলিলেন_যাঁও, তোমার 
হাঁক্কে পোষাক আর খাবার কিনে দিও । 

হারুকে কোলে করিয়া! লাঠি হস্তে কালু জমিদারের 
আদেশ পালন করিতে সদলবলে বাহির হইয়া পড়িল। 
ছেলেকে লইয়া সে গ্রামের একটি দূরসম্পর্কের আত্মীয়ার 
কাছে রাখিবার জন্য গেল, কিন্তু বৃথা চেষ্টা। যতবার 
সে ছেলেটিকে আত্মীয়ার কোলে তুলিয়া দেয় ততবারই 
হারু তাহার দুটি কোমল বানু দিয়া পিতার গল! জড়াইয়া 
কাদিয়া ওঠে। ও যে ভূমিষ্ঠ হইবা মাত্র এগার দিন পরেই 
মায়ের সহিত স্নেহের সকল সম্পর্ক চুকাইয়া বাপের কোলেই 
বাঁড়িয়া উঠিয়াছে। ত আর কাহারও কোলে যাইতে 
চাহে না। 

সহসা সাঁথীরা তাহার বলিয়া উঠিল, বেল! বে গেল 
সর্দার, এতটা পথ কখন যাবে? 

আকাশের দিকে একবার চাহিয়৷ কালু ত্রুত কঠিন 
হন্যে হীরকে নিজের বঙ্গ হইতে নামাইয়! আত্মীয়ার কোলে 
তুলিয়া দিল। যেমন দেওয়া আর সঙ্গে সঙ্গে হাত-পা 
ছ'ড়িয়া সে কাঁদিতে লাগিল। পুত্রের কার! দেখিয়া 
কালু বুঝিল যে তাহাকে রাখিয়া যাওয়া একেবারেই 
অসম্ভব। 

বেলা পড়িয়া আসিতেছে । আর বিলম্ব করিলে হয়ত 
মাঠের সুদীর্ঘ. পথ অতিক্রম করিয়! ্টীমার ধরিতে পারা 
যাইবে না। ,অথচ খাজনা দিবার কালই শেষ দিন। 
কালু নিতাস্তই নিরূপায় হইয়! এই দূরের পথেও তাহার 


নিঃসঙ্গ জীবনের আশা ভরসা! একমাত্র পুত্রটিকে সঙ্গে 
লইতে বাধ্য হইল। 


বর্ধাকাল। গ্রামের সংকীর্ণ কর্দমাক্ত পথ পার 
হইলেই বিস্তীর্ণ ফীকা মাঠ। মাঠের উপর দিয়! সুদীর্ঘ একটি 
পথ 'অতিক্রম করিয়া যাইতে হইবে ট্টামারঘাঁটে। হাঁরুকে 
সন্ধে তুলিয়া লইয়! কালু চলিয়াছে লাটের থাঁজন৷ 
পৌছাইয়া দিতে, সঙ্গে দুই জন লাঠিয়াল ও আরও 
একজন বন্দুকধারী সিপাই। 

দেখিতে দেখিতে তাহারা গ্রাম ছাড়িয়া মাঠে আসিয়া 
পৌছিল। অরূরেই প্লাবিত ভৈরব নদের উজ্জলিত বন্থার 
ঘোলা জলে চতুর্দিক থে থৈ করিতেছে। মুদু হাওয়ায় 
আন্দোলিত ধান্যের কচি কচি সবুজপাতার উপর অন্তমান 
সুর্যের রশ্মি ঢেউ থেলিয়। ষাইতেছে। 

প্লাবিত মাঠের এক-তৃতীয়াংশ পথ তাহার! প্রায় 
অতিক্রম করিয়! আসিয়াছে এমন সময় নদীর অনতিদূরের 
এই স্ুবিস্কৃত জনমানবহীন প্রান্তরটিকে সন্ধ্যা অন্ধকারে 
ঢাঁকিয়৷ ফেলিয়া! একট! ভীতির সঞ্চার করিয়া তুলিল। 
মাঠটা নিরাপদ নহে। আশেপাশে প্রায়ই খুন জখম 
লাগিয়াই আছে। কিন্ত এই স্থানটা ফাঁকা, কোথাও বন 
জঙ্গল নাই বে দুর্বত্েরা অন্তরালে লুকা ইয়া থাকিবে। 

ক্রমশ অন্ধকার ঘনাইয়া আমিল। কালুরও ছোট্ট 
দলটি তখন নিঃশবে দ্রুত হাঁটিয়া চলিয়াছে। কাহারও মুখে 
কোন কথা নাই। স্টেশনে পৌছিতে পারিলেই তাহারা 
এখন বাঁচে ! 

হঠাৎ অনন্তগ্রাসী অন্ধকারের গর্ভ হইতে মোটরের 


হেড-লাইটের মতন একটা তীব্র আলোর জ্যোতিঃ ঠিক্রাইয় 


পড়িয়া এক একবার পথের মলিনত৷ নাশ করিয়া দেয়, 
পরক্ষণেই আবার তাহাকে গাঢ়তর অন্ধকারে ভুবাইয়া 
ফেলে! মাঝে মাঝে দূরে ঝুপ-ঝাপ বৈঠার শব ফাকা 
মাঠের মৃদু জলো-হাঁওয়াঁয় ভাসিয় আসে। তারপরে 
ক্রমশই অতি নিকটে কল্কল হল্ছল্‌ নৌকার দুধারে 
ঢেউ ভাঙার শব্খ। সহসা যোজনব্যাপী নিম্তন্ধ রাত্রির 
অন্ধকার ভে? করিয়া লঙ্কাচর মাঠের বুকখানা প্রকম্পিত 
হইয়া উঠিল এক উৎকট বীভৎস চীৎকারে। আর সঙ্গে 
স্‌. নৌকা হইতে কতকগুলি লোক চক্ষের পলকে লাঁফাইয়া 


ফান্তুন---১৩৪৭ ] 





পাঁড়ে আসিয়। পড়িল। দস্থ্যুরা কালুর সম্মুখে বন্দুকধারী 
রক্ষীটির হাত হইতে বন্দুকটা ছিনাইয়া লইতেই-_কালু 
আতন্কে সন্ত্রস্ত হইয়া উঠিল। 

কিন্তু কালুসর্দার ঘাবড়াইবার মত মানুষ নহে। সে 
তখন দ্রুতহন্তে মাথার পাগড়ী খুলিয়৷ ভয়ে মৃচ্ছিতপ্রায় 
ছেলেটিকে পিঠের সঙ্গে বীধিয়া ফেলিল। এদিকে 
জমিদারের অপর লাঠিয়াল দুইজন-_যদিও নামেই মাত্র 
লাঠিয়াল, তবু তাহারা আত্মরক্ষার্থে প্রাণপণে একবার শেষ 
চেষ্টা করিতে কম্থুর করিল না । কিন্তু দুরর্য দস্্যুর লাঠির 
কঠিন আঘাতে দুইজনই আহত হইয়া তৎক্ষণাৎ ভূমিতে 
গড়াইয়া পড়িল। অস্তবহীন হিন্দুস্থানী সিপাইটি প্রাণের ভয়ে 
দৌড়িয়! পলাইয়া গেল । 

এইবার দস্থ্যদল তাহাদের সম্মিলিত শক্তি দিয়! কালু 
সর্দারকে আক্রমণ করিল। কিন্ত পাঁচ-দশজন লোকের 
মুষ্টিমেয় শক্তিকে ভয় করিবার মত মানুষ সে নয়! মুহূর্তের 
মধ্যে সে তাহার ওত্তাদের নাম স্মরণ করিয়া বিদ্যুতের মত 
জিয়া উঠিয়া লাঁফাইয়া পড়িল দুর্বৃত্তদের উপর । সর্দারের 
লাঠির সম্মুখে লড়িবার শক্তি ডাকাতদের মধ্যে একজনেরও 
ছিল না। দৃঢ় মৃষ্টিবদ্ধ লাঠির এক একটি আঘাতে-_কেহ 
বস্তার অথৈ জলে আহত হইয়া ছিট্কাইয়া পড়িল, কেহ-বা 
রাস্তার উপরেই ফিন্কি-দেওয়! রক্তত্মোতের মাঝে মৃত্যু 
যন্ত্রণার করুণ আর্তনাদদে নৈশ আকাশ মুখরিত করিয়া 
তুলিল ! বাতাস ভারী হইয়া উঠিল মুমূর্যুর তপ্ত দীর্ঘশ্বাস, 
অন্ধকাঁর হইয়া! উঠিল আরও ভয়ঙ্কর । 

লাঠির স্থকৌশল প্যাচে ডাকাতের কবল হইতে কালু 
ক্ষত দেহে জমিদারের টাকার থলিটা বাচাইল বটে; কিন্ত 
অচিস্তিত দুর্দৈবের হাত হইতে তাহার একমাত্র নয়নের মণি 
হারাধনকে বীঁচাইতে পাঁরিল না। কোন এক অসতর্ক 
মুূূর্তে শত্রুপক্ষের নিক্ষিপ্ত: একটি স্তৃতীক্ষ সড়কির ফলা 
আসিয়া কটি দেহটি বিদ্ধ করিয়া! ফেলিয়াছে--একটা ভয়াবহ 
দাঙ্গার মধ্যে পড়িয়া তাহার সেদিকে হয়ত খেয়ালই ছিল না। 
একবার মাত্র “বাবা+ বলিয়াই হারাধন পিতার পৃষ্ঠদেশে 
নেতাইয়া পড়িল। তাজ! গরম রক্তের প্রবল ধারায় কালুর 
কাপড়খান! রাঁঙাইয়। উঠিল । 

কালুসর্দীর অপলক চোখে মৃত পুত্রের দিকে খানিকক্ষণ 
চাহিয়া! রহিল। চোখ তাহার শু, মুখে একটা গম্ভীর ভাব 


কশহ্কাচল্ত্েল্র হকি 


২০2১৫ 


স্ সহ 


-__অতলম্পর্শ সীমাহীন সমুদ্রে ঝড়ের পূর্ধবকার স্তন্ধ ভাঁবেরই 
মতন বুঝি তাহা ভয়ঙ্কর ! 

কিছু সময় এইভাবে কাটিয়া যাওয়ার পর কালু তাহার 
সঙ্গীদের নাঁম ধরিয়া ডাঁকিল। কিন্তু সেই ডাক মাঠের বুকে 
প্রতিধ্বনি তুলিয়া অতল অন্ধকারে মিলাইয়া গেল। সাড়া 
আর আসিল না। তার পর পুত্রের শিথিল শীতল মৃত-দেহটি 
বুকের উপর তুলিয়া লইয়া একাঁকীই আগাইয়া চলিল। 





একে অন্ধকার আকাঁশ। তাহার উপর হঠাঁৎ অধিকতর 
পুরু আর একটা বিশ্বগ্রাসী অন্ধকারের কালো আবরণ 
পড়িয়া নক্ষত্রগুলিকে ঢাঁকিয়! ফেলিয়াছে। আঁর তথায় 
ভাদ্রের সীম্বাহারা কুলপ্লাবী অগাঁধ জলরাশি ভৈরবের বক্ষ 
মথিত করিয়া ছুটিয় চলিয়াছে। আবর্তের পর আবর্তের 
প্রতিঘাতে তাহার উপকূলবর্তী এই পথটিও বিধ্বস্ত । হৃদয়ের 
তীব্র বেদনাকে উপেক্ষা করিয়! কালু যখন পুত্রের দাহকার্ধ্য 
সমাধা করিল, সুদূর হইতে একটা বাঁজপক্ষীর উচ্চ 
জানাইয়! দিল-_রাত্রি তখন দ্বিপ্রহর। 


মার স্টেশন। যাত্রীপূর্ণ ট্টামার ততক্ষণ স্রোতের 
অন্কুলে বহুদূর চলিয়া গিয়াছে । পরের ট্টীমারটা কাঁল সেই 
সকাল ছণ্টায়! অল্প অল্প বৃষ্টি পড়িতে স্থুরু করিয়া দিয়াছে 
অথচ নিকটে কোথায়ও থাকিবার মতন তেমন সুবিধাও 
তাহার নাই যে রাত্রিটা সেখানে কাটাইয়! দেয়। সর্দার 
একটু চঞ্চল হইয়া উঠিল ! 

সহসা! খাঁনিকট! দূরে পথের সংলগ্ন একটা বাড়ীতে 
আলোর ক্ষীণরশ্মি দেখিয়া কালু সেদিকেই আগাইয়! চলিল। 
ছোট্ট একখানা খড়ের ঘর, তাহার মধ্যে মিট মিট করিয়া 
একটা তেলের বাতি জলিতেছে, মনে হয় যেন লোকও 
সেখানে আছে। আস্তে আন্তে সে ডাকিল--ঘরে কেউ 
আছ? 

প্রথম দু-এক ডাকে তে! লাড়াই মিলিল না । পরে একটু 
রুক্ষ কণ্ঠে উত্তর আসিল, এত রাত্রে এই ভর! গাঙে আর 
পাড়ি ধরি না । 

কালু বুঝিল-বাঁড়ীর মালিক এ ঘাঁটেরই একজন 
পাটনী। | 

--পাঁরে যেতে চাই না, একটু আশ্রয় চাই। নড়াইল 


২৩০৬ 





ভ্ডাব্সভব্রহ্ব 


| ২৮শ বর্ধ-_২য় থও্ড--ওম-সংখ্যা 


ক 





জমিদারবাবুদের আমি বরকন্দাজ, সকালের গ্টীমীরে যশোর গাড়ী ভাড়া করিতে চাঁহিলে কোন গাড়োয়ানই সম্মত 


যাব। 

বাবুদের নামে এত রাত্রিতেও সে ওখাঁনে একটু আশ্রয় 
পাইল। 

পরের দিন প্রাতেই জমিদারের কানে এই দুর্ঘটনা উঠিল 
পলায়িত হিন্দুস্থানী দরওয়ানটির মুখে। টাঁকার ও কালুর 
দুশ্চিন্তায় বাবুরা উদ্ব্স্ত হইয়া পড়িলেন। সঙ্গে সঙ্গে 
থানায় রিপোর্ট গেল, জরুরী টেলিগ্রাম পৌছিল সদরে 
কালেক্টর সাহেবের কাঁছে। ঘণ্টাঁকয়েক পরে তারের উত্তর 
আসিল, কালুসর্দারের মারফৎ জমিদারের মালগুজারি__ 
সরকারী মালখানায় যথাসময়ে নিয়মিতভাবে জম! হইয়া 
গিয়াছে । সংবাদটি পাইয়া জমিদার দুশ্চিন্তার হাত হইতে 
হাঁফ ছাড়িয়া বাচিলেন। 


দিনের পর রাত আসে আবার দিন হয়, কিন্ত কালু আর 
ফিরিয়া আসে না। সংবাদপত্র ও লোকের সাহায্যে জমিদারের 
অক্লান্ত চেষ্টা চলিল তাহাকে ফিরাইয়! আনিতে। সমস্ত 
চেষ্টাই ব্যর্থ হইল ! 

তাহার পর কত শুরু ও কৃষ্ণপক্ষের মধ্য দিয়া মাঁস, 
মাসের পর বৎসরও ঢলিয়া৷ পড়িয়াছে কালের কোলে। 
খু'জিয়া! খুঁজিয়া ক্লান্ত জমিদার নিরাশ হইয়া পড়িলেন। 
কালুর আর কোন সংবাদই পাওয়। গেল না! 


তিন বছর পরের কথা। ভৈরব নদের সেই ছোট্ট 
জাহাজ ঘাটটির পাঁড়ে এক শীতের রাত্রে অবতরণ করিল 
অজয় ও মেনকা। কোলে তাহাদের দুই বৎসরের শিশুপুত্র। 

অজয় এই অঞ্চলেরই লোক । পাঁচ বছর পরে সে 
কর্মস্থল হইতে দেশে ফিরিতেছে-_বাড়ী তাহার লঙ্কাচর 
মাঠের ওপারে । 

ঘাটের উপরেই একটা বুড়া অশ্বথ গাছ। নিয়ে তাহার 
দুই-তিনটি প্রজ্জলিত আগুনের কুণ্ড। কতকগুলি লোক 
তাঁহার চতুর্দিকে বসিয়া হাসি গল্পে সময় কাটাইতেছে। 
অদূরেই যে সব ছোটি ছোট অস্থায়ী কুঁড়ে ঘর দেখা যায়, 
বোঁধ করি এগুলি গাড়োয়ানদেরই বস্তি । 

গ্রামে পৌছিতে অন্ত কোনরূপ যাঁন-বাহনাদির ব্যবস্থা 
দেখানে নাই। তাই গরুর গাড়ীর আড্ডায় গিয়া অজয় 


হইল না। সকলেই চম্কাইয়া উঠিয়া ভীতকণ্ঠে বলিল-- 
না কতা, গায়ে আমাদের অতে। তাকত নেই। যে 
ডাকাতের মাঠ সে, দিনের বেলায়ই যেতে গা কেঁপে ওঠে, 
আর এখন ত রাত ! 

মেনকা বলিল--কি করবে এখন, আমার যে বড্ড 
ভয় করছে। 

অজয় একটু হাঁসিয়া বলিল, ডাঁকাতি__হেঃ হেঃ! যত 
সব বাজে কথা। রাত্রিতেই যাঁব। নইলে এখানে থাকবে 
কোথায়? তা ছাড়া, এই কন্কনে শাত, খোলা মাঠে 
নদীর ঠাণ্ডা হাওয়ায় ছেলেটা যে বীচবে না! দেখছ না) 
এরই মধ্যে ও তোমার কোলে কাপতে সুরু করেছে । 

অতীত পাঁচ বছর এ অঞ্চলের খবর অজয় রাখিত না। 
নিকটেই যে সামান্ত দু-চার ঘর পরিবার লইয়া একটা 
বিরল বসতি আছে তাহাতে বাঁস করে ছুলে ও বাগ্দীশ্রেণীর 
ছোট জাত। একে তাহাদের শিক্ষার অভাঁব--তাচার উপর 
দারিদ্রের কশাঘাঁতই ইহাঁদিগকে হীন চৌর্যযবৃত্তি, সুযোগ 
পাইলে ধনরত্বের বিনিমযে মাশ্ষের জীবনকেও বিপদাঁপক্ন 
করিয়া তুলিতে শিখাইয়াছে। পথিকের ধনসানগ্রী লুণ্ঠন, 
কখনও বা বাঁধাদানে নিহত করা_এবপ সংবাদ গল্লেরই মত 
সে যখন চাকুরীর পূর্বে গ্রামের বাড়ীতে থাকিত তখন 
লোকের মুখে শুনিয়াছে। তাই মনে হয় না যে সেখানে 
কোথাও থাক! আজ তাহাদের পক্ষে নিরাপদ । 

অনেক বলিয়া কহিয়৷ বকৃশিসের লোভ দ্েখাইয়! শেষ 
পর্য্যন্ত অজয় একজন কমবয়সী বলিষ্ঠ গাড়োয়ানকে সম্মত 
করাইল। বিদেশী এই গাঁড়োয়ানের গায়ে শক্তি আছে এবং 
সাহসও আছে প্রচুর, সর্ধবোপরি বকৃশিসের লোভে কাহারও 
বাধা না মানিয়াই সে রাঁজি হইয়া গেল। 

গরুর গলার ঘণ্টা বাঁজিয় উঠিল, তখন রাত্রি প্রায় 
নয়টা। কিছুদূর যাইতেই মেনকা বলিল-_-এঁ ঘণ্টাগুলো 
খুলে ফেল্তে হ'বে। কে জানে ওর শব্ধ শুনে হয়ত 
ডাকাতের! দূর থেকেও আমাদের সন্ধনি পেতে পারে। 

ঠাদের আলোয় অলস মন্থরগতিতে গরুর গাড়ী লোকালয় 
ছাড়িয়া যে বিস্তৃত মাঠটায় আসিয়া পড়িল--সেইটাই 
লঙ্কাচরের মাঠ! . 


দিক-গ্রসারিত ফাকা মাঠ। পথের বর্তমান বিপদের 


ফান্তুন--১৩৪৭ ] 


সঙ্গে বিশেষ পরিচয় না! থাঁকিলেও অন্যান্য লোকের মুখে 
ডাকাতির কথা শুনিয়া পথিক ও চালক একটু ভয়ে ভয়েই 
চলিয়াছে। সুউচ্চ পথের নিয়ে ছুই ধারে কলাই ও যবের 
ক্ষেত। হিমের ভারে উন্নত গাছগুলি নববধূর মত ঘোম্টা 
টানিয়া লঙ্জাঁবনত মুখে দীড়াইয়া আছে । আনত শীর্ষ- 
গুলির ডগায় শিশিরের ফোটা ফোঁটা জল চন্ত্রালোকে মনে 
হয় যেন মুক্তার নোলকের মতন ছুলিতেছে। কর্দাচিৎ 
শম্পূর্ণ সমতল প্রীন্তরের মাটি খু'ড়িয়া খু'ড়িয়া আহার 
সন্ধানে মত্ত একাধিক বন্ত বরাহের বিকট গোানি, 
কখনও বা শৃন্ঠে নিশাচর পেচকের কর্কশ কণ্ঠ ও ডানার 
ঝট্পট্‌ শব্ধ শুনিয়াই অনাগত বিপদ্দের আশঙ্কায় তাহাদের 
বুকটা ছ্যাৎ করিয়া ওঠে । 

আরও কিছুদূর এইভাবে চলিবাঁর পর শুরা পঞ্চমীর 
ঠাদের আলো ম্লান করিয়া দিয়া অন্ধকার মাঠের বুকে 
নামিয়। আসিল। 

অজয় গাড়ীর ভিতর বসিয়া বসিয়া তরল অন্ধকারে 
চতুর্দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখিয়া নিজের ও মেনকার বুকের 
তারটাকে কিঞ্চিৎ লঘু করিবার জন্যই তাহার সহিত 
নানারূপ হাঁসি তামাসা করিতে প্রবৃত্ত হইল। 

অজয়ের হাটুর উপর মাথা রাখিয়া মেনকাঁও সেইদিকে 
তাকাইয়! বলিল--ওগো শুন্ছো) যদি সত্যি সত্যি কিছু 
ঘটে যাঁয়, তা হ'লে কি হবে? 

কি ঘটবে? 

এঁ ডাঁকাত-_ 

বাঁধা দিয়! অজয় বলিল, পাগল !**" 

অদূরে পথের ধারে একটা মর! খেজুরগাঁছের ঝোপ 
দেখাইয়া দিয়া মেনকা৷ বলিল, দেখছ, না কে এ দীঁড়িয়ে 
রয়েছে? বলিয়াই মেনকা আতকাইয়া উঠিয়া ছুইবাহু 
বাড়াইয়৷ অঞ্জয়ের গল! এমন ভাবে জড়াইয়া৷ ধরিল যে 
অজয় আর হাপিয়াই বাঁচে না। 

হাঁসি শুনিয়! মেনকা বুঝিতে পারিয়া বলিল__কি মানুষ 
তুমি গো, এতেও হাসি? অন্ধকারে ওটা দেখলে মানুষ 
বলে কার না মনে হয়? 

অজয় বলিল, আত্মরক্ষার জন্য তুমি এত ব্যস্ত যে 
ছেলেটাকে পর্যস্ত ভুলে গিয়েছিলে। গলাটা ছাড় 
ত একবার। 


নন চ্ুল্লেক্র মা 


২৯৫ 


_না ছাড়ব না। আমার বুঝি ভয় করে না? 
অজয় হাসিয়! বলিল, আমার গলা ধরে থাকলেই কি 
ভয় ভয় পেয়ে পালিয়ে যাবে? ছুষ্ট ! 


_যাবেই ত। 

_ কিন্ত গাড়োয়ানটা দেখে ফেল্লে কি ভাব্ৰে 
বলত? 

-কি আর ভাববে? ভাঁববে বাবুর স্ত্রীর সঙ্গে 
খুব ভাব। 


ছেলেটা তখন জাগিয়া উঠিয়া মায়ের কোলে বসিয়া 
খেলিতে সুরু করিয়া দিল। 

অজয় বলিল, তোমার চেয়ে দেখছি মণ্ট,র সাহস 
ঢের বেশী। 

_তা হবে না, ছেলে কাঁর? নির্ভীক ত হবেই! 
অচেনা অজানা! মুখ দেখলেও ওর ভয় করেনা । তার কোলে 
ঝঁপিয়ে ওঠে । ছু বছরের ছেলে কুকুর-বেরালের সঙ্গে 
খেলা করে, নতুন হাঁটুতে শিখে জলে জঙ্গলে আধারে যেতেও 


যে ভয় পায় না। তাঁকিতুমিজান না? 


সুদীর্ঘ মাঠ আর ফুরাইতে চায় না! অন্ধকারে দৃষ্টি 
হাঁরাইয়! বাঁয়। কোথায় যে ইহার শেষ হইয়াছে ঠাঁওর 
করিবার উপায় নাই । লঙ্কাচরের মাঠের মধ্যস্থলে একটা 
বহুদিনের পরিত্যক্ত দীঘি আছে। সংস্কার অভাবে চতুঃপার্খ্ব 
তাহার অশ্ব, পাঁকুড়ঃ তাল, বেতস ও নানাজাতীয় জংল৷ 
গাছে সমাচ্ছন্ন। হুধ্যের আলো ভয়ে সেখানে প্রবেশ 
করে না। এমনিই ঘন বনে সে স্থানটা আচ্ছাদিত। 

নীরব নিথর রাত্রি, অন্ধকাঁর ক্রমশ সুচীভেছ্য হইয়া 
উঠিতেছে ! শীতের আকাশ থম্থম্‌ করিতেছে । দেই 
ভয়াবহ স্তন্ধতার মধ্যে এক অজ্ঞাত ০০০ 
ছম্ছম্‌ করিয়! উঠিল। 

মেনকা! বলিল, আর কতদুর গো? 

হঠাৎ একটা অজ্ঞাত মান্গষের মুখ হইতে উচ্চ-_বিকট 
_বীভতস হাসির হাঃ হাঃ শব সেখানকার আকাশ 
বাতাস কাপাইয় উত্তর দিল, "আর দুর নাই? ! 

মেনকা৷ অজয়কে জড়াইয়া ধরিয়া টা কে বলিয়া 
উঠিল-_ও মা! 

গাড়ী তথন দীধির মাঝামাঝি পথে আসিয়। পড়্িয়াছে। 


২১৮ 


অজয়ের মুখে আর কথা যৌগাইল না। আসন্ন বিপদের 
বিভীষিকায় চম্কাইয়! উঠিয়া সে এদিক-ওদিক চাহিল। 
কোথায়ও কিছু দেখিতে পাইল না। 

কিন্ত পরমুহূর্তেই কতকগুলি ভারী পদশব্ধ শোনা গেল । 
কাহারা যেন ক্রুতপদে এদিকেই অগ্রসর হইতেছে । জমাঁট 
অন্ধকারের মধ্যে তাহার কারণ অশ্রসন্ধান করিতে অজয় 
বৃথাই দৃষ্টি প্রলারিত করিয়া দিল। 

অনাগত বিপদের দুশ্চিন্তায় নির্বাক অজয়ের চোখ 
দুইটি জলে ভরিয়া উঠিল! শেষে কি-না স্ত্রীপুত্রকে 
ডাকাতের হাতে সঁপিয়া দিতে হইবে। 

পিছন ফিরিয়া গাঁড়োয়ান ডাকিল, বাবু ! 

অজয় উত্তর করিল, গুনেছিঃ জোরে হাকাও । 

গাঁড়োয়ানের ক তখন মরুভূমির মত খা খা 
করিতেছে । গলা! হইতে শব্দ আর বাহির হইতে চাহে না! 

সঙ্গে সঙ্গে মশালের আলো! জবলিয়া উঠিল, আর বিছ্যুৎ- 
প্রবাহের মতই মরণের অগ্রদূতেরা খড্গ হাতে হানা দিয়া 
বজ্জকণ্ঠে বলিল, সামাল যাত্রী ! 

ডাকাতদের ভীষণ কণম্বরে সকলেই ভয়ে জড়সড় হইয়া 
পড়িল। 

নিশুতিরাঁতে জনমানবহীন সেই লঙ্কাঁচর প্রান্তরের বুক 
অসহায় যাত্রীদের মর্ভেদী করুণ আর্তনাদে . মুখর হইয়া 
উঠিল। গাড়ীর উপর হুইতে প্রাণভয়ে ভীত গাঁড়োয়ান 
লাঁফাইয়া পড়িল পথের নীচে । কিন্ত মমতাহীন হিং 
ডাকাতের নির্দয় অস্ত্রের মুখ হইতে সে রেহাই পাইল ন। 
মুহূর্তে মাথাটি তাহার একটি মাত্র আঘাতেই দেহ ছাড়িয়া 
একটু দূরে ছিট্‌কাইয়! পড়িল। 

দল্যুসর্দীরের বড় সাক্রেদ মোঙলার হাতের প্রজলিত 
মশাঁলের তীব্রতায় আলোকিত মাঠের মর্মস্পর্শী এই হত্যা- 
কাণ্ডের বীভৎস দৃশ্টে মেনকা মণ্ট,কে বুকে চাপিয়া সংজ্ঞা 
হারাইয়া ফেলিল ! 

সবল হাতের ছু টানেই গাড়ীর টিনের আচ্ছাদন ঝন্‌ ঝন্‌ 
শবে খুলিয়া ভাঙিয়া গড়ি । মশালের আলোর জ্যোতি: 
খঙ্জোর উপর ঠিক্রাইয়া' পড়িয়া! কূর্য্য-কিরণের মতই চিক্‌ 
চিক করিয়া! জলিতেছে। টাটকা রক্তের ধারা তখনও 
বহিয়! পড়িতেছে তাহার গা দিয়া। কম্পমান অজয ফ্যাঁল্‌ 
ফ্যাল্‌ দৃষ্টিতে ডাকাতের মুখের দিকে চাহ্িযাই বলিয়! 


ভ্ান্পসভখ্র 


| ২৮শ বর্ষ-_২য় খণ্ঁ-৩য় সংখা! 


উঠিল, কে? কালু! তূমি'.এর বেণী আর একটি কথাও 
তাহার মুখ হইতে বাহির হইল না'। 

কালুর শ্রুতিশক্তি তখন এক অতীত স্নেহের প্রবাহে 
পড়িয়! বিলুপ্ত হইয়া গিয়াছে । বাহিরের কথায় সাড়া দিবার 
মত জ্ঞানও আর তাহার নাই। 

অকস্মাৎ তাহার উখিত খঙ্গী শিথিল ভাবে নামিয়া 
আসিতেই বিশ্ময়াভিভূত মোঙলা দেখিতে পাইল- ছোট্ট 
শিশুটির পানে নিবন্ধ দৃষ্টি সর্দারের চক্ষু অশ্রবন্ায় ভাসিয়া 
যাইতেছে । যাহার অস্ত্রের সন্ধান বরাঁবরই লক্ষ্যভেদ করিয়া 
চলিয়! গিয়াছে, কোন দিন কোন কারণেই ব্যর্থ হয় নাই__ 
আজ তাহার এমন কেন হইল ? 

কালু তখন উদ্বেলিত হৃদয়ে বলিয়া উঠিল, ওরে মোঁঙলাঃ 
আমার হারাঁধনকে ফিরে পেয়েছি ।-- আমার হারাধন-__- 
হাঁক রে. 

মোঙ্‌লা বলিল, সেকি সর্দার! পাগল হ'লে নাকি? 

_-ওরে না রে না, পাগল হইনি, দেখছিস না অবিকল 
সেই মুখ! 

সহসা অতবড় শক্তিশালী হিংঘ্র দানবের হাঁত দুইটি 
কাপিয়া উঠিল__ছোট্র একটা শিশুর সম্মুথে। মুষ্টিবনধ 
হাত হইতে খড্গ কোন এক সময় মাটার উপর থসিয়! 
পড়িয়া গিয়াছে । প্রবল রক্তপিপাসা- মুহূর্তে যেন কোথায় 
উড়িয়া গেল! পাহাড়ের বুকে একটা খরশ্োতা ঝরণার 
মতই পেহের শতধার! তাহার জদয় মথিত করিয়া বহিয়া 
চলিল একটা অতীত স্থৃতির উদ্দেশে । 

আপনার অজ্ঞাতে ছুর্দীস্ত ডাকাতের রক্তমাখা হাত 
ছুইটি কম্পিত আগ্রহে মণ্ট,র দিকে আগাইয়া গেল। 

দানবের এই আকস্মিক তাববিকাঁর লক্ষ্য করিয়া মৃত্যু- 
ভয়ে নিজ্জীব অজয়ের প্রাণে সাড়া আসিল। পাশেই 
সংজ্ঞাহীনা মেনকার বাহুবে্টন হইতে মুক্ত করিয়া অজয় 
মণ্ট কে ডাকাতের প্রসারিত হস্তে তুলিয়া দিল। কোলে 
উঠিয়াই সার্গীরের গলার কণ্ঠীগাছ লইয়া মণ্ট, খেলিতে 
খেলিতে তাহার মুখের দিকে চাহিয়া খিল্‌ খিল্‌ করিয়! 
হাসিয়া উঠিল। উৎক্ষিপ্ত সে হাসির ঝরণায় পুত্রহারা 
পিতার ল্েহবুতৃক্ষু হৃদয় ভাসিয়া গেল । 

মণ্ট, অজয়ের দিকে চাহিয়া ডাকিল-বা_-বা--বা। 

শিশুকষ্ঠের সেই আধ আঁধ ডাঁক সর্দারের কানে 


ফান্তন--১৩৪৭ ] 


অমূতের পরশ বুলাইয়া দিল। হারাধনও একদিন এমনি 
করিয়া ডাকিয়াছে। তারপর কোথা হইতে যেন কি 
হইয়া গেল ! 

সাহস পাইয়া অজয় বলিল, আমাদের ছেড়ে দাও 
সর্দার। আমাদের সঙ্গে টাকা পয়সা বিশেষ কিছু নেই, 
যা আছে আমি নিজে হাতে তোমায় তুলে দিচ্ছি। 

কালু খানিকক্ষণ অজয়ের দিকে চাহিয়া পরে মোঙলাকে 
ডাকিয়া! বলিল-_ওরে জল নিয়ে আঁয়, মা আমার ভয়ে জ্ঞান 
হারিয়েছে ! 

কালু সর্দারের বুকে অন্তঃসলিলা ফন্তুর নিন্তরঙগ প্রবাহের 
মতই যে করুণার নির্ঝরিণী লুকাইয়া ছিল, মোঙ্লার 


স্পভিভ্ডা্র চ্তীল্ক্ষা 


২০২৯ ৪২ 


সাঁকরেদী-জীবনের এই কয়বছরে তাঁহাকে দেখিয়! ইহার 
বিন্দুবিসর্গও সে জানিতে পারে নাই। তাই আশ্চর্য্য হইয়া 
একবার সর্দারের মুখের দিকে চাহিয়! তাহার আদেশ পানন 
করিতে গেল। 

মণ্ট, আবার ডাকিয়া উঠিল-_বাব্ববা! 

কালু ম্ট,কে জোরে বক্ষে চাপিয়া ধরিল। যেন সেই 
কতদিনকাঁর পলাইয়া যাওয়া বুকের নিধি-মাতৃহার! সেই 
হারাধনকে আজ তাহার অতৃপ্ত বক্ষে আবার ফিরিয়া 
পাইয়াছে। 

মেনকা চোখ মেলিয়! চাহিতেই কালুসর্দার বলিল-_মা 
তুই ভয় পাস্‌নি। আমিও তে(র ছেলে। 


পতিতার দীক্ষা 


জ্রীনীলরতন দাশ বি-এ 


“তোমার ও দেবদেহে এলে মোর পাঁপগেছে, 
কেমনে বরণ প্রস্তু করি? 

পঙ্িল পন্থল সম কলুষিত দেহ মম, 
তোমারে বরিতে লাজে মরি। 


নাহি পূজাফুলদল, আছে শুধু অীখিজল, 
চরণ সেবিতে মম সাধ; 


কলঙ্কিনী পতিতার  আছেকি সে অধিকার? 
কহ দেব! ক্ষমি অপরাধ ।, 

শুনি আম্মপালী কথা অন্তরে পাইয়া ব্যথা 
ভগবান্‌ বুদ্ধ তারে কন, 

তুমি অতি ভাগ্যবতী, নহ কু হীন-মতি ; 
ব্যর্থ নহে তোমার জীবন। 

করিয়াছ নিমন্ত্রণ, কর এবে আয়োজন 
অতিথির সমাদর তরে; 

বিগত জীবন শ্মরি, কাদ কেন ছুঃখ করি”? 


মহোৎসব আজি তব ঘরে। 


'অআীধারে আলোঁক রাজে, তেমতি তোমার মাঝে 
জালি' দিব দিব্য-প্রেম শিখা 

সে অনলে করি? দগ্ধ তোমারে করিব শুদ্ধঃ 
মুছে দিব দুর্ভাগ্যের লিখ! । 


অমুতের পাত্রখানি তব হস্তে দিব আনি” 
মৃত্যুরে করিবৈ তুমি জয় ; 

নব জন্ম করি দান তোমারে নৃতন প্রাণ 
দিব, নারী ! নাহি তৰ ভয় ।ঃ 


এত বলি” তথাগত করিলেন মন্ত্রপৃত 
পতিতার তন্থমন প্রাণ; 

আত্রপালী কহে, প্রভু! নাহি যেন ভুলি কতু 
করুণার তব অবদান । 


তোমার চরণ ধূলি মাথায় লইয়া তুলি, 
যাব আমি দেশ-দেশাস্তর, 


তোমার দীক্ষার কথা প্রচারিব যথাতথাঃ 
বাণী তব শাশ্বত স্ন্দর !, 


কৃষ্ণধামালীর গান 


গ্রীতারাপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় 


কৃষ্ধামালীর গান সম্বন্ধে আমাদের দেশের একদল পঞ্ডিতের মধ্যে 
উপভোগ্য মতান্তর আছে। কেহ ইহার মধ্যে উৎকট অশ্লীলতার গন্ধ 
পাইয়াছেন; তাহার মতে ধামালীশ্রেণী ছুই ভাগে বিভক্ত কর! হইয়াছে 
-কৃঞ্ধামালী ও শুরুধামালী। কৃষক ও শুরুর মধ্যে প্রভেদ শুধু 
অশ্লীলতার পরিমাপে। মেজন্তই নাকি উক্ত গান মাঠে গীত হয়, 
লোকাবামের বিশুদ্ধ বাতাসে তাহার স্থান নাই। আবার কেহ মনে 
করেন, ধামালী গানের এক প্রকার অস্তিত্বই নাই-_তাহাদের স্বীকার 
করা শুধু মন-গড়া ছাড়! অন্য কিছুই নহে। 

সে যাহা হউক, শিক্ষার ধার] অনুসারে গবেষণার একটা মোহ 
আছে। একজন হয়ত পল্লীর প্রান্তর হইতে কিছু মাল-মদলা সংগ্রহ 
করিয়! আনিয়। সাহিত্য-ব্যগ্রনের মধ্যে যোজনা করিলেন ; কিন্তু 
পরিবেশন করিতে গিয়৷ দেখ! গেল, কাহারও নিকট তাহা বিশ্বাদ মনে 
হইয়াছে, তিনি পাচক ঠাকুরের আছ্ছশ্রাদ্দ করিলেন; বেগতিক 
বুঝি পাচকঠাকুরও থুস্তি (কলমরপ) লইয়া ছুটিয়া আমিলেন এবং 
প্রমাণ করিতে চেষ্ট! করিলেন যে, তিনি যাহা রন্ধন করিয়াছেন তাহা 
টপাদেয-_ব্যপ্রুনের আম্বাদ গ্রহণ করিতে পারেন নাই, কারণ তাহার 
চত কোন স্থানে ক্ষত আছে। বন্তত এরূপ গবেষণায় আসল তথ্য 
গালাইয়! গিয়া জট বাঁধিতে থাকে। 

সেরপ কোন গবেষণা করিবার ক্ষমতা আমাদের নাই। তবে পল্লী- 
ীতিকা। সঙ্কলনের মধ্যে কতকগুলি শবের দিকে নজর পড়িয়াছে, কতক- 
এলি গানের সম্বোধন স্থলে কানাই, কালা, মাধব, কানু প্রস্ুতি শবের 
প্রয়োগ দেখিতে পাই। দাধারণত পল্লীবাসীর এরূপ সম্বোধনমূলক 
মানগুলিকে কান[ইধামালীর গান বলিয়া! আথ্য! করিয়। থাকে--তাহাই 
মামানের আলোচনার বিষয়বন্ত। কানাইধামালীর গানই যে মাঞ্জিত 
চাষায় “কৃষ্ণধ।মালী” তাহা বোধ করি ভাষ।তন্ববিদের! স্বীকার করিবেন। 

গুর্ুধামালীর গানের দন্ধান এখনও আমর! পাই নাই। কৃষ্ণের 
বিপরীত শব্দ শুরু,এরূপ ধারণায়ও বিশেষ বিচার নাই। উহাকে অতিরিক্ত 
মশলীলঙ!-ব্যগ্নক বিয়! স্বীকার করিয়! লইতেও আপত্তি থাকিতে পারে। 
চাহ! করিলে পল্লীক্ষবিদের প্রতি বিশেষ অবিচার কর! হয়- শ্লীলত 
ক্ষ করিয়। তাহার] গান করিতে পারে, ইহ।র প্রমাণ 'অনেক আছে। 
বশেষত সাহিত্য যদি শুধু ললীলতানুশীলনে যত্বান হইত, তাহ! হইলে 
দগতে এত কাব্যের উত্তুব সম্ভবপর হইত না। সাহিত্যঙ্গেত্র তাহ! হইলে 
ঠর্ঘস্বান হইয়! দাড়াইত এবং সেস্থানে শ্যাস ধ্যান ভিন্ন উপায় থাকিত 
|| শ্লীলতা-অল্লীলতার মধ্যে সামঞ্জন্ত করিয়াই সাহিত্য। সত্য শিব 
দোরের মোহ আদর্শবাদীঘের পক্ষে গ্রযোজ্য। 

বাংল! দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পর্ীগীতিতে আমর! অল্লবিদ্তর বৃষ- 


ধামালী গ|নের সন্ধান পাই। দেশ কালের গণ্ভী অতিক্রম করিয়! 
গানগুলি বাংলার প্রায় সব্ধত্রই ছড়াইঘ। পড়িয়াছে। এই গানগুলি 
কোন জেলার নিজস্ব নহে--ভাষ! পরিবর্তিত হইয়া ভাব পরিবদ্ধিত 
করিয়া তাহ! বাংলার এক প্রান্ত হইতে অন্য প্রান্তে প্রদার লাভ 
করিয়াছে। 

উত্তর বঙ্গের “ভাওয়াইয়। গানের মধ্যে আমর! কৃষ্ধধামালীর গান 
অনেক পাই। রঙ্গপুর, দিনাজপুর প্রভৃতি জেলায় চৈত্রমাসের 
মদনোত্সবের মধ্যেও কৃষ্ধধামালী গানের কিছু কিছু সন্ধান পাইয়। 
থাকি। উহাকে মদন কামের পুজা, কিংবা জা!গগান বল| হয়। “জাগ 
গান” আবার ছুই ভাগে বিভন্ত-_চেংড়! জাগ, বুড়ো! জাগ। গ্রীকৃফের 
জন্ম হইতে আর করিয়। প্রীকৃঞ্জের অন্তলীল পর্য্যভ্ত জাগ গানের 
অন্তভূক্ত। 

রাধাকৃষ্চের প্রেমলীলা-ব্যিয়ক গানগুলিতে উভয়কে প্রাকৃত বলিয়। 
ধারণ! করা হইয়াছে ।-_তাহার্দিগকে সাধারণ বাঙ্গ।লী পরিবারের 
পরিঝেষ্টনীর মধ্যে আন! হইয়াছে। সেগ্ানে বুঝ হয়ত হাল বহিতেছেন, 
মঠে গরু চরাইতেছেন-_রাধ! কখনও কলসীতে জল ভরিতেছেন, কখনও 
জল সরাইয়৷ মাছ মারিতেছেন। এন্বলে কয়েকট গান আংশিকভাবে 
উল্লেখ করিতেছি । কানাই রৌ্রে হাল বহিতেছে, তাহার জন্ক কন্ঠা!* 
উল! হইয়া! পড়িয়াছে। কানাইর বয়স হইয়াছে, কিন্ত এখনও তাহার 
বিবাহ হয় নাই। 


ও সুন্দর কানাই রে-- 
আধাঢ (ও) শ্রাবণ (ও ) মাসে 
আহ্ঘির জলে কানাই মাটি ভেজে 
ওদে না ঘামিল রেগাও। 
ও নুন্দর কানাই রে-_ 
ছুয়ারের আগে রে কানাই, 
হালথানি জুরিছ 
দে ন| ঘমিল রে গাও ॥ 
ধিক ধিক তোর বাপ. রে মাও, 
এমন ব'সে কানাই নাই হয় বিভাও, 
পড়া যাউক তোর দলান কোঠা বাড়ী রে-। 


কোন সময হয় কানাইকে বাক ঘাড়ে করিয়! মাধায় রাজপাগড়ী 
বাধিয়। মাঠের পথের দিকে যাইতে দেখ| যাইতেছে। তাহাকে দেখিয়া 





* কন্তা শব গল্পী গীতিতে বিশেষ অর্থে বাবহাত ছইয়! থাকে । 
কল্তা জর্থে যুবতী স্ত্রী বুবায়। 


৩২৩ 


ফাল্তুন--১৩৪৭ ] 

খল -স্যখ্ঘ স্ক্যান প্লাস স্্ইটি স্র্ 
ক্যা উদ্মনা হইয়। পড়িয়াছে। কানাই-এর মুখের ছুইট! মধুর কথা 
শুনিবার জন্য তাহার একান্ত আগ্রহ প্রকাশ পাইতেছে ।-_ 





কানাই, ঘাড়ে দেখে! তোর নাল বাকুয়া 
হস্তে দেখে। নাল পিকিয়া রে__ 
মাথে দেখো মনির আজ পাগরী রে-_ 
ও তুমি কোথ! হইতে কোথা যাও, 
রে নিঠুর, মধুর কথা কআ! যাও ॥ 


কন্ঠ। মাছ মারিতেছে, গায়ে কাদ। মাখিতেছে, তাহাকে উপলক্ষ্য 
করিয়া কানাইও ছুই-চারিট। গানের পদ ধরিল। 


প্রযে, মালি বান্দ রে কন্যা, 
পানি আরও ছেক। 
সদর গায়ে কই না! কাদ! রে মাথ__ 
পরপুরুষের সঙ্গে কিসের মৈচ্ছ মার রে ॥ 
মাছ মার রে কন্যা ইলিসা, 
মছ মার রে কন্যা খলিস৷, 
বেছে মৈচ্চ মার চন্দনা আর কুরুসারে॥ 


এইরূপে আলাপ-পরিচয়ের মধ্য দরিয়া! কানাই-এর সহিত কন্ঠার 
পিরীতি হইয়াছে । পাড়ার লোক তাহা! আবার জানিয়। ফেলয়।ছে-_ 
সেজন্ত তাহাকে অনেক নিন্দা সহ করিতে হইতেছে। কিন্ত সে ওরপ 
নিন্দাকে অঙ্গের ভূষণ-স্বরাপ মনে করিয়ছে। দুঃখের বিষয়, কানাই-এর 
সহিত তাহার দেখা নাই। তাহার জন্য সে বনঝ।সে বাড়ী বাধিয়াছে, 
তবুও কানাই আপন হইল ন1। 


ও মোর কাল! মানুষ ভাল, 
না বুঝে কাল! সন্ধ্যা কাল, 

না বুঝে কাল! এফেল! নারীর কাম রে-_ 
ওদিয়! (১) গেইছেন কাইল, 
তার জন্ত মোরে পাড়ে গাইল, 

সেও গাইল মোর গুনে পাড়ার লোকে ॥ 
ও তোর পিরীতির আশে, 
বাড়ী বান্দিমু বনবাসে, 

তবু কালা না হলু (২) রে আপন॥ 


কালার জন্ভ কলঙ্কের পপর! মন্তকে বহন করিয়া কন্যা বনবাসে 
আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছে। সেখানে হুপারী গাছের “চারা” পাঁতিয়াছে, 
কল! গাছ রোপণ করিয়াছে। নুপারী গাছ বড় হইয়াছে, নুপারী 
ফলিয়াছে--কল। গাছে বড় পাত। হইয়াছে, কল! ধরিয়াছে, কিন্ত কালার 
সঙ্গে এখনও দেখ! নাই। 


সস? সপ ০ 





শপ ০ তি 


(১) ,ওদিয়াস্ দিক দিয়া (২) হইলে 
৪১ 


ক্রুনও-্বামাব্লীল্প গান্ন 


সম ও --স্হা “০” হস” সস সদ বস ৮ “স্ব "স্ব ্- -স্প্ 


২2২২৭ 


শ্র” -ব্হচ 





ওরে বান্দিম্থ বাড়ী, 
গুয়! (৩) উন্ু সারি সারি-- 
গুয়ার বাগুচায় ঘিরিয়! লইলে বাড়ী রে-_ 
আসিবে মোর প্রাণের শুয়া (৪) 
তায় পাড়াইবে গাছর গুয়! 
মুই নারীটা ফাকিয়! (৫) খাইম তাক। 
ওরে আসিবে মোর প্রাণের নাথ 
তায় কাটিবে কলার পাত, 
মুই নারীটা বসিয়! খাইম (৬) বেল ভাত॥ 
ও কি ও প্রাণ কাল! রে-_ 
ওরে মহাকালের ফল যেমন, 
মোর নারীর যৈবন যেমন (৭) 
থ।আ দেখ কাল! যৈবন কেমন মিঠা রে॥ 
কালার গানগুলিকেও কানাই ধামালীর গানের অস্তভূপক্ত কর! যাইতে 
পারে। উত্তরবঙ্গের রঙ্গপুর, দিনাঙ্গপুর, জলপাইগুড়ি প্রভৃতি অঞ্চলে 
এরূপ গান অনেক শুনিতে পাওয়! যায়। “কালার' ধুয় ধরিয়া মাছতকে 
উপলক্ষ্য করিয়াও গান আছে _সেগুলিও কৃষ্ণ ধামালীর অন্তৃভূক্তি কি-না, 
তাহ! বিচারসাপেক্ষ । যাহা হউক, কাল! কিংবা কানাই-এর জন্য 
কম্য।র আকুতির অন্ত নাই--সে তাহার যথাসব্ধন্থ কানাইর নিকট অর্পণ 
করিয়াছে। গোপনে তাহার নিকট সে অভিসার করিয়াছে--কিস্ত 
তাহাদের গোপন কথা কেমন করিয়া যেন প্রকাশ হইয়া! পড়িল। কানাই 
মাঠে মাঠে ধেনু চরাইয়। বেড়ায়, রক্ষা করিবার ক্ষমতা তাহার আছে। 
কিন্ত তাহাদের উভয়ের পিরীতির কথা নিজেদের মধ্যে রাখিতে পারিল 
না, ইহাই বিশেষ আক্ষেপের বিষয় । এমন কি, কানাই তাহাকে ছাড়িয়া! 
যাইতে বাধ্য হইল। কানাই-এর সহিত বাল্যকালের প্রেম ভোলা যায় 
না__রহিয়! রহিয়া জাগিয়৷ ওঠে। তাই বুকে পাষাণ বাধিয়। মে অতি 
কষ্টে রাত্রি যাপন করে। 
ও নাগর কানাইরে-_ 
ওর অবোধকালে করিছি পিরীত 
তুমি আমি জানি। 
এখন কেনে লোকের মুখে নানান কথ৷ শুনি, 
ওরে ছুইজনায় কইরাছি পিরীত, খাবার নিবার আশে । 
বাদি (৮) হুইল পাড়ার লোকে, পিরীত ভাঙ্গল শেষে ॥ 
ওরে, নাউ কাটিনু ফাল! ফালা, 
চালে ধুনুরে (৭) দাও । 
অবোধ কালে করিয়া পিরীত ৃ 
আজিও ঝাঞ্লায়(১*) গাও ॥ 


- শশী শিপ শালি িপীশীশী শিকল লা 


(৩) রোপণ করিলাম (৪) প্রিয় (৫) ফাক করিয়া ( অর্থাৎ কাটিয়।) 


-_ ৮০0৯) খাইব (৭) দে রকম (৮) বাদ সাধিল (৯) রাখিলাম, খুইলাম। 


(১৯) চিকমিক করে, জ্বাল! করে 


৮ শিপ পিপিপি? শীট ও সি 


১৯২.২, 


ও নাগর কানাইরে-_ 
বদে বনে চরাও রে ধেছু 
আখোয়ালে।১১) মতি । 
এঁলস।(১২) কেনে বেড়াইল তোর 
গোপন পিরীতি ॥ 
ওরে, ধনেটি খাইল টিয়ে 
কেমনে কাটাব রাত্রি 
বুখে পাষাণ দিয়ে ॥ 
উপরি-উক্ত গীতাবলী উত্তরবঙ্গের ভাওয়াইয়া গান হইতে উদ্ধৃত 
হইল-_গানগুলি রঙ্গপুর দিনাজপুর অঞ্চলে বিশেষ ভাবে প্রচলিত। 
দক্ষিণবঙ্গ অনুরাগ গান শুনিতে পাওয়া যায়। যশোহর জেলা 
হুইতে উক্ত গানের অনুরূপ পদ যাহ! পাইয়াছি, এস্থলে তাহার কিছু 
প্রকাশ করিতেছি ।-- 
ও কি হায়, পরাণের মাধব রে-_ 
যখন করিলাম পেম তুমি আর ও আমি । 
এখন কেন সে সব কথা লোকের মুখে শুনি ॥ 
যখনে করিলাম পেম 
সান বাধ! খাটে । 
আশমানের চক্জ সূর্য্য তুলে দিল হাতে ॥ 
বেল! গেল নঠ্ে(১৩) হল, 
সপ্রে লাগাও বাতি। 
ফুলশাখে(১৪) বিছান! পাতে 
জাগব কতরাতি॥ 
বাত (ও) এক পহরের কালে, 
চালে ডাকে চুয়ো 10১৫) 
পান খেয়ে যাও প্রাণের বন্ধু 
আড়ে কাটা গুয়ে! ॥ 
সং সং 
রাত (ও) প্রভাতের কালে পুবে উদয় ভামু 
রাধিকার অঞ্চল ধরে বিদায় মাগে কানু ॥ 


কানাই কিংবা মাধবকে নিকটে পাইয়া! সে যেন আকাশের চাদ 
হাতে পাইয়াছিল। এখন তাহার অদর্শনে মন কেমন করে- তাহার 
গন্চ দে বিনিদ্র রজনী যাপন করে। শেষ রাত্রে তাহার পহিত দেখ! হয়, 
আবার নুর্ধা উদয়ের সঙ্গে সঙ্গে চলিয়! যায় ।-_-ইহাই উক্ত গানের প্রতি- 
পান্ধ বিষয়। খুলনা জেলায়ও অনুরূপ গান শোন! যায়। 
ও নাগর কানাইরে-_ 
বেল! গেল সন্ধ্যা হ'ল, ও কানাইরে-- 
ও দে ঘালে মোমের বাতি। 


(১১) রাখালের ভাব, রক্ষা করিবার প্রকৃতি । (১২) এখন। 
১৩) সন্ধ্যা (১৪) ফুলশয্যা (১৫) ইহ 


| ২৮শ বর্ষ ২য় থণ্ড--৩য় সংখ্যা 


না জানি মোর প্রাণনাথ, 
আস্বে কত রাতি ॥ 
ও নাগর কানাইরে--. 
রাত্র-একফর(১৬) হইল কানাইরে_ 
বেড়ানে(১৭) দিলে মন। 
র'াথিয়া বাড়িয়া অন্ন, জাগব কতক্ষণ ॥ 
রাত্র ছুই ফর হইল 
ও সেগাছে ডাকে শুয়ো। 
গ1 তুলে খাও বাটার পান 
নারী কাটে গুয়ে! ॥ 
ঙ 
রাত্র চার ফর হইল কানাইরে-_ 
কোকিল ছাড়ে বাসা । 
রাধিকার সঙ্গে প্রেম করিয়া 
ন| পুরিল আশা রে ॥ 
ফরিদপুর অঞ্চলে মাধবকে উপলক্ষ্য করিয়৷ একটি গান শোনা যায়। 
যৌবনে মাধবের সঙ্গে প্রেম হইয়াছে, এ প্রেমের কথ! ভোলা যায় না। 
সাদা কাপড়ে কালির দাগের মত মনের মধ্যেও দাগ লাগিয়া শিয়াছে। 
মন পরিক্ষার ভাবে তাহা বুঝিতে পারে । 
আজ কেন রে যৈবন তুই, 
মিছে পাগল করিসরে হায় ! 
ধোপ, কাপড়ে কালির ফোটা 
মাধব! য|বে যৈবন রবে থোট|।॥ 
রঃ 
আড়ায় যেমন ময়না! রে পোষে, 
ও মাধব, ছুটে গেলি আর ন! আসে ॥ 
আড়ায় যে মন ময়না রে পাখী, 
ও মাধব, তাই দেখে প্রাণ বেঁধে রাখি ॥ 
আমরা সাধারণভাবে কৃষ্ণধামালী গাঁনের উল্লেখ করিয়াছি। নদীর 
পথে মাঝির! যে সারি গান করে, তাহার মধ্যেও উক্ত গান পাওয় যায়। 
থুলন| জেলার একটি সারি গান এস্বানে উল্লেখ করা যাইতেছে ।-_গানের 
বিষয়বন্ত এইরাপ .. কৃ্ণও মাধি হইয়া নৌক| লইয়া ঘাটের নিকট 
আসিয়াছে, রাধা ছুধের পসরা মাথায় করিয়া ঘাটের কাছে দীড়াইয়াছে। 
তাহাকে ওপারে যাইতে হইবে, বেল! বহিয়া যাইতেছে. সেজগ্ত-_সে 
মাঝির নিকট কাতর মিনতি জানাইতেছে। মাঝিও তাহাকে লইয়া 
ছলনা আরগ্ত করিয়াছে। সকল সখির নিকট হইতে সে “আনা” গ্রহণ 
করিবে, আর রাধিকার নিকট হইতে সে কানের সোনা লইবে। 
পার কর পার কর কানাই, 
বেলার দিকে চাল্সে। (১৮) 


(১৬) এক প্রহর (১৭) বেড়াইতে (১৮) চাহিয়া। 


ফাল্গুন_-১৩৪৭ ] ক্ষওশ্রামাজ্লীল্র গান্ন ২০২২৪ 
দধি দুগ্ধ জল নষ্ট --দেখিয়া যমুনার কেউ রে 

দিবা গেল বয়ে ॥ ও নাগর প্রাণ কাপেরে থরে । 

সকল সখি পার করিতে লব আনা আন । আজ আমি কবন! কথ! 
রাধিকারে পার করিতে নিব কানের সোন! ॥ যা ফিরে তোর ঘরে ।-- 

০ তোমার মাত পিতে 
কানাই মাঝির চুক্তি স্বীকার করিয়! রাধা নৌকার উপর ৩০ ফিরি ॥ 

কেমন তে।মার হিয়ে । 


বসিল, নৌকাখানি বুঝি-ব! দুলিতে আর্ত করিয়াছে, রাধিকার ভার বোধ 
করি সহা করিতে পারিবে না।* 


তুমি ও সন্দার কানাই 
তোমার ভাল! নাও | (১৯) 
কোথায় থোব ছুধের পসর রে'কানাই 
কোথায় থোব পাও ॥ 
রন 
_ ভাঙ্গা নয় নৌকাখানি, 
রাধে, পসরি সার। 
কত হস্তি ঘোড়! করলেম পার 
তোর কি এত ভার ॥ 
ষ 
অদ্ধেক গাঙে যায়ে কানাই 
নৌকায় দিল নাঁচ1। (২২) 
উড়িল রাধিকার প্রাণ 
কানাইর গাওর ভাঙ্গিল পাছ| ॥ 
--বাহ বাহ বাহ কানাই, 
বাহে ধর কুল। 
এ ধন যৌবন দিব কানাই__ 
গঙ্গায় দিব পুল॥ 


রাধিক! ঘাটে আসিয়! কলনীতে জল ভরিতেছে। তাহাকে এক! 
পাইয়। কানাই তাহার সছিত কথা বলিবার জন্য ব্যন্ত হইয়াছে। 
রাধিকার ভয় করে পাছে যদি কেহ দেখিয়! ফেলে। সেজন্য সে 
কানাইকে ঘরে ফিরিয়া যাইতে অনুরোধ করিতেছে । কানাইও যেন 
নাছোড়বান্দা-_তাহার সঙ্গে কথা কাটাকাটি আরম্ভ করিল। একট! 
কিছু ন| করিয়া যেন মে আজ ফিরিবে না। তাহাদের মধ্যে উভয়ের 
যৌবনকে লক্ষ্য করিয়া আলোচনা চলিতে লাগিল। 


জল পোরে। রাই বিনোদিনী, 
জলে দিয়! ঢেউ। 
নয়ন মেলে কও কথা 
ঘাটে নাই কো কেউ। 





* নৌকাবিলান গানের মধ্যেও জনুরপ ভাব আছে | 
(১৯) নাও নৌকা! (২) নাচন। 


বার বছর হয়েছে বয়স 
না দিয়েছে বিয়ে॥ 
_ভাল আমার মাতা পিতে 
ভাল আমার হিয়ে। 
তোমার চায়ে সুন্দর কুমার 
সেই করেছে বিলে ॥ 
পরের নারী দেখে কুমার ভ্বলে পুড়ে মর। 
নিজ ধন ভাঙ্গায়ে কুমার বিয়ে নারে কর ॥ 
_কোথায় পাব টাকাকড়ি 
কোথায় পাৰ আইয়ে (২১)। 
তোমার মত হুন্দরী নারী, 
কোথায় পাব যাইয়ে ॥ 
- আমার মত হন্দর নারী, 
কুমার যদি চাও। 
উলুর ছোট! কলপী নিয়ে 
যমুনায় ভাসাও ॥ 
-কোথায় পাব কলসী নারী 
কোথায় পাব দড়ী। 
তুমি হও যমুনার জল 
আমি ডুবে মরি ॥ 
উপরি-উক্ত গানটি ষশোহর জেলা হইতে সংগৃহীত হইয়াছে। 
থুল্না জেলার একটি গানের সঙ্গে উক্ত গানের শেষের দিকের সামগ্রস্ত 
আছে। এস্থলে তাহ! উদ্ধৃত করিতেছি। 
তুমি ও যে হুন্দর কানাই, 
আমি তোমার মামি। 
কোন্‌ সাহসে বল রে কানাই 
জল ফেলব আমি॥ 
তুমিও যে সুন্দর কানাই, 
না করিলে বিয়ে ॥ 
পরের রমণী দেখি কানাই, 
মর জলে পুড়ে ॥ 
কোথায় পাব টাকাকড়ি-_ 
কোথায় পাব মাইয়ে (২২)॥ 


(২১) আইয়ে, এক্োতি ইহার ছার! পরকীয়। ভজন শৃচিত হয়। 
(২২) মে়ে। 





১2২৪ 


তোমার মত সুন্দরী পেলে 
করতেম আমি বিয়ে ॥ 


দক্ষিণবঙ্গের পল্লী অঞ্চলে উক্তরূপ গান অনেক প্রচলিত আছে। 
আমর! এস্বলে উত্তরবঙ্গের রঙ্গপুর জেলার একটি গান তুলনার 
জন্য উল্লেখ করিতেছি । রঙ্পুরের স।ধারণের গ্রাম্য “ভাওয়াইয়া গানের” 
মধ্যেও উহা শে|ন| গেলে “চলমল সাধুর গান* নামে একটি গানের 
উহা অন্তভু ক্ত। 

“চলমল সাধুর” গ!নের বিষয়বস্তু এইরূপ। লক্ম্রীমাতার পুত্র চলমল 
সাধুর সহিত পাটগ্রামের শঙ্খ রাজার কন্যা দুবুলার সহিত বিবাহ হইয়- 
ছিল। বিবাহের পর দাধু বাণিজ্যে গমন করে, ছুবুলার কাতর মিনতি 
তাহাকে নিবৃন্ত করাইতে পারে নাই। বার বৎসর ধরিয়া তাহার সহিত 
দেখা নাই। একদিন ঘাটের পথে সাধুর সহিত ছুবুলা সুন্দরীর নাক্ষাৎ- 
কার হইল; কিন্তুকেহ কাহাকে চিনিতে পারিল না। ন| চিনিতে 
পারিলেও তাহার! উভয়ে পরস্পরকে উপলক্ষা করিয়! গান করিতে লাগিল। 
শেষে উভয়ের সহিত পরিচয় হইয়াছিল । নদীর ঘাটের পথে যে গান 
হইয়াছিল, তাহ! এন্থলে উল্লেখ করা যাইতেছে। ইহার দ্বারা আমর! 
প্রমাণ করিতে চেষ্টা করিব যে, তিন শত মাইল দৃরবর্তী পল্লী অঞ্চলে 
প্রচলিত গানের সহিত অন্যান্য দূরবর্ত! পল্লী অঞ্চলের সহিত ভাঁষ! ও ভাবে 
মিল আছে। 


ও নাথ কনা ও, জল ভর রে হন্দর কইনা 
জলে দিয়! ঢেউ 
একলা ঘাটে আইসাছ কন্ঠ। 


সঙ্গে নাইকো কেউ ॥ 
- তুমি ত রাজার ছাইল1(২৩) বিভীও(২৪) করতে পার। 
পরার রমণী দেখে কেন জলে পুড়ে মর ॥ 
- আমি ত রাজার ছাইল! বিভাও করতে পারি। 
তোমার মত সুন্দর কন্া। মিলাইতে নারি ॥ 
- সাধু, আমার মত হুন্দর কল্! যদি মিলাইতে চাঁও। 
গলায় কলসী বেধে জলে বম্প দেও | 
- কোথায় পাব কলস কণ্ঠা কোথাও পাৰ দড়ি। 
তুমি হইলেন যবুনার জল তাঁমি ডুবে মরি ॥ 


পূর্ববঙ্গের পল্লীগীতির দিকে দৃষ্টি দিলে বোধ করি, আমর! পূর্বোক্ত 
প্রকারের গান পাইতে পারি। উত্তরবঙ্গের সুদূর পল্লী অঞ্চলে যে গান 
প্রচলিত আছে, দক্ষিণবঙ্গের পল্লী অঞ্চলেও সেরূপ পাইতেছি; পূর্ব 
কিংবা পশ্চিমবঙ্গের পল্লী অঞ্চলেও সেরূপ গান শুনিতে পাওয়া যাইবে। 

মামা ও ভাগিনাকে উপলক্ষ্য করিয়া অনেক কুরুচিপূর্ণ গান পল্লী 
অঞ্চলে প্রচলিত আছে। রাধাকৃঞ্ণের প্রেমলীলার প্রাকৃত ভাব তাহাতে 


আত্মগোপন করিয়। আছে। বাংলার পল্লী অঞ্চলের “মেঠোগ্রামে” উক্ত 





০ পপি জা পিপিপি শপ পাশাপাশি 


(২৩)। ছাইলাশ্ছেলে। (২৪)। বিতাও,্ বিবাহ 


ভ্ঞাব্ুভবশ্য 





[ ২৮শ বর্ষ-_২য় খণ্ড--৩য় সংখ্যা 


ভাষ অনেক পাঁওয়! যায়। কিন্ত তাহাকেই বড় করিয়৷ ধরিলে পক্গী- 
গীতির প্রতি বিশেষ অবিচার কর! হইবে। এ বিষয়েও একটু তুলনা" 
মূলক আলোচনা কর! যাইতেছে । রঙ্গপুরের একটি গান এস্লে উল্লেখ 
করিতেছি। 
ও চাদ, আমার বাড়ী তোমার বাড়ী 
মধ্যে হীরা নর্দী। 
কি যাব তোমার বাড়ী রে চাদ 
পাঙ্ছা (২৫) নাই দেয় বিধি ॥ 
একবার আসিয়া কি ও মোর সোনার চাদ 
যান ত দেখিয়! হে ॥ 
অ।মার বাড়ী :তোমার বাড়ী, 
মধ্যে ব্যাতের আড়া। 
কি যাব তোমারে বাড়ী, 
আমার কপাল পোড়! ॥ 
আমার বাড়ী তোমার বাড়ী, 
একে ত আঙ্গিন!। 
আত হ'লে ও মোর সোনার টাদ 
দিন হইলে ভাগিনা | 
গানটির প্রথম দিকৃটা একেবারে মন্দ নয় ; শেষের দিকে পদ পড়িয়! 
অনেকের নৈতিক মনে আঘাত লাগে। মামি ও ভাগিনার এইরূপ 
আপত্তিকর সন্ঘদ্ধের মধো আমর! কানাইধামালীর গনের গন্ধ পাইতে 
পারি। ধাহারা কৃষণধামালীর গানকে অশ্লীলতার নামান্তর মাত্র 
বলিয়াঃছন, ঠাহার| ইহাতে উল্লপিত হইয়া উঠিবেন সন্দেহ নাই। 
পূর্ব্বোক্ত গনের সহিত দক্ষিণবঙ্গের একটি গানের অপূর্ব মিল 
আছে। এস্থলে তাহার সামান্য কিছু উল্লেখ করিতে প্রয়াস পাইতেছি । 
গানটি খুল্না জেলায় শোনা যায়। 


বন্ধুর বাড়ী আমার বাড়ী, 
মধ্যে ্ষীরে! নদী । 
উড়ে যাবার আশায় করি 
পয়ার (২৬) দেয় নি বিধি ॥ 
বন্ধুর বাড়ী আমার বাড়ী, 
মধ্যে নলের বেড় । 
হাত বাড়ায়ে পান দিতে 
দেখলে! দেওর (২৭) ছোড়া ॥ 
পান দিলাম নুপারী দিলাম, 
চণো দিয়ে খাইও | 
আর(ও) কোন কথ! থাকে, 
কদমতলায় যাইও । 


(২৫) পাঙখাশ পাখা । (২৯) পয়ার অর্থেও “পাখ।” বুধায়। 
(২৭) দেবর, রঙ্গপুরে “দেওর!” বলে। 











ফাল্ধন_-১৩৪৭ ] 


উত্তরবঙ্গের একটি গানের মধ্যে পাওয়া যায়__ 
আমার বাড়ী যান হে দেওরা, 
থাইতে দিব পান। 
আর শুইতে দিমো (২৮) শীতল পাটি 
যৈবন করব দান | 
পূর্ববঙ্গের “মহুয়”র গানের মধ্যে একস্থানে দেখিতে পাই ।-- 
অতিথ বলিয়া যদি আহও আমার বাড়ি। 
বাপেরে কহিয়া আমি বইতে দিতাম পিড়ি ॥ 
২) দমে দি (পু) ০দিব। | 





2 ভ্ন্ন চ্ক্লিজ্া আনে 


১০২৪৮ 


গুইতে দিতাম শীতল পাটি বাট! ভর! পান । 
আস্ত ধদি সোনার অতিথ যৌবন করতাম দান 
আলোচনা! করিতে করিতে আমর! এমন স্থানে আসিয়! পড়িয়াছি 

যেস্থান হইতে চলিয়! আসা বড়ই কগুসাধ্য। পাঠকের ধৈর্যের বাধ না 
ভাঙ্গিলেও প্রবন্ধের গণ্ডী পার হইয়া যাইবে বলিয়া আশঙ্কা হয়। 
পল্লীর প্রেম-গীতি-কথা বলিয়া! শেষ করা যায় না। কৃষ্ণধামালীর গানও 
যে উক্ত প্রেম-গীতির অংশম্বরাপ, তাহা নিঃসংশয়ে বলা চলে। তবে 
কৃষ্ধামালীর গান যে প্রকৃতভাবে কাহাকে বলে, তাহা এখনও জানা যায় 
নাই-_কল্লিত বিষয় কি না তাহাও বিচারলাপেক্ষ। 


যে জন চলিয়া যাবে 
কবিকম্কণ শ্রীঅপূর্ববকৃষ্ণ ভট্টাচার্য্য 


তোমারি তরে মা সঁপিয়! জদয়, তোণাঁরি তরে মা সঁপিয় দেহ, 
সকল দুঃখ বরিয়! জীবনে থে জন একদা! চলিয়া যাবে 
অশ্রুপথের বেদনা মাখিয়া শুন্ করিয়া গেহ__ 

বল মা আমারে, তুমি কি সেদিন শোক-সঙ্গীত গাবে? 


একটি জীবন তোমারি সেবাঁয় সহিয়া কত না নির্ধ্যাতন 

আঁধার করিবে আপনাঁর যশ মরুর ধুলায় তোমারি তরে, 
শ্নেহবঞ্চিত করিবে তাহারে কত আপনার জন, 

অশ্রু তোমার রাখিবে কি মাগো তারি বুকের "পরে ! 


যদিও সমাজ ঠেলে দেবে পায়ে, অরাতি দণ্ড দেবে গো এসে 
ভগ্ন বীণাঁয় তুলিয়। দ্রীপক তুমি কি জাঁগাবে বহ্নিশিখা? 
স্বার্থের লাগি অরাঁতির কাছে ত্বণ্য হলেও শেষে__ 

তোমার সেবায় জীবন সঁপিয়া পরেছে হোমের টীকা । 


মরমে তোমার স্বর্গ-প্রেমের জড়ায়েছে তার স্বপ্ন যত; 

এই ধরণীর আলোক-ছাঁয়ার হেরিয়াছে রূপ তোমারি কোলে; 
জীবন-গ্রভাতকুঞ্জে প্রথম শুনেছে কাঁকলী কত, 

তোমারি তরে মা দুঃখ বেদনা! সকল ভাবনা ভোলে । 





দখিনা বাতাস ছিল তাঁর সাথে সোনালী মেঘের! করিত খেলা; 
নীরব রাতের বাতায়নে বসি” শুভ্র তারকা করিত গান। 
স্বপনের রাণী ঘুমেতে তাহার ভাসাঁত স্থখের ভেলা, 
চম্পকবাঁস শৈশবে তাঁর জুড়াতি কোমল প্রাণ । 


শেষের সময় দেবতার কাছে আত্মকাহিনী জানাবে যবে) 
তোমার কথাটি ফুটিয়া উঠিবে তাহারি সকল কথার মাঝে । 
পিছল পথের রিক্ত পথিক কহিবে করুণ রবে 

“আশিস্‌ কর মা, ফিরিয়া আসিতে পারি যেন তোর কাঁছে। 


হয় তো ফিরিতে পারিব না আর তব গৌরব প্রভাতে আমি, 
বন্ধুরা সব রহিবে তোমার বিজয়পতাঁক। উচ্চে ধরি+ ; 

ধন্য তাঁহারা-_অভাগা! শুধুই স্থদুরের পথগামী-_ 

সেদিন তুমি কি নয়নের জল ফেলিবে আমারে স্মরি” ? 


তোমার লাগিয়া যে জন নিজেরে যুগের খড়গে দিবে গো বলি; 
ওপারে তাহার মহিমামুকুট গর্বে রচিবে স্বর্গলোক । 

যে জন একদা চলিয়া! যাবে মা! শত লাঞ্ছনা! দলি? 

তাহারি বিরহে মুক্তি-দিবসে করিবে কি তুমি শোক? 


ইউরোপীয় ও ভারতীয় সঙ্গীতকলা 


শ্রীবীরেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী এম-এল-লি 


সঙ্গীতকলার আলোচনা বর্তমানে আন্তজাতিক সমজদা'রদের 
পক্ষে অতি কঠিন হয়ে পড়েছে। সঙ্গীতকলার কোন 
পরিচিত ধ্বনির অনুকরণ মাত্র নয়, গ্রীক মৃত্তি বা রিনে্সীস 
যুগের চিত্রের মত একে 1758115110 ভাবে বিচাঁর করা চলে 
না। জগতে নিখিল ধ্বনি-বিতানকে স্থসম্বন্ধ করার 
সাধনার নান! সভ্যতার কৃতিত্ব বা সারবন্তার পরিচয় পাওয়া 
ষায়। এ সমন্ত বিচিত্র ধ্বনিকে ছন্দের স্ত্রে গ্রথিত না 
করতে পারলে সঙ্গীত বা স্থরবীথিক1 কলালীলার দাবী করতে 
পারে না। নিগ্রো সঙ্গীতের উল্লোল উদ্ভটত্বকেও এফুগে 
মর্যাদা দেওয়া হয়েছে কারণ ইউরোপের দানের ভিতর 
একটা বিরাট অপূর্ণতা ও শৃন্টতা আছে। এই শুন্যতা পূরণ 
এধুগে অবশ্থস্তাবী হয়েছে । 

জার্মেণ কলাবিদ্‌গণ সঙ্গীতকলাকে “47065009017 
0? ৪1] ৪:05” বলে থাকেন। এর মানে হচ্ছে সঙ্গীতই 
সকল 91এর লক্ষ্যস্থানীয়-_-সকল কলাই সঙ্গীতকলার মত 
৪1090:80 নিরুপাধি বা বস্তুনিরপেক্ষ হওয়ার চেষ্টা করছে। 
ইউরোপে 5816০ 29তকে মর্যাদা দিতে ইদানীং 
কোন আর্টই চেষ্টা করে না। সঙ্গীতে বাক্যটি প্রধান নয়__ 
বিষয়বস্তর মূল্য এতে কম-স্থুরের মৃল্যই সবচেয়ে বেশী। 
কাজেই সুরের রাজ্যে প্রবেশ করে” ইউরোপীয় সঙ্গীত বায়বীয় 
অবান্তবের ক্ষেত্রে এসে পড়েছে । সঙ্গীতে ধ্বনি-্ূপ রচনার 
08621 চরম ও শেষ কথা। সুরের 796০7 রচনা 
করাই হ'ল উচ্চসাধনার ব্যাপার। এ পথে ইউরোপ বেশী 
দুর যায় নি। অবস্তব তন্ত্র 7051:200 1051০ ইউরোপের 
ইতিহাসের গোড়ায় ছিল। ক্রমশ: তা প্রাণে দুঃসহ হয়ে 
পড়ল । এজন্ত সঙ্গীতকে ০০০7৪র সহিত যুক্ত ক'রে 
$/221767 এই কলাকে ব্তুতান্ত্রিক করে তুল্লেন। গল্পের 
হের ফের, উত্থান পতন, সুখ দুঃখকে সুরের ভাষায় অন্থকরণ 
করাই হল বড় কাঁজ। এভাবে একবার বাস্তবতার ক্ষেত্র 
হ'তে ক'রে সঙ্গীতকে ইউরোপ আবার বস্তবাদের খাঁচায় 
পুরেছে। ৰ 
এই গেল একদিক; অপরদিক হচ্ছে ইউরোপের সঙ্গীতের 


রথ এক পক্ষীরাজ ঘোড়ায় চলে না। সাতটি হোক না হোক্‌ 
অনেক ঘোড়ায় তাঁকে চালান হয়--সে সব সাঁতদিকে ছোটে । 
10112 সহজ ভাষায় বলেন “17 9650911) 1000510 1 
15 006 01101569101 10695 1201191 01217 11001510051 
10695 ড/1)101) 10৮6 5[১6০19] ৮৪10০”, এরূপ অবস্থায় 
স্থরের 4900০০72০৮র রাজ্যে ইউরোপ আত্মসমর্পণ করেছে। 
এটা নিক্স্তরের কেলি_-উচ্চ স্তরের আরোহণ নয়। 
ভারতীয় সঙ্গীতে ও ধ্বনির বৈচিত্র্য আছে, কিন্তু সেগুলো 
একটি পুম্পহারের মত কল্পিত হয়ে, কোন রাগিণীর স্ুষমাকে 
মুকুরিত ক'রে তোলে । তাতে পাচমিশেলি ভাব নেই। 
বস্ততঃ ইউরোপীয় সঙ্গীতের ভিতর প্রক্যের মধ্যে বৈচিত্র্য ও 
ভারতীয় সঙ্গীতে বৈচিত্র্যের মধ্যে প্রক্যই লক্ষ্য করবার বিষয়। 

তত্বের দিক হ'তে এই ছুটি কলাকে বিচার করতে গেলে 
আরও গভীর জায়গায় উপস্থিত হ'তে হয়। ইউরোপীয় 
সঙ্গীতে বৈচিত্র্যই মুখ্য । এর মানে হচ্ছে ইউরোপে 
প্রত্যেকটি ধ্বনির একটা ইন্দ্রিয়গত বা '০১০০০৬০, স্বাতস্ত্র 
স্বীকৃত হয়েছে । এই স্বতন্্ৰ ধ্বনিগুলির ঘাত-প্রতিঘাতকে 
বাড়িয়ে তুলে একটা সাময়িক 56175816101) জাগ্রত ক'রে 
চিন্তকে বিক্ষু্ধ করাই হল এ শ্রেণীর সঙ্গীতকলার উদ্দেশ্টু। 
তত্বের দিক হতে ভারতীয় কল্পনা একেবারে বিপরীত । 
ইউরোপ “নাদের সন্ধান নিতে হাটে মাঠে ছুটে গেছে। 
পাথরের টুকরোর মত সে সব সাজিয়ে সঙ্গীতকারেরা 
০8081005০ করে রেখেছে । কাঁণে এ সবের মিশ্র একটা 
কিছু রচনা করাই হল ইউরোপের বাহাছুরী। 

অপরদিকে হিন্দু কল্পনায় “নাদ? কল্পনা অতি সুদুরগামী 
ব্যাপার। তার মূল তুরীয় স্তরে নিহিত। সমগ্র ব্যাপারটি 
301১061%০ এবং তন্ত্রশান্ত্রের প্রতিপাদ্য গভীর তত্ব। 
কাজেই হিন্দু সঙ্গীতের ভিতর রাগ রাগিণী যে এঁক্যকে 
বহিরঙ্গ রূপ দিয়েছে-কোঁন বিশিষ্ট রূপ ও রসের লীলা 
প্রসঙ্গে হিন্দু অনুভূতি সে এঁক্যকে তুরীয় স্তরে অগ্গুভব 
করেছে এবং সঙ্গীতকলার বহিরঙগ ধবনিসুষমার রদ্বকদস্বকেও 
সে আলোকেই এক্যের পাদপীঠে স্থাপন করেছে । 


৩২৬ 


ফান্তুন-_-১৩৪৭ 


হিন্দুকল্পনা সকল ধ্ৰনির ডিতর এক্য অনুভব করেছে। 
মতঙ্গ বলেন__“সা চ একা অনেক! বা একৈব শ্রুতিরিতি” 

ধ্বনি এক--আবার তার অণুরণন অসীম । বর্ণ যেমন 
শুধু সাতটি নয় সীমাহীন, তেমন ধ্বনির রণনও বাইশটি বা 
ছয়ষট্ট শুধু নয়-_ তা? অনন্ত । ব্যবহারিক দিক হ'তে হিন্দু 
সঙ্গীতকার বাইশটি শ্রুতিকে মুখ্য করেছে-_কিস্ত তত্বের 
দিক হ'তে তা” অসীম। এ রকমের একটা! বিরাট অঙ্ভূতি 
হিন্দু সঙ্গীতকলার ভিতিস্থানীয় হয়েছে। 

তা” ছাড়া ভারতে ধ্বনিকে যে তুরীয় মর্যাদা দেওয়া 
হয়েছে--এমন আর কিছুকে দেওয়া হয় নাই। সঙ্গীত- 
রত্বাকর মতে “নাদ দুপ্রকার আহত ও অনাহত। যা” 
আঘাত দ্বারা উৎপন্ন হয় তাহা! আহত-_যা” স্বতই উৎপন্ন 
হয় তা অনাহত। শারদাতিলকতন্ত্রমতে পরা-শক্তি হইতেই 
নাদের উদ্ভব। স্ৃষ্টিকালে নাদ হতে উৎপন্ন মাতৃকাঁর 
অ-উ-ম হতে ব্রদ্ধা বিষুণ শিব উৎপন্ন হয়েছেন। রত্বাকর 
মতে এই দেবতারা নাদাত্মক | নাঁদ হ'তে ষড়জাদি ধন্য ক 
স্বর একদিকে- অন্যদিকে বর্ণাআ্বক শব্দ সমূহ উদ্ভূত হয়েছে । 
ধন্াত্মক নাদ হচ্ছে সঙ্গীতের উপাদান এবং বর্ণাত্মক 
নাদ হচ্ছে মন্ত্রা্দির পরিপোষক। 

হিন্দু সঙ্গীতকারগণ ধ্বনিকে তুরীয় শক্তিরই রূপান্তর 
বলেছেন । কাজেই বিচ্ছিন্ন প্রাকৃতিক যাদুবর হ'তে প্রাপ্ত 
ধ্বনির টুকরোগুলির 11750170101) হিন্দু সঙ্গীতকারকে 
প্রবৃদ্ধ বা অন্দোলিত করেনি। নাদ অবাঙমনসো- 
গোচর-_“যতো বাচ্যে নিবর্তন্তে অপ্রাপা মনসাসহ” | তৃমার 
মাঝে তীরা ধ্বনির উৎস খুঁজেছেন এবং সৃষ্টির আদিতে 
ধ্বনিকে শক্তিরূপী প্রবর্তক বলে লক্ষ্য করেছেন। এরূপ 
অবস্থায় ধ্বনিলালিত্যের সহিত তুরীয় অখণ্তার যোগ 
স্থাপিত হয়েছে এবং ম]নুষের অন্তর্লোকেও অনুভূত অনাহত 
স্থুরের সথযম! ছায়াপাত করেছে। 

ফলে সঙ্গীতকারগণ ধ্বনির ভিতর দিয়ে ধ্বনির 
অতীত লোকের সহিত সামাজিকতা করতে লোকদের 
উৎসাহিত করেছেন। এটা হ'ল সঙ্গীতের দ্বারা সিদ্ধ 
হওয়ার পথ । 

ইউরোপীয় সঙ্গীতকলার শ্রী জাগ্রত হয় [21177017)' 
রচনীর ভিতর | [7811)0179র ভিতরকার মূল স্থত্র হচ্ছে 
বিরোধ বা ০07551-_-ত1 একান্তভাবে ব্যতিরেকী ব্যাপার 


ই্উল্লোগীম্স ও ভাব্রভীজ্র সঙ্গীভক্কল্লা 


২৩২ 


গ্রতিমুহূর্ত নৃতন নূতন বিরোঁধ সৃষ্টি করে” একটা বিরোধ- 
মূলক তান-হ্ট্টির মূলে আছে আমাদের খরন্দ্রিয়িক 
অশন্ুভূতিকেই কান্তিক মর্যাদা দেওয়া। এর জন্য কোন 
উচ্চতর প্রেষণাঁর প্রয়োজন হয় না। কোন ইউরোপীয় 
আলোচক বলেন--”11) ৮/651511 200510 076 5811517 
110695 219. 002069 107 100 100017)917691 110100192 
০ 070 17917177017, 0? 0116 00011661101) 2170 
115 0109 01015025101 11091251861)61 00217 11001510091 
110655 ৮/1)101 17856 51060191] ৮1006, 

ভারতীয় সঙ্গীতে এইরূপ বৈপরীত্যের ইমারত তৈরী হয় 
না__তা অন্বয়ী বা সামঞ্জস্তের প্রেরণায় মৃত্তিমান। ভারতীয় 
কলার উদ্দেশ্য রসের এশ্ব্্য উদবাটন। মানুষের অন্তরেই 
সকল রূপবীথিকার শেষ আবেদন চলে । সেই গভীর প্রদেশে 
উৎসারিত রসকদম্থ সাময়িক ব্যাপার নয় এবং ক্ষণিক 
উত্তেজনাঁরও ব্যাপার নয়। সে সব চিরন্তন। অসীম মানবত্ব 
স্ষ্টির শেষ পুলক পর্যন্ত এই সমস্ত রসপ্রেরণায় শিহরিত 
হবে। শৃরঙ্গার, করুণ, রৌদ্র প্রভৃতি রস কোন বিশেষ 
কাল স্থান বা জাতির আকস্মিক সম্পদ নয়। কাজেই এসব 
চিরন্তন ও চিরনবীন সৌনর্যযস্বপ্রকে জাগ্রত করতে না 
পারলে সকল রচনাই ক্ষণভঙ্কুর হয়ে পড়ে। ইউরোপের 
ফ্যাসন দিন দিন বদ্লাচ্ছে__ অপূর্ণতা অতৃপ্তি ও অধীরতায় 
পাশ্চাত্য সঙ্গীত পরিপূর্ণ--এজন্য সকল জাতির এমন কি 
নিগ্রোদেরও কলা লালিত্য হ'তে উপকরণ সংগ্রহ করতে 
ইউরোপ উৎসুক | 

ভারতীয় কলা রাঁগরাগিণী করনা করে, এক একটি 
মনোবিহারের রাজপথ রচনা করেছে । এসব বদলান চলে 
না, যদিও নানা আলঙ্কারিক বিভবে এদের স্থশোভন কর! 
চলে। সে স্বাধীনতা! ভারতের প্রতি রচনায় আছে। একই 
রাগিনী বিভিন্ন গায়কের কণ্ম্বরে একটা নৃতন জ্যোৎস্না ্নাত 
সুষমা মণ্ডিত হয়__কিন্ত কেউ মূল রাগিণীকে ধবংস করতে 
চায় না। এজন্য মার্গ বা ০18551581 সঙ্গীতের রাগ রাঁগিণী- 
গুলিকে এদেশের কলাবিদ্গণ অপৌরুষেয় বলেন। দেশী 
সঙ্গীতের বৈচিত্র্যের পশ্চাতে মার্গ সঙ্গীতের চিরন্তন প্রেরণ! 
বর্তমান__একথা তুললে চল্বে না। মার্গসঙ্গীত ইন্জিয়ের 
জড় আবরণ ভেদ করে? গভীরতর অধ্যাত্ম স্তরে উপস্থিত 
হয়-_যে ম্তরে জরা মরণ নেই--যা! চিরনবীন ও চিরপ্রফুলল। 


২৩২৬৮ 


এজন্য এ শ্রেণীর সঙ্গীত সমগ্র জাতীয় চিত্তকে সংহত করে। 
মা্গসঙ্গীতের উৎপত্তি ও আদর্শ এজন্যই দিব্য বল! হয়। 
এ সঙ্গীত মুক্তিদান করে, ধর্মস্থানীয় হয়ে পড়েছে ভারতবর্ষে । 
অন্বয়াত্মক স্থরহিল্লোলে অর্থাৎ10919তে চিত্ত একাগ্র হয় । 
যে জায়গা হ'তে নাদের আবির্ভাব সে জায়গার সহিত 
সামাজিকতা এন্প একোম্ুখী শব্দকুগ্ডলী সম্ভব করে। 
সকল দুঃখ ও পীড়ার অপর পারেই মুক্তি । ধীরে ধীরে চিত্তকে 
এমনি তাবে আন্দোলিত করে” ভারতের সঙ্গীতকলা হৃদয়ের 
সকল গ্রন্থিকে ভেদ করে দেয়-_“ভিগ্যতে হৃদয় গ্রন্থি।৮ এই 
আরোহণ আনন্দের সহম্্ারের দিকে নিয়ে যায়। অপরদিকে 
, ছিন্নবৃন্ত অবরোহণ সাময়িক সঙ্গীতকে কতকগুলি জমকাল 
উত্তেজনা! ও মনোহর বুজরকীর ভিতর দিয়ে নিয়ে যায়__ 
বিরোধী ব্যঞ্জনার সাহায্যে-_যা ক্ষণভঙ্গুর 50775980101) স্থষ্টির 
সাহায্যে মুগ্ধ করে। এরকম হ্ষ্টির স্থানও হিন্দু রচনায় 
আছে। শ্াস্ত্রোক্ত দেশী সঙ্গীতের উন্মাদনার মূলে আছে 
এই জাগ্রত ধবনির নব নব ব্যৃহ রচনার প্রয়াস। 

আধুনিক চিত্র ও গান চায় বস্ততন্ত্র এরহিকতার মায়ায় 
আচ্ছন্ন হতে _এই ভাবেই ইউরোপীয় সঙ্গীতকলা সমাদূত 
হচ্ছে। এই শ্রেণীর কলা চাঁয় রূপরসগন্ধের স্নায়বিক 
56115801017-_চিত্তের পরম শান্ত ও শিবভাব নয়। 'অথচ 


স্ডাব্রভনহ্ব 


| ২৮শ বর্-- ২য় খণ্ড--৩য় সংখ্যা 


আহত ধ্বনির সাহায্যে অনাহততে না পৌছলে তুরীয় 
গমকের সাহচর্য্য লাভ হয় না--অথওড হৃষটি খোলে না। 
রাগ রাগিণীর ভিঠর দিয়ে এই পরমলোকে বিচরণ মানুষের 
একটা অধিকার । ধিনি রসম্বরূপ-_তী”কে পেতে হলে রসের 
অথগড প্রকাশের পথে যাওয়া প্রয়োজন । ভারতীয় সঙ্গীতের 
ইতিহাসে ভক্তদের সঙ্গীতকাররূপে দেথ্তে পাওয়া যাঁয়। 
বস্ততঃ সঙ্গীতকলাকে শুধু কর্ণের বহিরঙ্গ সেবার বস্তরূপে কেউ 
ভারতে দেখে নি। চিত্তের সকল দিককে ও মানবিকতার সকল 
আদর্শকে বিকশিত করে" ভারতীয় কলা অগ্রসর হয়েছে। 

ভারতীয় সঙ্গীতকল! সাময়িক ও দেশী সঙ্গীতকেও স্থান 
দিয়েছে__তাঃ না হ'লে অধিকাঁর ভেদে প্রত্যক্গ অনুভূতি ও 
রসচর্চা ব্যর্থ হয়। অরূপের পথে রূপের সঙ্গেও বোঝাপড়া 
প্রয়োজন । এ ছুটিই অঙ্গাঙ্গী। এদেশেও বৈচিত্র্য ও বহুত্ের 
পথ বজ্জিত হয় নি, এজন্য ইউরোপীর সঙ্গীতকলাঁয় শাশ্বত 
সংযম না থাকলেও হিন্দুকলা তাঁ'কে গ্রহণ করতে পারে-_ 
বথাবোগ্য বহিরঙ্গ শোভনতা আরোপ করে। তাতে 
ইউরোপীয় কলাও সমুদ্ধ হবে এবং ভারতীয় সঙ্গীতও 
আধুনিক বাস্তবতার সহিত সঙ্গত হয়ে মহীয়ান্‌ হবে। এরূপে 
এ ছুটি কলার যুগ্নকরের সম্বদ্দনাঁয় মানব চিত্তের আনন্দ 
উপচিত হবে সন্দেহ নেই। 


নিখুত প্রেমেরি দায় 


প্রীকালাকিস্কর সেনগুপ্ত 


তাঁলবেসো মোরে ভাল বাসো যদি নিখুঁত প্রেমেরি দায় 
দুরাপ যে প্রেম কৈবল্যের অমল অহৈতুকী-__ 

বাসিও আমারে দেহের কিনারে ভাসি প্রেম দরিয়ায় 
অমানিণীথের চকোর যে প্রেমে পাগল উর্ধ মুখী । 

ক্ষমা! কোরো প্রিয় ভাল বাসিও না ফুল্প হাসির রেখা 
বাসিও না ভালে! সরস নধর ডালিম লালিম! ধর 


কপোলে কপালে কর চরণের গতিবিভঙ্গে লেখা 
নব সঞ্চার এ তন্তু লতায় অতনুর মর্মখর | 
ফাগুনের প্রেম কুস্বমকোমল শুকায় ফুলেরি মত 
মলয়ের প্রেম মিলাঁয় হেলায় তাহাঁরি বিদায় সনে 
মেঘমল্লারে বরষার প্রেম পল্ক মেঘেরি মত 
চোখের মোহের মরীচিক! প্রেম শুধু পিপাসার ক্ষণে। 


হৃদয়ের সনে অটুট বীধনে বীধা যাঁয় পাঁকে পাকে 
দিবে যদি সখ! দাঁও সেই প্রেম বাঁধা দাও আপনাকে । 





গন চেবেত 


চগ্তীমগ্ডপ 


(পাঁচ) 

গল্লে শোনা যায় যমজ ভাইয়ের ক্ষেত্রে বমদূতেরা রামের 
বদলে শ্তামকে লইয়া! যায় শ্ামের ব্দলে আসিয়া ধরে 
রামকে। তাহাদের অনুকরণে হইলেও ক্ষেত্র বিস্তৃততর 
করিয়া লইয়া রাম অপরাধ করিলে মানুষ অতিবুদ্ধিবশতঃ 
প্রায়ই শ্যামকে লইয়াই টানাটানি করে। পুলিশও মানুষ, 
স্থুতরাং এ ক্ষেত্রেও তাহার ব্যতিক্রম হইল না। পরদিনই 
একটা পুলিশ-তদস্ত হইয়া গেল। অনিরুদ্ধ আক্রোশের 
কারণ দেখাইয়া ছিরু পালকে সন্দেহ করিলেও পুলিশ আসিয়া 
মাঠ-আগলদার সতীশ বাউড়ীর বাড়ী খানাতল্লাম করিয়! 
তছনছ করিয়৷ তাহাকে টানিয়া আনিল। ঘণ্টার পর ঘণ্ট! 
লোকটাকে জেরা করিয়৷ নাজেহাল কিয়! অবশেষে ছাড়িয়া 
দিল। অবশ্য একবাঁর ছিরু পালের খাঁমার-বাড়ীটাও ঘুরিয়া 
দেখিল-_কিন্ত সেখানে দুই বিঘ1! জমির আধ-পাঁকা ধানের 
একগাঁছি খড়ও কোথাও মিলিল ন!। 

পুলিশ আসিয়া গ্রামেরচণ্ডীমগ্ডপেই বসিয়াছিল--গ্রামের 
মণ্ডল মাতব্বরেরাও আসিয় চন্ত্রমগুলের নক্ষত্র সভাসদের 
মত চারিপাশে জমিয়৷ বসিয়া উত্তেজিতভাবে ফিস ফিস 
করিয়া পরস্পরের মধ্যে কথা বলিতেছিল-ছিরু পাল 
বসিয়াছিল-_ পুলিশের অতি নিকটেই অত্যন্ত গম্তীরভাবে। 
তাহার আকর্ণবিস্ত মুখগহ্বরের পাশে চৌয়ালের হাড় 
দুইটা কঠিন ভঙ্গিতে উচু হইয়া! উঠিরাছিল। অনিরুদ্ধ 
সন্মুখেই উপু হইয়! বসিয়াছিল। সে মাটির দিকে চাহিয়া 
ভাবিতেছিল। তদন্ত শেষে পুলিশ উঠিল। সঙ্গে সঙ্গে 
অনিরুদ্ধও উঠিল, সে চাহিয়া না দেখিয়াও বেশ অনুভব 
করিতেছিল যে সমস্ত গ্রামের লোক কঠিন প্রতিহিংসা- 
তীক্ষ দৃষ্টিতে তাহার দিকে চাহিয়া আছে। প্রত্যক্ষ যন্ত্রণা 
সহ কর! যাঁয়-_নিরুপায়ে মানুষকে সহাও করিতে হয়-_কিন্তৃ 
যন্ত্রণার ভাবী ইঙ্গিত মাচুষের পক্ষে অসহা। সে পুলিশেরই 
পিছন পিছন আসিয়! ডাক্তার জগন্নাথ ঘোঁষের ডাক্তারথানার 
দাঁওয়ার, বসিল। ডাক্তার -ওখানে যায় নাই, সে রোগী 


বিদায় করিতেছিল। অনিরুদ্ধকে দেখিয়৷ হাসিয়া সে 
বলিল__কি রে, কৌটোর মধ্যে ঢাক খুঁজে পেলে না 
দারোগাবাবু? 

অনিরুদ্ধ খু'টিতে ঠেস দিয়া একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া 
বলিল--না। 

মিনিম গ্লীসে ওষুধ ঢালিয়া_গ্লাসটা উচু করিয়া ধরিয়া 
ওষুধের পরিমাণ দেখিতে দেখিতে ডাক্তার বলিল- ু'খান৷ 
দরখাস্ত ক'রে দিচ্ছি দীঁড়া; একখানা পুলিশসায়েবকে, 
একখানা এস-ডি-ও কে। জমাদার-ছিরু পালের এক- 
গ্লাসের ইয়ার । 

অনিরুদ্ধ বলিল- আজ্ঞে না ডাক্তারবাবু; ও আর থাক। 

ডাক্তারের চোঁথ মুহূর্তে মিনিম গ্লাস হইতে অনিরুদ্ধের 
মুখের উপর নিবন্ধ হইল। পরমুহূর্তে হাসিয়া ডাক্তার 
বলিল__-ভয় পেয়ে গেলি-_এরই মধ্যে? 

অনিরুদ্ধ হাত ছুইট! উপরের দিকে তুলিয়া দেহথানাফে 
যথাসম্ভব টানিয়া হাই তুলিয়া আলশ্য ভাঁডিয়! লইল-_তাঁরপর 
বলিল--ভয় আর কি ডাক্তারবাবুঃ তবে ও-সব ঝঞ্চাট হাঙ্গাম৷ 
কত পোয়া বলুন? হাকিম পেস্কার উকীল মোক্তার, 
আদালত ঘর-_এ আর কত করব। তার চেয়ে দেখাই 
যাক_-কতদুর কে করতে পারে! ধরতে যেদিন পারব 
ডাক্তারবাবুঃ সেদিন লোহা-পেটা ক'রে ছেড়ে দোব। 

ডাক্তার বলিল--তাতে তোর বিপদ হবে অনিরুদ্ধ । 

অনিরুদ্ধ তাচ্ছিল্যভরে হাসিল_বিপদ ? ছিরু পালের 
গাদা শরীর দেখে ভাবেন বুঝি ছিরু পাল সাক্ষাৎ ভীম? 
ডাক্তারবাবুআমি কামারের ছেলে- আগুনের আঁচে- লোহা 
পিটে আমি মানুষ। ধরতে পারলে--ওর হাড় আমি 
পিষে ফেলব। ক্রোধে প্রতিহিংসার অনিরুদ্ধ ভীষণ 
হইয়! উঠিল। 

ডাক্তার তাহার সে মৃ্তি দেখিয়! শিহরিয়া উঠিল, 
বলিল-_না_ না । বিপদ তোর তাতেই হবে। চোর হোক 
আর ডাকাত হোক-_-খুন কিংবা সাংঘাতিক জখয় তুমি 


৩২৪ ৪৮ এ 


২2২2 


তাঁকে করতে পার না। তাতে উদ্টে তোমারই সাঁজা 
হয়ে যাবে। 

_কি হবে? জেল, না হয় ফাঁসী? তাই স্বীকার! 
অনিরুদ্ধ উঠিয়া! পড়ি, পিছনের দিকে ছুটি হাত নিবদ্ধ করিয়! 
ধীর দৃঢ় পদক্ষেপে ওই চত্তীমণ্ডপটার সম্মুখ দিয়াই সে 
আপনার বাড়ীর দিকে অগ্রসর হইল। স্থির দৃষ্টি সম্মুখের 
দিকে রাখিয়া সে চলিতেছিল--যেন কোনদিকে তাহার 
দবকপাত নাঁই। 

চণ্ডীমগ্ুপে তখন প্রচণ্ড কলরব উঠিতেছিল। পুলিশ 
চলিয়া যাইবার পরই সমবেত প্রত্যেক জনটি আপন আপন 
মন্তব্য ঘোষণা আস্ত করিয়াছে; কেহ কাহারও কথা 
শোনে না দেখিয়া প্রত্যেকেই কস্বরকে যথাসম্ভব উচ্চ 
করিয়া তুলিয়াছে। সদেগাপ সম্প্রদায়ের কেহই অবশ্ঠ 
শ্রহরি ঘোষকে সু-্চক্ষে দেখে না; কিন্ত অনিরুদ্ধ কণ্্কার 
যথন পুলিশে খবর দিয়া তাহার বাড়ী খানাতল্লাস করাইল, 
বাড়ীতে পুলিশ ঢুকাইয়া দিল, তখন অপমানটাকে তাহারা 
সম্প্রনায়গত করিয়া লইয়া উত্তেজিত হইয়া উঠিয়াছে। 
বিশেষ করিয়া সেদিন অনিরুদ্ধের সমাজকে উপেক্ষা করার 
ওদ্ধত্যের অপরাধের ভিত্তির উপর আজিকার ঘটনাটা 
ঘটিয়া বিষয়টা উচ্চতায় এবং গুরুত্বে খুব বড় হইয়া উঠিয়াছে। 
স্পষ্টবত্ত। দেবদাস ঘোষের গলাটা যেমন ততীক্ষ তেমনি 
উচ্চ--সে মাইনর পাস- গ্রাম্য পাঠশালায় পণ্ডিতি করিয়া 
থাকে--সকল কলরবের উর্ধে তাহারই কণ্ঠস্বর শোনা 
যাইতেছিল। দেব্দাস সমাজতত্ব লইয়া আপন মনেই দীর্ঘ 
একটি বন্তৃতা দিয়া চলিয়াছিল-_-কামার ছুতোর, ধোঁপা 
নাপিত, কাজ করব না বললেই তো হবেনা । এর জন্টে 
রীতিমত নালিশ চলবে । হাইকোট-_বিলাত পর্য্যন্ত মামলা 
চলবে। এই ধর তোমার চৌকীদার__আগে চৌকীদার 
ছিল জমিদারের হাতে-_গতর্ণমেণ্ট যেই চৌকীদাঁর নিজের 
হাতে নিলে_অমনি জমিদারের কাছায় পাঁক দিয়ে 
চৌকীদারী চাকরাণ জমি বাজেয়াপ্ত করে খাস ক'রে 
নিলে। গ্রামের যে যা কাজ করে-ছাঁড়তে হ'লে তার 
ক্ষতি-পুরণ লাগবে ।, ইয়াকি নয়। 

শ্রীহরি কেব্ল তেমনি গম্ভীরভাঁবে দাঁতে ধলাত চাপিয! 
বসিয়াছিল; এতথানি যে হইবে সে তাহা আশঙ্কা! করে 
নাই। অনিরুত্ধের দুর্দান্ত সাহছসকে সে অস্বীকার করে না, 


ভ্ঞাল্ভ্বম্ব 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় খণ্ড--৩য় সংখ্যা 


তাহীর ভরসা! ছিল- চক্ষুলজ্জার ভয়) গ্রামবাসীর ওই 
বস্তটিকেই ঢালের মত আড়াল দিয়া মে এতকাল স্বচ্ছন্দমত 
বিচরণ করিয়া! 'আসিয়াছে। থানার জমাদার তাহার বন্ধু 
_-সে শ্রীচরির মর্যাদা যথাসাধ্য বজায় রাখিয়াঁও ইঙ্গিতে 
তাহাকে সাবধান করিয়া গিয়াছে। নতুবা এখনই সে 
ছুটিয়া গিয়া অনিরুদ্ধের কণ্ঠনালীটা টিপিয়া ধরিত-_যেমন 
করিয়া অন্ধকার রাত্রে লোকের গোয়াল হইতে পাঁটা- 
খাসীর কগ্ঠনালী রোধ করিয়া হত্যা করিয়া বাহির 
করিয়া আনে । 

অনিরুদ্ধ একট! সুদীর্ঘ নিশ্বাসে শ্বাসম্থলী পূর্ণ করিয়া 
বুকটাকে আরও খানিকটা চওড়া করিয়াই চণ্ডীমণ্ডপটা 
পার হুইয়! গেল। পথে শ্রীহরির খামার-বাঁড়ীতে গুকাইতে- 
দেওয়া! ধান পায়ে পায়ে ওলোট-পাঁলোট করিয়া! দিতে দিতে 
ছিরুর মা অশ্লীল ভাষায় গাল ও নিষ্্রতম আক্রোশে 
নির্শমতম অভিসম্পাত দিতেছিল। অনিরুদ্ধ সেও গ্রাহ্‌ 
করিল না, ধীর দঢ় গমনে সে সমস্ত পথটা অতিক্রম করিয়া 
বাড়ীতে গিয়! উঠিল । 


পদ্ম উৎকণ্টিত দৃষ্টিতে পথের দিকে চাহিয়া! বাহির- 
দরজাটিতেহই দীড়াইয়াছিল। থানা-পুলিশকে তাহার বড় 
ভয়। ছিরুর মায়ের অশ্লীল গাঁলি-গালাজ এবং নিষ্ঠুর 
অভিসম্পাতগুলি এখান হইতে স্পষ্ট শোনা যাঁইতেছিল। 
পদ্মও দুরন্ত মুখরা মেয়ে-__গাঁলি-গালাঁজ অভিনম্পাত সেও 
অনেক জানে । কাহারও স্পই নামোল্লেথ না করিয়া_ 
তাহার অবস্থার সহিত মিলাইয়া এমনভাবে অভিসম্পাত 


দিতে পারে যে শব-ভেদী বাণের মত ঠিক ব্যক্তিটির 


একেবারে বুকে গিয়া আমূল বিধিয়া যায়। কিন্তু আজ 
উৎকগ্ায় শাপ-শাপান্তগুলি মুখে আসিতেছিল না। 
অনিরুদ্ধকে দেখিয়া গভীর আশ্বাসে সে একট! আরামের 
দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিল। পরমুহূর্তেই চোখ মুখ দীপ্ত করিয়া 
সে অনিরুদ্ধকেই বলিল__-আমিও এইবার গাঁল দোব কিন্তু! 

অনিরুদ্ধের অবস্থাটা ঠিক প্লীতের বরফের মত, অনুতপ্ত 
স্থির সংকল্পে সে অবিচলিত-চিত্ত। স্ত্রীকে একটা ঠেলা! দিয়া 
সে বলিল-_না? গাঁল দিতে হবে না--ঘরে চল। 

পল্প ঘরে ঢুকিতে ঢুকিতে বলিল-_না? ঘরে যাব কেনে? 
কানের মাথা খেয়েছ ? গালগুল! শুনতে পাচ্ছ না? 


_ তবে যা, গাল দিগে; গলা ফাটিয়ে চীৎকার 
কর গিয়ে ! 

পল্প গজ গজ করিতে করিতে গিয়। ভাড়ার ঘর হইতে 
তেল বাহির করিয়া আনিয়া বলিল--কি খোঁয়ারটা আমার 
করছে, শুনতে পাচ্ছ না তুমি? পদ্ম ও অনিরুদ্ধ নিঃসন্তান; 
তাই ছিরুর ম! অনিরুদ্ধের নিষ্ুরতম মৃত্যু কামনা করিয়া 
পন্মের জন্য কদরধ্যতম অঙ্গীল ভবিষ্ততের নির্দেশ দিয়া 
অভিসম্পাত দিতেছে । তেলের বাটি পাশে রাখিয়৷ সে 
স্বামীর একখানা হাত টানিয়া লইয়া তাহাকে তেল 
মাথাইতে বসিল। কর্কশ কঠিন হাত আগুনের আচে 
রোমগুলি পুড়িয়া কামানো দাড়ির মত করকরে হইয়া 
আছে। তেল দিতে দিতে পল্ম বলিল--বাঁবা, হাত তো৷ 
নয়, যেন উধো। শুধু হাত নয়-_হাত পা! বুক-_-মোট কথা 
দেহের সম্মুখ ভাগের অনাবৃত অংশটাই এমনি দগ্ধরোম । 

অনিরুদ্ধ সে কথায় কান না দিয়া বলিল-_আমাঁর 
গুপ্তিটা বার ক'রে বেশ ক'রে মেজে রাখবি তো। 

পদ্ম স্বামীর মুখের দিকে চাহিয়া বলিল-_আমারও দ! 
আছে, কাল মেজে ঘষে সান দিয়ে রেখেছি । নিজের 
গলায় মেরে একদিন দুখানা হয়ে পড়ে থাকব কিন্তু। 

কেনে? 

_তুমি খুন-খারাঁপী ক'রে ফাসী যাবে-আর আমি 
“হাঁড়ির ললাঁট ডোমের ছুগগতি” ভোগ করতে বেঁচে 
থাকব না কি? 

অনিরুদ্ধ কথাঁর কোন উত্তর দিল না, কেবল বলিল-_ 
হই! অর্থাৎ পদ্মের হাড়ির ললাট ডোমের দুর্গতির 
সম্ভাবনার কথাট৷ সে ভাবিয়া দেখে নাই, নতুবা ছিরেকে 
ঘায়েল করিয়া জেণ খাটিতে বা হত্যা করিয়। ফাঁসী যাইতে 
বর্তমানে তাহার আপত্তি ছিল না । 

--বারণ করলাম, থানা-পুলিশ ক'র না । কথা কানেই 
তুললে না। কিন্তু কি হ'ল? পুলিশকি করলে? গায়ের 
সঙ্গে কেবল ঝগড়া বিবাদ বেড়ে গেল। আর আমি গাল 
দৌবৰ বললেই--একবারে বাঘের মত হাঁকিড়ে উঠছে-_ননা, 
দিতে পাবি না ।» 

রদ্ধ-ক্রোধ অনিরুদ্ধ বিরক্তিতে অসহিষ্ণু হইয়া উঠিল, 
কিন্তু কোন কঠিন কথা বলিতে তাহার সাহসও হইল না 
প্রবৃত্তিও হুইল না। বন্ধ্যা পল্পফে লইয়া তাহাকে বড় 


গীশ-দেলিভা। 





খাটি 


সস. স্স্থ সথাদ প 


সন্তর্পণে চলিতে হয়, সামান্ত কারণে নিতান্ত বালিকার মত 
সে অভিমান করিয়া মাথা খু'ড়িয়া-__কীদিয়া-কাটিয়া অন্্থ 
বাধাইয়া তোলে-_-আবার কখনও প্রবীণ! প্রৌঢ়া যেমন দূরন্ত 
ছেলের আবদার অত্যাচার সহা করে, তেমনি করিয়! হাঁসি- 
মুখে অনিরুদ্ধের অত্যাচার সহ্য করে-_-অনিরুদ্ধের হাতে 
মার খাইয়াও তখন সে খিল খিল করিয়া হাঁসে। কখন 
কোন্‌ মুখে পদ্ম চলে_সে অনিরুদ্ধ বেশ বুবিতে পার়ে। 
আঁজিকাঁর কথার মধ্যে তাহার আব্দারের স্থুর ফুটিতে 
আরম্ভ কবিয়াছে_ সেইটুকু বুঝিয়াই সে দারুণ বিরক্তি 
সত্বেও আত্মসম্বণ করিয়া রহিল। কোন কথা না বলিয়! 
সে আপনার পা-খানা টানিয়া লইয়া বলিল--কই, 
গামছা কই? 

পদ্ম কিন্তু এটুকুতেও অভিমানে ফৌস করিয়া উঠিল; 
মুখে সে কিছু বলিল না, কিন্তু বিছ্যুতগতিতে মুখ তুলিয়া 
বিচিত্র দৃষ্টিতে স্বামীর মুখের দিকে চাহিল-_পরমুহূর্তেই 
তেলের বাটিটা ভুলিয়! লইয়া উঠিয়া চলিয়া গেল। 

বিরক্তিতে ভ্রকুটি করিয়া অনিরুদ্ধ বলিল-_বেল৷ 
পানে তাকিয়ে দেখেছি? ছেঁয়া কোথা গিয়েছে দেখ। 
তিনটে বাজে । 

গম্ভীরমুখে চকিত দৃষ্টিতে চাহিয়া! বাঁড়ীর উঠানের ছায়া 
লক্ষ্য করিয়া পদ্ম গামছাখানা আনিয়! অনিরুদ্ধের হীতে 
দিয়া বলিল_-কস, আমি জল এনে দি, বাঁড়ীতেই চান 
ক'রে নাও । 

গামছাথান! কাধে ফেলিয়া অনিরুদ্ধ বলিল-_সে দেরী 
হবে পদ্ম। আমি যাব আর আসব। পানকৌড়ির মত 
ভূক ক'রে ডুবব আর উঠব। ভাত তুই বেড়ে রাখ। সে 
ক্রুতপদেই বাহির হইয়া গেল। 

পদ্ম ভাত বাড়িতে রান্নাঘরের শিকলে হাত দিয়া থমকিয় 
দাড়াইল। ভাত ডাল তরকারী সব তো হিম হইয়া 
গিয়াছে । বাবুর মুখে কচিবে কি? বাবু নয়, নবাব। যত 
আয়, তত ব্যয়। কামার কুমোর ছুতার নাপিত স্বর্ণকার 
ইহাদের অবশ্য থরচে বলিয়া চিরকাল বদনাম, কিন্তু উহার 
মত- অর্থাৎ অনিরুদ্ধের মত খরচে পণ্য কাহাকেও দেখে 
নাই। ওপারে সহরে কামাঁরশাল! করিয়! খরচের বাঁতিক 
বাড়িয়া গিয়াছে । এক টাঁকা সেরের ইলিসমাঁছ কে এ 
গ্রামে খাইয়াছে? এখন একটা কিছু গরম না! করিয়া 





৮.৯ 





দিলে নবাব কেবল ভাতে আর হাতে ছু'ইয়াই উঠিয়া পড়িবে। 
খিড়কীর ভোবাটার পাড়ে পদ্প গ্রথম আশ্বিনেই কয়েক ঝাড় 
পেয়াজ লাগাইয়াছিল, সেগুলা বেশ ঝাড়ো গোছে বড় হুইয়া 
উঠিয্লাছে। পেয়াজের শাক আনিয়া ভাজিয়! দিলে কেমন 
হয়? পদ্ম খিড়কীর দিকে অগ্রসর হইয়াই লক্ষ্য করিল-_ 
ছুয়ারের পাশে কে যেন দীড়াইয়া আছে। সাদা কাপড়ের 
ধানিকটা মধ্যে - মধ্যে দেখা যাইতেছে । সে শিহরিয়। 
উঠিল। তাহার মনে পড়িয়া গেল__গত কালের ছিরুপাঁলের 
সেই বীভৎস হাসি ! কয়েক পা পিছাইয়া আসিয়া সে প্রশ্ন 
করিল-কে? কে দীড়িয়ে গো? 

সাড়া পাইয়া মানুষট চকিত গতিতে ঘরে প্রবেশ 
করিল। পন্ম আশ্বস্ত হইল-_পুরুষ নয়, স্ত্রীলোক । পরমুহূর্তেই 
সে স্তস্তিত হইয়! গেল__ছিরুপালের বউ ! চব্বিশ পচিশ 
বসরের মেয়েটি--এককালে সুন্দরী ছিল সে, কিন্তু এখন 
অকালবার্ধক্যে জীর্ণ। চোখে তাহার সকরুণ মিনতি । 
ছিরুপালের বউ বিনা ভূমিকায় ছুটি হাত যোঁড় করিয়া 
বলিল--ভাই কামার বউ ! 

পল্প কোন কথা ৰলিতে পারিল না; ছিরুপালের বউকে 
সে ভাল করিয়াই জানে, এমন ভাল মেয়ে আর হয় ন1। 
কত বড় ভাল ঘরের মেয়ে যে, তাও সে জানে । তাহার কত 
বড় দুঃখ তাও সে চোখে দেখিয়াছে-কানে শুনিয়াছে-_ 
ছিরুপালের প্রহার সে স্বচক্ষে দেখিয়াছে, ছিরুর মায়ের 
গালিগালাজ সে গুনিয়াছে। 

ছিরুর বউ তাহার সম্মুখে আসিয়া ঈষৎ নত হইয়া 
বলিল-_তোমার পাঁয়ে ধরতে এসেছি ভাই। 

দুই প! পিছাইয়! গিয়া পল্প বলিল--না-_না__না ! 

--আমার ছেলে ছুটিকে তোমর! গাল দিয়ো না ভাই) 
যে করেছে তাঁকে গাল দাঁও-_কি বলব আমি তাতে ! 

ছিরুপালের সাতটি ছেলের মধ্যে দুটি মাত্র অবশিষ্ট। 
তাও পৈত্রিক ব্যাধির বিষে জর্জরিত- একটি রুগ্ন, 
অপরটি প্রায় পঙ্গু । 

সম্তানবতী নারীদের উপর বন্ধ্যা পদ্মের একটা আত্ম- 
মজ্ঞাত হিংসা আছে, এই মুহূর্তে কিন্ত সে ছিংসাও তাহার 
স্নধ হইয়া গেল। সে কেবল একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিল। 

ছিরুপালের শ্রী বলিল- তোমাদের অনেক ক্ষতি 
করেছে।' চাষীর মেয়ে--আমি জানি। তুমি ভাই এই 


শ্গান্পভজ্ 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় খণ্ড--এয় সংখ্য 





টি 


কট! রাখ--বলিয়৷ সে স্তত্তিত পদ্মের হাতে দুইথানা দশ 
টাকার নোট গুঁঞজিয়া দিয়া আবার বলিল- লুকিয়ে এসেছি 
ভাই, জানতে পারলে আমার আর মাথা থাকবে নাঁ_ 
বলিয়াই সে দ্রতপদে ফিরিল। দরজার মুখে গিয়া সে 
আঁবাঁর একবার ফিরিয়া দীড়াইয়। হাত ছুটি যোড় করিয়! 
বলিল--আমাঁর ছেলেদের কোন দোঁষ নাই ভাই; আমি 
যোড়হাত করে যাচ্ছি। 

পরমুহূর্তেই সে খিড়কীর দরজার ও-পাশে অদৃশ্য হইয়! 
গেল। পদ্ম যেন অসাড় নিষ্পন্দ হইয়! দাঁড়াইয়া! রহিল। 

রস সঁ গা 

কিছুক্ষণ পরে তাহার এই স্তম্ভিত ভাব কাটিয়া গেল-_ 
অদূরবর্তী একটা কোলাহলের আঘাতে । আবার একট! 
গোলমাল বাধিয়া উঠিয়াছে। সকল কোলাহলের উর্দে 
একজনের গলা শোনা যাঁইতেছে। পদ্ম উৎকন্তিত হইয়া 
উঠিল ;_ অনিরুদ্ধ? নাঃ সে নয়। তবে? ছিরুপাল? 
কান পাতিয়া শুনিয়া পদ্মা বুঝিল-_এ ছিরুপাঁলের কণ্ঠস্বরও 
নয়। তবে? সেদ্রতপদে আঁসিমা বাহির দরজার সম্মুখে 
পথের উপর দাড়াইল। এবার সে স্পষ্ট বুঝিল__এ কণ্ন্বর 
এ গ্রামের একমাত্র ব্রাঙ্মণবাসিন্দা হরেন্্র ঘোষালের । পদ্ন 
এবার নিশ্চিন্ত হইল। মুখে খানিকটা ব্যঙ্গ-হান্তও দেখ! 
দিল। হরন্ত্র ঘোষাল পাগলও খানিকটা, তাহাতে সন্দেহ 
নাই। এ গ্রামে সকলকে টেক্কা দিয়া তাহার চল! চাই। 
ছিরুপাল সাইকেল কিনিলে-_সে সাইকেল এবং কলের গান 
কিনিয়৷ ফেলিল জমি বন্ধক দিয়া । ছিরুপাল নাকি রহস্য 
করিয়া! রটনা করিয়াছিল--সে এবার ঘোড়া কিনিবে। 
হরেন্ত্র মানরক্ষার জন্ত চিস্তিত হইয়! মায়ের সঙ্গে পরামর্শ 
করিয়াছিল-__ছিরুপাল ঘোড়া কিনিলে সে একটা হাতী 
কিনিবে। আজ আবাঁর বামুনের কি রোখ মাথায় 
চাঁপিয়াছে কে জানে? পথে কেহ একট! ছোট ছেলেও 
নাই যে জিজ্ঞাসা করে ! 

ঠিক এই সময়েই পদ্ম দেখিলঃ অনিরুদ্ধ আঁসিতেছে। 
কাছে আসিয়৷ পন্মের মুখের দিকে চাহিয়। অনিরু্ধ হো-হে! 
করিয়া হাসিয়া উঠিল । 

পদ্ম বলিল--মরণ ! হাঁসছ কেনে? 

অনিরুদ্ধ হাঁসিয় প্রায় গড়াইয়া পড়িল। 

যা গেল? কথা ঝলেই তো মানুষে ছাঁসে! 


ফান্তন--১৩৪৭ ] 





চেঁচামেচি কিসের? হ'ল কি? হরু ঠাকুর এমন 
চেচাচ্ছে কেনে? 

বনু কষ্টে হাশ্য-সম্বরণ করিয়া অনিরুদ্ধ বলিল__তারা 
নাপিত ঠাকুরকে ভারী জব্দ করেছে । আধখানা 
কামিয়ে দিয়ে- আবার প্রবল হান্তোচ্ছাসে তাহার কথা 
বন্ধ হইয়া গেল। 

কাপড় ছাড়িয়া থাইতে বসিয়া কোনমতে অনিরুদ্ধ 
কথাটা শেষ করিল। তারা নাপিতও তাহাদের দেখাদেখি 
বলিয়াছে, ধান লইয়া! গোট! বখ্সর সমস্ত গ্রামের লোকের 
ক্ষোরির কাজ সে করিতে পারিবে না! বাহাদের জমি 
নাই--হাল নাই__তাহাদের কাছে ধান পাওয়া যায় না। 
যাহাদের আছে-তাহারাঁও সকলে দেয় না। সুতরাং 
ধানের কারবার ছাড়িয়া সে নগদ কারবার সুরু করিয়াছে । 
হরুঠাকুর আজ কামাইতে গিয়াছিল--তারা নাপিত পয়সা 
চাহিয়াছিল। খানিকটা বকিয়া অবশেষে পয়সা দিব 
বলিয়াই হরুঠাকুর কামাইতে বসে । 

অনিরুদ্ধ বলিল_ তারা নাপিত _একে নাপিত ধূর্ত 
তায় তারা । আধখান! কামিয়ে বলে--কই, পয়সা দাও 
ঠাকুর? হরু বলে_-কাল দোব। তাঁরাও অমনি ক্ষুর 
ভাঁড় গুটিয়ে ঘর ঢুকে ব'লে দিয়েছে-তা৷ হলে আজ থাক 
কাল বাকীটা কামিয়ে দেব। এই চেঁচামেচি গালাগাল-_ 
হিন্দী_ফার্পী ইংরিজী! গায়ের লোক 'আবাঁর জটলা 
পাঁকাচ্ছে। অনিরুদ্ধ আবার প্রবল কৌতুকে হাসিয়া উঠিল 
_-সে হাঁসির তোড়ে তাহার মুখের ভাত ছিটাইয়া উঠানময় 
হইয়া গেল। 

পন্মের খানিকটা শুচি-বাই আছে; তাহার হাহা 
করিয়া উঠিবার কথা, কিন্ত সে আজ কিছুই বলিল না। 
অনিরুদ্ধের এত হাসিতেও সে এতক্ষণের মধ্যে একবারও 
হাসে নাই। কথাটা অনিরুদ্ধের অকন্মাৎ মনে হইল। সে 
গভীর বিস্ময়ে পন্মের মুখের দিকে চাহিয়া প্রশ্ন করিল-_ 
তোর কি হ'ল বল দেখি? 

দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া পদ্মা বলিল-ছিরু পালের বউ 
এসেছিল । 

--কে ? বিম্ময়ে অনিরত্ধ সচকিত হইয়া উঠিল। 

-"ছিরু পালের বউ। তারপর ধীরে ধীরে সমস্ত কথা 
বলিয়া! পদ্ম কাপড়ের খু'টে বাঁধা নোট দু-খানি দেখাইল। 


গশ-্বভ্ডা 





২২৩২৩ 





অনিরুদ্ধ নীরব হইয়! রহিল । 

পদ্ম আবার দীর্ঘনিশ্বীস ফেলিয়! বলিল-_মায়ের প্রাণ ! 

অনিরুদ্ধ আরও কিছুক্ষণ স্তব্ধ হইয়া থাকিয়। অকন্মাৎ 
গা-ঝাঁড়৷ দিয়া উঠিয়। পড়িল, যেন ঝাঁকি দিয়া নিজেকে 
টাঁনিয়! তুলিল__-বলিল---বাঁবাঃ, রাজ্যের কাজ বাকী পড়ে 
গিয়েছে । এই খেয়ে-দেয়ে এক কোঁশ পথ ছুটতে হবে। 

পদ্ম কোন কথা বলিল!না। হাতমুখ ধুইয়া মশলা মুখে 
দিয় একটা বিড়ি ধরাইয়া অনিরুদ্ধ একমুখ হাসিয়া বলিল-_ 
একখানা নোট আমাকে দে দেখি। 

পদ্ম ্ধ কু্চিত করিয়া অনিরুদ্ধের মুখের দিকে চাঁছিল। 
অনিরদ্ধ আরও খানিকটা হাসিয়া বলিল--লোহা আর 
ইম্পাত কিনতে হবে পাঁচ টাকার। ছিরে শালাকে টাকা 
দিতে খদেরের পাঁচ টাঁকা ভেঙেছি। আর 

পদ্ম কোন কথা না বলিয়া একখানা নোট অনিরুদ্ধের 
সম্মুখে ফেলিয়! দিল । 

অনিরুদ্ধ কুড়াইয়া লইয়া হাসিয়া বলিল--আমি নিজে 
একটি-_মাইরী বলছি-_একটি টাঁকাঁর বেণী একটি পয়সা 
আমি খরচ করব না। কতদিন খই নাই বল্‌ দেখি। 

অথাৎ মদ । 

পদ্ম তবুও কোন কথা বলিল না। অকন্থাৎ 'যেন 
অনিরুদ্ধের উপর তাহাঁর মন বিরূপ হইয়া উঠিয়াছে। 


(ছয়) 


হুরু ঘোঁষালের আঁধখাঁনা দাড়ি কামাইয়া বাঁকীটা 
রাখিয়া দেওয়ায় তারা নাপিতের যতই পরিহাস-রসিকতা 
প্রকাশ পাইয়া থাকুক এবং গ্রামের লোকে প্রথমটা হরু 
ঘোঁষালের সে অর্দনারীশ্বরের মত রূপ দেখিয়া হাসিয়া 
যতই হাস্যকর ব্যাপার করিয় তুলুক-_প্রতিক্রিয়ার় ঘটনাটা 
কিন্ত ততই ঘোরালো৷ এবং গম্ভীর হইয়া উঠিল। 

হরিশ মণ্ডল প্রবীণ মাতব্বর ব্যক্তি-_ লোকটির বোধ- 
শক্তিও আছে। সেই প্রথম বলিল_হাসিস না তোরা). 
হাঁসির ব্যাপার এটা নয়। গায়ের অবস্থাটা কি হল ভেবে, 
দেখেছিস? পু 

সকলেই হাসির বেগের প্রবলতা থান্রিটা সম্বর়ণ করিয়া 
হরিশের মুখের দিকে চাহছিল। হরিশ গম্ভীরভাবে, 
বলিল-_অরাজক | ব | 


২১২০৪ 








ভবেশ পাল-_ছিরুর কাকা! স্থুল ব্যক্তি, তবুও বুদ্ধি- 
মত্তার ভাণ তাহার আছে, সেও গম্ভীরভাবে বলিল__ 
তা বটে! 

দেবদাস বুদ্ধিমান যুবক- সে ব্যাপারটা চকিতে অনুমান 
করিয়া লইয়া বলিল_-তা তো হবেই আপনার। সে 
আপনি আটকাবেন কি ক'রে? গীয়ের জোটান আছে 
আপনাদের? ওই কামার ছুতোরের ব্যাপারে-ছিরু-- 
দ্বারিক চৌধুরীর অপমান করলেঃ চৌধুরী উঠে চ/লে গেল; 
জগন ডাক্তার তো এলই না-_উল্টে অনিরুদ্ধকে উদ্কে দিলে । 

ভবেশ একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া বলিল-_হরি নাম 
সত্য হে! কেলি শেষে একবর্ণ হইবে যবন”--এ কি আর 
মিথ্যে কথা বাবা! এমনি করেই ধর্ম-কম্ম সব যাবে। 

“হরিশ বলিল- লুটনী দাই কি বলেছে ভান? আমার 
বউমায়ের ন'মাঁস চলছে তো! তাই ব'লে পাঠিযেছিলাম 
যে রাত-বিরেতে কোথাও যদ্দি যাস, তবে আগে খবর নিয়ে 
যাঁদ যেন! তা বলেছে_-আমাকে কিন্তু নগদ বিদেয় 
করতে হবে। 

গভীর চিস্তায় ভোর হুইয়া ভবেশ বলিল-_হু' ! 

হুরিশই বলিল-_রাঁজ! বিনে রাজ্যনাঁশ যে বলে__কথাটা 
মিথ্যে নয়। আমাদের জমিদার যে হয়েছে--থেকে 
না-থাক! ! 

দেবদাস বলিল--জমিদারের কথা বাদ দেন। জমিদার 
আমাদের বরং ভালই। এ কাজ তো জমিদারের নয়-_ 
আপনাদের । আপনারা কই শক্ত হয়ে »সে ডাকুন দেখি 
মজলিস; ঘাড় ছেট ক'রে সবাইকে আসতে হবে। আসবে 
না চালাকী নাকি? বিপদ আপদ নাই তাদের? 
লোহাতে মুড় বাধিয়ে ঘর ক'রে সব? চৌধুরীকে ভাকুন__ 
জগন ভাক্তারকে ডাকুন-ডেকে আগে ঘর বুঝুন-_-তারপর 
কামার, ছুতোর, বায়েন, দাই, ধোপা, নাপিত এদের 
ডীকুন। আর ন্যাষ্য বিচার করুন। 

হরিশ মাতব্বরগণের মুখের দিকে চাহিয়া বলিল__ 
দেবদাস কিন্ত বলেছে ভাল। কি বলেন গো সব? 

তবেশ বলিল-_উত্তমূ কথা । 

নটবর বলিল-স্ঠ্যা, তাই করুন তা হ'লে। 

দেবদাসের উৎসাহের সীম! ছিল না, সে বলিল--আজই 
ধস্ুন সব.সন্ধ্যের সময়। আমি আসর ক'রে দিচ্ছি, 


ভান্রতবহ্ব 





| ২৮শ বর্--২য় খণ্ড-৩য় সংখ্যা 





ইস্কুলের চল্লিশ বাতীর আলে! এনে দিচ্ছি; খবরও দিচ্ছি 
সকলকে । কি বলছেন? 

হরিশ আবার সকলের দিকে চাহিয়! জিজ্ঞাসা করিল-_ 
কিগো? 

_তা বেশ! 

_খানিকটা তামাক আর আগুনের যোগাড় যেন 
রেখো বাপু! 


বহুকাল পরে চণ্ডীমণ্ডপটা আবার আলোকোজ্জল হইয়া 
গ্রাম্য-মজনিসে জমিয়া উঠিল। পঞ্চাশ বংসর পূর্বেও 
চণ্তীমগ্ডপটা এমনি ভাবে নিত্য সন্ধ্যায় জম-জমাট হইয়া 
উঠিত। গ্রাম্য-বিচার হইত, সংকীর্ভন গান হইত, পাশা- 
দাবাও চলিত, সলা-পরানর্শে গ্রানখানির কেন্ত্র্ল ছিল এই 
চগ্তীমগ্ডপটি। গ্র।মে কাঙারও কুটদ্ব-সঙ্জন আপিলে _এই 
চণ্ডীমগুপেই বসানো হইত | ক্রিয়া-কম্__মন্নপ্রাশন বিবাহ 
শ্রাদ্ধ সবই অন্ঠিত হইত এইথানে। ধুলায় এবং কাল 
গতিকে--অবলুপ্তপ্রায় বহু বন্থধারার চিহ্ন 'এখনও শিব- 
মন্দিরের দেওয়ালে এবং চণ্ডীমগ্ডপের থামের গায়ে দেখা 
যাঁয়। তখন গ্রামে ব্যক্তিগত বৈঠকথাঁনা ব৷ বাহিরের ঘর 
কাহারও ছিল না । জগন ডাক্তারের পূর্বপুরুষ-_জগনের 
পিতামহই কবিরাজ হইয়া বাহিরের ঘর বা বৈঠকখানার 
পত্তন করিয়াছিল । প্রথমে সে অবশ্য এই চণ্তীমগ্ডপেই 
বসিয়া রোগী দেখিত। তারপর অবস্থার পরিবর্তনের জন্যও 
বটে এবং জমিদারের গমন্তার সঙ্গে কি কয়েকটা 
কথান্তরের জন্যও বটে-__কবিরাঁজ ষধালয় এবং বৈঠকথাঁনা 
তুলিয়! তানাক ও পানের স্বাচ্ছল্যে ম্জলিস জমাইয়া-_চণ্ী- 
মণ্ডপের মজলিসে ভাওন ধরাইয়৷ দিয়াছিল। তারপর ক্রমে 
ক্রমে অনেকের বাড়ীতেই একটি করিয়। বাহিরের ঘরের পত্তন 
হইয়াছে; সেইগুলিকে কেন্দ্র করিয়া! সমগ্র গ্রাম জুড়িয়া 
অনেকগুলি ছোট মজলিস জমিয়া উঠে। কেহ বা একাই 
একটি আলো জালিয়া সন্মথস্থ অন্ধকারের দিকে চাহিয়া 
চুপ করিয়া বসিয়। থাকে । তবে এখনও জগন ডাক্তারের 
ওখানেই মজলিসটি বড় হয়। জগনের রুঢ় দাস্তিকতা সত্বেও 
__রোগীর বাড়ীর লোকজন যায়; আরও কয়েকজন 
যায়-_ডাক্তারের অর্ধ-সাপ্তাহিক খবরের কাগজের 
সংবাদের প্রত্যাশায় । দেবদাস ঘোঁষ এত বিরূপতা! সন্ত্বেও 


ফাস্তন-_-১৩৪৭ ] 


যায়। সেই চীৎকার করিয়৷ কাগজ পড়ে, অন্য সকলে 
শোনে। অসহযোগ আন্দোলন তখন শেষ হইয়াছে, 
স্বরাঁজপার্টির উগ্র বক্তৃতায় এবং সমালোচনায় কাঁগজের 
স্স্তগুলি পরিপূর্ণ । শ্রোতাদের মনে চমক লাগে- 
স্তিমিতগতি পর্লীবাসীর রক্তে থেন একটা উষ্ণ শিহরণ 
অনুভূত হয়। 

আজ দেব্দাসই সকলকে সম্ভাষণ করিতেছিল, সেই 
উদ্যোক্তা । মজলিস আরম্ভ হইবার পূর্ব হইতেই সে বেশ 
আসর জমাইয়া তুলিয়াছে। চণ্ডীমণ্ডপের বাহিরে দেবস্থলের 
আঙিনায় পুরানো! বকুলগাছটি গ্রামের ষগাীতলা» একটি 
বাস্দেব মৃষ্তি সেখানে গাছের শিকড়ে একেবারে শ্াটিয়া 
বসিয়া আছে; সেইটিই ষষাদেবী বলিয়া পূজিত হয়। 
সেখানে একটা মোটা শুকনা! ডাল জালিয়৷ আগুন করা 
হইয়াছে। সেই আগুনের চারি পাঁশে গ্রামের জনকতক 
হরিজন আসিয়া! বসিয়া গিয়াছে । মজলিস কেবল জন- 
কয়েকের জন্য অপেক্ষা করিতেছে । দ্বারকা চৌধুরী, জগন 
ডাক্তার, ছিরু পাল এবং আরও ছুই একজন এখনও 
'আসে নাই। 

চল্লিশ-বাতীর আলোয় উজ্জল চণ্ডীমণগ্ডপটির উপরের 
দিকে চাহিয়া ভবেশ বলিল-_ বেশ লাগছে বাপু! 

হরিশও একবার চারিদিক দেখিয়া লইয়া বলিল-_এইবাঁর 
কিন্তু একবার মেরামত করতে হবে- চণ্তীমণ্ডপটিকে | বলিয়৷ 
সে সপ্রশংস কণ্ঠে বলিল_-কি কাঠামো দেখ দেখি ! ও$-- 
কি কাঠি! 

দেবদাস বলিল-_ষড়দলে লেখা আছে কি জানেন 7 
যাবৎ চন্দ্রার্ক মেদিনী। মাঁনে চন্্রস্য্য পৃথিবী যতদিন 
থাকবে--এও ততদিন থাকবে । 

-_-তা থাঁকবে বাপু! বলিহাঁরী_বলিহারী! ভবেশ 
পাঁল অকারণে উচ্ডুসিত এবং পুলকিত হইয়া উঠিল। 

ঠিক এই সময়েই দ্বারকা চৌধুরী লাঠি হাতে ঠুক-ঠুক 
করিয়া আসিয়া বলিলেন__ওঃ১ তলব যে বড় জোর গো! 

দেবদাস ব্যস্ত হইয়া উঠিয়া গেল-জগন ডাক্তার ও 
ছিরুর জন্ত। আবার সে ছুটি ছেলেকে দুজনের কাছে 
পাঠাইয়৷ দিল। কিন্তু জগন ডাক্তার আসিল না? সে স্পষ্ট 
বলিয়া দিয়াছে-_তাঁহার সময় নাই। চোঁথে চশম! লাগাইয়া 
সে নাকি খবরের কাগজ পড়িতেছে। ছিরুও আসে নাই? 


গপ-েব্রিভা 


টি এটি ৫ 


তাহার জ্বর হইয়াছে, তবে মে বলিয়াছে-_পপাচ জনে যা 
করবেন তাই আমার মত |, 
দেবদাস আশ্চর্য্য হইয়া গেল--ছিরুর বিনয়ে। 


স স্ঁ ঁ 
ছিরুর কথাটা অস্বাভাবিক দোষে দুষ্ট; বিনয়ের ধার 
শ্রীহরি ঘোষ ধারে না। জর তাহার হয় নাই। সে নির্শম 


আক্রোশে গর্তের ভিতরের আহত অজগরের মত মনে মনে 
পাঁক খাইয়া! ঘুরিতেছিল। বাড়ীর ভিতরে দাওয়ার উপর 
উপু হইয়া বসিয়া সে প্রকাগু বড় হু'কাটায় ক্রমাগত একঘেয়ে 
টান টানিয়া যাইতেছিল ও প্রথর নিনিমেষ দৃষ্টিতে উঠানের 
একটা বিন্দুর উপর দৃষ্টি নিবন্ধ করিয়! বসিয়াছিল। নান! 
চিন্তা তাহার মাথার মধ্যে ঘুরিতেছে। 

ঘরে আগুন লাগাইয়া দিলে কি হয় ? মনটা আনন্দে চঞ্চল 
হইয়া উঠে। পরক্ষণেই মনে হয় না। সদ্য-সছ্য আক্রোশের 
কথাটা বড় হইয়া__আবার এমনি ফ্যাঁসাদে পড়িতে হইবে। 
আজই পঞ্চাশ টাঁক1 জমাদার বন্ধুকে দিতে হইয়াছে! সেই 
লইয়! তাঁহার মা এখনও বক-বক গজ-গজ করিয়া! তাহাকে 
গালি পাড়িতেছে। 

_মর তুই মররে! এমন রাগ তোর ! সবুর সুই! 
ইাদা_গাড়োল কোথাকার! পঞ্চাশ টাকা আমার খল- * 
খল করে বেরিয়ে গেল! বুকে বাঁশ চাপিয়ে যাও তুমি__ 
আমার হাঁড় জুড়োক ! 

শ্রীহরি চুপ করিয়া আছে। অন্য সময় হইলে এতক্ষণ 
সে বুড়ীর চুলের মুঠা ধরিয়া উঠানে আছাড় মারিয়া ফেলিয়া 
নির্মম প্রহার আরম্ভ করিত। কিন্তু আজ গভীর নি্টুরতম 
চিন্তায় একেবারে মগ্ন হইয়! গিয়াছে । 

__অনিরুদ্ধ ওপার হইতে রাত্রি নয়টা দশটার সময় 
ফেরে। অতর্কিত আক্রমণে-না! সঙ্গে গিরীশ ছ্ুতার 
থাকে । দুজনকেও ঘায়েল কর! অবশ্ঠ খুব শক্ত নয়? শেষ 
করিয়া দেওয়াই বা এমন কি কঠিন? শ্রীহরির মিতে চন 
গড়াঁঞী সানন্দে তাহাকে সাহায্য করিবে। ূ 

পরক্ষণেই মে চমকিয়া উঠিল। ফাঁসী হইয়া যাইবে 
তাহার সে চমক এত পরিস্দুট যে তাঁহার ক্ষীণ দৃষ্টি বৃদ্ধা ম! 
পথ্যন্ত দেখিয়া ফেলিল। অত্যন্ত রূ় ভাষায় সে বলিল-_ 
মর মুখপোড়া! ছোট ছেলের মত চমকে উঠে যেন, 
দেয়াল! করছে ! 


5২৬ 


শ্রীহরি অত্যস্ত কঠিন দৃষ্টিতে মায়ের দিকে একবার 
ফিরিয়া! চাহিল- পরক্ষণেই দৃষ্টি ফিরাইয়াঁ_হু'কা হইতে 
কক্েট! নামাইয়া দিয়া বলিল-_-এই ! কক্েটা পাণ্টে দে! 

কথাটা বল! হইল তাহার স্ত্রীকে। ছিকুর স্ত্রী উনান- 
শালে ভাতের হাঁড়ির দিকে চাহিয়া বসিয়াছিল। পাঁশেই 
ল্যাম্পের আলোয় ছিরুর বড় ছেলেটা বই খুলিয়া -- একদৃষ্টে 
বাপের দিকে চাহিয়। বসিয়া! আছে। শীর্ণ রুগ্ন বছর দশেকের 
ছেলেটা--গলায় এক বোঝা মাছুলী--বড় বড় চোখে অদ্ভুত 
স্থির অকম্পিত দৃষ্টি দিয়া বাপের প্রতিটি ভঙ্গিমা' লক্ষ্য 
করিতেছে । শ্রীহরির ছোট ছেলেটা প্রায় পন্ধু এবং বোবা) 
সেটাও একপাশে বসিয়া আছে-_মুখের লালায় সমস্ত বুকটা 
অনবরত ভিজিতেছে। বড় ছেলেটিই উঠিয়া! আসিয়া ককেটা 
লইয়৷ গেল। শ্রীহরি ছেলেটার দিকে একবার চাহিল। 
ছেলেটা অন্তত, শ্রীহরির মার খাইয়াও কাদে না, স্থির দৃষ্টিতে 
চাহিয়া থাকে ৷ উহার জন্ত এখন উহার মাঁকে প্রহার করা 
কঠিন হইয়া উঠিয়াছে। মাকে সে যেন আগলাইয়া ফেরে। 
মারিলে পণুর মত হিংন্ত্র হইয়া উঠে। সেদিন একটা সুচ 
নে প্রহার-রত শ্রীহরির পিঠে বিধিয়| দিয়াছিল। ছেলেটার 
দিক হুইতে দৃষ্টি ফিরাইয়! শ্রীহরি স্ত্রীর দিকে চাহিল-_ 
উন্নানের আগুনের আভীঁয় শীর্ণ গৌরবর্ণ মুখখানা লাল হইয়া 
উঠিয়াছ্ছে-_ চামড়ায় চাকা কঙ্কালসার মুখ! শ্রীহরি দৃষ্টি 
ফিরহিয়া লইল। 

--অনিরুদ্ধের অন্নুপস্থিতিতে পাচীল ডিগাঁইয়া-_পদ্প 
কাঁমারনীকে বাঘের মত মুখে করিয়া শ্রীহরির বুকখানা 
ধ্বক ধ্বক করিয়া লাফাইয়া উঠিল! দীর্ঘাঙ্গী সবল দেহ 
কামারনীর দাখান! কিন্ত বড় শাণিত! চোখের দৃষ্টি তাহার 
প্ীতল এবং ক্রুর! দাখানার রৌদ্র-প্রতিফলিত ছটায় 
হিরুর চোথ ধাধিয়া গিয়াছিল! 

_-বায়েনদের ছুর্গা-কামারিনীর চেয়ে দেখিতে অনেক 
ভাল-_যৌবনও তাহার উচ্ছুসিত। দেহবর্ণে দে গৌরী। 
লীলা-লাশ্তও তাঁহার অপূর্বব ৷ কিন্তু তাঁহার আকর্ষণ শ্রীহরিকে 
আঁর তেমন বিচলিত করে না। দুর্গার দাদা পাতু আবার 
তাহার নামে জমিদারের কাছে নালিশ করিয়াছে। শ্রীহরির 
মুখে তাচ্ছিলোর ব্জ-হাস্য ফুটিয়৷ উঠিল । জমিদারের ছেলের 
সোনার নিমফলের গোট তাহার কাছে বীধা আছে! শ্রীহরি 
অকণ্মাৎ উঠিল। 

শ্রীহরির স্ত্রী কন্ছেতে নতুন তামাক সাজিয়! আনিয়া 
নামাইয়া দিল। তামাক প্রীহরিকে আকর্ষণ করিল না। 
দেওয়ালে-পৌতা পেরেকে ঝুলানে! জামাটা হইতে বিড়ি 
দেশলাই বাহির করিরা লইয়া সে চলিয়া! গেল। অন্ধকার 
গলিপথে পথে ঘুরিয়া সে আসিয়! হরিজন পল্লীর প্রান্তে 
উপস্থিত হইল। 

গরচ্সকলরব উঠিতেছে! পলপীর প্রান্তে বহুকালের বৃদ্ধ 


ভ্ডাব্রভনম্ 


[ ২৮শ বর্--২য় খও--৩য় সংখ্যা 


বটগাছ, গ্রামের ধর্মরাজতলায়-_প্রতি সন্ধ্যায় উহাদের 
মজলিস বসে। গান-বাজনা হয়, ভাসান, বোলান, ঘেটু 
গানের মহলা চলে-_আবাঁর ছুননিবার কলহও বাধিয়া উঠে। 
আজ কলহ বাঁধিয়াছে। শ্রীহরি একট! গাছের অন্ধকারের 
মধ্যে আত্মগোপন করিয়! দাড়াইয়! কাঁন পাতিয়া শুনিতে 
আরম্ত করিল। 

পাঁতু চীৎকাঁর করিয়া আক্ফালন করিতেছে । 

দুর্গার তীক্ষ কণ্ঠের আওয়াজও উঠিতেছে- ভাত দেবার 
ভাঁতার লয়, কিল মারবার গৌসাই। দাদা সাজছে-_দাদা ! 
মারবি কেনে তু? আমি যা খুসী তাই করব। হাজার 
নোঁক আসবে আমার ঘরে, তোর কি? 

সজে সঙ্গে দুর্গার মাও চীৎকার করিতেছে । শ্রীহরি 
হাঁসিল- তাঁহাকে লইয়াই আন্দোলন চলিতেছে ! 

সহসা সে গাছের আড়াল হইতে বাহির হইয়া! নিঃশৰে 
অগ্রসর হইল দুর্গাদের পল্লীর দিকে । পল্লীটা খা খা 
করিতেছে । সব গিয়া ওইথানে জুটিয়াছে। শ্রীহরি সম্তর্পণে 
ঢুকিয়া পড়িল দুর্গাদের বাঁড়ীতে। বাড়ী অর্থে প্রাচীর- 
ঝেষ্টনীহীন একটুকরা উঠানের দুইদিকে ছুথাঁনা ঘর); 
একখান! দুর্গা ও দুর্গার মায়ের অপরথানা পাতুর। শ্রীহরির 
তীক্ষ দৃষ্টি পাতুর ঘরানার দিকে। পাতুর সেই মোটাসোটা 
ছোটখাটো বিড়ালীর মত বউটা কোথায়? শ্রীহরি হতাশ 
হইল। দরজাটা বন্ধ__দাওয়াটাও শৃন্ | 

একটা কুকুর অকন্মাৎ গো শব্ধ করিয়া ছুটিয়া পলাইয়া 
গেল। বোধ হয় চুরি করিয়া চামড়া খাইতে আসিয়াছিল। 
শ্রীহরি হাঁসিয়া একটা বিড়ি ধরাইল, স্থকৌশলে হাতের 
মধ্যে মেটাকে সম্পূর্ণভাবে লুকাইয়! টানিতে টাঁনিতে বাহির 
হইল। ছুর্গার জন্য কতক্ষণ অপেক্ষা করিতে হুইবে কে 
জানে? গাছের আড়ালে আবাঁর সে আয়! দাঁড়াইল। 

ওদিকে কিন্তু ঝগড়াটা ক্রমশই প্রবলতর হইয়া উঠিতেছে। 
শ্রীহরি আবার একটা বিড়ি ধরাইল। কিছুক্ষণ পরে সে 
গাছিতলা হইতে বাহির হুইয়া জলন্ত বিড়িটা পাতুর চালের 
মধ্যে গুঁজিয়া দিয়া ক্রুত লঘুপদে আপন ৰাড়ীর দিকে 
চলিয়া গেল। 

চণ্ডীমণ্ডপে প্রবল আলোচনা চলিতেছে । 

শ্ীহরি হাসিল। 

কিছুক্ষণ পরেই গ্রামের উর্ধলোকে অন্ধকার আকাশ 
রস্তীভ আলোয় ভয়াল হইয়া উঠিল। আকাশের নক্ষত্র 
মিলাইয়৷ গিয়াছে । পোড়া খড়ের জলস্ত অঙ্গার আকাশে 
উঠিয়া নিবিয়া যাইতেছে ফুলঝুরির মত। আগুন! আগুন! 
আর্ত চীৎকার--শিণড ও নারীর উচ্চ কারার রোলে শুস্ত- 
লোকের বায়ুতরল মুখর হইয়া উঠিল। 

চণ্তীমণ্ডপের মজলিস ভাঙিয়া গেল। 

(ভ্রমশঃ ) 


জীনিকেতন 


জ্ীতবধীরঞ্জন মুখোপাধ্যায় 


অরশেষে “বিশ্বভারতী” বাসের গতি নস্থর হয়ে এলো। 
মেঘে মেঘে মিন মধ্যাহ্ন । রাঁঙ। মাঁটার পথের ধারে- 
ধারে গাছের শাখা-প্রশাথায় আছড়ে পড়েছে শ্রাবণের 





স্বায় বাছাছর ভ্নুকুমীর চট্টোপাধ্যায় এম-এ, এম-বি-ই 
স্তিমিত রোদদ,র। ্নিকেতনেক্র সীমানা আমর! 
প্রবেশ করমাদ। 

ছাত্ররা আমাদের নিয়ে এগিয়ে গেল। ভিজে মাঁটীর 
গৌা গন্ধে পাখীর কাকলীতে প্রকৃতির সজীব 
সৌন্ধর্ধে মুখবিত আশ্রম । আমাদের শহার চোখে নামলো 
পাঁদাহীন বিশ্বয়। 

প্রনিকেতনের চার পাশ কোনও দিন ছিল অধণো থেবা 
স্জাজও সেকথা বোঝ! যাঘ। এখানকার কর্মীর ক্রমে 
ক্রদে নিশ্চিহ্ন ক'রে ফেলছেন অরণ্য-_বর্ধা বাধা পাঁঘ ব'লে। 
অধরণ্য ধ্বংস করতে গিয়ে বহু প্রযোজনীয় বৃক্ষও নষ্ট হ'যে 
যাঁয়। এ্রতেগড গ্রচুর ক্ষতি হয় গ্রামবাসীর । 

গুরুদেব তাই “বৃক্ষরোপণ? ারধিক উৎসবের আযোজন 
ইয়েছেন। এ উৎসবে মহাঁলমীরোছে বেদ-সীতে চারদিক 
এতিতনিত গঞ্জে খ্াষিবালী প্রযোজনীয় বৃক্ষ রোপণ করে 


বিহার, / 


দেগের ক্দপরপ রূপ একিম মুত হয়ে উঠেছি 
গ্রামের পাতায় শাখায় । শহরের মংহারে জাজ সে-সীন্ 
ভন্মীভৃত। আজ গ্রধু পড়ে আছে কন্কার। এই কক্ষে 
প্রাণপ্রতিষ্ঠা করাই শ্রীনিকেতনের উদ্দেশ্ট | , ॥ 

'ুরুদেব গুধু সাহিত্যিক নন। তিনি কর্মী, স্তিনি দেপ' 
প্রেমিক। মর্মে মর্মে তিনি উপলব্ধি করেছেন দেশের! দানা 
উন্নতি করতে হ'লে সর্বপ্রথম প্রয়োজন গ্রাম-সংক্কার । সাং 
১৯২২ সালে শান্তিনিকেতন থেকে মাইল দেড়েক দূরে 
গুরুদেব শ্রীনিকেতন আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। উারর্রীলে 
বলা চলে 41132 4১0০6 01 1১10509৩1105% 

অকম্মাৎ শ্রাবণের সজল হাওয়া জামারের গীষে রি 
মর্দর সরু হল গাছে গাছে। মাথার ওপরে খরধনী 
বিশাল আকাশ-_ আর চারপাশে সুদুর ২ এবারও 








নাম সর্বপ্রথম উল্লেখ করা সমীচীন। আজ ডিজি 


জি ই 


কিন্ত এই গ্যা্রমের প্রতি বক্ষই, ক্টীর, ছু পরিযাদের 
যাক্গ্য মের); 


২২০৬৮ 


বর্তমানে শ্রীযুক্ত ম্ুকুমার চট্টোপাধ্যায় মহাশয় 
শ্রনিকেতনের সেবায় আত্মনিয়োগ করেছেন । অনেকাংশে 


এই আশ্রম তার কাছে খণী'। শ্রীনিকেতনের অতীত ও' 


বর্তমান সখন্ধে ন্ুকুমারবাবু আমাদের অনেক কথাই 
শোনালেন খ্বং নিজে আমাদের নিয়ে বেরুলেন 
আশ্রমের বিভিন্ন বিভাগগুলি দেখাতে। ওদিকে বৃষ্টির 
অবসান হল। 

গ্রামবাসীদের শক্তি হয়তো আছে কিন্তু উপযুক্ত 
শিক্ষার অভাবে সে-শক্তি অনেক সময় চাঁপা পড়ে যায়। 
শ্রনিকেতনের কক্ষে কক্ষে শিক্ষার বিচিত্র সুর ধ্বনিত । 

কর্তৃপক্ষ নিরক্ষর গ্রামবানীর জন্ত সযত্বে প্রাথমিক 
শিক্ষার ব্যবস্থা করেছেন । শিক্ষার্থীদের দিক থেকেও 


শান্তর 


| ২৮শ্ধ-_২য থণ-_৩য় সংখ্যা 


সাহায্যে গ্রামের স্বাস্থা, কৃষি ও সমবায় সমিতির উন্নুতির 
কথা শিক্ষকের! তাদের বুঝিয়ে দেন। 

গ্রাম্য শিক্ষকদের জন্যে আবার আলাদা “ভবন খোলা 
হয়েছে । তার নাম “শিক্ষা-চর্চা-ভবন? | শিক্ষকদের শিক্ষা 
আরও উন্নত করাই এই ভবনের উদ্দেস্ট-_যেন তারা 
ভবিষ্ততে সুবিবেচনার সঙ্গে গ্রাম-সংস্কার করতে পারেন। 

আজ শ্রাবণের জলভর! সরস মধ্যান্নে কে যেন অকম্মাৎ 
আমাদের টেনে এনেছে নৃতন পৃথিবীতে । অপরপ প্রারকতিক 
সৌন্দর্যের সীমানায় ক্ষণে ক্ষণে কাণে বাঁজে মহাসঙ্গীত। 
প্রকৃতির প্রাণময় প্রকাশমুহূর্তে আমাদের চোখের সামনে 
বিচিত্র জগতের দ্বার উন্মুক্ত করে দিল। বাচার গানে, 
জাগরণের মন্ত্রে, জীবনের জীবন্ত প্রকাশে সজীব চারধার। 





পল্লী সংস্কার গ্রতিষ্ঠঠন ও তাহার কতিপয় কম্মা 


সজীব সাড়া পাওয়া গেছে। গ্রাম্য বালকের চরিত্র 
গঠনের দিকেও শিক্ষকেরা সতর্ক দৃষ্টি রাখেন । তাদের 
মন গ্রফুল্প করতে, জীবনের চঞ্চল ন্োতে তাঁদের মাতিয়ে 
রাখতে এরা সতত সতর্ক। নাচ, গান এবং নানাপ্রকার 
খেলার মাতিয়ে শিক্ষকের! ছাত্রদের মন জয় ক'রে নেন__ 
সম্পর্ক সহজ ক'রে তোলেন। 
্বযপশিক্ষিত জন্সাঁধারপের জন্যও এই ব্যবস্থা করা 
হয়েছে। শিক্ষার প্রতি আকৃষ্ট করার উদ্দেস্টে অপনা্ে 
প্রায়ই তাদের সঙ্গে নানাগ্রকার আলোচন! কর! হয়, সরল 
ধ. সহজ ব্ট/পড়ে শোনানো হয় এবং ম্যাঁজিকল্যাপ্টার্নে 


এখানকার বিভিন্ন ক্ষেত্রের গ্ররতি চেয়ে অপাঁর আনন্দে 
মন ভরে যাঁয়। মনে হয় আবার ফিরে এসেছে গ্রামে 
সে-সৌন্দর্য, সে-অনাবিল আনন্দ। চোখে পড়ে বাঙলার 
সত্যিকারের রূপ । 
এর! উৎপাদন করেছে নানাপ্রকার ধান, গম, আলু, 
আক--এমন কি, তামাকও । এই আশ্রম মন দিয়েছে 
আশে পাশের গ্রামগুলির সংস্কারে । তাই ক্রমে ক্রমে 
এদের শক্তি ও সাহস বেড়ে যাচ্ছে । নব উদ্চোগে+ নব 
উৎসাহে, নব অনুপ্রেরণায় গ্রামবাসীরা আজ গেগে উঠেছে। 
আবার আগের মত সোনা ফলবে ক্ষেত্রে-ক্ষেত্রে আবার 


ফান্ধন--১৩৪৭ ] 


জেগে উঠবে ঘুমন্ত নির্জীব প্রাসাদের প্রতি কক্ষ। তার 
আর দেরী নেই। 

,সুমবায় সমিতিগুলির প্রতি 'গুরুদেবের আস্থা প্রচুর । 
্রনিকেতনে নাঁনাপ্রকার সমবায় সমিতি আছে, আর এগুলি 
ভালভাবে পরিচালন! করবার অন্ত কো-অপারেটিভ সেপ্টল 
যক্ক গ্রতিটিত হয়েছে । | 

দেনার দায়ে গ্রামবাসীর জীবন বর্তমানে জালাময় 
ুঃ্প্রময় হয়ে উঠেছে। অনাহারে অনিদ্রায় এচুর পরিশ্রম 
করাও তাদের পক্ষে স্বকঠিন__একথা সর্বজনবিদিত । 

এই ব্যান্ক শুধু গ্রামবাসীদের অল্প সুদে টাকা ধার 


4 
1 





উবীম্সিলেক কন 
স্‌ 2 নে 


923) 


এদের সব সময় খুব অল্ল মূল্যে ওষুধ দেওয়া! হয়। এখানকার 
গ্রধান চিকিৎসক সুযোগ্য এবং গুণী । 

আমরা শহরবাসী। পঙ্গু প্রভাত, ম্লান মধ্যাহ নীর 
দিন নীরবে অতিবাহিত করি প্রাচীর ঘের! নিঃসাঁড় 
কারাকক্ষে-_শহরের সংকীর্ণ সসীম সীমানায় বসে. ভারি, 
শহর-সভ্যতাঁর বোঝা নামিয়ে কোনি দিনও কি আসন্া "ছুটে 
যাব না আমাদেরই একান্ত আপনার জনের কাছে-_বাংলার 
পল্লীতে-পল্লীতে ? গুরুদেবের মহান আদর্শ কোন দিনও কি 
আমাদের চোখে আঙ্ল দিয়ে দেখিয়ে দেবে না--যাঁরা 
আমাদের মেরুদণ্ড তাদেরই মেরুদণ্ডে আজ ধরেছে তুখ ! 


রী শাপা। 0৭ 11 
৮০৭ নিল 
২ শ 


শা 





শ্রীনিকেতনে ভাত শিল্প 


আর কতদিন অলীক অহঙ্কার বুকে-বঃয়ে উদ্দাসীনতার চাপে 
নিশ্চিন্তে আমর! দূরে সরে থাকব £ 


দেয় না--আরও অনেক জনহিতকর কাঁজে অর্থের সদ্ধবহার 
করে। পুকুর খনন, জল সেচন প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য । 

অবশ্য এখানকার কতপক্ষ একথা মুহূর্তের জন্তও 
ভোঁলেন নিষে, গ্রামবাসীদের প্রকৃত কর্মী ক'রে তুলতে হ'লে 
দৃষ্টি রাখতে হবে তাঁদের স্বাস্থ্যের প্রতি । দূর করতে হবে 
তাদের পারিবারিক দৈনন্দিন অশান্তি । 

কোন কালে বীরভূম অঞ্চলের লোকালয়গুলি স্থাস্ত্যে 
সৌন্দর্যে আনন্দ-মুখরিত ছিল। কিন্ত বর্তমানে আর সেদিন 
নেই। ম্যালেরিয়া! প্রভৃতি নানাগ্রকার দুরারোগ্য ও 
সংক্রামক রোগে সে-আরন্দ আজ কোথায় মিলিয়! গেছে । 

শ্রীনিকেতনের হাসপাতাল যথাসাধ্য চেষ্টা করে এই 
সমন্ত রোগের হাত থেকে জনসাধারণকে রক্ষা করছে। 


মধ্যাহ্নের মৃত্যু হল। অপরাহ্কের আরম্ত। আকাশ 
পরিষাঁর। বৃষ্টি বিচিত্র-এই আসে? এই যায়। আমর! 
এবার কুটীর-শিল্পের দিকে মনোযোগ দিলাম । 

শ্রীনিকেতনের কুটারশিল্প সত্যই আকর্ষণীয়। মৃৎ-শিল্প, 
বয়ন শিল্প, কাঠের কাজ, চামড়ার কাঁজ সমস্তই এখানে 
শেখানে! হয় । বর্তমানে এদের কর্মের যথেষ্ট উন্নতি দেখা! 
যাচ্ছে, কারণ জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এরা আজ । 
এদের কাজের প্রথম ও প্রধান বিশেষত্ব--রুচির পরিচয়। 
ব্যাগ, জুতাঃ চটি গ্রভৃতির ডিজাইন্‌ এত সুন্দর যে. দেখলেই 





্ট 


ফিষত ইচ্ছে বরে।। ' জনযাধারদের আইয়ের ইিধাঁর অন্ত তর বনগখে জরদের 'ছারীতে আলোতে বাশরী উঠেছে 
কলকাতায় শ্রীনিকেতনের একটি শাখা খোল! হয়েছে । বেজে। 





০৫ 
রং 2৮ 


গ্রামে সজী চাষ 
বার্থ সমস্ত শেখানো! হচ্ছে গ্রামবাসীদের স্বাধীন জীবন “ছুঃসহ ব্যথা হ'যে অবসান 
বাজার জন্য, তাঁদের আত্মনির্ভর ক'রে তোঁলবার ভঙ্ । জন্ম লভিবে কি বিশাল প্রাণ । 
সের্দিক দ্বিয়ে দেখতে গেলে পূর্ণ সাফল্য লাভ করা গেছে পোহায রজনী, জাগিছে জননী 
আজ । বিপুল নীড়ে, 
আঁ প্রীনিকেতন শ্রীমণ্ডিত হযে উঠেছে রূপে রসে এই ভারতেৰ মহা-মানবেব 
বডে। সজীব ঘাসে ছাঁওয। মাঠে-মাঠে, রজনীগন্ধাব গন্ধে সাঁগব-তীরে |” 
তোমারে পুজিব শুধু 
শ্রীদুর্গাদাম ঘোষাল 
তোমাবে পৃজিব শুধু শত সুখ শত ব্যথা 
ধন মান তেযাগিযা দুবে, দ্বাব হ'তে থাবে দূরে চলি। 
তোমারে ভাবিব শুধু কঞ্চণা পবশে তব 
অন্তরের অন্ততম পুরে । মুগ্ধপ্রাণ রবে অবিরল, 
ডাকিব তোমারে শুধু তগ্ঠ অশ্রুধাঁব হবে 
কভু যদি নাহি দাও সাড়া, একমাত্র মম কাম্য ফল। 
তব ধ্যান শুধু মোরে সার্থক জীবন মম 
হরধে করিবে আত্মহারা । চিরানন্দে রহিবে ডুবিয়াঃ 
তাঁমারে রন্দিতে দেব? অনস্তের পুজায়ী যে 









খ্ি 
্ 
রর এ 
্ 
১2 ॥ 
দি বিনে রর 
পি /ি 





2//1 হুশ” 
1০ 
কথা ও স্ত্বর ? -কাজী নঞ্জরুল ইস্লাম স্বরলিপি £--জগৎ ঘটক 
দোলন-চম্পা £& 
তাঁল--ততালী 


দোলন চাপা ধনে দোলে, 
দোল পৃণিমা রাতে চাদের সাথে । 
শ্যাম পল্পব কৌলে যেন দোলে রাধা 
লতার দোলনা তে ॥ 
যেন দেব-কুমারীর শ্ুত্র হাঁসি, 
ফুল হ'য়ে দোলে ধরায় আসি; 
আরতির শুদ্ধ ছেোতি প্রদীপ কলি 
দোলে থেন দেউল-আঙ্গিনাতে ॥ 
বন-দেবীর ওকি রূপালী-ঝুম্কা 
চৈতী সমীরণে দোলে, 
রাতের সলাজ আঁখিতাঁর 
যেন তিমির আঁচলে । 
ও-যেন মুঠিভরা চন্দন-গন্ধ 
দোলেরে গোপিনীর গোপন আনন; 
ও-কিরে চুরিকরা শ্ামের নূপুর 
চন্ত্রী যামিনীর মোহন হাতে ॥ 


২) ০ ৯ শঁ 
1? সা -গান্ধা পা 1 "শন্ষা পা "7 | শ গা মা মনা |] ধ্ধা 7111 

৮০০০ ৬স্স্পী 

দো ০ ল ন ০ চা পা ৪ ০ ব নে দে! লে 


11 1 না সাঁ |! সধা-ণাধা পা | ন্দা পা -শ গা | মানা রা সা 
আআ সর 


* * "দো ল্‌ পু *র্ণিমা রা তেতৎ টা দে র'সা থে 
218 | ৩৪১ 


11 


পান্সা পা 


বেন দে 
সর্গা মর 
ফু ল্‌ হ, 


সা গা ন্দা 
আ র তি 


গা -মা রা 
দো ০ লে 
1 রা সান 
গু বৃ ন্‌ 


1 ধা -দণ! 


না পা - 


পে 


ঞঃ 


-ক্ষ্পা 


সা -ননস৭ দা -প। 


দো 


সা 
গু 


মা রী র্‌ 


সর সর 


০০ ৩ লে ০ 
গ| 7 ঙ্দা 
তু «৭ জো। 
প্রণধা পা 7 
০ ০ গা ০ 
1 ন্বা পা 
র ও কি 
দীপা গা মা 
মী*ৎ র ণে 
মা গম রা 
লা ৭ জঁ 
পা 7 মন্দা 
লে ০ দে! 
স1 সস 


[ ২৮শ বর্ম খণ্ড --৩য় বংখ্যা 
রা এ লা 41:71 গা ক্গা | 
কো* লে * * * যে ন 
না স- ধা । ধা ণাধা পা] 

০০ ধস 
ল তা * মু দোল না তে 
১ শঁ 
পা -না ধারা | না "771 
সত * ভ্রু ভা সি ০ ৭০ 
ধা ণ! -] ধা | পা - 7] 4 | 
সসপ 
ধ রা যু আম সি ০ ০. ০ 
প1- ঙ্গা পা । 7 ন্বা পান 
তি টি পা নী এ ধু লি' ০ 
না] সা -| -সাধ | ধা ণা ধা পা ]। 
পাস স্পা? 
দে উ * লু আ টি না তে 
১ 7 
ধান]! সা - 1 সধ! ১ পা” ছু 
পাপা 
রূ পা লী « ঝু ম্‌ কা ০ 
মনা সনদনা-সধা- | "7" 77 
দো ০ ৩ লে ০ গু ০ গু ০ 
গা - রা সন! | সা 7 সা ন্‌! ঢু 
আ ০ থি তা রা ০ যে ন 
8) | মস! ধা 7 
লে ০ ৩ দো লে * ০ ০5 ৩ 
সরণশ্সাস | দধা -ণ ধপা 1] 
চ নদ ন * গ ন্‌ ধ*.ৎ.:.. 


ফান্তুন_-১০৪৭ | ন্নিশীএ আক্কাশ্ণে ডুবে আল্স উল ১৪২৩ 


| সা নাসাসর্গা | গমণ ধরণসা ১ | না সা নার্সণ | সধা -ণা ধা -া | 
সপ্প | সপ পা ১ 


দো লে * রেৎ গো পি নী র্‌ গোপ ন আ ন্‌ ন্‌ ॥ ৭ 

॥ ধা -দণা ধা পা |] ধা শণা ধ। পা | ন্ধা পদ্মা পান্গা | 45 | 
ও * কি রে চু রি ক ধা শ্যটা মে নু নু পু ০ ০ যু 

| 1] গা - মার | রা রা সা - ! গা মা নরা সা! রা "সা" 11] 
০ চ ন্‌ ড্র যা মি নী র্‌ মো ০ হল ন হা €* তে ০ 


* রাগটি কবি কাজী 'নজরুল ইস্লাম-রচিত। আদি কয়েকটি রাগ-রাশিনীর মিএণ-ফলে কত যে নৃতন রাগের স্থষ্টি এাবৎকাল হ'য়ে 
এসেছে এবং হ'তে পারে, এই রাগটি তাহার অগ্ঠতম দৃষ্টভস্ত । এমনি ক'রেই ভারতের সঙ্গীত-সম্পদ চিরদিন বৃদ্ধি পেয়ে এসেছে। ইহার পিছনে 
থাক! দরকার--কৃষ্টি ও প্রতিত | 

এ-রাগের আরোভাবরোহ £-_সা গা ন্ধা পা, গা মা না ধা, পানা ধা সা। 
সানাধা ণাধা পান্গা পা গামা রা সা॥ 
বাঁধা- পঞ্চম | সম্খাদী_যড়জ । গতি-বক্র | 


নিশীথ আকাশে ডুবে যায় চাদ 
বন্দে আলী মিয়! 
কুষ্ণতিথির আধো-জোছনাধ ঘরখানি গেছে ভরি যদি জান মনে মিছে 'এ স্বপন 
নিশীথ বাতাসে শগণে ক্ষণে বেন কাপিতেছে শর্ববরী ) ভেঙে যাঁবে এই বৃথা আয়োজন 
দৃযু বনতলে জলিছে জোনাকি মাটির তারকা সম তবে কেন বল আসি বারে বারে করিলে এ অভিনয় ! 
কাক্‌-জোছনায় আজি এ ধরণী সুন্দর অন্টপম | আজি একা ঘরে মনে মনে তাই মানি তোমা পরাজয় । 
নারিকেল শাখা কীপে থর থরি 


রজনীগন্ধা উঠিছে শিহরি 
শেফালী ঝরিয়া আকে আলিপনা সবুজ ঘাঁসের "পরে 
আমি চেয়ে আছি ম্লান নততলে দুরু অচেনার তরে । 


হয় তো বা আজ নবীন সাধীর বাঁধা আছ বাছ ভোরে 
জনি গোপাঁষাণী ক্ষণেকের লাগি মনে পড়ে নাকো মোরে, 
আমার আকাশে তেমনি গ্রভাত তেমনি সন্ধ্য। হয় 
তোমার লাগিয়! কুস্তথমে কুন্ুমে জাগে আজি বিল্ময়। 


আজি ক্ষণে ক্ষণে আসে সৌরভ করবীর ফুল হতে নতুন সাথীর শিথিল বাধনে 

জানি তুমি গেছ চির-পর হয়ে-আসিবে না কোন মতে, একদা আমারে পড়িবে গো মনে 

সে-দিন কাননে ফুলতোলা ছলে মোর পানে তুলি আখি সে দিন আমি ষে ভুলে যাব তোমা মনে রাখিব না আর 
ইসারাতে কেন.ঘর হতে তুমি নিয়েছিলে মোরে ডাকি। নিণীথ আকাশে ডুবে যাঁয় চাদ-__-ঘেরিয়া আমে আধার । 












€গি ৪ ৪০০৬৫ 
* | 5 ৯ 


ও খা ০ 
৪৩ ও 











রর ৬৪৮৭ 

নু রি উস, ১ 
টি সহ * রর বঁ ন্‌ শত ৯2৫ 
& ডু ৯ এ 


৫০ 
এ 


বনজ্যোৎসসা 
জ্ীঅনিলকুমার ভট্টাচার্য্য 


নিত্য নৃতন শাড়ীর চমক্‌ লাগাঁইয। চলনভঙ্গীর ভিতর অপূর্ব 
ছন্দ-মাধুরধ্য তুলিধ। বান্ধবীদের সহিত কলচান্তে মুখরিত হইযা 
মহানগরীর রাজপথ বহছিযা ষে মেয়েটি বহু পুকষের ঈপ্সিত 
দৃষ্টির মাঝে চলিষ! ফিরিযা বেড়ায় তাহাব কথাই বলিতেছি। 

বনজ্যোল্|-_বাড়ীতে এবং বান্ধবীদেব কাছে স ক্ষিপ্ত 
হইয়াছে বন। 

সাধারণ গৃহস্থের মেযে। বাঁপ মসিজীবী কেরাণী__ 
মার্চেন্ট অফিসের বিশ বংসবেব চাঁকরি-জীবনেব মাঝে 
রিটায়ার করিবার সময় একশত টাঁকা বেতন হইযাঁছে। 
গোটা তিনেক ছেলে--সবাই অমানুষ । কেহ বাঁজাবেব 
পয়সা মারিয়া ফোর্থ ক্লাশে সিনেমা! দেখে__কেহ বেস কোর্সে 
যায় কিংবা ওস্তাদ রাখিযা খেযাঁল ঠংবী শোনে । 

ম1 কিছুটা একেলে-উকীলেব কন্তা এবং ডাক্তাবেব 
ভগিনী । আধুনিক কালের কচিসম্পন্ন ত্রাতৃবধূদেব সংস্পর্শে 
একেলে মতবাদটাই আদর্শরূপে গ্রহণ কবিযাছেন। ভ্রাতু- 
শ্পত্রীরা তাহার ভাযোশেসনে পড়ে_টেনিস খেলে _সে 
রঙের ছৌষ! তাহার জীবনেও স্পর্শ কবিযাছে। ছেলেদের 
আশা! ছাঁড়িয! তাই মেযেটিকেই মানুষ করিতে চলিযাঁছেন। 

মার্চেন্ট অফিসের কেরাণী মাঝে মাঝে প্রতিবাদ জানান 
_এ্রত পয়দা! খরচ ক'রে মেয়েকে লেখা-পড়া শেখাচ্ছো__ 
কি হবে শুনি? লব ভন্মে ঘি ঢালা-_শেষ পর্যন্ত ওই তোমার 
মতন ঠেঁসেলের হাড়ি ঠেলা বইতো নয়। 

গৃহিণী পাপ্টা জবাব দেন-_সাংসারিক বুদ্ধি তোমাব 
একটুও নে । এই প্রগতির ধুগ_ তোমরা সব সেকেলে । 
এই লেখা”পড়! গান-বাজনা! শেখানো মানেই মেষেকে ভালো 
ধরে বিয়ে দেওয়া | ছেলেগুলো তে! সব অমানুষ হল, এখন 
াঁকিছু ভরসা আমাদের বন। ওই মিত্তির রাড়ী দেখ__এক 
মেয়ে ইল! ভাল বর-ঘরে পড়ে বাপের বাড়ীর সমম্ত সংসার 
চালাছে। 

সে হইতে বধহ্যোৎক্ব। বন্__সাজিয়া গুজিযা বাসে 
চাপিয়। ছুবে দার । এ হলে বাস ভাড়ার ধর5ও বাচিয়া 


খেছে। 


_-কেন ম| মিথ্যে বাসেব ভাঁড়া, কত মেয়ে তে! হেঁটেই 
কলেজে যাষ! 

মাও বুঝিলেন এ অপব্যযেব কোন যুক্তি নাই, মেয়ে যখন 
শিক্ষিত ও সোমণ হইযা এই স্বাধীন মত প্রকাশ করিষাছে 
--স"সাঁবেবও যখন সাশ্রঘ হয। 


ম্যাট্রিক পাশ করিষা বন কলেজে পড়িতেছে ৷ বাড়ীতে 
সঙ্গীতশিক্মক বাঁখিযা বা*লা গানও শিখিতেছে। 

ভাইষেবাঁ০ বলে--বন একটু বঝে স্তনে চলিস্-হাজাৰ 
হোক মেযেমানষ তো-পাডার লোকেবা সব যা-তা 
নিন্দে কবে। 

বন ক্ষেপিযা ওঠে-যত সব ইডিযট্‌, কাজকর্ নেই, 
কেবল মেযোদব নিযে আলোচনা । * 

কিন্তু বনেব ভক্কেবও অভাব নাট । 

সামনের বাড়ীব গ্ুফেলব বোস -পাঁশেব বাড়ীর এম্‌-বি, 
ডি-টি-এম্‌ ডাক্তান-_ ওদিককাঁব বাঁড়ীব এম্‌-এ, বি-এল্‌ 
ধন্‌ বলিতে 'অজাঁন। বনেব মার্ষিত কুচি-নিতা নূতন 
শাডীব ডিজাইন - ভাঁহাব কণ্নিঃস্থত ববীন্্র-সঙ্গীত বুঝি বা 
সকলকেই পাগল কবিযা তুলিযাছে। আব কলেজের 
ছেলেদের তো কথাই নাই-বন ভাগদের করুণার চক্ষেই 
দেখে। 

পিছনের ঘাঁও-কামানেো সঙ্গীতশিক্মকটি সেধিন গান 
শিথাইতে গিযা অর্গানের রিডটি স"শোধনকালে অন্থুলি- 
স্পর্শ কবিযা ফেলে। 

বিদ্যুতের তেজে বন্‌ জলি! ওঠে--আপনি আর কাল 
থেকে আসবেন না আপনার মতন অভদ্র লোকের কাছে 
আমি আর গান শিখৰ না। 

বেচারি ঘাঁড়-কামানে নিরুত্বরে বাহির হইয়| বায়। বন 
রেডিও কিনিয়! প্রতি রবিবার সকালে পদ্কজ মল্লিকের কে 
ক মিলায়-_ 

এমি দিত কারে বলা যায়” ৷ 


৩৪৪ 


ফাস্তন--১৩৪৭ ] 


বড বদ “স্ব ব্্প্ 





বনের পিতা সেদিন এক পাত্রের সম্বন্ধ আনিলেন। 
তাহারই অফিসের নবনিযুক্ত এক কেরাণী-_-বি-এ পাশ 
করিয়াছে। 

ফাষ্ট-এপয়েন্টমেন্ট চল্লিশ টাঁকা পাইয়াছে। ছেলেটি 
দেখিতে শুনিতেও মন্দ নয়। 

গৃহিণী বাঁধা দিলেন--ভারী বি-এ পাঁশ! আর আড়াই 
ব্ছর পরে বনও আমাদের বি-এ পাশ করবে? আমি 
ভাঁবলুম_-কোন ব্যারিষ্টার কিংবা ডাক্তার বুঝি! 

কর্তা নীরব রহিলেন । 

যা! খুশী করগে-আমি আর তোমাদের এর 
মধ্যে নেই। 

বনের পড়িবাঁর ঘরে সেদিন টেবিল ঝাঁড়িবাঁর কাঁলে 
রাইটিং প্যাঁডখ্যানির ভিতর হইতে একখানি গোলাপী খাম 
বাহির হইয়া আঁসিল। 

প্রফেসর বোস কবিতায় চিঠি দিয়াছেন -সে সব কি 
লেখা-বনের মা হাজার হোক্‌ কেরাণীর স্ত্রী, অতশত 
বুঝিলেন না । 

প্রথমে বিরক্ত হইলেও শেষে অন্তরে খুসীই হইলেন । 
যাহোক্‌ মেয়েটার একটা হিল্লে হ'ল! 

সন্বন্ধের প্রন্তাবনাকালে প্রফেসর বোস তো হাঁসিয়াই 
খুন! বন্কে তিনি ন্নেহ করেন_-তার রুচির এবং রুষ্টির 
তিনি ভক্ত-_তাই বলে বিয়ে? 

আঁর যে মহান ব্রত তীাহার-_শিক্ষকতা করিয়! দেশের 
ছেলেমেয়েদের মানষ করিয়াই তিনি তাঁহার আদর্শ জীবন 
কাটাইবেন। 

বন শুনিল এবং সেইদিন হইতে সামনের বাঁড়ীর দিকে 
ঘন করিয়া! পর্দা আটিয়৷ দিল। 


কয়েকদিন ধরিয়া এম্-বি, ডি-টি-এম্‌ ডাক্তীরটি খুবই 
আঁসা-যাওয়! করিতেছে বনেদের বাড়ী। 

বনের ইন্ফ্ুয়েঞ্জায় রাত্রি জাগিয়া চিকিৎসা করিল। 
ফিস্‌ দিতে গেলে হাসিয়া বলিল; আমি আপনাদের 
বাড়ীরই ছেলে--এতট! চামার হইনি যে আপনাদের 


কাছে ফিদ্‌ নেবো। আপনারা ল্লেহ করেন-__-এই আমার ' 


সৌভাগ্য ! 


নস্বতেক্যাঙ্তুষা। 








52 ৫ 


স্ব -স্স্ি- খা বড সি সস 


ছেলেটির যেমন মিষ্ট কথ! তেমনি ভদ্র ব্যবহার ।-_গৃহিণী 
কর্তীকে বলিলেন_-একবার দেখ না, ছেলেটি তো বেশ! 

প্রসঙ্গ তুলিতেই ডাক্তারের পিতা বলিলেন : তা৷ ছেলের 
যদি মত হয়ে থাকে আমার তাঁতে অবিশ্টি অমত নেই-- 
কিন্তু ধরুন, ছেলের বিয়েতে তে! আর ঘর থেকে খরচ করতে 
পারি নে--কমে-সমে দশ হাজার। 

দশ হাজীর! বনের পিতা মাথায় হাত দিয়া বসিলেন। 
এম্-বি, ভি-টি-এম্-এর গমনাগমন বন্ধ হইয়া গেল। 

এম্‌ এ, বি-এন্‌ উকীল ভিন্ন জাতি__ভিন্ন গোত্র । 





বনের বয়স বাড়িয়া! চলিয়াছে। 

দেহ-যৌবন রূপমাধুধ্য কলেজের পুস্তকের তারে আর 
বৈশাখের খরদীপ্ত প্রথরতাঁয় দিনে দিনে পরিল্নান হইয়া 
আসে। 

বিচিত্র শাড়ীর গজ্জল্য আর চলার তঙ্গী__ তাও যেন 
অতি পুরাতন হইয়া আসিয়াছে । 

সিনেমায় বাসে মহানগরীর রাজপথে গৃহ-বাতায়নের 
ফাকে যে রূপটি প্রভাতের হূর্যের সোনালী রং-এ উদ্ভাসিত 
ছিল আজ যেন তা অন্তমিত-_শুধু গোধূলির গাঁড় অবসাদ 
আর ক্ষীণ স্তিমিত ধূসর রেখায় পধ্যবসিত। . 

বয়স পঁচিশ পার হইয়া গেছে । রূপেগুণে পছন্দ-সই 
বর আর মিলিল না। 

তবুও জনতার স্রোতে ডুবিয়া যাওয়া যাঁয় না। 

বি-এ পাশ করিয়া বন শিক্ষয়িত্রীর কাঁজ করিতেছে । 
বৃদ্ধ মাতাঁপিতা, অনুপযুক্ত ভাইদের ভরণপোঁষণ চাঁলাইতেছে। 

ক্লান্ত অবসাঁদ-মুহূর্তে দক্ষিণের ঝিশ্লুক্রে বাতাসে রাত্রির 
অন্ধকারে দেখ! যাঁয় কয়েকটি জীবনের কয়েকটি চিত্র। 
প্রফেসর বৌসের আদর্শ শিক্ষানীতি__পাঁচটি সন্তানের 
জন্ক। এম্-বি, ডি-টি-এম্-এর দশ হাজার বর-পণে বিক্রীত 
স্্রী_তাহাদের সংসার! দিবসের সাংসারিক মালিন্ের 
পর নীল আলো! জালাইয়া রাত্রির কাব্য ! 

পাড়ার চিরবিচ্ছিন্ন কুখ্যাত বাড়ীটির অধিবাদিনী বন 
নিদ্রাহীন গাঢ় রজনীর দীর্ঘতর অুবকাশে গভীর দীর্ঘস্বাসে 
কল্পনা করে_-তাহীর ছেলেমেয়ে হইলে কি আদর্শ শিক্ষাতেই 
না সে তাহাদের মানুষ করিয়! তুলিত। 


বৌদ্ধধর্মের বিস্তার 


ডক্টর শ্রীবিমলাচরণ লাহা৷ এম-এ, বি-এল, পি এইচডি 
( পূর্ববান্তবৃত্তি ) 


বু পুরাকাল হইতে বৌদ্ধদিগের নিকট চীনরাজ্য 
সুপরিচিত ছিল। প্রবাদ আছে যে সম্রাট অশোকের 
ধর্্প্রচারকের! চীনদেশে বৌদ্ধধর্দ আনয়ন করেন। হাঁন 
রাজ্যের কোন একজন রাজ! বুদ্ধদেবের ভক্তগণের অন্বেষণে 
ছুইটী রাজদূত প্রেরণ করেন। এই ছুইটা রাজদূত কাশ্তপ 
মাতঙ্গ ও ধর্রত্ব নামে দুইজন ভারতীয় ভিক্ষু সমভিব্যাহারে 
চীন রাজধানীতে ফিরিয়। আসেন। এই দুইটা ভারতীয় 
ভিক্ষু সর্বপ্রথম চীনভাষায় বোদ্ধগ্রস্থ অন্তবাদ করেন। এই 
দুইজন ভিক্ষুর আগমনের পূর্বে চীনদেশে বৌদ্ধধর্ম স্ুপ্রতিঠিত 
ছিল। কোন একজন চৈনিক রাজদূত ইপ্ডো-সিথিয়ান 
রাজদরবার হইতে একটা বৌদ্ধগ্রস্থ আনেন। নাগাজ্জুনিকোগ 
শিলালিপি হইতে জানা যাঁয় যে চৈনিক স্থবীরের! খুষ্টার 
দ্বিতীয় কিংব! তৃতীয় শতাঁবীতে ভারতবর্ষে আসেন । 

চীনদেশে বৌন্ধধন্ত্ব বিস্তারের জন্য চীন ও ভারতবর্ষের 
বধ্যে অনেকগুলি চলাচলের পথ ছিল। চৈনিক পর্যটক 
হুয়েন সাং ভারতবর্ষে আসিবাঁর সময়ে উত্তরদিকস্থ পথ 
অবলম্বন করেন। তিব্বতের নধ্য দিয়া চীন ও ভারতবর্ষের 
মধ্যে খৃষ্টীয় সম শতাব্দীর প্রারস্তে একটা পথ খোলা হয়। 
এই পথ দিয়া প্রভাঁকর মিত্র চীনে গমন করেন। চীন ও 
ভারতবর্ষের মধ্যে গমনাগমনের জন্য যেমন স্থলপথ ছিল 
তেমনি জলপথও ছিল। চীনদেশে বৌদ্ধধন্্ন বিস্তারে 
তিব্বতীরা যথেষ্ট সাহাষয করিয়াছিল । 

কাঘোডিয়া। চম্পা; জাত! এবং স্থুমাট্রীয় বৌদ্বধর্শের 
চিহ্ন পরিলক্ষিত হয়। লোঁকচেম নামে একজন স্ুুপপ্ডিত 
বৌন্ধভিক্কু কতকগুলি স্থপ্রসিদ্ধ মহাযান বৌদ্ধগ্রস্থ চীন 
ভাষায় অনুবাদ করেন। তীাহারই একজন শি শতাধিক 
বৌস্বগ্রস্থ চীনভাষায় অনুবাদ করিয়াছিলেন। ইণ্ডো-সিথিয়ার 
নুপ্রসিদ্ধ পণ্ডিত ধর্মরক্ষ বৌদ্ধধর্মজ্ঞ ছিলেন। তিনি 
অনেক সংস্কত পুস্তকৃ চীনভাষায় অনুবাদ করেন। 
পাধিক্লাবানী লোকোতম অনেক বৌদধগ্রস্থ চীনভাষায় তর্জম! 
করেন। পারধিয়ার পরে বৌদ্ধধর্ম সগদিয়ায় বিস্তারিত হয়। 


ৃষ্টীয় চতুর্থ শতাঁবীর শেষভাগ হইতে ভারতীয় বোদ্বধর্ম 
ব্যাখ্যাকার্ষ্যে কাঁচবাসী কুমারজীব চীনদিগকে যথেষ্ট সাহাষ্য 
করিয়াছিলেন। মহাঁধান বৌদ্ধধর্ম কুমারজীব সর্বপ্রথম 
চীনভাষায় প্রণয়ন করেন এবং যে সকল মহাধান বৌনধগ্রন্থ 
অনুবাদ করেন তাহাদের মধ্যে কতকগুলি উল্লেখযোগা, 
যথা__অশ্ব ঘোষ বিরচিত স্ত্রালঙ্কারশাস্ত্র, নাঁগার্জুনকৃত 
দশভূমি বিভাস শাস্ত্র, বন্থবন্ধু প্রণীত শতশান্ত্ হরিবর্খণ কৃত 
সত্যসিদ্ধিশাস্ত্র এবং ব্রহ্ষপালস্ত্র | 

টীনদেশে বৌদ্ধধর্ম প্রচারে খোটান যথেষ্ট সাহায্য 
করিয়াছিল। কোন একজন চৈনিক বৌদ্ধ ভিক্ষু বৌদ্ধধর্ম 
শিক্ষার জন্ত খোটানে আগমন করেন। তিনি চীনভাষায় 
বৌদ্ধগ্রন্থের তালিকা প্রস্তুত করেন। আর একজন 
খোটানদেণীয় বৌদ্ধ ভিক্ষু চীনে গমন করেন এবং পঞ্চবিংশতি- 
সাহন্রিক গ্রজ্জাপারমিতা নামক স্প্রসিদ্ধ মহাযান গ্রশ্থ 
টীনভাঁষাঁয় অন্তবাঁদ করেন। খুষ্টীয় পঞ্চম শতাব্দীর প্রারস্তে 
কোন একদন চৈনিক যুবরাজ খোটানে আসিয়া বুদ্ধসেন 
নামে একজন ভারতীয় শিক্ষকের নিকট মহাঁধান বৌদ্ধগ্রস্ 
অধ্যয়ন করেন। পঞ্চম শতাব্দীতে খোটান এমন একটী 
মহাযান বৌদ্ধধর্মের স্ুগ্রসিদ্ধ কেন্দ্র হইয়াছিল যে কাশ্মীর 
হইতে ধর্মক্ষেম নামে একজন ভারতীয় ভিক্ষু মহাযান 
বৌদ্ধধর্ম অধায়নের জন্ত এখানে আসিয়াছিলেন। পরে 
তিনি চীনদেশে গমন করিয়া চীনভাষায় মহাপরিনির্বাণসুত্র 
তর্জম। করেন । 

থুঠীয় সপ্তম শতাব্বীর মধ্যভাগে তিব্বতের রাজ! অং 
স্যান্-গ্যামপো একটী চীন ও একটী নেপালদেশীয় 
রাঞ্জকন্তাকে বিবাহ করেন। এই দুই রাজকন্তা তিব্বতে 
বৌদ্ধধর্ম প্রণয়ন করেন। ইহাদের সাহায্যে বোদ্ধধর্শ 
তিব্বতে শুপ্রতিষ্ঠিত হয় । রাজা পল্মসম্ভবকে এবং শাস্তরক্ষিত 
নামে আর একজন স্ুপ্রসিদ্ধ পপ্ডিতকে তিব্বতে নিমস্ত্র 
করেন। তিব্বতে লামাধর্খের প্রবর্তক ছিলেন পন্নুসপ্তব। 
সাম-এ নামে একটা বিহার বৌদ্ধশিক্ষার প্রসিদ্ধ কেন্তর 


৩৪৬ 


ফান্তন--১৩৪৭ ] 


ছিল। বু দেশ-দেশাস্তর হইতে ভিঙ্ষুরা এখানে 
আপিয়া সংস্কৃত বোদ্ধগ্রস্থ তিব্বতীয় ভাষায় অনুবাদ করেন। 
খুষ্টীয় একাদশ শতাবীতে তিব্বতে স্ুপ্রসিদ্ধ আচাধ্য 
দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞানের আবির্ভাব হয়। তিব্বতীয় বৌদ্ধ 
ইতিহাসে তাঁহার স্থান সর্ধোচ্চে। যখন মুসলমানেরা 
বাঙ্গাল! ও বিহার জয় করে তখন অনেকগুলি ভারতীয় 
বৌন্ধভিক্কু ও পণ্ডিত তিব্বত ও নেপালে পলায়ন করেন । 
চীন ও মধ্য এশিয়ার প্রচলিত ধর্মের উপর তাঁহাদের প্রভাব 
অধিক ছিল। কুব্লাই খা নামে কোঁন একজন লোঁকের 
নেতৃত্বে বৌদ্ধধর্ম স্থপ্রতিঠিত হইয়াছিল। তাহারই পৃষ্ঠ- 
পোঁষকৃতায় অনেকগুলি বোদ্ধগ্রন্থ চীন ভাষায় অনুদিত হয়; 
তাহাদের মধ্যে মূলসর্ববাস্তিবাদ কর্মনবাচার নান উল্লেখযোগ্য | 
চীন ও তিব্বতীয় বৌদ্ধ ত্রিপিটকের একটা তালিকা! প্রস্তুত 
করা হইয়াছিল। ইহ! ব্যতীত ত্রিপিটকের কতকগুলি 
সংস্করণ প্রকাশ করা হয় এবং কতকগুলি চীন বৌদ্ধ গ্রন্থ 
তিব্বতীয় ভাঁষায় অনুদিত হয়। 

ৃষ্টায় পঞ্চম শতাব্দীতে কাম্থোডিয়ার রাঁজা কোতিণ্য 
জয়বন্দণ চীন-রাজদরবারে নাগসেন নামে একজন ভারতীয় 
বৌদ্ধকে পাঠাইয়াছিলেন। ফু-নান অর্থাৎ প্রাচীন 
কান্বোডিয়ার মন্ত্রসেন এবং সঙ্ঘভরত নামে দুইজন ভিক্ষু 
চীনদেশে গমন করিয়া কতকগুলি বোদ্ধগ্রন্থ চীন ভাষাঁয় 
অনুবাদ করেন। 

চম্পা দেশে চাম্‌ অক্ষরে লিখিত অনেকগুলি বৌদ্গ্রন্থ 
ছিল। সপ্তম শতাব্দীতে জাভা ও সুমাট্রা৷ বৌদ্ধশিক্ষার কেন্দ্র 
ছিল। এই দেশঘ্বয়ে স্ুগ্রসিদ্ধ চীন পর্যটক ইৎসিং, বৌদ্ধ 
শাস্ত্রে সুপগ্ডিত দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান এবং ব্্রবোধি আসেন। 

চীন সাত্রাজযের তাংদিগের সময় বৌদ্ধধর্ম উন্নত ছিল। 
এই সময়ে কতকগুলি ভারতীয় পণ্ডিত চীনদেশে গমন করিয়া 
চীনভিক্ষুর সহিত একত্র কাধ্য করেন। আরও দেখা যায় 
যে, এই সময়ে স্প্রসিদ্ধ চীন বৌদ্ধতিক্ষু ছয়েন্‌ সাং, ইৎসিং, 
সং-মুন প্রভৃতি সকলে ভারতীয় বৌদ্ধধর্ম জানিবার জন্য 
ভারতবর্ষে পদার্পণ করেন। চীনদেশবাঁসীর গাহ্‌স্থ্য জীবনের 
উপর বৌদ্ধধর্মের গ্রভাঁব বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয় এবং 
বৌদ্ধধর্মের উন্নতিকল্পলে ভারত ীঢিরিন যথেষ্ট সাহায্য 
করিয়াছিল। 

ভারত ও চীনের সহযোগিতার ফলে স্প্রসিদ্ধ চীন 


০ীছদপ্রস্মিল্প তিজ্ভান্র 


৯282 


ত্রিপিটকের সৃষ্টি হয়। বৌদ্ধধর্মের আঁটটা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের 
পুস্তক এবং কতকগুলি ব্রা্গণ্যপুস্তক এই ব্রিপিটকের 
অন্তর্গত। 

কোরিয়া হইতে বৌদ্ধধন্্ জাপানে সর্ধপ্রথমে আসে 
এবং চীন ত্রিপিটকের সর্বপ্রথম সংস্করণ কোরিয়ায় ছিল; 
পরে জাপানে আনা হয়। খ্ষ্টীয় ষষ্ঠ শতাববীর মধ্যভাগে 
কোরিয়ার সহিত জাপাঁনের কলহ হয় এবং কোরিয়া! জাপান 
সম্রাটের সহিত সন্ধিস্থত্রে আবদ্ধ হইবার ইচ্ছায় তাঁহাকে 
কতকগুলি বৌদ্ধগ্রস্থ ও মৃষ্তি উপহার দেয়। ভারত ও 
তিব্বত হইতে কতকগুলি বণিক ও ধর্প্রচারক কোরিয়ায় 
গমন করেন। খুষ্টীয় দশম শতাব্দী হইতে চতুর্দশ শতাবী 
পর্য্যন্ত ওয়াং রাঁজ্যের পৃষ্ঠপোষকতায় বৌদ্ধধর্মের উন্নতি 
সাধিত হয়। অনেক সুন্দর সুন্দর বিহার নির্মিত হয় এবং 
বৌদ্ধধর্ম রাজ্যের ধর্ম বলিয়া পরিগণিত হইয়াছিল। খুষ্টীয 
পঞ্চদশ শতাঁবীতে বৌদ্ধধম্মের প্রতি বিরুদ্ধাচরণ করা 
হয়। বৌদ্ধমুণ্তি ন্ট কর! এবং রাজ্যে বৌদ্ধশিক্ষা1! বিস্তার 
নিষিদ্ধ বলিয়া ঘোষণা করা হয়। 

জাপানে বৌদ্ধদিগের বাটা সম্প্রদায় ছিল, যথা-_কুশ; 
যোযিৎস্থঃ রিস্স্ স্তান্রন্, হোঁস্‌সোঃ কেগন, টেনডাই, 
সিঙ্গন, জোড়োঃ জেন, সিন্‌ এবং নিচিরেন। এই নকল 
সম্প্রদায়ই মহাযাঁন বৌদ্ধধম্শ্ীবলম্বী ; কেবল কুশ, যোধিৎস্থ ও 
রিস্স্থ হীনযাঁন বৌদ্ধধর্মের সহায়ক ছিল। জাপানে 
সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সামরিক বিষয়ের উপর বৌন্ধ- 
ধর্মের প্রভাব বিদ্যমান ছিল। | 

সিংহলে থেরবাদ বৌদ্বধন্ম্ম প্রচলিত। এখানে বৌদ্ধধর্ম 
প্রচারের জন্ত সম্রাট অশোক স্থবীর মহেন্র এবং ভিক্ষুণী 
সজ্ঘমিত্রাকে প্রেরণ করেন | দেবানং প্রিয় তিম্ত্র এই সময়ে 
সিংহলের রাঁজ! ছিলেন । তিনি তাহাদিগকে সাদরে আহ্বান 
করেন। বহু সংখ্যক নরনারী বৌদ্ধধর্থে দীক্ষিত ইন। 
এখানে বৌদ্ধধর্ম সুপ্রতিষ্ঠিত হইবার ফলে অনেক বিহার ও 
স্তপ নির্মিত হয় এবং বৌদ্ধ প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয় । সিংহলের 
রাজা ছুট্ঠগামণির সময়ে সিংহল দ্বীপের সামাজিক উন্নতি- 
কল্পে বৌদ্ধধর্ম যথেই সাহায্য করিয়াছিল । রাজা বট্ঠগামণির 
সময়ে বৌদ্ধ নীতিশিক্ষাণ্তলি লিখিত হয়। খুষটী় প্র 
শতাবীতে সিংহল বৌদ্ধসজ্ে কলহের সষ্টি হয়। যহাবিহারের 
ভিক্ষুগণের সহিত অক্তয়গিরি বিহারের বৈতুল্য ডিক্ষুগণেক্. 


৬ 


ভ্াাব্রত্ডজ্ঘ 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় খণ্ড--৩য় সংখ্যা 





বহুদিন ব্যাপী কলহ চলিতেছিল। খুষ্টীয় পঞ্চম শতাব্দীর 
প্রথম ভাগে স্ুপ্রসিদ্ধ বৌদ্ধ টাকাকার বৃদ্ধঘোঁষ দক্ষিণ ভারত 
হইতে সিংহল দ্বীপে পদার্পণ করেন। তৎকালীন সিংহলের 
রাঁজা মহানামের পৃষ্ঠপোষকতায় তিনি বৌদ্ধ পিটকের 
অন্তগত পুস্তকগুলির অর্থকথা প্রণয়ন করেন। তিনি যে 
সকল টীকা লিখিয়াছিলেন তাহাদের মধ্যে বিশুদ্বমার্গ, 
সমস্তপাসাদিকা, সুমঙ্গলবিলাসিনী, পপঞ্চগ্ৃদনী, মনোঁরথ- 
পূরণী এবং সারখপ্রকাশিনী বিশেষ উল্লেখযোগ্য । খৃষ্টায 
দ্বাদশ শতাবীর মধ্যভাগে রাজা পরাক্রমবাহুর পৃষ্ঠপোষকতায় 
বৌন্বধর্্শ নৃতন জীবন লাভ করে। তিনি বহু বিহারের 
সংস্কার করেন এবং ভিক্ষু্দিগের জীবনযাত্রীর জন্ত কতকগুলি 
নিয়ম করেন। তাহার মৃত্যুর পর সিংহল দ্বীপের রাজনৈতিক 
গোলমালের সৃষ্টি হয়; কিন্তু দক্ষিণ ভারতের অন্তর্গত চোড় 
দ্বেশের ভিক্ষুগণের সাহায্যে বৌদ্ধধর্ম পুনরায় প্রতিষ্ঠিত 
হয়। ইহার পরবর্তী সময়ে সিংহলে বৌদ্ধধর্মের পতন 
পরিলক্ষিত হয়। শরণস্কর নামে একজন বৌদ্ধশ্রমণের 
সাহায্যে তৎকালীন শ্রীবিজয়রাজসিংহ নামে একজন 
সিংহলের রাজা বোদ্ধধর্শ পুন: প্রতিষ্ঠার জন্য শ্যাম দেশ 
হইতে ভিক্ষুগণকে সিংহলে আনয়ন করেন। ১৮১৫ সালে 
সিংহছল দ্বীপ ইংরেজদিগের হস্তগত হয় এবং এখনও পর্য্যন্ত 
খেরবাদ বৌন্ধর্্ম উন্নতাবস্থায় এখানে বিদ্যমান আছে। 

হ্যাম দেশেও থেরবাদ বৌদ্ধধর্ম প্রচলিত। এখাঁনকার 
কতকগুলি পুরাতন স্থানে বৌদ্ধ স্থাপত্যের হ্বন্দর নিদর্শন 
পাওয়া যায়। শ্াম রাঁজ্যে আজকাল যে বৌদ্ধধর্ম প্রচলিত 
আছে তাহা হীনযাঁন বোদ্ধধন্্ হইতে কিঞ্চিৎ বিভিন্ন 
বলিয়া মনে হয়। শ্ঠামবাসীরা সিংহল বৌদ্ধসঙ্জের প্রাচীনতা 
স্বীকার করে এবং সিংহল হইতে একজন ধর্মপ্রচারককে 
তাহাদের দেশে নিমন্ত্রণ করিয়া আনে। খ্রীয় চতুর্দশ 
শতাঁধীর মধ্যভাগে শ্যামরাজ্যের রাজধানী অজুধিয়াঁ় 
স্থানান্তরিত করা হয়। এখানে 'মনেক বৌদ্ধমূত্তি এবং 
বৌন্বপ্রতিষ্ঠানের ভগ্নাবশেষ দেখিতে পাঁওয়৷ যাঁয়। 
ফার-তাক্-সিন্‌ নামে একজন চৈনিক ব্যাঙ্ককে রাজধানী 
প্রতিষ্ঠিত করেন এবং, চক্রী নামে কোন একজন লোক 
কর্তৃক তিনি রাজ্যচ্যত হন। শ্থামরাজ্যের পরবর্তী 
ইতিহাসে দেখিতে পাওয়া যায় যে সমগ্র বৌদ্ধ ত্রিপিটক 
সংশোধিত-হইয়! একটী বড় হল ঘরে সুরক্ষিত হয়। 


প্রবাদ আছে যে সম্রাট অশোক ব্রহ্মদেশে বৌদ্ধধর্ম 
আনয়ন করেন। সংস্কত ভাষায় লিখিত ধে সকল বৌদ্ধ পুস্তক 
পুরাতন প্রোম দেশে পাওয়া গিয়াছে তাহা হইতে বেশ বুঝা 
যায় যে পূর্ব-ভারতের মগধের অন্তর্গত দেশগুলির সহিত 
ব্রহ্ষদেশের একটী নিকট-সন্বদ্ধ ছিল। পুরাতন গপ্রোমে 
অনেকগুলি বৌদ্ধ স্বতিস্তস্ত এবং স্থাপত্য আবিষ্কৃত হইয়াছে। 
পেগান দেশে থেরবাদ বোদ্ধধন্্ম সুপ্রতিষ্ঠিত ছিল। নিম্ন 
বরহ্মদেশে সিংহলীয় সঙ্ঘ ক্রমশঃ সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। ব্রহ্মদেশীয় 
সঙ্বের উন্নতিকল্লে সিংহল দেশবাসী ভিক্ষুগণ যথেষ্ট সাহায্য 
করেন এবং রাজা ধর্মচেতির সংস্কারের ফলে সিংহলীয় 
সঙ্ঘের উন্নতি সাধিত হয়। চৈনিক ভূপধ্যটক ইৎসিংএর 
বিবরণ হইতে জানা যাঁয় যে খুষ্টীয় সপ্তম এবং অষ্টম শতাবীতে 
সর্বাস্তিবাদ বৌদ্ধধন্ম ব্রহ্মদেশে প্রচলিত ছিল। উচ্চ 
বরহ্ধদেশে মহাযান বৌদ্ধধন্ম এবং তান্ত্রিক ধন্ম এই ছুই ধঙ্ধের 
অস্তিত্ব দেখা বায়। মিন্দোন্-মিন্‌ নামে একজন ব্রহ্মদেশবাসী 
্রহ্মদেণয় বৌদ্ধসজ্ঘের যথেষ্ট উন্নতিসাধন করেন। ভিক্ষু- 
দিগের জন্য তিনি কতকগুলি নিয়ম করেন। 

থৃষ্টীয় দ্বিতীর কিংবা তৃতীয় শতাবীতে ইগ্ডোচীনে 
বৌদ্ধধন্মের নিদর্শন পরিলক্ষিত হয়। খুষ্টায় নবম শতাবীর 
পূর্বে ইণ্ডোচীনের অন্তর্গত চম্পা রাজ্যে বৌদ্ধধম্ম সন্থন্ধে 
কোন কিছু সংবাদ পাওয়া যায় না। সমন্ত নামে পাুরাঙ্গ 
দেশের একজন বৌদ্ধ জিন এবং শিবের উদ্দেশ্টে বিহার 
এবং মন্দির উৎসর্গ করেন। চম্পা, জাভা এবং স্ুমান্্রীয় 
শৈবধন্মের সহিত বৌদ্ধধর্মের নিগুঢ় সম্বন্ধ ছিল। রাজা 
থ্বিতীয় ইন্ত্রবর্মণ লোকেশ্বরের বিখ্যাত বৌদ্ধবিহার নিশ্মাঁণ 
করেন। ইহার পর আর একজন মহাঁধান বৌদ্ধ স্থবীর 
আর একটী লোকেশ্বর বিহার নিম্মীণে যথেষ্ট সাহায্য 
করেন। চম্পা রাজ্যে মহাধান বৌদ্ধধর্ম প্রচলিত ছিল। 
পাুরাঙ্গ দেশের রাজ! মহাযাঁন বৌদ্ধধর্্ীবলন্বী ছিলেন 
এবং বুদ্ধ লোঁকেশ্বরের একটী মুন্তি নির্মাণ করেন। 
চম্পার ভগ্নাবশেষ হইতে লোকেম্বর এবং প্রজ্ঞাপারমিতার 
শিলামৃহ্তি পাওয়া গিয়াছে । খুষ্টীয় সপ্তম শতাবীতে চম্পার 
বৌদ্ধের! আধ্যসমিতি সম্প্রদায়তূক্ত ছিল এবং তাহাদের মধ্যে 
কতকগুলি সর্বাস্তিবাদ সম্প্রদায়তুক্ত$ ছিল। খুষ্টীয় পঞ্চদশ 
শতাকীর শেষভাগে" চম্পায় মহাযান বৌদ্ধধর্শের অবনতি 
পরিলক্ষিত হয়। | 


ফার্ভুন--১৩৪৭ ] 


চম্পার ন্যায় ফিউনান রাজ্যে শৈব এবং বৌদ্ধধর্ম একত্র 
অবস্থিত ছিল। ইৎসিংএর মতে ফিউনানের লোকেরা 
সর্বপ্রথমে দেবদেবীর উপাসক ছিলেন: পরে সেখানে 
বৌদ্ধধর্ম উন্নতি লাভ করে। ফিউনাঁন রাজ্যের কোন 
একজন নিষ্ঠুর রাঁজা বৌদ্ধদিগকে দেখান হইতে বিতাড়িত 
করেন এবং একটা মাত্র ভিক্ষুকেও সেখানে থাকিতে দেন 
নাই। ফিউনান রাজ্যের ভিক্ষুর| বৌদ্ধধর্থ্ের পুস্তকগুলি 
অঙ্বাদের জন্য চীনদেশে আনেন এবং ইহাদের মধ্যে 
সঙ্বপাল ও মন্দ্রসেনের নামোল্লেখ করিতে পারা যায়। 

ফিউনান রাজোর দক্ষিণে অবস্থিত মালয় দেশ একটা 
বোদ্ধকেন্দ্র ছিল। খুষ্টীয় ষষ্ঠ শতাববীর মধ্যভাগে কাদ্বোজেরা 
ক্ষমতাঁশালী হইয়া ফিউনান রাজ্য ধবংস করে। কাম্বোডিয়ায় 
বৌদ্ধদেবতা লোকেশ্বরের পূজা প্রচলিত ছিল । বৌদ্বধর্মীবলক্থী 
প্রথম হুর্য্যবন্মণ পরমনির্বাণপাদ নামে প্রসিদ্ধ ছিলেন। 
লোফবুরির চতুদ্দিকস্থ দেশগুলিতে মহাঁধান বোদ্বধর্্ন প্রচলিত 
ছিল। খ্ৃষ্টীয় পঞ্চদশ শতাব্দীতে খামার রাঁজন্টবর্গ তাহাদের 
রাজধানী পরিত্যাগ করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন এবং 
রাজধানী পরিত্যাগ করার সঙ্গে সঙ্গে হিন্দু ও মাঁান 
বৌদ্ধধর্ম নষ্ট হয়। 

স্থপ্রসিদ্ধ চীন পর্যটক ফাহিয়নের মতে জাভ৷ দেশে 
বৌদ্ধধর্মের চিহ্ন পরিলক্ষিত হয়। তিনি আরও বলেন যে? 
এখানে ব্রাহ্মণদের প্রাধান্য অধিক ছিল। খুষ্টীয় পঞ্চম 
শতাঁীতে কাশ্মীরের যুবরাজ গুণবন্দীণ এখানে আসেন এবং 
বৌদ্ধধশ্ম প্রচারে তিনি কতদূর সমর্থ হইয়াছিলেন সে বিষয়ে 
আমাদের জান। নাই। খুষ্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীতে মধ্য জাভার 
প্রাধান্ত পরিলক্ষিত হয়। খৃষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীর মধ্যভাগে 
জাভা-_বিশেষতঃ মধ্য এবং পশ্চিম জাঁভা--শৈব রাঁজন্যব্গের 
হস্ত হইতে স্ুমাট্রার কোন একটী বৌদ্ধরাজ্যের অধীনে আসে। 
সমান ব্যতীত মধ্য জাভা এবং মালয় পর্যন্ত স্থবিস্তৃত রাজ্য 
শ্রীবিজয়ের শৈলেন্দ্রদ্দের অধীনে ছিল। শৈলেন্ত্ররা মহাঁধান 
বৌদ্বধর্শ্াবল্বী ছিলেন। তাহাদের মধ্যে কোন একজন 
রাজা মহাযান তারাদেবীর সম্মানের জন্ত মধ্য জাভায় 
কলপান মনির নির্াণ করেন। মধ্য জাভার অন্তর্গত 


০ীহ্পরশ্ররেল শ্িভ্ডান্ 


ঠিহি উৎ 


বরবৃদুরের স্থপ্রসি্ধ বৌদ্ধমন্দির শৈলেন্দ্রদিগের ঘারায় 
নিশ্মিত। চৈনিক ভৃপর্যটক ইৎসিংএর মতে সুমা! একটা 
হীনযাঁন বৌদ্ধশিক্ষার কেন্দ্র ছিল। ইৎসিংএর পরে 
শৈলেন্দ্রদিগের পৃষ্ঠপোষকতায় এখানে মহাধান বৌদ্বধন্থ 
উন্নতি লাভ করে। খুষ্টীয় দশম শতাব্দীতে মাদ্রাঞ্জের অন্তর্গত 
নেগাপতম দেশে শৈলেন্ত্রদিগের কোন এক রাজার 
অর্থান্গকুল্যে এবং একজন চোড় যুবরাজের অনুমতিতে একটী 
বৌদ্ধন্দির নিশ্মিত হয়। নালন্দায় বলপুত্রদেব নামে আর 
একজন শৈলেন্দ্ররাজ্যের বৌবধর্্মীবলম্বী রাজা একটা 
বিহার নিমন্মাণ করেন। নালন্দার স্প্রসিদ্ধ গুরু ধর্মপাল 
সুমাট্রায় শেষ জীবন অতিবাহিত করেন। পাল রাজাদিগের 
সময়ে বাঙ্গালা ও মগধে মহাঁযান বৌদ্ধধর্ম উন্নত ছিল। 
সুমাঃ জাভা এবং কাগ্োডিয়ার কোন কোন অংশে বৌদ্ধ 
এবং তান্ত্রিক এই দুই ধর্মের সমন্বয় দেখিতে পাওয়া যায়। 
জাভা দেশে অনেকগুলি স্ুপ্রসি্ধ বৌদ্বগ্রস্থ আবিষ্কৃত 
হইয়াছে এবং বরবুদুরের মন্দির বৌদ্ধ ইতিহাসে চিরন্মরণীয় 
হইয়! থাকিবে। খুষ্টীয় দশম শতাবীর মধ্যভাগে মধ্য জা! 
হইতে দূরীভূত হইয়া শৈব রাজন্তবর্ পুর্ব জাভায় বসবাস 
করেন। শৈলেন্ত্রদিগের নিকট হইতে তাহাদের নই রাজ্যগ্ুলি 
পুনরুদ্ধার করেন এবং মধ্য জাভায় শৈবধর্থের পুনরুখান হয়। 
বর্তমান জাভায় বোদ্ধধর্ম স্থাপনের জন্ত অনেক লসময় 
লাগিয়াছিল। হলাণ্ডের অন্তর্গত লাইডেনের যাদুঘরে যে 
প্রসিদ্ধ প্রজ্ঞাপারমিতার মূত্ধি রক্ষিত আছে তাহা খৃষ্ীয 
ত্রয়োদশ শতাবীর শেষভাগে কেন্‌ এ্যারক্‌ রাজ্যে ছিল। 
হাম উরুকএর রাজত্বকালে ভূজঙ্গ নামে কতকগুলি 
সুশিক্ষিত ধর্মযাজক ছিলেন। তীহার! রাজ্যের অনেক 
কার্য করিতেন । তাহাদের মধ্যে কতকগুলি ব্রাহ্মণ এবং 
কতকগুলি বৌদ্ধ ছিল। রাজধানীর দক্ষিণদিকে বৌদ্ধেরা 
বাদ করিত। এই সময়ে কতকগুলি সুন্দর বৌদ্ধ চৈত্য ও 
বিহার নিম্মিত হয়। বলিদেশে বৌদ্ধধন্ম বিশেষ উন্নতির 
দিকে অগ্রসর হইতে পারে নাই। যদিও এই স্বীপে এখনও 


বৌদ্ধধর্ম বিদ্যমান, তাহা হইলেও এখানে হিন্দু ধর্ের প্রাধান্ত 
যথেষ্ট আছে। সমাপ্ত , 





প্রতিধ্বনি 


উীরধীন্দ্রকান্ত ঘটক চৌধুরী 


বৈশাখের এক হুর্যোগ রাত্রে চলিয়াছি বল্পভগপ্জ হইতে মেঘনা- 
নদী পাড়ি দিয়া সাত ক্রোশ দূরস্থিত সাভারপুর গ্রামে । 
নৌকা তীত্র বেগে ছুটিয়া চলিয়াছে মাঝথানের জমাট বাধা 
অন্ধকার ভেদ করিয়া । বিদ্যুতের তীব্র আলোকচ্ছটায় 
এক একবার চোখ ঝল্সাইয়া যাইতেছে, আমি ত্রাসার্ত_ 
চীৎকার করিয়া ডাঁকিতেছি, “মাঝি ।” নিবিকার মাঝি 
হাল ধরিয়া বলিয়। আছে। বিদ্যুতের আলোতে মাঝির 
নিশ্চিন্ত মুখচ্ছবি দেখিয়া আমি চমকিয়! উঠিতেছি। 

প্বাবু 1” নিতান্ত সহজ উত্তর | 

“আকাশের অবস্থা দেখছ তো । কোথাও পারে ভিড়িয়ে 
না হয় কিছুক্ষণ অপেক্ষা করো । শীগগির-ই ঝড় বইতে 
সুরু করে দেবে ।” 

“আপনার কিচ্ছু ভয় নেই, বাবু। সামনে কোথাও পার 
নেই। ভোর নাগাদ আপনাকে সাগরপুরে নিধিদ্বে পৌছে 
দেব । বোশেখ মাসে এরকম বড়-বৃষ্টি হয়েই থাকে ।”-_সেই 


নিতান্ত হজ উত্তর । 

“কিন্ত 'এ তো সামান্ত কড়-হৃষ্টির লন্মণ নয়, মাঝি” 
-আমার কণ্ঠস্বর তীব্র হইয়া ওঠে । 

“মেঘনায় বোশেখ মাসে এই বড়-বৃষ্টির লক্ষণ সামান্তই 
বাবু।” 


অগত্যা চুপ করিয়া থাকিতে হয়। শংকিত মনটা লইয়া 
আকাশের দিকে আর এককার চাহিয়া দেখি। অশান্ত 
ধমনীগুলি দুলিয়! দুলিয়া! ওঠে । প্রাণপণ শক্তিতে চোখ বন্ধ 
করিয়া থাকি। 

“বাবু!” মাঝি ডাঁকিতেছে। প্রথমটাঁয় ইচ্ছ! করিয়াই 
উত্তর দিলাম না। 

পম্যুমিয়ে পড়েছেন ?” 

উত্তর দিলাম, “ন1 1” 

পআপনি একটুকও ভয় করবেন না। ছিদাম মাঝি 
আজকের লোক নয় ৷ বোশেখের বহু দুর্যোগ রাত্রিতে সে 
মেঘনা নদী পাঁড়ি দিয়েছে । এর চেয়ে শত গুণে ভয়ংকর 
রাত্রি শত গুণে ।” 


“কিস্ত দৈবের কথা বলা যায় না তো” আমি অন্ধকারে 
মাঁঝিকে দেখিবার বুথা চেষ্টা করিয়া কহিলাম। তাহার 
জীবন্ত দেহটা অন্ধকারের সঙ্গে কোথায় যেন জমাট বাধিয়! 
গিয়াছে । 

উত্তর পাইলাম, “দৈব টেব কিছু নয় বাঁবু। এসব ক্ষেত্রে 
সব অভিজ্ঞতা । আমার পঞ্চাশ বছরের অভিজ্ঞতা আঁজকের 
দুর্যোগ রাত্রির কাছে কিছুতেই হার মান্বে না।” 

উত্তর দিবার কোনও প্রযোজন বোধ না করায় চুপ 
করিয়! রহিলাম | 


এমএ পাশের পর জীধনে প্রথম চাকুরী করিতে 
চলিয়াছি সাগরপুরে এই ছুর্যোগ রাত্রে। মনে হইতেছে, 
আমার এই যাত্রাটা যেন একটা দুঃস্বপ্ন । এই ঝড়-বঞ্চা 
সকলই যেন মিথ্যা, সকলই যেন অর্থ হীন। আকাশ ধরণীর 
এ কি পাগলামি! এ কোন্‌ নিছ্ধুর খেয়াল! চমকিয়া 
উঠিলাম, শাণিত বিদ্যুত আকাশের এক প্রান্ত হইতে আর 
এক প্রান্তে ছুটিয় পালাইয়া গেল তীব্র অর্তনাদে। 

“নদীর কোথাও বাঁজ পড়েছে বোধ হয় মাঝি?” ডাকিয়া 
জিজ্ঞাসা করিলাম । 

উত্তর আসিল--“হু”। আবার সমস্ত স্তব্ধ । 
মাঝে শোন! যাইতেছে নদীর জলের ছল ছলাৎ শব্দ । 

“রাত্রি প্রায় শেষ হয়ে এলো- ভোর নাগাদ আমরা 
নিশ্চয় পৌছে যাব। পালে বেশ হাওয়া লাগছে”-_মাঝি 
কহিল। আমি বিন্দুমাত্রও উৎসাহ প্রকাশ না করিয়। চুপ 
করিয়া গেলাম। 

মাঝি বলিয়া চলিল, “আপনাদের কোনও সাহস নেই 
বাবু। মেঘনার তীরে বাস ক'রে মেঘনাকেই আপনারা ভয় 
ক'রে চলেন ! মেঘনা আমাদের ম1। কালী করাল মুত্তি 
ধারণ করলেও কথনও সন্তানের অমংগল করেন না।” 

আমি বিরক্তিগ্রকাশ করিয়া কছিলান, “ওসব আমি 
কিছু বিশ্বাস করিনে মাঝি.” 

“কিন্ত দৈব?” মাঝি অট্রহাত্য করিয়া উঠিল। হিংশ্র 


মাঝে 


৩৫৩ 





ফাল্গুন--১৩৪৭ ] 
নদীবক্ষের উপরে মাঝির অষ্রহাস্ত ভয়ংকর হইয়। আমার 
কানে বাজিয়া উঠিল। 

র্ ৯ 


নাগরপুর হইতে মেঘনার অপর পারে বল্লভগঞ্জে 
যাইতেছি। মাঝথানে দিগন্ত প্রদারি মেঘনা নদী। 
আকাশের হুর্য তখন পশ্চিমে হেলিয়া পড়িয়াছে। চতুদ্দিক 
নিম্তন্ধ। মাঝি আপন মনে দীড় টানিয়া সারি গান 
গাঠিতেছে। কর্মস্থল হইতে ফিরিয়া চলিয়াছি পেন্সন্‌ 
লইয়া। যৌবনের দুর্যোগ রাত্রির অন্ধকারের বাত্রা ফুরাইয়া 
[গয়াছে। 

অশান্ত তরংগগুণি স্ুদীর্ঘকাঁল দাপখদীপির পরে যেন বিষ- 
দাত-ভাঙা সাপের মত ঝ'পির অন্তরালে চুপ করিয়া আছে। 
মাঝি সাতাশ-আঠাশ বছরের যুবক । ধমনীতে যৌবনের 
উদ্দামতা, দেহে যৌবনের কঠোরত। | কর্মসোতের তীব্র 
গতিতে ভাসিয়া চলিয়াছে। 

ডাকিলাম, “ম|ঝি ৮ 

উত্তর পাইলাম, “আজ্ঞে।” 

প্বল্লতগঞ্জে কখন নৌকা! লাগবে বল্তে পারো ?” 

“তা বাবু সন্ধ্যা নাগাঁদ পৌছবে বলেই তো আশ 
করছি” 

মাঝি ফস্‌ করিয়া একটি বিড়ি জালাইয়া লইল। চাহিয়া 
দেখিলাম মাঝির বাহুর মাংসপেশিগুলি যেন যৌবনের তেজে 
উদ্ধত হইয়া আছে । 

আমি স্তব্ধ হইয়া বসিয়া আছি। মনের মধ্যে কত 
অস্পষ্ট কথা ভামিয়। উঠিয়া মিলাইয়া যাইতেছে । মনে 
পড়িল এক দুর্যোগ রাত্রির কথা । এই মেঘনার হিং 
তরংগগ্ডলি আমাদের নৌকাটাকে লইয়া সেদিন কি মাতী- 
মাতিই না করিয়াছে! 

“আর কখনও যাননি বুঝি সাগরপুরে ?” মাঝি বিড়িটায় 
শেষটান দিয়! নদীর জলে ছু*ডিয়া। ফেলিয়া দিল। 

প্যাব না কেন? সাগরপুরেই যে আমার বাস্তভিটে।” 
আমি হাসিয়া উত্তর দিলাম। 

কথায় কথায় গল্প জমিয়া উঠিল মাঝি কহিল, “আমার 
বাবা ছিল দশ-বিশ ক্রোশের মধ্যে সেরা মুঁঝি। বড়-বঞা 


প্রভিপ্ররন্মি 


৫টি 





দুর্যোগ রাত্রি কোন কিছুই গ্রাহ্থ করৃতনা সে। আমরা 
বল্তাম, “বাবা, তুমি সাঁপ নিয়ে খেলা করুছ, একটা আপদ 
বিপদ ঘটতে কতক্ষণ ?” বাঝ! দিব্যি সহজ হেসে উত্তর দিত, 
“বিষ দত ভেঙে ফেলে দিয়েছি রে-_ভয় কয়্বার আর কিছুই 
নেই।, বাবার একটি মাত্র মন্ত্র সম্থল ছিল-_“মাভৈঃ। 
আমাদের সে সাঁহসও নেই, সে শক্তিও নেই |” 

মাঝি নৌকার মোঁড় ফিরাইয়!। দিল। নদীর জলে শব্দ 
উঠিতেছে ছলাৎ ছলাৎ ছপ. ছপ। দিগস্তবিস্তারি জল- 
রেখা ঝক্‌ ঝক্‌ করিয়া মৃদু মুদু ছুলিতেছে। নৌকা চলিয়াছে 
মাঝ নদীর উপর দিয়] । 

আমি ভাবিতেছি, আমার জীবনে একটি দুর্যোগ রাত্রি 
আসিয়াছিল সেই কথা। 

মাঝি বলিয়! চলিল, “ছিদাম মাঝির নাম আজ পর্যন্ত 
গায়ের ছোট ছেলেটিও জানে । আমার বাবা মরেছিল এক 
ছুযৌগ রাত্রিতেই এই মেঘনার বুকে ঝাঁপ দিয়ে অন্ত নৌকার 
এক আরোহিণীকে রক্ষা করতে গিয়ে। আরোছিণীকে 
নৌকায় তুলে দিয়েই বাবা ঝুপ্‌. ক'রে তলিয়ে গেল, আর 
উঠলনা। পরে জান্তে পেরেছিল!ম, কুমীরে তাকে পা ধরে 
টেনে নিয়ে গিয়েছিল।” 

শুনিলাম মাঝি দীর্ঘ নিশ্বাস ছাড়িতেছে। নৌকাটা একটু 
ঘুরিয়া আবার দক্ষিণ দিক ধরিয়। চলিতে লাগিল। 

আমি কহিলাম, “তোমার বাবা শ্রীদাম মাঝি! সে এক 
দুর্যোগ রাত্রে আমাকে মেঘন৷ নদী পাড়ি দিয়ে সাঁগরপুর 
গ্রামে পৌছে দিয়েছিল। সে আজ পচিশ-ছাঁব্বিশ বছর 
আগেকার কথা |” 

বিস্মিত মাঝি আমার দিকে একবার ফিরিয়া চাহিল এক 
মুহূর্তের জন্য । তার পরে দুজনেই চুপ চাপ. 

বল্লভগঞ্জের ঘাটে নৌকা ভিড়িয়াছে। বিদায়ী সূর্য তখন 
পশ্চিমের দিকৃবলয়ে রক্তরাঁগ লেপিয়! দিয়াছে । নৌক! হইতে 
নমিবার সময় দেখিলাম কাঠের বৈঠার উপরে বড় বড় অক্ষরে 
খোদাই করা নামটি *শ্রদাম তাতি।” 

মাঝি প্রণাম করিয়া বিদায় লইল। 
আমি তখনও এক দুর্যোগ রাত্রির কথ! ভাবিয়া 
চলিয়াছি। ূ 


কত্তিবাস 


কবিশেখর শ্ীকালিদাস রায় 
বাংলার বাহ্গীকি কবি, দেবীর আদেশ লি, বঞ্চক “মুরারি শীল ছাঁড়ে না যে একতিল, 
শুভক্ষণে কবে নাহি জানি, মেকি দিতে তারও হাত কাঁপে, 
সীতার নয়ন জলে বসিয়৷ অশোক-তলে পাপ করি দিন কাটে, সাঝে রামায়ণ পাঠে 
লিথেছিলে রামায়ণখানি । রাতে শুয়ে মরে অনুতাপে। 
তাল-পত্রে সেই লেখা সে-ত অশ্রু জল-রেখা, 
অনল অক্ষরে আঁ জলে, শিখাইলে কী যে সত্য, গ্রামে গ্রামে ভাড়, দত্ত 
বাংলার ঘরে ঘরে তার তাপে সুধা ক্ষরে, মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে ভুলে যায়, 
পাষাণ হৃদয়-ও তায় গলে । 20501 ভিছিবডিরিযা লি, 
বক্ষদেরও হাদয় গলায় । 
জানকীর আবি নীর গৃহে গৃহে গৃহিদীর দিনে হাটে হট্রগোল কাড়াকাড়ি ডাঁমাডোল, 
তা সন্ধ্যায় সকলি চুপচাঁপ। 
শরির রাজ লঙ্কাকাণ্ড শেষ করি উত্তরা কাওটি পড়ি 
শত শত দেবর লক্ষণ । দোকানী দোকানে দেয় ঝাপ 
কাঁডালের তুচ্ছ পুজি তাই নিয়ে যোবাযুঝি বৈকালে বটের ছাঁয় স্বর করি নিতি গায় 
ভারেতারে হাতার দা-ঠাকুর কাহিনী সীতার, 
ছে কবি, তোমার গান গলায় তাদের প্রাণ যি ৫ 
একই কথা শুনে বার বার। 
আখি জল ছন্দ করে জয়। 
শাশুড়ী তোমার গাঁনে বধূরেও বক্ষে টানে, তব বাণী মধুচ্ছন্দ। নন্দিত করেছে সন্ধ্যা, 
তুলে যাঁয় অবলা-গীড়ন, স্নিগ্ধ শান্ত গ্রীষ্মের দিবস, 
স্মরিয়৷ সীতার কথা তুলে যায় সব ব্যথা জরা-জীর্ণ গ্রন্থখানি। কি সুধা তাতে না জানি, 
গৃহে গৃহে অভাগিনীগণ। শু দৈন্তে করেছে সরস। 
মোদকের খই-্চুড় তব গীতি সুমধুর 
কি মহিম। রচনার ! উদয়ন-কথ! আর আরো যেন মিঠা ক'রে তুলে। 
কহে না ক" গ্রাম-বুদ্ধদল, তব গ্রন্থখানি ছাড়ি উঠে যায় বারবারই 
তাহাদের চারি পাশে যুবা শিশু কেন আসে? দাম নিতে মুদি যাঁয় তুলে । 
তব বাঁণী তাদের সম্বল । 
পশারী পশর! শিরে থমকি দাড়ায় ফিরে জমিদার ঘরে ঘরে প্রজা-নিধাতন করে 
» শুনে যদি রামায়ণ পাঠ; 'তব পুথি পড়ে মাতা ভার, 
গুহকের ভাগ্য ন্মরে, ছুই চোঁখে ধারা ঝরে, প্রজা রঞ্জনের সুর লাগে তার নুমধুর, 
ভুলে যায় বেচা-কেনা, ছাট । গলে যায় তায় কর-ভার । 


৬৫২ 











ফান ১৩৪৭ | করিনা অর 
রাজ! রাণী বাজভ্রাতা রাজার নন্দিনী, মাতা-_ রাম নারায়ণ নিজে সীতাদেবী মা লক্ষ্মী যে 
দৈবদণ্ড তাহাদেরই কত ! একথা ত পড়ে না ক” মনে, 
একথা তই স্মরে বৈরাগ্যে হায় ভরে, হৃদয়-শোণিত ছানি সীতার প্রতিমাথানি 
ছুঃখী তুলে নিজ ছুঃখ শত। গড়ি মোরা যজ্ঞ সমাপনে। 
অলংযত রসনায় যে ভ্রম করিল হাঁয় 
অধোধ্যার নির্বোধ প্রজার, 
আজি বঙ্গ ঘরে ঘরে তারি প্রায়শ্চিত করে, তুমি রস-গঙ্গ৷ হতে আনিলে নূতন শোতে 
চক্ষে ঝরে সরযূর ধারা। আগে আগে দেখাইয়া পথ 
নব রস-ভাগীরথী, উদ্বেল তাঁহার গতি, 
চির শির:সজ্জাহীন এই বঙ্গ দীন হীন, ইনি ভার বাজ রধ! 
নগ্ন শিরে ছিল লজ্জা-ভার, সে প্রবাহ অনাবিল ভাসাইল খাল বিল, 
রাম-নামাবলীথানি আর্ধাবর্ত হ'তে আনি একাকার গোম্পদ পন্থল, 
চির েরার। সে ধারার দুই কুলে লতা-তৃণে শহ্বে ফুলে 
সপ্তকাণ্ড দীপ-ভাতি দিয়! তুমি সারা রাতি কতটি) 
ভারতীর কৰিলে আরতি, ৃ ূ 
সেই দীপ হ'তে আজি জলে লক্ষ দ্রীপরাজি, 
তোঁমা তার! জানায় প্রণতি । বধূরা গাগরী ভরে নিয়ে ষায় ঘরে ঘরে 
আর কারে নাহি জানি মানি শুধু তব বাণী, যা তৃণ্ করে সেই বারি, 
শুনিয়ছি বান্মীকির.নাম, করি তায় নিত্য ল্লান জুড়ায় তাঁপিত প্রাণ, 
তব চিত্তভূমে কৰি নৃতন জনন লভি দয় রাম” গায় নর-নারী। 
অবতীর্ণ বঙ্গে পুন রাম। 
সেই রসধারা বাছি” জয় সীতারাম গাহি” 
এ রাম মোদেরি মত সেধেছে, কেঁদেছে কত, ভেসে যায় কত দ্মধুকর”। 
জেরে রিয়ার দার লঙ্কায় বাণিজ্য তরে যুগে যুগে যাত্রা করে, 
এ রাম মোদেরি মত করিয়াছে ভক্তি নত টায়ার হার বা ৰ , 
নীল পদ্নে পূজা অস্থিকার । 
এ ম্সামে আপন জানি বক্ষে লইয়াছি টানি, শত শাখা-গ্রশাখায় রর সুজা ঝহিয়া যাঁয়। 
দুঃখে তার হয়েছি অধীর, .এউহ্েলিত ক্র ভুর্ফীনে, 
লক্মণের সাথে সাথে অবিরল অশ্রপাঁতে £এহে। বাহ” নহে শেষ চলে যায় নিরুদ্দেশ . 
পদ্পা হ্বুদে-বাঁড়ায়েছি নীর। শেষ ধারা অনন্তের পানে । 





৪৫ 





তাসের খেলা 
যাছুকর পি-সি-সরকার 


আলোচ্য প্রবন্ধে 'ভারতবর্ধ'এর পাঠক পাঠিকার্দিগকে দুইটি গ্ুপ্তবিষ্ভার উপর প্রতিষ্টিত। কাজেই ইউরোপীয় খেলাগুলি 
অত্যাশ্চর্য তাসের খেলা শিখাইব মনস্থ করিয়াছে । যে-কেহ শিখিতে পাঁরিলেও প্ররুষ্ট ভারতীয় যাছুবিষ্ঠা 
ম্যাজিকের কৌশল কোঁনটিই খুব কঠিন নহে। যেকোন 
ব্যক্তি বাড়ীতে কয়েক ঘণ্টা অভ্যাস করিলেই সর্বপ্রকার 
খেলা দেখাইতে সক্ষম হুইবেন। আমি এদেশে এবং 
বিদেশে যাুবিষ্যা 'প্রীরর্শন করিয়া যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় 
করিয়াছি তাহাতে বুঝিয়াছি যে, পৃথিবীর কোন দেশের 
ম্যাজিকই কঠিন নহে। লগ্ন ও আমেরিকাতে বর্তমানে 





রবারের হৃতার সাহাধয প্রস্তত-প্রপালী 
একমাত্র সাধনা দ্বারাই সম্ভবপর । বলা বাহুলা, পুনঃ পুনঃ 
অভ্যাস করাকেই সাধনা বলে। জাপানের ও চীনের 





হাতকড়ি ও দড়ির বন্ধন হইতে মুক্ত হইতে 
রত বাছুকর পি-সি-সরকার 


যে সমস্ত খেলা দেখান হয় সেগুলি অধিকাংশই যন্ত্রকৌশলে 
সাধিত হয়। বহু মূল্যবান যন্ত্র, বাক্স, শ্প্রীং বিদ্যুৎ, চুম্বক চি 
প্রভৃতির সাহায্য বাইয়া তাহাদের খেলা রচিত হয়। আর আঠা দ্বার! প্রস্তুতের প্রগালী 

অপরপক্ষে ভারতীয় যাদুবিষ্তা প্রধানত হম্তকৌশল, ম্যাজিকও অত্যধ কঠিন। উহা শিক্ষা করিতে হইলেও 
মনঃসংযোঁগ, ইচ্ছাশক্তি চালনা, চিন্তাপাঠ প্রভৃতি অতিশয় কঠোর অভ্যাসের প্রয়োজন হয়। সে যাহা হউক, এইবার 


৩৪৪ 





ফান্তুন_-১৩৪৭ ] 


দুইটি আধুনিক অথচ চমকপ্রদ খেলার কৌশল প্রকাশে 
প্রযাস পাইব। 

সকলেই দু-চারটি তাসের খেলা দেখাইতে ইচ্ছুক এবং 
পৃথিবীর সকল দেশের যাঁছুকরগণই অপরাপর খেলার সঙ্গে 


এর পর ঝা এ এজ আগ ও ও এ এপ এ 





আঠ। ছ্বার! প্রস্তুতের অপর একটা প্রণাপী 
এাসেব কতকগুলি খেলা দেখাইবেন ইহা স্থনিশ্চিত। কাজেই 
তাসের কতকগুলি লেখা উত্তমরূপে অভ্যাস করিয৷ বাখা 
যুক্তিযুক্ত । অনেকে হয়ত দেখিযা থাঁকিবেন যে বাবসাধী 
যাহকরগণ রঙ্গ মঞ্চে কোন 
তাসেব খেলা আরস্ত করিবার 
পূর্ধ্বে যখন তাঁসের প্যাকেট 
হাতে সর্ধসমক্ষে উপস্থিত হন 
তখন তাঞারা আশ্র্যযজনক- 
ভাবে সাফল ( 5170016 ) 
করেন। তাসগুলি এক হাত 
হইতে অন্ত হাঁতে বিছ্যুতৎবেগে 
চলিয়া যায়। এই সফল 
করার নানারূপ নাম আছে। 
একপ্রকার সাফলের নাম 
জলপ্রপাত (5980915]1 


অপয় হাতে একটি একটি তান সৌ-সৌ চলিয! যাষ। 


আতনন্ল খ্েজন। 


2৫ ক 


সাফলও বলিয়া থাকেন । বলা বান্ুল্য প্রত্যেক খ্যাতনামা 
যাদুকরই তাসের খেল! দেখাইবার পূর্বে ও পরে এই 
ম্যাজিক সাফল দেখাইয়া থাকেন। কারণ ইহ! দেখিয়! 
দর্শকগণ যাছুকর সঙ্বন্ধে খুব উচ্চ ধারণ। করেন। কিন্ত 
এই অত্যাশ্চ্ধ্য খেলাটিক কৌশল অতিশয সহজ। ইহা 
নানাভাবে সম্ভবপর। প্রথমত নিযমিত অভ্যাস দ্বারা । 
দ্বিতীযত তাসের প্যাকেটে কৌশলযুক্ত তাস ব্যবহার 
করিয়া। আমি বহু বসব অভ্যাসের পর কিছুদিন হয 
হন্তকৌশলে ইহা কবিতে সক্ষম হইবাছি। এ যাবৎ কাল 
আমি কৌশলযুক্ত প্যাকেট ব্যবহাঁব করিয়াই এই খেল! 
দ্েখাইধাছি। কিবপে তাসের প্যাকেটে আমি কৌশল 
করিতাম এইবার তাহাই বর্ণনা কবিব। আমি বিলাঁত 
হইতে ম্যাজিকের সরু রবারেব সতা ( (1580 515501০) 
কিনিযা আনিযা তাহার সাহায্যে সমুদয় তাঁসগুলি গাখিয়! 
এই খেলা দেখাইতাঁম। তাহাতে এক হাত হইতে তাস 
লাঁফাইযা অপর হাতে যাইত। শ্থৃতায মাঝে মাঝে গাট 
দেওয়া থাকিত বলিয়। তাসগুলি দ্বিতীয় চিত্রের অনুরূপভাবে 
যাতাঁষত করিত । ইহ! দেখিতে খুবই "আশ্চর্যজনক | তবে 
যাহাবা বিলাত হইতে প্র সৃতা না আনাঈযা কাজ করিতে 
চাচেন তীহাবা বাড়ীতে বসিষা অনুরূপ “টিক প্যাকেট 





বিশেষ প্রস্তুত প্যাকেটের সন্দুথের দৃশঠ 
907৩ )১ কারণ ইহাতে জলপ্রপাতের গ্ভাট এক হাত হইতে তৈয়ার করিয়া লইতে পারেন। উহ্থী নানাভাবে তৈয়ার 


কর! সম্ভবপর £ তবে তৃতীয় ও চতুর্থ চিত্রে সর্বাপেক্ষা 


কেহ কেহ ইংরেজীতে ম্যাজিক সাফল বা ইলেকটিক সহজ প্রণালী দুইটি বুঝাইয়া দেওয হইয়াছে । চিত্রগুলি 


ডক মু শর 


9৫ ৬০ 


ঘ্ডান্পততন্যহ্য 


[ ২৮শ বধ-_-২য় বণ্ী_-৩য় সংখ্যা 





ভাল করিয়া লক্ষ্য করিলে সকলেই ইহা অতিশয় সহজে 
বুঝিতে পাক্িবেন। তৃতীয় চিত্রে তাসগুলি ভাজ করিয়া 
হারমোনিয়ামের বেলোজের ন্যায় তৈয়ার করিতে হয়। 
তৃতীয় চিত্রে ছুইটি সরল রেখা ও ছুইটা চক্ররেখা দ্বারা উহার 
প্রস্তুত-প্রপালী বুঝাইয়া দেওয়া হইয়াছে । চক্ররেখা দ্বারা 
প্রদশিত তাঁস দুইটিকে ভাঁজ করিয়া লইতে হয়। তারপর 
উহার্দিগকে ভাল তাসের সঙ্গে আঠা দ্বারা আঁটকাইয়৷ লইতে 
হয়। এইভাবে প্রস্তুত তাঁসের প্যাকেট দেখিতে অনেকাংশে 
ধেশল্ডিং হারমোনিয়ামের গায় দেখাইবে। সাঁফল্‌ করিবার 
প্রণালীও উক্ত বাগ্যন্ত্রের ন্তায়ই। এইভাবে বিশেষ প্রস্তুত 
প্যাকেটের উপরে ও নীচে কতকগুলি আত্মা (19056) 





বিশেষ প্রস্তত প্যাকেটের পেছনের দৃষ্ঠ 


ভাল তাঁস রাখিতে হয়। থেল! দেখাইবার পূর্বের হঠাৎ 
হাত হইতে আত্মা তাসগুলি মাটীতে ফেলিয়। দিতে হয়। 
শ্গুলি পড়িবাষাত্র ছড়াইয়া যাইবে। যাছুকর এ 
অনাবধান্তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করিয়া! একে একে এঁ আক্না 
তাসগুলি তুলিয়া! লইবেন এবং তারপর খেলাটি দেখাইবেন। 
এরূপ ফরিবার একটি বিশেষ কারণ আছে। তাসগুলি 
ছড়াইয়া পড়ায় দর্শকগণের ধারণ! হইল যে এ প্যাকেটের 
সবগুলি তাই এরূপ আত্মা অর্থাৎ বিশেষ প্রস্তুত নহে । বদিও 
তাহা সত্য নহে__অর্থাৎ সমস্তই বিশেষভাবে তৈয়ারী। 
তারপর খেল! দেখাইলে দর্শকগণ আ'রওবিন্দিত হন। 


এইবার ম্যাজিক সাফলের সর্বাপেক্ষা সহজপ্রণালী 
বর্ণনা করিব। চতুর্ঘ চিত্রে উহ! উত্তমরূপে বুঝাইয়া দেওয়া 
হইয়াছে । ইহাতে এক প্যাকেটের প্রত্যেকটি তাঁস এমন 
ভাবে জোড়া দেওয়া! হয় যে তাসের উপরের অংশ উপরের 
তাসের সহিত এবং নীচের অংশ নীচের তাসের সহিত 
লাগান থাকে । চতুর্থ চিত্রটি ভাল করিয়া দেখিলে ইহার 
্রস্তত-প্রণালী সহজে বোধগম্য হইবে । যে-কেহ এই চিত্রের 
নির্দেশ অনুযায়ী বাড়ীতে তাসের প্যাকেট প্রস্তর করিয়া 
খেলা দেখাইতে পারিবেন। আমার অভিজ্ঞতা হইতে 
এই দৃঢ় ধারণা জন্গিয়াছে যে এই খেলাটি দেখিয়া ষাট 
বংসরের নীচের সমস্ত ছেলেমেয়েই অত্যন্ত আনন্দিত 
(ও বিস্মিত) হইবেন। 

এইবারে যে তাসের 
খেলাঁটির কৌশল প্রকাশ 
করিব ইহা আরও আশ্চর্যয- 
জনক ও আরও সহজ- 
সাধ্য । খেলাটির ইংরেজী 
নাম 41)1591909911175 
0810 বা পলায়মান 
তাম। যাদুকর কতক- 
গুলি তাঁস তাহার হাতে 
ফেলিয়া ধরিয়া দর্শক- 
দিগকে সেগুলি হইতে 
যেকোন একটি তাস 
মনে মনে চিস্তা করিতে 
বলিবেন | অথচ যাছুকরের 


.মায়ামন্তর প্রভাবে ঠিক সেই তাসটি এ প্যাকেট হইতে আনৃশ্থ 


হইবে। যতজন খুশী বা যতটি খুশী তাস চিন্ত/ করিলেও 
যাদুকর সেই তাস কয়টি অনৃষ্ঠ করাইবেন। খেলাটি দেখিতে 
বা শুনিতে অতিশয় কৌতৃহলোদ্দীপক ও বিস্ময়কর-_কিন্ত 
ইহার কৌশল অ, আ$ ক; খ-এর স্তায় সহজ। এই খেলা 
দেখাইতে মাত্র ২৬-টি তাস ব্যবহার করিতে হয় এবং 
প্রত্যেকটি তাঁসই বিশেষ প্রস্তুত । অর্থাৎ উহাদের কোনটিরই 
পেছন নাই ছুইদি/কই তাস। এক প্যাকেটের মধ্য হইতে 
যেকোন ২৬টি ঠাস বাছিয়। লইয়া উহার পিছনে অপর 
২৬টি তাঁস আট দ্বারা পিঠাপিঠি করিয়া আটিয়া দিতে হুয়। 


ফাল্ঠন_-১৩৪৭ ] 


হ “স্হা ব্হ- আদ ব্হ_. স্ব ব্-._.্জ স-* স্ব. আদ স্ব 


তবে একদিক হইতে দেখাইলে ষে ২৬টি তাস দেখাঁইৰে 
প্যাকেটটী কৌশলে উল্টাইয়৷ ধরিলে অপর ২৬টি তাঁস 
দেখা যাইবে। প্রদত্ত চিত্র হইতে ইহা৷ সহজে বুঝাঁন যাইবে। 
পঞ্চম চিত্রে মনে করুন ২৬টা (বা কতকগুলি ) তাঁস দেখান 
হইয়াছে যাহা হইতে দর্শকগণ যে-কোন একটি তাঁস মনে 
করিবে। মনে করুন দর্শকগণ মনে করিল হরতনের ছয় 
বা চিড়াতনের বিবি। তারপর তাসগুলি উল্টাইয়া যাদুকর 


শুই জাস্স 





২০৮৭, 


"সস বর “স্ব -স্্হ সর. স্হান -্হ ব্রা সপ্ত “স্ব স্ব 


যখন 'ষষ্ঠ চিত্রের ন্যায় দেখাইবেন তখন দর্শকগণ দেখিবেন 
সমস্ত তাঁসই আছে কেবল তাহাদের চিড়াতনের বিবি ঝা 
হরতনের ছয়--_উহাই নাই। খেলাটি যতবার খুশী করা চলে । 
অথচ কৌশল জানা না থাঁকিলে_যত চাঁলাকই হউন না 
কেন কেহই ইহার মৃলহ্ত্র আবিফষার করিতে সক্ষম 
হইবেন না ইহা স্ুনিশ্চিত। আপনারা বাড়ীতে চেষ্ট 
করিয়াই দেখুন। 


ওই যায়! 
ক্রীমতী সাহান! দেবী 


মাজি সোনার স্বপনে রঙিন গগন এ কী এ আলোকে চাঁ 
আজি ধরণীর পারে সুনীল সরণী উজলি? ওই কে যায়। 
আঁজি কে যাঁয় নবীন লগন মেলে, 
কে যাঁয় অপার আঁধার ঠেলে, 
কে যায় মরণ-শিয়রে জেলে 
আপন অমরতায ! 
আজি ধুলার জীবন রাঁডিযাী কে ওই আপন! বিকাঁয়ে যাঁয়। 


আজি রাতের আকাশে কত টা হাসে কত যে তাঁরকা গায় 
আজি উষার পবনে স্থথশিহরণে এ কী এ হরষ ছাঁয। 
আজি গগনে ভুবনে কোন এ খেল" 
ধূসর উষরে রঙের মেলা; 
রন্জ শিলার প্রাণের ভেলা 
কে আজি উজানে বাঁয়। 
আঁজি ধূলার জীবন রাডিয়া কে ওই আপন! বিকাঁয়ে যাঁয়। 


আজি ওপারের ঢেউ ভেসে এসে লাগে এ পারের এই কুলে, 
আজি ধুলিমাখা বীণা ঝঙ্করি” ওঠে অপরূপ স্থর তুলে । 
আজি কে লয় তুলিয়া! কমল করে 
পথিক-পরাণ আঁপন ঘরে, 
গতি ছন্দিয়া জীবন 'পরে 
চুমিয়া চিত কে ভায়। 
আজি ধূলাঁর জীবন রাডিয়! কে ওই আপনা বিকায়ে যায়। 


তার একটি রেখায় উছল অসীম আবরি” সীমার গান, 


তাঁর একটি আ্বাখির তারায় উজল লক্ষ রবির দান। 
তার একটি মণির অতলতলে 
অসীম আলোর রং উথলে 
হিয়ায় নিখিল বিশ্বদ্দোলে 
নিঃস্ব মধুরিমায়, 


আজি ধুলার জীবন রাড্য়া কে ওই আপনা বিকায়ে যায়। 


আজি অপার সে ওই সমতায় মোর তনু মন হ'ল লয়, 
আজি তারি স্বরে মোর জীবন জলধি শত তরঙ্গে বয়। 
মোর কুল নাহ ন্মামি অকুলধারা, 
নিমেষে নিমেষে রভসে হারা ! 
মোর প্রাণে আজি চন্ত্রতারা 
কিরণ পরশ পায় ' 
আজি ঠঅপাঁর সে ওই মত্তায় মোর তরীখানি ডুবে যায়। 


্ীরাধিকারঞ্জন গঙ্গোপাধ্যায় 


পরদিন ভোরে উঠিয়াই মনোহর কাহারও সহিত দেখা- 
সাক্ষাৎ কর! অপ্রয়োজন বোধে দেখা-সাক্ষাঁৎ না করিয়াই 
চলিয়৷ গেল। ইহাতে বিশ্মিত কেহ হুইল না, কেননা 
মনোহরের প্রতিই প্রকার, লৌকিকতা আত্মীয়তার 
সে বড় ধার ধারে না। 

মনোহরের এই যে আসা-যাওয়া ইহাকে বড় করিয়া 
দেখার প্রয়োজন কাহারও হয় না--একমাত্র টিয়ার ছাড়!। 
টিয়া মনোহরের এই যাতায়াত উদ্দেশ্টহীন বলিয়া প্রথম 
প্রথম ভাবিত সন্দেহ নাই; কিন্তু এখন আর তাহা সে 
ভাবিতে পারে না। টিয়া কাল সারারাত বিনিদ্র কাটাইয়া 
ছোট-মা! রূপসীর কথাটাই হৃদয়ঙ্গমের চেষ্টা করিয়াছে 
এবং ছোট-মা যে নেহাত মিথ্যা কিছু বলে নাই সে-সম্বন্ধেও 
নিঃসন্দেহ হইতে পারিয়াছে । মনোহর এখানে আসে তবে 
তাহার দিদির সঙ্গে দেখ! করিতে নয় আসে তাহাঁরই সঙ্গে 
দেখা করিতে, আসে একটু রঙ্গ-তামাস। করিতে ! টিয়া 
একথা যতবারই ভাবিয়া দেখে ততবারই ছোট-মা”র মনের 
অন্তঃন্তলে কি ষে পৈশাচিক উল্লাস ভবিষ্যতের পানে একটা 
স্ৃতীক্ষ দৃষ্টি প্রসারিত করিয়া দিয়া নিথর বসিয়া আছে 
--একটা ষোগ্য মুহুর্তের জন্ত তাহাই অনুমান করিয়া অন্তরে 
গিরিপ্রদেশের হিম-শৈত্য অন্ুতব করিয়াছে, কিন্ত সে জানে 
ইহার প্রতিবাদ তাহার শক্তি ও সামর্থ্যের বাহিরে । যদি 
তাহার দিক হইতে মনোহরের এই গতায়াতের প্রতিবাদ 
ধ্বনিত হয় তো রূপসীর দিক হইতে অমনি আসিবে 
আবেগময় সমর্থন- যাহার তোড়ে তাহার ভীরু প্রতিবাদ 
সামান্ত তৃণখণ্ডের মত বিপুল জলধির ূর্ণাবর্তে নিমেষে 
নিমজ্জিত হইয়া যাইবে । তাই প্রতিবাদেও তাহার প্রবৃত্তি 
নাই। সেজানে সে নিরপায়। 

বর্তমানে মনোহর যে আবার কিছুদিনের জন্য নিরুদেশ 
হইয়াছে তাহারই আনন্দে টিয়া ভোরের আলোককে গুভের 
সথচন! বলিয়া সহজে গ্রহণ করিতে পারিল। রাত্রের এ্রটো 
বাসনের পাঁজা লইয়! সে খালের ঘাঁটে গেল, ঘাটে বাসনগুলি 
নামাইয়৷ রাখিয়। উপরে উঠিয়া গেল-ছাই আর শুষ্ক তৃণ 


সংগ্রহ করিতে--অবশ্থী যে-ঘাটে নিত্য বাসন মাজা হয় 
সে-ঘাটে যে এ-সবের অভাঁব থাঁকা সম্ভব নয় তাহা জানিয়াও 
সে উপরে উঠিয়া আসিল- সেই বাঁতাৰি লেবু গাছটির 
কাছে। এখান হইতে ভৈরব দত্তের বাড়ীর রান্নাঘরের 
বেড়াঁটা পর্য্যন্ত দৃষ্টি চলে_ আর এ রান্নাঘরের দক্ষিণ দিয়াই 
বাড়ীর উঠান হইতে খালের ঘাট পর্য্যন্ত পায়ে-চলা পথের 
রেখাটি আমবাগানের ভিতর দিয়! কিয়া বাঁকিয়া নামিয়া 
আসিয়াছে । শ্ুন্দরকে আসিতে হইলে এ&ঁ পথেই ঘাটে 
আসিতে হইবে। স্বন্দর আসিলেও আসিতে পাঁরে। 
এতক্ষণে কি আর তাহার ঘুম ভাঙ্গে নাই। আলম্য 
ভাঙ্গিতে ভাঙ্গতে সে যদি ঘাটে এখন চোখ-মুখ 
ধুইতে আসে--সে বেশ হয়! কিন্তু আবার যদি সুন্দরের 
মাথায় সেদিনের মত ছুর্বব,দ্ধি চাপে, আবার যদি সে তাহাকে 
পূর্ববৎ পিটুলি ফল ছু'ড়িয়া মারিয়া তাহার উপস্থিতি সঙ্বন্ধে 
সচেতন করিয়া তুলিতে চেষ্টা পাঁয়। টিয়া সঙ্গে সঙ্গে 
একবার কপালে হাত বুলাইয়৷ ফেলিল; কিন্তু সে-দাগ তথন 
আর বর্তমান নাই, রাত্রের মায়ায় সে যেন কোথায় 
মিলাইয়া গেছে । 

টিয়া ওপারের চতুর্দিকে একবার তন্ন তন্ন করিয়া দৃষ্টি 
বুলাইল, তাঁরপরে পাঁড় হইতে কতকটা দুর্ব! ছিশড়িয়া লইযা 
ঘাটে নামিয়! আসিল; যোহতু ছেোট-মা”র ঘুম ভাঙার আগেই 
তাহাকে বাঁসন মাঁজিয়! ঘরে ফিরিয়া বাড়ীর উঠাঁন-ঘরের 
দাওয়! প্রভৃতি নিকাইয়া রাখিতে হইবে এমনভাবে--যেন 
রূপসী ঘর হইতে বাহির হইয়া ভিজ] দাওয়া বা উঠানে পা 
ফেলিয়া! না অপ্রতিভ হইয়া! ওঠে পায়ের দাগ পড়ার দরুণ । 
তাহা হইলে টিয়ার আর রক্ষা থাঁকিবে না এবং যে গাল-মন 
অবিলম্বে স্থুরু হইয়া যাইবে তাহা সার! দিনমান তে বিনা 
ক্লেশে চলিবেই, রাত্রেও থামিবে কি-না বল! দুফষর। তবে 
রক্ষা এই যে, রূপসীর যে-বেলায় ঘুম ভাঙ্গে সে সময়ের 
মধ্যে .একটা খাল; গুকাইয়া যাওয়াও খুব যে বিচিত্র একটা 
কিছু ব্যাপার তাহা তো বোধ হয় না। 

টিয়া ঝন্‌ ঝন্‌ করিয়া ক্ষিগ্রতার সঙ্গে ঘাটের উপর 


২১৫৮ 


ফান্তন__১৩৪৭ ] 


বাসন ঘুরাইয়া ঘুরাইয়! মাজিতেছিল। গত বর্ষায় বেদিয়াদের 
কাছ হইতে সে যে চাঁরগাছি রভীন্‌ কাচের চুড়ি দুই হাতের 
জন্ত কিনিয়াছিল তাহার দুইগাছি কবেই ভাঙ্গিয়া গিয়াছে, 
এখন যে ছুইগাছি বা-হাতে অবশিষ্ট ছিল তাহ! বাসনের 
গায়ে লাগিয়া মাঝে মাঁঝে চিন্‌ চিন্‌ করিয়া! উঠিতেছিল- যে- 
কোন মুহূর্তে হয় তো৷ বা থান্‌ খান্‌ হইয়া ভাঙ্গিয়া যাইতে 
পারে; তাহা তো যাইতেই পারে । সেদিকে টিয়ার কোন 
খেয়াল ছিল না। শুধু সর্পাকারে স্বর্ণ-বলয় দুইটি সে 
দুই হাতের শীর্ষসম্তব স্থানে ঠেলিয়! আঁটিয়া রাখিয়া! দিয়াছিল 
যাহাতে বার বার সে ছুইটিকে না সরাইতে হয়, কেন না 
কাজের তাহাতে ব্যাঘাত জন্মিবার সম্ভাবনা আছে । 

টিয়া কাজ করিয়! চলিয়াছিল সত্য, কিন্ত মন তাহার 
পড়িযাছিল দত্তদের পাছ-ছুয়ারের খালের ঘাটের দিকে । 

হঠাৎ একসময় টিয়া দৃষ্টি তুলিয়৷ ওপারের ঘাঁটের দিকে 
চাহিতেই দেখিতে পাইল সুন্দর একথানি বৈঠার উপর 
দেহের ভার আনমিত করিয়া দিয়া নিনিমেষ বেহায়া দৃষ্টি 
পাতিযা যেন তাহারই পানে চাহিয়া আছে। কুমারী 
কন্যার ঘোম্টা টানিয়া মুখ ঢাঁকিবার রীতি নাই, থাকিলে 
টিযা ধেন স্বস্তি অনুভব করিতে পারিত; কাঁজেই সামান্ত 
একটু সে ঘুরিয়া বসিয়া মুখটি যথাসম্ভব আড়াল করিতে 
প্রয়াস পাইল এমনভাবে-_যাহাঁতে সুন্দরকে ইচ্ছামত সে যে- 
কোন অবস্থায় প্রয়োজন হইলেই দেখিতে পায়, আর স্ন্দর 
সেই ঘাটে বতক্ষণ রহিল ততক্ষণ প্রয়োজন তাহার আর 
ফুরাইল না। 

সুন্দর তাঁহাদের নৌকার পরে গিয়া উঠিযা! বসিল। 
নৌকা জপে বোঝাই হইয়া ছিল_-কাঁজেই বৈঠাটি পাশে 
পাটাতনের উপর নামাইয়! রাখিয়৷ নৌকার ভিতরে রক্ষিত 
নারিকেলের মালাটি লইয়া স্থন্দর জল সেঁচিয়া ফেলিতে 
লাগিল। আর এত ঘটা ও শব্ধ করিয়া সুপ্দর জল 
সে'চিতে লাগিল যে ওপারে আনত-শির টিয়া মুখে কাপড় 
চাপা দিয়া হাসিতে বাধ্য হইল। সুন্দর তাহা বুঝিতে 
পারিয়াও নিরস্ত হইল না। নৌকার জল সেঁচা শেষ 


হইলে খুব চিন্তিতের মত দে বৈঠা তুলিয়া লইয়া 
নৌকা ছাড়িয়া দিয়া বসিয়। রহিল | খালে শ্োতের 
তেমন কোন প্রাবল্য ছিল না যে ঝৌকা মুহূর্তে কোথাও 


ভাসাইয়৷ লইয়া যাইবে, নৌকা একস্থানেই যেন হেলিয়া 


ককশক্ষিন্বৌক্প খাঁভশ 


২০৫ ৪২ 


ছুলিয়া এীকাস্তিক বিরাম খুঁজিতেছিল, নৌকার উপরের 
আরোহী স্ুন্দবর যেন ততোধিক। অথচ এ আচরথে 
সুন্দর যে টিয়ার কাছে ধরা পড়িয়া গিয়াছে 
তাহাও সে বুঝিয়া ফেলিয়াছিল, কাজেই বাধার 
দিকটা বহু পূর্বেই শ্লথ হইয়া গিয়াছিল। সুন্বর 
হঠাৎ এ বিসদৃশ অসামঞ্জস্যের হাতি হইতে নিজেকে 
মুক্ত করিয়৷ লইতে গিয়া একটু অপ্রত্যাশিত আচরণের 
আশ্রয় লইতে বাধ্য হইল। হঠাৎ বৈঠা জলে নামাইয়া একটা 
চাড় দিয়া নৌকার আগা-গলুইটা টিয়ার দিকে ফিরাইয়! 
আর একট! ঈষৎ চাঁপে নৌকাটিকে সঙ্জন-বাড়ীর ঘাটের 
দিকে ঠেলিয়। দিয়! অকারণ অর্থহীন উল্লাসে সহসা হাসিয়া 
উঠিয়াই আবার থামিয়া গেল। টিয়া তেম়ূছা দৃষ্টিতে সকলই 
লক্ষ্য করিল এবং নৌক। ঘাঁটের দশ হাতের মধ্যে আসিয়া 
পড়ার আগেই কাপড়টা অপরিচ্ছন্ন হাতে সাম্লাইয়৷ ধরিয়া 
ফিক করিয়া হাসিয়া ফেলিয়া সহজ লঘু স্বচ্ছন্দ গতিতে 
পাড়ে উঠিয়া গেল। তাহার ভাব-ভঙ্গী দেখিয়া মনে 
হইল, স্থন্দর যেন তাহাকে ঘাট হইতে জোর করিয়া 
তাহার নৌকায় তুলিয়া লইতে আসিয়াছে । সুন্দর 
অমনি মুহূর্তে নিজেকে সাম্লাইয়! লইয়া বৈঠা চাপিয়া ধরিল 
এমন ভঙ্গীতে যেন তাহার কঠোর কর্তব্য সহসা! ম্মব্ণে 
জাগিয়াছে। কিন্তু তখন আর লুকাইবার সাধ্য কিছু 
স্থন্দরের ছিল না, সে টিয়ার কাছে ধরা দিয়াছে খামোখা 
একেবারে, এটুকু দৌর্ববল্য ধরা সে না দিলেও পারিত। 
সেজন্য আফসোস করা অবশ্য সুন্দরের স্বভাবও নয়, বীতিও 
নয়। সে তাই টিয়ার দিকে ফিরিয়া! সহজ অবিজড়িত 
কণ্ঠে বলিয়া উঠিল--আমি যেন কেউটে সাপ একটা, পাছে 
ছোবল্‌ মারি তাই পালালে বুঝি? 

টিয়া কথা বলিবে না ভাবিয়াছিল, কিন্তু না বলিয়া এত 
বড় সুযোগকে ব্যর্থ হইতে দিতেও সে পারিল ন1; তাই 
বলিল, নাঃ সাপ কেন হতে যাঁবে। শিখিপুচ্ছের সঙ্জন- 
বংশের চিরকালের শক্র তোমরা, তাঁই সেদিন পিটুলি 
ফল ছুড়ে মেরে শক্রতার প্রথম নমুনা! যা দেখালে তাতে 
তয় না ক'রেও তে! পারি না। 

সন্দর একটু হাসিয়া বলিল, তা শক্র চিরদিন 
শত্রই থাকে । ্ 

টিয়া এইবার বিশেষ ঠেম্‌ দিয়া কথা কহিল, বলিল, তা! 


২৩৬০ 


ভ্ান্রজ্্র্্ 


| ২৮শ বর্ধ--২য় থণঁ--৩ধ সংখ্যা 


থপ ব্য বা -্হা ব্যাস স্াটে বট” এ ও -স্হটি ও “শি ৮ সি ২৮ ০ বত আট সপ সা বত সরা বত -স্হাদি স্টপ” স্হহা ব্া -_ আআ বসব সর” বা ব্রা "সা ব্য” ্থ্হস্হা* হ ব- -ব্্- ০ -স্্-স্্্- সচ 


শক্রতাই যদ্দি করবার সাধ তো গাঁয়ে পড়ে আলাপ করতে 
এলে কেন? একেবারে সড়কি-বল্লম নিয়ে বেরুলেই 
পারতে । কলক্কিনীর খাল মাবাঁর লালে লাল হ'য়ে উঠত, 
দেশের লোক সন্ত্রম ও আতঙ্কে চেয়ে থাকত। ভৈরব 
দত্তের ছেলের নামে টি টি প'ড়ে ঘেত-_সেই-তো বেশ হ'ত! 

ভু, তা হত বই-কি! কিন্ত ভৈরব দত্তের ছেলে 
তো আর তা” বলে নিশি সঙ্জনের মেয়ের সঙ্গে লড়াই 
করতে বেরুতে পারে না সড়কি-বল্পম নিয়ে! দেশের 


লোক যে হাসবে তা হলে !-বলিয়৷ সুন্দর মুত একটু হাঁসিয়া' 


আবার বলিলঃ তাই তো৷ সড়কি-বল্লম ছেড়ে এবার তীর- 
ধনুক নিয়ে বেরিয়েচি । দেখা বাক ফলাফল ! 

টিয়া সহসা বলিয়া ফেলিল, অ! টিয়া পাখী বিধবার 
মতলৰে বুঝি এবার তীর-ধন্নুক স্ল করেচ? ঠিকই তো, 
যার যেমন অস্ত্র! 

বলিয়া ফেলিয়াই টিয়া মুহূর্তে সেখান হইতে অবৃষ্ঠ হইয়া 
গেল। সুন্দর টিয়ার কথা বলার অপূর্ব ভঙ্গী দেখিয়া 
মুগ্ধ হইল, টিয়ার সলাজ বঞ্কিম পলায়ন-তৎপর ভঙ্গীটি আরও 
চ্ঘৎকার, আরও মনোমুগ্ধকারী । সুন্দর আজিকার ভোরের 
এই নিরুদ্দেশ যাত্রীকে সার্থক জয়োল্লাসে পরিপূর্ণ ও 
বর্ষণক্ষান্ত রাত্রের পর ভিজা সধ্যের সলা্গ উকি-ঝুকির মত 
অন্তরঙ্গ বলিয়া মনে করিল । 


বাসনগুলি ঘাটেই পড়িয়া রহিয়াছে, কাজেই টিয়া 
বেশীক্ষণ আর বাগানের মধ্যে অর্থহীন ওদাহ্য লইয় ঘুরিয়া 
বেড়াইতে পারিল নাঁ। কিন্ত সুন্দর তখনও সেই ঘাটের 
নিকটবর্তী কোনও স্থানে নৌকা লাগাইয়া অপেক্ষা করিতেছে 
কি-না কে জানে, সেই ভয়েই সে ঘাটের দিকেও অগ্রসর 
হইতে পারিতেছিল না। একটু একটু করিয়া ভয়-বিব্রত 
পদে সে আবার ঘাটে নামিয়া আসিল। সুন্দর আশে- 
পাশে কোথাও নাই দেখিয়া একটা স্ব্তির নিশ্বাস ফেলিয়া 
বাচিল। বাসনগুলি মাজিয়া ঘষিয়া আবার যখন সে 
সেগুলিকে পাঁজা করিয়া বাড়ীর উঠানে প্রবেশ করিল তখন 
বেশ বেলা চড়িয়া গিয়াছে, কারণ তখনই ঠিক তাহার 
সৎ-মা রূপসী তাহার ঘরের দরজায় দীড়াইয়া একটি কঠিন 
অসন্তোষ-ব্যঞ্জক ভঙ্গিমায় নিবিড় আলম্ত ভাঙ্গিতে গা 
মটুকাইতেছিল। টিয়াকে উঠানে আসিয়া পীড়া্টতে 


দেখিয়াই মুহূর্তে সে কঠিন একটি সরল রেখায় স্পষ্ট হইয়া 
দাড়াইল এবং টিয়া একটি ঢোক্‌ গিলিয়া নিজেকে সাম্লাইয়া 
লবাঁর পূর্বেই বলিয়া উঠিল-_-কি, মনোহর বিদেয় হয়েচে 
বুঝি, তার ঘরের দরজ! যে খোলা রয়েচে দেখচি? আবার 
কবে আসবে ঝলে গেল গুনি? 

টিয়া বিরক্তি বোধ করিয়া বলিল - ক্ধেন, সেকি আমার 
আত্মীয়-কুটুঘঘ যে আমাকে বলে যাবে? বলে যদি কিছু 
যেতই তো সে তো তোমাকেই বলে যেত, আমাকে কিসের 
জন্তে বলতে যাবে শুনি? 

না, আমার তখনও ঘুম ভাঙ্গেনি কি-ন1 সে জন্বোই একথা 
জিগোস্‌ করলান। যদি তোকে কিছু ঝলে গিয়ে থাকে -_ 
এই আর কি !-_বলিয়। রূপপী নিজের পুরু ঠোট কেমন 
একটু জিন দিযা চাপিয়া ধরিয়া নিজেকে সাম্লাইল। 

টিয়াও রান্নাঘরের দিকে চলিয়া যাইতে যাইতে বলিল, 
সে হয় তো রাত থাকতেই উঠে চলে গেচেঃ আমার ঘুম 
তখনও ভাঙ্গে নি। 

রূপপা দেখিল, এদিক দয়া টিয়াকে তেমন সুবিধা কর! 
গেল না, আর একদিক দিয়া তাহ।কে তবে আক্রমণ কর! 
যাক। অমনি সে আবিষ্ষার করিঘ্বা ফেলিল যে, তখনও 
ঘরের দাওয়া ও উঠান নিকানো শেষ হয় নাই । রান্নাঘরের 
দিকে গলা খাড়াইয়া তাই সে ডাঁকিল+ অ টিয়া, বলি রাত 
থাকতে উঠে তো ঘাটে ঘাঁওয়া হয়েছিল, আর ফেরা হল 
তো এই বেলা নষ্টা নাগাদ! বাবা! বাবা! কি থে 
মেয়ের মনের কথা, আর কি যে তার কাজের ছিরি! 
এ ধেন পরের বাড়ীর কাজ করা হচ্ছে, প্রাণ নেই কোন 
কাজে। বশি* এই এত বেলায়ও ঘর-দোঁর-উঠান সবই তো৷ 


' পড়ে আছে, একটু গোবর জলের ছি'টে বুলোতেও এত 


আলিস্তি! আমারও যেমন কপাল ! 

টিয়া রাক্নাঘরে বাসন নামাইয়। রাখিয়া নিরুত্তরে আবার 
বাহিরে আসিয়া ধাড়াইল। ছোট-মার সকল কথাই 
তাহার কানে গিয়াছিল, কিন্ক উত্তর দেওয়ার কোন 
প্রয়োজন আছে বলিয়া সে বোধ করিল না। অবশ্য; উত্তর 
দিলে বিবাদ বেশি এবং উত্তর না দিলেও সে বিপন্ুক্ত নয় 
কাজেই বুথা বাক্যব্র্যয়ের স্পা তাহার মধ্যে জাগিল না। 
ঘরের দাওয়া ও উঠান নিকানোর কাজেই সে নিজেকে 
ব্যাপূত করিল। রূপনী আশে-পাশে ক্ষণিকের জন 





ধা্ধন--১৬৪৭ ] 





ভিডি লেটার 
বাঁকা-মুশল ঘুরাইয়া টিয়াকে হতভন্ত করিয়া দেওয়াঁর চেষ্টায় 
ঘুরিয়া বেড়াইল, কিন্তু তেমন কোন কিছু সে তন্ুহূর্তেই 
হাতড়াইয়া না পাওয়ায় ক্ষুণ্ন হইয়া শেষে বলিয়া! ফেলিল-_ 
অনেক দেমাকী দেখেচি এযাব্ মাঁকে দেখিনি, কিন্তু 
তার ছা/টিকে দেখ চি; আর এই যদি তার নমুনো হয় তো 
ভগবান আমাকে খুব বাঁচান বাঁচিয়েচেন__ 

বলিয়া রূপমী আপন বাক্‌-পটুতাঁর ভূয়সী গর্কে হেলিয়া 
ছুলিয়া ঘাটের দিকে চলিয়া গেল চো মুখ ধুইতে-_সর্বাঙ্গে 
তখনও তাহার জড়াইয়৷ আছে রাত্রির অবসাদ, যেমন 
করিয়া ভোরের দুর্বাদলকে জড়াইয়া থাকে রাত্রের 
শিশির | 

টিয়ার সহসা আজ আবার মায়ের কথা মনে পড়িয়। 
গেল। সে আজ প্রায় পাচ-ছয় বসর আগেকার কথা-_ 
যখন সঙ্জন-বাড়ী বলিতে সেই একমাত্র মহিয়সী নারীর 
কথাই সর্বাগ্রে সকলের মনে জাগিত। এখনও তাহার 
হ্বধ্যাতি গায়ের ঘরে ঘরে কারণে-অকাঁরণে উচ্চারিত হইয়া 
থাকে । বূপসীর কানেও সেকথ| যে লোকে গুঞ্জরণ করে 
নাই এমন নয় এবং তাহা হইতেই রূপসীর কেমন একটা 
ধারণা জন্মিয়াছিল যে, সে চতুর্দিকে শক্রবেষ্টিত হইয়া বসবাস 
করিতেছে, কাজেই পাড়ার অন্যান্য মেয়ে ও বধূদের কাহারও 
সহিত সে তেমন অন্তরঙ্গ হইয়া উঠিতে পারে নাই বা 
চাহেও নাই। 

টিয়া সকলের অলক্ষ্যে চোখের জল দিয়া মায়ের স্থৃতি- 
তর্পণ করিল এবং মুহূর্তে আবার তাহা সে সাম্লাইয়াও 
উঠিল। টিয়ার মন অনেকটা বাঁলির মত-_দাগ পড়িলেও 
মিলাইতে বেশী সময়ের প্রয়োজন হয় না, জল পড়িলেও 
অবিলম্থে আবার তাহা শুকাইয়! নিশ্চিহ্ন হইয়া! যাঁয়। 


কিন্ত এই যে বালির মত টিয়ার মন সে-মনেও একটা 
জিনিষ গভীরভাবে দাগ কাটিয়াঁছে এবং সে-দাগ আর কখনও 
মিলাইবে বলিয়াও তো মনে হয় না-_সে সুন্দর । স্ুন্দরকে 
তাহার ভাল লাগিয়াছে, বড় ভাল লাগিয়াছে, যেমন ভাল 
পাগে বিজয়োদ্ধত ফেনোন্মি-উচ্ছুসিত সাগর্যক বেলাভূমির 
ঠিক তেমনাটি। ফলে ঘাটের কাজ কি বাড়িয়াছে, 
একবারের জায়গাঁয় যে কতবার সে বাতাঁবী' লেবু গাছটার 
তলা দিয়! ঘাটে যাইতেছে তাহার আর ঠিক নাই। কিন্ত 


৪৩৬ 


কতশন্হিন্নীল খোকন 


বস সহ স্যান্ডি ব্য -ব্হ 


২৬৬৯ 





বেণী সময়ই তাহাকে ব্যর্থ হইয়া! ফিরিয়া আসিতে হয়, 
কেন ন! সুন্দরের দেখ! প্রায়ই মেলে না। 

সঙ্জন-বাড়ীর সাম্নের দিকে শিখিপুচ্ছের রায়েদের 
একটা প্রকাণ্ড দীঘি আছে। সেই দীঘির জলই শিখি- 
পুচ্ছের গৃহস্থের পানীয় জল। প্রত্যহ বৈকালের দিকে গ্রামের 
মেয়ে ও বধূরা দল বাঁধিয়া পশ্চিম দিকের শান-বীধানো 
ঘাটে যায় গা ধুইতে ও কলসী ভরিয়া পানীয় জল তুলিয়া 
আনিতে। টিয়া এতদ্দিন বৈকালে সেখানেই গা ধুইতে ও 
কলসী ভরিয়া জল আনিতে যাইত) কিন্তু এখন শুধু সে 
একবার যায় কলসী ভরিয়া পানীয় জল তুলিয়৷ আনিতে 
এবং গা-ধোওয়ার কাজ খালের জলেই অনায়াসে চলিতে 
পারে বলিয়া অধুনা তাহার ধারণ! জন্থিয়াছে ও তাহাই সে 
মানিয়া চলিতেছে । 

সেদিনও তাই টিয় রান্না ও পানীয় জল রায়েদের দীঘি 
হইতে কলসী ভরিয়া আনিয় দিয়া একটা গামছা কাধে 
ফেলিয়া খালের ঘাটের দিকে চলিয়া গেল। সন্ধ্যা! 
ঘনাইয়া আসার তখনও কিছু বিলম্ব আছে, কিন্তু আশে-পাশে 
চতুর্দিকে বেশ একট! ছাঁয়া-স্থনিবিড়তা বিরাজ করিতেছে, 
শুধু পাখীর কল-কাকলি অদূরের বন-বিতানে একটা তন্ত্রাতুর 
ূচ্ছনা জাগাইয়া বসিয়াছে। 

টিয়া ক্ষণিকের জন্ত একবার বাতাবি লেবুর আভৃমি- 
হুইয়া-পড়া ডালটার উপর মাটিতে পা রাখিয়া উপরের আর 
একটা ডাল ধরিয়া বসিয়া রহিল কিসের যেন প্রতীক্ষায় । 
স্বন্দরদের ঘাটের নৌকাটি তখন ঘাটে ছিল না। হয় তো 
নুন্দরই নৌকাঁষোগে কোথাও বাহির হইয়্াছে। এখনই 
হয়তো আবার ফিরিয়া আসিবে নাও আসিতে পারে। 
থাঁল দিয়া বার বার তিন-চারখানি নৌকা চলিয়। গেল-_ 
তন্মধ্যে একখানি আবার বেপারীদের নৌকা । সব নৌকাই 
উপর দিকে উজান ঠেলিয়া চলিয়াছে বকফুলী নদীর উদ্দেশ্টযে 
হয় তো মাত্র একখানি দক্ষিণ দিকে স্রোতের মুখে মুখে 
চলিয়া গেল হাজারথুনীর বিলের পানে । এই হাজারখুনীর 
বিল এ-অঞ্চলের মধ্যে একটি প্রসিদ্ধ জিনিষ--বর্তমানে তাহার 
যে-কোন এক পার হইতে কুধ্য ওঠার সূজে সঙ্গে নৌকায় 
রওনা হইলে অপর পারে পৌছিতে নুধ্য অন্তে নাঁমিয়া যায়, 
এত বড় বিল এ-অঞ্চলে আর নাই। আবার শ্রীক্ষকালে 
হাঁজারখুনীর বিলের মাঁঝ দিয়া পারে-চলা! পথও প্রশ্তত হ়7 


টি ৬০২২ 


ছয়” 





শুধু কতকগুলি বিশেষ বিশেষ স্থানে জল বারোমাসই 
বর্তমান থাঁকে এবং সেগুলিকে অনেকটা বৃহৎ পুষ্ষরিণী বা 
দীঘির মত দেখিতে হয়। বর্ধাকালে হাজারখুনীর বিল 
নৌকাঁয় পাড়ি দেওয়া বেশ বিপদসম্কুল__কেন না একটু 
জোরে বাতাস বহিতে সুরু করিলেই জলরাশি উত্তাল হইয়া 
ওঠে_এপপ্রান্ত ও-গ্রান্ত পর্যন্ত সাগর-সদৃশ ঢেউ উচ্ছল 
কলছাঁসি হাসিয়া ওঠে । আর ঝড় উঠিলে তো কথাই নাই। 
হাঁজারখুনীর বিলের তাই নাঁমডাক আছে। উত্তর দিকের 
বকফুনীরও নাম-ডাক আছে-_অশীস্ত দামাল বলিয়া নয়, 
বরং তাহারই উপ্ট! ; তবে বকফুলীরও শ্রোত সাধারণ নদী 
অপেক্ষা কিঞ্চিৎ খরধাঁর। দুই পাড়ে নানা গঞ্জ, বাজার- 
হাট, বসতি-বল গ্রাম, মঠ ও মাঠ রাখিয়া বহুদূর পর্যস্ত 
তাহার গতি। বকফুলীই এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য 
প্রশস্ত রাঁজপথ। দিনে ও রাজ তিনখানি গ্রামার এই 
বকফুলী দিয়া যাতায়াত করে, মোটর-বোট বা লঞ্চের তো 
কথাই নাই। আর নৌকা চলে অসংখ্য--দিবারাজের 
সমস্ত সময় জুড়িয়া । 

টিয়া কখন যে আচ্ছন্ন হইয়া! গিয়াছিল নিজের চিন্তায় 
তাহা নিজেও সে বুঝিতে পারে নাই। হঠাৎ তাহার চমক্‌ 
ভাঙ্গিল ওপারে সুন্দরের গলা গুনিয়া। সুন্দর পাড়ে 
দাড়াইয়া নৌকার "পরে উপবিষ্ট তাহারই সমবয়সী শ্রীমস্তকে 
ডাকিয়া বলিল, উঠে আয় শ্রীমন্ত। আজ জ্যোহঙ্গলা রাত 
আছে, রাত ক'রে যাওয়া! যাবেখন হাজারখুনীর বিলে। 

শ্রামস্ত একলাফে ডাঙায় গিয়া উঠিল। তারপরে 
সন্দরের একটা হাতি চাঁপা! ধরিয়া বলিল, এই যে--ওপারে, 
ওই তো নিশি সঙ্জনের মেয়ে টিয়া না? 


শমন্ত আন্তে করিয়া কিছ আর বলে নাই। কাজেই 


টিয়ার কানে তাহার সব কথাই পৌছিল। স্থন্দর কি যেন 
শ্রীস্তর কানের কাছেলইয়! গিয়া আস্তে করিয়1! বলিয়া একটা 
ঝটকা টানে শ্রীমন্তকে বাগানের দিকে টানিয়া লইয়া গেল। 
শ্রীস্ত তবুও একবার সুন্দরের টানে আত্মসমর্পণ করা সব্েও 
পিছু ফিরিয়া টিয়ার দিকে দৃষ্টি ফেলিল। টিয়া অমনি 
অন্থ দিকে মুখ ফিরাইয়। লইল। টিয়া ইতিপূর্বে শ্রীমন্তকে 
আরও কয়েকবার দেখিয়াছে, আর শ্রীমন্তও যে টিয়াকে 
দেখিয়াছে তাহাতে টিয়ার সন্দেহ নাই । তবে শ্ত্রীমন্ত কেন 
যে আজ আবার তাহাকে এমন বিশেষ করিয়া দেখিয়া লইল 


ভ্ডাব্রভন্ব্ব 


সর” বা” বর বব খর” _স্ বস সস ব _ হা বড সু বসা স্ব বন্য ব্হ” - স্হ খপ - সহ ব্য স্য্হাদ বা ব্জ খে “হা ব্_-্ 


[ ২৮শ বর্-_২য় খণ্ড--৩য় সংখ্যা 


ব্্স্ম্থ বস ব্রা 





তাহা কে জানে। হয় তোন্থন্দর তাহাঁরই সম্বন্ধে শ্রীমস্তকে 
কিছু বলিয়াছে এবং বিশেষ কিছুই হয় তো বলিয়াছে। টিয়ার 
সহসা মুখে-চোখে কেমন যেন একটু লজ্জার রং ধরিল। 
আবার মুহূর্তে নিজেকে সে সাম্লাইয়া লইয়া! ঘাটে নাঁমিল। 
যত ভ্রুত সম্ভব গাঁঁধোওয়া অনাড়গ্বরে শেষ করিয়া শ্রীমন্তর 
ফিরিয়া চাওয়ার যথা-কাঁরণ গবেষণ! করিতে করিতে বাঁড়ীর 
দিকে ভিজা কাপড় পরিয়াই বাতাঁবি লেবুর গাঁছের ডালের 
উপর রক্ষিত শুকনো কাপড়থানি হাঁতে করিমা তুলিয়া য়া 
চলিয়া গেল । ঘাটে কাপড় ছাড়িতে আজ তাঁহার কেমন 
যেন বাধিল । 


রাত্রে নিরাঁলা নির্জন অন্ধকার শয্যাধ নিদাহীন চোঁথ 
বুজিয়া টিয়া চেষ্টা করিয়াছে কলস্কিনীর থাল দিয়া একথাঁণি 
নৌকা চলার শব্দ শুনিতে, কিন্ত ব্যর্থ হইযাছে। এক "র 
যেন সে এঁ খালের দিক হইতেই একটা বাঁশের বাণী ফুকাঁপিমা 
উঠিতে শুনিতে পাইয়াছিল বলিযা তাঁভাঁর মনে হস, কিন 
ভাল করিয়া কিছুই সে ঠিক বুঝিতে পারে নাই । হতে 
পাঁরে-_ সুন্দর আর শ্রীমন্ত খাল দিয়া নৌকা বাঠিয়া চলিযাছে 
হাজারথুনীর বিলের দিকে; তাভাদেরই মধ্যে কেহ হম তো 
বাণী বাজাইতেছে- আবার তাহা নাও হইতে পাঁরে। 
বাহিরে জ্যোত্শ্নলা তখন ঝল্মল্‌ করিতেছে । আদ রাতে 
সুন্দর আর শ্রীমন্ত হাঁজারখুনীর বিলে হয় তো নৌকা লয় 
বিলাস-ভ্রমণে বাহির হইয়াছে । নাজানি তাহারা কাঠার 
কথা একান্তে আলোচনা করিতেছে । হইতে পারে ভাঁ--যে 
শ্মন্ত স্থন্বরকে টিয়ার কথা তুলিয়া বিব্রত করার প্রযাস 
পাইতেছে। তাহা তে৷ আর খুব কিছু অসম্ভব না। কারণ 
শ্ীমন্ত আজ বৈকালের দিকে টিয়াকে ঘাটে অমন বাঁর বার 
নিরীক্ষণ করিয়া তবে দেখিল কেন? নিশ্চয় তবে তাহাদের 
মধ্যে তাহাকে লইয়া! কথা উঠিয়াছে। আর এই রাত্রের 
নিঃসঙ্গ আকুলতাঁর মধ্যে উভয়ে অত কাছাকাছি নৌকায় 
বসিয়া তরঙগায়িত জ্যোঁতন্সার নিবিড়তম আঁবেশের মধ্যে 
ডুবিয়া গিয়া সেকথা নৃতন করিয়৷ আবার তুলিবে না কি! 
হয় তো তুলিলে তুলিতেও পারে । আবার টিয়ার কেমন 
বা কা নাই। 
সেই পিটুলি ফুঁ ছুড়িয় মারার গল্প কি আব সুন্দর না 
করিবে। লজ্জায় টিয়ার সমন্ত মুখ রাও! হইয়া উঠিল। 


ফাস্ধুন--১৩৪৭ ] 


টিয়ার ঘরের পিছনের বাগানের নিন্তক্ধ গভীর বিজনতা 
ভাঁতিয়! দিয়া__একট! কি পাখীর ডান! যেন ঝট্‌পট্‌ করিয়া 
উঠিল-_তারপরেই রাত্রের নিহ্ুরঙ্গ বুকে ঘা মারিয়া গুরু- 
গম্ভীর নাঁদে ধ্বনিত হইল-_বুদ্‌-বুছুম্‌। টিয়ার এ ডাকের সঙ্গে 
পূর্ব-পরিচয় ছিল তাই ; তাহা না হইলে ভয় পাইয়া চীৎকার 
করিয়া ওঠাও কিছু অন্যায় হইত ন1। পাধীটির নাম 
ভূতুম-পেঁচা, যেমন কদাঁকাঁর ও বিশাল তাহার মৃত্তি, তেমনই 
আবার বিপুলায়তন ঘোরালো ছুইটি চক্ষু, আবার ডাকটিও 
তেমনই ভয়-জাগানে। নিশীথে সহস। প্রথম পরিচয় ঘটিলে 
সংজ্ঞা হারানো খুব আশ্চর্য ঘটনা বলিয়। কেহ বিবেচনা করিবে 
শা। টিয়ার পূর্ব-পরিচয় থাক! সত্বেও কেমন জানি ভয় 
করিতে লাগিল। মুহূর্তে সে হাজারখুনীর বিলে সুন্দরের 
নৌকা যে ছলাৎ-ছল শব্ধ তুলিয়া ভাসিয়া বেড়াইতেছে তাহা 
ভুলিয়া গেল। বকফুলীর দিক হইতে একটা মোটর-বোটের 
সিটির ফু যেন দিগ-দিগন্ত মাড়াইয়া দিল। টিয়া নিদ্রায় 
সমস্ত ভুলিয়া থাকিতে চেষ্টা পাইল। 

সকালবেলা শ্রীমস্ত সোজা একেবারে সঙ্জন-বাঁড়ীর 
উঠানে আসিয়া! দীড়াইল। শ্রীমস্ত বনপলাশীর অনাদি 
ঘোষের তৃতীয় পুত্র। এককালে অনাদি ঘোষের পয়সা 
ছিল_এখন আছে শুধু দেমাক। টিয়া উঠানে একটা বটি 
পাঁতিয়া একরাশ নারিকেল পাতা লইয়! পাতা হইতে 
কাঠিগুণি ছাড়াইতেছিল, আর একপাঁশে সেগুলিকে জড়ো 
করিয়া রাখিতেছিল। এমন সময় শ্রীদন্ত সেখানে আসিয়া 
প্রবেশ করিল। টিয়া ক্ষণিকের জন্য একটু সঙ্কোচ অঙ্ছভব 
করিল। তারপরেই আবার সে সহজ অবস্থায় ফিরিয়া 
আসিল। 

রীস্ত আশে-পাশে আর কাহাকেও না দেখিতে পাইয়া 
টিয়াকেই জিজ্ঞাসা করিল- স্থ্য| টিয়া, তোমার বাব! গেলেন 


হযি-ভিত্ 


9৬২ 


টিয়া সলাজকঠে জবাব দিল, বাবা! এই তে! এতক্ষণ 
এখানেই ছিলেন, আবাঁর বুঝি রাঁয়েদের বাড়ীর দিকেই 
গেলেন তবে। আপনি দাঁওয়ায় উঠে চেয়ারটায় বন্থন 
না- আমি রায়েদের বাড়ী থেকে বাবাকে ডেকে নিয়ে 
আসি। 

বলিয়! টিয়া কাপড়টা সাঁম্লাইয়! লইয়! উঠিয়া! দীড়াইল। 

শ্রীস্ত অমনি বলিল--ন! থাক, তোমার আর কষ্ট কঃরে 
রায়েদের বাড়ী গিয়ে কাঁজ নেই, আমিই বরং পথে তার লঙ্গে 
দেখাটা ক'রে যা+্খন। | 

টিয়া অধিকতর লঙ্জাকাতর একটি ভঙ্গিমায় বলিল-_না, 
কষ্ট আর কি! 

তবু!-অতি আস্তে করিয়! বলিয়। শ্রীমন্ত মুহুর্তে টিয়ার 
সর্বাঙ্গে যেন একটা প্রথর দৃষ্টি বুলা ইয়া শইয়া চলিয়া! গেল। 
টিয়ার সহস! মনে হইল, শ্রীমন্ত যেন তাহাকেই দেখিতে 
আসিয়াছিল; দেখা হইয়াছে, চলিয়া! গেল। কাজ গুধু 
তাহার অছিলা মাত্র। একথ! মনে জাগার সঙ্গে সঙ্গেই 
টিয়ার সমস্ত ব্যাপারটা কেমন যেন বিসদৃশ ও শ্রীমস্তর পক্ষে 
বাড়াবাড়ি বলিয়! তাহার মনে হইতে লাগিল। শ্রীমন্ত ইহা 
ভাল করে নাই, এই কথাঁই তাহার কেবল মনে 
জাগিতেছিল। 

শ্রীমস্ত চলিয়া গেলে রূপসী তাহার ঘর হইতে বাহির 
হইয়া আসিয়া বলিল__অ টিয়া, ও এসেছিল কে গুনি? 

ছোট-মা”র কথার ভঙ্গীতে টিয়ার সর্ব শরীর জালা 
করিয়া উঠিল। সে যথাসম্ভব নিজেকে সং্ত রাখিয়া বলিল, 
বনপলাশীর অনাদি ঘোষের ছেলে শ্রীমস্ত ঘোষ এসেছিল 
বাবার খোঁজে । 

অঃ! আমি বলি কে নাকে আবার!-__বলিয়! রূপসী 
আবার তাহার ঘরের মধ্যে গিয়! প্রবেশ করিল । 


কোথা? (ক্রমশঃ ) 
হবপ্র-ভল 
প্ীকমলাপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় 
মৌন শর্বরীর কোলে তাঁরা-দীপ নির্ব্বা পিত-প্রায়। স্বপ্নের কল্পিত রূপ লক্ষ্য থেকে অলক্ষ্যে মিলায় ; 
বিদীর্ণ নটিনী নদী নিঃসার-কল্লোলে যাঁী বহি” নিতল তিমির অঙ্কে দীপ্তিহীন তারকা জাগিছে, 


অনুচ্চ উভয় কুলে নিণীথের তন্দ্রা রহি হি 
টুটে যাঁর ;-_চিত মম নিঃসন্দেহ হ'তে নাহি চায়। 


অমর্ত্য পুলকম্পর্শ হারা-হদি নিয়ত মাগ্সিছেঃ 
কল্পনার আর্দি-অন্ত স্বপ্নতঙ্গে কোথায় লুকায়? 


চারুকলার ক্রমোম্নতি 
ভ্রীনরেজ্দ্রনাথ বন্ধ 


সম্প্রতি কয়েক বংসর হইতে বাংলাদেশে কলাশিল্লের যেন বৎসরের মধ্যে আজ তাহা বিশেষ উৎকর্ষ লাভ করিয়াছে । 
একটা মৃছুম্োত বহিতেছে। অনাদৃত চারুশিল্পের পক্ষে এত অল্প কালের মধ্যে এই নিঃস্ব দেশের কলা-সম্পদের যে 
উন্নতি দেখা দিয়াছে তাহাতে 
দ্বিধা হীন ভাবে বলা যাঁয়__ 
যদি সাধনার বিদ্ধ না ঘটে 
তবে আর পঁচিশ বৎসরে দেশ 
শিল্প-গৌরবে যে কোন স্বাধীন 
দেশের সঙ্গে তুলনীয় হইতে 
পারিবে। অযত্র অনাদর 
সত্বেও ললিতকলার এতাদুশ 
শ্রীবদ্ধিতে আমরা যথার্থ ই 
বিশেষ গৌরবের অধিকারী 
হইয়াছি। 

শিল্পকল! দেশের বাবমা 
বাণিজ্যের পরম মিত্র। এই 
সাধারণ কথাটা আমরা অন্ত 
গ্রবন্ধেও বলিয়াছি, কিন্ত 
আমাদের দেশের লোক তাহা 
যথার্থ উপলব্ধি করিতে পারে 





এইটী খুবই আশার কথা । অবস্থ ইহাতে 
বিশেষ আশ্চর্য্য বোঁধ করিবার হেতু 
নাই, কারণ কোন জাতির মধ্যে যথার্থ 
প্রাণ-শক্তি থাকিলে সাময়িক দুর্বলতা 
সেখানে কখনই স্থায়িত্ব লাভ করিতে 
পারে না। 

ত্রিশ চল্লিশ বৎসর পূর্বে আমাদের 
চারুশিল্পের ভাগ্ডারে কোন উল্লেখযোগ্য 
সম্পদ ছিল না। তখন দেশের শিল্পীর 
কোঁন উচ্চ জ্ঞান ও দানের পরিচয় 
আমরা পাই নাই। পটের নামান্তর 
ছিল--তৈল চিন্ত্ু। সে চিত্র কোন মূল্য 
বহন করিত না। কালের গুণে কয়েক “রামধমু' ণ - কুমার রবীন রায় 





ফাততুন_১৩৪৭ ] চান্সমকরনান্প আন্তমাক্সভি এসডি 





না। তাহাদের ধারণা দেশের শ্রীবৃদ্ধির পথে অনায়াসলন্ধ 
বছ ফলের মধ্যে “কদলী, ত্যাগ করিলেও তেমন ক্ষতি বৃদ্ধি 
হইবে না । এপ ধারণ! নিতান্তই অনিষ্টকর। এই কলার 
প্রকৃত নাম-_রূপ, সৌন্দধ্য । সমস্ত জগৎই রূপের দাস। রূপ 
আগে, গুণ তাহার পরে । হহার দৃষ্টান্ত নিয়তই আমাদের 
সম্মুখে রহিয়াছে, তথাপি আঁমরা দেখিয়াও বুঝি না। 
এতদিন পধ্যস্ত কলিকাতায় প্রতিবৎসর শীতকালে কলা- 
শিল্পের মাত্র একটা প্রদর্শনী হইত। কিন্তু গতবৎসর হইতে 


মত রা ১ ০পেপশিসাারারন্পপ কাজও টিপ ৭ ৪ তত শা তত স্পিন জর পা সত আগ 


2 ক ॥ 


॥ ০ ৫ ৪ 
এ ছড গ্রপাত 





সত সত” সব স্পা ফা স্থল গাগা স্কিপ পিই 


কোন সম্পর্ক ছিল নাঁ শুধু শ্বধ্য ও আভিজাত্যের বন্ধনীতে 
উহ! আবন্ধ থাকিত। ইহা! ব্যতীত আর একটী অভাবও 
ছিল। প্রদর্শনীর উদ্যোক্তাগণ বহু আয়াঁসে যে শিক্পসংগ্রহ 
করিতেন তাহা দৌষগুণের বিচারের বিশেষ অধীন হইত না। 
প্রদর্শনীর কলেবর বৃদ্ধির দিকেই অধিক দৃষ্টি থাকিত। 





শবুনতলা 
৫ --বিমল মজুমদার -ভান্বর কে-সি-রায়, এআর-সি-এ 

বর্ষার স্পাধটাক্ষের ফলে নিয়মের একটু ' সম্প্রতি দোসাইটী অফ. মডার্ণ আর্ট নামক শিল্প- 
ব্যতিক্রয ঘাটর। প্রদর্শনীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাইয়াছে। পূর্বে প্রতিষ্ঠান কলিকাতার চৌরজ্ীতে একটী বিশিষ্ট চিত্র প্রদর্শনীর 
দেশের সাধারণ লোকের সঙ্গে এই শ্রেণীর প্রদর্শনীর বিশেষ নআয্কোজন করিয়াঁছিলেন। তীহাদের উদ্দেন্ত ছিল-_ধার্থ 


শর্ট স্াান্রব্ঞ্ঘ [ ২৮শ বর্-_২য় খণ্ড--ওয় সংখ্যা 


শিল্প ও শিল্পীর যোগ্য সদায় করা। এই প্রদর্শনীটী আয়তনে গিয়াছেন। এ সব আলেখ্যে শারীরিক গঠনের ক্রটীর কথা 
চুত্্ হইলেও প্রকৃতপক্ষে ইহাতে সম্পদ ছিল যথে্ট। প্রথম দর্শকের কেহ কেহ উল্লেখ করিলেও, ভাব এবং নির্ীণের 
শক্তিতে চিত্রগুলি যে উচ্চাঙ্গের 
তাহা স্বীকার না করিবার উপায় 
নাই। (বুদ্ধ ও সহচরগণ+ চিত্র- 
থাঁনিতে শিল্পীর বর্ণের থেল! বেশ 
উজ্জল ও কৌশলপূর্ণ। 

শ্রীযুক্ত পুলিন কুতুর পপ্রিয়- 
মার্কা* সি গাঁরটী বেশ সযতে 
চিত্রস্থ করা হইয়াছে । স্বাভাবিক 
মুখমণ্ডলের ত্রিসীমানায়ও চিন্তার 
দৌরাত্ম্য নাই। প্রতিকৃতি চিত্রে 
ইনি অনেককাল পূর্বেই খ্যাতি 
অর্জন করিয়াছেন। 

শিল্পী হেমেক্জ্নাঁথ মজুমদারের 
“অনন্তের সুর” চিত্রটী সর্ধাংশে 
'চ্জাশ্রোত' -পূর্ণচ্ চক্রবর্বী প্রদর্শনীর গৌরব বৃদ্ধি করিয়াছে। 


বদরের অনুষ্ঠান দর্শকের মনে যে আশার সঞ্চার করিয়াছে, ফকীরের শুদ্ধ চিত্রে ভাব, প্রেম ও কল্পনার এত রস সঞ্চালন 
তাহাঁতে আমর! নিলেন্দেহে বলিতে পারি এরপ প্রদর্শনীর যিনি করাইতে পারেন তিনি অশেষ শক্তিশালী সন্দেহ 
দ্বারা কলা-শিল্পের প্রভূত উন্নতি সাধনেরই সহায়তা হইবে। 

প্রদর্শনী-কক্ষে বিভিন্ন চরিত্রের চিত্রকে একস্থানে উপযুক্ত- 
ভাবে সঙ্গিবেশ করা সর্বাপেক্ষা শ্রমজনক কাধ্য। এই 
কার্যে মার্জিতরুচি, প্রক্যতার জ্ঞান ও স্ুক্ম বিচারশক্তির 
প্রয়োজন । বর্ণোজ্জল বিশাল একটা নৈসর্গিক চিত্রের পার্থ 
মৃদু-ষধুর সলজ্জ নারিকাকে স্থাপন করিলে তাহা সৃত্যদণ্ড 
তুল্য হয়। এই কারণে স্থান, কাল, পাত্র বিবেচনা করিয়া 
অতি অভিজ্ঞ ব্যক্তির দ্বার! প্রতি চিত্রের স্থান দান করা 
কর্তব্য । উল্লিখিত চিত্র প্রদর্শনীটা এই কার্যে সিদ্দিকা 
হইরাছে, তাহ! হচ্ছন্দে বল! যাইতে পারে। 

স্বর্গীয় গগনেন্ত্র নাথ ঠাকুরের “বিসর্জন” নানক রঙ্জীগ 
চিঞ্টা বিশেষ উপভোগ্য হইয়াছে । ইহা গ্রতিদ! নিরঙনের 
একটী সান্ধ্য-ৃশ্া। সামান্ত বিষয়বস্তকে বেশ বাছা 
করিয়া শিল্পী চিত্রিত ক্রিয়াছেন। 

 গ্রর্গীয় সারদা 'উকীলের বহু চিত্র প্রদর্শনীতে ছিলি। 
পেন্সিলে অঙ্ধিত চিত্রগুলিতে গাধুরধ্য ও রেখার কোমলত! উভয়ই 
বি্গান 1 কৃষলীলার বহু টি এই শিল্পী অঙ্কন করিয়া | 'ভীববতী গুরু . --পৈলজ নুখাজি 








ফান্তন---১৩৪৭ ] 


নাই। তাহার “কার্দমে কমল 
প্রদর্শনীতে একটা চাঞ্চল্য টি 
করিয়াছিল । তাহার "শ্রীঅর- 
বিনদ+ অপূর্ব হইয়াছে । অন্ত- 
রের ভাব তিনি বাহিকরূপে 
_-মুথে প্রতিফলিত করিয়া- 
ছেন। স্বামী অভেদানন্দও 
অতি স্ন্দর হইযাছে। 

শিল্পী পূণ চন্দ্র চক্রবর্তীর 
“চিন্তান্্োত” একটা উৎকৃষ্ট 
জল-রং চিত্র। তীরব্রোজ্জল 
বর্ণপ্রয়োগ না করিয়াও যে 
মধুর ও প্রা ণম্পর্শী চিত্র 
নিন্মীণ সম্ভব হয়, পূর্ণবাবু 








ূ “কৈকেনীয় বর প্রার্থনা! 


ৰা 
রি 
৮ 
সপ রি 4 


'্ীকৃকের দেহত্যাগ' সর্থীয় লায়ধা ট্ধাল 


তাহার উৎকুষট ৃ্টাস্ত দেখাইিযাছেম। “হার 
'জহরতের বাঁঝ”টা বেশ মৃলাবান। . *চৈতকর 
চিত্রটাতে বেশ একটা দেবভাব রহিয়াছে । 

শ্রীযুক্ত ননদলাল বসুর -“ৰিষু৮ চিত্র খাদি 
আধুনিক হইলেও নির্মাণ চাঁডুর্য্ে নু 
আছে। সুক্ম তুলিকার সাহাযো সোপানী 
পশ্চাঁদপটের উপর মূর্তিটা নিম্মিত। চিত্রর্থানি 
প্রদর্শনীর শোভা বর্ধন করিয়াঁছিল। 

শীযুক্ত অতুল বন্থুর বহু চিত্র আময্া 
দেখিয়াছি । প্রতিকৃতি চিত্র অঙ্কনে ইনি পূর্ষে্ইই 
খ্যাতি অর্জন করিয়াছেন। কিন্তু প্রদর্শনীতে 
তাহার নৈসর্গিক চিত্রগুলিও সকলের বিশেষ 
দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়াছে। সেতুর পাশে 
নৌকা” চিন্রটী যথার্থই সুন্দর । “অজানা 
স্থান” চিত্রটীতে বর্ণের খেলা বেশ উচ্চাঙ্গের 
হইয়াছে। ও 

শিল্পী যাঁষিনী গাঁজুলীর নাম এদেশের 
লোকের নিকট দুপরিচিত। যঙ্িগু 
প্রাক তিক দৃষ্টে বশন্থী, তথাপি তীহার 
গৃহহারা” চিত্রটী দর্শক মাত্রই স্তন স্পর্শ, 


স্প্রনেজ চক্রবন্তী ৬ করিয়াছে। দল উল তি কিল তত।  লীবারজাটীরা 


২৯৬৬ 


পাঁঞজাবের শিল্পী ঠাকুর সিংএর দান এবার তাহার 


উউদ্রিহ্ভন্যঞ্ী 


| ২৮শ বধ_২য় খ্--৬ সংখ্যা 


শ্রীযুক্ত সতীশ সিংহের “মা ও ছেলে” খড়ি-চিত্রটা সবিশেষ 


নৈসগিক চিত্র অপেক্ষা “এ্যালিফেন্টা গুহা'তেই অধিক উল্লেখযোগ্য । সামান্ত কয়েকটী রেখাপাতেই অবাধ্য ছেলের 





»-ভান্কর প্রমথ মল্লিক 


আবন্ধ। কার লি ইন বিল রি 
প্রধান করিয়াছেন। 


যাত্রা 


সবরূপটা শিল্পী ফুটাইয়া তুলিয়াছেন। 

শ্রীযুক্ত রমেন্দ্র চক্রবর্তীর অঙ্কিত রমোর়ণের চিত্রাবলী 
সকলেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়াছিল। “কৈকেয়ীর বরপ্রীর্থনা, 
চিত্রটির ভাবব্যঞ্জনা অতি হুন্দর হইয়াছে। 

শ্রীযুক্ত শৈলজ মুখাঁঞ্জির চিত্রে একটু বৈশিষ্ট্য আছে। 
তীব্বতী তরুণীর মুখখাঁনায় তুলিকার বেশ সবলত৷ দেখা 
যায়। তাহার “সকিম তোরণ+ও উল্লেখযোগ্য চিত্র । 

শ্রযুক্তবিমল মদ্দুমদার যে প্রাকৃতিক দৃশ্ট অঙ্কনে উচ্চস্থান 
অধিকার করিয়াছেন, তাহা তাহার প্রতি চিত্রেই অল্প বিস্তুর 
প্রমাণ পাওয়া যায়। রাচীর “হড়, প্রপাত এবারকার 
শ্রেষ্ট চিত্র । 

কুমার রবীন রায়ের লাক্ষা নিম্মিত চিত্রগুলি প্রদর্শনীতে 
অনেকেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়াছিল । 

বিভিন্ন বর্ণের লাক্ষাকে শিশ্পী প্রয়োজন মত ভাঁব ও 
কল্পনার মৃষ্তিতে রূপান্তরিত করিয়া বিশেষ নৃতনত্বের ও 
নৈপুণ্যের পরিচয় দিয়াছেন। 

প্রদর্শনীতে আর একটি দর্শনীয় ও উপলব্ধির উপযুক্ত 
বিষয় ছিল-_রাগ-রাঁগিনীর কল্পিত প্রাচীন মুগ্তিগুলি। দুই- 
শত বৎসর পূর্বের বর্ণপাত বর্তমানেও সমভাবেই উজ্জল 
দেখা গিয়াছিল। 

প্রদর্শনীতে ভাস্কর্যের উৎকর্ষের নিদর্শনও যথে্ট ছিল। 
যুক্ত প্রমথ মল্লিকের “শোর” শ্রেষ্ঠ স্থান পাইবার যোগ্য। 
তাহার “যা গ্রাম্য মাঝির নিধু'ৎ প্রতিসুগ্তি | ভাস্কর কে, সি, 
রায়ের *শকুক্তলা” প্রদর্শনীকে সুন্দরতর করিয়াছিল বল! 


যাইতে পারে। দেহভঙ্গী, লাস্ত ও কোমলতা একত্রে মিলিয়া 


কঠিন উপাদানকেও নমরতর করিয়াছে প্ীযুক্ত চিন্তামণি কর, 
কামাক্ষ্যা দাস, হবীকেশ দাসগুগ গ্রসৃতির শিল্পগুলিও বিশেষ 
উল্লেখযোগ্য । 


7 রি 






রা ষ্ঠ“ 
এ শু 


81141011118 111।9784 ৮৮ ৯ 
ছি 





|] 41 


& ॥010119 | | মু] [|] 
০ রর 








প্রহেলিক 


নাটক 
শ্রীযামিনীমোহন কর 
পরিচয় গিরিজা। আশ্চর্য্য ! 
গিরিজা প্রসন্ন ভট্রীচাধ্য (ডিটেকটিভ ইন্সপেক্টর), কার্তিকচন্ত্ কান্তিক। হয় ত €ুর নাম পদবী সবই মিথ্যে। 


বিশ্বাস ( তার সহকারী ), দামোদর সামন্ত ( হোটেল 
“ক্যামিনো”র ম্যানেজার ), স্থশীলা ( হোটেলের ঝি ), 
রতনলাল মণ্ডল (পুলিশ জগাদার) নীহার রায়, মালিনী দেবী, 
গণেশদাস সকসেরিয়া ( হোটেলের অধিবাসী ), বংশী, অনাথ 
( হোটেলের লিফউ-মেন) বনমালী সাহা, ত্রিদিবেন্্র- 
নারায়ণ নন্দী ( মাগস্ক ), ভাক্তার দে ( পুলিশ ডাক্তার ) 


প্রথম অঙ্ক 


হেটেল ক্যাসিনো | কুমার জগদীশগ্রসাদ পাইনের ফ্র্যাট । সকাল 
সাড়ে সাতটা । ইন্সপেরর গিরিজাপ্রনন্ন ভটাচাধ্য টেলিফোন করছেন 


গিরিজা। ( ফোনে) হাালো-্থ্যা, ম্যানেজার সাহেবকে 
একবার ডেকে দিতে পারেন? আচ্ছ! ধন্বাদ_-- 
ডিটেকৃটিভ কার্ডিকচন্ত্র বিশ্বাসের প্রবেশ 
তারপর কান্তিকঃ ডেড. বডি ঠিক ক'রে পাঠিয়ে দিয়েছ তো? 


কার্তিক । আজে হ্যা। 

গিরিজা'। ডাক্তার কি বললেন? 

কাণ্তিক। বললেন-__-“রাইগর মর্টিস সেট ইন করেছে, 
আর এখনও রয়েছে । সাঁত-আট ঘণ্টা তো! বটেই ।” 

গিরিজা। তাহ'লে রাত্রি বারোটা-একটা নাগাদ ধরা 
যেতে পারে। 


কার্ডিক। আজ্জে হ্্যা। বুলেটটা বার করা হলেই 
আপনাকে ফোনে খবর দেবেন বলেছেন । 

গিরিজা । আচ্ছা । ( ফোনে ) হালো__কে ? ম্যানেজার 
সাহেব? একবার ওপরে এলে ভাল হয়। দু-চারটে কথা 
জিজ্ঞেন করবার ছিল। না, নাঃ বেণীক্ষণ লাগবে না! 


টেলিফোন রাখলেন 
গিরিজা। লোকটার সম্বন্ধে কোন খোঁজ পেলে ? 
কার্তিক। আজে না। “হজ হু” “ইয়ারবুক” “প্রমিনেপ্ট 
মেন” কোনটাতেই ওর নাম খু'জে পাওয়া' গেল না। 


গিরিজা | হতে পারে। হাওর মনিব্যাগ, সিগাঁর কেস 
কান্তিক। দেরাঁজেই সব রেখে দিয়েছি । 


গিরিজা। হ'। দেখ কেউ যেন হাঁতটাত না দেয়। 
আঙুলের ছাপ পাওয়া যেতে পারে । তোমার তো. এই 
প্রথম মার্ডার কেস? 

কাণ্তিক। আজ্ঞে হা! 


গিরিজা। খুব মন দিয়ে সব লক্ষ্য করবে। . কি ভাবে 
কু ধরতে হয়, কোন্‌ লাইনে জেরা করতে হয়_ বুঝলে ? 
বই পড়া বিদ্ভা আর সত্যিকারের কেস শ্বাই ক্রা, 
ছুটোতে অনেক প্রভেদ । বুদ্ধি, দৃষ্টিঃ চিন্তা-_-সব অতি প্রথর 
হওয়া চাঁই। সব শুদ্ধ খুনের কেস পনেরোট! করেছি, 
তার মধ্যে বারোটাকেই ধরে দোষী প্রমাণ করেছি। এরকম 
রেকর্ড সচরাচর থাকে না বললেও অত্যুক্তি হবে না। 
কার্তিক । আর তিনটের স্যর কি হ'ল? 
গিরিজা। সে অনেক কথা । ্‌ 
কান্তিক। আপনার আযাভারেজটা নষ্ট করে দিলে। 
গিরিজা। কি? | 
দরজায় খট্‌ খট. ধ্বনি 
আসুন_- 
দরজা খুলে ম্যানেজার দামোদর সামন্ত দাড়িয়ে রইলেন 
ভেতরে আস্ুন__ 
সেইথান থেকেই চারিধারে ভীতভাবে দেখতে লাগলেন 
কার্ঠিক। ভয়ের কিছু নেই। লাশ তো চালান দেওয়া! 
হয়েছে । 
ধীরে ধীরে এগিয়ে এলেন 
গিরিজা। বন্থুন। আর কোন খবর জানতে পারলেন? 
' দ্ামোদর। (বসে) আজে না। খাতায় তো আর 
কিছু লেখা নেই। মাঁস দুয়েক থেকে এখানে আছেন। 
প্রত্যেক মামের টাঁকা অগ্রিম দিয়ে দেন, সুতরাং. 


৩৩৯ 


৪৭ 


টি 


গিরিজা। সে তো বটেই। আচ্ছা, কোন লৌকজন-_ 

দামোদর । আমি ঠিক জানি না। হোটেলের স্টাফ, 
ঝি চাকর তারাও কিছু বলতে পারলে না। 

গিরিজা। মুস্কিল! 

দামোদর । বিলক্ষণ! কিন্তু আমার অবস্থাটা একটু 
ভাবছেন? হোঁটেলের বদনাম__হয় ত ভয়ে কেউ আর 
আসবেই না। লোকটা নিজের মাথার খুলি নিজে উড়িয়ে 
দিয়ে__ 

কার্তিক। নিজে নয়__ 

দামোদর । মানে? 

গিরিজা। অন্ত কোন ব্যক্তি__ 

দামোদর। ত্যা! বলেনকি? 

গিরিজা। অনেক প্রমাণ পাওয়া গেছে । 

দামোদর | অর্থাৎ আমার এই হোটেল “ক্যাসিনো”তে 
কুমারবাহাদুরকে হত্যা করা হয়েছে? 

কাণ্ডিক। তাই তো মনে হচ্ছে। ব্যাড লাক্‌। 

গিরিজা। আপনার হোটেলের চারতলায় ধারা আছেন, 
তাদের নামের একটা লিস্ট করেছেন ? 

দামোঁদর। হ্্যা। সঙ্গেই এনেছি। 

গিরিজা বাবুর হাতে একটা স্লিপ দিলেন 

গিরিজা। ধন্তবাদ। এরা বুঝি এই তলায়ই থাকেন? 
বেশ, বেশ। আচ্ছা এই দরজাটা দিয়ে কোন্‌ ঘরে 
যাওয়া যায়? 

একটা দরজা! দেখালেন 

দামোদর । ওদিকে আর একজন থাকেন। আর 

বারে একজন খুব বড় ফ্ল্যাট চাওয়ায় দেওয়ালে এই দরজাটা 


ফুটিয়ে দিয়েছিলুম। এখন ওটা বন্ধ ক'রে দু'টো ফ্ল্যাট 


ক'রে দিয়েছি। 
গিরিজা। ওঘরে কে থাকেন? 
কাণ্ডিক দরকারী কথ! নোট করছেন 
দামোদর । নিশিকান্ত মুখোপাধ্যায় বলে এক ভদ্রলোক । 
গিরিজা । আপনার লিফটে ক'জন লোক কাজ করে? 
দামোদর । ছু'জন। একজন সকাল সাতটা থেকে 
চারটে, আর একজন চারটে থেকে রাত বারোটা অবধি। 
অবস্ত অনেক বেশী লোক বাইরে থাকলে একটা অবধিও 
থাকে। দিনে থাকে বংশী, আর রাতে অনাপ। কালকে 


স্রাব ভন 


না মজা স্থ্া প্র স্ বল স্ম্ স্- সর স্কুল সম ব্” স্বর স্ব স্যর আআ স্ফ বল স্ব স্ব স্য সমর স্ড নর 


[ ২৮শ বর্ব-_-২য় থণ্ড- ৩য় সংখ্যা 


অনাথ রাতে বিশেষ কাজ থাকার দ দরুণ শ আমাকে বিজ 
ক'রে বংশীর সঙ্গে ডিউটি বদলাবদলি ক'রে নিয়েছিল-_ 

গিরিজা। এখন লিফটে কে আছে? 

দামোদর । বংশী। 

গিরিজা। আচ্ছা» এই সব ঘরের কাঁজকর্্ম কে করে? 

দামোদর । ঘর পরিষাঁর আর বিছানা ঠিক ক'রে 
রাখার ভার স্শীলার ওপর । 

গিরিজা। তাঁর কাঁছ থেকে হয় ত-_ 

দামোদর । তাঁকে পাঠিয়ে দেব? 

গিরিজা। দিলে ভাল হয়। 


দামোদর দরজার কাছে গেলেন 

আচ্ছা, আর একটা কথা । আনাদের আসার আগে এঘরে 
কেউ এসেছিল? 

দামোদর । প্রথমে সুশীলা, তারপর আমি । 

গিরিজা। মেজেয় কাটিজ কেস পড়েছিল? 

নামোদর। কিছু দেখেছি বলে তো মনে হচ্ছে না। 

গিরিজা। আচ্ছা । আপনাঁকে অনেক কষ্ট দিলুম | 

দামোদর । কষ্ট ত আপনাদের । আমি নীচে অফিসেই 
রইলুম ৷ যখনই কোন দরকার হবে খবর দেবেন। ফোন 
করলেই হবে। তাঁকে যে এত তাড়াতাড়ি এখান থেকে 
সরিয়ে নিয়ে গেছেন এর জন্ত অসংখ্য ধন্টবাদ। 

গিরিজা । কিছু না। আঁমাঁদের কর্তব্য । আর এখানে 
তো পোস্টমর্টেম হতে পারত না। 

দামোদর । পোস্ট-_না, না, বটেই তো, বটেই তো 

গ্রন্থান 

কান্তিক। ভদ্রলোক অত্যন্ত নার্ভাস হয়ে পড়েছেন। 

গিরিজা। থুব স্বাভাবিক । ঝিকে নিয়ে বিপদে পড়তে 
না হয়। 

কান্তিক। কেন? মাথায় ছিটফিট আছে নাকি? 

গিরিজা । ছিট না থাকলেও ফিট থাকতে পারে। 

কাণ্তিক। নীচে থেকে এক বালতি জল দিয়ে যেতে বলব? 

দরজায় খট খট ধ্বনি 
গিরিজা। ভেতরে এস। 
খাট! হাতে নুশীলার প্রবেশ 


সুদীলা। (দূর থেকে ) আমাকে ডেকে পাঠিয়েছেন? 
কার্তিক । ভেতরে এস না। ভয় পাচ্ছ কেন? 


ফান্তন-_-১৩৪৭ ] 


স্থণীলা। ভয় পেতে যাব কেন? 
এগিয়ে এল 
গিরিজা। তোমার নাম কি? 
সুশীল । স্থশীলা। ম্যানেজারবাবুর কাছে শোনেননি? 


গিরিজা। কোথায় থাক ? 
স্থনীলা। কখন? 
কান্তিক। কখন মানে? 


ন্থলীলা। দিনে না রাতে? 

গিরিজা। (রেগে) দিনে রাতে আবার কি? 

স্থণীলা । ( েঁচিয়ে ) দিনে থাকি এই হোটেলে, আর 
রেতে থাকি আমার বাসায় । 


গিরিজা। তোঁমার বাসার কথাই জিজ্জেস কর! হচ্ছে? 
স্থণীলা। কেন? 
কার্তিক। জান, আমরা পুলিশের লোক । 


সুণীলা। পুলিশ তে কি হয়েছে? তারা কি আমাদের 
পাঁড়ীয় যায় না নাকি? আমি থাকি কীঁসারীপাঁড়ায়। 

গিরিজা। তুমি ভয় পেয়েছ বলে ত মনে হচ্ছে না। 

স্থণীপা। ভষ পাব কেন? এসব আমার গা-সওয়া 
5য়ে গেছে । যেখানেই চাঁকরি করতে যাঁই সেখানেই 
একজন না একজন কেউ মরে । হয় ছাত থেকে পড়ে, না 
হয় বাস চাঁপা পড়ে, কিংবা ঘরে আগুন লেগে অথবা বিষ 
খেয়ে । সেই জন্যেই ত এবার হোটেলে চাকরি নিয়েছি। 
এক সঙ্গে তো আর সব লোক মরতে পারবে না। 

কান্িক। ওঃ। অপঘাতে মৃত্যু তা হলে অনেক 
দেখেছ ! আমর! কি প্রশ্ন করব-_ 

স্থশীলা । সে আমার জানা আছে। এর এখানে কে 
আসত, শেষ কখন দেখেছি, গোলমাল শুনেছি কি না 

গিরিজা। থাক, আর বলতে হবে না। এই ঘরে 
তুমিই প্রথম এসেছিলে না? 


সুশীল! । আজে হ্যা । ঘর পরিষ্কার করতে । 
গিরিজা। এসে কি দেখলে? 
স্থশীলা। সে তো আপনার! জানেনই । 


গিরিজা। ঘরের মেজেয় কাটিজের, কেস দেখেছিলে ? 

সুণীলআা। কাঠের কেস? র 

গিরিজা। নানা । (দেরাজ থেকে একটা রিভলবার 
বার করে) এটা কার জানো? 


হেরা 


এটি 


সুণীলা। না। ও আমারও আছে, ছু অনি! দিয়ে 
দোলের সময় রং খেলার জন্তে কিনেছিলুম । 

গিরিজা। নাঃ, তুমি এবার যেতে পার। 

স্ুশীলা। অনেক সময় নষ্ট হয়ে গেল, এতক্ষণ কত 
কাজ এগিয়ে যেত। 

কার্ঠিক। কুমারবাহাদুর লোক কেমন ছিলেন জান? 

সুশীল । আজ্ঞে না_আমার সঙ্গে তার বিশেষ 
ভালবাস! ছিল না । 

গিরিজা। (রেগে) যাও এখান থেকে । 

সুশীলার প্রস্থান 

কান্তিক। কি ফাজিল রে বাবা! 

গিরিজা। হোটেলের ঝি ওইরকমই হয়ে থাকে। 

কান্তিক। হিস্টিরিয়া কি ফিট কিছু তো হ'ল না। 

গিরিজা। হু'। ডাকের চিঠিগুলো আন তো, দেখি। 


কার্তিক। আনছি । 
পাশের ঘরে গেলেন 


গিরিজা। কেস্টা কোথায় গেল? 
চারধারে খুজতে লাগলেন। পাশের ঘর থেকে কার্তিক 
চিঠিগুলে! নিয়ে ফিরে এলেন 
কাণ্তিক। এই নিন। কি দেখছেন? 
গিরিজা। রিভলভার রয়েছে । একটা গুলি ছোড়া 
হয়েছে। কিন্তু কেস কই? ( একটু পরে ) দেখি চিঠিগুলো। 
একটা নিয়ে খুলতে গেলেন 
কার্তিক। খুলবেন? 
গিরিজা। বাজে বোকো না। শ্রেফ দেখে যাও কি 
ভাবে কাঁজ করতে হয়। ( একটা চিঠি খুলে) জমিদার 
ত্রিদিবেন্্রনারায়ণের চিঠি । চৌরলী টেরেস। লিখেছেন-__ 
“বড়ই ছুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে ২২শে মে রাত্রিতে 
আটটাঁর সময় আমার বাড়ী আপনার ডিনারের ষে নিমন্ত্রণ 
ছিল, তাহা ক্যাঁনসেল্‌ করা হইল।” হাঁ, তবে তো 
ত্রিদিবেন্্রবাবুর সঙ্গে 'কুমারবাহাঁছুরের আলাপ ছিল বলে 
মনে হচ্ছে। 


কাণ্তিক। কিন্ত কতখানি-_ 
গিরিজা। তাতে আমাদের বিশেষ প্রয়োজন নেই। 
ডিরেক্টরী থেকে তার নম্বর দেখে তাকে ফোন কর। 


চিঠিটা ভাল ক'রে পরীক্ষা করতে ও নোট বুকে লিখতে লাগলেন 


২০এ২, 


কার্তিক । হালো, সাউথ 95271 ইয়েস প্লীজ । 

গিরিজা। (চিঠির খাম দেখে) ভারী আশ্চধ্য তো? 

কাণ্ডিক। কেন? কিহ*ল? 

গিরিজা। চিঠির ওপর লেখা আছে তিন তারিখ, 
আর খামের ওপর ছাপ রয়েছে সতেরোই অর্থাৎ কালকের । 

কান্তিক। তাই তো। এতদিন চিঠিটা কোথায় ছিল? 


গিরিজা। নিশ্চয়ই তাকে দেওয়া হয় নি। কিন্তু সেটা 
গাঁফিলি না ইচ্ছাঁরুত? 
কাণ্তিক। হয় তে! চাঁকরদের দোষ। ( টেলিফোনে) 


হালো, ইজ ছ্যাট সাউথ ০527? জ্রিদিবেন্দ্রবাবু আছেন? 
একবার দয়া ক'রে ডেকে দেবেন? বলবেন পুলিশের 
লোক । আচ্ছা, ধরে আছি । ( গিরিজাকে ) ত্রিদিবেন্্রবাবুকে 
ডাকতে গেছে। 

গিরিজা। দেখি আমাকে দাও। (ফোন নিয়ে) 
হ্যা কে? ত্রিদিবেন্্রবাবু? নমস্কার ! দেখুন, আপনি কুমার 
জগদীশপ্রদাদ পাইনকে চেনেন? তার এক আকম্মিক 
বিপদ্-_স্ত্যা, কি বললেন? চেনেন না ! নাম পর্য্স্ত শোনেন নি? 
কি আশ্চর্য্য ! কিস্ত-_ আচ্ছা দেখুন, যদি কিছু মনে না করেন, 
একবার হোটেল “ক্যাসিনো”তে আসতে পারবেন? আমি 
সেইখাঁন থেকেই কথা বলছি । না না, তা সম্ভব নয়। হ্থ্যা, 
বটেই তো। বুঝতে পারছি কিন্তু এটা অত্যন্ত জরুরী কাজ । 
বেশী দেরী হবে না। আসা প্রয়োজন। উপায় নেই! 
আমার কর্তব্য-মাফ করবেন। হ্যা এখুনি। যত 
তাড়াতাড়ি হয়। বেশীক্ষণ লাগবে না । আচ্ছা ধন্যবাদ । 


রিসিভার রেখে দিলেন 


কান্তিক। আসতে চাইছিলেন না? 

গিরিজা । না । বললেন, কুমাঁরবাহাছুরকে চেনেন না! । 
হয় তে! খুনের ব্যাঁপারে জড়িয়ে পড়তে চান না! । 

কাণ্িক। কিন্তু খুনের কথা তো আপনি বলেন নি। 

গিরিজা। (ভেবে) তা বটে। (একটু পরে) ষ্্যা, 
ততক্ষণ হোটেলের কতকগুলো! লোককে জের! ক'রে দেখা 
যাঁক। অবশ্থ বিশেষ কিছু সুবিধা হবে বলে মনে হয় না। 

কার্তিক। হতেও তে! পারে। এদের মধ্যে কারুর 
সঙ্গে আলাপও তে! থাকতে পারে। 

গিরিজা। হা । রাত্রে কোন গোলমাল যদি শুনে 


ভ্ঞাব্রভন্ব্ 


[ ২৮শ বর্ষ--২্য় থণ্র-৩য় সংখ্যা 


থাকে । রতনলালকে নামগুলো দিয়ে এস আর এক এক 
জন ক'রে পাঠিয়ে দিতে বলে দাঁও। 
কান্তিক। আচ্ছা স্যর । 


কার্তিক চলে গেলেন ও অল্পক্ষণ পরেই ফিরে এলেন। ইত্যবসরে গিরিজ! 
একট! চেয়ার এক জায়গায় সন্ত্পণে সরিয়ে রাখলেন 


কাত্তিক। ওট! কি করছেন? 
গিরিজা। এই জায়গাটায় রক্তের এবং পায়ের দাগ 
রয়েছে । পাছে মাড়িয়ে ফেলে চেয়ার দিযে ঢেকে রাখলুম। 


কান্তিক। (ঝুঁকে দেখে) পায়ের ছাপ স্পষ্ট দেখা 
যাচ্ছে। হীললেস জুতো । 
গিরিজা । রবার সোল বলেই মনে হচ্ছে। 


কান্তিক। তবে আর ঝি, একটা ক্লু, তো পাঁওয়া গেল। 

গিরিজা। তোমার মাথা । কলকাতায়লাখ লাখ লোক 
রবার সোলের জুতো পরে। মনে হয় জমিদার তিদিবেক্রের 
কাছ থেকে অনেক দরকারী তথ্য পাওয়া যেতে পারে। 


রতনলালের গ্রবেশ 


রতন। মিস্‌ নীহারবালা রায়ের সঙ্গে এখন দেখা 
করবেন? 
গিরিজা। হ্যা। পাঠিয়ে দাও। 
রতনলাল বাইরে গেল। মিস্‌ রায় ঢুকলেন 
গিরিজা। আস্মন। কান্তিক, 
বন্থুন। 


কার্তিক একটা চেয়ার গিরিজাবাবুর সামনে এগিয়ে 
রাখলেন। মিস্‌ রায় বসলেন 


নীহার। ধন্তবাদ। 

গিরিজা। বড়ই ছুঃখিত। আপনাকে কষ্ট দিতে 
হল। বেশীক্ষণ আটকাঁব না । আমি ইচ্ষপেক্টর গিরিজা- 
প্রসন্ন ভট্টাচার্য্য, আর ইনি হলেন আমার সহকারী । 

কার্তিক । নমস্কার ! 

নীহার। নমস্কার! 

গিরিজা। আঁপনার নাম? 

নীহার। নীহারবাল! রাঁয়। 

গিরিজা ।. আপনি কোথায় থাকেন? 

নীহার। এই হোটেলে । 


একটা চেয়ার দাও। 


ফাস্তুন-_-১৩৪৭ ] 


ওল সান পাস্থিগান্ষপা স্পালা বগ লা স্থান স্ব বগা সখ গা স্হান 


এসেছেন। তার আগে 

নীহার। দেশ বর্দমান জেলার চুরপুনী। তবে এখন 
এইথানে স্থায়ীভাবে থাকব মনে করেছি। 

গিরিজ! । কলকাঁতীয়__হোটেলে !__ 

নীহার। হ্য। একটা মেয়ে কলেজে চাকরি পেয়েছি । 
একলা থাকার পক্ষে হোটেলই প্রশস্ত । (একটু থেমে) 
এমব জিজ্ঞেস করবার কারণ জানতে পাঁরি কি? 

গিরিজা। আজ এই ঘরে একজনকে মুত অবস্থায় 
পাঁওয়! গেছে । কেউ তাকে হত্যা করেছে বলে সন্দেহ করি। 

নীহার। কি ভয়ানক কথা! 

গিরিজা । মুতের নাম কুমাঁর জগদীশপ্রসাদ পাইন । 
তার সঙ্গে আপনার পরিচয় ছিল কি? 


নীহার। না। নামও শুনি নি। 

গিরিজা। লম্বা দোহাঁরা চেহারা, বড় ঝড় গোফ, 
ফরসা! রউ.__ 

নীহার। না, দেখিনি । মাত্র ছু দিন এসেছি । চোথ 


নিয়ে একটু কষ্ট পাচ্ছি বলে ঘর থেকে মোটে বাঁব হই নি। 
গিরিজা। কাল কণটার সময় শুতে গিছলেন ? 
নীহার। রাত দশটা হবে। 
গিরিজা। রাত্রে গোলমাল কি অন্য কোন শব্দে 
আপনার ঘুম ভেঙ্গে গিছল কি? 
নীহার। না। সকালে ঝি চানিযে আসায় ঘুম ভাঙ্গল। 
গিরিজী। আচ্ছা, ধন্বাঁদ। অনেক কষ্ট দিলুম । 
নীহার । না, না, কষ্ট আর কি। 


উঠে দরজার কাছে গেলেন 


গিরিজা । এখন ঘরেই থাকবেন তো? যদি দরকার হয়-_ 

নীহার । কিন্তু আমার যে দু-চাঁরটে কাঁজ রয়েছে 

গিরিজা। ঘণ্টা তিনেকের জন্য অন্তত আপনাঁকে 
থাকতে অন্গরোধ করছি-- 

নীহার। দরকারী কাজ ছিল-_ 

গিরিজা। এটাও তো খুব দরকারী। যদি কোনো 
সাহায্য 

নীহার। আমি যা জানি বলেছি। "এ ছাড়া আর-- 

গিরিজা । তবুও-_সরকাঁরী কাঁজ, মাফ করবেন। 


শ্ত্েক্লিক্কা 
গিরিজা । মানে, এই হোটেলে তো আপনি সম্প্রতি 








চিন 


টিরিরনিররারিতর রিনািরি তিতির 
নীহার। অগত্য।। 
মিস্‌ রায়ের প্রশ্থান 
কার্তিক। বিশেষ এগোলো' বলে তো মনে হচ্ছে না। 
গিরিজা । না। 
কান্তিক। উনি তো! কিছুই জানেন না স্তর। মিথ্যে 
ওঁকে আটকে রাখলেন! বেচারীর কাজকর্মের ক্ষতি 
হ'ল। সমস্ত রাতই উনি ঘুমিয়ে ছিলেন। 
গিরিজা। কি ক'রে জানলে? তুমি কি কাছে ছিলে? 
কাণ্ঠিক ৷ (লজ্জিত হয়ে) আজ্জে না । এই প্রথম দেখলুম । 
গিরিজা | পুলিশের কাঁজে কাউকে বিশ্বাস করতে নেই। 


রতনলালের প্রবেশ 


রতন। মালিনী দেবী এসেছেন। 
গিরিজা । পাঠিয়ে দাও । 
রতন। (দরজার কাছে গিয়ে ) ভেতরে আশ্থন। 


ম।লিনী দেবীর প্রবেশ ও রতনলালের প্রস্থান 


কাত্তিক। দীড়িয়ে রইলেন? বসুন । 


চেয়ার এগিয়ে দিলেন 
মালিনী। (হেসে) নিশ্চয়ই, বসব বই কি! 
চেয়ারে বসলেন 
গিরিজা। আমি ইন্সপেক্টর গিরিজা প্রসন্ন ভট্টাচার্য্য । 
মালিনী। আলাপ করে স্থখী হলুম। 
গিরিজা। আপনি কি করেন? 


মালিনী । আমার নাম শোনেন নি ! 

গিরিজা । হয় তো শুনে থাকব। ঠিক মনে পড়ছে না। 

মালিনী। আগে নীরেন বোসের দলে নাঁচতুম। এখন 
ফিলে। আমার ছবি “বিজনচারিণী” “যৌবনপাখী”-_ 

কার্তিক। হ্যা এইবার মনে পড়েছে । আপনি একজন 
ফিলুস্টার । 


গিরিজা। স্বামীর সঙ্গে কেস-__ 

মালিনী। সে তে৷ অনেক পুরোনো কথা । 

গিরিজা। আপনি বাবু মৃগাঙ্কনাথ দত্ডের স্ত্রী না? 
মালিনী। ছিলুম। এখন চিত্রতারক1 মালিনী দেবী। 


গিরিজা। আপনার তখন নাম ছিল-- 
মালিনী । মাধবী। 


২2৩৪ 


কান্িক। ঠিক হয়েছে। আপনি স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া 
ক'রে স্বামী ও পুত্রকে ছেড়ে দিয়ে আলাদা হয়ে গিছলেন। 

মালিনী । দেড়শ” টাকা মাইনের জ্যর্নালিস্টের স্ত্রী 
থাকলে আজ হোঁটেল পক্যাসিনো”্তে থাক। আর ছু'খানা 
গাড়ী রাখা সম্ভবপর হত না । আঁর যখন ফিল্মে নাঁমবই 
ঠিক করলুম তখন একটা ছেলে নিয়ে লটবহর বাড়ানে৷ 
প্রয়োজন মনে করলুম না। 


গিরিজা। আপনাকে ছু-চারটে কথা জিজ্জেস করব। 
মালিনী। বেশ তো। কোন কাগজে বেরোবে? 
গিরিজা। তাঁর মানে? 

মালিনী । খবরের কাগজে ছাপবেন তো? 

গিরিজা। না। এই ঘরে কুমার জগদীশপ্রসাদ পাইন 


থাকতেন । কেউ তাঁকে হত্য। করেছে । মৃতদেহ ঘরে পাওয়। 
গেছে। 

মালিনী। শুনেছি । স্ুশীলা বলেছে । (চারিধারে 
চেয়ে ) ঘরটা বেশ সাজানো । ভদ্রলোক বেশ পয়সাওয়ালা । 


গিরিজা। কাল আপনি তাঁকে দেখেছিলেন ? 

মালিনী । নাঁ। কাঁল সকাঁল ছণ্টাঁয় বেরিয়েছিলুম 
আর ফিরলুম রাত বারোটাঁয় | শুটিং ছিল। “আজকালকার 
মেয়ে”তে আমি না্সিকার ভূমিকাঁষ নামছি। 

গিরিজা। আপনাদের শুটিং শেষ হ'ল ক"টার সময় ? 

মালিনী । দশটায় । 

গিরিজা। তারপর কি করলেন? 

মালিনী । সোজা বাড়ী চলে এলুম। 

গিরিজা। তাতে দৃ্ঘণ্টা লাগল ? 

মালিনী । কথন ফিল প্লে করেছেন? 

গিরিজা। না। 

মালিনী। তবে বুঝবেন না। শুটিং শেষ হলে রেস্ট 
নিয়ে, মুখ হাত ধুয়ে, কিছু খেয়ে ব্যারাকপুর থেকে এখানে 
আসতে দশ মিনিটের বেণী সময় লাগে। 

গিরিজ! । বারোটা বেজেছে কি করে জানলেন? 

মালিনী । ঘড়ি কেনবার পয়সা আমার আছে। 

গিরিজা । একল! ফিরলেন? 

মালিনী । এসব কথার উত্তর দিতে আমি বাধ্য নই। 

ৃ উঠে দাড়ালেন 
গিরিজা। কথার উত্তর দিন। একলা ফিরলেন? 


ভ্াান্সভন্বন্য 


[ ২৮শ বর্ষ-_২য় খণ্ড-৩য় সংখ্যা 


মালিনী । (বসে) হ্যা। কেন? 
গিরিজা। লিফটে চড়ে ওপরে উঠেছিলেন? 
মালিনী। নিশ্চয়। সমস্ত দিন খেটেথুটে রাঁতবারোটার 


সময় হেটে সিঁড়ি দিয়ে চারতলায় ওঠবার সথ হয়নি । 
গিরিজা। লিফ ম্যান আপনাকে ওপরে নিয়ে এল? 
মালিনী। কেন আসবে না? আমি কি অমনি থাকি? 
গিরিজা। ঘরে গিয়ে কি করলেন? 


মালিনী । হাঁসলুম, কাঁসলুম,একবাঁর ডানদিকে চাইপুম, 
তারপর বা দিকে চাইলুম- 
কাতিক। না, না, তা নয়। উনি গ্িজ্ঞেস করছেন 


ঘরে গিয়ে কি আপনি কিছুক্ষণ জেগে গল্পের বই পড়লেন, 
না তখুনি ঘুমিয়ে পড়লেন, অথবা জেগে শুয়ে রইলেন__ 

মালিনী। (হেসে) সোজা গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লুম | 
বড্ড ক্লান্ত হয়ে গিছলুম কি-ন!। 

গিরিজা । গুয়েই ঘুমিয়ে পড়লেন ? 

মালিনী। না। তিন মিনিট সাড়ে ছাঁপ্লান্ন সেকে € 
জেগেছিলুম । 

গিরিজা। রাত্রে আপনার ঘুম ভেঙ্গেছিল কি? 

মালিনী। না। 

গিরিজা। কোন শব্ধ শুনেছিলেন ? ধরুন গুলির শন্দ ? 

মালিনী। কি বলছেন কিছুই বুঝতে পারছি না। 
ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে গুলির শব্দ__স্বপ্পে বলছেন কি? 

গিরিজা। আপনার ঘুমোবার আগে, এই ঘরে কোন 
রকম গোলমাল, কি ঝগড়া__ 

মালিনী । না, কিছু শুনি নি। 

গিরিজা। ধন্তবাদ। এবার যেতে পারেন। 

মালিনী উঠে দাড়ালেন 

কান্তিক। এখন কিছুক্ষণ ঘরেই থাকবেন। কোথাও 
বার হবেন না। 

মালিনী । ( উৎসাহিত হয়ে ) কেন, আঁপনি আসবেন ? 

কাণ্তিক। (লজ্জিত হয়ে ) নাঃ নাঃ তা বলছি নাঁ_ 

মালিনী। (হেসে) আচ্ছা থাকব। আপনাদের এই 
ব্যাপার তে ক্বাগজে বেরোবে । তাতে আমাকে একটু 
পাঁবলিসিটি দিয়ে দেবেন। আপনাদের আমার লেটেস্ট 
একখান! ছৰি দেঁব। সেইটাঁও সঙ্গে দিলে চমৎকার হবে। 

কান্তিক। গ্র্যাণ্ড হবে। ছবিতে নাম লিখে দেবেন। 


ফান্তিন_১৩৪৭ ] 
মালিনী। 








গল 


নিশ্চয়ই । আচ্ছা তবে যাঁই। 


মালিনীর প্রস্থান 
বেশ নেয়েটি-__ 


গিরিজা। মেয়ে দেখতে গেলে আর এসব কাজ 
এগোবে না। ভয়ানক মিথ্যাবাদী । 

কার্তিক । কি বলেন স্তর? 

গিরিজা। কখন এসেছিল, একলা ন! সঙ্গে কেউ ছিল, 
কত রাত অবধি সঙ্গী এখানে ছিল-_ 

কার্তিক। সে তো লিফটম্যানকে জিজ্ঞেস করলেই 
খোঁজ পাওরা যাবে। 


গিরিজা। হু । 


রতনলালের প্রবেশ 


রতন । গণেশদাস সকসেরিয়াকে পাচিয়ে দেব? 


কান্তিক। 


তাকে ডেকে পাঠাতে হবে। 


গিরিজ! । হ্যা, দাও । 
রতনলালের প্রস্থ(ন ও গণেশদাসের প্রবেশ 
গণেশ । বাম রাম বাবু। সোঁব ভালো আছেন? 
গিরিজা। নমস্কার । 
কাণ্ডিক। বসুন । 


চেয়ার এগিয়ে দিলেন। গণেশদান বসলেন 
গণেশ । কেও বাবু, কিছু চোরী হয়েছে? 
গিরিজী। তাঁর চেয়ে বেশী । খুন হয়েছে বলে মনে হচ্ছে । 


গণেশ। খুন! হত্তিয়া !! কুমারবাহাছুর__ 
গিরিজা। হ্যা। 
গণেশ। তিনি কাকে হত্তিয়া করেছেন? 


গিরিজী। তিনি করেননি । তাঁকে কেউ হত্যা করেছে। 

গণেশ । রাম রাম। এটা তো বোড়ো অন্থায় আছে। 

গিরিজা। আপনাকে দু-একটা কথা জিজ্ঞেন করব। 

গণেশ। বোলেন। 

গিরিজা। আপনার নাম? 

গণেশ। গণেশদাস সকসেরিয়া, ( একটু থেমে ) লিঃ । 

কাণ্তিক। লিমিটেড ! 

গণেশ। হা। হামি তো একঠো কম্পানী আছে। 

গিরিজা। কুমারবাহাছুরকে চিনতেন? 

গণেশ। কেনো চিনবে না। হামরা ছু'জনেতে একই 
তলায় থাকে। হামারও গুরই মতন বড়া ফ্র্যাট। বেশ 
ভালা আদমী ছিলেন । কে তাঁকে মেরেছে জানেন? 


শহেল্নিক্কা 


বসবাস সাপ রপ্ত স্হ ্-_আ্াপ_ -স্ স্ব-স্ব স্থল” স্যার 


২৫ 


গিরিজা। সেইটাই তে! আমরা বার করবার চেষ্টা 
করছি। আচ্ছা, আপনার সঙ্গে কি রকম আলাপ ছিল ? 

গণেশ। দেখা হোনেসে “রাম রাম”, “নমস্কার” এই 
সব বোলেছে। 

গিরিজা। কুমারবাহাঁছুর কিছু বলতেন না ? 


গণেশ। না। তিনি বড়া আদমী ছিলেন। আচ্ছা 
বাবুজী, হামি এবার চোলে। 
উঠে দাড়ালেন 


গিরিজা। এক মিনিট । আর দু-একটা কথা আছে। 

গণেশ। একটু জল্দি কোরেন। 

গিরিজা। কুমারবাঁহাছুরের কোন বন্ধুবাঁঞ্ষব ছিল? 

গণেশ। আমি জানে না। 

গিরিজা। কাল তাকে দেখেছিলেন ? 

গণেশ। না। 

গিরিজা । কাল রাত্রে? 

গণেশ। না। এবারি হাঁমি একটু যাবে। আমার 
খুব জরুরী কাঁজ আছে । নিজের ঘরে থাকবে। দরকার 
হোঁলে ডেকে পাঁঠাবেন। 

গিরিজা। কেন? এত তাড়া কিসের? 

গণেশ। বোল্নেসে আপনি বুঝতে পাঁরবেন। হাঁমি 
শেয়ারের দালালি করে। একজনকে কুছু শেয়ার বিক্রী 
কোরবে। হামার ঘরে সে বসে আছে। আগের দফায় 
এই লোক যখন আসিয়াছিলেঃ তখন সত্যবাবু হামাকে 
ঠসিয়ে হামার নাম লিয়ে এর সঙ্গে কাজ করেছিলে । পরে 
এই লোক হামার কাঁছে বলেছিলে। দেরী হোলে সে আবার 
চলিয়! গেলে হামার লুকসাঁন হোবে। 

গিরিজা। না, দেরী হবেন1। রাঁত্রে কখন ফিরেছিলেন? 

গণেশ। সাড়ে এগার! হোবে। 

গিরিজা। সিঁড়ি দিয়ে উঠেছিলেন না লিফটে । 

গণেশ। সিড়ি দিয়ে। লিফট উপরে ছিলো। ঘর্টি 
বাজিয়েছিলে, লেকিন লিফট নামলে ন1। খারাঁব হয়েছিলে! । 

গিরিজা। কোন্‌ তলায় লিফ টটা আটকে ছিল? 

গণেশ । হাঁমি উপরে এসে দেখলে হামার তলে 
লিফট খড় আছে, লেকিন তাতে কোনো আদমী আছে না । 

গিরিজা। ওঃ। তারপর আপনি শুতে গেলেন ? 

গণেশ। হা। 


' টিবি ৬ 

গিরিজা। কোন গোলমাল কি গুলির আওয়াজ 
গুনেছিলেন? 

গণেশ । না। 

কার্তিক। এমন কিছু আপনি জানেন কি, যাতে 
আমাদের কোন সাহায্য হতে পারে? 


গণেশ। যদ্দি কুছু টাকা কোরতে চান তো এই সময় 
জুট কিনতে পারেন। আয়রণও খারাৰ হোবে না 

গিরিজা। আপনাকে অনেক কষ্ট দিলুম। যান, 
আপনার কাজ সেরে ফেলুন । 

গণেশ। কুছু না। সীতারাম সোঁব ঠিক কোরে দেবে। 

কান্তিক। ঘণ্টা ছু”য়েক কোঁথাঁও বেরোবেন না । হঠাৎ 


কোনে। দরকার হোতে পারে । 
গণেশ । আমি নিজের ঘরে থাকবে । আচ্ছা, রাঁম রাম। 
প্রস্থান 


গিরিজা। যাক, কিছু সন্ধান মিলল। রাত্রি সাড়ে 
এগারোটার সময় বংশী লিফট ছেড়ে এই তলার কি 


করছিল? 
কান্তিক। প্রায় কুমারবাহাদুরের মৃত্যুর সময়। 
গিরিজা। বংশীকে একবার ডেকে পাঠাতে হবে। 
রঙতনল।লের প্রবেশ 


রতন। নিশিকান্তবাঁবুর কোনে! খবর পাচ্ছি না। 
গিরিজ!। ম্যানেজারকে বলে দিলুম সকলকে ঘরে 
থাকতে বলতে । দেখি, মাঝের দরজাটা ধা! দিয়ে । 
দরজার কাছে গেলেন। কার্তিকও সঙ্গে গেলেন 


গিরিজা। একি! দরজার ছিটুকিনি খোলা! ! 
কাহিক। (ধাকা দিয়ে) কিন্ত ওধার দিয়ে বন্ধ। 


গিরিজা । এ দ্রিকটাঁও তো বন্ধ থাকা উচিত ছিল। 


নাঃ কিচ্ছু বুঝতে পারছি না । রতন, লিফটম্যান বংশীকে 


আর ম্যানেজার দামোদরবাবুকে পাঠিয়ে দাঁও। 
রতন। আজ্ঞে দিচ্ছি। 
রতনের প্রস্থান 
কার্তিক। “হোটেল ক্যাসিনো” লেখা কাধের ব্যাজটা 


কোন চাকরের পোঁষাক থেকে খুলে পড়েছে বলেই মনে হয়। 
টেবিল থেকে ব্যাজট! তুলে নিয়ে পরীক্ষা করতে লাগলেন 
গিরিজ!। হয় তো কোনো রকম ঝুটোপুটি হয়েছিল, 
সেই সময় ছি'ড়ে পড়েছে । কেউ লক্ষ্য করে নি। 


ভীন্রত্ড্ 


[ ২৮শ বর্ষ-_-২য় খণ্ড--৩য় সংখ্যা 


কার্তিক । বংশীর আঙ্গুলের ছাঁপ নেওয়া দরকাঁর। 
গিরিজা। হ'। 
একটা আযাশটে, রুমাল দিয়ে ভালে! কোরে মুছে 
দূরে টেবিলে রেখে দিলেন 

এইতেই কাজ চলে যাবে। 

কান্তিক। দেরাজে যে নোটগুলো আছে তাঁতে রক্ত 
মাথা আঙুলের ছাপ আছে । ট্রের ছাঁপের সঙ্গে মিলে গেলে-_ 
রতনলালের প্রবেশ 


রতন। বংশী এসেছে স্যর । 
গিরিজা। পাঠিয়ে দাঁও। 
রতনলালের প্রস্থান । ঘরে ঢুকে বংশী দরজার কাছে দীড়িয়ে রইল 


বংশী। (সেইখাঁন থেকে ) আমাকে ডেকেছেন হুজুর? 


কার্তিক । হাঁ) এগিয়ে এস | 

বংশী এগিয়ে এল 
গিরিজা। আমরা পুলিশের লোক, জানো বোধ হয? 
বংশী। হ্যা হুজুর। 


গিরিজা। কুমাঁরবাহাছুর মারা গেছেন, গুনেছ? 

বংশী। আজ্ঞে হ্যা । 

গিরিজা। কেউ তাকে খুন করেছে মনে হচ্ছে। তুমি 
নিশ্চয়ই তাঁকে রোজ দেখতে, তার সঙ্গে কথা বলতে_- 

বংশী। দেখেছি বটে কিন্তু কথা প্রায় বলিনি বললেও 
চলে। খুব গম্ভীর ছিলেন। অনাথকে একটু ভালবাসতেন। 

কান্তিক। অনাথ কে? যে লিফ টম্যান রাতে থাকে? 

বংশী। আজে হ্যা। 

গিরিজা। তাকে স্নেহ করতেন কি ক'রে জানলে? 

বংশী। আপনি অনাথকেই জিজ্েম করবেন। সে 
রোজ রাত্রে কুমারবাহাছুরকে বিছানায় শুইয়ে দিত। 

কার্তিক। কেন? 

বংশী চুপ ক'রে রইল 


গিরিজা । অত্যন্ত মদ খেতেন কি? 

বংণী। আজে হ্্যা। মাতাল হয়ে ঘরময় ঘুরে 
বেড়াতেন। জোর করে না শুইয়ে দিলে শুতেন না। 
অনাথ একদিন.তাঁই দেখতে পেয়ে তাকে ব্যবস্থা ক'রে শুইয়ে 
দিয়েছিল। তারপর থেকেই রোজই-_ 


ফাস্তুন--১৩৪৭ ] 


গ্হেল্িক্কা 


৩৭ 


ধলা স্থগা্াস্থগ্প “গল স্থানকে স্পা ব্য বশ সচল সবল স্ব স্পা ব্য ব্য বল আস সা - স্হাস্- -স্হ- স্ব ও সহ ৮ -্হ ৮ স্ব - সহ ৮ হা খা হা  বস্চ 


গিরিজা। কাল রাতে অনাথের জায়গায় তুমি ছিলে। 
তুমিও কি গিয়ে তাকে শুইয়ে দিয়েছিলে? 

বণী। আজ্ঞে না। আর কাউকে উনি বিশ্বাস 
করতেন না । কারুর সঙ্গে দেখা পর্য্যন্ত করতে চাইতেন না। 

গিরিজা। কাল কত রাত্রে উনি বাড়ী ফিরেছিলেন? 

বংশী। রাঁত সাড়ে ন+টা হবে। 

গিরিজা। তারপর আর বেরিযেছিলেন? 

বশী। ( একটু ভেবে ) আজ্ঞে না। 

কার্তিক । ( একটা সিগারেট ধরিয়ে ) বশী ! 

বণী। আজ্ে। 


কান্তিক। প্র আশট্রেটা দাও তো। 
বণী। (আ্যাঁশট্রে এনে ) এইখানে রাখব? 
কাণ্তিক । হ্যা, বাখ। 


সামনের টেবিলে রাখল 
গিরিজা। কাল রাঁতে লিফটু ছেড়ে কোথা গিছলে ? 


বশা। আজে না। 

গিরিজা। ঠিক ক'রে মনে ক'রে দেখ । ধর এই 
চারতলায় কোন সময়-__ 

বংশা। না হুভুর। 

গিরিজা। মালিনী দেবী ক'টার সময় এসেছিলেন ? 


বংশী । মনে পড়ছে না। বারোটার কাছাকাছি হবে। 
গিরিজা। আর মিস্‌ রাধ? 

বংী। তিনি স্ধ্যার সময়ই ফিরে এসেছিলেন । 
গিরিজ!। গণেশবাবু কণ্টাঁয এসেছিলেন ? 


বংশী । দশটার সময়। 
গিরিজা। এঁরা সকলেই একা এসেছিলেন ? 
বংশা। হ্যা হুজুর । 


গিরিজা। আচ্ছা দেখ, নিশিবাবু কেমন লোক ? 
বংশী। আজে, আমি তাঁকে কোনদিন দেখি নি। 
গিরিজা। সেকি রকম? এখানে থাকেন__ 
বংশী। হয়ত লিফট খোলবার আগেই চলে যাঁন, 
রাতে ফেরেন। তাই আমার সঙ্গে দেখা হয় না। 
গিরিজা। এই তলায় কাল কেউ নতুন এসেছে? 
বংশী। আজে না। 
গিরিজা। কাল রাত্রে কোন রকম গোলমাল কি 
গুলির আওয়াজ কিছু শুনেছিলে ? 


৪৮ 


বংশী। নাঁহুজুর। 

গিরিজা। কুমার বাহাদুরের সঙ্গে কেউ কখনও দেখা 
করতে এসেছিল ? 

বশী । না। ( একটু ভেবে) একটা কথা-__ 

গিরিজা। কি? বল। 

বশী। একজন লোক একদিন গুর ধোঁজ করতে 
মআসে। তিনি তখন বাইরে । আসতেই তাঁকে জানাই । 
তাতে বলেছিলেন কখনও যেন লোৌকটাঁকে আসতে দেওয়! 
না হয়। অনাথকেও বলেছিলেন। 

গিরিজা । তাই নাকি! ভদ্রলোকের নাম কি? 

বংশী। আজ্ঞে নামটা পেটে আছে, মুখে আসছে না। 

গিরিজা। এটা কতদিন আগেকার ঘটনা ? 

বংশী। প্রাম মাসখানেক হবে। তারপর সেই ভদ্রলোক 
মট-দশবার কুমার বাহাদুরের খোঁজে এসেছিলেন। 

গিরিজা। অনাথও তাঁকে দেখেছে? 

বংশী। না হুজুর। তিনি বিকেলের আগে আসতেন। 
কখনও পরে আসেন নি । 

গিরিজা । অনাঁথের হয়ত” নামট। মনে থাকতে পারে? 


বশী। তা পারে। 
গিরিজা। অনাথ এসেছে? 
বশী। আজে না। অন্যদিন এতক্ষণ এসে পড়ে। 


এবার যাব হুজুর? লিফটে আমিই এখন আছি। 

গিরিজা। আচ্ছা যাঁও। 

কার্তিক। এক মিনিট । তোমাদের এই পোধাকগুলো 
তো বেশ। সকলকে দেওয়] হয় বুঝি ? 

বংশী। আজ্ঞে না। শুধু লিফট, ম্যানদের । 

কার্তিক । কটা ক'রে দেওয়া হয়? 

বংশী। আমার একটা, আর অনাথের একটা। 
অনাথের আগে যে লিফ ট্ম্যান ছিল তাঁর পৌষাকটা নীচের 


ঘরে পড়ে আছে । সেটা আমাদের কাঁর'র গায়ে হয় ন|। 
কার্তিক । ওঃ। আচ্ছা যাঁও। কিন্তু হোটেলের 
বাইরে যেও না, দরকার হতে পারে। 
বংশী। আচ্ছা হুজুর। 
বংশীর প্রস্থান 


কাণ্তিক। বংশীর পোষাকের কাঁধটা তৌ ছেঁড়া ছিল না। 
গিরিজা। না। তবে বদলে নেবার সময় পেয়েছে । 


৬৬ 


কাত্তিক। জামা তো ওদের মোটে একটা করে। 
গিরিজা। তা বটে। 
কার্তিক । গণেশবাবুকে লিফ টে ক'রে আনবার কথাটা 


নিয়ে একটু গোল হচ্ছে। 

গিরিজা। হছ'। একজন কেউ মিথ্যে কথা বলছে। 
আঙ্গুলের ছাপ কি রকম উঠেছে? 

কাণ্তিক। (আ্যাশটে ভালভাবে দেখে ) পরিষ্কার। 

গিরিজা। বেশ। রতনলাল! 

রত নলালের প্রবেশ 

রতন। কি বলছেন স্যর? 

গিরিজা । এই নোটগুলে। নাও- রুমালে ক'রে নাও, 
হাত দিও না, আর এই আযাশট্রেটাও নাও । 

কার্তিক । ছু'টোতেই আশ্ুলের ছাপ আছে। আপিসে 
মিলিয়ে দেখে ফলাফল আমাদের ফোনে জানাবে। 

গিরিজা। রুমালে বেঁধে খুব সাবধানে নিয়ে যাঁবে। 
যেন ছাপ মুছে না যাঁয়। 

রতন। না স্যর। 


সব রুমালে বেঁধে নিল 
গিরিজা ৷ হোটেলে কেউ কুমারবাহাঁছুরকে চিনত বললে? 
রতন। না স্যর। সকলেরই এক কথা। মুখচেনা 
আছে মাত্র। তিনি কারো সঙ্গে মিশতেন না। 
গিরিজা। হু" । দামোদরবাবুকে আসতে বলেছ? 
রতন। হ্যা। একটা কাজ সেরেই আসছেন বললেন। 
গিরিজা। আচ্ছা যাও। হ্র্যা শোন, তুমি নিজে না 
গিয়ে আর কাউকে দিয়ে পাঠিয়ে দাও। 
রতন। আচ্ছা স্তর । 
রুমালে বাধা জিনিম নিয়ে রতনলালের প্রস্থান 
কাত্তিক। আঙ্গুলের ছাপ এক হলে কা্জ অনেকটা 
এগোতে পারে। 
গিরিজা। আর যদি না মেলে তা হলে বংশীকে বাদ 
দেওয়া চলবে। 
কাত্তিক। বংশী যে লোকের কথা বললে-_যাঁকে কুমার- 


বাহাদুর খুব ভয় করতেন-_ 
গিরিজ! | * এখনও কিছু বলা শক্ত । বংশী যদি দোষী 
হয় তো! সে ভাওতা৷ দেবার চেষ্টা করবে বই কি। 


হটাব্সভবম্ব 


[২৮শ বর্--২য খণ্ড ৩য় সংখ্যা 


দরজায় থট খট ধ্বনি 
কাত্তিক। কে? ভেতরে আস্থন। 
দামোদরবাবুর প্রবেশ 
দামোদর । কিছু মনে করবেন না। একটা কাঁজে 
আটকে পড়ে দেরী হয়ে গেল। 
গিরিজা। না, না, ঠিক আছে । বন্থন। 


দামোদরবাবু বসলেন 


পাশের ঘরের নিশিকাস্তবাঁবুর সম্বন্ধে কি জানেন বলুন তো। 

পামোদর। বিশেষ কিছু জানিনে। তিনি অদ্ভুত 
লোক। অবশ্ঠ খারাপ ভাবে একথা বলছি ন1-_ 

গিরিজা। একটু পরিক্ষার ক'রে বলুন। 

দামোদর । তিনি চিঠি লিখে ঘর ভাড়া করেন, সঙ্গে 
এক সপ্তাহের ভাড়াও পাঠিয়ে দেন। চিঠিটা «“মেডেন্স” 
হোটেল থেকে এসেছিল। ঘিনি ওরকম হোটেলে থাকেন, 
তার সম্বন্ধে সন্দেহের কারণ থ।কতে পারে না। 

কান্তিক। শুধু এক সপ্তাহের ভাড়া? 

দামোদর । হ্যা। তিনি লিখেছিলেন যে একটা ফ্ল্যাট 
চাই, কিন্তু তিনি যে আসবেনই তার কোন ঠিক নেই। 
অবশ্য ব্যাপারটা আমার কাছেও কেমন কেমন লেগেছিল, 
তবে যখন অগ্রিম টাকা দিচ্ছেন__ 

গিরিজা। সে তো বটেই। 

দামোদর । কথন আসেন কখন যান টেরই পাই ন। 

কান্তিক। কেউ এলে আপনারা খোজ রাখেন না? 

দামোদর । কতলোক আসছে যাচ্ছে, আমি আপিসে 
বসে কি তাঁর খোঁজ রাঁখতে পারি । প্রথমে ভেবেছিলুম এক 
সপ্তাহ পরে ফ্ল্যাট ছেড়ে দেবেন, কারণ তাঁর আসবার কোন 
চিহ্বই দেখলুম না। কিন্ত গত সোমবারে একজন চাকর 
এসে আমায় একটা সীল করা খাম দিল। খুলে দেখি 
নিশিকান্তবাবু আর এক সপ্তাহের ভাড়া পাঠিয়ে দিয়েছেন, 
আর ফ্ল্যাটের চাবিটা চেয়েছেন। চাঁকরট! চাবি নিয়ে চলে 
যাবার পর হঠাৎ মনে হল কিছু জিজ্ঞেস করলে হ'ত। তখন 
সে চলে গেছে। আর করকরে টাঁকা হাতে এলে__ 

কান্তিক। কে আর ছাড়তে চায়? 

দামোদর | ' (হেসে) আজে হ্যা। 

গিরিজা! । আপনি কখনও তাঁকে দেখেন নি? 


ফাল্তুন-_১৩৪৭ ] 


শ্রহ্েত্লিক্কা 


2৬) 


৮৮ স্ফন্াস্ফা্কপ বালা স্াপা্্থন্প _ব্বান্চপ স্পা স্যগনক স্ফন্কপা স্ফান্কশা স্ান্ক্প স্হস্ষপা স্স্গা্্যগাগা স্যান্পা ্দা্প -স্হচান্ছল সাপ স্হচন্া বাপ বনপা বাথ স্ব্চলব্ 


দামোদর | না, বোঁধ হয় কেউই দেখে নি। (একটু 
ভেবে) হ্যা, ঠিক হয়েছে। অনাথ একদিন দেখেছিল । রাত্রি 
সাড়ে আটটা হবে। আমি তখন একটা কাঁজে বাইরে 
গিছলুম | অনাথ লিফট থেকে উকি মেরে দেখলে নিশিকান্ত- 
বাবুর ঘর থেকে কে একজন বেরিয়ে এসে লিফটে উঠলেন । 
জিজ্ছেস করতে তিনি বললেন--'আমার নাম নিশিকাস্ত 
মুখোপাধ্যায়। কাল আসব বলে ঘরটা একবার দেখতে 
এসেছিলুম | তাঁর পর লিফট্‌ নীচে নামতেই চলে গেলেন। 

কাণ্তিক। আপনাকে এসব কথা কে বললে? 

দামোদর । আমি ফিরে আসতে অনাথ বলেছিল। 

গিরিজা। আচ্ছা, ওঘরট! একবার খুলতে পারেন? 
দরজার এধারটা খোল! রয়েছে__ 

দামোদর । (দরজার কাছে গিয়ে দেখে) কিন্ত ত৷ 
তো থাকবাঁর কথা নয়। ছু দিক থেকেই বন্ধ থাকা উচিত। 
( ধাক্কা দিয়ে ) ও দিকটা বন্ধ রয়েছে । আমি গিয়ে খুলে 
দিচ্ছি। আমার কাছে সব ঘরের ডুপ্লিকেট চাবি আছে। 
মালিকের অনুপস্থিতিতে সেই চাবি দিয়ে দরজা খুলে ঝি- 
চাঁকরর! ঘর পরিষ্কার করে। 


প্রান 


কাণ্তিক। কিছুই তো কৃণকিনারা পাওয়া যাচ্ছে না। 
গিরিজা। না। এই নিশিকান্তবাবুকে নিয়ে আবার 

এক ফ্যাসাদ। লোকটাঁর অমন লুকোচুরির দরকাঁর কি? 
কান্তিক। আর আসব বলে এলেনই না বা কেন? 
গিরিজা। তার ওপর আবার কেউ তাঁকে চেনে না। 
কান্তিক। এক অনাথ ছাঁড়া। 


গিরিজ! ৷ সেও একবার মাত্র দেখেছে। টুকে নিচ্ছ তো? 

কান্তিক। ( নোটবুক দেখিয়ে) স্থ্যা। প্রতোক কথাটি 
নেট ক'রে নিচ্ছি। শট হাণ্ডে। 

গিরিজা। দামোঁদরবাঁবু ও ঘরে ঢুকেছেন। দরজা 
খোলবার চেষ্টা করছেন, শুনতে পাচ্ছ? 

কাতিক। হুঁ । এ ঘরে নড়াচড়া করলে আর এক 
ঘর থেকে শোনা যায়। সুতরাং কুমারবাহাদুরের গতিবিধি 
লক্ষ্য করবার জন্ত ওঘরে ওৎপেতে থাকা! জশ্চধ্য নয়। 

গিরিজ।। ঘধীরে। বড্ড তীঁড়ীতাঁড়ি এগোচ্ছে! । 


মাঝের দরজ! খুলে দামোদর ঢুকলেন 


দামোদর । এ ঘরের এখনও কাজ হয় নি 

গিরিজা'। (দরজার কাছে গিয়ে ) সাবধান ! নড়বেন 
না। পায়ের দাগ দেখছি। কাত্তিক দেখ এ ঘরের পায়ের 
দাগের সঙ্গে ওঘরের পায়ের দাগ হুবহু মিলে যাচ্ছে। 

কার্তিক । ( দেখে) একই রবার সোলের জুতো-- 

গিরিজা। একেবারে এক । কোনও ভূল নেই। 

হঠাৎ ওঘরে গিয়ে কার্তিক দরজার পাশ থেকে 
কি একট! তুলে নিয়ে এলেন 

কাষ্ঠিক। এযে কার্টিজ কেস দেখছি। 

গিরিজা । (দেখে ) তাই তো । ( রিভলভারট! টেবিলের 
ওপর থেকে নিয়ে ফিট ক'রে ) ঠিক ফিট করেছে । আমি 
এইটাই ভেবেছিলুম, তবে ওঘরে আশা করি নি। 

দাঁমোদর। (অবাক হয়ে) কিন্তু এসবের অর্থ কি? 

গিরিজা। অর্থ এই যে, নিশিকান্তবাবু আর ফিরবেন না। 

দীমোদর। কেন? তিনিই কি কুমারবাহাদুরকে_ 

গিরিজা । বল! যাচ্ছে না, তবে তার বিরুদ্ধে প্রমাণ__ 

দামোদর । এ তে ভারী মুস্কিল। হোটেলটা দেখছি 


এরাই পাঁচজনে মিলে উঠিয়ে দেবে। 
প্রস্থান 


গিরিজা । এইবার ঠিক হয়েছে। 

কাণ্তিক। কি? 

গিরিজা। নিশিবাবু আর কুমারবাহাছুর বাকে ভয় 
করতেন উভয়ে এক লে|ক। বংশী তাঁকে দেখেছে । তাই নাম 
তাড়িয়ে ঘর ভাড়া করলেন । আর রাতে ছাড়া আসতেন না, 


কারণ বংশী রাতে থাকে না। 
কার্তিক। তা হ'লে নিশিকান্ত তার নাম নয়? 
গিরিজা। ন!। 


কান্তিক। ও ঘরে কাঁটিজ কেসট৷ গেল কেমন ক'রে? 

গিরিজা। আমীর মনে হয়ঃ এই মাঝের দরজাট! খুলে 
এইখানে দাড়িয়ে কুমারবাহাছুরকে গুলি করা হয়েছিল। 

কার্ডিক। গুলি ক'রে কার্টিজ কেসটা বার না করলে 
কি সেটা আপনি বেরিয়ে পড়ে? 

গিরিজাী। সাধারণত বেরোয় না, তবে হঠাৎ হাতের 
চাঁপ লেগে বেরিয়ে গেলেও যেতে পাঝে। 

কাণ্তিক ৷ যে রিভলভীরট। ফেলে গেছে; সে গুলি করবীর 
পর নিজে ইচ্ছে করেই থালি কেসট। বার করে নি। 


২০৮০ 


গিরিজা। মনে তে! হয় না। রিভলভারে নম্বর লেখা 
আছে। থানায় পাঠিয়ে দিই। লাইসেম্দ বুক থেকে 
মালিকের নাঁম-ধাঁম সংগ্রহ হয়ে যাঁবে। 
একটা কাগজ হাতে রতনের প্রবেশ 

কান্তিক। কি খবর? হাতে রক্তমাথ! ওটা কি? 

রতন। আমি বাইরে যে বেঞ্চটায় বসে আছি, সেটার 
তলায় এটা পড়েছিল। একটু আগে হঠাৎ নজরে পড়ল। 

গিরিজা। প্রথম থেকেই ছিল কি? 

রতন । বলতে পারি নাস্তর। লক্ষ্য করিনি। 


গিরিজা। কাগজটা দেখি । (হাতে নিয়ে) এ যে 
কি লেখা রয়েছে! আচ্ছা, তুমি যাও। 
রতনের প্রস্থান 
কার্তিক। তাই ত।. যেন নভেল মনে হচ্ছে। 


গিরিজা । পড় ত? শুনি। 

কান্তিক। (পাঠ) "মুষলধারে বৃষ্টি আর ঝড়। যেন 
প্রলয় উপস্থিত। আকাশ গুমরে গুমরে কাদছে আর 
দীর্ঘনিশ্বীস ফেলছে । বাঁসস্তীর মনের অবস্থাও তজ্রপ। সে 
ভাবছে-” একি! 

গিরিজা। কিহ্*ল? 

কাণ্তিক। এই দেখুন। লেখা বন্ধ ক'রে একটু ফাক 
দিয়ে আবার কি একটা-_ 

গিরিজা। (কাছে গিয়ে দেখে) তাই তো! 

কান্তিক। “বনমাঁলী সাহা রিভলভার হাতে পিছন 
থেকে ঘরে ঢুকেছে । সামনে আরশিতে দেখতে পাচ্ছি। যদি 
আমার কিছু হয়, তবে--” এইখানে লেখা থেমে গেছে। 

গিরিজা। ভারী আশ্চর্য্য ব্যাপার তো। কাগজটার 
ওপর কালকের তারিখ রয়েছে । সামনে আরশিও রয়েছে । 

কান্তিক। তবে এ ঘটনা সত্যি। কালই ঘটেছিল, 
আর আততায়ীর নাম বনমালী সাহা । 

গিরিজা। ঠিক হয়েছে। (চেঁচিয়ে) রতন, রতন ! 
( কাঙ্তিকের প্রতি) হয়ত” এই লোকটাকেই কুমারবাহাছুর 
ভয় করতেন। 

কার্তিক। সে তো বংশীকে জিজ্ঞেস করলেই জান! যাবে। 
রতনের প্রবেশ ্ট 

গিরিজা। রতন, বংশী কোথায়? 

রুতন। লিফটে। 


ভান ভন 


[ ২৮শ বর্--২য় থখণ্ত--৩য় সংখ) 


গিরিজা। এক্ষুনি পাঠিয়ে দাও। 

রতন। দিচ্ছি। প্রস্থান 

গিরিজা। (মাঝের দরজা! বন্ধ ক'রে দিয়ে) নিশিকাস্ত 
আর বনমালী যে একই লোক--তাতে আর সন্দেহ নেই। 

কাঙিক। অর্থাৎ বনমালী নান ভাড়িয়ে নিশিকান্ত 
সেজে পাশের ঘরে থাকতেন । 

গিরিজা। হ'। (রিসিভার তুলে) লাইন গ্রীজ। 
( কান্তিককে ) “মেডেন্স” হোটেলের নশ্বর কত? 

কাতিক। জানি না। 

গিরিজা | পুলিশে চাকরি কর আর এত ঝড় হোটেলটার 
নম্বর জান না। ডিরেক্টরী থেকে দেখে দাও । 

কান্তিক। (দেখে ) পি. কে. 0123 
বংশীকে নিয়ে রতনলালের প্রবেশ 

গিরিজা। রতন, “মেডেম্ল” হোটেল চেন? (ফোনে) 
পি. কে. ০9123 প্লীজ, ইয়েম। ( রতনকে ) একবার 
এখুনি সেখানে যাবে । গিয়ে-_( ফোনে ) মিস্টার বনমালী 
সাহা আছেন ? নাঃ নাঃ ডাকতে হবে না।--কি বললেন? 
আঁজই চলে যাবেন। ওঃ, এমনি জিজ্ঞেস করছিলুম ।-_ন! 
কিছু বলতে হবে না। ধন্যবাদ। (ফোন রেখে) হ্যা, 
সেখানে গিয়ে বনমালীবাঁবুকে সঙ্গে ক'রে নিয়ে এখানে চলে 
আসবে। কোন আপত্তি শুনবে না। বলবে ডিটেক্টিভ 
পুলিশের কাজ। আর একবার মিস্‌ রায়কে আমার সঙ্গে 
দেখা করতে বলে যাবে। রূতনের প্রস্থান 
বংশী, নামটা শুনে কিছু মনে পড়ছে? 

বংশী। আজ্ঞে হা!। যে লোকটির সঙ্পে কুমার- 
বাহাছুর দেখা করতে নারাজ ছিলেন, এ তাঁরই নাম। তখন 
ঠিক মনে করতে পারছিলুম না। 

কাণ্তিক। তাকে দেখলে চিনতে পারবে তো? 

বংশী। আজ্তে হ্্টা। কতবার দেখেছি। 

গিরিজা। অনাথ এসেছে? 

বংশী। না। হয়ত” অন্থথ করেছে। তা না হলে 
এতক্ষণ এসে পড়ত। 

কার্তিক । কোথায় থাকে? ডাকতে পার? 

বংশী। কাছেই। এখুনি লোক পাঠিয়ে দিচ্ছি 


গিরিজ1। হ্যা । গিয়ে একবার দেখ। 
বংশীর প্রস্থান 


ফান্তুন-_১৩৪৭ ] 


খপ স্থচান্ডিসা স্্ন্ডিপা -স্াব্ডপা স্হন্কপ স্পা চা বা -স্যাপ ব্হস্পা স্হান 


কান্তিক। অনাথকে না! পাওয়া গেলেই মুস্ধিল। 
বনমালীকে নিশিকাস্তরূপে কেবলমাত্র অনাথই দেখেছে। 
গিরিজ্লা। আর নিশিকাস্তকে বনমালীরপে বশী 
দেখেছে। সুতরাং ছু'জনকেই এক সঙ্গে চাই। তুমি 
এই রিভলভারট! কাউকে দিয়ে থানায় পাঠাবার ব্যবস্থা কর। 
রিভলবার নিয়ে কার্তিকের প্রস্থান 
টেলিফোন বাজল। গিরিজ| রিসিভার তুলে নিলেন 


হাঁলো-ইা) আমি গিরিজা। গুলিটা বের করেছ? 
(িভলভারটা পাঠাচ্ছি। ফিট হয় কি-না দেখ। স্থ্যা) 
আঙ্ুণের ছাঁপের জন্ত কতকগুলো নোট আর একটা 
আ'শট্রে পাঠিয়েছি । পেয়েছ? ওঃ পরীক্ষা চলছে। 
আচ্ছা, হ'লেই খবর দিও । ত্য, কি বপলে? ডান হাতের 
নখে খানিকটা চামড়া আর রক্ত লেগেছিল? হ্যা বুঝেছি | 
কাউকে খিমচে নিলে যে রকম হয়। মাংস গুদ্ধ উঠে 
এসেছে । ওঃ আচ্ছা ধন্যবাদ । 
রিসিঙার রেখে দিলেন। দরজায় গট. খট. ধধশি 

গিরিজা। 
মিম্‌ নীহার রায়ের প্রবেশ 
বন্থন মিস্‌ রাঁয়। 

নীহার। (বসে) যা জানতুম সবই তো! বলেছি। 

গিরিজা । কুমারবাহীছুরের মৃত্যু সম্বন্ধে আপনাকে 
আরও দু-একটা! কথা জিজ্ঞাসা করবার ছিল । 

 নীহার। আমার শরীর অতান্ত খারাপ। 

গিরিজা। এই পাশের ঘরের নিশিকান্তবাঁধুকে 
চিনতেন? আ্যা, কিহল! মিস্‌ রাঁয_ (দরজার কাছে 
গিয়ে ) কান্তিক, শিগগির এস | 

কান্তিক। (দরজায় এসে ) কি স্তর? 

গিরিজা। মিস রায় অজ্ঞান হয়ে গেছেন। 

কার্তিক । তাই তো, ভারী মুস্থিল। 

গিরিজা। তুমি গিয়ে স্বশীলাঁকে চট করে ডেকে আন। 

কার্তিকের প্রস্থান 

গিরিজা ব্যন্তভাবে রাইটিং প্যাড, তুলে নিয়ে হাওয়! করতে লাগলেন 
একটু পরে সুশীলাকে নিয়ে কার্তিকের প্রবেশ 

সুশীলা। আমার ঘরের কাজ-_ 

গিরিজা। দেখ, ইনি অজ্ঞান হয়ে গেছেন-__ 


আমন, ভেতরে আমন । 


শরঁহেল্লিক্কা 


স্ব বর ০ সহ ব “সহ ০ স্ ব--স্্-- স্ব সস 





২2৮৮ 





স্থশীলা। ও কিছু নয়। মুখে জল দেন নি কেন? 


ঘরের কোণের কু'ক্তো থেকে এক গ্লাস জল এনে হশীল! মিস্‌ রায়ের 
চোখে মুখে ছিটিয়ে দিল। একটু হাওয়! করতেই জ্ঞান ফিরে এল 


নীহার। আমি-_-এ কি! 

গিরিজা। আপনি অজ্ঞান হয়ে গিছলেন। 

নীভার । ছিঃ ছিঃ, আপনাদের কষ্ট দিলুম | 

গিরিজা। না, না। বরং আমরাই আপনাকে কষ্ট 
ধিলুম ৷ সেজন্য খুবই দুঃখিত । 

নীহার। এখন যেতে পারি? বড় ক্লান্ত মনে হচ্ছে। 

গিরিজা। নিশ্যয়ই। স্ণীলা, গুকে ঘরে পৌছে দাও । 


নীহীর । আমি একলাই যেতে পারব। 
উঠে ধীরে ধীরে চলে গেলেন 

স্ুত্রীলা । এবার আমিও যাই। আমার কাঁজকর্ম্-- 

গির্জা । তুমি এই পাশের ঘরের লৌকটিকে দেখেছ? 

স্থণীলা। না” একবারও না। 

গিরিজা। দেখলে চিনতে পারবে? 

স্থুশীলা। আপনি পারেন? প্রস্থান 

গিরিজা। কি বললে? 

কান্তিক। যাকে দেখনি তাঁকে কি ক'রে চিনবে? 

গিরিজা। তাও তো! বটে। 

কাণ্তিক। মিস্‌ রাঁয় হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে গেলেন কেন? 

গিবিজা। জানিনে। এসেই বললে শরীর খারাপ। পরে 
পাশের ঘরের লোঁকটিকে চেনেন কি-ন! জিজ্ঞেস করতেই 
অজ্ঞান । 

কান্তিক। এইবার স্যর আমিও অজ্ঞান হব। 

গিরিজা। কেন? তোমার আবার কি হল? 

কান্তিক ৷ খিদেয় গ্রাণ যে বাপাস্ত। 

গিরিজা। হ্যা, একটু চা খেলে মন্দ হ'ত না। 

কান্তিক। চলুন হোটেলের রেস্তর'! থেকে কিছু খেয়ে 
আসি। 

গিরিজা। কিন্তু ঘরটা__ 

কাণ্তিক। তালা বন্ধ করে দেব। আর বাইরে একটা 
পুলিশ মোতায়েন ক'রে দেওয়। ষাবে।, 

গিরিজা। বেশ, চল। . উরের প্রস্থান 

( ক্রমশঃ ) 


চল্তি ইতিহাস 


প্রীতিনকড়ি চট্টোপাধ্যায় 


মধ্যপ্রাচী 
সিদিবারাণীর পতনের পর বৃটিশ সৈষ্কগণ যে উত্তর আফ্রিকায় ইটালীয় 
বাহিনীকে মিধর হইতে তাড়াইয়! লিবিয়ার সীমান্ত পর্যন্ত পৌছিয়াছে, 
এ কথ! ভারতবর্ষের গত সংখ্যাতেই উল্লেখ কর! হইয়াছে। বুটিশ 
বাহিনীর উৎকৃঈতর রণ-কৌশলের ফলে সল্লাম ও ক্যাপুজো দুর্গের 
পতন হয়। ইহার পর লিবিয়ায় প্রবেশ করিয়! বৃটিশ সৈন্য ইটালীর 
গুরুত্বপূর্ণ ঘটি বা্দিয়া দুর্গ অবরোধ করে। তিন সপ্তাহের অধিক 
কাল প্রবল যুদ্ধের পর বার্দিয়ার পতন ঘটে | লওন হইতে এই মর্ণে 
ঘোষণা! কর! হইয়াছে যে পিদিবারাণী ঘণাটির ইটালীয় অধিনায়ক 
জেনারেল আর্জেন্টিনা! বাদিয়ার পতনের পর তোক্রক অভিমুখে পলায়ন 
কালে বৃটিশ সৈন্যদের হস্তে বন্দী হইয়াছেন। গত সংখ্যায় আবিসিনিয়ার 
বিদ্রোহ আসন্ন বলিয়া যে সংবাদ দেওয়| হুইয়াছিল, রয়টারের সংবাদে 
প্রকাশ সম্রাট হাইলে সেলাসী মে বিষিয়ে অনেকটা কৃতকাম্য হইয়াছেন। 
কয়েকজন দুঃসাহসী বৃটিশ অফিসার হাবসীদিগকে সজ্ববদ্ধ করিঝার 
চেষ্টা করিতেছেন। একদল বিদ্রোহী হাবসীবাহিনী সংগঠিত হইয়াছে। 
তাহাদিগকে অস্ত্রশস্ত্র দিয়া আধুনিক রণ-কৌশলে শিক্ষাদান করা 
হইতেছে। আবিদিনিয়ার মেটেমা অঞ্চলে বৃটীশ টহলদারী বাহিনীর 
হন্তে একদল ইটালীয় সৈশ্য পযুদণ্ড। ইরিত্রিয়। হইতে ১৮ মাইল 
উত্তরে ইন্দ-মিশরীয় হদ্ান সীমান্তে অবস্থিত কামাল! দুর্গ বুটিশ- 
বাহিনী পুনরায় অধিকার করিয়াছে । সমগ্র রণঙ্গেত্র হইতে ইটালীয় 
বাছিনী পশ্চাদপসরণ করিতেছে । এদিকে বুটিশ সৈশ্য তোক্রক লক্ষ্য 
করিয়! অগ্রসর । মার্শাল গ্রযাৎদিয়ানী যে সৈশ্যবাহিনী লইয়া মিশরের 
গ্ান্তে অবস্থিত সিব! মরগ্ভানের উপর আক্রমণ চালাইবার সস্বপ্ 
করিয়াছিলেন, সেই সৈম্ঠদল তোক্রক হইতে দেড়শত মাইল দক্ষিণে 
জেরাবুব মরগ্যানে বৃটিশবাহিনী কর্তৃক পরিবেষ্টিত হইয়! অবরুদ্ধ। 
ইটালীয় সৈগ্যবাহিনীর সহিত তাহাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হইয়াছে। 
এদিকে রোমের রেডিও হইতেই নাকি ঘোষণা কর! হইয়াছে যে 
সমগ্র ইটালীয় সাত্রাজ্যই ইটালী হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়। গিয়াছে। 
একমাত্র বিমান পথ ব্যতীত উভয়ের মধ্যে অন্ত কোন সংযোগ আর 
নাই। আফ্রিকার উত্তরাঞ্চলে ইটালীর ন্যুনাথিক আড়াই লক্ষ সৈন্যের 
সমাবেশ হইয়াছিল। তন্মধ্যে হতাহত ও বন্দীর সংখ্যা! নাকি প্রায় 
এক লক্ষ! এইমাত্র খবর পাওয়। গেল, বৃটিশের হস্তে তোক্রকের পতন 
হইয়াছে । এই সকল সংবাদ নিভূল হইলে ইটালীর অবস্থা যে সত্যই 
পোচনীয় হয়! উঠিয়াছে (সে বিষয়ে কোনই সন্দেহ নাই। 
মুমোপিনী সদস্ত উক্তির ভ্বারা বারবার প্রতিপন্ন করিবার চেষ্টা 
করিয়াছেন যে, তুমধাসাগরে ইটালীর প্রভুত্বই এখনও প্রতিঠঠিত আছে। 


কিন্তু উল্লিখিত ঘটনায় তাহার উক্তির অসারত! ধর! পড়িয়। গিয়াছে, 
বিড়াল আজ থলি হইতে বাহির হইয়া! পড়িয়াছে। ভূমধাসাগরে 
ইটালীর অপ্রতিহত গ্রতৃত্ব থাকিলে মার্শাল গ্র্যাৎসিয়ানী তিনমাসকাল 
ধরিয়! নিয়মিত উপকরণ সরবরাহের নিশ্চয়ত|। লাভ না করায় নিশ্েষ্ট 
হইয়। বসিয়া থাকিতেন না, ইটালীয় সাস্াজ্যের সহিত ইটালীয় 
সংযোগও আজ বিচ্ছিন্ন হইয়া যাইত না। বুটিশের প্রভুত্ই যে 
তূমধাসাগরে সুপ্রতিষ্ঠিত ইহা! যেমন ম্ুুনিশ্চিত, আফ্রিকার বুটিশ- 
বাহিনীর সাফলাজনক বিজয়লাভও তেমনই উল্লেখযোগ্য । ইহাও 
প্রকাশ যে, এই যুদ্ধে ভারতীয় সৈগ্দলের সাহায্য বিশেষভাবে গণ্য 
কর! হইয়াছে। এই যুদ্ধে জয়লাভ একদিকে যেমন বৃটাশের উল্লেখ- 
যোগ্য বিজয়, অপরপক্ষে তেমনই ইটালীর এই পরাজয়ে ক্ষতির 
পরিমাণ অপরিমিত। পুর্ববভূমধ্যসাগরের উত্তর তীরে ঈজিয়ান 
সাগরের তীর পধ্যস্ত এবং দক্ষিণ তীরে আলেকজান্রিয়া ও সুয়েজ 
পর্যান্ত অধিকার বিস্তারের আকাঙ্ষা ও পরিকল্পনাকে আর ইটালী 
মনের কোণেও স্থান দিতে পারিবে না। অধিকার বিস্তারের স্থানে 
তাহার অধিকারভুক্ত লিবিয়াই বিপন্ন হইয়া! উঠিয়াছে। এদিকে 
একের পর এক পরাজয়ে সৈনিকদের উপর নৈতিক ফলাফলও 
আশঙ্কাজনক । 

আফ্রিকায় বুটিশের সহিত যুদ্ধে ইটালী যেমন কৃতিত্ব দেখাইতে 
পারে নাই, গ্রীের মহিত যুদ্ধেও সেইরূপ ইটালী বিশেষ কোন সাফল্য 
অঞ্জন করিতে অক্ষম হইয়াছে । গত মাস অপেক্ষা ইটালী বর্তমানে 
সামান্যই উন্নতিলাভ করিয়াছে বলা যাইতে পারে। ডিসেম্বর মাসের 
শেষ সপ্তাহে শ্রীকবাহিনী খিমের! দখল করিয়াছে। উত্তরাঞ্চলে তাহার! 
এল্বাসান্‌ লক্ষা করিয়া অগ্রসর হইয়াছে; অপর দল ত্যালোনার 
সম্গিকটে উপস্থিত। গ্রীক ও বুটিশ বিমানবাহিনীর পুনঃ পুনঃ 
আক্রমণে ভ্যালোনার বদর বিধ্বস্ত ও অকর্মণ্য হইয়া পড়িয়াছে। 
জানুয়ারীর প্রথম সপ্তাহের শেষভাগ হইতে গ্রীক বাহিনীর আক্রমণের 
তীব্রতা হাস পাইয়াছে। ইহার কারণ হিসাবে প্রাকৃতিক ছুধ্যোগের 
কথা উল্লেখ করা হইয়াছে। কিন্তু প্রাকৃতিক হূর্ষ্যোগে উত্তয় 
পক্ষেরই সমান অন্ুবিধ! হইবার কথা। অন্ুবিধাকর আবহাওয়। 
শুধু গ্রীকদের আক্রমণের সময় বাধা স্থাষ্টি করিবে, অথচ ইটালীয় 
প্রতিরোধ বাহিনীর কোনই অন্বিধা সৃষ্টি করিবে না, এরাপ বিশ্বাস 
করিবার কোন সঙ্গত কারণ না থাকাই স্বাভাবিক প্রকৃতপক্ষে 
ইটালীর প্রতিরোধ ক্ষমত| বৃদ্ধি পাইয়াছে। জানুয়ারী মাসের তৃতীয় 
সপ্তাহের শেষ অবধি তাহার! ভ্যালোনার নিকটবর্তী একমাত্র ক্লিহনরা 
অধিকার করিতে সক্ষম হইয়াছে। 


৩৮২ 


ফান্তন--১৩৪৭ 1 
পাস্তা স্নান সালা গলা 

কিন্ত সম্প্রতি ইটালীর প্রতিরোধ ব্যবস্থার কিছু উন্নতি হইলেও 
এবং তদুদ্দেপগ্তে আলবানিয়ায় বহু নুদৃঢ় দুর্গশ্রেণী নির্দাণ করিলেও 
ইটালীর অবস্থা নৈরাশ্জনক | গ্রীসের সহিত যুদ্ধেও তাহার বহু সৈচ্ 
বিনষ্ট হইয়াছে। আলবানিয়ায় ইটালীর প্রধান সেনাধ্যক্ষ জেনারেল 
মোদ্, পদত্যাগ করিয়াছেন। সরকারী ঘোষণা! অন্ারে তিনি 
অনুস্থতার জগ্ঠ কার্য্যতার পরিত্যাগ করিয়াছেন। তবে তাহাকে 
অন্ধ কোন কারণে উত্ত পদ হইতে অপসারিত করা হইয়াছে 
বলিয়া! ঘি ভবিষতে কোন সংবাদ শোনা যায়, তাহাতেও বিস্মিত 
হইবার কোন কারণ নাই। জেনারেল হিউগে! ক্যাবেল্রে। তাহার 
কার্ধ্যভার গ্রহণ করিয়াছেন। আবার রয়টারের সংবাদদীত। জানাই- 
তেছেন যে, যে সকল আলবানিয়ান সৈম্ঘকে বলপূর্বক ইটালীর 
সৈম্যবাহিনীর অন্তভুক্তি কর! হইয়াছিল তাহারা বিদ্রোহ করিয়াছে। 
ফলে ইটালীয়দের যথেষ্ট ক্ষতি হয়। ইটালীর কয়েকখানা জাহাজ ও 
ডেষ্টুয়ার নিমজ্জিত হইয়াছে। বৃন্দিসি ও কয়েকটি বন্দরে মুসোলিনীর 
বিরুদ্ধে নাকি বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হইয়াছে । হিটলারের প্রধান 
মহযোগী 'একিস্‌' শক্তির অন্যতম সভ্য ইটালী ভূমধানাগরের উভ্তয় তীরের 
রণক্ষেত্রেই বিপন্ন হইয়। পড়িয়াছেন। 

যে মহ।মানবের প্রতি প্রকাস্তিক শ্রদ্ধায় মহাত্মা গান্ধী বড়দিনের 
সময় ভারতের সত্যাগ্রহ স্থগিত রাখিয়াছিলেন, পুণিমা অমাবন্। 
মানিতে প্রস্তুত হিটলারের দে মহামানবের কথা স্মরণ করিবার 
অবসর হয় নাই। রণ-দানবের পৈশাচিক লীলা বড়দিনের সময় 
ইয়োরৌপে সমভাবেই চলিয়াছে। শেফিল্ড, মিড ল্য, পোর্টম্মাউথ. 
প্রভৃতি স্থানে সমভাবে বোমাবমণ দ্বারা ধ্বংস সাধনের চেষ্টার টি 
হয় নাই। স্থানে স্থানে অগ্নিপ্রজ্জালক বোম।ও নিক্ষেপ কর! হইয়াছে। 
গিজ্ডহল, টিনিটি হাউস এবং কয়েকটি গির্জা! ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছে। 

বুটিশবিমানবহরও মমানভাবেই পান্টা আক্রমণ চালাইয়াছে। খাস 
বাঞ্সিন, ব্রিমেন, কীল, ম্যান্হিম জেলা, নেপল্স্‌, মিলান, জেনোয়! 
প্রভৃতি স্থানে বৃটিশ বিমান বাহিনী বোমাবধণ করিয়াছে। লোরিয়েপ্ট 
এবং বর্দোর ইউ-বোট-ঘণাটিও বোমার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত । দুর্য্যোগপূর্ণ 
আবহাওয়ার মধ্যেও বৃটিশ রণ-বিমান ফ্রান্স, বেলজিয়াম, নরওয়ে, হল্যাও, 
জার্মানী এবং ইটালীর বিভিন্ন কেন্দ্রে বোমা বর্ণ করিয়। আপিয়াছে। 
কিন্ত ভাহা হইলেও ইংলগ্ডের উপর জার্মানীর আক্রমণের গুরুত্ব 
অত্যধিক। বৃটেনের ক্ষতিও হইয়াছে যথেষ্ট । এ পধ্যস্ত নাৎসী 
আক্রমণে নিহত বৃটিশের সংখ্যা মিঃ চাচ্চিল তাহার বক্তৃতায় উল্লেখও 
করিয়াছেন। 

শুধু ইংলণ্ডে নে, সমুদ্র বক্ষেও জার্ানীর তৎপরত! হ্বাদ পায় নাই। 
জার্নানীর অর্থনীতিক অবরোধের সন্কল্পের কথা গত সংখ্যাতেই উল্লিখিত 
হইয়াছে। খাস্ত অথবা উপকরণ যাহাতে বুটেনে সরবরাহ হইতে 
না পারে, সে বিষয়ে জাপানী বিশেষ সচেষ্ট । বৃটেনের সহিত অষ্ট্রেলিয়ার 
ও দক্ষিণ আমেরিকার সামুদ্রিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করিবার উদ 
জার্মানী ব্রেষ্ট, সেপ্টলেজার, বর্দে! প্রভৃতি ঘাটি সকল ব্যবহার করিতেছে । 





চলনৃভি ইভিহাস 





অঠ৮৮৯ঠি 


স্ব্ন্ব্--স্ব--স্হ  -্৮- -স্১ বড ৮ সস ০ - সহ স্ত৮- ্হ 


তদুপরি আরর্জগ নিরপেক্ষ থাকায় জাগানীর সুবিধ! হইয়াছে যথেই। 
দক্ষিণ আয়র্লগ্ডের ঘণটিসকল বৃটেন ব্যবহার করিতে না পারার ফিঞিৎ 
অস্থ্বিধা উপলদ্ধি করাই তাহার পক্ষে ম্বাভাবিক। 

যুদ্ধের গতি সম্বন্ধে আগ্রহশীল ও অনুরাগী ব্যক্তিগণ সম্প্রতি 
উৎ্কঠিত হইয়া পড়িয়াছিলেন। জাপ্নানী কি করিবে, তাহার গতি 
কোন্‌ দিকে হইবে, এ সম্বন্ধে জল্পনা কল্পনার অন্ত ছিল না। জা্জনীর 
সহিত অপরাপর রাষ্ট্রের সম্বন্ধের কথা লইয়াও অনেকে অনেকরূপ সন্দেহ 
করিতেছিলেন। ফ্রান্স ও জার্জ।নীর মধ্যে মতদ্বৈধ ক্রমশ গুরুতর 
আকার ধারণ করায় যে-কোন মুহূর্তে একটা অগ্রত্যাশিত পরিস্থিতির 
আশঙ্কা করা যাইতেছিল। ম'সিয়ে পিয়ারে লাভালের পুনণিয়োগ লইয়া 
মসিয়ে গেষ্যার উপর জার্নানী চাপ দেওয়ায় যে সমস্তার উত্তব হইয়াছিল, 
সম্প্রতি তাহার সমাধান হইয়৷ গিয়াছে । মঃ পেত্যা ও মং লাভালের 
মধ্যে যে মতান্তরের হৃষ্টি হইয়।ছিল, সরক্ষারীভাবে ঘোষণা কর! হইয়াছে 
যে, সেই সকল কারণ দূরীভূত হইয়াছে। ভিনি মক্ত্রিসভার পুনর্গঠন 
সংক্রান্ত কার্ধ্যাবলী ধীর গতিতে চলিয়াছে। ফ্রান্সের রণপোত এবং 
সমুদ্রতীরের ঘণাটিসকল জার্মানী বহুদিন হইতেই নিজ কর্তৃত্াধীনে 
আনিবার জন্য দাবী করিয়া আসিতেছে । লাভাল-পেত্র্যা ঘটিত 
সমস্যার সমাধান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ বিষয়েও জাপানী সহিত ফ্রান্সের 
যেকিছু বোঝাপড়। হয় নাই, সে কথাও নিঃসন্দেহে বল! চলে না । 
কারণ হিটলারের মুখ্য উদ্দেন্ঠ হইতেছে বৃটিশ শক্তির কেন্দ্রস্থল ইংলগ্ডে 
আঘাত করা। এই উদ্দে্ট সাধনের নিমিত্ত এবং সামুদ্রিক পথ অবরোধ 
করিয়! ইংলগ্ডের অর্থনীতিক অবরোধ সফল করিবার জন্য ফ্রান্সের পশ্চিম 
কুলের ঘণটিসকল এবং নৌশক্তি জাঞ্জানী নিজ কর্তৃত্বাধীনে আনিবার 
চেষ্ট]! করিতে ত্রুটি করিবে না। 

এদিকে সাংবাদিক ও পর্যটক বেশে বহু জার্ান দৈম্ত নাকি 
বুলগেরিয়ায় প্রবেশ করিয়াছে । বুলগেরিয়।-সরকার অবষ্ঠ জানাইয়াছেন 
যে, কোন বৈদেশিক শক্তি তাহাদের রাজ্যে নাই ; কিন্ত তথাপি তুরস্ক 
এই সৈম্ঠ প্রবেশের অনুমতি দানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করিয়াছে। 
রুশিয়! হইতে বল! হইয়াছে যে, সৈন্য প্রবেশের পূর্ব্বে জা্লানী তাহাকে 
কিছুই জানায় নাই, বুলগেরিয়াও এ সম্বন্ধে তাহার সহিত কোন পরামর্শ 
গ্রহণ করিতে আসে নাই। অর্থাৎ রুশিয়ার ভাব হইতেছে, তোমরা 
ছুজনে যাহা ভাল বোঝ কর। যতদূর সম্ভব, এই সৈল্ঠ প্রবেশে রুশিয়ার 
বিশেষ কোন আপত্তি অন্তত বর্তমানে নাই । 

অবশ্ঠ অনেকে সন্দেহ করিয়াছিলেন যে, শীগ্রই বোধ হয় জার্জানীর 
সহিত রুশিয়ার বিরোধ আসর হইয়া উঠিবে। রেড, ট্রারে' এক 
স্বাক্ষরিত পত্রে মঃ ট্র্যালিন লিখিয়াছিলেন যে, রুশিয়া শীঘ্বই এক বিরুদ্ধ 
মামরিক শক্তির সঙ্দুধীন হইতেছে । অসতর্ক অবস্থায় শত্ররা যাহাতে 
তাহাকে আক্রমণ করিতে না পারে, সে বিষয়ে তাহাকে সতর্ক থাকিতে 
হইবে। রুশিয়ার এই উক্তি এবং কিছু দিন যাবৎ তাছার রহন্তজনক 
নীরবতায় সকলে অধীর উৎকণায় তাহার ভবিষ্তৎ কার্যকলাপ দর্শনের 
প্রতীক্ষা করিতেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে তাহার মনোভাব হস্পষ্ট। 


২১৮৩ 


সম্প্রতি জার্মানীর সছিত তাহার একটি অর্থনৈতিক চুক্তি হইয়া গিয়াছে। 
এই চুক্তির একটি সর্ত অনুসারে জীানী কলকজার বিনিময়ে রশিয়া 
হইতে খান্ধদ্রব্য ও কাচা মাল পাইবে। 

রুমানিয়াতেও জার্মান সৈম্ংখ্যা যথেষ্ট বৃদ্ধি পাইয়াছে। কয়েক 
ডিভিসন নৃতন জার্মান নৈন্ঠ রুমানিয়ায় প্রবেশ করিয়াছে এবং এ সংখ্যা 
শীদ্রই আরও বৃদ্ধি পাইবে বলিয়! আশঙ্কা করা যাইতেছে । 

বৃটেনের উপর সম্প্রতি কয়েক দিন ধরিয়া প্রবল ভাবে বোম! বর্ষণ কর! 
হইতেছে। জার্দানীর তুলনায় বুটেনের সমর সম্ভার যে কম এবং বৃটিশ 
সৈল্তগণ যে পূর্ণভাবে অন্ত্রশস্ত্রে নজ্জিত নয়, একথা মিঃ চাচ্চিল ডিসেম্বরের 
ভূতীয় সপ্তাহের বন্তৃতায় উল্লেখ করিয়াছেন। সম্প্রতি আমেরিকার 
নিকট যে সাহায্য প্রার্থনা কর! হয়, তাহাতে প্রেসিডেন্ট রুজভেন্ট বৃটেনকে 
“অন্ন ইজার! দেওয়! বা ধার দেওয়া” সংক্রান্ত একটি বিল কংগ্রেসে 
পাশ করাইতে ইচ্ছুক। এই দিক দিয়! বুটেন নিঃসন্দেহে যথেষ্ট লাভবান 
হইতেছে । এতদিন পর্যযগত নগদ মুল্যের বিনিময়ে বুটেনকে অস্ত্রশস্ত্র কয় 
করিতে হইতেছিল। ইহাতে বুটেনের প্রত্যক্ষ যুদ্ধ জয়ের উপর মাকিন 
বণিক সম্প্রদায়ের বিশেষ নজর দিবার প্রয়োজন হয় নাই। মালের 
বিক্রয় এবং নগদ মূলাপ্রাপ্তির মধ্যেই উভয়ের সম্পর্ক সীমাবদ্ধ ছিল। 
কিন্তু উক্ত বিল পাশ হইলে আমেরিকার সরকার ও বণিকদিগের স্বার্থ 
যুদ্ধে বিশেষভাবে জড়িত হইবে। দ্বিতীয়ত “জন্দন্‌ এক্ট"কেও বৃটেন 
এইভাবে এড়াইতে সক্ষম হইল। 

কিন্তু বৃটেনের উপর আক্রমণাত্মক কারা সমভাবে চালাইলেও 
প্রকৃতপক্ষে জার্মানীর গোল বাধিয়াছে ইটালীকে লইয়া । আফ্রিকা 
এবং পূর্বব-এশিয়ায় বুটেনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করিতে হইলে ভূমধাসাগরকে 
সম্পূর্ণরূপে নাৎসী-ফ্যাসিস্ত কর্তৃত্বাধীনে রাখ! প্রয়োজন। এই উদ্দেগ্ঠ 
সাধনের নিমিত্ত হিটলার তাহার অন্যতম সহযোগী মুদে।লিনীর উপর 
বথেষ্ট নির্ভর করিয়াছিলেন। কিন্তু ঠাহার আশা নফল হয় নাই। 
আফ্রিকায় ইটালীয় সৈম্ক একটির পর একটি যুদ্ধে পরাজয় স্বীকার 
করিয়াছে, গ্রীসের বিরুদ্ধে যুদ্ধেও ইট।লী সাফল্যলাভ করিতে পারে নাই, 
ভূমধ্যদাগরও এখনও সম্পূর্ণরূপে বৃটিশ-প্রভাবান্বিত অঞ্চলরপে আছে। 
ইটালীর শে।চনীয় পরাজয়ে এবং নিজ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য জান্নানীকে 
বাধ্য হইয়। এই দিকে মনোযোগ দিতে হইয়াছে । সিসিলি দ্বীপ জার্ান- 
বাহিনী অধিকার করিয়ছে। ইটালীর অভ্যন্তরেও বছ জাপান সৈন্য 
পৌছিয়াছে। জাগানীর দিসিলি ত্বীপ অধিকার করার গুরুত্ব অভ্যন্ত 
অধিক। আফ্রিকার ইটালীয় সৈম্দের সাহায্য করিতে হইলে 
ভূমধ্যসাগরে শক্তি বিস্তারের বিশেষ প্রয়োজন। অধিকন্তু গ্রীসের 
অসুবিধার স্ষ্টি করিতে হইলে বুটিশের সহিত গ্রীপের সংযোগ বিচ্ছিন্ন 
করা একান্ত আবগ্চক। এই উদ্দে্য সফল করিতে হইলে পূর্বব- 
ভূমধ্যদাগর অভিমুখে চালিত বুটিশ জাহাজগুলিকে মধ্যপথে আটক করা 
দরকার। সঙ্গে সঙ্গে ভূমধ্যমাগরের বৃটিশ খাটিগুলিকেও শক্তিহীন করা 
প্রয়োজন। সম্ভবত এই উদ্দেশ্যেই জাঙানী মিসিলি অধিকার করার 
পরেই মাণ্টার উপর বোমাব্ণণ করিতে আর্ত করিয়ছে। স্পেনের 
সহযোগিতায় পশ্চিম ভূমধানাগরে শক্তি বিস্তারের উদ্দোশ্তে জিব্রান্টার 
আক্রমণের সন্তাবনাও এখনও দূরীভূত হয় নাই। সম্প্রতি হিটলার এবং 
মুসোলিনী আবার গোপনে সাক্ষাৎ করিয়াছেন। আমর! প্রতিবারই 
লক্ষ) করিয়াছি যে, কোন নূতন পরিকল্পনা অনুযায়ী কার্ধ্যারন্তের পূর্ব্বে 
উভয়ের মধ্যে সাক্ষাৎ হইয়াছে এবং সাক্ষাতের পরেই যুদ্ধের গতি 
পরিবর্তিত হইয়াছে । এবারেও অন্রাপ ধারণা করিবার কোন কারণ 


৮০ 
রবি টো 22227 
রাড ৬ 7০2 
%5835 25 ০৯৫ 7৫ 
িলিহি এ বব্ ৫ 





ভ্াাশ্রভবযর 


[ ২৮শ বর্ষ- ২য় খণ্ড-৩য় সংখ্যা 


ন! থাকাই সম্ভব। 'এজিল' শক্তির এই ছুই পার সাক্ষাতের ফলাফল 


বিশেষ লক্ষ্য করিবার। 
নুদুর প্রাটী 


ইন্দোচীন ও থাইল্যাণ্ডের সঙ্বর্ধ ক্রমশই জমিয়া উঠিতেছে। 
উভয় দেশের সীমারেখায় অবস্থিত মেকং নদীর নিকটবর্তী ভূ-ভাগ 
সম্পকে থাইল্যা্ড দাবী উত্থাপন করাতেই এই সঙ্ঘধষের হুত্রপাত। 
মাসাধিক কাল পূর্বেবে সীমান্ত বিরোধের শাস্তিপুর্ণ অবসান ঘটাইবার 
জন্য থাইল্যাও-সরকার ফরাসী ইন্দোচীনের নিকট "সীমাগ্ত 
কমিশন” নিয়োগের অনুরোধ জানাইয়াছিলেন। কিন্তু শেন পর্য্যন্ত 
কোন মীমাংসা ন| হওয়ায় সঙ্বর্ধেরও অবসান হয় নাই। থাইল্যাণ্ডের 
বিমান হইতে বোমা বর্ণের ফলে কাখ্যোডিয়। এবং সিসোফেন নগর 
ক্ষতিগ্রন্ত হিটবোল সারাগারে অবস্থিত ফরাসী ইন্দোচীনের সৈষ্ভগণের 
আক্রমণ থাইল্যাণ্ডের দ্ব।র! প্রতিহত হইয়।ছে | মেকং নর্দীতে ফরাসী ইন্দে| 
চীনের সৈন্য বোঝাই স।তখানি নৌকা থাইল্যাও বিমানবাহিনী ডুবাইয়া 
দিয়াছে । অপর পক্ষে থাইল্যাণ্ডের ছুইখানি রণহরী ডুবাইয়া দেওয়া 
হইয়াছে বলিয়! ইন্দোচীন দাবী করিতেছে । ফরাসী দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত 
কম্মচা্পী মঃ গ্যারে! নাকি থাইল্যাত্ের সহকারী পররাষ্ট সচিবের নিকট 
থাই-সৈন্দের গুলিবধণ বদ্ধ রাখিবার আদেশ দিতে অনুরোধ জানাইয়াছেন। 

এদিকে চীনের বিরুদ্ধে সংগ্রামে জাপান দুইটি যুদ্ধে পরাজিত 
হইয়াছে। ইচাং বন্দরের চতুঃপার্ে প্রচণ্ড সংগ্রাম চলিতেছে । আক্রমণ- 
রত জাপ সৈন্য ছুইবার প্রতিহত হইয়া ফিরিয়। আমে। এখানকার 
বিমান ঘাটি অধিকার করিতে পারিলে চীনের রাজধানী আক্রমণ কর! 
সুবিধাজনক বলিয়াই এই যুদ্ধ এত তীররূপ ধারণ করিয়াছে। লান! 
সাহায্যে উদ্দীপ্ত চীন সংগ্রাম চালাইয়াছে প্রবলভাবে । সম্প্রতি রুশিয়ার 
সহিত চীনের একটি সন্ধি স্বা্রিত হইয়াছে । এই চুক্তি অনুসারে 
রূশিয়। চীনকে সমরোপকরণ প্রেরণ করিবে এবং বিনিময়ে চীন পনের 
লক্ষ ্টালিং মুদ্রার চা রুশিয়ায় সরবর[হ করিবে। চীনের খনিজ দ্রবোর 
পরিবঞ্তডে রুশিয়ার উৎপাদন যগ্ত্রার্ির বিনিনয় ব্যবস্থাও ইহার মধ্যে 
আছে। স্মরণ থাকিতে পারে, জাপান কিছুদিন পূর্বে নানকিং 
গভর্ণমেন্টের অধিনায়ক ওয়াং-চিঙ্গ-ওয়েইর সহিত চুক্তি করিয়াছিলেন । 
এই চুক্তির দর্তের মধ্যে একটি কমিষ্ট।ন-বিরোধী ধার! সমমিবিষ্ট হইয়াছিল । 
জাপান ইহার কারণ সম্বন্ধে রুশিয়াকে নানাভ।বে বুঝাইতে চে 
করিলেও রুশিয়া যে উত্ত চুক্তির কথ বিশ্বৃত হয় নাই, চীনের সহিত 
বর্ধমান চক্তিই তাহার বিশেষ প্রমাণ 

সম্প্রতি জাপ ডায়েটে পররাষ্ট্র সচিব মিঃ মাৎসক| এক বন্তৃত। প্রসঙ্গে 
বলিয়াছেন যে__রুশিয়ার সহিত যে ভ্রান্তিপূর্ণ মনোভাবের সষ্টি হইয়াছে, 
তাহ! দূর করিয়া! কুটনীতিক ক্ষেত্রে হদূর প্রসারী সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্ট1 
হইতেছে। প্রসঙ্গক্রমে আমেরিকার কথ! উল্লেখ করিয়! মিঃ মাৎহকা 
বলেন যে, মাকিন যুক্তরাষ্ট্র যদি বর্তমান ইয়োরোগীয় সংগ্রামে শেষ পরান্ত 
জড়াইয়! যায়, তাহা হইলে জাপনও সেই যুদ্ধে যোগদান করিতে বাধ্য 
হইবে। এদিকে সমরমচিব লেঃ-জেনারেল টোজে| বলেন যে চীন- 
জাপান যুদ্ধের পরিসমাপ্তি সাফ্ল্যপূর্ণ। কিন্তু তাহা হইলেও চীন- 
জাপান বিরোধের অবসানের আগ্ু সম্ভাবন!নাই বলিয়াই তিনি মত প্রকাশ 
করিয়াছেন। আমেরিকা হইতে সাহায্যপ্রাপ্ত চীন যখন রুশিয়ার সহিত 
বাণিজ্যহুত্রে আবদ্ধ এবং তাহার অবস্থা যথন পূর্ববাপেক্ষ! উন্নত, তখন সে 
যে রাতারাতি জাপান্রে সহিত সন্ধি করিতে চু্টিবে ন| ইহা শ্বাভাবিক । 


রি ৮১৫০৯ 
/20-োহ্ আনু চির হি জনি 
্ 2: ০২2 ১ নি রি ৮ 
1) 1 ০] চা ৩০৫ ১৫ এ তব 
6147৬ সু রর 4 





রি এ রি সু 
পেট নং 5 1111চিত 1911 111187। েদ। ৫1005) 148১৪। 18585 ০88৪৪ ০১ ৫১৫০১০৪৪৫০ 


টরাযারিরানারা টা 
গহন 


তবানন্কঞ্টুল্লে শল্রহুস্মভিবাক্িক্কী- একদিকে পল্লী-পাঠাগার রাখা হইবে ও অপর দিকে একটি 

গত ২৬শে জানযারী রবিবার অপরাহ্নে অপরাজেয় মাতৃমঙ্গলকেন্ত্র খোলা হইবে । কিন্তু এখনও 'আবন্ঠক অর্থ 
কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মহাশয়ের জন্মভূমি হুগলী- সংগৃহীত হয নাই। সেজন্ত তিনি সকলের নিকট আব্দেন 
জেলার দেবানন্দপুর গ্রামে তাহার স্বতিবাধষিকী উৎসব জ্ঞাপন করিযাছেন। খগেন্দ্বাবু সভাপতির অভিভাণে 
যাহা বলিয়াছেন, তাহা সকলের পক্ষেই বিশেষ হৃদয়গ্রাহী 
হইযাছিল। তাহার একাংশ আমরা এখানে তুলিয়া 
দিলাম-_“মাচুষকে শবৎচন্দ্র যে মর্যাদা দিয়েছিলেন, তার 
মধ্যে শুনতে পাওয়া যাঁষ, বর্মান যুগের যুগবাণী। বুগে 
যুগে পরিবর্তমান জগতেব যে অনবস্থা ঘটছে, তাঁকে ভালই 
বলি আব মন্দই বলি--তাঁকে অস্বীকার করবার উপাধ নাই। 
বর্তমানে মানবতার দবী আকাশ বাঁতাঁস মাঁতিযে তুলেছে । 
জগতে ব্যক্তিত্বের চিরনিম্পেষিত বার্তা আজ আর্তনাদ করে 
উঠেছে সকল বাধাঁবিধাঁন অতিক্রম করে। এমনটি আগে 
কখনও হযনি। সমাজকে আমবা চিরদিন খুব বড় করেই 
দেখেছি । এমন এক সময ছিল যখন মানুষ সমাজকেই ঞ্রুব 





সম্রাট ষষ্ঠ জঙ্জ সৈশ্দল পরিদর্শন করিতেছেন 


সমারোহের সহিত সম্পন্ন হইয়াছিল। এবার তী সঙ্গে 
ববিবাসবের অধিবেশনের আযোঁজন হওয়ায় জলঝড় সত্বেও 
সেদিন দেবানন্দপুবে কলিকাতা হইতে বহুলোক গমন 
করিয়াছিলেন। রবিবাঁসরেব সর্বাধ্ক্ষ রায বাহাদুর 
মধ্যাপক শ্রীযুত খগেন্দ্রনাথ মিত্র মহাশয় উৎসবে সভাপতিত্ব 
কবিযাঁছিলেন। সভায দেবানন্দপুরের অধিবাসীরা ছাড়াও 
নিকটস্থ স্থানগুলির বহু অধিবাসী উপস্থিত ছিলেন। শরৎন্ত্র- 
স্বতিসমিতির সভাপতিরূপে হুগলী জেলাবোর্ডের চেযারম্যান 
হীযুত তারকনাথ মুখোপাধ্যায় মহাশয় সভায় সকলকে 
জানাইয়াছেন--শরৎচন্ত্রের পৈতৃক বাসভবন সংলগ্ন গ্রাঙগণটি 
ও তুপরিস্থ বৈঠকথানা গৃহখানি স্থানীয প্লীসেবক সমিতি ভিত উজার হর হিলিতে 
স্বতিমন্দির নির্মাণের জন ক্রয় করিয়াছেন এবং তথায একটি রিনি নিরিহ দর 

স্বতিস্তস্ত প্রতিষ্ঠা করিয়াছেন। স্থতিমন্দিরের জন্ত অর্থ সত্য বলে মেনে নিয়েছিল এবং বযক্িত্বকে তাহ দ্ব গলি 
সংগৃহীত হইতেছে এবং গীঘই মলির নির্মিত'হইবে। মন্দিরের দিতে কুষ্টিত হয়নি। কিন্তু আদব মানুধ ফাঁকা 


৮৫ 





৪৯ 


৬১৬ 
৯ সাপ স্হা্থাল স্থল স্গ্ডহ_ব্আপা 


হী্রজ্ন্যহ 





| ২৮শ বর্ব--২য় খণ্ড-_-৬য সংখ্যা 





আবিষ্কার করেছে খর কাঁকিধান! হাটবাজারের মধ্যে। কুপি লিকলে যাদের দম এখনও দীড়ের পী্ধীর মত উড়ে উড়ে 
মজুর দীনদঘিদ্র-খবাদের দিকে আমরা কখনও সঙ ভুলে চাই গীড়েতেই আছাড় থাচ্ছে, তাবের পক্ষে নৃতনের সঙ্গে ছন্দ 





দক্ষিণ আমেরিকায় লর্ড ও লেডী উইলি*ডন 
নি- তারাই আজ পৃথিবীর অধিকাঁব করাযত্ত করবার জন্ত 
লক্ষ হাত বাড়িয়েছে । আমরা যতই দাতে াতে পিষে 
জগতের এই পবিস্থিতিকে অভিসম্পাত করি না কেন, একে 
অন্বীকার করবার অধিকাৰ কাবও নেই। পুরাতনেব 


রক্গা করে চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। আমরা গণতন্ত্র 
সমাজতন্ত্র, শ্রমিকতন্রকে এখনও ঠিক মনের সঙ্গে 
বরণ করে উঠতে পাঁবি নি। কিন্তু বর্তমান যুগের এহ 
তন্ত্র না মেনে ত উপাধ নই । মহানির্বাণতন্ত্র রুদ্র- 
যামলতন্ত্রের দিন চলে গেছে__নুতন যুগের নৃতন তন্ত্রকে 
মানতেই হবে। পুবাঁতন সৌধে অশ্ব বট ধ্ব*সেব শিকড় 
প্রবেশ কবিষেছে। স্ুতবা" সে প্রাচীন সৌধের মাধ ত্যাগ 
করতেই হবে। শবতচন্দ্র এই সত্য ঘেমন কবে বুঝেছিলেন, 
তেমন কবে বোধ হয আব কোন লেখকই বুঝতে পারেন 
নি।” ধাদের চেষ্টায সে দিন দেবানন্দপুরে শরৎচন্ত্র স্বতিসভ। 
সাফল্যমণ্ডিত হযেছে, তাবা দেশব।সী সকলের ধন্ঠবাদেব 
পাত্র কাঁগণ ত্বাদ্দের জন্গই এতগুলি লোক শরৎচন্দ্রেব 
জন্মভূমি দর্শন কবে ধন্য হতে পেবেছিপেন। 
ম্পল্র শুভ্র প্সভিল্রল্মগাল ব্যবস্থা 
অপরাজেয কথাশিক্পী ন্বর্গত শবৎচন্ত্র চট্টোপাধ্যাষেব 
স্বৃতিরক্ষাব উদ্দেশ্যে যে তিন হাজাব টাকা সংগৃহীত হইযাছে, 
স্বতিরক্ষা কমিটি তাহা কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে 
অর্পণ কবিযাছেন। এই টাঁকাব সুদ হইতে প্রতি তিন 





ভারতে আনীত ইটালীয় বন্দী 


ফান্ঠন--১৩৪৭ ] 





বংসর অন্তর বাকা ভাঘার সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গাল! গ্রন্থের 
লেখককে একটি স্বর্দপন্নক পুরস্কার দেওয়া হইবে। স্মতিরক্ষা- 
কমিটির এই সিদ্ধান্ত সর্ধবতোভাবে সমীচীন হইয়াছে ; শরৎ- 
চন্দ্রের শ্বতিরক্ষার ইহার অপেক্ষা শ্রেষ্ঠতর উপায় আমাদের 
জান! নাই। তবে এই প্রসঙ্গে অত্যন্ত দুঃখের সহিত স্বীকার 
করিতে হুইবে যে বাঙ্গীলার সর্বজনপ্রিয় 'উপন্তাসিকের 
স্ৃতিরক্ষাঁয় মাত্র তিন হাঁজাঁর টাকার বেনী সংগৃহীত 
হইল না! 


হাইক্ফোর্ডেল্স লুভ্ভন্ন হিচ্গা্রস্ান্ডি-_ 


কলিকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি স্যর বি. এন্‌ রাও 
ভারত সরকারের অধীনে বিশেষ কাধ্যের ভার পাওয়ায় 


গর” তলার বন গলদ ক হীরার শি বল ০০০০০ 





চ 











প্পলিজ্নোক্ষে 2জ্ম্স্‌ জক্সেস- 


স্গ্রসিত্ধ আইরিশ -ওপস্তাসিক মিঃ জেম্স্‌ জয়েল মাত্র 
ছাপান্ন বখসর বয়সে পরলোকগমন করিয়াছেন। তিনি 
একাধারে ছিলেন কবি ও ওঁপন্যাঁসিক হিসাবে জগৎপ্রসিদ্ধ 
ব্যক্তি ও মণীষী। তাহার লেখা একদল পাঠক সানন্দে বরণ 
করিয়া লইয়াঁছিল, আর একদল তেমনই নাসিক কুঞ্চন 
করিয়া দূরে ঠেলিয়৷ দিয়াছিল। তাহার স্ুবৃহৎ ও বহুনিন্দিত- 
প্রশংসিত “ইউলিসিস+ একদা! জগতের পাঠকসমাজকে উগ্র 
আধুনিকতার প্রভাবে অভিভূত করিয়াছিল। তাহার প্রশংসা 
ও নিন্দা এমন পাশাপাশি প্রচারিত হয় যে, তাহার প্রতিভার 
সঠিক বিচার করা সহজসাধ্য নহে। তাহার প্রচারিত নীতি 


১৯৪*এর অক্টোবরে লঙনের দৃগ্ঠ__নাজি বোমীবরধণ সত্বেও ঠিক আছে 


বড়লাট কলিকাতা হাইকোর্টের প্রতিষ্ঠাবান য়্যভ্ভোকেট 
ড্র. পাঁধাবিনোদ পাল মহাঁশয়কে বিচারপতি স্যার বি. 
এন্‌ কাওয়ের অনুপস্থিতিকালে কিংবা পুনরাদেশ 
পর্যন্ত হাইকোর্টের বিচারপতি নিযুক্ত কনিয়াছেন। 
ডক্টর পাঁল একজন প্রসিদ্ধ ব্যবহারাজীব সুপত্তিত। 
তাহার যোগ্যতা স্বীকৃত হইয়াছে দেখিয়া আমরা প্রীত 
হইলাম । | 


ও সত্যের নির্ভীক নগ্নতা দেখিয়া কোন কোন রাজ-সরঞষার 
তাহার গ্রন্থ পড়া নিষিদ্ধ করিয়া! দিয়াঁছিলেন। তাহার এই 
অকালমৃত্যুতে একজন প্রকৃত শক্তিমান লেখকের অভাব হইল। 
ভাল্রভীন্ ্বিভন্তা্ন কহশপ্রন্ন 


এবার ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের অঙ্টাধিংশতিতম 
অধিবেশন বিশেষ সাফল্যের সহিত কাশীধামে সুসম্পন্ন 


ইক 


[ ২৮শ বর্ব--২য় খ্ড--৩য় সংখ্যা 


ৃ্‌ ৃ ৃঁ রি 


হইয়াছে । বিভিন্ন শাখার সভাপতিদের অভিভাষণগুলি 
হইতে ও বিভিক্ন শাখায় আলোচিত বিষয় হইতে ভারতে 
বিজ্ঞান প্রচেষ্টার যে সকল তথ্য জানিতে পাঁরা যায়--তাহাতে 
ক্বতই মনে হয় যে আমাদের দেশে বিজ্ঞানচচ্চা ভ্রুত 
উন্নতির পথে অগ্রসর হইতেছে। ভারতীয় বিজ্ঞানীদের 
মধ্যে একজন নোবেল পুরস্কার পাইয়াছেন এবং আরও 
কয়েকজন ইউরোপ ও আমেরিকার বিদ্বৎংসমাজে খ্যাতিলাভ 
করিয়াছেন। তাহা! সন্বেও একথা অস্বীকার করিবার জো 
নাই যেঃ আমাদের ভাব-জীবনে এখনও বিজ্ঞানের একটি 


আধিক ও সাংস্কৃতিক দৈল্টেরই পরিচয় দেয়। ববিজ্ঞান- 
কংগ্রেস ভারতীয় বিজ্ঞানের গতিকে আত্মকেন্দ্রিক খাতে 
প্রবাহিত করিয়! বিশ্বের অপরাপর দেশের বিজ্ঞান 
গ্রচেষ্টার সমপর্য্যায়ে উন্নীত করিবেন ইহাই আমর সাগ্রহে 
কামনা! করিতেছি । 


এশল্লতুলাত্ক শ্যাতডস্ম শাবি 


তিরাশী বৎসর বয়সে স্কাউট আন্দোলনের প্রবর্তক লর্ড 
ব্যাডেন পাওয়েল সম্প্রতি পরলোকগমন করিয়াছেন । ১৯০৮ 
সালে তিনি স্কাউট আন্দোলন প্রবর্তন করেন এবং এই অল্ল 





পশ্চিম মরুভূমিতে ভারতীয় সৈন্তদল 


আরহাওয়া গড়িয়া! ওঠে নাই-_্রত্যক্ষ জীবনেও বিজ্ঞানের 
প্রভাৰ পূর্ণভাবে পরিস্ফুট হয় নাই। তাহার প্রধান কারণ, 
বিজ্ঞান এখনও আমাদের দেশের মাটি হইতে রস আহরণের 
মুধোগ পায় নাই $আমর1 এখনও পাশ্চাত্যের মুখের দিকে 
ভাকাইয়া আছি--নিজের গবেষণা ও অস্ুসন্ধানের ভিতর 


সময়ের মধ্যে বলিতে গেলে প্রায় সমগ্র সভ্যজগতে তাহা 
ছড়াইয়! পড়িয়াছে। এই আন্দোলনের ফলে ছেলের! নিয়মানু- 
বিতর ও জনসেবার আদর্শে অনুপ্রাণিত রে | 


কাপল লাজ উপ. 


রর রাজারা 
মুললমান-) তাই রাজ্যের প্রাথমিক বিষ্াালয়গুলি হইতে হিন্দি 





ভাষার সাহায্যে শিক্ষার ব্যবস্থা তুলিয়! দিয়া! উর্দ, ভাষার 
প্রবর্তন করা হইয়াছে । ফলে হিন্দুদের মধ্যে বিক্ষোভ দেখা 
দেয়; হিন্দি-উর্দ, বিতর্কের মীমাংসা করিতে গিয়া স্থির 
হইয়াছে ষে, কাশ্মীর রাঁজ্যের সমন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় 
হইতে ভাষা হিসাবে হিন্দি বা উর্দ, শিক্ষা দেওয়া হইবে না। 
প্রাথমিক (মাঁধামিকও ) বিদ্যালয়ে সাঁধারণ উর্্দ,ই শিক্ষার 
বাহন হইবে। প্রথম শ্রেণী হইতে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত সরল 
উদ, দেবনাঁগরী অথবা! পারসী অক্ষরের সাহায্যে শিক্ষা 
দেওয়া! হইবে । সকল বিতর্কের সহজ ও অভিনব সমাধানের 
জন্ ছাত্রদের মাতৃভাষা শিক্ষার ব্যবস্থাই তুলিয়া দিতে 
হইবে। একেই ত ইংরেজী শিক্ষার দাপটে লোক মাতৃ- 
ভাষার সম্মান দ্রিতে চাহে না, তার উপর ঘা-ও দেণী ভাষায় 
শিক্ষার ব্যবস্থা গ্রবন্তিত হইবার 
ফলে ইহার প্রতিকার সম্ভা- 
বনায় আমরা আশাঘ্িত হইয়। 
উঠিয়াছিলাঁম কিন্তু কাশ্মীর 
রাজ্যের এ ব্যবস্থায় আমাদের 
আঁ শঙ্কা বাঁড়িল বই কমিল 
না। জিজ্ঞাসা করি-_নিজাম 
রাজ্যের হিন্দু প্রজা রা যদি 
অনুরূপ দাবী করিয়াবসে 
তাহা হইলে তাঁহাদের দোষ 
দেওয়! যায কি? 
জআক্গুর্ষ্েদ 
»ক্দ্রবেছে, 
আলোচনা" 
৩ম্মিজ্নম্ন_ 
গর্ত ২৫শে ও ২৬শে জানুয়ারী শনি ও রবিবারে 
কলিকাতা বিশ্ববিগ্ঠালয়ের আশুতোষ হলে বঙ্গীয় আুর্ষ্েদীয় 
চিকিৎসক মহাসদ্মিলনের এক বিশেষ অধিবেশন হইয়া 
গিয়াছে। প্রথম দিনে দেশনেতা শ্রীযুত শরৎচন্দ্র বনু মহাশয় 
তথায় ধন্বস্তর্ধি পতাঁক! উত্তোলন করেন এবং ডক্টর শ্রীযুত 
্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় মহাশয় দক্সিলনের উদ্বোধন 
করেন শরৎবাৰু তাহার বক্তৃতায় দেশবাসীকে পুনরায় 
বিদেশী চিকিৎসাপদ্ধতি ত্যাগ করিয়! দেঁশীয় চিকিৎসাপদ্ধাতির 
অন্ধুরাগী হইতে আঁক্বান করেন এবং শ্ঠামাপ্রদাদবাবু 





বিশ্ববিদ্যালয়ে যাহাতে আযুর্যেদের অধ্যাপনার ব্যবস্থা! হয় 
সে জন্ত চেষ্টা করিবেন বলিয়! আশ্বাস দান করেন। প্রথম 
দিনের সভায় অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতি কবিরাজ শ্রীযুত 
অনাথনাঁথ রায় ও মুলসভাপতি শ্রীযুত সতীশচন্ত্র সেন 
মহাশয় তাহাদের অভিভাষণ পাঠ করিযাঁছিলেন। দ্বিতীয় 
দিন কবিরাঁজ শ্রীযুত বিমলানন্দ তর্কতীর্ঘ মহাশয়ের 
সভাপতিত্বে লম্মিলন হয়। সভায় গভর্ণমেণ্ট কর্তৃক গঠিত 
£ছেঁট্‌ ফ্যাকাল্টি অফ আযুর্ষেদিক মেডিসিনের বু কার্যের 
তীত্র নিন্দা করিয়া প্রস্তাব গৃহীত হইয়াছে এবং যাহাতে 
অতঃপর নির্বাচিত সবন্ঘ্বারা ফ্যাকাল্টি গঠিত হয় সেজস্ 
গভর্ণমেন্টকে জানান হইয়াছে। বোস্বাই প্রদেশে আমূর্কোদীর 
চিকিৎসকগণের স্বার্থরক্ষার জন্ত গভর্ণমেণ্ট ১৯৩৮ সালে 





আদানসোলে কুষ্ঠা্রমে বাঙ্গলর গতর্ণর--সার ষ্্যানলী 
হার্বাট--সঙ্গে মন্ত্রী সার বিজয়প্রসাদ সিংহ রায় 


যেরূপ আইন গঠন করিয়াছেন, বাঙ্গালাদেশের ব্যবস্থা 
পরিষদকে তদমুরূপ আইন স্থির করিতেও অন্থরোধ কর! 
হইয়াছে। ফ্যাকালটির দ্বারা কবিরাঁজগণ উপরূত ন! 
হইয়! বরং অপকৃত হইতেছেন__-এ কথ! সন্মিলনে সকলেই 
স্বীকার করিয়া লইয়াছিলেন এবং কবিরাজগণ যাহাতে 
এলোপাখিক ডাক্তাীরগণের সহিত তুল্যাধিকার লাভ করেন, 
সেজন্কও গভর্ণমেপ্টকে সকলে একবাক্যে ফাবী 
জানাইয়াছেন। বাঞজ্ালার মফ:ম্বল হইতে নু কবিরাজ 
এই. সচ্মিলনে যোগদান করায় অন্ষিলনটি সাফল্যমণ্ডিত 
হইয়াছিল 1.. কবিরাজ শ্রীধূত ইন্দৃভূষ্৭ সেন, কঘিয়াজ 


টিবি 


জ্রীধুত রামরুষ্ণ শাস্ত্রী প্রভৃতির একান্ত চেষ্টায় . এধার 
আমূর্বেদীয় চিকিৎসকগণের বহু অস্থবিধার কথা এই 








স্পা চা 






7 ্ 
ন্‌ পু ০ 
চিট 


ঠ্ ৮ 
রবি 
টু - 






চিত, ১ শা 
নাশ, - তত 
টিক, « --1 


&. “৯ বা 
খা 


ক ও 


গত ১৭ই ডিসেম্বর কলিকাতায় সিভিক গার্ড 
প্রদর্শনীতে বাঙ্গালার গভর্ণর --ফটে! পান্না নেন 
সঙ্সিললের মাঁরফতে সর্বসাধারণের প্রকাশ করার ব্যবস্থা 
হইয়াছিল। 


নি্ষুন্রে পুল্রেত্ অন্ন স্যরি 


হুগলী জেলাবোর্ডের চেয়ারম্যান শ্রীতুত তাঁরকনাথ 
মুখোপাধ্যায় ১৯৩৯-৪ বর্ষের বোর্ডের কার্য্ের যে বাধিক 
বিবরণ সম্প্রতি প্রকাশ করিয়াছেন, তাহাতে একটি বিষয় 
সকলেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করিবে। ন্বর্গত দেশপ্রেমিক 
স্থরেন্নাথ মল্লিক মহাশয়ের পত্বী শ্রীমতী স্বর্ণ প্রভা! দেবী 
তাহার স্বামীর শ্বৃতিরক্ষার্থ হুগলী জেলার সিঙ্গুর গ্রামে 
মোট ৯১ হাজার €শত টাঁক! দান করায় এ অর্থে তথায় 
একটি স্বাস্থ্যকেন্ত্র ও গ্রস্থতি চিকিৎসালয় স্থাপিত হইয়াছে। 
জেল! বোর্ডের পরিচাঁলনাধীনে এ প্রতিষ্ঠান নির্মিত হইয়াছে 
এবং আমেরিকার যুক্তরাজ্যের “রকফেলার ফাউগ্ডেসন, 
হইতেও এ প্রতিষ্ঠানকে সাহায্য করার ব্যবস্থা হইয়াছে । 
স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রথম ৫ বৎসর যে অর্থ ব্যয়িত হইবে, তাহার 
কিছু অংশ রেকফেলার ফাঁউণ্ডসন হইতে পাওয়া যাইবে। 
ভারতবর্ষে এরূপ প্রতিষ্ঠান এই নৃতন। শুধু অর্থ হইলেই 
কোন বড় কাজ হয় না। বাঙ্গালার স্বাস্থ্য বিভাগের 
ডিরেক্টার ও হুগলী জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যানের সমবেত 
চেষ্টায়. প্রীত্তী হর্ণপ্রভা দেবীর প্রদত্ত অর্থে এক্সপ একটি 
পতি, গড়িয়া উঠিল-_ইহা সমগ্র বাঙ্গালার লোকের 
প্রক্ষই গৌরবের বিষয় সন্দেহ লাই। স্থরেন্্রনাথ মঙ্লিক 


স্ব স্দ্চম্খঞ্ঘ 


[ ২৮শ বধ-_-২য় খণ্ড--৩য় সংখ্যা 


ব্- স্ফচ 


মহাশয় যে প্ররূতই একজন দেশপ্রেমিক ছিলেন, তাহ। তাহার 
স্মতিরক্ষা ব্যরস্থার সাফল্যের দ্বারাই গ্রমাণ হুইয়া গেল। 


অক্জ্রম্ণস্ ন্নিম্প্রাপেল্প ক্ষান্রখান্না 


মিডল্‌ ঈস্ট কম্যাণ্ড ও ফার্ঈস্ট কম্যাণ্ডের রিপোর্ট 
হইতে জানা যায় যে যুদ্ধ বাঁধিবার পর হইতে অস্ত্রশস্ত্র 
নির্শাণের কারান! গ্রসারের কর্মতালিক! গ্রহণ করিবার 
ফলে ভারতবর্ষ ক্রমশ বিদেশের অর্ডার সরবরাহে সমর্থ 
হইতেছে । সাঁত কোটি টাকা ব্যয়ে অস্ত্রশস্ত্র নির্মাণের 
ঝারখানা প্রসারের যে দ্বিতীয় পরিকল্পনা গ্রহণ কর! 
হইয়াছে, বর্তমানে সেই অনুসারে কাঁজ আরম্ভ হইয়াছে। 
এই পরিকল্পনা অস্ধ্যায়ী প্রত্যেক কারথানায় আধুনিক 
ধরণের অস্ত্রশস্ত্র এবং গোলাবারুদ প্রস্তুতের ব্যবস্থা হইতেছে । 


নুতন্ন ভ্রল্রণেক্ল আঁত্ুু_ 


আলুতে মেদবৃদ্ধি করে আশঙ্কায় কেহ কেহ আলু 
ব্যবহারের পক্ষপাতী নছেন। সম্প্রতি আমেরিকার নিউ- 
ইয়র্ক প্রদেশে কোন বাগানের মালিক শ্বেতসাঁরবিহীন আলু 
উৎপাদন করিয়াছেন। ইহার নাম “টপাঁটো”। আলু 
এবং টমাঁটোর বীজের সমগ্বর করিয়া ইহা উৎপন্ন হয়। 
শ্বেতসার-বিন&্কারী টমাটো আলুর শ্বেতসার ন্ট করিয়া 
দেয় এবং এই শ্রেণীর আলু ব্যবহারে মেদ বৃদ্ধির আশঙ্কা 
নাই বলিয়৷ উক্ত বাঁগানের মালিক দাবী করিতেছেন । 
টপাটো আলুর স্যায়ই একপ্রকার উদ্চিৰ। মাটির নীচে 
টপাটো এবং মাটির উপরে টমাটো জন্নায়। প্রায় সাতটি 





ভারতীয় বিমান বাহিনীতে একদল যুবক ধিমান-চালক- 
ইহার! মৃতকে ভয় করে না 


ফান্তুন_-১৩৪৭ ] 


হল -ম্যন্ছিপ স্থান বগা 





সাসন্সিশসি 





২০0৯২৭৯ 


সহ” “০ “স্ব 





স্যর 


রাসায়নিক ভ্রব্যের সাহায্যে এই নৰ আবিষ্কত আনু বছরের এই সময়ের আয় অপেক্ষা ৮ কোটি ৬৬ লক্ষ 


উৎপন্ন হয়। 


পুর্ি্ীল্প ক্ম্নিজ্কীবীল্ল হত্যা 


লগ্ন স্কুল অফ. ইকনমিকস্-এর অধ্যাপক মি: হল জাঁতি- 
ঘের অর্থনীতিক সমিতির নিকট জীবিকা-নির্বাহের 
উন্নততর ব্যবস্থার উপায় উদ্ভাবন সম্পর্কে একখানি ম্মারক- 
লিপি প্রেরণ করিয়াছেন। মি: হল উক্ত স্মারকলিপিতে 
উল্লেখ করিয়াছেন যে বিভিন্ন দেশে যে আদমস্ুমারি গৃহীত 
হইয়াছে তাহার উপর ভিত্তি করিয়া এবং যে সকল দেশে 
তাহা গৃহীত হয় নাই তাহার আ্ুমানিক সংখ্যা-বিবরণীর 
উপর নির্ভর করিয়া দেখা যায় যে গত ১৯৩৮ সালে 
পৃথিবীর লে1কসংখ্য। দুইশত কোটির উপর ছিল। তাহার 


আক: পি 
১440০ সি | 771281-4 
৮ 
টিন টি উন, রিড ৮ 


ৃ 
বিল. 


টাকা বেশী। 


্ন্সিক্ক প্রশ্রচ্ছক্রেল্র হিল্লা নিকাশ 


১৯৪০ সালের ১ এপ্রিল লইতে ৩০ জুন পর্যস্ত ভারতের 
বিভিন্ন প্রদেশে মোট ১০১টি শ্রমিক ধর্মঘট সংঘটিত 
হইয়াছিল। ইহাতে ২ লক্ষ ৬৮ হাজার «শত ৮০জন 
শ্রমিক সংশ্লিষ্ট ছিল এবং মোট ২৪ লক্ষ ৭৪ হাঁজার ২শত 
৬৩টি কাঁজের দিন নষ্ট হইয়াছে । উক্ত ১০১টি ধর্মঘটের 
মধ্যে ৬২-টিই ছিল মজ্ুরীবৃদ্ধির দাবী সংক্রান্ত। এই 
সময়ে আসামে ২, বাঙ্গ'লাঁয় ৩৫, বিহাঁরে ৪, বোম্বাইয়ে ২৫, 
মধ্যপ্রদেশে ৭, মাদ্রাজে ১২, উড়িস্তায় ১, পাঞ্জাবে ৯ 
সিন্ধতে ২ এবং সংযুক্ত প্রদেশে ৪-টি ধর্মঘট হয়। ধর্মঘটের 





ভারতীয় পদ[তিক সৈশ্ঠগণ ইরির্রীয়ার সীমান্তে আটবার! নদী পার হইতেছে--নদীতে কুস্তীরের উপদ্রব খুব বেশী 


মধ্যে নব্বই কোটি লোক লাভজনক কাঁজে জীবিকা নির্বাহ 
করিত এবং তাহার মধ্যে কৃষিকাঁ্যে আন্মমানিক পঞ্চানন 
কোটি লোক নিযুক্ত ছিল। উহার অর্ধেকের বেশী এশিয়া 
মহাদেশের। কেবলমাত্র ভারতবর্ষেই বিশ কোটির আধিক 
লোক কৃষিকার্য্যের দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করে বলিয়া মিঃ 
হল উল্লেখ করিয়াছেন। 


সল্ক্ষান্্লী €্রিজ্পম্পখ্েন্স আজ- 


বিগত ১লা এপ্রিল হইতে ৩০শে নবেশ্প্ পর্য্যন্ত আঁট মাসে 
সরকারী রেলপথসমূহের মোট আয়ের পরিমাণ দীড়াইয়াছে 
৬৯ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা । ইহা! গেল বছরের এই সময়ের 
আয়ের তুলনায় ৭ কোটি ৭৪ লক্ষ টাকা এবং তারও আগের 


শ্রেণী বিভাগ করিলে দেখা যায়--কাঁপড়ের কলে ৩৮-টি, 
চটকলে ৮-টি, ইঞ্জিনিয়ারিং কারখানায় ৪-টি এবং বিভিন্ন 
শিল্পে বাকী ৪৫-টি ধর্মঘট হুইয়াছিল। এই এতগুলো 
ধর্মঘটের ২০-টিতে ধর্ম্ঘটীর1 সাঁফল্যলাভ করে, আঁটটিতে 
তাহাদের দাবী আংশিক মিটানো হইয়াছে এবং ১৭টি 
ধর্মঘট ব্যর্থ হইয়াছে । 


স্ল্ল্োক্ষে আক্তি লাশ 


প্রসিদ্ধ ফরাসী দার্শনিক ও পৃথিবীবিখ্যাত মণীষী শ্ারি 
বার্গশ' পরলোকগমন করিয়াছেন। মৃত্যুর সময় তাহার 
বয়স হইয়াছিল বিরাশী বখসর। ইনি জাঁতিতে ছিলেন 
ইহুর্দি, তাই শক্তিমান নাৎসীদের হাতে লাঞ্ছনা ও উৎপীড়ন 


ডিউক ই 





খা” স্ান্ত” 


অনেকথানিই তীহাকে ভোগ করিতে হইয়াছে। আধুনিক 
বিজ্ঞানে পরমাণু আবিষ্কারে যে বিরাট বিপ্লব সংঘটিত 
হইয়াছে এবং পদার্থপ্গৎ মনোঁজগতের আভাসমাত্র বলিয়া 
যে আধ্যাত্মিক বিজ্ঞানবাদ প্রাধান্ত লাভ করিয়াছে__বাশ'র 
স্বতংস্ুর্ত বিবর্তন'-এর মতবাদের দৌলতে তাহা! অনেকথানি 
সমূদ্ধ । জীন্স, ঘ্যাভিংটন প্রমুখ বিশ্ববিখ্যাত বৈজ্ঞানিক- 
গণের দার্শনিক আলোচনায় যে মতবাদ অসম্পূর্ণভাবে 
অভিব্যক্ত-_বার্গশ'র দর্শনেই তাহা পাওয়া যায় পরিণত ও 
পূর্ণরূপে । মণীষার উপর বর্ধরোচিত অত্যাচারের পালা 





র্‌ টা ৬ মি 





[ ২৮শ ব্ধ---২য় ধর সংখ্যা 


খ্া” সা 


হইরে। এই আইনের বলে ম্যাজিস্টেট যে-কোন ভিক্ষুককে 
উক্ত আশ্রমে ভর্তি করিবার নির্দেশ দিতে পারিবেন। 
কর্মক্ষম ভিক্ষুকদের জন্ত মাদ্রাজ কর্পোরেশন একটি আশ্রম 
খুলিবার পরিকল্পনা করিয়াছেন-_রুণ্ এবং বয়স্ক ভিক্ষুকদের 
জগ্যও কালক্রমে কর্পোরেশন আর একটি পৃথক আশ্রম 
প্রতিষ্ঠা করিতে ইচ্ছা করেন। উক্ত বিলের মর্ম এই যে, 
ষোল বৎসরের অধিকবয়স্ক কর্মক্ষম ভিক্ষুকদের বিচার 
করিবেন প্রেসিডেন্দী ম্যাজিস্টেট এবং উক্ত বিচারকই এই 
শ্রেণীর ভিক্ষুকদিগকে ভিক্ষৃুকশালায় ভর্তির নির্দেশ দিবেন । 


ৰং 








ভারতীয় রাজকীয় নৌবাহিনীতে নবনিযুক্ত যুবকবৃন্দ-_সকলেই নাবিকবেশে সজ্জিত 


পৃথিবীতে আজও শেধ হয় নাই; তবু বার্গশ'র ন্যায় মণীষীরা 
অমর-_-কোন ডিক্টেটারের রক্তচক্ষু তাহাকে ম্লান করিতে 
পারে নাই, পারিবেও না কোনদিন । 


ভিল্ষু-ক-সম্ত্ঠা সমাশ্রান্সেন্্র 


আইনের ' সাহায্যে, মাদ্রাজ শহরের ভিক্ষুক সমন্া 
সমাধানের জন্য মাত্রাজ সপ্নকার সম্প্রতি একটি বিল প্রগয়ন 
করিয়াছেন। ইহা আইনে পরিণত হইলে ভারতবর্ষের 
মউন্ট: সর্বপ্রথম মারীজেই একটি ভিক্ষুকশাল! প্রতিষ্ঠিত 


তিন বৎসরের অধিককাল কোন ভিক্ষুককে এই ওয়ার্ক- 
হাউসে রাঁথা হইবে না। ভবিষ্তে ভিক্ষা না করার 
প্রতিশ্ররতি দিলে কর্মক্ষম ভিক্ষুকদিগকে ছাড়িয়া! দেওয়। 
হইবে। বিলে ভিক্ষুকদের জন্য কর্মসংস্থান এবং কর্ম গ্রহণে 
অসম্মত হইলে ভিঙ্ষুককে শাস্তি দেওয়ারও বিধান 
আছে। কলিকাতায় এরকম একটা ব্যবস্থার প্রত্যাশা 
কি আমরা করিতে পারি না? | 
আক্ভিস্মক্ন ব্বিক্লে কচুীান- 
আড়িয়ল বিল ঢাঁকা৷ জেলার মুন্সিগঞ্জ ও দক্ষিণ সদর 





অনন্ের সর 


ভ্ঞাল্লভ্ডলম্ব 





তেলে 
রি দ্‌, ৯ 57 


1৯ ৪১ এ 
এ 
31? ৮ 





৮1] লাল বব ৮87 ন 


এ ক পা পপ কক ০ আত স্প ৮ প 


শা স্টপ পা পপ পপ, ৭৭: ৪৪ ৯-০ গ,০_এ_প্া 





কলিকাতায় নিখিলভাপত দে ইউনিয়ন ক'গেসের নেতৃরন্দ 


ান্ন--১৬৪৭ ] 


ক 


মহকুমার শ্রীনগর, দোহার ও নবাবগঞ্জ থানার মধ্যে বিস্ৃত। 
ইহার আয়তন সমগ্র ঢাকা জেলার ষোল ভাগের এক ভাগ 
অর্থাৎ ১২৪ বর্গ মাইল। যত দুর জানা যায় ১৯২১ সালে 
প্রথম এই বিলে কচুরী পানা আসে এবং অল্প সময়ের মধ্যে 
সমঘ্ত বিল ছাইয়া ফেলে । ফলে চাষীদের ফসল নষ্ট হইতে 
থাকে। কচুরী আসার আগে বিলে প্রচুর ধান ফলিত, 
চাধীরাও প্রচুর ফসল পাইত; কিন্তু কচুরীপানার 
আবির্ভাবের পর হইতে তাহাদের ক্ষতির পরিমাণ অসম্ভব 
হইয়া দীড়াইয়াছে। অথচ চাষীদের জমির খাজনা নিয়মিতই 
জোঁগাইতে হইতেছে । যাহাতে বিলে কচুরীপানা আসিতে 
না পারে তাহার জন্য বেড়া দেওয়ার ব্যবস্থা সরকার হইতে 
কর হইয়াছে; অবশ্ঠ তাহার ব্যয় চাঁধীদের নিকট হইতেই 





াসন্গিক্কী 


খটিিি 





১১জন, নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটির সন্ত ১৭৬ জন্) 
কেন্দ্রীয় পরিষদের সাস্ত ২২ জন ও প্রাদেশিক আইন সভার 
সদস্য ৪০৯ জন ধৃত ও দণ্ডিত হইয়াছেন। এই সত্যাগ্রহের 
পরিণাঁম কিঃ কে বলিবে। 


হন ভিমান্ম আভ্রন্সত্পে হভ্ডাহভ্ভ- 


গত সেপেম্বর হইতে ডিসেম্বর এই চারিমাঁসে 
বুটেনে যে জার্মাণীর বিমান আক্রমণ হইয়াছে তাহাতে 
মোট ২৪১৬৬৯ জন নিহত ও ৩১৩০৮ জন আহত 
হইয়াছে । ইহার মধ্যে ডিসেম্বর মাসে মোট ৩,৭৯৩ জন 
অসামরিক ব্যক্তি নিহত হয় এবং ৫১০৪৪ জন অসাঁমরিক 
ব্যক্তি আহত হুইয়৷ হাসপাতালে ভর্তি হইয়াছে । ইহাদের 





থুলনা বালিক| বিস্ভালয়ে গভর্ণর-পন্থী লে্ডী মেরী হারা 


আদায় করা হয়। অথচ এ সত্তেও চাষীরা বিশেষ ফললাভ 
করিতে পারিতেছেন না। ইহার প্রতীকার কল্পে সম্প্রতি 
ঢাঁকাঁর মালিকান্দায় ডাঃ সুরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের 
সভাপতিত্বে এক সম্মেলন আহত হইয়াছিল। অবিলম্বে 
কচুরীপানার প্রতীকার করিতে না পারিলে নিরন্ন কুষক- 
কুলকে বীচানো সম্ভব হুইবে না। আমরা সরকারকে এ 
বিষয়ে তৎপর হইতে সনির্বন্ধ আবেদন জানাইতেছি। 


ভ্ডান্শ্ভ্ড সভ্ভ্যা গ্রহু-_ 


মহাত্মা! গান্ধীর নির্দেশে যে সত্যাগ্রহ আন্দোলন সুরু 
ছইয়াছে ভাহাঁতে এ যাঁবৎ ভারতের আঠারটি বিভিন্ন 
প্রদেশের ২৯ জন তৃতপূর্ব্ব মন্ত্রী, ওয়াকিং কমিটির সবস্য 


মধ্যে ১১৪৩৪ স্ত্রীলোক ও ৫২১ জন শিশু নিহত হয় এবং 
আহতদের মধ্যে ১১৭৭৫ জন স্ত্রীলোক ও ৩০৭টি শিশু 
আছে। এই লোকক্ষয়কর মহাষুদ্ধ যে কবে শেষ হইবে 
এবং কি তাহার পরিণীম তাহা! কে বলিবে? 


জাল্ুুল্র -্লেকচগাল্রাল্র- 


কলিকাতা বিশ্ববিদ্ঠালয়ে ১৯৪১ সালে ঠাকুর ল 
লেকচার দিবার জন্য স্যার নৃপেন্ত্রনাথ সরকারকে অন্থরোধ 
করা হইয়াছে । তিনি এই পদ গ্রহণ করিতে সম্মত হইলে 
“বৃটিশ ভারতে সাঁলিসী'__এই বিষয়েনতাহাকে বারটি বতুতা 
দিতে হইবে । আমাদের বিশ্বাস, তাঁহার, মত একজন কৃতী 
আইনজ্ঞের দ্বার! বিশ্ববিষ্ঠালয় উপকৃত হুইবে। 


৬৪ 


ন্রভ সন্রক্চান্লেল আক্মব্যন্জ-- 


সম্প্রতি সংশোধিত আ্বাকারে ভারত সরকারের আয়- 
ব্যয়ের যে মাসিক বিবরণ প্রকাশিত হুইয়াছে তাহা হইতে 
জান! যায়-_গত নবেম্বর মাসের শেষে পূর্ববর্তী বৎসরের 
তুলনায় রাজন্বের আয প্রায় পাচ কোটি টাকা কম 
পড়িয়াছে। ১৯৪০-৪১ সালের প্রথম আট মাঁসে পূর্ববর্তী 
বৎসরের এই সময়ের তুলনায় শুহ্কধ বিভাগের আয় পাঁচ কোটি 
টাকা, কর্পোরেশন ট্যাক্স বাবদ আয় চব্বিশ লক্ষ টাকা ও 
লবণ-গুক্কের আয় দুই কোটি আটাশ লক্ষ টাকা হাস 
পাইয়াছে। অপর দিকে কেন্দ্রীয় আবগাঁরী বিভাগের আয় 


রঃ ক্ষ $ ১ 
ণ 


[২৮শ বর্ব-_২য় ধু সংখ্যা 


তিম্াত্তর লক্ষ টাকা বৃদ্ধি পাইয়া! পনর কোটি জাটায় লক্ষ 
টাক দীড়াই়াছে। আলোচ্য আট মাসে রাজন্ের খাতে 
ত্রিশ কোট আটানব্বই লক্ষ টাক! ঘাটতি হইয়াছে বলিয়া 
ৃষ্ট হয়) ইহার পরিবর্তে রেল বিভাগ এবং ডাক ও তার 
বিভাগের আয় যথাক্রমে পঁচিশ কোটি আঁটাশ লক্ষ 
এবং ছিযাট লক্ষ টাকা হওয়ায় উক্ত ঘাটতির পরিমাঁণ হাস 
পাইয়া পাঁচ কোটি টাকায় পরিণত হইয়াছে । . 


জাপানী শশ্যেল্র আসচ্কানী শ্রন্ত্ধি- 


গত নবেম্বর মাস পর্য্যন্ত আট মাসে ভারতে জাপান 
হইতে ভারতে আমদানী বাণিজ্যের পরিমাণ তের কোটি 





মাঞ্রাজে বাঙ্গালার ব্রতাচারা দল 


এবং আয়কর ও অন্যান্ত ট্যাক্স বাবদ আয়ের পরিমাণ 
আলোচ্য সময়ে ষথাক্রমে এক কোটি চুরাশী লক্ষ, একার 
লক্ষ এবং উনিশ লক্ষ টাঁকা বাড়িয়াছে। গত নবেম্বর 
মাসের শেষে ভারত সরকারের মোট ব্যয়ের পরিমাণ 
সাঁতান্তর কোটি একষটি লক্ষ টাকা দীড়াইয়াছে। 
আগের বৎসর এ সময় ইহার পরিমাণ উনসত্তর কোটি 
পচানব্বই লক্ষ: টাকা ছিল। দেশরক্ষা বিভাগের ব্যয়ের 
পরিমাণ ছত্রিশ. কোটি, একার লক্ষ টাকা! গাড়াইয়াছে। 
আগের বৎসর এই প্লময়ে এই ব্যয়ের পরিমাণ আটাশ কোটি 
আঠার লক্ষ টাকা ছিল। বিবিধ খাতে ব্যয়ের পরিমাণ 


টাকার অধিক দীড়াইয়াছে। পূর্ববর্তী বংসরে এই সময় 
ইহার পরিমাণ ছিল সাড়ে এগার কোটি টাকা । আলোচ্য 
সময়ে যন্ত্রপাতি, রঞ্জনদ্রব্য এবং এই প্রকার অন্যান জাপানী 
জিনিষের আমদানি বৃদ্ধিতে মনে হয় যে বর্তমান যুদ্ধের জন্য 
ইংলণ্ড ও ইউরোপের অন্তান্ক দেশ হইতে ভারতে উপরোক্ত 
জিনিষের আমদানি বন্ধ হওয়ায় জাপাঁন তাহার স্থুযোগ 
গ্রহণে অগ্রসর হইয়াছে । অপর পক্ষে, তী সময়ে জাপানে 
ভারতীয় রপ্তানি বাণিজ্যের পরিমাণ পৌনে ছয় কোটি টাকা 
হাস পাইয়াছে। আগের বৎসর ইহার পরিমাণ ছিল 
সাড়ে আট কোটি টাকারও উপর। ভারতে কার্পাসজাত 


ফাঁন্তন-*১৩৪৭ ] 


জাপানী গশ্যে্ব আমদানিই ছিল বেশী, কিন্তু বর্তমানে তাহা 
কনিয়া গিয়াছে। অপর পক্ষে জাপানী যন্ত্রপাতি ও রঞ্জন- 
ডূব্য ইত্যাদির আমদানি বাঁড়িয়াছে। যুদ্ধের জন্য গ্রৃত্যেক 





জামলেদপুরে প্রবার্সী বঙ্গ সাহিত্য সশ্মিলনে সমবেত-_মুল পভাপতি 
গীগুরুসদয় দত, রামানন্দ চটোপাধ্যায়, অননদাশক্বর রায়, 
শ্রীমতী কুমুদিনী বন্ধ প্রভৃতি 
জিনিষের দাঁম বাঁড়িয়ছে বটে, কিন্তু তাহা সত্বেও এইরূপ 
জিনিষের আমদানি বাড়িতেই দেখা যাঁয়। 


ল্িপ্রন্স কুল ব্রিজ ও াগগাল শক্তি 


পাঁঞ্জাবেও বাঙ্গালার মতই একটি বিক্রয় কর বিল 
উপস্থাপিত হইয়াছে । সম্প্রতি পাঞ্জাব ব্যবস্থা পরিষদে এই 
বিলটি উপলক্ষ করিয়া! একটি ভারী মজার ব্যাপার ঘটিয়াছে। 
জাতিগঠন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী মহাঁশয় সরকারের 
পক্ষ হইতে এই বিলটি পরিষদে পেশ করিয়াছেন; কিন্ত 
বিলটি আলোচনার সময় তাহার পা্লামেপ্টারী সেক্রেটারী 
স্তর উইলিয়াম রবার্ট বিলের বিরোধিতা করিয়া এই মন্তব্য 
প্রকাশ করিয়াছেন যে, এই বিল পাশ হইলে পাঞ্জাবের 
শিল্প-বাণিজ্যের সমূহ ক্ষতি হুইবে। কংগ্রেসী দলের 
অধিকাংশ সভ্য অনুপস্থিত বিধায় পরিষদের বাহিরের 
মতামত সংগ্রহ করাই জনমত নির্ধারণের প্রধান উপায় 
বলিয়া তিনি এই বিলটি প্রচারের প্রস্তাব সমর্থন করেন। 
অবস্থা সুবিধার নয় বলিয়! শ্বয়ং প্রধানমন্ত্রী মহাশয় জবাব 
দিতে বাধ্য হন। যাহাতে কোন পক্ষই ক্ষতিগন্ডনা হয় লেদিকে 


£ 
₹ 
এ রি ১] 
| 


ভারপ্রাপ্তমন্ত্রী মহাশয় বিশেষ দৃতটি রাঁখিবেন বলিয়া: প্রধাস 
মন্ত্রী আশ্বাস দেন। পাঞ্জাবের তুলনায় বাঙ্গালায়' বিক্রয় 
করের পরিমাণ ঢের বেশী, অথচ সেই অবস্থায় পাবে বিরুয় 
করের বিরুদ্ধে যে প্রবল প্রতিবাদ উঠিয়াছে তাঁহ। লক্ষ্য করিয়া 
বাঙ্গালার মস্ত্রিমগুলী কি তীহাঁদের কর্তব্য স্থির করিবেন ? 


আাক-্লাল্স আত্ল্টীলন্ম দু্সন্ম জেলা 


সম্প্রতি পাঞ্জাব ব্যবস্থা পরিষদের প্রশ্নোতরনকালে সরকার 
পক্ষ হইতে জানা গিয়াছে যে পাঞ্জাবে খাঁকসাঁর আন্দোলন 
দমনের জন্ত সরকারের ১৯৪০ সালের নবেঙ্গর *াঁস পর্য্যস্ত 
১১৯৪৯৭৩০ টাঁকা ব্যয়িত হইয়াছে । ইহা ছাঁড়। এক 
বৎসরকাল লাহোর শহরে এই প্রসঙ্গে একজন পুলিশের 
ডেপুটি স্ুপারিপ্টেণ্ড্ট, একজন ইন্ষাপেক্টর, বিশজন হেড 
কন্স্েবল ও ছয়শত কনস্টেবল মোতায়েন করিতে 
হইয়াছিল; ইহাতে মাসে ২১১৭৭০ টাকা খরচ হইয়াছে । এই 
বিপুল অর্থব্যয় করিয়া খাকসাঁরদেরবতটুকু দমন করা হইয়াছে 
তাহা কতদিন স্থায়ী হইবে জান! নাই ; অথচ খ্বরিস্্ দেশের 
অতগুলা! টাকা খামকাই ব্যয়িত হইল! ইহার জবাবদিহি 
কে করিবে? 


লুুস্মাল্রী কুন্িজ্ড। মিজ্র-- 


কুমারী কবিতা মিত্র বারাকপুরনিবাসী শ্রীধৃত 
কালীপদ মিত্র মহাশয়ের কন্তা। ইনি অতি অল্লধাসে 





*ঠিউিৎ ৬১ 





রা | ঘ 
রি হি রঙ 





[ ২৮শ বর্ব--২য় খণ্ড -ওয় সংখ্যা 





অপূর্ধব নৃত্য প্রদর্শন করিয়৷ নানা স্থানে প্রশংসা লাভ তাহা সব্বেও ভারতীয় কাগজশিল্পের সম্মুখে গ্রচুর সুযোগ 


করিয়াছেন। 

জ্ীস্বাম্ম ভহক্ন সাজা | 
আমেরিকার কলছিয়া বিশ্ববিষ্ঠালয় হইতে অন্ধদিগকে 

শিক্ষার্দানপদ্ধতি শিক্ষা করিয়া শ্রীমান অমল সাহা সম্প্রতি 





জাপান, চীন ও ব্রহ্ষদেশ হইয়া কলিকাতায় প্রত্যাবর্তন 
করিয়াছেন। তিনি ভারতে অন্ধদের চিকিৎসাদান বিষয়ে 
অগ্রনী পরলোকগত রেভাঃ এল-বি-সাহার পৌত্র । অমগের 
বয়স মাত্র ২৪ বসর। তিনি এদেশে অন্ধদের শিক্ষাানে 
আতনিয়োগ করিবেন। 


ভ্ঞান্সভীন্ম ক্ষাঙ্গভ্ম্শিল্র-- 


গত বৎসর ইউরোপীয় যুদ্ধের জন্ত বিদেশী কাগজ এদেশে 


খুব কম আমদানি হওয়ায় ভারতীয় কাগজের কলগুলিতে 
কাগজের উৎপাদন বৃদ্ধি পাইয়াছে। আগের বৎসর এই 
উৎপাদনের পরিমাশ ছিল ঘে স্থানে ১* লক্ষ ৭৬ হাজার 
দর, আলোচ্য বর্ষে সেই স্থানে তাহা ১১ লক্ষ ৮৪ হাজার 
হরে দাড়াইিয়াছে। নরওয়ে ও ন্থুইডেন প্রভৃতি দেশ 
হইতে কাঁপিজের আমদানি বন্ধ হইবার ফলে বর্তমানে 
বিদেসী প্রতিযোগিতা হইতে ভারতীয় কাগঞ-শিল্প অনেকটা 


্রস্থতেয় উপাদানগুলিরও দায় বাঁড়িয়া গিয়াছে বটে, কিন্ত 


বিষ্মান। আলোচ্য বৎসরে তারতে মোট ১৩টি কাগজের 
কলের জন্ত ২২ লক্ষ টাকার ২ লক্ষ ৩৪ হাজার হনার কাঠের 
মণ্ড আমদানি হয়। আগের বৎসরে তাহার মূল্য ও পরিমাণ 
ছিল যথাক্রমে ২৬ লক্ষ টাকা এবং ২ লক্ষ ৭৭ হাজার 
হন্দর। এ বংসর নরওয়ে ও সুইডেন হইতে মোট ১ লক্ষ 
৫২ হাজার হন্দর এবং যুক্তরাষ্ত্ী হইতে ৭১ হাজার হন্দর 
কাষ্ঠের মণ্ড আমদানি হয়। তাঁর আগের - বৎসর উক্ত 
দেশগুলি হইতে যথাক্রমে ১ লক্ষ ৪* হাঁজার হন্দর এবং ১ 
লক্ষ ২১ হাজার হন্দর মণ্ড আমদানি হইয়াছিল । বাকী 
অংশ ফিনল্যাও হইতে আমদানি হয়। আলোচ্য বখসরে 
কাগজ ও পোস্টবোর্ডের আমদানির পরিমাণ আগের বৎসরের 
৩১ লক্ষ হন্দর হইতে কমিয়। ২৭ লক্ষ ৯৯ হাজার হন্দরে 
দাড়াইয়াছে। কিন্তু কাগজের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় তাহার 
মূল্যের পরিমাণ ৩ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা হইতে ৩ কোটি 
৪৬ লক্ষ টাকায় বৃদ্ধি পাইয়াছে। 
হটি্পাম্চত্ক্র ্কাম্পও০৩ু-- 

জলপাইগুড়ির খ্যাতনামা উকীল পরম ধাশ্মিক ঈশানচন্দ্ 
দাশগুপ্ত লহাশয় সম্প্রতি এক শত বৎসর বয়সে পরলোক- 
গমন করিয়াছেন । তিনি প্রিদ্নিপাল ডাঃ পি-কে-রায়+ সার 





ঈশানচতর দাশ 
রক্ষা পাইন্াছে। তবে কাগজের -মূল্যেক্ মহিত কাগজ কে-পি-গুণু শ্রস্ভৃতির সহপাঠী ছিলেন। প্রথম আীবনে 


শিক্ষকতা আর্ক করিয়া পরে ১৯৮৮৪ সাল হইতে কিনি 


িন”-১০৬৭ ] | 


লপাইগুড়িতে ওকালতী করিয়াছিলেন । বিক্রমপুর জেলার 
ব্্গাওয়ে তাহার বাসস্থান ছিল। তাহার পুভ্রগণও 
কলেই কৃতী | বঙ্গীয় ব্যবস্থা পরিষদের কংগ্রেসী সদস্য 
যাতনামা৷ কংগ্রেসকর্মী শ্রীযুত খগেন্ত্রনাথ দাশগুপ্ত তাহার 
ন্যতম পুত্র । 


শঞ্ডিষ্ভ সঞুসুদ্ন্ন ভট্টীজ্গাশ্ব্য_ 


২৪ পরগণ! বারাকপুর তালপুকুরনিবাসী খ্যাতনামা 
গত মধুহুদন ভট্টাচার্য্য মহাশয় সম্প্রতি ৯৮ বৎসর বয়সে 
পরলোকগমন করিয়াছেন। তিনি বহু্দিন ষাঁবৎ সরকারী 
শাকরীর পর অবসর গ্রহণ করিয়াছিলেন এবং শেষ জীবনে 
টাল প্রতিষ্ঠা করিয়া সংস্কৃত শিক্ষার প্রচারে ব্রতী 





মধুহদন ভটাচার্যয 


হইয়াঁছিলেন। বাঙ্গালা দেশের সর্ব তাহার বু কৃতী 
ছাত্র বর্তমান । 


শল্পন্লোক্ষে বাসী শ্রপব্বাননকভলী- 
“ভারত সেবাশ্রম বজ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা ত্বামী প্রণবানদদজীর 
মেহরক্ষ! করার সংবাদে রাক্গালী মাত্রই হুঃখিত হইবেন। 


সানি 


৮৮০০০ 


তাহার গাহস্থ্যাশ্রমে নাম ছল বনোদাবহারী দাস, ফরিদপুর 
জেলার .বাঁজিৎপুরে তাহার জন্ম হয়। গুথম যৌবনে তিনি 





স্বাম। অশবাপপা 


বাঁজিৎপুর ষড়যন্ত্র মামলায় লিপ্ত হইয়! পড়েন, পরে সন্ন্যাস 
জীবন গ্রহণ করেন; কিন্তু সন্ন্যাসীর নীরব তপস্তা! তাহার 
মনে স্থায়ীভাবে বাসা বাঁধিতে পারে নাই; তাই তিনি 
ভারত সেবাশ্রম মঙ্ঘ, স্থাপন করিয়া তাহাকে বিশ বৎসরের 
মধ্যে বাঙ্গাল! ও বাঙ্গালার বাহিরে এক বিরাট প্রতিষ্ঠানরূপে 
গড়িয়া তুলিয়াছিলেন। তাহার সেবা, ত্যাগ, নিষ্ঠা ও 
অক্লান্ত পরিশ্রমেই ইহা সম্ভব হইয়াছে । বিভিন্ন তীরস্থানে 
ধর্মশীলা নির্দীণ করিয়া স্থামীতী অসংখ্য তীর্থকামীর 
অশেষ উপকার করিয়। গিয়াছেন। তাহার এই অকাল- 
বিয়োগে বাঙ্গালার হিন্দুর একজন প্রকৃত কর্মী সন্ন্যাসীকে . 
হারাইল। | 


লাজ্চা্লাক্স সোজ্কাঙগ্গেডিও মিল 


একখানি বৃহদাকার পুস্তকে সকল শিল্পের সাধারণ 
পরিচয় থাকা অপেক্ষা এক একটা শিল্প সম্বন্ধে সকল 
জাতব্য বিষয় সন্নিবেশিত করিয়া অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র আকারে 
কয়েকখানি পুস্তক. লিখিত হইলে শিল্পের প্রসারের নেক 


বটি 


ান্রক্ন্ন্য 


[২৮শ বধ--২য় খ৩--ওয় দখ্যা 


সুবিধা হইয়। থাকে । ইহাতে বিভিন্ন পুস্তকের মূল্য হাঁস জ্বীসুভ ছিগগন্রল্ ুড্রৌম্পাপ্্যা- 


পায় এবং যাহার যে খানি প্রয়োজন তাহা ক্রয় করিয়া 
পাঠ করিলেই উদ্দেশ্য সিদ্ধ হইয়। থাকে। বাঙ্গালা সরকার 
হইতে ইতোপূর্বে বাঁঙ্গালায় কার্পাস শিল্পের উপর 
একখানি পুস্তিকা বাঁজাল৷ গভর্ণদেপ্টেযর শিল্প বিভাগের 
শ্রীমুকুল গরপ্ত কর্তৃক লিখিত হইয়! প্রকাশিত হুইয়াছে। 
আমন যতদুর জানি তাহা! সাধারণের নিকট বিশেষ 
সমাদর লাভ করিয়াছে । বর্তমানে বাঙ্গালা মোজা 
গেঞ্জি সংক্রান্ত ব্যবস! সম্বন্ধে যে পুস্তিকা প্রকাশিত হইয়াছে 
তাহা বহু তথ্যে পরিপূর্ণ। পুস্তিকা পাঠ হইতে উক্ত 
শিল্পের নানা দিক অবগত হইয়া কোনও নূতন ব্যবসায়ী 
কার্যে প্রবৃত্ত হইবেন কি না তাহা বুঝিয়া লইতে পারিবেন। 
বাঙ্গালায় ৩১ লক্ষ টাকা মূলধনে ১২৫টী মিল চলিতেছে, 
তাহাতে কম বেশ ৪৫০০ লোক উপজীবিকা অর্জন করে। 
ইহা ছাড়া কুটারশিল্প হিসাবে প্রস্তত দ্রব্যাদি মিলিয়া প্রায় 
৬০ লক্ষ টাকার মত মাল প্রতি বংসরে উৎপাদিত হয়। 
১৯৩২ সালে স্থাপিত রক্ষণগুক্ক দ্বারা জাপানী প্রতিদ্বন্বিতার 
হাত হইভে শিল্পটীকে রক্ষা করা হয় এবং ভারতবর্ষ 
বিশেষতঃ বাঙ্গালায় অনেকগুলি কারখানা স্থাপিত হয়। 
এখন স্বদেশী মিলগুলির মধ্যে. ভীষণ প্রতিদ্ন্দিতা দেখা 
দিয়াছে এবং শিল্পে প্রভৃত ক্ষতি হইতেছে। মিল-মালিকরা 
সজ্ববন্ধ হইয়া ইহার প্রতিকারের জঙ্ঠ সচেষ্ট হইয়াছেন। 
বাঙ্গালার শিল্প সম্বন্ধে সম্যক জ্ঞান লাভ করিতে হইলে 





গঙ্গাসাগ্রর মেলার সেয়াকার্যে রত কলিকাতা কারমাইকেল 
জাপানের অবস্থা+ জাত হওয়] প্রয়োজন এই পুস্তিকায় 
তাহাও সুবিষ্তারে আলোচিত হওয়ার বিশেষ হুবিধা হইয়াছে। 


কলিকাতা বিশ্ববিষ্ভালয়ের কৃতী ছাত্র শ্রীমান দিগম্বর 
চট্টোপাধ্যায় এম-এস-সি সম্প্রতি লগ্ুনস্থ পলিটেকনিক 





দিগন্যর চট্টোপাধ্যায় 
কলেজ হইতে “সাউও এঞ্জিনিয়ারিং, বিদ্যায় ভিপ্লোম! প্রাপ্ত 
হইয়াছেন। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রেরিত হইয়া 
যুদ্ধের সময় নানা! অন্ুবিধা সত্বেও তিনি লগ্ুনে থাকিয়া 


বিগ্যাশিক্ষা করিতেছেন। জন্প্রতি তাহাকে বৃটাশ 
কিনেম্যাটোগ্রাফিক সোঁসাইটার সদস্য করা হুইয়াছে। 
ইনি দমদম কাদিছাটী নিবাসী গ্রযুত শাস্তিনাথ চট্টোপাধ্যায়ের 
পুর । আমরা ইহার জীবনে সাফল্য কামনা করি। 


আম্মযনিকি শ্পিশক্ত। বিকল ও স্নিন্েতেল্ল 


সি্ষাত্-_. 


মাধ্যমিক শিক্ষণ বিল বাঙ্গালার প্রতিক্রিয়াণীল মন্ত্রিমগুলীর 
সাম্প্রদায়িক ভেদবুদ্ধির জলস্ত দৃষ্টাত্ত বলিয়! দেশের সকল 
সম্প্রদায়ের বুদ্ধিমান ব্যক্তিমাত্রই মনে করিয়! থাকেন। 
সম্প্রতি এই বিল সম্বন্ধে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ হইতে 
যে রিপোর্ট তৈয়ারি হইয়াছিল বহু ভোটে সেই রিপোর্ট সিনেট 
সভায় গৃহীত হইয়াছে । সরকারের পক্ষ হইতে এই বিরুত্ধ- 
বলিয়া তারহ্থরে ঘোষণা করা হইলেও সরকার পক্ষের সকল 


ফার্ডীন__১৩৪৭ ] 


তল খালা ব্গালা বালা ব্হলালা গালা ব্লক্ষপ স্পা স্পা বাচা স্পা 


চেষ্টা ব্যর্থ হইয়াছে । সিনেট সভার ভোটের তালিকা 
দেখিলেই বুঝা যাইবে যে হিন্দু-মুসলমান ও খৃষ্টান নির্বিশেষে 
সকল ম্বাধীনমনা চিন্তাণিল ব্যক্তিমাত্রই রিপোর্ট সমর্থন 
করিয়া বিলের বিরোধিতা করিয়াছেন। জনকয়েক 
শাস্তিকামী ব্যক্তি নিরপেক্ষ ছিলেন এবং ষে একুশ জন 
রিপোর্টের বিরোধিতা! করিয়াছেন তাহার! সরকারী কর্মচারী, 
লীগ সদন্য বা লীগদ্লের সমর্থক ॥ খানবাহাঁছুর তসন্দক 
আহমেদ, অধ্যাপক এম্‌ জেড সিদ্দিকী, এস্‌ ওয়াজেদ আলী 
প্রভৃতি মুসলিম প্রধানগণ লীগদলের বিরোধিতা সত্বেও ম্বাধীন- 
চিত্তের পরিচয় দিয়া জনসাধারণের ধন্যবাদার্থ হইয়াছেন । 





সরদ্বতী ইন্ট্িটিউসনের সরম্বতী প্রতিমা-_ফটো--্রপান্না সেন 


কিন্তু আমরা শ্রীযুক্ত অপূর্ববকুমার চন্দের আচরণে অবাক হইয়া 
গিয়াছি। তিনি যে শুধু রিপোর্টের বিরোধিতাই করিয়াছেন 
তাহা নয়, তিনি যে ভাবে ডক্টর জেস্কিম্দের সমর্থন করিয়াছেন 
তাহাতে তাহার বুদ্ধি, বিদ্যা ও সংস্কৃতির উপর সন্দেহ হওয়া! 
অন্বাভাবিক নহে। সে যাহাই হোক, সিনেটের স্তায় শিক্ষা 
সম্পর্কে অভিজ্ঞন্দের দ্বারা গঠিত সভাঁও যে বিলের বিরুদ্ধে 


অভিমত প্রকাঁশ করিয়াছেন তাহা! নিছক রাজনৈতিক, 


স্বার্থপরতা প্রণোদিত হিচ্ুদের আন্দোলন? নয়। আশা! করি, 


১াসস্সিশ্ী 





০০০ 
ব্যস্ত ব্য -স্হস্থি স্ন্যা কা 


বাঙ্গালার মন্ত্রিমগুলীর মনে সে বিষয়ে আর কোন সন্দেহ 
থাকিবে না। অতঃপর তাহাদের চৈতন্তোঁদয় হইবে বলিয়া 
কি আমরা আশা করিতে পারি না? 





টাল! ম্পোর্টিংক্লাবের সরম্থতী প্রতিমা--ফটো-_সাষ্টার গুপলু 
সল্রলোন্কে শভিিসা তী- 


নলডাঙ্গা! রাজপরিবারের কনা ও হেতমপুররাজের 
দৌহিত্রী কলিকাতার খ্যাতনামা এঞ্জিনিয়ার মিঃ এস, 
সি, চট্টোপাধ্যায়ের পত্রী প্রতিমা! দেবী গত ১৮ই পৌষ 





৪৬5 এরাবািজ্তর্হ | ২৮শ বর্-_২র খণ্ড ওয় সংখ্যা 


পরলোকগমন করিয়াছেন জানিয়৷ আমরা ব্ধিত হুইলাম। কয়েদীর! অনশন ধর্মঘট করেন। সুভাষচন্ত্র ইহাদের প্রতি 
তাহার সাহিত্য ও শিল্পের প্রতি বিশেষ অনুরাগ ছিল এবং সহানুভূতি দেখাইতে গিয়া নিজে অনশন অবলম্বন করেন 


দানের জন্ত তিনি বহজনপরিচিত ছিলেন। এবং দিন কয়েক বাদে অনুস্থ অবস্থায় মুভিলাভ করিয়! 
চিকিৎসিত হুইতেছিলেন। ইতিমধ্যে ভারতরক্ষা আইনের 
শ্রীসান্ন কপতেসস্শনুসান্ল বন বলে তীহার বিরুদ্ধে এক মাঁমল! দায়ের হয়। কিন্ত 


শৈলেশকুমার দানাপুর ক্যাণ্টনমেপ্টনিবাসী রায় সাহেব 
প্রবোধচন্ত্র বন্ত্রর দ্বিতীয় পুত্র। ইনি এবার পাটনা 





শৈলেশকুমার বন্ গ্যুক্ত সুভাষচন্দ্র বনু 
বিশ্ববিষ্ঠালয়ের বি-এ পরীক্ষায় অর্থনীতির অনার্সে প্রথম অসুস্থতার জন্ত আদালতে হাজির হইতে ন| পারিয়া তিনি 
হইয়াছেন। শ্রীমানের বয়স মাত্র ১৮ বৎসর । মুক্ত ছিলেন। এ দিন সহসা তাহাকে আর ত্বাহার থরে 
দেখা গেল না । এক বন্ত্রে তিনি গৃহত্যাগ করিয়াছেন। 
জি / কেহ বলেন তিনি সন্গ্যাসগ্রহণ করিয়াছেন, আর কেহ বা 


গত ১৩ই মাধ রবিবার শ্রীযূত সুভাষচন্দ্র বন্নর আঁকম্মিক বলেন অন্ত কিছু । সম্ভব অসম্ভব জল্লনাকল্পনার আর সীমা 
নিরুদ্দেশ যাত্রায় বাঙ্গাঁলাঁর নরনারী কিংকর্তব্যবিমূঢ় হইয়া .নাই। দেশবাসীমাত্রই এই ঘটনায় মর্াহত। তিনি 
পড়িয়াছে। কিছুদিন আগে প্রেসিডেম্মী জেলের কর্তৃপক্ষ । সুস্থ দেহে পুনরায় ফিরিয়া আসিয়া আরন্ধ কার্য গ্রহণ করুন 
রাজনৈতিক কয়েদীদের সঙ্গত দাবী উপেক্ষা করায় | শরীভগবানের নিকট ইহাই আমরা পরর্ঘন| করি। 









:.. ২ 1: 10:54. 


সস 
& রর ] 















£€5ন্দ রা? 


, সভাপতি-মআচাদা প্র 


ধক উৎসব 


তে 
। 


ন্ট 


৩ 


লা 


ডি 
ডি 

৭ 
15 
বা 

রর 
7 


“দপ' লা 


দি বাঙ্গালীদের 


বাস্তালেোরে প্রবানী 





7 সম্মিলন-+১৩৪৭, সভাপতি-_-অধ্যাপক প্রিয়র প্রন সেন 


ঙ 
সস 


বঙ্গ বঙ্গ সাহি 


নাঁগল 


£ 


ভ্ডাল্রভন্ব্ 


হি 


হু 


[ 


হিরো ররিনা ডে অঃ নারির টে 





৬৮ 2 ৭৯০ শীট শি পপ পপর ০ এ ৮৬ াপীপিপশাপাা পাশা াসপাীসপিলসি 
্ 


» তাত 








শ্রীক্ষেত্রনাথ বায় 


ভাইসরয়ের একাদশ-_-৩০২ ও ১৮৯ (৭ উইকেট) 

বাঙল। গভর্ণরের একাদদশ-__৩৬৪ ও ১২৩ 

ভাইসরয়ের একাদশ ৩ উইকেটে বিজধী হযেছে । 

ইডেন উদ্যানে খেলা সুরু হযেছে । আবহাঁওযা বেশ 
চমৎকার, দর্শক সংখ্যাও খেলা উপযুক্ত । দর্শকবা একটু 
চতাঁশ হলেন, পাতৌদীব নবাব হাটুর আঘাতেব ফলে খেলতে 
পারবেন না বলে । তাব স্থানে বাঙ্গলাব গভর্ণবের একাদশের 
ক্যাপ্টেন হযেছেন মেজর নাইডু। ইংলগ্ডের ভৃতপূর্ব টেষ্ট 
খেলোযাড পাঁতৌদী ভারতবর্ষে প্রথম শ্রেণীর ম্যাচে আঁজ 
পর্য্যন্ত অবতীর্ণ হননি এব" ভবিম্ততে কখনও হবেন কিনা 
সন্দেহ। ইতিপূর্বে যতবাব তিনি বড বড় ম্যাচে খেলবার 
জন্য নিমন্ত্রিত হয়েছেন প্রতিবারই শারীবিক অসুস্থতা জন্ত 
তা রক্ষা করতে পারেননি । 

নাইডু টসে জিতে মান্তক ও গাঙ্গুলীকে ব্যাট করতে 
পাঁঠালেন। উইকেটের অবস্থা বেশ ভাল । বল কচ্ছেন নিসাব 
ও অমবনাথ। গাঙ্গুলী খুব সতর্কতা অবলম্বন ক'বে 


খেলছেন। মাম্তকেব খেলা খুব নির্ভীক; তার দৃষ্টি ক্রুত 
বান তোলার দিকে । প্রথম ওভাবেই তিনি অমরনাথকে 
ছুবাব বাউগ্ডারীতে পাঠিষেছেন। নিসারের ২য ওভাবে 
একটা ক্যাচ দিযেছিলেন, আঁজমৎ নিতে পারলেন না। ৪ 
মিনিট খেলে তাঁব নিজন্ব ৫০ বান পূর্ণ হলো । 

নিসারকে বদলে আমীর এলাহিকে আনা হযেছে। 
তাঁব বলে মাস্তক আজমতেব হাঁতে ধবা দিলেন, নিজস্ব ৫৯ 
বাঁনেৰ মাথাঁষ। পাঁলিষ! গাঙ্কুলীব সঙ্গে যোগ দিলেন। 
এক ঘণ্টা দলেব শত বান পুর্ণ হলো । বান বেশ ভ্রুত 
উঠছে। গাঙ্ুলী পিটিযে খেলতে স্থক করেছেন কিন্তু ২৮ 
বানেব মাথায নিপার তাকে স্্রিপে লুফলেন। মেজর নাইড় 
এসেই মানকদকে বাঁউগাারীব ওপর পাঠিষেছেন। তবে 
তিনি বেণাক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি ; মিড-অফে 
মাঁনকদের বলেই নিসাবেব হাতে আটকে গেলেন। নির্শল 
কোন বান কবাব আগেই মানকদ তাকে বোন্ড ক”রলেন। 
মাঁনকদ আবার পরেব ওভাঁবেই পাঁলিযাঁর উইকেট পেলেন) 





৪০২২ 


তার বল মারাত্মক হচ্ছে। ১৩৫ রাঁনে পাঁচটা উইকেট 
পড়ে গেল। ভাল ব্যাটসমাঁন সকলেই আউট হ'য়ে গেছেন। 
নাইড়ু ব্যানাঞ্জিকে পাঁঠালেন। ব্যানার্জির ওপর তার 





জাহাঙ্গীর খা 


অমরনাধ 


ষথেষ্ট আশ্থ।। ভীঙ্গনের মুখে টামকে রক্ষা করে 
ব্যানার্জি এবারও সে আস্থা অক্ষু রেখেছেন। দিলওয়াঁর 
ও ব্যানার্জি খেলছেন । রানসংখা বেশ উঠছে। 
আমীর বেশী রান দেওয়ায় তাঁকে বদলে দেওয়া হলো! । 
লাঞ্চের সময় ৫ উইকেটে রান উঠেছে ১৯০ । ২২ রানের 
মাথায় অমরনাঁথ, দিলওয়ার ও ব্যানার্ডজির জুটি ভাঙলেন । 
তাদের ষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৮৫ রান ওঠে । দিলওয়ার 
৩১ রান ক'রে আউট হলেন; চার ছিলো ৬টা। দলের 
আর ২৪ রান যোগ হবার পর ব্যানাজ্জি আমীরের বলে 
ইাম্পড় হ'লেন। তীর নিজশ্ব ৬২ রাঁন করতে ৭২ মিনিট 
সময় লাগে। দলের সন্কট মুহূর্তে এসে তিনি উইকেটের 
চারিদিকে নির্ভীকভাবে পিটিয়ে খেলে দলের সর্বোচ্চ রান 
করেন; তীর খেলায় বাউগ্ডারী ছিলো ৮টা। লংফিল্ড ১৮ 
রান ক'রে আউট হ/য়েছেন। জাহাঙ্গীর খা ও রামসিং মিলে 
আবার ক্রত রান তুলছেন । চায়ের সময় ৮ উইকেটে রানসংখ্যা 
উঠেছে ৩৩৭ । জাহার্গীর বোলারদের অত্যন্ত তাঁচ্ছিল্যের সঙ্গে 
পিটিয়ে খেলছেন এবং মাত্র ৩১ মিনিটে.নিজন্থ ৫ রান করে- 
ছেন!লাষসিংও সহযোগির নির্তীকতা দেখে গ্রুতরানি তুলছেন? 
চায়ের পর বখন থেলা সুরু হ'ল মহারাজ! নিজে বল 
ফপ্রতে এলেন । ৩৫* রানের মাথায় কোঁমরুদ্দিন আঁমীয়ের 
বলে জাহাজীরকে লুফলেন। বাঁজলা-গতর্ণর দলের ইনিংস 
শেষ হাল ০৬৪ রালে। রামপিংয়ের ৪৫ উল্লেখযোগা । 


স্ঞাব্রভল্শ্য 


[ ২৮শ বর্ব_ংয় খণ্ড--শয় সংখ্যা 


তাইসরয়ের একাদশের ব্যাটিং জু করলেন 
হিন্দেলকার ও মানকদ। হিন্দেলকাঁর লংফিন্ডকে ছুবার 
বাউগ্ডারীতে পাঠিয়ে তাঁরই বলে উইকেটের পিছনে ধরা 
দিলেন। মারওয়াৎ মাঁনকদের সঙ্গে যোগ দিলেন। ১৮ 
রানের মাথায় ব্যানাজ্জি মারওয়াতের উইকেট নিলেন। 
সেদিনের মত খেলা শেষ হ'ল। 

দ্বিতীয় দিনের থেলা সুরু হল। আগের দিনের নট- 
আউট ব্যাটসম্যান মানকদ ও কোমরুদ্দিন খেলছেন । 
৪৪ রানের মাথায় লংফিন্ড আশ্চর্য্যভাঁবে মাঁনকর্দকে এক 
হাঁতে লুফলেন ; ক্যাচটি নেওয়া! প্রায় অসম্ভব ছিলে|। 
অমরনাঁথ এসে খেলায় যোগ দিলেন। রান বেশ দ্রুত 
উঠতে লাগলো । ৮* রান ওঠাঁর পর পালিয়াঁর স্থানে 
মেজর নাইডু নিজে বল করতে এলেন। 

কোঁমরুদ্দিন জাহাঙ্গীরের বলে দিলওয়ারের হাতে ধর! 
দিলেন। তিনি ৬৫ মিনিট খেলে রান তুলেছেন ৪২ ; চাঁর ছিলো 
৫টা। তাঁর খেল! বেশ দর্শনীয়। শত রান পুর্ণ হবার পর 
জাহাঙ্গীরের স্থানে ব্যানাজ্জি বল করতে এলেন। 
ব্যানাঙ্জির বল অত্যন্ত “ফাষ্ট” হচ্ছে, অপর দিকে রামসিং 
“স্লো” বল দিচ্ছেন । ব্যানাজ্জির বাম্পার” ব্যাটসম্যানকে 
ছাঁড়িয়ে যাচ্ছে । অমরনাথ কিন্তু বেশ স্বচ্ছন্দে খেলছেন। 
নাইডুর ঘন ঘন বোলার পরিবর্তনেও কোন ফল হচ্ছে না। 
লাঞ্চের সময় ৪ উইকেটে ১২৯ রান উঠেছে। 

৯৫ মিনিট খেলে অমরনাথ নিজস্ব ৫০ রান পূর্ণ 
ক'রলেন। তিনি খুব দীয়িত্ব নিয়ে খেলছেন। ১৯১ 
রানের ম।থায় মেজর খুব তৎপরতার সঙ্গে নাজির আলিকে 
রান আউট ক*্রলেন। এইবার মহারাজ! নিজে এলেন, 





ছিনেলকার 


আর প্রথম ওভারেই বাঁমসিংকে তিনবার বাঁউগাঁরীতে 
পাঁঠালেন। ব্যানাক্জির বাম্পার়ে তিনি অন্বস্তি বোধ 


দিলওয়ার হোসেন 


ফান্তন---১৩৪৭ ] ধেজনাঞ্ুকশ। ৪০৩ 


করছিলেন। রাঁমসিংই শেষ পর্যন্ত তাঁকে ঠকালেন তাঁর তিনি যাবার পরই আজমৎ পালিয়ার হাতে ধর! দিলেন। 
নিজদ্ব ২৪ রানের মাঁথাঁয়। দলের রান সংখ্যায় আর মাত্র এই ম্যাচে তার রাঁনই সর্কেণচ্চ। দেড় ঘণ্টার ওপর নিভূল 
দুরান যোগ হবার পর অমরনাঁথ জাহাঙ্গীরের বলে ও নির্ভীক ভাবে ব্যাট ক'রে আজামাঁৎ নিজন্ব ৬৫ রান ': 
ক'রেছেন। ৩০২ রানে ভাইসরয়ের একাঁদলের ইনিংস 
শেষ হয়েছে। সময়াভাবে খেলাও সেদিনের মত 
শেষ হ'ল। 
দ্বিতীয় দিনের খেলায় কতকগুলি দর্শক বার বার 
নাইডুকে বোলার পরিবর্তনের জন্য চীৎকার ক'রেছেন। 
জাহাঙ্গীর তাঁদের দিকে বল ছূ'ড়ে এই গোলমাল থামাবার 
চেষ্টা ক'রে বিফল হননি। দর্শকরা! যদি অন্তায় করে 
থাকেন তীহলে জীহাজীবের কজও গ্রশংসনীষ নয়। 
নাইডুরও মত তীরও এটাকে উপেক্ষা করলেই ভাল 
হ'ত। নাইডু কে ভট্টাচা্যকে আরও বেশী ওভার বল না 
দেওয়ায় অনেকে খেলার মাঠে ও বাইরে নাইড়ুর বিরুদ্ধ 
সমালোচনা করেছেন গুনেছি। তাঁদের মতে ভট্টাচার্যের 
পাঁতিয়ালার মহারাজ ওপর নাকি অবিচার করা হ,য়েছে। ক্রিকেটে এই 
দিলওয়ারের হাতে ধরা দিলেন। অমরনাথকে ইতিপূর্বে অবিচার কথার কৌন মূল্য নেই। টীমের জন্য ব্যক্তিগত 
এতবেশী সতর্কতার সঙ্গে খেলতে দেখা যাঁয়নি। তবে খুব ভাঁবে ত্যাগ শ্বীকার এখানে করতেই হবে। টীমে যখন 
দায়িত্ব নিয়ে খেললেও তার খেলীর স্বচ্ছন্দগতি ক্ষুন্ন হয়নি। একই টাইপের তিনজন বৌলার রয়েছেন তখন ক্যাপ্টেনের 
তিনি বিভিন্ন রকম দর্শনীয় মার দেখিয়ে সকলকে মুগ্ধ পক্ষে তাদের সকলের প্রতি সমান বিচীর করা৷ একটু 
ক/রেছেন। ১৮৫ রানেসাতটা ৃ ৃ নি নি | 
ভাল ভাল উইকেট চ”লে 
গিয়েছে । ব্যাট কচ্ছেন উদীয়- 
মান খেলোয়াড় আ জা মাৎ 
হায়াৎ ও রাম! বলীন্দর। 
২১২ মিনিটে ২০ রান 





উঠলো। নাইড়ু নূতন বল 4 
নিতে দেরী কচ্ছেন দেখে 
রর্শক বিশেষ চাঞ্চল্য প্রকাশ টু 
ক'রলেন। ৫৫ রান তুলে ৫ 
অষ্টম উইকেট ভুটি ভালো; টু 


বলীন্দর আউট হলেন। ২৫* 
রান ওঠবার পর নাইড় 
ব্যানাজ্জিকে নৃতন বল দিলেন। মেজর. নাইডুর একাদশ ও মোহনবাগান ক্লাধের সম্মিলিত খেলোর়াড়বৃন্দ 

২৯৯ রানের মাথায় হায়াৎ--এলাহী জুটি ভাঙ্গলো। এঁদেরজুটি শক্ত। তাছাড়া নাইডু যে শ্লো বোলারদের উপর আক্রমণের 
স্নান তুলেছেন ৫₹৯। আমীর ২৯ রান ক'রে আউট হ'লেন। বেশীর ভাগ দারিত্ব দিয়েছিলেন তারা নিঃসন্দেহে 





সঃ 
০০ 
সিল 
টু 


শ০ 


ভ্চান্পতঞ্ন্ 


[ ২৮শ বর্ষ--২র খণ্ড--৩র সংখ্যা 





ভট্টাচার্যের ভুলনীয় ভাল বল ক*রেছেন। মনে পড়ে অস্ট্রেলিয়ার 
বিখ্যাত কাপ্টেন উডফুল তাঁর ক্রিকেটের বইতে এক 
গানে লিথেছেন--4 চিত 76215 050 12 21551 
119061) 2591050 5০00) £১001095 0080 01180010191 01 
4১050581090 510৬ 0০019150110 0595 (0181115 
11110107500 9৪5 1700 ০81150 91301) 6০ 0০৬1] ৪, 
51101210211 11 51005110111109- 01015 22050 108৬০ 
5651] ৪. 001006 65006115109 11) 1715 10176 800 
17017001690 021961১55৯৭ 01565 01100100055 9০801 
41050151121) 85 110 61৮০ 0102 00100100101 ০1 
050)0175018010/5 115 010৩০55) 270 766 ৮৮6 10910 
10 ৬0105 0£ 00101918170, অবশ্য তাই »লে আমরা 
বলছি নাঃ যে সেখানে ব্যারাকিং হয় না। ব্যারাকিং সব 


অমরনাঁথের বল খুব কার্য্যকরী হয়েছে ।, তিনি ১৪ ওভার 
বল দিয়ে ৩৭ রানে ওটে উইকেট পেয়েছেন। ক্যাচ না 
ফেললে তিনি আরও বেণী উইকেট পেতেন। 

হিন্দেলকোর ও মানকদ ভাইসরয়ের একাদশের ২য় 
ইনিংস সুরু ক'রলেন। আরম্ভ থাঁরাপ হয়নি। নাইড়ু 
কয়েকবার বেলার পরিবর্তন ক'রে কোন ফল পেলেন না। 
শেষে নিজে বল করাতে মানকদের উইকেট পেলেন। এর 
পর ভাঙ্গন সুরু হ'ল। কোমরুদ্ধিন ২, অমরনাঁথ ০ নাজির 
আলি ৭ ক'রে আউট হলেন। হিন্দেলকারও বেশীক্ষণ 
থাকতে পারলেন না । ৫টা উইকেট পড়ে গেল ৭৭ রানে। 
আজামাৎ হায়াৎ ও মহারাজা খেলার গতি ঘুরিয়ে দিলেন । 





রামকৃফ ইন্ট্িটিউটের উদ্ভোগে দিতিক গার্ডলদের সাত মাইল সাইকেল রেসে গুতিযোগিগণ ও উপস্থিত ব্যক্তিগণ 


দেশের দর্শকরাই ক'রে থাকেন। অষ্ট্রেলিয়া এবং ইংলণ্ডের 
দর্শকও, যেখানে শতাব্দী ধরে ক্রিকেট খেলা চলছে । 

তৃতীয় দিনের খেলা দারুণ উত্তেজনার সৃষ্টি করেছিলো! 
আঁর সে উত্তেজনা থেলার শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ছিলে! । 

৬২ রানে এগিয়ে থেকে নাইডু, মান্তক ও গাঙ্গুলীকে 
ব্যাট ক'রতে পাঠালেন। গভর্ণর একাদশের প্রথম ইনিংস 
মাত্র ১২৩ রানে শেষ হ'ল। এবারও ব্যানার্জি সর্ষধোচ্চ 
কান করেছেন ২৯1 সকলেই খুব কম সময়ের ভেতর ভ্রুত 
সান তোলার চেষ্টায় ছিলেন কিন্তু কেউও বিশেষ নফল হননি 


মহারাজ! খুব দ্রুত রান তুলছেন, আজামৎ খেলছেন খুব ধীরে 
ধীরে। মহারাজা! লংফিজ্ডের বলে নাইভুর হাতে ধা দিলেন। 
৭ উইকেট গেল ১২৪ রানে। এখনও গতর্ণরের এনক্াদশের 
জয়লাভের আশা রয়েছে। নাইড়ু বহ রকমভাবে লোভনীয় 
ব্ল দিয়েও আজামৎকে বিচলিত করতে পারলেন না। 
শেষপধ্যস্ত তিনি ৬১ রান ক'রে নট আউট রইলেন। 
ভাইসরয়ের একাদশ জয়ী হলেন ৩ উইকেটে। সমগ্র 
ম্যাচের তেতর ব্যাটিংয়ে কৃতিত্ব দেখিয়েছেন তরুণ খেলোয়াড় 
আজামাৎ হাঁয়া্ড অমরনাঁথ, এস ব্যানাঞ্জি। মাস্ক ও 


ফাল্ঠুদ--১৩৪৯ 4 


জাহালীর খা এবং বোলিংয়ে মেজর নাইভু, অমরনাথ ও 
মানকদ। তৃতীয় দিনের খেলায় মেজর একেবারে বিশ্রাম 
না নিয়ে দেড় ঘণ্টা ব্যাপী যেরূপ সুন্দর ভাবে বল ক'রে 
গেছেন ₹1 আমাদের বহুদিন মনে থাকবে। লং ফিল্ড ও 
রাম পিংয়ের বোলিংও প্রশংসনীয় । উইকেট কিপিংয়ে 
হিন্দলকার ও দিপওয়ার উভয়েই সমান কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। 
তবে দিলওয়ার বহুবার আম্পায়ারকে অহেতুক আবেদন 
জানিয়েছেন। এইখানে হিন্দলকার তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব বজায় 
রেখেছেন। গভর্ণরের একাদশের ফিল্ডিং উন্নততর 
আম্পায়ারিং সম্বন্ধে কোনরূপ সমালোচনা! কর! উচিত হবে 
ন! যদিও কয়েকটি বিচারে আমাদের যথেষ্ট সন্দেহ ছিলো। 


জ্ষেতশাঞুকন 
৮ ্ক্পাা্পক্পাস্কিপান্কিপা স্পা বগা স্কলার কাপ সকাল ব্চাপা বকা জালা বাতা বাবা বা 


শি 





ইনিংফ ও ১৬৮ রানে কাণী বিশ্ববিদ্যালয় দলকে শোচনীয় 
ভাবে পরাজিত করেছে। 

বোস্থাই বিশ্ববিষ্ালয়ের প্রথম ইনিংসের ব্যাটিংয়ে কৃতিত্ব 
দেখান এইচ অধিকারী ১২৯ রান ও আর এস কুপার 
১২৪ রান করে। এছাড়া সিন্ির নট আউট ৯২, এস 
সোহানীর ও ইউ চিগ্লার ৪৩ রাঁন উল্লেখযোগ্য । রঙ্গরাঁজ 
১১৪ রানে ৪১ গুরুদাচারী ১৮৮ রানে ৩ ও ফান-সালকার 
১১ রানে ১টি উইকেট লাভ করেন। 

কাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ইনিংস শেষ হয় ৭৪ রানে। 
জে ফানসালকার দলের সর্বোচ্চ ৬৬ রান করেন। এম 
রায়জী ৪৪ রানে ৫টা, ইউ চিপ্লা ৩৬ রানে ২টি উইকেট 





ঢাকুরিয়া 'জুনিয়ার ফোস' বিজয়ী কলিকাতা! বিশ্ববিস্ঞালয়ের "ডু" 


অবশ্য যে সব খেলোয়াড়র! মাঠে ছিলেন তারা এবং ব্যাটসমানরা 
নিজে এ সন্থন্ধে কিছু বলতে পারেন। তাদের মতে, অনেকেই 
আম্পায়ারিংয়ের ত্রুটির জন্ত তাদের ভেতর অনেকের লাভ 
ও ক্ষতি হ/য়েছে। 


ল্লোহিণ্টম বাল্িকস! ত্রিকেউ কাশ £ 


বোম্বাই বিশ্ববি্ভীলয়-_-৪৯২ 
কাশী বিশ্ববিষ্ভালয়--১৭৪ ও ১৫০ 


সবান্ুঃবিশ্ববিষ্ঠালয় রোহিণ্টন বারিয়া ক্রিকেট কাপ 
প্রতিঘোগিতায় ফাইনালে বোস্বাই বিশ্ববিষ্ঞালয় দল এক 


পান। কাশী দলের দ্বিতীয় ইনিংসে একমাত্র গুরুদাচারী ৬৬ 
রান ক'রে যা কিছু ব্যাটীংয়ে কৃতিত্বের পরিচয় দেন। 

এন কোলা ২৬ রানে ৪ এবং এস সিদ্ধি ৩২ রানে 
৪ উইকেট লাভ করেন। এইবার নিয়ে বোশ্বাই বিশ্ব- 
বিদ্যালয় দল উপধু্যপরি তিনবার উক্ত কাপ বিজয়ের 
সম্মান লাভ করলে। 


ল্ুুন্বিহাক্ ক্কাঞ্প স্রাইউন্মাক্ল $ 


কাষ্টমস-_২৫৮ ও ১১ (কৌন উইকেট'না হারিয়ে ) 
উপিক্যাল দ্কুল-_১৮৭ ও ৮* 


55 


কাষ্টমস ১০ উইকেটে ই্রপিক্যাল হ্কুল দলকে পরাক্জিত 
ক'রে কুচবিহাঁর কাপের ফাইনালে বিজয়ী হয়েছে। 

উপিক্যাল স্কুল দলের. উভয় ইপ্নিংসেই সন্তোষ গাঙ্গুলি 
দলের সর্ধবোচ্চ ৪৮ ও ৪৪ রান করেন। প্রথম ইনিংসে 
পি মুখাঁজির ৪০ রান উল্লেখযোগ্য । গাঙ্গুলির দ্বিতীয় 
ইনিংসের খেলায় বিজিত দলের যা কিছু গৌরব ছিল। 
গাঙ্গুলি সাতবার দড়ির ধারে বল পাঠিয়ে দলকে পরাজয়ের 
হাত থেকে রক্ষ! করবার চেষ্টা করেছিলেন । কিন্তু ছূর্ভাগ্য- 
ক্রমে তিনি রান আউট হ+য়ে যান। ট্রপিক্যাল স্কুলের প্রথম 
ইনিংসে কংকয়োষ্ট ২৯ রানে ৫টা উইকেট পান। কাষ্টমস 
দলের প্রথম ইনিংসে হার্ডেজনষ্টন উভয় দলের সর্বাপেক্ষা 


আমেরিকান টেনিস প্রতিযোগিতায় যে সব দর্শক মূল্য দিয়াও টিকিট সংগ্রহ করতে 
পারেননি সেই সব উৎসাহী ক্রীড়ামোদীর ভীড় ' 


বেশী ৮৩ রান করেন। একে দাস করেন ৬৩ রান। কে 


ভ্ঞান্ম কিনব 





[ ২৮শ বর্- _২র খণ্ড--ওয় সংগ্যা 


ইণ্টার কলেজ ক্রিকেট লীগের ফাইনালে বিদ্যাসাগর 
কলেজ ১০৭ রানে প্রেসিডেন্ি কলেজকে পরাজিত ক'রে 
লীগ চ্যাম্পিয়ানসীপ পেয়েছে । 

বিষ্তাসাগর কলেজের প্রথম ইনিংসে হিমাঁশু মুখার্জি 
উভয় দলের প্রথম ইনিংসের সর্বোচ্চ ৫* রান করেন। এস 
মুস্তাফির ৪৯ রান উল্লেখযোগ্য । 

ডি দাস ৪৪ রানে ৩ ও নির্্ল চ্যাটাজি ৬০ রানে 
৩ উইকেট পান। 

প্রেসিডেন্সির প্রথম ইনিংসে অধিক রান তুলেন এন 
চ্যাটাজি ৪৭। হিমাংশু মুখাঁজি উভয় দলের দ্বিতীয় ইনিংসৈও 


সর্বাধিক ৩২ রান করেন। 
জে দত্ত ১৩ রানে ৩ ও 


মুস্তাফি ২৩ রানে ৩টে উইকেট 
পান। 

প্রেসিডেমন্সির দ্বিতীয় 
ইনিংসে অনিল দত্ত ২৯ রানে 
৪ ও মুস্তাফি ২২ রানে ৪ 
উইকেট পেয়েছেন। 


আকভ্৪ন্বিশ্র- 


আব্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস 
প্রতিযোগিতা পাঞ্জাব বিশ্ব- 
বিদ্যালয়ের মাঠে শেষ হয়েছে । 
প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন বিশ্ব- 
বিচ্যালয় থেকে ছাত্রর! যোগ- 
দান করলেও প্রতিযোগিতাটি 
প্রথম শ্রেণীর হয়নি। আন্তঃ 
বিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টসে বহুদিন 
থেকেই পাঞ্জাব বিশ্ববিগ্ঠালয়ের 
ছাত্রদের যথে&ট খ্যাতি রয়ে 
গেছে। সুতরাং পাজাব বিশ্ব- 
বিষ্ভালয় যে বর্তমান ৰ্থসরেও 
নিজদের পূর্বণ অজিত সুনাম 
রক্ষা করতে সক্ষম হবে এ 
সম্বন্ধে ব্রীড়াঁমোদীদের কিছুমাত্র সন্দেহ হয়নি 1 আমরা কয়েক 





ভষ্টাচাধ্য ৮২ রানে পান ৪টা উইকেট । ট্রপিক্যালের বারই তাদেন্র প্রতিযোগিতায় প্রতিঘম্থিতা করতে দেখেছি। 
দ্বিতীয় ইনিংসে হজেসের বলই মারাত্মক হয়েছিল। হজৈম প্রতিযোগিতায় সাফল্য লাভ কর! ছাঁড়াও তাঁদের ছাত্রদের 


৩৬ রান দিয়ে উইকেট নিয়েছিলেন ৫টা। 


ইটা ক্লক ভ্রিক্কেউ লীগ £ 


বিস্যাসাগয কলোজ-_-১৭৬ ও ১৩৫ 
প্রেসিডেন্সি কলেজ--১০১ ও. ১৩ :: 


সুষ্ঠ দৈহিক গঠন এবং উদ্ভম যে ফোন বিশ্ববিষ্ভালয়ের 
ছাত্রদের অপেক্ষা উল্লেখযোগ্য | কিকাতি! বিশ্ববিষ্ভালয়ের 
সঙ্গে যতবার স্পোর্টস হয়েছে ততবারই তারা আমাদের 
ছাত্রদের বহু দূরত্ব পয়েণ্টে শোচনীয়ভাবে পরাজিত করেছে । 
উপযুক্ত শিক্ষকের অভাব, .ছাত্রদেন এবং বর্তৃপক্ষদেয় মধ্যে 


ফাঁক্উন--১৩৪৭ ] 
দলাদলি, নিরুৎসাহ এবং অমনোযোগীতাই যে এর কারণ 
সে বিষয়ে কোন সন্দেহের অবকাঁশ নেই। 

কিন্তু সবচেয়ে দুঃখের বিষয় ধারা ছাত্রদের ভাগ্য-নিয়ন্তর 
তারাই নিশ্চিতভাবে বসে আছেন। 
এ বৎসর পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বেশীর ভাগ বিষয়েই 
প্রথম স্থান অধিকার ক'রেছেন। মোট পয়েপ্টের ফলাফল £ 
(১) পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্ভালয় ১১৪ (২) লক্ষৌ ১৪ ও 
আলীগড় ১৪ (৩) পাঁটনা ১ পয়েন্ট । 


ইণ্টাল্প কলেজ ০স্পীউস £ 


ইন্টার কলেজের ২৮তম বাধিক খেলাধুলায় প্রেসিডেন্সি 
কলেজের ছাত্র আনন্দ মুখার্জি ৩৬ পয়েন্ট পেয়ে ব্যক্তিগত 
চ্যাম্পিয়ানসীপ লাভ করেছেন। প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন 
কলেজের ছাত্ররা যোগদান করেছিল । বিভিন্ন বিষয়ে স্থান 
লাভ করা ছাড়া আনন্দ মুখাঁজি লং জাম্প, হাই জাম্প ও 
পোলভল্টে প্রথম স্থান অধিকার করেন। 

কলেজ চ্যাম্পিয়ানসীপ-_সিটি কলেজ ( ৯৮ পয়েপ্টস ), 
(২) আশুতোষ কলেজ ( ৬* পয়েন্টস )। ৩) স্কটিশচার্চ 
কলেজ (৪৯ পয়েন্টস )। 


এন্লিস মার্ঞ্েলেন্র শল্লাভ্ক্জ £ 


তৃতপূর্বব ব্রিটিশ ইণ্টার স্াশানাল টেনিস খেলোয়াড় 
মিস্‌ মেরী হার্ডউইক সাতটা পেশাদারী খেলায় পরাজিত হয়ে 
সম্প্রতি আমেরিকান এবং উইন্বলডন চ্যাম্পিয়ান মিস্‌ এলিস 
মার্বেলকে ৬-৪১ ৪-৬১ ৬-২ গেমে পরাজিত ক'রেছেন। 
১৯৩৮ সালে উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ানসীপের . সেমি-ফাইনাল 
খেলায় মিস মার্যেল প্রথম পরাজিত হন মিস্‌ হেলেন জ্যাঁক- 














এলিম মার্বেল 


আনন মুখাঞজি 


বের কাছে। সেই থেকে তিনি কারও কাছে পরাজয় 
স্বীকার করেন নি'। 


পুলা 





৪৬৭ 





“হত স্ব বস” “আহ -. অন ব্-- সস্্ডাস্্ 


৮-৬১ ৮*৬ গেমে মিস মেরী হার্ডউইককে ম্যাডিসন স্কৌয়ারে 
গার্ডনে পরাজিত করেন । 
অআনে্ল্িকান লন্ম টেন্িস £ 


আমেরিকান লন টেনিস এসোসিয়েশন তাঁদের টেনিস 
খেলোয়াড়দের নামের একটি ক্রমপর্য্যায় তালিকা সরকারী 





ম্যাকনীন 


ভাবে প্রকাঁশ করেছেন৷ ভৌনান্ড ম্যাকনীল পুরুষদের তাঁলি- 
কায় পৃথিবীর এক নম্বর টেনিস খেলোয়াড় ববি রিগসকে স্থান- 


মিস এলিস মার্কেল প্রথম পেশাদার টেনিস খেলায় চ্যুত ক'রে প্রথম স্থান অধিকার ক'রেছেন। বিল টিলডেন, 


ইভ 


হেনরী কোসে, ভাইম্ন এবং ডোঁনাহ্ড বাঁজ প্রভৃতি পৃথিবীর 
খ্যাতনামা! টেনিস খেলোয়াড়দের মত ম্যাকনীলও পেশাদার 
খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে ঘোঁষণ! করবেন কিনা এই নিয়ে 
ইতিমধ্যে টেনিস মহলে বেশ জল্পনা কল্পনা আরম্ভ হয়ে গেছে । 

ডন ম্যাকনীলের বয়স বর্তমানে মাত্র ২২। কেনিয়োন 
কলেজ থেকে তিনি ডিশ্রি উপাধি লাভ করেন। গত বৎসরে 
ভারতবর্ষ, চীন, জাপান, হঈজিপ্ট এবং ইউরোপের সর্বত্র 
ভ্রমণ ক'রে বিভিন্ন টেনিস খেলায় যোগদান করেন এবং 
নিজের কৃতিত্বের পরিচয় দেন। গত বৎসর ভন ক্রামকে 
পরাঁজিত ক'রে ফ্রেঞ্চ হার্ডকোর্ট চ্যাম্পিয়ানসীপ লাভ করেন। 
এ বৎসর “নিউ ওরলিয়নস সুগার বাউল, ইউ এস ক্লে কোর্ট 
চ্যাম্পিয়ানসীপ, ইন্টার কলেজিয়েট টুর্ণামেপ্ট এবং পৃথিবীর 
এক নম্বর খেলোয়াড় রিগসকে পরাজিত ক'রে আমেরিকান 
টেনিস চ্যাম্পিয়ানসীপ লাভ করেছেন। ম্যাকনীল একজন 
জনপ্রিয় টেনিস থেলোয়াড়। এ ছাড়া তিনি একজন কৃতি 
ছাত্র বৈদেশিক উচ্চপদস্থ চাকুরীর জন্ত তিনি পড়াঁগুনায় 
মনোনিবেশ করেছিলেন । দুঃখের বিষয় তাঁর সে উচ্চাকাঙ্া 
বর্তমানে আর নেই-_টেনিস খেলায় চ্যাম্পিয়ানসীপ লাভ 
ক'রে প্রচুর অর্থ এবং সন্মান অর্জনের পথ খুঁজে পেয়েছেন। 
পুরুষদের নামের ক্রমপর্ধ্যায় মহিলাদের নামের ক্রমপধ্যায় 


শ্ডাকাগ্ডঞ্বঞ্ 


[ ২৮শ বর্--ংয় খণগঁ--এএ সংখ্যা 


প্শিডি তক ০০০০ ল্্রাম্স £ 


বর্তমান বৎসরের ক্রিকেট খেলায় যোগদান ক'রে 
কালীঘাট ক্লাবের ও কলিকাতা বিশ্ববিষ্যালয়ের ভূতপূর্বব 
খেলোয়াড় পি ডি দত্ত ১,০** রান পূর্ণ করেছেন। এছাড়া 
তিনি ৫০টি উইকেট নিয়ে বোলিংয়ে কৃতিত্ব দেখিয়ে 
ছেন। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় যে, তিনি এ বৎসরের 
কোঁন প্রতিনিধিমূলক ক্রিকেট ম্যাচে খেলবার সুযোগ 
পান নি। 


সপীর্গী জিমত্থাননা। নিস টুর্পাতসপ্উ ৪ 


পার্শা জিমথানা টেনিস টুর্ণামেন্টের খেলায় পুরুষদের 
সিঙ্গলস বিজয়ী দিলীপ বসু যথেষ্ট কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন । 





তালিকা £ তালিক! 

(১) উইল ডোনাল্ড (১) মিস এলিস মার্বেল 

(২) মিস হেলেন জ্যাকব 
(২) আর এল রিগস (৩) মিসেস আরজে কেলেহার 
(৩) জে আর হান্ট (৪) মিস ভার্জিনিয়া 
(৪) এফ আর পার্কার ওয়েলফান্ডম পিডি দত্ত দিলীগ বন 
(৫) এফ এল কোডাক্স (৫) মিস আর এফ হার্ডউইক ফাইনালে বস্ত্র ৬-৪) ৬-* গেমে জে চিরঞ্জীভকে পরাজিত 
(৬) জে এক্রামার (৬) ডোরাথি বাগ্ডি করে সিঙ্গলস বিজয়ের সম্মান পেয়েছেন। ফাইনালের 
(৭) ইটিকুক (৭) মিস এস পালফ্রে 71091 5৪৮এ চিরঞ্ীভ নিখুঁত সাঁভিদ এবং ক্রস কোর্ট 
(৮) এইচ প্রুসোফ (৮) মিস পাউিপিন বেটেজ সর্টে বন্ুকে বিপর্যস্ত করে তুলেছিলেন কিন্তু বন্থু প্রতিহ্বন্দ্বীর 
(৯) বি এম গ্র্যা্ট (৯) মিস ভিক্কট সকল চেষ্টা ব্যর্থ করতে সক্ষম হ'ন। অবশেষে কেমব্রিজ 
(১০) এফ এস স্কোইডার (১৯) মিস হেসেন বার্ণহার্ড . উঙি_' বুকে পরাজয় স্বীকার করতে হয়। 

মাহি মত্বাদ 
নন্বর-প্রক্ষাম্ণিভ্ড 
শীতড়িৎকুমার বহু প্রদীত চিত্-মাট্য-রূপী-কখাসাহিত্য হীবিনযকৃক মুখোপাধ্যায় প্রণীত “আধুনিক অভিনয় পিক্ষা্--।* 
“দাধী”--১1* প্রীন্ঠাষাচরণ খবর বিভাবারিধি সম্পাদিত “অমরকোব-বর্গবর্গঃ 


শ্ীযোগেশচভ্র চৌধুরী প্রণীত নাটক “পরিঙীতা”-_১. 
ঞরামনাথ বিশ্বাস প্রণীত ত্রমণ-কাহিনী “তরশ-তুকা"--১।, 
ব্রীপ্রভাবতী দেবী সরন্বতী প্রণীত উপন্টাস “পথের উদ্দেশে”-২২ 
জীদীনেল্রকুমার রায় সম্পাদিত “নিঠুর নিয়তি"--১২ 
হ্ীনরেন্্রনাথ বহু সম্পাদিত "ন্মপ্রবাসে শরৎচন্্"--১1, 


তথ! চাণকানুত্রম সানুবাদষ”--।* 
মুখোপাধ্যায় প্রণীত গঝ্প “ব্যায়”. 
শ্রীপ্যারীমোহম সেমগুগ্ত প্রণীত “পল্লী সেবক উপেন্দ্রনাথ”--1০* 
হ্ীঅরবিঙ্গের ধ্যাথা জবলঘ্ঘনে ভ্ীীঅনিলবর়ণ বায় সম্পাদিত 
“্রীমদৃভগ বদ্‌গীতা” ৪ খও--/৯, ১৮০, ১%* ও ১০/৯ 


.. আম্পাদম্” ভ্ীফদন্্রনাথ মুখোপাধ্যাপন এমএ 
২৯১১ কণগ্যালিদ্‌ ইট, ফলিকাভ।, ভারতবর্ধ প্রিন্টিং ওয়ার্কদ হইতে বীগো কি গদ জট।চয কর্ৃর ও ও প্রকশিন্ভ 





তা " ১ 
1 [শি | "2 12০ ০৯ 


1 ৯ রি 





কট 
৯৮ 
৯০. ০৪০০১1১৪০০৪ ০০ 
৯৯৬ ২ রী ১৬ 3৯৭8 সত 


151871.8:215151%1)15 1 











্ভ্জ--১-৩০৪৭৭ 


দ্বিতীয় খণ্ড ৃ 


অ্টাবিংশ বর্ষ 


চতুর্থ সংখ্যা 


ভারতীয় সভ্যতার ভবিষ্যত 
জ্ীঅনিলবরণ রায় 


আঁজও আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষিত ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি- 
গণের মধ্যে এমন অনেকেই রহিয়াছেন ধাহার। মনে করেন 
যে, ভারতের প্রাচীন সভ্যতাঁর বৈশিষ্টা কিছুই নাই, তাহা 
মরিয়া ভূত হইয়া গিয়াছে, তাহা লইয়া আলোচনা করা 
কেবল সময় ও মস্তিষ্কের অপব্যবহার নহে, পরন্ত দেশের 
পক্ষে সাক্ষাতভাবে অনিষ্টকর ; কারণ যত শীদ্র আমরা 
আমাদের অতীতের সহিত সকল সম্বন্ধ ছিন্ন করিয়া 
আধুনিক ভাব ও আদর্শ-সকল গ্রহণ করিতে পারিব ততই 
আমাদের কল্যাণ ও প্রগতির পথ পরিষ্কৃত হইবে ।* কিন্তু 
বিশেষ লক্ষ্য করিবার বিষয় এই যে, যদিও আমাদের 








০16 10012 01521652525 00101১16121 0) 101 
21301011116 800. 08010101223. 20050010001) 125 
81১0 )06215--01)6 089 51)6 0065 50 1)67 1):087655 ৬111 196 
8(010101005,*--18278661702021271641 72/:%6, 


দেশের পাশ্চাত্য-ভক্তেরা ভারতীয় সভ্যতার প্রতি উদাসীন, 
এমন কি বিরুদ্ধভাবাপন্ন--পাশ্চাত্য দেশের মণীষীরা 
আদৌ সেরূপ নহেন। দৃষ্টান্ত স্বরূপ পাশ্চাত্য সভ্যতার 
কেন্্রস্থল আমেরিকার কথা উল্লেখ কর! যাইতে পারে। 
সেখানে ভারতীয় সভ্যত৷ স্বন্ধে শিক্ষা ও গবেষণার বিশেষ 
আয়োজন আছে-__আটটি প্রধান বিশ্ববিগ্ালয়ে + সংস্কৃত ও 
[110010995 পড়াইবার সুব্যবস্থা (0171) আছে এবং 
২১৮-টি প্রধান প্রধান মিউজিয়ম ও লাইব্রেরীতে ভারতীয় 
কৃষ্টির বিভিন্ন বিভাগের অনুশীলন করিবার উপযোগী নান! 
পুস্তকঃ পাতুলিপি ও অন্যান উপাদান সংগৃহীত আছে? কিন্ত 
আমেরিকার স্ধীগণ ইহাতেও সন্ধষ্ট নহেন। তাহারা 


সপ শিস্পপাপাশাশা শি ০০2৩০ 








শশী তি এপি 


1 [7975210, 915, 00101070112, 771005601) 001703- 
17010117155 1961010551520125 01010550210 05116017715. 


৪০৯ 


৫২ 


৪৯৯০ 





এখন বলিতেছেন যে, আমেরিকার প্রত্যেক ছাত্রকে ভারতীয় 
সভ্যতার জ্ঞান লাভ করিতে হইবে। 4১106110217 
00701701101 1.0211750 9০০19665 হইতে আমেরিকায় 
ভারত-বিষয়ক চচ্চা ও অনুশীলন সন্বন্ধে যে পুস্তিকা 
প্রকাশিত হইয়াছে (13011901) [০. 28, 71939 ) তাহাতে 
ক. 1০010781) 13107 লিখিয়াছেন £--- 


৮0155 211 15 00100109065 05 01151 15105151705 
[16 10701071106 11101) 11010 0151112861017 1795 
120 1001 0176 01109 961] 1095 21701785% 0৫ 
০১196০665৫0 6০ 118562 10) 075 05000০61017 01261 
06102195 ০০ 6300910060 500... ০ 70051 
1610)6101961 01086 075 56006105100 [09.551% 
0010051) 011 90010900112] 10801011101 ৮1]] 11৮6 
[10611 506০61569 11555 00115 005 56001701911 
01 [176 (/0110161]] 061)0019 2100 10 00505 10 610 
০ [30101)605 0০ 19150100005 26 00৮ 0105 005 
0110 ৮511] 10701009 2. ৮1001005 11)019১ [0055101 
7১০11009115 [56১ ০0106152101) ৪ 001017276 [9০%/61 
1 016 00116170 2170 0210911019 17601150005117 ৮121 
210 [00106159. [০৬ 021) ১1001102175 100 
1792 109৬1 106 [17019 11) 01617 60010801019] 
95092119100 0১০ 2১:1960060 0০ 11৬0 1166111061019 1) 
50101) 2; 5/0110 ৯ ৮/5 0০118৮6  00175600191)01)7, 
11020 170 06198100676 01 50055 19101001211) 11) 
(176 17010721710695 1) 21201209001 01015215100 0217 
06 [0117 50011050 ৮101)0906 2. [9016115 21090 
90550191156 17) 0100 110010 79108569 01 15 01501191275. 
৬/০ 10211552 10০0,01)96 ০1 ০011626 ৮/1)101) 21009 
10 10165181615 £17005055 101 11165111561 011 
1 02 ৮০110 10101) 15 00100 00115 60 1156 175 
11190178501 105 90802. 50150151 601010006তা06 1] 
(106 015111296101 91 ]110019. 45170 ৮৮০ 1021156 (119 
০৮৪1 1110151% 01 [0056010) 10101) 0062175 €0 
151 [0019 (78) 507150 01051070181 100091555 
1280051 171010106 11010 [02571815117 105 50119061015 
8170 [18010 51601911505 07 15 5190 

ইহার ভাবার্থ-_ভারতের সভ্যতা অতীতে জগতের জন্ 
কি করিয়াছে, এখন কি করিতেছে এবং ভবিষ্যতে কি 
করিতে পারে তাহার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দিয়া আমরা এই 
সিদ্ধান্ত করিতে চাই যে, আমাদের দেশে ভারতীয় সভ্যতার 
অধ্যয়নের ব্যবস্থা স্ারও বিস্তৃতভাবে করা আবশ্যক | এ-কথা 


বলিতে ভবিষ্যঘবক্তার শক্তির প্রয়োজন হয় না যে, বিংশ 


স্ঞান্রভজ্রএ্ 





ছিলেন তখন তিনি এই ব্যবস্থা 


[ ২৮শ বর্-_২য় খণ্ড--৪র্থ সংখ্যা 


সি 





সা সদ 


শতাব্দীর ছিতীয় ভাগে-যখন আজিকার ছাত্রগণ 
সাংসারিক জীবনে প্রবেশ করিবে-__-ভারত জগতের মধ্যে তখন 
একটি শক্তিশালী দেশ হইয়া উঠিবে, সম্ভবত সে রাজনৈতিক 
স্বাধীনতা লাভ করিবে, এমনও হইতে পারে যে সে প্রাচ্য 
দেশে প্রীধান্তশালী শক্তি হইয়া! ্লাড়াইবে। আর জ্ঞান- 
বিজ্ঞানে সে যে জীবন্ত ও সৃষ্টিশীল হইয়া উঠিবে সে-সন্বন্ধে 
সন্দেহের কোনও স্থান নাই। তাহা হইলে যে-সকল 
শিক্ষালাভকালে ভারতীয় সভ্যতার সহিত 
পরিচিত না| হইবে, তাহারা তখন কেমন করিয়া! সুট্ুভাবে 
জীবনযাত্রায়|অগ্রসর হইবে ? টি 
ভারতের ভবিস্ত অন্ধকার ভাবিয়া বাহার! অভিয়মাঁন 
হুইয়৷ পড়িয়াছেন, আমেরিকার শ্রেষ্ঠ বিদ্জ্জন প্রতিষ্ঠানের 
মুখপত্রে এই আশার বাণী শ্রবণ করিষ! ত্তীহারা নিশ্চয়ই 
আশ্বাসিত হুইবেন। ভারতীয় সভ্যতার নব অন্যুদয়কে 
সম্মানের সহিত অভ্যর্থনা করিবার জন্য আমেরিকা প্রস্তুত 
হইতেছে, আর আজও আমাদের দেশের শিক্ষিত সমাঁজ 
ভারতীয় সভ্যতার নামে নাসিকা কুঞ্চন করিতেছেন ! 
আমেরিকা! এবং অন্তান্ত পাশ্চাত্য অগ্রগামী দেশে ভারতীয় 
দর্শন, সাহিত্য ও আর্টের চর্চা ক্রমশই বৃদ্ধি পাইতেছে, 
আর আমাদের দেশের যে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় আছে 
তাহার! আজও পাশ্চাত্য ভাবধারা শিক্ষা দিতেই তাহাদের 
প্রায় সমস্ত শক্তিটুকু ব্যয় করিতেছে । কলিকাতা বিশ্ব- 
বিদ্যালয়ে ধাহাঁরা দর্শনশান্ত্রে এম-এ পরীক্ষা দেন তাহাদিগকে 
আটটি গ্রশ্রপত্রের জন্য প্রস্তুত হইতে হয়, তাহাদের 
মধ্যে কেবল একটিতে ভারতীয় দর্শন নামমাত্র স্থান 
পাইয়াছে! লর্ড রোনাল্ডশে যখন বাংলার গবর্ণর 
দেখিয়া সাতিশয় 
বিশ্ময় প্রকাঁশ করিয়াছিলেন। বিজ্ঞানে ভারত পাশ্চাত্যের 
যত পণ্চাতেই পড়িয়া থাকুক না কেন, দর্শনশান্ত্রে ভারত 
যে জগতের শীর্ষস্থান অধিকার করিয়া রহিয়াছে, তাহা 
পাশ্চাত্য পণ্ডিতমগডলী মুক্তকে স্বীকার করিতেছেন। 
উল্লিখিত আমেরিকান পুস্তিকাঁয় মিঃ ব্রাউন লিখিয়াছেন £__ 


৮০ 001)57 0০116 ০ 19001] 1725 19691 50 
0159017 015০০০/19150 ৮/10) 01195 50191906585 1185 
11১5 1110121 2110 1925 10160 (1)017) 17 ৪. (52819 
৮/101 [01711950110 ৪15/275 1017061017105 00 501৮5 
12116101) *** 17220 005 17691150608] ৬০5৮ ৫15- 


চৈত্র ১৩৪৭ ] 


০9৮9৫০0 076 725 ৪৮ 005 2170 01 09 
01610656100) 06100017505 11701517 86609৭০ 01 
17110 1180 2 00101090170 11000017025 ৮/11101) 161090 
10 0001010 106 0611221 100020610 10005970217 01 
079 11106969010761) ০1100017270 17 27061161961, 
1১0 00 000 5০16106160 5000 01 07610156015 2100 
00100811501) 01911519105, ৮1161) 9.0170161710201 
1080 0112 07/75/2251) 51200 02051561011 
02179915171] 02119180011 0007 000 92105101169 
1010616 01926191750 21956 00109 60 2 01991 2170 
10070010015 00001) 0211 2170 101055565102610 
1109 00)গ্্, 06 0110 [01705106101 1[91010101) ০01 
1010175 0171101] (0 0100 010150152100 170 10017 
11 [1050 (০2005 ৮0105 00106091001 1015 1100) 075 
১0170০ 9 1015 00701). [10015 00016 85 
1659011511913 001 12081100110 07056 11701901021) 
0111161)0 11 001 0৮1) 25100611091) 01215691005 65- 
150 ১০1)০901১ [00109102017 010 10056 01501170110 
/810011591011195010171071 10005600610 01 0115 
1111)00001)0])  00110115,15010051016  0)9 
১1011660110]) 0010601550195510 10000 1190 11 
11018 2 0/-/091 001 [0605[91)515810):910110165,5 


তারতবাসী যে দর্শন ও আধ্যাত্মিকতা লইয়া! যুগ যুগ 
ব্যাপৃত ছিল, যাহার উপর প্রতিষ্ঠিত ভারতের সভ্যতা শুধু 
চীন, জাপান ও সমগ্র প্রাচ্য দেশ নহে, ইউরোপ ও 
আমেরিকাঁতেও এত প্রভাব বিস্তার করিয়াছে, ভারতীয় 
বিশ্ববিদ্ালয়গুলিতে আজও তাহার স্থান এত নগণ্য কেন? 
ভারতীয় দর্শনশাস্ত্রের একটি কথা৷ না জানিয়াও কলিকাতা 
বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শনশাস্তরে গ্রাজুয়েট হওয়া যাঁয় কেন? শিক্ষায় 
এই গোড়ায় গলদ থাকাতেই আমাদের দেশের শিক্ষিত 
সমাজ এমন পরাহ্ুবাদ ও পরাৃকরণ-প্রিয় হইয়া উঠিয়াছে। 
এই মারাত্মক ক্রটি সংশোধনের দিন কি আজিও আইসে 
নাই? কেহ কেহ হয়ত আপত্তি তুলিতে পারেন যে, ভারতীয় 
দর্শনে বহুকাল হইতেই চধ্বিত চর্বণ চলিতেছে, নৃতন কিছুই 
সৃষ্টি হইতেছে না, তাই আমার্দিগকে পাশ্চাত্যের মুখাপেক্ষা 
করিতে হয়। মিঃ ব্রাউন ইছার উত্তর দিয়াছেন, 
+৬/1)50051 0086 05 0৪5০0: 0061021015 51001855, 
109 11019010070 00106 55 596 11012 €111010915 
(০৪৮ 185 1390017)9 2৮/812 06 019 100101515 


10101) 10700611) 50161102195 1010051)6 0০ 010110- 
901177, [615 0121) 5917 69581150052 028 110) 2 


ভ্াব্রভীক্স সভ্যভাব্র ভত্রিম্্জ্ড 


৪ 


151600155 08016101 01 26 19850 07192 61100591509 
৪170 10059910017 25০ (110015810 /9815 10617170 
01161075 61767 7089 07909 0601165 001101100 01015 
(০ 115090611) 00101115 ৮/18101) ৮0010 1006 179৮5 
০0209 11:01) ৮/99505111915) 06080150 11) 117012175 
$/111 017. 1101) 01111 0%/1) [01119500115 176116552 
25 %/০]1 25 0000 008৮ 0? 12010152170 1] 
00195 170০901) 1) (15911 05501709100 01 00011511 
[)91015175. 


কিন্তু বান্তবিকই কি দার্শনিক চিন্তায় আধুনিক ভারতের 
মৌলিক দান কিছুই নাই? শ্রীমরবিন্দের মধ্যে প্রাচ্য ও 
পাশ্চাত্য, প্রাচীন ও আধুনিক চিন্তাধারার যে অপূর্ব 
সমন্বয় ও অভিবিকাশ হইয়াছে তাহার সহিত বাহার 
কিছুমাত্র পরিচিত আছেন তাহারা কখনই এমন কথা 
বলিতে পারিবেন না । তাহার অধুনা প্রকাশিত 131 
[ঘা ])াডামিঘ গ্রন্থথানি দার্শনিক চিন্তার ক্ষেত্রে যুগান্তর 
আনয়ন করিয়াছে, এ-কথা বলিলে অত্যুক্তি হইবে না। 
তাহার বাণীর সহিত পরিচিত না হইয়াও আমাদের দেশের 
ছেলে-মেয়ের! দর্শনশান্ত্রে বিএ ও এম-এ ডিগ্রী লাভ 
করিতেছেন, এরূপ শিক্ষা-ব্যবস্থার সংশৌধন অবশ্যকর্তব্য । 

ভারতীয় সাহিত্যে দর্শন ও আধ্যাত্মিকতার প্রাধান্য 
থাকিলেও সাহিত্যের অন্তান্ত বিভাগেও সমুচ্চ বিকাশ 
হইয়াছিল__ধগেদ হইতে আরম্ভ করিয়। সে ধারা আজ পর্য্স্ত 
শুফ হয় নাই। যে-সভ্যতা সাহিত্যে ও স্ুকুমারশিল্লে 
এমন সুদীর্ঘকালব্যাপী বহুল বৈচিত্র্য স্থষ্টি করিয়াও পরিশ্রাস্ত 
হইয়! পড়ে নাই, এখনও নূতন নূতন আদর্শ ও সৌনর্যের 
বিকাশ করিয়! চলিয়াছে, সে সভ্যতার অস্তনিহিত শক্তি যে 
কতখানি তাহা সহজেই অনুমেয় । মিঃ ব্রাউন ভারতের 
কাব্য, নাটক ও অলঙ্কারশাস্ত্ররে মহত্বের কথা উল্লেখ 
করিয়াছেন এবং দেখাইয়াছেন যে গঞ্পসাহিত্যে জগৎ 
ভাঁরতের নিকট যেমন খণী, এমন আর অন্ত কোন প্রাচীন 
জাতির নিকটেই নহে। সাধারণভাবে তিনি বলিয়াছেন, 


প[0 095 25 10061700806 1791 %1)015 1070%117 
10150015 11019, 10917691105 2, 51501005 2190 [10007 
০61৮০ 11651819 08010109105 006 21 10010601016 20 
০0) [92090155 1700% 2৮০৫ 17)0619013051 2170 
০:520৮০৮ ভারতের স্থাপত্য, ভাস্বর, চিত্রাঙ্কন প্রভৃতি 
চারুকল। সম্বন্ধে তিনি বলিয়াছেন, “/১৮০111500015 ৪170 
005 019500 2165 10855 1080 2. ০8:661 11) [17018, 


৪০২ 


11101) 9০ 081 51000 51106 006 07110. 10111017171 
1) 3, 0. 2100 021 ০19110 60 01709156210 51709 
0) 0১110 0610001 3.0, 11101915 ৪1 1795 1180 ৪ 
1111009 10150010 01 01060 210 090101010116১ 210 1795 
106৮2110901) 93581190101 10096179055 10০0৮015 

শুধু কাল্চারের উচ্চতর জিনিষগুলিতেই নহে, কার্যকরী 
বি্তাতেও প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতা কিছুমাত্র ন্যুন ছিল না; 
তাহা উল্লেখ করিয়া মিঃ ব্রাউন বলিয়াছেন, “5০101105-__ 
1)9.00121)500121 2110. 10010021715010--1895 1180 21010 
8110 11019010200 06526006106 10 117018, 80০10106) 
25010101705 1002010917)76105, 185 [00116102] 800 
5০০191 01200019520101) 218. ৪1] 065011920 11) 17217) 
০০5 19610116115 00 & 08010191001) [010 
217010015) ৬101) 110102510 21009117080101 10 075 
1091105 01 50000255150 200015. 


প্রশ্ন উঠিতে পারে যে ভারতীয় সভ্যতা অতীত কালে 
মহাঁন ও সর্বতোনুখী ছিল ইহা স্বীকার করিলেও এখন আর 
সে-সবের চট্চা করিয়া লাভ কি? ভারতের সেই সভ্যতা ত 
তারতকে অধঃপতন হইতে রক্ষা করিতে সমর্থ হয় নাই-_ 
এখন কি নূতন দিক হইতে নৃতন জীবনীশক্তি আহরণের 
চেষ্টা করাই ঠিক নছে? ইহার উত্তর এই যে, ব্যক্তিগত 
মানুষের জীবনের ন্যায় একটা জাতি বা সভ্যতার জীবনেও 
তারুণ্য, যৌবন, বার্ধক্য আদে এবং শেষ অবস্থায় সে 
নিজেকে পুনরুজ্জীবিত করিতে পারে এমন কোন অন্তনিহিত 
শক্তি যদি তাহার না থাকে তাহ! হইলে সে বিলুপ্ত হইয়া 
যায়। ভারতীয় সভ্যতা এই শক্তির আশ্চর্য্য পরিচয় 
দিয়াছে, কতবার তাহার গ্লানি ও পতনের অবস্থা আসিয়াছে 
কিন্তু সে মরে নাই-_সে সভ্যতার ভিত্তি যে আধ্যাত্মিকতা, 
যাহার উৎস রহিয়াছে বেদ, উপনিষদ, গীতায় এবং শত শত 
মহাপুরুষের সাঁধনায়__তাহাই মৃতসঞ্ীবনীর ন্যায় যুগে যুগে 


ভারতকে নৃতন জীবন প্রদান করিয়াছে এবং আজও আমরা 
আমাদের চক্ষের সম্মুখে এইরূপই এক নব অত্যুরথান প্রত্যক্ষ 


করিতেছি । অতএব পাশ্চাত্য হইতে বহু জিনিষ গ্রহণ 
কর! আমাদের পক্ষে প্রয়োজন হইলেও আমাদের এই যে 
বিরাট, মহান; অপূর্ব জীবনীশক্তি-সম্পন্ন অধ্যাত্ম-সভ্যতা, 
ইহাঁকে অবহেলা করিয়া যেন আমরা পরধন্ন গ্রহণ করিতে 
ধাবিত না হই। পাশ্চাত্য রূপের অন্তরালে উৎকৃষ্ট যাহা 
কিছু আমাদের নিক্লুট এখন আসিতেছে, তাহা যে আমাদের 
স্বকীয় প্রাচীন জ্ঞানে উপেক্ষিত হইয়াছে গুধু তাহাই নহে, 


ভ্ঞান্রভ্ভ্ঞ্ 


[ ২৮শ বর্ষ-_২য় থণ্ডঁ-৪র্থ সংখ্যা 


পরস্ত সেইথানে তাহাদের এমন গভীরতর ও মহত্বর অর্থ 
পাওয়া যাইবে যাহা হইতে আমরা আরও মহান ও উৎকঃ 
রূপ-সংগঠনের সন্ধান পাইব। ধীহাদের নিকট আমরা নৃতন 
সভ্যতা শিক্ষা করিতে চাহিতেছি তাহারাই আজ ক্রমবর্ধমান 
আগ্রহে ভারতীয় সভ্যতা হইতে শিক্ষা ও শক্তি আহরণ 
করিবার প্রয়াস করিতেছেন। এ-বিষয়ে মিঃ ব্রাউন 
বলিয়াছেন_ 

06 50621006 21101910% [17010 01011601015 
0926115 509179560১০ ০০-01:০1৮০ 1021015 01 1519717710 
2170 17010196217-01)1150191)  ০010019 2%00010 
00910760027 00110021. 11) 11661200109 0951)16 
076 50011009090 01 2 00911956 6৫107010121 
5/5060)--17096 05360 81১01) 009 ০৮101001010 
০০০1705 07910 199 10901) 21) 01100251105 [)10900001- 
৬100 11) 000 ৮0177000181 12100098005 

“109. 5017910012610179 ৪0৮21100011) 61)0 1010- 
01170 01509055101) 10501 05 1 107151106৬০ 
[32001 021)0181158010175 91000 11019 (0057. 0106 
15 11126 1101 01511128601 1095 0201) % 00116110111] 
(01 €51)07755 170170100 90815১ [00551017 759 
0100952005 21511 17 00669112110 00010110017, 
79610951102, 00917012801 51515051 05515 01161101017) 
810) 0005176,  [6 টি 5 ০810016 1)151) 1075 0০017 
2090190 0/ ৪0 1985 01169 00501001 11150601116 
001100195 8110 15 50111 01796120070 [10100 6০ 01 
00510, 10105 00001 55 0056 006 10517900100 06 110019 
10৬ (21010 [01706915101 ৪ [0090855 01 0150810110 
06 01250100178] 01511125007 টি 21761 01006 110091- 
(50 001 096 ০50,100 180)615091)51505 17 2421- 
[105 005 50179110900 00996 00909109105 01 0179 


00006170110 ৮110) 10 10010550 1170050191 


0102121290017910)5205 01 00100100101080191) 2170 
70০01161551 2170 59012] 0)9015, [156 ০0119160010. 
0100 50111050009 009: 15915091706 ৬1710 076 
11010610903 ০0615 6০ 0109 1016101 7 009 195010- 
(01) 01 000 01811565৮11] 09006 ৮1501) [17012 1025 
58100650 101) 61)5 1016151) 00099 0101005 ৮/11101 
516 (71]1নে 250695215 (09 70916906116 0650117, 
5917)02 10018+5 ০010010 £5 7900170 60 [9915150 
10 00105 ০0100010127019 0086 ৬5 17)056 50045 
[1018 2100 1061 ০0100165 100 09811) 1017 16 00955 
168001259 19165. 01 910211) 0790 11] ০01719066 
€০ ০৮৫ 0%/1) 2170 09 25545061591 1 60000001000 


চৈত্র--১৩৪৭ ] | ভ্ঞান্সভীম সভ্ভ্যভাল্র ভ্ঞন্বিম্্যক্ড ৪৯৩ 





715 01990 10178595 01 001 0%/1) 01৮11129001 10101 
3176 0817 056, ৬/০ 17660 106511900091 017051- 
502101176 07 9801) 5106 00 17791:5 2 52015680601 
20005100610 01 1856 ৮10 ৬৬০5০. 

ভারতীয় সভ্যতার প্রতি আমেরিকার স্তুধীজনের 
কিরূপ মনোভাব, এখানে তাহার একটু বিস্তৃত পরিচয় 
কেন দিলাম তাহার কারণ সুস্প্ । শ্রীরামকৃষ্ণের নিকট 
একজন লোক আসিয় হিন্দুশান্ত্রের নিন্দা করিত। একদিন 
সে গীতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হইয়া উঠিল। শ্রীরাম 
তাহা শুনিয়া বলিয়াছিলেন, “বুঝি কোনও ইংরেজ গীতার 
প্রশংসা করেছে !” 

উল্লিখিত পুস্তিকাঁয় মিঃ ব্রাউন ভারতীয় সভ্যতার 
বহিরঙ্গেরই কিছু পরিচয় দিয়াছেন, কিন্ত এ সভ্যতার যাহা 
মন্মকথা-_-যেনাহং নামৃতা। স্যাম্‌ তেনাহং কিং কুর্যাম্‌-_ 
তাহার নিগুঢ় রহস্য তিনি উপলব্ধি করিয়াছেন বলিয়া 
মনে হয় না। বেদ ও উপনিষদের যুগের খবিরাই ভারতীয় 
সভ্যতাঁর ভিত্তি স্থাপন করেন। তাহার পূর্বেও ভারতে 
যে সভ্যতা ছিল তাহার কিছু নিদশন পাওয়া গেলেও 
সে সভ্যতা তাহার বৈশিষ্ট্য লইয়! স্থায়ী হইতে পারে 
নাই-- তাহার মধ্যে সারবস্ত যাহ| কিছু ছিল আধ্য সত্যতার 
মধ্যেই গৃহীত হইয়াছে এবং ভারতীয় সভ্যতা বলিতে আমরা 
এখন এই সভ্যতাই বুঝি, এই সভ্যতাই অন্তত তিন সহম্র 
বসর কাল আপন বৈশিষ্ট্য বজায় রাখিয়া তাহার পরম 
লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হইয়াছে । ইহার নিগুঢ় মন্দ বুঝিতে 
হইলে ভারতের সেই প্রাচীন খধিদের সাধনা ও দৃষ্টি অন্তত 
কতক পরিমাণে থাকা প্রয়োজন, শুধু বুদ্ধিচালনা ও 
পাণ্ডিত্যের দ্বারা তাহা সম্ভব নহে। তাই আমাদের 
সভ্যতার প্রকৃত মর্ম বুঝিতে আমাদিগকে আমাদের দেশেরই 
যোগী ও খাষিদের শরণাপন্ন হইতে হইবে। শ্রীঅরবিন্দ 
যোগলব্ধ দিব্যদৃষ্টি লইয়া! আর্ধ্য পত্রিকায় ভারতীয় সভ্যতার 
যে গভীর ও বিস্তৃত পরিচয় দিয়াছেন তাহ! হইতেছে 
ভারতের আধ্যাত্মিকতা, ধর্ম, দর্শন সাহিত্য, আর্ট, রাঁজ- 
নীতি, সমাঁজনীতির অপূর্বব দিকৃদর্শন-_ এই অতিপ্রয়োজনীয় 
জানের ক্ষেত্রে আর আমাদিগকে অন্ধকারে হাতুড়াইতে 
হইবে না। 4 তার ০ 0৮ [বাজার 0০101 
নামে সেই প্রবন্ধগুলি এখনও পুস্তকাকাঁরে প্রকাশিত হয় 





নাই ।% তাহার লন তার /১155480 াথ [101 1 
নামক ক্ষুদ্র পুস্তকটিতে ভারতের নব-মত্ুথান সম্বন্ধে অনেক 
গভীর কথা বলা! হইয়াছে । 

আমরা যে অপূর্ব এ্রতিহের উত্তরাধিকারী হইয়া! 
জন্মগ্রহণ করিয়াছি, যাহা অলক্ষ্যে আমাদের প্রাণ, মন, 
আমাদের স্বভাব, চরিত্র গঠন করিয়াছে তাহার সহিত 
আমরা যত ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত হইতে পারি ততই ভাল, 
নতুবা আমর! নিজদিগকে ভাল করিয়! চিনিতে পারিব না। 

আমাঁদের এই প্রাচীন সভ্যতা অন্য কোন সভ্যতার 
তুলনায় হীন নহে, মান্বজীবনকে পূর্ণ করিয়া তুলিতে 
ইহার মধ্যে অপূর্ব শক্তি ও সম্পদ নিহিত রহিয়াছে ; আমর! 
যে আমাদের সভ্যতার গৌরব বৌধ করি সেটা বুথা গর্ব 
নহে। অনেক বিষয়েই আমাদের এই সভ্যতা জগতের 
অন্তান্য প্রাচীন ও আধুনিক সভ্যতা হইতে শ্রেষ্ঠ । ইহার অর্থ 
এই নহে যে, ভারত এতদ্দিন যে সভ্যতার বিকাশ করিয়াছে 
ইহাই মানবজাতির চরম সীমা, ইহার উর্ধে আর মানুষ 
যাইতে পারিবে নাঁ__আমরা যে সব প্রাচীন অনুষ্ঠান ও 
রীতিনীতি হারাইয়াছি, সেই কালকে ফিরাইয়! আনিবার 
চেষ্টা করাই আমাদের পক্ষে যথেষ্ট । এরূপ মনোভাব 
মারাজআক হইবে। এবিষয়ে শ্রীঅরবিদদ তাহার 
[৩ [04 01970 1? $ গ্রন্থে বলিয়াছেন £-_ 
“নিজেদের উপর এবং নিজেদের কৃষ্টির অস্তনিহিত সত্যের 
উপর বিশ্বাস, ইহাই হইতেছে স্থায়ী ও শক্তিশালী জীবনের 
জন্য প্রথম প্রয়োজন ; দ্বিতীয় প্রয়োজন হইতেছে দৌষ ক্রি 
গুলি স্বীকার করা এবং মহত্তর সম্ভতাবনাসকল দর্শন করা) 
ইহা ব্যতীত সুস্থ ও জয়যুক্ত নবজীবন লাভ কর! সম্ভব নছে। 
আমাদের ভবিষ্যতের যে চেষ্টা-_-তাহাতে আমর! একটি 
সত্যকে সর্বোৎকষ্ট পথপ্রদর্শক বলিয়! গ্রহণ করিতে পারি। 
বিবেকানন্দ এই সত্যটিকে অতি স্পষ্টভাবেই দেখিয়াছিলেন, 


*. এই গ্রন্থের শেষ চারি অধ্যায়ে ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভ! ও 
শক্তি সম্বন্ধে যে গভীর আলোচনা ও নুম্পট পথ-নির্দেশ আছে তাহ! 
বাংলা ও হিন্দীতে অনুদিত হইয়া ইতিমধ্যেই পুস্তকাকারে প্রকাশিত 
হইয়াছে। 

1 এই পুন্তকটি “ভারতের নবজদ্ম” নামে বাংলায় অনুদিত হইয়াছে। 

£ “ভারত কি সভ্য” নামে এই মূল্যবান গ্রস্থখানি বাংল! ও হিন্দী 
ভাষায় অনুদিত হইয়াছে। 


৪০০ 


--সত্যটি এই যে, যদিও আমাদের সভ্যতার অন্তনিহিত ভাব 
ও আদর্শমকল খুবই উৎকৃষ্ট ছিল এবং তাহাদের অধিকাংশই 
মূল তত্বে চিরকালের জন্ মূল্যবান এবং আভ্যন্তরীণ ও ব্যত্তি- 
গতভাঁবে সে-সব আমাদের দেশে খুবই একা স্তিকতা ও শক্তির 
সহিত অনুহ্ত হইয়াছিল ( অন্তত নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিগণ ও 
তাহাদের অন্থবর্তীগণের মধ্যে )-_তথাঁপি সমাজের সমষ্টিগত 
জীবনে সে-সবের প্রয়োগ আমাদের দেশে কখনই যথেষ্ট 
সাহস ও পূর্ণতার সহিত করা হয় নাই এবং তাহা ক্রমশই 
বেশী বেণী সক্কীর্ণ ও ক্রুটিপূর্ণ হইয়া উঠিয়াছিল এবং আমাদের 
সমাজের উপর দুর্বলতা ও পরাজয়ের একটা ক্রমবর্ধমান ছাঁপ 
মারিয়া দিয়াছিল। প্রথম প্রথম বাহিরের জীবন ও আভ্যন্তরীণ 
আদর্শ এই দুইয়ের মধ্যে কোনরকম সমম্বয় সাধন করিবার 
একটা উদার প্রয়াস ছিল, কিন্তু ইহার পরিসমাপ্থি হয় 
সমাজের অচলায়তন বিধি-বিধানে ; অধ্যাত্ম আদর্শবাদের 
একটা নীতি ভিত্িস্বরূপ থাকে, বাহিক এঁক্য ও সহযোগিতা- 
মূলক নির্দিষ্ট অনুষ্ঠান-সকলকে বীঁচাইয়! রাঁথা হয়) কিন্ত 
সমাজের সাধারণ জীবনে কড়াকড়ি বন্ধন ও ভেদবৈষম্যমূলক 
জটিলতার ভাব ক্রমশই বাড়িয়! ওঠে, আর স্বাধীনতা, এ্রকা, 
মানবের মধ্যে দেবত্ব--এই সব মহান বৈদাস্তিক আদর্শ কেবল 
ব্যক্তিগত অধ্যাত্ম সাধনার জন্তই রাঁখিয়। দেওয়া হয়। এই 
ভাবে ঘটিল প্রসারণ ও গ্রহণ-শক্তির ন্যুনতা এবং ইহার 
পরিণাম হইল এই যে, যখন বাহির হইতে প্রবল ও আক্রমণ- 
লীল শক্তিসকল-_ইস্লাম-_-ইউরোপ-_ভিতরে আসিয়া প্রবেশ 
করিল তখন সমাজ কেবল সীমাবদ্ধ ও গতিহীন আত্মরক্ষাতেই 
সন্ষ্ঠ রহিল-_যেমন সন্কীর্ণভাবেই হউক, আত্মরক্ষার বিকাশ 


ভান তন্ব্ 


[ ২৮শ বর্ব--২র থণ্-_৪র্থ সংখ্যা 


ঘত ক্ষু করিয়াই হউক, কোন প্রকারে বাচিয়া৷ থাকাটাই 
একমাত্র লক্ষ্য হইয়া পড়িল। এইভাবে স্থিতি ও জীবন রক্ষা 
হুইল বটে, কিন্তু সে স্থিতি বস্তুত সুনিশ্চিত ও প্রাণময় 
নহে, কারণ বৃদ্ধি ও বিকাশ ব্যতীত তাহা অসম্ভব, আর সে 
জীবন-রক্ষাও মহান সতেজ জয়শীল হইল না। কিন্ত এখন 
আর প্রসারণ ব্যতীত জীবনটি রক্ষা করাঁও সম্ভব নহে। 
এখন আমাদের পক্ষে প্রয়োজন হইতেছে, আমাদের যে 
মহত্বর প্রয়াস বাধাপ্রাপ্ত হইয়াছিল পুনরায় সেইটি আর্ত 
করা এবং ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবন, আধ্যাত্মিকতা; 
দর্শন, ধর্ম, আর্ট, সাহিত্য, শিক্ষা, রাজনীতি, অর্থনীতি, 
সমাজ-সংগঠন সর্বত্রই আমাদের শ্রেষ্ঠ আদর্শ ও জ্ঞানের 
পূর্ণ ও মহান অর্থ অনুযায়ী সাহসের সহিত এবং সর্বাজ- 
সম্পন্নভাবে জীবনের বিস্তার করা। আমরা যে সামঞ্জস্য 
বিকাঁশ করিয়াছিলাম তাহা ছিল অতিমাত্রায় সীমাবদ্ধ ও 
স্থিতিশীল) আমরা ভুলিয়! গিয়াছিলাম যে, যতদিন ন! আমরা 
পূর্ণতার অবস্থা লাভ করিতেছি ততদিন সামঞ্জস্যের রূপটি 
অপূর্ণ ও সাময়িক ভিন্ন আর কিছুই হইতে পারে না; তাহার 
প্রাণশক্তি বজায় রাখিতে হইলে এবং তাহার চরম লক্ষ্য সিদ্ধ 
করিতে হইলে তাহাকে এমনভাবে নিজেকে পরিবস্তিত ও 
প্রসারিত করিতেই হইবে যেন তাহা গ্রশম্ততর ও অধিকতর 
বাস্তব এঁক্যের দিকে অগ্রসর হইতে পাঁরে । আমাদের কাল্চার 
ও সভ্যতার এইরূপ বৃহত্তর প্রসারের চেষ্টাই এখন আমাদিগকে 
করিতে হইবে আমাদের সমাজের মধ্যে আধ্যাত্মিক ও মাঁন- 
পিক এঁক্যের মহত্বর বিকাশ এবং সমগ্র মানবজাতির সঙ্গে, 
অন্তত শেবপর্য্স্ত একটা সামঞ্জস্য ও এ্রক্যসাধন। 


তুমি আর আমি 


ভ্রীসমরেন্দ্র দত্ত রায় 
তব নয়নের নীলাভ ছায়ার তলে মৌর সাধনার মানসী-ম্ম্বাণী 
মোর হৃদয়ের কবিত! বেঁধেছে নীড় নিভৃতে সেথায় গাঁথিছে জয়ের মালা । 
তব বিরহের অশ্রঝরণ1 জলে তুমি আর আমি এক হয়ে আছি মিলে 
্‌ আমার ছন্দ খোঁজে সুর বীশরীর। অচিস্তনীয় সুগভীর পরিচয়ে 
তব জীবনের প্রেমের প্রদীপথানি পূর্বাচলের সোনালী রূপালী নীলে 
' এই ভবনের যেখানে রয়েছে জালা ' যুগে বুগাস্তে অমরার সুধা লয়ে। 


পথবেঁধে দিল 
শ্রীশরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় 


ফেড. ইন্‌ 

পরদিন অপরাহ্ন । রঞ্জন নিজের ঘরে বসিয়া খানিকটা 
রবার ও একটা দ্বিভূজ পেয়ারাঁর ডাল দিয় গুল্তি তৈয়ার 
করিতেছে । কাজটা যে সে গোপনে সম্পন্ন করিতে চাঁয় 
তাহা তাহার দ্বারের দিকে সতর্ক নজর হইতে প্রমাণিত হয়| 

গুলৃতি প্রস্তুত শেষ করিয়া সে রবা'র টানিয়া পরীক্ষা 
করিল, ঠিক হইয়াছে। একটা কাগজ গুলি পাঁকাইয়া 
গুলৃতিতে সংযোগ করিযা অনুরস্থ ড্রেসিং টেবিলে রক্ষিত 
একটি প্র্যাস্টারের পরীর দিকে লক্ষ্য করিয়া ছু'ড়িল। পরী 
টলিয়া পড়িলেন। 

সন্ত হইয়া রঞ্জন গুল্তি পকেটে রাঁখিল; তারপর 
বারের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখিয়া চিঠি লিখিতে মারন্ত করিল। 

চিঠি লেখা হইলে তাঁজ করিয়া পকেটে রাখিয়! রঞ্জন 
উঠিয়া সন্তর্পণে দ্বারের দিকে চলিল । 

কাটু। 

এই বাড়ীরই আর একটা ঘরে প্রতাপ রেলজানির 
উপযুক্ত সাজ-পোষাক করিয়া অত্যন্ত অধীরভাঁবে পায়চারি 
করিতেছেন। ঘরের একট! জানাল! বাগানের দিকে। 
সেই জানাল! হইতে দরজা পর্যন্ত পিঞ্জরাবন্ধ পশুরাজের মত 
যাতায়াত করিতে করিতে প্রতাপ মাঁঝে মাঝে জেব-ঘড়ি 
বাহির করিয়া দেখিতেছেন। 

একবার জানালার সম্মুথে দীড়াইয়া ঘড়ি দেখিলেন) 
তারপর বিরক্তভাবে নিজ মনেই বিড় বিড় করিলেন__ 

প্রতাপ £ সময় যেন কাটতে চায় না। এখনও ট্রেণের 
সময় হতে-_পাঁচ ঘণ্টা । 

হঠাৎ জানালার বাহিরে দৃষ্টি পড়িতেই প্রতাপ একেবারে 
নিম্পন্দ হইয়া গেলেন; তারপর জানালার গরাদ ধরিয়া 
অপলকচক্ষে চাহিয়া রছিলেন। 

জানালার বাহিরে কিছুদূরে একটা! মেতির ঝাঁড়ের বেড়া 
বাড়ীর সমান্তরালে চলিয়া গিয়াছিল। প্রতাঁপ দেখিলেন, 
বেড়ার ওপারে সন্তর্পণে গা ঢাঁকিয়া কে একজন চলিয়া 
যাইতেছে। তাহার মুখ বা দেহ পাতার আড়ালে ঢাঁকা 


পড়িয়াছে; কেবল ঝাঁড়ের পত্রবিরল তলার দিক দিয়া 
সঞ্চরমান পদযুগল দেখা যাইতেছে । পদযুগল যে কাহার 
তাহা প্রতাপের চিনিতে বিলম্ব হইল না। 

যতক্ষণ দেখা গেন্স প্রতাপ পদযুগল দেখিলেন; তারপর 
চক্ষু চক্রাঁকাঁর করিয়! চিন্তা করিলেন। গালের আবটি 
ধরিয়া টিপিতে টিপিতে তাহার মাথায় একটা কৃটবুদ্ধির উদয় 
হইল, চাদর কীঁধে ফেলিয়! ঘর হইতে বাহির হইলেন। 

কাটু। 

বাড়ীর ফটকের ঠিক অভ্যন্তর। ফটকের পাশে 
দরোয়ানের কুঠুরি, তাহার পাশে গারাঁজ-ঘর। একজন 
গুর্থা দরোয়ান রঞ্জনের মোটর বাঁইক বাহির করিয়। 
আনিতেছে ; রঞ্জন ফটকের সম্মুখে দাড়াইয়া আছে। 

মোটর বাইক রপঞ্জনের সম্মুখে উপস্থিত করিয়া গুর্থা 
দরোয়ান ছুই পা জোড় করিয়া স্তালুটু করিল। রঞ্জন 
গাড়ীতে চাপিয়া বসিয়া স্টার্ট দিতে গিয়া! থামিয়! গেল। 
শব্ধ করা হয় তো! নিরাপদ হইবে না, এই ভাবিয়া মে নামিয়! 
পড়িল। মাথ! নাঁড়িয়া বলিল-__ 

রঞ্জন £ নাঃ হেঁটেই যাব। 

বলিয়া মোটর বাইক আবার দরোয়ানকে প্রত্যর্গণ 
করিয়া রঞ্জন দ্রুত পদক্ষেপে ফটক হইতে বাহির হইয়া গেল। 

কাটু। 

বাগানের একটি ঝাউগাঁছের আড়ালে প্রতাপ লুকাইয়া 
দাড়াইয়া ছিলেন) রঞ্জন বাহির হইয়া যাইবার পর তিনি 
গল! বাঁড়াইয়! উকি মারিলেন; তারপর বাহিরে আসিয়া 
দেখিলেন দরোয়ান গাঁড়ীটা আবার গারাজে ফিরাইয়া৷ লইয়া 
যাইতেছে । তিনি চাঁপা গলায় ডাঁকিলেন-- 

প্রতাপ : এই! স্স্স্‌! 

গুর্| দরোয়ান পিছু ফিরিয়। মালিককে দেখিয়া 
তৎক্ষণাৎ জোড় পদে স্তালুট্‌ করিয়া দীড়াইল। 

প্রতাপ কাছে আসিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন-__ 

প্রতাপ £ ছোটবাবু কোন্‌ দিকে গেল? 

দরোয়ান হিলারি কায়দায় হন্ত প্রসারিত করিয়া রঞ্জন 


৪১৫ 


৪৩৬ 


যেদিকে গিয়াছিল সেইদিকটা দেখাইয়া দিল । প্রতাপ আবার 
তৎক্ষণাৎ ক্ষিগ্রচরণে ফটক পার হইয়া সেই পথ ধরিলেন। 

ডিজল্ভ্‌। 

ঝাঝার একটি পথ। দুই-চারিটি পথিক দেখা যায়। 
রঞ্জন পথের মাঝখান দিয়া দীর্ঘ পদক্ষেপে অগ্রসর হইয়া 
আসিতেছে। বহুদূর পশ্চাতে প্রতাপ রান্তার ধার ঘেষিয়া 
নিজেকে যথাসম্ভব প্রচ্ছন্ন রাখিয়া তাহার অন্থুসরণ 
করিতেছেন। 

ক্রমে রঞ্জন দৃষ্টিবহিভূতি হইয়া! গেল? প্রতাপ কাছে 
আসিতে লাগিলেন। একটা কুকুর তাহার সন্দেহজনক ভাব- 
ভঙ্গী দেখিয়া ঘেউ থেউ করিতে কারতে তাহার পিছু লইল। 
উত্াক্ত হইয়া শেষে প্রতাপ একটি টিল কুড়াইয়া লয়! 
কুকুরের উদ্দোস্ট্ে নিক্ষেপ করিলেন। কুকুর পলায়ন করিল । 

ডিজল্ভ্‌। 

কেদারবাবুর বাড়ীর পাশ দিয়া একটি সঙ্কীর্ণ গলি 
গিয়াছে । কলিকাতার গলি নয়; পদতলে সবুজ ঘাসের 
আস্তরণ, দুই পাশে ফণি-মনসার ঝাড়। ঝাড়ের অপর 
পাশে বাগান-ঘের! বাড়ী । 

রঞ্জন সাবধানে এই গলির একটা মন্সা-বেড়ার ধারে 
আসিয়৷ দাড়াইল; সম্মুখে কেদারবাবুর দ্বিতল বাড়ীর 
পার্্ভাগ । রঞ্জনের দৃষ্টি অনুসরণ করিলে একটি জানাল! 
চোখে পড়ে । দ্বিতলের জানাল!, গরাঁদ নাই, কিন্তু কাচের 
কবাট বন্ধ। 

কাটু। 

দ্বিতলের ঘরে মঞ্ুর শয়ন কক্ষ । নানাপ্রকাঁর ছোট- 
থাট মেয়েলি-মাসবাঁব চোখের শ্রীতি সম্পাদন করে । ঘরটি 
কিন্তু বর্তমানে ঈষদন্ধকাঁর 

মঞ্জু নিজের শব্যার উপর উপুড় হইয়৷ গুইয়া ছু হাতে 
রঞ্জনের ছবিখানি সম্মুখে মাথার বালিসের উপর ধরিয়া 
একদৃষ্টে দেখিতেছে। তাহার মুখখানি অত্যন্ত বিরস। 

দেখিতে দেখিতে তাহার চোখছুটি জলে ভরিয়া উঠিল; 
অশ্রুনিরোধের চেষ্টায় ঠোট কাম্ড়াইয়৷ ধরিয়াও কোনও ফল 
হইল না; ছবির উপর মাঁথ| রাখিয়া মঞ্জু নিঃশব্দে কাঁদিতে 
লাগিল। 

কাট। 

রঞ্জন জানালার দিকে তাঁকাইয়া ছিল, সেখান হইতে 


শান্রতবহ্র 


[ ২৮শ বর্ষ-_২য় খ্ড-_৪র্থ সংখ্যা 


দৃষ্টি নামাইয়! মাটিতে এদিক ওদিক খুঁজিতে লাগিল। 
তারপর একটি ছোট মুড়ির মত পাথর কুড়াইয়া৷ লইয়া! 
পকেট হইতে চিঠিখানি বাহির করিয়া তাহাতে মোড়কের 
মত মুড়িতে লাগিল । 

ইতিমধ্যে প্রতাপবাঁবু কিয়ন্দুর পশ্চাতে বেড়ার পাশে 
আসিয়া লুকাইয়া৷ ছিলেন; উৎকন্টিতভাবে গলা বাড়াইয়া 
উকি মারিতেই তাহার পশ্চ।স্ভাগে ফণিমনপার কাটা ফুটিল। 
তিনি চকিতে আবার খাঁড়া হইলেন । 

রঞ্জন গুল্তি বাহির করিয়া! তাহাতে শুঁড়িটি বসাইয়া- 
ছিল, এখন অতি যত্বে জানালার দিকে লক্ষ্য গ্বির করিয়া 
নুড়ি নিক্ষেপ করিল। 

জানালার একট! কাচ ভাঙয়া মুড়ি ঘরের মধ্যে অনৃষ্থ 
হইয়। গেল। 

কাট্‌। 

মণ ঘরের মধ্যে পূর্ববৎ কাদিতেছিল, কাচ ভাঙার 
শবে মুখ তুলিল। কাচ-ভাঙা জানালা হুইতে তাহার চক্ষু 
মেঝের উপর নাঁমিয়৷ আসিল; ক।গজ মোড়া চুড়িটি দেখিতে 
পাইয়া! সে তাড়াতাঁড়ি উঠিয়৷ আসিয়] সেটি কুড়াইয়া লইল। 

চিঠিতে লেখা ছিল-__ 

“মঞ্জু আজ আমি কলকাতা! চলে যাচ্ছি আমারও 
বাব এসেছেন। যাবার আগে তোমাকে একবার 
দেখতে ইচ্ছে হচ্চে। যে পাথরের আড়ালে রোজ 
আমাদের দেখা হত, সেইখানে আমি অপেক্ষা করব। 
তুমি আসবে কি? 

তোমার রঞ্জন” 


চিঠি পড়া শেষ হইয়া যাইবার পরও মঞ্জু চিঠি হাতে 


' ধরিয়া তেম্নিভাবে দীঁড়াইয়! রহিল; চিঠিখানা স্মলিত 


হইয়া মেঝেয় পড়িল। মঞ্জু অন্যুট স্বরে উচ্চারণ করিল-_ 

মঞ্জুঃ একবার--শেষবার-_- 

কাট্‌। 

বেড়ার ধারে রঞ্জন ব্যগ্র উর্ধমুখে চাহিয়া আছে। 

জানালা খুলিয়৷ গেল; মঞ্জুর পাংশু মুখখানি দেখা 
গেল। নিয়াভিমুখে তাঁকাইয়! সে কিছুক্ষণ রঞ্জনকে দেখিলঃ 
তারপর আন্তে আস্তে সম্মতিজ্ঞাপক ঘাড় নাড়িল। 

ডিজল্ত.। 

দ্বিতলে মঞ্জুর শয়নকক্ষের দরজার সম্মুথে কেদারবাবু 


চৈত্র--১৩৪৭ ] 


ভি -স্ন্ 


দাড়াইয়া আছেন ; দরজ! ভেজানো রহিয়াছে । কেদারের 
মুখে ক্ষুব্ধ বিষপতা। মঞ্জুর মনে দুঃখ দিয়া তিনিও 
সুখী নন। 

কেদার দ্বারে মৃদু টোকা দিলেন, কিন্তু কোনও উত্তর 
আসিল না। দ্বিতীয়বার টোকা দিয়াও যখন জবাব পাওয়। 
গেল নাঃ তখন তিনি ভাকিলেন__ 

কেদার: মঞ্জু! 

এবারও সাড়া নাই। কেদার তখন উদ্দিগ্রমুখে দ্বার 
ঠেপিয়া ঘরে প্রবেশ করিলেন । 

ঘরে কেহ নাই। কেদাঁর বিশ্মিতভাবে চারিদিকে 
তাকাইলেন। ভাডা জানালাটা চোখে পড়িল; তারপর 
মেঝে চিঠিখ।ন| পড়িয়। আছে দেখিতে পাইলেন । 

চিঠি তুলিয়া লইয়। পড়িতে পড়িতে তাহার মুখ 
ভীষণাকৃতি ধারণ করিল; তিনি সেটা মুঠির মধ্যে তাঁল 
পাঁকাইয়া৷ গলার মধ্যে হুঙ্কার দিলেন, তারপর ক্রভবেগে 
ঘর হইতে নিঙ্ষান্ত হইলেন। 

্রুত ডিজল্ভ. ৷ 

কেদারবাবুর বাড়ীর সদর। মিহির জাপানী ছন্দে 
হেপিতে ছুলিতে ফটক দিয়া প্রবেশ করিতেছিল, হঠাৎ সম্মুখ 
হইতে প্রচণ্ড ধাক্কা খাইয়া প্রায় টাউরি খাইয়া পড়িল। 
কেদারবাবু জুদ্ধ বন্ মহিষের মত তাঁহার পাঁশ দিয়া বাহির 
হইয়া গেলেন। মিহির কোনও মতে সামলাইয়া লইয়া চক্ষু 
মিটিমিটি করিয়া বাহিরের দিকে তাকাইয়৷ রহিল । 

ডিজল্ভ। 

পার্বত্য স্থান। যে পাথরের টিবিটার উপর রঞ্জন ও 
মঞ্ু প্রথম দিন আরোহণ করিয়াছিল, তাহারই তলদেশে 
একটা পাথরে ঠেস্‌ দিয়া দীড়াইয়া রঞ্জন প্রতীক্ষা 
করিতেছে । যেদ্িক দিয়া মঞ্জু আসিবে, তাহার অপলক 
দৃষ্টি সেইদিকে স্থির হইয়া আছে । 

কাট্‌। 

পার্বত্য স্থানের আর এক অংশ। প্রতাপ একটা 
ঝোপের আড়াল হইতে অনিশ্চিতভাবে উকিবঝুঁকি 
মারিতেছেন_-যেন কোন্‌ দিক্‌ দিয়া অগ্রসর হইলে অলক্ষ্যে 
রঞ্জনের নিকটবর্থী হওয়া যায় তাহা ঠাহর করিতে 
পাঁরিতেছেন না। শেষে তিনি ঝোপের আড়ালে থাকিয়া 
বিপরীত মুখে চলিতে আরম্ত করিলেন । 


€৩ 


শঞ্ধ 2ন্ছে' চিপ 


বা 





. 
ৃ 
4 & 

ৃ 
০.০] 
শি 





সদ 


কাটু। 

মঞ্জু আসিতেছে । যেস্কানে সাধারণত তাহাদের গাড়ী 
আসিয় দীড়াইত সেখান হইতে সিধা রঞ্জনের ' দিকে 
আসিতেছে । গু মুখে করুণ আগ্রহ; চুল ঈষৎ রুক্ষ ও 
অবিন্ন্ত। সম্মুখ দিকে চাহিয়া চলিতে চলিতে সে একবার 
হোঁচট খাইল, কিন্তু তাহা! জানিতেও পারিল না। 

রঞ্জন মঞ্জুকে দেখিতে পাইয়াছিল) সে কাছে আসিতেই 
ছুই হাঁত বাঁড়াইয়! তাহার ছুই হাত ধরিল। 

দু'জনে পরম্পর মুখের দিকে তাঁকাহিয়া গলাড়াহিয়া৷ আছে ; 
মুখে কথা নাই। দু'জনের চোখেই আশাহীন ক্ষুধিত 
আকাঙ্খা! মঞ্জুর শ্বাস একটু ভ্রুত বহিতেছে। অবশেষে 
রঞ্জন ধরা-ধর! গলায় বলিল-_ 

রঞ্জন £ মঞ্জু! এই আমাদের শেষ দেখা আর দেখা " 
হবে না। 

মঞ্তু হঠাৎ ঝরঝর করিয়া কাঁদিয়া ফেলিল। নীরবে 
মাথা নাঁড়িয়া অন্য দিকে তাকাইয়া রহিল। রঞ্জন একটা 
দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলিল। 

রঞ্জন £ বেশ, দেখা না হোক। কিন্তু তুমি চিরদিন 
আমাকে এমনি ভালবাসবে ? 

মঞ্জু রঞ্জনের দিকে চক্ষু ফিরাইয়া বলিল__ 

মঞ্জু; বাস্বো ।_-আমাঁদের ভালবাস! তো কেউ কেড়ে 
নিতে পারবে না !-_ 

রঞ্জন দৃঢ়মুষ্টিতে হাত ধরিয়া তাহাকে আরও একটু 
কাছে টানিয়া আনিল। 

কাঁটু। 

পাথরের পশ্চাতে কিছুদূরে অসমতল কক্করপূর্ণ জমির 
উপর দিয়! কেদার হামাগুড়ি দিয়া চলিয়াছেন। 

কাটু। | 

মগ্ু ও রঞ্জন। ছু'জনের চক্ষু যেন পরস্পরের মুখের 
উপর জুড়িয়া গিয়াছে । রঞ্জন একটু মলিন হাঁসিল। 

রঞ্জন £ আমরা কেউই নিজের বাবার মনে ছুঃখ দিতে 
পারব না? তা যদি পাঁরতুম আমরা নিজেরা থেলো হয়ে 
যেতুম+ আর আমাদের ভাঁলবাসাও তুচ্ছ হয়ে ষেত--- 

মঞ্জুর চোখে আরতি প্রদীপের *ক্িঞ্জ জ্যোতি ফুটিয়া 
উঠিল। ৃ 

মঞ্জুঃ কেমন ক'রে তুমি আমার যনের কথ! জানলে ? 





ৃ 
1 
ইউ: 
| 





ব্ডাব্সত্তন্যয 


[ ২৮শ বর্ষ--২য খণ্--ওর্থ সংখ্যা 


স্ব-স্ব 





কঞ্জন £ তোমাক মনের কথা আয় আমার মনের কথা ওত্তাদ! মারবি আমার ছেলেকে! পুলিস ডেকে তোকে 


এক হয়ে গেছে মু 

কাট। 

প্রতাপ কষ্করপূর্ণ ভূমির উপর হামাগুড়ি দিতেছেন। 

কাট। 

মঞ্জু বিদায় চাহিতেছে। তাহাদের ছাতে হাত আলে 
আঙুল শৃঙ্খলিত হইয়া আছে; রঞ্জন এখনও তাহাকে 
ছাড়িয়া দিতে পারিতেছে না। মঞ্জু রু্ধস্বরে বলিল-_ 

মঞ্জু ঃ এবার ছেড়ে দাও-_ 

ধীরে ধীরে রঞ্জনের অঙ্গুলির শৃঙ্খল শিথিল হইয়! গেল; 
মঞ্চু'খলিতপদে অশ্রু-অন্ধ নয়নে নিক্ষান্ত হইয়! গেল। চোখে 
অপরিসীম বিয়োগ-ব্যথ লইয়া রঞ্জন সেই দিকে চাহিয়া 
রহিল । 

মঞ্চ চলিয়া যাইতেছে ; যাইতে যাইতে একবার পিছু 
ফিরিয়া চাছিল, আবার চলিতে লাগিল । 

কাট্‌। 

ক্করপূর্ণ স্থান। ভিন্ন ভিন্ন দিক হইতে হামাগুড়ি দিয়া 
প্রতাপ ও কেদার প্রবেশ করিতেছেন। ক্রমে তাহারা 
অজ্ঞাতসারে পরম্পরে নিকটবর্তী হইতে লাগিলেন। 

তারপর কাছাকাছি পৌছিয়৷ ছজনে একসঙ্গে মুখ তুলিয়া 
পরস্পরকে দেখিতে পাইলেন । তাহাদের গতি কদ্ধ হুইল) 
পঁচিশ বৎসরের অদর্শন সত্বেও চিনিতে বিলম্ব হইল না। 

দুইটি অপরিচিত কুকুর পথে সাক্ষাৎকার ঘটিলে যেমন 
দন্ত নিক্ষান্ত করিয়া গৃঢ় গর্জন করে, ইহারাও ভন্্রপ গর্জন 
করিলেন; তাঁরপর চতুষ্পদ ভাব ত্যাগ করিয়া উঠিয়া 
দাড়াইলেন। 

কেদার প্রথম কথা কহিলেন। 

কেদার £ এঁ_! তুই! আমার বোঝা উচিত ছিল 
যে এ একটা নচ্ছার উল্লুকের কাজ । 

প্রতাপ ঃ চোঁপ-রও ভালুক কোথাকার! আমার 
ছেলে ধরবার জন্তে ফাদ পেতেছিস ! 

যুযুৎন্থভাবে উভয়ে উভয়কে প্রদক্ষিণ করিতে লাগিলেন। 

কেদার £ ( সচীৎকারে ) ফাঁদ পেতেছ! দিড়া রে 
নচ্ছার, তোর ছেলেকে পেলে তার হাড় একঠাই--মাস এক 
ঠীই করব। এতবড় আম্পর্ধা, আমার মেয়েকে চিঠি লেখে ! 

প্রতাপ (আশ্কালন করিতে করিতে ) তবে রে বেঁড়ে- 


হাজতে না-পুরি তো আমার নাম প্রতাপ সিংগিই নয়__ 

কাট। 

রঞ্জন যথাস্থানে পূর্বববৎ দীড়াইয়া ছিল; রুমাল বাহির 
করিয়া মুখখানা মুছিয়া ফেলিল। মুছিতে মুছিতে হঠাৎ 
থামিয়া সে শুনিতে লাগিল, অনতিদূর পশ্চাৎ হইতে কর্কশ 
কলহের আওয়াজ আসিতেছে । 

রঞ্জনের বিস্মিত মুখের ভাব ক্রমশ সন্দিগ্ধ হইয়া উঠিল 
সে উৎকর্ণ হইয় শুনিতে লাগিল । 

কাটু। 

কেদার ও গপ্রতাপ। তাহাদের দ্বন্দ ক্রমে সগ্ুমে 
চড়িতেছে । 

কেদার ; শয়তানি করবার আর জায়গা পাস্‌্নি__ 
হতভাগা হাতী-_ 

প্রতাপ £ বাঘের ঘরে ঘোগের বাসা বাঙ্কেল রামছাগল ! 

কাটু। 

রঞ্জন শুনিতেছিল; এতক্ষণে কণ্ঠস্বর চিনিতে পারিয়া 
তাহার মাথার চুল প্রায় খাড়া হইয়! উঠিল। তাহার বিবর্ণ 
মুখ হইতে বাহির হইল-_ 

রঞ্জন £ বাবা! কেদারবাবু! 

কি করিবে স্থির করিতে না পারিয়! রঞ্জন কিছুক্ষণ হাত 
কচলাইল; তারপর দ্বিধাভরে মল্লভূমির দিকে চলিল। 

কাট। 

কেদার যথাযোগ্য হস্ত আম্ষাঁলন সহকারে বলিতেছেন-_ 

কেদার ঃ ইচ্ছে করে এক চড় মেরে তোর আব্‌-গুদ্ধ 


_ গালটা চ্যাঁপটা ক'রে দিই। 


্রত্যুত্তরে প্রতাপ কেদাঁরের মুখের সিকি ইঞ্চি দুরে 
নিজের বন্ধ মুষ্টি স্থাপন করিয়া বলিলেন-__ 

প্রতাপ ইচ্ছে করে একটি ঘুষি মেরে তোর দাতের 
পাটি উড়িয়ে দিই। 

কেদার উত্তর দিবার অন্ত হা] করিলেন; কিন্ত তাহার 
মুখ দিয়া বাক্য বাহির না হইয়া সহস! আর্ত কাতরোক্তি 
নির্গত হইল । তিনি হাত দিয়া গাল চাপিয়া ধরিলেন। 

কেদার £ আ--উ! উহ হুছ-আরে রে রে রে-- 

বন্ত্রণায় তিনি মাটির উপর সজোরে পদীঘাত করিতে 
লাগিলেন। 


চৈত্র--১৩৪৭ ] 


প্রতাপ ভ্যাবাচাক! খাইয়! গিয়াছিলেন; নিজের মুষ্টির 
দিকে উদ্বিগ্ন সংশয়ে দৃষ্টিপাত করিয়া ভাবিলেন_ হয় তো 
অজ্ঞাতসারে মুষ্ট্যাঘাত করিয়া বসিয়াছেন। কেদারবাবুর 
আক্ষেপোক্তি হাস ন! পাইয়া বৃদ্ধির দিকেই চলিল। তখন 
প্রতাপ ধমক দিয়া বলিলেন__ 

প্রতাপ £ কি হয়েছে-_কাদছিস কেন? আমি তোকে 
মেরেছি-_মিথ্যেবা্দী কোথাকার? 

কেদার £ আরে রে রে রেরে--দাত রে লক্মীছাড়া__ 
দাত-__রে রে রে রে-_- 

প্রতাঁপ কণ্টকবিদ্ধবৎ চমকিয়! উঠিলেন। 

প্রতাপ £_ দাত? 

কেদারের স্বন্ধ ধরিয়া ঝাঁকাঝাকি দিয়া বলিলেন__ 

প্রতাপ ২ কি ব্ল্লি- তি? দাত ব্যথা করছে? 

কেদার £ হা রে বোদ্বেটে-_দন্তশূল ! নইলে তোকে 
আজ-- হু হু হু_- 





প্রতাপঃ দস্তশ্ল! এতক্ষণ বলিন্‌ নি কেন রে 
গাধা? 

ত্বরিতে পকেট হইতে গুলি বাহির করিয়া তিনি 
কেদারের সম্মুখে ধরিলেন। 


প্রতাপ £ এই নে-_খেয়ে ফ্যাল্‌। ছু”মিনিটে যদি তোর 
দন্তশুল সেরে না যায় আমার নামই প্রতাপ সিংগি নয়-_ 

কেদার সন্দিঞ্চভাবে বড়ি নিরীক্ষণ করিলেন। 

কেদার ঃ এঃ? খুনে কোথাকার, বিষ থাইয়ে মারবার 
মতলব? আযআ-উ! 

কেদার হা করিতেই প্রতাপ বড়ি তাহার মুখের মধ্যে 
ফেলিয়া দিলেন। 

প্রতাপ £ নে-খা। আহাম্মক-_ 

অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা! করিবার পূর্বেই কেদার বড়ি 
গিলিয়া ফেলিলেন। 

কাট্‌। 

রঞ্জন অনিশ্চিত পদে অগ্রসর হইতেছিল; তাহার 
উৎকন্টিত দৃষ্টি সন্মুথে নিবন্ধ। কিছু দূর আসিয়! সে একটা 
পাথরের আড়ালে আত্মগোপন করিয়া দীড়াইল। কলহের 
কলম্বরে মন্না পড়িয়াছে; কেদারবাবু থাকিয়া! থাকিয়া 
কেবল একটু কুস্থন করিতেছেন। রঞ্জন অন্তরালে দাঁড়াইয়া 
সবিন্ময় আগ্রহে দেখিতে লাগিল। 


সা 2েখ্রে ক্কিত্ল 





টিিন্লি 
৮ 
৫ 





কাট। 
দুইটি টিবির উপর কেদার ও প্রতাপ বসিয়া আছেন। 
কেদারের মুখ বিম্ময়ে হতবুদ্ধি; তাহার দস্তশুল যে এসন 
মন্ত্বৎ উড়িয়া যাইতে পারে তাহা! যেন তিনি ধারণাই করিতে 
পারিতেছেন না; বিহবলভাবে গালে হাত বুলাইতে বুলাইতে 
প্রতাপের দিকে আড় চক্ষে তাকাইতেছেন। প্রতাপের 
মুখে বিজয়-দীপ্ত হাসি সুপরিস্ফুট । শেষে আর থাকিতে না 
পারিয়। প্রতাপ মন্তকের উন্নত ভঙ্গী করিয়! বলিলেন-_ 
প্রতাপ £ কি বলেছিলুম ? সাঁরলে৷ কিনা? 
কেদার মিন্মিন্‌ করিয়া বলিলেন__ 
কেদার £ আশ্চধ্য ওষুধ! কোথায় পাওয়া যাঁর? 
প্রতাপ অট্রহাস্ত করিয়া উঠিলেন। 
প্রতাপ £ হেঃ হেঃ হে:--এ আমার তৈরি ওষুধ। 
চালাকি নয়, নিজে আবিষ্কার করেছি-_ 
কেদার £ (ঘোর অবিশ্বাসভরে ) আবিষ্কার করেছিস! 
তুই? 
প্রতাপ £ হ্যা হ্যা, আমি না তো! কে? 
তিনি উঠিয়! গিয়। কেদারের টিবির উপর বসিলেন। 
প্রতীপ : এর নাম হচ্ছে বৃহৎ দন্তশূল উৎপাটনী ব্রটিকা। 
বুঝলি? এই বড়ি বার ক'রে সতের লাখ টাকা করেছি-_- 
কেদাঁর একেবারে অভিভূত হইয়! পড়িলেন। 
কেদার : বলিস্‌ কি! আমি যে অভ্রেরথনি করে মোটে 
এগারো লাখ করেছি-__ 
প্রতাপ সপ্রশংস নেত্রে কেদারের পানে তাকাইলেন। 
প্রতাপ £ তাই নাকি !__তা এগারে। লাখ কি চাডিখানি 
কথা নাকি! কটা লোক পারে? 
তিনি কেদারের পিঠে প্রশংসা-জাপক চপেটাধাত 
করিলেন। কেদারের মুখে সহসা হাসি ফুটিল। 
কাট্‌। 
রঞ্জন পূর্বস্থানে দীড়াইয়া দেখিতেছিল; তাহার মুখ 
অপরিসীম আনন্দে যেন ফাটিয়া পড়িবার উপক্রম 
করিতেছিল। এই সময় কেদার ও প্রতাপ উতয়ের 
সন্মিলিত্ব হাসির আওয়াজ ভাসিয়া আসিল। 
রঞ্জন পা টিপিয়! টিপিয়া পিছু হটিতে আরস্ত করিল; তার- 
পর পিছু ফিরিয়! সোজা দৌড় দিল । দৌড়িতে দৌড়িতে সে বে 
“মঞ্জু” “মঞ্চ” উচ্চারণ করিতেছে তাহা সে নিজেই জানে না। 


আহ, ভ্ডান্রুভন্য [ ২৮শ বর্-_-২য় খণ্ড--৪র্থ সংখ্যা 
কাট । কেদার £ নাঃ আমার বাড়ীতে আগে-_ 
কেদারবাবুর গৃহের ফটকের সম্মুথ। মন্ত্র মোটর উভয়ে চলিতে আরম্ভ করিলেন । 


দাঁড়াইয়া আছে। মঞ্জু ফটকের ভিতর হইতে বাহির হইয়া 
আসিল ; পশ্চাতে মিহির | 

মিহির ঃ চল্লেন? একটা জাপানী কবিতা লিখেছিলুম__ 

মঞ্জু মোটরের চালকের সীটে প্রবেশ করিতে করিতে 
ভারী গলায় বলিল-_ 

মধু ঃ মাপ করবেন মিহিরবাবুঃ আমার সময় নেই ।-_ 
হ্যা, বাবা এলে বলে দেবেন, তাঁর জন্তে ম্যাণ্টেলগীসের 
ওপর চিঠি রেখে গেলুম__ 

গা্ভীতে স্টার্ট দিয়া মঞ্জু চলিয়া গেল। মিহির করণ 
দুটিতে তাঁকাইয়া দাঁড়াইয়া রহিল। 

কাট্। 

রঞ্জনের বাড়ীর ফটক । গুর্থা দরোয়ান স্বস্থানে দণ্ডায়মান 
আছে। রঞ্জন দৌড়িতে দৌড়িতে বাহির হইতে প্রবেশ 
করিতেই দরোয়ান পদযুগল সশবে জোড় করিয়! দাড়াইল। 

রঞ্জন £ দরোয়ান, জল্দি-__জল্দি ফট্ফটিয়! নিকালো-_ 

দরোয়ান স্যালুট করিয়া মোটর বাইক আনিবার জন্য 
প্রস্থান করিল। রঞ্জন নিজের উৎফুল্ল অথচ ঘর্মমাক্ত মুখখানা 
রুমাল দিয়া মুছিতে লাগিল। 

কাট্‌। 

টিবির উপর পরম্পরের স্থম্ধ জড়াজড়ি করিয়া প্রতাপ 
ও কেদার বসিয়া আছেন ; উভয়েরই চক্ষু আর্দ্র । পুনমিলনের 
অকাল বর্ষধ দু'জনেরই মন ভিজাইয়া দিয়াছে । 

কেদার ঃ (নাক টানিয়!) ভাই, আমি কি মিছিমিছি 
তোর ওপর রাগ করেছিলুম? তুই আমাকে “কছু রায়” 
বলেছিলি কেন? আমার নামটাকে বেকিয়ে অমন ক'রে 
ডাকা কি তোর উচিত হয়েছিল? 

প্রতাপ ঃ ভাই, তুইও তো আমাকে “আবু হোসেন, 
বলেছিলি। আমার গালে আব আছে বলে আমাকে আবু 
হোসেন বলা কি বন্ধুর কাজ হয়েছিল? 

কেদার £ (চক্ষু মুছিয়া) রেখে দে ওসব পুরানো 
কথা_ চল্‌ বাড়ী যাই। 

উভয়ে উঠিলেন। * 

প্রতাপ £ আগে আমার বাড়ীতে তোকে যেতে 
হযে কিন্তু। 


কেদার £ আমার মেয়েকে তো তুই এখনও দেখিস 
নি। ( সগর্ধে ) অমন মেয়ে আর হয় না 

প্রতাপ : ( গর্ধোদ্ীপ্ত কে) আর আমার ছেলে? 
তুই তো দেখেছিস্‌-কেমন ছেলে ? 

সম্তানগর্ধের উভয়ে উভয়ের পানে চাহিয়া হাশ্য করিতে 
করিতে চলিলেন। 

কাট্‌। 

কেদারবাবুর ফটকের সন্মুখ। রঞ্জনের মোটর বাইক 
আসিয়া দীড়াইল। রঞ্জন ফটকের ভিতরে প্রবেশ করিয়া 
দেখিল সিঁড়ির উপর মিহির বিমর্ষভাঁবে গালে হাত দিয়া 
বসিয়া আছে। 

রঞ্জন মিহিরবাবু! মধ্জু কোথায় ? 

মিহির £ (বিরস কে) তিনি মোটরে চড়ে চলে 
গেলেন। আমার জাপানী কবিতা শুনলেন না-_ 

রঞ্জন $ চলে গেলেন? কোথায় চলে গেলেন? 

মিহিরঃ তাজানি না। এদিকে । আপনি শুনবেন 
কবিতা__ 

রঞ্জন আর দীড়াইল না? লাফাইয়! গিয়া গাড়িতে 
চড়িল। 

রঞ্জন £ আর এক সময় হবে। 

তাহার মোটর-বাইক তীরবেগে বাহির হইয়! গেল। 

কাট। 

গ্র্যাওড্রীঙ্ক রোড । মঞ্জুর মোটর কলিকাতাঁর দিকে 
চলিয়াছে। মঞ্জু চালকের আমনে বসিয়া) তাহার দৃষ্টি 
সমন্মুথে স্থির হইয়া আছে; ঠোঁট ছুটি দৃঢ়বন্ধ। 

কাট। 

রঞ্জনের গাড়ী ঝাঁঝার সীমানা পার হইয়া গ্র্যাগুত্রীস্ক, 
রোডে আসিয়া পড়িল। গাড়ী উ্কার বেগে ছুটিয়াছে। 
একটা গ্রাম্য-কুকুর কিছুদূর পর্ধ্স্ত ঘেউ ঘেউ করিতে করিতে 
তাহাকে তাড়া করিয়া আসিল, তারপর হতাঁশ হইয়া 
হাল ছাড়িয়া! দিল। 

কাট। 

বাড়ীর সম্মথের, বারানাঁয় মিহির, কেদার ও প্রতাপ 
প্াড়াইয়। আছেন। কেদার বড়ই ঘাবড়াইয়া গিয়াছেন। 


চৈত্র-১৩৪৭ ] 


কেদার ঃ আ্্যা- চলে গেছে! কোথায় চলে গেছে? 


সখ ৫ চিতল 


ভু 


প্রতাঁপ ক্ষণকাল চিন্তা করিলেন, বোধ করি মনে মনে 


মিহির : তা তো জানি না।__কিছুক্ষণ পরে রঞ্জনবাবু রাঁজকন্তাকে পুত্রবধূ করিবার উচ্চাশায় জলার্জলি দিলেন। 


এলেন, তিনিও খবর পেয়ে মঞ্জু দেবীর পিছনে মোটর 
বাইক ছোটালেন। 

কেদার ও প্রতাঁপ উদ্িগ্নভাবে মুখ তাঁকাতাকি করিতে 
লাগিলেন । 

মিহির ঃ মঞ্জু দেবী আপনার জন্তে ম্যাপ্টেলপীসের 
ওপর চিঠি রেখে গেছেন-__ 

কেদার £ ( খিচাঈয়া ৷ এতক্ষণ তা বলনি কেন ?__ 
এস প্রতাপ । 

ছুজনে বাঁড়ীর মধ্যে প্রবেশ করিলেন। অনাহৃত মিহির 
আবার সিড়ির উপর বসিয়া পড়িয়া গালে হাত দিয়! রাস্তার 
দিকে চাহিয়া রহিল । 

কিছুক্ষণ পরে তার চোথে সহসা প্রাণ-সঞ্চার হইল। 
ফটকের সম্মুখ দিয়া চারিটি তরুণী- ইন্দু মলিন! সলিলা 
মীরা__যাঁইতেছেন। তাহারা প্রত্যেকেই নিরীহ বাড়ীটার 
দিকে তীব্র কটাক্ষবাণ নিক্ষেপ করিয়া গেলেন। 

তাহারা অন্তহিত হইতে না হইতেই মিহির চমকিয়] 
উঠিয়া ধীড়াইল, তাঁরপর ক্রুতপদে সিড়ি নামিয়! তরুণীদের 
পশ্চাছত্তী হইল । 

কাঁট্‌। 

ড্রয়িং কমে কেদার মঞ্জুর পত্রপাঠ শেষ করিয়া বিহ্বল 
প্রতাপের পানে তাকাইলেন । 

কেদার £ কলকাতায় চলে গেছে !-__কি করি প্রতাপ? 

প্রতাপ আশ্বাস দিয়া কেদাঁরের পৃষ্ঠে কয়েকটি মৃদু 
চপেটাঁঘাত করিলেন । 

প্রতাপ £ কিছু ভেবো না; আমার রঞ্জন তাঁকে ঠিক 
ফিরিয়ে আনঝে_বোসো-_ 

উভয়ে একটি সোফায় বসিলেন ; কেদারের মন কিন্ত 
নিরুদ্ধেগ হইল ন!। 

কেদারঃ ছেলেমামুষের কাণ্ড-__কিছু বোঝে না আমাদের 
মত মাথা ঠাণ্ডা তো নয় ।__শেষে কি করতে কি করে বসবে _ 

প্রতাপ ঃ আরে না না, কোনও ভয় নেই। আসল 
কথা, ছু'টোতে দু'জনের প্রেমে পড়ে গেছে-_ভীষণভাঁবে। 

কেদার £ হাঁ--ছুটোই বেহীয়া। সেই তো হয়েছে 
ভাবন!।-_কি করা যায় এখন! 


তারপর কেদারের উরুর উপর একটি চাপড় মারিলেন। 
প্রতাপ £ ঠিক হয়েছে ! এক কাজ করি এসো 
কেদাঁর সপ্রশ্ন নেত্রে চাহিলেন। 
প্রতাপ £ ও ছুটোর বিয়ে দিয়ে দেওয়া যাঁক ! 
কিছুক্ষণ পরম্পর তাকাইয়৷ রহিলেন। তারপর উভয়ে 
একটু হাসিলেন; হাসি ক্রমে প্রসারলাঁভ করিল। শেষে 
উভযে পরস্পর হাত ধরিয়! দীর্ঘকাল কর-কম্পন করিতে 
লাগিলেন । 
কাট। 
মঞ্জুর গাড়ী চলিয়াছে। 
মঞ্জুর দুই চোঁখ জলে ভরিয়া উঠিয়াছে; ঠোঁট 
কাপিতেছে ; মুখের বাহা দৃঢ়তা আর রক্ষা হইতেছে না। 
সহসা সে চলন্ত গাড়ীর স্টীয়ারিং হছুইলের উপর মাথা 
রাখিয়! ফুপাইয় কাঁদিয়া উঠিল। 
অবশ্থন্তাবী দুর্ঘটনা! কিন্তু ঘটিতে পাইল ন! ; গাড়ী স্বেচ্ছানু- 
যায়ী কিছু দূর গিয়! ক্রমে মন্দবেগ হইয়া অবশেষে থামিয়াগেল। 
মঞ্জু অশ্র-ধোত মুখ তুলিয়া দেখিল গাড়ী নিশ্চিন্তভাবে 
দাড়াইয়া আছে। সে সেল্ফ-্টার্টার দিয়া গাড়ীর শরীরে 


প্রাণ-সঞ্চারের চেষ্টা করিল, কিন্তু এঞ্জিনের স্পন্দন 
পুনরুজ্জীবিত করিতে পারিল না। 
ব্যর্থ হইয়া মঞ্জু গাড়ী হইতে নামিবার উপক্রম করিল। 
কাট্‌। 
রঞ্তনের মোটর-বাইক উর্দশ্বাসে ছুটিয়া আসিতেছে। 
কাটু। 


মু একান্ত ভ্রিয়মান মুখচ্ছবি লইয়া মোটরের ফুটবো্ডে 
বসিয়া আছে। তাহার যেন আর বীচিবার ইচ্ছা নাই। 

দূরে অম্পষ্ট ফট্‌-ফটু শব্ষ শোনা গেল; ক্রমে শব্দ 
স্পষ্টতর হইতে লাগিল। মঞ্জু প্রথমটা কান করে নাই; 
তারপর সচকিতে ঘাড় তুলিয়া! সেইদিকে তাঁকাইল। 

দূরে রঞ্জনের মোটর বাইক আসিতেছে দেখা গেল। 
শব্দ ও গাড়ী নিকটতর হইতে লাগিল। শেষে রঞ্জনের 
মোটর-বাইক মঞ্ুর পাশে আসিয়! দাড়াইল। 

রঞ্জন আসনের উপর পাশ ফিরিয়া বসিল, মুখ গম্ভীর । 
কিছুক্ষণ দুজনে নীরবে দু'জনের পানে তাঁকাইয়। রহিল । 


শি ২২ 


রঞ্জন ঃ গাড়ী খারাপ হয়ে গেছে ? 

মঞ্জু উত্তর দিতে পারিল না, শুধু ঘাড় নাড়িল। 

রঞ্জনের অধরপ্রাস্ত একটু নড়িয়া উঠিল। 

রঞ্জন £ আমি জানি কি হয়েছে___পেক্রৌল ফুরিয়ে গেছে-_ 

মঞ্জু অধর দংশন করিয়া অধোমুখে রহিল । 

রঞ্জন উঠিয়৷ আসিয়া! তাহার সম্মুখে দীড়াইল। মঞ্জু 
চোখ তুলিয়! রুদ্ধন্বরে বলিল-_ 

মণ্তুঃ আবার কেন এলে? 

রঞ্জন গন্ভীরভাবে একটু হাসিল। 

রঞ্জন £ তোমাকে একটা খবর দিতে এলুম ।--তোমার 
বাবার সঙ্গে আমার বাবার আবার ভাব হয়ে গেছে__ 
ভীষণ ভাব। 

বিস্কারিত নেত্রে চাহিয়৷ মঞ্তু আস্তে আস্তে উঠিয়া 
দাড়াইল। 


ভা ব্রভন্বন্য 


[ ২৮শ বর্ব_২য় খণ্ ৪র্থ সংখ্যা 


না; অন্তরের চাপা উল্লাম উদ্বেলিত হইয়া পড়িল। সে 
দু'হাতে মঞ্ুকে নিজের কাছে আকর্ষণ করিয়া লইয়া 
উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলিল-_ 

রঞ্জন £ যা বললুম-_ছুজনে একেবারে হরিহর আত্মা! 
--চল, ফিরে যেতে যেতে সব বল্ব। 

ডিজল্ভ. | 

মঞ্জুর গাড়ী ফিরিয়। চলিয়াছে। রঞ্জনের মোটর বাইক 
তাহার পিছনের সীটে উঁচু হইয়া আছে। 

রঞ্জন গাড়ী চালাইতেছে। পাশে মঞ্জু। মঞ্জুর মাথাটি 
রঞ্জনের স্বন্ধের উপর আশ্রয় লইয়াছে; চক্ষুদুটি পরিতৃপ্তির 
আবেশে স্বপ্রাতুর । 

রঞ্জন একবার ঘাড় ফিরাইয়া দেখিল; তারপর মঞ্জুর 
নরম চুলের মধ্যে নিজের গাল রাখিয়া সন্গেহে একটু নাড়া 
দিল। মঞ্ু স্খাঁবিষ্ট চোখ তুলিল। 


মঞ্জু ঃ কি__কি বললে? ফেডভ আউটু। 
রঞ্জন আর গাস্তভীষ্যের অভিনয় বজায় রাখিতে পারিল শেষ 
যক্ষের মিনতি 
প্রীনীলরতন দাশ 
ওগো আষাঢ়ের নব জলধর ! বারেক থামে! না ভাই, শয়নে স্বপনে তোমারই মুষ্তি ধ্যান করি” প্রতিদিন 


তাপিত প্রাণের গোপন মিনতি তোমারে জানাতে চাই। 
হেরি বাদলের বারিধারা আজি উদ্বেল মম হিয়া। 
অন্তর-ভরা বিরহ বেদনা ম্মরি” মোর প্রাণপ্রিয়া । 

গৃহহার। আমি বঞ্চিত-প্রিয়া-চারু-মুখদরশন 

বরষের তরে রামগিরি শিরে লভেছি নির্বাসন । 
যক্ষরাজার নাহি ক' বিচার, ক্রুদ্ধ সে নিরদয় ; 

একা মোর দোষে প্রেয়সীও শেষে কত না যাতন! সয়! 
কোথায় অলকা৷ কুবেরনগরী--কোথা রামগিরি আর-_ 
দুজনের মাঝে ব্যবধান আজি বিরহের পারাঁবার ! 
সহচরহার! বিরহবিধুরা চক্রবাকীর সম 

অঝোরে অশ্রু ফেলিছে নীরবে হায় প্রিয়তমা মম ! 
আমার বারতা ল”য়ে যাও সথাঃ কুবেরের অলকায়-_ 
কাস্তা যেথায় যাপিছে জীবন বিচ্ছেদ-বেদনায় | 

কহিও প্রিয়ারে রার্মগিরিশিরে কোন মতে তব স্বামী 
বিরহের ব্যথা বৃহিয়। বক্ষে জাগিছে দিবসযামি। 


অন্তরে তার জাগে ভাহাঁকার, শরীর শীর্ণ ক্ষীণ। 
বান্ধবী ! শুন, কাতর! হইয়! করিও না দেহপাত, 
শাপ অবসানে দয়িতের সনে হ,বে পুনঃ সাক্ষাৎ। 
শীতখতুগতে নববসন্তে গ্ররূতি পুলক-ভরা 


_বিরহঅন্তে মিলন তেমনি মধুর পাগল করা। 


চারি মাস পরে কান্ত তোমারে লইবে বক্ষে তুলি 

সুভ মিলনের আশায় রহ গো বিরহবেদনা তূলি, | 
আমার বার্তা জানায়ে প্রিয়ারে তাহার কুশল আনি, 
বাঁচাও, দরদী বন্ধু আমার প্রবালী পরাণথানি | 

মহৎ বংশে জন্ম তোমার, পুষ্ধর তব নাম-_ 

হে মহান্‌ মেঘ ! দয় ক'রে মোর পুরাও মনস্কাম। 
তৃষিত ধরণী কর সুশীতল ঢালি' তুমি শীতল বারি 
আমি কি পাব না তোষাঁর করুণা, হে জলদ তৃষাহারী ? 
সুন্দর ! আজ বন্ধুর কাজ কর তুমি দয়! ক'রে-_ 
বিরহী বক্ষ মরে যে কীদিয়। বিরহিণী প্রিয়া তরে! 





বান্ুুদেব সার্বভৌম 
অধ্যাপক শ্রীদীনেশচন্দ্র ভট্টাচার্য এম্‌-এ 


্রচৈতন্যচরিতের উপাদান বিষয়ে মহ।মহোপাধ্যায় শ্রীযুক্ত ফণিভূষণ তর্কবাগীশ 
মহাশয়ের আলোচনামুগক প্রব্ধর[র্ অগ্ননখলাকার মত নুতন নৃতন 
তত্ব ও বিতর্ক উন্নীলিত করিয়া ভারতবর্ষের পাঠক-মগুলীকে ধন্য 
করিতেছে । আমর! বহুক।ল এ জাতীয় অপুর্ব আলোচন! মানিকপত্রে 
দেখি নাই। ঠাহার কতিপয় প্রবন্ধে ঝঙ্গ(লার তৎকালীন মহামণীধী 
বাহুদেব সাব্বভৌমের বিবরণ প্রদত্ত হইয়াছে। সীর্র্বভৌম সন্বদ্ধে অনেক 
নৃতন তথ্য এখনও অপ্রকাশিত রহিয়াছে। আমরা অশেবশ্রদ্ধ।ভাজন 
ঞ্রীযুত তর্কবাণীশ মহাশয়ের প্রবন্ধের পরিশিষ্টরূপে তাহা প্রকাশ করিতে 
চেষ্ট] করিব। 

বাঙ্গালার নব্যনৈয়ায়িকগণ সকলেই পরিজ্ঞাত আছেন যে, রঘুনাথ 
শিরোমণি “অনুমান-দীধিতি”্র বহস্থলে “সার্বভৌম” মত উদ্ধৃত করিয়া 
প্রামশ: খণ্ডন করিয়াছেন। অনুযূন ৬* বৎসর পূর্ব্বে অধুনানুপ্ত “পণ্ডিত” 
পরিকার পরিশিষ্টে কাশীর বিখ্যাত সরম্বতীভবনে রক্ষিত হস্তলিখিত 
সংস্কৃত গ্রন্থের তালিক! মুদ্রিত হয়। তন্মধ্যে বাহুদের সার্বভৌম রচিত 
দুইটা গ্রন্থের নাম ছিল--সমাসবাদ ও চিন্তামণিব্যাখ্যা। (501216- 
[10101 00 06 477871911, ০15. ৬11-150, 0.175০ & 188) 
নমাসবাদ পরবতী রামভদ্র সার্বভৌম রচিত, বাহুদেব রচিত নহে, এ 
বিষয়ে এখন কোন ননেহ নাই। ১৮৮৮ ধৃঃ অধ্যক্ষ ৬০15 সাহেব 
পুথির তালিক। গ্রন্থাকারে পৃথক্‌ মুদ্রিত করেন, তন্মধ্যে (পৃঃ ১৯৯) 
বাহ্ছদব সার্বভৌম রচিত (১৮৫ সং পুথি) চিন্তামণিব্যাখ্ার নাম 
“নারাবলী” এবং পত্র সংখ্য। ১৯৯ লিখিত আছে। কতিপয় বৎনর পুর্বে 
কাশী সংস্কৃত কলেজের তদানীন্তন অধ্যক্ষ মহামহোপাধ্যায় প্ীযুত 
গোগীনাথ কবিরাজ মহাশয় অশেষ পরিশ্রমমহকারে এই গ্রস্থ এবং 
অন্তান্য বিনুপ্প্রায়গ্রস্থ হইতে অজ্ঞ|তপূর্বব বছ উপাদান সংগ্রহ করেন এবং 
বাহদেব, তদৃত্রাত| বিস্ক।ব।চম্পতি, পুত্র জনেশ্বর বাহিনীপতি এবং পিতা 
মহেখর রচিত গ্রন্থের আবিষ্কারমূলে বাঙ্গালায় নবান্তায়চ্চার ইতিহাসে 
আলোকপাত করেন। শ্রন্ধেম কবিরাজ মহাশয়ের ইংরাজি 
প্রবন্ধ বাঙ্গালায়: বিশেষগ্রচার লা করে নাই। কিন্তু শ্রীযুক্ত তর্কবাগীশ 
মহাশয়ের প্রবন্ধ হইতেই বহু নৃতন কথ। অনেকে পরিজ্ঞাত হইয়াছেন। 

উল্লিখিত গ্রন্থগুলি বাঙ্গালার নৈয়ায়িক সপ্প্রদায় কর্তৃক বিশেষভাবে 
আলোচিত হওয়া আবগ্থীক। ছুঃখের বিষয় নব্য্তায়চ্চার বঁমান 
শোচনীপ্ন পরিণতির ফলে অধ্যাপকগণ এ বিষয়ে সম্পুর্ণ উদাদীন। 
বাহদেব সার্বভৌম রচিত নব্য গ্রন্থের আলোচনার কোন দার্থকতা 
আছে, ইহা পরিগ্রহ কর! তাহাদের সাধ্যাতীত। আমর! এ বিষয়ে 
প্রবীণ শ্রীযুক্ত তর্কবাগীণ মহাশয়ের আগ্রহ দেখিয়া পুলকিত হইয়াছি এবং 
প্রধানতঃ ডাহারই উৎসাহে উল্লিখিত গ্রস্থগুলি কথুিৎ আলোচন! করিয়া 


দেখিয়াছি ।১ তাহ।র ফলে শ্রদ্ধেয় গ্রীযুত কবিরাজ মহাশয়ের প্রবন্ধের 
স্থানে স্থানে সংশোধন আবগ্ঠক হইয়ছে। প্রথমে সংক্ষেপে তাহার 
কারণ বলিব। 

১। “প্র্যক্ষমণি মাহেশ্বরী” নামে একটা গ্রন্থ কাণীর সরম্বতীভবনে 
রক্ষিত আছে। শ্রীযুত কবিরাজ মহাশয় (39857%20 01390902 
9101165, 0] [৬., 7১0. 61-69) এই মহেথ্বর বাহছদেব সার্বভৌমের 
পিচ মহেগ্গর বিণারদ হইতে অভিন্ন হইতেও পারে, এইরপ কল্পনা 
করিয়াছেন। কিন্তু তাহার এ কল্পন! প্রমাণসিদ্ধা নহে। এই গ্রন্থ 
আমরা আলোচন। করিয়। দেখিয়াছি (ইহার নূতন সংখ্যা স্তায় 
বৈশেধিক ৩*১) ইহ|। আগ্ঘন্তধগ্ডিত। প্রথম পর্র নাই; স্থিতীয়পত্রের 
আরস্তে আছে 2-%* * * মণিনমধারণেপযোগিমণিপারপ্যম।হ--যত 
ইতি। গ্রসঙ্গাদিতি স্থৃতত্তেপেক্ষানহহাদিত্যর্ঘচ। কেচিদিহোপোদ্যাতঃ 
সঙ্গতি £ নিশ্ষলন্ত উক্তযসম্তবেন উক্তসিদ্ধার্থতাদেতচ্চিন্তায়া ইত্যাহঃ।” 
৩*৯ক পত্রে আছে--“বিশেষণোপলক্ষণ বিচার; সমাপ্ত;। অতঃপরমা- 
সম।প্তিমূলব্য।খ্যা |” ২৭৪খ পত্রে পাঁওয়। যায়, “ইদফ্ালোককৃৎ যব! 
ইত্তাত্র চ বক্ষ্যতি।” “আলোককৃৎ” এই শবের দ্বারা এই গ্রন্থ যে 
পক্ষধরমিশ্রের আলোকের প্রত্যক্ষধণ্ডের টীকা, তদ্বিষয়ে সন্দেহ নাই। 
পরস্ত গ্রন্থোপরি প্রথমতঃ “মাহেশী আলোকটাকা” এইরূপ পরিচর়লিপি 
ছিল, তাহা কাটিয়া (মহামহোপাধ্যায় বিদ্ধ্যেখবরী প্রসাদ কর্তৃক) 
*প্রত্যক্ষমণি মাহেশ্বরী” পরে লিখিত হইয়াছে। দৌভাগাক্রমে সরম্বতী- 
ভবনে "মহেশ ঠন্কুর রচিত “আলোকদর্পণে*র (প্রত্যক্ষথণ্ডের অন্তহীন ) 
দুইটি প্রতিলিপি রক্ষিত আছে (ন্য।য়-বৈশেধষিক, ৩৫* এবং ৩৫১ সং 
পুথি )-_ উত্তর স্থলেই পূর্ব্বোদ্বুত ২য় পত্রের বাক্য অবিকল পাঁওয়! যায় 
(৩৫* সংগ্রন্থের ৩ক পত্রের ২-৩ পওক্তি এবং ৩৫১সং গ্রন্থের ৭ক পত্রের 
৭-৮ পঙক্তি)। “আলোকদর্পণে”্র প্রারস্তে দেখা যায়-- 

শঙ্কর জগদম্থিকয়োরঙ্কে পঙ্কেন খেলস্তং | 
লন্বোদরমবলম্ে যং বেদ ন তত্বতো| বেদঃ ॥ 
গৌধ্যা গিরীশাদিব কান্তিকের়ে। যোধীরয় চন্ত্রপতেরলস্তি। 
আলো।কমুদ্দীপয়িতুং নবীনং স দর্পণং ব্যাতম্থৃতে মহেশ? ॥ 
অত্র গ্লোকানাং ব্যাথ্য টীকাকৃতা সুকরত্বাহুপেক্ষিত৷ স! তিয়ং--প্রারিপ্সিত 
***( ৩৫১ সং পুথি )। 
অপর পুথিতে (৩৫) গ্লেকতরের মধ্যে কৃষ্ণ, বিরিঞ্ি শিব এবং 


১। কাশী সংস্কৃত কলেঞজের অধ্যক্ষ ডঃ শাস্ী এবং সরম্বততীভবন 
পুধিশালাধ্যক্ষ শ্ীযুত নারায়ণ শাস্ত্রী মহাপয়দ্ধয়ের নিকট পুখি দেখার 
অনুমতি এবং সুযোগ দানের জন্ত অশেষ কৃতজ্ঞত| জাপন করিতেছি। 


৪২৩ 





০, ভান্রত্বশ্ [ ২৮শ বর্ষ__২য় খণ্ড ওর্ঘ সংখ্যা 
সরম্থতীর নমন্কীরম্বরূপ অতিরিক্ত ৪টী শ্লোক পাওয়া বায়। এই মহেশের রঘুনাথ শিরোমণি খণ্ডন করিয়াছিলেন, ইছার প্রমাণ পাওয়! যায়। 


অন্ভতর ভ্রাতা ভগীরথ ঠন্ুর, নামান্তর মেঘ ঠকুর, পক্ষধরমিশ্রের ছাত্র 
ছিলেন। মহেশ তাহার গ্রন্থের কতিপয় স্থলে প্রগলভের মত উদ্ধৃত 
করিয়াছেন, যথা 
শ্্ীপ্রগল্ভন্ত উভয়বাদিসিদ্ধং প্রামাণ্যগ্র।হকত্বং হন্তান্তস্তিননা 
যাঁবতী জ্ঞানগ্রাহিকা সামগ্রী তদগ্রাহাত্বং স্বতব্বদিত্যাহ।” 
(৩১ সং পুথির ৪২খ পত্র, ৩৫১ সং পুথির ৪৩-৪৪ পত্র) 


২। সরম্বতী ভবনে “বিস্তাবাচম্পতি” রচিত চিন্তামণি টাকার 
(শব্ধ খণ্ডের) এক প্রতিলিপি রক্ষিত আছে। শ্রীযুত গোগীন1থ 
কবিরাজ মহাশয় গ্রস্থকারকে বাহুদেৰ সার্ব্বভৌমের ভ্রাতা রত্রীকর (1) 
বিস্ঞাবাচম্পতির সহিত অভিন্ন ধরিয়াছেন। এই আগ্যন্তহীন 
গ্রন্থ ও ( ন্যায়বৈশেষিক ২৮১ সং পুধি ) আমর! পরীক্ষা করিয়! 
দেখিয়াছি। প্রথম পত্র না থাকাদ গ্রস্থকারের নাম কিন্বা উপাধি গ্রস্থ 
মধ্যে ফোথায়ও পাওয়া গেল না। নাগরাক্ষরে লিখিত প্রতিলিপির 
পার্থে পরিচয়হ্চক “বি বা”, শবস্থা”, “বি শা” এবং শবিস্তাঝা” 
লিখিত আছে। এই গ্রন্থ ও পক্ষধর মিশরের আলোকের (শব্দ 
খণ্ডের ) উপর টাক বটে। ২য় পত্রের প্রারস্তাংশ আমর! “গুণ'নন্দ 
বিভাবাশীশ” রচিত “শব্দালোকবিবেক” গ্রন্থের একটি অন্তহীন 
(৩৬৬ সং) প্রতিলিপির সহিত মিলাইয়! দেখিয়াছি--অবিকল একই 
্রস্থ। বিণুপ্তপ্রায় এই বিখ্যাত বাঙ্গ।লী গ্রস্থকারের পরিচয় গ্লেক 
নাগরাক্ষরে লিখিত। শেষোক্ত প্রতিলিপি হইতে আমরা উদ্ধৃত 
করিলাম £ 


নমে! দৈত্যকুলা ক্রাস্তভুবোভা রঞ্জিহীর্ববে। 
বৃষ্ণিবংশাবতীর্ণায় চতুর্ববাহায়_বিষ্বে ॥ 
মধুহদনসন্থযাখয।-সুধাক্ষালিত চেতসা। 
গুণানন্দেন কৃতিন! শব্দালোকো! বিবিচ্যতে ॥ 
হুতরাং বাসুদেব সার্বভৌমের পিতা ও ভ্রাতা নব্যন্তায়ের গ্রন্থকার ছিলেন 
এবিষয়ে প্রমাণ এখনও পাওয়। গেল না। (৩) সরম্বতী-ভবনের 


“সারাবলী” গ্রন্থের প্রতিলিপিও নাগর।ক্ষরে লিখিত এবং আগছ্ন্তহীন . 


»-প্রথম ৩ পত্র নাই এবং শেষেও কতিপর পত্র নাই। অনুমানখণ্ডের 
অন্ুমিতি হইতে বাধগ্রস্থের কিয়দংশ পর্য্যন্ত চিন্তামণির টাকা ইহাতে 
পাওয়া যায় এবং রঘুনাথ শিরোমণির "অনুমানদীধিতি” অপেক্ষা এই 
প্রস্থ আকারে বৃহৎ বলিয়। বোধ হুইল । ব্যাপ্তিবাদের টীক। অপেক্ষাকৃত 
কু । এই গ্রস্থ মধ্যেও (ন্যায়বৈশেবিক ২৮* সং পুথি) গ্রস্থকারের 
মাস কিন! গ্রস্থের নাম আমরা কোথায়ও খুজিয়। পাই নাই--কেবল 
পার্খে “চি' সা"" “সার্ক” এবং “সার্ব' টী” লিখিত আছে। প্রতিলিপির 
উপরে গ্রন্থের নাম “পারাবলী” লিখিত রহিয়াছে--ইহাও বিদ্ধ্্বরী- 
প্রসাদদেয় কল্সিত বলিয়া মনে হয়। ক্তরাং এই প্রস্থ যে বাহদের 
সার্ববতৌমটরচিত, তাহ! সম্পূর্ণ বিচারসাপেক্ষ। কিন্তু আমর! এ বিষয়ে যে 
সামান্ত আলোচন! করিয়াছি, তন্বার| এই গ্রন্থই যে “দীধিতি“কার 


সংক্ষেপে তিনটি প্রমাণ লিখিত হইল $-- 

(ক) ব্যপ্তিপঞ্চকের দ্বিতীর লক্ষণে দীধিতিকার “সাধ্যবত্তিন্নে 
যঃ. সাধাভাব১***০ বলিয়। ৭মী তৎপুরুষ ব্যাখ্যা .করিয়াছেন। 
“্দীধিতি প্রসারিণী"কার কৃকদাস নার্ব্বভৌম রস্থলের ব্যাখ্যায় লিখিয়াছেন 
পৃঃ) “সাধ্যাভাবপদবৈয়ধধ্যমিতি সার্ববতৌমদুষণমন্ধর্ত মাহ-_ 
সাধ্যবস্তিন্নে য ইতি ।” তৃতীয়লক্ষণের অবতারণাকালে বন্ততঃই সরন্বতী- 
ভবনের উল্লিখিত গ্রন্থে এইরাপ আশঙ্কা কর! হইয়াছে +-- 


(৪* 


"সাধ্য ভবপদণ্ বৈযর্ধামাশস্ক্যাহ সাধ্যবদিতি” (১২ক পত্র) 


(খ) “সিংহব্যাপ্্রীর দীধিতি"গ্রস্থে “কেচিন্ত* বলিয়। যে মত 
উদ্ধৃত হইয়াছে, তাহা “দার্বভৌমম৩” বলিয়াই টীকাকারগণ ব্যাধ্যা 
করিয়াছেন। কিন্তু তৎকালীন নৈয়ায়িকগণ পুন্বতন গ্রস্থের বচন 
অবিকল উদ্ধৃত ন|। করিয়া “নপরিক্ষার” কিন্বা! “বহুধ! পরিছুরব্ন্‌” এতই 
পরিবর্তিত আকারে উদ্ধৃত করেন যে চিনিয়া লওয়! প্রায় অসাধ্য। 
বর্তমান স্থলে দীধিতির সন্দভ এই £ 

“কেচিন্তুত সাধ্যানামানাধিকরণ্যং হেতুতা বচ্ছেদকসন্বন্ধেন হেত্ধিকরণে 
তেনৈব সম্বদ্ধেন সাধ্যববৃত্তিহ ভাবস্তদধিরণ[ভিন্নত্রমর্থঃ তেন.*-ই ত্যাহঃ 1” 


সরন্বতী-ভবনগ্রন্থের (“সারাবলী”র ) সন্দভ এই £(১২খ পত্র) 


“সাধ্যাসামানাধিকরণাং সাধ্যনামান[ধিকরণ্যাভাব স্তদনধিকরণত্ব- 
মিত্যর্থ:।” 

দীধিতিকার এখানে সার্ধভৌমের ক্ষুদ্র উক্তি আমুল পরিবর্তন ও 
পরিবদ্ধন করিয়া বিস্তারপূর্বক উদ্ধৃত করিয়াছেন। দৌভ্তাগাক্রমে 
একজন অজ্ঞাতপূর্ধ্ব দীধিতি টীকাকারের গ্রন্থে এই পরিবর্তন ও তাহার 
সার্থকতা শ্পষ্টাক্ষরে লিখিত হইয়াছে। সরম্বতী-ভবনেই রঘুনাথ 
বিালক্ক'র রচিত “অনুমান দীধিতিপ্রতিবিদ্ব" নামক গ্রন্থের এক 
থগ্ডিত প্রতিলিপি (ব্যধিকরণ ধর্দ্াবচ্ছিন্নাভাবপ্রকরণ পর্যান্ত ) 
অপ্রত্যাশিত ভাবে আমাদের হস্তগত হয়। তন্মধো সিংহবাস্রীর উক্ত 
স্থলের টাকায় লিখিত হইয়াছে :-_ 

“ননু সাধ্য-সামানাধিকরণ্য।ভাবস্তদধিকরণত্বমিত্যেবং সার্ববভৌমোক্তং 
কিমিতুযুপেক্ষিতমিতাত আহ তেনেতি |” (৫৬ খ) 

সরম্বতী-ভবনের তথাকথিত "সারাবলী” গ্রন্থ যে বন্ততঃই সার্ধতৌম 
রচিত, তাহার প্রমাণ পাওয়। গেল। 

(গ) ব্যধিকরণধর্মাবচ্ছিন্নাভাবপ্রকরণে দীধিতিকার সার্ব্বতৌমের 
“কূট"-ঘটিত এক ব্যাণ্ডিলক্ষণ উদ্ধৃত করিয়াছেন। যখা,_- 

“অন্ঠে তু বৃতিমদ্বৃত্তয়ে! যাবস্তঃ সাধ্যাতাব সমুদায়াধিকরণ বৃত্তি- 
ত্বাভাবান্তহবত্বং...ইত্যাছঃ, তন্ন” ইত্যাদি । এই লক্ষণ ও প্রায় অবিকল এ 
গ্রন্থে পাওয়! বাইতেছে-_ 

“মৈবং, সাধ্যাতাবকূটাধিকরণবৃত্বিত্বাতাব! বৃত্ধিমতূত্তয়ো যাবস্ত 
স্তাবদাজযত্বং ব্যাপ্ডিরিতি বিবক্ষণাৎ।” (১৪ ক পত্র) 

বানছদেব সার্বধতৌম এই গ্রন্থে পূর্ববতন গ্রন্থকারদের মত বহস্থলে 


চৈত্র--১৩৪৭ ] 


চু 


উদ্ধত করিয়াছেন। শ্রীযুক্ত কবিরাজ মহাশয় তাহার হুচি প্রকাশ 
করিয়াছেন। যল্ঞপতির বচন ১২ বার উদ্ধৃত এবং খণ্ডিত হুইয়াছে। 
৫৩ক পত্রে “নরনিংহ” নামক সম্পূর্ণ অজ্ঞাত এক নব্যনৈয়ায়িকের বচন 
লিখিত হইয়াছে। ১৫৪ক এবং ১৬৮ক পত্রে যথাক্রমে “প্রত্যক্ষমণি 
পরীক্ষা” এবং “শবমণি পরীক্ষা” গ্রশ্থের দোহাই আছে--সম্ভবতঃ তাহা 
তাহার স্বরচিত গ্রস্থেরই পৃথক অংশ। এতদনুসারে বর্তমান গ্রন্থের 
নাম “অনুমানমণিপরীক্ষা” বলিয় অনুমান কর! যাইতে পারে, “সারা বলী” 
নহে। তাহার নিঞ্জ অধ্যাপকের মত ছুইস্থলে উদ্ধত আছে ; 
যথা,-_ 

অত্রাম্মদগুরুচরণ।:-_সাধ্যতাবচ্ছেদকপ্রকারেণ প্রকৃত সাধ্যব্যাপ্তয- 
বগাহি-পক্ষতাবচ্ছেদক প্রকারক-পক্ষতোপরক্ত-পক্ষ ধর্মতাবগা হি-জ্ঞ।নজন্ো 5 
সাক্ষাৎ কাধ্যশাব্দোইনুমিতিরিত্যর্। ইথমপি তু**ইত্যাঃ। (৮৯ 
পর, অন্ুমিতিপ্রকরণ ) 

অত্রাম্মদ্‌গুরুচরণা:__ ধুমাদিহেতে। অগ্নবন্ধাছ্যপাধিতানিরাসায় ব্যভি- 
চ|রোন্নয়নসমর্থত্বে সতীতি বিশেষণীয়ং, ন চৈবং সাধনা-ব্যাপকপদবৈয়র্ঘ্যং 
'*ইত্যাহঃ। (৯৮ খ, উপ।ধিবাদ ) 

কিন্ত বাস্ছদেবের এই গুরু কে ছিলেন, এখনও অজ্ঞ।ত রহিয়াছে । 
পক্ষধরমিআের অনুমানালোকের অনুমিতিপ্রকরণে উদ্ধত বচন 
আমর] খুজিয়। পাইলাম না। সুতরাং বাস্থদেৰ পক্ষধরমিশ্রের 
ছাত্র ছিলেন, এই প্রবান্দ প্রমাণসিদ্ধ নহে। তবে এ বিষয়ে আরও 
বিচারালোচনা আবগ্তক। এভভিন্ন 'কেচিত্তু উত্তানাস্ত,” “কশ্চি- 
দ্বিপশ্চিন্মন্যো' প্রভৃতি নির্দেশপুর্বক সমসাময়িক এবং পূর্বতন কত নব্য 
নৈয়ায়িকের মত যে উদ্ধৃত হইয়াছে, তাহার ইয়ত্তা করা কঠিন। ইহাদের 
মধ্যে অনেকেই বাঙ্গালী ছিলেন সনোহ নাই। বাসদেবের পুর্বগামী 
নৈয়ায়িকদের মধ্যে অন্ততঃ একজন যে বাঙ্গালী ছিলেন, তাহার প্রমাণ 
পাওয়া গিয়াছে। ব্যাধিকরণধশ্মীবচ্ছিন্নাভাব প্রকরণের একস্থলে বাস্ছদেব 
লিখিয়।ছেন :-_ 

'উত্তানস্ত সাধ্যাভাববতি যহ্ধ.তো। প্রকৃতানুমিতিবিরোধিত্বং নান্তি 
তন্বং লক্ষণমাহঃ তম্-*”” (১৪ক পত্র) 

রঘুনাথ শিরোমশির দীধিতি গ্রস্থেও এই মত অবিকল উদ্ধৃত হইয়া 
গণ্ডিত হইয়াছে এবং একমাত্র মথুরানাথ ব্যতীত দীধিতির সমস্ত 
টাকাকারগণ ( কৃষ্দাস হইতে গদাধর পর্যন্ত) ইহা প্রগল্ভের তৃতীয় 
লক্ষণ বলিয়! ব্যাখ্যা করিয়াছেন। এই প্রগল্ভ বাঙ্গালী ছিলেন, তাহার 
প্রমাণাবলি আমার পৃথক্‌ এক প্রবন্ধে মুদ্রিত হইয়াছে । মথুরানাথ অনুমাল 
দীধিতির টাকায় উদ্ধৃত মতটাকে বিশারদ মত বলিঙ্প! ব্যাখ্যা করিয়াছেন-_ 
“বিশারদলক্ষণমুপন্তন্ত দুষয়তি য্ধিত্যাদিনা” (২) কিন্তু বিশারদ 





(২) অন্ুমাম দীধিতির মাধুরী টীকা ছু্প্রাপ্য। বঙ্গীয় সাহিত্য 
পরিষদে একটি খণ্ডিত প্রতিলিপি আছে (১০৩৮ সং সংস্কৃত পুধি, 
ব্যাপ্তিবান, ৪৩ক গঞ্জ জষ্টব্য)। ঢাক! বিশ্ববিদ্ভালয়ের পুধিশালায়ও 
একটা প্রতিলিপি আছে (২*৮৮ সং পুথি, ৬৮ থ পত্র)। আমরা 

৫৪ 


ল্রান্ুরতল্র সার্ত্রভৌস 


৯৬ 


বলিতে তৎকালে একমাত্র সার্বভৌমের পিত| বিশারদকেই বৃঝাইত। 
সার্বভৌম কখনও “উত্তানান্ত" বলিয়। পিতৃমতের উপর কটাক্ষ করিতে 
পারেন না। মথুরানাথের উক্তি অগ্রাহা হইলেও ইহাতে “বিশারদ” 
নামক শিরোসণির পূর্বগামী একজন বাঙ্গালী নব্য-নৈয়ারিকের অস্থিত্ব 
সপ্রমাণ হয় বলিয়। আমাদের ধারণ। এবং তিনি আপাততঃ বান্ছদেব-পিতা 
হইতে অভিন্ন ধর! যাইতে পারে। 





বিশারদ ভট্টাচার্য্য 


এখানে প্রনঙ্গক্রমে বাহুদেবের পিতার সম্বদ্ধে জ্ঞাতব্য বিষয় সংক্ষেপে 
সংগৃহীত হইল। কাশীর সরস্বতী ভবনে বাহুদেব সার্ধ্বভৌমের পুত্র 
( জলেশ্বর)“বাহিনীপতি মহাপান্ত্র ভট্টাচার্ধ্য” বিরচিত “শব্দালোকোস্তোত” 
গ্রন্থের সপূর্ণ একটি প্রতিলিপি আছে (ন্তায়বৈশেঘিক ৩৫৮ সং পুথি, 
পত্র সংখ্যা ৫২, লিপিকাল ১৬৪২ সম্ৎ)। ্রীযুন্ত কবিরাজ মহাশয় এই 
অজ্ঞাতপুর্ব গ্রস্থের পরিচয় প্রদান করিয়! বাঙ্গালী এক মহানৈয়ায়িকের 
লুপ্তকীন্তির উদ্ধার সাধন করিয়াছেন। এই গ্রন্থ বাহুদেবের জীবদ্দশায় 
রচিত হইয়াছিল এবং গ্রন্থকার মঙ্গলাচরণে কোন দেবতার নসক্কার না 
করিয় নজ পিতৃদেব সার্্বভৌমের বন্দনা করিয়া অপূর্ব দুইটি ফ্লোক 
রচন| করিয়াছিলেন। যথা, 


নৈগমে বচসি নৈপুণং বিধেঃ 
স্বভৌমপদ সাতিধং মহঃ। 
জীর্ণ তর্কতনু জীবনৌষধং 
জৈমিনের্জযতি জঙ্গমং ঘশ: ॥১ 
কংসরিপোরবতারে 

বংশে বৈশারদে জাতং । 
উত্তংসং খলু পুংসা (২) 

তং বনে সার্ব্বভৌমাধ্যং ॥২ 


এই গ্লেঃকে বিশারদ-সার্রবভৌমের পিতাপুত্র সম্বন্ধ পরিস্বট না 
হইলেও এ বিষয়ে সন্দেহের অবদর নাই। কারণ উক্ত জলেশ্বর বাহিনী- 
পতির পুত্র মহাপপ্ডিত স্বপ্রেশ্বরাচার্য শাগ্ল্যহ্ত্রের ভাস শেষে আত্ম- 
পরিচয়স্থলে লিখিয়াছেন £-_ 


গৌড়্াবলয়ে বিশারদ ইতি থ্যা হাদভুত্ত'মণেঃ 

সর্ধোব্বপতি-সার্ববভৌম-পদভাক্‌ প্রজ্ঞাবতামগ্ুণী:। 

শুস্মাদাস জলেম্বরে! বুধবরে! সেনাধিপঃ শ্াভৃতাং 

স্বপ্রেশেন কৃতং তদঙগজনুষ! সদ্ভক্তি মীমাংসনস্‌ ॥ 
(শার্িজ্য্থত্র, মহেশ পালের সং, পৃ ১৯৯) 


এই ক্লোকেও “তুমণি” বিশারদের সমগ্র গৌড়দেশে প্রতিষ্ঠার কথ 


উভয় প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের [নিকট জামাদেশ্ম কৃতঞ্জতা জ্ঞাপন 


করিতেছি। 


৮2৯০৫ 


খ্যাপিত হুইয়াছে। এতস্তিন্, সার্ধ্ঘভৌমত্রাত৷ বিভভাবাচম্পতির পুত্র 
বিভভানিবাস এবং পৌন্র কতন্ায়বাচম্পতিও শ্ স্ব গ্রস্থে বিশারদ হইতেই 
জআব্বপরিচয় দিয়াছেন। এই বিশারদের প্রকৃত নাম মাত্র ছুই স্থলে 
লিপিবদ্ধ আছে-_চৈতন্ত ভাগবতে মহেশ্বর বিশারদ এবং সার্ব্বতৌমের 
স্বরচিত অন্বৈতমকরন্দের টীকায় নরহরি বিশারদ । শেষোক্ত ক্লোক 
শ্রীযুক্ত ফণিভৃষণ ভর্কবাগীশ মহাশয়ও উদ্ধৃত করিয়াছেন। যথা 





প্রীবন্দ্যা ্বয়কৈরবামৃতরুচে| বেদান্ত বিভ্ভাময়াৎ 
ভট্টাচার্ধ্যবিশারদান্নরহরেধ (ং) প্রাপ ভাগীরথী। ইত্যাদি 


স্থলে সার্বভৌম পিতামাতার নাসন্বয়ই (নরহরি বিশারদ এবং ভাগীরথী) 
কীর্তন করিয়াছেন বলিয়া! আমর! মনে করি । শ্রীযুক্ত তর্কবাগীশ মহাশয়ও 
পরে তাহার “ন্যায় পরিচয়” পুস্তকের দ্বিতীয় সংস্করণের ভূমিকায় এইমতই 
গ্রহণ করিয়াছেন। অবস্ঠ “নদীয়া কাহিনী” নামক গ্রস্থের এক পাদটাকায় 
নয়হরি বিশারদকে সার্বভৌমের পিতামহ বগা হইয়াছে (পৃ ১৫৭, 
২য় সং), যদিও মুল গ্রস্থমধ্যে ( পৃঃ ১১* ) এইরূপ উক্তি মাই। পরে, 
'ভারতবর্ষে' জনৈক লেখক ( ১৩৩৬ ৰাং, আশ্বিন সংখ্যা, পৃঃ ৫৯৭-৮) 
তাহাই বিন! বিচারে গ্রহণ করিয়াছেন । কিন্ত আমর! নবন্বীপ অঞ্চলে বছ 
অনুসন্ধান করি! দেখিয়াছি, নমীয়। কাহিনীর এই উক্তি কল্পমগ্রহৃত। 
আমর! পরে দেখিব, কোন কুলপঞ্জিক! দ্বারাই ইহ! সসধিত হয় না। 
আশ্চর্যের বিষয়, গ্রন্থকার ও প্রবন্ধলেখকগণ নির্বিবাদে এইরূপ 
কল্পিত বন্ত মুদ্রিত করিয়। সত্যনিধাারণে বিদ্ধ উপস্থিত করিতে কু! বোধ 
করেন না। 

সার্ব্ভৌমের বচনানুসারে তাহার পিত। নরহরি বিশারদ বেদান্ত 
ছিলেন এবং মথুরানাথের উক্তি হইতে ঠাহার নৈয়ারিকত্বও সপ্রমাণ 
হইতে পারে । এতত্তিন্ত, বিশারদ নামে একজন বিখ্যাত শ্বৃতিনিবন্ধক।র 
বঙ্গের সুলতান বারবকসাহের রাজত্বকালে ১৩৯৭ শকান্ধের পরে গ্রন্থ 
রচন| করেন। (৩) তিনিও অভিন্ন বলিয়া মনে হয়। কারণ নবদ্ধীপের 
প্রবাদ অনুসারে সার্বাভোৌমের পিতা ম্মার্ত ছিলেন। (নবদ্বীপ মহিমা, 
১ম সং, পৃঃ ৩৪; ২য় সং, ১৫৭ পৃঃ)। সার্ববভৌমের পিত| নরহরি 


বিশারদ চৈতচ্কদেবের মাতামহ নীলাম্বর চক্রবর্তীর সহাধ্যায়ী ছিলেন। . 


(চৈতন্য চরিতামৃত মধ্য-বষ্ট এবং কর্ণপুরের চৈতচ্যচন্্রোদয়নাটকের 
বষ্টঙ্ক শরষ্টব্য)। শচীদেবীর প্রথম পুত্র বিশ্বক্পপের (১৪৭৫ থুঃ) জন্মের 
পূর্বে মাত আটটি কন্ঠ] সন্তান নষ্ট হয়। সুতরাং নীলাম্থরের জন্ম- 
তারিখ অনুমান ১৪১৫-২* খৃঃ মধ্যে পড়িবে এবং তাহার সহাধ্যায়ীর 
জ্ঞোষ্ঠ পুত্র বাহুদেব সার্বতৌমের জন্মতারিখ অনুমান ১৪৪৫-৫০ খবঃ 
ধর! বায়। 

সার্ব্বভৌমের চিন্তামপিবাখ্যা নবর্থীপ অবস্থান কালে রচিত হইয়াছিল 
সন্দেহ নাই | এই গ্রস্থের রচনাকাল অন্মান করিতে হইলে সার্ধ্বভৌমের 


আনা পি পপ পপ ০৭ পপ 





8৮৯০ এ 


(৩ অন্মজিখিত' “হরিদাস তর্কীচার্ধ্য" প্রবন্ধ--বঙ্গীয় সাহিত্য- 
পরিষৎ পত্রিক!, ১৩৪৭। 


ভ্াাম্লভন্ব 


[ ২৮শ ব্ধ--২য় খণ্ড--ঘর্থ সংখ্যা 


সহ ৮৮ হা ৮” 





উড়িস্কাযাত্রার আনুমানিক কাল নির্ণয় কর! কর্তব্য। ১৫৯ খ্বঃ সার্বব- 
তৌমের মহিত চৈতন্তদেবের প্রথম সাক্ষাৎ, তৎকালে সার্বভৌম উড়িস্ায 
ূর্ণপ্রতিষ্ঠিত এবং প্রভারশালী রাজপুরুষের মধ্যে পরিগণিত। হ্থুতরাং 
১৫** খৃঃ পর্ব্বেই তিনি উড়িস্তার় গমন করিয়াছিলেন। এইরূপ অনুমান 
কর! অসঙ্গত হইবে না। জয়াননোর মতে চৈতচ্যদেবের জন্মের পূর্ব্বেই 
তিনি উৎকল গমন করেন, কিন্তু তৎকালে প্রতাপরুদ্র রাজা নহেন ; 
হুতরাং জয়াননোর উক্তি সর্বাংশে গ্রহণীয় নহে। ১৪৮*-৯* খবঃ মধ্যে 
তাহার নব্যস্তায়ের টাকা রচিত হইয়! খাকিবে। 

যাহারা নবহ্ীপের নৈয়ায়িক বাস্থদেব সাব্বভৌম ও উড়িস্ার 
বৈদাস্তিক বাহুদেব সার্বভৌম পৃথক্‌ বলিয়া মনে করেন, জলেশ্বর বাহিনী- 
পতির নব্য্তায় গ্রন্থের আবিষ্ষারে তাহাদের মত নিশ্প্রমাণ প্রতিপর 
হইতেছে। জলেঙ্বরের প্রথম মঙ্গলাচরণ গ্লোকে সাব্ষভৌমের বেদান্ত, 
স্টায়, বৈশেষিক এবং মীমাংস! শাস্ত্রে গ্রবীণত। ম্পষ্টক্ষরে কীর্ঠিত হইয়াছে। 
পণ্ভাবলীতে উদ্ধৃত তাহার প্রসিদ্ধ ফ্লোকে ও তিনি ঘড়দশনবিদ্‌ বলিয়াই 
মিজেকে খ্যাপন করিয়াছেন ঃ 


জ্ঞাতং কাণভুজং মতং, পরিচিতৈবান্ীক্ষিকী, শিক্সিতা 
মীমাংস1 বিদিতৈব সাংখ্যসরণি মোগে বিতীর্ণা নতিঃ। 
বেদ1প্ত1; পরিশালিতাঃ সরভসং, কিন্তু স্বংরন্সাধুরী 
ধারা ক! চন ননাগুনুমুরলী মচ্চিন্ত মাকনতি ॥ 

(৯৯ ফ্লেক) 


জলেশ্বরের “শবালোকোস্তো ৬” গ্রন্থে একাধিক স্থলে “পিতৃচরণান্ত” 
এবং “অন্মকং পৈতৃকঃ পন্থাঃ” বলিয়! সাব্বভৌমের নবান্ঠায়শান্ত্ীয় মত 
উদ্ধৃত হইয়ছে। এই জলেশ্বর যে উড়িস্কাবাসী ছিলেন, “মহাপা্র” 
উপাধি হইতেই তাহ! প্রমাণিত হয়। 

উড়িযার রাজসভায় অবস্থানকালে সাব্বভৌম “অস্বৈতমকরনে”র 
টাকা রচন! করিয়াছিলেন। এই গ্রপ্থের মঙ্গলাচরণ গ্লোক চুড়াপগ্তভাবে 
অদ্বৈতবাদের নির্দেশক । 


দেবে! নিজাজ্ঞানবশেন সাক্ষী জীবে! মন: স্পনদিতমীশ্বরশ্ঠ। 
জগন্তি জীবানপি বীক্ষতে যঃ স্বস্থ: স্বয়ং জেযোতিরহং স এক: ॥ 


হুঙরাং এই গ্রন্থরচনাকালে তিনি চৈতন্থ মত অবলম্বন করেন নাই। 
গ্র্থশেষে সার্বভৌম স্বকীয় পৃষ্ঠপোধকের নামোল্লেথ করিয়।ছেন £ 


কর্ণাটেশ্বর-কৃকরায়-বৃপতে-গর্ববগ্রিনির্ববপক্ষে। 

যত্র স্ত্তভরোহ ভবৎ গজপতিঃ ইরুদ্রভূমীপতিঃ | 
তন্ত ব্রহ্মাবিচারচারুমন সঃ শ্রীকৃর্ম বিস্ত।ধর 

হানন্দো মকরন শুদ্ধিবিধিন| সাজে ময়! মন্ত্রিতঃ ॥ 


কর্ণাটরাজ কৃ্রায় ১৫১, খৃঃ সিংহাসনারোহণ করেম। :৫১২ খু: 
তাহার উৎকল অভিযান আরম্ভ হয়। হুতয়াং এই প্রস্থ ১৫১১ খৃঃ এর 
পূর্ব্বে রচিত হওয়। সন্তধপর নহে । চৈতন্ঠচরিতকারদের মতে ১৫৯৯ ধুঃ 
চৈতন্তদেব সার্ববতৌমকে প্রথম দর্শন কালেই ম্বমতে আনয়ন করিয়াছিলেন! 


চৈত্র--১৩৪৭ ] 


কিন্তু তাহ। হইলে সার্বভৌম এ সময়ের পরে “অদ্বৈত মকরন্দে"র টাকা 
করিয়। অধ্ৈতমত সমর্থন করিতে পারেন না। 

মহাপ্রভুর অন্তর্ধানের পুর্বে ১৫৩২ খুঃ.সার্বভৌম পুরীত্যাগ করিয়া 
বারাণসী গমন করিয়াছিলেন । চৈতম্যচরিতামৃতের মধাযখণ্ডে শেষলীল।র 
সুত্রবর্ণনায় পাওয়া যায় ;-- 





“পথে সার্বভৌম সহ সভার মিলন। 
সার্বভৌম ভট্টাচার্যের কাশীতে গমন ॥” 


কিন্ত আশ্চর্যের বিষয়, কবিরাজ গোস্বামী যথাস্থানে ইহ! বর্ণনা 
করিতে ভুলিয়! গিয়াছেন। কবিকর্ণপুরের চৈত্ন্যচন্দ্রোদয়নাটকের শেষ 
অস্কে বারাপসীগামী সার্বভৌমের উক্তি পাওয়া! যায় :--“হঠাদেবাহং 
বারাণনীং গত্বা ভগবন্মতং গ্রাহয়ামীতি” | তিনি শেনজীবন কাশীতেই 
যাপন করিয়াছিলেন। কাশীথণ্ডের টীকাকার রামানন্দবন বাঙ্গালী 
ছিলেন। তিনি এক “বাস্থদেব” নামক শেষ্ঠ ত্রাঙ্গণের বাক্যাগ্রহে 
টীক1 রচনায় প্রবৃত্ত হইচাছিলেন এবং প্রথম শ্লোকের গণেশবন্দনার 
ব্যাখ্যায় লিখিয়াছেন :₹-_“অত এ বেদানীমপি গণেশল্যাগ্জে প্রীসা্বাভৌম 
ভটাচার্যা। দক্ষিণাত্যাশ্চ স্বকর্ণো ধৃত্বা শিরোধুননং শির; কুটনঞণ কুর্বস্তীতি”। 
উক্ত বাহুদেব এবং সাব্দভৌম উত্তয়ই আমাদের আলোচ্য বাহুদেব 
সার্বাভৌম হইতে অভিন্ন বলিয়া মনে হয়।৪ সার্বভৌম খুঃ ১৬শ 
শতাব্দীর চতুর্থ দশকেও প্রায় নবতিবম বয়সে জীবিত ছিলেন এইরূপ 
অনুমান কর! চলে। 

সার্লাভৌম পুত্র জলেশ্বর একাধিক গ্রস্থ রচনা করিয়/ছিলেন। শব্দা- 
লোকোফ্ঠেতের ২৮১ পত্রে লিখিত আছে-__ 

অধিকং শংধিকরণে (1) গ্রপঞ্চিতমম্মাভিঃ | 

ইহা! মীমাংসাশাস্্ীয় কোন গ্রন্থ হইতে পারে। শেষপত্রে আছে :__ 
“এবং প্রত্য়ং বিনাগীত্যা্দি ছন্দ (1? শব্দ)-প্রকাশটিযন্তাং প্রপঞ্চিতং 
উত্তৈবানুসন্ধেয়মূ।” এই “শব্দপ্রকাশ” গ্রন্থ বর্তমানে সম্পূর্ণ অজ্ঞাত, 
নবান্তায়ের শবখণ্ডের চ্যায় কোন শ্রস্থ হইবে সন্দেহ নাই। 
জলেশ্বর-পুত্র স্বপ্রেশ্বরাচার্ধয ষড়দশনবিৎ মহাপপ্ডিত ছিলেন। শাগিল্য 
সুত্রভান্তের একস্থলে আছে £-_ 

“প্রমাণ বিচারে, স্মভি শ্ঘায়তত্বনিকষে বেদীস্ততত্বনিকষে চ নিরূপিত 
ইতি নেহ প্রতগ্ঠাতে।” ( পৃঃ ১*৬-৭, মহেশ পালের সং)। এতন্তি্ন, তিনি 
বাচম্পতিমিশ্রের তত্ব-কৌমুদ্ীর উপর “প্রড1” টাকা রচন! করিয়াছিলেন। 

1911 £ ০019171৮801005 0. 6) কিন্তু ভক্তিহুত্রের ভাস্তকাররূপেই 
তিনি চিরজীবী হইয়াছেন। ভক্তিস্ত্রের অন্ঠ টাকাকার মৈথিল ভবদেব 
মিশর সবপ্রে্বরের মত শ্রদ্ধাসহকারে পদে পদে উল্লেখ করিয়াছেন। এখানে 
বল! আব যে জলেশ্বর কিনব! স্বপ্নেশ্বর চৈতন্যমতাবলঘী ছিলেন না, 
তাহাদের গ্রন্থ হইতে ও এইরূপ প্রতিপন্ন হয় এবং চৈতন্যসম্প্রদায়ের 


শি বা শীতল উজ পপি শী আপি পিল প্প্পীপ্লাপ্লাশ তা তাতো তি ও শীট 


৪1 অন্মলিখিত ইংরাজি প্রবন্ধ [. চা. 0.১" 2001.» 190. 66-? 
জ্ধ্য। 


সপ আপ পা 


বাস্সতেন্র সার্খ্ভোৌস 





শু 





শাখাবর্ণনায়ও সাবর্বতৌম ভিন্ন তাহার এবং তাহার ভ্রাত| বিস্তাবাচম্পতির 
অধস্তন কোন বংশধরের নাম পাওয়া যায় না। 

বঙ্গীয় নৈয়ায়িক সম্প্রদায়ের চিরপ্রচলিত প্রবাদ অনুসারে রঘূনাথ 
শিরোমণি _-সার্র্যভৌমের ছাত্র ছিলেন। যদিও নৈয়ারিক সম্প্রদায়ের 
অনেক গ্রবাদই অধুলক প্রতিপন্ন হইতেছে-__-তথাপি যিরুদ্ধ প্রমাণ 
আবিষ্ষার ন| হওয়! পথ্যস্ত ইহা সত্য বলিয়! ধরিতে হইবে। সনাতন 
গোস্বামী এবং সম্ভবতঃ জলেশ্বর বাহিনীপতি ও তাহার নিকট অধ্যয়ন 
করিয়াছিলেন। এতত্ডিনন সার্কাভৌমের অন্ত কোন ছাত্রের নাম আবিষ্কৃত 
হয় নাই। শ্মার্ত রঘুনন্দন ডাহার ছাত্র ছিলেন, এরূপ কোন প্রমাণ 
নাই। শ্রীযুক্ত ফশিভূষণ তর্কবাগীশ মহাশয় এ বিষয়ে যথেষ্ট বিচার 
করিয়াছেন। কৃষ্ণনন্দ আগমবাগীশ রঘুনন্দনের ও পরবর্তী ছিলেন, এরূপ 
গ্রমাণ রহিয়াছে । 

পরস্ত প্রায় ৫* বৎসর ধরিয়া! যুক্তি ও প্রমাণপক্ষপাতী বহু 
এঁতিহাসিক ও প্রবন্ধকার পুনঃ পুনঃ প্রমাণ করিয়।ছেন যে, চৈত্যাদেব 
সার্ববতৌমের ছাত্র ছিলেন না । কিন্তু বৃন্দ।বনদাস, কবিকর্ণপূর, জয়ানন্দ, 
কবিরাজ গোস্বামী প্রহতির প্রামাণিক উক্তি উপেক্ষা করিয়া যাহারা 
এখনও অদ্বৈতপ্রকশের অমূলক উক্তিই আকড়াইয়! ধরিয়া আছেন, 
তাহাদের চিত্তবৃত্তির স্বরূপবর্ণনায় অগ্রসর হইলে কাহাকেও দৌষ 
দেওয়া চলে না । আমর! এ বিষয়ে আর একটি নুতন প্রমাণ উপস্থিত 
করিতেছি। ঢাকা বিশ্ববিস্তালয়ের বিপুল পুথি সংগ্রছে চৈতন্ভচরিত 
বিষয়ক একটি নৃতন গ্রন্থ আবিষ্কৃত হইয়াছে £--ব্রজমোহন দান রচিত 
চৈতন্ঠতন্বপ্রদীপ ৫ (গ্রন্থসংখ্য। ১৬৭৩, পত্রসংখ্যা ৫*, লেখক কৃষ্ঃবললত 
শন্মা, লিপিকাল ১৬২৫ শক ১৩ ফান্ন)। এই গ্রন্থে কতিপয় অজ্ঞাত- 
বৈষঃবগ্রস্থের উল্লেখ দৃষ্ট হয় ; যথ|, চৈতম্যতত্বমৃত,ভক্তিভাবপ্রদীপ, জয়কৃফ 
দাস ঠাকুর রচিত বিচার-হ্ধার্ণব, নরহরি দাস রচিত চৈতন্তসহত্র- 
কৃষ্ণতত্বপ্রকাঁশ, নারায়ণতত্বপ্রকাশ প্রভৃতি । বৃন্দাবনদাস ও মুরারির 
চরিতগ্রস্থ ইহার উপাদান এবং গ্রস্থমধ্যে একস্থলে চৈতগ্থচরিতামৃতের 
(১৩ ক পত্রে) এবং “শ্রীকৃষ্খসন্দর্ভে শ্ীজীবগোন্বামী"র বচন উদ্ধৃত 
হইয়াছে। অনুমান হয় জীবগোস্বামীর জীবদাশায় ধৃঃ ১৭শ শতাব্পীর 
প্রথম ভাগে এই গ্রন্থ রচিত হইয়াছিল। গ্রন্থে চৈতন্যের অবশারতন্ব, 
বিভিন্ন জন্ম পাট নির্ণয়, শাখা নির্ণয় এবং মহাপ্রভুর লীল! সুত্র বর্ধিত 
হইয়াছে_সব্ধাত্র কিছু নূতন কথ পাওয়া যাইবে। মহাপ্রভুর বিদ্বা 
শিক্ষা বিষয়ে এই গ্রন্থে পায়! যায় ৫ 


গঙ্জাদাস দ্বিজন্থানে পড়িবারে দিল। 
অল্পে অধ্যাপক প্রভু সর্ধবশাস্ত্রে হেল ॥ 


পাপী শিশ তপতি রোদ পপি ৩৯ আপিল 


৫। ঢাকা বিশ্ববিভ।লয়ের সংস্কৃত ও বাঙ্গাল! পুখিণালার অধ্যক্ষ-. 
সুযোগ্য প্রমান হুবোধচন্ত্র বন্দেযপাধায় এম ও এই গ্রন্থ এবং অন্তান্ত 
ছুত্রীপ্য প্রস্থের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়া আমাদ্দের অশেষ 
কৃতজ্ঞতা অর্জন করিননীছেন। 'তক্তিভাব প্রদীপ' নাঁনক একটি আন্তস্তহীন 
বৈষবগ্রস্থের প্রতিলিপিও (৪৪৯৯ সং পুখি) ভরষ্টব্য। 


২৬ 


ভ্ডাব্রভবহ্ধ 


[ ২৮শ বর্ব_২য় খণ্ড ৪র্থ সংখ্যা 





পড়িল সকল বিভ্ভ। করি গুরু লক্গ্য। 
অষ্টাদশ বিদ্তা' এতে প্রভু হৈলা দক্ষ ॥ 


(৪৫ খ পত্র) 


এই গ্রন্থে সার্বভৌমের একটি অভিনব প্লোক ও উদ্ধৃত হইয়াছে £ 
“গুন সাব্বভৌম ভটাচাধ্যের বচন। তথাহি-_ 
অবতরতি জগত্যাং কৃষ্চচৈতন্যদেবে, 
ন ভবতি বিমলাধী ধশ্য তন্তৈব ন স্যাৎ। 
উদ্নয়তি দ্িননাথে সৎপথে যন্ত দৃষ্টি (ঃ) 
প্রসরতি নহি কিবা তন্ত শক্ত তমিস্ত্রে ৪” 
(৪* ক পত্র) 


কুলপরিচয় ও বংশাবলী 


সার্বভৌম অদ্বৈতমকরন্দের টাকায় “প্রীবন্দা হ্বয়” বলিয়। কুলপরিচয় 
দিয়াছেন। নদীয়, ফরিদপুর প্রভৃতি অঞ্চলে “বন্দ আখগুল” বংশীয় 
বছ পরিবার বিদ্ধমান আছে--অনেকে বাসুদেব সাব্বভৌমের বংশধর 
বলিয়া পরিচয়ও দিয়! থাকেন; কিন্তু কেহই বাসুদেব হইতে বিশ্বাসযোগ্য 
নামমাল| দেখাইতে পারেন না। বাহদেবের জন্মভূমি নবদ্বীপ অঞ্চলে 
একটি চিরপ্রসিদ্ধ প্রবাদ আছে যে, আড়বান্দির বিখ্যাত ( বন্দেযাপাধ্যায় ) 
ভটাচার্ধ্য পরিবার বাহুদেব বংশসম্ভৃত। ৬ আমরা এই প্রসিদ্ধ বংশের 
প্রাচীন দলীল পত্র আলোচনা করিয়! দেখিয়াছি-ইহার! নবন্বীপরাজ 
রাঘব র।য়ের দানভাজন মহামহোপাধ্যার গোবিন্দগ্তায়বাগীশ হইতে নাম 
গণন। করেন। কিন্তু বাহদেব হইতে গোবিন্দ পর্য্যন্ত নাম পরম্পরা 
ডাহাদের অজ্ঞাত। আখথগুলবংশে বহুকাল যাবৎ কুলাঁভাব ঘটিয়াছে 
এবং সম্বন্ধনির্ণর-পৃত মুলে! পঞ্চাননের এক কারিকামুসারে অনেক অজ্ঞাত 
কুল বংশ “আখথগুল” বলিয়! পরিচয় দিয়! থাকে । 


বাসে যথাযথ কুলে, কাটা খনে বলে। 
আমাটে, কলিকাতা, বন্দোরো আখগুলে ॥ 
( সম্বন্ধ নির্ণয়--বংশাবলী, ১২৬ পৃঃ) 


এইভাবে বাহ্থদেবের কোন অধন্তন বংশধরের বিশ্বাসযোগ্য কোন 
পরিচয় পাওয়া না গেলেও হ্বর্গত নগেন্দ্রনাথ বসু মহাশয় ১৩*৫ সনে 
আথগুল বংশের সার্বভৌম প্রস্তুতির ধার! মুদ্রিত করিয়া এক অভিনব 
বন্ত প্রকাশ করেন। (বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস, (ব্রাঙ্গণকাণ্ড ) প্রথম 
ভাগ, প্রথমাংশ ১ম সং, পৃঃ ২৯৫-৬)। যে একখানি মাত্র গ্রন্ 
দেখিয়া ইহ| মুদ্রিত হইয়াছে, তাহা রাণাঘাট নিঝসী ৬ সাতকড়ি 
ঘটকসংগৃহীত কুল পঞ্জিকা ( উ, ২৩৬ পৃ পাদটাকা)। অদ্য ৪* 
বৎসর যাবত, ঝাঙ্গালার শিক্ষিত সমাজ নির্বিচারে এই বংশাবলী 
ও প্লোকসমূহের প্রামাণ্য মুগ্ধচিতে গ্রহণ করিয়া আসিয়াছে। এই 

৬। নবন্বীপ-মহিমা (১ম সং, পৃঃ ৩৪), নদীয়া-কাহিনী (২য় নং, 
পৃঃ ৩৩২) 





জাতীয় মুদ্রিত বস্তুর উপর প্রতিষ্ঠিত ৪* বৎসরের সংস্কার এখন দূর করা 
অতিভুরহ ব্যাপার। ্বর্গত সতীশচন্্র মিত্র মহাশয় (যশোহর খুলনার 
ইতিহাস, ২য় ধও, পূ ৪৬*-৬২) প্রামাণিক কুলপঞ্জিক।'র সহিত উত্ত 

ংশাবলীর অংশবিশেষের ( নলডাঙ্গ! শাখার ) মারাত্মক বিরোধ প্রদর্শন 
করিয়াছিলেন। কিন্তু বর্তমানে কুলশান্ত্র ও তাহার প্রামাণ্যবিষয়ে শিক্ষিত 
সমাজে যেরূপ বিরাট অজ্ঞত| ও উদাসীনতা বিরাজমান, তাহাতে কৃত্রিম 
অকৃত্রিম ভেদ নির্ণয়পূর্ববক সত্যনিধণরণ প্রায় অসাধ্য হইয়াছে এবং যাহা 
কিছু সর্ববাগ্রে ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হয়, তাহারই প্রামাণ্য অব্যাহত 


থাকিয়! যাইতেছে। বন্থধৃত কুলপণ্রিকানুসারে আখথগুল বংশের 
বংশলতার প্রয়োজনীয় অংশ এই ;-- 

এ 

তপন 

০ 

কেশব 


| 
| 
নরহরি বিশারদ 










| 
ধনগ্য় মিশ্র 
(মত্ত রঘুনন্দনের পিতামহ ) 





| | 
বাস্থদেব সার্বভৌম রত্বরকর ভি ছি 


| 
কাশীনাথ বিদ্যা নিবাস 


| | 
৬ শ্রীধর মিশ্র 


| 
বিষুদাস হাজর! 
( নলডাঙ্গ। ) 


এই বংশে কুলাতাব ঘটিলেও নলডাঙ্গারাজ শাখার গৌরবে ঘটকগণ 
ইহাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করেন নাই। ধবানন্দের মহাবংশাবলীর পর 
মহেশ মিশ্রের নির্দোষকুলপঞ্জিক| রাড়ীয় কুলীনগণের একমাত্র প্রামাণিক 
কুলগ্রস্থ । এই গ্রন্থের পরিবদ্ধিত সংস্করণ রাঢ়-বঙ্গের সর্ধ্বত্র ঘটকসমাজে 
প্রচারিত ছিল। আমর! এধাবৎ বিভিত্নস্থানে ইহার ৭ থানা প্রতিলিপি 
পরীক্ষ। করিয়াছি । বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের ও নবদ্বীপ লাইব্রেরীর 
পুধিতে আখগুল বংশ নাই। কাশীর সরহ্বতীতবনে রক্ষিত পুথিতে 
নলডাঙগ। শাখ| মাত্র লিপিবদ্ধ আছে। ঢাক] বিশ্ববিসালয়ে সংগৃহীত 
৪ খানা পুথিতে নলডাঙ্গার সহিত বিশারদ শাখার ও বর্ণনা! আছে--- 
পরস্পর অনৈকাসন্বেও বংশলতা বিশুদ্ধঙাঁবে যতদুর নির্ণয় কর! গিয়াছে 
নিম্নে প্রকাশিত হুইল :-- 


চৈত্র--১৩৪৭ ] 


৮০ স্কিপ স্স্ক্স্স্্মস্্্প্বসস্স্ব্স্ ্ 


লাল্দুচেব্র সার্জরভম 





রাড ( ধবানন্দ--১৪শ সমীকরণ ) 


| 
প্রিয়ন্কর 








| 
সন্তোষ তপন চকো মকোে 
| 
| | 
দামে নিলে পভোক অর্থ।ৎ প্রভাকর 
ণ 
শব নারায়ণ গণোক 
( নলডাঙ্গা শাখার আদি ) 
| 
রত্বাকর সতানন্দ (নাবেো) 
| 
| | 
বিশারদ ভটাচাষ্য শ্রীনাথ চক্রবস্তী শ্রীকান্ত পঞঙ্চিত 
| | 
সাব্বভৌম ভটাচাধ্য বিদ্াাবাচম্পতি জগন্নাথ বিশাই 
বি্য(নিবাস 
জলেশ্বর বাহিনীপতি চন্দনেশ্বর 
| রুদ্র ভটাচার্য্য-বিশ্বনীথপঞ্চানন-নারায়ণ ভট্ট।চাধ্যাদয়ত। 
| [ | | | 
প্নেশ্বর নীলকণ্ঠ গোপানাথ বিদ্যাসাগর চূড়ামণি 
কেশব ডি 
| 
ভবানন্দ রা 
রতিনাথ রামকুষঃ 


৪ খান! পুথিতে তপনের পুত্র “শিব-ব্যাস-বামনকা+” লিখিত আছে। 
একখানি মাত্র পুথিতে আছে, তপনের পুত্র “দামো-নিলো-পতোকা১-_ 
সতীশচন্দ্র মিত্র মহাশয়ের সংগৃহীত পুথিতেও শেষোক্ত নাম রহিয়াছে। 
ইহাই প্রমাণসিদ্ধ ; কারণ, পভোক অর্থাৎ প্রভাকরের কুলক্রিয়ার বর্ণন! 
আছে “পভোকন্ান্তি চং ধর্ম উচিত মুং বশিষ্ঠ”। ধবানন্দের মহাবংশের 
৩১শ সমীকরণকারিকায় (৩৪ পৃঃ) মুখবংশীয়বপিষ্ঠের কুলক্রিয়ার বর্ণনায় 
“বন্দযপ্রভাকরে"র নাম আছে। যে সকল পুথিতে পভোকের নাম 
বাদ পড়িয়াছে তাহাতে বানের পুত্র “মতানন্দ রত্বাকরো” লেখা আছে। 
একক পুথিখা'নিতে নারায়ণের পুত্র “রতোসাবোকৌ” রহিয়াছে, আমরা 
তাহাই গ্রহণ করিয়াছি। এই শেষোক্ত পুথিতেই জলেশ্বর এবং চন্দনেশ্বর 
ও তাহাদের পরবর্তী নামগুলি পাওয়! যায়-_অন্য ৩টি পুথিতে একমাত্র 
জলেশ্বরের নাম উল্লেখপূর্বক বংশলত! সমাপ্ত হইয়াছে। চন্দনেশ্বর 
ও বিস্থৃতগ্রায় স্বপ্নেশ্বরের নাম থাকায় এই তালিকার প্রামাণ্য নিঃসন্দিদ। 
কুলক্রিয়ার অংশ পুধিখান| হইতে সম্পূর্ণ উদ্ধৃত হইল £ “নারায়ণন্তানতি 
চং চকে! ক্ষেম্য চং বিশো। অত্রহানিঃ তৎমুতৌ রতোসাবোকৌ | রতে। 
অকৃতী তৎসুতাঃ ্রীনাথ চত্রবস্ত্ি বিশারদ ভট্টাচাধ্য প্রাকান্তাঃ। 
বিশারদন্তার্তি গাং গ্রীকান্ত উচিত মুং হিরণ্য ক্ষেম্য চং গোগীনাথ 
আচাধ্যঃ। তৎহতাঃ সার্বতৌম-বিস্তাবাচম্পতি রঘুপতিভটাচার্যয বি 
নিবেশকাঃ (1)। সার্বভৌমন্ত ক্ষেম্য মুং রাঘব চক্রবর্তী চং 
পরমানন্দ চং মুকুন্ন ভট্টাচার্য্য তৎমতো। জলেশ্বর-চন্দানেস্থরৌ, জলেশ্বরন্ত 


বাহিনীপতিখ্য।তি লভ্য চং কৃষ্ণনন্দ আস্তি গাং ঘোৌ তত্হতাঃ সপনেশ্বর- 


নীলক্ঠ-পে|পীনাথাঃ.-.” 


৫ 
(পুথি -- রি ১৬৪ পত্র) 


আমরা বাহুল্য ভয়ে নলডাগ! শাখার আলোচনা করিলাম ন।--- 
সতীশবাবুর গ্রন্থে তাহা জ্টব্য। বহু-ধূত বংশলতার ছুইটিশাখার 
(নলডাঙ্গা ও বিশারদ ) উদ্ধতন নামপথ্যার় সম্পূর্ণ কৃত্রিম বলিয়! প্রতিপন্ন 
হইতেছে এবং সঙ্গে সঙ্গে বিদ্তাবাচম্পতি ও বিদ্তানিবাসের নামহবপ়্ রত্বাকর 
এবং কাশীনাথ সম্পূর্ণ কল্পিত বলিয় প্রমাণিত হইতেছে। পিতামহ- 
পৌত্রের এক নাম থাকা অসম্ভব। বন্নধূত বংশলতার তৃতীয় স্মার্ড- 
ভট্টাচাযোর ধারা ও সম্পূর্ণ কল্লিত-_রঘুনন্দন আথওল বংশীয় বংশজ 
ছিলেন না-তিনি সাগরদিয়ার বিখ্যাত কুলীনবংশীয় ছিলেন ইহাই 
চিরন্তন প্রবাদ । ৪* বৎসর পুরে সম্বঘ্ধ নির্ণয়কার যে ক্ষিতীশ বংশের 
কারিকা মুদ্রিত করিয়াছিলেন, তাহাতে সাগরদিয়াকুলের বর্ণনায় শ্পষ্টাক্ষরে 
লিখিত আছে ; 


“রঘু গঙ্গা-পৌন্র স্বার্ত, পিত৷ হরিহর |” 
( সম্বধনির্ণয-_বংশাবলী, পৃ ২৭ 


এ বিষয়ে আমর! সাদরে বিশেষজ্ঞগণের আলোচন! আহ্বান করিতেছি 
সত্য নিধারিত হইয়| কৃত্রিমতার হ্বরাপ সম্যক্‌ প্রকাশিত হউক। 
ফরবানন্নমিশ্রের বণনায় আথগুলের « পুত্র (৩ পুত্র নহে) “হতকুল 


£€.৩ 


ছিলেন তাহ! মোটেই বুঝ! যায় না। আমাদের উদ্ধৃত বচনে শষ্ট প্রমাণ 
হইতেছে বিশারদের পিতামহ প্রথমতঃ কুলভঙ্গ করেন এবং পিতা 
“অকৃতী” অর্থাৎ কুলক্রিয়ায় মিকৃষ্ট ছিলেন। তাহার ফলে বংশের 
কৌলীন্য ধ্বংস হয়। মহেশের কুলগ্রন্থে উল্লেখ আছে বাহিনীপতির 
কন্ঠ! বিবাহ করিয়! ছুইজন মহাঁকুলীনের কুলভঙ্গ হইয়াছিল-_ফুলিয়- 
মেলের জগদানন্দ মুখোপাধ্যায়ের পুত্র অনন্তের পুত্র রঘু ( “অয়ং 
জলেশ্বরে মগ্নঃ পরীবর্তা ভাবঃ” ) এবং কাচনার মুখবংশীয় হরানন্দ পুত্র 
বিশাই ( “বাহ্িনীপত্যাং গতঃ” )। সংগৃহীত বিবরণে বিশারদ জামাত 
গোগীনাথাচাধ্য ছাড় দার্বতভৌমের তিন জামাতার নাম নৃতন পাওয়! 


ভানব্রভন্শ্খ 


[ ২৮শ বর্--২য় খণ্ড--৪র্থ সংখ্যা 


যাইতেছে । সার্ব্বতৌমের অধস্তন ৬ পুরুষ পরাস্ত নাম পাওয়া যাইতেছে। 
এই অনন্ঠসাধারণ প্রতিভাসম্পন্ন বংশের সমস্ত ধারা বিলুপ্ত হইয়াছে ই 
আমাদের বিশ্বাস হয় না। নবস্বীপাদি অঞ্চলে নিশ্চয়ই এই বংশ এখনও 
বাচিয়! আছে--কিস্তু তাহাদের পরিচয় উদ্ধার করা প্রায় অসাধ্য । 

আখগুল লক্ষ্পণসেনের সম।ময়িক ( ঘর্দাংগু পুত্র ) দেবলের প্রপৌত্র 
ছিলেন। দেবলের বাড়ী ছিল “ভাবড়ান্থরা” গ্রামে, একথানা পুধিতে 
তদনুসারে বন্দ্যবংশের এই ধারার নাম “ভাবড়ান্থরিয়1” প্রকরণ লিখিত 
হইয়াছে। দেবল হইতে বিশারদ »ম পুরুষ অধ্যন্তন এবং কাঁলগণনায় 
ইহাতে কোনই অসামঞ্জন্য ঘটে না। 


নিশি শেষে 


শ্রীকুমুদরঞ্জন মল্লিক 


আজি নিশি-শেষে চাহি নীল নভে 
ফিরাতে পারিনে আখি, 
গগনেতে চলে এত সমারোহ 
আদি কি খপর রাঁখি? 
জ্যোতি সুন্দর অগণিত তারা__ 
আমারে করিল যেন দিশেহারা 
স্থর-প্রতিভার হেন সমাবেশে 
বিমুগ্ধ হয়ে থাকি। 
২ 
এত আলো» এত স্থমধুর আলো-_ 
এত আলো মনোলোভা, 
বিরাটের এ যে বিরাট আরতি 
এ ত নয় শুধু শোভা! 
এ যে প্রেমলিপি আলোক-আথরে 
প্রাণকে মাঁতাঁয় বিমোহিত করে, 
এ যে ইঙ্গিত নয়নে নয়নে 
একেবারে মাখামাখি । 
৬. 
নিম্নে আধার--উপরে আলোর 
উৎস উৎসারিত, 
জনম ভরিয়া দেখিতাম_যদি 
হাজার নয়ন দিত। 
শবাসনা যবে প্রসন্ন হ'ন 
সাধক কি হেরে এমনি গগন ? 
এত রূপ, এত মধু কি কখনো! 
থাকে--না রাখিলে ঢাকি? 


৪ 
দিন ত নেহাঁৎ দীন এর কাছে 
রাতে সমারোহ এত! 
শেমেই যাহার এত মধু তার 
প্রথমে না জানি কত? 
এ রূপের কেন পাই নাই ওর 
হায় রে নদির যৌবনে মোর ! 
দুর্বল আখি বুঝিতে নারিছে 
কত কিযে দিলে ফাকি। 
৫ 
বিশ্ব্ূপ ত দেখিয়া! ফেলি 
কি রয়েছে আর বাদ 
কণিকা হউক, আমি ত পেয়েছি 
অমুতের আহন্বাদ। 
মন্দির-পথ পেয়েছি আলোকে - 
গরুড়-স্তস্ত পড়িয়াছে চোখে, 
দেখা ত হবেই, হোক যত দেরী__ 
দুয়ারে বসিয়া ডাকি। 
৩ 
সমীরে আসিছে কুন্থমের বাস 
্ প্র ্ণ গণি? 
পুরাঙ্গনারা আনে “তু? 
উঠিছে ছুলুধবনি। 
জীবনে অমর মুহূর্ত মোর 
লয়ে-_হ'ল আজ শুভ নিশি ভোর, 
গণ্ডষে পান করেছি সাগর 
| যা থাকে থাকুক বাকি। 


10 ৮৩) 


জীতারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় 
চণ্তীমণ্ডপ 


সাত 


একা পাতুর ঘর নয়, পাতুর ঘরের আগুন ক্রমশ বিস্তৃত 
হইয়া প্রায় সমস্ত হরিজন-পলীটাই পুড়িয়া গেল। বড় গাছের 
আড়াল পাইয়া খান দুই-তিন ঘর কেবল বাঁচিয়াছে। 

অতি অল্প সময়ের মধ্যেই পুড়িয়া গেল। সাণান্ত কুটারের 
মত ছোট ছোট ঘর--বাশের হালকা কাঠামোর উপর 
অল্প খড়ের পাতলা ছাউনি-_কাণ্ডিকের প্রথম হইতে বৃষ্টি 
না হওয়ায় রোদে শুকাইয়া বারুদের মত দাহা বস্তু হইয়াই 
ছিল; আগুন তাহাতে স্পশ করিবামাত্র বিস্ফোরণের মতই 
অগ্নিকা্ডটা ঘটিয়া৷ গেল। গ্রামের লোক অনেকেই ছুটিয়! 
আসিয়াছিল-_বিশেষ করিয়া অল্পবয়সী ছেলের দল; তাহারা 
চেষ্টাও অনেক করিয়াছিল, কিন্তু জল তুলিবার পাত্রের 
অভাবে এবং বহ্ছিমান সংকীর্ণ চালগুলিতে দীড়াইবার 
স্থানের অভাবে-_ তাহারা কিছু করিতে পারে নাই। 
তাহাদের মুখপাত্র ছিল জগন ডাক্তার। অগ্রিণাহের সমন্ত 
সময়টা চীৎকার করিয়া সেনাপতির মত আদেশ উপদেশ 
বাতলাইয়া এমন গল! ফাঁটাইয়৷ ফেলিল বে, আগুন নিভিতে 
নিভিতে তাহার আওয়াঁজ বসিয়! গেল । 

রাত্রে উহাদের সকলকে চত্ীমণ্ডপে আসিয়া শুইতে 
অন্গমতি দেওয়া হইল, কিন্ত-_আশ্চর্্য মানুষ উহারা-_ 
কিছুতেই ওই পোঁড়াঘরের মায়া ছাড়িয়া আসিল না। 
সমস্ত রাত্রি উহারই মধ্যেই কোনরূপ স্থান করিয়া এই 
হেমস্তের গীতজর্জর রাত্রে অনাবৃত স্থানে রাত্রি কাটাইবে। 
ছেলেগুল! অবশ্ত ঘুমাইল, মেয়েগুলা গানের মত স্থুর 
করিয়া বিনাইয়! বিনাইয়] কীঁদিল, আর পুরুষেরা পরস্পরকে 
দোষ দিয়া নিজের কৃতিত্বের আন্ষালন করিল এবং 
দগ্ধগৃহের আগুন তুলিয়া ক্রমাগত তামাক খাইল। প্রায় 
ঘরেই দু-একটা গরু, দু-চারিটা ছাগল আছে, আগুনের সময় 
সেগুলাকে তাহার! মুক্ত করিয়া দিয়াছিল, সেগুল! এদিকে 
ওদিকে কোথায় গিয়া গড়িযাছে-_রাত্রে সন্ধানের উপায় 


৪৩১ 


নাই। হাঁস-মুরগীও প্রত্যেকেরই আছে__তাহাঁর কতকগুলা 
পুড়িয়াছে--চোথে দেখা না গেলেও গন্ধে অনুমান করা 
গিয়াছে। যেগুলা পলাইয়া বাচিয়াছে-_সেগুলা ইতিমধ্যেই 
আসিয়া আপন আঁপন গৃহস্থের জটলার পাশে পালক 
ফুলাইয়া যথাসম্ভব দেহ সম্কচিত করিয়া! বসিয়া গেল। 
অন্ত সম্পদের মধ্যে কতকগুলা মাটির হাড়ি-_দ্ু-চাঁরিটা 
পিতল কীঁসার বাঁদন _ছেঁড়া-কাঁপড়ের জীর্ণ এবং ময়লায় 
দুর্গন্ধযুক্ত কয়েকখানা কীথা-বালিশ মাছুর-চ্যাটাই, মাছ 
ধরিবাঁর পলুই, দু-চারিখাঁন! কাঁপড়-_তাহার কতক পুড়িয়াছে 
বা পোড়াচালের ছাইয়ের মধ্যে চাঁপা পড়িয়াছে। যে যাহা 
বাহির করিয়াছে-_-সে সেগুলি আপনার পরিবাঁর-ঝেষ্টনীর 
মাঁঝখানে_-যেন সকলে মিলিয়। বুক দিয়! ঘিরিয় রাখিয়াছে। 
শেষরাত্রে হিমের তীক্ষতাঁয় কুগুলী পাঁকাইয়া সকলে 
কিছুক্ষণের জন্ত কাতর কান্তির নীরবতার মধ্যে কখন 
তন্জ্ায় আচ্ছন্ন হইয়া পড়িয়াছিল। সকাল হইতেই জাগিয়া 
উঠিয়া মেয়ের আর এক দফা শোকোচ্ছ্বাস প্রকাশ করিতে 
কীদিতে বসিল। একটু রোদ উঠিতেই কোমর বাঁধিয়া 
মেয়ে-পুরুষে পোড়া খড়ের ছাইগুলি ঝুড়িতে করিয়া আপন 
আপন সারগার্দায় ফেলিয়! ঘর দুয়ার পরিষ্কার করিতে 
লাগিয়া গেল। পোড়া কাঠগুলি একদিকে জড়ো করিয়া 
রাখা হইল-_জালানির কাঁজে লাগিবে। ছাইয়ের গাদার 
ভিতর হইতে চাঁপা-পড়া বাসন যাহার যাহ ছিল-_সেগুলি 
স্বতন্ত্র করিয়া রাখিল। এ সমন্ত কাজ ইহাদের মুখস্থ। 
ঘরের উপর দিয়া বিপর্য্যয় ইহাদের প্রায়ই ঘটিয়া থাকে। 
প্রবল বর্ষা হইলে___জীর্ণ-আচ্ছ।দন ঘরগুলি পড়িয়া যাঁয়, নদীর 
বীধ ভাঙিলে বন্যার জল আসিয়া পাঁড়াটা ডূবাইয়া দিলে 
ব্যাপকভাবেই ঘরগুলি ধ্বসিয়া পড়ে; মধ্যে মধ্যে 
জ্বালানির জন্ঠ সংগৃহীত শুকনা পাতায় মগ্ঘবিভোর সন্ধ্যায় 
নিজেরাই আগুন লাগাইয়া ফেলে। বিপধ্যয়ের পর সংসার 
গুছাইবার শিক্ষা এমনই করিয়া পুরুযান্ক্রমেই ইহাদের হইয়া 
আসিতেছে । ঘর দুয়ার পরিষ্কারের পর আহাধ্যের ব্যবস্থা 


৮৬২, 


১ 


করিতে হইবে । গত.সন্ধ্যার বাসী ভাতই সকালে ইহাদের 
খান, ছোট ছেলেদের মুড়ি দেওয়| হয় ; কিন্তু ভাত বা মুড়ি 
সবই নষ্ট হইয়া গিয়াছে । ছোট বাচ্চাগুলা ইহারই মধ্যে 
চীৎকার আরম্ভ করিয়! দিয়াছে__কিন্তু তাহার আর উপায় 
নাই। দু-একজন ছেলেগুলার পিঠে দুম দাম করিয়া! কিল 
চড় বসাইয়া দিল। 

_ রাক্ষসাদের প্যাটে যেন আগুন লেগেছে । 
তোরা ময়! 

ঘর দুয়ার পরিষ্কার হইয়। গেলে মনিব-বাড়ী যাইতে 
হইবে--তবে আহার্যের ব্যবস্থা হইবে। মনিবেরা এসব 
ক্ষেত্রে চিরকাল সাহায্য করিয়া থাকে। এপাড়ার প্রায় 
সকলেই চাষীদের অধীনে কাঁজ করিয়া থাকে । বাঁধা বেতনে 
অথবা বংসরের উৎপন্ন ভাগের টুক্তিতে শ্রমিকের কাজ 
করে। ছোট ছেলেরা পেটভাতায় ; অথবা মাসে ভাতের 
হিসাব মত ধান এবং বখসরে চারখান সাত হাত কাপড় 
লইয়া! রাখালি করে। অপেক্ষাকৃত বয়স্কেরা মাসে আট আনা 
হইতে এক টাকা পর্যন্ত মাহিনা পায়-_ধানের পরিমাণও 
তাহাদের বেশী। পূর্ণ জোয়ানেরা অধিকাংশই উৎপন্গের 
এক-তৃতীয়াংশ পাইবাঁর চুক্তিতে চাঁষের শ্রমিকের কাজ 
করে। মনিব, সমস্ত চাষের সময়ট। ধান দিয়া ইহাদের 
সংসারের সংস্থান করিয়া দেয়-_ফসল উঠিলে ভাগের সময় 
সুদ সমেত সে ধান কাটিয়া লয়। হ্থদের হার প্রায় শতকরা 
পচিশ হইতে ত্রিশ পধ্যন্ত। অজন্মার বংসরে-_এই খণ 
শোধ না হইলে-_আসল এবং স্থুদ এক করিয়া তাহার উপর 
আবার এ হারে সুদ টানা হয়। এ প্রথার মধ্যে অন্তায় 





মর মর, 


কিছু ইহার! বোধ করে না--বরং সকৃতজ্ঞ আন্ুগত্যই অন্তরে, 


অন্তরে পোঁধণ করে। দাঁয়-দৈবে মনিবের! চিরকাল সাহায্য 
করে। সেইটাই অতিরিক্ত করণা। সেই করুণার 
ভরসায় আহার্য্যের চিন্তায় এমন ব্যাকুল তাহারা নয়। 
মেয়েরাও অবস্থাঁপন্ন চাঁধী গৃহস্থদের ঘরে সকালে বিকালে 
বাসন মাজা- আবর্জনা ফেলিয়! পাট-কাজ করে। সেখান 
হইতেও কিছু পাওয়া যাইবে । এ ছাড়াও দুধের দাম কিছু 
কিছু পাওনা আছে। সে পাওনা কিন্তু গ্রামে নয়। চাঁষীর 
গ্রামে চাষীদের ঘরেই দুধ হয় হরিজনেরা তাহাদের 
গরুর দুধ পাঁশের বড়লোকের গ্রাম কন্কণাঁয় বেচিয়া আসে। 
ঘু'টেও সেখানে বিক্রয় হয়। 


ভাব্রভ্ডবন্ 


[ ২৮শ বর্ধ--২য় খও--৪র্থ সংখ্যা 





পাতুর কিন্তু এসব ভরস| নাই। সে জাতিতে বায়েন 
বা বাগ্চকর অর্থাৎ মুচি। তাহার কিছু চাঁকরান জমি 
আছে; গ্রামের সরকারী শিবতল! কাঁলীতলা এবং পাশের 
গ্রামের চণ্ডতীতলায় নিত্য ঢাঁক বাজায়, সেই হেতু বৎসরে 
দেবোত্তর সম্পত্তির কিছু ধান সে পিতামহের আমল 
হইতে পাইয়া থাকে। নিজের দুইটা বলদ আছে-_সেই 
হালে কক্কণার ভদ্রলোকের কিছু জমি ভাগে চাষ করে। 
এ ছাড়া ভাগাড়ের মর! গরু-মহিষের চামড়া ছাড়াইয়া পূর্বে 
সে চাঁমড়া-ব্যবসায়ী সেখদের বিক্রয় করিত । আপদে- 
বিপদে তাহারাই দু-চারি টাকা দাঁদন ম্বরূপে দিত। কিন্তু 
সম্প্রতি জমিদার ভাগাড় বন্দোবস্ত করায় এ আয় তাহার 
অনেক কমিয়া গিয়াছে । নেহাত পারিশ্রমিক অর্থাৎ_-তিন- 
চার আনা মঞ্জুরি ছাঁড়া কিছুই পাঁওয়া যায় না। এই লইয়া 
চাঁনড়াওয়ালার সঙ্গে মনান্তরও হইয়া আছে। সেকি 
আর এ সময় সাহাব্য করিবে? বে ভদ্রলোকের জমি ভাগে 
চাষ করে সে কিছু দিলেও দিতে পারে, কিন্তু ভদ্রলোকে 
খত না লেখাইয়া কিছু দিবে না। সেও অনেক হাঙ্গামার 
বাপার। খতকে পাতুর বড় ভয়। শেষ পর্যন্ত নালিশ 
করিয়া! বাড়ীটা লইয়া বগিলে_সে কোথায় যাইবে! 
পৃথিবীর মধ্যে তাহার সম্পত্তি এই বাড়ীটুকু। 


নির্বাক হইয়া অত্যন্ত দ্রুতগতিতে সে ছাই জড়ো 
করিয়াই চলিয়।ছিল। ছিরুপালের কাছে সেদিন মার 
খাইয়া তাহার মনে যে উত্তেজনা জাগিয়া উঠিয়াছিল--সে 
উত্তেজন! দিন-দিন বাঁড়িয়াই চলিয়াছে। সেই উত্তেজনা বশেই 
সেদিন অমরকুণ্ডার জোলে দ্বারকা৷ চোধুরীর কাছে ছিরুপাল 
সম্পর্কে আপনার সহোদরা দুর্গার যে কলঙ্কের কথ৷ প্রকাশ 
করিয়াছিল--জমিদারের কাছেও সেই কথ প্রকাশ 
করিয়া নালিশ করিয়াছিল। সেই লইয়া গত সন্ধ্যায় 
স্বজাতির মধ্যে তাহার লাঞ্ছনা হইয়া গিয়াছে। ম্বজাতিরা 
কথাটা লইয়া ঘট পাকাইয়া তাহাকে প্রশ্ন করিয়াছিল-_ 
তুমি তো আপন মুখেই বলেছ হে; চৌধুরী মশায়ের কাছে 
বলেছ, জমিদারের কাছারিতে বলেছ ! বলেছ কিনা? 

_্যা, বলেছি। 

তবে? তুমি পতিত হবে না ক্যানে, তা বল! 

কথাটা পাতুর ইহার পূর্বের খেয়াল হয় নাই। সে চমকিয়। 


চৈত্র--১৬৪৭ ] 


উঠিয়াছিল। কিছুক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয়৷ সে হন-হন 
করিয়! বাড়ী গিয়া বোন দুর্গার চুলের মুঠিতে ধরিয়া হিড় হিড় 
করিয় টানিয়া মজলিসের সম্মুখে হাজির করিয়াছিল । ধা 
দিয়! দুর্গাকে মাটির উপর ফেলিয়া দিয়! বলিয়াছিল-_-সে কথা 
এই হাঁরামজাদী ছেনাঁলকে শুদৌও। ভিনুভাতে বাপপড়শা ) 
আমি ওর সঙ্গে পেথকান্ন। 

দুর্গার পিছনে-পিছনে তাহার ম| চীৎকার করিতে করিতে 
আসিয়াছিল, সকলের পিছনে পাতুর বিড়ালীর মত বউটাও 
গুন গুন করিয়া কাদিতে কাদিতে আঁসিয়াছিল। তারপর 
সে এক চরম অশ্লীল বাক-বিতণ্ডা। স্বৈরিণী দুর্গা উচ্চকণে 
পাঁড়ার প্রত্যেক মেয়েটির কু-কীন্তির গুপ্ত ইতিহাস প্রকাশ 
করিয়া পাতুর মুখের উপর সদন্তে ঘোষণ! করিয়াছিল--ঘর 
আমার, আমি নিজের রোঁজকারে করেছি, আমার খুশী 
যার ওপর হবে-_সে-ই আমার বাড়ী আসবে। তোর কি? 
তাতে তোর কি? তু আমাকে খেতে দিস, না দিবি? 
আপন পরিবারকে সাঁমলাঁস তু । 

পাতু আরও ঘাকতক লাগাইয়া! দ্রিয়াছিল। পাতুর 
বউটি ঘোমটার ভিতর হইতে তীক্ষকে ননদকে গাল দিতে 
নুরু করিয়াছিল। মজলিসের মধ্যে উত্তেজিত কলরব 
ভাঁতাহাতির উত্তীপের সীমানায় বোধ করি গিয়া পৌছিয়া- 
ছিল-_ঠিক এই সময়েই আগুন জলিয়া ওঠে । 


এই ছুই দিনের উত্তেজনা, তাহার উপর এই অগ্রিদাহের 
ফলে গৃহহীন্তার অপরিমেয় দুঃখ তাহাকে রুদ্ধমুখ আগ্নেয়- 
গিরির মত করিয়া তুলিয়াছিল। সে নীরবেই কাঁজ 
করিতেছিল। পাতুর বউ কিন্তু এখনও গুন গুন করিয়া 
কার্দিতেছে। সে এতক্ষণ ছাগল গরুগুলিকে অদূরবন্তী খেজুর- 
গাছগুলির গোড়ায় খোঁটা পুতিয়া বাঁধিয়া, হাঁসগুলিকে 
নিকটবর্তী পুকুরের জলে নামাইয়া দিয়! স্বামীর কাজে 
সাহায্য করিতে আসিল; জড়ো-কর! ছাই ঝুড়িতে পুরিয়া সে 
সারগাদ্ায় ফেলিতে আরম্ভ করিল। পাতু হিংস্র জানোয়ারের 
মত দীতি বাহির করিয়া গর্জন করিয়া উঠিল__খ্যাই দেখ, 
মিহি-গলায় আর ঢং ক'রে কাদিস না বলছি। মেরে হাড় 
ভেঙে দোব বলছি- স্থ্য । 

ঘর পুড়িয়া যাওয়ার ছুঃখে এবং সমস্ত রাত্রি কষ্টভোগের 
ফলে পাতুর বউয়ের মেজাজও খুব ভাল ছিল না, সে বন্ত- 


৫৫ 


গাপ-কেিলশ1 


৪ 2.2 


বিড়ালীর মত হিংন্্র ভঙ্গিতে ফ্্যাস করিয়া উঠিল-_ক্যানে, 
ক্যানে আমার হাড় ভেঙে দিবি শুনি! বলে-_-“দরবারে হেরে, 
মাঁগকে মারে ধরে” _সেই বিত্তান্ত। নিজের ছেনাল বোনকে 
কিছু বলবার ক্ষেমতা নাই-_ 

পাতুর আর সহা হইল না, সে বাঘের মত লাফ দিয়া 
বউকে মাটিতে ফেলিয়া তাহার বুকে বসিয়৷ গলা টিপিয়া 
ধরিল। তাহার সমস্ত কাঁগজ্জন তখন লোপ পাইয়া গিয়াছে । 

পাতুর ঘরের সম্মুখেই_-একই উঠানের ওপাশে দুর্গা ও 
তাহার মায়ের ঘর; তাহারাও ঘরের ছাই পরিষার 
করিতেছিল। বউয়ের কথা গুনিয়৷ দুর্গা দংশনোগ্যত 
সাপিনীর মতই ঘুরিয়! দাঁড়াইয়া ছিল; কিন্তু পাতুর 
নির্যাতন-ব্যবস্থা দেখিয়া বউকে আর দংশন করিল না, 
বিজ্ঞতাঁবে ভাইকেই বলিল_-্ক্যা, বউকে একটুকুন শাসন 
কর, মাথায় তুলিস না! 

সেই মুহুর্তেই জগন ডাক্তারের ধরা-গল! শোন! গেল, সে 
হা হী করিয়া বলিল__ছাড়, ছাঁড়, হারামজাদা বাঁয়েন, 
ম'রে যাবে যে! 

কথা বলিতে বলিতেই ডাক্তার আসিয়া পাতুর চুলের 
মুঠি ধরিয়া আকর্ষণ করিল; পাতু বউকে ছাড়িয়া দিয়া 
হাপাইতে হাঁপাইতে বলিল-_দেখেন দেখি হাঁরামজাদীর 
আম্পদ্ধা, ঘরে আগুন টাগুন লাগিয়ে-_ 

_-জল আন, জল | জলদি, হারামজাদা গোয়ার !_জগন 
বলিয়া উঠিল। বউটা অচেতন হইয়৷ অসাঁড়ের মত পড়িয়া 
আছে । ডাক্তার ব্যস্ত হইয় নাঁড়ী ধরিল। 

পাতু এবার শঙ্কিত হইয়া ঝু'কিয়া বউয়ের মুখের দিকে 
চাহিয়া অকম্মাৎ একমুহূর্তে হাঁউ-হাঁউ করিয়া কাঁদিয়া উঠিল-_ 
ওগো-__-আমি বউকে মেরে ফেললাম গে ! 

পাতুর মা সঙ্গে সঙ্গে চীৎকার করিয়া উঠিল-_ওরে 
বাবা! কি করলি রে! 

ডাক্তার ব্যন্ত হইয়া বলিল--ওরে জল-_-জল, জল আন্‌! 

ছুটিয়া জল লইয়া আসিল ছূর্গা। সে বউয়ের মাথাটা 
কোলে তুলিয়া লইয়া বসিয়া বুকে হাঁত বুলাইতে আরস্ত 
করিল; ডাক্তার ছপাছপ জলের ছিট৷ দিয়া বলিল-_-কই, 
মুখে মুখ দিয়ে ফু দে দেখি ছুগগা! * 

কিন্তু ফু আর দিতে হইল না, বউ আপনিই একটা দীরঘ- 
নিশ্বীস ফেলিয়া চোখ মেলিয়া চাঁহিল। কিছুক্ষণ পর সে 


৪৩১৬ 


সস 


উঠিয়া বসিয়া তারম্বরে কাদিতে আরম্ভ করিল-_আঁমাকে 
আর মেমতা করতে হবে না রে, সংসারে আমার কেউ 
নাই রে! গলা তাহার ধরিয়! গিয়াছে, আওয়াজ বাহির হয় 
নাঃ তবু সে প্রাণপণে চীৎকার আরম্ভ করিল। 
সং ক রঁ 
জগন ডাক্তার কতগুলি ঘর পুড়িয়াছে গণনা করিয়া 
নোটবুকে লিখিয়৷ লইল-_-কতগুলি মানুষ, তাঁহাও লিখিয়া 
লইল। খবরের কাগজে পাঠাইতে হইবে, ম্যাজিষ্টেট 
সাহেবের কাছে একটা আবেদনের খসড়া সে ইতিমধ্যেই 
করিয়া ফেলিয়াছে। স্থানীয় চার*পাঁচখানা গ্রামের 
অধিবাসীদের নিকট হইতে ভিক্ষা! করিয়া খড়, বাঁশ, চাল, 
পুরানো কাপড়, অর্থ সংগ্রহের জন্ত একট! সাহাব্য-সমিতি 
গঠনের সংকল্পও তাহার আছে । সকলকে ডাকিয়া ডাক্তার 
বলিল--সব আপন-আপন মুনিবের কাছে যা, গিয়ে বল্‌ 
দুটো ক'রে বাশ__দশ গণ্ড1 ক'রে খড়, পাঁচ-সাত দিনের 
মত খোরাঁকি আমদিগে দিতে হবে। আর যা লাঁগবে-_ 
চেষ়ে-চিন্তে আমি যোগাড় করছি। ম্যাজিষ্রেট সায়েবের 
কাছে একট! দরখাস্ত দিতে হবে__আমি লিখে রাখছি ও- 
বেলায় গিয়ে সব টিপসই দিয়ে আসবি । 
সকলে চুপ করিয়া! রহিল, সায়েবের নামে তাহারা 
ভড়কাইয়া গিয়াছে । সায়েব-স্থবাকে ইহারা শাসনকর্তা 
বলিয়াই জানে ; কনেস্টবল দারোগার উপরওয়াল! হিসাবে 
সাঁয়েবের নামে পর্য্যন্ত আতঙ্কিত হইয়া! ওঠে । তাহাঁর কাছে 
দরখাস্ত পাঠাইয়া আবার কোন্‌ ফ্যাসাদ বাধিবে কে জানে ! 
জ্রগন বলিল-বুঝলি আমার কথা? চুপ ক'রে 
বইলি যে সব! | 
এবার সতীশ বাঁউরী বলিল- আজ্জে, সায়েবের কাছে__ 
_স্্যা, সায়েবের কাছে। 
_সে আবার কি না কি ফ্যাঁসাদ হবে মাশায়। 
_ফ্যাসাদ কিসের? জেলার কর্তা, প্রজার স্থুখ দুঃখের 
ভার তার ওপর । দুঃখের কথা জানালেই তাকে সাহাধ্য 
করতে হবে। করতে বাধ্য। 
_--আজে, উ মাশায়-_ 
- আবার কি? 
__আজে,কনেস্টবল দারোগা- থানা পুগিশ-_সে মাশায় 
হাজার হাঙ্গাম! ! 


ভ্ডান্ভন্ব্ধ 


[ ২৮শ বর্--২য় খণ-চর্থ সংখ্যা 





ডাক্তার এবার ভীষণ চটিয়া গেল, তাহার কথায় 
প্রতিবাদ করিলে সে চটিয়া যায়। তাহার উপর খ্রই 
হুযোগে ম্যাজিষ্রেটের সহিত পরিচিত হওয়ার একটা প্রবল 
বাসনা তাহার ছিল। স্থানীয় ইউনিয়ন বোর্ডের সভ্য- 
শ্রেণীভুক্ত হইবার আকাজ্ষা তাহার অনেক দিনের। 
কেবলমাত্র মান-মর্ধ্যাী লাভের জন্যই নয়, দশের কাজ 
করিবার আকাঁঙ্ষাও তাহার আছে। কিন্তু ক্ষণার 
বাবুরাই ইউনিয়ন বোর্ডের সমস্ত সভ্যপদগুলি দখল করিয়া 
রহিয়াছে । ইউনিয়নের সমস্ত গ্রামগুলিই কম্কণাঁর বিভিন্ন 
বাবুদের জমিদারি, ভোট প্রকাশ্টে দিতে হয়, কাজেই সকলে 
আপন আপন জমিদারদের ভোট দিতে বাঁধা হয়। গতবার 
জগন ঘোষ প্রতিদ্বন্দিতায় নামিয়া মাত্র তিনটি ভোঁট 
পাইয়াছিল। সরকার-তরফ হইতে মনোনীত সভ্যপদগুলিও 
কঙ্ষণার বাবুদের একচেটিয়া । সায়েব-স্থুবা উহাদেরই চেনে, 
কঙ্কণাঁতেই তাহাদের যাঁওয়া-আস1; সভ্য মনোনয়নের সময় 
তাহাদের দরখাস্তগুলিই মঞ্জুর হইয়া বায়। এই কারণে 
এমন একটি পরহিত-ব্রত লইয়া সায়েবের সহিত দেখা 
করিবার সংকল্পটি ডাক্তারের বহু-আকাক্ষিত এবং পরম 
কাম্য । সেই সংকল্প পূরণের পথে বাঁধা পাইয়া ডাক্তার 
ভীষণ চটিয়া উঠিল। বলিল-_তবে মরু গে তোরা, প”চে ময় 
গে! হারামজাদা মুখার দল সব ! 

__কি হ'ল কি, ডাক্তার ?-_বলিয়া ঠিক এই মুহুর্তটিতেই 
বৃদ্ধ ছারকা চৌধুরী পিছনের গাছপালার আড়াল অতিক্রম 
করিয়া সন্মুথে আসিয়া! উপস্থিত হইল। চৌধুরী ইহাঁদের 
এই আকম্মিক বিপর্দে সহাশ্ভৃতি প্রকাশ করিতে 
আসিয়াছে। এ তাহাদের পূর্বপুরুষের প্রবর্তিত কর্তব্য । 
সে কর্তব্য চৌধুরী আজও যথাসাধ্য পাঁলন করে। ব্যবস্থাটার 
মধ্যে দয়ারই প্রাধান্ঠ, কিন্তু প্রেমও থানিকটা আছে। 

ডাক্তার চৌধুরীকে দেখিয়া বলিন-_দেখুন না, বেটাদের 
মুখ্যমি। বলছি-_ম্যাজিষ্টেট সাঁয়েবের কাছে একটা দরখাস্ত 
কমু। তা বলছে কিজানেন? বলছে, __থান! - পুলিশ। 
দারোগা 

চৌধুরী বলিল__এর জন্তে আর সায়েব-স্থুবো৷ কেন ভাই? 
গায়ের পাঁচজনের কাছ থ্বেকেই ওদের কাজ হয়ে যাবে। 
আমি তোমার প্রত্যেককে দুগণ্ডা ক'রে খড় দোব। পীঁচটা 
বাশ দোব। এমনি ক'রে. 


চৈত্র ১৩৪৭ ] 


ডাক্তার আর শুনিল না, হন্‌ হন্‌ করিয়। সে চলিতে 
আরম্ভ করিল। যাইবার সময় সে বলিয়া! গেল-_যাঁস বেটারা 
এর পর আমার কাছে । আরও কিছুদূর আসিয়! দীড়াইয়া 
সে চীৎকার করিয়! বলিল--কাল রাত্রে কে কোথায় ছিল 
রে? কাল রাত্রে? 

চৌধুরী একটু চিন্তা করিয়া! বলিল-_তা৷ দরখাস্ত করতেই 
বা দোষ কি বাঁব৷ সতীশ? ডাক্তার বলছে । আর সায়েবের 
যদি দয়াই হয়--সে তো তোমাদেরই মঙ্গল! তাই বরং 
তোমরা যাও ডাক্তারের কাছে। 

সতীশ বলিল-_তা হাঙ্গামা কিছু হবে না তো চৌধুরী 
মাঁশায়? আমাদের সব সেই ভয় হচ্ছে কিনা ! 

_না। হাঙ্গামা কিছু হবে বলে তো মনে নেয়না 
বাবা! নানা । হাঙ্গামা কিছু হবে না। 


অপরাহ্ে সকলে দল বাঁধিয়া ডাক্তারের কাছে হাজির 
হইল। আসিল না কেবল পাতু। 

ডাক্তার খুনা হইয়া উঠিয়াছিল, সে বেশ করিয়া সকলকে 
দেখিয়া লইয়া বলিল__পাতু কই__-পাতু ? 

সতীশ বলিল--পাতু, আজ্ঞে আসবে না। সেমাশায 
গায়েই থাকবে না বলছে। 

_গাঁষেই থাকবে না? কেন, এত রাগ কেন রে? 

--সে মাঁশীয় সে-ই জানে । সে আপনার উপাঁরে জংসনে 
গিয়ে থাকবে । বলে- যেখানে খাটব সেইথানে ভাত ! 

- দেবোত্তরের জমি ভোগ করে যে! 

-_ জমি ছেড়ে দেবে মাঁশাষ। বলে--ওতে পেটই ভরে 
না, তা উ নিয়ে কিহবে! উ-সব বড়নোকের কথা ছেড়ে 
দেন। পাঁতু বাঁয়েন আমাদের বড়নৌক। উকিল 
ব্যালেস্টার মাহুষ। 

--আহা তাই হোক। সে বড়নৌকই হোক । তোমার 
মুখে ফুলচন্নন পড়,ক। দলের পিছনে ছিল দু, সে ফৌঁস্‌ 
করিয়া উঠিল। তারপর বলিল-সে যদি উঠেই যায় গ! 
থেকে-তাতে নৌকের কি গুনি? উকিল ব্যালেস্টার_ 
সাত-সতেরো! ক্যানে শুনি ? সে যদি চলেই যায়-_তাতে তো 
ভাল হবে তোদেরই। ভিক্ষের ভাগ তোদের মোট! হবে। 

জগন ডাক্তার ধমক দিয়া উঠিল-_থাম্‌__থাম্‌। 

_ক্যাঁনে, থামবে ক্যানে? কিসের লেগে? এতকথা 


গিশ-তম্বভ্ডা 


£9 ১০৫ 


কিসের ?-_বলিয়াই সে মুখ ফিরাইয়! আপনার পাড়ার দিকে 
পথ ধরিল। 

__ওই ! এই দুর্গা, টিপ-সই দিয়ে যা! 

-্না। 

-_তা হলে কিন্ত সরকারী টাকার কিছুই পাবি না তুই। 

এবার ঘুরিয়। দীড়াইয়া মুখ মচকাইয়া দুর্গা বলিল-_. 
আমি টিপ-সই দিতে আসি নাই। তোমার তালগাছ বিক্রী 
আছে শুনে এসেছিলাম কিনতে । ভিথ করব ক্যানে? গলায় 
দড়ি! সে আবার মুহুর্তে ঘুরিয়া আপন মনেই পথ চলিতে 
আরম্ভ করিল। 

পথে বাঁশ জঙ্গলে ভর! পালপুকুরের কোণে আসিয়৷ ছুর্গ 
দেখিল; বাঁশবনের আড়ালে শ্রীহরি পাল দীড়াইয়া আছে। 
দুগা হাসিয়া ইঙ্গিত করিয়া বলিল__টাঁকা চাই। এতগুলি ! 
ঘর করব। 

শ্রীহরি গ্রাহ্থ করিল না, প্রশ্ন করিল_ কিসের দরখাস্ত 
হচ্ছে রে? 

__সাঁয়েবের কাছে। ঘর পুড়ে গিয়েছে-__তাঁই__- 

_-তাই আমাকে স্ুবে করে দরখাস্ত করছে বুঝি ? শাল! 
ডাক্তার, শালাকে-_। শ্রীহরির মুখখান! ভীষণ হইয়। উঠিল। 

দুগা গম্ভীর মুখে তীক্ষ দৃষ্টিতে ছিরুর দিকে চাহিয়া বলিল 
_তুমিই তে দিয়েছ আগুন ! 

_দিয়েছি! তুই দেখেছিস? 

_ হ্যা দেখেছি। 

_চুপ কর, এতগুলো টাকাই দোব আমি। 

দুর্গ আর উত্তর করিল না। ঠোঁট বাঁকাইয় বিচিত্র 
দৃষ্টিতে শ্রীহরির দিকে মুহূর্তের জন্য চাহিয়! দেখিয়া__আঁপন 
পথে চলিয়া গেল। দন্তহীন মুখে হাঁসিয়৷ ছিরু তাহার গমন- 
পথের দিকে চাহিয়া রহিল। 


আট 


দুর্গা মেয়েটি বেশ সু মেয়ে। তাহার দেহবর্ণ পর্য্যন্ত 
গৌর, যাঁহ! তাহাদের স্বজাতির পক্ষে দুর্লভ এবং আকম্মিক। 
ইহার উপর দুর্গার রূপের মধ্যে এমন একটা কিছু আছে যাহা 
মানুষের মনকে মুগ্ধ করে__আকর্ষণ ররে। 

পাতু নিজেই দ্বারক! চৌধুরীকে বলিয়াছিল__ আমার ম! 
হারামজাদদীকে তো৷ জানেন ; হারাঁমজাদীর স্বভাব আর গেল 


৪১৩৩৬ 


না। ছুর্গীর রূপের আকম্মিকতা পাতুর মায়ের সেই 
স্বভাবের জীবন্ত প্রমাঁণ। 

এ স্বভাব দমনের জন্ত কোন কঠোর শান্তি বা পরিবর্তনের 
জগ্ত কোন আদর্শের সংস্কার ইহাদের সমাঁজে নাই। অন্পশ্বল্ল 
উচ্ছঙ্ঘলত ্বামীরা পধ্যন্ত দেখিয়াও দেখে না) বিশেষ 
করিয়া উচ্ছ জ্বলতার সহিত যদি উচ্চবর্ণের স্বচ্ছল অবস্থার 
পুরুষ জড়িত থাকে। কিন্তু দুর্গার উচ্ছজঙ্খলতা সে 
সীমাকেও অতিক্রম করিয়া! গিয়াছে । সে স্বেচ্ছাচারিণী__ 
স্বৈরিণী, কোন সীমাঁকেই অতিক্রম করিতে তাহার দ্বিধা 
নাই। নিশীথ রাত্রে সে কঙ্কণার জমিদারদের প্রমোঁদভবনে 
যাঁয় ইউনিয়ন বোর্ডের প্রেসিডেন্টকে সে জানে; লোকে বলে 
-_দীরোগা হাঁকিম পর্যান্ত তাহার অপরিচিত নয়। সেদিন 
ডিগ্রিন্ট বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান মুখাঁজ্জী সাভেবের সহিত 
সে পরিচয় করিয়া আসিয়াছে গভীর রাত্রে, দফাঁদার তাহার 
শরীর-রক্ষীর মত সঙ্গে সঙ্গে গিয়াছিল। দুর্গা ইহাঁতে অহঙ্কার 
বোধ কবে, নিজেকে স্বজাতীয়দের অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ মনে করে । 
নিজের কলঙ্ক সে গোপন করে না। এ স্বভাবের জন্য লোকে 
দায়ী করে তাহার মাকে । তাহার মা নাকি কন্টাকে স্বামী 
পরিত্যাগ করাইয়। এই পথ দেখা ইয়। দিয়াছে । কিন্ত দায়ী 
তাহার মানয়। তাহার বিবাহ হইয়াছিল কক্কণাঁয়। দুর্গার 
শাসণ্ডড়ী কষ্কণার এক বাবুর বাড়ীতে ঝাড়দ্রারণীর কাজ 
করিত। একদিন শাশুড়ীর অস্থথ করিয়াছিল--ছুর্গা 
গিয়াছিল শাশুড়ীর কাজে । বাবুর বাড়ীর চাঁকরটা সকল 
কাজের শেষে তাহাকে ধমক দিয়] বাঁবুর বাগান-বাঁড়ী বাট 
দিবার জন্য একটা নির্জন ঘরে ঢুকাইয়া দিল । ঘরে ছিল 


বাবু; দুর্গা সন্ত্রস্ত হইয়া পিছনের দরজার দিকে ফিরিবার, 


চেষ্টা করিতেই দেখিল__দরজা বাহির হইতে বন্ধ । বাড়ী 
ফিরিল সে--কাঁপড়ের খু'টে বাধা পাঁচ টাকার একখান! 
নোট লইয়া। আতঙ্কে ভয়ে এবং সঙ্গে সঙ্গে অর্থপ্রাপ্তির 
আনন্দে--সেইদিনই সে পলাইয়া'আসিয়াছিল মায়ের কাছে। 
মায়ের চোঁথে বিচিত্র দৃষ্টি ফুটিয়! উঠিয়াছিল__-একটা উজ্জ্বল 
আলোকিত পথ সহসা যেন তাহার চোখের সম্মুখে উদ্ভাসিত 
হইয়া উঠিয়াছে। সেই পথ সে কন্তাকে দেখাইয়া দিল। 
তাহার পর হইতে ছুর্গা' সেই পথ ধরিয়া চলিয়াছে। 

ছিরু পাপের সহিত দুর্গার একান্তভাবে ব্যবসায়ের 
সন্বন্ধ। তাহার প্রতি এতটুকু কোমলতা কোন দিন 


ভ্ডাব্রজ্বর্ব 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় খণ্ড--৪র্ঘ সংখ্যা 


তাহার ছিল না। আজ তাহার প্রতি ছুর্গার ঘ্ব্ণ! 
-_ আক্রোশ জন্মিয়া গেল। পাতুর সহিত তাহার যতই 
বিরোধ থাক, জাতি জ্ঞাতিদের যতই সে হীন ভাবুক-_-আজ 
তাহাঁদের জন্তই সে মমতা অনুভব করিল ।:-.ছিরু পালের 
মদের সঙ্গে গরু-মারা বিষ মিশাইয়া দিলে কি হয়? 

_ডাঁক্তোর কি বললে? গাছ বেচবে?-প্রশ্ন করিল 
দু ীর মা। চিন্তা করিতে করিতে দুর্গা কথন আঁসিয়। বাড়ী 
পৌছিয়'ছে-_খেয়াল ছিল না। 

সচকিত হইয়] দুর্গা উত্তর দিল-__ন। 

_বেচবে না? 

_ জিজ্ঞেস করি নাই। 

--মরণ ! গেলি ক্যানে তবে ঢং করে! 

দুর্গা একবার কেবল তীব্র তীর্যাক দৃষ্টিতে মায়ের দিকে 
চাঁহিল, কথার কোন জবাব দিল না। 

কন্যার আতন্মবিক্রয়ের অর্থে মা এখন বাচিয়া আছে__ 
দুগার চোঁথের দৃষ্টির তীক্ষতা দেখিয়া মা সম্কুচিত হইয়া চুপ 
করিল। কিছুক্ষণ পর সে বলিল--হাম্ছু স্তাখ পাইকার 
এসেছিল । 

দুর্গা এবারও কথার উত্তর দিল না। 

মা আবার বলিল- আবার আসবে, 
পাড়ার নোকের সঙ্গে কথা কইছে। 

দুর্গা এবার বলিল _ক্যানে কি দরকার তার? আমি 
বেচব না গরু ছাগল । দুগার একপাল ছাগন আছে? 
কয়েকটা গাই এবং একটা দামড়া বাছুরও আছে । অগ্নি- 
কাণ্ডের সংবাদ পাইয়া সেথ নিজেই ছুটিয়া আসিয়াছে। 
এই পাঁড়ায় ছাগল গরু কেনে- প্রয়োজনে চার আনা 
আট আনা হইতে ছু চার টাক! পর্য্স্ত অগ্রিমও দেয় হামছু 
সেখ । পরে ছাগল গরু লইয়া টাকাটা সুদ সমেত শোধ 
লইয়া থাকে । আজও সে আসিয়াছে ছাঁগল গরু কিনিতে, 
ছু একজনকে অগ্রিমও দিবে। এত বড় বিপদে এই 
বারণ প্রয়োজনের সময়-_হাম্দু কর্জ করিয়া টাকা লইয়া 
আসিয়াছে । দুর্গার পালিত দামড়া বাছুরটার জন্য হামছু 
অনেকবার তোষামোদ করিয়াছে, কিন্তু দুর্গা বেচে নাই । আজ 
সে আবার আসিয়াছে এবং দুর্গার মাকে গোপনে চার আনা 
পয়স! দিয়াছে । স্ওদ! হইলে, পশ্চিম মুখে দীড়াইয়া' আরও 
চার আনার প্রতিশ্রুতি হামছু দিয়াছে। মেয়ের কথাটা 


ধন্মরাজতলায় 


চৈত্র--১৩৪৭ ] 


মায়ের মোঁটেই ভাল লাগিল না_খানিকটা ঝাঁঝ দিয়া 
বলিল-_বেচবি না তোঃ ঘর কিসে হবে শুনি? 

-(তোর বাবা এসে দেবে, বুঝলি হারামজার্দী! আমি 
আমার শশাখাবাধা বেচব। দুর্গা দুই-চারিখানা! সোনার 
গহনাও গড়াইয়াছে ; অত্যন্ত সামান্ত অবশ্য, কিন্তু তাহাই 
ইহ্ণদের পক্ষে স্বপ্রের কথা । 

দুর্গার মা! এবার বিস্ফোরক বস্তর মত ফাঁটিয়৷ পড়িবার 
উপক্রম করিল, কিন্ত দুর্গা তাহাতে দমিবার মেয়ে নয়, সে 
বলিয়াই গেল__ক* আনা নিয়েছিস-__হাঁমছু স্াখের কাছে? 
আমি কিছু বুঝি না মনে করছিস; ধান চালের ভাত আমি 
থাই না, নয়? 

বিস্ফোরণের মুখেই দুর্গার মা প্রচণ্ড বর্ষণে যেন ভিজিয়! 
হিম হইয়া গেল। সে অকন্মাৎ কাদিতে আরম্ভ করিল, 
প্যাটের মেয়ে হয়ে তু এতবড় কথা আমাকে বললি ! 

দুর্গা গ্রাহ্হ করিল নাঃ বলিল- দাদা কোথা গেল? 
বউটাই বা গেল কোথা? 

মা আপন মনেই কাঁদিতে আরম্ভ করিল, দুর্গার প্রশ্নের 
উত্তরও তাহারই মধ্যে ছিল-_-গভো আমার আগুন ধরিয়ে 
দিতে হয় রে, নেকনে আমার পাথর মারতে হয়! জ্যান্তে 
আমাকে দগ্ধে দগ্ধে মারলে রে । যেমন ব্যাটা-_তেমুনি বেটা। 
বেটা বলছে চোর। আর আর ব্যাটা হ'ল গ্যাশের-বার ! 
দ্যাশের লোকে তালপাত। কেটে আপন আপন ঘর ঢাঁকলে-_ 
আর আমার ব্যাটা গ ছেড়ে চললো । মরুক-_মরুক ড্যাঁকরা 
-_-এই অত্্রাণের শীতে মক্ক। 

অত্যন্ত রূঢম্বরে দুর্গ! বলিল-_-বলি, রান্না-বান্না করবি, ন! 
প্যান-প্যান করে কাদবি? পি গিলতে হবে না? 

_না মা, আর পিগ্ডি গিলব না মা। তার চেয়ে গলায় 
দড়ি দোঁব মা !__ছুর্গার ম| বিনাইয়| বিনাইয়! জবাঁব দিল । 

দুর্গা আর কিছু বলিল না, উঠিয়া ঘরের ভিতর হইতে 
একগাছা গরু-বাধা দড়ি লইয়া মায়ের কোলের কাছে ফেলিয়া 
দিল; তারপর সে পাঁড়ার মধো চলিয়া গেল আগুনের 
সন্ধানে। 


হরিজন-পল্লীর মজলিসের স্থান-_-ওই ধর্মরাঁজের বকুল- 
গাছতলা। বহুদিনের প্রাচীন বকুলগাঁছটি পত্রপল্লবে 
পরিধিতে বিশাল ; কাওুটি প্রায় শৃন্তগর্ত এবং বহুকাল পূর্বের 


গিশ-৩০দ্বভ্ঞা 


৪ ৩ 


কোন প্রচণ্ড ঝড়ে অর্দোৎপাটিত হইয়৷ তূমিশায়ী হইয়াই 
আজও বাঁচিয়া আছে। ইহা নাকি ধর্মরাজের আশ্্য্য 
লীলা । এমন করিয়া শায়িত অবস্থায় কোথায় কোন্‌ গাছ 
কে দেখিয়াছে! গাছের গোড়ায় স্তপীকৃত মাটির ঘোড়া; 
মানত করিয়া লোকে ধর্মরাজকে ঘোড়া দিয়া যাঁয়। আঁশ- 
পাশের ছাঁয়াবৃত স্থানটি পরিচ্ছন্ন তক তক করিতেছে। 
পল্লীর গ্রত্যেকে প্রতি প্রভাতে একটি করিয়া মাড়,লী দিয় 
যাঁয়, সেই মাড়,লীগুলি পরস্পরের সহিত যুক্ত হইয়া__গোটা 
স্থানটাই নিকাঁনে হয়। হাঁমদু সেখ সেইখানে বসিয়া পল্লীর 
লোকজনের সঙ্গে গরুছাগল সওদার দরদস্্র করিতেছিল; 
কয়টা ছাগল--ছুইটা গরু অদূরে বীধিয়৷ রাঁখিয়াছে__ 
এগুলি কেন! হইয়া গিয়াছে । 

পুরুষেরা সকলেই গিয়াছে জগন ডাক্তারের ওখানে, 
হামদুর কাঁরবাঁর চলিতেছিল মেয়েদের সঙ্গে। মেয়েরা কেহ 
মাসী, কেহ পিসী, কেহ দিদি, কেহ বা চাঁচী, কেহ ভাবী । 
হামছু একট! খাসী লইয়া! এক বাউড়ী ভাবীর সঙ্গে দর 
করিতেছিল- ইয়ার কি "আছে, তুই বল ভাবী! সেরেফ 
খালটা, আর হাড় ক'খান!। পাঁচ স্যার গোস্তও হবে না 
ইয়াতে। স্তার তিনেক হবে। ইয়ার দাম পাঁচ সিকা 
বলেছি-_কি অন্তাঁয় বলেছি বল। পাঁচজনা তো রয়েছে-_ 
বলুক পাচজনাঁয়। আর ই অসময়ে লিবে কে বল? গরজ 
এখনি, তুর না__গরজ পরের, তুর বুঝ কেনে। বলিতে 
বলিতেই সে চীৎকার করিয়া ডাকিল-__ও দুগগা দিদি, 
শুন গো» শুন। তুর বাড়ী পাঁচবার গেলম। শুন- গুন! 

দুর্গা আগুনের সন্ধানে পাড়ায় বাহির হইয়াছিল, সে 
দূর হইতেই বলিল-_বেচব না আমি । 

_আরে না বেচিস, শুন_-শুন। তুকে বেচতে আমি 
বলি নাই। | 

_কি? ছুর্গা আসিয়া দাড়াইল। 

--আরে বাপরে! দিদি যে একবারে ঘোঁড়ায় সওয়ার 
হয়ে এলি গো! 

_ষ্্যা) তাই বটে! গিয়ে আমাকে রাঁধতে হবে। কি 
বলছ, বল? 

ভাল কথাই বলছি ভাই; বলাঁছ ঘরে টিন দিবি? 
সন্ধানে আমার সম্তায় টিন আছে। 

_টিন? 


শট 5৮৮ 


_হ্ব্যাগো! একবারে নতুন। কলওয়ালারা বেচবে। 
কিনৰি? একবারে নিশ্চিন্দি ! দেখ! গোটা চালিশ টাকা। 

দুর্গা কয়েক মুহূর্ত ভাবিল। মনশ্চক্ষে দেখিল__তাহার 
ঘরের উপর টিনের আচ্ছাদন--রোদের ছটায় রূপার পাতের 
মত ঝকমক করিতেছে! পরমুহর্তেই সে আত্মসম্বরণ 
করিয়া বলিল_উন্ন! না। 

_তুর টাক! না-থাকে, আমাকে ইয়ার পরে দিস। 
ছ মাস, এক বছর পরে দিস! 

_উহ্ছ! দুর্গা হাঁসিয় ঘাড় নাঁড়িয়া বলিল-_উ--হু-_! 
ও দামড়াঁর নামে তুমি হাত ধোঁও তো হামছু ভাই। ও 
আমি এখন দু-বছর বেচব না ।--বলিয়া হাসিতে ভাসিতেই 
সে চলিয়া গেল। আগুন লইয়া বাড়ী ফিরিয়া দেখিল-_ 
দড়িগাছটা সেইথানেই পড়িয়া আছে, ম1 সেটা স্পর্শও করে 
নাই। উনানে আগুন দিয়া এখন সে পাতুর সঙ্গে বচসায় 
নিষুক্ত। ছুই বোঝা ভালপাতা উঠানে ফেলিয়া পাত 
হাপাইতেছে এবং মায়ের দিকে তুদ্ধ বাঘের মত চাহিয়া 
আছে। পাতুর বউ, কাঠকুটা কুড়াইয়া জড়ো করিতেছেন, 
রান্না চড়াইবে। 

ছুর্গা বিনা ভূমিকায় বলিল-_বউ, রান্না আর করতে হবে 
না। আমিই রাঁধছি, একসঙ্গেই থাব সব। 

পাতু দুর্গার দিকে চাহিয়া বলিল__দেখ দুগগা__দেখ ! 
মায়ের মুখ দেখ। যা মন তাই বলছে! ভাল হবে না 
কিন্তুক! 

_কি করবি বল? আমিই বা কি করব বল? গভ্যে 
ধরেছে! মা! তাঁড়িয়েও দিতে লারবি, খুন করতেও 
লারবি। র 

_ একশো বার। তোর কথার কাটান নাই। কিন্তৃক 
--ই গায়ে থাকব কি স্ুখে__তুই বল দেখি! 

_-সত্যিই তুই উঠে যাঁবি নাকি? হ্থ্যা দাদা? ভিটে 
ছেড়ে উঠে যাবি? 

পাতু কিছুক্ষণ চুপ করিয়া রহিল। তারপর বলিল-_ 
তাতেই তো আবার এই অবেলাতে তালপাত। কেটে আনলাম 


ভ্ডান্সভন্বন্য 


[২৮শ বর্-_২য় খণ্ড ৪র্থ সংখ্যা 


দুগগা! নইলে-__জংসনের কলে কাজ--ঘর সব ঠিক 
ক'রে এসেছিলাম ছুপর বেলাতে ।-_ছু'হাত ছাদাছাদি 
করিয়া তাহারই মধ্যে মাথা গু'জিয়৷ পাতু মাটির দিকে 
চাহিয়া বসিয়৷ রহিল । 

দুর্গী বলিল-_-ওঠ | ওই দেখ কথানা লম্বা বাশ 
রয়েছে আমার; ওই কখানা চাপিয়ে - তালপাঁতা দিয়ে 
ঘরখান! ঢাঁক। পিতি-পুরুষের ভিটে ছেড়ে কেউ কখনও 
যায় নাকি? তুইচালে ওঠ, আমি বউ ছুঃজনাতে তুলে 
দিচ্ছি সব। 

একটা দীর্ঘনিশ্বাম ফেলিয়া পাতু উঠিল । দুর্গা কাঁপড়ের 
আচল কোমরে আ্াট-সাাট করিয়া বাধিতে বাঁধিতে বলিল-_- 
ওই গাদা সতীশ ! সতীশ বাউড়ী, মিনষে _জগন ডাঁক্তোরকে 
বলছে-_পাতু বায়েন বড় লোক, ব্যালে্টার-উকীল ! তা 
আমি বললাম__আহা তোর মুখে ফুল চন্নন পড়,ক ! বলে 
_বড় নোক গা থেকে উঠে যাবে! যাবে! তোপধিগে_ 
ভিটে দানপত্ত লিখে দিয়ে যাবে । তোরা ভোগ করবি! 

বিড়ালীর নত হষ্পুষ্ট পাতুর বউটা খাটিতে পারে খুব, 
খাটো পায়ে-_ দ্রুতগতিতে লাটিমের মত পাক দিয়া ফেরে। 
সে ইহার মধ্যে বাঁশগুলাকে টানিয়া আনিয়। ফেলিযাছে । 

_পাতু রয়েছ? পাতু? 

_কে? 

_আমি থানদার ভূপাল লোহার! থান্দার 
চৌকীদার। চৌকীদারের আবিভাঁবে সকলেই শঙ্কিত 
উঠিল। পাতুর হাতের তালপাতাখান! খসিয়া 
পড়িয়া গেল। 

_কিগেো থানদার ? 

-আবারকি! তোমার সব ডাক পড়েছে হে! 

_- কোথা? 

_পেসিডেন বাবুর কাছে, ইউনান বোডে। গায়ের 
লোকের কাছেও বটে। ট্যাক্পোর ঢোল দিতে হবে আর 
নবান্লোর ঢোল । 


অর্থে 
হইয়] 
নীচে 


( ক্রমশঃ) 





প্রহেলিকা 


স্্রীধামিনীমোহন কর 
দ্বিতীয় অঙ্ক 
একই দৃষ্ঠ গিরিজা। পরামর্শটা ভাল, কিম্ত তিনি এখন নেই। 
গিরিজ। | এতক্ষণে মালিনী দেবীর মাস! উচিত ছিল | আপনার ঘরের সামনে তার ঘরের দরজা, তাই__ 
কান্তিক। হয়ত ছবি নিয়ে ব্্ত আছেন। আমি মালিনী । তাইকি? 


তো বহুক্ষণ তাকে ডাঁকতে লোক পাঠিয়েছি । 
দরজায় খটখট ধ্বনি 


এ বোধ হয় এসেছেন । (দরজা খুলে) আস্থন, মালিনী দেবী। 
মালিনী। ( ঢুকে ) কই আমার ঘরে গেলেন না? 
কাঠিক। কাঁজে বড্ড ব্যস্ত ছিলুম। 
গিরিজা। বসুন। 
মালিনী । (বসে) থ্যাঙ্ক ইউ। 
গিরিজা। আপনাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিলুম, কারণ-__ 
মালিনী । এক মিনিট । ( কাঞ্ডিকের প্রতি ) দেখুন বেছে 

বেছে এই ছবিটা আমার পছন্দ হয়েছে। 


কার্তিককে ছবি দিলেন 


কার্তিক । (নিয়ে) ধন্যবাঁদ। 
মালিনী । ভাল করে দেখুন। 
কান্তিক। ( দেখে) চমৎকার ! 
মালিনী। বেশ ভাল উঠেছে । কি বলেন? কারা 


তুলেছে জানেন? এ যে বোনিও না কি আছে-__ 
কার্তিক। বোণিও আয গিল্ডারস্টেন_ 
মালিনী । ্থ্যা, হ্আা। বোনিও আন গিলিডারটেন। 
কেমন পোজট!? 
গিরিজা। এইবার কাঁজের কথা আরম্ভ করা যাক। 
মালিনী। নিশ্চয়ই। দেখুন ছবি কিন্তু বার করা চাই। 
গিরিজা । আমর! এই পাঁশের ঘরের লোকটির সম্বন্ধে 
জানতে চাই। 
মালিনী। গিয়ে আলাপ ক'রে এলেই পারেন। 
আপনারা পুলিশের লোক । যার বাড়ীতে ইচ্ছে ঢুকে পড়া; 
ধাকে তাকেহায়রাণ করা_-এ তো৷ আপনাদের নিত্য কর্ম। 


গিরিজা। যদি আপনার সঙ্গে তার আলাপ হয়ে 
থাকে। তার নাম নিশিকান্ত মুখোপাধ্যায় । 

মালিনী । না, আমি তাঁকে চিনি না। আপনি কি 
বলতে চান ঘরের সামনে দরজা থাকলেই গায়ে পড়ে গিয়ে 
আলাপ করব। সে রকম মেয়ে আমি নই। 

গিরিজা । কিন্তু স্বামীর ঘর থেকে বেরিয়ে যাবার মত 
মেয়ে তো আপনিই'। 

মালিনী। তাঁতে আপনাদের কি? বার বার এক 
কথা বলার কি প্রয়োজন? বেশ করেছি, চলে এসেছি । 
একটা জার্নালিস্ট স্বামী, দেড়শ” টাঁকা মাইনে আর ত্রিশ 
টাকার ফ্র্যাট। তাতে আমার পৌষাতো না। আমার বাবা 
গদাই মিত্তির শেয়ার মার্কেটে অনেক টাঁকা করেছিলেন। 
আমার রুচিও তেমনি হয়েছিল । যে সব সোসাঁইটাতে তিনি 
আমায় মিশিয়েছিলেন তারপর অমন লোকের সঙ্গে বিয়ে 
দেওয়াটাই তাঁর অন্ায় হয়েছিল। কিন্তু আপনি সে 
কথা ক্রমাগত তুলছেন কেন? এ কেসের সঙ্গে তার 
কি সম্বন্ধ ? 

গিরিজা। কিচ্ছু না । তবুও তুলছি, কারণ আপনার 
স্বামী আর আমি একসঙ্গে স্কুলে লারা আচ্ছা, 
আপনি এখন যেতে পারেন। 

মালিনী। দেখা হলে আপনার বন্ধুকে বলবেন যে 
মাস্টার আর জার্নালিস্টদের বিয়ে করা শোঁভা পায় না, 
বিশেষ করে আমাদের মত মেয়েদের । 


কার্ডিকেয় হাত থেকে ছবি কেড়ে নিয়ে প্রস্থান 
গিরিজা। ওকে দেখলে আমার পিত্ত জলে বায়। 
কাণ্তিক গণেশবাবুকে ডেকে দিতে বল। 


, কান্তিক চলে গেলেন 


৪৩৯ 


৪৪০ 


চেয়ারে বসে গিরিজ। কার্তিকের নোট বইতে লিখতে 
লাগলেন। কার্িক এলেন 

কান্তিক। একটা চাকর যাচ্ছিল। তাকে বলে 
দিয়েছি । লোকটা এবার ক্ষেপে উঠবে । 

গিরিজা। উপায় কি? তবে সময় নষ্ট করাবে না। 
আঁমাঁদের চেয়ে ও বেশী ব্যন্ত। 

কার্তিক। বনমালীবাবুকে নিয়ে রতনের এতক্ষণ ফেরা 
উচিত ছিল। 

গিরিজা। তুমি একবার মিস্‌ রায়ের কাছে যাঁও। 
নিশিকান্তবাঁবুকে চেনেন কি-না জিজ্ঞেস কোরো । 

দরজার কাছে গণেশকে দেখ। গেল 


আনুন গণেশবাবুঃ ভেতরে আসুন । 
গণেশ এলেন ও কান্তিক চলে গেলেন 


গণেশ। এবার কি চাহেন? জানেন আমার কাজের__ 

গিরিজা। কিছু মনে করবেন না । আধ মিনিট। বস্থুন। 

গণেশ । (বসে) জল্দি করিয়া বলিয়া ফেলেন। 

গিরিজা । এই পাঁশের ঘরের লোকটির সম্বন্ধে আপনি 
কি জানেন? নাম নিশিকান্ত-_ 

গণেশ। হানি কুছু জানে না। 

গিরিজা। এই হোটেলে কোন দিন তাকে দেখেছেন? 

গণেশ। কেমন দেখতে আছেন? 

গিরিজা। তা তো আমিজানি না। 

গণেশ । আপ যাঁকে দেখা নহি' সেই আদমীকে হাঁমি 
চেনে কি-না বাবুজী, 'আপকে লিয়ে হাঁমি এক গিলাস 
সরবত পাঠিয়ে দেবে। 

গিরিজা। মানে আমি জিজ্ঞেস করছিলুম, এই ফ্ল্যাটে 
কাঁউকে আসতে যেতে দেখেছেন কি? 

গণেশ। না। 

গিরিজা। আচ্ছা, এখন যেতে পারেন। ধন্যবাদ | 

গণেশ চলে গেলেন 

গিরিজা খাতায় লিখতে লাগলেন। কাঠিক এলেন 

গিরিজা । মিস রায় কি বল্লেন? চেনেন? 

কার্ঠিক । না! । কখনও দেখেন নি পর্য্যস্ত। 

গিরিজা। আমিও তাই ভেবেছিনুম। এখন অনাথ 
এসে পড়লে বীচি। হ্থ্যাঃ আপিন থেকে ফোন করছিল, 


ভাব্রভজহ্ধ 


| ২৮শ বর্ধ-_২য় খণ্ড_৪র্থ সংখ্যা 


কুমারবাহাছুরের ডান হাতের ন'থে রক্ত আর চামড়া 
লেগেছিল । 

কাণ্তিক। তার মানে হুটোপাটির সময় কারুর গা 
খিমচে গিছল । 


দরজায় খটথট ধ্বনি 


কে? কি চাও? 

অনাথ। (নেপথ্যে ) আমায় ডেকেছিলেন ? 

কাণ্তিক। কেতুমি? 

অনাথ। (নেপথ্যে) আমি এখানকার লিফ টমান। 
আমার নাম অনাথ। 

গিরিজা। ওঃ! অনাথ? ভেতরে এস। 
অনাথের প্রবেশ 


গিরিজা। এতক্ষণ কোথায় ছিলে? 


এক দৃষ্টে অনাথকে দেখতে লাগলেন 


অনাথ । আজ্ঞে আমার একটু জরের মত হমেছিল। 

গিরিজা । ওঃ। অনাথ-- তোমার নাম কি? 

অনাথ । অনাঁথ। 

গিরিজা। আর কোন নাম আছে? 

অনাথ । আজে না। 

গিরিজা। তোমায় যেন কোথায় দেখেছি মনে হচ্ছে । 

অনাথ। আমি কিন্ত আপনাকে এই প্রথম দেখলুম। 

গিরিজা। অনেক দিন আগেকার কথা। তুমি 
কিংবা ঠিক তোমার মত দেখতে কেউ--্্যা, আমরা 
পুলিশের লোক । কুমার জগদীশপ্রসাদ পাইনকে আজ 
সকালে মৃত অবস্থায় এই ঘরে পাওয়া বাঁয়। মাথায় 
গুলির আঘাত। 

অনাথ । এই মাত্র এসে বংশীর মুখে শুনলুম। 

গিরিজা। এখুনি একজন ভদ্রলোক আসবেন। তুমি 
তাঁকে চেন কি-ন1 বলবে। । 

অনাথ। কে? 26 

গিরিজা। পাঁশের ঘরের নিশিকাস্তবাবু। তাকে চেন? 

অনাথ । আজে হ্্যা। একবার তাকে দেখেছিলুর্ম। 

গিরিজা। আবার দেখলে চিনতে পারবে তো? 

অনাথ। পারবূ। লিফটে ওপর থেকে নীচে নিয়ে 
গিছলুম ৷ দু-একটা কথাও হয়েছিল । 


চৈত্র--১৩৪৭ ] 





গিরিজা । কোন ভূল হবে না? 

অনাথ। না। 

গিরিজ! | যাঁক্‌ বাচা গেল। তিনি ঘরে ঢুকবেন, 
তুমি তাঁকে ভাল ক'রে দেখে ঘর থেকে বেরিয়ে যাবে। 
যতক্ষণ না ডেকে পাঠাই বাইরে অপেক্ষা করবে । চিনতে 
পেরেছ তা জানতে দেবে না। 

অনাথ । কাকে চিনব ? 

গিরিজা । তুমি দেখে বলবে সেই ভদ্রলোক নিশিকান্ত- 
বাবু কি-না। তিনি অন্ত নামে পরিচয় দেবেন । 

অনাথ। কিনাম? 

গিরিজা। বনমালী সাহা । 

অনাথ। গুঁকেই তো কুমারবাহাঁছুর ভয় পেতেন। 
আমাদের বলে দিয়েছিলেন উনি এলেই যেন বলে দিই যে 
তিনি ঘরে নেই। 

গিরিজা তুমি বনমালীবাবুকে দেখেছ? 

অনাথ । না। বংশী অনেকবার দেখেছে । 
রতনলাল এলেন 


রতন। বনমালীবাবু এসেছেন । 
গিরিজা। ভেতরে পাঠিয়ে দাও। 


রতন চলিয়! গেলেন ও বনমালীবাবু এলেন 
বনমালী। আমাকে এরকমভাবে ডেকে আনবার কারণ 
জানতে পারি কি? 


অনাথ চলে গেলেন 


গিরিজা। বন্থন। 

বনমালী। (বসে) ধন্যবাদ । 

* গিরিজা। আমি ইন্সপেক্টর গিরিজাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য্য, 
আর ইনি আমার সহকর্মী । 

বনমালী। এটা ভো থানা নয়? 

,গিরিজা। না। হোটেল “ক্যাসিনো। কেন, আপনি 
কি জাগে কখনও এখাঁনে আসেন নি? 

বনমালী। না। কলকাতায় এই প্রথম এসেছি । 

গিরিজা। কুমার জগদীশপ্রসাঁদ পাইনকে চিনতেন? 

বনমালী। জগদীশপ্রসাঁদ পাইন? কই না। এ নামে 
কাউকে চিনি বলে তো মনে পড়ছে না। . 

গিরিজা । তাই নাকি? 


€ত 


অক্ছেক্ি্গা 








ক সি স্ব -্্ 


বনমালী। এক কাজ করুন না। আমার কথায় 
বিশ্বাস না হয় তো তাকে এথানে ডেকে এনে দিজ্েস করুন 
আমায় চেনেন কি-না? তাহলেই সব ল্যাঠা চুকে যায়। 

গিরিজা। উপায় থাকলে তাঁই করতুম। তাকে কল 
রাত্রে কেউ হত্যা করেছে। 

বনমালী। তা হ'লে আর কি করা যাঁবে বলুন? 

গিরিজা। তিনি মারা গেছেন শুনে আপনি বিশেষ 
দুঃখিত হলেন বলে তো মনে হল” না। 

বনমালী। রোজ কত কোটি লোক মারা যাচ্ছে। 
সকলের জন্য দুঃখ করতে হলে তো কেঁদে কেঁদেই মরতে হয়। 
যাঁকে চিনিনে তার মরা-বাচায় আমার কি? 

গিরিজা। তা বটে। আচ্ছা, আপনি কি হোটেল 
ক্যাসিনোতে এই প্রথম এলেন? 

বনমালী। হ্যা। কারণ এখানে আসতে হলে 
কলকাতায় আসা দরকার । 

গিরিজা। কাণ্তিক, একবার বংশীকে ডেকে আন তো। 

কার্তিক চলে গেলেন 

আপনার ম্মরণশক্তি কি একটু কম? 

বনমালী। পুলিশে চাঁকরির চেষ্টা কখনও করি নি, 
তাই ঠিক বলতে পারছিনে। 

গিরিজা । বংশী নামে এখানে একজন লিফ টম্যান 
আছে, তাকে চেনেন ? 

বনমালী। না। এখানে কখনও এলুম না_-অথচ 
এখানকার লিফ টম্যানকে চিনৰ, একি কম কথা? 

গিরিজা। তা ঠিক। আচ্ছা বনমালীবাবু১ আপনি 
লোকের চেহারা মনে রাখতে পাষেন ? 

বনমালী। তা একটু পারি বলেই মনে হয়। 
বংশীকে নিয়ে কার্তিকের প্রবেশ | 

গিরিজা। বংশী, তুমি একে চেন? | 

বংশী। আজ্ঞে হ্্যা। ইনি কয়েকবার এসে কুমার- 
বাহাদুরের খোজ করেছিলেন। 

গিরিজা। কুমারবাহাছুর দেখা করেছিলেন ? 

বংশী। আজ্ঞেনা। তিনি বলে দিয়েছিলেন যে ইনি 
এলেই যেন বলে দেওয়া হয় যে তিনি বাইরে গেছেন । 

গিরিজা। কোন ভূল হচ্ছে ন। তো ?. 

বশী। আজে না। ঠিক চিনতে পেরেছি । 


28 


গিরিজা। এ'র নাম বলতে পার? 

বংশী। বাবু বনমালী সাহা। 

গিরিজা। বনমালীবাবু কি বলেন? 

বনমালী। যাক, এ নিয়ে বেশী-__ 

গিরিজা। বংশী, তুমি এবার যেতে পার। 

বংশী চলে গেল 

আপনি তবে কুমারবাহাছুরকে চিনতেন? 

বনমালী। হ্থ্যা। 

গিরিজা। এতক্ষণ মিথ্যা কথা কইছিলেন কেন? 

বনমালী। মানে-_সামান্য একটু আলাপ ছিল মাত্র। 

গিরিজা। প্রায়ই গুর খোজে আসতেন কেন ? 

বনমালী। আমার কাছ থেকে উনি কিছু টাঁকা ধার 
করেছিলেন। তারই তাগাদায়। 

গিরিজা। রিভলভাঁর উচিয়ে কি টাকা আদায় করেন? 

বনমালী । হঠাৎ এ প্রশ্ন কেন? 

গিরিজ!। কা'ল রাত্রে টাকা আদায় করতে আপনি 


কুমারবাহাদুরের ঘরে ঢুকেছিলেন কি? 

বনমালী। না। কাল এই হোটেলের কাছেও 
আসি নি। 

গিরিজা | মিথ্যা কথা। আমি জানি-_ 


বনমালী। কি ক'রে জানলেন? 

গিরিজা। কুমারবাহাঁদুরের কাছ থেকে। 

বনমালী। তিনি মরবাঁর পর আপনাকে বপেছেন__ 

গিরিজা। না তিনি মরবার আগে লিখে গিছলেন। 

কান্তিক। যাতে লোকে জানতে পারে কে তাকে 
ত্যাকরেছে। (পাঠ ) “বনমালী সাহা! রিভলভাঁর হাতে 
পিছন থেকে ঘরে ঢুকছে । সামনের আরশিতে দেখতে 
পাচ্ছি। যদি আমার কিছু হয় তবে-_” ব্যস্* এইখানেই 
তার লেখ শেষ হয়ে গেছে__ 

গিরিজ1!। এবং সেই সঙ্গে তার জীবনেরও শেষ। 

বনমালী। (হঠাৎ চমকে উঠে) তাই তো, চেয়ারে 
বসলে আরশিতে সব দেখা যাঁয় দেখছি। 

গিরিজা। এইবার ব্যাপারটা কি রকম দীড়িয়েছে 
বুঝতে পারছেন বোধ হয়? 

বনমালী। আপনারা কি ননে করেন আমি দোষী? 

গিরিজা। ঘটনাচক্রে তাই দাড়িয়েছে। 


ভ্ান্রন্ন্ব্ 


[২৮শ বর্ষ-_২য় খণ্ড--৪র্থ সংখ্যা 


বনমালী। আমি কিন্তু কুমারবাহাছুরকে ইচ্ছে করে 
হত্যা করিনি। আযাকৃসিডেপ্ট _ 

গিরিজা। আপনি তবে স্বীকার করলেন-_ 

বনমালী। ( চমকে ) তা, কি বললেন? 

গিরিজা। স্বীকারোক্তি দিতে রাঁজী আছেন? 

বনমালী। অগত্যা । 

গিরিজা। মনে থাকে যেন যে আপনি স্বেচ্ছায় দোষ 
স্বীকার করছেন, আমরা বাধ্য করিনি। আর দরকার হ'লে 
আপনার বিরুদ্ধে স্বীকারোক্তি ব্যবহার করতে পারি । 

বনমালী। তাজানি। 

গিরিজা। বলুন। কািক, 
আলাদা! কাগজে লিখে নাও । 

বনমালী বলতে ও কার্তিক লিখতে লাগলেন 

বনমালী। আমি খুব গরীবের ছেলে । কলেজে কুমার- 
বাহাদুরের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল। তাঁর দু-একটা হীন 
কাজে সাহাধ্যঞ করেছিলুম । ভাঁরপর বহুদিন তাঁর সঙ্গে 
দেখাপাক্ষাঁৎ হয় নি। আমি অনেক কষ্টে লেখাপড়া শিখে 
উকিল হই। সেই সময় একটা জঘন্য কাঁজের জন্য সে 
আমার সাহাধ্য চায়। আমি রাজী হইনা। উকিল হয়ে 
পয়সার জন্য ছু-চাঁরটে এমন কাজ করেছিলুম যুঁনীতি কিংবা 
হ্তায়ের চোখে গহিত। কুমারবাহীছুর কোন রকমে তা 
জানতে পারে এবং দু-একটা অকাট্য প্রমাণ জোগাড় ক'রে 
আমার কাছে আসে । বলে, তাঁর কাঁজটা ক'রে দিলে 
প্রমাণগুলো ফেরত দেবে, নইলে ব্রাকমেল ক'রে টাকা 
আদায় করবে। ক'বছর থেকে তার গীড়ন সমভাবে 
চলছিল। কিন্তু এবছর আমি দু-একটা ভাল কেস 
পাওয়াতে টাকার পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে বলে। আমি 
মরিয়া হয়ে একট! হেম্তনেত্ত করার জঙন্ত ব্যন্ত হয়ে উঠি। 
দেশে অনেক লৌকের মধ্যে থাকে বলে সুবিধা হত” না। সে 
হঠাৎ কলকাতায় আসতে আমিও অনগসরণ করি। কাল 
স্থুযোগ বুঝে আমি তার ঘরে ঢুকি। তখন রাত একটা 
হবে। আমার তাকে হত্যা করবার উদ্দেশ্য ছিল না। শুধু 
ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে প্রমাণগুলে৷ আদায় “করতে 
এসেছিলুম। ঘরের দরজায় ধাকা দিতেই খুলে গেল । আমি 
রিভলভার উচিয়ে ঢুকে দেখি সে মাতাল অবস্থায় কি যেন 
লিখছে । নাম ধরে ডাকতেই চমকে উঠে আমার দিকে 


এঁর বক্তব্য একটা 


চত্র--১৩৪৭ ] 





চেয়ে বললে-__“কে ? বনমাঁলী ? কি চাও?” তার নেশ। 
ছুটে গেছে। আমি বললুম--“তোমার কাছে আমার 
বিরুদ্ধে যা প্রমাণ আছে সেগুলো দাঁও।” সে ীঁড়িয়ে 
উঠে বললে__“ওটা নামাও, দিচ্ছি।৮ আমি রিভলভার না 
নামিয়েই বললুম-_-“আগে দাঁও।” যন্ত্রচালিতের মত সে 
সেল্ফের কাছে গিয়ে হঠাৎ বললে-_“আরে চাঁবিটা যে 
দেরাজে রয়ে গেছে ।” এই বলে ফিরে এসে দেরাজ খুললে । 
একটু অন্যমনস্ক হয়েছি, এমন সময় দেখি সেও রিভলভার 
বার করে আমায় বলেছে__যাও, এখান থেকে বেরিয়ে 
যাও।” আমি গত্যন্তর না দেখে তার ঘাড়ে লাফিয়ে 
পড়ি। ঝুটোপুটিতে রিভলভারটা আমার হাত থেকে পড়ে 
যায়। আর কুমারবাহাছুরেরটা কি ক'রে যেন ছুড়ে যাঁয়। 
সে আমার হাতের মধ্যে নেতিয় পড়ে। দেখলুম তার 
মাথার মধ্যে গুলি ঢুকে গেছে । সেমারা গেছে । আমি 
তাড়াতাড়ি নিজের রিতলভারট৷ কুড়িয়ে নিরে সরে পড়ি। 

গিরিজা । ধন্তবাদ। আপনার স্টেটমেণ্টে প্রায় সবই 
সত্যি কথ! বলেছেন । অবশ্য দু-একটা-_ 

বনমালী। কেন আমি তো সবই সত্য বলেছি। 

গিরিজা। ঘ। বলেছেন তা সত্য, কিন্তু কিছুটা বাদ গেছে। 

বনমালী। কই মনে পড়ছে না তো। 

গিরিজা। এই পাঁশের ঘরটা কি ভাড়া নিয়েছিলেন? 

বনমালী। ( অবাক হয়ে ) না। 

গিরিজা। কান্তিক, একবার অনাথকে ডেকে আন তো। 

কার্তিক চলে গেছেন 

আপনি কি বলতে চান যে নিশিকান্ত মুখোপাধ্যায় নামে পরি- 
চয় দিয়ে এই পাশের ঘরটা ভাড়া নেননি? এ হত্যাটা 
্যাকৃসিডেপ্ট নয়, আগে থেকে হিসেব করে ঠাণ্ডা মেজাজে__ 


অনাথকে নিয়ে কার্তিক এলেন 


অনাথ, তুমি নিশিকাস্ত বাবুকে চেন? 
অনাথ। একবার দেখেছিলুম। 
গিরিজা। আবার দেখলে চিনতে পারবে? 
অনাথ। আজে হ্্যা। 
গিরিজা। এই ঘরে নিশিকান্তবাবু কে? 


অনাথ চুপ ক'রে দাড়িয়ে রইল, 
কই দেখাও। চুপ করে রয়েছ কেন? 


পা সস সা স্হপপা ব্রাশ স্পা স্পা ব্ান্তশ স্পা স্থান স্ভিপাস্ 





অনাথ। তিনি তো এ ঘরে নেই। 

গিরিজা। বল কি! (বনমালীকে দেখিয়ে) ইনি 
নিশিকাস্তবাবু নন? 

অনাথ। না। 

গিরিজা। (নিরাশ হয়ে ) আচ্ছা, তুমি যেতে পার+। 
নীচে থেক। 


অনাথ চলে গেলেন 
কান্তিক। আপনি যখন ঘরে ঢোকেন তখন কোন্‌ 
আঁলোটা জলছিল ? 
বনমালী। টেবল ল্যাম্প। 


গিরিজা। ঝুটোপুটিতে আলোটা পড়ে ভেঙ্গে গেছল ? 

কার্তিক । আমরা সকালে এসে সেটা ভাঙ্গ! অবস্থায় পাই। 

বনমালী । না, আমার সামনে সেটা ভাঙ্গেনি। অজানা 
নতুন ঘরে হঠাঁৎ আলো নিভে গেলে নিজের রিভলবার খুঁজে 
নিয়ে পালানো সম্ভবপর হত না। 

গিরিজা। আপনার হাতে রক্ত লেগেছিল? 

বনমালী। তা একটু লেগেছিল । টেবিলের ওপর রুমাল 
ছিল। তাঁড়াতাড়িতে তাতে হাঁত মুছে পকেটে করে নিয়ে 
গিয়েছিলুম । এই সেই রুমাল। কুমারবাহাছুরের নাম লেখ! 
আছে। 

পকেট থেকে একটা রক্তমাখা রুমাল বার ক'রে গিরিজাকে দিলেন 

গিরিজা। কুমারবাহাঁছুরের পকেট থেকে একতাড়া 
নোট পড়ে গিয়েছিল, লক্ষ্য করেছিলেন? 

বনমালী। প্রাণ নিয়ে পালাবার জন্য এত ব্যস্ত ছিলুম 
যেও সব লক্ষ্য করতে পারি নি। 

গিরিজা। তা হ'লে আপনি তাতে হাত দেন নি? 

বনমালী। যা দেখলুম না তাতে হাত দেবকি ক'রে 
বুঝতে পাঁরছি না । : 

কান্তিক। আচ্ছা, ভিজে ফুটপাথে পড়ে যেতে 
পারেন তো? 

বনমালী। হঠাৎ এ প্রশ্ন কেন? 

কান্তিক। রবার সোল জুতো জলে পিছলে যায় না? 

বনমালী। কি বলছেন আপনি? 

কানিক। দেখি আপনার জুতোর ছল! । 

বনমালী। আপনি ক্ষেপে গেলেন নাকি ? 


প! উচু ক'রে দেখালেন 














559 ভ্ঞান্পভ্ড্শ্ [ ২৮শ বর্ষ--২য় খণ্ড--৪র্থ সংখ্যা 
কার্িক। তাই তো! রবার সোল তো নয়। ত্রিদিবেন্্র। না, না, কষ্ট আর কি। আমি একটা 
বনমালী। আমি তো তা বলি নি। কাজে ব্যস্ত থাকায় আসতে দেরী হল। 
কার্তিক। কিন্তু কার্পেটের ওপর রবার সোল জুতোর গিরিজা। বন্থুন। 


ছাপ রয়েছে। 
বনমালী। তার আমি কি করতে পারি বলুন? 
গিরিজা। (ফোনে) হালো__দামোদরবাবুকে ডেকে 
দিন তো-কে? আপনিই দামোদরবাবু। হ্থ্যা দেখুন, 
এই তলায় কোন ঘর খালি আছে ?- বাইশ নম্বর) খোল৷ 
আছে? আচ্ছা ধন্তবাদ। (ফোন রেখে) রতনলাল-_ 
বনমালী বাবু আপনাকে কিছুক্ষণ এঘরে অপেক্ষা করতে 
হবে। 
রতনলাল এলেন 
রতন, একে বাইশ নম্বর ঘরে বসিয়ে রেখে এস। 
আর দরজার বাইরে একজন পুলিশ মোতায়েন ক'রে দেবে 
যেন কেউ ঘরে না ঢোকে । বুঝলে? 
রতন। আজে হ্ট্যা। ( বনমালীর প্রতি ) আন্বন। 
রতনলাল ও বনমালী চলে গেলেন 
কান্তিক। জুতোর কথাটা স্তর কি রকম কায়দা ক'রে 
জিজ্েস করলুমঃ দেখলেন ? 
গিরিজা। ভদ্রলোক তোমায় পাগল মনে করেছেন। 
ও তে! এমনিই দেখা যায় রবার সোল কি না। 
ফার্তিক। বনমালীর জবানবন্দী কি সত্য বলে মনে হয়? 
গিরিজা। তাই তো মনে হচ্ছে। আমাদের কলর সঙ্গে 
গ্রায় মিলে যাচ্ছে। 
রতনলাল এলেন 
কি রতন? বনমালীবাবুকে বসিয়ে দিয়ে এসেছ তো? . 
রতন। আজে হ্যা । হরিকিষণকে পাহারায় রেখে 
এসেছি । এক ভদ্রলোক দেখা করতে এসেছেন । 
গিরিজা। কে? কিনাম? 
রতন। ত্রিদিবেন্্রনারায়ণ নন্দী । 
গিরিজা। তাকে এক্ষুণি পাঠিয়ে দাও । 


প্লতনলাল ঢলে গেলেন 
কাঙ্তিক। ভদ্রল্লোক আসতে অনেক সময় নিয়েছেন । 
জিদ্দিবেল্প এলেন 
গিরিজা। আনুন । আপনাকে কষ্ট দিলুম-_ 


তিদিবেন্্র। গলা) আর বসব না। আমার একটু তাড়। 
আছে। তারপর, ব্যাপারটা কি? 
গিরিজা। কুমার জগদীশপ্রসাদ পাইনকে চেনেন? 


ত্রিদিবেন্্র। না। আগ্রহও নেই । কেন, কি হয়েছে? 
গিরিজা। তাঁকে হত্যা কর! হয়েছে । 
ভিদিবেন্র। হত্যা! কি ভয়ানক কথা! 


গিরিজা। আপনি তাঁকে চিনতেন? 
ত্রিদিবেন্্র। পৃথিবীতে এত লোক থাকতে হঠাৎ আমার 
কাছে খোজ নিচ্ছেন কেন? 
গিরিজা। হয়ত' কোথাও কিছু তুল হয়েছে। 
নেপথ্যে দু'জন কথা কইছে । ঘরের ভেতর থেকে শোনা যাচ্ছে 
অনাথ। (নেপথ্যে) আমায় ভেতরে যেতে দিন। 
দরকারী কথা আছে। 
রতন। ( নেপথ্যে ) গুরা এখন ব্যস্ত | 
গিরিজা। কে গোলমাল করছে রতন? 
রতমলাল এলেন 
রতন। আজ্জে অনাথ বলছে আপনার সঙ্গে দেখা করতে 
চাঁয়। ভয়ানক দরকারী কথা। 
গিরিজা। আচ্ছা, তাকে পাঠিয়ে দাও। 
রতন চলে গেলেন ও অনাথ এলেন 
অনাথ। আপনি নিশিকান্তবাবুর খোঁজ করছিলেন? 
উনিই নিশিকান্তবাবু। 
ত্রিদ্দিবেশ্রেপ দিকে দেখালেন 
গিরিজা । তুমি ভুল করছ” । ইনি জমিদার ত্রিদিকেন্দ্- 
নারায়ণ নন্দী । 
অনাথ । জমিদার হতে পারেন, কিন্তু ইনিই নিশিবাবু। 
ব্রিদিবেন্ত্র। পাঁগল। 
ত্রিদিবেন্্র। পাগল হতে যাব কেন? আপনাকেই 
আমি সেদিন ওঘর থেকে বার হতে দেখে জিজ্জেস 
করেছিলুম-_“আপনি কে?” আপনি নিজের মুখেই বলে- 
ছিলেন_-“আমার নাম নিশিকান্ত মুখোপাধ্যায় । কাল 
আ'সব বলে ঘরট! একবার দেখতে এসেছিলুম।” 


চৈত্র--১৩৪৭ ] 


ত্রিদিবেন্র। কি যা-তা বলছ হে? 

অনাথ। আঁজকে নীচে আপনি যখন লিফটে উঠছেন; 
আমি বংশীর সঙ্গে গল্প করছিলুম । আপনাকে দেখে আমি 
নমস্কার করলুম । আপনিও মাথা নেড়ে লিফটে চড়ে ওপরে 
চলে এলেন। আমিও এঁদের খবর দিতে এলুম। সিঁড়ি 
দিয়ে ছেটে আঁসতে যতটুকু দেরী । 

ত্রিদিবেন্ত্র। মিথ্যা কথা । 

অনাথ। কি! আমি মিথ্যে কথা বলছি? এসব 
লুকোচুরি কিসের__ 

গিরিজা। অনাথ, চুপ কর। তা হলে স্বীকার করছেন 
যে আপনিই নিশিকান্ত নামে পাশের ঘরটা ভাড়া নিয়েছিলেন? 

ত্রিদিবেন্্র । হ্যা । ( অনাথকে দেখিয়ে ) ওর সামনে 
ছড়া কথ! কি চলতে পারে না? 

গিরিজা। নিশ্চয়ই পারে। অনাথ, তুমি বাইরে 
গিয়ে অপেক্ষা! কর। দরকার হ'লে ডেকে পাঠাব। 

অনাথ চলে গেলেন 

আপনি নাঁম ভাঁড়িয়ে এই ঘরট! ভাড়া নিয়েছিলেন কেন? 

ত্রিদিবেন্্। আমার দরকার ছিল। 

গিরিজা। কি দরকাঁর জানতে পারি কি? 

ত্রিদিবেন্দ্র । মাহুষের প্রাইভেট জীবন নিয়ে টানাটানি 
করা উচিত নয়। 

গিরিজা। আমিও করতুম না, যদি না আপনার চালচলন 
এত মিস্টীরিয়াস হ'ত । 

ত্রিদিবেন্ত্র। আমার পাওনাদার অনেক, অথচ সমস্ত 
টাক! ব্যবসায় আটকে রয়েছে । তাই কিছুদিন গা ঢাকা 
দিয়ে থাকবার মতলবে এই ফ্ল্যাটটা ভাড়া করেছিলুম। 

গিরিজা। যদ্দি তাই আপনার মতলব ছিলঃ তবে এমন 
ঘর নিলেন কেন--যার পাশের ঘরে পরিচিত লোক থাকেন । 

ত্রিদিবেন্্র। এখানে আমার পরিচিত লোক কোথায়? 

গিরিজা। কেন? কুমাঁরবাহাদুর-_ 

ত্রিদিবেন্্র। ( উত্তেজিত হয়ে) আমি বারবার ব্লছিঃ 
তাকে চিনি না তবুও আপনি একই কথা বলে যাচ্ছেন। 
আপনি কি বলতে চান যে আমি মিথ্যা কথা কই? 

গিরিজ!। সব সময় ক'ন কি-না জানি না, তবে এখন 
যে বলছেন সে বিষয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই। অপরি- 
চিত লোককে কেউ বাড়ীতে খাবার নিমন্ত্রণ করে না। 


শ্রতেক্তিকা। 


55৫ 


'জ্রিদিবেন্ত্র । তাঁর মানে? 

গিরিজা। আপনি কুমারবাহাছুরকে ২২শে মে ডিনারে 
নিমন্ত্রণ করেছিলেন । 

ত্রিদিবেন্ত্র । একেবারে বাজে কথা । 

গিরিজা। প্রমাণ আমাদের কাছেই আছে। কাত্তিক 
চিঠিটা পড় তো। 

কান্তিক। (চিঠি বার করে পাঠ) «-_নং চৌরক্ী 
টেরেস, থার্ড মে। বড়ই দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে ২২শে মে 
রাত্রি আটটার সময় আমার বাড়ী আপনার ডিনারের যে 
নিমন্ত্রণ ছিল তাহা ক্যাঁনসেল করা! হ'ল ।” 

গিরিজা। চিঠির কাগজও আপনার। ওপরে মনো- 
গ্রাম করা রয়েছে। 

ত্রিদিবেন্্র। ( দেখে ভীত হয়ে) এ কি রকম ক'রে 
হণ। আমি এ চিঠি ডিক্টেট করেছি তিন তারিখে, আর 
আঁজ আঠারোই । এতদিন কোথায় ছিল? 

গিরিজা। আজ কুমারবাহাদুরের নামে সকালের 
ডাঁকের অন্য সব চিঠি-পত্তরের সঙ্গে এটাও ছিল। তা হ'লে 
আপনি তাকে চিনতেন ? 

ত্রিদিবেন্দ্র । (চমকে ) না। 

গিরিজা। কিন্তু এখুনি যে নিজের মুখেই স্বীকার 
করলেন যে আপনি তাঁকে চিঠি লিখে বারণ করেছিলেন। 
নিমন্ত্রণও আপনিই করেছিলেন, স্থৃতরাং পরিচয়ও ছিল। 

ত্রিদিবেন্্র। এখন দেখছি অস্বীকার করা বৃথা । আমি 
তাকে চিনতুম বটে, কিন্তু ছুঃ চক্ষে দেখতে পারতুম না । অথচ 
তিনি গায়ে পড়ে আমার সঙ্গে মিশতেন। সেধিনকার 
নিমন্ত্রণটা তিনি অনেকটা জোর ক'রে আদায় করেছিলেন 
বলা যায়। পাঁচজনের সামনে বলতে আর আপত্তি করিনি । 
বাড়ী গিয়েই তাই চিঠি লিখে নিমন্ত্রণ ক্যানসেল করেছিলুম। 
আমার সেক্রেটারী চিঠিটা কোথায় ফেলে__ 

গিরিজা। বুঝেছি । সেইজন্য আপনি তার সঙ 
আলাপ ছিল সেটা অস্বীকার করছিলেন । 

ত্রিদিবেন্ত্র। হ্যা। আমি যখন এইখানে ঘর ভাড়। 
নিই তখন জানতুম না যে উনি পাশের ঘরে থাকেন। 

গিরিজা। সেক্রেটারীকে চিঠি ডিক্টেট করবার পর 
কুমারবাহাদুরের ঠিকানাটাও নিশ্চয়ই বলে দিয়েছিলেন? 

ত্রিদিবেন্্র। তা বলেছিনুম বই কি? 


৪০৪৩৬ 


গিরিজা। তবু আঁপনি বলতে চান যে কুমারবাহাছুর 


এখানে থাকেন জাঁনতেন না? 
ক্িদিবেন্ত্র। (ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে) আপনার এভাবে 
প্রশ্ন করার ভঙ্গী আমি পছন্দ করি না। 
গিরিজা। তজ্জন্ত আমি দুঃখিত। আপনি সাধারণত 
রাত্রি ছাড়া এখানে আসতেন না । 
ত্রিদিবেন্্র। না। 
গিরিজা । শেষ কবে এসেছিলেন? 
ত্রিদিবেন্্র। দু-তিন রাত্রি আগে। 
গিরিজা। কাল রাত্রে তবে এখানে আসেন নি? 
ত্রিদিবেন্্র। না। 
গিরিজা। আপনার জুতোর তলা রবাঁরের দেখছি। 
ত্রিদিবেন্্র। হ্যা। কেন? 
গিরিজা। বেশ স্টাইল। 
টা একটু উচু করবেন? 
ত্রিদিবেদ্র | কি আবোল-তাঁবোল বকছেন। নিন? দেখুন। 
অনিচ্ছাসত্বেও পা উ'চু করলেন। গিরিঞ্জা ঝু'কে পড়ে দেখলেন 
গিরিজ। । ধন্যবাঁদ। ১২২ মার্কা। ঠিক অবিকল 
এই জুতোর ছাঁপ এ ঘরে কার্পেটের ওপর আছে। ঘরের 
কাঁজ রোজ সকাল-সন্ধ্যা করা হয়। স্থতরাঁং এ দাগ কাল 
সন্ধ্যার পরের। 
ত্রিদিবেন্্র। আমার ঘরে যদি আমি এসেই থাকি-_ 
গিরিজা । (উঠে একটা চেয়ার সরিয়ে) এই দাঁগের 
সঙ্গেও মিলে যাচ্ছে। আপনি এ ঘরেও এসেছিলেন। 
ব্রিদিবেন্্র। ( একটু ভেবে ) শরীরটা খারাপ লাগতে 
ভাবলুম একটু ব্র্যাণ্ডি খাই । মাঝের দরজায় খটখট করতে 


কাদের তৈরি দেখি । পা" 


এ ঘরের ভদ্রলোক নিজের দিকের ছিট্কিনি খুলে দিলেন। 


আমার দিকেরট! খুলে দরজা খুলতেই-__ 

গিরিজা | কুমারবাহাছুরকে দেখে অবাক হয়ে গেলেন! 

ক্রিদিবেন্্র | নিশ্চয়ই | তাঁকে দেখব আশা! তা করি নি-_ 

গিরিজা। একটু অপ্রস্ততও নিশ্চয়ই হলেন। নিমন্ত্রণ 
ক্যানসেল ক'রে আবার তারই কাছে__ 

ত্রিদিবেন্্র। বিলক্ষণ অপ্রস্ততে পড়লুম। 

গিরিজা। কিন্তু দরজা খোলবার আগে তো আপনি 
জানতেন না যে কুমারবাহাছুর এবরে-- 

ত্রিদিবেন্্র। সে তো বটেই। জানলে কি আর তাঁকে-_ 


ভান্রভনশ্ব 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় থণ্ড--৪র্থ সংখ্যা 


গিরিজা | অথচ ঠিকানাটা আপনি নিজেই সেক্রেটারীকে 
ডিক্টেট করেছিলেন-_ 

ত্রিদিবেন্্র। (মুস্কিলে পড়ে) আপনি লোঁককে ঠিক- 
ভাবে গুছিয়ে কথা বলতে দেন না। 

গিরিজা। না। ভেবে চিন্তে মিথ্যা কথা গুছিয়ে বলতে 
দিই না। আপনি কাল এঘরে রাত্রে এসেছিলেন। ব্র্যাপ্ডি 
অথবা অন্ত কোন কারণে-__ 

ত্রিদিবেন্ত্র। ব্রযাগ্ডির জন্া। 

গিরিজা। আপনি এই হত্যা সম্বন্ধে কি জানেন? 

ত্রিদিবেন্্র। কিচ্ছু না। 

গিরিজা । আপনার জুতোয় “টো”য়ের কাঁছটাঁয় সামান্ত 
একটু রক্ত লেগে রয়েছে । 

তিদিবেন্্র। ( দেখে ভীতভাবে ) তাই তো! 

গিরিজা। এইবার বলবেন? 

ব্রিদিবেন্্র। আমার কিছু বলার নেই। 

গিরিজা। (পকেট থেকে কার্টিজ কেপ বার করে) 
এটা আপনার ঘরে কি ক'রে গিছল বোঝাতে পারেন? 

ত্রিদিবেন্্র | (নারাস হয়ে ) আমার ঘরে পেয়েছিলেন? 

গিরিজা। হ্যা। 

ব্রিদিবেন্ত্র। এতক্ষণ একথা বললেই পাঁরতেন। অস্বীকার 
করবার চেষ্টা করতুম না । 

গিরিজা। আপনি তবে এই হত্যা সম্বন্ধে কিছু জানেন? 

ত্রিদিবেজ্্র। আমার দ্বারাই তিনি হ'ত হয়েছেন। তবে 


ইচ্ছারুত নয়, হঠাৎ । 
গিরিজা। হত্যা! করেছেন! স্বীকারোক্তি দেবেন? 
ত্রিদিবেন্ত্র | হ্থ্যা দেব। 


গিরিজা। আপনি স্বেচ্ছায় স্বীকার করছেন, আমর! 
বাধ্য করিনি। আর দরকার হ'লে আপনার বিরুদ্ধে 
ত্বীকারোক্তি ব্যবহার করতে পারি। 

ত্রিদিবেন্্র। জানি, তবুও যা বলবার বলব। 

গিরিজা। কাঞঙ্ঠিক, এঁর বক্তব্য আলাদা কাগজে 
লিখে নাও। 

অ্রিদ্দিবেজ্র বলতে ও কার্তিক লিখতে লাগলেন 

ত্িদিবেন্্। আমার ভাইঝি বাঁসম্তী একটু বেশী মাত্রায় 
মডার্ন হয়ে পড়েছিল । আমি দেশে জমিদারী দেখাশুন। 
কর্‌তুম । দাদা রেলে একট! বড় চাকরি করতেন। বেশীর 


চৈত্র--১৩৪৭ ] 


ভাগ সময়ই ট্যুরে থাকতেন। বাসন্তী এলাহাবাঁদে হোস্টেলে 
থেকে পড়ত। সেইথানেই কুমারবাহাঁছুরের সঙ্গে তাঁর 
আলাপ হয়। হঠাৎ একদিন দাঁদার চিঠিতে জানলুম যে 
কুমারবাহাদুর বাসস্তীকে নিয়ে কোথায় সরে পড়েছে। দাদা 
সেই শোকে মারা গেলেন। আঁমি প্রতিশোধ নেবাঁর 
সুযোগ খুঁজতে লাঁগলুম । সন্ধান নিয়ে জানলুম সে 
কলকাতার হোটেল “ক্যাসিনো”তে উঠেছে । আমিও 
অনুসরণ করলুম। প্রথমে বাঁড়াতে নিমন্ত্রণ ক'রে 
খাবারে বিষ মিশিয়ে দেব মনে করেছিলুম । পরে ভেবে 
দেখলুম তাতে জানাজানি হবার সম্তাবনা। তাই 
নিমন্ত্রণ বাতিল ক'রে দিপুম। তাঁরপর নিশিকান্ত 
নামে তাঁর পাশের ঘর ভাড়া নিলুম। দিনে আসতুম 
না, পাছে দেখে ফেলে । মধ্যে মধ্যে রাত্রে এসে 
স্থবোগ সন্ধান করতুন । কাল ওর দরজায় ধাক্কা দিতে দেখি 
খোঁলা। তখন রাঁত সাঁড়ে বারোটা ইবে। মাঝের দরজার 
ছিটকিনি খুলে রেখে নিঃশব্দে রিভলবার হাতে ওর ঘরে 
ঢুকলুম। গিয়েই এদিককাঁর মাৰের দরজার ছিটকিনিটা 
খুলে দিলুম। সে চেয়ারে বদে নেশায় ঢুলছিল। শব্ধ 
শুনে আমার দিকে ফিরে চাইলে । রিভলবার দেখে নেশার 
ঘোর ছুটে গেল, ভীতভাবে আমায় জিজ্ঞেন করল-_-“আপনি 
কে?” আমি বললুম_“আঁমি বাঁসস্তীর কাকা। সে 
কোথায় ?” সে উত্তর দিনে-“জাঁনি না। অনেক দিন 
আমাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে।” আমি বললুম__ 
“আমাদের অপমানের আজ গ্রতিশে।ধ নেব। তোমায় খুন 
করব” সে ভয়ে আমার পায়ের কাছে বসে পড়ল। 
আমি একটু অন্তমনস্ক হয়ে গিছলুম, হঠাৎ সে লাফিয়ে 
উঠে আমার হাঁতে সজোরে থুঁষি মারলে । রিভলভারটা 
ছটকে বেরিয়ে গেল। সে তাঁড়াতাঁড়ি টেবিলের দেরাজ 
থেকে রিভলভার বার ক'রে আমার দিকে লক্ষ্য করলে। 
প্রাণের ভয়ে আমি তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লুম। ঝুটো- 
পুটিতে টেব্ল ল্যাম্পটা পড়ে ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল। 
সেই সময় হঠাৎ তার হাতের রিভলভাঁরটা আপনিই ছু'ড়ে 
গেল। আমার হাতের মধ্যে সে নেতিয়ে পড়ল। আমার 
ঘর থেকে একটু একটু আলো আসছিল। দেখলুম গুলি 
তাঁর মাঁথায় প্রবেশ করায় সে মরে গ্েছে। তাড়াতাড়ি 
তাকে রেখে দিয়ে নিজের ঘরে এসে মাঝের দরজাটা বন্ধ করে 


শ্রহেকিনকা। 


22% 


দিলুম। তারপর একটু দম নিয়ে নিঃশব্দে হোটেল থেকে 
সরে পড়লুম। 

গিরিজা। তাহলে আর একটা রিভলভার থাকবার 
কথা। এ ঘরটা তো তন্ন তন্ন ক'রে খুঁজেছি, কিন্ত-_ 

ত্রিদিবেন্্র। হয় তো! আমার ঘরে আছে। টেবিলের 
তলায় কিংবা__ | 

কার্তিক দরজ! খুলে পাশের ঘরে গেলেন। একটা! রিভলভার হাতে 
বেরিয়ে এলেন। মাঝে দরজাট। আবার বদ্ধ ক'রে দিলেন 

কান্তিক। এই যে আর একটা রিভলভার ওঘরের 
টেবিলের তল1 থেকে পাওয়া গেছে। 

ত্রিদিবেন্্র । এটাই আমার | বাটে নাম লেখা আছে । 

কাহিক। (দেখে) তা আছে বটে। 

গিরিজা। কুমারবাহাছুরের পকেট থেকে একতাড়া 
নোট পড়ে যেতে দেখেছিলেন কি? 

ত্রিদিবেন্ত্র। নাঃ তা লক্ষ্য করিনি । 

গিরিজা। (ফোনে) হাঁলো_দামোদরবাঁবুকে ডেকে 
দিন। (ত্রিদিবেন্দ্রের প্রতি ) আপনাকে এখন কিছুক্ষণ 
এইথানে থাকতে হবে। (ফোনে) কে? দামোদরবাবু? 
যা) শুমুন--আর কোন ঘর খালি আছে? দোতালায় ১৩ 
নম্বর_ একটু ব্যবহার করতে পারি? আচ্ছা, ধন্যবাদ । 
( ফোন রেখে) কাণ্তিক, রতনকে একবার ডাঁক”। 

কার্তিক চলে গেলেন 

ত্রিদিবেন্ত্। আমার এ গার্দভ সেক্রেটারীর জচ্ই ধর! 
পড়ে গেলুম। সে বদিঠিক সময় চিঠি পাঠাতো» তা হ'লে 
এতদিনে কুমারবাহাছুর চিঠি পড়ে ছি*ড়ে ফেলে দিত। 

গিরিজা। আমাদেরও বিলক্ষণ অসুবিধা হত। 


কাণ্তিক ও রতন এলেন 


রতন, তুমি একে সঙ্গে করে দোতলার ১৩ নম্বর ঘরে বসিয়ে 
রেখে এস। দরজায় একটা পুলিশ মোতায়েন ক'রে দিও । 
ত্রিদিবেন্্বাবুং আপনি এর সঙ্গে যাঁন। 

রতন। আপনার সঙ্গে একটা কথ! ছিল, স্যর । 

গিরিজা। গুকে আগে পৌছে এস। 

ভ্রিদ্বেজর ও রতন চলে গেলেন 
আচ্ছা! মুস্কিলে পড়া গেল । ইনিও তো স্বীকার করে বসলেন। 
টেলিফোনের ঘণ্টি বাল । কাস্ডিক ধারের 


৪5৮ 


বলছি। আমি কান্তিক। আপিস থেকে- আচ্ছা । গুলি 
ব্রেণ ভেদ ক'রে গেছে?-_তক্ষুণি মারা গেছেন।--রিভলভার 
পরীক্ষা করা হয়েছে? গুলিটা এ রিভলভার থেকেই ছোড়া 
-স্ট্যা। সাইলেন্সার ফিট করা ছিল-_ঠিক হয়েছে, তাই 
কেউ শব শোনে নি। ওঃ, এখানকার লাইসেন্স নয়। নাম 
ধাম পরে পাওয়া যাবে। নোট আর আ্যাশট্রের আঙ্গুলের ছাপ 
এক নয় ?- রেকর্ডের সঙ্গে মিলিয়ে দেখে বলবেন _আচ্ছা। 
ফোন রেখে দিলেন 
সব শুনলেন তো? 
গিরিজা। বংশীকে তবে বাদ দেওয়া যেতে পারে । 
একটু আগে আমরা তো ওকেই দোষী মনে করেছিলুম । 


রতন এলেন 


এই যে রতন, কি বলবে বলছিলে না? 

রতন। আজ্ঞে, কিছুক্ষণ আগে যে টেলিফোন ক্লার্ক 
রাত্রে ডিউটিতে থাকে তার সঙ্গে কথা হচ্ছিল। সে বললে 
__কাল রাতে কুমারবাহাছুর লাইন চেয়েছিলেন । 

গিরিজ1। তিনিই যে চেয়েছিলেন তা সেকি করে বুঝলে? 

রতন। ঘরের নম্বরে আর গলার আওয়াজে । তিনি 
প্রায়ই টেলিফোন ব্যবহার করতেন। তাই তাঁর গলার 
আওয়াজ তারা চিনত। কিন্তু আশ্চর্য্য এই যে, লাইন চেয়ে 
তিনি রিসিভার রেখে দিয়েছিলেন । 

কান্তিক। কণ্টার সময়? 

কার্তিক নোট বই দেখতে লাগলেন 
রতন। রাত ছু'টো। 
কাঙিক। কি ক'রেজানলে? 


রংন। খাতায় ওরা লোকের নাম আর সময় 
টুকে রাখে। 
গিরিজ!। আচ্ছা, তুমি যেতে পার। বাইরেই থেক। 


রতন চলে গেলেন 
কার্ঠিক। কি রকম বুঝছেন স্যর ? 
গিরিজা । আর কিছুক্ষণ এরকম চললে পাগল হয়ে যাঁব। 
কার্ডিক। হোটেলের লোকেরা মিথ্যে কথা বলছে। 
একজনের সঙ্গে আর একজনের কথা মিলছে না । এই ধরুন; 
বংশী আর গণেশবাবুর কথ! । 


ভারতবর্ষ 
রার্রিত। 2177; তো ক্0াতিদো” ঠেকে 


! ২৮শ বর্য-ত্র ধও--৪ সংখা 


/ঠিরিত/ 77 £দরে একে 8 কারি । 
রতন! 
বুতন এলেন 
বংশী আর গণেশবাবুকে এক্ষুণি আসতে বল। 
রতন চলে গেলেন 
কার্তিক। (নোট বই দেখে) সাড়ে বারোটার সময় 
টেবল্‌ ল্যাম্প ভেঙ্গে চুরমাঁর হয়ে গেল; অথচ একটার সময় 
বনমালীবাবু এসে ল্যাম্পকে জলন্ত অবস্থায় সুস্থ শরীরে 
দেখতে পেলেন-__ 
গিরিজা। কিছুই বুঝতে পারছি ন। 
কার্তিক। কুমারবাহাছবর কিন্তু বেশ রসিক লোক। 
একবার সাড়ে বাঁরোটাঁয় মরলেন, আবার দেড়টার সময় 
ঝুটোপুটি করে মরলেন। তারপর ছু+টোর সময় টেলিফোন 
করতে গেলেন এবং তাতেও মত বদলালেন। কিছুতেই 
আর মনস্থির করতে পারলেন না। তার ওপর আবার 
বনমালীবাবুর পকেট থেকে কুমারবাহাঁদুরের রক্তমাঁথা রুমাল 
আর ব্রিদিবেন্্বাবুর জুতা রক্ত--আর ঘর থেকে খালি 
কাটিজ কেস পাওয়া গেল। 
গিরিজা। এদেখছি সব ভূতুড়ে কাণ্ড। 
দরজায় থটগ/্ ধ্বনি 


কে। কাণ্তিক দেখ ত। 

কান্তিক। (দরজা খুলে দেখে) আসুন গণেশবাবুঃ 
ভেতরে আসম্মন । 
গণেশ এলেন 


গণেশ । আবার হাঁমিকে কি জন্য বুলায়েছেন? 

গিরিজা। কাল রাত্রে লিফট কাজ করছিল না বলে 
আপনি সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠেছিলেন__না? 

গণেশ। এ কথা তো আগেই বলেছে। 

গিরিজা। কিন্তু লিফটম্যান বলছে লিফট কাজ 
করছিল। তারপর আপনি ওপরে এসে দেখলেন লিফট. 
খালি_ কেমন ? 

গণেশ । হাঃ তাতে কোন আদমী ছিলে না। 

গিরিজা। কিন্ত সে বলছে যে লিফটু ছেড়ে সে 
একদও্ড কোথাও যায়নি । 

গণেশ। তার হামি কি করতে পায়ে? 


ভারতবধ প্রিষ্টিং ওয়াকম্‌ 


শিল্পী--প্রীযুক্ত বৃসিংহপ্রসাদ রায় 





চৈজ--১৩৪৭ ] 


১ 








গস 


গিরিজা। কোন্টা সত্যি? 


ওহেল্লিক্কী 
সবের কিছুর মধ্যে নেই। ( একটু থেমে) আমি হুজুর কাল 





55৯২ 


সহ বস” স্ব বা” - আহ খল ক” খা সহ 





গণেশ। হামি জানে না। লেকিন মিথ্যে কথা লিফটে ছিলুম না। 


বোঁলবাঁর জন্য ঝুটমুট এতন! সিঁড়ি উঠিবার হামি হাঁসি 
দেখে না। 
গিরিজা। লিফ টম্যানও এখুনি এল” বলে। 


গণেশ । হাঁমাকে আগে বুলালেন কেন? কত কাজের 
লুকসান-_ 
রতন এলেন 

রতন। বংধী এসেছে । 


গিরিজ!। পাঠিয়ে দাও । 
রতন চলে গেলেন ও বংশী এলেন 
বশী, কাল গণেশবাবুকে লিফটে ওপরে এনেছিলে ? 
বা । আজে হ্যা । 
গিরিজা । উনি কিন্ত তা মন্বীকাঁর করছেন। 
বংশী চুপ করে রইল 
তোমার কি বলবার আছে বল। 
তবুও চুপ করে রইল 
এই ফ্ল্যাটে একটা খুন হয়েছে। মিথ্যে কথা বললে বিপদে 
পড়তে হবে। 


বংশী। আমার হয়ত” ভুল হয়েছে । উনি যদি রাত্রে 
বাড়ী না ফিরে থাকেন_- 
গণেশ । হুঁ । এইবার হামি রাত্রে বাড়ী ফেরে না 


বলছে। সব ঝুট আছে-_ 

গিরিজা। তুমি সব সময়েই লিফটে ছিলে? 

বংশী। আজ্ঞে হ্টা। একদওও লিফট ছেড়ে যাইনি। 

গিরিজা। গণেশবাঁবু, আপনি কি বলছেন? 

গণেশ । হামি বলছে, কাপ রাত্রে অনেকবার ঘরটি 
বাজিয়ে লিফট নামলে না! দেখে সিড়ি দিয়ে হেঁটে 
ওপরে এসেছে । এসে দেখছে যে লিফটে কোন আদমী 
নেই। 

গিরিজা। বংশী, সত্যি বল। হত্যা সম্বন্ধে কি জান? 

বংশী। (ভীতভাবে ) আজে, কিছু না। আমি এ 


ক উর ১৫ 






এও ব 8.৭ 


রর 
17 ৫গ7৮৮-0 

9০:/২৯1 ৪ 
288 স্টু 


৯, 
গী 187 ১ শি সীমা হর 


গিরিজা। তুমি ছিলে না! তবে কে ছিল? 

বশী। অনাথ। 

গিরিজা। অনাথ কাল ছুটিতে ছিল না? 

বশী। শেষ মুহূর্তে আমাকে বলে আবার কাজে 
লেগেছিল। বলেছে শনিবারে ছুটি নেবে। অবশ্য কর্তা 
জানেন না। 

গণেশ। যো কোই ছিল হামি হেঁটে সিঁড়ি উঠেছে। 
এবার হামি যাচ্ছে। হামার অনেক কাঁজ পড়ে আছে-_ 

গিরিজা। আপনি এবার যেতে পারেন । ধন্যবাদ । 

গণেশ চলে গেলেন 


কান্তিক। ( নোট বইয়ে কাটাকুটি করে) এতক্ষণ এ 
কথা বল”নি কেন। 

বংশী। চাঁকরির ভয়ে। 

গিরিজা। যত সব মিথ্যা বলে সব পও্ডঅম ক'রে দ্িলে:। 
যাও এখান থেকে । অনাঁথকে পাঠিয়ে দাও । 

বংশী। সে নিজের বাসায় গেছে__ 

গিরিজা। যেখান থেকে হোক তাঁকে ধরে আন। 
তোমার জন্যই যা-কিছু গগুগোলের সৃষ্টি হয়েছে । যাও 

বংশী চলে গেলেন 
কান্তিক। সব বুঝি ভেস্তে যায়। 
গিরিজা। আমার মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছে। 


কার্তিক । এই সময় আর এক কাপ চ1 খেলে ধাতস্থ 
হওয়া যেতে পারে। 
গিরিজা। হু । রতন! 
রতন এলেন 
নীচে থেকে এখুনি আসছি । দরজা থেকে নড়ে না। 
রতন। আজ্জে হ্যা। 
কান্তিক। ঘরে চাঁবিও দিয়ে যেতে হবে। 
গিরিজা । নিশ্চয়ই । 
সকলে চলে গেলেন 
ক্রমশঃ 
০ ৬২ ১ ৩ 






৫ ১৯৬ 


বনবাস 
শ্রীবিজয়রত্ব মজুমদার 


দিনকতক বাহিরে যাইবার দরকার হইয়া পড়িয়াছিল। 
পরীক্ষার খাঁতাগুলাঁও দেখা হইবে, শরীরটাকে কতকটা 
চাঁজ! করিয়! লওয়! হইবে। স্থান নির্বাচন করাই মুস্কিল। 
যেখানেই অজ্ঞাতবাস করি না, “স্যার, আমার নম্বরটা 
স্তারের” দল সেখানেই হানা দেয়। জগদীশ্বর সর্বজ্ঞ ও 
সর্বত্র বিরাজমান কি-ন! সে বিষয়ে মতদ্বৈধ থাকিতে পারে, 
কিন্তু ইহারা অমনিপ্রেজেন্ট ইহা সর্ববাদীসম্মত সত্য। 
এক সহকন্্ী কহিলেন, তীহাঁর স্বর্গীয় শ্বশ্তর মহাশয় 
এককালে রহমতপুরে একখানি স্থন্দর বাঁলো নির্শীণ 
করিয়াছিলেন, ছুঃএকবার গিয়াছিলেনও, শেষকালে রামঃ 
করিয়া ত্যাগ করিয়াছিলেন । বাঁওলোখাঁনি পড়িয়া আছে। 
জলবাঁযু উত্তম, স্থানও নির্জন । ছু'তিন ক্লোশের মধ্যে বসতি 
নাই, মানুষের মুখও দেখা যাঁয় না, গরু বাঁছুরও বিরল । ষ্টেশন 
হইতে তিন মাইল মাঠের মধ্য দিয়া পথ। মাইল চারেক দূরে 
একটি গ্রামে সপ্তাহে একদিন ছাট বসে, খাগ্ভদ্রব্যাদি সেই 
হাটে সংগ্রহ না করিলে একা দশীর ব্যবস্থা প্রশস্ত । আমি এই 
রকম স্থানেরই সন্ধান করিতেছিলাম। বাঁচা গেল-_বলিয়া 
যাত্রা করিলাম। ছোট ষ্টেশন, ফ্ল্যাগ ঠ্রেশন বলিয়াই মনে 
হইল। স্লো প্যাসেঞ্জার ছাড়া অন্ঠ গাড়ী থামে না; ষ্টেশনে 
মাষ্টার, পোর্টার, ঘন্টি-মারো সিগন্সালম্যান যা-কিছু সব 
একজন । তিন মাইল হাটিয়! বাঁলোম্ন আসিয়া! উঠিশাম । 
স্থানটি বিহারের অন্তর্গত হইলেও মা্চমাসের শেষেও খুব 


গরম নয়। হা, নির্জন যাকে বলে -এতথানি পথ আসা গেলঃ 


একটি জনমানবের মু্ধি দেখিলাম না। 

সেদিন হাঁটবার, চাঁকরের! হল্লা করিয়া হাট করিতে 
গেল, বাসায় একলাই রহিলাম। বনবাঁস বলা যাঁয় না, 
কেননা বন বড় নাই, তবে প্রাস্তর-বাঁস নিঃসন্দেহে বলা চলে। 
বাঙলোর বামদিকে রশি পাঁচেক দূরে একটি মসজেদ, তাহার 
নীচে একটি পুকুর; আর সাঁমনে খানিকটা তফাতে একটি 
গু মন্দির। অতীতকাঁলেও বৌধ করি হিন্দু মুসলমানের 
মমন্তাটা একদিন জটিল হইয়! উঠিয়াছিল এবং সামঞ্জস্ত- 
বিধান জন্য উভয় পক্ষকেই এ ভাবে শান্ত করা হইয়া 


থাকিবে । মসজেদের পুকুরট! ছোট কিন্তু পরিফার, জল 
যেন কাঁচ, তর তর করিতেছে । বসিয়! বসিয়া! সেইটাই 
দেখিতাম। আর কি দেখি ছাই? কোনদিকে 
যে কিছু নাই! 

মসজেদটায় মাঝে মাঝে অনেক লোঁকসমাগম হইত। 
কোথা হইতে আসে কে-জানে। আজান গুনিবামাত্র পিল 
পিল্‌ করিয়া লোক আসিত। পুকুরে নামিয়া হাত পা ধুইত; 
মসজেদের বারাওীয় দাঁড়াইয়া ও বসিয়া উপাসনা করিত। 

আমি আশ্চর্য্য হইয়া ভাবি, এত বড় দিগন্তব্যাপী 
প্রাস্তরটা__-একটাও গাছ নাই কেন? এ অঞ্চলে মহুয়া 
গাছ ত প্রসিদ্ধ, তাহাঁও যদি একটা থাঁকিত তবে খানিকটা 
সবুজও চোখে পড়িত, তাও নাঁ। ঘাস, তাও নয়। যদি 
বা কোনখানে খানিকটা ঘাঁস দেখা যায়, সেগুলার রূপ ও 
রঙ এমনই যে ঘাঁস মনে না হইয়া কীকরই মনে হয়। 
অজ্জাতবাসের পক্ষে উত্তম স্থান সন্দেহ নাই। তবে মনে 
হইতেছে এতখানি উত্তম না হইয়া কিঞিৎ অধম হইলেই 
ভাল হইত। 

মাঠে মাঠে সকাল বিকাল একটু ঘুরি-কিন্তু ভাল 
লাগে না। মাঠ হইলে ভাল লাগিত, দুদশটা গরু চরিতে 
দেখা যাইত, দু”্টা ডহর জনারের ক্ষেত্র দেখিতাঁম, কিন্তু এ 
যে তাও না। সহকল্মীর শ্বশুর মহাশয়কে ধন্যবাদ দিব 
কিছ্বা নিন্দা করিব, ভাবিয়া ঠিক করিতে পারিতেছি না। 
লক্ষণ যদি সীতাদেবীকে এই রকম স্থানে বনবাসে দিয়া 
যাইতেনঃ আমি শপথ করিয়া বলিতে পারি দেবী একটি 
দিনও বীচিতে পারিতেন না। লব কুশের হাতে বীণ, 
দিয়া রামায়ণ গান গাঁওয়াইবার সাধও-_না ফুটিতে ফুল 
ঝরিত মুকুল হইত না । আমাদের নাকি ছেলে-ঠেঙ্গান কড়া 
জান, তাই এই ধাপশ্ধাড়া প্রীন্তরবাসেও অক্ষু্ অথওড 
রহিয়। গেলাম। 

সেদিন দূরে বেড়াইতে ন! গিয়া, সেই মন্দিরটার দিকেই 
অগ্রসর হইলাম। সন্ধ্যা হয় নাই, তবে খুব বেশী দেরীও 
নাই; আলো আকাশ ছাড়িয়া যাঁয় নাই, যাইবার জন্য 


চৈত্র--১৩৪৭ ] 


প্রস্তুত বটে! বিদায়কালে লালসা-করুণ চোখে পৃথিবীটা 
দেখিয়া লইতেছে | ওদিকের মসজেদটায় নমাজ সুরু হইয়া 
গিয়াছে । মন্দিরটা খুবই কাছে, মাঠ পার হইয়া গেলে 
হয়ত তিন চার মিনিটও লাগে না, রাস্তা ঘুরিয়া গেলে 
অনেকটা পথ। মন্দিরের ভিতরটাঁয় অন্ধকার, সিঁড়ির নীচে 
ধাড়াইয়। বিগ্রহটি কি তাহাই ঠাঁহর করিবার চেষ্টা 
করিতেছি, শুকনো থেজুর গাছ সদৃশ একটি মেয়ে ঠাকুর 
প্রণাম করিয়া বাহির হইয়া আসিয়া বলিল-তুমি বামুন? 

প্রশ্নটা এত অকস্মাৎ আর অকম্মাৎ বলিয়৷ এত অভদ্র 
যে জবাবটা মুখে আসিয়াও আসিল না। 

আমাকে নিকুত্তর দেখিয়৷ সে বোধ করি বুঝিয়া লইল, 
আমি নিয়জাতীয় লোৌকই হইব; বলিল-_বামুন নয়) তবে 
আর কি হবে !_ তাহার কথাগুলা নৈরাশ্যব্যপ্ক | 

এবার কথা কহিলাম, জিজ্ঞাসা করিলাম, বাঁমুন হলে 
কি হত? 

মেয়েটি যেন রণচ্ডী। বঙ্কাঁর দিয়! বলিয়া উঠিল, কি 
আবার হবে! বাবার মাথায় ছু'টো ফুল ফেলে দিতে। 
সারাদিন বাবার মাথায় আজ জল পড়লো না। 

আমি যে দেখলুম, তুমি পূজো! করে প্রণাম করে উঠলে ! 

মেয়েটি উগ্রম্বরে বলিল, পূজো করলুম না আমার মু 
করলুম ! মাথা করলুম। আমি শুধু ফুল বিবিপত্তর আর 
নৈবিদ্িট নামিয়ে রেখে বললুম-_বাঁবা মহাদেখ আমাদের 
অপরাধ নিয়ে! না বাবা। আমি এই সব রেখে যাচ্ছি, 
তুমি আপনি চান করো, আপনি খাও । 

আমি বলিলাম, এ ত পুজো! হলো! । ওর নামই পুজো। 

মেয়েটা এইবারে হাসিয়া ফেলিয়া বলিল, দূর ! মন্তর না 
বললে বুঝি পূজো! হয়! তুমি আমারই নত মুখ্যু। বামুন 
হ'লে জানতে, মন্তর না পড়লে ঠাকুরদের পূজো হয় না। 

হয়ত তাহার কথাই ঠিক। বহুবিধ জটিল শব সমদ্থয়ে 
বহুল অং বং ব্যতিরেকে ঠাকুরদের হয়ত ক্ষুধাও হয় নাঃ 
আহারে রুচির উদ্রেকও হয় না-তাই আজও এমন মন্ত্র 
রচিত হয় নাই যাহাতে অং বং না আছে। দেবতারা 
দেবভাষ! ছাঁড়া অন্ত ভাষাও বোধ করি জানেন না, তাই 
বিবাহে শ্রান্ধে দেবভাঁষ! উচ্চীরণ করিতে যাহাঁদের কণ্ঠতালু 
আরবের মরুভূমি হইয়! যায়, তাহাদিগকে দিয়াও মটর কড়াই 
গম পিষাইয়া লইবার সনাতন ব্যবস্থা আজও অব্যাহত । 





নবান্ন 


৪৫ 


মেয়েটি কিছুক্ষণ শ্লানমুখে মন্দিরের বিগ্রহের দিকে চাহিয়া 
বলিল, আমি আর কি করবে! ঠাকুর, বাঁবা আসতে পারলে 
না; নিশ্চয়ই কাঁজে আটকে পড়েছে, তুমি ত জানতেই পারছ 
ঠাকুর, অপরাধ নিয়ো না। বলিয়া মন্দিরের দরজ। বন্ধ 
করিল) শিকলটা তুলিয়া দিয়া আমাকে বলিল, তুমি 
বুঝি এ বাড়ীটায় থাকো? রোজ এই দিকে তুমিই 
ই করে চেয়ে বসে থাকো না? 

কথাগুলা এমন রসকসহীন এবং বঙগার ভঙ্গিটাঁও এমন 
কদর্য্য যে ঠাস্‌ করিয়া চড় বসাইয়! দিতে ইচ্ছা করে। 

সে আবার বলিল, কি দেখো বল ত? 

রাঁগ ভুলিয়া, 'একটু রসিকতা করিলাম । বলিলাম, আর 
কি দেখবো, তোমাকেই দেখি ! 

মেয়েটা যে এমন কদধ্য অর্থ করিবে তাহা জানিলে ও 
পথেই ঘেঁসিতাঁম না! বলিল কি-না, ঘরে বুঝি তোদাঁর 
মা মেয়ে নেই! মর মিন্সে ! 

কিন্ত আমি যে অপদভিপ্রায়ে ই কথা বলি নাঁই সেই 
কথাটা তাঁহাকে বুঝাইয়৷ দিব, সে কিন্তু সে সময়টুকুও 
দিল না। গাঁয়ের আঁচলটা টানিয়া, চাবির গোছাটা 
ঝনাঁৎ করিয়া পিঠের উপর ফেলিয়া হন্‌ হন্‌ করিয়া 
চলিয়! গেল। 

আমি ডাকিলাঁম, শোন, শোন খুকী-_ 

মেয়েটা আরও জোরে জোরে চলিতে চলিতে বলিল, 
তোর মা খুকি তোর বোন্‌ খুকি, তোর সাতপুরুষ খুকী | 
_অনৃশ্ঠ হইয়। গেল । 

রাগিব কি, হাঁসি চাঁপিতে গিয়া বিষম খাইলাম । হা, 
পাঁড়াকুঁছুলী বটে! মাঃ বোন, মেয়ে ইহারা যে পুরুষ- 
জাতীয় জীব নয় এবং সাঁতপুরুষের তালিকায় তাহাদের 
স্থান থাকিতে পারে নাঃ কৌদলের সময় সেটুকু তারতম্য 
করিবার দরকারও দেখিল না। বংশের আগত বিগত ও 
অনাগত নারীমাত্রকেই এককথায় পুক্ষ বানাইয়া দিয়! 
কেমন হন্‌ হন্‌ করিয়া চলিয়! গেল। বাহাছুরী আছে বটে! 

পরদিন প্রাতঃভ্রমণ করিয়া আসিয়া! বাঁরান্নায় ইঞ্জি- 
চেয়ারে বসিলাম। চাকর পড়িবার বই, অভিধান, খাঁতা- 
পেন্সিল, চুরুট-দান রাখিয়া গেল। একটা চুরুট ধরাইয়। 
মন্দিরটার পানে চাহিয়া রহিলাম। চাহিয়া প্বাকাঁও মুস্কিল, 
কেবল হানি আসে। অন্রীর্ণ রোগীর পেটের ভিতরটা! গুলা ইয়া 





2, 


উঠিয়া গুড় গুড় করিয়া! উপরের দিকে কি-যেন উঠিতে চায়, 
আমার হাসিটাঁও তেমনই । যত মনে করি আর কত 
হাসিব, ততই হাসি আসে। আর আসিলে থামাইতে পারি 
না। বই খুলিলাম, কিন্তু পড়িব কি ছাই, হাসি আসে আর 
অন্তমনস্ক করিয়! দেয়। এমনই হাসিতে হাসিতে বইএর 
পাঁতা হইতে চোখ তুলিবামাত্র দেখি মন্দিরের সিঁড়িতে 
দাঁড়াইয়া সেই মেয়েটি ছুইটি বৃদ্ধানুষ্ঠ উত্তোলিত করিয়া 
আমাকে কদলী ভক্ষণের নির্দেশ দিতেছে । তা'ও একবার 
দুইবাঁর নয় বোধ করি মিনিট দুই তিনের মধ্যে সে আমাকে 
ঝুড়িখাঁনেক মর্তমান রস্তা ভোজন করাইল। ফলে যা হইল, 
তাহা ভীষণ। এতক্ষণ যে হাসিটা পেটের ভিতরে ও ছুণ্টি 
বন্ধ ওষ্ঠাধরে নিবন্ধ ছিল, তাহাই এক্ষণে সশবে উৎকট হইয়! 
বাহিরিয়া পড়িল। আমি যত হাঁসি, সে তত কলা আগাইয়! 
দেয়। হাসির শব্দটা ষে এত জোর হইয়াছিল, তাহা বুঝি 
নাই। ঠাকুর, চাকর, মাঁয় দরোয়ান আসিয়! উকি দিতেছে 
দেখিয়! সামলাইবার চেষ্টা করিতে লাগিলাম ; কিন্তু “তা সে 
হবে কেন” ! কলার কীর্দি তখনও অকৃপণ করে ও অকাতরে 
বিতরিত হইতেছে । আমি মুখে রুমাল গুঁজিয়া ইজি- 
চেয়ারটায় শুইয়া পড়িলাম। মেয়েটার কলার কাদি বোধ 
হয় নিঃশেষ হইয়াছিল। করিল কি জানেন? একবার 
দাত খিচাইয়!, দীর্ঘ জিব বাহির করিয়া আবার দাত 
িঁচাইয়া, ছুপ. দুপ. করিয়া! মন্দিরে ঢুকিয়! গেল। 

ঘড়িতে দেখিলাম, ১২টা! বাজে । ন্লানাহার করিতে হয়। 
কিন্ত অতগুলি কলার জন্ত কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করিতে না 
পারিলে স্থুস্থির হওয়াও যায় না। চাঁকরকে ডাকিয়া 
বলিলাম, ন্লানের জল ঠিক কর, আমি আসছি। 

মন্দিরের সিঁড়িতে পদশব শুনিয়। মেয়েটি এদিকে চাহিয়া 
আমাকে দেখিবামাত্র-ও বাবা, দেখো না-_-বলিয়াই হড় মড় 
করিয়া দরজাট। বন্ধ করিয়া দিল। আমি যে মা কালীর লক্‌ 
লকে জিহ্বাথানি কাঁটিতেই আসিয়াছি বুদ্ধিমতী তাহা! ঠিক 
ধরিয়! ফেলিয়াছিল। 

কিন্তু আমার যে ভাব না করিলেই নয়। কয়েক মিনিট 
দাড়াইয়া থাকিয়াও যখন দরজা! খুলিল না, তখন যেন চলিয়া 
যাইতেছি এই ভাবেশব করিয়! বা দিকে সরিয়া গেলাম। 
মেয়েটাও বুঝিল আমি চলিয়া! গিয়াছি, তবে সে নাকি 
'অনেকগুল! অপরাধ করিয়| বসিয়াছেঃ একেবারে নিঃসন্দেহ 


জ্ঞান্সন্ন্বশ্র 


[ ২৮শ বর্-_-২য় খণ্ড--৪র্থ সংখ্যা 


হইতে পারিল না। দরজাটা একটুখানি খুলিয়া) মুখ 
বাড়াইয়া উকি মারিয়াই--ওগেো বাবা গো-_-বলিয়া ঝপাঁং 
করিয়৷ দরজা বন্ধ করিয়া দিল। এবার খিল আটিবার শবটুকুও 
পাওয়া গেল। ম্থুতরাং আজ আর বৃথা চেষ্টা--ভাবিয়া 
চলিয়৷ আসিবার উদ্যোগ করিতেছি, এমন সময়--কাঁকে 
চাঁন মশয় আপনি?--ফিরিয়! দেখি, মেয়েটার বাবাই 
হইবেন, চেহারা একই রকম বটে! বলিলাম, চাই নে 
কাকেও মন্দিরে ঠাকুর দেখতে-_ 

কোথায় থাকা হয়? আপনারা? এই পট্‌লি 
হাঁরামজাদি, দরজ! বন্ধ ক'রে কি করছিম্? দরজা থোল্‌। 
হ্যা) কোথায় থাকেন বললেন? 

আমি কিছুই বলি নাই, এখনও বলিলাম না। দরজা 
খুল়্া গেল। মেয়েটি ভয়ে ভয়ে পাশে সরিয়!৷ গেল। 

এই হাঁরামজাদি, পা ধোবার জল দে না বলিয়া ব্রাহ্মণ 
হুঙ্কার ছাঁড়িলেন। তারপর আমার দিকে চাহিয়া কন্বর 
অনেকটা! মোলায়েম করিয়! বলিলেন, বাবার পূজো দেবেন? 

পূজা! দিতে আপত্তি ছিল না; কিন্তু উদ্দেশ্ঠ যে তাহাই 
এমন কথাও বলিলাম না) চুপ করিয়া দীড়াইয়া রহিলাম। 
পটুলি একটা কালো ছাতাধর! ঘটি আনিয়া সিঁড়ির উপর 
ঠক করিয়। নাঁমাইয়া রাঁখিল। ব্রাঙ্গণ পদপ্রক্ষালন করিতে 
লাগিলেন। পটুলি ভাঁলমানুষটির মত দীড়াইয়া রহিল, 
একটু আগেও যে-আমাঁকে বাগান উজাড় করিয়া সাদরযত্বে 
অনেকগুলো কলা খাঁওয়াইয়াছে, সেই-ঞাঁমার পানে একটি- 
বার ফিরিয়াও চাহিল না। বৃদ্ধ ব্রাঙ্গণ মন্দিরে ঢুকিবার 
পূর্ব্বে পুনর্ববার জিজ্ঞাসা করিলেন, পুজো! দেবেন ? 

বলিলাম, আজ থাক্‌। 

ব্রাহ্মণ চটিয়া গেলেন বুঝিলাম, কারণ একটা অগ্মিদৃষ্টি 
নিক্ষেপ করতঃ গর গর করিতে করিতে মন্দিরে প্রবেশ 
করিলেন। আমিও ফিরিলাম। যাইতে যাইতে এইটুকু 
শুনিলামঃ কে রে লোকট1? উত্তর হইল-প্র বাড়ীটায় 
থাকে। পুলি নালিশ দায়ের করে কি-না জানিয়া 
লইবার জন্ত এক মিনিট দীড়াইতে হইল। না, পট্‌লি 
অনাধারণ বুদ্ধিমতী। সে জানিত, আমার বিরুদ্ধে 
কিছু বলিলে দশগুণ ফিরাইয়া বলিবার মালমসল! সেই 
আমাকে অগ্রিম উপহার দিয়া রাখিয়াছে, আমি সেই 
উৎহৃষ্ট কলার কাদির সঘ্যবন্থার করিব। ব্রাঙ্গণের হাতের 


চৈত্র--১৩৪৭ ] 


ঘণ্টা নড়িতে লাগিল, কাল ঠাকুরের উপবাস গিয়াছে আজ 
ভালই পাঁরণ করিবেন ভাঁবিতে ভাঁবিতে বাসায় ফিরিলাম। 

সেই একটিবেলা! ঠাকুর দিনান্তে তর একবারই 
থান। কারণ সন্ধ্যাবেল| পটলির বাবাঁকেও দেখিলাম নাঃ 
পটলিকেও দেখিলাম না। ইহাদের ঠীঁকুরটি ভাল, 
অতিশয় নিরীহ এবং অল্লেই সন্তষ্ট। সাধে কি আর 
আশুতোষ নাম! ওদিকের মসজেদটায় নমাঁজ হইতেছিল, 
প্রতিদিন বোধ করি প্রতি প্রহরেই হয়! ভোরে, প্রায় 
রাত থাকিতে আজানের বিচিত্র মধুর ধ্বনি শুনি) 
আবার দিবাঁবসানেও নিত্য সেই সুর কাণে বাঁজে। জানি- 
না একই লোক আজান্‌ দেয় কি-না, নেই দিক্‌, কণস্বর যেমন 
মিষ্ট, তেমনই উচ্চ । ম্ুুগায়কেরা ক সাধনা করিয়া! থাঁকে 
শুনিয়াছি ; ইহারাঁও তাহাই করিয়াছে সন্দেহ নাই। 
বিহারের পল্লী গ্রাম, কিন্ত মুরগীর ডাঁকে কোনদিন ঘুম ভাঁঙে 
নাই, এ আজানই আমার নিদ্রাভঙ্গ করিত। ধর্ম-কর্মন 
বলিতে যা বুঝাঁয় তাহা লইয়া মাথা ঘামাইবার অবসর কখনও 
হয় নাই । তবে ভোরের বেলা বিছানায় আড়মোড়া ভাঙ্গিতে 
ভাঙ্গিতে এই কথাটাই ভাঁবিতাম__এই যে নিরলস নিষ্ঠা, অথণ্ড 
এঁকাস্তিকতা, অন্তে এমনটি দেখি না কেন? কাণীতে বাব! 
বিশ্বেশ্বরের ভোগাঁরতি দিনে-রেতে পঁচিশবাঁর হয় হোক্‌-_ 
চিরদিন হোঁক্‌; কিন্তু সে যাহারা করে, যাহারা দেখে, সে 
শুধু তাঁহাদেরই--কাশীর বাবা বিশ্বনাথ বিশ্বব্যাপী, সে ভক্তের 
মনে, তিনি ত সর্বত্র রূপ পরিগ্রহ করিয়! নাই ! কাশী গিয়া, 
বৈদ্যনাথে গিয়া, তারকেশ্বরে গিয়া» চন্দ্রনাথ কেদারে গিয়া 
হত্যা দিবার মাথা খুঁড়িবার লোকের অভাব নাই, তা”ও 
জানি। কিন্তু আমি এখানে নিত্য যে দৃশ্য দেখিতেছি, যে 
করুণ-গম্ভীর প্রার্থনা নিয়ত শুনিতেছি, তাহার সঙ্গে মিল 
কোথায় আছে কিছুতেই খু'জিয়া পাই না কেন? দূরে 
কাছে বস্তী ত ঝড় কথা, একথানি কুটার পর্য্যন্ত দেখি না 
অথচ আজানের আহ্বানে এতো! লোক জড়ো হয় কোথা 
হইতে? কই, &ঁ মন্দিরে ত মহাদেব রহিয়াছেন। কে আসে ! 
যাক্‌, ধর্প্রচার করাও আমার উদ্দেশ্য নয়, ধর্মের গ্লানি 
করিবার জন্তও 'লেখনী ধারণ করি নাই। বড্ড কাছাকাছি 
_প্রীয় পাশাপাশি জায়গায় যে ছুইটা দৃশ্ত নিয়ত চোখে 
পড়িতেছে, কিছুমাত্র সাদৃশ্ত অথবা স্[ম্জন্ত নাই বলিয়াই 
কথাগুলি ত্বতোৎসারিত হইয়া পড়িল। 


ম্বম্ন্বালক 


৪৫? 


: পরীক্ষার থাতাগুলো ফেরত দিবাঁর দিন সক্গিকটবর্তাকাল 
সারারাত খাতা দেখিয়াছি । ভোরে ঘুমাইয়া পড়িয়াছিলাম, 
উঠিতে অনেক বেল! হইল। সঙ্গে সঙ্গে গোটাকতক চৌয়া 
টেঁকুর উঠিয়! পড়িল। রাত্রে ন! ঘুমানোর ফল। দিবাঁভাগে 
আহার করিব না বলিয়া দিলাম । এক পেয়ালা চাও পরে 
এক গ্লাঁস পাঁতিলেবুর সরবত খাইয়া! বারান্দার ইজিচেয়ারটায় 
পড়িয়া রহিলাম। ঘুমাইয়া পড়িয়াছিলাম বোধ হয়, হঠাৎ 
এক সময়ে চক্ষু চাহিয়। সোজা উঠিয়া! বসিয়া দেখি, আমার 
ন্নেহমধী কদলীদাত্রী বাবার মন্দিরের সি'ড়িতে বসিয়া আছে। 
বাবার বরাতে আহার তখনও জুটে নাই, বুঝা গেল। 

পটলি আমাকে আসিতে দেখিয়াই ধাঁড়াইয়! উঠিয়া ছিল। 
মনে হইল তরজা-গাঁনটা মোঁহড়া দিয়া লইতেছে_ কিন্ত 
আশ্র্য্য হইয়া গেলাম, আমি কাছে আঁসিতেই একগাল 
হাঁসিয়! কাঁশ্ীর হইতে কন্তাকুমারিকা পধ্যন্ত মাড়ি বাহির 
করিয়া বলিয়া উঠিল__তবেরে মিথ্যেবাদী! তুমি ত বামুন। 
সেদিন যে বড় বললে বাঁমুন নয়। 

বলিতে পারিতাঁম যে এতবড় মিথ্যাঁটা শুধু সেদিন নয়, 
কোন দিনই বলি নাই; কিন্তু কিছুই বলিলাম না, শুধু 
হাসিলাম | আসিবার সময় তাড়াতাড়িতে জামার 
বোঁতামগুল! দিই নাই_বোঁধ করি কদলীর লোভ ব্রাঙ্গণ- 
গণের পক্ষে ছুনিবার--আঁমার ব্রাঙ্গণত্বের পতাকা 
দৌছুল্যমান, তাহা দেখা যাইতেছিল। 

পটলি বলিল, মহাদেবের পুজোটা ক'রে দাও না। 
বাবা সদরে গেছে মামলা করতে, বলেছিল ১২টার মধ্যে 
আসবে। তা দুটো বেজে গেল, এখনও এল না। বলিয়া 
সে আকাশের দিকে চাহিয়া! দেখিল। 

আমি যখন বাঁসা হইতে বাহির হই, তখনই দেখিয়া- 
ছিলাম, ২টা বাজিয়! মিনিট ছুই তিন হইয়াছে । পটলি 
সূর্যের পানে চাহিয়াই নিল সময় বলিয়া দিল দেখিয়! 
বিশ্মিত হইলাম। যদিও জানিতাম, এককালে স্থইস্‌ ঘড়ীর 
নামও যখন কেহ শুনে নাই হ্ৃর্য্যঘড়ির চলনই ভারতবর্ষে 
প্রসিদ্ধ ছিল। পটলি আবার বলিল, বাব! মহাদেব রোজ 
রোঁজ উপুনী থাকেন, সে কি ভাল? লক্ষমীটি, দীওন! 


'ছু'টো ফু ফেলে-_তুমি মন্তর জান ত! বলিয়াই একটু 


হাসিল ; আবার বলিল, বামুম যখন, নিশ্চয়ই জান মন্তর । 
বলিলাম, আমি গ্রায় তোমারই মত বিদ্বান। 


৪6৪ ভ্ডান্রত্ডন্রশ্র [২ম্পবর্ ২য় খণ্ড -৪র্থ সংখ্যা 
পটলি হাসিয়া বলিল, মিথ্যে কথা। না করবার শতছিন্ন আসন, কুশগুলির থস্‌ থস্‌ শব হইবামাত্র পটলি 
শুধু ফন্দী। চকিতে দীড়াইয়া উঠিল, আবার তখনি বসিয়! পড়িয়া মাটাতে 


কিন্তু আমি কথাটা মিথ্যা বলি নাই, পুজা-পাঠে আমি 
যে কোনদিন পটলিকে ছাড়াইয়' যাইতে পারিয়াছি এমন 
কথা বলিতে পারি না। শিবপুজার “ধ্যায়েন্লিতং মহেশং” 
পর্যন্তই আমার দৌড়। তবে একটা কথা মনে পড়িয়া 
গেল, বাসায় পঞ্তিকা ম্মাছে। আজকালকার পঞ্জিকায় 
গরু হারাইলে গরু পাঁওয়] যায় সব মন্ত্রও আছে, শিবপূজার 
মন্ত্র থাকিবে না? বলিলাম, মন্তর ঠিক মনে নেই পটলি__ 

আমার নাম জানে রে! বলিয়া পটলি আবার সেই 
সিমলা-শিলউবিস্তৃত মাঁড়ী বাহির করিয়া হাসিল। 

হাত গুণতে জানি। 

মাইরি? দেখনা আমার হাতটা! না, এখন নয়, 
আগে বাবার মাথায় জলটি দাও-_ 

তবে দাঁড়াও, মন্তরের বইটা আনি | 

বই কোথায়? বাসায়? 

ই্যা। যাব আর আসবো । 

পটলি কিন্তু আস্থা স্বাপন করিতে পারিল না; বলিল, 
তাই ঝলে পালাবে! ওরে ধূর্ত । তা হচ্ছে না, তুমি থাক, 
আমি চেয়ে আনছি বই। 

আমি গম্ভীরভাবে 
আনছি। 

পঞ্জিকায় মন্ত্র পাওয়া গেল। মন্দিরে প্রবেশ করিতে 
যাই, গটলি গাঁলে আঙুল রাখিয়া বলিল, হ্যা গা, তুমি কি 
রকম বামুন গা? রাস্তার পায়ে বাবাকে ছৌবে? দাড়াও, 
প1 ধোও।-_বলিয়! সেই বিবর্ণ ঘটিটি আনিয়! দিল। 

বাবার মাথায় জল টালিলাম কয়েকটি ফুলও দিলাম । 
ছুঃএকটি পড়িয়া গেল, দু”তিনটি থাকিয়া! গেল। 

শক বাজাইয়৷ পূজা শেষ করিয়া মুখ ফিরাইতে 
দেখি, পটলি ঠিক দরজার সামনে হাত ছু+টি জোড় করিয়া 
বসিয়া আছে; দু'টি চোখে তাহার সহন্ত্র ধারা । এবন্ব 
জীবনে দেখি নাই ; এমনটা যে সম্ভব হইতে পারে, ভাবিও 
নাই। চোখের জলে তাহার দৃষ্টি আচ্ছন্ন, আমি যে নিঃশবে 
তাঁহার পানে চাহিয়া আছি সে তাহ! জানিতেও পারিল না। 
জাঁনিলে বোধ হয় লজ্জা পাইত । 

ঠিক তাই ! আমি আসন ছাঁড়িয়া দাড়াইয়া উঠিলাম। 


বলিলাম, পালাৰ না, এখুনি 


মাঁথা রাখিয়া প্রণাম করিল। প্রণাম করাটা, বোধ হয়, ছল। 
চোখের জল গোপন করিবার জন্যই ব্যগ্রতা। 

আমি নিঃশবে পঞ্জিকাহস্তে বাহিরে আসিয়া দীড়াইলাম। 
পটলি একবার ওদিকে সরিয়া গেল, একটু পরেই বাহিরে 
আসিয়া দীড়াইল। চোখ দু”টা তাহার সেই গড়ের মত 
কাপড় দিয়া খুব জোরে মুছিয়াছে সেটা বেশ বুঝা গল; 
ঘর্ষণের চোটে তাহার সেই প্রায়-মসীকৃষ্ণবর্ণ বেগুনের রও 
হইয়া উঠিয়াছে; চোঁখের পাতায় যে রোমগুলি, তাঁহাদেরই 
ফাঁকে ফাকে জলের সুন্মবিন্দুগুলি তখনও ছিল, তাহাঁও 
দেখা গেল। 

বাহিরে আসিয়া পটলি বলিল, যেদিন বাবার আঁসতে 
দেবী হবে তোমায় ডেকে আনবো কেমন? তুমি বেশ 
পূজো কর; খুব ভাল মন্তর পড়লে। বাবা কিযেবলে 
কিষেকরে কিচ্ছু বোঝা যাঁয় না। আর এক মিনিটে 
সেরে দেয় ।বাঁবা মহাদেব তোমার ওপর খুব জস্থষ্ট হয়েছেন। 

রঙ্গ করিয়া বলিলাম, কিসে বুঝলে ? 

ও আমি বুঝতে পাঁরি। মহাদেব আমার সঙ্গে কথা 
কয়। খুব খুসী হয়েছেন। 

আর তুমি? তুমি খুসী হয়েছ? 

হি", খুব__বলিয়! পটলি দাত ও মাড়ী ছুইই দেখাইল। 
তাহার চোখের পাতাছু*টাও যেন কীাপিয়া কাপিয়া 
উঠিতেছিল। 

বলিলাম, আর কলা দেখাবে না ত? 

- পটলি একটু দূরে সরিয়! যাইতে যাইতে বলিল, আমার 

পানে অমন হা! করে চেয়ে ছিলে কেন? তাই ত-_ 

তোমায় দেখতে ভাল লাগে, তাই ত চেয়ে থাকি। 

পটলি পূর্বমূত্তি ধরিবার উপক্রম করিতেছিল, বলিল, 
কেন; ভাল লাগে কেন? আমি কি সঙ? _বলিয়াই সে 
মন্দিরের ভিতরে ঢুকিতেছিল, আবার বলিল, যাঁই 
বাড়ী যাই। 

তোমর! পাঠিকারাণীরা যে কোন কদর্থ করিতে বাঁনা 
কর করিতে পার, আমি কবুল করিতেছি, পটলির সঙ্গদ্থুথে 
বঞ্চিত হইবার বাসনা আমার এতটুকু ছিল না; বলিলাম, 
এখনি বাড়ী গিয়ে কি করবে, বসোনা। একটু গল্প করি। 


চৈত্র--১৩৪৭ ] 


হু” সা স্ব-স্ব" -স্থদ “- স্ব বহতা” ব্যাস 


পটলির সোজা! জবাঁব--ওঃ£ঃ কি আমার মাসীমার কুটুম 
এলেন গো। তিনপোর বেলায় আমি ওর সঙ্গে বসে গল্প 
করি, আর ক্ষিধেয আমার পেট চুঁই চুঁই করুক। ভারি 
কথা বললেন ! 

এত বেলা পর্য্স্ত খাওনি ? 

ঠাকুরপূজো না হলে কেউ থায় নাকি? তুমি কি 
ভাঁত খেয়েদেয়ে বাবার পূজে! করলে নাকি? ওমা» কেমন 
বামুন তুমি ! 

না, ভাত খাইনি । 

তাই বল!-_বলিয়। পটলি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলিয়া 
যেন বাচিল। বলিল, এখন খাঁওগে না। 

আঞজ আর থাঁব না। তোমাদের বাড়ী এখান 
থেকে কতদূর ? 

তা” এক ক্রোশের বেশী । 

মনটা দুঃখে ভরিয়া গেল । এই রৌদ্রে একক্রোশ পথ 
টিয়া বেলা ওটার সময় এই কচি মেয়েটা দুটা ভাত 
খাইতে পাইবে। জিজ্ঞাসা করিলাম, তোমাদের বাড়ীতে 
আর কে আছে পটল ? 

পটলি বঙ্কার দিয়া বলিল, মিন্সের আবার সৌহীগ 
হচ্ছে, পটল ! পটল নয় গো ঠাকুর, পটল নয়, পটলি ! পটল 
থে পুরুষ মান্ষের নাম, ঘটে এটুকু বিদ্যেও নেই বুঝি ? 

না, ঘট একেবারে খাঁলি। কে আছে বললে না? 

কে আবার থাকবে, আমি আর বাঁবা। 

তোমার মা? 

নেই, ওবছর মরে গেছে । 

এখন বাড়ী গিয়ে র'ধতে হবে ত? 

না। সকালে রেধে রেখেছি। 

কি রে'ধেছ ? 

কেন, শুনে তোমার কি হবে? খাবে? চল, ভাত 
দোব, সিম সেদ্ধ দোব, মুগ্ডরির ডাল দোব। যাবে? তুমি 
ভাত খাওনি কেন? 

প্রশ্ন করিয়! উত্তর শুনিবার ধৈর্য্য পটলমণির নাই; 
পুনশ্চ প্রশ্ন করিলঃ তোমীর বউ কোথা? 

মারা গেছে। 

আর বিয়ে করনি? 

না। 


হস নাস 





2৫৫ 


বর সহস্র 


' কেন করো নি? 

একটি কৃত্রিম দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলিয়া মুখ চুণ করিয়! 
বলিলাম, মনের মত ক'নে পাইনি পটল। তুমি যদি রাজী 
থাক ত বলো-_ 

পটলি চোখ পাকাইয়৷ হাতের ঘটিটা তুলিয়া বলিল; 
দেখেছ এই ঘটি, মাথায় মারলে 

মাথা ভেঙ্গে যাবে কেমন? 

হ্যা। এক্কেবারে হিলু বেরিয়ে যাবে ।_ বলিয়া ছুপ ছুপ 
করিয়া মন্দিরের ভিতরে ঢুকিয়৷ নৈবেদ্যের আলোচাল কয়টি 
(আর কিছু থাকে না) আচলে বীধিয়! মন্দির বন্ধ করিয়া 
পথে নামিয়া পড়িল; আমার প্রতি দৃকপাতও করিল না। 
আমি কিন্ত সঙ্গ ছাঁড়িলাম না। কয়েক পা গিয়া পটলি 
থমকিয়া ধাড়াইল, তুমি “পেছনে পেছনে” ( বলা বাহুল্য, সে 
অন্য শব ব্যবহার করিয়াছিল ) কোথায় আঁসছ ? 

বলিলাম__কেন, এই থে বললে ভাত দেবে, ডিম সেন্ব 
দেবে__ 

পটলি কুদ্ধ হইয়া বলিল, কি দোব? 

ডিম সেদ্ধ, পাঠাঁর কালিয়া__ 

চোথমুখ ঘুরাইয়া৷ পটলন্ুন্দরী বলিল-_-আহা» স্কাকরা 
দেখে আর বাঁচি নে! যাও, বাড়ী যাও। 

দু'চারবার মুখ ঝাম্টা খাওয়ার পর সন্ধি হইয়া! গেল। 
যে সমস্ত এঁতিহাসিক তত্ব জানা গেল, প্রোফেসরীর পক্ষে 
সেগুল! অপ্রয়োজনীয় হইলেও বর্তমানে অপরিহাঁধ্য নয় । 
এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা কে__তাহা পটলি জানে না__ 
দেব সেবার উদ্দেশে অথবা সেবায়েতের উদ্দেশ্যে দশ বিঘা 
জমি লাখেরাজ দিয়! গিয়াছিলেন, তাহাদের তাহাতেই 
গ্রাসাচ্ছাদন চলে । একজন স1ওতাঁল-ঘাটোয়াল দশ বিঘার 
এক বিঘা ভোগ! মারিৰার চেষ্টা করিতেছে বলয়! পটলির 
বাবাকে প্রীয়ই সদরে মামলা করিতে যাইতে হইতেছে। 
পটলিদের বড় কষ্ট । একখানি বই কাপড় নাই, এইটি পরিয়া 
স্নান করেঃ গায়েই গশুকায়; কাপড়খানিও শতচ্ছিন্ন। শত 
সেলাই, বুঝি সেলাইয়েরও আর যাঁগা নাই। তাহার 
উঠানের বেড়ার গায়ে ক'টা সিম গাছ হইয়াছে, সেইগুলিই 
তরকারী) চুন কেনে, কিন্তু তেল কেনে না, অত পয়সা নাই। 
পটুলি এই বলিয়া উপসংহার করিল, পেটে ছু;'টো গেলেই 
হোল; তুমি কি বল, তাই না? 








৪০৩৬৩ 


আমার চোখ দিয়া জল পড়িতেছিল; পটলি পাছে 
দেখিয়া ফেলে ও তাহার স্বভাঁবসিদ্ধ ভাষায় গালির ছড়া 
সূরু করিয়া দেয়, তাই অন্য দিকে চাহিয়া আস্তে আস্তে 
বলিলাম--পটলি, আমি যদ্দি একজোড়া নতুন শাড়ী দিই, 
তুমি নেবে 

পটলি বিনাদ্বিধায় বলিলঃ টই:, কেন নোব না? তবে 
এমনি এমনি নোৌব না, তুমি মন্দিরে বাবাকে উচ্ছগ্য ক'রে 
দিলে নোব। 

এইটুকু এই অশিক্ষিতা গ্রাম্য মেয়েটার দেবতায় তক্তি 
দেখিয়া মনট| ভারী প্রন্ন হইল। কোন কথা বলিবাঁর 
আগেই পটলি ধপ করিয়া বসিয়া পড়িল। তারপর মাঁটাতে 
বার কতক মাথা ঠুকিয়া এক-কপাল ধুলা লইয় দীড়াইতে, 
আঁটি বলিল'ম-_ওকি পট্‌ুলি, অত ঘটা ক”রে মাথা ঠোকা 
হোল কার কাছে? আগার কাছে নাকি? 

পটলি মুখ গম্ভীর করিয়া, জিব কাটিয়া বলিল__ছিঃ, 
বলতে নেই !--বলিতে বলিতে তাহার মুখটা হাসিতে 
ভরিয়া গেল। আবার বলিল উঃ বাবা মহাদেব কি জাগ্রত 
ঠাকুর দেখলে! তাহার মুখখানি ভক্তির আলোঁকে যেন 
উজ্জল হইয়া উঠিল। 

জিজ্ঞাসা করিলাম, কিছুই ত দেখলুম না। কিন্ত হঠাঁং 
ও কথা মনে হোল কেন বল ত পটুলি? 

পটলি বলিল, গুনবে কেন? তবে শোন, বলি। কাল 
রাত্রে বাবাকে মনে মনে বলছিলুম, বাঁবা কাপড়খানি থে 
একেবারে শতকুটি হয়ে গেছে বাবা, আর যে পরা যাঁয় না! 
যাবা তাইতেই আজ তোমাকে পাঠিয়ে দিয়েছেন, তোমাকে 
বলে দিয়েছেন, কাপড় দিতে ।--হঠাঁৎ আমার মুখের পানে 
চাহিয়া বলিয়। উঠিল-_বাঁব৷ তোমায় স্বপ্ন দিয়েছেন না গো? 
--পটলির করুণ চোখ দুটিতে যেন জল আসিয়। 
পড়িতেছিল। 

আমি হাসিলাম, কিন্তু হাঁ অথবা না কিছুই বলিলাম না। 
তাহার অগাধ বিশ্বাস ভাঙ্গিয়া দিতে ক্ট হইতেছিল। 
পটলি বকিতে বকিতে চলিল-_বাঁবাকে উচ্ছুণ্তয না ক'রে 
আমি কিছু থাই নে, পরি নে। আঁচলে বাঁধা চাল ক'টা 
দেখাইয়া বলিল, কালকে এই ক'টা রাধবো। আজ আর 
গাছে সিম ছিল না, বাবাকে দিতে পারি নি, তাই কাল আর 
লিম সেন্ধ করবে না, শুধু ভাতই র'ণধবো। হুন আর ভাঁত। 


ভাশ্রত্ঞ্ম্ 


[ ২৮শ বর্-_-২য় খত চর্থ সংখ্যা 


অশ্রু সম্বরণ করা ক্রমেই অসাধ্য হইয়া পড়িতেছিল; 
কিন্ত ভয়ও ছিল। আমার প্রান্ত্-গ্রিয়তমার যে মেজাজ, 
-বাঁপ ! মাঠের শেষে একটা গ্রাম দেখা ধাইতেছিল, 
মুখট! ঘুরাইয়! সেই দিকে চাহিয়া চলিতে লাগিলাঁম। 

পটলি বলিল, সত্যি তুমি আমাদের বাড়ী যাবে? 

এই ত যাচ্ছি, দেখছ ন1? 

রোদে তোমার কষ্ট হচ্ছে না? 

না। তোমার কষ্ট হয়? 

আমার ! বলিতেই সে কি হাসি। পটলি যেন লুটাইয়া 
মাঠের সেই আলের উপর শুইয়া পড়ে! অনেকক্ষণ ধরিয়া 
হাসিল, যেন দম বন্ধ হইয়া যাইবে এমন হাসি। তারপর 
বোঁধ হয় পেটে খিল ধরিয়া গেল, পটলি হাসি বন্ধ করিয়। 
বলিল, আমি বে ঠাকুর, ছ” বছর বয়েস থেকে এই কুড়ি 
বছর বয়েস পরাস্ত রোঁজ- রোজ রোজ আসছি, আর 
যাচ্ছি। রোদ,» বৃষ্টি, ঝড়, বিছ্যুৎঃ শিল কিচ্ছু মাঁনিনে ! 
বুঝলে ঠাকুর | 

তোঁগার বয়স কত বললে? কুড়ি? 

হ্যা, কুড়িই ত! এই ভাদ্দর মাসে একুশ হবে। কেন? 

বিপদ অবশ্থস্তাবী বুঝিয়াও বলিলাম, তোমার বিয়ে 
হয় নি সে ত বুঝতেই পারছি। তোমার বাবা বিয়ে 
দেবে না? 

পটলির স্পষ্ট কখা। বলিল, দিলেই বা করছে কে? 
আর বিয়েতে টাকা লাগে না বুঝি ! 

একমুহুর্ত নীরব থাকিয়া বলিলাঁম_যদি কেউ টাকা না 
নিয়ে বিয়ে করে ? 

কাঁর মরণ নেই এই স্তাঁওড়াতলার পেত্রীকে বিয়ে 
করতে যাবে! 

কথাটা মিথ্যা নয়, অতিরঞ্রিত একটুও নয়! পটলি 
যদি কাছা দিয়! কাপড় পরিত, আর গায়ে একটা 
গেঞ্জি দিত, কাহার সাধ্য বলে যে সে স্ত্রীজাতীয়৷ 
এবং যৌবনটা পার করিয়া আরও অনেকথানিদুর 
আগাইয়া গিয়াছে । বিধাতা যেন বাকুড়া দেশের পাখাল- 
ছোঁড়ান্‌ গড়িতে গড়িতে রাগ করিয়া মাঝথানেই ছাড়িয়া 
দিয়া বলিলেন, যা মরগে যা! কিন্তু নারীই যখন গড়িয়াছেন, 
তখন উহ্বার যোগ্য পুরুষ গড়েন নাই কি? কুস্তকার হাড়ী 
গড়িয়াই কর্তব্যের শেষ করে নাঃ সরাও গড়ে । 


চৈত্র--১৩৪৭ ] 


আবার বলিলাম__-ধরো। তেমন লোক যদিই থাকে-_ 
যদি ফেউ টাক না! নিয়ে তোমায় বিয়ে করে ? 

পটলি আমার পানে স্থিরতুষ্টিতে চাহিয়া, বোধ করি ঝা 
বুঝিতে চেষ্টা করিল ঘে আমি রহুন্য করিতেছি কি-না । 
তারপরই হাসিয়া! ফেলিল ; বলিল-_তুমি করবে নাকি? 

আমি মনের ভিতরে আতকা ইয়া উঠিলাম। এ কথা 
শোনাও বরাতে ছিল! হা হরি! বলিলাম-_নাঃ আমি 
নয়। তবে অন্ত সন্বন্ধ করতে পারি, যদি তুমি বল। 

বাবাকে বলোঃ বলিয়! পটলি বাঁধের ধারে একখানা 
মাটির ঘর দেখাইয়া বলিল, এ আমাদের বাড়ী। হ্যাঁগা, 
সত্যি তোমার খায়! হয় নি? 

আজ খাই নি, পটলি, সত্যি। 

পটলি মুখখানি করুণ করিয়া কণঠন্বরে মিনতি ভরিয়া 
বলিল--ছুটি ভাত খাবে আমাদের ঘরে? শুকনো কুড়ে 
হয়ে গেছে, ত। কি করবো বলো» সেই কোন্‌ সকালে রেঁধে 
মন্দিরে গেছি । বল নাঃ খাবে ছুটি? 

তাহার এই অতুক্ত সঙ্গিটির জন্ত তাহার কাটখোটা! 
হৃদয়ের অভ্যন্তরটা আর্দ হইঘা উঠিয়াছিল, তাহা মনে 
করিতেই আমার চোখ ছলছল করিয়া আসিল । অতিকষ্টে 
অশ্রু সম্বরণ করিয়া বলিলাম, কাল রাত্রের খাওয়াটা হজম হয় 
নি বলেই আজ থাই নি। একেবারে রাত্রে খাব। 

বলিতে বলিতে আম:1 তাহাদের ঘরের সামনে আসিয় 
দাড়াইলাম। এই আমার সিম্‌ গাঁছ--পটলি দেখাইল।-_ 
তুমি সিম্‌ খাও ?- খাই শুনিয়াই বলিল, আজ খাঁধাঁর মত 
হয় নি, কাল তোমার জন্তে চাটি নিয়ে যাঁব। 

দাড়াও, তোমায় একটা বসবার যায়গা দিই, বলিয়া 
পটলি দরজার তিন পয়সানে তালাটা খুলিয়া খরে ঢুকিতে 
ঢুকিতে কহিল, কে জানে আসন-ফাসন আছে কি-না! নেই 
বোধ হয়। ওমা, একি কাণ্ড? 

আসনের কোন দরকার নাই বলিবার পূর্বেই পটলি 
একখানা ছেঁড়া কুশাসন হাতে বাহির হইয়া আসিল । মন্দিরে 
একথানি ছিল, ইহারই জোড়া বৌধ হয়। আসনট দাওয়ায় 
পাতিয়৷ দিয়া বলিল, বাব! মহাদ্দেব আজ আর বরাতে ভাত 
মাপান্‌ নি দেখছি। 

জিজ্ঞাসা করিলাম, কেন ? | 

পোড়ার দশ! আমার মনের | জানলা বন্ধ করি নি, 


৫৮ 


স্্হাপ্প লে অপ শব স্থান স্হান” 





হ্বস্ন্বাস্ 





৪ 


"সস স্য্- 


বেরাল ঢুকে চেটে পুটে খেয়ে রেখেছে। বেশ হয়েছে», 
যেমন উঠতে বসতে তুল, তেমনই হয়েছে। মরণ দশা ! বলিয়া 
পটলি হাসিতে লাঁগিল। 

আমি তাহার আচলের কোণে বাঁধা চাল কট দেখাইয়! 
বলিলাম-_দু”টি ভাঁত চড়িয়ে দাও-নাঃ চাল ত রয়েছে। 

পটলি বলিল, তুমি ত বেশ বললে ঠাকুর, কাল তখন 
কি হবে? 

কালকের কথা কাল হবে আজ ত-- 

তা হয় না গো! ঠাকুর; হয় না, মাপ! চাল, এদিক ওদিক 
হবার জো৷ নেই। 

তাই ঝলে উপোস ক'রে থাকবে। 

অমন কতদিন থাকি । পটলি হাসিল । 

কাছে দোকান টোঁকাঁন আছে? 

তা আছে, কেন? 

কিছু কিনে নিয়ে এস-- 

পয়সা 

পকেটে ব্যাগ ছিল, বাহির করিতে করিতে বলিলাম-_ 
যাও, কিছু কিনে এনে খাঁও। 

পটলি হাসিল; বড় করুণ হাসি, বলিল--তোঁমার ও 
পয়সা ত নোব না। বাবার মাথায় না চড়ালে ত আমি 
কিচ্ছু নিই নে। তুমি দুঃখু করে! না, উপোস করা আমার 
খুব সওয়া আছে; প্রায়ই করতে হয়। বাবাও করে, 
আমিও করি। 

পটুলি পয়সা! লইল না। তাহার জেদের কাছে আমাকে 
হার মানিতে হইল। তবে আমার পীড়াগীড়িতে এইটুকু 
অনুগ্রহ পটলমণি করিলেন যে আচলের চাল ক”টির অর্ধেক 
লইয়া ভাত বসাইয়া দিলেন। আমি প্রতিশ্রুত হইয়াছিলাম 
যে তাহার বাব! মহাদেবের জন্য চাল ও অন্তান্ত সামগ্রী আমি 
যেখান হইতেই পারি রাত্রের মধ্যেই সংগ্রহ করাইয়া রাখিব 
তাহার মাপ জোপ করা চালে টান পড়িবে না, তাহার 
পিতৃদেবের নিকট গালি থাইতেও তাহাকে হইবে ন|। 

উনানে ভাত বসাইয়া দিয়া, পটুলি আমার কাছে 
বসিয়া জিজ্ঞাসিল__ঠাকুর, তুমি হাত দেখতে জানো, দেখে 
ত আমার হাতটা ? এ 

কি দেখতে হবে পট্‌লি, কবে বিয়ে হবে, এই ত? 

তোমার মুও।- কিন্তু গালভরা হাঁসি। 








পিজি 


তবে কি দেখবে? 

কবে আমার মরণ হবে, তাই! 

রাগ করিয়া বলিলাম, ওসব আমি দেখি নে। 

পটলি বলিল, তুমি হাঁত দেখতে জাঁন না-ছাই জান! 
বলিতে বলিতেই তাহার মুখ চিন্তাধুক্ত হইল, কহিল-_জানে 
বোধ হয়, নইলে আমার নাম জানলে কি করে ! 

না পটলিঃ আমি হাত দেখতে জানি নে। যদ্দি বলো) 
তোমার নাম জানলুম কি করে? মনে নেই সেই যেদিন 
আমাকে কাদি কীাদি কল! থাইয়েছিলে, তোমার বাবা এসে 
ডাকলেন পটলি হাঁরামজাদি দরজা বন্ধ করেছিম কেন? 

ও, তাই-_বলিয়৷ পটলি উনানে কাঠ ঠেলিয় দিতে 
উঠিয়া গেল। উনানটা নিবিয়া আসিতেছিল। 


, আমার বাসার পাঁচকের নাম নীলমণি চক্রবর্তী, সে 
বাঁকুড়া জেলার লোক । বাঁর বার তিনবার ছুটী লইয়! বিবাহ 
করিতে গিয়াছিল, প্রতি বারই আঁশ! ভঙ্গে শুক মুখে ফিরিয়া 
আসিয়াছিল। চেহারাটা! ভাল নয় তাহা বরাবর দেখিয়াছি, 
আজ ভাল করিয়! দেখিতে গিয়া দেখিলাম, পটলির কাঁউণ্টার- 
ফয়েল! চেক বই বা লটারির টিকিটের যে অংশটা! পরহপ্তে 
চলিয়া যায়, সেই অংশটায় বরং কিছু রঙ চঙ বাহার টাহার 
থাকে, কাউণ্টার-ফয়েল একেবারে নীরস, বিবর্ণ ! তাহাকেই 
পটলির যোগ্যপাত্র বিবেচনা করিয়া! নীলমণিকে ভাকিলাম। 

বিয়ে করবে? একটি বামুনের মেয়ে আছে। 

নীলমণি মনিবকে ঘটকালি করিতে দেখিয়া! বিস্মিত 
হইয়াছিল সন্দেহ নাই; বোধহয় কিছু লঙ্জাঁও হইয়াছিল। 
জবাব দিল না, মাথ! নীচু করিয়া দাঁড়াইয়া রহিল । 

আমি গ্রশ্নগুলা পুনরায় করিলাম। নীলমণি এইবারে 
দেওয়ালের চুণ-বালিতে আঁচড় কাঁটিতে কাঁটিতে কহিল; 
আজে মেয়েটি দেখতে কেমন? কি ঘরঃ মেল্‌-__ 

বলিলাম, নীলমণি, মেল ত পাঞ্জাব মেল, ডিল্লী মেল, 
বোম্বাই মেল-_সে সব নিয়ে কি করবে তুমি ! বামুনের মেয়েঃ 
বছর কুড়ি বয়স, স্বভাব চরিত্র ভাল ( বলিলাম না যে একটু 

ঝগড়াঁটে ! ) সংসারের কাজ কর্ম জানে । বল ত-_ 

নীলমণি গ্রলুন্ধ হইখ্লীছিল, বলিল--পণটন দেবে ত? 
আধার রাগহইল, বলিলাম_-কর ত রশীধুনী বামুনগিরি, 

& ত বৃষকাষ্ঠ চেহারা, কি দেখে পণ দেবে তোমাকে ? 


সভ্ডান্র-স্ব্ঞ্র 


[ ২৮শ বর্ষ-_-২য় খণ্ড--৪র্থ সংখ্যা 


কেন আজ্ঞা, আমরা কুলীন-_ 
কুল নিয়ে ধুয়ে খাও গে, যাও । তিন তিনবার ত গেলে 
বিয়ে করতে, কট! বিয়ে করেছ-_ শুনি? যাঁও। 
যাইতে বলিলাম, কিন্তু সে গেলনা । দেওয়ালে নাক 
ঠেকাইয়া ধ্লাড়াইয়াছিল, তেমনই রহিল । 
আমি রাঁগতভাবে চাছিতেই নীলমণি বগিল, আজ্ঞে কিছুই 
দেবে না? ঘরখরচটাও দেবে না? 
হাসিয়া ফেলিয়াছিলাম। সাধ্যমত গাস্তীর্য্য ফিরাইয়! 
আনিয়া বলিলাম_- আচ্ছা, দেখবো”থন কথা কয়ে । 
বেল! অনেক হইয়াঁছিল। বারান্দায় আসিতেই দেখি 
পটলি এই দিকে চাহিয়া দাড়াইয়! আছে, আমাঁকে দেখিবা- 
মাত্র হাত নাঁড়িয়া ডাঁকিতে লাগিল। তারপর আঁচলটা 
তুলিয়া দেখাইল। বুঝিলাম পটলমণি আমার জন্য সিম্‌ 
'আনিয়াছে। আমি তাহাকে ডাকিলাম। 
আজ আর কিছুমাত্র আপত্তি করিল না ইঙ্গিতে 
'আসছি* বলির! মন্দিরের দোর বন্ধ করিয়া আমার বাড়ীর 
দিকে আসিতে লাগিল-_-দূর পথে নয়, মাঠটুকু অতিক্রম 
করিয়া আসিল। আমি গেট ঘুরিয়া আগিতে বলিলাম। 
পটলি বলিল, সিম এনেছি_বলিয়া আচল খুলিয়া 
দেখাইল। 
আমি ডাকিপাম, নীলমণি | 
নীলমণি আসিলে বলিলাম, 
রণধ গে। 
পটলি সিম কয়টি-_বেণী নয়, গুটি পাঁচ ছয়- ঠাকুরের 
হাতে দিয়া বলিল, তুমি র'ঁধ বুঝি? সিম ছেচকি করতে 


সিমণ্ডলো নিয়ে যাও, 


. জান? সেদ্ধ ক'রে নিয়ে তেলে একটা লঙ্কা, গোটা কতক 


সর্ষে দিয়ে_ 

নীলমণির পঙ্ষে এই ওদ্ধত্য অসহা ও অীর্জনীয়) তিক্ত- 
কটুক্ঠে কহিল--থাম্‌ থাম্‌, জানি জানি! * 

পটলি বলিল, জানলেই ভাল । 

নীলমণি চলিয়া গেলে বলিল-_বাঁবা কাল রাতে আসে 
নি, আজ এখনও ত এলো নাঃ কে জানে কখন্‌ আসবে! 
দেবে, বাবার মাথায় ফুল কটা দিয়ে? 

ত! চল দিই গেসে প্রস্থানোগ্ঠত হইলে বলিলাঁম__ 
পটলি, তুমি এই কাপড় জোঁড়াটা নিয়ে চলো, আমি আসছি। 
--কাঁল রাত্রেই বাজার হইতে লালপাড় শাড়ী জোড়া 


চৈত্র-১৩৪৭ ] 


আনাইয়! রাঁখিয়াছিলাম । পটলির হাতে দিলাম। তাহার 
মুখে কৃতজ্ঞতা সুম্পষ্ট হইয়া উঠিল। বলিল, খুব ভাল কাঁপড়। 
অনেক দামঃ না? 

উত্তরটা এড়াইয়া গিয়া বলিলাম-__তুমি নিয়ে যাঁও, 
মহাদেবের মাথায় চড়িয়ে দোব, তারপর-_ 

এ ত বাবার মাথায় চড়ানো! হবে না। 

কেন? 

বারে! নাকেচে বুঝি ঠাকুরকে দিতে আছে! তুমি 
কি রকম বামুন গে! ? 

মনে মনে বলিলাম_-বোধ করি কুলিন, নীলমণিরই 
জুড়িদার! বলিলাম, তাইত! 

পটলি বলিল, আজ কাচিয়ে শুকিয়ে রেখে দাও না, 
কাঁল তখন বাঁবাঁর মাথায় ছু'ইয়ে আমায় দিও । 

পটলির মত দরিদ্র হুঃখীও অনাচারের আশঙ্কায় এতখানি 
লোভ অবহেলে সম্বরণ করিল দেখিয়া শ্রদ্ধা না হইয়া 
পারে না। 

পটলি বলিল, তুমি শীগগির ক'রে এমো। বুঝলে? 

বিকালে নীলমণিকে ডাকিয়া বলিল|ম, মেয়ে ত দেখলে? 
পছন্দ হয়েছে? 

কই আজ বলিয়! নীলমণি হা করিয়া চাহিল। 

সেই যে সিম্‌ দিয়ে গেল ওবেলা । 

নীলমণি বলিল, এ আজ্ঞা । ওকে ত রোজ দেখি এ 
মন্দিরে আসে । ও, আজ্ঞা, হিজলী ! 

হিজলী কি আবার, বলিতে বলিতে থামিয়! গেলাম। 
নীলমণি যাহা বলিতে চাহিতেছে তাহা বুঝিয়! হাসি চাঁপা দায় 
হইয়া পড়িল! তবু বলিল!ম, হিজলী কি? নোনা হিজলীঃ 
মেদিনীপুর জেলা-_যেখানে রাজবন্দীদের ওন্ত গারদ আছে-_- 

আজে নাঃ ওটা নপুংস। 

তোমার মুও্পুংশ ! ওকেই তোমায় বিয়ে করতে হবে। 
এক শ' টাকা পণ পাবে। 

নীলমণি গৌঁজ হইয়া দ্রাড়াইয়া রহিল দেখিয়৷ আবার 
বলিলাম, নাহয় আরও গোটা পচিশ টাকা বেশী পাবে, 
যাও। এই মাসেই বিয়ে করতে হবে। 

নীলমণি তবুও রাজী নয়, মুখ দেখিয়াই বুঝিলাঁম। সে 
কি বলিতে উদ্যত হইয়াছিল, বলিলাম, আমার এই হুকুম, 
যাও। তবু দাড়িয়ে রইলে যে বড়? আমার কাছে কাঞ্ 





হঞ্ন্বাস্ন 








করতে হলে আমার হুকুম তামিল করতে হবে, না পাঁরঃ 
অন্তত্র কাজের চেষ্টা করগে যাঁও, তোমায় আমি জবাঁধ 
দিলাম। যাও আমার মুখ থেকে । প্যাচার মতে! মুখ 
করে পাড়িয়ে থাকতে হবে ন1। 

কিকরে! নীলমণি চলিয়া গেল। যে হাঁসিট! এতক্ষণ 
বহু কষ্টে চাপিয়া রাখিয়াছিলাম, আর পারিব কেন? 
হাসিতে হাসিতে বাড়ীর বাহির হইয়া গেলাম। আমার 
বাড়ীর ঠাকুর চাঁকর কেহ তাড়াইয়া দিলেও যাঁয় না। কারণ 
আছে। কাঁজ কম; বকুনি ঝকুনি নাই; খাওয়া দ্বাওয়ায় 
নিরবচ্ছিন্ন স্বাধীনতা; তাহারাই কর্তা, তাহারাই গিশ্নী ; সারা 
ভাড়ার ঘরটাই তাহাদের। বাজারের হিসাব মিলাইভে 
গলদধন্্ন হইতে হয় না; মাসের শেষভাগে তেল কম, ঘি কম, 
ময়দা কম করিয়া বাঁড়ী মাথায় করিবার লোকও কেহ নাই, 
নৃতরাং চাকর বাকরদের একাদশে বৃহস্পতি । নীলমণিটা 
আছে দশএগারো৷ বছর । 

বেটা গো-বেচারীর মত থাকে, সাত চড়ে কথা বলে না, 
যেন ভিজা বিড়ালটি। কিন্তু ধুকড়ীর ভিতর এমন খাস 
চাল তাহা ত জানিতাম না! আমি বাড়ী নাই, বেড়াইতে 
গিয়াছি, এখনও ফিরি নাই ভাবিয়| রান্নাঘরের রোয়াকে 
চাঁকরদের বৈঠকে নীলমণি খুব আসর জমাইতেছিল, ভালই, 
ত, সশ টাকা পণ ত পেয়ে গেলুম । তারপর হিজলীর ঘাড়ে 
ঢোঁলক দিয়ে যাঁদের বাড়ীতে ছেলেপুলে হবে নাচিয়ে পয়স! 
রোজগার করলেই হবে। চাঁকরদের মধ্যে কেহ বোধ হয় 
হিজলীর নৃত্যের অভিজ্ঞতায় সন্দেহ প্রকাঁশ করিয়াছিল; 
শুনিলাম নীলমণি বলিতেছে, শিখিয়ে নোব রে, শিথিয়ে 
নোৌব। ভারী ত গান--“নন্দরাণীর কোলে নন্দছুলাল 
দোলে।” সঙ্গে সঙ্গে হাসির হল্লোড়। 

মনে হইল, নীলমণি নাচের পা”টাও উহাদের দেখাইয়া 
দিল। সন্ধ্যা হইয়া গিয়াছিল, বাগানে অন্ধকারে আর 
থাক! নয় ভাবিয়া! গলার্াকারি দিয়া গোবরাকে ডাকিলাম। 
সব ভালমানুষ ! গোবর! বলিল, আজে) আলো জালছি। 

রাত্রে খাইতে বসিয়! জিজ্ঞাসা করিলাম, কিহে কি ঠিক 
করলে? নীলমণি প্রথমটা জবাব দিলনা । কড়। করিয় 
প্রশ্ন পুনরাবৃত্তি করিলাম। * 

নীলমণি বলিল, আজ্ঞা, আপনি বখন হুকুম করছেন- 
কথাট। সে শেষ করিল না; দরকারও ছিল না। 


৬৪৬৩ 


বলিলাম; বেশ, বেশ । 

নীলমণি আমতা-আমতা করিয়া বলিল, তবে, আজ্ঞা 
সে খামিল। 

আবার কি আজ্ঞ। করছেন ? 

মীলমণি নতমুখে মুচকি হাসিয়া বলিল, পণট। দেড়শ 
হয় না? | 

বলিলাম, তা! হয় ত হতে পারে। কিন্তু বিয়ে করে দেশে 
নিয়ে গিয়ে মেয়েটাকে যত্ব টত্ব করবে ত? না 

“না” টা খুলিয়া বলিতে পারিলাম না। 

নীলমণি জিব কাটিয়া বলিল, সে কি কথা, আজ্ঞা ! 

হিজলী-নৃত্যের কথাটা আমি “গুনি নাই” অন্ততঃ আমি 
শুনি এমন ইচ্ছা তাহাদের ছিল না। কাঁজেই সে কথা 
বলিতে পার! গেল না। তবু যতখানি বলা! যায়, বলিলাম। 

যদি শুনি মেয়েটার যত্র আত্যি হচ্ছে না, জান ত, 
কলকাতার পুলিশ. ম্যাজিষ্ট্রেট নব আমার ছাত্র, ধরে 
তোমায় পুলি-পোলাঁও চালান করে দোঁব। মনে 
থাকে যেন! 

মনে থাকিবে, মুখভাবে ইহাই জানাইয়৷ দিয়া নীলমণি 
প্রস্থান করিপ। গভীর রাত্রে ঘরে মানুষের পদশব্দ গুনিয়া 
বিশ্বিত হইয়া বলিলাম, কে রে? 

আজ্ঞা, আমি নীলমণি। 

কি চাও? 

আজ্ঞা, একটা কথা--- 

কি কথা, চট্‌ু করে বলে ফেলো। 

তবু বলে না দেখিয়৷ জোর একটা ধমক দিলাম । 

আজ্ঞা; পণটা দু'শ হয় না? , 

আমি মহা গরম হইয়া বলিলাম, না হয়না! একি 
ছাগল ভেড়া কেনাবেচা হচ্ছে নাকি ? যাঁওঃ তোমায় বিয়ে 
করতে হবে না, আমি অন্ত লোক দেখছি । 

নীলমণি কাদ কাদ হইয়া বলিল-_আঁজ্ঞ) না, সে কথা 
ত বলছি না-বলিতে বলিতে সে চলিয়া যাইতেছিল, 
বলিলাম, আচ্ছা দেখি, দু'শ টাকাই দেওয়া । 

অন্ধকারেও নীলমণির দস্তশেভ| নিরীক্ষণ করিতে 
লাগিলাম | পুনরায় “বলিলাম, আর নেই করাটা মনে 
গাছে ত? পটলির যদি একটু অয হয়-_ 

নীলমণি হাতে পায়ে পড়ার মত গলার স্বর করিয়। 


1 


ভাব্পাস্ব্য 


[ ২৮শ বর্--২য় থণ্ড---৪র্থ সংখ্য। 


বলিয়! উঠিল, সে কি হুজুর আজ্ঞা, আপনার হুকুম মাঠাকরুণ 
ক'রে রাখবো। তেমন বামুন আমরা নই আজঞ। ! 

আচ্ছা যাও। নীলমণি চলিয়া গেল। 

বেটা কে গে! বলে কি-না মা-ঠাকরুণ করে রাখবে ! 

কাপড়জোড়া দিয়া নীলমণিকে মন্দিরে পাঠাইয়া দিলাম । 
বলিয়া দিলাম; আমি দাঁড়ীটা কামাইয়! পরে আসিতেছি। 
মহাদেবের মন্দির_ শৈলেশ্বর মহাদেব একই কথা-_পূর্ববরাগ 
অনুরাগ একটু হয় ত হোকনা! দোষকি? জগৎসিংহটি 
ভাল; তিলোত্রমার ত কথাই নাই। আমি বিমল” পরে 
আসিলেও চলিবে । একালের নিয়মে না আঁসিলেও চলিতে 
পারে। কাজটা অগ্রসর হউক-ন! ! 

কিন্তু কিছুই হয় নাই। নীলমণি রাস্তায় গোবর নাকি 
মাঁড়াইয়। গিয়াছিল, সিঁড়িতে পা দিবাঁমাত্র পটলি তাহাকে 
ঝট গঙ্গাজল দিয়া সন্বর্দনা করিয়াছে । আমার সঙ্গে পথে 
দেখা, তাহার অন্ধকার মুখ দেখিয়াই বুঝিলাম--সেকালের 
জগতসিংহ ও তিলোন্তদার সঙ্গে একালের অনেক তফাৎ! 

পটলি তখনও সোপান গুণি মার্জনা করিতেছিল, বলিল, 
তোমার ঘাটের মড়া পথ থেকে ঠাকুর কি যে মাড়িয়ে এলো, 
মরণ, চোখ দু'টো আছে কি করতে! ঠাকুরকে তখনও 
দেখা যাইতেছিল, পটলি এক একবার তাহাকে দেখে - আর 
জোরে জোরে ঝ'টা ঘসে। 

পটলি আমাকে পা ধুইবার জল দিল, পা ধুইতে ধুইতে 
বলিলাম, তোমার বাবা কালও আসেন নি বুঝি ? 

পটলির মেজাজটা আজ চড়াপর্দায় বাধা ছিল, বলিল, 
না। মরেছে বোধ হয়। তিন তিনটে দিন তুই যে সদরে 
বসে রইলি ঠাকুরকে উপোসী রেখে, এক বিঘে জমির জন্টে, 
সেই এক বিঘেই থাকবে নাকি? ঠাকুর বুঝি কিছু দেখছেন 
না? বুঝছেন না? কোন্‌ আকেলে তুই রইলি বল্‌ 
দিকিন্‌। 

বুঝিলাম সুর বড় চড়া, বাঙনিম্পত্তি করিলাম না। 
পূজায় বসিলাম। শেষ করিয়! কাপড় জোড়াটা শিবলিগের 
অধোদেশে স্পর্শ করাইয়া উঠিয়া! দাঁড়াইয়া পটলির হাতে 
দিলাম। পটলি একগাল হাসিয়! নতজাচু হইয়া মহাদেবকে 
প্রণাম করিল। আমায় বলিল, একবার বাইরে এসো ত! 
বাহিরে আঙদিলে পটলী যে-ভাবে ঠাকুর প্রণাম করিয়াছিল, 
সেইভাবে আমাকেও প্রণাম করিল। পায়ের ধুলা লইয়৷ 


চৈত্র--১৩৪৭ ] 


জিবে ঠেকাইল। উঠিয়া! স্ৃতজ্ঞ হাপিমুখে কহিল, আমার 
চারবছরের খোরাক হলো, বলিয়া কাপড়জোড়াটা দেখাইল। 

তাহার আনন্দের পরিমাপটা বুঝাইতে পারি, ভাষার 
সে সমৃদ্ধি আমার নাই; তবে অন্নভূতিতে সাধ্যাসাধ্যের 
কোন কথাই নাকি নাই--তাই সেটা হৃদয় দিয়াই অনগভব 
করিলাম। বলিলাম, পটল, তোমার সঙ্গে কথা আছে, 
একটু বসো দ্রিকি। 

পটলি বলিল, আবার পটল। বলিছি না পটল পুরুষ 
মানযের নাম ! বলিয়া সে চাপটালি খাইয়! বসিল। 

আমি বলিলাম, আচ্ছা! আচ্ছা পটলি, আর ভুল হবে না। 
মন দিয়ে শোন-- 

বল-না, আমি শুনছি ত! 

তোমার বিয়ের ঠিক করে ফেলেছি । আজ বুধবার, 
গুক্রবারে ভাল দিন আছে, সেইদিন-__ 

পটলি হাঁসিয়৷ বলিল, দিনও ঠিক হয়েছে? 

বলিলাম, হ্যা সব ঠিক হয়েছে । 

পণ লাগবে ? 

ত৷ কিছু লাগবে বৈকি! 

পটলি গরম হইয়া বলিল, কি তোমায় বুদ্ধি! কে দেবে 
পণ? বাবা পারবে না। গলাটা! একটু নরম করিয়া 
বলিল, কত টাকা পণ? 

শুই । 

পটলি চোখ ছু*টা কাঁণের গোড়া পর্যন্ত বিস্ফারিত 
করিয়া বলিল, দু'শ টাকা! ছু-_শো টা_-আ-_কা! 

ছ্যা গোঃ ছু শো! টাকা । তা” তোমার বাবাকে তার 
জন্তে ভাবতে হবে না। সে হয়ে যাবেখন। বুঝলে? 

পটলি মাথাটাকে বার দুই উপর নীচ করিয়া নাড়িয়া 
হাসিয়া! বলিল, তুমি দেবে বুঝি ! 

তা দিলামই বা! 

পটলি খুব খুসী হইল। একমিনিট চুপ করিয়া লজ্জায় 
নগ্ন) সেটা তাহার ধাতসহ নয়, ত! জানি-_-বলিল, তারা 
আমায় কি দেবে? 

তুমি ফি চাও বলো। 

পটলি একটু ভাবিয়া! বলিল, আমাকে একটি নথ দিতে 
হলো না। 

তা বলবো। কিন্তু নখ তোমাকে মানাবে না । ভারিন্ে? 





হজ্বন্াস 


৪৩৬ 





স্্হ”*স্হ -..স্হা ব- সহ - -. শখ স্ব - সপ্হপব্রলপ হা বড - “ছটা বল স্্ 


মোটা আর গোঁলগাল মুখের ওপর নথ বেশ মানায়। তুমি 
যে ছেলেমান্ুষ ! 

ছেলেমানুষ, না, হাতি !_-এই সেই চিরদিনের পটলি। 

তারচেয়ে সোণার মাকড়ি কিনা চুড়ী__ 

পটলির মুখ হাঁসিতে রঞ্জিত হইয়া উঠিল) বলিল, 
মাকড়ী ত খুব ভালো। মাঁকড়ী পরার আমার ভারি 
ইচ্ছে। তবে মাকড়ী একটা হলে ত হবে না, দু'টো ছ*কাঁণে 
চাই ত! তাতে খরচ অনেক হবে তাই নথের কথা 
বলছিলুম। নথ একটাই ত হয়। 

পটলির গণিতশাস্ত্রে যেরূপ ব্যুৎপত্তি, আমাদের কলেজে 
প্রোফেসরী করিতে পারে! হাসিয়া বলিলাম, ছুটো 
মাঁকড়ীই হবে। 

এইবার পটলি কাঁজের কথা পাড়িল, বলিল--পাত্র 
কোথায় থাকে? মন্তর টন্তর জানে ত? 

বিয়ের মন্তরের কথা বলছো ত? সে ত পুরুতে 
পড়াবে, পটলি। 

পটলি হাসিয়া বলিল, সেই মন্তর আমি বলছি বুঝি ? 

বলিলাম, পাত্তরটিকে তুমি দেখেছ পটলি। 

পটলি মাড়ি বাহির করিয়! বলিল; কবে গো? 

নীলমণিঃ আমার ঠাকুর । দেখনি। 

ওমাঃ ওযে গরু!-_বলিয় পটলি হাসিয়াই গড়াইয় পড়িল ।, 

বলিলাম, হলোই বা গরু! তুমি পাঁচন রাগী 
হেট করে চালাতে পারবে না? 

পটলি বোধ করি মনশ্ক্ষুতে নিরন্তর 
লয়ে যায় মাঠে, দৃশ্াটা দেখিয়া লইল ; বোধ করি বেমানান্‌ 
বা অনঙ্গত মনে হইল' না। হাসিয়া চুপ করিয়া রহিল। 
বুঝিলাম, বর অপছন্দ হয় নাই। অপছন্দ হইবেই বা কেন! 
এ পিঠ আর ওপিঠ বৈ তনয়। পটলির বাব! মহাদেব ষেন 
রাজ-যোটক করিয়াই ছু”টিকে তৈরী করিয়াছেন। 

জিজ্ঞাসা করিলাম, তাহলে পশু ই ঠিক? 

পটলি বলিল, বেশ লোক তৃমি। দীড়াও বাবা চা 
তাকে বলো । 

তুমি বলো-না । 

পটলি প্রবলবেগে মাথা নাড়ি চি মিচ্লে, 
আমার বিয়ের কথা আমি বুঝি বাপকে ব্লতে পারি? 
আমার লজ্জা.করে না বুঝি ূ্‌ | 


৬৬ 


হরি ! হরি! পটলিরও তবে লজ্জা আছে৷ 

পটলি বলিল, আচ্ছা, তুমি ত সেদিন বললে তুমি শীগগির 
চলে যাবে। 

তা যাব। দিন পাঁচেক পরেই যেতে হবে। 
খোলবার সময় হলো। 

তোমার ঠাকুরকে বুঝি রেখে বাবে? সেখানে অন্ত 
ঠাকুর রাখবে? 

বলিলাম, তা কেন? ও বিয়ে ক'রে তোমায় নিয়ে ওর 
বাড়ী যাবে; দিনকতক থেকে আবার আমার কাছে কাজ 
করতে আসবে । আবার কিছুদিন পরে চুটী নিয়ে আবার 
দেশে যাবে। 

পটলি ফ্যাল ফ্যাল করিয়! চাহিয়াছিল, আন্তে আস্তে 
বলিল, ও এথানে থাকবে না? 

না। 

পটলি বলিল, তাহলে বিয়ে হবে না ত। 

আমি বিলম্ময়ে অবাক হইয়] পড়িয়াছিলাম । বলিলাম, 
হবে না কেন? 

আমি বুঝি মন্দির ছেড়ে বাব! বিশ্বনাথকে ছেড়ে যাব 
ভেবেছ! তা আমি যাব নাঃ মরে গেলেও ন1।-_-বলিতে 
বলিতে পটলির চোথে জল আসিয়! পড়িয়াছিল $ পটলি 
নূতন জোড়া কাপড়ের একটা জায়গা! তুলিয়া চোখ মুছিয়া 
ফেলিয়া বলিল--বাবা বিশ্বনাঁথকে ছেড়ে আমি কোথাও 
যাব নাঃকোখায়ও না। 

আমি বলিলাম, তোমার বাব! আছেন, পটলি-_ 

পটলি যেন লাফাইয়া উঠিল; বলিল, থাকলই বা বাঁধা! 
আমি বলে বিশ্বেবরের দাসী-- 

বেশ ত, মাঝে মাঝে আসবে। 

পটলি বলিল, না» নাঃ নাঃ সে হবে নাঃ কিছুতে হবে না। 
আমি বাবার মন্দির ছেড়ে এক পা যাব নাঃ মেরে ফেললেও 
যাবে! না, কেটে ফেললেও যাবে মা। 
” আচ্ছা তোমার বাবা আমুন--- 

পটলি হঠাৎ কীদিয়া ফেলিয়া আমার প! ছু”্টা জড়াইয়। 
ধরিয়। বলিল, তোমার পায়ে পড়ি বাবাকে একথা বলো না 
তোমার পায়ে পড়ি, বলে না। 

 পটলি এক মিনিট ধরিয়৷ আমার মুখের পানে অনিমেষ 
ময়নে চাহিয়া রহিল; তারপর কাকুতি করিয়। বলিল, বাব! 


কলেজ 


ভান্রস্ঞনম্ 


[ ২৮শ বর্ধ--২র খণ্-_৪র্ঘথ সংখ্য! 


ত এমনই দিনরাত “বিদেয় ক'রে দোব»। পুর ক'রে দোব” 
“তোকে তাড়িয়ে তবে জলগ গরণ করবো” করে, তাঁর ওপর 
তোমার মুখে এঁ কথা শুনলে তথ্থুনি বিদেয় করবে তবে 
ছাড়বে । 

বলিলাম, তোমার বাবা তোমায় দিন রাঁত দূর-ছাই ক'রে 
কেন বলো! ত? 

পটলি আমার গলার স্বরে ব্যথা অনুভব করিয়াছিল 
কি-না কে জানে, মাথাটা নীচু করিরা বলিল-_-ওর এ রোগ। 
মাঁকেও অমনি করতো । মা-সতী লক্ষ্মী ভাগ্যিমানি ড্যাং 
ড্যাং ক'রে কেমন চলে গেলো। একদিন ভূগলো না, 
কাউকে কষ্ট দিলে না, ডাক্তার ডাকতে হোল না» যেন পাক। 
আমটি, পাকলে! আর টুপ ক'রে মাটাতে পড়ে গেল । 

আমি নীরবে শুনিতেছিলাম, পটলি এবার করুণ রস 
ছাড়িয়া বীর রসের অবতারণা করিয়া বলিল, রাগ করি কি 
সাধে! বার দৌলতে পেটে খাচ্ছি, কোমরে পরছি সেই 
বাবাকেই ও দিনের মধ্যে দশবার গো-ভাগাঁড়ে ফেলে দিয়ে 
আসতে চায়! ভোলানাথ না হয়ে আর কোনও ঠাকুর 
হোলে কবে মন্দির ছেড়ে চলে যেতো । নিজে মালি মামলা 
করে আজ হেথা; কাল হোথা ক'রে বেড়াবে বাবার পূজো 
হয় না, আমি বলতে গেলেই আমায় বিদেয় করে, বাবাকেও 
_বলিতে বলিতে থামিয়া গিয়া পটলি মহাদেবের উদ্দেশে 
প্রণাম করিল। আমি কোন কথাই বলিতে পারিলাম না। 
কিই বা বলিব? কেই বা বলিতে পারে? 

আমাকে নির্বাক দেখিয়! কাঁদিতে কািতে বলিল- বলো, 
বলবে না! নইলে তোমার পায়ে আমি মাথা মুড় খুণ্ড়ে 


মরবো।-বলিয়াই সে পায়ের কাছে শানের উপর মাথা 


ঠুকিতে সুরু করিয়৷ দিল । 

শশব্যস্তে বলিলাম__ আচ্ছা? বলবো নাঃ তুমি ওঠ। 

পটলি উঠিতে উঠিতে বলিল, ভগবানের রোয়াকে গগাড়িয়ে 
বললে, মনে থাকে যেন! 

এ কথাটা ভাবি নাই। ভাবিয়াছিলাম, এখন ত মাথা 
ছেচা থামাই, তারপর দেখা যাইবে । কিস্ত--সনটা দমিয়া 
গেল ) বলিলাম, পটলি, বিবাহ মানুষমাত্রেরই ধর্ম; তা জান। 

পটলি এতথানি ধর্ম তাহা জানিতাম না। বলিল, 
ঢের মাঁজষ আছে, ধর্ম তারা করুক গে। 

মেয়েটার অন্ত সত্যই বড় ছুঃখ হয়। রোধ করি গটলিকে 


৫55৪৮, ] 


ভাববাসিতে স্বর করিয়াছিলাম । আবার চেষ্টা করিতে 
উদ্ভত হইলাম। বলিলাম, পটলি ভাঁল ক'রে ভেবে দেখ। 
তুমি স্ত্রীলোক আজ তোমার বাবা আছেন-__সংসারে কিছুই 
আটকাচ্ছে না, কিন্ত তিনি বুড়ো হয়েছেন কতদিন আর 
বীচবেন বলো ! তখন তুমি একলা, অসহায় শ্ীলোক-__ 

পটলি হাসিয়া রাঁগিয়! ঝঁণঝাঁইয়া উঠিয়া! বলিল, বাবার 
বাব রয়েছেন না! তুমি ত ভারি মুখ্য! বলিয়া সে 
মন্দিরের ভিতরে চাহিল। বিগ্রহ তাহাকে আশ্বাস দিল না? 
ইহা নিশ্চয় ; কিন্ত সে পরম নিশ্চিন্তমনে বলিল, থাবা থাকতে 
তয়কি! সরো, মন্দির বন্ধ ক'রে বাড়ী যাই। 

পটলি আবার নত হইয়া ঠাকুর প্রণাম করিল; চাঁল 
ক'টিঃসিম ক'খানি আচলে বাঁধিল,নতুন কাঁপড় জোড়া বগলে 
চাঁপিয়া দরজা বন্ধ করিয়া! হাসিমুখে বলিল, সিম খেয়েছিল? 
কাঁল আবার চাটি আনবো ।-_বলিয়। চণিয়! গেল । 

ওদিকের মসজেদটার পানে চাহিয়া! দেখি, বড় 
সমারোহ! আজ শুক্রবার_ জুম্মা । 

তারপর যে কটা দ্দিন ছিলাম, দেখিতাম পিতা পুত্রীতে 
আদিয়। পুজা করিয়া! মন্দির দ্বার বদ্ধ করিয়া চলিয়৷ যায়, 
ব্যতিক্রম হয় না । পটলি আসিবার সময় ও যাইবার কাঁলে 
আমার বাঁসাটার দিকে চাঁয় বটে। কিস্য আমি বুঝি সে 
চাহনিতে আগ্রহের আভাঁষমাত্র নাই । বরং খানিকটা যেন 
ভয়ে ভয়েই এই বাড়ীটার পানে চাহিয়া! পলাইতে গারিলে 
বাঁচে এই ভাব! 

নীলমণি কদিন বা রান্না রাধিলঃ মে আর কি বলিব ! 





সর্থিক 


স্ব” সস হট বি” সহ া-- “সি ২ সু ০০০ স্্ছট ব- সহ ব” 


৪৬২ 





যাহারা ছেলে ঠেঙ্গার, তাহাদের হাতে আর জোর থাকে না, 
তাই নীলমণির পিঠ ও কাঁণ অক্ষত ও অথগ্ডই থাকিতে 
পারিয়াছিল। বেচারার দুঃখটাও ত বুঝি তাই আলুনী 
ঝোলে লবণ সংযোগ করিয়া, জলের গ্লাস হইতে দুধটা দুধের 
বাঁটাতে নিজেই ঢালিয়। লইয়! সে.কণ্টা দিন চালাইয়া দিয়া 
যেদিন “রহমৎপুর” ছাঁড়িলাম, সেই নির্জন মন্দির ও সেই 
বনজনসেবিত মসজেদ তেমণই দীড়াইয়! নিঃশষে আমাদের 
বিদীয় দিল। যেদিন আসিয়াছিলাম, সেদিনও উহাাই 
এমনই নীরবে অভ্যর্থনা করিয়াছিল । 

নীলমণির দুঃখট! বুঝিয়াছিলাম। শুধু অনুমান নয়, 
স্বকর্ণেই কিছু কিছু শ্রবণও করিয়াছিলাম। আমাঁকে বলে 
নাই বটে, তবে এই সকল মূল্যবান কথা গোঁপনও থাকে না। 
নীলমণি চাঁকরমহলে প্রকাশ করিয়াছিল, না-হয় সে-দেশেই 
থাকতুম। বাবুরও শরীরটা ভাল হচ্ছিল, গুরই বা ফিরে 
আসবার দরকারটা কি ছিল? একল! ত মানুষ, কি দরকার 
চাঁকরী করবার, বাবুর যা আছে, তা,তেই সচ্ছন্দে চলে যেতো । 
চাকরর! নীলমণিকে সমর্থন করে নাই ) তাহারা বলে, আরে 
নীলমণি সে-ষে বনবাঁস ! 

নীলমণি ইহার কি উত্তর দিয়াঁছিল শুনিবেন? রামায়ণ 
মহাভারত উজাড় করিয়া এমন সব অকাট্য দৃষ্টান্ত দিয়াছিল 
যে কাহারও মুখ দিয়া! কতকগুল! দীঘনিঃশ্বাস ছাড়া রা শব্দটি 
বাহির হয় নাই । মোদ্দা কথাটি এই যে, রামচন্দ্র সীতাঁদেবীকে 
লইয়া বনবাসেই থাকিতেন; চাকর গোবর] যখন তাহাকে 
দাদ! বলিয়া ডাকে দেবর লক্ষণের পার্টটা সেই প্রে করিত! 








পথিক 


এস্‌, শাম্‌হল্‌ হুদা 

পথিক তুমি যাবে অনেক দূরে যা গিয়াছে, গেছেই যদি তবে 

নীলের ছাওয়া ওই সে তোমার ঘর, আর ফেরা যে তোমার সাজে না রে। 
পথ তোমারে ডাকে করুণ সরে দিনের আলো নিভায় যদি রাতি 

সামনে জাগে ধূসর বালুচর । একলা তোমার চলার পথে হায়; 
ক্লাস্ত চরণ চালিয়ে নিয়ে শুধু কেউ-বা যদি নাহি দেখায় বাঁতি__ 

সামনে চল, এগিয়ে চলার সুখে, নাইবা ডাকে শশ্রাস্ত ওরে আয় ।» 
থাক্‌ না পথে ভীষণ মরুর ধূংধ সাহস ভরে চল কোন মতে * 

নাই যদি কেউ কাদে তোমার দুখে । আধার করে বিজন পথের সাথী; 
মনে পড়ে বের হয়েছ কবে শুকৃতারাটি গগন-সীম| হতে * 

এ-দুনিয়ার পান্থশীলাঁর ছারে ? ওই যে তোমায় দেখায় আশার বাতি ! 


প্রাপ্তবয়স্কের শিক্ষা 
রীক্ষিতীশচন্দ্র কুশারী বি-এ, বি-টি 


ঘাজাল! দেশে বযন্ষ-নিরক্ষরের সংখ্যা হিসাব করিয়া! লাভ নাই। যে 
দেশের পাচ কোটা লোকের মধ্যে শতকর! ৮ জন মাত্র লিখিতে 
পড়িতে পায়ে সে দেশের অগণ্য নিরক্ষর জনসাধারণের হিসাব অঙ্ক 
কবিয়! বাছির না করিলেও এমন বিশেষ কিছু আসিয়! যায়না । অথচ 
আশ্চর্যের বিষয় এই যে আমর! ইহাদের কথা বড় বেশী ভাবিনা, 
ভাবিয়া দেখিন! এই বিরাট বিপুল মুক জনদাধারণ জাতীয় উন্নতিকে 
কি ভাবে ব্যাহত করিতেছে, জগদ্দল পাথরের মত জাতির বুকে কি 
ভাবে চাপিয়! পড়িরা আছে। 

ইয়ত বাঙ্গাল! দেশের তথা ভারতবর্ষের ইহাই নিয়ম। এই সনাতন 
দেশে শিক্ষার ধারাই ত দনাতন নিয়মেই চলিয়। আদিতেছে। বৌদ্ধ- 
বুগের পৃর্ধে বোধ হয় কোন কালেই জনস।ধারণের মধ্যে শিক্ষ! প্রচলিত 
ছিল না। শ্রেণী বিশেষের মাত্র শিক্ষায় অধিকার ছিল। মনুনংহিতার 
ইহার কিছু কিছু আভাব আছে এবং অনধিকারীর1 যদি বেদ পড়ে 
অথব! শিক্ষার চেষ্ট1! করে তাহা হইলে তাহাদের জন্ যে শান্তির বিধান 
ছিল সে শান্তির রূপ বর্তমান বুগের পিনাল কোড কল্পনাও করিতে 
পারে নাই। কাণে তপ্ত সীসা ঢালিয়া দেওয়া হইত অনধিকারীর 
অনধিকার চর্চার জগ্য--তাহার পশ্চা্দেশে তপ্ত লোহার শল৷ বিদ্ধ করিয়া 
দিবার ব্যবস্থ। পর্যন্ত ছিল। বৌদ্ধ যুগে ইহার প্রতিকারের চেষ্টা 
হইয়াছিল। কিন্তু তাস্ত্রিকতার বীভৎসতার মধ্যে বৌদ্ধ ধর্ম ডূবিয়া 
গেল, জনসাধারণের শিক্ষার প্রন/র ও সঙ্গে সঙ্গে প্রতিহত হইল। 
তাঙথার পর অনেকদিন চলিয়া গেল, কত রাজা গেল, রাজত্ব গেল, 
জনসাধারণের শিক্ষার কথ! আর উঠিল না। 

ইংরাজ রাজত্ব আরম্ভ হইল। সাধারণের শিক্ষার কথাও উঠিল। 
কিন্ত অলস নিক্কিয় জাতির সনাতন মন তাহাতে সায় দিলনা । তাহার 
ফল হইল এই--যাহারা নৃতন শিক্ষায় শিক্ষিত হইল তাহাদের সঙ্গে 


জশিক্ষিতদের বিভেদ ক্রমশঃ বাড়িয়াই চলিল। এই কৃত্রিম বিভেদের, 


কুফল, সমাজের দিক দিয়া, অর্থনীতির দিক দিয়া এবং রাজনীতির দিক 
দিয়! আমর। এখন বেশ বুঝিতেছি। ফরাসী-বিপ্লবের কিংব| রুষিয়ার 
নববিধানের মূলে শিক্ষিত ও অশিক্ষিতের এই কৃত্রিম বিতাগ মন্ত্রে 
মত কাজ করিয়াছিল। 

আমাদের দেশে নান! দিক দিয়! পরিবর্তন হুয় হইয়াছে । »মাজ 
ভাঙ্গিয়! গিয়াছে, শ্রেণীগত বৃত্তি লোপ পাইয়াছে, কুটারশ্কি আর নাই। 
বর্তমান যুগ বস্ত্রের ধুগ, গতির যুগ । এই যাত্ত্রিক সভ্যতার সঙ্গে, এই 
গতির সঙ্গে জনসাধারণ আর যোগ রাখিতে পারিতেছে না, তাই নানা 
সমন্ত| ও বিয়োধ দিনের 'পর দিন দেখা দিতেছে। শাসন ক্রমশঃ 
গণ্তান্তিক হুইতেছে,লোকের তে!টাধিকার ক্রমশঃ প্রমারিত হইতেছে-_ 


অথচ জনদাধারণ এই নূতন আবেষ্টনের মধ্যে জাগনাদিগকে ঠিক খাপ 
খাওয়াইতে পারিতেছেনা। ইহার প্রধান কারণ নিরক্ষর়ৎ।, 
ভোটাধিকারের নঙ্গে শিক্ষার একট! গভীর যোগ আছে। নিরক্ষরদের 
প্রজার দায়িত্ব সম্বন্ধে সম্যক জ্ঞান নাই। ইহার ফলে জাতির সর্বববিধ 
দুর্গতিরও শেষ নাই। 

সখের বিষয় দেশের লেক এখন নিরক্ষরদের শিক্ষ! সম্বপ্ধে ভাবিতে 
আরম্ভ করিয়াছে এবং গবর্ণমেন্টও এ সমস্তা! সমাধানের জনক আলোচন! 


করিতেছেন। 
ইহা! ভালই। সমন্তকার আলোচন।রও হুফল আছে--ইহাতে 
সমাধানের পথ কতকটা সুগম হয়। 


বযন্কদের শিক্ষার কথ! উঠিঞ্লেই মনে একটা বিচিত্রতাব আসে-_ 
নিরক্ষর যুবক প্রৌচি ও বৃদ্ধ ছাত্রহিসাবে লোভনীয় নহে, ইহাদের 
জনতাও তশোতন। কিন্তু লোভন ও শোভন লইয়াই কথা নহে, 
ভাবিতে হইবে প্রয়োজন এবং এই প্রয়োজনের উদোগ্ত । 

প্রয়োঞ্জনের কথা আগেই বলিয়াছি। 

ডেনমার্কে বয়ন্বদের শিক্ষার জন্ত অনেক বিদ্কালয় আছে। এখানে 
নাধারণভাবে লেখা পড়া শিখান হয়, স্বাস্থ্য ও কৃষির সম্বন্ধে জান দান 
কর| হয় এবং বরম্কদিগকে তাহাদের পৌরদারিতব সম্বন্ধে সজাগ করিয়া 
তুলিবার চেষ্টা কর হয়। এইখানেই শিক্ষার শেব নছে। কাজের 
অবসরে কি তাবে সকলকে গ্রামের সঙ্গে জড়িত করিয়া রাখিতে হইবে, 
কি ভাবে নিজেদের পল্লীকে সুন্দর ও শোতন করিতে হইবে, সমাজের 
সংহতি দৃঢ় করিতে হইবে, শ্রমের মর্ধয।দা বাড়াইয়। জাধিক সমন্তা দূর 
করিতে হইবে এবং সর্বোপরি ভগবানে বিশ্বাস রাখিতে হইবে--তাহাও 
শিক্ষা দেওয়া হয়। 

ডেনমার্কের মত স্বাধীন দেশে যাহা! সম্ভব হইয়াছে হয়ত এদেশে 
তাহ! সম্ভবপর হইবেন! । কিন্তু আদর্শ অনুসরণ করিতে দোষ নাই। 

এখানে একটা কথ! স্পষ্ট করিয়া বলা! ভাল। শুধু বয়স্কদের লেখা- 
পড় শিখানোই এই আন্দোলনের উদ্দেস্ঠ হওয়া উচিত নছে। রেখা- 
পড়! শিখানোর 'সঙ্গে সঙ্গে এই সব ছাত্রকে মোটামুটীভাবে শিক্ষা 
দিতে হুইবে--পল্লী, স্বাস্থা ও গান স্থাস্থাবিজঞান, আয়বায়ের নীতি, 
কি ভাবে কৃবির উন্নতি করা য।য়, কি ভাবে জমিতে সার দেওয়া! উচিত, 
গবাদি পশুর পালন ও রক্ষণ--লাজল ও অল্লান্ত কৃবিসন্বন্কীয় যন্ত্রপাতির 
নির্দাণ ও উন্নতি, কৃষিজাত ভ্রযোর সহজ বিঞ্রয় বাবস্থা, গ্রামের রাজস্ব 
নীতি, মহাজনের ধার দিবার পদ্ধতি ও সমবায় নীতি । সমাজের 
দিক হইতে ইহাদিগকে লজ্ঞান করিয়া! তুলিতে হইযে--নিজের সঙ্গ 
গ্রাসবাসীদের সম্পর্ক, গ্রামের আপদে বিপদে উৎসবে য্ালমে পরম্পরের 


৪৬৪ 


চৈত্র--১৩৪৭ ] 


দারিত, ধণদান সমিতি অখবা সমবার সমিতির সঙ্গে নিজের সম্পর্ক। 
ইহা! ছাড়া এই সব ছাত্রদ্িগকে জানিতে হইবে, গ্রামের যানবাহনের 
কথা, নদীর কথা, পোষ্টাফিসের কার্্যপন্ধতি, যাতায়াতের রাস্তার 
কথা। সামাঞ্জিক দিক দিয়! তাহাদের আরও জানিতে হইবে 
সামাজিক দৌধক্রটি _অল্প বয়সের বিবাহের কুফল, জাতিভেদ প্রথার দোষ, 
নত্রীজাতির বর্তমান দুরবস্থা ও উচ্চনীচ ভেদাভেদের বিষমল্ন ফল। 

মোটের উপর ইহাদের শিক্ষা হইবে আনন্দের ভিতর দিয়! । 
বাঙ্গালী জাতির জীবনে আজকাল আনন্দের স্থান নাই-_বয়ক্ষের 
শিক্ষার মধ্য দিয়! এই আনন্দকে আবার ফিরাইয়| আনিতে হইবে। 
তাহাদিগকে শিক্ষা দিতে হইবে কি ভাবে আনন্দে অবসর সময় 
কাটানো যায়--গানে, গল্পে, কথাবার্তায় কি ভাবে জীবনকে ভোগ 
কর| যায়। যি এই আনন্দের মাধূর্ধযা বয়স্কদের শিক্ষার মধ্যে 
বহাইয়! দেওয়! যায় তাহ! হইলেই ইহাদের শিক্ষ! হইবে সার্থক এবং শিক্ষার 
আনন্দ তাহাদের কর্্মজীবনকে মধুময় ও সুন্দর করিয়! তুলিবে। 

কিন্ত বয়ন্কদের শিক্ষার গোড়ার কথা ভুলিলে চলিবে ন|। 
নিরক্ষরতা দূর করাই এই আন্দোলনের মুখ্য উদ্দোষ্ত। প্রথমেই কথ 
উঠিতে পারে--ঘে বয়সে এই সব ছাত্র বিষ্ত/লয়ে আমিবে, তাহার! সত্যই 
কিছু শিখিতে পারিবে কি না? অর্থৎ তাহাদের শিক্ষাগ্রহণের 
ক্ষমত। আছে কিনা? হয়ত এই সম্বন্ধে বৈজ্ঞানিক গবেষণা হইয়াছে 
এবং হইতেছে | বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফল যাহাই হউক একথা! স্বীকার্ধ্য 
যে মানুষের মন নামক পদার্থ টা! জীবন্ত; ইহার গ্রহণ করিবার শক্তি 
অফুরস্ত, বাহিরের সংঘাতে ইহ! চির-চঞ্চল। হয়ত অল্পবয়স্ক বালকগণের 
মনের দ্রতগতি বয়ন্কদের নাই, কিন্তু বয়স্বদের মনের শিক্ষাগ্রহণের 
শক্তি আছে ইহ! বৈজ্ঞানিকগণও স্বীকার করিয়াছেন । 

আমি আগেই বলিয়াছি, বয়ন্করা সাধারণ ছাত্র নহে--ইহার! 
অসাধারণ । হ্থতরাং ইহাদের শিক্ষাব্যবস্থাও নুতন রকম হওয়! 
উচিত। সময় যত কম 'লাগে ততই ভাল, এক বৎনরের মধ্যেই পাঠ/- 
তালিকা শেষ করা বিধেয়। 

ক,খকিংবা অ,আ হইতে বয়স্কদের শিক্ষ/ আরম্ভ করিলে চলিবে 
না। বর্ণশিক্ষার মধ কোন আনন্দ নাই, শবশিক্ষার মধ্যে আনন্দ 
আছে। বদি সেই বর্ণের সঙ্গে চিত্র থাকে তবে ত সোনায় সোহাগ! । 
এই বযন্বদের শিক্ষাক্ষেত্রে চিত্র অথব! চার্টের একট! বিশেষ উপযোগিতা! 
আছে। বোর্ডে চিল লিখিয়া যদি চিলের চিঞ্রটি আকিয়া রাখা যায়, 
তাহ। হইলে শিক্ষার্থীর মনের সঙ্গে শব্ধ ও চিত্রের একট! অদৃষ্ঠ যোগাযোগ 
ঘটিয়া ঘা এবং শব্দটা মনে না খাকিলেও চিত্র দেখিয়া তাহা সহজেই 
মনে পড়ে । এইভাবে সাধারণ ও প্রচলিত শব্দ পড়া শিখানে! চলিতে 
পারে এবং আবগ্তক মত শব বিশ্লেষণ করিয়। বর্ণজ্ঞান দেওয়াও সম্ভব 
হয়। বুদ্ধিমান শিক্ষক বিভিন্ন শব্ধ দ্বারা বিচিত্র কবিতাও রচনা 
করিতে পারেন এবং ছাত্রগণ উর কবিত] ছ্বার। শবাগুলি নহজেই মনে 
রাখিতে পায়ে। 

সহরে দোকামে দোকানে বিজ্ঞাপনের ছড়াছড়ি, দেওয়ালে 

৫৯ 


৮ স্ক্চান্গ্প্স্্া্থিপশাস্যপাাল্পা্স্যগ্থাগ ব্যাগ স্পস্ট স্হান _বআগ্্্পা্ব্হ্া্প -্হাা্ছ স্হান স্হান হা 


৪৬৬ 





দেওয়ালে বিজ্ঞাপন, রাস্তায় রাস্তায় রাস্তার নাম লেখা-_-সহরের ছেলের 
ইহ! হইতে নিজের অজ্ঞ/তেই কতকট! শবজ্ঞান আয়ত্ব করিয়া লয়। 
বয়স্কদের শিক্ষাগৃহে বদি সহজ এবং অতি সাধারণ প্রবাদ বাকা, ধর্ম- 
শাস্ত্রের সহজ সরণ কথা, সরল নীতিকথ। প্রসূতি বিজ্ঞাপনের মত বড় 
বড় অক্ষরে লেখ! থাকে তাহা হইলে ইহা দ্বার! অতি নুকৌশলে পড়া 
শিখানে। যায়। বিভিন্ন লেখাগুলি ক্রমাগত কয়েকদিন শিক্ষার্থীকে 
পড়িয়। দেওয়! হইল । তার পর শিক্ষক মহাশয় ছাত্রদিগকে বলিবেন 
-_ অমুক লেখাটি কোথায় দেখাও দেখি । ইহার ফল হইবে এই 
»_ম্বতঃই শিক্ষার্থীর মন উহাতে আকৃষ্ট হইবে এবং তাহাদের মনে পড়ার 
জন্য একটা একান্ত আগ্রহ সৃষ্টি হইবে। 

মোট কথ! এই বয়স্ক শিক্ষার্থীদের এমন একটা মানসিক অবস্থা নষ্ট 
করিতে হইবে যে যেন তাহারা! এই শিক্ষা ব্যাপারটাকে খুব সহজ বলিয়! 
মানি লয়। বাহিরের কৃত্রিম যন্ত্র সাহায্যে শিক্ষাদান ক্ষেত্রে বড় বেশী- 
দূর অগ্রসর হওয়া যায় না। ইহার ক্ষেত্র সীমাবদ্ধ। হন্ত্রগুলি হইবে 
গোৌঁণ এবং ইহাদ্দিগকে কেন্দ্র করিয়া শিক্ষার্থীর মনে শিখিবার আগ্রন্থ 
জন্মাইতে হইবে। 

বয়স্কদের পড়িতে শিখাইতে যতট! বেগ পাইতে হইবে, লেখ! 
শিখাইতে ততটা পরিশ্রম হইবে না। ইহার প্রধান কারণ ইহাদের 
হাতের আঙ্গুলের গতি সংযত। ছোট ছেলেদের আঙ্গুলের মত অস্থির 
নহে। ইহাদের মধ্যে অনেকেই কারিকর, তাতী, অস্কনপটু ইত্যাদি 
থাকিবে । সুতরাং যদি তাহাদের মনের মধ্যে শব্দের ছবিটা থাকে তাহা! 
হইলে অতি সহজেই কলমের ডগায় তাহার চিত্ররূপ ফুটিয়া উঠিবে। 

এই ত গেল শিক্ষার কখা। কিন্তু শিক্ষক কাহার হইবেন? 
আমি অর্থসমন্তার কথা মোটেই তুলিতেছি না। এক একটি স্কুল 
চালাইতে হইলে যে থুব বেশী অর্থের প্রয়োজন তাহা নহে। যোধ হয় 
বাৎসরিক ১**২ টাকা হইলেই একটি স্কুল চলিয়া যাইতে পারে। 
আরও কম খরচে হয়। বিনা খরচেও হয়। চীনদেশে হইতেছে, 
রুষিয়ায় হইতেছে, স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীর! অবসর সময়ে জাতীরতার 
দিক হইতে এই জন-কল্যাণের কাজ করিতেছে । আমাদের দেশে 
আমাদের ছাত্ররা হয়ত এই সব কাজ এক দিন করিবে, হয়ত একটু 
বিলম্ব আছে। এখন এ কাধ্যের ভার প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক্দিগকেই 
গ্রহণ করিতে হইবে, সামান্ত কিছু অতিরিক্ত পারিশুমিকের বিনিময়ে । 
প্রথম প্রথম তাহার! একটু বেগ পাইবেন, একটু বেশী পরিশ্রম হইবে 
--তিন মাদ পরেই এই পরিশ্রমের কিক্িৎ লাঘব হইবে। কারণ 
বযন্বছাত্রেরাই তাহাদিগকে ক্রমশঃ সাহাষ) করিবে। ছাত্রের শিক্ষক 
মহাশয়কে সাহাধ্য করিয়া আত্মপ্রসাদ লাত করিবে-_আত্মনির্ভর 
হইবে, তাহাদের নিজের উপর বিশ্বান আমিষে। শিক্ষার্থীরা যদি 
প্রত্যেকে মাসিক এক পরস! কিংবা ছু' পয়স! “করিয়া দেয় তাহা! হইলেই 


শিক্ষক মহাশগ্জের পারিশ্রমিক পাওয়া স্থন্ধে বিশেষ চিন্তা করিতে হইবে 


না। স্থানীয় ইউনিয়ন বোর্ড ইচ্ছা করিলেও কিছু সাহাধ্য করিতে পায়ে 
এবং সাহাধ্য কর! উচিত। 


৪৬৬ 


বিদ্ভালয় গৃহ সম্বন্ধে ভাবিবার আবগ্তক নাই। স্থানীয় ক্লাবঘর, 
লাইব্রেরী, মঙ্গির বা মজিদের উঠান, আখড়া_-নিতাপ্ত পক্ষে পাঠশালা- 
গৃহই হইবে শিক্ষা মন্দির । সাধারণতঃ কাজকর্থের অবসরে এই 
বিভ্ভালয়ের কার্ণ্য হইবে এবং নাচ গান আনন্দের ফাকে ফাকে, বিড়ি, 
সিগারেট ও হকার ধুয়ায় ধু'য়ায় পাঠদান কার্ধ্য চলিবে। বয়ন্থদের 
শিক্ষাদানকালে শিক্ষক মহাশয়ের পৃথক অস্তিত্ব থাকিবে না । ছাত্রদের 
সঙ্গে ভাহাকে সমান ভাবে মিশিয়] যাইতে হইবে । 

এখানে আর একটা কথ! মনে রাখা আবগ্তক। এক বৎসর পরে 
বয়ন্কর!। বিদ্ভালয় পরিত্যাগ করিবে। চচ্চার অভাবে হয়ত তাহার! 
তাহাদের অধীত বিদ্তা ভুলিয়া যাইবে। এই অবস্থার প্রতিকারেদ জন্য 
প্রতি ইউনিরনে ছোট-থাট সাধারণ গোছের গ্রন্থাগার থাক] উচিত এবং 
যাহাতে এই গ্রন্থাগারের গ্রস্থের সঙ্গে এই বয়ন্কদের যে।গ থাকে তাহার 
ব্যবস্থা না করিলে সমন্ত পরিশ্রমই পণ্ড হইবে। গ্রামের বড়লোকন্দের 
সাহাযো ইউনিয়ন বোর্ড অতি সহজেই এই গ্রন্থাগার স্থাপন করিতে 
পারিবে ও পরিচালন করিতে পারে। 

স্থানীয় ইউনিয়ন কোর্ড বয়স্কদের শিক্ষ।সমস্তার সমাধানের যথেষ্ট 
সহায়ত। করিতে পারে। ইউনিয়ন বোড ভিন্ন পল্লী উন্নয়ন সমিতি, 
সমবায় সমিতি এবং স্থানীয় দাতব্য প্রতিষ্ঠ।নসমূহও বয়ন্ষদেয় শিক্ষা 
আন্দোলনে যোগ দিয়! ইহাকে সার্থক করিয়া তুলিতে পারে। 


1 ২৮শ বর্ধ--২য় থণ্ড--এর্থ সংখা 


এই শিক্ষা মমন্যার আর একটা! দিক আঙ্ছে, যাহা সহজেই লোকের 
চোখ এড়াইয় যায়। বয়ন্থদের শিক্ষার প্রতি কি ভাবে তাহাদের আশ্রহ 
জন্মাইতে হইবে তাহার কিঞিৎ আলোচনা করিয়াছি; কিন্তু তাহার! খুব 
সহজে বিস্তালয়ে যাইবেন। এ জন্ত কিছু কিছু প্রচার কার্ধ্য অবস্থা 
আবন্তক ; তবে শুধু প্রচারেই কিছু হইবে না। অন্য ভাবে চাপ দিতে 
হইবে। যদি সমবার সমিতি নিয়ম করে টিপসহি দেওয়! লোককে ধণ 
দেওয়া হইবে ন|, খণ দান সমিতির সভ্য কর! হইবে না; ইউনিয়ন বোর্ড 
যদি বলে নিরক্ষর চৌকিদার দফাদার পিয়ন প্রস্তুতি করতে গ্রহণ করা 
হইবে না, যাহাদের চাকর ও মুনিষ রাখিবার নঙ্গতি আছে তাহার! যাঁদ 
নিরক্ষর লৌক কর্মে নিযুক্ত না করে-_তাহ| হইলে সম্ভবতঃ এই নিরঙ্গর 
বয়স্বর! শিক্ষার প্রতি একটু আগ্রহশীল হইবে। এতস্তিম্ন আরও নানা 
উপায় আছে, তাহ! অনেকেই জানেন, বাহুল্য ভয়ে তাহার উল্লেখ 
নিষ্রয়োজন। 

যদি এই বয়ক্ষদের শিক্ষার কোন ব্যবস্থা! না করিতে পার! যায়, 
তবে দেশের শিক্ষার সব্বাঙ্গীণ উন্নতি সম্ভব হইবে না; যেখানে গ।চ 
অন্ধকার যোজন ব্যাপিয়! রহিয়াছে ছুই একটা প্রদীপের শিখা সেখানে 
কত আলে! যোগাইবে? দশের উন্নতির জন্য, দেশের উম্মতির জগ্য, 
জাতির উন্নতির জন্য, রাষ্ট্রের উন্নতির জন্য মকলকেএই আন্দোলনে 
মনে-প্রাণে যোগ দিতে হইবে। 


যাত্রী 


শ্রীঅশ্বিনীকুমার পাল এম-এ 
অসীম তিমির যাত্রি, তৃষ্ণতুর এই দুটি অন্ধকার চোখে নাই আলোকের লেশ; 
আমরা পথের ধাত্রী। তমসা অশেষ, 
যেতে হবে দূরে বহু দুরে ঘনাইছে হিয়ায় চিয়ায়। 
গিরি নদী বন ঘুরে ঘুরে শিহরায় 
অন্ধকার দাঁড়াইয়। দুয়ার সম্মুখে । মরু মরীচিকা ওই চারিদিক থেকে, 
মৌন অধোণুখে | সর্ব অঙ্গে ক্ষত চিহ্ন এঁকে । 
ওগো আর কত দুর ! 
যেকান্নার স্থর 
ঝরে পড়ে দিগন্তের অন্তরাল হতে, 
মেঘে ঢাকা অন্ধকার পথে। 
আকাঁশ ভূধর তাই করিছে ক্রন্দন, 
ছি'ড়িতে বন্ধন । 


দিকে দিকে উঠিতেছে ধ্বনি--আর কতদূর ? 
যাতী আমি চলিতে হইবে পথ দুর_বহু দুর। 


রাজবল্পভের গয়ায় ভূমিদান ও তৎকালীন দলিল-পত্র 


স্রীযোগেন্দ্রনাথ গুপ্ড 


বাঙ্গালাদেশের ইতিহা'সান্রাগী ব্যক্তিমাত্রই রাঁজনগরের 
মহারাজা রাজবল্পভের নামের সহিত পরিচিত আঁছেন। 
তাহার সম্বন্ধে বাঙ্গালা সাহিত্যে কয়েকখানি প্রামাণিক 
গ্রন্থও আছে। “বিক্রমপুরের ইতিহাস-এর প্রথম সংস্করণে 
(১৩১৬ সাল ) আমি রাজবল্পভের জীবনী সম্বন্ধে আলোচনা 
করিয়াছিলাম | সম্প্রতি আমার লিখিত “বিক্রমপুরের ইতিহাস, 
দ্বিতীয় সংস্করণ-_প্রথমথণ্ড প্রকাশিত হইয়াছে । দ্বিতীয়খণ্ডও 
মুদ্রিত হইতেছে। তাহাতে রাজবল্লভ সম্পর্কে বিস্তারিত 
আলোচনা করিয়াছি । এখানে প্রসঙ্গত তাহার একটি 
নান সম্পকিত দলিলপত্র লইয়া! অলোঁচনা করিব | উহা হইতে 
সেকালের অর্থাৎ অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষভাগের জমিদারগণের 
বিচাব্রপদ্ধতি, সেকালের দলিল-দন্তাবেজ ও বাঙ্গীলাভাঁষার 
আদর্শ সম্বন্ধে একটা ধারণ। জন্মিবে। 
মহারাজা রাজবল্লভ গয়াতে পিতৃকার্ধ্য করিতে গিয়া 


শতুনাথ কোঠি গয়ালীকে বিষুগ্রতি উৎসর্গ করিয়া মৃল্যবান্‌ 
ভূসম্পত্তি দান করেন। উত্তর বিক্রমপুরের মাল্জ্রাগ্রাম 
সেই সম্পত্তির অন্তভূতি থাকায় & গ্রাম গয়ালি-মান্দ্া নামে 
পরিচিত হইয়া আসিতেছে। রাঁজবল্লভ গয়ার পাডাঠাকুরকে 
৯২৩/ বিঘা ভূমি দান করেন? এ দান ১১৬৫ সালে 
অর্থাৎ ইংরেজী ১৭৫৮ খুষ্টান্দে সম্পন্ন হয়-_ঠিক পলাশি 
যুদ্ধের এক 'বৎসর পর। তদবধি গয়ালি পাগাঠাকুর ও 
তাহার ব্শধরেরা তদীয় যজমান রাজবল্লভের প্রদত্ত ভূসম্পন্ি 
ভোগদখল করিতে থাকেন; কিন্তু তাহাদের পক্ষে গয়া 
হইতে সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ণ কর! সম্ভবপর ছিল না বলিয়া 
তাহার! সম্পত্তি রক্ষার ভার বা তাহাদের প্রতিনিধিরূপে 
তদ্দির করিবার ও আদাঁয়-ওয়াসিলের ভার একজন 
তহসীলদারের উপর সমর্পণ করেন। 

আমরা শ্রীশিবশঙ্কর বিশ্বাস নামক এক ব্যক্তির বরাবরে 


তে জানি সটান না এও 


এ 1 
স্পা রি . 25 সি পে জে সি চিনি 


৮৭ ৮ পা শখ 


৮ ২ ৯০০ ৬ সতত নক ০ 


৪ ০১ ৯:৯২ এপ ১ ৯৯ ছি মিন 


ূ ্ | চর | ঃ ঠ দি 4৫ 
১৮৯৫৬ ৬৫৯৯১: "5. এগ. 
্ না 

৯ পিল, 


কবর 


এ 





বাঁ * 218 
| ৯ এ সত ২ - পর 3. 2 
বা নং জা 


১১৯৭ সালের দলিলের শেষাংশ 
৪৬৭ 


৪ ৬ 


ধরূপ ছুইখানি তহসীলদার নিয়োগপত্র পাইতেছি। 
উহার একথাঁনার তারিখ ১২৩৯-২২ বৈশাখ। আর 
একখানার ১২৩...পরের অক্কটির স্থান পোকায় কাটিয়া 
নষ্ট করিয়! ফেলিয়াছে; কাজেই অন্কটি বুঝা! গেল না, 
সম্ভবত ১২৩৮ হইবে। তারিখ ২৫ চৈত্র। এই দলিল 
ছুইথাঁনি ১০৮ বৎসরের পুরানো । ইহ! দ্বারা বুঝা যাইতেছে 
যে শল্গুনাথ কোঠি গয়ালির বংশধরগণের মধ্যে ভাগ- 
বাটোয়ারা হওয়ার দরুণই 'রহগত্রপ্রাপ্ত ভূমির অংশীদারগণ 
স্বতস্ত্রভাবে শ্রশিবশঙ্কর বিশ্বাসকে তহসীলদার নিযুক্ত 
করিয়াছিলেন। আমরা এখানে দলিল দুইথাঁনির পাঠ 
প্রদান করিলাম । মহারাজা রাজবল্পভ ১১৬৫ সালে 
শত্তুনাথ কোঠি গয়ালিকে বিষুগ্রীত্যর্থে বরহ্বত্র দান করেন। 
আর গ্রীশিবশঙ্কর বিশ্বাসকে তহসীলদার নিযুক্ত করিলেন 
তাহার পরবর্তী বংশধরেরা ১২৩৯ সালে অর্থাৎ ৭৪ 
বৎসর পরে। 

১২৩৯ সালের ২২শে বৈশাখের দলিলখানির ও ১২৩-*" 
২৫শে চৈত্র তারিখের দলিলের পাঠ নিয়ে লিখিত হইল। 


প্ীশ্রীতৃর্গাসহায় 


্রীদিবশঙ্কর বিশ্বাধ যু চরিতেযু আগে 

আমার ব্রন্গত্র প্রাপ্ত তালুক পরগণে রাজনগর-_ঢাঁকা 
মুরপুর কিসমত মান্দর৷ দত্ত মহারাজা রাজবল্লভ বনামে 
সম্ভুনাথ গয়ালি উপর লিখা জাঁএ উক্ত কিসমত মজকুরের 
তহঙীলদারি কর্মে তুমি নিযুক্ত আছ এই কিলমতের খাজনা 
উুল তহণীল করিয়া! মবলগ ৪৮১২ চাইরশ একাশী টাকা 
আমার সরকারে আদাএ করিবা এহার পর জাহা বিক্রী স্থপ্ 
তাহা তুমি পাইবা আমার দাবী নাহী তোমার পাটারী 
মাহিআন। জন্ী তিনকানী আর নগদ ৩৬২ ছত্রীশ টাকা 
পাইবা আর বাঁজে জমা রাজধুতি গয়রহ জাহা হত্র তাহার 
অদ্দেক সরকারে দাখিল করিবা অর্দেক তুমি নিবা ইতি 
সন ১৩২৯-তারিখ-২২ বৈশাখ । 


এই দলিলে স্বাক্ষর করিয়াছেন- শ্রীমতী দুর্গাগয়ালিন 
দেব্যা জওজে মৃত হুকুম্াদ কুঠি গয়ালি ঠাকুর সাং গয়াধাম 
মহল্লা নাওয়াগারি। নাম স্বাঞ্গজর রহিয়াছে দলিলের 
উপরে ভান দিকে । 


স্ডাক্সভ্বর্ধ 


[২৮শ বধ--২য় খণ্ড ৬৭ সংখ্যা 
দ্বিতীয়থানির অনুলিপি এইরূপ £ 


শ্রীসিবশঙ্কর বিশ্বাষ মোহরের যুচরিতেযু আগে 


আমার ব্রঙ্গত্র জমি পরগণে রা.'র (রাজনগর ) “রা”-র 
পরের অক্ষর তিনটি ছিন্ন। চাঁকলে হুরপুর কিসমত মান্দর! 
বনামে শভভুনাথ গয়ালী ঠাকুর লিখ! জাত্র এই কিসমত 
মজকুরে তোমাকে উত্ুল তহণীল কাঁরণ চাকর মকরর আছ 
তুমি হামেশা গ্রাম মজকুরে হাঁজীর থাঁকিবা-জথন জে 
কার্য্যকর্ম হয় তাহা করিবা এবং খাজান! গয়রহ ওশুল 
তহশীল করিয়া থাজান! আমার নিকট হৃণ্তী করিয়া পাঠাইব! 
হাওলাঁদারি পাট আমার বিনা এতলায় কেহকে দিবা 
না_তে।মার মাহীনা বৎসর ময়..-খোরাক ৪২২ বেয়ালীষ 
টাকা সীক্কা পাইবা এবং পাটোয়াঁরি মাহিনাঁয় জে জমি 
আছে তাহা ভোগ করিয়া মামলী খরচ জে২ আছে 
করিব গরহাজীর থাকীয়া কর্মের লোকসান কর মাহীন! 
বাজেয়াপ্ত বাঁজে দফা জেতক হয় তাহার অর্দেক তুমি পাইব! 
অর্দেক সরকারে দাখিল করিব! ইতি সন ১২৩." (ছিবাংশ) 
তারিখ--২৫শে চৈত্র । এইখানিও শ্রীমতী ছুর্গা গয়ালীন 
স্বাক্ষরিত এবং জমি তিনকানী উল্লিখিত আছে। বোঁধ 
হয় বিভিন্ন অংশ অনুযায়ী তহশীলদার নিমুক্ত করা 
হইয়াছিল । 

এই ছুইখানিই শিবশঙ্কর বিশ্বাসকে গয়ালী-মান্দ্রার 
কর্মচারী নিয়োগ পত্র। 

মহারাজা রাঁজবল্লভ ১১৭০ বার্জলা এবং ইংরেজী ১৭৬৩ 
খৃষ্টাবে মৃত্যুমুখে পতিত হন। তাহার জমিদারি পরবর্তী 
বংশধরগণ মধ্যে বিভিন্ন অংশে বিভক্ত হইয়া পড়ে। ইংরেজী 
১৭৯২ এবং বাঙ্গাল! ১১৯৮ সালের একখানি বাটোয়ারা 
বাজে জমা পত্রে গয়া্গীদিগের প্রদত্ত ব্রঙ্গত্র জমির বিষয় 
মহারাজ! রাঁজবল্লভের পাঁচ পুত্রের নামোল্লেখ দেখিতে 
পাওয়।! যায়। তাহার আংশিক গপ্রতিপিপি এখানে 


খোলশ! নকল একোয়ান বাটোয়ারা বাজে জমী পরগণে 
রাজনগর গএরহ সরকার ফথেয়াবাদ ও গয়রহু জমীদার 
শ্রীরাজ! লক্মীনারায়ণ রাঁয় বাটোয়ারা আমীন শ্রীযুত মেঃ 
তামসেন সাহেব সন ১৭৯২ সতরশত বিল্লানব্বই ইঙ্গরেজী 
মতাবেক সন ১১৯৮ এগারশত আটানব্বৈ বাঙ্গলা 


চৈত্র--১৩৪৭ ] ল্লাভকম্বললজ্ডেল্র গন্সান্স ভূমসিল্গানন ও ভহুক্কালীন্ন দুব্লিল-সক্র 


১২১ ফর্দের পোন্ডে-হিঃ রায় গোঁপালরু্চ চাঁকলে 
চুরপুর আসামী--জমি--ভিটি-_নাঁল-_মজগুনি__ভিটি-_ 
নাল--নাঁগায়ত সন ১১৯৬ ভিটী__নাঁল--উৎসর্গ-__ভিটি__ 
নাল-_বাস্তপূজা--ভিটি নাল__ 

কি £-_মান্দরা জমি ২৩৭ ভিটি ২।৮। মজকুনি ২1৬/৩॥ 
ভিটি %১৫॥ নাল ২।৮।.-.*, 

হিং রাঁজা গঙ্গাদাস 

৮৬ ফর্দের পোস্তে 

জমি ২৩/৩%০ ভিটি %১৫॥ নাল, ২।৮। মজকুনি ২৩/৩%০ 
ভিটি %১৫॥ নাল ২৮। 

হিং কেবলরাম বাবু 

১৯ ফদ্দের পোস্তে 

জমি ২1৩৩| ভিটি %১৭॥ নাল ২৮ মজকুনি ২/৩। 
ভিটি ৮%১৫॥ নাল ২৮ 

হিঃ রাজা কষ্ণদাস বাঁহাদুর__ 

৪৫ কর্দের পোস্তে__জমি ২৩/৩। ভিটি %১৫॥ নাল ২৮। 
মজকুনি ২1৩/॥ ভিটি %১৫॥ নাল ২1৮... 

হিঃ রাঁয় রাঁধামোহন 

১৫৭ ফর্দের রোখে জমি ২১/৩॥ ভিটি %১৫% নাল ২৮ 
মগকুনি ২1৬৭ ভিটি %১৫% নাল ২।৮ 
১২৬১৮ 0১৭8 ১১1৮৭ 

শ্ীকেবলরাম সেনগোপ্ুশ্ত, শ্রীরাধামোহন সেনগোপ্রস্ 
বং শ্রীনিলমণি সেনগোষ্তস্ত, শ্রীরামগোপাল সেনগোস্তস্য বং 
শ্ীপীতা্র সেনগোণুন্ত, শ্রীরাজা গঙ্গাদা সেন বং 
শীকালীশঙ্কর সেন, শ্রীরাজা কৃষ্ণাস বাহাদুর বং 
শ্ররাঁজকৃষণ সেন। 

অতঃপর আমরা নং ৫৩ সন ১৮৫৯।৬০ তারিখের একাটি 
মোকদ্দমার কাগজপত্র হইতে এই গয়ালী-মান্ত্রা গ্রামের 
্রহ্ধত্র জমি সম্পর্কে যে একটি মোকদ্দমা উপস্থিত হয় 
উহাতে রাজার পঞ্চম পুত্র গোপালরুষ্ণ কর্তৃক একটি 
বিচারের মীমাংদার দলিল (ফয়সালা) দাখিল হয়। 
সেই দলিলটিতে রাঁজা গোপাঁলকণের স্বাক্ষর রহিয়াছে । 
সেই দলিলখানির অংশ আমরা এই প্রবন্ধে প্রকাশ 
করিলাম। 

মহারাজা রাঁজবল্লভ সলরজঙ্গ বাহাদুরের সাত পুত্র 
ছিলেন। 


১২৬/১৮৮% ॥/১৭৮% ১১1%| 


১০৬৬০ 


« . মহারাজা ১ সলরজঙ্গ 
[নিল নিল 
(১) দেওয়ান রামদাস (২) রাজা কষ্দাঁস (৩) রাজা 
গঙ্গাদাস (১) রায় রতনকৃষ্ণ (৫) রায় গোপালকৃষ্ণ 
(৬) রায় রাধামোহন (৭) কেবলবাবু। 


মহারাঁজা রাঁজবল্পভের প্রথম পুত্র দেওয়ান রাঁমদাঁস ও 
চতুর্থ পুত্র রতনকৃষ্ণ পিতার জীবদ্দশায় মৃতামুখে পতিত 
হইয়াছিলেন। এজন্য তীঁহাদের দত্তকগণ জমিদারীর অংশ 
না পাইয়া ভরণপোষণার্থ প্রত্যেকে মাসিক ৫০০২ টাঁকা 
প্রাঞ্থ হয়েন। 

মহারাজা রাঁজবল্লভের পুত্রগণের পরিচয় দেওয়ায় 
এইক্ষণে গয়াশী-মান্দ্রার বিষয়টি পাঠকগণের বুঝিতে বিশেষ 
সুবিধা হইবে । 

যে মোকদ্দমার দক্ণ রায় গোপালকৃষ্ণ স্বাক্ষরিত ফয়সাঁলা- 
খানি দাখিল হইয়াছিল, এখানে সেই দলিলখানির অনুলিপি 
প্রদান করিলাম । 

বোরকারি কাচাঁরি ডিপুটি কালেক্টারি জেল! ঢাঁকা 
মোকাম ঢাঁকা_ শ্রীযীত বাবু রামকুমার বন্থু ডিপুটি 
কালেক্টর সন ১৮৬০ সন ইংরেজী--১৯ জানওয়ারি 
মোতাবেক সন ১২৬৬ সন ৭ মাস 

সরকার বাহাদুর-_বাদী 
প্রীণনাথ কুটী গয়ালী সাংনাওয়াগাড়ি পরগণে গয়া 
জিলে বেহার--প্রতিবাদী 

পরগণে রাজনগর কি ঃ মান্দরা মধ্যগত ৯২৩/ বিঘা-_ 
নিফর ভূমি তদন্তের মকদ্দমা-** 

অগ্য এই মকন্দম! গ্রতিবাদীর মোক্তার মহেবচন্দ্র চক্রবর্তী 
ও গোলোকচন্ত্র সেনের সাক্ষাতে উপস্থিত করিয়৷ নথির 
কাগজাৎ্.'বিদিত হইল জে থাকবস্তের শ্রীধুত স্ুপ্রেটেপ্ট 
সাহেব বাহাছুর-.'তাঁরিখের রোরকারি দ্বারা উক্ত নিফর 
ভূমির নকনা এই-**কালেক্টারিতে প্রেরণ করিয়াছিলেন যে 
মহারাজা রাজবল্লভের দত্তা উক্ত কিদমতের নিষ্ষর ভূমি 
তাহাঁর জমিদারি সংক্রান্ত বিধায় তল্ত ৫ পাচ পুত্রের মধ্যে 
মেঃ তামশান সাহেব কর্তিক ৫ পাচ অংশে বণ্টক হইয়া 
তাহা গবর্ণরমেন্ট পর্য্যন্ত মঞ্জুর হইয়াছেন নিষধর ত্রস্ত হইয়া 
তজবিজ হওনাস্তর রেহাই পাও! প্রকাষ নাই এ প্রবুক্ত 
নিফরের সিদ্দাশীন্দের বিচার কালেক্টার' হইতে আমলে 


৪৭০ 


আন! জায় তদাহুসারে প্যুত কালের সাহেব বাহাদুর 
১৫ আগস্ট তারিখে এই আদেষ এই মকদ্দমার কাগজাত অত্র 
কাচারিতে অর্পণ করিয়াছেন জে এপক্ষ এ নিফর ভূমির 
উচিত তান্ত আমলে আনিয়া রায় সম্বলিত কাগজাত:.. 
নিয়! শ্রীযুতের হুজুরে প্রবল করে সেমতে প্রমাণ তলবে 
প্রতিবাদীর নামে এত্লানাম! জারি করাতে প্রতিবাদী গত 
সেপ্তান্বর মাসের ১৩ তারিখে ১ এক কেতা দরখাস্ত দাখিল 
করিয়াছে জে উক্ত ভূমি পরগণে রাজনগরের সামিল এ 
পরগণে রাজনগরের পূর্ব মালিক রাজা! রাজবল্লভ সেনগুপ্ত 
১১৬৫ সনে উক্ত কিসমতের ভূমি প্রতিবাদীর পূর্ব পুরূস মৃত 
শল্তুনাথ কুটা গয়ালীকে বিষণ প্রতি দান বিক্রির সত্য বলে 
নিফর দিয়। সনদ দও1তে তদবধি ১০৭ এক শত বৎসরের 
অধিক কাল পর্যন্ত তাহার দখিলকার আছে পরে ১১৯৮ 
সনে মেঃ তামসেন সাহেব কণ্তিক এ পরগণে রাজনগর 
এ রাঁজ৷ রাঁজবল্লভের ৫ পাচ পুত্রের স্থলে ৫ পাচ অংশে 
বাটওয়ারা হইয়। উক্ত কিসমত বাটওয়ার৷ কাগজে প্রতি 
হিস্তাতে ২৬/৩॥ কর! জমী নিধর লিখা জায় ও ১১৯২ সনে 
কানাই বেলদার নামক এক বেক্তী এ কিসনতের জমী 
বেলাদাঁর জায়গীর উল্লেখে মকন্দমা উপস্থিত করাতে হাকিমের 
বিচারে এ জমি প্রতিবাদীর পূর্ধব পুরুষের প্রাপ্ত নিফর 
সাব্যস্ত হইয়াছে অত্র স্থলে এ জমী সরকারে বাজেমাপ্ডের 
অধুগ্য ও আপন এজাহাঁরের প্রমাণ ভৈন্য ১১৯২ সালের ২৭ 
জ্যৈষ্ঠের লিখিত ফএঞছলা ১ কেতা ও ১১৯৮ সালের মেঃ 
তাঁমশেন সাহেবের কিক খোলাষ! বাটাওারার নকল ও ৫ 
কেতা ও ১১৯৭ সালের ৩রা ফাল্গুনের লিখিত রায় গোপাল- 
কৃষ্ণ সেনগুপ্ত সালীশের দস্তখতী ফএছল! ১ এক কেতা 
একুনে ৭ সাত কেতা দস্তাবেজ ও রাঞ্জবল্লত গেনগুপ্তের দা 
১১৬৫ সালের ২৬ ফাল্কুনের লিখিত সনদ ১ কেতা দাখিল 
করিয়াছে ইতি-- 

জেহেতুক প্রতিবাদীর দাখিলী রাজবল্লভ সেনগুপ্তের দা 
১১৬৫ সালের ২৬ ফাল্গুনের সনর্দে লিখিত আছে জে এ 
কিসমত মান্দরা এ রাজা রাজবল্লভের জমিদারি তপে চুরনগর 
সামিল এ কিসমতের সদর জম! এ রাজা রাজবল্লভ তাহার 
জমীদারি সামিল রাখিয়া এ কিসমত সমুদয় ৬বিষু প্রীতে 
শম্ভ,নাথ কুটি গয়ালিকে ব্রন্ধোত্তর দিয়াছিলেন ও কালেক্টরীর 
্হাফেজের দাখিলী গত 'নবান্থর মালের ১৯ তারিথের 


ভ্ঞান্রত্তশর্থ 


[ ২৮শবর্ষ--২য খণ্ড--৪র্থ সংখ্যা 


কৈফিয়ত ও প্রীতিবাদীর দাঁখিলী মেঃ তামসেন সাহেবের 
কর্তিক খোলাসা! একোঁওান ব।টাওারা দিষ্টে পষ্ট প্রকাঁষ যে 
এ কিপমত মান্দরা রাজ! রাজবল্লভের স্বকর জমিদারি পরগণে 
রাজনগরের অন্তঃপাতী এবং তাহার সদর জম! এ রাজ 
রাঁজবল্লভের ৫ পাঁচ পুত্রের ; পাচ অংশে বাটওারা হইয়া জে 
প্র ৫ পাচ হিম্ার সদর জম! প্রথক ২ হইয়াছে এ ৫ পাঁচ 
মহাঁলের সামিলই সরকার দাখিল হইতেছে কেনন! জমি প্র 
কিসমত এ ৫ পাঁচ হিন্তার স্বকর মহাঁলের সামিল না হইবেক 
তবে কখনও এ কিসমত এ ৫ পাঁচ তিশ্যায় বাটগারার 
সামিল হইত না। তাহা এ বাটওয়ারা হইতে বর্জীত থাঁকিত 
অত্রাবস্থায় জখন এ কিসমতের জমা উক্ত ৫ পাঁচ হিশ্তা 
সামিল সরকারে দাখিল হইতেছে এবং প্রতিবাদদীর দাখিলী 
পূর্ব উক্ত সনদে এ কিসনত এ স্বকর মালের সামিল 
রহ্র্ত প্রাপ্ত লিখিত আছে তখন আর উক্ত নিষ্কর ভূমিতে 
সরকার বাহাদুর পুনরায় কর বসাইতে পারেন না৷ এতাবতা 
এ পক্ষের বিবেচনাতে উক্ত নিষ্ধর ভূমি সরকারের দাবি 
হইতে ছারান পাবার যুগ্য জানিয়া__ 
হুকুম হইল জে__ 

এই মকদ্দম! এই কাচারির বাঁকী খাত হইতে খারিজ করত 
উচিত হুকুম প্রদান কারণ কাগজাত শ্রীধুক্ত কালেক্টার 
সাহেব বাহাদুরের হুম্বুরে পাঠান জায় ইতি_ 

ম শ্রীরাঁজকিশোর সেন একটিন সেরেন্ত।দার নং ১২১২২ 

হুকুম হইল জে মোতফরকাতে নম্বর দিয়! পেষ হয় সন 
১৮৬০ সন তারিখ ২৫ জানওারি-অগ্য পেষ হইয়া হুকুম 
হইল জে জমী খালাঁধ দেও জায় ও নম্বর খারিজ হএ সন 
১৮৬০ সন তারিখ ২৭ ফেব্রও1রি-_ 

এই নকপ রোয়কারি ১৮৬০ সন ১০ মাই (মে) সন 
১২৬৭ সালের ২৯ বৈশাখ প্রাণনাথ কুটির মোক্তার 
গোলোকচন্দ্র সেনের হাঁওলা করা গেল ইতি__ 

এই হুকুমনামার নকল হইতে আমরা জানিতে পারিগাম 
বে মহারাজ। রাগবল্পভ ১১৬৫ স।লের ২৬শে ফাল্গুন এক 
সনদ দ্বার| কিনমত মান্দরা রাজ! রাঞজবল্পভের জমিদারি 
সামিল বিষণ গ্রীতিতে শল্তুনাথ কুটি গয়ালীকে দান করিয়া- 
ছিলেন। পলাণীর যুদ্ধ_২৩শে জুন, ১৭৫৭ থুষ্টান্ধে ঘটে। 
আর রাজ! রাঁজবল্লভ শড়ুনাথ কুটি গয়ালীকে সনদ দান 
করেন-_-১৭৫৮ খুষ্টান্দের মার্চ মাসের শেষভাগে--” 


চৈত্র-_-১৩৪৭] ন্লাজন্বলভ্েল্প গলা ভূমিদ্লান ও ভহুকালীন হুলিনিলি-সভ্র 





শিল্প স্ব 


যুদ্ধের নয়মাস পর। আমরা রাঁজবল্লভ প্রদত্ত সনদখানি 
দেখিতে পাই নাই । কোথায় কাহার নিকট শ্রী সন্দখাঁনি 
আছে অনুসন্ধান করিয়াও জানিতে পারি নাই। এথানির 
অনুসন্ধান হওয়া আবশ্তক। কেহ কেহ বলেন গয়ালি 
পাগডাদের গৃহেই রহিয়াছে। কিন্তু এই মোকদ্দমমার 
কাগজপত্র হইতে জানা যাঁয় যে সনদখানি আদালতে দাখিল 
হইয়াছিল।-সেই সন্দখানার সন্ধান কেহ দিতে পারিলে 
উপকৃত হইব। 

খোলাঁধ! বাটাওয়ারারে প্রতিলিপি এখানে প্রদত্ত 
হইয়াছে । ব্িতীয় গয়ালীপক্ষের দাঁখিলী নিফর ভূমির 
প্রমাঁণপক্ষে রায় গোপালকৃষ্ণ সেনগুপ্তের সাঁলিশের নিজ 
দম্তথতী ফয়ছলাখানা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য | 

এই ফয়ছালাখানার কাগজখানি অধত্বে বিনষ্ট হইতে 
চলিযাছে। একান্ত দুঃখের বিষয় এই যে, রায় গোপাঁলকুষ্জের 
স্বাক্ষরটিরও কোন কোন অংশ নষ্ট হইয়া গিয়াছে । 

ফয়ছালাখানার তারিখ ১১৯৭ সালের ৩র! ফাল্তুন। 
ইংরেজী_-১৭৮৩ খুষ্টাব্ষ। পলাশীর যুদ্ধের ২৬ বৎসর 
পরের। এই দলিলের তিনটি অংশ। প্রথম অংশ-বাদীর 
অভিযোগ । দ্বিতীর অংশে__প্রতিবাদীর উত্তর এবং 
সর্বশে । গায় গোপালকৃষ্ণ সেনগুপ্তের মীমাংসা বা হুকুম 
নামা। এই ফয়ছালাখানার প্রতিলিপি প্রদত্ত হইল । 

হকিগত তজবিজনাম! কাঁচারি পরগণে রাজনগর 
জমিদারি শ্রীযুত রাজা লক্ষমীনারায়ণ রাঁয় তজবিজ শ্রীযুত রায় 
গোপাঁলরুষ্চ সেনগুপ্ত বতারিথ মাহে ২৭ মাঘ 


মুন্দাই মুদালয় 
কানাই ভূইমালি শ্রীহকুমচন্ত্র গয়ালি 
সাঁকিম মান্দরা সাঁকিম তথা 


'"* কানাই তূইমালি ঈজকুর মোচলক| লিখীয়া দিল যে 
মুদালয় শ্রীন্ুকুমচন্ত্র গয়ালি ... রতরপ লোক দিয়া মুদে 
তুইমালি মজকুরের একখান পাতাম নৌকা জবরদস্তি 
( করিয়া ) নিয়াছেন আর মদ্দে মজকুরের জায়গীরের জমির 
ধান্ কাটাইয়!৷ নিয়াছেন ও জায়গীরের ভিটাঁতে কাঁপা 
রোয়াইয়াছেন ও মদ্দে মজকুরের খানে বাড়ির আমলে 
জোর জবরদন্তী আমল করেন ও বাড়ি চড়াও করিয়া 
লুটিয়া নিয়াছেন এ সকল দফা! প্রমাণ করিবেক জদি 
প্রমাণ করিতে না পারে তবে গুনাগার__ 


৪৭০ 


স্্থাাব্প--্থা নি হে বড ব্লন্ছ -স্হগব্ছপ -স্হ বড ব্যালন সস্থে ব্য হা স্হান * খত লা হব স্ব স্হান আপা স্্থা খ্িপ ব্হা খা ব্যাগ পা "ন্ট 


(মন্দা) লয় গয়ালি মজকুর মোঁচলকার উত্তর 
মোচলকা! লিখিয়া দিল মন্দে ভূইমলি মজকুরকে মোচলকা৷ 
লিখিয়! দিয়াছে এমত নহে মৌজে মান্দরা মালয় মজকুরের 
বি (তত?) তাহার আমলি গাছের আমলি পাড়িতে 
কয়েকজন লোক পাঠাইয়াছীল সেই লোককে মন্দে তুইমালি 
মজকুর মাইরপিট করিতেছিল সেই সোর শুনিয়া মালয় 
গয়ালি মা .. (ন্দরা) গ্রামের সিকদারকে পাঠাইয়াছিল 
তাহার সঙ্গে খাজানা হু ছিল তাহা বেম.''মাইরপিট জখমি 
লবেজান করিয়া! খাঁজানা লুটিয়া নিয় নৌকা ফেলাইয়া 
গিয়াছিল মদ্দে মজকুরের পাঁতাম নৌকা জবরদস্তী করিয়া 
নেয় নাই এবং মদ্দাীলয় গয়ালি মজকুরের আপন বিশষ্তির 
জমির ধান্ঠ কাঁটাইয়া নিয়াছে মদদে ভূইমাঁলি মজকুরের 
জায়গীরের জমির ধান্ত কাটাইয়া নেএ নহে আপন বিশ্তির 
ভিটাঁতে কাঁপাঁস রোয়াঁএ নহে মালয় গয়ালি মজকুরের 
আপন বিত্তির ভিটায় আমলি গাছ আমল করে মদ্দে 
তুইমালি মজকুরের খানে বাঁড়ির আমলি গাছ জবরদস্তি 
আমল করে নহে। আর মদদে মজকুরের বাড়ি চড়াও 
করিয়া লুটিয়া নেএ নহে জদ্দি মদ্দে ভূইমালি মজকুর 
এ সকল দফা প্রমাণ করিতে পারে তবে মদালয় 
মজকুর গুনাগার। 

এহাতে মদদে তুইমালি মজকুরের ঠাই প্রমাঁণ সাক্ষী 
তলব হইল পরে মন্দে মজকুর প্রমাণ সহি লিখিয়া দিল 
মালয় গয়ালি মজকুর সাক্ষী সহি করিল এবং মদ্দে তুইমালি 
মজকুর এক ফারখতি জাহির করিল মদীলয় গয়ালি মজকুর 
সেই ফাঁরথতি ওদল করিল পরে ফাঁরখতিতে ইসাদ জে জে 
ছিল তাঁহার ঘরেই মদাঁলয় গয়ালি মজকুর সহী করিল এ 
সকল সাক্ষিরা আপন আপন জবানি লিখিয়া দিল তাহাতে 
(শ্রীদেব?) নৌকার সাক্ষি শ্রীমানন্দিরাম শর্মা জবানি 
লিখিয়। দিল..." 

মাহে আশ্বিন বেলা গ্রহর আড়াইকের কালে শ্রীআরাধন 
তুইমালি ও শ্রীকানাই ভূইমালি ও শ্রীবদাই তূইমালি এহারা 
শর্মা মজকুরের বাড়ীর পাচ বাড়ির ঘাটে নৌকা লাগাইয়া 
বাঁড়িতে উঠিয়া কহিল দেখ আমার ঘরে লড়াইয়৷ আসিছে 
পরে প্রীহুত গয়ালির লৌক আসিয়াঁ কহিল আমার ঘরে 
ক্ষুন করিয়া আসিছে একথা ক্হিয়া গয়ালির লোকে 
তুইমালির নৌকার উপর চড়িয়া নৌকা! বাহিয়া গেল আর 


শুপহ 


ক 





জমির সাক্ষি শ্রীদয়ারাম মিত্র জবানি লিখিয়া দিল খালের 
পৃ পথের উত্তর এককোঠা আর এই কোঠার পৃবে এক 
কোঠা আর এই কোঠার দক্ষিনে পুবে লাগ তিন কোঠা 
একুনে পাচ কোঠা জমি মুরপুর তপা' কাএম থাকিতে 
মিত্র মজকুর কড়া জোত করিয়াছিল খাজনা তপা মজকুরের 
এতমামদায় শ্রীরাম হালদার ও কানাই কর এহার ঘরে 
ঠাই দিয়াছে মহারাজা চুরপুর তপা খরিদ করিলেন পরে 
মহাঁরাজার এতমাঁমদারে তাহার ঠাই হতে জমি ছাড়াইয়! 
নিল পরে এহার এক কোঠা জমি রাম হালদার জোত 
করিয়াছিল তাহার ঠাই হতে সেই কোঠা শ্রীদয়ারাম 
ভূইমালি ও শ্রীজয়সিংহ ভূইমালি এহারা নিয়া চাঁস করিয়া 
জিরাত ধান্ বুনিয়াছিল মহারাজা মান্দরা গ্রাম গয়ালিরে 
উৎসর্গ দিলেন পর গয়ালির গোমত্তা হরি তহবিলদার 
জিরাঁত কাঁটাইয়া নিয়া জমি আমল করিল আর বাড়ি 
লুটের সাক্ষি শ্রীগোপিনাথ পাল জবানি লিখিয়া দিল 
বাড়ি লুটের ব্রিন্তান্ত জানেনা আর আমলি গাছের প্রমান 
মদ্েও মদালয় উভয় সম্মত হইয়া শ্রীরাধারুষ্ণ চাঠাতিকে 
আমিন লইয়া সরে জমিনে জাইয়া হক সফির লোক লইয়া 
তহকিক করিল মালয় গয়ালি মজকুরের বিস্তির ভিটাতে 
আমলি গাঁচ সেই গাচ (গাছ) গয়ালি মজকুর আমল 
করে আর ফারখতির সাক্ষি শ্রীতিতারাম শর্মী ও সেক 
তিতাই ও হেসাঁমদ্দিখা এহার! জবানি লিখিয়া দিল এহাতে 
সেক তিতাই ও হেসামদ্দিখা এই দুইজন জবানি লিখিয়া 
দিল তাহাঁরা এ ফাঁরখতির ব্রত্বান্ত (বৃত্তান্ত) কিছু জানে না৷ 
তিতারাম শর্মা জবানি লিখিয়া দিল মহারাজা মান্দা গ্রাম 
গয়ালিরে উৎসর্গ দিয়াছেন তাহাতে এই গ্রাম গয়ালি 
ঠাকুরের ঠাই হরি তহবিলদাঁর ইজার! লইয়া তাহার জানিবে 
পাচু সিকদারকে গ্রামের এতমামদারি দিল তাহার তরপ 
মুহুরির শন্মী মজকুর ছিল পর সন ১১৭* সনে হালইওদাএ 
উহার বর তরপ হইল গ্রাম গজেষ চত্রুবর্তি ইজারা লইল 
পর জয়সিংহ তৃইমাঁলি পেয়াদা আনিয়া পাচ সিকদারকেও 
শর্দশা মজকুরকে পাকড়াও করিয়া! কছিল তোমার ঘরে 
তাকানিব নও বা আমার জমির ফারখতি দেও ইছাতে 
শর্মা মর্জকুর সিকদার মজকুরের সঙ্গে পরাতর্শ করিল গ্রাম 
আঁমার ঘরে আমল নায়াহ জদ্দি পেয়াদাএ পাকড়িয়! ঢাক! 
নেএ তবে পেয়াদার রোজ খোরাক কথ! হইতে দিব চল 





শ্ডাল্রুভবহ্ 


মিরার তি তি জাউউ রিচ হর খপ ্টে 


[ ২৮শ বর্ষ-_ংয় খণ-ওর্থ সংখ্যা 


আমর! ফারখতি দিয়া খালাস হইয়া জাই পরে শী 
মজকুর কহিল আমার ঘরে চিঠার জমি কি প্রকার ফারথতি 
দিব সিকদার মজকুর কহিল যে প্রকাঁর তুইমালি মজকুর 
কহে সেই প্রকার লিখিয়! দেও পরে শর্মা মজকুর চিঠার 
জমি মনাঁকসা বুনিয়া৷ ফাঁরথতি লিখিল পাচু সিকদার 
ফাঁরথতিতে দস্তখত করিয়! দিল ফাঁরখতি পাইয়া ওহার ঘরে 
ছাড়িয়া দিয়া ভূইমালি মজকুর পেয়াদা লইয়া! গেল। 

অতয়েব তজবিজ কহ (রুহ?) জানা গেল ভূইমালি 
মজকুর পেয়াদা আনিয়! গয়ালি মজকুরের তগিবই বারাদারের 
গোঁমস্তা পাকড়িয়া৷ ফারথতি লইয়াছে এমত ধারার 
ফাঁরথতি তুইমালি মজকুরের জমি ন! পৌচে এবং ুরপুর 
তপা দস্তরের সাবেক চিঠ! তহকিক করা গেল এসকল জমি 
তপা মজকুরের চিঠার সামিল আছে অতএব চিঠা তহকিক 
এবং তাহার সাক্ষিরঘয়ের জবানি মতে তূইমালি মজকুরকে 
তাহার পাতাম নৌকা জবরদন্তি নেওয়া ও জায়গিরের 
জমির ধান্য জবরদন্তি কাটাইয়া নেওনেও জায়গিরের 
ভিটাতে কাঁপাষ রোঁহাঁনওয়ানে বাড়ির আঁমলি গাঁচ 
জবরদন্তী আমল করনও বাড়ি চড়াও করিয়া লুটিয়া 
নিয়াছে এসকল দফার প্রমাণ করিতে না পারিল ভূইমালি 
মজকুর জে পাতাম নৌকা ফেলাইয়া গিয়াঁছিল সেই নৌকার 
রূসিদ গয়ালি মজকুরকে তুইমাঁলি মজকুর দিয়া তাঁহার 
নৌকা মাঁয় সরঞ্জাম বুঝিয়া লইয়া গেল ইতি সন ১১৯০ 
তেরিথ ৩ ফাল্ন। 

আমরা রাঁজা বা রায় গোপালকৃষ্ণের এই ফয়ছালাখান। 
গাঠকগণকে বিশেষ মনোযোগ সহকারে পাঁঠ করিতে বলি। 
প্রথমত ভাষার দিক দিয়া দেখিতে গেলে দেখা যায় যে, 
দলিলখানি তৎকাল প্রচলিত আঁরব্য ও পারশ্য ভাষার 
বহু শব সম্থলিত হইলেও বক্তব্য বিষয় বেশ সুস্পষ্টভাবে 
সহজ বাঙ্গাল! ভাষায় বণিত হইয়াছে। 

ুদ্দাই, মুদীলয় মজকুর, মোচলকা, মজকুর, জায়গীর, 
জবানী, আমল, জবরদন্তী, দফা, গুণাগার, মৌজে, আমলি 
গাছ (তেতুল গাছ), খানে, ফারথতি, ইসাদ, ইসাি, 
জাহির, সহী, তপা, জোত, এতমামদারঃ গোমস্তাঃ 
তহবিলদাঁর, মনাঁকষা, লবেজান, ফয়ছাঁলা ইত্যাদি । মুদ্দাই 
অর্থে বাঁদী বা 18101) মুদ্রায় বা মুদালেছে-_ প্রতিবাদী 
19197021705 মঞ্জকুর) উল্লিখিত ০1০ ৪1১০৩ মৌচলকা, 


চৈত্র--১০৪৭ ] ন্লাভন্যত্ভেল্র গল্সাস্স ভূঙমিল্তান্ন ও ভঙুক্রাক্পীনন চক্িক্প-পত্ 


মুচলেকা আদালতের আদেশ প্রতিপালনের অঙ্গীরুতি; 
জায়গীর-_রাঁজসরকাঁর হইতে প্রদত্ত নিফর জমি £90 
01217 ০9 18100) জবানী- মৌখিক উক্তি 9110919 
জবরদস্তী-বলপ্রয়োগ 1)121109110600559১ দফ1-__পরিচ্ছেদ 
1015 গুণাগার- দণ্ড [06181, মৌজে--মৌজা গ্রাম 
$111925, নির্দিষ্ট সেহুদ্দীভূক্ত স্থান, খানা খানে গৃহ, 
ফারথতি, ফারখত - ছাড়পত্র ৪০৫0160709১ 10916850 
ইসাদ-__সাক্ষ্য, ইসাদী সাক্ষী, জাহির-_প্রকাঁশ করা 10০91, 
সহী-_স্বাক্ষর 51178016, তপা, এপ পা কয়েকটি মৌজার 
জোত- প্রজার রুষিসত্ব যুক্ত জাম, 1)91015, 

এতমামদার- রক্ষণাবেক্ষণকারী, গোঁমস্তা জমিদারের 
কন্মচারী, তহবিলদার-_ধনাধ্যক্ষ (০8১015%7 মনাকষা 
যে জমির বিষয় চিঠাতে উল্লিখিত আছে, অথচ প্রজার 
অধিকারতুক্ত নে, ফয়ছাঁলা, ফযসল1--রাঁয়, বিচার নিষ্প্তি, 
লবেজান-_ওষ্টাগত প্রাণ। 

এই দলিল কয়খাঁনিতে যে যে আরবী ও পারসী শব্দ 
ব্যবহৃত হুইয়াছে এখানে তাহার অর্থ লিখি দিলাঁদ, ইহ! দ্বারা 
পাঠকগণ অতি সহজেই দশিলের বা ফরসলার খিষয় পড়িযা 
সেকালের জমিদারের বিচারপদ্ধতির আদর্শ বুঝিতে পারিবেন । 

এখানে আর একটি বিষয় লক্ষ্য করিবেন, অষ্টাদশ 
শতাব্দীর শেষভাঁগেও বিক্রপুরে কার্পাস বুনা হইত। 
ফয়সালার ছুই স্থাশেহ “জায়গীরের ভিটাঁতে কাপাঁধ 
রোয়াইয়াছেন” উল্লিখিত আছে। 

বাটোয়ারা পত্রে মেসাস তামসেনের নাম আছে। 
ইহার নাম জজ টমসন্‌ (111, 960116 11009701501) )। 
এই বাটোয়ার৷ সম্পর্কে একটু বলিতেছি। 

মহারাজা রাজবল্পভ মুলফত্গঞ্জ (11011710771] ) 
থানার অন্তর্গত রাজনগরের অধিবাঁপী ছিলেন। বাঁকরগঞ্জের 
অন্তর্গত বুজারউমেদপুর পরগণ! রাজবগ্লভ ঢাঁধাঁয় আগা 
বাকরের (4১৫৭ 13811 ) মৃত্যুর পর স্বাধিকীরভুন্ত 
করেন। বাঙ্গালা ১১৬৭ সনে ইংরেজী ১৭৯ খৃষ্টাবে এ 
পরগণার জরিপ হইয়। জমা বৃদ্ধি কর! হয় । রাঁজা রাঁজবল্লতের 
জীবনের ইতিহাসের সহিত ঢাকা ফরিদপুর এবং বাঁকরগঞ্জের 
ইতিহাসেরও সংশ্রব রহিয়াছে । তবে তাহার সহিত ঢাকা 
ও ফরিদপুরের ইতিঙাসেরই ঘনিষ্ঠ সংশ্বব রহি্যাছে, 
বাকরগঞ্জের সহিত ততটা নাই । 

বাঁজা রাঁজবল্পভ ও তাহার দ্বিতীয় পুত্র কষ্পদাস মুঙ্গেরে 
কিন্নপ শোচনীয় ভাবে মৃত্যুমুখে পতিত হইয়াছিলেন তাহা 
সকলেই অবগত আছেন। রাজবল্লভ ও কৃষ্ণদীসের মৃত্যুর 
পর রায় বা রাজা গোপালকৃষণ ( রাজবল্লভের পঞ্চম পুত্র ) 


সমুদয় জমিদাঁরীর কর্তৃত্বভাঁর গ্রহণ করিয়াছিলেন। রায় 
গোপালরুষ্চ ১১৯৪ সনের ২৪শে আধাঢ় ইংরেজী ১৭৮৭ 
ৃষ্টাব্ের ৬ই জুলাই প্রাণত্যাগ করেন। যে ফয়সলার বিষয় 
লইযা আমরা আলোচন! করিলাম, রায় গোঁপালরুষ তাহার 
মৃত্যুর চারিবৎসর পূর্বে উহা! করিযাছিলেন। রায় 


গোপালকৃষ্ণের তিন পুত্র ছিলেন; যথ৷ £ 
রাজবল্লত 
রায় গোপালরুষ 
|. নি ৃ 
গীতাদ্বর নীলাম্বর মহাস্বর 


গীতান্বরের সহিত রাঁজবল্লভের অন্তান্ত পৌন্রগণের সঙ্গে 
বিষয়সম্পত্তি লইয়া নান! গোলযোগ ও অশাস্তির সৃষ্টি হইতে 
থাকে । ১৭৯০ খুষ্টাবধে ঢাকার কালেক্টার তদানীস্তন 
এসিস্ট্যান্ট কালেক্টার মিঃ জর্জ টমসন (9515020 €9 0175 
(00116069101 108008) সাহেবকে বৈষয়িক গোলযোগ 
নিষ্পত্তি করিয! সম্পত্তি বাটোয়ার৷ করিবার জন্য প্রেরণ 
করেন। সম্পার্ত বাঁটোযারা করিয়া আপোষ নিষ্পত্তির জন্য 
দেওয়ান রামদাসের পৌত্র কালীকিস্কর ১১৮৯ বাংলা সন 
ইংরেজী ১৭৮২ খ্ুষ্টাবে ঢাকার দেওয়ানী আদালতে দরখাস্ত 
করেন এবং তাহার 'আবেদনও মঞ্জুর হুইয়াছিল। ১১৯৪ 
বাংল! সনের বৈশাখ মাসে ও ইংরেজী ১৭৮৭ খৃষ্টাব্দে সেই 
আদেশই বহাঁল থাকিলে, ঢাকার কালেক্টীর মিঃ ডে (1. 
[)8/ )_ বুজার উমেদপুর, রাজনগর, কাণ্তিকপুর, ুজাবাদ 
পরগণা প্রভৃতি বাটোয়ারা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্য্স্ত 
সরকারের তত্বাবধানে রাখিয়াছিলেন। প্রাচীন দলিলপত্র 
হইতে দেখা! যাঁয় যে, পীতান্বর সেনের চত্রানস্তেই অনেককাল 
পর্য্যন্ত আপোষ নিষ্পত্তিতে সম্পত্তি বাটোয়ারা হয় নাই। 
অবশেষে মিঃ টমসন সাহেব সম্পত্তির ভাগ-বাটোয়ারা! করিয়া 
গভর্ণমেণ্টের নিকট হইতে প্রশংসা লাভ করিয়াছিলেন। 
আমাদের প্রবন্ধোক্ত বাটোয়ারা জমির খোলশ! নকলে যে 
মেপাঁস তামসেন সাহেবের উল্লেখ আছে, তিনিই এই 11. 
190150 111017)50105 25915097৮0০ 0176 00112001 
9£ 18০০৪. আর ১২৩৯ সালে শ্রীমতী দুর্গা. গয়ালীন 
শ্রীশিবশঙ্কর বিশ্বকে যে নিয়োগপত্র দিয়াছেন, এই 
শিবশঙ্কর বিশ্বাস, গয়ালী-মান্দ্রীর নিকটবর্তী পল্লী হারিয়া- 
মুন্দিয়া গ্রামের ব্রাহ্মণ বংশীয় বিশ্বাস পরিবারের একজন 
পূর্বপুরুষ । হারিয়ামুক্িয়া বিশ্বাস পরিবারের অনেকেই 


গয়ালি ঠাকুরদের তহমীলদারের কাঁজ করিয়াছেন । 









তা 


্ 









গু 


০৫৫1 ০. পহ২৩৯ 
৩205১৯৮ 
কথা, সবর ও স্বরলিপি_ শ্রীজগন্নাথ বন্দ্যোপাধ্যায় এমৃ-এ 


চন্ত্রকান্ত--ত্রিতাঁল ( মধ্যলয় ) 


রূপসী চন্দ্রা মাধবী রাতে 
উছল হ'ল মলয় বাতে। 
কি যেন মোহে আকুলি” তাহে 
রূপালি মায়! রাঁগাতে চাছে, 
গোপন দিঠি 
হানিয়! মিঠি 
অলস ক্গিপ্ধ নযন-পাতে ॥ 
১. ২ ৩ ৩ 
হা [ন্তা-সনাধ্পাপ্না | ল্গাননাগা | (রগা-পাধন্ধাগা | খপা-পরা সা-) 1 
রূৎ ** পৎ সী চ ন্‌ * ড্রা মাণ «০ ধণ বী রা ০ তে 
৩ ৪ ১ ২ 
সন ধলা ধা পা] |প্সা-না-রা-গা| র্না -রা সা-া | রগা-পধা খনা 7 | 
উ গু ০ ৩৪ ছ্‌ ল হ্‌ঃ গু গু 9 গু ৩ ল গু মও ৬ ৩ লী ০ 


ধন্ষা -গরা রপা 7 |পরা -গা -রা সা)] 


য্ঃ ০ ৩ গু ৪ বা ০ ০ তে 
৯ ৩ 9 

[| গপা ধনা ধা পা | পাশা | ধনা-রর্গারাসরনা | ন্পসা ৭ শার্সা ] 
কিঃ ০০ বে ন গেট. ০ ০ হে আ০ ০৪০ কু লি” তা ০ ৪ ছে 


৪৭৪ 


টৈত্র--১৬৪৭ 1 চন্তি গুগ্র 


রা 


১ ৮ ৩ ঙ 

না -ধনা ধা পা | পনা-7 7 না | গপা -ধনা ধাক্ষগা | গপা 7 71 পা)! 
রূ* ** পা লি মাত *য়া রাণ **ডাতে* চা * * হে 
১ ২ ৩ 2 

গধা ধ্গা গপা পরা | র্গা- 77 | রন রা গারা | সা" -7া 7 
গে৷। পূ ন্‌ দি ঠি ০ ০ ০ হা নি য়া মি ঠি শু গু ৩ | 
৯ ২ ৩ 9 

ধনা -রগা পা ন্দগা | গপা 7] 7 পা | নধা ন্গগা পন্গা -গরা| রা-গা-রা সা 1111 
অ০ ৩০০ পল সণ ক্রি ০ গ ধ ন০য়০ নন৫ ০ ০ পা ও ০ তে 


েষ্টব্য ই চন্ত্রকান্ত কল্যাণ মেলের একটা অপ্রচলিত রাগ। স্থুলতঃ ইহা খাড়ব-সম্পূর্ণ, যেহেতু আরোহে মধ্যম 
(কড়ি)লাগে না ও অবরোহে সাতটা পর্দাই লাগে। কিন্তু অবরোহ সম্পূর্ণ হইলেও, পঞ্চম ব্যবহারের বৈচিত্রযটুকু 
চোঁথে না পড়িয়া যায় না। প্রায়ই দেখা যাঁয় যে “না ধা পা দ্ধা গা” স্বর-বিন্তাঁসের পঞ্চম-সাঁরল্য ইহাতে থাকে না, বরং 
না ধা দ্ধা গা পা” বা না ধা হ্ধা গা রা পাঃই রাগ-বাঁচক বলিয়া মনে হয় । ফলে, ইংরাঁজী সবরের কিছু আভাসও মনি 
যায় ( অবশ্ঠ, এ কথা কল্যাণ মেলের একাধিক রাঁগ সম্বন্ধেই সাধারণ ভাঁবে বল! চলে )। 

রাগটার আকৃতি থেকে আরও বোঁঝা যাঁয় যে ইহা! শুদ্ধ কল্যাণের প্রচুর প্রভাব থেকে মুক্ত নয়, যদিও আরোছে 
নিখাদের প্রাবল্য ও অবরোহে পঞ্চমের নৃতনন্ব কিছু রাগ-বৈশিষ্ট্য না আনিয়া পারে না। কিন্ত “জোরদার, চি হেতু, 
আবার ইমনেরও কিছু ছাঁয়৷ আসিয়া যায়। 

ইহার বাদী “গ, ও সঙ্থাদী “ন+ এবং বাঁগ-রূপ প্রায়ই মন্ত্র ও মধ্য সপ্তকে নিবদ্ধ বলিয়া স্বর-গতি ধীর | 


_সুরদাতা। 
কবি 
শরীশববোধ রায় 

যেই কথাটি বলতে গিয়ে দেওয়। নেওয়া, বেচা-কেন৷ 

ব্ল্তে নারি বারে বারে, চল্ছে বেন হাঁটের মেলা 
চিত্ত যেথায় স্তব্ধ গভীর হদয় নিয়ে ছিনিমিনি 

অর্থশালী শবহারে ; বে-দরদী প্রাণের খেলা । 
বুকের শোণিতঃ চোখের জলে, সেথায় যে জন আপন তুলে 
গভীরভাবে, হাসির ছলে, বিকাঁয় নিজে বিনি মূলে, 
জীবন-পটে রঙে রূপে জীবন-যাগে সবার ভাগে 

ফুটিয়ে তোলে সেই সে ছবি দেয় যে নিত্য প্রেমের হবি) 
যেই কুশলী নিপুণ হাতে-_ নীরস ধরায় সরস করে 


সেই তো সাধক--সেই তো কবি। সেই দরদী, সেই তো কৰি । 


গান্ধার-শিপ্পে কয়েকটি জাতক কাহিনীর চিত্র 


স্রীগুরুদাম সরকার 


অনুনন্ধ।নী পি ভগণের চেষ্টায় ইহা নিঃসনদে হরূপে প্রমাণিত হইয়াছে যে. 
জন্মাস্তরবাদ অতিগ্রাচীন কাল হইতেই হিদুদিগের মধ্যে প্রচলিত 
আছে। খথেদের একস্থলে মৃত্যুর পর জীবাস্মা বারি ও বৃক্ষার্দিতে 
পরিণত হয় এইরপ উক্ত হইয়াছে। ব্রাঙ্ষণখণ্ডেও জন্মান্তরের আঙাস 
পাওয়! যায়। ছান্দোগ্য ও বৃহদারণ্যক উপনিষদে পুনজন্মের যে উল্লেখ 
আছে তাহ! অতি নুস্পঃ। উপনিষদগ্রন্থের মধ্যে এই হুইখানিই 
প্রাচীনশ্ম। 
উপনিষদের যুগ বুদ্ধের আবির্ভাবের বহু পূর্ববব্তী। বুদ্ধদেব দেহরক্ষা 
ক'রয়াছিলেন ৮* বংসর বয়সে, আনুমানিক খুঃ-পুঃ ৪৭৮ হইতে ৪৮৩ 
অবের মধ্যে। প্রাচীনতর উপনিষদগ্ুলির রচন| কাল যে খুঃ-পৃঃ ৫৫, 
অন্বের পরে ঠেলের। লওয়। চগে না৷ তাহ! ইউরোগীয় প্রাচ্যহত্ববিদেরা 
স্বীকার করেন। বুদ্ধ তাহার অভ্যু্য়কালীন প্রচলিত ধর্মমত হইতে, 
উচ্নার অঙ্গীভৃত এই কর্ম ও জন্মাত্তরমূলক দৃঢ়বন্ধ মতবাদ নিজ ধর্ছে স্থান 
দিতেন ন। যদি উহ! লেোকসমাজে শান্বত সত্যরপে না স্থান পাইত। 
আম বা আমার নিজের কেহ কন্মদেষে মনুষ্তেতর যোনিতে জন্মগ্রহণ 
করিতে পারি এই বিশ্বাদে মাহ! স্থাপন করিলে অহিংসার ভাব আপন! 
হইতেই আসিয়া পড়ে, হুতরাং জন্মা্তরবাদের সহিত কর্দফলবাদ ও 
অহিংসাবাদের অঙ্গাঙ্গী সধ্দ্ধ রহিয়াছে । পাশ্চত্য পণ্ডিতের অনুমান 
করেন বৌদ্ধবুগের পূর্ব হইতেই যে দল উপদেশমুলক জনপ্রিয় কাহিনী 
এতদেশে প্রচলিত ছিল, তাহাতে কোথাও ব!| মানব, কোথাও 51 
মানবেতর জীব, কোথাও বা ষক্ষ রক্ষ কিন্নর বিভিন্ন ভূমিকায় অবতীর্ণ ; 
সেইগুলিই কিছু পরিবান্তত ও পরিবদ্ধিত আকারে বুদ্ধের পূর্ববজীবনের 
কোনও ন|! কোন কাল্পনিক ঘটন! সমাবেশে জাতক-কাহিনীর রূপ 
ধারণ করিয়াছে। প্রাচীনকালের আচার-ব্যবহার এবং রাজনৈতিক 
ও সামাঞ্জিক বিধি-নিয়মাদি সম্বন্ধে জাতক-কাহিনী হইতে অশেষ 
জন লাত কর যায়। বের জাতক হইতে আমরা জানিতে পারি 
যে, বাবীলশের সহিত ভারতের বাণিজ্যপম্পর্ক ছিল এবং ভারতবধ- 
জাত বিহঙ্গম ময়ুর তদেশে তারতবর্ধ হইতেই আনীত হইয়াছিল। 
অপর একটি জাতক-কাছিনীর গল্পাংশ আরব্য উপন্তাসের একটি 
হুপরিচিত আখ্যারিকার সহিত বিশেষ সাদৃহ্ঠযুক্ত । প্রবাদপরম্পরার 
লন্ব এই হুবিশাল একত্রগ্রথিত কথা-সংগ্রহের সহিত সাক্ষাৎ 
পরিচয় লাত, স্ব্ত রায় ঈশানচন্ত্র ঘোষ বাহাদুরের বঙ্গানুবাদের 
-কুগু বঙ্গীয় পাঠক মাত্রেরই অনায়াম-সাধ্য হইয়াছে। 
কণিকাত| হরে তত্রস্থ গান্ধার-গৃহের উত্তর-পশ্চিম কোণে 
ছধানি প্রস্তরধণ্ডে খ্যাদিত তিনটি জাতক-কাহিনীর চিত্র-একটি 
কাচের আবরপ-বিশিঃ আধারে রক্ষিত হইয়াছে। ১নং ফলক 
পেশোয়ার জেলার জালগড়িতে এবং ংনং হইতে এনং ফলক 


লোরিয়াল তাঙ্গাই নামক স্থানে প্রাপ্ত। ৬নং ফলকের প্রাপ্তিস্থান 
অজ্ঞত। নিযে ম্বর্গত ননীগে(পাল মজুমদার মহাশয়ের রচিত পরিচিতি 
অবলঘ্নে এই চিত্রগুলর বিস্তারিত বিবরণ প্রদত্ত হইল। ১নং হইতে 
৪নং ফলক দীপক্কর জাতকের চিত্র, ৫নং ফলকে চন্ত্র-কিমুর জাতকের 
চিত্র এবং ৬নং-এ খন্বশূঙ্গ জাতকের চিত্র। দীপন্কর জাতকের 
কাহিনী এইরূপ। শ্মতি নামক একজন বেণজ্ঞ ব্রাহ্মণ যুবককে 
বাদব নামে এক রাজ! যজ্জস্তে পাচটি দান গ্রহণ করিতে অনুরোধ 
করেন; স্বর্ণময় দণ্ড ও জলাধ!র পাত্র, স্বর্ণ ও রত্বখচিত শয্যা, 
পচশত কাধাপণ (১) মুদ্র। ও একটি সালস্কার! কন্া। ব্রহ্গচ্ষ্যের 
ওজুহাতে কন্ঠাটির প্রার্থন|! উপেক্ষা করিয়৷ তাহাকে গ্রহণ করিতে 
অন্বীকার করেন। প্রত্যাখ্যাতা কন্তা তাহ।র দেহের অলঙ্কারগুলি 
কোনও উদ্যানপাল নালাকরকে দান করিয়া দেবসেবায় নিযুক্ত 
হ'ন। দাপক্কর বুদ্ধ যেন দীপাবতী নগরীতে আগমন করিবেন_ 
দি) হইয়া ব্রাীণ-কুমারও সেই দিন দীপাবতীতে আসিয়া 
উপস্থিত হ'ন। দেশের রাজা দীপঙ্করের পুজার জন্য নগরে যেখানে যত 
পুপ্প ছিল তাহা সমস্তই সংগ্রহ করিয়াছিলেন, কেবল সাতটি কমল যাহা 
দৈবপ্রভাবে নেই মালীর সরোবরে ফুটিয়াছিল তাহাই লইতে পারেন নাই। 
যে কন্যার নিকট মালী বহুমূল্য রত্বাভরণ লাভ করিয়াছে তাহার মনপ্তাষ্টি 
জগ্ঠ তাহাকে মে এই পুষ্প কয়টি লইতে দিবে তাহাতে আর বিচিত্র কি? 
কন্ঠ। পৃব্বাহ্েই পদ্ম কয়টি তুলিয়া একটি কলম মধ্যে লুকাইয়! রাখিয়া" 
ছিলেন। তাহারও উদ্দেশ্ত যে তিনি এই পঞ্মমপ্তকে দীপস্করের পুজা 
করিবেন। ্রগ্গীচারী যখন পুষ্প ন| পাইয়া ব্যর্থমনোরথ হুইয়! ফিরিতে 
ছিলেন তখন কুম।রী তাহার কলসটি লইয়া! দীপক্বরের দর্শনাঁশাযস গমন 
করিতেছিলেন। ব্রাঞ্গণ নিকটবন্তী হহ্‌তেই পম্মকয়টি আপনা হইতেই 
কলদ হইতে বাহির হইয়। আসে । ত্রান্গণ মূল্য দিয়া উহা! ক্রয় করিতে 
চাহিলে কন্াটি তাহাতে অস্বীকৃত। হয়েন। অবশেষে পুষ্পাঞ্জলি দিবার 
সময় তাহাকেই জন্মজন্ান্তরের পত্ীরপে পাইবেন, মনে মনে এই 
অভী? পোধণ করিবেন, এইরপ অঙ্গীকারে আবদ্ধ হইয়া তিনি 
কুমারীর নিকট হইতে পচটি পদ্ম গ্রহণ করেন। অপর দুইটি কন্ঠা 
নিজেই বৃদ্ধাকে অর্পণ করিবেন বলজিয়। রাখিয়া! দেন। জনত| ভেদ 
করিয়। স্বীপন্ক রর সমাপবর্তী হওয়! ষ্ঠাহাদের উত্তয়ের় পক্ষেই একরূপ 


শপ পালাশাশ ৯ স্পট শপে পা শী জপ শষপাশপাপশপীসসীপপশীপস জাজ 


(১) মানবধর্মশান্্র মতে ৮* রতি ওজন তারে এক কার্ধাপণ 
হইত। বৃদ্ধঘোষ স্বর্ণ ও রৌপ্যময় কার্ধাপণের উল্লেখ করিয়াছেন কৃতরাং 
বৌদ্ধযুগে কাহাপণ ( কার্যাপণ ) যে মুদ্রাবাচক শবায়পে ব্যবহ্ছত হইত 
তাহাতে সন্দেহ নাই। (প্রাচীন মুদ্রা $ রাখালদান বন্দযোপাধ্যার, হিন্দী 
সংস্থরণ, পৃঃ ৫ ও ৮ 


৪৭৩ 


চৈত্র--১৩৪৭ ] 


অসম্ভব হইয়া গড়িয়াছিল। বুদ্ধের কৃপায় হঠাৎ সেই লময়ে ধারিবর্মণ 
হওয়ায় জনতা বিক্ষিণ্ত হইর! পড়ে। তখন ছুইজনে বুদ্ধের নিকটে 
পঁছিয়া তাহার দেহ লক্ষ্য করিয়া পুষ্প কয়টি নিক্ষেপ করেন; কিন্তু উহ। 
কোনটিই মাটিতে না পড়িয়া-_দীপঙ্করের শিরোদেশন্থ প্রভামগ্ুল সংলগ্ন 
হইয়া থাকে । ব্রাঙ্গণ নিজের কেশ দ্বার! দীপন্করের পদছয় মুছাইয়া 
দেন। সেই সময়ে দীপস্কর ভবিষ্যদ্বাণী করেন যে ব্রাঙ্গণ পরবর্তীকালে 
বুদ্ধ শাক্যমুনিরপে জন্মগ্রহণ করিবেন। চিত্রে দেখিতে পাই যে, 
দীপন্করের নিকট বজ্রপাপি দাড়াইয়। আছেন। 

৫নং প্রস্তরখণ্ডে উৎকীর্ণ চন্ত্-কিন্নর জাতকের আখ্যানাংশ সংক্ষিগতর । 
বোধিসন্ব তাহার এক পূর্বজন্মে হিমালয়ের কোন প্রদেশে কিন্নররূপে 
জন্মগ্রহণ করেন। তাহার নাম ছিল চন্দ্র এবং তাহার পড়ীর নাম চন্ত্রা। 
একদিন উভয়ে তাহাদের পর্ধধত-গৃহ ত্যাগ করিয়া বনবিহারার্থ বাহিরে 
আগমন করেন। চন্দ্র বীণাবাদন করিতে থাকেন এবং চক্র! নৃত্যগীতে 
নিবি হন। তৎকালীন কাশী-নর়েশ সেই সময়ে সশস্ত্র তখায় আসিয়া 
উপস্থিত হন। চন্ত্রার রাপলাবণ্য তাহাকে মুগ্ধ করে এবং তিনি 
ডাহাকে স্ত্রীরপে পাইবার ছুরভিসদ্ধিতে তাহার স্বামীর প্রতি ম্বর নিক্ষেপ 
করেন। শরে বিদ্ধ হইয়াই ন্্র মৃত্যুমুখে পতিত হন এবং ভূতলে পড়িয়া 
যান। কিন্তরীর কাতর প্রার্থনায় শত্রু (ইন্) দয়া করিয়া তাহার 
স্বামীকে বাচাইয়া দ্বেন। থোদিত চিত্রে দেখিতে পাই, চন্দ্র বীণা 
বাজাইতেছেন এবং তাহা স্ত্রী চক্র! বৃত্য করিতেছেন। নিকটস্থ পাহাড়ের 
পশ্চাৎ দিক হইতে ধনুধধারী এক ব্যক্তি তীর ছুঁড়িতেছে। ডাহিন 
দিকের ফলকে চন্দ্র মাটিতে পড়িয়া আছেন, তাহার বীণা চিত্রের সম্দুথ- 
ভাগে তৃপৃষ্ঠে পতিত ; চক্র! াহার স্বামীর মাথার নিকট বসিয়! কাতর- 
ভাবে ক্রনন করিতেছে এবং পিহুন হইতে একজন-_অনুমান হয় এই 


শ্রিষ্সা ও আমি 


৪৭৭ 


পুরুষটিই বারাণমীর অধীশ্বর--ঠাহাকে টানিয়া লইয়! যাইবার চেষ্টা 
করিতেছে। 

৬নং চিত্র অলঘুষা জাতকের কাহিনী হইতে গৃহীত। তারহতের 
প্রস্তর ঝেষ্টনীতেও ঠিক এইরূপ চিত্র খোদিত দেখ! যায়। সে চিত্রের 
নিয়ে "্ধব্যশূগ জাতক” এইরূপই লিখা আছে। বোধিসত্ব তাহার 
পূর্বজন্মে এক খধি হইয়া তপশ্চরণে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন। তাহার 
শোঁচাদির জন্য যে স্থানটি নিদ্দিষ্ট ছিল সেই স্থানের মৃত্তিক! একটি মৃগী 
জিহ্বার দ্বার! চাটিয়! লওয়ায় তাহার গর্ভসঞ্চার হয়। সে ধেশিগুটিকে 
প্রনব করে সেই শিশুই খন্তশূঙ্গ | তাহার মন্তক শৃঙ্গ -শোতিত ছিল। 
খ্শূঙ্গ যজ্ঞ করিবার জগ্য রাজসভায় আনীত হুইয়াছিলেন-_রাসায়ণে 
এইরূপ বণিত আছে। রামায়ণের আখ্যায়িকা ও বৌদ্ধকাহিনীতে 
এইটুকু মিল দেখা যায় যে, ধত্যশৃ্গকে আশ্রম হইতে তুলাইয়। আনিয়াছিল 
কোনও স্ত্রীলোক । শেষোক্ত বর্ণনামতে সেই তরুণী অপর কেহ নহে, 
রাজকন্যা ম্বয়ং, ই'হারই সহিত পরে খত্তশৃঙ্গের বিবাহ হয়। খত্তশূ 
আজন্ম ধধির আশ্রমে পালিত; তিনি শিশুর মত সরল ছিলেন। 
রমণী জাতির সহিত পূর্বে তাহার কোনও পরিচয় হয় নাই, তাই তিনি 
ত্র-পুরুষের তেদ বুঝিতেন না। মোদক এক প্রকার হুমিষ্ট ফল বলিয়াই 
বিশ্বাস করিয়াছিলেন। মহাকবির কল্পনামাধূর্যে খযশ্জ উপাখ্যান 
কবিতায় কি অপূর্ব সৌন্দর্যে মঙ্ডিত হইয়াছে তাহা! রবীন্দ্রনাথের “পতিতা” 
পাঠ করিলে বুঝা যায়। 

পূর্বোক্ত তিনটি জাতক-কাহিনী ব্যতীত আরও চারিটি (যড়ন্ত- 
জাতক, শ্তাম জাতক, বেস্দাস্তর জাতক ও শিবি জাতক ) যে গাদ্ধার- 
ভান্বর্যা-নিদর্শনের মধ্যে আবিষ্কৃত হইয়াছে এ স্থলে এ কথার উল্লেখ 
বোধ হয় অপ্রাসঙ্গিক হইবে না। 





প্রিয়া ও আমি 


কাজি আফসার-উদৃদিন আহমদ 

আজিকে শোনাবে দু-টি গান অতি সংগোপনে আমার তরণী নিয়ে উৎক্ষিপ্ত তরঙ্গদল মাঝে 
ধীরে অতি ধীরে বিপদ বহুল ; 

দেবে কী উত্তর তার? চমকিয়! যাবে অকারণে তোমার সে-ক্ুর হাসি সপিল চাঁহনি শত কাজে 
ক্ষিপ্ত পদওরে ? করিবে গো ভূল? 

নছিলে দোলায়ে গ্রীবা - তুলি দু-টি রোষ তীক্ক আখি তুমি কী সুন্বর হাঁসি” ভালোবেসে কাপায়ে নয়ন 
নিয়ে দৃপ্ত হাসি সরু দু-টি করে 

সরে যাবে এলোচুলে : আমারে কী রাখিবে না ঢাকি? টানিয়! লইবে মোরে ওগো প্রিয়া, পাঁতিবে শয়ন 
ওগো! চঞ্চলা উর্বশি ! তুংগ বক্ষপরে? 

চরণের তালে তালে রেখে যাঁবে বিপ্লবের ঝড় তোমার বসনপ্রান্তে রাখি মুখ ছুটি আখি তুলি+ 
হেরিবে না চাহি? তম্ুর আভায়, 

এমন বরিষ! রাতে আমারে ভাঁবিলে তুমি পর! আমার প্রশন্তি-গীতি, জাঁলিবে কী প্রেমের দীপাঁলি 
আমি যাবে বাহি-_ সবুজ শোভায়? , 





বনফুল 
তৃতীয় অধ্যায় 


১ 
একটি সন্বীর্ঘ গলি-পথে বাইকটি ঠেলিয়া তন্টু চলিয়াছিল। 
বাইকের পিছনের চাকাটায় গোলমাল হইয়াছে, হাওয়া 
বাহির হইয়া যাইতেছে । শ্রীপ্র সারাইবার সম্ভাবনা নাই, 
কারণ পকেটশৃস্ক । একেবারে শৃন্ট নয় একটি অর্দতুক্ত 
কাচা পেয়ারা আছে। সকালে আপি যাইবার মুখে 
মৃন্যয়ের বাসায় সে কিছু টাকার চেষ্টায় গিয়াছিল। মুন্ময় 
চিন্ময় কেহই বাঁড়িতে ছিল না, ছিল হাসি। পেয়ার! 
কিনিয়া সে গোয়াভ৷ জেলি প্রস্তত করিবার আয়োজন 
করিতেছিল। হাসির নিকট হইতে টাকা চাওয়! যাঁয় নাঃ 
কিন্ত পেয়ারা চাওয়া যায়। গোটা দুই ডাশা পেয়ারা সে 
সংগ্রহ করিয়াছিল। ভাগ্যিস করিয়াছিল, তাই আপিসের 
পর কথঞ্চিৎ ক্ষুন্নিবুত্তি করিতে পারিয়াছে। এখন চলিয়াছে 
নিবাপণবাবুর নিকট, ধাঁরের চেষ্টায় । অবিল্গে কিছু টাকাঁর 
প্রয়োজন । এক--আ।ধ টাকা নয় সাড়ে পাঁচশত টাকা। 
করাপলিচরণ দ্রাবিড় যাইবে বলিয়া! ক্ষেপিয়া উঠিয়াছে। 
আগামী সপ্তাহের মধ্যে বেমন করিয়! হোক টাকাটা! তাহাকে 
দিতেই হবে। কি কুক্ষণেই যে সে করালিচরণের টাকায় 
হাত দিয়াছিল। এ টাঁকা না পাইলেও তাহার সংসার 
নিশ্চয়ই চলিয়া যাইত। খুচখুচ করিয়া টাকাগুলি খরচ 
হইয়া গিয়াছে, এখন মহামুস্কিল ! হঠাৎ সাড়ে পাঁচশত 
টাকা জোগাড় করা কি সহজ? বৌদিদির অলঙ্কারগুলিও 
নাই। দাদা তাহার কিয়দংশ পূর্বেই সাবাড় করিয়াছিলেন, 
তাহার বি. এস-সি. পরীক্ষার ফি জমা দিবার সময় রুলি 
জোড়া গিয়াছিল, ফনতির অস্থখের সময় হারটা গিয়াছে। 
নিরাভরণ! বৌদিদি শথা লোহা ও সি"ছুরের সহায়তায় 
সধবার ঠাট কোনরকমে বজায় রাখিয়াছেন। বিড্ডিকাঁর 
এ বিষয়ে মুখে অবশ্য কথনও কিছু বলেন নাঃ কিন্তু না 
ঝলিলেও ভন্টু সব বুঝিতে পারে৷ কিন্তু বুঝিতে পারিয়াঁও 
বা কি করিবে, গহনা গাড়াইয়া দিবার সাম্য তো তাহার 
নাইি। বরং মনে হইতেছে বৌদিদির গহনাগুলি এ সময়ে 


যাইত বড় ভাল হইত। 


থাকিলে কাঁজে লাঁগিত। তিন দিন হইতে সে করালিচরণকে 
এড়াইয়! চলিতেছে, টাঁকা না লইয়! তাহার সহিত দেখা কর! 
অসম্ভব। শঙ্করের বহুদিন হইতে দেখা নাই। সেদিন 
হস্টেলে গিয়া! সে যাহা শুনিল তাহা অবিশ্বাস্য ৷ শঙ্কর নাকি 
লেখা-পড়া ছাড়িয়া দিয়া জিনিসপত্র বিক্রয় করিয়া বিবাঁগী 
হইয়া গিয়াছে । হস্টেলের দাঁরোয়ানটা বলিল । দারোয়ানের 
কথায় আস্থা স্থাপন করিয়া নিশ্চিন্ত গাঁকিবার পাত্র তন্টু 
নয়। সে আরও খোঁজ করিয়৷ জানিল__ভীমজালে পড়িয়! 
ছোকরা গা-ঢাক! দিয়াছে । অত লদ্কালদ্‌কি করিলে 
ভীমজালে পড়িবে না! ইদানীং সে যে বড় একটা ধরা ছোঁয়] 
দিত ন৷ তাহার কারণ এতদিনে স্পষ্ট বুঝা বাইতেছে। 
কয়েকদিন পূর্ধেব ওরিসিন্তাল অর্থাৎ দ্রশরথের মুখেও সে 
অতিশয় চমকপ্রদ একটি সংবাদ গুনিয়াছে। আধুনিক 
ছোকরাদের গালাগালি প্রসঙ্গে তাহাদের হাংলামির উদাহরণ- 
স্বরূপ ওরিজিন্ঠাল শঙ্কর নামক একটি ঘুবকের উল্লেখ 
করিলেন। সে নাকি লুকাইয়া৷ ওরিজিন্তালের রক্ষিতাঁর 
নিকট যাতায়াত করে! কলেজের দুই-একজন প্রীক্তন 
সহপাঠীর নিকটও ভন্ট্‌ শঙ্করের সম্বন্ধে নানাকথা শুনিয়াছিল 
এবং সমস্ত শুনিয়! তাঁহার প্রতীতি জন্মিয়াছিল যে “চাম্‌ 
গ্যান্ট” তীমবেগে রসাতলের উদ্দেশ্তেই রানিং আপিস 
খুলিয়াছে। এখন যদি ছোকরার একবার নাগাল পাওয়া 
আর যাই হোক, রাসকেলটার 
মাথা বড় সাফ-_কাব্যিরোগেই উহাকে খাইয়াছে ! 

মেজকাকা অর্থাৎ বাবাজি পুনরায় অন্তহিত হইয়াছেন। 
মায়ের বিষয়টি বাঁধা দিয়া কিছু অর্থসংগ্রহ করিয়াছিলেন 
এবং তাহারই সাহায্যে তিনি নাকি কুমারিকা অন্তরীপের 
সন্নিহিত কোন নির্নগ্থানে চলিয়া গিয়াছেন। ভন্টুর মনে 
হইল বাবাঁজির বিষয়টা হস্তগত করিয়! লইলে মন্দ হইত না। 
এ সময়ে অন্তত তাহা কাজে লাগিতে পারিত। বাবাজি 
তো দিতেই চাহিয়াছিলেন। 

অন্ধকার গলি। গলির দুইপাঁশে ধেঁষার্ধেষি খোলার 


৪৭৮ 


চৈত্র--১৩৪৭ ] 


ঘর। কোন ঘরে কলহের কোন ঘরে বেগুনভাজার। কোন 
ঘরে হারমোনিয়মের, কোন ঘরে শিশুর ক্রন্দন রোল 
উঠিয়াছে। ভন্টুর কিন্ত এসব দিকে লক্ষ্য নাই। বাইকটি 
ঠেলিতে ঠেলিতে নানা এলোমেলো চিন্তার মধ্যে একটি 
কথাই সে কেবল ভাবিতেছে _হঠা এনটাকাঁর কথা 
নিবারণবাবুর কাছে পাঁড়িবে কি করিগ! ! 


পৃথিবী বৈচিত্র্যময়ী। বিচিত্র লীলাঁয় বিচিত্র ভঙ্গীতে 
বিচিত্র বিধানে জীবনধারার বিচিত্র বিকাঁশ। এই বৈচিত্রাকে 
আমরা অন্তরের সহিত উপলব্ধি করি না বলিয়াই অপ্রত্যাশিত 
কিছু ঘটিলে বিস্মিত হই। বস্তত প্ররুতির বিচিত্র 
লীলানিকেন্তনে অপ্রত্যাশিত বলিয়৷ কিছু নাই। কোন 
কিছুকে আমরা অপ্রত্যাশিত বলিয়া মনে করি আমাদের 
কল্পনার দৈন্টবশত । আগাঁদের আরও একট অভ্যাস 
মামরা নিজেদের রুচি, বুদ্ধি, সংস্কার ও স্থবিধা অনুযাঁরী 
প্রত্যাশা করি এবং নিজেদের চি, বুদ্ধিঃ সংস্কার ও স্থবিধার 
প্রতিকূল কিছু ঘটিলেই তাহাকে অপ্রত্যাশিত আখ্যা দিয়া 
বিস্মিত অথবা মন্তাহত হই, ভুলিয়। যাঁই থে বৈচিত্র্যই পৃথিবীর 
প্রাণধর্্ম | প্রাণধর্ের প্রেরণায় প্রত্যাশিত, ঈষৎ প্রত্যাশিত, 
অপ্রত্যাশিত সর্বপ্রকার ঘটনাই ঘটে । আমরা ইহা জানি, 
বিচারের ক্ষেত্রে ইহা শ্বীকাঁর করি-_কিন্তু ব্যবহারিক জীবনে 
এতদনুসারে চলি না। ব্যবহারিক জীবনে আমরা আঁশা করি 
যে আমাদের সংস্কার, সুবিধা এবং নৈতিক আদর্শ অনুষায়ী 
সব কিছু ঘটিবে। কিন্তু তাহা ঘটে না, কাহারও জীবনে 
ঘটে না, নিবারণবাবুর জীবনেও ঘটিল না। নিজের 
মেয়েকে কেহ মন্দ ভাবে না, নিজের বন্ধুর চরিংত্র 
বিশ্বাস করাও মানষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। এই সুবিধা- 
জনক হ্বাভাবিক ধারণার আরামদায়ক আবেষ্টনীতে মন 
নিশ্চিন্ত থাকে । রাত্রে ঘুমন্ত অবস্থায় নানা বিপদ ঘটিতে 
পারে জানিয়াও আমরা ঘুমাই। সুতরাং মাঝে মাঝে 
অপ্রত্যাশিত রকমে চমকিত হইতে হয়। সকালে উঠিয়া 
দেখি চোরে সি'ধ কাটিয়াছে। অথব! ঘরে আগুন 
লাগিয়া গিয়াছে । নিবারণবাবুর মুখে সমস্ত শুনিয়া 
ভন্টু স্তস্ভিত হইয়া গেল। মাস্টার আসমিকে লইয়া 
সরিয়াছে। | 


ভল্ষহস 


শুগডি 


২ 

ছোট স্টেশনটি এতক্ষণ নিবিড় অন্ধকারে অবলুপ্ত ছিল। 
রাত্রি বারোটার সময় কিছুক্ষণের জন্ত তাহা সজীব হইয়া 
উঠিল। একটা গাড়ি আপিবে । স্টেশনের বাহিরে গভীর 
অন্ধকার বিল্লীম্বরে স্পন্দিত হইয়া! উঠিতেছে। চাৰিদিকে 
কেবল মাঠ। একটি সরু রাস্তা স্টেশন হঃতে মাঠের ভিতর 
দিয়া অঅকিয়া বাকিয়া গিয়া ছুই ক্রোশ দূরবর্তী বড় রাস্তায় 
মিশিয়াছে। এ্টশনের নিকট রেলোয়ের দুই-একটি 
কোয়ার্টার ছাড়া আর কোন ঘরবাড়ি নাই। আঁশেপাশে 
কেবল দিগন্তব্যাপী প্রান্তর । অরাবশ্তার সচীভেগ্ঠ অন্ধকারে 
চতুর্দিক সমাচ্ছন্ন | ... ট্রেন আসিল, ছুই মিনিট থামিগগ এবং 
চলিয়া! গেল। ট্রেন হইতে জন কয়েক যাত্রী নামিলেন, 
চিন্ময়ও নামিল। নির্দেশমত এই স্টেশনেই তাহার নাঁসিবার 
কগা। অন্ত বাঁত্রীদের সহিত চিন্ময়ও স্টেশনের বাহিরে সরু 
রাস্তাটার উপর আসিয়া হাজির হইল। অন্য যাত্রীরা মাঁপন 
আপন গন্তব্যপথে চলিয়া গেলেন। চিন্ময় একা চুপ করিয়া 
দাঁড়াইয়া রহিল। একটি ছেলের আসিবার কথা, কিন্ত 
কই, কেহই তো আসে নাই । এই অন্ধকারে পথ চেনাও 
মুষ্কিল। চিন্মর্ অনিশ্চিতভাঁবে এদিক ওদিক চাহিতে 
লাগিল। 

“আপনি কি জাঁফরাণপুর যাঁবেন ?” 

কোমল বালককণ্ঠে অন্ধকারের মধ্যে কে যেন প্রশ্ন 
করিল। 

“আপনি কে?” ৃ 

“আমি আপনাকে নেবার 'জন্কেই ধাঁড়িয়ে আছি 
এখানে |” 

“তাই নাকি, আচ্ছ৷ এদিকে এস ।” 

অন্ধকারে একটি ছায়ামৃত্তি নিকটে সরিয়া আসিল। . 

“আলোর কাছে চল দেখি তুমি কে ।” 

স্টেশনের নিকটবর্তী হইয়া স্টেশনের আলোকে চিন্পুয় 
চিনিতে পারিল। কলিকাতায় তাহাদের দলপতি দূর হইতে 
একদিন এই বালকটিকেই চিনাইয়া দিয়াছিলেন। 

চিন্ময় প্রশ্ন করিল, “কতদিন পূর্বে তুমি কোলকাতা! 
গিয়েছিলে ?” 

“ওমাসের পচিশে |” 

তাঁরিখটাঁও মিলিয়৷ গেল। 


৮5 


প্চল তা হ'লে যাওয়া বাক |” ও ” 

আবার তাহীর! মাঠের দিকে অগ্রসর হইতে লাঁগিল। 
বালক প্রশ্ন করিল--“আপনার নাম কি?” 

“বাইশ নম্বর ।” 

“চলুন |” 

তরুণকান্তি পনেরো-ষোল বছরের একটি কিশোর। 
তাহারই উপর নির্ভর করিয়! চিন্ময় অন্ধকার মাঠে নামিয়া 
পড়িল। সমস্ত সন্ধ্যাটা গুমোট করিয়াছিল, এখন বেশ 
ঝিরঝির করিয়! বাতাঁন বহিতে আরম্ভ করিয়াছে । কিন্তু 
চারিদিকে কি ভীষণ অন্ধকার ! চিন্ময় সহসা লক্ষ্য করিল 
ছেলেটি তাহার পাশে পাশে নয় আগে আগে চলিয়াছে। 

“তুমি আগে আগে যাচ্ছ কেন?” 

“আমি আগেই থাকি-আপনি আমার পিছু পিছু 
আস্মন।” 

“কেন বল তো” 

বালক কোন উত্তর দিল না। সে কিন্তু চিন্ময়ের সহিত 
চলিতে পারিতেছিল না, চিন্ময় তাহাকে বারম্বার ধরিয়] 
ফেলিতেছিল। তখন সে ছুটিয়৷ আবার থাঁনিকটা আগাইয়া 
যাইতেছিল। চিন্ময়কে সে কিছুতেই আগাইয়া যাইতে 
দিবে না। 

চিন্ময় হাসিয়া বলিলঃ “অমন ছুটে ছুটে এগিয়ে যাবার 
দ্রকারটা কি? একসঙ্গে পাশাপাশি যাই চল না।” 

“না, আমি এগিয়ে থাকব।” 

“কেন 7” 

“এমনি” 

চিন্ময় যে কাধ্যে চলিয়াছে সে সন্বন্ধে আলোচনা! করা 
মানা। এই কিশোর তাহাকে জাফরাণপুর অবধি 
পৌছাঁইয়া দিবে। সেখান হইতে অন্য উপায়ে কর্মস্থলে 
পৌছিতে হইবে । উভয়ে নীরবে মাঠ পার হইতে লাগিল। 
উভয়েই বেশ দ্রুতপদে চলিয়াছে; তাহার সঙ্গী আগাইয়া 
থাকিবার জন্ প্রায় ছুটিয়! চলিয়াছে। চিন্ময় পুনরায় প্রশ্ন 
না! করিয়া পারিল না। 

“অত ছুটে চলবার দরকার কি?” 

“আস্থন না আপনি" 

“তুমি পাশাপাশি ন! চললে আমি যাৰ না” 

“আনুন না 


ভ্ঞান্সসন্ব্ধ 


[ ২শ বর্ষ--২র় খণড--গর্থ সংখ্য 


“তুমি কেন এগিয়ে থাকতে চাও না বললে আমি 
যাব না ।” 

কিছুক্ষণ নীরব থাকিয়! একটু ইতত্তত করিয়া ছেলেটি 
অবশেষে বলিল--”“এ মাঠে বড় বড় গোথরো। সাপ আছে। 
আমার টর্চ আনা উচিত ছিল, কিন্তু আমি ভুলে গেছি ।” 

“তাঁতে কি হয়েছে 1” 

«আপনাকে যদি সাঁপে কামড়ে দেয়? আমার উপর 
ভার আছে আপনাকে জাফরাঁণপুরে নিরাপদে পৌছে 
দেবার । আপনি আসন্ন ।” 

“তোমাকে যদি সাঁপে কামড়ায় ?” ৬ 

“আমার চেয়ে আপনার প্রাণের দাম ঢের বেশী। 
আস্মথন ।” 


৩ 


শঙ্কর বিবাগী হইয়া যায় নাই। 

পিতার পত্র পাইবার পরদিনই সে হস্টেল ছাড়িয়া দিল, 
জিনিসপত্র ও বই বিক্রয় করিং1 খুচর! ধারগুল! শোধ করিয়া 
ফেলিল এবং উ্ভ্রাস্তচিত্তে অনিশ্চিতভাবে বান্তায় রাস্তায় 
ঘুরিতে লাগিল। পকেটে সাড়ে বারে! আন! পয়সা! মাত্র 
সম্বল। [বরাট কলিকাতা নগরীতে মাথা গু'জিবার স্থান 
নাই। শঙ্কর সহদা অনুভব করিল কলিকাতায় ধনীর 
স্থান আছে দরিদ্রের স্থান আছে, কিন্ত মধ্যবিত্তের স্থানীভাব। 
ধনীর প্রাসাদ আছে, দরিদ্রের ফুটপাথ আছে কিন্ত 
মধ্যবিত্তের, চক্ষুলজ্জীসম্পন্ন ভদ্রতাজ্ঞানবিশিষ্ট মধ্যবিত্তেরই 
মুস্কিল । এখানে বিনা পরিচয়ে অথব! বিনা পয়সায় 
ভদ্রভাবে কোন আশ্রয় পাইবার উপায় নাই। শঙ্করের 
যাহারা পরিচিত তাহার এত বেশী পরিচিত যে শঙ্কর 
অনস্কোচে তাহাদের নিকট যাইতে পারে না। কোন্‌ 
লজ্জায় সে শৈলর বাড়ি যাইবে! যাহাকে সে চিরকাল 
অনুগ্রহ করিয়া আসিয়াছে তাহার নিকট যাইবে অনুগ্রহ 
ভিক্ষা করিতে! এই একই কারণে ভন্টুর নিকট যাওয়াও 
অসম্ভব । তাছাড়া ভন্টুদের অবস্থা সে ভাল করিয়াই 
জাঁনে। তাহাকে আশ্রয় দেওয়ার মত দঙ্গতি তাহাদের 
নাই। শিরিষবাধু বদলি হইয়া গিয়াছেন, থাকিলেও শঙ্কর 
এমন দীনবেশে শ্বশুরবাড়ি যাইতে পারিত না। প্রফেসার 
গুপ্তের শরণাপন্ন হইয়া অবিলঙ্গে একটা টিউশনির বন্দোবস্ত 


চৈত্র-+১৩৪৭ ] 


করিয়! ফেলিতে পারিলে অনেকটা নিশ্চিন্ত হওয়! যাঁয়। 
প্রফেসার গুঞ কি অবিলম্ে একট। টিউশনির ব্যবস্থা 
করিয়া! দিতে পারিবেন? যখন প্রয়োজন ছিল না তখন 
একদিন তিনি বলিয়াছিলেন তাহাকে একটা টিউশনি 
তিনি জোগাড় করিয়া দিতে পারেন। এখনও কি 
পারিবেন? শিয়ালদহের সামনে একটা মুসলমানী দোকানে 
ঢুকিয়া শস্তায় কিছু রুটিমাংস কিনিয়া শঙ্কর ক্ষুন্নিবৃত্তি 
করিল। স্টেশনের ঘড়িটাতে দেখিল আড়াঁইট! বাজিয়াছে। 
রবিবার, গ্রফেসার গুপ্ত হয় তো বাঁড়িতেই আছেন। তাহার 
বাড়ির দিকেই- শঙ্কর অগ্রসর হইল। কোনক্রমে দশ- 
পনেরো! টাকার মতো একটা টিউশনিও যদি জুটিয়৷ বায়। 
পথ চলিতে চলিতে মায়ের কথ! তাহার মনে পড়িশ। বাবা 
ঘে তাহার খরচ বন্ধ করিয়াছেন মা কি তাহা জানেন? 
খুব সম্ভবত জানেন না। বাবা মায়ের দুর্বল মস্তিষ্কে 
পারতপক্ষে বিচলিত করিতে চাঁহিবেন না। সে যে বিবাহ 
করিয়াছে সে কথাও কি মাজানেন নাঁ। কিন্ত! হয় তো 
সব জানেন, বাবার ভয়ে কিছু করিতে পারিতেছেন ন1। 
জান আর না-হ জানুন শঙ্কর নিজে তাহাকে কখনও 
জানাইবে না । মাকে নিজের অবস্থার কথা জানানোর 
সরল অর্থ বক্রপথে পিতার অনুগ্রহ প্রার্থনা করিতে যাওয়া । 
তাহা সে মরিয়! গেলেও করিবে না । সহস! অমিয়র কথা 
তাহার মনে হইল । সে শিরিষবাবুর সঙ্গেই তাহার নূতন 
কর্মস্থল দিনাজপুরে গিয়াছে । অমিয়ার শিশুর মতো সরল 
মুখখান৷ চোখের উপর ভাসিয়া উঠিল। নিতান্ত সরল! 
শঙ্করকে পাইয়। যেন বত্তিয়া গিয়াছে! এমন স্বামী যেন 
কাহারও নাই, হইতে পারে না। এতট৷ সরলতা কিন্ত 
শঙ্করের ভাল লাগে নাই। শঙ্করের পরিণত মনের ক্ষুধা 
কি ওই শিশু প্রকৃতির অমিয়! মিটাইতে পারিবে? উহাকে 
স্নেহ করা চলে, উহার অযৌক্তিক সারল্য দেখিয়! 
কৌতুকান্থিত হওয়া চলে, কিন্তু উহার সহিত রোমার্টিক 
প্রেম করা চলে না। ওইটুকু মেয়ে ভালবাসার কি বোঝে 
ও! শঙ্কর যেন নূতন রকম একটা দামী পুতুন এবং 
তাহারই একাস্ত নিজন্ব এই আনন্দেই অমিয়া বিভোর। 
শঙ্করের মনের নিগৃঢ় আকুতির বিচিত্র পিপাসার কোন 
খবর রাখ! উহার পক্ষে সম্ভবই নয়। ও যদি কুটিল হইত, 
অপাঙ্গের বিলোল কটাক্ষে মুগ্ধ করিয়া ভ্রভ্দী সহকারে 


৯ ৃ 








চা 


বসব সস “সদ্য বস... বা সহ সস - - স্ব-স্ব ব্রা 


৪৮০ 





ব্যাহত করিতে পাঁরিত তাহ! হইলে শঙ্করের ভাল লাগিত। 
এ অতিশয় সরল; অত্যন্ত সহজ | বিন! প্রতিবাদে বানুবন্ধে 
ধরা দেয়, বিনা প্রশ্নে সমম্ত কিছু বিশ্বাস করে, বিনা 
সঙ্কোচে কৃতজ্ঞ হয়। কোন জটিলতা নাই, মনকে উৎস্ক 
করিয়৷ তোলে না। 


প্রফেসর গুপ্ঠের বাসায় পৌছিয়া শঙ্কর যাহা দেখিল 
তাহা অপ্রত্যাশিত । প্রফেপার গুপ্ত ও মিষ্টিদিদি দক্ষিণ 
দিকের নির্জন বারান্দায় বসিয়! চ1 পান করিতেছেন। 
বাঁড়িতে বালক ভূত্যটি ছাড়া আর কেহ আছে বণিয়াও 
মনে হইল না । 

শঙ্করকে দেখিয়া মিষ্টিদিদিই হাশ্তমুখে স্্ধনা 
করিলেন । “এ কি শঙ্করবাবু যে! অনেক দিন পরে দেখা 
হল আপনার সঙ্গে? বন্থুন |” 

নির্বিকারভাবে মিষ্টিদিদি কথাগুপি বলিলেন । শঙ্কর 
অবাক হইয় গেল। 

“মুখখানা বড় শুকনো শুকনে! দেখাচ্ছে যে, বসুন না|” 

শঙ্কর উপবেশন করিল। 

প্রফেসর গুপ্ত বালক ভূত্যটিকে ডাকিয়া আর এক 
পেয়াল৷ চা ফরমাঁস করিলেন । তাহার পর শক্করের দিকে 
চাহিয়া একটু হাঁসিয়! বলিলেন, “আমাদের কাব্য আলোচনা 
হচ্ছিল । কিং লিয়ারের গনেরিল আর রেগানকে কেমন 
লাগে তোমার ?” 

শঙ্করের কিং লিয়ার পড়া ছিল না, তবু বলিল, 
“ভালই লাগে ।” 

মিষ্টিদিদ্ি সবিন্ময়ে বলিলেন, “ভালো লাগে আপনার? 
আপনার রুচি বদলেছে তাহলে বলুন। আগে তো 
ঝ'1জওল! জিনিস বরদাস্ত করতে পারতেন না আপনি, !” 

প্রফেসার গুপ্ত বলিলেন, “ওর রুচির থবর রাখেন না৷ 
কি আপনি ?” 

“সামান্ত একটু পরিচয় নিয়েছিলুম একদিন। একদিন 
একটু ঝাজালো৷ সস্‌ চাখিয়েছিলুমঃ খেতে পারলেন না। 
কম ঝণজালে। মিষ্টি আরও খাবার ছিল+ সেগুলো পর্য্য্ত 
খেতে পারলেন নাঃ উঠে যেতে হ'ল ওঁকে !” 

“তাই নাকি? আমার তো ধারণা ছিল শঙ্কর খুব 
ঝালের ভক্ত !» 


0 এ 


০৩ 


শঙ্কর নির্বাক হইয়া বসিয়া রহিল। মুখ পাঁংশুর্র্ণ 
হইয়া গেল কি না তাহা সে নিজে দেখিতে পাইল না, কিন্ত 
তাহার কান ছুইটা গরম হইয়া উঠিল। মিষ্টিদিদি 
হাসিমুখে পুনরায় প্রশ্ন করিলেন; “তারপর, আছেন কেমন 
বলুন, অনেকদিন আপনার কোন খবর পাই নি। 
পড়াশোনা হচ্ছে কেমন ?” 

“পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছি” 

"ওমা সে কিঃ এটা আপনার এগজামিনের বছর না ?” 

প্রফেসার গুপ্তের চক্ষু ছুটিও প্রশ্নাকুল হইয়া! উঠিয়াছিল। 
তিনি বলিলেন, প্পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছ ?” 

যা, 

“কেন, হঠাৎ হল কি !» 

“বাবা খরচ দেওয়া বন্ধ করেছেন, তাঁর অমতে বিনাপণে 
বিয়ে করেছি বলে !” 

মিষ্টিদিদি মুখে একটা বিস্মিত সহানুভূতির ভাব 
ফুটাইতে চেষ্টা করিলেন, কিন্তু তীহার চোখ ছুটি হইতে 
একট চাপা হাসি উপচাইয়। পড়িতে লাগিল। প্রফেসার 
গুপ্ত বলিলেন, প্হঠাৎ তাঁর অমতে বিয়ে করতে গেলে 
কেন?” 

“একটি কন্ঠাদায়গ্রস্ত ভদ্রলোকের উপর অন্ুুকম্পা 
হল 

মিষ্টিদিদি একটু মুচকি হাসিয়া বলিলেন, “তবু ভাল, 
আমি ভাবছিলুম বুঝি আর কিছু__” 

শঙ্কর আত্মসম্বণ করিতে পারিল না। স্থানকাল 
বিস্বৃত হইয়! বলিয়া ফেলিল, “আপনি ভাববেন বই কি!” 

এই কথায় শিষ্টিদির্দি কলকণ্ঠে হাসিয়৷ উঠিলেন। 
উচ্ছ্বসিত হা্ততরজে শঙ্করের ব্যঙ্গোক্তি কোথায় ভাসিয়া 
গেল, তাহাকে স্পর্শই করিতে পারিল না। চায়ের 
পেয়ালার বাকী চা-টুকু নিঃশেষ করিয়া মিষ্টিদিদি উঠিয়া 
পড়িলেন। বলিলেন, “আমি এবার চলি ত হলে। আপনি 
একটা লোকের চেষ্টায় থাকবেন কিন্তঃ আমরা আমাদের 
সমিতির থেকে রৌজ আট আনা ক'রে দিতে পাঁরব। 
এর চেয়ে বেণী দেওয়ার ক্ষমতা নেই সমিতির। অত 
শন্তাঁয় কোন ট্রেন্ড, নাস পাওয়! যাবে না মানি, ই্রেন্ড, 
নার্সের দরকারও নেই, পাহারা! দেবার মতো একজন লোঁক 
পেলেই হ'ল। বেধোরে খাট থেকে পড়ে টড়ে না যান 


স্ব্য্ত্হ 








এ 





ঁ ৮ বর্ষ-_২য় খণ্ড-_৪্থ সংখ্য 





ভদ্রলোক। ওষুধ খাওয়াবারও হাঙ্গীমা নেই। ওষুধ 
দিচ্ছেন আমাদের প্রকাঁশবাবুঃ হোমিওপ্যাথি, পনেরো! দিন 
অন্তর এক ফৌোটা-_* বলিয়া একটু মুচকি হাসিলেন। 
প্রফেসার গুপ্ত বলিলেন, “আচ্ছা, চেষ্টায় থাকব-_-অত 
সস্তায় কোন বিশ্বাসযোগ্য লোক পাওয়া শক্ত-_” 

«ওর চেয়ে বেশী দেবার ক্ষমতা আমাদের সমিতির 
নেই। অত দেবারও ক্ষমতা নেই, মিসেস স্যানিয়লের বোন 
চুনচুনের ম্বামী বলেই আমাদের যা ইন্টারেস্ট । নিজেদের 
মধ্যে টাদা তুলে কিছু টাকা জোগাড় করেছি আমরা-_” 

“টি, বি. বলে সন্দেহ করছেন-__সেইটেই হয়েছে আরও 
মুস্কিল কি না” 

“ডাক্তাররা তাই বলছে, আমরা কি করব বলুন--” 

একটু হাঁসিয়া মিষ্টিদিদি আবাঁর বলিলেন, “কি ক'রে 
চুনচুন যে ওই রোগা কুচ্ছিত লোকটার 'লাতে, পড়লো 
তাই ভেবে অবাক লাগে আমার-_” 

প্রফেসার গুপ্ত মিষ্টিদিদির মুখের পানে ক্ষণিক চাহিয়! 
রহিলেন। ক্রমশ তাহার নুখে মৃছু একটা হাসিও ফুটিয়| 
উঠিল। মিষ্টিদিদিও হাসিলেন। তাহার পর বলিলেন, 
“মনে রাখবেন কথাটা । মিসেস স্যানিয়াল আমার ওপর 
ভার দিয়েছেন, আমাকে অপ্রস্তত করবেন না যেন। 
শঙ্করবাবুকেও বলুন না! ব্যাপারটা খুলে, উনিও হয়তো| 
কোন লোকের সন্ধান দিতে পাঁরবেন। অনেক জায়গায় 
ঘোরেন তো, পুরুষ মান্য হ'লেও চলবে” তাহার পর 
হাতঘড়িটা দেখিয়া বলিলেন, "উঃ বড্ড দেরি হয়ে গেছে 
আমার । এবার চলি আমি--” 

মিষ্টিদিদি চলিয়! গেলেন । 

শঙ্কর জিজ্ঞাসা করিল, “ব্যাপারটা কি?” 

“মিসেস মিত্রের একজন বান্ধবীর বোন-_চুনচুন 
কিছুদিন আগে যতীন হাজরা! বলে একটি লোককে লুকিয়ে 
বিয়ে করে। যতীন হাজরার তিনকুলে কেউ নেই, প্রেসে 
না কোথায় একটা কাজ করত; কোন রকমে চলে 
যাচ্ছিল। এখন সেই যতীন হাজরার হয়েছে টি.বি.-নার্স 
করবার লোক পাওয়া যাচ্ছে না। চুনচনের দিদি মিসেস 
স্যানিয়াল চুন্ুনকে কিছুতে সেখানে যেতে দেবে না। 
ওদের সমিতি থেকেই তাঁর চিকিৎসার খরচ চলছে, তার 
থাকবার জন্তে একটা ঘরও ভাড়৷ ক'রে দিয়েছেন ওরা; 


চৈত্র--১৩৪৭ ] ৪৬৩ 


ব্য ব্র ব্টে বব ক” স্থিত " স্ ৮” আহা সহ “হস... আস্- ্স্- 


এখন সেবা! করবার একজন লোক চাই। রোজ আট ততদিন টিউশনি করেই চালাঁব, তাছাড়া উপায় ফি। 
আনা ক'রে পাবে সে। আছে এমন লোক তোমার আপনি আপাতত যাঁহোক কিছু একটা জোগাড় করে দিন 


তল 














সন্ধানে ?” 

“আমিই করতে পারি।” 

“তুমি 1” 

“আপত্তি কিঃ আমি আপনার কাছে এসেছিলাম 
একটা টিউশনির চেষ্টায় । যতদিন সেট! না জুটছে ততদিন 
এই কর! যাক--* 

“নত্যি সত্যি তুমি পড়াশোন! ছেড়ে দেবে না কি! 
ব্যাপারটা কি খুলে বল তো! |” 

«ওই তো! বললাম, বাঁবা খরচ দেওয়া! বন্ধ করেছেন ।” 
প্রফেসর গুপ্ত কিছুক্ষণ নীরব থাকিয়! বলিলেন, “বেশ তো৷ 
টিউশনি করেই পড়াশোনা কর। পরীক্ষাটা দিয়ে 
রী 

“ডিগ্রী লাভ করার কোন সার্থকত৷ দেখতে পাচ্ছি না। 
বর্তমান যুগে টীকাঁটাই আসল, সময় নষ্ট না ক'রে টাঁকা 
রোজগারের চেষ্টাতেই লেগে যাওয়া উচিত।” 

“কিন্ত টাক! রোজগারের পথে বাঙালীর ছেলের 
ডিগ্রীটাই আসল সম্বল । ওটা! নিতান্ত তুচ্ছ করবার জিনিস 
নয়__» 

দড়িগ্রী সম্বল বলেই বাঙালীর ছেলের এত দুর্দশা 

“তা হ'লে কি বলতে চাও লেখাপড়া করাঁটা অনর্থক ?" 

“যারা লেখাপড়ার জগ্তেই লেখাপড়া করতে চায় তারা 
তা করুক এবং সম্পূর্ণভাবে তার উপযুক্ত হোক। আমি 
ভেবে দেখেছি আমার দ্বারা ও সম্ভব নয় ।” 

“তার মানে?” 

*বিদ্যার্থী হবার মত মনের জোর নেই আমার । সকলে 
রাক্মণত্ব লাভের উপযুক্ত নয় ।” 

“তুমি ষে একেবারে মরিয়া হয়ে উঠেছ দেখছি ।” 

শঙ্কর কোন উত্তর দিলনা! । বালক ভূত্যটি এক 
পেয়ালা! চা দিয়া গেল। শঙ্কর নীরবে চাপান করিতে 
লাগিল। 

“তুমি টিউশনি করেই টাকা রোজগার করবে 
ঠিক করেছ? ব্যবসা হিসেবে ওটা তো খুব প্রশস্ত পথ 
নয়।” 

"যতদিন অন্ত কোন একটা উপার্জনের পথ না পাই 


আমাকে__» 

“একটি আই. এস-সি. ছেলেকে কোচ. করতে 
পারবে ?” 

“পারব 1 

“কত মাইনে চাও ?* 

“আপনি যা ঠিক ক'রে দেবেন ।” 

“গোটা চল্লিশ হ'লে চলবে ?” 

“চলবে ৮ 

“দুবেল৷ পড়াতে হবে কিন্তু 1৮ 

“তাই পড়াব।” 

“আচ্ছা বলব তাদের তাহঠলে। একটি জুনিয়র 
প্রফেসারের সঙ্গে তার! কথা বলেছেন, দরে বনছে নাঃ সে 


ভদ্রলোক ষাট টাকা চান। তুমি চল্লিশ টাকায় 
রাঁজি তো ?” 

“ছ্থ্যা। কবে থেকে পড়াতে হবে ?” 

“আসচে মাস থেকে ।” 

“ততদিন তা হ'লে এই টি. বি. রোগীটার সেবা করা 
যাক্‌। 

“ও সবের মধ্যে আবার গিয়ে কি করবে। রোগটা 
ছোয়াচে এবং মারাত্মক |” 


“তা হোক, তবু আমি যাঁব।” 

“আচ্ছা পাগল তো! তোমার জীবনের মূল্য এখন 
অনেক বেশী, বিয়ে করেছ ।” 

শঙ্কর উত্তরে গুধু একটু হাঁসিল। 

কিছুক্ষণ নীরবতার পর প্রফেসার গুপ্ত বলিলেন, 
“তোমার সেই বান্ধবীটির থবর শুনেছ ?” ্‌ 

“কোন বান্ধবীটির ?” 

“বেলা মল্লিক ।” 

“নাঃ অনেকদিন কোন থবর জানি না ।” 

“সে এক বুড়ো সায়েবের সঙ্গে জুটেছে।” 

“তার মানে ? 

“একদিন বেলা দিনেমার সেকেণ্ড শো থেকে বাঁড়ি 
ফিরে এসে দেখে তার বাড়ির ঠিক সামনে একটা বুড়ো 
সাঁয়েব অজ্ঞান হয়ে পড়ে রয়েছে। চতুর্দিকে জনগ্রাণী কেউ 


৪5৮ 


নেই। বেল! জনার্দনকে ডেকে ধরাধরি ক'রে অজাঁন 
সায়েবকে ঘরে নিয়ে এল । শুধু তাই নয়, একজন ডাক্তার 
ডাকলে এবং সেবা শুশধা ক'রে সায়েবকে চাঙ্গা! ক'রে 
তুললে । 

“সাঁয়েবটা নিশ্চয় মাতাল ।” 

“না, তার স্টিক হয়েছিল। অর্ধেক শরীরে পক্ষাঘাত 
হয়ে গেছে ।” 

“তারপর ?” 

“্সায়েবের জ্ঞান হবার পর জানা গেল সায়েব খাঁটি 
বিলিতি সায়েব, এখানে একটা! সায়েবি দোকানে বড় চাঁকরি 
করে, কিছুদিন পরে রিটায়ার করে দেশে ফেরার কথা, 
এমন সময় এই বিপদ ।৮ 

“বেলার বাসার সামনে এল কি ক'রে |” 

“সায়েব নাকি এক ট্যাক্সিতে ছিল, ট্যান্সিতেই অজ্ঞান 
হয়ে যায়। যতদুর মনে হচ্ছে ওই ট্যাক্সিওলাই বেগতিক 
দেখে ওই নির্জন গলিতে সায়েবকে নামিয়ে দিয়ে সরে 
পড়েছে। অজ্ঞান সায়েব নিয়ে সে আর ঝামেলায় ঢুকতে 
চায় নি” 

“তারপর ? এ যে রীতিমত রোম্য1টিক ব্যাপার !” 

প]06 15501210861 00217 70610105? 

"তারপর কি হল ?” 

“তারপর যোগাযোগও দেখ অদ্ভুত, সাহেবের তিন- 
কুলে কেউ নেই, থাকবার মধ্যে আছে একটি পিয়ানো । 


বেলাও নাকি মিস্টার বোসের বাড়িতে পিয়ানো বাজাতে 


শিখেছে ।” 

শঙ্কর বলিল, “্থ্যা, শৈলর পিয়ানোটা! ও বাজাতো 
শুনেছি_-” 

“ফলে, বেলা এখন রোঁজ সন্ধষেবেলায় সেই পক্ষাঘাত গ্রস্ত 
সায়েবকে পিয়ানো বাজিয়ে শোনায়। সামটবের “কার, 

এসে ওকে নিয়ে যায় দিয়ে যায়|” 

“মাইনে নিশ্চয় পায় এর জন্যে 1” 

“সেটা ঠিক জানি না আমি। তবে সায়েব জাত কাঁরো 
কাছে অমনি কিছু নেয় না। নিশ্চয়ই কিছু দিচ্ছে ।” 

শস্কর চুপ করিয়া 'রহিল। 

প্রেসার গুপও বাতায়ন-পথে খানিকক্ষণ নীরবে চাহিয়া 
বহিলেন। 


ভ্ডাল্ুভন্বশ্ব 


[ ২৮শ বর্--২য় খণ্ড-৪র্থ সংখ্যা 


শঙ্কর অন্য গ্রসঙ্গ উত্থাপিত কর়িল। 

“মানতুরা কি এখানে নেই না কি, কারো! সাড়াশবধ 
পাচ্ছি না।” 

“নাঃ ওরা অপর একট! বাড়িতে আছে। মানতুর 
বিয়ে -* 

“তাই না কি?” 

্ট্যা। 

প্রফেসার গুপ্ত কেমন যেন একটু অন্তমনস্ক হইয়! 
পড়িয়াছিলেন। 

“মিসেস মিত্রকে আপনি কি একটা চিঠি দেবেন ? না, 
আমিই মুখে গিয়ে বলব--৮ 

“তুমি ওই যক্মারোণীর সেবা ন! ক'রে ছাড়বে না ?” 

“না 15 

“তবে আঁর চিঠি লেখবাঁর দরকার কি, নিজেই গিয়ে 
বল__” 

“তবু একটা লিখে দিন |” 

স্মিত হাশ্ত করিয়া প্রফেসাঁর:গুপ্ত বলিলেন, “তা 
হ'লে প্যাডখানা আর কলমটা নিয়ে এস ওই টেবিলট 
থেকে ।” 

শঙ্কর আনিয়া দিল। 


গ্রফেসার গুপ্ত লিখিলেন-_ 


মিসেস মিত্র, অন্যলোক খোঁজার দরকাঁর নেই। 
শঙ্করই সেবা করতে রাজি হয়েছে । এত শস্তাঁয় 
এত ভাল লোক পাওয়া যেত না। কালকের 
এন্গেজমেন্টের কথা মনে আছে তো? ইতি 
গুপ 


শঙ্কর পত্রথানি লইয়! চলিয়া গেল। 

প্রফেসার গুপ্ত আদন্ন এনগেজমেণ্টটার কথা ভাঁবিতে 
লাগিলেন । হঠাৎ তাঁহার মনে হুইল-_ইভার চিঠির উত্তর 
দেওয়া হয় নাই। প্রায় দুইমাস হুইল বেচারা চিঠি 
লিখিয়াছে। প্যাঁডখানা টানিয়া লইয়। তিনি ইভাকে চিঠি 
লিখিতে বসিলেন। উচ্ছাসপূর্নণ দীর্ঘ একটা চিঠি লিখিয়া 
তখনই সেটা পাঠাইয়া দিলেন। তাহার পর অগ্যমনস্ক- 
ভাবে “কুমারসন্তবথান! লইয়! উল্টাইতে লাগিলেন। সহস! 
তাহার দৃষ্টি এই ক্লোকটিতে আটকাইয়া গেল-_ 


চেত্র--১৩৪৭ ] ল্যাঞ্বন্মভ্য ৪৩০ 











শুচে চতুর্ণাং জ্বলতাং শুচিশ্মিতা 'ভাগীরথী নির্ঝরশীকরাণাং বো মুহঃ কম্পিত দেবদারুঃ 1 
হবিভূ জাং মধ্যগতা হুমধ্যমা যদ্বায়ুরিষ্টস্থগৈঃ কিরাতৈরাসেব্যতে ভিন্নশিখতিবর্ঃ | 
বিজিত্য নেত্র প্রতিঘাতিনীং 


সেই হিমালয়ের স্ুকুমারী কন্তা উম! শ্শীনিবিলাসী সন্গযাসীর 

জন্ত অগ্মিপরিবেষ্টিতা হইয়া স্যর দিকে চাহিয়া! আছেন । 
প্রফেপার গুপ্তের সহসা মনে হইল এই দুরূহ তপশ্চরণ 

আজকাল আর কেহ করে না । শিবই আজকাল নান1উপহার 


গরভমনন্যদৃষ্টি: সবিতারমৈক্ষত ॥ 


শুচিন্মিত৷ কশোদরী তপস্যারতা উম! গ্রীষ্মকালে অনন্ত- 
দৃষ্টিতে হৃুর্যের পানে চাহিয়া আছেন! তুষারণীতল 


হিমালয়ের কন্তা| উমা-_-যে হিমালয়ে 


লইয় উমার পিছ পিছু ছুটিয়! বেড়াইতেছে ! 


ক্রমশঃ 





ব্যাধনৃত্য 


্ীক্ষীরোদবিহারী ভট্টাচার্য্য 

রিনিনিনি নিকণে কাটার! বেত বনে 

ঝংকৃত তলত সর সয় শব্দে, 

ভাবলগীলায়িত লাস্ট, কি ফেল কি চুটে চলে টমফি। 

মৃদু বাত হিল্পোলে নিঃশ্বাস রুধি বুকে 
সাঁমলীয় লখিয়াকে 

চঞ্চল বল্লরী জঞাওগগিিনিহা 

পুলকি ঝলকে কলহান্তে। 
“ধুখতোর শয়তান ! 

আজি নর্তনে আহ্বত কোন্‌ গান! চুপ কর-_পাতি কান, 

ররস ঝরণায় নইলে এ বনে পাখী পাবি নে।” 
ঝ নি রি ফিন্কি হাসির ছলে, 
উট লখাই কাঁতরে বলে-__ 


মুগধিল অন্তর কোন্‌ তান ! 


মঞ্জীর কলরোলে 


“তোরে দেখে ভুলে যাই, পারিনে 1” 


বেয়াদব চুপ কর, 
মৃদুল মাঁদল বোলে এ দেখ কবুতর 
বেয়াকুল মন করে আন্চাঁন। দীডারারে রর কে নি নরত। 
লক্ষ্য করিয়া থির, 
এ বুঝি উড়ে যায় বক্ষে হানিল তীর 
মারি এক পাকশাট, ছটুফটি পড়ে ঝোপে পারাবত । 
বীর ত বুকফাটা শেষ ডাঁক 
কপট চাহনি হানি নীড়হারা পায়রার, 
মুনকী১ লখায়ে বলে-_ খগ্ডিত বিচ্ছেদ বেদনায় ; 
ছু'সিয়ার ! আর যেন যায় না। ক্রন্দিত নর্তনে , 
ক বুক ভেদি বনানীর 
(১) মুন্কী সব্যাধরমণী শোঁকবারি বাহিরায় ঝরণায়। 


বাইবেলে ব্রজলীল। 


প্রীবিনোদলাল বন্দ্যোপাধ্যায় এম-এ বি-এল্‌ 


“নিকুঞ্জ মন্দির মাঝে শুতল কুনুম শেজে 

দু দোছ। বান্ধি ভূজপ।শে ।” 

“চরণে চরণে এক।কারে, কেবা তাহা ছাড়াবারে পারে, 
এক তনু ধরি যদি টানে ছুই তনু আসে তার মনে ।” 


মহাপুরাণ গ্রীমত্ভ'গবতের দশম স্বদ্ধে প্ীভগবান শ্রীকৃষ্ণের লীল| বঠিত 
আছে, এই লীল1 আদি, মধ্য ও অন্ত-_তিন ভাগে বিভক্ত । আদিলীল__ 
বৃন্দাবন বা ব্রজলীল! । মধ্যলীলা-_মথুরালীলা। অন্তযলীল1--দ্বারকালীলা। 

বৃন্দাবন ব! ব্রজলীল! আবার সখ্য, বাৎসল্য, মধুর-ভেদদে তিন ভাগে 
বিভক্ত, যথ| £- ব্রজবালকদিগের সঙ্গে সখ্যলীল! ; মাতা যশোদা, পিত 
নন্দ ও মাতাপিতৃ-স্থানীয় গোপ-গোপীর সঙ্গে বাৎনল্য লীলা এবং ব্রজ- 
বধূদ্দিগের মহিত মধুরলীলা, এই শেষোক্ত লীলাই বৈষ্ণব ভক্তগণের হৃদয়ের 
ধন। এই লীলা-কথামূত দান ও গান করিয়! বহ ভাগ্যবান ব্যক্তি 
অমরত্ব লাত করিয়াছেন, যথ! প্রীমন্ত।গবতে £-- 


“তব কথামৃতং তগু-জীবনং 

কবিভিরীড়িতং কলষাপহং। 

শ্রবণ মঙ্গলং শ্রীমদাততং 

ভুবি গৃনস্তি যে ভূরিদা জনাঃ1” ভাঃ ১*-৩১-৯ 
অনুবাদ £-- তব কথামৃত কৰি কুলে স্তৃত 
শ্রবণ মঙ্গল তপত-প্রাণ। 
কলুষ লাশন, মুদদাত৷ সেজন 
যে করে বিস্তারে ভুবনে দান ॥ 


এই শ্লোকরত্ব চৈতন্য মহা প্রভুর অতি প্রিয় ছিল। 

কৃষলীল! শুধু পুরাণে সীমাবদ্ধ মহে, প্রাচীন গোস্বামীপাদগণ এই 
পবিভ্রলীল! অবলম্বনে বহপাগিত্যাপূর্ণ বৈষবগ্রন্থ প্রণয়ন করিয়! গিয়াছেন। 
যখ| £__ললিতমাধব, বিদগ্ধমাধব, উজ্জবলনীলমণি প্রন্ৃতি ; বিখ্যাত 
বৈষব কবিগণ £-_-জয়দেব, বিস্তা পতি, চণ্তীদান প্রভৃতি মনোহর পদাবলী 
রচনা করিয়! গিয়াছেন, যাত্রা, কীর্তন, থিয়েটার, কবিগান, কথকথা 
প্রভৃতিতে এই লীল! সর্বদ| অভিনীত হইয়। আমিতেছে। গুধু তাহাই 
নহে, পূর্বববঙ্গে ছাতপেটা, ধানকাটা, নৌকা-দৌড়, বিবাহ ইত্যাদিতে গীত 
গ্রাম্যদীত সকল এই লীল! অবলঘ্বনেই রচিত। মোটকথা “কানু বিনা 
নীত নাই।” সুতরাং এই লীলার বিষয়বন্ত এ দেশে সুবিদিত, অধিক 
বর্ণনা বাহুল্য মাত্র। কিন্তু এই লীল|-রসাম্বাদ করিবার যোগাতা ও 


অধিকার অনেকেরই নাই ।১ ধাঁহার! এই সুপবিভ্র লীলাকে প্রিয় ভক্তের 





১ “বহিরঙ্গ সনে করে নামসংকীর্তন। 
অন্তরঙ্গ 'দনে করে রস আম্ম।দন ॥”--চ, চ, 


সহিত ভগবানের লীলা, প্রকৃতির সহিত পুরুষের লীলা, পরমাস্মার সান্মিধ্য 
লাভ হেতু জীবাস্মার তীব্র আকাঙ্ষা মনে করেন সেই সমন্ত ভাগ্যবান 
ব্যক্তি এই লীলা-কথামৃত কিঞিৎ পান করিয় কৃতার্থ হইয়। যান। আর 
যাহারা ইহাকে পািব নায়ক-নায়িকার কুৎসিত কামক্রীড়া মনে করিয়া 
কবিবর ভারতচন্ত্রের বিস্তাুন্দরের পর্যযায়ে ফেলিয়া উপহান বিদ্ধপের 
লাগি ধাঞ্জায় সং দিবার উদ্দেস্টে রাধাকৃষ্ণের শ্বকীয়রসের পরকিয়াভিনয় 
উল্লেখ করে তাহার! নিশ্চয় নিজের সর্বনাশ নিজেরাই ডাকিয়! আনে, 
হুতরাং করুণার পাত্র সন্দেহ নাই। এই ভঙগ্যই বলা হয় মধুর লীল। 
কীর্ভন শুনিবার ব। আলোচন! করিবার অধিকার সকলের নাই। ইহাতে 
হয়ত অনেকে বিরক্ত হইতে পারেন কিন্তু কথাট! ঠিকই; ইহাতেই স্ুপবিত্র 
বৈধব সমাজে বাভিচার প্রবেশ করিয়া নেড়া-নেড়ীর সৃষ্টি করিয়াছে। 
পাশ্চাত্য শিক্ষিত সম্প্রদায়ের মধ্যে অনেকে এই লীলার নাম শুনিয়া 
নাসিক কুঞ্চন ও কর্ণে অঙ্গুলি প্রদান করিয়! থাকেন। বড় বড় 
মণীষীপদিগের মধ্যেও একাধিক ব্যক্তি এই লীলা বিশেষত রাঁস-লীলা 
শ্রীমস্তাগবতে প্রক্ষিপ্ত বলিয়া অভিমত প্রকাশ করিতেও কুণ্ঠা! বোধ করেন 
নাই। সমালোচনা সমালোচকের মনের ভাবের উপর অনেকটা নির্ভর 
করে। পুর্ব হইতে কোন একটা সংস্কার লইয়! বিচার করিতে বসিলে 
বিচারনিরপেক্ষ হওয়া! সম্ভব নয় ; বিশেষতঃ পাশ্চাত্য পণ্ডিত দিগের ভ্রান্ত 
মতবাদের ছার আমাদের মতবাদ প্রায়ই প্রভাবান্থিত হইয়া পড়ে। 
ধর্মগ্রন্থ সম্বন্ধে আমাদের দেশের এরূপ শিক্ষিত লোকের এই শোচনীয় 
অবস্থার হযোগ লইয় খ্রীষ্টান পান্ত্িগণ তাহাদের প্রচারকার্ষের সুবিধার 
জন্য এই লীল! অতি কুৎসিত বলিয়৷ নিন্দাবাদ এবং কুষঝ্চরিত্রে অকথ্য 
দোষারোপ করিয়! থাকেন৷ ইহাদের ভ্রান্তি দূর করিবার জন এই 
প্রবন্ধে আমরা! দেখাইতে চেষ্টা করিব যে, তাহারা যে বাইবেলকে অপৌরুষেয় 
ও ঈশ্বরাদেশে প্রচারিত অতি পবিত্র গ্রস্থ বলিয়া প্রগাঢ় ভক্তিভাবে গ্রহণ 
করেন সেই পবিত্র পুস্তকেও মধুর ব্রজলীলার অনুরূপ লীলা! দৃষ্ট হয়। 
পূর্ব্বে আমরা! "গীতা ও বাইবেল” প্রবন্ধে বাইবেলের বিষয়বস্ত 
ক্ষেপে বর্ণনা করিয়াছি, এখানে আর উহার পুনরুক্তি করিয়া প্রবন্ধের 
কলেবর বৃদ্ধি করিব না| ( ভারতবর্, ১৩৪৬, আধাঢ সংখা ভরষ্টব্য )। 
বাইবেলে (010 10562700171) অন্ান্ত বিষয়ের মধ্যে দাউদের গীত 
(65191)5 0£ 02100) ও মলোলেমান গীত (9০910100185 5016) 
নামক ছুইটি বিষয় সম্মিবেশিত আছে এবং উহ ইহুদী ও খৃষ্টান সমাজে 
অতি ভক্তিভাবে গৃহীত এবং বাইবেলের অন্তান্ অংশের স্তায় তুলায়গে 
সমাদূত। 
উঈশ! দাউদের-বংশধয়। দাউদ ও তৎপুঞ্্ সুলেমান বাদশা ঈশ্বরের অতি 
অনুগৃহীত তক্ত ও ভবি্ৎবক্তা (1১:921১615) | মূলেমান ঈশ্বয়ের এতই 


৪৮৩ 


চৈত্র-”১৬৪৭ ] 


্রাইন্হেল্পে ভ্রভ্কক্লীজ্ল। 


শুব্নি 





প্রিয় ছিলেন যে, একদিন স্বপ্নে আবিভূ্তি হইয়া ঈশখর হুলেমানকে বর 
দিতে চাহিলেন, স্থলেমান ধনদৌলত প্রভৃতির বর না লইয়! দিব্যজ্ঞান 
লাভের বর চাহিলেন। ভগবান (]11)0%) ইহাতে অতিশয় তুষ্ট হইয়া 
ধর বরই তাহাকে প্রদান করিলেন এবং এই জ্ঞ/নপ্রাপ্তির পরীক্ষা! পরের 
দিনই হইয়া! গেল। এ সম্বন্ধে বাইবেলে একটি ক্ষুদ্র আখ্যায়িক! আছে, 
এখানে উহ! উদ্ধত করিবার লোভ সম্বরণ করিতে পারিলাম না, বোধ 
হয় অপ্রাদর্জিক হইবে না । আখ্যায়িকাটি এইরূপ ৫-_ 
এক বাড়ীতে ছুইটি স্ত্রীলে।ক বাস করে, সে বাড়ীতে আর কেহ থাকে 
না। উভয়েই সম্তান-সন্তাবিত। বড় একটি পুত্র গ্রদব করিল। কয়েক 
দিন পরে ছোটরও এক পুত্র জন্মিল। কিছুদিন পরে ছোটর পুত্র 
একদিন রাত্রে হঠাৎ মার গেল। ছোট প্র মৃত পুত্রটি নিড্রিতা বড় স্ত্রীর 
পার্থে রাখিয়া তাহার জীবিত পুত্রটি লইয়। আসিল। নিদ্র/ তায়! 
বড় দেখিল ছেলেটি মৃত এবং সে তাহার ছেলেও নয়। তখনসে ছোটর 
ঘরে গিয়। দেখে তাহার পুত্র ছোটর নিকট রহিয়াছে । সে প্র পুত্র তাহার 
বলিয়া দাবী করিলে ছোট উহা! অস্বীকার করে, অগত্যা ত।হাকে বিচারার্থ 
রাঁজদরবারে যাইতে হয়। বাদশা সুলেমান জীবিত পুত্রসহ উভয়কে 
তলব করিলেন। বিচার আরস্ত হইল । উহার! প্রত্যেকে প্র পুত্র তাহার 
বলিয়া দাবী করিল। কোন প্রমাণ নাই। তখন বাদশা একথানি 
তলোয়ার আনাইয়া ধলিলেন--যখন কোন প্রমাণ নাই তখন এ পুত্রকে 
দ্বিথগ্ড করিয়া প্রত্যেককে অদ্ধেক করিয়! দিবার ব্যবস্থা করিলাম । ছোট 
ইহাতে তুষ্ট হইল ; কিন্তু বড় কাঁদিয়া কহিল, “ধর্মাবতার আমি ছেলের 
ংশ চাহি ন|, ছেলে আমার বেঁচে থাক, কখন না| কখন দেখতে পাব।” 
ইহাতে বাদশ! অত্যন্ত সন্ত হইয়! এ পুত্র বড়কে দিবার আদেশ দিলেন 
এবং ছোটকে তিরস্কারপূর্বক বাহির করিয়া দিলেন। এই বিচারে বাদশ! 
সুলেমানের নাম জগঘিখ্যাত হইল । 
এই সুলেমান বাদশাই বছু ব্যয়ে জেরুজিলাম নগরে মন্দির প্রস্তুত 
করাইয়! দিয়াছিলেন, উহ! এখনও বর্তমান আছে। আমাদের কাশী, 
গয়া, বৃন্দাবন, প্রীক্ষেত্রের স্ায় ইহ! ইহুদী ও খ্বীষ্টানদিগের মহাতীর্থ স্থান। 
দাউদ ও তৎপুত্র সুলেমান বাদশ| ইহুদী ও থুষ্টান সকলেরই বিশেষ 
সমাদৃত ও সম্মানিত। মুনলিম জগতেরও ইহার! অতিশয় শ্রন্ধার পাত্র। 
হজরত মহম্মদ স্বয়ং ইহীদ্দিগকে নবী (1১:01)1615) বলিয়! স্বীকার করিয়! 
গিয্লাছেন এবং শ্রদ্ধার চক্ষে দেখিয়াছেন। এ-হেন সুলেমান গীতাতেই 
আমর! ব্রজলীলার অনুরূপ লীলা দেখিতে পাই। ইহা আট অধ্যায়ে 
সম্পূর্ণ। দাউদের গীতের (2518715 ০£ 1980) পঞ্চত্বারিংশত্তম স্তোত্রে 
ইহার সুত্রপাত, পরে বাদশা সুলেমান বিস্তৃতভাবে উহার আলোচন! 
করেন, ইহ। ঈশ্বরাদেশে রচিত। ্রীভগবানের পরম ভক্ত বা ভক্তমণ্ডলীর 
(০৮010) সহিত ভগবানের * এই নিত্যলীল!। এই লীলার নায়ক 


পিসী পাপ পাপ 


কবে নীরব হান্তমুখে আদবে তুমি বরের সাজে 
জীবম-বধূ হবে তোমার নিত্য-অনুগত।-- 
বিজন রাতে পতির সাথে 


মিলবে পতিত্রতা । স্পপ্নবীন্্রনাথ-_- 


ভগবান ও নায়িকা ভক্তমণ্ডলী, উভয়ের মধ্যে বর-বধূর মিলন। আশ্চর্য্যের 
বিষয় এখানেও নায়ক গ্ঠামহন্দর, (1১120 1)00 ০01161)”) | সেখানে 
গোপাল এখানে মেষপাল, সেখানে ব্রজবালাগণ এখানে ইহুদী বালাগণ, 
সেখানে গোচারণ এখানে মেষচারণ, সেখানে রাজনন্দিনী এখানেও রাজ- 
নন্দিনী, সেখানে নিকুপ্ মিলন, এখানে উদ্ভান মিলন ইত্যাদি ইত্যাদি । 
কিছুরই অঙ্গহানি দৃষ্ট হয় না। 

ধাহারা আমাদের হুপবিত্র ন্বর্গায় বৃন্দাবন লীলার অনর্থক নিন্দা 
কগিয়। থাকেন তাহাদের জ্ঞানচক্ষু উন্মীলনের জগ্ভ এই লীলার কোন 
কোন স্থান, অনুবাদ ও স্থানে স্থানে তুলনামূলক ভাগবতের প্লোক ও 
বৈষ্ব পদাবলী সহ নিয়ে উদ্ধত হইল £-- 

(১) 1 না) 0190, 1001 €০022619. 


0 96, 08061)0915 01 7100581617,1-775 
[00100110101] 1709, 1)60281156 ] 217 10170. 1-6 


অনুবাদ £-- বটে আমি কালো, দেখিতে তে! ভাল 
ইহুদী বালিকাগণ, 
কালো বলে তাই করে! না আমায় 
অবজ্ঞা এ নিবেদন। 
“এমন কালিয়া ঠাদে কে আনিল দেশে 
অকলম্ক কুলেতে কলহ্ক রইল শেষে ।”- ইত্যাদি 
--চত্তীদাস 
(২) 7611 1706) 0 11১01] 18017) 129 
5০01] 10901), ৮1616 11900 0990651) 
৬৬1)616 07011 00706510195 119 
01001 26 17001), 
অনুবাদ :-_- পরাণের প্রি তুমি যে আমার 
বল হে আমারে সত্য । 
কোথায় চরাও পশুপাল তব 
বিশ্রাম কর নিত্য । 


1--7 


এই ত তোমার আলোক ধেনু 
কোথায় বগে বাজাও বেণু ! 


চরাও মহাগগন তলে? -_রবীন্দ্রনাথ 


চলসি যদ্ব'জাচ্চারয়ন্‌ পশৃণ, 
নলিনহুন্দরং নাথ তে পদং 
শিলতৃণাঙ্ুরৈঃ সীদতীতিনঃ 


কলিলতাং মন: কান্ত গচ্ছতি। ভাঃ ১*।৩১।১১ 


ব্রজ ছাড়ি যবে চল গে।চারণে 
নলিনসন্দর পদে তোমার 
শিলা তৃণান্ুর বাজিছে ভাবিয়। 
হৃদয়ে বেদন। বাড়ে সবার । 


(৩) 1019 0116615 215 001080৩1) জম101) 10৬5 0৫606৮/613, 
119 1060৮ চ11 0109105 018010, 1--1০ 








৪৮৬ জ্ঞাবভষ্বঞ্ধ [ ২৮শ বর্ষ ২য় খণ্ড--ধর্থ সংখ্যা 
গণ্ডে তোমার মাশিকর ছট! ৃ (দেঘে) বাম বাছ রাখি শিতামে আমার 
কিব! হুশোভন অতি, বামেতর ভূজে বাধয়ে মোরে। 
হেম-হারে ঘের! ক শোভিত সেখ! বাহিরের আবরণ নাহি রয়, 
ধরিয়া তাহার দ্যৃতি। যেথা! আপনার উলঙ্গ পরিচয়। -_রবীন্দ্রনাথ 
মণিময় মকর মনোহর কুগুল মণ্ডিত গঙগ্মুদ।রম্‌। “নাগরের বাহু করিয়। শিতান 
জয়দেব, ২৭ বিখান বসন ভূষা ।” --দান জগন্নাথ 
কাঞ্চন মণিগণ যেন নিরমাওল “ভূজে ভূজে বন্ধন নিবিড় আলিঙ্গন 
রমণী মগলী মাঝ। যেন কাঞ্চন মণি জোড়।” 
মাঝ হি মাঝ যাবত রর “নাগর সঙ্গে রঙ্গে যব বিল সই 
হ্যামর নটবর রাজ। -গোবিন্দদাস কুঞ্জে শুতলি ভুজ পাশে ।” --গোবিন্দদাস 
(৪) [762 57211 196 211 1011) 17096%181 00910162515, 2--13 “তুজে তুজে বাদ্ধি উরে উরছান্দে 
সারা নিশি সে যে থাকিবে শয়ানে হিয়ার উপরে হিয়া ।” 
কুচ যুগ মাঝে মোর । পিঙ্গল বরণ বলনখানিতে 
যস্তে ুজাতচরণানুরুহং স্তনেযু মুখানি আমার মোছে, 
ভীতাঃ শনৈঃ প্রিয় দধীমহি কর্কণেষু। শিতান হইতে মাথাটি বাহুতে 
তেন|টবীমটসি তম্্যথতে ন কিং শ্বিৎ রাখিয়া! শুতল কাছে। --চণ্তীদাস 


ভঃ, ১৯।৩১।১৯ 


কুর্পাদিভিত্র মতি ধীভবদাযুযাং নঃ 
কোমল কমল পদ রাখি মোর! ধীরে 
ভয়েতে কর্কশ কুচে পাছে তায় লাগে। 
কষ্করে বাজে না তাকি বনে বিচরণে 
এই চিন্তা প্রাণনাথ সদ! প্রাণে জাগে ॥ 


কিশলয়শয়ননিবেশিতয় 
চিরমুরপি মমৈব শয়ানম্‌। জয়দেব ২।১৩ 
শ্রিতকমলাকুচমণ্ডল ! ১1১৭ 


( তোমার ) 


(6) 1361)010 01১00 21 917, 09 1)610৮60 ; 
061১010 01১00 210 912, 01১০0. 1251 ৫95515 65, 7-15 


দেখ দেখ কত হুন্বর তুমি 
কপোতনয়ন! প্রেরদী মোর । 
চন্ত্রবদনী ধনী মৃগনয়নী 
রূপে গুণে অনুপম| রমণী মণি, 
--রঘুনাথ দাস 
(৬) ৪61210 0700 21 নিত 0) 19610%6৫. 
৪৪, 119252,269 8150 ০001179০015 £76€1. [--19 
কি সুন্দর তুমি কিবা মনোহর 
আনন্দদারিনী প্রিয়ে, 
সম্ভ বিছান শধ্য। মোদের 
অর্ভূক্ত রয়েছে চেয়ে। 
(৭) [715 16010210015 01706] 209 10620, 
4১0৫ 0015 018176 0817 0907 6770150500৩, 276 


্ইব বাধা বাহ ডোরে।  স্পরবীনত্রনাথ 


৮) 1091১610615 11158 & 06 01: 2. 01116 1010) 
1061)0)0, 105 51200611) 19613100 ০007 ৮9115 
76 1001611) 00101) 20 1116 ৬/11100/, 5110%%11) 
1)17715611 0)10061 05 140006- 279 


প্রাণের হরিণ পিয়! যে আমার 
দড়ায়ে গৃহের বাহিরে, 
বাতায়ন-পথে দেখে চেয়ে চেয়ে 
দেখা দিতে আসে আমারে । 
ওলে! সই, কিবা জ্বাল! হল কাল! কান্ুর পিরীতে, 
প্রণ কাদে আথি ঝুরে কিনা হ'ল চিতে। 
খাইতে সোয়াপ্টি নাই নিদ গেও দুরে, 
দিব! নিশি প্রাণ মোর কানু লাগিঝুরে ॥ 


9 1)610560 91১০166 7000 5210 01১10 16, 
156 010), 109 19৮6, 009 911 0100 210. 00106 25/89.2-71 
10110, 075 ৬7110665115 10851) 006 
1210 15 ০৮61 200 00156. 2--17 
1105 10615 800068 01 11)6 6700: 
11)6 0117)5 01 1106 51176116016 101105 15 ০0156) 
2720 006 ৬0106 01 1116 (0110৩ 15 1)6270 11) 0101 181)0.2-12 


বারেক আলিয়া! মোর বাতায়ন-পথে চেয়েছিলে | -_রবীন্দ্রনাথ 
ঝরোম! সব খুলে ঘেত হৃদয়-বাতায়নে। রবীন্দ্রনাথ 


অনুবাদ £-_ 


ঠপ্স্স 


( দেখ ) 


--চণ্ভীদাল 


প্রিয়তম মোরে কহিল ডাকিয়া 
উঠ উঠ পরিয়ে এস বাহিরিয়া | 
শিশির গিয়াছে বরিব! শেষ ; 
ফুলে ফুলে দেখ ছেয়েছে দেশ, 


চৈত্র--১৩৪৭ ] লাইন্বেক্নে আরভ্কক্নীজ্া। ৪৮৯, 


এখনই গুনিষে পাখীর গান 
এ যে কপোত ধরেছে তান। 


“রশ দিশ নিরমল ভেল পরকাশ, 
সখীগণ মনে ঘন উঠয়ে তরাস। 
আস্তে কোকিল ডাকে কদদ্থে ময়ূর 


দাড়িম্বে বসিয়া কীর * বোলয়ে মধুর ॥”--শশিশেখর 


(১৯) 710) 001060 13 1711)6 2110 ] 2) 1015, 
16 0660611) 212)0176 01)6 111165 2--16, 


আমি সে পিয়ার পিয়। সে আমার 
কমলের মধু করে সে পান। 


(১১) [0001 076 092 1)19271 100 1106 511700 ১ 


16০ 2৬/29, 01117 1209 0০100, 2--1 
এখনও রজনী আছে গুণমণি, 
আধার ছাড়েনি বিশ্ব, 
ফিরে এদ নাথ, ন| হ'তে প্রভাত 
করে! ন৷ আমারে নিঃম্ব। 
“এমন পিরীতি কু দেখি নাহি শুনি। 
নিমিষে মানয়ে যুগ কোরে দূর মানি ॥ 
এক তনু হয়ে মোরা রজনী গৌয়াই। 
সখের সাগরে ডুবি অবধি না পাই॥ 
রজনী প্রভাত হইলে কাতর হিয়ায়, 
দেহ ছাড়ি যেন মোর প্রাণ বাহিরায়। 
সে কথা কহিতে সই বিদরে পরাণ, 
চণ্ীদাস কহে ধনি সব পরমাণ |” 


(১২) 89 01006017215 7950. ] 50061311111 


৮1101) 0৮ 50111 10560), ] 50118111111). 


১1] (00130 1110) 190, 3---॥ 
শয্যার 'পরে প্রাণেশে আমার 
খু'জিলাম কত নিশিতে, 
খু'জিয়। না পাই কি করি উপায় 
ন! পাই তাহারে দেখিতে। 


(১৩) 1] 111 1156 70৬ 200 8০2০০ 0) 010) 
10) 06 5116515 2190 10 015 01080 75, 
[ ৮0111 5661৫ 10110 %1)00) 0) 9০001 10611) $ 


[ 50081) 00110) 000] 00010 1917) 1801 
উঠিধ এখনি যাইব নগরে-_ 
ঘাটে মাঠে বাটে খু'জিব পিয়ারে ; 
খু'জিলাম কত গিয়া! ঘ্বারে বারে 
কোথাও না পাই তাছারে। 





গুকপাখী 


লি 


শট 


৮, 


"গাযস্তয উচ্চৈরমূমেব সংহত 
বিচিকুত্রুম্মত্তকবন্থাত্বনং | 
পপ্রচ্ছুরাকাশবদভ্তরং বহি-_ 
ভূরতেষু সন্তং পুরুষং বনম্পতীন্‌॥” 

স্ভাঃ, ১০।৩০।৪ 


মিলি সবে উচ্চ তানে গ্রাহি তার গান 
পাগলিনী প্রায় ভার] খোজে বনে বনে, 
অন্তরে বাহিরে যিনি সর্ধ্বভূতে স্থিত 
জিজ্ঞাসে বারতা ঠার যত তরুগণে। 


“গোরয়া বসন, বিভূতিভূষণ, শঙ্ষের কুগল পরি, 
যোগিনীর বেশে যাব সেই দেশে যেখায় নিঠুর হরি। 
মথুর! নগরে প্রতি ঘরে ঘরে খু'জিব যোগিনী হ'য়ে, 
কারু ঘরে যদি মিলে গুণনিধি বাধিব বসন দিয়ে | 
-জ্ঞানদাস 
(১৪) 100)0 710017101 0১26 £0 21১0111 0)6 010) 
10010 1000 ) 10 ৮101) ] 5210, 52৬ 900 ৬/1)017) 
[71 90011 10611), ৮3, 
প্রহরী যাহারা আছিল নগরে 
দেখিতে পাইল আমারে, 
শুধাইনু আমি দেখেছে কি তার! 
নগরে আমারে পিয়ারে । 
কহ ত কহুত সখি, 
বোলত বোলত রে 
হামারি পিয়া কোন দেশ রে। 
পিয়! বিন্ু সগরি নৈরাশ রে ॥ --বিস্ভাপতি 


ধৈর্য্যং কুরা ধৈধ্যং রাধে, 
গচ্ছং মথুরায়ে । 
ঢুঁড়ব পুরী, প্রতি প্রতক্ষে, 
যাহা দরশন পাওয়ে ॥ 
ভদ্রং অতি ভঙ্্ং শীন্ত্বং করু গমন, 
অবিলমবনে মথুরাপুরে প্রবেশ করল ভ্রমণ! । 
মধুরাবাসিনী এক রমণী 
দূতী তাকব পুছে। 
'নন্দাজ্জ কৃষ্ণ খ্যাত কাহার 
ভবনে আছে। 
গুনি কছে ধনি, তাহে নাহি চিনি ৃ 
সে! কাহে হিরা আরব। 
মোর! জানি বন্ু-দেবকী-মৃত 
রামানুজ খ্যাত 
কংশঘাতী মাধব। 





৪৯১০ ভ্ঞান্রভন্বহ্থ [ ২৮শ বর্-_২য় খণ্ড--৪থ সংখ্যা 
সোই সোই কোই কোই, দারুণ কতক বিলোকন মোর। 
দ্রশনে মম আসা। কালহোই কিয়ে উপজল মোর ॥ 
যছুনন্দন কহে যাও যাও হারে হরল মন জন বুঝি এঁছন 

এ ষেউচ্চ বাসা ॥ ফাস পসরেল কাম ॥ --বিভ্ভাপতি 


(১৫) 17 0০010162505 215 1176 ৬০ 9০০৪ 
1085 01১96 815 1%11)5 
ড/11101) 60 917101)0 (1)6 11165, 


4 
কি হন্দর তব উচ্চ কুচ ছুটি 
জমজ হরিণ শিশুর মত, 
পল্মের বনে হরধিত মনে 
পদ্মের মধু পানেতে রত। 
“কুচ যুগ গিরি কনক কটোরি 
শোভিত হিয়ার মাঝে, 
ধীরে ধীরে যায় খমকিয়! চায় 
খন ন| চাহে লোকলাজে 
-চণীদাস 
(১৬) 01011] 1156 099 1916810 2170. 006 51)800% 5 
16৩ 2১/95 ] ৮111 £61 106 11) 0150 17) 011171810 
01 17057102100 10 006 10111 ০1 021)00110001096-74-0 
যাবৎ রজনী আছে আধার জড়ান ধর 
বিহরিব শৈল মাঝে স্বর্গীয় সুষমা ভর! 
কুচ যুগ চারু ধরাধর জানি, 


হদি পৈঠব জনি পছছিল পাপি। 
-বিস্তাপতি 
(১৭) 71)00 2171 21] হি 1) 10৬০ 
10061515109 51000 11) 0১০6, --4-7 


কি হুন্দর তুমি প্রেয়পী আমার 
নাহিতে! তোমাতে কলুষ লেশ। 


[1000 10851 17515105010 10621 ৮9101) 
06 01 01776 65 ৬1101) 0116 01)211) 
01 11)9 1)6০৫.---4-09. 


(১৮) 


(তুমি) নয়াণের বাণে কণ্ঠতৃষণে 
বধিয়াছ মোরে পরাপে। 
“শরছুদাশয়ে সাধুজাতসৎ 
সরসিজোদরঞ্রমুষ। দৃশা। 
সুরতনাথ তেহ শুক্ষদাসিক। 
বরদ নিম্নতে! নেহ কিং বধঃ ॥”--ভাঃ, ১০৩১২ 
শরতের ফুল সুজাত সয়োজ 
শোভা চুরি কর! নয়ন বাণে 
মহে কি সে বধহে্ুরতনাথ 
বিনাঙ্গলে দবানী বধিছ প্রাণে ।” 


1 51661), ০06 005 10621655190), 1015 006 ৮9102 ০01 
79 0619৬৫ 0১20 107001:601), 58511), 0791. 0১ 
10৬5 007 209 19520. 15 91160 ৮111) 09৮/, 1209 10015 
৮/10) 006 07015 0£170181)0. ০52, 
ঘুমাইলে আমি জেগে থাকে হিয়া 
প্রিয়তম ডাকে ছুয়ারে, 
(বলে) নিশির শিশিরে ভিজিয়াছে শির 
খুলে দাও দ্বার আমারে। 
“এ ঘোর রজনী মেঘের ঘটা 
কেমনে আইল বাটে, 
আঙ্গিনার মাঝে বন্ধু! ভিজিছে 
দেখিয়া পরাণ ফাটে ।” 


(১৯) 


--চণ্ীদাস 


1 0067760 (0 11) 19610৮8৫, 1১0 1) 17081060 1170 
%/101)01/0 17100551120 ৮55 £0106. 1] 50081511310) 
101 1 ০0010 2001 9170 1)117), ] 08110 1)11) 1১01 1) 
£2৮6 [06 70 91)5 ৬61, 00, 


(২৯) 


থুলিলাম দ্বার পিয়ার লাগিয়া 
দেখিতে না পাই আর 
(আমি) কত খু'জিলাম কত ডাকিলাম 
সাড়া ত দিলে না তার। 
1 1961060 [00 11) 115 12170 105 118 1)010 ০1 1])6 


000], 20 17) 1১০0/615 * ৮16 17)0৮90 00: 1১11), 
--5-8. 


(২১) 


বক্ষে তাদের মোচড় দিত --রবীন্দ্রনাথ 
প্রিয়তম মোর ছুয়ারের ফণকে 
প্রবেশ করা'ল হস্ত। 
পুলকে অঙ্গ সিহরিল মোর 
হইয়া পড়িমু বাস্ত 
(২২) ৬/1)10)67 15 09 ০৩1০৮০এ ৪০76, 
01100 911550 20006 ৮5010770617 2 
৬৬191101505 06100 (02060 
29106, 0021 ৮০ 1799 55500 1010) ৮111) 0066 0 6-1 


মোর জীবনের রাখাল ওগে! 
আছ যেন কাছের কোণে 
'একটুখানি আড়ালে, 





গ. 2170 05210 010, 05505007555 076 600061005 76117% 
50000560 1০15 552050 10 (1)৩ 100%/619, 
03, & 513800587535 01320010515, 





চৈত্র--১৩৪৭ ] অ্াইন্বেক্শে ভ্রভত্নীলা। ৪৯১৯ 
শাক্পা্প্পা্পিস্প ্পিপা্পিা স্পা স্পা সিটি টি 
ছুঁতে পারি বদনথানি ১005 50050570506 0015 1008059 09:10 11 ৮০৪10 
একটুকু হাত বাড়ালে । - রবীন্দ্রনাথ 90115 0৬ ০0170601960, 8-7 
আজ ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার পিরীতি অনল নিবাইতে জল, 
পরাণ বন্ধু হে আমার। _ রবীন্দ্রনাথ কোথাও নাহিক মিলে । 
কহলে! সুন্দরী দয়িত তোমার প্লাবনে না যায়, তুচ্ছ মনে হয় 
গেল কোথা, কোন গলিতে, সর্ধবন্থ সঁপিয়! দিলে ॥ 
থু'জিব কোথায় বল ন! তাহারে “পিরীতি, পিরীতি, পিরীতি অনল 
আমরা তোমার সহিতে। দ্বিগুণ জ্বলিয়। গেল! 
(২৩) গুলার 2৬5১ 01106 5555 007) 109 001 101)6১ বিষম অনল নিবাইল নহে * 
1253 061001006 100, 5-0 হিয়ায় রহল শেল ॥ 
ফিরাও ফিরাও আখি চেও না আমার পানে চণ্ডীদাস বাণী গুন বিনোদিনি 
মোহিত করেছ মোরে মোহের মদির| দানে। পিরীতি না কহে কথা। 
ছুইটি মোহন নয়নের বাণ পিরীতি লাগিয়া পরাণ ছাড়িলে 
দেখিতে পরাণে হানে, পিরীতি মিলয়ে তথা ॥” 
পশিয়া মরমে, ঘুচায়ে ধরমে আমরা আরও হুই-একটি কথা বলিয়া এই প্রবন্ধ শেষ করিব। 
পরাণ সহিতে টানে । _চণ্তীদাস এই পাধিব বর-কম্যার মিলন-লীল| যে কেবল প্রাচীন বিধানে (010 
বঙ্থিমে নয়নে চিত হরি নিল মোর। -বিগ্ভাপতি ?55192)61() দেখিতে পাওয়া যায় তাহা নহে, নব বিধানেও (ও 


(২৪) 110 1)6 01001 216 0) 661 ৬10) 51065, 0 08170615 
01801111001, 101 10105 06 (1) 11010115716 1115 0615 
(16 011 01061021005 01 2 00110101106 ৬ 011007218, 7-1 


নরেশ নন্দিনী কি সুন্দর তব 
* পাছুক! পরাণ প! ছুখানি ; 
কোন কারিকরে গড়া উকজোড়। 
যেন রে খচিত রতনমণি। 
“পুনহি দরশনে জীবন জুড়ায়ব, 
টুটব বিরহক ওর। 
চরণে যাবক হৃদয়ে পাবক 
দহই সব অঙ্গ মোর॥ 
ভনয়ে বিদ্তাপতি, সে যে যুবতী 
চিত থির নাহি হোয়। 
নে ষেরমণী সরম গুণমণি 
পুন কি মিলব মোয় ॥* 
চরণ যুগল জিনিয়! কমল 
আল্তা-রঞ্রিত তায়। 


(২৫) 00106 [09 19910560161 85 8০ 091: 1120 006 9610, 
[6105 10006 10 06 ৮111886 7-35. 


এস প্রিয়ে মোর চল যাই মাঠে, 
“পল্লী ভবনে করিগে বাস। 


(২৬) 11209 81515 ০201)0% 05600) 10৬6, 1)6101)67 021) 
(05 8005 010৬7) 1৮: 1652 10217) ৮০০] ৫1৮6 ৪11 


-বিস্তাপতি 


--চতীদাস 


* দেশ কাল পাত্র ভেদে জালতার স্থান পাছুক! পাইয়াছে। 


গু'651217161)1) ইহার পরিষ্কার উল্লেখ আছে, বথা:_-জনের শিৰ্কগণ 
আসিয়! ঈশাকে জিজ্ঞাসা করিল, “আমর! সব্ধ্দা! উপবাস করি, তোমার 
শিতের| সেরূপ করে না| কেন?” ইহার উত্তরে উইশ বলিলেন, 
021) 0)0 01110161001 006 10006 01920019611 17800111), 25 
10176 25 015 01106210017) 15 9101) 11060) 7 13810; 05 
0855 ৬111 00706 ৬1101) 006 10110087007) 51711 100 191:91) 
207) 01617) 200 01060 5121] 0১69 951. -৯15100৮ 15 

বর ষে পর্যন্ত তাহাদের সঙ্গে আছেন সে পর্যন্ত বরের ঘরের লোকের৷ 
কি শোক করিতে পারে? কিন্তু এমন দিন আসিবে যেদিন বরকে 
তাহাদের নিকট হইতে চলিয়া য।ইতে হইবে এবং তখন তাহার! উপবাস 
করিবে। দেখা যায় ঈশ। এখানে নিজেকেই বর বলিয়। বর্ণনা 
করিয়াছেন। আর এক স্থানে (মথি ২৫ অধ্যায়) ষীশু বর আসবে 
ব'লে দশটি কুমারী প্রদীপ লইয়! দেখিতে গিয়াছেন। অধিক রাত্রি 
হওয়ায় তাহারা ঘুমাইয়! পড়িল, অনেক রাত্রে বর আদিতেছে বর 
আসিতেছে শব্ধ শুনিয়। পাচটি বোকা মেয়ে দেখে-_ভাহাদের প্রদীপ 
নিবিয়! গিয়াছে এবং সঙ্গেও তেল নাই, তখন তাহার! বুদ্ধিমতী অপর 
পাঁচ জনের নিকট গেল ধার চাহিলে তাহার! বলিল যে-তেল আছে 
তাহাতে তাহাদের কোনরূপে চলিতে পারে, ধার দেওয়া চলে না। তখন 
তাহার! বাজারে তেল কিনিতে গেল। ইত্যবমরে বর আসিয় পড়ার 
বুদ্ধিমতী কুমারী পাঁচ জন বরের সঙ্গে বরের ঘরে প্রবেশ করিলে দরজা! 
বন্ধ হইয়া গেল, আর পাঁচটি বাজার হইতে ফিরিয়া ঘরে প্রবেশ করিতে 
পারিল না। দেই সকল ভাগ্যবতী যাহার! বরের ঘরে প্রবেশ করিয়াছিল 
তাহার।ই বরকে লইয়। বিমল মিলনানন্দ উপভোগ করিস। 


* নিবিল না। 


5৯২২, 


আপত/দৃষ্টিতে এই লীল! ব্যাপারটি কেমন কেমন লাগে বে কিন্ত 

ভিতরে প্রবেশ করিয়া সকল দিক বিবেচনা করিয়া দেখিলে এই নর- 
নারায়ণ মিলনের মধ্যে কোন অসৎ ব| অশ্লীল ভাব থাকিতেই পারে না। 
ইহা ্ব্গীয় দৌরভে নুরভিত অপাধিব বন্তা। ভোগ্য বিষয়ের সংস্পর্শে 
ইন্জ্িয়জ ষে ভোগ তাহা ছুঃখের আকর এবং তাহার আদি ও অন্ত আছে 
ুতরাং অনীম অনন্ত ব্রন্মানন্দের সহিত তুলন! হইতে পারে এমন ভোগ 
ঝবস্ত এখানে কোথায়, তবে কিঞ্চিৎ আভাস দেওয়া মাত্র। এই 
লীল! যে কেবল এদেশের প্রকৃত বৈষণব ভক্তগণেরই সতত ধ্যানের বস্ত 
এবং ধর্থের প্রধান অঙগ তাহা! নহে, মধ্যযুগীয় প্রকৃত খুষ্টানগণও এই লীলা 
উপাসন। করিয়া গিয়াছেন এবং এ বিষয়ে বৈষুব মহাজনগণের শ্ঠায় 
তাহাদেরও পদাবলী দৃষ্ট হয়, যথ! :- 

01007 709 10567 1)16251 

৬৬1১০119 0£ 1)117) 2190 59৮6 

[71075611001 1)0106 

৬1167 010 1 £1৮০ 5৮০০1 1951 


0 00 19610990০06. 
৮5৮ 00100 01006 01055 


উরস উপরে কুন্ুমশষ্য 

(শুধু) রচির! তাহারি তরে, 

প্রদানিল সুখে বিশ্রাম সেখ! 

প্রাণেশে পাইয়া ঘরে। 

উতয় দেশের মহাজনগণই যে একই আধ্যাত্মিক ভাবধার স্বার! 

পরিচালিত হইয়াছেন তাহা ইহার খারাই প্রতীয়মান হয়। এক্ষণে উক্ত 
মহাপুরুষের একটি গানের সহিত বিস্তাপতি ঠাকুরের একটি পদের তুলনা 
করিয়া এই প্রবন্ধ শেষ করিব। 


“[00017 210 01)501006 10181) 
165০1০0 ৮৮101) 10675 815166 
(01) 1 1)9101655 1121009 10018100 ) 
] 170, 0078 5561708 1097 
139 10161)0560016 290) 51610. 
4১10 17)9 2১ 59016656217 01580115601, 
750 0010000101)6 01955 


ভান 


[ ২৮শ বর্-_২য় থণ্ঁ--৪র্ঘ সংখ্যা 


নব অন্গুরাগিণী রাধা, 
কছু নহি মানয়ে বাধা। 
একলি কয়ল পয়াপ, 
পন্থ বিপথ নহি মান। 

ঙঃ ্ঃ সং 
যামিনী ঘন আন্ধিয়ারা, 
মনমথে হেরি উঞ্জিয়ার]। 
বিথিনি বিথারিত বাট, 


প্রেমক আমুধে কাট। -_বিভাপতি 


ইহার। কেহ কাহারও দ্বার! প্রভাবিত নহেন ইহা! নিশ্চয় । ইহাদের 

প্রত্যেকেরই একইরূপ আধ্যাত্মিক অনুভূতি হইয়াছে, ইহাতে ভৌতিক 
দেহেন্ত্িয়ের ভোগের কোন কথ| নাই, যেহেতু উহা নম্বর। 

“যে হি সংস্পর্শজ! ভোগ! ছুঃখ যোনয় এব তে। 

আন্তস্তবস্তঃ কৌভ্তেয় ন তেষু রমতে বুধঃ॥ 

গীতা, ৫২২ 

ইঞ্জিয়জ ভোগ যাহ! দুঃখের আকর তাহা, 

আদি অন্ত আছে যার কুস্তীর নন্দন 

তাই তাতে রত নয় পণ্ডিত যে জন। 


এখন উভয় গ্রন্থের লীলার উপরে উদ্বৃত স্থানগুলি বিশেষ আলোচনা 
করিয়া দেখিলে প্রতীয়মান হইবে যে, উহা! মূলত একই-_কামগন্ধশূন্ 
ভগবত প্রেমের থেলা, নশ্বর ভৌতিক দেহের সহিত দেহের মিলন নহে, 
আত্মার সহিত আত্মার মিলন, জীবের সহিত ভগবানের লীল!। 
প্রীভগবান জীবকে আত্মমাৎ করিবার জন্য সর্ধদাই প্রস্তুত। জীবকে 
ধর! দিতে ঠাহার আগ্রহ ন| থাকিলে জীবের কি সাধ্য তাহাকে ধরিতে 
বা তাহার মহিত মিলিতে পারে। ভক্ত কবি গাহিয়াছেন £-_ 


“ছোট ছু'টি ভূজ পাশে সে যদি ন! নিজে আসে, 

অনন্ত মহান্‌ সে যে-মিছে আশা তারে ধরা; 
(তবে) মিছে আশা তার সাথে নীরব নিথর রাতে-_ 

প্রাণে প্রাণে অতি ধীরে প্রেম বিনিময় কর!” 





আমিই শুধু ঢুলছি হেথা 





আব্দুর রহমান 

সরাইথান! শূন্য ক'রে দুষ্ট সাকী হাসছে দূরে 
পা কী যেন এক করুণস্থরে। 
উপ পপ জীবনটাকে ভাবছি একা 

(যেন) সাহারাতে সরল রেখা 
শীতের রাতে স্প্ত পুরী, আ্াকা বাঁকা নাইক' কোথা 
মোমবাতি: যতদূর ওর যাচ্ছে দেখা । * 

বৃথাই যেন জাগছে রাঁতি-- * ওময় খৈয়াষ অনুসয়ণে 


2 ০২২ 
পলা নাও হা 


শ্রীরাধিকারঞ্জন গঙ্গোপাধ্যায় 


সুন্দর বাঁড়ীর প্রশস্ত উঠানে একখানি মোড়ার উপর বসিয়া 
একটি অতি ধারাঁলে! কাঁটারি লইয়া একথানি স্থপারির 
বৈঠা টাচিয়া তাহাকে কার্যোপযোগী করিয়া তুলিতেছিল। 
এমন সময় সেখানে শ্রীমন্ত সারা মুখে দুষ্ট বাঁকা হাঁসি 
ফুটাইয়৷ তুলিয়া প্রবেশ করিল। সুন্দর মুখ তুলিয়৷ 
চাহিতেই শ্রীমন্ত ফিক করিয়া হাসিয়া ফেলিয়া বলিল, হু" 
দেখে এলাম, দেখবার মতই বটে ! 

সুন্দর বিব্রত হইয়া! উঠিয়া দাঁড়াইয়া তাড়াতাড়ি বিল 
আঁ: চুপ কর্‌। তোর যদি একটুও কাণগ্ডাকাণ্ডি 
জ্ঞান থাকে! 

এমন সময় সুন্দরের মা পূর্ণলঙ্ষমী ঘরের দাওয়া হইতে 
একখানি মোড়া লইয়া! উঠানে তাহাদের কাছে নামিয়৷ 
আসিয়া মোড়াটি শ্রীমন্তর কাছে মাটিতে পাতিয়া দিয়া 
বলিল, বোঁস্‌রে শ্রীমন্ত, দীড়িয়ে থাকবি কেন। সুন্দরের 
যেমন লোকে এলে বসতে দিয়ে তবে ত তার সঙ্গে 
কথ! বলে বাপু, তা নাযে এল সে দড়িয়েই থাকুক। 
নিজের মোড়াটাওত ওকে ছেড়ে দিতে পারতিস্‌। 

-_ হু” তা পারতাম মা_স্ুুন্দর এইখানে একবার 
থামিয়! বলিল, কিন্তু ও যে আমার সর্বনাশ ক'রে এসেচে ! 

পূর্ণলক্মী চমতকাঁর একটু হাসিয়া বলিল” তোমার 
সর্বনাশ করবার জন্তে ত লোকের চোখে নিদ্রে নেই। 
শ্রীমন্তকে আমি চিনি-_সে যাবে তোমার সর্বনাশ করতে! 
শোন দিকিনি ছেলের কথা ! 

তুমি তবে চেনে! ওকে ছাই, ও একটি কিচ্ছু, ও না 
পারে এমন কাঁজই দুনিয়ায় নেই।-_বলিয়া সুন্দর 
ভ্রভঙ্গী করিল। 

শ্রীমস্ত এতক্ষণে কথা! কহিল, বলিল-_না জ্যেঠাইমাঃ 
ওর কেন আমি সর্বনাশ করতে যাৰ শুনি? বরং সর্বনাশ 
যাতে না হ'তে পারে তাই দেখব। তা কিও স্বীকার 
করবে! আর একথা ও বলেচে তোমাকে শুধু তয় 
দেখাবার জন্যেই জ্যেঠাইম| । 

--সে কি আর আমি বুঝি না ্্রীমস্ত।-_বলিয়া পূর্ণলঙ্ষী 


আপনার কাজে চলিয়া যাঁইতেছিল, আবার সহস! ফিরিয়! 
ঈাঁড়াইয়। বলিল-স্ট্যারে শ্রীমন্ত, দুধ-কল! দিয়ে মুড়ি দেব, খাৰি 
চারটি? কাঞ্চনপুরের তাল-পাটালি আছে ঘরে। সেদিনও 
দিতে চাইলাম, খেয়ে যাবার তোদের সময় হ'ল ন। 

_ তা ছাড়বে না যখন দাও |-_বলিয়! শ্রীমন্ত সুন্দরের 
দিকে ফিরিয়া বলিল, ও আবার কিছু ভাবলে কি-না কে 
জানে। কিন্তু ভাল করেই এবার দেখে এসেচি-_-এমন 
কি বা দিককার তিলটা পর্য্যন্ত । 

সুন্দর কৃত্রিম বিন্ময় প্রকাশ করিয়া বলিল, বলিম্‌ কি! 
তা দেখতে গেলি, খাবার-দাবার খাইয়ে তবে ছাড়লে ত? 

- তা আর না। আমি তখন পালাবার পথ খুঁজচি। 
বলে কি-না আবার আদর-আপ্যাঁয়ন । পালিয়ে তবে 
ইাঁপ ছেড়ে বাঁচলাম। 

সুন্দর ইতিমধ্যে আবার বৈঠাটির দিকে নজর দিয়াছিল। 
কাজেই শ্রীমন্তর কথার আর কোনও উত্তর দিল নাঃ বা 
নৃতন কোন কথাও আর তুলিল না। শ্রমস্ত ক্ষণিক 
নীরব থাকিয়া বিরক্তি বোধ করিয়া বলিল, তবে তুই 
বৈঠাই ঠাছ, আমি পালাই। 

বলিয়' শ্রীমন্ত উঠিতে যাঁইতেছিল, সুন্দর তাড়াতাড়ি 
বাঁধা দিয়া বলিল, বাঃ, পালাবি কি রকম? আমি ত 
কোন কথাই তোর শুনিনি এখনও | সব হুবহু আমাকে 
বলবি তবে ত তোকে ছাঁড়ব। পালালেই হ'ল যেন! 
মা কখন আবার কটু ক'রে এসে পড়েন সেই ভয়েই ত 
তোকে বলতে দিচ্ছি না। 

প্রীমন্ত ভান রাখিয়৷ আবার চাপিয়া বসিল। 

সুন্দর তখন বলিল, ভাল কথাঃ আজ নৃপুরগঞ্জের 
হাটবাঁর ত, যাবি একবার হাটে? 

_কেন, তোর কি কাজ আছে কিছু? বাড়ীর জন্তে 
কিছু সওদা করতে হবে নাকি? 

_ নাঃ এমনিই একবার যাঁৰ ভাবচি। অনেক দিন 
যাইনি, গেলে মন্দ হয় না। সন্ধ্যের সময় ফেরবার পথে 
বকফুলী পার হ'য়ে নৌকো বেয়ে আসতে চমৎকার লাগবে। 


৪৯৩ 


3 ৪৭59 


_তা ত চমৎকার লাগবে! কিন্তু সত্যি কি 'সেই 
কারণেই শুধু নৃপুরগঞ্জের হাটে যাবি? 

-ই+ তাঁ, তা একরকম শুধু শুধুই বই কি! 

শমন্ত সুন্দরের কথা শুনিয়া কেন জানি একটু হাঁসিল। 
তারপরে বলিল, কার জন্তে কিনবি সে ত আমার জানাই 
আছে, কিন্তু কি কিনবি আঁগে জানতে পাই না কি? 

সুন্দর তখন জোর দিয়া বলিল, সত্যি কিছু কিনব 
না, কাউকে কিছু দেবও না, একটু ঘুরে আসবার জন্তেই 
শুধু যাব। 

বেশ, তবে তাঁই। তা যাওয়া যাবে। আর--সে 
জন্তেই কি বৈঠা তৈরী হচ্ছে নাকি? বলিয়া প্রীমন্ত মুখ 
ফিরাইতেই দেখিল, স্থন্দরের মা একটি বাটিতে করিয়। 
দুধ-কলা-মুড়ি-পাঁটালি ও এক গ্লাশ জল লইয়া আসিয় 
উপস্থিত। শ্রীমন্ত হাত বাঁড়াইয়! সেগুলি গ্রহণ করিল। 

পূ্ণক্মী সেখান হইতে চলিয়া যাইতেই সুন্দর বলিল, 
দেখতে যাওয়ার জলপানি, ঘুষ বল্তেও পারিস্‌। কিন্ত 
মনে থাকে যেন। তা যে-কোন এক পক্ষ থেকে 
আপ্যায়িত হলেই হ'ল। 

শ্রীস্ত অমনি বলিল, ও তাই নাকি? তবে ত 
জ্যেঠাইমাকে ডেকে আমার শুনিয়ে যাওয়া উচিত__ 
কেমন দেখলাম। 

_থাক্‌, আর বাহাঁছুরিতে কাজ নেই !_ বলিয়া! সুন্দর 
আবার বৈঠার প্রতি মন দিল। 

শ্রীন্ত দুধ-কলা-মুড়ি ও পাটালি একত্রে মাখিয়া 
লইয়া বলিল, তা হলে সত্যিই যাবি তুই আজ 
নৃপুরগঞ্জের হাটে ? : 

স্থন্দর বলিল, নিশ্চয় । 

রীমন্ত বলিল, তবে এক কাঁজ করিস, আমাদের ঘাটে 
নৌকো! লাগিয়ে আমাকে ডেকে নিয়ে যাঁস্‌। 

তা যাবখন।-_বলিয় সুন্দর নিজের মনে মনেই কেন 
জানি একটু হাসিল। 

শ্ীমস্ত কিন্তু তাহা লক্ষ্য করে নাই। 


বকছুলী নদীর ওপণরটারই নাঁম নৃপুরগঞ্জ। এই নূপুর- 
গঞ্জের ঘাটেই স্টীমার ভিড়িয়া থাকে । আর স্টীমার-ঘাটা 
হইতে সামান্ত কিছ পশ্চিমে প্রায় নদীর তীরেই নৃপুরগঞ্জের 


ভান 


[ ২৮শ বর্ব-_-২য় খণ্ড -৪র্ঘ সংখ্যা 


হাট। সপ্তাহে একদিন মাত্র এখানে হাট জমে, কিন্ত 
মস্ত বড় হাট জমে) আর কত দুর দেশ হইতে যে বেপারীর 
দল মালপত্র বোঝাই দিয়া ছুই মাল্লাই, তিন মাল্লাই, চার 
মাল্লাই, এমন কি ততোধিক বিরাট ঘাঁসি নাও লইয়া 
আসে তাহা সত্যই ভাবিয়। দেখিবার জিনিষ। হাটের 
দিনে নৃপুরগঞ্জে জন-সমাগম আর বকফুলীর উত্তর পাড়ে 
নৌকার সমাগম একটা দেখিবার বস্ত। বকফুলীতেও 
নৌকা চলাচলের আর বিরাঁম থাঁকে না, বকফুলীতে সে যেন 
নৌকা-উৎসব সুরু হইয়া! যায়। এই হাটের দিনে বকফুলী 
দিয়া চলাচল করিতে স্টামার ও মোটর-বোটগুলির খুব 
অস্থবিধা যে হয় তাহাতে আর সন্দেহ করিবার কিছু নাই। 

নৃপুরগঞ্জের হাটের লাগাও পশ্চিমে একট! কাটা খাল 
আছে, বকফুলী হইতে তাহা কিছুদূর পধ্যন্ত গ্রামের ভিতরে 
প্রবেশ করিয়! শেষ হইয়া গেছে। এই কাঁটা খাল 
পূর্বাহ্ছেই নৌকাঁয় নৌকায় একেবারে ছাইয়! যায়, 
তিল-ধারণের আর স্থান থাকে না। এই খাল হইতে 
নৌকা বাহির করিয়া আনা শেষে এক মহা সমশ্ার 
বিষয় হইয়] ধ্রাড়ায় | 

বেলা তিনটা সাড়ে-তিনটা নাগাদ হ্থন্দর শ্রীমস্তদের 
ঘাটে গিয়া নৌক! লাগাইল এবং বাড়ীর চাকর গঙ্জকে 
নৌকায় রাখিয়! শ্রীমন্তকে ডাকিয়া! আনিতে পাড়ে উঠিয়া 
গেল। শ্রীমস্ত স্বন্দরের ডাকের জন্ত একপ্রকার প্রস্তত 
হইয়াই ছিল। উভয়ে আসিয়া নৌকায় উঠিল, দুইজনে 
দুইটি বৈঠা তুলিয়া লইল, শ্রীমন্ত গিয়৷ পিছু গলুইয়ে হাল 
ধরিয়া বসিল। আর গঙ্গা স্রন্দরের আদেশ মত মাঝখানে 
পাটাতনের ওপর নিশ্চুপ বলিয়া রহিল। 

খালে নৌকা কিছুদূর অগ্রসর হইতেই শ্রীমন্ত মৃছ চাসিয়া 
সুন্দরকে বলিল, এখন সত্যি ক'রে বল্‌ ত--পাথীর জন্যে কি 
কি কিনবি ঠিক করেচিস্‌? 

সুন্দরও সলজ্জ একটু হাঁসিয়৷ উত্তর দিল, পাখীর জন্যে 
কিনতে হ'লে তো কিনতে হয় একটা দাড় আর কিছু ছোলা। 

শরীমন্ত বলিল, রাখ. তোর ফাজলামি সুন্দর, আমি যেন 


তোর মনের কথা! কিছুই আর ধরতে পারিনি। এখন 


যা বলি তাই শোন, মাধবী-কঙ্কনের জোলাঁর! ত "হাটে 
তাতের শাড়ী নিয়ে আসে নানা রঙ.-বেরঙের _তাঁরই একটা 
পছন্দ ক'রে কিনে নেবখন, চমৎকার মানাবে! 


চৈ--১৩৪৭ ] 


হু") তা মানাবে জানি, কিন্তু দেবে কে গুনি? আবার 
শেষে কি বহুপুরুষের শক্রতায় নতুন ক'রে রঙ. চড়াঁব 
নাকি? বলিয়া স্ন্দর হাসিল। 

__তা কেন, শক্রতা চিরদিনের মত শেষ ক'রে দিবি, 
যাঁতে আর শত চেষ্টায়ও কারও নতুন রঙ না চড়ে।__ 
বলিয়! শ্রীমন্ত পাণ্টা হাসি হাসিতে লাগিল । 

এমন করিয়া ঠারে ও ইসারায় হাসি-তামাসার ভিতর 
দিয়া তাহরা বকফুলীতে আসিয়া পড়িল। বকফুলীতে 
স্রোতের টান ভীষণ-__গঙ্গাও কাজে কাজেই আর একখানি 
বৈঠা তুলিয়া লইল। শ্লোতের টানের সঙ্গে যুদ্ধে মাতিয়া 
ওঠায় রঙ্গ-কথা তাহাদের আপনা হইতেই বন্ধ হইয়া আসিল। 

গঙ্গাকে নৌকায় রাখিয়া উভয়ে তাহারা নূপুরগঞ্জের 
হাঁটে উঠিয়া গেল। হাটে পা দিয়াই সুন্দর বলিল, হাঁটে 
এসেচি কেন জানিস্‌ শ্রীমন্ত? তোরা কেউ হাজার ভেবেও 
তাঠিক করতে পারবি না। কিন্তুযর্দি তা না পাই, সব 
দিন তে হাটে তা ওঠে ন!। 

শ্রীমস্ত বলিল; কি এমন অপরূপ জিনিষ তা শুনি আগে? 

সুন্দর বলিল, হাস্বি না বল্‌--একটা টিয়াঁপাখী কিনব 
কলে এসেচি। 

_ টিয়াপাথী? সত্যি ?-শ্রীমন্তর যেন তাহা বিশ্বাসই 
হইতেছিল না। 

স্থন্দর বলিল, সত্যি। আর এত সত্যি যে, এর চেয়ে 
বড় কিছু সত্যি হয় নাঃ হ'তে পারে না। 

শ্রীমস্তের সহসা! কেন জানি স্থন্দরের মতলবটা অতি 
অভিনব, চমতকার ও কৌতুক প্র বলিয়া মনে হইল। সে 
আনন্দে তাই সুন্দরের একটা হাত ধরিয়৷ তাহাকে অতি 
কাছে টানিয়া আনিয়া বলিল, মাঝে মাঝে ত হাঁটে উঠতে 
দেখেচি, আজ যেমন ক'রে হোক একটা খুঁজে বের করতে 
হবে কিস্ত। টিয়া ভারী জব্ধ হয়ে যাবে তাহলে। এ 
কিন্ত আজ পাওয়াই চাই। 

--তবে যে আমার কথা তোর বিশ্বাস হচ্ছিল না ?__ 
বলিয়া স্ন্দর হাসিতে লাগিল । 

শ্রীস্ত বলিল, তখন কি আর সব দ্দিক ভেবে 
দেখেছিলাশ যে হবে। সত্যি, চমতকার হয় কিন্তু তা হ'লে! 
ভারি মজা! হয়! চমৎকার ! 


কজলক্জিত্বৌল্ শাক্প 


৪৯৫ 


শিখাপুচ্ছের কমল গৌঁসাইয়ের মেয়ে নবহুর্গী আবার 
শ্বশুরবাঁড়ী হইতে ফিরিয়া আসিয়াছে আজ অপরাচ্ধে। 
ফিরিয়া আসার অনতিবিলম্বেই সে টিয়ার সঙ্গে দেখা 
করিতে আসিল, সঙ্গে তাহাঁর আঁগিল অমিয় সরকেলের 
দ্বিতীয়া কন্ঠ! বাবলি । 

ন্বহূর্গার সাড়া পাইয়া টিয়া! আনন্দে উঠানে নামিয়] 
আসিল এবং নবদুর্গা ও বাব্‌লিকে লইয়া গিয়া পশ্চিমের বড় 
ঘরটার দাওয়ায় একটা মাঁছুর পাতিয়! বসিতে দিল । 

টিয়া কিছুক্ষণের জন্ নবছুর্গার দিকে সবিশ্ময়ে চাহিয়া 
রহিল। নবদুর্গীকে সত্যই বড় চমতকার দেখাইতেছিল। 
নবদূর্গার মুখে কেমন একটি পরিপূর্ণ কৌতুক-উল্লাস, 
সারা অঙ্গে কেমন জানি ঢল নাঁমিয়াছে, চোখ দুইটিতে 
আনন? যেন উপচাইয়া পড়িতেছে, কপালে সিছুর যেন 
আশাতীত মানাইয়াছেঃ হাতের বালা ও চুড়ি কয়গাছি 
যেন সোহাগে ঝল্মল্‌ করিতেছে, কানের ত্বর্ণছুল দুইটি 
থাকিয়া থাকিয়া! ঝিল্মিল্‌ করির1 উঠিতেছে, গলার »পরে 
মপ্‌ চেন্টি যেন তরা নদীতে চাদের রেখাটির মত 
দেখাইতেছে। নবছুর্গার ভাব-ভঙ্গী কথা-বার্তা চাল-চলনে 
আপিয়া গিয়াছিল একটা সলজ্জ সোহাগের জড়িমা। এই 
কয়দিনেই কিন্তু নবহুর্গা নৃতন জীবনের আভাস অঙ্গে 
জড়াইয়া৷ ফিরিতে পারিয়াছিল। নবদুর্গীকে টিয়ার আজ 
ভারি ভাল লাগিতেছিল। 

ন্বদুর্গা পূর্বের চাইতে একটু মোঁটাও যেন হইয়াছে। 
টিয়া তাই ঠাট্টা করিয়! প্রথম বলিল- মাঁসখানেকও স্বর্ণকমলে 
থাঁকিস্নি বোধ করি, আর এরই মধ্যে কি মোটাই হয়ে 
এসেচিস্‌ দুর্গা, আমাদের অবাক ক'রে ছাড়লি তুই। 

বাবলি বলিল, আর বছরথানেক সেখানে কাটলে তে 
তুই দেখতে হবি একটা সাজা হাতীর মত। বাবা! বাবা! 
এখনই যা৷ দেখতে হয়েচিস্‌ ! 

নবদুর্গা খিল্‌ খিল্‌ করিয়া হাঁসিয়া উঠিল। তারপরে 
বলিল, যাঃ, তোদের আবার যত বাড়াবাড়ি কথা ! তা' 
একটু মোটা হয়েচি বই কি! 

টিয়া তাড়াতাড়ি বলিল, একটু নয়, বেশ মোটা হয়েচিস্‌। 
তারপরে শ্বশুর-শাশুড়ী, নন্দ-জায়েরা তোর কেমন হ,ল 
তাই বল্‌? 


নবদুর্গী বেশ একটু সময় লইয়া ভিতরে ভিতরে 


৯২৬১ 


কৌতুকোচ্ছুল হাঁসি চাপিয়া রাখিয়া বলিল, শ্বপুর-শীশুড়ী 
আমার চমত্কার লোকঃ সবচেয়ে চমতকার আমার মেজো 
ননদ__ নাম তাঁর কনকাঁপা-সবাই ডাকে কনকদিদি, 
আমার চেয়ে বছর তিন-চারের বড় হবেন হয় তো, কিন্ত 
সে তাঁর চেহার! দেখে ধরবাঁর জো-টি নেই, বিয়ে হয়েচে 
তার চন্ননহুলের জমিদারদের ছেলের সঙ্গে । চব্বিশ ঘণ্টা 
মুখে তার হাসিটি যেন লেগেই রয়েচে, আর সময় নেই 
অসময় নেই কাজ না থাকলেই তাঁর কেবল তাঁস পেটা-_ 
সঙ্গে করে নিজেই তাই চন্ননহুল থেকে তিন জোড়া 
“গ্রেট মোগল” তাস নিয়ে এসেছিলো । বাপরে বাপ, 
তার জ্বালায় রাত্রে কি ঘুমোবার জো ছিল। এক একদিন 
রাত ছু*টো-তিনটেও বাজিয়ে দিয়েচি তাঁদ পিটে! আর 
তাঁসের আড্ডাঁটি জমতে! আমাদেরই ঘরে । 

বাবলি এইখানে কথা কহিল, বলিল--তোঁদের তো 
তা হ'লে খুব কষ্টে কাটত রাত। 

নবছুর্গা হাসিয়া গড়াইয়' পড়িয়া প্রতিবাদ করিতেই 
যেন বাব্লির গা টিপিয়! দিয়া বলিল? কষ্টে কাটলে আর 
মোটা হলাম কেমন ক'রে রে? 

টিয়া হাসিয়া বলিল, ব্যস্, এই তো চমত্কার কথা বলতে 
শিখেচিস্‌ দুর্গা! তা হ'লে তোর মাস্টারটি ভালই পেয়েচিম্‌ 
বল্‌, শিক্ষা তো'র ভালই হচ্ছে তবে? 

_-হা'ঃ তা হচ্ছে বই কি !__বলিয়া নবদুর্গা কৌতুক আর 
চাঁপিতে না পারিয়াই যেন টিয়ার গায়ের উপর গড়াইয়! 
পড়িল। 

টিয়া ও বাবলি নবছুর্গার ভাব দেখিয়া হাসিয়া গড়াইয়া 
পড়িতে চাহিল। টিয়া নবদুর্গাকে ছুই হাত দিয়া সাম্লাইয়া 
ধরিয়া তাহার মুখের কাছে মুখ লইয়া স্বর করিয়া 
বলিয়া উঠিল,_ 

ভাবে গদ গদ রাই, 
(ও তারে) কি পোড়া কথা বা! শুধাই ! *** 
মনোহরের মুখের শোঁনা কথা বলিয়া ফেলিয়! টিয়া খুব 
থুণী হইতে পারিল না, কিন্তু নবছুর্গা ও বাবলি একেবারে 
উচ্ছলিত আবেগে থিল্‌ খিল্‌ করিয়া হাসিয়া উঠিল। 

হাঁসি থাঁসিলে পর টিয়াই আবার বলিল, অত বাজে 
বকে মরচিস্‌ কেন দুর্গা? সরাসরি আমাদের সরোজবাবুর 
কথ] কিছু শুনিয়ে দিলেই তে! আমরা! নিশ্চিন্ত হ'তে পারি। 


ভ্ান্রভবহ্থ 


[ ২৮ বর্ষ-_২য় খণ্ড তর্থ সংখ্যা 


বাবলি অমনি বলিল, সত্যি, তাঁর কথ! তে! একবারও 
বললি না দুর্গা । প্রথম তোদের কি কথা-বার্তা হ'ল, 
কেমন ক'রে লজ্জা! ভেঙে প্রথম কথা কইলি-_সেই সব বল্‌, 
তা না যত বাঁজে কথা। 

নবহুর্গা এইবার একটু বিপদেই পড়িল। সেই কথা 
বলিতেই তো! 'আসাঃ কিন্তু কেমন করিয়া যে সুরু করা 
যায় তাহা সে কিছুতেই ভাবিয়া পাইতেছিল না; আর 
বলিতে চাহিলেই কি সে সব এত সহজে বল! যায় নাকি, 
আর গুছাইয়া বলিতে পারাঁও কি সহজ! নবদুর্গা 
কাজে কাজেই কেমন যেন একটু লজ্জায় কাতর হইয়! 
পড়িল। তারপরে বলিল বিশেষ তেমন 'াঁর কিযে 
বলব ছাই! 

টিয়! মুহূর্তে নবদুর্গার কাঁধের উপর হাত রাখিয়া বলিল, 
দেখি তোর মুখ আমরা ভাল ক'রে--বিশেষ কিছু কিনা তা 
আমরাই বলে দিতে পাঁরব। 

তবে তো তোর! জানিস্‌ সবই ।--বলিয়া নবহুর্গা মৃদু 
একটু হাসিল । 

টিয়া বলিল, কেন, আমর। কি জর্জ্ঞত। না আমরা 
স্বামীর ঘর করতে গেছি কখনও? সরোজবাবু লোকটি 
কেমন তাই বল্‌ না, না, তা৷ বলতেও লজ্জা করে? বাবা! 
বাবা! আর সাঁধতে পারি না! 

নবদুর্গ সোহাগে গলিয়া গিয়া বলিল, তা 
বেশ ভালই । 

বাবলি নবছুর্গীকে একট! ধমকৃ দিয়া বলিল, থাক্‌, খুব 
হয়েচে তোর আর বলতে হবে না কিছু । 

টিয়৷ বলিল, ভারি যে তোর দেমাক লো৷ ছুর্গা! যা, 
আর সাধতে পারি না ! 

তখন দুর্গা একটা! ঢোঁক্‌ গিলিয়৷ যেন আড়ষ্টকণ্ঠে বলিতে 
লাগিল, প্রথম কথাই ও বললে কি জানিস্‌ ? বললে, শুধু 
হুর্গাতে মানাচ্ছিল না বুঝি, তাই নবদুর্গা নাঁম রাখা হ'ল? 
উত্তরে বললাম, শুধু নবহূর্গীতেও আর মানাচ্ছিল না, কাঁজেই 
না তোমার খোঁজ হ'ল। 

_ব-ল্‌-লি !- বাবলি এমনভাবে নবদূর্গার কথার পিঠে 
কথা কহিল যে মনে হইল, নবছুর্গার উত্তরটা সে যেন 
কিছুতেই বিশ্বাস করিতে পারিতেছে না । 

নবহুর্গা বলিল, হু", সত্যিই বলপাম বই কি। আর ও 


লোক 





জন্ম--১২৪৭ মাল, ওরা পৌয উমেশ দণ্ড মৃত্যু--১৩১৪ সাল, ৪ঠ৷ আষাঢ় 


চৈত্র--১৩৪৭ ] 








এমন ঠাই যে কথা আপনিই জুগিয়ে যায়, বিশ্বাস না 
করবার এতে আছে কি? 

বাবলি সৌতস্থক্যে বলিল, তারপর ? 

নবহুর্গা বাবলির “তারপর” বলার ভঙ্গী দেখিয়া হাসিয়] 
ফেলিল। টিয়াঁও সে হাসিতে যোগ দিল। 

তারপর নবদুর্গা একাই কত কথা যে বলিয়া চলিল, 
তাহার আর যেন শেষ নাই। এমন কি, একদিন যে তাহার 
মেজো নন্দ কনকটাপার চোখে তাহাদের সামান্ত একটা 
দুর্বলতা ধরা পড়িয়া গিয়াছিল তাহাও বলিতে সে তুল 
করিল না। কথ! বলিতে বলিতে নবহুর্গার মুখ-চোঁখ ঈষৎ 
রাঁডিয়া উঠিয়াছিল, ললাটে ও কপোঁলে মুক্তাফলের ন্তায় 


স্বেদবিন্দু দেখ! দিয়াছিল। 

কথায় কথায় বেলা গড়াইয়া গেল। ঠিক হইল, 
তিনজনে একত্রে আবার বহুদিন পরে রায়েদের দীঘিতে গা 
ধুইতে ও কলসী ভরিয়া জল আনিছে যাইবে। 


টিয়! একটি পিতলের কলমী, একথানি গামোছা ও 
একখানি শাড়ী সঙ্গে লইয়া তাহাদের সঙ্গে প্রথম সরকেল- 
বাড়ী এবং সেখান হইতে নবদুর্গাদের বাড়ী গেল। নবদুর্গী 
প্রস্তুত হইয়া আমিলে তাহার মা ডাকিয়া বলিয়া দিল, বর্ধার 
জল বাপুঃ একটু তাড়াতাড়ি যেন গ! ডুবিয়ে উঠে আপা হয়। 

নান! গাছের নীচ দিয়! সরু একফালি চির-ছায়ায়-ঘেরা 
গ্রাম্য পথ-_নির্জন ও অভিমানিনী প্রিয়ার মত থম্থমে__ 
অসমতল ও আকাবাকা, মেই পথ ধরিয়াই হাসি-গুঞ্জনে 
তাহারা রাষেদের দীঘির পানে আগাইয়া চলিল। 

নবদুর্গার কাধে আজ গামোছাঁর পরিবর্তে একখানি 
লাল বর্ডার দেওয়া দামী তোয়ালে-_ এখনও তাহাতে যেন 
স্থবাসিত তৈলের একটা সুমিষ্ট দ্রাণ মুচ্ছিতপ্রায় হইয়া 
আছে, নবদুর্গার সারা অঙ্গে কেমন যেন একটি ঘুমন্ত 
স্থবাস। 










2, ৮ -স) 
রা 


০০০০০ 
৬ খাটো 


ক্রুকুশক্িন্নীল্ আকন 


স্ব” সসস্্__স্্ি -স্স্_্্- সস 


5534 


সহ 





সখ্য আতা” 





সস 


নানাকথার মধ্যে পথ চলিতে চলিতে দীঘির প্রায় কাছে 
আসিয়া বাঁব'লিকে ঠেলিয়া সরাইয়া দিয়া টিয়ার প্রায় গায়ের 
উপর আসিয়া পড়িয়া নবদুর্গী বলিল_হারে টিয়া, আসল 
কথাই তোকে আমি জিগ্যেস করতে তুলে গেচি। সত্যি 
কথা বলবি তো? ৃ 

টিয়া অত্যন্ত সহজভাঁবেই বলিল -_কেন বলব না, নিশ্চয় 
বলবো । র্‌ 

_স্ট্যা রে, রায়েদের দীঘিতে আজকাল বিকেলে নাকি 
তুই গা-ধোওয়া বন্ধ ক্েচিস্‌? খালের জলই নাঁকি তোর 
মন ভুলিয়েচে শুনতে পাই? একি সত্যি? 

টিয়া সহজভাবেই বলিল-_হু"ঃ তা সত্যি বই কি! খালের 
জলও তো নতুন জল--বেশ পরিফার। আবার পচতে 
সুরু করলেই দীঘিতে গা ধোবো। কেন, একথা হঠাৎ? 

নবছুর্গী কোনও উত্তর না দিয়া বাঁবলির গাঁয়ের উপর 
আসিয়া যেন হাসিয়! লুটাইয়া পড়িল । 

-_-আ মরণ তোমার !-_বলিয়া বাবলি সরিয়া ধাড়াইল। 
ইহাতে নবছুর্গার হাঁসির মাত্রা যেন আরও বাড়িয়। গেল। 
শেষে হাসি থামাইয়! নবহুর্গা বলিল-_একথা হঠাৎ কেন? 
হঠাৎই শুনলাম যে, তাই হঠাৎ বলা । 

বাবলি অন্ত দিকে মুখ ফিরাইয়া মুখ টিপিয়া 
হাঁসিতেছিল । 

টিয়া কিন্ত ইহাতেও অপ্রতিভ হইল নাঃ বলিল-_হ্ঠাঁৎ 
স্ুনলেও সত্যি কথাই গুনেচিস্‌ ছুর্গা । 

নবদুর্গা বাঁবলির দিকে চাহিয়া কোনও রকমে হাসি 
চাঁপিয়া বলিল, তা মিথ্যে হবে কেন সে তো আর তোর 
শত্রু নয়। 

_ও$ শক্র নয় বুঝি ।-__বলিয়! টিয়া চুপ করিল, আর 
সে এবিষয়ে কোনিও কথ! কহিবে না এমনই ভাবে। 





(ক্রমশঃ ) 






২২, সক কক মহ জোরে কপ রি £” 


আচার্য্য উমেশচন্দ্র দত্ত 


্্রীমম্মথনাথ ঘোষ এম-এ, এফ -এস্‌-এস্‌, এফ-আর-ই-এস 


শত বর্ষ অতীত হইল, বাঙ্গালার এক নিভৃত গ্রামে উমেশচন্ 
দত্ত জন্সগ্রহণ করিয়াছিলেন। বাঁল্যে পিতৃহীন হইয়া 
দারিদ্র্যের মধ্যে গ্রতিপালিত হইয়! উৎকষ্ট বিদ্যালয়ে শিক্ষা- 
লাভের স্থুযোগের অভাব সত্বেও, তিনি প্রশংসনীয় শ্বাবল্বন, 
অবিচলিত অধ্যবসায় এবং গভীর বিদ্যাল্গরাগের বলে 
উচ্চশিক্ষা লাভ করিয়াছিলেন এবং নান! শাস্ত্রে পাতিত্য 
অর্জন করত প্রায় অর্থ শতাব্দী ব্যাপিয়া অধ্যাঁপনাদ্বারা 
দেশবাসীর মধ্যে জ্ঞান বিতরণ করিয়াছিলেন। তিনি 
কলিকাতার অন্ধতম প্রথম শ্রেণীর কলেজের-_সিটি কলেজের 
প্রতিষ্ঠাকালাবধি তাহার মৃত্যুকাল পধ্যস্ত উহার অধাক্ষতা 
করিয়া উহ্হীকে গৌরবের সমুচ্চ শিখরে স্থাপিত 
করিয়াছিলেন। যখন দেশ কুসংস্কারে আচ্ছন্ন, তখন তিনি 
হ্বগ্রামে ও নিকটবর্তী গ্রামসমূহে শ্ত্রীশিক্ষ! বিস্তার প্রভৃতি 
বহুবিধ সংস্কার সাধিত করিয়াছিলেন এবং অস্থঃপুরিকাগণের 
মানসিক উন্নতি সাধনার্থ প্রায় অর্দশতাব্ধীকাঁল“বামাবোধিনী” 
নায়ী স্ুপ্রসিদ্ধ পত্রিকা সম্পাদিত ও প্রচারিত করিয়া এবং 
বঙ্গমহিলাগণকে উহাতে লিখিতে উৎসাহিত করিয়া! এতদ্দেশীয় 
নারীগণের মানসিক উন্নতি সাধন ও মাতৃভাষার শ্রীবৃদ্ধি 
সম্পাদন করিয়াছিলেন। মূক ও বধিরগণের জন্য বিদ্যালয় 
তাহারই যত্বে সর্বপ্রথম এদেশে প্রতিঠিত হয়। তাহার ন্যায় 
পরছুঃথকাতর, পরোপকারী, সাধু; অহমিকাশৃন্, সরল, 
মিষ্টভাষী, মধুরম্বভাব ব্যক্তি অতি বিরল। অধ্যয়ন ও 
অধ্যাপনাতে তিনি সমগ্র জীবন অতিবাহিত করিয়াছিলেন; 
কিন্তু কবি কামিনী রায় যথার্থই বলিয়াছেন, 


“অধ্যয়ন, অধ্যাপনঃ নহে রে দুর, 
হুক্ষর চরিত্রে শান্তর করা গ্রতিভাত।* 


উমেশচন্ত্রের চরিত্রে হিন্দুশীস্ত্রের মহত্তম আদর্শ গ্রতিফলিত 
হইয়াছিল। এই জন্য তিনি হিন্দুধর্মের একটি বিশিষ্ট শাখায় 
বহুদিন নেতৃত্ব করিবার নিমিত্ত নির্ববাচিত হইয়াছিলেন। 
আজ “ভারতবর্ষ সসম্রমে তীগীর পবিত্র স্বৃতির উদ্দেশে 
শ্রন্ধানিবেদন করিতেছে । 


১৮৪০ খুষ্টান্বে ১৬ই ডিসেম্বর দিবসে ( ১২৪৭ বঙ্গাবে 
ওরা পৌষ) কৃষ্ণপক্ষ নবমী তিথিতে চব্বিশ পরগণাঁর 
অন্তঃপাতী মজিলপুর গ্রামে উমেশচন্দ্র জন্মগ্রহণ করেন। 

উমেশচন্দ্রের পিতা হরমোহন দন্ত মজিলপুরের দত্ত 
জমিদাঁরগণের অধীনে তহশীলদারের কাঁধ্য করিতেন। তিনি 
কর্তব্যপরায়ণ ও ধর্মভীরু ব্যক্তি ছিলেন। ১২৫৭ সালে 
২৪শে অগ্রহায়ণ তিনি তিন পুত্র ( অভয়চরণ+ উমেশচন্ত্র ও 
দীননাথ) এবং ছুই কন্তা রাখিয়। অকালে পরলোকগমন 
করেন। তাহার শোকে তাহার জননী উন্মাদিনী হন। 
উমেশচন্দ্রের জননী সর্ববমঙ্গলা তাহার উন্মাদিনী শ্বশ্রীমীত। 
অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তাঁনগণ এবং পরিবারের আশ্রিত আত্মীয়গণকে 
লইয়া অকুল পাথারে পতিত হন। কিন্তু অনন্কসাধারণ 
পরিশ্রমশীলতা ও প্রত্যুৎপন্নমমতিত্র গুণে তিনি সংসারের 
গুরুভার বহন করিয়াও পুত্রগণকে “মানুষঃ করিতে 
পারিয়াছিলেন। জ্যেষ্ঠ পুত্রকে অল্পবয়াসেই জমিদারগণের 
অধীনে স্বল্প বেতনে কার্য্যে প্রবৃন্ত হইতে হয়। অত্যধিক 
সাংসারিক চিন্তায় অভয়চরণের মন্তিষক্ষবিকৃতি ঘটে এব' 
তাহাকে বাতুলালয়ে প্রেরণ করিতে হয়। পুত্রবিরহে 
সর্বমঙ্গল। অত্যন্ত শোকবিহ্বলা ও রোগগ্রন্ত! হইয়া পড়েন 
এবং অভয়চরণ সুস্থ হইয়! ফিরিয়া মাঁসিবাঁর অল্লকাল মধ্যেই 
ইহলোক পরিত্যাগ করেন (১২৭৪ সাল ২২শে চৈত্র )। 

বাল্যকালে উমেশচন্ত্রের বিগ্যাশিক্ষার নানা বাঁধা উপস্থিত 
হইয়াছিল। আজ এ পাঠশালায়, কাল এঁ পাঠশালায় 
এইরূপে নানাস্থানে তিনি বিছ্যাশিক্ষা করেন। গ্রামের 
কোনও পাঠশালা অধিক দিন চলিত না। মুক্তারাম 
পণ্ডিতের পাঠশালায় একটা পরাক্ষায় কৃতিত্ব দেখাইয়া! তিনি 
বিদ্যোৎসাহী ব্রজনাথ দত্তের শ্লেহদৃষ্টি লাভ করেন। ইহার 
পুর শিবরুষ্ণের সহিত উমেশচন্দ্রের বিশেষ ঘনিষ্ঠতা! হয়। 
শিবরুঞ্ণ বিছ্যাুরাগী ছিলেন এবং গ্রামে শিক্ষাবিস্তারে যথেষ্ট 
আগ্রহ প্রকাশ করিতেন। তিনি সাহিত্যান্থরাণী ছিলেন 
এবং লুক্রিশিয়ার উপাখ্যান বাঙ্গালা পন্ে অনুবাদিত 
করিয়াছিলেন। ইনিই সর্বপ্রথম মজিলপুরে ব্রাঙ্গধর্ের 


৪৯৮ 


চৈত্র””১৩৪৭ ] 


বার্তা লইয়৷ যান। ইহাই সাহায্যে উমেশচন্দ্র রাঁজনারায়ণ 
বন্থর গ্রন্থাবলী এবং তত্ববোধিনী পত্রিকা প্রভৃতি পাঠের 
হুযোগ পাঁন এবং উহা! পাঠ করিয়! বাঙ্গালা সাহিত্যের ও 
্রাঙ্মধর্ম্ের প্রতি আকৃষ্ট হন । উমেশচন্ত্র ও তীহাঁর বন্ধুগণ 
মজিলপুরে একটী “বিদ্যোৎসাহিনী সভা” স্থাপিত করেন) 
উহ!তে তাহারা বাঙ্গাল! সাহিত্যের আলোচনা! করিতেন । 
উমেশচন্ত্র সঙ্গীতপ্রিয় ছিলেন এবং কেবল সঙ্গীতের চচ্চা 
করিতেন তাহাই নহে, তিনি স্বয়ং অনেক সঙ্গীত রচনা 
করিয়াছিলেন ; উহার কতকগুলি “সঙ্গীত রত্বাবলী”তে মুদ্রিত 
হইয়াছিল । তিনি ইতিহাস পাঠ করিতেও খুব ভালবাসিতেন 
এবং পঞ্চদশ বর্ষ বয়সে রোমরাজ্যের একটা সংক্ষিপ্ত ইতিহাস 
রচন! করিয়াছিলেন । উহা ১৮৫৯ খৃষ্টান প্রকাশিত হয়। 

মজিলপুরে কিছুদিন একটা ইংরেজী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত 
ছিল। উমেশচন্ত্র উহাতে ইংরেজী শিক্ষা করেন । 
খঙ্টাবে উহা উঠিয়া যায়। অতঃপর শিবরুষ্ণ দত্তের চেষ্টায় 
তিনি ভবানীপুরে লগ্ডন মিশন ইনষ্টিটিউসনে গ্রথম শ্রেণীতে 
প্রবিষ্ট হন এবং সেই বংসরেই কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের 
প্রবেশিকা ( এ্ান্স) পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হইয়া 
ছাত্রবৃত্তি লাভ করেন । 

অতঃপর উমেশচন্ত্র মেডিক্যাল কলেজে প্রবিষ্ট হন। 
১৮৬০-১ খুষ্টান্দে এই বিষ্ভালয়ে পাঠ করিবার পর তাহাকে 
বৃত্তির অভাবে পড়াশ্তনা বন্ধ করিতে হয়। তাহার জ্যেষ্ঠ 
ভ্রাতার পীড়ার জন্য সংসারের সমস্ত ভার তাহার উপর 
পড়িয়াছিল এবং অতিরিক্ত পরিশ্রমে তাহার নিজেরও 
মন্তকের ও চক্ষুর পীড়া হইয়াছিল। হইহাঁও কলেজ ত্যাগের 
অন্ততম কারণ । 

১৮৬২ খৃষ্টাব্দে তিনি জয়নগবে ই:রেজী বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় 
শিক্ষকের পদ গ্রহণ করেন । এই সময়ে তিনি, শিবরুষ্ণ দত্ত, 
কালীনাথ দত্ত, হরনাথ বন্থু প্রভৃতি বন্ধুগণের সহিত মিলিত 
হইয়| গ্রামের সর্ধববিধ উন্নতি সাধনে যত্ববান হন। ইহারা 
একটা বালিক! বিগ্যালয় সুপ্রতিঠিত করেন। ইহারা “বঙ্গ হিতা- 
থিনী” নামক একখানি পত্রিকা প্রকাশ করেন, শিবরুষ্ণ উহার 
সম্পাদক এবং উমেশচন্ত্র উহ্থার সহকারী সম্পাদক ছিলেন। 
ইহার! একটা হিতৈষিণী সভ। স্থাপন করিয়! গ্রামের দুঃখ 
ুর্দশা। ঘুচাইতে ত্ববান হন। ব্রাঙ্ষধর্মের প্রতি অন্ুরাগের 
জন্ত ইহার! হিন্দু জমিদারবাবুদের নিকট বু নির্যাতন লাভ 





১৮৫৯ 


আছাম্ম্য ভক্ত তু 





ডক 


করেন এবং , অবশেষে উমেশচন্দ্রকে বাধ্য হইয়া জয়নগরের 
শিক্ষকের পদ পরিত্যাগ করিতে হয়| 

অতঃপর উমেশচন্ত্র কলিকাতায় পুনরাগমন করেন এবং 
কলিকাতা ট্রেনিং একাডেমীর শিক্ষক হন। এই বিষ্তালয় 
পরে বিষ্ভাসাগর মহাশয়ের মেট্রোপলিটান ইনষ্টিটিউসন 
নামে প্রসিদ্ধি লাভ করে। এই সময়ে মহধি দেবেন্দ্রনাথ 
ঠাকুর ও ব্রঙ্মানন্দ কেশবচন্দ্রের সহিত তাহার রিশেষ 
পরিচয় হয়। মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র আর-এল-দত্ঃ 


বিহারী ভাছুড়ী, বিজয়রু গোস্বামী প্রভৃতির সহিত 


উমেশচন্ত্র প্রায়ই মিলিত হইয়! ধর্ম ও সমাঁজ সংস্কার সম্বম্ধে 
আলোচনা! করিতেন। এই সকল আলোচনার ফলে 
সত্রীশিক্ষ! গ্রচার কল্পে ১৮৬৩ খুষ্টাবে বাঁমাবোধিনী পত্রিকা! 
প্রচারিত হয়। উমেশচন্দ্র প্রথমাঁবধি তাহার সৃত্যুকাল 
পর্য্যন্ত উহ্বার সম্পাদক ছিলেন। বাঙ্গালার প্রসিদ্ধ মহিল! 
লেখিকাঁগণ প্রায় সকলেই কোন না কোন সময়ে উহার 
সহিত সংশ্লিষ্ট ছিলেন এবং উমেশচন্দের নিকট উৎসাহ 
প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। 

এই সময়ে উমেশচন্ত্র কলিকাতি। বিশ্ববিষ্ঠালয়ের এল-এ 
পরীক্ষা দেন ও সসম্মানে উত্তীর্ণ হন। অতঃপর কিছুঙ্গিন 
হিন্দু স্কুল, বেধুন স্কুল, দক্ষিণ বহুড়, স্কুল ও নিবোধই মধ্য 
বাঙ্গালা-ইংরেজী স্কুলে শিক্ষকতা করিয়া ১৮৬৬ খ্ঙ্টাব্দে 
উমেশচন্ত্র রাঁজপুর স্কুলের দ্বিতীয় শিক্ষকের পদে নিযুক্ত হন। 
সোমপ্রকাশ-সম্পাদক স্থপণ্ডিত দ্বারকানাথ বিষ্যাভূষণ মহাশয় 
এই বিদ্যালয়ের অন্যতর সম্পাদক ছিলেন। কিছুদিন পরে 
বিষ্যাভুষণ মহাঁশয় কোন কারণে উক্ত বিষ্ভালয়ের সহিত সকল 
সংব ত্যাগ করিয়া স্বয়ং “হরিনাভি ইংরেজী-সংস্কৃত 
বিদ্যালয়” স্থাপন করেন এবং উমেশচন্দ্রকে উহার প্রধান 
শিক্ষক নিযুক্ত করেন। এই* সময়ে উমেশচন্্র শিক্ষকন্ধপে 
কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বি-এ পরীক্ষা দেন এবং সসম্মানে 
উত্তীর্ণ হন। অতঃপর তিনি দর্শনশীন্তরে এম-এ পরীক্ষা 
দিবার জঙ্ প্রস্তত হন, কিন্তু শারীরিক অন্ুস্থতার জন্য 
পরীক্ষা দিতে পারেন নাই। 4 

হরিনাঁভিতে অবস্থানকালে উমেশচন্্র কতিপয় বন্ধুর 
সাহায্যে তথায় একটী ব্রাঙ্গসমাজ স্থাপন করেন। ছাত্রগণ 
উমেশচন্দ্রকে দেব্তাজ্ঞানে পূজ! করিত এবং অনেকে তাহার 
প্রভাবে ব্রাঙ্গসমাজে ষাতীয়াত করিত।' এইজন্য উমেশচন্ত্ 





৫০০ 


ও তাহার-বন্ধুগণ যথেষ্ট নির্ধ্যাতন ভোগ করিতেন ;'কিন্ত 
উমেশচন্ত্র যেমন কুসুমাপেক্ষা কোমল ছিলেন, তেমনি 
বন্জাপেক্ষা কঠোর ছিলেন। যাহা সত্যঃ শিব ও সুন্দর, 
তাহার সাধনার জন্ত তিনি সকল প্রকার দুঃখ, কষ্ট ও নিগ্রহ 
ভোগ করিতে সর্বদা প্রস্তুত ছিলেন। | 

১৮৬৬ থৃষ্টাবে কেশবচন্্র আদি ব্রাক্ষঘমাজ পরিত্যাগ 
করিয়৷ ভারতবীয় ব্রাঙ্মদমাজ স্থাপন করেন। উমেশচন্দ্ 
নূতন লমাজে যোগদান করেন। ১৮৬৯ খুষ্টাব্ধে ৭ই ভাদ্র 
ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মদমাজ মন্দির প্রতিষ্ঠার দিন দ্বারকানাথ 
বিষ্তাভৃষণ মহাশয়ের ভাগিনেয় শিবনাথ শাস্ত্রী মহোদয় 
্রাহ্মধর্শে দীক্ষা গ্রহণ ও উপবীত ত্যাগ করিলেন। ইহার 
পর হুইতে বিদ্াভৃষণ মহাশয় কেশবচন্দ্ের দলকে তীয় 
সোমপ্রকাশ পত্রে আক্রমণ করিতে লাগিলেন। হরিনাঁভি- 
নিবাসী রক্ষণশীল হিন্দুগণের প্রথল আন্দোলনে উমেশচন্দ্রের 
অধ্যক্ষতায় পরিচালিত বিগ্যালয়টার অনিষ্ট হবার 
আশঙ্কা হইল। অবশেষে উমেশচন্ত্র হরিনাভি স্কুল হইতে 
বিদায় লইলেন। 

১৮৬৯ খৃষ্টাব্ধের শেষভাগে উমেশচন্দ্র কোন্নগর বিদ্যালয়ের 
প্রধান শিক্ষকের পদে নিযুক্ত হন। এই বিদ্যালয় ১৮৫৪ 
খষ্টাবে ১লা মে প্রাতংম্মরণীয় শিবচন্ত্র দেব কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত 
হইয়াছিল। উমেশচন্দ্র কয়েক বংসর উক্ত বিগ্ালয়ের 
অধ্যক্ষতা করিয়া উহ্হার যথেষ্ট উন্নতিসাধন করেন। 
তিনি শিবচন্ত্র দেব কর্তৃক কোন্নগরে প্রতিষ্ঠিত ব্রাঙ্গমমাজেও 
নিয়মিতভাবে ব্রদ্দোপাসনা করিতেন । 

১৮৭২ থ্ষ্টাব্ধে উমেশচন্ত্র কলিকাতায় প্রত্যাগমন 
করেন। এই সময়ে ব্রাঙ্গ যুবকগণ “সঙ্গত-সভা” নামক 
একটি সভায় মিলিত ভুইয়া পর্মালোচন| করিতেন। এই 
সকল ধর্দপালোচনা “ধর্শসাধন” নামক একটি পত্রিকায় 
প্রকাশিত হইত । উমেশচন্ত্র এই পত্রিকার সম্পাদক 
নির্বাচিত হুন। বোধ হয় '১৮৭৫ থ্ষ্টাব পর্য্স্ত এই 
পত্রিকা প্রচলিত ছিল। 

১৮৭৮ খষ্টা্ে ভারতব্ষীয় ব্রাঙ্মসমাজ্ের নেতা কেশবচন্্ 
বন তৎগপ্রবন্তিত নিয়ম ভঙ্গ করত অভিনব পদ্ধতিতে স্থীয় 
অপ্রাপ্তবয়স্ক কন্ঠার সহিত কুচবিহারের অপ্রাপ্তবয়স্ক হিন্দু 
নরপতির বিবাহের আয়োজন করিলেন, তখন ব্রাঙ্গসমাঁজে 
মহা আন্দোলন উপস্থিত হয় এবং উন্নতিণীল ব্রাঙ্গগণ 


সুডাব্রভঞ্মঞ্ 


[ ২৮শ ব্য ২য় খণ্ড--9থ সংখ্যা 


প্রকাস্ট্ট সভায় কেশবচন্ত্রকে আঁচার্যের পদ হইতে বিচ্যুত 
করিয়া বিজয়কৃষ্ষ গোন্বামী। শিবচন্দ্র দেব রামকুমার 
বিষ্ভারত্বত উমেশচন্দ্র দত্ত ও যদুনাগ চক্রবস্তীকে পর্য্যায়ক্রমে 
আচাধ্যের কার্য্য করিতে নিষুক্ত করেন। ইহার অনতিকাল 
পরে সাধারণ ব্রাঙ্ষদমাজ নামক নূতন ব্রাঙ্মমমাজ প্রতিটিত 
হয় এবং আনন্দমোহন বন্থ উহার প্রথম সভাপতি, 
শিবচন্ত্র দেব উহ্গার প্রথম সম্পাদক এবং উমেশচন্ত্র দণ্ড 
উহার সহকারী সম্পাদক নিষুক্ত হন। 

ইহার পর আনন্দমোহন বন্থ মহাশয় বিষ্ভাশিক্ষার সহিত 
নীতিশিক্ষা ও চরিত্রগঠনের আবশ্তাকতা হাদয়ঙ্গম করিয়া 
অভিনব প্রণালীতে একটা নৃতন বিগ্যালয় প্রতিষ্ঠার সংকল্প 
করেন। ১৮৭৯ খুষ্টান্দে ১লা জানুয়ারী এই বিদ্যালয় সিটি 
স্কুল নামে স্থাপিত হয় এবং আদর্শ শিক্ষক, আদর্শচবিত্র 
উমেশচন্দ্র উহার প্রধান শিক্ষকের পদে নিযুক্ত হন। ১৮৮১ 
খৃষ্টাব্দে উহা দ্বিতীয় শ্রেণীর কলেজে পরিণত হয় এবং 
উমেশচন্ত্র উহার প্রথম অধ্যক্ষ হন। ১৮৮৩ থুষ্টান্বে উহাতে 
আইন শ্রেণী খোল! হয়। শ্যর গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায় বিন! 
বেতনে এই বিদ্যালয়ে আইনের অধ্যাপনা করিতেন । 
১৮৮৪ খুষ্টান্দে উগ প্রথম শ্রেণীর কলেজে পরিণত হয় 
এবং উহাতে বি-এ (পাশ ও অনার্স ) এবং এম-এ 
পড়াইবার ব্যবস্থা হয়। আনন্দমোহন বন্ধ, স্যর সুরেন্্রনাথ 
বন্দ্যোপাধ্যায় হেরম্চন্দ্র মৈত্র, শিবনাথ শাস্ত্রী প্রভৃতি 
কলেজে পড়াইতেন | এই বিদ্যালয় উমেশচন্দ্রের অধ্যক্ষতা- 
কালে গৌরবের সমুন্নত শিখরে গ্রতিঠিত হইয়াছিল 
এবং উহার ছাব্রগণ_-জানকীনাথ ভটাচাধ্য, রামানন্দ 
চট্টোপাধ্যায় প্রভৃতি কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাতেই 
শীর্ষস্থান অধিকার করেন নাই, চরিকগুণে জাতীয় গৌরব- 
ভাগ্ডার সমৃদ্ধ করিয়াছেন । উমেশচন্র সিটি কলেজের 
প্রতিষ্ঠাদি বিষয়ে আনন্দমোহনের দক্ষিণ হন্তম্বদূপ ছিলেন। 
তাহাকে কেবল অধ্যক্ষের কাধ্যই করিতে হয় নাই, কলেজের 
জন্ত অসংগ্রহও তাহাকে করিতে হইয়াছিল । 

উমেশচন্দ্র বহুদিন কলিকাঁত। বিশ্ববিষ্ঠালয়ের সেনেট 
সভার সদস্য ছিলেন। 

হুর্গীমোহন দাশ, দ্বারকানাথ গান্গুলী প্রভৃতির সহযোগে 
উমেশচন্দ্র বালিকাদের জন্ভ বঙ্গমহিল! বিগ্ভালয় স্থাপিত 
করিয়াছিলেন । উহা পরে বেধুন বিষ্যালয়ের সহিত 


চৈত+-১৩৪৭ ] 


পা স্প্যাম স্পা বব 


সংবুক্ত হইলেও উমেশচন্দ্র উহার সহিত সংযোগ রক্ষা করিয়া- 
ছিলেন । 

পূর্ব্বেই উক্ত হইয়াছে ১৮৮০ খুষ্টাবে উমেশচন্দ্র সাঁধারণ 
্রাঙ্মসমাজের সহকারী সম্পাদক নিষুক্ত হইয়াছিলেন। 
১৮৮১১ ১৮৮২১ ১৮৮ খৃষ্টাব্দে শিবচন্ত্র দেবের সভাপতিত্বকালে 
তিনি উহার সম্পাদক নির্বাচিত হইয়াছিলেন। পুনরায় 
১৮৮৯ ও ১৮৯৭ খুষ্টাবে মহাত্া আনন্দমোহন বসুর সতী- 
পতিত্বকালে উমেশচন্দ্র উহার সম্পাদক মনোনীত হন। 
১৮৯১ ও ১৮৯২ খৃষ্টাব্দে উমেশচন্ত্র সাধারণ ব্রাঙ্মসমাজের 
সভাপতির পদ অলঙ্কত করেন। সমাজে প্রদত্ত তাহার 
উপদেশগুলি অত্যন্ত জয় গ্রাহী হইত । 

উমেশচন্দ্র জাতিধর্মমনিব্বিশেষে মহাপুরুবগণের পুজা 
করিতে ভালবাসিতেন । ডেভিড হেয়ারের স্বৃতিপূজা তিনি 
পুনঃপ্রব্তিত করেন। রাঁজা রামমোহন রায়ের নিয়মিত 
ভাবে স্বতিপূজার তিনিই প্রবর্তন করেন এবং সিটিকলেজে 
নিয়মিতভাবে এই সকল ম্বতিমভা আহ্বান করিতেন। 
অনেকে হয়ত বিশ্বত হইয়াছেন বে, মাইকেলের সমাধির উপর 
স্বতিন্তস্ত প্রধানত উমেশচন্দ্রের চেষ্টাতেই রচিত হয়। 
এতৎসম্বন্ধে মধুন্থদনের চরিতকার যোগীন্দ্রনাথ বন্থু মহাশয় 
লিখিয়াছেন £-- 

“অর্থাভাবে মধুহ্দনের মৃতদেহ নিতাস্ত হীনভাবে সমাহিত 
হইয়াছিল এবং বহুদিন পর্যন্ত তাহার সমাধির উপর কোনরূপ 
স্বৃতিস্তস্ত সংস্থাপিত না হওয়ায় তাহা৷ ক্রমে লুপ্ত ও অগোঁচর 
হইবার সম্ভাবনা! হইয়াছিল । কিন্তু বিধাতা বঙ্গদেশকে সে 
কলঙ্ক হইতে রক্ষা করিয়াছেন । সর্ববিধ সৎকর্মে অনুরাগী, 
বামাবোধিনী সম্পাদক বাবু উমেশচন্দ্র দত্ত মহোদয়ের 
উদ্যোগে এবং যশোহর-খুলনা-সম্মিলনীরও মধ্য-বাঙ্গালা- 
সন্মিলনীর চেষ্টায় তাহার সমাধির উপর এক স্মৃতিস্তস্ত 
প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। * * ১৮৮৮ খুষ্টাব্ের ১লা 
ডিসেম্বর ব্যারিস্টার মনোমোহন ঘোষ মহাশয় সাধারণের 
সমক্ষে সেই সমাধিস্তস্ত প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন ।” 

অন্ধ, মুক, বধির প্রভৃতি উমেশচন্দ্রের সহামুভৃতি হইতে 
বঞ্চিত ছিল না। ১৮৯৩ খৃষ্টাবধে উমেশচন্ছ্র যামিনীনাথ 
বন্দ্যোপাধ্যায়, ভ্রীনাঁথ সিংহ এবং মোহিনীমোহন মজুমদারের 
সহযোগিতায় কলিকাতা মৃক-বধির বিদ্যালয় (117৩ 
০৪1086510৩8 & [017 50001 ) প্রতিষ্ঠা করেন। 





আছোঙ্খ্য শত্সেশভতক্র 





৪০৬ 





বা” স্্ 


উক্ত বংসর মে 'মাসে দুইটী ছাত্র লইয়! বিদ্যালয় স্থাঁপিত 
হয়। সিটি কলেজের একটী গৃহে তখন উহা বসিত। 
উমেশচন্দ্র প্রথমাঁবধি মৃত্যুকীল পধ্যন্ত উহার সম্পাদক 
ছিলেন। তাহার কার্য স্মরণ করিয়! উক্ত বিদ্যালয় এক্ষণে 
নিজগৃহে একটী স্থৃতিশিলা স্থাপিত করিয়াছে। উহাতে 
লিখিত আছে £-_ 


11 7121))015 01 
02065 01320412, 7081. 


00176 ০? 7০ 17090110615 8110 8. 1105055 91 
1116 08100/15 1)59£ ৫ 1)010)00 90110991906 /110] 
10 90650 85 10101700191 ১০018181 1101 105 
11100100101) 11) 119 7893 0161] 617০ 0987 ০ 115 
06911) 1901) 00116 1907, 

11015 05100 1755 05217 51606650117 190081710101) 
06 10100 00681 56151065 161706150 07 008 185 
56010091100 0765 07052 06 1068 & 10810 
60101086101) 810 0 0115 17500000100 10 09981000121, 


উমেশচন্দ্রের পারিবারিক জীবন মধুময় ছিল। পঞ্চবিংশ- 
বর্ষ বয়/ক্রম কালে (আন্মানিক ১৮৬৫ খ্ষ্টাব্ে) তিনি 
নৃত্যগোপাল সরকার মহাশয়ের ভগিনী কৈলাসকামিনীর 
পাণিগ্রহণ করিয়াছিলেন। ৩৩ বৎসর নিরবচ্ছিন্ন দাম্পত্য 
সুথভোগের পর তাহার সাধবী সহধম্মিণী ্ব্গারোহণ করেন। 
ইহার কিছুকাল পরে উমেশচন্ত্রের এক কন্তাও পরলোক- 
গমন করেন। এই ছুইটা শোক উমেশচন্দ্রকে সহা করিতে 


হইয়াছিল। ১৯০৭ খুষ্টাবে ১৯শে জুন (৪ঠা আষাঢ় ১৩১৪ 


বঙ্গাব্দ ) বুধবার রাত্রি ১০॥টাঁর সময় তিনি চারি পুত্র ও তিন 
কন্া রাখিয়। ম্বর্গারোহণ করেন। . 

তাহার স্বর্গারোহণের পর ১৯শে জুলাই বঙ্গমহিলাগণ 
তাহার স্বতিরক্ষাকল্পে একটা সভা আহৃত করেন। মহাত্মা 
আনন্দমোহন বস্থর সহধন্মিণী ্বর্ণপ্রভা বন্থু এই সভার প্রধান 
উদ্ঘোগকন্ত্রী ছিলেন এবং তাহার গৃহেই সভার অধিবেশন 
হয়। এই সভা “উমেশচন্ত্র দত্ত ধনভাগ্ডাঁর” নামক একটা 
ফণ্ড স্থাপন করিয়া সংগৃহীত অর্থের আয় হইতে দুস্থ 
বাঁলিকাঁদিগকে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করিতে সংকল্প করেন। 
বামাবোধিনী পত্রিকা স্থপরিচালিত করিবার জন্তও মহিলাগণ 
একটা সমিতি নিযুক্ত করেন। রি 


&০২ 





সম 


উমেশচন্ত্র স্ুরাঁপান নিবারণের জন্তও অনেক চেষ্টা 
করিয়াছিলেন। তিনি মেট্রোপলিটান টেম্পারেন্স এগ 
পিউরিটি সভার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সহকারী সভাপতি 
ছিলেন। এই সভাও উক্ত 'বংসর ১০ই আগষ্ট একটী 
শোকসভায় নিয়লিখিত প্রস্তাঁব গ্রহণ করেন : 

"মহাত্মা উমেশচন্ত্র দত্ত যিনি এই সভার মূল পত্তন হইতে 
যাবজ্জীবন ইহার অন্ততম সহকারী সভাপতি ছিলেন, 
ধাহার সমন্ত জীবন পবিত্রতা ও সংযমশীলতায় লোঁক- 
পাবন দৃষ্ান্তত্বরূপ, সেই সাঁধুপুরুষের পরলোকগমন জন্য 


স্ডাব্রত্ত্্য 








[ ২৮শ বর্--২য় খও---৪গ মংখ্য। 


ব্য” খা সত 





এই সভা হৃদয়ের ৪ শোকোচ্ছ্ষাস গ্রাকাশ 
করিতেছেন ।” 

সিটি কলেজেও তাহার একটা চিত্র প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। 

বাঙ্গালা সাময়িক সাহিত্যের ইতিহাসে, বাঙ্গাল! দেশে 
শিক্ষা বিষ্তারের ইতিহাসে, বাঙলার সামাজিক উন্নতির 
ইতিহাসে এবং ব্রাঙ্মদমাজের ইতিহাসে, সাহিত্যের একনিষ্ঠ 
সেবক, শিক্ষার অকৃত্রিম সুহদ, সমাজসংস্কারে অরাস্তকর্মী 
এবং ত্রাঙ্গনমাজের পবিত্রচেতা পুরোহিত উমেশচন্ত্র দত্তের 
নাম চিরদিন স্বর্ণাক্ষরে লিখিত থাকিবে। 


স্রলে প্রেমের উজল শত বাতি 
প্রীঅনুরাধ! দেবী 


তোমায় ভাঁলোবাঁসি, 
একথা কি বল্তে হবে নিতুই কানে কানে 1 
বুঝে নিও চোখের ভাষা ওগো, 
ক্ষণকালের নীরব অনুমাঁনে। 
তোমার সাথে এই যে জানাজানি, 

দেহ মনের নিখিড় পরিচয় ) 
এ কি প্রিয় একটি জীবনের? 

জাগরণের স্বপ্ন এতো নয়! 
অজানা কোন্‌ শ্রোতের পারাবারে 

পারাপারের খেয়ায় ছুটি হিয়া 
সঙ্গহার! চলাপখের শেষে 

মিতালি চায় গোপন আঁখি দিয়; 
পলকে সেই পলকহারা ক্ষণে 

দুজনাঁরে দুজনাঁরই চাওয়া, 
সেই কি প্রিম্ন গ্রথম পরিচয় ! 

সেই কি ওগো প্রথম কাছে পাওয়া? 
এক্‌ল! যখন চুপটি ক'রে ভাবি 

কসে ওগো নিরাল। ওই ছাদে, 
দুর আকাশে জলের কণ। ভাসে, 

বন্ধনী দেয় এক'দণীর চাদে, 
তখন আমার নিথর দেহ মনে 

'এই কথাটিই নিতা জাগে ধেন-_ 


তোমার £েমে সিক্ত শিকর-কণা 

আমায় ঘিরে ঠাদের শোভ। হেন 
রচেছে এক কল্পলোকের মায়া 

দূর অকাশের ন্বপন পারাঁবার, 
তোমার সাথে আমার পরিচয় 

নিত্য কালের গ্রন্থি অনিবাঁর। 
ওষ্ঠে আমার তোমার দেহ কাপে, 

ভৃঙ্গ তুমি কমল-কলি »পরে ; 
মন্ম্মে আমার কাদে চকোর হিয়া, 

তৃষ্ণা তৃষি তুষি তোমার ঝরে। 
ভালোবাসার জানি না কোন্‌ রূপ 

বুকের মাঝে কোন্থানে তার বাসা ! 
মনে মনে খুঁজতে গিয়ে দেখি 

তোমায় ঘিরে আমার সকল আশা! 
অজানা এক তৃপ্তি-লোভাতুর 

রাজিদিনের রচে ত্বপনলোক ; 
মনে হয় ও-হিয়ার পরশ লতি? 

এ তন্থমন সফল আমার হোক। 
সন্ধ্যাতারা খুমিয়ে পড়ে যবে, 

আকাশ পারে ঘনিয়ে আসে রাঁতি। 
নিরাঁলা মোর দেবালয়ের কোণে 

জলে প্রেমের উজল শত বাঁতি। 


ভূতের গপ্প 
প্র-না-বি 


আজ একটা তৃতের গল্প বলিব_ একেবারে নিছক সত্য 
ঘটনা । আমি নিজে দেখিয়াছি কি না, জানিতে চাও? 
নিজে না দেখিলেও এক রকম দেখাই; পাড়ার ঘটনা, বন্ধু- 
বান্ধব দেখিয়াছে ; ঘটনার ঠিক পরেই তাঁরা ভয়ে কাপিতে 
কাপিতে আসিয়া উপস্থিত হইয়াছে, কাজেই দেখা ছাড়া 
আরকি? 

আমাদের পাড়াতে একটা বাড়ীকে লোকে ভূতের বাড়ী 
বলিত। ছেলেবয়সে বাড়ীটাতে ভাড়াটে থাঁকিতে 
দেখিয়াছি; কিন্তু হঠাৎ একদিন গুনিলাম বাড়ীটাতে নাকি 
ভূতের উৎপাত হইয়াছে । ভাড়াটে আসে না, আসিলেও 
থাকিতে পারে না; ভূতের উৎপাঁতে দু-চার দিন পরেই 
উঠিয়া যাঁর়। শেষে আর ভাড়াটে জোটে না) টু লেট 
লেখা কাঠের তক্তা! সারা বছর মাছুলীর মত বাড়ীর গায়ে 
বাতাসে ছুলিতে থাঁকে। প্রকাণ্ড বাড়ী--এই সম্ভার 
বাজারেও আশী টাকা ভাড়া নিশ্চয় হইত। 

বাড়ীটাতে নাকি ব্রহ্মদৈত্য থাকে। উৎপাত আর কিছু 
নয় মাঝ রাতে হাওয়া নাই, বাঁতাস নাই, হঠাৎ দরজা 
জানল! সব একসঙ্গে খুলিয়া গেল। উঠিয়া! দরজা-জানলা 
দিয়া শৌও) আবার খুলিয়া যাঁইবে। গরমের রাতে দরজা- 
জানলা খুলিয়৷ ঘুমাও, হঠাঁৎ সব বন্ধ হইবার শব্দে ঘুম 
ভাঙিয়! যাইবে। 

মাঝ রাতে বিদ্যুতের আলোগুল! দপ করিয়া জলিয়া 
উঠিল; কিন্বা হয়তো সব আলো! একসঙ্গে নিভিয়৷ গেল। 
বেশি রাত্রে ঘুম ভাঙিয়া গিয়া শুনিতে পাইবে ছাদের উপরে 
কে যেন খড়ম পায়ে দিয়া খটু থটু করিয়া ঘুরিয়া 
বেড়াইতেছে; গ্রহণে বা এ্রঁজাতীয় কোন যোগ উপলক্ষে 
অনেকে গভীর রাত্রে ছাদের উপরে সংস্কৃত মন্ত্রের আবৃত্তি 
শুনিয়াহে-ম্বর ঈষৎ অনুনাসিক। লোকে প্রথমে মনে 
করিত ব্যাপার আর কিছু নয়__দুষ্টলোকের উপদ্রব? পাড়ার 
ছেলেরা পাছার! বস।ইল, পুলিশে পাহারা দিল, কিন্তু এ সব 
উপত্রব কমি না। 

তখন বাড়ীয় মালিক রিষড়ার বিখ্যাত ভূতের ওঝাঁকে 


ডাকিয়া! আনিল; সে আসিয়া অনেকক্ষণ ধরিয়া! একট! ঘর 
বন্ধ করিয়া কি করিপ জানি ন1; বাহির হইয়! আসিলে জানা 
গেল চোর-বাটপাড় কিছু নয়, ব্র্গদৈত্য ভর করিয়াছে । 
কথাটা দেখিতে দেখিতে পাড়ায় রাষ্ট্র হইয়া গেল, বাড়ীতে 
ভাড়াটে আসা বন্ধ হইল, আর ব্র্ধদৈত্য পরম সুখে সেখানে 
কাল যাঁপন করিতে লাগিল। এসব আমাদের অল্প বয়সের 
কথা; তারপরে সেই ভূতের বাড়ীর অস্তিত্ব সকলে একরকম 
ভূলিযাই গিয়াছিল; হঠাৎ কি করিয়া এই বাড়ীর এ্রসঙ্গ 
উঠিল, সেই কথাই আজ বলিব। 


৮ 


হঠাৎ একদিন মুকঙ্গের হইতে রাম-দা আসিয়া! উপস্থিত । 
রাম-দা*র পরিচয় কি দিব ভাবিতেছি; আমরা পাড়াসশুদ্ধ 
সকলে তাঁকে মুজেরের রাম-দা বলিয়া! জানিতাম, পরিচয়ের 
কোন প্রয়োজন ছিল না। এত বড় বিরাট পুরুষ আমি 
কখনো দেখি নাই-যেন রামায়ণ-মহাভারতের একটা 
বীরপুরুষ পথ তুলিয়া চলিয়া আসিয়াছে । 

এহেন রাম-দা”র জীবনে ছুটি আসক্তি ছিল, তিনি ভূতে 
বিশ্বাস করিতেন। ভূত দেখিবার আশায় তিনি যে কত 
শুশানে, কত পোঁড়ো বাড়ীতে, কত অমাবস্যার রাঁজিতে 
ঘুরিঘাছেন তাঁর হিসাব নাই। আর কবিতা! পড়িবাঁর জন্য 
নৃতন বই সংগ্রহ করিতে তিনি যে কত লাইব্রেরি, কত 
দৌঁকান, কত কবির বাড়ী ঘুরিয়াছেন, তারও হিসাব অপরে 
জানে না। রাঁম-দা ইংরেজী ভাপ জানিতেন না, বাংলা 
কবিতাই বেশি পড়িতেন। 

রাম-দা আমার বাসায় আসিয়! বিন! ভূমিকায় বলিলেন 
ওহে সাহিত্যিক (আমি একজন সাহিত্যিকের পাশের 
বাঁড়ীতে থাকিতাম বলিয়া তিনি আমাকে সাহিত্যিক বলিতেন) 
নূতন কবিতার বই কিছু দাও। তার জন্যে আমি আগেই 
এক বোঝা বাংল! কবিতার বই সংগ্রহ করিয়া রাখিয়াছিলাম, . 
বিরাট কাব্য-গন্ধমাঁদনটিকে অনায়াসে কুক্গীগত করিয়া যখন 
তিনি উঠিতেছেন, গুধাইলাম-_রাম-দা, ভূতের দেখা মিল্ল ? 


£€৪৩ 


95 


পু'থির বোবঝাঁটা ধপ করিয়া তক্তপোষের উপরে ফেলিয়া 
বলিলেন যা নেই তার দেখা মিলবে কি ক'রে ?__এই বলিয়া 
নিজের আধুনিকতম ভৌতিক এড.ভেঞ্চারের কাহিনী বিবৃত 
করিলেন। গল্প শেষ করিয়া মন্তব্য প্রকাশ করিলেন না 
হে, ও জিনিষ নেই। 
আমার পাশেই রমেশ বসিয়াছিল, সে একরকম 
পুরাতাত্বিক, অর্থাৎ পুরাঁনে! বাড়ীর দালাল; সে বলিল-_ 
রাম-দা, এ পাড়ায় একটা ভূতের বাড়ী আছে । 
এই পর্য্যন্ত বলিয়৷ আমার দিকে তাঁকাইয়! বলিল__-সেই 
ঘোষেদের তেতাল! বাঁড়ীটার কথা বলছি হে। 
পূর্ব্বোস্ত পুরাতন তৃতের বাড়ীর কথ! আমার মনে 
পড়িয়া গেল । আমি বলিলাম__হা* ওটাঁতে ভূতের উপদ্রব 
আছে শুনেছি। 
রাম-দা*র মুখ উজ্জল হইয়া উঠিল__ভূত আছে এবিশ্বাসে 
নয়, একটা এড ভেঞ্চার জুটিল এই আশায় । 
তিনি বলিলেন- চল হে যাঁওয়! যাঁক। 
আমাদের মধ্যে যতীন ডিটেক্টিভ, কারণ রহস্য-পিরামিড 
সিরিজের ১৫২-খাঁন৷ বই পড়িয়া ফেলিয়াছে; সে বলিল-_ 
রামদা। রাত ছাড়া তো স্থুবিধে হবে না। 
রাম-দা বলিলেন__যা দিনেও নেই, তা রাতেও নেই। 
বেশ রাতেই যাবো । বাড়ী-ওলাকে ঝ'লে রাতটা সেখানে 
থাকবার ব্যবস্থা ক'রে দাও । 
রমেশ বাড়ী-ওলার অন্কমতি আনিতে গেল, আর যতীন 
স্ট-বাতি, চায়ের সরঞ্জাম প্রভৃতি সংগ্রহ করিবার জন্য উদ্যোগী 
হইল। তারা রাম-দা”র সঙ্গে এ বাড়ীতে রাত্রি যাপন করিবে। 
রাম-দা বলিলেন-রাতট| জাঁগতে হবে, আমি একটু 
দমিয়ে নিইগে। 
তারপরে বলিলেন-_-যাঁক ভালই হ'ল-_রাতটা যখন জাগতে 
হবে, নৃতন কবিতার বউগুলে! পড়ে ফেল! যাবে। কি বল? 
বলিলাম-_ভালই হবে। 
রাম-দা রাঁথির ঘুম আগাম ঘুমাইয়! লইবার জন্ত- বাসায় 
রওনা হইলেন। 


৩ 
ঙ 


রাত্রে আহারান্তে রাম-দা দলবল লইয়া ঘোষেদের ভূতের 


বাদ্দীতে গিয়া আশ্রয় লইলেন।. দোতালার হুলঘরটি . 


স্ঞান্রস্তন্ঙ্ 


[ ২৬শ বর্ধ--২য খণ্ড--৪র্থ সংখ্যা 


আগেই পরিষ্কার করিয়া রাখা হইয়াছিপ্, সেখানে শ তরধিঃ 
বিছাইয়া সকলে শুইয়া পড়িপ। পোঁড়ো বাড়ীতে আর 
বিদ্যাতের আলো কে রাখে? গোট! ছুই হারিকেন লঞ্ঠন 
জলিতে থাঁকিশ্ন; বিপদের জন্ত গোটা কয়েক উর্চবাতি 
আন! হইয়াছিল । 

রাত্রি বারটার মধ্যে বার কয়েক চা হইলেও ঘুমে চোখের 
পাতা ভার হইয়া আসিতেছিল। 

রমেশ বলিল _রাম-দা, ঘুম পাচ্ছে যে! 

যতীন বলিল-_রাম-দা; কবিতাই যখন পড়ছ, উচ্চ স্বরে 
পড়ো, আমরাও শুনি । 

রাম-দা বাংলা কবিতার বোঝা সঙ্গে আনিয়াছিলেন; 
তিনি এতক্ষণ একমনে পড়িতেছিলেন, এবারে মুখ তুলিয়৷ 
বলিলেন_-এসব কি তোমাদের ভাল লাগবে? 

_বলকি? আসন্ন ভূতের ভয়ের সম্মুখে বাংল! কবিতা 
মনোরম লাগবে না, বাংল! সাহিত্যের প্রতি এমন অশ্রদ্ধা 
আমার নেই। 

রাম-দা শ্বগতভাবে বলিলেন__যা বল, আব্কালকার 
কবির! খাসা লিখছে হে। 

__পড়,ন, রাম-দা, পড়চন। কবিতা শোনবার এমন 
পরিপূর্ণ অবসর দুর্লভ । 

_-ভূত, না ছাই। এই দেখ না রাত একট!।-__ 
একবার ঘড়ির দিকে তাকাইয়! রাম-দা এই কথাগুলি 
বলিলেন। তাঁরপরে সকলের আগ্রহাতিশয্যে পড়িতে 
লাগিলেন__শোন তবে, এই দেখ, ঈগল পাখীর উপরে কি 
সুন্দর কবিত। ! 

“অধূর্য্যের তপস্থার নৈরাজ্য বিলাসে 
তপশ্চর মহীয়ান্‌ ! 

দুন্দূভি, দামামা ! 

হোরা, অক্ষ, দ্রাঘিমা লঘিমা, 
ঈডিপাস্‌ বিষম কম্পেকস্‌।” 

চমতকার! চমৎকার !-রাম-দা নিজেই উৎসাহ দিতে 
লাগিলেন ।-_-এইবারে দেখ-_ঈগল আর সাপে যুদ্ধ হচ্ছে! 

“পীগম্যালিয়ন রস! মার 
সুন্দরী মেনকা। 

মৈনাক কৈ নাক দস্ত 
ফুৎকার চীৎকার ! 








চৈষ্ত 4১৬৪৭ ] ভঁত্লে গল্স €গ্জ 
অন্ধ হ'ল রক্জ তব। 'ছ্ছেচ্ছাচারী ভ্রাম 
মার্কস্‌ কই আলো? ক্রতুকৃতমের শেষ 
লেনিন লন জালো । আকাশে চাঁদ, আর এরোপ্লেন 
মধ্যবিত্ত হাসি আর অশ্রু আভিজাত্য । বোম! আর শিলা বৃষ্টি 
তাজমহলের গম্ুজ, অজবন্ধু মাতরিশ্বা, 
দা-ভিঞ্রি তুলি, য়, দিল্লী, ব্যাবিলন |” 
হুইটম্যানের দাড়ি, 'আবার সশবে দরজা-জানলা খুলিয়া! গেল । ব্যাপার কি? 
“পর্বত চাহিল হ'তে বৈশাখের নিরুদ্দেশ মেঘ” এমন সময়ে সকলে দেখিল অতি বিরাট ও অতি 
বিডি বতলত কুৎসিত এক পুরুষ ঘরে ঢুকিতেছে। পায়ে তার খড়ম 
মিলিয়নের মিলেনিয়াম | গলায় রুদ্রাক্ষের মালা, খাটো একথাঁনা কাপড় পরণে, 
সাপ আর ঈগল |” - কাধে গামছা । রমেশ ও যতীন রাম-দার পিছনে গিয়া 
_কি হে, ঘুমোলে নাকি? লুকাইল। 


রমেশ বলিল--কি যে ধ্ল রাম-দা। এমন কবিতা 
শুনলে স্বয়ং কুলকুগুলিব্ী জেগে ওঠেন, আর আমরা 
ঘুমোব ? 
রাঁম-দা বলিলেন-_ওয়াগ্ডারফুল ! 
যতীন অতিসঙ্কোচে বলিল-_অর্থ বোঝা কঠিন। 
_কিছু কঠিন নয়। তোমাদের মধ্যবিত্ত সংস্কার ত্যাগ 
করলেই বুঝতে পারবে ।_-এই বলিয়া রাম-দা সেই সরল ও 
সরস কবিতা পড়িয়া! যাইতে লাগিলেন । 
এমন সময়ে হঠাৎ হলের দ্রজা-জনিলা খুলিয়া গেল। 
সকলে লাফাইয়৷ উঠিল, ব্যাপার কি? বাতাস নাই, ঝড় 
নাই, জানলা খুলিল কেমন করিয়া? কবিতা পাঠে বাধা 
পাইয়া! রাঁম-দ| বিরক্ত হইলেন) উঠিয়া দরজা-জানলা বন্ধ 
করিয়া দিয়া বসিয়া আবার কবিতা পাঠ আর্ত 
করিলেন-_চন্ত্রগ্রহণ সম্বন্ধে আধুনিক বাংলার সেই শ্রেষ্ঠ 
কবিতাটি । 
“কীটদ্ট চক্রবাক্‌ 
উন্মোচিত, হে বাঁচাল, 
জনতা সঙ্বাতে তব অনুম্র্যমাতে | 
পোস্ট-কার্ড আর খাম 
বেড়েছে তার দাম। 
বেশি দিন নয় আর 
আলছে লাল দানব 
ওই শোন! যাঁয় হুঙ্কার 
ইনক্লাব ফৈজাবাদ ! 


৪ 


রাম-দা শুধাইলেন- মশায় কে? 

কিন্তু সেই পুরুষ তার উত্তর ন দিয়া অত্যন্ত করুণভাবে 
বলিল-_আপনারা আমাকে আর কষ্ট দেবেন নাঃ ছেড়ে দিন । 
__লোকটার স্বর ঈষৎ অননাসিক। 

রাম-দা শুধাইলেন- আপনি কে? 

-আজ্ঞে আমি এই বাড়ীতে থাকি । 

রাম-দা বলিলেন__-এতক্ষণ দেখিনি কেন? 

- আজ্ঞে পাঁশের বেল গাঁছটাঁর উপরে বসে” হাওয়া 
খাচ্ছিলাম । 

রাম-দা--আপনি কি? 

- আজ্ঞে হা, আঁপনারা যাকে ব্রহ্গদৈত্য বলেন 
আমি সেই। 

রমেশ ও যতীন গে গে! করিয়া মৃচ্ছা' গেল। 

রাম-দা বলিলেন_ আপনি যেখানে খুশী বসে” হাওয়! 
থান, কিন্ত এখানে কেন? 

_ আজ্ঞে আমাকে আর কষ্ট দেবেন না। 

রাম-দা বলিলেন- কষ্ট দিলাম কোথায় ? 

সে বলিল-_ওই যে ভূত তাড়াবার মন্ত্র পড়ছিলেন, এতে 
আমার বড় কষ্ট হচ্ছে। ্ 

রাম-দ। বলিলেন__ভূতের মন্ত্র কোথায় পেলেন? এ তো 
কবিতা, আধুনিক কবিতা ! 

সে বলিল- আজ্ঞে ভূতের মন্ত্র তো কবিতাতেই 
লেখা হয়। 

তারপরে সে বইয়ের গাদা দেখিয়া ভয়ে কীপিতে 


€ত৬ 


লাগিল। বলিল-_সর্বনাঁশ। ভূতের মন্ত্রের এতগুলো বই 
ছাঁপা হয়েছে! আমি হচ্ছি নবাব আলীবর্দীর সময়ের ভূত । 
তখনকার দিনে সের! ভূতের ওঝা ছিল লালগোঁলার হোসেন 
মিঞা । সে আর কটা মন্ত্র জানতো? 

রাম-দা বলিলেন_-এ যে ভূতের মন্ত্র তা কে বল্ল? 

লোকটা বলিল--আমি নিজে ভূত, আমি বলছি। 
আপনার গ্রত্যেকটি শ্লোক তপ্ত লোহার মত আমার গায়ে 
বিধছিল। কিছুকাল আগে এই বাড়ীর মালিক রিষড়ে 
থেকে ওঝা এনেছিল । স্ুুবা বাংলার শ্রেষ্ঠ ওঝা । সে-ও 
আমাকে তাড়াতে পারেনি । কিন্তু আপনি আমাকে 





হার মানিয়েছেন। এবারে অনুমতি করুন, আমি বাড়ী 


ছেড়ে পালাই। 

তারপরে একটু থামিয়া বলিল- _নাঃঃ বাড়ীটা বেশ ছিল। 
একদিকে বেল গাছ, একদিকে তাল গাছ, হাওয়। খাবার 
কি স্ুবিধেই না ছিল। 

আবার একটু থামিয়া বলিল-ধন্ত আপনার শিক্ষা ! 
এই সব মন্তর আবার যখন ছাপা হয়েছে, বাংলা দেশে 
আর আমাদের বাস কর! চল্ল ন! দেখছি । বাঙালী 
ভূত বাংলার বাইরে গেলে কি আর আজকাল জায়গা 
দিলবে? ছাতু ভূত, মেড়ে! ভূত, বেহারী ভূত, পাঞ্জাবী 


শ্ান্সত্চ্রঞ্ 


[ ২৮শ বধ--২য় খণ্ড-চর্থ সংখ্যা 


ভৃত--সবাই বলবে, প্বঙ্গালী' ভূত বংলামে ধাঁও।” তা 
তাদের তাড়া খাই, সেও ভাল; না হয় পাগড়ী পরে, 
বাঙালীকে গাল দিয়ে রাষ্ট্রভাষা! শিখে নিয়ে জাত তাড়াবো? 
কিন্ত আপনার মন্তর অসহ। 

এই বলিয়া সে গলায় গামছা দিয়া রাম-দাঁ”র পায়ের 
কাছে একটা প্রণাম করিয়া অনৃষ্ত হইয়া গেল। সঙ্গে সঙ্গে 
সেই প্রকাণ্ড বাড়ীটা কাপিয়! উঠিল। 

অনেক চেষ্টার পরে ষতীন ও রমেশের মুছা ভাঙিল। রাত্রি 
প্রায় শেষ হইয়া আসিয়াছিল, তাহার! বাঁসায় ফিরিয়া! আসিল। 

ঘটনা নান! লোকে নানাভাবে বলিতে লাগিল। কেন 
বলিল-_রাম-দ| লড়াই করিয়া ব্রহ্মদৈত্য তাড়াইয়াছেন; কেহ 
বলিল__শর্ষে পড়া দিয়া; আবার কেহ বা বলিল-_মন্তর 
পড়িয়া। আসল রহস্য কেহই জানিল নাঃ তবে সকলেই 
দেখিল যে বাড়ীটাতে আর কোনল্উৎপাঁত নাই। 

রাম-দা এখন নামজাদ! ভূতের ওঝা) তিনি ভিজিট 
লইয়া ভূত তাড়ান ; মানুষকে ভূতে পাইলে ভূত ছাড়ান; 
থান দুই বাড়ীও কলিকাতায় করিয়াছেন। রাম-দা”র কবিতা" 
পাঠ অত্যন্ত অগ্রত্যাশিতরূপে সার্থক হইয়াছে। তার 
ঠিকানা চাই? ঠিকানা দেওয়। বাহুল্য মাত্র--তার পরিচয় 
আজ কেন জানে? 








ভাষাতীত 


কাব্যরঞ্জন প্রীআশুতোষ সান্যাল এম্‌-এ 


সখি, কেমনে কহিব কেমন সে মুখখানি ?-- . 
যদি না পারি বলিতে বুঝে নিস অনুমাঁনি” ! 
শুধু দিয় মানবের ভাষা__ 
তারে ফোটাতে যে বৃথা আশা ;__ 
ওগো সে মাধুরী কতু ফোটাতে পারে কি বাণী? 
কি ফল কেবল চাদের উপমা দিয়! ? 
হয়ে যেত শ্লান সে বয়ান নিরখিয়া ! 
যদি , শশীতে সে শোভা পাই-_ 

আজ গগনের পানে ধাই ; 
দিই কাটায়ে জীবন চন্ত্র-কিরণ পিয়া ! 


প্রুঞ্ে 


সখিঃ 
আমি 


ফুলের মাঝারে সে মাধুরী কোথা বল্‌? 
দেখেছি খুঁজিয়া বসন্ত-বনতল ! 
যার পক্কজ ফোটে পায়_ 
আর জোছন! লুটায় গায়, 
বদনের তুগ্‌ হয় কি কুন্থমদল ? 


কেমনে কহিব-_ কেমন সে মুখ তার ? 
গুধালে জাগে যে মরমের হাহাকার । 

কত দুঞ্জের ত্বাদ হায়, 

শুধু জলে কিগো বুঝা যায়? 

বন্তর রূপ- কেমনে ফুটাই যা শুধু কল্পনার ! 


মজলিস 


নারটিকা 
( দ্বিতীয় বৈঠক ) 


ভাক্কর 


মজলিস.বসিয়াছে। বিবেকরক্ষা এবং আলোক-নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা পূর্ববৎ 
(ভারতবর্ষ, কাতিক, ১৩৪৭)। আজকার বিবেকরক্ষী ও ডঃ নন্দী । 
ডঃ নন্দী। আজ প্রথমেই একটা কথা আমায় বল্‌তে 
হচ্ছে। সেদিন আমাদের আলোচনা বডড নীচে নেমে 
গিয়েছিল । আমাদের সকলেরই এ বিষয়ে অবহিত হওয়া 
উচিত। আমাদের ভুল্লে চলবে না যে, আমরা একটা 
উচ্চ প্লেনের অধিবাসী । আমাদের চিন্তা আমাদের 
আলোচনা যেন কখনই অমন নিয়ভূমিতে নেমে না আসে । 
ডঃদ্ে। আপনি ঠিকই বলেছেন, আমাদের সকলেরই 
এবিষয়ে সাবধান হওয়া! উচিত। 
ডঃ বোস। এই সাবধানতার আব্কতাটাই আমার 
কাছে লুডিক্রাস্‌ মনে হচ্ছে। আমাদের কাঁলচার্ড মনগুলো 
তো উচুতেই থাকে । নেমে আসাটা একটা আযাকৃসিডেপ্ট,। 
ডঃ মুখাঞজি । আযাকৃসিডেন্টটা যেন ঘন ঘননা হয়! 
এবিষয়ে আমাদের দায়িত্ব! কত বড়, তা আমাদের মনে 
রাখ তে হবে। গীতায় আছে, যদ্‌ যদ্দাচরতি শ্রেষ্টস্তদেবেতরো! 
জনঃ | স যত প্রমাণং কুরুতে লোৌকন্তদনুবর্ততে ॥ আমাদের 
মনে রাখতে হবে, আমরা হচ্ছি সমাজের ইন্টেলেকচুয়াল 
পাইলটস্‌্। আমরা যা ভাবব, যা বল্বঃ অপর লোকে, 
অর্থাৎ অ-ডক্টর অ-বিলেতফেরত লোঁকরাঁও তাই ভাববে, 
তাই করবে। আমর! যেন আমাদের এই মহান্‌ দায়িত্ব 


ভুলে না যাই। 

ডঃ নন্দী। আজকার আলোচনাটা আরম্ভ করা যায় 
কি দিয়ে? 

ডঃ মিটার। আরম্তটা ব্রহ্ম দিয়েই হোক। আলোটা 
তো একশ'তেই আছে। 


ডঃ বোস। ব্র্গ সম্বন্ধে আলোচনায় কোন অস্ুবিধে 
নেই। কারণ সর্বং খম্বিদং ব্রহ্ম। সুতরাং যে-কোন 
বিষয়ে আলোচন! করলেই সেটা ব্রচ্ম বিষয়েই হবে। ব্রহ্গের 
বাইরে তো কিছু নেই! 


মিস্‌ চ্যাটাজি। (সোফার তীংএর উপর ঈষৎ 
নাচিয়া) তাই যদি হয়, তবে এসব বিবেকরক্ষা আলোর 
খেলা» এসবের কি দরকার? 

ডঃদে। দরকার আসলে কিছু নেই। তবে কি-না 
'আমাদের মজলিসের বিশেষত্ব, স্বুতরাং_ 

ডঃ ঘোষ। ওটা বজায় রাখ তেই হবে। 

ডঃ মুখাঁজি। এই যে, সর্বং খদ্ধিদং ব্রন্গ, একথাটার 
তাৎপর্য সত্যই খুব গভীর । 

ডঃ দে। নিশ্চয়ই । আমরা! যা-কিছু দেখি, গুনি, অন্নুভব 
করি- ইন্দিয়গ্রাহথ এবং অতীন্দ্রিয় যা-কিছু আছে, সবই মূলত 
এক এবং অদ্বিতীয় সত্তার মধ্যে বিলীন ; এটা মনে, জানে, 
ধ্যানে আয়ত্ত করা এক মহাঁকঠিন ব্যাপার। মানুষের মন 
অতটা তীক্ষ, অতটা গভীর, অতটা! স্বচ্ছ, অতটা নির্ষল, 
অতটা পবিত্র যে হতে পারে, সেটা কল্পনা করাও কঠিন। 

ডঃনন্দী। সেই জন্যই তো আমর! গুনি, ইতিহাসে 
পড়ি, এই অদ্বৈত সাধনায় সিদ্ধিলাভ করবার জন্ঠ শঙ্গরাদি 
কত মহাপুরুষ জীবনপাত ক'রে গেছেন। কুতকার্য কতদুর 
হয়েছেন, তা আমাদের পক্ষে বিচার কর! যেমন কঠিন, 
তেমনি অসম্ভব । 

ডঃ ব্যানাজি। এ ধুগের একটা প্রধান বিশেষত্ব এই 
যে, আমাদের চিন্তাধারা তথাকথিত বৈজ্ঞানিক যুক্তিধার! 
অবল্হ্বন ক'রে চল্তে চায় । এপথে কিন্তু বেশি দূর এগোনে! 
যায় না। সেই জন্যই বেদ, উপনিষদ প্রভৃতির প্রতি অনেক 
আধুনিক পণ্ডিতের একটা! উপেক্ষার ভাব দেখা যায়। 
এই কারণেই দ্বৈতবাদ, অ্বৈতবাদ বা অন্য কোনপ্রকার 
দার্শনিক মতবাদই বর্তমান যুগের যুক্তিবাদের কাছে শ্রদ্ধা 
পায় না। 

ডঃ মুখার্জি। এসব দার্শনিক বাদের মধ্যে কি যুক্তি 
নেই? দার্শনিকরাঁও তো যুক্তির সাহাঁষ্যেই ভীদের মতবাদ 
সমর্থন করেন। 


€৬৭ 


৫5৮ 


ডঃ ব্যানাঞ্জি। কিন্তু দার্শনিক যুক্তির ধারা) আর 
আজকালকার বৈজ্ঞানিক যুক্তির ধারা ঠিক একপ্রকার নয় । 
দুটোর ফিল্ডই আলাদা । একটা মনৌজগতের এবং 
তারও উপরের ব্যাপার, আর একটা ল্যাবরেটরির ব্যাপার । 
এ দুটো ধারার সামঞ্জশন্য সুহজ নয়। 

ডঃ বোস। সামঞ্জন্ত নাই বা হ'ল। যদি সত্যিই 
মানুষের মন কোনদিন একটা সর্বশ্রেষ্ঠ যুক্তির ধারা মেনে 
চল্‌তে সমর্থ হয়, তথন সামঞ্জস্ত আপনিই হবে। নতুবা 
ধরে বেঁধে, টিকি আর ইলেক্টিসিটির মত; একটা ছেলে- 
ভূলোনো যুক্তির ছড়া বেঁধে মিষ্টিসিজ ম্‌ আর র্যাশন্তালিজ মের 
আধ-সিদ্ধ খিচুড়ি না পাঁকানোই ভাল। 

মিল্‌ চ্যাটার্জি। ড্যাম্‌ ইয়োর মিষ্টিসিজম্। ওসব 
ইয়ে আজকালকার দিনে শিকেয় তুলেই রাখা উচিত। 
যা চোখে দেখ] যায় না, যা কোন ইন্দ্িয়ের গোচর নয়, যা 
লেবরেটরিতে পরীক্ষা কর! যাঁয় না, এক কথায় যা-- 
এক, ছুই, তিন, চার ক'রে গোনা যায় না, এধুগে তার 
কোন মূল্যই নেই। 

ডঃ বোস। অন্তত এ মজলিসের সভ্য ও সভ্যাদের 
মধ্যে সবাই যে পিওর র্যাঁশনালিস্ট, সে বিষয়ে তো কোন 


সন্দেহই নেই। 
ডঃ চক্রবর্তী। বেশি জোর করে কিছু বল] যায় না। 
ডঃ$বোস। মানে? 


ডঃ চক্রবর্তী। আমার ধারণা, আমরা সকলেই বাইরে 
র্যাশান্াল, ঘরে মিষ্টিক। 

মিস্‌ চ্যাটাপ্্ি। অফ. কোর্স নট! তাই যদি হয়, 
আমি প্রস্তাব আন্বোঃ আমাদের' মজলিসে মিস্টিকতা 
চল্বে না। 

ডঃ বোস। আবার প্রস্তাব? সেবারের সে প্রস্তাবের 
কথা মনে আছে তে৷? 

ডঃদে। কোন্‌ প্রস্তাব? আমি তো জানিনে কিছু ! 

ডঃ বোস। আপনি তখনো মঞ্জলিসে আসেন নি। 
একবার আমরা প্রশ্তাব করেছিলাম, যে আমাদের মব্জলিসে 
চাকরি, মাইনে, ট্রান্সফার, প্রমোশন আর টেল-বেয়ারিং 
এ কয়টা আইটেম বাঁদ দিতে হবে। প্রত্ভাবটা ইউন্ঠানিমাঁস্লি 
পাঁশ হয়ে গেল। তারপর দুমাসের মধ্যে আমাদের সভ্য- 
সংখ্যা ১৪২ থেকে নেমে ৩৭-এ এসে গাড়াল। 


স্বত্ব 


[২৮শ বর্য-_২য় খণ্ড--৪র্থ সংখ্যা 


মিম্‌ চ্যাটার্জি। তা হোক্‌ গে। র্যাশন্তালিজ ম্ই যদি 
আমাদের ব্যক্তিগত, সামাজিক এবং নৈতিক প্রিক্িপ.ল্‌ হয়, 
তা হলে তাঁর জন্ত সব রকম ত্যাগ স্বীকারের জন্তই প্রস্তত 
থাকতে হবে। 

ডঃদে। আপনি ঠিকই বলেছেন, মিস চ্যাটার্জি 
আমাদের প্রিহ্সিপ ল্‌ ঠিক রাখতে হবে বৈকি। 
মিসেন ভৌমিকের প্রবেশ 

ডঃ নন্দী। এই যে মিসেস্‌ ভৌমিক, নমস্কার ! 

মিসেস্‌ ভৌমিক | নমস্কার! নমন্ধার! সবাইকেই 
নমস্কার ! একটু দেরী হয়ে গেছে, না? কি করি, এক 
দালাল এসে যা এক রাবিশ গাড়ী গতিয়ে দিয়ে গেছে! 
পঞ্চাশ মাইলের বেশি ম্পীডই হয় না। 

মিস্‌ চ্যাটাজি। ( সোৎসাহে) আপনি গাড়ী বদলেছেন 
বুঝি ? কত টাকায় কিন্লেন, ইফ. ইউ ডোণ্ট মাই? 

মিসেস্‌ ভৌমিক । কিনেছি ন'শ টাকায় তবে 
মজলিসের বাইরের লোকের কাছে বলি, উনত্রিশ শ/। 

মিস্‌ চ্যাটাজি। কেন বলুন তো? 

মিসেস্‌ ভৌমিক । আমার পোজিশনের লোকের ন/শ 
টাকার গাড়ীতে বেড়ানটা-_ বোঝেনই তো! তাছাড়া সত্য 
কথা বল্‌তে কালচারে বাধে। 

ডঃ মিটার। যাক গে। আজ আমাদের প্রধান 
আলোচ্য বিষয়_র্যাশানালিজম্‌। মিসেস্‌ ভৌমিকের এ 
বিষয়ে বক্তব্য কি? 

মিসেস ভৌমিক । আঁই ত্যাম্‌ আউট গ্যাণ্ড আউট 
এ র্যাশানালিস্ট, এতে আপনাদের কারে! কোন সন্দেহ 
আছে নাকি? 

ডঃ বোস। সন্দেহ একেবারেই নেই। 

মিসেস্‌ ভৌমিক । রাওলপিগ্ডিতে এতদিন ছিলুম, আমার 
র্যাশানাল মোড. অফ. লিভিং দেখে সবাই অবাক হত। কোন 
রকম বস্তা-পচ৷ সের্টিমেট কোনদিন আমার কাছে ত্যা'পীল 
করে নি। 

মিস্‌ চ্যাটার্জি। তাই তো চাই আমরা । বাংল! দেশটা! 
কেমন যেন মিয়িয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেখতে হবে, 
যাতে সারা বাংলা আবার চাঙ। হয়ে উঠতে পারে। 

ডঃ নন্দী। আমাদের ডঃ পুরকায়ম্থ এবার ট্রায়াক্ষ, 
অফ. র্যাশানালিজ মূ সম্বন্ধে যে বইথানা লিখেছেনঃ আমাদের 


চৈত্র---১৩৪৭ ] 


উচিত সেখান খুব প্রচার করা। মিস্‌ চ্যাটাজি নিশ্চয়ই 
বইখান! পড়েছেন । 

মিস্‌ চ্যাটার্জি । পড়িনি এখনও | তবে রিভিযু দেখেছি, 
শিগগিরই পড়বার ইচ্ছা আছে। 

ডঃ নন্দী। হ্যা আপনারা সকলেই পড়বেন আশা 
করি। বইথাঁন! সত্যই যুগোঁপযোগী হয়েছে । 


ডঃ ভট্টাচার্ষের প্রবেশ 


ডঃনন্দী। এই যে ডঃ ভট্টাচার্য, আনুন, নমস্কার । 

ডঃ ভট্টাচার্য । নমস্কার, গুড ইভনিং টু এভরিবডি। 

ডঃ মিটার । আগেই আমরা আপনাকে কন্গ্রাচুলেশন্স 
জানাচ্ছি। আপনার আযামস্টায়্ডাম রিভিয়ুয়ের সেই 
পেপারটা_থিওরি আযাগ প্রাকৃটিস্‌ অফ.লুনার একুলিপ স্‌-_ 
খুব ভাল হয়েছে। 

মিস্‌ চ্যাটাজি। তাই নাকি ! আমিতো দেখিনি এখনে! | 

ডঃ নন্দী । পরে দেখবেন একটা চমৎকার র্যাশ- 
ম্ঠালিস্টিক আউট্লুক। 

মিস্‌ চ্যাটাজি। নিশ্চয়ই পড়ব। ডঃ ভট্টাচার্য, একখানা 
বই কিন্তু আমি চাই। 

ডঃ ভট্টাচার্য। বেশ তো! 

ডঃ মুখাঁজি। মিস্‌ চ্যাটাঞজি, আপনার পড়া হলে 
বইথান! আমাকে দেবেন কিন্তু । 

ডঃ মিত্র। আপনার পড়া হয়ে গেলে আমাকে দেবেন । 

ডঃ বোস। আপনাদের সবার পড়া হয়ে গেলে আমি 
যেন একবার পাই! 

ডঃ নন্দী। আচ্ছা, আজ ডঃ বটব্যাল তো এলেন না ! 

ডঃ দে। বটব্যাল তো পাঁগল হয়ে গেছেন। বোধ হয় 
রাচীতে আছেন। 

ডঃ মিটার। সেকি! কাঁলও তে তার সঙ্গে বেচু 
চ্যাটা্জি স্টশীটের মোড়ে দেখ| | সে রকম কোন লক্ষণ ত-_ 

ডঃ দে। শুধু দেখে ঠিক বোঝা যায় না। 

ডঃ চক্রবর্তী । কেন, পরগুদিন তো! তার সঙ্গে জুট- 
ফোরকাস্ট নিয়ে দু'্ঘপ্টা আলোচনা! হ'ল। কোন রকম 
ইল্লজিক্যাল-_ 

ডঃদ্দে। গুধু কথা বল্লে বোঝা যায় না। 

ডঃ ভষ্টাচার্য। আমি তে। গত সামারে ছুমাস দেরাদুনে 


হমগক্তিস্ন 


৫ 22৭ 


ওর ' বাসায় ছিলাম। একসঙ্গে থাকা, একসঙ্গে খেলা, 
একসঙ্গে বেড়ান, একসঙ্গে শীকারে যাওয়া_-সবই তো 
করেছি । কই, কোনরকম ইডিওসিন্ক্রেসিও তো৷ আছে 
বলে মনে হ'ল না! 

ডঃদে। এগজ্যাক্টলি! , গর পাগলামির আসল 
লক্ষণই এই যে “কেউ জান্তি পারে না”। 

মিস্‌ চ্যাটাজি। ডঃ দে, এটা আপনার “উইশ ফুল *থট্‌” 
নয় তো! 


মিসেস ভৌমিক । কিম্বা একটা সাইকলজিক্যাল 
নেসেসিটি ! 

ডঃদে। কি যে বলেন আপনার! ! 

ডঃ সিংহ। কিংবা একটা এক্স্পেরিমেণ্ট ইন্‌ 


অটোসাজেস্শন ! দশজনে মিলে বল্‌তে বল্‌তে যদি সত্যিই__ 

ডঃদে। আপনার! ভারি ইয়ে 

ডঃ সিংহ। আমার কথাটা একেবারে উড়িয়ে দেবেন 
না। আমাদের সাইকলজি-শান্ত্রে ওটা কিন্তু একটা থুব 
প্রচলিত থিওরি--অনেক এক্‌সপেরিমেণ্টের নজির আছে। 
তাছাড়া, ডঃ বটব্যাল এরকম এক্স্পেরিমেপ্টের পক্ষে খুব 
কন্ভিনিয়েন্ট, সাবজেই_-একটু শাই, একটু সেট্টিমেট্টাল, 
একটু সেন্সিটিভ 

ডঃ নন্দী। দেখুনঃ আমাদের কথার মধ্যে ঝড় বেশি 
ইংরেজি কথা ঢুকে যাচ্ছে। 

ডঃ সিংহ। সরি। আচ্ছা; এখন থেকে একটু সাবধান 
হওয়া যাবে। 

ডঃ চক্রবর্তী! তাছাড়া, আমাদের আলোচনাগুলে৷ বড় 
এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। আজকের আল বিষয়টা কিন্ত 
র্যাশানালিজ্ম্‌। ৃ 

মিসেস ভৌমিক । দেখুন একটু আনন্দ, একটু বিশ্রাম, 
একটু আডডা-এর জন্যই এখানে আসা। এখানেও 
যদি লজিক আর ইউটিলিটির নিক্তিতে ওজন ক'রে কথা 
ব্ল্‌তে হয়, তাহ'লে তো ভারি মুস্কিল। 

ডঃ নন্দী। না, অতটা অবশ্ত নয়। তবে আমাদের 
মজলিনের বিশেষত্ব, মানে একটা হায়আর ইন্টেলেকচুয়াল 
লেভেল'_-সেটা থেকে বেশি না নামলেই হ'ল । 

ডদে। আপনার! যাই বলুন, সত্যিই ডঃ বটব্যাল__ 

ডঃ মুখার্জি। আবার বটব্যাল! অন্ত কথা পাড ন। 


৫০ 


মিসেন্‌ ভৌমিক দেখুন, মজলিসটা মোটেই 'ঘেন 
জম্ছে না । 

ডঃ চক্রবর্তী । কেন বলুন তো? 

মিসেস্‌ ভৌমিক । আপনারা তো দেখছি মোটে 
আটাশ জন। এত অল্প 'লোকে কি আডডা জমে? 
আমাদের রাওলপিত্ডিতে তো কোরামই হয় পঞ্চাশ জনে। 

ভঃ চক্রবর্তী। এটা বাংলাদেশ কি না। এখানে সবই 
একটু ছোট-ছোট। আপনাদের রাওলপিগ্িতে সবই একটা 
গ্র্যাণ্ড স্কেলে হয়। এই নিন, একট! সিগারেট খান। 

মিসেস্‌ ভৌমিক । ( সিগারেট ধরাইয়! ) থ্যাঙ্ক স্‌। 


ডঃ করের প্রবেশ 


ডঃ বোস। এই যেডঃ কর, এত দ্েরীযে! 

ডঃকর। আর বলেন কেন, একটা নারী সমিতিতে 
গিয়ে পড়েছিলাম, বেরুতে দেরী হয়ে গেল। 

মিসেস্‌ ভৌমিক। আপনি নারী সমিতিতে গেলেন 
কি হিসেবে? 

ডঃকর। আমার স্ত্রীর ম্বামী-হিসেবে। সেখানে 
আজ ছুটো খুব উচ্চাঙ্গের প্রস্তাব পাশ হয়েছে। 

ডঃ মুখাজি। ইউ মীন, খুব র্যাশন্াল প্রস্তাব । 

ডঃকর। হ্্যা। একট প্রস্তাব হচ্ছে যে, নারীরা 
এখন থেকে ঠিক পুরুষদের নৈতিক আচরণ হুবস্থ নকল 
করবে। আমি একটা সংশোধন প্রস্তাব করেছিলাম, 
“আমাদের সমাঁজে পুরুষের! নারীর প্রতি যে সকল অবিচার 
করে, তার প্রতিবিধানকল্পে আইন এবং সামাজিক ব্যবস্থার 
যথোচিত পরিবর্তন করা হোক।, আমার প্রস্তাব গুনেই 
তো! সবাই ভীষণ চটে গেলেন। এষুগে নারীর প্রতি পুরুষের 
বিচার-অবিচারের কোন প্রশ্নই ওঠে না। আদিম কালে 
যখন নারীকে রক্ষা কয়ুবার জন্ঠে নরের দরকার হতো, তথন 
এসব যুক্তি চল্‌্তো। এখন থানা রয়েছে, পুলিশ রয়েছে, 
পেনাল কোড রয়েছে-_ সুতরাং বিচার-অবিচারের কর্তী 
তো আর ম্বামীরা নয়! একথার উত্তরে আমি বললুষ, 
“তাহলে আমি আর একট! সংশোধন প্রস্তাব কন্মুবোঃ অন্থমতি 
দিন।+ সভানেত্রী বলগেনঃ আমাকে আর কোন সংশোধন 
প্রস্তাব কম্ুবার অনুমতি দেওয়। হবে না। আঁমি বললুম, 
“আপনাদের প্রস্তাবের অর্থটা কি এই যে, পুরুষেরা যেমন 


ভ্ঞান্রত্তন্ম্ 


[ ২৮শ বর্য--২য খণ্ড--৪র্থ সংখ্যা 


সিগারেট খায়, লেমনেড খায়, ক্লাবে সারারাত আডড 
দেয় তেমনি মেয়েরাও? সভানেত্রী বল্লেন, “ওসব 
ডিটেল্স্‌ পরে ঠিক করা যাবে। এতবড় সভায় ওসব 
খুটিনাটি আলোচন! করা চলে না।” আমি চুপ ক'রে রইলুম। 


প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হয়ে গেল। 

ডঃ বোস। ভেরি ইণ্টারেস্টিং! আচ্ছা» দ্বিতীয় 
প্রস্তাবটা কি? 

ডঃ কর। দ্বিতীয় প্রস্তাব হলো, “সন্তান-সন্ততির মধ্যে 


বৈধ এবং অবৈধ বলে কোন প্রভেদ থাকবে না» আমি 
বললুম, “একটা সংশোধন প্রস্তাব আন্তে পারি কি? 
সভানেত্রী বল্লেন, “হা, একটা সংশোধন প্রস্তাবের অন্তমতি 
দিতে পারি। কিন্ত তার বেশি নয়।” আমি বললুম, “আমি 
প্রস্তাব করি যে সমাঁজ থেকে বিবাহ-ব্যাঁপাঁরটা তুলে দেওয়া 
হোক ।, গুনে সবাই ভয়ানক থাপ্সা ! 

মিসেস্‌ ভৌমিক। কেন বলুন তো? 

ডঃকর। আমার পাশে ধারা বসেছিলেন, তারা 
বল্লেন, “এ আমরা কিছুতেই সমর্থন করবো না। এ প্রস্তাব 
পাশ হলে আমরা জয়ঢাঁক ঘাড়ে কর্বার লোক কোথায় 
পাব? আমাকে প্রস্তাব প্রত্যাহার করতে হু'ল। মুল 
প্র্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হলো! । 

ডঃ বোস । এ প্রস্তাবটার ইম্প্রিকেশনটা কি, তা 
একবার আপনারা ভেবে দেখেছেন ! 

ডঃ নন্দী । ভেবেই দেখুন, এথানে আর আলোচনায় 
কাঁজ নেই, আলো নিভে যাবে। 

মিসেস্‌ ভৌমিক | না, না, আলো নিভিয়ে দেবেন না। 
আপনারা যাই বলুন, আমার তো মনে হয় ভারতীয় সভ্যতার 
কিংবা মানব-সভ্যতার জন্ম থেকে এ পর্যস্ত নারীর নিজের 
মুখে এমন র্যাশন্যাল প্রস্তাব এ পর্যস্ত শোন! যায় নি। 

ডঃ বোস। মানে, ব্যাক টু নেচার ! 

মিসেস ভৌমিক | বাঁট্‌ র্যাশন্তলি আযাগ্ু লজিক্যালি। 

ডঃ মুখাঞ্জি। এটা কিন্তু বড় বাড়াবাড়ি হচ্ছে। এরকম 
আইডিয়া সাধারণের মধ্যে প্রচার করাটা অত্যন্ত অন্তায়। 

ডঃ নন্দী। আমারও তাঁই মত। আমার মনে হয়, 
প্রথম বিলাতী সভ্যতার ধাকায় যেমন বাঙালী পুরুষগুলোর 
মাথা ঠিক ছিল না, এখন তেমনি উচ্চশিক্ষা এবং নারী- 
প্রগতির একটা আচমকা ধাক! এসে আমাদের ছেলেমেয়েদের 


টৈত্--১৩৪৭ ] 


মাথা গুলিয়ে দিচ্ছে। স্বাধীনতা আর উচ্ছ ্খলতাঁর ভেদরেখা 
এরা মান্তে চায় না। 

মিসেস ভৌমিক । (তড়াকু করিয়া চেয়ার হইতে 
লাকাইয়া উঠিয়া )। এ্রী-ষ-যাঃ_ 

ডঃনন্দী। কিহ্ল? 

ডঃ বোস। ছারপোকা বুঝি ? 

ডঃ চক্রবর্তী। আপনার হ্যাও ব্যাগ হারিয়েছে বুঝি? 

মিসেস্‌ ভৌমিক। না, না, ওসব কিছু না। আজ 
পাঞ্জাব মেলে উনি রাওলপিগ্ডি যাচ্ছেন, স্টেশনে সী-অফ. 
করতে যাবার কথা ছিল-_শ্রেফ ভুলে গেছি। (হাতের 
ঘড়ির দিকে চাহিয়া) এখনও বোধ হয় সময় আছে। 
আচ্ছা, আজ আমি । নিক্ষান্ত 

ডঃকর। আজ তো ডঃ দাসের একটা কবিতা! পড়ার 
কথা ছিল। কই, পড়লেন না তো ! 

মিস্‌ চ্যাটাজি। থাক্‌, ওর আর কবিতা পড়ে কাজ 
নেই। আমার একটুও ভাল লাগে না। 

ডঃনন্দী। কেন বলুন তো? 

মিস্চ্যাটার্জি। উনি বড শিগগির শেষ ক'রে ফেলেন। 

মিসেস নন্দী । যা বলেছ” একটু ভাব না জম্লে কি 
কবিতা ভাল লাগে? 

ডঃ ভট্টাচার্য । এক্ম্কিউজ মি? দেখুন আমাকে আজ 
একটু সকাল সকাল বাড়ী ফিরতে হবে। 

ডঃ মুখাজি। কেন বলুন তো? 

ডঃ ভট্টাচার্য। আজ আটটা সাতান্ন মিনিটে ননতরগ্রহণ। 
তার আগেই খাওয়া-্দাওয়। শেষ করতে হবে। হাড়ি- 
কুড়িগুলে৷ সব ফেলে দিতে হবে তো .. 

মিসচ্যাটার্জি। আপনিও এসব মানেন নাকি? 
আপনিই না আস্ট নমিতে গবেষণা! করেছেন ? 

ডঃ ভট্টাচার্য । মানে, কথাটা কি জানেন, সবই কি আর 
আজকালকার সায়েম দিয়ে বোঝা যায়? দেয়া আমু 
মোর থিঙ্স্‌ ইন হেভন্‌ আয আর্থ, হরেসিও, দ্যান আহ 
দ্রেম্ট অফ. ইন ইওর ফিলজফি- বুঝলেন কি ন!। 

ডঃ বোস। হ্যা) বুঝেছি। মানে, শ্রীয়ান্ছ. অফ. 
র্যাশনালিজম্‌ আর কি! 

ডঃ ভষ্টাচার্ঘ। ত। ঠাট্টা করতে হয় করুন। আমি তো 
আর বিজ্ঞানে রিসার্চ ক'রে নাস্তিক হ'য়ে যাইনি । 





হতঠজ্পিস 


৪ 





ডঃ বোস'। গ্রহণে হাড়ি ফেলার সঙ্গে নাস্তিকতা বা 
আন্তিকতার সন্বন্ধটা ঠিক বোঝা! গেল না । 

ডঃ ভট্টাচার্য। সবাই সব জিনিষ বোঝে না, ডঃ বোস । 

ডঃবোস। আজে না। 

ডঃ ভট্টাচাঘ। আচ্ছা আসি তা হ'লে। নমস্কার! 

নিঙ্গান্ত 

ডঃ মিটার। দেখুন, আমাকে আজ একটু শিগগিরই 
যেতে হবে। 

ডঃ নন্দী। আপনারও কি গ্রহণ-সমস্তা নাকি? 

ডঃ মিটার। আজ্ঞে না। আমার প্রয়োজনটা আরো 
আর্জেণ্ট। 

মিস চ্যাটাজি। ব্যাপার কি? 

ডঃ মিটার। ( পেন্টংলেনের পকেট হইতে একটি ছুই- 
ড্রাম হোমিওপ্যাথিক ওষধের খালি শিশি বাহির করিয়া ) 
এই দেখুন,আমাঁকে একবার ষেতে হবে ঠনঠনের কালীবাড়ী। 
মা-কালীর চরণামৃত একটু নিয়ে গিয়ে খাওয়াতে হবে আমার 
ভাইঝিকে-_ 

ডঃ দাস। কি আশ্চর্য! আপনি আবার ওসব_- 

ডঃ মিটার । আজ্ঞে, মানে-আমি ওসব মানিনে। 
তবে মেয়েদের ব্যাপার কি না, মানে তাছাড়া কিসে কি 
হয় বলা! তো যায় না। দেয়ার আর মোর থিংস্‌ ইন হেভেন্‌ 
আয আর্থ 

ডঃ বোস। তা তো বটেই! 

ডঃ মিটার। আচ্ছা, আজ উঠি। নমস্কার! ন্ক্ান্ত 

ডঃ সিংহ। দেখুন, আমাকেও একটু আগেই যেতে হচ্ছে 

ডঃকর। কেন, আপনার আবার কি হ'ল। 

ডঃ সিংহ। ভাবছিলুম, একবার থিয়েটারে যার। প্রায় 
ছুবছর থিয়েটার দেখিনি । 

ডঃ পালিত। থিয়েটার ! দেখুন কিছু মনে করবেন না, 
মনে হয়, এ মজলিসের সভ্যদ্দের এসব মিডীভ্যাল আঁমোদ- 
চর্চায় যোগ দেওয়। মানায় না। এ দেশের ধিয়েটায়ের 
ইন্টেলেক্চুয়াল এবং কাল্চারাল লেভেল বড় নীচু । 

ডঃসিংহ। আমি অবস্ত অতট! সিরিয়াসলি ভেবে 
দেখিনি। একটু সময় কাটানো-_ছুঁ-ঢারটে গান-টান শোন! 
- ছু-একটা হাঁসি-রসিকতা-_মন্দ কি! চলুন না,আপনিও । 

ডঃ পালিত। আমি? কি যে বলেন! আদি 


১২ 


₹ -স্থ -স্প্স বত “সপ্ন হস স্পা 


ধরণের আমোদ একেবারেই পছন্দ করি নে। তাছাড়া 





স্ডাব্তন্যঞ্র 


| ২৮শ বর্ষ ২য় খণ্ড--ঘর্থ সংখ্যা 





ডঃ ঘোষ। নাঁ না, ওসব কিছু না। আমাকে একবার 


আজ আমার একটা খুব দরকারী এনগেজমেন্ট আছে। শুধু যেতে হবে হারিসন রোডে। সেশ্টণল আযভেনিউ-এর 


আজ নয়, এ সপ্তাহের সবগুলি সন্ধ্যাই এক রকম বুকৃড ! 

ডঃ সিংহ। কি এত এন্গেজমেণ্ট আপনার? 

ডঃ পালিত। আজ মিলেস্‌ গাঞ্গুলীর বাড়ীতে ছাত্রছাত্রী- 
দের উদ্দাম নাচ, কাল মিঃ ভূ'ইয়ার বাড়ীতে মায়েদের এবং 
মেননেদের স1ওতালী নাচ, পরশু ডঃ বাড়রীর বাড়ীতে মিকৃম্ড 
ব্রীজ, তারপর দিন খিচুড়ী-ক্লাবের প্রীতি-ভোজ, তারপর 
দিন কাজিন-ক্লাবের বাৎসরিক উৎসব, তারপর দিন-_ 

ডঃ সিংহ । থাক্‌» আর বলতে হবে না। আপনার 
থিয়েটার-বিরাগের কাঁরণ বোঝা গেল । 

ডঃ পালিত। আপনাদের মন অত্যন্ত । 
আচ্ছা আজ আসি তাহলে । নমস্কার! 

ডঃ দাস। আমাকেও এবার উঠতে হ'ল । 

ডঃনন্দী। এখনই ? 

ডঃ দাস। হ্থ্যা। 

ডঃ নন্দী। কোথায় যাবেন এখন? 

ডঃ দাস । যাঁর ফাঁরপোতে । কয়েকটি ফিরিঙ্গী মেয়ে 
আসবেন, তাঁদের সঙ্গে একটা সময় ঠিক করতে হবে। 
ওকি? আলো কমে গেল কেন? 

ডঃ নন্দী। অন্‌ এ পয়েন্ট অব অর্ডার! এ মজলিসে 
ওসব আলোচন! চল্বে না। 

ডঃ দ্াস। সাটু আপু প্রিজ। এই রকম নীচ আর 
সন্দি্ক মন নিয়ে আপনি মজলিসের বিবেক রক্ষা করবেন? 
শিগগির আলো বাড়িয়ে দিন । 

ডঃ নন্দী। তা দিচ্ছি। কিন্ত আপনার ওই কথাগুলোর 
একটা র্যাশন্তাল এবং কালচারাল ইন্টারপ্রিটেশন চাই। 

ডঃ দাস। তা দিচ্ছি। ওয়ারা আমার ভাগ্নের বিয়ের 
বরষাত্রী। কৰে কখন কোথা থেকে রওয়ান! হয়ে কোথায় 
যাবেন তাই ঠিক করবার জন্য ফারপোয় যাচ্ছি! ওয়ারা তো 
আর আমাদের পাড়াঁ় বেশি যাতায়াত করেন না! আচ্ছা, 
আসি তা হলে। নমস্কার! গুড নাইট টু এভরি বডি। 

নিক্রাস্ত 
ডঃ ঘোষ। একর্সকিউজ. মিঃ আমিও এবার উঠব। 
মিসঘোষ। কেন? এত সকালেই যে! মিসেসের 


ছকুম বুঝি ? 


থাক্‌গে, 
নিজ্কান্ত 


মোড়ে একটা পশ্চিম! সাঁধুর কাছে অস্থলের অন্ুখের মাছুলী 
পাওয়া যায়। দিনের বেলায় যেতে লজ্জা করে। ভাবছি, 
বাড়ী ফিরবার পথে নিয়ে যাব । 

মিস্‌ঘোষ। আপনি আবার মাছুলীও 
করেন নাকি? 

ডঃ ঘোষ । বিশ্বাস আমি করিনে। তবে মেয়েদের 
ব্যাপার--মন জুগিয়ে চলাই ভাল। তাছাড়া কিসের কি 
গুণ? বলা তো যায় ন]। দেয়ার আর মোর থিংস্‌ ইন 
হেভেন আগ আর্থ-_ 

ডঃ বোস। ট্রায়ান্ছ, অফ. র্যাশান্তালিজম্‌! 


বিশ্বাস 


ডঃ ঘোষ। অমন ঠাট্টা সবাই করে । আবার অবস্থার 
ফেরে পড়ে মত বদ্লাতেও দেরি হয় না। 

ডঃবোস। তা তো বটেই_বিশেষত আল্ট্রা- 
র্যাডিক্যালদের । 


ডঃ ঘোষ। আচ্ছা, আসি তা হ'লে। বেশি দেরি হ'লে 

আবার সে ব্যাটাকে পাওয়া যাবে না । গুড নাইট্‌। 
নিষ্তান্ত 

ডঃ ব্যানা্জি। আমিও ভাবছি, এখন উঠলে হয় । 

ডঃ নন্দী। আপনিও ? 

ডঃ ব্যানাজি। হ্্যা। আমাকে একবার যেতে হবে 
এক পণ্ডিতের কাছে--একখানা কো্টীর সম্ন্ধে খোঁজ 
করতে। 

ডঃ মুখাঞজি। কোঠী? 

ডঃ ব্যানার্জি। হ্যা, একখান! ঠিকুজী দিয়েছি, তাই 
থেকে কোষ্ঠী তৈরি করতে হবে। একটি মেয়ের সঙ্গে 
আমার ভাইপোর বিয়ে ঠিক হয়েছে। সবই ঠিক, কিন্ত 
কোঠীটা নিয়ে একটু গোলযোগ বেধেছে । 

ডঃ মুখার্জি। আজকালকার দিনে ওসব আবার আছে 
না কি? বিশেষত আপনার মত একজন আধুনিক 
রাশান্তাল র্যাডিক্যাল লোকের পক্ষে-_ 

ডঃ ব্যানার্জি । মানে আমল কথাটা কি জানেন, 
আমরা মুখে ব! মিটিং-এ যতটা র্যাশন্াল, মনে তা নই। 
তাছাড়া .এই যে আমাদের জ্যোভিষ-্শান্ত্র--এটা যে 
একেবারে ভূয়ো-_তাই বা বলি কি করে? 


ঈৈর৮-১৪৭,] 


চক চট ৪11 





ডঃ বোস । মালে র্যাশক্তালিনম্ট! একট। ঘাঁা ! 

ডঃ ব্যানার্জি। জতট! মানতে আমি রাজি নৃই। 

ডঃ বোস। সেটা আরো! খারাপ! মানে, সুবিধে 
বুঝে মানি। আমি তো! দেখেছিঃ যখন দরে বনিবনাও না 
হয়, তখন কোৌগ্ীর তলব পড়ে । আবার যখন দরদস্তরটা 
বেশ স্থবিধে মত হয়ে যায়, তথন জ্যোতিষীকে পাঁচ সিকে 
দিলেই আবার রাজযোটক হতেও দেরি লাগে না। 

ডঃ ব্যানাজি। আপনার সব বিষয়েই একটা! সিনিক্যাল 
এবং স্যাটিরিক্যাল ভাব; এটা কিন্তু আমার পছন্দ হয় না। 

ডঃবোস। বেশ বলব না। ঠিকুজিকোঁঠী বা 
যা-খুণী দেখে আপনার ভাইপোর বিয়ে দিন। আন্তরিক 
আনীর্বাদ রইল। 

ডঃ ব্যানাঞ্জি । থ্যাঙ্কম্‌। আমারও অনুরোধ রইল, 
আপনি ওসব প্িনিধকে অত বাঁজে মনে করবেন না। 
আমাদের বর্তমান যুগের লেবরেটরির বাইরে যে আর কোন 
সত্য নেই, তা আমি বিশ্বাস করি না। দেয়ার আর মোর 
থিংস্‌ ইন হেভেন্‌ আযাণ্ড আর্থ 

ডঃ বৌস। নিশ্য়ই। নিশ্চয়ই । আমাদের আল্ট্রী- 
র্যাডিক্যালদের অনেকের মুখেই তো ওই কথাই শুনলুম । 

ডঃ ব্যানার্জি। আচ্ছা, আজ উঠি। কোঠীটার একটা 
হেস্তনেস্ত না হওয়1 পর্যস্ত পাক! দ্রেখাটা হয়ে উঠছে না। 
আচ্ছাঃ নমস্কার ! 

নিজ্ঞান্ত 

ডঃ কুত্। আই আ্যাম্‌ আযফ্রেড, আই গুড. লীত নাউ ! 

ডঃ নন্দী। আপনারও কি ঠিকুজী-সম্তা নাকি? 

ডঃকরুত্র। আজ্ঞে না। আমাকে এখুনি একবার যেতে 
হবে বাগবাজারে। আমার এক ভাগ্নে একটা বামুনের 
মেয়েকে বিয়ে কল্নুতে চায়। যেমন ক'রে হোক, তাকে 
নিরস্ব করতে হবে। 

ডঃবোল। কেন? যদি মেয়ের পক্ষের মত থাকে; 
তবে জ্াপনি ফেন বারণ কয়েন? 

ডঃ কুদ্র। দেখুন, র্যাশন্তালই হই আর র্যাডিক্যালই 


হই, আমাদের পারিবারিক মর্যাদা ক্ষণ কমতে 
দিতে পারিনে। 
ডঃ বোস। আমার মনে হয় এসব ব্যাপারে 


পারিবারিক 'মধীধধার অআদর্শট! পদ্লিব্তন করযার সময় 


এসেছে । উচ্চ শ্রেণীর হিন্দুর মধ্যেও যদি এই সঙীর্ঘ 
কুলিনীয়ানা না যায়, তা হলে কেমন ক'রে আমরা স্ব 
কয়ুব যে আমর! সবাই সবাইকে একজাতিতৃক্ত মনে কয়ুব ? 

ডঃ রুদ্র। বুঝি তো সবই, কিন্ত দেখুন কিছু বুদ্ধি 
দিয়ে বোঝা আর কাজে করা, এছুটোর মধ্যে তফাৎ অনের 

ডঃ বোস। অশিক্ষিত, আন্কালচার্ড লোকের কাছে 
এ তফাৎ যত বেশি, আমাদের মত র্যাশন্তাল. লোকগেনর 
কাছে অত বেশি হওয়া উচিত নয়। 

ডঃ রুদ্র। তাঠিক। তবে কি জানেন, ুরুষপরষ্পরা 
থেকে পাওয়1 পারিবারিক ট্রাডিশন-_- 

ডঃ বোস। একেই বলে ট্রায়ান্ষ. অফ. র্যাঁশস্তালিজম্‌! 

ডঃ রুদ্র। ঠাট্টাই করুন আর যাই করুন, আমি বামুন- 
কায়েতের বিয়েতে কিছুতেই মত দেবো না। * 

ডঃবোস। নিশ্চয়ই না। 

ডঃ রুদ্র। আচ্ছা, আসি তা হ'লে। দেখি কতদূর 
ব্যাপারটা গড়িয়েছে। তাই বুঝে ব্যবস্থা কম্নুতে হবে। 
আচ্ছা, নমস্কার ! মক্কা 

ডঃ পুরকায়স্থ। আমাকে কিন্তু একটু এক্স্কিউজ 
করতে হবে। 

ডঃবোস। আপনার এখন কি কাজ? কোন 
গণৎকারের কাছে হাত দেখাতে যাবেন নাকি? 

ডঃ পুরকায়স্থ। না! না, ওসব বুজরুকিতে আমান 
বিশ্বাস নেই। 

মিস্‌ চ্যাটাঞজি। তবু ভাল, অন্তত একজন র্যাশস্তাঁল 
লোক এখানে আছেন, যিনি এসব বুজরুকি বিশ্বাদ 
করেন না। 

ডঃ নন্দী। বুজরুকি আমরা কেউই বিশ্বাস করি না। 
যে সব ব্যাপার আমাদের মধ্যে কারে কারো কাছে. 
বুজরুকি বলে মনে হয়, হয়তো! তার মধ্যে খানিকটা বা 
থাকতে পারে। 

ডঃ মুখার্জি। সত্য আছে কি-না-_সেটা ভাল কয়ে লা 
জেনে শুধু শ্রদ্ধা ভক্তি আর বিশ্বাসের দোহাই দিয়ে যা-তা:" 
কর! আর যা-তা' মানা এট তে। র্যাশন্াপিজ.য্‌ নয় |. 

ডঃ বোস। ঠিকুজী, কোর্ঠী, : হাঁত-দেখা। সির 
নেক বযাশ্া ব্যাখ্যা আছে হয তো! ::0.. 

ডঃ মুখার্জি। ত৷ হলে তো জগতে ঝরা খ 





৯৮৬৪ ভ্গান্রসজ্যঞ্ছ 
বলে থাঁকৃতে পারে না। সব কিছুরই একটা 


র্যাশল্াল ব্যাধ্যা খাড়া! করা যায় । 

ডঃবোস। তা যায় বলেই তো সবাই নিজেকে 
্যাশন্তাল মনে করে; আর সেই জন্তই সব রকম অন্ধ 
ংস্কারর আমাদের পেয়ে বসে। 

ডঃ সিংহ। কিন্তু আমার্দের মজলিসের সভ্যেরা তে! 
সে লেতেলের লোক নন। এঁদের মন কখনো! ওসব অন্ধ 
সংস্কারে আবদ্ধ হ'তে পারে না। 

ডঃ বোস। তবে কি না, দেয়ার আর মোর থিংস্‌ ইন্‌ 
হেভ ন্‌ আযা্ড আর্থ __ 

ডঃ পুরকায়স্থ। তা হ'লে আমি উঠি এবার । 

মিসেস্‌ নন্দী । আচ্ছা আঙ্গন! আপনার স্ত্রী তে 
সবে আজ নাসিক থেকে এসেছেন । বিয়ের পর এই বোধ 
হয় আপনাদের প্রথম দেখা । 

মিন্‌ চ্যাটাজি। তাই নাকি? কি আশ্র্য! আর 
আজ আঁপনি এখনো মজলিসে বসে আছেন? ও, আঁপনিই 
তো দ্্বীয়ান্, অফ ব্যাশস্ত1লিজ ম্‌” লিখেছেন, তাই আপনার 
অত সের্টিমেপ্টালিটি নেই। কি বলেন? 

ডঃ পুরকায়স্থ। হ্যা) তা কতকটা বটে। তবে আমি 
এখন উঠ.ছি একটু অন্ত প্রয়োজনে ৷ অবশ্ঠ প্রচার করবার 
মত কিছু নয় তবে কি ন! বিটুইন্‌ আওয়ারসেলভ.দ্‌-__ 

মিসেন নন্দী। হ্যা, তা বেশ তো--বলুন না। আমরা 
তে আর-_ 





[ ২৮শ বর্ধ--২য খণ্-চর্থ সংখ্যা 


১. ০ 





স্ন্ছ -স্ন্ছ -্ব সহ স্থান স্ব 


ডঃ পুরকারস্থ। না না) তা তো বটেই। আপনারা 
তো আরম-। মানে, আজ আমার বাঁড়ীতে গুরুদেব 
আস্বেন। 

ডঃ ধোস। এই রাত্রে! 

ডঃ পুরকায়স্থ। আমার জীবনের একটা গ্রধান ব্রত 
এই যে, কোন কিছু নিজে গ্রহণ করবার আগে গুরুদেবকে 
নিবেদন করি। বখন বাজারে প্রথম আম ওঠে, প্রথমে 
গুরুদেবকে অর্পণ করে পরে আমি খাই। যখন শীতের 
পিনে সোয়েটার পরি, তখন আগে গুরুদেবকে একটি 
সোষেটার পরিষে তবে সেটা আমি পরি। এমনি সব 
বিষষেই_- 

ড: বোস । অ্যানাদার ট্রায়াম্ফ, অফ. র্যাশন্তালিজ ম্‌! 

ডঃ পুরকাযস্থ। আপনাদের হয়তো এ জিনিষটা তেমন 
আ্যাপীল করূছে না। কিন্ত, দেয়ার আর মোঁর থিংস্‌ উন্‌ 
হেঙ্৭্‌ আও. আর্থ 

ডঃবোল। যেআজ্ে! 

ডঃ পুরকাধস্থ । আচ্ছা, আপি তা হ'লে । নমস্কার! 

নিজ্তান্ত 

মজলিসম্থ সকলেই কিছুক্ষণ গাপে হাত দিয় তন্ময় হইয়া 
কি যেন ভাবিতে লাঁগিলেন। কিছুক্ষণ পরে ডঃ নন্দী 
বলিলেন, আজ মজলিসট৷ এখাঁনেই শেষ হোক । সকলেই 
সম্মতি জ্ঞাপন করিলেন এবং ধীরে ধীরে গৃহ হইতে নিষ্কান্ত 
হইলেন। 


বধশেষে লহ নমস্কার 

স্রীহীরেন্দ্রনারায়ণ মুখোপাধ্যায় 
ওগো রুদ্র জাগিয়! উঠিবে নব মন্দাকিনী ধার 
হে বহ্ছিদেবতা ! অমৃতের ছন্দোময়ী লীলা অশরীরী, 
বর্ষশেষে লহ মোর মধ্যান্মের শত ্সর্পে তারি মৃত্যুক্রি্ন গ্রাণ 

নমস্কার; মুক্তি-ন্নানে হবে আত্মহারা । 

প্রদীপ্ত ভাস্বর ! পশ্চাতের শ্বতি 
বিজয় ডমরু তব পশ্চাতে পড়িয়া থাক, 
' ধাজাইয়া গুরুগ্রু তালে-_অনিবাঁর মুছে যাক অতীতের অবসন্ন গ্লানি) 
শুনা বিশ্বৈর ঘারে কালের কঙ্কাল হতে 
বিশ্বাতীত মর সঙ্গীত ওগো মহাকাল ; ; . 
যার্‌ কল-কাললোল উল্লাসে এনে দাও নৃতনের অর্থাপাত্রখানি 


চলতি ইতিহাস 
দলীতিনকড়ি চট্টোপাধ্যায় 


মধ্যগ্রাচী 

অধীর উৎকঠ1 ও দীর্ঘ প্রতীক্ষার মধ্য দিয়! পূর্ণ একটি মাস অতিবাহিত 
হইয়াছে । প্রাচী ও প্রতীচী উভয় রণক্ষেত্রেই ইতিমধ্যে বছ পরিবর্তন 
মানিত হইয়াঞছছে। উত্তর আফ্রিকার ইতাণীয় ঘাটি তোক্রকের পতনের 
পর কুঁটিশ-বাহিনী দার্ন। অধিকার করে। তাহার পর সাইরিন বনার 
অধিকার করিয়া বুটিশ-বাহিনী অগ্রসর হইলে ইতালীয় সৈম্ভগণ 
পশ্চাদপনরণ করিতে বাধ্য হয়। কয়েকদিন পূর্ববে লিবিয়ায় মার্শাল 
গ্রাৎনিয়ামীর সর্বশেষ খাটি বেন্ঘ।জী বন্দরের পতন হইয়াছে। উত্তর 
আফ্রিকার এই বদারটির গুরুত্বই ছিল সর্বাধিক। ইতালী হইতে সকল 
রণসস্তার জাহাজে করিয়! প্রথমে এই বন্দরে প্রেরণ কর! হইত। এখান 
হইতে মেইসকল রণোপকরণ অন্ঠান্ভ ঘাটিতে প্রেরণের ব্যবস্থা কর! 
হইত। সৃতরাং উত্তর ইতালীতে এই বন্দরটিকেই সমস্ত শক্তির কেন্ত্র 
বল! যাইতে পারে। কাজেই বেন্ঘাজীর পতন হওয়ায় ইতালীর ক্ষতি 
হইয়াছে যথেষ্ট । 

তবে জেনারেল ওয়েস্ভালের সাফল্যের কারণ হ'ল, নৌ৷ ও বিমান 
বাহিনীর ধুগপৎ সহযোগিত!। তৃমধ্যসাগরে বৃটিশ নৌশক্তি এখনও 


দি, 7 7 45 এ ক] ১ 
শর চন দ্ধ ধু গা দিল কিছ 
1 7 8৬৬ 
চাদর পি | হা 
4 রী ৪ | রি লি 
ঃ 


আফ্রিকার অন্তান্চ অঞ্চলেও ইঠালীয় সৈম্ভগণ বিশেষ নুবিধা! করিতে 
পারে নাই। হাবদী সৈস্তদের ক্ষগ্জা $গত সংখ্যাতেই উদ্লেখ কর! 
হইয়াছে। বৃটিশ সৈম্ভাধাক্ষের শিক্ষাদধানে ও সআাট হাইবে সেলানীৰ 
নেতৃত্বে একদল রণদক্ষ হাবসী বাহিনী গঠিত হইয়াছে । এরিক্রিয়ায 
বৃটিশবাহিনী ইতালীয়দের নিকট হইতে আগোরদাৎ ও বারেস্ত অধিকার 
করিয়া লইদ্লাছে। আবিসিনিয়ার় মোগার ফ্োোড ধরিয়া বৃটিশ বাহিতবী 
অপ্রতিহত গতিতে অগ্রসর হইতেছে । ইতালীয় সোমালিল্য। ও সীমান্ত 
হইতে ৪৫ মাইল অভ্যান্তরে একটি শক্রঘাটি বুটিশের অধিকৃত । সংক্ষেপে 
আফ্রিকার সকল রপক্ষেত্রেই ইতালীয় সৈন্য বুটিশ-বাহিনীর হস্তে পর্দা । 
লিবিয়ার দশম ইতালীয় বাহিনীর অঙিনায়ক জেদানেল টেলর! 
বেনঘাজীতে আহত ও বন্দী হুইয়! মারা গিয়াছেন। মার্শাল গ্রাৎসিয়ামীর 
দক্ষিণ হম্তত্বরাপ জেনারেল বায়গান্জলি বেনঘাজীতে বন্দী হইয়াছেন। 
বেনঘাজী দখলের ফলে সাইরেবিকায় ইতালীর ত্রিশ বৎসরের জআধিগত্য 
কু হইয়াছে । ইতালীর সহিত আবিসিনিয়ার যোগাযোগও 'আজ 
বিচ্ছিন্ন। সমগ্র উত্তর আফ্রিকা! ইতালীর হন্তচ্যুত কর! বৃটিশের উন্নত 
রণকৌশল ও সাফলোর পরিচায়ক । 





তবরুক আক্রমণের পথে বৃটিশ সৈম্তগণ কাট তারের বেড়ার ফাকের মধ্য দিয়া যাইতেছে 


হুপ্রতিষ্ঠিত। আক্রিকায় বৃটিশ সৈপ্ভ বখনই কোন লক্ষ্যাভিমুখে অগ্রসর 
হইয়াছে মৌ  বিষান বাহিনী সেই সমগ্পে যোমাবধণ করিয়া স্থলসৈন্তের 
অগগবনে নখে অহায়তা করিয়াছ্ে। অপর পক্ষে আফ্রিকাস্থিত 
ইতালীয় সৈল্তগণ প্রয়োজনমত নৃতন সৈম্তদলের সাহায্য লাত করিতে 
পায়ে নাই। কলে আত্ারক্ষা অনস্তধ বুবিবাঙ্গাত্র ইতালীয়গণ বৃখ। 
নৈশ নিধায়পার্থে জান্মনমর্পণ করিয়াছে, অথব! হাঁটি ত্যাগ করিয়া 
গল্চাবগলরগ করিয়াছে । এই ফাঙ্গণেই আক্তিক্ষার বৃটিশের হত্তে 
লক্ষািক ইভামনির লৈক় হর্থী হইয়াছে। 


আফ্রিকায় বৃটিশের এই বিজয়ে ভূমধ্যলাগরে বৃটিশ প্রতৃত্ব হুপ্রতিষ্টিত 
হইল। প্রকৃতপক্ষে লিবিয়া হইতে হথয়েজ পর্যন্ত ভূষধাসাগরের লদগ্র 
দঙ্গিপাংশ বৃটিশের নিয়স্ত্রণাধীদে জালিল বলা বায়। ইতালীর ছার! 
প্রস্তুত পথ ঘাট ব্যবহারের ক্থবিধাও বৃটিপ-বাহিনী সম্পূ্ণয়গে লান্ড 
করিবে। কিন্তু এই জয় সামরিফ হিসাবে হতই ওরতপূর্ণ হউক না 
কেম, ইহাতে অত্যধিক উদ্মিত হইবুর ফোন কারণ নাই। 
মিং চার্চিলও একখ! বিশ্বৃত হন নাই। আললে এই জয়ে হুটেদের 
সান কটু$1 হে মুসোজিনীকে তাহার! মরুভূষি-ফুড়াদর খন ঠা 


৫১৫ 


ধা 





করিয়াছিলেন, বর্তবানে সেই মরুভূমিই তাহাদের হস্তগত ছইয়াছে, জি 
জার্চানীর ক্রুত আক্রমণ-পদ্ধতির অনুকরণে বৃটিশ সৈম্তদল আফ্রিকায় 
'িজকিগ,' আক্রমণের একট! পরীক্ষা দিল বলা যাইতে পারে।' কিন্ত 
যুদ্ধের প্রকৃত গুরুত্ব এখানে নয়। মিঃ চাচ্চিল একথ! ভাল করিয়া 
জাদেন বলিয়াই তাহার বৃ্তার সংঘমের অভাব হয় নাই। বুটেনের 
গরকৃত শরু জার্মানীয় বিরুদ্ধে * বর্তদানে আত্মরক্ষার নিরত বৃটেন বখন 
এইকপ প্রতি আক্রমণ চালাইতে সক্ষম হইবে, তখনই বৃটেন প্রকৃত 
বিঞ্জয়ের গৌরব জনুষ্ভব করিতে পারিবে । 

গ্রীসের বিরুদ্ধে ইতালীর যুদ্ধের অবস্থা! জাঙ্রিকার তুলনায় উন্নততর 
বল! হ্াইতে পারে । গত একমাসে গ্রীস বিশেষ কোন উল্লেখযোগ্য 
র়লাভ করিতে পাঁরে নাই। একমাত্র তেপেলিনিতে গ্রীক-বাহিনী 
কিফিৎ সাফল্য অর্জন করিয়াছে। প্রীকদিগের বিজন সম্বন্ধে বিভিন্ন 
প্রকারের সংবাদ পরিবেশিত হইতেছে বটে, তবে নে দকল স্থানের 
ওরু্ও কিছু নাই, বিজয়ও আদৌ উল্লেখযোগা নয়। আল্বামিত়ায় 
ইন্ানীর নৈস্ভলংখযা বৃদ্ধি পাইর়াছে। ইতালী পান্টা আক্রমণ 
চাঁলাইতেছে বলিয়াও খবর আসিতেছে । তাহ! হইলেও গ্রীক-বাহিনী 
যেসাফল্য লা করিতেছে ইছ| নিঃসন্দেহ। 

উদ্চয় রণক্ষেত্েই ইতালীর এই শোচনীয় পরাজয় জান্ানীকে 
বিচজিত করিয়ছে। হিটলার ষে বর্তমান যুদ্ধে ধীর ও সুচিস্তিত 
পৰক্ষেপে অগ্রসর হইতে ইচ্ছুক ইহা নিঃসনেহ। কাইজারের 
ভূলেই যে: গতবুদ্ধে জাপানী পরাজিত হইয়াছে. ইহ! হিটলারের 
অজান। নয়। সেই জন্তই তিনি বর্তমান বুদ্ধে একসঙ্গে একাধিক 
রণক্ষেত্রে বুদ্ধ চালাইতে অনিচ্ছুক। কাজেই সম্পূর্ণরূপে বৃটেনের 
দিকে মনোনিবেশ করিবার অভিপ্রায়ে ছিটলার মধ্য প্রাচীর সম্পূর্ণভার 
ইতালীর হতে প্রদ্ধার করিয়াছিলেন। কিন্তু মুসোলিনীর অকৃতকাধ্যত।র 
ফলে তাহার সমস্ত পরিকল্পনা! নষ্ট হইবার উপক্রষ হইয়াছে। 
সথতগ্কাং ফাধ্য হইয়াই জার্সানীকে আজ এইদিকে মনোনিবেশ করিতে 
হইতেছে। জার্সানী যে সিসিলি অধিকার করিয়াছে, একথা 
গত সংখ্যাতেই উল্লেখ কর! হুইয়াছে। জার্মানী কর্তৃক সিসিনি স্বীপ 
অধিকারের গুরুত্ব হথেষ্ট। সিসিলি ও টিউনিসিয়ার মধ্যে অবস্থিত 
প্যাপ্টেরিলিয়! স্বীপটি ইতালীর। এই উতয় স্বীপের মধ্যবর্তী সমুদ্রাংশ 
দির! জাহানের গমনাগমনের পখ। 'হৃতরাং ভূমধ্যসাগরে বুটিশ নৌশকির 
প্রাষ কু করিতে হইলে সিসিলিকে খটিরূপে ব্যবহার করার প্রয়োজন 
স উপযোগিত! বথেষ্ট। গ্রীন অভিমুখে চালিত বৃটিশ জাহাজগুলিকে 
পথেই বাঝ গুদান করার সুবিধা সর্ধ্বাপেক্ষা। অধিক । এতত্বাতীত 
ইতালীর সহিত আফিকার ঘোগাযোগ স|ধন করিতে হইলেও ভূষধ্যঘাগরে 
'টিশের (সীগরিক ছীদবল করা প্রয়োজন । 

সুখের নৌগত্ধি যে বের একথ| হিটলার চাল করিয়াই জামেন। 
লই কালের -আৌবহর হস্তগত করিবার চেষট সবারগানীর পক্ষ 
»খ্বাজ/বিক । . কাজেই, লাান-পেষ্য। ঘটত .সমনার ছুসমাধামের ' অজায 


পরিলক্ষিত হওয়ায় যুদ্ধের গভি স্ধে জাগ্রহনীল ও অনুযাগী বাস্ছিপীণ 


| ২৮শ র্ব---২য় ছ্-স"হথ লহহ্থযা 


উৎক্ঠত হইয়া পড়িয়াছেদ। জদেকে আশক্কা করিতেছেন যে, জার্মানী 
বোধ 'হয় ফ্রান্সের সহিত এ বিষয়ে একটা বোষাপড়! করিস! লইভে চায়। 
এড ষিরাল ফীর্লণ অধগ্ত ঘোষণা করিয়াছেন যে, ফরাসী-নৌবহর 
আত্মসমর্পণ করিবে না। আবার সংবাদে প্রকাশ যে, ছিটলার মাকি 
ভিসি সরকারকে জানাইয়াছেন ঘে ফেব্রুয়ারী মাসের মধ্যেই জার্দান- 
ফরালী সমতার সম্পূর্ণ সমাধান করিতে হইবে। মার্শাল গেঙ্যা হা 
সচিধ ও সর্ব্বোচ্চ পরিষদের সদত্যয়পে মঃ লাভালকে ফরাসী অস্ত্রিগায় 
গ্রহণের প্রস্তাব করিয়াছিলেন । কিন্তু মঃ লাভাল কর্তৃক উহ প্রত্যাখ্যাত 
হইয়াছে । মার্শাল পেষ্ট্যাকে মস্ত্রিসত৷ পুনগর্ঠন ব্যাপারে পূর্ণ হ্বাধীসত 
প্রদানের নিমিত্ত মঃ লাতালের পরবত্তী পররাষ্ট্রসচিব মঃ ফলা! পদত্যাগ 
করিয়াছেন বলিয়া প্রকাশ । জান্নানীর দাবীর ফলেই নাকি ছঃ ক্লাদীকে 
পদত্যাগ করিতে হইয়াছে । তাহার স্থানে এডমিরাল দার্ল। শররাষট্ 
বিভাগীয় মন্ত্রীরপে নিযুক্ত হইয়াছেন। ফ্রাঙ্কো-ইতালীয় সীশাস্ত পথে 
মার্শাল পেঙ্যা ও জেনারেল ফাঙ্কোর মধ্যে সাক্ষাৎকার হইয়াছে । 
মুমোলিনীর সহিত সাক্ষাৎকল্পে জেনারেল ফ্রাক্কো ইতালী আসিয়াছিলেন। 
ইতালী নাকি যুদ্ধ বিরতির ইচ্ছ! করিতেছে ও বুটিশের সহিত নাকি সে 
পৃথকভাবে সন্ষি করিতে চায় বলিয়! যে সংবাদ রটিয়াছিল জেনারেল ক্রাঙ্ছো 
তাহা অন্বীকার করিয়াছেন । 
মুসোলিনীর পরাজয়ে অনেকের মলে উল্লিখিত সবি সম্ব্ধে সনেহ 
জাগিলেও এ বিষয়ে বিশেষ লক্ষ) করিবার ব্যাপায় আছে। ইতালী 
উভয় রণক্ষেত্রেই যুদ্ধে সবিধা করিতে পারিতেছে ন! বটে, কিন্তু এ পর্যান্ত 
সে ন্বীর় জয়লানের নিমিত নিজ নৌবহর যুদ্ধার্থ ব্যবহার করে নাই । 
ইতালীর নৌবহরের অজেয় শক্তি সম্বন্ধে মুমোলিমী বহুপূর্কোই ঘোষণা 
করিয়াছিলেন, কিন্তু এ পর্য্যন্ত তাহা ব্যহহার না|! কর! বিশেধ বিশ্ময়ের 
বিষয় সঙ্গেহ নাই। ভূমধ্যপাগরে বৃটিশ নৌবহরের তৎপরস্তাক্ যখন 
ইতালী-আক্রিক! নংযোগ বিচ্ছিন্ন হইবার উপক্রম, 'এক্সিল' শক্তির 
অন্ততম সহঘোরীকে সাহায্যের জন্য জার্দানী যখন সিসিলি দ্বীপে খাটি 
সংস্থাপন করিল, তখনও ইতাঁলীর নৌবহর রণক্ষেত্র হইতে দূরে 
অবস্থান করাই যুক্তিযুক্ত বলিয়া বোধ করিল কেন? বৃটিশ নৌধহরের 
শক্তিকে জার্নানী উপেক্ষা! করিতে পারে ন! বলিয়াই ইতালীয় ব্ণপোত- 
গুলিকে পূর্ব হইতে যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হইতে ন1 দেওয়ার যাসমনা ও 
মুসোলিনীর সহিত তদনুঘায়ী ব্যবস্থা! ফর! কি জার্ানীর পক্ষে অসপ্তব? 
সম্প্রতি ক্রান্কো-মুসোলিনী সাক্ষাৎকার হইয়া গিক্লাছে। জিজ্তান্টার 
সঙ্গন্ধেও সেই সময়ে ফোন ব্যবস্থার পরিকপ্টান! হইগ়্াছে ফি মাঁকে 
নি ভূমধ্যসাগরে বৃটিশ নৌবছরকে তুর্বল করার প্রয়োজন ফেন 
বং তহুদ্দেস্ে কি ব্যবস্থা অবলব্বন কযা! সম্ভব, সে টি 
আত বিস্তারিত আলোচন! কর! হইয়াছে । : ২ 
বন্ষান ও -দক্ষিণ-পুর্বব ইয়োরোপে সন্বট. আসর ইয়া উঠিয়াছে। 
জেষগ্র রন়্ালে জার্দালীর ব্যাপক সঙরায়োজদ চলছে । গা -জাবুকান্ধী 
শেষ দিকে কমামিয়ায় আয়রণ-গার্টের বযিগকযদ ৈজোহ ফায়ে$ ' ক্ষিং 
জেনারেল এতনেন্কু সৈভবিভাগের সহারভার এই ধিযোছু মদ করিতে 


উত-১ন ] 


শপ উউছ্তিনাতল 


খা সব বলা ব্রার থা ব্যাস ব্য বার সহ স্পস্ট বছর যন পবা নল সা বন সি ন্নন্লপত্ী 


সন্ধষ হওয়ায় উইথ বার্থ হয়। কয়েক ভিভিসন জর্দান সৈন্য হে 
রুমাবিয়ার প্রবেশ ফারিয়াছে এ সংবাদ পূর্যেই দেওয়! হইয়াছে। 
বর্তমানে উহাদের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাইনলাছে। তবে বিজ্রোহীদের 
বিরুদ্ধে এই দৈহ্কা যথেষ্ট সাহায্য করিতে পারে নাই। কারণ রুমানিয়। 
প্রকৃতপক্ষে জার্মানীর প্রভৃত্বাধীন হইলেও উহা! এখনও একটি ম্বতত্ত্ 
দেশরুপে থাকায় অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে জার্দানীর হন্তক্ষেপ করা 
বিপদজনক । কাজেই বিজ্োছের সময় জার্দান-বাহিনী কয়েকটি সরকারী 
তবন অধিকার কয়! ব্যতীত অধিক কিছু করিতে সক্ষম হয় নাই। 
জেনারেল এন্তমেস্থুর প্রাণনাশের আশঙ্কা এখনও দুর হয় নাই। 
রুমানিয়ার বৃটিশ রাজদুত নর রেজিল্যাণড হোর পদত্যাগ করিয়। 
প্রত্যাবর্তন করিয়াছেন। বৃটিশ সরকার ১৫ই ফেব্রুয়ারী হইতে 
রুমামিয়াকে শত্র-অধিকৃত দেশ বলিয়া! সরকারীভাবে ঘোষণা করিয়াছেন। 
সম্প্রতি কনষাঞ্। বঙ্গরে পঞ্চাশ হাজার জামান সৈন্যের সমাবেশ 
হইয়াছে । কনষ্টা্। বন্দর হইতে উত্তর ও দক্ষিণে প্রায় পনের ম।ইল 
পর্যন্ত কৃকদাগরের তীর জাহাজ চলাচলের পক্ষে বিগ্জ্জনক বলিয়া 







রি চা নল পক 
| 1 21 ৬ 3৮ 
শীত 

. এল খা? 


? 4 1 ০ ৃ রি 
: বি 


ঠি . ইল ২ 
$.& 


বে, বন্ধানে শান্তি রক্ষায় রুশিয়! জাগ্রহান্িত। প্রা দেড় মাল পুধে 
সোডিয়েট পররাষ্ট্র বিভাগের উচ্চপাস্থ কর্াচারী মঃ সযোজিষ্ক নানিতুষ 
সম্মেলনে ষোগদাম হরিতে বাইহার পথে সোকিয়ার আনিয়াছিদেখ। 
অনেক রাজনৈতিক মহলের ধারণ! যে তিনি রাজ! বরিস্কে জানাইয়া 
ছিলেন। লোভিয়েট বুলগেরিয়াকে স্বাধীন রাষ্ট্র বলিয় স্বীকার করে। 
সুতরাং সে স্বীয় রাজ্যে বিদেশী সৈল্ত 'ালদার অনুমতি প্রদান করিলে 
সোিয়েটেরও ইচ্ছামত কার্য করিবার অধিকার থাকিবে এবং বন্কান অঞফলে 
ুদ্ধ বিস্তৃতি লাত করিলে রাইথের নিক্ষট সোিয়েটের কোন বাধ্যবাধকতা 
থাকিবে না। কিন্তু এ ংবাদের কোন মুল্য না থাকাই মন্তব। বর্তবান 
যুদ্ধে বিশেষ বন্ধান অঞ্চলের ব্যাপারে, জার্গানী রুশিয়ার সহিত পূর্ব 
হইতে কথাবার্ত। না চালাইয় স্বেচ্ছা কোন কার্য করিবে ইহা প্রায় 
অবিশ্বান্ত। কিন্তু গোল বাধিয়াছে তুরঙ্ষকে লইয়া। যুলগেরিয়ায় 
সৈশ্ক গুষেশ করিলে তুরছ্ধে নিরাপত্ত। ব্যাহত হইবার জাশস্কা প্রতি 
পদে। অথচ এই সময়ে তুরম্ধ হঠাৎ বুলগেরিয়ার সহিত এক জনাঞষণ 
চুক্তি করিয়া বসিল। এই চুক্তির সর্তও অভিনব । গরয়াষ্ট্র আক্রমণ 







পেগ ু ২ 


/,৪+ এ 


87 ” পি 





৭০ ] 1 রা 





৮, 
০18 : ৪ 


ডিএ ৮ 


রী ॥ এ টি রি 
পু ১, ্ এব 18৮, 
টি ছা, 


ডানার পতন--একটি দুর্গের উপর আরুমণ--দুর্গ দখলের জন্য সৈম্কগণ অগ্রসর হইন্ছে 


ঘোষণা! কর! ছুইয়াছে। রুজলা হইতে মিনিয়ম পযান্ত এই এলাকার 
অন্তভূঁক্তি। সাক্কেতিক আলোক নির্বাপিত করিয়া সামরিক কর্তৃপক্ষ 
সমগ্র ক্ষমানিয়ায় নিশ্রুদীপের কড়াকড়ি ব্যবস্থা করিয়াছেন। রাত্রে 
রাস্তাক্স ধূমপান পর্যন্ত নিষিদ্ধা। রেলপথ ও অস্ত্রের কারখানা! সকল 
লরক্কারী নিরস্্রণাধীনে গৃহীত রুমানিয়া সরকার যে-কোন মুহুর্তে বৃটিশ 
বিষাম আক্রমণের আশস্কা করিতেছেন ধলিয়া প্রকাশ। 

রুমানিয়াকে জা্ানীর একটি প্রধান কেন্তরয়পে ব্যবহায় করার 
পশ্চাতে গ্যাছে বন্ধামে জার্গান প্রাধান্য প্রতিষ্ঠার অভিপ্রায় । বুলগেরিয়ার 
জার্মান সৈন্ত প্রবেশের সংবাদ গত সংখ্যাতেই উল্লিখিত হইয়াছে। 
যুগোষ্সাডিগায় মহিতঙ জাগামী সহধোগিত। লাভে জাগ্রহ প্রকাশ 
কছিযাছে। করেছি স্বাৰ ভাগাকে ছাড়িয়া দিলা তৎপরিধর্তে 
হুগোজাতিনাঞে প্রীমের ধুদ্ধে জিয়পেক্ষ থাকিতে অনুরোধ কর! 
ইইতেছ। ঘুজগেরিয়া খধ্ত ভাহাক্খ রাজ্যে বৈদেশিক সৈতে 
আগমনের আভিমাগ বসিয়াছে। এয়প সংবাদ ও প্রচায় করা হইছেছে 


হইতে বিরত থাকার কথা চুক্তির মধ্যে আছে বটে, কিন্তু উত্তর ররর 
রাজনৈতিক সম্পর্ক কিরাপ থাকিবে সে বিষয়ে চুক্তিতে ফোন উল্লেখ 
নাই। তবেজার্মানী যে বৃথা সমর নষ্ট করিতে ইচ্ছুক নয়, এব্খা স্পষ্ট। 
গত ১৮ই ফেব্রুয়ারী গ্রীসের উপর জার্ান ধিদান টহল দিক আসিয়াছে 
অর্থাৎ এককথায় ইতালীয় বিরুদ্ধে প্রীসকে তুদ্ধ বন্ধ করিতে চাগ দেওয়ার 
উদ্দেশ্তে জার্নানী "ন্াযূ-বুদ্ধ” আরম্ত করিগ্জাছে বলা যাইতে পারে । 

তবে ইতালীয় দৌর্ধধল্যহেতু মধ্য প্রাচীতে জাঁগানীকে মমোনিবেশ 
ফরিতে হইলেও বুটেমই তাহার প্রধান লক্ষা। আগতগ্রাগ বসত ও 
গ্রীষ্মে ছিটলার ধে প্রবলভাবে বৃটেন আক্রমণ করিবে, অধিকাংশ 
রাজনীতি বিশেষজদের ইহাই ধারণা । মিঃ জামেরি, মিঃ ইভেল, কর্ণেল 
মন্স প্রভৃতি সফলেই বৃটেন লীগ্রই আক্রান্ত হইতে পারে হজিযা জাগা! 
করিতেছেন। ছিঃ চার্চিল গাহার বক্তৃতার দেই কথার উদ্লেখ 
করিয়াছেন । তবে বৃদ্ধারগ্ডের অবস্থা অপেক্ষা বর্থযাদে হৃটেছের প্রতিরোধ 
তবজত। ব্থেই্ট বৃদ্ধি পাইগাছে। বৃটেনের প্রান সসত্রী ডাহার বনুতায় 


€্ ক 
হস ব্যাক ব্রস্ত প্র প্রান ব্যাক এ 
গ্রানাইয়াছেন যে, ট্রোন্ের প্রয়োজন বৃটেনের মাই। কৃটেনের গ্রয়োদ্ন 
কুদ্ধসামঞ্জী ও উপকরণের । এতছ্‌ সঙ্গে উল্লেখ করা যাইতে পারে বে, 
মিঃ উইলকি দেশে ফিরিয়া গিয়া! কুটেনফে যে অনতিবিলম্বে এধং যখানাধ্য 
পাহাধ্য কর! প্রয়োজন একথা উল্লেখ করিরাছেন। বুক্তরাষ্ট্রেয় নৌনচিব 
কর্মেল নক্পোর মত বৃটেনকে নুতন কোন ডেষ্রয়ার দেওয়া সম্ভব নয়। তবে 
বিঃ কুজনেল্টের কথা হইতে (বাধ হয় বে, বুটেন তবিষ্কতে আরও কিছু 
পাইততি পারে। কর্মেল নক্ষের ঘোষণার পরেও বৃটেনকে ৪৬থানি 
ভেইঠার দিবার ব্যবস্থা! হইধাছে এবং সেগুলি যে কর্নেল নক্সের বিবৃতির 
সধ্যে পড়ে না, একথাও জানাইয়া দেওয়া হইয়াছে । আরও ৪*খানি 
কেয়ার শগ্রই বৃটেনের পাইবার আশা আছে। মিঃ চার্চিল আরও 
বলিয়ছেন ঘে, সমুদ্র ও বিদান উতয় স্থানেই আধিপত্য স্থাপন করিতে না 
পারিলে বুটেনে অতিযাম চালানে! ছুঃসাধ্য। হিটলারও যে একথা বোঝেন 
ন! তাহা! নহে । সেই জন্কই বুটেনের উপর বিমান আক্রমণ চলিতে থাকি- 
লেও জাানীর সামুদ্রিক তৎপরত! কিছুষাত্র কমে নাই। ফেব্রুয়ারী মাসের 
দ্বিষ্ভীর সপ্তঃছে ছিটলারের সহকারী কডলফ, হেস বক্তৃতা প্রসঙ্গে 
বলিয়াছেন যে, সাধমেরিগ যুদ্ধ বলিতে যাহা বুঝায় তাহ বসস্তকালেই 
আর্ত হইবে। জানান সাবমেরিণের বিরুদ্ধে বৃটিশ জাহাজ যে বিশেষ 
সুধিধা করিতে পারিতেছে না একথ! কর্নেল নল্ঈই বিবৃত করিয়াছেন । 
মিঃ উইলকি এষন কথাও বলিয়াছেন ঘে আমেরিকা হইতে ডেট্রয়ার 
পাওয়া সত্তেও বৃটেন সম্ুখ ও পশ্চাতে দুইখানি 'কনভয়' জাহাজ রাখিয়। 
৪০1৫০খাষি বাণিজ্যপোভ লইয়া ঝ/তায়াত করিতেছে । গত ১৪ই জুলাই 
হইতে জাঙুক্ীরী পত্যঘত সাডে ছয় মাসে বুটেনের ১৭ লক্ষ ৪৭ হাজার টন 
বাশিজ্য জাহাজ জঙবপ্র হইয়াছে। আর ত্র সময়ের মধ্যে জার্দানীর 
জহাজ গিয়াছে ১৩ লর্ষ ৩*ছাজার টন এবং ইতালীর গিরাছে ৬লক্ষ ২৩ 
হাজার টন। ফ্রান্সের পশ্চিম সমুক্রোপকূলের ঘা টিগুলি ব্যবহার করিতে 
পারায় বুটেনের বাশিজ্য জাহাজ ক্ষতি করিবার সুবিধা জাপানী পাইয়াছে 
যথেই। তবে আয়র্মগ সধ্যপথে পড়ায় জাপ্নানীকে কিঞ্চিৎ বাঁধা স্বীকার 
করিতে হুইতেছে। যে সকলজাহাজ উত্তরের পথে আরর্লণ্ডের উপর 
দিয়! আমে সেগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত কর! জার্মানীর পক্ষে কষ্টকর। বর্তমান 
যুদ্ধে কোন ক্ষুদ্র শক্তির পক্ষে নিরপেক্ষ থাক। সন্তব নয়। বসস্তের প্রারস্তে 
জার্মানীর দানুড্রিক তৎপরতা বৃদ্ধি পাইলে আয়র্লণের স্বীপগুলি জার্মানীর 
পক্ষে ঘাটিরূপে ব্যবহার করিবার চেষ্টা চলিতে পারে। কয়েকদিন পূর্বের 
মিঃ ডি ভ্যালের। এক রেডিও বতৃতায় বুখ্ের গতির অনিশ্চয়তার কথ! 
উল্লেখ করিয়। ডাবলিন হইতে শিশু ও নারী স্থানাভ্ভরফরণের কথ! 
বলিয়াছেন । সন্েষঙ্জনক ফলের অভাব হইলে বাধ্যতাবুগক ব্যবস্থা 
অধলদ্বদের আভাবগ তিনি দিয়াছেন। এক সপ্তাহের মধ্যেই ডাবলিন ও 
কিন বন্দরের অধিযাসীদের মধ্যে আড়াই লক্ষ লোক স্থানত্যাগের জন্য 
নাস লিখাইয়াছে। আগামী বসন্তে বৃটেনে বিমান আক্রমণের তীব্রহ। 
হৃদ্ধির সঙ্গে জার্মানীর লাগুজিক্ক তৎপরত। যথেষ্ট হৃদ্ধি গাইছে বলিম! 
আশা কযা বাইভেছে। তিষে পূর্ববাপেক্ষ। রাযাকীর। বিদানি ধছিীনগ 
ফা্যতৎপরত| বথেঠ হৃদ্ধি পাইবে বলিয়া জাগক কায বাইকেছে। ভবে 


নন স্ব 


[ ২৮শ বর্ষ-_২য খণ"্ঃর্ঘ সাধ্য 





পূ্্বাগেক্ষা রাজকীয় বিমানবাহিনীর কাধ্যতৎপরত! যথেষ্ট বৃদ্ধি পাইয়াছে 
এবং বৃটেনও যুদ্ধারস্তকাল অপেক্ষা! বর্তমানে হথেষ্ট অধিক শর্তিশালী 
হইয়াছে। 

বৃটেনকে “অস্ত্রশস্ত্র ইজারা দেওয়! বা ধার দেওয়া” সংক্রান্ত যে বিলটি 
প্রেসিডেন্ট রুজভেন্ট কংগ্রেমে পাশ করাইতে ইচ্ছুক ছিলেন, মাকিন 
প্রতিনিধি-পরিষদে তাহ! গৃহীত হইয়াছে । ইহার বিরুদ্ধে যে সংশোধন 
প্রস্তাব আনীত হইয়াছিল, তাহ! বিস্তর ভোটা(ধক্যে (২*৬-১৪৪) জগ্রাহ 
হইয়। যায়। প্রতিনিধি পরিষদে বিলটি গৃহীত হইবার সপ্তাহ কাল 
মধ্যেই সেনেট কাল বিলম্ব ন!| করিয়া উক্ত বিল লইয়! বিতর্ক আরম্ত 
করিয়াছেন। বিলটি গৃহীত হইবার সম্ভাবনাই অধিক। বিলটি পাশ 
হইলে বৃটেন কিভাবে লাভবান হইবে মে সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচন! 
ভারতবধ'-এর গত সংখ্যায় হইয়| যাওয়ায় এখানে পুনরুল্লেখ নিল্প্রয়োজন। 


সুদূর প্রাচী 


থাই-ইন্দোচীনের বিরোধ গুরুতর আকার ধারণ করিবার মুখে হঠাৎ 
চাপা পড়িয়াছে। জাপানের মধ্যস্থতায় থাইপ্যাণ্ড ও ইন্দোচীনের মধ্যে 
সময়িক যুদ্ধবরতি হইয়াছে। প্রথমে এক সপ্তাহের জন্য এই যুদ্ধ- 
বিরতি ঘেরধিত হইয়/ছিল। পরে আরও দুই সপ্তাহ সময় বৃদ্ধি করিয়া 
দেওয়া হয়। ফেব্রুয়ারীর চতুর্থ সপ্তাছে ঘোষণার মেয়াদ শেষ হইবে। 

এদিকে জাপানের অনিচ্ছা সত্তেও চীন-জাপানে বুদ্ধ চলিয়াছে। 
কয়েকদিন পূর্বে হংকং-চীন সীমান্তের শাটাউকোং ও শাউইমুং নামক 
দুইটি স্থান জাপসৈন্ দখল করিয়াছে । তামণ্ডই ও শাইউচুং অধিকার 
করায় ফৌলুন ও ক্যান্টনের যোগাযোগ বিচ্ছিয়্ হইয়াছে । শাইউচুং ও 
কৌলুনের মধ্যে জলপথের সংযোগও বন্ধ। কয়েক স্থানে চীনা বাহিনীও 
জাপানের অগ্রগতিতে বাধ! প্রদানে সঙ্গম হইয়াছে । কিন্তু চীনের যুদ্ধকে 
টানিয়! পইয়। চলিবার আগ্রহ আর জাপানের নাই। কিছুদিন আগে 
প্রিন্স কনোয়ে জানাইয়াছিলেন যে চীন-জাপান যুদ্ধের জন্য ব্যক্তিগতভাবে 
তিনিই দাযী। আবার জাপান নানকিং-এর ওয়া্গ চিঙ্গ-ওয়েইর 
গবর্ণমেন্টকে ম্বীকার করিলেও জাপানের পররাষ্ট্রসচিব মিঃ মাৎনুকা, 
এক বিবৃতিতে বলিয়াছেন যে, তাহার! চুংকিং গবর্ণমেপ্টকেও জন্বীকার 
করিতে চ|হেন না। এই ছুই উক্তির যোগগ্থত্র ও অন্তনিহিত অর্থ হুষ্পট। 
প্রশান্ত মহাসাগরে শক্তি বিস্তারের চেষ্ট! করিলে তাহাকে ঘষে অধিকতর 
বিপদের সম্মুখীন হইতে হইৰে ইহা! উপলব্ধি করিয়া জাপাস আজ চীনের 
সহিত একট! মিটমাট করিতে ইচ্ছুক। 

রয়টারের সংবাদে প্রক্কাশ যে, ইতালীর দরজ! লক্ষ্য করি! জার্গানী 
জাপানকে যুদ্ধে নামাইবার চেষ্টা] করিতেছে। আগার্ী বলস্তে যখস 
বৃটেনের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ পরিচালিত হইবে সেই সময়ে জাপাদ 
হাহাতে ওললাজ পূর্বহারতীয় দ্বীপপুঞ্জ ও মালয় জ্রদণ কয়ে, ছিটজার 
ক্চাহারই চেষ্ট। করিতেছেন । রুশিঝায় সহিত একট! আপোষ করিয়া 
একেলিবার জন্ডঙ জাপাগ জার্মানী কর্তৃক বনুরুদ্ধ হইয়াছে। লক্ষোতে 
গুলার রুপ-জাপান, বাণিজা জালোচন! জায় হই! শিয়াছে। 


চৈত্র--১৩৪৭ ] 


কা স্পা স্ফান্যপ স্পা স্থ্ন্টিস স্থপতি স্্প্ 


নমুদ্র-পথেও জাপান বিশেষ তৎপর হইয়া উঠিয়াছে। ' দঙ্গিপাছিনূখে 
আক্রমণোদেশ্টে জাপান ছাইনান দ্বীপে ঘটি নির্মাণ করিতে আরম্ত 
করিয়াছে। ঈরক্কারী পত্রিক! সেপ্টাল ডেলি নিউজের সংবাদে প্রকাশ 
যে, হাইনান ব্যতীত সিসাওপ্প্রালী দ্বীপপুঞ্জ, ক্যান্টন, ফরাদী ইন্দোচীন 
প্রভৃতি স্থানে জাপান সৈম্ভসমাবেশ করিয়াছে । উহার! নাকি সাইগন 
ও কামর! উপসাগর দখলের জন্য নির্দিষ্ট । এই অগ্রগতির কারণের জন্য 
বুটেনও আমেরিকাকে দোষী করা হইয়াছে। 'নিচিনিচি সিন 
পত্রিকায় যোবিত হইয়াছে যে বুটেন ও আমেরিক1 চুংকিং গবর্ণমেণ্টকে 
সাহায্য প্রদান করিবার নীতি অবলম্বন করিবার পর হইতেই জাপান 
দ্রুত অগ্রসর হইতে আরম্ভ করিয়াছে। 

জপ|ন নৌ বিভাগীয় বিমান পৌোতের অবিরাম বোমা বর্ণের ফলে 


চন্ভি ইভিহাম্প 


১ 





ভাবেই জামে থে; পুর্বভারতীয় স্বীগপুঞ্জ আক্রমণ করার অর্থ বৃটেন ও 
আমেরিকার বিরুদ্ধে সংগ্রামে প্রবৃত্ত হওয়া। চীন-যুদ্ধ হইতে সনিয়া 
আসা তাহার পক্ষে দুক্ধর। কারণ সংশ্লিষ্ট শক্তিবর্গ চীনকে সাহাব্য ছার! 
জাপানকে চীনে নিযুক্ত রাখিতে সচেষ্ট । বদিও বা মে সনিয়া আসে 
এবং জা্ানীর স্যার রুশিয়ার সহিত স্য হে জাবন্ধ হয়, তাহ! হইলেও 
তাহাকে যথেষ্ট ক্ষতি স্বীকার করিতে হইবে। ইঞাতে রণনীতি, অর্থ- 
নীতি, সাম্রাজানীতি প্রভৃতি সকল দিক দিয়াই তাহাকে ক্ষতির সম্ুর্থীন 
হইতে হইবে। হুতরাং লাভালাতের প্রশ্ন তাহার বিশেষরাপে 
বিবেচনা! কর! প্রয়োজন । তর্কের থাতিরে ধর! গেল, যদি অসস্ভবও সম্ভব 
হয়, যদ্দি যুদ্ধে জাপান কিঞ্চিৎ সাফল্য অর্জন করিতে সক্ষম হয়, তাহ! 
হইলেও ভবিষ্যতে জাপানী, রুশিয় প্রভৃতির সহিত ভাগ-বাটোরায়ার 





ডার্না আক্রমণের দৃষ্ত-_কামান হইতে ভার্নার উপর বোম! ফেল! হইতেছে 


রঙ্গ রাজপধ প্রায় বিধ্বস্ত । মেকং নদীর উপরস্থ কুংকুয়ে! সেতু ধ্বংস কর! 
হইল়াছে। আশেপাশে ২৫'-খানারও অধিক লরি আটক পড়িয়াছে। 

এদ্দিকে বৃটিশ সরকার কর্তৃক দ্রুতগতিতে প্রতিরোধ ব্যবস্থা অবলঘ্থিত 
হইতেছে। নিঙ্গাপুর প্রগ!লীর গূর্ববদিকন্থ প্রবেশ-পথে মাইন স্থাপন কর! 
হইয়াছে । বিসানবহনের সংখ্যা যথেষ্ট বৃদ্ধি কর হইয়াছে, বছ 
অষ্ট্রেলিয়ান সৈচ্ দিঙ্গাপুয়ে অবতরণ করিয়াছে । আমেরিকা হইতে 
আড়াই শত বিধান আলিয়! দলে যোগ দিয়াছে। 

ওবে জাপানের এই অগ্রগতি সন্ধে বিশেষ ভাবিবার কথ! আছে। 
মিঃ চার্চিল অবনত বন্তৃতার বলিয়াছেন যে, শক্ত ভারতের দ্বায়ে আসিয়া 
উপস্থিত হইলেও ভাহার পরাজয় অনিধার্ধ্য। কিন্তু জাপান বেশ ভাল 


প্রশ্ন আছে। অর্থাৎ এশিয়ায় একচ্ছত্র আধিপতা বিস্তারের আশ! তাহার 
বিলীন হইবে। কাজেই সকল অবস্থা হিসাব করিয়া দেখিলে জাপানের 
ক্ষতির মাঞ্জাই অধিক হইবে বলিয়া বোধ হয়। হৃতরাং জার্ানীর চাপে 
পাঁড় যুদ্ধে অবতীর্ণ হইলেও জাপান বিশেষ সঙ্তির কোন অংশ গ্রহণ 
করিবে বলিয়া বোধ হয় মা। প্রশান্ত মহাসাগরে নৌবহর সজ্জিত 
করিয়। এবং হছমকি দেখাইয়! মে একটা “শ্বাযু-বুদ্ধ* করিতে থাকিব 
বলিয়াই বোধ হন্প। ফলে বৃটিশ শত্তিফেও এদিকে খাদিকটা ব্যাপৃত 
থাকিতে হইবে এবং বদপ্তকালীন আক্রমণে হিটলায় সেই 
সামান্ত ছযোগটুকু গ্রহণের চেষ্টা ব্যতীত অধিক কিছু লাভে মদর্খ 
হইবে না। 





মাইকেল মধুসুদল 


শ্ীভোলানাথ সেনগুপ্ত 
একে একে গাহি গান বঙ্গের কাননে যতদৃরে, তত মুছুঃ তত সুমধুর নমি তব পদাঘুজে বৈধাব-খুস্টান, 
বিস্তাপতি-চত্তীনাস-আদি কবিঘল বিমোহিত করিল হৃদয। অকন্মাৎ মহাকবি মাইকেল শ্রীমধুহ্দন ! 
চলি যবে গেলা হ্বর্গপুবে- মুস্তপ্রাণ ব্্রকণ্ে উঠিল গজ্জিযা, বন্তগর্ভ প্রাচ্য আর পাশ্চাত্যের পৃণ্য-যোগবীজ 
বিহ্ঙ্গম গাহি গান কান্তার প্রাবিযা) নবজলধরবর্ণ মেঘনাদ-কবি। প্রথম স্থাপিলে তুমি। তুমি গাহ্যাছ 
আত্মহারা হয় যথা দুর-দূরাস্তবে__ ক্ষণে মুহু মূ ক্ষণ গ্রভা-প্রভা জিনি প্রতীচোব ছন্দে রচি প্রাচ্যেব সঙ্গীত। 
তখন কহুগো দেবি, অমৃতভাষিণি, বীবাঙ্গনাগণ বিমোহিযা মন:প্রাণ পাশ্চাত্য-স্থবেশধারী কৃষ্ণাজ পুরুষ 


বরি কাবে বরপুত্রপদে, পাঠাইলে 
অবশেষে এ বঙ্গ-অঙ্গনে ? কহ মাত:, 
কার কে কোন্‌ স্ব দ্যা, কোন্‌ ছন্দে; 
কোন্‌ ভাবে, কি আনন্দে বঙ্গে বিপূশিলা? 
বঙ্গে তুমি চিরকুপাময়ী ১ তোমাব প্রসাদে, 
কবিশুন্ত হয় নাই বঙ্গ-সি*হাসন | 


হ্বপনে ভ্রমিন্থ আমি কবিতা-কাননে। 
বিয়ছি-বৈফব-হদে জাগিয়া বেছাগ 
থেমে গেল গাহিয়া গাহিযা । সেই সুর 


দ্বীপিলা অন্ববে । পবিধরতিল স্বপ্ন । 
ভাতিল গগনে তুর্ণ পূর্ণ শশধব 
সে কিবণ উদ্ভাসিযা ব্রজেব নগবে 
বচিল অপূর্বব মা] ( ইন্দ্রজাল হেন ) 
স্নেছে, সধ্যে, দাস্তে, প্রেমে পবিত্র স্ুন্দব। 
ত্রিযামা মধ্যম যামে সহস। ধবনিল 
গভীব, হৃদযস্পর্শী _ ব্রজবধুটির 
বিবহেব করুণ সঙ্গীত। কোথা গেল 
ঘন-গরজন ? সত্যই স্বপন ইহা । 

এ 


যোগমগ্ন কাষ্ঠাসনে পুরাণ-চিন্তাষ 

স্থজিলা কঙ্জলবর্ণ অক্ষয অন্মরে 

জানকীর তপ্ত অশ্রধাঁবা। সনেটে বন্দিণে 

কাশীবাম-কৃত্তিবাসে- পযাবের কবি। 

পাশ্চাতোব অবযব, প্রাচার হাদয 

এক করি গঠিলে যে কী্তি সুমন্দির 

কৌশলে স্থাপিতে তব প্রাণ-দেবতাধ__ 

হে বৈষ্ণব, তুমি তার প্রথম সেবক 

হে খৃস্টান, তুমি তার আদি 
পুরোহিত। 


রাপ-সমুদ্দ্র 
্ীরামেন্দু দত 


সাগরের জলে জেগেছে জোযার, রেগে যত ঢেউ উঠিছে ফুলে 
বেগে ছুটে ভার! ভেঙ্গে লুটে লার! রা! দুটি তব চবণমূলে। 
তুমি দেখিতেছ ক্ষুন্ধ সাগর, আমি অনিমিথ মুগ্ধ আখি 

তব দেতটে যে জোযাঁর লোটে, সেই দিক পাঁনে চাহ্যাথাকি। 


রঃ রা 


ধ্বসে বাঁলু-বেলাঃ ঢেউযের উপবে ঢেউ এসে পড়ে ক্রমাস্বযে-_ 
তব দেহ-বেলা-নিলযে তেমনি বীধ-ভাঙ্কা রূপে জোযার বহে! 
ধবসে বসনের ভঙ্গুর বাধা, রূপ-উরঙ্গ উছলি” ওঠে 
আতরণ তারে আবরণ দিবে? সরমে তৃষণ চরণে লোটে। 
ফাকন কাদিছে বালুর শক্পনে মেখল! ফেলিছে আখির লোর_ 
লবণ সলিলে সিননি করিয়। মুকুতার মাল! কাদে অঝোর | 
কাঞ্ধী, কেযুর লি'খির ময়ূর, মণিঃ মরকত, পদ্মরাগ-_ 
কনক, প্রবাল, চুনী ও পাল্লা গোমে?; হীরার মন্দভাগ ! 

ও বারিধি ঢু'ড়ে কুবেরের পুরে মিলে যে অতুল বন্ু-নিচয 
এই বন্ুধার ধন-ভাগর চ্চার কাছে হায় কিছুই নয় ! 


ক ্ 


রত্বধ হ'তে রত্ষেশ্বরী, কমলার মত নুলক্ষণা-_ 
বারি-মন্থনে দ্বিতীযা লক্ষ্মী, উদ্মি নেহারী অন্তমনা ! 
এখনো অঙ্গে নীলতবঙ্গ, বীচি-বিভঙ্গে লীলাঘমান | 
গগন-মুবভী চুম্বন-লোভী মুক্ত পবন প্রবহমান । 
এখনো! তোমার জাঁগর-অরুণ ডাঁগব আখিতে সাঁগব-লীন 
বাডব-বহ্কি জলিছে তন্বী , তরল বিজলী তন্দ্রাহীন ! 
পৃণিমা টাদ আননের ছাদ-চর্ণ অলক চুমিছে স্থুথে। 
শীকব-কণায যেন স্ধাকর লভে সমাদর বারিধি বুকে। 
রা রঃ 


উদাস চাহনি ভেসেছে সুদূরে-_নহে ত গুধু এ নীলের মায়া 
তুমি তিলে তিলে গড়িয়া উঠিলে ;-_-তিলোত্মাঁটি লভিলে কাব! ! 
যেখানে যেটুকু সুষমা ধরে তা৷ দিল যে বিধাতা অধীর হাতে 
শেষে বর-তণ্চ সাঁজালে। অতম্গ আপনি সে কোন্‌ চাদিনী রাঁতে। 
মধুমুখী দেব-সথিরা তখন ন্ুধার ভা হরিয়া আনে 

চন্দন বনে লুকাষে গোপনে তুষিল তোমারে অমিযা-ঙ্নানে ! 

না হলে অমন কমনীয় তনু, রমণীয় রূপ কোথায় পেলে? 
আমরাঁবতীর দেব-আরতির হেম-দীপ-শিখা মরতে এলে ! 


' মর-অময়ার দিলন-মেলার প্রসাদী পুষ্প এনেছ বহি? 


ও রনপ-নিলয়ে পশিব কি লয়ে? অহরহ তাঁই বিরহ সহি ! 


গুম 


এবলাহ্ভাবাতেক অহঙ্ক সাহিভ্য সলক্ম্যেলন- 


সম্প্রতি এলাহাবাদ হিমি হলে এলাহাবাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়ের 
ভাইস-চান্সেলার পণ্ডিত অমরনাথ ঝা ঙ্গসাঠিতা সম্মেলনের 
দ্বিতীয় বাঁষিক আর্ধবেশনের উদ্বোধন করেন । উদ্বোধন 
বক্তৃতায় তিনি বঙ্গ সাহিতোর উচ্চ প্রশংন| করিবা বলেন যে 
উহা একটি সার্বজনীন ভাযা এবং আধুনিক হিন্দী সাহিত্য 
বঙ্গনাহিত্যের নিকট 'অনেক বিষয় খণী। সন্মেলনের 
সভাপতি শ্রীযুক্ত রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় মহাশয় তাহার 
সুচিন্তিত অভিভাঁষণে বলেন যে বাঙ্গালীরা যদ্দি সত্যসত্যই 
ভাল করিমা বাঙ্গালা শিখিতে চাহে তাঁভা হইলে তাহাদিগকে 
অনান্য ভাষাও শিক্ষা করিতে হইবে। আদান প্রদানেই 
ভাষার সমুদ্ধি সাধিত হয; স্থতর।ং যে ব্যক্তি অপরের ভাষা 
দানে না সে নিজের ভাষাঁও জানিতে পারে না। বাঙ্গালা 
বাহিরে এই ধরণের সন্মিলনের সার্থকতা অনেক বেন ই 
বলাই বাহুল্য । 
০সছ্কিনটীঞ্ুল্রে সাহিভ্য সশ্কোলন্ম- 


গত ১৭ই ও ১৮ই ফাল্গুন বঙ্গীঘ সাহিত্য পরিষদের 
মেদিনীপুর শাখার ২৮শ বাধষিক অধিবেশন মেদিনীপুরে 
বিদ্যাসাগর স্বতিমন্দিরগৃতে প্রসিদ্ধ সাহিত্যরসিক শ্রীযুক্ত 
অতুলচন্ত্র গুপ্ত মহাশয়ের সভাপতিত্বে স্সম্পন্ন হইয়া 
গিযাছে। সাহিত্যশাখার সভাপতি হইয়াছিলেন কথা- 
সাহিত্যিক শ্রীযুক্ত অন্নদাশঙ্কর রায়। সাহিত্যাদর্শ সম্পর্কে 
শ্রীযুক্ত সঙ্গনীকান্ত দাস ও শ্রীযুক্ত অন্নদাশক্ষর রায় 
মহাশয়ের মধ্যে আলোচনা হয় এবং মূল সভাপতি 
শীযুক্ত অতুলচন্দ্র গুপ্ত উভয়ের আলোচনার সম্পর্কে নিজের 
অভিমত জ্ঞাপন করেন। সম্মেলন উপলক্ষে একটি শিল্প 
প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হইয়াছিল। তথায় শ্রীযুক্ত 
জ্ঞানাঞ্জন নিয়োগী মেদিনীপুরের শিল্প সম্ভাবনার 
বিষয় ওজশ্বিনী ভাষায় বক্তৃতা দেন) পরে “মানুষের 


জয়যাত্রা” সম্বন্ধে ছাঁয়াচিত্র সংযোগে আর একটি বক্তৃতায় 
তিনি আদিমানব হইতে বর্তমান সভ্যতার পরিণতি *ও 
বর্তমান ঘুন্ধ পর্য্যন্ত আবেগময়ী ভাষায় বর্ণনা দেন। আমরা 
মেদিনীপুর সাহিত্য পরিষদের এই বাঁধিক উৎসবের উত্তরোত্তর 
সাঁফল্য কামনা করি । 


লীল্লক্ভে সলাহিভ্য ন্দেলন্ন_ 


বীরভূম জেলার চণ্ডতীদাস নান্ন,র গ্রামে গত ১১ই ফাস্ধন 
বীরভূম জেলা-সাহিত্য-সম্মিশনের ষষ্ঠ অধিবেশন এবং ১২ই 
ফাল্গুন চণ্তীদাস সাহিত্য সম্মিলনের অধিবেশন হইয়া 
গিয়াছে । জেলা সাহিত্য সম্মিলনে অধ্যাপক ডক্টর 
শ্রীকুমার বন্দোপাধ্যায় মহাশয় মুল-সভাপতির, শ্রীযুত 
নিত্যনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় সাহিত্যাশাখার সভাপতির ও 
শ্রীৃত হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সাহিত্যরত্ব ইতিহাসশাখার 
সভাপতির আসন গ্রহণ করিয়াছিলেন। কলিকাতা 
বিশ্ববিদ্ভাপয়ের অধ্যাপক ডক্টর স্বকুমার সেন চত্তীদাঁস 
সাহিত্য সম্সিলনে সভাপতিত্ব করিয়াছিলেন । স্থানীয় 
সাহিত্যিকগণের চেষ্টায় প্রতি বংসরই বীরভূমে জেলা 
সাহিত্য সম্মিলনের অধিবেশন হইয়া থাকে। এবার 
চণ্ডীদাস সাহিত্য সম্মিলনে স্থির হইয়াছে, চণ্ডীদাস স্বৃতি- 
পূজা কমিটী চত্তীদাসের ভিটা ও বিশালাক্ষী মন্দিরের 
ধ্বংসন্তূপ খনন করাইয়া অন্যন্তরস্থিত সম্পদের সন্ধান ও 
উদ্ধার করিবেন। সম্মিলনে রায় বাহাদুর শ্রীযৃত নিশ্শলশিব 
বন্দ্যোপাধ্যায়, সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় প্রভৃতি 
বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিও উপস্থিত ছিলেন । 


ক্ুতিজ্সান্স ক্রত্িল্াস শন 


গত ২৭শে মাঘ রবিবার নদীয়া জেলার ফুলিয়া গ্রামে 
বাঙ্গালা ভাষায় রামায়ণলেখক গ্হাকবি কত্তিবাসের 
বাধিক স্মরণ উৎসব হইয়া গিয়াছে । গত প্রায় ২০ বৎসর 


৫২১ 


১০৬২ 


কাল তথায় এ উৎসব. মম্পার হইভেছে. এবং গত কয়েক 
বসর হইতে কলিকাঁডার বহ লোক ও উৎদবে যোগদান 
করিতে গমন করিয্া। থাকেন। যাহাতে এ সময়ে তথায় 
একটি মেলা হয়, সেজন্তও উদ্যোগ আয়োজনের কথ! 
হইতেছে বটে কিন্তু এখন? তাহা কার্যে পরিণত হয় নাই। 
এবার ভারতবর্ষস্পাদক শ্রীুত ফণীন্্নাথ মুখোপাধ্যায় 
এ, উৎসবে সভাপতিত্ব করিয়াছিলেন এবং বঙ্গীয় ব্যবস্থা 
পরিষদের সদস্য শ্রীধৃত অতুলকুষ্ণ ঘোষ রামায়ণ প্রদর্শনীর 
উদ্বোধন করিয়াছিলেন। শাস্তিপুর সাহিত্য পরিষদ, 
কৃষ্ণনগর সাহিত্য সঙ্গীতি, রাঁণাঘাট সাহিত্য সংসদ 
প্রভৃতির যত্বেই উৎসবটি দিন দিন জনপ্রিয় ও বড় 
হইয়া উঠিতেছে। 


আঙ্গার্খ্য জল্সজ্ভী এ্রদর্শনী- 


আচার্য গ্রফুল্লচন্ত্র রায় মহাঁশয়ের ৮০ বংসর বয়স হওয়ায় 
যে জয়ন্তী উৎসবের আয়োজন করা হইতেছে তৎসম্পর্কে 
কলিকাতা কর্পোরেশনের কমাসিয়াল মিউজিয়াম হইতে 
একটি “কেমিকেল ও ফারশ্মীসিউটিকাল" প্রদর্শনীর আয়োজন 
কর! হইতেছে । সেজন্ত কলিকাতা বিশ্ববিছালয়ের বিজ্ঞান 
কলেজের ফলিত রসায়নের অধ্যাপক ড্র বি-সি-গুহকে 
সভাঁপতি করিয়া একটি প্রদর্শনী বোর্ডও গঠন করা 
হইয়াছে । আচার্য রায় সারা জীবন ধরিয়া যে কেমিকেল 
ও ফার্মাসিউটিকাল শিল্পের উন্নতির জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম 
করিয়াছেন, আজ তাঁহার জয়ন্তী উৎসবে সেই শিল্পের 
ইতিহাস বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্মতের কথা দেশবাসীর 
নিকট উপস্থিত করাই তাহার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের শ্রেষ্ট 
উপায় বলিয়া বিবেচিত হইবে । আমাদের বিশ্বাস, এই 
প্রদর্শনী সর্ব্ধাঙ্গন্ুন্দর করিবার জন্য যত্ধের ও চেষ্টার অভাব 
হইবে না। 


ভাল্রভ্ড গর্ভতৈস্টেল্স আল ল্যয্স- 


গত ২০শে ফেব্ুয়ারী কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা পরিষদে ভারত 
গভর্ধমেপ্টের বাধিক আয়ব্যয়ের যে হিসাব উপস্থিত করা 
হুইগ্নাছে তাহাতে দেখা যায় যে ভারত গভর্ণমেণ্টের আয় 
অপেক্ষা ব্যয় :.১৪০-৪১ সালে ৮ কোটি ৪২ লক্ষটাকা 
এবং ১৯৪১-৪২ সালে ২৭ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা অধিক 


[ ২৮শ বর্--২য় খণ্-.৪র্থ সখ্য 


ছইবে। কাজেই ভাষ়ত গভর্ণমে্ট এ ব্যয় সন্কুলানের 
জন্ত দেশলাইএর উপর গন্ধ দ্বিথণ করিয়া দেড় কোটি 
টাকা, নকল রেশম ও রেশমী মুতার উপর শুক্ক বাড়াইয়। 
৩৫ লক্ষ টাক! ও টায়ার টিউবের শ্ুন্ধ বাড়াইয়। ৩৫ লক্ষ 
টাকা সংগ্রহ করিবেন। তাহা ছাড়া অতিরিক্ত লাঁভ- 
কর বাড়াইয়া এবং আয়কর ও স্পা ট্যাক্সের উপর 
কেন্দ্রীয় সারচার্জ বাড়াইয়া অর্থ সংগ্রহ করা হইবে। কিন্ত 
তাঁহাতেই কুলাইবে না-কাঁজেই বাকী টাঁকা ভারত 
গভর্ণমেণ্ট খণ গ্রহণ করিবেন। যুদ্ধের জন্য গভর্ণমেণ্টের 
ব্যয় বৃদ্ধি করিতে হইয়াছে । কাজেই এ অবস্থায় 
গতর্ণমেণ্টের এইরূপ অসাধারণ ব্যবস্থা করা ছাড়া গত্যন্তর 
নাই। তা সহ্েও যাতে সাধারণ প্রঞ্জার কোনরূপ 
কষ্ট না হয়, সে বিষয়ে গভরণমেন্টের অবহিত থাকা উচিত । 


গুক্রীপ্বান্ে ০দ্কাললমাভী।_ 


এ বৎসর দোলধাত্রার দিন শন্ধায় চন্ত্রগ্রহণ হওয়া 
পুরীধামে সমুদ্র ্নানের জন্য বনু হিন্দু যাত্রী সমবেত হইবেন । 
একসঙ্গে জগন্ন।খদেবের দোলবাত্রা দর্শন ও গ্রহণে সমুদ্র- 
ন্নানের সুযোগ সহজে মিলে না। পুরী যাত্রীদের জনক 
বেঙ্গল নাগপুর রেলও নানাগ্রকাঁর বিশেষ স্বিধার ব্যবস্থ' 
করিয়াছেন জানিয়া আমরা সুখী হইলম। 


বহাল নেহুল্রভ জা ভাল 


গত ২৮শে ফেব্রুয়ারী মহাত্সা গান্ধী এলাহাবার্দে কমলা 
নেহরু প্রস্থতি হাসপাতালের উদ্বোধন করিয়াছেন। পণ্ডিত 
জহরলালের সহধর্মিণী কমলা নেহরুর মৃত্যুর পর তাহার 
স্বতিরক্ষার জন্ত যে ৫ লক্ষ ১০ হাজার টাকা সংগৃহীত 
হইয়াছিল, তাহা দ্বারা এই হাসপাতাল থোলা হুইল। 
পণ্ডিত মদনমোহন মাঁলব্য অসুস্থ শরীর লইয়াও এ উৎসবে 
যোগদান করিতে গিয়াছিলেন । 


প্রন্বত্ুক্ক জুটি মিকেলন্র উদ্বোপ্রন-_ 


গত ১৬ই ফেব্রুয়ারী রবিবার ২৪পরগণার বেলঘরিয়া 
গ্রামে বারাকপুর ট্রাঙ্ক রোডের ধারে প্রবর্তক সংঘ কর্তৃব 
গঠিত প্রবর্তক জুট মিল্স্‌ লিমিটেডের উদ্বোধন উৎস 


হুইয়। গিয়াছে । বর্ধমানের মহারাঁজাধিরাজ সার বিজয়া? 


চৈত্র--১৩৪৭] 





মহতাঁব বাহাছুর উৎসবে সভাপতিত্ব করিয়াছিলেন এবং 
কলিকাতা হইতে সেদিন কয়েক শত গণ্যমান্ত লোক 
বেলঘরিয়াঁয় গমন করিয়াছিলেন । প্রবর্তক সংঘের বঙ্ছমুখী 
কাধ্য-পদ্ধতির কথা এখন বাঙ্গাল! দেশে সুপরিচিত । তাঁহারা 
যে কার্যে হস্তক্ষেপ করেন, তাহাই সাঁফলামণ্ডিত হয়। 
আমাদের বিশ্বাস, তাহাদের এই পাটকলও বালা দেশের 
স্থনাম বৃদ্ধি করিবে। 


লাভ্লাল। সন্রক্ষাল্পেন্র বাতভেেউ- 


এবার বাঙ্গাল সরকারের অর্থসচিব মিঃ সুরাবন্দী বঙ্গীয় 
ব্যবস্থাপরিষদে ১৯৪১-৪২ সালের যে বাজেট উপস্থাপিত 
করিয়াছেন তাহাতে কিছুমাত্র নৃতনত্ব ত নাই, উপরস্থ 
পর্বব পূর্ব বৎসরের মত এবারেও আয়ের তুলনায় ব্যয়ের 
পরিমাণ অনেক বেশী হইযাছে ; ফলে এই বায় স্কু- 
পানের জন্য দেশবাসীর উপর নূতন কর বসাইবার কথা 
জানানো হইয়াছে । গতবারে যখন বাজেট পেশ করা 
হয় সেই সময় ১৯৩৯৪ সালের রাঁজস্বের খাতে আয়- 
ব্যয়ের হিসাবে চৌদ্দ লক্ষ টাক ঘাটতি পড়িবে বলিয়৷ 
অন্ঠমান করা হইয়াছিল। কিন্তু এ বৎসরের শেষের দিকে 
'আয়ের পরিমাণ অপ্রত্াাশিতভাবে ২৯ লক্ষ টাঁকা বাড়িয়া 
ধাওয়ায় এবং বায় ৪৫ লঙ্গ কমিয়া যাওয়ায় এই বৎসরে 
১৪ লক্ষ টাক! ঘাটতির বদলে ৬০ লক্ষ টাকা উদ্ত্ত থাকে। 
কিন্ত ইহার মধ্যে হিসাবের পদ্ধতি পরিবর্তনের জন্য ৪২ 
লক্ষ টাঁকা ঝাঁচিযাছে এবং ১০ লক্ষ টাকা জেলাবোর্ড 
ইত্যাদি স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের হিসাবে জমা রহিয়াছে। 
কাজেই এই বৎসর বাঙ্গালা সরকারের আয় হইতে ব্যয় 
সম্কুলান হইয়া মাত্র ৮ লক্ষ টাকা বাচিয়াছে বলা যায়। 
১৯৪০-৪১ সালে রাজন্বের হিসাবে আয়ের তুলনায় 
ব্যয় ৫৬ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা এবং মূলধন থাতে 
আয়ের তুলনায় ২৫ লক্ষ ৭১ হাঁজীর টাকা অধিক ব্যয় 
হইবে বলিয়া গত বৎসর বাজেট পেশ করিবার সময় 
বল হইয়াছিল। কিন্তু গত নয়-দশ মাসের হিসাব 
অনুযায়ী অর্থসচিব জানাইয়াছেন যে, চলতি ব্থসরে 
রাজস্বের হিসাবে ১ কোটি ৩ লক্ষ টাকা ঘাটতি হইবে। 
তবে মূলধন খাতে এ বৎসর ৭৯ লক্ষ টাঁকা উদ্ত্ত হইবে। 
অবশ্ঠ এই ৭৯ লক্ষ টাকা খণ গ্রশণ করিয়া! উদ্ধৃত্ত দেখান 


শামিন্িকগী 


সপ স্যচন্ষসান্প্িপ স্ন্ষশা স্চলা স্্গ্পা স্ষ্টাপা স্পা সি স্পা স্ম্িপাশ ্থাা্তপা স্্গ্ধিপা সস্তা স্পা সাথ বড 


বট 

হইয়াছে। কাঁজেই দেখা যাইতেছে, চলতি বংসরে রাজন্থ 
থাতে ঘাটতি এবং মূলধন খাঁতে উদ্বত্ব--এই দুই গলির! 
সরকারের তহবিলে ২৪ লক্ষ টাকা ঘাঁটতি হইয়াছে। 
আগামী বখসর সরকারের রাঁজন্বের অবস্থা আরও 
শোঁচনীয় হইবে। প্র বৎসর রীঁজম্বের খাতে সরকারের 
মোট আয় ১৪ কোটি ৩ লক্ষ টাকা এবং মোট ব্যয় 
১৫ কোটি ৩৭ লক্ষ টাক! ধরা হইয়াছে । মূলধন থাতেও 
২৫ লক্ষ টাঁকা ঘাটতি হইবে। কাজেই উভয় দফায় মোট 
ঘাটতির পরিমাঁণ হইবে ১ কোটি ৫৯ লক্ষ টাক1। আলোচ্য 
বর্ষের প্রথমে সরকারের হাতে মজুদ তহবিলের পরিমাণ 
দাড়াবে ১ কোটি ৯২ লক্ষ টাঁকা। ইহা হইতে ঘাটতি 
বাবদ যদি ১ কোঁটি ৫৯ লক্ষ টাকা চলিয়া যায় তাহা হুইলে 
আগাদী বংসরের শেষে সরকারের হাতে যাত্র ২৪ লক্ষ 
টাকা উদ্দত্ত থাঁকিবে। যাহাদদিগকে বৎসরে রাঁজন্ব ও 
মূলধন_-এই ছুই খাতে সাড়ে বত্রিশ কোটি টাকা ব্যন্ 
করিতে হয় তাহাদের পক্ষে হাতে মাত্র ২৪ লক্ষ টাঁক লইয়া 
কাজ করা একরপ অসম্ভব । মন্ত্রী মহাশয় এই অবস্থার 
প্রতীকাঁর কল্পে প্রস্তাবিত বিক্রয় করের দিকে তাকাইয়াছেন। 
বিলটি কি ভাবে গৃহীত হইবে এবং তাহাতে কত টাকা সর- 
কারের ব্যয় হইবে তাহা বুঝা যাইতেছে না'। তবে মন্ত্রী মহাশয় 
আশা করেন যে, এক এই বিলের দৌলতেই আগামী বৎসরের 
ঘাটতি পূরণ করিয়! জাতিগঠনমূলক কাঁজের জন্ত সরকারের 
পক্ষে অধিকতর অর্থ ব্যয় কর! সম্ভব হইবে । এই প্রসঙ্গে মন্ত্র 
মহাঁশয় আরও জানাইয়াছেন যে, বিক্রয় করই দেশের উপর 
সর্বশেষ ট্যাক্স নহে এবং অবিলঘ্বেই নুতন কর ধাধ্য করা 
হইবে। অথচ যে যুদ্ধ উপলক্ষ করিয়া ঘাটতি মিটাইবার জন্ম 
মন্ত্িমগুল ট্যাক্সের পর ট্যাকা চাপাইয়। চলিয়াছেন তাহাও ষে 
পরীর মিটিবাঁর নহে,সে সম্পর্কে ভবিষ্বদ্বাণী কর! যাইতে পারে। 


এ্রবালী লাজ্ষালীক্ছেল্র ক্লীতিক্কাতিন্নী-- 


বিহারের বাঙ্গালী সমিতির পক্ষ হইতে বিহার প্রবাসী 
বাঙালীদের অতীত ও বর্তমান কীত্তিকাহিনীর বিবরণ সংগ্রহ 
করা হইতেছে। এই তথ্যসংগ্রছের মুলহুত্র হইবে- প্রবাসী 
বাঙ্গালীর! প্রবাসের জন্ত নিংস্বার্থভারবে কতটুকু করিয়াছেন 
তাহার পরিচয় প্রদর্শন। এইগুলি পরে যথাবথভাবে 
সম্পাদনা করিয়া ধারাবাহিকভাবে সাঁময়িকপত্রে প্রকাশিত 


৪২ 


হইবে। বিহারপ্রবাসী বাঙ্গালীর সাস্কতিক, সামাজিক, 
অর্থনৈতিক ও রাঁজনৈতিক সমন্াদির সম্বন্ধে আলোচনা 
ইহাতে সন্নিবেশ করিবার সংকল্প আছে। এই সন্কলন- 
প্রচেষ্টা মুখ্যত বিহারপ্রবাঁসী বাঙ্গালী সম্বন্ধীয় হইলেও 
ভারতের অন্যান্য প্রদেশে 7তস্তত বিক্ষিপ্ত বাঙ্গালী সমাঁজের 
আলেখ্য সংগ্রহেও সমিতি সচেষ্ট থাকিবেন। এইরূপ 
বিবরণী গৃহীত হইলে শ্রীযুক্ত রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় 
কর্তৃক আঁরন্ধ “প্রবাসী বাঙ্গালীর কৃতি? সঙ্কলনও সহজতর 
হইবে-_এজন্য আশ1 করা যাঁয় যে এই প্রচেষ্টায় সকলেরই 
সহযোগিতা ও সহানুভূতি পাওয়া যাইবে। তথ্যাদি 
শ্রীযুক্ত মণীন্দরচন্ত্র সমাদ্দার ( সম্পাদক, বেহাঁর হেরাঁল্ড ও 


প্রভাতী), “পাটলিপুত্র”  কদমকৃয়া, পাটনা_-এই 
ঠিকানায় প্রেরিতব্য। 


হিন্দু ম্পিক্ষার্থীদে্র জন্য ক্তুল- 


সম্প্রতি বাঙ্গালার ব্যবস্থা পরিষদে একটি প্রশ্নের উত্তরে 
বলা হইয়াছে, গত ১৯৩৮ সালের পর হইতে মক্তবের 
হিন্দু ছাত্রসংখ্যা বাড়িয়। চলিয়াছে। ১৯৩৮ সালে ৩২ 
হাজার ১ শত ৪৯ জন হিন্দু ছাত্র মক্তরবে পড়াশুনা করিত । 
১৯৪০ সালে এই সংখ্য বাড়িয়া ৭৪ হাজার ৫ শত ৬ জন 
হইয়াছে । রঙ্গপুর জেলায় ১৯৩৮ সালে মক্তবে-পড়া হিন্দু- 
ছাত্রের সংখ্যা ছিল ৯ শত ৬০ জন, কিন্তু ১৯৪০ সালে এই 
সংখ্যা বাড়িয়া গিয়া ১৫ হাজার ৬ শত ৯০ জন হইয়াছে। 
বলাবাহুল্য এতগুলি হিন্দু ছাত্র স্বেচ্ছায় মক্তবে পড়িতে যায় 
নাই, অন্য স্কুলের ব্যবস্থা নাই বলিয়াই মক্তবের আয় 
লইতে বাধা হইয়াছে । পাকে চক্রে বাঙ্গালার সমগ্র শিক্ষা- 
পদ্ধতিকেই মুমলমানভাবাপন্ন করিবার নীতি বাঙ্গীলাঁর 
মন্ত্রীরা যে গ্রহণ করিয়াছেন-_-এবারকার বাজেটে তাহার 
সুম্পষ্ট পরিচয় রহিয়াছে । সুতরাং অদূর ভবিম্ততের দিকেই 
হিন্দুদের তাকাইয়! থাকিতে হইবে, বর্তমান মন্ত্রীদের হাতে 
ইহা! অপেক্ষা অন্ত ব্যবস্থা আশ! করা যায় না। 


লাশে ক্রভাঙগালী সম্মযেজ্লন-__ 


গত ৯ই ফেব্রুয়ারী রবিবার কলিকাতাঁর নিকটম্থ্‌ 
বেহালায় ব্রতাচারী গ্রামে বাঙালা গভর্ণমে্টের অন্যতম 
মন্ত্রী কাপিমবাজজারের মহারাজা শ্রীযুত প্রীশচন্ত্র নন্দীর 


শপন্প্রভ্ড্জম্থ 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় খণ্--৪র্থ সংখ্যা 


সভাপতিত্বে ব্রতাঁচারী আন্দোলনের বাঁধিক প্রতিষ্ঠা দিবস 
উৎসব ও. ব্রতাচারী সম্মেলন হইয়া গিয়াছে। প্রতিষ্ঠাতা 
শ্রযূত গুরুসদয় দত্ত মহাশয় সকলকে এ দিন ব্রতাচারী 
আন্দোলনের উদ্দেশ্য ও সার্থকতার কথা বুঝাইয়! দিয়া- 
ছিলেন। মহারাজা তাহার বক্তৃতায় গ্রামোন্নতি কার্ধ্যে 
ব্রতাঁচারীদের কর্তব্যের কথ! বিবৃত করিয়াছিলেন। 


হিশ্লিচ্ঞালনক্সেল ক্ভীকগ্গোক্িক্ক শ্রদ্শলনী- 


কলিকাত৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বারভাঙ্গা হলে গত ১৮ই 
ফেব্রুয়ারী ডক্টর শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় মহাশয় একটি 
স্থাধী ভৌগোলিক প্রদর্শনীর উদ্বোধন করিয়াছেন। এ 
প্রদর্শনীতে প্রয়োজনীয় মানচিত্র, চার্ট, ছবি গ্রভৃতি দেখান 
হঈয়াছে। গত ৩০ বৎসর বিশ্ববিষ্ভালয়ে ভূগোল শিক্ষার 
ভাল বাবস্থ। ছিল না__এখন সে ব্যবস্থা সম্পূর্ণ করা হইয়াছে । 
সে জন্ত সকল প্রকার আসবাবপত্র একত্র করিয়া এই 
প্রদর্শনী খোলা হইল | ম্যাটিকুলেসন, আই-এ ও বি-এ তে 
এখন ভূগোল পড়ান হয় এবং তুগোল শান্ত এম-এ 
পরীক্ষারও পরিকল্পনা প্রস্থত হইতেছে । 


ই্তন্ত।নিনিক্েল্প ্শোচ্ীক ম্মক্ভ্য- 


কানাডার পৃথিবীবিখ্যাত চিকিৎসক স্তর ফ্রেডারিক 
ব্যান্টিং বিমান দুর্ঘটনায় সম্প্রতি মৃত্যুবরণ করিয়াছেন। 
মৃত্যুকালে তাহার বয়ন ৯ইয়াছিল মাত্র পঞ্চাশ বসর। 
১৯২২ সালে তিনি বহুমূত্র রোগের “ইম্ল,লিন” নামে একটি 
ধধ আবিষ্কার করিয়া মানব সমাজের অশেষ কল্যাণ সাধন 
করেন। ১৯২৩ সালে তাহার এই আবিষ্কারের জন্য তিনি 
বিজ্ঞানে নোবেন পুরষ্কার পাইয়াছিলেন। এই সব মাঁনব- 
হিতৈষীর অকালমৃত্যু জগতের ক্ষতির কাঁরণ। 


ডল্টল্র সুশীলক্ুমাল্র ঘুখ্োোপান্যান্স- 


আমর! জানিয়া অতীব দুঃখিত হইলাম যে কলিকাতার 
নুপ্রসিদ্ধ চক্ষু-চিকিৎসক হুগলী তেলিনীপাড়া নিবাসী ড্র 
সুণীলকুমার মুখোপাধ্যায় মহাশয় গত ১৩ই ফেব্রুয়ারী মাত্র 
৫৫ বৎসর বধসে তাহার তেলিনীপাড়াস্থ ভবনে সহসা 
পরলোকগমন করিয়াছেন। তিনি বহুবার কলিকাতা 
মেডিকেল কলেজের চক্ষু চিকিৎসা! বিভাগের প্রধান 


চৈত্র--১৩৪৭ ] 


উস বস্তি স্থ- 





অধ্যাপকের কার্ধ্য করিয়াছিলেন-_কিস্ত ১১ বৎসর এ কাজ 
করার পর ১৯৩৯ সালের মার্চ মাসে বাঙ্গালা গভর্ণমেণ্ট 
এ পদে তাহার দাবী উপেক্ষা করায় তিনি পদত্যাগ 





ডর;র হশীলকুমার'মখোপাধ্যায় 
করিয়াছিলেন । তিনি অক্সফোর্ডের ডি-ও, লগ্ডনের ডি ও- 
এম-এস» এডিনবরার এফ-আর-সি-এস এবং বাঙ্গালার 
এফ-এস-এম-এফ উপাধিধারী ছিলেন । তিনি কারমাইকেল 
মেডিকেল কলেজেরও চক্ষুচিকিৎসার প্রধান অধ্যাপক 
ছিলেন। বনু বংসর যাবৎ তিনি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের 
সিনেট ও সি্ডিকেট সভার সদশ্য ছিলেন এবং ফাইনাল 
এম-বি পরীক্ষার ও বেঙ্গল ছ্েট মেডিকেল ফ্যাঁকাল্টীর 
পরীক্ষক ছিলেন। ১৯৩৭ সালের ডিসেম্বর মাসে কায়রো 
সহরে যে পঞ্চদশ আন্তর্জাতিক চক্ষুচিকিৎসক কংগ্রেসের 
অধিবেশন হয় সুশীনবাঁবু ভারত গভর্ণমেণ্টের প্রতিনিধি হইয়] 
তাহাতে যোগদান করিয়াছিলেন। তিনি ইউরোপ ভ্রমণে 
যাইয়! জুরিচ, ভিয়েনা ও উটরেক্টের চক্ষুচিকিৎস1 কেন্দ্রুগুলি 
দেখিয়া আসিয়াছিলেন । বাঙ্গালা দেশে অন্ধতা নিবারণের জন্য 
যে সমিতি প্রতিষিত হইয়াছে, তিনি তাহার অন্যতম প্রধান 
উদ্যোক্তা ছিলেন এবং অন্ধতা নিবারণ সম্বন্ধে “ভারতবর্ষে, 
তাহার প্রবন্ধ প্রকাশিত হইয়াছিল । চিকিৎসা! কাধ্যের সঙ্গে 
সঙ্গে তিনি নান! স্থানের বহু জনহিতকর গ্রতিষ্ঠানের সহিত 


সামজিক 


স্থপন্ষস স্বস্ স্ বড সস স্ সস সস স্ন্ডিসস্থপ্ স্া্পা 


৫২২৫ 








স্ব -ব্্- 


সংশিষ্ট ছিলেন। তিনি অপুত্রক ছিলেন। আমরা তাঁহার 
শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গকে তাহাদের এই শোকে আন্তরিক 
সমবেদন জ্ঞাপন করিতেছি । 


সন্রল্লোন্কে প্ুল্রেত্ভরক্োহুন্ম £ভ-- 
রাজসাহীর প্রবীণ কংগ্রেস নেতা ও বঙ্গীয় ব্যবস্থা 
পরিষদের সদশ্ স্বরেন্দ্রমোহন মৈত্র ব্লাড প্রেসার রোগে 
অকালে পরলোকগমন করিয়াছেন । স্ুরেন্রমোহন প্রথম 
যৌবনেই কংগ্রেস ও দেশের সেবায় আত্মনিয়োগ করেন এবং 
দীর্ঘকাল বাব একনিষ্ভাবে দেশের ও দশের সেবা করিয়া 
আপিতেছিলেন। একাধিকবার তিনি কাঁরাঁবরণও 
করিয়াছেন। তাহার মৃত্যুতে দেশের অশেষ ক্ষতি হইল। 
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি নিরতচ্গীর, সরল ও অমায়িক 
প্রকৃতির লোক ছিলেন। আমরা তাহার শোকসন্তপু 
পরিজনদের প্রতি গভীর সমব্দেনা জ্ঞাপন করিতেছি । 


হল্লিস মুখ্যোশাপ্র্যাজ-_ 


গত ১৬ই ফেব্রুয়ারী রবিবার ভোরে (শনিবার রাত্রি 
শেষ ) ২৪পরগণ| কাঁমারহাঁটা নিবাসী হরিদাস মুখোপাধ্যায় 








হরিদাস মুখোপাধায় 
মহাশয় ৬৭ বৎসর বয়সে পরলোকগমন করিয়াছেন জানি! 


আমর! ব্যথিত হইলাম। হরিদাসবাবু বহু বৎসর 


১ 





"” সপ্ন সি 


কাঁমারহাটা মিউনিসিপালিটার কমিশনার, কিছুকাল উহার 
চেয়ারম্যান ও বেঞ্চের অনারারী ম্যাজিষ্রেটে ছিলেন। 
সরকারী চাকরী হইতে অবসর গ্রহণের পর তিনি সর্বদা 
নানা জনহিতকর কার্যে নিযুক্ত থাকিতেন। তিনি 
কামারহাটা ও তৎসন্নিহিচ গ্রামসমূহের সর্বসাধারণের 
বিশেষ প্রিয় ছিলেন। আমরা তাহার শোকসন্তপ্ত পরিবার- 
বর্গন্বক আন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করিতেছি । 


ুজিনন্কাভ্ডাক্স লুক্ভন্ন উপকম্শাল-- 


আলীপুর অঞ্চলে শীঘ্রই একটি টশকশাল তৈয়ারি হইবে 
বলিয়া জানা গিয়াছে । যুদ্ধের জন্থা দেশে মুদ্রার চাহিদা 
অতি মাত্রায় বাঁড়িয়া যাওয়ার জন্য বর্তমীনে বোম্বাই ও 
কলিকাতায় টীকশালে কাঁজের চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় 
টীকশাল সম্প্রলারণের এই ব্যবস্থা হইতেছে । নূতন 
টখণকশালটির নিশ্শীণে ৬২ লক্ষ টাকার অধিক বায় হইবে । 
প্রথমে এই নূতন টণাকশালে কেবলমাত্র রৌপ্য মুদ্রাই প্রস্তত 
হইবে। ন্বাভাবিকভাবে কাজ চলিলে দিনে ৬ লক্ষ করিয়া 
দ্র! প্রস্তুত হইতে পারিবে এবং পূর্ণোগ্চমে অতিরিক্ত 
সময় কাজ চাঁলাইলে দিনে প্রায় ১২ লক্ষ মুদ্রা তৈয়ারি কর! 
চলিবে। স্বাভাবিক অবস্থা দেখা দিলেই কলিকাতার 
পুরানো ট'কশালটি বন্ধ করিয়া নবনির্মিত বাড়ীতে টাকশাল 
তুলিয়া লইয়া গিয়া নিকেলের ও ব্রোর্জের মুদ্র। তৈয়ারির ব্যবস্থা 
করা হইবে। সরকার অনুমান করেন যে বর্তমান টকশালটি 
যে স্থানে অবস্থিত সেই স্থানে যে পরিমাণ জমি আছে তাহ! 
বিক্রয় করিয় পঙ্কাশ লক্ষ টাকা পাওয়া! যাইবে । 


সল্লত্লোক্কে ্পজীত্ুক্রপ্র-্নাদি আস্ত 


বিগত স্বদেশী আন্দোলনের প্রসিদ্ধ কর্মী ও প্রবীণ 
সাংবাদিক শটীন্ত্র প্রসাদ বস্থু গত ২৮শেমাঘ অকালে পরলোক- 
গমন করিয়াছেন। তিনি ছাত্রাবস্থাতেই দেশের কাজে 
আত্মনিয়োগ করেন। স্বদেশী আন্দোলনের সময় তাহার 
কন্মশক্তি ও বাগিতাঁর পরিচয় দেশবাপী পাইয়াছিল। সেই 
সময় যে নয়জন জননেতাকে সরকার তিন আইনে আটক 
করেন শচীন্ত্রপ্রসাদ “তাহাদের একজন ও সর্বকনিষ্ঠ। 
পরবর্তীকালে কংগ্রেসের সঙ্গে তাহার যোগ ছিন্ন হয় এবং 
তিনি উদারনীতিক মতাবলন্বী হইয়াছিলেন। তাহার 


ভান্ত্তশশ্ব 





[ ২৮শ বর্য-_২য় খণ্ত--৪র্ঘ সংখ্যা 








দেশগ্রীতি ছিল অসীম । দীর্ঘকাল তিনি “ব্যবসা ও বাণিজ্য, 
নামক মাসিক পত্রিকা সুষ্ঠভাবে সম্পাদন করিয়া 
আসিতেছিলেন। আমরা তাহার পত্বী ম্বনামখ্যাত 
্রীযুক্তা কুমুদিনী বস্থ ও অগ্কান্ত পরিজনদিগকে আমাদের 
আন্তরিক সমবেদন! জ্ঞাপন করিতেছি । 


ল্রা্গালা। সন্রক্কাল্রেল্র অশ্সিভন্যজ্িভা-_ 


ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ যখন সিভিলিয়ানী শাসনের 
অধীন ছিল তখন দেশের রাঁজন্ব লইয়া দেশের সিতিলিয়ানগণ 
বথেচ্ছ ব্যবহার করিয়াছেন । কিন্তু গত ১৯৩৭ সালের এপ্প্রিল 
হইতে যে নৃতন শাসন প্রবর্তিত হয় তাহাতে দেশবাসীর 
নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রতিনিধি-স্থানীয় মন্ত্রিমগুলের 
উপর প্রাদেশিক রাজস্বের শতকরা ৮৫ ভাগ তাহাদের 
ইচ্ছামত ব্যয় করিবার অধিকার দেওয়া হয়। ফলে দেশবাসী 
স্বতই মনে করিয়াছিল যে নূতন শীসনতন্ত্রের আমলে দেশের 
শাসকরূপে মন্ত্রীরা বথাসম্ভব কম পারিশ্রমিকে কাজ 
করিবেন এবং দেশবাসীর প্রদত্ত অর্থের অন্তত শতকরা ৮৫ 
ভাঁগের প্রত্যেকটি পয়সা দেশের সর্বোচ্চ স্বার্থের প্রতি 
লক্ষ্য রাখিযা ব্যয়িত হইবে । কিন্ দুঃখের বিষয়, জন- 
সাধারণের আশা-ভরস! সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হইয়াছে । মন্ত্রীরা 
নিজেরা কোন স্বার্থত্যাগে রাজী ত হনই নাই, উপরন্ দেশ- 
বালীর প্রদন্ত অর্থের যাহাতে সদ্ধয় হয় সে বিষয়ে উৎসাহ 
প্রদর্শন করেন নাই। শুধু তাহাই নহে, নূতন শাসনতন্ে 
শাসনকার্যের ব্যয় এত বাড়িয়া গিয়াছে যে ইতিমধ্যেই 
দেশবাসীর উপর নূতন কর বলিয়াছে এবং আরও যে 
অনেক কর বসিবে তাহার লক্ষণ স্পষ্ট দেখা যাইতেছে । 
এই কয় বংসরের অভিজ্ঞতা হইতে দেশবাসীর মনে 
হওয়া খুবই স্বাভাবিক যে, তথাকথিত প্রাদেশিক 
স্বায়ত্তশাসন হইতে সিভিপিয়ানী শাসন অনেক ভাল ছিল । 
অথচ ইহার জন্য ইংরেজকে দায়ী করা সঙ্গত হইবে না; 
কেননা দেশ এখন শাসন করিতেছে আদলে দেশবাসীরই 
নির্বাচিত প্রতিনিধিরা । তাহারা যপ্দি তঠাঁৎ রাঁজশক্কি পাইয়া 
অমিতব্যয়ী হন__তাহার জন্য দোষ দিতে হইলে দেশবাঁপীর 
নির্ববাচনকেই দিতে হয়। বাঙ্গালা সরকারের বাজেট 
আলোচনা করিতে গেলে এই কথাই মনে হয়। বাঙ্গালা 
বর্তমান মন্ত্রীরা যখন দেশের শাসনভার গ্রহণ করেন ঠিক 


চৈত্র--১৩৪৭ ] 


ব্রা সহ ব্রিজ স্থ্হচ স্ব” স্ স্যর বস” ব্রা স্ব “স্ বব ব্য - আগ ৮” সহ বা 


তাহার আগের বৎসর ( ১৯৩৬-৩৭ ) রাঁজস্বের হিদাবে 
বাঙ্গালার আয় ছিল ১২ কোটি ১৪ লক্ষ টাঁকা। মন্ত্রীদের 
আমলে রাঁজস্বের আয় অনেকখানি বুদ্ধি পাইয়াছে। 


১৯৩৬-৩৭ সালে ১২ কোটি ১৪ লক্ষ 
৯৯৩৭-৩৮-১৯ ১৩ ৯ 
১৯৩৮-৩৯ ০ ১২5৭৬ ১ 
১৯৩৯-৪০ ১, ১৪ ১১ ৩১ 
১৯০০-৪১ ১৩ ৮২ 


চর 55 


কাজেই দেখা যাইতেছে যে গত চার বৎসরে পূর্বর- 
শ।পসনের তুপনাঁপ মন্ত্রীদের হাতে € কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা 
'অতিরিক্ত আমদানি হইযাছে। তাহা ছাড়া সিভিলিয়ানী 
আমলে খণের সুদ বাব বৎসরে গড়ে ১৮ লক্ষ টাকা দিতে 
হইত, বন্তমানে সেই সুদও মকুব করা হইয়াছে; এই দিক 
দিনাও ৪ বংসরে ৭২ লক্ষ খরচ বাচিয়াছে। ইঠা ছাড়া 
সঞ্চাসবান দমনের জন্য সরকার বৎসরে প্রায় ৬০ লক্ষ টাঁকা 
ব্য করিতেন; কিন্ত মন্ত্রীদের আনলে তাহণও ব্যয়িত হয় 
ণণিথা শুনি নাই । ফলে এই চাঁরি বংসরে ২ কোটি ৪০ 
লক্ষ টাকা বায়ভ।র কমিয়াছে। মোট ৮ কোটি ৪৫ লক্ষ 
টাকা অতিরিক্ত অথলাভ হইয়াছে । এত ধেশী টাকা 
পাইরাও ঠাহারা বাঙ্গালার দুঃখ এতটুকু কমাইতে পারিযাছেন 
বণিঘা শোনা যায় নাই ; বরং অতিরিক্ত ট্যাঞ্স ধাধ্য করিয়া 
রোগ-শোক-অভাব অনাটন-খণভার পীড়িত জনগণকে আরও 
অতিরিক্ত ট্যান্সের ভারে প্রপীড়িত করিতে উদ্যোগী 
হইয়াছেন । 


জ্ঞালত্ভীঞ তরলের আ-ব্যজআ- 


রেলওয়ে বোর্ডের গত ১৯৩৯-৪০ সালের বিবরণ 
প্রকাশিত হইয়াছে । তাহাতে দেখা যায় সমস্ত খরচ বাদ 
মোট ৪ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা উদ্দত্ত হইয়াছে এবং এই 
টাকাটা ভারত সরকারের রাঁজস্ব তহবিলে ন্যস্ত করা 
হইয়াছে । আলোচ্য বর্ষে সরকারী রেলপথগুলির মোট আয় 
হইয়াছে ৯৭ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা। ইহার পূর্ব্ব বৎসরে এই 
আয়ের পরিমাণ ছিল ৯৪ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা । সাধারণ 
কাধ্য পরিচালনা ব্যয় ৭৫ লক্ষ টাঁকা বাড়িয়া ষাওয়। সত্বেও 
ব্যয়ের হার আগের বৎসরের শতকরা ৫৩.১ স্থলে আলোচ্য 
বখসর ইহা! শতক্করা ৫২.০০ ভাগ পর্যন্ত হাস পাইয়াছে। 


সলাসজিক্কী 





৫২২ 





সহ্য 





যাত্রীদের ভাড়া বাবদ আয়ের পরিমাণ আগের বৎসরের ৩০ 
কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা হইতে কমিয়া গিয়া ৩০ কোটি ৪৭ 
লক্ষে দাড়াইয়াছে। মালের ভাড়। বাঁব্দ আয় ৭০ কোটি 
৫৬ লক্ষ টাকায় ঈ্াড়াইয়াছে। এত আয় সন্বেও ভারতের 
তৃতীয় শ্রেণীর যাত্রীদের দুঃখের এতটুকু লাঘব করার দিকে 
ভারতীয় রেলওয়ে বোর্ডের কিছুমাত্র প্রবৃত্তি দেখা 
যাইতেছে না ইহাই সর্বাপেক্ষা পরিতাঁপের বিষয় । 





বাতিক ভগ্গুল্রে হিন্দু সং্মমেলন্ম- 


সম্প্রতি ভারত সেবাঁশ্রম সঙ্ঘবের উদ্যোগে ফরিদপুর 
জেলার বাজিতপুর সেবাশ্রমে প্রসিদ্ধ এ্রতিহাসিক শ্রীযুক্ত 
যোগেন্দ্রনাঁথ গুপ্তের সভাপতিত্বে একটি বিরাট হিন্দু সম্মেলন 
অনুষ্ঠিত হইয়াছে । সভায় বাঙ্গলার বিভিন্ন স্থান হইতে 
অগংখ্য নরনারী যোগদান করিয়াছিল। তথায় হিন্দু 
জনসাধারণকে বন্তমান আদনস্থমারী কার্য্যে হিন্দুর সংখ্যা 


8 
১: 


ই) ৬ 





বাজিতপুর হিন্দু সম্মেলনের সভাপতি 
প্রীযৃত যোগেন্দ্রনাথ গুপ্ত 
যথাঁথ লিপিবদ্ধ যাহাতে হয় তাহাতে সহায়তা করিতে 
অনুরোধ, বাঙ্গীলার সর্বত্র ব্যাপকভাবে জোর সংগঠন 
কাঁধ্য পরিচালনের ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয়ে চাঁরিটি প্রস্তাব 
গৃহীত হইয়াছে। 


আক্মুর্কেেল্কীক্স অন্বম। ন্িআাল্রপ সন্দেমলন্ন-_ 


গত ৮ই ফেব্রুয়ারী শনিবার অপরাহ্নে কলিকাতা কলেজ- 
স্কোয়ার মহাবোধী দোসাইটী হলে বিরাজ শ্রীযুত যছুনাথ 
গুপ্ধ মহাশয়ের সভাপতিত্বে আধুর্ব্বেদীয় যক্ষা নিবারণ 
সম্মেলন হইয়। গিয়াছে । কবিরাজ শ্রাধৃত রামরুষণ শাস্তী 


২৮ 


কাব্যব্যাকরণতীর্ঘ মহাঁশয় অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতিরূপে 
এক বভৃতায় এদেশে যক্া রোগের প্রকোপ ও তাহা 
নিবারণের উপায় সম্বন্ধে বিস্তৃতভাবে আলোচনা করিয়া- 
ছিলেন। আঘূর্ব্বেদীয় চিকিৎসায় যে সত্বর যক্ষারোগীর 
উপকার হইতে পারে /স বিষয়টি সভাপতি মহাঁশয়ও 
সকলকে বুঝাইয়া দেন। আযুর্ষেরেদীয় চিকিৎসকগণও যে 





কবিরাজ গ্রারামকৃ্ণ শাস্ত্রী 


দেশে যঙ্া রোগের বিস্তৃতি দেখিয়া তাহা! নিবারণের জন্য 
উদ্যোগী হইয়াছেন, ইহা দেশের পক্ষে মঙ্গলের বিষয় 
সন্দেহ নাই। 


জ্কাম্-ভ্ডাক্সভড ্বাণিভ্ক্য-, 


জাপান হইতে ইদানীং ভারতে আমদানির পরিমাণ 
অত্যধিক বাড়িয়1! যাওয়ায় এবং সেই তুলনায় জাপাঁন 
ভারতবর্ষ হইতে মালপত্র ক্রয় না করায় তাহার প্রতীকারের 
জন্ভ ভারত সরকাঁর এদেশে জাপানী মালের আমদানি 
নিয়ন্ত্রণ করিয়! দিবেন বলিয়া! একটি খবর প্রকাশিত 
হইয়াছে । গত বৎসর এপ্রিল হইতে ডিসেম্বর পর্যন্ত 
নয় মাসে জাপান হইতে ভারতে ১৩ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা 
মূল্যের মালপত্র আমদানি হয় এবং ভারত হইতে জাপানে 
৯ কোটি ৬১ লক্ষ টাকার পণ্য রপ্তানি হয়। কাজেই 
গত বংসর জাপান"এ দেশে যত টাকার পণ্য বিক্রয় 
করিয়াছিল তাহা অপেক্ষা ৩ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকার 
কম পণ্য এদেশ হইতে প্র করে। এবার এই নয় 


ভ্াাব্রভবহ্্র 


| ২৮শ বর্-_২য থণ্ডঁ--৪র্থ সংখ্যা 


মাসে জাপান হইতে ভারতে আমদানির পরিমাণ ১৫ 
কোটি টাকা এবং ভারত হইতে জাপানে রপ্তানির পরিমাণ 
৬ কোঁটি ৭৭ লক্ষ টাকাঁয় পরিণত হইয়াছে । কাজেই 
এবার জাপান ভারতে যত টাকার পণ্য বেচিয়াছে তাহার 
তুলনায় ৮ কোটি ২৩ লক্ষ টাকার কম পণ্য ক্রয় 
করিয়াছে । এরূপ অবস্থায় শুন্ধ বৃদ্ধি দ্বারাই হোঁক বা মুদ্রা 
বিনিময় নিয়ন্ত্রণ করিয়াই হোক, জাপান হইতে ভারতে 
আমদানির পরিমাণ কমানো আবশ্তক ৷ ইহার ফলে আর 
যাহাই হভোঁক, ভারতীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলি জাপানের 
প্রতিযোগিতা হইতে অনেকট৷ রক্ষা পাইবে। 

ভান্ক ও ভাল্ল ভ্বিভ্ভাঙ্গেব্র ক্ষাশ্্যনিলক্রণ _ 


ভারত সরকারের তার ও ডাঁক বিভাগের গত বর্ষের 
( ১৯৩৯-৪০ ) কাধ্যবিবরণে প্রকাশ, আলোচা বর্ষে বিভিন্ন 
প্রকারের যানবাহনে ভাঁরতে মোট এক লক্ষ আটাম হাজার 
মাইল ব্যাপী ডাক চলাচল হয়। আগের বৎসরে ইনার 
পরিমাঁণ ছিল এক হাঁজার মাইল কম । বিমান-ডাঁক চলাচল 
এই হিসাবে ধরা হয নাই। আলোচ্য বর্ষে ৭ কোটি 
২২ লক্ষ ৭৫ হাঁজার টাকার ডাঁকটিকিট বিক্রয় 
হইয়াছে । আগের বৎসরের তুলনায় ইহা ৩২ লক্ষ ৯৩ হাঁজার 
টাকা অধিক। সাভিস স্ট্যাম্প বিক্রঘের পরিমাণ আগের 
বৎসরের অপেক্ষ। ৮ লক্ষ ৩৩ হাঁজার টাঁকা বাড়িয়া এ বৎসরে 
তাহা ১ কোটি ১৩ লক্ষ ১৯ হাজার টাঁকা ধাঁড়াইয়াছে। গত 
১৯৪০ সালের ৩১শে মার্চ পর্য্যন্ত শহর ও পল্লী অঞ্চলে মোট 
২৪ হাজার ৭৪১টি ডাকঘর ছিল। আগের বৎসরে এ সময 
ইহার সংখ্যা ছিল ২৪ হাঁজার ৩০৫টি । শহর ও পল্লী অঞ্চলে 
চিঠির বাক্সের সংখ্যা ছিল ৫৪ হাজার ৪৭৪টি। আগের 
বৎসরে ছিল ৫২ হাজার ৮৫১টি । গত ১৯৩৯ সালের 
৩১ মার্চ পর্য্যন্ত ভারতে ১১১৬টি ডাঁকঘর পরীক্ষামূলকভাবে 
পরিচালিত হইতেছিল। এই সালে আরও ৪১৯টি নূতন 
ডাকঘর খোলা হয়। এই ১৫৩৫টি নূতন ডাকঘরের 
মধ্যে শহর অঞ্চলে ২০টি এবং পল্লী অঞ্চলে ৪৭২টি স্থায়ী 
ডাকঘর বলিয়া গণ্য হয়। ৭৯টি ডাকঘর বন্ধ করিয়া 
দেওয়া হয় এবং ৯৬৪টি পরীক্ষামূলকভাবেই বজায় রাখা হয়। 
এ বংসরে ৬* লক্ষ ১৪ হাজার চিঠিপত্রাদি ডেট-লেটার 
আপিসে প্রেরিত হয়; আগের বৎসরে ইহার সংখ্যা ছিল 
৫৭ লক্ষ ৩৩ হাঁজার। 





কলিপাতা ইউনিভাসিটি হনিষ্টিটিউটের আনুকলেডায় ১৬ মাহল অ্ণ প্রাঙনো মহান পুরপ।ন বিবরণ ডৎসব-ক্গটিশচ1৮৮ কলেজের 


নিশাঠ বস।ক । ছবির নীচের দিকে বামদিক ত৬৩ে দ্বিতীয় ) প্রথম কেসি-শুল (নীচে বামদিকে প্রথম ) 


দ্বিতায়'ও ডি-মেগ্ঘিন (নাচে দন্সিণদিকে ) ভুতীয় হইয়াছেন 





ঢণ্টর গধাবিনোদ পাল কলিকাতা হাভকোটের বিচারপতি নিযুক হওয়ায় হার সন্বন্ধন1-মধ্যে মালা গলায় বিচারপতি পাল, 


তাহার দক্ষিণে বিচারপতি বিজনকুমার মুপাপাধায় ও বামে বিচারপতি কপেন্দচল্প মিএ 


বিশ 
১ ২ 
৭. 





ঙ্ 
ন্‌ -৮-)০ 


গড়েরমাঠে কালকাটা ফুটবল গ্রাউণ্ডে কৃপ্ঠী কানিভালের দশটা 


আপা 


অ্গন্রভন্নন্ন 


এলাহাবাদে নিখিলভারত ফটে। প্রতিযোগিত। 


্ 





টা 


তন গর্ত 19, ৮251৩, পথ 








চৈত্র--১৩৪৭ ] 


২৮ হা বা সহ স্ব সা” সস - স্ব” স্ব -স্ন্হা “্হ - স্দস্ব্ হ বত সহ 


স্পিকন-ওখতে। ও মুজলঞ্রন্ন সমমনা 


বাঙ্গালায় শিল্পপ্রব্য প্রস্ততের উপযোগী ক্বাঁচা মাল, শিল্প- 
জাত দ্রব্যের চাহিদা, শিল্প কারখানায় কাজ করিবার 





ট্টগ্র।মে নৃতন মন্দিরে প্রতিষ্িত ঠাকুর 
রামকৃপ্দেবের দারমু্তি 


উপযোগী শ্রমিক-__কিছুরই অভাব নাই। এই সব স্ুযোগ- 
সুবিধা থাকা সত্বেও যে এখানে শিল্লের বিশেষ প্রসার 
হইতেছে না তাহার প্রধান কারণ-_মূলধনসংগ্রহের সমস্থা! | 
ধাহাদের হাতে টাকা আছে তাহার সেই টাকা শিল্প ব্যবসায়ে 
খাটানো অপেক্ষা কোম্পানীর কাগজ বা ব্যাঙ্কের সুদের উপরই 
নির্ভর করেন বেশী। ফলে টাঁকাঁর 'অভাঁবে এদেশে নৃতন 
কোন শিল্প ব্যবস্থা গড়িয়া উঠিতেছে না । শুধু তাহাই নহে, 
ধাহারা ইতিমধ্যেই শিল্প কাঁরখান গড়িয়। তুলিয়াছেন তাথারা 
আরও অতিরিক্ত মূলধনের সুবিধা না থাকায় তাহার 
প্রয়োজনান্ুরূপ বিস্তৃতি সাধন করিতে পারিতেছেন না । এই 
উদ্দেস্ত্ে অবিলম্বে উপযুক্তসংখ্যক ইগ্ডাগ্রিয়াল ব্যাঙ্ক স্থাপন 
দরকার । আমাদের বিশ্বাস” কেরাণী বাঙ্গালীর অপেক্ষ? 
বিস্তশালী ও ব্যবসায়ী শ্রেণীর দৃষ্টি এই অত্যাব* কীয় 
ব্যাপারে অধিক নিয়ে(জিত হইয়া দেশের মহোঁপকাঁর সাধন 
করিবে। 


চাশ্উলেল্ল মুল্য স্বন্হিন্ল আশঙ্কা 


সরকারী বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ যে যুদ্ধের জন্য জাহাজ- 
গুলিকে সরকারী প্রয়োজনের জন্ত নিয়োজিত করা! আবশ্যক 
হইয়া পড়িবে। তাই ব্রহ্মদেশ হইতে ভারতে চাউলের 


৬৭ 


সামসিকী 





৮২৯, 








স্স্থ্স্" সহ ৮ 


আমদানির পক্ষে অন্তরায় উপস্থিত হইয়া চাঁউলের মূল্য 
বাঁড়িতে পারে। হইয়াছেও তাহাই । তবে এ অবস্থাট! 
সাময়িক বলিয়াই সরকারের ধারণা; কাজেই কিছুকাঁলের 
মধ্যেই ব্রহ্ম হইতে চাউল আমদানি সম্ভবপর হইবে। কিন্তু 
অবস্থা যেরূপ দ্রাড়াইতেছে তাহাতে সমগ্র প্রাচ্যখণ্ডেই যুদ্ধে 
বেড়া আগুন জলিয়! উঠিতে পারে এবং তাহা হইলে বর্গ 
হইতে চাঁউলের আমদানি অনির্দিষ্ট কাল পথ্যন্ত বন্ধ থাকিবে 
বলিয়াই মনে হয়। অপর পক্ষে ব্যবসায়ীরা যে এই স্থযোগে 
চাঁউলের দাম বাড়াইয়া দিবে তাহাতে কোন সন্দেহ নাই। 
অবিলম্বে ইহাঁর প্রতিকার হওয়া দরকার; বাঙ্গীল! সরকার 
পণ্যদ্রব্য-মূল্য-নিয়ন্ণের জন্য একজন "্মফিসাঁর নিষুক্ত করিয়া 
ছিলেন, তিনি এই বিষয়ে কি করিতেছেন? 


ফাক্কিবাভি্র ্ল্রলম- 


কিছু দিন আগে পাট কেনা-বেচা সম্পর্কে দিলীতে বাঙ্গালা 
সরকার ও চটকল সমিতির যে চুক্তি হইয়াছিল তাহা যে 
পাটচাষীর সঙ্গে একটা প্রচণ্ড ফাঁকিবাজী, তাহা দিন দিনই 
স্পষ্ট হইয়া ধর! পড়িয়াছে। এর চুক্তির সর্ত ছিল, গত ১৫ই 
জানুয়ারী পর্যন্ত এক মাসে চটুকলগুলি ১৫ লক্ষ বেল এবং 
ইহার পর ১৫ই ফেব্রুয়ারি পধ্যন্ত এক মাসে ১০ লক্ষ বেল 
পাট ক্রয় করিবে। তবে যদি চটকলগুলি এই পরিমাণ 
পাট কিনিতে অক্ষম হয় তাহা হইলে বাঙ্গালা সরকার 





চট্টগ্রামে ডক্টর গাম প্রসাদ মুখোপাধ্যায় 


রয়োজ্নানগুরূপ পটি কিনিয়া কুকের পক্ষে উক্ত পরিমাণ পাট; 
বির্ুয়ের সুযোগ করিয়া দিবেন 3 উল্ত চুক্তির সর্ত অঙ্যায়ী 


০২5০2 


চটকলগুলি গত ১৫ই জানুয়ারী পর্য্যন্ত ১৫ লক্ষ বেলের বদলে 
১৩ লক্ষ ৫৮ হাজার ৭৪৫ বেল পাঁট ক্রয় করে। কিন্তু 
বাঙ্গালা সরকার এ তারিখের মধ্যে বাকি ১ লক্ষ ৪১ হাজার 
২৫৫ বেল পাট কিনিয়া ১৫ লক্ষ বেল পুরণ করিয়া দেন 
নাই। ইহার পরবর্তী একমাস শেষ হইল; যতদুর জানা 
গিয়াছে তাহাতে এই এক মাসে-_অর্থাৎ--গত ১৫ই 
ফেকগ়ারি পর্য্যন্ত চটকলগুলি ১০ লক্ষ বেলের পরিবর্তে মাত্র 
পাঁচ-ছয় লক্ষ বেলের বেণী পাট কেনেন নাই। কাজেই 





ঝলিকাঠ। ধর্মতগা স্রাউগ্থ ইত্ডিয়ান আর্ট স্কুলের সরন্বতী মূর্তি--স্কুলের 
মডেলিং কাদের ছাত্র কেণবল!ল তৌমিক নিশ্চিত 


চুক্তির সর্ত অন্থ্যায়ী এই সময়ে বাঙ্গালা সরকারের চার-পাঁচ 
লক্ষ বেল পাট ক্রয় কল্প! কর্তব্য ছিল। কিন্তু গ্রথম মাসের ন্যায় 
ঘিতীয় মাসেও বাঙাল! সরকার এক তোল! পাটও কেনেন 
নাই। সরকারের যখন পাট কেনার ইচ্ছা বাঁ সাম্থ্য নাই 
তখন দিল্লীতে এই ধরণের একটা চুক্তি করিয়া রুষককে 
স্তোক দিলেন কেন? এই চুক্তির পর দায়িত্বশীল মন্ত্রীরা 
মফঃদ্বলে কুষকদের অন্ন দাঁমে পাঁট বিক্রয় করিতে নিষেধ 


ভ্াাব্রভবশ্ 


[ ২৮শ বর্ব--২য় খণ্ডঁ--৪র্থ সংখ্যা 


করিয়া বেড়াইয়াছেন। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী ছুই পক্ষই 
কৃষকদের নিরাশ করিতেছেন । শুধু তাঁহাই নহে, ইহার ফলে 
ফাটকা! বাজারে পাটের দর প্রতি বেলে €টাকা কমিয়া 
গিয়াছে এবং মফংম্বলেও ইহার প্রতিক্রিয়া দেখা যাইতেছে । 
মন্ত্রীদের কথায় বিশ্বীস করিয়া কষককে যে ক্ষতিগ্রন্ত হইতে 
হইল তাহা পূরণ করিবে কে? 


ভ্ডার্ডম্পিল্গেল্ অণ্ডসান অলস্ছা_ 


ভারতের তাতশিল্লের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তথ্য 
সংগ্রহ করিবার জন্য যে কমিটি কিছুদিন আগে গঠিত 
হইয়াছে, শোনা গেল তাহার! কাঁজ আরম্ভ করিয় দিয়াছেন। 





সম্তোষের মহা'রাজকুমার রবীন্দ্রনাথ রায়চৌধুরী পরিকলিত দক্ষিণ 
কলিকাতার হুবৃহৎ স্বর্ণ সরম্বতী--পার্থে রবীন্দ্রনাথ দণ্ডায়মান 


ভারতের বস্ত্রশিল্পের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে তাঁতিদের আথিক 
অবস্থা খারাপ হইয়াছে বটে, কিন্তু তাঁত শিল্প একেবারে 
সমূলে নষ্ট হয় নাই। এখনও ভারতের বস্ত্র মোট চাহিদার 
প্রায় এক চতুর্থাংশ গ্রাম্য তাঁতিরাই সরবরাহ করিয়া থাকে । 
তাতিদের সর্ধপ্রধান অন্ুবিধা ঘটায় কাপড়ের কলগুলি। 
বেণীর ভাগ কাপড়ের কল সুতাঁও কেনে এবং স্থৃতার দাম 
ইহারা এমনভাবে বীধিয়া রাখেযাহাতে তাতের 
কাপড়ের দর কলের কাপড়ের দর অপেক্ষা খুব বেশী 
নীচে নাঁমিতে না পারে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও ন্ুৃতা 
চালান দেওয়ার সময় তাতিদের সুবিধা দেখার প্রয়োজন 
বোধ করেন না। এইসব কারণে দরিদ্র খণভার গর্ত মূলধন- 


চৈত্র--১৩৪৭ ] 


হান তাতিকে তাঁত শিল্প যে কত কষ্টে বীঁচাইয়। রাখিতে 
হইতেছে তাহা সহজেই অচ্থমেয়। আমরা এই কমিটির 
রিপোর্টের জন্ত সাগ্রহে প্রতীক্ষা করিতেছি । 





লাহ্ষালাম্ শ্শিশুওম্মক্্য-_ 


গত ১৯৩৮ সালে বাঙ্গালায় মোট ২ লক্ষ ৮* হাজার 
৯২৩টি শিশু জন্মিবার পর মৃত্যুমখে পতিত হইয়াছে। 
উহার মধ্যে ১ লক্ষ ৫৪ হাজার ৪৭৪ জন জন্মিবার একমাঁস 
কাল মধ্যেঃ ৮১ হাঁজার ৬৪০ জন জন্মিবার ছয়মাস মধ্যে ও 
৪৪ হাঁজার ৮*৯ জন ছয়দাঁস হইতে এক বৎসরের মধ্যে 
মৃত্যুমুখে পতিত হুইয়াছে। ১৯৩৭ সালে হাঁজার-করা 
১৭৬২ জন শিশু এ্রীভীবে জন্মিবার পর প্রাণত্যগ 
করিয়াছিল। ১৯৩৮ সালে মৃত্যুসংখ্যা বাড়িয়া হাজার 
করা ১৮৪'৭ জন ধ্াড়াইয়াছে। 


লাকা ভ্ান্বক্রীনাঞ্থ ব্রাক 


বাঙ্গালার খ্যাতনাম! ব্যবসায়ী ঢাঁক! তাগ্যকুলের রাজা 
জাঁনকীনাথ রাঁয় সম্প্রতি ৯৩ বখসর বয়সে কলিকাতী।য় 
পরলোকগমন করিয়াছেন। তিনি মাত্র ১৩ বৎসর বয়সে 
ব্যবসায়ে প্রবৃত্ত হন এবং গত ৮* বৎসর কাল নানাগ্রকার 
শিল্প ও ব্যবসায়ে নিষুক্ত থাকিয়! বহু অর্থ উপার্জন করিয়া- 
ছিলেন। জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা রাজা ৬প্রীনাথ রায় ও কনিষ 
ভ্রাতা রায় বাহাদুর ৬সীতানাথ রায়ের সহিত একযোগে 
লবণ, চাউল ও পাটের ব্যবসা করিয়া তাহারা প্রথমে 
প্রতিপত্তি লাভ করেন। তাহাদের প্রতিঠিত ইষ্টবেঙ্গল 
রিভার হিম সাভিস লিমিটেড বাঙ্গালীর জাহাজের ব্যবসার 


+ পুরী পয ারারারগারারারাারারাঃানারিররারারারিনিরারজ থে 
রা ন্ 
€ 


(এ 


4৫8 


ামভিন্কী 





৫টি ৩২০ 





উৎকৃষ্ট নিদর্শন। কিছুদিন পূর্বের তাহারা প্রেমচাদ ভুট 
মিলস্‌ নামে পাঁটের কল প্রতিষ্ঠা করেন এবং সম্প্রতি 
ইউনাইটেড ইগ্ডাগ্রিয়াল ব্যাঙ্ক নামে একটি ব্যাঙ্কও তাহারা 
প্রতিষ্ঠা করিয়াছেন। শ্বেতাঙ্গ ব্যবসায়ীদের সহিত 
প্রতিযোগিতার জন্য রাজা হৃবীকেশ লাহা প্রভৃতির সহিত 
রায়ের! যে “বেঙ্গল ন্যাঁশানাল চেথ্ার অফ কমাস” প্রতিষ্টা 





রাজা জানকীনাথ রায় 


করিয়াছিলেন, আঁজ তাহা দেশীয় ব্যবসায়ীদের স্বার্থরক্ষার 
প্রধান কেন্দ্রে পরিণত হইয়াছে। রাঁজা জানকীনাথের 
তিন পুত্রের মধ্যে দুইজন যোগেন্ত্রনাথ ও নরেজ্জনাথ 
পূর্বেই পরলোকগমন করিয়াছেন। আমর! তাহার 
শোঁকমস্তপ্ত পরিবারবর্গকে মমব্দেন। জাপন করিতেছি । 


এর ৫ 


৭ ৬ 





শ্রীক্ষেত্রনাথ রায় 


ন্লপভি ট্রি ০সমিক্ষাইনাল্েন & প্রতিবারই ভারতের ক্রিকেটে নূতন নূতন রেকর্ড স্থাপন 
রা £_*৯৮ করেছে । ইতিপূর্বে কোন প্রদেশ ব্যাটিংয়ে প্রতি ম্যাঁচে 

উ এরপ ক্রমোন্নতি দেখাতে পারেনি আর পারবে কলে মনেও 
স্তর ভারত £৪৪২ হয় না। অথচ টামে একটিও টেষ্ট খেলোয়াড় নেই। 
মহারাষ্ট্র ৩৫৬ রানে জয়ী হঃয়েছে। দলের একমাত্র প্রবীণ খেলোয়াড় দেওধর ৫০ বৎসর বয়সেও 


রণজি ট্রপি সেমিফাইনালে মহারাষ্ট্র উত্তর ভারতের এখনে তরুণের মতই শক্তি রাখেন। তাঁর অধিনায়কত্ের 
কাছে বিপুল রানে জয়ী হয়েছে। শুধু সেমিফাইনালেই উচ্ছুসিত প্রশংসা না ক'রে থাকা যায় লা। অন্ততঃ পাঁচটি 





ইন্টার কলেন্গ ক্রিকেট লীগ বিজয়ী বিস্তাসাগর কলেজ, টাম ফটো-_জে কে সান্ডাল 


নয় এবারের রণজি টফির প্রতি ম্যাচেই মহারাষ্ট্রের বিপুল প্রথম শ্রেণীর ব্যাটসম্যান এদের টীমে আছেন ধীর 
রানসংখ্যা অপর, পক্ষের খেলাকে ম্লান করেছে এবং প্রত্যেকেই অল-ইতিয়! টীমে স্থান পাবার যোগ্য । একটি 


€৩২ 


চৈত্র--১৬৪৭ ] 


প্রদেশের পক্ষে এটি যে ফত বড় গৌরবের কথা তা সকল 
ক্রীড়ামোদীই জানেন। 

উত্তর ভারতের সঙ্গে খেলায় মহারাষ্ী টসে জিতে 
প্রথমে ব্যাট করে এবং ৭৯৮ রান ক'রে সকলে আউট 





প্রফেনার দেওধর 


হয়। প্রথম দিনের খেলায় মহারস্্র ৪ উইকেটে ২৭৭ রান 
তোলে। তরুণ খেলোয়াড় ভাঁজেকাঁর ১২০ রান করে নট 
আউট থাফেন। শত রান কবতে তার সময় লেগেছিলে। 


শখশাঞুতশা 


স্দ 
প্রতিবারই বেশ তাল হয়। এবারও . প্রথম কাজা 
পড়েছে ১৫৮ রানে । 

দ্বিতীয় দিনের খেলায় ভাজেকার আর কোন রি 
না করেই আউট হয়ে গেছেন। ক্যাপ্টেন দেওধর থেলার 
যোগদান করে, তারা অভাব, বুঝতে দেন নি। লাঞ্চের 
সময় মহারাষ্ট্রের ৫ উইকেটে ৩০৯ রান হয়েছে । দেওধর 
নট আউট আছে ৫২ ক'রে। তিনি প্ন্লিপে একটা হ্থুযোগ 
দিয়েছিলেন। ক্যাঁচট! অবশ্ঠ বেশ শক্ত ছিলো । 

লাঞ্চের পর থেলা সুরু হল রাঁনও বেশ ভ্রত উঠছে? 
২০৪. মিনিট খেলে দেওধর তাঁর নিজন্ব শত রান পূর্ণ 
ক'রলেন। তেরোটা বাউগ্ডারী ক'রেছেন। বেশীর 
ভাগই হুক ও ড্রাইভ করে । চায়ের সময় ৬ উনিও 
৫২৫ রান হয়েছে । 

৬০১ রানের মাথায় গোঁখলে তাঁর নিজন্ক ৭৫ বান 
কঃরে আউট হলেন। দিনের শেষে ৭ উইকেটে ৬১২ রান 
উঠলো । দেওধর ও যাঁদব বথাক্রমে ১৬৪ ও-৬ বাঁ ক'রে 
নট আউট রইলেন। 

তৃতীত্ব দিনের খেলায় মহারাষ্্রী সব উইকেট হানি 
৭৯৮ রাঁন তুললে । ভারতবর্ষের রণজি এ্ুফির তথা গ্রথম 





ইন্টার কলেঙ্গ ক্রিকেট লীগের ফাইনালে পরাজিত প্রেলিডেন্সি কলেজ টীম 


২৪৫ মিনিট। তিনি উইকেটের চতুর্দিকে খুব চমতকার 
ভাঁবৈ পিটিয়ে খেলেছেন। তার ফুট-ওয়ার্ক বেশ ভাল। 
খেলায় “চার, ..ছিলো ১৫টা। মহারাষ্ট্ররে ওপনিং 


ফটো-_সরকার ডিও - 
শ্রেণীর খেলায় ইহাই সর্বেচ্চ রান পূর্বে মহারাষ্ট্র বোগাপ্েকজ 
বিরুদ্ধে ৬৭৫ রান ক'রে রেকর্ড কবে ছিলো । দেওধর 
মাত্র.চার রানের জন্ত ডবল সেঞ্চুরী করতে পেলেন, না। 


6২55 ভ্াবভবশ্র [ ২৮শ বর্ষ”--২য় খণ্ড ৪র্থ সংখ্য। 





তিনি সাড়ে ছঘণ্টা থেলে উক্ত রান সংখ্যা তুলেছেন। থেকে তিনি সহযোগিতা পাননি। সরীফের সহযোগিতায় 
বাউগ্ডারী ছিলো! ২৫টা। এছাড়া যাদব “নাইস্থম্যান গিয়ে ৫ম উই.কটে রান উঠেছিলো ২১৭। রামপ্রকাশ নির্ভীক- 
১১৫ রান ক'রে অন্ভুত কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। মাত্র চারজন ভাবে উইকেটের চতুদ্দিকে সমানভাবে পিটিয়ে থেলে 
খেলোয়াড় ছাড়া মহারাষ্ট্রের প্রত্যেক ব্যাটসম্যানের রান গেছেন। কোন বোলারই তাঁর ভীতি উৎপাদন করতে 
খ্যা ৬০এর উপর, ফলে 
তাদের পাচটি জুটি শতাধিক 
রান করেছেন। দেওধর 
পর পর তিনটি এরূপ জুটির 
সহযোগিতা করেছিলেন । 
ব্যাটংএর এত চমৎকার 
রেকর্ড সচরাচর দেখা যায় 
না। বান এত বেশী উঠলেও 
উত্তর ভারতের ফিল্ডিং বেশ 
উচ্চ শ্রেণীর হ/য়েছে। 

উত্তর ভারতের ৪ উইকেটে 
১৪৪ রান হবার পর সেদিনের 
মত খেলা শেষ হ'ল। রাম- 
প্রকাশ ও সরীফ যথাক্রমে 
৬৯ ও ৬৬ রাঁন ক'রে নট 
আঁউট রইলেন। 

শেষ দিনের খেল! উত্তর 
ভারতের ৪৪২ রানে ইনিংস 
শেষ হাল। সরীফ ১১৮ রান 
ক'রে আউট হ/'য়েছেন। 
সময় লেগেছিলো ৩১৩ মিনিট 
আর বাষ্টগারী ছিলো ১২ট1। 
মহারাষ্ট্র বিপুল রানে জয়ী 
হলেও এই ম্যাচে ব্যক্তিগত . 
কূতিত্ব সবচেয়ে বেশী দাবী 
ক'রতে পারেন বিজিত 
ক্যাপ্টেন রাঁমপ্রকাশ। তাঁর 
টীমের রান সংখ্যা বখন মাত্র 
৩ তখন তিনি খেলায় যোগ- 
দান করেছিলেন আর খন কুচবিহার কাপের ফাইনালে পরান্গিত ট্পিক্যাল স্কুল ফটো-_জে কে সাহ্যাল 
খেল. শেষ হ'ল তখন পর্যন্ত তিনি নট আউট ২*৯। পারেননি। তাঁর খেলা অধিনায়কের মতই হয়েছে৷ 
একমাত্র সরীফ ছাড়া দলের আর কোন খেলোয়াড়ের কাছ সরবাতে ৬৯ রানে চারটে উইকেট পেয়েছেন। 





চৈত্র--১৩৪৭ ] 


মাভ্রাজ ৫২৭১ ও ১৫৮ 
ইউ পি$--২৫৫ ও ১৪৯ 


মান্রাজ মাত্র ২৫ রানে জয়ী হয়েছে। 

রণজি ট্রফির অপরদিকের সেমি ফাইনালে মাদ্রাজ ইউ 
পিকে মাত্র ২৫ রানে পরাজিত ক'রে ফাইনালে উঠেছে। 
মাদ্রাজ প্রথমে ব্যাট ক'রে ২৭১ রান করে। গোঁপাঁলম 
১০১ রান ক'রে নট আউট রইলেন আর রামসিং মাত্র 





গে!পালম 


৯ রানের জন্ত সেঞচুরী ক'রতে পারলেন না। এই ছুজন 
খেলোয়াড় না থাকলে মাদ্রাজজের অবস্থা খুবই খারাপ হ'ত। 
৮ উইকেটে যখন ২০০ রান হয়েছে তখন গোপালমের 
রান সংখ্যা মাত্র ৪৬। বাকী ৭১ রানের ভেতর 
৫৫ রান তিনিই ক'রেছেন। আফতাব ৯৬ রাঁনে পাঁচটা 
উইকেট পেয়েছেন। 

ইউ পির প্রথম ইনিংদ শেষ হয়েছে ২৫৫ রানে। 
ক্যাপ্টেন গ্রালিয়া একাই ১১০ করেছেন এবং শেষ পর্য্যন্ত 
আউট হননি। তিনি আড়াই ঘণ্টার উপর ব্যাট 
করেছিলেন চার ছিলো ৬টা। এছাড়া গুরুদাচরের ৪৪ 
রানও উল্লেখযোগ্য । রঙ্গচারী ৭৫ রানে পাচটা উইকেট 
পেয়েছেন। ৃ 

আলেকজাগারের বলে মাদ্রাজের কোন ব্যাটসমাঁনই 
দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে পারেন নি। তাঁর বল অদ্ভুত রকম 
ভাল হয়েছিলো । ২১ ওভার বল 'দিয়ে মাত্র ২৯ রানে 
তিনি ৭ট! উইকেট পেয়েছেন। মাদ্রাজের দ্বিতীয় ইনিংস 


খ্থেরশাধুকল! 


৫২9৫ 


শেষ হয়েছে ১৫৮ রানে। এত কম রানে তাদের 
নামিয়ে দিয়েও ইউ পি চতুর্থ ইনিংসের মাঠে মোটেই 
সুবিধা করতে পারেনি। তাদেরও ইনিংস শেষ হয়েছে 
খুব অল্প রানে। মাত্র ১৪৯। ইউ পি আর একটু 
ধীরভাবে খেললে হয় তে! জিততে. পাঁরতো৷। ভেম্কটে সন 
ও রঙ্গচারী উভয়ে যথাক্রমে ২৩ ও ৩১ রানে ৩টে ক'রে 
উইকেট পেয়েছেন। * 
মাদ্রাজ ফাইনাল খেলবে মহারাষ্ট্রের সঙ্গে। ব্যাটিংয়ে 
মহারাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের তুলনাই চলে না। তবে মাদ্রাজের 
বোলিং ভাল এবং সেই স্ববিধাতেই যদি তাঁরা কিছু করতে 


পারে। আরও একটি ম্থবিধা অবশ্য মাদ্রাজ পাচ্ছে। 
তারা নিজেদের মাঠে খেলবে। এই স্বিধাটি মোটেই 
কম নয়। 

লঞক্তি ট্রক্ষি ৪ 


পশ্চিম ভারত ষ্টেট £_৪৫৯ 
মহারাষ্ট্র --:৪৬০ (৩ উইকেট ) 


মহারাষ্ গুথম ইনিংসে অগ্রগামী থাকার ফলে জয়ী 
হ'য়েছে। 

রণজিট্রফির ওয়েষ্ট জোন ফাঁইনাঁলে মহারাষ্ট্র পশ্চিম 
ভারত ষ্টেট টীমকে অন্ভুতভাবে পরাজিত ক/রেছে। 
পশ্চিমভারত ্েঁট প্রথমে ব্যাট ক'রে ৩৪৪ তোলে। 
সর্বোচ্চ রান করেন সৈয়দ আমে? নট আউট ৮*। 
মানভাদারের নবাবের ৬২ এবং আকবর খাঁর ৫৭ রানও 
উল্লেখযোগ্য । মহারাষ্ট্র বিরুদ্ধে এতবেশী রান তোলার 
ফলে পশ্চিমভাঁরত ষ্টেটের সমর্থকর! তাদের জয়লাভ সম্বন্ধে 
বোধ হয় নিশ্চিত ছিলেন। নিরপেক্ষ ব্যক্তিরাও মহারা 
যে সহজে জয়লাভ কণ্রতে পারবে নিশ্চয় একথা ভাবতেও 
পারেন নি। মহারাষ্ট্র অস্ভুত ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখিয়ে 
সকলকে চমত্কৃত ক'রেছে। চতুর্থ উইকেটে ৩৪২ রান 
উঠবার পরও কোন ব্যাটসম্যান আউট হন নি। সোহনী 
ক'রেছেন ২১৪ আর হাজারে ১৬৪। সোহনী বোথ্বাই ও 
গুজরাটের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরী করেছিলেন । ইতিপূর্ক্রে কোন 
খেলোয়াড় পরপর তিনবার শতাধিক রাঁন ক'রতে 
পারেনি। | 


৫৩৩৬ 


পিক টরক্ষি অভিযোপিভ্ঞাজ ব্রা! 
ডবল স্েখুগুলী কুল্লেন্ন ৪ 
৩১৬ রি এস হাঁজারী (মহারাস্র ) 
১৯৩৯-৪০ সালে পুণাতে বরোদার বিরুদ্ধে । 
২৪৬ -_প্রেফেসাঁর দেওধর ( মহারা্ত্ী ) 
১৯৪০-৪১ সালে পুণাঁতে বোদ্বাইয়ের বিরুদ্ধে । 
*'২২২-_-ক্যাঁপটেন ওয়াঁজীর আলী ! দক্ষিণ পঞ্জাব) 
১৯৩৯-৩৯ সালে কলকাতায় বাঙ্গল! প্রদেশের বিরুদ্ধে। 
* ২১৮--এস ডবলউ সোহনী ( মহারাস্তী) 
১৯৪০-৪১ সালে পুণাতে পশ্চিম ভারত স্টেটের বিরুদ্ধে । 
* ২০৯__রাঁমপ্রকাশ (উত্তর ভারত) ১৯৪০-৪১ সালে 
পুণাতে মহারাষ্ট্রের বিরুদ্ধে । 
২০৩-__-জে নওমল (সিন্ধু) ১৯৩৮-০৯ সালে নওনগরে 
নওনগরের বিরুদ্ধে । 
২০২__রঙ্গনেকাঁর (বোন্বাই ) ১৯৪০-৪১ সালে পুণাঁতে 
মহারাষ্ট্রের বিরুদ্ধে | 
* তারকা চিহ্ৃগুলি নট আউট রান নির্দেশ করে। 
ইপ্টাল্ল জুল স্পোডউস 
ইন্টার স্কুল স্পোর্টসের ত্রয়োদশ বাঁধিক অন্তষ্ঠান শেষ 
হয়েছে । 
ব্যক্তিগত চ্যাম্পিয়ানপীপ, ( সিনিয়ার ) এ হাষেদ ( খড়াপুর )-২৫ 
। »ইক্টারমিডিয়েট--জিতেন দাস (ফরিদপুর )-১৬ পয়েন্টস 
জুবিয়ার- নিতাই ঘোষ ( ছুগলী ) ২৪ পয়ে্ট 
স্কুল-চ্যাম্পিয়নসীপু £ (১) বি এন আর ইগুয়ান এইচ ই স্কুল 
(খড়াপুর) ৮২ পয়েন্টস (২) ঈশ্বরগঞ্ভ হাই স্কুল ( ময়মনসিং ) ২৪ পড়েপ্টন 
এসোসিয়েশন চাম্পিয়ানসীপ £ £ (১) খড়গপুর ১৭৫ পয়েন্টন (২) 
কলিকাতর ৬: পয়েন্টদ 


, অঙ্গ রাও একটিডিটিস ; কলিকাতা--১৬ পয়েন্টস 


ভালান্র ভরি্কেট হ্যা £ 

বেঙ্গল জিমখান! £--৩৪১ ও ২১৪ 

রেল গভর্ণরের দল 2৪১৮ 
ওয়ার ফণ্ডে সাহায্যের জঙত টাকায় বেঙ্গল জিমধানার 
সঙ্গ বেঙ্গল গভর্ণরের একাদশের একটি ক্রিকেট ম্যাচের 
ব্যবস্থা হ্য়। খেলাটি অনীমাং ংদিতভাবে শেষ হয়েছে। 
গতর মের ্াপ্টে ছিলেন মেজর নাড়ু এছাড়া 
এস ব্যানাঙ্জি, মানকাঁদ নওমল ও নাজির আলির মত 


ভাক্রভবখ 


[ ২৮শ বর্--২য় খণ্ড--ওর্থ সংখ্যা 


অল-ইত্ডিয়া খেলোয়াড় ও উক্ত দলে খেলেছিলেন। বাঁকী 
ক'লকাঁতা ও ঢাকার কয়েকজন তরুণ খেলোয়াড় দিয়ে অপর 





মেজর নাইডু 


দলটি গণ্ঠু্ত হয়েছিলে। ৷ বেঙ্গল জিমখানার পক্ষে নির্মল, 
পিডিদত্ত ও এ দেব মনোনীত হয়েছিলেন কিন্তু খেলতে 





বেঙ্গল এখলেটিক স্পৌর্টসের ১৫** মিটার সাইকেল য়েস 
বিজয়িনী কুমারী শোতা গাঙ্গুলী ফটো-_সরকার ইডি 


পারেননি। তাঁতে টাম একটু দুর্বল. হয়ে পড়ে। পি?" 


দত্তের স্থান এস দত্ত বেশ ভাল, খেলেছেন। ১২ জন ক 





বাদবপুর খঙ্্লা হানপাঠ।লে রোগাদদর বাদিক খেলনা €ৎসবে সভাপতি সার ্পেকনাথ মএকার । মধ্যস্থলে ) ও 
ডাক্তার কুমুদশঙ্কর রায (বমে) 





যাদবপুর যা হাসপাতালের রে।গাদেপ খেলার একট পৃষ্ঠ_ (বাম হইন্ডে দ্বিতীয় ) স্কধাল সেন প্রথম হউঠাছেন 


রি 





কলিকাতা বেহালায় ডায়মগ্হারবার রোডে ব্রতাচারী গ্রামে ব্রতচারীদের বাধিক উৎসব-_সভীপতি কাশিমবাজারের মহারাজা 


হান আখ আটপাতগাজলা ৩০ কভিাতা ধচী ও১ব,সনারহা রি শী লর্িহার জা 





বোম্বায়ে বেঙ্গল ক্লাবের খেল! উৎসবে সমবেত প্রবা্ী বাঙ্গালীবৃন্দ__-বোধাহ হাইকোটের বিচারপতি 
শ্রীঘুক্ত ক্ষিতীশচন্দ্র সেন পুরক্ষার বিতরণ করিতেছেন 





এলাহ্থাবাদে কমল! নেহের, প্রন্ুতি হাসপাতাল--পণ্ডিত জহরল।ল নেতের'র পরলে।কগতা পত্বীর শ্মৃঠিরক্ষার্থ নিম্মিত 


চৈত্র_-১৩৪৭ ] 


বর 


খেলোয়াড় নিয়ে যখন টাম গঠিত তখন এস দত্তের মত 
খেলোয়াড়ের এমনিতেই স্থান পাওয়া উচিত ছিলে! । 
বিশেষত এই ম্যাচের কিছুদিন আগে দত্ত জ্যাকসনকাপে 
যেভাবে থেল! দেখিয়েছেন । 

বেঙ্গল জিমথানার ক্যাপ্টেন কে বনু টসে জিতে ব্যাট 
করতে পাঠালেন । দিনের শেষে সব উইকেট হারিয়ে 
রান সংখ্যা উঠলো ৩২৯। 
কাত্তিক নিজে। তিনি নিখুত ও চমতকার ভাবে 
উইকেটের চারিদিকে পিটিয়ে থেলে দেখিয়েছেন যে, মেজর 
নাইড়ু, এস ব্যানার্জি, মাঁনকাঁদ, নওমল ও নাজির আলির 





-স্্্ - স্ব 








ভারত স্ত্রী শিক্ষা সদনের বাঁলিকাগণ কর্তৃক পিরামিড দৃষ্ঠ 


মত অল-ইগ্ডিয়। খেলোয়াড় নি'খুতভাবে বল ফেললেও রান 
তোলা! মোটেই অসম্ভব নয়। তিনি এইরকম নির্ভীকভাবে 
খেলার জগ্যই দলের অন্ঠান্ত তরুণ খেলোয়াড়রাঁও বেশী 
সহজে রান তুলতে সক্ষম হয়েছেন। এস দত, রামচন্দ্র 
ও টি ভট্টাচার্যের যথাক্রমে ৪৭ (নট আউট), ৩৯ ও 
৩২ রান উল্লেখযোগ্য । জব্বর হতাশ করেছেন। বেঙ্গল 
জিমখানার রান সংখ্য। বেশ সম্মানজনক । মানকাদ ৯৯ 
বাঁনে ৪টে উইকেট পেয়েছেন। 

বেঙ্গল গভর্ণরের টামের প্রথম ইনিংস শেষ হয় ৪১৮ রানে। 


ছেলাঞুলা 





দলের সর্ববোচ্য রান করেছেন" 


৫২৩৩ 





স্থচনা খুব ভাল হ,য়েছে। ওপনিং ব্যাটস এস ব্যানার্জি ও 
মাঁনকদ আউট হয়েছেন যথাক্রমে ৭৬ ও ৬৪ ক/রে। এবং 
এর পরই কিন্তু ভাঙ্গন সুরু হয়। শেষে নাইডু নিজে এসে 
খেলার গতি ঘুরিয়ে দিলেন। নাইড়ুর ব্যাটিং সকলকে 
ম্লান ক'রে দিয়েছে । অনেকদিন পরে নাইডু আবার এত 
চমৎকার খেললেন, বোলারদের সকলকেই সমানভাবে 
পিটিয়েছেন। জে এন ব্যানাঙ্জি এক ওভারে রান 
দিয়েছেন ২৪। ৩টে ৬ আর একটা চার ছিলো। শতরাঁন 
পূর্ণ হবার পর তিনি নিজস্ব ভঙ্গীতে অত্যন্ত সহজভাবে 
বোলারদের পিটিয়ে গিয়েছেন। তাঁর ১৫৬ রান কণ্মূতে 
সময় লেগেছিলো ১৭০ মিনিট, 
প্র বানের মাথায় তিনি এস 
দত্তের বলে রামচন্ত্রের হাতে 
ধরা দেন। তার খেলায় “চার; 
ছিলো তেরোটা আর “ছয় 
নটা। কমল ৯০ রানে ছটা 
উইকেট পেষে বিশেষ কৃতিত্ব 
দেখিয়েছেন । 

৭৭ রাঁনে পিছিয়ে থেকে 
বেঙ্গল জিমখানা দ্বিতীয় 
ইনিংস স্থুরু করলে এবং ২১৪ 
রানে ইনিংস শেষ হবার সঙ্গে 
সঙ্গে খেলাও শেষ হ'ল। এবার 
দলের সর্ববোচ্চ রাঁন করলেন 
এ দাস ৫০। 

এছাড়া গাঙ্গুণী, কে বোস 
ও কে ভট্টাচার্য ব্যাটিংয়ে 





ফটো-_কাঞ্চন মুখাঞজি 
নৈপুণ্য দেখিয়েছেন। নওমলের বোলিং খুব কার্যকরী 
হয়েছিলো । তিনি ৭৭ রানে ৯টা উইকেট পেয়েছেন। 
সময়াভাবে খেলা অমীমাংসিতভাবে শেষ হ'ল। 


ত্যাকসন্ন কাপ ক্কাউনাজ & 


কালীঘাট £_-১৫৮ ও ৩৫০ 

ই বি আর ম্যানসন ১২৮৬ ও ১৫৫ 

কাঁলীঘাট ৬৭ রানে ই বি আর ম্যানসূন ইনষ্টিটিউটকে 
পরাজিত ক'রে ঢাঁকাঁর বিখ্যাত জ্যাকসন কাপ বিজয়ী 


৬ ৬ 


৮ স্ব খন্ড স্ক্রল স্পা -স্্া্্ 


হয়েছে। ই বি আর ম্যানসন গতবার উক্ত কাপ বিজয়ী 
হঃয়েছিলো। কালীঘাট টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করে 
এবং তাদের ইনিংস শেষ হয় মাত্র ১৫৮ রাঁনে। ফল্যাঁণ 
বস্গু একাই ৮২ রান করেন। টি ভট্টাচার্য ৩৮ রানে 
টে উইকেট পাঁন। . 

ইবি আর প্রথম ইনিংসে ২৮৬ রান তোলে, জব্বর 
১১৯ রান করেন; চার ছিলো! ১১টা আঁর একটা ছয়। 
এছাড়া জে ব্যানার্জি, দিলীপ সোম ও টি ভট্টাচার্যের 
যথাক্রমে ৪৬, ৪৭ ও ৩৫ রানও উল্লেখযোগ্য । এস দত্ত 
১২৩ রানে ৭টা উইকেট পেয়েছেন । 

কালীঘাঁট ১২৮ রান পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস স্থরু 


৮০ ০৯ লস পানা? নত 


মহিলাদের ইন্টার কলেজ স্পোর্টসের টীম চ্যাম্পিয়াননীপ বিজয়িনী ভিক্টোরিয়া! ইনষ্টিটিউটের ছাক্রিগণ 


করে'এবং খুব দৃঢ়তার সঙ্গে খেলে ৩৫০ রাঁন তোলে । পিডি 
দত্ত খুব নির্ভীকভাবে থেলে ১০৯ রাঁন করেন তাঁর খেলায় 
বাঁউগ্তারী ছিলো ১৭টা। দত্ত একজন ফাঁষ্টবোলার হ'লেও 
তাঁর ব্যাটিংয়ের যথেষ্ট নৈপুণা আছে বিশেষতঃ এবছর 
অনেকদিন আগেই সহম্বাধিক রাঁন পূর্ণ ক'রে যথেই 
রুতিত্ব দেখিয়েছেন। কল্যাণ বন্্র দ্বিতীয় ইনিংসেও বেশ 
ভাল খেলে ৬৩ রান ক'রেছেন। 

২২৩ রাঁন তুলতে পারলেই জয় হবে। ইবি আর 
ব্যাটিং স্থুরু ক'বুলো কিন্তু চতুর্থ ইনিংসের উইকেটে একমাত্র 
দিলীপ সোম ছাড়া আর কোন ব্যাটস্ম্যানই সুবিধা করতে 


ভ্ান্লসভন্বশ্র 





'কলেজ স্পোর্টস শেষ হয়েছে। 


| ২৮শ বর্ধ_২য় খণ্ড__৪র্থ সংখ্যা 





পারলেন না। ই বিআরের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হ'ল মাত্র 
১৫৫ রানে। রামচন্দ্র ও এস দত্ত উভয়ে ৫টা ক'রে 
উইকেট পেলেন যথাক্রমে ২৮ ও ৬৭ রানে । 


হিলাতেকল্র আজ্ঞঃ ক্রলেজ্ক ০স্পাউসন & 


কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ষষ্ঠ বাধিক আন্তঃ 
আমাদের দেশের স্কুল 
কলেজের মেয়ের1 যে শরীর গঠনের জন্য খেলাধুলায় বিশেষ 
দৃষ্টি দিয়েছেন তার কিছুটা পরিচয় মেয়েদের বিভিন্ন 
স্পোর্টসের মধ্যে পাঁওয়৷ যাঁয়। স্কুল কলেগের ছাত্র ছাত্রীদের 
স্বাস্থ্য ক্রমশই অবনতির দ্িকে অগ্রসর হয়েছে; জাতীয় 





ফটো-_বি বি মৈত্র 


জীবনের এই সঙ্কট অবস্থায় ছাত্রদের অটুট স্বাস্থ্য সঞ্চয়ের 
যেমন প্রয়োজন মেয়েদেরও তেমনি । বর্তমান সভ্যতার 
ক্রমবিস্তারে আমাদের জাতীয় জীবনের ধারা অনেকথাঁনি 
পরিবর্তন হয়েছে। এ পরিবর্তন ম্বাভাবিক। সেই 
পরিবর্তনের বিবর্তে পড়ে আমরা আমাদের স্বাস্থ্য হারাতে 
বসেছি । বর্তমান শিক্ষাধারার ভারে আজ দুর্বল 
স্বাস্থ্য নিয়ে জগতের সকল জাতির কাছে আমর! ক্রমশই 
নানা দিক থেকে পিছনে পড়ছি । পল্লীজীবনে মেয়ে 
পুরুষ যতথানি উন্মুক্ত আলোবাতাসের অধিকারী হয় 
নগরবাসী ততথানি সুযোগ পাঁয় না। স্বাস্থ্য রক্ষার পক্ষে 


চৈত্র-১৩৪৭] 








এই দুইয়ের যে অধিক প্রয়োজন সে সম্বন্ধে আমাদের জ্ঞান 
পরিপূর্ণ থাকলেও আমর! সহরে থেকে এদের ভোগ করতে 
পারি না। 

স্থল কলেজের ছাত্রীরা ছাত্রদের মতই ক্রমশই ক্ষীণজীবী 
হয়ে পড়ছে । সুখের বিষয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষগণ 
শিক্ষাদানের অবসরে ছাত্রছাত্রীদের খেলাধূলার ব্যবস্থা দিয়ে 
স্বাস্থ্যরক্ষা পালনের ব্যবস্থা করেছেন। এ বিষয়ে বিশ্ব- 
বিছ্যালয়েরও যথেষ্ট কর্তব্য আছে বলে আমরা মনে করি। 
বিশ্ববিচ্যালয়ের 50001765 ৮/০10212 00101701666 নামে 
একটি 'প্রতিষ্ঠীনের নাম আমরা কাগজে দেখে আসছি । 

বিশ্ববিষ্ভালয়ের বর্তৃপক্ষগণ ইচ্ছা করলে এই প্রতিষ্ঠানের 


খ্োঞ্ুকসা 





০৫০ 


বর্তমান বংসরের বাধিক খেলাধুলায় স্কটিশচাঁচ্চ কলেজের 
ছাত্রী এক! ৩৬ পয়েপ্ট লাভ করে ব্যক্তিগত চ্যাম্পিয়ানসীপ 
লাভ করেছেন। ভিক্টোরিয়া ইনষ্টিটিউশন ৭৩ পয়েণ্ট পেয়ে 
কলেজ চ্যাম্পিয়ানসীপ পেয়েছে । প্রতিযোগিতায় ছাত্রীদের 
মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দিতা চলে, সকলের মধ্যে বেশ উদ্দীপনার 
পরিচয় পায়! যায়। | 








স্পা লম্ম তউন্নিস ল্যান্পিআান্মসীশ £ 


পাঞ্জাব লন টেনিস চ্যাম্পিয়ানসীপে এস এল আর 
সোহানী পুরুষদের সিঙ্গলস, ডবলস এবং মিক্সড ডবলসে 
বিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন । 





মহিলাদের ইন্টার কলেজ স্পে্টসের রীলে রেস বিজয়িনী বেথুন কলেজের ছাত্রিগণ 


সাহায্যে ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থারক্ষ! ব্যাপারে বহু সংকা্য 
করতে পারেন। ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্যরক্ষ1! বিষয়ে বিশ্ব- 
বিদ্যালয়ের যে একটা বড় কর্তব্য রয়েছে এটা আমরা 
স্বীকার করি; কিন্তু অপরের কর্তব্পরায়ণতার উপর নির্ভর 
ক'রে আমাদের ছাত্রছাত্রীর! যেন নিশ্েষ্ট হয়ে না থাকেন। 
স্বাস্থ্যরক্ষা করতে হলে শরীরধারণকারীরও একটা কর্তব্য 
আছে-_সে কর্তব্য অবহেলার নয়, আমর! সেই কর্তব্য ব্রতী 
হতেই তাদের অনুরোধ করি ; আর আমাদের বিশ্বাস বুজনের 
সাধনা এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন প্রতিষ্ঠানই নিব্বিকার 
ভাঁবে দাড়িয়ে থাকবে না। 


ফটো--তারক দাস 

ফলাফল £ 

পুরুষদের সিঙ্গলসে সোহান্টী ৬২, ৬-৩ গেমে নরেন্- 
নাথকে পরাজিত করেন। 

মহিলাদের সিঙ্গলসে মিসেস মাসি ৬-২১ ৬২ গেমে 
মিসেস হাউলালকে পরাজিত করেছেন। 

পুরুষদের ডব্লম ফাইনালে সোহানী ও সোনী ৬-১, 
৬-১১ ৬-৩ গেমে সভারা ও সফিকে পরাম্ত করেছেন। 

মহিলাদের ডবলস ফাইনালে মিসেস মাসি ও মিসেস 
ম্পেনসার ৬৩১ ৬-২ গেমে মিসেস কোৌশেন ও কারেকে 
পরাজিত করেন। | 


৫5৩ 


মিক্সড ডবলসে সোহানী ও মিসেস মাসি ৬-৪১ ৬-০ 
গেমে সৌনী ও কারেকে পরাজিত করেন। 

প্রবীণদের ডবলসে কৃষ্ণপ্রসাঁদ ও ক্রুক এডযার্ডস ৬-৪, 
৬-২ গেমে ম্লীম ও ঘুলারকে পরাস্ত করেছেন। 


শ্রাদেম্ণিক স্পোডিস £ 

বেঙ্গল প্রভিন্সিয়েল স্পোর্টসের অষ্টাদশ বাধিক অনুষ্ঠান 
শেষ হয়েছে। আই এ ক্যাম্পের এস কে সিংহ ৪৮ পয়েন্ট 
পেয়ে ব্যক্তিগত চ্যাম্পিয়ানসীপ পেয়েছেন । টীম চ্যাম্পিয়ান- 





ভাত 





[ ২৮শ বর্--২র খণ্ড--৪র্থ সংখ্যা 


স্ব ব্হপ সহ সময স্হ স্্য ব্য স্থল স্্ পপ ০ 


সীপ পেয়েছে আই এ ক্যাম্প ১৩৩ পয়েপ্ট পেয়ে। 
মহিলাদের বিভাগে মিস বি বিক ৩১ পয়েণ্টে ব্যক্তিগত 








এস কে সিংহ বেঙ্গল প্রভিন্সিয়েল ম্পোর্টসের 
৫*** মিটার ওয়াকিংএ নুতন 
রেকর্ড করেছেন 


চ্যাম্পিয়ানসীপ লাভ করেন। ক্যালকাটা ওয়েট ক্লাব 
১৩৭ পয়েণ্টে মহিলাদের টীম চ্যাম্পিয়ানসীপ পায়। 

৫০০ মিটার ওয়াকিং রেস এস কে সিংহ ২৫ মিঃ 
৫৬৩1৫ সেকেণ্ডে শেষ কবে ভারতীয় ২৭ মি ১৮ সেকেণ্ডের 
রেকর্ড ভঙ্গ করেন। কিন্তু অলিম্পিকের কর্মকর্তারা এই 


ফটে1-বি বি মৈত্র 





মহিলাদের ইন্টার কলেজিয়েট স্পোর্টসের ব্যালেন্স রেস। কুমারী করুণ! গুহ (ভিক্টোরিয়া) প্রথম হ'ন 


কটে]--তারক দাস 


চৈত্র--১৩৪৭ ] ত্খেতশাঞুকনা | ৫৮5৯ 





স্্প ্ক্কলা্কিন্প স্পা কিনা স্কিল সাপ স্ফান্া স্থল সাল স্থ 


রেকর্ডকে সরকারী ভাবে ভারতীয় রেকর্ড বলে গ্রহণ করতে সাফল্য লাভ, ক'রে বর্তমানে একজন শ্রেষ্ঠ এখেলেটসের 
অস্বীকার করেছেন। তাদের ধারণ! সময় নিরূপণ ব্যাপারে সম্মান অর্জন করেছেন। 


উ-্টীল্লপ কুলে ৯৬ মাইল 


সাইইক্কেল্ লান্নন্ন। ৪ 
ইণ্টার কলেজ ১৬ মাইল সাইকেল চালনায় প্রেসিডেম্দিঃ 
স্কটিশ, আশুতোষ, সেপ্টজেভিয়াস+ সিটি ও সেপ্টপলস 


লে ১ টে 
তন রি এ ১5৭ 
8 5 





আশুতোষ কলেজের মহিল। বিভাগের স্পোর্টসে ব্যক্তিগত 
চ্যাম্পিয়ানসীপ বিজয়িনী কুমারী তপতী ভট্টাচার্য্য 

ফটে!__পান্নী সেন 
কোনবপ ক্রুটী আছে। উপস্থিত দর্শক এবং খেলোয়াড়রা 
অলিম্পিক কমিটির কর্মকর্তাদের এ বিচারে একমত হ'তে 
পারেন নি। ৪০০ মিটার দৌড় ৫১ সেকেণ্ডে শেষ করে 
এম ফেরোন বাঙ্গলার নৃতন রেকড স্থাপন করেছেন। তার 
বয়স মাত্র ১৯, এই মল্প বয়সেই আলোচ্য প্রতিযোগিতায় 





মিন বিবিক 
বেঙ্গল গ্রভিন্নিয়েল স্পে।ট'সের মহিলাদের বিভাগে ব্যক্তিগত 
্াম্পিয়ানসীপ পেয়েছেন ফটো-_কাঞ্চন মুখাজ্জি 
কলেজ থেকে মোট ছ'জন ছাত্র যোগদান করে। স্কটিসের 
ছাত্র নিতাইটাদ বসাক ৫১ মিঃ ২৯ সেকেণ্ডে নির্দিষ্ট পথ 
অতিক্রম ক'রে প্রথম হয়েছেন। 


দশ সের ভার বহনসহু দশ মাইল ওয়াকিং হেখলা এুভ্না্স ল্বিম্পিউ ব্যক্তির চ্তাম্ম € 


রেস বিজয়ী রবিন সরকার আর্লামলাই বিশ্ববিস্তালয়ের ভৃতপূর্ব্ব ভাইস-্যান্ালার 
একাধিক অনুষ্ঠানে বিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। স্যার এম আর এম আল্লামলাই চেটিয়ার আন্তঃবিশ্ববিদ্তালয় 
এছাড়। কলকাতায় অনুষ্ঠিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিশেষ স্পোর্টসের ছাত্রদের উৎসাহ দেবার জন্ত ১:৫০ টাকা দাঁন 





6৪২. ভ্ডান্সভ্ল্বশ্র [ ২৮শ বর্ষ-_২য় খণ্ড-৪র্থ সংখ্যা 


করেছেন। এ টাঁকা থেকে প্রতিবৎসর প্রতিযোগিতায় জয়পুরের ( উড়িস্যা) মহারাজ বিশ্বরমা দেও বন্ধ] ২১০০০ 
বিজয়ী দলকে একটি শীল্ড দান করবার ব্যবস্থা দেওয়া টাঁকা মূল্যের একটি শীল্ড দিয়েছেন । উক্ত শীন্ডটি ইণ্টার ভার- 
হয়েছে। পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় এ বৎসর উক্ত শীল্ড বিজয়ের সিটি টেনিস টুর্ণামেণ্টের বিজয়ী দলকে উপহার দেওয়া হবে। 
সম্মান প্রথম অজ্জন করেছে । এ বৎসর পাটনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম এই শীল্ভটি লাভ করেছেন। 


বিভিন্ন দেশের বিশিষ্ট মহিলা টেনিস খেলোয়াড় ঃ 





হেলেন জ্যাকব--আমেোরকার দুই নম্ঘর খেলোয়াড় 





* এনিট! লিজানা (চিলি) 
কোন'সেটে পর।জিত ন হয়ে ইউ এস এ সিঙ্গলদ বিজয়িনী হন এস ম্পার্কলিং জার্দাণি £ ফ্রান্স ও জার্মদীণ টাইটলস বিজয়িনী 


চৈত্র-_-১৩৪৭ ৭ ৫খজ্নাএুল ৮৪৩৬ 





এস হেনরোরত্ঠি এলিন মার্বেল 
১৩৩৭ সালের ইউএস এ কণ্ভার-কোর্ট বিজয়িনী আমেরিকার একনম্বর খেলোয়াড় 





নানসি ওয়ানি মিসেস সারহ! ফেবিয়ান, 
অষ্ট্রেলিয়ার ডবলস বিজয়িনী ইউ এস এ ভবলস বিজগ্িনী 


৮259 


তক! জুইস্ল্র ম্যান & 

পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মুষ্টি যোদ্ধা জো লুই, গম্‌ ডোরাঁজিওকে 
নক্‌ আউটে পরান্ত ক'রে পর্যায়ক্রমে চতুর্দশবার তার 
পৃথিবীব্যাপী সম্মান অক্ষুণ্ন রাথলেন। 
গান্মনোক্ল্প সাক্ষল্্য ৪ 

পেশাদার বন্িং টুর্ণামেন্টে ওরিয়াণ্ট চ্যাম্পিয়ান গাঁন- 
বোট জ্যাক সহজেই অল্‌ ইত্ডিয়া রেলওয়ে চ্যাম্পিয়ান 
ডানকান ছট্টারটনকে পরাজিত করেন। দশ রাউও 
লড়াইয়ের পর গানবোট পয়েন্টে জয়ী হ'ন। 
ইন্টীব্র ভ্ডাক্রনিডি হক্কি ৪ 

ইণ্টার ভাঁরসিটি হকি খেলার ফাইনালে লক্ষৌ ও 
এলাহাবাদ বিশ্ববিষ্ালয়ের থেলা চার বাঁর খেলানর পরও 
গোলশূন্ত প্” হওয়ায় অমীমাংসীত ভাবে খেলাটি শেষ 
করতে হয়েছে । 
উত্ুল্র ভ্াল্রত্ড ন্নিস ্যাম্পিল্ানসী্প £ 

পুরুষদের সিঙগলস ফাইনালে ডেনমার্কের ২নং খেলোয়াড় 
এফ বেকিভোও্ড ৭-৫+ ৬-২ গেমে সি বার্কারকে (বাঁঙ্গালোর) 
পরাজিত করেন। 

পুরুষদের ডবলসে এফ বেকিতোণ্ড ও জে টিউ ৬-৪ ৬-১ 
গেমে আর পণ্ডিত ও এন ভি লিমায়িকে পরাস্ত করেছেন । 


ভান্লজ্বম্ 


[ ২৮শ বধ--২য় খণ্ড--ধর্থ সংখ্যা 


মিক্সড ডবলসে এম কে হাজী ও এম সি বকজী ৬-৩ ৬-১ 
গেমে মিস এস উডব্রীজ ও এ আজীমকে পরাজিত করেন। 
ইপ্টাল্ল ক্ুলেকজিস্সেউ ৫গমস £ 
টেবল টেনিস ঃ 
ইণ্টার কলেজ টেবল টেনিসের ফাইনালে কলিকাতা 
ল” কলেজ, কারমাইকেল কলেজকে পরাঁজিত ক'রে এবার 
নিয়ে পর পর চারবার চ্যাম্পিয়ানসীপ লাভের সম্মান 
পেয়েছে । ল” কলেজের অধিনায়ক হিসাবে কমল ব্যানাঁজিকে 
টেবল টেনিসের টুফি প্রদান করা হয়। 
মহিলাদের ক্যারাম খেলার ফাইনালে আশুতোষ 
কলেজের অনিল সেন বিজয়িনী হয়েছেন । 
টেবল টেনিসের ( মহিলাদের ) ফাইনালে বিজয়িনী 
হয়েছেন আশ্ততোষ কলেজের নির্মল! পুরী । 
আই এক এ £ 
আই এফ এ-র বাধিক সভায় নিয়লিখিত ব্যক্তিগণ 
আগামী বসরের জন্য বিভিন্ন পদে নির্বাচিত হয়েছেন । 
প্রেসিডে্ট-_মিঃ এইচ আর নর্টন 
ভাঁইস-প্রেসিডেণ্ট-_ মিঃ বি সি ঘোঁষ, বার-এট ল, 
জয়েণ্ট সেক্রেটারী__মিঃ এম দত্ত রাঁয় ও জে পেস্টনী 
কোষাধ্যক্ষ-_-পি এন ঘোঁষ 


মাহিত্য মংবাদ 


সৌরীন্্র মজুমদার প্রণীত “কংসনদীর তীরে”_-১।* 
রাধিকারঞ্জন গঙ্গোপাধ্যা় প্রণীত “সবিনয় নিবেদন”--২২ 
বরোগ্ারী উপন্থান “বান্ধবী”--১৫« 

কৃষ্ণগোপাল ভট্ট/চার্ধ্য প্রণীত “মিস্ত্রীর মেয়ে”--১1* 

গোকুলেশ্বর ভট্টাচাধ্য ও পঞ্চানন চক্রবর্তী প্রণীত “দীপান্থিতা”--1%* 
জিতেন্ত্রল।ল মৈত্র প্রণীত “মেধনগরের অন্ধকার1”--১২ 

মণিল/ল বন্দোপাধ্য।য় প্রণীত “আলো! ছায়ার খেলা”_-২ 
বলাইঠাদ মুখোপাধ্যায় ( বনফুল ) প্রণীত “নির্মোক”- ২1 
প্রবোধকুম!র সান্তাল প্রণীত “নববোধন”--১২ 

পশুপতি তটাচার্ধয প্রণীত “ছুইপনীকা”-_-২২ 


নন্ব-প্রকাম্পিভ গুত্ডকাবলী 


নিরুপমা দেবী প্রণীত “অনু কর্ষ”__২২ 
গোর সী প্রণীত নাটক “ঘুপি*--১২ 
বিধায়ক ভা চার্ধয প্রণীত নাটক “রত্বদীপ”--১।* 
অচিন্তযকুমার সেনগুপ্ত গ্রণীত “মেমসাছেব”--|, 
রাধারমণ দাস প্রণীত “নীল সাগরের রক্ত-লীল”-_/১ 
হেমেক্রকুমার রায় প্রণীত “দেড়শ খোকার কাণ্ড”--১২ 
ব্রহ্মচারী পরিমলবন্ধু দাস প্রণীত “প্রভু জগবন্ধু”--১২ 
প্রীমতী সরল! দেবী বিলিখিত 
“প্রীগুর বিজয়কৃফ দেবশর্্ানৃষ্ঠিত শিবরাত্রিপূজ।”-।* 
নরেশচন্র বন্দ্যোপাধ্যায় প্রণীত “গীত-রাজিকা”--৩ 





সম্পাদচ্ক_ শ্রীফণীন্্রনাথ মুখোপাধ্যায় এম-এ 
২৯৩।১1১, কর্ণওয়ালিস্‌ ্ীট, কলিকাতা, ভারতবর্ষ প্রিন্টিং ওর়ার্ধম্‌ হইতে ীগোবিনদপদ ভট্টাচার্য কর্তৃক মুদ্রিত ও প্রকাশিত 


ভ্ডা্রশ্ লম্্ 


পা 2১১2 
ই পিপিপি পন ও শত | পাপী তত ও বাদ পালাতিক্প শী পাতি কাত পা উপ ত শুল্ক 2 
টিপ 


রশ? পক্ষী 


চা হে ধা 








€স্পাশ-- ৯৩৪৮৮ 


দ্বিতীয় খড 


অটটাবিংশ বর 


পঞ্চম সংখ্য। 


বঙ্কিমচন্দ্র ও রবীন্দ্রনাথের ওপন্যাসিক দৃষ্টিভঙ্গি 
অধ্যাপক শ্রীবিশ্বপতি চৌধুরী 


উপন্যাস ক্ষেত্রে বস্কিমচন্দ্রের সহিত রবীন্ত্রনীথের ভাব ও 
আদর্শগত পার্থক্য কোথায়-বাঙ্গালার এই শ্রেষ্ঠ দুই 
মনীষীর ব্যক্তিত্বের মধ্যে, দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে, জীবনকে দেখিবার 
ও বুঝিবার বিশিষ্ট প্রণালীর মধ্যে প্রভেদ কোন্‌ স্থানে 


এবং ইহাদের উপন্যাসের মধ্য দিয়া এই পার্থক্য কোন্‌ 


পথে কেমন করিয়া আত্মপ্রকাশ করিয়াছে, এই প্রবন্ধে 
তাহাই আমরা দেখিতে এবং বুঝিতে চেষ্টা করিয়াছি। 

বঙ্িমচন্ত্রকে আমর! তার উপন্তাস-সাহিত্যের মধ্য 
দিয়া যেভাবে দেখিতে পাই, তাহাতে তাহাকে আমরা 
আমাদের দেশের এবং জাতির একজন শ্রেষ্ঠ চিন্তানায়ক 
এবং সংস্কারক বলিয়। মনে করিতে পারি । 

স্বজাতিকে বড় করিতে হইলে, মানুষ করিয়া তুলিতে 
হুইলে) জাতির মধ্যে শৌ্য্য-বীর্ধ্য-মনুস্তত্ব জাগাইয়! তুলিতে 
হুইলে যাহা কিছু প্রয়োজন, দে সকলই তিনি তাহার 


উপন্তাসগুলির ভিতর দিয়া আমাদের মধ্যে সধশারিত করিয়া 
দিতে চেষ্টা করিয়াছেন । 

ইহা হইতে কেহ যেন মনে না করেন যে-_বঙ্ষিমচন্ত্রের 
উপন্তাসগুলি নিছক উদ্দেশ্তমূলক হইয়া উঠিয়া একটা! 
অস্বাভাবিক, কৃত্রিম এবং মনগড়া মানবসমাজ এবং মানব- 
জীবনের অবান্তব কাহিনী মাত্রে পর্যবসিত হইয়াছে । 

মানব-ভীবনের সত্যকার ঘাঁত-প্রতিঘাত, আশা- 
আকাঙ্া, সুখ-দুঃখকে তিনি কোথাও অস্বীকার করেন 
নাই। এ সকলকে ব্বীকাঁর করিয়া লইয়াই তিনি মামব- 
জীবনকে একটি সুচিন্তিত, স্ুনিয়নত্রিতি পথে পরিচালিত 
করিতে চাহিয়ছেন। 

বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্থীসের আদর্শচরিত্রগুলি অনেকস্থলে 
সাধারণ মানুষ অপেক্ষা অনেক*বড় হইয়া উঠিয়াছে সত্য, 
কিন্তু তাহারা কোথাও অতিমানব হুইয়া উঠে নাই। 


৫৪৫ 


৬৯ 


৮৪৪৬ 


তাহারা আমাদেরই রাঁজ-সংস্করণ। আমাদের অপেক্ষা 
তাহার! বড় মানবত্তের শ্রেষ্ঠতাঁয়। অতিমানবত্বের লৌকো ত্তরত্থে 
নয়। তাহার সত্যানন্দ, মাধবাঁচার্্য, ভবানীপাঠক 
প্রভৃতি মহাপুরুষগণ চরিত্রের দিক হইতে যত বড়ই হউন 
না কেন, আমাদের হৃখ-দুঃখ আঁশা-আঁকাজ্ষার সহিত 
তাহারা নিবিড়ভাবে জড়িত। আমাদের জীবনকে অস্বীকার 
করিয়৷ তাহারা কোন তুরীয় সত্যের সন্ধানে বাহির হইয়া 
পড়েন নাই। 

বঙ্কিমের উপন্তাঁস স্থানে স্থানে মানবজীবনের সাধারণ 
স্বর ছাঁড়াইয় খুব উচু পর্দায় বাজিয়! উঠিয়াছে সত্য, কিন্ত 
মানবজীবনের বিচিত্র সঙ্গীতকে ছাড়াইয়া অনাহত ধ্বনির 
শূন্যতায় পর্যবসিত হয় নাই। 

পূর্বেবেই বলিয়াছিঃ বঙ্কিমচন্দ্র আমাদের জাতির কঞ্, 
দেশের কবি। আমাদের মধ্যে যেখানেই তিনি গলদ 
দেখিয়াছেন, ভুল-ত্রান্তি ও ত্রুটি দেখিয়াছেন সেইখানেই 
তার সংশোধনের পথ দ্রেখাইবার জন্য সুদৃঢ় হস্তে লেখনী 
ধারণ করিয়াছেন। কিন্তু জাতিকে বড় করিতে গিয় 
ধ্দমকে তিনি কোনদিন উপেক্ষা করেন নাই। তাহার 
ভারতবর্ষীয় মন সে পথে তাঁহাকে যাইতে দেয় নাই। 

তিনি ধর্মকে মানিয়াঁছেন সত্য, কিন্ত জাতি-নিরপেক্ষ, 
দেশ-নিরপেক্ষ, সমাজ-নিরপেক্ষ অশরীরী, তুরীয় ধর্মকে 
তিনি কোনদিন সমর্থন করেন নাই। তাই ধর্মের সহিত 
জাতির, ধর্মচেতনার সহিত দেশাত্মবৌধের একটা সামঞ্জস্- 
বিধানের চেষ্টা তাহার উপন্তাসগুলির মধ্য দিয়া বার বার 
আত্মপ্রকাশ করিয়াছে । 

বঙ্কিমচন্দ্র ধর্্মচেতনাকে জাতি-চেতনা ও ব্বদেশ-চেতনার 
সহিত যুক্ত করিয়া! দিয়াছেন এবং তাহার ফলে তাহার 
ধর্মচেতনা যেমন একটা বিশিছ রূপ লাভ করিয়া শরীরী 
হইয়া উঠিয়াছে, সেইরূপ তাহার জাতি-চেতন! ও স্বদেশ- 
চেতন! একটা বৃহত্তর ও মহত্তর সার্থকত। লাভ করিয়াছে । 

রবীন্দ্রনাথ কিন্কু ভিন্নপথ অবলম্বন করিয়াছেন । তিনি 
ধর্মের সহিত কোন কিছুরই রফা করিতে চান নাই। 
তিনি ধর্মকে চিরদিন ছাড়িয়া রাখিয়াছেন” আন্গা 
রাখিয়াছেন, মুক্ত রাখিতে চাহিয়াছেন। ফলে ধর্ম তাহার 
উপন্তাঁসে দেশ-নিরপেক্ষ। জাতি-নিরপেক্ষ, সমাঙ্গ-নিরপেক্ষ 
একটি অশরীরী তত্ব হইয়া! দেখ! দিয়াছে এবং এই অশরীরী 


স্ান্র ভন 


[ ২৮শ বর্ঁ_ ২য় খণ্ড মে সংখ্যা 


নিলিপ্ত, অন্তরুখী ধর্্মচেতনার আওতায় পড়িয়া! দেশ-চেতনা 
ও জাঁতি-চেতন! কোন স্পষ্ট রূপ লাভ করিতে পারে নাই। 
এইথানেই বঙ্কিম ও রবীন্দ্রনাথের উপন্তাস-সাহিত্যের 
ভাবগত পার্থক্য । 

তাহার প্রথম-প্রকাশিত উপন্াস “বৌঠাকুরাণীর হাট” 
হইতেই রবীন্দ্রনাথ বঙ্ষিমচন্দ্রের ভাবধার! ছাড়িয়া এক নৃতন 
পথে চলিতে সুরু করিয়াছেন । 

£বৌঠাকুরাণীর হাট”-এর মধ্যে আমরা রবীন্দ্রনাথের 
যে চিন্তাধারার সহিত পরিচিত হই, তাহা বঙ্কিমচন্দ্রের 
চিন্তা ও ভাবধারা হইতে সম্পূর্ণ পৃথক। রবীন্দ্রনাথ যথন 
“বৌঠাকুরাণীরন হাট” লেখেন, তখন তাহার বয়স মাত্র উনিশ 
কি কুড়ি। কিন্তু আশ্চর্য এই যে, এত অল্প বয়সেই তিনি 
তার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি এবং চিন্তা-প্রণালী স্থির করিয়া 
ফেলিয়াছেন। ইহা তাহার একট! খাঁমখেয়াল বা সাময়িক 
ধারণা মাত্র নয়ঃ কেন না তাহার অল্লবয়সের এই চিন্তাধারা 
এবং ভাবধাঁরার ক্রমবিবর্তনই আমরা তাহার পরিণত 
বয়সের উপন্তাসগুলির মধ্যে দেখিতে পাই। 

“বৌঠাকুরাণীর হাট” এবং পরবর্তী উপন্তাঁসগুলির মধ্যে 
আমরা লেখকের যে চিন্ত| ও ভাবধারাঁর সহিত পরিচিত 
হই, তাহা বঙ্ষিমচন্দ্রের উপন্যাসের ভাবধারা হইতে যে 
সম্পূর্ণ পৃথক, তাহাই এখন আমরা দেখাইতে চেষ্টা করিব। 
“বৌঠাকুরাণীর হাট” হইতেই স্থুর করা যাঁক। 

বঙ্কিমচন্দ্র তাহার অনেক উপন্যাসেই দেশপ্রেম এবং 
জাঁতি-চেতনাকে চরম উচ্চাসন দিয়াছেন। এই সকল 
উপন্যাসে তিনি দেশপ্রেমিক মহাঁপুরুষদের সাধনা ও 
আত্মত্যাগের কাহিনী জলস্ত ভাষায় লিপিবদ্ধ করিয় 
গিয়াছেন। 

“বৌঠাকুরাণীর হাট”-এ আমর! কিন্তু ইহার ঠিক বিপরীত 
চিত্র দেখিতে পাই। সেখানে রবীন্দ্রনাথ দেশাত্মবোধের 
সহিত ধর্মচেতনার একটা শোচনীয়, মর্্াস্তিক বিরোধের 
চিত্র অঙ্কিত করিয়াছেন। এখানে তাহার চিন্তাধারা 
বন্ধিমের ঠিক বিপরীত পথে চলিতে সুরু করিয়াছে। 
ইহার কারণ খুবই সুস্পষ্ট । 

বঙ্ধিমচন্ত্র দেশ ও জাতির সহিত ধর্মকে থাপ খাওয়াইতে 
চেষ্টা করিয়াছেন, আর রবীন্দ্রনাথ ধর্মকে অব্যাহত রাখিয়া 
দেশ ও জাতিকে তাহারই অনন্ত ব্যাপ্তির মধ্যে বিদুবৎ 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


নিরীক্ষণ করিতে চাহিয়াছেন। ফলে দেশ ও জাতি 
তাহার নিকট নিতান্তই নগণ্য হইয়া পড়িয়াছে। 
তাই দেশভক্তিকে লইয়া! মাতামাতি রবীন্দ্রনাথের ধাঁতে 
কোনদিন সহে নাই। তাহার প্রথম প্রকাশিত 
উপন্যাঁস “বৌঠাঁকুরাণীর হাঁটঃ-এ তিনি দ্েশপ্রেমিকের এমন 
উৎকট চিত্র আঁকিলেন, যাহার পানে চাহিয়া আমরা 
শিহরিয়। উঠি, দ্বণায় নাঁসিকা কুঞ্চিত করি। অবশ্য একথা 
ঠিক যে, প্রথম বয়সের রচনা বলিয়া “বৌঠাকুরাণীর হাট*-এ 
দেশপ্রেমের প্রতি কটাক্ষটা অতিরিক্ত তীব্র এবং স্পষ্ট 
হইয়! উঠিয়াছে। 

গোরা নামক উপন্যাসে কটাক্ষপাতের তীব্রতা 
কমিয়াছে বটে, কিন্তু ব্যঞ্জনা! আরও বাড়িয়াছে। গোঁরার 
দেশপ্রেমের মধ্যে পাপ বা দুর্নীতির কোন স্থান নাই, একথা 
স্বীকার করিয়া তাহার প্রতি শ্রদ্ধানিবেদন করিতে রবীন্দ্রনাথ 
কার্পণ্য করেন নাই সত্য, কিন্তু তাহার দেশপ্রেম যে 
সন্কীর্ণতার পরিপোষক এবং বিশ্বপ্রেমের পরিপন্থী, একথা 
বলিয়৷ তাহার দুর্বলতার প্রতি অনুকম্পা প্রদর্শন করিতে 
তিনি ছাড়েন নাই। গোর! পাঁপ করে নাই বটে, কিন্ত 
সে ভুল করিয়াছে, একথা রবীন্দ্রনাথ বাঁর বার ইঙ্গিত 
করিয়াছেন। তাহার পর “ঘরে বাইরের সন্দীপের ভিতর 
দিয়! রবীন্দ্রনাথ দেশপ্রেমের যে কদর্ধ্য রূপ ফুটাইয়া 
তুলিয়াছেন, তাঁহা যেমন জঘন্ক, তেমনি ভীতিপ্রদ। ইহার 
পর চাঁরঅধ্যায়-এর মধ্যে তিনি দেশগ্রীতি অপেক্ষ! 
মাঁচষের স্বাভাবিক সুকুমার বৃত্তিগুলিকে অনেক বড় উচ্চাসন 
দিয়াছেন। তিনি দেখাইয়াছেন, জোর করিয়! মানুষের মনে 
দেশগ্রীতি সঞ্চারিত করিয়! দেওয়াটা কোনক্রমেই বাঞ্ছনীয় 
নয় এবং তাঁহার ফল কোনদিনই শুভ হইতে পারে না, দেশের 
দিক হইতেও নয়, ব্যক্তিবিশেষের দিক হইতেও নয় । 

আসল কথাঃ দেশপ্রেমের মাতামাতি রবীন্দ্রনাথ 
কোনদিনই বরদাস্ত করিতে পারেন নাই। দেশপ্রেম 
জিনিসটা! রবীন্দ্রনাথের নিকট যে পরিমাণে সন্কীর্ণ এবং স্কুল 
বলিয়া মনে হইয়াছে, বহ্কিমচন্ত্র আজ বীচিয়া থাকিলে 
রবীন্দ্রনাথের বিশ্বপ্রেম তাঁহার নিকট হয়ত ঠিক সেই 
পরিমাণেই ফাঁক এবং শূন্ত বলিয়া মনে হইত। আসল কথা; 
বাঙ্গালার এই দুইজন অনন্তসাধারণ প্রতিভার মনের গঠন 
এবং দৃষ্টিতঙি সম্পূর্ণ ভিন্নজাতীয়। 


ন্ন্িক্মেচত্ুক্র ও ল্বীত্দ্রুনাখেল শপ্ন্যানসিক ভুগভিভত্ক 


20. 


শুধু দেশাত্মবোধ সম্পর্কেই নয়, মানুষের অন্ান্য আদর্শ 
সম্বন্ধেও রবীন্দ্রনাথের সহিত বস্কিমের ভাবগত বা চিন্তাঁগত 
মিল নাঁই। যে কারণে রবীন্দ্রনাথ দেশকে এবং জাতিকে 
স্বতন্ত্র করিয়া বিশেষ করিয়! দেখিতে পারেন নাই, ঠিক 
সেই কারণেই তাহার মন দেশের প্রচলিত ধর্মকে, সমাজকে, 
নীতিকে খুব শ্রদ্ধার চক্ষে দেখিতে পারে নাই । এইগুলি 
তাহার নিকট ছোট বলিয়া, সঙ্কীর্ণ বলিয়া, সীমাবদ্ধ বৃলিয়া 
মনে হইয়াছে। তাই “বৌঠাকুরাণীর হাঁট”এ দেশপ্রেমের 
কদধ্যরূপ দেখাইয়াই তিনি ক্ষান্ত হন নাই, পরবর্তী উপন্তাঁস 
রাজধি-তে প্রচলিত সাশ্রদায়িক ধর্মের গ্লানি এবং 
সন্কীর্ণতাঁর প্রতিও তীব্র কটাক্ষপাত করিয়াছেন। 

বঙ্কিমচন্দ্রও যে দেশের এবং সমাঁজের সকল ব্যবস্থাকেই 
অপরিবস্তিত অবস্থায় রাখিতে চাহিয়াছেন, তাহা নয়। তিনি 
অবস্থান্সারে, প্রয়োজনানুসারে সমাজ ও ধর্মের পুরাতন 
ব্যবস্থাগুলির সংস্কার চাহিয়াছেন। কিন্তু সে পরিবর্তন 
এবং সংস্কারের মূলে একটা নির্দিষ্ট ক্ষ্য ছিল। তিনি চিন্তার 


দ্বারা» বিচারের দ্বারা একটা নির্দিষ্ট আদর্শ ঠিক করিয়া 


লইয়াছিলেন এবং সেই সুনির্দিষ্ট আদর্শের পাঁনে দেশ ও 
জাতিকে পরিচালিত করিয়া লইয়! যাইতে বিধিমত চেষ্টা 
করিয়াছেন। বঙ্কিমচন্দ্র জাঁনিতেন, পুরাঁতনকে বর্তমান 
কালের সহিত খাপ খাওয়াইয়া নৃতন করিয়। লইতে হয়। 
তাই তিনি দেশের ও জাতির পুরাতন ধর্ম, সমাজ ও নৈতিক 
আদর্শকে পরিত্যাগ না করিয়া তাহাঁদের যুগোপযোগী নূতন 
রূপ দিতে চাহিয়াছেন। 

রবীন্দ্রনাথ কিন্তু সে-পথে যাঁন নাই । তিনি জাতি ঝা 
দেশের মুখের পানে চীহিয়। তাহাদের চিরকালের জিনিস- 
গুলিকে যুগোপযোগী পরিবর্তনের ভিতর দিয়া সংশোধিত 
করিতে চাঁন নাই;--তিনি' যুগ ও কাল-নিরপেক্ষঃ সমাজ 
ও জাতি-নিরপেক্ষ শাশ্বত সত্যের বিরাট অনন্ত বিস্তৃতির 
মধ্যে দেশ ও জাতির সংস্কার এবং ধ্যানধারণাকে হারাইয়া 
ফেলিয়াছেন। 

আমাদের মন হইতে শ্বদেশ প্রেম মুছিয়! গিয়াছিল। 
বন্ধিমচন্ত্র তাহাকে জাগাইয়া তুলিবার জন্য প্রাণপাঁত 
করিয়াছেন। রবীন্দ্রনাথ কিন্তু সেপ্দিক দিয়াই গেলেন ন1। 
তিনি বিশ্বপ্রেমের অথগ্ডানুভূতির দ্বারা দেশপ্রেমের থণ্ড এবং 
স্পষ্ট অনুভূতিগুলিকে ঢাকিয়! ফেলিতে লীগিয়৷ গেলেন। 


6৪৬ 


সমাজের দিক হইতেও তিনি তরী একই পথ অধলম্বন 
করিয়াছেন । বহ্ছিমচন্ত্র আমাদের সমাজবব্যবস্থার মধ্যে 
প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনয়ন করিয়া তাহাকে যুগোপযোগী 
করিয়৷ তুলিতে চাঁহিয়াছেন। রবীন্ত্রনাথ ( শেষের দিকে ) 
সমাজকে ব্যক্তিম্বাধীনতার পরিপন্থীরূপে দেখিয়] তাহার প্রতি 
কটাক্ষপাঁত করিতে ছাড়েন নাই । বঙ্কিমচন্ত্র চাহিতেন, মানুষ 
সমাজকে মানিয়া চলিবে (অবশ্ঠ সে সমাজ যদি আদর্শ সমাজ 
হয় )__-আর রবীন্দ্রনাথ বলিতে চান, প্রত্যেক ব্যক্তি এতই 
একক, এতই স্বতন্ত্র যে, কোন আদর্শ সমাজই তাহার ব্যক্তিগত 
স্বাধীন চিন্তাকে অবাধ মুক্তি দিতে পারে না। 

ধর্ম সম্বন্ধেও রবীন্দ্রনাথের মত এঁ একই জাতীয়। তিনি 
সাম্প্রদায়িক বা আনুষ্ঠানিক কোন ধর্ছেইি আস্থাবান নন। 

তাহার ধর্ম কোন দেশ বা জাতির ধর্ নয়_তাহা 
একটি উদার অসাম্প্রদায়িক মনোভাব মাত্র। বিরাটের 
সহিত মানব-মনের একটা ধ্যানগত এঁক্যের ভিতর দিয়াই 
তাঁহার সমন্ত ধর্মচেতনা আত্মপ্রকাশ করিয়াছে। তাই 
“রাঁজধির" গোবিন্দমাণিকাকে আমরা মন্দির অপেক্ষা উন্ুক্ত 
প্রকৃতির মধ্যেই তাহার ভাগবত চেতনাকে সার্থক করিয়া 
তুলিতে দেখি । তাই পরেশবাবুর ভাগবত উপলব্ধির পীঠস্থান 
ব্রাহ্মমন্দির অপেক্ষা বৃক্ষমূলেই অধিক স্থায়িত্ব লাভ করিয়াছিল । 

আদল কথা, রবীন্দ্রনাথ সকল দিক হইতেই নিজেকে 
দেশ ও জাতিনিরপেক্ষ করিয়া! তুলিতে চাহিয়াছেন; আর 
বহ্কিমচন্তর সকল দিক হইতে নিজেকে দেশের ও জাতির 
ধ্যানধারণা, আশা-আকাজ্ষার সহিত জড়িত করিয়া তুলিতে 
চেষ্টা করিয়াছেন। ফলে বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্তাসের ক্রমবিবর্তন 
হইয়াছে ধর্ম ও দেশাত্ববোধের সামগ্স্তের অভিমুখে । তাই 
মূণালিনী” ও রাজসিংহে বণিত দেশপ্রেম “'আনন্দমঠ? ও 
“সীতারামে” আসিয়। ধর্মের সহিত যুক্ত হইয়া একট! বিশেষ 
পরিণতি লাভ করিয়াছে । "আর রবীন্দ্রনাথের দেশ ও 
জাতিনিরপেক্ষ মনোভাব চরম পরিণতি লাভ করিয়াছে__ 
ণতুরঙ্গ+ “ঘরে-বাইরে” “শেষের কবিতা” এবং চার 
অধ্যায়'-এর ব্যক্তিস্বাতন্ত্্যের অবাধ মুক্তির ক্ষেত্রে। 

বঙ্কিমচন্দ্র একটা আদর্শ সমাজ, আদর্শ ধর্ম আদর্শ জাতি 
গড়িতে চাহিয়াছেন এবং সেই সমাজ? ধর্ম ও জাতির সহিত 
মানুষকে খাপ খাওয়াইয়৷ তাহাদের জীবনকে স্ুুনিয়ন্ত্রিত 
করিতে চাহিয়াছেন। *আর রবীন্দ্রনাথ মানুষকে দেখিতে 
চাহিয়াছেন ব্যক্তিস্বাতস্ত্র্যের অবাধ মুক্তির ক্ষেত্রে যেখানে 
সে একক; যেখানে সে স্বতন্ত্র এবং ম্বাধীন। 


ভ্ডাব্রভন্বশ্ব 


[ ২৮শ বর্ব--২য় খণ্ড--€৫ম সংখ্যা 


পূর্বেই ' বলিয়াছি, বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাসের আদর্শ 
মানবগুলি দেশ ও জাতির স্বার্থ এবং ধ্যানধারণার সহিত 
নিজেদের নিবিড়ভাবে জড়িত করিয়া তাহাদেরই একজন 
হইয়! উঠিয়াছেন। দেশের চিন্তা, জাতির চিন্তা এই সকল 
আদর্শ চরিত্রকে চিরদিন সচল এবং কর্মব্যস্ত করিয়া 
রাখিয়াছে। জাতি ও দেশগ্রীতি তাহাদের চিন্তা ও ধ্যান- 
ধারণাকে কোনদিন অন্তমু্থী ভাবুকতাঁয় পরিণত হইতে না 
দিয়া বহিমু্থী কর্মপ্রচেষ্টায় রূপায়িত করিয়া তুলিয়াছে। 
তাই বস্কিমচন্দ্রের উপন্যাসে আদর্শ চরিত্রের প্রাছূর্তাবে কর্ম ও 
ঘটন| বাঁড়িয়াছে বই কমে নাই। কিন্ত রবীন্দ্রনাথের 
উপন্তাঁসে ইহার ঠিক বিপরীত ব্যাপার ঘটিতে দেখা গিয়াছে । 
তাঁহার উপন্যাসে আদর্শচরিত্রের যতই প্রাছুর্ভীব হইয়াছে 
ততই তাহার উপন্যাসগুলির মধ্যে ঘটনা ও বর্ধপ্রবাহ 
মন্দগতি হইয়া আসিয়াছে । 

বহ্ছিমচন্দ্রের উপন্তাঁসের বিবর্তন কর্ম হইতে উতকৃষ্টতর 
কর্মে; আর রবীন্দ্রনাথের উপন্তাসের বিবর্তন কর্ম হইতে 
কর্মহীন ভাবুকতাঁয়। তাই বঙ্কিমচন্দ্র শেষ তিনখানি 
উপন্যাস “আননামঠ' দেবী চৌধুরাণী' এবং “সীতারাঁম'-এ 
ধর্ম ও আদর্শের কথা যতই থাকুক না কেন, কর্মের দিক 
হইতে, ঘটনাবৈচিত্র্যের দিক হইতে উপন্াসগুলি আরও 
সজাগ এবং সচেতন হইয়া উঠিয়াছে। অপরপক্ষে 
রবীন্দ্রনাথের শেষ বয়সের উপন্তাঁসগুলির মধ্যে যতই আদর্শ 


চরিত্রের প্রাদুর্ভাব হইয়াছে, উপন্তাসগুলি ততই কর্ম ও 
ঘটনাশূন্য হইয়া কর্মহীন তত্বকথা অথবা ঘটনাহীন, ভাবময়, 
উচ্দ্বাসময় কবিত্ব ও ভাবুকতায় পর্যবসিত হইয়াছে। 

ইহা! খুবই স্বাভাবিক । মানব-মন যেখানে একক, 
সেথানে হয় তাহা কবিত্বের উচ্ছাসের দ্বারা ভারমুক্ত হইয়া 
শূন্টে উঠিতে থাকে, আর না হয় তব্জ্ঞানের গভীর নির্জন 
গুহায় আশ্রয় গ্রহণ করে। হয় তাহা শূন্যে উঠে, আর 
না হয় পাতালে প্রবেশ করে; মাটির পৃথিবীতে হাঁটিয়! চলার 
পালা তাহার বন্ধ হইয়া যায়। 

রবীন্দ্রনাথের শেষ বয়সের উপন্তাস কয়টির প্রধান 
চরিত্রগুলি ঠিক এই কারণেই হয় অতিরিক্ত মাত্রায় তত্াশ্রয়ী 
আর না হয়, অতিমাত্রায় উচ্্বীসবল ও সঙ্গীতময় হইয়! 
উঠিয়াছে। চতুরঙ্গ”, "ঘরে-বাইরে শেষের কবিতা”, 
ছুইবোন” এবং “চার অধ্যায়ে, প্রত্যক্ষ মানবজীবন অপেক্ষা 
মানব-জীবনের গভীর তত্ব অথবা মানবাত্মার কবিত্বময় 
সঙ্গীতের কথাই আমরা বেশি করিয়া শুনিতে পাই। 





গণনীয় নন্দকিশোর 
শ্রীজগদীশ গুপ্ত 


আদম্য জানপিপাসার প্রেরণায় নয়, ভদ্রভাবে এবং যথোচিত 
উদরান্নসংগ্রহের জন্যই নন্দকিশোর লেখাপড়। শিখিয়াছে 
ইহা যেমন সতা, সে-ন্ুযোগ সহজে মিলিবার নয় ইহাঁও 
তেম্নি সত্য । কিন্তু নন্দকিশোরের ভদ্রভাবে এবং যথোচিত 
উদরান্নসংগ্রহের উদ্যম অংশত সফল হইল মণীন্দ্রবাবুর 
অনুগ্রহে *": 

মণীন্দত্রবাবু নন্দকিশোরকে তার পুত্রের গৃহশিক্ষক নিযুক্ত 
করিলেন। পুত্রের জন্য গৃহশিক্ষক নিযুক্ত কর! তার একান্ত 
প্রয়োজন-_অন্থুগ্রহ বিতরণের আকাঁজ্ষা তার মূলে আদৌ 
নাই; কিন্ত এত লোক এটুকুর জন্য লালায়িত হইয়! ছুটিয়া 
আপিলেও তাহাকেই নিযুক্ত করা অন্ঠগ্রহ ভিন্ন আর কি! 
তিনি অধিকতর গুণবান্‌ অপর কাহারো উপর ছেলের 


শিক্ষার ভার দিলেই পারিতেন-_ সেখানে তাঁর অবাধ, 


স্বাধীনতা, জবাবদিহির প্রশ্নই ওঠে না; কিন্তু তা না 
দিয়া দিলেন তিনি নন্দকিশোরকে- যার “কলেজ কেরিয়ার” 
ধর্তব্ই নয়। নন্দকিশোর এই অপার সুখময় প্রভূত 
অন্রগ্রহ সর্বাস্তকরণে স্বীকার করিল ... 

“কাজ পাইয়া” অর্থাৎ অন্তান্ত কর্প্রার্থগণকে পরাস্ত 
করিয়া, নন্দকিশোরের যতই পুলক হউক, শুনিলে সে 
নিশ্চয়ই আশ্চধ্য হইয়! যাইবে যে মণীন্দ্র তাহাকে মনোনীত 
করিয়াছেন তার গুণাগুণ বিচারপূর্ববক সন্তষ্ট হুইয়া নয়ঃ 
তার চেহারা দেখিয়া । গুণের ওজন বিচারের তুলাদণ্ডে 
চাঁপাইলে নন্দ গিয়া ঠেকিত একেবারে মাঁটিতে-_কিন্ত 
তার চেহারাটা ভালো-_আর সব বাদ দিয়া মণীন্ত্র তার 
চেহারাটাই পছন্দ করিলেন ... 

মেয়েলি ছাদের স্ুকোৌমল আর হ্থাস্ত্যোজ্জল পুষ্ট চেহারা 
নন্দর__বড় বড় শান্ত চোখ; চোখ দেখিলেই মনে হয়ঃ 
সরল বিশ্বাসে পৃথিবীকে আত্মসমর্পণ করিয়া এ সুখী 
হইয়াছে__মনে গ্লানি কি কপটতা। নাই। গোঁফ অতি 
সামান্যই উঠিয়াছে-_-একটু বেশি বয়সেই উঠিয়াছে ? কিন্ত 


মুখ পাঁকিয়া ওঠে নাই, আর দাঁড়ি কর্কশ ঘোরতর 
কালো হইয়া কালো কুৎসিত হইয়া ওঠে নাই; লগাট 
রেখাহীন মহ্থণ__গণ্স্থলও তাই অর্থাৎ ব্রণ কলঙ্ক একটিও 
সেখানে নাই; মণীন্্র আরো লক্ষ্য করিলেন, আউুল আর 
করতল দিব্য নরম-_-আইঙুলের গি'ঠগুলি রূঢ় পৌরুষে প্রকট 
হইয়া! নাই। তৃরুও ভাল, চোঁখও ভাল, কিন্তু দুটি 
শোভার আধার আবাঁর যেন পরস্পর বিচ্ছিন্ন-__তাদের 
সমন্বয়ে একট! সৌকুমার্য্যের উদয় হয় নাই, এমন অনেক 
দেখা যায়; কিন্তু নন্দকিশোরের তা হইয়াছে__তুরু আর 
চোখ যেন ভাবোন্মেষের চিরস্থির আলিঙ্গনে আবদ্ধ আর 
একাকার হইয়া! গভীর সুন্দর স্বচ্ছ একটি প্রেম-পরিবেশ 
সৃষ্টি করিয়াছে ... দেখিলেই মনে হয়, এ আপন হইয় যাইতে 
বিলম্ব করে না প্রীতির আদান প্রদানে এ প্রশ্ন কি সন্দেহ 
করিতে জানে না। তার উপর, ইহাঁও দ্রষ্টব্য যে 
নন্দকিশৌরের ঠোঁট দুখানিও রমণীস্থলভ সরস ও 
লাবণ্যযুক্ত। 

ধীসব লক্ষ্য করিয়া মণীন্ত্র তাহাকে পছন্দ না করিয়া 
পরিলেন না 

জিজ্ঞাস! করিলেন, তুমি বিয়ে করেছ ? 

নন্দ লজ্জায় লাল হইয়! উঠিল-_অত্যন্ত মৃহ্ভাবে ঘাড় 
নাঁড়িয়া জানাইল, বিবাহ সে করিয়াছে। 

_করেছ। বলিয়া নিনিমিষচক্ষে মণীন্্র কয়েক মুহূর্ত 
কি যেন ধ্যান করিলেন, বোঁধ হয় স্ত্রী-পুরুষের নিত্যসম্বন্ধাটি । 

তারপর বলিলেন-_-তোমার বয়স কত? 

_-তেইশ। 

_ ছেলেপিলে হয়েছে? 

_আজ্জে না। 

গুনিয়া মণীন্দ্র পুনরায় পূর্বববৎ নিনিমিষ চক্ষে কি যেন 
ধ্যান করিলেন আরো! গাঢ়তরভাবে-_ তারপর চক্ষু মুদ্রিত 
করিলেন, যেন ধ্যেয় সামগ্রীটি তার মুদ্রিত চক্ষুর সম্মুখে 


€৪৯ 


৫৫০ 


সর্ঘতোভাবে পরিস্ফু১ আর অধিকতর উপভোগ্য * হইয়া 


বলিলেন বেশ। কিশোর আর কিশোরী । বলিয়া 
এবার আর ধ্যান করিলেন না, চক্ষু অর্ধনিমীলিত করিয়। 
প্রসন্ন বদনে একটু হাসিলেন'। 


নন্দকিশোর এ"সব অর্থাৎ লেখাপড়ায় দিগগজ লায়েক 
লাঁয়েক লোৌককে বিদায় ফরিয়] দিয়! তাহাকে নিবুক্ত করিবার 
কারণ কিছুই জানে না-সে কেবল ধন্ত এবং 
কৃতজ্ঞ হইল ... 

পরম কৃতজ্ঞতা বশে সে তাদের সব আদেশই শিরৌধাঁধ্য 
মনে করিয়া প্রাণপণে_ আর বাঁজারের ভিতর চক্ষুলজ্জ 
বিসর্জন দিয়াও--পালন করে। বাড়ীর চাকরটাও 
সেই স্থযোগে নন্দর উপর মাঝে মাঝে একহাত কৌশল 
থাটায়-_তাহার জবানি গৃহিণী আদেশ করিতেছেন বলিয়! 
নন্দকে দিয়া সে চাঁকরের কাজ করাইয়া লয় ! 


নন্দকিশোরের বাড়ীতে আছেন বিধবা মা, আর আছে 
ছোটভাই বি, আর স্ত্রী মমতাময়ী। কিন্তু তাদের জন্য 
ভাবনা! যে খুবই দুস্তর আর নৈরাগ্জনক হইয়া আছে তা 
নয়__তবে নগদ খরচের জন্য তীর্দের নগদ টাকার দরকার 
আছে; তা ছাড়া আজকার দিনই ত চরম দিন নহে-_ 
অনস্ত গ্রয়োজন আর সুখ দুঃখের দিন আছে সন্মুখে তখন 
চোখে অন্ধকাঁর দেখিয়া! হাহাকার করিতে না হয় তাহারই 
জন্য প্রস্তুত হইতে হইবে। নন্দকিশোর তাই মণীব্তরবাবুর 
ছেলেকে পড়াইতে আসিয়াছে **' ছেলেকে সে বাড়ীতে পড়ায়ঃ 
সঙ্গে লইয়া বাহিরে বেড়ায়, মনের পক্ষে হিতকর আর বুদ্ধির 
পক্ষে পুষ্টিকর গল্প উপদেশ শুনায়, আনন্দ আর উৎসাহ 
দেয় এবং করে নিজের আসল যে কাজ তাই-_ভালো 
চাকরির সন্ধান করে। 

মণীন্দ্রবাবু কয়েকদিন আড়চোখে নন্দমকিশোরের শিক্ষা- 
দানের কৌশল, কথাবার্তা, রুচি, সহবৎ অভ্যাস প্রভৃতি 
লক্ষ্য করিয়া নিশ্চিন্ত হইয়া আছেন--ছেলেও পাঠগ্রহণে 
মনোযোগী হইয়াছে । 


মণীন্্রবাবুর এই ছেলেটি তাঁর প্রথম পক্ষের। তার 
প্রথম পক্ষের স্ত্রী পরলোকগমন করিয়াছেন এবং মণীন্্র 


ভ্ান্রভ্ডশশ্্ 


[ ২৮শ বর্--২য় খণ্ড--€ম সংখ্যা 


সম্প্রতি অর্থাৎ বছর দেড়েক হুইল, দ্বিতীয়বার দারপরি গ্রহ 
করিয়াছেন। 

রাম্তার লোৌকেও জানে যে, মণীন্দত্রবাবুর টাকার অভাব 
নাই__কাজে হুশ আর মনে উদারতাঁরও অভাব নাই; 
তার অকাট্য প্রমাণ এই যে, নন্দকিশোরকে মাসিক আটুটি 
টাকা তিনি যথাসময়ে, না চাহিতেই, দেন, আর 
“থাওয়াদাওয়া” করিতে দেন অন্তঃপুরেই ; আগে অবস্ 
অনুমতি দেন নাই, কারণ অজ্ঞাতকুলশীলম্য ইত্যাদি 
হিতোপদেশটি তাঁর অজানা নয়; কিন্তু নন্দকিশোরের 
কুলশীল অর্থাৎ প্রকৃত পরিচয় বেশিদিন অজ্ঞাত রহিল 
না__নন্দকিশোর ঠাকুরের ডাকে তখন অন্তঃপুরে অর্থাৎ 
রন্ধনাঁলয়ে গিয়া আহার করিতে লাগিল। 

মণীন্ত্রবাবুর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীকে-_-এই গৃহের গৃহিণীকে 
নন্দ দেখিয়াছে, খুব সুন্দরী তিনি। অন্তঃপুরে কি 
সাম্নাসাম্নি দেখে নাই, দেখিয়াছে অন্তুঃপুরের বাহিরে__ 
যখন তিনি স্বামীর সঙ্গে বাহির হন আর ফিরিয়া আসেন, 
অর্থাৎ অতিশয় সুসজ্জিত অবস্থায় ; কৃত্রিমতা আর একটা 
অভিনয়ের ভঙ্গীর ভিতর দূর হইতে তাহাকে নন্দ দেখিয়াছে। 

খুবই সুন্দরী তিনি__ 

আধুনিকতম বেশ আর সপ্রতিভ গতিভঙ্গী এবং 
দুনিয়াকে নিতান্ত অবহেলা করিয়৷ তাঁর দৃষ্টিচালনা নন্দ 
দেখিয়াছে ; আর মনে মনে কত যে বিস্মিত হইয়াছে আর 
প্রশংসাঁও করিয়াছে তাহার লেখাজোখ! নাই; কিন্ত 
মণীন্দ্রবাবুকে ঈর্ষা করিবার কি তার স্ত্রীর প্রতি লুনধ দৃষ্টি 
নিক্ষেপ করিবার মতো! ইতর মন তাঁর নয়_দৃশ্ত হিসাবে 
অনিন্দনীয় আর আনন্দ প্র, এ-বিষয়ে এই মাত্র তার চেতনা, 
সঙ্ঞান অন্ভভৃতি '": 

এঁ সজে তার খুবই মনে পড়ে স্ত্রী মমতাঁর কথা__নাম 
তার মমতাময়ী এবং সত্যই সে মমতাময়ী । 

এঁর তুলনায় মমতার রূপ প্রণিধানযোগ্যই নয়, তর্কের 
অবসর ন| দিয়া তা বলা চলে না; কিন্তু পার্থক্যও আকাশ 
পাতাল ।."' নন্দ জানে, রূপ ত প্রসাধন আর মার্জন সাপেক্ষ 
কৃত্রিম বস্ত নয়-_দেহলগ্ন বাহিরের বসন্ত তা নয়। সে দেখিয়াছে 
ইহার বাহিরের রূপ; কিন্তু উত্ভিন্ন উন্মুখ অন্তরের ছ্যুতিতে 
দীপ্ত হইয়া প্রেমের যে রূপটি দেহে বিকশিত হয় তার মে- 
রূপটি নন্দ দেখে নাই-__কয্পনাঁও করে না, সে ছুই বুদ্ধি 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


তাঁর নাই। ইহাকে যখনই সে দেখে তখনই দেখে ইহার 
রূপের অর্থাৎ রূপসজ্জার, বিলাসবিভঙ্গ--এমন একটা চঞ্চল 
ূর্তি_যার স্বাদ নাই? কিন্তু মমতার রূপ প্রদাধনপটুতা আর 
বেশরচনার কঠোর অন্তরাঁল হইতে উগ্র লীলায়িত হইয়া তার 
সম্মুখে নাই__ 

মমতা অতি সহজ, খুব স্বাভাবিক ; আর তার মন 
অজানা আধারে লুক্কাইত নহে বলিয়াই তাহাকেই ভাবিতে 
নন্দর সব চাইতে ভাল লাগে_মনে হয়, এমন মধুর 
একাত্মতার অগ্ুভূতি দেওয়া পৃথিবীর মধ্যে কেবল মমতাঁর 
দ্বারাই সম্ভব ".. 

নন্দ কিশোরের আরো মনে হয়, ইনি হয়ত খুবই শিক্ষিতা, 
“কলেজ কেরিয়ার” হয় ত তারই সমান; হয় ত খুবই 
বাকৃপটু” খুবই প্রেমময়ী, খুবই আদরিণী ইত্যাদি; এবং 
ইহার পদক্ষেপ যেমন ক্ষিপ্র অর্থাৎ অশান্ত, মুখের কথাও 
হয় ত অত্যন্ত স্পষ্ট খুতম আকারে তেমনি ক্ষি প্রবেগে 
নির্গত হইতে থাকে ... 

ভাবিয়া নন্দর মনে হয়ঃ ভারি জটিল; আর তাঁর 
ভয় হয়__ 

কিন্ত তাঁর মদৃ্ট ভাল, মমতার তা নয়__মমতাঁর মুখের 
কথা চমতকার অস্পষ্ট, আর চমতকার মৃদু; তাঁর এই 
অস্পষ্টতা আর মূছৃতা এমন মুগ্ধকর যে, ভুলিতে পাঁরা যায় 
না-_ভাবিতে গেলে ন্নেহে মন উদ্বেল হইয়া ওঠে । তবুসে 
রসিকা--নিজের ধরণে সে বেশ রসিকা- হাসাঁয় সে খুব, 
কিন্ত যেন অজ্ঞাতসারে ; তার চোখের চেহারা কি ঠোঁটের 
তঙ্গী দেখিয়া অনুমান করিবার কিছুমাত্র উপায় থাকে না যে 
মে মনে মনে তৈরী হইয়া আছে; কিন্ত কথার জবাব দেয় 
এমন স্থিরভাঁবে, আর হাঁসির কথার সঙ্গে তাঁর শান্ত মুখের 
এমন অপূর্বব অসামঞ্জশ্য দেখা যায় যে, তাকে ভারি নিরীহ, 
ভারি নির্দোষ আর ভারি ভদ্র সরল মনে হয় |... চোখে তার 
আবেগ নাই, চঞ্চলতা নাই, বিলাস নাই, তীক্ষতা নাই, অথচ 
আলম্কাও নাই, নির্বদ্ধিতাঁও নাই-_-আছে কেবল কোমল 
একটা ভাষা, অসীম মাধুর্য আর নির্ভরতা, আর চোখের 
ভাবের সঙ্গে মুখের কথার অপূর্ব্ব মধুর অসংগতি. 

আর ভারি ভীরু সে-_ 

স্বামীর আদর গ্রহণ করিতে করিতে সে*ও আদর করে 
--ছু'ছাতে স্বামীর হাত জড়াইয়া ধরিয়া অধিকতর নিকট- 


গণপনীয্স মন্ষক্রিস্ণোল্ 


৫৯৫৯১ 


বস্তিনী হইতে হইতে-স্বামীর আঙ্লগুলি লইয়া! খেলা করিতে 
করিতে হঠাৎ সে সরিয়া যায়". 

নন্দ বলে, ও কিঃ অমন ক'রে ত্যাগ ক'রে গেলে যে! 

মমতা! বলে, তুমি যদি রাগ করে! 

_রাগ করবো কেন! এ সুখের কথ না রাগের 
কথা ! 

যদি অন্তাম মনে করো ! 

মমতাঁর মুখের এমনি টুক্টাঁক্‌ কথাগুলি নন্দর ভারি 
মিষ্টি লাগে, আর তার ভারি হাসি পায় -.. 

বলে, অন্ায়ের জ্ঞান তোমার কিছুই নেই। 

মমতা তখন হাসিয়া বলে, বাঁচলাম। 

কিন্তু তাঁর আচরণ কেহ অন্তাঁয় কিংবা তাহাকে কেহ 
প্রগল্ভ মনে করিবে এই ভয়ে সে সর্ধদা সতাই সাঁবধান-- 
স্বামীকে সঙ্গ আর আনন্দদানেও তার বাড়াবাড়ি 
কোথাও নাই। 

তবু সে মাঝে মাঝে ইয়ারকি দেয়__ 

বলে, অমন করে তাঁকিয়ে আছ যে? 

নন্দ বলে, একটু ইয়ারকি দেব ভাবছি । 

_উ হু, ভয় পেয়েছ। 

নন্দ বুবিতে পারে না যে মমতা ইয়ারকি সুরু 

বলে? তার মানে? 

-_ সেদিন রান্নাঘরে একটা বেরাল কেবলি ছৌঁক ছৌঁক 
করছিলঃ “হেই” বলে” ধমক দিতেই সেটা খাঁনিক পিছিয়ে 
ঠিক তোমার মতে! ক'রে তাকিয়ে থাক্‌ল-.. 

নন্দর মুখে হাসি দেখা দেয় ; বলে-_তাঁরপর ? 

-আবাঁর “হেই, করতেই দিল পিট্টান। আমি ত 
তোমাকে কিছু বলিনি যে পালাবে ! 

নন্দ তখন হাসিয়া উল্লাসে আকুল হইয়! যায়-_আগাইয়া 
গিয়া তাহাকে ধরে-_দুহাঁতের চাপের ভিতর তাহাকে 
জড়ো করিয়া লয়__চোঁখ বন্ধ করিয়! তাঁর নিজের আর 
মমতাঁর রক্তের উত্তপ্ত নাচন অনুভব করে। 

মমতা চিঠি লেখে-_ 

নন্দকিশোরও লেখে ; নন্দকিশোর চিঠিতে চুন জানায় 
কিন্তু মমতা তা জানায় না। নন্দ মনে মনেখুঁতধু'ত 


৫ ৫২ 


করিয়া একবার অপরিসীম তৃষ্ণা জাঁপন করিয়া এ বস্ত্র 
ভিক্ষা চাহিয়া আর অনেক মিনত্তি ও কাতরোক্তি করিয়া 
এক পত্র ডাকে দিল__ 

পুনশ্চ? দিয়া লিখিল £ প্চাই কিন্তু” 

কিন্তু মমতা লিখিল £ যদি হঠাঁৎ কেউ তোমার চিঠি 
দেখে ফেলে তবে সে মনে কয়্বে কি! তোঁমরা লিখতে 
পারো; কিন্তু মেয়েরা কথাটা লিখলে কেমন যেন অন্যায় 
আর “অভদ্দর” মনে হয়। 

্ অন্তায় আর অভন্দর শব্দটা ব্যবহার না করার কারণ 
দেখাইয়া মমতা অনেক কথাই লিখিতে পারিত-_লিখিতে 
পারিত যে হাতে-কলমে সত্যিকাঁর জিনিসই যখন চাওয়ামাত্র 
দিয়ে থাকি তখন পত্রের মার₹ৎ নিরবযব বস্ত্র দরকার কি? 
তাঁর জন্তে এত লোনুপতা কেন? এসে নিয়ে যাঁও, একবার 
নয়, দু'বার নয়, অগুণতি, যত ইচ্ছে তত '"* 

কিন্তু তা সে লেখে নাই। 


নন্দকিশোর বিবাহিত মণীন্্র তা জানেন; নন্দ বাড়ী 
যাইবার অন্থমতি চাহিলেই তিনি আগে মুচকি হামেন ; 
তারপর বলেন, প্ৰাড়ী যাবে? যাও, কিন্তু দু'রাত্রির বেশি 
নয় ৰা 

দিনের কথা না বলিয়! মণীন্দ্র বলেন রাত্রির কথা__-কোন্‌ 
দিকে ইঙ্গিত করেন তা” নন্দ পরিষ্কার বোঁঝে .. 

তারপরই মণীন্দ্র বলেন, অত শীগগির চলে” আস্তে মন 
চাইবে না, না? বৌটিকে এখানে নিয়ে এলেও ত পারো ! 

মনে হইতে পারে, বধূটিকে এতদিনেও তাহার গৃহে লইয়। 
না আসায় মণীন্দ্র মৃদু অন্গযোগ করিলেন এবং এই নিমন্ত্রণ 
এই অমায়িক ভদ্রলোৌকটির নিষ্পাপ হৃগ্যতা ব্যতীত আর 
কিছুই নাই। ৃ 

নন্দকিশোর মনে করিল তাই এবং স্থথ্ী হইল-_ 

বলিল--মাকে একা থাকৃতে হয় আর-_ 

মণীন্দ্র বাধ! দিয়া বলিলেন__এদিকে তুমি যে একা 
থাকো। বয়স কত তোমার ? 

_তেইশ। 

তেইশ বছর বয়সে বিয়ের পরও একা থাকা কত কষ্ট 
তাযারা থাকে.তারাই জানে । নিয়ে এসো--আনন্দে থাক! 
যাবে। বলিয়৷ মণীন্্র যেন জরুরী একটা তাগি্ই দিলেন। 


শাএভন্ঞ্ধ 


| ২৮শ বর-_ ২য় খণ্ড ৫ম সংখ্যা 


তার আনন্দ কিরূপ, কোথায় এবং কেন অর্থাৎ গুহ. 
শিক্ষকের আনন্দেই অন্থুকম্পাণীল অভিজ এ ব্যক্তির 
আনন্দ কি না__তাহা নন্দ ঠিক বুঝিয় উঠিতে পারে না-_ 

ইতস্তত করিয়া! বলে, যাবো! ? 

-যাও, কিন্তু '.. 

__আজ্েঃ পরস্তই চলে” আন্ব। 

_দু*রাত্রি পাবে? 

নন্দ,'জবাঁব দেয় না_ 

মণীন্দ্র বলেন, দিনে গাড়ী কখন্‌? 

__তিনটেয়। 

_তা হলে ছুপুরটাঁও পাচ্ছ। বলিয়া মণীন্্র সম্পর্ক- 
বিগহিত এবং বয়সের তারতম্য হিসাবেও অত্যন্ত অভচিত 
একটা! ইঙ্গিতের হাসিতে মুখমণ্ডল উদ্ভাসিত করিয়া তোলেন 
'**নন্দ এতক্ষণে টের পাঁয়, একটা ইন্দ্িয়লালসা যেন মণীন্ত্রের 
কথায়, স্থুরে, মুখে, চোখে সঞ্চিত হইয়া আছে। 


মমতা বলিল- আস্তে দিলে? 

_ষ্্যা। 

- লোকটি ত ভালো । 

_ হাঃ দয়া আছে। তেইশ বছরের যুবক স্ত্রীর সঙ্গে 
ছাড়াছাড়ি হয়ে থাকৃতে যে কষ্ট পায় তা তিনি জানেন, 
বলিয়৷ নন্দ হাঁসিল। 

-_-তিনি যে জানেন তা! তুমি জান্লে কেমন ক'রে? 

_বল্লেনই পষ্ট। দরদ দেখালেন খুব) বল্লেন 
বৌকে নিয়ে এসো এখানে__-তেইশ বছর বয়সে বৌ-ছাড়া 
হ'য়ে থাকা যে কত কষ্ট তা কেবল তৃক্তভোগীই জানে । 

মমতা অবাক্‌ হইয়। বলিল_-তোমাঁর সঙ্গে এসব কথা 
হয়নাকি? 

__হ'ল এবার, মানে, তিনিই বল্লেন । 


_ বয়স কত তার? 

_ প্রায় চল্লিশ। দ্বিতীয় পক্ষ। 
_তা-ই নাকি! দ্বিতীয়াকে দেখেছ ? 
শন । 

_ কেমন ? 

খুব সুন্দরী । 


মমতার মুখ হঠাৎ ভারি বিমর্ধ হইয়া উঠিল, ওখানকার 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


হা স্স্যিগ্থপা সাপ ব্য 


দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীটি সুন্দরী বলিয়া নয়, আর তিনি বুদ্ধের 
ভার্ধ্যা এবং স্বামী অনাত্ীয় যুবক এবং সেই গুহবাসী বলিয়াও 
নয়। অন্ত কারণে; তার মনে হইল, ভদ্রসম্তীন আর গৃহ- 
শিক্ষক হিসাবে গৃহশিক্ষকের যে-মর্ধ্যাদা অবস্ঠ প্রাপ্য সে- 
মর্যাদা স্বামীকে দেওয়া হয় নাই, আর ভদ্র ব্যক্তি এবং 
বয়সের পার্থকা হিসাবে যে সংযম আর গাস্তীর্য রন্ধা কর! 
মাষের উচিত তাহা রক্ষিত হয় নাই_-হয় নাই জঘন্ত 
কারণে; পরস্ত্রী সম্বন্ধে কু্ঠাহীন আলোচনায় রত হইয়া তিনি 
সেই শি রীতি লঙ্ঘন এবং আত্মপন্মান বিশ্বাত হইয়াছেন-_ 
তিনি এই নিলজ্জতা আর আম্মসংযমের অভাব দেখাইয়া 
অমার্জনীয় অন্যায় করিয়াছেন .** বলিল- তুমি ওখানে 
আর থেকো না। 

_-কেন? 

_ভদ্রলোক লোক ভা 

নন্দ তা বুঝিয়াছে__ 

এবং মমহাঁও তা” বুঝিয়াছে দেখিয়া নন্দ ভারি বিস্মিত 
'আর পুলকিত হইয়া গেল :* বলিল_-আমার অনিষ্ট তিনি 
কিছু করতে পারবেন না। তুমি যাবে সেখানে ? 

--দশ বচ্ছর তোমার দেখা না পেলেও নয় । 

শুনিয়া নন্দকিশোর উৎসাহে পরিপূর্ণ হইয়া মমতাকে 
আরো ভালবাসিল। 





স্থান সম উপ 





নয়। 


নন্দর পারিবারিক অস্তিত্বকে শণীন্দ্র আদৌ ভূলিতে 
পারিতেছেন না বলিলে সবটা বলা হয় না__ আরো 
নিবিড়তা তিনি চান্‌ ... 

দু'দিন বাদেই নন্দ কিরিয়া আসিলে তাহাকে ফিরিতে 
দেখিয়া মণীজ্দ্র পরম বিস্রিত হইয়া গেলেন) বলিলেন__কথা 
ঠিক রেখেছ দেখছি! তোমার দিব্যি, আমি ভেবেছিলাম, 
একটি দিন তুমি চুরি করবেই; তুমি না করো তোমাকে 
দিয়ে করাবে একজন । 

কে তাহাবে, আসিতে দিবে না, দিন চুরি করাইবে, 
তাহা নন্দ বুঝিল এবং একটু হাসিয়া মাসিক আট টাকা 
বেতনদাত৷ আর রোজ ছু*বেলাকার অক্নদাতার মান রাখিল; 
প্রায় অর্থহীনভাবে বলিল -- আজে, না। 

মণীজ্জ বলিলেন--তোমার এই বয়সে আমি এ-বিষয়ে 
খুব হাভেতে” হাংল! ছিলাম। কিন্ত বৌকে আন্লে না যে? 


শঙ 


গপনীর্ নম্কন্কিস্পোক্ 





€ €র্গ ০ 


বলিয়া পরক্ষণেই বলিলেন, সখীর মতো দু'জনে থাকতো 
ভালো-_একা থাকে ত সর্বদাই । 

কথাটা সংস্কত এবং মন্দ গশুনাইল না; নন্দ 
তৎক্ষণাৎ মিথ্য! উক্তি সাজাইয়া তুলিল, বলিল-_-মা বল্লেন, 
বিষ্ট,র পরীক্ষেটা হয়ে যাক তা*পর না-হয় যাঁবে। 

তোমার বোনের বুঝি বিয়ে হয়ে গেছে? বলিয়া 
মণীন্দ্র পুনরায় ভারি লিগ হইয়া উঠিলেন_ নন্দর মেয়েলি 
ছাদের স্বচ্ছ মণ সুগঠিত মুখের দিকে তিনি স্থিরচক্ষে 
তাকাইয়া রহিলে --কি তিনি কল্পনা করিতে লাগিলেন তা? 
তিনিই জানেন 3 বোধ হয় ইহাই যে, নন্দর ভগিনীর স্বাস্থ্য 
নিবিড়, মন প্রফুল্ল, মুখ সহাস্তয এবং রূপৈশ্বর্য অপরিসীম 
হওয়াই সম্ভব ... 

নন্দ বলিল, বোন আমার নেই। 

নন্দর বোনের ঝঞ্ধাট নাই দেখিয়া মণীন্দ্র যেন সঙ্গে সঙ্গে 
বাঁচিয়া গেলেন বলিলেন, যাঁক্‌, বেঁচেছ। ..' কিন্তু আর ছুটি 
শীগগির পাবে না বলে? দিচ্ছি। 

বলিয়া তিনি নন্দকে শাসাইয়া রাঁখিলেন এবং ফিক্‌ 
ফিকৃ করিয়া হাসিতে লাগিলেন- স্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘ বিচ্ছেদের 
ভয় দেখাইয়া তিনি যেন একটা দুর্শ লা আর পবিত্র কৌতুক- 
রসের সৃষ্টি করিয়াছেন । 


মণীন্দ্রের ছেলে রাখাল জড়বুদ্ধি ছেলে-_পাঠ্য বিষয় তার 
মস্ত্িষ্ষে ষেন ঠেলিয়! ঠেলিয়া ঢুকাইতে হয় । 

চাঁকর বলরাঁম আহলাঁদে গোঁছের- কথা বলিবার সময় 
দীত বাহির করিয়া কেবলই গা দোলায়) আর, ঠাকুর 
হরেরাম গোবেচারী, য' বলো তাতেই রাজি । 

ছেলে কেমন পড়ছে, মাস্টার? জিজ্ঞাস! করিয়া ছেলের 
পড়িবার অর্থাৎ নন্দর থাকিবার ঘরে প্রবেশ করিয়া মণীন্দ্ 
চেয়ারে উপবেশন করেন। 

নন্দ বলে, বুঝ তে কিছু দেরী হয়, কিন্তু আগ্রহ আছে। 

-_-তোমারও কিন্তু বুঝতে দেরী হয়, আঁর আগ্রহও 
নাই। . তোমার কোনো অন্থবিধা হচ্ছে না ত? 

_আজে না। 

--ঘরটাকে মার একটু সাজানো দরকার ) ছেলেমানয 
তুমি; কিন্তু বুড়োর ধরণ তোমার; তোমার সথ কিছু 
নেই। তুমি জানো না বোধ হয়, বুড়ো মাঙ্গষ আমি 


(দি ৫) 


০ ০ 


একেবারেই পছন্দ করিনে__বুড়োমান্ষের দিকে চাইলেই 
আমার বুকে যেন ঠাঁওা লাগে -.. 

মনিবের তুষ্টিসম্পাদন করিতে নন্দ একটু হাস্য করিল। 

_ হাঁস্লে তুমি__বোধ হয় ঠা লাগার কথায়। কিন্ত 
দেখ, আমার বাড়ীতে যারা আছে সবাই যুবক । 

নন্দ তা স্বীকার করিল, আজে হ্যা । 

--কেন বলো ত? 

_-তা ত জানিনে। 

_জাঁনো না ।"'*আর, সবাই বিবাহিত ; ঠাঁকুর, চাকর 
আর তুমিও । বিয়ে ক'রে দায়িত্ববোধ বেড়েছে বলে? কাঁজ 
ভালো পাব এ আমার উদ্দেশ্ত নয়। 

কি তাহার উদ্দেশ্য তাহা জানিবার উদ্দেস্টে_-তিনি তা 
প্রকাশ করিবেন এই আশায়-_নন্দ তাহার মুখের দিকে 
চাহিয়! রহিল '.. 

উদ্দেশ্ত প্রকাশ করিবার পূর্বে, উদ্দেস্তকে জোরালো এবং 
হৃদয়গ্রাহী করিবার উদ্দেস্টে মণীজ্র একটু হাঁসিলেন- খুব 
নিপুণ আর উচ্চন্তরের আত্মগরিমার হাসি__ 

বলিলেন-_-ঘরে যুবতী স্ত্রী বার আছে সে সুখী নয় কি? 
ন্থথী। আমি তার স্থুখের অংশ গ্রহণ করি। 

নন্দ হঠাৎ বলিয়া উঠিল £ ৫ মন রে? 

_-মনে মনে ছাড়া আর কেমন ক'রে । একেবারে 
বালক। বলিয়া মণীন্দ্র এমন একটা ভঙ্গী করিয়! উঠিয়া 
গেলেন যেন নন্দর সঙ্গে কথা কহিয়া স্থখ পাওয় 
যাইতেছে না। 

নন্দকিশোঁর ভাবিয়া পাইল নাঃ মনে মনে কেমন করিয়া 
তা সম্ভব হয়! 


পরীক্ষায় রাঁখাল জীবনে এই প্রথম সকল বিষয়ে পাশ 
করায় মণীন্দ্র হরষিত হইয়া নন্দকিশোরের বেতন ছৃ*টাকা 
বাঁড়াইয়! দশ টাক! করিয়া দিলেন-_ 

মুখ উজ্জল করিয়া জানিতে চাহিলেন_ খুশী ত? 

নন্দ খুশী বই কি-_বলিল, আজে হ্যা। 

কিন্ত মণীন্দ্র তখন একটা স্ুচিস্তিত অভিলাধবশত খুব 
থোশমেজাজে আছেন; বলিলেন, তুমি ত খুশী এখানে; 
ওখানে তোমার বউকেও আমি থুশী করতে চাই। তাকে 
একখানা নীলাস্বরি কিনে, দিও। দিও, বুঝলে? 


জ্ঞান্পজন্শ্য 


[ ২৮শ বর্-_ ২য় খণ্ড €ম সংখ্যা 


মণীন্দ্রের এই ব্যাকুল আগ্রহ দেখিয়া নন্দ অবাক্‌ হইয়া 
গেল-_ঘাড় নাঁড়িয়া সম্মতি দিতেও তার মন উঠিল না__-তার 
এই 'অবিচলতা প্রতিবাদের মতো! দেখাইতেছে বুঝিয়াও সে 
অবিচলিতই রহিল ..' 

তার স্ত্রী নীলাগ্রি পরিধান করিলে এই মানুষাটর 
ইচ্ছার সার্থকতা কিসে! নন্দর মনে হইল, লোকটি অদ্কুত 
এবং ইহার আচরণ যেন হ্ৃদ্কম্পজনক-_অন্বচ্ছ একটা 
সন্দেহের মধ্যেই তার মনে হইল, এখানে থাকা নিরাঁপদ 
নয়__বুদ্ধি বিপথে চাঁলিত এবং আত্মা অধোগামী হইতেছে। 
নারীপ্রসঙ্গে এমন নিলজ্জ ছুনিবার লোলুপতা সে কল্পনা 
করিতে পারিল না, এমনই তা৷ অভন্র '. 

কিন্তু মণীন্দ্র তখনও সেখানে বলিয়া মানসচক্ষে 
দেখিতেছেন, নীলাম্বরি পরিহিতা রমণী অভিসারে যাত্রা 
করিয়া জ্যোতশ্নালোকে পথ খু'জিয়! পাইয়াছে। 


কিন্ত নন্দকে শীপ্রই উর্দস্বীসে পলায়ন করিতে হইল 
মণীন্দ্রের অরূপ রসের উপদ্রবে নয়, অন্ত কারণে। 

সেদিন বৈকালে বলরামকে সে ডাকিয়া পাইল না--সে 
বাড়ীতে নাই ; ঠাকুর এখনও আসে নাই; রাখালকে তাঁর 
জনৈক বন্ধু ডাকিয়া লইয়া! কোথায় গেছে ঠিক নাই ... 

বাবু আছেন “ওপরে”-_- 

এদিকে টেপিগ্রাফ-পিওন আসিয়! টেলিগ্রাম লইয়া 
দাড়াইয়! আছে-_তাঁর বিলম্ব করিবার উপায় নাই--আর, 
“কাম সার্প, ছাড়া আর-কোনে সংবাদই তারে আসে নাঁ_ 
স্থতরাং নন্দ সিদ্ধান্ত করিল যে পরিস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ । 

বাবু বলিয়া চীৎকাঁর করাও অসম্ভব-_-লঙ্জা করে) 
অতএব 'এমন সাংঘাতিক জরুরী ব্যাপারে উপরে গিয়া 
সংবাদ দিতে বা সাক্ষাৎ করিতে বাধাটা কি! বাবু তাহাতে 
অসন্ধ্ হইবেন ন| নিশ্চয়ই... 

গবেষণাপূর্বাক এবং কর্তব্যপালনে মান্তষের যে-সাহস 
থাকা দরকার সেই সাহম তাহারও আছে-_ইছাই মনে 
করিয়! নন্দ, বাবু ষে উর্ধলোক রহিয়াছেন সেই উর্ধলোকের 
অর্থাৎ দ্বিতলের অভিমুখে রওন! হইল '.. হাতে টেলিগ্রামের 
লেফাফা এবং রসিদের কাগজথণ্ড '"' 

পিড়ি দিয়! উঠিবার সময় নিষ্পাপ মন, ছুরভিসন্ধির 
অভাব এবং কর্তব্পালনের সৎসাহস সন্বেও তার বুক 


বৈশাখ-_১৩৪৮ | 


সস --্হাস্ব্- -- স্প্রে 


একটু একটু কাপিতে লাগিল যেন অদৃষ্টের উপর 
গ্ুভাগুভের ভার দিয়া অপরিচিত আর সঙ্কটসম্কুল স্থানে 
সে চলিয়াছে-_-এত কষ্ট করিয়া সে সিড়ি ভাঙিতেছে ক্রুর 
নিয়তির বশে__যেমন থাছ্য অদ্বেষণ করিতে করিতে ব্যাং 
গিয়! লাফাইয়া পড়ে সাপের একেবারে মুখে । 

মমতা গুনিলে স্বামীর ভীরুতায় হাসিবে নিশ্চয়ই, 
কিন্তু পরের অন্তঃপুরে প্রবেশ-উদ্ঘম নন্দর পক্ষে এম্নই 
ভয়ঙ্কর। 

সিড়ি দিয়া উঠিয়া সম্মুখেই প্রশস্ত চৌকোণ বারান্দা 
ছু”দিকে; বায়ে এবং সম্মুখে প্যাসেজ- প্রত্যেক ঘরে প্রবেশের 
দরজা এ প্যাসেজে...কিন্তু নন্দ দেখিল, সবগুলি ঘরেরই 
দরজা! বন্ধ। মাত্র একটি ঘরের দরজা খোলা আছে বলিয়া 
তার মনে হইল-_সম্মুখের প্য।সেজ দিয়া অনেকটা অগ্রসর 
হইয়া গেলে দক্ষিণে সেই দরজা পাওয়া! যাইবে-_এবং ঘরের 
ভিতরটা দেখা বাইবে__ 

কিন্তু এ ঘরেই বাবু আছেন কি না কে জানে !... 
পরক্ষণেই তার ত্রাস জন্মিল গৃহিণী যদি হঠাৎ বাহির হইয়া 
তাহাকে দেখিয়৷ চীৎকার করিয়া ওঠেন! তখন চক্ষের 
পলক না ফেলিতেই অবস্থাটা কি দীড়াইবে ! মানুষের 
সে-অবস্থা.ভাবিতেই পার! যায় না... অপরাধ হাল্কা করিয়া 
আনিতে নন্দ ডাকিল, বাবু? 

মণীন্দ্রকে নন্দ কোনো সম্পক ধরিয়া কি কিছু বলিয়াই 
ডাকে ন|-_ভাবিয়া চিত্তিয়া সে বাবু বপিয়া ডাকিল- কিন্ত 
আহ্বান তার ভয়ে সঙ্কোচে এত মুদু ধেঃ আহ্বানে ফলোরয় 
*ইল না__বাবুর সাড়া আসিল না 

কিন্ত আসিল মধুর একটি গন্ধ_দামী সাবানের 
উৎকষ্ট দ্রাণ :.. 

টেলিগ্রাম-পিওন কঠোর স্বরে বলিয়া দিয়াছেঃ বাবুঃ 
গুল্দি করনা ... 

নন্দ আর-দু,পা অগ্রসর হইয়া গেল অনুমান করিল, 
সাবানের স্বাণ আসিতেছে এ খোলা-দরজ| দিয়া) বাবু 
এর ঘরে বসিয়াই অভিজাত সাবান-নহযোগে বৈকালিক 
ক্ষৌরকাধ্য. সমাঁধা করিতেছেন... 

তারপর সে আরো বুক বাঁধিল ইহাই মনে করিয়া যে, 
যদি দুর্ভাগ্যবশত গৃহিণীর সম্মূথে সে পড়িয়া যায় তবে 
সে কি কাতরম্বরে বলিবে, মা, এই টেলিগ্রাম এসেছে-- 





গণপনীক্স সম্ষক্কিশ্শোন্ত 





৪৫৫ 


অত্যন্ত জরুরী বলেই আমি নিয়ে এসেছি__নীচেয় আর 
কেউ নেই। আমাকে ক্ষমা করুন। 

্বয়ং বাবুর হাতেই টেলিগ্রাম পৌছাইয়! দেওয়া সন্থন্ধে 
প্রায়-নিঃসন্দেহ হইয়া নন্দ খোলা-দরজা লক্ষ্য করিয়া অগ্রসর 
হইল... এবং দরজার সম্মুখে পৌঁছিয়াই পরমুহূর্তে হাতের 
কাগজ ফেলিয়! দিয়! সে উর্দশ্বাসে পলায়ন করিল '.' হুশ 
রহিল না, এখন সে কোথায়, আলো না অন্ধকার, সিঁড়িতে 
পা দিয়া, না গড়াইয়া নামিতেছে, আর কোথায় সে 
চলিয়াছে। এক মুহূর্তে ফলগর্ভ এত বড় দৈবযোগ ইতিহাসে 
আর ঘটে নাই । 

কিন্ত আসিল সে ঠিক পথেই--পৌছিল সে নিজের ঘরেই 
এবং ধপ, করিয়া বসিয়া পড়িল নিজের চেয়ারটিতেই-_ 

তখন ঘামে তার সর্বাঙ্গ ভিজিয়৷ গেছে--মাথার ভিতর 
কেমন করিতেছে_-সেই কেমন-করাটা অসাড়তা না যন্ত্রণা 
না ঘৃর্ণন__তাহ! উপলব্ধ হইতেছে না এবং মস্তিষ্কের সেই 
অবর্ণনীয় অবস্থার দরুণ তার চিন্তাশক্তি এবং নিজেকে 
হৃদয়ঙ্গম করিবার সদ্থিং লোপ পাইয়া! গেছে... 

টেলিগ্রাম-পিওনের প্রশ্ন তার কানে গেল না । 

তারপর জন্মিল দুঃসহ প্রবল ত্রাস-_ 

মা'র খাইয়া বিদায় লইতে হইবে মারিবে জুতা 
না বেত! 

নন্দর চক্ষু দেয়ালের দিকে নিম্পলক হইয়! রহিল ... 
ক্রোধে আগুন হইয়া তার শাস্তিদাতার ক্ষিপ্ত অবতরণের 
বিলম্ব আর কত! 

যাহা দেখিবার নয় নন্দকিশোর দৈবাৎ তাহাই 
দেখিয়াছে সন্দেহ নাই-মূঢ়তার বশে ক্ষমার অযোগ্য 
অপরাধ সে করিয়াছে__অসাধুতার নয়, মুঢ়তার শাস্তি 
তাহাকে প|ইতেই হইবে '"' 

বাবু এ ঘরেই আছেন, কেবল উত্কুষ্ট সাবানের গন্ধ 
পাইয়া তাহ! অনুমান কর! বুদ্ধির চূড়ান্ত জড়তা, অথবা 
যে-নিয়তির বশে থাগ্যান্বেষণে নির্গত ব্যাং লাফাইতে 
লাফাইতে গিয়। পড়ে সাঁপের একেবারে মুখে সেই নিপ্নতির 
ক্রীড়া ছাড়া আর কি! 

সে জানিত ন৷ যে '"' 

কিন্তু অপরাধ চিরকালই অপরাধ, আর ন'-জানিয়া 
অপরাঁধ করিলে সর্বদাই তার ক্ষমা আছে এবং ফলভোগ 








কচ ৫৯ ৬৩ 





করিতে হয় না ' এমনও নয়, যথা আগুনে আঙ্ল পড়িলে 
আঙ্ল পুড়িবেই, আগুনে আঙ্ল দৈবাৎই পড়,ক' কি 
জানিয়া শুনিয়াই দাঁও। 

ছি ছি-_ 

এ শব্ধ দু'টি নন্দকিশোর, আতঙ্কে অভিভূত হইয়1ও 
পুনঃ পুনঃ আবৃত্তি করিতে লাগিল ... 

সব্বনেশে সেই টেলি গ্রামকে মনে হইয়াছিল ছুঃসংবার্দের 


বাহক, কারো শেষ মুহুর্তের ডাক; সে-ই করিল 
এই সর্বনাশ! আর, মাটি করিয়াছে সাবানের 
সেই গন্ধ-_ 


সাবানের গন্ধের অঙ্গসরণ করিয়াই ত সে দরজায় গিয়া 
দাড়াইয়াছিল__মনে করিয়াছিল, বাবু থেউরি করিতেছেন; 
কিন্ত দরজায় গিপা দাড়াইতেই দেখা গেল, অন্ত লোক-_ 
“একেবারে বাচ্ছে তাহ ব্যাপার”। 

প্রভৃপত্বীঃ তরুণী রমণী, মান একখানি তোয়ালে কটি- 
তট হইতে বিলম্থিত করিয়া দিয়! দাঁড়াইয়া আছেন__দীখ 
কেশদামে পৃষ্টদেশ আবৃত_.ধোত চুলে চিরশী লাগাইয়৷ 
তিনি হাত তুলিয়া চিরুণী টানিয়া আনিতেছেন পিছনের 
চুলের ভিতর-_পাড়াইয়া আছেন দরজার দিকে পিছন্‌ 
ফিরিয়া এবং স্ুবুহৎ দর্পণের পটভূমিকায় তার সর্বাঙ্গের 
ছায়। প্রতিবিশ্বিত হইয়াছে :.. 

এক-পনকে নন্দ তাহা দেখিল_ না-দেখা অসম্ভব) 
নন্দ আরো! দেখিল যে, তাহারও প্রতিবিশ্ব পড়িল সেই 
পাপ দর্পণেই, গ্রভুপত্বীর বহু পশ্চাতে '.. 

আর সে দাড়ায় নাই; আর কিছু সে দেখে নাহ; 
তারপর কিছু ঘটিল কি না তাহা সেজানে না; কিন্তু 
পরিণামে কি ঘটিতে পারে অর্থাৎ ফলভোগ কিরূপ হইবে, 
তাহা সে জানে". 

সে পলাইবে না কি! থাক্‌ বাক্স বিছানা মাহিনা__ 
মানরক্ষা! সর্বাগ্রে 

কিন্তু মানরক্ষার্থে পলায়ন করিবার পূর্বেই অর্থাৎ 
মিনিট পাচ-ছয় পরেই নণীন্দ্রের পদশব আসিল পিড়ি 
হুইতে-_-অপমানিত প্রভু মৃত্যু বিভীষিকার মতে। অনিবাধ্য 
রুদ্র মুন্তিতে অবতরণ করিতেছেন": নন্দর মনে হইল, তিনি 
ষেন চীৎকার করিতেছেন; “কই সে ব্যাটা ?”.* নন্দ 
[ছট্কাইয়া উঠিয়া দাঁড়াইল-_.কোণের দিকে সরিয়া 


তু 


| ২৮শ ব্-_২য় খণ্ডন সংখা! 





গেল-- তখনই সরিয়া আসিল বুহদাকার টেলিগ্রাম- 
পিওনের পশ্চাতে ... 

মণীন্দ্র আসিয়া দরজায় দঈলাড়াইলেন__চৌকাঠ ডিঙাইয়া 
ঘরে প্রবেশ করিলেন_-নন্দকিশোরের কম্পমান্‌ গ্রাণ 
ওষ্ঠাগত হইল - ক্রোধে যে ব্যক্তি একেবারে নিঃশব্দ হয়! 
যায় সে-ই হয় আরো ক্ষমাহীন__ 

কিন্তু মণীন্ত্র তারস্বরে তাহাকে খুঁজিলেন না; সহজ 
লোক যেমন সহজভাবে কথা কয় তেম্নি সহজভাবে তিনি 
বলিলেন--এই নাও । একটু দেরী হ'ল। বলিয়া পিওনের 
হাতে রসিদ দিলেন। 

পিওন চলিয়া গেল__ 

তৎক্ষণাৎ দেখা দিল ভারি একটা মুশকিল-_-নন্দর 
বুক ভাঁডিযা আসিল, দেখিল, তাহার আর ওর 
মাঝখানে অন্তরাল আর নাই... 

নন" ঢাক গিলিল-__ 

মণীন্দ্র কলকঠে বলিয়া উঠিলেন, আরে, তুমি ছিলে 
কোথায়? টেলিগ্রাম বুঝি তুমি দিয়ে এসেছ ওপরে ! 

স্বীকার করিতে গিয়া নন্দর শু্ষ ক এবং শুষ জিহ্বা 
আরে। আড় হইয়া! গেল--ঠোটের ফাক দিয়া শব্দের স্তানে 
থানিক বাধু বাহির হইল কেবল। 

মণীন্দ্র বলিলেন, রাখাল কি বলরাম ছিল না এখানে ? 

নন্দ আগে দিল একটু গলা-খাকারি--তারপর উহাতে 
বাকৃশক্তি একটু কাঁধ্যকরী হল, সে বলিলঃ ন"". 

সঙ্গে সঙ্গে সি'ড়িতে হিল্-উচু জুতার থটুথট্‌ ভ্রত শব্দ 
উঠিল- গৃহিণী আসিতেছেন '"" 

তাহার সম্মুখেই তাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ স্বামীর 
কাছে করিবেন এক প্রতিকার চাঁছিবেন এমন তেজে আর 
এমন জুদ্ধ হইয়া যে”. 

কিন্তু কিছুই ঘটিল না-_ 

স্বামীর জন্ত তিনি দীড়াইলেন না পধ্যস্ত--একাহ 
অগ্রসর হইয়। গেলেন রোজ যেমন যান্‌্_ মণীন্দ্র তার অন্গগমন 
করিলেন ; বলিয়! গেলেন, তুমি বুঝি বেড়াও না মাস্টার ? 

নন্দকিশোর তখন গিয়া চেয়ারে বসিল-- একেবারে 
গা ছাড়িয়া দিয়া অবিলম্েহ একটি নিঃশ্বাস মুক্ত করিয়া 
দিল এবং সেই নিঃশ্বাসের সঙ্গে তার জালা যন্ত্রণা উৎকণ্ঠা 
ভয় প্রভৃতি সমূদয় গ্লানি বহিষ্কান্ত হইয়া গেল, 'ওঝার 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


ফুৎকারে বিষের মতো. তারপর ক্রমে সে খুশী হইয়া 
উঠিল; এম্নি ক্ষমাই ত মাছষকে করা উচিত; 
অজানত দৈবাৎ যে-অপরাঁধ ঘটিয়! যাঁয় যথার্থ ভদ্রলোক 
নিজেরই মনে তার উপযুক্ত শাস্তি ভোগ করে__বাহিরের 
শান্তি কখনে! অতিরিক্ত কখনো অত্যাচার । 

যে-ব্যাপার সংক্ষো1ভে তুমুল এবং মারাত্মকভাবে ক্ষতি- 
জনক হইয়! উঠিতে পারিত তা ক্ষমাময় উদার নিলিপ্ততার 
ভিতর দিয়া নিঃশব্দে শেষ হইয়া গেছে। অন্য দিক দিষা 
তাহার আর গুরুত্ব রহিল না-_কেবল রহিল নিষ্কৃতি দানের 
দরুণ ওদের প্রতি অপার কৃতজ্ঞতা, আর অতুল আনন্দ '.' 


পরদিন ছিপ্রহরে মণীল্র আহারান্তে তার কাজে বাহির 
হহয়৷ গেলেন । 

নন্দকিশোর খাইতে বসিযাছে-_ 

ঠাকুর কুন্তিত্ঙাবে জিজ্ঞাসা করিল-_ডালটা কেমন 
ভয়েছে, বাবু? 

নন্দ বলিল-_ভালো হয়েছে। 

_ঝোলটা? 

_-ঝোলটাঁও ভালে। হয়েছে। 

_-কিন্তু বাবু ত কিছু বল্লেন না! 

মণীন্ত্র রোজ তারিফ বা নিন্দা করেন। 

নন্দ তাহাকে সাস্বনা দিল; বলিল-_ভুল গেছেন 
হয় ত। বলিয়াই নন্দ অনুভব করিল, ঘরের ভিতর মান্চষের 
ছাঁয়া পড়িল-_ছায়া ভৌতিক নয়, কারণ পরক্ষণেই কণ্চম্বর 
শুন! গেল £ ঠাকুর, বলরাম কোথায়? 

স্টনিয়াই নন্দকিশোর অধোমুখ শশব্স্ত ত্রপ্ত এবং 
মনে মনে পলায়নোগ্ত হইয়া উঠিল-মুখে ভাতের গ্রাস 
তোলার চাঁঞধ্ল্য বন্ধ হইযা গেল-_-এবং দরজার আসিয়া 
দাড়াইলেন গৃহিণী:.. 

ঠাকুর বলিল--তাকে আমি একটু বাজারে পাঠিয়েছি 
মাঃ এক পয়সার পান আন্তে। 

ঠাকুর বড্ড পান খায় এবং একটি করিয়া পয়সা সে 
রোজ পান-থরচা পায়। 

কিন্তু গৃহিণী তখন মাস্টারবাঁবুকে পক্ষ্য করিতেছেন__ 
বলিলেন-_ ঠাকুর এ-বাবুকে গার মাছ দিয়েছ যে? 

ঠাকুর হাত কচ্লাইতে লাগিল-_ 


গঞশন্ীক্স অম্ষক্কিস্পোল্র 


৫৫ এই 


গৃহিণী ঠাকুরকে আদেশ করিলেন, পেটির মাছ দেবে । '*" 
থান আপনি; খাওয়া বন্ধ করলেন কেন? 

ঠাকুরকে যেমন তাহাকেও তেম্নি আদেশই তিনি 
করিলেন; নন্দকিশোরের মনে হইল, আদেশ মান্ঠ 
করিতে সে বাধ্য। লজ্জায় চোখ মুখ লাল করিয়া আর 
ছোট ছোট গ্রাস মুখে প্রিয়া নন্দ আদেশ মান্ত 
করিতে লাগিল. এ 

গৃহ্ণি পুনরায় আদেশ করিলেন-_ঠাকুর, দু'পয়সার 
মিছরি নিয়ে এস ত শীগগির। আমি এর খাওয়ার 
কাছে দীড়াচ্ছি। 

নন্দকিশোবের মনে হইল, গৃহকএীর এ-আচরণ খুবই 
অন্কম্পাময়, খুবই শিষ্ট, খুবই দায়িত্ববোধের পরিচায়ক । 

ঠাকুর পয়সা লইয়া মিছরি আনিতে গেল-_ 

একা পড়িয়াই নন্দকিশোরের বুক আবার বেজায় 
টিপ টিপ করিতে লাগিল-_গৃহকত্রীর অনুকম্পা, শিষ্টতা 
এবং দায়িত্ববোধ যতই ন্নিঞ্চ আর শান্তিদায়ক হউক, স্গিগ্চতা 
আর শান্তর সেই আবহাওয়৷ টিকিতে পারিল না-_-অপরাধের 
স্বতি সজীব আর কন্ত্রীর উপস্থিতি সেই মুহুর্তেই নিদাক্ষণ 
উদ্বেগজনক হুইয়। উঠিল '*' 

সে এতক্ষণে যেন তার একট ভুল বুঝিতে পারিল ঃ 
নিজেরই হাতে ধথেচ্ছ আর অবিসম্বাদিত শাসনক্ষমতা 
থাকিতে ইনি ঘটনার যথাষথ এবং আমনুপূর্ধিক বর্ণনা 
দিয়া স্বামীর কাছে অকারণে লজ্জা পাইতে যাইবেন কেন! 
পাপাকে দণ্ড দিবার হক তার আছে-_তাই দিতে তিনি 
আসিয়াছেন ... 

কিন্তু সব তার আগাগোড়া ভুয়ো, ভুল, আর ভূসোর 
মত কালো আর হাল্কা । নন্দ ধাহাকে চণ্ডিকা, শাসনকত্রী 
আর দগুদাত্রী মনে করিয়৷ ভয়ে লজ্জায় ক্ষোভে এতটুকু হইয়া 
গেছে আর অনর্গল ঘামিতেছে, তিনি তখন তাঁর অবনত 
মুখের দিকে তরল চক্ষে চাহিয় মুছু মুদু ঠাসিতেছেন ... 

হাসিটুকু নন্দ দেখিতে পাইল না, কিন্তু স্বর শুনিল $ 
দণুমুণ্ডের কণ্রী বলিলেন_-কাল হঠাৎ অমন ক'রে এসে 
দাড়ানো আপনার উচিত হয়নি। 

খুঁজিলে ভৎসনার বিষ এঁ কথ্ধণর ভিতর পাওয়া যাইতে 
পারে। 

ক্ষমা! ভিক্ষার নুযোগ পাইয়া! নন্দর কথ! ফুটিল, বলিল, 


০ 


€ ৬ 


আজে সেজন্তে আমি অপরাধী আর অন্ুৃতপ্ত-_ আমাকে 
ক্ষমা করুন । 

প্রার্থনাবাক্য উচ্চারণ করিয়াও নন্দ তীব্রতম তিরস্কারের 
প্রতীক্ষা করিতে লাগিল... কিন্তু তার কাঁতরতাঁকে অবিশ্বাস 
কেহ করিতে পারিবে না। 

_আমি তখন কেবল গা ধুয়ে এসে দীড়িয়েছি, হঠাৎ 
আয়নার ভিতর আপনাকে দেখলাম_-আপনার ছায়া 
পড়ল? ৪৬: 

নন্দ তা জানে-_ 

উনি বলিলেন, কিন্তু অমন ক'রে ছুটে পালিয়ে গেলেন 
ভয়ে, লজ্জায় না ঘ্বণায়? 

ইহাঁর কি উত্তর আছে! নন্দ কথ! কহিল না, উঠিবার 
উপক্রম করিল '". 

. -্ভয় পাবার কি ছিল! ঘ্বণাহ বা করবেন কেন! 
লজ্জা পেয়েছিলেন বুঝি ! ও কি, খাওয়া শেষ না করেই 
উঠছেন যে? আমি তবে যাই এখান থেকে :.. 

চলিয়া গেলেন না-_বোঁধ হয় মিছরি না লইয়া তিনি 
যাইবেন না । নন্দ উঠিল না, থাইতে লাগিল ... 

- আপনার বিয়ে হয়েছে? 

নন্দ ধীরে ধীরে মাথা কা'ত করিয়া জীনাইল, তার 
বিবাহ হইয়াছে । 

তবে ত বোঝেনই সব। কিন্ত আর কখনো যদি ওপরে 
আসেন তবে খবর দিয়ে আস্বেন ? 

উপরে আসিতে নিষেধ তিনি করিলেন না । 

নন্দ বলিল, আজ্ঞে । 

তাই করবেন। 

বলিয়া তিনি চুপ করিয়া রহ্নিলেন _ 

আদেশ গ্রহণ করিতে মনে মনে মাথা পাতিয়৷ নন্দ 
হঠাৎ মুখ তুলিয়া চাঁহিল ; সম্ুখবন্তিনীর মুখের উপর তার 
দৃষ্টি পড়িল_ তাহাকে না দেখিয়া সে পারিল না এবং 
দেখিল যে, রূপ অজম্ব-_-এত যে আর এমন বিভ্রম ঘটানো 


আর একটা কাজ করবেন, 


ভাব্রভন্রহ্ 


[ ২৮শ বধ-_২য় খণ্--ংম সংখ্যা 


তাঁর উজ্জলতা যে, দৃষ্টি রূপ দেখিতে দেখিতে রূপ দেখিতে 
ভুলিয়। গিয়! রূপের দিকেই নিনিমেষ হইয়| থাকিতে চায়... 

তবু সে তাড়াতাড়ি চোঁথ নামাইল-_ 

কত্রী বলিলেন--আ'মার হুকুম মীনবেন ত? 

নন্দ যেমন করিয়া বিবাহের কথা স্বীকার করিয়াছিল, 
ভয়ে ভয়ে মাথা কাত করিয়া হুকুম মাঁনিতেও সে তেমনি 
রাজি হইল-_ 

কিন্তু সেটা যে এমন হাসির কথা হইবে তা কে জানিত! 
কর্তী খিল্খিল্‌ করিয়া হাসিয়! উঠিলেন; বলিলেন__ 
পালাবেন না, আমাকে যেমন দেখেছেন তেম্নি দেখা আমার 
ভালে! লাগে--আপনাঁকে আরো! ... আপনি নির্বোধ, তা-ই 
দিশে পান্‌ না- পালান্‌। 

বলিযা তিনি থামিলেন । 

নন্দ সাষ্টাঙ্গে মাটির সঙ্গে মিশাইয়া গিয়াও সর্বাস্তঃকরণ 
দিয়া অন্তভব করিতে লাগিল যে, তিনি তাহাকে নিরীক্ষণ 
করিতেছেন, 'আর হািতেছেন .. 

পরক্ষণেন তার কাপড়ের থস্থস্‌ শব্ধ উঠিল-_তিনি 
প্রস্থান করিলেন। 

তারপর নন্দ কি কৰিল, কেমন করিয়া করিল; উঠিল, 
না বসিয়াই রহিল; খাঁওয়া শেষ করিল কি না: কোথা 
দিয়া সময় যাইতেছে; কেমন করিয়া আর কোন্‌ পথে 
আসিয়া সে তার তন্তপোষে আছ.ড়াইয়া পড়িল, তাহা সে 
জানে না :.. 

খানিক অসাড় অবস্থায় পড়িয়া থাকিবার পর সময়ের 
শুশষায় ক্রমে তাঁর চোখে দৃষ্টি, বুকে নিঃশ্বাস, মস্তিষ্কে চিন্তার 
চৈতন্য এবং তাঁর হাত পা! নাঁড়িবার সামর্থ্য ফিরিল :. 

নন্দ যেন বহুদিন পরে রোঁগশয্যা ছাঁড়িয়! উঠিয়া বসিল। 

সেইদিনই বাক্স বিছানা আর কুড়ি দিনের বেতন 
ফেলিয়া সে চলিয়া আসিল-_ 

মাকে বলিল, তাড়িয়ে দিলে । 

মমতাকে বলিল, পালিয়ে এলাম। বলিয়া তাঁর মুখ- 
চম্ন করিল। 





গোবিন্দদাসে শ্্রীরাধার অভিসার 
ত্ীশভব্রত রায়গৌধুরী 


গোবিনদাসের “রাধা” গাইলেন, 


--“এ নখি, বিরহ মরণ নিরদন্দ। 
এঁছনে মিলই যব গোকুলচন্দ ॥”-_ 


শ্যামের সাথে এমনি করে' নিজেকে-হারিয়ে-ফেল|। মিলনে যদি 
মিলিত হওয়| যায়, তবে জীবন-সৃতুযু, বিরহ-মিলন সব যে গিন্বুলীন! 
তটিনীর মত এক হয়ে যাবে-_জীবনের সাথে মৃত্যুর-_মিলনের সাথে 
বিরহের রইবে না কোন দ্বন্ব, কোন বিরোধিতা! সব কিছু সেখানে 
বিলীন হয়ে গড়ে" তুলবে বিচ্ছেদ-বিধুরতার অতীঠ এক মহামিলন। 
মে মিলন চিরস্তন__বিচ্ছেদবিহীন-_সৃত্ঠাঞ্জয়ী । 
যে প্রেমে এই মিলন--সেই প্রেমের মাধনাই রাধার জীবনের লক্ষা 
--তার প্রাণের আরধনা। কিন্তু কেমন করে' সে এই সাধনাকে 
নফল করে? তুলবে? এই সাধনার পথ যে কভু গহন জটিল, 
“কতু পিচ্ছল খন পন্কিল, 
কু সন্কট ছায়।-শঙ্কিল, 
বঙ্কিম দুরগম |" 
ই! রাধ! ত| জানে--তাই-_ 
_"দূতর পঞ্- গমন ধনী সাধয়ে 
মন্দিরে যামিনী জাগি ॥- 
তাই নব-অনুরাগিণী রাধার সাধন| স্ুক হয়েছে তারই মন্দির মাঝে ! 
“বিঘিনি বিথারল বাটে” তাকে চলতে হবে বিনিদ্্র রজনী যাপন করে? । 
কণ্টক-শংকিল বারি-পংকিল পথে তার অভিসার ।-_-তারই জন্যে রাধা 
গোপন সাধনায় মগ্ন হয়েছে--আপন মন্দিরে-_ 


“কণ্টক গাড়ি" কমলসম পদতল 
মণ্্রীর চীরহি ঝাপি। 
গাগরি-বারি ঢারি' করি' পিছল 


ি ০ 


চলতহি অঙ্গুলি চাপি 


এমনি করে' মে কণ্টকপথে চলবর সাধন] করছে নীরবে--মপ্লীর- 
গুঞন, চরণধ্বনি সব সন্তর্পণে শত করে'। যে অভিসারের উদ্দেশে সে 
যাত্রা করবে--তাতে কি কোন বাহিক আড়ম্বর, কোন কোলাহল 
থাকতে পারে !...-.সেখানে যে সব কিছুকে স্তন হ'তে হবে--নিফম্প- 
প্রদীপশিখ! হয়ে চিত্ত শুধু অভীগ্দিতের তরে ত্বলবে! সমাহিত 
সাধনার নিবিড় তন্ময়তার মাঝে মিলিয়ে যাবে বাহিরের নকল 
কলগুঞ্জরণ! সাধক প্রেমিক যথন অন্তর-দেবতার অস্ত্বেষণে জাকুল 
হয়ে ওঠে, তখন তার কাছে বহিরাড়ঘর হয় শুধুই বিদ্ব। সেতার 


প্রেমের পুজার অর্থয রচনা করে তারে হৃদয়ের নিভৃত মন্দিরে--অতি 
সংগোপনে। বাহিরের দিক থেকে সে নিজেকে করে" তোলে রিভ্ত-- 
কিন্ত অন্তর তার ভরে" ওঠে উশ্বর্ষেয । রাধার সাধনায় তাই নাই 
কোন আড়ম্বর, নাই কোন অনুষ্ঠান।--“অন্তরে ্বর্্য তার অন্তরে 
অমৃত ।”- নিন্দা-অপবাদের হয় তার নেই--ঘর মংসারের বাধন তাকে 
নীধতে পারে নি-দ্বিধা দ্বন্দ লব তার গেছে ভেঙ্গে | 


এত দিনে ভাঙ্গল ধন্দ 
কানু-নুরাগ- তূজঙ্গে গরাসল 
কুল-দাদুরি মতি-মন্দ ।”_- 


মে জানে কি তার সাধন! । সে তার হৃগয়-দেবতাকে প্রতিষ্ঠিত 
করেছে তার হৃদয়-মন্দিরে--সেখানে দে চিরজাগ্রত করে' রেখেছে তার 
প্রেম-প্রহরীকে-- 


-হদয়-মন্দিরে মোর কানু ঘুমাওল 
প্রেম-প্রহরী রছ জাগি” !__ 


নিন্দা-তিযন্কার, গুরুজন-গঞ্জনা? ' কীই ঝা বিক্ষোভ তার! আনবে, 
আর--কেমন করেই বা আনবে? সে সব কথাযে তারকানেইযায় 
না-সে সব কথ! শুনলে সে যে “ঝাপি রহত দুহু কান।” গুরুজন 
বচনে রাধা “বধির সম মানই”"-আর, “পরিজন বচনে মুগধি সম 
হাই ।” এই নিন্দা-উপহাসের ভীতিই না চলার পথের হুমুখে বিস্তার 
করে' দেয় মসীমাখ! কালে! ছায়া-অন্তর্জগৎকে ঢেকে দেয় সংশয়ের 
তমসায় ! কিন্তু এ অন্ধকার তারই কাছে-_বাহিরের আধি যে রেখেছে 
খুলে__বাহিরের পানে যে রয়েছে চেয়ে। তাই বহিমু্ধী চক্ষু ছু'টিকে 
বন্ধ করে' অন্তর-তরাখির অনিমেষ দৃষ্টি মেলে রাধা চলেছে সাধনার পথে 
“তিমির পয়ানক আশে”, ধেন অন্ধকার হি ন! করতে পারে তার চলার 
পথে কোন বাধা। এই তে অভিপার! রাধা তা৷ জানে--তাই, 
“কর যুগে নয়ন” আবরিত করে' সেই পথে চলবার সাধনাই নে করছে। 
তার শ্রবণকে সে যেমন করে' বধির করেছে--নয়নকে সে তেমনি করেই 
আবরিত করবে--'বাছির-দুয়ারে' সে এমনি করেই 'কপ|ট' দেবে! 
কিন্তু পথ যে বড়ই ছুস্তর--"চলইতে শঙ্কিল পক্ষিল বাট 1”- আশাকে 
আহত করে”, সাধনার প্রত্যয়কে ধুলিসাৎ করে', অন্তরে নৈরাগ্তের 
অন্ধকার সৃষ্টি করার মত প্রশ্্যবায় যে পথে প্রচুর! এ পথের যাত্রী 
যারা__সংদার কেবলই চায় তাদের অন্তর-জগতে প্রবেশ করতে আপনার 
মুখে-মধুবিষে-ভরা ভোগ সামগ্রী নিয়ে, ঠিক যেমন করে' সাপ চায় 
অন্ধকারে তার বিষদস্তে বিভ্রান্ত পধচারীকে অতফ্িতে আঘাত করতে। 


তাই সে-- ৃ 


৫৬৩ 


৫ ৬০ 


স্অশিকস্কগ-পণ ফণিমুখ-বন্ধান 
শিখই ভুজগ-গুরু পাশে ।-_ 
সাংসারিক বৈভব হাসিমুখে উৎসর্জন করে' রাধা তার অন্তরতমের 
নিকট হতে যে চিরপ্তন বাণীর সন্ধান পাবে--সেই হবে তার পরম মন্ত্র 
তারই বলে সে রুদ্ধ কয়ে' দেবে সংসারের দংশনোস্ভত বিষমুখ ! 
এত উদ্ভোগ--এত প্রচেষ্টা! রাধা কি তবে এ অগ্ডিসারে বাত্রা 
করষেই? তবে যে অনেক ছুঃথ অনেক দৈম্য তাকে সইতে হবে! 
নিজের দেহ-মন্গিরের রুদ্ধ দুয়ার খুলে তাকে যাত্রা করতে হবে দেহকে 
দূয়ে সরিয়ে! একে তো পথ অতি 'শঙ্কিল, পক্ষিল'--আবার “ঠহি 
অতি দূরতর বাদর দোল!” এরা সবাই ষে তাকে ক্ষত বিক্ষত করে' 
তুলবে! কীইবা আছে তার যা তাকে রক্ষা করবে! কীই বাতার 
জশ্রয়-_কীই বা তার সহায়! শুধু আছে তার একখানি 'নীল-নিচোল', 
কিন্তু “বারি কি বারই নীল-নিচোল?” বাহিরের বাধাকে দে নাহয় 
অতিক্রম করলো--দেহের ব্যথাকে সে না হয় উপেক্ষা করলো]__কিন্তু 
“হরি রহ মানস-হ্ৃরধুনি-পার”__হুরি রয়েছে যে মানস-গঙ্গার পরপারে ! 
এই মনকে পার হতে হবে গোকুলচন্দের সাথে মিলিত হতে । কামনা 
বাসনা--অহংএর যারা অন্ুচর--তার| সবাই উতল হয়ে মনকে করে' 
তুলতে চায় ঝড়ের রাত্রির বন্ত্রনাদবিক্ষুন্ধ উত্তাল তরংগসংকুল নদীর মত। 
এরই মধ্য দিয়ে "হুন্বরি, কৈছে করবি অভিনার 1” এই সদা-বিক্ষুব 
মানস-গঙ্গাকে জয় করতে হবে--তাকে তরণ করে' যেতে হবে শ্ঠামের 
ষহ্থামিলন ক্ষেত্রে। হুমুখে এই বিপদসংকুল তটিনী--তার ওপর আবার 
“খন ঘন ঝন ঝন বজরনিপাত |”... 
স্ইথে যব, সুন্দরি, তেজবি গেহ। 
প্রেমক লাগি' উপেখবি দেহ ॥-- 
কিন্তু এই সতর্কতার বাণী কার তরে? রাধ। তো কোন বাধাই 
মানবে না, 
নব অন্রাগিণী রাধা 
কছু নাহি মানয়ে বাধা।”_ 
নতমসাচ্ছন় ঘোর রজনী? ন|--আধারের ভয় তার নেই--রাধার প্রাণে 
ঘে প্রেমের আলো ত্বলছে তারি ছটায় কেটে যাবে সকল আধার-_ 
-যামিনি ঘন আধিয়ার 
মনমথ ছিয়ে উজিয়ার 1-_ 
বঞ্চা-বিলোড়িত মানস-তটিনী 1--ন! ও ভয়ও সে করে না, 
--নিজ-মরিধাদ- সিদ্ধু-সঞ্ে পওরনসু 
তাছে কি তটিনী অগাধ! ?-- 
আত্ম-অভিসানরপ দিন্ধুকে . সে তরপ করে' এসেছে-_'মানস-সবরধুনি' 
তার কাছে আর হুর্লংঘা নয়! কামনা-বাসনার বাধা? মে তো জতি 
তুচ্ছ! কাধ! এসেছে, তার “অহংস্এর লৌহপিঞ্জয় হতে মুক্ত হয়ে 
“আধিস্বের গণ্তী অতিক্রম করে'। এখন কি জার কাদনা-বাসনার 


স্ডাব্রতন্বঞ্র 


[ ২৮শ বর্ষ-_-২য় খণ্ড--€ম সংখ্যা 


মোহ কিংব| দেছের ছুংখ তার প্রেমাম্পদের সাথে মিলনের এ শুন 
অতিসারে কোন বিদ্ধ ঘটাতে পারে ? প্রেমের দেবতার “কোটি কুহছম-শর' 
যাকে অবিরত বিদ্ধ করছে--তার কাছে বৃষ্টিধার! | প্রেমের অগ্নি যার 
অন্তরকে প্রতিনিরত দগ্ধ করছে--তার কাছে বস্ত্রের অনল! না, না, 
সে ভয় তার আর নেই! দেহকে খিরে যে সব কামনা বাসনা আশা 
আকাংক্ষা বিরাজ করে, তাদের সবাইকে দে পশ্চাতে ফেলে এসেছে-_ 
তাদের উদ্দীপক 'মহং'কে নে পরিপূর্ণরূপে রোধ করেছে ।-_দেহের বাধা 
তার কাছে কোন বাধাই নয়। সে যাবেই--সে যাবে তারই কাছে যার 
তরে তার অন্তর-প্রদীপথানি সদ! উধ্বশিখ! হয়ে জলছে--বার তরে 
মানসগঙ্গার সংকই-আবর্ত মাঝে সে ছুট চলেছে নিভাঁক পরাণে ।-- 
সে যাবে তারই কাছে “যছু পদতলে নিঙ্গ জীবন সৌপপু |” মানবে 
নাদেকোনমান।। নদ নদীপর্বত সিষ্ধুর কলরোল অশনিদম্পাত সব 
তুচ্ছ করে'_-দেহের গর্জন আমিত্বের ক্রুকুটি সব উপেক্ষা করে" সে যাবে 
তার প্রেমাম্পদের কাছে। ভয়? ভয় কোথায়! 


--ভয় বাধ! সব অতয় মুরতি ধরি' 
পন্থ দেখাওব মোর ।-- 


_বিখিনি বিধারল বাট 
প্রেমক-আদুধে কাট।-_ 


প্রেমের আঘুধ তার পথের বাধা নব কাটিয়ে দিয়ে এমনি করে' তাকে 
সর্বজয়ী করে পৌঁছে দেবে গ্ামের মমীপে। পথের সম্বল ?--পথের 
সম্বল তার এর নীগ নিচোল । শু নীল নিচাল? হ্যা-কিস্ত সেকি 
সামান্ত ! লোকে হয় তো ভাবে তাই। হয়তে। ভাবে--দালুষের 
বিশ্বাসের মতই সে চঞ্চল--হুঃধের দমক! হাওয়ায় সে উড়ে যেতে 
চাইবেই। সানুষের বিশ্বাসটুকু যে চঞ্চল অঞ্চলের মত সদাই দোলারষান। 
দুর্দেবের অভিঘাতে অতিস্থির বিশ্বাসও তে! উদ্বেজিত হয়ে ওঠে। কিন্ত 
রাধার বিশ্বাস !--সে যে তার প্র নীল নিচোলখানির মতই তার প্রাণের 
পরতে পরতে জড়িয়ে রয়েছে একেবারে স্থির ধব অচঞ্চল হয়ে! ঝড় 
ধঞ্ধ। আঘুত অভিঘ।ত কিছুই পারবে না তাকে দোলাতে । ছুঃখ নিন্দা 
নিরুৎসাহ পারবে না তাকে লক্ষা হতে অ্রষ্ট করতে! সেছুটেযাষে 
তার গ্ামের পানে এমনি অবিচলিত বিশ্বাসতরে | এই ফব বিশ্বাসের 
বলেই ১নে দার্থক করে তুলবে তার সাধনাকে। সংলার ফি করে' 
তার ছূর্জয় অন্তরকে রোধ করবে? সে যে তার প্রিয্তমের জন্য 
ব্যাফুল হয়ে ছুটে চলেছে। তার প্রিয়তম যে তারই আশাপথ চেয়ে 
বসে আছে, 


হৈছে হাদয় করি'  পস্থ ছেরত হরি 
সোগঙরি সোওরি মন ঝুর | 


সঞ্জল নযনে ভার প্রাণশ্রির যে তারই প্রতীক্ষা করছে !... একথা যেমনি 
তার মনে পড়ে জনি সারাটি ছাদর বাধায় ভরে' হায়-্তার প্রেম 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] ল্রি্ত শশ্বিক্র ! হুভ্ডাশ হ'তে ক্ষতি আকড়ে ₹ ৪৬৯ 


ভলাস্চাক্পাস্থিক্া চাপা স্কান্ছপা সালা জান্তা ্িন্কপা ব্কা্পা স্কিপ স্কিন জিপ কানা স্থল বাপ স্বপন বাতা ব্রাশ ব্রা স্হান বহাল ব্ভান্তলা বালা দাবা 


ছলছল নয়ন ছুটি বেয়ে নেমে আমে বারিধারা | তর বিরহ-বিধুর কঠে সে চার নিখিল প্রকৃন্তির মাঝে আপনাকে ছড়িয়ে দিতে বেখানে তার 


যেন ধ্বনিত হতে চায়, জলধর শ্যাম নিত্য বিরাজমান । তার প্রেম তাকে বিশ্বের সাথে মিলিয়ে 
বিরহ তাপে তব দিতে চায়--বিশ্বের স্টামলিমার মাঝে তার প্রিয্নতমকে প্রকাশ করে । 

অব” ঘুচাওব, আপন প্রাণের স্পন্দন বিশ্বপ্রাণের স্পন্দনের মাঝে উপলব্ধি কর1--এই 

কুঞ্জ বাট পর তে! ভূমার প্রেম ! এই প্রেম এমনি করে' যার হৃদয়ে জেগেছে --বাকে 

অবহ' ম ধাওব এমনি করে আত্মহারা করে তুলেছে, তার মিলন-অতিসারে কি কোন 

সব কছু টুটইব বাধা ।-- বাধা অগ্রসর হতে পারে? তার অভীগ্সিত অভিপারে ঘাত্র|! সে করবেই। 


দে তার শ্রির্তমের সাথে এমনি নিরবচ্ছিন্ন মিলনে মিলে থাকতে চায় প্রেমের কবি গোবিনদদাস তাই আনন্দাগত হৃদয়ে-_পুলক-কম্পিত কণ্ঠে 
যেন নিমেবের তরেও কোন ব্যবধান ন! ঘটে। ধরণীর ধুলি হয়ে সে গেয়ে উঠলেন :-- 

সেই পথে ছড়িয়ে থাকবে “ধাহ! পু অরুণচরণে চলি' যাত।” সে সেই “বিরহ মরণ নিরদন্দ 

সরোধরের সলিল হয়ে থাকবে যেখানে তার শ্যাম “নিতি নিতি নাহ ।” ধ্রছনে মিলই ধব গোকুলচন্দ ।” 


রিক্ত পথিক ! হতাশ হ'লে কি ঝড়ে ? 
শ্ীঅপূর্ববকৃষ্ণ ভট্টাচার্য্য | 


রাত্রি গভীর-_আধারের মাঝে আলোকের স্থৃতি ভোলা, 
রিক্ত পথিক ! হতাশ হ'লে কি ঝড়ে? 
আশা-নিরাঁশার দন্ব তোমার বিষাদে জটিল হোলো, 
হৃদয় ভাঙিয়। পড়ে । 

বন্ুধার বুকে নিদ্রাবিভোল জীবন-প্রভাতখানি, 

জাগিতে চাহে ন! শুনিয়া আর্তরব। 

চলার চেতন! শেষ হয়ে আসে, থেমেছে কণ্ঠে বাণী, 
সমুখে গলিত শব। 


অশখ বটের শাখা-প্রশাখায় শুকায়ে গিয়াছে লতা, 
কষচুড়ার ঝরে গেছে মঞ্জরী। 

আজিকাঁর গানে আজিকার সুরে তুলিয়া ছুঃখ ব্যথা 
ভেসেছে হ্বপ্নুতরী | 

কাদদিছে পথিক, কানপেতে শোনে সঘন অন্ধকারে 
দুঃখ করিয়। কি হবে বন্ধু_বলো ? 

পাবে না সেদিন যে গেছে চলিয়া কুম্থম-গন্ধভারে, 
ধীরে ধীরে পথ চলো । 


কত শুভদদিন এসেছিল হেথা আলোর মেখলা পরে' 
চন্দনমাথ! ত্রিদ্দিবের মালা গলে । 


পাতার কুটীর পরমাঁনন্দে গেছে চুম্বন ক'রে 
উদার আকাঁশতলে। 

এসেছিল কত ছন্দমবলাকা ভাঁব ভারতীর গানে 
মধুমিলনের মুখর মঞ্ু সাঁঝে। 

রূপালী গগনে প্রথম তারকা দেখেছিনন এইখানে, 
এই বনানীর কাছে। 


বনকুস্তলে লক্ষ জোনাকা শোভিত সঙ্গোপনে 
নাহন করিয়া হৃদয়ের নির্ঝরে, 

কুহু ও কেকাঁয় দুলিত বিটপী লতাপল্লব সনে 
আবেশ আবেগ ভরে। 

কত উৎসব হয়ে গেছে হেথা শ্বামল কানন ছায়ে 
প্রাণের কুস্ম বসিত প্রেমের জপে। 

নৈশ ন রা নৃত্য করিত মন্দ মধুর বায়ে 

বড়ধতু কলরবে। 


রিক্ত পথিক ! আজিকে সে সব তুলিতে পারি না আর; 
তোমার আমার ছুর্যোগপথে বিপুল অন্ধকার। 





৭৯ 


সাধনার ফল 
দ্ীআশালতা সিংহ 


৯ 

নমিতাদের স্কুলে যিনি নূতন হেড্মিষ্রেস্‌ হইয়া আসিয়াছেন, 
বয়স তাহার বেশি নয় ; খুব বেশি হয় তো জোর কুড়ি কিংবা 
একুশ হইবে। কিন্তু বুদ্ধিতে বিদ্যায় ব্যক্তিত্বে মেয়েদের 
প্রিয় রেবাদি অতি আপন হইয়া উঠিয়াছেন। সেদিন 
ম্যাটিংকের খবর বাহির হইয়াছে। স্কুলে খবর আসিয়াছে 
আগে। নমিতাঁর রেবারি মনের আনন্দ চাপিতে না পারিয়া 
গাড়ী-ভাড়। করিয়া একেবারে নমিতাঁদের বাড়ী আসিয়! 
উপস্থিত হইলেন। প্রকাণ্ড বড় বাড়ী এবং ততোধিক বৃহৎ 
সংসার। সামনের হাতায় কয়েকটি ছেলে মার্কেল 
খেলিতেছিল। খেলা! থামাইয়! একজন কহিল, ওরে গাড়ীতে 
কয়ে কোথা থেকে মেয়েছেলেরা বেড়াতে এসেছেন। 
ভিতরে পিসীমাকে খবর দিয়ে আসি। 

আর একজন বলিল, খবর দিয়ে আর কি হবে একেবারে 
সঙ্গে ক'রে ভিতরে নিয়ে যা না। 

হেডমিদ্ট্রেন্‌ দিস রেবা রাঁয় এমনই একটি ছোট ছেলেকে 
অগ্রবর্তী করিয়া খিড়কির দরজ! দিয়া বাড়ীর ভিতরে 
ঢুকিলেন। 

তখন সকাল বেলা । আটটা কি সাড়ে আটটা হয় তো 
যা্জিয়াছে। গৃহস্থের অন্ঃপুরে কাজকর্মের একটা সন্ধিক্ষণ। 
সকলেরই ব্যস্ততার আর সীমাপরিসীম। নাই। ছেলেদের 
স্কুল-কলেজ আছে, বাবুদের কাছারি-আফিস আছে। 
,কাঁহারও দশটা, কাহারও সাড়ে দশটায় ভাত চাই। মেয়েরা 
তরকারির ঝুড়ি, রান্নার জোগাড় লইয়া ব্যস্ত। নমিতা 
পিসীমার নির্দেশমত কাচাকাপড় পরিয়া শুদ্ধ হইয়া আচারের 
হাড়ি রোদে দিতেছিল, হঠাৎ রেবাদিকে দেখিয়! তাহার 
মুখ শুকাইয়া উঠিল। দুই হাতে আচারের তেল হলুদ 
লাগিয়া রহিয়াছে, পরণের কাপড়টায় কালির দাঁগ। 
এরবাড়ীর গৃহিণী বিধবা পিসীম! ন'ছাতি খাট তসরের ধুতি 
পরিয়া মালা করিতে করিতে কাজ কর্খের তদারক করিয়া 
ফিরিতেছেন। ন,বৌদির কোলের মেয়ে ক্ষেত্তিটা সম্পূর্ণ 
উলঙ্গ হইয়া বালির বাটি ছাতে তারম্বরে কারা! ভুড়িয়াছে। 


এই দৃশ্ত ও এই পরিবেশের মাঝে রেবাদিকে দীড়াইয়া 
থাকিতে দেখিয়! নমিতার মনে হইতে লাগিল, এই মুহূর্তে 
যদি কোন উপায়ে মিস্‌ রায়ের চোখের সুমুখ হইতে সে 
বিলুপ্ত হুইয়া যাঁইতে পারিত তাহা হইলে ভগবানের কাছে 
আর কিছুই চাহিত না। কিন্ত ততক্ষণে মিস্‌ রেব! রায় 
তথায় আসিয়া আনন্দ-বন্কৃত কে কহিলেন, ম্যাটিকের 
রেজাণ্ট বার হয়েছে, স্কুলে খবর এসেচে। নমিতা তুমি 
ফাস্ট ডিভিশনে পাশ হয়েচ,আর পঁচিশ টাক! করে স্বলারণীপ 
পেয়েচ। আই কন্গ্র্যাচুলেট ইউ । তোমার জন্যে স্কুলের 
মুখ উজ্জল হ'ল। খবরটা তোমাকে তাড়াতাড়ি দিতে 
ছুটে এলুম। 

নমিতা অভিভূত হইয়া গুনিতেছিল, পিসীম! ওদিক 
হইতে ভীষণ ভঙ্গী করিয়! কহিলেন, তোর রফমটা কি বল্‌ 
দেখি লা! নমিতা! কাগে মুখ দিচ্চে না হাড়িগুলোতে। 
দেখতে পাচ্চিস না? লোকে কথায় বলে আচার, বিনা 
আচারে এসব জিনিষ দুর্দিনে পচে গোঁবর হয়ে উঠবে না। 
আন্গক আজ বরেন বাড়ীতে । তোমার রাতদিন পড়া 
আর পড়া আমি বার করচি। একটি কাঁজ যদি পাবার 
জে আছে এতবড় ধাঁড়ি মেয়েকে দিয়ে-_বলিয়৷ তিনি 
রেবার দিকে অপাঙ্গে একবার ত্রকুটিকুটিল চক্ষে চাহিয়া 
সম্পূর্ণ নিলিগুভাবে ঘন ঘন হরিনামের মাল সধশালন করিতে 
লাগিলেন। বাড়ীর মেয়েদের মধ্যে নমিতার রাঙাবৌদির 
রুচি মার্জিত এবং এখনও ছেলেপুলে হয় নাই বলিয়া 
ঘরখানি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন । 

নমিতা তাহার রেবাদিকে সঙ্গে করিয়া আনিয়! সেই 
ঘরে একটি চেয়ারে বসাইল এবং ইজিতে রাডাবৌদিকে 
একটুখানি চা-জ্ললথাবারের আয়োজন করিতে বলিল। 
ঘরের দেওয়ালে ক্যালেগডারের ছবিতে মাকালীর একটি 
পট টাঁঙাঁনো ছিল, সেইদিকে চাহিয়! মিস্‌ রেবা বলিলেন__ 
আশ্ম্য্য নমিতা তুমি, এই বাড়ীতে এই আবহাওয়ায় মানুষ 
হয়েও তুমি এত তীক্ষবদ্ধ! এ যেন কলনাতে 
জানতেও বাধে। 


৫২ 


বৈশাখ---১৩৪৮ ] 


সাশন্মা্র শজ্ন 


৮৬২৬ 


চা 





নমিতার মুখ লাল হুইয়! উঠিল, কহিল, আমার বড়দা 
আর মেজদার কথা গুনি, তারা নাকি সব বিষয়ে 
যুনিভা্িটিতে রেকর্ড মার্ক পেয়েছিলেন। রাঙাদা সেই 
স্কুল থেকে এম-এ পর্য্যন্ত বরাঁবর ফাস্ট হয়েচেন। ছোটদা 
প্রফেসারি করচেনঃ কৃর্তৃপক্ষ শীগগীর স্টাডি লিভ্‌ দিয়ে 
নিজেদের খরচে তাঁকে বিলেত পাঠাচ্চেন। শিক্ষাবিভাগে 
এর মধ্যে তার সুনাম হয়েছে খুব । 

রেবা বা চোখ একটুখানি কুঞ্চিত করিয়া কহিল; 
আশ্চর্য তো। বাইরে থেকে দেখলে লোকে মনে করবে, 
একটা অত্যন্ত কুসংস্কারাচ্ছন্ন পরিবার। আর তোমার এ 
পিসীমাঃ উনি তে! রীতিমত ভীতির ব্যাপার । আমি তো 
গ্রথমটায় ভীষণ অগ্রস্তত হয়ে পড়েছিলাম, এসেই বিপদ । 

এমন সময় পিসীমার কাংস্কণ্ঠ ঝন্‌ ঝন্‌ করিয়া উঠিল, 
ও রাঙাবৌ, একবার দেখে এস দ্রিকি মা, নমিতা! আবাঁর 
কোথায় গেল। ওই খ্রীস্টানীকে ছুয়ে সেই কাপড়ে আবার 
হষ্টি একাকার করছে নাকি মা। এই শ্লেচ্ছর সংসারে আর 
আমার থাকা চলবে না দেখচি! আনুক আজ বরেন 
বাড়ী, আমার একটা ব্যবস্থা ক'রে দিক। একটা মিনিটও 
আর আমার এখানে থাকতে ইচ্ছা করে না। রমেন আবার 
বলে বিলাত যাব। 

রাঁডাবৌ মিনতির সুরে বলিতেছে, আপনার পায়ে 
পড়ি পিসীমা, চুপ করুন। অত জোরে টেঁচাবেন না। 
উনি তো সামনেই আমার ঘরে বসে রয়েচেন, সমস্তই শুনতে 
পাবেন ষে। ত। ছাড়া, উনি খ্্রীস্টানই বা! হতে যাবেন কেন; 
শুনলে অবাক হবেন, উনি আমাদেরই জাত। এই বয়সে 
বিঞ বি-টি পাশ করেছেন। কত শিক্ষিতা। আজকাল 
কত ভত্্রবরের মেয়ে চুপচাপ বাড়ীতে বলে কবে বিয়ে হবে 
সেই অপেক্ষার না থেকে নিজেরা কাজ ক'রে উপাঞ্জন 
করচেন। এতো আর কিছু মন্দ কাজ নয়। নমিতা 
যে ওর রেবাদির মহাভক্ত, ওর কাছেই সব শুনেচি কি-না । 

পিসীমা উত্তপ্ত কণ্ঠে কহিলেন, নাও আর মেলাই বাজে 
বোকে| না! মা। খুব ভালো কাজ। তোমাদের মাথায় 
রম্ন! এই সব চুঁকিয়েচে । বাঁবু নিজে বেলাত যাবেন, তাই 
বসে বসে বাড়ীগুদ্ধ সবাইকে বিবি বানানো হচ্ছে। 

রাঁঙাবৌদিয় ঘরের খোল! জানালা-পথে সমন্ত কথাবার্তাই 
শোন! যাইতেছিল। ক্ষোভে দুঃখে নমিতা উত্তরোতর 


ব্যাকুল-হইয়া উঠিতেছিল। রেবা চেয়ার ছাড়িয়া উঠিয়া 
দীড়াইলেন, আর তো আমি থাকতে পারিনে নমিতা, 
স্কুলের বেলা হচ্ছে। তোমার পিসীমাকে বুঝিয়ে বোলো 
যে, তোমার পাশের খবরে ভারি আননাই হয়েছিল তাই 
খবরটা দিতে এতদূর এসেছিলুম.। এছাড়া আমার অন্ত 
অভিসন্ধি ছিলে! ন1 । বুঝিয়ে দিলে হয় তো বা তিনি অবিশ্বাস 
না-ও করতে পারেন। , 

নমিতা অনুনয় করিয়া কহিল, গুর অমনি কথা। 
আমরা তো অষ্টগ্রহর এর শুনচি। আপনি চলে যাঁবেন না 
রেবাদি। রাঁঙীবৌদি আপনার জন্তে একটু চা আর খাবার 
তৈরী করছেন। না থেয়ে গেলে তার ভারি ছুঃখ হবে। 

রেবা গম্ভীর হইয়া কহিল-_না সে হয় না নমিতা । তুমি 
বুদ্ধিমতী, সমস্তই তো বুঝতে পারচ। সামান্ত একটা ব্যাপান্স 
নিয়ে অশান্তি ঘটাতে চাও কেন? তোমাদের বাড়ীর যে 
সব পাত্রে আমাকে খেতে দেবে, খ্রীস্টান বলে সেগুলো! 
হয় তো ফেলা যাবে, তোমার পিসীমা .. 

দরজার পার্দা ঠেলিয়! ছাব্বিশ-সাতাশ বছরের একটি 
সুপ্রী যুবা' ঘরে টঢুকিল। নমস্কার করিয়া রেবার দ্নিকে 
চাহিয়া বলিল, মাপ করবেন। আপনার! দরকার হলে তো 
অনাত্ীয় পুরুষের সঙ্গে কথা বলেনঃ তাই আমি ছুটো কথা 
আপনাকে বুঝিয়ে বলার লোভ কিছুতেই সংবরণ করতে 
পারলুম না। পাশের ঘরে বসেছিলুমঃ আপনাদের কথাবার্তা 
কানে গেল। আচ্ছা, এত অল্পেতেই চটে উঠেচেন কেন 
বলতে পারেন? কিন্তু কথা গুনিবে কি তাহার দিকে 
চাহিয়া রেবার চোখ আর কিছুতেই ফিরিতে চাহিল না। 
কী দীপ্ত আভা সারা মুখে । প্রশত্ত ললাটে যেন বুদ্ধির 
আলে! জলিতেছে। দৃপ্ত তেজ এবং অত্যন্ত কমনীয়তার 
সমগ্থয়ে সে মুখ অপূর্বর্ব। 

রমেন তখন বলিয়া চলিয়াছে, ভারতবর্ষের ইতিহাস 
তো পড়েচেনঃ দেখেচেন ভারতের সাধনার ধারাটা 
কোন্‌ দিকে । কত বিক্দ্ধ মত, কত বিরুদ্ধ সংঘাত, কত 
বিভিন্ন জাতিকে মে নিজের কোলে টেনে এনে সমদ্বয়ে আনতে - 
চেয়েছে। হিন্দু পরিবার সেই সাধনারই ছোট সংস্করণ। 
একথাটা যদি বুঝতেনঃ তাহ'লে আমি হলফ ক'রে বলতে 
পারি, আঁজ কখনই রাগ করতে পারতেন না। আমাদের 
এই বাঁড়ীতেই দেখুন না_পিসীমা! আছেন/ নম্কিতা আছে, 


২৬১৯৪ ' খ্ভানতন্হ্া - [ ২৮শ বর্--২য় খণ্ড €ম সংখ্যা 


নর রা্াবৌদি আছেন, আবার আমিও আছি। প্রতোকের 
স্বতন্ত্র মত, স্বতন্ত্র আদর্শ, তবু কাউকে বাদ দেবার উপায় নেই। 
পিসীমা আছেন তার বড়ি, আচার, জপেরমাঁলাঁ, হাঁড়ি ইত্যাদি 
নিয়ে, নমিতা যাবে বেধুনে আই-এ পড়তে । তার মনটা 
ভাড়ারের হাড়ি-কুঁড়ির বাইরে উধাও হয়েচে। আমিও 
শীগশীর স্টাডি লিভ. নিয়ে বিলেত থাচ্ছি। প্রত্যেকেই কত 
আলাদা বলুনতো! তবু প্রত্যেকেরই এবাড়ীতে অঙ্গ 
অধিকার আছে। একটা সমদ্বয়ের সাধন! বুঝলেন না? 

পিছন হইতে কে মিষ্টকঠে কহিল, খুব বুঝেচেন। কিন্ত 
ঠাঁকুরপো, এখন তোমার বক্তৃতা একটু থাঁমাও ভাই; 
উনি চা থাবেন। 

নমিতার রাঙাবৌদি চায়ের ট্রে ও জলখাবার লইয়া 
ছুয়ায়ের কাছে দাড়াইয়া আছেন। 

রাঙাবৌদি মিষ্ট হাসিয়া কহিলেন, এটি আমার ছোট 
দেওর, শ্রীযুক্ত রমেনবাবু। কিন্তু প্রফেসারি করতে করতে 
এ'র ভারি একটি কু-অত্যান হয়েচে যখন তখন বন্তৃতা 
দেওয়া। সাধারণ ভাষায় কথা বলতে যেন ভুলেই গেছেন। 
'** ও কি ছোটঠাকুরপো, রাগ করলে নাকি? রমেন ঘর 
হইতে চলিয়া যাইবার উপক্রম করিতেছিল, কহিল, না। 
কিন্ত আমার ঘরেও শীগ গীর এক পেয়াল! চ1 পাঠিয়ে দিও । 
দেখো যেন ঠাওড হয়ে যায় না। 

' হ্তাহার কথায় উপস্থিত সকলেই হাসিয়া! ফেলিল। নমিতা 
আত্বস্ত হইয়। দেখিল-_-তাহ্থার রেবাদির আর রাগ নাই। 

' প্রস্থানোগ্ঘত রমেনের দিকে চাহিয়া রেবা কহিল, দেখুন, 
আপনাদের ঘাড়ীর এই সব বাঁসনে চা খেলে ভারতবর্ষের 
ইঙ্ডিহাসের সমঘ্ব:য়র সাধন! সেগুলো ধাচাতে পারবে কি? 
আমার ভয় হয়, আপনার পিসীমার ক্রোধানলে পুড়ে সেগুলো 
নই না হয়ে যায়। 

রমেন সগর্ধে কিল, ভারতবর্ষের সাধনা কত অসাধ্য 
সাধন করেচে জানেন? এ আর তার কাছে কি ! নমিতার 
কাছে গুনেচি, আর আজ নিজেও দেখলাম, আপনি তো! 
আমাদেরই মত, আমাদের চেয়ে কোথাও আলাদা নয়। 
কিসের সঙ্কোচ আপনার? 

বমেন চলিয়া গেলেও তাঁহার শেষের কথাগুলি রেবার দুই 
কাঁন ভরিয়া বাজিতে লাগিল এবং ফিরিবার পথে 
জপরানের সমস্ত জাঁগা নিভাইয়া দিয়া তাহার সম্ত মন এক 


অনির্বচনীয় মাধুর্যরসে কেন যে ডুবিয়া রছিল তাহা 
কিছুতেই সে ঠাহর করিতে পারিল না। আসিষার সময় 
ঠাট্টা করিয়! নমিতার রাঁঙাবৌদি বলিয়াঁছিলেন, আপনার 
মত কারো সঙ্গে যদি ঠাঁকুরপোঁর ধিয়ে হয় তবেই আশা 
আছে; নয়তো আমাদের মত মূর্খের কাছে অবিশ্রান্ত 
বক্তৃতা দিয়ে দিয়ে সে যেমন বক্তৃতা দিতে শিখেচে চিরদিনই 
তার পুনরাবৃত্তি ঘটবে। 

একলা গাড়ীর গদিতে ঠেস দিয়! সেই কথাটা মনে 
হইতেই সে লজ্জায় অকম্মাৎ রাঁডা হইয়া উঠিল। 


সেদিন সকালের ডাকে রেবার নামে একখানা চিঠি 
আসিয়াছিল, খুলিয়া! দেখিল কাকা লিখিয়াছেন। 

“মা, একটা সুখবর আছে, আমিও সামনের মাঁস হইতে 
_-পুরে বদলি হইয়াছি। তুমি যদি বোডিং ছাড়িয়। আমার 
বাড়ীতে এস, তবেই জানি তুমি যে শহরে চাকরি করিতেছ 
তথায় বদলি হওয়া আমার পক্ষে সৌভাগ্যজনক হইয়াছে। 
আর একটা কথা মা বলি বলি করিয়াঁও তোমাকে বলা হয় 
নাই। অনেকেই মনে করে এবং কেহ কেহ প্রকাশ্টেও 
বলিতেছে, তোমার বাঁবা নাই বলিয়! আমি তোমার বিবাছের 
অবথা দেরী করিতেছি । কিন্তু লোকের কথায় কিছু আসে 
যাঁয় না; এ বিষয়ে তোমার মত কি যথার্থরূপে জানিবার জন্ত 
তোমার সঙ্গে দেখা না হওয়া অবধি অপেক্ষা করিয়! 
রহিলাম ।” 

রেবার মনের মধ্যে কিছুদিন হইতেই একটা পরিবর্তন 
কাজ করিতেছিল, চিঠিখানা পড়া শেষ হইয়া গেলে মুড়িয়া 
রাখিয়া অন্যমনস্ক হইয়া জানালার বাহিরে চাছিল। বিবাহের 
কথায় এতদিন সে ওুদাসীন্ঘ দেখাইয়াছে, নেহাঁৎ যদি 
কল্পনায় কথনও সে বথা উঠিয়াছে তাহ! হইলে নিরালা 
নিভৃত স্থানে কোন সিভিলিয়ান বা বড় চাকুরের বাড়ীর 
অজল্র আরাম এবং স্বাধীনতার ছবিটাই মনে জাগিক্সাছে। 
কিন্তু এখন সর্ধধাই মনে যে দৃষ্ট ভাসিয়া ওঠে তাহার 
স্বরূপ টের পাইয়! সে শিহরিয়! উঠিল। নমিতাদের বাড়ীর 
সেই অন্তত গোড়ামি সেই অসঙ্থ রুচি ও অসম্ভব 


কৌলাহল, আর সে লমন্ত ছাপাইিঘা একটি দৃগত উজ্জল 


আশ্চর্য্য সুঙ্দগর মুখ। 


বৈশাখ-৮.১৩৪৮ ] 


কয়েক দিন আগে গঙ্গার ধারের চরটায় বেড়াইতে 
গিয়া দূরে রমেনকে পায়চারি করিতে দেখিয়াছে কিন্ত 
একটা ভদ্রতার নমস্কার মাত্র সারিয়া রেবা একরকম ছুটিয়! 
পলাইয়া আসিয়াছে । নিজের মনকে যাচাই না করিয়া 
আর মুখোদুখি গল্প করিবার ভরসা তাহার হয় না। 


২) 


সন্ধ্যার বিশ্রন্ধ অবকাঁশে বোডিংয়ের দক্ষিণ দিকের 
বারান্দায় সভ| বসিয়াছিল। মিস্‌ বেলা গুহ একটা হাই 
তুলিয়া বলিলেন, নাঃ, আর ভালে! লাগে না। রোজ রোজ 
সেই খাড়াবড়ি থোড়, আর থোড় বড়ি খাড়া। তার 
উপর ফিফথ, ক্লাস আর নাইন্থ্‌ ক্লাসের মেয়েরা এমন 
নির্জীব, এমন ডাল্‌ (411), রোজ রোজ ওদের অঙ্ক কষাতে 
পারিনেঃ সে এক শান্তি। 

শিপ্া মল্লিক বলিলেন? শান্তিটা আর কার কম, চল না 
একদিন সবাই মিলে ওপারে পিকৃনিক ক'রে আসা যাঁক। 
খাঁমিকটা সময় ভালে! কাটবে এই একটানা রূটিনের মধ্যে । 

অরুণা রায় কহিল, মন্দ প্র্যান নয়, গেলেও হয়। 
তোমরা সব বন্দোবস্ত কর না। কিন্তু রেবাঁদি, সেদিন 
আপনি যে ব্লাউজটা পরেছিলেন, কাইগুলি সেটা আমাকে 
একবার লেগ. করতে হবে। ভারি চমৎকার প্যাটার্ন, 
তুলে নেব ভাবচি। 

হুনীতি উচ্্বাসভরে কহিল, নাও নাও, এখন তোমার 
প্যাটার্ন রাখ, কি চমৎকার সিনারি হয়েছে দেখ। 
গাছের আড়াল দিয়ে চাদ উঠচে, গ্লোরিয়াঁস ! 

বেলো অস্ফুট গদগদ কে কহিল, মাই গড় 
হাউ লাভলি! 

রেবাঁও বসিয়াছিলঃ এতদিন সে ইহাদেরই সঙ্গে গল্প 
করিয়া অবসর এবং চিত্ব-বিনোদন করিয়াছে, কিন্ত আজ 
তাহার মনে হইতেছিলঃ জীবনের সমস্ত গুরুদায়িত্ব ও 
বাস্তবতাবজ্জিত হইয়া পাঁচ বছরের ছেলে” যেমন খেলনা 
হাতে উচ্ড্বীসভরে টেঁচীয়, অনর্থক বকে, অকারণে হাসে, 
ইহারাও যেন তেমনই করিতেছে । সত্যকার জীবনের 
সহিত ইহার কোথাও কোন যোগ নাই। 


সুনীতি কহিল, গুনপুম রেবাদি, আপনি নাকি সের্ছি 


সকালে নমিতাদের বাড়ী গেছলেন! কেমন লাগলো? 


নান্ম্ধান শু 


৬৬ 


প্র জিনিষটি কিন্তু বাপু আমার আদৌ বরদাস্ত হয় জা 
ম্যাটিক ক্লাসের উধাঙ্গিনী অনেক জেদাজেদি করায় একদিন' 
তাদের বাড়ী গিয়েছিলুম | বাবা, সে কি গোলমাল, একপাল 
ছেলের ট্যা ভা, বিরক্তিকর একেবারে । সেই থেকে আর 
কখনে! কারো! বাড়ী যাইনে বেড়াতে । ইচ্ছে হ'লে গঙ্গার 
ধারে বা খোলা মাঠে বেড়ালেই হ'ল। তাতে শরীর ও 
মনের উন্নতি হয়। ৃ 

রেবা ঈষৎ হাসিয়া কহিল, কেন, ছেলেপুলের একটু 
কান্নার উপর এত বিরাগ কেন? এরপর নিজের যখন হবে 
তখন গঙ্গার ধারে গিয়ে কেমন ক'রে বসে থাকবে শুনি? 

জবাব শুনিয়া সুনীতি, বেলা) অরুণা পরস্পরের মুখ 
চাওয়া-চাওয়ি করিতে লাগিল। বিস্ময়ে হতবাক হইয়া 
গেল তাহারা, এই সেই রেখা্দি! যাহার নিখু'ত আভিজাত্য 
এবং ওজন-করা! কথা এতদিন তাহাদের সগ্রশংস শ্রদ্ধা 
অর্জন করিয়াছে। তাহাদের এতদিনকার উপাশ্ 
দেবতার সম্বন্ধে তাহাদের মত পরিবর্তন করিবার প্রয়োজন 
আসন্ন হইয়া উঠিল। 


প্রায়, ম।সথানেক হইল রেবার কাকা! আসিয়াছেন 
এবং তাহার কাছেই রেবা উঠিয়া আসিয়াছে। সেঙিন 
সন্ধ্যাবেলায় তাহার কাকাকে চা দিতে বাহিরের ঘরের 
দিকে আসিতে আসিতে একটা! পরিচিত কগস্বর শুনিয়া 
সে থমকিয়া দাড়াইল। খোল! জানাল! দিয়া স্পষ্ট চোখে 
পড়িল, রমেন বসিয়! তাহার কাকার সহিত গল্প করিতেছে । " 

ভিতরে ঢুকিয়া শাস্তভাবে সে নমস্কার করিল। 

রমেন হাসিয়া কহিল, আমাদের বাড়ীতে একদিন গে 
যা অভ্যর্থনা পেয়েছিলেন আর যেতে সাহস হম না. 
বোধ হয়ঃ না? | | 

রেবা গম্ভীর হইবার চেষ্টা করিয়াও হাসিয়া ফেলিয়া 
কহিল, ঠিকই অনুমান করেচেন। কিন্তু আপনার সাহসের 
তো কিছু অভাব দেখচিনে । ধরুন, আন যর্দি সেই অভ্যর্থনার 
শোধ নিই। 

রমেন কহিল, তা হলে হয় তো আপনার মনের ক্ষোত 
খানিকটা কমে। কিন্তু উজ্জল বাতির আলোর রেবা স্পষ্ট 
দেখিল, রমেনের হাসি হাসি মুখখানি একেবারে ম্লান হইয়া 


রি 


গেছে। কি একটা অত্যন্ত আশ! করিয়া মে 'যেন 
হতাশ হইয়াছে। 

রেঝা অনুতগুকঠে কহিল, ও কথাটা আমি তামাঁস! 
ক'রে ব্ললুম মাত্র। 

রষেন মৃদুষ্বরে বলিল, পনি কি মনে করেন তামাসা 
জমি বুষতে পারিনে, বুঝিয়ে দেবার প্রয়োজন হয় ! 

রেবা কহিল, তা খানিকটা মনে করি বই-কি। আমার 
মতে জাগনি দুনিয়ার মধ্যে এক ভারতবর্ষের ইতিহাসই 
সম্যকরপে বোঝেন। আর কিছু বড় একটা বোঝেন না। 

রমেন অন্য দিকে চাহিয়া কহিল, আপনি যে খুব বেশি 
বোঝেন তাও আমি মনে করিনে। যে মানুষ অল্পতেই 
ক্নেগে যায় সে ধীরভাবে বুঝবে কি? 

রেব! কহিল বেশ ঝগড়া এখন থাক । যাই, আমি 
জাগনার চা নিয়ে আমি। 

রেষার কাকাবাবু ডাকিয়া কছিলেনঃ অমনি চায়ের সঙ্গে 
কিছু খাবার নিয়ে এস রেব৷। রমেনের সঙ্গে ভোরবেলায় 
বেড়াতে বেরিয়ে রোজই যে আমার দেখা হয়। বড় ভালো, 
বন়্ জ্ঞানী ছেলেটি। 

রমেন একটু হাসিয়া! রেবার দিকে চাহিয়! কহিল, যান, 
এবার অতিথি সংকারের আয়োজন করুনগে। কি আর 
করবেন বদুন--গুরুজনের আদেশ । 


মাসখানেক পরে একদিন রেবার কাকা তাহাকে 
ডাকাইয়। ভূমিকা! না করিয়াই কহিলেন, তোমার একটা 
মত না নিয়ে তো আমি হা না কিছুই বলতে পারিনে মা। 
কমেনের বড়দাদ। তোমার সঙ্গে রমেনের বিবাহের প্রস্তাব 
ক'রে পাঠিয়েছেন। বেশি দেরী করবার সময় নেই। 
কেন সামনের মাসে ইংল্যাণ্ড যাচ্ছে। 


ক পু ৬৪ দি, 
০2 27487 ১ 
ঠ্ঠে এ শুউিং ৮৮5০ 


৬” ০". 
ক ১২০ 
১৯ 
মল ০ 
ভা: 


সা বাষ্ঘ্ 


[২৮শ বর্---২য খণড--€ম সংখ্যা 


বহ চেষ্টা করিয়াও না৷ শবটা!রেবা কিছুতেই মুখে আনিতে 
পারিল না!। 

বিবাহের পর রমেন বলিল, আমি তো৷ চলে যাব, কিন্ত 
সে সময়টা তুমি থাকবে কোথায়? কাকার বাড়ীতে? 
সেই ব্যবস্থাই ভালো। রেবার চোখেমুখে কৌতুকহাস্ 
উচ্ছল হুইয়া উঠিল, কহিল, কেন সে ব্যবস্থা ভালো কেন? 
আমার নিজের বাড়ী কি নেই যেকাকার বাড়ীতে থাকবার 
ব্যবস্থা হবে। 

রমেন তাহার দিকে একদৃষ্টে চাহিয়া কহিল, লত্যি 
তাই কি মনে কর? এইটুকু যদি সম্বল পাই তা হ'লে 
একটা বছর দেখতে দেখতে কেটে যায়। কিন্তু পিসীম! ... 

রেবা বাধ! দিয়া কহিল, সে আমি জানি । পিসীমা একটু 
আচার বিচার মেনে চলেন বলেই যে নিজের বাড়ী ছেড়ে 
আমায় থাকতে হবে তার কোন মানে আছে কি?-- 
তারপর একটু থামিয়া আবার বলিল, তা ছাড়া, এই ঘরটি 
ছেড়ে এখন বোধ হয় আর একটা রাত্রিও আমি অন্তত্র 
থাকতে পারিনে। আমি যখন তোমার জীবনে ছিলাম নাঃ 
তখনও তুমি এই ঘরে তোমার কত চিন্তা কত আশা ও আদর্শ 
নিয়ে দিন কাটিয়েছ। এর চারিদিকেই তো! তুমি। 

রমেন কি বলিতে যাইতেছিল, তাহাকে থামাইয়। দিয়] 
রেব! হাসিয়া কহিল, দোহাই 'তোমার, আর এক দফা যেন 
ভারতবর্ষের ইতিহাস আর তার সাধনার পাল! শোনাতে 
বোসো৷ না। তোমার এ স্কুল মাস্টারি আমার ধাতে 
সইবে না। মাস্টারি জিনিষটার উপরই বিতৃষকা ঘটেচে। 
অনেক করেচি কি-ন!, সেই জন্তেই বোধ হয়। 

রমেন কহিল, না, ভারতবর্ষের সাধনার কথা আর 
বলার প্রয়োজন হবে না। কারণ সেই সাধনার ফল তো 
প্রত্যক্ষ দেখতে পাচ্চি সামনেই। 





টি রর 42221 এ টি ৬ 
শব তু পি ্ ঈ ছি. রি 
রি ই. 9 পিরিত 

্ 


গভীর অরণ্যে একটি রাত্রি 
শ্রীদেবী প্রসাদ রায়চৌধুরী এম-বি-ই 


সন্ধ্যা আগত প্রায়। জনমানবহীন মেঠো পথ। গরুর 
গাড়ী চলিয়া! চলিয়া ছুই ধারে ফুটখানেক করিয়া গভীর হইয়া 
গিয়াছে । গাড়ী চলিলে রেলের লাইনের মত সোজাই 
চালাইতে হয়, মোড় ফিরাইবার উপায় নাই। পাড় ওঠার 
মত স্থানটি ঘাঁসে আচ্ছাদিত থাকিলে ও মাঁঝে মাঝে এখনও 
পাথরের কুচি দেখিতে পাঁওয়া যায়। কোনও সময় ইহা 
রাজপথ ছিল। ইহার রক্ষণাবেক্ষণের ভার হস্তান্তবিত 
হইতে হইতে বর্তমানে এমন একটি গোীর নিকট আসিয়া 
পৌছিয়াছে ধাহাদের নিকট বংসারাস্তে কয়েক ঝুড়ি 
মাটীর বেশী প্রত্যাশা করিবার উপায় নাই। কিছুদিন পূর্বে 
কর্তাদের নেকনজর যে এদিকে আকধিত হইয়াছিল, সে 
বিষয়ে সন্দেহ নাই) কারণ নূতন ফেলা মাঁটি মাঝে মাঝে 
টিপির আকার ধারণ করিয়াছে । লেভেল করা হয় নাই__ 
হইবেও না। সকলে জানে উপযুক্ত সময় গরুর গাঁড়ীর 
চাকাই এই সামান্ত ক্রটি ঠিক করিয়া লইবে। উদ্দেস্ঠ সাধু 
হইলেও কীর্তিটি কর্তাদের হ্ৃদয়হীনতাঁর পরিচায়ক হইয়া 
আছে। প্রমাণ আমার নাসিকা এবং টাকযুক্ত মাথা। 
ইতিমধ্যে যে কয়বার হেঁচকা খাইয়াছি, তাহাতেই উক্ত 
অঙ্গের স্থানে স্থান বিশেষ স্ফীত ও চিন্বণ হইয়া উঠিয়াছে 
এবং যে কয়টি ঠেচকা বাকী আছে, তাহাতে যে রক্তত্রাব 
আরম্ত হইবে সন্দেহ করি না। শুকৃনা বীখাঁরির ছাউনির 
সহিত সজোরে সংঘধিত হইলে মানুষের চামড়া আর কত 
সহ করিতে পারে। 

সরকারী কাঁজ। গভীর অরণ্যে মন্দিরের ছবি পরীক্ষা 
করিয়া ফিরিতেছিলাম। গাড়োয়ান ও স্থানীয় বাসিন্নাদের 
আপত্তি সত্বেও ক্যাম্পে ফিরিতে বাধ্য হইয়াছিলাম। 
তারযোগে উপরওল! তাড়া দেওয়ায় সকলেই না খাইয়া 
ক্যাম্প হইতে বাহির হইয়াছিলাম। সমস্ত দিন অনাহারে 
কাটিয়াছে, তাহার উপর রাত্রেও যদি ন্মতৃক্ত থাকিতে হয় 
তাহা হইলে সময়মত রিপোর্ট লেখা আর সম্ভব হইবে না। 
গোশ্যানে নাঁসিকার সাঁমান্ত বিকৃতি মারাত্মক নয়, কারণ 
আমার তাহাতে সৌন্ধ্যহানির সম্ভাবনা নাই; কিন্ত 


রিপোর্টের বিলম্ব হইলে কর্ণ ও প্রাণ পর্য্যন্ত দলিত হইতে 
পারে। নিকটবর্তী গ্রামে আহার ও বাত্রিবাসের ব্যবস্থা 
করিতে পারিতাম, কিন্তু আহার সম্বন্ধে আমার গুচিবহি 
ছিল। পাশাপাশি ছুইটি গ্রামের মাঝে একটিমাত্র 
পুক্ষরিণী ;__তাহাতেই স্থানীয় লোকেরা অবগাহন দ্বান হইতে 
আরম্ভ করিয়া কাপড় কাঁচ, থালা ধোয়া এবং পানী 
জলের ব্যবস্থা করিয়া থাকে । সুতরাং প্রত্যাবর্তন সম্বন্ধে 
মনকে দৃঢ় কর! ছাঁড়া উপায় ছিল না। | 

আমরা চলিয়াছি। ঈশান কোণে তখন বিঙ্গিগ্ত 
ধূসরবর্ণ মেঘের টুক্রা ক্রুমা্বয়ে ঘোরতর কৃষ্ণ হইয়া 
উঠ্িতেছে। ঝড় ও বৃষ্টির আগ সম্ভাবন! অনুভব করিতৌ্ছি 
ঠা বাতাসে । মাঝে মাঝে দম্কা হাওয়ায় গুকৃনা খাড়া 
ঘাসগুলি ছুলিয়া উঠিতেছে। রাস্তার ছুই ধারে পানে 
বরোজ। মাঝে মাঝে খাঁড়াই ঘাস, নারিকেল, খেল্ধুর "৬. 
বট গাছ। গন্তব্য স্থানে পৌছিতে তখন আট মাইল পর্থ 
বাঁকী। পথের মাঝে দুই মাইল প্রস্থ ত্রিশ মিল দীর্ঘ 
জঙ্গল। তাহার পর হিন্দুপুরের মাঠ । মাঠ উত্তীর্ণ হইলে 
গ্রাম। কোন প্রকারে জঙ্গলটা পার হইতে পারিলেই 
নিশ্চিন্ত হওয়া যায়। মেঠো পথ, বাদল! হাওয়া, চাকার 
ক্যাচর ক্যাচর থট্‌ শব্দ, বিলি পোকা এবং তেকের ডাকে 
যে এীক্যতান স্থষ্টি হইয়াছিল, তাহাতে কেমন একটা! বয়স- 
কমান প্রভাব ছিল। অজান! প্রিয়া এবং ছোট্ট একটি 
নিরিবিলি ঘর যে মনে মনে গড়িয়া তুলি নাই বলিতে পারি 
না। ভুলিয়া গিয়াছিলাম, আমি একজন ডিসিপ্লিন্স 
সরকারী অফিসাঁর। সরকারী কর্তব্য সাধনই আনান 
বাঁচিয়া থাকার একমাত্র উদ্দেশ । প্রিয়ার স্থান সেখানে 
নাই। চমক ভাঙ্গিল হঠাৎ গাঁড়ীটা একদিকে কাত হইয়া 
যাওয়ায়? ধাকা সাম্লাইয়া নাসিকার গঠনের পরিবর্তন 
হস্তের দ্বারা অনুভব করিতেছিলাম-__বহু দুয়ে শৃগাল ডাকিয়া 
উঠিল। চারপাশে তাকাইয়া দেখিলাম গোধূলির শেষ, 
দীপ্তি নিঃশেধিত হই! আসিয়াছে অদূরে বনানী গভীয়, 
হইয়া আসিয়াছে এবং তাহার গাড় ছায়ার ঘোয়তয 


৫৬৭ 


€ ৬৬ 


স্তান্সত্তবঞ্খ 


[ ২৮শ বর্--২য় খণ্ঁ--৫ম সংখ্যা 





অন্ধকার স্থষ্টি করিয়াছে । তাহারই গর্ভে আমাদের রঃন্তাটি- 
ধীরে ধীরে অনৃশ্ঠ হইয়া গিয়াছে । সামনেই ভাঙ্গা পোল। 
তাহার জন্স-ইতিহাস জানিতে হইলে সুদূর অতীত অনুসন্ধান 
করিতে হয়। খিলানগুলিতে বালির চিহ্ন মার নাই, 
ইটগুলিও গলিয়! গিয়াছে |. মাঝে মাঁঝে ভীতিগ্রদ ফাটল 
অরীক্পের আবাস স্থান হইয়া আছে। প্রথম দৃষ্টিতেই 
মনে হয়__-পৌলটি এখুনি বুঝি ধসিয়া পড়িবে। পোলের 
তলার নীলাটিও ভয়াবহ। ফাটলের প্রতিবিষ্ব নানারূপ 
ধরিয়া জীবন্ত হইয়া উঠিয়াছে। গাড়োয়ান অশ্রাব্য ভাষায় 
গালি দিয়া গরু ছুইটাকে টিপি অতিক্রম করাইবার চেষ্টা 
করিতেছে । কিন্তু জেদী জন্ত দুইটা__কিছুমাত্র ভ্রক্ষেপ 
নাই। কান খাড়া করিয়৷ পাশের খাড়াই ঘাসের দিকে 
মুখ ফিরাইয়৷ আছে। আতঙ্কের কারণ অরৃশ্ঠ হইলেও 
বলদ দুইটার কাছে তাহার অস্তিত্ব স্থুনিশ্চিত। 

আমারও কান খাড়া করা ব্যাপারটা সুবিধার ঠেকিতে 
ছিল না। গত বৎসরই ত ঠিক এই ঘটনার পরমূহূর্তে 
বাঘের মুখ হইতে বীচিয়া গিয়াছিলাম। খাঁনসামাঁটা ঠিক 
সময় দেখাইয়। না দিলে এবং তৎক্ষণাৎ রাইফেলে টিগার না 
টিপিলে আজ আমার বাৎসরিক শ্রান্ধের আয়োজন চলিত। 
পাঁচ-ছয় হাত তফাতে নয় ফিট ব্যাস্ত্রের যে মুত্তি দেখিয়া- 
ছিলাম তাহা আজও তৃলিতে পারি নাই। টিপ করিবার 
পর্যন্ত মময় ও ষাহন ছিল না। চোখ কান বুজিয়া ঘোড়া 
টিপিয়াছিলাম মাত্র । ৪২৫ বোধ হইতে নির্গত বূর্ণায়মান 
গুলি বাঘকে এফোড় ওফোড় করিয়া! পিছনের গাছে প্রায় 
তিন ইঞ্চি চুকিয়! গিয়াছিল। অতীত ও বর্তমান ঘটনার 
যোগাযোগ ভাবিতেই অজানা প্রিয়া ও গোপন ঘর উধাও 
হইয়। গেল। অভ্যাস মত বসিবার স্থানটি হাতড়াইতে 


লাগিলাম_রাইফেল. নাঁই1 ,মোটা কোঁটের পকেট 


'খু'জিলাম- রিভল্বার নাই। হেড আপিসের তাড়ায় দুইটি 
অগ্ই সঙ্গে লইতে ভুলিয়াছি। ড্রইংরুমে তর্ক উঠিলে সব 
সময় চার্ববাককে সমর্থন করিতাম। কিন্তু ঈশ্বরের অস্তিত্ব 
ও নিরাকারে বিশ্বাস তো দূরের কথা, শিব, দুর্গা কালী সব 
কয়টি দেবদেবীর আরাধন! একযোগে সুরু করিয়। দিলাম 
জবর ঘোরতরভাবে স্পঙ্দিত হইতে আরম্ভ করিয়াছে। 
আ্রাহি যধুহ্্ন ব্যতীত অন্ত কোন চিত্ত! অস্তয়ে নাই। 
তক্ক যেপাইয়াছি তাহ! প্রকাশ করিবারও উপায় নাই। 


হাজার হোক লোকে ভাবে আমি একজন উচ্চপদস্থ রাজ- 
কর্মচারী, আমার অধীনে ... 

ভাবিলাম, গাড়োয়ানটার গা! ঘেধিয়। বসি। হোক না 
সে গাড়োয়ান, তবু মাছ্ষ তো। বিপদের সময় মানুষ 
মানুষকেই সাহায্য করিয়া থাকে। কিন্ত গোলামির 
জাত্যাভিমান আমার বাহিক প্রকাশকে ভিন্নমুখী করিয়া 
দিল। আমি গদিয়ান চালে তাহাকে দ্রুত গাড়ী চালাইতে 
হুকুম করিলাম। সুদূর পল্লীগ্রামের নিরীহ গাড়োয়ান 
বন্ত হিংশ্র জন্ত অপেক্ষা রাজকর্মচারীকে বেশী ভয় করে। 
বিশেষ করিয়া আমার মত একজন মাতব্বর ব্যক্তিকে । 
উঠিতে বমিতে জমকালো পরিচ্ছদভূষিত আরদালীকে সে 
সামরিক প্রথায় সেলাম ঠৃকিতে দেখিয়াছে। কখন কিসে 
আমি বিগ্ড়াইয়! যাইব ঠিক নাই। সেচাঁবুক ও পদাধাত 
করিয়া জন্ত দুইটাকে অস্থির করিয়া তুলিল, কিন্ত গাড়ী 
চলিল না। চলিবে কেমন করিয়া-বলদ নড়িলে তবে তো 
গাড়ী চলে ?-_জন্ত ছুইটা সেই যে কান খাড়া করিয়াছে 
তাহা আর নামাইবার নাম নাই। ইচ্ছা হইতেছিল চাঁবুকটা 
কাড়িয়। লইয়া! কানের উপর বসাইয়া দি। কান নীচু দিকে 
ঝুলিলে অন্তত ভয় কিছু কমিতে পারে। 

হঠাৎ দেখিলাম বলদের দ্রষ্টব্য স্থানটি নড়িয়। উঠিল। 
উচু ঘাস উপরের দিকে ছুলিতেছে। ইহাতে ধানের উপর 
ঢেউ খেলার কবিতা নাই। খাঁটি ধাবমান জানোয়ারের 
একটি নির্দিষ্ট গতি-_-তাহারই দোল! উপরে সঙ্কেত 
করিতেছে । গরু দুইটা ফোন ফোঁস করিয়৷ উঠিল। 
গাড়োয়ান হঠাৎ তারম্বরে গান ধরিল;--তামাকের 
সরঞ্জামের টিনের বাক্সটা! লইয়া! মরিয়া হইয়। তবল! বাঞজাইবার 
অন্নকরণে পিটিতে আরম্ভ করিল। তাল নাই, স্বর নাই 
তথাপি সঙ্গতের সহিত তাহা সঙ্গীত বলিয়া মানিয়া লইলাম। 
পদমর্যাদা! তখন তূলিয়াছি, ভ্রাসে জিন্বা শুকাইয়া গিয়াছে। 
আমিও গাড়োয়ানের ভাষায় বিকট চীৎকার করিয়া গান 
ধরিলাম। কোন সুর গাহিয়াছিলাম মনে নাই, তবে তাহ! 
কোন রাগ-রাগিনীর অন্তভূক্তি নহে। অনুপ্রাণিত হইয়! 
গাড়োয়ানের পিঠে যে প্রচণ্ড দুইটি সম্‌ ঠুকিয়াছিলাম তাহা 
মারাত্মক অস্ত্রের অন্ততূক্ত। বিনা লাইসেল্সে যে বে-আইনী 
করিয়াছিলাম তাহা অন্থীকার করি না। কিন্ত কোন 


উপায় ছিল না। ভয় আমাকে গ্রাস করিয়াছিল। অন্তরে 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


গভীর অন্রত্ঞ্ায একটি ল্লাক্তরি 


৫৬৯ 





যে বিভীবিকা দেখিতেছিলাম তাহারই প্রকাশ হইয়াছিল 
গাড়োয়ানের পিঠে সমের দ্বারা । 

উৎকট সম-_গাঁড়োয়ানের গান--বলদের লাঙ্গুলমর্দনের 
মাঝে কখন গাড়ীটা টিপি পার হইয়া আবার সমতল মাটির 
উপর আসিয়া পড়িয়াছিল। গাড়ি চলিতে আরম্ভ করিল। 
আমরা নালাটার একেবারে নিকটে আসিয়া পড়িয়াছি। 
আর কয়েক হাত অগ্রসর হইলেই পোলের উপর গাড়ীটি 
উঠিবে, এমন সময় বাম দিকের খিলানের তলায় দেখিলাম 


ছুট দিল। সঙ্গে সঙ্গে দেখিলাম, আর একটি জন্ক বাধের 
মত লাফ দিয়া বলদটাকে তাড়া করিয়াছে । সমস্ত শরীর 
ক্ষণিকের জন্ত হিম হইয়া আসিল। কেন বলিতে পারি না 
থিলানের তলায় নিজের অজ্ঞাতে চোখ চলিয়া গেল। 
সেখানে লুক্কায়িত জন্তর লেজ অদৃষ্ত হইয়াছে । হঠাৎ মনে 
আসিল আগুনই এখন প্রাণ বাচাইতে পারে। গাড়োয়ান- 
টাকে ঝাকুনি দিলাম, কিন্তু সে কেমন জড়তরতের, মত 


'হইয়।.. গিয়াছে । অগত্যা নিজেই আমার বসিবার স্থান 1 


একটি জন্ত ঢুকিয়া পড়িল। সম্পূর্ণ দেহ আবৃত হইল না। হইতে খানিকটা খড় লইয়া মশালের আকারে বাগিল 


লেজ ও পিছন অংশ বাহিরে থাঁকিয়৷ গেল। লেজটি 
কুকুরের নয়, শৃগালের নয়, আকার তাহার মোটা বোড়া 
সাপের মত, ছুলিতেছে। অকম্মাৎ বাম দিকের বলদটা 
বিকটভাবে ফ্োল্‌ ফৌঁদ্‌ আওয়াজ করিতে করিতে এমন 
ভাবেই মাথা ঝাড়া দিল যে জোত খুলিয়া! গাড়ীটা কাৎ হইয়া 
খ্। গাড়োক়্ানের হাত হুইতে দড়ি তখন প্খলিত 
হইয়াছে। বলদটি বন্ধনমুক্ত হইয়া সামনের রান্তা ধরিয়া 





1)) 11 


১৬ -৪: ূ ] 
২ হী্বা । [ 1 | ২2 
সি, নি! ৮ ॥ ৯৪) 
৬ পপ ৯ ৪? রঃ 
12৫ | ্ 
রিং £ তে ২ 
টি ১ 
্ 1) 5: বর ্ 
এরি .৬৪(|। ১।। 1 ০.5 কতবার 


আমিও গাড়োয়ানের ভাষায় গান ধরিয়া দিলাম 


করিলাম । দিয়াশলাই খু'জিতে গিয়া দেখি কোনথানে 
তাহার অস্তিত্ব নাঁই। বসিবার স্থানটি তচ্নচ্‌ করিয়া 
ফেলিলাম। কোন জায়গায় দি়াশলাই খুঁজিয়। পাইলাম 
না। মৃত্যুর বিভীষিকা তখন প্রত্যক্ষ হইয়া উঠিয়াছে। 
মাত্র আর কয়েক মুহুর্তের জন্ত পৃথিবীর বুকে আমার স্থান । 
তাহার পর একটি থাবায় প্রাণবায়ু নির্গত "হইয়া যাইবে। 
স্্রীপুত্রের কথা মনে আসিল, তাহাদেকয় সংস্থানের বখ। 


৬ 


€৬ 


হাসন 


| ২৮শ বই ২য় খণ্ড ঈ সংখ্যা 





ভাবিলাম। তাহার পরই মনে হইল সবই মায়া। কে 
কারার! ঘিনি সৃষ্টি করিয়াছেন তিনিই রক্ষা করিবেন। 
আমি ত উপলক্ষ মাত্র । এই অল্প সময়ের ভিতরেই কেমন 
ঞ্কটা বিমান ভাব আসিয়া পড়িয়াছিল। কাঠ পিঁপড়ার 
কামড় খাইয়া বেদনার স্থানে হাত দিতেই অনুভব করিলাম 
দিয়াশলাইটি আমার মুঠার মধ্যেই রহিয়াছে । তবে চ্যাপ্টা 
হইয়া গিয়াছে! উত্তেজনা! ও ভয়ে কখন তাহা সজোরে 
চাঁপিয়! ফেলিয়াছি ! যাহা হউক, ছুই-চাঁরিটি সম্পূর্ণ কাঠি 
পাইতে বিলম্ব হইল না। মশাল জালাইয় বাহির হইয়া 
আসিলাম। গাঁড়োয়ানটাকে মশাল ধরিতে বলিলাম। 
কিন্ত তখন তাহার জান লুগ্ত হইয়াছে । এখন করি কি? 
তাহাকে এ অবস্থায় ফেলিয়া! গাছেও ওঠা যায় না। আবার 
বাকুনি দিলাম, কোন সাড়া নাই। এমন সময় অনতিদূরে 
যে দিকে বলদটা পলাইয়াছিল, সেই দিক হইতে ঘড় ঘড়, 
শব আসিল- ঠিতাঁধাঘের শিকার ধরার মত আওয়াজ। 
কাঁল বিল না করিয়া গ্রজ্জরণিত মশালটা ফেলিয়! নিকটবর্তী 
নারিকেল গাছটার দিকে ছুটিবার চেষ্টা করিলাম। কিন্ত 
পা দুইটা কে যেন শুঙ্ধলাবন্ধ করিয়া রাঁখিয়াছে। যতই 
ক্রুত চলিবার চেষ্টা করি ততই গতি মন্থর হইয়া আসে। 
যেন পঙ্গু হইয়া গিয়াছি। তথাপি প্রাণের মায়ায় জোর 
করিয়৷ গাছটার দিকে আসিলাম। তলায় যে ঝোপ 
জমিয়াছে তাহাতে গাছের" গোড়ায় যাওয়াও শক্ত। 
কোনপ্রকারে বাধা ঠেলিয়া ফিট ছুই উঠিন্লাছি, এমন সময় 
শুনিলাম ফোস শব্ষ! একেবারে জাত সাপ ছোব্প 
মারিকাছে। লক্ষ্য আমার পায়ের দিকেই ছিল। কিন্ত 
ঠিক বে মুহুর্তে ছোবলটি মারিয়াছিল সেই সময়ই ভাগ্যগুণে 
আমার পা দুইটা ছুই ফুট উপরে উঠিয়াছিল। ঘটনাটি 
প্ররণ করিতেও আজ শিহরণ আসে । প্রাণপণ শক্তিতে 
দেহটাকে টানিয়া েচড়াইয়া উপরে উঠাইতে লাগিলাম। 
ডগায় পৌছাইতে বেশীক্ষণ সময় লাগিল না । দুই-চারিটি 
পাতার গোড়া জোর করিয়া একত্রিত করিয়া তাহার 
উপর বসিলাম এবং দুই হাতে অন্ত পাতার গোড়া চাপিয়া 
ধরিলাম। গাছটি, উচু না হইলেও বাঘ সম্বন্ধে নিরাপদ 
হল! চলে। 

বুকের চ্িতর স্পন্দন এমনভাবেই চলিয়াছিল যে ভীত 
হইয় পড়িয়া ছিলান--হুয় তো বা শ্বাস-গ্রশ্থাসের ক্রয়! এখুনি 


বন্ধ হুইয়া যাইবে। তৃষ্ণায় তালু শুকাই়1 গিয়াছে-_ মাঝে 
মাঝে মাথাটা ঘুরিয়া উঠিতেছিল। কতক্ষণ এই ভাবে 
কাটিয়াছিল বলিতে পারি না। 

মেঘল! জ্যোতনায় দেখিলাম মশালটি নির্ববাপিত হইয়াছে । 
ঝটিকার সহিত বারি পতনে আমি সিক্ত হইয়া গিয়াছি। 
কন্কনে ঠাণ্ডা হাওয়া হাড়ের ভিতর পধ্যস্ত কাপাইয়া 
দিতেছে । দৃষ্টি তখন ঝাপসা আলোয় অভ্যন্ত হইয়া 
আসিয়াছে । প্রথমেই মনে আসিল গাড়োয়ানটার কথা। 
তাহার বসিবার স্থানটি ভাল করিয়া লক্ষ্য করিলাম। সে 
ঠিক সেই অবস্থাতেই রহিয়াছে । বলদ নিশ্চল ভাবে 
দীড়াইয়া। অনুমান করিলাম--ভয় বলদটাঁকে সম্মোহিত 
করিয়া ফেলিযাছে। তাহার তৃষ্টি তখনও সন্দিগ্ধ স্থানের 
দিকে। তবে কি বিপদ কাঁটিয়৷ যাঁষ নাই! পলাতক গরুটির 
পিছনে যে একটি বৃহৎ আকারের চিতাবাঘ ছুটিয়াছিল সে 
বিষয়ে ক্ষোন সন্দেহ নাই, কারণ বিতাবাঘের শিকার ধরাব 
পর ঘড় ঘড় শব গুনিয়াছি। চিতা বড় না হুইলে 
একটি পূর্ণাবয়ব বলদকে তাড়া! করিত না। তাড়া করিবার 
পর ঘড় ঘড় শব্দের অর্থ ভুল হইবার নয় । বলদটা মরিয়াছে 
এবং সগ্ভলভ্য শিকার ছাড়িয়া চিতা এদিকে আসে নাই। 
তবে কি আর একটি মাংসাণী ওৎ পাতিয়া আছে! 
অনুমান সত্য হুইলে পলাইবার সময় আমাকে আক্রমণ 
করিল না কেন? ধাবমান শিকারকেই ব্যা্রজাতীয় জন্তরা 
আগে আক্রমণ করিয়া থাকে । সব কেমন গোল পাকাইয়া 
যাইতেছিল। 

নালাটার দিকেই মুখ করিয়৷ বসিয়াছিলাম। এমন সময 
ঘেৎ ঘেৎ শব+গুনিলাম। ঝাপসা আলোয় যতটা দেখা 
যায় তাহাতে মনে হইল প্রায় গোটা বার বন্ত বরাহ জল 
থাইতে আসিয়াছে । তাহাদের মধ্যে গুণ্ডাটি মাঝে মাঝে 
সচকিতভাবে বলদের দৃষ্টি অনুসরণ করিতেছে । আবার 
নাসিকার অগ্রভাগের সাহায্যে মাটি খোঁচাইতেছে ? পুনরায় 
থাড়াই ঘাসের দিকে তাকাইতেছে। হঠাৎ গুণ্ডাটি যুদ্ধ 
দেহির মত ক্ষণিকের জন্ত দাড়াইল, তাহার পরই সদলে যে 
দিক দিয়া আসিয়াছিল সেদিকে চলিয়া গেল। ইহার পর 
মুহুর্তে হঠাৎ দ্বিতীয় গরুটাও দড়ি ছি'ড়িয়া নালার দিকে 
বেগে ছুট দিল। গ্রাড়ীটার অবলম্বন না! থাকায় সামনের 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


সস স্্হ 


মাটাভে পড়িয়া! গেল। অস্তুত দৃশ্ ! একটি জীবন্ত মানুষকে 
কুমড়ার মত গড়াইতে দেখিণাম। যে-কোন মুহূর্তে অনৃষ্ঠ 
দানব বাহির হইয়া আসিতে পারে এবং আসিলেই 
গাড়োয়ানকে অক্লেশে লইয়া যাইবে, আমি কিছুই করিতে 
পারিব না। প্রত্যেকটি মুহূর্ত অবর্ণনীয় আতঙ্কের মধ্য দিয়! 


কাটিতে লাগিল। ... 
রাত গভীর হইতে আরম্ভ করিয়াছে। দাদুরীর 


কোলাহলে কোন জস্তর পদশব্দ শুনিবার উপায় নাই। মনে 
মনে হাঁদিলাম। কিছুকাল আগে এই দাদুরীর ডাকই 





গন্ডীল্ল অল্পে জকি লাকি 





€্চ 


ডান! বাঁপটাও খাইলাম । তাহাদের কিচির মিচির শুনিয়া 
কতকটা অন্তমনন্ক হইয়াছিলাঁম। রাত্র পলে পলে অগ্রসর 
হইয়া চলিয়াছে। ঝড় ও বৃষ্টি তখন থামিয়া গিয়াছে। 
আকাশের মেঘাচ্ছন্ন ভাব কাটিয়া যাওয়ায় গুজ জ্যোত্ল্ার 
আলোয় নিকটবর্তী সব কিছুই প্রায় স্পষ্ট দেখিতে পাইতেছি। 
গাঁড়োয়ান বেচারার পায়ের দিকের খানিকটা অংশ বৃষ্টির 
জলে ডুবিয়া গিয়াছে। একটা হাত মুচড়াইয়া৷ আছে, 
মুখটা বোধ হয় মাটির দিকে । .ঘন কাদায় নাক পড়িলে 
দম বন্ধ হইয়া! মার! পড়িবে । চাঁকাঁটা উহার উপর পড়ে নাই 


০ *প৫ টি? -« না ] শী; / ]1157%1 
12 ।:,/7/7% 4: গা 


টে ০ এ টি 
+*, টি 
4 - ৮৭ ্ প & 

রি ॥ 2/ ৭৯ ্ 

চপ ঠঠি ৫ বি 
শশুর. 44 916 টি ূ ৩5 
৫৫ এ ও 

মে ২77 


? 
শি 
উর ৬৪৮ 

ন্ 
ডু 


/ 
1. ৮//৫7:৫ 
চা ১/4,/৫ ্ 
রত 1/4 0 ঠিক ত্র 
রা *% ঘর ৮ 
7 14,৯১1, 
৮ 
৮ রঃ রে 
্ রা 
রর 
ডি 
২ 
ঙ রর ্ 
.স 
এরি ? 
রি ্ 
॥ সপ 
্ 
2 এ র্পে 
-্) 
8 রা রি 
এ 





চি 
ঃ চপ 


ৰা চর 
এ টা 2 
র্‌ ্ রঃ 
মর চা 
২ ২২২ ং ২ রর 
১ ] রর এ ৮০০০০ টি 
। 5 রে সি ্ সি ১2 
১ চে এ ৭ 2 
০ পরে গজ চে 
* এ রম ্্‌ 2১:২8 
রা ০ ৩৬ ৬ ৫০ র্‌ স্তুতি গত 
রর ূ ) ৮ মি ্ চা ৩১০ 
রে পু সিকি রে ৯. 
রি এ রি টক5: ছং্‌ ১ রি হলি 
রর - চি লা টা 
স চি মধ স . দূ পল চু 
১১ এ. ূ ৪ সই শর হুর পের নি 
না ৮৮ ০৯ স্ ১ ঃ স- ছ ্ 
স্) £ রি হি 2, ১২২ ্ 
চে চি ূ নি ইউ ডি৬-- কার 
১ ও জু 
রি র্‌ নি নু ৯. এ কি 
ঠ চে রে রি ্ 2 ০ ৯ 
নর রখ ৮ এ , টি রর ৯ 
সি ০৪টি চে রি ছু ্ 
রম 5৬. চে রি কাত রি , 
ক টি * 1 পু 
টু ৬ শা ৬ ২ ্ ন্‌ / ী রর 3৮ 
০ তা ০৯ বই - ্ র্‌ 1 ০২৯, 
এ ্ ১ ৬ + টি 
০. না ৮ হি নু ও 


এমন সময় দেখিলাম গাড়ীর ছাউনির উপর সেই বিরাটঃঅজগর 


আমার মনকে কি ভাবে আচ্ছন্ন করিয়াঁছিল। একদৃষ্টিতে 
গাড়োয়ানটার দিকে তাকাইয়। আছি। ভাবিতেছিলাম-_ 
যদি লোকটার জান ফিরিয়া আসে তখন কি করিব। 
করিবার আছে কি--ভাবিয়া কূল-কিনারা পাইতেছিলাম 
না। এমন সময় একটি বিরাট বাছুড় আসিয়া পাশের বট 
গাছটায় আশ্রয় লইল। তাহার পর আর একটা ; স্বেখিতে 
দেখিতে আঅনংখ্য বাছুড়ের-ভিড় লাগিয়া গেল; ছুই-একটার 


তো! গোলের নালার শোঁতের কল্‌ কল্‌ মৃদু শব শুনিতে 
পাইতেছি। মেঘ গর্জন ও. বৃষ্টির পর রহস্যপূর্ণ নিস্তব্ধত! 
আমার পারিপার্থিক আবেষ্টনীকে ঘিরিয়া ফেলিয়াছে। 
একট! সন্দেহজনক শব্ধ শুনিলাম-_বাঁঘের আওয়াজের মত 
_-অতি .নিকটে। ফাঁপা স্থানে রক্ষিত বড় শীলে নোড়া 
ঘষার শবের সহিত ইহার মিল নাই। নিশ্চিত হইলাম_- 
অবটি চিতায় নয়, অভিজাত কুলোত্তব ছুর্দীস্ত শার্দ.ংল তাহার 


০৩ 


অন্তিত্ব ঘোষণা করিতেছে । তাহায় পর' রাস্তার পাশের 
ঘাস নড়িয়া! উঠিল। ঘাসেন্র দোলা ক্রমান্বয়ে আরও নিকটে 
জাসিল। আবার গুরু গন্ভীয় সক্কেত__যেন এখনি বন্ত 
মিনাদে সমস্ত বনানীর নিস্তবতা আলোড়িত হইয়া! উঠিবে। 
কিন্ত তাহা হুইল না-দাস নাড়া থামিয়া গেল। এক 
দৃষ্টিতে সন্মোছিতের মত গাড়োয়ান ও খাড়াই ঘাসের দিকে 
তাঁকাইয়া রহিলাম | মনের অবস্থা তখন কি রকম হইয়াছিল 
প্রকাশ করা সম্ভব নয়। মাঝে মাঝে সমন্ত শরীরে একটা 
কম্পন অনুভব করিতেছিলাম। যদি শিখিলতাবশত নীচে 
পড়িয়া বাই তাহা হইলে আমাকেও-_। আর ভাবিতে 
পারিলাঁষ না। কিন্তু গাড়ীর ছাউনির উপর, ওটা কি-- 
জাহাজ বাধিবার বিরাটাকার দড়ির মত, ওটা নড়ে না যে! 
ভগাট! ফুটখাঁনেকের উপর মাথা খাড়া করিয়াছে । আবার 
নীচু হইল। পরমুহূর্তে মড় মড় করিয়া ছাউনীর পিছন 
দিকটা মুচড়াইয়া গেল-_-ঠিক যে ভাবে দিয়াশলাইটা আমার 
হাতে নিম্পেষিত হইয়াছিল। নিশ্চয় উহা! ময়াল, দৈত্যের 
আকার লইয়া আসিয়াছে । গাড়ির গোটা! ছাউনিটির 
পরিধি যে জীবদেহের দ্বারা আবেষ্টন করিতে পারে তাহার 
পূর্ণশরীর কত বড় হইবে অনুমান করিতে পারিলাম না। 
ক্রমান্বয়ে বিশাল সরীস্থপ ছাউনির পিছন দিকে নামিতে 
আরস্ত করিল। দেহ ভার সম্পূর্ণ মাটীতে পড়িবার পূর্বব 
মুহূর্তে গাড়ীটা প্রায় সোজা হইয়া! আসিল। সরীহ্প দেহের 
অনেকটা অংশ মাটির তলার ঝুলাইয়। দিয়াছে । গাড়ীটা 
তখন দড়ি পাল্লার মত উঠিতেছে ও নামিতেছে। সমস্ত 
দেহটা ষ্টার সংস্পর্শে আসিতেই গাড়ীটা আবার সামনের 
দিকে সশবে পড়িয়া গেল। মনে হুইল বলদ জ্কুতিবার 
জায়গাটা! গাঁড়োয়ানের পায়ের উপরই আঘাত করিয়াছে। 
অজগরের কুণডলায়িত দেহ ক্র্থাঁঘয়ে বিস্তারিত হইতে লাগিল; 
তাহার পর গাড়ীর ছাউনির উপর যেভাবে মাথ! তুলিতেছিল 
ঠিক সেইভাবে পুনরায় মাঝে মাথা ছুলাইয়া খু'জিতে লাগিল 
তাহার প্রতিতন্্বী কে! হঠাৎ বিকট গর্জনে কাণে প্রায় 
তাল লাগিয়া গেল। মনে হইল সহন্্ বজ্লাঘাৎ একই সঙ্গে 
আকাশ ফাটাইয়া ধরিত্রীর বুকে পড়িয়াছে। ..' পৃথিবী 
চুর্ণবিচ্র্ণ হইয়া গেল। “তাহার পর আবার গর্জন | অনুভব 
করিলাম_ আমার হন্তের বন্ধন শিথিল হইয়া! আমিতেছে। 
প্রাথপণ শক্তিতে"পাতাগুলি আরও ভাল করিয়া ধরিলাম। 





হল বন্ধ 


[ ২৮শ বর্ধ--২র খণ্ড--€ষ সংখ্যা 





এইটুকু শক্তিকেই আর বিশ্বাস করিতে পারিতেছি ন!। 
পরক্ষণেই দেখিলাম মহাপরাক্রমশালী অরণ্যের অধিপতি 
শার্দুল খাড়াই ঘাঁস সজোরে সরাইয়া৷ একেবারে রাস্তার 
উপর আসিয়া পড়িয়াছে। কি বিরাট দেহ! পূর্ণবয়স্ক 
বাংলার গরুর মত, কিন্তু পিছনকার পা-টা ভাঙ্গা। সোজ৷ 
চলিবার উপার নাই ;__হ্েঁচড়াইয়া অগ্রসর হইতেছে এবং 
মাঝে মাঝে ত্রস্তভাবে ফিরিয়া তাঁকাইতেছে। মানুষ তাহার 
সামনে পড়িয়। আছে, সেদিকে তাহার লক্ষ্য নাই। 
আততায়ীর নিশ্চিত আক্রমণ তাহার গতি সংযত করিয়াছে। 
ইতিমধ্যে বাঁঘ গাড়ীর চাকার পাশে আসিয়া! গাড়াইয়াছে। 
যেন একটু নিশ্চিন্ত ভাব। একবার ঘুরিয় মানুষটি দেখিল, 
তাহার পর আবার কি ভাবিয়া মাটী শু'কিতে আরম্ভ করিল। 
শত্রু সেখানে নাই। বুভুক্ষের আহার রাঁজভোগের মত 
সামনে রক্ষিত। বাঘ গাড়োয়ানের দিকে মুখ ফিরাইয় 
বসিল। গাড়ীর ছাউনি তখন মাধাঁর উপর মৃছভাবে 
ছুলিতে আরম্ভ করিয়াছে । বাতাস নাই অথচ ছাউনি 
ছুলিতেছে কেন? অনুমান করিলাম হয়তো! বাঘের গায়ে 
ধাক্কা লাগিয়া থাকিবে । বাঘের লাঙ্ভুলের তখন উথান- 
পতন চলিয়াছে ) লন্ফ প্রদানের পূর্বব সম্থেত। বাস্তবিকই 
বাঘটা লাফাইবার চেষ্টা করিল, কিন্তু লম্ফ হুইল না। 
সর্বদেহে একটা ঝাঁকুনি দেখিলাম মাত্র । যখন সে উঠিয়া 
গাড়োয়ানের দিকে অগ্রসর হইবে ঠিক করিয়াছে, এমন সময় 
লক্ষ্য করিলাম গাড়ীর ছাউনির উপর সেই বিরাট অজগর। 
মুখটা নীচের দিকে ঝুলাইয়া দুলাইতেছে। দেখিতে দেখিতে 
মুহূর্তের ভিতরে সমস্ত দেহটাকে বাঘের উপর ফেলিয়া! দিল 
এবং সার্কামে ঘোড়ার খেলার লম্বা চাবুকে যেভাবে ঢেউ 
খেলিয়া থাকে ঠিক সেই ভাবে অজগর দৈত্যের বিরাট দেহ 
বাঘের পিঠে ঢেউ থেলিতে লাগিল। এই সময় যে কয়টি 
গর্জন গুনিয়াছিলাম তাহার বর্ণনা দিবার চেষ্টা করিব না। 
একটি পাক পুরাপুরি দিবার আগেই চকিতে বাধ নিজেকে 
মুক্ত করিয়া সামনের প দিয়! থাবা! মারিল। তৎক্ষণাৎ 
বারুদ বিস্ফুরিত হাউই বাজির মত সম্মুখের দেহের খানিকটা 
অংশ সোজ! প্রায় উড়াইয়! সাঁপ বাঘের মুখে ছোবল মারিল। 
চোখের উপর ছোবল মারে নাই তো? হুইভেও পারে। 
বাধ যেন বিধবত্ত হইয়! পড়িয়াছে। রণে তঙ্গ দিয়া আবার 
ঘাসের দিকে অগ্রসর হইল। অরণ্যের আদি প্রবৃদ্ধি ক্ষেপিয়া 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


উঠিয়াছে। যুদ্ধে একজন আর একজনকে সম্পূর্ণ বিনাশ 
ন! করিয়া থামিবে না। সরীস্থপ বাঘের পিছু লইল। বাঁঘ 
তখন খাড়াই ঘাসের আড়ালে চলিয়! গিয়াছে । 

আমি গাঁছের উপর স্তত্তিত হইয়! বসিয়া আছি। ইহার 
পরের ঘটনা কি হুইবে অনুমান করা শক্ত। গাড়োয়ানের 
আশা ছাড়িয়া দিয়াছিঃ কারণ যুদ্ধের পর একজন-_যে কেহ 
আসিয়া তাঁহার ভবলীল! সাঙ্গ করিয়া দিবে। নানা চিন্তা 
মনে আসিতেছিল ) এমন সময় রাস্তা হইতে একটু দূরে 
ঘাসের আড়ালে অকস্মাৎ বাঘের উপধুপরি গর্জন সুরু 
হইল, যেন সৃষ্টি এখনি ধ্বংস হইয়া যাইবে । যেখান হইতে 
শব আসিতেছিল তাহার অনেকখানি পরিধি লইয়! ঘাসগুলি 
দারুণ ভাবে আলোড়িত হইতে লাগিল। ক্রমান্বয়ে বাঘের 
চীৎকার গোঁঙানিতে পরিবর্তিত হইল; যে শব্দ আসিতে- 
ছিল তাহা ক্ষীণ হইতে ক্ষীণতর হঈতে আরম্ভ করিয়াছে । 
ঘাঁসের আলোড়ন নাই। অনেকক্ষণ বাদে একটা দমবন্ধ 
হওয়ার মত আওয়াজ কাঁনে আসিল। কিছুক্ষণ পরে 
আবার নিস্তব্ধতায় পূর্ণ হইয়! উঠিল। 

পূর্বাবস্থায় আছি। 

একটির পর একটি করিয়া কতগুলি প্রহর কাটিয়৷ 
গিয়াছে জানিবার উপায় ছিল না । হাতে পায়ে খিল ধরিবার 
উপক্রম হইয়াছে । একটু নড়িয়া বসিবার সাহস নাই। 
নিস্তব্ধতা যেন গুরুভার কঠিন বস্তুর মত আমার মনের উপর 
ভর করিয়াছে। 

প্রভাতের আগমন-বার্তা দূরে পাথার কাঁকলিতে শুনিতে 
পাইতেছি। দিকভ্রম হইয়াছে । কোন দিক পূর্ব, কোন 
দিক পশ্চিম ম্মরণ করিতে পারিতেছি না। আস্তে আস্তে 
আকাঁশ ফরসা হইয়া আসিতে লাগিল। 

ইতিমধ্যে নবজাত অরুণকিরণ গাছের ভাল পালার পাঁশ 
কাটাইয়া“রাস্তায় আসিয়! পড়িয়াছে। গাড়োয়ানটার কথা 
মনে আমিতেই ল্মরণীয় ঘটনাস্থানটি লক্ষ্য করিলাম। 
দেখিলাম বেচারা ঠিক সেই ভাবেই পড়িয়া! আছে। মাথার 
নিকটে খানিকটা স্থান জমাট রক্তে লাল হইয়া উঠিয়াছে। 

শিহরিয়া উঠিলাম! তবে কি বাঘ লোকটিকে থাব! 
মারিয়াছিল? কই,যতদূর মনে পড়ে বাঘকে তে! অত নিকটে 
আসিতে দেখি নাই। হইতেও পারে। মনের অবস্থা তখন 
এমন ছিল নাঃ যাহার উপর সম্পূর্ণ আস্থা রাখা চলে। 


গ্ভ্ভীল্ল আন্লশ্যে একটি ল্লাজি 


€ঞ্ 


একটু নড়িয়া বসিবার ইচ্ছা! আসিল। শেষ্টা কঙ্গিলাম, কিন্ত 
পারিলাম না। হাতে খিল ধরিয়াছে। মুঠা দুইটা কে 
যেন রজ্জু দ্বারা পাঁতার গোছার সহিত দৃঢ় ভাবে বাঁধিয়া 
দিয়াছে । নিরুপায় হইয়াই পথিকের আসার আশায় 
অপেক্ষা করিতে লাগিলাম। 

সকাল হইয়া গিয়াছে । অনতিবিলঘ্ে দেখিলাম সদলবলে 
জঙ্গলীর দল শুকৃনা কাঠ কুড়াইবার জন্ত আমার দিকে 
আসিতেছে । নিকটবর্তী হইতে তাহাদের দৃষ্টি আকর্ষণ 
করিবার জন্য প্রাণপণ শক্তিতে ডাক দিলাম। সকলে 
আমার নিকট ছুটিয়া 'আাসিল, কিন্তু গাড়োয়ানের অবস্থা 
দেখিয়া থতমত খাইয়া গেল। গত রাত্রের বাঘের গর্জন 
নিশ্চয় তাহারা শুনিয়াছিল। গাঁড়োয়ানকে রক্তাক্ত 
অবস্থায় পড়িয়া থাকিতে দেখিয়া, অনুমান করিল বাঘ 
নিকটেই আছে। তাহাদের মধ্যে প্রাচীন ও অভিজ্ঞব্যক্তি 
ইতিমধ্যে বাঘের থাবা আবিষ্ষার করিতে গিয়া অজগরের 
অস্তিত্বও জানিয়া ফেলিয়াছে। খবরটি সকলের গোচর 
হইতেই একটা আনন্দের সাড়া পড়িয়! গেল। তাহার পরই 
একত্রিত হইয়! কাঠে কাঠে ঠুকিয়া বিকট খটাখট্‌ শব্ধ আরম্ত 
করিয়া দ্িল। বুড়াই যে দলপতি--বুঝিলাম। সে সাপের 
গতি ও বাঘের থাবা লক্ষ্য করিয়া গত রাত্রের ভয়াবহ 
স্থানটির দিকে অগ্রসর হইতে লাগিল। পিছনে দলের লোক 
তথন চীৎকার জুড়িয় দিয়াছে। বেশীদুর যাইতে হইল 
না। তাহাদের ভিতর অনেকেন় মাথ! দেখিতে পাইতেছিলাম। 
একটি স্থানে আসিয়৷ সকলেই ্লীড়াইয়৷ গিয়াছে এবং 
মাঝে মাঝে নীচু হইয়া কি দেখিতেছে । বুঝিলাম, অনুসন্ধানের 
ফল শুভ। তাহার পর বেশীক্ষণ সময় কাটে নাই। 
দেখিলাম-__দশ-বাঁর জন মিলিয়! বহুকষ্টে রাত্রের অজগরকে 
লইয়া আসিতেছে । বিশাল* শক্তির মৃতরূপ। মাথার 
অস্তিত্ব যেটুকু আছে তাহাতে জীব্তি অবস্থায় কি ছিল 
জানিবাঁর উপায় নাই। একটা চোখ একেবারে বাহির হইয়। 
পড়িয়াছে। অজগরের মৃত দেহটা গাড়ীর নিকটে আনিতে 
গাড়োয়ানের প্রতি দৃষ্টি পড়িল। দেখিলাম__লোকট! যেন 
পাশমুড়ি দিবার চেষ্টা করিতেছে। দিনের বেলা এবং 
অতগুলি লোক উপস্থিত না থাকিলে আমি কি করিতাম 
বলিতে পারি না। নিশ্চিন্ত হইলাম, লোকটা! মরে নাই। 
মরিলে রিপোর্টের ভিতর এতবড় ঘটনাটা "বাদ দিতে পারিতাম 


5 


না। লোকটাকে মনে মনে ধন্তবাদ দিলাম । '] 1)9৩)৩ 
170208৫ 0০ 50011৮এর গোলামি মন্ত্রে চার পাত 
লেখার কর্তব্য হইতে সে আমাকে বীচাইয়! দিয়াছে । 

সদর আপিসে গদিয়ানি পোষাক পরিয়! আড়ষ্ট হইয়া 
উঠিয়!ছে কি না ভাবিতেছিল্লাম, এমন সময় ডাক আঁসিল। 
তহসিল্দার লিখিয়াছেনঃ মানুষ-থেকো বাঘ মারার জন্ত 
কালেকটার জঙ্গলীদের পুরস্কত করিয়াছেন এবং বাঘের 
আসল ধ্বংসকারী অজগর নিজে মরিয়া জঙ্গলীদের বিরাট 


ভ্গঞাতজ্বঞ্ধ 


[ ২৮শ বর্--২য় খণ্ড--€ম সংখ্যা 


ভোজের ব্যবস্থা করিয়াছিল । শেষের দিকে গাড়োয়ানের 
বলদ দুইটার জন্ত সুপারিশ করিয়াছেন _-যেন গরীব সন্বন্ধে 
আমার উদার মনে কলঙ্কের ছাপ না পড়ে। কলঙ্কের বোঝা 
যথেষ্ট আছে, উপরি ফাঁউ বহন করিবার ইচ্ছা ছিল না। 
পরের ডাঁকেই বখ.শিস্‌ সহ শার্দ;িলতুক্ত ও পলাতক বলদের 
দাম মনি অর্ডার যোগে পাঠাইয় দিয়াছিলাঁম। 

বলিয়া রাখা ভাল, টি-এ বিলে এই বাড়তি খরচের 
অঙ্ক সরকারকে লিখিতে তৃলি নাই। 


কে তুমি? 


শ্রীমানকুমারী বন্থু 
(১) ( ৩) 
সে যে ছিল বড় আপনার গণিয় গণিয়া দিন 
তাই প্রাণে ওঠে হাহাকার । আমার ফুরাল দিন 
আজিও স্ুনীলাকাশে রবি আসে শশী আসে দেখিব না মুখখানি তার। 
ছয় খতু আসে বার বার এ জীবনে অহরহ 
সে-ই শুধু আসে না ক আর। কি যে ব্যথা ছুর্ববিসহ 
জি বলিতে পারি না তা যে আর 
চিরন্তন সেই মুখ দেখিব না আর। 
বনে বনে ফুল ফোঁটে (৪ ) 
মলয় বাতাস ছোটে প্রকৃতির তেমনি বাহার এ কি দশা হয়েছে আমার 
মুঞ্জরিত তরুশাথে তেমনি কোকিল ডাকে ভাবিতে পারি না তা আর। 
সুললিত মধুর বঙ্কার। নয়নে নাহিকো! দৃষ্টি 
শুনি সেই কুহু কু তমময় বিশ্বস্্ 
প্রাণে আসে উহু উহু বক্ষ গেছে হয়ে চুরমার । 
মনে পড়ে মুখখানি তার তবু অলক্ষিতে থাঁকি কে দিতেছে ন্লেহমাখি 
সে-ই শুধু আসে না ক আর। ভগ্ন বক্ষে শকতি সঞ্চার। 
দেখ! নাই কথ৷ নাই, 
তবু যেন কাছে পাই; 
কে মুছাঁও তপু অশ্রধার 


হেন দিনে “কে তুমি” আমার 


একই 


শরীপৃথ্থীশচন্দ্র ভট্টাচার্য্য এম-এ 

মণিকা কি ধরণের মেয়ে সেকথা এককথায় লে বুধানো _কিস্ত প্রদেশ সম্বন্ধে এবং মানুষের চেহারা সম্বন্ধে 

বড় কঠিন-সে শিক্ষিতা স্বন্দরী এবং অত্যন্ত আধুনিক আপনি অনার্স-এরই উপযুক্ত নয়। 

ধরণের ত বটেই-_কিন্তু সেইটাই তাঁর সব নয়। আমি হাঁতজোড় করে বললাম-_-আমি ভূল করেছিলাম । 
কুশিয়ার বিশ্ববিখ্যাত নর্তকী কলকাতায় এসে একদিন --আপনি ত লেখেনগ । 

বাঙালী মেয়ের বেশকে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ আসন দিয়েছিলেন, _ষ্ট্যা আপনি জান্লেন কি ক'রে? 

কিন্তু যে সব বাঁঙালীমেয়ে তাদের সেই জাতীয় রুচিজ্ঞানকে _ প্রফেসর গোস্বামী সেদিন বলছিলেন আপনার কথা। 

বিসর্জন দিয়ে মাদ্রাজী ধরণের বেশতৃষ! করা স্থুক করেছে -_-ও তাই। 

মণিকা তাদের দলেও বটে-_অর্থাৎ নতুনের মোহে সে তার মণিকা আমার হাতের বইথানাঁর পানে চেয়ে ছিল, হঠাৎ 

নিজশ্বটুকু অনায়াসে ত্যাগ করতে পারে। অশোভন প্রশ্ন করলে--আপনি অত সিগারেট থান কেন? 
আমার সঙ্গে তাঁর যে পরিচয় হয়েছিল সেটাও আঁশ্চর্য্য- _অত? | 

রকমের। আমরা৷ উভয়েই পোস্ট গ্রাজুয়েটেই তখন পড়ি।  -স্থ্যা, এই আঙুল দু*টোর অমন রং হ'ল কেন 

মণিক! ও আমার ইকনমিক্স ছিল, কিন্তু তাঁর বেশভূষা দেখে তা নইলে? 

চিরদিন মী্রাজী বলেই ভুল ক'রে এসেছি। অকম্মাৎ _ সামান্ত খেলেও হয়। 

পিড়ির মাঝে একদিন সে আমাকে প্রশ্ন করলে-- আপনার _ না, আমার দাদার হাতেও অমনি দেখেছি, সে 

নাম সব্যসাটী বন্দ্যোপাধ্যায়? ত রোজ তিরিশটা সিগারেট খাঁয়। যাক, আপনাদের 
স্পষ্ট বাংলাভাষা গুনে অবাক হয়েছিলাম, তাই বললুম বাড়ী কোথায়? | 

-_ আজে হ্থ্যা। ূ -গড়পার। 
-আঁপনি অবাক্‌ হয়ে গেছেন দেখছি। --আপনি কুস্তি করতে পারেন? 
-্যা। -_না। 
- কেন, আমি আলাপ করছি দেখে? --আমার ধারণা ছিল, যাঁদের বাঁড়ী গড়পাঁর তারা সব 
_ না। কুম্তিগীর। আমাদের বাড়ী বালীগঞ্জ- হিন্ুস্থান পার্কে_. 
_ তবে? আট নম্বর । আমাদের ওখানে যাবেন? আমরা একসঙ্গে 
- আপনার বাংল! শুনে। পড়াশুনো করলে সুবিধে হ'তে পারে--মোট কথা, আপনার 
_ তাঁর মানে ? সঙ্গে আলাপ করবার উদ্দেস্ঠ হচ্ছে আপনি খুব পড়াশুনো 
_ আপনি বহুদিন বাঁংলায় আছেন? ক'রে যে নোটগুলো করবেন, আমি তা বিনাক্রেশে সংগ্রহ 
_ তাঁর মানে? আমি বাঙালী, তা বাংলা ছাড়া করতে চাই। 

যাবো কোথায় ? আমি হেসে জবাব দিলাম বহুক্রেশেও আমি তা 
লজ্জিত হইয়া বলিলাম-_-ও, আমি তুল করেছি ক্ষমা! আপনাকে দিতে প্রস্তুত আছি। 

করবেন। আমি ভেবেছিলুম আপনি মাদ্রীজবাসী। আচ্ছা, শনিবার বিকেলে আপনার চার নেমন্ত্র রইল । 
মণিকা খুব খানিকটা হেসে নিয়ে বললে-আপনি এ 

ফাস্ট'ক্লাস অনার্স পেয়েছিলেন না ? আজ হলে মণিকার নিমন্ত্রণকে কি মনে করতাম ত 


হা বলা কঠিন, কিন্ত সেই উচ্সিত যৌবনে জুদ্দরী তরুণীর এই 


€৭$ 


' গগন 





নিমন্ণরকে আমি আরও অনেকের মতই ভাগ্য বলে মনে 
করেছিলাম এবং শনিবার দিন বেশটাকে যথাসম্ভব ভত্রস্থ 
কারে নির্দিষ্ট সময়ে যে উপস্থিত হয়েছিলাম একথা 
বলাই বাহুল্য। 

বৈঠকথানায় প্রবেশ ক'রে বসেছিলাম_ চাকর-দারোয়ান 
কাউকেই পাই নাই। হঠাৎ এক ভদ্রলোক এসে প্রশ্ন 
করলেন-_-কাঁ”কে চাই ? 

__মিস্‌ মণিকাকে | 

-আপনি? 

- আপনি দয়া ক'রে তাকে বলুন, আমার নাম সব্যসাচী 
বন্দ্যোপাধ্যায়। 

--ও আচ্ছা । 

একটু পরেই মণিকা এসে বললে--ও এসেছেন ! 
আসুন, আমরা পড়বার ঘরে গিয়ে বসি। 

পাশের ঘরে আলমারি-বোঝাই হরেক রকমের কেতাঁব। 
আমি ভয়ে তয়ে একটা চেয়ারে বসলাম । মণিকা তার দাদা, 
মা, বোন-__-সকলের সঙ্গে আমার পরিচয় করিয়ে দিয়ে 
বললে- আগামী বারে ফাষ্ট প্রেস ওর বাধা আমরা এক 
সঙ্গেই পড়বো। 

সকলেই এই ব্যাপারে উৎসাহ দিলেন এবং আমাদের 
দু'জনকে পড়বার সুযোগ দিয়ে তারা প্রস্থান করলেন। 
মণিকা বললে-_.একটু চা খাবেন বলেছিলাম, সেটা 
বলে আসি। 

মণিকা বাড়ীর ভিতর থেকে ফিরে এসে বললে- আচ্ছা, 
এত ত পড়ছেন কি করবেন? আই. সি. এস.-এর জন্তে 
চেষ্টা করতেন? 

পুরু চশম! ও স্বাস্থ্যের প্রতি ইঙ্গিত ক'রে বললাম__ 
এ জীবনে ও রাঁজসিক চাকরি করার সৌভাগ্য হবে না, 
বে একটা! প্রফেসরী পেলেই থুণী, কিন্তু-_ 

মণিকা! উৎসাহ দিয়ে বললে-__ত! নিশ্চয়ই হবে। 

চাঁকর চা ও অন্তান্ত থাবার দিয়ে গেল। মণিক! প্লেটটা 
ঠেলে দিয়ে, চা ঢেলে বসে নিজে এক চুমুক খেয়ে নিয়ে 
'বললে__মিঠি আর লাগবে ? 

স্না। 

»-ওহো, আপনি, ত সিগারেট থান, কি সিগারেট ? 

- ক”লেই হ'ল, এ বিষয়ে আমি লর্বতৃক-_ 


স্ডারস্ন্ 


[ ২৮শ বর্-_২য় খণ্ড--€ম সংখ্যা 





মণিকা চাঁকরকে সিগারেট আন্তে আদেশ দিয়ে বললে 
_আজ প্রথম পরিচয়েই পড়ার কথা বলা চলে না, আজ 
গল্পই করা বাকৃ্‌। আচ্ছা, বাংলা সিনেমা আপনার 
কেমন লাগে? 

আমি বললাম-_বাংলা সাহিত্যে যেমন উচ্চাঙ্গের বস্ত 
পাওয়া যাঁয় ছবিতে তার এক-শতাংশও পাওয়া যায় না-_ 
সেগুলো আমাদের অর্থাৎ বাংলার রুচিজ্ঞানের তুলনায় 
নিয়ন্তরের | 

-আমার ত মনে হয়, এ কতকগুলো স্তাকামিছাড়! 
আর কিছুই নয়, অবশ্ত বিদেশী ফিল্সও '্যাকামিই__কিন্ত 
তার প্রকাঁশটা একটু ভদ্রস্থ। 

বাংলা ছবিতে দেখেছেন, কেমন অকারণ রসিকতা, 
নাচ এবং গান লাগিয়ে দেওয়া হয়-_ 

_-মাচ্ছা, চলুন আজ একটা ফিল্ম দেখে আসি, যাবেন? 
এখনও তিন কোয়াটার সময় রয়েছে। 

_-আপততি নেই, চলুন-__ 

__আচ্ছঃঠ আপনি এই মাসিকথানা 
ততক্ষণে কাপড় ছেড়ে আসি-_ 


পড়,ন+ আমি 


মণিকা ট্রামে উঠে আমার পাশে বসে বললে-_ 
সিগারেট আপনি খুব থেতৈ পারেন? ওতে আমার কোন 
অন্ুবিধেই হয় না। 

সিগারেটেই টান দিলাম, হঠাৎ মণিকা বলে উঠল-_ 
আমার সম্বন্ধে আপনি কি ভেবেছেন? 

_ এখনও ভাবি নিঃ তবে ভাবতে ইচ্ছে আছে-_ 

তা নয়, কি ইম্প্রেসন হয়েছে? 

আমি চিন্তা ক'রে জবাব দিলাম আমার জীবনে ছু- 
দশজন মহিলার সজে আলাপ হয়নি যে অন্তের সঙ্গে তুলন! 
ক'রতে পারি উচ্চ শিক্ষিতা মহিলা কেবল আপনি-__তাই 
এ সম্বন্ধে আপনাকে আমি আধুনিক মেয়েদের প্রতীক বলে 
ধ'রে নিয়েছি। 

সকল আধুনিক মেয়েই কি এক রকমের হয়? 
হ'তে পারে? 

-ন! হওয়াই সম্ভব। 

- তবে আমার মধ্যে বৈশিষ্ট্য কি দেখেছেন? 

-_একটি জিনিষ দেখেছি যে, বাঁঙালী মেয়ের মত অত্যন্ত 


বৈশাখ-_-১৩৪৮ ] 


লজ্জা ও আড়ষ্টতা আপনার পা ছু'টোকে অচ্প করতে 
পারেনি । 

মণিকা সম্ভবত এটাকে একটা গ্রশংসা মনে ক'রে হেসে 
উঠল। কিছুক্ষণ পরে বল্লে_ মেয়েরা যে পুরুষের মতই, 
একথা কি আপনি অস্বীকার করেন? 

_ নিশ্চয়ই করি, নাবী পুরুষের মত হ'লে তাদেরও ত 
দাড়ি কামাতে হ'ত । 

মণিকা রসিকতাটাকে তারিফ ক'রে হেসে উঠল। 


ছবিটার বিষয়বস্ত ছিল এই যে, একটি বাঙালীমেয়ে 
তাঁর নিষ্ঠা, ত্যাগ ও আত্মসমর্পণের দ্বারা তাঁর অত্যাচারী 
উচ্ছংজ্থল স্বামীকে বশীভূত করেছিল । 

মণিকা আমার প1শে পাশে হাটতে হাটতে বল্লে-_ 
এটা কি স্বাঙাবিক বলে মনে হয়? 

- কি? 

--মেয়েটির পক্ষে এই ত্যাগ, সহনশীলতা ? 

_অন্তদেশে না হলেও আমাদের দেশে এ খুবই 


স্বাভাবিক । আমাদের দেশ সীত!র কাছ থেকে এটা 
শিথেছে-_- 
_-মনম্তত্ব হিসাবে এটা ভুল 


_-নাঃ সভ্যতা মানুষকে জানোয়ার থেকে বর্তমান 
অবস্থায় এনে দিয়েছে; আর হিন্দুসভ্যতা তার পারিবারিক 
জীবনে দিয়েছে এই ত্যাগ, নিষ্ঠা ও আত্মসমর্পণ । বিদেশী 
ছবিতে এটা দেখলে অস্বাভাবিক বল্তুম নিশ্চয়ই, কারণ 
তাদের সভ্যতার ধারা অন্যরূপ। 

কিন্তু আমি হ'লে কবে বিদ্রোহ করতুম। 

__মন্ত অনেকেই করতোঃ কিন্তু তাতে সে লাভবান 
হ'তে পারতো! না নিশ্চয়ই । বিদেশ হ'লে সে অন্যকে বিবাহ 
করতো, আবার তাঁকে এমনি করে বিদ্রোহ করতে হত । 
ঘর খু'জতে খু'জতে তাকে জীবন কাটাতে হ'ত__কিন্ত ঘরে 
সে মাথা গুজতে পারতে না। 

মণিক চিন্তা ক'রে বললে-_ আপনার মাঝে সংস্কার 
রয়েছে প্রচুর__ 

বললাম--হতে পারে; তবে এটা আমি বিচার ক'রে 
দেখেই বলেছি, কারণ মেয়েদের এবং পুরুষের শারীরিক ধর্ম 
এক নয় বলেই তাদের বিভিন্নরূপ ব্যবস্থাও দরকার । 


গত 


একর 


০. 


আধিক জগতে তারা স্বাধীন হলেও গৃহ ও সন্তান 
তাদেরই প্রয়োজন । 
--সেই জন্তে পুরুষের দাসত্ব তার অবশ্টা করণীয়? 
-টাঁকার জন্যে যদি দাঁসত্ব.মাচুষে করতে পারে; তবে 
গৃহ ও সন্তানের জন্যে দাঁসত্ব-যি তাই হয়-_কেন করবে 
না আনন্দে করবে। এ 
মণিক! হঠাৎ নমস্কার জানিয়ে বল্লে-কবে আস্বেন? 
_-ঘেদিন বলবেন । 
_-যেদিন থুণী, আমি কদাচিৎ বেরুই। 


'আপনি'র গন্তী পাঁর হয়ে আগি আর মণিক! 
কিছুদিনের মধ্যে তুমির গণ্ভীতে এসে পৌছলাম। 
ভালবাসায় নয, বন্ধুত্বের নৈকট্যে এবং অধ্যয়ন-মধ্যাপনার 
ঘনিষ্ঠতার মধ্যে । এর মাঝে কতদ্দিন, কত সময়, মণিকাকে 
আঁমার গৃহে বধূরূপে প্রতিষ্ঠিত ক'রে মনে মনে দেখেছি, মনে 
মনে আনন্দ ও অব্যক্ত একটা সুখাবেশ অনুভব. করেছি । 
এই যদি ভালবাস! হয়, আমি মণিকাকে ভালবেসেছিজান।. 
কিন্তু তাকে বলবার সুযোগ কোন দিনই আফি পাঁরিকিবা 
তাঁর প্রয়োজনও আমার হয়নি । 

পরীক্ষার পরেও মাঝে মাঝে তাদের বাড়ীতে গিষ্বেছি। 
একদিন চা খেতে খেতে প্রশ্ন করলাম_ এখন কি করবে 
ভাবছ? 

সেইটাই ত সমস্যা | 

_বিয়ে ক'রে ঘরকল্পা! করবে? 

--করতে পারি। 

__আচ্ছা কি রকম ছেলেকে তুমি বিয়ে করবে বল তা? 
তোমার বাবা যেমন ছেলে এনে দেবেন ? 

__না, যার সঙ্গে পরিচয় নেই তাকে বিয়ে করবো কি 
ক'রে? তবে কি পেলে সুখী হই তা বলা কঠিন, কারণ 
এখনও সেটা ভেবে দেখিনি । আচ্ছা, ভূমি কি করবে ? 

__ প্রথমে চাকরি সংগ্রহ করতে হবে, তারপর বিবাহ 

--কি রকম মেয়ে বিয়ে করবে? 

যে আমার স্থথে স্ুতী হতে পারবে, দুঃখে দুঃখিত 
হ'তে পারবে । আমার অক্ষমতাঁকে মার্জনা! করবে .'' 

_ষে ভালবান্বে সে-ই ত তা হতে পারবে। 

--অর্থাৎ যে আমাকে স্বামী বলেই ভালবাসবে, আমার 


৮৮৬৮ 
চাকরি, অর্থ, সৌন্দধ্য, গুণ প্রভৃতি দেখে ভাঁলবাস্বে না। 
এমন দিন ধরি আসে যে চাকরি, অর্থ, সৌনার্্য কিছুই না 
থাকে, তবে সে তবুও আমাকেই ভালবাসবে এবং আমার 
ক্ষমতাকে ঢেকে রাখবে । | 

মণিকা খুব খানিকটা হেসে নিয়ে বল্লে--তবে 
তোমার আর বিয়ে কর! হবে না। 

' আমিও ছেসে বললাম-_যদি না-ই হয় তবে কি করবো? 

-তুমি একজনকে ভালবেসে বিয়ে ক'রে ফেল, য৷ 
হয় হবে। 

_-বরাত ঠুকে? 

_ষ্ট্যাঃ তাই। 

_-তুমিও তাই করবে? 

_আমি ত তোমার মত চাই না, আমি পরিচয় ক'রে 
দেখবে! যদি পছন্দ হয়-_ক/রবে!। 

_-যদি পছন্দ ভূল হয়? 

-ফিরে আসবো, নিজে ত অক্ষম নয়। না! পোঁষায়, 
বিদীয় নেব। 

-প্বরঃ আমার মত পক্ষিচিতকে কি বিষে করতে পার ? 

আমার মুখখাঁন! তীক্ষ দৃষ্টিতে দেখে নিয়ে মণিকা বললে, 

-্ভার মানে? 

»আমার কথ] বলছি নাঃআমাঁর মত ছেলের কথা বলছি-_ 

ঈণিকাঁ মুখতঙ্গি ক'রে বললে তুমি বঙ্ডো পড়, 
তোমাকে বিয়ে করা যায় না। তারপরে ধর, তোমাকে ত 
আমি তালবাসতে পাঁরবো নাঃ তোমার অর্থ__যা! নেই তাকে, 
সৌন্দর্য্য যা নেই তাকে, ভাঁলবাস্তে ত পারবো না। আর 
তুমিও জদানাকে বিয়ে ক'রে পড়বে সমন্তায়__ 

-সমন্কাটা কি? 

_-ভোঁমার অক্ষমতাকে ত মার্জনা করতে পারবো ন!। 
বাঁধা দেব, পতি পরম গুরু মনে ক'রে চোখের জলে বালিশ 
ভিজিয়ে শিবপৃজ| করতে পারবো না। 

আমি হেসে বললাম-_-এটা সমশ্যাই_-সন্দেহ নেই। 
তবে তুমি সুধী হবে কিনাতাত বল্লেনা। আমিকি 
হব আমি জানি। 

মণিকা ভ্রভঙ্গি ক'রে আবার বললে--আমি? নুরী 
হতে (রিযতুম-_কিন্ত ভূমি বডেডা বেটে, বড্েডো রোগ! আর 
ভয়ানক বাজে কথা বলো । 


স্ডাব্রভব্শ্ব 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় খণ্ড ৫ম সংখ্যা 


আমি হেসে বললাম-__অর্থাৎ, আমি যদি বাশের মত 
লম্বা, হাতীর মত মোটা ও পেচকের মত গম্ভীর হতে 
পাঁরতুম তা হ'লে তুমি বিয়ে করলেও করতে পারতে-_ 

মণিকা কাঁণের ছুল দুলিয়ে মাথা নেড়ে বললে- স্থ্যা। 


মণিকাঁকে আর একদিন প্রশ্ন করেছিলাম-_ধর, তুমি 
যাঁকে ভাঁলবাঁস্লে সে যর্দি তোমাকে ভাল না বাস্তে পারে ? 

মণিক1 ওষ্টটা উল্টিয়ে জবাব দিলে-_বয়ে গেল। এত 
থুবই স্বাভাবিক, আর একজনকে ভাঁলবাস্বো-_ 

_-সেও যদি তাই করে বা! বিশ্বাসঘাতকতা করে? 

_তবে১ আবার আর একজনকে ভালবাস্বো_ সেও 
যদি অমন হয় তবে বিয়ে করবো না । 

-_বিয়েই করবে না? 

__নাঁ তুমি ডন-বৈঠক দিয়ে কু্তিগীর হ'লেও তোমাকে 
বিয়ে করছি না; আমি ত আর সীতার মত নই যে দুঃখ 
হ'লে কেবল কীঁদবই, ঝগড়া করতে পারবো ন|। 

আমি সভয়ে বললাম ঝগড়া করবে ? ঘবে ত তোমাকে 
ৰিয়ে কেউ করবে না । 

মণিকা অভিমানপূর্ণ কঠে বললে- আমার বিয়েই হবেন! ? 

_না। 

আমরা উভয়েই গ্রগলভের মত ছেসে ওঠলাম। 


মণিকার আন্দাজ মত আমি ফাস্ট ই ভযেজিজ্ষাম, মণিকা 
সেকেও্ড ক্লাস ফাস্ট হয়েছিল। পরীক্ষা দেওয়ণর পরে সেও 
জানতো যে ফাস্ট কাস তার হবে না। পরীক্ষার খবর 
জানাতে যেদিন তার ওখানে গেলাম সেদিন অনেক মিষ্টিপূর্ণ 
একথান! ' প্লেট ঠেলে দিয়ে বল্লে- এটা আমার পাশের 
থাওয়! নয় তোমার ফাস্ট হওয়ার খাওয়া । আমার ভবিস্ৎ- 
বাণী সফল হয়েছে, দেখলে ত? 

বললাম _দেখলাম ত, কিন্তু সবগুলো! ফলে গেলে ত 
মুস্কিল । 

-আর কোন্ট1? 

-_-ওই তুমি যে বলেছিলে আমার বিয়ে হবে না। 

মণিক। হেসে বললে-_-ভয় নেই, হবে এমন একটা 
মেয়ের সঙ্গে যে কথ! বললেই কাঁদবে, তোমার স্দি 
লাগলেই তারকেশ্বরে হত্যা দেবে। 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


আমি হষ্টমনে বললাম-_যাহোক্‌, হবে তা হলে? 

মণিক1 ঠাট্টার স্থুরে বল্লে- হবে মশাই হবে, আচ্ছা 
বিয়ে-পাগল। ত! 

মণিক! অকম্মাৎ গম্ভীর হয়ে বললে-__আমি ফাস্ট হলে 
ভুমি দুঃখিত হ'তে ? 

বললাম--হ', তুমি ফাস্ট হলে বলে নয়, আমি হতে 
পারিনি +লে__কাঁরণ তা হলে চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা 
মোঁটেই থাকৃতো না। 

-_ মোঁটেই সম্ভাবনা থাকতে না কেন? 

_ মেয়েলোঁক ফাটি হয়েছে, আমি তার নীচে একথা 
শুনলে কি আর কেউ চাকরি দেয়। 

মণিক৷ কৃত্রিম ক্রোধে বললে__ওই ত তোমাদের দোষ, 
মেয়েরা কি ফাস্ট হতে পারে না? 

_পাঁরে, বহুবার পেরেছে । 

_তবে? 

_যারা সেকেণ্ড হয়েছে তাঁরা চাকরি পেয়েছে শুনিনি । 

মণিক হেসে বললে তবে ত বড় অন্যায় হয়েছে, 
তোমাঁদের এই স্ুপিরিয়রিটি কমপ্রেক্সটা আমি কিছুতেই 
বরদাস্ত করতে পারি নে। কেন, আমর! মানুষ নয় ? 

__নী, মেয়েমানুষ | 

মণিকা পরাজিত হয়ে বললে-__আঁমি যদি তোমায় 
বিয়ে করতাম তবে তোমাকে সাত ঘাটের জল খাইয়ে 
দেখাতুম মেয়েমানুষ কি চিজ। 

_তুমি কেন । যে ছিচ.-কাছুনে মেয়ের কথা বললে সেও 
পাঁরবে আশা করি। কারণ পুরুষেই ভালবাসে, মেয়েদের 
ত সে বালাই নেই। যে ভালবাঁসে তাঁরই বিপদ-_ 

- ফাস্ট প্লেসের মত ওটাও তোমাদের একচেটে ? 

চায়ের বাটিতে চুমুক দিয়ে বললাম-_ই"-_দেখ তেই 
পারছে৷। - 

-_তাঁর মানে, তুমি আমাকে ভালবেসেছে? 

- আমি বেটে, রোগাঃ আমি কি তোমায় ভালবান্তে 
পারি? তুমি শিক্ষিতা সুন্দরী, তার উপর বড়ণোকের মেয়ে। 

বড়লোকের মেয়েরা বুঝি বেঁটে রোগা লোককে 
ভালবাসে না? 

বাসে? 

-বাস্তে পাবে, তবে আমি ভালবাসিনি | 


একই 


দত 


-'তুমি ভালবাস্বে একটি আট ফুট লক্ব পাচ ফুট চওড়া 
ও বাইশ মণ ওজনের লোক্কে। 

মণিক1 হেসে উঠে ঝললে-_-পাঁরলে না বল্তে, আমি 
ভাঁলবাঁসবো৷ এমন লোককে যে ট্টীমারের সঙ্গে গাধাবোটের 
মত নির্বিকার চিত্তে চল্বে। 

আমি হাত উচু ক'রে বললাম_ন্বত্তি ! স্ব্তি! 


প্রফেসারী পেয়েছিলাম-_ 

একদিন রাত্রে আহারাদির পর বৌদি এসে ডাকলেন__ 
তোমার দাদা ডাকছে, ঠাকুরপো। 

বুলাম একটা গুরুতর কিছু নইলে এমন সময় ডাক পড়া 
সম্ভব নয়। চঁকরি করলেও শ্রদ্ধায় ভয়ে তখনও দাদার সঙ্গে 
কথা কইবার সাঁহস হয় না। ভয়ে ভয়ে দাদার-বিছানাঁয 
বসলাম। দাদা গড়গড়ার নলটা রেখে বলে-__শোন্‌। 

তার মুখের দিকে চেয়ে রইলাম । 

দাঁদা বললে-__আমি একটি ভাল মেয়ে ঠিক করেছি, 
আমারই এক বন্ধুর বোন। সর্বস্থলক্ষণা এইবার ম্যাটিক 
দেবে ... ফী 8:88 

দাঁদা ক'নের সর্ধ্ববিধ বর্ণনা দিয়ে পরিশেষে বলেঃ ইচ্ছে 
হলে তুমি দেখে আ্তে পাঁর। টাকা পয়স! ত দেখে মন্দ 
নয়। ফাল্ুন মাসেই দিন একরকম ঠিক করেছি। তুমি 
লেখাপড়া শিখেছ, একবার জিজেসা করা দরকার, আমার 
কথায় অমত তুমি করবে না জানি? তা তোমার রা 
তোমার বৌদিকে ঝলো _ 

_কিন্তু। 

দাদা আমার মুখের পানে চেয়ে বললে- কিন্তু মানে 
বিয়ে করবে না, আজীবন কুমার থেকে পড়াশুনে। করবে এই 
ত বল্‌্তে চাও? তাতাই করো, এই কেবল মন্ত্র কটা 
প'ড়ে আমাকে একটা বৌমা! এনে দাও, আর কিছু তোমাকে 
করতে হবে না। তোমার কোন সম্পর্ক নেই আর 
তার সঙ্গে-_ 

দাদা বৌদি একসঙ্গে হেসে উঠলো, আমি লজ্জিত হ/য়ে 
চলে এলাম। 

মণিকার কথাই ভাবছিলাম--তাঁকে পেলে আমি 
আনন্দিত হতাম সন্দেহ নেই কিন্তু মণিকা হয়ত আমার 
চেয়েও অনেক বেণী আশ! করেছে- আমাদের এই দরিদ্র 


€গ ৬০ 


গৃহস্থালীর মাঝে সে হয়ত তৃপ্থি পাবে না, তাঁর মত" মেয়ে 
হয়ত 'এ গৃহকে কল্পনাও করে নাই। তাকে বহুদিন 
পরোক্ষে প্রশ্ন করেছি, তাঁর উত্তর য! সে দিয়েছে তাঁর অর্থ 
সুপরিষ্ষার- আমার সন্দেহের অবকাশও নেই। 

শুন্লাম পাশের ঘরে দাঁদা ও বৌদিতে তর্ক হচ্ছে-_ 

দাদ ব্ললে-__গলার হার দিয়ে মুখ দেখব--ওই যে 
বন বড় লকেট থাকে-_ 

বৌদি বললে--না॥ আর্মলেট দিয়ে । 

-_আ্দলেট-_আ্লেট মানুষে পরে ? 

মেয়েমানুষে পরে। 

- আমি হারই দেব। 

-_দীও গিয়ে, আমি আমার চুঁড়ি ভেঙ্গে আ্মলেট দেবই। 

দাদ! বললে-_আমার সেই সোনার মেডেল ভেঙ্গে 
আমি এত তো! বড়ো লকেট দেব। চুড়ি ভাঙলে বাণীর 
টাকা পাবে কোথায়? 

বৌদি জুদ্ধ হঃয়ে বল্লে__ছুল বেচবো। ভারী টাকার 
ভয় দেখাচ্ছে ! 

অকল্মাৎ বৌদি এসে দরজায় ধাক্কা দিয়ে বললে-_ ঘুমুলে 
ঠাকুরপো? 

না । কেন? 

_-তা৷ হলে ফাত্ুনেই দিন ঠিক হোক? 

অগত্যা জবাব দিলাম-_আমাঁকে কিছু না জানিয়েই যখন 
এতদূর করেছ তখন বিয়েটাও তোমরাই করলে পারতে ! - 

বৌদি হেসে বললে- মেয়ে দেখাবো ভয় নেই, ভয় নেই। 

উত্তরের অপেক্ষা না ক'রেই বৌদি চলে গেলেন । 


ফাত্তনের প্রথমে দাদা কতকগুলো ছাপানো কার্ড দিয়ে 
বললে--তোমার বন্ধুবান্ধবদের্‌ নেমস্তল্ন ক'রো, তাত আর 
আমি পারবো না। ৰ 

বিবাহের নিমন্ত্রণপত্র নিয়ে মণিকার সঙ্গে দেখা করতে 
উপস্থিত হলাম। মণিকা বললে-বেশঃ এতর্দিন আসনি 
কেন? পড়াঁগুনে! নিয়ে এতদিন ত ছিলাম বেশ, এখন দিন 
ত কাটে না আর। তা তোমারও যেমন-_ 

_-কলেজে তিনঘণ্ট। পড়াতে হয়, পড়তে হয়, জানো! ? 

_-অতএব খাওয়া, ঘুমানো» বেড়ানো! সব বন্ধ; চাঁকরি 
এক তুমিই করলে শ্বাহোক্‌। 


ভ্ঞান্পভন্বহ্ 


[ ২৮শ বর্--র খণ্ড--€ম সংখ্যা 


আমি অভিমানের সঙ্গে বললাম--আমি আসিনি ঝলে 
আর যেই অভিযোগ করুক, অন্তত তুমি করবে না বলেই 
আমাঁর বিশ্বাস ছিল-_ 

- ভাঁলকথা) এর মাঝে এক কাণ্ড হয়েছে। এক 
বিলাত ফেরত ব্যারিস্টার এসেছিলেন আমার পাণি প্রার্থনা 
করতে। তিনি প্রশ্ন করলেন- আমি যদি ব্রিফলেস 
ব্যারিস্টারিই সারাঁজীবন রয়ে যাই, আপনি কি তখন আমার 
দারিদ্র্যকে ব্যঙ্গ করবেন? আমি উত্তর করলাম, দারিপ্র্যকে 
ব্যঙ্গ আমি করি না তবে পছন্দও করি না। যদি ব্রীফলেসই 
থাকবেন তবে বিয়ে করতে চাঁন কেন? ভদ্রলোক ভয়ে 
প্রস্থান করেছেন। 

_বটে! তুমি অসম্ভব বীরত্ব করেছ সন্দেহ নেই। 

মণিকা চটে উঠে বললে-বীরত্বটা কি দেখলে? স্পষ্ট 
কথা বলেছি মাত্র ) 

আমি বক্তব্য প্রকাশ করবো মনে করে বল্লাম 
আমারও অনুরূপ একটা ঘটন! ঘটেছে-_ 

মণিক! বাধা দ্রিয়ে বললে-_অত্যন্ত বেটে ও রোগা বলে 
মেয়েপক্ষ পছন্দ করেনি ত? বেশ করেছে-_ 

মাথা নেড়ে বললাঁম__তা নয়, ব্যাপার সাঁংঘাতিক__ 

বিবাহের থামে ভরা নিমন্ত্রণপত্রটা তার হাতে দিয়ে 
বললাম--এবংবিধ ব্যাপার। 

মণিকা পাংশুমুখে অত্যন্ত তাড়াতাড়ি খামথাঁনা খুলে 
চিঠিখানা এক নিষশ্বাসে পড়ে ফেলে বললে-_তার মানে ? 

__চিঠির ভাঁষাটা কি দুর্ব্বোধ্য বলে মনে হচ্ছে? 

মণিকা বিম্বয়-কম্পিত-কণ্ঠে বললে-_তুমি বিয়ে করতে 
যাচ্ছে! ত আমার কাছে একটা ক্লথাও জিজ্ঞাস করার 
প্রয়োজন বোধ করলে না? 

--তাঁর মানে? 

_তুমি কি এতদিন আমাকে নিয়ে ছেলেখেলা! করেছ! 

-_আমি কিছুই করিনিঃ তোমার কথা আর একটু 
পরিষফার করে বল। 

মণিকাঁর চোখ দুটি জলে ভরে উঠেছিল, যথাসাধ্য চেষ্টায় 
তাকে দমন ক'রে সে বললে--আমার মনের কথা তোমার ত 
না জানা ছিল এমন নয়, তবুও তার মর্যাদা দাঁওনি, বিশ্বাস- 
ঘাতকতা করেছ। 

আমি ব্যথিত হয়েছিলাম 3 ঝললাম__-আমি আজ যা 


বৈশাখ-_-১৩৪৮ ] 





জানবার স্থযোগ পেলাম আর পনের দিন আগে তা জান্তে 
পারি নি এ আমার দুর্ভাগ্য কিন্ত এখন আমি উপাঁয়- 
হীন। কিন্তু বিশ্বাসঘাতকতা আমি করিনি, তুমি নিজের 
সঙ্গেই নিজে বিশ্বাসঘাতকতা করেছ। তুমি আত্মবঞ্চনা 
করেছ-_ 

মণিক! নিয়কণ্ঠে বললে--আমি? 

_-স্্যাঃ নিজের মাঝে তুমি নিজেকে চিন্তে পারনি। 
আমার দরিপদ্রগৃহে তোমার স্থান বোধ হয় ভগবানের 
অভিপ্রেত নয়। 

মণিকা বিরক্তির সঙ্গে বললে-_ভগবাঁনের দোহাই রেখে 
দাও, আমার প্রগলভতার মূল্য কি আমার চেয়েও বেশী ! 

_তা নয় মণিকা। তুমি ফুলের মত- তোমাকে 
ভালবাসতে ইচ্ছে হয়, আদর ক'রে সৌন্দর্যকে উপভোগ করা 
যায় তোমার সঙ্গে ফ্রার্ট কর! চলে এবং সে আননা সত্যই 
আমার জীবনের স্মরণীয় গৌরব-_কিন্তু তোমাকে গৃহে স্থান 
দিতে আমি সত্যই ভয় পেয়েছি, তোমাকে না হ'লেও তোমার 
নতুনত্বের মোহকে আমি ভয় করি। 

মণিকা নমিতনেত্রের স্জলদৃষ্টি নীরবে আমার মুখের 
উপর ন্যস্ত ক'রে রইল মাত্র। 

আমি আবার ব্ললাম- আঁজিকার বেদনা তোমার 
জীবনের শ্রেষ্ঠ অভিজ্ঞতা হয়ে থাক। আশা করি, ভবিষ্তৎ 
জীবনে তুমি নিজেকে নিজে প্রতারণা করবে না। 

মণিকা ক্লান্ত বিষাঁদার্দ কণ্ঠে বললে-_-তোমার উপদেশ 


চন্বি 





৫৮৮৬ 





পেয়ে কৃতার্থ হলাম সন নেই, তবে ভবিষৎ জীবনে তার 
প্রয়োজন হবে না। 

আমি খোল! জানালার ভিতর দিয়ে অকারণেই দূর 
দিগন্তের একফালি কালি-কালো মেঘের পানে চেয়েছিলাম 
অন্তায়মান হুর্য্যের সোনালী রৌদ্র মেঘের গায়ে ছড়িয়ে 
পঙেছে-- 

অকল্মাৎ চেয়ে দেখি, মণিক! পিছন ফিরে সঙ্গোপূনে 
একফৌোটা অস্ত হাতের তালুতে মুছে ফেলে আবার ধীর শাস্ত- 
ভাবে আমার পানে তাকালো । 

আমি আগ্রহের সঙ্গে ঝললাম--আমায় ক্ষমা করো 
মণিকা। 

মণিক1 হাস্তে চেষ্টা ক'রে বললে-ক্ষমা করেছি। 
তুমি বিয়ে ক'রে বৌ কেমন হ'ল গল্প করতে আস্বে ত আর 
একবার ? 

_তাঁতে তুমি সুখী হবে? 

_নিশ্চয়ই। 

--তবে আস্বো। 


ফুলশয্যার দিনে মণিকা! এসে ছু'টো ফুলের মাল! উপহার 
দিয়ে অনাড়স্থেরই বৌ দেখে গিয়েছিল । আর আসার স্ত্রী সেই 
রাত্রে প্রথম প্রশ্নই করেছিপ--যে মেয়েটি ফুল দিল সে কে? 

আমি বলেছিলাম__সহপাঠিনী। 

স্ত্রী অবিশ্বাসের সঙ্গে প্রশ্ন করছিল- মাত্র? 


ছৰি 


শ্রীসত্যব্রত মজুমদার বি-এ 
তুষারের শিরে স্বর্ণতপন অন্তকিরণ সন্ধ্যাদদেবীর 
কনকগ্রদীপ জালে; নিবিড় চুলেতে ভাসে। 
বলাঁকাঁর পাঁতি ঢেউ তুলে যাঁয় চিত্রনিচয় তুলিকা চাঁলনে 
আষাঢ় গগন-ভালে । আ্ীকে না কো কোন মায়া, 
নদীর কৃষ্ণ জলের উপর অন্তরতটে ফেলে এর! শুধু' 
শ্বেততরঙ্গ হাসে; কোন্‌ মানবের ছায়া! 


রেফুঁজি-সংসর্গের স্মৃতি 
শ্রীচিন্তামণি কর 


ফেব্রুয়ারী মাসের শেষ । রান্তার উপর জমাঁট বরফ একটুও 
কমেনি । মাঝে মাঝে দু-একদিন পাখীর পালকের মত 
ঝুর ঝুর ক'রে তুষারপাতও হয়ে যায়। কাফের মধ্যে বসে 
টেবিলে খালি কাপটার দিকে চেয়ে দার্শনিক কিছু চিন্তা 
করবার চেষ্টা করছি, কারণ পকেটে হাত দিলে কেবল মাত্র 
পকেটটিই সাদরে করমর্দিন ক'রে জানায়--ওর বেণী আর কিছু 
দেবার তার ক্ষমতা নেই। বিরস, উদ্বেগপূর্ণ মনে ভাবছিলাম 
অর্থাভাবে শেষে কি বিদেশে না খেয়েই মরব। তখনই মনে 
হ'ল, আমি ত তবু ধাচ্ছি--কিন্তু সেদিনের দেখা স্প্যানিস্‌ 
রেফুজি ছেলে-মেয়েরা! কয়েক' টুকরো শুখনো রুটির জন্তে 
কত কাড়াকাড়ি মারামারি করলে। ওদের পেট চালাতে 





এন্কার্ণার চিঠি 


পারীর( রমঞ্চে নেচে অর্থোপার্জন করতে দেখেছি। 
লোকে নাচ দেখে বাহব! দিয়েছে ফুলের তোড়া দিয়েছে, 
কিন্তু তাঁরা কেমন থাকে, থেতে পায় কি না) জানতে কারো 
কৌতুহল হয়নি। 

এমিল জোলার “নানা” উপন্তাঁসে জুভিসি স্থানটির নাঁম 
দেখেছিলাম । ঘটনাচক্রে সেই জুভিসিতে গিয়ে পড়েছিলাম। 
ভুভিসির রেলস্টেদন থেকে ছুই মাইল দূরে দ্রীভেই-এর 
প্যাভিয়'ক্লো গ্রামটিতে চাষীদের বাস। পারী থেকে কন্ুবেই 
যেতে বাঁসেও এখানে নাম! যায়। বই পড়ে কল্পনার মত 
স্থন্দর না হলেও প্যাভিফ্রক্লোর বেশ একটা মোহ আছে। 


একবার গেলে দুবার যেতে মনকে তাগিন দেয়। এই গ্রামে 
চাঁধীদের ফসল রাঁখার একটি খালি বাঁরাঁকে প্রায় তিরিশটি 
রেফুঁজি মেয়ে-পুরুষে কোন মতে মাথা রক্ষা করছে। এরা 
পাড়ার লোকের সহানুভূতি যে পায় না তা নক্ব, কিন্তু তা 
অবাধ নয় কারণ তাতে পুলিসের হুকুমকে অগ্রাহ করতে 
হয়। এদের অপরাধ-_-এরা রাষ্ট্রের কর্ণধারদের নরমেধযজ্ঞের 
বাইরে-পড়া আহুতি। রবিবারটা প্রায়ই রেফুঁজিদের সঙ্গে 
হৈ-চৈ করে কাঁটাতাম। এক রবিবারে প্যাভিয়'ক্লোতে 
পৌছে দেখি যে, যতটুকু পেরেছে কালো কাপড়ের টুকরো 
সংগ্রহ ক'রে মাথায় হাতে বেঁধে গোঁলভাবে ধড়িয়ে আছে। 
কারো মুখে শব্ধ নেই, কোন ভাবলক্ষণও তাদের মুখে 
প্রকাশ পাচ্ছে না, নিষ্পন্দ স্থির, তাঁরা যেন কোন মায়াবীর 
যাচুতে পাথর হয়ে গেছে । সকলের মাঝে কালো কাপড় 
ঢাকা একটি ছোট কফিন্‌। একটি মেয়ে কফিনের একপ্রান্তে 
মাথা রেখে নিরালঘ্বভাবে বসে আছেঃ আর তাঁর একখানি 
হাত ধ'রে দীঁড়িয়ে রয়েছে যুদ্ধে বিকৃত তগ্নাঙ্গ একটি 
স্প্যানিস যুবক। তাদের চোঁখে পলক পড়ছিল না যেন 
মমির উপর আকা চোখ । একজনকে জিজ্ঞাসা করলাম, 
“কে মারা গেছে ?” লোকটি বেশ একটু তিক্ত স্বরে বললে, 
“মারিয়ার ছেলেটি |” বছর দুইয়েকের ছেলে। সাতদিন 
আগে দেখে গেছি প্রত্যেকের কোলে ঝাপিয়ে পড়ে চুল 
টেনে নাক ধরে ব্যতিব্যস্ত করছে। , সব কিছু সজীবের 
চেয়েও তাকে যেন বেশী সজীব দেখাত, আর আজ তার 
অপাড় দেহপিগড হাঁজারবাঁর কারো কোলে ছুঁড়ে দিলেও 
কিছু বলবে না, খল খল হেসে উঠবে না। বড় মর্মাহত 
হলাম। জিজ্ঞাসা কর! অবান্তর, তবু বললাম, “কি হয়েছিল 
তার? এই ত সাতদিন আগে তাঁকে দেখেছিলাম বেশ ভাল 
ছিল।” লোকটি তেমনি নিপিপ্ত তিক্ত স্বরে বলল, “হবে 
আবার কি, আমর রেফ,জি, এই দারুণ শীতে মাথায় 
আচ্ছাদন নেই, গায়ে শীতনিবারক বস্ত্র নেই, পেটে এক- 
কণাও খাগ্য নেই, মরাঁটাই আমাদের পক্ষে স্বাভাবিক, বেঁচে 
আছি তাবতেও ঘিধা হয়। এ ছেলেটিকে বেশী ভাগ্যবান 


৫৮২ 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


বলব, কারণ ওর সহা ক্ষমতা আমাদের মত নয়; মৃত্যু ওকে 
সহাম্থভৃতি দেখিয়ে আজ শাস্তি দিয়েছে ।” শুনে স্তস্তিত 
হলাম ! পকেটে সামান্ঠ যাঁকিছু ছিল তাদের দিয়ে বললাম, 
আমার ক্ষমতা অতি সামান্ঠঠ তোমাদের অভাবের বিরাট 
বিভীষিকাঁকে একটুও প্রশমন করতে পারি না, একমাত্র 
হৃদয়ের সহানুভূতি দিতে পারি যা তোমাদের এই দৈন্য দশায় 
কোন কাজে লাগবে না। ৃ 

এইবার কফিনটি নিয়ে যাবে। মায়ের স্নেহবন্ধন ছিন্ন 
ক'রে কফিন নিতে সকলেই ভয় করছিল। গৃহযুদ্ধ তাদের 
শীস্তিময় আশ্রয়ে আগুন জালিয়ে সর্ববন্থহীন ক'রে জগতের 
নিষ্ঠুরতার মাঝে ছেড়ে দিলেও তাদের মনের মমতার কোমল 
তন্ত্রীটি তখনও ছেঁড়েনি । মেয়েটির স্বামী মাঝে মাঝে তার 
মাথায় হাত বুলিয়ে অস্ফুটভাবে বলছিল, “শান্ত হও মারিয়া ।” 
মেয়েটি নিজেই কফিনটি ছেড়ে একপাঁশে সরে দীড়াল,তারপর 
হঠাৎ আমার দ্রিকে এসে অচযোগের সুরে বললে, “তিন দিন 
আগে এলে না কেন কর? তুমি বলছ সাান্ত, কিন্ত এ 
সামান্ দান পেলে আমার ছেলেকে মরার আগে একটু দুধ 
খেতে দিতে পারতাম । বাছা আমার মরে যাবার আগে 
খেয়েছে শুধু জল-_ময়লা জল !” 

এরপর আর সেখানে দীড়িয়ে তাদের মনত? দৃশ্য 
দেখবার মত সাহস আমার রইল না পালিয়ে গেলাম । 

এব পর প্রায় দুসপ্তাহ প্যাতিয়ব্লোতে যাবার আমার 
সাহস হয়নি। পরের রবিবার গ্রামটিতে যাবার মোহ 
আমাকে ফের পেয়ে বসল। প্রায় ১১টা হবে, পৌছে দূর 
থেকে দেখি ব্যারাঁকটির চাঁরিধারে যেন নান! রডের অতিকায় 
প্রজাপতির মেলা । ব্যারাকে উপস্থিত হয়ে দেখি বিরাট 
ব্যাপার। কোন কম্যুনিস্ট পার্টির অধিবেশন উৎসবে নাচ 
দেখাতে তাদের আমন্ত্রণ এসেছে, তাই তাদের জাতীয় 
পোষাক রঙ-বেরঙের ঘাঘরা-ওড়না সব পরিক্ষার ক'রে 
বাইরে শুধাতে দিয়েছে । আমায় ধরে বসল, তাদের সঙ্গে 
যেতে হবে। ছুটি লরীর উপর চাঁরথানি বেঞ্চ সাজিয়ে তাঁর 
উপর বসে আমরা সবাই যাত্রা করলাম। যেতে হ'বে 
ভিল্‌ জুইভ, গ্রামে, প্রায় ৬১ কিলোমিটার দূর। রাস্তায় 
ছেলে-মেয়েরা সমস্বরে তাদের জাতীয় সঙ্গীত গাইছিল। 
আমরা প্রায় সাড়ে চাঁরটেয় পৌছাঁনর পর বছুলোক এসে 
আমাদের দলটিকে সম্বর্ধনা! ক'রে নিয়ে গেল। পারীতে 


ল্লেফ্ুজিি-সহসর্গেল্প স্যর্ভি 


€ ৮৮টি 


সা মাতার রঙ্গমঞ্চে নাচগান শুনিয়ে “জুনেস্‌ ছ্যাস্পান্‌ 
(স্পেনের কিশোরদল ) প্রায় সারা ফ্রান্সের শহরে, গ্রামে, 
পল্লীতে বিখ্যাত হয়েছিল। কিছু পরেই মুক্ত প্রাঙ্গণে ছেলে- 
মেয়েরা কখন দৃপ্ত কখন করণ অর্কেন্ত্রীর সুরের সঙ্গে তাদের 
জাতীয় জীবন, সহজ সরল পল্লীগ্রাণ, ঘরোয়া সংগ্রামের 
মর্মন্তদ কাহিনী ফুটিয়ে তুলল তাদের নাচে গানে । ছেলে- 
মেয়েদের মধ্যে পেপিতা ও এন্কারন! নাচ দেখিয়ে সকলের 
প্রশংসা লাভ করলে। পাকিতা মেয়েটি গ্রাম্য চাষীর 
মেয়ে। নাচ কোন দিন কোন বিদ্যালয়ে শেখার সৌভাগ্য 
হয়নি। গ্রাম্যনৃত্যে সহজ সরগভাবে সে দেখাল শিশুর 





বৃত্যরত| এন্কার্ণা 
ঘুমপাঁড়ানে। গানে রতা মায়ের ছবি । ছেলেদের মধ্যে মৌজেস্‌ 
মারিয়ানো আঙ্খেল দেখাল কর্মীবসানে সুখী চাঁধীর সরল 


উল্লাস। এমন প্রাণঢালা নাচগানে ভুলে যেতে হয় এদের 
আসল অবস্থাকে । কে বলে এরা নিঃ:ব্বঃ সর্ধহারা ! 
অলিম্পিয়ার দেবশিশুরা যেন মর্তে নেমে এসেছে । ব্যারাকে 
ফিরতে বেশ রাত হয়ে গেল। সে রাতে পারী ফিরে যাবার 
কোন উপায় ছিল না, কারণ শেষ ট্রেন এবং বাস অনেক 
আগেই চলে গেছে । গ্রামের একটি রেন্তুরশতে নৈশাহার 
সেরে যথন ব্যারাকে ফিরলাম তখন রেফজিরা তাদের 


গ্৬্ 


ঝাঁতি খর্চলন্ধ কটি এবং সুপ খাচ্ছিল। আমার সামনে 
একটি বছয় বারোর মেয়ে বসে ছিল, তার নাম ললিতা । 
স্পেনের মেয়েদের নামগুলি প্রায় আমাঁদের দেশের মেয়েদের 
নামের মত শোনায়। ললিত] স্পেনে খুব সাধারণ এবং আদরের 
নাম। মেয়েটির আপন বলতে কেউ নেই। গুনলাম তার 
বাপ কাকা! রিপাঁবলিকান্‌ গবর্ণমেণ্টের পক্ষে লড়াইয়ে ট্েঞ্ে 
মারা গেছে। তার একটিমাত্র ভাইকে ফ্রাঙ্কোর দল 
অর্ধমৃত অবস্থায় বন্দী করে এবং পরে বিচারের অভিনয় 








আধুনিক নৃত্যরত| পেপিত! 


শেষ হ'লে গুলি ক'রে মারে। গভীরু রাতে কেবল বৃদ্ধ 
আর শিশুর ঘুমোচ্ছে। সক্ষম নারীরা পুরুষের পাশে 
দাড়িয়ে যুদ্ধ করতে ট্রেঞ্চে চলে গেছে। বৃদ্ধ বৃদ্ধা শিশুদের 
ঘুম গভীর শান্তিপূর্ণ ছিল না, আসন্ন বিপদের আতঙ্কে তারা 
মাঝে মাঝে চমকে উঠছিল। যে-কোন মুহূর্তে তাদের ঘুম 
চিরনিদ্রায় পরিণত হ'তে পারে। এমনি এক রাতে 
বািলোন! শহরের পথ, বাড়ী, মাটী, শিশুদের বুক কীপিয়ে 


ভ্ডান্্ভন্্র 


[ ২৮শ বর্ধ--২য় খণ্ড €ম সংখ্যা 


বটল স্বট 





সাইরেন্‌ বেজে উঠল। আঁকাশে এয়ারোপ্েনের গুরু গর্জন 
শোন! গেল। পরমুহূর্তে বিরাট কাঁন-ফাটা বি্ফোরণ শব । 
করুণ কণ্ঠের অন্তিম চীৎকার বম্ফাটার শব-গ্রতিধবনির 
যেন শেষ রেশ। অন্ধকারে এয়ারোপ্লেনগুলিকে এক ঝাক 
শবলোলুপ শকুনের মত দেখাচ্ছিল। মেসিনগানের কড় 
কড় শব্দ যেন ধ্বংসোম্মস্ত প্রেতের পৈশাচিক হানি । চাঁপা 
ভরার্ত চীৎকার ক'রে লোকজন রাস্তায় ছুটাছুষ্টি করছে। 
ফে একজন ভাঁকল, প্ললিতার মাঃ তোঁমাঁর মেয়ে ছু”টিকে 
নিয়ে এখুনি বাইরে এস, পালাতে হবে।” বড় মেয়েটি কিছুতেই 
বাইরে এল না। সে বলল “বাইরে মাথায় বম্‌ পড়ার বেশী 
সম্ভাবনা, আমি ঘরেই থাকব |” ভাববার সময় ছিল না, 
বু ও ললিতাকে একজন বাইরে টেনে নিল। একটা 
আগুনের চমক ও সঙ্গে সঙ্গে প্রচণ্ড শব্--তারপর কি হ'ল 
মা-মেয়ে জানতে পারেনি । যখন তাঁরা চোখ মেলে চাইলে 
তখন ভোর হয়েছে। কয়েকটি মেয়ে" ও পুরুষ তাদের 
চাঁরিপাশে বিরস বিবর্ণ মুখে বসে ছিল, আহত কেউ ঝা 
যন্ত্রণায় গোঙাচ্ছিল। বৃদ্ধা চীৎকার ক'রে উঠল, “আমার 
বড় মেয়ে কোথায়! একি! এমাঠের মাঝে আমরা কি 
ক'রে এলাম?” সহ্ের অতীত হলেও বৃদ্ধাকে শুনতে হ'ল 
যেখানে তার মেয়ে শুয়েছিল, তারা জ্ঞান হারাবার পর 
সেখানে বাড়ীর ভাঙা স্তপ আর কয়েকটি গর্তে রক্ত জড়ান 
মাংসের দু-এক টুকরো পড়েছিল মাত্র। প্রাণভয়ে পালাবার 
সময় আর সকলে তাকে আর ললিতাঁকে কুড়িয়ে নিয়ে 
এসেছে। এদের যেতে হবে বহু দূর ফরাসী সীমান্তে, এই 
আশায় যদি ফরাসীরা আশ্রয় দেয়। এদের পিছনের 
টান ছিল না। আপন বলতে সব কিছুর বন্ধন ছিন্ন 
হয়েছে। এরা! কারে! পক্ষে নয়, বিপক্ষে নয়; তবু এদেরই 
হারাতে হয়েছে সব কিছু । রাষ্্র-নায়করা তাঁদের মত 
প্রতিহত করতে নির্মমভাবে এই নিরীহদের করেছেন বলি। 
সীমান্তে এসে রাস্তায় কি একটা পায়ে ফুটায় ললিতার মা 
বেশ কাহিল হয়ে পড়েছিল। মাত্র তিনদিন জর ভোগ 
করার পর বুদ্ধ! ফ্রান্সের চেয়ে আরো নিরাপদ স্থানে চলে 
গেল- যেখানে ফ্রাক্কো নেই, স্পেনের গৃহযুদ্ধ নেই, হতাহত 
নেই, হাহাকার নেই। তারপর আরো বহু ঘটনাঁর মধ্য দিয়ে 
ললিতা এসে পড়েছে এই জুনেস্‌ গ্াসপান্এর মাঝে । 

নানা! কথার ফাঁকে বললাম, “ললিতা আমাদের দেশেও 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


অতি সাধারণ নাঁম। তা! ছাড়া, ললিতাঁকে যদি আমাদের 
দেশের পোষাক পরিয়ে কোন ভারতীয়কে বলা যাঁয়__ 
আমাদের দেশের মেয়ে, তাতে কেউ অবিশ্বাস করবে ন1।” 
তারা বললে, “কর, ওকে তোমার বোন ক'রে নাও না ।” 
বললাম “তা ত আছেই, আবার নতুন ক'রে সম্পর্ক করবার 
দরকার কি?” ওরা বলল, “তা নয় হে, আমাদের দেশে 
যে-কোন মেয়ে ব ছেলেকে ভাই বা বোন হিসাঁবে গ্রহণ 
করা যাঁয়। তুমি তাতে রাজী আছ?” বললাম, পথ্য” 
কিন্তু ব্যাপারটি প্রথমে ভাল বুঝিনি । তাঁরা সকলেই পাঁন- 
পাত্রগুলি পরস্পরে ঠেকিয়ে বললে, “আজ থেকে কর আর 
ললিতা ভাই-বোন ।” পাত্রে অবশ্য জল ছাড়া অন্য পানীয় 
ছিল না_-পাবে কোথায়! তারপর ললিতা সকলের 
করমর্দন ক'রে ধন্ঠবাদ জানালে, আমাকেও অন্গরূপ করতে 
হ'ল। কথাচ্ছলে বললাম, “ললিতা, দেশে ত তোমার কেউ 
নেই, আমাদের দেশে যাবে?” সে বলল, “নাঃ এয়ারমানে 
কর, তোমাকে আমরা খুব ভালবাসি, কিন্তু আমি ফিরে 
যেতে চাঁই ম্পেনে। আমার কেউ নেই সত্যি, কিন্ত 
স্পেনের মাটিতে আমার জন্ম, তাঁর সঙ্গে আমার সংযোগ 
কেউ ছিন্ন করতে পারবে না। সে আমার সবচেয়ে আপন, 
আমি তার কোলেই আশ্রয় পেতে চাই ।” বয়সে অনেক 
ছোট হলেও সেদ্দিন থেকে ললিতাঁকে শ্রদ্ধার চোখে 
দেখতাম । আমরা বহুদিনের পরাধীনতার মোহে নিজের 
দেশকে কতথানি ভালব।সতে হয়ঃ শ্রদ্ধা করতে হয়, তা 
বোধ হয় ভুলে গেছি । 

দেখতে দেখতে কয়েক মাস কেটে গেছে । এই কয়েকটা 
মাস দুর্ভাগ্যের সঙ্গে লড়াই করে এর! কোনমতে গ্রাণট1কে 
বাঁচিয়ে রেখেছে । জুনেস্‌ গ্যাস্পানের আগে যেমন আদর 
ছিল, নিমন্ত্রণ ছিল, এখন আর তা নেই। ইউরোপে এই 
ক"মাসে অশান্তির আগুন দ্াবানলের মত একদেশ থেকে 
আঁর একদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ফ্রান্স নিজের ঘরের 
দরজায় যুদ্ধের বিভীষিকা দেখছে। কয়েকটা বিদেশী 
রেফ,জির কে খোঁজ নেয়, কার এত মাথা ব্যথা। কয়েকজন 
রেফুজি চেষ্টা ক'রে রাশিয়। বা স্পেনে চলে গেছে। যে 
ক'জন পড়ে আছে, তারাও ভাবছে অন্তত্র যাবার কথা। 
স্রান্দ এখন আর নিরাপদ আশ্রয় নয়। তারা এক যুদ্ধন্থল 
থেকে আর এক বৃহত্তর যুদ্ধস্থলের সামনে এসে পড়েছে। 

৭৪ 


ল্লেহ্ুক্ি-সহসগ্গক্প স্ম্রন্ভি 


গে 


এদের দলে এক অতি-বৃদ্ধ দম্পতি ছিল। স্বামীর বয়েস 
ছিয়াত্তর, স্ত্রীর বয়স বাহার । বুদ্ধ তার স্ত্রী, মেয়ে, 
জামাই ও একটিমাত্র নাঁতনী লাঁকিতার সঙ্গে পালিয়ে 
এসেছে । তার জামাই ছিল রোখো রিপাব্লিকান্‌ 
সৈম্দলের একজন অফিসার, 'যুদ্ধের চিহ্ন তাঁর সর্বাঙে 





ম।তৃম্সেহ নৃূত্যে লাকিত৷ 


পরিস্ফুট। যুদ্ধের পূর্ববে এরা ছিল বাপিলোনার এক 
গ্রামের সরল চাষী পরিবাঁর। বিদেশে বড় কষ্ট পায় দেখে 
একদিন বৃদ্ধকে বল্লাম? তোমরা স্পেনে চলে যাও না, এখন 
ত যুদ্ধ থেমে গেছে। বৃদ্ধ বললে, প্যাঁৰ ত, কিন্তু স্পেনে 
প্রবেশের হুকুম পাঁৰ কি করে।” বললীম, ”ওঃ১ তোমার 


৫৮৮৩৩ 


জামাই যে আবার রাজনৈতিক ব্যাপারে 'লিপ্ত, কাজেই 
তোমায় ফ্রাঙ্কোর দল পেলে মেরে ফেলবে ।” কিন্তু বুদ্ধ 
নিশ্চয় করে জানাল রোখোর জন্ত তাকে ফ্রাঙ্কোর দল 
দোষী করবে না। সেলিয়র রোখোকে বহুবার জিজ্ঞাস! 
করেছিলাম, বৃদ্ধ কোন রাজনৈতিক ব্যাপারে জড়িত ছিল 
কি-না; কিন্তু প্রতিবারই সে গভীরভাবে বলত-_“না।” অনেক 
চেষ্টা ক'রে অন্থমতি-পত্র পেয়ে বৃদ্ধবৃদ্ধা স্পেনে চলে গেল। 
দিন দশেক পরে প্যাভিয়' ব্লোতে গিয়ে দেখি সকলের মুখ 
অন্ধকার হয়ে আছে, যেন ঝড় আসবার পূর্বের প্ররুতির 
থমথমে ভাঁব। কি হয়েছে জিজ্ঞাসা করায় লাঁকিতা 





লালিতা 


একটি টেলিগ্রাম এনে আমার হাতে দিল। তাতে লেখা 
ছিল, “তোমার শ্বস্তর ও শীশুড়ীকে সীমান্তে যথাবিহিত 
সম্মানে গুলি করা হয়েছে ।” প্রেরক ফ্রাঙ্ক গবর্নমণ্টের এক 
অফিসাঁর। লোঁকটি অতি ভদ্র বলতে হবে, না হ'লে খোঁজ 
ক'রে জামাইকে ম্থথবরটি পাঠাত না । কি বলব, সাস্বনা 
দেবার মত কিছুই নেই । এদের দুঃখের জীবনে এ ঘটনা 
নতুন নয়। কিন্ত আমার মনে বি'ধতে লাগল, আমি 
অকারণ তাদের মৃত্যুর নিমিত্ত হলাম। শুধু সেনিয়র 
রোখোকে জিজ্ঞাস করলাম, “তাদের মারল কেন, তার! 


জ্ঞা্তন্বস্্ 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় খণ্ড--€ম সংখ্যা 


ত কোন অপরাঁধ করেনি বা কোন রাজনৈতিক সংশ্রবও 
তাদের ছিল না।” সে বলল, “তারা লেবার ফ্রেডাঁরেশনেয 
সেক্রেটারী ছিল।” অত্যন্ত বিচলিত ক্ষুব্ধ হয়ে বললাম, 
“রোখো+ তুমি জেনে শুনে তাদের মৃত্যুর দরজায় পাঠিয়ে 
আমায় নিমিত্ত করলে ?” রোখো উত্তর দিল, “তারা 
এখানেও না খেয়ে মরত ?” ভেবেছিলাম তাদের বয়েস 
দেখে ছেড়ে দেবে, কিন্তু শুয়োরের! কি পাবগড! শাস্তি 
এইটুকু যে তাঁদের রক্ত নিজের দেশের মাঁটাকে ভিজিয়েছে। 
বিদেশী মাঁটাতে কবর দিলে তাঁদের মর! হাঁড়গুলোও হয়ত 
আমাদের অভিশাপ দিত। 

এর কিছু দিন পরে একদিন গল্পে মত্ত হণয়ায় ঘড়ির 
দিকে খেয়াল ছিল না। যাবার জন্য প্রস্তুত হয়ে দেখি-_ 
ট্রেন ও বাস সেরাতে আর পাওয়া বাবে না। রোখো 
ব্লল, “তোমার যদি আপত্তি না থাকে ত আমার ওখানে 
আজকের রাতট1 কাটাতে পার” সে থাকে ব্যারাক 
থেকে প্রায় চার মাইল দূরে এক কারখানার ছোট একটি 
শেড-এ। তার স্ত্রী ও মেয়ে আগেই শেডের দিকে রওনা 
হয়েছে । রোঁখো বললে, “চল হে, যেতে হবে অনেকথাঁনি |” 
চাঁষের জমির মাঝ দিয়ে পথ। কিছুদূর অগ্রসর হয়েছি, 
এমন সময় ঝড়ের বেগে কে একজন বিপরীত দ্রিক থেকে 
আমাদের অতিক্রম ক'রে গেল। রোখো চীৎকার করে 
ডাঁকল, প্লাকিতা, কোঁথা যাস?” উত্তর এল জক্রন্দনে, 
“মরতে ।” আমি ত অবাক! রোখো চুপ ক'রে গড়িয়ে 
গেল, বললাম, “মেয়েটি এই অন্ধকারে গেল কোথায় 
দেখ শিগগির ।” মেয়েটি অনুরবর্তী একটি দীঘির পাড় থেকে 
জলের দিকে ছুটে নেমে যাচ্ছিল। অতি কষ্টে তাঁকে 
ফিরিয়ে আনা গেল। তখনও সে কাদছিল আর বলছিল, 
“আমার জীবনে শান্তি নেই, আমি মরব।৮ স্তেনর রোখো 
নতমুথে দড়িয়েছিল। আমার কাছে সবটাই হেঁয়ালী 
লাগছিল। একটু রষ্টভাবেই বলাম, প্রান্তায় দাড়িয়ে 
অভিনয় না ক'রে বলই ন! কি হয়েছে ?” লাঁকিত৷ রুক্ষতাবে 
জবাব দিল, “ওই যে লোকটা তোমার সামনে দাড়িয়ে, 
ও আমার নিজের বাবা নয়। আমার বাবা আমার দু'বছর 
বয়েসের সময় মারা গেছে । রোঁখো তার এক বছর পরে 
আমার মাকে বিয়ে করেছে, কিন্ত তখন আমাকে ওয়া 
চায়নি। বারে! বছর মা আমার কোন খোঁজ করেনি, 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


আমি ছিপ্াম আমার দিদিমা ও দাঁদামশীই-এর কাছে। 
ওদের কোন সন্তানাদি না হওয়ায় আজ এক বছর হ'ল 
রোখো তাঁর মেয়ে হিসেবে আমায় দত্তক নিয়েছে । হয়ত 
রোখো৷ আমায় নিজের মেয়ের মত ভালবাসে, কিন্তু হায় রে 
আমার ভাগ্য ! আমার মা মনে করে আমার প্রতি 
রোঁখোর ভালবাসাটা মোটেই বাঁৎসল্য নয়। মাকে দেখিয়ে 
রোখো আমার প্রতি খারাঁপ ব্যবহার করে, মা'র ব্যবহার না 
বলাই ভাল। আমার আজ কেউ আপন নেই যাঁর কাছে 
দাড়াতে পারি। আমার একমাত্র অবণন্থন দিদিমা) দাঁদা- 
মশাইকে তোমরাই চক্রান্ত ক'রে মেরেছ। তোমরা তাঁদের 
দেশে যেতে উত্তেজিত না করলে বা! পাথেয় জোগাড় কঃরে 
না দিলে তাঁরা মরত না। আমার জীবনকে বিষময় করবার 
জন্ত তোমরাই দ্রায়ী।” আমি ত চুপ, রোখোও নীরব 
রইল, একটি কথারও জবাঁব দিল না। নিজেদের ঘরোয়! 
কথা ঝেঁকের মাথায় বলে লাকিতা একটু অপ্রস্তত হয়ে 
পড়ল। তখনকাঁর মত ব্যাপারটা মানিয়ে নিলেও বাধ্য না 
হলে সে রাতে রোখোর বাড়ী যেতাম কি-না সন্দেহ। 
অন্বস্তিকর মনস্তাপ সমস্ত রাত আমাকে খোঁচা দিয়েছিল । 
তাবছিলাঁম, রাঁজনৈতিক কারণে ঘট। অশান্তি ও পারিবারিক 
অশান্তির মধ্যে কোন্টা তীব্রতর । এর পর প্যাভিয়'ক্লোর 
মোহ আর আমাকে টান্তে পারে নি। 

যে যুন্ধাতন্ককে ফ্রান্স এতদিন দূরে ঠেলে রেখেছিল 
উপরোক্ত ঘটনার কয়েকদিন পরে বিরাট আকারে তা 
ফ্রান্সের সীমান্তে হুমকি দিচ্ছিল । হিটলার কর্তৃক পোল্যাণ্ডের 
দাবী তীত্র হতে তীব্রতর হচ্ছিল। দালাদিয়ের সমানে 
হুমকি দিলেও তার মধ্যে ভয় ও উদ্বেগের মিশ্রণ ছিল। 
রাত-দিন যখন-তখন সাইরেন বেজে লোকজনের ন্নাধুগুলিকে 
ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করছিল। ঘরবাড়ী, ম্মারকম্তস্ত, মুক্তি, 
শিল্পসম্পদ বালির বন্তা দিয়ে ঢেকে, আলো নিভিয়ে ফ্রান্স 
আত্মরক্ষার ব্যবস্থায় ব্যস্ত হয়েছে । আমার প্রফেলার 
জিওভানে্লি দুরগ্রামে চলে গেলেন। তাঁর এবং গ্রাদ 
শমিয়ের-এর স্ট,ডিয়ো বন্ধ হয়ে গেল। ঘরে বসে ভাবছি 
এখানে থাকব, ন! দেশে ফিরে যাব। হোটেলের পরিচারিকা 
এসে খবর দিল-_নীচে দু”টি মহিলা! আমার সঙ্গে দেখা করতে 
চায়। নেমে দেখি এন্কামূনা আর তার মা মাদাম মারিয়া 
দাড়িয়ে । অভিবাদন-কুশলসংবাদাদির পালা শেষ হ'লে 


ন্লেফুভি-সহসশক্র স্যরি 


৪৬ 


মারিয়। বললেন, “কর, আমরা বড় বিপদে পড়ে তোমার 
কাছে এসেছি |” কি বিপদ জিজ্ঞাস! করায় তিনি বললেন-__ 
তাঁর ম্বামী অনেক খুঁজে অতি কষ্টে ঠিকানা যোগাড় ক'রে 





সকন্যা মাদাম মারিয়া 
বাঠিলোনা থেকে চিঠি দিয়েছেন স্পেনে ফিরবার অন্থরোঁধ 
জানিয়ে। কিন্ত নবনিযুক্ত কন্াল কিছুতেই প্রবেশের 
হুকুম দিচ্ছে না। যে কাণ্ড করে শেষে হুকুম ও পাথেয় 
মিলল তা সবিস্তারে লিখলে একটি মহাকাব্য হয়ে ষেত। 
মারিয়া বললেন “কর, আমরা চলে যাব আর হত দেখ! হবে 
নাঃ কিন্ত তোমাকে আমাদের কাছ থেকে কিছু নিতে 
হবে ।” শুনে বললাম,“পাগল হলে নাকি ! তোমরা একেবারে 
নিংস্বঃ আহাধ্য পাথেয--এমন কি পরণের উপযুক্ত 
কাপড়টুকুও যার নেই কি চাঁইব তাঁহাদের কাছে। একে 
উপকার কর! হ'ল মনে ক'রে প্রতিদান নিলে নিজের কাছে 
এবং নিজের দেশের কাছে লজ্জিত হব। এতটুকু উপকার 
আমাদের দেশে লোকে লোকের প্রতি ক'রে থাকে। 
পরাধীন হ'লেও আমাদের দেশে হাদয় একেবারে মরে যায় 
নি। যদি একান্তই কিছু ভালবেসে দিতে চাও ত দেশে 
গিয়ে পাঠিয়ো |” তাঁরা বলল, “দেশে ফিরে আমাদের ছুর্গতি 
আরো বাড়বে ছাড়া কমবে না । দেশে খাবার কই, অর্থই 
বা কোথায়! ব্যবসা? বাণিজ্য, চাষ-_সরই ত বন্ধ । সত্যিই 


€ ৬৬, 


আমরা তোমাকে কিছুই দিতে পারি না। তুমি আমাদের 
কিছু কাজ দাও যা ক'রে আমরা তৃপ্ত হব।” তাঁদের 
কিছুতেই নিবৃত্ত করা গেল না। শেষে বললাম, প্প্রতিবান 
হিসাবে নয়, তোমাদের সঙ্গে জীবনের কয়েকটা মুহূর্ত কেটেছে, 
তার স্বতি-হিসাবে তোমাদের একটি প্রতিকৃতি এঁকে 
নিই।” যাবার দিন মারিয়া এন্কারনাকে স্পেনের বর্তমান 
অবস্থা সম্বন্ধে লিখে জানাতে অনুরোধ করেছিলাম । লিখে 
জানান সম্ভব হয় নি। কিন্তু এনকাঁরনা একটি ছবিওয়াল৷ 
পোস্টকার্ড পাঠিয়ে জানিয়েছিল স্পেনের বর্তমান অবস্থা কি। 
ছবিতে ছিল ভূলুষ্ঠিতা শোকাবনতা একটি নারীর প্রস্তরমৃত্তি। 
লিখে বোঁধ হয় সে এত পরিফার ক'রে জানাতে পারত না 
তাদের দেশের হৃতসর্ধন্য অবস্থাকে | 

পয়লা সেপ্টেম্বর থেকে যুদ্ধ বেধে গেছে। পরিচিত 
সকলেই চলে গেছে। আমি পড়ে দিন গুণছি পাঁথেয়ের 
আশায়। অধ্যাপক জিওভানেল্লি বহুবার অনুরোধ করে- 
ছিলেন তার সঙ্গে গ্রামে গিয়ে থাকতে। এই সহাম্ৃভৃতির 
জন্ত তার কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ, কিন্তু ফিরবার বহু কারণ 
আমাকে তাগিদ দিয়ে ভাবিয়ে তুলল। একদিন আমার 





রেফুজি ছেলের! ও আমি 


জিনিষগুলি জিওভানেল্লির কাছে নিয়ে গিয়ে বললাম, “জানি 
না ভাগ্যে কি আছে; বহুদিন আমার সংবাদ না পেলে 


ভান্রত্ শব 


[ ২৮শ বর্ষ-_২য় খণ্ড--৫ম সংখ্যা 


অনুগ্রহ ক'রে এগুলি আমার দেশের ঠিকানায় যেন পাঠিয়ে 
দেন।” তাঁর কাছে বিদায় নিয়ে থালি স্ুটকেশ হাতে কয়েক 
মিনিট রান্তা চলতেই পাশের একটি পার্ক থেকে প্রচণ্ড শব্দে 
বিমান ধবংসী কামান গর্জে উঠল। এক মুহূর্তে রাস্তা 
জনশূন্য হয়ে গেল। কি করব ভাবতে পারছি না; হতবন্থ 
হয়ে গেছি। যেলোকের কামান দেখা দূরের কথা, এত 
কাছে বিস্ফোরণে তার মস্তি বিকল হওয়া কিছু আশ্চর্য্য 
নয়। একটি পুলিস ছুটে এসে কানের কাছে বাঁশী বাজিয়ে 
এক ধাক্কায় আমায় ফুটপাথের এক প্রীস্তে ঠেলে দিল। 
সামনের বাড়ীর দরজায় লেখা ছিল “আব্রি” (আশ্রয়)। 
ঢুকে পড়লাম। “কাভি”-এ (ভূগর্ভস্থ ঘর ) নেমে দেখি 
কয়েকটি মেয়ে প্রায় উলঙ্গ অবস্থায় তাদের শিশুগুলি কোলে 
ক'রে বসে আছে। আতঙ্কে তারা যে যে অবস্থায় ছিল ছুটে 
আশ্রয়ে এসেছে, কাপড় পরবাঁর সময়টুকু পর্যন্ত পায়নি। 
তাদের বিশ্রন্ত চুল চোঁখের ভয়-বিম্ফারিত দৃষ্টি যুদ্ধের 
বীভৎসতাঁকে আমার সামনে প্রকট ক'রে তুলল । তারা 
শিশুগুলিকে নিজেদের কুক্ষিতে দৃড়ালিঙ্গনে চেপে ধরেছিল। 
নিজেদের শরীর দিয়ে ঢেকে সন্তানকে আরো নিরাপদ 
করবার আপ্রাণ প্রয়াসে মনে হচ্ছিল তারা আশ্রয়েও 
নিরাঁপদ অনুভব করছে না। সকলের চোখ দিযে অশ্রু 
অবিরলধারে পড়ছিল আর মাঝে মাঝে কাতরোক্তি যেন 
তাদের বুক চিরে বেরুচ্ছিল, “হায় আমাদের এ কি সর্বনাশ 
হল!” কারো স্বামী, ভাই বা বাঁপ যুদ্ধে চলে গেছে। 
অনেকের আত্মীয়স্বজন বিগত মহাযুন্ধ-বৈতরণীর পাঁর থেকে 
ফিরে এসেছে । এরা কেউই হয় ত তখন ভাবেনি আবার 
তাদের ফিরে যেতে যবে যুব্ধ-দেবতার খর্পর রুধিরে ভরে 
দিতে । পুরুষ যুবক হয়ে এদের মাঝে কাপুরুষের মত 
দাড়িয়ে থাকতে লজ্জা হ'ল, উপরে উঠে এলাম । সব সময় 
প্রাণের ভয়ই যে বড় হয়ে ওঠে না, সেদিন তা মর্মে মর্দে 
অন্গভব করেছিলাম । পারিপাশ্বিক অবস্থা ও তার প্রভাব 
অতি কাপুরুষকেও কামানের মুখে দীড় করিয়ে দিতে সক্ষম । 
আমাদের দেশে ভীরু বলে নিন্দিত শ্রমিক চাষীরাঁও আত্মদান 
ক'রে তার প্রমাণ দেখিয়েছে। 

পাথেয় মিলেছে । ফিরবার জন্য জাহাঁজও পাওয়া 
গেছে। কিন্ত আনন্দকি দুঃখ হচ্ছে তা বুঝলাম না! 
অন্তত আননোর উল্লাস বা হুঃখের তীব্রতা কোনটাই অনুভব 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


লা স্্হগন্থষ্প স্চ 


করিনি । স্টেসনে উপস্থিত হয়ে দেখি, ছিন্ন মলিন পোঁধাকে 
বিষষ্ন মুখে কয়েকজন রেফ,জি প্রেতের মত দীড়িয়ে। ঘণ্টা 
বাজল, রেলের কর্মচারীরা “ঝা ভোয়াতুর সিল্ভূপ্লে” 
(যাত্রীর! অনু গ্রহ ক'রে গাড়ীতে উঠুন) ব'লে চীৎকাঁর করতে 
লাগল। তাঁরা একে একে আমার হাত চেপে ধরে বিদায় 
জানাল। মুখে কিছু বলবার ভাষা আমাদের ফুরিয়ে 
গিয়েছিল। কিন্তু এ সামান্য চাপেই অনুভব করেছিলাম 
অন্তরের অকৃত্রিম বিচ্ছেদ বেদনাকে । আর কোন দিন তাঁদের 


সভা শ্রম্মাে 





৫৮৮৪২ 





স্ব” -স্য্হ 


সঙ্গে দেখা হবে কি-না জানি না । বহুদুরের বিদেশী তালবাসার 
বোঝা বড় ভারী। গাড়ী ছাড়বার জন্য বাণী বাজল। 
রুমাল বা হাত নেড়ে বিদায়ের অভিনয়কে দীর্ঘ করার ইচ্ছে 
হয় নি। বিদায়ের শেষ মুহূর্তে তাদের মুখের ভাব দেখবার 
মত সাঁহসও ছিল না। সামনের'জানালার পর্দাটা কাচের 
উপর টেনে দিলাম। ইউরোপের সামান্ধ কয়েকমাসের 
বাস্তব ছবিকে চোখের সামনে থেকে মুছে দিতে. পেরেছি 
কি-না অন্তরই সে প্রশ্নের জবাব দেবে। 





সতী প্রয়াণে 
মহারাজ। শ্রীযোগীন্দ্রনাথ রায় 


তুমি চলে গেলে সতী, 
শান্তিময় ম্বর্গলোৌকে-_ 
মোরা রঙ্গ দুরে-_ 


হেথা কেন থাকিবে গে! ? 
যখন বাইতে পার 
স্বরগের পুরে ? 


মাতৃরূপে দেখেছিন্ত 
তোমারে গে ওগো! সতী 
কিবা কব আর 


করুণায় ভর! আখি 
কে বলিবে দেখে নাই 
এপারের পার? 


যদি সবই জেনেছিলে 
কেন তবে চলে গেলে 
সব কিছু ফেলে? 






দি ৪ এ ্ ঙ 

রে ৯৯৮+ ঞ 
রা ৩ 5 রত 
৩ ৭০০৩৩ গু ৯ 





নি 


জীবন-সঙ্গীরে তব 
তব রাঁজ্য তব সব 
তব মেয়ে-ছেলে। 


অন্তরাঁল হতে তুমি 
একবার দেখ নিজে 
নিচেকার ছায়!। 


ছুঃখ পাঁবে জানি তাহা 
মন তব কবে আহা । 
এতে। নহে মায় । 


প্রসন্ন কালিক। মাতা 
গ্রসন্ন! তোমার প্রতি 
সন্য ইহা, মিথ্যা কভু নয়। 


»তী গেল স্ব্গপুরে 
সঙ্গীতের সুরে সুরে 
স্থরহীনা সেকি কতু রয়? 








সাক্ষী 


শ্রীহধাংশুকুমার ঘোষ বি-এস্‌-সি 


কলিকাতা থেকে মোটরে আমি দুইজন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে 
রামগড় কংগ্রেসে ভিজিটার হ'য়ে গিয়েছিলাম ৷ অধিবেশনের 
দিন প্রাতে আকাশে মেঘের ঘটা দেখে বৃষ্টি আরস্ত হবার 
আগেই আমরা মজহরপুরী ত্যাগ করেছিলাম । ফেরবাঁর 
পথে রাজরপ্লার ৬ছিন্নমন্তার প্রাচীন গ্রস্তর মন্দির দেখে 
যাবার আমার খুব ইচ্ছা হয়েছিল। সঙ্গী বন্ধুদ্বয় সময়াভাবে 
রাজরপ্লা যেতে রাজী হলেন না1। আমি তাদের রশচি 
রোড স্টেশনে তুলে দিয়ে নিজে মোটরে রাঁজরপ্লা অভিমুখে 
ড্রাইভার সহ রওয়ানা হলাম। চিতরপুরের মিশন 
হাসপাতালে বিহারের সাঁব-ডেপুটি ৬ছুলালহরি থোঁষের 
স্বতি-ফলকও দেখবার ইচ্ছা ছিল। সেখানকার হাঁস- 
পাঁতালের ডাক্তীর মুখাজ্জির নামে একজন বন্ধু একটি 
চিঠি দিয়েছিলেন। ডাক্তার মুখাজ্জি উক্ত বন্ধুর আত্মীয় । 
পথে চিতরপুর থেকে একটা গাইড সঙ্গে নেবো ঠিক ছিল। 
ছোটনাগপুরের ছোট ছোট পাহাড় ও জঙ্গলের ভেতর 
দিয়ে_ উচু পাথরের রাস্তা । এক এক স্থানে এমন বেক 
আছে যে সামান্য বেতাল হ'লে মোটর আরোহী সহ ষাট 
ফিট পর্য্যন্ত নীচে গিয়ে পড়তে পারে। এই অঞ্চলের 
জঙ্গল কংসরাজার কয়েদথান! রূপে ব্যবহৃত হ'ত এরূপ 
প্রবাদ আছে। ছোট ছোট নদীর ওপর বড় বড় পুল 
বাধা আছে। নদীগুলি গ্রীক্মকাঁলে কেবল বালুগর্ত-_কিস্ত 
বর্ধাকালে ভীষণ! খরক্রোতাঁর আকার ধারণ করে। 
চিতরপুরে যখন পৌছলাঁম, ডাক্তার নিকট লারী নামক 
গ্রামে রোগী দেখতে গেছলেন। “মেমসাহেবও সঙ্গে 
গেছলেন। লারী গ্রামে অনেক বাঙ্গালীর বাস আছে। 
ডাক্তারের ছোট বাংলোর সংলগ্ন আর একটি ছোট বাংলো 
আছে। সেটি ভিজিটাযূস্‌ রেস্ট, হাউস্‌ রূপে ব্যবহৃত হয়। 
আমি ডাক্তারের অনুপস্থিতিতে সেই রেস্ট হাউসে আশ্রয় 
নিলাম। ইচ্ছা ছিল, পরদিন প্রতাষে একজন গাইড, 
সঙ্গে নিয়ে রাঁজরপ্লা রওয়ানা হব। ড্রাইভার আমার মোটর 
নিয়ে মাইলথানেক দূরে এক গ্যারেজে বিশ্রাম করতে 
গেল। ছ্বগ্রহরে এক ঘুম ঘুমিয়ে উঠে দেখলাম--আকাশে 


মেঘের ছুটাছুটি লেগে গেছে__পশ্চিম আকাশ ঘোর কৃষ্ণবর্ণ 
ধারণ করেছে । একটু পরেই ঠাঁওা হাওয়! দিয়ে মুফলধারে 
বৃষ্টি এসে পড়ল। অল্লক্ষণ মধ্যেই রান্তাঘাট প্রবল বৃষ্টিতে 
ভরে গেল। বাংলোর নিকাটস্থ 'গাঙ্গীজমী” নামক 
নালাটি এক পার্বত্য খরক্সোতে পরিণত হ'ল। ডাক্তারের 
বাংলোর দিকে মুখ করে আমি নিজের ঘরে বসেছিলাম। 
ডাক্তারের “বয় একটি পাঁচবৎসরের বালিকাকে তার 
পিতামাতার ফের্বাষ্‌ আর দেরী নেই-__-এইরকম বোঝাচ্ছিল। 
ভীষণ বর্ষায় তার পিতামাতার জন্য মেয়েটি একটু ব্যাকুল 
হয়েছে_-বোঝ| গেল। মেয়েটিকে খাওয়াতে সে চেষ্টা 
করছিল-_কিস্তু সে কিছুতেই খেতে রাজী ছিল না। হঠাৎ 
মেয়েটি জোর করে “বয়ে'র হাত ছাড়াতে গিয়ে সিমেন্টের 
মেঝের ওপর পড়ে গেল। তৎক্ষণাৎ চীৎকার ক+রে 
সে কেঁদে উঠল। কান্নার স্থরের মধ্যে বেদনা অপেক্ষা 
পিতামাতার দীর্ঘকাল অনুপস্থিতির অভিমানের অভিব্যক্তি 
আমার কাণে বেণী লাগল। বৃষ্টির মধ্যে ছুটে চ”লে এসে 
আমি তাঁকে কোলে নিলাম। অপরিচিতের কোলে উঠে 
সঙ্কৌোচে ও বিস্ময়ে সে কান্না বন্ধ করল, কিন্তু ফোৌপাতে 
লাগল। তারগাঢেকে আমি তাকে নিজের ঘরে নিয়ে 
গেলাম । সেখানে আনিকা মাদার টিধ্শারের পটি তার 
বেদনার স্থানে দিয়ে আণিক| ৬ ক্রম তাঁকে খাইয়ে দিলাম 
এবং তার হাতে রামগড়ের মেলায় কেনা দুটো পুতুল, 
বিস্কুট, লেবেনচুষ প্রভৃতি ঘুষ দিয়ে তাঁকে শান্ত করলীম। 
সে খুশী হয়ে আমার দিকে দেখতে লাগল । নাম জিজ্ঞেস 
করায় সে বলল--তার নাম স্ুৃধীরা, তার ম! তাকে স্ধী ঝলে 
ডাঁকেন। আমার মনটা কেমন ছ্ণাক্‌ ক'রে উঠল । আমা? 
নিজের নাঁম সুধীর । কিছুক্ষণ তার সঙ্গে গল্প করার পর সে 
ঘুমিয়ে পড়ল-_-তাকে আমার বিছানায় শুইয়ে দিলাম । রাত্রি 
আটটা নাগাদ আকাশ বেশ পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার পর সপ- 
ত্রীক ডাক্তার তাঁর মোটরে ফিয়ুলেন। মোটর থেকে নেমেই 
মেমসাহেব মেয়ের শোবার ঘরে মেয়েকে দেখতে গেলেন। বয় 
তখন ভয়ে ভয়ে সন্ধ্যার ঘটনা! সব বললে। 


৫৯৪ 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


সস সদ 


মেমসাহেব বেশ পরিবর্তন না ক'রেই আমার বাংলোয় 
প্রায় ছুটে এলেন। আমি ইঙ্গিতে নিদ্রিতা স্ধীরাকে 
দেখিয়ে দিলাম । তিনি আমাকে সকৃতজ্ঞ ধন্তবাদ জানিয়ে 
মেয়ে নিয়ে নিজের ঘরে উঠলেন। আমি বারান্দায় ধাড়িয়ে- 
ছিলাম--ঘরের আলো মুখে পড়ায় চিন্তে পারলাম, 
ডাক্তার মুখাজ্জির জায় ওরফে “মেমসাহেব আমার 
পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ক্লাসের সহপাঠিনী বীথিকা ব্যানার্জি । 
বীথিক! বারান্দায় পৌছে স্ুধীরাকে জাগিয়ে তার মুখে 
চুমু দিয়ে তাঁর অভিমান ভাঙ্গালো। এদিকে ভাক্তার 
“বয়ে'র কৈফিয়ত শুন্তে শুন্তে ক্লান্তদেহে হঠাৎ ধৈর্য হারিয়ে 
তাকে এমন পদাধাত করলেন যে, সে বেচারা ধাকা 
সামলাতে না পেরে দূরে ছিটকে পড়ল। ভয়ে সে 
আধমরা হয়েই ছিল। পড়বার আগে তাঁর মুখ থেকে 
মাত্র একট! অস্ফুট কাতরোক্তি বেরোল। 

ডাক্তার রাগে গন্ধ গর কণ্য্তে করতে কাপড় চোপড় 
ছাড়তে উঠলেন। আমার ঘরে আলো জলতে দেখে, 
আমার বারান্দায় উঠে এলেন । প্রথমে মেয়েকে ফাস্ট-এড. 
দেওয়ার জন্য আমাকে ধন্যবাদ দিলেন। তারপর আমার 
আগমন-উদ্দেশ্, বন্ধুর পরিচয় প্রভৃতি জেনে আমাকে 
বললেন-_পার্ধতা ভেড়! নদী এত বৃষ্টিতে ভীষণ আকার 
ধারণ করেছে । তার ওপর কোনও পুল নেই। সে 
নদী ছেঁটে পার হয়ে রাজরগ্লায় মার মন্দিরে যেতে হয়। 
যদি আর বৃষ্টি না হয় তবে চাঁর-পাঁচ দিন অন্তত না 
অপেক্ষা করলে সে নদী হেঁটে পার হওয়া যাবে না। 
দামোদর ও ভেড়া নদীর সঙ্গমস্থলে জঙ্গলের মধ্যে মা'র 
মন্দির অবস্থিত। সেখানে বাঁঘের অত্যাচারের কথা প্রায়ই 
শোনা যাঁয়। মনটা এসব গুনে বড় থারাপ হয়ে গেল। 
নিকটে থরন্োতা৷ গাঙ্গী-জমাঁর গর্জন বাংলো থেকে শোন! 
যাচ্ছিল। কন্ার ক্রন্দন গুনে ডাক্তার নমস্কার ক'রে নিজের 
বাংলোর বারান্দায় উঠলেন। 

টিফিন বাস্কেটে খাবার ছিল-_তাই থেয়ে নিয়ে বারান্দায় 
ইজিচেয়ারে চোখ বুজে পড়েছিলাম । চারিদিকে নিস্তব্ধতা 
ও অন্ধকার বিরাজ করছিল। ভাবছিলাম মানুষ কত 
রকম ভাবে, আর অবৃষ্টের অনৃস্ঠ সক্কেতে বাস্তবে তার কত 
ওলট-পালট হ,য়ে যাঁয়। এই বীথিকার সঙ্গে আমার 
বিবাহ একরকম পাকাপাকি স্থির হয়েই ছিল। পরস্পরের 








সা্হতী 





৫৪১০ 


-স্্ত্ছপ্প শ্ন্ডিপ ্ খ স্ব স্থ্ ব্ফশা বে 


পরম্পরকে কত ভাল লাগত। আমি বিলাতে থাকতে 
প্রতি মেলে উভয়ের চিঠি লেখালেখি ছিল। সিভিল সাঁভিস 
পরীক্ষার ফল বেরোবার সঙ্গে সঙ্গে সব কি রকম বদলে 
গেল। “ভাইভা ভোসিতে আমি কিছু কম নম্বর 
পাওয়ার জন্য পরীক্ষায় আমাঁর স্থান নীচে হয়ে গেল। 
আই. দি. এস্‌ হ'তে পারলাম নাঁ। খবর বেরোবার পর 
বীথিকার চিঠি আসা বন্ধ হয়ে গেল। তাঁর বাব! ফর্দ্যালি' 
দুঃখ ক'রে চিঠি লেখেন, আরও লেখেন--তোমার প্রতি 
আমার অনেক আশা ছিল--যা হোঁক, বীথিকে আর 
আটকে রাখ! সম্ভব নয়, আগামী মাসে ডাক্তার মুখার্জির 
সঙ্গে তার ইত্যাঁদি। বীথিকাঁর বাবার সে চিঠি পেয়ে 
আমি প্রায় পাগলের মত হয়ে গিয়েছিলাম । প্রবাসে 
একমাত্র মাতসম ল্যাগুলেডীর শ্লেহচর্য্যায় অতি কষ্টে 
সে ধাকা সাম্লাঁতে পেরেছিলাম । আমার বাবা লিখ লেন 
দ্বিতীয় বার সিভিল সাঁভিস্‌ পরীক্ষার জন্য লগ্ডনে থেকে 
প্রস্তুত হতে। কিন্তু সিভিল সাভিস পরীক্ষা! দিতে 
আমি আর মনে জোর পেলাঁম না। ব্যারিস্টারী 
পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে কলকাতা ফিন্্লাঁম। 
তারপর কয়েক বছর কেটে গেছে । বাবা মারা গেছেন। 
সংসারে এখন আমি একলা-_সম্পূর্ণ একল!। তাই খেয়াল- 
গুলো কিছু উদ্দাম। রাঁজরপ্লা যাব ঝলে কলকাতা থে.ক 
বেরিয়েছি-_-এতদূর এসে ফিরে যাঁব কি না ভাবছি--চোখ 
বুজে--আপন মনে। হঠাঁৎ মাথার কাছে “ম্ধী” “সুধী, 
ডাক শুন্লাম। এই নাঁমে বীথি আমাকে ডাঁকৃত। মনে 
হ'ল ঘুমিয়ে পড়েছি* আর স্বপ্ন দেখছি । সেই ডাক আবার 
ুন্লাম। চোখ মেলে দেখি, বীথি মাথার কাছে চেয়ারে 
গা দিয়ে আমাকে ডাক্ছে। আমি উঠে তাকে একটা 
চেয়ারে ঝস্তে দিলাম । মে আমার হাত ধরে কাঁদ কাদ 
স্বরে বললে-_-কি হবে সুধী, বয়টা যে মরে গেল! আমি 
চমকে উঠলাম। বীথি আমার হাত ছুটি ধরে তাঁর ওপর 
মাথা রেখে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাদতে লাগল। আমি 
বললাম, কি ছেলেমানুষী কঃরো, ডাক্তার মুখার্জি এখনই 
দেখতে পেলে কি মনে করবেন! সে জানালো ডাক্তার 
প্রচুর বিয়ার পান ক'রে অচেতন হয়ে আছে ; এমনই ভাবে 
তার দাম্পত্য জীবনের প্রতিটি দিন কাটছে । মেয়েটি যদি 
তাদের মধ্যে না আস্ত, তাহলে সে এরস্তদিন নিশ্চয় বিষ 








৫ ৪১২. 


খেয়ে মরত। আমি তাকে সান্বনা দিলাম এবং স্থর হ'তে 
বললাম । আমার সহানুভূতি পেয়ে সে বালিকার মত 
আমার কোলে মাথা রেখে ফুলে ফুলে কাদতে লাগল । 
সে বলে যেতে লাগল-_আমাঁর দিক থেকে তুমি যে রকম 
ব্যবহার পেয়েছ, তথাপি তুমি আমার ওপর এত অনকম্পা 
দেখাচ্ছ। আমার মা”র ইচ্ছা ছিল না তোমার সঙ্গে এন্গেজ- 
মেণ্ট ভাঙ্গা। কিন্তু বাবা কিছুতেই সে দময় ডাক্তারকে 
হাতছ'ড়া করতে রাঙ্ী হলেন না। আমার শেষ চিঠির 
উত্তর তোমার কাছে পাবার আশায় কত অছিলায়ঃ কত 
কষ্টে আমি বিয়ে আটকে রেখেহিলাম, তা কেবল আমি 
জানি। সে চিঠির যখন কোন উত্তর পেলাম না, তখন 
আমার সব জোর চলে গেল । পরে জেনেছিলাম, আমার 
লেখ! সে চিঠি তোমার কাছে যেতে দেওয়া হয় নেই। 

বীথিকার বাক্যশ্োতে বাধা দিয়ে বললাম, বয়টাঁর 
মুতদেহের কি ব্যবস্থা হবে? বীথিকা ঝললেঃ নেশার ঘোরে 
ডাক্তার একবার বলেছিল, গাঙ্গীজমীর শ্রোতের মুখে 
ফেলিয়ে দাঁওগে। জলে ডুবে মরেছে ঝলে দেবো । আমি 
ভাবগাঁমঃ ডাক্তার হঃয়ে যদি মুখাঁজ্জির এই মত হয়, তা হ'লে 
তার নেশা খুব হয়েছে । কারণ এ হ'ল মুতদেহে বিষ গিলিযে 
বা ফুঁড়ে দিয়ে বিষ খেয়ে মরেছে বলবার চেষ্টার মত। 
রিগর মর্টিস আরম্ভ হবার পর ধমনীতে রক্ত সঞ্চালন আশা 
করার ম্যায় মেডিকাঁল জুরিস্প্রুডেন্সের অভিজ্ঞতা কোনও 
ডাক্তারের সঙ্ঞানে হ'তে পারে না। 

বীথিকাকে সাস্থন! দিয়ে তাঁর ঘরে পাঠালাম । আমার 
মনটা খুব খারাঁপ হ'য়ে গেল। বারান্দায় লঘু পদক্ষেপে 
পায়চারি করছি। রাত প্রায় এগারটা। ডাক্তার মুখার্জি 
ভয়ার্ভভাবে আমার কাছে এলেন। আমি বিস্মিত হঃয়ে 
মুখের দিকে চাইতে ভিনি বললেন, সন্ধ্যায় একটা 
ফ্যাক্সিডেণ্ট হ'য়ে গেল» আপনি ব্যারিস্টার, বলুন ত'-_ 
ইণ্টেন্শান্‌ টু কিল্‌ না থাকলে এতে কন্ভিকৃশান্‌ হ'তে 
পারে? আমি বললাম, “মার্ডার চার্জে না হ'লেও গ্রিভাস্‌ 
হার্টের চার্জে ৩২৬ ধাঁরাঁয় হতে পারে। হইন্টেন্শান্‌' ছেড়ে 
আপনি প্রভোকেশান্ঃ  “সেল্ফ -ভিফেন্স + ঘয়্যালিবি, 
প্রভৃতির “ডিফেন্স * দিলে কিছু স্থবিধা হ'তে পারে। ডাক্তার 
বললেন, তার ত “ইন্ভিপেন্ডেপ্ট, উইট্‌নেস্ চাই । আমি 
আকাশ থেকে পড়লাম। সামনে চেয়ে দেখি বীথিক! 


স্ডান্রভব্বঞ্র 


[ ২৮শ বর্- হয় থণ- ৫ম সংখ্যা 


আমার ঘরের দিকে উন্মুখ হয়ে নিজের বাংলোর বারান্দা 
থেকে চেয়ে আছে । আমি হঠাৎ বলে ফেল্লামঃ আপনি 
ঘ্্যালিবি ডিফেন্স» দেবেন, আমি সাক্ষী দেব!। ডাক্তার 
আমার পায়ে হাত দিয়ে কলে উঠলেন, ভগবান আমাকে 
বাচাবার জন্য আজ আপনাকে এখানে পাঠিয়েছেন । আপনি 
এখানে থাকুন্‌, নদীর জল একটু কম হোক, আমি আঁপনাঁকে 
সঙ্গে নিয়ে রাঁজরগ্প। যাঁব। মিশনের চাঁকরদের ডাকাডাকি 
করে বয়'টার মৃতদেহ সৎকারের ব্যবস্থা হল। তারা 
জান্ল বৈকাঁলে ডাক্তার সাহেবের অন্কুপস্থিতিতে বিয়ের 
বুকে একট! ব্যথা ওঠে। সেকথা আমাকে বলে সে 
শুয়েছিল। তার পর তাকে আর দেখা ধায় নাই। ডাক্তার 
ফিরে এসে পরীর! ক'রে দেখেন সে ভার্টফেল হ/য়ে মার! 
গেছে । পরদিন প্রাতে মিশনের একজন ধর্মযাজক আমার 
উক্ত মর্মে একটা স্টেটমেন্ট লিখে নিলেন । আমি নিব্বিকার- 
চিন্তে €স্টেট্মেণ্টে” সই ক'রে দিলাম । ধর্মযাজক ঝললেন, 
ডাক্তার মুখাজ্জি তাদের মধ্যে খুব “পপুলার ফিগার । ওর 
চিকিৎসায় সকলের খুব রোগ সারে । তিন বসর বিশ্লাতে 
ডাক্তার মুখাজ্জির অধায়নের সুখ্যাতি ক'রে এবং আমার 
করমদ্দন ক'রে তিনি চ'লে গেলেন। 

ডাক্তার মুখাজ্জি তারপর আমাকে পেয়ে বসলেন__ 
বীথিকাঁর সঙ্গে আলাঁপ ক”রতে বললেন। ঘণ্টাখানেকের 
মধ্যে হাসপাতালে গিয়ে ৬দুলালহরিবাঁবুর দান আলমারী, 
যন্ত্র ও স্বতিফলক দেখে এলাম। ডাক্তার মুখার্জি 
হাঁস্পাতালের কাজ সেরে যখন বাংলোয় ফিরলেন, তখন 
দেখলেন বীথিকার সঙ্গে আমার আলাপ বেশ জমে 
গেছে । তিনি আমাকে বললেন-_বীথিকা অতি সহজেই 
সকলের সঙ্গে আলাপ করতে পাঁরে--এট! তাঁর মন্ত গুণ। 
বীথিকা আমার “প্ল্যান অফ. লাইফ» সম্বন্ধে সব জেনে 
নিয়েছিল। আমি যখন তাঁকে বললাম, পরজন্মে যদি 
বিয়ে করা ভাগ্যে থাকে, তবে হবে--এ জন্মে হল নাঁ_ 
তখন ভার মেয়েকে আমার কাধে ফেলে দিয়ে সে খুব গা 
ঘেঁষে দাড়াল। আমার তখন মনে হ'ল- পোর্ট গ্র্যাজুয়েট 
ক্লাসে আমরা কাল পধ্যন্ত পড়েছি। মাঝের সব ঘটন৷ 
স্বৃতি থেকে মুছে গেছে। 

বীথিকা আমাকে নিজে রেঁধে খাওয়াল। চাঁর দিন 
পরে আমাদের রাজরগ্প যাবার দিন স্থির হ'ল। দুপুরে 


শ্ুতুশ্ 





4 


[* ৮. ঈযুভ' পৃণচঞ্র চরবপ্া বুল'ল ভার হন 


প্রন্টিং ওয়। বস্‌ 


বৈশাখ-_-১৩৪৮ ] 


নিজের ঘরে একটু ঘুমোলাম। একটা স্থস্বপ্ন দেখে ঘুম 
ভেঙ্গে গেল। উঠে শুন্লাঁম, ডাক্তার ও “মেম্সাঁহেক, 
নিকটস্থ পোনা গ্রামে মোটরে বেড়াতে গেছেন। একটু 
পরে তাঁরা যখন ফিয়ুলেন, আমি ততক্ষণ নিজের জিনিষপত্র 
গুছিয়ে মোটরে তুলে ফেলেছি। ডাক্তার ব্যস্ত হয়ে কারণ 
জিজ্ঞাসা করলেন--আমি বললাম চার-পাঁচ দিন বসে 
থাকার ছুটি নেই! আকাশ পরিষ্কার হ'য়ে গেছে, তাই 
কলকাতা! ফিরে যাঁচ্ছি। বীথিকা স্থধীরাকে আমার কোলে 


সদ্য স্ব-স্ব 


ভ্ডাব্সভভত 


০ 


তুলে দিল। তাকে কয়েকটা চুমু বখশিস্‌ দিয়ে ডাক্তারের 
কোলে তুলে দিলাম। শুরা বারান্দায় উঠতে উঠতে 
৪0 15০11 বলে বিদায় জানালেন। আমি মোটরে উঠে 
বসলাম, দ্রাইভার স্টার্ট দিয়ে দিল। গীঙ্গীজমীর উচু 
পুলের ওপর গাড়ী যখন উঠল--একটা বেক পার হয়ে 
ঘাড় ফিরিয়ে দেখি বীথিকা তখনও বারান্দায় দাড়িয়ে 
রয়েছে__ন্ত্ধীরাকে কোলে নিয়ে। রাঁজরগ। দর্শন কপালে 
নেই, বুঝ্লাম। 


ভারতচক্দ 
শ্রীভোলানাথ সেনগুপ্ত 

রূপনগরীতে রসের পসরা! ভাষার নগরে ভাবের পসরা 

বেসাতি করিতে গিয়া, বেসাতি করিতে গিফ়া, 

কবি-সদাঁগর রায়গুণাকর কথাথে কাটিয়া হৃদয়ের গাঁটি 

ফিরিলে কলঙ্ক নিয়! ॥ ১ ॥ ফিরিলে সুষশ নিয়া ॥ ২॥ 
যে কলঙ্কে কলঙ্কিলে লেখনী তোমার, রচিলে যে রসকাব্য রায়গুণ1কর, 
বুথ কাল নিল তাহা মুছিবাঁর ভার। শবেঃ ছন্দে, অলঙ্কারে সর্বগুণাঁকর। 
অশ্লীল বলিয়! লোকে মনে বাসে রাগ, ভাষারে পরালে তুমি নানা অলঙ্কার, 
সহজে ছাড়ে না তোম! বদি পায় বাগ। বধুরূপা-মাতৃ-অঙ্গে-দিব্য-অলঙ্কার। 
আনিরসগতপ্রাণ স্থরত-রসিক বিদগ্ধজনের মুখে গুনি এইরূপ; 
যেইজন, সেই পারে বুঝিতে সঠিক । রূপ গুণ বিচারিতে আগে চাই রূপ । 
শুনিতে কামন! বাড়ে বিদগধ-চিতে, কাচা-সোনা দিয়ে গড়ি উপমার হার, 
মন্দমমতি তব দোষ অক্ষম কহিতে। যতনে মাতার কণ্ঠে দিলে উপহার । 
দোঁষকে করিয়া গুণ লয় যাঁরা মনে রূপাতে রচিলে তুমি রূপকের মল, 
দুষ্ট বলি তব কাব্য তাঁহারা না গণে। জননী চরণে তাহা করে ঝল্মল্‌। 
পড়িতে পড়িতে মন তুলি কোন্‌ ছলে, স্বভাবোক্তি? কাকু; শ্লেষ, বক্রোক্তি যমক, 
মজিতে মজিতে ডুবে যায় রদাতলে ! মণি-সম মাঝে মাঝে বাড়ায় জমক। 
হে ভারত, কবিদলে হয়ে সমাসীন, সাবধানে ধরি দেখি বিচারের তুল, 
লোকচক্ষে সর্বজনে করিয়াছ হীন । ভাষাতে অপরে নহে ভারতের তুল। 


কলম্ব- অপবাদ, কালি। রাগ ক্রোধ, অনুরাগ । আদিরস- কামরস, আদি-ঈশ্বর। হুরতস্উত্তম কাঁধ্যে রত, অশ্লীল কাধ্যে 


| বিদগধ-্বি-দ্ধ ( পোড়া), বিদগ্ধ -্বিঘবান। 


৭৫ 


গুণ-্গুপন, (20161015 ), গুপ-্ (019118021101) ) । 


গোবিন্দচন্দ্র ও ময়নামতী 
অধ্যাপক শ্্রীবিজনবিহারী ভট্টাচার্য এম-এ 


বাঙ্গাল! দেশে রাঁজ৷ গোবিন্বচন্ত্র বা গোপিটাদের নাম তেমন 
স্থপরিচিত নয়। কিন্তু বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাসে 
গোঁবিদ্দচন্ত্র এবং তাহার মাতা ময়নামতীর একটি বিশিষ্ট 
স্থ'ন আছে। বাঙ্গালা দেশের উত্তরাংশে গোবিনাচন্দ্রের 
কাহিনী অবলম্বনে যে সব গ্রাম্য গাথা এবং গান প্রচলিত 
আছে তাহার সংখ্যা নিতান্ত লল্প নয়। গোঁবিন্দচন্দ্রের 
কাহিনী বিষয়ক কয়েকটি পুস্তকও প্রকাশিত হইয়াছে। 
গোঁবিন্দচন্দ্র বা তাঁহার মাতার জীবনকাহিনী সর্বসাধারণের 
কাছে প্রচার করা এই সকল পুস্তকের উদ্দেশ্ট নহে। 
সম্পাঁদকগণ ভাঁষ! সাহিত্য এবং ধর্মের তত্বপিপাস্ু পণ্ডিতের 
এবং তত্বাম্বেধী বিদ্যার্থীর সাহাষ্যকল্পেই এই সকল পুত্তক 
গ্রকাঁশে মনোযোগী হইয়াছেন। 

্রিয়ার্সন সাহেবের সংকলিত “মাণিকচন্দ্রের গান” 
নলিনীকাস্ত ভট্টশালী ও বৈকুষ্ঠনাথ দত্ত সম্পাদিত 
“ময়নামতীর গান”, নলিনীকান্ত ভট্টশালী সম্পার্দিত 
“গোপিচান্দের গীত”, শিবচন্ত্র শীল সম্পাদিত “গোঁবিন্দাচন্ত্ 
গীত”- গোগী্টাদদের আখ্যান প্রসঙ্গে এই পুস্তকগুলির নাম 
উল্লেখবোগ্য । কিন্ত বটতলা বা বঙ্গবাসী সংস্করণ পুস্তকের 
দ্বারা যে কাজ পাওয়া যায় এ সমম্ত বইয়ের ছারা 
সে কাজ পাওয়া অসম্ভব, পাওয়ার আশ! করাও উচিত 
নয়। আজ ফুল্লরা কালকেতু, বেহুলা লখিন্দর, লহন! 
ুল্পনা, শ্রীমস্ত ধনপতি বাঙ্গালীর কাঁছে যে ধরণের পুস্তকের 
সাহায্যে ঘরের লোক হইয়া উঠিয়াছে ময়নামতী বা 
গোপি্টাদের আখ্যান সম্বন্ধে সে রকম পুত্তক বাঙ্গালা 
ভাষায় বিরল। প্রাদেশিক ভাষার রূপ অব্যাহত রাখিবার 
জন্থ স্ুপগ্ডিত সম্পাদকগণ পু'খির লেখা যেমন আছে 
তেমনই ছাঁপেন। তত্বসন্ধের কাছে তাহার মূল্য আছে, কিন্ত 
ষে গল্প চায় তাহার কাছে নে ভাষার মূল্য কি? 

আজ বঙ্গের এক উত্তরাংশ ব্যতীত অগ্ত কোঁথাও 
গোবিন্দচন্ত্রের নাম শোনা যায় না) কিন্তু বের বাছিরে 
ভারতের অন্তান্ত প্রদেশে এই বাঙ্গালী রাঁজার নামে গান ও 
কাহিনী অগ্ঠাপি গ্রচলিত আছে। 


উত্তরবঙ্গে প্রচলিত গোপিাদের আখ্যানগুলি কিংবদন্তী 
অব্স্থনে রচিত। গোপিটাঁদ বিষয়ক যে সকল গ্রন্থ 
প্রকাশিত হইয়াছে তাহাদেরও কোনোটির মধ্যে প্রকৃত 
্রতিহাসিক তথ্য নাই। বস্ততঃ আধ্যানকারগণ সাল 
তারিখ মিলাইয়। গোঁবিন্দচন্দ্রের জীবনচরিত লিখিতে বসেন 
নাই। চমতকার গল্প শুনাইয়া আোতা ও পাঠকের 
মনোরঞ্জন করাই তীঁহাদের উদ্দেশ্য ছিল। দু-দশ জায়গায় 
সত্যের অপলাপ হইবে না-_-এমন প্রতিজ্ঞ! করিয়া তাহার! 
গল্প রচনা করেন নাই। 

প্রকাশিত যে কয়টি গ্রন্থের নাম কর! হইয়াছে এগুলিও 
গ্রামাঞ্চলে প্রচলিত আখ্যান ও কিংবদস্তীরই অসংস্ৃত 
সংস্করণ ; ছাপার অক্ষরে মুদ্রিত হইলেও মৌখিক উপন্ণসের 
সহিত ইহাদের প্রকৃতিগত মিল আছে । ইহারাও গল্প মাত্র, 
ইতিহাস নহে। 

তবে এই সমস্ত গল্পের মধ্যে অনেক বিষয়ে মিল আছে। 
চরিত্রের নামে, স্থানের নামে এমন কি কাহিনীর নানা 
অংশেও ভিন্ন ভিন্ন বইয়ের মধ্যে কিছু কিছু সঙ্গতি দেখা 
যায়। মূল কাহিনীতে মিল তো আছেই। 

প্রকাশিত সব কয়টি গ্রন্থ অবলম্বন করিয়! বাঙ্গালী রাজ 
গোবিন্দচন্দ্র এবং তাহার মাতা ময়নামতীর কাহিনীটি 
সংকলন করা হইয়াছে । গোবিন্দচন্ত্রের ইতিহাস সম্বন্ধে 
যোগেশচন্ত্র রায় বিগ্যানিধি, স্বর্গীয় দীনেশচন্দ্র সেন, 
নলিনীকান্ত ভট্টশীলী প্রমুখ উপাধ্যায়গণ অনেক আলোচনা 
করিয়াছেন, এক্ষণে কাহিনীটি জনসাধারণের মধ্যে প্রচারিত 
হউক এই কামন! করি। বাঙ্গালা দেশের যাঁত্রাঃ থিয়েটার 
এবং সিনেমায় খাঁটি বাঙ্গালার কাহিনীগুলি বরাবর সমাদৃত 
হইয়া আসিতেছে । চত্ডীমঙ্গল, মনসামঙ্গল, ধর্মঙ্গল-_-এমন 
কি পূর্ববঙ্গের ছড়াগুলিও নাট্যন্ূপ পাইয়াছে। গোবিন্দচন্ত্রের 
কাহিনীর মধ্যে নাট্যসম্ভাবনা অল্লনয়। এবিষয়ে ধীারা 
চিন্তা করেন তাহাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করি। 

গ্রায় নয় শত বৎসর পূর্বে মেহারকুল অঞ্চলে তিলবচন্ত্ 
নামক এক গ্রজারগ্রক ও পুণ্যশীল নরপতি রাজত্ব 


৫৯৪ 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


০গাি্ত্ঞ্র ও ক্সনাসভী 


৫8২৫ 





করিতেন। তাহার দুই কন্তাঃ জ্যোষ্ঠার নাম ময়নামতী এবং 
কনিষ্ঠার নাম সিল্টুরমতী। তখন বিক্রমপুরের রাঁজ। ছিলেন 
মাণিক্যচন্ত্র। এই মাণিক্যচন্দ্র বা মাণিকাদ্দের সহিত 
রাজকন্ঠ! ময়নার বিবাহ হয়। কিন্তু বিবাহকালে বয়স 
অত্যন্ত অল্প ছিল বলিয়! ময়ন! পিতামাঁতাঁকে ছাড়িয়া এক 
সঙ্গে অনেক দিন শ্বগুরালয়ে থাকিতে পাঁরিতেন না, মধ্যে 
মধ্যে পিত্রালয়ে আসিয়া বাস করিতেন। 

সেইকালে গোরক্ষনাথ নামক এক সিদ্ধ যোগীর 
আবির্ভাব হয়। তিলকচন্ত্রের রাঁজবাঁটাতে এই যোগীর 
যাতায়াত ছিল, সেখানে তিনি বালিকা ময়নামতীকে প্রায়ই 
দেখিতেন। ময়নাকে দেখিয়া তাহার মনে ন্সেহের সঞ্চার 
হইল। তিনি মনস্থ করিলেন, ইহাকে মহাজ্ঞান শিক্ষা 
দিবেন। অনন্তর বালিকার সম্মথে গোরক্ষনাথ স্বীয় 
অভিপ্রায় ব্যস্ত করিলে ময়নামতী সানন্দে তাহার নিকটে 
দীক্ষা লইতে সম্মত হইলেন । দীক্ষা! দানের জন্য যে সমস্ত 
অনুষ্ঠানের প্রয়োজন সে সকল সম্পন্ন হইলে মন্ত্র গ্রহণের 
যোগ্যতা পরীক্ষা করিবার জন্য যোগিবর ময়নামতীকে 
দ্বাদশ বৎসরের আহার্য মুহূর্ত মধ্যে প্রস্তুত করিবার জন্য 
আদেশ দিলেন। আজ্ঞামাত্র ময়না পুরীমধ্যে প্রবেশ 
করিয়া কাচা হাঁড়ি ও কাঁচা পাতিলে অন্ন রন্ধন করিলেন 
এবং সোনার, থালে সেই অন্ন বাড়িয়া ঘ্বৃত, “আউটা ছুপ্ধ 
এবং চম্প] কলা” সহযোগে তাহা গুরুর নিকট উপস্থিত 
করিলেন। তখন-__ 


“অন্ন লইয়া গোরক্ষনাথ মনে মনে ঘুণে। 
সতী কি অসতী কন্ঠ বুঝিব কেমনে ।” 


সতীত্ব পরীক্ষার নিমিত 


“বার সুর্যের তাপ সিদ্ধা তলপ করিল। 
যতেক হুর্যের তাপ মৈনার গায়ে দিল ॥৮ 


এক ৃর্ষের তেক্জই মানুষ সহ করিতে পারে না কিন্তু দ্বাদশ 
হুর্ষের তেজ ময়নামতী অবলীলা ক্রমে সহা করিলেন । গোরক্ষ- 
নাথ বুঝিলেন এই কন্তার চরিত্র নিষ্ধলঙ্ক । ময়নার হত্তের 
অন্ন গ্রহণে আর কোন বাধা রহিল না দেখিয়া গোরক্ষ 
যোগী আহারে বসিলেন এবং ময়নামতী ভক্তি সহকারে 
গুরুর মধ্তকে আরাঙ্জিছত্র ধরিয়া! রহিলেন। 


“তা দেখিয়া গোর্খনাথ মনে মনে গুণে। 
এমন সুন্দরী যাইবে যমের ভবনে ॥৮ 


না, যেমন করিয্লাই হউক ইহার মৃত্যু রহিত করিতে হইবে। 
এই মহীয়সী রমণীকে অমর করিয়! মেহেরকুলে একটা! কীত্তি 
রাখিয়া যাইব। ইহা স্থির করিয়া গোরক্ষনাথ সেই দিন 
হইতেই শিল্তার শিক্ষণ দীক্ষাঁয় মনোযোগ দিলেন। তীক্ষ বুদ্ধি 
এবং গভীর অধ্যবসায়ের ফলে ময়নামভী অচিরকাল মধ্যেই 
মন্ত্রে তন্ত্রে বিচক্ষণ হইয়া উঠিলেন। গুরুর আশীর্বাদে 
জরা-মৃত্যু-ব্যাধি তাঁহার করতলগত হুইল। স্বয়ং যমরাজ 
থত লিখিয়! দিলেন। ্ীহাঁর শরীর অগ্নিতে দগ্ধ হইবে না, 
জলে ডুবিবে নাঃ অস্ত্রে বিদ্ধ হইবে না। অধিক কি 


“গুরু বোলে দিনে মৈলে মৈনামতী আই। 
সুর্য বান্দি মাঙ্গাইব এড়! এড়ি নাই ॥ 
রাত্রিতে পড়িয়া মৈলে মএনামতী আই। 
চন্দ্র বান্দি মাঙ্গাইব এড়া এড়ি নাই ।” 


মূর্খ স্বামীর ভাগ্যে বিছুষী পত্তী জুটিলে গৃহ পালন 
কর! অনায়াসসাধ্য হয় না, সংসার পথ হূর্গম হইয়া পড়ে; 
মাঁণিকচন্দ্রের ও তাহাই হইল। স্ত্রীর শক্তির পরিচয় পাইয়া 
তিনি সর্বদাই সন্ত্রস্ত থাঁকিতেন। বাহিরে যতই পৌরুষ 
দেখান না কেন, মনে মনে তিনি স্ত্রীকে সর্বদাই ভয় করিয়া 
চলিতেন। এই হেয়তাবোধগ্রন্থি রাজা মাণিকচন্ত্রকে 
অষ্টপ্রহর পীড়িত করিতে লাগিল। ইতিমধ্যে আর একটা 
ব্যাপারে রাজা স্ত্রীর উপর ভয়ানক ক্রুন্ধ হইলেন। একদিন 
ময়না! ধ্যানে বসিয়া জানিতে পারিলেন যে মাণিক্যচন্জ্রের 
পরমাঘু ফুরাইয়া আসিয়াছে । ইহা! বুঝিতে পারিয়াই তিনি 
স্বামীকে বিরলে ডাকিয়া মহাজ্ঞান শিথিবার জন্ত অনুরোধ 
করিলেন। মহাজ্ঞান সাধন ব্যতীত বিধাতার নির্দিষ্ট পরমায়ু 
বৃদ্ধি করিবার আর কোন উপায় নাই। আসন মৃত্যু হইতে 
রক্ষা করিবার জন্য পতিত্রতা পত্রী স্বামীকে সেই গুপ্ত মন্ত 
দান করিতে অভিলাষী হইলেন । 

কিন্তু স্ত্রীর নিকট হইতে মন্ত্র গ্রহণ করিতে মাণিক্যচন্দ্রে 
পৌরুষে বাধিল। পুরুব হইয়া নারীর নিকট শিয্বত্ব গ্রহণ 
করিলে রাজ্যের লোক তাহাকে উপহাস করিবে, লজ্জায় 
লোকসমাজে তাহার মুখ দেখাইবার উপায় থাকিবে না। 
স্ত্রীলোক পুরুষের, বিশেষত: স্বামীর গুরু হয় এমন কথ তো 


৫৪২৬৩ 


কেহ কোথাও গুনে নাই, কোন শাস্ত্রে এরূপ' বিধান 
দেখা যায় না। ভিনি বীরের গ্যায় উত্তর করিলেন-_ 


“জন্মিলে মরণ আছে সর্বলোকে কএ। 
আমি হব নারীর সেবক মরণের ভয়ে ॥৮ 


অকালে মরি মরিব তথাপি স্ত্রীকে গুরু বলিয়। স্বীকার 
কূরিতে পারিব না। এই পৌরুষদর্পার দৃঢ় গ্রতিজ্ঞ বিচ- 
লিত হইবার নয়__ইহা বুঝিতে পারিয়া ময়না অতিশয় শঙ্কিত 
হইয়া উঠিলেন। কারণ তিনি জানিতেন মহাজ্ঞান ব্যতীত 
মৃত্যু দেবতার আক্রমণ রোধ করিতে পারে এমন শক্তি 
বিশ্বব্্মাণ্ডে আর কাহারও নাই। 

দৈব অলঙ্বনীয়, তাহা ন৷ হইলে রাজা মন্ত্র গ্রহণ করিতে 
অসম্মত হইবেন কেন? ময়নামতী বারংবার ইহাই 
ভাবেন। হায় হায় শক্তি থাকিতেও পতির প্রাণ রক্ষ 
কর! অসম্ভব হইল? একবারে নিরাশ না হইয়া পুনরায় 
চেষ্টা করিলেন, যদি রাজার মতের পরিবর্তন হয়, কিন্ত রাজার 
সেই উত্তর প্রাণের জন্ঠ কাতর হইয়া পত্বীর নিকটে জ্ঞান 
লইব না। স্ত্রীর শিষ্ত হইয়া প্রাণলাভ করা অপেক্ষা মৃত্যুও 
অনেক গুণে শেয়। বার বার প্রত্যাখ্যাত হইয়াও ময়নামতী 
মধ্যে মধ্যে রাজাকে উপদেশ দিতে ছাড়েন না; অবশেষে 
রাজ! ময়নার উপর অতিশয় বিরক্ত হইয়া আর কয়েকটি 
বিবাহ করিলেন এবং প্রথম! পত্বীর সাহচর্য যতদুর সম্ভব 
এড়াইয়া চলিতে লাগিলেন। 

নৃতন বধূগণের মধ্যে দেবপুরের পাঁচটি সুন্দরী কন্তা 
ছিলেন। ইহাদের প্রতিই রাজার প্রগাঢ় অনুরাগ পরিলক্ষিত 
হইল। 

নবীন! সপত্রীগুলি স্বামীর প্রেম পাইলেও সংসারের 
কত্ৃত্ভভার জ্যেষ্ঠার হাতেই রহিয়া গেল। দেবপুরিকাগণ 
ইহাতে সন্তষ্ট হইতে পারিলেন না, সুতরাং কোন্দল বাধিল। 
তাহারা কর্তা এবং কর্তৃত্ব উভয়কেই চান, একটি লইয়! সুখী 
হইবেন কেন? রাজ! কলহের মীমাংসা করিতে গিয়া 
নবতনীদেরই পক্ষ লইলেন এবং প্রথম! পত্বীকে গৃহ হইতে 
বহিষ্কৃত করিয়া দিয়া! ফেরুস| নামক নগরে পাঠাইয়া দিলেন। 
রাঁজবধূ ময়না! সেখানে গিয়া একটি ক্ষুদ্র কুটার বাঁধিয়া 
অনাথিনীর ভ্তাঁয় বাস করিতে লাগিলেন। একদিকে 
সুসজ্জিত প্রাসাদে বহুপত্বী-পরিবৃত হইয়া 


ভ্চানস্ঞ্ 


[ ২৮শ বর্ধ--২য খ্--৫ম সংখ্য। 


“মহারাজ! রাজ্য করি থার পাঁটের উপর |” 
আর অন্ত দিকে 
“মএনামতী চরকা কাটি ভাত খায় বন্দরের ভিতর ॥% 


মাঁণিকাদের রাজত্বে নিধন বলিয়া! কেহ ছিল ন1। 
দেশে সোনারূপার ছড়াছড়ি । রুষকের পুত্র যে, সেও সোনার 
ভাটা লইয়া নির্ভয়ে খেলা করে। যে কাঠ-পাত৷ বিক্রয় 
করিয়া! সংসার চালায়, হাঁতী না চড়িয়া! সেও বেড়াইতে বাহির 
হয় না। যে নিতান্ত দরিদ্র সেও খাসা তাঁজী ঘোড়ায় চড়ে । 
চাঁটাই বিছাইয়! হীরা মণি মাণিক্য শুকাইতে দেয়। 
প্রত্যেকের বাড়িতেই বড় বড় পুষ্করিণী, কেহ অপরের 
পুক্ষরিণী হইতে জল আনিবার প্রয়োজন অনুভব করে না। 

খণ কাহাকে বলে দেশে কেহ জানে না। গৃহস্থের 
মেয়েরা সোনার কলসীতে জল আনে এবং সোনার পাছড়া 
পরিধান করে। দাসী পর্যন্ত পাঁটের কাপড় পরিতে দ্বণ! 
বোধ করে। মাণিকর্চাদের রাজত্বকে লোকে রাম রাজত্বের 
সঙ্গে তুলনা করে বটে, কিন্তু এত সখ এত এশ্বর্য বোধ হয় 
রামচন্ত্রের রাজত্বেও ছিল না। কিন্তু এহেন রাঁজত্বেও দুঃখ 
দারিদ্র্য দেখা দ্রিল। ময়নামতীর ফেরুসাঁগমনের পর হইতেই 
মাণিকচন্ত্র পীড়িত হইলেন, রাজকর্মচারিগণ স্থযোগ পাইয়! 
ধনরত্ব লুষ্ঠন করিতে লাঁগিল। অধিক অর্থ উপার্জনের 
আশায় দেওয়ান কর বৃদ্ধি করিয়া দিল। শেষে এমন অবস্থা 
হইল যে প্রজারা আর কর দিতে পারে না। কৃষক লাঙ্গল 
ও বলদ বিক্রয় করে, ফকির দঞ্বেশকে ঝোঁল! কীথা বেচিতে 
হয়, সাধু সাগর নৌকা বেচিয়! রাজার কর দেয় । এমন কি 


“থাঁজনার তাপত বেচে ছুধের ছাঁওয়াল।” 


রোঁগশব্যায় শুইয়৷ মাণিকর্টাদ সবই শুনিতেছেন। কিন্ত 
তিনি করিবেন কি? শয্যা হইতে উঠিবার পর্যন্ত তাহার 
সামর্থ্য নাই। প্রজাদের জন্ত চিন্তা করিয়! করিয়া তাহার 
রোগ আরও বৃদ্ধি পাইতে লাগিল । ময়নামতীর জন্তও যে 
হায়ের এক কোণে একটু বেদনা! ছিল না তাহাই বা কে 
বলিতে পারে? দুর দেশান্তর হইতে কত বৈদ্য কত ধত্বস্তরি 
আসিয়া উপস্থিত হইলেন। তীহাদের ব্যবস্থা মত নানা 
রকমের উধধ ও পথ্য গ্রস্তত হইতে লাগিল । | 

কিন্তু সকল চেষ্টা ব্যর্থ করিয়! রাজার গীড়া উত্তরোত্তর 
বাড়িয়াঁই চলিল। ওদিকে স্বর্গে বসিয়া! শমন রাজা চিত্র" 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


গুগুকে জিজ্ঞাসা করিলেন-মাণিকচন্দ্রের আর কত বাকি? 
চিত্রগুঞ্ত দপ্তর দেখিয়া! উত্তর দিলেন-__ছয়মান। 

একদিন দুইদিন করিয়া দেখিতে দেখিতে ছয়মাস প্রায় 
অতিবাহিত হইতে চলিল। মাণিকচন্ত্রের জীবন প্রদীপও 
প্রায় নিবু নিবু হইয়া আসিয়াছে । বিধাতৃদেবের আজ্ঞা 
পাইয়৷ গোঁদা নামক যমদূত “চাঁমের দড়ি এবং লোহার 
“ডাঙ্গ” সহ উপস্থিত । আর কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই রাঁজার 
প্রাণবাঘু বহির্গত হইবে। রাজ! বুঝিতে পারিলেন আর 
বিলম্ব নাই সময় ঘনাইয়! আসিয়াছে । মৃত্যুকালে সকলের 
সঙ্গেই দেখা হইল। রাঁজা! আশা! করিয়াছিলেন, ময়নামতীও 
দেখা করিতে আসিবেন কিন্তু তিনিই কেবল আিলেন না। 
ময়নামতী নারী হইলেও সাঁধাঁরণ স্ত্রীলোকের সহিত তাহার 
অনেক বিষয়ে পার্থক্য ছিল। অতিশয় দুঃখের কারণ 
ঘটিলেও তিনি বিহ্বল হইতেন ন! এবং পরম আনন্দের সময়েও 
শান্ত ও সংযত থাকিতেন। স্বামীর মৃত্যু যখন অবশ্যম্ভাবী 
তখন সেখানে গিয়া! অন্থান্ত সপত্বীর সহিত নিক্ষল রোদন 
করিয়া কোন লাভ নাই। .মৃতসঞ্জীবনী ত্যাগ করিয়া 
হলাঁহল সেবন করিতে যে ব্যক্তি বদ্ধপরিকর, তাহার নিকটে 
গিয়! অস্কবিসর্জন করা কি একান্ত নিরর্থক নয়? 

মৃত্যু রোধ করিবার শক্তি তাহার ছিল এবং সে শক্তি 
তিনি ম্বতঃপ্রণোদিত হইয় প্রয়োগ করিতে গিয়াছিলেন; 
কিন্ত মাণিকচাদ তাহা গ্রহণ করেন নাই, এখন কেবলমাত্র 
চক্ষুজল সম্বল করিয়া মুমুষু স্বামীর শয্যাপার্থে দীড়াইতে 
তাহার ইচ্ছা হইবে কেন? মরণসাঁগরের প্রান্তদেশে দাঁড়াইয়া 
আজ মাঁণিকচাদের মনে অন্ত চিন্তা নাই। অতিদুরে যাঁহাঁর 
অবস্থান কেমন করিয়া সে-ই যেন আজ আপনার জন হইয়া 
উঠিল। পৃথিবীর কাছে শেষ বিদাঁয় লইবার পূর্বে তিনি 
একবার ময়নাকে দেখিবার ইচ্ছা জানাইলেন। রাজবাক্য 
লইয়া বার্তাবহ ফেরুসা নগরে ময়নামতীর কুটারে আসিয়া 
অভিবাদনান্তে নিবেদন করিল-_ 





“ছয়মাসের কহিলা রজা মহলের ভিতর । 
দেখা করিবারে চায় রাজরাজেশ্বর ॥৮ 


সংবাদ শুনিয়াই ময়নামতী ধ্যানে বসিলেন এবং মুহূর্তমধ্যে 
রাজার অবস্থা জ্ঞাত হইয়া বেঙ্গাপাত্রের সহিত রাজবাটা 
অভিমুখে যাত্রা করিলেন। সেখানে পৌছিত্তেই 


গোন্িম্ভেজক্র শু সক্সনামভী 





৯৭ 


" প্যখন ধর্মী রাজা ময়নাকে দেখিল। 
কপালে মারিয়। চড় রাঁজ। কান্দিতে লাগিল ॥৮ 


যিনি একদিন দর্পভরে বলিয়াছিলেন_ জন্ম হইলেই মৃত্যু 
হইবে, সেই বীরই আজ প্রাণভয়ে ব্যাকুল হইলেন। 

ময়না প্রবোধ বাক্যে রাজাকে আশ্বস্ত করিয়া বলিলেন-_ 
মহারাজ, চিন্তা করিও না, আমি থাকিতে থাকিতে মৃত্যু 
তোমার কি করিতে পারে? আমার একটি মাত্র ধাক্য 
রক্ষা কর, শমন রাজার কোন অধিকার তোমার উপরে 
থাকিবে না। 


“কিছু জ্ঞান কহি দিমু আড়াই অক্ষর । 
পৃথিবী টলিলে না যাঁইবে যমঘর ॥৮ 
এখনও সময় আছে, মহাজ্ঞান গ্রহণ করিয়া অক্ষয় যৌবন 
এবং অনন্ত জীবন লাভ কর। গর্বান্ধ হইয়া! মহামূল্য প্রাণ 
বুথ! নষ্ট করিয়া লাভ কি? 
মহাঁজ্ঞানের প্রস্তাবে রাঁজার স্থুপ্ত চৈতন্ত আবার জাগৰিত 
হইল। মনের সকল দুর্বলতা নিমেষমধ্যে দূর হইয়া! গেল। 
অকম্পিত কণে রাজা উত্তর করিলেন-_ প্রাণভয়ে ভীত হইয়া 
রাঁজা মাঁণিক্যন্ত্র স্ত্রীর জ্ঞান গ্রহণ করিবে না। পূর্বের সুর্য 
পশ্চিমে উদয় হইলেও মাণিক্যচন্ত্রের প্রতিজ্ঞা অটল। 
ময়না বুঝিলেন-_বিধাতার এইরূপই ইচ্ছা. তাহা না হইলে 
আসন মৃত্যু দেখিয়াও রাজার মতি পরিবতিত হইল না কেন? 
মহাজ্ঞান গ্রহণ করিতে রাজা কোনরূপে স্বীকৃত হইলেন 
ন! দেখিয়া ময়নামতী স্বীয় শক্তির দ্বারা স্বামীর মৃত্যু রোধ 
করিবার জন্য চেষ্টা আরম্ভ করিলেন। রাজার শয়নকক্ষে 
চারিটা রক্ষা প্রদীপ জালাইয়৷ দেওয়া হইল, প্রদীপগুলি 
দিবারাত্র জলিতে থাকিল। তাহার পর-- 


“চাইর কলসী জল থুইলে বিরলে ভরিয়! 
যেই রোগের যেই দাওয়া আনিল ধরিয়| ॥৮ 


গষধপত্র প্রস্তুত হইলে ময়নামতী গুরুস্মরণ করিয়া শ্বামীর 
পদতলে বসিলেন। বমিতেই দেখিলেন কৃষ্ণদেহ ভীষণ 
আকৃতি এক পুরুষ পাশ এবং দণ্ড ধারণ করিয়া রাজার 
শিয়রে দগ্ডায়মান। ময়নার কিছু অজ্ঞাত ছিল নাঃ এই 
বিরাটকায় পুরুষটিকে দেখিয়ার্ই তিনি বুঝিলেন-__ইনি 
শমনের প্রেরিত জনৈক দূত এবং মাণিকচন্ত্রের প্রাণ লইয়া 
যাইবার উদ্দেস্ত্েই ইহার এনস্কানে পদার্পণ। তথাপি এন 


€ 


করিলেন--ছে নবাগত, ইতিপূর্বে রাজগূহে তোমাকে কখনও 
দেখিয়াছি বলিয়া ত স্মরণ হয় না। তোমার পরিচয় কি? 
কোথা হইতে তোমার আগমন ? কেনই বা তুমি শিরোদেশে 
দাড়াইয়া আছ ? গোরাযম আত্মপরিচয় দিয়া উত্তর করিল__ 
বিধাতার আদেশে তোমার ম্বামীর প্রাণপুরুষকে লইয়া 
যাইবার জন্য এস্থানে আসিয়াছি। ইহা শুনিয়া! ময়ন! 
অন্ুনুয় বিনয় করিয়া যমদূতের নিকট স্বামীর প্রাণ ভিক্ষা 
চাহিলেন। যমদূত উত্তর করিল__মামি আজ্ঞাবহ মাত্র; 
প্রাণ ভিক্ষা দিবার আমার তো কোন অধিকার নাই। কিন্ত 
ময়না তাহার কথায় কান না দিয়া রোদন করিতে লাগিলেন । 

ময়নার ক্রুন্দনে ব্যথিত হইয়া এবং পুরস্কারত্বূপ একটি 
টাঙ্গন লাভ করিয়া! গোদা যম সেদিনকার মত ফিরিয়! 
আদিল। 

প্রথম দিন আসিয়াছিল একজন, দ্বিতীয় দিন আসিল 
ছুইজন, তৃতীয় দিনে সংখ্যা আরও বাড়িল। এই ভাবে 
গোদা যম সাঙ্গোপাঙগ লইয়া প্রতিদিনই মাঁণিকঠাদের বাড়ি 
বাতীয়াত করিতে লাগিল এবং ময়নামতীও প্রতিদিন ধন 
রত দিয়া যমকে ফিরাইয়! দিতে লাগিল । অবশেষে যমদুতকে 
সন্ত করিবার জন্য মনুষ্য জীবন পর্যন্ত দাঁন করিতে হইল। 
স্বামীকে রক্ষা করিবার জন্ত ময়না নিজের ভ্রাতাকে যমদুতের 
হাতে সমর্পণ করিলেন। ভেট পাইলে যমদূত একদিনের 
জন্ত রাজাকে ত্যাগ করিয়া যায় আবার পরদিনই বনু 
অন্ুচর সহ দেখা! দেয়। এইভাবে কিছুদিন চলিলে রাঁজ- 
ভাণ্ডার শুন্ত হইয়া গেল, হস্তিশালার সব হস্তী, অশ্বশালার 
সব অশ্ব শেষ হইল । যমদূতের হাতে অপিত হইবার ভয়ে 
দাস-দাঁপী আত্মীয়-স্বজন বাড়ি ছাড়িয়া প্রস্থান করিল। 
এবার ময়ন৷ প্রমাণ গণিলেন। এখন কেমন করিয়া যমকে 
প্রতিনিবৃত্ত করিবেন তাহ! ভাবিয়া রাণীর মন অত্যন্ত উদ্বিগ্ন 
হইল। 

শেষে স্থির করিলেন-_অনৃষ্টে যাহা আছে তাহা কে লঙ্ঘন 
করিতে পারে? তথাপি আর একবার শেষ চেষ্টা করিয়া 
দেখিব। যদি স্বামীর মত পরিবর্তন করিতে পারি। এই 
সংকল্প করিয়া ময়না! হ্বামীর চরশে ধরিয়া! গলদশ্রুনয়নে 
বলিলেন---প্রিয়তম। এখনও আমার কথা রাঁখ। মাহ্যের 
জীবন অবহেলার বস্তু নয়। সামান্ত জিদের বশবর্তী হইয়া 
তাহ! ত্যাগ করা 'তোমার স্তায় বুদ্ধিমান ব্যক্তির পক্ষে 


জ্ঞাব্রত্ডল্ঞ্র 


[২৮শ বর্-_২য় খও-৫ম সংগযা 


শোভা পায় না। আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছি। 
কিন্ত এবার যমদূত আদিলে আর বোধ হয় তাহাকে 
বাধা দিতে পারিব না। মহারাজ আর প্রত্যাখ্যান 
করিও না। স্ত্রীলোক বলিয়া আমাকে সহন্রবার উপেক্ষা 
করিতে পার--তাহাতে আমি ছুঃথ করিব নাঃ কিন্তু মহাজান 
তো তাচ্ছিল্যের বস্ত নয়। পণ্ডিতগণ কুম্থান হইতেও 
কাঞ্চন তুলিয়া লইবার পরামর্শ দেন। নারীকে স্ব 
করিলেও নারীর মন্ত্রকে অবজ্ঞ! না করিয়! গ্রহণ কর। এস 
প্রস্তুত হও 


“আমার শরীরের অমর জ্ঞান তোমাকে শিখাই। 
স্ত্রী পুরুষে বুদ্ধি করি যমের দাঁয় এড়াই |” 


কিন্ত রাঁজা হিমালয়ের ন্যায় অচল। তিনি স্থির কণ্ঠে 
উত্তর করিলেন 


“এমনি যদি আমার প্রাণ যায় ছাড়িয়া । 
তবুত মাইয়ার জ্ঞান না নিব শিখিয়]॥৮ 


ময়নামতী দীর্ঘশ্বাস ফেলিলেন। 

পরদিবন সাজসজ্জা করিয়া! গোদ্াযফম বহু অন্থুচর সহ 
যথাঁসময়ে উপস্থিত হইল । আজ তাহারা প্রতিজ্ঞ! করিয়! 
আসিয়াছে- কোন প্রলোভনে মুগ্ধ হইবে না, কোঁন ভীতি 
প্রদর্শন গ্রাহ করিবে না, কোন বাঁধা বিপত্তি মানিবে নাঁ_ 
যেমন করিয়াই হউক মাঁণিকটাদের প্রাণ শমনরাজের দরবারে 
উপস্থিত করিবেই করিবে। 

ময়নামতী প্রস্তত ছিলেন, তিনিও স্বামীর প্রাণরক্ষার 
জন্য যথারীতি অনুনয় বিনয় আরম্ভ করিলেন; কিন্ত গোদা 
বিচলিত হইল না, আজ সে রাজার প্রাণ লইবেই, তখন 
ময়নামতী নানাবিধ উপঢটৌকন আনিলেন, গোঁদাষম তাহাঁও 
প্রত্যাখ্যান করিল। রাজমহিষী তখন অনন্টোপায় হইয়া 


“মহামন্ত্র গিয়ান লইল হৃদয়ে জপিয়। 
চণ্ডী কালীরপ হইল কায়া বদলিয়া ॥” 


রুদ্রচণ্তীর মুতি ধরিয়া হাতে তৈল পাটের খাঁড়া লইয়া ময়না 
যমদূত বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করিবার জন্ত অগ্রসর হুইলেন। 
তাহার রণরঙ্গিনী মুতি দেখিয়া গোদার সাহস অন্তর্হিত 
হুইল, ভয়ে পলায়ন করিয়া সে সরাসরি মহাদেবের নিকটে 
গিয়! উপস্থিত হইয়! নিবেন করিল-._ 


হৈশাখ---১৩৪৮ ] 


০গাজিল্কভজস্র শু সক্সমাসভ্জী 


ইং 





“মহাদেব অইত ময়না গিয়ানে ভাঙ্গর । 
কেমন করি আইনবেন রাঁজাকে যমপুরীর ভিতর ॥” 


মহাদেব বুঝিলেন ময়নামত্তী পতিপার্থ্ে থাকিতে কাহারও 
সাধ্য নাই যে রাজার প্রাণ বীধিয়া লইয়া আসে। 
সতরাং মাণিকাদের মৃত্যু ঘটাইতে হইলে সর্বাগ্রে ময়নাকে 
স্থানান্তরিত করা দরকার। ইহা ভাবিয়া মহাদেব সব 
যমদূতকে একত্র করিয়া প্রত্যেককে পৃথক পৃথক কাঁজের 
ভার দিলেন। আদেশ পাইয়া! *বাঁওথুকর! যম? বাযুরূপে 
রাজার শধ্যাগৃহে গিয় চারিটি প্রদীপ নিবাইয়! চাঁর কলসী 
গঙ্গাজল ঢালিয়া ফেলিল। “ভাঁড়ুয়া যম” বিড়ালরূপ 
ধরিয়া ময়নার সংগৃহীত উবধগুলি ভক্ষণ করিল। 

নলুয়া” যম বরহ্গনলদ্বারা শ্বেত কুয়ার জল শুধিয়া লইল। 
ছুতাশন” নামধারী যম স্থযোগ দেখিয়া! ঠিক এই সময় রাজার 
কে মরণ তৃষা জাগাইয়! তুলিল। তৃষ্ণায় অস্থির হইয়া 
রাজা জল চাহিতেই দাসীরা জল আনিবার উদ্যোগ করিল; 
কিন্তু “বুদ্ধি ব'” রাঁজাকে বুদ্ধি দিল__ময়নার হাতে ভিন্ন 
জল খাঁইও না। অমনি বাঁজা বলিয়া উঠিলেন__ 


“এমনি যদি আমার প্রাণ যাঁয় চলিয়া । 
তবু ধান্দির হাতের জল খাব না পালঙ্গে শুতিয়] ॥” 


অগত্যা জল আনিবার জন্ত সোনার ঝারি লইয়া! ময়নাকেই 
যাইতে হইল। গিয়া দেখেন রাজ-প্রাসাদের নিকটবর্তী 
কোন স্থানে বিন্দুমাত্র জল নাই, শ্বেতকুয়া পর্য্যন্ত সম্পূর্ণ শু; 
সুতরাং বাধ্য হইয়া ময়না গঙ্জাভিমুখে চলিলেন। যমদূতগণ 
প্রস্তুত হইয়াই ছিল, রাজপথে প! দিতেই তাহারা সকলে 
মিলিয়৷ রাজার হাত পা বীধিয়া বার মোকামে বার ডাঙগ 
বসাইয়৷ দিল। আর গোদ। 


“রাজার জিউ নিল লাংটিত বাদ্ধিয়!। 
সোনার ভমরা হৈল যম কায়! বদলা ইয়] ॥ 
যে মাটিতে জল ভরে ময়না হেট মুণ্ড হৈয়!। 
মাথার উপর দিয় জিউ নিগ্যাল বান্ধিয়! ॥৮ 


ময়ন! নীচের দিকে মুখ করিয়া জল ভরিতেছেন গোদ! যম 
অ্রমরের রূপ ধরিয়া যে আকাশ পথে উড়িয়া যাইতেছে 
তাহা! তিনি দেখিতে পান নাই। কিন্তু সে গঙ্গাদেবীর দৃষ্টি 
এড়াইতে পারিল না। ভ্রমররূপী গোদাকে দেখিয়াই গঙ্গা 


বুঝিতৈ পাঁরিলেন যে মাণিকটাদের প্রাণ লইয়া সে 

পলাইতেছে । তখন গঙ্গা ময়নাঁকে ডাকিয়া বলিলেন-_ 
“ওগো মা, যার জন্তে জল ভরে। তুমি হেট মুণ্ড হৈয়া 
সে তোর ছুলাল স্বামী গেল পার হৈয়া ॥৮ 


ইহা গুনিয়াই ময়না চমকিত হইয়! কপালে করাঘাত করিতে 
লাগিলেন । তাহার শীর্ষের সিন্দ,র এবং হন্তের শঙ্খ মলিন 
হইয়া আসিল। জল আনিবার জন্ত কেন স্বামীকে ত্যাগ 
করিয়া আসিলাম-_এই বলিয়া তিনি অনুতাপ কঙ্চিতে 
লাগিলেন। হায় হায় মুহুর্তের তুলে স্বামীকে চিরজীবনের 
মত হাঁরাইলাম। পথে বাহির হইবার পূর্বে কেন ভাবিয়। 
দেখি নাই যে রাজার মরণ পিপাসা আর কিছু নয়, যমেরই 
ছলন! মাত্র? এই ভাবে পতিশোকে কাতর হইয়া ময়না 
কিছুক্ষণ রোদন করিলেন কিন্তু অগৌণেই তাহার সংজ্ঞা 
ফিরিয়া আসিল, মনে মনে ভাবিলেন--এ আমি কি 
করিতেছি? শোকে অভিভূত হইয়া! অনর্থক কালক্ষেপ 
করিতেছি কেন? যতক্ষণ নিজের প্রাণ আছে ততক্ষণ 
পতির প্রাণের আশা বিসর্জন দিব না । স্বামীকে বাচাইবার 
জন্য আমর সকল শক্তি প্রয়োগ করিব। এতদিন ধরিয়া 
কি সাধনা করিলাম আজ তাহার পরীক্ষা হইবে। এই 
বলিয়া ময়ন! যমাঁলয়ের অভিমুখে যাত্রা করিলেন। কিছুদূর 
অগ্রসর হইতে না হইতেই দেখিলেন সম্মুখে এক বৃহৎ নদী । 
সে নদী গ্রস্থে এত বড় যে একবার খেয়া দিতে হইলে অন্তত 
একবৎসর সময় লাগে । নৌক1 করিয়! যাইবারও উপায় 
নাই। এমন শ্োত যে এক খণ্ড তণ পড়িলে শতখণ্ড 
হইয়া যাঁয় তাহার উপর 


“এক এক ঢেউ উঠে পর্বতের চূড়া” 


মহাজ্ঞানের অধিকারীর পক্ষে এই সকল বাঁধা অতি তুচ্ছ। 
গুরু স্মরণ করিয়া! এবং ধর্মদেবের নাম লইয়। ময়নামতী 
অবলীলাক্রমে নদী পার হইয়া গেলেন। মন্ত্রগ্রভাবে পথের 
সকল বাঁধা অতিক্রম করিয়া রাঁণী যখন যমপুরীতে উপস্থিত 
হইলেন তখন সেখানকার সকলে ভয়ে নিজ নিজ ই&্টদেবের 
নাম ম্মরণ করিতে আরম্ভ করিল। গোঁদা যম নিশ্চিন্ত- 
মনে অন্তঃপুরে বসিয়াঁছিল, ময়নার আগমন-সংবাঁদ পাইয়া 


“হাতে মাথে গোদাষম কাপিয়া উঠিল ।৮ 
বিপদ আসন্ন দেখিয়া গোঁদা প্রাণ ভয়ে একটা! খড়ের ত্য.পের 


২০০০০ 


অন্তরালে লুকায়িত হইয়া রহিল । ময়না জ্ঞানদৃষ্টির ঘারা তাহা 
দেখিতে পাইয়া সর্পরূপ ধারণ করিলেন । 

ণ্ট্যাঁদা বোড়। হইয়! ময়না! এক ঝম্প দিল। 

চটকি যাইয়! গোদা যমের ঘাড়েতে বসিল ॥৮ 


গোদা! উপায়ান্তর না দেখিয়! মৃষিকরূপ ধারণ করিয়া গতের 
মধ্যে আত্মগোপন করিল। কিন্তু ময়নার হাতে নিস্তার 
নাই, তিনিও বিড়ালয়প পরিগ্রহ করিলেন। গোঁদাষম 
ষেরূপই গ্রহণ করে, ময়না ততক্ষণাঁৎ তাঁহার ভক্ষকের 
আকৃতি ধারণ করেন। অবশেষে গোদার আত্মরক্ষার 
সকল চেষ্টা নিক্ষল করিয়া! ময়না তাহাকে ধরিয়া! ফেলিলেন। 
তাহার পর সে কি শাস্তি! হাতপাচর্স রজ্জু দিয়! বীধিয়! 
তাহার মুখে ঘোড়ার লাগাম পরাইয়া 


“এক লন্ দিয়! গোদাঁর পিঠেতে চড়িল। 
লোহার মুদগর দিয়া ভাঙ্গাইতে লাগিল |” 


গ্রহারে জর্জরিত হইয়! গোদ্াযম উচ্চৈম্বরে রোদন আরম্ত 
করিল কিন্ত ময়নার হাত হইতে পরিত্রাণ করিবে কে? 
গোদার চীৎকারে স্বর্গ মত্য পাতাল কীপিয়া উঠিল কিন্ত 
কেহ সাহস করিয়া তাহার নিকটে আসিল না; তখন স্বয়ং 
মহাদেব আসিয়া নানা প্রবোধবাক্যে ময়নাকে শান্ত 
করিয়া বলিলেন যে, রাজার আযুফ্ষাল ফুরাইয়৷ যাঁওয়ায় 
দেবতাগণের আদেশেই গোদাযম তীহার প্রীণপুরুষকে আনয়ন 
করিয়াছে । ইহাতে তাহার কোন অপরাধ নাই এবং 
বিধাতৃ-নির্দিষ্ট কর্মে বাঁধা দেওয়! তীঁহার মত জ্ঞানসম্পনা 
নারীর পক্ষে সঙ্গত নয়। তাহার পরামর্শে গোদাষমকে 


ভান্লব্তব্্থ 


[ ২৮শ বর্--২য খখ-৫ম সংখ্যা 


দণ্ড না দিয়া ময়নামতী বরং তাহাকে মুক্তি দিন। তাহা 
হইলে দেবতাগণ সন্তষ্ট হইয়া তাহাকে আশীর্বাদ করিবেন। 

ময়ন! বুঝিলেন বিধাতৃনির্দেশ অন্তথা করা অসম্ভব। 
সুতরাং মহাদেবের উপদেশ অনুযায়ী গোদাকে ছাড়িয়। 
দিলেন। দেব তীগণও সন্ধষ্ট হইয়। আশীর্বাদ করিয়া ময়নাঁকে 
বিদায় দিলেন। 

ময়নামতী যখন রাজবাঁটা ফিরিয়া আসিলেন তখন 
মাণিকচন্দ্রের পতীগণ এবং জ্ঞাতিবর্গ শোকে মুহমান হইয়া 
মৃতদেহ বিরিয়া বসিয়া আছেন। তখনও পর্যন্ত সৎকারের 
কোন উদ্যোগ আয়োজন হয় নাই। ময়না! আসিয়াই 
লোকজন ডাঁকাইয়া শব তুলিবার ব্যবস্থা করিলেন। 
কীর্তনিয়াগণ নামগান করিতে লাগিল, হরিধ্বনি সহকারে 
মাণিকাদের মুতদেহ গঙ্গাতীরে আনীত হইল। ময়নার 
অনুরোধে গঙ্গাদেবী মাঝদরিয়ায় বালুচর করিয়। দিলেন। 
সে বালুচরে চিতাশয্যা প্রস্তুত হইলে মাণিকচন্দ্রকে তদুপরি 
শায়িত করাইয়! সাঁধবী ময়না স্বয়ং তাহার পার্থে শয়ন 
করিলেন। জ্ঞাতিগণ চিতাঁর চতুষ্পার্থে চন্দন কাঠ স্তপাকার 
করিয়! সাজাইয়। তাহার উপর ঘ্বৃত তৈল প্রভৃতি সহজ দাহ 
পদার্থসমূহ ঢালিয়া দিয়া দুরে সরিয়া আসিল। ময়নামতী 
তখন সকলের নিকটে শেব বিদায় প্রার্থন৷ করিয়া স্বহস্তে 
চিতায় অগ্নি সংযোগ করিলেন, দাউ দীউ করিয়! আগুন 
জ্বলিয়। উঠিল। সাত দিন সাত রাত্রি ধরিয়া চিতা জলিল, 
মধ্যের ধুম স্বর্গে পৌছিল। এই হুতাশনের তাগবলীল৷ 
দেখিতে দেখিতে লোকে আহার নিদ্রা ভুলিয়া! গেল। 

( আগামীবারে সম(প্য ) 


কবিতা 


ভ্রীমতী ছায়! বন্দ্যোপাধ্যায় 

কর্মময় দিবসের তীব্র কোলাহলে আনি জরা, ব্যাধি, মৃত্যু, উলঙ্গ তিক্ততা 
উন্ত্ত ব্যস্ততা লয়ে লোক দলে দলে ব্যথ মৌন ধরা বুকে অসহ রিক্ততা। 
চলে শুধু স্বার্থে স্বার্থে বাধায়ে সংঘাত-_ তবু ত বেসেছি ভাল এ ধরার ধূলি £ 
নীচতা, বঞ্চনা, ঈর্ষা আসে অকম্মাৎ স্নেহ, প্রেম, গ্রীতি স্পর্শে যখন অঙ্কুলি 
দর্দম, দুঃসহ বেগে । কৃষ্টি অকরুণ-_ সযত্বে মুছিয়া লয় কণ্ঠের ক্রন্দন 
মোদের দুঃথেরে নিত্য করিছে ছিগুণ ভুলি ব্যথা, প্রাণে জাগে প্রাণের স্পন্দন । 

দিনান্তের ক্লান্তি শেষে শান্ত দ্নিগ্ধ ছায়া 


ধরায় রচেছে স্বর্গ কবিতার মায়! । 





কথা__কাজী নজরুল ইস্লাম 


নুর-_প্রীনিতাই ঘটক স্বরলিপি-_কুমারী বিজলী ধর 
হ্যামা-সঙ্গীত- দীদ্রা 
মা মেয়েতে থেলব পুতুল আয় মা আমার খেলা ঘরে । 
(আমি) মা হয়ে মা শিখিয়ে দেব পুতুল খেলে কেমন ক'রে ॥ 
কাঙাল অবোধ করবি যা”রে 
বুকের কাছে রাখিস্‌ তারে (মা )। 
আখর :-_ [ নইলে কে তা”র ছুথ্‌ ভোলাবে ? 


(যারে ) রত্ব মাণিক দিবি না মা উচিত সে তার মাকে পাবে । ] 
( আবার ) কেউ বা ভীষণ দামাল হবে, কেউ থাকবে গৃহকোণে পড়ে ॥ 
মৃত্যু সেথায় থাকবে না মাঃ থাকবে লুকোচুরি খেলা 
রাত্রি বেলায় কাঁদিয়ে যাবে আসবে ফিরে সকাল বেল! । 
কাদিয়ে খোকায় ভয় দেখিয়ে 
ভয় ভোঁলাবি আদর দিয়ে (মা) 
আখর £-- [ বেশী তা”রে কীদাস্‌ ন। মা_ম! ছেড়ে সে পালিয়ে যাঁবে ] 
( সে) থেলে যখন শ্রান্ত হবে ঘুম পাঁড়াবি বক্ষে ধরে ॥, 


শা ৩ 7 ০ 
]া 1 " রসা | বগা! - ॥ গমা পা মা | গা রস - | 
মাৎ মে য়ে তে ০ থেৎ লু বৰ পু তু ল্‌ 
॥ ১ 


পি ৯ 
ঢু গা-মাপা |! সা ধণা পাছুগা পাম! | গাগা সর)? গা মা 


আয়ু মা তু আ মান থে লা ঘ রে ০৪ ** "' আ মি 
৬৬১ 


1 পা-পধামা | 
ছু *খ. ভো 


1 পা-ধা ধা] 
র ত ন 


শচান্পতন্ঞ্ধ 


সণ ধা 


য়ে মা ০ 


41] ধা ধর্পা সণ! 


শিখিৎ য়ে 


পধা মপা -স ছু ণা পধা -মপা 


থে লেৎ গ কে মণ ০ প্‌ 
ধপা মগা মা [ পা -না নস 
ডাল অ বোধ ক মনু বিৎ 


সর] রা রণ হছুসণসর্গা -রর্গ। 
কেম কা ছে রা খিণৎ *স্‌ 
- "7 7 )1 ম। -গা মা 


০. ০. ৪ ন ই লে 


রা 
মা -গা হু রা "7 7 


গা 

লা বে ০ ৩ চৈ গু 
ধা ধা -া ছু ধা ণা ধা 
মা নি কৃ দি বি না 


॥ গমা রগা-মা | পা পধা -দণধা ॥ পধা -মপধা পম 


উ চিৎ ত্‌ 


ঢু - 771]. 


৩ ৪ ও 


সে তাৎ 


০্রু মা০ ০০০ কে 


7 মাপা নু পা না না 


ৎ আ বান্ কে উ বা 


1ধনা পধা-নসা| না নসা - ঢু "7 7 7 


দা * মাও ণ্ল্‌ 


গ 


হ্‌ বেও ও গু ঙ চি 


॥পা-না সরা | -পরণ ণা ণধা হু পধা মপধা পম 


থা কৃ'বেঞ 


০ ৩ গৃ হ্‌' কো ণেণও পপ 


আসত 


[ ২৮শ বধ--২য় খণ্ড হস সংখ্যা 


[4] 
ধা পা (-গমা) ) ] 
দেব ০ ৪ 
মা গা -সরা |] 
ক রে ০০ 
নস - ঢু 
যা! রে ৩ ৩ 
সানা -পধা ] 
তা রে ০ 
পা পধা সণধা এ 
কে তাও ৩ য় 
»] পা পা 
০ যা রে 
ণধা -পমা -গা 
মাও ০ ০ 9 
গা মা গরা ॥ 
টিসি 
পা বে ০৩ 
না না -সা 
ভী ষ থণ্‌. 
-শ সননা সপ হু 
৩ কেও উ 
গমা -রগা -সরা ] 
ড় 5৬ ৪ ৬ 


বৈশাখ-_-১৩৪৮ ] 





7 সা -রারা 


মু * তৃযু 


রা -গা মা 
থা কৃ বে 
গা -পা ধা 
রা * ত্তি 


পা -ধা পধ! 
আ স্‌ বে* 
নাগ 
কা দি য়ে 
স৭-রণ র” 
ভ য় ভো 
ধস 7 -1 
মা ৩ ৩ 


পধা পমা 7 
কাৎ দা স্‌ 


ধা ধা ণা 
পা লি য়ে 
পধা পমা 
ফাণ দা স্‌ 


পা পনা - 
থে লে* * 


২ 


রা 


9 য় 


-পা পা পধা ] 


» লু কো' 


সণা ধা "শা ] 


বে লা য় 


মি 


পরা ণা ধা এ 
০ ৩ ফি রে 


না না -ধা এ 
খো কা য় 


| রণ রর্গী রস 


না না 
য থ ন্‌ 


লা বি ০ 


গো ভা শ] £ 


গা মগ 
না মাণ 


ধা ণধা -পমা 


যা বে, ৩ ৩ 


গামগা রা £ 


না মাৎ ৭ 


ধা 


বল্লরক্িস্পি 


রগা -মপা 2 মা "গা 'গর। 
সে থা 


থা কৃ বে, 


মপা 
ট্‌ৎ 


পধা পা 
রিৎ থে 


ধা ধা ণ! 
কা দি য়ে 


মা -গম। 


ভ য় দে 
সা সর্গ। -রর্গ। 
আ দ* *র 
মা গা -পমা 
বে শী ০ 


ম্পা ৭ ধা 
মা * ছে 


না -নস1 সর 
শ্রা *ন্‌ ত 


পা-নাসরণ | সর রণ -ধপাছ পধা -মপধা পা 


হত গাও 


ড়াৎ বি ও 9 


বও ৩৩৩ চষে 


স্পা 


র। রা - 
না মা ৩ 
মগা রা "7 £ 
লা ০৪ গু 
ধা ণধা -পা 
যা বে* ০ 
রগা হে - ঢু 
বেখ লা 
ধনা সা - 
খি য়ে এ 
সঙ না -পধা ছু 
দি য়ে ০০ 
পা পধা -সণধ! ছু 
তা রে*ণ ০০ 
ধা ধা - ]ু 
ডে সে ০ 
পা পধা -দণধা ছু 
ডা বে ৩০ 
- ম্য -পা 
৩ পে 6৩ 
না সখ "১ 
হ্‌ বে ০ 
মা গা -সরা 111 
ধ্‌ রে ৬ ৩ 


৬১০৪ 


অন্ধের বৌ 
প্রামাণিক বন্দ্যোপাধ্যায় 


বিবাহের একবছর পরে ধীরাজ অন্ধ হইয়া গেল। চোখের 
একটা অসুখ আছে, রড় বিপজ্জনক অস্থুখ, চোখের ভিতরের 
চাঁপ যাতে বাঁড়িয়! যায়। অবস্থাবিশেষে একদিনের মধ্যেই 
মাচুষের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হইয়া যাইতে পারে। 

' আগের দিনটা ছিল বিবাহের বার্ষিক তিথি। রান্রিটা 
ছু'জনে জাগিয়! কাটাইয়া দিয়াছিল। সারারাত কয়েক 
মিনিটের জন্তও চোখ না৷ বুজিয়া প্রতিদিন সকালে একেবারে 
হুর্য্ের মুখ ন| দেখিলেও রাত জাগাঁটা তাদের অবশ্ত বেশ 
অভ্যন্ত হইয়া আসিয়াছিল। বিবাহের প্রথম বছরে রাত 
চু'টোর আগে ফিসফিসানি শেষ হওয়াটা সাধারণ স্বামী- 
স্ত্রীর পক্ষেও স্বাভাবিক নয়। 

চোঁথে একটু যন্ত্রণা বোধ করিতেছিল, ধীরাজ একটু 
যাঁপস! দেখিতেছিল। বাহির হইতেও চোখ ছুটিকে তার 
রেশ লাল দেখাইতেছিল। কিন্তু বিবাহের বাধিক তিথিকে 
ধাযোগ্য সম্মান করার উৎসাহে ওসব সামন্ত বিষয়কে 
তাঁর! গ্রাহও করে নাই। নয়ন! বলিয়াছিল, “তাই বলে 
আজ রাতে ঘুমৌতে পাবে না । কাল সারাদিন ঘুমিও, সব 
ঠিক হয়ে যাঁবে। আমারও তো! চোখ জাল! করছে ।, 

“তবে একটু সেইরকম নাচ দেখাও ? 

“চোখ বোজো ? 

পরদিন বিকাঁলের দিকে ডাক্তার ডাকা হইল। তারপর 
ভাড়াহুড়া ছুটাছুটি করিয়। করা হইল অনেক কিছুই । কিন্ত 
তখন বড় বেশী দেরী হইয়া গিয়াছে। ভোরে হুনয়নার 
হাত ধরিয়। ছাঁদে দীড়াইয়া নৃতন হুর্যযকেও বীরাজ যখন 
ঝাঁপনা দেখিতেছিল তথন সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা করিলেও হয় 
তে! কিছু হইতে পারিত। কিন্তু তখন কে ভাবিয়াছিল 
টকটকে লাল চোখ, চোঁথের যন্ত্রণা, ঝাপস! দেখা, চোখের 
মধ্যে আলোর ঝলক মার! এসব ধীরাজের একেবারে অন্ধ 
হুইয়! যাওয়ার ভূমিকা ! ওসব তার! পরম্প্রকে ভালবাসিয়া 
রাতজাগার সাঁধারণ ও ম্বাভাবিক লক্ষণ বলয়] ধরিয়! লইয়া 
নিশ্চিন্ত হইয়াছিল। 

বিশেষজ্ঞ অনেক রকম পরীক্ষ। করিলেন, কিস্ত অপারেশন 


করিতে অস্বীকার করিলেন। বলিলেন, আর কিছুই 
করিবার নাই। 

পরদিন সকালে জগতের আলোর উৎস যথাসময়ে 
আকাশে দেখা দিল কিন্তু ধীরাজ সেটা টেরও পাইল না। 
তাঁর চোখের আলো চিরদিনের জন্ত নিভিয়া গিয়াছে। 

চোখের ডাক্তার স্পষ্টই বলিয়া দিয়াছেন, রাত জাগা 
ধীরাজের অন্ধ হওয়ার আসল কারণ নয়। রাত না 
জাগিলেই অবস্ত ভাল ছিল, কিন্তু তাতেও যে ধীরাজের 
চোখ বাঁচিত তাই বা জোর করিয়া কে বলিতে পারে? 
এ বড় সাংঘাতিক অন্থথ, কত লোকের চোঁখ নষ্ট করিয়া 
দিয়াছে। কিন্তু মানুষের মন কি সহজে এসব যুক্তি মানিতে 
চায়? স্থুনয়নার কেবলি মনে হয় ওভাবে জোর করিয়া 
স্বামীকে রাত না জাগাইলে চোখের অন্থখটা কখনও এত 
তাড়াতাড়ি এরকম বাড়িয়া যাইত না। অন্তত রোগের 
লক্ষণগুলিকে রাঁত জাগার ফল ভাবিয়া! নিশ্চয় তাঁর! অবহেলা 
করিত না, সকালবেলাই চোখের অবস্থা দেখিয়া ভয় পাইয়া 
তাড়াতাড়ি চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হইত। ুনয়ন| এসব 
কথা ভাবে আর চোখের জলে সকালবেলার আলে! এমন 
ঝাঁপস। দেখায় যেন সেও আধাআধি অন্ধ হইয়! গিয়াছে । 

সেই ঝাপসা দৃষ্টিতে স্বামীর বিরুত মুখখানা দেখিতে 
দেখিতে সে হাউ হাউ করিয়! কাঁদিয়া ফেলিল, “ওগো, 
আমার জন্তেই আমাদের এ সর্বনাশ ঘটল |, 

ধীরাজ মরার মত বলিল, “তোমার কি দোষ? 

স্থুনয়না সজোরে নিজের কপালে করাঘাত করিয়া 
বলিল, কোর দোষ তবে? কে তোঁমার টকটকে লাল 
চোখ দেখেও তোমায় ঘুমোতে দেয় নি? সকালে কে 
তোমায় বলেছে, একটু ঘুমোলেই সব সেরে যাবে? আমি 
তোমার চোথ নষ্ট করেছি--শ্বামীর চোথখাণী হতভাগী 
আমি, আমার মরণ নেই। আমিও অন্ধ হয়ে যাব--নিজের 
চোঁখ উপড়ে ফেলব। যদিন! উপড়ে ফেলি, মা কালীর 
দিব্যি কয়ে বলছি--, 

চুপও ওসব বলতে নেই।» 


৬৪ 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


ধীরাঁজ ব্যস্ত হইয়| স্থুনয়নার একখান! হাত হাতড়াইয়া 
খুঁজিতে আরস্ত করায় সুনয়না হঠাৎ শিহরিয়া৷ অন্ফুট 
আর্তনাদ করিয়া উঠিল। ধীরাঁজের কাকা অন্ধ, প্রথম 
এবাড়ীতে আসিয়া তাকে প্রণাম করার পর এমনিভাবে 
আন্দাজে তাঁর গায়ে মাথায় শীর্ণ হাত বুলাইয়া! কাঁকা তাকে 
অভ্যর্থনা আর আশীর্বাদ জানাইয়াছিলেন। 

“কি খুজছ? কি খু'জছ তুমি? 

“তোমার হাত কই ?, 

“এই যে 

তার একটি হাত নিজের হাতের মধ্যে গ্রহণ করিয়া 
ধীরাজ পাত্বনার স্থরে বলিতে লাগিল, “ওসব কথা মনেও 
এনে না। তোমার চোখ গেলে আমি বাঁচব কি করে? 
এখন থেকে তোমার চোখ দিয়েই তো! আমি দেখব? 
তুমি আমার সেবা করবে, কাজ ক'রে দেবে, বইটই 
পড়ে শোনাবে-_” 

স্থনয়নার হাত ছাড়িয়া দিয়! ধীরাজ তাঁর মাথায় হাত 


বুলাইয়া দিতে থাকে । স্থুনয়নার মাথাটা হঠাৎ এমন; 


জোরে তার বুকে আসিয়া পড়িয়াছে যেন সে তার বুকেই 
মাথা কুটিয়! মরিতৈ চায়। যে অন্ধ হইয়া গিয়াছে, 
সাত্বনা আর সাহস পাওয়ার ব্দলে সে নিজেই অপরজনকে 
বুঝাইয়া আদর করিয়া শাস্ত করিতেছে, এটা দু'জনের কারও 
কাছে খাপছাঁড়া মনে হইল না। ভালবাসার এই অন্ধ 
ব্যাকুলতার মত দুর্ভাগ্যের ভাল ওষুধ জগতে আর 
কি আছে? 

ধীরাজ বেশী ব্যাকুল হয় নাই। কতকটা বদ্রাহত 
মানুষের মত সে বিছানায় পড়িয়া আছে, মুখে বেশী কথা 
নাই, অদৃষ্টকে ধিকার দেওয়া নাই, কি পাপে তার এমন 
শান্তি জুটিল ঈশ্বরের কাছে সে কৈফিয়ৎ দাবী করা নাই, 
লোভী শিশুর মত সকলের সহানুভূতি গিলিবাঁর অধীর 
আগ্রহও নাই। এখনও সে নিঃসন্দেহে বিশ্বাস 
করিয়া উঠিতে পারে নাই, চিরদিনের জন্য সে অন্ধ হইয়া 
গিয়াছে । মনের তলে এখনও তার একটা যুক্তিহীন 
অন্ধ আশা জাগিয়া আছে, হয় তে! সব ঠিক হইয়া যাইতে 
পারে। ইতিমধ্যেই স্থনয়নাকে সে বলিয়াছে, «ত| ছাড়া 
কি জান, কিছুদিন পরে হয় তো৷ একটু একটু দেখতে পাব। 


অন্হেল 


৬৩৬ 


ধোয়াটে ঝাপসা মত কাছের জিনিষ শুধু দেখতে পাক 
তবু দেখতে পাব তো! খুব বড় একজন স্পেশালিস্টেয় 
কাছে যেতে হবে । 

ধীরাজের মধ্যে যতখানি হতাশা জাগা উচিত ছিল; 
ধীরাজের কাছে আমল না৷ পাইয়া তাঁর সবখাঁনি যেন আশ্রয় 
করিয়াছে স্থনয়নাকে--আর সমস্তক্ষণ কাবু করিয়! রাখিয়াছে 
তাকে) ধীরাজের আফসোস আর হা-হুতাশ যেন মুক্তি 
পাইতেছে তার মুখে। 

পরপর ছু”টি রাত্রি সে ঘুমায় নাই। একটি রাত্রি 
জাগিয়াছে স্বামীর সোহাগ ভোগ করিয়া, আর একটি র্রাত্তি 
জাগিয়াছে অন্ধ স্বামীর স্ত্রী হইয়া জীবন কাটানোর বীভৎস 
অন্বিধাগুলির কথা কল্পনা করিয়া! । সারারাত সে আলো 
নিভায় নাই। প্রথম রাত্রে তারা আলে নিভায় নাই, 
দুজনে দু'জনকে দেখিবে বলিয়া । পরের রাত্রে সে আলো 
নিভীয় নাই, অন্ধকারের ভয়ে। হাসপাতাল হইতে ধীরাজ 
বাড়ী ফিরিয়াছিল রাত্রি প্রায় এগারটার সময, শ্রাস্ত ক্াস্ত, 
ঘুমের নেশায় আচ্ছন্ন, অন্ধ ধীরাজ। একবাটি ছুধ চুমু 
দিয়া খাইয়াই সে শুইয়া পড়িয়াছিল। শুইয়। পড়িতে 
তাকে সাহীষ্য করিয়াছিল বাড়ীর প্রায় সকলে, মা বাবা 
ভাই বোন পিসী খুড়ী ভাইপো ভাইঝি ভাগ্নে ভান্মীর দল। 
বাড়ীর ঠাকুর চাকর পধ্যস্ত দরজায় আসিয়! গ্লাড়াইয়াছিল। 
শুধু আসে নাই ধীরাজের সেই অন্ধ কাঁকা। ধীরাজের মায়ার 
মৃদু কারার শব্দ শুনিতে শুনিতে তখন সুনয়নার কানের মধ্যে 
হঠাৎ ভাঙা! কাপির বেতাল আওয়াঁজের মত কি যেন ঝম্‌ 
ঝম্‌ করিয়1 বাঁজিয়া উঠিয়াঁছিল, বিদ্যুতের আলোয় উজ্জল 
ধঘরখান! পাক খাইয়া খাইয়! হইয়! গিয়াঁছিল অন্ধকার । 

মচ্ছা নয়, মুচ্ছা গেলে সুনয়ন! পড়িয়৷ যাইত, জ্ঞান 
থাঁকিত না। একটু টলিতে থাকিলেও সেইধানে দ্াড়াইয়া 
দাঁড়াইয়া সে প্রায় মিনিটখাঁনেক চোখ দিয়াই যেন সেই 
গাড় সাযাতসে'তে অন্ধকার দেখিয়াছিল। কানের মধ্যে তখন 
ভাঙ্গ৷ কাসির বমঝমানির শব্ধ থামিয়! গিয়াছে । বাহিরেও 
কোন শব্ধ নাই। সেই স্তন্ধতাকেও সুনয়নার মনে হইয়াছিল 
সাময়িক অন্ধকারের অঙ্গ । 

তারপর সেই নিবিড় কালো! অন্ধকার পরিণত হইয়াছিল 
গাঢ় কুয়াশায় এবং ক্রমে ত্রমে কুয়াশাও কাটিয়া! গিয়াছিল। 
সকলের কথার গুঞ্জনধ্বনি হঠাৎ স্পষ্ট ও বোধগম্য হইয়া 


২২১০ ও 





উঠিয়াছিল। কিন্তু এক অজানা আতঙ্কে তখন দ্ুনয়নার 
বুকের মধ্যে টিপ. টিপ. করিতেছে । সে আতঙ্ক ধীরাজের 
চোখের জন্ত নয়__চোঁথ যে তার নষ্ট হইয়া গিয়াছে হুনয়না 
আগেই সে খবর পাইয়াছিল। অন্যমনস্ক অবস্থায় হঠাৎ 
কানের কাছে প্রচণ্ড একটা "আওয়াজ হুইলে কিছুক্ষণের জন্ঠ 
মানুষ যেমন বেহিসাবী আতঙ্কে অতিভূত হইয়! যাঁয়, কি জগ্ঠ 
আতঙ্ক তাও বুঝিবার ক্ষমতা থাকে না' চিন্তাশক্তি ফিরিয়া 
আসিবার পরেও সথনয়না অনেকক্ষণ পর্য্যন্ত সেইরকম একটা 
আতঙ্ক অনুভব করিয়াছিল । 

তাকে চমক দিয় বাস্তবে টানিয়! আনিয়াছিল ঘর থালি 
হওয়ার পর ধীরাঁজের অস্দুট প্রশ্ন £ “আলে! নিভাঁলে না? 

এ প্রশ্ন স্থনয়ন! অনেকবার গুনিয়াছে। শোয়ার আগে 
আলে! নিভাঁইতে তার গ্রীয়ই খেয়াল থাঁকে না, ধীরাজ মনে 
পড়াইয়া দেয়। এই পরিচিত সাধারণ প্রশ্নটি শুনিয়া 
আকস্মিক উত্তেজনায় তাঁর দম যেন আটকাইয়! আসিয়া- 
ছিল। ধীরাজ কি তবে ঘরের আলে! দেখিতে পাইতেছে ! 

“তুমি আলো দেখতে পাচ্ছ?” 

ধীরাজ সাড়। দেয় নাই। তখন স্ুনয়না বুঝিতে 
পারিয়াছিল। ঘুমের ঘোরে অভ্যাসবশে ধীরাজ ওকথা 
বলিয়াছে। ঘরে আলো! জালানো৷ থাক্‌ বা নিভানে৷ হোক, 
ধীরাজের কাছে সব সমান । 

বুকের অস্বাভাবিক টিপটিপাঁনি কমিয়! তখন স্বাভাবিক 
কান্না বুকের ভিতর হইতে ঠেলিয়৷ উঠিয়াছিল, কিন্ত 
বীরাজের ঘুম ভাঙ্গিয়া যাওয়ায় ভয়ে প্রাণ খুলিয়া সে 
কাদিতেও পারে নাই। 

তারপর কখনও সন্তর্পণে বিছানায় উঠিয়া কিছুক্ষণ শুইয়া 
থাকিয়। আবার নামিয়া আসিয়া, কখনও একদৃষ্টিতে ঘুমন্ত 
স্বামীর মুখ দেখিয়া, কখনও জানালার শিক ধরিয়া পাঁশের 
বাড়ীর উঠানে আবছা! টাদের আলোয় চেন! জিনিবগুলিকে 
নূতন করিয়া চিনিবার চেষ্টা করিয়া__আর সমস্তক্ষণ আঁকাঁশ- 
পাতাল ভাবিয়া সে রাত কাটাইয়াছে। ঘরের আলো 
নিভানোর কথা একবারও আর মনে পড়ে নাই। 


বেলা বাঁড়িলে কয়েকজন গ্রতিবেণী দেখ! করিতে এবং 
ছুঃখ জানাইতে আসিলেন। আগে সুনয়না ঘর ছাড়িয়া 
চলিয়! ধাইত, আঁজ সে উদ্ধতভাবে বিছানার কাছ হইতে 


স্কাস্ব্ন্ব্ 


[ ২৮শ বর্ষ খণ্ড .-€ম সংখ্যা 





শুধু একটু তফাতে লরিয়! দীঁড়াইল। এই সামান্ত ব্যাপারে 
তায় এমন বিরক্তি বোধ হইতে লাগিল যে বলিবার নয় । সম- 
বেদনার গান্তীষ্যে বিকৃত সকলের মুখ দেখিয়া আর অর্থহীন 
ভদ্রতার মিঠ৷ মিঠা কথ! শুনিয়া গাঁয়ে যেন তার আগুন ধরিয়া 
যাইতে লাগিল। একজন অকালবৃদ্ধ সবজাস্তা ভদ্রলোক 
যখন অদ্ভুত একটা আফসোসের শব্ধ করিয়া বলিলেন যে 
এলোপ্যাথি ন! করিয়। হোমিওপ্যাথি করিলে হয় তো উপকার 
হইত, তথন বাঁধিনীর মত তার উপর ঝাীঁপাইয়া পড়িয়া 
আচড়াইয়। কামড়াইয়া তাকে ঘরের বাহির করিয়া দেওয়ার 
ইচ্ছাটা দমন করা কাল রাত্রে কান্না! চাঁপিয়! রাখার চেয়েও 
সুনয়নার কঠিন মনে হইতে লাগিল । 

হঠাৎ সে শুনিতে পাইল-_তার গলার আওয়াজে তারই 
মনের কথা কে যেন উচ্চারণ করিতেছে ;: “আপনারা 
এখন আল্গুন, উনি একটু বিশ্রাম করবেন।, 

সকলে আহত বিস্ময়ে তাঁর এলোমেলো চুল, ক্লিট মুখ 
আর বিস্ফারিত চোথের দিকে তাকায় । ধীরাজ ভদ্রতার 
খাতিরে বিছানায় উঠিয়া বসিয়া বিনয়ের হাসি হাসিবার 
চেষ্টা করিতেছিল, তার মুখের হাঁসি মিলাইয়া যায়। 

সকলের আগে কথ! বলেন অকালবৃদ্ধ ভদ্রলোঁকটি £ 
চলো! হে চলো, আপিসের বেলা হ'ল ।” 

ধীরাজের ছোট ভাই বিরাজ সকলকে সঙ্গে করিয়! ঘরে 
আনিয়াছিল, সকলে চলিয়া! গেলে সে বলিল, “তুমি সকলকে 
তাড়িয়ে দিলে বৌদি !” 

ধীরাজ ভৎসনার স্থরে বলিল, “তোমার কি মাথ। খারাপ 
হয়ে গেছে? 

সুনয়না উদ্ত্রান্তভাবে ৰী হাতের বুড়া আঙ্গুল দিয়া নিজের 
কপালটা. ঘষিতে থাকে, কথা বলে না। বিরাজ বছর 
তিনেক ডাক্তারি পড়িতেছে, সথুনয়নার মূর্তি দেখিয়া! এতক্ষণে 
তাঁর খেয়াল হয়, হয় তো৷ তার অন্ুথ করিয়াছে । 

“তামার অন্ুখ করেছে নাকি বৌদি ? 

স্থনয়ন! মাথ! নাড়িয়া ঘরের বাহিরে চলিয়া গেল। একটু 
পরেই বিরাজ গিয়! খবর দিল, দাঁদ! ডাকছে বৌদি।, 

ঘরে ফিরিয়া গিয়া ধীরাঁজের পরিবর্তন দেখিয়া! জুনয়না 
স্মিত হইয়া! গেল। কয়েক মিনিটের মধ্যে তার মুখখানা 
ন্ত্রণায় বিকৃত হইয়া গিয়াছে, ডান হাতে সে নিজের চুলগুলি 
সজোরে মুঠা করিয়া ধরিয়া! আছে। 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 





সুনয়না! সভয়ে জিজ্ঞাস! করিল, “কি হয়েছে & 

ধীরাঁজ অস্বাভাবিক চাঁপা গলায় বলিল, “তোমার অন্ুখ 
করেছে তো? আমি টেরও পাইনি! বিরাজ না বললে 
জানতেও পারতাম না। এবার থেকে তোমার অন্ুখ করবে, 
আর আমি না জেনে তোমায় খাটিয়ে মারব বকব-_ 

স্থনয়ন! চুপ । কি বলিবে সে? তার কি বলিবার আছে? 
জীবন আর এখন জীবন নয়, নিছক নাটক। লাগসই 
অভিনয় করিতে সে তো কোনদিন শেখে নাই । 

ধীরাঁজ হঠাঁৎ যেন আর্তনাদ করিয়। উঠিল “ঠকাও, 
ঠকাঁও, তুমিও আমায় ঠকাও। চোখে তো দেখতে পাই 
না, যা ইচ্ছা তাঁই বলে কচি ছেলের মত ভুলাও আমাকে 1 
বলিয়া ধীরাঁজ কাদিতে আরম্ভ করিয়া দিল। 

আগের মত শাস্তভাবে ধীরাজ কথাগুলি বলিলে স্ুনয়না 
হয় তে! তার পাশে বিছানায় আছড়াইয়! পড়িয়। কাদাকাটা 
আরম্ভ করিয়া দ্বিত। ্বামীর ব্যাকুলতা আর কান্না 
দেখিয়|! নিজেকে সে সংযত করিয়া ফেলিল। ধীরে ধীরে 
পাশে বসিয়! স্বামীর মাথাটি বুকে চাপিয়া ধরিয়া কয়েকঘণ্টা 
আগে ধীরাজ যেভাবে তাঁর মাথায় হাত বুলাইয়৷ তাঁকে 
সাস্বনা দিয়াছিল তেমনিভাবে এখন তার মাথায় হাত 
বুলাইয়া দিতে দিতে বলিল ণওরকম কোরো না । পাগল 
হয়েছ, তোমায় ঠকাঁব? ঠাকুরপোর কি কাওজ্ঞান আছে? 
ভাবনায় চিন্তায় রাত জেগে মুখ একটু শুকনে! দেখাচ্ছে, 
ওম্নি ঠাকুরপো! ধরে নিল আমার অসুখ হয়েছে। অস্থথ 
হ'লে তোমায় বলব না? 

€কিস্তু বিরাজ যে বলল তোমার নার্ভাস নি 
উপক্রম হয়েছে ? 

'ঠাকুরপো তো মস্ত ডাক্তার ! 

এমন সময় আসিলেন পিসীমা। সুনয়নার দিকে কেউ 
নজর দিতেছে না বলিয়! বিরাজ বোধ করি বাড়ীর সকলকে 
একটু খোঁচাইয়। দিয়াছিল; ঘরে টুকিয়াই পিসীম! বলিতে 
আরম্ভ করিলেন; 'নাওয়! নেই খাওয়া নেই, তুমি কি 
আরম্ত ক'রে দিয়েছ বৌমা? কাল থেকে উপোস দিচ্ছ, 
এয়োস্্রী মানুষ__ 
. পিসীমার পিছনে পিছনে কাকীমাও আঁসিয়াছিলেন 
তিনি তাড়াতাড়ি বলিলেন, “আহা, থাক্‌ থাক। এসো 
বৌমা, একটু কিছু খেয়ে নেবে এসো? 


অন্েল্প 





২৬০ 





কাকীমা একটু গম্ভীর চুপচাঁপ মানুষ, কারও সঙ্গে 
বেণী মেলামেশা! করেন না । এতদিন মানুষটাকে দেখিসেই 
সুনয়নার বড় মায়! হইত, মনে হইত, আহা দশ-বাঁর বছর 
বেচারী অন্ধ ম্বামীকে লইয়া, ঘর করিতেছে । আজ 
কাকীমার শাস্ত কোমল মুখখানা দেখিয়া তার গভীর 
বিতৃষ্ণ বোধ হইতে লাগিল ; আস্তরিক মমতাভরা কথাগুলি 
গুনিয়া মনে হতে লাগিল, সুযোগ পাইয়! তাকে যেন কাকীমা 
ব্যঙ্গ করিতেছেন। পিসীমার মৃদু ভৎ“সনার প্রতিবাদ করিয়া 
যেন ইঙ্গিতে বলিতেছেন, আহা থাক থাঁক, ওকে আপনি 
বকবেন না? ও এখন আমার দলের । 

একটু আগে সুনয়না হয় তো৷ নিজেকে সাঁমলাইতে না 
পারিয়! প্রতিবেশী ভদ্রলোকদের মত গুরুজন দু*জনকে 
অপমান করিয়া বসিত। কিন্তু ধীরাজের আকম্মিক 
উদ্‌ত্ান্তভাব তার সমস্ত সঙ্গত ও অসঙ্গত উচ্ছ্াসের বাঁছির 
হওয়ার পথ তখনও বন্ধ করিয়! রাখিয়াছিল। একটু ঘোমটা! 
টানিয়া দিয়া সে নীরবে কাকীমার সঙ্গে চলিয়া গেল। 


একবার ভাঙ্গিয়! পড়িয়াই ধীরাজের ধৈর্য আর সংযম 
যেন নষ্ট হইয়া গেল। এতক্ষণে সে যেন টের পাইয়াছে 
তার চারিদিকে যে অন্ধকার নামিয়া আসিয়াছে সেট! 
রাত্রির সাময়িক অন্ধকার নয়, ভাগ্যের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত । 
কখনও দুঃখে সে একেবারে মুষড়াইয়া পড়িতে লাগিল, 
কখনও অধীর হইয়! ছটফট করিতে লাগিল। মা একবার 
ছেলেকে দেখিতে আসিয়া ছেলের অবস্থা দেখিয়া! দীঁড়াইতে 
পারিলেন না, চোখে আচল দিয়! পলাইয়া গেলেন। বাড়ীর 
সকলে আসিয়া নানাভাবে তাকে শান্ত করিবার চেষ্টা করিল, 
কিন্তু তাতে সে যেন আরও অশান্ত হইয়! উঠিতে লাগিল । 

সব কথার জবাবে গুমরাইয়। গুমরাঁইয়! কেবলি বলিতে 
লাগিল, অন্ধ হয়ে বেঁচে থেকে কি হবে, এর চেয়ে মরাই ভাল। 

ধৈর্য আর সংযম দেখা দিল সুনয়নার মধ্যে। মনের 
সমস্ত অবাধ্য ও উচ্ছৃঙ্খল চিন্তাকে সে যেন জোর করিয়া 
মনের জেলে পুরিয়া ফেলিল, বাহিরে আর তাদের অন্যিত্ের 
কোন চিহুই প্রকাশ পাইল না। ছুঃজনের দ্রুত পরিবর্তন 
দেখিয়া মনে হইতে লাগিল, তাঁরা যেন পরামর্শ করিয়া 
পরস্পরের মানসিক অবস্থাকে অদলবদল রুরিয়৷ লইয়াছে। 
ধীরাজ বতক্ষণ শান্ত ছিল ততক্ষণ পাগলামী করিয়াছে 


৩০৬ 


সুনয়না, এবার ধীরাজকে পাগল হওয়ার স্থযোগ দিয়' 
সুনয়না আত্মসন্বরণ করিয়াছে । 
কারও বলার অপেক্ষা না রাখিয়া প্লান করিয়া ছুনয়না 
দু'টি ভাত খাইল। গুরুজনদের কাছে প্রয়োজনীয় লক্জা 
বঙ্গায় রাখিয়া চলিতে লাগিল । নীরবে সকলের স্নেহাত্মক 
সমবেদনার উচ্ড্বাসভর! অসহ্য কথা শুনিয়। গেল। আর 
প্রন্ভি মুহূর্তে অনুভব করিতে লাগিল, ভিতরের বন্দী 
ব্যাকুলতা আর উচ্দ্বীস ক্রমে ক্রমে যেন ফুলিয়া ফাপিয়া 
উঠ্িতেছে। 
বিকালে থাকিতে না পারিয়া সে পলহিয়া গেল 
ছাতে। সেখানে অনায়াসে নিজের মনে পাগলের মত 
বত ইচ্ছা কাদাকাঁটা করিয়া আর গুড়া শ্যাওলার ধুলাতে 
গড়াগড়ি দিয়া ভিতরে আটকানে! প্রচণ্ড আবেগকে সে 
কতকটা হাক করিয়া ফেলিতে পারিত। কিন্তু নির্জনে 
হিস্টিরিয়াকে প্রশ্রয় দিতে মেয়েদের ভাল লাগে না। মালুষের 
সামনে যে অন্ধ উচ্্বীস বাহিরে আসিবার জন্য দুরস্তপন! 
আরম্ভ করে, নির্জনে সেটা রূপান্তরিত হয় উদত্রান্ত 
কল্পনায়। কিছুদুরে পুরানো একটা বাড়ীর পিছনে সৃর্ধ্য 
আড়াল হইয়া যাওয়ার উপক্রম করিতেছে । সৌজাস্থজি 
হুষ্যের দিকে চাহিয়া! ঝলসানো চোঁথে চারিদিক আবছ! 
হইয়া গিয়াছে দেখিয়া! স্থুনয়নার রীতিমত তৃপ্তি বোধ হয়। 
এই কি তার শান্তির হুচনা? শ্বামীকে সে অন্ধ করিয়াছে, 
তাই সেও অন্ধ হইয়া যাইতেছে? তাই ভাল, চোখ 
উপড়াইয়া৷ ফেলার চেয়ে ধীরাজ যেমন ঝাপসা দেখিতে 
আরম্ভ করিয়া "অন্ধ হইয়া গিয়াছে তারও সেভাবে অন্ধ 
হওয়াই'ভাল। রাতের পর রাঁত জোর করিয়৷ জাগাইয়া 
রাখিয়া ধীরাজের চোখ সে ন& করিয়াছে, তার চোখে 
জল দেখার ভয়ে নিজের চোখের কথা ধীরাজ ভাবে 
নাই, আজ ধীরাঁজ একা সেই রাত জাগার ফল ভোগ 
করিবে কেন? 
চারিদিক আবার স্পট হইয়া উঠিয়াছে দেখিয়া সুনয়না 
গভীর হতাঁশ! বৌধ করে। কাল রাত্রে কিছুক্ষণের জন্ত 
যেমন অন্ধকার দেখিয়াছিল নিজের জগতে স্থায়ী ভাবে সেই 
রকম অন্ধকার টানিয়। আনিবার জন্ত মন তার ছটফট 
করিতে থাকে। .চারিদিক অন্ধকার হইয়া যাইবে সে জানে, 
কিন্তু ধৈর্ঘ্য ধরিয়া 'দেজন্ত অপেক্ষ! কর! তার যেন অসম্ভব 


স্ডান্সত্ন্বঞ্থ 


[ ২৮শ বর্--২র খও--৫ম সংখ্যা 


মনে হয়। হুর্যাও বাড়াটার আড়ালে চলিয়া! গিয়াছে, 
ুর্য্যের দিকে যতক্ষণ পারে তাকাইয়া আবার বে একটু 
সময়ের জন্তও ঝাপসা দেখিবে তারও উপায় নাই। 

স্থ্য একেবারে ভুবিয়া গিয়া সন্ধ্যা নামিয়া আসে, কিন্ত 
অন্ধকার কই? আকাঁশে তারা ফুটিয়াছে, চাদ উঠিয়াই 
আছে, নীচে ঘরে ঘরে রাস্তায় ঘাটে হাঁজার হাজার আলো 
জলিয়াছে। এখানে ওখানে থণ্ড খণ্ড পাতলা অন্ধকার 
আর ছায়া লুকাইয়া আছে, আলোময় জগতে অস্তিত্বের 
লজ্জা রাঁখিবার ঠাই আনাচে কানাচে ছাড়া খু'জিয়া 
পাইতেছে না। 


বিরাজ আসিল । বৌদির জন্ত বেচারীর দুর্তাবনার 
অন্ত নাই। 

“এখানে কি করছ বৌদি ?, 

দাড়িয়ে আছি |; 

চলো! নীচে যাই ।, 

নুনয়ন! মৃদু হাসিয়া বলিল; “ভুমি বুঝি ভাবছ ঠাঁকুরপো, 
ছাত থেকে নীচে লাফিয়ে পড়ব? 


খুব সম্ভব ওরকম কিছুই বিরাঁজ ভাবিতেছিল, কিন্ত 
তাড়াতাড়ি অন্বীকাঁর করিয়া বলিল, ন| না,কি যে বল তুমি ! 
পাঁদা ডাকছে ।, 

ঘরে আলো জলিতেছে। ধীরাজের জন্য নয়, যার! 
ঘরে আসা যাওয়া! করিতেছে তাঁদের জন্ত । ঘরে পা দিয়াই 
সুনয়নার মনে হইল, আলে! যেন অস্বাভাবিক রকম উজ্জল 
হইয়! উঠিয়াছে, বালব টা সর্য্যের মত তীব্র জ্যোঁতিতে চোখ 
ঝলসাইয়া দিতেছে । পরক্ষণে কালরাব্রির মত কানের মধ্যে 
ঝমবমানি আরম্ভ হইয়া চারিদিক চটচটে অন্ধকারে ঢাকিয়! 
গেল, ঝমঝমানি থামিয়া পৃথিবী ভুবিয়। গেল শ্যন্ধতায় । 

মিনিট খানেক পরে সে স্বামীকে দেখিতে পাইল, তার 
কথাও শুনিতে পাইল। 

«কে এল? তুমি নাকি ?--, 

নুনয়না আগে আলোটা নিভাইয়া দিয়া বিছানার কাছে 
গেল। আলে! তার সহ হইতেছিল না। ধীরাজের সঙ্গে 
কথা বলার চেষ্টামাত্র না করিয়। মোটা চাদর মুড়ি দিয়া 
বালিশে মুখ গু'জিয়া গুইয়! পড়িল। 

“কি হয়েছে? গুয়ে পড়লে যে? 

গয়ীরটা থারাঁপ লাগছে । 


বৈশাথ--১৩৪৮ ] 





তেমনিভাবে চাদর মুড়ি দিয়া বালিশে মুখ গু'জিয়] 
ঘণ্টার পর ঘণ্টা সুনয়না নিম্পন্দ হইয়া পড়িয়া রহিল। ঘরে 
মানুষের আসা যাওয়া চলিতে লাগিল, মাঝে মাঝে স্থ্যইচ, 
টেপার শব্বে সে টের পাইতে লাগিল, আলো জবলিতেছে 
নিভিতেছে। সে ঘুমাইয়া পড়িয়াছে ভাবিয়া কেউ তাকে 
ডাকিল না। এক সময় ধীরাজের খাবার আসিল, কাকীম৷ 
নিজে কাছে বসিয়া তাকে খাইতে সাহাষ্য করিলেন। 
বিরাজের হাত ধরিয়া সে বাহির হইতে ঘুরিয়া আসিল। 
চুরুটের গন্ধে সুনয়না বুঝিতে পারিল, বিছানায় ওঠাঁর বদলে 
সে আরাম কেদারায় বসিয়া চুরুট ধরাইয়াছে। 

কাকীমা! আস্তে আস্তে তাঁকে ঠেলিয়া বলিলেন, খাবে 
এসো বৌমা 1, 

তখনও স্ুুনয়না মুখ তুলিয়! চাহিল ন!।__“কিছু খাঁব 
না। শরীরটা বড় খারাঁপ লাগছে । 

“একটু গরম দুধ থাঁও তবে? বিকেলে চা-ও তো! খাঁওনি।* 

£কিছু খেলেই বমি হয়ে যাবে ।” 

কিছুক্ষণ পরে ধীরাজ তাঁকে ডাঁকিল, কিন্তু সে সাঁড়া 
দিল না। আরাম কেদারা ছাড়িয়া উঠিয়া ধীরাঁজ ঘরে 
হাতড়াইয়া ফিরিতেছে টের পাইয়া তাঁর ইচ্ছা হইতে লাগিল, 
উঠিয়া গিয়! স্বামীকে বিছানায় শুইতে সাহাঁধ্য করে। কিন্ত 
আজ একদিন সাহাধ্য করিয়া আর কি হইবে? আজ- 
কালের মধ্যে সেও তো অন্ধ হইয়! যাইবে! 

হাতড়াইয়। হাঁতড়াইয়। দরজা দিয়া ধীরাজ শুইয়া 
পড়িল। ধীরাজ ঘুমাইয়! পড়িয়াছে বুঝিবার পর সথনয়না 
অনুভব করিতে লাগিল, ইতিপূর্বে দু'বার চোখে অন্ধকার 
দেখিবার সময় যে দম আটকানো! স্তব্ধতা চারিদিকে নামিয়া 


পিত্-ভ্ান্ত! 


আসিয়াছিল ঠিক সেইরকম ত্তবধতা তাকে তিরিয়া জমাট 
বাধিয়া উঠিতেছে। দামী রূকটার ঘণ্টা বাজার গম্ভীর 
আওয়াজ পর্য্স্ত যেন অস্পষ্ট হইয়| যাইতেছে । বমির মত কি 
যেন ভিতর হইতেঠেলিয় বাঁছির হইবার চেষ্টা করিতেছিল-_ 
কেবল বুক ভাঙ্গিয়া' নয়_ মাথাটা পর্যন্ত যেন চুরমার 
করিয়৷ দিয়া বাহির হইয়া আসিতে চায়। 

রাত বারোটা বাজিবার পর সে আর শুইয়া থাকিতে 
পারিল না। বাহিরে গিয়া বমি করিয়া আসিলে ভাল 
লাগিবে ভাবিয়া সে উঠিয়া! পড়িল। ঘর অন্ধকার। ঘরে 
আলো জলিবার সময় ছু'বাঁর মিনিট থানেকের জন্ক যেমন 
গাঢ় চটচটে অন্ধকার দেখিয়াছিল, তার চেয়েও ঘন 
অন্ধকার। আন্দাজে স্থ্যইচের কাছে গিয়া স্থ্যইচে হাত 
দিয়! সে স্তব্ধভাঁবে খানিকক্ষণ সেই ভাবেই দীড়াইয়া রহিল। 

ন্যুইচ নামানোই ছিল। 

ধীরাজ হাঁতড়াইয়! হাতড়াইয়৷ দরজা বন্ধ করিয়াছে, 
আলো! নিভায় নাই। এই অন্ধকার ঘরে এখনো আলো! 
জ্বলিতেছে। সে তবে সত্যই অন্ধ হইয়া গিয়াছে? 





যে স্পেশালিস্ট ধীরাজের চোখ পরীক্ষা করিয়াছিলেন 
পরদিন তিনিই নানাভাবে স্ুনয়নার চোঁখও পরীক্ষা 
করিলেন । তারপর বিব্রতভাবে আরও একজন বড় চোখের 
ডাক্তারকে ডাকিয়া আনিলেন। কিন্তু অনেক রকম পরীক্ষা 
আর পরামর্শের পরও দুজনে ঠিক বুঝিয়া উঠিতে পারিলেন 
না, স্থুনয়নার চোখ কেন নষ্ট হইয়া গিয়াছে । তথন ভাবিয়। 
চিন্তিয়া স্পেশালিস্ট মত প্রকাশ করিলেন ; এটা অপ.টিক্‌ 
নার্ভের অস্থথ। কদাচিৎ মাঁচুষের এ অন্তুখ হয়। 


পথ-হারা 
শ্রীনীলাম্বর চট্টোপাধ্যায় 
যেদিন প্রথম বাহির হইন্থু পথে কত বসন্ত কত উৎসব রাতি 
সেদিন রজনী ছিল ছুধ্যোগে ভরা, একে একে হ'ল নীরবে বাহিত সব, 
পরিচিত যারা রহিল পিছনে পড়ে যাহা কিছু ছিল বিলায়ে দিলেম সাথী, 
বাহিরে এলেম শুনিয়৷ তোমার সাড়া। এবার থামিবে জীবনের কলরব : 
সেইদিন হ'তে কত নিশাস্ত ধরি তবু পুরাতনে কেন মনে পড়ে বারে, 
সন্মুখপানে চলেছি নিরুদ্দেশ, গাল বেয়ে কেন ঝরে অশ্রুর ধারা 
পদতলে কাট! ফুটিয়াছে কতবারই, একেলা পাগল রাতের অন্ধকারে 
কত বন্ধুর পথ হ,য়ে গেছে শেষ। আর কত দিন চলিব পন্থ-হারা ! 


৭৭ 


প্রহেলিকা 
নাটক 


প্রীযামিনীমোহন কর 


তৃতীয় অঙ্ক 
একই দৃষ্ 
গিরিজা। অনাথ এখনও এল না! 
. কার্তিক । আমি বংশীকে জিজ্ঞেস করেছি । সে বললে, 
অনাথ এক্ষুণি আঁসছে। বাড়ী গিয়ে শুয়েছিল। জর 
বেড়েছে। দরজায় খট খট ধ্বনি 
গিরিজা। কে? অনাথ? 
অনাথ। (নেপথ্যে) আজে হ্যা । 
বেমানান বড় একটা ইউনিফণ্্ম পরে অনাথ ঢুকল 
কার্তিক। এ পোষাক তো তোমার নয়? তোমারটা 
কোথায়? 
অনাথ । খুজে পাচ্ছি না। 
গিরিজা। মিথ্যা কথা বলে এতক্ষণ আমার সময় নষ্ট 
করছিলে কেন? কাল তো তুমিই লিফটে ছিলে। 
অনাথ চুপ ক'রে রইল 
কথার উত্তর দ7াও। ছিলে কি না? 
অনাথ । আজে হ্যা। 
গিরিজা । হঠাৎ ডিউটি বদল করেছিলে কেন? 
অনাথ। বেহালার ডগ রেসের হঠাৎ একটা খুব ভাল 
টিপ পেয়েছি। তাই কাল কাজ করেছি, শনিবারে ছুটি 
নেব বলে। 
গিরিজা। বংশী তো সমস্ত মিথ্যা কথা বলেছে । এখন 
তুমি সত্যিকারের কি ঘটেছিল বল। কোন রকম আওয়াজ 
কি ঝগড়া কিছু গুনেছিলে ? 
অনাথ। আজ্ঞে না। 
গিরিজা । কাল রাত্রে মিস্‌ রায় কখন ফিরেছিলেন? 
অনাথ। জানিনা । লিফট ব্যবহার করেন নি। 
গিরিজা। কাণ্তিক তোমার রেকর্ড দেখ। 
কাষ্ঠিক। ( নোটবই দেখে ) ঠিক আছে। মিস্‌ রায় 
কাল ঘর থেকে বার হন্ত নি। 
গিরিজা। মালিনী দেবী কথন ফিরেছিলেন? 
অনাথ। জানিনা । তিনিও লিফট ব্যবহার করেন নি। 


গিরিজা । তিনি যে বললেন, লিফটে ওপরে এসেছেন-__ 

কার্তিক। (নোট বই দেখে) এই রাত বারোটার সময়। 

অনাথ। আমি বলতে পারছি না। লিফটে উঠলে 
আমার নিশ্য়ই মনে থাকত। 

গিরিজা। আচ্ছা । তাঁকে ডেকে দিয়ে তুমি বাহিরে 
অপেক্ষা কর। বাড়ী যেও নাঃ তোমায় এখুনি দরকার 


হতে পারে। অন।থের প্রস্থান 
ভারী আশ্্্য তো! 
কান্তিক। কি? 


গিরিজা। এই লোকটাকে যত দেখছি, ততই মনে 
হচ্ছে কোথাও যেন দেখেছি । 

কান্তিক। মনে করতে পারলে স্থুবিধা হত। 

গিরিজা। বহুদিন আগেকার কথা। তবে মনে পড়বেই। 

কার্তিক। মালিনী দেবীর কাছ থেকে কি সাহাধ্য 


পাওয় যাবে? 
গিরিজা। কে মিথ্যা বলছে? অনাথ না! মালিনী 
দেবী? কেন ধলছে? খট থট ধ্বনি 


কান্তিক। ভেতরে আস্গুন। 
মালিনী দেবীর প্রবেশ 


মালিনী। (হেসে ) এখনও সেই একই কাঁজ চলছে? 

গিরিজা। হুঁ । আপনি আগে যা সব বলেছেন তার 
দু-একটা কথা কেমন যেন গুলিয়ে যাচ্ছে। ্‌ 

মালিনী। তা যাবেই। আমি থাকলে আরও বেশী 
গুলিয়ে যেতে পারে । 

গিরিজা। আপনি কাল-রাঁত বারোটার সময় লিফটে 
উপরে উঠেছিলেন, ঠিক তো? 

মালিনী । তাই ত মনে হচ্ছে। 

গিরিজা। লিফটে কেছিল? অনাথনা বংশী? 

মালিনী । লিফ টম্যানদের সঙ্গে আমার নাম জানবার 
মত বন্ধুত্ব এখনও হয় নি। 

গিরিজা। তাঁদের চেহারা তো মনে আছে? 

মালিনী । বিশেষ ন!। 


৬১৩ 


বৈশাঁখ--১৩৪৮ ] 


গিরিজা। একজন রোগা আর একজন মোট!। 
কে লিফটে ছিল? 

মালিনী। যে রোগা সে-ই বোঁধ হয়। 

গিরিজা। সে কাল লিফটে ছিল না। 

মালিনী । তবে সেই মোটা লোকটা । 

গিরিজা। সে বলছে আপনি কাল রাত্রে লিফ্ট মোটে 
ব্যবহারই করেন নি। 

মালিনী। তাকিক'রে হতে পারে? 

গিরিজা। তাঁকে ডাঁকব? 

মালিনী । না, ডাঁকবাঁর দরকার নেই। 

গিরিজা। দেখুন মালিনী দেবী, এই ফ্ল্যাটে একটা খুন 


হয়েছে । আপনি সত্য কথা না বললে বিপদে পড়তে হবে । 
মালিনী। (ভীতভাঁবে) আমি এসবের কিছুই 
জানি না। আমি কাল এখানে থামলেন 
গিরিজা। বলুন, থামবেন না। 
মালিনী । আমি কাল রাত্রে এখানে ছিলুমই না। 
গিরিজা। একথা এতক্ষণ বলেন নি কেন? 
মালিনী। আপনাদের ভয়ে । আপনার যে রকম 


ব্যস্তবাগীশ লোক, হয় ত এর একটা তুল মানে ক'রে বসবেন। 

গিরিজা। কাল রাত্রে কোঁথায় ছিলেন ? 

মালিনী। শুটিং ঠিক শেষ হয়ে এসেছে এমন সময় 
আমার ভয়ানক পেট কামড়াতে লাঁগল। দুপুর বেলা 
স্ট,ডিওতে চিংড়ি মাছ, মাংস ইত্যাদি অনেক খাওয়া 
হয়েছিল। ডিরেক্টর রঙীনবাঁবু বললেন--“হোঁটেলে গিয়ে 
কষ্ট পাঁবে। কেই বা দেখবে। তাঁর চেয়ে আমার ওখানে 
চল।» তাই তাঁর সঙ্গে গেলুম। কি একটা ওষুধ দিলেন, 
খেলুম। অনেকটা আরাঁমও পেলুম। তখন রাত অনেক 
হয়ে গিছল, তাই তিনি বললেন__“আজ এখাঁনেই থেকে 
যাও। কাল সকালে পৌছে দেব” আমিও আর দ্বিরুক্তি 
করলুম না। 

গিরিজা। ছা । 

মালিনী। আপনি আবার তাঁকে. যেন টেলিফোন 
ক'রে বসবেন না । আমি যা বলছি সবই সত্য । 

গিরিজা। তাই মনে হচ্ছে, তবুও একবার জিজ্ঞেস 
করা দরকার। 


মীলিনী। বেশ। দশটার পর যখন স্ট,ডিওতে 


শক্তেকিলম্চা 


লৈ ॥ 
্ ॥ 
এ? 


যাবেন; তখন জিজ্ঞেস করবেন। বাড়ীতে ফৌন করবেন 
না। আজ সকাল আটটার গাড়ীতে ওর স্ত্রীর বাপের বাড়ী 
থেকে ফেরবার কথা । তিনি যদি এসে শোনেন_- 
কার্তিক । (হেসে) ওঃ! তবে করব না। 
গিরিজা। আপনার শরীর কি প্রায়ই খারাঁপ হয়? 
মালিনী। নতুন ডিরেক্টর এলে ছু-্চার বার শরীর 
থারাঁপ হয় বই কি। 
গিরিজা। আচ্ছা ধন্যবাদ । এবার যেতে পারেন। 
মালিনী । ( যেতে যেতে ) বাড়ীতে ফোন করবেন না 
যেন। ওুরস্ত্রী আবার উল্টো মানে করতে পারেন। সে 
এক বিপদ ! হেসে প্রস্থান 
কার্তিক। ভদ্রমহিলাকে অনর্থক লজ্জায় ফেলা হ'ল। 
গিরিজা। কি করব? ক্রমাগত মিথ্যা কথা বলছিলেন। 
তবে এক রকম ভালই হয়েছে । এই আমার বন্ধু মুগান্কের 


স্ত্রী। এরই জন্য সে আর বিয়ে করেনি। বলে--প্মতি 
গতি ফিরলে মে ঠিক ফিরে আঁসবে।” এই কথা জানালে 
তার উপকার হ'তে পারে । হাঁ? অনাথকে ডাক । 


দরজ| খুলে কান্তিক বাহিরে গেলেন ও অনাথকে নিয়ে ঢুকলেন 


গিরিজা। অনাথ, কাল রাত্রে কোনও সময় লিফট 
ছেড়ে তুমি কোঁথাঁও গিছলে? 

অনাথ। আজ্ঞে না। 

গিরিজা। একবারও না। 

অনাথ । না। 

গিরিজা। মনে করে দেখ। 
যাওনি কি? 

অনাথ। তা হুজুর একবার গিছলুম। কিন্তু মাত্র 
মিনিট ছু,য়েকের জন্ত | 

গিরিজা। লিফট. তথন কোন্‌ তলায় ছিল? 

অনাথ। একেবারে নীচের তলায় । 

গিরিজা। অন্য কোন তলায় লিফট. ধীড় করিয়ে তুমি 
কোথাও যাঁওনি? 


এক মিনিটের জঙ্যও 


অনাথ। নাহুজুর। 

গিরিজা। কান্তিক, গণেশবাবুকনে নিয়ে এস । 

কাণ্তিক। (যেতে যেতে) তিনি এবার আমায় 
কামড়ে দেবেন। প্রস্থান 


গিরিজা। এখনও ঠিক করে বল। 


০০ 


অনাথ । ঠিকই বলছি হুজুর । 

গিরিজা। তোমার পোষাক কাল কোথায় ছিল? 
এটা তে! তোমার নয়। 

অনাথ। কাল রাতে তো আমি পরেছিলুম। তারপর 
যাবার সময় আমাদের নীচেকার ঘরে টাঙ্গিয়ে রেখে গিছলুম । 
আজ আর খুজে পাচ্ছি না। 

, গিরিজা। কতদিন এখানে কাজ করছ? 

অনাথ। বেশীদিননা। মাঁস দেড়েক হবে। 


গণেশ ও কার্তিকের প্রযেশ 


গণেশ। যদি কুমারবাহাছুরকে হাঁমি হত্তিয়৷ করেছি 
বললে শাস্তি পেতে পারে তো তাই স্বীকার করবে। 

গিরিজা। না, না। দয়া ক'রে আপনি আবার স্বীকার 
ক”রে বসবেন না। কাল রাত্রে হোটেলে ফেরবার পর 
আপনি কি দেখলেন আর একবার বলুন তো। 

গণেশ। বার বার ঘণ্টী বাজায়ে লিফট নামলে না 
দেখে হামি হেঁটে সিড়ি দিয়ে ওপরে যথন এসেছে, তখন এই 
তলায়ে লিফট. দীড়িয়ে ছিলে লেকিন তাঁতে কোন আদমী 
ছিলে না। এক কাম করিয়ে। একঠো কাঁগজে এই 
সব লিখে দেন হামি দসথৎ করে দেবে। ফের বারবার 
আসতে হোবে না। 

গিরিজা। অনাথ, গণেশবাবু কি বললেন শুনলে ? 

অনাথ। আজে হ্্যা। 

গিরিজা । গণেশবাবু আপনি কণ্টার সময় ফিরেছিলেন? 

গণেশ। অনেকবার তো বলেছে । এগারো হোবে। 

গিরিজা। ধন্ঠবাদ! আপনি এবার যেতে পারেন। 

গণেশের প্রস্থান 


অনাথ, এইবার সত্য কথা বল। কোথায় গিছলে? 
পরোপকার করতে? 

অনাথ। কি বলছেন? 

গিরিজা। কুমারবাহাদুরকে শুইয়ে দিতে ? 

অনাথ। ( চমকে ) আপনি কি করে জানলেন? 

গিরিজা। যেরকম করেই হোক, জেনেছি। এখন 
আমার কথার উত্তর দাও। 

অনাথ । আজ্ঞে নাঁ। কাল তাঁর ঘরে যাইনি। ছুটি 
নিয়েছিলুম কি না। পাছে জানাজানি হয়ে যায়-__ 





স্কাব্ব্ডহ্যন্ 


[ ২৮শ বর্--২র খণ্ড -€ম সংখ্যা 





একটা লিফট ম্যানের পোষাক নিয়ে দামোদরের প্রবেশ 


দামোদর । দেখুন, আমি এই-_-(অনাথকে দেখে) 
এখনও এই পোষাক! হোটেলটা দেখছি তোমরা 
পাচজনে মিলে-_ 

গিরিজা। আপনার কথাটা কি খুব দরকারী 
দাঁমোদরবাবু? 

দামোদর । আপনাদের দরকারে লাগতে পারে । 

টেলিফোনের ঘণ্ট। বাজল। কার্তিক গিয়ে ধরলেন 

কাণ্ডিক। ( ফোনে ) হালো--আমি কাত্তিক। বলুন, 
আচ্ছা* ধরে আছি, ডেকে আঙুন। 

গিরিজা। বলুন দাঁমোঁদরবাবুঃ কি বলবেন? 

দামোদর । অনাথকে বড় পোষাক পরে থাকতে দেখে 
আমি ওদের নীচেকার ঘরে খোঁজ করেছিলুম। কেউ 
তক্তাপোষের তলায় এই পোষাকটা পুণ্টলীর মত করে ফেলে 
রেখেছিল। বার করে খুলে দেখি রক্তের দাগ। এই 
দেখুন। থুলে দেখালেন 

গিরিজা। (পরীক্ষা ক'রে ) রক্তের দাগই তো মনে 
হচ্ছে। কীধের ব্যাজটাও ছেড়া রয়েছে। 

কাত্তিক। (ফোনে) ্ট্যা, বলুন। নোটের উপরে যে 
আঙ্গুলের ছাপ ছিল- স্থ্যাঃ রেকর্ডে পাওয়া! গেছে-_-কার? 
বৃন্দাবন দাস, আচ্ছা-_-ছবি খুঁজে পেলে পাঠিয়ে দেবেন। 
ডাকাত ছিল__-ওঃ | আচ্ছা ফোন রেখে দিলেন 

গিরিজা। আর ছবি পাঠাবার দরকার নেই। 
( অনাথকে দেখিয়ে ) সামনেই বৃন্দাবন দাড়িয়ে রয়েছে । 


অনাথ দরজার দিকে যাচ্ছে দেখে গিরিজ| চেঁচিয়ে উঠলেন 
চুপ করে ধ্রাড়িয়ে থাক । পালাবার চেষ্টা বৃথা। 


অনাথ'। সত্যি বলছি হুভুর__ কেঁদে ফেললে 

গিরিজা। চুপকর। 

দামোদর । আপনি কি বলতে চান অনাথ জেল-ফেরত 
আসামী ? 


, গিরিজা। হ্যা। প্রায় পনেরো বছর আগে এক 
ডাকাতী কেসে ধরা পড়ে। দশ বছর সশ্রম কারাদণ্ড পায়। 
আট বছর পরে “জেলে ভাল ব্যবহারের” জন্ত তাকে ছেড়ে 
দেওয়া হয়। তার পর সাত বছর এর কোন সন্ধান পুলিশ 


- পায় নি। 


বৈশাখ-_-১৩৪৮ ] 


ক্াটাল্স্স্্াগ্ত্রা স্ 





শ্রক্েক্স্চা 


খু ৯২ 





দামোদর। (উত্তেজিতভাবে) আমার এ হোঁটেল কর ভাব আমি বুঝি জানতে পারি না। আজ আর 


আর টিকবে না। এরাই পাঁচ জনে মিলে উঠিয়ে দেবে 
দেখছি। প্রস্থান 
গিরিজা । এইবার তোমার কি বপবার আছে বল+। 


অনাথ চুপ ক'রে রইল 
তোমার রক্তমাথা আঙুলের ছাপ নোটের তাড়ায় পাঁওয়া 


গেছে। তুমি রাত্রে কুমারবাহাছুরের ঘরে নিশ্চয়ই 
এসেছিলে । 

অনাথ। (কাদ কীদ ম্বরে) হুভুর ইচ্ছে করে নয়__ 
হঠাঁ_ চুপ করল 


গিরিজা। হঠাৎ কি? বল, চুপ ক'রে থেকো না। 

অনাথ। আমি কুমারবাহাদুরকে হত্যা করেছি। 

গিরিজা। ত্যা ! 

কান্তিক। কি বলছ! তুমি হত্যা করেছ? 

অনাথ । আজে হ্য। কিন্তু হঠাঁৎ। 

গিরিজা। কি কি ঘটেছিল সমস্ত খুলে বল? । 

কান্তিক। ওকে আগে সাবধান ক'রে দিন । 

গিরিজা। মনে থাকে যেন তুমি স্বেচ্ছায় জবানবন্দী 
দিচ্ছ আমর! বাধ্য করি নি। আর দরকাঁর হলে তোমার 
বিরুদ্ধে আমরা তা! ব্যবহার করতে পারি। 

অনাথ । আজে হ্থ্যা। 

গিরিজা। কাত্তিক, এর বক্তব্য একটা আলাদ! কাগজে 
লিখে নাও। 


অনাথ বলতে ও কার্তিক লিখতে লাগলেন 


অনাথ। রোজ রাত্রে কুমারবাহাঁছুরকে আমি এসে 
শুইয়ে দিতুম। তিনি তখন মাতাল অবস্থায় থাকতেন। 
কোন রকম হুশ থাকত না। আমিও তাঁর জামা খুলে 
টাঙ্গিয়ে রাখবার সময় দু-চাঁর টাঁক৷ সরিয়ে নিতুম। তিনি 
কোঁন দিন টের পেতেন না । কাঁলও তাঁকে শুইয়ে দেবার 
পর জাম! খুলে রাঁথতে গিয়ে দেখি পকেটে একতাড়! নোট। 
রোজকার মত কিছু নিতে ইচ্ছে হ'ল, কিন্তু লোভ 
সামলাতে না পেরে তাড়া শুদ্ধ নিয়ে যেই যাব, অমনি কুমার- 
বাহাদুর উঠে বসে ডাকলেন-_-“অনাথ!” আমি থমকে 
দাড়াতে, তিনি উঠে এসে দেরাজ থেকে রিভলভার বার 
ক'রে আমার দিকে উচিয়ে বললেন-__"অনাথ, আমি তোমায় 
বিশ্বাস করতুম। তুমি রোজ আমার পকেট থেকে চুরি 


তোমার নিস্তার নেই |” আমি ভীত হয়ে বললুম__"আমায় 
পুলিশে দেবেন না।৮ তিনি বললেন__“না, তোমায় আমি 
খুন করব।” বুঝলুম তাঁর নেশার ঘোর তখনও কাটেনি। 
আমি গ্রাণভয়ে তার ঘাড়ে লাফিয়ে পড়লুম। ঝুটোপটি 
করতে করতে তার হাতের রিভলভারটা কি রকম ক'রে 
আপনি ছু'ড়ে গেল। তিনি আমার হাতের মধ্যে নেতিয়ে 
পড়লেন। নিশ্বাস পড়ছে ন| দেখে বুঝলুম মার! গেছেন। 
আমার হাতে জামায় রক্ত মাথামাথি। নোটগুলে! পাঁয়ের' 
কাছেই পড়েছিল, তুলে নিয়েও আসছিলুম, কিন্তু ধরা 
পড়বার ভয়ে সেইথানেই ফেলে রেখে চলে এলুম । আসবার 
সময় ধাক্কা লেগে টেবল্‌ ল্যাম্পট! পড়ে গিয়ে ভেঙ্গে চুরমার 
হয়ে গেল। 

কার্তিক। তখন রাত কণ্ট1? 

অনাথ । বারোটা । নোটগুলোর জন্যই ধরা পড়লুম। 
নিয়ে গেলেই ভাল হত । 

কান্তিক। দামোদরবাবুকে আর একটা ঘরের কথা 
জিজ্ঞেস করব? 

গিরিজা। নাঃ এবার মারতে আসবেন। রতন! 


রতনের প্রবেশ 


নিশিকাস্তবাবুর ফ্ল্যাটটা খালি আছে। একে এঁ পাশের 
ঘরে বসিয়ে রেখে এস। বাইরে একজন পুলিশ মোতায়েন 
ক'রে দিও। অনাথ, কোন রকম গণ্ডগোল করার চেষ্টা 
কোরো না। রতন ও অনাথের প্রস্থান 

কাত্ডিক। এব্যাপার মন্দ নয়। একই টেবল্‌ ল্যাম্প 
একবার বারোটায় ভাঙ্গল, আবার সাঁড়ে বারোঁটায় তাঙ্গল_ 
তারপর একটার সময় জোড়া লেগে জলতে লাগল। একই 
লোক বারোটা, সাড়ে বারোটা; একটা; তিন তিন বার 
ঝুটোপাঁটি করে মারা গেলেন, তারপর দুটোর সময় বেঁচে 
উঠে টেলিফোন করতে গেলেন, শেষে নে মতও বদলে 
ফেললেন । 


গিরিজা। এ রকম কেস তো কখনও দেখি নি। 
আমার তো ভয় হচ্ছে পাগল হয়ে যাব। 

কাত্তিক। এক কাঁজ করলে হয়। 

গিরিজা। কি বলতো! 


৬১৪ ভ্ান্সত্তম্মঞ্র [ ২৮শ বর্য--২য় খণ্ড--€ম সংখ্যা 


সহ বট স্ব স্ত্ 


কাততিক। ওদের দিয়েই প্রকৃত আসামী খুঁজে 'বার কার্তিক ও বনমালীর প্রবেশ 











করা যাক্‌। কাণ্তিক। বনমালীবাবু, আঁপনি এইখানে একটু 
গিরিজা। তুমিও কি থেপে গেলে নাকি? অপেক্ষা করুন। বেশীক্ষণ লাগবে না। 
কার্তিক । আজ্ঞে না। ওরা সকলেই মনে করছে রতন ও কার্তিকের প্রস্থান 


তার দোষ প্রদাণ হয়ে গেছে, তাই জবানবন্দী দিয়েছে ।  বনমালী। এখানে বসে থেকে আবার কি হবে? 
যদি জানতে পারে যে সে ছাড়া আরও দু'জন দোষ অনাথ। সেই কথা তো আমিও জানতে চাইছি। 
হ্বীকার করেছে তাহলে প্রত্যেকে নিজেকে বাঁচাবার 
চেষ্টা করবে। ভ্রিদিবেন্ত্র ও গিরিজার প্রবেশ 

গিরিজা । ঠিক বলেছ। ওদের তিনজনকে এই কথ! গিরিজা । বহ্ছন। বনমালীবাবু। আপনিও বন্থুন। 
জানিয়ে দিয়ে একসঙ্গে এইথানে হাজির করি। দেখি দীঁড়িয়ে রইলেন কেন? 


ব্যাপারটা কি রকম দাঁড়ায় । বনমালী। বসছি। 
কাত্তিক । আমার বিশ্বাস তাতে কাজ কিছু এগোঁবে। ত্রিদিবেক্্র ও বনমালী বসলেন 
গিরিজা। দেখ তো রতন ফিরে এসেছে কি না। তরিদিবেন্্র। কিন্ত আমাকে এখানে আনবার উদ্দেশ্ত কি? 


কাত্তিক। (দরজার কাছে গিয়ে) রতন, একবার গিরিজা। আমি আপনাদের তিনজনকে__ 
ভিতরে এস। 
কার্তিকের প্রষেশ 
কার্তিক । আপনার সঙ্গে একটা কথা আছে-_ 
গিরিজা | রতন, তুমি গিয়ে অনাথকে এই ঘরে নিয়ে গিরিজা ৷ পরে হবে। আগে এদের-__ 
এস। কািক, ভুমি বনমাণীবাবুকে আনবে, আর আমি কাত্তিক। কথাটা আগে শুঙুন। খুব দরকারী। 
অিদিবেজ্বাবুকে সঙ্গে করে নিয়ে আসব । আঁর শোন, এই. গিরিজা। বেশ,বল। 


০০৮৪ গিরিজআা। কি এমন কথা! দেখুন, আমি এক্ষুণি 
দা হা আসছি । আপনারা বন্থুন। 


গিরিজা। জেল ভ্যান এ 
রতন। এখনও আসে শর রঃ করে দেব? কার্তিক ও গিরিজার গ্রস্থান। কিছুক্ষণ তিন জনে চুপ করে 
রইলেন। পরে চ।পা কণ্ঠে কথ! বলতে আরম্ভ করলেন 


গিরিজ। । আর একটু অপেক্ষা! করে দেখ। 
| ক ত্রিদিবেন্্র। সব ঠিক হয়েছে? 


০০৪ বনমালী। হ্থ্যা। যেমন ঝলে দিয়েছিলেন । আপনার ? 
চতুর্থ অন্ধ ত্রিদিবেন্্র। নিখুত হয়েছে বলেই তো মনে হচ্ছে। 
এই দ অনাথ । খুব সহজেই কাজ হাসিল হয়েছে, কিন্তু-_ 

ত্রিদিবেন্্র। কিন্ত আবার কিসের? 
অনাথ। সে দিন রবিবারে আমর! যখন পরামর্শ 
রতন। তুমি এখাঁনে একটু অপেক্ষা কর। ইন্সপেক্টর করলুম__ 


রতনের প্রবেশ 


ও অনাথের প্রবেশ 


সাহেব এলেন বলে। * ত্রিদিবেন্্র। চুপ+ কেউ শুনতে পাবে। 
অনাথ। আবার অপেক্ষ! কেন? একেবারে থানায় বনমালী | না কেউ এখানে নেই। 
নিয়ে গেলেই , অনাথ। কি কথা ছিল আপনার মনে আছে? 


রুতন। চুপ কর। ত্রিদিবেজ্্। লটারীতে বার নাম উঠবে সে-ই হত্যা 


বৈশাখ---১৩৪৮ ] 


ও তেহতিশক্কা। 


০৬ 


উস” সা স্কিপ াস্ডস্ফপ বাপ স্বপ্না স্যপ্পা চাপ স্ফাপা স্পা স্থাাপা স্বপন স্্পান্থ্াস্ষপান্্ 


করবে। কিন্তু যে-ই হত্যা! করুক না কেন, তুমি সব ক্ল,গুলো 
আমার কথা মত সাজিয়ে রেখে দেবে। 

অনাঁথ। তাঁই তো করেছি, তবে-_. 

বনমালী। তবে আবার কি? 

অনাথ। আমি দাঁগ-কাট1 লটারীর কাগজ তুলেছিলুম 
বলেই তো মনে হচ্ছে। অথচ-_ 

ত্রিদিবেন্্র। কি বলছ? কে দাঁগ-কাঁটা কাঁগজ তুলেছিল 
তাই আমি এখন অবধি জানতুম না। আমি তুলিনি-_ 

অনাথ । আপনি ন! হত্যা! করে থাকলে উনি করেছেন? 

বনমালী। নাঃ না। আমি দাগ-কাঁটা কাগজ তুলি 
নি। তাই ভেবেছিলুম হয় তুমি, না হয় উনি তুলেছেন। 

স্নাথ। তবে একি ক'রে হ'ল? 

ত্রিদিবেন্্র। কিহ*ল? 

অনাথ। আপনারা ঠিক বলছেন যে হত্যা করেন নি? 

ত্রিদিবেন্্র। আমি করি নি। 

বনমালী। আমিও না। 

অনাথ । তবেকেকরেছে? 

তরিদিবেন্র। আমরা দু'জনে যখন করি নি, তখন তুমিই 
করেছ। দ্বাগ-কাটা কাগজ তো তুমিই তুলেছিলে ? 

অনাঁথ। তা তুলেছিলুম। কিন্তু এসে দেখি কুমার- 
বাহাদুর মৃত অবস্থায় এই খানটায় পড়ে আছেন। শরীরের 
অর্ধেকটা টেবিলের তলায়। মাথার মধ্যে দিয়ে গুলী 
চলে গেছে । 

ত্রিদিবেন্র। তাকি করে হবে! 

অনাঁথ। আমি ভাঁবলুম আপনারা কেউ হঠাৎ এসে 
পড়ে সুবিধা বুঝে কাজ শেষ ক'রে রেখে গেছেন। 

ত্রিদিবেন্্র। আমি এ সবের কিছুই জানি না। 

বনমালী। আমিও ন|। 

অনাথ । আমি ভাঁবলুম চিন্ধগুলে! রেখে যাবার ভার 
আমার ওপর দিয়ে আপনারা নিশ্চিন্ত হয়ে আছেন । তাই-_ 

বনমালী। তাই তো! যে হত্যা আমরা কেউ করি 
নিঃ চিহ্ুগুলো রেখে আসার দরুণ মিছিমিছি তাতে জড়িয়ে 
পড়লুম! 

অনাথ । তার .আমি কি জানি। যা যা আমায় করতে 
বলে দিয়েছিলেন. সবই সেই মত করলুম। কুমারবাহাঢুরকে 
তুলে চেয়ারে বসালুমঃ টেবিলের ওপর নোটের তাড়। 


রাখলুম, আপনার ঘরের টেবিলের তলায় আপনার 
রিভলভারটা রেখে দিলুম, রক্তমাথা লেখা কাগজটা টেবিলে 
রাখতে তুলে গিছলুম। যখন মনে পড়ল তখন এসে দেখি 
ঘরে লোক রয়েছে, তাই বাইরে বেঞ্চের তলায় তাড়াতাড়ি 
ফেলে দিয়ে পালিয়ে গেলুমঃপাঁছে আমায় কেউ দেখে ফেলে-_ 

ত্রিদদিবেন্্র। তবে কি আত্মহত্যা! করলে? 

অনাথ। মনে হয় না, কারণ তাঁর রিতলতধবরটা 
কাছাকাছি কোথাও খুঁজে পাইনি। অনেক কষ্টে খালি 
কেস খুঁজে আপনার দরজার পাশে রেখে দিলুম । লেখা 
কাগজটা টেবিলের ওপর রেখে আলোটা ভেঙ্গে দিয়ে ঘর 
থেকে বেরিয়ে গেলুম | 

ত্রিদিবেন্র। তা হ'লে আর কেউ এসে তাকে খুন 
করেছে। 

বনমালী। কিন্তুকে করলে? 

অনাথ। যদ্দি আমর! কেউ না করে থাঁকি, তবে তো 
অনর্থক অনেক বিপদে-_- 

গিরিজা। (নেপথ্যে) হ্যা, তা ঠিক-_ 

ত্রিদিবেন্্র। চুপ, ওরা আসছে। 


গিরিজ! ও কার্তিকের প্রবেশ 
গিরিজা। আপনারা একটু পাশের ঘরে গিয়ে বস্থন। 


ব্রিদিবেন্ত্, বনমালী ও অনাথকে মাঝের দরজা খুলে ওঘরে পৌছে 
দিয়ে এসে কার্তিক দরজ| বন্ধ ক'রে দিলেন 


সব শুনলে তো। এর! কেউই হত্যাকারী নয়। 

কাণ্ডিক। ত্রিদিবেন্দ্রবাবুই এ যড়যন্ত্রের নেতা । তার 
কথা মত-_ 

নীহার। (নেপথ্যে) আমায় ভেতরে যেতে দিন। 
বিশেষ দরকার আছে 

গিরিজা। মিস্‌ রায়ের গলা মনে হচ্ছে । যাঁও১' নিয়ে 
এস। 

কাণ্তিক। (দরজ! খুলে) আম্মন মিস্‌ রায় ভেতরে 
আস্থন। 


মিস্‌ রায়ের প্রবেশ 


নীহার। আপনাকে একট! কথ! বলবার আছে। 
গিরিজা। বলুন। 


৯১৪০১, 


নীার। আপনারা জমিদার ভ্রিদিবেজ্ নন্দীকে ধরে 
এনেছেন কেন? 

গিরিজা। কর্তব্যের খাতিরে। 

নীহার। তিনি কি এই হত্যার জন্ত দায়ী? 

গিরিজা। হ্্যা। ঘোষ হ্বীকারও করেছেন। 

নীহার। সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা বলেছেন। তিনি হত্যা 
করেন নি। 

গিরিজা। আপনি কি ক'রে জানলেন যে তিনি__ 

নীহার। কারণ-_কাঁরণ আমি হত্যা করেছি। 

গিরিজ।। আপনি! কি বলছেন? 

নীহার। ঠিকই বলছি। তিনি কেন যে স্বীকার 
করলেন বুঝতে পারছি না । তবে এট! ঠিক যে কাকা মিথ্যা 
কথা বলেছেন । 

গিরিজা। কাকা! কার কাকা? আপনার কাঁকাঁকে 
তে! আমরা 

নীহার। তাঁকে আপনি যখন এ ঘরে আনছিলেন তখন 
আমি দেখেছি। 

.গিরিজা। জমিদার ত্রিদিবেন্্র নন্দী আপনার কাকা? 

নীহার। হ্্যা। আমিই এই খুন করেছি, কাকা নয়। 

গিরিজা। আমি সাবধান করে দিচ্ছি। আপনি 
যা বলেছেন-__ 

নীছার। কাঁকার সঙ্গে একবার দেখা হতে পারে? 

গিরিজা। না। 

নীহার। (কীঁদ কীাদ শ্বরে) দয়া করে একটিবার-_ 

গিরিজা । আচ্ছা । ( উঠে গিয়ে মাঝের দরজা ঈষৎ 
ফাঁক করে ) ত্রিদিবেন্্রবাবু, একবার এ ঘরে আন্মুন। 

জিদিবেক্্র এ ঘরে এলেন। গ্িরিজ! দরজ! বন্ধ ক'রে দিলেন 

ত্রিদিবেন্্র। (চমকে) কে? বাসন্তী! 

নীহার। কাকা! 

ভ্রিদিবেন্ত্র। তুমি এখানে কি করছ ? 

নীহার। কাঁকা, আমি যা করেছি তার জন্ত দুঃখিত 
নই, মোটেই দুঃখিত নই-_ 

অিদিবেজ্র। কি করেছ? 

গিরিজা। মিস্‌ রায় বলছেন যে তিনি কুমারবাহাঁছুরকে 
হত্যা করেছেন। 

নীহার। হ্যা কাকা। 


ভ্ান্পতন্শখ 


[ ২৮শ বর্---২য় খশু--হম সংখ্যা 


্রিদিবেজ্ । কিন্তু-_ 
হঠাৎ থেমে গেলেন। বুঝলেন যে নীহার সত্য কথ] বলছেন। 
তাড়াতাড়ি সামলে নিলেন 

কিন্ত কি পাগলের মত বকছ? অসম্ভব যত সব মিথ্যা 
কথা-_গিরিজা বাবু 

গিরিজা । সত্য কথাটা কে বলছে? 

ত্রিদিবেন্্র। আপনি নিশ্চয়ই এ সব যাঁতা বিশ্বাস 
করছেন না । 

নীহার। এ যা-তা নয়, একেবারে সত্য কথা । আমাকে 
বাচাবার জন্ত-_ 

ত্রিদিবেন্্র। চুপ কর। ছেলেমান্ুধীরও একটা সময় 
আছে । আমি বলছি যে আমিই-_ 

নীহার। কিন্তু তুমি নও কাঁকা, আমি করেছি-_- 

গিরিজা। দয়া ক'রে আপনারা চুপ করুন। তর্ক 
করবেন না । আমি পাগল হয়ে যাব। (নীহারের প্রতি ) 
আপনার কি বলবার আছে বলুন। মনে রাখবেন আপনি 
স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকার করছেন, আমর! বাধ্য করি নি। আর 
দরকার হ'লে আপনার স্বীকারোক্তি আমরা আপনার বিরুদ্ধে 
ব্যবহার করতে পারি। বলগুন। কান্তিক, একটা আলাদ! 
কাগজে ওর বক্তব্য টুকে নাও। 

নীহার বলতে ও কার্তিক লিখতে লাগলেন 

নীহার। আমি যখন এলাহাঁবাদে হস্টেলে থেকে পড়তুম 
তখন কুমারবাহাছুরের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। তিনি 
আঁমাকে বিবাহ করবেন অঙ্গীকার করায় আমি তীর সঙ্গে 
চলে যাই। কিছুদিন আমায় খুব আদর যত্ব করেন। কিন্ত 
বিবাহ করতে বললেই গোলমাল করতেন। ক্রমে আমার 
প্রতি অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার আরম্ভ করলেন। মাতাল হয়ে 
মেয়েমীন্ষ নিয়ে বাড়ী আমতেন। আপত্তি করলে মার- 
ধর করতেন। শেষে একদিন হঠাৎ আমায় ফেলে কোথায় 
সরে পড়লেন আর ফিরলেন না। আমি তখন অন্তঃসত্। 
ছিলুম। চ্যারিটেবল হাসপাতালে একটি মৃত সস্তান হয়। 
সেই থেকে আমি তার খোজ ক'রে বেড়াচ্ছি। তিনি 
কলকাতায় হোটেল প্ক্যাসিনোগ্তে রয়েছেন খবর পেয়ে 
আমি আর থাকতে পারলুম না । ঠিক করলুম তার সঙ্গে শেষ 
বোঝা-পড়৷ করব। এখানে এসে মিস্‌ নীহারবাল! রায় নামে 
পরিচয় দিয়ে এই তলায় একটা ঘর ভাড়া করলুম। দিনে 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


খর” -স্ত্ 


অন্থথের অজুহাতে ঘর থেকে বেরোতুম নাঃ পাছে আমায় 
দেখে ফেলেন। কাল রাত্রে গ্রাঁয় দেড়টার সময় গুর ঘরের 
দরজায় ধাক্কা দিয়ে দেখি--খোলা আছে। ভেতরে ঢুকে 
দেখলুম নেশায় চুর হয়ে তিনি চেয়ারে বসে আছেন। আমি 
যে ঘরে ঢুকেছি তা শুদ্ধ টের পাঁননি। দ্বণায় বিরক্তিতে 
আমার মন ভরে উঠল। নাড়া দিতে তিনি চোখ খুলে 
আমাকে দেখে চমকে উঠলেন । তাড়াতাড়ি টেলিফোনের 
রিসীভারটা ভুলে লাইন চাইলেন। আমি হাত থেকে ফোন 
কেড়ে নিয়ে রেখে দিয়ে বললুম-_“তুমি আমার সমস্ত জীবনট। 
নষ্ট করেছ। আমি আজ সমাজের যে স্তরে নেমে গেছি 
তার থেকে ফেরা অসম্ভব।” তিনি রেগে কতকগুলো 
অশ্লীল ইঙ্গিত ক'রে দেরাজ থেকে রিভলভার বার ক'রে 
আমার দিকে উচিয়ে ধরলেন। আমি কাড়তে গেলুম। 
ঝুটোপটির মধ্যে তাঁর হাঁতের রিভলভারটা কি রকম ক'রে 
ছুঁড়ে গেল। সঙ্গে সঙ্গে তিনি আমার পায়ের কাছে লুটিয়ে 
পড়লেন। পরীক্ষা! ক'রে দেখলুম, নিশ্বাস পড়ছে না । তিনি 
মার! গেছেন । 

গিরিজা। আপনি ঠিক বলছেন যে তিনি আপনার 
পায়ের কাছে পড়েছিলেন ? 

নীহার। হ্যা। এই জায়গাটায়, অর্দেকটা টেবিলের 
তলায়। ঝুঁকে দেখলুম তিনি-_ 

গিরিজা। মৃত। 

নীহার। হ্যা। 

গিরিজা। সকলেই বলছেন যে ঝুটোপটি করতে করতে 
হঠাৎ মারা গেলেন। কিন্তু আমরা এসে তাঁকে চেয়ারে বসা 
দেখলুম। 

নীহার। কিন্তু তাকি ক'রে সম্ভব হবে? 

গিরিজা। এই ঘটনায় অনেক অসম্ভব জিনিষও সম্ভব 
হয়ে পড়ছে। (ত্রিদিবেন্দ্রেরে প্রতি) মিস্‌ রায় যে 
কলকাতায় আছেন তা আপনি জানতেন? 

ত্রিিবেজ্ঞ । নামানে--আমি-- 

গিরিজ!। (নীহারের প্রতি) অথচ আপনি বলছেন 
যে আপনাকে বাচাবার জন্ত উনি শ্বেচ্ছায় নিজের ঘাড়ে দোষ 
নিচ্ছেন। 

নীহার। ঠিক বুঝতে পারছি না। হয় ত-- 

ভ্রিদিবেন্্। গিরিজাবাবুঃ ওর কোন কথা-_- 


৭৯ 


গুক্ছেতিশক। 








৬০৬ 





গিঁরিজা। (নীহারের প্রতি) আসল ব্যাপার হচ্ছে এই 


যে, আপনি যখন ঢুকতে যাচ্ছেন সেই সময় দেখলেন 
আপনার কাকা কুমারবাহীছবরের ঘর থেকে বেরিয়ে 
যাচ্ছেন। আপনি ঘরে ঢুকে দেখলেন যে কুমারবাহাদুরকে 
গুলী ক'রে মারা হয়েছে। তথনই বুঝতে পারলেন এ 
আপনার কাকার কাজ। 
পড়বেন না। কিন্তু গুকে আমরা ধরে ফেলেছি দেখে 
আপনি ওঁকে বাঁচাবার জন্ত মিথ্যা কতকগুলো_ 


ভেবেছিলেন হয় ত তিনি ধর! 


ভ্রিদিবেন্্। (আগ্রহ সহকারে) ঠিক বলেছেন। 


আমারও তাই মনে হয়। 


নীহার। না, নাঃ তা নয় । আমি যাবলেছি সব সত্য। 
গিরিজা। প্রমাণ কি? 
নীহার। কাল রাত্রে ঝুটো-পাটির সময় তার নখে 


আমার কীধের খানিকটা খিমচে গিছল। এই দেখুন। 


কাধের কাছ থেকে নাড়ীট! সরালেন। খিমঢে যাওয়ার 
দাগ স্পষ্ট দেখ! গেল 
কান্তিক। (নোট বই দেখে) কুমারবাহাছুরের ডান 
হাতের ন'থে রক্ত ও মাংস লেগেছিল । 
নীহার। এবার বিশ্বাস হ'ল? 
কান্তিক। ঠিক মিলে যাচ্ছে। 
গিরিজা। এইবার ওদেরও ডাকি। 
গিরিজ চেয়ার ছেড়ে উঠলেন। ত্রিদদিবেক্্র তাড়াতাড়ি 
মাঝের দরজার কাছে গেলেদ 
ত্রির্দিবেন্্র। না, না, ওদের আর ডাকবেন না। 
নীহার। কাদের? ও ঘরে কে আছেন? 
গিরিজ!। আরও দুজন লোক যাঁরা স্বীকার করেছে 
ষে তারাই কুমারবাহাঁদুরকে হত্য! করেছে । 
গিরিজ! দরজার কাছে গেলেন 
নীহার। কি আশ্চর্য্য ! 
ব্রিদিবেন্্র। গিরিজাবাবু, আমার একটা অন্ুরোধ-- 
গিরিজা। কি? 
ত্রিদিবেন্্র। বাঁসম্তীকে এখান থেকে নিয়ে বাই। ওকে 


আর এদের সঙ্গে জড়াবেন না৷। 


গিরিজা। বিলক্ষণ জড়িয়ে পড়েছেন। আর এখন 


উপায় নেই। সর্ন। | 


রা 


৬৬, 
জিদিবেজ্র ময়ে এলেন। গিরিজ| মাঝের দরজাট। খুললেন 


গিরিজা। আপনারাও এ ঘরে আসন । 


এ হয়ে প্রথমে অনাথ ও পরে বনমালী ঢুকলেন। ব্রিদিবেন্ 
ব্যস্ত হয়ে উঠলেন | বনমালী ও বাসম্তী উ্তয়ে 


উভয়কে দেখে চমকে উঠলেন 
বনমালী। বাসন্তী! 
“নীহার। আ্যা- তুমি! 


নীহার অজ্ঞান হয়ে মেজেয় পড়ে যাচ্ছিলেন, এমন সময় বনমালী 
ছুটে গিয়ে ধরলেন। ত্রিদিবেন্ত্রও এগিয়ে গেলেন। 
দু'জনে মিলে নীহারকে আন্তে আস্তে 
কৌচে গুইয়ে দিলেন 


ত্রিদিবেন্্র । বাঁসস্তী, বাসম্তী-_ 

গিরিজা। (ব্যস্ত হয়ে) কিহল? 

ত্রিদিবেন্্। বাসস্তী অজ্ঞান হয়ে গেছে । গিরিজাবাবু, 
আমি আগেই বলেছিলুম-_ 

গিরিজা। আমি কি ক'রে জানব যে এমন হবে? 

বনমালী। (হঠাৎ চীৎকার ক'রে) বাসস্তী-_বাসন্তী__ 
কাকাবাবু; বাসস্তী আর নেই। 

ত্রিদিবেন্্র। নেই! কি বলছ বনমালী। (নাঁড়ী 
দেখে) তাই তো। গিরিজাবাবু১ আমার ভাইঝি 
মারা গেছে । 

গিরিজা । মারা গেছে! হার্ট ফেল করেছে? 

ত্রিদিবেন্্র। তাই মনে হচ্ছে। শকৃটা বড্ড বেশী 
লেগেছে, সামলাতে পারে নি। নিজের মনের দ্বন্দেই ও 
মৃতপ্রায় হয়েছিল। মরেছে, ভালই হয়েছে । সমাজে তো 
ওরম্থান ছিলনা। ও যেমেয়ে। সংসারের সমুদ্র-মস্থনে 
পুরুষ নিঃশেষে অমৃত পান ক'রে মেয়েদের জন্য শুধু গরল 
রেখে দেয়। | 

গিরিজা। ( ফোনে ) লাইন প্লীজ। 

ত্রিদিবেন্্র। কাকে ফোন করছেন? 

গিরিজা। ডাক্তারকে । (ফোনে) ইজ দ্যাট এক্সচেঞ্জ? 
গিভ. মী পি-কে-০০5, ইয়েস প্লীজ । 

অ্রিদিবেন্। কিন্তু তিনি এসে এইভাবে বাসম্তীকে 
দেখলে-_- 

গিরিজা। মাই ভিউটি। (ফোনে) হ্যালো-_কনেক্ট 
মীটুডক্টরদে। - 


হান্ব্ন্যহ্ 


[ ২৮শ বধ-- ২য় খণ্--€ন সংখ্যা 


ত্রিদিবেজ্্র । জানাজানি হয়ে পড়বে-_ 

গিরিজা। নিরুপায় । (ফোনে) কে? ডক্টর দে? 
হ্যা আমি গিরিজা। এক্ষুণি হোটেল “ক্যাসিনোগ্তে 
আস্ুন। একজন মহিলা মারা গেছেন । বোধ হয় হার্ট ফেল্‌ 
কঃরে। হ্্যটা_এসে আমার নাম করলেই নিয়ে আসবে। 
আচ্ছা-_যত তাড়াতাড়ি পারেন। ধন্যবাদ । ফোন রেখে দিলেন 

ক্রিদিবেন্্র। শেষে মেয়েটা এর মধ্যে জড়িয়ে পড়ল । 


বাসস্তীর বুকে মাথ৷ রেখে বনমালী কাদছেন 


অনাথ। দাদাবাবু, কাদবেন না । উঠুন। 

ভ্রিদিবেন্্র। গিরিজাঁবাবুঃ সমস্ত ঘটনাটা আপনাকে 
পরিষ্কার ক'রে বলি। আপনাদের করুণা কিংবা দয়া 
চাইছি না। তবুও বলছি, না হলে দম ফেটে মারা যাঁব। 
আপনি ব্যাপারটা বোধ হয় কিছুই ধরতে পারছেন না। 

গিরিজা। না। সমঘ্তই অষ্তুত মনে হচ্ছে। আপনার 
কাহিনী জবানবন্দী-হিসেবে লিখে নিতে পারি ? 

ত্রিদিবেন্্র । নিশ্চয়ই । বাঁসস্তী যখন মাঁরাই গেল, 
আর আমাদের বলতে আপত্তি নেই। তবে একট| অনুরোধ, 
ওর নামটা ন! জড়িয়ে যদি তদন্ত করতে পারেন__ 

গিরিজা। ঘটনাটা! সমস্ত না গুনলে বলতে পারছি না । 
বলুন। কান্তি, লিখে নাও। 


অ্রিদ্দিবেন্ত্র বলতে ও কার্তিক লিখতে লাগলেন 


ত্রিদিবেন্্র। বনমালীর সঙ্গে বাসস্তীর বিয়ে হবে ঠিক 
ছিল। হঠাৎ কুমারবাহাছুর বাঁসস্তীকে নিয়ে সরে পড়ে। 
অনাথ এক সময় চুরী ডাকাতি করে সংসার চালাতো!। 
জেলেও গিছল। সেখান থেকে বেরিয়ে বাড়ী ফিরে দেখলে-_ 
তার বাপ ম৷ সব মরে গেছে । সেই সময় বনমালীর কাছে 
সে চাকরি নেয়। অনাথের একবার অন্ুখের সময় 
বনমালী গ্রাণপাত করে ওকে বীচায়। সেই থেকে 
বনমালীকে অনাথ দেবতার মত ভক্তি করে। বাসন্তী চলে 
যেতে বনমালীর মনে খুব ঘা লেগেছিল । দাদা মারা যাবার 
পর আমর! কুমারবাহাুর আর বাঁসস্তীর খোজ ক'রে 
বেড়াই। শেষে কলকাতায় হোটেল পক্যাসিনোষ্তে ওর 
সন্ধান পেয়ে আমরাও কলকাতায় এসে হাজির হুই। 
ঠিক করলুম ওঁকে খুন করতে হবে। কে করবে? একটা 
দবাগকাটা আর দু'টো শাদা! কাগজ নিয়ে লটারী করা 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 





| এ. -্হ্দস্হে- 


হল। যে দাঁগ-কাটা কাগজ তুলবে সে-ই খুন করবে, 
কিন্তু কে তুলেছে তা কাউকে বলতে পারবে না। নিথু'ত 
খুন প্রায় অসম্ভব বলে আমি অনাথকে এমন সব ক. রেখে 
দিতে বলেছিলুম যাতে আমাদের তিনজনের ওপরেই সন্দেহ 
পড়ে। ওদের জবানবন্দীও আমি মুখঘ্ত করিয়ে দিয়েছিলুম। 
সারকামস্ট্যানশিয়াল এভিডেন্সে আমাদের কাউকেই 
দোষী গ্রমাণ করা যাবে না, কারণ প্রত্যেকের জবানবন্দীতে 
গরমিল আছে । কিন্তু-_ 

গিরিজা। কিন্তু সব প্র্যান উল্টে গেল। অনাথ 
দাঁগ-কাটা কাগজ তুলেছিল, কিস্তু এসে দেখলে তাঁর আগে 
কেউ খুন ক'রে গেছে। 

অনাথ। ( চমকে ) আপনি কি ক'রে জানলেন? 

গিরিজা । এ যে মাইক্রোফোন ফিট কর! রয়েছে । ওঘর 
থেকে সমস্ত কথা আমর! শুনেছি । জবাঁনবন্দীতে অনেক গলদ 
রয়েছে, সেট! আগেই লক্ষ্য করেছি । কোন সলিউশন পাচ্ছিলুম 
না বলেই আপনাদের একত্র করে আমর! চলে গিছলুম-_ 


বনমালী। এখন পেয়েছেন? 

গিরিজা। হ্যা। 

বনমালী। কে? 

গিরিজা। উনি। বাসস্তীকে দেখালেন 


ত্রিদিবেজ্্। কোন ভুল হচ্ছে নাতো? 

গিরিজা। নাঁ। কেবলমাত্র গুর জবাঁনবন্দীই সমস্ত 
গুলোর সঙ্গে মিলেছে । আপনাদের স্বীকারোক্তি আর 
ক সাজানোর মধ্যে কনটিনিউইটি নেই। 

বনমালী। গিরিজাবাবুঃ সবই তো শুনলেন। বলুন 
বাসস্তীর নাম বাচিয়ে রিপোর্ট দিতে পারবেন কি-ন!? 

ত্িদিবেন্্র। আমাদের ফীলিংস্‌ বুঝতে পারছেন তো! । 

গিরিজা। পারছি। কাত্তিক, জেল ভ্যান এসেছে 
কি-না দেখ। কার্তিকের প্রস্থান 
আপনাদের চালান আমায় করতেই হবে। খুন না করলেও 
চেষ্টা ষে করেছেন সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। স্বরোপিত 
ক এবং জবানবন্দীতে আপনারা দোষী। তবে আপনাদের 
প্ল্যান অন্গসারে হয় তো কনভিকৃশন হবে না। 

বনমালী। কিন্তু বাঁসস্তীর-- 
কার্তিক ও ডাক্তার দে'র প্রবেশ 

কাত্তিক। জেল ভ্যান এসেছে । 


শ্রতেকিশক্ষা। 





৬৬৯২ 





গিরিজা। বেশ। ডাক্তার দে, এঁকে একবার 
পরীক্ষা করে দেখুন। ডাক্তার দে বাসস্তীকে পরীক্ষা করলেন 
ডাক্তীর। ডেথ. বাই হার্ট ফেলিওর। অন্তত এখন 
তাই মনে হচ্ছে। থানায় লাশ পাঠাবার ব্যবস্থা করুন। 
গিরিজা। উনি এই তলায় একটা ঘরে থাকতেন। 
ওর নাম মিস্‌ নীহার রায়। হার্টটা খারাপই ছিল। একটু 
আগে অজ্ঞান হয়ে গিছলেন। আমার কাঁজ সকলকে 
জেরা করা। হঠাৎ কথ! কইতে কইতে পড়ে যান। 
তারপর আমাদের সন্দেহ হ'তে আপনাকে খবর দিই। 
ডাক্তার। ডেড. বডি মর্গে পাঠিয়ে দিন, ভাল ক'রে 
পরীক্ষা করতে হবে। ডাক্তার দে'র প্রস্থান 
ব্রিদিবেন্্র। আপনাকে কি বলে ধন্যবাদ জানাব। 
গিরিজা। জানাতে হবে না। 
নীহারের জবানবন্দীর কাগজটা! ছি'ড়ে ফেললেন 
ত্রিদিবেন্্র। ভগবান আপনার মঙ্গল করুন। 


গিরিজা। কার্তিক; এদের নিয়ে যাও। 
কাণ্তিক। আপনার আাভারেজটা-_ 
গিরিজা। চুলোয় যাঁক। 


গিরিজ! বাতীত সকলের প্রস্থান 
(ফোনে ) লাইন প্লীজ। ইজ ্যাট এক্সচেঞ্জ । গিভ. মী 
পি, কে, ০০5. ইয়েস। হালো-_থান! ? আমি গিরিজ|। 
হোটেল “ক্যাসিনো”তে একটা আযাম্বুলেক্দ কার পাঠিয়ে 
দাও। ডেড. বডি নিয়ে যেতে হবে। ্্যা-এখানকার কাজ 
এক রকম মিটেছে। থ্যাঙ্ক ইউ। রিসীভারটা রাখলেন 


হস্তদস্ত হয়ে দামোদরবাবুর প্রবেশ 
দামোদর । আবার এক ফ্যাসাদ হয়েছে । সুশীল! খাবার 


নিয়ে গিয়ে ফিরে এল, মিস্‌ রায়কে পাওয়া যাচ্ছে ন!। 


কৌচটা গিরিজার পিঙ্ছনে আড়ালে ছিল। যাসন্তীর মৃতদেহ 
দামোদর দেখতে পান নি। শিরিজ1 সরে এসে দেখালেন 


গিরিজা। এযেমিস্রায়। 

দামোদর । ত্য, অজ্ঞান হয়ে গেছেন? 

গিরিজা। আর জ্ঞান হবে না। মারা গেছেন,। 

' দামোদর । কি ভয়ানক! না, আর টিকতে দিলে 


না। এর! পাঁচজনে মিলে হোটেলট্রা উঠিয়ে দিলে দেখছি । 
বেগে প্রস্থান 
গিরিজ! ধাসস্তীর মৃতদেহের দিকে কিছুক্ষণ চেয়ে দাড়িয়ে রইলেন। 
পরে পকেট থেকে রূষাল বার করে মুখটা ঢেকে দিলেন। 
একট! সিগারেট ধয়ালেন। ধীরে ধীরে বনিক! গড়ল 


ভঙ্গ 


৪ 

অমিয়ার বিবাহ হইয়া গিয়াছে রাঁজমহলের ভবেশবাবু 
ছাড়৷ পাইয়াছেন, মুকুজ্যে মশায়ের এবার নিশ্চিন্ত হওয়ার 
কথা, কিন্ত তিনি নিশ্চিন্ত নহেন। নিশ্চিন্ত থাকা তাহার 
স্বতাঁব নয়। কোন একট! কিছু লইয়! ব্যাপৃত থাঁকিতে 
না পারিলে তিনি কেমন যেন স্বস্তি পান না। একটা 
কিছু জুটিয়াও যাঁয়। মুকুজ্যে মশায় হরেরামবাঁবুর নিকটে 
গিয়াছিলেন। মফঃঘ্বলের একটি ক্ষুদ্র গ্রামে হরেরামবাবু 
পোষ্টমাস্টারি করেন। নিতান্ত নিরীহ লোক, কাহারও 
সাতে পাঁচে থাকেন না। থাঁকিবার অবসরই নাই। 
সকাল হইতে স্থুক করিয়া রাত্রি আটটা নয়টা পর্য্যন্ত 
আপিসের কাজকর্ম শেষ করিতেই কাটিয়া! যায়। নিড়বিড়ে 
নিষ্ঠাবান ব্রাঙ্ষণ অতিশয় ভালোমানুষ। মুকুজ্যে মশাই 
কিন্তু হরেরামবাঁবুকে বড় ভালবাসেন এবং বছরে অন্তত 
একবার আসিয়! হরেরামবাবুর কাছে কয়েকদিন কাটাইয়া 
যান। এবারে আসিয়া! কিন্ত কিছু অধিকদিন থাকিতে 
হুইল। পাঁকেচক্রে অবস্থা একটু জটিল হইয়! উঠিল । 

হরেরাঁমবাবুর জ্ো্পুত্র ভোন্ধল তাহাকে মুস্কিলে 
ফেলিয়া! দিয়াছে । ভোগ্বলের বয়স দশ এগারো বছর 
মাত্র। কিন্তু হইলে কি হয়, বাঘ-বকরি খেলায় সে মুকুজ্যে 
মশাইকে বারবার তিনবার হারায় দিয়াছে । মুকুজ্যে 
মশাই বাজি বাখিয়! হারিয়া গিয়াছেন। মুকুজ্যে মশাই 
বাজি রাখিয়াছিলেন যে ভোম্বল যদি তাঁহাকে তিনবার 
উপধু্যপরি হারা ইয়া দিতে পারে তাহা। হইলে ভোগ্বল যাহা 
খাইতে চাহিবে মুকুজ্যে মশাই তাহাই তাহাকে প্রাণ 
ভরিয়া খাওয়াইবেন। বিজেত। ভোম্বল মাংদ থাইতে 
চাহিয়াছে। মুরারিপুর যদি শহর হইত অথব! হরেরামবাবু 
যদি একটু কম নিষ্ঠাবান হইতেন তাহা হুইলে মুকুজ্যে 
মশায়ের পক্ষে এই সামাগ্ঘ প্রতিশ্রুতিটুকু পালন করা 
অসন্তব হইত না। মুরারিপুরে কশাইয়ের দোকান নাই, 
হরেরামবাবু বৃথা! মাংস পছন্দ করেন না। মুকুজ্যে মশাই 
অনুরোধ করিলে হুরেরামবাবু অনিচ্ছাসত্বেও হয়তে! রাজি 


ত২ও 


হইতেন; কিন্তু কাহারও প্রিক্সিপলে আঘাত করা মুকুজ্যে 
মশায়ের হ্বভাববিরদ্ধ। যে যাহা লইয়া স্থখে আছে-_ 
থাকুক, ইহাই তাহার মত। সুতরাং হরেরামবাবুকে এ 
অনুরোধ তিনি করিলেন না। কিন্ত ইহার পরিবর্তে তিনি 
যাহা করিলেন তাহা! প্রিন্সিপল্‌ সঙ্গত হইলেও হরেরাঁমবাঁবুর 
পক্ষে আরও সাংঘাতিক হইল। হরেরামবাঁবুকে ডাকিয়৷ 
তিনি বলিলেন, “হরেরাম আঁসচে অমাবন্তাতে এসো 
কালীপৃজে৷ করা যাক” 

মণিঅর্ডার-রেজেপ্রি-ভিপি-ইনশিওর-বিক্ষুন্ধ হরেরাম প্রথমে 
কথাটা হদয়ঙ্গমই করিতে পারিলেন না| । 

“কি বলছেন?” 

“আগামী অমাবস্যাঁতে এসে! কালীপুজে৷ কর! যাক !” 

“কালীপুজো 

হরেরাম আকাশ হইতে পড়িলেন। তিনি সমস্তদ্িন 
আপিস লইয়া ব্যত্ত থাকেন; ভোগ্বলের সহিত মুকুজ্যে 
মশায়ের বাজির কোন খবরই তিনি রাখেন না। বস্তুত 
ভোদ্বল এবং মুকুজ্যে মশাই ছাড়া আর কেহই এ থবর 
জানে না। বিম্মিতনেত্রে হত্ষেরাম চাহিয়। রহিলেন। 

মুকুজ্যে মশাই বলিলেন--“শাক্তবংশের ছেলে তুমিঃ 
কালীপুজো! করবে তাতে হয়েছে কি। তোমাকে কিচ্ছু 
করতে হবে না, আমিই সব ব্যবস্থা করব। একটি কালীমুন্তি 
আঁর একটি ভাল দেখে কালো পাঠা জোগাড় করতে হবে ।» 

মুকুজ্যে মশায়ের সহিত হরেরামের অনেকদিনের 
পরিচয় । তিনি মুকুজ্যে মশায়ের মুখভাঁব দেখিয়া বুঝিতে 
পারিলেন যে আপত্তি করা বৃথা । মুকুজ্যে যাহা ধরেন 
তাহা না করিয়া ছাড়েন না। তাছাড়া দেবীপুজায় 
আপত্তি তুলিতে তাহার ধর্ম্তীর মন ভীত হইল। 

বলিলেন, “অমাবস্যার আর কদিন বাঁকী--* 

' পরশ দিন” 

পএর মধ্যে কি সব হয়ে উঠবে?” 

"এর মধ্যে ছোটথাটো মূত্তি একটা হবে না? খোঁজ 
কর, গ্রামে নিশ্চয় গড়তে পারে কেউ--* 


বৈশাখ--১৩৪৮] 





হি 


৬২১৯ 





স্ব ব্যাস 


মাথ! চুলকাইয়া হরেরাম বলিলেন__“দেখি, বংশীকে ভোহুল ভালমান্থষের মতো! একবার আড়চোখে চাহিয়া 


বলে। আমি কিছুই জানি না” 
বংশী পিওন। 


বংশীর সহায়তায় সাতআটদিনের মধ্যে ছোট একটি 
প্রতিমা! এবং নধর একটি পাঠা জোগাড় হইয়া গেল। 
ভোগ্বল উল্লসিত হুইয়! উঠিল। নিষ্ঠাবান পিতাঁর সন্তান 
হইলে কি হয়, মাংসের প্রতি তাহার খুব লোৌভ। মাংস 
থাইতে পায় ন! বলিয়া লোভটা আরও বেণী। তাহার 
ভারী আনন্দ হইল। পিতামাতার জ্ঞাতসারে সে অবশ্য 
বেশী হর্ষপ্রকাঁশ 'করিতে সাহস করিল না। বাঘ-বকরি 
খেলার তুচ্ছ বাজির জন্য মুকুজ্যে মশাই এতকাঁ করিতেছেন 
তাহা প্রকাশ হইয়া পড়িলে হরেরামবাবু অত্যন্ত চটিয়া 
যাইবেন। নিরীহ হরেরাঁম চটিয়া গেলে মারধোর অথবা 
হাঁকডাক করেন না, নীরবে উপবাস করিতে থাঁকেন। 
সৃতরীং সহসা কেহ তাঁকে চটাইতে চাহে না। মুকুজ্যে 
মশাই বাঘ-বকরি প্রসঙ্গ তাহার নিকট উতাপিতই 
করিলেন না। ভোম্ছলও ভালমান্ষের মতো চুপ করিয়া 
রহিল। 

বংশীর আমুকৃল্যে মুকুজ্যে মশাই কালীপুজার আয়োজন 
যখন শেষ করিয় আনিয়াছেন এমন সময় অত্যন্ত 
অপ্রত্যাশিত রকম একটি বাধা আসিয়। উপস্থিত হইল । 
পোস্টাল স্পারিন্টেণ্ডেন্টের এক চিঠি আসিয়া হাঁজির ! 
তাহার ' সারমর্শ--মুরারিপুরের কয়েকজন মুসলমান 
অধিবাসী অভিযোগ করিয়াছেন যে মুরারিপুর পোস্টাফিসে 
নাকি কালীপৃজা করা হইতেছে । অভিযোগ যদি সত্য 
হয় তাহা হইলে এতত্বারা হরেরামবাবুকে পোস্টাফিসে 
কালীপুজ! করিতে নিষেধ করা! হইতেছে । কোন গভর্ণমেন্ট 
আপিসে এরূপ পুজাদি কর! নিয়মবিরুদ্ধ। 

ভোম্বল অত্যন্ত দমিয়া গেল। সন্কল্পিত এবং আয়োজিত 
দেবীপূজায় বিদ্ব উপস্থিত হওয়াতে হরেরামবাবুও মনে মনে 
উদ্বিগ্ন হইলেন। দমিলেন না মুকুজ্যে মশাই। তিনি 
হাসিয়া বলিলেন, “ওর জন্তে আর ভাবনা কি, ওই সামনের 
মাঠটায় একটা চাল! তুলে ফেলে সেইখানেই পুজে! করা 
যাবে। পোস্টাফিসে পুজো! নাই বা করলাম আমরা । কি 
বল ভোম্বল--* 


চুগ করিয়া রহিল। নিকটে উপবিষ্ট বংশীকে সম্বোধন 
করিয়! মুকুজ্যে মশাই বলিলেন, “তুমি ছু”চারটে জনমন্তুর 
ডাকাঁও, বুঝলে বংশী-_একটা ছোটখাটো চালা তুলতে 
আর কতক্ষণ যাঁবে। গ্রীষ্মকালে মাঠের মাঝখানে বরং 
ভালই হবে। ও জমিটা তো রাঁমকিষুণের__সে বোধহয় 
আপত্তি করবে না। তাকেও তুমি একবার জিগ্যেনা! করে 
এসো--» 

বংশী রাঁমকিষুণের অনুমতি লইবাঁর জন্ত চলিয়া গেল 
এবং একটু পরে ফিরিয়া আসিয়া! বলিল যে রামকিষুণের 
আপত্তি তো নাই-ই--সে বরং খুশীই হইয়াছে। সাঁধুবাবা 
ওখানে কালীমাঁয়ির পূজা করিবেন ইহাতে আপত্তি 
করিবার কিআছে! সে কৃতার্থ হইয়া গিয়াছে। ইহার 
জগ্ত আরও যদি কোন সাহায্যের প্রয়োজন হয় সে করিতে 
প্রস্তুত আছে। মুকুজ্যে মশাই বংণীকে চালা তুলিবার 
ব্যবস্থা করিতে বলিলেন এবং খড় বাঁশ প্রভৃতি কিনিবাঁর 
জন্য টাকা বাহির করিয়া দিলেন। পুজার যাবতীয় খরচ 
মুকুজ্যে মশাই-ই বহন করিতেছেন, হরেরামের অন্থুরোধ 
সত্বেও তিনি হরেরামের নিকট হইতে এক পয়সাও লইতে 
রাঁজি হন নাই। 

আয়োজিত কালীপুজায় বিদ্বা উপস্থিত হওয়াতে 
হরেরাম মনে মনে শঙ্কিত হইয়াছিলেন, এখন কর্তৃপক্ষের 
অমতে কালীপৃজা করিতে আবার তিনি মনে মনে ইতন্তত 
করিতে লাগিলেন । যদ্দিও পোস্টাফিসে কর! হইতেছে না, 
একেবারে পোস্টাফিসের সীমানার বাহিরেই হইবে; তথাপি 
কর্তৃপক্ষের অমতেই তে! হইবে! চাঁকরির যা বাজার, 
কোথা হইতে কি হইয়া যায় কে বলিতে পারে। অথচ 
নিষ্ঠাবান হিন্দুস্তান হইয়া আয়োজিত পুজা না করণটাও-! 
একদিকে মা কালী অন্যদিকে পোষ্টাল স্পারিন্টেণ্ডেষ্ট, 
নিরীহ নিষ্ঠাবান হরেরাম মর্্ান্তিক দোটানায় পড়িয়! 
গেলেন। কিন্তু মুকুজ্যে মশাই মা কালীর পক্ষে, নিরুপায় 
হরেরাঁমকে চুপ করিয়াই থাকিতে হইল । 

মুকুজ্যে মশাই মহা! উৎসাহে জনমন্ুর লইয়া রামকিষুণের 
মাঠে চাঁলাঘর তুলিতে লাগিয়! গেলেন। ভোদ্বল মুকুজ্যে- 
মশায়ের নিকট হইতে ফর্দ ও টাকা লইয়া! ভাল খি গরম- 
মপনা! গ্রত্ৃতির সন্ধানে বাজারের নানা. দোকানে ঘুরিতে 


সি, 


লাগিল। মুকুজ্যে মশাই এতরকম মশলার ফিরিস্তি 
দিলেন যে মুরারিপুরে সবগুলি মেলাই মুফধিল হইয়া 
উঠিল। সির্কা এবং জাফরাঁণ এ ছুইটি ভ্রব্য তো 
কোথাও মিলিল না। 


বেলা! তিনটা নাগাদ চাল! খাড়া হইয়া গেল। চালার 
ব্যপার শেষ করিয়! মুকুজ্যে মশাই মাংসের ব্যাপারে মন 
দিলেন। মুকুজ্যে মশাই ঠিক করিয়াছেন-_রাত্রে পুজা 
হইয়া যাইবার সঙ্গে সঙ্গেই মাঁংসটী রাাধিয়া ফেলবেন । 
তিনি নিজেই র'ীধিবেন। ভোখল এবং তাহার কয়েকজন 
সঙ্গী গোল গাল করিয়া নৈনিতাল আলু ছাঁড়াইতেছে। আলু 
ছাড়ানো হইয়া! গেলে আলুগুলির গায়ে ছোট ছোট ছিত্ 
করিয়া ভাজা মশলা পুরিতে হইবে। মুকুজ্যে মশাই 
নানারকম মশলা ভাজিয়া গুঁড়া করাইতেছেন। অনেক 
কষ্টে জিওলপুর গ্রামের দৌলতরাম মাড়োয়ারির নিকট 
জাফরাণ পাওয়া গিয়াছে । সির্কা পাওয়া যায় নাই। মুকুজ্যে 
মশাই টক দই দিয়া তাহার অভাব পূর্ণ করিয়! লইবেন আশ্বাস 
দিয্লাছেন। কালীপুজার আয়োজন পুরাঁদমে চলিতেছে, এমন 
সময় একটি অভাবনীয় ঘটনা ঘটিল। সন্ধ্যার প্রাককালে গো- 
শকটে আরোহণ করিয়া স্বয়ং পোস্টাল স্থপারিশ্টেণ্ডে্ট মহাশয় 
হাজির হইলেন। তিন ক্রোশ দূরবর্তী স্টেশন হইতে মুরারিপুরে 
আসিতে হইলে গোশকট ছাড়া অন্য কোন যান নাই, 
ক্থতরাং মাননীয় হুপারিণ্টেণ্েটে মহাশয়কে গো-শকটেই 
আসিতে হইয়াছে। প্রকাস্তে স্থপারিণ্টেণ্ডেপ্ট মহাশয় 
বলিলেন-__-তিনি মুরারিপুর পোস্টাফিন ভিজিট করিতে 
'আসিয়াছেন। কিন্তু যেহেতু তিনি মুসলমান সেই হেতু 
সকলে অনুমান করিতে লাগিল ষে তাহার কালীপুজা- 
সম্পফিত আদেশ বণে বর্ণে প্রতিপালিত হইতেছে কি না 
তাহাই প্রত্যক্ষ করিবার জন্ত তিনি আসিয়াছেন। 
চাকুরিজীবী নিরীহ হরেরাম বেশ একটু ঘাবড়াইয়া গেলেন। 
মুকুজ্যে মশাই ছিদ্রিত আলুগুলিতে মশলা পুরিতে পুরিতে 
একটু হাসিলেন এবং হরেরামকে বলিলেন, “তুমি তোমার 
স্বপারিপ্টেপ্তেটকে সামলাও গিয়ে, এখানে আসবার 
দরকারই নেই তোমার । আমরা সব ব্যবস্থা করে 
নিয়েছি” . 

হয়েরাম সুপারিপ্টে্ডটে সামলাইতে লাঙগগিলেন্‌। মুকুজ্যে 


স্ডাব্পব্ডন্ঞ্ 


[ ২৮শ বর্--২য় খণ্ড--€ম সধ্্যা 


মশাই ভোস্ছলদের মার্চেন্ট অব্‌ ভেনিসের গল্প বলিতে বলিতে 
মাংস রানার আয়োজনে ব্যাপৃত রহিলেন | সন্ধ্যা নাগাদ 
কালীপ্রতিমা আসিয়! চালায় প্রতিষ্ঠিত হুইয়া গেলেন, 
গ্রামের পুরোহিত মহাশয় পুজার আয়োজন করিতে 
লাগিলেন। 


কালীপৃজ! হইয়া গিয়াছে। অমাবস্যার অন্ধকার রা্রি 
থমথম করিতেছে । চালাঘরের পাশেই একটি তোলা 
উন্ুনে মুকুজ্যে-মশাই মাংস রান্না করিতেছেন, সৌরডে 
চতুর্দিক আমোদিত। নিকটেই তোম্বল ও তাহার তিন- 
চারজন সঙ্গী গুটি সুটি হইয়া বসিয়া আছে। পুরোহিত 
মহাশয়ও মহাপ্রসাদ আস্বাদন করিবেন বলিয়া অপেক্ষ। 
করিতেছেন। জমির মালিক রাঁমকিষুণ ও তাহার সম্্থী 
থুবলালও সোৎসাহে জাগিয়া বসিয়া আছে। যর্দিও 
রাত্রি দ্বিপ্রহর উত্তীর্ণ হইয়! গিয়াছে, কাহারও চোথে 
ঘুম নাই। মুকুজ্যে মশাই খুব জমাইয়া একটি ভূতের গল্প 
সুরু করিয়াছেন । 

আগামী কল্য বেল! দশটার আগে ট্রেণ নাই। সুতরাং 
নুপারিপ্টেণ্ডেপ্ট মহাঁশয়কে পোস্টাফিসেই রাত্রিবাস করিতে 
হইতেছে । তিনি কালীপৃজা সম্পর্কে হরেরামবাবুর কোন 
খুঁত ধরিতে না পারিয়া আপিসের কাগজপত্র নাকি তন্ন 
তন্ন করিয়া! পরীক্ষা করিয়াছেন। ভোম্বল মাঝে মাঝে 
উঠিয়া গিয়া সংবাদ সংগ্রহ করিয়া আনিয়াছে যে রাত্রি 
দশটা পর্য্যন্ত তিনি নাকি থাতাপত্র দেখিয়াছেন। 
পোস্টাফিসের বাহিরের ঘরটাতে তাহার শয়নের ব্যবস্থা 
হইয়াছে এবং স্থানীয় মাপ্রাসার মৌলভী সাহেব তাহাকে 
স্বগৃছে নিমন্ত্রণ করিয়া পরিপাটিরপে আহার করাইয়াছেন। 
বংশী বলিল__এই উপলক্ষে মৌলভীগৃহে মুগিও নাফি নিহত 
হইয়াছে । এখন স্পারিশ্টেণ্ডেট মহাশয় পোস্টাফিসের 
বাহিরের ঘরটাতে নিদ্রিত।"."'"'মাংস প্রায় সিদ্ধ হইয়া 
আসিয়াছে, ভূতের গল্পও বেশ জমিয়া উঠিয়াছে-_এমন 
সময় পোস্টাফিসের বাহিরের ঘর হুইতে একটা চেঁচামেচি 
শোনা গেল। 

সাপ-_-সাপ! 

সকলেই সচকিত হইয়া উঠিল। 

মুকুত্যে মশাই বলিলেন, “বংশী তুমি লঞ্ঠনটা নিয়ে একটু 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


শুক্চ 


৬হ 





এগিয়ে দেখ_-”। শুধু বংশী নয় খুবলাল, রামকিষুণ, 
পুরোহিত, ভোম্বল সকলেই আগাইয়া গেল। সত্যই সাপ 
বাহির হইয়াছে । বিরাট এক কেউটে পোস্টাফিসের 
কোণে ফণা! তুলিয়! ধীড়াইয়া আছে। স্থপারিপ্টেণ্ডেণ্টের 
অবস্থা অবর্ণনীয় । সাঁপটাকে মারা গেল নাঃ কোথায় যে 
চকিতের মধ্যে অৃশ্য হুইয়া পড়িল বোঝা গেল না। 
ন্পারিণ্টেণ্ডে টে পোস্টাফিসে শুইতে চাহিলেন ন]। 
শশব্যস্ত হরেরাম তাহাকে কোথায় শুইতে দিবেন চিন্তায় 
পড়িলেন। রামাঁকিষুণ বপিলঃ মৌলভী সাহেবের বাড়িতে 
খবর পাঠানো হউক। তাহাই হইল। স্ুপারিপ্টেণ্েণ্ট 
মৌলভী সাহেবের বাহিরের ঘরটাতে শুইতে গেলেন। কিন্ত 
সেখানেও তাহার স্ুনিদ্রা হইল না। চোঁথ বুজিলেই 
তাহার মনে হইতে লাগিল- প্রকাণ্ড কৃষ্ণকায় সর্পটা হিংন্ত্ 
ফণ! উদ্যত করিয়া তর্জন করিতেছে । অতি প্রত্যুষেই 
তিনি মুরারিপুর ত্যাগ করিলেন। রামকিষুণ প্রথমে 
ব্যাপারটা ভালভাবে প্রণিধান করে নাই ; কিন্ত পরে সমস্ত 
হাদয়জম করিয়া! প্রভাতে আসিয়া! ভক্তিভরে মুকুজ্যে মশাইকে 
সাষ্টাঙ্গে গ্রণিপাত করিল। সাধুবাবাটি তো সহজ লোক 
নহেন! এত বড় অকাট্য প্রমাণ পাইয়া সে যেন চরিতার্থ 
হইয়। গিয়াছিল। প্রকাণ্ড কেউটে আসিয়া! হাজির হইয়! 
গেল! শ্লেচ্ছ সুপারিন্টেণ্ডটে পলাইতে পথ পাইল না! 
রামকিষুণের এতাদৃশ ভক্কিবাহল্যে মুকুজ্যে মশাই কিন্তু মনে 
মনে শঙ্কিত হইয়া উঠিলেন-_লোকটা মাছুলি অথবা মন্ত্র 
চাহিয়া না বসে! এই জাতীয় অনেকগুলি ভক্ত তাহার 
জীবনে অনিবাধ্যভাবে জুটিয়া গিয়াছে, আর সংখ্য। 
বাড়াইতে তিনি চান না। রামকিষুণ মাছুলি কিন্বা মন্ত্র 
চাহিল না; কিন্ত অন্থরোধ করিল আরও ছুই চারিদিন 
তাহাকে থাকিয়া যাইতে হুইবে। তাহার কন্তার “গওনাঃ 
অর্থাৎ দ্বিরাগমন আর কয়েক দিন পরেই অনষ্ঠিত হইবে। 
মে জময় পধ্যস্ত যদি সাঁধুবাবা “কিরপা” করিয়। থাকিয়! 
যাঁন, বড় ভাল হয়। তাহার আশীর্বাদ নবদম্পত্তীর জীবনের 
অসূল্য সম্পদ হইবে । 

মুকুজ্যে মশাই মনে মনে প্রমাদ গণিলেন। তোদ্থল 
মাংস খাইয়া খুশি হইয়াছে, কালীপুজ! নির্বিষ্বে সম্পন্ন 
হইয়াছে । সুপারিণ্টেখ্ডেট স্টেশন অভিমুখে রওন] হইয়া 
গিয়াছেন, হযেরামবাবুর কাজকর্মে কোনরূপ গাফিলতি 


ধরা পড়ে নাই; সুতরাং নিশ্চিন্তচিত্তে মুকুজ্যে মশাই এবার 
যাইবার আয়োজন করিতেছিলেন_ হঠাঁৎ রাঁমকিযুণের 
নির্বন্ধাতিশয্যে তিনি একটু বিব্রত হইয়া পড়িলেন। এই 
সরলপ্রকৃতির লোকটিকে ক্ষুন করিয়া চলিয়া! যাইতে 
তাহার বাধিতেছিল, অথচ মুরারিপুরে আর তাহার ভাল 
লাগিতেছিল না। একস্থানে বেশী দিন থাক! তাহার 
স্বতাব নয়। হয় তো শেষ পর্য্যন্ত তিনি রামকিযুণের 
অনরোধ অগ্রাহহ করিতে পারিতেন না, কিন্তু সকালের 
ডাকে একখানি পত্র পাইয়া! তিনি বিচলিত হইয়া পড়িলেন । 
সেইদিনই তাহাকে কলিকাতা! যাত্রা করিতে হইল। জরুরি 
পত্রের বিষয় অবগত্ত হইয়া রামকিযুণও আর আপত্তি 
করিল না। পত্রথানি হাসির । হাঁসিকে তিনি মুরারি- 
পুরের ঠিকানা দিয়া আসিয়াছিলেন। সাধারণত তিনি 
কাহাকেও ঠিকানা দিয়া আসিতে চান না| কিন্তু হাসি 
নূতন লিখিতে শিখিয়াছে, মুকুজ্যে মশাইকে চিঠি লিখিবে 
বলিয়া জোর করিয়া তাহার নিকট হইতে ঠিকানা আদায় 
করিয়া লইয়াছিল। হাসির চিঠি পাইয়া মুকুজ্যে মশাই 
স্তত্তিত হইয়া গেলেন। বড় বড় আকা-বাকা অক্ষরে হাসি 
লিখিয়াছে__ 
শ্রীচরণেষু, 

বড় বিপদে পড়ে আপনাকে চিঠি লিখছি । ঠাঁকুরপো 
তার এক বন্ধুর বিয়েতে বরযাত্রী যাচ্ছি বলে একদিন. 
সন্ধ্যের সময় চলে যায়। সেই থেকে ঠাকুরপো আর 
ফেরেনি । এখন শুনছি সে নাকি পুলিশের হাতে ধয়া 
পড়েছে, তাঁর কাছে বোমা! আর রিভলভার পাওয়া গেছে। 
ঠাঁকুরপো এখন হাজতে । আজ শুনছি গুরও নাকি 
চাকরি থাকবে না। উনি যখন মজঃফরপুর গিয়েছিলেন 
তখন ওঁকে আমি একট! চিঠি লিখেছিলাম । গুদের সঙ্গে 
মিস্টার ঘোষ বলে কে এক মুখপোড়া নাঁকি কাজ করে-_ 
চিঠিথান! তার হাতে পড়েছে। আমার চিঠির ভেতর সে 
কি দেখতে পেয়েছে জানি নাঃ কিন্ত তা নিয়ে নাকি ওর 
চাকরি যাচ্ছে। আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। আপনি 
শিগগির চলে আসুন। আমি বাতাকেও চিঠি লিখলুম। 
ইতি- হাসি 
পুনশ্চ। 

দেখেছেন আমার মাখার একেবারে ঠিক নেই। 


৬২ 


ভান্রভম্খহ 


[২৮শ ব--২য় খণ্ডঁ--€ন সংখ্যা 





তাড়াতাড়িভে আপনাকে প্রণাম দিতেই তুলে গেছি। 
ভক্তিপূর্ণ প্রণাম নিন। ইতি-হাসি 

মুকুজ্যে মশাই সেইদিনই কলিকাতা অভিমুখে 
যাত্রা করিলেন। 


' নীরব গভীর রাত্রি । 

মরণোন্থুখ যতীন হাঁজরার শয়ন শিয়রে শঙ্কর একা 
জাগিয়! বসিয়া আছে। ঘরের এককোণে টেবিলের উপর 
একটি বাতি জলিতেছে। আপেল, বেদানা, কমলালেবু 
প্রভৃতি দুই চাঁরিটি ফলও টেবিলে সাজানো আছে। 
মিষ্টিদিদি এগুলি পাঠাইয়া দিয়াছেন কিন্তু যতীনবাবু 
একটিও স্পর্শ করেন নাই। ঘযর্তীনবাবু লৌকটি অদ্ভুত- 
প্রকৃতির । আর কিছু নয়, অদ্ভুত রকম নীরব। শঙ্করের 
সহিত এ পর্যন্ত একটিও কথা হয় নাই। শীর্ণ পার 
মুখ, অতিশয় ক্লাস্তিব্ঞঙ্কক কোটরগত চক্ষু দুইটি বুজিয়া 
সর্ধবক্ষণই চুপ করিয়া গুইয়া থাকেন। নীরবে বিনা 
প্রতিবাদে মৃত্যুর কাছে এমন আত্মসমর্পণ শঙ্কর আর কখনও 
দেখে নাই। শঙ্কর যতীনবাবুর মুখের দ্রিকে চাহিয়! চুপ 
করিয়া বসিয়া থাকে । লক্ষ্য করে তাহার গলার দুই পাশের 
শিরা দুইটা অহরহ স্পন্দিত হইতেছে । মাঝে মাঝে 
দীর্ঘনিষ্বান পড়ে, সন্ধ্যার পর কাসিটা বাড়িয়া ওঠে। 
প্রয়োজন হইলে নিজেই উঠিয়া বাথরুমে যাঁন, একটি বালক- 
ভৃত্য খাবার আনিয়া! দুইবেল! তাহাকে খাওয়াইয়! যায়) 
গ্রকাশবাবু প্রত্যহ সন্ধ্যায় একবার করিয়া 'আসেন, 
প্রকাশবাবুর প্রশ্নের উত্তরেই অতি সংক্ষেপে ছুই চারিটি 
কথা যতীনবাবু বলেন, প্রকাশবাবু চলিয়া গেলে আবার 
চোখ বুজিয়া গুইয়া থাকেন শঙ্কর যে দিবারাত্রি তাহার 
নিকটে রহিয়াছে তাহা তিনি মোটে লক্ষ্যই করিতে চান 
না। শঙ্কর পাড়ার একটা শস্ত| হিন্দু হোটেলে আহারাদি 
সমাধা করিয়া আসে (নিজের গরম ওভার-কোটটা 
বিক্রয় করিয়া সে কিছু অর্থ সংগ্রহ করিয়াছে) এবং 
নির্বাক হইয়া এই ফল্লা রোগীর মরণ শিয়রে জাগিয়া 
বসিয়া থাকে। 

হয়তো থাঁকিত না, কিন্ধু চুনচুনের জন্ত থাকিতে হয়। 
লকলের বারণ সব্বেও গভীর রাত্রে চুনচুন লুকাইয়্‌ স্বামীকে 


দেখিতে আসে । গভীর রাত্রে শঙ্কর কপাট খুলিয়! দেয়, 
চুন্চুন চোরের মত আসিয়া প্রবেশ করে। চুন্ছুন প্রবেশ 
করিলে শঙ্কর বাহিরে চলিয়া যায়। চুনচুন বেশীক্ষণ থাকে 
না। যতক্ষণ থাকে শঙ্কর ফুটপাথে পায়চারি করিতে 
করিতে চুনচুনের কথাই ভাবে। চুনচুন খুব রোগা, খুব 
কালো, কিন্তু চোখ ছুটি তাহার সুন্দর। চোখ দুটি বড় 
নয় কিন্তু অপরূপ। চুনচুনের সমস্ত অন্তরের ছবি যেন 
ওই কালে! চোখ ছুটি । গভীর রাত্রে এই গোপন 
অভিসার শঙ্করের মনকে উতলা করিয়া তোলে । প্রেমাস্পদকে 
গোপনে বিবাহ করিয়া চুনচুন গোপনেই তাহার জঙ্ 
প্রায়শ্চিত্ত করিতেছে । হিতৈষিণী দিদি এবং দিদির বান্ধবীর 
দল চুন্চুনকে কিছুতেই তাহার স্বামীর সংশ্রবে আসিতে 
দিবে নাঃ এমন কি মৃত্যুকালেও নয়! ছোঁয়াচে রোগের 
ওজুহাতে এ যেন প্রতিশোধ লওয়া ! আজ যদি মিসেস্‌ 
স্যানিয়ালের ওই রোগ হয়-চুনমুনকে কি তিনি কাছে 
যাইতে দিবেন না? কিন্তু এসব লইয়া দিদির সহিত তর্ক 
করিবার কল্পনা করাও চুনচুনের পক্ষে অসম্ভব। অতিশয় 
মাঞ্জিতরুচি মৃদুপ্রকৃতির মেয়ে। শঙ্করের মনে হয় 
অতিশয় নিগুঢ় প্রকৃতির । তাহা না হইলে গোপনে বিবাহ 
করিতে পারিত না, গভীর রাত্রে এক! স্বামীর সহিত দেখা 
করিতে আসিত না। শঙ্করের মনে হয় চুনচুন সমাজের 
সহিত ইতরের মতো! কলহ করিতে চায় না, কিন্তু নিজের 
মতে নিজের পথে চলিতে চায়। প্রকাশ্তভাবে চলিবার 
যদি বাঁধ থাকে, বাধা অতিক্রম করিবার জন্য সে অকারণে 
শক্তিক্ষয় করে না__গোঁপনতার আশ্রয় লয়। নিপ্িত 
ষতীনবাবুর পার মুখের পাঁনে চাহিয়া শঙ্কর চুনচুনের 
কথাই ভাবে। চুনচুনকে ঘিরিয় তাহার মন উৎসুক হইয়া 
উঠিয়াছে। উৎসুক হইয়া না উঠিলে শঙ্কর এই নীরব 
মৃত্যু-পথ-যাত্রীর মাথার শিয়রে এমনভাবে হয় তো দিনের 
পর দিন বসিয়া থাকিতে পারিত না। পাঁশের বাড়ির 
ঘড়িতে বারোটা বাজিয়৷ গেল । আর একটু পরেই চুন্চুন 
আিবে। দ্বারে মৃদু করাঘাতটির প্রত্যাশায় শঙ্কর সজাগ 
হইয়া বসিয়। রহিল। 


কতক্ষণ কাটিয়া! গিয়াছিল শঙ্ধরের খেয়াল ছিল ন্া। 
সে টেবিলের একধারে বসিয়! “আযান ক্যারেনিনা” পড়িতে” 


বৈশাখ-_-১৬৪৮ ] 


ছিল। হঠাৎ লক্ষা করিল যতীনবাবু একদৃষ্টে তাহার 
মুখের পানে চাহিয়া আছেন। শঙ্কর বিস্মিত হইয়া গেল, 
একটু ভয়ও পাইল। 

পপ্তহুন__» 

শঙ্কর তাড়াতাড়ি তাঁহার বিছানার কাছে উঠিয়া গেল। 
যতীনবাবু ধীরে ধীরে বলিলেন, “আমার একটি উপকার 
করবেন দয়া করে__” 

“কি বলুন-_” 

যতীন হাজরা কয়েক মুহূর্ত শঙ্করের মুখের পানে স্থির- 
দৃষ্টিতে .তাকাইয়া রহিলেন। তাহার পর বলিলেন, 
“আপনাকে বিশ্বাস করতে পারি তে1?” 

“নিশ্চয়, 

যতীনবাবু আবার কিছুক্ষণ চুপ করিয়া রহিলেন। 
তাহার পর বলিলেন, “দেখুন আমি বুঝতে পেরেছি আমি 
আর বাঁচব না। আমার ভেতরটা কেমন যেন খালি 
থালি হয়ে আসছে--” 

আবার চুপ করিলেন। 

শঞ্চর নীরবে সোৎস্থকে চাহিয়া! রহিল । 

ক্ষণকাঁল পরে যতীনবাবু বলিলেন, “মারা যাঁৰ সেজন্ 
দুঃখ নেই, আমার সবচেয়ে দুঃখ যে মরেও আমি শাস্তি 
পাচ্ছি না । আমার মনে হচ্ছে যে আমার মৃত্যুর পরও অশান্তি 
ভোগ করার জন্য আমার মনট! বোধ হয় বেঁচে থাঁকবে--» 

শঙ্কর চুপ করিয়াই রহিল। 

যতীনবাঁবু বলিতে লাগিলেন, “কিন্তু আপনি তাকে 
বলবেন যে অন্ুতাপে আমার বুকট। পুড়ে থাক হয়ে যাঁচ্ছে। 
আঁমি এ কদিন থালসি তার কথাই ভাবছি, আর কোন 
কিছু ভাববার শক্তিও নেই আমার-_” 

“আপনি কার কথা বলছেন ?” 

«আমার স্ত্রীর” 

শঙ্গর চুপ করিয়া! রহিল। 

যততীনবাবু বলিলেন, “চুনচুনের নর, আমার প্রথম স্ত্রীর । 
সে এখনও বেচে আছে। আমি তাঁকে ফেলে পালিয়ে 
এসেছিলাম ; সে নিরপরাধ জেনেও তার মাথায় কলঙ্কের 
বোঝা চাঁপিয়ে দিয়ে ত্যাগ করে এসেছিলাম । সে এখনও 
বেঁচে আছে। আপনি একবার দয়া! করে যাঁবেন তার 
কাছে? তাকে বলবেন যে আমি--* 

পল 





ভুত 


২৫২৫ 





যতীনবাবু ক্লান্ত হইয়া পড়িয়াঁছিলেন। 

একটু চুপ করিয়া বলিলেন, *ছ্যা, বলবেন আমার 
পাপের পুরো প্রায়শ্চিন্ত করে জলে পুড়ে অন্ুতাঁপ করতে 
করতে আমি মরেছি। আপনি কাল একবার দয়া করে 
যাবেন তার কাছে। গিয়ে বলবেন যে জীবনের শেষ 
মুহূর্ত পর্যন্ত তাঁরই কথা ভেবেছি, মনে মনে তার পায়ে 
ধরে ক্ষমা চেয়েছি--” 

শঙ্কর বলিল, “টুনচুন, মানে মিসেস্‌ হাজরা কি একথা 
কিছুই জানেন ন1 ?” 

“না। লুকিয়ে বিয়ে করেছি ওকে, সে অনেক 
ইতিহাস-_-বলবার এখন সময় নেই” 

একটু চুপ করিয়া পুনরায় বলিলেন, “মেয়েমানৃষ, ছুটো 
মিষ্টি কথ| বল্ললেই তুলে যায়, অতি সহজেই ভূলে যায়। 
আপনি ওকে যেন ওসব কথা বলবেন না, বৃথ৷ কই পাবে। 
একি--একি--এখনি সব অন্ধকার হয়ে আসছে" যে-- 
আপনি-__তাঁর--” ও 

সব শেষহইয়া গেল। 

প্রথম স্ত্রীর ঠিকানাটা আর শঙ্করকে বলা হইল না। 
নির্বাক শঙ্কর পাথরের মৃত্তির মতে! ধাড়াইয়া রহিল । 


প্রথম দিন ভন্টু কথাটা পাড়িতে পারে নাই। ওইরূপ 
নিদারুণ সংবাদ শোনার পর টাকার কথা গাড়া সম্ভবপর 
হয় নাই। আজও যে জিনিস্টা সহজ হইয়াছে তাহ! নয়, 
কিন্ত আজ না পাড়িয়া উপায় নাই। কাল রাত্রে 
করালীচরণ স্বয়ং না কি টাকার তাগাদায় তাহার বাড়িতে 
আসিয়াছিল। ভাগ্যে সে বাড়িতে ছিল না। বউদ্দিদি 
বলিলেন যে সে বাড়িতে নাই" শুনিয়াও করালী নড়িতে 
চাহে নাই। ভন্টুর অপেক্ষায় রাস্তার ধোঁড়ে অনেকক্ষণ 
দীড়াইয়াছিল। যাইবার সময় বলিয়া গিয়াছে-_ভন্টু যেন 
অতি অবশ্তু অবিপন্থে তাহার সহিত সাক্ষাৎ করে। দ্রাবিড়ী 
লদকা-লনকির নেশায় চীম গ্যান্ডঅ যেরূপ ক্ষেপিয়! উঠিয়াছে 
তাহাতে রিক্তহস্তে তাহার সহিত দেখা করিলে রক্তসিক্ত 
হইয়া ফিরিতে হইবে । স্থতরাং অশোভন হইলেও. নিবারণ- 
বাবুকে আঙ্গ না খজগাইয়া উপায় নাই। কিন্ত কিরূপে! 
মুখবন্ধটা কি গ্রকারে করা যার়। ভন্টু ভাবিত্বে ভাবিতে 

এ 


২০২১ 


অগ্রসর হইতে লাগিল; কিন্তু সমন্তার সমাধান 'করিতে 
পারিল না। এরূপ ক্ষেত্রে ঠিক কথাগুলি গুছাইয়। মনে মনে 
মহড়। দিয়া লইলে শ্তুবিধা হয় বটে, কিন্তু ঠিক কথাগুলি 
কিছুতেই মনে আসে না । কাঁধ্যক্ষেত্রে যথাসময়ে যাহোক 
করিয়া ব্যাপারটা আপনিই সম্পন্ন হইয়া যাঁয়। হইলও 
তাঁই। ভন্টু গিয়। দেখিল নিবারণবাবু ম্লানমুখে চুপ করিয়া 
বসিয়া আছেন। ভন্ট্কে দেখিলে পূর্বে যেরূপ সোচ্ছাসে 
সম্বর্ধনা] করিতেন এখন তাহার কিছুই করিলেন না। 
কলান্তক্ঠে কেবল বলিলেন--“আম্ুন” 

ভন্টু উপবেশন করিল । ভন্টু কবি নয়_তবু তাহার মনে 
একটা উপমার উদয় হইল। লৌকটাযেন নিবিয়! গিয়াছে। কিছু- 
ক্ষণ নীরবতার পর ভন্টু বলিল, “কোন খবর টউবর পেলেন ?” 

“কিছু না। পুলিশে খবর দিয়েছি আমি--” 

ভন্টু নীরব রহিল। 

সহসা নিবারণবাবু উদ্দীপকে বলিলেন, “এর জন্যে 
যত টাঁকা লাগে খরচ করব আমি। ও ব্যাটাকে আমি 
দেখে নেব যেমন করে হোক-_” 

ভন্টু তথাপি নীরব। 

“আঁসমিকে জানতেন তো, অত্যন্ত সরল সাদাসিধে মেয়ে 
সে; স্কাউণ্ডেলটা নিশ্চয়ই কোনরকম ভাওত৷ দিয়ে নিয়ে 
গেছে তাকে । বুঝছেন না আপনি-__” 

তন্টু স্থযোগ পাইল, হাসিয়া বলিল--“খুব বুঝছি। 
আসমির কতই বা বয়েস? দারঞ্জি হলেও বা কথা ছিল।” 

“্দারজিও ওসব কিছু বোঝে না, আমাদের গুষ্টিরই 
ধারা অন্ত রকম। এই রাস্কেলটা জুটেই না এই হাঁল হল!” 
. জ্ভন্টু একটু হাসিয়া বলিল, “দে কি আর আমি জানি 

না! এতদিন আপনার বাড়িতে আসছি যাচ্ছি__আপনার 
মেয়েদের গলার স্বরটি পধ্যন্ত শুনতে পাইনি কোনদিন-_” 

"ওই যে বললাম আপনাকে -আমাদের গুষ্টিরই ধারা 
অন্ত রকম-_” 

নিবাঁরণবাবুর গুষ্টির ধারা কি রকম তাহ! লইয়। 
আলোচন! করিতে ভন্টু আসে নাই, সুতরাং সে চুপ করিয়া 
গরেল। আসল কথাটা কোন ফাকে পাড়িবে তাহাই চিন্তা 
করিতে লাগিল। 

ক্ষণকাল পরে নিবারণবাঁবু বলিলেন-_-“পুলিশের পাল্লায় 
পড়লে টিটু হবেন বাছাঁধন--” 


জ্ঞান 


[ ২৮শ বর্-_২য় খণ্ড--£ম সংখ্যা 


ভন্টু বণিল, “পুলিশের হাঙ্গামা করলে আবার একটা 
কেলেঙ্কারি না হয়। কাশজে হর তে| এই নিয়ে ঘাটাথাটি 
করবে, আপনাঁকে আবার দারজির বিয়ে দিতে হবে তো!” 

“হলেই বা, সত্যি কথ বললে কেউ বিশ্বান করবে না 
বলতে চান ?” 

তন্টু নিবারণবাবুর মুখের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করিয়া 
মন্তব্য করিল, “আঁপনাঁর মতো! সরল ধর্মভীরু লোক দুনিয়ায় 
খুব বেণী নেই নিবাঁরণবাঁবু_” 

নিবারণবাবু কোন উত্তর দিলেন না, ত্রকুঞ্চিত করিয়া 
পা দোলাইতে লাঁগিলেন। ভন্টুও আর কোন কথা বলিল 
না। তাহার মনে হইতে লাগিল লোকটি অতিশয় ভালো- 
মানুষ এবং ভালোমান্ষি জিনিসটা নির্ববদ্িতারই নামান্তর । 

সহসা! নিবারণবাবু ভন্টুর দুটি হাত ধরিয়া বলিলেন 
প্ৰারজির জন্তে দিন না একটা পাত্র জুটিয়ে ভন্টুবাবুঃ 
মেয়েটা মুখ শুকিয়ে ঘুরে বেড়ায়__ভারি কষ্ট হয় আমার । 
টাকা আমি খরচ করব। তিন হাজার নগদ; গয়না, 
দানপত্র--থাঁসাধ্য দেব আমি। ভদ্রবংশের ছেলে দিন 
একটি জোগাড় করে, গরীব হলেও ক্ষতি নেই, ওদের ভরণ- 
পোষণের যাহোক একট! বন্দোবস্ত আমি করে যেতে পারব। 
আমার ওই মেয়ের ছাড়া আর কে আছে বদন! তাও 
তো আসমিট1--” 

নিবারণবাবুর কণন্বর রুদ্ধ হইয়া গেল। তিনি বক্তব্য 
শেষ করিতে পারিলেন না । উপগত অশ্ গোপন করিবার 
জন্য অন্যদিকে মুখ ফিরাইয়া লইলেন। 

বিছ্যুৎচমকের মতো! ভন্টুর মাথায় একটা বুদ্ধি খেলিয়া 
গেল। দুই এক মিনিট দে ভ্রতুঞ্চিত করিয়া ভাঁবিল এবং 
তাহার. পর বপ্সিন, “আপনি যদি কিছু মনে না করেন 
তাহলে একটা প্রস্তাব করি --” 

“কি বলুন_” 

“আমার সঙ্গে আপনার মেয়ের বিয়ে দেবেন ?” 

নিবারণবাঁবু সত্যই ইহ! প্রত্যাঁশ। করেন নাই। তিনি 
বিস্ফারিতচক্ষে ভন্টর মুখের পানে চাহিয়া রহিলেন। বাক্য- 
্তি হইলে বলিলেন, “আমার ওই কুচ্ছিত মেয়েটাকে 
নেবেন আপনি? 

তন্টু বলিল, “দেখুন আমি আপনার কাছে কিছুই 
গোপন করব না। আপনি আমার অবস্থা ভাল করেই 


বৈশীথ--১৩৪৮ এ 


“নয বা সস পয” 


জাঁনেন। ছু'কুড়ি সাঁতের খেল! কোনক্রমে খেলে যাচ্ছি_ 
তা-ও চারিদিকে ধার হয়ে গেছে । যাঁ মাইনে পাই তাঁতে 
কুলোয় না। দাদার চেঞ্জের থরচ, সংসারের খরচ-_সব 
আমাকে ওই মাইনে থেকে চালাতে হয়। চারদিকে ধার 
হয়ে গেছে । আপনি যদি কিছু টাঁকাঁকড়ি দেন, ধারটারগুলো 
শোধ করে একটু ঝাড়া হাত পা হতে পাঁরি। টাকার 
জন্যেই আমার বিয়ে করা । এক জায়গায় সাড়ে পাচ শো 
টাক! ধার আছে, ছু একদিনের মধ্যে দিতে না পাঁরলে 
অপমানিত হতে হবে। আমি আপনার কাছেই টাকাটা 
চাঁইব তাঁবছিলাঁম, আপনার এই অবস্থা দেখে কেবল চাইতে 
পারছিলাম না। এখন আপনার কথা শুনে মনে হল-_- 
আপনি স্বজাঁতি, পালটি ঘর, আমার সঙ্গে শ্বচ্ছন্দে আপনার 
মেয়ের বিয়ে হতে পারে । আপনারও কন্ঠ।দাঁয় উদ্ধার হয়, 
আমিও একটু ঝাঁড়া হাত পা হই। বিয়ে তো একদিন 








স্্হা্-.. “্” 





গ্রহাল্ঠীঞ্গ 


৬২৭ 


নিবারণবাবু বলিলেন, পমাপনি দাঁরজিকে দেখেছে 
ভাল করে ? 

“যা দেখেছি তাই যথেষ্ট” 

“আপনার বাবা রাজি হবেন তো?” 

“চেষ্টা কোরব- ৮ 

নিবাঁরণবাবু উঠিয়া ভিতরে চলিয়া গেলেন এবং কয়েক 
মিনিট পরে একটি চেক বহি লইয়া ফিরিয়া আসিলেন। 
“কত টাক৷ চাই বললেন আপনার ?” 

“সাড়ে পাচ শো” 

নিবারণবাবু তৎক্ষণাৎ চেক লিখিয়া দিলেন। 

“কথা তাহলে পাকা তো !” 

“একদম পাঁকা_-” 

এই বলিয়া ভন্টু হেট হইয়া নিবারণবাবুর পদধূলি 
লইল। এবার আর নিবারণবাবু আপত্তি করিলেন না। 





করতেই হবে । চিঠিও আসছে নানা জায়গা থেকে__” ক্রমশঃ 
গৃহদীপ 
কবিশেখর শ্রীকালিদাস রায় 

লক্ষ লক্ষ দীপ জলে গৃহে গৃহে আজি এই যে গৃহটি আলে! করে হাহাকার উঠে তা, 
আধার সন্ধ্যায়, সে গৃহ আধার । 

বিশ্বভরা অন্ধকার যেমন তেমনি থাকে রাষ্ট্র বল দেশ ধলঃ সমাজ সংসার বল' 
নাহি ঘুচে তাঁয়। কারো মোরা নই, 

বিশ্বভরা অন্ধকারে দীপের জীবন সে ত কারো চিরদিনকার' আধার ঘুচাতে পারি 
জোনাকির মত। সে শকতি কই? 

বিরাট বিশ্বের সনে শু্যচন্দ্রমারি যোগ আমরা গৃহের রবি ক্ষীণপ্রাণ দীপ, তবু 
তাহাই শাশ্বত। গৃহ করি আলো, 

শত শত নিভে যদি দুর্য্যোগের ঝঞ্চাবাতে বিনা বায়ে কম্পমান কখনো স্তিমিত হই 
কিবা আসে যায়? কখনো জোরালো । 

নিভিছে জলিছে কত কে রাখে হিসাব তার, গৃহই মোদের সব, প্রাণরসে করি তার 
কে তাহা খতায়? তিমির হরণ? 

নিভে যদি কোন দীপ আলোর স্ঘলটুকু নিতি যদি কার ক্ষতি? গৃহের ক্ষতির আর 
লুপ্ত তবে কার? হয় না পূরণ । 


খাদ্য ও পরিপাঁক সম্বন্ধে আলোচনা 
প্রীকালিদান মিত্র 


পাত ১৩৪৭ ষ্ঠ সংখ্যা 'ভারতবর্া-এ (৮৩৫-৮৩৯ পৃঃ) প্রকাশিত 
“খাস ও পরিপাক" প্রবন্ধের আলোচন! যখন লিখি তখন স্বপ্নেও ভাবি নাই 
ষে এই সামান্য ব্যাপারে আবার কালির আচড় টানার প্রগনোজন হবে। 
ুঙ্গ প্রবন্ধে (খান্ড ও পরিপাক--ডাঃ পশুপতি ভটাচার্যয ডি-টা-এম্‌ 
ভারতবর্ধ পৌষ ১৩৪৬, ৬৯-৭৪ পৃঃ) কতকগুলি অসম্পূর্ণ ও ভ্রমাত্বক 
উক্তি নজরে পড়ায় সেগুলির প্রতিবাদ করি। প্রতিবাদ করার 
মুখ্য উদ্দেগ্ত ছির যে বর্তমান কালে খাস্ত ও পুষ্টি বিজ্ঞানের প্রগতির 
যুগে বাংলা ভাবার সম্পাদিত 'ভারতবর্ধএর মত হুবিখ্যাত মাসিক 
পত্রিকার পাঠকপাঠিকার| যাহাতে এ সম্বন্ধে ত্রান্ত ধারণা পোষণ ন| 
করেন। হয়ত মুগ প্রবন্ধ ও তাহার আলোচনা, যিনি থাস্ত ও পুষ্টি 
সম্বন্ধে বিশেষভাবে চর্চ।! করিতেছেন, এমন কোনও বিশেষজ্ঞের কাছে 
মতামতের জন্ত পাঠালে আলোচনার 'উত্তর' (ল্গোষ্ঠ ১৩৪৭, ৮৩৬-৮৩৯ পৃঃ) 
লেখায় প্রয়োজন হোত না। বাংলা দেশে কোন কোন কেনে এ সন্বন্ধে 
গবেষণ! হচ্ছে তাহার উল্লেখও আলোচনার মধ্যে ছিল। 

যখন শ্রদ্ধেয় লেখক মহাশয় অকাট্া () নজীর পুখগত্র থেকে 
দেখাতে চেষ্ট/ করেছেন তখন ব্যাপারট| জনহিতার্থে বিশদভাবে 
আলোচনার প্রয়োজন। খান্ত ও জনস্বাস্থ্যের সন্ধদ্ধ এতই ঘনিষ্ঠ যে 
এ ব্যাপারে “বিজ্ঞানের নামে জ্ঞানের প্রচার" হলে তার যথাযুক্ত 
প্রতিবাদ করাটা! অবগ্তকর্তবা হয়ে পড়ে। একথা বোধহয় সকলে 
স্বীকার কর্ষধেন যে নলীরগুলি বিজ্ঞানসম্মত হতে হলে এমন বৈজ্ঞানিকের 
লেখা 'থেকে হওয়! চাই ধার থান্ত বিজ্ঞান সন্বদ্ধে গবেষণ! বা প্রত্যক্ষ 
অভিজ্ঞত! আছে। ডাক্তার ভটাচার্ধা তাহার 'উত্তরে' তিনজন গ্রস্থকর্তার 
নাম উল্লেখ করেছেন। এবারে দেখা যাক্‌ তাহাদের থাপ্ত বিজ্ঞান সম্বন্ধে 
অভিজ্ঞত। কিরাপ। 

(১ কর্ণেল চোপর1; ইনি একজন বিশ্ববিখ্যাত ভেবজতত্ববিদ্‌। 
ব্যগুণ সম্বন্ধে ইহার মৌলিক গবেষণ! প্রত্যেক ভারতবাসীর শ্লাঘার 
বিষয়। তাহার প্রণীত [75:47610105 সম্বন্ধে বৃহৎ গ্রস্থে খাত্ত- 
বিজ্ঞান সন্বন্ধে অল্লবিস্তর আলোচনা আছে পরিশিষ্ট হিনাবে। 

(২) ডাক্তার আলেকজাওার ব্রাইস ; ইনি 'বিখ্যাত স্বাস্থ্য তত্ববিদ্‌' 
কিনা জানিনা। তবে ইনি 1691 1716210) বলে একখানা পুস্তক 
(ধাম আন্দাজ ৩%*) প্রণয়ন করেছেন সম্প্রতি, তাছাড়! ইনি 1016181103, 
1100517 00৩01163 01015 সম্বন্ধে আরও ২ ১থান| কেতাব লিখেছেন। 
তবে খাস বিন সন্ধে মৌলিক গবেষণ! করেছেন বলে জানা নেই। 

(৩ কুমুর পুষ্ট প্রয়োঠশালার অধ্যক্ষ ডাকার এক্রয়েড। খান্ত 
বিজ্ঞান স্ঞ্ধে এর মৌলিক গবেধণা গাছে, কয়েকখামি পুস্তকও 
লিখিয়াছেদ এবং তজ্জগৃ যথেষ্ট খ্যাতি আছে। ডাঃ এক্রয়েড সম্পাদিত 


পহেল্ধ বুলেটিন নং ২৩* একখান! উচ্চার্জের নজীর-যদদি না ভাহীর 
লেখার কদর্থ বা! বিপরীত অর্থ কর| হয়ে থাকে । হাঁ-_এইবেলা একট! 
সামান্য প্রতিবাদ করে রাখি কলিকাতাস্থ পাঠকবর্গের সুবিধার জন্। 
বইথানার জন্ক ডাঃ ভট্টাচার্যের নির্দেশমত চার আন! পয়স! খরচ কর্তে 
হবে না, এ অমূল্য গ্রস্থখানি কেবলমাত্র ছুই আন! দামে পাওয়! যাবে হেষ্িং 
ট্টস্থ ভারত সরকারের বুক ডিপেতে। কয়েক মাদ আগেও সেখান 
থেকে পাওয়া গেছে। আমার মত 'বৈজ্ঞনিক ন! হয়েও" (ডাঃ 
ভট্টাচার্যের ভাষায়) ধারা খান্ত সম্বন্ধে বিজ্ঞানের নির্দেশ জানিতে 
চাহেন তার! এই পুন্তিক! পাঠে বিশেষ তৃপ্তিগ্াভ করিবেন। 

এইবার বাদামুবাদের বিময়ীতৃত উক্তিগুলির আলোঢন! কর! যাউক, 
ডাঃ ভট্টাচার্যের লিখিত উত্তরের পর্য্যায়ানু ক্রমে । 

(১) উত্তর লেখক (৮৩৬ পৃঃ ২য় কঃ ও ৮৩৭ পৃঃ ১ম কঃ) মহাশয় 
প্রায় এক কলঙব্যাগী বাক্য বিষ্াস দ্বারা বোঝাতে চেষ্ট। করেছেন যে 
থান্ের কাজ 'শরীরের ক্ষয়পুরণ কর! নহে, ক্ষয় নিবারণ কর! এবং থাস্তের 
সংজ্ঞার মধ্যে শরীর গঠনের উল্লেখ থাকিলে দে সংজ্ঞা নাকি দৌষাত্মক 
হবে। বেশ বুঝতে পারা যাচ্ছে এরপ 'ম্যায়ের' তর্কের অবদান কোনও 
দিন হবে ন।। তাছাড়া এ বাদানুবাদে মুলপপ্রবন্ধ লেখক (ডাঃ ভট্টাচার্ঘয) 
বা নমালোচক (এ রচনার দীন লেখক ) যে কোনও পক্ষই জয়ী হোন না 
কেন, ফলে তাহার যুক্িগত আত্মশ্লাঘ! ছাড় পাঠকপাঠিকাবর্গের খান্ 
নির্বাচনে সহায়ত! কর্ষে না। কাজেই আমার বক্তব্যের (৮৩৫ পৃঃ 
২য় কঃ) বাহিরে আর কিছু বলিতে চাহিনা। 

(২) লেখক মহাশয় ডাহার নং পর্য্যায়ে (৮৩৭ পৃঃ :ম কঃ হইতে 
৮৩৮ পৃঃ ১ম কঃ) এক পৃষ্টাব্যাপী ওজংম্িনী ভাষায় যে দীর্ঘ উত্তরটী 
দিয়াছেন তাহা অনুশীলন করিলে দেখা ধায় যে মুলপ্রবন্ধের আলোচনা 
প্রসঙ্গে আমি যে তিনটা উক্তি করিয়াছি (যথাক্রমে ক,খ এবং গ) 
তিনি তাহার প্রতিবাদ করিয়াছেন। আমার উক্তিগুলি হচ্ছে 
(ক) 'নবচেয়ে মের! প্রোটিন হচ্ছে মাংস--তা সে যে কোনও অস্তরই 
হউক' এবং 'রীতিমত প্রোটিন বলতে মাছ মাংসগুলাকেই বুঝায় এই 
উক্তি ছুইটার কোনও বৈজ্ঞ/নিক ভিত্তি আছে বলে মনে হয় না। পৌঁটিক 
হিসাবে ছুদ্ধের প্রোটিনই শ্রেষ্ঠ । (খ) 'নান| রকম অন্তর মধ্যে মুরগীর 

ংদ ও ছাগলের মাংস সবচেয়ে ভাল' এরপ উত্ভির হেতু বোধ! হুষ্ধর। 
কারণ এদেশে নানাবিধ মাংসের পৌঙ্টিকতা (পুষ্টিকরতা 1) সন্ধে 
তুলনাধুলক গবেধণ! হয়েছে বলে মনে হয় না। “ডাল, বরবটা, গেন্তা, 
বাদামের' মধ্যে প্রোটিনের অংশ কম এরূপ উক্তি ছুষ্পাচা।' এইবার 
আমায় উক্তিগুলির (নূলপ্রবন্ধের প্রতিবাদে ) বৈজ্ঞানিক ভিত্তি পরীক্ষা 
করে দেখ! যাউক--বখাষথ নজীর দিয়ে। 


৯২৮ - 


বৈশাখ-__-১৩৪৮ ] 


(ক) লেখক মহাশয় বখন নিজেকে টপিকাল ক্কুলের ভূতপুর্ব ছাত্র 
হিসাবে পরিচয় দিয়াছেন তখন তার পক্ষে জানাই সম্ভব যে ১৯২৭ সালে 
ডিমেম্বর মাপে কলিকাত! ট্পিকাল স্কুলের কর্তৃপক্ষের তত্বাবধানে 
প্রাচ্যের চিকিৎসকবৃন্দের (87 0951627 45550011002. 01 
110101021 006010176 ) এক বৈঠক হয়। সমবেত বৈজ্ঞানিকমগ্ডলীর 
সেই অধিবেশনে ভারতের বিখ্যাত খাগ্ভতত্ববিদ জেনারেল স্তর রবার্ট 
ম্যাক্কারিন্‌ একটা প্রবন্ধে ভারতের বিভিন্ন জাতির খাছ্ের পৌঁঙ্টিকত। 
সম্বন্ধে তাহার গবেষণার বিবরণ (175 70) 007, [, চ.&, 
2. 21. (3) 0, 352-23 ) * দেন। পরীক্ষা! কর! হয়েছিল জীব 
শরীরের উপর এবং ফলে দেখা যায় যে বিভিন্ন জাতির মধ্যে 'শিখ,' 
জাতির খান্ক শরীরগঠনশীল গুণে সর্বশ্রেষ্ঠ । এমন কি পাঠানের 
খানকে মাংসাধিক্য থাকলেও শরীরগঠন হিসাবে তাহার স্থান ছুগ্ধবহুল 
শিখ ভোজোর নিয়ে। 

লীগ, অফ. নেশন্দের একটা স্বাস্থা বিভাগ ( 86210) 390110, 
16910 ০৫ 3201015 ) আছে; তাহাতে সব্বদশের ( অবশ্ঠ বর্তমান 
ধাযাপক যুদ্ধ অনুষ্ঠানের অব্যবহিত পূর্বের কথা বলা হচ্ছে) শ্রেষ্ঠ বৈজ্ঞ[নিক- 
গণ মমবেত হয়ে জনম্বাস্থ্য সম্বন্ধীয় সমস্তাগুলি (7001)110 1)6210]) 01০- 
115 ) সমাধানের জন্য আলোচন!। করেন বা করিতেন। এই 
বিভাগ হইতে স্বাস্থাসন্ন্বীয় গবেষণা পূর্ণ একটি পত্রিকা প্রকাশিত হয় 
( প্রথমে ব্রেমাসিকী। পরে দ্বিমাসিকী)। সেই পত্রিকার (00817 73]. 
[16810), 0182715, ],. 0. বব. ৬. 3.7 458, 1936) একটি সংখ্যায় 
প্রায় $* বৎদর পূর্বে প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে প্রোটিন সম্ন্ধে পুথ্থানুপুর্- 
বাপে তুলনামূলক সমালোচনা (6.৮. [11011)000 01066115 ০০066 
01016 চ1)101) [১6110105 01 £79%100, ৮9181) 10016700100 ঠা) 
£7210106 [301 পু1ক0]065 01010981021 ৮210০, 170051015062- 
(107 61০.) দ্বার! প্রমাণিত কর! হয়েছে যে জান্তব প্রোটিনগুলির মধ্যে 
ছুষ্ধের প্রোটিনের স্থান সুউচ্চে। এখানে ইংরেজিতে লিখিত ফরাসী 
বৈজ্ঞানিকপ্রবরের উক্ভিটুকু তুলে দেবার লোত সম্বরণ কর্তে পারলুম না। 
+810)0481) 0065 01661: 10652 59 06 201072]101065175 
(100110566৫7 170681৮1506) 0150175 20 01000650102060 
2110 17121760 50167101115 ০৮] 81] 10109161175 01 ৮626681015 
01810. 40001081106 0010067,0)056 ০1 701]. ০০০0] &, 
»11)011) [001৬1168550 70051010107 200 216 11011156010 1010) 
[07000110100 05 0৩ 01011) 018501510, 

কলাম্িয়! বিশ্ববিদ্ালয়ের অধ্যাপক এবং নুবিখ্যাত পুষ্টিতত্ববিদ্‌ 
প্রোফেসর শরমন্‌ তাহার একখানি বহুল প্রচলিত পুস্তকে ( 31:677021 
[7,0.--016701505 01 চ০০০ ৪170 01110101711 200011190 





পা আস্ত ৮৮৭, 


* শ্রচ্ছেয় ডাঃ ভট্টাচার্য্য ও পাঠকপাঠিকাদের মধ্যে ধীহারা 
বিজ্ঞানের চর্চা করেন তাহাদের পক্ষে নজীরের সংক্ষিপ্ত উল্লেখই যথেষ্ট। 
পরবতী নজীরগুলিও এইভাবে দেওয়] যাবে। 


পেশ পপি শশীশীী টি শিপশীটী পিসি পিপিপি | শালী তি পিসি 
পিকে শী শিপিপশ্পীশিপ শিস 





3 ভা সি 


৬২৪, 


০০, 16৮/5011 1937. ৮, 232.) বিভিন্ন প্রোটিনের তুলনামূলক 
সমালোচনায় বলেছেন যে ছুষ্ধের প্রোটিন মাংসের প্রোটিনের চেয়ে যে শ্রেষ্ঠ 
( 27655018519 500610০7) একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে। ধার 
বিশদভাবে প্রমাণ প্রমেয় চাছেন ভার। এই পুস্তকখানিতে সব খবর 
পাবেন। বিশ্ববিখ্যাত পুষ্টিতত্ববিদ্‌ জন্হপ.কিন্দ বিশ্ববিস্তালয়ের অধ্যাপক 
ও ভাইটামিনের শ্রেণীবিভভাগের আবিষ্কারক ধষি ম্যাকৃকলাম (710 
০01181]]) তি ৬. 5021, 1000 06%628170%19086 ০৫ বিঘা, 
11000, 11801011121) & 00, 19397) 939) তাহার পুস্তকে জান্তব 
প্রোর্টিনের তুলনামূলক গবেধণ! করিয়! দেখাইয়াছেন যে বিভিন্ন মাংসের , 
চেয়ে ছুদ্ধ ও ডিদ্বের প্রোটিন শ্রেঠঠ। এই পুন্তকখানির পরিশিষ্টেখ্ং 
অনেকগুলি জান্তব প্রোটিনের 13101081098] ৮৪116 এবং কোন কোন 
বৈজ্ঞানিকের গবেষণ। থেকে এসব তথ্য পাওয়! গেছে তাহার খবরও 
দেওয়া আছে। এখানে একট! কথ! বলে রাখা ভাল। খাস্ততত্ববিদের 
মধ্যে কেহ কেহ বর্তমানে মাংদকে নহে-_বরঞণ ডিম্বের প্রোটিনকে ছুগ্ধের 
উপরে স্থান দিতে চাহেন। এ বিষয়ে এখনও বিশেষভাবে কিছুই 
স্থিরীকৃত হয় নাই। 

এরপরেই মূল প্রবন্ধলেখক উপদেশ দিয়াছেন যে মাংসের প্রতি 
আমার এতটা বিদ্বেষ থাক! উচিত নহে। তিনি হয়ত বিশ্বাস কর্ষেন ন| 
যে আমি জ্ঞানপাপী অর্থাৎ ছুগ্ধের চেয়ে মাংসটাই আমার ভোজ্য হিসাবে 
প্রিয়। কিন্তু আমি যাই হই ন| কেন, তাহাতে বড় কিছু যায় আসে না; 
কারণ বৈজ্ঞানিক হিসাবে ধারা ছুধের জয় ঘোষণা! করেছেন তাহাদের মধ্যে 
অনেকেই ভোজ্য হিসাবে চতুষ্পদ জীবের মধ্যে কোনওটাকেই বাদ দেন মা, 
ধীরা প্রকৃতই বৈজ্ঞানিক আবিষ্ষার জাতির কল্যাণ কামনায্কুনিয়োগ কর্তে 
চাহেন তাদের ব্যক্তিগত বিদ্বেষ ঝ| প্রেমটা প্রচারকার্য্য স্থান পায় না এবং 
প্রয়োজন হলেই নিজের ভূলট| ম্বীকার কর্তে ঠার! কার্পণ্য করেন না। 
শ্রদ্থেয় লেখকমহাশয় দেশবাসীকে মাংস ভোজনে সচেতন করার ঝেখকে 
ভারতে খাস্ত সম্বন্ধে শ্রেষ্ট গবেষণ|কারীর' উক্তির (০৩৭ পৃঃ ২য় কঃ) 
উল্লেখ করিয়। যে আক্ষেপ করিয়াছেন তাহ! পড়ে মনে হয় যেন গ্রন্থকর্ত। 
(ডাঃ এ ক্রয়েড ) 89179] 0:0610 অর্থে 'মাংসের' ইঞ্জিত করেছেন। 
মূল নজীর বা হেল্থ বুলেটিন খুলে দেখ! যায় এ ক্রয়েড সাহেব এ নজীরোক্ত 
ভাষণের অব্যবহিত পূর্বেই বলেছেন যে দুগ্ধই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ জান্তব প্রোটিন 
(4/1002] 7:01617)--৩1 সে দুগ্ধ গরুরই হৌক বা জাতীয় যে কোনও 
জন্তরই হউক, ক্রমবর্ধমান বালক বালিকাদের পক্ষে । একখা বলা 
বাহুল্য যে প্রোটিনের প্রধান কার্ধ্য হচ্ছে শরীর গঠন ; কাজেই প্রোটিন 
সম্বন্ধে তুলনামূলক সমাঞ্জোচনাকালীন কষ্টিপাথর হচ্ছে বর্ধমান 
(বর্দনলীল ?) জীব দেহ। 

এইবার 'মধুরেণ সমাপয়েখ' হিসাবে বিশেষজ্ঞদের ব্যক্তিগত অভিমত 
ছাড়ি! দিয়] দুইটি বৈজ্ঞানিক মণ্ডলীর মতবাদের উল্লেখ কর্ব। একটা 
হচ্ছে লীগ, অফ, নেশব্সের পুষ্টিতত্ব কমিটার রিপোর্ট । ভার! বলেন 
(1৮ 0. ই 1০0, 0৮১ 4০8 ) “19110 8০০1৭ 07) 2 00501, 
01003 61617600105 ৭151 ৪1৪11 ৪5৩5, অর্থাৎ মানুষের জন্ম 


৪৩ 





হইতে মৃত্যু পর্ধাস্ত সব বয়সেই দৈনিক খাস্তাবলীর মধ্যে হুগ্ধের প্রাধান্ত 
যেন সর্বদাই ফুটে উঠে। দ্বিতীয় ষতবাদ হচ্ছে ইংলগ্ডের জনন্থাস্থয 
বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রীমহীশয় সেখানকার শ্রেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক সমম্বয়ে এক 
কমিটি গঠন করেন- সেই কমিটির রিপোর্ট (21100150001 চ68100, 
£05150179 001711721060 017 [বি (0907, চা 06001 ৮, 


1. 5200061508০. [,0100090)। রিপোর্টের ৩৫ পৃষ্ঠায় বলা 


হয়েছে ৯ 1০০00 ৮/1101) ০0870178521] 0106 12020611915 295017012] 
0: 610%/01) 2170. 17)81171211)5 01 1166 11) 20017 ,1580 101 
86111521101) ০ 012 1১00 15 0101৮073515 ০01 10180 ৮2105. 
৭ ৮18000 21076 15 0:86 006 000 ৮/1)10]) 19621) [01515 11015 
£ 00170100)” অর্থাৎ যে থাস্ছদ্রষ্যের মধ্যে শরীর গঠন ও জীবনধারণের 


উপযোগী সারীভূত পদার্থথুলি এমন ভাবে বিরাজমান যে তাহ! থাইবা- 
াত্রই জীব শরীরের কাজে লেগে যায় সেরাগ খানের মূল্য খুবই বেশী 
এবং হুপ্ধই একমাত্র তোজা যাহাতে উপরিউক্ত গুণগুলি দম)কৃভাবে 
এক সঙ্গে পাওয়! যেতে পারে। 

' আমার আলোচনার মধ্যে কোথাও বলি নাই যে মাংস খাওয়া খারাপ; 
আমি কেবল এই কথ! বলিতে চাহিয়াছিলাম যে বাঙ্গালী জাতিকে 
ব্যাপকভাবে মাংসভূক করাইয়। যাহার দেশের কল্যাণ কামনা করেন 
(৩৭ পৃঃ ১ম কঃ পুরোভাগে) তাদের বিপক্ষে বলার কিছু নেই ; তবে তারা 
যদি প্রচার করেন বে মাংসের প্রোটিন দুগ্ধের প্রোটিমের চেয়ে শ্রেষ্ঠ তাহলে 
সে উক্তি বিজ্ঞানদন্মত হবে মা। কিছুঙ্িন পূর্বে ভারতীয় কৃষি গবেষণ! 
মন্দির (10005015] 0001701] ০8 £001]0ন] [২5558107) যে যে 
প্রদেশে ছুগ্ধের প্রচলন আছে সেখানে সেখানে গড়পড়ত! জন পিছু ছুধের 
বর়াঙ্দ কত তাহার এক নিকাশ দেন--এ বিষয়ে দীর্ঘ অনুসন্ধানের পরে । 
রিপোর্ট পড়ে দেখা যায় যে তাহাতে পাঞ্জাব, যুক্তপ্রদেশ, মধ্য প্রদেশ ও 
বিহার প্রদেশের নাম আছে কিন্তু বাংল| দেশের নাম নাই। সত্য কথ! 
বলিতে কি, খাগ্দম্পদে দুগ্ধ শ্রেষ্ঠ হলেও বাংলাদেশে তাহার প্রচলন 
বড়ই কম। তাই বাঙ্গালীর শরীরের গঠন এবং বাংলার জনন্বাস্থয ভারতের 
অনেক প্রদেশের চেয়ে নিকৃষ্ট । 

এইবার (খ) বিষয়ীভূত উক্রিটর পর্যালোচনা! কর! যাঁক্‌। 
ছাগলের মাংস ও মুরগীর মাংসের তুলনামূলক গবেষণা! এদেশে হয় নাই। 
পুষ্টিকরত। বা পৌষ্টিকতা ইংরাজিতে' অনুবাদ করিলে হয় 70011৩ 
৮211৩ 1 আমি সেই কথাই উল্লেখ করিয়াছিলাম। লেখক মহাশয় 
বদি এই প্রসঙ্গে 91010510581 ৮2106 সম্বন্ধে নজীর দেখাতেন তাহার 
উত্তরে" তাহলে ব্যাপারটা সহজে মীমাংসা হোত। তাহা না করে তিনি 
মুরগী ও ছাগলের মাংসে প্রোটিনের অংশ বেশী এই কথা 
দেখিয়েছেন। তিনি 'তুলনামুলক পৌষ্টিকতা" এবং “প্রোটিন শতকরা 
কতটা আছে' এই ছুই উক্তিরধো আকাশ পাতাল তফাৎ তাহা জানেন 
বেশ ভাল করে ( সে কথা পরে দেখাইয়াছি ) ; কিন্তু এক্ষেতে পু ধিপত্রের 
লাঙ্গী ভাহার পক্ষে হুবিধাজন নহে বুঝতে গেরে অপ্রাসঙ্্রিক বিষয়ের 
অবতারণ! করেছেন। "মাংসের 13101081051 ৬210০ সব্ঘন্ধা ভারতবর্ষে 
কোধার় কাজ হয়েছে ত| জানেন কি না এ সাদ! কথাটা এড়িঞে গেছেন। 


গ্ডান্পস্ড্র 


| ২৮শ বর্ধ--২য খণ--€ম সংখ্যা 


(গ) আমি মুল প্রবন্ধের উল্লেখ করে লিপিয়াছিল।ম যে 'ডাল, 
বরবটী, পেস্তা বাদামের মধ্যে প্রোটিনের অংশ কম এউক্তি ছুম্পাচ্য এক্ষেত্রে 
প্রতিবাদট! ছিল প্রোটিনের অংশ নিয়ে তুলন।মূলক ভাবে ; তাহাদের 
পৌষ্টিকত| সন্বদ্ধে কোনও উল্লেখ ছিল ন]। কিন্তু তাহলে কি হয়; 
আমি যে 'আসলে প্রোটিন সম্ন্ধে গোড়ার কথাটা হজম করিতে' পারি 
নাই এই অজুহাতে নেহাৎ অবান্তর হলেও 81010985108] %58115 সম্বন্ধে 
এক নাতিদীর্ঘ ভাষণে (বন্তৃতায় ?) ব্যাপারটা চাঁপা দেবার চেষ্টা 
করেছেন। এই বাদানুবাদে বিশেষভাবে উপভোগ্য হচ্ছে 'আলোচনার' 
'উত্তরে' ডাঃ ভট্টাচার্য মহাশয়ের তর্কের প্রণালী । যেখানে পৌঁষ্টিকত| 
নিয়ে তর্ক ( যেমন ছাগ ও মুরগীর মাংসের শ্রেষ্ঠত্ব) সেখানে শতকরা 
প্রোটনের অংশ ক তাহার আলোচন! ; আর যেখানে প্রোটিনের অংশ 
কত তাহা নিয়ে তর্ক (যেমন ডাল, বরবটা ইত্যাদি ) সেখানে অহৈতুকী 
ভাষণ পোঁষ্টিকত| নিয়ে । বিজ্ঞানের আলোচনায় ( প্রতিপক্ষ চিকিৎসক 
ব| বৈজ্ঞানিক না হলেও) 'মুবিধাবাদ'কে দুরে রাখিলে তবেই সত্যের 
মধ্যাণ| রক্ষিত হয়। 

আমি মুল প্রবন্ধের আলোচনা প্রসঙ্গে বলেছিলুম যে পুষ্টিবিজ্ঞান 
বর্তমান যুগে এমন দ্রুত তালে চলেছে যে খুব ঘনিষ্ঠতাবে এর চচ্চা ন! 
করিলেই তাল কাটিয়া যাবার সন্ভাবন!। ডঃ ভট্রাচার্ধ্য মহাশয়ের 
উত্তর” থেকেই একটা উদাহরণ দেই। তিনি লিখেছেন (৮৩৮ পৃঃ 
১ম কঃ ১ম পংক্তি) 'এ পর্যান্ত ১৮ রকমের র্যামিনো-্যামিড চেন! 
গেছে'। যদি 'এ পর্যান্ত' কথাটার অর্থ ১৯৩৫ সাল না হয়ে ১৯৩৯ 
খৃষঠাব্য পার হয়ে যাবার পরে হয় তাহলে তার উক্কিটা ভূল। ১৯৩৯ 
সালে অন্ততঃ ২২টা এযামাইনো-এ্যানিডের অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়ে গেছে 
নিভূ'ল ভাবে এবং আরও ৭/৮টার অস্তিত্ব 'বিবেচ্য' অবস্থায় পড়ে আছে 
বিশ্বের বৈজ্ঞানিকবৃন্দের বিচারালয়ে । এর পর নজীর দিলে পাঠক- 
পাঠিকাবর্গের ধৈধ্যচ্যুতির ভয় যথেষ্ট তাই বিরত রহিলাম। তবে যদ্দি 
শ্রদ্ধেয় ডাঃ ভট্টাচার্য বা রসায়ন শান্ত্ামোদী কোনও পাঠক (বা! পাঠিক1) 
আমার উক্তির বৈজ্ঞানিক ভিত্তি জানিতে চাহে ঠাহায় কৌতুহল চরিতার্থ 
করার চেষ্ট! কোর্্ো সম্পাদক মহাশয়ের মারফৎ। কর্ণেল মকাইএর 
নামের বানান ও উচ্চারণ নিয়ে লেখক মহাশয় ইঙ্গিতে (৮৩৮ পৃঃ ১মকঃ 
মধ্যভাগে) প্রতিবাদ করেছেন! বাননট! কিন্তু 712029 নহে 
11008) 1 ঠিক উচ্চারণ কি হবে তাহা জানি না। মেডিকেল 
কলেজের ছাত্রদের মুখে “ম্যাকৃকে" উচ্চারণটা! বেশী শুমেছি আবার 
কেউ কেউ বলতেন “মকাই”। ইংরাজদের মুখে শুনেছি অনেকটা যেন 
“ম্যক্‌-কাই”। 

(৩) বিয়ে হ্বল্প পরিমাণ ভাইটামিন বর্তমান থাকে বাছা উত্তিজ 
তৈলে নাই (অবগ্ঠ 1২907811011 বাদে ) একথা ডাঃ ভট্টাচার্ধয স্বীকার 
করতে চাহেন না। “হেল্ধ বুলেটিন ২৩ নং আমায় পড়ে দেখতে 
বলেছেন। ভার আদেশ অনুসারে হেল্থ বুলেটিন পুপ্তিকাথামি খুলিয়া 
দেখিলাম যে ৫ম পৃষ্ঠায় বেশ প্রাঞ্জল ভাবায় লেখা আছে--সাধারণতঃ 
উত্ভিজ তেলে 'ক্যার্-অটান” বা ভাইটামিমএ খাকে না। ভাইটামিন 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


নত স্লাভাতে ডালা 


২৬১০ 


৮ স্পা স্নান স্হান বাতা ব্ভা্প কান্ত স্পা স্পা ব্রা স্কান্চপা স্পা স্যগাপ ্া্পা স্র্পা ন্ চপ সকাল ব্জা্কপান্্ন্কপা স্ফাপা নাশ স্পা স্থল 


'সি'এর কথ| উঠেই না কারণ “সি' ভাইট[মিন হচ্ছে একটা এ্যাসিড 
(৯5০০:910 4010 ) এবং স্নেহজাতীয় পদার্থের মধ্যে তাহ! দ্রবীভূত 
অবস্থায় থাকে ন|। নপ্পর্ণ বিপরীত অর্থ নঙ্জীর হিসাবে তার প্রতিপক্ষের 
যুক্তির খণ্ডন করতে বা প1ঠকবর্গের গোচর কর্তে কেহ যে পারেন তাহা 
বিশ্বান হয় না। তাই সভয়ে অনুমান কর্তে হয় যে শ্রদ্ধের লেখক মহাশয় 
হয়ত কেতাববান। ভাল করে পড়ে দেখবার অবকাশ পান নই বা গোটা 
সরিষার দানার (তেলের নহে) বিশ্লেষ এ পুস্তকের ৩২ পৃষ্ঠা দেখে 
এবং তলার লেখা ছোট ছোট অক্ষরে নোটটা না৷ পড়ে এই ভুলটা করে 
বসেছেন। 

(৪) এইবার আলোচ্য বিষয় হচ্ছে ভাইটামিন কয়টা ব 
কয়রকমের আবিদ্কৃ হযেছে। লেখক মহাশর মূল প্রবন্ধে মোট ছয়টার 
নাম করেন এবং একথাও বলেন যে এই ছনটার অগ্ভাবে ছপ্নরকমের রোগ 
হয়। আমি এই উক্তিটির সমালোচনা প্রদঙ্গে বলি যে ইহ! অদন্পূর্ণ। 
লেখক মহাশগ় 'উত্তর' প্রসঙ্গে কর্ণেল চোপরার সথবৃহৎ এবং স্বিখ্যাত 
গ্রন্থের নজির দিয়ে বলেছেন যে এর কেতাবের নিংদিণশ মত 
তিনি এই ছয়টার উল্লেখ করেছেন। বেশ ভাল কথ! ; কিন্তু এটা তুলে 
যাওয়া উচিত নহে যে পুস্তক ছাপ! হয়েছে ১৯৩১ সালে এবং বাদ।নুবাদ 
চলেছে ১৯৪* দালে। কেতাব ছাপা হওয়ার পরে (টবি।০০1010 2010) 
নিক-অটিনিক-এমিড ভাইটামিন পর্য্যায় ভূক্ত কর! হয়েছে এবং বিশুদ্ধ 


অবস্থায় 50150 করা হয়েছে। শুধু তাহাই নহে 1100171৪৫1৫ 
দ্বারা রোগের চিকিৎসাও হচ্ছে। আর সবগুল! ছেড়ে দিলেও 'কে' ও 'পি' 
ভাইটামিন সম্বন্ধে গত দুবৎদরে অনেক কথ! জানা গেছে। ছয় রকম 
রোগের কথারও প্রতিবাদ করিয়াছি্লাম ; তাহার উল্লেখ উত্তরে নাই 
দেখিয়া সুধী হইয়াছি। কারণ 'জের' টা,এত লহ্ঘা হয়ে চলেছে যে ভাইটা"মন 
সম্বন্ধে প্রমাণ প্রমেয় বৈজ্ঞানিক পত্রিকার জঙ্ঠ মুলতুবী রাখাই ভাল। 

সমালোচনার এ দীর্ঘ জের টানার জগ্ মুলপ্রবন্ধ লেখক ডাঃ ভট্টাচার্য্য 
মহাশয়, সম্পাদক মহাশয় ও পাঠক পাঠিকাবর্গের মধ্যে ধারা *ধৈর্যয 
সহকারে এতদুর পড়ার অবকাশ পেয়েছেন তাদের সকলের কাছে ক্ষমা 
ভিক্ষা করি। অত্যন্ত লক্জার সহিত স্বীকার করিতেছি ভাবাজ্ঞান, : 
কম, তাই অক্ষমতাবশতঃ ইংরাজি উক্তিগুলির ভাল অনুবাদ করিতে রা 
নাই। আমি জানি যে জনসাধারণের জন্য লিখিত প্রবন্ধে বৈজ্ঞানিক 
থুটিনাটার (62115) স্থান নাই। কিন্তু মুলপ্রবন্ধলেখক শ্রদ্ধেয় 
ডাঃ ভট্টাচার্ধ/ প্রবল প্রতিপক্ষ, নজীরের উপর তার প্রগাঢ় অনুরাগ, তাই 
অত নজীরের উল্লেখ কর্তে বাধ্য হয়েছি। গার মত মাতৃভাষার সেবায় 
নিযুক্ত থাকলে হয়ত বক্তব্য বিষয়গুলি আরও সংক্ষেপে অথচ বিশদভাবে 
বোঝাতে পারতুম তক্জন্য যথেষ্ট ধিক্কার দিচ্ছি নিজেকে | * 


১১ 
পপ পি 


* এ বিষয়ে কোন আলোচনা আর প্রকাশ কর! হইবে না । ভাঃ সঃ 


রঙে রাঙায়ে তোল-_ 


্নীদেবনারায়ণ গুপ্ত 
কিসের পরশনে তারি-ই আয়োজন 
ফাগুন বনে বনে জানায়ে সমীরণ 
লেগেছে উৎসব মাঁতায়ে তুলিয়াছে 
বল না গো লাখো হিয়! ? 

প্রকৃতি যেন আজ এস হে নটবর/ 
করেছে নব সাজ জুড়িয়া শতকর 
করিতে সবাকায় অদ্ভুত হিয়া ডাকে 

ছলনা গো ! বারে বারে; 
হেথ! কি পুনরায় এস হে মনোরম 
আসিবে শ্ঠামরাঁয় নিদয়া নিরপম 
শঙ্খখ-চক্র-গদা রঙে রাঙীয়ে তোল__ 

পদ্ম নিয়াঃ আজ তারে। 


০0 ৮3৩) 
প্রীতারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় 
চগ্তীমণ্ডপ 


ন্‌য় 

এ কাজ ছুইটায় পাতুর আপত্তি ছিল না। কারণ কাঁজ 
ঢুইটাতেই নগদ বিদায়ের ব্যবস্থা আছে। ইউনিয়ন-বোর্ডে 
যে-কোন ঘোষণার সঙ্গে তাহাকে ঢোল-সহরৎ করিতে হয়, 
প্ঠাহার জন্ত সে ট্যাক্স হইতে অব্যাহতি পায়। বোর্ড 
হইতে ইউনিয়নের মুর শ্রেণীর উপরেও ট্যাক্স ধার্য আছে, 
একদিনের মজুরী । মজুরী হার নির্দি আছে ছয় আনা। 
পাতুকে মজুর খাটিতে হয় না, সে ঢোল:দিয়! খালাঁস পায়। 
অবশ্য বোৌর্ড-বাঁজেটে প্রতিবার ঢোল-সহরতের জন্য ছয় পয়সা 
মজুরী ধাঁধ্য আছে। প্রতিবারই পাতু ভাউচারের পিছনে 
বুড়া আঙুলের টিপছাপ দেয়। ঢোলসহরতও তাহাকে বৎসরে 
আটবার দশবার করিতে হয়, বৎসরের শেষে সেক্রেটারী 
ছুগাই মিশ্র তাহার নামে ছয় আনার একখানা রসিদ কাটিয়া 
ভূপাঁল চৌকীদার মারফত পাঠাইয়। দেয়। খরচ পড়ে 
পনের আনা, জম! হয় ছয় আনা, কিন্তু সে সংবাদ দুগাই 
ছাড়া কেহ জানে না; প্রেসিডেণ্টবাঁবু টিপ দেখিয়া ভাঁউচারে 
সই করেন; পাঁতুরও তাহাতেই আনন্দ--ঢোল বাজাইয়া 
ট্যাক্স হইতে নিষ্কৃতিই তাহার পরম লাভ। 

গ্রামের সামাজিক ঘোষণা! হইলেও-__নবান্নের ঢোল 
দিতেও তাহার আপত্তি নাই। নবান্নের ঢোল দেওয়ার জন্য 
বিদায়টা তাহার প্রায় নগদ-বিদায়। প্রতি গৃহস্থ হইতে সে 
একথাক্জা প্রসাদ পাইবে । পরিমাণে কম দিলেও সমস্ত 
গ্রাম কুড়াইয়া যে ভাঁত-তরকারী জমে-__তাহা দুই তিন দিন 
থাইয়াও শেষে গরুর মুখে ধরিঘ্া| দিতে হয়। তিন দিনের 
পর আর খাওয়া চলে না। 


ভূপাল চৌকীদার, ইউনিয়ন বোর্ডের মোহর দেওয়া! 
একখানা নোটিশ হাতে করিয়া চলিয়াছিল, আগে-আগে 
ডুগ-ডুগ শবে নাগোর ধরণের একটা টার বাজাইয়। 
চলিতেছিল্‌ পাতু। 

“এক সপ্তাহের মধ্যে আষাঢ়-আশ্ষিন ছুই কিন্তির বাকী 


ট্যাক্স আদীয় না দিলে-_-জরিমান! সমেত- দেড়গুণ ট্যাক্স 
অস্থাবর ক্রোক করিয়া আদায় করা হইবে।” 

জগন ডাক্তার একেবারে আগুনের মত জলিয়। উঠিল। 

_কি? কি?কিকরাহবে? 

ভূপাঁল সভয়ে হাতের নোটিশখানি আগাইয়া দিয়া বলিল 
_- আজ্ঞে এই দেখেন কেনে ! 

জগন কঠিন দৃষ্টিতে ভূপাঁলের দিকে চাহিয়া বলিল 
_সরকারী উদ্দি গায়ে দিযে মাথা নোয়াতেও ভূলে 
গেলি যে! 

অপ্রস্তত হইয়া ভূপাঁল তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পায়ের 
ধুলা মুখে লইয়া বলিল-__আঁজ্ঞে দেখেন দেখি, তাই ভোলে! 
আপনকাঁরাই আমাদের মা-বাপ ! 

পাতু বলিল- নিশ্চয় ! 

জগন নোটিশখানি দেখিয়া! একেবারে গর্জন করিয়া 
উঠিল--এয়াফি নাকি! এ সব কি পৈত্রিক জমিদারী 
পেয়েছে সব! লোকের মাঠের ধান এখনও মাঠে রইল, 
বাবুরা একেবারে অস্থাবরের নোটিশ বার ক'রে দিলেন! 
মানুষকে উৎখাত করে ট্যাক্স আদায় করতে ঝলেছে 
গবর্ণমেণ্ট ? আজই দরখাস্ত করব আমি ! 

ভূপাল হাতযোড় করিয়া বলিল-_ আজ্ঞে আমরা চাঁকর, 
আমাদিগে যেমন ঝলেছে তেমনি-॥। 

-তোদের দোষ কি? তোর! কি করবি? তোর! ঢোপ 
দিয়ে যা !: 

পাতু ঢোলটায় গোটা কয়েক কাঠির আঘাত করিয়া 
বলিল__আজ্ঞে ডাক্তোর বাবু, লবান্ন হবে বাইশে তারিখ । 


-_নবান্ধ? বাইশে ? 

_আজে হ্যা। 

-আঁর সব লোককে বল গিয়ে । গায়ের লোকের সঙ্গে 
আমার কোন সম্বন্ধ নাই। আমি নবান্ন করব--আমাঁর 
যেদিন খুসী। 


পাতু আর কোন উত্তর না দিয়া পথে অগ্রসর হইল; 


৬৩২ 


1৯155 ১৫১ ১৪৪৮! 





বৈশাখ--১৩৪৮ ] . 


ডাক্তার কুদ্ধ গাম্তীর্য্যে থমথমে মুখে তাঁহার দিকে চাহিয়া 
বলিল__এই পেতো-_শোন ! 

_আজ্ঞে! পাতু ঘুরিয়] দাড়াইল। 

_কাল যে দরখাস্ততে টিপ'সই দিতে এলি না! বড়! 
থুব বড়লোক হয়েছিস, না|? সহরে গিয়ে বাড়ী করবি এ 
গায়েই আর থাকবি না, শুনছি ! 

বির্ক্তিতে পাতুর ভর কুঁচকাইয়। উঠ্িল। কিন্তু কোন 
উত্তর দিল না। ডাক্তার ঘরে ঢুকিয়া দরখাস্তখানা বাহির 
করিয়া আশিয়া সন্গেহ শাসনের জুরে বলিল--দে, টিপছাঁপ 
দে! তোর জন্যেই আমি ছাড়ি নাই দরথাস্ত। 

পাতু এবার বিনা আপত্তিতেই টিপছাঁপ দিল। কালষে 
সে আসে নাই, সমস্ত দিনটাই গ্রামত্যাগের সংকল্প লইয়া 
জংসন সহর পর্য্যন্ত ঘুরিয়া আসিয়াছে_ সে সমস্ত সাময়িক 
একট! উত্তেজনার প্রেরণায়; আজ যে সে মুহুর্তপূর্বের 
ডাক্তারের কথায় ব্বকুঞ্চিত করিল- সেও ডাক্তারের কথার 
কটুত্বের জন্য । নতুবা সাহায্য বাঁ ভিক্ষা লইতে তাহার 
আপত্তি নাই, গভীর কৃতজ্ঞতার সহিতই সে টিপছাঁপ দিল। 
টিপছাপ দিয়া বুড়া আঁঙ,লের কালি মাথায় মুছিতে মুছিতে 
রুতজ্ঞভাবে হাসিয়া বলিল- ডাক্তারবাঁবুর মতন গরীবগ্তনোর 
উপকার কেউ করে না। ডাক্তারের জুতার ধুলা আঙুলের 
ডগায় লইয়া সে মুখে ও গাথায় বুলাইয়! লইল। সঙ্গে সঙ্গে 
ভূপাল চৌকীদারও লইল। 

ডাক্তার ইহারই মধ্যে কিছু যেন চিন্তা করিতেছিল, চিন্তা 
শেষে বাঁর ছুই ঘাড় নাড়িয়! বলিল-ীড়া! আরও একটা 
কাগজে টিপছাপ দিয়ে যা। 

- আজ্ঞে? পাতু সভয়ে প্রশ্ন করিল। অর্থাৎ আবার 
টিপছাপ কেন? টিপছাঁপকে ইহাদের বড় ভয়। 

--এই ট্যাক্স-আ দায়ের জন্তে একটা দরখাস্ত দোব। 
তোদের ঘর পুড়ে গিয়েছে, চাষীদের ধান এখনও মাঠে, 
এই সময় অস্থাবরের নোটিশ ! এ কি মগের মুলুক নাকি? 

এবার ভয়ে পাতুর মুখ গুকাইয়া গেল, ইউনিয়ন-বোর্ডের 
হাকিমের বিরুদ্ধে দরখাস্ত! তে তৃপাল চৌকীদারের দিকে 
চাহিল__ভূপালও ভয়ে বিব্রত হইয়া! উঠিয়াছে। ডাক্তার 
তাগিদ দিয়া বলিল-_দে, টিপছাঁপ দে! 

_আজ্ঞে না মশায়। উ আমি দিতে পারব না! পাতু 
এবার হন হন করিয়া! পথ চলিতে আরম্ভ করিল। পিছনে 


চাও 


গপ-৫ম্বজ। 


৬5০০ 


পিছনে ভূপাল পলাইয়া' হীপ ছাড়িয়া বাঁচিল। ভূপাল 
: ভাবিতেছিল-_-খবরট। আবার “পেসিডেন+ বাবুকে গিয়৷ দিতে 
হইবে। না হইলে সন্দেহে আসিবে_ভূপাঁলেরও ইহার 
সহিত যোগসাঁজস আছে । 

ডাক্তার ভীষণ কুদ্ধ হইয়া পাতু ও ভূপালের পিছনের 
দিকে চাহিয়া! দাঁড়াইয়া রহিল, কয়েক মুহূর্ত পরই সে ফাটিয়া 
পড়িল__হাঁরামজাদার জাত, তোদের উপকার যে করে €স 
গাঁধা! বলিয়াই দে দরখাম্তখানা ছি'ড়িয়া ফেলিবার 
উপক্রম করিল । 

-__ছি'ড়ো না, ডাক্তার ছি'ড়ো না । বাঁধা দিল পাঠশালার 
পণ্ডিত দেবদাস ঘোষ। সে কিছু দূরে গ্লীড়াইয়া সবই 
দেখিয়াছিল। এ-সব ব্যাপারে তাহারও আন্তরিক সহানুভূতি 
আছে এবং এ-ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বী বলিয়াই ডাক্তারের সহিত 
তাহার সপ্তাব নাই । কিন্তু আজ ডাক্তারের কথাটা তাহার 
বড় ভাল লাগিয়াছে। সত্যই তোঃ ইউনিয়ন-বোর্ড 
কাহারও পৈত্রিক জমিদারী লাখেরাজ নয়। দশজনের 
স্থবিধা-অস্থবিধার দিকে ভ্রক্ষেপ না করিয়া_এমনভাঁবে 
অস্থাবরের নোটিশ বাহির করিবার অধিকার গ্রেসিডেপ্টের 
নিশ্চয় নাই ! 

ডাক্তার দেবদাসের মুখের দিকে চাহিয়া বলিল--ছি*ড়তে 
বারণ করছ? ওই বেটাদের উপকার করতে বলছ? 
দেখলে তো সব! 

দেবদাস বলিল-_তা+ দেখলাম । ওদের ওপর রাগ করে 
কি ক'রবে বল! দাও তোমার ট্যাক্সের দরখাস্ত, আমি 
সই করছি, আর দশজনার সইও করিয়ে দিচ্ছি ! 

ডাক্তার একটা বিড়ি ও দেশলাই পণ্ডিতকে দিয়! বলিল 
_বস। তারপর বাড়ীর দিকে মুখ ফিরাইয়া' চীৎকার 
করিয়! বলিল- মিনু, দু কাপ ! 

মিনু ভাক্তারের মেয়ে । 

ডাক্তার আবার আরম্ভ করিল-_ লোকে ভাবে কি জান 
দেবনাথ ? ভাবে-_এ সবের মধ্যে আমার বুঝি কোন স্বার্থ 
আছে। অন্তায় অত্যাচারের প্রতিকার হলে বাচবে সবাই, 
কিন্ত রাজা হয়ে যাব আমি!  , 

দেবদাস বিড়ি ধরাইয়! দেশলাইটা ডাক্তারের হাতে দিয়া 
একটু হাঁসিয়৷ বলিল-_তা* স্বার্থ একটু আছে বই কি 


১৯৬১০ 





স্বার্থ? ডাক্তার র্ম অথচ বিশ্মিত দৃষ্টিতে দেবদাসের 
দিকে চাহিল। 

পণ্ডিত হাতের বিডিটার আগুনের দিকে চাহিয়াঁ_ 
চক্ষুলজ্জাকে অতিক্রম করিয়া বলিল-_-্বার্থ আছে বৈ কি! 
দশজনের কাছে গণ্যমান্ত হবে তুমি, দুদিন বাঁদে ইউনিয়ন 
বোর্ডের মেম্বার হতে পার ; স্বার্থ রয়েছে বৈকি! 

, ডাক্তারের কপাল কুঞ্চিত হইয়া উঠিল-_বলিল, ওটা 
ষদদ স্বার্থ হয়ঃ তবে তো সাধু-সন্গ্যাসীর ভগবানের তপস্যা 
মরার মধ্যেও স্বার্থ আছে। বুদ্ধদেবও স্বার্থপর ! 

এবার পণ্ডিত চুপ করিয়া রহিল। 

ডাক্তার বলিল__ইউনিয়ন বোর্ডের মেম্বার আমি হতে 
চাই, আলবৎ হ'তে চাই। সে হ'তে চাই দশজনের সেবা 
করবার জন্তে। পরলোক-ফরলোক জপতপ ও-সবে আমার 
বিশ্বাস নাই। ওই ছিরু পাল-চুরী করবে_ব্যাভিচার 
করবে- আর ঘরে বসে জপতপ করবে-__কালীপুজো করবে 
ঘটা করে, ও রকম ধর্সের মাথায় মারি আমি পাঁচ ঝাড়, | 

অতঃপর ডাক্তার আরস্ত করিল এক স্থুদীর্ঘ বক্তৃতা । 

“জীবন ধন্ত করিতে কে না চাঁয় এ সংসারে? কেহ জপ তপ 
করিয়া ঈশ্বরকে পাইয়া! জীবন ধন্য করিতে চায়। কেহ 
মান্ঘষের সেবা করিয়া ধন্য হইতে চায় ইত্যাদি_ইত্যার্দি |” 
বক্তৃতার উত্তরে বক্তৃতা দেবদাঁসও দিতে পারিত, সেও 
অনেক ভাল-ভাল কথ! জানে। কিন্তু আজ সেকোন 
বক্তৃতা দিল না, কেবল বলিল-_দশজনের ভাল করতে 
চাঁও-_গীয়ের মঙ্গল করতে চাঁও, খুব ভাল কথা ডাক্তার । 
কিন্ত গায়ের লৌককে “হেণ্টী-কেণ্টা” কেন কর তুমি? আজ 
বললে-_গীয়ের লোকের সঙ্গে নবান্ন করবে না তুমি ! ক'দিন 
আগে ছু ছুটো মজলিস হ'ল গীয়ে__তুমি ত* গেলেই না, 
উপ্টে অনিরুদ্ধ কামারকে তুমি উন্তে দিলে । 

_কখনও না। গায়ের লোকের বিরুদ্ধে আমি উদ্তে 
দিই নাই। অনিরুদ্ধের জমির ধান কেটে নিলে-_-আমি 
তাকে ছিরের নামে ডাইরী করতে বলেছি। এই পর্য্যন্ত! 

_বেশ কথা! মজলিসে গেলে না কেন? 

_ মজলিস? যে মন্ুলিসে ছিরু পাল টাকার জোরে 
মাঁতব্বর__সেথানে আমি যাই না। 

_-ভাল। নবান্ন করবে না 
লোকের সঙ্গে? 


কেন তুমি গাঁয়ের 


জ্ঞাব্রু্ক্হ্ধ 





[ ২৮শ বর্ষ-_ ওয় খণ্ড ৫ম সংখ্যা 








এবার ডাক্তার কাবু হইয়া পড়িল। কিছুক্ষণ পরে 
বলিল-_করব না এমন প্রতিজ্ঞ আমি করি নাই। 

দ্েবদাসও এবার খুনী হইয়া বলিল_স্ঠ্যা। দশে 
মিলে করি কাজ, হারি-জিতি নাহি লাঁজ।” যা করবে 
দশজনাঁতে এক হয়ে কর। দেখ নাঃ তিনদিনে সব টিট 
হয়ে যাবে। অনে কামার, গিরে ছুতোর, তারা নাপিত, 
পেতো! মুচি--মায় তোমার ছিরেকেও নাকে কানে খত- 
ইধে তবে ছাড়ব। 

ডাক্তার বলিল__বেশ ! কোনও আপত্তি নাই আমার। 
তবে এক হতে হ'লে সব কাজেই হঃতে হবে। গাঁয়ের গরজের 
সময় জগন ডাক্তার আর দেবু পণ্ডিত; আর ইউনিয়ন 
বোর্ডের ভোটের সময় কঙ্কনাঁর বাঁবুরা কিন্বা ছিরে পাল-_ 

বাধা দিয়া দেবদাস বলিল-_খেপেছ তুমি? এবার 
তিন নম্বর ওয়ার্ড থেকে তুমি আর আমি দাড়াব। কই 
লেখ তুমি দরখাস্ত । 

সঃ ঙী সা 

দেবদাঁস ও জগন ভাক্তীর দু'জনে মিলিত উৎসাহে কাঁজ 
আরম্ভ করিয়া দ্িল। দরখাস্ত পাঠানো হইয়! গিয়াছে। 
নবায়ের দিনে দু'জনে পরামর্শ করিয়া একটা উৎমবেরও 
ব্যবস্থা করিয়াছে । সন্ধ্যায় চণ্ডীমণ্ডপে মনসার ভাসাঁন 
গান হইবে ; ভাসান গানের দনকে এখানে “বেহুলার দল” 
বলিয়। থাকে । বাউড়ীদের একটি বেহুলার দল আছে; 
সেই দলের গাঁন হইবে। চাঁদা করিয়া চাল তুলিয়া উহাদের 
মদের ব্যবস্থা করা হইয়াছে__তাহাতেই দলের লোকের 
মহা আনন্দ । এই ভাসান গানের ব্যবস্থার মধ্যে একটি 
উদ্দেশ্য আছে ; নবান্নের দিনে ছিরু পাল, বাড়ীতে অন্নপূর্ণা 
পূজ| করিয়া! থাকে ; সেই উপলক্ষে সন্ধ্যায় গ্রামের সমস্ত 
লোকই গিয়া জমায়েত হয় ছিরুর বাড়ীতে । তামাক খায়; 
গালগল্প করে, খোল বাজাইয়া অল্প স্বল্প সংকীর্তন গাঁন-ও 
হয়। তামাঁক-লোভী গ্রামের লোক যাহাতে ছিরুর বাড়ী না 
যায়--জগন ডাক্তার এবং দেবদাস তাহারই জন্য এ ব্যবস্থা 
করিয়াছে । গ্রামকে সঙ্ঘবন্ধ করিবার প্রচেষ্টায় জগন ও 
দেবদাসের এটি প্রথম ব্যবস্থ। বা ভূমিকা । 

চাষীর গ্রামে নবান্নের সমারোহ কিছু বেশী, সত্যকারের 
সার্বজনীন উৎসব। চাষের প্রধান শশ্য হৈমস্তী ধান 
পাকিয়! উঠিয়াছে ) এইবার সেই ধান কাটিয়৷ ঘরে তোলা 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


হইবে। কার্তিক সংক্রাস্তির দিনে কল্যাণ করিয়া আড়াই 
মুঠা ধান কাটিয়া আনিয়া লক্ষমীপৃজা হইয়া গেছে। এইবার 
লঘু ধানের :চালে নানা উপকরণ তৈয়ারী করিয়া! পিতৃলোক 
এবং দেবলোকের আজ ভোগ দেওয়া হইবে; ঘরে ঘরে 
আজ লক্ষমীপূজ! হইবে । ছেলেমেয়েরা সকাল বেলাতেই 
স্নান করিয়া ফেলিয়াছে। অগ্রহায়ণের তৃতীয় সপ্তাহে 
শীত বেশ পড়িয়াছে, তবুও নবান্ের উৎসাহে ছেলেরা পুকুরের 
জল ঘোল! করিয়া তবে উঠিয়াছে। তাহারা সব এখন 
চণ্ডীমণ্ডপের আঙিনায় রোদে ঈাড়াইয়৷ খোঁড়া পুরোহিতের 
কঙ্কাললার ঘোড়াটাকে লইয়া কলরব করিতেছে । বুড়া 
শিব এবং ভাঁও| কালীর মন্দিরে ভোগ না হইলে নবান্ন আরস্ত 
হইবে না। কুমারী কিশোরী মেয়েরা ভিজা চুল পিঠে 
এপাইয়া দিয়া নতুন বাঁটিতে নতুন ধানের আতপ চাল, 
চিনি, মণ্ডা, দুধ কলা, আখের টিকলী, আদকুচি, মূলা- 
কুচি সাজাইয়া মন্দিরের বারান্দীয় নামাইয়া দিতেছে। 
যাহাদের বাড়ীতে কুমারী মেয়ে নাই তাহাদের প্রবীণারা 
সামগ্রী লইয়। আসিতেছে । গ্রামের পুরোহিত- খোঁড়া 
চক্রবন্তী বসিয়া সামগ্রীগুলি লইয়া দেবতার সম্মুখে রাখিয়া 
দিতেছে । মধ্যে মধ্যে ধমক দিতেছে ওই ছেলেগুলিকে-_ 
এ্যাই-এাই ! গ্্যাই ছেলে! এ তো ভারী বদ! যাঁসন! 
কাছে, চাট ছোড়ে তো পিলে ফাঁটিরে দেবে! অর্থাৎ 
ওই ঘোড়াটা। ঘোড়াটা পিছনের পা ছু'ড়িলে প্রাহা 
ফাটাইয়া দিবে! খোঁড়া চক্রবর্তী গ্রাম-গ্রামাস্তরে ওই 
ঘোড়ার উপর সওয়ার হইয়া! যজমাঁন সাধিয়া ফেরে। 
ফিরিবার সময় ঘোড়ার উপর থাকে সে-_তাহার মাথায় 
থাকে চাল-কল! ইত্যাদির বোঝা । ঘোড়া খুব শিক্ষিত, 
চক্রবন্তী লাগাম না ধরিয়া ছুই হাতে বোঝা ধরিয়া! অনায়াসে 
চলে, অবস্থা ইচ্ছা করিলেই চক্রবর্তী মাটিতে পা নামাইয়! 
দিতে পারে । মাঁটি হইতে মাত্র ফুটখানেক উপরে তাহার পা 
ুইটা ঝুলিতে ঝুলিতে যায়। ছেলেগুলি দূর হইতে ঢেল! 
ছ'ড়িয়া ঘোড়াটাকে ক্রমাগত মারিতেছিল। পুরোহিত 
ভয়ানক চটিয়া উঠিল। কিন্তু কোন উপায় সে খু'জিয়া 
পাইল না। একটি বিধবা প্রৌডঢ়া ভোগের সামত্রী লইয়া 
আসিয়াছিল-সেই পুরোহিতের উপায় করিয়া দিল__সে 
বলিল__এ'া--তোরা সব ঘোড়া ছু'লি? বলি ওরে-__ও 
মেলেচ্ছোর দল ! ষা সব আবার চান করগে যা। 





গল-চ্নভ্ঞ 





৬৬৩৫ 
/ক্কপা স্কাক্কা্ছ 


পুরোহিত বলিল-_দেখ বাছা দেখ, বজ্জাত ছেলেদের 
কাণ্ড দেখ। চাট ছোড়ে তো পিলে ফাটিয়ে দেবে। তখন 
নাম-দোষ হবে আমার । 

বিধবা কিন্তু একথাটা মানিল না; সে বলিল-_-ও-কথা 
আর বল না ঠাকুর। ছাগলের মত ঘোড়া নাকি পিলে 
ফাটিয়ে দেবে! ওই ছাগলের মত ঘোঁড়া-_তাঁর ওপর 
আচার-বিচের কিছু নাই। সামনের দুটো! পায়ে বেঞ্নে 
ছেড়ে দাও, রাজ্যের আস্তাঁকুড়ঃ পাতা, ময়লা মাড়িয়ে চরে, 
বেড়ায়। সে-দিন আমাদের গায়ে এসে নতুন পুকুরের” 
পাড়ে-_মাঁগোঁঃঃ মনে করলেও বমি আসে-চান করতে 
হয়_সেইথানে দেখি ঘাঁস খাচ্ছে। আর তুমি ওই 
ঘোড়াতে চেপে এসে দেবতার পুজে। কর? 

পুরোহিত বলিল-_গঙ্গাজল দি, মোঁড়ল পিসী, রোজ 
সন্ধোবেলা বাড়ী ফিরলে গঙ্গাজল দিয়ে তবে ওকে 
ঘরে বাঁধি! 

_মিছে কথা ! 

_ঈশ্বরের দিব্যি! এই পৈতে ছুয়ে বলছি আমি। 
গঙ্গাজল না দিলে কিছুতেই ঘরে ঢোকে না । বাইরে দাড়িয়ে 
চিহি চিহি ক'রে চেঁচাবে! 

মোড়ল পিসী কি বলিতে গিয়া শশব্যস্ত হইয়া সন্দুখের 
দিকে খানিকটা আগাইয়! গিয়া ফিরিয়া দঁড়াইল--কে 
লো? হনহন করে আসছে দেখ! পিছন দিক হইতে 
কোন আগন্তকের দীর্ঘ ছায়ার মাথাটা তাহার পায়ের 
উপর পড়িতেই মোড়ল পিসী সংস্পর্শের ভয়ে সরিয়! আসিয়া 
গ্রশ্ন করিল- কে? 

একটি বধূ) দীর্ঘাঙ্গী-__অবগুঞনাবৃত মুখ; সে উত্তর 
করিল নাঃ নীরবে ভোগের সামগ্রীর পান্রখানি পুরোহিতের 
সম্মুথে নামাইয়া দিল । 

_অ! কামার বউ! আমি বলি কে-না-কে! 

এই মুহূর্তেই জগন ও পণ্ডিত আসিয়া চণ্ডীমণ্ডপে প্রবেশ 
করিল। দেবদাস বিন! ভূমিকাঁয় বলিল--ঠাকুর, কামারের 
পূজো গায়ের সামিলে আপনি করবেন না; সে হতে 
আমরা দো না! 

জগন ও দেবদাস এই সুযোগটিরই প্রতীক্ষা করিয়া 
নিকটেই কোথাও ছিল, পদ্মকে চণ্তীমণ্ডুপে প্রবেশ করিতে 
দেখিয়া! তাচীরাও আসিয়া হাজির হইয়াছে 





শর” ব্য 


২৬০৬০ 


ঠাকুর কিছুক্ষণ পণ্ডিতের মুখের দিকে চাহিয়া থাকিয়! 
প্রশ্ন করিল-সে আবার কি রকম? গাঁ-সামিলে পূজে। 
না-হলে, কি ক'রে পূজো হবে ? 

-সে আমরা জানি নাঃ কর্মকার বুঝে করবে! সে 
যখন গীয়ের নিয়ম লঙ্ঘন করেছে, তখন আমরাই বা তাঁকে 
গায়ের সামিলে ক্রিয়া-কর্মে নোব কেন? 

পদ্ম তেমনি অবগু্নে মুখ ঢাঁকিয়া স্থির হইয়! দীড়াইয়াই 
রহিল, একটুকু চাঞ্চল্য দেখা গেল না । ঠাকুর তাহার 
দিকে চাহিয়া নিতান্ত নিরুপাঁয়ভাবে বলিল আমি কি 
করব মা! 

দেখদাস পদ্পকে লক্ষ্য করিয়া বলিল- পূজে। তুমি 
ফিরিয়ে নিয়ে যাও ব্লগে কর্মকারকে, পুজো দিতে দিলে 
না গাঁয়ের লোকে । 

পদ্ম এবার ধীরে ধীরে চলিয়া গেলঃ কিন্তু পূজার পাত্র 
হুপিয়া লইল না, সেট। সেইথানেই পড়িয়া রহিল। 

পুরোহিত বিব্রত হইয়া বলিল-_ওগো৷ বাছা, পুজোর 
ঠাহটা; ও বাছা! কামার-বউ ! 

জগন এবার বলিল-_থাক না। কামার তো আসবেই । 
1 হোঁক একটা মীমাংসা আজ হবেই । জগন ভাঁক্তারের 
গাপনতম অন্তরে কর্মকারের উপর একটু সহান্ভৃতি 
এখনও আছে । 

পুরোহিত ব্যাপারটা ভাল বুঝিতে পারে নাই, বুঝিবার 
ব্যগ্রতাও তাহার ছিল না। উপস্থিত একবাড়ীর আতপ 
ছুধ মণ্ড প্রভৃতি পৃজোর সামগ্রী বাদ পড়িতেছে-_সেই 
চিন্তাটাই তাহার বড়। তাহার ভ্র-কুঞ্চিত হইয়া উঠিল। 
বলিল-বলি হ্যাহে ডাক্তার-__-ও পণ্ডিত-_ 

পণ্ডিত বাধা দিয়া দৃঢ় আদেশের ভঙ্গিতে তাহাকেই 
বলিল__গিরীশ ছুতোর, তারা নাপিত এদের পূজোও হবে 
না ঠাকুর। বলে রাখছি আপনাকে । আমরা অবিশ্ঠি 
একজন না একজন থাঁকব-তবে যদি না থাকি-_সেই জন্যে 
আগে থেকে বলে রাখছি আপনাকে । 

ঠিক এই সময়েই ছিরু পাল আসিয়া ডাকিল-_ঠাকুর! 
ছিরুর পরণে আজ গরদের কাঁপড়ঃ গায়ে একথানি রেশমী 
চাদর; ভাঁবে ভঙ্গিতে ছিরু পাঁল আজ একটি স্বতন্ত্র মান্য? 
গ্রথম দৃষ্টিতেই সেটা ষেন বেশ বুঝা যায়। 

পুরোহিত চত্রবর্তী ব্য্ত হইয়! বলিল--এই খাই বাবা। 


জ্ঞান্রভ্ভপ্বব্র 


[ ২৮শ বর্-_২য় থণ্ড--€ম সংখ্যা 


আর আধ ঘণ্টা। ও পণ্ডিত, ও ডাক্তার, কই হে সব 
আঙছে না কেন? 

গম্ভীর গাবে জগন ডাক্তার বলিল--এত তাড়াতাড়ি 
করলে তো হবে না ঠাকুর! আসছে সব একে একে 
আসছে । একঘর যঙজজমানের জন্য দশজনকে ব্যতিব্যস্ত 
করতে গেলে তে। চলবে না ! 

ছিরু বলিল__বেশ-_বেশ ! দশের কাঁজ সেরেই আন্মুন 
ঠাকুর! আমি একবার তাগাদা দিয়ে গেলাম। তারপর 
ছিরু তাহার প্রকাঁও বিশ্রী মুখখানাঁকে যথাসাধ্য কোমল এবং 
বিনীত করিয়া বলিল- ডাক্তার, একবার যাবেন গো দয়া 
ক'রে । দেবু খুড়ে;_দেখে শুনে দিয়ো! বাবা 

কথা তাহার শেষ হইল না, অনিরুদ্ধের প্রচণ্ড কুদ্ধ 
চীৎকাঁরে চণ্ডীম গুপট1 যেন অতার্কতে চমকিয়! উঠিল। 

_কে? কার ঘাড়ে দশটা মাথা; কোন নবাব বাদশা 
আমার পূজো বন্ধ ক'রেছে শুনি? অনিরুদ্ধের সে মুক্তি 
যেন রুদ্র মৃষ্তি ! 

চক্রবন্তী হতভভ্ত হইয়া! গেল, দেবদাস সোজ। হহয়া 
দাড়াইল, জগন ডাক্তার বিজ্ঞ সান্ত্বনা দাতার মত একটু 
হাসিয়া আগাইয়া আঙিল, ছিরুপাল কিন্তু আজ অচঞ্চল 
স্থির ভাবেই দীশড়াইয়া রহিল । 

ডাক্তার বলিল--থাম, থাঁম,চীৎকার করিল না! অণিকুদ্ধ__ 

চকিতে ব্যঙ্গভর! গণিত দৃষ্টিতে একবার ডাক্তারের 
দিকে চাহিয়া অনিরুদ্ধ মন্দিরের দওয়া হইতে পগ্মের 
পরিত্যক্ত পৃজাঁর পাত্রটা তুলিয়া! লইল। পাত্রটা সে ছুই 
হাতে তুলিয়া যেন দেবতাকে দেখাইয়া বলিল-_হে বাঁবা শিবঃ 
হে মা কালী- খাঁও বাবাঃ খাঁও মা; খাও! আর বিচার 
কর, তোমরা বিচার কর! বলিয়াই সে পাত্রট। লইয়া 
যেমন হনহন করিয়! আসিয়াছিল-_তেমনি হনহন করিয়াই 
চলিয়া গেল। 

ডাক্তার ও দেবুর চোখ দিয়া যেন আগুন বাহির হইতে- 
ছিল, কিন্তু অনিরুদ্ধকে ধরিয়] নির্যাতন করিবার কোন 
উপায় ছিল না। 

পুরোহিত চক্রবন্তী এবার অনিরুদ্ধের উপরেই মর্ধাস্তিক 
চটিয়া গিয়াছিল--বেটা কন্মকারের ছেলের আম্পর্ধা দেখ 
দেখি! শুভ্র হয়ে দেবতাকে ভোগ দেখিয়ে বলে কিনা 
থাঁও বাবা, খাও মা ! | 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


গিশ-দে্িভ্ডা 


৩২৩৬ 


৪ 
থা সবার _.. সস. বাউল ০ শর... সহ স্যর _. আত "থা. তে বা -স্থা কথ সর আসি সে বি - সব সা বা সস বা বল স্- তথ চা সে ব্হ -স্টে খাল -্থ্ বল -স্হহদ খত স্্হা” ৮- “চে ৮ স্যর খর -স্ট 


ছিরু কিন্তু আজ অবিচলিত ধৈর্য্যস্থির প্রশান্ত ভাঁবেই 
চণ্তীমগ্ডপ হইতে নামিয়া বাড়ীর পথ ধরিল। আজ সে 
কাহারও সহিত বিরোধ করিবে না, কাহারও অনিষ্ট করিবে 
নাঃ পৃথিবীর ন্টায়ন্তাঁয় কিছুরই সিত আজ তাহার সংশ্রব 
নাই। আজিকার ছিকু শ্বতন্ত্রব_এই ছিরু যে কেমন করিয়া 
ব্যাভিচারী পাষণ্ড ছিরুর প্রচণ্ড ভার ঠেলিয়া৷ দেবপূজাঁকে 
উপলক্ষ করিয়! মধ্যে মধ্যে বাহির হইয়া আসে সে অতি 
বিচিত্র সংঘটন ; কিন্তু সেআসে। পাষণ্ড ছিরুর অন্তাঁয় 
বা পাপে কোন ভয় নাই, দেবসেবক ছিরুরও পে পাপ 
থগুনের জন্য ব্যগ্রতা নাই; আছে কেবল পরমলোক 
প্রপ্তির জন্য একটি নিষ্ঠাভরা তপন্ঠা এবং অকপট বিশ্বাস। 
দিন ও রাত্রির মত পরস্পরের সঙ্গে মুখোমুখী দেখা কখনও 
হয় নাকিস্তকোন বিরোধও নাই । তবে ছিরুর দিনগুলি 
শীতের দ্িন_-সংক্ষিপগ্ততম তাহার আঘু। 


দ্রশ 


প্রচণ্ড রাগের উপরেই অনিরুদ্ধ হন হন করিনা বাড়ী 
ফিরিয়া আসিল। পুজা-ভোগের সানগ্রীর পাত্রটা ঘরের 
মেঝের উপর নাথাইয়। দিয়া বলিল__ওই নে; পূজো ভোগ 
দিয়ে দিয়েছি আমি । 

পদ্ম চুপ করিয় ঘরের দেওয়ালে ঠেস দিয়! বসিয়াঁছিল, 
একটি বিষণ্ন উদামীনতা৷ তাহার সর্বা্জে পরিস্ফুট হইয়া 
উঠিয়াছে। কয়েক দ্রিন হইতেই পদ্ম যেন কেমন হইয়াছে । 
দেহ যেন ক্লান্ত মন যেন অহরহ ভারাক্রান্ত । অনিরুদ্ধ এটা 
লক্ষ্য করিয়াছে; কিন্ত তেমন গ্রাহা করে নাই, মাচুষের 
রক্ত-মাংসের দেহ তো! পাথরের তো নয় যে ভালো মন্দ 
কিছু থাঁকিবে না। আজ কিন্তু কুদ্ধ অনিরুদ্ধের এটা বরদাস্ত 
হইল না, জলন্ত আগুনের মত দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ নিরুত্তর পদ্মের 
দিকে চাহিয় থাঁকিয়া অকম্মাৎ প্রচণ্ড চীৎকার করিয়া প্রশ্ন 
করিল- বলি, তোর হ'ল কি? 

শীস্ত স্বরে পল্ম জবাব দিল-_কি হবে! কিছু হয় নাই! 

দীতে পাতে ঘষিয়! অনিরুদ্ধ বলিল--তবে? তবে যে 
বিরহিণী রাধার মত বসে রয়েছিস, চালের কাঠের 
দিকে চেয়ে? 

পল্প যেন দপ করিয়! জলিয়! উঠিল-_-মুহূর্তে তাহার ডাগর 
চোখ দুটি ক্রোধে রক্তাভ এবং উগ্রভঙ্গিতে বিস্কাঁরিত 


হইয়া উঠিল - স্থির দৃষ্টিতে সে ম্বামীর দিকে চাহিয়া! রহিল। 
অনিরুদ্ধের মনে হইল--ছুই টুকরা লোহা যেন কাঁমার- 
শালার জলন্ত অঙ্গারের মধ্য আগুনের চেয়েও দীপ্তিময় 
এবং উত্তপ্ত হইয়া! গলিতেছে ; পদ্পের দেহথান পধ্যস্ত জলন্ত 
অঙ্গারের মত অসহনীয় উত্তাপ ছড়াইতেছে বলিয়া তাহার 
বোঁধ হইল। এ মৃ্তি পদ্সের নতুন। সে ভয় পাইয়া গেল) 
পদ্ধা এইবার কি ধলিবে-সেই আশঙ্কায় তাহার মন অস্থির 
হইয়! উঠিল। পদ্ম কিন্তু মুখে কিছু বলিল না, তাহার ক্রোধ, 
পাত্রে-আবদ্ধ জলন্ত ধাতুর মতই দৃষ্টি এবং দেহভঙ্গির মধ্যেই : 
গণ্ডীবদ্ধ হইয়া! রহিল। একটা গভীর দীর্ঘ-নিশ্বাস ফেলিয়া 
সে ধীরে ধীরে উঠিয়া পূজা-ভোগের পাব্রটা লইয়! লক্্মীর 
ঘরে ঢুকিল। 

সসঙ্কোচে অনিরুদ্ধ প্রশ্ন করিল- লক্ষ্মী পেতেছিস? 
লঙ্গমী? 

সংক্ষিগুতম উত্তর আসিল-_হু'! 

_-কই শশাখ বাজালি না? শখ? 

পদ্ম শখটা আনিয়া অনিরুদ্ধের সম্মুখে নামাইয়৷ দিল। 


অপ্রতিভের মত হাঁসিয়া অনিরুদ্ধ বলিল-_-আমি 
শখ বাজাতে পারি? ব্িজ্ধেস করছি বলি--শ'াখ 
বাজিয়েছিস তো? 


উত্তর না দিয়া শ'াখট! তুলিয়া পদ্ম আবার তাহাতে 
একটা ফু' দিল। 

_ শহরের দু'জনাকে নেমন্তন্ন করেছি । আর গিরীশকে 
বলেছি। সেও আসবে! 

পদ্ম এবারও কোঁন উত্তর দিল না, শশাথটার মুখে জল 
দিয়া ধুইয়৷ সেটাঁকে লক্ষ্মীর ঘরে যথাস্থানে রাঁখিয়৷ দিল। 

অনিরুদ্ধ আবাঁর অধীর হইয়া! উঠিতেছিল, পদ্মের এই 
শান্ত বিষ নিলিপ্ততাঁর রহস্য এ্রতই গভীর যে__তাঁহার শ্বাস 
বেন রুদ্ধ হইয়া আসিতেছে । বাঁরকয়েক ত ধীরভাবে ঘাড় 
নাঁড়িয়া হয় আকাশকে--নয় আপনার ঘরছুয়ারকে লক্ষ্য 
করিয়াই যেন বলিল--এ কি বিপদ বল দেখি বাপু! মুনি 
কথাঁও কয় না, ভিক্ষেও নেয় না। অন্থুখ-বিস্তরথ 
কিছু হয় তৌ-_দেখতে পাই, ,মুখে যদি বলে--তবে 
বুঝতে পাঁরি__ 

এবার বাধা দিয়! পদ্ম যেন কত ক্লান্ত আর্ত স্বরে কহিল-- 
ওগো তোমার দুটি পায়ে পড়ি তুমি চেচিও না, খাম! 


৬৩৪৬৮ 


অনিরুন্ধও কাতরশ্বরে প্রশ্ন করিল _তোর হ'ল কি 
তাই বল? 

_-কিছু হয় নি বাপু; তুমি থাম, একটু বাইরে যাও! 
আমাকে কাজ-কর্শ করতে দাও ! 

অনিরুদ্ধ আবার ক্রুদ্ধ হইয়! উঠিল, সে ক্রোধভরে বাড়ীর 
বাহিরে যাইবার উদ্যোগ করিল। যাইতে যাইতে হঠাৎ 
থমকিয়! দী1ড়াইয়! বলিল--আমিই হয়েছি তোর ছু-চক্ষের 
বিষ! বুঝলি! বলিয়াই সে বাড়ীর বাহিরে চলিয়! গেল। 
৮ পদ্মের চোক্ষে জল আদিল। মনে হইল-_তাহার 
অপেক্ষা দুঃখী এ সংসারে কেহ আর নাই । এত করিয়াও 
এই কথাটা তাহাকে শুনিতে হইল ? ওই ছিরু পালের 
স্ত্রীর ভাগ্যের নিন্দা করে লোকে-কিন্তু পদ্মের ভাগ্য 
আরও মন্দ। ছিরু পাল স্ত্রীকে প্রহার করে কিন্তু অবিশ্বাস 
কখনও করে না! এই তো আজই দেখা হইয়াছিল-_ 
ল্লানের সময়, বেণে-পুকুরের ঘাটে । ওই কাঠির মত শীর্ণ 
দেহে এক কাথে ঘড়া অন্ত কাঁখে সেই পঙ্গুপ্রায় ছেলেটাকে 
লইয়! চলিয়! গেল-_কিন্ত এক বিন্দু দুঃখের ছাপ তো 
. তাহার মুখে সে দেখে নাই! ডগ-ডগে লালপেড়ে মটকার 
শাড়ী পরিয়া আপন সৌভাগ্যে যেন ডগমগ করিতেছে 
ছিক্ষর স্ত্রী! পদ্ম একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলিয়া ধীরে ধীরে 
রাক্নাশালায় আপিয়া উনানে আগুন দিল। নবান্নের সকল 
আয়োজনই তাহার হইয়া! গিয়াছে, লক্ষ্মী পাতা হইয়াছে, 
চাল দিয়া নবান্নের আয়োজন থরে থরে সে সাজাইয়া 
রাখিয়াছে, ঘরের মেঝে হইতে উদ্ণন পর্যন্ত নিকাইয়া 
আল্ননার বিচিত্র চিত্রে ভরিয়! দিয়াছে, বাকী এখন কেবল 
রাক্না। উনান জালিয়া সে কোটা তরকারীর পাত্রগুলি 
বাহিরে আনিয়া রাখিল, উনানের উপর কড়াখানা চাপাইয়। 
দিয়া-_-তেল আনিবার জন্ভ উঠিল । কিন্তু যাইবার কি 
জো আছে। ঘরের চালের উপর কাকগুলা সারি দিয়া 
বসিয়া আছে। ম্ুযোগ পাইলেই ঝাঁপ দিয়া পড়িবে। 
পঁচবছরের একট! ছেলে থাঁকিলেও__তাহাকে লাঠি হাতে 
বসাইয়া রাখিলে চলিত। বাহিরে অনিরুদ্ধের সাঁড়া-শবও 
পাওয়া যাইতেছে না। , পদ্ম অত্যন্ত বিরক্ত হইয়া নিজেই 
কাঁকগুলাকে তাঁড়াইতে আরম্ভ করিল-_হু--স, ধা__! 
ছ-স্‌! কিন্তু গ্রমন হতভাগ! পাজী জাত কি আর আছে? 
তাড়া দিলে লাফ দিয়া এপাশ হইতে ওপাশে সত্তিয়া যায়; 


ভ্ডান্তত্তঞ্ 


[ ২৮শ বর্ষ--২র খণ্ড- ৫ম সংখ্যা 


বড় জোর খানিকটা উড়িয়া আবার যথাস্থানে 
আসিয়া বসে। 
-কম্মকার! কম্মকার গো! ওগো--ও-কনম্মকার ! 


কে ডাঁকিতেছে ! পদ্ম মৃছুষ্বরেই সাড়া দিয়া প্রশ্ন 
করিল- কে গো! 

- আমি ভূপাল থানদার! কল্মকারকে ডেকে দাও। 
ইউনাঁন বোডের অস্থাবর আছে । সেকেটারীবাবু ডাকছে-_ 
চত্ীমণ্ডপে ! 

পল্প শিহরিয়া উঠিল। অস্থাবর ! অস্থাবর কাহাকে 
বলে পদ্মা তাহা জানে । জমিদারের গমন্তার সঙ্গে অনিরুদ্ধ 
একবার ঝগড়া করিয়াছিল; সেই আক্রোশে গমন্তা 
খাজনার জন্য নালিশ করিয়া অস্থাঁবর ক্রোকের পরোয়ান। 
আনিয়াছিল। ধানের মরাই ভাঁডিয়৷ ধান তছনচ করিয়া 
ঘরের বাঁসন কীাঁসা-বাহির করিযা সে কি কাণ্ড! সেই 
সময়েই অনিরুদ্ধ ছিরুর কাছে দশটাঁকা ধাঁর করিয়াছিল । 
ছিরু কিন্তু তখন চাহিবামাত্র দিয়াছিল। ওই গুণটি 
ছিরর আছে, বিপদে হাত পাতিলে ছিরু কখনও 
ফিরাইয়া দেয় না। 

ভূপালের অনেক কাজ--গোটা গ্রামের লোকের 
অস্থাবর আসিয়াছে, প্রত্যেক লোকটিকে ডাঁকিতে হুইবে 
_ সে আবার হাঁকিয়৷ বলিল-_ পাঠিয়ে দিয়ো চণ্ডীমগ্ডপে । 

পল্প এবার একটু অগ্রসর হইয়া সদর দরজা হইতে 
মুখ বাড়াইয়া বলিল-_থানদার গিরীশছতোরের বাড়ী তো 
তুমি যাবে-_-ওইথাঁনে__ 

তূপাঁল বলিল-_দেখা পাই তো বলব! বলিতে বলিতেই 
সে পথের ঝাকে অবৃশ্ঠ হইয়া! গেল। 

পদ্ম" ফিরিয়া দেখিল দশবারোটা কাক আসিয়া 
রান্নাশালায় নামিয়৷ পড়িয়াছে। সে ছূটিয়া গেল, কিস্ত 
ইচ্ছা হইল-__জিনিষপত্র সমস্ত তছনচ করিয়া ছড়াইয়া ফেলিয়া 
দেয়, ঘরে আগুন ধরাইয়! দেয়। এমন কপাল! ছি! 
ছি! এমন কপাল! তাহাকে সাহাষ্য করিতে একট! 
পাচবছরের শিশু পধ্যস্ত নাই! ছি! 

নু রী রঃ 
চণ্ডীমগ্ডপে ততক্ষণে গ্রামের প্রায় সমস্ত লোকই আসিয়] 
জড়ো হইয়াছে । আটচালার মাঝখানে ইউনিয়ন বোর্ডের 
সেক্রেটারী দুগাই মিশ্র বেশ ভ্রাকিয়া বসিয়াছে। সঙ্গে 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


একখানা বাঁধানো খাতা, একগাদা পরোয়ানা, একখান! 
রসিদ বই। তাহার হাপহাতা কামিজের বুক পকেটে ক্লিপ 
আটা একটা পেম্সিল__-একটা ফাউণ্টেন পেন। সে 
চালকাঠের দিকে চাহিয়া নিতান্ত নিলিপ্তভাবে বিড়ি 
টানিতেছে। সমবেত সকলেরই মুখ গুকাইয়৷ গিয়াছে । 
আজ এই মাঙ্গলিক পর্বের দিন, ঘরে ঘরে লক্ষ্মী পাতা 
হইয়াছে । এখন কেমন করিয়া ঘর হইতে কড়ি বাহির করা 
যায়! আর কড়ি অর্থাৎ টাকাই বা কোথায়? এখনও 
হৈমন্তী ধান মাঠে। আউশ যে কয়টি হইয়াছিল তাহা 
বেচিয়া আলু বদসাইবার খরচ চাঁলানে হইয়াছে; কিছু 
মুনিষ মাহিন্দারকে দেওয়া হইয়াছে ; কিছু নিজেদের জন্য 
আছে। এই নবান্নের খরচের জন্তও সে ধানও কিছু বিক্রী 
করা হইয়াছে । নিয়ম লঙ্ঘন করিয়াও দিব বলিলেই বা 
আসিবে কোথা হইতে । বুকের ভিতর উদ্বেগ লইয়া শুমুখে 
সকলে নির্বাক হইয়া বসিয়াছিল। বকিতেছিল-_-জগন 
ডাক্তার। ইউনিয়ন বোর্ডের কর্তৃপক্ষের অন্গায় এবং 
অত্যাচার সে অনর্গল বর্ণনা করিয়া চলিয়াছিল। 

মিশ্র বিডিটা ফেলিয়! দিয়া একসময় প্রশ্ন করিল-হ্থা৷ 
গো মোড়লরা, তা হলে_-রসিদ লিখি? 

প্রো হরিশ বলিল--আজ যে নবান্ন মিশি, লক্মীপাতা 
হয়েছে । আজ তো টাঁক। দিতে নাই বাপু! 

মিশ্র বলিল_সে তো বুঝছি, কিন্তু সরকারী কাজে 
তো আমাবস্তে, পুণিমে, লক্ষমীপূজো-_সরম্বতী পূজোর বিধেন 
নাই বাপু। সরম্বতী পূজোর দিনেও কাঁলী-কলম নিয়ে 
অ।মাদিগে কাজ করতে হয়__ 

জগন বাধা দিয়! বলিল-_-ওহে বাপুঃ আমরা সময় চেয়ে 
দরখান্ত করেছি-_ 

_কই, কোন দরখাস্ত তো৷ পাই নাই আমর! ! 

_-তোমরা ? তোমরা কে হে? আমরা দরথাত্ত 
করেছি, এস-ডি-ওর কাছে। 

সবিনয়ে মিশ্র বলিল--এস-ডি-ও তো আমাদের কাছে 
কোন খবর কি হুকুম পাঠান নি বাপু! আমরা কি ক'রে 
জানব? বোর্ডে যদি দরখাস্ত করতে তা? হলে অবশ্য 
একশোবার বলতে পারতে । বিবেচনা করতে বাধ্য 
ছিলেন প্রেসিডেন্ট ! 

দেবদাস গুম হুইয়! দাড়াইয়াছিল- সে এবার অত্যন্ত 


গ-ত্ন্বভ্ড। 


৬৩৬০৪, 


তীক্ষ্রে বলিল__তা” হলে সেইটাই হ'ল আসল কথা । 
প্রেসিডেণ্টের কাছে দরখাস্ত না ক'রে এস-ডি-ওর কাছে 
দরখাস্ত করাটাই হ'ল কারণ ! তাই বেছে- বেছে নবাক্পের 
দিনে অস্থাবরের ব্যবস্থা, নাকি গে মিশ্রি মশায়? 

ছুগাই মিশ্র তীর্ধ্যক দৃষ্টিতে দেবদাসের দিকে একবার দৃষ্টি 
নিক্ষেপ করিয়! পরমুহূর্তেই পূর্বের মত নিলিপ্ত ভঙ্গিতে সম্মুখের 
দিকে চাহিয়া বলিল__-তাই যদি ভাব, তবে তাইই হ'ল! 


জগন বলিয়া উঠিল-_ আপনারা শুন গো সব; 
শুনে রাখুন ! 

পণ্ডিত বলিল--এনকোয়েরী হলে বলতে হবে 
আপনাদিগে । 


-আসছে বার ভোট দেবার সময় মনে করবেন কথাটা! 
কথ।ট! বলিয়া জগন বিদ্রোহীর মত উদ্ধত ভঙ্গিতে চারিদিকে 
একবার দেখিয়া লইল। 

দুগাঁই মিশ্র কথাটা বলিয়া একটু অপ্রতিভ হইয়াছিল। 
কিন্তু কথাট! সত্য । দরখাস্তের সংবাদ ভূপাঁল জানাইয়াছিল, 
তাই বাছিয়া বাছিয়া আজিকার দিনেই অস্থাবরের ব্যবস্থা 
প্রেসিডেন্ট করিয়াছেন। বিনীত আত্মসমর্পণের বিনিময়ে 
মার্জনা করিতেও প্রস্তুত আছেন। সে কথাটা দুগাই 
জানে। কিন্তু সে বার্তা প্রকাশের পূর্বে সে নিজের 
প্রাপ্টা আদায় অথবা ভবিষ্যৎ প্রাপ্তি সম্বন্ধে নিঃসংশয় হইতে 
চাঁয়। নিজের অগপ্রতিভ ভাবটা গোপন করিবার জন্য 
এবার সে অত্যন্ত কঠোর কর্তব্পরায়ণ হইয়া উঠিল-_ 
বলিল_-তা৷ হলে আমার আর দোষ দেবেন না কেউ। 
কর্তব্য কাজ আমাকে করতে হবেই। ভৃপাল! সে বেটা 
আবার কোথা গেল? 

মিশ্রের সঙ্গে চৌকীদার,ছিল আরও কয়েকজন, 
তাহাদেরই একজন বলিল-হুজুর। সে এখনও ডাক 
দিয়ে ফেরে নাই। 

হুঁ! তামাক থেতে জমে গিয়েছে কোথাও আর 
কি! বেটা 

ঠিক এই সময়েই ভূপাল ফিরিল-_তাহার সঙ্গে সঙ্গে 
কয়েকজন কালীপুরের অধিবাসী, তাহাদের সকলের প্রিছনে 
বৃদ্ধ ্ারকাচৌধুরী । 

মিশ্র একটু সম্ত্রম করিয়া চৌধুরীকে সম্ভাষণ করিল-_ 
আন্গন চৌধুরী আন্ন। 


২৬১০০ 


চৌধুরী হাসিয়া বলিল_প্রণাম! সম্ভাষণ আগেই 
জানিয়েছে আপনার তৃপাল। 

কথাটার খোঁচায় দুগাই একটু অপ্রস্তত হইল। চৌধুরীকে 
সে একটু সম্্রম করিয়াই' চলে। প্রাচীন অভিজাত্যের 
দাবীতে এবং চৌধুরীর অনুদ্ধত মিষ্ট ব্যবহারে সম্রম অবস্থা 
সকলেই করে? কিন্ত ছুগাইয়ের বেলায় অতিরিক্ত কারণ 
কিছু আছে। একখানা নূতন ঘর তৈয়ারী করিতে মিশ্র 
১ €্ুবার তালগাছের জন্গ বৃদ্ধকে ধরিয়াছিল ; দ্বারকা চৌধুরী 
বিনামূল্যে পাঁচটা! তালগাছ ছুগাইকে দিয়াছিল। মিশ্রের 
প্রার্থনা ছিল দুইটা গাছ। সময়টা ছিল বৈশাখ মাঁস__বেলা 
প্রায় দিপ্রহর। চৌধুরী ছুগাইয়ের মুখের দিকে চাহিয়া 
ততক্ষণাৎ দুইটা গাছ দিতে প্রতিশ্রুত হইল - এবং অনুরোধ 
করিল-_মিশ্রমশাই, শ্লান করুনঃ ত'রপর আহার করে 
বিশ্রাম করেও বেলায় যাবেন। 

মিশরের কিন্তু সময় ছিল না) তাহার পূর্বব-রাঁত্রে প্রচণ্ড 
ঝড় জল হইয়া গেছে- দেয়ালের খানিকটা ক্ষতিও হইরাছে, 
সেইদিনই তালগাছের ব্যবস্থা করিতে প্রতিজ্ঞা করিয়া সে 
বাহির হইয়াছে--সে বলিয়াছিল-_-আজ মাফ করুন চৌধুরী 
মশায় অন্ত্দিন বরং হবে। আজ আমাকে মেলানপুর যেতে 
হবে। আরও তিনটে তালগাছ আমার চাই। আজ 
প্রতিজ্ঞা ক'রে বেরিয়েছি বাড়ীথেকে__ 

তাহার মুখের দিকে-_এবং আকাশের দিকে চাহিয়া 
চৌধুরী হাসিয়া বলিয়াছিলেন- ব্রাহ্মণের প্রতিজ্ঞা বৈশাখ 
মাসে কি অপূর্ণ থাকে মিশ্র মশায় ; পূর্ণ হতেই হবে। সে 
হবে। .নিন এখন স্নান করুন; আহার করুন, বৈকালে 
তালগাছ দেখুন-দেখে বাড়ী ফিরবেন। পাঁচটা গাছই 
আমার কাছেই আপনি পাব্নে! 

এই কারণেই মির আজ অপ্রস্তত হইল-_ অন্যজন হইলে 
সে উত্তর একট! দিত, বেশ যুতসই উত্তরই দিত। অপ্রস্তত 
হইয়া সে বলিল__পেটের দাঁয় চৌধুরী মশায়_ আর আমার 
অনৃষ্ট ; নঙলে এই চাকরী কি মানুষে-করে ! চাঁকরে 
আর কুকুরে কি সমাঁন। প্রেসিডেণ্টের হুকুম-_ 

বাধা দিয়! চৌধুরী 'খলিল-_হুকুম তামিল করুন দেখি 
এখন) রসিদ কাটুন! আমার, নিশিমুখুজ্জের_ 

_স্্যা গো চৌধুরী মশায়_-আজ যে নবান্স_ 
লক্ষমীর দিন! প্রোড় হরিশের 'আর বিম্ময়ের দীমা রহিল না। 


জ্ঞান 


[ ২৮শ বর্ব-_২য় খণ্ড--৫ম সংখ্যা 


হাসিয়া চৌধুরী বলিল--লক্ষমী কি আছেন পাল মশায়__ 
যেলঙ্গীর দিন! লক্ষমীছাড়ার আবার লক্ষ্মী! চৌধুরী দশ- 
বারোঁজন গ্রামবাসীর নাম করিয়া বলিল-_এদের রসিদগুলো 
কেটে ফেলুন। একটু হাত চালিয়ে কাজ করুন। 

এঁদের সবারই আপনি দেবেন? চৌধুরীকে 
জানিয়াও মিশ্র একটু বিস্মিত হইল। 

_হ্া। 

_ মহাশয় লোক কি আর সাধে বলে লোকে? এমন 
লেক যে গায়ে থাঁকে-সে গায়ের লোকে বাস ক'রে 
পাহাড়ের আড়ালে! কত বড় বংশ! দুগাই মিশ্র উচ্ছুসিত 


হইয়াই কথাটা বলিল। 

_ন-গো না! গুরা সব আমাকেই দিলেন_ দেবার 
জন্তযে | 

-আর না গো! মিশ্র বলিল- আমরাও মানুষ 


চৌধুরী মশায়_| বুঝি সব। দশ-বিশ থানা গ্রাম নিয়ে 
আমার কারবার, কই কাউকে তো এমন দেখলাম না। 
রসিদ লিখতে লিখতেই মিশ্র বলিয়! গেল । 

সমবেত লোকগুলি স্তব্ধ হইয়া বসিয়াছিল। জগন ও 
দেবদাস ঘোঁষ পর্যন্ত স্তব্ধ! ছুগাই মিএ রসিদ লিখিয়। 
টাকা লইয়া_-রপিদগুলি কাটিয়৷ চৌধুরীর হাতে দিল__ 
চৌধুরী চলিয়া গেল। 

মিশ্র বলিল--এই ত বাপু চৌধুরী টাঁকা দিলেন__ 
নবান্-লঙ্ষমী তে! গুর বাড়ীতেও আছে ! 

ছিরু পাল আগাইয়! আমিল-_ডাঁকিল-হরিশ কাকা! 
ছোটকাকা একবার শুনুন! ছিরু অত্যন্ত গম্ভীর_ চোখে 


বিচিত্র দৃষ্টি। 
হরিশ ও ভবেশ আশ্চধ্য হইয়া গেল ! ছিরুর কথাটা 
তাহাদের বিশ্বান হইতেছে না। ছিরু বলিল--আমি 


ট্যাক্সের টাকাট। দিয়ে দি, অবিশ্টি যেয়ে রাজী হবে, 
আমাকে আপনারা পরে দেবেন। কি বলেন? ছোটকাকা 
- তুমি বাপু একটা কাগজে কার কত ট্যাক্স লিখে রাখ 
পরে আবার গোল না হয়! মিশ্র মশায়_-আপনিও 
একবার শুনুন! আজ এ বেলাটা আমার বাড়ীতেই 
থাকতে হবে আপনাকে । আমি ট্যাক্স সব দিয়ে দিচ্ছি। 
টাকাটা আমি জংসনে কলওয়ালার গদীতে 

পাঠাচ্ছি। 


রক ॥ 


বৈশাখ--১৩৪৮ 1 


লক্ষ্ীর-দিনঃ ঘরে থেকে তো টাক! দিতে নাই! আপনার 
সম্মান আমি করব গো! ! 
ছুগাই উচ্ছ্বসিত হইয়া উঠিল-_বেশ তো! বেশ তো! 











ছিরুর এই মহাম্ুভবতায় গ্রামের লোক মুগ্ধ উচ্ছ্ুসিত 
হইয়া উঠিল। বিপর্দে আঁপদে ছিরু অবশ্থ টাকা ধার 
বরাবরই দিয়া থাকে । হ্াগুনোট অথবা জিনিষবন্ধক 
রাখিয়৷ টাকা দিতে কখনই সে আপত্তি করে না, শক্রকেও 
না। কিন্তু আজিকাঁর আচরণ অপ্রত্যাশিত অদ্ভুত । 

প্রেরণটা অবশ্ত_ চৌধুরীর কাছ হইতে আসিয়াছে। 
ওই চৌধুরীকে সে ত্বণা করে, হিংসা করে! এই 
দুইখান। গ্রামের মধ্যে ছিরুই এখন সর্বাপেক্ষা বিত্রশালী; 
চৌধুরী সে হিসাবে সামান্ত ব্যক্তি। কিন্তু কোন প্রাচীন- 
কালে তাহাদের সমৃদ্ধি ছিল বলিয়া বর্তমানে তাহার 
সমৃদ্ধিকে উপেক্ষা করিয়া চৌধুরীকে লোকে সম্মান করে_- 
এটা ছিরুর সহা হয় না। তা ছাড়াও চৌধুরীর ওই মিষ্ট 
মিষ্ট কথা যেন হিরুর গায়ে বিষ ছড়াইয়! দেয়। সে 
কিছুতেই এমন করিয়া কথা বলিতে পারে না। মহত্বের 
প্রতিযোগিতায় ছিরক আজ অকন্মাৎ এমন করিয়া ফেলিল; 
আলোকচ্ছটার প্রতিচ্ছটার মতই তাহার এ আচরণের 
মধ্যে আলোকের পবিভ্রতা-দীপ্তি-উন্তাপ সবই আছে। 
ছিঞ্ুর মুখের মধ্যে আত্মপ্রসাদ আছে- আত্মস্তরিতাঁও 
হয়তো আছে; কিন্ত সে আত্মস্তরিতা উগ্র নয় রূঢ় নয় 
মানুষকে আঘাত করে না। দেবু ছিরুর কাছে আসিয়া 
বলিল__ আমার টাকাট1ও দিয়ে দিল বাবা! এই তো 
চাই রে! 

ছিরু বলিল_ নিশ্চয় ! যেয়ো কিন্তু খুড়ো, অন্নপূর্ণা 
পূজোর সব দেখে শুনে দিয়ো। 

নিশ্চয়! সন্ধ্যেতে ভাসানর গান আজ তোর 
ওখানেই হবে ! 

_-বেশ! বেশ! কাছে-পিঠে যাত্রার দল নাই খুড়ো__ 
তা হলে না হয় কাল_-) ছিরু উৎসাহিত হইয় উঠিয়াছে। 

তাহাদের কথাবার্তায় বাধা পড়িল। জগন ঘোষ 
ডাক্তার দস্তভভ/রেই বলিতেছিল-_-আমি হাত-ও কারুর 
কাছে পাতব না» ট্যাক্সও দেব না আজ লক্মীর দিনে! কর 
তুমি আমার অস্থাবর ! সে স্যাগডালটা পায়ে দিয়া ফটফট 


রস 


ঈী-তেন্ভ। 





৬৪৬৯ 





করিয়া চলিয়া গেল। ডাক্তারের সঙ্গে সঙ্গে আরও একজন 
উঠিয়া গেল। সে অনিরুদ্ধ! 

অনিরদ্ধ বাড়ী আসিয়! বিনা ভূমিকায় পদ্মকে বলিল-_ 
সেই নোটখান! দে তো! 

পদ্ম ঘড়৷ হইতে ঘটিতে জল ঢাঁলিতেছিল, তাহার হাত 
নিশ্চল হইয়া গেল-__সেই নতভঙ্গিতেই সে শুধু মুখ তুলিয়া 
স্বামীর মুখের দিকে চাহিল। দৃষ্টিতে তাহার বিম্ময়-.বিরক্তি 
যেন পুগ্তীভূত হইয়া আছে ! 

_-সেই ছিরুর বউয়ের দরুণ টাকা ! অনিরুদ্ধ টাকাটার 
কথা পদ্মকে স্মরণ করাইয় দিল! 

পদ্মের দৃষ্টির অর্থ কিন্তু তাহ! নয়; তাহার দৃষ্টির অর্থ-_ 
লক্ষ্মীর দিন-_-একি লক্ষ্মী ছাড়ার আচরণ ! 

বলি, দিবি? না হাড়িকুঁড়ি ভেঙে বার করতে 
হবে? 

এতক্ষণে পদ্ম একটি কথা বলিল-_লক্মীর দিন-- 

_নিকুচি করেছে তোর লক্ষ্মীর !--ীতে দাঁতে 
ঘষিয়! অনিরুদ্ধ বলিল, সে যেন বর্ধর পণ্ড হইয়! উঠিয়াছে। 

পদ্ম ঘড়া ও ঘটিট! ছাড়িয়া দিয় কাপড়ের আচলে হাতি 
মুছিয়া ঘরের ভিতর হইতে নোটখাঁন! আনিয়া অনিরুদ্ধের 
সম্মুখে ফেলিয়া দিল। 

অনিরুদ্ধ নোটখাঁনা আনিয়া দুগাইয়ের সম্মুখে ফেলিয়া 
দিল। ছুগাই তখন দু”থানা চেয়ার লইয়া ব্স্ত। জগন 
ডাক্তারের চেয়ার ক্রোক কর! হইয়াছে । জগন গম্ভীর- 
ভাবে দাঁড়াইয়া আছে ডাক্তারখানার দাওয়ায়। 

ক ন ঠা গা 

সন্ধ্যায় অনিরুদ্ধ ছুটিয়া আসিয়া ডাঁকিল--ডাক্তারবাবু, 
ঘোষ মশায়! 

ডাক্তার বাড়ীর ভিতর গ্রামোফোন লইয়া বসিয়াছিল। 
ছিরুর বাড়ী ভাঁসান গান হইতেছে, ভাঁক্তার ঘরে 
গ্রামোফোঁন জুড়িয়াছে। এক মকেলের গ্রামোফোঁন, 
আজই সেটাকে আনা হইয়াছে! অনিরুদ্ধ সাড়া না 
পাইয়া বাড়ীর ভিতরেই ঢুকিয়া পড়িল। ডাক্তার প্রশ্ন 
করিল--কে? 

_আমি অনিরুদ্ধ। একবার আসুন। আমাদের 
বউ কি রকম করছে । দাত লেগেছে । গৌঁ-গেৌ করছে। 

ডাজার আজ অনিরুত্ধের উপর বিশেষ তুষ্ট-ছিল--: 


উভিই 


সপ $ শর 0 পি শে সপ 


অনিরুদ্ধ ছিরুর কাছে টাকা লয় নাই! হাসিয়া জগন 
বলিল-_নবান্নে থেয়ে দেয়ে অঙ্থল হয়েছে__আর কি! চল! 

_ আজে না; আজ দীতে কুটো কাটে নাই। রাগ 
করে কিছুই খায় নাই। 

ব্যস্ত হইয়া ডাক্তার উঠিয়া পড়িল। 

বিসপিল গতি গ্রাম্যপথখানি গাছের ছায়া ও জ্যোত্ল্লার 
আলোয় অজগরের মত বিচিত্রিত। জনহীন স্তন্ধ। ছিকুর 
বাড়ীর প্রাঙ্গণে ভাসানের গানের সুর এবং শ্রোতাদের 
কষ্মরব উঠিতেছে । আলোর ছট!1 দেখা যাইতেছে । ছিরুর 
বাড়ীর পাশ দিয়াই পথ। ভাক্তার সহসা! জনহীন অন্ধকার 





স্ান্রগুন্হঞ্য 





[ ২৮শ বর্ষ-_-২র খণ্ড ৫ম সংখ্যা 





সব স্াপ্ন্াদ 


চণ্তীমগ্ডুপটার ভিতর দিয়! মোড় ফিরিয়া বলিল-__-এই দিক 
দিয়ে আয়। চু ক'রে হবে। 

চপ্তীমণ্ডপের ভিতর দিয়া গেলে চট করিয়া যাওয়। 
যায়, ছিরুর বাড়ীর সাম্গিধ্যও এড়াইয়! চল! চলে। কিন্ত 
রাত্রে কেহ দেবস্থান দিয় যায় না। ডাক্তার মোড় ফিরিতে 
অনিরুদ্ধও তাহার অনুসরণ করিল--তাহার আর দ্বিধা 
হইল না। 

জনহীন-_অন্ধকার চণ্ডীমগ্ডুপ ! কেবল অতীত ইতিহাঁস- 
লেখার মত আল্লনার সাদা রেখাঁচিত্রগুলি অন্ধকারের 
মধ্যে ঝলমল করিতেছে । ক্রমশঃ 





রূপবতী 
জসীম্‌ উদ্দীন 


কে আসিলে তুমি ওগো রূপবতি ! জবাকুম্থুমের দ্যুতি 
তোমার সোনার অধর ঘেরিয়! করিছে রূপের স্বতি। 
তরল বিজলী-তরঙ্গে ছুলি খেলিছে তোমারে লয়ে । 
সন্ধ্যার মেঘ জড়াইছে গাঁয়ে রাড অনুরাগ হয়ে। 


মেরু কুহেলীর তুষারভবনে লক্ষ বরষ ভরি, 

রঙিণ স্বপনে ঘুমায়েছ কি গো অনন্ত বিভাবরি ? 
শিয়রে তোমার অনন্ত রাতি জালাইয়! কোটি তারা 
অনন্ত চোথে করিয়াছে ধ্যান হইয়া! আত্ম-হার!। 
মহাকাল সে স্তব্ধ হইয়া অনস্ত যুগ ধরি 

শত বরণের আকিয়াছে রেখা! তৌঁমার অঙ্গ ভরি । 
নয়মে তোমার ভরিয়াছে আনি আকাশের নীল মায়! 
আর আকিয়াছে সুদূর ধুসর বনানীর শ্তাম-ছায়।। 
কুস্বলে তব মেরু কুহেলীর অনস্ত আধিয়ার 

জড়াগ্নে জড়ায়ে আফিয়াছে বসি মহারহস্ত তার। 
তারাগুলি সেথা তোমার বেণীর মণিমাঁণিক্য হয়ে 
জলেছে নিবেছে অনন্ত কাল তব রূপকথা কয়ে। 
নিখিল নরের মমতা-কুন্ুম একটি একটি ছিড়ে 

তব কণ্ঠের মন্দীর হার গণড়ে দিয়েছিল ধীরে। 
বরণে তোমার বহ্ছি জালিয়! ত্রিলৌক কামনানলে 
স্থবির সেকাল কল্পের শেষে উঠেছিল জলে জলে । 


ওগো রূপবতি ! আজি এলে তুমি ভাঙিয়! মেরুর ঘুম 
সোনার অঙ্গে মাথিয়! এসেছ কুহেলীর নিজ ঝুম । 
আমি কি তোমার রূপের দেবতা, বীকায়ে কুস্থম-তীর 
লক্ষ বছর স্তবের মন্ত্রে ভেদিয়াছি তব নীড়। 

আমার কামন! লক্ষ বছর জলিয়! কি হোমানলে 
আজি ফুটিয়াছে মত ্-সিদ্ধ বাসনার শতদলে । 


এ মন-মাঁনস কোটি মরালীর ডানার আঘাত লয়ে 
শত তরঙ্গে হ'য়ে বিতাড়িত দিকে দিগন্তে কয়ে : 
আজি কি তাহার প্রসারিত বুকে হয়েছে এমন স্থান, 
তুমি এসে হেথা ওগো অগ্সরিঃ করিবে কেলির স্নান! 


আকাশ বাঁতাঁস কাপে থর থর মুরছে দিগঙ্গনা, 
গ্রহতারাগুলি ছুলিয়া শুন্ে পড়িতেছে বান! । 

ওগে! রূপবতি, সন্বর তব স্বর রূপজাল, 

নতুবা এখনি কোটিধরা লয়ে ভেঙে যাঁবে মহাঁকাল। 
ও বাহু-বাকান বিদ্যুৎ ধনু _আমি হীন মৃগ তার 

ও রূপবহ্হি হবে না তৃপ্ত আমি যদি দহি আঁর। 

এ নয়নে আছে কতটুকু তৃষা, কোটি গ্রহতার! ছাঁড়ি 
উদিয়াছে যার বহ্কির শিখ! কোটি মহাকাশ ফাঁড়ি__ 
এ নয়নে আছে কত প্রসারতাঃ নে রূপ জ্যোতিরে লয়ে 
ছড়ায়ে পড়িৰ যুগ হ'তে যুগে স্তবের কুসুম হয়ে। 
ওগো রূপবতিঃ তবু সাধ জাগে, গ্রহতার! ধর! ভরা 
খতুর চক্রে শত থণ্ডিত মাটির বসুন্ধরা; 

তৃণে আর ফলে কুন্থুমগন্ধে বিহগকাকলী লয়ে 

এই বুক যেন প্রসারিত হ'ল সুদুর দিকৃবলয়ে 

যেন দিগন্ত ভরিয়া আসিল সুদূর প্রসাঁরি ঘুম 

তব অঙ্গের মাধুরীর মত মোহভরা নিজ ঝুম । 
তবুসাধ জাগে ওগো বূপবতি, কোটি কোটি যুগ ভরি, 
ও সতী-অঙ্গ স্বন্ধে করিয়া চলি গ্রহপথ ধরি। 

গ্রহ হ'তে গ্রহে কালে মহাকালে চলি আর শুধু চলি, 
তোমার সোনার অঙ্গ হইতে খসিয়। রূপের কলি; 
দেশে আর দেশে গড়িয়৷ উঠিবে দেবীর পীঠস্থান 

যুগে যুগে সেথা পুজারীরা৷ আসি রচিবে রূপের গান। 


চণ্ডীদাস-নানর 


শ্রীহরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সাহিত্যরতু 
“নানুরের মাঠে পাতের কুটার যেমন মাঠের উল্লেখ পাইতেছি, তেমনই ছুই শতাধিক 
নিরজন স্থান অতি। বৎসর পূর্বে রচিত “ভক্তি-রত্বাকর” প্রণেতা নরহরি 
বাস্থলী আদেশে চণ্তীদাস নিতি চক্রবর্তীর “গীত-চন্দ্রোদয়* গ্রন্থে চত্ডীদাস বন্দনার পদে 
ভজন করয়ে তথি॥” পাইতেছি-_ 


নার বাঙ্গাপার অন্ততম সারম্বত-তীর্ঘ। নান্ুর বাঙ্গালীর 
আদি মহাকবির বাণী-সাঁধনার পুণ্য-গীঠ। যখন বাঙ্গালায় 
চণ্ডীদাস-সমন্তা লইয়। কোন গণ্ডগোল ছিল না, সে দিন-__ 
প্রায় ৬৮ বৎসর পুর্বে, ন্বর্গগত রামগতি গ্টায়রত্ব মহাশয় 
তাহার “বাঙ্গালা-ভাষা ও বাঙ্গাল! সাহিত্য-বিষয়ক প্রস্তাব” 
গ্রন্থের ১ম থণ্ডে (১৮৭৩ খ্রীঃ) লিখিয়াছিলেন--“চণ্ডীদাঁস 


বগা পপ লা ্ 


] ৮৮91 রি ্ 
/ ৬ 
1915 
চর 


“নার গ্রামেতে নিশ! সময়েতে 
বাসুলী প্রসন্ন হইয়া । 

রাই কাছ দু নওল চরিত 
কহল নিকটে গিয়। |” 


শতাধিক বৎসর পূর্ব্বে রচিত অকিঞ্চন দাসের বিবর্ত-ব্লাসে 
পাইতেছি_ 





বীরভূম জেলায় চণ্ডীদাস-নানুরে চশ্তীদান স্থৃতিপূজ! সমিতি কর্তৃক স্থাপিত চণ্ীদাস সাধারণ পাঠাগার ও 
বিদ্যামন্দির (চণ্ডীদাস মেমোরিয়াল উচ্চ ইংরাজি বিদ্যা।লয় ) 


জাতিতে ব্রাহ্মণ ছিলেন, নাঁছর নামক গ্রামে তাহার 
নিবাস ছিল। এই গ্রাম বীরভূম জেলার অন্তর্গত 
সাঁকুলীপুর থানার অব্যবহিত পূর্বদিকে অবস্থিত।” এখন 
থানার নামও নাগর, গ্রামের নাম চণ্ডীদাস-নালুর | 
উপরের উদ্ধত পদে এবং আরে! একটী পদে-_ 


“নান্রের মাঠে হাটের নিকটে বাসুলী বৈসে যথা । 
বানুলী আদেশে কহে চতীদ।সে সখ যে পাইবে কোথা |৮ 


“নিত্যের আদেশে বান্ুলী চলিল সহজ জানাবার তরে। 
ত্রমিতে ভ্রমিতে নার গ্রামেতে প্রবেশ যাইয়া করে ॥* 


মালদছের এঁতিহাসিক ন্বর্গগত রজনীকান্ত চক্রবর্তী 


মহাশয় “গড়ের ইতিহাস” ১ম খণ্ডের একস্থলে লিখিয়ছেন, 
প্বীরভূমে নলবংশীয় রাঁজগণ রাঁজধ্ঘ করিতেন» স্থানীয় 
বিবরণ হইতে জান! যায়, নার এই নলবংশীয় রাজগণের 
রাজধানী, ছিল। নাঁন্রে আজিও ,নলরাজার ভিটা, 


৬৪৩ 


ভি 


রাজবাড়ীর তেলগড়্যা, ঘিগভ়্যা প্রভৃতি ছোট ছোট 
পুগ্ধরিণীর বিলুপ্তাবশেষ বর্তমান রহিয়াছে । বর্তমান নার 
ও সাকুলীপুরের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে এই ধ্বংসন্তপ 
বেড়িয়াই প্রাচীন নাহুর, অবস্থিত ছিল। বীরভূমের 
নলহাটী, সন্ধিগড় গ্রভৃতি স্থানেও নলবংশীয় রাঁজগণের স্বতি- 
বিজড়িত ধ্বংসাবশেষ এক প্রবাদ বর্তমান আছে। 

* নানুরের নলবংশীয় শেষ রাঁজার নাম সাতরায় বা 
সত্য রায়। গোপভূমের রাজধানী অমরাঁর গড়ের রাঁজা 
মহেন্দ্র রায়ের সেনাপতি কীর্ণাহার বা কর্ণহার এই 
সত্য রাঁযকে পরাজিত করিয়া নান্ুর অধিকার করেন এবং 
রাজভবন ধ্বংস করিয়া নিজ নামে কীর্ণাহার বা কর্ণহাঁর 
গ্রাম প্রতিষ্ঠাপূর্বক তথায় রাজধানী স্থাপন করেন। 
তদবধি প্রাচীন নাহুরের অধিবাসীগণ ধীরে ধীরে পূর্বদিকে 


] ! 


গান্পতন্ব্ব 


খল 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় খণ্ড--€ম সংখ্যা 


গ্রসঙ্গত বলিয়া! রাখি-_নান্ুরের এক ক্রোশ উত্তরে 
প্রাচীন কীর্ণাহার গ্রাম। এই স্থানের কীর্ণাহার বা কর্ণহার- 
বংশীয় শেষ রাজার নাঁম কিন্কিন, চণ্ীদাস ইঞ্ারই সভাকবি 
ছিলেন। কীলগির খা! নামক একজন পাঠান-বংশীয় 
যোদ্ধা! এই কিস্কিন রাজাকে নিহত করিয়া কীর্ণাহার ও 
নাগর অঞ্চল অধিকার করেন। কীর্ণাহারে কিস্কিনের 
রাজবাটা ও দেবালয়ের ধ্বংসন্তপ দেখিতে পাওয়া যায়। 
প্রবাদ আছে, কীলগির খাই চণ্ডীদ্াসের হত্যার আদেশ দেন, 
এদিকে কীর্ণাহারের একস্থানে সংকীর্তন সময়ে নাটমন্দির 
পতনে চত্ীদাঁস সমাধিস্থ হন। 

নারে রামী রজকিনী সথন্ধে নাঁনারূপ প্রবাদ প্রচলিত 
আছে। রামীর পিত্রালয় ছিল তেহাই গ্রামে । রামী 
যে পুক্ষরিণীতে কাপড় কাচিত সেই “দেবখাত পুষ্করিণী” ও 


৮ ৭৪ এ 
ফু নে / ॥ 
ঠা চু এ ৮ রি ্ 4 পশ 
“পা এ ১98 
0 ॥ 
$ া 
রি চা 
রত পিং 





ঞ্ 


চ্ভীদামের ভিট| ও বিশালাঙ্ষী মন্দিরের ধ্বংসন্ত,গ 


সরিয়]'আসিয়া বসতি স্থাপন করিলে বর্তমান নাম্ুরের 
প্রতিষ্ঠা হয়। নানুরের চণ্ডীদাসের ভিটা নামে পরিচিত 
স্তপটী যে বাসলী মন্দিরের ধ্ংসম্তপ সে বিষয়ে কোন 
সন্দেহ নাই। কারণ এই স্তপের নিকটেই মাঠের শিব 
বা হাটতলার বুড়ো শিবের মন্দির ছিল। এই স্থানেই যে 
চ্তীদাসের কুটার ছিল, শতাধিক বৎসর পূর্ষের রচিত 
একখানি সহজ সাধনের পু'থিতে তাহার উল্লেখ আছে-_ 

নানর গ্রামের ঈশ্বান কোণেতে। 

তথা হইতে একপোয়া নিকট সাক্ষাতে ॥ 


চণ্তীদাসের কুটার। বর্তজান চণ্তীদাসের ভিটা প্রাচীন 
নানুরের ঈশান কোণেই অবন্থিত। 


“রামীর কাঁপড়-কাঁচা পাটা” ( একথানি প্রস্তরীভূত কাষ্ঠ) 
আজিও নানুরে বর্তমান রহিয়াছে। 

চণ্ডীদাসের উপাস্যা দেবী পবাণীশ্বরী”, “বাসলী” ঝ 
“বিশালাক্ষী” নান্ুরে আজিও পূজা পাইতেছেন। রামগতি 
ন্তায়র্ব মহাশয় লিখিয়। গিয়াছেন--্ গ্রামে বাশুলী 
নামে এক শিলাময়ী দেবী অগ্ঠাপি বর্তমান আছেন। ইনি 
চণ্তীদাসের উপান্যা দেবতা বলিয়া! বিখ্যাত। ইহার গ্রকৃত 
নাম বিশালাক্ষী, অপভাষায় ইছাকে বাস্থলী বলে।” এই 
মুত্তির ছুই হাঁতে বীণা, একহাতে পুস্তক ও অন্তহাতে 
জপমালা। অগ্নিপুরাণে এইরূপ মৃত্তির উল্লেখ আছে-_ 
“পুস্তাক্ষমালিকাহন্তা বীণাহস্তা সরহ্বতী” | বাণীম্বরী-- 


বৈশাঁখ--১৩৪৮ ] 


শষ স্যার 





দেবীর দে সাধনার এক গুঢ়রহস্ত জড়িত আছে। তান্ত্রিক 
হোমের এই মন্ত্রী সেই সাধনার ইজিত। 


প্বাগীশ্বরীমূতু ন্নাতাং নীলেন্দীবরলোচনাং। 
বাগীশ্বরেণ সংযুক্তীং ক্রীড়ীতাঁবসমদ্থিতাং ॥” 


এই সাধনায় হোমকুণ্ড ঘ্বৃত, বহ্ছি-স্থাঁপন, পুষ্প, ইন্ধন 
প্রভৃতি সমস্ত শব্দগুলিই এই রহম্তময় সাধনার গুঢার্থ- 
ব্ঞ্ক পারিভাষিক শব্। কবি চত্তীদাসের সহজসাধন 
ব! রূপ কোন সাধনার কথা যদ্দি সত্য হয়, তাহা হইলে 
তিনি বে এই বাঁশীশ্বরীরই উপসক ছিলেন, সে বিষয়ে কোন 
সন্দেহেরই কারণ নাই। বাণীশ্বরীই অপত্রংশে বাসলী 
হইয়াছেন। ইহার প্রণামে ইহাকে বিশালাক্ষীও বলা 
হইয়াছে। 

সরম্বতি মহাভীগে বি্যে কমললোচনে । 

বিশ্বরূপে বিশালাক্ষি বিদ্যাং দেহি নমোস্ততে ॥ 


নাচুরের জমিদাঁরবংশীয় শ্রীমান্‌ অনাদিকি্কর রায় প্রমুখ 
কয়েকজন উৎসাহী কর্মী নান্রে চণ্ডীদাসের স্থৃতিরক্ষাকল্লে 
“্চণ্ীদাস পাঠাগার” ও শ্চতীদাস উচ্চ-ইংরেজী-বিদ্যালয়” 
স্থাপন করিয়াছেন । সম্প্রতি নাগুরে যে বীরভূম-জেলা-সাহিত্য- 
সম্মেলন ও চত্তীদীস-সাহিত্য-সম্মেলন হইয়া গেল, এই 
সম্মেলনে চত্তীদাসের ভিটা খননের উদ্দেশে স্থানীয় প্রতিষ্ঠা- 
ভাঁজন যুবক খাঁনসাহেব মৌলভী সৈয়দ আবছুল মজিদকে 
লইয়া একটা শক্তিশালী কমিটা গঠিত হইয়াছে। স্ত.পটা 
গভর্ণমেণ্ট কর্তৃক সংরক্ষিত। আমরা আশা করি গভর্ণমেণ্ট 
এই স্তুপ খননের অগুমতি দিবেন এবং প্রত্বুতত্ব বিভাগ ও 
কলিকাতা বিশ্ববি্ভালয় এই বিষয়ে অবহিত হইবেন। 
বাঙালায় এই ধরণের শপ খননের বেসরকারী প্রচেষ্টা 
এই প্রথম। স্থতরাং এদিকে বাঙ্গালার বিগ্ান্ুরাগী 
বিত্তশালী সম্প্রদায় ও শিক্ষিত বাঙ্গালীর দৃষ্টি আকর্ষণ 
করিতেছি। চত্ীদাস বাঙ্গালার কবি, বাঙ্গালীর প্রথম 
মহাকবি। সুতরাং তাহার মর্য্যাদানুরূপ স্মৃতিরক্ষায়ও 
সকলেরই সচেষ্ট হওয়া! কর্তব্য । 

চত্ীদাস যে বাঙ্গালার আর্দি কবি এবং মহাকবি, সে 
বিষয় বিতর্কের অতীত । শ্রীচৈতন্ত-পূর্ববযুগের যে দুইজন 
মহাকবির নাম একসঙ্গে উচ্চারণ করিতে পারি; তাহার 


চগুভী্কাস-ন্যান্ুক্র 





৬, 





তান্ত্রিক, বৈদিক, শাক্ত, সকল সম্প্রদায়ের উপাস্তা। এই একজন বাঙ্গালার চণ্ডীদাঁস, অন্থজন মিথিলার বিষ্যাপতি 


দুইজন কবিই এক গোঠীভৃত্ত । ইহারা কেহই বৈষ্ণব 





দেবখাত পুঙ্চরিণী চণ্ডীদাস-নাদুর। এই পুকুরে চণ্ডীদাল 
মাছ ধরিতেন ও রামী কাপড় কাচিত। সম্মুখে 
রামীর কাপড় কাচিবার পাট! 

সম্প্রদায়ের লোক ছিলেন নাঃ অথচ রাধাকুষ্ণ প্রেমলীল। 
লইয়া কবিতা রচনা করিয়াছিলেন ; দুইজনই মহাপত্তিত ও 
মহাঁকবি। দুইজনই রাঁজসভার কৰি। সংক্ষেপে পরিচয় 
দিতে হইলে বলিতে হয়__ 

বিচ্যাপতি ছিলেন একজন সিদ্ধ-স্থপতি । মানবের 
পরমাশ্রয় প্রেমের প্রাসাঁদসৌধ নির্মীণেই ছিল তাহার 
আনন্দ। এইরূপে তিনি এমন এক গৃহ নির্শীণ করিলেন, 
যাঁহা বিগ্রহেরই বাসোঁপযোগী মন্দির ; সাধারণ নরনারীর 
উপাসনার স্থল। যাহা ধরণীর ধুলামাঁটীতে থাকিয়াও 
উর্দাদিকে শীর্যোভ্তোলন করিয়া বৈকুণ্ঠ স্পর্শ করিয়াছে। 
বিদ্যাপতি ধন্য হইলেন, তাহার রচিত মন্দির সেই অনাদি- 
অব্যয় চির-প্রেমময়ের পাঁদম্পর্শে ধন্ঠ হইল। বিদ্যাপতির 
মানব-প্রেমের বাস্তবান্ৃভৃতি অপ্রাকত প্রেমের দিব্যানভূতিতে 
রূপান্তরিত হইয়া গেল । 

চণ্ডীদাঁস ছিলেন আজন্ম-সিদ্ধ ভাম্কর। নরনারীর প্রেমের 
ূর্তিনির্মাণই তীহার নিত্যকার্্য ছিলি । কিন্তু অকম্মাৎ এক 
শুভ মুহূর্তে বিশ্মিত চত্রীদাঁস অনুভব করিলেন, তাহার নিশ্মিত 
মৃননয় নরনারী না জানি কখন চিম্ময়-যুগলবিগ্রহে রূপান্তরিত 
হইয়াছে। মর্ভের মানব অমৃতের বার্তা বহন করিয়া 





৬৪৬ 
আনিয়াছে। নিশ্ীতা চণ্তীদাস কথন শ্ষ্টা চত্ীদাসে 
পরিণত হুইয়াছেন। তাই চত্তীদাসের কবিতা মানুষের 


ভাষায় কথ! কহিতে গিয়া সেই শাশ্বত প্রেম-কল্পলোকের 
অমৃত বাণীই উচ্চারণ করিয়াছে । 
ধাহারাই শ্রীরষ্*কীর্তন পাঠ করিবেন, হারাই আঁমার 
কথার সত্যতা ত্বীকার করিবেন। যিনি শ্রীকুষ্ণকীর্তনে 
ব্লিয়াছেন-__ 
যে কানু লাগিয়৷ মো আনন! চাহিলেণ বড়াই 
না মানিলে৷ লঘু গুরু জনে। 


হেন মনে পরিহাসে আনা উপেখিয়া রোঁষে 


আন লঞা বঞ্চে বুন্নাবনে ॥ 





বাণুলীদবী--চণ দাস-নান্বর--ধ্বংসম্ভুপ হইতে 
ইহ! পাওয়। গিয়াছে 


ভ্ঞাব্পদ্ঞন্ধঞ্থ 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় খণ্ড-_-€ম সংখ্যা 


বড়াই গো কত ছথ কহিব কাহিনী । 
দহ বুলি ঝাপ দিলে সে মোর শুখাইল লো 
মুই নারী বড় অভাগিনী ॥ 

প্রেমের এই যে সুধাবিষের জালা, আনন্দের এই যে অসহনীয় 
বেদনা, দহে ঝাপ দিতে গেলেও দহ গুকাইয় যায়, প্রেমের 
অকুল-পাথারে কুল শীল লজ্জা ধৈর্যের সঙ্গে কুল (তীর) ও 
কোথায় মিলাইয়] যায়_-চণ্ডীদাস পদাবলীর পরতে পরতে 
এই স্থর। বাঙ্গালার নিত্য-নীল-গগনাঙ্গনে এই প্রেম-করণ- 
ক পাপিয়ার সেই সুরঃ সেই অমৃত-মদির সঙ্গীত আজিও 
প্রতিধবনিত হইতেছে-_ 

ধিক রহু জীবনে পরাঁধিনী যেহ। 

তাহার অধিক ধিক পরবশ নেহ ॥ 

এ পাঁপ কপালে বিহি এমতি লিখিল। 

স্থধার সাগর মোঁর গরল হইল ॥ 

ছাঁয়! দেখি বসি যদি তরুলতা বনে। 

জবপিয়৷ উঠয়ে তরু লতাপাতা সনে ॥ 

শীতল বলিয়া! যদি পাষাণ করি কোলে । 

পিরীতি অনল তাপে পাষাণ যে গলে ॥ 

যমুনার জলে যদি দিয়ে যাঁঞা ঝাঁপ । 

পরাণ জুড়াবে কি অধিক উঠে তাঁপ॥ 

বাঙ্গালায় এই গান মৃদ্তি পরিগ্রহ করিয়াঁছিল। বাঙ্গালী 

বিদ্যাপতি-বিরচিত রত্বমন্দিরে চণ্ডীাসের প্রেমের হেম-বিগ্রহ 
শ্রীমন্‌ মহাপ্রভুর দর্শনলাঁভে কৃতার্থ হইয়াছিল । বাঙ্গালা ধন্য 
হইয়াছে। বাঙ্গালীর প্রেমসাঁধন! সার্থকতা লাভ করিয়াছে। 





ক্ষণবসন্ত 
প্্রীপ্রভাতকিরণ বন্থু 


পেয়েছিনু নির্জনতা শাস্তিভরা নিভৃত আউনে 3 

তবুও মনের কথা প্রিয়তমে র+য়ে গেল মনে । 

অথণ্ড সময় ছিল, অবসর ছিল সীমাহীন, 

হাতে কাজ ছিল না! কো, তবু হায় কল্পনা! রডীণ 

হল না দিবসগুলিঃ স্মধুর হ'ল না রজনী 

সুন্দর সুযোগ যত, তুলিল না কোনো প্রতিধ্বনি ! 
তবু কি পিপাঁসা নেই? মিথ্যা কথা বলিব কি ক'রে? 
আশা জাগে, চূর্ণ হয় রাত্রিদিন মনেরি ভিতরে । 


শুধু ব্যর্থতার গ্লানি ক্ষয় আনে ক্ষণবসস্তের ; 
আকাশের তৃষ্ণা জাগে আান্দোলনে নীচে অরণ্যের ) 
সুর্য ওঠে, অন্ত যায়, তারাগুলি করে ঝলমল, 
তবুও দেয় না ধরা কাননের শ্যামল অঞ্চল। 


জীবনের বাত্রাপথে কত স্বপ্ন ভেঙেছে এমনি, 

. তুমি জানো আমি জানি বৃথা হ'ল কত নিবেদনই ! 
হাহাকারে ভরা বুকে কেন জাগে রোমাঞ্চ নবীন? 
কেন এ নির্জনবাস--বেদনায় পূর্ণ রাত্রিদিন ? 


বলিব ষ! ভেবেছিনু তোমারে টানিয়] পরিয়ে কাছে, 
কিছুই হ'ল ন! বল1। শুভলগ্ন চলিয়া গিয়াছে । 


ূ ক্রিতী; গাল 


্ীরাধিকারপ্ন গঙ্গোপাধ্যায় 


রায়েদের দীঘির শাণশবাঁধানো ঘাঁট মেয়েদের কলকণ্ের 
কাঁকলিতে মুখর হইয়া উঠিল। নব-পরিণীতা নবদুর্গাকে 
ঘিরিয়া যত রঙ্গ-পরিহাস বাদানবাদ স্থরু হইয়া গেল। 
একে একে সেখানে পাড়ার আরও অনেক মেয়ে ও 
বধূর! আসিয়া জুটিল এবং দীঘির কাকচক্ষু__অধুনা বর্ষার 
ঘা খাইয়া! একটু ঘোঁলাটে-হইয়া-ওঠা জলে গলা পর্য্যন্ত 
ডুবাইয়া কত রঙ্গ-পরিহাসের কথাই না জুড়িয়া দিল। 
সবারই লক্ষ্যবস্ত নবছুর্গা, কাজেই নবদুর্গা সবার মাঝে 
পড়িয়া! যেন ঠাপ লইতে লাগিল। কিন্তু নবছুর্গার এসব 
ভালই লাগিতেছিল ; সে যে আবার কোন দিন সবার দৃষ্টি 
এমন একান্ত করিয়া আকৃষ্ট করিতে পারিবে তাহা ভাবিতে 
পারে নাই। টিয়া! ও বাব্লির কাছে ইতিপূর্ব্বে বণিত 
ঘটনাগুলিরই পুনরাবৃত্তি তাহাকে করিতে হইল। রায়েদের 
ছোট তরফের ছোটবাঁবুর ছোট মেয়ে রেণি--সেটি আবার 
ফাজিল কম না, সে একসময় নবছুর্গাকে অপ্রতিভ করিয়। 
তুলিবার জন্য সহসা! নবছুর্গার গণ্ডের একস্থানে একটি 
আঙ্লের ডগ! সকৌতুকে স্পর্শ করাইয়া বলিয়া উঠিল; 
হারে ছুগ গিঃ এ দাগটা তোর তে। আগে ছিল না। 

নবহুর্গীর মুখ-চোথ একেই পূর্বব হইতে কিঞিৎ রাডিয়া 
ছিল, তাহাতে রেণির কথা যেন আরও রঙ. চড়াইয়া দিল। 

নবদুর্গা কোনক্রমে রেশির কথার উত্তরে বলিল, তা 
অত কি আগে লক্ষ্য করেচি, আর নতুন হওয়াও খুব 
বিচিত্র না। তাতুই যখন বলচিস্‌ তখন হয় তে! সত্যিই 
ছিল না। 

সকলেই মুখ টিপিয়া হাসিতে লাগিল । ইহাতে নবদূর্গা 
বেশী অপ্রতিভ হইল, ন1 রেখি, তাহ! বিচাঁধ্য বটে ! 

রাঁয়েদের দীঘির ঘাটে কল-কৌতুক যখন বন্ধ হইল 
'তখন সন্ধ্যা স্থনিবিড় হইয়! ঘনাইয়। নাঁমিয়াছে। টিয়া, 
নবদুর্গা ও বাবলি ত্রস্তে কাপড় ছাড়িয়া কলসী ভরিয়া জল 
তুলিয়া লইয়! চলিয়া! গেল। টিয়া অন্ধকার-ঘনানো পথ 
দিয় নীরবে চলিতে চলিতে ভাবিতেছিলঃ আজ না জানি 
কপালে তাহার কৃত গাল-মন্দই লেখা আছে। ছোটমা 


এতক্ষণে নিশ্চয় ঘরের দাওয়ায় বসিয়। টিয়াকে বিদ্ধ করিবার 
মত তীক্ষ তীক্ষ বাঁক্য-বাঁণ সংগ্রহ করিয়া! রাখিতেছিল। 
টিয়া পথে সাথীদের বিদায় দিয়া যখন গৃহে ফিরিল, পা তখন 
আর তাহার যেন গৃহের দিকে চলিতেছিল ন1। 

টিয়া উঠানে পা দিতেই নিশি সঙ্জন প্রথম কহিল, এত 
দেরি হলো যে তোর দীঘির ঘাট থেকে ফিরতে ? 

টিয়া চকিতে উঠান ও ঘরের দাওয়াগুলির দিকে 
একবার দৃষ্টি বুলাইয়! লইয়া! ছোটমা রূপসীকে দেখিতে না 
পাইয়া! একটা স্বস্তির নিশ্বীন ফেলিয়া দিল) আজ নবদুর্গা 
শ্বশুরবাড়ী থেকে এসেচে কি নাঁ_সেই তারই জন্যে এত 
দেরী হয়ে গেল। তুমি আজ নুপুরগঞ্জের হাটে গিচলে 
বুঝি? এই ফিরে আসচো? 

না, ফিরেচি আমি অনেকক্ষণ । ফিরে দেখি একটা 
লোকও ঘরে নেই যে এই জিনিষগুলো ঘরে তুলে নেবে। 
শেষে আমাকেই একট! একটা ক'রে ঘরে তুলতে হচ্ছে-__ 
এ যেন এক লক্ষমীছাড়া বাড়ী হয়েচে ।--বলিয়৷ নিশি সঙ্জন 
উঠানে জড়ো করা অবশিষ্ট কয়েকটি ঝুনা৷ নারিকেল তুলিতে 
যাইতেছিলঃ টিয়া তাড়াতাড়ি তাহার কাজে বাধা দিয়া 
বলিল-_যাঁক বাব, আমি যখন এসেই পড়েচি তখন আর 
তোমাকে কষ্ট ক'রে ওগুলো তুলতে হবে না। 

নিশি সঙ্জন কার্য হইতে বিরত হইল। তারপরে 
টিয়ার আর একটু কাছে আগাইয়! আসিয়া আস্তে করিয়া 
বলিল, তোর ছোটমার কি জর হয়েচে নাকি টিয়া ? 

কই, আমি তে! জানি না।-_বলিয়! টিয়া রান্নাঘরের 
দিকে জলের কলসী লইয়! চর্লিয়৷ যাইতেছিল - নিশি সঙ্জন 
আবার কি মনে করিয়! যেন বলিল, ভাল কথ! টিয়া, আজ 
নূপুরগঞ্জের হাটে মনোহরের সঙ্গে দেখ! হ'লো। সে বললে, 
বকফুলীর ওপারে ধবলীর কুওুদের বাড়ী তারা পালা গাইতে 
এসেচে। কাল সময় পেলে সে এসে দেখা করে 
যাবেখন। | + 
টিয়া কথাটা শুনিল, কিন্তু কিছুমাত্র খুশী হইতে না 
পারিয়। নিজের কাজেই চলিয়া গেল। কারণ, ছোটমার 


৬৪৭ 


৬৪৬৮ 


যখন জর তখন সাতদিন সাতরাত্রি তো! সে আর কোন 
কাজেই হাত দিবে না, আর সুস্থ থাকিলেই বা কি-_ 
টিয়াকেই গৃহের প্রায় সমস্ত কাজ করিতে হয়। উনন 
তখনও ধরে নাই-_রাত্রের রাক্প। তে! পড়িয়াই আছে। 

টিয়া জলের কলসী রান্নাঘরে নামাইয়! রাখিয়া উঠানের 
নারিকেলগুলি যথাস্থানে--অর্থাৎ উত্তরের ঘরের «কারে, 
তুলিয়া! রাখিয়া! উনন ধরাইতে গেল। উনন ধরাইয়! রান্না 
চাঁপাইয়া দিয়া ছোটমার শয্যার পাশে গিয়। বসিতেই 
রূপসী যেন খেপিয়া উঠিল। অন্য দিকে পাশ ফিরিয়া শুইয়া 
রূপসী বলিল, আমি বলে কি-না! জরের তাড়সে মরে যাচ্ছি, 
আর এই সোমত্ত মেয়ের কি-না রাত দশটা বাঁজিয়ে দীঘির 
ঘাঁট থেকে আড্ডা ভেঙ্গে ফেরা হলে! ! 

টিয়া! কুপন হইয়া বলিল ঘাটে যাওয়ার আগেও 
তোমাকে ভাল দেথে গেলাম--কই, তাঁড়াতাঁড়ি ফেরার 
কথাও কিছু বলে দিলে না। আমি তো আর গুণতে 
জানি না যে--_ 

অ+ গুণতে জানো না বুঝি !-_বলিয়! রূপসী অতি কঠিন 
্সেষ করিল ) তারপরে বলিল, কিন্তু গুণতে জানে ঝলেই 
তো! পেত্যয় লাগে, নইলে এ কদিন তে! খালের ঘাঁটেই 
গা ধু'তে যাওয়া হচ্ছিল আজ আবার দীঘির ঘাটে যাঁওয়া 
হলে! কেন? দত্ত-বাড়ীর ছেলে আজ নুপুরগপ্জের হাঁটে 
গেছে, ফিরতে তাঁর রাত হবে-_-দে সব তো গুণতে পারো 
দেখচি। 

টিয়ার সর্বশরীর কাপিয়! উঠিল__রাগে। না ছুঃখে সে 
ঠিক বুঝিতে পারিতেছিল না। দত্ত-বাড়ীর সুন্দর যে আজ 
হাটে গেছে তাহ! তো তাহার জাঁনা ছিল না, আর ছোঁটমানই 
বালে-খবর জানিল কেমন করিয়া? তবে একটা কথা 
তাঁহার মনে হইল, হইতে পারে তাহার পিতার সহিত 
সুন্দরের হাটে সাক্ষাৎ হইয়াছেঃ কথায় কথায় সে হয়তো 
ছোটমার কাছে সেকথা বলিয়াছে। কিন্ত সে একবারও 
ভাবিতে পারিল ন! যে, রূপসী অপরাহ্নে খালের ঘাটে 
গিয়াছিল নিজের কাজে এবং স্থন্দর ও গঙ্জাকে সে নৌকায় 
উঠিতে দেখিয়াঁছিল, আর নৌকা ছাড়ার কালে সুন্দরের 
মা পূর্ণলক্মীকে পাড়ে দীড়াইয়া হাকিয়া বলিতেও 
গুনিয়াছিল, নুপুরগঞ্জের হাটে যাচ্ছিস্‌ যা, কিন্তু ফিরতে যেন 
রাত বেশী হয় না৷ তাড়াতাড়ি ক'রে ফিরিস্‌ কিন্তু সুনার। 


গাব ন্শঞ্র 


[ ২৮শ বর্ধ-_২য় খণ্--€ম সংখ্যা 


সেযাহাই হউক, রূপসীর এই কঠিন ইঙ্গিতে--আর 
ইঙ্গিতই বা বলি কেমন করিয়া, ইহাতো! স্পষ্ট করিয়াই 
বলা? টিয়া! একেবারে স্তস্তিত হইয়া! গেল। তবু টিয়৷ নিজেকে 
অতিকষ্টে সংযত রাখিয়া বলিল--নবছুর্গী আর বাবলি 
এসেছিল বলেই রায়েদের দীঘিতে গেলাম গা ধুতে, নইলে 
থালের ঘাটেই যেতাম । 

রূপসী সপাঙ্গে একবার টিয়ার মুখের দিকে চাহিয়া 
দৃষ্টি ফিরাইয়! লইল এবং আর কোনও কথা বলার প্রয়োজন 
সে অনুভব করিল না। 

টিয়! কিছুক্ষণ সেথানে নীরবে দী।ড়াইয়! থাকিয়া শেষে 
আবার বলিল, তোমার জন্যে কি পথ্যি হবে জানতে পেলে 
পরে ছোটমা 

রূপসী সহস! শয্যায় উঠিয়া বসিল এবং পরমুহূর্তেই 
উঠিয়া দাঁড়াইয়া বলিল, পথ্যি হবে মানে? আমাকে 
পথ্যি করাবার জন্যে এত কিসের গরজ তোদের শুনি? 
আমার হয়েছেটা কি? দুপুরে আজ ঘুমুতে পারিনি তো 
তোদের তিনজনার দাওয়ায় বসে গজ গজননু করাতেই, 
আর তারই ফলে সন্ধ্যে হ'তে-না-হ'তেই ধরেচে মাথা। 
আমাকে পধ্যি করাতে পারলেই যেন তোদের সবার মনের 
সাঁধ মেটে ?-- 

বলিয়া রূপসী অদ্ভুত একপ্রকার মুখভঙ্গী করিল-_ 
যেন নিজের অনৃষ্টকেই সে ক্ষোভে মুখ ভেংচাইল। 

টিয়ার বিশ্ময়ের আর সীমা পরিসীমা রহিল না। 
ছোটমা”র প্রকৃতি আজিও সে সম্যক চিনিয় উঠিতে 
পারে নাই, কথন যে কোন্‌ বিচিত্র পথে তাহার মনের ধারা 
বহিতে থাকে তাহা সে যেন নিজেও ঠিক বুঝিয়া উঠিতে 
পারে না, অপরের তে! কথাই নাই। 

টিয়া আর একটা কথাও না বলিয়৷ অন্টত্র চলিয়া 
গেল। মানুষের চরিত্র যে কত বিচিত্র ও হীন হইতে 
পারে তাহা যেন সে আজ মর্মে মর্মে উপলব্ধি করিল । 


ওপারের ঘাটের দিকে দৃষ্টি ফেলিয়া টিয়া লজ্জায় 
মরিয়া গেল। কিন্তু লজ্জায় মরিয়া যাওয়ার মত এমন 
কিছু কাণ্ড আর সুন্দর করে নাই। দত্ত-বাড়ীর ঘাটে 
বাধা নৌকার গোলুইয়ের উপর বঙগিয়া সুন্দর একটা 
পিতলের দীড়ে শিকল দিয়া বাঁধ! টিয়াপাখীটিকে খালের 





বৈশাখ” ১৩৪৬ ] ০০০০ 
জরে পান করাইতেছিল। টিয়া এই অপ্রত্যাশিত 


ব্যাপার দেখিয়া নিজেদের ঘাটে দীড়াইয়া মুখে কাপড় 
তুলিয়া! দিয়! সলজ্জ চাঁপা হাসি হাসিতে লাগিল। সুন্দরের 
সেদিকে সহজেই দৃষ্টি পড়িল, কিন্ত দৃষ্টি যে পড়িয়াছে 
তাহা বুঝিতে না দেওয়ার ভান করিয়া অন্ত দ্রকে মুখ 
ফিরাইয়া রহিল । তবে পাখীটিকে প্লান করানোর ঘটা 
কিঞ্চিৎ বাঁড়িয়া গেল। 

টয় ঘাটে আসিয়াছিল সামান্ত গোটা ছুই বাসন 
লইয়া, তাড়াতাড়ি সেগুলিকে মাজিয়া৷ ধুইয়৷ লইয়া! সে 
উঠিয়া যাইতেছিল এমন সময় পারীটার অস্বাভাবিক 
চীৎকারে আবার সে ফিরিয়া চাহিল। টিয়া! ফিরিয়া 
চাহিয়া ষে দৃশ্য দেখিল তাহা উপভোগ্য হইলেও করুণ। 
পাখাঁটি হ্বন্দরের বাঁ-হাতের একটা আঙল যেন আক্রোষে 
কাম্ড়াইয়া ধরিয়া আছে, আর ন্ন্দর সেই আঙুলটা 
ছাড়াইয়৷ লওয়ার জন্ত যেন প্রাণান্ত চেষ্টা করিতেছে । টিয়া 
এ দৃশ্য দেখিয়া বিশেষ বিচলিত হইয়! পড়িয়াছিল; কাঁজেই 
সুন্দরকে লক্ষ্য করিয়া সে বলিয়া ফেলিল, পাখীটাকে জলে 
ডুবিয়ে ধরো_শীগ.গির, নইলে কি ছাড়ানো সহজ ! 

সুন্দর সঙ্গে সঙ্গে একেবারে দড়-সমেত পাখীটিকে 
জলের মধ্যে চুবাইয়া ধরিল এবং কেমন একপ্রকার লজ্জায় 
সে না হাসিয়াও থাকিতে পারিল না। টিয়ার বুদ্ধি কাঁজে 
লাঁগিল। পাখীটি আত্মরক্ষার্থ সুন্দরের আঙল ছাড়িয়া 
দিতে বাধ্য হইল। সুন্দর পরমুহূর্তেই আবার ক্ষিগ্রতার 
সঙ্গে দীড়-সমেত পাথীটিকে নৌকাঁর উপরে তুলিল। 
টিয়া তখন রহস্ত-কৌতুকে মুখ চাপিয়া হাসিতেছিল। 
সুন্দর তাহা লক্ষ্য করিয়াই বলিয়া উঠিল তা শত্তুরের 
সর্বনাশ হ'তে দেখলে কেই বা! না খুণী হয়। 

হু তা খুশী তো হয়েচি। আর কেনই বা খুশী হবো 
নাগুনি? আমাকে যারা ঠাট্র] করবে-ত। সে শক্রই 
হোক, আর মিত্রই হোঁক্‌-_তাদের ছুঃখে আমি থুণী 
হবোই, একশোবাঁর হবো।--বলিয়া বিজয়গর্ধে টিয়া 
মাটিতে পা ফেলিয়া ঘাট হইতে উঠিয়া গেল। 

বাতাবী লেবু গাছটার কাছ বরাবর আসিতেই তাহার 
ন্জরে পড়িল. মনোহর--সে ঘাটের দিকেই আসিতেছে । 
টিয়া আর মুহূর্তমাত্রও (সেখানে দীড়াইল না, বাড়ীর দিকে 
হাটিয়। চলিল। মাথা! সে নীচু করিয়াই অগ্রসর হইতেছিল। 


৮২ 





২৪৪ 


স্হ্াস্হা” স্যার ব্ 


মনোহরের অতি নিকটে আসিয়াও সে মাথা তুলিয়। চাহিল 
না, মনোহর ইহাতে হালিয়া ফেলিয়া বলিল-_সকাঁলব্লো 
আমার মুখ দেখাও কি পাপ নাকি টিয়াঁপাখী? একেবারে 
মাথা গু'জে যে চলেছে! ? এমন কি অপরাধ করেছি তোমার 
কাছে শুনি? 

টি থমকিয়া পথের মাঝেই দীড়াইয়া গেল। 

মনোহর টিয়াকে নীরব দেখিয়! আবার বলিল-_আমি ৫ষ 
আজ আসবো তা নিশ্চয় জানতে ? কাল নূপুরগঞ্জের হাটে 
জামাইবাবুর সঙ্গে দেখা হয়েছিল, তাঁকে সে কথা তো ঝলে 
দিয়েছিলাম, বলেন নি বুঝি কিছুই ? 

টিয়া বলিল-__হু', তা বলেচেন বই কি! ধবলীর কুণুদের 
বাড়ী পাঁল। খাটতে এসেছিলে বুঝি ? 

মনোহর তারি খুশী হইল। টিয়া তো৷ তবে তাহার 
সকল খবরই রাখে । কাজেই মনোহর বলিল, কাঁল রাত্তিরে 
যাত্রা গেয়ে রাত থাকতেই রওনা হ'য়ে পড়েছি এখানে এসে 
তোমার সঙ্গে দেখা করবার জন্তে। আরও আগে এলে 
পৌছুতে পারতাম, কিন্তু বকফুলী পার হওয়ার জন্তে সুবিধে 
মত নৌকা পাওয়া গেল না শেষে তিন আন! পয়সা খরচ 
করেই পার হ'তে হলো) আর একটু দেরী করলে অবশ্য 
তাও লাগতো না। তা তিন আনা পয়সা এমন কিছু 
বেশীও আর না। 

টিয়৷ এইবার একটু রূঢ় হইয়া কহিল__কেন, তিন আনার 
পয়সাউ বা খামোক৷ খরচ করতে গেলে কেন? 

মনোহরও ইহাতে রূঢ় না হইয়া! পারিল না, বলিল-_ 
আমার পয়সা আমি থরচ করবো তাতে কার কি বলার 
আছে? বেশ করেচি। 

টিয়া মুখ টিপিয়া হাসিল । হাসিয়াই টিয়া পথ ছাড়িয়া 
ঘাসের জমির উপর দিয়া মনোহরকে পাশ কাটাইয়া চলি! 
যাইতোছিল। .মনোহর অমনি ফিরিয়! দাড়াইয়া বলিল-_ 
একটা কথা আমার গুনে যাঁও টিয়!। 

মনোহরের ভারী কণ্ঠ টিয়াকে চম্কাইয়া দিল, সে 
দাড়াইয়া গেল। মনোহর দুই পা অগ্রসর হইয়া টিয়ার মুখের 
প্রতি গভীর দৃষ্টি ফেলিয়া বলিল; এই,যে আমার আপা-যাওয়া 
এ তোমার একেবারেই পছন্দ হুয় না-_তাই না কি টিয়া? 
আমাকে তুমি দেখতে পারে নাঃ না? কিস্ত আমি এমন কি 
অন্তায় করেচি গুনতে পাই না-কি ? 





৬9৫৯০ 


টিয়া ক্ষণিক নীরব থাকিয়া বলিল-_না+ তুমি কেন 
আবার অন্ঠায় করতে ষাবে গুনি? আমার অবৃষ্ট মন্দ তাই 
আমার ব্যবহারে কেউ থুণী হয় না। নইলে, এত থেটেও 
তে! ছোটমা'র মন যোগাতে পারি না। 

মনোহর সুযোগ পাইয়! বলিল, সেআমি জানি। আর 
দিদি তে! চিরকালই এম্নি--তাঁর মন জোগাতে পারে 
এমন মাষ বোধ করি পৃথিবীতে আজও জন্মায় নি। 
বাবার মত ভালমাচুষই দিদিকে সহ করতে পারতেন না 
তা অন্রের তো কথাই নেই । দিদির বিয়ের পরে বাবা তাঁই 
স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে বলেছিলেন-যাঁক, এতদিনে পাপ 
বিদেয় হলো । দিদির গুণের আর ঘাট নেই। সত্যি 
কথ! বলতে কি টিয়া, দিদির সঙ্গে দেখা করতে আমি 
শিখীপুচ্ছে আসি না কোনদিনই: তা তোমার যদি পছন্দ না 
হয় তো আর সত্যিই আসবো না। 

টিয়া লজ্জা! পাইয়! তাড়াতাড়ি বলিল--আঁসবে না কেন, 
নিশ্চয় আসবে । ভোঁমার আসা-যাওয়া যে আমি পছন্দ 
করিনে এ খবর কি তোমার কাছে বাতাসে পৌছেচে? 

বলিয়! হাসিয়! ফেলিয়া টিয়া ত্রস্তে বাঁড়ীর দিকে চলিয়া 
গেল। মনোহর খুশী হইয়া ঘাটের দিকে চলিয়া গেল 
তাল করিয়া মুখ হাত পা! ধুইয়া! আমিতে। 


টিয়৷ সত্য গোপন করিয়া মিথ্যার আশ্রয় লইয়! 
মনোহরকে খুশী করিতে গিয়া কত বড় বিপদ যে সেই সঙ্গে 
ডাঁকিয়া আনিল তাহ! বুঝিতে তাঁহার বিশেষ বিলম্ব হইল 
না। টিয়া মনোহরের নিকট হইতে বিদায় লইয়া রান্নাঘরে 
আসিয়া ঢুকিল। মনোহর কিন্ত টিয়াকে রান্নাঘরে স্বস্তিতে 
রান্নার কাজে ব্যাপৃত থাকিতে দিল না, অবিলঘ্ে ঘাট হইতে 
ফিরিয়া আমিয়। সে বান্নার্ঘরের দরজা ধরিয়া গীড়াইল। 
সেখানে দীড়াইয়া দুই-একটা অবান্তর কথা তুলিল এবং 
পরমুহূর্তেই রান্নাঘরের বেড়ার গায়ে ঠেস্‌ দিয়া দাড় করাইয়া 
রাখা পী'ড়িগুলির মধ্য হইতে একথাঁনি পী'ড়ি মেঝেয় 
পাতিয়৷ বসিয়া পড়িয়া বলিল, এককালে শিখীপুচ্ছের 
রায়েদের বাড়ীতে নাক্রি খুব যাত্রাগাঁন হতো শুনেচি, 
আর সেকথা মিথ্যেও নয়, কাঁরণ অধিকারী ম'শায়ের মুখেই 
দেকথা আমার শোনা । এখন কই, সে সব আর হয় না। 
হ'লে পরে বেশ হতো কিন্তু টিয়া, ত হলে আমি তোমাকে 


গান 


[২৮শবর্ব ২য় খণ্--৫ম সংখ্যা 


আমাদের দলের যাত্রা শোনাতে পারতাম। তাহলে বুধাতে 
পারতে ষে আমি বড়-একটা সামান্ত লোক নই। আজকাল 
দলের মধ্যে য্যা্িং-এ আমি সেকেও. যাচ্ছি, শালুকখালির 
কেশব চৌধুরীকে কিছুতেই আর এঁটে ওঠা গেল নাঃ ও- 
লোকটা যেন একটা! বর্ম-য্যাক্টর, আর কি থাঁস! গলাথান! ! 
তেম্নি আবার তার চেহারা! সভার মধ্যে এসে যখন-_ 
“সথে বাসুদেব 1, বলে দীড়ায়_-তখন সাধ্য আছে কি কোন 
লোকের যে কাণ ন! খাঁড়। ক'রে থাকে ! হ্যা, ও-লোকটার 
কাছে হার স্বীকার করেও আনন আছে। স্থ্যা, ফ্যাক্টর যদি 
বলি তো কেশবদা+ আমাদের একজন য়্যাইয়ু বটে! 

কেশব চৌধুরীর অভিনয় যত চমতকারই হউক্‌ না 
কেন, টিয়া মনোহরের কথায় কোন চমৎকারিত্ব খু'জিয়া 
পাইতেছিল না। কিন্তু মনোহরকে সেখান হইতে কি 
উপায়ে ষে ক্ষুপ্ন না করিয়! বিদায় লইতে বল যায় তাহাও 
সে ভাবিয়া পাইতেছিল না। তাহার ভয় হইতেছিল 
ছোঁটমা”র জন্ট, কেন না এখানে আসিয়া! এমন কিছু কঠিন 
কথাই হয় তো বলিয়! ফেলিল যে, তাহারই চোটু সাম্লাইয়া 
উঠিতে টিয়ার সারাদিন কাটিয়া যাইবে। কারণ বূপলীর 
এবসিধ হঠকারিতা। ও বুদ্ধিবৃত্তির নিকষ্টতাঁর বহু প্রমাঁণই সে 
এ যাঁবৎ পাইয়াছে। 

টিয়া তাই বলিয়া ফেলিল--এখন তুমি উঠে গিয়ে 
ছোটমা,র ঘরে একটু বসো । আমার কাঁজ-কম্মে৷ সারা 
হ'লে পর তোমার কাছে তোমাদের যাত্রার গল্প শুনবো”খন। 
কাজের সময় গল্প করছি দেখলে ছোটম| হয় তো চটবেন 
আবার ! 

মনোহর ইহাতে বিশেষ ক্ষুপ্ন হইল না, বরং দিদির 
বুদ্ধিবৃত্তির একটু নিন্দা করার সুযোগ পাইয়া সে যেন 
বাচিয়া গেল। বলিল-্থ্যা, দিদি আবার চটবেনঃ আর 
তা আবার নাকি লোককে গ্রাহ ক'রেও চলতে হবে! 
পেয়াদার আবার শ্বশুরবাড়ী! দিদি তো অষ্টগ্রহর চ/টেই 
আছেনঃ একটা লোককেও যদি দুনিয়ায় দেখতে পারলেন। 
অমন ম্বার্পর আর কাগুজ্ঞানহীন যে মাচৃষ আবার হয় 
কেমন ক'রে-_-তা৷ তো আমি ভেবে পাই না। 

টিয়া মনোহরকে তাড়াতাড়ি থামাইবার জন্য বলিল-__ 
তুমিও তো খুব লোক "যাহোক মনোহরমাঁমা। তারই 
বাড়ীতে বসে তারই নিনে করছো! । ্‌ 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


স্তজশক্জিন্মৌলল আাক্শ 


৬৫ 





নিদদে আবার কি রকম? যা সত্যিতাই তো আমি 
বলচি।__বলিয়। মনোহর একটু হাসিতে চেষ্টা পাইল। 
যাঁক এখন সে সব কথা আমাকে একটু চা খাওয়াতে পারো 
টিয়া, কাল সারারাত জেগে পালা গেয়ে গলাটা আমার কেমন 
একটু ড্যামেজ হয়েছে, চা না হ'লে আর চলছে না যে। 

চা? চার কোন আয়োজনই তো! এ বাড়ীতে নেই। 
আচ্ছা, তবু একবার চেষ্টা ক'রে দেখি, যদি বাব্‌লিদের 
বাড়ী থেকে চারটি চা চেয়ে-চিন্তে পাই কোঁন রকমে । 
তা হলেই এক খাওয়াতে পারবো, নইলে হবে না ।- বলিয়া 
টিয়া! উঠিয়া ধ্লাড়াইল এবং বাবলিদের বাড়ীর উদ্দেশে 
বাহির হওয়ার মুখে বলিয়া গেল, তুমি ততক্ষণ ছোটমার 
ঘরে গিয়ে গল্প করে? আমি চেষ্টা করে দেখি তোমাকে 
চা ক'রে থাঁওয়াতে পারি কি না। 

টিয়ার সঙ্গে সঙ্গে মনোহরও রান্নাঘর হইতে বাহির হইল। 

বাবলিদের বাড়ী হইতে টিয়া চা সংগ্রহ করিয়া আনিয়! 
মনোহুরকে চ! দিলে পর মনোহর বলিল, থ্যাস্কিউ ! 

কথাটা ইংরেজি হইলেও এবং মনোঁহরের উচ্চারণে 
যথেষ্ট ভ্রটি থাকিলেও টিয়া অর্থগ্রহণে সক্ষম হইল, আঁর 
রূপসীর সম্মুথে তাহ! হওয়াঁয়ই নিজেকে কেমন যেন বিপন্ন 
মনে করিল। মানুষ যে কতদূর বিরক্তিকর হইতে পারে 
তাহ! মনোহরকে না দেখিলে টিয়া কোনদিনই অনুভব 
করিতে পারিত না । কি প্রয়োজন ছিল তাহার এই 
বিজাতীয় ভাষ৷ প্রয়োগের আর কথা! বলারই বা তাহার 
হইয়াছিল কি; সে তো নীরবে গ্রহণ করিলেই টিয়া নিজের 
শ্রম সার্থক জ্ঞান করিতে পারিত। টিয়ার কেমন যেন 
ইহাতে লজ্জা করিতে লাঁগিল। ভবিষ্যতে ছোটমা” 
কাছে এই কথারই ধার যে কত গুনিতে হইবে তাহা সে 
এখনই ধারণা করিতে পারিল। 

সমন্ত মধ্যাহ্ন টিয়ার মহা অস্বস্তিতে কাটিল। 

অপরাচ্ছে নবছুর্গা একবার দেখ! করিতে আসিয়াছিল, 
কিন্তু তাহার বিশেষ কাজ থাকায় সেও বেশীক্ষণ ঈড়াইিয়া 
কথা কহিতে পারে নাই। নবছুর্গ! যখন উঠানের একপাশে 
টিয়াকে ডাকিয়া লইয়া কথ! কহিল তথন মনোহর উত্তরের 
ঘরের দাওয়ায় একটু গড়াইয়া লইতেছিল, আর রূপসী 
তাহারই পাশে বসিয়া কি ঘেন সব আবাস্তর কথা-বার্তা 
বলিয়া চলিয়াছিল। 


নবছুর্গী চলিয়া গেলে পর টিয়া! কাজ করিতে চলিয়! 
গেল। ঘয়ের কাজ সারিয়া রায়েদের দীঘি হইতে দুই কলস 
জল আনিয়া রাক্লাঘরে রাখিয়! একখানি শাড়ী ও গামছা 
কাধে ফেলিয়া খালের ঘাটে সে গা.ধুইতে গেল । বেলা তখন 
একেবারেই পড়িয়া গেছেঃ সন্ধ্যার গাঢ়িতম বেদনা ঘনাইয়া 
আসার আর যেন বিলম্ব নাই। 

ওপারের ঘাটে কোন নৌক! ছিল না-_ইহা যেন হুন্দয়ের 
বাড়ী না থাকার নিশানা । টিয়! নিশ্চিন্তমনে খালের জলে 
নামিয়া গল! পধ্যন্ত ডুবাইয়া গাঁ! দিয়া গা মাঁজিল, 
তারপরে ঘাটের গাবের থাঁটিয়াটার উপর উঠিয়া! বসিয়া জলে 
পা ঝুলাইয়া রাখিয়া মুখে জল লইয় কুলি করিতে করিতে 
সকাঁলে-দেখ! সুন্দরের কাঁগটাঁর কথাই সে ভাবিতেছিল। 
স্বন্দর তাহাকে জব্দ করিবার জন্য খামোঁকা একট! টিয়াপাখী 
সংগ্রহ করিয়া আনিয়াছে। টিয়াপার্থীটি যে সুন্দরের 
আঙ্ল কাম্ড়াইয়া ধরিয়া তাহাকে ভারি জব করিয়া 
ছাঁড়িয়াছে তাহ! মনে করিয়া টিয়া মনে মনে হাসিল। কে 
জানে, সুন্দরের আঁউলে আবার কিছু হয় নাই তো! 
সন্দরের আঙুলের জন্য টিয়ার কেন জানি ভাবন! ধরিল। 
আবার একথাঁও সে ভাবিল, বেশ হইয়াছে, যেমন তাহাঁকে 
জব্দ করিতে যাওয়া সুন্দরের! এইবার নিজেই সে জব্ব 
হইয়! গেছে ! 

সন্ধ্যা গাঢ় হইয়া! নামিতেই টিয়া ঘাটে ধাঁড়াইয়। গা 
মুছিয়া কাপড় পাণ্টাইল এবং ভিজা কাপড়খাঁনি ভাল করিয়া 
ধুইয়া নিংড়াইয়া লইল। তারপরে সহজ গতিতে উপরে 
উঠিয়া আস্লি। উপরে উঠিয়াই সে চম্কাইয়া গেল। 
মনোহর নীরবে বাতাবী লেবু গাছটার একটি ডাল ধরিয়া 
পথের পরেই দীড়াইয়া আছে। কে জানে এমন সে 
কতক্ষণ দীড়াইয়া আছে। টিয়ার সার! দেহে তখন ভীষণ 
উত্তেজনাপূর্ণ শিহরণ থেলিতেছিল, কাঁজেই একটা কথাও লে 
বলিতে পারিল না। আর যত রূঢ় করিয়া গ্রথম বাক্যটি 
প্রয়োগ করা এক্ষেত্রে প্রয়োজন বলিয়! সে মনে করিতেছিল, 
ঠিক ততখানি বূঢ়তার সন্ধান নিজের মধ্যে সে পাইল না। 
ফলে তাহাকে চুপ করিয়া থাকিতেই হইল 

মনোহর বিকৃত একটু হাসিয়া বলিল আমাকে ভূমি যত 
থারাপ ভাবচো টিয়া, তত খারাপ আমি সত্যিই নই। আজ 
আমি সেই,কথাই শুনতে এসেচি, তোমাকে বলতে হবে__- 


শক ২. 





কেন তুমি আমাকে দেখতে পারো! না । সমজ্ত দিনে সেকথা 
জিগ্যেস করবার স্থুযোগ ক'রে উঠতে পারিনি, তাই তোমার 
খোজে এখানে আঁসতে আমি বাধ্য হয়েচি। কাল ভোরেই 
আবার আমাকে চলে যেতে হবে। তাঁর আগে আমি 
শুনতে চাই, কেন তুমি আমাকে দেখতে পারো না? 
টিয়া তখনও চুপ করিয়া রহিল। 

* মনোহর আর একটু অগ্রসর হইয়া বলিল-_-কি, বলবে না 
টিয়া? দিদির জন্ত কি আমিও তোমার চোখে চিরদিন 
বিষ হ'য়ে থাকবো? 


টিয়া তথাপি নীরব রহিল। 
মনোহর আবার বলিল, আমি যাত্রার দলের ছেলে হ'তে 


পারি টিয়; কিন্তু এই যে এতর্দিন আঁসি-যাঁই কখনও কি 
কোন খারাপ ব্যবহার করেচি তোমাদের কারও সঙ্গে? 
তবে তুমি আমাকে কেন দেখতে পাঁরবে না? আমাকে যে 
কত কষ্ট হ্বীকার ক'রে দল ছেড়ে পালিয়ে আসতে হয় 
শিথীপুচ্ছে, তা বললে কি তোঁমর| কেউ বিশ্বাস করবে? আর 
আসি তো সে শুধু তুমি এখানে আছ বলেই, নইলে দিদির 
জন্তে ভারি আমার মাথা ব্যথা! ওর মুখ দেখাও আমি 
পাঁপ মনে করি টিয়া। আর এ যদি তোমার পছন্দ না হয়, 
তুমি যদি এ না চাও তো আমি চাই না এখাঁনে এসে 
তোমাকে এভাবে বিরক্ত করতে । তুমি যদি আসতে বারণ 
করে৷ তো সত্যি আর কখনও আমি আসবো! না। 

টিয়। মনোহরের কণ্ঠের আর্্তীয় কেমন একটু বিচলিত 
হইয়৷ বলিল--সে কি কথা, তুমি আসবে না কেন, নিশ্চয় 
আঁসবে। তুমি তো আর আমার শক্র নও যে তোমাকে 
আমি দেখতে পারি না। আর আমি কেন তোমাকে 
এ বাড়ীতে আসতে বারণ ক'রে দেব শুনি? তা যদি 
কেউ পারে তো৷ ছোটমাই একমাত্র পারেন। চাই কি 
আমাকেও একদিন গ্রয়োজন হ'লে তাড়িয়ে দিতে পারেন। 

মনোহর সহানুভূতি প্রকাশ করিয়াই বলিল--সে আমি 
ভাল ক'রেই জানি টিয়া। আর সেই কারণেই দিদিকে 
আমি আরও সহ করতে পারি না। তোমার মত মেয়েকেও 
যে ভালবাসতে পারেনি সে যে কত বড় পাষণ্ড তা আমি 
বহুপূর্বেই ঠিক ক'রে ফেলেছি। 

মনোহর টিয়ার আরও নিকট হইয়া প্রাড়াইল, টিয়া 
মনোহরের এতথানি ঘন্ঠতায় নিজেকে বিশেষ বিব্রত মনে 


হ্ডান্পতশ্ন্ 


[২৮শ বর্ষ--২র খণ্ড ৫ম সংখ্য। 





করিল। কিন্ত মনোহরকে আপনার সামান্ত তার 
দ্বারাও আঁজ আর কিছুতেই যে সে আঘাত দিতে পারিবে 
না তাহা সে সহজেই বুঝিল। মিজের কাছে নিজেকে 
আজ তাহার ভারি দুর্বল বোধ হইতে লাঁগিল। তাঁই সে 
সেখাঁন হইতে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টাতেই যেন বলিল-_ ওদিকে 
আবার সন্ধ্যে উতরে গেল, তুলসীতলায় সন্ধ্যে-পিদিম 
দেওয়! হ'লে! না, ছেটমা”র একবার সেদিকে খেয়াল 
হলেই হয়- আমার আর রক্ষে থাকবে না। আর ভাল 
কথাঃ এবেলা চা খাবে কি, তাহলে না হয় ক'রে দি একটু 
জল ফুটিয়ে। 

মনোহর নিজেকে সাম্লাইয়। লইয়া বলিল_-চা” তে! 
আমার ছুঃবেলা খাওয়াই অভ্যেস কিন্তু বলি না পাছে 
তোমার আবার কষ্ট হয় টিয়া। আর তোমাদের এখানে 
যে চায়ের কোন ব্যবস্থাই নেই কিনা। না থাক, আমার 
জন্তে আর তোমাঁর অনর্থক কষ্ট ক'রে লাভ নেই। 

না, নাঃ কষ্ট আবার কি!_বলিয়। টিয়া মনোহরের 
পাশ দিয়! অগ্রসর হইতে যাঁইতেছিল, মনোহর কি মনে 
করিয়। টিয়ার পিছন হইতে টিয়ার কাধে ঝুলাঁনে। 
গামছাটার প্রাস্তভাগ ধরিয়া তুলিয়া লইয়! বলিল-__আপন্তি 
না থাকলে গাম্ছ1টা ভোমার নিলাম টিয়া) ঘাট থেকে 
একটু ঘুরে আসি । 

টিয়া একটু চম্কাইয়াছিল সন্দেহ নাই, কিন্ত মুহুর্তেই 
আবার নিজেকে সাম্লাইয়। লইয়া বলিল- না, আপত্তি 
আবার কিসের! কিন্তু ঘাট থেকে একটু চটু ক'রে 
ফিরো, আমি সন্ধ্যে-পিদিম দিয়েই কিস্ত বাশপাতা ধরিয়ে 
তোমার চায়ের জল চাপিয়ে দেব। 

মনোহর টিয়ার গাম্ছাটা নিজের কাঁধে ফেলিয়া বলিল, 
দেরীহবে না নিশ্চয়ই । বাঃ, তোমার গাম্ছাটায় তো 
ভারি চমৎকার মিঠে গন্ধ টিয়া ! স্থগন্ধি তেল মেখেছিলে 
নিশ্চয়? 

টিয়! লজ্জায় হাঁসিয়! ফেলিয়! বলিল-_-আমি কি মেথেছি 
ছাঁই, নবদুর্গা জোর ক'রে মাথায় ঢেলে দিলে তাই। আমার 
আবার অত সথ থাকলেই তো হয়েছিল ! 

মনোহর অমনি বলিল--বাঃ, সখ তোমার থাকবে নাঁই 
বাকেন? এখন সথ থাকবে নাতো--থাকবে আবার কবে 
শুনি? এবার যেদিন আঁসবো- তোমার জন্তে একপিশি 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


সুগন্ধি তেল কিনে আনবো । চম্পল্-এর নাম শুনেচো 
নিশ্চয়-_-তাই একশিশি নিয়ে আঁসবো। 

টিয়া আর সেখানে প্লীড়াইল না; মনোহরও ঘাটে 
নামিয়া গেল। 





মনোহরের বেশীদিন কোথাও থাকিবার উপায় নাই। 
কাঁজেই তাহাকে পরদিন ভোরেই চলিয়া যাইতে হইল। 
এবার সে সকলের সঙ্গে দেখা! করিয়াই গেল। 

মনোহর চলিয়া! গেলে টিয়। একট! নিবিড় ব্বস্তিঘন নিঃশ্বাস 
ফেলিয়! পূর্ববরাত্রের উচ্ছিষ্ট বাসনের পাজা লইয়া! খালের 
ঘাটের দিকে চলিয়! গেল । কিন্তু বেশীদূর আর তাহাকে শ্বচ্ছন্দ 
সহজগতিতে অগ্রসর হইতে হইল না । বাগানের পথে পা 
দিয়াই গতি তাহাঁর কেমন বিব্রত ও সলাজ হইয়া উঠিল এবং 
পরমুহূর্তেই গতি তাহার একেবারে স্তব্ধ হইয়া! গেল। সে 
পথের মাঝেই তাই দীড়াইয়! গেল__নীরব; নিথর, নিষ্পন্দ। 

সুন্দরের পক্ষে ইহা সম্পূর্ণ অসম্ভব । কিন্ত সুন্দর পথের 
পাঁশের কাঠাল গাছটার নীচে সত্যই দীড়াইয়া আছে। 
সেখানে কি যে তাহার প্রয়োজন থাকিতে পারে তাহা টিয়া 
সত্যই ভাবিয়া পাইল না। স্বন্দরকে এত কাছে পাওয়! 
টিয়ার পক্ষে অতি বড় ভাগ্যের কথা, কিন্তু ভাগ্য যদি বা! 
আজ স্ুপ্রসন্ন হইল তো! টিয়া এত ভয় পাইতেছে কেন? 
স্থন্দরকে এত নিকটে দেখিয়! টিয়ার ভয় পাওয়ার কথা 
না, কিন্তু বুক তাহার কেমন যেন দুর্বলতায় কাপিয়া উঠ্িল। 
টিয়ার মুখ-চোখ পাংগু হইয়। আসিল। শ্মন্দর কি তবে 
পূর্বপুরুষের শত্রুতা! একেবারেই ভুলিয়া গেল? ছুইবাড়ীর 
রক্তে যে সে-অতীতের শত্রতাঁর বিষ এখনও জড়ানো আছে 
তাহা কি তাহার একেবারেই খেয়াল নাই? সামান্য সংঘর্ষে 
যেআবার কলগ্কিনীর খাঁলে বিষাক্ত রক্ত নাচিয়৷ উঠিতে 
পারে, তাহা! কি সে একবারও ভাঁবিয়! দেখে নাই? 

কিন্তু টিয়া কেন জানি ইহাতে খুশী না! হইয়াও পারিল 
না। টিয়াকি কোনদিন আবার ভাবিতে পারিয়াছে যে, 
সে স্থন্দরকে সমস্ত অতীত নিশ্চিহ্ন করিয়া ভুলাইয়! দিয়া 
এপারে টানিয়া আনিতে পারিবে। যে জীবনে কখনও 
এপারে ভূলেও পা ছোয়ায় নাই, মে তো আজ টিয়ার 
মায়াতেই এপারে পা বাড়াইয়াছে। গর্ধোল্লাসে টিয়া 
একেবারে নিম্তরঙ্গ হইয়া গেল। 


ক্তশহ্হিনী লি আখক্ল 


৬৫৩ 





সুন্দর টিয়াকে দেখিয়া ম্লান একটু হাসিল এবং লঙ্জা- 
কাতিরকণ্ঠেই বলিল, টিয়ার মায়াতেই আমাকে এপারে আস্তে 
হলো, আমাঁকে একেবারে দৌড় করিয়ে মারলে । শেষ পর্যন্ত 
উড়ে এসে বসেচে তোমাদের এই কাঠালগাছের শিক-ডালে। 
টিয়া মুহূর্তের জন্ত একটু বিচলিত হইল, তারপরেই নিজেকে 
সে সাম্লাইয়! লইয়া! বলিল-_ টিয়াপাথীটা উড়ে এসেছে বুঝি ? 
বা, দাড়ের শেকল কেটে পালালো! কেমন করে? 
স্ন্দর বলিল,পায়ে ওর পাছে লাগে তাই শেকলের আংটাটা 
একটু আল্গা ক'রে রেখেছিলাম, ঠোট দিয়ে টেনে টেনে খুলেই 
পালিয়েছে বোধ করি । কি মুস্কিলেই যে পড়া গেছে । 
টিয়া মুদু একটু হাসিয়া বলিল-_বনের পাখী তো 
পালাবেই। মিছে ওর পেছনে ছোটা, আর ও কি ধর! 
দেবে নাকি! এবার আর একটা টিয়া এনে পোঁষো, 
টিয়ার মায়াতেই যখন পড়েছে! । 
্যাঃ মায়া না !-_বলিয়া সুন্দর উর্ধে গাছের দিকে দৃষি 
ফেলিতেই দেখিল, টিয়াপাখীটি সংসা সেখান হইতে অন্থত্র 
উড়িয়া চলিল। এবার আর সঙ্জন-বাড়ীর বাগানের কোন 
গাঁছেই বসিল না, বহুদূরে উড়িয়া গেল। সুন্দর হতাশ 
হইয়া বলিল, এপারে আমাকে এনে তবে ছাড়লে, কিস্ত 
ধরাও তো দেবার মতলব কিছু দেখি না। লজ্জা-অপমানই 
বোধ হয় ভাগ্যের লেখা! 
টিয়! সুন্দরের মুখের দিকে মুখ তুলিয়! বলিল-_সত্যিই 
তো উড়ে পালালো যে! পাঁলিয়েছেঃ বেশ হয়েছে, আমি 
থুণীই হয়েছি, যেমন আমাকে খামোকা জব করার জন্ত 
টিয়। কেনা। মুপুরগঞ্জের হাট থেকে টিয়। কিনে এনে 
যেমন আমাকে জব্ব করতে চাওয়া, বেশ হয়েচেঃ আমি 
ধম্মো দেখেছি ।-"'আহা ! সত্যিই যে উড়ে গেল! বেশ 
ছিল কিন্ত দেখতে পারীটা। বনপলাশীর ভৈরব দত্তের 
ছেলের না হয়ে যদি আর কারও ও-পাখী হতো তো আমি 
প্রথম দিনই ঠিক চেয়ে বসতাম। আমার বেশ লেগেছিল 
সত্যি তোমার এঁ পাখীটা। 
সুন্দর এতক্ষণে দুষ্টামির হাঁসি হাঁসিয়। বলিল-_-এটা যে 
শিখীপুচ্ছের নিশি সঙ্জনের মেয়েরু মত কথা হয়েচে তা?তে 
আর সন্দেহ নেই, কিন্তু এটা তোমার মনের কথ হ'লোনা টিয়া । 
টিয়া বলিল__না, মনের কথা হলো নাঃ আমার 
মন জানে! আবার কি! আমার মন যেন তোমার ছয়োরে 


৬ 








বাধা রেখেছি, তুমি তার সব খবর জানো ! কিন্তু আমার 
মনের থবর না রেখে, বাবার মনের খবর রাখলে নিজের 
ভাল হ'তে! | বাবা যদি একবার দেখতেন যে ভৈরব দত্তের 
ছেলে সার ভিটের মাটিতে পা ঠেকিয়েচে__তা! হলে এতক্ষণে 
মহাপ্রলয় হ'য়ে যেত। তোমার টিয়া এখানে আছে ঝুলে 
নিশ্চয়ই তাঁর হাত থেকে পার পেতে না । 

,সুনর হাঁসির মাত্রা সামান্ত আর একটু চড়াইয়া বলিল-_ 
তা পার না পেতে পারতাম, কিন্তু সত্যি কথাই বল! হ'তো৷ তো। 

টিয়া সুন্দর করিয়া! একটু হাঁসিয়া ফেলিল। কারণ, 
ইহার পরে আর কি যে কথা বলিয়া স্ুন্দরকে সেখানে 
আরও কিছুক্ষণের জন্য আট্কাইয়া রাখিয়া ভবিষ্যতের 
আলাপের পথটা অধিকতর প্রশস্ত 'এবং সহজ নির্বাধায় 
চলমান করিয়! তোল! যাঁয় তাহা! ভাবিয়া পাইতেছিল না। 
এখনও সে সুন্দরের সঙ্গে আঁলাঁপে নিজেকে ঠিক বাধামুক্ত 
মনে করিতে পারিতেছিল না। আজিকার এই ক্ষণিকের 
কৌতুক-পরিহাস-বিজড়িত আলাপের পরেও ভবিষ্যতে হয় 
তো সামান্ত কথার আদান-প্রদানেও উভয়ের মধ্যে আসিয়া 
ধাইবে পূর্বেকার অনালাপী দিবসের কঠিন জড়তা! । সেই 
ভয়েই আরও সে ভাষা বন্ধ করিয়! প্রাণের সমস্ত আনন্দ 
ও অভ্যর্থনা প্রকাস্তিকভাবে হাসির ভিতর ঢালিয়! দিয়! 
স্ুন্দরকে নিকটতম করিয়া! তোলার প্রয়াস পাইল। 

কিন্তু টিয়ার পিছনে দড়াইয় সেই জঙ্গেই প্রায় যে হাঁসিয়। 
উঠিল সে টিয়ার অনৃষ্ট নয়-_টিয়ার ছোটমা-_রূপসী। আর 
হাঁসি তাহার মনে মনে হইলেও কথ! ছিল, একেবারে চরম। 

সুন্দর পূর্বেই চম্কাইয়াছিল অদূরে বূপসীর আবির্ভীবে 
এবং টিয়াও চম্কাইল রূপসীর হাসি শুনিয়। | সে হাসি শুনিয়! 
টিয়ার হাত হইতে বাঁসনের পাঁজা থসিয়! পড়িলেই হয়তো 
তাহার মনোভাবের যথার্থ পরিচয় পাওয়া হইত; কিন্তু পড়িতে 
সে দেয় নাই, যেহেতু সুন্দরের কাছে নিজেকে সে অতখানি 
দুর্বল বলিয়! পরিচয় দিতে কিছুতেই রাজী হইতে পারে নাই। 

রূপসী হাসিয়া থামিলেই যথেই ছিল, কিন্ত বাড়াবাড়ি 
দোষে ছুষ্ট যে তাহার শ্বভাব সে-ম্বভাঁবের নিখুত পরিচয় 
দেওয়া হয় না বলিয়াই যেন্ব সে বলিয়া ফেলিল-_অ তাই 
না বলি, রাত থাকতে উঠে মেয়ের খালের ঘাটে যাওয়ার 
আর আলিস্তি নেই। মরণ আর কি! শত্তরের সজে 
চলেছে তবে গোপনে মিতালি ! হাঃ হাঃ হা! 


ভ্গন্রত্ডম্যঞ্ 


[ ২৮শ বর্ষ-_-২র খণ্ড--€ম সংখ্যা 





টিয়া মুহূর্তে কঠিন হইয়া ফিরিয়া গীড়াইয়। বলিল__ 
শত্তর-পুরীতে যাঁর বাস সে মিতালি করতে মিত্র পাবে 
কোথায় শুনি। আমার থুণী, আমি করবো শত,রের 
সঙ্গেই মিতালি । কিন্তু শত,রের সাঁম্নে বেহাঁয়াপনা করতে 
তোমার লজ্জা করে না সঙ্জন-বাড়ীর বউ হ+য়ে? 

রূপসী আনন্দে সত্যই মার! হাঁরাইয়াছিল এবং সঙ্জন- 
বাড়ীর বউয়ের মাথায় দত্ত-বাঁড়ীর ছেলের সাঁম্‌নে ঘোম্টা 
না থাকাটা যে অপরাধের তাহা তাহার খেয়ালই ছিল না। 
টিয়া তাহ! তাহার স্মরণে আনিয়া দিতেই সে টিয়াকে 
বিজ্রপেক্প ভঙ্গীতেই বলিয়া গেল-_ই-_স্‌! 

আর চলিয়া যাওয়ার কালে মাথায় ঘোম্টাটি তুলিয়া 
দিয়াই রূপসী চলিয়া গেল। 

সুন্দর এতক্ষণ যেন প্রস্তরমূত্তিতে রূপাস্তরিত হইয়া 
নিষ্পন্দ হইয়া গিয়াছিল; সহসা সম্বিত ফিরিয়া পাওয়ার 
মত করিয়৷ জাগিয়া উঠিয়াই যেন বলিল--এপারে টিয়া 
ধরতে এসে তোমার বু-গঞ্জনার কারণ হ,য়ে রইলাম টিয়া। 
এ নিয়ে তোমাঁকে বহু কথাই হয়তো শুনতে হবে তবিষ্তে। 

টিয়া রূপসীর আবির্ভাবে যত না বিব্রত হইয়াছিল 
ততোধিক বিব্রত হইল সুন্দরের অন্ুতাঁপ-মিশ্রিত কণ্ঠের 
করুণ আর্জতায়। কোন রকমে নিজেকে সাম্লাইতে চেষ্টা 
পাইয়! বলিল-_গঞ্জনা যাঁর অবৃষ্টের লেখা তাঁর কাঁরণ হতে হয় 
ন! দুনিয়ার কাঁউকে । আর তুমি যদি সত্যিই আমার গঞ্জনার 
কাঁরণ হয়ে ওঠো তো- সে-গঞ্জনা আমি সইতে পারবো 
অনায়াসেই, তা”তে আমার থাকবে তবু সাত্বনা। সেযাই 
হোঁক্‌, সঙ্জন"বাড়ীর সীমানার মধ্যে আর তো! তোমার দীড়িয়ে 
থাঁকা উচিত হবে না, কাঁরণ বছ পুরুষের ঘুমস্ত শত্রুতা আবার 
আমাকে ছুয়ে জাগতেই বা কতক্ষণ! 

সুন্দর বলিল-_-ত! যদি জাগেই টিয়া তে! জাগুক্‌, এ 
ছাই-চাঁপা আগুনের চেয়ে সে ঢের ভাল। 

টিয়া মহ হাসিয়া বলিল, ভাল বুঝি! তবে জাগুক্‌, 
সঙ্জন-বংশের রক্তের পরিচয় দিতে আমিও তখন পিছপাঁও 
হবো না জেনো । 

সুন্দরও হাসিয়া বলিল, পিছপাঁও হবে কেন, আর হ'তেই 
বাআমি বলবো কেন; একেবারে গিয়ে দত্তবাড়ীর ঘাটেই 
কাড়া-নাকাড়া বাজিয়ে উঠো, সঙ্জনবাড়ীর লক্গমীকে সাদরে 
বনপলাশীর দত্তর! সেদিন ঘরে তুলে নেবে। ক্রমশঃ 


ডায়াবিটিস্‌ বা বম 


ডাক্তার শী প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় এমৃ-বি 


বহমুত্র রোগের আর একটি নাম মধুমেহ। এ্যালোপ্যাথিক শাস্ত্রে 
এই রোগটিকে ডায়াবিটিস্‌ মেলাইটাস্‌ বলে। এই প্রবন্ধে বহুযুত্র বা 
ডায়াবিটিস্‌ সম্বন্ধে কিছু বল্ব_কারণ এই অন্থ আমাদের দেশে 
যথেষ্ট থাকলেও এর বিষয় ফতথানি সাধারণের জানার প্রয়োজন, তার 
কিছুই সাধারণে জানে না। পাশ্চাত্যদেশে বিশেষজ্ঞ পগ্িতের 
ডায়াবিটিস্‌ সম্বন্ধে সাধারণের জন্য সহজ, সরল ও সুপাঠ্য বই লিখেছেন-_ 
য| পড়ে রোগীরা নিজেই নিজেদের নিত্যনৈমিত্তিক জীবন শীন্ত্রমত 
নিয়ন্ত্রিত করতে পারে। সেরকম বই আমাদের বাঙ্গাল! ভাষায় একখানিও 
লিখিত হয়নি। 

এইরকম বই লেখার বিশেষ প্রয়োজন আছে ; কারণ ন! লিখলে 
পড়বেই ব| কি করে সাধারণ লোক--বুঝবেই ঝা কি করে যে তাদের 
অন্গখট। কি--গুরুত্ব কত এবং কেমন করে তারা নুস্থভাবে জীবন- 
যাপন করতে পারে কতক-গুলি মাত্র নিয়ম পালন করে। বু লোক 
এই অনুথে প্রাণ হারাচ্ছে অকাঙ্জে এবং অকারণে--অথচ তাদের 
অনেকেই বেঁচে থাকতে পারতে! বহু বৎসর--পশ্ু হয়ে নয়--সংসারের 
এবং সমাজের প্রয়োজনীয় হয়ে । 

আমার ব্যবসায়-জীবনের অভিজ্ঞত। থেকে আমি এই সিদ্ধান্তে 
উপনীত হয়েছি-যে অজ্ঞতাই অধিক।ংশক্ষেত্রে এই সব অকালমৃত্যুর 
কারণ। অনৃষ্টবাদিতাও আমাদের দেশে অনেক অযথা বিপদ ঘটায়, 
কিন্তু এর মূলেও সেই অজ্ঞতা । এ ছাড়! নিয়মা নুবন্তিতা। (01501011776) 
আমাদের ধাতে সয় না-_বীধা-ধর! নিয়মের মধ্যে জীবন-যাপন করবার 
মত সংযম আমাদের আধকাংশ লোকের নেই। নিয়ম মান্তে হলে 
গ্রা হাফিয়ে ওঠে-মন বিদ্রোহী হয়-_নিয়ম-কানুন মেনে সে চল্তে 
চায় না। | 

এই নির়মানুবপ্তিতা-বিরোধী মনকে বিশেষভাবে পথ-রষ্ঠ করে 
পুরাতন রোগীর দল। বলে-_“ডাক্তারের কথ! ছেড়ে দাও। এইতে৷ 
আমি দশ বৎসর অনুখ সত্বেও বেঁচে আছি-তাদের কথ! ন| শুনে। 
থাও-দাও বেপরওয়! হয়ে-_মৃত্যু যেদিন হবার সেদিন হবেই- তোমার 
ডাক্তারে ত। ঠেকাতে পারবে না।” নুতন রোগীর কাণে তা হুধা-বৃষ্টি 
করে--নিয়মের বাধন মুহূর্তে কেটে সে বেরিয়ে গড়ে ভাগ্যের দোহাই 
দিয়ে। তারপর? দেও সেই ভাগ্য। ছুর্ভাগ! না হলে সে শুনে 
কেন ও উপদেশ, বিচার না করে? কিন্তু বিচার করবেই বা! সে কেমন 
ক'রে? বিচার করতে হলে তার যে জানা দরকার--অনুখটা কি-_-এতে 
প্রাণের তয় হতে গারে কি কি কারণে--সে কারণগুলি কি করলে 
ন| ঘটে বা ঘটুলে কেমন ক'রে প্রশমিত কর! যায়। মেজ্ঞান তার 
নেই-তাই নে অন্ধের সাহায্য নিয়ে সর্ধ্ঘনাশের পথের পথিক হয়'। 


এই প্রবন্ধে তাই ডায়াবিটিদের কথ| বল্যো--সাধারণের সুবিধার 
জন্তে যতখানি সম্ভব স্পষ্ট ও প্রাঞ্জলভাবে। 


ডায়াবিটিস্‌ রোগটি কি? ৃ 


প্রত্যেক রোগীই জানে বে এই রোগে প্রশ্রাবে চিনি বা গ.কৌজ 
(8&1০০5৪) থাকে । বারবার প্রভূত পরিমাণে প্রত্রাব হয়। তেষ্ট 
যথেষ্ট থাকে । যতই জল খাওয়া যাঁর ততই প্রস্রাব বাড়ে। রাত্রে 
একাধিকবার উঠতে হয়। 

নুস্থলোকের প্রন্সাবে চিনি থাকে না। দিনে 81৬ বারের বেণী 
প্রশাব সাধারণত হয় ন]। রাত্রে কদাচিৎ উঠতে হয়। তেষ্টাও এমন 
কিছু অন্বাভাবিক থাকে ন|। 

ডায়াবিটিসের (বুমুত্র রোগীর) প্রশ্বাবে এই চিনি বা প্কোজ 
কেন আমে? এবিষয় জান্তে হলে কার্বো-হাইড্রেট মেটাবলিজিম 
( ০2:)01)901816 17611901151 ) সন্থদ্ধে কিছু বলা দরকার। 

ভাত, রুটি, আলু চিনি প্রতৃতি খাস্তকে কার্বো-হাইড্রেট খান্ড বলা 
হয় এবং শরীরাভ্যন্তরে এই থান্তের স্বাভাবিক পরিণতি বা ব্যবহারফে 
মেটাবলিজিম্‌ বল! হয়। উদাহরণ স্বরূপ ধরুন--একট| শ্বলস্ত উনানে 
কয়লা দিলে কি হওয়া স্বাভাবিক? ধেয়া--আচ--ছাই। এটাই 
হচ্ছে কয়লার স্বাভাবিক পরিণতি উমানের শরীয়ের মধ্যে বা উনানের 
খাস্তড কয়লার মেটাবলিজিম--উনোন মহাশয়ের শরীরের মধ্যে। 
বুঝলেন? ডায়াবিটিদ্‌ অন্থথে এই কার্বো-হাইড্রেট মেটাবলিজিম-এর 
বা কার্বো-হাইড্রেট খান্ভের শরীর-অভ্যন্তরের স্বাভাবিক পরিণতির 
ব্যাঘাত ঘটে। 

ভাত, রুটি প্রভৃতি কার্বো-হাইড্রেট খান্ত আমর! যখন খাই তখন 
মুখ থেকেই তার পরিপাক বা 18651107-এর কাজ নুরু হয় এবং 
শেষ হয় সরলান্ত্রের (30811 11716511706 ) ভিতরে । এই পরিপাক 
একটি রাসায়নিক ক্রিয়া-_যার দ্বারা সমস্ত কার্বো-ছাইড্রেট খান মূকোজ 
বা আঙুরের চিনিতে পরিবর্তিত হয়ে যায়। মজার কথা নয়? খেল|ম 
ভাত-_গেলাম আঙ্রের চিনি ; তাজ্জব ব্যাপার | আঙুরের চিনি 
বলার মানে হচ্ছে যে--এই চিনির রাসায়নিক 0117015 বা কাঠাঙো 
আর ভাত বা রুটির চিনির কাঠামে! এক। প্রন্রাবে চিনি (50857) 
বল্তে বৈজ্ঞানিকের! এই কাঠামোর চিনিই (8180096) ভেবে ধাকেন। 
্কোজ বা! আঙুরের চিনি হদি খাওয়! যায় তাকে আর পরিপাক 
করবার দরকার হয় না,কারণ কারবো-হাইড্রট পরিপাকের শেষ বন্ধই বে 
্কোজ। তাহলে এটা নিশ্চয় বোঝ। গেল যে, কার্বো-ছাইড্রেট খা 
পেটের মধ্যে পরিগাক হয়ে গ্রুকোজে পরিণত চুয়। এই-িঈকোজে 


৬৫৫ 


৬৮৬ 





পরিণতি এটাকে হজম বা 01£656101) বল! হয়--এট| মেটাবলিজিম 
নয়। মেটাষলিজিম্‌-এর কথা এই বার বলব। 

উপরে যে প্লকোজের কথা বল্লুম--সেই গ্লুকোজ অস্ত্র থেকে 
(10165006) রক্তে শোবিত বা 85০৫0 হল এবং প্রথমে 
লিভার বা যকৃতের তিতর দিয়ে গিয়ে সাধারণ রক্ত-স্রোতে ছড়িয়ে 
পড়লে! । লিভারের ভিতর দিয়ে গ্কোজ গেল কেন? এ কি গ্লুকোজের 
মর্জি? না, তানয়। এই পথ ছাড়া অন্য পথ দিয়ে যাবার তার যো 
নেই--তাই। লিভার বড়ই সঞ্চমী--ভবিষ্তৎ ভেবে কাজ করে। যেই 
অনেকখানি প্লকোজ পেলে অমনি প্রাণপণে তাকে নিয়ে যতথানি পারে 
প্লাইকোজেন (119009567-৮ 50810) জাতীয় এক প্রকার বন্ত ) তৈরী 
করে নিজের ভাড়ারে তুলে রাখল্জে। বাকী গ্রকোজ--যা লিভার 
থেকে বেরিয়ে গেল--তা থেকে শরীরের মাংসপেশীরাও সাধামত 
প্লীইকোজেন তৈরী করে নিয়ে নিজেদের ভখড়ারে রেখে দিলে। 
মূকোজের পরিশেষ যা রইলো--তা সাধারণ রক্ত-শ্রোতে ভেসে বেড়াতে 
লাগলে! শরীরের আপাতত প্রয়োজন যোগান দিতে। ব্যাপারট! 
অনেকটা! এই রকম। ১,***২ টাকার একটি নোট (502701), ভাত 
বা কার্বো-হাইড্রেট ) ব্যাঙ্ক ( পরিপাক-যস্ত্র) থেকে ভাঙিয়ে টাকা 
(গ্লুকোজ) করে গিম্নীর (লিভার ) হাতে দেওয়া হল। গিশ্লী দেখলেন 
স্পঞত কাচ1 টাকার তো! দরকার নেই এখন। তাই তিনি তার 
বিবেচনা মত সে টাকার অনেকট! দশ-টাকার নোট, (£19 00057 ),-- 
যা সহজেই সর্বত্র ভাঙানো যায়-গথিয়ে বাক্সে চাবি দিয়ে তুলে 
রাখলেন। কিন্তু গৃহিণী কৃপণ নন--যে টাক! দিলেন সরকারকে 
(20850165 ) তা সংসারের প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশী । সরকার 
হিনেবী ভালে লোক। সে আবার ত থেকে দশ টাকার 
কতকগুলো নোট গাথালো--ক-একট1 টাক! মাত্র দৈনন্দিন প্রয়োজন 
মত খরচা করতে লাগলে! । এটাক! কটি যেমন ফুক্তে লাগলো-- 
তবিল থেকে দশ টাকার নোট তাঙিয়ে ভাঙিয়ে টাক করে নেওয়! 
চলতে লাগলো । তাহলে দেখ| যাচ্ছে, বড় নোট ভেঙে-_-টাক।- টাক! 
ভুড়ে ছোট নোট আবার ছোট নোট ভেঙে টাক1। এ টাকা কিন্ত 
ক্রমশই খরচ। হয়ে যাচ্ছে--তাই নোটের পর নোট ভাঙাতে হচ্ছে-_ 
নইলে দিন চলবে না। তেমনি কার্বো-হাইড্রেট ভেঙে গ্লকোজ-_- 
গকোজ জুড়ে গ্লাইকোজেন--গ্লাইকোজেন ভেঙে জবার গ্লকোজ। 
গুকোজ কিন্তু ফুরিয়ে আদে--তখন গ্লকোজ যোগান দাও ভাড়ারের 
প্লাইকোজেন থেকে। ওদিকে ভাড়ার খালি হয়ে আস্বার ভয়ে 
কার্যো-হাইড্রেট খান্ড থেকে প্লকোজ তৈরী করে ভীড়ারে পাঠাও-_ 
গিশ্নী গ্লাইকোজেন গেঁথে ভশড়ারে জমান--নইলে তার ভশড়ার শীগ্তই 
বাড়ন্ত হয়ে উঠবে। এই যে শোধিত বা 2১5০:১৫৫ গ্র.কোজের শরীরের 
মধ্যেব্যবহার ব৷ পরিণতি--একেই কার্বো-হাইড্রেট মেটাবলিজম্‌ বল! হয়। 

আগে যা বল! হয়েছে ত। থেকে এট! বেশ বোঝ! গেল যে, রততশ্বোতে 
সকল সময়ই খানিকটা গকোজ বা চিনি আছে। এই চিনিকেই গ্লাড. 
সুগার ( 1০০-5৪০7 ) বল! হয়। অনেক সময় গুনি, মোকে বলে, 


সডাশ্ত্ডবঞ্ 


[ ২৮শ বর্ব ২ খণ্ড ৫ম সংখ্যা 





যে তাদের 119০-52881: নেই । এট! অসম্ভব কথা--কারণ 110০৫- 
908৪: না থাকলে মানুষ এক মুহূর্তও বাচতে পারে ন|। তবে এই 
910990-58881-এর পরিমাণ সব সময়ে এক নয়। আহারের পরে তা 
বাড়ে কিন্ত অল্প কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তা আবার কমে আসে । সবচেয়ে 
কম ১1০০০-5৪৪ পাওয়া! যায় অনশনে থাকলে । অর্থাৎ এই 1০০৫- 
9082:-এর হার বা ৮218 নির্ভর করে--কতথানি প্লকোজ শরীর 
পাচ্ছে--কতখানি তার গ্লাইকোজেন হয়ে জম! খাকচে--আর কতথানিই 
বা তার ব্যবহার হচ্ছে-_তার উপর। 

সাধারণত নুস্থ অবস্থায়--310900-50591 ০০৮-০১%-এর কম 
হয় ন। ব| ০'১৮%-এর বেশী হয় না। 
বল্‌্তে আমর! কি বুঝি? শতকরা হার? গোলমাল লাগে বুঝতে-_ 
নয়? ধর! যাক্‌, ১1০০-5০৭7 যদি ০১%হয়-_ত| হলে কি বুঝবো? 
বুঝবো যে ১** সি"সি রক্তে ০১ গ্র্যাম চিনি আছে। ১** সি'সি মানে 
হচ্ছে ৩১ আউন্দ--কারণ ৩* সি'সিতে ১ গাউন্স হয় । ০১ গ্র্যাম মানে 
হচ্ছে ১৯৮৯৮ ১৫-৮১১ গ্রেন, কারণ -৫ গ্রেনে ১ গ্র্যাম হয়। তাহলে 
০'১%5৪৪: মানে হল--৩১ আউন্স রক্তে ১২ গ্রেন গ্লুকোজ ব| 
আউন্স-পিছু ৯ গ্রেন গ্লকোজেরও কম। একটা ধারণা হলে| তে|? 
কিন্তু বৈজ্ঞানিকেরা এইভাবে হিসেব না করে গ্র্যাম বা! মিলিগ্র্যাম 
(ভন গ্র্যাম ) ও নি'সিতেই হিসেব রাখেন। ০১%কে ০১ গ্র্যাম% 
বা ১** মিলিগ্রাম বলা যেতে পারে । যতক্ষণ পর্যাস্ত 101000- 
৪8297 ০১৮%-এর বেণী না হয়--ততক্ষণ গুত্রাবে চিনি আসে ন|। 
কিন্তু যদি কোন প্রকারে ০+১৮%-এর চেয়ে বেশী 1)1০900-50887 কর! 
যায়--তাহলে সুস্থ লোকেরও প্রস্রাবে চিনি এপে পড়ে। দেখ! গেছে 
যে একজন সুস্থ লোক যদি একসঙ্গে ১৫০-২** গ্র্যাম গ্লকোজ 
খায়--তার প্রশ্নাবে চিনি আসে না। এতে এই প্রমাণ হচ্ছে যে এতখানি 
গ্কোজ একসঙ্গে খেলেও শরীরের ভিতরে এত শীত ও এত পরিমাণে 
প্লাইকোজেন তৈরী করে ফেল! হয় যাতে করে 7)1০0-501881 ০১৮%- 
এর বেশী বাড়তে পারে না। এর বেশী যদি বাড়তো তাহলে উদ্বৃত্ত 
চিনি প্রস্তাবে উপছে পড়তো । এই ০'১৮% (বা ১৮* মিলিগ্র্যাম? ) 
কিডনি থে.স্হোন্ড (15101)69 11):653-1১010 ) বলা হয়। এই 
থে স্হোন্ডকে মুগ্প্স্থীর (151076)-র ) রক্ষণশীল লীমা--ব। বাধ বহার 
বল! যেতে পারে । যতক্ষণ এই রক্ষণ-শীল সীম। ব৷ বাধ 110900-50887 
না টপ.কাচ্ছে ততক্ষণ চিনি প্রন্নাবে উপছে পড়তে পারে না। এইখানে 
বল! ভালে! যে, কিডর্বন থেস্হোল্ড কারে। বা ০'১৬%-এ, কারে! বা 
০'১৮%-এ। দেই জন্যে ০১৭% (১৭* মিলিগ্র্যাম% )-ফকেই কিডনি 
থেস্্‌হোল্ড বলে কোন কোন চিকিৎসক ধরে থাকেন। এখন প্রশ্ন 
হচ্ছে কেন নুস্থ লোকের 01990-99057 রক্ষণশীল সীমার বেশী হয় না? 
বেশী হতে মানা করে কে--কে ঠেকায়? নেই কথাই বল্বো। 

ইন্হ্ুলিন 

আমাদের পেটের ভিতর একটি গ্রন্থি (81270) আছে--তা় না 

প্যান্ক্রিয়ান্‌ ( 97)0:588 )। এই প্যান্ক্রিয়াসের কাজ ছুরকমের | 


10990451521 10610617188 6 


টতর্শাখ--১৩৪৮ | 


একরকম কাদ-_খান্ত হজম করানোইজমী রগ তৈরী করে আস্তে 
মধ্যে নল দিয়ে ঢেলে দিয়ে। অন্ত কাজটি হচ্ছে কার্বো-হাইড্রেট 
মেটাধলিজম্‌ চালানো-_অর্থাৎ গ্লুকোজ থেকে গ্লাইকোজেন তৈরী 
করানে। ও গ্ল-কোজ-এর ব্যবহার মাংসপেশীর মধ্যে চালানো । এই 
দ্বিতীয় কাজটি চালাচ্ছে প্যানক্রিয়াসের আর একটি রস--তার নাম 
ইন্হলিন (1050110)। ইন্হলিন কোন নল দিয়ে আমে না 
একেবারে রক্তে মিশে যায়। ইন্হুলিন তৈরী হয় প্যামক্রিয়াসের শরীরের 
মধ্যের কতকগুলি বিশেষধরণের সেল-সংগ্রহ (০611 81০80) ) হতে- 
যাদের 191615 ০৫ [81186115205 ব। ল্যাংগারহ্যানের স্বীপপুঞ্জ বল! 
হয়। ল্যাংগারহ্যান একজন বৈষ্ঞানিকের নাম। ইনিই এই সেল- 
গ্রহগুলি প্রথম অবিষ্ধার করে দেখিয়েছিলেন। নুস্থ লোক যদি 
অনেকট! গ্লুকোজ ধায় তৎক্ষণাৎ এই সব স্বীপপুঞ্ হতে উপযুক্ত 
পরিমাণ ইন্হূলিন বেরিয়ে সেই গ্রকোজের সন্্যবহার করে। তাই 
সস্থ লোকের 91০০-51881 যুত্রগ্রন্থির রক্ষণশীল সীম! (০১৮% বা 
১৮* মিলিগ্র্যাম% ) ডিডিয়ে যেতে পারে না। 31০০9৫-5977 এই 
সীম! ছাড়াবার আগেই অধিকাংশ গ্লকোজকেই গ্লাইকোজেন তৈরী 
করে দেয় ইন্হুলিন। 


মানুষের শরীর একটা জটিল মেসিন 


মানুষের শরীরের সঙ্গে ষ্ীম্‌ এন্জিনের বেশ একটা তুলন! কর! 
যেতে পারে। চ্ীম্‌ এন্জিন্‌ চালু রাখতে হলে তাতে জল, কয়লা, আগুন 
তেল প্রভৃতি জিনিষ সরবরাহ করতে হয়--খারাপ হলে মেরামত করতে 
হয়। মানুষ এন্জিনেরও এসব দরকার--তধে প্রভেদ হচ্ছে লোহার 
এন্জিন্‌ বন্ধ করে মেরামত কর! চলে-_মানুষ এন্জিন্কে বন্ধ কর! 
চলে ন--চালু অবস্থাতেই তার মেরামতি চালাতে হয়।. অধিকাংশ 
মেরামত নে জাপনি করে নেয়- কিন্তু কখনে! কখনে। এন্জিনিয়ারের 
সাহায্য লাগে। 

লোহার এন্জিন্‌ আর মাংসের এন্জিন্‌--ছুটোকেই চালাতে হলে 
চালফশক্তির ( 61)01£)র ) দরকার। সেই চালকশক্তি বা 526185 
পাওয়া! যায় দাহা বন্ত (1061) থেকে । লোহার এন্জিনের দাহ্য বন্ত 
কয়লা এখং দাহিকাবন্ত আগুন। মানুষ এনজিনের দাহা বন্ত গ্লকোজ 
এবং দ্বাহিকাবন্ত ইন্হুলিন। হুতরাং দেখা গেল উভয় এন্জিনেরই 
চালু অবস্থায় তাদের ভিতর একটা দ্বাহ (00700050107 ) সর্বদাই 
চল্ছে। আর চল্ছে বলেই গায়ে হাত দিলে আমর! একট! উত্বাপ 
বোধ করতে পায়ি। মানুষ মরে গেলে সে উত্তাপ আর থাকে না--কল 
খেষে যাধার সঙ্গে সঙ্গেই দাহও থেমে যায়। 

কিন্তু মানুষ এনজিন লোহার এনজিনের তুলনায় অত্যন্ত জটিল। 
ম্কোজ মানুষ এন্জিনের করলা বটে কিন্তু গকোজ ছাড়াও ফ্যাট, 
(চবি) এবং প্রোটন (মাংস) উভয়ই দাহ্থাবস্তর দত অল্প-বিভ্তর 
ব্যবহার হয়। সব চেয়ে বেশী পোড়ে প্লকোজ, সবচেয়ে কম পোড়ে 
প্রোটিন এবং মাঝামাঝি পোড়ে ফ্যাট,। ফ্যাট, বা! চব্বিদাহ নির্ভয় 


সপ সপ শক পট আশ 





_ ভাল্গান্বিভিস্ন ন্‌ ন্যা! ন্ছমুত্র 


৬এ 


সস ০০ 











করে গ্রকোজ'এর দাহর উপর-_অর্থাৎ প্লকোজ যদি বেশ দাউ-দাউ 
করে পোড়ে--তাহলে অ।চ খুব ভালে! হয়--আর সেই আচে ফ্যাট, বা 
টরধিষ সম্পূর্ণভাবে পুড়ে যায়। কিন্তু যদি গুকোজ-এর আচ ভালো 
ন| হ্য়-_টিমে হয়-চধ্বি ভালে! করে পুড়তে পারে না-_-আধপোড়! 
কতকগুলি বিশ্রী জিনিষ (1১০০০ ১০165) তৈরী হয়ে যায়। এর 
কথ! পরে আবার বল্বে৷। তাছাড়া, শরীর ফ্যাট ও প্রোটিন থেকে 
প্রয়োজনমত গ্লংকোজ তৈরী করে নিতে পারে। 

তাহলে সুস্থ শরীরে কার্বো-হাইড্রেট, খান্ধের পরিণতি আমর! 
দেখলাম। কার্বো-হাইড্রেট পরিপাক হয়ে গ্কোজ তৈরী হয়। রক্তে 
সেই গ্লুকোজ শোষিত হলে লিভার ও মাংসপেশীতে গ্লকে।জ থেকে 
গ্লাইকোজেন তৈরী করে জমিয়ে রাখা হয়। প্রয়োজন মত গ্লাইকোজেন 
ভেঙে ভেঙে গ্রকোজ করে নেওয়া হয়। শরীরের দাহ চলে প্রধানত 
গ্কোজ পুড়িয়ে । গ্লুকোজ পোড়াতে হলে ইন্হুলিনের আগুন দরকার । 
ইন্হলিন শুধু গ্লফোজ পুড়িয্জে এনাজি যোগায় ন1- প্রয়োজনের 
অতিরিক্ত প্কোজ জুড়ে গ্লাইকোজেন তৈরী করে-_যা লিভার ও মাংস- 
পেশীতে ভবিস্তৎ প্রয়েজনের জন্ক জমা থাকে। প্লাইকোজেন কথাটির 
মানে হচ্ছে--গ্রকোজের জগ্মা।ত। ( £1)০০-*£18০956 ০01 চিন্নি £90 
সত 50176121001 বা জন্মদাতা) 

গ্লাইকোজেন তৈরী করতে ইন্হুলিন সক্ষম হলেও--গ্লাইকোজেন 
ভেঙে গ্লকোজ করবার ক্ষমত| ইন্হলিনের নেই। এই কাজ করতে 
এড্িনালিনের (301601177 ) প্রম্নোজম । মন বদি সহসা! ভাব-প্রবণ 
হয়ে পড়ে--সে ভাব যে রকমেরই হোকৃ--ভয়, আনন্দ, ছুঃখ, রাগ 
প্রভৃতি তৎক্ষণ।ৎ এড্ডিনালিন বেশী পরিমাণে শরীরের মধ্যে উৎপন্ন 
হয়। এই ভাবপ্রধণতার অব্যবহিত পরেই আছে কাজ--যেমন, রাগের 
পরেই চিৎকার বা মারামারি, আননৌর পরেই জলিঙ্গন বা! লক্ষন, ভয়ের 
পরেই পলায়ন ইত্যার্দি। অর্থাৎ সহনা দেহের মাংসপেশীর কাজ বেড়ে 
যায় তাবপ্রবণ হুবায় পরেই। নেই জন্য--স্থষ্টির এমন কৌশল যে, এই 
ভাবপ্রবণতা৷ হলেই বেশী পরিমাণ এড্রিনালিন রক্তে এসে পড়ে। কি 
দ্রক।র বেশী এড্রিনালিনের--কি জন্ক আসে? বেশী করে গ্লাইকোজেন 
ডেঙে গ্কোজ তৈরী করতে-_গ্ন.কোজের প্রয়োজন যে এখুনি বেড়ে 
যাবে, শরীরের কাজ বাড়বার সঙ্গে সঙ্গেই। আন্তে হাটতে যতখানি 
এনাঞ্জি বা চালকশক্তির প্রয়োজন-_ঘবে-দৌড় দিলে তার অপেক্ষা 
অনেক বেশী এনাঞ্জি বা চালকশক্তির দরকার । সেই বেশী এনাঞ্জি 
যোগান যায় কি করে? না--বেশী গুকোজ পুড়িয়ে। তাইবেশী 
এড্িনালিন এমে বেশী করে গ্লাইকোজেন ভেঙে গ্রকোজ তৈরী করে 
রক্তল্রোত দিয়ে মাংদ পেশীতে পাঠিয়ে দিলে। ইন্হ্লিন বেশী করে 
এলো, অনেক গ্ল,কোজ পোড়াতে হবে কি-ন। ভাবপ্রবণ ব্যক্তি হলগতো 
তখন মারামারি সুরু করে দিয়েছেন-_ ইা-ইরা ঘুসি চালাচ্ছেন-_জআর 
ভেতরে দেই খুসি চালাবার এনাঞজি বোগাচ্ছে এডিদালিন গ্লাইকোজেন 
ভেঙে প্লঃকোজ যোগান দিয়ে--আর ইন্জুলিন সে যোগান-দেওয়া 
*্কোজক্ষে দাউ দাউ ভ্বালিয়ে। এখানে এটাও প্রমাণ হচ্ছে যে 


৬৮৮ 





এড্িনালিন ইন্হলিনের বিরোধী । ইনসুলিন গ্লাইকোজেন গড়ে, 
এপ্রিদালিন গ্রাইকোজেন ভাঙে। ইন্হলিন গ্রঃকোজ পুড়িয়ে ব্লাড- 
হগার কমায়, এডিনালিন প্লাইকোজেন তেঙে 1০০-৪৪৪৪: বাড়ায়। 
এ ছাড়া এক দেখ! যাচ্ছে-_যে বেশী 1১1০০০-$891 হলে ইল্ছুলিন 
বেশী তৈরী হয়--ব! ল্যাংগারগ্তান খ্বীপপুঞ্র উত্তেজিত হয়ে ওঠে। 
এডিমালিন--এডি নাল গ্রন্থি বা লা এর রস। এই গ্রস্থি ছুটি। এক 
একটি মুত্র গ্রন্থি বা [কিডনির ঘাড়ে বসে আছে। 

এই এডি,নাল গ্রন্থি ছাড়! শরীরে আরে! ছুটি গ্রন্থি আছে-_যার রস 
ইন্হলিনের বিপক্ষে কাজ করে। একটি থাইরয়েড আর একটি 
পিটুইটারী। এর উত্তেজিত হলে 01000-55841 বেড়ে যায়। 


ডায়াবিটিস্‌ রোগে কার়ুবো-হাইড্রেট মেটাবলিজম্‌ 


*  ডায়াবিটিস রোগে এই কার্যে -হাইড্রেই মেটাবলিজ,ম্‌-এর ব্যাঘাত 
ঘটে। সেই ব্যাধাতের মৃখ্য কারণ উপযুক্ত পরিমাণ ইন্হলিনের অভাব 

--+অর্থাৎ ইন্সলিন প্রয়োজনের চেয়ে কম তৈরী হয়। আগেই বলেছি 
সে ল্যাংগারহানের দ্বীপপুঞ্ হতে ইন্হুলিনের জন্ম। যদি কোন কারণে 
এই স্বীপপুঞ্গুলি ক্লান্ত বা জখম হয় তাহলে ইন্হলিন তৈরী করবার 
ক্ষমতার হাস হয়ে পড়ে। 

যদি অতিরিক্ত কারবো-হাইড্রেট, অনেকদিন ধরে খাওয়া! হয় তাহলে 
কালক্রমে এই স্বীপপুঞ্জগুলি হাপিয়ে পড়তে পায়ে এবং হাপিয়ে পড়বার 
জন্তেই ইন্হ্ণলিন উপযুক্ত পরিমাপ তৈরী করতে পারে না। কিন্তু এই 
ইপানে! অবস্থাতেই তার! উপযুক্ত পরিমাণ ইন্হুজিন যোগান দিতে প্রাণপণ 
বৃখ! চেষ্ট। করে-্-কর্তব্যপরায়ণ কি-ন!। হাঁপাতে হাপাতে তার।যতই বেশী 
চেষ্টা করে ততই আরে! বেশী হাঁপিয়ে পড়তে থাকে । শেষে কতকগুলি 
দ্বীপ ক্লান্ত হয়ে নির্জীব হয়ে পড়ে--কতকগুলি হয়তো! সত্যই মরে যায়। 

অন্ত কারণেও এই স্বীপপুঞ্জ আহত হতে পারে-_ঘেমন প্যানক্রিয়াসের 
01701010102 0)712610) বা পুরাতন বা ধীর-গতি-শীল প্রদাহ । এই 
প্রদাহে ধীরে ধীরে দ্বীপপুগ্জগুলি আক্রান্ত হয়--এবং ধারে ধীরে মরতে 
থাকে। এখন বদ্দি কারবো-ছাইডে,ট্‌ খাণ্ত সমান পরিমাণই খেয়ে যাওয়া 
যায়--তাহলে এই আক্রান্ত স্বীপপুঞ্জ যথাসাধ্য ইন্হুলিন যোগাতে চেষ্ট| 
করে, ফলে আরে! জখম হয়ে পড়ে এবং আরে শীস্ত্ মরতে থাকে । 

ইন্হুলিন উৎপাদন যদি এই রকম ক্রমশই কমে যেতে থাকে তাহলে 
ইন্সলিনের ছুটি কাজেই ক্রমশ ঘাটতি পড়ে। অর্থাৎ স্বাভাবিক পরিমাণ 
গ্লাইকোজেন তৈরী হয় নাঁ-এবং স্বাভাবিক পরিমাপ গ্রকোজও পোড়ে 
না। ফলে কি দীড়ার?-রক্তে ন্বাভাবিকের চেয়ে বেশী গ্লুকোজ 
জমতে থাকে--910০90-50£21 10610610985 ব| ব্লাডন্থগারের শতকর। 
হার স্বাভাবিকের চেয়ে ক্রমশই বাড়তে থাকে এবং বাড়তে বাড়তে 
১1০০৫-৪৪৭/--কিডনি থেসহোল্ভ ব| রক্ষণশীল সীমা পার হয়ে 
যাক়্--ফলে প্রন্রাবে ্কোজ বা চিনি উপ.ছে পড়ে। বোঝ! গেল, কেন 
ডায়াবিটিস-এ গ্রশ্নাবে চিনি জাসে ? 

এখন এই চিনি বেরুতে অনেক জলের দরকার । ধরুন, একটি 
ছাক্নি আছে ধার জালির ফুটাগুলো ছোট ছোট। এই ছ'কনিতে 
গুড় চেলে দিলে তে! তা বেরুতে পারবে না-_-খানিকটা! জল দিয়ে গুড় 
পাতলা! কয়ে দিলে যেরুবে। তেমনি খুব ঘন চিনি গোল! কিডনি 
ছণকনি দিয়ে বেরুতে পারে না। তাই শরীরে যে জল আছে তাই টেনে 
নিয়ে চিনির-গোল পাতলা করে বের করে প্রন্্রাবে। এদিকে শরীরের 
জল বত বেরিয়ে যেতে থাকে-্ভতই শরীর সে জল ফিরে পেতে চায়-_ 
ফলে বাড়ে তেষ্টা। তেষ্টা পেলেই খাওয়া হয় জল--শরীরের বেরিয়ে 
যাওয়া জল সরবরাহ করতে । আবার প্রত্াৰে সে জল বেরিয়ে আসে 
চিত্রি-গোল। হয়ে-_-আর প্রল্রাবের পরিমাপও সে জন্যে বেড়ে যার়। 
তাহলে বোঝ! গেল-_কেন ডায়াবিটিসে এত তেষ্ট| পার এবং কেনই বা এত 
ঘন ঘন প্রভূত পরিমাণে প্রনাব হয়। 


ভাত্ান্বঞ্ 


[ ২৮শ বধ- ২য় খণ্ড হম সংখ্যা 





আগে বলেছি যে শরীরের চালকশক্তি বা এনাজি ঘোগাঃ 
ুকোজ ইন্হলিন-এর আগুনে পুড়ে । এও বলেছি যে চর্বি বা ফ্যাট 
পন ,কোজ-এর আচে গোড়ে। কমতে কম্তে এই আচ এমন কম-জোরী 
হয়ে যায়- যাতে চর্বিব সম্পূর্ণ পুড়তে পারে না--ফলে কতকগুলে! আধ- 
পোড়া বিশ্রী এবং বিষাক্ত জিনিষ তৈরী হয়ে পড়ে । এই বিধাক্ত জিনিষ 
রক্তে জমৃতে জম্তে শেষে এত বেশী জমে উঠতে পায়ে যে, তার জনক 
প্রাণহানি ঘটাও আশ্চর্য্য নয়। এই বিষাক্ত জিনিষগুলিকে কিটোন 
বডিস্‌ (86:০7৩ ০1০০ ) এবং তাদের বিষ-ক্রিয়াকে কিটোসিস্‌ 
(05(9515 ) বল! হয়। এই কিটোসিস্‌ই হচ্ছে ডায়াবিটিসের একটি 
তয়াবহ উপসর্গের কারণ। সেই উপসর্গের নাম ডায়াবিটিক কোমা 
(019061010 ০0108) বা! অচৈতন্য অবস্থা । 


্বাভাবিক প্রোটিন মেটাঁবলিজ ম 


প্রোটিন বলতে আমর! মাছ, মাংস ব! ছানা-জাতীয় খাপ্ত মনে করি। 
তষে প্রোটিন নিরামিষ থাণ্ত থেকেও পাওয়। যায়, যেমন--ডাল। 

কায়বো-হাইডেট খান্তের (ভাত, রুটি প্রভৃতি ) পরিপাক-ফল যেমন 
গুকোজ প্রোটিনের পরিপাকফল, তেমনি এযামাইনো-এ্যাসিডস্‌ 
(409170-80105) 1 এই এ্যামাইনো-এ্যামিডস্-এর প্রধান কাজ 
শরীরের ক্ষতি-পুরণ ও বর্ধম। প্রতিদিন আমাদের শরীরের প্রোটিন 
ক্ষয় হচ্ছে ( 015505 %2516)1 সেই ক্ষতি এই এযামাইনো-এ্যাসিড স্‌ 
পুরণ করে নূতন টিস্ছ তৈরী করে। যখন 'বাড়ে'র বয়স খাকে--তখন 
বেশী করে নূতন টিম তৈরী করে শরীরকে বাড়ায় এই এযামাইনো- 
এ্যাসিডস্‌। শরীরের চালকশক্তি ব| এনাজি যোগান প্রোটিনের 
প্রধান কাঞ্জ নয়। সে কাজ প্রধানত কার্বো-হাইডেট ও ফ্যাটের। 

কিন্ত যত এ্যামাহনো-এ্যাসিড.স্‌ প্রোটিন থেকে আমরা পাই- 
বিশেষত বেশী প্রোটিন খাদ্ত থেলে সবটাই তার এই গাবে (ক্ষতিপূরণ 
ও বর্ধন) ব্যবহার হয় না--অনেকট। উদ্বস্ত থেকে যার। সেই উদ্ধ-্ধ 
এযামাইনো-এ্যাসিডস্‌ থেকে নাইটে জেন (70100867)) অংশ ভেঙে 
নিয়ে লিভার ইউরিয়া (01০৭) তৈরী করে। নাইটে জেনহীন অংশ 
থেকে আধাআধি (৫*-৫* ) প্কোজ ও ফ্যাটি এ্যানিড (নি 801৫) 
তৈরী হয়। গ্লকোজ থেকে গ্লাইকোজেন আর ফ্যাটি এ্যাসিডস্‌ থেকে 
ফ্যাট (2) তৈরী হয়ে জম! থাকে । ইউরিয়। (0:58) প্রত্রাব দিয়ে 
শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। 

সাধারণত ডায়াবিটিসে প্রোটিন মেটাবলিজমের ব্যাধাত ঘটে না। 
তবে অত্যন্ত গুরুতর ডায়াবিটিসে শরীরের প্রোটিন অতিরিক্ত মাত্রার 
ক্ষয় হয় এবং এই প্রোটিন থেকে গ্লুকোজ বেরিয়ে ব্লাড.-হুগার ( ১1০০- 
50887) অত্যন্ত বাড়ায় । এক্ষেত্রে শরীরের দ্রুত ক্ষয় হয়ে থাকে। 


স্বাভাবিক ফ্যাঁট্‌ মেটাবলিক্গ ম্‌ 


ফ্যাট মেটাবলিজ.মের কথ! কার্বো-হাইড্রেট মেটাবলিজ.মের সঙ্গেই 
কিছু বলেছি । এখানে এই সম্বন্ধে আর একটু বল্বো। ফ্যাট (9) 
ছুটি জিনিষের সংযোগে তৈরী--একটি গ্লিলারিন (£150717৩ ) আর 
একটি ফ্যাটি খ্যাসিড (ঠিঠ9 9010) ফ্যাট (চর্ষিজাতীয় খান) 
খেলে--পরিপাকের সময় এই সংঘোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গ্রিসারিণ 
(£1%০6117) আর ফ্যাটি এসিড (দি ৪00) আলাদা হয়ে যায়। 
এই বিরহ অল্প সময়ের জঙ্তে, কারণ শোধিত ( 29501) হবার পর 
জাবধার তাদের মিলন ঘটে--আবার ফ্যাট তৈরী হয়। এই ফ্যাট 
শরীয়ের মধ্যে দান! স্থানে জমা! থাকে ভবিষ্ভতের প্রয়োজনের জন্যে । 
আমর! দেখতে পাচ্ছি যে ফ্যাটে প্লিসারিণ আছে। এই গ্লিসারিণ 
থেকে গ্লকেজ তৈরী হতে পায়ে। ফ্যাট থেকে ১*% গ্কোজ, আর 
৯০% ফ্যাটি এযানিড পাওয়া যায়৷ 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] ভাক্সান্বিটিস্‌ বা নবন্মুজ্র ৬৫৯, 


গ্নকোন্দের আগুনে যখন ফ্যাট সম্পূর্ণ পোড়ে--তার শেষ ফল কার্বন (০0%5000110 &০াথ, 01-805110 2010, 4061001076) রভ্তে জমে 
ডাই অক্সাইড, (009) আর জল (750)--গ্কোজ দ্াহের শেষ উঠলে প্রম্রাব দিয়ে কিটোন বডিস বেরুতে থাকে । 
ফলও তাই। কিন্তু ফ্যাট যদি আধ-পোড়া হয় তাহলে রক্তে কিটোন নীচে কার্বো-হাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাটর পরিপাক শোষণ ও 
বড়িস্‌ জমে ওঠে। কিটোন বডিস্‌-এর (19605 ৮০৫15) নাম মেটাবলিজ.ম্‌ এক সঙ্গে দেখান গেল। অভিন্ন লাইন স্বাভাবিক পরিণতি 
অক্সি-বিউটাইরিক এযাসিভ, ডাই-এসেটিক এযাসিড জার এ্যাসিটোন দেখাচ্ছে। ছিন্ন লাইন ডায়াবিটিসে কি.পরিবর্ততন হয় তাই বুঝিয়ে দিচ্ছে। 
তা প্রো হ্যা 
(ভাত রুটি প্রভৃতি ) ( মাংস মাছ প্রভৃতি ) (ঘি তেল প্রভৃতি) 
হজম ও শোষণ . ৃ 
(018650101) & 21950719000 ) 





গকোজ এযামাইনে! ফ্যাটি এযাসিড, ও 
গ্লিসারিন 
ক্ষতি পূরণ ও বর্ধন ( আংশিক ) 
জম 
ৃ - 
৪(01869 ) বাকী 

| 

+. $ + 

াইকোজেন ৬. +-০প্কোজ+-_ -১ফ্যাটি এাসিড-__৯ ফ্যাট 


টিন ₹ নি 
॥ ৰ 


ব্যবহার ও 


দহন 'কোজ ক (0762 ) কিটোন বডিস 


(লিভারে ) এটি 








(00115501017 2170 


00710100501010 ) 








ৃ ৃ 


নি ০9৪ গ্যাস ও জল প্রশ্থাবে ০09৪ গ্যাস ও জল 
1 নিশ্বাস প্রভৃতির সহিত নিঃস্ত * নিশ্বাস প্রভৃতির সহিত 
নিঃস্ত (রক্ত হইতে ) নিঃহত 





(জরমশঃ ) 


চলতি ইতিহাস 
প্রীতিনকড়ি চট্টোপাধ্যায় 


মধ্য প্রাচী 
লিবিয়ায় ইটালীর সর্ধ্বশেষ ঘটি বেনঘাজির পতনের পর ইটালীয় 
সোমালিল্যা্ডের রাজধানী মগাদ্িশু অধিকার বৃটিশবাহিনীর উল্লেখযোগ্য 
যিজয়। ইটালীগ বাহিনীর এই শোচনীয় পরাজয়-প্রসঙ্গে মুসোলিনী 
বলিয়াছেন যে, যুদ্ধারত সৈশ্দলে নূতন সৈগ্য প্রেরণের অক্ষমতাই 
পরাজয়ের প্রধান কারণ। ভূমধ্যদাগরে বৃটিশ নৌশক্তির প্রভুত্ব যে 
' দৃ়রাপে এখনও ব্ুপ্রতিষ্িত আছে, ইছাই তাহার প্রমাণ। ইটালীর 
সহিত আধ্রিকার জলপথের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলেই নৃতন 
ইটালী্গ ধাহিনী ও প্রয়োজনীয় সমরোপকরণ প্রেরণ করা সম্ভব 
হয় নাই। 
এদিকে বেনযাজির দক্ষিণে স্বাধীন ফরাসীবাহিনীর হস্তে ইটালীয় 
ঘণটি কু! আত্মদমর্পণ করিয়াছে । ইটালীয় সোমালিল্যাণ্ডের সরিকাটস্থ 
কেরিয়ার বুটিশসৈচ্যের হত্তগত। কিসমাউ বন্দর অধিকারের সময় 
চারখানি ইটালীয় জাহাজ আত্মনিমজ্জন করিয়াছে। এতদ্ব্তীত মোট 
২৮,৯** টনের ছয়খানি ইটালীয় জাহাজ বুটিশের হস্তগত হইয়াছে। 
বৃটিশ দোমালিল্যাণ্ডের রাজধানী বারবের| পুনরধিকাঁর বৃর্টিশবাহিনীর 
পরবর্তী উল্লেখযোগ্য মাফল্য। ইটালীর এক ইন্তাহারে জানান হইয়াছে 
যে, শত্রুপক্ষের নৌবাহিনীর প্রবল গোলাবর্ধণের মুখে ইটালীয় সৈশম্গণ 
সহজেই অভিভূত হুইয়৷ পড়িয়াছিল। কেরেনের জিজিগা বৃটিশের 
অধিকারে আদিয়াছে। আদ্গিস আবাবা অভিমুধে একদল বুটিশ সৈদ্য 
সাফল্যের সহিত অগ্রসর হইতেছে । যুদ্ধ বর্তমানে কেরেনের চতুপ্পার্শে 
সীমাবদ্ধ। 
গ্রীসের যুদ্ধেও ইটালীয়বাহিনী যথেষ্ট সাফল্য লাভ করিতে পারে 
নাই। নূতন ইটালীয় সৈম্যদলের আগমন বন্ধ করিবার উদ্দেষ্ঠে রাজকীয় 
বিমানবাহিনী ভেলোন! ও ডুরাজোয় প্রবলভাবে বোমাবর্ষণ করিতেছে। 
সম্প্রতি তেপেলিনি গ্রীক সৈগ্ঘদের হস্তগত হইয়াছে। কিন্তু তাহা 
হইলেও রণনীতির দিক হইতে গ্রীসের অবস্থা যে বর্তমানে বিশেষ 
আশঙ্কাজনক ইহা। নিঃসন্দেহ। তুরন্ব ও বুলগেরিয়ার মধ্যে অনাক্রমণ 
চুক্তির কথা গত সংখ্যাতেই উল্লিখিত হইয়াছে। ইহার অব্যবহিত পরেই 
জানান সৈস্ত বুলগেরিয়ায় প্রবেশ করে। বুলগেরিয়া অধিকারের কারণ 
সম্বন্ধে জাগ্লানীর পক্ষ হইতে বল! হইয়াছে যে, দক্ষিণ-পূর্ব ইয়োরোপে 
বৃটিশ যে প্রভাব ও শক্তি বিস্তার করিতে অগ্রসর, তাহ! হইতে মুক্ত 
রাখিবার জন্যই জার্মানী এই পন্থ! অবলম্বন করিয়াছে। 
কিন্তু বুলগেরিয়া অধিকীরের প্রকৃত কারণ শ্ষ্ট। গ্রীক-ুদ্ধের 
পরিসমাপ্তির জন্থই জা্নানবাহিনী বুলগেরিয়ায় প্রযেশ করিয়াছে। 
গ্রীসের যুদ্ধের অবমান ঘটাইবার জন্যই জাানীর এই '্লাযু-যুদ্ধের' 


আয়োজন। তষে উহা কার্যকরী না হইলে সে অন্ত্রধারণে বাধ্য হইযে। 
এই 'ম্ায়ু-ুদ্ধে' সাফাল্য লাতের উদ্দেশ্টেই যুগোক্লাতিয়াকেও জাানীর 
নিজ প্রভূত্বাধীনে আনা! প্রয়োজন। জার্ানসৈচ্যের বুলগেরিয়ায় প্রবেশের 
পর সোভিয়েট সরকার বুলগেরিয়া সরকারের এই নীতির প্রতিবাদ 
করিয়! জানাইয়াছেন যে, বুলগেরিয়ার এই নীতি অবলম্বনের ফলে বলকান্‌ 
অঞ্চলে শাস্তি প্রতিষ্ঠ| দূরে থাকুক, রণ-ক্ষেত্র অধিক বিস্তৃত হইয়া পড়িবার 
আশঙ্কাই বৃদ্ধি পাইয়াছে। অনেকেই ইহাকে জান্নানীর সহিত রূশিক্পার 
বিভেদের সুন্্পাত বলিয়া মনে করিতেছেন। কিন্তু জার্মানীর বিরদ্ধে 
এই প্রতিবাদের গুরুত্ব কতথানি তাহা বিশেষভাবে বিবেচ্য। এই 
প্রতিবাদের কোন স্থানে সোভিয়েট সরকার জার্মানীর নামোল্লেখ পর্যন্ত 
করেন নাই, অথচ বল্কান্‌ অঞ্চলের এই যুদ্ধবিস্তৃতিতে জাপাণীর দায়িত্ব 
যথেষ্ট । এতত্বাতীত, সোভিয়েট সরকার প্রতিবাদ জানাইলেন তখনই, 
যখন জানানবাহিনী বুলগেরিয়ায় নিশ্চিন্ত পদক্ষেপে প্রবেশ লাভ 
করিয়াছে। বুলগেরিয়া৷ অভিমুখে জান্নানবাহিনীর অভিযানের নিশ্চয়তার 
যে সংবাদ বিশ দিন পূর্বে বুটেনে পৌছিয়াছে, ঘরের পাশে সোভিয়েট 
সরকার যে সে সংবাদ বুলগেরিয়! অধিকারের পূর্বে পায় নাই, ইহা 
একরূপ অসন্তব বলিয়াই বোধ হয়। অধিকস্তু সোভিয়েট সরকারকে 
বল্কান্‌ অঞ্চলের কার্যযপন্ধতির বিন্দু বিসর্গ পর্য্স্ত না জানাইয়। যে 
জাানী তথায় স্বীয় নীতি ও পরিকল্পনা! প্রণয়ন ও কাধ্যকরী করিবে 
ইহাও বিশ্বাস কর কঠিন। যতদূর ধারণা করা যায়, বুলগেরিয়| 
সরকারের নীতির প্রতিবাদ করিয়া! রুশিয়! নিজেকে দায়িত্ব-মুক্ত করিয়া 
রাখিল মাত্র। 

তবে যুগোক্নাতিয়া ও তুরম্ককে লইয়া বল্কান্‌ অঞ্চলের জটিলতা বৃদ্ধি 
পাইয়াছে। লগুনের কূটনৈতিক মহল বলেন যে, তুরন্কের উপর সরাসরি 
আক্রমণ চালাইয়৷ ইরাক ও ইরানের মধ্য দিয়া মোহুল তৈল খনির 
দিকে পথ করিয়া লওয়াই হিটলারের উদ্দেশ্য । কিন্তু বুলগেরিয়ায় 
প্রবেশের পর হিটলার যে কূটনৈতিক আলাপ আলোচনা! ব্যতীত আর 
কিছুই করিতেছেন না, ইহা জানান সৈস্চের নিশ্চেষ্টত1। হইতে বেশ বুঝা 
যায়। বুলগেরিয়ায় প্রবেশের পরই হিটলার হথয়ং তুরস্কের রাষ্ট্রপতি 
ইনেউনুকে ব্যক্তিগত পত্র পাঠাইয়াছেন। সম্প্রতি এই পত্রের উত্তরও 
পাঠান হইয়াছে । কিন্তু কি উত্তর প্রদান কর! হুইয়াছে তাহা এখনও 
অজ্ঞাত। যুগোক্লাতিয়ার সহিতও জার্জানীর কি আলোচনা চলিতেছে, 
কোন্‌ পক্ষের দাবী কিরূপ, এবং আপত্তির মূল কোথায় সে সয খবরও 
জানিবার উপায় নাই। বিভিন্ন আনুমানিক তথ্য হইতে এইটুকু 
বুঝা যাইতেছে যে, যুগোল্লাডিয়! ত্রিশ চুক্তিতে অসম্মত। আক্কার! 
রেডিও হইতে যুগোক্লাতিয়াকে সতর্ক করিয়া দেওয়া হইয়াছে বে, 


৩৪ 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


চক্রপত্তিতে যোগদানের অর্থ হইতেছে বুগোষ্নাভিয়ার রাজনৈতিক মৃত্যু 
দার্দানেলিম ও বস্‌ফোর!স্‌ প্রণালীতে একটি সন্ধীর্ণ খাল বাদ দিয়! তুরম্ক 
মাইন স্থাপন করিয়াছে। অন্তত ছয় ঘণ্টা পূর্ববে না জানাইয়! এবং 
তুরস্কের অনুমতিব্যতিরেকে উক্ত প্রণালী দিয়া জাহাজের গমনাগমন 
নিষিদ্ধ বলিয়া ঘোষিত হইয়াছে । এদিকে যৃগোক্লাভিয়! জার্ানীর বিরুদ্ধে 
দৃঢ় মনোভাব অবলম্বন করিয়া সশন্ত্র বাধাপ্রদান করিলে তুরস্ক যে 
যুগোক্লাভিয়াকে সাহায্য করিবে এরূপ আভাষও প্রদত্ত হইয়াছে । 
যুগোষ্গাত নেতার! জায্নানীর দাবী সম্পর্কে নাকি “হয় গ্রহণ অথবা 
পরিত্যাগ কর' এইরূপ নীতি অবলম্বন করিয়াছেন। ডেইলি 
টেলিগ্রাফের আক্কারাস্থিত সংবাদদাত| জানাইতেছেন যে, সৌভিয়েট 
সরকারের নির্দেশেই যুগোঙ্লভিয়া জার্মানীর সহিত চুক্তিবদ্ধ হইতে 
ইতত্তত করিতেছে । এ সংবাদের সভাত| কতখানি সে সম্বন্ধে সঠিক 
নিশ্চয়তা ন! থাকিলে ও জার্জানী যে বল্কানে যথেচ্ছ বঙ্লপ্রয়োগে ইতন্তত 
করিতেছে ইহা অন্বীকার কর! চলেনা । যুগোষ্ল।ভিয়৷ আক্রান্ত হইলে 
তুরস্ক হয়তে যুদ্ধে লিগু হইতে পারে ; ফলে বল্কানে আবার এক নৃতন 
রণক্ষেত্রের সৃষ্টি হইবে। কিন্তু হিটলার গত মহাযুদ্ধে কাইজারের স্ায় 
তুল করিতে প্রস্তত নন। বৃটিশ শক্তির প্রাণকেন্দ্র বৃটেনে সমস্ত শক্তি 
প্রয়োগ না করিয়৷ আরও বিভিন্স্থানে নৃতন রণক্ষেত্রের সৃষ্টি করিতে 
তিনি একান্ত অনিচ্ছুক। এতদ্ব্যতীত বুটেন যদি এই নবস্থষ্ট রণক্ষেত্রে 
সৈল্ত প্রেরণ করে তাহ! হইলে যুদ্ধের অবস্থা বিশেষ আশঙ্কাজনক হইয়া 
উঠিবে। তবে বৃটেন অন্থস্থান হইতে সৈচ্ঠ সরাইয়। আনিয়। এখানে 
ব্যাপৃত রাখিবে কি না সে বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ আছে। 
কিন্তু বল্কানে ইহা! অপেক্ষা অধিক বিচার্ধ্য বিষয় রুশিয়া ও তাহার 
স্বার্থ এবং মনোভাব । তুরস্ের যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার অর্থ বল্কানে 
রুশিয়ার স্বার্থ ক্ষুণ হওয়া। কাজেই তুরস্ক যুদ্ধে জড়াইয়৷ পড়িলে 
তাহাকে রক্ষার জন্য সোঁভিযেটের আগ্রহ হওয়া যেমন ম্বাভাবিক, 
জার্মানীর পক্ষেও ছুশ্চিন্তাগ্রস্ত ও আশক্ষিত হওয়া তেমনই সম্ভব । মাকিন 
যুক্তরাষ্ট্র যেমন বৃটেনের প্রধান সহায়, রুশিয়াও সেইরূপ জার্ানীর ভরস। 
স্থল। সুতরাং তাহার স্বার্থ কু করিয়! সোভিয়েট সরকারের বিরাগভাজন 
হওয়! জার্নানীর আদৌ অভিপ্রেত নয়। যুগোশ্লাভ সরকার যদি 
স্বেচ্ছায় ব্রিশক্তি চুক্তিতে ম্বাক্ষর করিয়া জার্মনবাহিনীকে ভার্ডার 
উপত্যকাপথে গ্রীদ অভিমুখে অগ্রসর হইতে বাধা প্রদান না করেন. 
তাহা হইলেই সকল দিক রক্ষা করিয়া জার্নানীর উদ্দেস্ঠ সিদ্ধ হয়। 
সেজন্যই গ্রী আক্রমণ আসন্ন হইলেও জার্নানী কূটনৈতিক চাল 
এখনও বন্ধ করে নাই এবং সফলকাম হইলে জার্মানী লাঠি ন1 
ভাঙ্গিয়! সাপ মারিতে সক্ষম হইবে । তবে তুরম্ক সত্বন্ধে জার্নানী বিশেষ 
অবহিত হইলেও যুগো্লাভিয়! সম্বন্ধে হিটলার ততট! গ্রাহা করেন না। 
কূটনৈতিক চাল বার্থ হইলে বুগোক্লাভিয়ার উপর শক্তিপ্রয়োগ অসন্তব 
নাও হইতে পারে, এবং যুগোক্লাভিয়ার স্তায় ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের অনমনীয় দৃঢ়তা 
ও বাধা প্রদ্দানের অতিলাধের মূল্য কতটুকু, গত এক বৎসরের ইতিহাসে 
তাহার যথেষ্ট প্রমাণ পাও! গিয়াছে । 


স্তম্ভ ভ্রাীভ্ক্হাস 


৬৬০০ 


জার্মানীর সামুদ্রিক তৎপরত! ও বৃটেনের উপর বিমান আক্রমণ বিশেষ 
বৃদ্ধি পাইয়াছে। হিটলারের সহকারী রুডলক্‌ হেস্‌ ফেব্রুয়ারী মাসের 
দ্বিতীয় সপ্ত/ছে বন্ৃত!-প্রসঙ্গে বলিয়াছিলেন যে, সাবমেরিন ঘুস্ধ বলিতে 
যাহ! বোঝায় তাহ! বসন্ত কালেই আরম্ভ হইবে। এ কথ! 'ভারতবর্ষ-এর' 
গত সংখ্যাতেই উল্লিখিত হইয়াছে | কর্নেল নফ ও মিঃ উইলকির কথাও 
সেইসঙ্গে গত সংখ্যায় বিবৃত হইয়াছে বলিয়া বাহুল্যবোধে এখানে 
পুনরুল্লেখ করা হইল না। গত ২৫এ ফেব্রুয়ারী মিউনিকে হিটলার এক 
বক্তৃতায় বলিয়াছেন, ম।চ্চি ও এপ্রিলে আমর! ইউ-বোট লইয়া এরূপ 
সামুক্রিক যুদ্ধ আরপ্ত করিব, যাহা আমাদের শক্রর কল্পানাতীত। বন্তত 
মার্চের প্রথমেই এই কথার সত্যতা প্রমাণিত হইয়াছে । ২রা মার্চ যে 
সপ্তাহ শেষ হইয়াছে, সেই সপ্তাহে শত্রর আক্রমণে জাহাজ ডুবির পরিমাণ 
অপ্রত্যাশিতভাবে বৃদ্ধি পাইয়াছে। উক্ত সপ্তাহে মোট ১ লক্ষ ৪৮ 
হাজার ৩৮ টনের ২৯ খানি জাহাজ সলিল সমাধি লাভ করিয়াছে। ইহার 
মধ্যে ২*খানি বৃটিশ জাহাজ, ৮থানি মিত্রপক্ষের ও একথানি নিরপেক্ষ 
রাষ্ট্রের। যুদ্ধ আরম্ভ হওয়ার পর হইতে এই তৃতীয়বার এত অধিক 
জাহাজ ডুবি হইল। ইহার পরবন্তী সপ্তাহে মোট ৯৮ হাজার ৮ শত ৩২ 
টনের ২৫খানি জাহাজ জলমগ্ন হইয়াছে। ইহার মধ্যে ২*খানি জাহাজ 
বুটিশের, অপর ৫ খানি মিত্রশক্তির ৷ গত ১৮ই মাচ্চ ইঙ্গ-মার্কিন সম্প্রীতি- 
মূলক এক ভোজসভায় মিঃ চার্চিল বন্তৃতা-প্রসঙ্গে এই অত্যধিক পরিমাণে 
জাহাজ ডুবি ও বৃটিশ জাহাজের অরক্ষিত অবস্থার উল্লেখ করিয়াছেন। 

বৃটেনের সহিত অপর সকল দেশের সামুদ্রিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করিবার 
জন্য জাঞানীর এই বিরাট আয়োজন ও উদ্ভমকে প্রবল ভাবে বাধ! দেওয়া 
বৃটেনের পক্ষে আগু প্রয়োজন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্তান্য বৃটিশ 
উপনিবেশ হইতে যে সকল সমরোপকরণ ও বিবিধ প্রয়োজনীয় মাল 
সকল জাহাজে গ্রেরিত হইতেছে, সেই সকল জাহাজের নিরাপদে বৃটেনে 
পৌছানর উপর বুটেনের জয়লাভ একরূপ নিষ্ভর করিতেছে বলিলেই 
চলে । আমর! গত ছুইমাস হইতেই জাানীর এই অভিপ্রায়ের কথ! বলিয়া 
আসিতেছি। শুধু সসরোপকরণ নহে, বৃটেনের প্রতি প্রযুক্ত জা্গানীর এই 
অর্থনৈতিক অবরোধ সফল হইলে বুটেনে খাছ সমস্যাও জটিল হইয়! দেখা 
দিবে। কিছুদিন পূর্বের কৃষি মন্ত্রী মিঃ হ।ডসন্‌ এক বন্তৃতায় খাস্-সম্তার 
কথ! উল্লেখ করিয়া যথাশক্তি পরিশ্রমের প্রয়োজনীয়তা! জানাইয়াছেন। 

বুটেনের উপর বিমান আক্রমণের*তীব্রতাও বিশেষ বৃদ্ধি পাইয়াছে। 
ক্লাইডস্‌, পোর্টস্মাউথ, প্রভৃতি অঞ্চলে এগ্রিপ্রজ্বালক বোমায় মলোটভ 
ব্রেড, বান্ছেট প্রভৃতি প্রচণ্ভাবে বধিত হইতেছে । হতাহতের সংখ্যাও 
যথেষ্ট বাড়িয়া গিয়াছে । রাজকীয় বিমান বাহিনীর তৎপরতা ও কার্ধা- 
দক্ষত| যথেষ্ট বৃদ্ধি পাইয়াছে। গেন্সেনকির্চেন ও ডসেল ডর্চের শিল্প- 
প্রধান এলাক৷ ও সামরিক লক্ষ্যস্থলের উপর এবং পশ্চিম জার্মানীর শিল্প- 
প্রধান অঞ্চলে বুটিশ বোমাবর্ধী বিমানসমূহ আক্রমণ চালাইয়! উত্ত অঞ্চল- 
সমুহের যথেষ্ট ক্ষতি করিয়াছে। উপকুলরক্ষী বিমানসমূহ নরওয়ে 
হইতে ব্রেষ্ট পর্য্যন্ত শক্র আবিষ্কৃত উপকূল এলাকার বোম! বর্ষণ করায় 
বিভিন্ন স্থানের বিমান ঘটি, ডক ও শত্রু জাহাজসমূহ ক্ষতিগ্রস্ত । 


৬৬২, 
এতন্বাতীত কয়েকখান! ইটালীয় ও জীর্ান জাহাজ আক্রমপ্রের ফলে 
ডুবিয়াছে। ৫১,১** টনের জার্মান জাহাজ 'ভ্রিমেন' অমিদগ্ধা। ভারত 
মহালাগরেও একখানি সশস্ত্র ইটালীর জাহাজকে ডুবাইয়৷ দেওয়! 
হইয়াছে । অপরপক্ষে বুটেনের যুদ্ধ জাহাজের সংখ্যাও জ্রুতগতিতে 
বাড়ির চলিয়াছে। 

আরর্মণ্ডে সম্বন্ধে গত সংখ্যায় আমর! ষে আশঙ্ক। প্রকাশ করিয়াছিলাম 
বর্তমানে তাহার সতত] প্রমাণিত হইয়াছে। সম্প্রতি মিঃ ডি, ভ্যালেরা 
এক বক্তৃতায় বলিয়াছেন যে, বর্তমান যুদ্ধে তাহারা! নিরপেক্ষ থাকিলেও 
রণনীতির দিক হইতে আযর্জও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, তজ্জন্ত সর্বদ! প্রস্তত 
থাক! প্রয়োজন । 

 বুটেনকে অন্ত্রশস্ত্র ইজার! দেওয়! বা ধার দেওয়া! “সংক্রান্ত বিলটি যে 
প্রতিনিধি পরিষদে গৃহীত হইয়। সেনেটে উত্থাপিত হইয়াছিল, তাহ! 
গত সংখ্যাতেই উল্লিখিত হইয়াছে । কয়েকটি সংশোধন প্রস্তাব সহ তাহ। 
সেনেটে ৬*-৩১ ভোটে গৃহীত হইয়ছে। সামান্য সংশোধন থাকায় 
বিলটি পুনরায় প্রতিনিধি পরিষদে প্রেরিত হয়। ৩১৭-৭১ ভোটে বিলটি 
পাশ হইলে প্রেসিডেপ্ট রুজভেপ্টের স্বাক্ষরিত হুইয়! উহা! আইনে পরিণত 
হইয়াছে। উত্ত বিলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে এরূপ ক্ষমতা প্রদান কর! 
হইয়াছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের কল্যাণার্থে তিনি যে-কোন রাষ্ট্রকে মমরোপকরণ 
বিক্রয়, হস্তান্তর, খণ অথব! ইজার! প্রদান করিতে পারিবেন। এই 
ক্ষমত]| প্রয়োগের কাল ১৯৪৩ খুটান্ধের জুলাই মাস পর্যান্ত নির্ধারিত 
হইয়াছে। দেনেটে উহা! এই মন্দ্রে সংশোধিত হইয়ছে যে, বর্তমানে 
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে সময়োপকরণ আছে, উহ! হইতে ৩২ কোটি ৫১ লক্ষ 
পাউণ্ডের অধিক যুল্োর উপকরণ হস্তান্তর করা চলিবে না। এই বিলের 
বিধান কার্ধাকরী হইলে মাত্র সামরিক দিক হইতে নহে, কুটনীতির 
ক্ষেত্রেও কৃটেন যে কতদূর লান্ডবান হইবে সে বিষয়ে গত ফাল্তুনের 
'ভারতবর্ষ-এ' বিস্তারিত আলোচনা হইয়াছে। 

বিলটি হবাক্ষরিত হইবার অব্যবহিত পরেই প্রেসিডেন্ট রুজভেন্ট বৃটেন 
ও গ্রীসে রণসন্ভারের প্রথম কিন্তি প্রেরণ অনুমোদন করিয়াছেন। 
রুজভেপ্টের অনুরোধে প্রতিনিধি পরিষদের সাব কমিটিতে বৃটেনের জন্ত 
সাত শত কোটি ডলার মঞ্জুর হইয়াছে। চীনকেও সাহায্য প্রেরণ কর! 
হইয়াছেখ। ৪*খানি বিমানপোত চীনে পৌছিয়াছে। গত ১৫ই মার্চ 
প্রেসিডেন্ট রূজভেপ্ট তাহার বত্ৃতায় বলিয়াছেন যে, বুটেন, গ্রীস, চীন 
জামেরিক! হইতে জাহাজ, খাস্ভ,সমরোপকরণ প্রভৃতি প্রয়োজনমত চাহিবা- 
মাত্রই পাইবে । প্রেসিডেন্ট স্পষ্টই বলিয়াছেন £ আমাদের দেশ গণতন্ত্রের 
অস্ত্রাগার। বর্তমানে মাফিণ যুক্তরাষ্ট্রকে আর 'নিরপেক্ষ দেশ' বল! 
চলে না। বস্তত, মাকিন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান নীতি ও নাৎসী ফ্যাসিস্ত 
শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণায় পার্থক্য খুব সামান্যই । এরাপ অবস্থায় যে- 
কোন সময়ে যে-কোন অছিলায় বুদ্ধে নামিয়! পড়া আমেরিকার পক্ষে 
আদৌ বিচিত্র নহে। 

গত এক মাসে স্ুদুর-প্রাচীর ঘটনাবলীরও যথেষ্ট পরিবর্তন হুইয়াছে। 
জাপানের মধান্থতার় থাইল্যাণ্ড ও ইন্দোচটীনের মধ্য শান্তি স্থাপিত 
হইয়াছে। থাইল্যাণ্ড এই সর্তের ফলে যে ভূভাগ লাভ কারয়াছে, 
তথাকার সৈম্তদল ভাঙ্গিয়! দেওয়। হইয়াছে এবং সেখানকার অধিবাসীরা 
থাইবাদীদের গ্যায় ব্যবহার ও খাইবাসাদের প্রাপ্য সকল অধিকার পাইবে 
বলিয়! স্থির হইয়াছে। এই মিটমাটের ফলে বৃহতর এশিয়ায় যে শাস্তি 
স্থাপিত হইবে এবং জাপান ও থাইল্যাণ্ড এবং জাপান গু ইন্দোচীনের 
সম্পর্ক যে ঘনিষ্ঠতর ও অধিকতর উন্নত হইবে এ বিষয়ে তিনটি দেশই 
নাফি একমত। 








ভাবত 





[ ২৮শ বর্ষ-_-২য় খণ্ডঁ--€৫ম সংখ্যা 





চীন'জাপান বুদ্ধের গতিও উল্লেখযোগ্য। জাপানে সরকারীভাবে 
স্বীকৃত হইয়াছে যে, জাপসৈম্ত কোর়াংশী প্রদেশের অগ্রবর্তী ঘাটিসমূহ 
হইতে সরিয়। আসিয়াছে । ইচাংএর পশ্চিমাঞ্চলে ইয়াংসী নদীর দক্ষিণ 
উপকূল-পথে সেচুয়েনের দিকে অগ্রগামী বিশ হাজার জাপসৈ্য চীন! 
বাহিনীর প্রবল আক্রমণে গশ্চাদপসরণ করিতে বাধ্য হইয়াছে। কোরাংচুর 
অন্তর্গত কোর়াংহাই শহর তাহাদের হন্তগত। আমেরিকাও বিমান 
পাঠাইয়! চীনকে সাহায্য করিতেছে এবং ভবিষ্যতেও সাহাষ্য কর! হইবে 
বলির৷ রুজভেপ্ট বক্তৃতায় উল্লেখ করিয়াছেন। এদিকে ম্যাশনাল্‌ পিপ ল্স্‌ 
কাউন্সিলে মার্শাল চিয়াং-কাই-শেক চীন! কমুনিঃ্দের বিরুছ্দে গুরু 
অভিযোগ আনয়ন করিয়াছেন। এতদুভয়ের মধ্যে কোন ষোগ থাক। কি 
অসম্ভব? গণতন্ত্রের জন্য এক্যবন্ধ শ্বেতজাতি যেদিন উপ-ন্ধি করিয়াছেন 
যে, জাপানকে সুদুর প্রাচ্যে ব্যাপৃত রাখিতে হইলে চীনের শক্তিবৃদ্ধির 
প্রয়োজন সেইদিন হইতেই জাপানের সঞ্চগ্রাসী ক্ষুধা হইতে চীনকে রক্ষা 
করিবার জন্তু সাহায্য আসিতে আরম্ভ হইয়াছে । শ্বেত গণতন্ত্রের সুবিধার 
জন্ত চীনকে যেমন জাপানের কুক্ষীগত হইতে না! দেওয়! প্রয়োজন, তেমনই 
চীনে রুশিয়ার প্রভাব ও প্রতিপত্তি হুগ্রতিষ্ঠিত হউক, ইহাও অনতিপ্রেত। 
কাজেই চিয়াং-কাই-শেকের পুনরায় এই কম্যুনিষ্টবিরাগের যুলে যে 
সংশ্লিষ্ট জাতির কোন প্রভাব কাধ্য করিতেছে না, এ কথা নিঃসনোহে বল। 
চলে কি? 

এদিকে রাইখ গভর্ণমেন্টের আমন্ত্রণে জাপানের পররাষ্ট্রসচিব মিঃ 
মাৎনুক1 ধাই-ইন্দোচীন বিরোধ অবসানের পরেই মঞ্চো, বালিন ও রোমে 
ভ্রমণোর্দেশ্তে যাত্রা! করিয়াছেন। মাঞুকো। সীমান্ত ও রেলপথ এবং 
সাথালিন অঞ্চলে মৎস্সংগ্রহ লইয়া! জাপ-সোভিয়েট বিরোধের অবসান 
হওয়ায় জাপান ও সোতিয়েটের মধ্যে অনাত্রমণ চুক্ত হওয়া অসম্ভব নয়। 
চীনের যুদ্ধ হইতে জাপান যদি সরিয়। আমিতে ন! পারে, তাহ! হইলেও 
উক্ত অনাক্রমণ চুক্তি সম্পাদিত হইলে জাপান প্রশান্ত মহাসাগরে 
মনোনিবেশ করিতে পারে । হাইনান্‌, ক্যান্টম্‌, ফরাসী-ইন্দোচীন প্রভৃতি 
স্থানে জাপান সৈল্গ সমাবেশ করিয়াছে । এতদঞ্চলে প্রভাব বিস্তার 
করিতে হইলে সিঙ্গাপুরে যে আঘাত করা প্রয়োজন একথা জাপান জানে। 
খাইল্যা্ডের ভূষ্পূর্বব রাজ! প্রজাধিপক এক বিবৃতিতে বলিয়াছেন যে, 
জাপানীর! স্থলপথে সিঙ্গাপুরের দিকে অগ্রসর হইতে চাছিলে ইন্দোচীন 
এবং খাইল্যাণ্ড তাহাদের দখল করা গ্রয়োজন। থাইল্যাণ্ড জাপানের 
প্রভাবাধীন অঞ্চল । সামরিক দিক হইতে ইন্দোচীনেরও বিশেষ গুরুত্ব 
আছে। ব্রন্গদেশের লোভনীয় চাউল এবং তৈল অধিকার করিতে হইলে 
ইন্দোচীনের মধ্য দিয়া স্থলপথে ব্রদ্ধদেশে পৌছান যাইতে পারে। চুংকিং 
সরকার সমরোপকরণ নির্মাণের কারখ।না নাকি ব্রহ্মদেশে স্থানাস্তরিত 
করিয়াছেন বলিয়৷ জাপান অভিযোগ করিয়াছে । চুংকিং সরকার অবস্ঠ 
ইহার প্রতিবাদ করিয়াছেন। কিন্তু ইহার মূলে জাপানের কোন 
দুরভিসন্ধি কাজ করিতেছে কি না বল! হ্রহ। তবে ইয়োরোপের বৃদ্ধ 
যে জাপানের স্থার্থসিদ্ধির পক্ষে "ন্থবর্ণ সুযোগ” এ কথা জাপান গোপন 
রাখে নাই। জাপান যদি এই “হুবর্ণ হযোগে” কিছু করিয়া লহতে চায় 
তাহ! হইলে তাহার সামুদ্রিক তৎপরত| বৃদ্ধি পাওয়া! এবং দিঙ্গাপুরের 
বিরুদ্ধে অভিযান বিশেষ বিশ্মকর হইবে ন|। কারণ সিঙ্গাপুরের এই বৃটিশ 
ঘাটিকে অক্ষত রাখিয়। উত্ত অঞ্চলে জাপানের পক্ষে অধিকার ও প্রজা 
বিস্তার অসম্ভব। সুতরাং হিটজ্ারকে সাহায্য করিবার ইচ্ছা! অথব। ম্বীয়- 
ক্ষমত| বৃদ্ধির অভিলাষ যাহাই থাকুক ন! কেন, সেই উদ্দেশ্ঠাকে সফল 
করিতে হইলে জাপানের পক্ষে সন্তর্ধ এড়াইয়। চলা আদৌ ফলগ্রসথ 
হইবে ন|। 








হ্রত্ষভ্ভাহ্ম। প্রঙ্গাক্ে্র ভভিভ্ান্ম-_ 


ছুই বৎসর পূর্বে বিভিন্ন গ্রদেশবাঁসী বাঙ্গালী সমাজে 
বাঙ্গালা ভাষার প্রতি অনুরাগ বৃদ্ধি এবং ভারতের অন্ঠান্ 
প্রদেশে জনসাধারণকে বাঙ্গালা ভাঁষার এ্ব্যের গ্রতি আকুষ্ট 
করার উদ্দেশ্টে বঙ্গভাঁষা প্রচার সমিতির প্রতিষ্ঠা হইয়াছিল। 
সম্প্রতি এই সমিতির বাধিক উৎসব শ্রীষুক্ত হীরেনত্রনাথ দত্ত 
মহাশয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হইয়াছে । এই উদ্দেশ্য 
াধ্যকরী করিতে হইলে প্রত্যেক বাঙ্গালীর সর্ধপ্রকারের 
সহযোগিতা করা উচিত। এই কার্যের জন্য যেমন চুর 
অর্থ আবশ্যক, সেই সঙ্গে প্রচুর নিষ্ঠাবান কর্মীরও এুয়োজন। 
আমাদের বিশ্বাস, বর্তমান পরিচালক সমিতি আন্তরিকতার 
সহিত কাধ্য করিলে সমিতির উদেশ্টা সফল হওয়ার পক্ষে 
কোন অন্তরাঁয়ই থাকিবে না। এই সভা যেছুইটি প্রস্তাব 
গ্রহণ করিয়াছেন তাহা হইতেই এই সমিতির উপযোগিতা কত 
বেণী তাহা উপলব্ধি কর! সম্ভব হইবে-_ 

(ক) বঙ্গের বাহিরে বেতার কেন্দ্রসমুহের অনুষ্ঠান লিপিতে বঙ্গ- 
ভাষায়ও অনুষ্ঠান তালিক! প্রবর্তনের জন্য ভারত সরকারের বেতার 
বিভাগের কার্য্যাধ্যক্ষ মহাশয়কে এই সমিতি অনুরোধ করিতেছে। 

(খ) ভারত সরকারের সেপ্টণাল বোর্ড অফ এডুকেশনের 
পরামর্শ কমিটি কর্তৃক নিঘুক্ত বৈজ্ঞানিক পরিভাষা কমিটির প্রতি 
নিখিল ভারত বঙ্গভাষ! ও সাহিত্য প্রচার সমিতির দৃষ্টি আকৃষ্ট হইয়াছে। 
কিন্তু এই কমিটিতে কোন বাঙ্গালী সাত্তের স্থান ন| দেওয়ায় এই সমিতি 
ক্ষোভ প্রকাশ করিতেছে । বৈজ্ঞানিক পরিভাষা সম্কলনে বহু পূর্ব 
হইতেই বাঙ্গালী হুধীগণ কার্য করিতেছেন । বঙ্গীয় সাহিতা পরিষৎ ও 
কলিকাতা! বিশ্ববিস্তালয় এই কার্ধ্যে যথেষ্ট জগ্রসরও হইয়াছেন। সেই 
নিমিত্ত এই সমিতি ভারত সরকারের নিকট উপরোক্ত বোর্ডে বাঙ্গালী 
সদন্ত গ্রহণের দাবী করিতেছেন। 


স্ভানল শ্লেক্কেস্প্লেন্র ্মোহমপা।- 


পাঁঞাবে সাম্প্রদায়িক এঁক্য প্রতিষ্ঠায় সরকার অসমর্থ 
হওয়ায় সরকারের নিন্দা করিয়া উত্থাপিত একটি ছাটাই 


পো 





প্রস্তাব সম্পর্কে বিতর্কের উত্তরদান প্রসঙ্গে সম্প্রতি পাঞ্জাব 
ব্যবস্থা! পরিষদে প্রধানমন্ত্রী শ্তর সেকেন্দর হায়াৎ খান 
ভারতের ভবিষৎ শাসনতন্ত্র সম্বন্ধে তাহার পরিকল্পনা ব্যক্ত 
করেন। এই প্রসঙ্গে তিনি একটি খাটি কথা উচ্চারণ 
করিয়াছেন; কথাটি খাটি হইলেও তাহার শ্বধন্মীবলদ্বীরা 
তাহা মানিয়! চলিবেন কি না জানি না। না মানিলেও 
কথাটা সত্য এবং ভারতের মুক্তির পক্ষে, শাস্তির পক্ষে, 
অগ্রগতির পক্ষে তাহা অপরিহার্ধ্য । তিনি বলেন, 

“পাঞ্জাবে পরিপূর্ণ মুঘলিম-রাজ প্রতিষ্ঠাই যদি পাকিস্থানের অর্থ হয় 
তাহা হইলে এরূপ পাকিস্ানের সহিত তাহার কোন সম্পর্ক নাই। 
তিনি স্বাধীন পাঞ্জাবের আদর্শ হৃদয়ে পোষণ করেন, যেখানে সমস্ত 
সম্প্রদায়গুলি স্বায়ত্তশাসন অধিকার ভোগ করিবে। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণ! 
করেন যে পাঞ্জাব মস্্িসভা লীগপন্থী মন্ত্িপভ| নহে, ইহা সম্পূর্ণভাবে 
পাঞ্াবীদের মস্ত্রিসভ| |” 

ইহার উত্তরে বাঙ্গালার প্রধান মন্ত্রী কি বলেন তাহা 
জানিবার কৌতুহল আমাদের পক্ষে অস্বাভাবিক নহে। 


ল্রাজ্গল্লাল্ত্র ন্্্রীকেকেল্প ৫খমাল-_ 


বাঙ্গালার মন্ত্রীদের ভ্রমণব্যয় যে দিনদিনই বাড়িয়া 
চলিয়াঁছে সম্প্রতি বঙ্গীয় ব্যবস্থা পরিষদে মন্ত্রীদের ভ্রমণব্যয় 
ও বারবরদারী মঞ্জুরীর সময় মৌলবী জালালুদ্দীন হাসেমী 
এক ছাটাই প্রস্তাব পেশ করিয়া তাহা! দেশবাসীর দৃষ্টি- 
গোচর করিয়া ধন্তবাদার্ হ্ইয়াছেন। তাহাতে অনেক 
রহশ্যই ফাঁস হইয়া গিয়াছে । হাসেমী সাহেব অভিযোগ 
করিয়াছেন__ 

(ক) জনৈক মন্ত্রী তাহার ব্যক্তিগত ধন্মসংক্রাস্ত ব্যাপারে আজমীর 
শরীফ গিয়। থাকিলেও সরফারী তহবিল হইতে তাহার টাক! আদার করা 
হইয়াছে; (খ) মুসলিম লীগের অধিযেশনে যোগদান করিতে বখন 
কোন মন্ত্রী বাঙ্গালার বাহিরে বোদ্বাই, দি্লী, মাদ্রাজ প্রভৃতি স্থানে 
গিয়াছেন তখনও তাহার ব্যয় সরকারী তহবিল হইতেই দেওয়া 
হইয়াছে ; (গ) মন্ত্রীর! খন নিজ্জ নিজ বাড়ীতে গিয়াছেন তথনও ভ্রমণ- 
ব্যয় এবং নির্দিষ্ট দৈনিক ভাতা আদায় করিয়াছেন । (₹) দলের উদ্দেশ 


৯৩ 


৬৬৬ 


সাধনের জগ্ত তাহারা যখন কোন উপনির্বাচনে নিজ দলের প্রার্থীকে 
সমর্থন করিতে কোথাও গিয়াছেন, তখনও গাহার আবস্তাকীয় বায় 
সরকারী রাজন্ব হইতেই গৃহীত হইয়াছে; (6) বাঙ্গাল! সরকারের 
সেরেস্ত! যখন দ।্সিলিং-এ তখনও মন্ত্রীরা হামেশ! নিজের প্ররোজনে 
কলিকাত| বা অন্যত্র গমনাগমন করিয়াছেন এবং দৈমিক ভাতা আদার 
করিয়াছেন। 

হাসেমী সাহেবের অভিযোগ যে সত্য নহে অর্থসচিব মিঃ 
রা বর্দী তাহা অশ্বীকার করেন নাই; পরন্ত দলের কাজও 
যে সরকারী কাঁজ তাহাই স্পষ্টক্ষরে জানাইয়! দিয়াছেন। 
সুতরাং ক্ষমতার এইরূপ ব্যবহার ধীহারা স্বজ্জানে করেন 
ঘতদ্দিন তীহাদের হাতে ক্ষমতা থাকিবে ততদিন তাহারা 
তাহার সুযোগ অবশ্ঠই গ্রহণ করিবেন--তাহাতে দেশের 
নিরয্ন জনসাধারণ না খাইয়াই মরুক, আর থাইতে না পাইয়া 
আত্মহত্যাই করুক, তাহাতে তীহাদের কিছু যাঁয় আসে না। 


স্যাল্ স্নি-ভি-্রীমন্নেন্র লুভন্ন সম্মান 


আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেল্ফিয়ার ফ্র্যাঙ্কলিন 
ইনস্টিটিউট প্রসিদ্ধ বৈজ্ঞানিক স্তর চন্দ্রশেথর বেস্কট রামন 
মহাঁশয়কে ফ্র্যাঙ্কলিন পদক দিয়া সম্মানিত করিবেন স্থির 
করিয়াছেন। ইতিপূর্বে এই পদক অধ্যাপক আইনস্টাইন, ডঃ 
মিলিকাঁন, ডঃ কম্পটন প্রমুখ বৈজ্ঞানিকগণ লাঁভ করিয়াছেন । 
স্তর চন্ত্রশেখর বেষ্কট রামনের এই সম্মানে উক্ত প্রতিষ্ঠানও 
যেমন যোগ্যতার সমাদর করিয়া ধন্ত হইলেন, আমরাও 
তেমনই তাঁহার সম্মানে গৌরববোধ করিতেছি । 


ন্বিশ্রতিল্যোলম্সেল্ সমান শ শুনব 


কলিকাতা বিশ্ববিষ্ভালয়ের এই বৎসরের সমাবর্তন 
উৎসব সম্প্রতি সারকুলার রোডস্থ বিজ্ঞান কলেজের প্রাঙ্গণে 
অনুষ্টিত হইয়াছে । বিশ্ববিদ্যালয়ের চান্দেলর বাঙ্গালার লাট 
স্যর জন্‌ হা্বার্ট অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। প্রসিদ্ধ 
ব্যবহারাঁজীব স্যর তেজবাহাদুর সাঞ্রু সমাবর্তন-বক্তৃতা দিবার 
জন্ত আহুত হইয়াছিলেন। তাহার বক্তৃতায় একটি বিষয়ে 
আমরা-_-আজিকার বাঙ্গালীরা অত্যন্ত থুণী হইয়াছি। 
আজিকার দিনে প্রা্েশিকতা একশ্রেণীর শিক্ষিত; অর্দ- 
শিক্ষিত বাঙ্গীলীকে এত মোহগ্রন্ত করিয়া তুলিয়াছে 
যে তাহারা মনে করে ভারতের অন্তান্ত প্রদেশবাসীরা 


বাঙ্জালাকে অবজ্ঞ/ করে। এই প্রকার একটা ক্ষোভ একটা 


শ্ডান্রভন্বখ্ 


এাস্ন্পা স্থল সস্তা স্হিগা্ ব্প্্পাস্প্যা্থিপাশ থালা সদ চান সব্হচা্প স্প্যান ব্রা 


[ ২৮শ বর্-_২য থণ্ডঁ- হম সংখ্যা 





সস ৬৮ সঃ 


জাতিকে নিয়ত পীড়া দিলে কিংবা হতাশা জাতির 
মনগ্রাণকে আচ্ছন্ন করিয়া ফেপিলে সেই জাতির জয়- 
যাত্রা ব্যাহত হয়। এই অবহেলার জন্ত বাঙ্গালী জাতির যে 
মন্খপীড়! তাহা যে বাস্তব সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত নয়, তাঁহা 
বন মণীধীই আমারিগকে শুনাইয়াছেন। স্যর তেজবাহাদুরও 
তাহাই বলিয়াছেন এবং তীহার উক্তি আতিথেয়তার 
প্রতিদানে শুধু স্তোকবাঁক্য বলিয়া মনে করিলে তাহার 
প্রতি অবিচার করা হইবে। প্রথম যৌবনে অর্ধাৎ পঞ্চাশ 
বংসর আগে তাহার ছাত্র জীবনে বাঙ্গালা হইতে সামাজিক 
ও রাষ্্নৈতিক আন্দোলনের তরঙ্গ গিয়া তাহাদের তরুণ 
মনকে আচ্ছন্ন করিয়া দিত। সামাঁজিক.জীবনে রামমোহন 
ও কেশবচন্দ্রের বাঁণী, রাষ্ট্রীয় জীবনে সুরেন্দ্রনাথ, লালমোহন, 
আনন্দমোহন ও কালীচরণের উদাত্ত আহ্বান তাহাদের চিত্ত 
আকুল করিয়! তুলিত। যুক্তপ্রদেশের মানসিক চিন্তার ধার! 
যে শুধু বাঙ্গালার দ্বারাই গড়িয়া উঠিতেছিল তাহাই নহে, উহা 
সম্পূর্ণভাবে বাঙ্গালার দ্বারাই আচ্ছন্ন হুইয়াছিল। আজও 
বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কুলে বহু বাঙ্গালী শিক্ষাদান ব্যাপূত আছেন । 
্যর তেজবাহাছুর মনে করেন যে, নাঁনা জাতি ও নানা 
ভাষার বিচিত্র লীলা-নিকেতন এই ভারতে মহামানবের এক 
নবমিলন-মন্দির গড়িয়া উঠিতেছে, সকল সংঘাতের 
অন্তরালেই এক অথণ্ড ভারত গড়িয়া উঠিতেছে। সকলের 
অলক্ষ্যে যে অথণ্ড ভারত ধীরে ধীরে গড়িয়া! উঠিতেছে, 
তাহাকেই মূর্ত করিয়া তোলা, প্রস্ফুটিত করিয়া তোলাই 
বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ। ম্যর তেজবাহাছুর সকল বৈষম্যের 
মধ্যে যে সাম্যকে দেখিয়াছেন, সকল ছন্দাতীত যে অথগ্ড 
ভারতকে দেখিয়াছেন, সাম্প্রদায়িক ভোবুদ্ধিকে বিনাশ 
করিয়া সেই ভারত দেখা দিবে কবে ? 


ল্রাজ্যন্নিন্নাহ ও হাক্সভ্রান্বাদ্ক-_- 


আধুনিক সভ্য সমাজ হইতে বাল্যবিবাহ তুলিয়! দেওয়ার 
একটা চেষ্টা চলিয়া! আসিয়াছে এবং কোন দেশে সঙ্গে 
সঙ্গেই চেষ্টা সাফল্য অর্জন করিয়াছে; কোন কোন 
দেশের নরনারী চিরাগত সংস্কারকে কোন মতেই অস্বীকার 
করিতে পারিতেছে না। হায়দ্রাবাদ পরিষদে নিজাম 
সরকারের রাজ্যে বাল্যবিবাহ বন্ধ করিবার জন্ত যে আইনের 
প্রস্তাব করা হইয়াছিল তাহা অগ্রাহ হইয়াছে । নিজাম 








এ শি শীি 


দ্বিতীয় কলিকাতা বয়স্কাউট সমিতি-_সভাপতি জে-পি-আগারওয়াল1--সঙ্গে বিচারপতি বিজনকুমা'র মুখোপাধ্যায় 


৪৪8 ড়া রি 
০ পসরা এ ০৩ ০১ পট ৩০ এ "নী 
0 
ছু টা র ্া 
, ॥ $ সপ ঁ 





৮গলী শ্রীরামপুরে শিবশঙ্কর জিউ প্রদর্শনীর উদ্বোধন--মহকুমা হাকিম:লভাপতিত্ব করিয়াছিলেন 


বৈশাখ---১৩৪৮ ] 


লাসজিক্কী 


৬১৬০৫ 


রাজ্যের সনাতনপন্থী সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুরা তীর প্রতিবাদ আসীন হইয়া তিনি আমেরিকা ও ইংলগ্ডের ব্যবহারাঁজীবদের 


করায় সরকার পক্ষ ও মুসলমান পক্ষ নাকি গ্রন্তাবটি 
সমর্থন করিতে সাহসী হন নাই। তাহাদের যুক্তি এই যে, 


সহিত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করেন। তাহার অকালবিয়োগে 
আলিগড় বিশ্ববিদ্ালয়ের অপূরণীয় ক্ষতি হইল) কেন না, 





ভিকৃটোরিয়। কলেজের ছাত্রীবন্দ( কনভোকেসন উৎসবে ) 


প্রস্তাবটি সমর্থন করিলে হিন্দু গ্রজারা মনে করিবে যে 
তাহাদের ধর্মাচুগগোদিত সংস্কীরকে অমর্য্যাদা দেওয়া! হইল। 
ভাল কথা, কিন্তু মজা! এই যে-_সমাজ সংস্কারের ব্যাপার 
ছাঁড়৷ অন্ত কোন আইন (তা সে আইন দেশের ও দশের যত 
অকল্যাণই করুক না) জারি করিতে তাহার! জনমতের দিকে 
কখনও ত তাকাইয়া নিক্কিয় বসিয়া থাকেন ন1। তবে? 


সল্রতলাত্্ স্ঞঞ্ আোহাাশ্গা্ স্পা 
স্মত্তশহ্বান্ম- 


ভারতের ফেডারেল কোর্টের বিচারপতি শ্যর মোহাম্মদ 
শাহ সুলেমানের মৃত্যুতে যে গুধু একজন বিশি ভারতীয় 
আইনজ্ঞের অভাব হইল তাহাই নহে, একজন বিশিষ্ট 
বৈজ্ঞানিকেরও অভাব হইল। ম্যর মোহাম্মদ এগাহাবাদ 
হাইকোর্টের বিচারপতি, পরে প্রধান বিচারপতি হিসাবে 
বিশেষ কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন। সঙ্গে সঙ্গে গণিতশাস্তী 
ও বৈজ্ঞানিক বলিয়া! তাহার নাম সভ্যসমাজে ছড়াইয়া 
পড়ে। ভারতীয় যুক্তান্্রীয় আদালতের বিচারপতির পদে 


ফটে|-_ডি, রতন এও কোং 
তিনি এই বিশ্ববিদ্ভালয়ের ভাইস-চাঁন্সেলার ছিলেন। আমরা 
স্তর মোহাম্মদের শোকসন্তপ্ত পরিজন ও গুণগ্রাহীদের প্রতি 
সমবেদনা জাপন করিতেছি । 
ভ্রাম্যমানন চমু চিন্কিশসালনস- 

বঙ্গীয় অন্ধত্ব নিবাঁরণী সমিতি বাঙ্গাীলার বিভিন্ন স্থানে 
ভ্রাম্যমান চক্ষু চিকিৎসাশালার ব্যবস্থা করিয়াছেন। এপর্যন্ত 
সিরাজগঞ্জ (পাবনা ), কুমিল্লা, ঘাটাল (মেদিনীপুর ) 
জলপাইগুড়ি ও মুশিদাবাদ* জেলায় কাধ্য আরস্ত 
হইয়াছে । জনসাধারণের পক্ষে ইহার চাহিদ! থাকিলে 
এবং প্রয়োজনানুরূপ স্থানীয় চাঁদা পাওয়1 গেলে ক্রমে ক্রমে এ 
ব্যবস্থা বন্ধিত করা যাইতে পারে । আমাদের বিশ্বাস আছে, 
এই সমিতির কার্যে জনসাধারণের সহযোগিতা ও সাহায্যের 
অভাব কখনও হইবে ন1। 


ববক্জিতেলতক্র প্ন্্ণ দক 


১৯৪* সালের কলিকাতা বিশ্ববিষ্ঠালয়ের বি. এ' 
পরীক্ষায় ' বাঙ্গালা ভাষায় প্রথম স্থান অধিকার করায় 


৬৬৬ 





প্রেসিডেম্দী কলেজের শ্রীযুক্ত অমিয়কুমার বন্থুকে বহ্কিমচন্্র 
সুবর্ণ পদক প্রদত হইয়াছে । আমর! অমিয়কুমারের জীবনে 
সর্ববাঙ্গীন সাঁফল্য কামনা করি। 


এ্রশ্রান্ম মন্্ী ও আদকসস্সমান্তি 


কিছুদিন হইতেই আদমন্ুমারি উপলক্ষ করিয়! বাঙ্গালা 
প্রধানমন্ত্রী মৌলবী ফজলুল হুক প্রতিদিন অন্তত একথানি 
করিয়া ইস্তাহার জারি করিতেছিলেন। এই সকল ইস্তাহারের 
কটুক্তির বিরুদ্ধে বাঙ্গলার বিভিন্শ্রেণীর হিন্দু জনসাধারণের 
অভিমত সুস্পষ্টভাবে অভিব্যক্ত হইয়াছে। সম্প্রতি প্রধান 
মন্ত্রী আদমন্ুমারি উপলক্ষ করিয়! একটি ইস্তাহারে বলেন, 
“ইহা ছাড়া আর অন্ত কিছুই ঘটা সম্ভব নহে-_যখন 
ব্যবারাজীবী, বৈজ্ঞানিক, অধ্যাপক, লেকচারার, জমিদার, 
ব্যবসায়ী, ব্রাঙ্গণ, অব্রা্দণ এবং অন্যান্ বনুজাতি ও উপজাতি 
তাহাদের সংখ্যা বাঁড়াইবার জন্ত মিথ্যা বলিতে এবং 
মিথ্যা বিবৃতি দিতে এঁক্যবদ্ধ হইয়াছে ।” তাহার এই 
মন্তব্যের প্রতিবাদ জন্য সম্প্রতি স্যর নৃপেন্ত্রনাথ সরকারের 
সভাপতিত্বে কলিকাতা৷ টাউন হলে হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ধবদলের 
এক বিরাট সভার অধিবেশন হইয়! গিয়াছে । কতথানি 
শালীনতা; শিষ্টাচার এবং আত্মসম্মানশুন্ত হইলে ব্যক্তি- 


উঠান 





[ ২৮শ বর্ই--২য় খণ্ড--€৫ম সংখ্যা 





স্থাদ্বা 


তাহাই ভাবিয়া আমর! বিম্ময় বোধ করি। সভাপতি স্বর 
নৃপেন্্রনাথ প্রধান মন্ত্রীর এই স্বেচ্ছাচারিত! দূর করিবার জন্য 
বাঁজলার লাট স্তর জন হা্বার্টকে সনির্বন্ধ অনুরোধ জ্ঞাপন 
করিয়াছেন যে, তিনি অবিলহ্ে এই ব্যক্তিকে বাঙ্গলাঁর প্রধান 
ম্ত্রীর গদি হইতে অপসরণ করিয়া! দেশের শাস্তি ও শৃঙ্খলা 
স্থাপনে সাহাধ্য করুন । 


নাতাশা ৩৩ পাওষ্তান- 


বাঙ্গাল! ও পাঞ্জাব__-এ দুইটি প্রদেশই মুসলমানপ্রধান 
এবং মোসলেম লীগের পাগ্ডারাই মন্ত্রীমগ্ুলী__-তথা দেশের 
শাসন চালাইতেছেন কিন্তু তবু এই দুই প্রদেশের মন্ত্রীমগুলীর 
চালচলনে যথেষ্ট পার্থক্য দেখাযাঁয়। বাঙ্গালা দেশের মন্ত্রীরা 
বে-হিসাঁবী অর্থব্যয় করিয়৷ এমন অবস্থায় আসিয়! পৌছিয়াছেন 
যে, দেশশাসনের জন্য তাঁহাদের করভারনিগীড়িত জনগণের 
উপর দিন দিনই ট্যাক্সের মাত্রা চড়াইতেছেন। তাহাতেও 
হালে পানি পায় না বলিয়৷ বেহালায় কুকুর দৌড়ের 
জুয়াথেলায় উৎসাহ দিতে উদ্যত হইয়াছেন। অপর পক্ষে 
পাঞ্জাবের প্রধান মন্ত্রী স্তর সেকেন্দর পাঞ্জাবে সাম্প্রদায়িক 
মৈত্রী প্রচারের জন্ত একলক্ষ টাকা ব্যয় করিতে মনস্থ 
করিয়াছেন। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী পরস্পরের প্রতি 





ও বেখুন কলেজের ছাত্রীবৃন্দ ( কনতোকেসন উৎসবে) 


নির্বিবচারে সাঁধারুণভাবে একটা সমগ্র সম্প্রদায়কে লৌক সহিষুতা ও সম্জ্রীতির পরিচায়ক ইতিবৃত্তসূহ সংগৃহীত 
এই প্রকার অতদ্র ভাষায় গালাগালি দিতে পারে ও প্রকাশিত হইবে, বিশিষ্ট ব্যক্তিগণের বক্তৃতার ব্যবস্থা 


ফটোস্্ডি, রতন এও কোং 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


কর! হইবে, যে সকল সংবাদপত্র ও সাময়িক পত্রিক| 
মৈত্রী প্রচারে স্ঘায়ত। করিবে তাহাদিগকে সাহাধ্য করা 





সহ 








প্রেণিডেন্সি কলেজের ভূবিজ্ঞানের ছাত্রবৃন্দ 
( কনভোকেসন উৎসবে) 

হইবে, সকল ধর্মের মহাপুরুষ- 
গণের জনমদিবস ও অন্ঠান্ঠ 
কয়েকটি উৎসব যৌথভাবে 
অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হইবে। 
পাঞ্জাবে যখন এই ব্যবস্থা, 
বাঙ্গালার মন্ত্রীরা তখন সাম্প্র- 
নায়িকতাঁর বিষ ছড়াইবার 
জন্ত প্রতিদিন ইস্তাঁহার জারি 
করিতেছেন। 


ন্নিথ্থিতল-ভ্ঞান্রভ্ড 
ম্পিক্ল সশ্মিকশনন_ 


সম্প্রতি বোগ্বাইয়ে স্যর এম্‌ 


বিশ্বেশ্বরায়ার সভাপতিত্বে 
নিখিল-ভারত শিল্প সম্মিলনের অধিবেশন হইয়া গিয়াছে । 


সাকিল 





৬৬০ 


ব্য স্ব -স্হ 


সংগ্রহ সম্পর্কে যথোপযুক্ত স্থবিধা দানের জন্ত সরকারকে 
অনুরোধ করিয়া! একটি প্রস্তাব গৃহীত হইয়াছে । বিদেশী 
প্রতিযোগিতা হইতে ভারতীয় শিল্পগুলি যাহাতে আত্মরক্ষা 
করিতে পারে সেজন্ত আরও কড়াকড়িভাবে সংরক্ষণ- 
মূলক ব্যবস্থা অবলম্বনেরও দাবী জ্ঞাপন করা! হইয়াছে । 
ভারতে বিদ্বেশী মূলধনের অবাঁধ আমদানি এবং বিদেশীয়গণ 
দ্বারা শিল্পগ্রতিষ্ঠান স্থাপনের ফলে দিয়াশলাই, সাবান, 
বৈদ্যুতিক ব্যাটারি, সিগারেট, রং ইত্যাদি দেশীয় শিল্পে যে 
অনিষ্টকর প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়াছে তৎসম্পর্কে অনুসন্ধানের 
জন্য একটি তাস্ত কমিটি গঠনের জন্য সম্মিলন সরকারকে 
অন্থুরোধ করিয়াছেন। অন্তান্ত প্রস্তাবে দেশের মধ্যে 
দেশয় শিল্পজাত দ্রব্যের অবাধ চলাচল সম্পর্কে অধুনা 
প্রচলিত শ্রেণীবিভাগ এবং রেল ভাড়ার পরিবর্তনের দাবী 
করা হইয়াছে এবং বর্তমানে বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহার্য কতিপয় 
বিদেশী জিনিষের আমদানি সম্পর্কে যে সকল অসুবিধা দেখা 
দিয়াছে সেইদিকে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ কর! হইয়াছে। 
সভাঁপতি তাহার বত্তৃতাঁয় বলেন যে, সরকারকে অবহিত 
হইতে হইবে যে কেবলমাত্র যুদ্ধের জন্য প্রয়োজনীয় শিল্প 
প্রতিষ্টায় উৎসাহ দান করিলেই তাহাদের কর্তব্য শেষ 
পরন্ত যুদ্ধের সময় এবং যুদ্ধের পর ভারত 





“স্্হচ বস ব্য”. পা ব্ছ 








বিষ্যাসাগর কগেজের ছাত্রীবৃদ্দ ( কনভোকেসন উৎসবে) 


যাহীতে বিভিন্ন শিল্পদ্রব্য সম্পর্কে আম্মনির্ভরশীল হইতে 
এই সম্িমনে ভারতের ছোট ও মাঝারি শিল্পের মূলধন পারে সরকারের পক্ষে সেজস্ক চেষ্টা ও যত্ব নিয়োগ করা 


৬৬৮৮ 


কর্তব্য। পরিশেষে তিনি ভারতীয় শিল্পপতিগণকে 
পরম্পরের মধ্যে সাহায্য ও সহযোগিতা স্থাপনের ভঙ্ু 
অনুরোধ করিয়াছেন। 


$ 
ক 
৪৮ 





কনভে।কেসন উৎসবে বাঙ্গালার গভর্ণর (চ্যাঙ্গেলার ) ও 
সার এম আজিজুল হক (ভাইস-চ্যান্সেলার ) 


ইন্ভিহ্থাস্স ল্চ্গম্মান্ল উডস্পকব_ 


সম্প্রতি কলেজ স্কোয়ার আগুতোঁষ হলে কলিকাতা 
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাদের প্রধান অধ্যাপক ডক্টর হেমন্ত 
রাঁয়চৌধুরীর সভাপতিত্বে কলিকাতা বিশ্ববিষ্যালয়ের ইতিহাস 
বিভাগের ছাত্রছাত্রী ও অধ্যাপকদিগের এক সম্মেলন হইয়া 
গিয়াছে। সম্মিলনের উদ্বোধন করিতে গিয়া অধ্যক্ষ 
প্রমথনাঁথ বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয় তাঁহার সারগর্ভ অভিভাষণে 
বলেন, “ইতিহাসের মালমশলাকে একটি নৃতন দৃষ্টিভঙ্গী 
দিয় সুষ্ঠু রূপ দিবার যুগ আসিয়াছে । নূতন যুগের ধারা 
উীতিহাঁসিকের দৃষ্টিভঙ্গী সম্পূর্ণদপে বদলাইয়া দিয়াছে। 
বর্তমান মহাযুদ্ধ সার! পৃথিবীকে প্রকম্পিত করিয়াছে এবং 
সেই কম্পনের সাঁড়া আমাদের দেশের হৃদয়েও পড়িয়াছে। 
যুদ্ধ জাতীয় সংস্কৃতির নিশ্রদীপ মহড়া-স্বরপ। জাতীয় 


ভ্ান্্ত্তন্বঞ্ধ 


[ ২৮শ বর্ব- ২য় খশ্ত--€ম সংখ্যা 


শিক্ষা সংস্কতি ও সভ্যতাকে আমুল পরিবপ্তিত করিয়াছে 
এই যুদ্ধ। এই আলোঁড়নের মধ্য হইতেই ইতিহাস রচনার 
জটিল উপকরণ সঞ্চিত হইবে ।» বিশ্ববিষ্ভালয়ের পোস্ট 
গ্রাজুয়েট প্রতিহাসিক সমিতির এই উদ্যম বিশেষ প্রশংসার 
যোগ্য। ইতিহাসের ছাত্র-ছাত্রীদের সংস্কতিমূলক উদ্যম 
জাতীয় ইতিহাসের পাতায় জলস্ত অক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকিবে। 


জিত্রল্স কুল বিজ্ল-_ 


দরিদ্রঃ করৃভারগীড়িত বাঙ্গালার অধিবাসীদের স্বন্ধে 
একটির পর একটি করিয়! নূতন কর চাঁপাইয় দিয়া বাঙ্গালা 
সরকার ইহাই প্রমাণিত করিতে চাহেন যে, শাসন করিবার 
যোগ্যতা তাহাদের নাই; কেন না» বেহিসাবী ব্যয় না করিলে 
বালালার রাজন্বে বাঙ্গালার শাসন কাঁধ্য পরিচালন! অবশ্ঠুই 
হইতে পাঁরে বলিয়! আমরা! বিশ্বীস করি। কিন্তু বাঙ্গালা 
সরকারের পক্ষে অত হিসাব করিয়! চলিবার কোন আগ্রহ ত 





শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রবৃন্দ ( কনভোকেসন উৎসবে ) 
নাইই, বরং ঘাটতি মিটাইবাঁর জগ্ত তাঁহারা একটা পর একটা 
ট্যাক্স বসাইয়৷ দেশের অবস্থা সঙ্গীন করিয়া তুলিতেছেন। 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


সম্প্রতি বঙ্গীয় ব্যবস্থা পরিষদে বিক্রয় কর বিল গৃহীত হওয়ায় 
আমাদের উক্ত অভিমত যে সত্য তাহাই প্রমাণিত 
হুইল। কংগ্রেস কৃষকপ্রজা ও তপণীলী দলের সমবেত 
তীব্র প্রতিবাদ ও বিরুদ্ধতা উপেক্ষা! করিয়া মন্ত্রিসভার 
সমর্থক কোয়ালিশন দল শ্বেতাঙ্গ দলের সহায়তায় বিলটি 
ভোটে পাশ করিয়া লইয়াছে। করের হার টাঁকায় এক 
পয়সা হিসাবে ধার্য্য হইয়াছে। বৎসরে আমদানি ও 
প্রস্তুত দ্রব্যের ক্ষেত্রে অন্যুন দশ হাঁজাঁর টাকা এবং অন্তান্য 
দ্রব্যের ক্ষেত্রে অন্যুন পঞ্চাশ হাঁজাঁর টাঁক! খুচর! বিক্রয় 
হইলে এই কর দিতে হইবে । সরকারের এই সব হ্বেচ্ছাচার 
দেশকে কোথাষ লইয়া গিয়া ফেলিতেছে তাহা চিন্তা 
করিবার সময় কি দেশবাসীর এখনও আসে নাই? 


লর্লসানে ল্রহিলাসব- 


গত ২৫শে ফাল্তুন শ্রীযুক্ত তিনকড়ি দত্ত মহাশয়ের আহ্বানে 
বর্ধমনে রবিবাসরের অধিবেশন হইয়াছিল । এ সভায় বাঁসরের 
সর্ববাধ্যক্ষ রায় বাহাদুর অধ্যা- 
পক থগেন্দ্রনাথ মিত্র মহাঁশয় 
সভাপতিত্ব করিয়াছিলেন 
এবং স্থুকবি শ্রীধুত স্থুরেন্দ্রনাথ 
মৈত্র মহাঁশয় “কাব্যে অন্গবাঁদ 
শীর্ষক এক প্রবন্ধ পাঁঠ করিয়া- 
ছিলেন, বর্ধমাঁনবাঁসীর! রবি- 
বাসরের সদস্তগণকে স্থানীয় 
টাউন হলে সম্বর্ধনা করিয়া- 
ছিলেন। রবিবাসরের বন 
সদশ্থ এ দিন বর্ধমানে উপস্থিত 
থাকিয়! উৎসবটিকে সাফল্য- 
মগ্ডিত করিয়াছিলেন। 


ল্রক্লোত্কে ত্র জর্ভ ভ্রিআান্লস্লম্ম_ 


ভারতীয় সিভিলিয়ানর! যে এদেশে কেবল শাসন 
করিতেই আসে এবং প্রসঙ্গত প্রচুর ধনার্জন করিয়! দেশে 
ফিরিয়া যায়, আমাদের মধ্যে এই ধারণাঁটাই বন্ধমূল। 
কিন্ত মধ্যে মধ্যে ছুই-একজন এমন লোকেরও সন্ধান পাওয়া 


যায় ধীহারা),এ দেশকে ও দেশবাসীকে প্রকৃত ভাল- 


সলাহমজিক্কী 


৬১৬০৯ 


বাসিয়াছেন। শ্যার জর্জ খ্রিয়ার্সন ইহাদের অন্যতম । ইনি 
১৮৫১ সালে আয়ারঙ্যাণ্ডের ভাবলিন কাউন্টিতে জন্ম গ্রহণ 
করেন। এবং ১৮৭৩ সালে ভারতীয় সিভিল সাবিসে 
যোগদান করেন। তিনি কর্মজীবনে বাঙলা ও বিহার 
প্রদেশে নানা পদদে আসীন ছিলেন। ১৯০৩ সালে কর্ম 
হইতে অবসর গ্রহণ করিয়! স্বদেশে ফিরিয়া গিয়া ভারতীয় 
ভাষার আলোচনায় মৃত্যুর দিন পর্য্যন্ত ব্যাপৃত ছিলেন। তিনি 
ডাবলিন, ক্যাস্বিজ ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিষ্ঠালয় হইতে 
সম্মানিত ডি. লিট. (সাহিত্যাঁচার্ধ্য ) উপাধি লাভ করেন। 
পাচ বসর ভারতীয় লিঙ্কুইস্টিক সার্ভের কর্তৃত্বভার 
পরিচালনা করেন। কিছুদিনের জন্ত তিনি কলিকাতা 
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো নির্বাচিত হন। ভারতীয় ভাষা ও 
ভাষাতত্ব সম্বন্ধে তিনি বহু পুস্তক রচন! করেন এবং ভারতের 
প্রচলিত ও অগুচলিত প্রায় সবগুলি ভাষাতেই প্রবেশ করিয়া- 
ছিলেন। তাহার মৃত্যুতে ভারতীয় ভাষা ও ভাষাতত্বের 
একজন বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞের অভাব আমরা অনুভব করিতেছি । 





বর্ধমানে রবিবার 


বল্সাপ্রি বিভল্রণ- 


এই বসর কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাধি বিতরণ 
উপলক্ষ্যে মোট ৫ হাজার ৩৩৪জন ছাত্র-ছাত্রী ডিগ্রি পান। 
ইহাদের মধ্যে এম্‌. এ. ৫৪৯ এম্‌. এসসি ১১১, বি. এ, 
২৭৩৬, বি. এস্-সি ৭১৮ বি. কম্‌ ২৯৯ বি. টি. ২১৬, 
বি. এস্‌. (জুন) ২২৮ (ডিসেম্বর ) ১২৬১ এম্‌. বি. 


২৬৭5 





( এপ্রিল) ১১০ (নবেম্বর ) ৯২) বি, ঈ 8৫, ডি. পি. 
এল্‌. ৩২ ও এম্‌. এল্‌. ২জন। ইহা ছাড়া পিএইচ ডি. 
উপাধি পাইয়াছেন শ্রীযুক্ত নলিনচন্ত্র গঙ্গোপাধ্যায়, শ্রীযুক্ত 
কমলরুষণ বন ও শ্রীযুক্ত শশিভৃষণ দাশগুপ্ত | ডি. এস্-সি 
উপাধি পাইয়াছেন ডাঃ নীলরতন সরকার, মনোহর 
রায়, সুধীরকুমার বন্থু ও হীরেন্দ্রনাথ দত্ব। এম্‌. ডি. 
পাইয়াছেন ভা: ফণীন্দ্রনীথ ব্রহ্মচারী; ডাঃ কৃষ্ণধন চট্টোপাধ্যায় 
ও শ্রীযুক্ত সুশীল দত্ত । সকলকেই আমাদের আস্তরিক শ্রীতি 
ও শুভেচ্ছ। জ্ঞাপন করিতেছি । 


শ্যামল কনিল্রত্র-_ 


পণ্ডিত প্রবর শ্ামাচরণ কবিরত্ব মহাশয় গত ৭ই চৈত্র 
কাশীলাঁভ করিয়াছেন। ১২৬০ সালের ২৯শে পৌষ হাওড়া 
জেলার চেঙ্গাঁইল গ্রামে তাহার জন্ম হয়। তিনি খ্যাতনামা 
পণ্ডিতের বংশে জন্ম গ্রহণ করেন এবং অতি অল্প বয়স হইতে 


স্পা কপ এর ০, 





পঙ্ঙিত শ্ঠামাচরণ কবিরত 
স্কিত শিক্ষা করিয়া ১৩ বংসর বয়সেই গভীর 
পাঁগ্ডিত্যের পরিচয় দান করেন। দারিদ্র্যের জন্ত তিনি 
শিক্ষালাভের সুযোগ তেমন পান নাই--কিছুকাল সংস্কৃত 
কলেজে শিক্ষালাভের পর ২০২১ বৎসর বয়সে তাহাকে 


ভাজ 





[ ২৮শ বর্ব-_-২য় খণ্--€ম সংখ্যা 


চাকরি গ্রহণ করিতে হয়। তাহার রচিত সরল কাদশ্বরী% 
প্রবেশিকা দর্পণ প্রভৃতি পুস্তক তাহার যশ ও অর্থের 
কারণ হইয়াছিল। ১৯১৩ থ্ষ্টাৰে তিনি অবসর গ্রহণ 
করিয়া কাশীবাসী হন। তাহার *ত্রিবেদীয় ক্রিয়াঁকাঁওড 
পদ্ধতি” হিন্দুকে তীহাদের ক্রিয়ার নূতন পথ দেখাইয়াছিল। 
তাহার মৃত্যুতে বাঙ্গালা দেশের যে ক্ষতি হইল, তাহা আর 
পূর্ণ হইবার নহে। 





কুর্নোক্ল্রেশন্মেল্র প্রপ্ান কম্পক্কত্া_ 


কলিকাতা কর্পোরেশনের প্রধান কর্মকর্তা শ্রীযুক্ত 
জ্যোতিষচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের কার্যকাল উত্তীর্ণ হওয়ায় 
তাহাকে পুনরায় এ পদে দুই বৎসরের জন্য রাঁখিবার প্রস্তাব 
কর্পোরেশন-সভায়' গৃহীত হয়। কিন্তু বাঙ্গালা সরকার 
কোন অজ্ঞাত কারণে এই পুননিয়োগে সম্মতি দিতে 
অসম্মত হন। অথচ ১লা এপ্রিলের মধ্যে প্রধান 
কর্মকর্তার পদে কাহাকেও নিয়োগ না করিলে কর্পোরেশনে 
অচল অবস্থা আসিয়! পড়ে, তখন অগত্যা সরকার নানাঁদিক 
বিবেচনা করিয়া শ্রীযুক্ত মুখোপাধ্যায়কে ১৫ মাসের জন্য 
পুননিয়োগের আদেশ প্রদান করেন। তিনি কর্পোরেশনের 
মুখ চাহিয়া এই প্রস্তাবে রাজী হইয়া আমাদের 
ধন্যুবাদার্হ হইয়াছেন। সমস্তাটার আপাতত যেভাবে 
সমাধান হইল তাহাতে আমরা তাহার সাধুবাদ 
করিতেছি। 


লীনা ক্ষাশ্পানীল্ সাক্কল্য- 


গত কয়েক বখসরের মধ্যে যে সকল বীমা কোম্পানী 
বাঙ্গালীর পরিচালনাধীনে থাঁকিয়া উন্নতির চরম শিখরে 
উঠিয়াছেন, আর্স্থান ইন্সিওরেন্দ কোম্পানী তাহাদের 
অন্ততম। সম্প্রতি তাহারা চিত্তরঞ্জন এভেনিউতে 
( কলিকাতা) নিজস্ব গ্রসাদোপম অট্রালিকাঁয় অফিস 
স্থানাস্তরিত করিয়াছেন। তাহাদের সম্পত্তির পরিমাণ 
বর্তমানে প্রায় ১০ লক্ষ টাক! এবং লাইফ ফণ্ডে এ পর্য্স্ত 
৮লক্ষ টাকার অধিক জমিয়াছে। এত অল্প দিনের মধ্যে 
বীমা কোম্পানীর পক্ষে এরূপ কাধ্য করা বাম্তবিকই 

প্রশংসনীয় । আমর! কোম্পানীর ম্যানেজার পরীযুত সবরেশচ্্র 
রায়কে এজস্য অভিনন্দিত করিতেছি । 


বৈশাখ-_১৬৪৮ ] 


টশল্প ₹9গ৪ স্ম্রর্ভি-উতুব- 

গত ৯ই মার্চ ই, বি, রেলের কীচরাপাড়া স্টেশনের 
অনতিদূরে কাঞ্চনপল্লী গ্রামে কবি ইশ্বরচন্ত্র গুপ্ত মহাশয়ের 
জন্মভিটাতে কবির স্ৃতি-উৎসব সম্পন্ন হইয়াছে। স্থানটি 
নদীয়া জেলার অন্তর্গত, রাঁণাঘাঁট সাহিত্য-সংসদের সদস্যগণ 
এ উৎসবের উদ্যোক্তা ছিলেন এবং শ্রীযুত রামানন্দ 
চট্টোপাধ্যায় মহাশয় উৎসবে সভাপতিত্ব করিয়াছিলেন । 
কলিকাতা হইতে ভাঁরতবর্য সম্পাদক শ্রীফণীন্ত্রনাথ 
মুখোপাধ্যায় কবিকঙ্কণ অপূর্বকৃষ্ণ ভষ্টাচাধ্য, কবিরাঁজ 
ইন্দুভূষণ সেন প্রভৃতি বু লোক উৎসবে যোগদান করিতে 
গিয়াছিলেন। কলিকাতা হইতে শ্রীযুত বতীশচন্ত্র দে 
মহাশয় সেদিন কাঞ্চনপল্লীতে নিজ বাটাতে গিয়। সকলকে 
আদর আপ্যায়ন করিয়াছিলেন। আমর! যে ক্রমে সকল 
খ্যাতনামা ব্যক্তির স্বৃতি-পুজা করিতেছি, ইহা জাতির পক্ষে 
জীবনের লক্ষণ সন্দেহ নাই। 


সলাগলাছিক্কেল্র সল্রললোক্গগমন্ম_ 


লঙ্বপ্রতিষ্ঠ সাংবাদিক কেশবচন্ত্র সেন মাত্র ৩৭ বৎসর 
বয়সে কলেরা রোগে পরলোক গমন করিয়াছেন জানিয়া 
আমরা! মন্াহত হইলাম । বহুদিন যাঁবৎ তিনি সাংবাদিকতার 
কাজে বনু সংবাদপত্রের সহিত সংশ্লিষ্ট ছিলেন। দারিদ্র্যের 
সহিত ক্রমাগত সংগ্রাম করিয়া তিনি তাহার যোগ্যতা 
প্রতিষ্ঠিত করিবার স্থযোগ পান নাই। তা সত্বেও আমরা 
তাহার কর্মমনদক্ষতায় ও সাংবাদিকতায় বিশেষ মুগ্ধ ছিলাম। 
নারীচরিত্র বাদ দিয়া তিনি ছেলেদের জন্ত খাঁনকয়েক নাটক 
রচনা করিয়া প্রসিদ্ধি অর্জন করিয়াছিলেন । 


শ্শিল্লেক্র উন্লভিত্ে সল্লক্ষাল্্রী লাহাহ্য- 


যুক্তপ্রদেশের ছোট ও মাঝারি শিল্পের উন্নতিতে 
সাহায্য করিবার জন্য যুক্তপ্রদেশ সরকার সম্প্রতি একটি 
পরিকল্পনা অনুমোদন করিয়াছেন। এই পরিকল্পনা 
অনুযায়ী শিল্প বা ব্যবসায়ের বিস্তৃতির জন্য সরকারী তহবিল 
হইতে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আবশ্তুক মত দেড় 
হাজার টাকা! পর্যন্ত এবং সমবায় সমিতি ও পল্লী-উন্নয়ন 
সমিতিগুলিকে পাঁচ হাজার টাঁকা পধ্যন্ত ধণদানের ব্যবস্থা 
হইবে। আবশ্যক হইলে ইহা অপেক্ষ! বেশী টাকাও দেওয়া 


সাঙ্মসসিলী 


৬৪১ 


যাইবে । প্রদত্ত ধরণের জন্য শতকর! একটাকা হারে সুদ 
আদায় করা হইবে। উপযুক্ত কিস্তিতে সাত বৎসরের 
মধ্যে খণ পরিশোধ করিতে পারিবেন। দেশের শিল্প 
ব্যবসায়ের ক্ষেত্র যাহাতে প্রপাপিত হয় এবং দেশের শিক্ষিত 
যুবকেরা যাহাতে অধিক মাত্রায় শিল্প বাবসাঁয়ে আত্মনিয়োগ 
করে, সেইজন্তই সরকার এই কার্যক্রম গ্রহণে আগ্রহশীল 
হইয়াছেন। বাঙলার সরকার কিন্ত এই ধরণের কোন 
পরিকল্পনা ভাবিতেই পারেন নাই। তাহাদের নীতি---লাঁগে 
টাঁকা দিবে গৌরী সেন। তাই নৃতন নূতন ট্যাক্স বসা ইয়া 
নিরন্ন বাঁঙালীকে উপবাদী রাখিতে মনস্থ করিয়াছেন। 


সপিক্ুমল মুখোশ শ্যাম 


বালীগঞ্জ ব্যাঙ্কের অন্ততম প্রতিষ্ঠাত৷ প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ী 
মণিকুমার মুখোপাধ্যায় গত ৩০শে জাশুয়ারী কাশীধামে 
মাত্র ৪৮ বংসর বয়সে পরলোকগমন করিয়াছেন জানিয়া 
আমরা ব্যথিত হইলাম। বঙ্গবসী কলেজের অধ্যাপক 
হিসাবেও তিনি খ্যাতি লাত করিয়াছিলেন । ১৮৯৩ সালের 





মণিকুমার মুখোপাধ্যায় 


১লা মার্চ আগড়পাড়ার প্রসিদ্ধ মুখোপাধ্যায় বংশে তাহার 
জন্ম হয়। দরিদ্র অবস্থা হইতে তিনি নিজের যত্ব, চেষ্টা ও 
অধাবসায়ের দ্বারা কৃতিত্ব অর্জন করিয়াছিলেন; আমরা 
তাহার শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গকে সমব্দেন জ্ঞাপন 
করিতেছি। 








জ্ীক্ষেত্রনাথ রায় 


ল্রপীক্ভি ট্রক্কি হ্কাইন্নাল £& 


মআাদ্রোজ 2 ১৪৫ ও ৩৪৭ 

মহারাষ্ট্র ২৮৪ ও ২১০ (৪ উইকেট) 

মহারাষ্ট্র ৬ উইকেটে মাদ্রাজকে পরাঁজিত ক'রে পর পর 
দু'বার রণজি ট্রফি বিজয়ী হলো। ইতিপূর্বে বোস্বাই 
অনুরূপভাবে উক্ত প্রতিযোগিতায় সাফল্য লাভ করেছিলো । 
মহারাষ্ট্রের এই জয়লাভে আমর! তাদের আন্তরিক অভিনন্দন 
জানাচ্ছি। তারা যেন্ধপ কৃতিত্বের সঙ্গে প্রতি ম্যাচ 
জয়লাভ ক'রেছেন তাতে ভারতের প্রত্যেক নিরপেক্ষ 
ক্রীড়ামোদী মাত্রেই তাদের এই সাফল্যের জন্ত অভিনন্দন 
না ক'রে পারবেন না। ব্যাটিংয়ে মহারাস্র ভারতের সকল 
প্রদেশের চেয়ে শক্তিশীলী। ইতিপূর্ব্বে ভারতের কোন 
প্রাদেশিক টীমে এতগুলি শক্তিশালী ব্যাটস্ম্যানের সমন্বয় 





এদ সোহানী 


দেখা যায়নি এবং অদূর ভবিষ্বাতে হবে বলেও মনে হয় না। 
আর সবচেয়ে উল্লেখযোঁগ্য দলের সকলেই উদীয়মান 


প্রফেসর দেওধর 


শু৭হ 


খেলোয়াড় । একমাত্র প্রবীণ থেলোয়াঁড় ক্যাপ্টেন দেওধর 
পঞ্চাশ বৎসর বয়সে তরুণের চেয়েও বেণী উৎসাহী ও 
শক্তিশালী । ভারতের ক্রিকেটের ভবিম্বৎ মহারাষ্ট্রের এই 
তরুণ খেলোয়াড়বৃন্দের উপর অনেকথাঁনি নির্ভর কচ্ছে। 
এখনও যর্দি টেষ্ট টীম গঠন করা হয় তাহলে মহারাষ্ট্র 
থেকেই সবচেয়ে বেশী ব্যাটস্ম্যান তাতে স্থান পাঁবেন। 
এবারের রণজি প্রতিযোগিতায় মহারাষ্ট্র ৬ ইনিংস খেলে 
৪৭ উইকেটে ২৯৪৫ রান ক'রেছে। অর্থাৎ প্রতি ইনিংসের 
এভারেজ রান ৪৯১ এবং প্রতি উইকেটের প্রায় ৬২'৭। 
এক! সোহানীই ৬৫৫ রান ক'রেছেন। হাজারী ৫৬৫ এবং 
ক্যাপ্টেন দেওধরের ৫০৮ রানও উল্লেখযোগ্য । হাজারীর 
এভারেজ সোহনীর চেয়ে বেশী হ'লেও সোহানীর ব্যাটিংয়ের 
কৃতিত্ব হাজারের চেয়ে কোন অংশে কম তো! নয়ই বরং বেশী। 





দি টি সারবাতে 


সোহনীর এভারেজ ১৩১, হীজারীর ১৪১২ এবং দেওধরের 
৮৪'৬। সারবাতে যদিও ২৪টা উইকেট পেয়েছেন তাঁকে তবু 


মহোরলা 
চি, ০৯১ সু ত 
54১ ৬ ন্ সর 
| রঃ 1 
8 7 
ছ রঃ 


জা ৪ ধু আট, ইট ১8 


৬18 $% $ 





টে,ণিং জাহ।জ“ডফ রিণ'__ইহাতে ভার 


তীয় শিক্ষার্থীদিগকে জাহাজ-চালান শিক্ষ। দেওয়| হইতেছে 





মুদ্ধী ষে সকল ভারতীয় বন্দী ইউয়াছে, তাহাদের জন্য লগ 


শস্থ ভারঠায় মহিলারা খাদ্য পাঠাইতেছেন 


কলিকাতা বিশ্ববিস্তালয়ের সমাবত্তন 


উৎসবে সার তেজবাহাছুর সাঞ্রু বন্তৃত! করিতেছেন 








চট্টগ্রামের রায় বাহাদুর উপেন্রলাল ক্সায় মহাশয়ের বাটার দুই শশ ব্সরেগ পুর।তন তৈল চিত্র সহী শনাননে মহ প্র 
রাণ।ঘাট শ্লীগৌরাঙ্গ আশমের গ্রীমুত বটকুষ্ণ দাস কর্তৃক সংগীত 





২৪ পরগণা1 পানিহাটীতে গঙ্জাতীরে মহারাজ চত্দ্রকেতু নিশ্মিত ৭ শত বৎসরের প্রাচীন ঘাট ও তদুপরি 
বটবৃঙ্গ- মহাপ্রভু চৈতন্যদেব এই ঘাটে ন।মিয়াছিলেন 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


খুব উচ্চ শ্রেণীর বোলার আমরা বলতে পারি না অন্ততঃ 
ব্যাটিংয়ে মহারাষ্ট্রের যে রকম রেকর্ড সেই তুলনায় বোলিং 
কিছুই নয় বললেও চলে। ফিল্ডিংয়ে মহারাষ্ট্রের স্থান 
অত্যন্ত নিন্নে। 

আমরা আগের মাসেই আভাম দিয়েছিলাম যে মাদ্রাজের 
উইকেট ভাল নয়। একাধিকবার এর প্রমাণ পাওয়া 
গেছে ; এবারও বিশ্বাসঘাতকতা ক'রতে ছাড়ে নি। তবে 
প্রথমে সেটা হয়েছে মাপ্রীজের উপরেই । 
তারা টসে জিতে প্রথমে ব্যাট ক*রতে 
যাঁয়। আরম্ত খুবই খারাপ হ/য়েছে। 
৪ রাঁনে দুটো ভাল ভাল উইকেট পড়ে 
&.) গেল। এরপর সামরিকভীঁবে ছুএকজন 
র খেলোয়াড় খেলার গতি একটু ফেরাতে 
পেরেছিলেন বটে কিন্ত তাতে বিশেষ 
কোন ফল হয়নি। শেষদিকের বরং 
খেলোয়াড় পিটিয়ে খেলে একটু রান 
তুলেছেন। দলের সর্বোচ্চ রান করেছেন ভেম্কটেসন 
৩১। ইনিংস শেষ হয়েছে মাত্র ১৪৫ রানে। যাদব 
২৩ রানে ৪টে উইকেট পেয়েছেন, সারবাতে ৩৬ রানে 
৩টে। মীদ্রাজের ব্যাটিং অবশ্য ভাল নয় তাই ঝলে এত 
কম রানে তার! নেবে যাবে তা ভাবা যায়নি। দেওধর 
বলেছেন বে মাদ্রাজের অধিকাংশ খেলোয়াড়ের সাধারণ 
ফুট-ওয়ার্কেরও একান্ত অভাব দেখা গেছে । 

মহারাষ্ট্রের ব্যাটিংও ভাল হয়নি। সোঁহনী এই প্রথম 
অকৃতকাধ্য হয়েছেন। দিনের শেষে ৬টা ভাল ভাল 
উইকেট হারিয়ে রান সংখ্যা! উঠেছে মাত্র ১১৩। অবস্থা 
মোটেই আশাপ্রদ নয়। একমাত্র ভরসা হাজারী। তিনি 
২৭ রাঁন করে নট আউট আছেন। 

দ্বিতীয় দিনের খেল! সুরু হয়েছে; হাজারী খুব 
ধীরভাবে খেলছেন । সারবাতে ৩৩ রাঁন করে অপ্রত্যাঁশিত- 
ভাবে আউট হয়ে গেলেন। হাজারী ১০৮ মিনিট খেলে 
নিজন্ব ৫০ রাঁন রু'রলেন। দ্রুত রান তোলার দিকে তাঁর 
মোটেই ঝেক ছিল না। টামের সমস্তই এখন তার উপর 
নির্ভয্ন কচ্ছে। পরবর্তী £* রান তুলতে কিন্তু তীর সময় 
লেগেছে মাত্র ৪৫ মিনিট। বোলারদের মোটেই গ্রাহ 
করেননি। প্রথম দিনের খেলার শেষে যেরকম অবস্থ! 

৮৫ - 





ভি এস হাজারী 


কয়েকজন 


হেলা এজন 


ভগ ৬ 





ধাড়িয়েছিল তাতে মাদ্রাজ গ্রথম ইনিংসে অগ্রগামী হঃলেও 
কিছু আশ্চর্য্যের ছিল না। হাজারী স্বীয় দলকে পতনের 
হাত থেকে যেভাবে রক্ষা করেছেন তাতে তার উচ্ছ্বসিত 
প্রশংসা না ক'রে থাঁকা যায় না। , 

১৩৯ রাঁনে পিছিয়ে মাদ্রাজ দ্বিতীয় ইনিংস সুক্ 
ক+রলে। এবার তাঁদের সুচনা ভালই হয়েছে । প্রথম 
উইকেট পড়লে ৭৮ রানে। মাঁত্রাজের ক্যাপ্টেন জনষ্টোন 
নিজন্ব ৪৯ রানের মাথায় আউট হঃয়েছেন। মাদ্রাজ বেশ 
দৃঢ়তার সঙ্গে খেলেছে। দিনের শেষে তাদের ২ উইকেট 
হারিয়ে রাঁন উঠেছে ১০৭ । | 

মাদ্রাজের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হল ৩৪৭ রানে। দ্বিতীয় 
ইনিংসের খেলায় তাঁদের ব্যাটসম্যানদের দৃঢ়! প্রশংসনীয় । 
রামসিং স্বীয় দ.লর সম্মান রক্ষা করবার জন্ত আপ্রাণ চেষ্টা 
করেছেন। তরুণ খেলোয়াড় ন্লোরের গ্রচেষ্টাও উল্লেখ- 
যোগ্য । তাঁরা যথাক্রমে ৭১ ও ৫৪ রান ক'রে আউট হ'ন। 
দলের সর্ধবোচ্চ রান ক'রেছেন রামসিং ; চাঁর ছিলে! দশট!। 





ইন্টার কলেজ ক্যারাষ প্রতিযোগিতায়, 

আশুতোষ কলেজের ছাত্রিগণ কটে! £ বিবি মৈত্র . 

তার হুক্‌, ড্রাইভ ও কাট বেশ দর্শনীয়। সারবাতে ৬টা 

উইকেট পেয়েছেন. ৮৩ রানে। ,২০৯ রাঁন ক'রলেই- 

মহারাষ্ট্র জয়লাভ করতে পারবে। সোহনী ও তাজেকার 

খেলা সুর করলেন । দিনের শেষে কেউ আউট না হয়ে 
রাৰসূংখ্য! ভূলুলেন ৫২। 


৩৬৩৭৩ 


শেষদিনের খেলায় দর্শক সমাগম বেশী হয়নি 


সভান্রাত্ঞ্বন্ | ২৮শ বর্ষ--২য খণ্ড--৫ম সংখ্যা 
বোধ মাদ্রাজ 
দ্বিতীয় ইনিংস 


হয় মহারাষ্ট্রের নিশ্চিত আঁয়লাভের কথা চিন্তা ক'রে। 
প্রয়োজনীয় রান তুলতে মহারাষ্্র মাত্র চারটি উইকেট 


হারালে । সোহনী সেঞ্চুরী ক'রেছেন। দেওধর 


আউট 


হয়েছেন ৩২ রান ক'রে। রণজি ফিতে মহারাষ্ট্রের 
খেলায় প্রতি ইনিংসে তাদের কোন না কোন খেলোয়াড় 


শতাধিক বাঁন ক'রেছেম। আশা করি আগামী 
রণজি প্রতিযোগিতায় মহারাষ্ট তাদের এবারের 


বারের 
সম্মান 


অক্ষ রাথবে এবং আরো! উন্নততর থেল! দেখিয়ে ভারতের 


ক্রিকেট ইতিহাসকে সমুজ্জল ক'রবে। 
| মা্রাজ 
প্রথম ইনিংস 
মি পি এনষ্টোন...কট,সোহনী : ব পটবর্ষন 








তি এন মাধর রাও ..কট গোখলে...ব সোহনী . ১২ 
এজি রামসিং '.কট নাইডু..'ব পটবর্ধন ১ 
আর নেলার..ব যাদব. ১৯ 
সিরামস্বাণী''ব যাদব ১৪ 
এম জে গোপালন..'কট গোখলে ' ব যাদব ১ 
জি পার্থসারথি-"“র সারবাতে ১১ 
জে এজি সি ল*'.'কট এবং ব...সারবাতে ৩ 
এন জে ভেম্কটেসন.. কট হাজারী...ব সাঁরবাতে ৩১ 
বি এস কৃষ্ণ রাও... নট আউট ২৯ 
সিআর. রঙ্গচারী'..ব যাদব ৪ 
| অতিরিক্ত... ১৩ 
মোট.'. ১৪৫ 
মহারাষ্ট্র 
প্রথম ইনিংস 
আর ভি ভাঞেকার:''ব রঙ্গচারী ২৭ 
এস ডবলউ সোহনী-.'.কট জনষ্টোন"'ব রঙ্গচারী ১১ 
আর বি নিঘলকার'.. এ-বি..ব রামসিংহ ৫ 
ডি বি দেওধর-.. এপ্স-বি.''ব রঙ্গচারী ১১ 
ভি এস হাকারী..'কট জনষ্োন.'ব রঙ্গচারী ১৩৭ 
এম এম নাইভু.''কট জনষ্টোন-''ব কৃষরাঁও * 
কে এম যাঁদব-'.কট জনষ্টোন."'ব রামসিং ১৫ 
পি টি সারৰাতে.''ব তেঙ্কটেসন ৩৩ 
গোখলে.''কট রামন্থামী'.'ব রঙ্গচারী রি 
সিন্বে'*' কহ 
পটবর্দন. ছি এবং ব ভেক্কটেলন । ১৬ 
অতিক্বিজ্'-. ৯ 
মোঁট'.. "২৮৪ 


৪৯ 
৩৩ 


সি পি জনষ্টোন'''কট গোখলেটুব সারবাতে 
জে ল+..কট নাইডু.*.ব সারবাঁতে 





মাধব রাও... রান আউট ৩৪ 
রাম সিং..কট ভাজেকার-" ব যাদব ৭১ 
নেলার.'".কট সোহনী'.ব সারবাতে ৫৪ 
সি রামন্বামী'".কট এবং ব হাজারী ১ 
পার্থ সারথী-.. নট আউট ১৮ 
গোপালন...কট দেও: ''ব সারবাতে ৪৩ 
ভেঙ্কটেসন...কট নাইডু-.'ব সাঁরবাতে ১৪ 
কৃষ্ণ রাও.'"'ব হাজারী ২ 
সি আর রঙ্গচারী...ব সারবাতে ৪ 
অতিরিক্ত. ১ ৩২ 

মোট." ৩৪৭ 

মহারাস 
ঘিতীয় ইনিংস 

আর ভি ভাজেকার-.'ব রাঁমসিং ১৬ 
এস সোঁহনী'"*কট জনষ্টোন-''ব রামসিং ১০৪ 
আর নিশ্বলকাঁর''.কট ল+..'ব রঙ্গচারী ২১ 
ডি দেওধর'..এল-বি -'ব রামসিং ৩২ 
ভি হাজারী... নট আউট ৬ 
কে যাদব" নট আউট ২ 
অতিরিক্ত'** ১৯ 





মোঁট (৪ উইকেট )... ২১০ 
লরি ট্রত্ক্রিত্ডি স্শভ্ডাশ্রিক লাল £ 
মহারাষ্ট্র দলের খেলোয়াড় ঃ 

প্রফেসর দেওধর ২৪৬ 
প্রফেসর দেওধর ১৯৬ 
ভি এস হাঁজারী *১৬৪ 
ভি এস হাজারী ১৩৭ 
ভিএসহাজারী ১১৭ 
এস ডবলউ সোহনী ২১৮% 
এস ডবলউ সোহনী ১৩৪ গুজরাটের 
এস ডবলউ সোহনী ১২০ বোস্বাইয়ের 
এস ডবলউ সোহনী ১৯৪ মাত্রাজের 
আর ভাঁজেকার ১২০ উত্তর ভারতের ” 
কে এম যাদব ১১৫ উত্তর ভারতের * 


পূর্ববর্তী বিজয়ী দল 
১৯৩৪-৩৫ বোতাই . ১৯৩৫-৩৬ বোঘাই 
১৯৬৬-৩৭ নওনগর ১৯৩৭-৩৮ সিন্ধু 
১৯৩৮-৬৯ বাঙলা ১৯৬৯-৪৬ মহারাষ& 


বৌঁশ্বাইয়ের বিরুদ্ধে 
উত্তর ভারতের £ 
পশ্চিম 
মাদ্রাজের 
গুজরাটের 


ঠ 


£? 


£9 
5 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 


ক্রিনক্ষেউ লীগ £ 

সম্প্রতি বেঙ্গল জিমখানার এক সভায় সর্ব সম্মতিক্রমে 
এই প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে যে, আগামী শীতকাল থেকে 
জিমখানাঁর তত্বাবধানে ক্রিকেট লীগ খেল! সুরু হবে। 
বিভিন্ন ক্রিকেট দলের বাঁধিক ক্রিকেট খেলার তালিকা 
প্রস্তুত ক'রতে যাঁতে কোন রকম অন্থবিধা না হয তার জন্য 
জিমথাঁনা থেকে লীগ তালিকা জুলাই মাসের মধ্যেই 
প্রতিষোগী টামকে প্রেরণ করা হবে। জিমখাঁনা কর্তৃপক্ষ 
তাদের অন্ততূক্ত সকল দলকেই লীগে যোগান করবার জন্ত 
আহ্বান ক'রবেন। অবশ্ হাওড়ার জন্ত স্বতন্ত্র এক লীগ 
খেলার ব্যবস্থা করা হবে আর তাতে কেবল হাওড়ার 





আছি... তিত পতি 
এ ০ ঞ্ চি চা 


প্র 
এ শা, 


শ্খলাশুলা 


চে 
স্ব স্ঘ- “সহ” শা বত” ব্য ব্য বত বল অভ” স্ব হস ভু স্ব বত স্যা ল স্ব স্ব 


৬০ রি 





সঙ্গে দেড় দিন ব্যাপী খেলারতালিকা প্রন্তত করবার জন্ত 
অনুরোধ করবেন। 

বেঙ্গল জিমথানার এই প্রচেষ্টা খুবই ভাল এবং এই 
ব্যবস্থা কার্যকরী হ'লে স্থানীয় ক্রিকেটের যথেষ্ট উন্নতি হবে 
বলে মনে হয়। কেবলমাত্র গ্রীতি-সন্মেলনে খেলায় 
প্রতিদ্বম্বিতা ভাল হয় না। যদিও কুচবিহার কাপ 
প্রতিযোগিতা কয়েক বছর থেকে চলছে তবু নক্‌-আউট 
টুর্ণামেন্ট হওয়ার ফলে একটি টাম একটি ম্যাচ ভাল ন 
খেলতে পারলে প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় নিতে হয়। 
তাছাড়া এত বড় দেশের পক্ষে এ একটিমাত্র গ্রতিযোগিতা 
যথেষ্ট নয়। লীগে প্রত্যেক টীম প্রত্যেকের সঙ্গে খেলবার 





এশিয়াটিক ভারোতে।লন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী প্রতিযোগিগণসহ উপস্থিত বিশিষ্ট ব্যক্তিবৃন্দ 


দলসমূহ যোগদান করবে। বাঙ্গলার অন্ত সকল জেলাতেও 
যাতে ক্রিকেট খেলার অন্গরূপ ব্যবস্থা হয় জিমখাঁনা 
সেখানকার পরিচালকদের এ বিষয়ে অনুরোধ করেছেন। 
কলকাতায় প্রথম বৎসর লীগ খেল! হবে ২০টি দল নিয়ে। 
এই ২০টি দলকে ছুটি বিভাগে ভাগ করা হবে আর প্রতি 
বিভাগের প্রথম পাচটি দলকে প্রথম শ্রেণীর দল ব'লে গণ্য 
করা হবে। লীগের প্রত্যেক মাচ দেড় দিন ক'রে খেল! 
হবে। জিমখানার অন্তভূক্ত কলেজ টীমগুলি উক্ত লীগে 
যোগদান করতে পারবে না। তবে জিমথানা! থেকে 
স্থানীয় প্রত্যেক বিশিষ্ট টীমকেই কলিকাত| বিশ্ববিদ্যালয়ের 


স্থযোগ পাবে এবং প্রত্যেক খেলাতেই একটা তীব্র 
গ্রতিদ্বন্বিত৷ দেখা যাবে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন যে, খেলা 
দেড় দিনব্যাপী হবে কিন্ত কোন পক্ষ কতকর্মণ খেলতে 
পারে সে সম্বন্ধে কিছু বলা হয়নি। আমাদের মনে হয় 
লাঙ্কাশায়ার লীগের অনুকরণে সমস্ত সময়টিকে সমান 
দুভাগে ভাগ ক'রে উভয় দলকে, ব্যাট করবার সুযোগ 


দেওয়া উচিত। তার ভেতর যারা বেশী রান খুলতে 


পারবে তারাই জিতবে । এরকম না হ"লে অধিকাংশ 
ম্যাচ ড্র হবার সম্ভাবনা! । যারা! প্রথম ব্যাট করবে তাদের / 
ইনিংস শেষ হ'তে যদি পুরো একদিন বা তার চেয়েও বেশী 


৬৬০ 


সময় লাগে এবং অপর পক্ষের সকলে আউট হবার আগেই 
যদি সময় উত্তীর্ণ হয়ে যাঁয় তাহলে জয় পরাজয় নিষ্পত্তি 
কর! সম্ভব হবে না। কিন্তু উভয় পক্ষকে যর্দি ব্যাট 





ভরত স্ত্রীশিক্ষ! সদন ম্পোর্টসের ব্যক্তিগত ঢ্যাম্পিয়ান্দীপ 
বিজয়িনী কুমারী নিভ| সেন 


করবার সময় সমান ভাবে নিদ্ধারিত করে দেওয়া! হয় 
তাহলে এ সময়ের ভেতর যে দল বেণী রাঁন তুলতে পাঁরবে 
সেই বিজয়ী হবে। এই রাঁন তুলবার জন্য উইকেট কম বা 
বেণী হারানোর উপর জয় পরাজয় কিছুই নির্ভর ক'রবে না। 
বিশ্ববিঠালয় সন্ধে যে ব্যবস্থা করা হয়েছে" তাতে ছাত্রদের 
থেলার যথেষ্ট উন্নতি হবে বলে আশা! করা যাঁয়। কিছুদিন 
থেকে দেখা যাচ্ছে স্থানীয় , বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলোয়াড়র! 
মোটেই ভাল খেল! দেখাতে পাচ্ছেন না অথচ বোদ্বাই, 
পাঞ্জাব, আলীগড় ব! বেনারস বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলোয়াড়র 
তাদের প্রক্কেতর হ'য়ে এবং বিশ্ববিদ্তালয়ের হ'য়ে খেলে 
যথেষ্ট স্থনাম অর্জন কচ্ছেন। লব দেশেই দেখা যায় 
উদীয়মান খেলোয়াড় আসে বেশীর ভাগ ছাত্রদের থেকে, 
এখানকার ছাত্রদের খেলার যেটুকু উন্নতি তা বেবল ক্লাবের 
ম্গে সংশ্লিষ্ট থাকার ফলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এদিকে কোন 
রকম দৃষ্টি নেই।" ছেলেরা দিজের নিজের ক্লাব থেকে 
খেলা শিখবে বিশ্ববিদ্যালয় শুধু টীম মনোনয়নের সয় 


স্ডাব্রত্ডব্ঞ্দ 


*-7 লিলুয়ার কাছে তারা নিঃসন্দেহে জিতবে। 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় খণ্ড ৫ম সংখা 


কয়েকটি ট্রায়াল ম্যাচ খেলাবেন। এইখানেই যেন তাদের 
দাঁয়িত্ব শেষ হয়ে গেল। সম্মেলিতভাবে বিশ্ববিষ্ঠালয়ের 
টামের সঙ্গে শক্তিশালী ক্লাবগুলির বাধিক ক্রিকেট খেলার 
তাঁলিক। প্রস্তত কর! বিশেষ প্রয়োজন। বাঙলা দেশের 
ক্রিকেট খেলার উন্নতির জন্ত উপরোক্ত নূতন ব্যবস্থা 
প্রবর্তন করার প্রথম প্রস্তাবক শ্রীযুক্ত মাই ঘোষকে আমরা 
আন্তরিক ধন্তবাদ জানাঁচ্ছি। 


হন্কি লীগ & 


হকি লীগ থেল! প্রায় শেষ হয়ে এসেছে । পুলিশ যে 
চ্যাম্পিয়ান হবে তা স্ুনিশ্চিত। পুলিশ এবার একটা 
খেলাতেও হারেনি অবশ তাদের এখনও একটা খেল! বাকী 
আছে লিলুয়ার সঙ্গে । লীগের প্রায় সর্ব নিম্ন স্থান অধিকারী 
অবশ্য 
লিলুয়ার কাছে হেরে গেলেও চ্যাম্পিয়ানসীপের পথে তা 
মৌটেও বাঁধা হৃষ্টি করবে না। কারণ লীগের দ্বিতীয় স্থান 
অধিকারী রেঞ্জার্স অনেক পয়েন্ট পিছিয়ে আছে। 
রেঞ্জার্স যদি সবকটা! জেতে এবং পুলিশ তাঁদের শেষ খেলায় 
হেরে যায় তাহলেও পুলিশই চ্যাম্পিয়ান হবে। পুলিশ 





ইন্টার কলেজ টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতায়, 
ৃ আশুতোধ কলেজের ছাত্রিগণ ফটো ঃ বিবিমেত্র 
ইতিপূর্ববে কখনও লীগচ্যাম্পিয়ান হয়নি।: এবার তার! 
১৫টা ম্যাচ থেলে জিতেছে ১৩ট জার দ্র ক'রেছে কাম 


বৈশাখ-”-১৩৪৮ ] 


খ্থেতলাঞ্ুতল 


৬৭, 





ও মেসারার্সের সঙ্গেঃ হারেনি একটাও । গোল দিয়েছে 
৩৪ট1! আর গোল খেয়েছে ১২টা। পোর্টকমিশনার্স ও 
রেঞ্জার্সের কাছে তাদের জয়লাভ কৃতিত্বপূর্ণ। পোটকমিশন।র্স 
গোড়ার দিকে বেশ ভাল খেলছিলো আর আঁশা কর! 
গিছলো৷ তারা হয়ত লীগচ্যাম্পিয়ান হ'তে পারবে কিন্ত 
শেষরক্ষা ক'রতে পারলে না। এবারের লীগে তাঁরাই 
সবচেয়ে কম গোল থেয়েছে মাত্র ৮টা। এবার 


সেপ্টজেভেরিয়ান্সদের অবস্থা বড়ই শোচনীয়; তাঁরা ১৪টা 
থেলে মাত্র ১ পয়েন্ট পেয়েছে অর্থাৎ একটি দ্র ক'রে বাকী 
সবকটা হেরেছে । তারা গোল দিয়েছে ৪টে আর খেয়েছে 
৩৪টা দ্বিতীয় বিভাগের লীগে কালীঘাট অদ্ভুত খেলছে। 


ঙ 


অনুগ্রহে এবারও প্রথম বিভাগেই রয়ে গেল। তিন বৎসর 
ধরে ক্যালকাটা লীগে শেষ স্থান অধিকার ক'রে আসছে। 


১৩৪৫ সাল 

খেলা জয় ড্র হার পক্ষে বিপক্ষে পয়েণ্ট 
২২ ৪ ৭ ১১ ৯ ২৩ ১৫ 

১৩৪৬ সাল 

২৪ ৩ ৮ ১৩ ২৩ ৪ ৩ ১৪ 

১৩৪৭ সাল 

২৪ ৩ ৮ ১৩ ১৮ ৩৪ ১৪ 


এর পর এ বছর ওঠা নামা বন্ধ কাজে কাঁজেই এবারও 
শেষ স্থান অধিকার করলে নামবে না। আর এবারও যে 
তারা তাঁদের গত তিন বছরের রেকর্ড অক্ষু্ন রাখবে সে বিষয়ে 





এশির়!টিক ভারোক্তোলন প্রতিযোগিতার প্রতিযোগী এবং বিশিষ্ট কর্মকর্ভগণ 


প্রথম বিভাগের অনেক টীমের চেয়ে ভাল। তবে এবার 
কোন লাভ নেই; ওঠা নামা বন্ধ । 


্ুউল্রকন & 


হকির মত ফুটবলেও এবার ওঠ নামা স্থগিত রইলো! । 
আই এফ এর এক সভায় সর্ধসক্মতিক্রমে এই ব্যবস্থা স্থির 
হয়েছে । আই এফ এর ভবিষ্যৎ গঠন সম্থন্ধে বহুক্ষণ 
আলোচন! ও বাদ প্রতিবাদের পর এ বৎসরের মত ও প্রসঙ্গ 
স্থগিত রাখা হর়। ক্যালকাটা ক্লাব আই এফএর সভাদের 


ফটো; তারক দাস, 


আমরা স্থনিশ্চিত। ক্যালকাটা সম্বন্ধে একটা প্রস্তাব পাঁশ 
করিয়ে নিলেই ভাল হ'ত যে, তারা ভবিষ্যতে যতবারই শেষ স্থান 
অধিকাঁর করুক দ্বিতীয় বিভাগে নামবে না। আত্মসম্মান সম্পন্ন 
কোন টাম পর পর তিনবার শেষ স্থানে থেকে এবং এ রকম 
নিকষ্ট খেলা দেখিয়ে প্রথম বিভাগে,থাকতে পারে ব'লে মনে 
হয় না। এতে প্রথম বিভাগের ষ্ট্যাগ্ার্ড নষ্ট হয়ে যায়। 
আগ্গাহমী হুউব্রল খেক & ্‌ 
কলকাতার ফুটবল মরম্থমের এখনও দেরী আঁছে। ভবে, 


ইতিমধ্যে প্রথম পর্ব শেষ হয়েছে। অপেক্ষাকৃত হ্ববিধালাভে 


৬৭৮ 











এবং ভবিষ্যতের সম্মানের লোভে বিভিন্ন ক্লাবের ২০৬ জন 
ফুটবল থেলোয়াড় অন্তত্র ফুটবল খেলবার জন্ত ছাড়পত্র 
আবেদন করেছেন। ইউরোপের নামজাদা ফুটবল 
খেলোয়াড়দের একটা আকর্ষণ আছে। প্রচুর অর্থের 
বিনিময়ে তারা বড় বড় ফুটবল ক্লাবে প্রকাশ্তভাবে নিমন্ত্রণ 
গ্রহণ করেন। ওদেশে ক্রীড়াজগতে সখের খেলোয়াড়দের 
যেন সম্মান আছে তেমনি পেশাদার খেলোয়াড়দেরও 
মত্খান কোন অংশে কম নেই। খেলা উৎকর্ষসাধনে 
পেশাদার খেলোয়াড়দের যথেষ্ট প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, সেটা 
উপেক্ষার নয়। একদিকে যেমন সখের তরুণ থেপোঁঞাড়দের 


স্ডান্রত্তজঞ্ 





[২৮শ বর্--২য় খণ্ড-€ম সংখ্যা 


দেশের জনসাধারণের মধ্যে সম্ভব নয়। অন্লচিন্তার সঙ্গে 
মনের আনন্দের একটা বড় সম্বন্ধ রয়েছে। আমাদের 
দেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে আজ সেই অন্নচিন্তা্ট প্রকটভাঁবে 
দেখা দিয়েছে। কিন্তু চাঁকুরীর বাঁজারে খেলাধুলার মূল্য 
আর কতথানি ! এ অবস্থা দেখে আমাদের দেশের ভবিষ্ত 
খেলোয়াড়দের মধ্যে খেলাধূলার আকর্ষণ কিঞিৎ হাঁস পাবে। 
চিন্তবিনোদনের প্রয়োজনে খেলাধূলা আজ আর থুব বেনী 
খেলোয়াড়কে আকর্ষণ করে না। আমাদের দেশে 
পেশাদার খেলোয়াড়ের চলন নেই, থেলোয়াড়দের পেশাদার 
শ্রেণীভূক্ত করবে এমন কোন প্রতিষ্ঠানও নেই আর ব্যবস্থাও 








৫*নং মুক্তারাম বাবু টস গ্রীযুক্তবাবু শরৎচন্দ্র মল্লিক মহাশয়ের বাটাতে প্রতিষ্ঠিত “মল্লিক টেনিন ক্লাবের” ১৯৪* সালের 
প্রতিযোগিতায় পুরস্কার বিতরণ | ডবলসে বিজয়ী--্রমান্‌ প্রণব ঘোষ ও আনল সেন কটো ডি রতন এও কোং 


উপযুক্ত শিক্ষকের শিক্ষাীনে রেখে উন্নত ক্রীড়া কৌশল 
শিক্ষা দেওয়া হয় অপর দিকে তেমনি বিভিন্ন ক্লাবগুলি 
ক্রীড়ামোদিদের প্রথম শ্রেণীর খেল! দেখাবার জন্তে গ্রচুর 
অর্থের বিনিময়ে খেলোয়াড়দের পেশাদার দলভুক্ত 
করেন। খেলাধুলা নিতান্তই সখের এরং অবসর অময়ের 
চিত্তবিনোধনের প্রয়োদনই ইহার ঘথেষ্ট এ সস্কার আমাদের 
মম খেকে দূয় না হলে খেলাধূলার একটা ব্যাপক জাগরণ 


নেই। ভূয়া আত্মপম্মীনে আমরা গৌরব অনুভব করি 
এবং বর্ণচোর! আধা পেশাদার খেলোয়াড়দের প্রতিষ্ঠানগাঁল 
যথেষ্ট প্রশ্রয় এবং আশ্রয় দিয়ে থাকেন। অপর কোন 
সভ্য দেশের কাঁছে এই শ্রেণীর আদর্শের কোন মূল্য নেই। 
কুস্তিবীর এবং ক্রিকেট. থেলোয়াড়দের চাকুরী দিয়ে 
খেলাধুলায় উৎসাহ দান করার বনিয্নাদী খেয়াল দেশীয় 
প্লাজাদের মধ্যে অনেকদিন থেকে রয়েছে। আমাদের 


বৈশাখ--১৩৪৮ ] 





দেশের যে ঈব প্রতিষ্ঠান জাতীয় স্বাস্থ্য উন্নতির জন্ত আগ্রহণীল 
তাদের প্রধান কর্তব্য খেলোয়াড়দের অন্নচিস্তার সমস্যা দূর 
করা। এ বুহৎ ব্যাপারে তাদের ছাড়াও অপর অনেকের 
যে কর্তব্য আছে তা আমর! ভাল ভাবেই জানি। তবে 
যে পরিমাণ কর্তব্য তাদের আছে সে কর্তব্যে তাঁরা যে 
একেবারেই উদাসীন রয়েছে সে বিষয়ে নিশ্চিত। আজ 
পেশাদার-থেলোয়াড় দলে যোগদান করা খেলোয়াড়দের যথেষ্ট 
প্রয়োজন হয়েছে । সেটা কেবল মাত্র আথিক ব্যাপারে 
নয় খেলার উতকর্ষলাতের দিক দিয়েও । পৃথক সমাজ 
হলেও সথের এবং পেশাদার খেলোয়াড়দের ক্রীড়ানৈপুণ্য 
সমভাবেই ক্রীড়ামোদিদের চিত্তবিনোদন করবে যদি শিক্ষা- 
দানের কার্পণ্য আমরা না করি। খেলোয়াড়দের সখের 
এবং পেশাদার এই ছুই দলে বিভক্ত করলে বর্ণচোরাঁদের 
প্রভাব হ!স পাবে, প্রথম শ্রেণীর ত্রীড়াচাতুর্যের সঙ্গে আমরা 
পরিচিত হব। এবিষয়ে দেশীয় 'প্রতিষ্ঠানগুলির কম্মকর্তাদের 
সহযোগিতার একান্ত প্রয়োজন-__-আশা করি তাঁর! ভবিষ্যতের 
কথ ভেবে সচেতন হবেন। 

বিশিষ্ট থেলোয়াড়দের ক্লাব পরিবর্তন-- 

এরিয়ান্গ ক্লাবর এ ভৌমিক ও কে প্রসাদ, কা'লীঘাট 
রবের 'এস জোসেফ ও ধীরাজ দাস, ইষ্টবেঙ্গল ক্লাবের 
গোলরক্ষক ডি সেন এবং মহারাণ! ক্লাবের ব্যাক এম সি 
দাস মোহন বাগান ক্লাবে যোগদান করেছেন । এরিয়া 
ক্লাবে এসেছেন অনেক গুলি উদীয়মান খেলোয়াড়। কালীঘাঁট 
ক্লাবে মোহন বাঁগানের ব্যাক পি চক্রবর্তী ও মহারাণা 
ক্লাবের গোলরক্ষক বি বল এবংসর খেলবেন। ইষ্টবেঙ্গল 
ক্লাবে গোলরক্ষক কে দত) কালীঘাঁটের আঙ্লারাও ও রামালু 
যোগ দিয়েছেন। ভবানীপুর ক্লাবে গেছেন মহাঁমেডান 
ম্পোটিং ক্লাবের সুজাতালী এবং কাঁলীঘাটের কাইজার। 

মহাঁমেডান স্পোটিং ক্লাবের নামজাদা একজন ব্যতীত 
সকলেই রয়ে গেছেন। তার উপর ক্লাবের শক্তি বাড়ান 
হয়েছে ই বি আর দলের ওসমান ও ইঞ্টবেঙ্গলের সাঁজাহানকে 
নিয়ে। জানা গেছে এবৎসর নাকি বিশিষ্ট খেলোয়াড় 
ওসমান নিয়মিত খেলবেন । 

থেলোয়াড়দের ক্লাব পরিবর্তনের ফলে মোহনবাগান, ইষ্ট- 
বেঙ্গল এবং মহামেডানম্পোটিং দলের শক্তি বৃদ্ধি গেয়েছে। 
কালীঘাট ক্লাবের বিশিষ্ট খেলোয়াড়রা ভিন্ন ভিন্ন ক্লাবে যোগ- 
পান করায় তাদের দলের শক্তি হাঁস পেয়েছে । যদিও ছু'এক- 
জন বিশিষ্ট খেলোয়াড় দলে এসেছেন । তবে বন্দিন যাবৎ 
নামজাদা খেলোয়াড় আমদানী করেও তারা বিশেষ কিছু 
করতে পারেনি । 
ঞম্শিসাডিক ভাল্লোত্ভোলন্ন 

প্রভ্িতোগিভা। & 

নিখিল ভারত ভারোত্তলন গ্রতিযোগিতার নাম পরিবর্তন 

ক'রে এ্রশিয়াটিক ভারোজিলিন নাম দেওয়া! হয়েছে ।. নামের 


ঞ্ধেকলা-ুকলা 


৬৩৪, 











গুরুত্বের সঙ্গে সঙ্গে যদি পরিচাঁলকমগ্ডলী এশিয়ার বিভিন্ন 
স্থান থেকে প্রতিনিধি যৌগদানের ব্যবস্থা করতেন অথবা 
সত্যসত্যই যদি এশিয়ার বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য স্থান থেকে 
প্রতিনিধিরা যোগদান করতেন তাহলে এরূপ নামের যেমন 
একটা গুরুত্ব বজায় থাকত তেমনি পরিচালকমগ্ডলীর 
সম্মানও অন্কু্ থাকত । 

আমরা জানিনা তাঁরা অদূর ভবিষ্কতের কোন ভরসা 
পেয়েছেন কি না! পেয়ে থাকলেও পূর্বাহ্ছেই নাদের 
আমূল পরিবর্তনে ক্রীড়ামোদিদের চোখে চমক লাগানো 
ছাঁড়া প্রতিযোগিতার এত বড় নামের আর কিছু গুরুত্ব 


আছে বলে ত আমাদের মনে হয় না। বিশেষতঃ যখন এবারের * 


প্রতিযোগিতাটিকে সমগ্র ভারতবর্ষের একটি প্রতিনিধিমূলক 





ইতিয়ান লাইফ সেভিং সোসাইটির এথলেটিক ম্পোর্টসের টাম ্যাম্পিয়ান- 
সীপ বিজয়ী সাউথ এগু পার্ক ইনঃ দল ফটো1£ পাস সেন 


হিসাবে তারা গৌরবান্বিত করতেও পারেননি । প্রতি- 
ধোগিতার বিভিন্ন বিভাগে বাঙালী ভারোতুলনকারিগণ 
বিশেষ সাঁফল্যের পরিচয় দিয়েছেন । এ সাফল্যে আমরা 
সাময়িক আনন! প্রকাশের সুযোগ হারার না কিন্ত এটাই 
আমাদের সবথেকে বড় নয়। ভীরোতিলনের বিজ্ঞানসম্মত 
কৌশল উপযুক্ত ব্যায়াম প্রতিষ্ঠানের অভাবে আফাদের দেশে 
এখনও ব্যায়ামবীরদের কাছে অজ্ঞাত রয়েছে। অর্থের 
গ্রয়োজনকে স্বীকার করলেও ব্যায়াম * গ্রতিষ্ঠানগুলির যে 
একা উৎসাহ এবং কর্মগ্রচেক্টার অভাব রয়েছে একথ 


/ 


৬৮৪ 


অন্বীকাঁর করবার নয়। অনুষ্ঠানের বাহিক আড়ঘরটাই 
আমযন] সাধারণের কাছে আকর্ষণীয় বন্ত করে তুলি। এন্দপ 
প্রতিষ্ঠানই আমাদের 
দেশের জাতীয় স্বাস্থ্য 
গঠনের ভার নিয়েছে-_ 
তাঁদের সংখ্যাধিক্যই 
আমাদের চিন্তার কাঁরণ। 
বাগবাজার জিমস্তাসিয়াম 
ক্লাবের উপর আমাদের 
যথেষ্ট আস্থা আছে, আশা 
করি ক্লাবের পরিচালক- 
মণ্ডলী এবিষয়ে সচেতন 
থাঁকবেন। 


গ্ররতিষেগিতার ফলাফল £ 


ব্যাণ্টম ওয়েট £ ১ম 
জি মল্লিক। ছুইহাঁতে 
মিলিটারীগ্রেস,ক্স্যাচ,ক্রিন 
ও জার্ক-মোট ৪৮৪: 
পাউওড। 
ফেদার ওয়েট £ ১ম-_ 
ব্জয়কৃষ্ণ বন্গু। দুইহাতে 
মিলিটারীপ্রেসঃ ন্স্যাচ, 
কিন ও জার্ক__মোট ৪৭৭ 





মিস্‌ এক! (ন্বটিন কলেজ) ইন্টার 
কলেজ মহিলাদের স্পোটসে 


ভাব্রভন্বন্্ 


[ ২৮শ বর্ষ-_২য় খণ্ড সংখ্যা 


লাইট ওয়েট £ ১ম--এ গফুর। ছুইহাঁতে মিলিটারী- 
পরের ব্যাচ ক্লিন ও জার্ক- মোট ৪৮২ পাউও। 

মিডল ওয়েট £ ১ম-_-এ কে সেন। দুইহাতে মিলিটারী- 
প্রেস, ন্যাচ, ক্লিন ও জার্ক-_ মোট ৫৫৫ পাউও। 

লাইট হেভী ওয়েট £ ১ম- সুবল ঘোষ। ছুইহাঁতে 
মিলিটারী প্যাচ, লিন ও জার্ক--মোট ৫০* পাউগ্ড। 

হেভী ওয়েট ঃ ১ম-পি জি উইলিশ। দুহাতে 
মিলিটারী, ন্ন্যাঁচ, ক্লিন ও জার্ক-_মোট ৫৫৫ পাঁউও। 
ল্রাক্লিকাকেকল্র ইণ্টাল্ল-কু্ল 

ল্যাম্পিমলানসীশ ৪ 

সিনিয়ার £--কমল! হাই স্কুল__৪৮ পয়েণ্টস 

জুনিয়ার £-_ প্রেসিডেন্সি স্কুল--৩৮ » 

ইণ্টারমিডিয়াট লেক স্কুল-_ ৮৩ ॥ 

ব্ক্তিগত চ্যাম্পিয়ানসীপ £ কুমারী উম বস্থ (ক্রা্গ 
স্কুল )--৩৬ 

ইণ্টারমিডিয়াট £__কুমারী নমিতা পাল ( পেয়ারীচরণ 
গার্লস স্কুল )--২৪ 

জুনিয়ার :__কুমীরী ডলি সেন (মডেল একাডেমি )--২৪ 

ভ্রমসংশোধন $ গতমাসের খেলাধুলায় অল্প সময়ের 
মধ্যে প্রুফ দেখার দরুণ কিছু কিছু তুল রয়ে গেছে। ৫৪* 
পৃষ্ঠার একটি ব্লকের নীচে টেবল টেনিস-.. “অরুণ গুহ” ছাপা 
হয়েছে। এ স্থানে ণঅরুপ ঘোষ হবে। ৫৩৫ পৃষ্ঠায় 
গোঁপালম-এর স্থানে গোপলন এবং ৫৩৬ পৃষ্ঠায় ডানদিকের 
কলমের দ্বিতীয় লাইনের “অপর” কথাটি “কয়েকজন/-এর 


ব্যক্তিগত চ্যাম্পিয়ান- 
শীগ বিযরিনী পাডিগু। পূর্বে বসবে অর্থাৎ কথাটি “অপর কয়েকজন” হবে । 
মাহিত্য মধবাদ 
ননব-শ্রক্যাম্পিভ গুত্ডকান্বরশী 


ত।রাপস্কর বঙদযোপাধ্যার প্রণীত গল্পপুস্তক “তিন শু্ট”--২২ 

শাস্তিনধা ঘোষ প্রণীত উপন্যাস ৪ ১৪৩৩ সাল*্”২।, 

নন্দগোপাল সেনগপ্ত প্রণীত উপগ্ভাস “ধে য়া”--২২ . 

রামপদ মুখোপাধ্যায় প্রণীত উপন্াস “প্রেম ও পৃথিবী”--২॥ 

মপিলাল বন্দ্যোপাধ্যায় প্রণীক গ্গল্পদাছুর বৈঠক”--/০ 

সর়োজনাথ ঘোষ প্রণীত “কুয়ে! ডেভিস” বা কোথা যাও--২২ 
এ ভ্বিতীয়--২২ এ আ--২২ 

, আতিলাল দা প্রণীত “বন্ধন ও মুক্তি”-_২২ 

শিবয়াম চক্রবস্তী প্রণীত “মেয়েদেয় মন”---১।, 

বীরেম দাশ এম, এ প্রণীত “ষ্টালিন”--১২ 

শিষেম্রমাধ গুপ্ত গুগীত “বৈফব 'কবিতার় রন”--১।১ 

. রাধারমণ দার. প্রণীত “ততিমুর্তির চক্রান্ত”--/* 


শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় প্রণীত চিত্রোপন্তাস “পথ বেঁধে দিল”--১।* 
্নিত্যনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রণীত নাটক “ভূল”--১২ 

মধুহুদন চট্টোপাধ্যায় প্রণীত “সমুস্্র”--১২ 

বাণী দাস প্রণীত “প্রাথমিক বেহালা শিক্ষ1”-_১।* 

শৈলেন রার ও কৃষ্ণচন্ দে প্রণীত "হারের মাল”-_১২ 

বুদ্ধদেব বন প্রণীত “ফেরিওল! ও অন্ভান্য গল্ল”--১।* 

বিধায়ক ভ্টাচার্ধ্য প্রণীত নাটক “কুহকিনী”--১২ 

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যার প্রণীত উপন্যাস “বেণীগির ফুলবাড়ী”--২, 
অসমঞ্জ মুখোপাধ্যায় প্রণীত “মিস্‌ মায়! যোডিং হাউস"-_-২. 
প্রঅরবিন প্রণীত “যোগ সাধনার ভিত্তি"--১/* 

মণীল্গনাথ পাল বি-এ প্রণীত “লুণ্ত রাজপুরীর রছন্ত”--1/ 
গ্রীজ্যোতিশ্চল রায় প্রণীত “কৃষ্ণ-গায়িক।”--৬* 





স্পপীদক-__ ভীফলীন্্রনাথ মুখোপাধ্যায় এম-এ 


তাপ পপি পর স্ব সস কপ পপ পপ এল প্র ্্াাস্ 


:২৯০১।১। কর্ণগয়ালিস্‌ ্রীট, কলিকাতা, ভারতব্ধ শিং বদ হইতে জীংগা বিপদ টাচ বরতৃক দিত ও প্রকাশি 





১-১২০১৮৮।এ১ 





6ত্জ7ভউ--৯৩০৪৮৮ 


দ্বিতীয় খণ্ড 


আটাবিংশ বর্ষ ূ 


ষষ্ঠ সংখ্য! 


8৪৪85881188888888868888888888888888888888885788687888888818888888888888888888888588888888881888886888888888888888888888888888888888888888888888888 85888888888 88886 88888 8888888868888888888586889 781888868 উনি 


ভাগবত-জীবন 


( প্বীঅরবিন্দের [.ভি [01116 ্রাস্থের সর্বাশেষ পরিচ্ছেদের মূল কথ! ) 


শ্রীচারুচন্দ্র দত্ত 


[6 1015106 গ্রন্থের গ্রথম খণ্ডের আরস্তে শ্রীঅরবিন্দ 
বলিয়াছেন যে মানব বহু বহু যুগ পূর্বেই সন্ধান 
পাইয়াছিল--জরা মৃত্যু শোক তাঁপ সুখ দুঃখের অতীত 
এক দিবা জীবনের, দিব্য লোকের। শুধু যে সন্ধান 
পাইয়াছিল তাহা নহে, সেই উর্ধতম লোকে যে সে 
উঠিতে পারে--এরূপ প্রতীতিও তাহার জন্মিয়াছিল। 
সেই অর্ধপরিণত আদিম মানব আর নাই, আজ তাহার 
বুদধিবৃত্তি তীক্ষ ও মার্জিত, সে প্রকৃতির সহিত অহরহ যুদ্ধ 
করিয়া জয়ী হইয়াছে, প্রাকৃতিক শক্তিসমূহ আজ দাসী-বাদীর 
মত তাহার আজ্ঞাপালন করিতেছে । শুধু তাহাই নয়, 
মনোরাঁজ্যেও তাহার শক্তি অগ্রতিহত, তাহার দৃষ্টি আজ 
বদুরপ্রসারিত। সে পরিবার. গোষ্ঠী; জাতি প্রভৃতি 
ক্রমবর্ধমান ক্ষুত্র ক্ষুদ্র সংঘটনে কৃতকাধ্য হইয়া মহাজাতি 


আই-সি-এস্‌ (অবসরপ্রাপ্ত ) 


সংঘটনে মনোনিবেশ করিয়াছে, জগতব্যাপী এক অথণ্ড 
সম্মিলিত রাষ্ট্রেরও স্বপ্ন সে আজ দেখিতেছে। এই 
পরিচ্ছেদে শ্রীঅরবিন্দ মানবের বহুসহস্্বৎসরব্যাপী সংগঠন 
প্রচেষ্টা, একটার পর একটা বিষ্লেষণ করিয়া দেখাইয়াছেন, 
কেন মানুষ সমগ্র নরজগতের মঙ্গলের জন্ত এক হইতে পারে 
নাই, গলদ কোথায় এবং কেন” : 

জড়বন্ত হইতে যুগযুগাস্তর্যাঁপী ক্রমিক পদ্মিণতির ফলে 
যেরূপ পূর্ণদেহ পূর্ণমস্তিষ্ক মানবের উদ্তব হইয়াছিল, তেমনই 
আজ বহু শতাবী ধরিয়.সেই বুদ্ধিজীবী পূর্ণমানবের সামাজিক 
ও রাষ্বীয় অভিব্যক্তি চলিয়া আসিয়াছে । এই সমস্ত 
সময়টা মানুষ 'য মরীচিকার পশ্গতে ধাবিত হইয়া তাহার 
'আদিমতম দিব্য আম্পৃহীকে (89019001) তুলিয়াতরহিয়াছে, 
তাহাও ঠিক নয়। বরং যগে যগে নানারূপে সে বিশ্বারতীত 


৬৮১ 


চত 


৬৮২, 





পরম সত্যের লঙ্গিকটস্থ হইতে চেষ্টা করিয়াছে । কখন 
তাহার প্রহিক ও আধ্যাত্মিক লক্ষ্য এক হইয়াছে, কখনও 
বা সে ছুই বিভিন্ন পথে অগ্রসর হইতে চেষ্ট! করিয়াছে । 
তথাপি উর্ধগমনের এই ষে মানুষের নানামুখী প্রচেষ্টা, ইহ! 
এপর্যন্ত ব্যর্থ হইয়াছে বলিলে তুল হয় না। কেন, তাহা 
শ্রীঅরবিন্দ এই পরিচ্ছেদে বুঝাঁইয়াছেন। 

মানবজাতির সংস্কৃতির অভিব্যক্তি নির্ভর করিতেছে, 
ব্যক্তিগত যোগ্যতা ও উৎকর্ষের উপর-_0৩ 1701%1089] 
15 110690 01১6 1557 ০ 08 
01056176170, কারণ, ব্যক্তিগত মাঁনবচেতনা অন্তমু'খী 
হইবে, তাহীর মধ্যে পরম সত্যের আলোক অবতরণ 
করিবে, তবে না সমগ্র জাতির মধ্যে ভাঁগবত-জীবনের 
প্রতিষ্ঠা ঘটিবে। 

অত এব প্রথমেই দেখিতে হইবে যে, অচেতন বা অবচেতন 
জড়জগতের আবেষ্টনে যে আমাদের মত একটা সচেতন 
সত্তার অবস্থান-_-তাহাঁর অর্থ কি, তাহার পশ্চাতে কি সত্য 
নিহিত রহিয়াছে? এই অবস্থান, এই অস্তিত্ব কি জড়শক্তির 
খেলা মাত্র বা বিশ্বকম্্ীর খেয়াল মাত্র? 

[6 07515 15 2 13911700026 15 1060017)11759 & 
75911 0£ 5315657700 0)%0 15 01010111702 15011 0) 
[1106১ 1796 00808511065 0780 1২551107 590150) 


19১ 15 ৬1126 ৮০ 1026 10 19200106১50 10 0০0128 
15 ০01 116555 507712521706, 


যদি ইহা সত্য হয় যে এক অথণ্ড অনন্ত সৎ দেশকালের 
মধ্যে বুরূপে ব্যক্ত হইতেছেন, তাহ! হইলে সেই অখণ্ড 
সতের যাহা যথা স্বরূপ, সেই স্বরূপ আমার্দিগকেও লাভ 
করিতে হইবে। ইছাঁই আমাদের ইহজীবনের তাৎপর্য্য। 
এক সতের বন্থ্রূপে প্রকট হওয়ার পশ্চাতে যে সত্য, তাহাই 
আমাদের জীবনের অর্থ। 'সেই অর্থের দ্বারাই নির্দিষ্ট 
আমাদের নিয়তি । এই যে নিয়তি, ইহা আমাদের বর্তমান 
সত্তাতে বীজরূপে অন্তনিহছিত, যদিচ আমরা তাহা উপলব্ি 
করি না। শ্রারবিন্দ বলিতেছেন, 081 0650117 15 


5013)501)1105 00208116805 5501515 11 05 25 ৪ 
10606991 200 ৪ 00121701811), 
চি 


দেশকালাতীত বস্তর দেশকাঁলের সীমার মধ্যে যে 
পরিণতি ঘটিতেছে, তাহার মূলে ছুইটী তত্ব চেতন! ও 
্রাণশক্তি। এই ছুই 'তত্বকে প্রীঅরবিন্দ বলিতেছেন 


ঢ৬০101012915 


রি 





[ ২৮শ বর্ষ--২য় খণ্ত-_ষষ্ঠ সংখ্যা 





/তয-/০105 0০ 51786 15 06105 ৮/011590 006 1 
[700৩. এই তত্ব ছুটীকে বাদ' দিলে জড়জগতের কোন 
অর্থ থাকে না,বিশ্ব হইয়া যায় একটা! আকম্মিক ব্যাপার 
বা নিশ্চেতন জড়শক্কির ক্রীড়া । 

তবে আজ আমাদের চেতনা ও প্রাণ যাহা, তাহাই 
শেষ কথা নয়। কেন না-তাহারা ত অপরিণত, তাহাদের 
ক্রমোত্তরণ চলিতেছে । মানবের মন, মানবের চেতনা 
অপূর্ণ ও অবিষ্ঠাচ্ছন্প। এই চেতনার আরও অপূর্ণ রূপ 
পূর্বেব ছিল, পূর্ণপরিণত রূপ 'ভবিষ্ততে আসিবে-_ 5৩1 
10101009015, জ্যোতিম্মান। আমাদের যে চেতনা ভাগ 
মূল নিশ্চেতন অবস্থা হইতে বাহির হইয়া আসিয়াছে, এখনও 
অজ্ঞাঁন-আচ্ছন্ন। এই অবস্থা হইতে স্বতঃ-ভাম্বর দিব্যমানসে 
ক্রমোত্তরণ আমরা বুঝিতে পারিব_যদ্দি আমরা উপলব্ধি 
করি যে মূল অজ্ঞানের মধ্যেও এই দিব্যমানস প্রচ্ছন্ন প্রন্পণ্ত- 
রূপে নিহিত ছিল। 

পূর্ণ-পরিণত বিজ্ঞান ম্বভাঁবতই আত্মজ্ঞ, স্বতঃ-ভাম্বর। 
কেন না তাহা চরম সত্যের, পরমাত্মনের চেতনা; যাঁহা 
আমাদের মধ্যে প্রচ্ছন্ন রহিয়াছে ও ধীরে ধীরে প্রকট 
হইতেছে । শ্রীঅরবিন্দের ভাষায়, 1701 1102 ০৮1001711) 
00050 170৪ 006 0011501001517055 01 [176 1২62110 
0) 13611185 0)6501710 01790559015 1705 2110. 
519919 1)2101659611)0 17616, 

চেতনা যদি হয় হৃষ্টির অন্তনিহিত গুঢ় রহস্__তবে প্রাণ 
তাহার বাহক কার্যকরী শক্তি। 


৪100 00710817010 5101, 


[115 15 016 5১:001101 
কিন্তু যেমন আমাদের মন 
অপরিণত ও অপূর্ণ, আমাদের প্রাণও তাহাই । মানবের 
জীবন 1319150 বা অসম্পূর্ণ, কেন না তাহার মন সতের 
চেতনার নিম্নতর প্রকাশ মাত্র। কিন্তু মন পূর্ণতা প্রাপ্ত 
হইলেও তাহার অবাপ্তব্য অনবাপ্ত রহিল, কারণ যে তবের 
বিশ্বে অবতরণ ঘটিয়াছে তাহা মন নয়__ আত্মা এবং 
শ্রীঅরবিন্দের কথায় 10170 15 1706 01১০ 1261%9 
00118178197) ০0£ ০00730100511955 ০0 105 90171 
আত্মীর চেতন! কাজ করে মন দিয়! নয়, দিব্যমানস দিয়! । 
এই দিব্যমানস বা তো10515-এর আবাহনই দিব্যজীবন 
প্রতিষ্ঠার একমাত্র উপায়। 

4১11 50100051185 তি 10105 0117019152 
51090) 1000 0151705 115106,  দিব্যমানসের জাগরণ 


জযযষ্ঠ-_১৩৪৮ ] 


মানেই দিব্জীবনের প্রতিষ্ঠা আধ্যাত্মিক জীবনের 
সুত্রপাঁত। মন ও দিব্যমানসের মধ্যবর্তী সীমা নির্দেশ 
কর! কঠিন। বীধাঁধরা কোঁন সীম! নাই। মনে প্রাণে 
দিব্য আলোকের সঞ্চার আরম্ত হইলেই 676) [১0 ০1) 
০1 1:50906 90170601176 06 075 41511, মনপ্রাণ 
ধীরে ধীরে দিব্যরূপ পরিগ্রহ করিতে আরম্ভ করে, ক্রমশ: 
সমস্ত সন্ত! জ্যোতিশ্য় হইয়া উঠে। কিন্তু পূর্ণ অভিব্যক্তির 
জন্য মনপ্রাণ দেহকে দিব্য আলোকে পুনর্গঠিত করিয়া 
লইতে হইবে, নবীন ভাশ্বর রূপ দিতে হইবে। আবার 
শুধু ব্যক্তিগত পূর্ণতা আদিলেও হইল না। বিজ্ঞানময় 
মানবের সমষ্টি ও সমাজ গঠন করি! স্থা্টির ক্রমোভ্তরণকে 
সার্থক করিতে হইবে। শ্রামরবিন্দের ভাষায়, ৪ ০০1- 


190৮1৬০1106 01 21795015 1991755 9509101151)90 285 ৪ 








10101)250 700/51 970 00110 01 0116 05০01070105 ০01 
আমাদের অন্তরে 
এমন ্বর্গরাজ্য প্রতিষ্ঠিত হইতে পারে যাহা বাহিরের রূপের 
উপর নির্ভর করিতেছে না। অন্তরের জ্যোতি অবশ্য 
কতকটা বাহিরের.কার্ধ্ে প্রতিফলিত হইবে। কিন্তু এরূপ 
হইলেও ব্যক্তিগত মুক্তি ব৷ পরিণতি সাধিত হইল, আবেষ্টন 
অপরিবর্তিত রহিল। ইহাকে 60651 00150101090017 বা 
পূর্ণ অভিব্যক্তি বলা যাঁয় না। শ্রীঅরবিন্দ এই পূর্ণতম 
অভিব্যক্তির লক্ষণ বর্ণনা করিয়াছেন_৪. 126” 
01181010 0112106. 1) 621৮1020015 15619 & 
501710021 0181159 0£ 006 ড11)019 [911701015 2110 
1050000510090017 07116 2170 20010105 07০ 
91005212106 0£ 2 179৮7 01061 ০ 10911165 2174 
৪1767 6810) 119 জড়পগ্রকৃতির জড়তা পরিহারি, 
প্রাণশক্তি ও তাহার ক্রিয়ার আধ্যাত্মিক রূপপরিগ্রহ, 
নবমানবের আবির্ভাব ও জগতে নবজীবনের প্রতিষ্ঠা 
ইহাই হইল চরম পরিবর্তন। ইহার পূর্বের খণ্ড খণ্ড 
পরিবর্তনগুলিকে এই চরমে উঠিবার ধাপ বলা যাইতে পারে। 
এই চরম অভিব্যক্কিকে শ্রমরবিন্দ বলিয়াছেন ৪ £17096০ 
12 0? 0/7812010 115106- জড়তা মাত্রের সম্পর্কহীন 
বিজ্ঞানময় জীবন ধারা । 

বিজ্ঞানময় জীবন সক্রিয় বটে। কিন্তু তথাপি মনে 
রাখিতে হইবে যে, এই জীবনের ভিত্তি ম্বভাবতঃ সর্বদা 
অন্তমু্খী, বহিমুর্থী নয়। এই অন্তমুর্থী ভাব, আধ্যাত্মিক 


00০ 50110111005 671৮ ছে 1০, 


ভ্ঞাঙ্গব্বভ-ভদিম্বন্ম 





৬৮৬২০ 
মূল, 927716021 011519001 ব্যতিরেকে দিব্যজীবন 
সম্ভব নয়। আমাদের বর্তমান বহিমুর্থী জীবনে মনে হয় 
যেন বিশ্ব আমাদের শ্রষ্টা, কিন্ত আধ্যাত্মিক ভাঁগবত-জীবনে 
আমরাই আপনার তথ! বিশ্বের নষ্টা । স্থষ্টির এই মর্ম 
উপলব্ধি হইলে সহজেই বোঝা যায় যে, 1776 116 
অন্তর্জীবনই বড় জিনিম, বাকী যাঁহা-_-তাহা! এই অন্তর্জাবনের 
প্রকাশ ও পরিণাম মাত্র। আমাদের পরিণতি লাভের 
প্রচেষ্টায় এই ব্যাপার স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়। বাহিরের 
প্রকৃতি জড় মূক অন্ধ অবিস্তাচ্ছন্প ; তাহারই মাঝে আমদের 
বাস অথচ আমর! নিরন্তর অনুভব করিতেছি যে অন্তরে 
কি একটা শক্তি আমাদিগকে আবেই্টন অতিক্রম করিয়া 
পূর্ণতার পানে লইয়া চলিয়াছে ! 

্রীঅরবিন্দ বলিতেছেন, ৭0105 0০ 1001 11609 


00017591059 27651 11010 75001581525 217 1152 ৬/101)11 
15 10110 ঠি'50 1790999165 001 0:811910110900 01 
11800102170 01: 09 01511701105. 


আমাদের স্বতাব পরিবর্তন করিয়া! ভাগবত-জীবন 
প্রতিষ্ঠা করিতে হইলে প্রথম প্রয়োজন-_-অন্তর পানে দৃষ্টি, 
অন্তরে প্রবেশ ও অন্তরের অন্তরতম প্রদেশে বাস। সাধারণ 
বহিমু্ধী চেতনার পক্ষে এ কাজ দুরূহ। কিন্ত গত্যন্তরও 
নাই। জড়বাদী বলেন যে দৃশ্যমান বাহিরের জগৎই একমাত্র 
নিরাপদ স্থান, চেতনাকে বহিমু্খী রাখাই ভাল, ভিতরে 
মাওয়া মানেই ত তমসাচ্ছন্ন শৃন্তাতে প্রবেশ, সমতা হারান, 
নিরানন্দ নির্জীব মনোভাব! তাহার মতে প্রাকৃতিক 
জগতংই একমাত্র সত্য, তাহার উপর দীড়াইয়া ভিতরের 
যেটুকু দেখা যাঁয় তাহাই ভাল। এ রকম মন অন্তরুথী হইবে 
কেমন করিয়া! ! 

তেমনই ্ষুত্রচেতা মাহুষেরও গোলযোগ আছে। 
তাহার মন অন্তরের পানে ফিরাইলে সে দেখিবে-_-আপন 
গ্রাণ, আপন মন--[4£5-580১ £710-2০-_আধ্যাত্মিক 
সত্ত। তাহার নজরে পড়িবে না। যে মন নিয়ত বাহিরে 
বাঁস করিয়াছে, তাহার দশাই এই। তাহার অন্তর 
সম্বন্ধে ধারণা বাহিরের অভিজ্ঞতার উপরই গঠিত। 


শ্রীঅরবিনদের ভাষায়) 101)55 & 00175680650 17051179] 
5061161706 11101) 06061005 07) [196 +005106 
০৫1৭ 60: 005 1780511215 ০1 15 061065 


কিন্ত যাহার সত্তার মধ্যে অন্তরে বাসের-_৪. 17015, 





০৪০ 


87151 115176-এর- ক্ষমতা প্রবিষ্ট হইয়াছে, সে ভিতরে 
জন্কারও দেখিবে না শুন্ততাও দেখিবে না। সে 
পরইবে, প্রীঅরবিন্দের কথায়) ৪11 61118175617) 2. 17051) 


0£7167 93:096710100) ৪. €162158 ৮1510175 2 1101061 
06110171) 21016107015 1581 2170 ৮8119050112) 
₹11)80 19. 1175 6%00611017060 0019106. অর্থাৎ 


চেতনার বিস্তার, নব নব অভিজ্ঞতা, হুল্্তর দৃষ্টি, পূর্ণতর 
আনন্দ, সত্যতর বৈচিত্র্যময় জীবন । 

ভিতরে যে নীরবতা ও শৃন্ততা আছে তাহাতে 
ক্ষু্র চিত্ত ভয় পাইতে পারে, কিন্তু সে নীরবতা 
আঁত্বাপুরুষের নীরবতা, তাহা আনিয়া দেয় গভীরতর 
জানশক্তি ও আনন্দ। সে শৃম্ততা শূন্তত! নয়, 
কেন না আধার দেবলোকের অমুতে পূর্ণ হইবে 
বলিয়া তাহাঁর মধ্যের সমস্ত আবর্জনা]! ফেলিয়! দিয়া 
প্রস্তুত করিয়া রাঁখা হইয়াছে । শ্রীঅরবিন্দের অনুপম ভাষায়, 
9116706 15 (116 81161708 01 0) 50106 ৮7110] 15 0176 
001716101০0 & £16261 10110%/15000 1909৮/21 8100 
11155, 016 61009017655 15 07০ 61019017601 006 ০0] 
ত্র: 001 18018] 109176)৪ 1109186101 01 1 
17010 15 001010 ০010091105-750 01056 10 008 106 
160 1101) 617০ ৮1109 01 ০. ক 2 

এই যে অন্তরের মধ্যে বাস, ইহার অর্থ বন্ধন নয়, 
মুক্তি__সৎ হইতে অসতে প্রবেশ নয়, বৃহত্তর মহত্তর 
সত্তাতে প্রবেশ, যথার্থ বিশ্বজনীনতার পানে প্রথম পদক্ষেপ। 
বহিমূ্ধী চেষ্টা দ্বারা বিশ্বচেতনার সহিত এক হওয়া যাঁয 
না। যাহা মনে হয় নিরহঙ্কার, তাহা অনেক সময়ে 
অহস্কারেরই হুল্জতর রূপ মাত্র। বহিমু্থী মানুষ আপনার 
সন্ত, আপনার কল্পনা অপরের উপর চাপাইতে যায়। 
পরের কাঁজ যাহা করিতে যায় তাহা আংশিক স্থায়ী, 
তাহার প্রেরণা অপূর্ণ। কেন না হৃদয় মনের যোগ আছে 
বটে, কিন্তু অভিন্নতা নাই। আপন পরের ভেদ ঘোঁচে 
নাই। শ্রীঅরবিন্দ বলিতেছেন, ০৪ 9০17 095১ 70 
00001506 [05 09175 ০0£ 00)615 85 00192165, 
আধ্যাত্মিক চেতনা আসিলে, আধ্যাত্মিক জীবন প্রতিষ্ঠিত 
হইলে, ব্যাপার সম্পূর্ণ 'বিপরীত হুইয় যায়। কারণ তখন 
প্রেরণা আসে অন্তরের অনুভূতি হইতে, অন্তরের একত্ববোধ 
হইতে, তথন পরও যাহা আপনিও তাহ!। শ্রীঅরবিনদের 


১াঁষায়। 1; 09569 15 2০010717005 ০0115005116 


্চোন্রত্ডন্বঞ্ 


[ ২৮শ বর্ব-_২য় খখ্- যষ্ঠ লংখ্যা 


09011, 217. $111)91 6500021161)05 2100 100105101) ০1 
001)615 1) 001 0%/1) 10911099 210 10101 561056 01 
16211 ৪00 01)61999, 


দিব্জীবনে বিজ্ঞানময় মানব অপরের মন প্রাণ দেহকে 
আপনারই বলিয়া জানিবে। সে কাঁজ করিবে 
বাহিরের দরদ ভালবাসার প্রেরণাতে নয়, অস্ত্রের একত্ব- 
বোধের ফলে, সবার হৃদয়ে যে ব্রহ্ম বিরাজমান তাহার জগ্ত-_ 
[07 60০ 101%106 11 06761752100 016 1)151110 
17 8211. 

1176 £17099010 0611) 11705 1)1075616 001 0119 
11015 0৮৮7 00101106176 91)101) 15 076 10101106111 
০ 010 1015170 1301100 2100 ৬৮111 17 10100) 00611 
[106 10191106101 0118215, 

বিজ্ঞানময় মানব কাজ করে শুধু তাহার আপন হৃদিস্থিত 
নারায়ণের তুষ্টির জন্য নয়, সকলের তুষ্টির জন্য, সকলের 
সার্থকতার জন্ত । আসল কথ! তাহার স্বতন্ত্র সত্তা নাই, সে 
নিজের জন্য কি করিতে পারে ! সে সর্বত্র ব্রহ্মাকে দেখিতেছে, 
বরন্মের ইচ্ছ। পূর্ণ হইতেছে বুঝিতেছে । তাহার কাঁজ মানে 
তাহার অন্তরস্থ দিব্যজ্যোতি ও দিব্যইচ্ছাশক্তিরই কাঁজ। 
71115 01715215811 17 80002. 15 009 18৭ 01 1115 
[015175 1117 এই বিশ্বজনীন ভাবই তাহার ভাগবত- 
জীবনের বিধি। 

ভাগবত-জীবনের প্রতিষ্ঠার জন্ত তাহ! হইলে তিনটা 
বস্তর প্রয়োজন। প্রথম_্যক্তির পূর্ণ পরিণতি অস্তরে, 
বাহিরে । দ্বিতীয়__ব্যক্তি ও তাহ।র আবেষ্টনের মধ্যে 
পূরণ-সঙ্গতি। তৃতীয়__নবীন জগৎ ও সেই জগতে পূর্ণতম 
সমবেত জীবন । 

প্রথমটী আসিলেই দ্বিতীয়টী আসিবে । পূর্ণপরিণত 
ব্যক্তি সহজেই তাহার আবেষ্টনের সহিত সঙ্গতি আনিতে 
পারিবে। কিন্ত জগতে দিব্যজীবন আনিতে হইলে নবীন 
সমাজ, 16৬ ০0120121017 115-এর প্রতিষ্ঠা করিতে হইবে। 
নবীন সমাজ মানে কি? আজ আমাদের যে সমস্ত সমাজ 
গোঠী জাতি রাষ্ট্রাদি আছে তাহ! নয়। এ সকলকে শ্রী 
শ্রীঅরবিন্দ 7175108] ০011501%10/ বাহক সমবায় বলিয়া" 
ছেন। ইহাদের মূলে রহিয়াছে--এক আকাঙ্ষাঃ এক 
সংস্কৃতি, একপ্রকার জীবন ধারা ইত্যাদি। 

বিজ্ঞানদয় মানবের সমাজ এরূপ বাহিক ব্যাপার হইবে 
না। সেখানে ঝগড়াঁঝ'টিঃ বেবনতির কোন সম্ভাবনা! থাকিবে 


জ্যোষ্ঠ--১৩৪৮ ] 


না, মিটমাট জৌড়াতালিরও কোন প্রয়োজন হইবে না। 
তাহা হছইলে সে সমাজের বন্ধন কি হইবে? শ্রীঅরবিন্দ 
বলিতেছেন_ -4১11 111 02 01160 07 00৩ ৪০100101 
0 016 110011-00115010057655 11 01000. ক + 
[1165 111 1961 00610515695 €০ 106 200100010)5105 
0 8 517619 961) 90015 01 8 910515 [২০2110. 


অর্থাৎ ধতচিতের জাগরণে তাহার! এক হইবে। তাহারা 
অনুভব করিবে যে তাঁহার! বহু দেহে একই আত্মার প্রকাশ, 
একই চরম সত্যের বহু রূপ। নে সমাজে শৃঙ্খলা থাকিবে, 
বিধিবিধান থাকিবে, কিন্তু সব আত্ম-নিয়ন্ত্রিত, স্বভাবজাত। 
শ্রীঅরবিন্দের কথায়) 1176 17016 10108010101 076 
009000001] 6%15001709 ৮/০010 02 2, 501 100110105 
০0106 501110081 [01505 007 00050 ৮011 01)610- 
551/55 ০0% 5001702176009515 17 5001) ৭ 116. 
বিজ্ঞানময় জীবের সমাজ গঠিত হইবে তাহারই অস্তনিহিত 
আধ্যাত্মিক শক্তিসমূহের দ্বারা, সমাঁজের জীবনধারা কাধ্যধারা 
হইবে স্বতস্ফৃর্ত ॥ অথচ 10001) 271526101 বাঁ 5/917081- 
0159001 তাহার লক্ষণ হইবে না-_যস্ত্রং হইবে না সে 
সমাঁজ, বৈচিত্র্য থাকিবে বিস্তর, সবাইকে এক ছ'চে ঢালাই 
করিতে হইবে না। অন্তরের অনুভূতি, অন্তরের দিব্যজ্ঞান, 
অন্তরের প্রেরণ] থাকিবে এক, কিন্তু তাহার প্রকাশ হইবে 
নানারূপী, বিচিত্র। তথাপি সে সমাজে কোন বিরোধ বা 
বিশৃঙ্খলতা৷ ঘটিবে না । ঘটিতে পারিবে না। কারণ অন্তরে 
যে একই সত্য সদাজাগ্রত! শ্রীঅরবিন্দের ভাষায়, « 
01%61:5107 ০০001 1100) 01001101056 210 0176 
11000 01116 ৮0910 02 00116126101) 2170 1701 217 
010091601. ব্যক্তিগত মতামত, ব্যক্তিগত ইচ্ছা, ব্যক্তিগত 
স্বার্থের ধাকীধাক্কি ধ্বস্তাধবন্তি সেখানকার দিব্যশাস্তি নষ্ট 
করিবে না। সবটা হইবে একই সত্যের একই আত্মনের 
বিচিত্র বিকাশ, খাঁটি সোনা, অহমিকাঁর থাঁদ তাহাতে 


থাকিবে না। শ্রীরবিন্দের কথায়, 70 62০ 10515061100 
01) [9615018] 1028. 2190 109 0051) 2100 01810001 
06 [35:501798] ৬11] 2110 17051551. বিশ্বজনীন ভাবের 


সাথে থাকিবে একটা ব্যক্তিগত নমনীয়তা, অন্তরের একত্বের 
সাথে থাকিবে বাহিরের বৈচিত্র্য | বাহিরের রপের অন্তরের 
সত্যের উপর কোন প্রভাব থাকিবে না । বিজ্ঞানে জাগ্রত 
£10961০ মানবের তার আবেষ্টনের সঙ্গে অমঙ্গতি কিছুতেই 
হইবে না, যাহাই কেন তাহার স্থান হউক না 1০900 সমষ্টির 





ভাগ্গবভজ্ষীবন্ন 


৬৮৬ 





মধ্যে। প্রয়োজনমত সে নেতাও হইবে নীতও হইবে, 
নিয়স্তাও হইবে দিয়ন্ত্রিতও হইবে, সে জানিবে কথন কি করা 
চাই সমষ্টির জন্ত, সবই তাহাকে সমান আনন্দ দিবে। 
একত্ববোধ ও সঙ্গতি দিব্জীবনের বিধান ও লক্ষণ 177 
69081281716 19, 
এই ভাবে মানুষ মনোময় জগৎ হইতে বিজ্ঞানময় জগতে, 
উন্নীত হইবে। অবিদ্যা অজ্ঞান হইতে আধ্যাত্মিক জ্ঞান 
ও বিশ্বজ্ঞানে উঠিবে। উত্তরণ অবশ্ঠস্ভাবী, কেন না সেই 
উন্নততর ন্বভাব, 98107 17900, তাহারই আপন স্বভাব, 
যদিচ তাহার বর্তমান চেতনার অগোচর। অজ্ঞানে 
অবস্থিত থাঁকিয়া আমরা! যে জীবনধারা প্রবর্তিত করিতে 
পারি তাহাতে জীবনের পূর্ণতা আসিতে পারে না । যাহা গড়িয়া 
তুলি তাহাতে ভাল, সুন্দর যে একেবারে নাই তাহ! নহে, 
কিন্ত বেশী রহিয়াছে মন্দ ও অন্গন্বর | শ্রীঅরবিনের ভাষায়, 
৪০017500061 17216 10161707555 00160 ৬10 
0000) 072 15 70176 810 0010%617 ৪10 
01111910099. ফলে আমাদের গঠিত সংস্থাগুলিও তাহাদের 
কার্ধযধারা স্থায়ী হয় না, কিছুকাল কাজ করিয়া ধবংসপথে 
যায়। 100001160 ০0156000 
১০৩০০-এআমর! নিজেরা অপূর্ণ, পূর্ণ জিনিষ গড়িব 
কেমন করিয়া! সংঘটনগুলি বাহিরে কার্যকরী দেখাইতে, 
পারে, কিন্তু টিকে না। 
আমাদের প্রকৃতি, আমাদের চেতনা, এরূপ যে আমরা 
পরম্পরকে চিনি না, জানি না, আমর! পরম্পর বিচ্ছিন্ন 
বিভিন্ন_-£0050 17. 01৮1060 62০. নানা সমস্ির মধ্যে 
আংশিক সঙ্গতি হয়ত আমর! আনিতে পারি, একটা সামাজিক 
'হতিও সাধিত করি, কিন্তু মোটের উপর আমাদের 
পরস্পরের সম্বন্ধ ক্রমাগত ,বিকৃত হইয়া! যায় পূর্ণ দরদের 
অভাবে, পূর্ণ বোঁঝাপড়ার অভাবে, ভুল বোঝার দরুণ; 
অসন্তোষের দরুণঃ বিরোধবিবাদের দরুণ-_1১) 170161501 
57710109075 10009166500 0170515091001065 1 £1055 
001901170150817011659501055 01500705017118[0131065থ 
এ ছাড়া আর কি হইবে যতক্ষণ না আত্মজ্ঞান প্রতিষ্ঠিত 
হয়, অন্তরে একত্বের অন্ুতব না আসে! আমরা যাহা 
গড়ি তুলি, তাহা জোড়াতালি-গোছের, * একতা-_ 
০০7505015৫ 8110- ব্যক্তি ও ব্যক্তিগত স্বার্থের সমবায়; 
আইনকলান্গনের চাপেই সে একতা! বজায় থাকে । আত্ম? 


৬/০ 08101001 


৬৮৬ 


ও অন্তরের একত্ববৌধকে ভিত্তি করিয়া আমাদের প্রকৃতিকে 
তাহার সীম! অতিক্রম করিতেই হুইবে, তবে না আমাদের 
জীবন হইবে সমঞ্জস ও হন্দর ! যদি তাহা ন! হয়, যদি 
আমাদের প্রকৃতি যাহা আছে. তাহাই থাকে, তাহা হইলে 
জীবনের পূর্ণ পরিণতি অসম্ভব স্থায়ী সুথও মানুষের অনুষ্টে 
নাই। কোন রকমে জোড়াতালি দিয়া ইহলোকে যেটুকু 
স্থখ পাওয়! যায় তাহাই লইয়া! সন্তষ্ট থাকিতে হইবে । যথার্থ 
স্ুথ ও পুর্ণ জীবন লাভ করিবার রন্ঠ কোন উর্ধতর লোকে 
যাওয়া পর্য্স্ত অপেক্ষা করিতে হইবে । নতুবা কোন নিগুগ 
নিরঞ্জন সভার মধ্যে লীন হইয়া নিক্ষিয় সুখশাস্তির চেষ্টা 
দেখিতে হইবে। শ্রীঅরবিন্দ বার বার বলিয়াছেন ষে জগতের 
অভিব্যক্তির পর্যবসান হয় নাই, নিশ্চেতন জড় হইতে আরম্ত 
করিয়া সৃষ্টির যে উর্ধগতি চলিয়া! আসিয়াছে তাহা বর্তমান 
অপূর্ণসতা মানব পর্যন্ত আসিয়া থামিয়া যাইবে কেন? 


ভ্ঞাবন্যঞ্জ 


[ ২৮শ বর্ধ--২র থ্--বঠ সংখ্যা 


সুপ্ত খতচিৎ জাগ্রত হইদেই। 115 00150171021 05500% 
[০ 1791216650 2170 96০0106 0126 50191 1080010-- 
101 1 5 06 1280016 0 001 009 5618 ০001 
50]] 0০০010 105081155 11768৮০1560 ৮/1)016 10910--- 


ইহাই মানবের নিয়তি ; মানবের যথার্থ পূর্ণ সত্তার যে 
প্রকৃতি, সেই পরাপ্রকতিকে মানবের উপলব্ধি করিতেই 
হইবে। আমাদের চাই পূর্ণ চেতনাতে জাগ্রত আধ্যাত্মিক 
জীবন। এই জাগরণের অবশ্থস্তাবী ফল আত্মজান, পূর্ণ 
পরিণত জীবন, চিরন্তন স্থখ ও পরম আনন । ক্রমবিবর্তনের 
পথে এই জাগরণও আসিতে বাধ্য ।% (ক্রমশঃ ) 





* প্রবন্ধে মূল প্রস্থ হইতে ইংরেজী বাকা এখানে সেখানে উদ্ধৃত 
করিয়াছি। ইংরেজীতে অনভিজ্ঞ পাঠক সেগুলি বাদ দিয়া পড়িবেন, 
অর্থবোধের কোন গোলযোগ হইবে না। তর্জর্ম! সর্বত্র দিয়াছি। 
বাহার ইংরেজী বোঝেন তাহার! সবটাই পড়িবেন, ্অয়বিদ্দের 
অনুপম ভাব] ও লিখনভঙ্গীর পরিচয় পাইবেন। 


প্রিয় বান্ধবী শিপ্রা 


শ্রীলতিকা ঘোষ 
গ্রিয় বান্ধবী শিগ্রাঃ আজিকে নিশীথ রাতে-_ দীঘির কৃষ্ণ জলের বুকেতে পল্ম-ফুল-_ 
ঘুম নাই মোর করুণ সজল নয়ন পাতে। গুন্‌ গুন্‌ করে মৌমাছির 'দল পুলকাকুল। 
জ্যোছনায় ভর! ধরণী বিভল সেথায় প্রেমের গুঞ্জনধ্বনি 
চাদ তারে চুমে করি নানা ছল নিশানাথ শোনে আর আমি শুনি 
কৰি জানে শুধু কিসে কানাকানি সেথায় চলে_ আকাশে বাতাসে আধারে আলোকে একই খেলা_ 
নিশানাথ ওগো! নিশিগন্ধারে কিঃ কথ! বলে ! লুকোটুরি আর কানাকানি চলে রাতের বেল! ! 
পূবালি হাওয়ায় নিভে গেল দীপ সোহাগ ভরে-_ রাতের পূর্ব-তোরণে দাড়াল গ্রভাত রবি__ 
শিখা আর বায়ু কোলাকুলি করে ক্ষণেক তরে। সকলের সাথে প্রণাম করিল মুগ্ধ কবি। 
গলি সোনালি আলো! লেগে গায় ওগো! সখি শোন কল্পনা নয় 
তাহাদের প্রেম ধর! পড়ে যায় প্রকৃতির প্রেম প্রাণময় হয় 
্রদীপ লভিল মরণ-মলয় ছুটিয়৷ চলে-_ আড়ি পেতে তাই দেখিলাম সব-_বুঝিলে মিতা-_ 


মধুপের সখী চম্পক রাণী দেখে তা ছলে! 


জাগিয়া যেজন রহিল নিপীথে_-তোমারি নীতা! । 





শটিম্রে 1 -- 


ভদ্র ভিখারী 
শ্রীসৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায় 


সগ্ধ সিনেম! ভাঙ্গিয়াছে। বাহিরে প্রচণ্ড বৃষ্টি । এবুষ্টিকে 
গ্রাহ করিলে যাহাঁদের চলে না, বৃষ্টি মাথায় করিয়া তাহারা 
পথে বাহির হইয়াছে; বাকী লোক সিনেমার লাউঞ্জে ভিড় 
করিয়! ঈাড়াইয়া আছে। গাড়ীতে গিয়! উঠিবে, উপাঁয় নাই ! 
ভিজিয়া একশ! হইতে হইবে! 

পথে রিকৃশ-ওয়াল! ঘণ্টা বাজাইয়া আহ্বান-সক্ষেত 
জানায় ; ফিটন-গাঁড়ীর আপাদ-মন্তক-মুড়ি-দেওয়া কোচম্যান 
বার-বার ফিটন লইয়! সিনেমার সামনের পথে ঘোঁরা-ফেরা 
করে ; ট্যাক্সিওয়াল! থাকিয়া-থাকিয় হ্ণ বাজায় । কেহ সে- 
সব ডাকে সাড়! দেয় না_ লাউঞ্জে দরাড়াইয়া আছে! ছবি 
দেখিয়া সগ্য যে তৃপ্তি-স্থখ, তাহার উপর এযেন অস্বস্তির কাটা! 

পথে একজন বাঙ্গালী ভদ্রলোক । জীর্ণ-মলিন বেশ:'' 
ভিজিয়া চেহারা এমন হইয়াছে যে তাহার পানে চাহিলে 
বুকখানা কেমন করিয়া ওঠে! বেচারীর দু'চৌথে যেমন 
বেদনা, তেমনি আকুল মিনতি ! লাউগঞ্জের বাহিরে আসিয়া 
সকলের মুখের পাঁনে তাঁকায়__কি যেন চায়! মুখে কিন্ত 
স্বর ফোটে না! 

হাত পাঁতিয়৷ বদি কিছু চাঁহিত, এই সব অলস-সৌথীনের 
মধ্যে হয়তো কেহ কিছু দিত! কিন্তসে চাহিল না! 
সকলের পানে তাকা ইয়! ভাবিতেছিল, চাঁহিলে কেন এরা দিবে? 
আমার কিছু নাই, তাহার দায় সম্পূর্ণ আমার ! অপরের কি 
রহিয়া গিয়াছে! সহরে আমার মতে! অভাবগ্রন্তের সংখ্যা 
গণিয়া শেষ করা যায় না! যাহারদদের আছে, কতজনকে 
তাহার! দিবে? কত দিবে? 

এই কথাই সে ভাবিতেছিল। আরো ভাবিতেছিল, 
এই বৃষ্টিতে এত লোক ছবি দেখিতে আপিয়াঁছে.'"ছবি 


দেখিয়া বৃষ্টিতে ফিরিতে পারে নাই...দীড়াইয়া আইস-ক্রীম 


খাইতেছে, চকোলেট খাইতেছে, সিগারেট টানিতেছে! 
এ-সব না খাইলে মানুষের বাধে না." আটকায় না! এ-সবে 
যে-পয়সা অপব্যয় করে সে-পয়সায় আমাদের মতো! কতজন 


ছুঃবেলা পেট ভরিয়া থাইতে পায়! কিন্তু আমরা মুখে 
অন্ন দিতে পারি না৷ বলিয়া সৌথীন-বিলাসীরা' কেন ছাঁড়িবে 
তাহাদের বিলাঁস-লীল! ? 


বৃষ্টির বেগ একটু কমিল... 

ভিড়ের মধ্য হইতে স্থুকুমার সহসা বাহিরে আসিল... 
চারিদিকে চাহিয়! হাঁত নাড়িয়া ইঙ্গিত করিল। সঙ্গে সঙ্গে 
সিনেমার সামনে আসিয়া ঈীড়াইল প্রকাণ্ড মোটর । সামনে 
বসিয়া উদ্দী-পর! ড্রাইভার। সুকুমার চাহিল লাউঞ্জে এক 
সঙ্জিতা তরুণীর পানে; কহিল- এসো" 

তরুণী আঁসিল : এবং সেই বাঙ্গালী ভদ্রলোরটির পাশ 
দিয়া ছুজনে মোটরে চাপিয়া বসিল। মোটর চলিল, 
পশ্চিম দিকে । 

তরুণীর নাম অতসী। অতসী স্থুকুমারের দিদি। 
তাহার বিবাহ হইয়াছে সহরের মন্ত ধনী-ব্যবসাঁয়ী বিদ্যুৎ- 
বরণের সঙ্গে । | 

গাঁড়ীতে উঠিতে গিয়া বাঙ্গালী ভদ্রলোকটির চোখে 
যে-ৃষ্টি অতসী লক্ষ্য করিল, সে-ৃষ্টিতে গভীর হতাশা-_ 
তেমনি আবার অনেকখানি প্রত্যাশা! সে-দৃষ্টি তার মনে 
বিধিল-..মনটা খচ খচ. করিতে লাগিল। 

গাড়ীর পিছন-দিককার কাচ দিয়া দেখিল, লোকটি 
তেমনি দীড়াইয়া আছে.''যেন পাথরের মূর্তি! 

কি মনে হইল, অতসী কহিল-_গাড়ী রাখো! দ্রাইভার-.. . 

দ্রাইভার গাড়ী খামাইল। অতসী কহিল__দেখেছিস 
রে সুকু, সিনেমার সামনে একজন লোক''.গো-বেচারীর 

স্বকুমার বলিল- দেখেছি । 

অতসী বলিল--এই জলে ঠায় ভিজছে !. * বোধ হয় 
কিছু চায়. | 


বেকার ভদ্রলোক" 


২৬৮৭ 


৬১৬৮৮ 


ড্রাইভারকে কছিল--একবার যাও তো দ্রাইভার, 
প্র গরীৰ লোকটিকে ডেকে আনো । 
_ এই জলে নামিতে হইবে..'দ্রাইভার বিরক্ত হইল। কিন্ত 
সে বিরক্তি-প্রকাশের উপায় নাই। চাঁকরি করে : বড়- 
লোৌক মনিব! সে তাকে ভাঁকিতে গেল। 

ভিখারী আসিল। 

অতসী কহিল -তোর কাছে খুচরো টাকা আছে 
নুকু ?...ছুটো ? 

সুকুমার পার্শ খুলিল, বলিল-_না। খুচরো আছে 
পাঁচ-সিকে...বাকী নোট, ! 

_ পীঁচ টাকার নোট. আছে? 

- আছে। 

. শ্াদে একখানা । 

নুকুমার দিল পাঁচ টাকার নোট.। নোট. লইয়া 
অতসী ভিখারীকে ডাকিল। ভিখারী গাড়ীর পাশে 
আসিয়! ধাড়াইল। 

অতমী কহিল__-এই নাও... 

ভিখারী হাত পাতিয়া লইল। পাঁচ টাকার নোট.! 
তাহার ছু,চোখ জলিয়! উঠিল! ভাবিয়াছিল, ছু'্চারিটা পয়সা 
মিলিবে...না হয় বড়-জোর একটা সিকি! তার বদলে পাঁচ- 
পাঁচ টাকার নোট! সে অতসীর পানে চাহিল। 

অতমী তার পানেই চাহিয়াছিল...মমতার দৃষ্টি! 

ভিখারী কহিল-_যদি একটা চাকরি আমাকে গ্ান্‌... 
আমি খুব খাটতে পারি ।.'.আমি ভিক্ষা চাই না-..চাইতে 
পারি না। ভিক্ষা মানুষ কদিন চাইবে? লোকে ভিক্ষা 
দেবের বা কদিন.''তার চেয়ে দু'বেলা ছ'মুঠো বাধা অন্ন 
আর থাকবার একটু আশ্রয়! "পথে পথে আর ঘুরতে 
পারছি না। এ 

বেচারীর কয়লার মতে! কালো চোথ  সে-চোখে 
গভীর হতাশা. .-অতসী বুঝিল ভিক্ষাঁয় এ-লোকটার রুচি 
নাই! অত্সীর মনে চিরকালের যে-নারী বসিয়া আছে:.' 
এই বিলাস-ভূষণ প্রমোদ-হাসির অন্তরালে...সে-নারীর 
মন মমতায় গলিয়! গেল। | 

অতসী কহিল-__কাজ করবে? 

অতসী চাহিল স্থকুমারের পাঁনে। সুকুমার, কাঠ হইয়া 
বৃসিয়া আছে-"'উদাসীন নির্বিকার:-'ভ্রযুগ কুঞ্চিত। 


শ্ান্রভন্যহ্র 


হল স্থ্ প্চ চপ স্হান স্ব সহি খা -স্রন্গ সর খপ থে ব্রা “হ্যা সদা“ স্হান“ থে 


[ ২৮শ বর্ষ-_২য় খণ্-_যঠ সংখ্যা 


সি 





সুকুমার কোনো! কথা কহিল না। 

অতসী চাহি ভিথারীর পানে, কহিল-_কিস্ত 
উপস্থিত তেমন কাঁজ তো নেই ।*"'তা আচ্ছা, পারবে 
বাগানের কাজ করতে ? 

ভিথারী কহিল-__যে-কাঁজ বলবেন, আমি করবো। 

অতসী বলিল-বেশ, তাহলে এসো আমার সঙ্গে । 
' গাড়ীতে উঠে বসো... 

ভিখারী তখনি গাড়ীতে উঠিয়া! বসিল...দ্রাইভারের 
পাশে। ড্রাইভার দু'চোখে আগুন জালিয়া৷ কঠিন ভঙ্গীতে 
ভিথারীর পানে চাহিল । তাঁর এই পরিষ্কার উদ্দী...সে-উদ্দী 
থেষিয়! ময়লা-ভিজা-টুকৃনি-পরা এই ভিথারী .. 

নিরুপায়! পরের ঘরে সে চাকরি করে এবং এখানে 
মনিব-গৃহিণীর এ ব্যবস্থা. 

পাঁচ টাকার নোটথান! অতসীর দিকে ধরিয়া ভিথারী 
বলিল-_এটা রেখে দিন। আশ্রয় আর অন্নের সংস্থান হলো, 
নোট নিয়ে আমি করবো কি? 

অতসী বলিল--রেখে দাও । ভিক্ষা নয়...তোমার 
মাহিনার দরুণ কিছু আগাম-"" 

ভিথারীর ছু'চোখে-."সে যে কি..'দেখিয়। অতসীর মন 
ভরিয়া গেল! 


গাড়ী চলিল । 

মৃদৃকণ্ে সুকুমার বলিল- জামাইবাবু কি বলবেন বলো 
তো? এই দামী গাড়ীতে তুমি ওকে তুললে ! 

হাসিয়া অতসী বলিল-_-এ-সব ছোট জিনিষ তিনি 
চোখ তুলে দেখেন না কখনো! 

স্বকুমার বলিল-__কি কাঁজ ও করবে, শুনি? থাকবে 
কোথায়? 

অতসী বলিল-মালীর লোক চলে গেছে। সে একটা 
লোঁক চাঁয়__সেই কাজ এ করবে। আর থাকবে মালীর 
ঘরের সামনে যে পাকা দালান, সেই দালানে । ক্যাম্প-খাট 
পড়ে আছে বাড়ীতে...তাতে শোবেখন। না হুলে 
ভদ্রলোক..'বাজালী ভদ্রলোক...মালীর মতে! থাকতে 
পারবে না তো! বোধ হয় লেখাপড়া জানে" 'কথাগুলে। 
বেশ তন | যারা 

এ-কথ! ভিখারীর কানে গেল না। গাড়ীতে বসিয়া 


ক্যোষ্ঠ--১৩৪৮ ] 


বন্ধ কাচের মধ্য দিয়া সে বাহিরে পথের পানে চাহিয়াছিল'.' 
আলো-আধারের অম্পষ্ট ঝাঁপটা চোখের উপর দিয়া জলিয়া- 
নিবিয়! সরিয়া-সরিয়! চলিয়াছে..'অত্যস্ত করত বেগে। 

অতসী বসিয়া ভাবিতেছিল, ম্বামী বিদ্যুত্বরণের কথা! 
এই যে অতঙী আজ মমতা-বশে এক পথের ভিখারীকে 
আশ্রয় দিতেছে, ইহা! লইয়া এতটুকু মাথা! ঘাঁমাইবেন না! 
মংসারের কোনো-কিছুতে কোনোদিন তাহাকে পাওয়া বায় 
না। না চান কারো পানে সদয় দৃষ্টিতে...না করেন 
কাকেও রূঢ় ভতসনা '.কোনোদিন নয়! মুখে হাঁসির 
রেখাটুকু সব সময়ে লাগিয়া আছে। হাসির সে-রেখায় 
কাহারো! মনে ছোট একটি দীপও জলে না! তাঁর সে- 
হাঁসি এমন নির্জীব যে সে-হাঁসিতে দুনিয়ায় না হয় কোনো 
লাভ..'এবং সে-হাঁসি নিবিয়া গেলে দুনিয়ার কোথাও 
এতটুকু ছায়! ঘনায় না! তাঁহাঁর এই নিজের জীবনে...স্বামীর 
কাছ হইতে সে কি পাইয়াছে? বিলাস-ভূষণ মান- 
মর্যাদা, সহজ-স্বাচ্ছন্দ্য...এ-সবের কোথাও এতটুকু ক্রুটি 
নাই! কিন্তু'"' 

স্বামী বিদ্যুত্বরণ বিদ্যা-বুদ্ধির জাহীজ-...বিদ্যা লইয়া স্বামী 
প্রাচীন কাব্যের বিচার করিতেছেন, আর বুদ্ধি লইয়া 
বাজারে ব্যবসা-বাণিজ্য চালাইতেছেন। এ বিষ্চাবুদ্ধির সঙ্গে 
দুনিয়ার প্রাণের সংযোগ কোঁথাঁও নাই! অতমসী দেখে, 
স্বামী যেন তুঙ্গ গিরি-পর্বত ! সে-গিরির মহিমা-গৌরবে 
মন মাতিয়! আছে..'কিন্ত ও-গিরির বুকে আশ্রয় পাইবে 
কি, গিরির নাগালই পায় না! 

অতসী বিদুষী। একালের পাশ-করা। এ-বয়সে শ্বামীর 
কাছ হইতে নারীর যা পাইবার কথা, অর্থাৎ নারী যা! চায়, 
মনের পিপাসা মিটাইতে...বিছ্যুত্বরণের কাছে সে তাহার 
কিছুই পায় নাই! 'ম্বামীর এশ্বর্ধ্য-সম্পদের আর-পাঁচটা 
আসবাঁবের মতে। সে একটা উপকরণ মাত্র! দামী মোটর- 
গাড়ী, সৌখীন বাড়ী-্ঘর, দামী সোঁফা-কৌচ-আলমারি- 
থাট-পালঙ-রেফ্রিজারেটরের গর্ষে স্বামী যেমন গৌরব বৌধ 
করেন, রূপসী বিদুষী স্ত্রীও তাঁহার তেমনি গর্ধের সামগ্রী 
এবং এই গর্ধ-গৌরবের আশ্রয়ে সমাজে-সংসাঁরে অতসী 
রত্ব-আসন পাঁতিয়। বাস করিতেছে! 

নিজের নিঃসঙ্গতাঁর বেদনায় জর্জরিত হইয়া অতসী 
কত্তবার.ভাবিয়াছে, এমন করিয়া মানুষ বাঁচিতে পারেনা !'"" 








ভঙ্র ভিম্বাক্রী 





৬৮৪, 








তবু সে এখানে এই বিছ্যাত্বরণের গৃছে তাহার আসবাব 
হইয়া পড়িয়া আছে! এখান হইতে নড়িতে পারে না! 
সমাজে এত মান, এমন সম্ম''এ শুধু স্বামীর জন্য ! 
কাজেই স্বামীর উপর তাহার. কৃতজ্ঞতার সীম! নাই! 

সে-কথ৷ অতঙী আর ভাবে নাঁ। ভাঁবিতে গেলে মাঁথ! 
ঝিম্‌-বিম্‌ করে-..চোঁখের সামনে হইতে পৃথিবী যেন বলের 
মতে! গড়াইতে গড়াইতে কোথায় অদৃশ্ঠ হইয়া যায় ! 

চাদের জ্যোত্লা-ধাঁরা'.'ফুলের গন্ধ" দক্ষিণ বাতাস 
""অতসীর মনকে বার-বার দোলা দেয়...নিজের অঙ্জাতে 
তন্জরীলস-ভরে অতসী আসিয়া! দীড়ায় স্বামীর পাশে... 
স্বামী মোটা-মোট! বইয়ে দুর্গ রচিয়া সে-ছুর্গে নিজেকে 
আবদ্ধ রাঁধিয়াছেন! সে-দুর্গে অতসী গিয়া হানা দেয়, 
স্বামী দু'হাতে ঠেলিয়া তাহাকে সরাইয়া দিয় বলে--কাঁজের 
সময় বিরক্ত করে! না অত্সী'.. এখন যাও." 

সার! মন অশ্রর তরঙ্গে উদ্বেল করিয়া অতসী সরিয়া 
আসে। স্বামীর কাজের সময় কোনোদিন আর শেষ 
হইল না! স্বামীর এক-নিমেষ অবসর নাই অতসীর পানে 
ফিরিয়া চাহিবেন ! নিশ্বাসের বাঁঞ্পে মন ভরিয়া ওঠে ! 
অতসীর মনে হয় বুকখানা' বুঝি এ-নিশ্বাসের চাপে 
ফাঁটিয়া চূর্ণ হইবে! 

প্রাণ চূর্ণ হয় না! মনকে অতসী তাই ছু'পায়ে চাঁপিয়া 
মাড়াইয়া জীবনের পথে চলিয়াছে! মানুষ কি সব পায়... 
যা চায়? এ-জনে অতসী যা পাইয়াছে, তার বেশী 
পাইবার ভাগ্য সে করে নাই! যাপাঁয় নাই, তার জন্য 
দুঃখ করিয়া কি ফল? কাজেই অতপী এদিকে আর 
ফিরিয়া তাঁকায় না !'". 

গাড়ী আসিয়া গৃহে পৌছিল। 

পর্চের সামনে ছিল বিছ্যুত্বরণ। ভিখারীকে দেখিয়া 
বিছ্যত্বরণের চোথে একরাশ বিশ্বময়! অতসী লক্ষ্য 
করিল। বলিল-_-এ লোকটিকে পণে গেলুম। তোমার 
মালীর লোক ছুটী নিয়ে দেশে * গেছে'''তার জায়গায় 
কাজ করবে। রি 

তাহার পর অত্তলী চািল দ্রাইভারের দিকে, বলিল-_ 
একে মালীর কাছে নিয়ে বাও..'আজ থেকে বাহাল হলো। 


রাকা 





৬৪০ 


একে যেন তার বিছানা-পত্র গ্ভায়। ওর জন্ত শুকনো! জামা- 
কাপড় আমি পাঠিয়ে দিচ্ছি বিশুর হাত দিয়ে। 
বিশু খানশাম!। 


রাত প্রায় দশটা। বৃষ্টি থামিয়া গিয়াছে । আকাশ-ভরা 
জ্যোত্না। বারান্দীয় ইজিচেয়ারে বসিয়া! অতদী ..একা । 
ভিখারীর কথ! ভাবিতেছিল। এ-জলে নিরাশ্রয় কোথায় 
পড়িয়া থাকিত-''এখানে আশ্রয় পাইয়। বাঁচিয়াছে ! 

স্ুকুমারের একথান! পুরানে! ধুতি, স্বামী বিছ্যুত্বরণের 
ছাত-কাঁটা একটা পুরানো সার্ট পাঠাইয়া দিয়াছে-..বিশু 
ক্যাম্প-খাট দিয়া আসিয়াছে...মাঁলীর সেই লোকের বিছানা 
আছে মালীর কাছে.*'বলিয়! দিয়াছে- উহাকে দিতে ! 

মনে তৃপ্তির সীম! নাই! সে তৃপ্তিতে মন ভরিয়া! আছে। 
অলস-বিলাসে সারাক্ষণ ডূবিয়া থাকে, আজ মন্ত একটা 
কাজ করিয়াছে..'নিরা শ্রয়কে আশ্রয়-দান ! 

ভাবিতেছিল, ঘরে সে এমন আরামে বাঁস করে__ 
আর বাহিরে উহার মতে! কত নিরাশ্রয়.."কত নিরন্ন 
হাহাকার করিতেছে'.'মাথায় ছাদের একটু আবরণ 
মেলে না! দারিদ্র্যের সে রুদ্র-রূপ স্মরণ করিয়া অতসী 
শিহুরিয়! উঠিশ ! 


পরের দিন। 

নিত্যকার জীবন-ধারাঁয় দেহ-মন ভাদিয়া চলিয়াছে। 
সকালে ঘুম-ভাঙ্গার সঙ্গে সঙ্গে লোকটির কথা মনে পড়িল। 
ভাবিল, একবার গিয়া দেখিয়া! আসে, কৃতজ্ঞতায় বিগলিত 
হইয়া অতসীর পায়ে লুটাইয়া সে কি বলে... 

অতসী ডাকিল-_স্কু'" 

সুকু পাশের ঘরে শেভ, বরিতেছিল, বলিল- কেন? 

অতসী আমিল। কহিল--তোর মনে একটু দয়া-মায়া 
নেই রে? লোকটাকে কাল পথ থেকে নিয়ে এলি, তা 


, তার একটু খোঁজ-খবর নে." 


স্বকুমার কহিল-_-হ'ঃ.''মন্ত মানী কুটুত্-লোঁক . 
সকালে উঠেই যাবে! তান তত্ব নিতে! 

কথাটা অতসীর ভালো লাগিল না। সে বলিল-_না 
হয় গরীব! মানুষ তো! ভদ্রলোক! অবস্থা একদিন 


“ভালোই ছিল হয়তো! 


 স্ডাবে-্ন্হঞ্্ 





[২৮শবর্-_২য় খণ্ড--ষ্ঠ সংখ্যা 


স্র স্হ্স্ব 








স্ব” -ব্স্ 


অতমী চলিয়া গেল। সুকুমার বুঝিল, দিদি রাগ 
করিয়াছে। 

কাঁজ চুকিলে নিঃশবে স্কু আসিল বাগানে । লোকটি 
গাছের গোঁড়া হইতে আগাছা সাঁফ করিতেছে । স্থকুমার 
বলিল__রাত্রে খাওয়া-দাওয়া! হয়েছিল-? 

সে বলিল- স্থ্যা। 

সহজ খ্বর__সে স্বরে বিগলিত ভাব নাঁই। 

সুকুমার বলিল_দদিদি তোমায় আশ্রয় দেছে.''তোমাঁর 
কুলুজী কেউ জানে না...বেইমানী করো না যেন! 

সে জবাব দিল না..'মুখ তুলিয়া! স্বকুমারের পানে 
চাহিলও না। 

স্থকুমার বলিল--মন দিয়ে যদি কাঁজ করো; তাহলে 
চাকরি এখানে পাকা হবে বুঝলে ? 

এবারো! সে না তুলিল মুখ, না দিল জবাব! 

সুকুমার কহিল-তোমার বাড়ী কোথায়? কে 
আছে ? আগে কোথাও চাকরি-বাকরি করেছে! ? 

লোকটির গ্রাহ নাই ! জবাব দিল না...নিজের মনে 
আগাছা উপড়াইতে লাঁগিল। 

সুকুমারের রাগ হইল। ভাবিল, লোকটার কৃতজ্ঞতার 
লেশ নাই! পথে পড়িয়াছিলি কুকুরের মতো.''মাথায় 
করিয়া আনিয়া! তোঁকে দিলাম আশ্রয়'".কৃতজ্ঞতার ভারে 
মুইয়া থাকিবি ! না, গ্রাহা নাই! যেন নবাব-বাহাছুর ! 

রাগে জলিয়! সে চলিয়া আসিল। 

আগাছ! সাফ করিয়া মালীর নির্দেশে লোকটা এক 
জায়গায় কোদাল ধরিয়া মাটী কোপাইতেছে' অতমী 
আসিয়! সামনে দীড়াইল। 

মুখে তৃণ্ডির হাঁসি, অতসী কহিল--কোনো অসুবিধা 
হচ্ছে না? 

মুখ তুলিয়৷ সে বলিল-_ন!। 

অতদী বলিল-_ বিছানা পেয়েছিলে ? 

_-পেয়েছিলুম। 

অতমী বলিল-_বাঁলিস-টাঁলি আছে তো ঠিক! 

লোকট৷ বপিল_ আমি দেখিনি । 

_গ্যাথোনি !'" কিসে শুলে? 

-_-থাটে। " 

--বিছানা ? 


জ্যৈ্-_-১৩৪৮ ] 


_-অগ্ক লোকের শোয়-বিছানায আমি শুতে 
পারি না । 

কথাটায় অতসীর মনে যেন ছ্যাকা লাগিল! এমন কথা 
চাঁকরের মুখে শুনিবে, ইহা ছিল কল্পনাতীত ! বামুন'চাকর 
আসে যায়...সরকারী বিছানা পায় চিরদিন। সে-বিছানা 
লইয়া এমন স্থরে এ পর্য্যস্ত কেহ প্রতিবাদ তোলে নাই ! 
বুঝিলঃ লোকটা কথা কহিতে জানে না! !...কাঁর সঙ্গে কি 
ভাবে কথা কহিতে হয়..'বোধ হয়, তেমন ঘরে কথনে! কাজ 
করে নাই! 

অতমী বলিল-_কিন্তু সব মালী এ বিছানাতেই শোয়। 
তোমার জন্কে নতুন বিছানা তৈরী হতে পারে না তো... 

মুদু হাস্তে সে বলিল- আজ্ঞে না, তা আমি বলিনি" 

এঁ কথা.'.তাঁর পর এই হাসি 'এ যেন বিদ্রুপ ! 

অতসীর রাগ হইল। একটু আগে নুকু বলিয়াছে, 
লোকটা দারুণ অসভ্য..কোনো-পুরুষে লোকের বাড়ী চাকরি 
করে নাই..একেবারে অধম ভিখারী !...তাঁই বটে! 

'অতসী বলিল--এখানে যদি কাজ করতে চাঁও, মানুষ 
হর্তে হবে। কার সঙ্গে কি করে, কথ! কইতে হয়, শিখতে 
হবে।"'এ-বাড়ীতে তুমি চাঁকরি করছো৷.'.তুমি চাঁকর..' 
মনে রেখো। 

সে বলিল-আজে হ্থ্যা, চাঁকর। আমি তা জানি। 
কাজ করছি তো! 

অতসী চলিয়া আসিতেছিল:..কি মনে হইল, দীঁড়াইল। 
দাড়াইয়া গ্রশ্ন করিল--তোমার নাম? 

লোকটা বলিল--নাঁম নিয়ে কি হবে? আমার কাজ 
নিয়ে কথা। 

মুখের উপর কথা ! এমন কথা ! অতসীর রাগ হইল... 
বলিল _মানুষের একট! নাম থাকে । তোমাকে ডাকতে 
হলে বাবু-মশাই বলে” তো৷ লোকে ডাকবে না'..কি তোমার 
নাম? 

সে বলিল--ও..আমাঁকে কাস্তি বলে ডাকবেন ! 

অতমী দাড়াইল না; চলিয়া আসিল । 

বিরক্তিলাগিল'''রাগহইল। পথে পড়িয়াছিল নিরাশ্রয়, 
নিঃসম্বল...ডাকিয়া ঘরে আনিয়া! ঠাঁই দিলাম, তাঁর জন্ত'-'এ 
যেন কী! বাড়ীতে আরো পাঁচজন লোক আছে. দাস-দাসী 
দ্রাইভার-মালী...তাদের সঙ্গে অতমী কথ! কহিতে যায় না! 


ভত্র ভিঙ্ালী 


৬৩৪২৯ 


কোনো কথা কহিলে সম্রমে ভারা! নত হয়'' সে কথা কি 
করিয়া শোনে'''কতখানি বিনয়-নম্র হইয়া সে কথার 

না, ইহাঁকে রাখা চলিবে না'',অন্ত দাঁস-দাসীদের শ্বভাঁব 
বিগড়াইয়া দিবে** 


তবু কাস্তিকে বিদায় দেওয়া গেল না। 

রাগ পড়িলে মনে হইল, কি এমন অপরাধ করিয়াছে? 
পরের ব্যবহার-করা বিছানায় শুইতে দ্বণা হয়! অতসীরও 
হয়.. অপরের তৌয়ালে-গাঁমছ! সে ব্যবহার করিতে পারে 
না! সে তোয়ালে-গামছা! আপন-জনের হইলেও না ! ও যদি 
মালীর বিছান! ব্যবহার করিতে না পারে! নাপারিবার 
কথা! ভদ্রলোক. নিশ্য় একদিন ও"*'নহিলে ভিক্ষা 
চাহিতে পারে না? 

মনে মনে কান্তিকে তখনি মার্জন। করিল এবং কাস্তি 
এ গৃহে রহিয়। গেল। 

মালীর ঘরের সামনে ঢাঁকা-দালান...সেখানে সে থাকে। 
থাওয়ার সময় ঠাকুর ডাকিয়া! পাঠায়, আসিয়া খাইয়া যাঁয়। 
বাসন মাজিতে পারে না...বলেঃ কলাপাঁতা কাটিয়া আনিব, 
সেই পাতায় ভাত দিয়ো! মন দিয়া কাঁজ করে ' মালী 
যা বলে, করে। মাটী কাটে.'"আগাছ! সাঁফ করে -'মাটীতে 
চার! বসায়.'.গাছে জল দেয়। কাজে আলম্ত নাই এক 
তিল! তারপর কাজ চুকিলে চুপচাপ বাঁগানে বসিয়া 
থাকে। কি ভাবে''-কাহারে! সঙ্গে মেশে না। অতঙী 
কত দিন এ-সব লক্ষ্য করিয়াছে । 

বিশ্ব আসিয়। বলে__আঁশ্চর্য্য মানুষ মা! গ্যার্দিন আছে 
...আমাদের সঙ্গে বসে একদিন দুটো কথা কইলে না! ! আমরা 
কথা কইতে গেলে সরে চলে যায় ! যেন নবাব-পুত্ত,র ! 

ঠাকুর বলে-_-কলাপাত! সামনে নিয়ে বসে'*'যা দি, চুপ 
করে খায়। কোনোদিন বলে না, আর-ছুটি ভাত দাও কি 
একটু ডাল দাঁও !..'পাঁগল, না? কি ও মা? 

অতমী ভাবে, সত্য'' আশ্র্য্য লোক! 

তারপর এ ষে চুপচাপ বসিয়া থাকা! ও কিভাবে? 

এখানে আজ আশ্রয় পাইয়ছে...তিখারীর নে * কাণর্য্য- 
তার ছোপ. আর নাই। উবিয়! গিয়াছে! চেহারা হা 


৬৪১২, 


বিরল-অবসরে কান্তির কথা অতশীর মনে 'চাপিয়া 
বসে। 

সেদিন অতসী বাগানে আসিল । বাগাঁনে মণ্ডমী ফুল 
ফুটিয়াছে। কান্তি কাছেই কাজ করিতেছিল...কোন গাঁছে 
কলম বাধিতেছিল । 

অতসী কহিল-_লোৌকজনের সঙ্গে মেশো না কেন 
তবমি? একদন্ে কাঁজকর্দপ করো সকলে. এক মনিব". 
পরম্পরে মিশবে-_পরম্পরে পরস্পরের স্থখ-ছুঃথ বুঝবে...ওরা 
কত বলে সেজন্ত ! 

মুছ হাসিয়া কাত্তি বলিল-_ ওদের সঙ্গে কি কথা 
কইবো ? ওরা হলো আলাদা ক্লাশের লোক'"' 

আলাদা ক্লাশ! 

অতসী কান্তির পানে চাহিল। তার ছু'চোখে বিম্ময় ! 

অতসী কহিল-_তা যদি বলো; তাহলে আমারো তো 
তোমার সঙ্গে কথা কওয়া উচিত নয়! 

কান্তি বলিল-আঁপনি আমার সঙ্গে কথা কন্‌...তার 
মানে, আপনি মনিব, আমি চাকর। আপনার দয়া হয়, 
দরকার হয়, তাই আপনি কথা কন।'..ধাঁরা উচু কোঠায় 
থাকেন, তার! বখন নীচু কোঁঠার পানে তাঁকান্‌-. ভাবেন, দয়া 
করছেন!""যারা খুব বড়, আর ধারা খুব ছোট...তারাই 
সকলের সঙ্গে মিশতে পারে, কথ! কইতে পারে-' কোথাও 
বাধে না 

কথাগুল৷ অতদী মন দিয়া শুনিল। নূতন কথা! এ 
কথা শুনিয়া সে বলিল কিন্তু ওদের সঙ্গে কথা কইতে 
তোমার কেন বাধবে? ওরা যা, তুমিও তাই। 

কান্তি একথার জবাব দিল না.. পাশে ছিল একটা 
শিউলি ফুলের গাছ'' দাড়াইয়! সে-গাছের পাতা ছিশড়িতে 
লাগিল । ৃ 

অতসীর মুখে কথা নাই...নিঃশব্দে সে প্রস্থান করিল । 

সারা মনে দারুণ অন্বস্তি! মনে হইতেছিল, কান্তি যে 
দুর্তেগ্চ ছুর্গ রচিয়া তার মধ্যে এমন নির্বিকারচিত্তে বাস 
করে, ও দুর্গে কি এমন শক্তি সে সঞ্চিত রাখিয়াছে! কেন 
সে গ্রাহছ করে না? অত্বসী বাগানে গেলে মালী যেখানে যে 
ভালো ফুলটি ফুটিয়াছে, আনিয়া সসম্রমে তার ছাতে উহার 
দেয়! উর সগ্তগী ফুলের রাশ-"'কানস্তির একবার মনে 
ছইল না যে ও*ফুল আনিয়া... 


জ্ঞান্পত্তন্মহ 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় খণ্ড--হষ্ঠ সংখ্যা 


ফুল আনিয়া! দেওয়া দুরে থাকুক, অতসী কথা কহিলে 
কাস্তি সে-কথাঁর জবাব দেয় কতথানি তাচ্ছিল্য-ভরে'"'ষেন 
কথা কহিয়া' অতসীকে সে কৃতার্থ করিয়] দিবে ! 

এ লোকটাকে কি করিয়া বুঝাইয়৷ দিবে, অতসীর 
অন্গগ্রহে শুধু আশ্রয় মিলিয়াছে? অতসী যর্দি আজ তাহাকে 
আবার তাড়াইয় দেয়, তাহা হইলে... 

অতসী আসিল বিছ্যত্বরণের কাছে। পাঁচথানা বই 
খুলিয়া বসিয়া বিছ্যুত্বরণ খাতার পাঁতাঁয় কি সব 
লিখিতেছে। 

অতসী ডাকিল-_-ওগে।"* 

বই হইতে মুখ না তুলিয়। বিদ্যুত্বরণ কহিল-- কেন? 

_ তোমার এ নতুন মালী। ও ভারী অকৃতজ্ঞ : ভারী 
বেইমান... 

বিদ্যুতবরণ বলিল-_হু'".. 

অতমীর পানে নিমেষের জন্ত তাঁকাইল না-..উঠিয়া 
আলমারি হইতে আর একখানা মোটা বই আনিয়া পাতা 
উল্টাইতে লাগিল । 

রাগে অতদী কাঠ! বলিল--মানুষ কথ! কত 
এসেছে, তা গ্রান্থ নেই ! 

বিদ্যুতৎ্বরণ বলিল-_বুঝছো৷ না ভারী 11701550167 
& চত্তীদাস . এমন নজীর পেয়েছি, যার জোরে প্রমাণ করে 
দেবো তিনি শুধু বৈষ্ণব পদাবলী লেখেননি:''একশো। খানি 
শ্ামা-সঙ্গীত লিখে গেছেন । 11105010981 ৬1051000 থা 
পাঁচ্ছি... 

নিশ্বান ফেলিয়া! অতসী চলিয়া আসিল । 

সোঁজা সুকুর ঘরে আদিল। স্গুকু একথানা বিলাতী 
সিনেম।-পত্রিকা দেখিতেছে 

অতমী বলিল-_পিনেমায় যাবি? 

সুকুমার লাফাইয়া উঠিল, কহিল-কোন্টায় যেতে 
চাও? 

--টিভোলীতে। 

যাবো । ওখানে খুব ভালো ছবি আছে! নম্মার 
ছবি। 


তাই হয়। অতঙী-ভাবে, তাগ্যে কু এখানে আছে 
.* নহিলে কি করিল্না তাঁর দিন কাটিত। 


জ্যোষ্ঠ--১৩৪৮ ] 


এ-বয়সে হ্বামী মুখের পানে চাঁহিতে জানে না! প্রাচীন 
কবিদের কাব্যে কি পাইয়া তাহাতে মশগুল থাকেন! 
অতসীর দ্েহে-মনে যে কাব্য আছে, তার পাশে চণ্ডীদাস- 
বিদ্যাপতি ! 

এক-একবার মনে হয়, কোথাও চলিয় বাই! কাছে 
আছে বলিয়া! স্বামী তার দাম বুঝিল না-"'দুরে গেলে বুঝিতে 
পারিবে! কিন্ত কোথায় যাইবে? 

ইছাঁর চেয়ে বদি গরীবের ঘরে গরীব-স্বামী'.'সে যত 
করিত, আদর করিত..' 

পরক্ষণে শিহরিয়া উঠিল। তাহা হইলে এ এশব্য-সম্পদ 
'**বিলাস-ভূষণ ' দাস-দাসী''বাড়ী-গাঁড়ী.'মান-সন্্ম''. 

পৃণিমার রাত। নিজেকে ভাঙ্গিয়া নিংড়াইয়৷ তাঁর 
সমন্ত জ্যোতক্সাটুকু পৃথিবীর বুকে নি:শেষে যেন ঝরাইয়া 
দিয়াছে! 

সিনেম! দেখিয়া অতসী বাড়ী ফিরিল। 

সিনেমায় তরুণ-মনের প্রমোঁদ-বাঁসরের যে-ছবি সচ্য 
দেখিয়া আসিয়াছে, তাহার রেশে মন ভরিয়া! আছে" 
দোতলার বড় বারান্দায় আসিয়া দেখে বিদ্যুত্বরণ 
কাগজ লইয়া কি সব লিখিতেছে.." 

অতন্দী বলিল-_শুনছে!? 

বিছাত্বরণ জবাব দিল না..'নিবিষ্ট মনে লিখিতে লাগিল । 

অতসী বলিল--চমৎকার জ্যোত্না ! লেখ! রেখে চলো 
না মোটরে চড়ে” দুজনে একটু বেড়িয়ে আসি। গঙ্গার ধারে 
কি লেকের দিকে । বড্ড ইচ্ছ! করছে বেড়াতে যেতে." 

বিছ্যুত্বরণ এবার চাছিল অতসীর দিকে...কহিল--হ' '"" 

অতসী কহিল-_তোমাঁর চণ্ডীদাসের পদাঁবলীর চেয়ে 
ঢের ভালে! লাগবে গঙ্গার ধার.'.এই জ্যোতল্লা'''পাঁশে 
আমি... 

অতসীর পানে বিদ্যুত্বরণ চাহিয়! রহিল-..অবিচল দৃষ্টি 
'**সে্নৃষ্টি এ মাঁটার পৃথিবীতে নাই...অতসী বুঝিল, সে দৃষ্টি 
অলীক-কল্পলোকে ! 

অতসী বলিল-_আমার কথা কানে যাচ্ছে না বুঝি? 

বিছাতবরণ বলিল-__এ-পদটা শোনো দিকিনি 

সখি, মরম কহিল তোয়ে ॥ 
আড়-নয়নে ঈষৎ হাসিয়া 
বিকল করিল ঘোরে । 





ভত্র ভিজ্খান্্রী 


৪ 








এমন-কথা কোনে! দেশের আর কোনো কবি লিখতে 
পেরেছেন ?1"'"আমার এপপ্রবন্ধে আমি তাই লিখছি'* 

অতসীর মনে আগুন জলিল। সে আগুনের স্পর্শ লাগিয়া 
আকাশের চাদ নিমেষে পাংগু হইয়। গেল। 

অতসী বলিল-চুপ করো ।'''তুমি যখন এ-দব কথা 
বলো? তখন আমার কি মনে হয় জানো ?.."মনে হয়, তুমি 
মানুষ নও""'পাথরের পুতুল !-''কবিতা নিয়ে মশগুল্‌ হুয়ে 
আঁছো."'আ'র আমি তোমার শ্রী-''আমার এই বয়স -. 
তোমার চণ্ডীদাসের বাধার চেয়ে কুশ্রী-কুনূপ নই !.'আমি 
যদি তোমার এ চণ্তীদাসের রাধার মতো! কৃষ্প্রেমে উধাও 
হয়ে যমুনা-তীরে চলে যেতুম ?'''জাঁনো, তা পারবো না... 

স্বর কাপিয়! ভাঙ্গিয়া গেল'..অতসীর কথা শেষ হইল 
না। অতসী সেখান হইতে চলিয়া আসিল... 

ঘরে গেল না..'নীচে গেল না...গেল একেবারে তিন- 
তলার বড় ছাদে।'"'ছাদের উপর উপুড় হইয়া শুইয়া 
পড়িল. .'ছুঃ চোখে বন্যা নামিল ! 


যখন ঘুম ভাঙ্গিল' অনেক রাত্রি। সার! গৃহ নিস্তব্ধ 
নিঝুম | আকাশে সেই চাঁদ...সে-টাদে সেই জ্যোত্লাধার... 

অতসী উঠিল..'উঠিয়া আল্‌্শের ধারে আসিয়া দাড়াইল। 
বাগানে জ্যোত্ন্নার লহর ৷ গাছে-পাতাঁয় ফুলে-ফলে যেন 
গলা-রূপা ঢাঁলিয়া দিয়াছে! এ মালীর ঘর'..সে ঘরের 
সামনে ঢাকা বারান্দার বাছিরে চুপ করিয়া বসিয়া আছে 
কাস্তি। 

ঘুমাঁয় নাই ! কি ভাবিতেছে! এত কি ভাবে? 

হয়তো অতীত দিনের কথা...হয়তে! ঘরে একদিন ছিল 
তরুণী স্ত্রী: হয়তো কাঁজের মাঁতনে তাঁর পানে ফিরিয়! চাহে 
নাই.''হয়তে৷ অতসীর মতো বেদন! সহিয়। সহিয়! একদিন 
সেই স্ত্রী! সেন্ত্রী যতদিন পাশে ছিল, তার পানে হয়তে। 
চাহিয়া দেখে নাই! আজ সে পাশে নাই, হয়তো তাই তাঁর 
স্বতিতে বিভোর চইয়া আছে! সে-বযথায় আকুল বলিমু 
হয়তো কাহারো সে মেশেনা:'.তাঁই হয়তো কাভারো! সঙ্গে 
কথা কয় না.' 

কিন্া হয়তো, তরণী স্ত্রী ওর পা ফিরিয়! তাঁকায় না.. 
হয়তে! মনের দুঃখ স্ত্রীকে বলিতে গিয়াছে বসুবার, হয়তো রী 
সে*কথায় কাঁন দেয় নাই। 


৬ঞ্ভ 


তাই যদি, তে৷ কি-নুখে ও বাঁচিতে চাঁয়? পথ ছাড়িয়া 
ধরে আশ্রয় খোঁজে ? 

ঘন বলিল, কাস্তির কাছে গিয়া জিজ্ঞাসা করিবে চলো, 
কি তুমি এত ভাবো কান্তি ?, 

কে যেন অতদীকে তার অলক্ষ্যে আকর্ষণ করিতেছিল ! 
বলিতেছিল, চাকর নয়...মনিব নয়-.. মানুষ. .ছুজনেই ব্যথী-". 

'অতসী ছাদ হইতে নামিল। সামনে বারান্দা ' পাশে 
ঘর...সেশ্বরে শয্যা "শয্যায় বিছ্যুত্বরণ ঘুমাইতেছে।".. 
জতসী ভাঁবিল, আশ্চর্য্য মানুষ ! অতমী রাগ করিয়া কৌঁথায় 
গেল ''কি করিল-.'বাচিল, না মরিল, খোজ নাই? বিছানায় 
অতসী নাই নিশ্চয় দেখিয়াছে.''একবার খবর লইল না? 
হায়রে, কি সুখে অতমী বাচিয়া আছে? কিসের আশায়? 
কিসের লোভে? .. 

একটা নিশ্বাস! অতসী দীড়াইল না - নিঃশব্দে বাগানে 
আসিল। কান্তি যেখানে বসিয়াছিল, একেবারে সেইথানে*** 
কাস্তির সামনে! ডাকিল-_কান্তি-"' 

কাস্তি চমকিয়! অতসীর পানে চাহিলঃ কহিল-- আপনি ! 

-হ্যা। তোমার সঙ্গে কথা কইতে এলুম। ঘুম হচ্ছিল 
না .'বারান্দা থেকে দেখলুমঃ তুমি জেগে আছো". 

কাস্তি কথা কহিল না...নিরুত্বরে চাহিয়া রহিল অতসীর 
পানে। 

অতসী বলিল-_-একলাটি থেকে কখনো! তোমার মনে 
চয় না কাস্তিঃ কারো সঙ্গে কথা কই? 

কান্তি বলিল- আগে হতো'.'যখন লোকালয়ে বাস 
করুম 

- লোঁকালয়ে বাস করতে ! তার মানে? 

--তার মানে যখন মানুষ ছিলুম। কারে! যখন কেউ 
কোথাও থাকে না_কিছু থাকে মা, তখন তার মনে হয়, 
সে যেন লোকালয়-ছাড়া সে যেন লোকাঁলয়ের বাইরে 
দাস করছে! 

. এ-কথায় কতথানি ব্যথা, অতসী বুঝিল। তাহার 
নিজেরে! থাকিয়া-থাকিয়! এমনি মনে হয় !...অতসী বলিল-__ 
কিন্তু এখন তো৷ তুমি লোকালয়েই বান করছে কান্তি! 

-_-কষাঞা-কর্থম করছি.'.একে বাস কর! বলে না।'.'কিন্ত 
গাঁপনি দাড়িয়ে রইলেন!...ক্যাম্প থাটখান! আনি". 


ভান 


[ ২৮শ বর্ ২য় ধ্--ষঠ সংখ্যা 


স্নাঃ না, াঁড়িয়ে বেশ আছি | 

তারপর একটা নিশ্বীস! নিশ্বাস ফেলিয়া অতমী 
বলিল-_তুমি বোধ হয় খুব আশ্চর্য্য হচ্ছে! যে আমি 
মনিব, এই রাত্রে তোমাকে ডেকে তোমার সঙ্গে কথা কইতে 
এসেছি... 

কান্তি বলিল-_আশ্র্য্য হই নি! আশ্চর্য্য হয়েছিলুম 
সেদিন, যেদিন ধী বর্ষায় আমাকে গাড়ীতে তুলে এই 
বাড়ীতে নিয়ে এলেন ! জাঁনা নেই, শোন! নেই.''তাঁছাড়া 
এ-বয়সে দুনিয়ায় আমি এত কিছু দেখেছি-গুনেছি যে 
কোনো কিছুতে আর আশ্্য্য হই না! তা ছাড়া মানুষ 
যখন ব্যথ! পায়, ছেট-বড়র ভেদ তখন সে তুলে যায়*** 
সব মাঁচুষকে তখন সমান দেখে । আপনি বোঁধ হয় তেমনি- 
কিছু ব্যথা পেয়েছেন, তাই'** 

অতগী কীপিয়া উঠিল! কম্পিত স্বরে কহিল--আমার 
আবার কিসের ব্যথা? 

কাস্তি হাসিল."'মৃছু হাসি । কহিল__-আমি বুঝি। 
'* এ-ব্যথা খুব আঁপন-জনের কাছেই পেয়েছেন-_-এমনি 
ব্যথাতেই মানুষের চেতন! থাকে না...সব কেমন একাকার 
হয়ে যায় ।...আমি জানি ! 

অতসীর বুকথাঁনা ধড়াস করিয়া উঠিল.''সেই সঙ্গে 
এ-কথায় ব্যথার ঘনান্ষকারে যেন একটু আলোর রশ্মি'' 

অতমীর মনে হইল,তাহার সব যেন ধরা পড়িয়া! গিয়াছে ! 
যে গোপন-ব্যথার কথা কেহ জানে না, লোকালয়শ্ছাড়া 
এ লোকটির কাছে সেথা যেন গোপন নাই... প্রকাশ 
হইয়া পড়িয়াছে ! এ-চিস্তায় অন্বপ্তির সঙ্গে কেমন একটু 

অতঙী ভাঙ্গিয়৷ পড়িল। নিশ্বাস ফেলিয়া অতসী বলিল; 
_তুমি সত্যি কথাই বলেছে! কাস্তি। আমার সাজগোজ 
অলঙ্কার-শ্বর্য দেখে কেউ বুঝতে পারে নাঃ আমার ছুঃখ 
আছে কি না। তাই আমি আশ্চর্য হচ্ছি যে তুমি আমার 
কি-বা জানো.'কতটুকুন্‌ আমাকে দেখেছে, অথচ তুমি '' 

কান্তি বলিল--আমি জাঁনি। বড়-্ঘরে জাঁকজমক 
শ্বর্্য যেমন বড়, ব্যথাও সেখানে তেমনি বড়। গরীবকে 
এ-লব বড় দুঃখ পেতে হয় না.'“তাদের ছুঃথ ছোটখাট সে 
দুঃখ ঘোচে। কিন্তু বড় ধয়ের ছুঃখ ঘুচোবাঁর সামর্থ্য কারো 
নেই..'ঘুচোবার উপায়ও নেই ! 


জ্যৈ্*--১৩৪৮ ] 


কে এ? এত কথা কি করিয়া জানিল? যে-কথ 
কাহারে! জানিবাঁর নয়...সেই ব্যথার কথা এ-লোকটি..' 

তারপর কথায় কথায় সমবেদনার ঘাঁয়ে মনের কপাট 
কখন খুলিয়া গেল..'গ্রভু-ভূত্যের সম্পর্ক ভূলিয়৷ সত্রী-পুরুষের 
ব্যবধান তুলিয়া একান্ত-বিশ্বস্ত-সাথীর মতো কান্তির কাছে 
অতমী খুলিয়! বলিল তার এতরদিনকার পুঞ্জিত বঞ্চনা-ব্যর্থতাঁর 
কাহিনী । বলিল, স্বামী বিদ্বান, বুদ্ধিমান, এশ্বয্যবানঃ অথচ 
--এই বয়ম আর রূপ লইয়া অতণী স্বামীর মনে এতদদিনেও 
একটু রেখাপাত করিতে পারিস না! স্বামী তাহার বই 
আর কাগজপত্র লইয়া বিভোর হ্ইয়া আছেন! কি 
তাহাতে পান্‌.*"অতসী যাচিয়া আদর চাহিয়া প্রত্যাখ্যানের 
বাণে আহত হুইয়। ফিরিয়া আসে! বারে-বারে ফিরিয়া 
আসিয়াছে! অভিমানে-অপমানে কাতর হইয়া কতবার 
ভাবিয়াছে, কোথাও চলিয়! যাইবে...! যাইতে পারে না। 
মনে হয়, এই এ্রশ্বর্ধ্য মান সম্ভ্রম সম্পদ-ভূষণ এ সব চির- 
দিনের জন্ত ক্ষোয়াইয়! বসিবে-*'চলিয়৷ গেলে সমাজে কলঙ্ক 
রটিবে-. কোনোদিন আর সমাঁজে মাঁথা তুলিয়া ্াড়াইতে 
পারিবে না! 

কাস্তি বলিল-_সমাজ ! হাজার জ্রীতায় মানুষকে 
পিষছে...পিষে থেঁতো করে” পাত্‌ করে” ফেলছে ! - একটি 
তা প্র বিয়ের মন্তর-..সে-্জীতায় পিষে আপনি থেঁতো 
হচ্ছেন। আর এক স্রীতা অভাব! এ জ্াতায় আমি 
পিষে চুর হচ্ছি !."'নাহলে কি না ছিল আমার ?.''লেখাপড়া 
শিথেছিলুম.''বিয়ে করে' ছিলুম। স্ত্রী'''আপনার পাশে 
দাড়ালে তাকে বেমানান দেখাতো না। ছেলেমেয়ে... 
সংসার''.কিস্ত এই অভাবের জীতায় কি হয়ে গেল!-"" 
ছুনিয়ার উপর রাগ হয়। যে-শক্তি আছে, পারিন! সে 
শক্তিতে এ অভাব মোচন করতে? পারি। কিন্তু ভয় 
হয়। আইনের ভয়...পুলিশের ভয় !1.'.তবু আমার এ 
দুঃখ..'আপনার দুঃখের কাছে কিছুই নয়! আমার এ 
অভাব ভিক্ষা পেলে ঘোচে! হাত পেতে অন্ন-বস্ত্র তিক্ষা 
করা চলে...কিন্ত ভালোবাসা ভিক্ষা! করা চলে না! ভিক্ষায় 
মানুষ সব-কিছু পায়, পায় না শুধু ভালোবাস! ! 

মন দিয়া অতসী .শুনিল কান্তির প্রত্যেকটি বথা। 
এত কথা কাঁস্তি কি করিয়া! জানিল ?...এত-বড় সত্য কথা"" 
ভিক্ষার সব পাওয়া যায়'''পাওয়া যায় না শুধু ভালোবাসা ! 








ভত্র ভিথ্ধাী 





৬২৫ 





স্ব 


মাথার উপর চাদের আলে! নিমেষের জন্ত যেন মলিন- 
ম্নান-*'একখাঁনা মেঘ আসিয়া! চাঁদকে ঢাকিয়া দিল । 

অতসীর মনে হইতেছিল, কান্তি যেন শাপগ্রস্ত কোনো 
রাজপুক্র..'যেন কোন্‌ মুনির 'শীপে এখানে ভৃত্যগিরি 
করিতেছে !:.. 

সত্যই তাই? "" 

কান্তির মুখের পাঁনে সে চাহিয়া রহিল:..অবিচল দৃষ্টি! 

সহসা মাথা কেমন বিম্-বিম্‌ করিয়া উঠিল। চাদকে সে 
মেঘখানা ধেন বন্দী করিয়াছে ! চারিদিকে যেন অন্ধকারের . 
ছাঁয়া নামিতেছে...এ ছায়া ঘন...আরো৷ ঘন..'মেঘ যেন 
তার বিরাট দেহ প্রসারিত করিয়া জ্যোতশ্নার শেষ 
রশ্রিটুকুকে চাপিয়া মারিয়া ফেলিল...আকাশ-পৃথিবী 
অন্ধকারে ভরিয়া গেল। '. 


তারপর আবার যখন আলো ফুটিল, চোঁখ মেলি 
অতমী দেখে, সে শুইয়া আছে.'.কাস্তির কোলে মাথা! 
কান্তি তার মাথায়-মুখে হাত বুলাইয়া দিতেছে ! 

কান্তির হাতের ম্পর্শ...অতসীর দেহ-মন অগুচি-ৰিষে 
রী-রী করিয়া উঠিল। 

ধড়মড়িয়! সে উঠিয়া বসিল। দু'চোখে আগুন আলিয়। 
কান্তির পানে চাহিল, ডাঁকিল- কান্তি. 

রূঢ় স্বর । 

কাস্তি কহিল-__আজ্ে.' 

__তুমি তুলে গেছ তুমি চাকর:'.আমি তোমার মনিৰ 1." 

কান্তি বলিল__ আপনিও সে-কথা তৃলে গিয়েছিলেন। 
দুজনেই ব্যথ৷ পেয়েছি কিনা! ব্যথায় মানুষ ছোট-বড় 
ভেদ ভূলে যায় 

অতসী কহিল--তোঁমারু আম্পর্ধ৷ বড় বেশী... 

অতসীর দেহে-মনে আগুনের জালা..কাস্তির শ্রী হাত... 

মনে হইতেছিল মুখ আর মাথা যেন পড়িয়া! যাইতেছে! 

অতসী ক্রত-পায়ে গৃহে ফিরিল ।'.'মুখ-হাত ধুইয়া, 
ফেলিল:' খোঁপা খুলিয়া! মাথায় জল ঢালিল... 


সকালে যখন ঘুম ভাঙ্গিল, বেলা আটটা । মাথা ভারী 
হইয়া আছে.''সমঘ্ত নেহে-মনে দার অবসাদ। রাত্রির 
কথা মূনে পড়িল । দ্ু্প্ন দেখিয়াছে.-.না-.. 


৬৪২৬ 


অতসী উঠিয়া বাহিরে আসিল । 

সব কথা মনে পড়িল। স্বপ্ন নয়। রাত্রে বাগানে 
গিগ্লাছিল...এঁ মালীকে ডাকিয়া যে-সব কথা বলিয়াছে.. 
তাঁরপর মাথা ঘুরিয় পড়িয়! গেল...আর এ মালীষ্টা.. 

অতসী বাগানের দিকে চাহিল-.. : 

কোদাল লইয়া কান্তি মাটা কোপাইতেছে:*' 

* অতসী গেল প্লানের ঘরে । গায়ে-মাথায় অজন্্র জল 
ঢালিয়া ন্লান করিল। দু*বাঁর তিনবার পীচবার সাতবার 
সর্ধবাজে সাবান মাথিল। গাঁয়ে-মাথায় আবার জল ঢাঁলিল। 
তারপর ফর্শা তোয়ালে দিয়! গাঁ-মাঁথা মুছিয়! ফর্শা শাড়ী- 
সেমিজ পরিল। পরিয়া আয়নার সামনে দীড়াইয়! কপালে 
সধত্বে আকিল সি'ছুরের টিপ.''চিরুণীর ডগায় সিছুর 
লাগাইয়া! সে-সি'ছুরে নথিতে রেখ! টানিল:.. 

তারপর বাগানে আসিল''.কাস্তির সামনে । ডাঁকিল-_ 
কোদাল রাখিয়া কাস্তি চাহিল অতসীর পানে। 
কাল রাত্রিকার দে মোহিনী-মূত্তি ন--এ যেন বিজয়িনী 
রাজেজ্সাণীর মস্তি! 
অতসী বলিল_-তোমার মাইনে দিয়ে এখান থেকে 
তুমি চলে যাবে ''এখনি'''বুঝলে ! এখানে তোমার চাকরি 
করা চলবে না।...ছু'মাসের মাইনে পাবে। না হয় তিন 
মাসেরই । সরকার মশাইকে বলে দেবো, তোমাঁকে পঁচিশ 
টাকা দেবেন। টাঁকা নিয়ে আজই তুমি চলে যাঁবে। 
কান্তি কহিল__যাঁবো। কিন্তু টাকা আমি চাই না... 
শটাঁকা চাও না ?..'অতসীর স্বরে বিস্ময় ! 
কান্তি বলিল- না ! 
অতমীর মনে অন্বন্তি! অতসী বলিল-_-তাহলে যে 
কিনের মাইনে পাঁওন! হয়েছে, তাই নিয়ে যেয়ো। 
_ যাবো |." 
ক্যা) যাবে |" 
অতী চলিয়া আসিতেছিল...কাস্তি আসিয়া সামনে 
অতসী কহিল-_কি চাও? 

লোহার একটা মাথার-কাটা লইয়া কাস্তি .'বলিল-_এটা 

কাল রাখে ফেলে গিয়েছিলেন আজ সকালে দেখতে পেয়ে 


ভার তব্বশ্ 


1 ২৮শ বর্ষ--২য় খণ্ড সংখ্যা 


অতমী বলিল--ও আমি চাই না। ফেলে দাঁওগে। 

কান্তি হাসিল.'বলিল__-আমি যদি এটা রেখে দি? 

অতপসা কোনো কথা কহিল না. গৃহ-মুখে যাত্রা করিল। 
কান্তি কহিল-_-আর-একটা কথা". 

_ আঁজ না গিয়ে যদি কাল যাই? 

অতমী ভ্রকুঞ্চিত করিল। কহিল-__কেন? 

_মানেঃ একটা আশ্রয় খুঁজে ঞলবো। এতদিন ঘরে 
বাস করে চটু করে, পথে ধ্লাড়াতে পারবো না 
হয়তো । তাই... 

_বেশ। কিন্তু কাল নিশ্চয় চলে যাবে। 

গৃছে ফিরিয়া অতসী আসিল একেবারে বিছ্যুত্বরণের 
কাছে...বিছ্যুত্বরণ খবরের কাগজ পড়িতেছে। 

অতসী তার পায়ের উপর লুটাইয়া পড়িল, বলিল-_ 
ওগে! তোমার ছুটি পাঁয়ে মিনতি জাঁনাচ্ছি-..এখানে একদও 
আমার মন টিকছে না। পাঁচ দিনের জন্ট'"'না হয় দুদিনের 
জন্ত অন্ততঃ আমাকে নিয়ে বাইরে কোথাও চলো। না 
হলে সত্যি বলছি, আমি পাগল হয়ে যাবো-''আমি 
মরে ষাবো'"' 

অতসীর হাত ধরিয়া বিছ্যুত্বরণ তাঁকে তুলিল। 
অতসীর ছু'চোখে শ্রাবণের ধারা! অতনীকে এমন সে 
কথখনে! দেখে নাই! 

বিছ্যুত্বরণ ডাকিল--অতসী.. 

অতসী বলিল- চলো...চলো:'যেখানে হোঁক...আজই 
'**একটু দয়া করেো-"'কখনো আমার পানে চেয়ে দেখোনি 
***আমাকে কোথাও নিয়ে চলো. যেখানে তোমার থুশী... 

চণ্তীদাসের রজকিন্ী রামীর ব্যথা বিদুতবরণের মনে 
তখনো আটিয়াছিল। বিছ্যুত্বরণ বলিল-_ একদিন কেন্দুবিধ 
যাবো ভাঁবছিলুম। সেখাঁনে.চণ্ডীদাসের ভিটে আছে-** 
বাঁশুলিদেবীর মন্দির'"' 

অতসী বলিল-চলো গে! সেইখানেই চলো। আজই 
থেয়েদেয়ে । আমি দেখবো কেন্দুবিষ্ব..'তোমাঁর তীর্থ. 

বিছ্যুতবরণ বলিল-_হ'..'বেশ! 

'তারপর ক্ষণেক স্বন্ধভাব ! 

বিছ্বাত্বরণ ডাকিল-_স্কু.. 


জৈর্ঠ--১৩৪৮ ] 


পাঁশের ঘর হইতে সুকুমার জবাব দিল-_জামাইবাবু... 
বিছ্যত্বরণ বলিল-_লগেজ বাধো । তুমি আমি আর 
তোমার দিদি...[০ [61100%112...আজই থাওয়ান্দাওয়। 


সেরে" বুঝলে ৪৪ 


একসপ্তাহ পরে ফেরা হইল...আবার এই বাড়ী... 
তখন সন্ধ্যা হইয়াছে। 

ঘরে আসিয়া গহনা তুলিতে গিয়া অতসী দেখে, 
'আলমারির কল ভাঙ্গা... 

আলমারি খুলিয়া দ্রয়ার টানিল। দেখে, সর্বনাশ! 
দামী নেকলেশ আর ব্রেশলেটের কেশ-দুটা খালি..'সাত- 
আটটা আংটির কেশও * ড্রয়ারের মধ্যে পড়িয়৷ আছে মাথার 
একটা কীটা.'.লোহার কীট! ! 

এ কীঁটা এখানে আদিল কি করিয়া? অতসী রাঁখে 
নাই... কখনে। রাখে না 1... 

পরক্ষণে দেহে রোমাঞ্চ-রেখা! এ কাটা-.'কাস্তি 
মালী রাখিয়াছিল-*কান্তি ! 

কোথায় সে? 

গুনিল, যেদিন তাঁরা চলিয়া! যায়, তাঁর পরের দিনেই 
কান্তি চলিয়া গিয়াছে ! 

এ তার কাজ! তুল নাই! শুধু বেইমান নয়..'চোর! 
টেলিফোনের বই খুলিয়া অতসী নম্বর দেখিল, থানা. 

থানা-পুলিশে থপর দিলে তারা যদি কাস্তিকে ধরিয়া 
আনে? ধরা পড়িলে কান্তি যদি বলে, এ মাথার কাঁটা." 
কি করিয়া সে পাইয়াছে.'.কার মাথার কাটা...সেই সঙ্গে 
সে-রাত্রের সে-কাহিনী যদি সে বলিয়! বসে? সে-কথায় 
স্বামী যদি সন্দেহ করেন ?... 

অতমী শিহুরিয়! উঠিল । 

তার কথ! কে বিশ্বাস করিবে? ব্যথার ভারে চেতনা 
হাঁরাইয়া সে-রাত্রে অতসীর বাগানে যাঁওয়া...তার মধো 
দোষের কিছু ছিল না... 


ভত্র ভিখাল্সী 


৬৯৭ 


কিন্তু কেহ বুঝিবে না" স্বামী-সংসার:.'সমাঁজ..'কেহ 

এচুরির কথা বলা চলে না." কাহাকেও ন1।'..কিন্ত 
সে চুরি করিল কেন ?...টাঁকা দিতে চাহিয়াঁছিলাম, বলিল, 
টাকা চাহে না !... 

শয়তান ! 

স্থকু আসিয়! ডাকিল-দিদ্বি-*. 

অতসী চমকিয় উঠিল। কহিল-_কেনরে? 

স্ুকু বলিল__ তোমার এ পুস্টিপুত্,র.'.এ কান্তি ব্যাটা" 

অতসীর বুকে মেঘ ডাকিল.'.কম্পিত-্বরে অতসী বলিল 
_-কি করেছে সে? 

উত্তরে কি শুনিবে'.'অতনী কাট! হইয়া রহিল! 

স্বকু বলিল-বিশ্ত বলছিল আমার ছুটে কোট, 
ছুখানা ধুতি, আর একজোড়া পাম্পপ্ু-জুতো নিয়ে ভেগেছে। 
মালীর কাছ থেকে দশটাকা ধার নিয়ে গেছে যাবার সময় । 
বলে” গেছে, মা-ঠাকরুণ ফিরলে মাইনের টাকা চেয়ে 
শোঁধ দেবে ।'"'আমি বলি, থানায় খবর দি**. 

আবার থানা? 

অতী বলিল--না, না.'সামান্ত জিনিষ নিয়ে আর 
থানা-পুলিশ করে না। বাঁড়ীতে পুলিশ আঁসবে'''একট! 
হৈ-হৈ ব্যাপার-.. | 

সুকু হাসিয়া বলিল-জানি, তোমার মায়া আছে 
ব্যাটার উপর! কিন্তু আমি ভাবছি ব্যাটা তোফা 
ছিল এখানে তোমার পুষ্টিপুত্র হয়ে'-এ ুর্দ্মতি হঠাৎ 
হলো! তার'"* | 

অতমী জবাব দিল না। 


বিশু আসিল.''তার ঘাড়ে স্যটকেশ। বলিল-- 
স্্টকেশ আজ তো৷ আর খুলবেন নাঃ মা? 

_না। চঃ কোথায় রাখবি, আমি দেখিয়ে দি... 

স্বস্তির নিশ্বাস ফেলিয়া অতসী গেল বিশুর সঙ্গে; 
বলিল__তুই নেয়ে নে স্ুকু...যদি চাঁন্‌ করতে চাঁস্‌...তাঁরপর 
আমি ঢুকবো বাথ-রুমে -..দেরী করিস্‌ নে। 





হরিমিশ্রের কারিকা 


ডক্টর শ্্রীরমেশচন্দ্র মজুমদার এম-এ, পিএইচডি (ভাইদ চাগেলার, টাকা বিশ্ব্ালয়) 


১৩৪৬ সনের ভারতবর্ষে, “বঙ্গীয় কুলশান্ত্রের এ্রতিহাসিক 
মূল্য” নামে আমি পাঁচটি প্রবন্ধ পিখি। কার্তিক মাসে 
প্রকাশিত প্রথম প্রবন্ধে অন্ান্ প্রাচীন ও প্রসিদ্ধ কুলগ্রন্থের 
সঙ্গে “হরিমিশ্রের কারিকা” সম্বন্ধে আলোচনা! করি। 
পরলোকগত নগেন্ত্রনাথ বন্ধু এই গ্রন্থথানিকে খ্ীয় ত্রয়োদশ 
শতাঁবীর রচিত বলিয়৷ অনুমান করেন এবং কুলগ্রস্থের মধ্যে 
*্সর্বপ্রাচীন ও মৌলিক” বলিয়! গ্রহণ করেন। এই গ্রন্থের 
একমাত্র পুঁথি তীহার নিকট ছিল এবং বঙ্গের জাতীয় 
ইতিহাস সম্বন্ধে তাহার বহুবিধ তথ্য এই গ্রন্থের উপর নির্ভর 
করিয়াই লিখিত হয়। এই সম্বন্ধে ১৩৪৬ সনের ভারগবর্ষের 
কার্তিক মাসের প্রবন্ধে আমি নিয্নলিখিতরূপ মন্তব্য করি £ 

"বস্‌ মহাশয় হরিমিশ্রের কারিকা ও এড়মিশ্রের 
কারিকার পুথি পাইয়াছেন এবং এ দুইথাঁনিই অতি প্রাচীন 
ও প্রামাণিক কুলগ্রন্থ এইরূপ মত প্রকাশ করিয়াছেন। 
৬বনু মহাশয়ের পূর্ববর্তী আধুনিক কোন লেখক এই 
ছুইখানি গ্রন্থের সন্ধান পাইয়াছেন বলিয়া মনে হয় না। 
স্তরাং সাধারণের নিকট এই ছুইথানি গ্রন্থের পরিচয় 
দনওয়া ৬বন্গু মহাঁশয়ের অবশ্থকর্তব্য ছিল। পূর্বোষ্লিখিত 
কয়েকটি ঘটনায় তাহার সংগৃহীত কুলগ্রন্থের অকুত্রিমতা 
সন্থন্ধে সন্দেহ করার যথেষ্ট ও যুক্তিসঙ্গত কারণ ছিল। 
তথাপি পুনঃ পুনঃ অনুরোধ ও প্রকাশ্য সংবাদপত্রে আন্দৌলন 
সত্বেও ৬বন্থ মহাশয় ততসংগৃহীত এই্‌ ছুইথানি গ্রন্থ কাহারও 
সমক্ষে উপস্থিত করেন নাই এবং ইছাদের কোন বিশিষ্ট 
বিবরণও প্রকাঁশ করেন নাই। 

মরণকাঁল পর্যন্ত যঙ্ষের,ধনের স্তায় এই গ্রন্থ দুইথাঁনি 
বন্ু মহাশয় কি কারণে লোকচক্ষুর অন্তরালে গোপন করিয়া 
রাখিয়াছিলেন তাহা বুঝিতে পারিলাম না। কিন্তু সমুদয় 
অবস্থা পর্ধ্যালোচনা! করিলে বন্ধু মহাঁশয় সংগৃহীত এই 
ছুইখানি গ্রন্থ সনবন্ধে ্বতই সনদেহ জন্মে ।” (৬৬৫ পৃষ্ঠা) 

সম্প্রতি, ঢাক বিশ্বৃবিষ্ভালয়ের কর্তৃপক্ষগণ ৬নগেন্দ্রনাথ 
বহর সংগৃহীত সমুদয় কুলগ্রস্থাবলী ক্রয় করিয়াছেন। এই 
কুলগ্রসথগুলি ঢাকায় আনীত হইলে জনি পু'ধিশালার: অধ্যক্ষ 


আমার ভূতপূর্বর ছাত্র শ্রীমান সথবোধচন্ত্র বন্যোপাধ্যায়কে 
উক্ত হরিমিশ্রের কারিকাঁধানি অনুসন্ধান করিতে বিশেষ- 
ভাবে উপদেশ দেই। শ্রীমান স্থবোধ অনেক অন্সন্ধীনের 
পর একথানি পুরাঁণ অমৃতবাজার পত্রিকার মলাটযুক্ত প্রাচীন 
পুথির চারিখানা পাতা আমার সম্মুখে উপস্থিত করেন। 
পু'ধির মধ্যে হরিমিশ্রের কোন উল্লেখ নাই, কিন্তু প্রতি 
পাতার উপরের বাম কোণে ভিন্ন কালীতে এবং ভিন্ন 
হস্তাক্ষরে “হরিমিশ্র” এই কথাটি লিখিত আছে। পুথি 
মলাটে "৮৭৮ এই সংখ্যাটি এবং ছহুরিমিশ্ এই নামটি 
দেখিতে পাওয়৷ যাঁয়। পুথির স্ত;পের মধ্যে কয়েকথানি 
ইংরাজী ও বাঙ্গালায় লিখিত পুথির তালিকা পাওয়া 
গিয়াছে । দুইথানি বাঙ্গালা তাঁলিকায় ৮৭ সংখ্যায় 
হরিমিশ্রের কারিকার উল্লেখ আছে এবং সঙ্গে এই মন্তব্য 
আছে যে, যে বাক্সে জমিদারী কাঁগজ-পত্র আছে সেই বাক্সেই 
এই পুঁথি রক্ষিত হইয়াছে । ইংরাজী তালিকায় এই গ্রন্থ 
সম্বন্ধে বলা হইয়াছে যে, ইহাতে কয়েকথানি “দুশ্রাপ্য পৃষ্ঠা” 
(৪105 1216 15865) মাত্র আছে। ৬নগেন্দ্রনাথ বনু 
শেষজীবনে কুলগ্রস্থগুলি বিক্রয় করিবার জন্ত বিশেষ চেষ্টিত 
ছিলেন। সম্ভবতঃ এই কারণেই তিনি ইহার কতকগুলি 
তালিকা! প্রস্তুত করিয়াছিলেন। এইরূপ কয়টি তালিক! 
পুথিগুলির সঙ্গে পাওয়া গিয়াছে__কিন্ত ইহার কোন 
তাঁলিকাঁয়ই একাধিক ছরিমিশ্র কারিকার পুথির উল্লেখ 
নাই। 

এই সমুদয় বিবেচন! করিলে সহজেই গ্রতীতি হুইবে ষে, 
যে খণ্ডিত পুঁথিথানির চারিটি পাত! মাত্র সযত্ধে জমিদারীর 
প্রয়োজনীয় দলিলপত্রের সঙ্গে একটি বাক্সে পৃথক রক্ষিত 
ছিল তাহাই ৬নগেন্জনাথ বন্ধু কর্তৃক সংগৃহীত "হরিমিশ্রের 
কারিকাগ। 

কিন্তু বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনায় আমি আরও বিশেষ- 
ভাবে হ্হার পরীক্ষ/ করিতে মনস্থ করিলাম। আমার 
নির্দেশক্রমে গ্রমান সুবোধ ৬বস্থ মহাশয় হরিমিশ্রের কারিকা 
হইতে যে সমুষয় ক্লোক “বিশ্বকোব" -ও “বঙ্গের জাতীয় 


» ইউনি 


জ্যোষ্ঈ--১৩৪৮ ] 
তিহাদ”-এ উদ্ধৃত করিয়াছেন তাহা সংগ্রহ করিয়া উ সমুদয় 

শ্লোক আমাদের আলোচ্য খণ্ডিত পু*ধিথানিতে আছে কি-না 
তাহাঁর পরীক্ষ/ করিয়াছেন শ্রীমান বহু আয়াস ও পরিশ্রম 
পূর্বক এই কাধ্য সম্পাদন করিয়া একটি বিস্তৃত বিবরণ 
লিপিবন্ধ করিয়াছেন। বঙীয় সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকায় এই 
গ্রন্থের পরিচয়-প্রসঙ্গে আমি ইহার সবিস্তারে আলোচন৷! 
করিব। বর্তমানে ইহা! বলিলেই যথেষ্ট হইবে যে, ৬বস্তু মহাঁশয় 
তাহার গ্রস্থাদির নানাস্থানে হরিমিশ্রের কারিকা হইতে যে 
৭৮টি শ্লোক উদ্ধৃত করিয়াছেন তাহার মধ্যে ৭৩টি এই 
পু'থিতে আছে, অবশিষ্ট পাঁচটি শ্লোক সম্বন্ধে শ্রীমাঁন সুবোধ 
নি্লিখিতরূপ মন্তব্য করিয়াছেন। 

১-২। এই দুইটি শ্লোক মহেশের নির্দোষ কুল- 
পঞ্জিকায় আছে। 

৩। এই গ্লোকটি এলালমোহন বিগ্ভানিধি কৃত সম্বন্ধ- 
নির্ণয়ের কুলরমা” হইতে উদ্ধৃত হইয়াছে । 

৪| সন্বন্ধনির্য়ে এই লোকটি বাচস্পতিমিশ্রকৃত 
বলিয়া উল্লিখিত হইয়াছে । বল্লাল চরিতেও এই শ্লৌোকটি 
আছে। 

৫। এই শ্লোকোক্ত বিষয়টি আলোচ্য পুখিতে অন্ত 
একটি শ্লোকে আলোচিত হইয়াছে। 

এই সমুদয় আলোচনার ফলে সন্দেহমাত্র থাঁকে না যে, 
আমাদের আলোচ্য খণ্ডিত পুথিখাঁনিই ৬বন্ত্ মহাশয় সংগৃহীত 
হরিমিশ্র কারিকা+ গ্রন্থ -যাঁহা অর্ধশতাব্বী কাল লোক- 
লোঁচনের অন্তরালে থাঁকিয়। দৈববিপাঁকে ঢাকা বিশ্ববিষ্ভালয়ের 
পু'থিশালায় আশ্রয় লাভ করিয়!ছে। 

এক্ষণে বিচাঁধ্য বিষয় এই যে, এই গ্রন্থথানিকে হরিমিশ্রের 
কারিক1 বলিয়৷ গ্রহণ করার কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ আছে 
কি-না । গ্রন্থথানির প্রথম ও শেষ অংশ নাই, মধ্যের চারিটি 
পাত। মাত্র আছে। ইহার কোন স্থানেই ইহা হরিমিশ্রের 
কারিকা৷ বলয়! উল্লিখিত নাই । স্থতরাঁং ইহা যে হরিমিশ্রের 
কাঁরিকা- ৬নগেন্্রনাথ বন্থুর এই অনুমানের কোন যুক্তিসঙ্গত 
কারণ আছে বলিয়! মনে হয় না। প্রতি পাতাঁর বাম কোণে 
“হরিমিশ্র” এই কথাটি লিখিত আছে, কিন্তু ইহার কালী ও 
অক্ষর মূল পু'থির কালী ও অক্ষর হইতে বিভিন্ন_স্ৃতরাং 
ইহার উপর কোন আত্থা স্থাপন করা যায় না। বাহারা 
পুরাতন পুথির আলোচনা করিয়াছেন তাহার! জানেন যে, 
এই প্রকার গ্রন্থের নামোল্লেখের প্রথা অতি আধুনিক কালের 
পূর্ব্বে প্রচলিত ছিল না। পুথি আবিষ্কৃত হইবার পরে 
সম্ভবতঃ ইহাকে হরিমিশ্রের কারিক] মনে করিয়া অথব৷ এ 





হল্লিসিত্রেল কান্সি্তা 





৬৪১৪৭ 





নামে ইহাকে পরিচিত করিবার উদ্দেশ্তেই যে কেহ এ শঙ্ধটি 
লিখিয়া রাখিয়াছেন এই অন্ুমানই স্বাভাবিক । এই প্রসঙ্গে 
শ্রীমান সুবোধ একটি বিষয়ে আমার দৃষ্টি আকৃষ্ট করিয়াছেন। 
৬বন্ু মহাশয় তাহার বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস ও বিশ্বকোষে 
হরিমিশ্রের কারিক! হইতে নিম্নলিখিত গ্নলোকার্দ উদ্ধৃত 
করিয়াছেন £ 

“কিন্ত সাগ্রিমহাগ্ঠাপি বিপ্রা্ৈবিকল! সভা ।” 
আলোচ্য পু'থিখানিতে এই গ্লোক আছে কিন্ত ইহার "প্রি, 
অংশটি কাটিয়া দেওয়া! হইয়াছে । যে কালী দিয়া এই 
শব্দাংশটি কাটা হইয়াছে তাহ! মূল পু'থিতে ব্যবহৃত কালী 
হইতে ভিন্ন) কিন্তু “হরিমিশ্র শব্ধটি যে কালীতে লিখিত 
হইয়াছে তাহার অনুরূপ । এই পুথিখানিই যে ৬বন্থ 
মহাশয় হরিমিশ্রকারিকারূপে ব্যবহার করিয়াছেন ইহা 
তাহার অন্ততর প্রমাণ । ইহা হইতে আরও অনুমিত হয় ষে। 
এই পুঁথিখানি যখন ৬বস্থ মহাশয়ের হস্তগত হয় তখন 
হুরিমিশ্র” এই নামটি পুঁথিতে ছিল না। পরবর্তী কালে 
পু'থিধানি সংশোধিত হইয়াছে ও এ নামটি ইহাতে ভুড়িয়া 
দেওয়া হইয়াছে। বন্থু মহাশয় এখন পরলোকগত ও যুক্তি- 
তর্কের অতীত। চুড়ান্ত প্রমাণ না পাইলে তাহার সম্বন্ধে 
কোন বিরুদ্ধ মন্তব্য করা সমীচীন নহে ।__-অসম্ভব নহে থে 
কোন কারণে তিনি এই থণ্ডিত পুথিথানিকে হরিমিশ্রের 
কারিক! বলিয়া মনে করিয়াছিলেন এবং এই বিশ্বাসের 
বশবর্তী হইয়াই ইহার প্রতি পাতার বাম কোণে “হরিমিশ্র' 
শব্ষটি যৌগ করিয়াছিলেন। তাহার এই বিশ্বাসের মূলে 
কি যুক্তি প্রমাণ ছিল তাহা! আঁর এক্ষণে জানিবার উপায় 
নাই। কিন্ত তিনি মৃত্যুকাল পর্য্যন্ত এই পুখিখানি 
সাধারণের গোচরীভূত না করায় প্বতঃই সন্দেহ জন্মে যে, 
তাহার যুক্তিপ্রমাণের মূল বিশেষ দৃঢ় ছিল না। ৬নগেক্জনাথ 
বস্থর মত ও বিশ্বাস যাহাই থাকুক একথা স্বীকার করিতেই 
হইবে যে, আলোচ্য পুথিখানিকে প্হরিমিশ্রের কারিকা” 
বলিয়া গ্রহণ করিবার কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ নাই। স্তর 
তথাকথিত হরিমিশ্রের কারিকাঁর উপর ভিত্তি করিয়। প্রাচীন 
কুলশান্ত্র সন্ধে যে সমুদয় সিদ্ধান্ত করা হইয়াছে তাহা সর্ববথা 
বর্জনীয় । অন্ত প্রমাণ না পাওয়া পর্যযস্ত ভবিষ্যৎ এ্তিহাসিক 
আলোচনায় ছুরিমিশ্রের কারিকা” হইতে উদ্ধৃত কোন ঙ্গোক 
প্রামাণিক বলিয়! গৃহীত হইতে পাঁরে না। ৬নগেন্দ্রনাথ বন্ধ 
এই গ্রন্থথানিকে “সর্বপ্রাচীন ও মৌলিকপ্রূপে গ্রহণ করিয়! 
যে সমুদয় সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছেন তাহার এঁতিহাসিক 
মূল্য কতটুকু পাঠক মাত্রেই তাহ। বিচার করিবেন। 





শ্বেত ময়ূর 
উর্পাচুগোপাল মুখোপাধ্যায় 


রাত্রি প্রায় নয়টার সময় একরাশ নূতন কাপড়ের বাঁণ্ডিল, 
একবাঁক্স সাবান, পুরা এক পাউওড চা এবং আরও 
কতকগুলি জিনিস লইয়৷ অশোক বাঁড়ী ফিরিতেছিল। সমস্ত 
'দিন অফিসের খাটুনির পর মীর্জাপুর গ্্রটের কাপড়ের 
দোকানটাঁয় বসিয়া প্রায় একঘণ্টা' চীৎকার করিবার পর 
এখন সে রীতিমত অবসন্ন বোধ করিতেছিল। তবুও আজ 
তাহার পাঁয়ের গতি অসম্ভব ভ্রুত এবং মুখচোঁথের ক্লান্তির 
রেখাগুলিও কিছু অপরিস্ফুট। 

বাড়ীর দরজায় আসিয়া! অশোক কড়া নাড়িল। কিন্ত 
কড়। নড়িবাঁর সঙ্গে সঙ্গেই দরজা খুলিয়া যাইবার উপায় 
ছিল না। কারণ খণ্ড-বিখণ্ড এই ভাড়াটে বাড়ীর যে 
অংশটায় তাহার বাঁস সেটা অনেকখানি ভিতরের দিকে । 
সেখান হইতে এতদূরে আসিয়া দরজা খুলিয়া! দিতে বিভার 
বেশ একটু সময় লাগে। কড়া যখন নড়িয়া ওঠে তখন 
হয়ত সে তরকারিতে মশলার ভাগ লইয়া উৎকলদেশীয় 
নিরীহ জীবটির সহিত বকাবকি করিতেছে__কিন্বা! ছোট 
ছেলেটিকে কোলে এবং বড়টিকে পাশে বসাইয়া পান সাজিতে 
রসিয়াছে। এই সব কাজ সারিয়া দরজ! পর্য্স্ত আদিতে 
পাঁচ-সাঁত মিনিট পর্য্যস্ত দেরী হইয়া যাঁওয়া৷ মোটেই বিস্ময়ের 
বিষয় নয়। কোন কোন দিন ছোট ছেলেটা হয় ত কোল 
হইতে নামিতেই চাহে না, কীদিয়া এবং চীৎকার করিয়া 
.বাঁড়ীর অন্তান্ত অংশের বাসিন্দাদের পধ্যস্ত উত্যক্ত করিয়া 
তোলে। সেদিন বিভ| আমিতেই পারে না। উপর হইতে 
সাধাসাধন! করিয়া পুরী জিলাঁর অধিবাসীটিকে দরজ! খুলিতে 
পাঠাইয়। দেয়। পাঁচক ঠাকুরটির বয়স হইয়াছে; তারপর 
আফিমের চর্চীও আছে একটু, নড়াচড়া! করিতে হইলে সে 
রাগিয়া খুন হয়। বিড় বিড় করিতে করিতে কোন রকমে 
দরজাটা খুলিয়! দিয়া সে রান্নাঘরে ফিরিয়। আসে এবং 
পিড়িটার উপর বসিয়া পড়িয়া আবার ঝিমাইবার 
চেষ্টা করে। | 

সেদিন কিন্তু বিভাই দরজা খুলিয়া দিল। অশোক হাতের 
কাপড়ের বাঙিল্টা বিভা ছাতে দিয়া ছোট একটা নিঃশ্বাস 


ফেলিল, তারপর বিভার খিলদেওয়া পর্যযস্ত অপেক্ষা না 
করিয়াই উঠিয়া আসিল উপরে । 

বিভা যখন উপরে পৌছিল অশোঁক তখন হাতের বাঁকী 
জিনিষগুলি টেবিলের উপর রাখিয়া জামা খুলিয়া বিছানার 
উপর শুইয়! পড়িয়াছে। 

হাঁতপাখাঁর হাওয়া করিতে করিতে বিভা জিজ্ঞাসা 
করিল, হঠ।ৎ এত সব জিনিষপত্র কিনে আনলে যে? 

অশোক বলিল, হঠাৎ অনেকগুল! টাকা 
গেল, তাই। 

বিভা খুনী হইল কি না৷ বোঝা! গেল না। 

অশোক এবার নিজেই ব্যাপারট! সবিস্তার বর্ণনা করিল। 
যুদ্ধের বাজারে কোম্পানি এবছর অনেক টাকা লাভ 
করিয়াছে-আর সেই লাভের ভগ্রাংশ দিয়া কর্তৃপক্ষ 
কর্মচারীদের খুসী করিবার চেষ্টা করিয়াছেন। সাদা কথায় 
তাহারা “বোনাস” পাইয়াছে। 

স্থসংবাদ সন্দেহ নাই । 

একবছর থাঁটিয়! দুই মাসের বেতন ফাউ ! 

বিভা কিন্ত তবুও কোন রকম উচ্ছ্বাস প্রকাশ করিল না। 

অশোঁক মনে করিয়াছিল, বিভার চোখ দুইটি আজ 
অনেকদিন পরে ঠিক আগেকার মত কৌতুক আর আননে' 
উজ্জ্বল হইয়! উঠিবে। দুটি ছেলেই আজ ঘুমাইয়! পড়িয়াছে, 
হঠাৎ বিভাকে কাছে টানিয়া আনিলে আজ হয় তসে রাগ 
করিবে না, এমনই কত কথা সে শুইয়া শুইয়া ভাবিবার 
চেষ্টা করিতেছিল। কিন্তু বিভার মুখের দিকে চাহিয়া 
অশোক হঠাৎ ছুই বুঝিতে পারিল না। 

বিভ1 একটু চুপ করিয়। থাকিয়া ভয়ে ভয়ে বলিল, এত 
জিনিষপত্র না কিনে, দেনার টাক! কিছু শৌধ করলে বোধ 
হয় ভাল হ'ত! র 

মাঝে এক বছর অশোঁকের চাঁকরি ছিল না। সেই 
সময় বাড়ীভাড়া এবং আরও কতগুলি কারণে প্রায় শঃপাচেক 
টাকা দেন! হইয়াছে। এই চাকরিটা পাইয়া! অশোক মনে 
করিয়াছিল, দেনাটা অল্নে অল্পে সে শোধ করিয়! ফেলিবে। 


পাওয়! 


৭6৪ 


জযোষ্ঠ--১৩৪৮ ] 


কিন্ত সংসারের নান! ছিন্রপথ দিয় অভাবের মৃষ্তিটা ক্রমেই 
এমন ভাবে প্রকট হইয়া উঠিতেছিল যে, নিত্যকার প্রয়োজন 
মিটাইয়! অন্ত কোন দিকে দৃষ্টি দেওয়া তাহার পক্ষে সম্ভব 
হয় নাই। দেনাটা যে আর বেশী দিন ফেলিয়া রাখা সম্ভবও 
নয়, এ কথাও অশোক মনে মনে ভাল করিয়! জানিত। 
কিন্তু কি উপায়ে যে সেটার হাত হইতে নিষ্কৃতি পাওয়া 
যায় তাহা সে ঠিক করিতে পারে নাই। 

আঁজ বিভার সামান্য এই কয়টি কথায়, সন্ধ্যা হইতে 
তাহার মনের মধ্যে যে মধুর ভাবলোক গড়িয়! উঠিতেছিল 
তাহা ভাঙ্গিয়া যেন চুরমাঁর হইয়া গেল। 

সে বলিল, দেনাটা শোধ করা যে দরকার সে কথা 
আমিই হয় ত সবচেয়ে বেশী বুঝি । কিন্তু ভদ্রভাঁবে বাচবাঁর 
পক্ষে যে সব ছোটখাট বিলাসিতার প্রয়োজন আছে, 
সেগুলিকে অস্বীকার ক'রে বেঁচে থাকবাঁর ক্ষমতা আমার 
নেই। তোমার কাছে আমার একটি মাত্র অনুরোধ 
বিভা, হিতোঁপদেশের বেত হাতে ক'রে তুমি মাস্টারি 
করতে এসো না। 

বিভা অবস্থাপন্ন ঘরের মেয়ে । তাহার বাপ মা ঘর দেখিয়া 
তাহার বিবাহ দেন নাই, বিবাহ দিয়াছিলেন কেবল বর 
দেখিয়া। অশোক সেই মাত্র এম-এ পাশ করিয়| বাহির 
হইয়াছে । বাঙালীর ছেলেদের মধ্যে তাহার মত সুদর্শন 
তরুণ সচরাচর দেখা যাঁয় না। কাজেই বিভীর আত্মীয়- 
স্বজন যদ্দি শুধু তাহারই উপর নির্ভর করিয়া বিবাহ দিয়া 
থাকেন তাহাতে আশ্চর্য্য হইবার কিছুই নাই। কিন্ত 
পৃথিবীতে একদল লোক আসে ভাগ্যের সঙ্গে কেবল লড়াই 
করিবার জন্য ৷ সমস্ত ব্যক্তিত্ব এবং সমস্ত যোগ্যতা সত্ত্বেও 
টাকাকড়ির লেন-দেনের বাঁজারে তাহার! নিজেদের প্রতিঠিত 
করিতে পারে না। অশোককেও আমর! সেই দলে ফেলিতে 
পারি। সে ভাবিতে পাঁরে অনেক কিছুঃকিন্তু তাঁহার একাঁংশও 
করিয়া উঠিতে পারে না। সংসারে দারিজ্ের মূর্তিটাকে 
বিভাও যে ঠিক সহ করিতে পাঁরে তাহাঁও নয়, তবুও সেটার 
সঙ্গে মানাইয়! চলিবার চেষ্টা! তাঁহাকে গ্রতিমুহুর্তে করিতে 
হয়। অশোকের বাঁপ মা অনেকর্দিন আগেই মারা গিয়াছেন, 
সে হিসাবে বিভা তাহার সংসারের একছত্র অধীশ্বরী। 
মাঝে রান্নাবান্নার ভারটাও সে নিজের হাতেই তুলিয়া 
লইয়াছিল; কিন্ত নূতন চাকরিটা পাইয়া অশোক উৎকল- 





ক্থেভ অন্তর 


৭02৯ 





দেশীয় পাচকটিকে বাহাল করিয়াছে। ঠিকা বি আসিয় 
দুইবেলা অন্ত কাজগুলি করিয়া দিয় যায়। . 
তাই বাহির হইতে অশোকের এই ছোট সংসাঁরটিকে 
দেখিলে উহার ভিতরে ঘুণ ধরিয়াছে কি না সেটা বুঝিবার 
উপায় নাই। বর্ষার সন্ধ্যায় এখনও সে রজনীগন্ধার 
গুচ্ছ কিনিয়া আনে। গুইবার ঘরে বকের পালকের মত 
পরিষ্ষার বিছানার পাঁশেই ছোট টেবিলের উপর ফুলদানিতে 
রজনীগন্ধা গুলি বর্ধারাত্রিকে বিহ্বল করিয়া তোঁলে। " গায়ে 
ঘাম অশোক সহা করিতে পারে না। তাই ফ্যানও একটা 
রাখিতে হইয়াছে । + 
ছেলে দুইটির অসম্ভব দৌরাত্যে অশোকের মাঝে মাঝে 
মনে হয় এ সব ফেলিয়। শীন্রই একদিন সে কোথাও পালাইয়া 
যাইবে। ছেলে ছুইটিকে সে যে ভালবাসে নাঃ এমন কথা 
বল! চলে না। হাতে পয়স! থাকিলে তাহাদের সম্ভব অসম্ভব 
সকল রকম আবদারই সে মিটাইয়। আসিয়াছে? কিন্ত 
সাধারণত তাহার মনটা সর্বদা নিজেকেই কেন্দ্র করিয়া! ঘোরে 
বলিয়া এত নৈকট্যের মাঝখাঁনেও সে যেন নির্জিগ্ত। 
রবিবারের বিকালে ফরসা! কাপড় জাম! পরিয়া যখন সে ক্লাবে 
ব্রীজ খেলিতে যাঁয়, তখন ছোটি ছেলেটা কোলে উঠিবার 
বায়না ধরিলে সে তাহাকে গ্রীতিপ্রফুল্ল মুখে বুকে তুলিয়া 
লইতে পাঁরে না। বরং একটু রাঁগিয়া যায়। অশোকের, 
এই প্রত্যাখ্যানের প্রতিক্রিয়াটা সহ করিতে হয় বিভাকে। 
অশোঁক তাহাও জানে । সেই জন্যই কতবার একটা ছোকরা 
চাকর রাখিবার জন্ত সে বিভাকে গীড়াগীড়ি করিয়াছে । 
একটা চাকর থাকিলে বিভা তবু একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস 
ফেলিয়! বাঁচিতে পারিবে । কিস্তু বিভা রাজী হয় নাই। 
“পাঁচটা নয়, সাতটা নয়, দুটি মাত্র ছেলে; তাদের 
জন্যে ঝি, চাঁকর, বামুন -.""এতগুলে৷ লোকের দরকাঁর কি ?” 
একুশ বছর বয়সেই বিভা পুরাদস্তর গৃহিণী হইয়] 
পড়িয়াছে ! ূ | 


সব কথাই যে বিভা ভালর জন্য বলে এটুকু বুঝিবার 
মত বয়স এবং বুদ্ধি অশোকের হইয়াছে । কিন্তু তাহার 
সাংসারিক অন্বচ্ছলতাকে কেহ কৃপাদৃষ্টিতে দেখিতেছে। এই 
ভাবটা সে কিছুতেই সহ্‌ করিতে পারে না। আত্মীয় 
অনাত্মীয় অনেকেই তাহাকে দেশের বাড়ীতে বউছেলেকে 


5২. 


রাখিয়া আসিবার পরামর্শ দিয়াছেন । কলিকাতা! হইতে 
তাহাদের দেশ খুব বেশী দূরে নয়, মাইল চল্লিশের মধ্যেই । 
কত লোক ডেলি প্যাসেঞ্জারি করে। সপ্তাহাস্তিক টিকিটের 
কপাঁয় কত লোক শনিবার বাড়ী গিয়! প্রফুল্ল মনে সোমবার 
বিমাইতে ঝিমাইতে অফিসে ফিরিয়া আসে। ইহার যে-কোন 
একটা উপায় অবলম্বন করা অশোকের পক্ষে সকল দিক দিয়া 
ভার । সংসার বাঁড়িতেছে। তাহার আঁধিক অস্বাচ্ছল্যের 
জন্ভ সময়ের চাকা থামিয়া যায় নাই। সংসার আরও 
বাড়িবেে আজ যাহারা দুরস্তপনাঁষ তাহাকে ব্যতিব্যস্ত 
করিয়া! তুলিতেছে, তাহারা একদিন বড়.হইবে; স্কুলে যাইবে, 
কলেজে যাইবে। 

ভবিষ্কতের সমস্ত দিগন্তটাই অশোক চোখের সাঁমনে 
স্পষ্ট দেখিতে পায়; সেখানে ছায়া নাই, বিশীমের অবসর 
নাই। জীবনের সঙ্গে শুধু উদয়ান্ত ক্ষমাহীন সংগ্রাম । 

এই ছবিটা চোঁখে পড়িলেই অশোক যেন ক্ষেপিয়া! ওঠে । 
না, মাথা সে কিছুতেই নীচু করিবে না । দীড়াইয় থাকিতে 
থাকিতেই গীঠের শিরাড়া একদিন হয় ত বীকিয়া যাইবে, 
তবু পথের ধারে বসিয়া পড়িয়! ভাগ্যদেবতার পায়ের লাখি 
সে খাইবে না। 

এই বিরাট ও বিচিত্র শহর ষেন তাহার রক্তের সঙ্গে 
মিশিয়া গিয়াছে । নয় বছর বয়সে যেদিন সে প্রথম 
হাওড়ার পুল পার হুইতে গিয়! বিস্ময়ে অবাক হইয়াছিল, 
সেদিন হইতে আজ পর্য্স্ত যে ইহার বিশ্ময়ের শেষ খুঁজিয়া 
পাইল না। এই বিরাট নগর প্রতিদিন দিনে ও রাত্রিতে 
তার মনে মনে যে মহাকাব্য রচনা! করিয়া চলিয়াছে, 
চটকল অফিসের লেজার বুকে কিনব! তাহার সংসাঁর খরচের 
হিসাবে উহ্থার কোন পরিচয় নাই। 

অফিস হইতে ফিরিবার সময় এখনও কতদিন সে 
অকারণে পথে পথে ঘুরিয়া বেড়ায়; ইচ্ছা করিয়! বাড়ী 
ফিরিতে দেরী করে। বাড়ীতে বিভা যে ততক্ষণ ছেলে 
দুইটির আবদার ও উপদ্রবে অস্থির হইয়! পড়িতেছে, একথা 
তাহার মনে থাকে না। 

ডবল ডেকার বাসের উপরে চড়িয়া চৌরলী পার হইবাঁর 
সময় মনে মনে সে যেন নিউ-ইয়র্কের ফিফথ. এভিনিউয়ে 
চলিয়া যায়। আর্মি এণ্ড নেভি হইতে সুরু করিয়া এধারের 
মোড় প্যস্ত একটা স্বতন্ত্র ৃথিবী, নূতন সৌরজগত | যেখানে 


ভান্রভন্ব 


[ ২৮শ ব্য--২য় খণ্ঁ-বষ্ঠ সংখ্যা 


গুধু সমারোহ, শুধু বর্ণচ্ছটা। নভেম্বর মালের মাঝামাঝি 
হইতে ক্রিশমাস সেল, গ্র্যাও রিডাকৃশান সেল এবং আরও 
কত রকম সেল সুরু হইয়৷ গেছে। ফার্পোর সামনে 
শ্রেণীবন্ধ ট্যান্সির ভিড়-_পষ্টিয়াক হইতে মার্সেডিজ বেএজ 
পর্যন্ত ! নিয়নসাইনের সরু সরু রেখাগুলিকে তাহার প্যারিস- 
বাসিনী তরুণীদের পেন্সিলে শাক! তুরু বলিয়! ভূল হয়। 
কার্জন পার্কটা! যেন ভ্রীফালগাঁর স্কোয়ার, কিন্বা প্যালে গ্ 
কনকর্ড। অশোক মনে মনে হাওড়া স্টেশনের নাম দিয়াছে 
_ গ্র্যাগ্ড সেপ্টাল টামিনাস! তাহাকে পাগল বলিয়া ভূল 
হইতে পাঁরে,কিস্ত তাহার মনের ভাঁবন! চিন্তাগুল1 এই ধরণের 
অসম্ভব যত পথ ধরিয়াই ধাতায়াত করে। কলিকাঁতাকে 
সে তাহার নাড়ীতে নাঁড়ীতে অনুভব করে। কলিকাতা 
তাহার কাছে শহর নয়, কোন শহরের নাম নয়, অতীত নয়, 
ইতিহাস নয়, পুরাঁণ নয়, বিরাট বর্তমান ! টাঁম-বাঁস- 
মোটর-রিকা-সাইকেল-মোটর-বাইক আর লরীর ঘড়-ঘড় 
ঝড়-ঝড় ধ্বনিতে সেই কঠচঞ্চল বর্তমানের জয়ধ্বনি । 
চারিদিকে কি প্রচণ্ড স্পীড, উন্মত্ত গতিশীলতা আর সে 
গতিশীলতা কি সংক্রামক ! কিছুতেই সে ইহার হাত হইতে 
আত্মরক্ষা করিতে পারে না। 

অনেকনিন সে বাস হইতে নামিয়া পড়িয়া যে মেয়ে দুইটি 
হয় ত সিনেমা হইতে বাহির হইয়া হাইহিলের শবে ফুটপাত 
মুখরিত করিয়া যাইতেছে, তাহাদের পিছনে পিছনে নিতান্ত 
অকারণে ঘুরিয়! বেড়াইয়াছে। 

বর্ণোজ্জল এই কলিকাতা হইতে সরিয়া আসিয়। তাহাকে 
অনেক কষ্টে পাঁচজনের অতি দাধারণ কলিকাতায় ফিরিয়া 
আসিতে হয়। কত অনুচ্চারিত বেদনায় সমঘ্ত মনটা তাহার 
সেই সময় আচ্ছন্ন হইয়া থাকে সেকথা সাধারণকে বুঝাইবার 
নহে। 


তিনদিন পরের কথা বলিতেছি। 

রবিবারের লকাঁল। ঘুম ভাঙ্গিয়া অশৌক দেখিল 
আকাশে অল্প অল্প মেঘ করিয়াছে । মেঘের সঙ্গে অশোকের 
মনের কোথায় যেন নিভৃত ঘনিষ্ঠতা আছে। মেঘময় আকাশ 
দেখিলে তাহার সমস্ত অশাস্তি আপনিই দ্গিগ্চ হইয়া আসে। 

বিছানা হইতে উঠিয়া অশোক মুখ ধুইয়া আসিল। 
জলযোগ এবং চা-পানের পালাটা চুকাইয়া ফেলিয়া 


সো১০৪৮] 


কামাইবাত্স সরঞ্জামগুলি লইয়া! মে পুরাণ ড্রেসিং টেবিলটাঁর 
সামনে বসিল। কিন্তু মনটা তাহার এত বেণী খুসী হইয়া 
উঠিয়াছে যে কামাইবার সৌখীনতা সম্বন্ধেও সে কেমন 
একট নিম্পৃহতা বোধ করিতেছে। 

এমন সময় প্লান সারিয়! বিভ! ঘরে ঢুকিল। এলোচুলের 
যে অংশটুকু শাড়ীর অবরোধ মানে নাই, সেখানে ছোট্ট 
একটি গি'ঠ দেওয়। ৷ ব্যাপারটা কিছুই নয়, তবু অশোকের 
ভাল লাঁগিল। 

বিভা টিপের কৌটা হইতে টিপ লইয়া কপালে 
পরিতেছিল। সেইদ্দিকে চাহিয়া থাকিতে থাকিতে 
অশোকের মনে হুইল, বিভাঁর যৌবনকে ইতিহাসের কোঠায় 
স্থান দিবার সময় হয়ত এখনও আসে নাই। গোঁধুলি 
আসন্ন হইলেও দিনের অিয়মান আলো তখনও তরঙ্হীন 
নদীর জলে ঝিকমিক করিতেছে । 

অশোক বলিল সন্ধার পর তোমার সংসারের 
কাজগুলো! একটু তাড়াতাড়ি সেরে নিও । রাত্রিতে 
সিনেমায় যাঁব। 

গলার ত্বরে আনন্দের সঙ্গে বিশ্ময় মিশাইয়৷ বিভা বলিল 
রাত্রে ? 

অশোক বলিল, রাত্রিতে কলকাতার শহরে বাঁঘভানুক 
বা'র হয় না; ভয় পাবার কি আছে? ছেলে ছুটো যাতে 
সকাল সকাল ঘুমোয় তার ব্যবস্থা ক'রো। 

“ওদের রেখে যেতে হবে ? 

নিশ্চয়ই হবে। কারণ আমরা কোন পৌরাণিক ছবি 
দেখতে যাঁব নাঁ, যাব “নিউ এম্পায়ার” কিস্া লাইট হাউস,-এ।, 

“কিন্ত এর! থাকবে কার কাছে ? 

“বুড়ো ঠাকুর পাহারা দেবে ।, 





ছেলে দুইটি যদি সকাল সকাল ঘুমাতে ন! চাহে সেই 
ভয়ে বিভা সমস্ত দিন তাহাদের ঘুমাইতে দিল না । 

সন্ধ্যার পরেই তাহাদের আহারের পর্বটা শেষ করিয়া 
দেওয়া হইল। কিন্তু তাহারা বোঁধ হয় বাতাসে কিসের একটা 
আভাস পাইয়াছে+ আটটা বাজিতে চলিল, কিন্তু দুইজনেই 
বিছানায় শুইয়! দিব্যি প্যাট্প্যাট করিয়া তাকাইয়া আছে। 

অশোক শ্লানের জন্ত নীচে নামিতে নামিতে বলিল, 
ঠিক পৌনে নটায় গাড়ী আসবে--আমি ট্যাক্সি বলে 


তত সন্ধু 


৮ 
এ2.ট 
লি 





রেখেচি। প্রথমে আমর! যাঁব সোডা-ফাউন্টেনে ; সেখান 
থেকে লাইটহাউস। সাড়ে আটটার মধ্যে তৈরী হওয়! 
চাই। 

বিভার ছোট্ট কপালটিতে বিন্দু বিদু ঘাম ফুটিয়া 
উঠিল। ঘড়িতে আটটা বাঁজিতে আর পাঁচ মিনিট বাকী ! 

অর্থাৎ তাহার হাতে পয়ত্রিশ মিনিটের বেশী সমক্ন নাই। 
ছেলে দুইটি ঘুমাইয়া পড়িলে সে ইহার আগেই তৈরি হইতে 
পারে। কিন্তু... | 

অশোঁক উপরে উঠিয়া আসিতে ব্ভা যেন আরও 
বিব্রত হইয়া পড়িল। দেখিল' ছেলের! একবার করিয়া চো 
বু'জিতেছে+ তারপরেই চোখ খুলিয়া তাহাদের রহম্তজনক 
গতিবিধি লক্ষ্য করিতেছে। 

বাপ-মায়ের ভাবিভঙ্গী সম্বন্ধে তাহারা আজ রীতিমত 
সন্দিহান ! তবুও ঘড়িতে এক সময়ে সাঁড়ে আটটা বাজিয়া 
গ্রেল এবং তাহার কিছুক্ষণ পরে সদর রাস্তায় ট্যান্সি আসিয়া 
থামিবার শব্ধও বিভা গুনিতে পাইল। 

ভাঁগ্য স্প্রসন্ন, মিনিট সাতেক আগে ছেলে ভুইটি 
সত্যিই ঘুমাইয়া পড়িয়াছিল। তাঁহীরই মধ্যে বিভা পাশের 
ঘরে গিয়! নিজের কেশ ও বেশ যথাসম্ভব পরিপাটি করিয়া 
লইতেছিল। 

অশোক সিক্ষের পাঞ্জাবীটায় মাথা গঙ্গাইতে গলাইতে 
বলিল, জুতোটা পায়ে দিতে ভুলো! না, খালি পায়ে ওখানে 
যাওয়া চলবে না। 

বিভা ট্রাঙ্কের তল! হইতে গতবারের পূজার জুতাটা 
বাহির করিয়া পরিয়া লইল। 

অনেক দিনের অব্যবহারে ভুতোজোড়ার গায়ে একটু 
আধটু ছাতা ফুটিয়া উঠিয়াছিল-_কিন্ত তখন আর পরিষ্কার 
করিবার সময় নাই। ঁ 

নিউ ইয়র্ক সোডা ফাউণ্টেনে তিন টাকা.চাঁর আনার 
বিল চুকাই। দিবার পর আবার ট্যার্সিতে চড়িয়া তাহার! 
যখন 'লাইট হাউস”-এ পৌছিল। তখন “শো? আরম্ভ হইয়া, 
গিয়াছে। , 

'লাইটহাউস'-এর লবিতে দাড়াইয়! বিভার মনে হুইল, 
দে কোন রূপকথার রাজবাড়ীতে পৌছিয়াছে। ডিনার 
ফের সায়েবমেম তখনও আসিয়া টিকিট খরিদ 


০০5) 


সখ. সহ ্স্স্্হ্ 


করিতেছিল। তাহাদের বিচিত্র পোষাক ও এই বিচিত্র 
পরিবেশের মধ্যে বিভার বুকের কীপুনি অসম্ভব ক্রুত হইয়া 
উঠিযাছে। টিকিট কিনিয়! অশোঁক বলিল, চলো। 

বিভার কপালে আবার ঘাম ফুটিয়া উঠিয়াছিল। পাশ 
মুখে সে অশোকের পিছনে পিছনে ভিতরে গিয়! ঢুকিল। 

অশৌক যদি বিভার পিছনে পিছনে যাইত তাহা হইলে 
বিভার আলতা-পরা পায়ে মলিন স্তাগালের অসামগরীন্য 
দেখিয়া! সে মর্মাহত হইত। 

যে ছবিথান৷ তাহার! দেখিতে গিয়াছিল, সেটির বিষয়- 
বস্ত গড়িয়া উঠিয়াছে দক্ষিণ দ্বীপের কয়েকটি ঘটনাকে কেন্ত্র 
করিয়া । নাচ? গান, আর প্রণয়-নিবেদনের দৃশ্তে ছবিখানি 
ভরপুর । 

ইণ্টারভ্যালের সময় অশোক বিভার মুখের দিকে চাহিয়া 
দেখিল, তাহাঁর বিন্ময়-বিস্ফীরিত দুইটি চোখ গ্রেক্ষাগারের 
এ প্রান্ত হইতে আর এক প্রান্ত পর্য্যন্ত ঘুরিয়া বেড়াইতেছে। 

অশোক মনে মনে লজ্জিত বোধ করিল। বলিল : 
কেমন দেখ চো। 

বিভা! জবাব দিতে পারিল না। তাহার চোখ দুইটি 
যখন আলোয়-উদ্ভাসিত প্রেক্ষাগারের দিকে চাহিয়! বিস্ময়ে 
বিশ্ষারিত হইয়! উঠিয়াছিল তখন মনে মনে সে- ছেলেরা 
উঠিয়া এতক্ষণে আবার কান্নাকাটি জুড়িয়াছে কি ন! তাহাই 
ভাবিবার চেষ্টা করিতেছিল। 

এ গল্প তাহার কাছে শুধু ছবি, কাহিনী নয়। 

পাত্র-পাত্রীর একটা কথাও সে বুঝিতে পারে নাই। 


. সবি শেষ হইবার পর বাহিরে আসিয়া তাহারা যখন 
আবার ট্যাক্সিতে উঠিল, তখন আকাঁশ ভাঙ্গিয় বর্ষা 
নামিয়াছে। বৃষ্টি সুরু হইয়াছে অনেক আগেই, ভিতরে 
বসিয়। তাহারা ইহার কিছুই টের পায় নাই। প্রকাণ্ড 
সিডানবডি ক্যাডিলাক গাড়ী; চলিবার সময় একটুকু শব 
হয় না, দেখিতে দেখিতে সেটা বড় রাস্তায় আসিয়া পড়িল। 

উইপ্ স্ত্রীনটা সরাইয়া দিয়া বৃষ্টিভেজা মাঠের দিকে 
টাহিয়া অশোক বলিলঃ চম$কার। 

,আঁজিকার অতি সাধারণ ছবির গল্পটা তাহার ভাল 
লাঁগে নাই। এতক্ষণে সে ক্ষোভটা তাহার মন .হইতে 
নিঃশেষে মুছিয়া গেল.। 


ভ্ান্রস্ডন্ঞ্ 


[ ২৮শ বর্ষ--২র থণ্ড--বষ্ঠ সংখ্যা 


তাহার স্বপ্পের কলিকাতায় রাত্রি নামিয়াছে। আর সেই 
রাত্রিকে মুখর ও বিহ্বল করিয়! তুলিয়াছে বৃষ্টি! কি 
তুমুল কলরোল এই বৃষ্টির! মনে হইতেছে? মাঝ সমুদ্রে 
ণটাইফুন+ উঠিয়াছে ; তাহাদের ঘরবাড়ী ভাঙ্গিয়া কোথায় 
ভাসিয়া গিয়াছে কে জানে! কোন রকমে উঠিয়া তাহারা 
ছোট্ট একটি নৌকায় আশ্রয় লইয়াছে-_তাহার! দুইটি 
প্রাণী। এটা ট্যাক্সি নয়, ময়ুরপত্থী নৌকা, তাহাদের 
ফ্যোণ্টম গণ্ডোল! 1 কাচের হাঁওয়া-জানালাট৷ খোলা 
থাকায় ভিতরে বাতাস আসিতেছিল হু হু করিয়া-আর 
সেই সঙ্গে বৃষ্টির ছাট! বিভা আজ গন্ধ-তেল মাখিয়াছিল। 
ট্যান্সির সীটে মাথা হেলাইয়া দিয়া অশোক চোথ বুজিয়া 
ভাবিতেছিল, হাওয়াই দ্বীপ হইতে হাওয়ার বন্যা আসিতেছে 
আর সেই বাতাসে বহিয়া আসিতেছে আকুল, উগ্র» গন্ধ__ 
পঁয়সেটা, না ইর্যাসমিক, কিসের তা সে কি করিয়! বলিবে ? 

গন্ধের কখনও নাম দেওয়। যায়! 

বিভা বলিল ঃ ভিজে গেলাম যে! জানালাটা বন্ধ 
ক'রে দাও । 

অশোক বলিল, নাঃ ওটা খোলা থাকবে । একটু প্রাণ 
ভরে নিঃশ্বাস নাও 7 একটু অসভ্য হওঃ একটু বর্ধবর-_ 

বলিতে বলিতে বিভার এলো খোপাঁটা টানিয়! সে 
একেবারে বিপর্যস্ত করিয়! দিল। 

বিভা বিব্রত হইয়া ড্রাইভারের দিকে চাহিয়া! বলিল 
লোকটা কি ভাববে বল ত? 

অশোক বলিল, ওরা! এর চেয়ে অনেক রোম্যার্টিক দৃশ্থ 
দেখেচে এই গাড়ীর ভিতরে; ওর! এত সহজে আশ্চর্য্য 
হবে না। 

ীচ-ঢাঁল রাস্তায় রীতিমত জল জমিয়াছে। আর 
সেই জলের উপর আসিয়! পড়িয়াছে গ্যাসের আলো । 

ট্যান্সির চাক! চলিয়াছে সেই জলের ভিতর দিয়াঃ দুই 
পাশে ছোট ছোট ঢেউ ভাঙ্গিয়া চুরমার হইয়া যাইতেছে। 

অশোক বলিল £ এটা কলকাতার রাম্তা নয় বিভা; 
হয় দুধমতী নদী, কিন্বা মেঘনা কি পক্মা! বানে আমাদের 
ঘর ভেদে গেছে । আমরা একটা ভেলায় চড়ে সভ্য 
সমাজের বাইরে ভেসে চলেছি। রাস্তার ওপারে ওই যবে 
আলোটা দেখচো, ওটা -.লাইট হাউস !--সিনেম! নয়ঃ 
সমুদ্রের ধারে জাহাজগুলোকে পথ দেখাবার আলো ! 


জ্যৈষ্ট--১৩৪৮ ] 


৮৮ সি -সচ ব্য 


বিভা সঙ্গেহে অশোকের কাধে মাথা রাখিয়া বলিল, 
তুমি মস্ত একটা পাগল! 

অশোক বলিল; পৃথিবীর লোক বড্ড বেশী হিসেবী 
হয়ে পড়েচে। সবাইকে অন্তত এক দিনের জগ্ভ পাগল 
ক'রে দেওয়া দরকার ! 


অশোকের কল্পনার সেই ছুধমতী নদী, মেঘনা বা পদ্বা 
পার হইয়া ট্যান্সির চাঁক! যখন গলির প্রান্তে থামিল, ঘড়িতে 
তখন একটা বাজিয়া গিয়াছে । সমস্ত পাড়াটা চুপচাপ । 

ড্রাইভারের হর্নের ঘন ঘন শবে চকিত হইয়! পাঁচক 
বনমালী পাণ্ডা আসিয়া দরজা খুলিয়া! দিল। 

উপরে ওঠা পর্যযস্ত অপেক্ষা করিতে হইল নাঁ। নীচেই 
বনমালীর মুখে খবর পাওয়া গেল যে তাহারা চলিয়া! যাইবাঁর 
আধঘণ্টা পরেই ঘুম হইতে উঠিয়া ছেলেরা যে চীৎকার 
সুরু করিয়াছে, এখনও তাহার বিরাঁম নাই। সে ছুধ এবং 
লজেঞ্জ আনিয়া তাহাদের শাস্ত করিবার যথাসাধ্য চেষ্টা 
করিয়াছে, কিন্তু সবই হইয়াছে ভম্মে ঘি ঢালা ! 

সরু গলিটা পাঁর হইতেই তাহাদের চীৎকার বিভার 
কানে গেল। তাড়াতাড়ি সে উপরে উঠিয়া! আসিল। 

ঘরের মধ্যে সে এক রোমাঞ্চকর দৃশ্য ! 

ছেলে ছুইটি বিছানার উপর বসিয়৷ এউহার মাথার চুল 
ধরিয়া টানিতেছে আর চীৎকার করিতেছে । বনমাঁলী যে 
দুধের বাঁটাটা আনিয়াছিল সেটা তাঁহার! উল্টাইয়া 
ফেলিয়াছে। আরযে সব ছোটখাট অপরাধ করিয়াছে 
সেগুলি লিখিবাঁর মত নয়। 

বিভাকে ঘরে ঢুকিতে দেখিয়া! ছোট ছেলেটা আধ আধ 
জড়িত গলায় অভিযোগ করিল যে দাদা তাহার ছধ খাইয়া 
ফেলিয়াছে। কেন খাইয়! ফেলিয়াছে সেই প্রশ্নই সে ঘুরিয়া 
ফিরিয়া বার বার করিতে লাগিল। 

বিভা ভাল কাপড়টা পধ্যস্ত ছাড়িয়া রাখিবার অবসর 
পাইল না। সেই অবস্থাতেই ছোট ছেলেটিকে কোলে 
তুলিয়া! লইয়! শাস্ত করিবার চেষ্টা করিতে লাগিল। 

পাশের ঘরে অশোক জামাটা খুলিয়া! রাখিয়া সিগারেট 
ধরাইতেছিল। ঘরের দক্ষিণ দিকের জানালাটা সে 
খুলিয়৷ দিয়াছে । বাতাসের ঝাঁপটায় তিন দিন আগে খরিদ- 


শ্রেভ সম্মু্র 


শ:০৬ 





কর! রজ্জনীগন্ধাগুলি বিছানার পাশের টিপয়ের উপর 
ফুলদ্রানিতে ছুলিতেছে । 

বৃষ্টি তখনও থামে নাই। ঝমঝম শব্ষে এখনও চারিদিক 
মুখর হইয়া আছে। সেই মুখরতার মধ্যে পাঁশের ঘরে 
ছেলে দুইটির অকারণ একঘেয়ে বিলাপ তাহার কানে 
যাইতেছে না। 

বৃষ্টিধবনিমুখরিত এই গভীর রাত্রিতে অশোকের মনের 
মধ্যে অনৃশ্ঠ একটি ভাবমগ্ল গড়িয়া উঠিয়াছে। পরিচিত 
পারিপাশ্বিকতাঁর সহিত সে কোথাও নিজের এতটুকু যোগ 
খু'জিয়া পাইতেছে না! এই সময় একবার যাদুঘরের ছাদে 
কিন্বা ভিক্টোরিয়া হাউসের উপরে দ্রাড়াইয়া শহরটাকে ভাল 
করিয়া দেখিতে পারিলে হইত ! 


একঘণ্টা পরে । 

অশোকের কিছুতেই ঘুম আসিতেছিল না। বারান্দায় 
পায়চারি করিতে করিতে সে পাশের ঘরে আসিয়া ঢুকিল। 
ঘরের এলোমেলো অপরিচ্ছন্নতা তাহাকে এক মিনিটের মধ্যেই 
পীড়িত করিয়া তুলিল। তবুসে বিছানার দিকে আরও 
থানিকট! অগ্রসর হইল। 

ভাবিয়াছিল+ বিভা এখনও জাগিয়া আছে। তাহাকে 
এ ঘরে ডাকিয়া আনিয়! ছুইগনে পাশাপাশি বসিয়া কিছুক্ষণ 
গল্প করিবে। বিছানার কাছে গিয়া দেখিল বিভা ঘুমাইয়া 
পড়িয়াছে-_-ছেলে ছুইটিকে শান্ত করিতে করিতেই এক সময় 
সে ডুবিয়৷ গিয়াছে ঘুমের অতল সমুদ্রে । ল্লিনেমায় যে 
জামা-কাপড় পরিয়া গিয়াছিল সেগুলি খুলিয়' রাখিবার 
অবসরও তাঁহার হয় নাই। 

ছোট ছেলেটি অপরিপুষ্ট দুই হাতে বিভার গলা জড়াইয়া 
ঘুমাইতেছে। বিভাকে ডাকিয়া আনিতে গেলে সেও, 
উঠিয়া! চীৎকার সুরু করিবে নিশ্চয় । 

অশোক চোরের মত আত্তে আন্তে ঘর হইতে রাহিরে 
আসিয়! গাড়াইল। 

বৃষ্টির জল-তরঙ্গ তখনও থামে নাই। কিন্তু ট্যাক্সিতে 
আসিতে আমিতে যে মেয়েটি তাহর মনের আকাশে চুলের 
পেখম মেলিয়। ধরিরাছিল, এ বাঁত়ীর ঘরে তাহার কোন 
সন্ধান পাওয়া যাইতেছে না। 


৯৮৯ / 


্যাকৃদিম গোকী 


প্রীঅমল সেন 


গোষাকে বাজাল! পাঠক-সমাজের কাছে বিশেষভীবে পরিচিত ক'রে 
দেওয়ার উদ্গেন্ত এ নয় যে তিনি বিশ্ববিখ্যাত ওপন্তাসিক | বিশ্ব- 
সাহিত্যে তার ঘ| অদ্ধিতীয় দান ত| হচ্ছে বৈপ্লবিক চরিব্রসথষ্টি ; বিষ্লবকে 
'মাছিত্যের মধ্য দিয়ে স্থষ্টি এবং সঞ্চালিত করা_তারই একটু পরিচয় 
দেব আমর! । 

গোক্র খুলিখিত জীবনী করখণ্ড প'ড়ে তার উপন্তাসগুলি পড়লে 
“ই বোঝ! বায়, নিজ জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতাকে ভিত্তি ক'রেই তার 
বিব-সাহিত্য গ'ড়ে উঠেছে। তার সব বইয়ের ভিতরেই আমরা 
ঙাকে খুঁজে পাই। গোরা সর্বত্র নিজের বেদনাময় অভিজ্ঞতাকে 
কেন্্র ক'রে ছুনিয়্ার সর্বহারাদলের অকৃত্রিম ছবি একেছেন। তাই 
গোক্কার বই পড়লে শুধু ষে গোকীঁর পরিচয় পাই তাই নয়__পিজেদেরও 
যেন আমরা ভাল ক'রে চিনি। গরীব আমরা, একদিকে দারিজ্য, 
অধিচার, অবজ্ঞা এবং অসাম্য, অন্যদিকে যুক্তি, জ্ঞান, বিক্ষোভ এবং 
বিজ্োছের মধ্যে অহপিশি রকা1 ক'রে চলেছি যার! শুধু ভগবান এবং 
পরকালের মুখ চেয়ে--তারাও যেন নিজের জীবনকে নতুন ক'রে পাঠ 
করতে শিখি; নতুন মন্ত্র আওড়াতে শিখি ; নবীনতম ব্যাখ্যা নিয়ে 
জীবনের নব-অধ্যায়ে প্রবেশ ধরতে চাই। এককথায়, গোর্কী আমাদের 
জশাস্ড ক'রে তোলে। 

তার বহু বই। সবগুলির ইংরেজী অনুবাদও বেরিয়েছে কি-ন| 
সঙ্গেহছ। তার মধ্য থেকে ষে কযখানিতে এই বি্ববাদ পরিপুষ্ট এবং 
পরিপূর্ণ হ'য়ে রয়েছে, তারই আলোচন! আমরা করব। 

বলা বাহুল্য, 'মা' এই হিসাবে ভার সর্বপ্রেক্ঠ বই। “ম” বই-এর 
দৌলতে ম্যাক্সিম গোরা আজ বিশ্ব-সাহিত্যের দরবারে ন্পরিচিত ; 
গোঁ্কার চাইতে বড় সাহিত্যিকের হয় তো! অভাব নেই-_অভাব, তিনি 
যেষম ক'রে, যতখানি দরদ দিয়ে, আবেগ দিয়ে, উত্তেজনা দিয়ে 
মজুরদের এবং চাবীদের কথা বলেছেন, তেন ক'রে বলার 
লোকের। "মা'কে তাই মঞ্ুর-চাবী তথা বিগব আন্দোলনের অগ্সিবেদ 
, বলা চলে। * 

এই অগ্নিমস্ত্র গোর্কার জীবনে ধীরে ধীয়ে প্রশ্কটিত হয়েছিল নান! 
ঘটনানিপা্যয়ে। 

গৌর্যার রচিত সাহিত্য এবং আত্মকাহিনীতে ভাই আমরা এই 
অন্গিবেদের ক্রমবিকাশ দেখতে পাই। গ্রোকীঁর “মা' বিশেষভাবে সব 
কেপে সমাদৃত হয়েছে। , 
' কিন্ত আমর! কুরু করব তার অন্থান্ত বই দিয়ে। কারণ যে 
এইগুলিতে। | 


মাল্ভা 

ভেসিলি এক গরীব চাবী; পাড়ার্গীয়ে তার অভাব কিছুতেই 
মেটাতে না পেরে দুরে এক বন্দরে চ'লে এসেছে, ভাগ্যাম্বেষণে__একা | 
তার বউ এবং ছেলে বাড়ীতে-_সে বারে । ক্ষুধা তাকে স্ত্রীর কাছ 
থেকে ছিনিয়ে এনেছে। কিন্তু নারীসঙ্গও মানুষের কাছে ক্ষুধার মতই 
অপরিহার্য । ভেসিলি বন্দরে এসে নারী মাল্ভাকে অবলম্বন কর্তে 
বাধ্য হ'ল। মাল্ভ। হুন্দরী, স্বাধীনা *** রুশ পতি-দেবতা শ্ত্রী-দাসীকে 
যে যুগযুগাস্ত ধ'রে নির্যাতন ক'রে এসেছেন, তারই উগ্র প্রতিবাদ ' 

এমন সময় গ্রাম থেকে জ্যাকফ এসে দেখল পিতার অবস্থ! 


অনেক হুদার হনর মিষ্টি মিটি বিশেষণে বিশেধিত ক'রে জীবনকে 
আমর! সহজ ক'রে নিতে চেষ্টা করেছি। কিন্তু পারিনি । 

জীবন মূলত যে সংগ্রাম, সেই সংগ্রামই র'য়ে গেছে। 

সুদুর অতীতে হয় তো! এমন দিন ছিল, যখন মানুষের সন্মুখে বিস্তৃত 
ছিল অফুরন্ত ভাণ্ডার আর অফুরস্ত আনন্দ । তাকে খাবার জন্য ভাবতে 
হ'ত না, ঘুমোবার জন্য মাথা ঘামাতে হ'ত না। 

কিন্ত ইতিহাস সেদিনকার সাক্ষ্য দেয় না। খাবার অফুরস্ত থাকলেও 
তা অনায়াসলভ্য কোন দিনই ছিল না ব'লে চিরকালই তাকে ভাবতে 
হয়েছে। বিশাল ছুনিয়৷ গ'ড়ে থাকতেও তাকে মাথা রাখার একটু 
ঠাইয়ের জন্ পরের অনুগ্রহ ভিক্ষা করতে হয়েছে। জীবন তার কাছে 
সংগ্রামই ছিল-ঠিক এখনকারই মতন। 

শুধু কি খাবার নিয়ে, মাটি নিয়ে সংগ্রাম? এর চাইতেও, বড় যুদ্ধ 
মানুষের মনে। প্রবৃত্তি নিয়ে যুদ্ধ। 

দেছের মত মনও তার চির-ক্ষুধিত, চির-অশাস্ত, চির-বিদ্রোহী | 

সকলের সঙ্গে তার সংঘর্ষ এই নিয়ে--সকলের সঙ্গে তার সংগ্রাম। 
মাল্ভ! এই সংগ্রাম-চঞ্চল জীবনের ছবি। 

দরিদ্র এক কৃষক পাড়া! ছেড়ে বন্দরে এসেছে, বাধ্য হ'য়ে এসেছে। 
ভিক্তর হিউগোর সেই জ? ভালজ' থেকে হুর ক'রে আজ পর্যন্ত 
পাড়া-গায়ে এই অবস্থা। পরিশ্রম ক'রেও অয় জোটে না। অভাব কম, 
কিন্তু ততটুকু অভাবও মেটে না। 'মাল্ভা'র ভেসিলি বলছে '.' 

আমর! কৃষকের! বেশী কিছুই চাই না। একখানি কু'ড়ে, এক টুকরো 
রুটি, আর পরবের দিনে এক-আধ প্লাস মদ--বাস, এ হ'লেই আমরা 
খুণী। কিন্ত এও আমর! পাই ন৷। পেলে বাড়ীশ্যর ছেড়ে কি এখানে 
এসে পড়ে খাকতুম 1 গাঁয়ে ছিলুম আমি নিজের কর্তা নিজে, সমস্তের 
সমান '* কিন্তু এখানে 1. এখানে আমি চাকর ! *** 

এই চাকুরী জীবনের মর্দকখা । 


এও 


জ্যষ্ঠ---১৩৪৮ ] 


রুটির অন্ত তাকে পরের গোলামি ক'রতে হয়। তার ম্বাধীনত৷ 
চ'লে যায়। আর সঙ্গে সঙ্গে যায় আর একটা অমূল্য বন্ত-_-তার 
চরিত্র । 

আহার মিজ্ব! জা মৈধুম-_-সব কয়টা তাকে সমানভাবে চালিত 
ক'রে। তাই সব কয়টায় খোরাফ তাকে যোগাতে হয়। তার খাস 
চাই, তার শব্যা চাই-_আর চাই নারী । *.. বন্দরে এসে ভেসিলি নারী 
মালভাকে অবলম্বন করেছে। 

ছেলে জ্যাকফ এল পিতার সঙ্গে দেখা করতে । ভেসিলি তখন 
কুষ্ঠায় চঞ্চল হ'য়ে উঠল-ছি ছি, কি ভাবছে ছেলে ! কিন্তু নিরুপায় ! 
সে যে সম্পূর্ণ নিরুপায় ! এযে প্রবৃত্বি-একে রোধ করা যায় না। 
তাই একা পেয়ে ছেলেকে সে বলছে ".. 

***কি করব! প্রথম প্রথম তে! ঠিকই ছিলুম ! কিন্তু পারলুম না 
শেষ রক্ষা করতে । অভ্যাপ কি-না *** তা ছাড়া *** মরণকেও এড়ানোর 
জে! নেই, মেয়েমানুষকেও এড়ানোর জে! নেই । .*. 

এই বন্দর-জীবনের করুণ ইতিহাস। শ্ত্রী-পুত্র-পরিবার হ'তে বিচ্ছিন্ন 
হতভাগ্য গোলামের দল এমনি ক'রে প্রবৃত্তির অদম্য তাড়নায় অমূল্য 
চরিত্র বিক্রয় করে। নারী এখানে রাপোপজীবিনী । 

পাড়া-গায়ে নারী কাজের দিক দিয়ে অপরিহাযা। আর এখানে 
নারী আনন্দ '. নারী পাপ *** 

মালভ! এই বন্দরের নারী। হ্ুন্দরী, তরুণী, চপল!. জীবনের 
স্রোতে উচ্ছ,দিত তটিনীর মত। পাড়া-গীয়ের নারী-জীবনের কথা৷ ভেবে 
সে শিউরে ওঠে। 

»* নারীর জীবন সেখানে চোখের জল ছাড়া আর কিছুই নয়। *.* 
পাড়া-গায়ের আমার মন চাক কি নাই চাক্‌, বিয়ে করতেই হবে। আর 
একবার বিয়ে হ'লেই নারী জন্মদ্াসী। হুতো কাট, তাত বোনো, 
গোপালন কর, আর সন্তান প্রসব কর। তার নিজের জন্য বাকি কি 
রইল ?--কিছুই না। শুধু পতি-দেবতার গালি ও প্রহার । 

রুপ নরনারীর এই অভিশপ্ত জীবন গোকা নিজের চোখে দেখেছেন। 
একদিকে দারিজ্র্য, আর একদিকে অশিক্ষা- একদিকে অনশন, আর এক- 
দিকে অত্যাচার-_এই ছিল রুশের ভাগ্যলিপি। 

গোর্কী ছেলেবেলায় মামাবাড়ীতে মাশুষ হয়েছেন। সেখানে 
দেখেছেন, তার এক মাম! মামীকে কিল চড় দিতে দিতেই মেরেছিলেন। 
দিদিমাও প্রায়ই দাদামশাইয়ের মার খেতেন। 

এই তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়েই গোর্কীর বাল্যজীবন সুরু হয়। দরিজ 
রুশ, অবজ্ঞোত রুশ--তাকে তিনি তাই এমন অকৃত্রিমভাবে এবং এমন 
দরদ দিয়ে জাফতে পেরেছেন । 

মাল্ভ৷ তাই ্বতস্্া-ন্াধীনা!। উদ্দাম তার যৌবন, অবাধ তার গতি। 
আমর! যাকে পাপ ধ'লে শিউরে উঠি, তা সে পাপ বলেই মনে করে না। 

রুশ বর্তমানে যেভাবে জীবমধাত্রা নির্ধাহ করছে, তারই যেন 
পূর্্বাভাব এই মাল্ভায়। 

মরেয় চাই 'দারী-_রীর চাই নর ।. 





ম্যান্চম্নিস গোর নি 


রে স্পা স্পিন 

নর নারীকে পাবেই-_নারী নরকে পাবেই। 

এই পাওয়া হুন্দর হয়, সহজ হয়, শ্বাভাবিক হয়--ঘদি এই মিলনের 
মধ্যে কোন বঙ্ধন ন! থাকে । 

নারী-ঘটিত ব্যাপারকে তারা একটা লজ্জার, একটা অপৌরুষের 
বন্ত ব'লে জাহির ক'রে প্রেমকে অসহজ ক'রে তুলেছেন। তাদের বিধান 
না মেনে ভালবাসলে হয় পাপ, হয় ব্যাভিচা। জীবনের সর্ববোস্তম 
আনন্দ তাই আজ সর্ধব-গহ্ত অবনতির সাজ প'রে বের হচ্ছে। 

** জীবন .** জীবম *** এই-ই সংসারের গতি । যা নিষিদ্ধ, চিরকাল 

ভয জঙ্তে মানুষের ০ জীবনের কথা মাঝে মাঝে ভাবি 

** ভেবে শঙ্কিত হই ** 

চিতা একটা হর ফুটে উঠেছে 
মাল্ভায়। 

মানুষের অবিচার, অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিজ্রোহের সার । 

ছুনিয়া আজ মানুষের ব্যথার ভারে আতুর। অনাহার, উপবাস, 
হাহাকার আজ পৃথিবীময়। 

ভারতবর্ষও তেমন একটি দেশ । এর উপয় চাকচিক্যময়, অভিজাত 
ধনী শিক্ষিত সম্প্রদায়, আর বেশীর ভাগ লোক-_-কোটি কোটি নর-নারী 
অন্ধকারে পচছে। দারিজ্্য এবং অশিক্ষা সেখানে মানুষকে ক'রে রেখেছে 
পশুর মত হিংস্র, মানুষ সেখানে ভাল হ'তে চাইল ভাল হাত পাছে লা 
মন্দ পথে চলতে বাধা হয়। 

কেন এর! খেতেও পায় না? 

কেন? 

কেন এ ব্যথা? কেন এ অনাহার? কেন এ হাহাকার? 
এর জবাবে বলা হয়-_একজন চাহিদার বেশী-__-অনেক বেী দের ব'লেই 
বাকি যারা, তারা অভাবে ভোগে, অনাহারে মরে । 

গোকীও তাই বলছেন মাল্ভায়-_সিন্ধু-শকুন উড়ছে, মাছ নিজে 

*** কেন ওরা মারামারি করছে? জলে যে মাছ তাতে কি ওদের 
সকলেরই কুলোয় না? মানুষ__ মানুষও তো! এমনি চেষ্টা ফর্ছে পরস্পর 
পরস্পরকে জীবন হ'তে বঞ্চিত ক'রতে। ... কেউ যদি পছন্দসই কিছু 
যোগাড় ক'রে নেয়, অন্টে তার টূ'ট টিপে তা ছিনিয়ে নেবে। কেন? 
জীবনে তে! প্রত্যেকের ঝন্তই প্রচুর আছে। আমি হা পেয়েছি, তা কেন 
অন্তে কেড়ে নেবে ? ** 

কিন্তু মাল্ভা শুধুই বিভ্রোহের সুর নয়। নর-নারীর খিচিত্র মত্ত 
সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে এর পাতায় পাতায় । 

সমুদ্রের বর্ণনা! এর চমৎকার | 

অনেকের মতে মাল্ভার এ বর্ণন! বিশ্ব-সাহিত্যে অতুলন-_স্পেমিশ 
লেখক ইবানেজের প্ক্যাবিন* ছাড়া অন্ত কোন হা এমন বর্ণনা 
নেই। 

বিরাট সমুদ্রের বন্দন। ক'রে টি রিনি রাজী 
এ'কেছেন প্দালল্ডায়। | 


খন 


_ অর্লফ-দম্পতি 
মুচি অর্মফ দীনাতিদীম, কিন্তু এ তার বাইরের অবস্থা । তার মন 
কিন্তু উদ্দীপ্ত। সে সন্তোষের পক্ষপাতী নয়, সে অশাস্ত, সে বৃতুক্ষু, সে 
অতৃপ্ত, গ্রাস তার বৃহৎ, দাবী তার যোল আন. কিন্তু এক পাইও 
মেলে না। অন্তন্বন্দে পাগল হ'য়ে সে বউকে মারে, মদ খায়, মাতলামি 
করে, ছটফট করে, তারপর আবার জুতে। সেলাইয়ে মন দেয় । .. নামকা- 
ওয়ান্তে অতি-মাত্রায় অস্থির হ'য়ে সে খালি নাম করার সুযোগ খু'জছে। 
অবশেষে এল ম্ষোগ। কলেরার এপিডেমিক পড়ল শহরে, 
হাসপাতাল সরগরম '' হামপাতালে গেলে সকলের নজরে পড়বে। মে 
*** আনন্দে অর্লফ-দল্পতি সেই ছোঁয়াচে রোগের আড্ডায় কাজ নিল। 
গোর মুচি-জীবনের অভিজ্ঞতা! দিনের আলোর মত ফুটে আছে 
অর্জফ-দস্পতিতে। 
মুচি ব'লে যাকে আমর! নিত্য নিয়ত তুচ্ছ ক'রে চ'লে যাই, যাকে 
মান দিতে চাই না, স্থান দিতে চাই না সমাজে-_সেই মুচিও যে মানুষ, 
ঠিক আমাদেরই মত রক্ত-মাংসে গড়। মানুষ, আমাদেরই মত আশী- 
আকাচ্া-কল্সনা-প্রবণ মানুষ-_গোর্কী তাই দেখিয়েছেন 
্বামী-স্ত্রী নিয়ে সংসার । সুখের নয়, গভীরতম ছু:খের। কি 
অন্ধকার অপরিচ্ছন্ন অপরিসর তাদের বাঁসগৃহ--একটা ত-গহবরের 
মত; মৃত্যুর মত শীতল । এই অন্ধকারে তারা জীবন কাটিয়ে দিচ্ছে। 
অনেকের ধারণা-যা এই সেদিন পধ্যস্তও চ'লে এসেছে-যে 
অন্ধকারের জীব যারা, তারা অন্ধকারেই অস্যযন্ত ; তাদের জীবন-যাত্রা 
পৌচনীয় হ'তে পারে, কিন্তু তারা তাদের প্র জীবন-যাত্রা নিয়েই সন্তষ্ট। 
কোন অভিযোগ তারা করে না। 
ধর্দশীস্্ও এই নীচুদের নীচু ভাবতেই শেখায়। পাছে তারাও 
জাগতে চার, তারাও উঠতে চায়, তারাও আলোকের উদদগ্র আকাঙ্ায় 
মেতে ওঠে, ভাই শাস্ত্র খুব চমৎকার চমতকার বুলির আমদানি করেছে। 
কর্ণাফল-_তুমি যেমন কাজ করছ, তেমনি ফল পাচ্ছ। অতএব 
অবস্থায় অসস্ভোষ প্রকাশ করলে তোমার গুধু অন্যায়ই হবে না, পাঁপও 
হবে। নীচু তারা, তারাও এ মানে, কারণ তারা যে ছোটকাল হ'তে 
শিখছে_-শান্ত্র অন্রাত্ত, শান্ত্র অপৌরুষেয্ । তারা ত জানে না যে, এ সব 
শান মানুষের তৈরি-_-আর সেই সব মানুষেরই তৈরি, যার! বাক্তিবিশেষ বা 
সম্প্রদায়বিশেষের স্বার্থের জঙ্য ইচ্ছ৷ ক'রে মানুষে. মানুষে এই অনাম্যের 
সৃষ্টি করেছে, নীচুকে নীচু রাখার আবগ্কতাকে শান্ত্রবাদের মুখোস 
, পরিয়ে বের করেছে। 
শাস্ত্র গুধু এখানেই থামেনি ! 
ফর্মুকলের উপর আবার পরকাল, জক্সান্তর। হাহা তোরা 
কাদিসনি ; ছোট্ট এ জীবনটা ছুঃখ হ্বীকার ক'রেও ধর্দপথে কাটিয়ে দে, 
তারপর অনপ্ত হুখের জীবন তোদের সামনে! তোদের উপর অত্যাচার 
করছে কেউ? নারে, ও-অত্যানার নয় ! আর বদিই ব! জত্যাচার হয়, 
" তোরা স'য়েই যা-_অত্যাচারের শাস্তি দেবার তোর! কে?. লান্তি পাবে 


১০৮ ১০১০| 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় খণ্ড--বষ্ঠ সংখ্যা 


ওয়! পরকালে-__শাস্তি পাবে ওরা ভগবাদেন্ন হাতে, শাস্তি পাবে ওরা 
পরজন্ধে ! 

চমৎকার মানুষ-ভোলাবার মন্ত্র ! 

কিন্তু ভুল, ভূল মানুষের এ ধারণা, শাস্ত্রের সত্যকে চেপে রাখার 
এন্পর্ধা | অন্ধকার তত দিনই সয়, হত দিন আলোকের সাড়া চোখে না 
লাগে। তাই অন্ধকারের জগতে আজ এই ছুনিবার চাঞ্চল্য ! 

গোর্কীর অর্জফ এই চাঞ্চল্যের পূর্ণমুর্তি। নিজের জীবন-বাত্রা নিয়ে 
সে সুখী নয়- আবদ্ধ বাম্পের মত কেবলই সে এই ্ষুজ্জ পরিসর জীবনের 
মধ্যে ব'সে গর্জাচ্ছে। 

** তারা গান কর্ছে। তাদের আনন্দহীন জীবনের ধত-কিছু 
শুন্যতা, ঘত-কিছু ধৈর্য্য, সব ঢেলে দিচ্ছে তার! স্থরে স্ুরে। প্রাণের 
অর্ধজাগ্রত আশা-আকাঙ্ষার ভাবন্োত যেন আজ প্রকাশের পথ পাবার 
জগত আকুলি বিকুলি কর্ছে। কখনও কখনও গ্রীস্কা গান গায়-_-ওগো ! 
ভাবতেও পারি না__-এই আমার জীবন ! কি অভিশপ্ত জীবন ! প্রাণে 
বেদনা, কি সুনিপুণ বেদনা ! এই তিক্ত পুপ্লীভূত ব্যথা, এই ছুঃখ দুর্দশার 
ভার, সব আজ ষেন তার অসহা। বউ অতশত বোঝে না। গান 
শুনে ঠাট্টা ক'রে বলে, এতই যদি বেদনা-তবে মরণ দেখে চেঁচাও কেন 
কুকুরের মত? 

অর্লফ বউ-এর উপর রেগে ওঠে, কিন্ত বোঝাতে পারে না, প্রাণে তার 
ব্যথার চাইতেও বিপুল যে জিনিষটা আছে--সে জাগতে চায়, উঠতে চায়, 
মানুষের মত বাঁচতে চায় এবং মরলেও মরতে চায় এমনভাবে যাতে 
একটা নাম রেখে সে যেতে পারে। পৃথিবীতে অজ্ঞাত অখ্যাত জীবন 
সে চায় না। মরণের সঙ্গে সঙ্গে ধরার বুক হ'তে মুছে যেতে সে 
চায় না। 

এক কথায়, সে চায় যত্র--জীবনে এবং মরণে। কিন্তু এ কথা 
কাউকে বল! যায় না-_-অথচ চেপে রাখাও অসম্ভব। অর্লফের বুকে এই 
আকাঙ্ার অগ্রি-নাচন। 

এই বন্ধ, সংকীর্ণ, অন্ধকার সমাহিত জীবন সে চায় না। 

রক্ষা! বলছে, এ তো জীবন নয়--এ দত্তরমত নরক। কিসের মনত 
যেন মুদ্ধ ক'রে রেখেছে আমাদের | কেন এজীবন? কিসের জন্য এ 
জীবন? কাজ আর ক্লান্তি, ক্লাস্তি আর কাজ '. 

জীবনের আর কোনও উদ্দেস্ঠ যেন সে খুঁজে পাচ্ছে না! তাই 
শেখানো বুলি বলছে। 

*** সব ভগবানের বিধান। তারই বিধানে মায়ের পেটে জঙ্মেছি_ 
জীবন পেয়েছি। অভিযোগ করা নিরর্ঘক ! *** তারপর ব্যবসা শিখলুম। 
*** কেন শিখলুম ? ছুনিয়ায় কি মুচির কমতি ছিল যে আমারও মুচির 
কাজ না শিখলে চলত না? 

মুচি সে ইচ্ছে ক'রে হয়নি। ছুঝিয়ায় অন্তান্ত সকল ছুয়ার়ে বৃখাই 
করাঘাত ক'রে লে এই বৃদ্ধি দিতে বাধ্য হুয়েছিল। এও বুঝি 
ভগবানের বিধান ! ** মুচি হ্লুম। তারপয়? লাভ কি হ'ল?."' 
এইখানে এই গর্তে বসে রুট সেলাই করছি। .. ফয়তে করতে 


জ্যোষ্ট---১৩৪৮ ] 


মরব। শহুরে মড়ক কলেরার *** আমাদের খুঁজে নেবেই। তারপর 
সবাই শুধু বলবে, গ্রীগরি অর্লফ ব'লে এক মুচি ছিল, সে কলেরায় মারা 
গেছে। কি লাভ হবে তাতে? কি লাভ আমার এ বীচায়? এ 
জুতে! সেলাই ক'রে বাঁচায়? সেলাই ক'রে এ জীবনপাত করায়? 

কোন লাভ নেই, দিনের আলোকের মত সে তা৷ দেখতে পেল। 
শান্ত তাকে পরকালের কথা কপচিয়ে শাস্ত করতে পারল না-_মুচির 
কাজ যে বড় কাজ, এ ছেদে। যুক্তি তার হৃদয়কে স্পর্শ করতে পারল না। 

*** আমরা এখানে পড়ে আছি কুকুর-বেরালের মত ডাকাডাকি 
ক'রে। হিংস্র জানোয়ারের মত ছিড়ে খাচ্ছি পরস্পরের মাংস। 
কেন, কেন এমন হ'ল? ..* এই বুঝি আমার ভাগ্য **" 

কিন্তু বনে আগুন লাগে, কাচা পাতাও নি:শেষে পুড়ে যায়। তার এ 
কাচা সাম্তবন! ভাগ্যের দোহাইও পুড়ে গেল তীব্র অসন্তোষের আগুনে ! তার 
পরই জাগতে লাগল নিরাশা-__আলোকের অন্ধকার যেমন বেশী ক'রে জাগে । 

সে ভাবতে চেষ্ট/। করে, কিন্তু ভাবনার খেই হারিয়ে ফেলে। 

বউ বলে, একট! ছেলেও যদি থাকত ! তাকে নিয়ে জীবনে একটা 
আনন্দ গ'ড়ে উঠত। 

হ'লেই তো পারত ! 

হবে কি ক'রে? তুমি আছ সব সময়ই কোমরে লাথি মারতে ! 

রাগের সময় কি অত জায়গা বাছাই ক'রে মারা যায়?-_ব'লেই সে বোঝে 
--কিস্তু এটা আদৌ কৈফিয়তই নয় । বউকে কেন সে মারে? কেন? কেন? 

বউয়ের উপর রেগে নয় নিজের জীবনের উপর বিতৃষ্ণ হ'য়ে, 
বিজ্রোহী হ'য়ে। 

বউকে বলে, এটা ঠিক, আমি পশু নই ! মেরে হাতের সুখ ক'রে 
নেওয়ার জন্য মারি না। মারি, যখন বুকে সেই কথাটা জাগে, যখন 
তাকে সামলাবার কোন পথই থু'জে পাই না। 

এ আমার অধৃষ্টলিপি। অনেকেই দেখি হেসেখেলে দিন কাটায়। 

কিন্ত আমি পারি না ওরকমভাবে বাচতে । একট! চাঞ্চল্য 
বুকে নিয়ে আমি এসেছি ছুনিয়ায় *.. স্বভাবও পেয়েছি তেমনি। ওদের 
জীবন সরল যষ্টির মত, আমার জীবন যেন শপ্রীং-_-একটু আঘাতেই 
নেচে ওঠে। রাস্ত। দিয়ে চলি, দু'পাশে নুন্দর সুন্দর জিনিষের মেল! *** 
কিন্তু ওর কিছুই আমার নয়। মন বিজ্োহী হ'য়ে ওঠে। ওর! 
এর কিছুই চায় না, আমি ভেবে কেপে উঠি। এও কি সম্ভব যে, 
ওদের এসব কোম জিনিষেরই দরকার নেই! কিন্ত আমি? আমি 
যেসব চাই। হাঁ_-যত-কিছু সব চাই। ** 

অল্প পেয়ে থুশী নয় অর্পফ। সে সবচায়, কিন্তু ব্যর্থ তার চাওয়!। 
সবহার! জীবনের বিষমভার তাকে দিনের পর দিন ব'য়ে বেড়াতে হচ্ছে। 

কিন্ত আমি এইখানে ব'সে আছি, সকাল থেকে রাত অবধি কাজ 
ক'রে চলেছি, কিন্তু বৃথা- বৃধী-সব বৃথ! | *** জীবনধারণে কোনও 
আনন্দ নেই। *** এই জীবন, এই'গর্ত-_-এ তে। কারাগার, এ তে। জীবন্ত 
সমাধি | বউ ভাবল ঘরটা বুঝি জর্জফের পছন্দ হয়নি। 

বাল, তা অনা কোন ঘরে চল না। 


ম্যান্ষ্‌ন্িস পা্কী 


92 


অঙ্ক বলল, ওগো, ত৷ নয়, তা নয়! গুধুই ঘর নয়। আমা 
সমস্ত জীবনটাই গর্ভের মত ! 

এক্রনদন শুধু একা অর্জফের নয়, গর্ভের অধিবাসী নিপীড়িত জনগ 
চিরস্তন আর্তনাদ এ। 

কিন্তু বৃথা এ বিলাপ। কেউ এতে কান দেয় না। 

যখন দয়! পেলে বেঁচে যায়, তখন দয়! পায় না। 

দয়! পায় যখন মরে। 

হাসপাতালের চমৎকার বিধি-ব্যবস্থা, অনবভ্য পরিষ্কার পরিচ্ছ 
দেখে অর্লমফ এই কথাই বলছে। 

*** এইথানে প'ড়ে আছি আমরা ! কেউ আমাদের ডেকে ভিজে, 
করে না, আমরা কেমন আছি? কি করছি? সুখী না ছুঃখী? তে 
পাই, না ভুগে মরি? কিন্তু যেই মরতে চলেছি, অমনি বের 
নেই, এমন কিছু নেই যা! আমাদের জন্ত না করা হয় তখন। ভাঁল ছ 
যদি তার৷ এনব করত-_তাদের হুঃখ দূর করার জনক যার! জীবিত। 

অর্মফ ঠিক করল, এভাবে দে বীাচবে না। গুধু কাজ আর ক্লা 
ক্লান্তি আর কাজ, আর মরণে ভয় পেয়ে মৃত্যু '* না, এ সে চায় ; 
সে হাসপাতালে যাবে__কলের! যেখানে হস্কার কর্ছে, সেখানে 
এগিয়ে যাবে মরণকে আলিঙ্গন করতে। 

অর্পশফ গেল, তার বউও গেল। হাসপাতালে রোগীর 
করে। মৃত্যুর তাওবকে উপেক্ষা ক'রে জীবনকে উপভোগ ক'রে চা 
শুহ্যতা বিদুরিত হ'য়ে জীবন যেন কানায় কানায় ভ'রে উঠছে! 

একদিন তার বউ বলল, এ শুনছ ব্যাণ্ড বাজন ? 

অর্লফ স্বপ্রোখিতের মত বলল, ব্যাড! ও কি হ্যা খন 
আমার বুকে কান দাও, বুঝবে কি এক সঙ্গীত-শ্রোত বয়ে যাচ্ছে জা 
অন্তরে অন্তরে । ... এই সঙ্গীতই একমাত্র শোনার উপযোগী । 

কোন্‌ সঙ্গীতের কথ! বলছ? ্ঃ 

কি সে সঙ্গীত, তা আমি নিজেই জানি নাঠিক ঠিক। বর্ণনার ₹ 
থু'জে পাই না, আর বললেও বুঝবে না। আমার জাত্ম! বেদ ত 
জ্যোতির সাগরে ভাসছে। আমি যাত্রা করতে চাই দুরে *' অনেক দু 
আমি কাজে লাগাতে চাই আমার সমপ্ত শক্তি। আমার বুকের ভি 
টের পাচ্ছি। এক শক্তির সমুদ্র টগবগ ক'রে ফুটছে। ৃ্‌ 

এমনি ক'রে বয়ে চলে অর্নফের জীবন-শ্রোত। গোর্কা পাশাপাশি! 
ছবি একেছেন__দীনদারজের পাশেই কলেরার ছবি । দীনগয়িত 
জীবন যেন চিরস্তন কলেরা । তার নায়ক অর্লক তাই বলছেন। « 
স্থানে **" মানুষ যদি ভাল ক'রে চোখ খুলে দেখে তবে বুঝতে পার 
যে, মানুষের জীবন অনেক সময় কলেরার চেয়েও যন্ত্রণাদায়ক । | 

গোক্ক লিখেছেন গার সমস্ত দরদ দিয়ে, তার হদরের পু্ীভৃত তি 
অভিজত। দিয়ে। মানবজীবনের আশা-আকাজ্গা যেন নিষ্বা 
হাহাকায়ের সঙ্গে জড়াজড়ি ক'রে চলেছে। * 

মুচি অর্নফের সঙ্গে ফুটে ওঠে ফানুষ 'অর্জক, জার ফুটে ওঠেন ৎ 

গ্রো্কা » ভার বাজ্যজীবনের ব্যথা বেদনা এবং ব্যর্থ অভিলাসরাশি নিয়ে 


ভঙ্গ 


রর 
প্রথম চিঠি লেখার উৎসাহে কিছুদিন পূর্বে হাসি চিন্ময়কে 
পুকাইয়া যে চিঠিখানি স্বামীকে লিখিয়াছিল তাহা যে 
মুক্সয়ের সহকন্ধী মিস্টার ঘোষের হাঁতে পড়িয়া এত অনর্থ 
সব্টি করিবে তাহা হাসির কল্পনাতীত ছিল। মুন্ময়ও 
কল্পনা করে নাঁই যে হাসি তাহাকে চিঠি লিখিতে পারে। 
মৃন্যয় জানিত হাসি নিরক্ষর | হাঁসি যে দিবানিদ্রা পরিত্যাগ 
করিয়া রোজ হাতের লেখা অভ্যাস করিতেছিল এ খবর 
মুস্সয়ের অজ্ঞাত ছিল। মৃম্ময়কে অবাক করিয়া! দিবে বলিয়া! 
হাসি ঘুণাক্ষরেও মৃন্সয়কে কিছু জানায় নাই। মজ:ফরপুরের 
কাজ সারিয়া মুন্য় যখন কলিকাতায় চলিয়া আসেন তখন 
সেখানকার পোস্টাফিসে বলিয়৷ আসিয়াছিলেন যে, তাহার 
নামে বর্দি কোন চিঠিপত্র আসে তাহা যেন কলিকাতায় 
ত্রাহার অফিসের ঠিকানায় পাঠাইয়া দেওয়! হয়। তাহার 
ধারণা ছিল যদি কোন চিঠি আসে তাহা অফিসেয়ই চিঠি 
হুইবে। সুতরাং বাড়ির ঠিকানা! দিয়া আসিবার কল্পনাও 
তাহার মাথায় আসে নাই। 

হাসির চিঠি যখন মজ:ফরপুর ঘুরিয়া . কলিকাতার 
অফিসে আসিয়া পৌছিল তখনও মুন্সয় অফিসে ছিলেন না। 
অফিসে ছিলেন মিস্টার ঘোষ, দৈবক্রমে চিঠিখানা তাঁহারই 
হাতে পড়ি গেল! দাবার ছকে নিবন্ধদৃষ্টি কোন দাঁঝা- 
থেলোয়াড় ভাল একটা চাঁল হঠাঁৎ আবিষ্কার করিলে যেমন 
আনন্দিত হইয়া ওঠেন, মিস্টার ঘোষও ঠিক তেমনি আনন্দিত 
হইয়া উঠিলেন। এই তো বাজি মাত হইয়! গিয়াছে ! ঠিক, 
এই হাতের লেখারই তো তিনি অগ্ুন্ধান করিতেছিলেন ! 
অসক্কোঁচে তিনি চিঠিখানা খুলিয়া পড়িয়! ফেলিলেন। কে 
এই ছাসি! বেই হোক, মুননয়বাবুর সহিত বেশ মাথামাঁথি 
আছে দেখা যাইতেছে । উত্তেজনায় আনন মিস্টার 
ঘোষের নাসারঙ্ধ বিস্ফারিত হইয়া উঠিল। দৃঢ়নিবন্ধ ওষ্টাঘরে 
অর্ধ-বিকশিত ক্ুর একটা হাঁসি নীরবে যেন বলিতে লাগিল 
- এইবার তে। লোকটাকে কবলে পাওয়া গিয়াছে। 
একেবারে হাতেনাতে ধরা .পড়িয়াছে, এতদিন বাছাঁধন 


ভুবিয়। ভূবিয়া জলপান করিতেছিলেন। মিস্টার ঘোষ 
অতিশয় আনন্দিত হইয়া উঠিলেন। শুধু যে বাজিমাৎ 
হইয়া গিয়াছে তাহা নয় এক টিলে দুইটি পক্গীই 
নিহত হইয়াছে । সেদিন যে ত্যানাকিস্ট ছোকরা ধরা 
পড়িয়াছে এবং তাহার নিকট যে চিঠির টুকৃরাঁটা পাওয়া 
গিয়াছে তাহার লেখা আর মুন্ময়বাবুর এই হাঁসির লেখা 
তো হুবথ এক। লিপি-সমস্তার সমাধান এইবার সহজে 
হইয়া যাইবে। শুধু তাহাই নয়, চাকৃরি-জগতের প্রবল 
প্রতিদ্বন্দ্বী মুন্ময় মুখোপাধ্যায়ের নিলঙ্ক চাঁকুরি-জীবনে বেশ 
মোটা একটা কলঙ্কও দাগিয়া দেওয়! যাইবে। চিন্ময় 
নামে যে ছোকরা! ধর! পড়িয়াছে শোনা যাইতেছে সে 
নাকি মুন্ময়বাবুরই সহোদর ভাই। এ হাসিটা মৃন্ময়ের 
কে হয়! 


পরদিনই খোদ বড়সাহেব মুলয়কে তলব করিলেন । 
মূন্য়ের মুখের দিকে ক্ষণকাল স্থিরৃষ্টিতে তাকাইয়! প্রশ্ন 
করিলেন, “চিনয় তোমার কে হয় ?” 

“ভাঁই |» 

“হাসি তোমার কে হয়?” 

নী ঃ 

“ইহারা যে এ ব্যাপারে লিপ্ত ছিল তুমি জানিতে ?” 

“না” 

“সত্য'কথা বল।” 

“সত্য কথাই বলিতেছি।” 

সাহেব ক্ষণকাল মৃন্ময়ের দিকে চাহিয়া রহিলেন। তাহার 
পর বলিলেন-_ “আচ্ছা, যাঁও |” 


মৃস্ময়ের শ্বশ্তর মহাশয় পুলিশের ঝড় চাঁকুরে। তাহারই 
খাতিরে এবং চেষ্টায় মুন্নয় ও হাসি রেহাঁই পাইয়া গেল 
অর্থাৎ তাহাদের জেল হইল না। মৃষ্ময়ের চাকরিটি কিন্ত 
গেল। মুকুজ্যে মশাই আসিয়া দেখিলেন-_চাকুরিবিহীন 
ময় অত্যন্ত মুষড়াইয়! পড়িয্লাছে এবং হাসি তাহাকে এই 


৭১০ 


জ্যৈষ্ট--১৩৪৮ ] 


বলিয়া প্রবোধ দিতেছে যে, জীব দিয়াছেন যিনি আহার 
দিবেন তিনি। এই হতভাগা চাকরি গিয়াছে ভালই 
হইয়াছে । অন্ত চাকরি একটা জুটিয়া যাইবেই। এত 
লোকের জুটিতেছে, মৃন্ময়েরই জুটিবে না? 

মুকুত্যে মশাই কলিকাতায় আসিয়া আর একটি সংবাদ 
পাইলেন । শিরিষবাবু লিখিতেছেন, প্বেহাঁই মশাই নাকি 
শঙ্করের পড়ার খরচ বন্ধ করিয়াছেন। শুনিতেছি তিনি 
তাহাকে ত্যজ্যপুত্র করিবেন। সংবাদ যদি সত্য হয় তাহা 
হইলে ইহা ভয়ানক সংবাদ। আমি কি করিব কিছুই 
বুঝিয়। উঠিতে পারিতেছি না। শঙ্করকে একথানি পত্র 
লিখিয়াছিলাম যে আমিই কোঁনক্রমে তাহার পড়ার খরচ 
চালাইব, সে যেন পড়া বন্ধ না করে। উত্তরে শঙ্কর 
লিখিয়াছে যে, সে চাকুরির চেষ্টা করিতেছে, আর পড়াশোন! 
করিবার তাহার ইচ্ছা নাই । আপনি যদি একবার সুযোগ 
পান তাঁহার সহিত দেখা করিবেন এবং তাহাকে বুঝাইয়া 
বলিবেন সে যেন পড়া বন্ধ না করে। আঁমি যেমন করিয়া 
হোঁক তাহার খরচ চাঁলাইব-_-» 

এই দুইটি জটিল সমস্যার সম্মুীন হইয় মুকুজ্যে মশাই 
উৎসাহিত হইয়া উঠিলেন। কিছুদিনের মত খোরাক 
পাইয়া! তাহার মস্তি সক্রিয় হইয়া! উঠিল। 


৮ 


সংংদপত্রে নিষ্নলিখিত বিজ্ঞাপনটি বাহির হইতেছিল £ “একটি 
শিক্ষিত বাঙালী পাত্রের জন্য বাঙালী পাত্রী চাই। পাত্রী যে-কোন 
জাতির হইলেই চলিবে, কিন্তু শিক্ষিত পাত্রী অথবা গাঁনবাজনা- 
জানা! মেয়ে একেবারেই চলিবে না। অক্ষর-পরিচয়হীনা ব্যস্থা 
পাত্রীই প্রয়োজন । পণ লাগিবে ন!। পাত্র শিক্ষিত, উপার্জনক্ষম | **" 
নং পোষ্টবন্মে আবেদন করুন ।” 


এদেশে অশিক্ষিত পাত্রীর অভাব নাই, কন্তাদায়গ্রন্ত 
পিতাও ঘরে ঘরে বিরাজমান, তথাপি এই বিজ্ঞাপনের উত্তরে 
আশানুরূপ সংখ্যায় আবেদন আসিয়! জুটিল না। “পাত্রী 
যেকোন জাতির হইলেই চলিবে” এই কথায় পুরাতন-পন্থীরা 
এবং “শিক্ষিত অথবা গান-বাজনা-জান! মেয়ে একেবারেই 
চলিবে না” এই কথায় আধুনিক-পন্থীর! ভড়কাইয়া গেলেন। 
সকলেই ভাবিলেন লোকটার মাথায় ছিট অথবা কোন 
কুমতলব আছে। নিজে শিক্ষিত, জাত মানে না অথচ 


ভুক্ষ 


এ 





অক্ষর-পরিচয়হীনা বয়স্থা পাত্রী বিবাহ করিতে চায়-_-এ 
আবার কি রকম! 

বেলার উপর চটিয়! প্রিয়নাঁথ মল্লিক অবশেষ বিবাঁহই 
করিবেন ঠিক করিয়াছিলেন কিন্তু সে সঙ্গে ইহাও ঠিক 
করিয়াছিলেন যে, শিক্ষিত মেয়ে বিবাহ করিবেন না। 
কিছুতেই না। উহাদের মুখ দর্শন করিলেও পাঁপ হয়। 
কিন্তু তাহার বিজ্ঞাপনের ধরণ দেখিয়া শিক্ষিতা অশিক্ষিত 
কোন মেয়েই জুটিল না। একেবারেই যে জোটে নাই তাহ 
নয়, কিন্তু যে দুই চারিজন আসিয়াছিলেন তাহারা বেলা 
গৃহত্যাগের বিবরণ শুনিয়া! আর অগ্রসর হওয়া সগ্গিবেচনা। 
কাধ্য মনে করেন নাই। কেহ যদি সত্য সত্যই অগ্রস' 
হইতেন তাহা হইলেই ষে প্রিয়নাথ বিবাহ করিতেন ভাঁহাং 
স্থনিশ্চিত বলা যায় না। তিনি হঠাৎ থেয়ালের বে 
বিজ্ঞাপনটি দিয়! ফেলিয়াছিলেন, মনে হইয়াছিল কি হই 
এমনভাবে বেলার পথ চাহিয়া । সে যদি না-ই আসিতে চা! 
চুলায় যাঁক, আমি বিবাঁহ করিয়া স্থু্থী হইব। সত্যসত্যা 
বিবাহের সুযোগ উপস্থিত হইলে হয় তো তিনি পিছাই 
যাইতেন। কিন্তু বিজ্ঞাপন দিয়! যখন কোন পাত্রীই পাও 
গেল না তখন ব্যাহত প্রিয়নাথ ক্ষোভে আক্রোশে মনে ম 
গুমরাইতে লাগিলেন। তাহার মনের উত্তাপ ' করম 
বাড়িতে লাগিল। তাহার একমাত্র চিন্তা হইল/ কে 
করিয়। বেলাকে জব্দ করা যায় । যেমন করিয়! হোক তাহ 
দর্পটা চূর্ণ করিতে হইবে--ছলে বলে কৌশলে-_-যে 
করিয়া হোক । | 


বৃষ্টি পড়িতেছে। 

ভিজিয়া ভিজিয়াই শ্ক্ুর হাটিয়া চলিয়াছে। তখ 
রাগে তাহার মাথার শিরাগুলো দপ দপ করিতেছি 
অপদার্থ লোকটার স্পর্ধা তে। কম নয়! হাদ জর 
ছেলেটাকে টাকার জোরেই রাতারাতি বুদ্ধিমান ক' 
তুলিবে ভাবিয়াছে! অস্ক কিছু তে! জানেই না; বুঝ 
দিলেও বুঝিতে পারে না, তাহাকে ফিজিক্স পড়া 
হইবে। তা-ও ন! হয় চেষ্টা করা যাইভ কিন্তু উই 
অর্থোত্তাপ অত্যন্ত বেশী, শঙ্করের পক্ষে অসহ্‌। জং 
ছেলেটার পিছনে শঙ্কর যে এতটা কক্রিয়! সমন্ন ন্ট করি 


গর 


তাহার জন্য কতজ্ঞতা-প্রকাশ কর! দূরে থাকুক; ছেলের বাবা 
এমন ভাবে কথাবার্তী বলেন যেন ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক 
গ্রভু-ভূত্য সম্পর্কের চেয়ে কোন অংশে বড় নয়। আজ 
স্বচছন্দে তাঁহাকে বলিয়। বসিলেন, “ওছে মাস্টের। আজ 
আমাদের চণ্তীবাবু বলছিলেন যে পড়াশোনা তেমন নাকি 
ক্বিধে হচ্ছে না! ফিজিক্সের কি একটা কোশ্চেন 
করেছিলেন উনি, কিছুই বলতে পারলে না। চণ্তীবাবু 
বলছিলেন আর কটা! টাকা বেণী দিয়ে কলেজের একজন 
প্রফেসার রাখলেই ভাল হয়। কি বলেন আপনি, হবে 
আপনার দ্বার পড়ানো--টাকার জন্যে আমি ভাবি না, 
ধা! বাহান্ল তাহা তিপপাযো!-প্রফেসারই না হয় 
দ্বাখি একটা-_-» 

শঙ্করের মাথার মধ্যে যেন আগুন জ্বলিয়া উঠিল। 
তথাপি সে শাস্তকষ্ঠেই প্রশ্ন করিল-_“চণ্তীবাবু কে ?” 

“একজন রিটায়ার্ড ইন্জিনিয়ার । আমাদের পাড়াতেই 
খারেন। তিনিই কাল জীবুকে ডেকে দু-চারটে কোশ্চেন 
কর়লেনঃ ও তো! কিছুই বলতে পারলে না, হাঁ করে রইল |” 

শব বলিয়া বসিল, “ও হা! ক'রেই থাঁকবে--ওর দ্বারা 
ক্বিছু হবেনা । ওর মাথায় কিছু ঢুকতে চায় না সহজে-_” 

“টোকাতে জানলেই ঢোকে । জীবু বলছিল আপনি 
নাকি কেবল অন্কই কষান, ফিজিক্স কিছুই পড়ান না ।” 

“অস্ক না জানলে ফিজিক্স পড়া যাঁয় না।” 

এই কথা শুনিয়া গড়গড়ায় একটা টান দিয়া হাটু 
দৌোলাইতে দৌলাইতে এমন টানিয়া টানিয়া তিনি হাঁসিতে 
লাগিলেন যেন শঙ্কর হান্যোন্দীপক অসম্ভব কিছু একটা 
বলিযা'ফেলিযাছে। 

“দেখুন, কারো রুটি আমি সহজে মারতে চাই না» কিন্ত 
মন দিয়ে একটু পড়াঁকেন টড়াবেন”_” 

'*আমি আর কাল থেকে আসব না, আপনি কলেজের 
গ্রফেসাঁরকেই বাহাল করুন ।” 

শঙ্কর বাহির হইয়া যাইতেছিল-_ডত্রলোক ডাকিয়া 
বলিলেন, “মাইনেটা ত| হ'লে চুকিয়ে দি দাড়ান । কণ্দিন 
কাঁজ' করেছেন আপনি ?” » 

*আমার ঠিক মনে নেই । 
 শ্ধাড়ান, আমার টোকা আছে 1” 

কিয়ংকাঁল পরে ফিরিয়া আসিয়া বলিলেন, “আপনি 


স্ডান্তকঞ্বঞ্য 


[ ২৮শ বর্ষ-_২য় খখ--যঠ মাখা 


আধ নিয়ে একুশ দিন কাজ করেছেন, মাসিক চষ্লিশ টাকা 
হিসেবে আপনার আটাশ টাকা পাওনা--এই নিন। গু 
মশায়কে বলবেন যে আমি আপনাঁকে ছাড়াইনি, আপনি 
নিজেই ছেড়ে গেলেন। আমার ছেলে ওই কলেজেই পড়ে, 
গুপ্ত মশায়ের কথায় গ্রিক্সিপাল ওঠেন বসেন গুনেছি, তীকে 
আমি চটাতে চাই না। আপনি নিজেই ছেড়ে গেলেন এই 
কথাটা দয়! করে জানিয়ে দেবেন তাঁকে |” 
“আচ্ছা ।” 


হন হন করিয়া চলিতে চলিতে শঙ্কর ভাবিতেছিল 
এইবার কি করিবে। মাত্র এই কটি টাকা, কলিকাতা 
শহরে দেখিতে দেখিতে ফুরাইয়! যাইবে। যে মেসে দে 
উঠিয়াছে তাহার চার্জ মিটাইতেই তো কুড়িটা টাকা 
লাগিবে। নৃতন কাজের সন্ধান করিলেই কি মিলিবে? 
তাহার উপর কয়দিন হইতে যে বৃষ্টি সুর হইয়াছে কোথাও 
বাহির হওয়াই মুশকিল । সমস্ত আকাশে চাপ চাপ মেঘ। 
দিবারাত্রি বৃষ্টির বিরাম নাই | সহসা! শঙ্করের মনে হইল-. 
আকাশ নির্মেঘ হইলেই বা সে কি করিত, বৃষ্টির দোহাই 
দিয়া তবু কয়েকটা দিন অকর্মমণ্যতাটাকে সহা করা 
যাইতেছে । আকাশ একদিন না একদিন নির্মেঘে হইবেই 
কিন্তু তাহার সমস্যার সমাধান কি তাহা হুইলেই 
হইয়া যাইবে ! 

“শঙ্করবাবু নাকি !” 

শঙ্কর ফিরিয়া দেখিল, বেল! মল্লিক। অবাক হইয়! 
গেল । মাথায় ছাতা, পরনে ঘন নীল রঙের শাড়ি? বা হাতে 
ভ্যানিটি ব্যাগ, পায়ে হাই হীল জুতা, গ্রীবাভঙ্গী-সহুকারে 
অধরোষ্ঠ দংশন করিয়া! তাঁহার দিকে চাহিয়া মৃদু মৃদু 
হাসিতেছে। সমঘ্য অবস্নবে এমন একটা আভিজাত্যমণ্ডিত 
রী ফুটিয়া উঠিয়াছে যে, শঙ্কর চোখ ফিরাইতে পারিল নাঃ 
মুগ্ধ বিশ্মিত দৃষ্টিতে চাহিয়া রহিল । বেলা মল্লিকই পুনরায় 
কথা বলিলেন, “কোথায় চলেছেন 1” 

“মেসে » 

“আজকাল মেসে থাকেন নাকি ? আমার ধাঁরপা ছিল 
আপনি হস্টেলে থাকেম।” 

“জাপনি কিছুই শোনেন নি তা হ'লে? 

"্না। শোনবার মত কিছু আছে নাকি?” 


জ্যৈষ্ঠ--১৩৪৮ ] 


তজঞ্চ 


২১ এটি 





শঙ্কর একটু হাসিল। তাহার পর বলিল, “শোনবার 
কিনব! শোনাঁবার মত কিছু অবশ্থ নয়-_” 

"ভনিতা ছাড়,ন, ব্যাপারটা কি?” 

প্যাপার কিছুই নয়, পড়াশোন। ছেড়ে দিয়ে উদরানের 
জন্চ কলকাতার রাস্তায় রাস্তায় টো টো ক'রে 
ঘুরে বেড়াচ্ছি__” 

“পড়াশোন! ছেড়ে দিলেন কেন হঠাৎ ?” 

“খরচ জুটলো! না ।” 

“তার মানে ?” 

শঙ্কর আর একটু হাসিয়া বলিল, “তার মানে ওই |” 

“টাকার অভাবে আপনাকে পড়াশোনা বন্ধ করতে 
হ'ল একথা বিশ্বাস করতে রাজি নই। আঁপনি যে গরীবের 
ছেলে নন, তা আমি জানি | 

“বাবা বড়লোক তে! আমার কি !» 

বেল! ভ্রভঙ্গী-সহকারে খানিকক্ষণ শন্করের মুখপানে 
চাহিয়া রহিলেন ! তাহার পর বলিলেন, “আপনার এখন 
সময় আছে কি?” 

প্রচুর, কেন ?” 

“ত| হ'লে আন্বন আমার সঙ্গে ।” 

”কোথায় ? 

“আমার বাসায় |” 

শঙ্কর বিশ্মিতকণ্ঠে বলিল, “কেন বলুন তে? 

"এমনি একটু গল্পসল্প করা যাঁবে। আজ একটু ছুটি 
পেয়ে গেছি |” 

“চলুন |” 

. 


ভন্টুর বৌদিদি বসিয়া বসিয়া বড়ি দিতেছিলেন। 
রবিবার, আপিসের তাড়া নাই। ভন্টু অদূরে একটি 
মোড়াঁর উপর বসিয়া নাকে, কানে, নাভি-বিবরে, পায়ের 
আঙ্লগুলির ফাঁকে ফাঁকে তৈল-নিষেক করিয়া! অতিশয় 
পরিপাঁটিরপে সর্ধাঙ্গে তৈল মর্দন করিতেছিল। এই 
একদিনে ভন্টু সাত দিনের মত তেল মাখিয়া লয়। 
সণ্াহের বাকি ছয়, দিন তেল মাঁথিবার অবসর থাকে না। 
কোন ক্রমে মাথায় দুই ঘটি জল ঢালিয়৷ এবং নাকে-মুখে 
যাহোক কিছু খু'জিয়া উর্ধস্বাসে আপিলে ছুটিতে হয়। এই 


[১ 


রবিবীর দিনই বেচারা প্রাণ ভরিয়া ল্লানাহার করে। 
বৌদিদিও রবিবার দিন আহারের একটু বিশেষ রকম 
আয়োজন করিয়া থাকেন। 

তন্টু সশবে৷ নাঁসা-রঙ্ধে খানিকটা তেল টানিয়! লইয়া 
বলিল, “বাকু কি ইটিং আপিস খুলেছেন ?” 

“তোমার আসবার আগেই বাবা খেয়ে নিয়েছেন। 
আচ্ছা ঠাকুর পো তুমি করছ কি, একেবারে আচার হয়ে 
গেলে যে-_” 

ভন্টু কিছু | বণিরা আবার খানিকটা তৈদ দানার 
সশষে টানিয়া লইল। ৰ 

বৌদিদি বলিলেন, “ওই জন্যেই তো জামাকাপড় তেল 
চিটচিটে হয়ে যায়। সাবান দিলেও পরিষ্কার হতে চায় না ।” 

“অয়েলিশ আযঁফেয়ারে বড় সখ !” 

ভন্টু বাঁম তালুতে খানিকটা তৈল ঢালিয়৷ লইয়া 
গর্দানায় ঘদিতে লাগিল । 

বৌদিদি এক নজর সেদিকে চাহিয়া দেখিলেন ও 
বলিলেন, “তোমার আর কি, রা টি 
হয় না, যাঁকে কাঁচতে হয় সে-ই বোঝে-_» 

ভন্টু গর্দানায় তেল মালিশ করিতে করিতে অর্ধ” 
নিমীলিত-নেত্রে বলিল ণ“্বড় সুখ-_” 

বৌদিদি আর কিছু না বলিয়! বড়ি দিতে লাগিলেন । 

ছুই-এক মিনিট নীরবতার পর ভন্টু বলিল, “আজ কি. 
কি রা! করেছ বৌদি ?” 

“আলুর দম, পটল ভাজা, মাছের ঝাল, মাছের অন 
মুড়ে দিয়ে মুগ ডাল-__” 

"বাকুকে ওই সমস্ত খেতে দিয়েছ না কি?” 

“তা দিয়েছি বই কি।” 

“বীরেন ডাক্তার বলছিল গুকে এখন ওসব গুরুপাঁক 
জিনিস থেতে ন1 দেওয়াই ভাল। চোখের কোল ফুলেছে, 
কিডনী খারাপ হয়েছে নিশ্চয়ই-_” 

প্ৰরে ভালমন্দ রান্না হলে ওকে ন! দিয়ে কি পারার 
জো আছে-” 

একটু থামিয়া বৌদিদি বলিলেন, “এমনিতেই তো পান 
থেকে চুণ থসলে তুলকালাম কাণ্ড । সেদিন রান্রে পরোটায় 
সামান্ত একটু ময়ান কম হয়েছিল, বললেন “এ পরোটা না 


কেনা" 


০, 


তন্টুর মুখ হাঁসিতে উদ্ভাসিত হইয়া] উঠিল । 

' "আজকাল বাঁকু আর সে রকম করেন না, না বৌদি?” 

“কি রকম ?” 

পরাগ হলে "ক্ষুধা নেই, কলে মশারি টশারি ফেলে তার 
ভেতর বসে শ্রীমন্তাগবৎ পড়তে সুরু করে দিতেন সেই যে-_* 

_ বৌদ্দিদি হাসিয়া বলিলেন, “না, অনেকদিন তো! সেরকম 
কেন নি” 

ভন্টু বাকুর ঘরের দিকে একবার দৃষ্টি নিক্ষেপ করিয়া 
, বলিল, প্বাকু স্লিপিং আপিস খুলেছেন বোধ হয়। কোন 

সাঁড়াশব পাওয়া যাচ্ছে না।” 

স্্যা, বোধ হয় ঘুমুচ্ছেন।” 

ভন্টু উঠিয়া ্রাড়াইল। পেটে ও পিঠে তেল মাঁথিতে 

মাধিতে বলিল, “আঁদল ব্যাপারের কতদূর কি সেট্ল্‌ 
করলে? বাঁকুর কাছে পেড়েছিলে কথাটা ?” 

“না, নিবারণবাধুর টাকা তুমি ফেরত দাঁও |” 

“কেন, দারজি মেয়েটি তো মন্দ নয়। চমৎকার শেলাই 

ফ্রোড়াই জানে» 

“রং কি রকম ?” 

“কাঁলোঃ কিন্ত কুৎসিত নয়। অনেকটা কচি নিমপাতার 

মতো, একটু লালচে আভা আছে ।” 

বৌদ্দিদি হাসিয়া ফেলিলেন। তাঁহার পর বলিলেন, 
 শ্রঙের জন্যে কিছু এসে যাচ্ছে না, আমার রঙই বাকি এমন 
ফরসা; কিন্তু যে বাড়িতে অমন কেলেস্কারি ঘটেছে সে বাঁড়িতে 
বিয়ে করতে হবে না টাকার জন্তে। টাকাটা ফেরত 
জিয়ে দাও।” 

প্টাঁকা তো গভীর গাঁও্ডায়__” 

“গাড্ডায় মানে ?” 

"করালীচরণকে দিয়ে এসেছি ।৮ 

“তোমাকে মানা করলুম তবু তুমি দিয়ে এলে! ওকে 
ুদিন পরে দিলেই তো চলত। এইবার তো তোমার দাদা 
এসে কাজে জয়েন করবেন, দুজনে মিলে কিছুদিন পরেই না 
হয় শোধ করে দিতে টাকাটা-_” 

“কেতুরাঁজ করালীচরণকে তুমি চেনো না, তাই কলায়ের 
ডালের বড়ি দিতে দিতে স্বচ্ছদে কথাগুলো বলতে পারলে । 
চিনলে সটান টৌক গিলে যেতে, ও-কথা আর উচ্চারণ 
করতে না।” 


ডাব 


[ ২৮শ বর্--২য় খণ্ড-ষ্ঠ সংখ্যা 


ছুই বগলে তেল চাপড়াইতে চাপড়াইতে ভন্টু বলিল, 
“্চম লদ্‌ করালী দ্রাবিড়ে লদ্‌্কা-লদ্‌কি করতে যাচ্ছে, তাকে 
আটকায় কার সাধ্য 1” 

“তা হলে অন্ধ কোথাও থেকে টাঁকা জোগাড় ক'রে 
নিবাঁরণবাবুকে দিয়ে দাও। ও বাড়ির মেয়ে ঘরে আন! 
চলবে না ।” 

পাশের ঘর হইতে গদাম্‌ করিয়া একটা শব্ধ হইল। 

বৌদ্দিদি ভন্টুর মুখের পানে চাহিয়া বলিল, "কেউ ঘুমোয় 
নিঃ সব মটকা মেরে পড়ে আছে তোমার ভয়ে ।” 

ভন্টু তেল মাখিতে মাঁথিতে আগাইয়া গেল ও জানলা 
দিয়া উকি মারিয়া দেখিল একট! পাঁশ বালিশ মাঁটিতে 
পড়িয়াছে। ছেলেরা সকলে চোঁথ বুজিয়া শুইয়া আছে, 
সকলেরই চোখ মিটমিট করিতেছে । 

“এই ফন্তি, বালিশ ফেললে কে ?” 

ফনতি ঘাড় ফিরাইয়! নাকি স্থরে বলিল, প্দাদা আমাঁকে 
কাতুকুতু দিচ্ছে খালি।” 

“শন্টু, বেত না খেলে পিঠ সুড়ন্থড় করছে, নয় ?” 

শন্টু আত্মপক্ষ সমর্থন করিবার চেষ্টা করিল না চোঁখ 
বুজিয়া চুপ করিয়া পড়িয়া রহিল । 

“পাঁশ বালিশটা তুলে চুপ ক'রে শুয়ে থাক সব। ফের 
যদি কোঁন আওয়াজ শুনেছি তো পিঠের চাঁম তুলে ফেলব 
আমি সকলের-_” 

ফন্তি পাশ বালিশট! তুলিয়া লইল এবং সকলে আর 
একবার নডিয়! চডিয়! শুইল। 

বৌদিদি আবার তাগাঁদা দিলেন। 

“তুমি এবার চাঁন কর+ আর কত বেল! করবে, সব যে 
ঠাণ্ডা হয়ে গেল-_» 

“তুমি ভাত বাড় নাঃ আমার চান করতে কতক্ষণ 
যাবে !” 

“তোমাকে যেন চিনি না আমি। দাত মাঁজতেই তো 
একযুগ যাবে এখন-_“ 

তন্টু মুখ বিকৃত করিয়া! বৌদিদির মুখের পাঁনে চাহিল। 


আহারাদির পর ভন্টু ছোট একটি হাত আয়ন! এবং 
ছোট একটি কাচি লইয়! মোড়ার উপর বসিয়া! গুল্ৰসংস্কার 


জ্যৈষ্*--১৩৪৮ ] 


করিতেছিল। বৌদিদিও আহার সমাপন করিয়া ছেলেদের 
পাশেই একটু গড়াইয়! লইতেছিলেন। তাহার তন্দ্রার মধ্যেও 
তিনি স্বপ্ন দেখিতেছিলেন-_ স্বামী আগিয়াছেন, শরীর বেশ 
সারিয়া গিয়াছে, আর জর হয় না, মুখের সে রুগ্ন ভাব আর 
নাই, গাল চিবুক বেশ ভারি হইয়াছে। 

একটা মোটরের হর্নের শবে তাহার তন্দ্রা ভাঙিয়া৷ গেল। 
বাড়ির সামনে একটা মোটর আসিয়৷ থ।মিয়াছে। ভন্টু 
আয়না ও কাচি কুলুঙ্গিতে রাখিয়া সদর দরজা খুলিয়! দেখিতে 
গেল কাহার মোটর তাহার বাসার সামনে আসিয়! থামিল। 
দরজা খুলিয়া ভন্টু বিম্মিত হইয়া গেল। তাহার আপিসের 
বড়বাবু! কেরাণীমহলের যিনি সর্ব্বেসর্ধা স্বয়ং তিনিই 
আপিয়াছেন। ভন্টুর আপিসের বড়বাবু বড়লোক । মোটা 
মাহিনা পান, তা ছাড়া ধনীর সন্তান। নিজের মোটর 
আছে । ভন্টু সসম্ত্রমে নমস্কার করিল । 

বড়বাবু মোটর হইতে অবতরণ করিয়া সহাস্তমুখে 
বলিলেন, “ভালই হ'ল, তুমিও এখন বাড়িতে আছ। 
তোমার বাবার সঙ্গে একটু আলাপ করতে এলাম--” 

হঠাঁৎ বাকুর সহিত বড়বাবু কেন আলাপ করিতে 
আসিলেন তাহ. বিস্মিত ভন্টু হদয়জম করিতে না পারিলেও 
মুখে সোচ্ফাসে আহ্বান করিল । 

“আনুন, আনুন---” 

তাহার পর একটু সঙ্কোচভরে বলিল, “বাবা কানে একটু 
কম শোনেন একটু জোরে জোরে কথ! বলতে হবে কিন্তু-_” 

“আচ্ছা” 

তন্টু বড়বাবুকে লইয়া! বাঁকুর ঘরে প্রবেশ করিল। 





ঘণ্টাথানেক পরে বড়বাবু যখন চলিয়া! গেলেন তখন ভন্টু 
আরও বিস্মিত-হুইয়। গেল। এবে স্বপ্নাতীত আবুহোসেনী 
কাণ্ড! বড়বাঁবু নিজের মেয়ের সহিত ভন্টুর সম্বন্ধ করিতে 
আসিয়াছিলেন ! বউদ্দিদি উল্লসিত হইয়! উঠিলেন। 

“এখন স”পাচ আন পয়স। দাঁও দিকি--” 

“কেন ?” 

“আমি মনে মনে হরির লুট মানসিক করেছিলাম যাতে 
ওই নিবারণবাঁবুর মেয়ের সঙ্গে তোমার বিয়ে না হয়--” 

“পাঁগল! উইন্টার ক্যাপিটাল অফ বেঙ্গল-গতর্ণরকে 
অগ্রাহ কর! সোজা নাকি--” 


জে 


এ১৫% 





“উইনটার ক্যাপিটাল কি-__-” 

“দার্জিলিউ”। 

বৌদিদি সবেগে মাথা নাঁড়িয়া বলিলেন, “না, ওখানে 
তোমার বিয়ে হতেই পারে না 

“না, ন! ছি-__অমন অসময়ে এককথায় করকরে সাড়ে 
পাচশোটি টাক! গুণে দিলে, তাছাড়া বৃশ্চিকরাঁশিঃ মকর লুগ্ 
জ্যেষ্ঠা নক্ষত্রে জন্মগ্রহণ করেছে, নিবারণকে এমনভাবে 
ল্যাঁড়ারিং করা কি ঠিক হবে?” 

ল্যাঁডারিং কথাটা ভন্টু সঙ্গে সঙ্গে সৃষ্টি করিল। 

বৌদিদি মানে বুঝিতে না পারিয়া বলিলেন, “তার 
মানে ?” 

“মানে, নিশ্চিন্ত নিবারণ গাছে উঠে মজাসে গোঁফে 
ত৷ দিচ্ছে, এখন মইট। সরিয়ে নিলে লৌকে বলবে কি-_” 

“লোকে যা-ই বলুক, ওখানে বিয়ে হবে না। আজই 
তুমি তাকে বলে এসো _বাঁড়ির কারো মত হচ্ছে না। কারো! 
মত হবেও না-_-ওকথ। শুনলে বাকু, তোমার দাদা, কেউ রাজি 
হবেন না। সকলের অমতে তুমি বিয়ে করবে নাকি ?” 

“কিস্ত ফাইভ এণ্ড হাফ সেঞ্চুরির মহড়া লামলাব কি 
করে! সেটা ভাবছ না| কেন ?” 

“সে আবার কি ?” 

“বেশ খাসা আছ তুমি ! সাড়ে পাঁচশে৷ টাকাটা তো' 
সপাচ আনার সিন্নি দিলেই উবে যাবে না! আর আমাদের 
গুষ্িন্দ্ধকে ছাতু করে ফেললেও পাঁচ টাঁকা বেরুবে কিন্ন! 
সন্দেহ। তোমার গয়নাগুলি তো বহু পূর্বেই বিক্রমপুর 
হয়ে গেছে । এক্ষেত্রে উপায় কি সেইটে বল, সিন্নি নিয়ে 
লরদকালেই তে! চলবে না ।” 

“পণ হিসেবে বড়বাবু নিশ্চয় কিছু দেবেন, তার থেকেই 
দিয়ে দিও নিবারণবাবুকে-” 

“্বড়বাবু কত দেবে তার ঠিক কি। যেরকম গোঁফ আর 
জুলপিঃ লোকটার কিছুই বিশ্বাস নেই।” 

পৰা, নিশ্চয়ই দিতে হবে-বাঁকুকে সব শিখিয়ে পি 
দিচ্ছি, দাড়াও না-_” 

প্বাকু তোমাকে একছাটে দিনে আর একছাঁটে বেচে 
পারে! বাকুকে শ্রেখাবে তুমি!” 

বাঁকুও এই বিষয়ে আলাপ করিবার জন্ত গ্আাকু গা 
করিতেছিলেন। তিনি বাহির হয়! 'আসিলেন। 


এত 


“কই গে বড় বৌমা, এস না একবার এদিকে । তন্টুর 
আপিসের বড়বাবুর প্রস্তাবটা বিবেচনা! ক'রে দেখা যাক। 
চাও চড়াও । চা থেতে খেতে বেশ জাঁকিয়ে বিবেচনা 
করা যাক । এস--” 

বৌদিদি ভন্টুর দিকে চাহিয়া বাকুর পিছু পিছু ঘরে 
গিয়া ঢুকিলেন এবং ত্ীহাঁর কানে কানে কি বলিয়া হাঁসি- 
মুখে বাহির হইয়া! আসিলেন। 

বাকুর কণ্ঠন্বর পুনরায় শোনা গেল-_-“বলে লাখ কথা 
* না হ'লে বিয়ে হয় না--* 
বৌদিদি চা চড়াইতে গেলেন। 
ভন্টু পিছন হইতে তাহাকে ভ্যাঁডাইতে লাগিল । 





১১ 


অন্ধকার রাত্রি। 

করালীচরণ বকৃপীর ঘরে মোমবাতির ম্লান আলোকে 
অন্ধকার ঘনতয় হইয়া উঠিয়াছে। বোতলের মুখে গৌজা 
যে মোমবাতিটি জলিতেছে তাহারও আঘু নিঃশেধিতগ্রায়, 
আঁর বেদীক্ষণ টিকিবে বলিয়া মনে হইতেছে না। বেশীক্ষণ 
টিকিবার আর প্রয়োজনও নাঁই। বক্সী মহাশয়ের গোছানো 
শেষ হুইয়। গিয়াছে, এইবার তিনি বাহির হইয়া পড়িবেন। 
মোমবাতির হবল্লালোকে বকৃসী মহাঁশঞজ মিরিষঈচিত্ত ত্র কুঞ্চিত 
করিয়া! একখানি পত্র পড়িতেছিলেন। সমস্ত মুখে বিরক্তির 
চিচ্ন ফুটিয়া! উঠিয়াছে, ওগত্বয় দৃঢ়নিবন্ধ চিবুক কুঞ্চিত ও 
প্রসারিত হইতেছে। জ্রাবিড়ে যাইবার মুখে এ কি এক 
ফ্যাসাদ। আসিয়া! জুটিল! পত্রের সহিত দলিল গোছের 
ফি একটা কাগজ ছিল। পত্রটি এবং দলিলখানি আগ্ঠোপাস্ত 
পুনরায় পড়িয়া করালীচনণ সেগুলিকে লম্বা খামের ভিতর 
পুরিয়া ফেলিলেন। দ্রাবিড় হুইতে ফিরিয়া! তারপর যাহ! 
হয় বাবস্থা করা যাইবে। ভন্ট্বাবু এখন তাড়াতাড়ি 
ফিরিলে যে বীচা যায়। ভন্টুকে তিনি কিছু মাল এবং 
টিকিট কিনিবার জন্ত পাঠাইয়াছেন। প্রায় ঘণ্টা ছুই হইয়া 
গেল? এখন৪ ফিরিতেছে না কেন। অধীর করালীচরণ 
উঠিয়া দাড়াইলেন। সহসা 'শাহার চোখে পড়িল দ্বারপ্রান্তে 
ছারামূর্তির মত.কে যেন দীড়াইয়! রছ্য়াছে। 

পক? 

“আমি!” 


স্ঞাব্সব্ডজ্ঞ্ধ 


[ ২৮শ বর্-_২য় খণ্ড-যষ্ঠ সংখ্যা 





ছায়ামৃত্তি আগাইয়া আদিল, মোড়ের সেই পানওয়ালীটা। 
একমুখ হাসিয়া মিসি-লাগানো দাতগুলি বাহির করিয়া 
পানওয়ালী বলিল, “জিনিসপত্তর সব বীঁধা-ছঁদা হচ্ছে, 
আজ সকাল থেকে দেখছি, কোথাও যাওয়া হবে 
নাকি ঠাকুরের ?” 

করালীচরণ কিছু না বলিয়া তাহার দিকে কয়েক 
সেকেণ্ড তাকাইয়! রহিলেন, এই অযাঁত্রাটা ঠিক যাঁইবাঁর 
সময় আসিয়া! হাজির হইয়াছে ! 

"আমি যেখানেই যাই না তোর তাতে কি! দুর হ 
তুই এখান থেকে-_” 

পানওয়ালী কিন্তু নড়িল না, শ্মিতমুখে দাড়াইয়া রহিল। 
“আচ্ছ। আমার ওপর তোমার এত রাগ কেন বল তো 
ঠাকুর! আমি তো তোমার ভাল ছাড়া মন্দ কোন দিন 
করিনি__* 

করালীচরণের চোৌথট! দপ করিয়া! জলিয়৷ উঠিল। 

তিনি গর্জন করিয়া গ্রাড়াইয়া! উঠিলেন, “তুই নড়বি 
কি-না বল্‌ ওখান থেকে-__” 

পানওয়ালী তথাপি নড়িল না। 

“আমার ওপর তোমার এত রাগ কেন তানা বললে 
আমি যাব না--” 

“্হারামজাঙ্গী ছোটলোক বেশ্তাঃ তোর মুখদর্শন করলে 
যে পাপ হয় তাতুই জানিস না? আবার কৈফিয়ৎ তলব 
করছেন!” 

পানওয়ালীর মুখের হাসিটা সহস! নিশ্রভ হইয়া গেল। 
তথাপি সে সপ্রতিভ ভাঁবটা বায় রাখিবার অঙ্ক আর 
একটু হাধিয়। বলিল “ওমা, এই জন্তেই এত রাগ! আমি 
ভেবেছিলাম বুঝি বা আর কিছু! মুখ দেখলে পাপ হয় 
আর আমার কাছ থেকে সিগারেট পান নিলে বুঝি কিছু 
হয় না। ধন্টি শান্তর তোমাদের !” 

পুর হ বলছি-_» 

করালীচরণ তাড়া করিয়া গেলেন। পানওয়ালী 
অন্ধকারে অন্তর্ধান করিল। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ভন্টু 
আসিয়া পড়িল। প্উঃ বড্ড দেরি করলেন আপনি ভন্ট্বাবু, 
সব জিনিসপত্তর পেয়েছেন তো! ?” 

ল্য ।” ] .. 
ভন্ট ছুই বোতল মদ, ছোট একটি কাচের লাস পাট 


জ্যৈ্ঠ--১৩৪৮ ] 








এবং টুকিটাকি আরও নান! রকম জিনিস টেবিলের উপর 
সাঙ্জাইয়া রাখিল। 

“টিকিট করেন নি?” 

“নিশ্চয়। এই যে, নিন না” 

ভন্টু ভিতরের পকেট হইতে ব্যাঁগ বাহির করিল 
এবং তাহার ভিতর হইতে টিকিট ও বাকি টাকা বাহির 
করিয়া দিল। 

করালীচরণ আলমাকির মাথায় দশড়কাঁকের খাঁচাট! 
দেখাইয়া বলিলেন, “আর ওটার ?” 

“ওটার সম্বন্ধে নান! বখেড়া। খাঁচার মাপ জোক চাই, 
তাছাড়৷ অনেক খরচ-_” 

গভীর বিম্ময়ের সহিত করালীচরণ বলিলেন, “থরচ ! 
খরচ বলে কি এতদিনের সঙ্গীটাকে এখানে ফেলে রেখে 
যাঁব নাকি! কে থেতে দেবে ওকে ?” 

ভন্টু বলিল, ”সে ভার না হয় আমি নিচ্ছি; আপনি 
বিদেশে যাচ্ছেন কোথায় ওই ঝামেল! নিয়ে ঘুরবেন ! তার চেয়ে 
ওকে এখানে রেখে যান, আমিই দেখাশোন! করব বরং” 

"আপনি ঠিক দেখাশোন! করতে পারবেন তে! ?” 

“ঠিক পারব |” 

“দেখুন-_* 

“বলছি ঠিক পারব ?” 

“তা হ'লে গোটা বিশেক টাকা রেখে দিন আপনি । 
ওকে মাছ মাংস ছাতু দেবেন রোজ । আমও বেশ থায়। 
দেখবেন যেন কষ্ট না পায়, আপনি ভার নিচ্ছেন বলেই 
ভরসা ক'রে রেখে যাচ্ছি--” 

“টাকার দরকার নেই, আমি সব ব্যবস্থা করব এখন 1৮ 

“নাঃ নাঃ টাকাটা রাখুন, টাকাই হচ্ছে পেয়ার্দা ওই 
তাগাঁদ। দেৰে আপনাকে | বাই নারায়ণ! বিনা টাকায় 
কিছু হবার জো আছে আজকাল-_“ 

ভন্টুকে টাকা লইতে হইল। 

"এবার চলুন স্টেশনে যাওয়া যাক তা'হলে। ট্রেনের 
আর দেরি কত ?” 

ণ্বণ্টাথানেক আছে আর--” 

“মার ঘণ্টাখানেক? চলুন, চলুন আর দেরি নয়ঃ 
ট্যাক্সি ডাকুন আপনি--* 


ভুজ্জ্স 
টিন সিগারেট, এক ডজন দেশলাই, দুই প্যাকেট মোমবাতি 





১১৭৭ 





স্প্রে” স্্ 


ভন্টু ট্যাক্সি ডাঁকিতে বাহির হইয়া গেল। 

করালীচরণ পুনরায় ল্বা খামটা হইতে চিঠি ও দলিলটা 
বাহির করিয়া পড়িতে লাগিলেন এবং আবার সমন্ত 
আগ্ঘোপান্ত পড়িয়া শ্বগতোঁক্তি করিলেন__“বাই নারায়ণ, 
এবং পুনরায় সেগুলি খামে পুরিয়া আলমাঁরির ভিতর 
রাখিয়া! দিলেন । 

ট্যাক্সি আসিয়া পড়িল। 


ঘণ্টা ছুই পরে ভন্টু ফিরিয়া আসিয়া দেখিল-_দ্ধ 
দ্বারের সম্মুখে পানওয়ালী চুপ করিয়া বসিয়া আছে। 
ভন্টু পানওয়ালীকে চিনিত। বাইক হইতে অবতরণ 
করিয়! বলিল, “ভালই হ'ল তোমার সঙ্গে দেখ! হয়ে গেল !” 

“কেন বলুন তো ?” 

প্ৰক্পী মশাঁয়ের ঘর-দৌরের কি ব্যবস্থা করা যায় তাই 
ভাবতে ভাবতে আসছিলাম। উনি আমার ওপরই সব 
ভাঁর দিয়ে গেলেন। তুমি পারবে দেখাশোনা! করতে ?” 

“কি করতে হবে বলু্--” + 

“এই ঝঁট-পাট দেওয়া আর কিঃ বক্‌লী মশায়ের 
একটা কাগ আছে, সেটাকেও খেতে টেতে. দিতে হবে। 
পারবে তুমি ?” 

“পারব !” ৰ 

“তা হ'লে এই টাক একটা রাখ, মাছ মাংস ছাতু আম 
যা দরকার কিনে দিও ।” 

“টাকার দরকার নেই ।৮ 

“বকসী মশায় দিয়ে গেছেন যে--৮ 

“আপনাকে দিয়ে গেছেন, আমাকে তো আর দেন নি ! 
আপনি কেবল একটি উবগাঁর করবেন--» 

বিস্মিত ভন্টু বলিল, “কি”?” | 

“গুকে জানাবেন না ষে গুর ঘরের ভার আপনি আমাকে 
দিয়েছেন |” 

অধিকতর বিশ্মিত হইয়! ভন্টু বলিল, "কেন ?” 

মিসি-মণ্ডিত দস্তপাতি বিকশিত করিয়া পানওয়ালী 
উত্তর দিল, "আমি গুর দুচক্ষের বিষ ছিলুম ।” 

ভন্টু কি বলিবে ভাবিষ্বা পাইল না । 

পাঁনওয়ালী পুরয়ায় হাসিয়া বলিল, “দিন, চাঁবি দিন। 
ওঁকে জানাবেন না কিন্তৃ--” 


৯৬৮ 


সুর 

“জানাব কি ক'রে, গর ঠিকানাই জানি না । 

“আচ্ছা, উনি কোথায় গেলেন বলুন তো” 

“দ্রাবিড়ে |” 

“লে আবার কোথা! সেখানে কেন?” 

“পড়তে ।” 

“পড়ে পড়েই সারা হ'ল। 
£নেই--” 

পানওয়ালী মুচকি হাসিয়া বলিল, “আচ্ছা, মানুষে 
এত পড়ে কেন বলুন তো। যত পড়ে ততই তো মাথা 
গোলমাল হয়ে যায় দেখছি_-” 

ভন্টু সহস| অনুভব করিল, “নাই পাইয়া মাগি বোধ 
হয় লদকা-লদকিতে ঢুকিবার চেষ্টায় আছে। 


দিবারাত্রি আর কোন কাজ 


বৈশাখ 
শ্রীকনকভূষণ মুখোপাধ্যায় 


বৎসরের পুজ্ীভৃত ধূলিক্রিন বেদনার দিনে 

হে বৈশাখ তুমি এলে বসন্তের অন্তরাগ শেষে-- 
পরিপূর্ণ রুদ্র সুর বঙ্কারিছে মর্মে মনোবীণে 
ভয়াল ধূর্জটি তূমি মর্মে এলে মনোহর বেশে । 


অফুরস্ত আনন্দের তুমি যেন নব অগ্রদূত 

দিগন্ত ভোলানে৷ তব পিঙ্গল সে ধুর জটাজাল-_ 
ভবনের খেলাধরে হে ভীষণ সুন্দর অত 
তোমার চলার ছন্দে নৃত্যরত হ'ল মহাকাল । 


মরুভূর দাঁব-দাহে আজি মোর বিশুষ্ক জীৰন 
অপূর্বব ভ্রতঙ্গ নিয় এসো বন্ধু ছন্দে নটরাঁজ-_ 
গ্রেরসীর ম্মিতহান্তে ল'ৰ মাথি আনন্দ চন্দন 
দহনের ব্যর্থতারে নির্বিচারে দেখাইব লাজ । 
“হন ধরণীতল”,-_-আননের এই বার্ড নিয়া 
আমি কৰি ধরণীরে জাগাইিব প্রাণ সঞ্চরিয়া। 


জ্ঞান্সজন্ব্য 


স্স্ফ্হ্সস্স্ 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় থণ্ড-_বঠ সংখ্যা 


গন্ভীরভাবে বলিল, “লেখাপড়ার মর্ম সবাই বুধলে আর 
তাঁবনা ছিল কি-_” ৮ 

"ইনি খুব বিদ্বান না?” 

লদ্কা-লদকি ঘনীভূত হইবার উপক্রম করিতেছে দেখিয়া 
ভন্টু এ কথার আর জবাব দিল ন|। 

বলিল, “চাবিট! রাথ ত৷ হ"লে। কাগটাকে খেতে টেতে 
দিও। কাল আবাঁর আসব আমি-_” 

সে বাইকে সওয়ার হইল। 

চাঁবিটা হাতে করিয়া অন্ধকার গলিতে পানওয়ালী 
করালীচরণের রুদ্ধদ্বারের সম্মুখে এক! দীড়াইয়! রহিল। 
রাঁত্রে ঘরটা খুলতে তাহার সাহস হইল না। 

( ক্রমশঃ ) 


প্রেম 
শ্রীগোপাল ভৌমিক 


তোমার আমার মাঝে চুধক-গ্রবাহ__ 
নিশিদিন চলমান, হে বান্ধবী তাই-_ 

বাহির জগতে নাই হোক বা উদ্বাহ-_ 
অস্তর-জগতে তুমি রয়েছ সদাই। 


মির্মম এ পৃথিবীর ডাকে, দূর হতে 

দূরান্তরে অবিরাম স'রে সয়ে যাঁও। 
. ভাব অচঞ্চল প্রেম নহে কোনষক্জে। 

মাঁনপিক বিবর্তনে বুঝি ভয় পাও। 


এক'নষ্ এ প্রেম আমার, মিছে তয়__ 
শিছে দ্বিধা করনা ক'র না অনুক্ষণ) 
আখাদের এই প্রেম মিথ্যা কতু নয়__ 
ব্যর্য নয় আপবিক এই আকর্ষণ! 


তাই ত নির্ভয়ে তোম! বেতে দেই দুরে-_- 
চঙ্বক-আবেশে জানি আসিবেই ঘুরে। 


বর্ণ পণ-_-না৷ ভবিতব্য ? 
স্রীকালীচরণ ঘোষ 


কল্যার বিবাহসমন্ত। ক্রমশই গুরুতর আকার ধারণ করিতেছে। 
ইংরেজি শিক্ষ! প্রবন্তিত হওয়া! এবং আমাদের রুচির পরিবর্তন ঘটার 
সে গৃহস্থের কন্যার বিবাহে যে সকল অন্তরায় দেপা দিয়াছিল, 
তাহার কোনটাই দূর হয় নাই, উপরস্ত কতকগুলি নূতন আপদ আসিয়া 
জুটিতেছে। বরপণ ছাড়া, স্ত্ীশিক্ষণ প্রসারের সঙ্গে শিক্ষিত পাত্রী, 
নত্যগীত প্রচলনের সহিত গীতনৃত্যপটায়সী পাত্রী এবং সিনেম| 
প্রচারের সহিত “তারকা”্র সন্ধান এবং পশ্চান্ধাবন, আমাদের রুচির 
কুমোন্নতির বিকাশ দর্শাইয়। থাকে। কালের গতির সহিত পাত্রীর 
বিবাহকালের বয়সের হিসাব অনেক ধাপ পার হইয়াছে । এখন আবার 
স্থানে স্থানে স্বল্লবয়ন্থা কম্া ( সর্দা আইনের মর্যাদা রক্ষ1 করিয়!) শিক্ষা- 
প্রাপ্তা অথচ সাধারণ বিষ্যালয় বা কলেজে পড়ে নাই, “লেক” বা সিনেমায় 
মাওয়ার অভ্যাস নাই, এরূপ পাত্রীর কচিৎ খোঁজ পড়িতেছে 

এই সকলের উপর আরও এক আপদ ব্যাপকভাবে জুটিয়াছে; 
গৌরাঙ্গী-_মেম, ইন্ছদী, ইরাণী প্রভৃতি শ্বেতাঙ্গী মহিলাকে যে পাত্রী বর্ণে 
হার মানাইতে পারে, তাহার খোঁজই চলিতেছে। কিন্তু ইহার মধো এক 
বিচিত্রতা প্রায় সর্ধাক্ষেত্রেই লক্ষা করিয়া আসিতেছি। অধিকাংশ স্থলেই 
এই দাবীর পশ্চাতে আসল লঙ্গা থাকে পণের পরিমাণ ; অছিল!, রং 
(সৌন্দর্যা নয়) মাত্র। কোথাও কোথাও যে কেবল বর্ণের জন্যই বিবাহে 
হবিধা হইতেছে না, তাহা বলা যায় না। কিন্তু ইহা খুবই কম। 

সম্প্রতি এই বর্ণের ব্যাপারে আমার এক অভিজ্ঞতা! জম্মিয়াছে। 
একস্থানে পাত্রী দেখিতে আসিলেন পারের পিতা, জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা ও পাত্রের 
অন্তরঙ্গ এক বন্ধু। পাত্রীর প্রতি প্রশ্মের পরিমাণ ও বৈচিত্র্য লক্ষ্য 
করিয়া পাত্রীর পিতা মনে করিলেন যে পাত্রীকে চাক্ষুষ পছন্দ হইয়াছে, 
গুণের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইলেই বিবাহকার্ধ্য সম্পন্ন হইতে পারে । তবে 
পণের যে বিশাল সমুদ্র পড়িয। আছে, তাহাতে এখনও আলোচনার দাড় 
পড়ে নাই, এই এক দারুণ সমস্যা । 

পাত্রী “দেখা” হইল, পাত্রী বাঁচিল। গান বাজন! নৃত্য এবং কল! 
সমম্বিত আবৃত্তি জানে না বলিয়! তাহার প্রাক্টিক্যাল ডিমন্সট্রেশন দিতে 
হইল ন| এবং "বাস্তর” ও অবান্তর প্রশ্নের ধথাসম্তব উত্তর দিয়! হাফ ছাড়িয়া, 
প্রণাম করিয়া, অতি ধীরে ধীরে গৃহ হইতে বাহির হইয়। গেল। 

পাত্রীর পিত। সসঙ্কোচে পরীক্ষার ফলাফল জানিবার জন্য জিজ্ঞাসিলেন, 
“কেমন দেখলেন ?” 

ছোট্ট একটা উত্তর "মন্দ কি” বলিয়া বরকর্ত! সারিয়া লইলেন। 
“বাড়ীতে পরামর্শ ক'রে আপনাকে পরে জানাবো ।” 

“আর পরে কেন? আপনি ত বরের বাপ, আপনারও ত একটা 


মতামত আছে। তা ছাড়া ছেলের দাদা-_-আপনার ভ্রাতুত্পুত সঙ্গে 


আছেন, আপনাদের কথার ত একট! দাম স্বাছে? আপনাদের মতামতটা 

জানিয়ে দিন, কেন আর দুশ্চিন্তায় রাখবেন? ঘা বলবার ব'লে ফেলুন, 

মেয়ের বাপ আমি, নানারকম মতামত শোনার অভ্যাম আমার আছে।” 
কিছুক্ষণ কাহারও মুখে কোনও কথা নাই। 

“মামার বড় বৌম। দেখতে ঠিক ইছদীর মতন ।” 

“তা হবে” বলিয়। কনের বাপ বোকার মতন মনে করিলেন যে একটা 
যখন সুন্দরী বধু হইয়াছে, অপরটী অত নুন্দরী ন! হইলেও বোধ হয় 
আপত্তি হইবে না। 

“আমায় ঝাকের কই ঝাঁকে মেশাতে হবে ত? তালা হ'লেএ 
ছেলে পরে আমায় দুষ্‌বে 1” 

“সামান্য ভুল করেছেন, যখন ইছদীর মেয়ে দরকার, তখন এই পাড়ায় 
আস! একটু ভুল হয়ে গেছে ; তার! ত এ পাড়ায় বাম করে না।” 

“আমার যে রকম দরকার আমি বলেছি, আমার খুব নুম্দরী মেয়ে 
চাই ; আপনার এ কথ! বলবার অধিকার কি আছে?” 

“সে রকম মেয়ে কটা ঘরে আছে? হয়ত কলকাতার মত শহরে 
পাঁচ ছ ঘর বিত্তশালী আছে, যারা কিছু চায় ন!, চায় কেবল রং ; কুল, 
গোত্র, সামাজিক পরিচয়, শীলতা, শালীনতা, সাংসারিক বিচারবুদ্ধি, এমন 
কি দেহের গড়ন, শ্রী-কছুই চায় না, কেবল রং হ'লেই তাদের চলে। 
তারা একদল রংএর এারিষ্টোক্র্যাট ; আর সব বিষয় বিচার করলে, 
আমাদের মতন মধাবিত ভদ্র গৃহস্থ, খুব স্থবিধ! পেলেও তাদের সঙ্গে 
কুটুম্বিত৷ করতে নারাজ হবে ।” 

“অনেক কথাই বলছেন আপনি; কিন্ত কি করব মশাই, আজকাল 
এই না হলে চলে ন! ; সবাই চায় রং, আমার ছেলেদের ত আবার তাদের 
মেয়ের বিয়ে দিতে হবে । আমায় ভবিষ্যৎ ভেবে কাজ করতে হবে।” 

“তত দিনে আর এ সকল বালাই থাকবে ন|। মেয়ে পুরুষে আর 
বিবাহের বাপার, ধনী বা মধ্যবিত্ত ঘরে থাকবে ব'লে মনে হয় ন!। 
অর্থ-নৈতিক দুর্দশা ত আছেই, তার ওপর আবার এই বাছাবাছির ফলে 
পাত্রপাত্রীর বয়স বেড়েই চলেছে ; সকলেই শুকদেব আর সতী হবে-৮এই 


আশ! ক'রে বসে থাকলে চলবে না। চারিদিকে ভোগের খেল! চলছে ;' 


কণ্ঠার বাপ, মা, ভাই, অস্যান্য বোনের, আত্মীয় কুটু্থ দকল স্থানেই যৌন 
জীবনের সমস্ত লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে, অবাধ মেলামেশার হুষোগ ক্রমশই 
বেড়ে যাচ্ছে ; সে ক্ষেত্রে, যুবতী যুবকে সাধু সচ্চরিত্র হ'য়ে ব'সে থাকবে 
না। আমাদের ছেলেপুলের ছেলেমেয়েদের বিবাহকালে “কম্পানিয়ন- 
ম্যারেজ' চালু হ'য়ে যাবে। তখন রংএর বিচার করবার সময় হবে না, 
যৌবনের তরঙ্গ যার ঘাটে যখন টালবে, তরী সেই ঘাটেই ভেড়াতে হবে।” 

“না, না, ও কথা কি বলছেন? হিন্দুর ঘরে ওনকল ঘটন! চলতেই পারে 


৭১৪ 


২2 


স্ডাব্যব্ব্বঞ্ 


[ ২৮শ বধ-_-২য খণ্ড _বঠ সংখ্যা 





না। বেদের আমল থেকে যে আচার চলে আসছে, ধর্মপ্রাণ হিন্দু তাই 
' আজও পালন করছে, একি একটা কম কথ? যাই হ'ক, কালের ধর্মে 
একটু বাড়াবাড়ি হ'য়ে পড়েছে। আপনার মেয়ে ত সকল দিকেই যোগা, 
কিন্ত আরও ফরসা চাই, আমার বাড়ীর তাই রেওয়াজ হয়ে ধাড়িয়েছে। 
এখন একটু খুঁজলেই আমি হুন্দরী মেয়ে পাব; আরও অনেক 
পাত্রী দেখেছি যার! আপনার মেয়ের মত মেয়ে নিয়ে অনেক টাকা দেবার 
, জন্য সাধাসাধি করছে; আমি কিন্ত মত করিনি।” 
, পাত্রীর পিতা বলিলেন “আমি ত ঠিক এই কথাই বলতে যাঁচ্ছিলাম। 
মেয়ের রং কট! করবার অনেক উপায় আছে। যখন থিয়েটার বায়োস্কোপে 
অত “সুন্দরী” ভারতের মত কালামাটিতেও একসঙ্গে দেখতে পাওয়া যায়, 
তখন শিশি বোতলে যে রং ভরা আছে তা বেশ বুঝতেই পারি । আপনাকে 
যে মেয়ে দেখানো হ'ল, এর গায়ে পাউডারের একটু গুঁড়োও পড়েনি, 
অন্য রং চঙের কথ! ছেড়ে দ্রিন। তার ওপর যাতে সকল দ্দিক উজ্জ্বল 
হয়ে ওঠে, সে জিনিসের পরিচয় এখনও দিতে পারি নি। একটা ঘটনা 
বলি শুমুন-_ 
পাত্রটী ভালভাবে ডাক্তারী পাশ করবার পর, পাত্রের মাম! আর দাদা 
উঠে প'ড়ে লেগে গেলেন সুন্দরী পাত্রী খু'ঁজতে। পাত্রী আর পছন্দ 
হয় না; কায়েতের ঘরের আঠারো! থেকে চবিবশ পর্য্যন্ত যত 
আইবুড়ো পাত্রী দেখা হ'লো, কোনটাই পছন্দ হয় না। এক 
ভদ্রলোক দেখলেন পাত্রপক্ষের এ “হৃনারী” খোঁজার পশ্চাতে 
ধেন দৃষ্টি আরও দুরে চলে গেছে। পাত্রদের বাড়ীঘর নেই, 
অন্তত কলকেতাঁয় নেই। উঠ.তি অবস্থ/, আভিজাত্য বজায় রাখতে 
গেলে যে সফল বন্তর প্রয়োজন, পাত্রপক্ষের তার অনেক কিছুরই 
অভাব আছে। তিনি একদিন ব'লে পাঠালেন--ঙার এক সুন্রী কন্য। 
আছে। পাত্র পক্ষ এসে দেখলেন-- সজ্জিত প্রকাণ্ড এক কামরা, ধর্ীর 
ধন যত প্রকারে আত্মপ্রকাশ করতে পারে, ঘরের মধ্যে তার কোনও 
ক্রট নেই। তারই একপাশে প্রকাণ্ড এক কালো আলমারি__ 
আবলুষের হবে__আবলুষের পালিশ নিয়ে রূপবিস্তার ক'রে ব'সে আছে। 
পাত্রী এসে অত বড় ঘরের আর কোথাও না ব'মে একেবারে আলমারির 
সামনে বসলেন। মুল্যবান আতরণমত্ডিতা কন্ঠ। আলমারির 
ব্যাকগ্রাউণ্ডে “হুনরী” হয়ে উঠলেন। তা না হ'লে পাত্রীর রূপ 
বরপক্ষীয়দের মুখে বেশ প্রতিফলিত হ'য়ে উঠেছিল। ব্যস্থা, শিক্ষিত। 
মহিলা--স্থৃতরাং সসন্ত্রমে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ ক'রে ছেড়ে দিতে হ'ল। 
পাত্রী যখন উঠে যাচ্ছেন, দাড়িয়ে উঠে একটা নমস্কার মাত্র ক'রে__ 
তখন পাত্রীর পিতা আলমারির হাতল ধ'রে টান মারলেন। আলমারি 
' খুলে যাবার আগে,ঃজিজ্ঞাস| করলেন--“কেমন দেগলেন ?” উত্তর-_“মন্দ 
কি!” আর কথা অগ্রসর হবার পূর্যেই আলমারি থুলে গেছে; 
তাতে দেখা গেল সেই আবলুষের আলমারির ভিতর স্তরে স্তরে সাজানো 
রয়েছে কারেক্সীর নূতন টাকা ; তারা এক সঙ্গে বক্ঝক্‌ ক'রে উঠল। 
কত হবে 1--আন্দীজ করলেন পাত্র পক্ষ, দশ হাজারের কম নয়; 
আরও কিছু :বেশী হ'তে পারে। পাত্রীর পিতা বলতে লাগলেন 


গহনা, এই আলমারি, টাকা, ঘরের বু আসবাবপত্র নাম ধ'রে ধ'রে 
ব'লে দিলেন, স্ুধমার বিবাহের জন্ত ক'রে রেখেছেন ।- আরও কত কি 
দেবেন, তারও একট ফর্দ মুখে মুখে দিলেন ; ব'লে দিলেন তালিকা 
এখনও অসম্পূর্ণ । বিশ্বাস করবেন না, মশাই--পাত্রীকে পুনরায় ডেকে 
এনে তখনই আশীর্বাদ হ'য়ে গেল। সেই বর এই দেদিন বধিলাত থেকে . 
বড় বড় ডিগ্রী নিয়ে এসেছে, কাগজে কাগজে ছবি বেরিয়েছে। সেই 
ক'নে সঙ্গে ছিলেন, তিনিও বিলাতী খেতাব প্রভৃতি নিয়ে এসেছেন, এখন 
“ভদ্রসমাজে” তিনি একজন মাতব্বর। কিন্তু সেই মাম! হৃদরোগে মারা 
প'ড়েছেন শুনেছি। আর বড় ভাই, অতিকষ্টে যিনি হুন্দরী পাত্রী খুঁজে 
ভাইকে সখী করতে চেয়েছিলেন, তিনি “যে তিমিরে সেই তিমিরে”ই 
আছেন। ভাই ভাত্রবধূ সময় সময়, তাও সময় প্রায়ই হয় না-_এক 
একবার খবর নেন ।” 

“টাক নেওয়! হবে নাই বা কেন? আমার মেয়ের বের সময় কেউ 
ত আমাকে ছাড়ে না । তার ওপর মেয়ের বেতে খরচ করব--আবার 
ছেলের বেতেও ঘর থেকে খরচ করব! এ সকল রীতি চ'লে এসেছে 
তাই লোকে ইচ্ছে ক'রেই টাক! দিতে চায়; আপনার কথা স্বতন্ত্র 
আপনি চান বিন! ব্যয়ে একটা কালে! মেয়ে গছাতে। তা হয় না, যেমন 
মেয়ে তার সঙ্গে তেমনিই পণ দিতে হয়। আমার উপযুক্ত ছেলে, লোকে 
এমে কত ধরপাকড় করছে, আমার যাচাই ক'রে নেবার ক্ষমত। আছে, 
অ'মি ছাড়ব কেন?” 

“ত। হ'লে তাই বলুন যে, টাকা পেলে আপনি যা হ'ক পাত্রী নিতে 
পারেন। তবে ইছদী চাই বল্পে টাকা আসবে কোথা থেকে? যার 
ইছদীর মত মেয়ে থাকবে সে আপনার ছেলের মত পাত্রে দেবে কেন? 
তাছাড়। কি জানেন, আগে মানতাম না, এখন দেখছি, জ্যাঠামশায় যা 
বলতেন ভবিতব্য একট| জিনিষ, যাকে না মেনে চলে না। আপনি 
“ইহুদী” খু'জছেন, ভবিতব্য থাকে ত কাফ্রী এসে জুটতেও পারে । তবে 
ধরে বসে থাকলে টাকা আসবে বলতে পারি ।” 

“ভবিতবা মানতে হয় বটে, তবে আমি কেন চেষ্টা করব না, সুন্দরী 
মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে উর ভবিতব্যের খেয়াল মেটাতে? পণ যা! পাওয়া 
যায়, তা দেখব কন্যার বাপ 'ন্বেচ্ছায় দিচ্ছেন। পীড়াপীড়ি ন| 
করলেই হ'ল।” 

“সব ঠিক হয় না। জ্যাঠামশীয় ধা বলতেন তার একট! দাম আছে; 
এক মহাতপা ধধি বহুকাল তপস্তায় রত আছেন। একদিন তার নগ্ন 
উরুর ওপর শীতলম্পর্শ কোমল একটা ছোট বস্ত পড়ল, তিনি মুদ্রিত 
নয়নেই সেট! বুঝতে পারলেন। মাথার ওপর গাছে তখন কতগুলে৷ 
কাক চীৎকার করছে। তিনি মনে করলেন- -বহির্জগতের সঙ্গে বখন 
কোনও সম্পর্ক নেই তখন চোখ ন! খুলে ঘটনাটাকে উপেক্ষা করবেন। 
আবার মনে করলেন যদি কোনও জীবই হয়, তার অবহেলায় সেট! হয়ত 
নষ্ট হ'তে পারে। চোখ খুলে দেখেন--একটা মুধিক শিশু, চক্ষু পর্য্যন্ত 
তার খোলেনি, মনে হ'ল কাকের মুখ থেকেই পড়েছে। বহু যত্বে মেটা 
পালন করলেন। কিন্তু বদিও তপযোগে তিনি তাকে রক্ষ। করতে পারতেন, 


সোপ 





টিব্ালরিনিন্দাহী না 


জ্যৈষ্ঠ --১৩৪৮ ] 


চা ্খচান্ষপা কিনা ক্লে থাপ -্হগা বশ “স্থল হস আজ 


তবুও তার সমন্তা হ'ল সেটাকে নিয়ে। ফিরে আদতে বিলম্ব হ'লে 
তিনি কাতর হ'য়ে পড়তেন, কোথায় কে হয়ত হনন ক'রেছে। তিনি 
স্থির করলেন তাহাকে বিবাহ দেবেন-_সেঁটী একটী মুবিকী। মনে 
করলেন তার পালিতা কন্া, যিনি সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী তাকেই 
কণ্ঠ! দান করবেন এবং সঙ্গে সঙ্গে হুধ্যদেবকে স্মরণ করলেন। তপঃ 
প্রভাবে অমিততেজা খধির আহ্বান মরিচীমালী টের পেয়েই এসে উপস্থিত 
হলেন। তাকে খধষি সমস্ত বল্লেন এবং কন্ঠা গ্রহণ করতে আদেশ 
করলেন। নুধ্যদেব বিপদ গণলেন, ভাবলেন এক নেংটো উদর নিয়ে কি 
(ব্পদেই পড়বেন, খধিবাক্য অবহেল! করলে এ দিকে শাপগ্রন্ত হ'তে হবে। 
তিনি যখন বুঝলেন তার বীধ্যবস্তার জন্য তাকে এই বিবাহ করতে হবে, 
তখন তিনি খণিকে বুঝালেন, মেণ যখন গগন আচ্ছন্ন কারন, তখন তার 
কোনও তেজই থাকে না, একেবার যান হ'য়ে পড়তে হয়, দিনের পর 
দিন অদৃশ্ঠ হ'য়ে থাকতে হয় বু সময়। খির অত ভাববার সময় নেই। 
তিনি কথাটা! শুনেই শুয্যকে ছুটি দিয়ে পর্জন্যদেবকে ডেকে দিতে 
বললেন। হ্ুধ্যদেব হাফ ছেড়ে বাচলেন, পর্জন্তদেব এসে সমস্ত কথা 
শুনলেন ; তার মনের অবস্থ। হুর্ধাদেবের চিন্তার সমস্ত স্তরই ধাপে ধাপে 
পার হ'য়ে গেল। বুদ্ধিমানের মত প্রকাশ করলেন_-পৰনদেবের শক্তিতে 
তিনি বিপধান্ত এবং বিশ্বের সর্বাপেক্ষা শক্তিমান বলিতে য| বুঝায় 
তিনি স্বয়ং ত| নন; শ্ৃতরাং তিনি সকল রকমেই এ কন্যার অনুপযুক্ত 
পাত্র। প্রভঞ্জন এলেন, ম্বন্‌ শ্বন্‌ রবে দিগন্ত কম্পিত ক'রে। সকল 
বার্তা শুনে, বিপদ হ'তে উদ্ধার হ'লেন এক ফন্দিতে। তিনি বুঝিয়ে 
দিলেন, তার সকল শক্তি ব্যর্থ হয়েছে হিমাচলের কাছে চিরকাল। 
হিমালয়ের ডাক পড়ল, তিনি সব গুনে ভাবলেন কত কোটী চুছুন্দর তার 
দেহে অবস্থান করছেন, আর একট। বাড়লে ক্ষতি বৃদ্ধি কিছুই নেই। 
কিন্ত কে বাবা, খধির ই'ছুরের ঝামেল৷ নিতে যায়। বুঝিয়ে দিলেন, 
তিনি বাইরের খোলসখানিমাত্র সন্থল ক'রে দীড়িয়ে আছেন, তার 
ডিতরট। ফেশীপর! ক'রে ফেলেছে, তার দেহের বলকে উপেঙ্গ! ক'রে 


দিজেতজনাল 





২২২৯ 





দুর্বল ক'রে ফেলেছে, অজস্র ইন্দ্রে। ক্তরাং প্রমাণিত হচ্ছে ই'ছুর 
শক্তিশালী হচ্ছেন, হূর্ধ্য, জলদ, পবনদেব, এমন কি হিমালয়ের চেয়ে। 
সাড়গরে খধি-কম্ঠার বিবাহ হ'লো, মুষিকরাজের সঙ্গে । খধি ভাবলেন 
“ভবিতবা”। 

“সুতরাং আপনার ছেলের যেখানে সেখানে বের চেষ্টা! করলেই যে 
হবে, তাত বল! যায় না; আমারও মেয়ে পাঁচটা, চেষ্টা করতে হবে। 
ইহুদী-টিছদী খু'জবেন না. ছেলে ত ষাট টাক! মাইনের কেমিষ্ট, শতখানেক » 
পধ্যন্ত হবে শুনেছি। বাড়ীট। আপনাদের বড় বটে, কিন্তু তাতে তু 
শুনছি পাত্র বা পাত্রের পিতার কোনও স্বত্ব নেই__-সবটাই তার 
জ্যাঠাসশায়ের | সুতরাং অত হুন্দরী নিয়ে এসে কি করবেন? গেরন্তর 
ঘরের স্থাস্থাবতী সুণ্তী মেয়ে নিয়ে মান্ন, রং দেখে দেবেন, কিন্তু পার্শী, 
ইদীতে আর কাজ নেই ।” 

পাত্রের পিতা আর ধৈর্যা সম্বণ করিতে পারিলেন না; আমিও 
মনে করিতেছিলাম, কম্ঘার পিত। খুব বেশী তাবে নিরীহ 
ভদ্রলোকদিগকে বাড়ীতে পাইয়। আক্রমণ করিতেছেন। বল! বাহুল্য 
ইহার মধ্যে পাত্রপক্ষের অপর দুইজন এবং কন্াপিঙ্গের লোকদের কথায় 
কথায় নরম গরম নান। আলোচনা হষয়াছে ; কাগজের মহার্ধতার 
দিনে সে সকল এখানে লিপিবদ্ধ কর| গেল না। কেবল শেষটা না 
জানাইলে আমার ক্র থাকিয়। যায়, তই পাত্রের পিতার উক্তিটী দিতে 
বাধা হইলাম-_ 

“ভারি মেয়ে দেখিয়েছেন মশাই, তার আবার অত চ্যাটাং চ্যাটাং 
কথা। দেখিয়ে দেব কি রকম বউ আনি, আর কত টাক! তার! স্বেচ্ছায় 
দেয়। আপনাকে নিমন্ত্রণ করব, যাবেন ত?” 

পাত্রীর পিতার নিকট শুনিয়াছি, নিমন্ত্রণ হয় নাই, কিন্তু বিবাহ 
হইয়। গিয়াছে। নববধূর সহিত ইহরর্ধর্‌ সাদৃষ্ঠমাত্র আছে কেশের বর্ণে, 
এমন কি, অক্ষি-তারকাতেও নয় ; আর পাত্রীপঙ্গ “স্বেচ্ছায়” চার হাজার 
টাক! দিয়াছেন। 


দ্বিজেন্দ্রলাল 


শ্রীস্ববোধ রায় 
দেশের ছুথে বুকের ব্যথা! গোপন করার ছলে, জন্মভীরু মেষের জীবন গতডালিকা ত্যজি 
মুখে তোমার ফুটুল মধুর হাঁসি, মাচ্ষ হতে উঠল সবাই জাগি? ! 
হাঁসির গানের তলে তব ফন্তুধারা চলে, নাট্যশালার হাঁসিখেলার নৃত্য-গীতের মাঝে 
বিষাদভরা উছল অশ্ররাশি। হঠাৎ এ যে নূতন চমক লাগে। 
গানের রাজ, প্রাণের রাজা, দরদ ভরা কবি, প্রাচীন দিনের বীরকাহিনীর দুন্দুভি যে বাঁজেঃ . 
যেথায় লোকে হাহা হাসি হাসে, রক্তে ষেন পুলক নাচন জাগে। 
সেথায় তুম হাঁসির স্রোতে ভাসিয়ে বাথার ভেলা তোমায় আমি স্মরণ করি, বরগ্থ করি কবি, 
ইন্ধন আকলে কাব্যাকাশে। ভাবছি মনে আসবে সেদিন কবে? 
নূতন ছন্দে, মেঘমন্ত্রে ধরলে নৃতন তান, যেদিন তোমাঁর অস্ত হাসি সকল ধন্ত করি 
জননী ও জন্মভূমির লাগি, তোমার গ্রাণের স্বপ্ন সফল হ'বে। 


কুলক্ষিণীত্র খাল 


শ্রীরাধিকারঞ্জন গঙ্গোপাধ্যায় 


সুন্দর দত্ত-বাড়ীর ঘাটে 'নৌকা লাঁগাইয়। উপরে উঠিয়া 
গেল। এই উপরে ওঠার সামান্ত পথটুকু এবং উপরে 


' উঠিয়াও সে কতবার যে সঙ্জন-বাড়ীর ঘাঁটের দিকে দৃষ্টি 


ফেলিল তাহার আর হিসাঁব নাই; শেষে নিজের কাছেই 
নিজেকে ভারি তাহার লজ্জা পাইতে হইল, কাজেই আর 
সেখানে গীড়ানো তাহার পক্ষে সম্ভব হইল না। লঙ্জা- 
বোধের চকিত হাসি হাসিয়া সে বাগানের পথ ধরিয়া 
বাড়ীর দিকে যেন একটু ভ্রুতই চপ্সিয়া গেল। 

টিয়া এপারের ঘাটে বসিয়! ওপারে সুন্দরের কাণ্ড 
দেখিয়া মনে মনে খুশীর হাসিই হাসিল। ছুই-একবাঁর 
লঙ্জীয় সেও যে সুন্দরের দিক হইতে মুখ ফিরাঁইয়! নেয় 
নাই__-এমন না, কিন্ত স্ন্দরকে যতদুর পর্যন্ত যাইতে দেখা 
গেল ততদূর পধ্যস্ত দৃষ্টি বিস্তৃত করিয়া দিয়া সে দেখিল, 
তারপরে দৃষ্টির বাহিরে চলিয়া গেলে কেমন যেন মন-মরা 
হইয়া পড়িল। অতি-নিকট ভবিস্ততে বাড়ী ফিরিয়া যে 
কলুবিত রসমঞ্চে তাকে অবতীর্ণ হইতে হইবে তাহারই 
আশঙ্কা বোধ করি তাহার সমস্ত ল্নামুমগ্লীতে একটা 
সুনিবিড় অবসাদ ঘনাইয় তুলিল। 

টিয়ার বাসন মাজিয়া ঘাট হুইতে, ফিরিতে তাই আজ 
অধিক বিলম্ব হইয়! গেল। বাড়ীরজ্উঠানে যখন তাহার পা 
ঠেকিল তথন মনে হইল রূপন্ীর বিকৃত হাসির ঢেউ যেন 
মাটিতে আসিয়া ঠেকিতেছে এবং তাহারই দোল! যেন 
সে সে-মাটির স্পর্শে সর্ববাঙ্গে বিছ্যুপ্রবাহের মত ক্ষণ-বিচ্ছুরিত 
হইয়] গেছে বলিয়া অনুভব করিল। 

রূপসী তাহার ঘরের দাওয়ার একটা খু'টিতে ঠেস্‌ দিয়া 
বসিয়া সত্যই হাসিতেছিল। টিয়াকে বিব্রত করিতে পারার 


' বাহাদুরিতেই যেন সে হাসিয়া খুন হইতেছিল। টিয়ার সে 


যেআপ্‌নার মা না হইলেও মাতৃস্থানীয়া তাহা তাহার 
খেয়ালই যেন ছিল না। টিয়া তাহার সধীব্থানীয়া হইলে 
একমাত্র এ-হাসি মানাইতে পারিত; কিন্তু সামঞ্জশ্য- 
বোধহীনতা! রূপসীর জন্মগত সম্বল, সেখানে সে নিল 


এবং একেবারে অদ্বিতীয়! |. 


টিয়ার ক্ষণিকের জন্ত একবার সে নিলজ্জ হাসি 
শুনিয়া মনে হইয়াছিল ও-মুখ প! দিয়া মাড়াইয়া দিয়া 
ও-্হাসি বন্ধ করাই যেন উচিত, কিন্ত পরমুহ্র্তেই এ-চিন্তার 
জন্যও অন্ুশোচনায় মন তাহার তিক্ত হইয়া উঠিল। 
তাহারপরেই নির্মম নিয়তির বিরুদ্ধে নিজেকে স্থির রাঁখিবার 
সংকল্লপে মন তাহার দৃঢ় হইয়া উঠিল। সে স্বসংযত 
পাদবিক্ষেপে রান্নাঘরের দিকে বাঁসনের পাঁজা লইয়া এমন 
ভাঁবে চলিয়া গেল যেন রূপসীকে সে দেখেও নাই, ব৷ 
তাহার হাসি তাহার কানেও যায় নাই। 

কিন্ত রান্নাঘরে প্রবেশ করিয়াই মন তাহার কেন 
জানি আবার বিকল হইয়৷ গেল। আজ নিজের গর্ভধারিণী 
বর্তমান না থাকার নৈরাশ্যই যেন তাহার সর্বাহ 
মুষড়াইয়া দিল। আজ দুনিয়ায় তাহার এমন একজন নাই 
যাহার কাছে সে একটা আব্বার জাঁনাইতে পারে, অগ্তাঁয় 
অপরাধের পরেও অভয় পাইতে পারে, সাত্বনা খুঁজিতে 
পারে। সেই একজনেরই অভাবে আজ সমস্ত দুনিয়া যেন 
তাহার সঙ্গে বৈরিতা সাধিতে উঠিয়৷ পড়িয়া লাগিয়াছে, 
আর সে যেন শক্র-বেষ্টিত হইয়া সমর:প্রাঙ্গণে নিরস্ত্র ড়া ইয়া 
অতফিত আঘাতের জন্ত নিজেকে সর্বদা গ্রস্ত রাখিতে 
প্রয়াস পাইতেছে । না, এ রুণ্টকিত মৃত্যু-শঙ্কা পূর্ণ ভয়াবহ 
জীবন একেবারে অসহা । 
উ. টিয়া কাপড়ে মুখ চাপিয়! ফু'পাইয়া কীদিয়া উঠিল। 
এই ফুলিয়া ফুলিয়া আকুল" হইয়া কান্নার মধ্যেও তাহার 
মায়ের মুখ আজ তাহার চোখের সম্মুখে সুস্পষ্ট হইয়া 
জাগিয়া রহিল। এমন করিয়া টিয়া মায়ের জন্ভ আর 
কখনই জীবনে কাদে নাই, অবশ্ত এমন গভীরভাবে জীবনে 
তাহার প্রয়োজনও সে আর কথনও অনুভব করে নাই। 

টিয়৷ অঝোরে কীর্দিয়াই চলিয়াছিল। কাদিতে জার 
ভাল লাগিতেছিল। 

তাহার পিঠের উপরে মানুষের হাত ঠেকিতেই সে সহসা 
চম্কাইয়া সোজা হইয়া বসিল। কিন্তু মুখের উপর হইতে 
কাপড় সরাইয়৷ লইতে তাহার কিছু বিল হইল। 


২ 


জোন্ঠ--১৩৪৮ ] 


মনোহর একেবারে টিয়ার পাঁশেই উবু হইয়া বসিয়া 
তাহার পিঠের উপর হাত রাঁধিয়াছিল। বলিল; ছিঃ টিয়া, 
তুমি কাদচে৷ ? 

টিয়া কোনরকমে নিজেকে সাঁম্লাইয়া লইয়া বলিলঃ হু” 
কীদচি বই কি! আমি কীাদব নাতো কাঁদবে কে শুনি? 
দুনিয়ায় আমার মত দুঃখিনী আর কে আছে? মার কথা 
মনে প'ড়ে গেলে আমি না কেঁদেও পারি না যে! 

মনোহর সে-কথায় যেন কর্ণপাত না করিয়াই বলিল, 
আমাঁকে ফিরে আসতে দেখে তুমি অবাঁক হচ্ছ না টিয়া? 
কই, সে কথা তো! একবারও জিগ্যেস করলে না? 

টিয়া তাড়াতাড়ি বলিল, আমার মনের অবস্থা আজ 
ভাল না, তাই ভূল হয়ে গেচে। সত্যি, তুমি আবার 
ফিরেই বা এলে কেন? 

- ফিরে এলাম__কেন? আমি নিজেই তা এখন ভেবে 
পাচ্ছি না।__বলিয়া মুছু একটু হাঁসিয়। মনোহর আবার 
বলিল; তোমাকে সত্যিই ছেড়ে যেতে পারলাম না টিয়া। 
যাত্রার দল যে তোমার দু'চক্ষের বিষ সে আমি বেশ বুঝতে 
পেরেচি ; না, আর কথনও যাত্রীর দলে আমি ফিরে যাব 
না। তোমাদের শিথীপুচ্ছের বাঁজারখোলা পর্যন্ত গিয়েই 
মন আমার কেমন বিগড়ে গেল টিয়া। এবার ঠিক করেচি, 
নৃপুরগঞ্জের হাটে একটা মনিহাঁরি দোকান খুলব আমি, 
ব্যবসায় মন দেব। আর ভাল কথাঃ তোমার জন্টে 
তোমাদের শিখীপুচ্ছের বাঁজার থেকে একটা তেল কিনে 
এনেচি টিয়া। চম্পল্‌-এর খোঁজ ক'রে না পেয়ে 
শেষে কমলালেবু রঙের একটা তেল নিয়ে এলাম, ক্রোদি 
যে হবে তা কে জানে। কর্থী আমার রেখেছি, 'এই 
দেখে! টিয়! | ? 

বলিয়া মনোহর পকেট হইতে একট! কাগজে মোড়া 
তেলের শিশি বাহির করিয়। টিয়ার সম্মুখে ধরিল। 

টিয়া সেদিকে চাহিয়া নিজে একটু সামান্য পিছাইয়া 
গিষ্লী বলিল, কি তোমার আকেল মনোহর মামা, আমি কি 
সুগন্ধি তেল ব্যাভার করি কখনও--যে তুমি পয়স! খরচ 
করে আবার ভা নিয়ে এলে? 

মনোহর সহজভাবেই বলিল, ব! রে বা, আমি দিলে 
ভূমি তা ব্যাভার করবেই বা না কেন? আর, আমি তো 
তোমার পর নই টির, আমি তোদাকে আমার অতি 





ককশক্হিত্ো আ্বাক্ 


এই টি 


০ 


আপনজন ঝলেই মনে করি। তুমি এ তেল না নিলে আমি 
সত্যিই মনে বড় ব্যথা পাঁব। 

টিয়। বিশেষ বিব্রতভাবে মনোহরের দান নিতাস্ত 
অনিচ্ছাসত্বেও গ্রহণ করিল। মনোহরের প্রতি অবজ্! 
প্রকাশ করিতে তাহার বাধিল। 

টিয়ার এ সামান্ত দান গ্রহণে মনোহর বেশ একটু সলজ্জ . 
হইয়া উঠিল। তাড়াতাড়ি তাই সে উঠিয়। দাড়াইয়া বলিল, 
দিদিকে তার ঘরে দেখেও কথা না কয়ে তোমার সঙ্গে 
এসে দেখা করলাম। দিদির আবার মেজাজ যে রকম-- 
তাতে হয় তো তোমাকেই এর জগ্তে আজে-বাঁজে দশকথা 
শুনিয়ে দেবে। যাই বাপু, তার সঙ্গে দেখাটা ক'রে বলে 
আসি যে ফিরে এলাম। 

মনোহর রান্নাঘর হইতে বাহির হইয়া! গেলে টিয়া নিজেকে 
সম্পূর্ণূপে সাম্লাইয়া লইয়া উঠিয়া ফ্রাড়াইল এবং রাক়ার 
জিনিষপত্র আনিবাঁর জন্ত অন্তত্র চলিয়! গেল। 





রূপনী মনোহরকে দেখিয়া! খুশী হইতে পারিল ন1। 
কিন্ত একজন কথা কওয়ার মত লোক পাইয়া সে বাচিয়! 
গেল। নিশি সজ্জন সকালবেল| মনোহরের বিদায়ের পরেই 
যেকি কাজে কোথায় বাহির হইয়! গিয়াছে কেহই জানে 
না, এখন পর্যাস্ত সে ফিরিয়া আসে নাই, কখন যে আসিবে 
তাহারও কিছু ঠিক নাই। কাজেই সকালবেলা! আজ 
ঘাটের পথে যে-দৃশ্ঠটি* তাহার চোখে পড়িয়াছে তাহারই 
একটা অতিরপ্রিত বর্ণনা কাহারও কাছে দিতে না পারিয়া 
রূপসীর মন হাঁপাইয়া উঠিয়াছিল। কিন্তু মনোহরকে যে 
সেকথা বলিয়া খুব সুখ হইবে না সে তাহাও বুঝিল, যেহেতু 
টিয়ার প্রতি মনোহরের বিশেষ একটু পক্ষপাতিত্ব 
আছে বলিয়াই সে জানে। তবু না বলিয়াও থাকিতে 
পারিল না। 

কিন্তু রূপসী সুরু করিতেই মনোহর দিল বাধা । তাঁহার 
এই হঠাৎ ফিরিয়া আসার কারণ এবং উদ্দেশ্য সর্বাগ্রে ব্যক্ত 
করা সে প্রয়োজন মনে করিল। রূপসী আবার জন্মাইল 
মনোহরের বাক্য নুক্ুর পূর্ধ্বেই বাধাঁ। শেষ পর্য্যস্ত রূপসীর 
বাসনাই জয়ী হইল। সে আদ্যোপান্ত সমত্ত ঘটনাটা একটা 


' উপাখ্যানের মত করিয়া বর্ণন) করিবার প্রবল লোভে 


বিকৃত "এবং সত্যবঙ্জিত একটা কিছু গড়িয়া তুলিল 


৬] 





সত্য, কিন্ত মনোহরকে সে বিশেষ চিস্তিত করিয়া তুলিতে 
পারিল না। 

মনোহর সমন্ত শুনিয়া বলিল, আমি বিশ্বাস করতে 
পারি না যে, সুন্দর আবার এপারে এসে কাঠাল গাছের 
নীচে দীড়াবে। সাত পুরুষের শত্রুতা ভুলে এপারে আসা 

, যেন চাঁরটিখানি কথা। 

-ও মাগো! তবে কি আমি মেয়ের নামে একটা 
গপপো রচনা! ক'রে বলচি নাকি? আমার যেন তা “হলে 
নরকেও স্থান হয় না ।--বলিয়া রূপসী এমন একটা ভরঙ্গী 
করিল যে মনোহর রীতিমত শঙ্কাক্রান্ত হইয়! উঠিল, পাছে 
বূপসী আবার বলিয়া মরা কান্না! সুরু করিয়া দেয়। কিন্ত 
রূপসী তেমন কিছু করিল ন! দেখিয়। মনোহর আশ্বস্ত 
হইয়! বলিল, তা টিয়ার সঙ্গে শত্রুতা তুলে এপারে আসাটা 
খুব বিচিত্র ₹লেও আমি মনে করি না দিদি। তোমার 
সতীনের মেয়েটি সত্যিই ভাল দিদি । 

--অঃ,আমার মরণ!-_বলিয়। রূপসী রাঁগে যেন দাপাইয়া 
ফাপাইয়া নিজের ঘরের দিকে চলিয়া গেল। এমন কি, 
মনোহরের ডাকেও সে ফিরিয়। দীড়াইল না এবং মনোহরের 
বলার যাহ। ছিল তাঁহাও আর বল! হইল ন|। 

টিয়া রার্লাঘরের দরজায় ফিরিয়া আসিয়! ধাড়াইয়। 
দাড়াইয় সমস্তই শুনিল । কারণ, তাহাকে গুনাইয়াই কথাগুল। 
বলা হইয়াছিল। এতক্ষণে টিয়ার হাসি পাইল, দুঃখের মাঝেও 
তাহার হাসি পাইল, রূপসীর নির্ববদ্ধিতা এবং নীচতা 
মানুষকে না হাসাইয়াই যেন পারে না_-এমনই টিয়ার 
মনে হুইল। 

রূপসী ঘরের ভিতর গিয়। প্রবেশ করার সঙ্গে সব্ধে 
মনোহর কেমন যেন ছুর্ব্বল হইয়া উঠিল, মন তাহার বিষণ্ন 
ভারাতুর হয়! উঠিল। টিয়ার মন কি সত্যই তবে সুন্দর 
পাইয়াছে, সেখানে কি তাহার আর স্থান হওয়ার কোন 
'স্সাশাই নাই, তরে কি ফিরিয়া আস! তাহার একেবারে 

, অর্থশুন্ হুইয়। যাইবে? কিন্ত কেনই বা সে টিয়ার মন 
পায়না? টিয়া কেন স্ুন্দরকে তাহার অপেক্ষা যোগ্য 
বলিয়া মনে করে? এই সব সাধারণ প্রশ্নগুলিই সহসা 
মনোহর়ের, মনে জাগিয়৷ উঠিল, কিন্ত সহৃত্বর কিছু মিলিল 


না। আর কোন দিন মিলিবে বলিয়াও সে আশ! করিতে ' 


_পারিল না। শুধু মনে হইল, ফিরিয়া আসিয়। সে ভাল 


ভ্ডান্সত্ 





[ ২৮শ বর্ষ-_২য় খণ্ড--ব্ঠ সংখ্যা 





করে নাই। কিন্তু টিয়াকে যে সত্যই তাহার ভাল লাগে, 
বড় ভাল লাগে, বিচার-বুদ্ধি-বিবেচনা যে পিছনে পড়িয়া 
যায়--তাই তে! তাহাকে ছুটিয়। আসিতে হইয়াছে । এখন 
সে-কারণে আবার তাহাকে অনুতাপও করিতে হইতেছে। 
নিজের জন্ত আজ তাঁই তাহার ছুঃখও হইল, অনুকম্পাও 
জাগিল। 


নিশি সঙ্জনের বাঁড়ী ফিরিতে একটু বিলম্ব হইল, কিন্ত 
ঘটন] শুনিতে বিলম্ব হইল না। তাহার বাড়ী ফেরার সঙ্গে 
সঙ্গেই রূপসী বারান্দায় একট বেতের মোড়া পাতিয়৷ 
তাহাকে বসিতে দিয়া নিজে একট হাতপাখা লইয়৷ সম্মুখে 
বসিল। আঁজ জীবনে এই প্রথম যেন নিশি সঙ্জন ক্লান্ত 
হইয়া বাড়ী ফিরিয়াছে, রূপসীর হাব-ভাবে তেমনই কিছু 
মনে হয়। রূপসী এযাবৎকাল কখনও পাখ! লইয়া নিশি 
সঙ্জনের পাশে বসে নাই । নিশি সঙ্জন রূপসীর এ নূতন 
মুন্তি দেখিয়া এমনই বিমুগ্ধ হুইয়! গেল যে, এ ব্যাপারে 
অসঙ্গতিটুকু তাই তাহার চোখেও পড়িল না। কিন্ত 
ঘটনা যখন রূপসী আদ্যোপান্ত বিবৃত করিয়া উঠিল তখন 
নিশি সজ্জনের চোখে রূপসীর এই পাখার বাতাসের সহজ 
অর্থ টা ধরা পড়িল, তাহার পূর্বের ধর! পড়ে নাই। 

নিশি সঙ্জন সমস্ত গুনিয়া গুধু বলিল, এ সমন্তই সত্যি? 
বেশ, আবার সুরু হ'ল ত1 হ'লে আবার কলক্ষিনীর খাল 
লাল হ'য়ে উঠবে। আমার ভাঙায় পা দেবে দত্ত-বাড়ীর 
ছেলে, আর আমি মুখ বুজে তা সইব-_অসম্ভব! টিয়া 
কোথায় ?.. টিয়া, অটিয়।! তাকে খুন ক'রে তবে আজ 
আমার অন্ত কাজ। সে আমার মেয়ে হ'য়ে কি-না আমার 
মান-সম্মান সমন্ত দেবে জলাগুলি, এই হ'ল কিন্না সঙ্জন- 
বাড়ীর মেয়ের মত কাজ? 

টিয়া নিশি সঙ্জনের কাছে আসিয়! মাথ! নীচু করিয়া 
দীড়াইল। সকলপ্রকার লাঞ্ছনার জন্ত সে প্রস্তত হইয়াই 
আসিয়াছিল। মনোহর কোথা হইতে ছুটিয়৷ আসিয়া 
টিয়াকে নিশি সঙ্জনের দৃষ্টি হইতে একগ্রকার আড়াল 
করিয়া দীড়াইয়া৷ বলিল, দিদির কথায় ষেন কান দেবেন না 
জামাইবাবু; টিয়ার কথাই আগে গুনে নিন্‌। দিদির তো 
গুণের ঘাট নেই, প্রয়োজন হলে অপরের নামে হাজার 
কথা বানিয়ে বতেও ওর জিবে আটকায় না। 


জ্যৈষ্*--১৩৪৮ ] 


টিয়া তাড়াতাড়ি অমনি বলিল, না৷ মনোহর মামা, 
তুমি যা জান নাতা নিয়ে কেন কথা কও। ছোটমা তো 
সত্যি কথাই সব বলেচেন। দর্ত-বাড়ীর ছেলে স্থন্দর 
এপারে সত্যিই আজ এসেছিল। তার টিয়াপাখী উড়ে 
এসে বসেছিল আমাদের কাঠুলগাছের ওপর, কাজেই সে 
আসতে বাধ্য হয়েছিল । 

রূপসী টিয়ার কথা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই একেবারে 
মনোহরের দিকে চাহিয়া সম্মুখ-সমরে আহ্বানের ভঙ্গীতে 
বলিয়। উঠিল--কেমন, হল তো! এইবার! বানিয়ে বল! 
কথা, জিবে আমার আটকায় না! বলিঃ অত গরজ কারও 
জন্তে কারও ভাল না। আমাকে মিথ্যক বানাতে গিয়ে 
পুড়ল তো মুখ নিজের? ওপরে ভগবান আছেন ! 

বলিয়া রূপসী মনের আনন্দে উপস্থিত সকলকে তুলিয়া 
গিয়া এক অতি হাস্যকর ভঙ্গীতে অন্তদ্দেশ্তে হাত যুক্ত 
করিয়। তুলিয়! ধরিয়। প্রণিপাঁত করিল । 

নিশি সঙ্জন এতক্ষণ ঘটনাটি ভাল করিয়া হদয়ঙগম 
করিতে চেষ্টা পাইতেছিল, কিন্ত হদয়ম হওয়ার সঙ্গে 
সঙ্গেই মেজাঁজ তাঁহার উত্তেজনার চরম সীমায় পৌছিয়া 
নিম্তন্ধ হইয়। রহিল। কিন্তু এ অবস্থায়ও তাহাঁর বেশীক্ষণ 
কাটিল না। টিয়া সম্মুথে নীরবে দীড়াইয়৷ উপযুক্ত শান্তির 
গ্রতীক্ষাই করিতেছিল । 

নিশি সজ্জন সহস! উঠিয়া দাঁড়াইয়া একেবারে টিয়ার 
উপর যেন সগর্জনে লাফাইয়া পড়িয়া বলিল, না না '"' 
এ আমাদের বিখ্যাত সঙজ্জন-পরিবারের মান-সন্মান 
নিয়ে টানাটানি। এ আমি কিছুতেই সহা করতে 
পারব না। আমি বেঁচে থাকতে এসব হ'তে পারবে না, 
কিছুতেই না। হ'তে পারে তার টিয়া, কিন্তু সে কেন 
আমার সাঁতপুরুষের ভিটের মাটিতে পা ছোয়াবে। আঁমি 
বাড়ী থাকলে আজ তাঁকে খুন ক'রে তবে হ'ত অন্ত 
কথা! লক্ষমীছাড়৷ মেয়েঃ তোর জঙগ্গে মানকান আমার 
সব ডুবল। বেরিয়ে যা আমার ন্ুমুখ থেকে। নইলে, 
থুন ক'রে আমি আমার আফসোস মেটাবে। 

মনোহরই আবার বাধা দিল। নিশি সঙ্জনের বগিষ্ঠ 
বাহুদ্ব় সে সবলে চাঁপিয় ধরিয়া বলিল, এ আপনি করচেন 
কি জামাইবাবু? টিয়ার কি দোষ হয়েচে গুনি? সে 
কি.কোমর বেঁধে বাবে নাকি দত্ব-বাড়ীর ছেলের সজে 


কশর্িন্নীল আাক্শ 


শ্ 


লড়াই করতে, না তাঁই কখনও জন্তব? কি যে করেন, 
মিছে ওকে আর কীদাবেন না। দিদির কথাতেই ওর 
যথেষ্ট হয়েচে। দেখচেন না-কি ভাবে কেদে কেদে 
চোখ ফুলিয়েচে। 

টিয়া ইতিমধ্যেই চোখে কাপড় তুলিয়। দিয়াছিল, কারণ 
পিতার এ রূতাঁয় নিজেকে সে আর সামলাইতে পারে নাই] 

নিশি সঙ্জন আবার যথাস্থানে গিয়া বসিল এবং 
অন্থুপশাসিত উত্তেজনার বিক্ষোভে বলিয়া উঠিল, আচ্ছা, 
তবে স্থুরুই হোক । আমিও দেখে নেবো। 

কিন্তু স্ুরু যে হইবে না ভাঁহা নিশি সঙ্জন ভাল করিয়াই 
জানে। ভৈরব দত্ত লোকটা নিশি সঙ্জনের মতে মহা! 
কাপুরুষ, কিছুতেই সে কলঙ্কিনীর খালের ছুই পারের ছুই 
বাড়ীতে আবার কলঙ্কের ুত্রপাত হইতে দিবে না।" 
কত বার তো নিশি সঙ্জন চেষ্টা করিয়া দেখিয়াঁছে, কিন্তু 
স্বার্থে আঘাঁত লাগা সত্বেও..ভৈরব দত্ত নীরবে তাহা, স্‌ 
করিয়া গেছে । কাজেই নিশি সঙ্জনের উত্তেজনার মধ্যেও 
কেমন যেন একটা হতাশা! প্রকাশ পায়। কেমন যেন একটা 
দুর্বলতা থাকিয়| যায়। 


আঁনন্দ-উল্লাস যখন মাত্রা! ছাঁপাইয়া যায় তখন মানব- 
হৃদয়ে জাগে কেমন একপ্রকার অকরণ শৃন্ততা । নুন্দরের 
হৃদয়েও সেই শুন্তত! বিরাজ করিতে লাগিল । বাড়ী ফিরিয়! 
সুন্দর মহা সমস্তাঁর পড়িল । কাহারও সম্মুখে বাহির হইতে 
তাহার কেমন যেন বাধিতেছিল, মুখে নাব্জরানি গাহার 
মনের ছায়৷ পড়িয়াছে, না জানি লোকে তাহার মনের 
কথাটাই বুঝিয়া! ফেলিল। কিন্তু এত বড় আনন'-ঘন 
দিনও তো! জীবনে তাহার আর কখনও ইতিপূর্বে আলে 
নাই, কাজেই আজ লোকের সম্মুখে না দীড়াইতে পারিলেও 
যে সে স্বস্তি অনুভব করিতেছে ন|। নৃণুরগঞ্জের হাট হইতে 
টিয়াটা কিনিয়া আন! তাঁহার সার্থক হুইয়াছে, টিয়াটাস্প্যে 
বন্ধন কাটাইয়! মুক্তিলাভ করিয়াছে তাহাতেও তাহার এখুন 
আর ক্ষোভ নাই; সে তাহার পরিবর্তে হুন্দরকে বিশেষভাবে 
লাভবান করিয়া গেছে। তাারই দরুণ সে শুধু সজ্জন- 
বাড়ীর সীমানার মধ্যে পা বাড়াইয়াছিল; আর তাহারই 
ফলে নিশি সজ্জনের মেয়ে টিয়াকে কথার জাল ফাঁদিয় 
ধরিবার একটা নুব্র্ণ ন্ুযৌগও সে' পাইয়াছিল। কিছু 


২৬ 


বিশ্ব-ভূবনে যে এক অপূর্ধ কুহক স্থট্টির আদি-অস্ত 
পর্য্যন্ত তাহার সাতরঙ মাঁয়াজাল বিস্তৃত করিয়া! দিয়া বসিয়া 
'আছে সেই মায়াঁজালে তাহারা ইতিপূর্তবেই উভয়ে ধর! পড়িয়া 
গিয়াছিল; আজ হয় তো নড়িয়া চড়িয়া তাহারা সে-জাঁল 
আর একটু শক্ত করিয়া অঙ্গের সঙ্গে জড়াইল। 
* স্ুন্মর কেবলই টিয়ার কথাগুলি মনে মনে আলোচনা 
করিয়া দেখিতে লাঁগিল। কত রকম যে তাহার অর্থ 
হইতে পারে, কত রকম যে তাহাতে ইঙ্গিত থাকিতে পাঁরে 
, তাহাই সে আবিষ্কার করিতে চেষ্টা পাইল। কিন্তু কিছুতেই 
সে স্বস্তি লাভ করিতে পারিতেছিল না। একথা কাহারও 
কাছে ব্যক্ত না করিয়া তাহার যেন আর মুক্তি নাই। 
শ্রীমস্ত সহসা আসিয়া! গেলে বেশ হইত। কিন্ত শ্রীমস্তর 
“সঙ্গে বাড়ী বহিয়া গিয়া দেখা করিতেও তাহার আঁজ 
কেমন যেন বাধিতেছিল। শ্রীমস্ত হয় তো ইহা লইয়া কত 
অকারণ বিদ্রপ করিবে, স্থন্দর লজ্জায় পড়িয়া! যাঁইবে। 
অথচ, সে-কাঁরণে এক একবার তাঁহার লোভও জন্মিতেছিল। 
শেষ পধ্যন্ত সে শ্রীমন্তদের বাড়ী গেল। সেখানে বসিয়া 
আঁজে-বাঁজে অনেক কথাই সে বলিল, কিন্তু যাহা! বলিতে 
সে গিয়াছিল তাহা আর বলা হইল না । না বলিয়াই সে 
মুখে লাজ-কৌতুক জড়াইয়া ফিরিয়া আসিল। তবে 
শ্রীমস্তকে সে রাজা করাইয়া আসিল যে, আজ রাত্রে 
উভয়ে নৌকা লইয়া হাজারখুনীর বিলে বেড়াইতে যাইবে। 
রাত্রের নিভৃত নিরালায় মনের কথা খুলিয়! বলিতে সুন্দর 
খুব সহজেই পারিবে । এই বন্দোবস্ত করিয়া সে কতকটা 
তবু স্বক্তি অন্ুভব করিল । 

রাত্রে আহারাদির পর শ্রীমন্ত তাহাদের নৌকা! লইয়া 
স্ুন্দরকে ভাকিতে আসিল । নুন্দর প্রস্তুত হইয়াই ছিল। 
্ীমস্তর সঙ্গে নৌকায় আসিয়া! উঠিল। 

নৌকা হাজারখুনীর বিলের দিকে ধীরমস্থর গতিতে 
অগ্রসর হইতে লাগিল । 
« নৌকা, কিছুদূর অগ্রসর হইবে শ্রীমন্ত্ই প্রথম কথা 
কহিল। বলিলঃ আর তো একমাসের মধ্যেই পৃজো। 
দেখতে দেখতে পূজে৷ এসে গেল একেবারে ! 

কুন্দর আত্তে করিয়া গ্রথম শুধু বলিল, হু'। তারপরে 
একটু সময় লইয়৷ গভীর চিন্তান্বিতের মত বলিল, এবার 
পৃজ্পোয় বিপদ আছে অনেক। 


ভ্ান্রস্চব্রঞ্ধ 


[ ২৮শ বর্য--২য় খণ্ড--বঠ্ঠ সংখ্যা 


শ্রীমস্ত তাড়াতাড়ি গ্রশ্ন করিল, সে কি, বিপদ 
আবার কিসের ? 

স্থন্দর বলিল, সে অনেক কথা । এবার সত্যি আমার 
অনৃষ্টে বিপদ লেখা আছে। কিন্তু সে সবআমিগ্রাহি 
করি না। আমিও মহেশ দত্তের নাতি-_সঙ্জঃদের আমিও 
ক্ষমা করব না। 

শ্রীমন্ত বিস্মিত হইয়! বলিল; সে আবার কি! 

সুন্দর একটু সময় লইয়! বলিল, দত্-বংশের রক্ত বইচে 
আমারও মধ্যে, শত্রর সঙ্গে আমারও চুটিয়ে শত্রুতা । সঙ্জন- 
বাড়ীর এর একরত্তি মেয়ের কথা শুনে গা আমার জলে 
যাঁচ্ছে। কি ওর আম্পর্ধা_-আমাকে কি-না মুখের ওপর 
চ্যালেঞ্জ করলে আজ! এবার আর মিষ্টি কথা না 
সড়কি-বল্পম নিয়েই বেরুতে হবে। দেখা যাক এবার, 
কোথাকার জল কোথায় গড়ায় । 

শ্রীমন্ত নীরবে সুন্দরের সব কথা শুনিয়৷ বিপুল (বগে 
হাসিয়া উঠিল। সুন্দর সে-হাসির বেগে চম্কাইল না, 
কিন্ত বলিতেও কিছু পারিল না। 

শ্রীন্ত বিদ্রপ-ঘনকঠে বলিল, এই গভীর প্রেম-_আর 
এরই মধ্যে চ্যালেঞ্জ একেবারে! শেষ পধ্যস্ত যাত্রার দলের 
সেই ছেলেটিরই বুঝি জয় হল? তা তো হবেই__সে 
হল গিয়ে গাইয়ে-বাঁজিয়ে চৌকস্‌ ছেলে, তোর সঙ্গে 
কি তাঁর তুলনা হয়! বেশ; বেশ, এখন যুদ্ধং দেহি ছাড়া 
আর উপায় কি! 

স্থন্দর সহস! হাঁসিয়! ফেলিয়! বলিল, না৷ রে না, আজ 
সকালে ভারি এক মজার ব্যাপার হয়ে গেচে। তাড়াতাড়ি 
একটু বেয়ে চল্‌, হাজারখুনীর বিলে গিয়েই তোকে সেকথা 
বলব, নইলে কে কোথায় আবার তা গুনে ফেলবে। 

শ্রীমস্ত অমনি ঠোঁট কাটিয়| বলিল, হ", মজার ব্যাপার 
বুঝি! তা আজকাল তো উঠতে বসতে তোর মজার 
ব্যাপার ঘটবে জানি। 

--তা তে! ঘটবেই ।-_বলিয়! সুন্দর থালের জলে বৈঠার 
ঘা মারিয় শ্রীমন্তর গায়ে খানিকটা জল ছিটাইয়া দিল এবং 
সঙ্গে সঙ্গেই গ্রায় সে হাসিয়া উঠিল! 

্রীমন্ত গায়ে জল লাগায় একটু চকিত হইয়া বলিয়া 
উঠিল, চটি নরাটরাগাসালি।:। বেশ, 
বেশ, এইবার একটা গুভদিন দেখে-_ 


ল্যৈষ্ট--১৩৪৮ ] 


সুন্দর বৈঠার ঘায়ে আরও থানিকট৷ জল শ্রীমন্তর গায়ে 
ভুলিয়া দিয়া তাহাকে মাঝপথেই নীরব করিয়া ছাঁড়িল। 
শেষে বলিল, আঁর বলবি কখনও ? 

এমনই সব হাঁসি-ঠা্টার ভিতর দিয়া নৌকা! তাহাদের 
খাল ছাড়াইয়! স্বিকৃত হাজারখুনীর বিলে আসিয়! পড়িল। 
দিগন্ত জুড়িয়া জলরাঁশি-_তাহাঁরই "পরে রাত্রির আধার যেন 
ঝুঁকিয়া পড়িয়া কান পাতিয়া পরা প্রিয়তমের মত প্রেম- 
গুঞ্রণ শুনিতেছে_-প্রিয়ার ক যেন আবেশ-আাবেষ্টনে 
জড়াইয়া আছে; আর জলরাশি গরবিণী প্রিয়ার মত 
অকুষ্ঠিতকণ্ঠের সুধা যেন ঢাঁলিয়া দির চলিয়াছে উল্লাস-্তবধ 
প্রিয়তমের সতর্ক কর্ণকুহরে । 

হাঁজারখুনীর বিলে পড়িয়াই স্থন্দর সমস্ত সঙ্কোচ 
কাটাইয়া উঠিয়। সকালের ঘটনা বিবৃত করিতে মুর 
করিল। বিনা বাধায় আদ্যোপান্ত বিবৃত করিয়া যখন একটা 
নিশ্বাস চাঁপিয়। গিয়া সে থামিল তখন শ্রীমন্ত মুখ টিপিয়া 
একটু হাসিয়া লইয়া বলিল, সা-বা-স্‌ ! 

এভাবে টানিয়া টানিয়া বলায় স্থন্দর একটু বিচলিত 
হুইল সন্দেহ নাই, কিন্তু কিছুমাত্র ্ষুধ হইল না) কারণ 
শ্রীমস্ত তাহাকে ক্ষপ্ন করার জন্য যে বিদ্রপ করে নাই তাহা 
সে সহজেই বুঝিল। 

সুন্দর মুহূর্তে নিজেকে সাম্লাইয়া লইয়া বলিল, তুই তো 
সাবান্‌ বলেই খালাস, কিন্তু এর ফল যে কি সাংঘাতিক 
দাড়াবে সে জানি আমি। টিয়ার সৎমা! যখন আমাকে 
সেখানে দেখে গেচে একবার তখন কণস্কিনীর থাল আবার 
রক্তে লাল না হয়েই পারে না। পৃজোও এসে গেল__ 
এইবার ভাগান নিয়েই হয় তো! বাধে ছু'বাঁড়ীতে। 

থাক্‌, আর না৷ বাধতে হলো !-_বলিয়া শ্রীমন্ত চমৎকার 
বিদ্রপের ভঙ্গীতে একটু হাসিল, তারপরে বলিল_ নাঃ না! 
বীধতেই হবে__একটা সীকো, এপার-ওপার ক'রে । 

সুন্দর শীমস্তর কথার ভঙ্গীতে না হাসিয়া আর পারিল 
না। বগল, স্ট্যা, সীকো যদি বাধতেই হয় তো তোকে 
ডাকব সেধিন। 

শ্্ীস্ত সঙ্গে সঙ্গে বলিয়! উঠিল, এই রাত ক'রে হাজার- 
খুনীর বিলে যে আমাকে পিষতে ডেকে আনা হয়েচে সে তো 
এ সীকো বাধবার জঙ্টেই। ডাক তো আমার বু আগে 
থেকেই পড়েচে, আর আমিও আমার যথাসাধ্য করচি। 


তশক্জিম্ৌনল খাঁজ 


শ২এ, 


সুন্দর শ্রীমস্তর কথায় খুশী হুইয়া গিয়া বলিল, খুব যে 
আজকাল কথ! কইতে শিথেচিন্‌ দেখতে পাই ! 

সত্যি নাকি ?_-বলিয়। শ্রীমস্ত একটু হাঁসিল,তারপরে 
বলিল, সেটা হয়েচে তবে তোর সংসর্গ দোঁষে। তোর মত 
ভাল মানুষের মুখ দিয়েই যা সব কথা বেরুচ্ছে আজকাল, তা 
আমার আর না বেরুবেই বা কেন! 

সুন্দর আর কথা খু'জিয়া না পাইয়! বলিল, খুব হয়েছে, 
এখন বাড়ী ফিরে যাই চ+। | 

শ্ীমন্ত তাড়াতাড়ি বলিল, হ্যা, চল্‌, ফিরেই যাওয়া! যাক। 
আর তোর কাজ যখন শেষ হয়েচে তখন আর থেকেই বা 
লাভ কি! 

সুন্দর অমনি বলিল, না রে না, রাঁত হয়ে গেচে অনেক । 

্রমন্ত হাসিয়! ফেলিয়া! বলিল? হাঁজারখুনীর বিলে এই 
প্রথম আমাদের অনেক রাত হয়ে গেল সুন্দর! সত্যি, 
ফিরেই চ। 

_তবে আর তোর ফিরে কাঁজ নেই।--বলিয়া গুন্দর 
তাহার বৈঠাটি নৌকার পাটাতনের উপর তুলিয়া রাখিয়া 
দিয়া নিশ্চিন্ত হইয়া বসিল। 

্রীমন্ত চাঁপিয় চাপিয়া হাসিয়া! উঠিল। সুন্দর এতক্ষণে 
সত্যই বিব্রত হইয়া পড়িল। কিন্ত শ্রীমন্তের উপর তাহার 
কিছুমাত্র বিদ্বেষ জাগিল না; যেহেতু স্থন্দর জানিত, শ্রীমন্ত 
একটু রঙ্গপ্রিয়। সুন্দর নিজেও তাই হাঁসিয়৷ ফেলিল। 


পরদিন ভোরেই আবার মনোহরকে যাত্রার দলের উ্দেস্ত 
রওন! হইতে হইল । তাহার এমন স্ুকল্লিত ব্যবসা নিশি- 
সজ্জনের মনে ধরিলেও রূপসীর মনে ধরিল না। কথাটা 
ভাল সময়েই মনোহর জামাইবাঁবুর কানে তুলিয়াছিল, কিন্ত 
কাঁজে আসিল না, তাহার দিদিই বাঁধা দিল এবং নিদারুণ- 
ভাবেই বাধ! দিল। নিশি সজ্জন শেষ পধ্যন্ত তাই রাজী 
হইতে পাঁরিল না। গত রাত্রে মনোহর জামাইবাবুর পাশে 
যখন আহারে বসিয়াছিল এবং টিয়! পরিবেশন করিতোছিল 
তখন রূপসীকে সেখানে অনুপস্থিত দেখিয়া সে কথাটা 
তুলিয়াছিল যে, শিখীপুচ্ছের বাঁজারখোলায় একখানি 
মনিহারি দৌকাঁন খুলিলে ব্যাপারটা খুব লাভজনক হইয় 
প্লাড়ায়। কথাট। নিশি সক্জন অনায়াসেই বিশ্বাম করিতে 
পারিল_ লাভজনক যে তাহাতে সনদে করিবার আর ঘি 


২২১ 


আছে। নিশি সঙ্জন বে-ছিসাবী লোক নয় কাজেই 
মনোহরের উপর নির্ভর কর! চলিতে পারে কি-না সেই কথাই 
সর্বাগ্রে সে চিন্তা করিতে লাগিল। পরে ভাবিল, নিজে 
একটু তত্বাবধাঁন করিলেই, ছুর্ভাবনার কিছু আর থাকিবে 
না এবং সে মনোহরের প্রস্তাবে অবিলছ্েই রাজী 
হইয়া গেল। 
| , কিন্তু রূপসীর স্বভাব তাঁহাদের ঠিক জানা ছিল না, 
সম্মুথে দীড়াইয়া কাহারও কোঁন কথা শোনা অপেক্ষা 
_ নেপথ্যে থাকিয়া চুপিসাড়ে শুনিতে পারিলে সে বিশেষ 
খুশী হইয়া উঠিত। কাজেই স্থযোগ পাইলেই সে চুপি দিয়া 
কথা শুনিতে ব্যগ্র হইয়া উঠিত। এক্ষেত্রেও সে চুপি দিতে 
ছাঁড়ে নাই। বেড়ার আড়ালে থাকিয়! সে শালা-ভগ্নীপতির 
শঙগা-পরামর্শ সকলই শুনিল। শুনিয়াই তাহাদের সন্দুখে 
বাহির হইয়!. আসিয়া মনোহরকে লক্ষ্য করিয়া বলিল, কি, 
আবার বুঝি ঝুরস! ফাঁদরার মতলব হয়েচে? এবার বুঝি 
মনিহারি পোকান? (৭ 

তারপরে নিশি সঙ্জনের 'দিকে ফিরিয়া বলিল_ আর 
রাজ্যে ৰামুন নেই-_-এইবাঁর শালা-ভগ্নীপতিতে ব্যবসা সুর 
হবে নে বেশ! কিন্তু: ক'দিন সেব্যবসা টিকবে 
গুনি1 ৃ 
মনোহর কেমম একটু বির টি স্লাথা নীচু করিল, 
আর নিশি সজ্জন মাথা তুলিয়া বলিল, সে তুমি নাই শুনলে, 
ব্যবসার তুমি বোঝ কি? 

বুঝি গো বুঝি/তোঁমার চেয়ে ঢের বেশী বুঝি !__বলিয়া 
রূপসী বকুটি করিয়া বলিতে সুর করিল, ব্যবসা করতে হয় 
কর, কিন্তু টাকা-পয়সা কখনও বিশ্বীসী করে যেন 
মনোহরের হাতে দিও না।: সেবার--বাবা তখন বেঁচে 
ছিলেন বাবাকে ছেলে বোরালে, যে তিনশে! টাকা তাকে 
ব্যবসার জন্তে দিলে_-মাঁসে তিনশো টাঁকা সে লাভ 
ছেখ্রিয়ে দেবে।: বাব! ছিলেন ভালমানষ, মর্নোহরের কথায় 
বিশ্বাস ক'রে ধিলেন ওর হাতে তিনশো টাকা । ব্যস; টাক৷ 
পেয়েই সেই যে গুণধর ভাই আমার উধাও হলেন, আর 


জ্ঞান্রত্ডশ্ব 


[ ২৮শ বর্ধ-_২য় খণ্ড _হঠ সংখ্যা 


চাঁর মাসের মধ্যে দেখাই নেই। ওকে বিশ্বাস ক'রে টাকা 
দিলেই ডুববে তুমি । আমার যা! বলা উচিত তা আমি ব'লে 
দিলাম, এখন তোমার যা! খুনী তাই তুমি করগে?। 

বলিয়াই রূপসী সেখান হইতে দেমাক-ছুর্বিনীত পাদ- 
বিক্ষেপে অন্তত্র চলিয়া গেল। | 

মনোহর একটা কথা কহিয়াঁও ইছাঁর আর প্রতিবাঁ? 
করিতে পারিল না, কেন না এ দুর্ঘটনা একদিন সত্যই 
ঘটিয়াছিল। নিশি সঙ্জনেরও মন কেমন যেন বিগড়াইয়া 
গেল, সে আর ব্যবস! সম্বন্ধে একটা কথাঁও কহিল না। 
উভয়ে নীরবে আহারাদি শেষ করিয়া উঠিয়া গেল । 

রান্নাঘরে টিয়া সমস্ত জিনিষপত্র সাজাইয়া রাখিতে 
রাখিতে নিজের মনে মনেই বলিয়া উঠিল, বাবা, বাঁবা, কি 
মেয়েমান্ষ, কারও যদি একটু ভাল দেখতে পারেন! এমন 
কি, নিজের ভাইয়েরও না । 

কিন্তু টিয়া ইহাতে বরং খুণীই হইল। মনোহর যে 
শিথীপুচ্ছের বাঁজারে মনিহারি দোকান খুলিয়া এখাঁনে 
কায়েম হইয়া বসিল না তাহাতে আনন্দ হইল তাহারই। 
মনোহরের প্রতি তাহার তেমন 'কোঁন বিদ্বেষ নাই, কিন্ত 
মনোহরের উপস্থিতিতে সে কেমন জানি অস্বস্তি অনুভব 
করে। কাজেই সে চিরন্তন অন্বস্তির হাত হইতে মুক্তি 
পাইয় খুশীই হইল। ূ 

মনোহর ইহার পরে আর ব্যবসার কথা নিশি সঙ্জনের 
কাছে তুলিতে পারে নাই, রূপসীর কথারও প্রতিবাদ কিছু 
করে নাই, টিয়ার সঙ্গেও দেখা করে নাই; যাঁজার দলেই 
আবার যোগ দিতে শিখীপুচ্ছ ছাড়িয়া ভোরের দিকেই 
চলিয়া গিয়াছে । 'রূপসী সতাই তাহার চুর্ধল স্থানে আঘাত 
করিয়া টিয়ার চোখে তাহাকে অত্যন্ত হেয় 'প্রতিপন্৷ করিয়া 
ছাঁড়িক্লাছে। ব্যবসা সে করিতে পারিল না-_সে" কারণে 
তাহার ছুঃখ হইল মী কিন্তু টিগ্লা যে তাঁহাকে কত ছোট 
ভাবিল তাহাতেই সে যেমন ছোট হইয়া! গেল তেষন ছুঃখও 
আবাঁর তাহার গভীরতর হইয়া দেখা দিল। 

( ক্রমশঃ ) 





মাদ্রাজ গভর্ণমেপ্ট আট্কুলের শিশ্প-প্রদর্শনী 
শ্ীন্শলকুমার মুখোপাধ্যায় 


দাক্ষিণাত্যে শিল্পগ্রদর্শনীর অষ্টা, অক্রান্তকন্মী শিল্পাচার্য 
্রীযুক্ত দেবী প্রলাদ রায়চৌধুরীর উদ্যোগে এবং তাহার ছাত্র- 
ছাত্রীর্দের চেষ্টায় মাদ্রাজ আর্ট-স্কুলের নবম বাধিক শিল্প 
প্রদর্শনীর শুভ উদ্বোধন হইয়া গেল। প্রদর্শনী সগ্থন্ধে কিছু 
বলিবার পূর্বের দেশবাসীর পক্ষ হইতে শ্রীযুক্ত রায়চৌধুরীকে 
আন্তরিক ধন্তবাঁদ জানাই এই জন্ত--যে তিনি তাহার অদ্ভুত 
কর্ণপ্রেরণার দ্বারা দাক্ষিণাত্যবাপীর মনে শিল্পবোধ এবং 
রলজান গড়িয়। তূলিয়াছেন। 

শিল্পরসিক-হিলাবে প্রদর্শনীর উদ্বোধনের দিন নিমন্ত্িত 
হইয়াছিলাম। প্রদর্শনী-গৃহে প্রবেশ করিতেই প্রথম 


না। দেবীপ্রসাদ তখন অফিসসংক্রান্ত কাছে ডুবিয়া 
আছেন। তীহাঁকে আর বিরক্ত করা অনুচিত মনে করিয়া 
চিতরগৃহের দিকে অগ্রসর হইলাম। 

নরনারীর ভিড় কাটাইয়া সহজে চলিবার উপায় 
নাই। কোন মতে অগ্রসর হইডেছি, হঠাৎ মেয্বেলী গলার 
আওয়াজ পাইয় দাাইলাম। মুখ তুলিতে দেখি একজন 
অতি-আধুনিকা তথথী তাহার সঙ্গীকে বলিতেছেন, ”এই 
শিল্পীদের যদি একটুও কাগুজ্ঞান থাকিত ! রাঁজকুমারীর 
ছবি আকিয়ছে দেখ। ছি-_ছি--ছি-মুখটা কি 
বিশ্রী!” যে ছবিটি লইয়া আলোচনা! চলিয়াছে, কৌতুহলী 





ভিনিভিন্রিত্রচিনা নিরাকার পুলি রত 
নিজ ভারতের তে্জীয়ান, হুইয়া সেটির দিকে তাকাইয়৷ দেখি একখান! অভিন্থন্দর 


নির্জীক শিল্পী দেবীপ্রসাদের ব্যবহারে অহমিকার লেশ 


ছবি-_রংং রস ও রচনার মাধুর্যে ছবিখানি যে-কোন 


মাত্র দেখিলাম না। নিতাস্ত পরিচিত বন্ধুর মত তিনি সত্যকার শিল্পরসিককে আকিষ্ট করিবে। তাবিলাম এই 
নানি রনির আক না! হইয়! পারিলাষ- ফেতা-দুরত্, ফ্যাশ্ানেব্‌ল্‌ ব্রেসিকাছের নিকট হইতে দুরে 


দিই 


ন9৬ 

থাকাই ভাল। 
ছোয়াছে রোগে আক্রান্ত' হইয়া পড়ে।' ব্যাধি ঢুফিলে 
আর ছাড়িতে চায় না। ক্রমশ মৃত্যুর পথে অগ্রসর 


ন্-্প 











-- জান্দোনা-শিরী দলা সুধা 


করিয়া দেহি দুত্যু নয মনের ঘৃতযু, রসবোধের 
অবসান! স্বামি বসের উপাসক। উপার়াস্তর না থাকায় 
সেখান হইতে সরিয় শবষ্টিলীম। তাঁলই হইল। যে 

ছবিটির নিকট আলির: পড়িলাম, তাহা একটি অতি 
উচ্চাঙ্গের ছবি। দকে্টিত: প্যাগাল”- শিল্পী শ্রী পি. 
্রীনিযাসম্‌ 1... জা কুইন (80001315050) ) 
এবং চৌধুরী যেন মিলিতভাবে শিল্পীকে প্রেরণা 
জোগাইয়াছেন। কমাচাতুর্য। বণসমাধেশ এবং যথার্থ 
টোন্ভ্যালু-সদঘ্ত মিলিয়া এক কথায় ছবিটিকে অতি 
চমৎকার করিয়া তুলিয়াছে। উপযুক্ত সুযোগ এবং উৎসাহ 


পাইলে তরুণ শিল্পী ভিথিষ্ঠতে যে শিকল্পজগাত একটি বিশিষ্ট 


স্থান পাইবেন সে বিষয়ে লন্দৈছ নাঁই। 
ই ছবির পর্বে পিলী কে-্রীনিবাসম্‌ অঙ্কিত “বেগারস্‌ 
ফেবরিত্যাল 1”. লি রংস্ধর় অত।ভুত খেলা দেখাইয়া গঠনের 


দোষ ..চাঁকিবার চে করিয়াচছেন। তবুও ছবিটি ভাল 


বলিতে হইবে। শিল্পী রসিক। 

!* ক্ষবিম গোপাল অস্কিত “নৌজীবী” পাশ্চাত্য প্রথায় 
গরঁষিত জগ-রংএর একথাঁনি নিখুত নঙুনা। শিল্পী জল- 
সরস : অতি, গুলরভাবে: বজায় রাখিক্নাছেন | 
“সিন স্বিধানি ঝল মন্‌ ক্ষরিতেছে। কোথাও, একটুখামি 
মৈটে -মানগিয়া বার নীই। জের বুকে গাচ্ছ, মাঞ্জব এখং 


ভাকঝ্ত্কঞ্ধ 


উহাদের নিকটে থাকিলে সুস্থ মাচ্যও নৌকার প্রতিবিখ যেন “মায়া” স্থষ্টি করিয়াছে । শিল্পীর 


'স্াপাইতেছে। 


1 ২৮শবর্ধ_২য় খণ্ড ষ্ঠ সংখ্যা 





শিল্প-গ্রচেষ্টা সার্থক হইয়াছে । 

. এদিক ছাড়িয়া একটু অগ্রসর হইতেই চোখে পড়িল 
প্লভাযুস্”. (10615 )--শিল্পী শ্রীদামোদর প্রসাঁদ। 
প্রেমিক প্রেমিকার নিকট বিদান়্ লইতে আসিয়াছে। 
মুখাবয়ব তাহার বিষাদাচ্ছিন্ন। উত্ভিন্ন যৌবনা নারী 
কামোন্মাদ হইয়! পুরুষকে জড়াইয়৷ ধরিয়াছে। তাহার 
চোখের কোণে অশ্রুবিন্দু। যেন বলিতে চাহিতেছে-_ 
আমাকে ছাড়িয়া কোথায় যাঁইবে? ছবিটি মোটের উপর 
মন্দ নয়। শিল্পী কিন্তু টোন্ভ্যানুতে বিরাট গোল 
বাধাইয়াছেন। রৌপ্য অলঙ্কারগুলি যেন দর্শকের চোখের 
সামনে আসিয়া চীৎকার আরম্ভ করিয়৷ দিয়াছে-_ আমরা 
অলঙ্কার__আগে আমাদের দেখ! ছবির আসল বিষয়বস্ত 
রৌপ্য-অলঙ্কারের ওজ্জল্যে এবং চাপে যেন নিশ্প্রভ হইয়া 
দেবীপ্রসাদের ছাত্রের নিকট এইরূপ 
মারাত্মক গলদ আঁশ! করি নাই। 

পাশ্চাত্য প্রথায় অস্কিত দৃশ্ঠ-চিত্রের ভিতর কে. সি. এস্‌. 
পাণিকর এবং গোবিন্বরাঁজের নাম উল্লেখযোগ্য । ইহাদের 
ছবি পূর্বেও অন্তান্ত প্রদর্শনীতে দেখিবার সুযোগ ঘটিয়াছে 
এবং দেখিয়! যথেষ্ট আনন্দও পাইয়াছি। উভয় শিল্পীই 
তাহাদের কাজে পূর্বের একা গ্রতা যেন হারাইয়! ফেলিয়াছেন। 
ইহা হুঃখের বিষয় সন্দেহ নাই। শ্রীযুক্ত পাঁণিকর “গ্রামের 





'ডইংরুম আদবাবপত্র'-প্রদেবীপ্রসাদ রাক্চৌধুরী পরিকল্পিত 


হাটি” ছবিখানিতে রং ও রচনায় -অভিনবস্থ দেখাইয়া তাহার 


'গূর্ষের স্াপ্ডার্ড থানিকটা বজায় রলাখিয়াছেন। 


জ্যেষ্ঠ --১৩৪৮ ] 


মাত্রাক্ত গ্রভর্পতেপ্উি আউচ্ফুলেন ম্পিল্প-প্রদস্ণনী 


এ খটিট 





ভারতীয় পদ্ধতিতে অঙ্কিত ছোট ছবির মধ্যে শ্রীধুক্ধ 
রাঁজমের অষ্কিত “বর” ছবিখানি দৃষ্টি আকর্ষণ করে। 
ছবিটি স্থন্দর রেখা এবং টৌন্‌ ভ্যালুর গুণে চিত্ৰীকর্ষক 





পূর্ব রাগ-_শিল্পী শ্রীস্শীলকুমার মুখার্জী 


হইয়াছে । কিন্তু ছবির নামকরণ আমার মতে ঠিক হয় 
নাই। এ্রীরূপ রূপবান্‌ বরের শ্বশ্শ অথবা শ্তালক হইবার 
লোভ কাহারও প্রবল হইয়া! উঠিবে কি না জানি না। 
যদি দুর্ঘটনাবশত হয়ই, তাহা হইলে বুঝিব--শ্বশী মারা 
পড়িয়াছে, শ্ঠালকটি বীচিয়াছে। আমর! তে! বলিয়াই 
থাকি-হতভাগ! শালা ।” ছবির চোখের ঢুলু ঢুলু ভাব 
এবং বঙ্কিম ভঙ্গী দেখিয়া “নেশ| ধরিয়াঁছে” নাঁমকরণটাই 
আমার মতে যুক্তিসঙ্গত হুইত বলিয়া মনে হয়। যাক্‌, 





শীতের সন্ধ্যা--শিল্পী প্রী কে-সি-এস্‌ পানিকর 


ছবির বিচার যখন করিতে বসিয়াছি, তখন নামের বিচার 
লইয়া মাথা ঘামাইবাঁর প্রয়োজন বোধ করি না। 
ইহার পর ডেকোরেটিভ, চিত্রবিভাগের নিকট আসিয়া 


উপস্থিত হইলাম। এই বিভাগে সুণীল মুখাঙ্জির ছবিগুলি 
অন্তান্ শিল্পীর ছবিকে নিশ্প্রভ করিয়া! দিয়াছে । সহজলভ্য 
উজ্জ্লতার সন্তা প্যাচ মারিয়! নয়, বর্ণসমাবেশ এবং রচনার 


বৈচিত্র্য ও বৈশিষ্ট্য । শিল্পীর কম্পোজিশনের জ্ঞান তি 
চমৎকার। নির্ভল কম্পোজিশন্‌ ও যথাঁষথ টোন্‌- 


ভ্যালুর গুণে ডেকোরেটিভ্‌ ছবি যে কত সুন্দর হইয় ওঠে, 
তাহা এই তরুণ শিল্পীর কাজ দেখিলে বোঝা যাঁয়। 
“মায়াপুরী”- শিল্পী সুশীল মুখাঞ্জি'। ছবিটি ঘিত্রিয়! কেমন 
একটা ভীতিগ্রদ খম্থমে ভাব, অথচ রোম্যা ে্সও অভাব 
নাই। সত্যই মায়াপুরী বটে। খু'জিলেই বুর্ষি সোনার 





বর--শিল্পী পীরাজমূ 


কাঠি, রূপার কাঠি এবং তৎসহ ঘুমস্ত রাঁজকন্তার দেখাও 
মিলিতে পারে। “কুটারবাঁসিনী” উক্ত শিল্পীরই অঙ্কিত 
আর একখানি ছবি। রসে ভরপুর হইয়া উঠিয়াছে। 

ঘুরিতে ঘুরিতে বাঙ্গালী-ধরণে শাড়ী-পর! - একজন' 
মহিলাকে দেখিয়া কে জানিবার কৌতূহল দমন . করিতে 
পারিলাম না। এফটি ছাত্রশিল্পীকে প্রশ্ন করিতেই জানিতে 
পারিলাম-_উনি এই ক্ষুলেরই ছাত্রী শ্রীমতী আইরিশ, খাঁন, 
বাঁ্ধালী। হুদূর কলিকাতা হইতে' মাপ্রাজে শিল্প শিক্ষার্িনী 


' হইয়া আসিয়াছেন। মহিঙাটিফে দেখি আমার ভিতরেই 


সমালো্ক নিশ্চিন্ত হইতে পারিল ল। জ্টীহার ছহি 


এ, স্ান্পভব্য্ [ ২৮শ বর্ধ-_-২য় খণ্ড বঠ সংখ্য। 


খু'ঁজিযা বাহির করিলাম। শ্রীমতী থান্‌ অঙ্কিত ণ্ৰধ্‌* প্রকাশভঙ্গীতে শিল্পী নিজের গুরুর নাম বজায় রাখিয়াছেন। 
ছবিখানি উল্লেখযোগ্য । আধুনিক যুগের বধূর বয়সের ভারতবর্ষের প্রায় সমস্ত আর্ট দুল এবং তাহাদের চিত্র ও 
কোন নির্দি্টতা নাই। গৌরীদানও হয়, আবার মরিবার মুষ্তির গরদর্শনী দেখিবার সুযোগ ঘটিয়াছে। কিন্তু মাত্রা 
আর্ট স্কুলের ভাগ্বর্্য বিভাগ যে অন্তান্ত আর্ট স্কুল অপেক্ষা 
কত বেশী উন্নত কৃষমূর্তির এই মুষ্ডিটি আমার সেই বিশ্বাদকে 
আরও দৃঢ় করিল। 

ইহার পরই শ্রীযুক্ত শা (বো্বাই জে. জে. আর্টম্কুলের 
প্রাক্তন ছাত্র) গঠিত “শিকারী” মূর্তিটি উল্লেখযোগ্য। 
শিকারী অব্যর্থ সন্ধানে তাহার বল্লমের তীক্ষ ফলা দিয়া 
শিকারের বক্ষ বিদীর্ণ করিয়াছে । মূর্তিটি একেবারে 
অভিনব না! হইলেও মোটামুটি হ্ুন্দর হইয়াছে বলিতে 
হইবে। 

অনেকক্ষণ ধরিয়া ছবি এবং মু্তি দেখিয়া বেড়ীইলাম। 
ছাত্র ও ছাত্রী শিল্পীদের কাজের ক্রমোন্নতি লক্ষ্য করিয়! 
আনন্দও পাইলাম, কিন্ত একটা জিনিষের অভাব মনকে 
সর্বক্ষণই গীড়া দিতে লাগিল। শিল্পী দেবীপ্রসাদ 
এইবারকার প্রদর্শনীতে একটিও ছৰি কিংবা! মুত্তি দেন নাই। 
এই বিরাট অভাব পূর্ণ করা কি উদ্রীয়মান তরুণ শিল্পীদের 

শেষ বিদার-শিলপীপ্রীদামোদর ম্বারা সম্ভব হইতে পারে । বেশ একটু মনক্ষু্ হইয়াই মাথা 

দুইদিন পূর্বেও বিবাহ হয়। বধূটি পুরাতন । তাহা হউক্‌। নীচু করিয়া! চলিয়াছিঃ হঠাৎ বাঁধা পাইয়া ধ্লাড়াইলাম। 
মোটমাট চলিয়! যাঁয়। অন্তত গহন! পরান চলে ।- 
“কুস্ধুম ডেকোরেটার”-_ শিল্পী শচীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় । 
ছবিখানি মোটের উপর ভালই হইয়াছে । তবে শচীন্দ্রনাথের 
পূর্ব্বের যে কাজ দেখিয়াছি তাহার সহিত তুলনা করিলে 
বলিব এই ছবিখানি তাহার স্ট্যাণ্ডার্ড বজায় রাখে 
নাই।__শিক্ষাকেন্ত্র ছাড়িলেই অধিকাংশ ভারতীয় শিল্পীরই 
যে এই ছুর্দশা হয় তাহা! আমর! লক্ষ্য করিয়াছি। ইহা 
জাতীয় কলঙ্ক, শিল্পীর নয়। ' কারণ শিল্পীকে বাচিতে হয় 
অর্থের বিনিমক্ষে রসকে সমাধিস্থ করিয়।। আমাদের দেশের 
“এই শিল্পীদের কথা মনে করিয্লা মন সমবেদনায় পূর্ণ 
হইয়া উঠিল 

. 'ন্সমনস্ক হইয়া ভাবিতে ভাবিতে খানিকক্ষণ 
চলিযাছিলাম, হঠাৎ মুখ, তুলিতে দেখিলাম--একাটি অতি | হর 
স্বর মূর্তির নিকট আসিয়া পড়িয়াছি। বসগ্রাধী মন প্রসাধদ--শিলপী শীশটীজ দুধ 
নূতন রসের সৃন্ধান পাইয়া সব কিছু তুলিয়া! গেল। “দি . মমুয়দেহের সহিত খারা লাগিয়াছে। দুখ ভুলিতে দেখি 
রোড. মেকার”--তাত্বর - ভীকক্ষদুর্তি। মুষ্ধিটির, তজিয়ান একজন খাঁটি মেমসাহেব! 








জ্যৈ্--১৩৪৮ ] 





সাভ্রা গ্রভর্শতেণ্উি আউন্ভুলেল স্পিলি-শচর্পনী 


খন ২২ 





ঘাবড়াইয়! গিয়াছিলাম। বেয়াদপি হইল না ত? আপনা পাথর' ছাড়িয়া শিল্পী মাত্র রেখা দ্বারা নিজেকে গুকাশ 


হইতেই মুখ হইতে কথা বাঁহির হইল, “মাঁপ করবেন-*."" 
আমি...” 





বাদ্ধকা-_শিল্পী অমলরাজ 


ভদ্রমহিলা! হাসিয়া বলিলেন, “তুমি অন্যমনস্ক ছিলে। 
লজ্জিত হইবার কোন কাঁরণ ঘটে নাই।” তাহার পর 
জিজ্ঞাসা করিলেন,“আচ্ছা? মিস্টার রাঁয় চৌধুরীর ছবি ও মুষ্তি 
কোথায় রাখ! হইয়াছে আমাঁকে বলিতে পার ?”*." 

এইবারকাঁর প্রদর্শনীতে দেবী প্রসাদের ছবি এবং মুগ্তি না 
দেওয়ার পিছনে কোন বিশেষ কাঁরণ আছে কি-না! জানি 
না। তবে ইহাঁতে বু দর্শকই যে রীতিমত মনক্ষুপ্ন হইয়াছেন 
তাহাতে সন্দেহ নাই। 

চিত্রগৃহ হইতে বাহির হইয়া কারুশিল্প-প্রদর্শনী-গৃহে 
প্রবেশ করিলাম। এইবার মাদ্রাজ স্কুলের কারুশিল্পের 
প্রত্যেকটি «ডিজইনেই” বেশ একটু বৈশিষ্ট্য দেখিলাম 
কারণ অনুসন্ধানে জানিলাম__-ডিজাইনগুলি প্রায় সমস্তই 
দেবীপ্রসাদের। 

এচিং বিভাগের নিকট আসিয়! চমৎরুত হইলাম । 


করিয়াছেন। তিনি শুধু এচিং করেন নাই, এচিং করিয়া 
দেখাইয়াছেন যে তীহার রেখার জোরের সামনে ভারতীয় 
অন্ত কোন শিল্পীর এচিং ক্ষুদ্র এবং সাঁধারণ মনে হওয়াটা 
কিছুমাত্র অস্বাভাবিক নয়। আমাদের দেশের শিল্পীর! দূর্বল 
হন্তের আকা-বাকা রেখাকে কি বলিয়! যে ছন্দপ্রধান বলিয়া 
চালান, তাহ! ভাবিয়! মর্্াহত হই। মনে পড়িল কোন 
বিখ্যাত বিদেশী সমালোচকের একটি কথা, *1)6110805 ০: 
1109 00100651010 50151760270 5061000]) 5101065 
দেবীপ্রসাঁদের এচিং-এ শক্তিমান হস্তের টান রেখাগুলিকে 
লীনায়িত এবং সজীব করিয়। তুলিয়াছে। 

দেবীপ্রসাদের ছবি ও মূত্তি না দেখায় মনে যে অভাব 
অনুভব করিতেছিলাম তাহা! কতকটা। পুরণ হইল । মনে মনে 
তাহাকে সহন্্র ধন্তবাঁদ না দিয়! পারিলাম না।: ভারতের 
শিল্পী কর্াবীর দেবীপ্রসাদ দীর্ঘজীবী হইয়া গ্রতিবৎসর নূতন 
নৃতন তেজীয়ান শিল্পী গড়িয়। ভারতীয় শিল্পের লুপ্ত গৌরব 
ফিরাইয়া আনুন, আমাদের দেশকে আবার শিল্প-সভীয় 


শশা, এক) সুপ দা 
0 এ ৯০ ছু 


টি শত 
নে 
ডি 
ডা 
টা 
পৃ 
এ 
ম 
তা ৭.৪ 
৯ 
স্ 
নদ 
সং 
মি 
দখা 
৬1 
চি 
এ 
সি 
ই? 
রত 
53 ধ 
সম 
রি * 
এ 
টা 


রি সি 
কী 





মি মর রথ 


চিএ 
শীতল 


ন্ট 


দি রোড্‌ মেকার 


এতদিন মনে যে অভিলাষ পোঁধণ করিয়া রাঁখিয়ছিলাম উচ্চ আসন লাভ করিতে সাহয্য করুন, একা স্তভাবে ইহ 
তাহা পূর্ণ হইল। দেবীপ্রসাদ এচিং করিয়াছেন। বরংও কামন! করি।. | 
















॥ ২৫৯৬7 ্ 
০) 


্ 


পে 


/, 


চে ০ * 
ই || মুসন]... -”+:০ রা 


"৯ 


৭10 ৮3৩) 


জ্রীতারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় 
চণ্তীমগ্ডপ 


এগারো 

পৃল্লের মৃষ্ছা--ক্রমে মৃচ্ছাঁর ব্যাধিতে দাঁড়াইয়া গেল। 

বন্ধ্যা পন্মের সবল পরিপুষ্ট দেহথাঁনি কয়েক মাঁসের 
মধ্যেই দুর্বল শীর্ণ হইয়! পড়িয়াছে। ঈষৎ দীর্ঘাজী মেয়ে 
পন্ম; এই শীর্ণতায় এখন তাহাকে অধিকতর দীর্ঘাঙ্গী 
বলিয়া মনে হয়) দুর্বলতাও বড় বেণী চোখে পড়ে, 
চলিতে ফিরিতে দুর্বলতভীবশত সে যখন কোন কিছুকে 
আশ্রয় করিয়া! দশড়াইয়!' আত্মসন্ধরণ করেঃ তখন মনে 
হয় দীর্ঘাঙ্গী পদ্ম যেন থর থর করিয়া কাপিতেছে। বলিষ্ঠ 
ক্ষিগ্রচাঁরিণী পল্নের প্রতি' পদক্ষেপে এখন ক্লান্তি ফুটিয়া 
ওঠে ধীর মন্গগতিতে চলিতে চলিতেও তাহার পা যেন 
কাপে। কিন্ত তাহার চোখের দৃষ্টি অন্বাভাবিক প্রথর 
হইয়া উঠিয়াছে দূর্বল পার মুখের মধ্যে পদ্মের ডাগর 
চোঁখ দুইটা অনিরুদ্ধের সথের শাণিত বগি-দাখানায় 
আক! পিতলের চোখ দুইটার মত ঝকমক করে; স্ত্রীর 
চোখের দিকে চাহিয়া অনিরন্ধ শিহরিয়া ওঠে । 
[অনটনের ছুঃখের উপর এই দারুণ দুশ্চিন্তায় অনিরুদ্ধ 
বোধ করি পাগল হইয়া ধাইবে। অগ্রহায়ণ পৌষ মাঘ 
ফাল্গুন এই কয়মাসে সাধ্যমত কিছু করিতে লে বাকী রাখে 
নাই। জগন ডাক্তার, কঙ্কণার হাঁসপাতাঁলের ডাক্তার, 
জংশনের রেলের ভাক্তার_-সকলকেই সে দেখাইয়াছে। 
ডাক্তারের পর কবিরাজ, কবিরাজও দেখানো হইয়াছে । 

জগন বলিয়াছে__মৃদীয়োগ । 

হাসপাতালের ডাক্তার, রের্পের ডাক্তার বলিয়াছে--এ 
একরকম মুঙ্ছারোগ । বন্ধ্যা মেয়েদেরই নাঁকি এ রোগ 
বেণীহয়। 

* কবিরাজ বলিয়াছে-_বাঁবুরোগ | 

পণড়া-পড়্পীর৷ কিন্তু প্রায় সকলেই বলে__দেবরোঁষ ! 
বাবা খুড়াঁশিব-_মা ভাঙ্গাকীনীকে উপেক্ষা করিয়া কেহ 
কেমি কালে, পার পায় নাই! নবানের ভোগ দেবন্থলে 
আনিয়া সে বন্ত তুলিয় লওয়ার় অপরাধ তে! সামান্স নয় ! 


কিন্তু অনিরুদ্ধ গ্রাহা করে না । তাহার মত কাহারও সহিত 
মেলে না। তাহার ধারণা দুষ্ট লোকে তুক করিয়া এমন 
করিয়াছে । ডাইনী-ডাকিনী বিদ্যার অভাব দেশে এখনও 
হয় নাই। ছিরুর বন্ধু চন্দ্র গড়াঞ্ী এ বিদ্যায় ওত্তাদ। 
সে বাণ মারিয়া মানুষকে পাথরের মত পঙ্গু করিয়া দিতে 
পাঁরে। পদম্মের একটা কথ! ষে, তাঁহার মনে অহরহ 
জাঁগিতেছে । 

প্রথম দিন প্রথম মুচ্ছা জগন ভাক্তাঁর ভাঙাইয়। দেওয়ার 
পর-_সেই রাত্রেই ভোরের দিকে পদ্ম ঘুমের ঘোরে একটা 
চীৎকার করিয়া আবার মৃচ্ছিত হইয়া পড়িয়াছিল। সেই 
নিষুতি রাত্রে অনিরুদ্ধ আর জগনকে ডাকিতে পারে নাই, 
আর সেই রাষ্ধেুদ্িতা পদ্মকে ফেলিয়া তাহার... যাওয়ারও 
উপায় ছিল না। শ্ঈজ রুষ্টে পদ্ের চেতন! সঞ্চার হইলে 
নিতান্ত অসহায়ের মত পদ্মা তাহাকে জড়াইয়া ধরিয়! 
বলিয়াছিল-_ আমার বড় ভয় লাগছে গো ! 

-'ভয়? ভয়কি? কিসের ভয়? 

- আমি স্বপ্ন দেখলাম 

-কি? কি স্বপ্ন দেখলি? অমন ক'রে চেঁচিয়ে উঠলি 
কেনে? 

_ন্বপ্ন দেখলাম__মণ্ত একটা কাল কেউটে মামাকে 
জড়িয়ে ধরছে । 

সাপ? 

_স্্যা, সাপ ! আর-- 

- আর? 

_-সাপটা ছেড়ে দিয়েছে--ওই মুখপোড়া-_ 

- কে? মুখপোড়া কে? 

_ওই শক্র!_ছিরে মোড়ল। সাপ ছেড়ে দিয়ে 
আঁমাঁদের সদর দুয়োরের চাঁলাতে দাড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাসছে । 

পল্স আবার থর থর করিয়া কীপিয়৷ উঠিয়া তাহাকে 
জড়াইয়া ধরিয়াছিল। 
'  কথাট! অনিরুদ্ধের মনে আছে। পন্পের অস্থখের কথা 


৭৩৪ 


জযোষ্ঠ--১৩৪৮ ] 


মনে হইলেই--ওই কথাটাই তাহার মনে পড়ে। ডাক্তারের 
যখন চিকিৎসা করিতেছিল, তখন মনে হইলেও কথাটাঁকে 
সে আমল দেয় নাই। কিন্ত দিন দিন ধারণাটা তাহার মনে 
বন্ধমূল হইয়া! উঠিতেছে। সে রোজার কথা ভাবিতেছে, 
অথবা কোন দেবস্থল! 

তাহার এই ধারণার কথা বিশেষ কেহ জানে না, 
পল্পকেও সে বলে নাই। বঙ্গিয়াছে কেবল-__মিতা গিরীশ 
ছুতারকে। জংশনের দোকানে যখন তাহারা যায় তখন 
অনেক স্বথছুঃখের কথা হয়। অনেক কল্পনাই ছুজনে 
করে। সমস্ত গ্রামই এখন একদিক, তাহাদিগকে জব্দ 
করিবার একট1 ধারাবাহিক প্রচেষ্টা চলিতেছে । ছিরু 
পালকে এখন নামে গ্রামের প্রধান খাঁড়া করিয়া! দেবদাস 
ঘোষ বসিয়া বসিয়া কল টিপিতেছে। অনিরদ্ধের সঙ্গে 
আরও কয়েক জন আছে-_জগন ডাক্তার ও পাতু বায়েন। 
তারাচরণ নাপিতের সঙ্গে হাঙ্গামাটা মিটিয়া৷ গিয়াছে। 
গ্রামের লোৌকেই মিটাইতে বাধ্য হইয়াছে, কারণ সামীজিক 
ক্রিয়াকলাপে নাপিতের প্রয়োজন বড় বেশী। জাতকর্খব 
হইতে প্রীন্ধ পর্যন্ত প্রতি. ্রিয়ায় নাঁপিতকে চাইই। 
তাঁরাচরণ এখন নগদ্দ পয়সা লইয়াই কাঁজ করিতেছে, 
রেট অবশ বাজারের রেটের অর্ধেক, কেবল দাড়ি-গোঁফ 
কামাইতে এক পয়সা, চুল কাটিতে ছুঃপয়সাঃ চুলকাটা এবং 
কামানো একসঙ্গে হইলে তিন পয়সা । অন্যদিকে সামাঁজিক 
ক্রিয়া-কলাপে নাপিতের প্রাপ্যও কমিয়৷ গিয়াছে । নগদ 
বিদায় ছাড়া--চাল কাপড় ইত্যাদি যে পাওনা নাঁপিতের 
ছিল, সেটার দাবী নাপিত পরিত্যাগ করিয়াছে । তারাচরণ 
নাপিত ঠিক কোন দিকেই নয়, অনেকটা নিরপেক্ষ ব্যক্তি । 
জগন-- অথবা অনিরুদ্ধ বা গিরীশ জিজ্ঞাসা করিলে চুপি 
চুপি সে গ্রামের লোকের সকল পরামর্শের কথাই বলিয়া 
ষায়। আবার অনিরুদ্ধ জগন গিরীশের সংবাদ গ্রামের 
লোক জিজ্ঞাসা করিলে তাঁও কিছু কিছু বলে। এ স্বভাবটা 
তাহার নূতন নয়, চিরকালের ) শুধু তাঁহাঁরই বা কেন__-এ 
ত্বভাঁবটা তাহাদের জাতিগত। রাজ্যের সংবাদ তাহাদের 
নথদর্পণে । ধনী দরিদ্র সকলের ঘরেই তাহাদের যাওয়া- 
আস! নিয়মিত সপ্তাহে ছুই দিন বা এক দিন আছেই; 





রামকে কামাইতে বসিয়া শ্টামের বাড়ীর গল্প করে, যছুর , 


বাড়ীতে গিয়া গল্প করে রামের । তবে তারাচরণের আকর্ষণ 


গিপ-ত্ম্বভা। 


গন) ও 





অনিরুদ্ধ গিরীশ জগনদের দিকেই একটু বেশী। পাতুর 
সহিত সম্বন্ধ তাহার নাই। কিন্তু জগনকে দরকার অনখ- 
বিন্খ, অনিরুদ্ধকে প্রয়োজন ক্ষুর নরুণের অন্ত-_-এ ছাড়াও 
তারা-নাপিত জংশনে গিয়া! ক্ষুর ভাড় লইয়া হাটের পাঁশেই 
একটা গাছতলায় বসিতে আরম্ত করিয়াছে । পাচথানা 
গ্রামে তাহার যজরমাঁন আছে, তাহার মধ্যে তিনখানার কাজ 
একেবারে ছাড়িয়া দিয়াছে । বাকী দুইখানার একখানি 
নিজের গ্রাম_-অপরখানি মহুগ্রাম। মহুগ্রামের ঠাকুর 
মশায় বলেন মহাগ্রাম, এই ঠাকুর মহাশয় শিবশেখর স্টাঁয়তীর্ঘথ 
জীবিত থাকিতে ও গ্রামের কাঁজ ছাড়া অসম্ভব । .স্তায়তীর্থ 
সাক্ষাৎ দেবতা । ই ছুইথানা গ্রামে দুর্দিন বাদে-_সপ্তাহেন্ 
পাঁচদিন সে অনিরুদ্ধ গিরীশের সঙ্গে সকালে উঠিয়া জংখনে 
যায়। এই যাওয়! আসার জন্জও বটে এবং আরও একটা 
অকারণ গোপন সহামভূতি তাঁরাচরণ অনিরুদ্ধ গিরীশ এবং 
জগনের জন্য অনুভব করে-_যাহাঁর জন্য আকর্ষণ একটু 
ইহাদের দিকেই বেণী। | 
পল্পের অস্থুখ সম্থন্ধে নিজের ধারণার কথা৷ অনিরুদ্ধ 
গিরীশকে বলিলেও তারাঁকে বলে নাই। তাঁরাচরণকে 
তাহারা জানে_সে যেমন তাহাদের সম্পূর্ণরূপে ঘোগ 
দেয় নাই, তেমনি তাহারাঁও তাহাকে হৃদয়ের সঙ্গে গ্রহগ 
করে নাই। রর 
কিন্ত তারাঁচরণ অনেক সন্ধান রাখে, ভাল রোজা, 
জাগ্রত দেবতার অথব! প্রেত দানার স্থান, যেখানে ভন্ন 
হয়-_এ সবের সন্ধান তাঁর নাপিত দিতে পারে। অনির্ধ 
ভাবিতেছিল-- তারা নাপিতকে কথাটা বলিবে কি না! 


সেদিন মনের আবেগে অনিরুদ্ধ কথাট।, তারাচয়ণেছ 
পরিবর্তে বলিয়। ফেলিল জগন ডাক্তারকে । দ্বিগ্রহরে 
জংশনের কাঁমারশাল! হইতে ফিরিয়। অনিরুদ্ধ দেখিলঃ পচ 
মুচ্ছিত হইয়া পড়িয়া আছে। কখন যে মুচ্ছ। হইয়াছে_ছে 
জানে! মুখে চোখে জল দিয়াও ছেতন। হইল ন 
কামারশীলায় তাতিয়া পুড়িরা' এতটা আসিয়। অনি্ধে 
মেজাজ ভাল ছিল ন!। বিরক্তি ক্রোধে সে কাওজা। 
হারাইয়া ফেলিল। জলের ঘটিটা ফেলিয়া! দিয়া পঞ্চ 
চুলের মুঠি ধরিয়া সে নিুরভাবে আকর্ষণ করিল। কি 
পল্প অসাড় । চুল ছাড়িয়া দিয়া তাঁহার*মুখের দিকে চাহি: 


২৬০ 





থাকিতে থাকিতে অনিরুত্ধের বুকের ভিতরটা কান্নার 
আবেগে থর থর করিয়! কাপিয়! উঠিল। সে পাগলের মত 
ছুটিয়। গিয়া ডাকিয়া আনিল জগন ডাক্তারকে । জগনের 
তেজী ওষুধের ঝাঝে পদ্ম অচেতন অবস্থাতেই বারকয়েক 
মুখ সরাইয়া লইয়া_-অবশেষে গভীর একটা দীর্ঘনিশ্বাস 
ফেলিয়া চোখ মেলিল। 
_ ডাক্তার বলিল--এই চেতন হয়েছে । কাদছিস কেন তুই? 

অনিরুদ্ধের চোখ দিয়া দরদর ধারে জল পড়িতেছিল। 
সে ক্রন্দনজড়িত কণ্ঠেই বলিল-_ আমার অদেষ্ট দেখুন দেখি 
ডাক্তার! আগুন তাতে পুড়ে এই এককোশ দেড়কোশ 
এসে আমার ভোগান্তি দেখুন দেখি ! 

ডাক্তার বলিল--কি করবি বল? রোগের ওপর তো 

হাত নেই! এ তো আর কেউ ক'রে দেয় নাই। 

অনিরুদ্ধ আজ আর আত্মসন্বরণ করিতে পারিল না 
সে বলিয়া উঠিল-_মাঁনুষ। মানষেই ক/রে দিয়েছে ডাক্তার) 
আর আমার এতটুকু সন্দেহ নাই। রোগ হলে এত ওষুধ 
এত পত্র-_একটুকু বারণ শোনে না! এ মানুষের কীত্তি। 

জগন ডাক্তার হইলেও প্রাচীন সংস্কার একেবারে 
ভূলিতে পারে নাই, রোগীকে মকরধবজ এবং ইনজেকশন 
দিয়াও সে দেবতার চরণোদকের উপর ভরসা রাখে, সে 
অনিরুদ্ধের মুখের দিকে চাহিয়া বলিল-_তা৷ যে না হতে 
পারে, তা নয়। ডাইনী ডাকিনী দেশ থেকে একবারে 
যায়.লাই। কিন্তু ভাক্তারে তে তা বিশ্বাস করে না। 
ওরা বলছে-_ 

বাঁধা দিয়া অনিরুদ্ধ বলিল-__বলুক। এ কীত্তি ওই 
হারামজাদা ছিরের। ক্রোবে ফুলিয়া সে এতথানি 
হইয়া! উঠিল। | : 

সবিম্ময়ে জগন প্রশ্ন, করিল--ছিরের ? 

হ্যা ছিরের! ক্রুদ্ধ আবেগে অনিরু্ধ সেই স্বপ্নের 
কথাটা আন্গপূর্তিক ডাক্তারকে বলিয়া বলিল-_ওই যে 
চন্ধ গড়াঞ্ী, ছিরে শালার প্রাণের বন্ধু__-ও শালা ডাঁকিনী 
বিষ্কে জানে। যোগী গঁড়ায়ের বিধবা মেয়েটাকে কেমন 
বদীকরণ ক'রে বের করে নিলে--দেখলেন তো! ওকে 
দিয়েই এই কীর্তি করেছে ছিরে ! 
_ গভীর চিন্তায় নিমগ্ন হইয়া “গল জগন, কিছু্খণ পর 
“বার ছুই ঘাড় নাড়ি! বলিল-_ছ' | | 


গাব 


[ ২৮শ বর্ষ-_২য় খণ--ষঠ সংখ্যা 





ক্রোধে অনিরুদ্ধের ঠোঁট দুইটা থর থর করিয়া 
কাপিতেছিল। সে কোন উত্বর দিল না। পল্প এই কথা- 
বার্তার মধ্যে উঠিয়। বসিয়্াছিল) দেওয়ালে ঠেস দিয়া 
বসিয়া সে হাপাইতেছিল। অনিরুদ্ধের ধারণার কথাটা 
শুনিয়া সে বিন্ময়ে শ্তপ্তিত হইয়া গেল। সেদিনের স্বপ্নটা 
আম্ুপৃর্বিক তাহার মনশ্চক্ষে ভাসিয়া উঠিল। সেই কালো 
সাপটা, দৈত্যের মত ছিরু পালের হাঁশ্যবীভৎস মুখঃ মনে 
পড়িয়৷ সে শিহরিয়া উঠিল। সঙ্গে সজে মনে হইল, তাহার 
বগি-দাথানার কথা। কোথায় সেখাঁনা? 

জগন আবার বলিল-_-তাই তুই দেখ অনিরদ্ধ; রোঁজা- 
কি দানা হলেই ভাল হয়! তারপর সহস! বলিল-_দেখও 
একটা কথ! কিন্তু আমার মনে হচ্ছে, দেখিস তুই এ ঠিক 
ফলে যাবে। নিজের বাণে বেটা নিজেই মরবে । 

অনিরুন্ধ স্থির দৃষ্টিতে জগনের মুখের দিকে চাহিয়া 
রহিল। জগন বলিগ- সাপের স্বপ্ন দেখলে কি হয় 
জানিস? 

-কি? 

বংশ বৃদ্ধি হয়, ছেলে হয়। তোদের কপালে ছেলে 
নাই, কিন্ত ছিরে নিজে যখন সাঁপ ছেড়েছে, তখন ওই 
বেটার ছেলে ম'রে-তোর ঘরে এসে জন্নাবে। তোর 
নাই, কিন্তু ও নিজে থেকে দিয়েছে । 

জগনের এই বিচিত্র ব্যাখ্যা শুনিয়া অনিরুদ্ধ বিস্ময়ে 
প্রায় স্তম্ভিত হইয়! গেল; চোঁখ দুইটা তাহার বিস্ফারিত 
হইয়া উঠিয়াছিলঃ সে জগনের মুখের দিকে স্থিরদৃষটিতে 
চাহিয়া রহিল। তাহার দৃষ্টি দেখিয়া জগন বিজ্ঞভাবে 
মুদু হাঁসিয়! বলিল - দেখিস, আমি বলে রাখলাম! এর 
পরে আমাকে বলিস। 

পল্মের মাথার ঘোঁমট! অল্প সরিয়! গিয়াছে, সেও স্থির 
বিচিত্র দৃষ্টিতে চাহিয়াছিল সম্মুখের দ্রিকে। তাহার মনে 
পড়িয়া গেল--ছিরুর শীর্ণ গৌরবর্ণা স্ত্রীর কথা। তাহার 
চোখ মুখের মিনতি, তাহার সেই কথা--আমার ছেলে 
দুটিকে যেন গাল দিয়ে! না ভাই! তোমার পায়ে ধরতে 
এসেছি আমি 1, 

অগন ও অনিরুদ্ধ কথা বলিতে বলিতে বাহিরে চলিয় 
গেল। জগন বলিল--চিকিৎসে অবিশ্থি এর তেমনি কিছু 
নাই। তবে মাঁথাট। একটু ঠাণ্ডা থাকে, এমনি এরফট। 


জৈঠ--১৩৪৮ ] 


গলে-চন্রভ্ঞ। 


২৫৭?) 





কিছু চলুক। আর তুই বাপু* একবার সাঁওগ্রামের শিবনাথ- 
তলাটাই না হয় ঘুরে আয়। শিবনাথতলার নাম ডাক 
তো! খুব! 

শিবনাথতলার ব্যাপারটা ভৌতিক ব্যাপার। কোন 
পুত্রহার! শোকার্তা মায়ের অবিরাম কানায় বিচলিত হইয়া 
নাকি তাহার মুত পুত্রের প্রেতাত্মা নিত্য সন্ধ্যায় মায়ের 
কাছে আসে। অন্ধকার ঘরের মধ্যে তাহার মা খাবার 
রাখিয়া দেয়, আসন পাতিয়! রাখে, প্রেতাত্মা আসিয়া সেই 
ঘরে বসিয়া! মায়ের সঙ্গে কথাবার্তা বলে। সেই অবসরে 
নানা স্থান হইতে লোকজন আসিয়া রোগ ছুঃখ অভাব 
অভিযোগ প্রেতাত্মার কাছে নিবেদন করে, প্রেতাত্মা 
সে সবের প্রতিকারের উপায় বলিয়া দেয়। 

অনিরুত্ধ বলিল--তাই দেখি। 

দেখি নয়, শিবনাথতলাতেই যা! তুই। দেখ. না 
কি বলে! 

একট! গভীর দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া অনিরুদ্ধ একটু হাসিল 
ম্লান হাসি। বলিল-_এদিকে যে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে 
ডাক্তারবাবুঃ এগিয়ে যাই কি ক'রে ! 

ডাক্তার অনিকদ্ধের মুখের দিকে চাঁহিল, অনিরুদ্ধ 
বলিল--আমার পুর্শজ ধাক হয়ে গেল ঘোঁষমশাই, বর্ষাতে 
হয়তো! ভাত জুটবে না। বাকুড়ির ধান মূলে-চুলে গিয়েছে, 
গায়ের ধান লোকে দেয় নাই, আমিও চাঁইতে যাই 
নাই; তাঁর ওপর মাণীর রোগে কি খরচটা গেল, 
তা তো আপনি সবই জানেন! শিবনাথের শুনেছি 
বেজায় থাই। 

প্রেত-দেবতা শিবনাথ রোগ দুঃখের প্রতিকার করিয়া 
দেয়-_কিস্ত বিনিময়ে তাহার মাকে মূল্য দিতে হয়। সেটা 
হাজির করিতে হয় গ্রথমেই। 

জগন বলিল--পাঁচ দশ টাকা! হ'লে ন! হয় কোন রকমে 
দেখতাম অনিরুদ্ধ, কিন্তু বেণী হ'লে তো-_ 

অনিরুদ্ধ উচ্ছ্বসিত হইয়া উঠিল-ডাঁক্তারের অসমাপ্ত 
কথার উত্তরে সে বলিয়া! উঠিল, তাতেই হবে ভাক্তারবাবুঃ 
তাতেই হবে; আরও কিছু আমি ধার-ধোর করে চালিয়ে 
নোৌব। গিরীশের কাছে কিছু নোব মার আপনার 
ছুগগার কাছে-- 

ডাক্তার ্র-কুঞ্চিত করিয়া প্রশ্ন করিল-_দুগগা? 


* কথাবার্তা হয়। 


অনিরুদ্ধ এবার হাসিয়া ফেলিল, তারপর মাথা চূলকাইয়! 
একটু লঙ্জিতভাবেই-_পেতো মুচির বোন দুগ গা। 

চোখ দুইটা বড় করিয়া ডাক্তারও এবার হাসিল-_-ও ! 
তারপর আবার প্রশ্ন করিল-এছুড়ির হাতে টাকাকড়ি 
আছে, নয়? 

_আছে। শাল ছিরের অনেক টাকা ও নিয়েছে $ 
ত৷ ছাড়া কষ্কণার বাবুদের কাছে ও বেশপায়। প্রচ 
টাকার কমে হাটেই না। 

__ছিরের সঙ্গে নাকি এখন গোলমাল হয়েছে শুনলাম ? 

চোঁথ দুইটা বড় বড় করিয়া অনিরুদ্ধ বলিল-_বাড়ী 
ঢুকতে দেয় না। আমার কাছে একখানা বগি-দা করিয়ে 
নিয়েছে; বলে-খ্যাপ কুকুরকে বিশ্বাস নাই। রান্রে 
সেথান! হাতের কাছে নিয়ে ঘুমোয়। 

-বলিস কি? 

__আজ্জে হ্যা! 

-_কিন্তু কেন বল দেখি? 

ঠোঁট দুইটা টিপিয়া চোয়াল পর্যযস্ত বিস্তৃত করিয়া 
অনিরদ্ধ কেবল কয়েকবার ঘাড় নাড়িয়া দিল-_অর্থাৎ সে 
কারণটা কোন ক্রমেই জান! যায় নাই। 

ডাক্তারও এবার চুপ করিয়া রহিল সেও মনে মনে 
কারণটা অনুমান করিবার জন্তই চিন্তিত হইয়া! পড়িল। 
অনিরুদ্ধও অকম্মাৎ গম্ভীর হইয়া উঠিল_সে মনে মনে 
অধীর হইয়া উঠিতেছে টাকাঁটার প্রতিশ্রুতির জন্ত | গিরীশের 
এখন কাজের মরস্থমের সময়; তাহার কাছে গোট। পাঁচেক 
থুব পাওয়া যাইবে, আর দুর্গার কাছে গোটা পাঁচেক। শুধু- 
হাতে দুর্গা একটি পয়সা কাহাকেও দেয় না, তবে ওই 
দা-থানা গড়ানো সা রন্রিনে বাহন 
স্যত! তাহার হইয়াছে। 

আজকাল দুর্গা জংশনে প্রায় নিত্যই যায় দুধের যোগান 
দিতে, ফিরিবার পথে অনিরুদ্ধের কামারশালায় একটি বিড়ি 
থাইয়া৷ আসে, সরস হান্য পরিহাঁসে কথা-কাটাকাটি করে * 
অনিরুদ্ধও সকালে বিকালে জংশন যাওয়া-আসার পথে 
দুর্গার বাড়ীর সম্মুখ দিয়াই যায়, ছুর্গীও একটি করিয়া বিড়ি 
দেয়; বিড়ি টানিতে টানিতে দীড়াইয়াই ছুই-্চারিটা 
দ্বাখানাকে উপলক্ষ করিয়া হুস্যতাটুকু 
অল্পদিনের মধ্যেই বেশ ঘন হুইয়! উচিযাছে। মধ্যে একদিন 


এ 


লোহা কিনিবার একটা গুরুতর প্রয়োজনে-__টাঁকাঁর অভাবে 
অনিরুদ্ধ বিব্রত হুইয়৷ চিস্তিত মুখেই কামারশালায় বসিয়া 
ছিল, সেদিন দুর্গা আসিয়া প্রশ্ন করিয়াছিল-_-এমন ক'রে 
বসে কেন হে? 

দুর্গাকে বিড়ি দিয়া সা একটা বিড়ি ধরাইয়া অনিরুদ্ধ 
কথায় কথায় সকল কথাই খুলিয় বলিয়াছিল ? দুর্গা সঙ্গে 
সঙ্গেই আচলের খু'ট খুলিয়া! ছুইট1 টাকা বাহির করিয়া 
তাহাকে দিয়! বলিয়াছিল-চাঁরদিন পরেই কিন্তুক দিতে 
হবে ভাই। 

অনিরুদ্ধ সে টাঁকাটা চারদিন পরেই দিয়াছিল। 
ছুর্গা সেদিন হাসিয়া বলিয়াছিল--সোনাঁর চাঁদ খাতক 
আমার ! 

সেই কারণেই প্রত্যাশা আছে-_দুর্গা কোন কিছু বন্ধক 
না লইয়াই হয় তো পাঁচটা! টাঁকা দিবে। এখন জগনের 
প্রতিষ্ষতিটা পাইলেই হয়। সে গম্ভীর হইয়া পায়ের আল 
দিয়া পথের উপর দাগ কাটিতেছিল। কিছুক্ষণ পর ঈষৎ 
ছুলিতে ছুলিতে বলিল-_তা হ'লে হ্যা গো ডাক্তারবাবু-_ 

সচেতন হইয়া ডাক্তার বলিল-__ছিরে তা হলে আর 
কারও সঙ্গে মজল না কি? 

অনিরুদ্ধ বলিল--দশটা টাঁকা হলেই আমার হবে। 

ডাক্তার গম্ভীর হইয়! গেল। 

_-তা হলে কবে দেবেন? 

_আমাঁকে কিন্ত শগগির দিতে হবে বাপু! 

নিশ্চয়! সে আপনি নিশ্চিন্তি থাকুন। মাথায় 
ক'রে টাকা আমি দিয়ে আসব আপনার। 

_্্যা। সেই কথা তুই ভাল ক'রে বুঝে দেখ। এক 
মাসের মধ্যেই কিন্ত-_ 

_ নিশ্চয়; আজ্ঞে নিশ্চয়। অনিরুদ্ধ মুখর হইয়া উঠিল। 
-আঁর কলের কাঁজট! যদি হয়ে যাচ্ছে আজ্ঞে-_-তবে-__ 
পনরো! দিনের মধ্যে, পার হতে দোব না পনরো দিন_- 
দেখবেন আপনি। 

-কল? কলেকিকাজ? 

-ফিটারের কাজ "আজ্ভে। সেদিন আগরওয়ালার 
মিলে কল খারাঁপ হয়েছিল, ইঞ্জিন আঁর চলে না। একটা 
বণ্ট, ধারাপ হয়েছিল--স্টো আর কিছুতেই কেটে বার 
করতে পারে নাই "ওদের মিশ্্ী। আমি মশায় বার ক'রে 


ভাব ভন্বখ 


[ ২৮শ বর্ষ-_২য় খণ্ত-_যঠ সংখ্যা 


দিয়েছিলাম । তাই আগরওয়াল! মশাই বলেছেনঃ কলে কাজ 
কর তুমি। অনিরুদ্ধের মুখ উদ্ভাসিত হইয়া উঠিল। 

ডাক্তার গম্ভীরভাবেই বলিল-_ আচ্ছা, তা হলে কাল 
যাস একসময় । আমি চলি এখন। 

জগন চলিয়া গেল। 

'অনিরুদ্ধ বাড়ীর মধ্যে ফিরিয়া দেখিল-__-পদ্ম তেমনিভাঁবেই 
বসিয়া আছে। তাহাকে আর কিছু বলিল না, কতকগুল৷ 
কাঠকুটা উনানের মুখে আনিয়া উনান ধরাইতে বসিল। 
রান্না করিতে হইবে। তাহার পর ছুটিতে হইবে জংশনে | 
রাজ্যের কাজ বাকী পড়িয়াছে ! 

পদ্ম কাহাঁকে ধমক দিতেছে-_বা ! 

অনিরুদ্ধ ফিরিয়া! চাহিল, কিন্তু কেহ কোথাও নাই, কাক 
কি কুকুর কি বিড়াল, তাও কোথাও নাই। সে ত্র কুঞ্চিত 
করিয়া প্রশ্ন করিল-_কি? 

পদ্মও উত্তরে প্রশ্ন করিল-_কি? 

অনিরুদ্ধ একেবারে খেপিয়া গেল, বলিল--খেপেছিস 
নাকি তুই? কিছু কোথাও নাই, ধমক দিচ্ছি কাকে? 

পন্ম এবার লজ্জিত হইয়া পড়িল ; শুধু লজ্জিতই নয়. একটু 
অধিক মাত্রায় সচেতন হইয়! সে ধীরে ধীরে উঠিয়া উনানশালে 
আসিয়! বলিল-সর) আমি এইবার পারব। তুমি যাঁও 
চান ক'রে এস। 

অনিরুদ্ধ কিছুক্ষণ তাঁহার মুখের দিকে চাহিয়। থাকিয়া 
উঠিয়া গেল। আর সে পারিতেছে না। 

তাহার অনুপস্থিতিতে যদ্দি পদ্মের রেণগ উঠিয়া পড়ে ! 
সে দ্বিধাগ্রন্ত হইয়া দীড়াইল। পড়ে পড়,ক, সে আর 
পারে না! 

পদ্ম রান্না চাঁপাইল। ভাতের সঙ্গে কতকগুলা আলু 
একটা ন্তাকড়ায় বাধিয়া কতগুলি মস্ুরীর ডাল ফেলিয়া দিয়া 
চুপ করিয়া বসিয়! রহিল । 

অনিরুদ্ধ স্নানে গিয়াছে । বাড়ীতে কেহ কোথাও নাই। 
নির্জন-নিঃসঙ্গ অবস্থায় আজ অহরহ মনে হইতেছে তাহার 
স্বপ্পের কথাগুলি, ডাক্তারের কথাগুলি। ছিরু পালের বড় 
ছেলেটা তাহার মাকে কি ভালই না বাঁসে ! 

ওই-_-ওই কি আসিবে? 

ধবকৃ ধবক্‌ করিয়া তাহার হৃদপিণ্ড স্পন্দিত হইয়া! উঠিল। 

সঙ্গে সঙ্গে মনে হইল ছেলেটির শীর্ণ গৌরাঁজী মা পদ্মের 


জ্যো্ঠ-_১৩৪৮ ] গিল-েিভ। ১৩৯ 
দিকে মিনতিভরা চোখে চাহিয়া আছে । পণ্ম একটা গভীর টাঁনিতে তারাচরণ বলিল-স্থ্যা, ক্ষুরে সান না দিলে আর 
দীর্ঘনিশ্বা ফেলিল। পাঁল-বধূর সন্তান গেলে আবার চলছে না । 


হইবে। আঁট নয়টি সন্তাঁন তাহার হইয়াছে । আবার 
নাঁকি সে সম্তান-সম্ভব! ! 

পল্পা অকন্মাঁৎ চঞ্চল হইয়! উঠিল। ছিরু পাল বীভৎস 
হাঁসি হাসিতেছে তাহার মনশ্চক্ষুর সুখে দীড়াইয়। ! উনাানে 
আগ্তন বেশ প্রথর শিখাতেই জলিতেছিল, তবুও সে 
কাঠগুলাকে ঠেলিয়! দরিয়া বলিল__-আঃ ছি_-ছি। 

তারপরই সে ডাকিল পোঁধ! বিড়ালটাকে--মেনী, মেন্নী, 


আআ: পুষি! 
ছেলে না হইলে ঘর, না_মেয়ের জীবন! একটি শিশু 
থাকিলে কত আবোৌল-তাবোল সে বকিত! গল্পে যে 


সেই বলে_ পোঁড়াঁকপালী বলিয়া বন্ধ্যা রাঁজরাণীর ভিক্ষ 
সন্ন্যাসী লয় নাই, সে মিথ কথা নয় । নিঃসস্তানীর মুখ 
দেখিতে নাই। 


বারে 


জগন ঘোঁষ কামাঁইতে বসিয়া কাটা বলিষ! ফেলিল 
তারা নাপিতকে। 

কাঁমাইতে বসিয়া তাঁরাঁচিরণ কথ কয় যুছু স্বরে, গোপন- 
কথা-বলার বেশ একটি ভঙ্গি থাকে । জগন বপিল--তুই 
একটু সন্ধান নিতে পারিস তাঁরা? 

বাটি হইতে জল লইয়া দাঁড়িতে ঘধিতে ঘযিতে তারা 
বলিল-সে কি আর বলবে ছিরু পাল? তবে-_ 

জগন ক্ষুরের মুখে আত্মসমর্পণ করিয়াও যথাসাধ্য তীর্য্যক 
ভঙ্গিতে তারার মুখের দিকে চাহিয়া বলিল-_তবে ? 

হাঁসিয়া তার! বলিল--রঙের মুখ হ'লে বলতে পারে । 

--তোর সঙ্গে রঙ চলে নাকি? 

তারাচরণ একটু লঙ্জিত লইল। সোঁজা উত্তর না দিয়া 
আরও একটু হাঁপিয়! বলিল-_-এই দিন কয়েক সবুর করুন। 
রঙ-ফিট্টি একদিন ভাল করেই করবে ছিরু। 

আড়ষ্টভাবেই হাসিয়া ডাক্তার বলিল-_তুঁমি বেটা আছ 
বেশ। ঝোলে, ঝালে, অস্বলে, আশ নিরিমিষ সবেই আছ 
আলুর মত! আঃ--বেজায় কর-করে তোর ক্ষুর--তাঁরা । 
জলে গেল'! 

ডাক্তারকে ছাড়িয়া" শিলের উপর ক্ষুরটা টাঁনিতে 


__কিন্ত ব্যাপার কি বল তে! ? ফিষ্টি কিসের? 

জমিদারের গমস্তাগিরি নিচ্ছে ছিরু। 

_ গমন্তাগিরি? ডাক্তার চমকাইয়া উঠিল । 

আঙল দিয়া ক্ষুরের ধার পরীক্ষা করিয়া! তাঁরাচরধ, 
ডাক্তারের মুখে আবার জল ঘধিতে ঘধিতে বলিল --হরু- 
ঠাকুর কলকাত!। থেকে-_নতুন একরকম ক্ষুর কিনে 
আনিয়েছে, সব খোলা_-প্যাচ দিয়ে আটিতে হয়_-পাঁতলা 
এইটুকুন ইস্পাতের পাত-লাগানো থাকে, “সেফটি ক্ষুর 
নাকি বলছে! চোঁখ ঝুঁজে কামানে! হয়। নাঁপিতের 
ধার আর ধারবে নাঁ। মাথায় চুল রাখছে । সেই দিনের 
সেই রাঁগ, বুঝেছেন! তা টাকাও লেগেছে তেমনি--পাঁচ 
সাত টাঁকা খরচ পড়ে গিয়েছে । এর ওপর নাকি--ওই 
ইস্পাতের পাত-_ছু-তিন দিন অন্তর কিনতে হবে; তাঁও 
দাঁম ছপয়সা দু আনা ! 

-_ছিরু পাল গমস্তাগিরি নিচ্ছে? ডাক্তার আবার প্রশ্ন 
করিল । হর্ঠাকুরের প্রসঙ্গে তাহাঁর মন আকুষ্ট হইল না । 

_হ্্যা। এই চোত কিস্তি থেকেই আদায় করবে! 
কথা পাকা হয়ে গিয়েছে । 

--ও শাল! গমস্তাগিরির জানে কি? চাষার ঘরে; 
গাধা, আকাট মুখ্য! 

-_লোক রেখে আদায় করবে। দেবু ঘোষ কাঁগজপ 
রাখবে। 

ডাক্তার হাঁত দিয়া তারাচরণের ক্ষুরস্তু্ধ হাঁতথা 
সরাঁইয় দিয়! এবার উত্তেজিতভাবে হাত মুখ নাড়িয়া বলি 
উঠিল- জমিদার ওই লোককে গমস্তাগিরি দিচ্ছে? আঁ 
আমি পত্র লিখব--জমিদারকে । 

জগনের চিবুকটা আঁবাঁর করতলগত করিয়া শুর টাি, 
টানিতে তারাঁচরণ সন্তর্পণে বার দুয়েক ঘাড় নাঁড়ি 
বলিল- কিচ্ছু হবে না আজ্ঞে। | 

কেন? 

জমিদার নিজে সেধে দিচ্ছে মাগির । আ 
হোঁক না হোঁক-_ছিরুকে মহাঁলের ডোলের টাকা পুরিয়ে?ি 
হবে। বকেয়া আদায় হ'লে সুদ সমেত ছিরু নেবে। 

ডাক্তার স্তম্ভিত হইয়া গেল। সমস্ত গ্রামটাই ছি 


খন 0১৩ 


জমিদারী হইয়া দাড়াইল যে! জমিদার নামে রহিল .মাত্র, 
ছিরুর হাঁতে সমস্ত সমর্পণ করিয়া কেবলমাত্র মুনাঁফা-ভোগী 
হুইয়! রহিল। | 

কামানো শেষ করিয়। শিলের উপর ক্ষুর সানাইতে 
সাঁনাইতে তারা বলিল-_একছুত্র হ'ল এখন ছিরু | গাঁয়ের__ 

জগন ফাটিয়া পড়িল-_তারাচরণকে বাঁধ! দিয়া দৃপ্তকণ্ঠে 
বলিয়া উঠিল-_একছত্র ! একছত্র কিসের রে? গবর্ণমেণ্টের 
গমন্তা হ'ল জমিদার, তার গমস্তা_ছু'চোর গোলাম 
চামচিকে ! থাঁজনা নেবে রসিদ দেবে, তার আবার একছত্র 
“কিসের রে? একছত্র ! ডাক্তার ক্রুদ্ধ সাপের মত নিশ্বাস 
ফেলিতে আরম্ভ করিল । 

তাঁরাচরণ ডাক্তারকে ভাল করিয়াই জানে, সে আর 
একটিও কথা বলিল না। কোন কিছু বলিলেই এখন বিপদ । 
ডাক্তারকে সমর্থন করিলে এখনি হয়তো ডাক্তার নিজের 
কথারই প্রতিবাদ করিয়া গ্রামের লোকের আসন্ন সর্বনাঁশের 
সম্ভাবন! গ্রমাণ করিতে বসিবে। সে ক্ষুর ভীড় গুটাইয়া 
হইয়া উঠিরা দীড়াইল- মৌ-গায়ে যেতে হবে আজ্ঞে! 
ঠাকুরমশায়ের নাতি এসেছেন, চুল কাঁটবেন ব'লে 
পাঠিয়েছেন। 
--ঠীকুরমশায়ের নাতি ক্কাতায় পড়ে না? 
_- আজে হ্যা। এম-এ পড়ছেন । 
কলকাতা থেকে এসে এখানে চুল কাটবে? জগন 
বিস্মিত হইয়া গেল। 

তারাচরণের মুখ শ্রদ্ধায় ভরিয়া উঠিল, বলিল - কাপড়- 
চোপড় চুলকাটা-__ইড্ডিং-ফিড্ডিং এ সবের দিকে তাঁর 
খেয়ালই নাই। থালি পড়া-পড়া-আর পড়া! বিদ্বান 
পণ্ডিতের বংশ, নিজে বিদ্বান। ছ টাকা দামের ক্ষুরও 
নাই, গরীবের ওপর রাঁগও নাই । ওদের বাড়ীতে তো 
আমি কখনও পয়স! চাই না, তা ঠাকুর মশীয় বছরের শেষে 
ধানটি ঠিক ডেকে দেবেন। আর খোঁকাবাবু যখন চাই-_ 
স্গদ পয়সা দেন। 

জুগন কেবুল বলিল--হু"। 

তারাচরণ রাস্তায় নামিয়া পড়িল । 

জগন তুরু কুঁচকাইয় কুদ্ধ প্াম্ভীর মুখে সম্মুখের দিকে 
হিয়া বসিয়া রৃহিল। ছিরু পাল গমস্তাগিরি লইয়! যে 
ধ্ামের সর্বনাশ করিবে, তাহাতে তাহার সন্দেহ নাই। 





চি 


জ্ঞান্স-্ঞন্হ্ 


[ ২৮শ বর্ধ--২য় খণ্ড ষষ্ঠ সংখ্যা 





ছিরুর সহিত যোগ দিয়াছে দেবদাঁস। লোকটার কুটবুদ্ধির 
পরিমাপ করা যায় না। এই তো সেদিন দিন কয়েকের 
জন্য তাহার সহিত মিত্রতা করিয়৷ নবান্নের দিন মুহূর্তের 
স্যোগে ছিরুর সহিত ভিড়িয়! গেল। সাক্ষাৎ শয়তান 
তাহাতে সন্দেহ নাই। থাজনা লইয়া রসিদ দিবে না, 
নিরক্ষরকে কম টাকার রসিদ দিবে। স্থদের সুদ তস্য সুদ 
টানিয়৷ প্রজার সর্বনাশ করিবে। যাহাদের সহিত বিবাদ 
আছে, তাহাদের খাঁজনা না লইয়া বসর বৎসর নালিশ 
করিবে। তারাচরণ বলিয়। গেল -- জমিদার ছিরুকে সাধিয়া 
গমস্তাগিরি দিতেছে! জম্দারকে অন্থরোধ জানাইয়! কোন 
ফল নাই। জগন একটা দীর্ঘনিশ্বীস ফেপিল। 

মানুষের খন লক্ষ্মী ছাড়ে পতনের সময় হয়, তখন 
এমনি করিয়াই বুদ্ধিভ্রংশ যে হইতেই হইবে। নতুবা এ 
গ্রামের জমিদার-বংশাটির স্তায়পরায়ণ এবং প্রজাপালক 
বলিয়া খ্যাতি তো অনেক দিনের_তাহাদের এ দুর্মতি 
হইবে কেন? প্রজারা পুরা খাজনা দিতে পারিতেছে না ইহা 
সত্য, বাজারও অগ্নিমূল্য হইয়া উঠিয়াছে ইহাও সত্য-_কিন্ 
সে কি প্রজার ইচ্ছারুত ? ছয় টাকা জোড়া কাপড়, নুনের 
দর দ্বিগুণ, পাঁচ আন সেরের তেলের দর বারো আনায় 
গিয়া ঠেকিয়াছে--এই বাঁজারে প্রজার দিকে দৃষ্টিপাত 
করিলে না-তুমি কিসের জধিদার ? 

ডাক্তার উত্তেজিত হইয়! উঠিয়া াড়াইল। এ আইনের 
যুগে অন্ঠায় করিয়া! কাহারও পাঁর নাই। লাটসাহেবের 
আইন-সভায় দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন মুখের উপর কড়া কড়া কথ! 
শুনাইয়া দেয় । স্থতরাং ছিক গমস্তা হিসাবে অন্তায় করিলে 
_এস-ডি-ওর কাছে দরথাস্ত করিলে--এক৷ ছিরু নয় 
সঙ্গে সঙ্গে জমিদারও বাঁদ যাইবে না। প্রচণ্ড উত্তেজনায় 
ভাবী কালের যুদ্ধকে--একেবারে চোখের সম্মুখে রূপায়িত 
করিয়া ডাক্তার ঘুদ্ধোগ্ঠতের মতই দৃঢ় পদক্ষেপে পদচারণা 
আরম্ভ করিল। 

ডাক্তারের কল্পনা আরও কতদূর অগ্রসর হইত কে 
জানে__কিন্ধ ঠিক এই সময়েই, চণ্ীমগ্ডপের পাশে রাস্তাটা 
যেখানে এই মুখেই মোড় ফিরিয়াছে, সেই মোড়ের মাথায় 
স্ত্রীলোকের ভয়ার্ত বিলাপে চকিত হইয়া ডাক্তার সেই দিকে 
ফিরিয়া চাহিল। হরেন্ত্র ঘোষালের মা কীদিতেছে--সঙ্গে 
হরেন্ত্র বা হাতে একটা স্বাকড়া ঝ-গালে চাপা দিয়া এই 


জ্যোষ্ট--১৩৪৮ ] 


গশ-চে্রভা 


১ 20 





দিকেই আসিতেছে । ইস! ন্তাকড়াটা রক্তে ভিজিয়! 
একেবারে লাল হুইয়! গিয়াছে ! তাহারা! আসিয়া তাহাঁরই 
ডাক্তারখানার সন্মুথে থামিল। হরেন্ত্রের মা উচ্ুসিত হইয়া 
কাঁদিয়! উঠিল--ওগো বাবা, সব্বনাঁশ হয়েছে গো; হরেন্দ 
আমার খুন হ'ল গো। এই দেখ গে! 

হরেন্দ্রের কথা বলিবাঁর শক্তি বোঁধ হয় ছিল না, সে বিনা 
বাক্যব্যয়ে__গালের স্যাকড়াটা খুলিয়া ফেলিল। ডাক্তার 
দেখিল নখের আঁচড়ের মত সারি সারি গভীর ক্ষতচিহ্ন, 
একেবারে কানের পাঁশ হইতে ঠোঁটের পাঁশ পর্য্যন্ত নামিয়া 
আসিয়াছে; যেন শাণিত লোহার চিরুণি দিয়া কেহ 
আচড়াইয় দিয়াছে । জগন শিহরিয়! বলিয়া উঠিল-_এ-হে- 
হে! এরকম কি ক'রে কাটল? 

আড়ষ্ট মুখে হরেন্ত্র কি বলিল, বোঝা গেল না । হরেন্দের ম| 
হাউমাউ করিয়া_-একট! সেকটা রেজার দেখাইয়া বলিল-_ 
এতেই বাবা, এতেই । একমুঠো টাকা দিয়ে_বাবা ছু 
বিশ ধান বিক্রী ক'রে আনালে-_-বলে, চোখ বুজে কামানো 
যায়। যেমন বাবা গালে দিয়েছে-__আর এমনি ক'রে কেটে 
নামিয়ে আনলে ! 

হরেন্ত্র আড়ষ্ট মুখে অস্পষ্ট ভাষায় এবার যাহা বলিল, 
জগন তাহা! বুঝিল, হরেন্দ্র বলিল--প্রথম টাঁনেই-_-একবাঁরে 
ক্ষত বিক্ষত! আঃ! 

জগন হাপিয়া বলিল--গালের ওপর সোঁজা বসিয়ে 
টেনেছ বুঝি? সোজা করে তে! বসায় না একবারে 
কাত ক'রে লাগাতে হয়। এই দেখ, এমনি ক'রে। 
হরেক্্ের মায়ের হাতি হইতে ক্ষুরটা লইয়া! সে আপনার 
গালে বসাইয়া দেখাইয়া দিল। তারপর বলিল--সত্যিই 
খুব ভাল জিনিস, অভ্যেস থাকলে সত্যিই চোখ বুজে 
কামানো যায়। 

হরেন্দের মা বলিল বামুনের ছেলে বাব” নাপিত তো 
নয় যে অভ্যেস থাকবে! এ গাঁয়ে সব অনাছিষ্টি বাবা 
নাপিতে লগদ পয়সা লইলে কামায় না, কামানের কাজ করে 
না, ছুতোরে বৃত্তি ছাড়লে! এ গাঁয়ের কি পিতুল আছে 
বাবা! মা লক্ষী এ গা ছেড়েছেন । তবে--ওরাই সব্বাগ্যে 
হাঁভাতে যাবেন, হা-ঘরে হবেন, ভিক্ষে ক'রে খাবেন। 
বামুনের ছেলের রক্তপাত ! 

হরেন তখন তারম্বরে ' চীৎকার করিতে আর্ত 


করিয়াছে । ডাক্তার তাহার ক্ষতের উপর টিঞ্চাঁর আয়োডিন 
বুলাইতে আরম্ত করিয়াছে । 


দিন কয়েক পর হরেন্দ্র আসিয়া! ডাক্তারের ওখানে 
উঠিল । 

ডাক্তার গভীর অভিনিবেশ সহকারে কি একটা, 
লিখিতেছিল । হরেন্ত্র বলিল--৬/1)8 515 508 0০17% 
[০০৮01 011091) ? ভদ্রলোক দেখিলেই হরেন্ত্র ইংরেজীতে 
কথ! বলে। ভাক্তার বিরক্তিপূর্ণ কটাঁক্ষে হরেঝের দিকে 
একবার চাহিল মাত্র তারপর সে যেমন লিখিতেছিল-_ 
লিখিতেই থাঁকিল। 

হরেন বলিল--1317011)015 0170 101170-- 

-আঃ! কি? 

_730৬/ 6০ 919৮-_মাঁনে -1 হরেন বাহির করিল 
সেফ টা রেজার, সেভিং ট্রিক বুরুশ ইত্যাদি কামাইবার 
সরঞ্জাম । আর একবার দেখিয়ে দাও । | 

আজ নয়, কাল এস। আজ আর আমার সময় 
নাই। 

--এত 10855 ! 
1090001? 

ডাক্তার অত্যন্ত বিরক্ত হুইয়া বলিল-__তুমি তো! ভারী 
অভদ্র হে! আমি কি লিখছি, কাঁকে লিখছি--সে কথা 
তোমাকে বলব কেন ? যাও, এখন যাও । 

হরেন্্র আর কিছু বলিতে সাহস করিল না। সেফ-টী- 
রেজারে কাঁমানোটা ডাক্তারের কাছে শিখিতেই হইবে। 
অন্তরায় সে বেশ একদফা চীৎকার করিত। সেকিছু ন! 
বপিয়াই উঠিয়া গেল। ডাক্তার তাহার পিছনের দিকে 
চাহিয়া বলিল-_ইডিয়ট কোথকার ! 

ডাক্তার একথান! বেনামী দরখাত্তের মুসাবিদা করিতেছে। 
দরখাস্ত একেবারে ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেবের নিকট । ছিরু পালের ' 
নিখুত পরিচয় দিয়া জানাইতেছে যে, ওই ব্যক্তিকে জমিদার, 
গমস্তা নিযুক্ত করিবার সংকল্প করিয়াছে ? ইহাতে নিরক্ষর 
সরল চাষী প্রজার সর্বনাশ হইরে। এ-মতে প্রার্থনা! যে, 
এই কাঁ্য করিতে জমিদারের উপর নিষেধাজ্ঞ! জারী করা 


৬18৮ 215 900 10100 


হউক । ডাক্তার আবার দরখাস্ত রচনায় মনোনিবেশ 


করিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই আঁবার কাঁধা পড়িল। 


22২ 


ভ্ডাব্রত্তন্মঙ্থ 


[ ২৮শ বর্ষ-_-২য় খও-ষঠ সংখ্যা 





পেনাম ! ভূপাল থানদার আসিয়া ছেঁট হয়! প্রণাম দরখান্তটা টানিয়া লইল। ভৃপাল আবার বলিল-_উনিই 


করিয়া ধাড়াইল। 

মুখ তুলিয়া তাহাকে দেখিয়া ডাক্তার হাসিয়া বলিল-_ 
ও£ তোর যে সাজগোজের ভারী বাহার রে! এ্যা! 
গায়ে নতুন জামা-_মাথায় সাদা পাগড়ি__। সত্যই ভূপালের 
পোবাকের আজ বাহার ছিল। গাঁয়ে হাতকাটা খাকী 
কামিজ, মাথায় নৃতন সাদা চাঁদরের পাগড়ি পরিয়া সে 
আঁফিয়াছে। ভূপাঁল সবিনয়ে হাসিয়া বলিল__-পাঁল মশায় 
নতুন গমস্তা হলেন কি নাঃ উনিই বশকিস করলেন । 

ডাক্তারের মুখ গম্ভীর হইয়! গেল, শুধু বলিল । 

-উনিই একবার পাঠালেন আপনার কাছে। 

--তা হ'লে গমস্তাঁগিরি নেওয়া হয়ে গেছে? 

--আজে হ্্যা। 

ডাক্তার অজগরের মত একটা নিশ্বাম ফেলিয়া! আবার 


একবার পাঠালেন আপনার কাছে। 

গম্ভীর ভাবেই জগন বলিল-__কেন? 

ফিরিস্তি অনেক। চত্তীমগ্ুপের ছাওয়ানোর খড়, 
খাজনা, তারপরে সেটেলমেণ্টারের কথা, সরকারী সেটেল- 
মেপ্টার আনছে কি না! 

_ছুঁ। ডাক্তার আবার দরখান্তে মন দিল। 

কিছুক্ষণ অপেক্ষ।! করিয়া ভূপাঁল আবার বলিল-_তা 
হ'লে ডাক্তারবাবু_কি বলব ? 

বল্‌ গিয়ে আমি যাব না। 

ভূপাল বিব্রত হইল । 

জগন এবার ক্রোধে ফাটিয়া পড়িল--যাঁও ! নিকালো! 
নিকালো হামার! হিয়াসে! নিকালো ্‌ 

( ক্রমশঃ) 


শ্রদ্ধাঞ্জলি * 

শ্রীস্থরেন্দ্রনাথ মৈত্র 
তুমি গেছ চলি আসিবে না ফিরে আর মাটিতে পু'তিয়! চক্র গ্রদক্ষিণে 
জানি নিশ্চয়, তথাপি অমর স্ৃতি ঘুণ্যাবর্ঠে গাঁজনের গাঁছে ঝোলে। 
এই দীপালোকে নয়নে আনে তোমার ) উৎসবশেষে সে গাছের গু'ড়িটিরে 
সৌম্য শাস্ত প্রেমময় প্রতিক্কৃতি। সলিলসমাধি দেয় পল্লীর বাঁসী, 
কালের সাগর তোমারে করেছে গ্রাস। স্তর থাকে সুগভীর লীয়ে 
জট নি চেত্রাবসাঁনে আবার ওঠে সে ভামি। 
রয়েছ নিলীন/ অঙ্গে জ্যোতির্দাস,  শ্াদ্ধবাসরে আজি এ "রবিবার, 
নাগ-পালক্কে ভাসিছ রৃত্বাকরে। স্থাগুসম তব প্রাংশড স্থৃতির শাখী, 


আজি পড়ে মনে- শুনেছিন্ধ ছেলেবেলা 
কিংব্দস্তী--বাংলার এক গ্রামে 
শীঘির সলিলে সীতারিয়া করে খেল 
চড়কের গাছ, ঘাটে এসে পুন থামে 


বৎসরাস্তে সংক্রান্তির দিনে। 
পঙ্লীবাসীর। তাহারে টানিয়া তোলে 


করেছে প্রোথিত এই ভিত্তির পর, 
মিলিত কে সাদরে তোমারে ডাকি । 


স্বৃতি-উৎসবে তোমারে স্মরণ করি 
হৃদয়ে হৃদয়ে হও তুমি সমাঁসীন, 
শ্রদ্ধাঞ্জলি এনেছি দুহাত ভরি” 
দাদ জলধর মোদেরে আশীষ দিন । 


* কত রি বাহার জল সের তীর নিক উপল 





অনেকের মুখেই এই ধরণের একটা অভিযোগ শোনা যায় যে, বাঁডালীর কীর্তন নাকি শুধুই কথা ব! কাব্য ওরফে 
ভক্কিজাতীয় বিকাঁশ__সঙ্গীত-রদিকর! ওর কাছ থেকে বিশুদ্ধ সাঙ্গীতিক আনন্দ পেতে পারেন না--কেন না সার্গীতিক 
রস পরিবেষণ কর! ন! কি কীর্তনের স্বধর্ম নয় । একথা অতি হসনীয়। কীর্তনের ভাব এত হৃদয়স্পর্শী হ'তে কখনোই 
পারত না--যদি ওর সুরকার অমন অপন্ধপ হয়ে না উঠত। এ সম্বন্ধে আলাদা গ্রবন্ধ অবতারণা করতে এ গৌরচন্দ্রিকা 
নয়ঃ এর উদ্দেন্ট হাতে কলমে সাধ্যমত কিছু ক'রে দেখানো। চণ্ীদাসের একটি বিখ্যাত গান কীর্তনের চে 
সরৈহ্র্যশীলী করেও কীর্তনের যে ভাব ও স্বধর্ন থাকে সেইটি দেখাতেই এ স্বরলিপি--আধুনিক স্থরকৃতি ও 
আখর সহ। 


বধু, কী আর কহিব আমি? 
জীবনে মরণে জনমে জনমে প্রাণ-নাথ ছোয়ো! তৃমি। 
( তুমি সকলি তো জানো-_অস্তরবামী ! কী আর কহিব আমি?) 
ভাবিয়া দেখিস এ তিন ভুবনে কে আমার আর আছে? 
রাধা বলে কেহ শুধাইতে নাই--দীড়াব কাহার কাছে? 
(আমার কেহ নাই-_বধুঃ তুমি ছাড়া আমার কেহ নাই-- 
বধুঃ তোঁমার চরণে পরম শরণে জনমে মরণে দিও ঠাই ) 
একুলে ওকুলে ছুকৃলে গোঁকুলে আপনা বলিব কায় 
শীতল বলিয়! শরণ লইন্‌ ও ছুটি কমল পায়। 
আখির নিমিথে যদি নাহি দেখি তবে যে পরাঁণে মরি । 
(তুমি নয়নমণি__নয়নের নাঁথ, নয়নমণি-_ 
নয়নের নাথ, আছ সাথে সাথ তোমারি আলোয় হেরি ধরণী ) 
চত্তীদান কহে পরশ রতন গলায় বীধিয় পরি । 


৭৪৩) 


৭55 ভ্াান্রত্তন্ঞ্ [ ২৮শ বধ-__২য খণ্ড_-যঠ সংখ্যা 


( পরশমণি !--জীবনের তৃমি পরশমণি 

ধরার ধূলায় তব করুণায় তারকামুরলী ওঠে যে রণি, 

জীবন ধরি-তুমি আছ বলে জীবন ধরি-_ 

জীবনের জ্যোতি বিন। কোথা গতি আলোক বিহনে পরাণে মরি ) 


কীর্তনের আখর সন্ধে আমার “সাঙ্গীতিকী” পুস্তকে বিশদ করেই লিখেছি । গায়ক প্রতি গান শোনেন অন্তরে-_ 
' কোন্‌ স্থরে সেটা আথরই দেখায়। তাই আথর দেবার সময় গায়ক নিজেও হন কবি, কারণ আখর হ'ল গানের 
“ইণ্টারপ্রিটেশন_-ভাবের দিক দিয়ে, যেমন তান-_ন্ুরের দিক দিয়ে । 


একতাল! 
ও ১ চে ৩ পেশি তি 
টি ০ পপি 

সাসা]| সরারমা মা | মপা পধা ধনা | পর্সা নর্সা নধা | ধপা! ধপা পসা | সরা রমা মা | 
ব ধু কী আ র ক হি ব আ - মি -. বধু - কী আ র 
১ 4 ৩ ও ১ 4 
মপা পা পধা | পধা নর্পা নধা | ধপা-- | স্সাণা ধা | ধা ণা ধণধপা | পা ধা ধণরর্সা | 
ক হি ব আ - মি - -- জীবনে মর ণে জনমে 
৩০০২, গু ১ ও ২ 
্ ০৫ . 2 
ধর্স ণা ধণা | পা ধা পধর্সা | ণধপা মগরা গগা | মপা পধা দ্গপা | 7 ধা পসা | 
জন মে প্রাণ না -. ০*থ হোয়ো তু মি - "- বু ধু 
৬ ১ কর্তা ক সি ৩ ০ 
সরা রমা মা | মপা ধনা সা | না ধাপা | শর্সা সা | রর্সনা সনধা ণধপা | 
কী আ র ক হি ৰ আ - মি - তু মি স ক লি 
১ রা ৩ ্‌ সম 
ধপম1] পমগা গমপধা | সরা রমা মা | পাধা না | পর্পা নর্পা নধা|পা সার্সা | 
তো জা নো কী আর ক হি ব আআ - মি - তু মি 
শট ৩] উড সি ১ শাঁ 
নরর্সা নর্সা নরর্সনা | ধপধা গপগপা পধা | পধা ধর্সা সা | সা র্ণগরণ | গরণ রর্পা স | 
জন্- - ত র যা মী কী আআ বর ক হি ব আ - মি 
ও গিন্হ্হি 9 ১ শা ০৮ ৩ গু 


শর্সা সস! | সরা রমা মা | মপা পধা পধনর্পা ! নাধাপা | 777 | মপাপাপা | 
* বৰ ধু কু আর ক হি ৰ আ - মি ১» * * ভা বিয়া 


ন্যৈ্--১৬৪৮ ] খুলরতিনির্সি | পরতে 


৯১ পঁ 

পা ধা পধপমা | মাধাপা | মপধপা মপা গমা | মপাপাপা | পা পধা মপা | 
দেখি ম্ু এ তি ন ভু -. বনে কে আম র আর 

+ ৩ ০ ১ এ 

গম! পধা নর | ধনা 7 নস | নস নর1 র1 | রা রখ গনা | নস নসর গম | 
বা 28 এ ছে - রা ধা বো লেকে হু শু ধা ০ হী * 
গু ০ ১ -- ৩ 

গাঁ মর্গরসণ নসণ | নরণ সণ নসা | ধনা পধা গপা | গপধা নরসানা | পাপা! 
তে ন' ০ ই ৰা ডা বৰ কা হা বর কা - ছে - আ মার 
৩ ৯ শঁ ১ ১ 

পধা ধনা না | 4 সা সর্র্পনা | নাসণনা | ধনসনন] ধা পা | পধা ধনা না | এ নানস৭ 
কেহ না ই বৰ ধু তু মিছা ডা আমার কে হ না ই ৰ ধু 

5 ৩ ০ রি ১ ২৬ -ঁ 

সরণ রণ রণ | নস নসর] গমা | গর বর্গ গনা | রণ সানসণ | ধনা পধা ধা | 
তো মার চর ণে - প বর ম শ র ণে জ ম মে 
্ ১. তাস 4 ৩ 

ক্ধপা দ্গপধা নর্পর] | খরররণ সানা | 1 | রর্পা সণা ণধা | ধা ধা ধণা | 
মর ণে - দি ও ঠা ই » - এ কু লে ও কু লে 

৩ ১ টা ও ্ রর ড় , 
পধা পা ধা | ধাধা ধণা | সর সর্প ণধা | ধণর্সা ণসণা ধপা | পা ধা মপধসা | 
দু কুলে গোকু লে তি, পি ॥ ই 5151 

১ +ঁ ৩) ৩ ১ স্ঁ 

ণধপা ণধপা! মগমা | পধা ক্ষপা 1 | 777 | ধাধাণা | পধাপা পধন্ষপা |ধারসাসাঁ 
ব লি“ব কা - - --য় শীত ল বলিয়া শর ণ 
৩ গু ৃ ১ শা ৩ 
রাঁরণ সর গর্ম। | মর্গা রাস ধর্স | গর সণ স্ণা | স্পা ধণা ধপা | 1 ধস সণ 
লই নু. - শী - - তল - বৰ »লি যা - - শর ৭ 


৩ ১ হি ৩ সি ০ ১ 
1রর্দা রর্গী | দরণ সব স1| সর্ণা ধপা ধণা |, পধা পা! 11 পা পা পা | পপা! স্পধনা সঁরগিরণ 
"লই হু ও ছু টি ক - মল পা - য় আখির নিমি খে 


$ 
৯৪ 


৪৬ | স্তাল্সভন্যঙ্ঘ .[] ২৮শ বর্ধ-_২র খত সংখ্যা 





পঁ শু ্‌ ও ০৫৯ ১ + পি 
সম সধর্পা | দাণনসসররর্পা | দনা রাস | নরনা ধপা ধা | গারাসা | 
ঘ দিন! হি দে খি ত বে যে প রা থে ম - বি 


৭৭ | সা কস তালফের করিয়া গেয়। তাল না রণ সর ্ঁরণ| নর সন ধপা ধা 


৮ ০ ০ তু মি চতুমত্রিক-ত্রিতালী বা কাফা ন - য় ন ম *- থণি - 
+ ৩ ্ 
1 স1সণস | সশ-াসাসরা | সর্না নর সাসর্রা | নরারসনা ধপা ধা | 
"ন্‌ য় নে র - না থ স্‌ ন্‌ য় ন ম - ণি - 
4 ০ ১৮৯ + 
1 সপ রা রণ | নর ৭নারণর্গা | রনা রাসাসরা | সনানানাস | 
- ন য় নে র - না থ - আছ সস! থে - সা থ - তো মারি 
৩ | গু ১ শা" ৩ 
নধা না ধপা ধা | 1গাপাধা | নধা পধা স1-1 | রস নানা সা | নরণ সনা ধপা ধা | 
আ - 'লো য় - হে রি ধ র - ণী - - তো মারি আ - লো য় 
৩ ১ 


1 গা পা ধা ] নধা পধা স৭- | এই অবধি আথর গাহিয়া একতালায় ফের “আখির নিমিথে..'মরি” 
- হেরি ধ বর - ণী - গাহিয়া 


একতাঁল! 
৬ ৮ সী ৩ গু 
পরি ৈ তর তারি রা রি ্ৈ ্ রত চার্ট ই লহ 
সরা সরণ | বনা নর নরগর্মী | গা রর্গা রনা | রার্সা নস | ধনা পধা ৭7 | 
চণ ডী দা সক হে প র শ রত ন গ লা য় 
৯ ০ ] ৩ ঙ 
দ্ধপা ক্ধগপধা নর্পর1 | সরস না 1 | শানা নস | সারারর্বা | সনা নর নরর্গমণ | 
বাঁধি যা - প রি- - ক হে চণ ডী দা স তোমায় 


সিসি ৩০৯, *. ৯ 7 
চি 


সৃশ 
গা রর্গা রর্না | রাখ সণ নর | ধনা পধা 7 1 ক্ষপা হ্বপধা নসর | সরা না 1 | 
পর রশ র'ত ন গ লা য় বাধি রা] *- ' পপ রি - 








জ্যৈষ্--১৩৪৮ ] ই£ল্ক্রাস্শেষ্মে এ ভগ 
: 
-] 4 - 1 গাহিয়া শেষ আখর এই ভাবে গেয় £-- 
ও * ১ শ- ৩ গু রত টি 
পা পা ধা | ধাপধানসা | ধ্না-ন 7 1] 7771 সাসানা | ধসনা ধা পা | 
গা রা লা অর. - 7 - -. - - জী বনে র - তুমি, 
জী ব ন ধ রি - ০. -. ০ - তুমিআ ছ - বলি, 
শঁ ৩ ০ ১ ঁ ৩ 
পাঁপাঁধা | ধাপধনা রসনা | ধ্না7- | শনাস | নসরণ রা রণ | রণ সরসণ নধা | 
পরশ মণি - *--  * ৰ ধু জী ব ন ধু লা ০য় 
জীব ন ধ রি - ২ - - তু মি জী ব নে র জ্যো তি 
গু সস শঁ ৩] ৩ 
ধনা পধা না | কপ নাস] | নর্পা ধনা পধা | ন্ষপা গন্ষা পা | ধা না নসর্গরণ | 
ত ব ক রু ণাঁয় তা র কা মু র লী ও ঠে যে 
বি না কো থা গ তি আ লো ক বি হ নে প রা ণে 
১ + ৩ ৯ 
সব না সা | ধাশানা | ধানা রস | না-71- 1 71--7 1 
ীম্নরেশ বিশ্বাস এম-এ, ব্যারিষ্টার-এট্‌-ল 

অঞ্চলের স্বর্ণরেণু বিলাইয়া বন্ন্ধরা তেপান্তর মাঠথানি মরুসম জনহীন | 

বসে আছে রিক্ত চৈত্রশেষে-_ শু শূন্য রিক্ত বসুন্ধরা; 
মাঠের ফমল কবে গোষ্ঠপথে ঘাটে এল এ মাঠ ও মাঠ যেন শতেক যোজন দূর | 

আঁটি আঁটি ধানে তরি ভরি ; সেতুহীন যেন :5ট ছুটি, 
ধ্যানের তপ্র বায়ু হতাশ্বীসে ঘুরে ফেরে কষকের অঙ্গনেতে বিলাইয়! বন্থুদ্ধরা 

থেপা কোন্‌ বৈরাগীর বেশে, ". বর্ষশেষ আনন্দ-পশর 
নীলাঁকাঁশে চিল ছুটি বারবার ভাঁক ছাড়ে শৃম্তমনা চেয়ে আছে অনস্তে মেলিয় আঁখি--. 

, তীব্র তীক্ষ হাহাকার করি'। ' দিগন্তে বসন পড়ে লু 


এ 


গোবিন্দচন্্র ও ময়নামতী 
শ্রীবিজনবিহারী তট্টাচর্য 
 পূর্ববানবৃতি ) 


অগ্নি নির্বাপিত হইলে দেখা গেল রাজার দেহ তম্মত্ত,পে 
পৃরিণত হইয়াছে, কিন্তু অগ্নিদেব রাণীর কেশাগ্রও স্পর্শ করিতে 
পারেন নাই। ভয়ে বিম্ময়ে সকলে দেখিল-_ এক সগ্যোজাত 
পুত্রসস্তান কোলে লইয়া ময়নামতী অক্ষত দেহে চিতা মধ্যে 
বসিয়া আছেন। এই শিশুই ভবিষ্তে মহারাজ গোবিন্দচন্্র 
বা গোপীর্টাদ নামে দুর্লভ যশ এবং অসামান্য খ্যাতির 
অধিকারী হন। ময়নামতীর ন্যাঁয় মহীয়সী রমণীর পুত্র যে 
স্বীয় শক্তি ও গ্রতিভা বলে সকলের শ্রদ্ধা এবং পূজা পাইবেন 


ইহাতে বিস্ময়ের কি আছে? 
গোবিন্দচন্ত্রের সমস্ত খ্যাতির মূল তাহার সন্ন্যাস এবং 


সেই সন্ন্যাসের মূলে ছিলেন ময়নামতী | জিতেন্ত্রিয সংসার- 
ত্যাগী সন্্যাসীর চরণতলে হিন্দুগণ চিরকালই শ্রদ্ধার 
পুষ্পাঞ্চলি দিয়া থাকেন। গুধু হিনদুই ঝা বলি কেন, ইন্দরিয়- 
জয়ী পুরুষগণ মান্ুষমাত্রেরই শ্রদ্ধার পাত্র। একদিন বুদ্ধদেব 
বৈরাগ্য অবলম্বন করিয়া সমগ্র জগতের জ্ঞান-নেত্র উন্নীলন 
করিয়াছিলেন। এই সেদিনও মহাপ্রতু শ্রীচৈতন্ত পাপতীপ- 
দগ্ধ জীবগণের হৃদয়ে নাঁমামৃত সিঞ্চন করিয়াছিলেন । 
গোবিন্দচন্ত্রের সহিত তাহাদের তুলনা যুক্তিযুক্ত হয় না। 
গোবিন্দচন্ত্র বৈরাগ্য অবলম্বন করেন আত্মপ্রীণ রক্ষার জন্তঃ 
আর বুদ্ধ ও চৈতন্য সন্ন্যাস গ্রহণ করেন জগৎকে ত্রাণ 
করিবার জন্ত। কপিলাবস্তর রাঁজনন্দন অগাধ পশ্ব্যয, 
অতুল স্থথ, পত্বীর প্রেম, মাতার ল্লেহ সব শ্েচ্ছায় বিসর্জন 
করিয়াছিলেন। গৃহত্যাগে উৎসাহ কেহই দেয় নাই, বরং 
সংসারের মায়াপাশে আঁবন্ধ করিবার জন্তই সকলে আগ্রাণ 
চেষ্টা করিয়াছিল। আত্মশক্তির দ্বারা সকল বাধা তাহাকে 
অতিক্রম করিতে হইয়াছিল। তাহার মানসিক দৃঢ়তার 
স্ন্থুথে মারের সকল গ্রচে্| বিফল হইয়া! গেল। সে 
প্রলোভনের তুলনায় হীরা নটীর রূপ-যৌবন নিতান্তই 
অকিঞ্চিতকর। নবন্ীপচঞ্জের বৈরাগ্য গ্রহণও বুদ্ধদেবের মত 
বিশ্বছিতের জন্যই, স্বার্থের সহিত তাহার কোন নন্বন্ধই ছিল 
না। প্রেদময়ী স্ত্রী, ন্েহময়ী মাতাঃ সংসারের ভোগ-বিলাঁস 


৭6৮ 


তিনিও ম্বতঃপ্রেরিত হইয়া উচ্ছিষ্ট মুখপাত্রের মত ফেলিয়া 
গেলেন। দূরপনেয় বাধার দুর্লজ্ঘ পর্বতসমূহ তেজন্বী মহা- 
পুরুষের পথরোঁধ করিতে পারিল না । 

ইহাদের মাহাত্ম্ের সহিত তুলনা করিলে গোগীর্ঠাদের 
মহিম! অতিশয় ম্লান বলিয়া মনে হয়। তথাঁপি গোগী্টাদের 
খ্যাতি একদিন ভারতবর্ষের এক প্রান্ত হইতে অপর প্রাস্ত 
পর্বস্ত ছড়াইয়াছিল। চৈতন্ততাঁগবতকার লিখিয়াঁছেন, তাহার 
কালে এ দেশের লোকজন গোগী্টাদের গান গাহিয়! রাত্রি 
জাগরণ করিত। 

বঙ্গদেশ ছাড়াও ভারতের অন্তণন্ত গুদেশে এখনও 
গোবিন্দচন্দত্রের কাহিনী শ্রুত হয় পূর্বে তাহা বলিয়াছি। 
গোঁপীটাদ কোন্‌ গুণে এত লোকের হৃদয় জয় করিলেন? 
কাহিনী পাঠ করিলে মনে হয় সংসারাঁসক্ত শত শত মানুষের 
সহিত তাঁহার কোন পার্থক্যই নাই। প্রশ্বর্যের মোহ, 
যৌবনের আসক্তি, ভোগের আঁকাজঙ্ষা-_অজগরের স্তায় 
তাহাকে পাকে পাকে জড়াইয়! রাখিয়াছিল। ময়নামতীর 
হ্যায় তেজস্থিনী জননীর চেষ্টা ব্যতীত এই জটিল গ্রন্থির 
উচ্ছ্দন সম্ভবপর হইত না । ময়নামতীকে বাঁদ দিলে গৌবিন্দ- 
চন্দ্রের পৌরুষ নিতাস্ত নিরবলঙ্ধ হইয়! পড়ে। 

ময়নামতী যখন ধ্যানযোগে" জামিলেন, গোবিন্দচন্ত্রের 
আয়ু অল্প তখন তিনি শঙ্কিত হইয়! উঠিলেন। মন্গ্রহণ না 
করায় এই পুত্রের পিতাই ত একদিন অকালে প্রাণ 
হারাইলেন; আবার পুত্র যদি পিতার ন্যাঁয় ময়নামতীর বাক্য 
অবহেল1 করে তাহা হইলে তিনি কি করিতে পারেন? কি 
তাবে পুত্রকে শ্বমতে আনয়ন করিবেন এই চিন্তাঁতেই তিনি 
মগ্ন হইয়া রহিলেন। 

সপ্তমবর্ষীয় রাঁজকুমারের সহিত হরিশ্চ্জ রাঁজার পঞ্চম- 
বর্ষীয়া কণ্ঠা শ্রীমতী পছুনার বিবাহ হইয়া! গেল। শ্যালিকা 
অচুনাও যৌতুক ন্বরূপ ভ্নীসহ অন্তঃপুরে প্রবেশ করিয়া ধন্য 
হইলেন। এতত্যতীত “রতনমালা এবং “কাধাাসোনাঁও, 
'রাণী হইয়া বালক দ্বাজার রাজপুরী আলোকিত করিলেন। 


জ্যৈ্--১৩৪৮ ] 


গোগীাদ অগ্রাপ্তবয়স্ক বালক বলিয়া ময়নামততী 
হবয়ং রাজ্য পরিচালনা! করিতে লাগিলেন, বালিকা বধূ 
চারিটি লইয়! রাঁজকুমারের দিন ধুলাখেলায় কাঁটিতে 
লাগিল। 

কৈশোরে পদাপ্পণ করিতেই গোবিন্দকে সিংহাসনে 
বসাইয় ময়নামতী রাঁজ্যভার তাহার হন্তেই সমর্পণ করিলেন। 
কিন্তু তাহার সতর্ক এবং সন্সেহ দৃষ্টি রক্ষা-কবচের মত সর্বদাই 
তাহাকে সমূহ বিপদআপদের হস্ত হইতে দূরে রাখিয়! 
চলিত। রাঁজা হইয়াও বাঁজ্যের ছুর্ভীবনা নাই । পরিপূর্ণ 
সুখ, অনাবিল শান্তি, অপরিমেয় আনন্দ--ইহার দ্বারাই হৃদয় 
পূর্ণ । গোগীচাদ্দ ভাঁবিলেন, মান্ষের জীবনপথ শুধু 
কুস্থুমাঁকীর্ণ। হাঁয়, মাতা ভিন্ন তিনি যে কত অসহায় তাহা 
কল্পনা করিবার মত ক্ষমতাঁও তাঁহার নাই । এই ভাঁবে 
আরও দুই বংসর অতীত হইলে গোপীর্চাদ কৈশোর অতিক্রম 
করিয়! যৌবনে পা দিলেন । ময়নামতী হিসাব করিয়! দেখিলেন। 
পুত্রের আঘুদ্ধাল পূর্ণ হইতে আর বিলম্ব নাই । চিন্তায় তাহার 
হৃদয় ভারাক্রান্ত হইয়া! উঠিল। বিশাল সাঁআঁজ্য এবং যুবতী 
রমণীগণের আকর্ষণ হইতে মুক্ত না করিলে গোবিন্দের মৃত্যু 
অবধারিত--অথচ মোহাবিষ্ট রাজার স্বপ্রঘোর কাটাইবেন 
কেমন করিয়া? ছুর্তাবনায় দুশ্চিন্তায় কিছুদিন কাঁটিল। 
অবশেষে ময়না মনস্থ করিলেন গোগীাদকে সব কথা খুলিয়া 
বলিবেন। ইহা স্থির করিয়া একদিন ময়ন! গোবিন্দচন্ত্রের 
রাজদরবাঁরে গিয়া উপস্থিত হইলেন। মাঁতাকে সভামধ্যে 
দেখিয়া! গোপীচাদ তৎক্ষণাৎ সিংহাসন হইতে অবত্তরণ করিয়া 
ভূমিষ্ঠ হইয়া তাহার পদবন্দনা করিলেন। নৃপতির আদেশে 
সভ1 ভঙ্গ হইল। পাঁত্রমিত্র এবং অন্যান্য সভাসদবর্গ বিদায় 
হইলেন। অনন্তর জননীকে ব্বর্ণীসনে বসাইয়! নিজে দণ্ডায়মান 
থাকিয়া গোপীটাদ করজোড়ে তাহার আগমনের কারণ 
জিজ্ঞাসা করিলেন । অবসর বুঝিয়া ময়নমতী একে একে 
সব বৃত্তান্ত বিবৃত করিয়া শেষে বলিলেন__প্রিয়তম পুত্র, 
তোমার মৃত্যু আসঙ্গ জানিয়া বড় দুঃখে সেই কথা জানাইতে 
আসিয়াছি। কিস্ত এখনও তাহার প্রতিকার সম্ভব । 
মৃত্যু জয় করিতে হইলে রাজ্য ধন শ্রশ্বর্য সব বিসর্জন দিয়া 
রমণীগণকে দ্বাদশ বংসরের মত ত্যাগ করিয়! হাড়িসিদ্ধার 


শরণাপন্ন হইতে হইবে। হাড়িসিদ্ধা মন্ত্রতম্ত্রে পরম পারপর্শী. 


এবং মহাজ্ঞানসম্পন্ন। তাহার নিকট শিল্পত্ব গ্রহণ 


তগোবিল্ঙ্জ্ক্র ও জ়নাসভ্ভী 


এ 8 


করিলে সেই যোগীবর কৃপা করিয়া তোমাকে মৃত্যুর 
হাত হইতে রক্ষা! করিবেন। 

মাতার মুথে এই অভাবনীয় বাক্য শুনিয়! গোবিনা 
চমকিত হইলেন। তাহাও কি সম্ভব? এই সুখ সম্পদ 
এই তুল বৈভব সব ত্যাগ করিয়৷ রমণীগণকে অনাথা 
করিয়া, ছিন্ন কম্থা এবং ভিক্ষার ঝুলি সম্বল করিয়া 
বাইশ দণ্ডের অধিপতি মহারাজ গোবিন্দচন্ত্রকে পথে 
পথে বেড়াইতে হইবে? উনশত নফর, অর্ধশত সামস্তরাঁজ, 
লক্ষাধিক সৈন্য এবং অগণিত নরনারী ধীহার চরণে 
প্রণতি নিবেদন করিয়া কৃতার্থ হয়--সেই গোঁবিন্বচন্্রকে 
এক হীনকর্ম৷ হাঁড়ির চরণ স্পর্শ করিয়া তাহারই আজ্ঞা 
শিরোধার্য করিতে হইবে? ইহা ষে কল্পনীরও অতীত ।. 
বিনামেঘে বজ্রপাত হইলেও গোপীঠাদ এরূপ চমকিত হইতেন 
না। আকস্মিক উত্তেজনায় তাহার মন্তি্ধ উত্তপ্ত হইয়া 
উঠিল। কিছুক্ষণের জন্য বিচারশক্তি লোপ পাইল। 
তাহার নুখে বাক্যম্ফ,তি হইল না। প্রথম উত্তেজনার ঘোর 
কাটিয়া গেলে রাজা ভাবিতে লাঁগিলেন--মাতার মুখে 
এ কি জঘন্ত প্রস্তাব! নৃপতি মাঁণিক্যচন্দ্রের মহিষী স্বীয় 
পুত্রের প্রতি এই দ্বণিত আদেশ দিলেন কেমন করিয়া? 
ময়নামতীর এই অসংগত আচরণের কোন অন্তত্নিহিত অর্থ 
আছে কি? 

গোবিন্দচন্ত্রের মনে সংশয় জাগিল। কিন্ত মাতার সমন্ধে 
সন্দেহ ঘনীভূত হইতে না হইতেই বিবেকের দংশনে তাহার 
চিন্তার গতি ঘুরিয়া গেল। তিনি করজোড়ে নিবেদন 
করিলেন--জননী; এখনও তোমার আদেশ প্রত্যাহার কর। 
জাতিকুল ডুবাইয়া পিতৃপুরুষের নামে কলঙ্ক লেপন করিয় 
নীচকুলোভ্তব হাড়ির শি্তত্ব গ্রহণ করা! আমার পক্ষে অসস্ভব 
পুত্রের অবাধ্যতা তোমার ছুঃখের কারণ হইবে সন্দেহ নাই 
কিন্ত আমার এইরূপ অধঃপতন দেখিলে স্বর্গলোকে থাকিয়া 
পিতৃপুরুষগণ অশ্রুবর্ষণ করিবেন। অশুচি বংশধরের পিং 
ও জল তাহার আর গ্রহণ করিবেন না! আরও চিন্তা 
কথা এই যে, কিসের আশায় জাঁতিকুল, মাঁন সম্মান, ধনর 
বিসর্জন দিয়! হাঁড়িকে গুরু করিব? কে সে? 
তাহার পরিচয়! সে যে আমাকে মন্ত্রবলে মৃত্যুর হাত হই 
রক্ষা করিতে সমর্থ হইবে তাহার প্রমাণ কি? 

পুরে বাক্যে ময়নামর্তী কুদ্ব-' হইলেন না। তি 


৭৫৩ 


জানিতেন-__যুক্তির দ্বারা: বশীভূত করিয়া পুত্রকে স্বমতে 
আনিতে না পারিলে তাহার প্রাণ রক্ষা করা অসস্ভব। 
সেইজন্ত মিষ্টবাক্যে গোবিন্বচন্ত্রকে বুঝাইতে লাগিলেন-_ 
ছাড়িসিদ্ধা মহাশক্তিমান মোগী, মন্ত্রবলে তিনি অসাধ্য সাধন 
করিতে পারেন। হ্য়ং যমপুত্র “মেঘনীল কুমর' তাহার 
অত্তকে চামর ব্যজন করেন । যমরাজ তাঁহার আজ্ঞানগবর্তী 
ভূত্য মাত্র। চন্্র এবং হূর্ধ তাঁহার ছুই কর্ণের কুগুলরপে 
শোভমান। দেবী মহালক্ী এই সিদ্ধপুরুষের পাকশালার 
অধিষ্ঠাত্রী এবং স্ববচনী তাহার তান্কলকরক্কবাহিনী। প্রতু 
গোরক্ষনাথের নিকটেই হাড়িপার দীক্ষা হয়, সেই সম্পর্কে 
হাড়িপা ময়নামতীর গুরুভাই। সাধারণ লোকে তাঁহাকে 
. চিনিতে পারিবে না। 


“তুমি বল হাড়ি হাড়ি লোকে বলে হাড়ি। 
মায়ারূপে খাটি খায় চিনিতে না পারি ॥ 


' ময়নামতীর মুখে হাড়িসিদ্ধার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা শুনিয়া 
গোবিন্দচন্ত্র বিশেষ সন্তুষ্ট হইতে পারিলেন না। মাতার 
চরিত্র সম্বন্ধে তাহার সন্দেহ ক্রমশ বদ্ধমূল হইতে লাগিল। 
তাহার মনে হইল-_তাহাঁকে সম্যাস অবলম্বন করাইবার জন্য 
ময়নামতীর এই যে প্রয়াস ইহার মধ্যে নিশ্চয় কোন দুরভিসন্ধি 
আছে। কোন্‌ মাত শ্নেহছের বন্ধন ছিন্ন করিয়া একমাত্র 
সম্তানকে বনবাসে পাঠায়? ব্যাদ্র ভন্নুক প্রভৃতি হিংস্র 
গ্রাণীও নিজ প্রাণ দিয়! শাবকগণকে প্রতিপালন করে। 
গোবিনাচন্ত্র স্থির করিলেন, কৃটচক্রী জননীর বাক্য তিনি 
পালন করিবেন না । যেমাতা স্বীয় স্বার্থ ও জঘন্ প্রবৃত্তির 
বশবর্তী হইয়া পুত্রকে সকল স্ুথ হইতে বঞ্চিত করিতে চায় 
সে মাতার আদেশ লঙ্ঘনে কোন পাপ নাঁই। তাঁহার এরূপ 
ধারণা হইল যে পিতার অকালমৃত্যুও সম্ভবত হাড়িসিদ্বা ও 
ময়নামতীর কোন মিলিত চক্রান্তের ফল। 

এদিকে রমণীগণও নিশ্চিন্তমনে বসিয়। ছিলেন না। 
শাশুড়ীর উদ্দেশ্ট ব্যর্থ করিবার জন্য চারি সপতীর মধ্যে 
যুক্তি পরামর্শ চলিল। কিন্তু কি বুদ্ধি করিলে রাজার 
সর্যাস গ্রহণ রহিত করা,যায় তাহা কেহই স্থির করিতে 
পারিলেন না । অবশেষে-- 
*অদুনাঁয় বলে, বৈন গো পছুনা সুন্দর | 
সাত কাইতেক-বুদ্ধি আমার ধড়ের ভিতর ॥ 


স্ঞান্পতন্বঙ্ 


[ ২৮শ বর্ষ__২য় খও--ষষ্ঠ সংখ্যা 


আমার কথামত চলিলে বর্তমান বিপদ হইতে উদ্ধার পাওয়! 
কঠিন হইবে না । পরামর্শ অনুযায়ী 

“অদুনাঁএ পিন্ধে কাঁপড় মেঘনীল শাড়ি । 

সেই শাড়ীর মূল্য ছিল বাইশ লাখ কৌড়ি॥ 

পছুনাএ পিন্ধে কাঁপড় তলে বান্ধি নেত। 

মাঞ্জা করে ঝলমল বনের স্থন্দি বেত ॥% 


রতনমালা' এবং কাঞ্চাসৌনাও তসর এবং “থিরবলি' 
বসনে দেহ সজ্জিত করিলেন। অনন্তর হাতে “রামলক্ষমণ, 
নামক শঙ্খ পরিধান করিয়া এবং কন্তরী অগুরু প্রভৃতি 
বিচিত্র প্রসাধনে অঙ্গ ভূষিত করিয়া চারি রাণী 


“্খঞ্জন গমনে জাএ রাজার গোচরে, 
হাঁলিয়া ঢুলিয়! পড়ে যৌবনের ভারে ॥” 


নিকুপ্জ মন্দিরে প্রবেশ করিয়া চারি রমণী বিবিধ যুক্তি 
প্রদর্শন করিয়া রাঁজাকে রাজ্য ত্যাগ করিতে নিষেধ 
করিলেন। অবশেষে তাহার শাশুড়ী ঠাকুরাণীর চরিত্র 
সম্বন্ধে দুই-্চারিটি ইঙ্গিত করিয়! বলিলেন 

“তোমার মায়ের কথার নির্ণয় না জানি। 

হেঁটে গাঁছ কাটিয়া উপরে ঢালে পাঁনি ॥” 


বনবাসে প্রেরণ করাই যদি তাহার উদ্দেশ্ট ছিল তবে এতগুলি 
রাজকন্ঠার সহিত বিবাহ দিলেন কেন? 
রাঁণীগণের যুক্তি অত্যন্ত সমীচীন বলিয়াই গোবিন্দচকের 
মনে হইল। ময়নামতীর আজ্ঞায় পরিচালিত হইয়! 
নিবুদ্ধিতাঁর পরিচয় দিবেন না ইহা স্থির করিয়া! গোপীঠাদ 
রাণীদিগকে বলিলেন 
“না যাইব না যাঁইব প্রিয়া দেশ দেশাস্তর | 
সুখে রাজ্য করিব থাঁকিয়া নিজ ঘর ॥” 
ইহা শুনিয়া সকলে আশ্বন্ত হইলেন। 
রাঁজার অঙ্গীকারে রাণীগণ আশ্বাস পাইলেন বটে, কিন্ত 
সম্পূর্ণ নিশ্চিন্ত হইতে পারিলেন না। মাতার সান্নিধ্যে 
আসিলেই গোঁবিন্দচন্ত্রের সমস্ত দৃঢ়তা মুহূর্ঠমধ্যে অন্তহিত 
হইয়া যাইবে ইহা তাঁহার! নিশ্চিত জানিতেন। ময়নামতীর 
চ্ঠায় শক্তিময়ী রমণীর প্রভাব হইতে ছূর্বলচেতা স্বামীটিকে 


.কেদন করিয়া মুক্ত করিবেন এখন এই চিন্তাই তাহাদিগকে 


বিব্রত করিয়া তূলিল। দিবারান্জ যুক্তিতর্ক চলিল; কিন্ত 


জ্যোষ্ঠ--১৩৪৮ ] 


জটিল সমস্তাঁর সমাধান কিছুতেই হইল না। অবশেষে 
“সাতকাইতের বুদ্ধি'ধারিণী অছুনাই এক সহজ পন্থা বাহির 
করিয়! তিন সপত্বীকে চমকিত করিয়া দিলেন। স্থির হইল 
নিমাই বাণিয়ার নিকট হইতে পঞ্চ তোঁল! বিষ ক্রয় করিয়া 
মিষ্টান্নের সহিত তাহা মিশ্রিত করিয়া! শাশুড়ী ঠাকুরামীকে 
ভেট দেওয়া যাইবে। নিমাই বাণিয়ার বিষ পঞ্চতোল। 
উদরস্থ হইলে আর ময়নামতীকে চক্ষু তুলিয়া! চাহিতে হইবে 
না। তাহার পর আর কি? এখন কোন রকমে পথের 
কণ্টক একবার দূর করিতে পারিলে হয়। 

যুক্তি করিয়া অছুনা, পছুনা, রতনমালা ও কাঞ্চাসোণা 
পঞ্চতোলার পঞ্চলাড়,* প্রস্তুত করিয়! ময়নামতীর নিকটে 
উপস্থিত হইলেন এৰং 


“লাড়র বাটা সম্মুখে রাখি প্রণাম করিল। 
যোড় হস্তে দাগ ইয়া কহিতে লাগিল ॥ 
এহি বর মাগি মোরা তৌমার গোচর। 
ত্বামী দান দাও মোরা চলি যাই ঘর ॥৮ 


গুত্রবধূগণের অতিভক্তির কারণ অনুমান করিতে ময়নার 
মুহূর্তমাত্রও সময় লাগে নাই; কিন্তু কোন সন্দেহের ভাব 
প্রকাশ না করিয়! তিনি চারি বধূর সম্মুথেই মিষ্টান্ন কয়টি 
আহার করিলেন। রাণীগণ মহানন্দে পুরীমধ্যে প্রত্যাবর্তন 
করিয়া ময়নার মৃত্যুর প্রতীক্ষা করিতে লাগিলেন । বলা- 
বাল্য মহাঁজ্ঞানের প্রভাবে ময়নামত্তী দ্বাদশ দণ্ডের মধ্যেই 
বিষ জীর্ণ করিয়৷ ফেলিলেন। 

এই কৌশল ব্যর্থ হওয়াতে রাণীরা আর এক বুদ্ধি স্থির 
করিলেন। তীহাঁরা বলিলেন_ময়নামতী যে জ্ঞানবলে 
ভূত ভবিস্তৎ গণনা করিয়] পুত্রকে গৃহত্যাগ করিতে আদেশ 
দিতেছেন সেই জ্ঞান কতদুর সত্য পরীক্ষা করিয়। দেখা 
হউক । ময়নামতী ষদ্দি পরীক্ষা দিয়! প্রমাণ করিতে পারেন 
যে তিনি প্রকৃতই মহাজ্ঞানের অধিকারী তবেই যেন গোবিন্দ- 
চন্ত্র তাহার আদেশ পালন করেন-_-অন্রথা নয়। গোঁগী- 
ঠাদেরও ইহা সংগত বলিয়৷ মনে হইল, সুতরাং তিনি মাতার 
মহাজ্ঞানের পরীক্ষা লইতে মনম্থ করিলেন। ময়ন! বুঝিলেন 
এবুদ্ধি গোগী্টাদের মন্তিষ্ক হইতে উদ্ভৃত্ব হয় নাই) কিন্ত 


তাহাতে কোন ক্ষতি বৃদ্ধি নাই। পরীক্ষা তিনি সকলের, 


নিকটেই দিতে গ্রস্তত আছেন। তিনি বলিলেন__ 


.হগ্রান্বিম্চ্ক্র গু সস্সামভ্ডী 


গু ৫গি 


«এক পরীক্ষার বদল শত পরীক্ষা দিমু। 

তবু তোর রাজার বেটা বাড়ী ঘর ছাড়ামু ॥ 
সত্যই ভীষণ রকমের পরীক্ষার বন্দোবন্ত হইল। মহাঁজ্ঞান 
বলে ময়নামতী সমস্তই নিরিদ্বে উত্বীর্ণ হইলেন। ম্রাত মণ 
ফুটন্ত তৈলের মধ্যে সাত দিন ডূবিয়া থাকিয়াও তাহার 
দেহ অবিকৃত রহিল। তুষের নৌকায় চড়িয়া তিনি সমুদ্র 
অতিক্রম করিলেন। তৌল যন্ত্রে ওজন করিয়া দেখা গেল-_. 
তাহার দেহ পোল্তদানার অপেক্ষাও লঘু। এইকূপে দাত 
পরীক্ষা শেষ হইলে গোঁবিন্দচন্ত্রের সন্দেহ দুর হইল। 
ময়নামতীর জ্ঞান যে মিথ্যা নয় তাহা তিনি এতদিনে বিশ্বাস 
করিলেন। যস্তান হইয়! তিনি মাতার সম্বন্ধে যে জঘন্ত 
ধারণ! পৌঁষণ করিয়াছিলেন সেজন্ত গভীর অনুতাপ জন্গিল। . 
স্বীয় নির্কুদ্ধিতাঁর জন্য তাহার আর ছু:খের সীমা রহিল না। 
গোগীটাঁদ স্থির করিলেন, যাহা হইবার হইয়া গিয়াছে__ 
এখন 


“আর আমি পরীক্ষা না নিব মায়ের বার বার। 
শির মুড়িয়া ধ্মরাঁজ মুগ ছাঁড়িমু বাড়ী ঘর ॥” 

পুত্রের মতি পরিবতিত হইল দেখিয়া ময়নামতী আশ্বস্ত 
হইলেন। 

সংবাদ শুনিয়া চারি নারীর মাথায় বজ্রাঘাত পড়িল। , 
তাহার! পুনরায় সাঁজসজ্জী করিয়া রাজাকে প্রতিনিবৃত্ত 
করিবার জন্ত উপস্থিত হইলেন। কিন্তু সকল লীল! কৌশল, 
অনুনয় বিনয় এবার নিক্ষল হইল। অবশেষে অছুনা 
কাঁদিয়া বলিলেন ১ 


"তোমা না দেখিয়া আমরা প্রাণ দিমু চারি রম] 
মরিমু যে গরল ভক্ষিয়। ।” 


কিন্ত তথাপি গোবিন্দচন্ত্র অচল, তিনি শুধু একটি কথা বিয়া 
পত্বীগণকে বিদায় দিলেন। বলিলেন__ 


প্ঘরে যাও অন্ুনা মাগো ঘরে যাও তুমি । 
এ বাঁর বছর রাজ্য ভ্রমি আসি আমি ।” 


বন্ধে ঝুলি এবং হন্যে “দোয়াদূশ” লইয়া গোপীর্টাদ্দ সত্য 
সত্যই গৃহত্যাগ করিলেন। রাঁজপুরীতে ক্রন্দনের রোল 
উঠিল; বাড়ী হইতে বাহির হইয়াই রাজ! সর্বগ্রথমে 
হাড়িফার নিকটে উপস্থিত হইলেন। গৌগী্ঠাদকে দেখিয়া 


০২ 


যোগীবর আদর আপ্যায়ন করিয়া আসনে বসাইলেন। 
অনন্তর গোবিন্দ হাড়িফার চরণে গ্রণত হইয়। বলিলেন__ 


*তোদ্ধার চরণে গুরু সেবা দিলু' আদ্ছি। 
এ ভব তরিতে জ্ঞান মোরে দেহ তুদ্ধি ॥ 


রাজার বিনয়ে সন্তষ্ট হইয়া হাঁড়িফা তাহাকে শিন্ত করিতে 
শ্বীকৃত হইলেন। 
“ সংশয়ীর মনে যখন বিশ্বাস উৎপন্ন হয় তখন তাহা 
ক্বভাঁবতই দৃঢ়মূল হইয়া! থাকে। নাস্তিকতাঁবাদীর! বিচার- 
বুদ্ধি এবং যুক্তিতর্কের দ্বারা ঈশ্বরের অস্তিত্ব একবার স্বীকার 
করিলে তীাহারাই চূড়ান্ত আস্তিক হইয়া উঠেন। তখন 
কাজেকর্মেঃ আচারে অনুষ্ঠানে তাহাদের নূতন বিশ্বীস 
অত্যন্ত প্রকট হইয়া দেখা দেয়। গোঁবিন্দচন্ত্রেরও তাহাই 
হইল। যেহাঁড়িফা সম্বন্ধে তিনি নানাপ্রকার নিন্দাবাদ 
এবং কটুক্তি করিয়াছিলেন আজ তীহারই চরণধুলি তাহার 
শিরোভূষণ হইল। গোপী্টাদ গুরুর সেবকরূপে তাহার 
সহিত দেশদেশীস্তর ভ্রমণ করিতে লাগিলেন। ছিন্ন 
কম্থাধারী ভিক্ষুকবেশী এই সন্গ্যাসীকে দেখিলে আজ কে 
বলিবে যে ইনিই সেই বাইশ দণ্ডের অধিপতি মহারাজ 
গোবিন্দচন্দ্র? 

পথে চলিতে চলিতে একদিন মহারাজ গোপীর্টাদ 
অত্যন্ত ক্লান্ত হইয়! গুরুর অন্নুমতি লইয়া এক বৃক্ষতলে শয়ন 
করিলেন। কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই গভীর নিদ্রায় তাহার 
দুই চক্ষু মুদ্রিত হইয়া আদিল। হাড়িফা শিবের সেবায় 
সন্তুষ্ট হইলেও তাহার ভক্তির পরীক্ষা ভাল করিয়া গ্রহণ 
করেন নাই। আজ সেই পরীক্ষা লইবার জন্ত তাহার 
ইচ্ছা জন্মিল। গোপী্টাদকে গভীর নিদ্রায় অভিভূত 
দেখিয়া গেই সুযোগে হাঁড়িফা তাহার থলির মধ্য হইতে 
রাঞ্জার শেষ সম্বল একুশ কড়া কড়ি হরণ করিলেন। 
গোপীটাদ তাহার কিছুই বুঝিলেন না । যথাঁসময়ে নিদ্রাভঙ্গ 
হইলে রাজা পুনরায় গুরুদেবের সহিত চল্রিতে আরম্ত 
কঁরিলেন।' কিয়দ্দর অগ্রসর হইলে পথপার্থে এক পানশালা 
দেখিয়া হাঁড়িফার সুরা পান করিবার ইচ্ছ! হইল, কিন্ত 
তাহার নিজের কাছে কপর্দক মাত্র ছিল না বলিয়! তিনি 
শিশ্তের নিকটে কিছু অর্থ বাঁচঞ1 করিলেন। বলা বাহুল্য 
রাজার ভক্তির পরীক্ষার জন্তই ছাড়িফার এই সমস্ত ছলন]। 


ভারত 


[ ২৮শ বর্ষ-_২য় খণ্ড--বঠ সংখ্যা 


যাহাই হউক হাড়িফা মদ্যপানের নিমিত্ব অর্থ প্রার্থনা 
করিতেই শিষ্য তাহার শেষ সম্বল একুশ কড়া কড়ি দিতে 
প্রতিশ্রুত হইলেন। কিন্তু কি আশ্র্য! ঝুলির মধ্যে ত 
একটি কড়িও অবশিষ্ট নাই। 

কয়েক দণ্ড পূর্বেও তিনি একুশ কড়া কড়ি ছিল 
দেখিয়াছেন, ইহাতে ভুল হইবার ত কোন কারণ নাই। হায় 
হাঁয় গুরুর নিকটে প্রতিজ্ঞা করিয়াছেন, সে প্রতিজ্ঞা রক্ষা 
হয় কেমন করিয়া? অঙ্গীকার ভঙ্গের ন্যায় মহাপাপ যে 
আর কিছুই নাই। পূর্ব জন্মের কোন্‌ দুক্কতির ফলে আজ 
এই মহাপাপের ভাঁজন হইতে হইল? এইরূপে নিজ অৃষ্টকে 
ধিক্কার দিতে দিতে গোবিন্দচন্ত্র কাঁতরভাবে বিলাপ করিতে 
লাগিলেন। ভক্তের দুংখ দেখিয়া! মনে মনে করুণা জন্মিলেও 
হাঁড়িফা বিচলিত হইলেন না। তিনি শিষ্তের ভবিষ্যৎ উন্নতির 
জন্য তাহাকে অধিকতর কঠিন পরীক্ষার জন্ত প্রস্তত করিতে 
লাগিলেন। তিনি জানিতেন এ পরীক্ষায় যে উত্তীর্ণ 
হইতে পারিবে ইছলোঁকের বাহা কিছু সকলই তাহার 
বশীভূত হইবে। রোগ শোক জর! মৃত্যু সমস্তই তাঁহার 
করায়ত্ত হইবে। পৃথিবীকে সে মৃত্তিকা নিমিত ক্রীড়নক 
বলিয়া মনে করিতে পারিবে । মোহের দ্বারা আচ্ছন্ন হইয়া 
এখন যদি গোবিন্দচন্ত্রের প্রতি করুণা করেন তাহা হইলে 
তীহার ভবিষ্যতের উন্নতির পথ রুদ্ধ হইবে। ইহা চিন্তা 
করিয়া হাঁড়িফা হীদয়কে দৃঢ় করিয়া কঠোর কর্তব্য পালন 
করিয়া যাইতে লাগিলেন । শোঁক-বিহবল শিস্তকে ডাকিয়া! 
হাঁড়িফা বলিলেন-_প্রতিশ্রতি রক্ষা করা মানব মাত্রেরই 
কর্তব্য, অঙ্গীকার করিয়া যে তাহা পাঁলন করিতে না পাঁরে 
সে পণ্ড .অপেক্ষাও হীন। তুমি একবার যখন প্রতিজ্ঞা 
করিয়াছ তখন যে-কোন উপায়েই হউক তোমার তাহা 
রক্ষা করা উচিত। তাহা না হইলে পরলোকে অনন্ত নরক 
যন্ত্রণা সহা করিতে হইবে । তোমার অন্ত কিছু না! থাকিলেও 
দেহটা ত আছে তাহা বিক্রয় করিয়াও তোমার প্রতিশ্রুত 
অর্থ এখনই দান করিতে পার। .গুরুবাক্যে গোবিন্দচন্দ্র 
তৎক্ষণাৎ আত্মবিক্রয়ে সম্মত হইলেন। তখন হাড়ি 
একুশ কড়া মূল্যে গোপীর্টাদকে হীরা নটা নামী এক 
বারবনিতার নিকুটে বন্ধক রাখিয়া সেখান হইতে 
প্রস্থান করিলেন। 

্রিয়দর্শন রাজপুত্রকে দেখিয়া হীরা মুগ্ধ হইয়। তাহার 


ক্যো্ঠ--১৩৪৮ ] 


নিকটে আত্মসমর্পণ করিতে ইচ্ছা করিল কিন্তু নিফলঙ্ক- 
চরিত্র দু়চেতা গোবিন্দচন্ত্র হ্বীয় শক্তিবলে সর্বপ্রকার 
প্রলোভন অবঙ্গীলাক্রমে জয় করিলেন। অবশ এ নারীর 
বাক্য অবহেলা করার জন্য রাজপুত্রকে বড় কম দুঃখ 
সহা করিতে হয় নাঁই। 

দ্বাদশ বৎসর ধরিয়! ক্রীতদাসের স্তায় তাহাকে বু হীন 
কর্ম করিতে হইয়াছে । হীরার আদেশে দুরবর্তী নদী 
হইতে তাহাকে প্লানের জল বহন করিয়া আনিতে হইত। 
নরপাল গোবিন্দন্দ্রকে ছাঁগপাল লইয়া বনে বনে 
চরাইতে হইত। এত সব দুঃখ তিনি অবনতমন্তকে সহ 


আক্কাশ-শ্রদ্লীশ 


ঞ৫ি 2 


ধ্যানে বসিয়া হাঁড়িফা সকলই জানিতে পারিতেন। 
শিল্ের শক্তি দেখিয়া! তাহার মন আননে পূর্ণ হইয়! উঠিত, 
কিন্ত তবুও তাহার উদ্ধারের জন্ত কোন ত্বরা করিতেন না৷। 
হীরার আবাসে দ্বাদশ বৎসর ' অতিবাহিত হইয়া গেলে 
হাঁড়িফা শিল্পের সম্বন্ধে সম্পূর্ণ নিশ্চিন্ত হইয়া! একদিন 
সেখানে উপস্থিত হইলেন। রাজা গুরুকে দেখিয়াই, 
ভূমিষ্ঠ হইয়া তাঁহাকে প্রণাম করিলেন । অতঃপর হীরার হত্ত 
হইতে মুক্ত করিয়া! যোগীবর গোঁবিনচন্দ্রকে পুনরায় স্বগৃহে 
পাঠাইয়৷ দিলেন। দ্বাদশ বংসর পরে গোগীটাদ গৃহে ফিরিয়া 
আসিয়া মাতার পদধূলি গ্রহণ করিলেন, দীর্ঘকাল পর পুত্রকে 





করিয়াছিলেন, তথাপি শুচিতা হারান নাই। দেখিয়া ময়নামতীর চক্ষে আনন্দাশ্র গড়াইয়া পড়িল । 
আকাশ-প্রদীপ 
শ্ীনিত্যানন্দ সেনগুপ্ত কাব্যতীর্ঘ 
আকাশের আলে! পথ নাহি পায় তবু নাহি ভোলে আকাশের কোলে 
ধুলার অন্তরালে, আছে তার আত্ীয়, 
ম্লান হ'য়ে এলে শান্তর টিকা চিরবিরহের যবনিকা হানি, 
ধরার ধূসর ভাঁলে। আঁলোরে সে জানে প্রিয়। 
সবিতার আলো, টারদিমার হাঁসি তাহারি স্মরণে প্রতি সন্ধ্যায় 
মেঘের কাঁরায় বাঁধা পায় আসি, ভীরু দীপথানি জেলে রেখে যাঁয়, 
হারাইয়া যায় পথের নিশান! আকাশ-প্রদীপে বলে £ ণপ্রিয় মোর 
কালো কুয়াশার জালে, দুখের দেয়ালি নিও, 
আঁকাঁশের আলো আনে না আশীষ তোমার অমৃত-পরশে এ ধূলি 
ধরার ধূসর ভালে। ফুল হ'য়ে ফোটে, প্রিয় ! 
গু রঃ রা রঃ 
গগনে গানের কত সমারোহ মোরা মরতের মাটির মাম্থষ, 
গ্রহ-তারকাঁর মেল" ধরণীর ধুলাবালি 
কানায় ভরা করুণ ধরণী আত্মা মোদের করিছে মলিন, 
চেয়ে রয় ছুই বেলা! চিত্তে জমিছে কালি। 
মুগ্ধ সে মেয়ে কত আশা! ক'রে সীমা-ঘেরা এই দীন থেলাঘরে 
বালির বসতি ভাঙে আর গড়ে আঁসে না আকৃতি অসীমের তরে, 
মরুভূমি ”পরে তরুর স্বপ্নে তবু কোন খনে মলিন এ মূনে 
রচে আনন্দ-মেলা, সে-্চরণে দিলে ডালি, 
অন্ধ নিয়তি আনে দুর্গতি মোরা মরতের মাটির মাচ্যষ - 
ভাঙে ভূল, ভাঙে খেল! । আকাশে গ্রদীপ আলি ॥ 


ভারতে প্রতৃতত্বান্বশীলন 


শ্ীজহরলাল বন্ধ 


পুরাতমের সঙ্গে নৃতনের, অতীতের সঙ্গে বর্তমানের যোগনুত্রের অনুসন্ধান 
করিতে গেলে ইতিহাস পাঠ করার প্রয়োজন । কিন্তু সেই যোগমুত্রের 
সূঠিক্ষ বিবরণ সব সময়ে ভাল রকম পাওয়া যার না। অন্ত দেশের কথা 
ছাড়ি! দিয়! নিজেদের দেশের কথাই বলি। 

আমাদের দেশে বর্তমানের তো প্রত্ঙ্গদরশী আমরা বরং ; কাজেই 
ভার আর অন্ত প্রমাণ সম্পূর্ণ নিশ্রয়োজন। বঙ্গোপদাগরে কোন দিন 
সঙ্গোপনে 'এম্ডেন' উ“কি মারিয়াছিল বা সেখানা কতদুর ত্রাসের সঞ্চার 
করিয়াছিল-_সেট! অন্তত আমাদের বয়পী কাহারও অবিদিত নাই। তারপর 
জর্দুর অতীতের ঘটনাবলী সম্বন্ধে জানিতে হইলে যদিও আমদের 
নিজেদের প্রতক্ষদৃ্টি ও জ্ঞানের সীমার মধ্যে পাই না, তথাপি তাহার জন্য 
বেদীদুর ছুটাছুটি করিতে হয় না। আমাদের বাপ-পিতামহদের নিকট হইতে 
অদূর অতীতের সম্ঘন্ধে এত পুগ্ধানুপুহ্খ বিবরণ পাই বা পাইতে পারি যাহা 
হইতে মনে করিতে পারি যেন সেগুলোর সম্বদ্ধেও আমাদের জ্ঞান বা ধারণা 
বর্তমান সম্বন্ধীয় জ্ঞানের মতই শ্পষ্ট, প্রযাদবজ্জিত এবং নিধু'ত। সিপাহী 
বিক্টোছের কথ! বা মণিপুরের লড়াইয়ের কথ! বা ব্রহ্ম-বিজয়ের কথ! সম্বন্ধে 
আমরা যতদুর অবগত আছি বা যতদুর শুনিতে পাইয়াছি সে সমূদু় বৃত্াস্ত 
সম্বন্ধে সন্দেহ করিষার আমাদের কিছুই নাই। 

কিন্ত সুদুর অতীতের সম্বন্ধে আমাদের জ্ঞান কতটুকু? দুরস্থিত 
চক্রবালের বহিভূতি জিনিষ যেমন আমর! শুধু চোখে দেখিতে পাই ন| 
তেমনি হুদূর অতীতের ঘটনাবলীর নিকটে আমাদের প্রত্যক্ষ জ্ঞান কোন 
মতে পন্ছছিতে পারে না। সুদুর অতীত ঘটনাবলীর সম্বন্ধে একটা ভাল 
রকম ধারণ! ক'রে নিতে হ'লে যে সমুদয় উপাদানের সাহায্য গ্রহণ করিতে 
হয় সেগুলি কতদূর নির্ভরযোগ্য তাহা আগেই বিবেচনা কর! উচিত। গ্রীক 
আক্রমণের পূর্বের যুগের ভারতবর্ষের ইতিহাস সম্বন্ধে জ্ঞান অর্ধ শতাব্দী 
পুর্বে আমাদের যাহ! ছিল তাহা! অতি অকিঞ্ংকর এবং অনির্ভরযোগ্য। 
কিন্তু গত অর্ধ শতাবী মধ্যে ্রতিহাসিক গবেষকগণ ভারতের প্রাচীন 
যুগের রীতিমত ধারাবাহিক ইতিহাস গ্রস্থনোপযোগী মালমদল! এত 
আহরণ করিয়াছেন যে এক্ষণে ভারতের শ্রাচীন যুগের ইতিহাস রচদ্লিতাকে 
কল্পনার পক্গপুট বিস্তার করিয়া আর মাঝে মাঝে অন্তরীক্ষে উড্ডীন 
হইতে হইবে না। 

এইরাপ দেখিতে 'পাওয়া যার যে, পুরাতন্বানুশীলনের স্বারা আমরা 
অনেক অজ্ঞাতপূরব্ব জিনিষের বা তথ্যের ষন্ধান পাই এবং পাইতেছি। 
প্রাচীন যুগের লোকদের জীবনধারা, তৎকালীন ঘটনাবলী ইত্যাদি অনেক 
তথ্য সম্ক্য়াপে উদ্ঘাটিত হইতে পারে-_পুরাতত্বামুশীলন সাহায্যে। 
আমিম যুগের ভ্বসত্য বর্ধরর মানব কির়পে ক্রমোক্নতিনুত্রে বর্তদান যুগের 
হুসত্য মছামানবে,পরিপত হইয়াছে, তাহার রোমাঞ্চকর অথচ ধুকতিপূর্ণ 


নির্ভরযোগ্য বিবরণ পাইতে হইলে এই পুরাতত্বের আশ্রয় লওয়া ছাড়া 
গত্যন্তর নাই। 

বিখ্যাত প্রত্বতাত্মিক 2:০0১1 814০6 ০০6 ভাহার" 001160607 
06 27610150110 0 1:000101500110 41001051065” নামক পুষ্তটক 
লিখিয়াছেন 01) 300) 119) 1863, [ ০806 ৪0055 & £600176 
010101060 17010161060 20017 1106 10191917151 001016008০1 
2. 32191110511551 016 00€ 10 00912161100 82156] 00 0)6 
[081506 £0870 80 28112582120), 50010 01 81250155, 10 
021)0875, 1864 11755151060. 01১6 01905 2110 00070 (৮0 
1010761 0812601100)65 01 19101081 51)81965 11) 11)6 0916119] 
3000560 7097 61121551067 01 07০ 011) 0060 08000 
[001151)90 1060111)10 117110161761715,৮ 


নানাস্থানের ভূগর্ড হইতে প্রচুর ভগ্ন পাত্রের ও প্রচুর প্রস্তরাদি নির্িত 
অন্ত্রশস্ত্রে উদ্ধার সাধন হইয়াছে। সেই সমুদয় একত্র করিয়! অভিনিবেশ 
সহকারে বিচারপূর্ধক পরীক্ষা! করিলে প্রাগৈতিহাসিক যুগের (যাহাকে 
এতিহাসিকেরা এখন বলেন 081260110710 86 এবং 260110]10 22৩) 
সম্বন্ধে অনেক তথ্য জানিতে পার! যার। সেই স্দূর অতীতের দিনে 
কুস্তকারগণ কত যে যত্বসহকারে নান কারুকার্ধযখচিত রঙবেরঙের 
নয়নাভিরাম পাত্র নিন্মীণ করিতেন তাহা! দেখিলে বিল্মিত হইতে হয়। কে 
বলে_ তাহারা বর্ধ্ঘর ছিল? কে বলে-_তাহার! সভ্যতার আলোক তখনও 
পায় নাই? কত শত শত বৎসর পূর্ব্ে তাহারা পাত্র গাত্রে কি হুন্দর হুন্দর 
রঙ ফলাইয়! গিয়াছেন ; আর এই নুদীর্ঘকাল পরেও সেই ভাঙা পাত্রগুলির 
গাত্রে অস্থিত চিত্রগুলির রঙ এখনও যেন নৃতন রহিয়াছে ! 

এই প্রসঙ্গে পূর্বোক্ত চ০০%০ সাহেব লিখিয়াছেন__ 


£1156 10980501009 00৮6] 6018 ৮111610 1)70106]। 8700810 
60 009 8011) 01 1১06978, 199700)61)৮1879 56889181001). 1) 
০010 £9৮০8--09769০]5 0:686:560--81)0দ /8116৮0 17) ৪1)9])9, 
69006 2100. 010080017080002 22091650985 8106 01 000 
00116006100 1৪ (109 £০86 11006 16 00103 9101) 290%7:20701091 
01962906100 0£ 006 60019 01 885618] 895. 01 0) 206: 
1)  001180107) 0006 10096 11066798011) 0716 19 & 10181) 
৮101) 8 ৪1007 8109 ৪7006 10010. 1) 006 11609108696, 
[116 81)81)9 0 006 8108৮ 19 090105ন17 81:01)910 ৪00 (006 
68161)61) 879 18 62:00106107)8115 00889 10180 81081] 8 56880]. 


প্রথমে এই পুরাতন্বানুশীলনের কোন শৃষ্ধলাবন্ধ ধার! ছিল না; কিন্ত 
ব্ হুনিপুপ গবেষকের অপরিসীম উদ্ধম ও অক্লান্ত পরিশ্রমের কলে অধুনা 
পুরাতত্থানুশীলন ধারা খুব কুনিযন্ডিত হইয়াছে এবং গত অর্ধ শতাব্দীর 
মধ্যে ইহার! অসাধ্য সাধনের কান করিয়াছেন। হুযোগ্য এবং সুদক্ষ 
পুরাতন্বজ্জ পণ্ডিতগণের তত্বাবধানে অভিনিযেশসহকারে কাজ করিয়া 
তূগর্ভ খননকারীর৷ এক্ষণে হাজার হাজার বৎসর পূর্বেকার অতীত যুগের 


৫৪8 


জ্যৈ্ঠ--১৩৪৮ ] 


ইতিহাসের পৃষ্ঠাগুলি আমাদের চক্ষের সামনে একে একে উদ্ঘাটিত 
করিতেছেন। এইরাপে প্রত্বতস্বান্ুশীলনের ফলে গত অর্ধ শতাব্দী মধ্যে 
ভারতের সুপ্রাচীন যুগের ইতিহাসে অনেক নূতন পৃষ্ঠা সংযোজিত হইয়াছে 
এবং অনেক পৃষ্ঠা আমুল পরির্ঠিত হইয়াছে । 

ভারতের প্রাচীন যুগের ইতিহাসের ঘে ষে অংশ পূর্ষে ছুর্ভেস্ভ অন্ধকারে 
আচ্ছন্ন ছিল এখন এই প্রত্বতান্বিকের৷ তাহার অনেকাঁংশের উপর প্রচুর 
আলোকপাত করিয়াছেন ও করিতেছেন। মুত ব্যক্তি [২10 ৪ 
৬/1011-এর মত শত শত বর্ষের বিস্বৃতির গুহা হইতে পুনরুখিত 
হইয়াছেন। যুগমানব যীণুধৃষ্টের আবির্ভাবের শত শত বর্ষ পূর্বেকার 
অধিবাসিগণের দৈনিক জীবনধারা ব৷ চিন্তনধারার সঙ্গে আমাদের নিজেদের 
জীবনধারার বা চিন্তনধারার কত এক বা অনৈক্য পরিলক্ষিত হয় তাহাও 
বিচার করিবার সুযোগ স্থবিধা এখন আমাদের ভাগ্যে ঘটিতেছে। 
প্রস্তরোপরি খোদিত ব! ধাতুপটোপরি উৎকীর্ণ লিপিমালার পাঠোদ্ধার 
এখন সম্ভবপর হইয়াছে। মেই সুদুর অতীতের হুন্দরীগণ কোন্‌ কোন্‌ 
অলঙ্কার ধারণ করিতেন বা তখনকার বিলাসিনীগণের চারু অঙ্গ প্রসাধনের 
কি কি উপাদান ছিল তাহারও সন্ধান পাওয়! এখন সম্ভব হইয়াছে। 

একথা নিতান্ত সত্য যে প্রাচ্যের সুদূর অতীত এখন প্রত্বতাত্বিকের 
কৃপায় আমাদের নাগালের মধ্যে আসিয়াছে। প্রত্বৃতান্বিকের! এখন সেই 
সুদুর অতীত যুগের পুষ্মানুপু্খ বিবরণ আমাদের নয়নপথে উপস্থাপিত 
করিয়াছেন ও করিতেছেন। 

917 1,6017810 ৬/০০0116% যথার্থ ই বলিয়াছেন_-“আজ আমর! 
প্রত্বতাত্তবিকগণের অক্লাপ্ত পরিশ্রমের ফলে খৃষ্টপৃবব চতুর্দশ শতাব্দী পূর্বের 
যুগের মীশরের সম্বন্ধে এত খুটিনাটি জানিতে সমর্থ হইয়াছি যাহা আমরা 
ৃষ্টায় চতুর্দশ শতকের যুগের ইংলগের সম্থদ্ধেও জানিতে পারি নাই। 
দীর্ঘকাল বিন্মৃতিগর্ভে নিমগ্ন প্রাচীন সুমেরিয়ান এবং হিটাইটদের 
সুবিস্তীর্ণ রাজ্যের সম্বন্ধে বা আসীরীয়। এবং ব্যাবিলনবাসিগণের হাজার 
হাজার বৎসরের তৃগর্ভস্থ নরকস্কাল সম্বন্ধে আজ যে এত বিস্তৃত বিবরণ 
জানিতে সমর্থ হইয়াছি_তাহার জন্য আমর! এ কোদাল এবং খনিত্রের 
নিকটেই খণী।” 

পূর্বে পাশ্চাত্য পগ্ডিতের৷ ভারতীয় প্রত্বতব্ব সম্বন্ধে বিশেষ আস্াবান 
ছিলেন না। যে .সময়ে আফগানিস্থান দেশসন্তৃত অশান্তির প্রচণ্ড বহি 
উত্তরোত্তর পুঞ্জীভূত হইয়। ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমাস্তকে মন্ন্ত করিয়া 
চলিয়াছিল প্রায় সেই সময়ে (১৮৩৮ খৃষ্টাব্দে) ভারতে এই প্রত্বতত্বানুশীলন 
বিদ্যার প্রথম প্রবর্তন হয়। যে ক্রাঙ্গীলিপি শত শত বর্ধ ধরিয়া অপঠিত 
ও অনুদঘাটিত ছিল, ধী বৎসরে সেই ব্রাঙ্মীলিপির প্রথম পাঠোদ্ধার সাধন 
করেন জেম্‌স্‌ প্রিন্সেপ। এই সুপ্রাচীন ভারতীয় লিপির পাঠোদ্ধার হইতে 
ভারতে এক নুতন যুগের প্রবর্তন হয়। অনন্তর হাজার হাজার প্রাচীন 
লিপি আবিষ্কৃত ও পঠিত হওয়ার ফলে ভারতের প্রাচীন বুগের ইতিহাসে 
কত নূতন পৃষ্ঠা সংযোজিত করিতে হইন্বাছে ! 

_ কিন্তু ছুখের বি বহদিন . ধরি! শুধু ইউরোগীয় পডিতেরাই এই 
ভারতীয় প্রত্বতত্বানুশীলন ব্যাপারে নিযুক্ত ছিলেন। 91215781061 





"স্স্য্স্প্্ খা দ্ . 


ভ্ঞাল্ুভে শুক্ষতস্ত্বান্চুম্দীলন্ন 


গর ₹ 





0807 প্রমুখ ইউরোপীয় পত্িতগণের বিশেষ প্রচেষ্টার কলে 


১৮৬২ খুষ্টাযোে ভারতগবর্ণমেন্ট কর্তৃক প্রত্বতত্ববিভাগের উদ্বোধন হয়, আর 
এ বৎসরেই 00100108027) সাহেব স্বয়ং ভারতীয় প্রত্বতত্বানুশীলন 
বিভাগের সর্বময় কর্তা নিধুক্তহন। , 

সার দেশটা মাঝে মাঝে পর্য্যবেক্ষণ কর! ও প্রার্টীন প্রতিহাসিফ 
তথ্যসন্তারে সমৃজ্ধ বিবরণীসমূহের ধারাবাহিক সন্কলন করা-_এই সব ছিল 
কানিংহামের প্রধান কাজ। এ কাজের প্রথম কর্মী কানিংহাম, কাজেই 
তাহাকে অনেক অন্ুবিধ। ভোগ করিতে হইয়াছিল ; কিন্ত তিনি ই 
বিষয়ে প্রকৃত অনুরাগী ছিলেন বলিয়া অক্লান্ত অধ্যবসায় সহকারে বিশেষ 
যোগ্যতার সহিত বহুদিন ধরিয়া এই কার্ধ্য পরিচালন করিয়াছিলেন । 
্রত্বতত্ব বিভাগ হইতে ঘে সকল বিবরণ তিনি প্রকাশিত করিয়াছিলেন 
সেগুলির মুল্য আজিও অক্ষুঙ্ণ রহিয়াছে। পুরাতন বৌদ্বধ্পসন্তথীয 
তথ্যলাভোপযোগী স্থানসমূহের অবধারণ ও প্রাচীন ধ্বংসাবশেধসযুছেকস 
সঠিক সময় নির্ধারণে কানিংহীম ছিলেন সিদ্ধহস্ত | রি 

ভারতের প্রাচীন যুগের ইতিহাস রচয়িতা সুবিখ্যাত পাশ্চান্তা পণ্ডিত 
ড10০67 50010 বলিয়াছেন, "ভারতের প্রাচীন যুগের ইতিহাস 
্রশ্থনোপযোগী উপাদান সব চেয়ে বেশী পাওয়া যায় চীনদেশীয় সুবিখ্যাত 
পর্যটক হিউ-এন্-্তাঙ্ডের বিবরণী হইতে! হিউ-এন্‌স্তাও ভারতে 
আসিয়াছিলেন খরষ্টীয় সপ্তম শতকে মহারাজ! হর্যবর্ধনের রাজত্বকালে। 
হ্ষবর্ধন ছিলেন একজন প্রবল প্রতাঁপান্িত বিচক্ষণ রাজা ; তিনি এই 
চীনদেশীয় পর্যযটককে বহু বৎসর নিজের কাছে রাখিয়াছিলেন এবং 
তাহার সহিত অন্তরঙ্গ বন্ধুর মত ব্যবহার করিতেন । হিউ-এন্‌-্াঙ 
ছাড়া আরও অনেক বিদেশী পর্যটক ভারতবর্ষ সম্বন্ধে বিৰরণী লিখি 
গিয়াছেন; কিন্তু উপাদান-সম্ভারে এই হিউ-এন্-্তাঙের বিবরীই 
মর্ধবাপেক্গা অধিক সমৃদ্ধ। ইহার ভ্রমণকাহিনী [৬০০৫৪ ০01 07৩ 
ড/650671) ৬০1] নামক পুন্তকে লিপিবদ্ধ আছে। এই অ্রমণ- 
ৃত্তান্তের সম্পূর্ণ কাহিনী সাধারণ প্রথম প্রচার করেন শ্রীযুক্ত কাঁনিংহাম 
এবং অচিরে ইংরেজী, ফরাসী, জার্মানী প্রসূতি ব্হ পাশ্চাত্য ভাষায় তাহ! 
অনূদিত হয়। ইউ-এন্-ন্াঙ উত্তরভারতের বহু স্থানে পরিভ্রমণ 
করিয়াছিলেন এবং প্রত্ততাত্বিকগণের যত ও পরিশ্রমের ফলে তাহার 
অমণের প্রতিটি বিবরণ আজ আমরা অবগত হইতে সমর্থ হইয়াছি। 

সরকারের এই প্রত্বতান্তিক বিভাগ এখন হইতে অনেক কাজ করিতে 
লাগিল বটে কিন্তু প্রাচীন শ্বৃতিমন্দির বা দেউলসমূহের সংন্কারকার্যোের 
দিকে এখনও কাহারও লক্ষ্য পড়িল না। সংস্কার তো দুরের কথা, বরং 
অনভিজ্ঞ লোকেরা তক্ষশিলা, সারদাথ, সণচি প্রভৃতি স্থানে, খননকার্ধ্যে 
নিযুক্ত থাকায় অনেক অনিষ্ট সংঘটিত হইয়াছে । 

১৮৭৮ খৃষ্টাব্দে বড়লাট লর্ড লিটন প্রত্ততত্ববিভাগকে লক্ষ্য করিয়া 
ঘলেন- “জাতীয় প্রাচীন কীর্তিকলার নিদর্শনগুলির সংরক্ষণ করা 
প্রান্দেশিক গবর্পসেন্টের হন্তে স্যণ্ত করিলে চলিতে পারে না” এই বলিয়া 
তিনি উত্ত বিভাগকে খাস ভারত অধীনে আনয়ন কয়েন! 


কিন্তু নও বিশেষ উল্লেখযোগ্য ক্লাজ কিছু হইতেছিল না ; বরং অনেক 


এ ৬০ 





মূল্যবান হছুর্নত পুরাতম জিমি ভারত হইতে ইউরোপ বা মাফিনের 
চিত্রশালার স্থানান্তরিত হুইয়। তখন ভারতকে ক্ষতিগ্রস্ত করিত। সেগুলি 
ভারতে থাকিলে ভারতের প্রত্বতান্বিকেরা আজ ভারতের প্রাচীন যুগের 
ইতিহাসের আরও কত নব নব তথ্যের হয়তো! সন্ধান দিতে পারিতেন। 
ভারতীয় প্রত্বতাত্বিকদের ক্ষতি শুধু যে এই প্রকারেই সাধিত হইয়াছে 
তাহা নহে; অর্থগৃপ্,, ধর্মদ্বেধী বিজাতীয়দের অত্যাচারের ফলেও 
গ্রস্ঠতাত্বিকদের ক্ষতি কম হয় নাই। মুসলমীনদের হাতে কত শত হিন্দ, 
বৌদ্ধ ও জৈন মন্দির এবং দেবদেবীর প্রতিকৃতি যে ধ্বংস প্রাপ্ত হইয়াছে 
তাহার সংখ্য। মাই। সোমনাথের মত কত দুপ্পাপ্য শ্মৃতিচিহ্ন সম্বলিত 
মন্দির এইরাপে ছুদধর্য অর্থলোভী নিম্দ্ম দস্াদের হাতে নিশ্চিহ্ন হইয়াছে। 
আবার কখনও বা অপেক্ষাকৃত গুণজ্ঞ স্থানীয় ব্যক্তির কৃপায় এই সকল 
স্মৃতিচিগ্ন ধ্বংসকারীর কবল হইতে রক্ষা পাইয়াছে। 

উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশস্ব এক পাঠানপন্লী হইতে ০. &. 
88511085 সাহেব বৌদ্ধযুগের এক উৎকীর্ণ মৃৎপাত্রের আবিষ্ধীর করেন। 
সেই পাক্রটি জনৈক স্থানীয় ব্যবসারী মুদ্রাধাররপে ব্যবহার করিতেছিলেন। 
এ মৃৎপান্রের গাত্রে থরোষ্টি অক্ষরে এবং প্রাকৃত ভাষায় উৎকীর্ণ ছিল-_ 
“থিওডোরেণ মেরিডার্থেন প্রতিথবিদ ইমে শরীরঃ শাক্ামুনিস ভগবতো 
বহুজনস্থিতয়ে” ( অর্থাৎবছলোকের শান্তির নিমিত্ত ভগবান শাক্ামুনির 
এই নিদর্শনগুলি থিওডোরস্‌ মেরিডার্থ কর্তৃক সংরক্ষিত হইল)। কি 
ইতিহাসের দিক হইতে, কি ধর্মের দিক হুইতে মৃৎপাত্রটির মূল্য যে কত 
বেণী তাহ! ভাবায় প্রকাশ কর! যায় না। এই উৎকীর্ণ লিপি আমাদের 

ংবাদ দ্রিতেছে যে, তখনকার দিনের জনৈক গ্রীক শাসনকর্তা একজন 

্বীনাতিদীন সেবকের মত ভগবান তথাগতের শারীর নিদর্শন সংরক্ষণ 
করিয়াছিলেন, সাধারণের মঙ্গলের জন্য এ মৃৎপাত্র মধ্যে । 

ভিল্স৷ নগরের সমীপবর্তী বেশনগরে একটি গরুড়ন্তস্ত আবিষ্কৃত 
হইয়াছে, তাহার গাত্রে উৎকীর্ণ লিপি হইতে জানা যায় যে, নরপতি 
£১2001101955-এর রাজত্বকালে তক্ষশিলা হইতে সমাগত 10197-এর 
তগবন্তক্তিপরায়ণ পু ৪1109001705 জ্লীভগবান বাসুদেবের প্রতি তাহার 
প্রগাড় শ্রদ্ধার নিদর্শন ম্বরাপ এ গরড়ধ্ধজ প্রতিষ্ঠা করেন। রাজা 
/510051701055-এর রাজত্বকালের সমন্ন হিসাবে এই স্তস্ত প্রতিষ্ঠার কাল 
আনুমানিক খঃ-পৃঃ ১৭৫ হইতে ১৩৫ মধ্যে । 

এইরাপে ১৮৬৯ থুষ্টাব্ধে পঙ্ডিত ভঁগবানলাল মথুরাতে জনৈক নিকুষ্ট- 
জাতীয় হিন্দুর গৃহের নিকট শীতলা-মন্দিয়ের মোপানে প্রোথিত একটি 
লালবর্ণের বেলে পাথরের থাম ভাঙ্গা! দেখিতে পান; সেটি ছিল কোন 
পরাক্রান্ত শক-ভূপালের প্রতিষ্ঠিত স্তস্তের শীর্ষভাগ । মধুরায় লব্ধ উক্ত 
তস্তগাত্রে উৎকীর্ণ লিপির উদ্ধার সাধনের দ্বার অনেক তৎকালীন ঘটনার 
নঙ্গে আমাদের পরিচয় হইয়াছে 

[):, 8511০ সাবাগগড়িতে যে পখ.তি-হি-বহি নামক উৎকীর্ণ 
লিপির আবিষ্কার করিয়াছেন তাহার মৃল্যও বড় কম নয়। ইহার সম্বন্ধে 
কানিংহাম সাহেব'লিখিয়াছেন-_“শ্লাপটখানি শত শত বর্ষ ধরিয়া মসল। 


বাট! শিলরগে ব্যবহৃত হখরায়,ইহারু স্বাবখানের লেখাগুলি হস) লাগিয়া 


স্ডঞাবুত্তজ্বঞ্ঘ 





[ ২৮শ বর্-_২র খণ--ষঠ সংখ্যা 


ব্যস্ত আর ব্-স্স্হটে ৮" সহ বড 


উঠিয়] গিয়াছে ।” ঢা51885597 সাহেব বলিয়াছিলেন-:৬717৩115৬6 
8250206৮111 56110815815 0705105060০ ৮015 006 
10151015 01 501111,1876 1) 10012, 176 ৮011) 600. 006 10210611515 
21901100217 200 06 36006100609 100 [76275 01690016100 
(0110. 


শুনিতে পাওয়া যায়, বারাণপীর নিকট গঙ্গাবক্ষে 100037108 
নিন্নাণকালে সারনাথের ধ্বংসাবশিষ্ট উপাদানগুলির সদ্যবহার কর! 
হইয়াছিল ! সারনাথের স্মৃতিস্তত্তগুলি কি কলাবিদ্ভার পরাকাষ্ঠ! হিসাবে, 
কি এ্রতিহাসিক নিদর্শন হিসাবে অতীব মুল্যবান, সন্দেহ নাই। সারনাথে 
লব্ধ ভগবান বুদ্ধদেবের এক মুর্তিকে লক্ষ্য করিয়া সুপর্ডিত 1০621 
97110) বলিয়াছিলেন, ॥সীভাগ্যক্রমে এই মুস্তিটি একবার নির্মম যবনগণের 
করাল কবল হইতে রক্ষা পাইয়াছে_-আর একবার ইংরেজ গবর্ণমেন্টের 
পুর্তবিভাগের সুযোগ কণ্টক্টরদিগের করকবল হইতে রক্ষা পাইয়াছে !” 

এই সারনাথের 766: [১2115-এতেই ভগবান তথাগত সব্ধপ্রথমে 
নির্বাণলাভের উপায় সন্থদ্ধে প্রকাশ্ঠভাবে উপদেশ দিয়াছিলেন বলিয়া 
এই স্থানেই তাহার প্রতিকৃতি সন্িবেশিত করা সুসঙ্গত হইয়াছে ; তাহার 
প্রধান শিশ্তুপঞ্চককে মঞ্চোপরি প্রদণিত করা হইয়াছে ; বামে শিশুসহ 
সত্ীলোকটি_-সম্ভবত এই মুস্তিটি যিনি করাইয়! দিয়াছিলেন তাহারই 
নির্দেশক। এই প্রতিকৃতিতে সেই যুগের ভাস্কর্যাকৌশলের পরাকাষ্ঠা 
পরিলক্ষিত হয়। উপরে পরিদৃগ্ঠমান পরীগণের প্রতিকৃতিগুলি দিওগড়- 
স্থিত অনুরূপ প্রতিকৃতিগুলির সঙ্গে উপমিত হইতে পারে। 

প্রসিদ্ধ প্রত্বতাত্বিক গোপীনাথ রাও তাহার চ.1617)1)5 01 117001 
[09008180075 নামক পুম্তকে লিখিয়াছেন__“ঝান্সীর অন্তর্গত দিওগড়ের 
এক প্রাচীন ভগ্ন বিষ মন্দিরে একটি প্রতিকৃতি পাওয়৷ গিয়াছে। ইহার 
তান্ধ্য বিচার করিয়া ৬10০670 52710) বলেন, এ মূন্তি অন্তত খৃষ্টী় 
ষষ্ঠ শতকের প্রথমভাগে নিন্মিত। পণ্ডিত গোগীনাথ রাওয়ের নিজের 
মতে প্র প্রতিকৃতি খৃষ্টীয় সপ্তম ব৷ অষ্টম শতকের প্রথম ভাগের” 

06065] ঘি" ০০ 12155) তাহার হ্ৃবৃহৎ 9%70)1 ৪170 115 
[২57)2175 নামক পুস্তকে সচী হইতে লন্ধ অনেক পুরাতন জিনিষের 
তালিকা! লিপিবদ্ধ করিয়াছেন। সাচী মধ্যভারতের ভিলসা নামক 
স্থানের নিকটবর্তী । এখানে বহু শ্তপ ও প্রন্তরমূত্তি পাওয়৷ গিয়াছে। 
সাঁচীর নিকটবর্তী উদ্য়গিরি হইতে লব্ধ এক গদাচক্রধারী চতুভূ'্জ 


ুর্যামস্তির কথা তিনি উল্লেখ করিয়াছেন। 
আবার 4 ঘ41)167 তাহার [1০000105001 41001001095 200 


[05071090975 9 বৈ. চ1951706 800 091) নামক প্রসিদ্ধ 
পুস্তকে অনেক স্থপ্রাচীন জিনিষের কথ! লিপিবদ্ধ করিয়াছেন । [০1৩ 
লিখিয়াছেন -সাহারাণপুরের অন্তঃপাতী খিজরাবাদ নামক স্থানে এক 


উৎকীর্ণ লিপি পাওয়া গিয়াছে যাহাতে চৌহান রাজকুমার বিশালদেবের 





* [011৩7 প্রসিদ্ধ সংস্কৃত কোষ-প্রণেতা অমরসিংহকে বৌদ্ধ 


বলিয়াছেন (“47027 51708132 &15005%7050. 80001515/ 19100- 


87290৩72700 ৪০0০৮ ০৫ 05৩ £১70210505158- 0, 85 )কিস্ত 
এ বিষয়ে খে শন্দেহ আছে। 


জ্যোষ্ঠ-১৩৪৮ ] 


১২২* সম্বতের (অর্থাৎ ১১৬৩ ধৃষ্টান্ধের ) জয়গাথ! দেখিতে পাওয়া যায়। 
এইরূপে চ 176! সাহেবের পুস্তক হইতে সুপ্রাচীন যুগের অনেক 
বিবরণ জানিতে পারা যায়। মাঠাকুয়ার নামক নুপ্রাচীন দুর্গে ভগবান 
বৃদ্ধদেবের এক প্রকাণ্ড প্রতিমুণ্তি পাওয়া গিয়াছে। মহানুভব কার্লাইল 
সাহেব নিজ ব্যয়ে এবং নিজ রুচি অনুযায়ী সংস্কারসাধন পূর্বক 
বুদ্ধদেবের এক নির্বাণ মূষ্তি এক প্রকাণ্ড বিহারে পুনঃ প্রতিষ্ঠিত 
করিয়াছিলেন ।” 

সুবিখ্যাত প্রত্বতাত্বিক কানিংহাম সাহেব ভাহার “156 31818 ০ 
131)221)0৮ নামক প্রসিদ্ধ পুস্তকে অনেক পুরাতন জিনিষের বিস্তৃত 
বিবরণ লিপিবদ্ধ করিয়াছেন। ভার্ছত বর্তমান পাটনা ষ্টেশন হইতে 
আন্বাজ সাত মাইল দক্ষিণে অবস্থিত। কানিংহামের মতে এই ভারহুত 
স্তপ খ্ব-পুঃ তৃতীয় শতকের জিনিষ । এখানে বৌদ্ধযুগের ইতিহাসের 
প্রচুর উপাদান আছে। বৌদ্ধজাঁতকের উপাখ্যানসমূহের বন্ুপ্রতিকৃতি 
এখানে পাওয়া গিয়াছ্টে। ভগবান বুদ্ধদেবকে দেখিবার বানায় হশ্টীপৃষ্ঠে 
আরঢ় হইয়। রাজ! অজাতশক্র এবং রথারঢ হইয়। রাজা প্রসেনজিৎ যে 
শোৌভাষাত্র। করিয়াছিলেন তাহার প্রস্তরময়ী প্রতিকৃতি এখানে দুষ্ট হয়। 
এখানে আর একটি উল্লেখযোগ্য প্রস্তরমুণ্তি পাওয়া গিয়াছে--সেটি শ্াবস্তি 
নগরের প্রসিদ্ধ জেতবাহনমঠের প্রতিকৃতি ; সেই প্রসিদ্ধ আবুক্ষ, সেই 
মন্দিরসমূহ, সেই প্রসিদ্ধ ধনী বাণিক অন।থপিগুদ--সবই একত্র পরিদুষট 
হয়। তাছাড়া বহু ষক্ষ-যক্ষিণী, দেব-দেবী, নাগর।জ প্রভৃতির প্রতিকৃতি 
এখানে পাওয়া খিয়াছে। সেই সকল পুরুষ ও স্ত্ীমুর্তির অলঙ্কারের 
প্রাচুম্য ও সৌন্দয্য বিশেষ উল্লেখযোগ্য । 

সারনাথের এই মুষ্তি সম্বন্ধে কানিংহাম বলিয়াছেন-“ [0১৩ ০1056 
ঠি00106 57000 0196 15 005 01 1106. [1051 ৫1151119011 
[9] 01 1116 51919, ৮/1)101) 15 51770012119 01121091870 
27950100619 111061)61700101 06110609701) 9০170011196 
007)000510100) 15 50 10101019 170100010171 08600 2025 0250 
10661) 06511760 5061 0)21700051 0 2 1702171150 1630০.* 
সারনাথের এইরাপ সুন্দর ুন্দর কত যে প্রস্তরমুস্তি নষ্ট হইয়া গিয়াছে 
তাহা কে বলিতে পারে? 

এই প্রসঙ্গে এলোরা এবং অজ্জন্তায় আবিষ্ষত গুহামন্দিরগুলিরও 
উল্লেখ কর! যাইতে পারে ; অব্রস্থ প্রস্তরমৃত্তিগুলি দেখিলে বেশ স্পষ্টই 
বুঝা যায় যে, সেই সুদুর অতীত যুগের ভাম্বরগণ কত সুন্দর হুন্দর মুন্তি 
গড়িতে পারিতেন; আবার অজস্তার প্রস্তর-গাত্রোপরি অঙ্কিত বর্ণাঢ্য 
চারুচিত্রাবলীও কম নয়নাভিরাম নহে! কোন্‌ ম্মরণাতীত যুগে 
অন্ুলেপিত বর্ণবিভ। সেগুলির আজও বিমলিন হয় নাই ! 

১৮৮৫ থুষ্টাকে 517 415880061 010717081)27 কার্য্য হইতে 
অবসরগ্রহণ করিলে প্রত্বতত্ববিভাগের ঘোর দুর্দিন সমুপস্থিত হয়; এ 
বিভাগের কর্ণাধাক্ষের পদ অপূর্ণ ই থাকিয়া যায়। পরে লর্ড কার্জন 
ভারতের বড়লাট হইয়। আঙ্গিলে এই প্রত্ততত্ববিভাগের কার্য আবার 
নবীন উদ্ধমে পরিচালিত হইতে থাকে । ১৯** খুষ্টাব্ধে তিনি বঙ্গীয় 
/১55500 90০150-র সদশ্যবুন্দকে সম্বোধন করিয়া যে বক্তৃত! দেন তাহ! 


ভান্সতে শ্রক্সভভ্তান্মশ্ীলন্ন 


৭৫৩ 


হইতেই তাহার এই বিভাগের প্রতি প্রগাঢ় অনুরাগের পরিচয় পাওয়া 
ঘায়। ধাহারা প্রত্ততত্ববিভাগ উঠাইয়া দিবার সংকল্প কারয়াছিলেন লর্ড 
কার্জন উক্ত অভিভাষণে প্রকারান্তরে তাহাদিগকে শাসাইয়া 
বলিয়াছিলেন-_ ভারতের পুরাতত্বের নিদশনগুলি যথাসম্ভব বজায় রাখ 
ও রক্ষা কর! হইতেছে ভারত গবর্ণমেন্টের একটা প্রধান কর্তব্য কর্। 
প্রত্ততত্ববিষ্ার রীতিমত ব্যাপকভাবে আলোচনা এদেশে সুরু হয় লর্ড 
কার্জনের আমল হইতে । এ সম্বন্ধে ব্ৃতাদানকালে তিনি হাহা 
বলিয়াছিলেন তাহাতে প্রত্রতত্ববিদ্ঞার প্রত তাহার প্রগাঢ় অনুরাগের 
পরিচয় পাওয়া যায় । তিনি বলিয়াছিলেন---“ [1)675 1785 ৮৩৫1 


91125 008 1850 0:0 96875, 9077) 507৮ 01 5015181060 
6706 010 0) 19810011155 (0০৬67700701) 10 160০0170156 105 
[559010517):110195 810 10 1)0166 11561 012. ৯/৬)1-2611160 
[80102017105 50610008107519661) ৭000170210160 200 
50006011065 061860, 199 015198655 %5 10 0১6 01571 0191125 
০0116562101) 200. 090615201077) 2130 1১ 01500155107) ০0৮61 
1651000206 5171)2165 01 800101) 01 005 06170191270. 10021 
0061)1710005,৮ ১৮৬০ খু্টান্দে লর্ড কানিও, এই প্রত্বতত্ববিভাগকে 


সরকার হইতে স্থায়ী সাহাযাদানের ব্যবস্থ! বিধান করেন এবং ১৮৬২ 
সালে 06170121 001/01081)270-কে প্রত্বতত্ববিভাগের বর্তৃত্পদে নৈয়োগ 
করেন। তদবধি এ বিভাগ বহুমূল্যবান তথ্যের উদ্ঘাটন দ্বার] ভারতের 
প্রাচীন যুগের ইতিহাস সম্বন্ধে প্রচুর আলোকপাত করেন। পরে ১৯০২ 
খৃষ্টাবে 51: 001) 212150081 ভারতীয় প্রতুতত্ববিভীগের সর্বময় বর্তা 
নিযুক্ত হন। মাশ্যাল সাহেব এই বিভাগের কাষ্যপরিচালন পদ্ধতির 
আমূল সংস্কার সাধন করেন। সৌভাগ্যত্রমে ভারতের তদানীন্তন বড়লাট 
সাহেবও ভাহাকে এই কাষ্যে প্রচুর উৎসাহ দিতে থাকেন। 
খৃষ্টাব্দে পুরাতন স্মৃতিস্তস্ত সংরক্ষণী আইন প্রবস্তিত হয়; এই আইনের 
দ্বারায় হিন্দু, বৌদ্ধ এবং মুসলমানদিগের প্রাচীন জীর্ণ স্মৃতিত্তন্ত ও 
সৌধমালা সরকার কর্তৃক সংরক্ষিত হইবার ব্যবস্থা বিধিবদ্ধ হয়। 
বাহিরের লোকেরা যাহাতে আর ভবিধতে শ্রী সকল মুল্যবান 
কীন্তিকলাপের কোনরূপ অপচয় বা ধ্বংস সাধন করিতে না পারে তঙ্জন্য 
রক্ষক নিযুক্ত করা হয় এবং সরকার হইতে উহাদের সংরক্ষণার্থ 
ইংরেজী ও বিভিন্ন দেশীয় ভাষায় ইস্তাহার জারি করা হয়। যাহাতে 
সকল প্রাচীন কীন্তির নিদূর্শন কোনরূপে নষ্ট নাহয় এবং যাহাতে 
প্রাচীন লিপিমালার পাঠোদ্ধারকার্ধ্য অব্যাহতভাবে সুশৃঙ্গলে পরিচাবিত 
হয় লর্ড কর্ন তাহার জন্য যতদুর সম্ভব বিধিবন্দোবস্ত করির়াছেন। 
তাহার এই মহৎ কার্য্ের জন্থ ভারতবামী চিরদিন ভাহার নিকট কৃতজ্ঞ 
থাকিবে। তাহার একান্তিক যত ও উৎসাহের ফলেই, প্রত্বতত্বতিভাগ 
আজ ভারতে এত অমূল্য সম্পদের সন্ধান দিতে সমর্থ হইয়াছে। তিনি 


ম্পষ্টই বলিয়াছিলেন--“1 15 17) 209 080870576508811) ০৪: 
এ 10 018 800 01500%61, €০ 019551$ি, 160:0006 ৪00 
0550[195, €০ ০9০৮ 200 0501731)67 8150. 00, 01167151920 


০0০3৩:৩.* ভারতীয় প্রত্বতত্ববিভাগ সৌভাণ্মক্রমে লর্ড কর্মের মত 
পরম বন্ধুকে দে সময়ে পাইয়ু্থিল বলিয়াই এত ক্রুত উন্নতির প. 


১০০ 


*৬০ 


(২) ফৌর-সংস্কতি, (৩) আগ্নেয়-সংস্কৃতি (৪) বৈষণব- 
সংস্কতি, (৫) শৈব-সস্কতি ও (৬) শাক্ত-সংস্কতি। ইছাবের 
সংক্ষেপত পরিচয় এইরূপ-_ 

(১) “গাণপত্য-সংস্কৃতি”_ শাস্ত্র বলিয়াছেন প্জানং 
গণেশং” | মাছষের যেদিন হইতে জ্ঞানের উদয় হইয়াছে, 
মানুষ বুদ্ধির ব্যবহার করিতে শিখিয়াছে, মান্থষের পঞ্চকৃষ্ট 
বা পঞ্চজন একত্রে “গণে” দলবদ্ধ হইয়াছে সেইদিন হইতেই 
গাঁণপত্য-সংস্কৃতির স্থষ্টি। হিন্দুর জ্ঞান-বিজ্ঞানের-_তাহাঁর 
. মানস-সম্পদের মূলে আছে এই গাঁণপত্য-সংস্কৃতি। হিন্দুর 
বিদ্া ও শ্রীর অধিষ্ঠাত্রী দেবত! সরস্বতী ও লক্ষ্মী গণেশেরই 
ভগিনী সহোদরা। হিন্দুর ললিতকল! এই দেব-গোঠীরই 
অবদান; উপনিষদের “দেবজন-বিগ্া৮ এই গাণপত্য- 
সংস্কতিরই পরিণতি । সঙ্গীত হইতে সাহিত্য, এমন কি 
দর্শন পধ্যন্ত এই ধাঁরাঁর অন্তভূক্ত। যদিও নিশ্টিতরূপে 
চিহ্নিত করিবাঁর উপায় নাই-_-তথাপি একথা বলিতে পারা 
যায় যে, রাজনীতি, হিন্দুর পারিবারিক প্রথা ও জমাজের 
আদিমতম বিধি ব্যবস্থা এই সংস্কৃতি হইতে উদ্ভূত। কালে 
গণপতি অগ্রধান হইলেও হিন্দু সমাজ হইতে তাহার প্রভাব 
অন্তহিত হয় নাই। ভারতের-_তথ৷ বাঙ্গালার স্থাপত্য ও 
ভাস্কর্যেও ইহার প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। 

ঞ (২) “সৌর-সংস্কৃতি”- এক হইতে দশম পর্যানস্ত সংখ্যা- 
লিখনপদ্ধতি, যজ্ঞ-কার্যের ও মানবের শুভাণ্ডভ গণনার 
জন্য দিন, পক্ষ, মাস, বৎসর, গ্রহ, নক্ষত্র, তিথি প্রভৃতির 
আলোচনামূলক গণিত ও ফলিত জ্যোতিষ প্রস্ততি এই 
সংস্কৃতি হইতে উদ্ভুত। সমাজের সর্বস্তরে ইছার প্রভাব। 
বেদে মিত্র দেবতা বহু সম্মানিত। ভারতীয় ব্রাহ্মণের 
সর্বশ্রেষ্ঠ দীক্ষা সাবিত্রী-দীক্ষা বা গায়্রী-দীক্ষা। গায়ত্রী 
মন্ত্রে মিত্র দেবতারই স্বরূপ প্রকাশিত। অধুনা সমাজে 
গ্রহাচার্ধ্গণ যতই অবজ্ঞাত হউন, এক সময় তাহার! 
সমাজের শীর্ষস্থানীয়গণের অন্ততম ছিলেন। বসন্তের মত 
দুশ্চিকিৎত্য, ব্যাধির চিকিৎসা ও সৌর-সংস্বৃতির ্ষটি। 
আযুবিজ্ঞানের কিয়দংশ এই সংস্কৃতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট । 
উড়িয্ঘার কোণার্কের মন্দির এবং মন্দির-পার্খস্থ মূর্তি- 
নিচয়ে সৌর-সংস্কৃতির স্থাপত্য ও ভাস্কর্যের যে পরিচয় 
প্রকাশিত, তাহা লইয়৷ যে-কোন দেশের যে-কোন জাতি 
গৌর করিতে পারে। * এই মুঁ্বির ও ম্তি-গোষ্ঠী দেখিয়া 


ভ্ডা্ভব্বন্ 


[ ২৮শ বর্-_২য় খণ্ড-যষট সংখ্যা 


বুঝিতে পারা যাঁয় ষে, শ্রীষীয় ত্রয়োদশ শতাবী পর্য্যন্ত সৌর- 
সংস্কৃতির গ্রভাব বছু বিস্তৃত ছিল। বাঙ্গালার নানা স্থানে 
বহু প্রাচীন স্থ্যমুত্তি আবিষ্কৃত হইয়াছে। বাঙ্গালার পাল 
ও লেন রাজগণের কেহ কেহ সৌর ছিলেন। পশ্চিম- 
বঙ্গের পল্লীর সর্ধশ্রেণীর মধ্যে প্রচলিত “ইতু পুজা” বা 
“মিতু পুজা” মিত্র পূজারই নামান্তর | হুর্ধযদেব আজিও 
আরোগ্যের দেবতারূপে পৃজাপ্রাপ্ত হন। 

(৩) “আগ্নেয়-সংস্কৃতি”__মাহুষের বিস্মিত দৃষ্টির সম্মুখে 
অগ্নিদ্েব যেদিন প্রথম আবিভূতি হইয়াছিলেন, পৃথিবীর 
ইতিহাসে সে এক ম্মরণীয় দিন। প্রান্তরে প্রস্তরে ঘর্ষণে 
অথবা অরণীকাষ্ঠের মন্থনে কিরূপে অগ্নির প্রথম আবির্ভাব 
ঘটিয়াছিল, তাহা ইতিহাসের গবেষণার বিষয়। কিন্ত 
যেরপেই তাহার আবির্ভাব ঘটুক, অগ্থিকে ধাহারা প্রয়োজনীয় 
কার্যে ব্যবহার করিতে শিখিয়াছিলেন, নিশ্চয়ই তাহাদের 
সংস্কৃতি অত্যন্ত সমুন্নত ছিল। যজ্ঞবেদী নিন্মাণের জন্য 
ভূমিতি ও পরিমিতি শাস্ত্রের উত্তৰ এই সংস্কৃতি হইতেই 
হইয়াছিল। আধুর্কেেদে ও ধনুর্ধেদের অনেকাঁংশ এই 
সংস্কৃতির অন্তভূক্ত। এই সংস্কৃতি হইতে রাষ্ট্রনীতিও অলঙ্কার- 
শীল এবং নক্ষত্র-বিষ্তার অনেক উন্নতি সাধিত হইয়াছিল। 

আধ্যগণের অনেকেই সাগ্নিক ছিলেন, তাহাদের পৃথক 
অগ্রি-গৃহ ছিল। প্রতিদিন সেই গৃহরক্ষিত অগ্রিতে সমিধ 
দান করিতে হইত। আজিও কোন কোন ব্রাহ্মণের 
অনুষ্ঠিত নিত্য-হোমে তাহারই শেষ স্মৃতি বর্তমান রহিয়াছে। 
কবে অভিশপ্ত-অগ্নি সর্ববভুক্‌ হইয়াছেন, কবে আধ্যগণের 
একশাথা অগ্রি-উপাঁসক পৃথক সম্প্রদায়ে পরিণত হইয়াছেন, 
নিশ্চিত করিয়া! জানিবার উপাঁয় নাই। মনেহয় বরঙ্গার 
সঙ্গে অগ্নির কিছু সম্বন্ধ ছিল। আজিও পশ্চিম-বঙ্গের 
প্রতি হিন্দুপ্রধান পল্লীতে অগ্নি-ভয় নিবারণ জন্য চৈত্র- 
মাসের কোন এক নির্দিষ্ট দিনে অগ্নির আরাধনা হয়। 
এদিন ব্রহ্মা-পৃজার দিন নাঁমে পরিচিত। শাস্তি-স্বস্তযয়নে 
হোম করিতে হইলে মর্ঠ্যে ব্র্মা আছেন কি-না দেখিয়া! দিন 
স্থির করিতে হয়। শাস্ত্র বলেন, “জয়! পূর্ণ মহীতলে”। 
জয়! ও পূর্ণা তিথিতে ব্রঙ্ধা মর্ত্যে অবস্থিতি করেন। ত্রহ্ধাও 
আদিতে পঞ্চবদন ছিলেন। মহাদেবের সঙ্গে বিবাদে 
তাহার একটা মন্তক লুপ্ত হইয়াছে । ভারতচন্ত্রের অন্নদা- 
মঙ্গলে ব্রহ্মা ব্যাসকে বলিতেছেন-- 


ভিক্ষু 
শিল্পা-শ্রীযুক্ত "সন ,নমাহন মুগাপাপযায 


ভারতব্ন প্রিণ্টি- 


॥ 





উো্--১৩৪৮ ] 


“আমার আছিল বাছা! পাঁচটা বদন। 
ৃ্‌ একর মাথা কাটিয়া লইল পঞ্চানন” |” 
এই বিবাদের পৌরাণিক রহস্ত আছে এবং ব্ক্জার এই 
মত্যকহীনতার সঙ্গে অগ্নিপৃূজা-লোপেরও সম্বন্ধ আছে। 

(৪) “শৈব-সংস্কৃতি”- বৈষ্ণব-সংস্কৃতির কথা সর্বশেষে 
বলিতেছি। অনেকে বলেন আর্ধ্যগণ অথবা আধ্যেতর কোন 
কোন জাতি আদিতে পশুচারক ছিলেন। আমার মনে 
হয় শৈব ও বৈধ'ব-সংস্কৃতির সঙ্গে পশুচারক জাতির সম্বন্ধ 
আছে। শৈব-সংস্কৃতির সঙ্গে কষির এবং বৈষ্ণব-সস্কতির 
সঙ্গে বাণিজ্যের ঘনিষ্ঠ যোগ ছিল। শৈব-সংস্কতি হইতে যে 
লোকগীতি এবং মঙ্গলকাবের সৃষ্টি হইয়াছিল, তাহার মধ্যে 
শিবের কৃষিকাধ্য একটা প্রধান উপাখ্যান । শৈব-সংস্কতি 
বহু প্রাচীন এবং অতীতে শিবোপাসক জাতিই কৃষির 
আবিষ্কার করিয়াছিলেন। ইহীরাই যোগমার্গের প্রবর্তক। 
চিকিৎসকার্ম্যে মুক্তা» প্রবাল, পারদ, স্বর্ণাদি ইহীরাই প্রথম 
ব্যবহার করেন। 'উষধার্থঘে হলাহলের প্রয়োগও এই সংস্কৃতির 
অন্কতম দান । 

জাতিগঠনে এই সম্কতির অবদান বড় অল্প নহে। 
সমাজের আপাঁদ-মস্তক-_চণ্ডাঁল হইতে ব্রাহ্মণ পর্যন্ত সকলেই 
শিবপুজ্ধায় অধিকারী। স্মরণাতীত কাল হইতে এই 
সংস্কৃতির মধ্যে শুদ্ধি-আন্দোলন অত্যন্ত ব্যাপকভাবে 
অন্তপ্রবি্ট রহিয়াছে । গত সন ১৩২৮ সালের তৃতীয় সংখ্যা 
পরিষং-পত্রিকাঁয় মহামহোগাধ্যায় আচাধ্য হরপ্রলাদের 
“মহাঁদেব” শীর্ষক একটা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। সেই প্রবন্ধে 
শীন্্রী মহাঁশয় এই শুদ্ধির বিবরণ দিয়াছেন। সেকালে 
একদল ব্রাঙ্গণ ছিলেন, তাহারা “্ষাধাবর”। তাহাদের 
গোত্রই ছিল ণ্যাঁধাবর” | খষি জরৎকাকু প্রভৃতি প্যাষাব” 
গোত্রের ব্রাঙ্গণ । ইহাদের দলকে দ্ব্রাত” বলিত, দলভুক্ত 
সকলেই দক্রাত্য* ছিলেন। দুই-চারি দিনের জন্য ইহার! 
যেখানে থাকিতেন সেই স্থানকে ব্রাত্যা” বলিত। শাস্ত্রী 
মহাশয় লিখিয়াছেন--“পঞ্চবিংশ ব্রক্ষণ বলে ব্রাত্যেরাঁও 
খষিদের মত দৈব প্রজা অথাৎ দেবতাদের উপাসক। তবে 
তাহাদের দেবতারা ব্বর্গে গিয়াছিলেন। মরুৎ দেবতা রা 
তাহাদিগকে কতকগুপি সামগান শিখাইয়া দিয়াছিলেন। 


সেই গান করিলে তাহার! দেবতাদের খু'জিয়া পাইত। সেই" 


গানগুলির নাম ব্রাত্যন্তোম”। যে যজে ব্রীত্যন্তোম হইত 


হিস্দু-্নতক্্জ্ভি 


তাহার নামও ব্রাত্যন্তোম। অন্ত অন্ত য্তে খিক ছাড়া 
একজন মাত্র ব্মান থাকে, ছুইজন যজমানের কথা বড় দেখা 
যায় না। কিন্তু ব্রাত্যন্তোমে যজমান হাজার হাজার হইতে 
পারে। আর সকলেই ব্রাত্যন্তোম করিয়া পবিস্র হইয়া 
যাইত ও খধিদের সঙ্গে সমান হইয়া! যাইত। ত্রাত্যন্তোমের 
পর খধষিরা ব্রাত্যদের সঙ্গে একত্রে খাইতেন, তাহাদের 
হাতের রান্না খাইতেন। তাহাদিগকে বেদ পড়িতে দিতেন 
তিন বেদই পড়িতে দিতেন, তাহাদিগকে খত্বিক দিতেন, 
মোটামুটি তাহাদিগকে আপনার সমান করিয়া লইতেন।” 
এই ব্রাতাদের দেবতা ছিলেন শিব। পূর্বে ব্রাত্যন্তোম 
অর্থাৎ শুদ্ধিযজ যখন তথন হইত। পরে একটা নির্দিষ্ট দিনে 
শুদ্ধিযজ্ঞ স্থুরু হয়। আজিও বৎসরের শেষে চেত্র-সংক্রাস্তির ' 
পুর্বদিন শিবের গাজনের দিন। এই দিনের নাম “হোম- 
পর্ব” | শিবের গাঁজনে ব্রাহ্মণ হইতে চণ্ডাল পর্য্যন্ত ভক্ত হইতে 
পারে এবং উত্তরীয় স্তর ( উপবীত ) গলায় দিয়া গাজনের 
কয়দিন সকলেই সণান হইয়া যা়। ইহাদের মূলমন্ত্র 

“মাতা মে পার্বতী দেবী পিতা দেবে! মহেশ্বরঃ | 

বান্ধব! শিবভক্তাশ্চ স্বদেশো তৃবনত্রয়ম্‌ ॥৮ | 
সমগ্র ভারতে-_-এবং ভারতের বাহিরেও এই সংস্কৃতির 
প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। স্থাপত্যে, ভাস্কর্য, তক্ষণ শ্ল্পে।, 
সঙ্গীতে, কাব্যে, সাহিত্যে, দর্শনে, জীবিকার অবলস্বনে, সমাজ- 
ব্যবস্থায় এবং রাষ্ট্রনীতিতে এই সমুন্নত সংস্কৃতির প্রভাৰ সর্বত্র 
সুপরিস্ফুট | 

(৫) “শাক্ত-সংস্কৃতি”_ শৈব-সংস্কৃতির এবং বৈষব- 
সংস্কৃতির সঙ্গে ইহার ঘনিষ্ঠ যোগ আছে। ভারতীয় দর্শনে 
প্রকৃতিবাদ বা শক্তিবাদ এই সংস্কতি হইতে উত্তুত। এই 
সংস্কৃতি সমাজের অন্তঃস্থলে প্রবেশ করিয়াছিল এবং সমাজে 
এখনও ইহার প্রভাব অগ্রতিহত। এই সংস্কৃতি সমাজের 
বিভিন্ন স্তরগুলিকে এক অথণ্ড যোগন্ত্রে বাধিবার চেষ্টা 
করিয়াছিল । ভারতব্যাপী নবরাত্র-উৎসব এবং বাঙ্গালার, 
দুর্গোৎসব প্রকৃতই জাতীয় উৎসব। ছুর্গোৎসবে, সাহিত্য 
ও দর্শনের সঙ্গে কৃষি, শিল্প এবং বাঁণিজ্যেরও সমবায় 
সাধনের চেষ্টা হইয়াছিল। ব্রাদ্ষিণ, ক্ষত্রিয় বৈশ্ঠ, শৃড্র» 
কামার, কুমোর, ছুতার, মালাকর হইতে আর করিয়া 
মুচি হাড়ি ডোম চগ্ডাল পর্যন্ত এই উৎসবে প্রত্যক্ষভাবে 
যোগ দিতে বাধ্য হইয়াছিল ১ হিন্দু জাতির সর্বস্পরর্্র 


“২৬২ 


সম্মেলনের এমন উৎসব বাঙ্গালায় আর দুইটা নাই। কিন্ত 
বর্তমানে ব হেতু এবং ম্যালেরিয়ায় বাঙ্গালার পল্মী- 
অঞ্চল ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়ায় এই উৎসবের প্রাণশক্তি ক্ষীণ হইয়া! 
আসিতেছে । বাঙ্গালীকে'বাচিতে হইলে এই সমন্ত উৎসবে 
নৃতন করিয়া প্রাণপ্রতিষ্ঠা করিতে হইবে। শীক্ত-সংস্কতির 
ফলে বাঙ্গালার সঙ্গীত, কাব্য, সাহিত্য; দর্শন, শিল্প, বাণিজ্য 
ও কৃষি, রাজনীতি ও সমাজনীতি যথেষ্ট সমৃদ্ধ হইয়াছিল । 
শ[ক্তগণ চিন্ময়ী জননীকে মুন্সয়ীর সঙ্গে মিলাইয়া এই নদী, 
পর্বত, বনানী ব্যবধানবহল ভারতবর্ষকে এক অথগ্ড এ্রক্যে 
আবদ্ধ করিয়াছিল। 

(৬) “বৈষ্ব-সংস্কৃতি,--এই সংস্কতিও বু পুরাতন। 
বেদ এবং তন্ত্রের সমদ্বয়ে এই সংস্কৃতির উদ্ভব হইয়াছিল। 
ৃষ্টের দমন, শিষ্টের পালন, অধর্ঘম নিবারণ এবং ধর্-সংস্থাপন 
এই সংস্কৃতির অন্যতম আদর্শ। শৈব-সংস্কৃতির মূলমন্ত্র যেমন 
প্বত্র জীব তত্র শিব” এই সংস্কতির মূলমন্ত্র তেমনই মানব- 
প্রেম, সর্বতৃতে সমদর্শম। পরাধীনতার মধ্যে জাতি গঠিত 
হয় না। জাতিকে স্বারাজ্য-সংসিদ্ধি লাঁভ করিতে হইলে 
পঞ্চবিধা মুক্তি অর্জন করিতে হইবে, ইহাই বৈষব-দর্শনের 
বাণী। জাতি গঠনে এই পঞ্চবিধা মুক্তি ব্য প্রয়োজনীয়। 

জাতি গঠনে প্রথম প্রয়োজন “সা৮--সমান প্রশ্ব্য্য | 
“অর্থ নৈতিক ভিত্তিই ইহার মূল। কিন্তু ইহার অর্থ এই নয় 
যে, সকলকে সমানভাগে সমাজের এশ্বর্য কোন নিদ্দিষ্ট দিনে 
বণ্টন করিয়া দিতে হইবে। বণ্টন করিয়া দিলেও সকলের 
রাখিবার সামর্থ্য সমান নয়, ব্যয়ের বুদ্ধিও সমান নয়, স্তায়- 
সঙ্গত নয়। ুতরাং সমাজের মধ্যে অর্থপ্রবাহের নিয়মান্থগত 
প্রণালী থাকা চাই, শ্রমের মর্যাদা চাই, বিনিময়ের বিধি- 
সঙ্গত ব্যবস্থা চাই, আদান-প্রদানের শুভবুদ্ধি চাই, সহ- 
যোৌগিতা চাই। সমাজের মধ্যে সকলেই যেন প্রতিভা- 
প্রকাশের, যোগ্যতা প্রদর্শনের ক্ষেত্র পার । সমাজে কেহ 
ধেন উপেক্ষিত না হয়। 
দ্বিতীয় মুক্তি “সালোক্য”-_-সমান দেশ। এক দেশের 
অধিবাসীকে লইয়া জাতি-গঠনে যেমন সুবিধা হয়, ভিন্ন 
দেশের অধিবাসীকে লইয়া ঘেমনই অন্গুবিধা ভোগ করিতে 
হয়। এই দিক দিয়া ভৌগলিক-খকোর প্রয়োজনীয়তা 
অস্বীকার করিবার উপায় নাই। হিন্দুগণ তীর্থঘের সৃতি 


স্ডান্পব্তম্বঙ্ধ 





[ ২৮শ বর্-_২য় খণ্ড--হ্ঠ সংখ্যা 





করিয়া যদিও খণ্ড ভারতকে অখণ্ড মহাভারতে পরিণত 
করিয়াছিলেন, তথাঁপি জাতিগঠনে সালোক্য-মুক্তি অবশ্ত 
প্রয়োজনীয় । 

ততীয় মুক্তি “সামীপ্য”-_-একদেশে বাস চাই, সঙ্গে সঙ্গে 
সামাজিক বন্ধনে বা অগ্যব্ষয়ের আদান-প্রদানে জাতির মধ্যে 
পরস্পরের নৈকট্য থাক! চাঁই। তীর্ঘাত্রায়, পার্ববণে? উত্সবে, 
নানা উপলক্ষে নাঁনারূপ সম্মেলনেও এই উদ্দেশ্য সাধিত 
হইতে পারে। 

চতুর্থ মুক্তি “সারপ্য”-_-জাতিগঠনে সমান রূপ চাই। 
কিন্ত আকার সকলের সমান হয় না, সুতরাং সবর্ণের 
আবশ্কতা আছে। সেক্ষেত্রেও বৈষম্য ঘটিলে পরিধের 


সমান হওয়া আবশ্যক! এই জন্তই জাতীয়-পরিচ্ছদের 
প্রয়োজনীয়তা রহিয়াছে । আজিকার দিনে এই কথাটা 
বিশেষভাবে চিন্তনীয়। 


পঞ্চম যুক্তি__“সাজ/”-_পঞ্চবিধ মুক্তির কোনটাই 
উপেক্ষণীয় নয়। জাতিগঠনে ভাব-সাঁযূজ্যের গ্রয়ৌজনীয়তাও 
প্রচুর। একভাষা না হইলে তাব-সাঁযৃজ্য ঘটে না। দেশের 
ব্যবধান থাকিলেও যদি পরিচ্ছদ এবং ভাষার এক্য থাকে, 
তাহা হইলেও জাতিগঠনে ব্যাঘাত ঘটে না । এমন কি, এক 
ভাষার এঁক্যেই জাতীয়তা সংরক্ষিত হইতে পারে। সংস্কৃতি- 
রক্ষার মূলেও আছে ভাষা । ভাষাই সাহিত্য স্ষ্টি করে 
সংহতি রক্ষা করে, জাতিকে এ্রক্যের বন্ধনে আবদ্ধ করে। 
যে জাতি নিজস্ব ভাষা ভূলিয়াছে তাহার দুর্ভাগ্যের অন্ত 
নাই। বৈষ্ণব-সংস্কতি আমাদিগকে এই মহান্‌ শিক্ষা 
দান করিয়াছে । বৈষ্ব-সংস্কৃতির মধ্যেও গুদ্ধির স্থান 
অপ্রধান নয়। শক, হু, এমন কি গ্রীক, যবনেরাঁও বৈষব- 
ধর্ম গ্রহণ করিয়াছিল, ইহার এতিহাসিক প্রমাণ আছে। 

সৌন্দর্যবোধ এবং রুচির দিক্‌ দিয়! বৈষব-সংস্কৃতির অবদান 
সুগ্রচুর। রাজনীতি, সমাঁজনীতি, কাব্য সঙ্গীত, সাহিত্য, 
দর্শন, শিল্প, বাণিজ্য, কৃষি ও বৈষব-সংস্কৃতির ফলে যথেষ্ট সমৃদ্ধ 
হইয়াছিল। এই সংস্কৃতিকে বাঙ্গালীর প্রেমের ঠাকুর, কাঙ্গালের 
ঠাকুর শ্রীমন্‌ মহাপ্রভু এমন এক দিব্যমহিমায় মণ্ডিত করিয়া- 
ছিলেন, বাস্তবতার এমন এক অমৃতলোকে সুগ্রতিঠিত করিয়া- 
ছিলেন, যাহা পৃথিবীর ইতিহাসে নৃতন। মানুষের ইতিহাসে 


'অভিনব। 


& রিও 


হে দেবাত্মাঃ নমামি নগাধিরাঁজঃ 

এ কি শৈলের সমারোহ দেখি আজ ! 
শিখরে শিখরে গলিছে নিবিড় লহ? 
আঁকার ধরিতে চাহিছে অপরিমেয় । 
গহবরে সিংহ কোথাও করিছে বাঁস, 
কোথা অজগর ফেলিতেছে নিঃশ্বাস । 


নিঃশ্বাস রোধি' গুহাতে কোথাও খধি-_- 


যোগনিমগ্ন রয়েছেন দিবানিশি । 
কঠোর, কোমল, প্রশান্ত দুর্জয়, 
ছুনিরীক্ষা নমোনমঃ হিমালয় । 


৮ 
ভূর্জ ও চীর, উচ্চ সরল শাল, 
রয়েছে প্রসারি ছায়াবাহু স্থবিশাল। 
চরিছে চমরী, মৃগ ময়ূরের শ্রেণী, 
ছড়ায়ে পড়িছে ঝর ঝর জলবেণী। 
মত্ত হস্তীযুথ ভ্রমে-_লাগে ডর, 
স্যাম সুন্দর বিপুল ভয়ঙ্কর । 
গঙ্গ। যমুনা. সর্ব্বতীর্ঘময়ী-_ 
দেছালা দেখিছে উৎসঙ্গেতে রহি। 
দিগন্তব্যাঁপী অভ্রভেদী ও রূপ 
হেরি উল্লাসে বিন্ময়ে হই চুপ। 

৩ 
গুরু কৃষ্ণ পক্ষেতে মিলামিশা-_ 
তূমি সাধনার প্রস্তরীভূত নিশা । 
স্বর্গ মর্তে পাষাণ যোজক তুমি, 
নর-নারায়ণে মিলনের পটভূমি | 
পাষাণ প্রতীক তুমিই অনস্তের, 
মূর্ত প্রথম হুত্র বেদাস্তের। 
আছ ভারতের রোধি উত্তর দ্বার-_ 
সাকার প্রশ্ন ব্রহ্ম জিজ্ঞাসার ! 
বক্ষে চলিছে ৃষ্টি স্থিতি লয়ঃ 
অনতিক্রম্য নমোঁনমঃ হিমালয় । 


হিমালয় 
জীকুমুদরঞ্জন মল্লিক 


শত 


৪ 
ভঙ্গিমাময় পাষাণ আখরে লেখা, 
তুমি মহাঁকাঁল সঙ্গীত-ম্বর রেখ! । 
ফ্রব প্রার্থনা, তুমি মহিন স্তবঃ 
প্রলয় নৃত্য প্রস্তরীকৃত সব। 
তুঙ্শৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্বা-_ 
মহাভারতের জমাট আকাজঙ্জা। 
ঘনীভূত প্রেমানন্দ আত্মহারা__ 
স্বর্গের ভাকে তুমি ভারতের সাড়া! । 
যুগের যুগের দেখিতেছ অভিময়-_- 
অনধিগম্য নমোনমঃ হিমালয় । 

৫ 
রূঢ় কর্কশ শিলা! আবরণ মাঝে 
জ্যোতিঃপুঞ্জ মৃষ্ঠি তোমার রাঁজে। 
হে মহাতাপস এসে ভূমি বাহিরিয়া-_. 
শাস্তি সলিলে জুড়াও ধরার হিয়!। 
তোমার আশায় জগৎ রয়েছে বসি 
অমৃতের বাণী শুনাও হে রাজধধি। 
যুগের যুগের তব সাধনার ফল 
দ্াঁও---অপসর--বিশ্বের অমঙ্গল । 
গুনাও নবীন উপনিধদের বাণী 
পতিত আমর উর্ধে উঠাও টানি। 


৯১ 
বাহির হইতে ভিতর যে মহীয়ান। 
জগন্মাতার পিতা ভূমি হিমবান। 
তুমিই প্রবর__লামরাও নহি পর 
ধিনি ও ভবন গুপ্ত ও মনোহর । 
ক্ষুদ্র মানব প্রেমের মন্ত্র জানি, 
দুপ্রধর্ধে নমনীয় করে আনি। 
গোত্রপ্রধান- তুমি পরমাত্ীয় 
গ্গেহের এ দাঁবী হঃকঞ্তব গ্রহবীয়। 
ক্ষস্তব্য-_-এ অপরাধ যদি হয় 
বিরাট পুরুষ নমোনমঃ হিমালয় । 


'অরপিকেধু 
শ্রীবীরেন্দ্রমোহন আচার্য 


মহাদেবপুরে মহা হৈ চৈ' কাণ্ড বাধিয়াছে অর্থাৎ নকুড় 
মোক্তারের নবাগত শ্ঠালক নন্দবাঁবুই যে বাঙ্গাল! সাহিত্যের 
স্থবিখ্যাত কথাসাহিত্যিক নন্দলাল চৌধুরী-_সে কথা তিনি 
গৌপন করিলেও কেমন করিয়া যেন প্রকাশ হইয় পড়িয়াছে। 

সাহিত্য সমিতির ছেলেরা আসিয়া নন্দ চৌধুরী মহাশয়কে 
ধরিয়া পড়িল-_তীহার মত খ্যাতনামা সাহিত্যিক যখন 
অখ্যাতনাম! ছোট্ট শহর মহাদেবপুরে অস্থগ্রহপূর্বক পদার্পণ 
করিয়াছেন তখন তাহাদের সাহিত্য সমিতির পক্ষ হইতে 
গ্রকটা বিনীত অভিনন্দন তাহাকে গ্রহণ করিতেই হইবে । 

খ্যাতি অর্জন করিলে এই জাতীয় নাঁনাপ্রকার অনুরোধ 
উপরোধের উপস্রব সহিতেই হয়। নন্দবাবু অবশ্তা অত্যন্ত 
লজ্জিত ও কুষ্টিত ভাবে আপনার অক্ষমতা জ্ঞাপন করিলেন 
এবং তিনি যে এখানে সাহিত্যিক হিসাবে মোটেই আসেন 
নাই, আসিয়াছেন তম্মীপতির বাড়ী বেড়াইতে, শরীরটাও 
তাহার তেমন ভাল নাই, উপরস্ত অভিনন্দন প্রভৃতি ব্যাপারও 
ঘে তিনি আদপেই পছন্দ করেন না, ইত্যাদি বহু প্রকার 
, এত আপত্তি করিয়াও তিনি মহাদেবপুরের অতি-উৎসাহী 
তরুণ সাহিত্যিকবুন্দের হম্ত হইতে নিষ্কৃতি পাইলেন না। 
বিপয্ন ও অসহাঁয় চৌধুরী মহাশয়ের সম্মতি তাহারা আদায় 
করিয়। তবে ছাড়িল। 

সত্যসত্যই নদ্দবাবু বড়দিনের ছুটিতে ভম্মীপতির বাড়ী 
বেড়াইতে আসিয়ান, সাহিত্য করিতে আসেন নাই; 
কলিকাতায় নান! কাজকর্ণে ব্যস্ত থাকেন, মহাদেবপুর 
আসা! পূর্বে তাহার আর ঘটিয়া ওঠে নাই; এইবার ভগ্মীর 
সনির্বন্ধ অনুরোধ এড়াইতে না পাঁরিয়। এখানে পদধূলি দিয়া 
ধন্ত করিতে আসিয়াছেন। ন্ৃতরাং তাহাকে পাইয়া তাহার 
তশ্মীপতির গৃহবাঁসীবৃন্দ পুলকিত এবং মহাদেবপুর শহরের 
অধিবাসীকুন্দ বিগলিত। বাঙ্গালার খ্যাতনামা সাহিত্যিক 
প্রীন্দলাল চৌধুরী মহাশয়ফে চাক্ষুস দেখিতে পাওয়াই 
মছাদেবপুরের উদীয়মান সাহিত্যিকদের মধ্যে একটা উল্লেখ- 
যোগ্য ঘটন!; ইহার উপর তাহার সহিত আলাপ করিবার 
স্থযোগ পাওয়ায় তাহারা আকাশের চন্ত্রই যেন হাতে 


পাইয়াছে, পাঁরতপক্ষে নকুড়বাবুর বাড়ীর ব্রিসীম! ছাড়িয়া 
যাইতেছে না। 

নন্াবাবুর ওম্নী বলিলেন, “সত্যি নন্দ, তুই এতবড় নাম 
করা লিখিয়ে হয়ে উঠলি কবে, আমাদের ত কিচ্ছু বলিসনি 
এ্যার্দিন।” 

কন্ঠ! মীরা মাতার অজ্ঞতায় হাসিয়া লুটোপুটি খাইয়া 
উত্তর দিল, “এ কথা আর বল না মা, লোকে শুনলে হাঁসবে। 
থাকবে দিনরাত ভাড়ার আর রান্নাঘর নিয়ে-তা মামার 
নাম গুনবে কোখেকে? বিঙ্গবিভাঁর মত কাগজের হেন 
সংখ্যা নেই যাতে মামার কোঁন লেখ! বেরোয়নি। তোমাকেও 
ত দেখিয়েছি মা মামার নাম কদ্দিন।” 

ভ্রাতার এ হেন খ্যাতির কথা৷ শোনেন নাই বগিয়। ভগ্মী 
অতিশয় লক্জিতা হইয়! বলিলেন, “না নাঃ তা নয়, গুনেছি 
সব। তবে ভাই, সংসারের ঝঞ্ধাটে পড়তেও সময় পাইনে 
সব। বাঁবা দুঃখু করতেন, আমার সব ছেলের মধ্যে নন্দটাই 
অপদার্থ হ'ল। তিনি থাকলে আঁজ কত খুণীই হতেন।” 
বধিয়সী মহিলা বস্ত্াঞ্চল দিয়! চক্ষুকোণ মার্জনা করিলেন। 
“তা নন্দ, আজকাল কাজকর্ম কি কচ্ছিস ত1 ত বল্লিনে ?” 

নন্দবাবু উত্তর করিলেন» “কত রকম কাজকর্ম 
কোলিকাতায় দিদি, একটু কি বিশ্রাম করবার উপায় আছে? 
এলাম ছু”দিন তোমাদের দেশে জুড়োতে, তা যেরকম ছেলে- 
পুলে লেগেছে পেছনে, স্ুস্থিরে দু”দিন দেখছি আর তিুতে 
দেবে না।' 

“সত্যি বাপু, দেশের লোকের যদি একটু আক্কেল 
থাকে । এল বেচারা ছু'দিন জিরুতে, তা! দিন রাত হৈ ছে 
ক'রে বেড়ালে কি আর শরীর থাকবে? যাঁসনে নন্দ তুই 
ওদের কথায় নাঁচতে-_বলে দিলাম আমি” . 

ভ্রাতৃগর্ধধে গরবিণী নকুড়-গৃহ্ণী ভ্রাতার আহারাদির 
তথ্বিরে উঠিয়া গেলেন। রে 

কিন্তু নকুড়-কস্া তিলার্ধও মামাকে ছাঁড়ির! থাকিতেছে 
না, নদালাল চৌধুরীর" লিখিত লমুদয় গল্প উপম্যাসই সে 
ইতিমধ্যে পড়িয়া ফেলিয়াছে ও বন্ধুমহলে পড়া ইয়াছে। উপরন্ধ 


জীত্বট? 


ইজ্যা্--১৩৪৮ | 


অল্রর্নিক্কে্ু 





গ্বনামধন্ঠ সাহিত্যিক ও অপরাজেয় কথাশিল্পী নন্দলাল ষে 
তাহার আপন মাতুল। সে কথা সে সগৌরবে প্রচার করিতে 
ক্লাস্তিবোধ করে নাই। 

মীরা জিজ্ঞাস করিল, “কয়েকমাস হ'ল যে উপন্যাসথানা 
তুমি শুরু করেছ বঙ্গবিভা,য়, তাঁর শেষটা কি রকম 
হবে মামা? অজয়ের সঙ্গে বুঝি প্রভার বিয়ে দেবে শেষ 
পধ্যন্তঃ ন1?” 

পক্য| এ রকমই একটা কিছু হবে। এখনো ভেবে ঠিক 
করিনি কিছু--” 

“আচ্ছা! মামাঃ তোমরা! মাস্ত বইখানা লিখে নিয়ে তার 
পর একটু একটু করে ছাপাঁও, না মাসে মাসে লেখ আর 
ছাঁপাও, বল না” 

. নন্দবাবু ভাগিনেয়ীকে সঙ্পেহে এই জাতীয় অদ্ভুত কৌতুহল 
হইতে প্রতিনিবৃত্ত হইতে বলিয়া জানাইলেন-_ সেটা লেখকের 
অবসর ও মঞ্জির উপর নির্ভর করেঃ এ সম্বন্ধে কোন ধর! 
বাধা নিয়ম নাই। কিন্তু এত সহজেই কথাশিল্পী মাতুলের 
ভাঁগিনেরীর কথা বন্ধ হইবার কথ! নহে। মীরা পুনরায় 
্রশ্নবাণ বর্ষণ করিয়া চলিল-_তীহার গ্রন্থাবলী তিনি মীরাকে 
উপহার পাঠান নাই কেন, কোন্‌ বইথানা তাহার প্রথম 
লেখ; তীহার মতে শ্রেষ্ঠ রচনা কোন্থানা, একথানা বড় বই 
লিখিতে তীহার কতদ্দিন সময় লাগে বই লিখিয়৷ মাসে 
তিনি কতটাকা উপার্জন করেন, ইতাদি-কিন্তু পল্লী- 
গ্রামের অশিক্ষিত ও অকালপক্ক বালিকার এই সব 
অবান্তর গ্রন্থ নন্দবাবুকে বিরক্ত করিয়৷ তুলিল। তিনি 
অগত্যা ভতসনার স্থুরে ভাগিনেয়ীকে বলিলেন, “এই বয়সে 
এত নভেল পড়ার ঝোঁক কেন তোর ত্বল ত? ঢের 
সময় পড়ে আছে, যখন বড় হবি তখন পড়বি, বুঝলি? যা 
চট ক'রে এখন গোটাঁকতক পান সেজে নিয়ে আয় ত দেখি, 
তোর সঙ্গে আর. বকতে পারিনে আমি। ঘরে বাইরে 
সাহিত্য-_-লাহিত্য আলিয়ে মারলে দেখছি-_” 

“হা! রে, তোমার বই দেশগুদ্ধ লোক পড়বে, আর আমি 
বুঝি পড়তে পাব ন1? পনেরোয় ত পা দিয়েছি গত মাসে” 
এখনে বুঝি ছোট ?” কষুন্ধ! মীরা অভিমানরত্ধ কঠ ও ছলছল 
চক্ষু লইয়া পান সারিতে উঠিয়। গেল। 

থাবিক বাদেই প্রো নকুড়বাবু একটি ধৃহৎ মতহ্য হাতে 
করিয়া প্রবেশ কম্নিলেন। সম্মানিত শ্তানক বাড়ীতে অতিথিঃ 


স্পস্পাহ্পিস্পান্পিশীন্পিপাস্পিন্পান্জিপা্পি্পান্যৃতেপ বা 

স্থতরাঁং আদর আপ্যায়নের ব্যবস্থাটা ভালই করিষ্ত হয়। 
সারাজীবন মফংশ্বল কোর্টে মোক্তারী করিয়া গৌঁফ 
পাঁকাইলেন, ফৌজদারী আইনের দু-দশটা ধারা মুখস্থ বলিতে 
পারেন, সাহিত্যের ধার ধারেন নাই কোন দিন। 

কিন্তু শ্যালক যাহার এতবড় সাহিত্যিক তিনি সাহিত্যের 
কিছুই খোঁজ রাখেন না বলিলে লোকে শুনিবে কেন? 
মোক্তার-বারের সহকর্ম্ীরা-_বিশেধত ছোকরা! মোক্তায়ের ' 
দল-_তীহাঁকে পাইয়। বসিয়াছে। নন্দবাবুর গ্রস্থাবলী নিশ্টয়ই 
তিনি উপহার পাইয়াছেন; কিন্তু এ পর্য্স্ত সেগুলি তাছান্দের 
দেখানে! তদূরের কথা নীম পর্য্যন্ত উল্লেখ করেন নাই কি মনে 
করিয়া? মোক্তারী করেন বলিয়। সাহিত্যের কি তাহার! 
কিছুই বুঝেন না? এমনি ধরণের সব অনুষোগে নবুড়বাবু 
ব্যতিব্যস্ত হইয়! উঠিয়াছেন ; বারের বৃদ্ধ উকিল ত্বামতাঁরণ-. 
বাবু নিজেকে একজন. বড়দরের সাহিত্য-সমালোচক : বলির 
মনে করেন, দাঁশুরায়ের পাঁচালি ও মেঘনাদবধের নেক? 
জায়গ! তাহার মুখস্থ । তিনি পধ্যস্ত আজ সরালে. '্লেষ 
দিয়! কহিয়াছেন __“কি হে ভায়া, তোমাদের এনব আধুবিক্ 
সাহিত্য না কি বলে, আমর! তার কিছুই বুঝিনে নাকি ঝন্গে 
কর? মহাদেবপুরে সত্যিকারের সাহিত্য কটা! লোক 
বোঝে বল ত? আর ঘলি, প্রেমের সাহিত্য নেকালেই কিছু 
কম ছিল না কি,লাগুক ত দেখি বিষ্তানুন্দরের সঙ্গে তৌমী 
আজকালকার ফচকে ছোড়াদেরসাহিত্য, দেখি কেমন পান্বে 1 
ছ্যাঃ ছাঃ নকুড়, তুমিও এ সব অকালপক ছোড়াদের সঙ্গে 
মিশলে নাকি গিয়ে! কি বোঝে ওরা সাহিত্যের ? লিয়ে, 
এস ত তোমার শালাকে একদিন এখানে, দেখব রর 
আলোচনা করে--” 

কি বিপদেই পড়িয়াছেন নকুড়বাবু। ধ্যানানা তরুণ 
সাহিত্যিকের আত্মীয় হুইয়া অধ্যাতনাম বৃদ্ধ মোক্তার: 
নকুড়বাবুর যেন হরিষে বিষাদ উপস্থিত হইয়াছে । 

সামনেই শ্তালককে পাইন্না আনন্দমিশ্রিত. অতিষ্কান: 
উথলিয়া উঠিল, “ভায়া ত শহরে আচ্ছা হৈ চৈ লাগিয়ে ভুলেছ 
দেখছি, কিন্ত সেই সঙ্গে আমাদের যে: প্রাণ যাঁয়।' কি কি'বই. 
লিখেছ ভায়া, তা ত দেখালেও ন&, কিছুই না? নাঁষ কটা অন্তত 
একবার আমাকে শুনিয়ে দাও তবু ত বাটি। দেশেয় লোক. 
যেআমায় খেয়ে ফেল্লে। ওগো শুনছ, ষাট! মিয়ে যাও, 
ত।” শেবাংশটুকু অবশ জন্াস্তিকেই বলা হইল 


৬৬ 
রি 


ননদবাবু রুহস্ত করিয়! কহিলেন, “তার জন্তে কি হয়েছে 
জামাইবাবু বই না হয় আমি গিয়েই খানকয়েক পাঠিয়ে 
দেকখম, কিন্তু আপনি সাহিত্য বৌঝেন না এ কখন হয়? 
আপনার মত এ বয়সে এতথানি রসিক লোক ত আজ 
পর্য্যস্ত দেখিনি বল্পেই হয় ।” 

নকুড়বাবু আপ্যায়িত হইয়! টাকে হাত বুলাইতে বুলাইতে 

'সহথান্তে কহিলেন, “তা! যা বলেছ ভায়া, ওইটুকুতেই বেঁচে 
আছি। এককালে বঙ্কিম চাঁটুজ্জ্যে খুবই পড়া গিয়েছিল, 
বুধলে কি-না; তা ইদানীং কাজকর্মের বঞ্চাটে আর পড়াশুনোর 
সময় পাইনে তেমন । আঁ: কি বই লিখে গিয়েছে “প্রেমের 
তুফান,” বঙ্ধিম চাটুজ্জ্যের লেখা, না হে?” 
, মীরা ইতিমধ্যেই আসিয়া অলক্ষ্যে দীড়াইয়াছিল, 
বাবার শেষ কথায় অসহিষ্ণু হইয়া কহিল, "বাবা, জানে! না 
কিছু, কেবল আবোল-তাবোল বকবে, যাও ভেতরে যাঁওঃ 
ম। ডাকছে---” 

“যবেখলে ভারা, একটু কি সাহিত্যচ্চার অবসর 
আছে! আমর! সব এখন ওল্ডো ফুলের দলে কি-না 
কঞ্গ! বলেই আবোল-তাবোল বকা হয় ।” 

হাসিতে হাসিতে নকুড়বাবু ভিতরে চলিয়া গেলেন। 

তুগুজ্প বেলা। আহারাদির পর একটু বিশ্রাম করিতে 
না করিতেই সাহিত্য সমিতির সভ্যবৃন্দ নকুড়বাবুর 
বৈঠকথানায় আড্ডা. জমাইয়াছে। লাইব্রেরীর প্রাঙ্গণে 
আজ সমিতির বিরাট অধিবেশন হইবে এবং সেই সঙ্গে 
মন্দবাবুকে সমার়োহে অভিনন্দন দিবার ব্যবস্থা হইয়াছে। 
শরীর ভাল নাই, মাথা ধরিয়াছে। পেট খারাপ প্রভৃতি 
বিভিন্নগ্রকারের শারীরিক অসাচ্ছন্দের কথ! উল্লেখ করিয়! 
নম্ববাবু অব্যাহতি পাইলেন না, আঁধ ঘণ্টার জন্চও অন্তত 
হাজির হুইয়। অনুষ্ঠান সুসম্পন্ন করিতে হইবে। 

সমিতির কয়েকজন উৎসাহী উদ্ঘোক্তার সর্গে হাসি 
ঠা্টা চলিতেছিল। নন্দবাবু হঠাৎ জিজ্ঞাস! করিয়া বসিলেন, 


“আচ্ছা মশাই, আমি যে সাহিত্যিক তা আপনারা খোঁজ, 


পেলেন কোথেফে বলুন ত ? 
“বাঃ আমর' পড়িনি বুনি আপনার বই। ' আমাদের 
লাইব্রেরীতে দে ধন আনার সব ক'খানি বইই ফবে কেনা 


হয়ে গিযেছে। ঈশ্বলে পড়ে থাকি বটে, তবু গ্াপনার নাম, 


শুনবো নাও 7. বলেন আপনি 


ভাক্াস্ডন্যঞ্ 


1 ২৮শ বর্ষ-_-২র খণ্ড --বঠ সংখ্য। 


: প্নানা তা বলছিনে, তবে আমিই বে সেই নন্নাগ 
চৌধুরী তা আপনাদের বল্লে কে?” 

ছেলের! এইবার হাসিয়া অস্থির হইল। একজন 
রসিক গোছের ছোকরা মুখ টিপিয়! কহিল+ “জামাদের 
কথা না হয় ছেড়েই দিন, নকুড়বাবুও আপনার নাম 
জানেন না নাকি ? 
তারপর ধীরে ধীরে কহিলেন, “আপনাদের বড্ড তুল হচ্ছে 
মশাই । আমাকে রেহাই দিন, আমি আপনাদের লেখক 
নন্দ চৌধুরী নই। কস্তিনকালেও কিছু লিখিনি-_আমি 
হলফ ক'রে বলছি। এতদূর আপনার! এগিয়ে পড়বেন 
জানলে” 

ছেলেরা দ্বিতীয়বার উচ্চুসিত হাস্তে ফাটিয়া পড়িল 
“বুঝেছি, মিটিং আযাভয়েড করবার মত্ত ফন্দী বার করেছেন 
স্যার, ওসব মোটেই চলবে ন! কিন্তু । বিছুরের খুব গ্রহণ 
করে আমাদের রুতার্থ করতেই হবে আপনাঁকে ।” কেহ 
বলিল; “আপনি যে লেখক সে আমরা আপনাকে দেখেই 
বলে দিতে পারি--” | কেছ ঝানিয়ন্বরে জনান্তিকে মন্তব্য 
করিল, “কি রকম রসিক দেখছিস্‌ 1» 

কথাবার্ভীয় দেখিতে দেখিতে মিটংস্এর সময় হইয়া 
আসিল। ছেলেদের হাত এড়াইতে না পারিয়া নন্দবাঁবু 
অগত্যা সভায় আসিয়া উপস্থিত হইলেন । 
: মহাদেবপুর শহরটি ছোট হইলেও হুজুগে কম লে) 
সুতরাং দলাদলিও বিচ্যমান। ননাবাবুকে অভিনন্দন প্রদাম 
লইয়াও একদল গগুগোল বাধাইবার উপক্রম প্রথমে 
করিয়াছিল বটে__তবে তাহার খ্যাতি ও প্রতিষ্ঠার কথা 
স্মরণ করিয়া তেমন সুবিধা করিতে পারে নাই। 

সভা লোকে লোকারণ্য । টেবিল চেয়ার বেঞি- ফুলের 
তোড়া মালা-_লাল নীল কাগজের নক্স! ইত্যাদিতে সভামগ্ডপ 
জমকাইয়া গিয়াছে । সভার কার্য যথারীতি আর্ত 
হইইল। শঙ্ধধ্বনি। লভাগতি বরণ? প্রম্তাবনা সঙ্গীত, 
প্রবন্ধাদি পাঠ, অভিনন্দন - প্রধান গ্রভৃতি যথা নিরমে 
চলিতেছে । . দুই-চারিজন -বক্তা ওজখ্িনী ভাষায় সুদীর্ঘ 
বন্তৃতীয় ব্যক্ত করিলেন:-দন্দলাল চৌধুরীর, সাত, বিশ্ববিশ্রুত 
সাঁহিত্যিককে পাইনা] একান্ত .অভাকান'..'বহাদেবপুরের 


অধিবামীবৃন্দ কি পন্নিনাঁপ ক্কৃতার্থ হইয়াছে । নহুড়বাবু 


জৈন্ট---১৩৪৮ ] 


তাহার ছেড়া মোক্তারী চাপকা'নটা চড়াইয়া ব্যন্তবাগীশের 
মত সর্বত্র ঘুরিয়৷ ঘুরিয়া ছাপান অভিনন্দন-পত্র বিলি 
করিতেছিলেন, হঠাৎ দৃষ্টি পড়িল রাঁমতাঁরণবাবু এখনও 
সভায় আসেম নাই। হয়ত অভিমান হইয়াছে ভাবিয়া 
তাড়াতাড়ি তাহাকে ডাকিয়া আনিতে ছুটিলেন। একগাদা 
গাদাফুলের মালায় সুশোভিতক্ নন্দবাবু নীলপার্জের 
কোট গায়ে ভক্তজন-পরিবৃত হইয়! নীলবর্ণ শৃগাঁলের মত 
গন্ভীরভাবে বসিয়াছেন। মুখ দেখিয়া মনে হয় পেটে যেন্‌ 
অসম্ভব যন্ত্রণা হইতেছে । পরিশেষে তাহাকেও কিছু 
বলিতে হুইবে। ছেলেরা ধরিয়াছে-_বাণী দিতেই হুইবে। 
অটোগ্রাফের খাতাঁও খানকয়েক জড়ো হইয়াছে টেবিলের 
উপর । 

নন্দবাবু অসুস্থতার অজুহাতে তাড়াতাড়ি সভার কার্ধ্য 
সমাপ্ত করিতে অনুরোধ করিয়! বাণী দিবার জন্য ঈীড়াইয়াছেন) 
এমনি সময়ে স্ভায় কি যেন একটা দুর্ঘটন! ঘটিল। 
সভামণ্ডপের উত্তর কোণ হইতে একটা উত্তেজনাপূর্ণ 
কোলাহল দ্রতগতিতে সভার মধ্যে সংক্রামিত হইয়া] 
পড়িতেছে। ধজোচ্চরি, কক্ষনো না”, “নিশ্চয়ই স্ট্যা 
“বিমল নিজে গুনে এসেছে” ইত্যাদি অসংলগ্ন কোলাহলে 
সভায় কান পাতা দায়। বিরুদ্ধবাদদীদলের রুদ্ধ ক্রোধ 
উলিয়া উঠিয়াছে । প্র্যাটফর্মের উপর তক্তগণ হীকিতে 
লাগিল -্চুপ, চুপ- অর্ডার, অর্ডার ! 

কে কাহার কথ! শোনে । নন্দবাবু চেয়ারে বসিয়া পড়িয়া! 
কি যেন বলিবার চেষ্টা করিতেছেন এমন সময় কলিকাতা 
হইতে সন্ভপ্রত্যাগত বিমল নামে একটি ছোকরা নন্দবাবুর 
কাছে আগাইয়া আসিল, পিছনে বিল্ময়বিমূঢ় জনতা । বিমল 











আল্রম্িতক্ষিজ্ু 


শ৬প.. 
জিজাঁস! করিল, "আপনাকে একটা কথা জিজ্ঞাগাঁ করি 
স্যার, সত্যিকথা বলবেন-_-” 

নন্মবাবু নিলিগ্রের মত উত্তর করিলেন, “করুন |” 

"আপনিই কি স্ববিখ্যাত সাহিত্যিক নন্দলাল চৌধুরী 1” 

বিক্ষুন্ধ জনতা রুত্ধনিশ্বাসে উত্তরের অপেক্ষ' করিতেছে । 

অবিচলিত কণ্ঠে উত্তর আসিল, “ন1।” 
ঘবিগুণিত কোলাহলের মধ্যে দ্বিতীয় গপ্ন হইল, “তবে 
আপনি আমাদের প্রতারণা করেছেন ?” 

“না, রসিকতা করেছি--” 

“মানে?” 

“আপনারাই ভূল ক'রে আমাকে সাহিত্যিক করে ভুলে 
ছেন। প্রথমটা আমি রসিকতা করে প্রশ্রয় দিয়েছিলাম বটেঃ 
কিন্তু শেষটা ভ্রম-সংশোধন করতে চেয়েছিলাম, আপনা 
শোনেননি । মিটিং-এ এই কথাই আমি খুলে বলতাম--* - 

মুহূর্ত মধ্যে সভায় দক্ষষজ্জ আরম্ভ হইল। কেহ বলিল-_ 
জুয়াচুরি, কেহ বলিল - ধাঁপাবাজী, রসিকতা কেহই যুঝিল রঃ | 
সভায় মার মার শব-_ 

হটরগোলের ভিতর নন্দবাবু অলক্ষ্যে সরিয়! পড়িলেন 
এবং সেই রাত্রেই জরুরী কাজে কলিকাতায় চলিয়া গেলেন। 
বলাই বাহুল্য, রসিক নন্দলাল ইহার পরে অরসিক মহামেবপুরে 
আর পদার্পণ করেন নাই। 

তবে নকুড়-গৃহিনীর পাড়া বেড়ানো সম্প্রতি বন্ধ হইয়াছে ও 
নকুড়-কন্তার বন্ধু সমাগমে অরুচি ধরিয়াছে। নকুড়বাঁবু হ'কাঁ 
হাতে ভাঁবিতে বসিয়াছেন-__কিছুদিন কোট কামাই করিলে 
তাহার চলে কি না? অজ্ঞাতসাঁরে মুখ হইতে নদদবাধুর সাঁছিত 
তাঁহার সম্পর্কটা দীর্ঘায়িত হইয়া! বাহির হইল-_“শ.-_শা--” 








পাইকপাড়ার বাসুদেব মুত্তিতে গোবিন্দচন্দ্রের লেখ 


শ্রীদীনেশচন্দ্র সরকার এম-এ, পি-আর-এস, পি-এচ-ডি 


কয়েক বৎসর পূর্বে বিক্রমপুরের অন্তর্গত পাইকপাড়া! গ্রামে 
মৃত্বিকা খননকালে ভূগর্ভ হইতে একটা বাদে মুর্তি 
আবিষ্কৃত হয়। গ্রামথানি ঢাঁকা জেলার মুন্সীগঞ্জ মহকুমার 
'ভন্তগৃত উঙ্গীবাড়ী থানার অধীন। মুর্তি আবিষ্কারের সংবাদ 
পাইয়া আউটসাহী পল্লী-কল্যাণ-আশ্রমের শ্রীযুক্ত কিরণচন্ত্র 
_ সেন মুর্ধিটী সংগ্রহ করিয়া আনেন এবং আউটসাহীতে 
পল্লীকল্যাণাশ্রমে উহা রাঁখিবার ব্যবস্থা করেন। তদবধি 
মুদধিটী এ স্থানেই রক্ষিত আছে। সম্প্রতি “বিক্রমপুরের 
টতিহাস-এর” শ্বনামখ্যাত গ্রন্থকার শ্রীযুক্ত যোগেন্্নাথ ৩প 
যড়াশয ও মূ্তির বিষয় অব্গত হুন। মৃত্তিটার পাঁদপীঠে একটা 
কুত্র'লেখ। উৎকীর্ণ আঁছে জানিয়া গুপ্ত মহাশয়ের কৌতুহল 
জার ছয় । তিনি শিল্পী প্রযুক্ত মণীক্্রভূষণ গুণ্ডের সহায়তায় 
লেখটার, একটা, গ্রতিলিণি সংগ্রহ করিতে সমর্থ হন। গত 
১৯শে ফেব্রুয়ারী গুপ্ত মহাশয় আমাকে গ্রতিলিপিটী অর্পণ 
করিক্কা উহার পাঠোদ্ধার করিতে অন্গুরোধ করেন। আমি 
এই অবসবষে খণ মহাঁশয়কে তাহার এই অনুগ্রহের জন্ত ধন্যবাদ 
জাঁনাইতেছি। প্রতিলিপিটী যথোপযুক্তরূপে গৃহীত হয় নাই) 
ঈ্বৃত্র সকলগুলি অক্ষরের উপর ঠিকমত কাঁলি লাগে নাই। 
ক্িন্ধ গ্রতিলিপিটার মহিত মণীন্দ্রবাবুর একটা অন্থলিপি 
যুক্ত ছিল। যাঁহা হউক, লেখটা পড়িতে কোনই অস্তথৃবিধা 
হয় নাই। 

, বাসুদেব মৃষ্ডিটার পাদপীঠের উভয়পার্খে দুইটা ক্ষুত্র মামুলি 
উপাসক মূর্তি আছে; উহাদের মধ্যবর্তী স্থানে মাত্র চারি 
পঙ.ক্তির একটা ক্ষুদ্র লেখ। লেখটার মধ্যে আবার একটা 
কত্ত গরুড় মৃষ্তি খানিকটা স্থান জুড়িয়াছে এবং অপর একটা 
রেখ! উপর দিক হইতে নামিয়া আলিয়াছে। ইহার ফলে 
উপরের তিনটী পঙক্তি তিনভাগে বিভক্ত হইয়। পড়িয়াছে। 
এই লেখটাতে একাদশ ও দ্বাদশ শতাবীতে প্রচলিত ভ্রুত 
হস্তলিপি ব্যবহৃত হইয়াছে । ধাহারা মধ্যযুগর প্রথমদিকের 
'পর্ব-ভারতীয় লিপিমালা আলোচনা করিয়াছেন। তাহার! লেখ- 
সমূহে ব্যবহার্য '্মপেক্ষাকত প্রাচীন অক্ষর এবং অপেক্ষাকৃত 
আধুনিক সাধারাই্াক্ষর, একই সময়ে এই তুই প্রকার লিপির 





ব্যবহার লক্ষ্য করিয়াছেন ।(১) দেবপালের ঘোঁষরাধা লিপির 
অক্ষর ধর্দমপালের খাঁলিমপুর লিপির অক্ষর অপেক্ষা প্রাচীন । 
নাঁরায়ণপালের ভাগলপুর-লিপির অক্ষর তাহাঁরই বাদাল 
এবং বিষুপাদ মন্দিরের লেখঘ্য়ের অক্ষর অপেক্ষ| আধুনিক । 
শক্রতঞ্জের কেশরী লিপি, কম্বোজাম্বয়জ গৌড়পতির বাঁণগড় 
দিপি এবং নয়পালের ইন্দী লিপিকে পণ্ডিতগণ দশয় 
শতাব্দীতে স্থান দিয়াছেন; কিন্তু এই সকল লিপিতে যে 
ত্রিভূজাকার “র” ব্যবহৃত হইয়াছে, দ্বাদশ শতাবীর, পূর্বে 
উহা! কদাচিৎ দেখা যাঁয়। উল্লিখিত বাঁণগড় লিপির “ভ”*ও 
অনেকটা আঁধুনিক। আবার শ্রীহট্টের রাজা গোবিন্দ 
কেশবদেবের ভাটের লিপির কাল আজকাল পগ্ডিতগণ 
১০৪৯ শ্রীষ্টান্ষ বলিয়া স্থির করিয়াছেন(২)? কিন্তু এই লিপির 
অক্ষর ত্রয়োদশ শতাবীর অক্ষরের গ্তাঁয়। যাহা হউক, 
বর্তমান পাইকপাড়া লিপির অক্ষর একাদশ শতাব্ীর 
শেষার্দের ও দ্বাদশ শতাঁবীর পাল ও সেন বংশীয়দিগের 
লেখমালায় ব্যবহৃত অক্ষরের ম্যায় । নয়পালের কুষ্ণদ্বারিকা 
মন্দিরের লিপি এবং প্রথম মহীপালের বাণগড় লিপির 
অক্ষরের সহিত পাইকপাড়া! লিপির অধিকাংশ অক্ষরের 
সাদৃশ্য আছে। কিন্তু “ত” “র” ও পভ” অক্ষর তিনটার 
রূপ অনেকটা আধুনিক। “ত” ও “ভ”-এর নিয়াংশ 
বামদিকে আবর্তিত হইয়াছে এবং তীরফলকের অগ্রভাগের 
সহিত দাপৃশ্ঠযুক্ত “র”-এর পরিবর্তে ত্রিভুজাকারের “র” 
ব্যবহৃত হইয়াছে । কৃষ্ণদ্বারিক মন্দির লিপির “ত* ও 
“ভ* এবং ইর্দী লিপির “র” কতকট! পাইকপাড়া লিপিতে 
ব্যবৃত & তিনটী অক্ষরের অনুরূপ। দশম ও একাদশ 
শতাবীতে উত্তর ও পশ্চিম ভারতের কোন কোন স্থলে এই 
আকারের “র” ও “ত*-এর ব্যবহার দৃষ্ হয়।(৩) যাহা 
হউক 'লিপিতর অস্ছলারে পাইকপাড়া লেখটাকে একাদশ 





(১) তি, 1). 19. সগ০ঞাটা, 07/72% ০286 52%841+ 
9672/1, 00. 6০, 6৪8-9, 

(২) 81091705112 228) ০ 1769, ই লিপি ১১শ 
শতাব্ধীর পরের হইতে পারে । . * 

*(৩) 13951316298 7০18৩০876 হাছে শ'ওভি! 


পাচ 


ল্যৈষ্-_-১৩৪৮ ] 


শতাব্বীর শেষার্দে কিংবা পরবর্তীকালে স্থান দেওয়া যায়। 
লেখটীর ভাঁষ! অশুদ্ধ সংস্কত। ইহা গন্ঠে লিখিত। 

এই লেখ হইতে জানা যাঁয় যে পাইকপাঁড়ার বাসুদেব 
মতি শ্রীমদে্গাবিন্দচন্ত্রের ২৩শ সংবসরে অর্থাৎ গোবিনাচন্্ 
নামক জনৈক রাজার ত্রয়োবিংশ রাজ্যাঙ্কে গঙ্গাদাস নামক 
এক ব্যস্তি কর্তৃক নির্ীণ করানো হইয়াছিল। গঙ্গারণাসের 
পিতা ছিলেন উপরত (অর্থাৎ মৃত) পারদাস। এই 
গল্গার্দাসকে “রালজিক” বল! হইয়াছে; সম্ভবতঃ ইহার অর্থ 
“রলজের (বা এতদনুরূপ কোন স্থানের) অধিবাসী |” 

ইতিপূর্বে রাজা গোবিন্দচন্ত্রের কোন লেখ আবিষ্কৃত 
হয় নাই; কিন্তু যাহারা বাংলা দেশের একাদশ শতাব্দীর 
ইতিহাস আলোচনা করিয়াছেন তাহাদের নিকট এই 
নরপতির.'নাম স্থুপরিচিত। বহুকাল পূর্বে স্ুদূর-দক্ষিণ 
ভারতের মহাপরাক্রান্ত সম্াটু রাজেন্দ্র চোলের তিরুমলৈ 
লিপি(৪) হইতে জানা গিয়াছিল যে, আনুমানিক ১০২৩ 
্ীষ্টান্ে চোল সৈন্যগণ দিখ্বিজয় ব্যপদেশে পূর্ব-ভারতে 
উপস্থিত হইলে বঙ্গালদেশের রাজ! গোঁবিন্দচন্দ্রের সহিত 
তাহাদের সঙ্বর্য উপস্থিত হইয়াছিল। কিন্তু তখন বঙ্গাল- 
দেশের অবস্থান, গোঁবিন্দচন্দ্রের বংশপরিচয় এবং তাহার 
রাঁজত্বকাল সম্পর্কে অধিক কিছুই জানা যাঁয় নাই। পরে 
বাংলার চন্দ্রবংশীয় রাঁজগণের কয়েকটা লেখ আবিষ্কৃত হওয়ায় 
তাহাদের সম্বন্ধে অনেক নৃতন তথ্য জানা গিয়াছে। 
পাইকপাঁড়ায় আবিষ্কৃত বর্তমান লেখ হইতে আরও দুইটী 
নূতন কথা জান! গেল। প্রথমতঃ, পূর্ব্বতন চন্ত্রবংশীয় রাজা 
্রীচন্দ্ের স্কায় গোঁবিন্দচন্্রও সম্ভবতঃ বিক্রমপুর অঞ্চল শাসন 
করিতেন। দ্বিতীয়তঃ, গোবিন্দচন্ত্র দ্বাবিংশতি বর্ষেরও 
অধিককাল রাজ্যশাসন করিয়াছিলেন । পূর্বেই বল! হইয়াছে 
যে, লিপিতত্বের দিক হইতে পাইকপাড়া লিপিটার কাল ১১শ 
শতাবীর মধ্যভাঁগের অধিককাল পূর্বের নির্দেশ করা যায় না; 
আবার রাজেন্তর চোলের লিপি হইতে জানা গিয়াছে যে, 


(৪) 9০40) [700121) [7300100095, (189০) 31,100. 97 
997 01 [00., 1১0 05229 £ি এই লিপি রাজেন্্র চোলের ১২শ 
রাজ্যাবর্ষে উৎকীর্ণ হইয়াছিল। রাজেন্দ্র ১০১২ শ্বষ্টান্পের ৩*শে মে 
তারিখে সিংহাসন আরোহণ করেন। স্থতরাং তিরুমলৈ লিপির তারিখ 
১,২৩-২৪ খ্রীষ্টাব্দ । রাজেন্রের »ম রাজ্যবর্ষের পরে এই বিজয়াভিস্তান 
প্রেরিত হুইয়াছিল। ৷ 


সাইকশাড়াল্স বাসুনেম্ৰ মুক্ডিভে গোিম্ত্রেক্রল্ল লেখ 


৬১ 


১৯২৩ শ্রীষ্টাবের নিকটবর্তী সময়ে গোবিন্দচন্ত্র বঙ্গালদেশের 
দিংহাসনে অধিঠিত ছিলেন্‌। হ্তরাং অনুমান করা যায় 
যে, রাজা গোবিনচন্দ্র আহ্গমানিক ১০২০ খ্রীষ্টাৰ্ৰ হইতে 
আনুমানিক ১০৪৫ শ্রষ্টাব্ পর্যন্ত রাজত্ব করিয়াছিলেন'। 
রাজেন্দ্র চোলের লিপিতে গোবিন্চন্দ্রকে বঙ্গালদেশের 
অধিপতিরূপে বর্ণনা করা হইয়াছে এবং এই দেশটাকে 
উত্তর-রাঁঢ় এবং দক্ষিণ-রাঁড় হইতে পৃথক করা হইয়াছে” 
চোল সৈন্ত পালবংশীয় প্রথম মহীপালকে পরাজিত করিয়। 
উত্তর-রাঁঢ়ে এবং গঙ্গাতীরে উপস্থিত হইয়াছিল। এই 
উত্তর-রাঢ় এবং নিকটবর্তী অন্তান্ত অঞ্চল মহীপালের রাত্যতুক্ত 
ছিল। সুতরাং দেখা যাইতেছে ষে, প্রাচীন বঙ্গের স্তায় এই 
বঙ্গালদেশও বাংলা দেশের দক্ষিণ-পূর্ববাঞ্চলে অবস্থিত ছিল. 
আইন-ই-আকবরী প্রণেতা আবুলফজন লিখিয়াছেন. (জ্যারে- 
টের অনুবাদ ২১২০) যে বঙ্গল প্রাচীন বঙ্গেরই নামান্তর. । 
প্রাচীনকালে বঙগদেশের রাজগণ প্লাবন নিবারণের জঙন্ক 
১০ গজ উচ্চ ও ২০ গজ আয়ত মুত্তিক। নির্মিত এক. গএ্রকটী 
“আল” প্রস্তুত করাইতেন। এই প্রথার ফলে, বঙ্গ +আল 
এই ছুই শব্বযোগে বঙ্গাল শব্ষের উৎপত্তি হুইয়াছে। 
অধ্যাপক শ্রীযুক্ত হেমচন্দ্র রায়চৌধুরী প্রাচীন বঙ্গের অবস্থান 
সম্বন্ধে পুঙ্থানুপুঙ্খ আলোচনা করিয়। দেখাইয়াছেন (৫) যে, 
প্রাটীনকাঁলে সঙ্বীর্ন অর্থে বঙ্গ বলিতে বিক্রমপুর ও 
তৎমঙ্লিহিত ব্রহ্মপুত্রের পূর্ববকৃলস্থিত ভূখণ্ড বুঝাইত; কিন্ত 
ব্যাপক অর্থে ব্রহ্মপুত্রের পূর্বব হইতে মেদিনীপুরের কাসাই 
নদী পর্যন্ত বিস্তৃত ভূখণ্ডের নাম ছিল বঙ্গ। আবুলফজলের 
নিরুক্তি পাঠে মনে হয় যে, এই ব্যাপক বঙ্গের সমুদ্রসন্নিহিত 
এবং ন্দীনালাবহুল দক্ষিণ ভাগেই জলপ্লাবন নিবারণের জন্ 
পূর্বোক্ত ব্যবস্থা অবলদ্িত হইত এবং উহাই কালক্রমে বঙ্গাল 
নামে খ্যাত হইয়াছিল, বিশ্বরূপ সেনের সাহিত্য পরিষৎ 
লিপি হইতে এই অনুমানের সমর্থন পাওয়া যায় । এই লিপিতে 
বঙ্গের নাব্য অঞ্চলে (নরদীনালাবহুল দক্ষিণাঞ্চলে অর্থাৎ 
“ভাটি” অঞ্চলে) অবস্থিত রাঁমসিদ্ধি পাঁটক এবং বঙ্গালবড়াড্‌ 
নামক ছুইটী স্থানের উল্লেখ আছে। বাখরগঞ্জ জিলার 
উত্তরদিকে গৌরনদী থানার, অন্তর্গত রামসিক্ধি এবং 
বঙ্গোদ্রা নামক স্থানদ্বয়ের সহিত এ ছুইটী স্থান অভিন্ন 





(৫) 9254725 1% 172/27 4867 558525) 00 1878, 


৭০ 


স্ঞান্রত্তম্ঘঞ্ 


[ ২৮শ বধ-_২য় খণ্ড-_যঠ সংখ্য। 





বলিক্া অগ্মান করা হইয়াছে ।(৬) সুতরাং অধ্যাপক রায় 
চৌধুরী যে চক্তুত্বীপ অর্থাৎ বর্তমান বাখরগঞ্জ জেলা ও 
তৎসন্নিহিত অঞ্চলের সহিত বঙ্গালদেশের অভিন্নতার সিদ্ধান্ত 
করিয়াছেন, উহ সমীচীন বলিয়াই মনে হয়। দশম শতাবীর 
মধ্যভাগে প্রাচীন বঙ্গের দক্ষিণাঞ্চলে অর্থাৎ বঙ্গালদেশে 
যখন চন্জরবংশীয় রাজগণ স্বতন্ত্র রাজ্য স্থাপন করেন, তখন 
' হইতেই বঙ্গাতিরিক্ত বঙ্গাল নামে একটা দেশ বা রাষ্ট্রের 
স্বতন্ত্র উল্লেখ দেখিতে পাঁওয়া যায়। চন্ত্ররাজ্য চন্ত্রথীপ 
নামেও খ্যাত হইয়াছিল। কিয়ৎকাঁল পরে বঙ্গালের চন্দ্র- 
রাজগণ প্রাচীন বঙ্গের উপর আধিপত্য বিস্তার করেন; এই 
সময় হইতে বঙ্গ অর্থেও বঙ্গাল শব্দের ব্যবহার চলিতে থাকে । 
সম্প্রতি শ্রীযুক্ত রমেশচন্্র মন্তুমদার দেখাইতে চাহিয়াছেন 
(৭) যে, বঙ্গাল নামক একটা নগর বর্তমান চট্টগ্রামের 
নিকটে অবস্থিত ছিল এবং চট্টগ্রামের চত্ুঃপার্খবর্তী অঞ্চলই 
বঙ্গাল দেশ নামে খ্যাত হইয়াছিল । কিন্তু এই সিদ্ধান্তটীকে 
তিনি.সম্তোষজনকরূপে প্রমীণ করিতে পারিয়াছেন বলিয়া 
মনে হয় না। প্রথমতঃ তিনি যে সকল বিবরণের উপর 
নির্ভর করিয়াছেন, উহাদের রচয়িতৃগণের অত্রান্ত ভৌগোলিক 
জ্ঞান ছিল বলিয়া মনে করিবার কারণ নাই। দ্বিতীয়তঃঃ সম্তাট্‌ 
আকবরের সময়ে হব! বাঙাল! ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হইলেও 
চ্টগ্র।ম অঞ্চল প্রকৃতপক্ষে উহার অন্ততভূক্তি ছিল না; আসল 
বঙ্গালদেশটীও ন্ুবা বাঙ্গালার অংশ ছিল, এইরূপ অনুমানই 
সঙ্গত এবং সহজ । তৃতীয়ত, বঙ্গালপতি গোবিন্দচন্দ্র বা 
তদ্বংশীয় অপর কেহ ষে চট্টগ্রামের রাঁজা ছিলেন তাহার 
প্রমাণ নাই ঃ বরং টট্টগ্রামাঞ্চল যে তাহাদের রাজ্যবহিভূতি 
ছিল, তাহা মনে করিবার কারণ আছে। কিস্তু এই সকল 
বিষয় পরিষ্কার করিতে হইলে বর্তমান বাংলা দেশের 
পূর্বাঞ্চলের ৮ম হইতে ১২শ শতাবীর ইতিহাস কিঞ্চিৎ 
আলোচনা করা প্রয়োজন । | 
. , সপ্তম শতাববীর শেষার্দে খড্গবংশীয় রাজগণ পূর্বব-বাংলা 
শাসন করিতেন। কেহ কেহ মনে করেন যে, থড়াগণের 
লিপিতে হর্যসংবৎ ব্যবহৃত হইয়াছে ? কিন্তু হর্ষের সহিত পূর্বব- 
বাংলার কোনরূপ সম্পর্ক প্রমাণিত না হইলে এই সিদ্ধান্ত 


গ্রহণ করা যায় না। যাহা হউক, সম্ভবতঃ অষ্টম শতাবীর 


(৬) 12747 0৮/%76, [1], 00, 1589, 
(৭) 47 4225, 082৮ 40774, 00, 22939. 





চতুর্থ দশকে ফনোজরাঁজ ঘশোবর্দার আক্রমণের ফলে 
থঙ্জাগণের পতন হয়। অতঃপর দেশে মাত্ত্য হ্যায় বা 
অরাজকতা উপস্থিত হইল । অষ্টম শতাবীর মধ্যভাগে অর্থাৎ 
খড়াগণের পতনের কয়েকবতর মাত্র পরে পালগণের 
অত্যুদনয়ের ফলে এই অরাজকতা বিদূরিত হইয়াছিল। 
তিব্বতীয় এতিহাসিক তারনাথের বিবরণ, বাদাল- 
প্রশস্তির ২য় শ্লোক; দেবপালের, মুঙ্গের লিপির ৩য় গ্লোক, 
ভোজের সাগরতাল লিপি, কর্করাজের বরোদা লিপি, 
বালাদিত্যের চাস লিপি প্রভৃতি হইতে আমি অন্তর (৮) 
দেখাইতে চেষ্টা করিয়াছি যে, পালবংশের আদি রাজা 
গোপাল প্রথমে বঙ্গে অর্থাৎ পূর্বব-বাঁংলায় রাজ্যলাভ বা 
রাজ্স্থাপন করিয়াছিলেন। ধর্্পালের সময়ে পালগণ 
গৌড়*মগধাদি জয় করিয়া সুবিস্তৃত সাম্রাজ্যের অধীশ্বর হন 
এবং ক্রমে তাহারা আপনার্দিগকে “গোৌড়েশ্বর” বলিয়া 
প্রচার করিতে থাকেন। এই সময়ে তাহারা উত্তর" 
বাংলার কোনস্থানে রাজধানী স্থানান্তরিত করিয়াছিলেন 
বলিয়া মনে হয়। সেইজন্যই বহুকাল পরে সন্ধ্যাকর 
নন্দী বরেন্দ্রী অর্থাৎ উত্তর-বাংলাকে তাঁহার সম- 
সাময়িক পালরাজগণের জনকভূ বা পৈত্রিক ভূমি বলিয়া 
আখ্যাত করিয়াছেন। যাঁহা হউক, দশম শতাববীতে পাল- 
বংশের ইতিহাসে এক দুর্যোগ উপস্থিত হয়। প্রথম 
মহীপালের নবম রাজ্যবর্ষে উৎকীর্ণ বাণগড় লিপির (৯) 
দ্বাদশ ক্লোকে উক্ত হইয়াছে যে, তিনি রণস্থলে বাহুবলে সকল 
বিপক্ষকে হত করিয়া অনধিকৃত বিলুপ্ত পৈত্র্য রাজ্য লাভ 
করিয়াছিলেন। ইহা হইতে স্পট বোঝা যাঁয় যে, মহীপালের 
পৈত্রিক রাজ্য ইতিপূর্বে তৎকর্তৃক অনধিকৃত এবং তৎপক্ষে 
বিলুপ্ত ছিল; অথবা যাহার! প্রকৃত রাজ্যাধিকাঁরী নহে, 
তাহাদের দ্বারা অধিকৃত হওয়ায় ইতিপূর্বে পালরাজের 

(৮) 47906222725 0/ 6 27৫1 1%2,1 27256 09785 
1938, 10. 194 7 4762 1%9., 47:25 [1], 0,382? সম্প্রতি ডক্টর 
মনুমদারও এইরাপ মত প্রকাশ করিয়াছেন (1%2. 47254. 08616 





মতা যদ 2338-)1 তবে তিনি যে সিদ্ধান্ত করিয়াছেন যে পালবংশীয়গণ 


চট্টগ্রাম অঞ্চল শাসন করিতেন, তাহার কোন সন্তোষজনক প্রমাণ নাই। 
চট্টগ্রাম অঞ্চলে পালরাজগণের কোন লেখ আবিষ্কৃত না হওয়া পর্যান্ত 
কিংব! অপর কোন অবিসংবাদী "প্রমাণ না পাওয়! পর্যাস্ত এই সিদ্ধান্ত 


অপ্রানস্ত বলিয়া গ্রহণ করা যার না। 
(৯) 7. 172. 4177 0526. 


ত্যৈষ্ঠ--১৩৪৮ ] 


সাইক্স্াভ়াল্র ববাস্নেম্ব মুক্তিতে গোতিম্দচভ্ব্রদ্ল কেন 


এ 





রাজ্যলোপ পাইয়াছিল। এম্থলে পৈত্র্যরাজ্য বলিতে সমগ্র 
পালসাআজ্য কিংবা পালগণের প্রথম অভ্যুদয় ক্ষেত্র বঙ্গ, 
কিংব! তীহাদের পরবর্তী কালের গনকভূ বরেক্দ্রী, কিংবা 
সাজাজ্যের বঙ্গ-বরেন্্রী অংশ বুঝাইতেছে, তাহা নিশ্চিত বলা 
সম্ভব নয়। তবে প্রথম মহীপাঁলের অব্যবহিত পূর্বে যে পূর্বব- 
বাংলা পালগণের হস্তচ্যুত হইয়াছিল এবং তৎকর্তৃক পুনরধিকৃত 
হইয়াছিল তাহার কিছু প্রমাণ আছে। 

ঢাকা জেলার অন্তর্গত রামপালে ও ধুল্লাতে (অর্থাৎ 
বিক্রমপুর মধ্যে) এবং ফরিদপুরের মাদারিপুর মহকুমার অধীন 
কেদারপুর ও ইদিলপুরে ( অর্থাৎ দক্ষিণ-বিক্রমপুর মধ্যে ) 
্রীচন্্র নামক জনৈক চন্ত্রবশীয় বৌদ্ধ নৃপতির চারিটী শাসন 
আবিষ্কৃত হইয়াছে । ধুল্লালিপি শ্রীচন্দ্রের পঞ্চিংশ রাজ্যান্কে 
উৎকীর্ণ হইয়াছিল এবং চারিটী শাসন বিক্রমপুরের 
জয়স্বন্ধাবাঁর হইতে শ্রীচন্দ্র কর্তৃক প্রদত্ত হইয়াছিল। এগুলির 
অক্ষর মহীপাঁলের বাঁণগড় লিপির অক্ষর হইতে প্রাচীন 
বলিয়! বিবেচিত হইয়াছে । শ্রীচন্্ের ধুল্লা ও রামপাল লিপি 
হইতে জানা যাঁয় যে, রোহিতাগিরির অধীশ্বর চন্দ্রদিগের বংশে 
পৃর্চন্্র নামক এক ব্যক্তি জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন । এই 
রোহিতাগিরিকে কেহ শাহাবাদ জেলার রোহ তাঁস্গড়, কেহ 
কেহ বাত্রিপুরার অন্তর্গত লালমাই পাহাঁড় বলিয়! মনে করিয়া- 
ছেন। বাংলার চন্দ্রবংশকে আজকাল অনেকেই আরাকানের 
চন্ত্রবংশীয় রাঁজগণের সহিত সম্পকিত মনে করেন। সুতরাং 
রোহিতাগিরি এ অঞ্চলের কোনস্থান হওয়া অসম্ভব নহে। 
আবার এই রোহিতাগিরি চন্ত্রত্বীপের অর্থাৎ বাঁখরগঞ্জ 
অঞ্চলের কোন স্থানও হইতে পারে । চন্ত্রধীপ নামটা হইতে 
মনে হয় যে উহা! প্রথমে একটা দ্বীপে সীমাবদ্ধ ছিল। যাহা 
হউক, রোহিতাঁগিরির অবস্থান স্থিররূপে জানা না গেলেও 
পৃরচন্ত্র যে প্রস্থানের ভূম্যধিকারীবংশে জন্মগ্রহণ করিয়া- 
ছিলেন, তাহাতে দন্দেহ নাই। স্থবচন্্র নামে পুর্ণচন্দ্রে 
এক পুত্র জন্মে; তিনিও রাজ! ছিলেন না। স্বর্চন্দ্রে 
পুত্র ব্রৈলোক্যচন্দ্র এই বংশের প্রথম রাজা । (১*) তিনি 
হরিকেলের রাজ্যশ্রীর আধার বা আশ্রয়স্বরূপ ছিলেন 
(অর্থাৎ হরিকেলপতির সামন্ত ছিলেন এবং চন্্রত্ীপের 


শপ প্র পপ স্পা এপ 


(১*) তাহাকে দিলীপের সহিত তুলনা করা হইয়াছে। ইহ! 
হইতেও মনে হয় ষে তিনি চন্দ্রবংশের প্রথম রাজ! ছিলেন। কালিদাস 





নূপতি হইয়াছিলেন। দ্বাদশ শতাব্বীতে “জতিধাঁন- 
চিন্তামণি”কার হেমচন্দ্র বলিয়াছেন যে বঙ্গ এবং হরিকেল 
অভিন্ন। সুতরাং ত্রেলোক্যচন্দ্র বঙ্গেশ্বরের সামস্তরূপে 


অত্যুদ্য় লাভ করিয়াছিলেন ('১১) এবং চন্ত্রধীপ অর্থাৎ 


বাখরগঞ্জ অঞ্চলের রাজ! হইয়াছিলেন। ব্রৈলোক্যচন্দ্রের 


স্বামী (০৮119: ) হরিকেলপতি যে পালবংশীয় ছিলেন » 


তাহাতে কোনই সন্দেহ নাই। তিনি স্বয়ং পালরাজের 
প্রতৃত্ব অস্বীকার করিয়াছিলেন, এরূপ সিদ্ধান্ত করিবার 


উপযুক্ত কোন প্রমাণ নাই। কিন্তু ব্রেলোক্যচন্দ্রের পুত্র ' 


পরমেশ্বর পরমভট্টারক মহারাজাধিরাঁজ শ্রীচন্দ্র পূর্ব্ববাংলার 
বিস্থৃত অঞ্চল ম্বাধীনভাবে শাসন করিয়াছিলেন । ইহার 
প্রমাণ তাহার শাসনসমূহ। জনৈক সামন্তরাজের পুত্র 
হইয়াও শ্রীচন্দ্রের “হচিতরাঁজচিহৃ”রূপে জন্মগ্রহণ হইতেও 
মনে হয় যে, তিনিই চন্দ্রবংশের প্রথম স্বাধীন নরপতি । তবে 
তিনি তাহার সুদীর্ঘ রাজত্বের প্রথম হইতেই স্বাধীন ছিলেন, 
এরূপ কোন প্রমাণ নাই। ত্রিপুরা জিলার বড়কাস্তা থানার 
অধীন ভারেল্পা গ্রামে লয়হচন্দ্র নামক অপর একজন চক্্র- 
নৃপতির রাজত্বকালে (সম্ভবতঃ তাহার ১৮শ রাজ্যাক্কে) 
নিশ্মিত একটা মুর্তি আবিষ্কৃত হইয়াছে। শ্রীচন্ত্রের সহিত 
লয়হচন্দ্রের কি সম্পর্ক ছিল অথবা! আদৌ কোন সম্পর্ক,ুল, 
কি-না (১২), তাহা জানা যায় না। তবে এই দুইজন নরপতি 
এক বংশদন্ভৃত হইলে লয়হচন্দ্রকে শ্রীচন্ত্রের সাঁমান্ত পরবর্তী 
মনে কর! যাইতে পারে। যে অনধিকারী চন্দ্রগণ পাঁল- 
সাআাজ্যের পূর্বাংশ হইতে পালগ্রতুত্ব বিলুপ্ত করিয়াছিলেন, 
সম্ভবতঃ প্রথম মহীপাঁল তাহাদিগকে হতবল করিয়া এ রাজ্যাংশ 
পুনরুদ্ধার করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন। ইহা যে কেবল 


বাণগড় লিপির পূর্বোল্লিখিত দাবী হইতে অনুমিত হয়) . 


তাহা নহে; প্রথম মহীপাঁজ্লর তৃতীয় রাজ্যান্কের বাঘাউরা 
লিপিও উহ সমর্থন করে। ত্রিপুরা জিলার ব্রাহ্মণবাড়িয়া 
থানার অধীন বাঁঘাউরা গ্রামে এই লিপি আবিষ্কৃত হইয়াছে? 





(১১) “আধারো৷ হরিকেলরাজককুদচ্ছ্ল্মিতানাং শ্রিয়াম্” কথাটীতে 
ষে ব্রেলোক্যচন্দ্রকে হরিকেলের পালজ্কাজগণের সামন্তরূপে বর্ণনা করা 
হইয়াছে, ইহ! প্রথমে অধ্যাপক রায়চৌধুরী মহাশয় 
বুষাইয়াছিলেন। | 

(১২) সম্পর্ক থাকাই সম্ভব; কারণ একই যুগে একই অঞ্চলে 


৭৭২, 


বাঘাউর! লিপির মহীপালকে কেহ কেহ প্রতিহারবংশীয় দ্বিতীয় 
মহীপাল বলিয়া! স্থির করিয়াছেন ; কিন্তু এই মতের সমর্থক 
কোনই যুক্তি নাই। প্রতিহারবংশের সহিত পূর্বববাংলার 
কোনরূপ সম্পর্ক প্রমাণিত না হইলে এই অনুমাঁনকে 
্রতিহামিক সত্যরূপে গ্রহণ করা যায় না। কেহ কেহ 
.বাঘাউরা লিপির মহীপালকে পালবংণীয় দ্বিতীয় মহীপাল 
মনে করিতে পারেন । এই সিদ্ধান্তকে একেবারে উড়াইয়া 
দেওয়া! যায় না। তবে লিপি-তত্বাহুসারে বাঘাউয। 
লেখটীকে দ্বিতীয় মহীপালের কিছু পূর্ববর্তী বলিয়াই মনে 
হয়। পালবংশীয় প্রথম মহীপাল শক্র পরাভব করিয়! নষ্ট- 
রাজ্য উদ্ধারের দাঁবী করিয়াছেন ) স্ুতরাং বাঁধাউরার মৃত্তি 
তাহার রাজত্বকালে নির্মিত হইয়াছিল এরূপ মনে করা 
অসঙ্গত নহে। যাহা হউক, প্রথম মহীপালের রাজত্বের 
প্রথম দিকে এই গৌরবলাভ ঘটিয়াছিল; কারণ তাহারই 
রাজত্বের শেষার্দে গোবিনচন্ত্র শ্রীচন্দ্ের সাম্রাজ্য (অথবা 
উহ্থার অধিকাংশ ) পুনরুদ্ধার করিতে সমর্থ হুইয়াছিলেন। 
ইহার প্রমাণ রাজেন্্র চোলের লিপি এবং বর্তমান পাইকপাড়া 
লিপি। কিন্তু চন্দ্রগণ দীর্ঘকাল বঙ্গে প্রভৃত্ব করিতে পারেন 
নাই। “শকপ্রদীপ” নামক একখানি চিকিৎসা গ্রন্থে 
লিখিত আছে যে, গ্রস্থকারের পিতা বঙগেশ্বর রামপালের 
রাজবৈষ্ক ছিলেন এবং তাহার প্রপিতামহ রাজা গোবিন্দ- 
চন্দ্রের রাজবৈগ্য ছিলেন অর্থাৎ যে ব্যক্তি গোবিন্দচন্ত্রের 
(আঃ ১০২০- ৪৫ স্ত্রী: ) সভাঁয় ছিলেন, তাহার পৌত্র 
রামপালের ( আঃ ১*৮৪--১১২৬ খ্রীঃ) সমমাময়িক ছিলেন। 
এন্থলে রাঁমপাঁলকে “বঙ্গেশ্বর” বলায় মনে হয় যে গোবিন্দ- 
চন্ত্রের পরে পূর্বব-বাংল! পুনরায় পালগণের করতলগত 
হইয়াছিল। এই সম্পর্কে লক্ষ্য করিতে হইবে যে 
“রামচরিত৮-এ রামপালের ষে সামন্তবৃন্দের বিবরণ আছে, 
তীহাদদের কেহই পূর্বব-বাংলার লোক নহেন। সুতরাং 
অনুমান কর! যাইতে পারে ষে, এই সময়ে বঙ্গ পালরাজের 
গ্রত্যক্ষ শাসনাধীন ছিল । ১০-১৩ শতাবীর অনেক লিপিতে 
বঙ্গ এমন কি ২৪ পরগণা জেলা পথ্যস্ত পুণু্‌ বর্ধনতুক্তির 
অন্তর্গতরূপে উল্লিধিত হইয়াছে ; মনে হয় যে ইতিপূর্ব্বে এই 
বিস্তৃত ভূক্তি পাঁলরাজগণ তাহাদের উত্তরবাংলাস্থিত রাজধানী 
হইতে নিজেরা শাসন করিতেন এবং সাআাজ্যের অন্তান্ 


ভ্ঞা্তন্মঞ্ 





[ ২৮শবর্ষ-_২য় খণ্ড- ব্ঠ সংখ্যা 


গণের কেহ কেহ কেবলমাত্র বলের অধীশ্বর হইয়াও পূর্বব- 
প্রচলিত ব্যবস্থা অনুসারে বঙ্গকে পুণ্ বর্ধন বা উত্তর বাংলার 
অন্তর্গত বলিয়া উল্লেখ করিয়াছেন। যাহা হউক, আমগাছী 
লিপির ১৪শ স্োকে তৃতীয় বিগ্রহপাঁলের দিগ্বিজয় বর্ণন-গ্রসঙ্গে 
পূর্ব দেশের উল্লেখ আছে। সম্ভবতঃ তিনিই দ্বিতীয়বার চন্তর- 
গণকে হতবল করিয়াছিলেন ।(১৩) 

শ্রীযুক্ত নলিনীকান্ত ভট্শাঁলী গোঁবিন্দচন্ত্রকে কিংবদস্তীর 
গোগীচন্দ্রের সহিত অভিন্ন মনে করেন। এই গোগীচন্ন 
তিলকচনোর পুত্র এবং মৃকুলের অর্থাৎ ত্রিপুরার অন্তর্গত 
মেহারকুল পরগণার রাঁজা ছিলেন। গোঁগীচন্দ সন্বম্ধীয 
কিংবদস্তীর মূল পূর্ব-ভারতে এবং পাঞ্জাবে প্রচলিত কয়েকটা 
গাথা, একখানি নাটক এবং তারনাথের .ইতিহাসে উল্লিখিত 
কাহিনী। অবশ্য কিংব্দস্তীসমূহের কিছু এ্রতিহাসিক 
ভিত্তি থাকিতে পারে, কিন্তু এগুলিতে তাম্রশাসন হইতে 
পরিজ্ঞাত চন্্রদিগের ইতিহাসের বিরোধী এবং অনেক 
পরম্পর-বিরোধী আজগুবি কাহিনীও আছে। ভট্টশালী 
মহাশয় প্রীচন্দ্রের পিতা! ব্রেলোক্যচন্দ্রের ও গোগীচন্দের পিতা 
তিলকচন্দকে অভিন্ন মনে করেন। এ অনুমান সত্য হইলে, 
গোবিন্াচন্ত্র শ্রীচন্দ্রের কনিষ্ঠ ভ্রাতা হইয়া দীড়ান। যাহা 
হউক, নূতন আবিষ্কার না হওয়া পধ্যস্ত এই মতের স্বপক্ষে বা 
বিপক্ষে কিছু বলিয়া! লাভ নাই । তবে অন্য প্রমাঁণ দার! সমধিত 
না হওয়া পধ্যস্ত ইহাকে ইতিহাসের বাহিরে রাখাই ভাল। 

একাদশ শতাবীর শেষদিকে পূর্ববাঁংল! বন্দীবংশীয় 
রাঁজগণের করতলগত হইয়াছিল। বর্দীগণ যাদববংশীয় 
ছিলেন এবং পূর্ব্বে সিংহপুরের অধিপতি ছিলেন। যুক্ত- 
গ্রদেশের দেরাঁদুন জেলার লক্খামণ্ডলে আবিষ্কৃত ৭ম 
শতাব্দীর একখানি লিপিতে পাঞ্জাব-অঞ্চলে সিংহপুরপতি 
যাদববংশীয় বন্মাদিগের অস্তিত্ব জানা যায়। ভারতের 

(১৩) হুতরাং বাঘাউরার মহীপালকে পালবংশীয় দ্বিতীয় মহীপাল 
বলিয়া ধরিতে এদিক হইতে কোন বাধা নাই। তবে আমার মণে হয় 
লিপিটা একাদশ শতার্ধীর প্রথমার্ধের, ছতীয়ার্জের নহে। অপর 
প্রমাণাভাবে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়! যাইবে না। বাঘাউরা লিপি 
দ্বিতীয় মহীপালের হইলে, প্রীচন্ত্র হইতে গোবিনদচন্ত্র পর্যন্ত চজ্রগণ 
অবিচ্িনভাবে বঙ্গ শানন করিয়াছিলেন, এইরাপ সিদ্ধান্ত করিতে হইবে। 
ইহ! যে অনস্তব, তাহা! নছে। বরং চত্্ররাজগণের দীর্ঘ দীর্ঘ রাজত্বকাল লক্ষ্য 
সমনাল উচ্ভা স্ব বজিয়াই অনে হয়। | 


জ্যেষ্ঠ--১৩৪৮ ] 


অপর কোথাও সিংহপুরপতি যাঁদববংশীয় বর্ম দেখ! 
যায় নাই। ম্ুুতরাং বাংলার বন্বীগণচক পাঞ্রাবের যাদব 
বন্মাদিগের একটী শাখা মনে করা অসঙ্গত নহে। বাংলার 
বর্ধারাজগণের সময়ের কয়েকখানি লেখ পাওয়া 
গিয়াছে-- হরিবন্্ীর এবং শামলশন্ীর লিপি, হরিবন্দীর 
মন্ত্রী ভবদেব ভট্রের প্রশত্তি (১৪) এবং ভোজবন্দার 
ব্লাবো লিপি । হরিবন্শীর রাঁজত্বের ১৯শ এবং ৩৯শ 
রাজ্যাঙ্কে লিখিত দুইথাঁনি প্ুণি আবিষ্কৃত হইয়াছে; 
সুতরাং তিনি প্রায় ৪০ বংসর রাজত্ব করিয়াছিলেন। 
তাহার সামন্তপাঁর লিপি অস্পষ্ট; উহা হইতে তিনি 
জাতবর্ধার পুত্র ছিলেন এবং বিক্রমপুর হইতে শাঁসনখানি 
দান করিয়াছিঙ্লেন, ইহাই মাত্র জানা যাঁয়। বর্দীবংশের 
ইতিহাসের জন্ক আমাদিগকে প্রধানতঃ ভোজবন্মার 
বেলাঁঝে লিপির উপরই নির্ভর করিতে হয়। এই লিপির 
৫ম শ্লোকে উক্ত হইয়াছে যে সিংহপুরে যাদববংশীয় 
বন্দশগণের আদ্িবাদ ছিল। এই বংশে যাঁদব সৈশ্তের 
মমরবিজয়যাত্রার মঙ্গলশ্বরূপ বজবর্শা নামক একব্যক্তি 
জন্মগ্রহণ করেন। এই বজ্ঞবন্মী - একজন সেনানীমাত্র 
ছিলেন। বজবর্ার পুত্র জাতবর্শা৷ বেণপুত্র পৃথুর শ্রী ধারণ 
করিয়াছিলেন; চেদিরাজ কর্ণের (১০৪১-৭১ খ্রীঃ) 
কন্তা বীরশ্রীকে বিবাহ করিয়াছিলেন ; অঙগদেশে রাঁজস্রী 
বিস্তার করিয়াছিলেন ) কামরূপরাঁজ, কৈবর্তরাঁজ দিব্য ও 
গোবর্ধনকে পরাজিত করিয়াছিলেন এবং পরিশেষে 
সার্বভৌম শ্রী বিস্তার করিয়াছিলেন। পুরাণের “আছ্য 
ক্ষিতীশ্বর” পৃথুর সহিত তুলনা হইতে সত্যই অম্মান কর! 
হইয়াছে যে, জাঁতবন্দাই এই বংশের সর্বপ্রথম রাজা 
ছিলেন। তিনি কোন্‌ দেশের রাজা ছিলেন, তাহ! নিশ্চিত 
জানা যাঁয় না; কিন্তু তিনি অঙ্গদেশ, উত্তর-বাঁংলা ও 

(১৪) ভবদেবের লিপিধানি “ভুবনেস্বর অনন্তবাহদেব মন্দিরের 
লিপি” নীমে বিখ্যাত। বর্তমানে লিপিটা & মন্দিরগাত্রে আছে বটে, 
কিন্তু মূলে অস্ত্র ছিল বলিয়াই মনে হয়। কলিকাতার এশিয়াটীক 
লোসাইটারু লোকের! ধ মন্দির হইতে কয়েকটা লেখ লইয়। আসিয়াছিল ; 
পরে মেগুলি ফেরত দেওয়া হয়। কিন্তু ফেরত দিবার সময় ভ্রমন্রমে 


অন্তর হইতে সংগৃহীত ভবদেবের লিপিটা ভূবনেশ্বরে পাঠান হইয়াছিল । 
£27068621%1£5 2 1৫ 2121 1741 225৮ 8: ৪8939; 


20. 287 দি 





্পাহ্ন্র-াড়ান্প শ্বাস্তেচ্ মুক্তিতে গোলের ক্লেহ্থ 


৩. 





কামরূপ প্রভৃতির সহিত সংঘর্ষে লিণ্ড হইয়াছিলেন। . লক্ষ্য 
করিতে হইবে যে বেলাবো লিপিতে পূর্বববাংলার সহিত 
তাহার কোন সম্পর্কের কথা নাই। আমি অন্তত্র 
দেখাইয়াছি (১৫) যে, জাতবর্মা সম্ভবতঃ তাহার শ্বণ্তর 
কলচুরি কর্ণের সেনানী বা সামস্তরূপে অঙ্গদেশ অধিকার 
করিয়াছিলেন। কর্ণ যে অঙ্গদেশ অধিকার করিয়া 
পূর্বদিকে বীরভূম পর্য্স্ত অগ্রসর হইয়াছিলেন, পাইকোড়ে 
আবিষ্কৃত তদীয় আয়ন্তস্তই তাহার প্রমাণ। সম্ভবত: 
জাতবর্্া প্রথমে কর্ণের সামস্তরূপেই অঙ্গে রাজশ্রী বিস্তার 
করিয়াছিলেন। এই সম্পর্কে পৌরাণিক অঙ্গরাজের পৌত্র 
এবং বেণরাঁজের পুত্র পৃথুর সহিত জাতবন্মীর তুলন৷ লক্ষ্য 
করিবার বিষয় । (১৬) যাহা হউক, মনে হয় যে দশম: 
শতাব্দীর মধ্যভাগে জাঁতবন্ী অঙগদেশে- অধিঠিত হইয়1 
ছিলেন। তিনি তৃতীয় বিগ্রহপাঁলের ভায়রাভ।ই ছিলেন 
এবং ভায়রার পুত্রের বন্ধুরূপে তীয় বিরন্ধাচারী দিবোর 
সহিত সংঘর্ষে লিপ্ত হইতে পারেন। কিন্তু বন্দাগণ চিরকাল 
পালদিগের বন্ধু ছিলেন না; কারণ রাঁজ্যোদ্বারকামী 
রামপালের বান্ধবগণের যে তালিক! রামচরিতে পাওয়া খায়, 
তন্মধ্যে বন্ধাবংশীয় কাহারও নাম নাই । আবার এই সময়ে 
পালদিগের বান্ধব রাস্তরকুটগণ অঙ্গদেশে প্রাধান্য লাভ 
করিয়াছিল। সুতরাঁং বোঝা যায় যে, বন্শীগণ শীপ্রই অঙ্গ 


হইতে বিতাড়িত হইয়াছিলেন। বিতাড়িত হইয়া তাহারা 


উত্তর-বাংলায় কোন স্থানে আশ্রয় লইয়াছিলেন বলিয়৷ মনে 
হয়। কারণ উত্তর-বাংল! ও কামরূপের সহিত জাতবন্মীর 
কিছু সম্পর্ক দেখা গিয়াছে । বেলাবো৷ শাসনে ভোজবর্া 
কর্তৃক কৌশাম্ী অর্থাৎ রাজসাহীর অন্তর্গত কুণুস্বাতে 
ভূমিদানের উল্লেখ আছে; ইহা হইতে জান! যে উত্তর- 


বাংলার কিয়দংশ পরবর্তী বর্মারাঁজগণের অধিকার ছিল। 


আবার “রামচরিত” হইতে জানা যায় যে, দক্ষিণ পূর্ব-বাংল৷ 
পালরাজের প্রত্যক্ষ শাসনাধীন ছিল এবং উত্তর-্বাংলার 


অধিকাংশ ব্যতীত সাম্রাজ্যের অন্তান্ত অঞ্চলে তাহার সামস্তগণ 


৯৯৬ পপি 





(১৫) 47926225755 ০7 816 2772 772,255, ০৮৪০, 


1938, ১, 98. 
(১৬) ভাগবত ৪1১৩১৮। অধ্যাপক রায় চৌধুরী আমাফে 


প্রথমে পৃথুর সহিত অঙ্গদেশের কোন সম্পর্ক আছে কি-ন! তাহা খু'জিয। 


দেখিতে পরামর্শ দিয়াছিলেন। 


৭:৭5 


শীসনচালন! করিতেছিলেন। ম্ৃতরাঁং আমর! মনে করি যে 
কৈবর্ভরাজ ভীমের প্রধান সহায় এবং পরবর্তীকালে রামপালের 
পক্ষাব্লঙ্বনকারী হরি নামক যে প্রতিপত্তিশালী নায়কের 
কথী “রামচরিত”-এ পাওয়া যাঁয়(১৭) তিনি জাতবন্মীর পুত্র 
হরিবন্্রী ব্যতীত অপর কেহ নহেন। পরামচরিত”-এর 
বর্ণনা হইতে মনে হয় ষে, রামপাল বঙ্গরাঁজ্যের কিয়দংশের 
অব! সর্বাংশের শাসনাধিকার দাঁন করিয়া হরিবন্মাকে 
স্বপক্ষে আনিতে পারিয়াছিলেন। প্রামচরিত”-এই পরে 
একজন পূর্বাঞ্চলের বর্দীবংশীয় নৃপতি দ্বার রামপালের 
প্রসারিত হইবার কথা আছে। এই বর্মা রাঁজা হরিবর্ম্মা 
হইতে পারেন; কারণ রামচরিতের ৪র্থ পরিচ্ছেদ ( ৩৭ 
.ও ৪৭ শ্লোক) হইতে মনে হয় যে, হরিবন্দী মদনপালের 
সময় পর্য্যস্ত জীবিত ছিলেন। তিনি স্থদীর্ঘ ৪* বংসর 
কাল রাজত্ব করিয়াছিলেন; সুতরাং তাহার পক্ষে ইহা 
অসম্ভব নহে। সম্ভবতঃ হরিবন্শীর পরে তাহার ভ্রাতা 
শামলবর্্মা রাজ! হন ; হরিবন্মীর দীর্ঘ রাজত্বের পরে শামল- 
বর্ধা অল্পকাল রাজত্ব করিয়াছিলেন বলিয়াই মনে হয়। 
শামলবন্ীর পরে ততৎপুত্র ভোজবর্্মী রাজা হইয়াছিলেন। 
ইহার অনতিকাল পরে দ্বাদশ শতাবীর মধ্যভাগে সেন- 
বংশীয়েরা বিক্রমপুর অঞ্চল অধিকার করেন। 

সেনবংশের আদিপুরুষ বীরসেন দাক্ষিণাত্যের জনৈক 
ক্ষৌণীন্দ্র বা ভূম্যধিকারী ছিলেন ।(১৮) তাহার বংশে সামস্ত- 
মেন জন্মগ্রহণ করেন ) তাহার যশোগাথা সেতুবন্ধ রামেখরের 
নিকটে (অর্থাৎ ভারতের দক্ষিণাঞ্চলে) গীত হইত। তিনি 
জাতিতে ব্রহ্গ-ক্ষত্রিয় ( অর্থাৎ ব্রাঙ্গণ ও ক্ষত্রিয় উভয় বংশ 
সম্ভৃত পিতামাতা হইতে জাত) ছিলেন। মাধাইনগর 
লিপিতে তাহাকে কর্ণাট-ক্ষত্রিয় বলা হইয়াছে। তিনি 
কর্ণট রাঁজলক্ীর শক্রগণকে ধ্বংস করিয়াছিলেন । বোধ হয় 
কর্ণাটের কোন চালুক্যরাজের সেনানীরূপে তিনি পূর্বব- 
ভারতে আগমন করিয়াছিলেন, ইহাই এই লোকে ব্যক্ত 
হইয়াছে 1১৯) দেওপাড়া লিপির ঈম ক্লক হইতে জানা 





(১৭) 25712072726, ঘা. চু" 9০০1619, [1)0:00006101, 
15015 2১১-])1, 
(১৮) দেওপাড়া লিপি, ৪র্ঘ প্লোক হইতে পরবর্তী প্লোকসমুছ। 
, (১৯) পরমারগণের নাগপুর প্রপক্তিতে কর্ণের সহিত কর্ণাটগণের 
মিলনের বিষয় উ্ত হইয়াছে €£/. 1%2. 11, 20. 185) 192 01. কিন্তু 


ভ্ান্স্ঞ্ঙ্ধ 


[ ২৮শ ধর্ধ---ংর খ্ড--ষ্ঠ সংখ্যা 


যায় সামস্তসেন শেষ বয়সে গঙ্গাতীরে আশ্রর় গ্রহণ 
করেন। এই গঙ্গাতীর সম্ভবতঃ রাঢ়ের অন্তর্গত ছিল) 
কারণ নৈহাটা লিপির তৃতীয় ক্লোকে বলা হইয়াছে যে; 
সেনগণ প্রথমে রাছ়ে অবস্থান করিতেছিলেন। ব্যারাকপুর 
শাসনের ৫ম ক্লোকে সামস্তসেনের পুত্র হেমস্তসেনকে 
প্রাজরক্ষাস্্দক্ষ” বল! হইয়াছে ; ইহা! হইতে মনে হয়, তিনি 
ত্দানীস্তন পালরাজের সামন্ত ছিলেন । হেমস্তসেনের পুত্র 
বিজয়সেনও প্রথম জীবনে পাঁলগণের সামস্ত ছিলেন ।(২৭) 
কিন্তু বিজয়সেন শূররাজবংশের কপ্ত! বিবাহ করিয়! সেন- 
প্রাধান্তের ভিত্তি স্বাপন করেন। তিনিই সেনবংশের প্রথম 
্বাধীন রাঁজা। বিজয়সেন নাগ্য, বীর, বর্ধন প্রভৃতি 
রাজগণকে এবং গৌড়, কামরূপ ও কলিঙ্গের রাজাকে 
পরাজিত করিয়াছিলেন । পরাজিত গৌড়েশ্বর অবশ্যই 
কোন পালসম্রাট ; ইহার নিকট হুইতেই উত্তর-বাংল! 
বিজিত হুইয়াছিল। সম্ভবতঃ বিজয়সেনের রাজত্বের শেষ 
দিকে ভোজবর্্ী বা তাঁহার কোন উত্তরাঁধিকারীর নিকট 
হইতে পূর্বব-বাংলা বিজিত হইয়াছিল। বীর প্রভৃতি পরাজিত 
নৃপবৃন্দের নামের তালিকামধ্যে কোন অজ্ঞাত বন্মারাজার 
নাম রহিয়াছে কি-না, নৃতন আবিষ্কার ন! হইলে তাহা জান! 
যাইবে না। বিজয়সেনের ব্যারাকপুর শাসন তাহার 
রাজত্বের ৬২তম বর্ষে বিক্রমপুর হইতে প্রদত্ত হইয়াছিল ।(২১) 
এই লিপির ৮ম ও ৯ম শ্লোক পড়িলে মনে হয় যে, বিজয়- 
সেন এই সময়ে অতি বৃদ্ধ হইয়াছিলেন এবং শাসনকাঁধ্য 
প্রকৃতপক্ষে তাহার শুরবংশীয়৷ রাণীর গর্ভজাত পুত্র বল্লাল 
সেনই নির্বাহ করিতেন। প্বল্লাল” এই কানাড়ী নামটা 


আপা শী শশাাাশী দশ ৬ শপ্পপীপিশীপাপকা শিপীিপীশীিপিশী | শিপ শিপ পিপাপ শপে 


কর্ণের পূরবভারত আক্রমণ কর্ণাটগণের সহযোগে সম্পাদিত হইয়াছিল 
কি-না তাহা! জান! যায় নাই। তাহা যদি হয়, তবে সেন ও বন্মাগণ 
একই সময়ে (অর্থাৎ চেদি-কর্ণাট আক্রমণের সময়ে ) বাংলায় আগমন 
করিয়াছিলেন । 

(২*) প্রীযুক্ত রায়চৌধুরী “রামচরিত"-এ উল্লিখিত রামপালের 
সামন্ত নিজ্রাবলপতি বিজয়রাজকে সেনবংণীয় বিজয়সেন মনে করেন 
(52825 18 1%28677474217%1//65, 0, 158). সম্প্রতি এ সম্পর্কে 
যে আপত্তি উত্ধাপিত হইয়াছে (72716757542, 0. 8851), তাহা! 
একেবারে অলঙজ্ঘয নহে। 

(২১) ভাগারকর মনে করেন যে, ইহা চালুকাবিক্রমসংবতের 


তারিখ (18, (২০. 1682, ০০৫ )1. কিন্তু এ অনুমানের পক্ষে ফোন 
প্রমাণ নাই। 


জ্যৈষ্--১৩৪৮ ] ডোমার কত্রিভ। এ: 


হইতেওড সেনদিগের সহিত কর্ণাটের সম্পর্ক হুচিত হয়। যাহা (৩য় পউক্কি) [ক] গঞ্গদ [খ] স-কারিত-বা-[গ] সুদেব- 
হউক পূর্ব-বাংলার ইতিহাসে চন্দ্রবংশের স্থান নির্দেশ করিতে (৪র্থ পডক্তি) [ক] ভট্টারক মা 
গিয়া আর অধিক দূর অগ্রসর হইবার প্রয়োজন নাই। সংশোধিত পাঠ 
নিয়ে শ্রীযুক্ত যোগেন্দ্রনীথ গুপ্ত মহাশয়ের প্রদত্ত নু 
প্রতিলিপি € €508107980 ) ও অনুলিপি (6৮০০০) ) ঠা 
হইতে আমর! পাইকপাড়া লিপির পাঁঠ উদ্ধৃত করিলাম । 
বঙ্গানুবাদ 


পাইকপাড়া লিপির পাঠ শ্রীমদেগাবিন্দচন্দ্রের [ রাজ্যের ] ২৩শ সংবৎসরে রালজিরু 
(১ম পঙক্তি) [ক] শ্রীমদেগা- [খ] বিন্দচ-[গীন্ত্রস্ত সম্বং২৩ (অর্থাৎ রলজের বা তদম্ুরূপ কোন স্থানের অধিবাসী ), 


রাল্িকোপরত-পারদাঁস- 
স্থৃত-গঙ্গাপীস-কারিত-বাস্দেবভট্রারকঃ ॥ 


(২য় পঙক্তি) [ক.; রালজিক-উ- [খ] পরত-পা- [গ] মৃত পারদাসের পুত্র গঙ্গাদাসের দ্বারা তৈরী করানো 
রদাস-স্ৃতঃ বাম্মৃদেবভট্রারক ( অর্থাৎ ভগবান্‌ বাস্থুদেবের মুত্তি )॥ 
তোমার কৰিতা 
শ্রীরামেন্দু দর 
মনের আবেগ মিশায়ে সদাই বুঝিতে পারি যে রহিল তাহার 
তোমার কবিতা লিখি-_ অনস্ত অবশেষ! 
মযুর মাতন জুড়ে সাঁরাথন এক রাতি জেগে একটি কবিতা-_ 
নাচে যে ভবন-শিথি ! হায়, তাই দিয়ে যদি 
তোমার কবিতা নহে ত কেবল সাগরে আনিয়া পাঁরিতাম আমি 
ছন্দে সাজানো কথা-_ মিলাতে খণের নদী, 
চরণে চরণে তব শ্রীচরণে ভগীরথ হয়ে পূরব জনমে 
নিবেদন ব্যাকুলতা ! ভাগীরথী ধারা তবে 
দুরু দুর আশা? হাসা, ভালবাসা আমিই আনিয়] দিতাম ঢালিয়া 
সকলি মিলায়ে দিয়া সাগরে সগৌরবে ! 
তোমার পুজার পুত উপচার এক রাতি কেন, যতগুলি রাতি 
পরিণত হয় প্রিয়া! জীবনে এখনে! বাকী 
হদি-বল্লভ আখি-পল্লব সব গুলি ভরি? যদ্দি লিখে মরি, 
সারা রাতি রছে জাগি কবিত৷ ফুরাবে না কি? 
হদয়-মাঁধব কীদে শতবার নহে, নহে, নহে-_তোমার কবিতা 
«পদ্দ-পল্লব, মাগি, ক্তু ফুরাবার নহে 
রাগেঃ অন্গরাঁগে” কোৌপনেঃ গোঁপনে জনমে জনমে দেহ হ'তে দেহে 
বিরহে, মিলনে গাঁথি, অন্নেহী এ ধারা বহে! 
তোঁমাঁর কবিতা! দুরূহ সবই তা তব কবিতার সুধা-বঙ্কার 
লিখিতে ফুরায় রাঁতি! করেছে আমারে কবি 
অথচ তাহার ছন্দে ছন্দে লভেছি কত না কবির জনম, ৃ 
অমূত গন্ধ ভর! আবার যেন গো লভি ! 
মুগনাভি সম লাগে অনুপম, মোক্ষ চাহি না, মুক্তি চাহি না 
যদিও যায় না ধরা! মাগি না কে! নির্বাণ-_ 
তোমার কবিতা লিখিয়! বখন কবি হয়ে যেন যুগে যুগে গেয়ে 


কষি টেনে করি শেষ-_ 0. যেতে পারিতৰ গান !. 





গ্রাম্াীপথ। যাযাবর জাতীয় একটী ক্ষুদ্র বাজিকরের দল চলিয়াছে। 
কটা জোয়ান পেশী-সবল দীর্ঘ দেহ; কঠোর মুখষ্রী, গালে একট বড় 
আকারের আচিল। তাহার কাধে একটী ভার; ভারের বাকের 


দুইপ্রান্তে ঝুলানে! দড়ির শিকায় পাচ-ছরটী করিয়া সাপের ঝাঁপি। . 


বাকের বাশটা ঝাহাতের কনুইয়ের ভাজে চাপিয়! ধরিয়াছে এবং ছুই 
হাতে বাজাইতেছে তুমড়ি বীশী। একটী তরুণী, কালে! নিকষের মত রঙ, 
তন্বী দীর্ঘাঙ্গী, তাহার কাধে ঝুলি, হাতে দড়িতে আবদ্ধ দুইটী বীদর, 
একটী ছাগল। পিছনে একটা সবল দেহ প্রৌট-_একমুখ দাঁড়ি গৌঁফ__ 
মাধার চুলে জট বীধিয়াছে। তাহার কাধে গোটা কয়েক বীশ, দড়ি 


ইত্যাদি। হাতে একটা ডুগডুগি। ডুগড়ুগি বাজিতেছে_-একঘেয়ে ডুগ-ডুগ, 


ডুগডুগ শবে । তাহাদের পিছনে একদল গ্রাম্ালোক 


, ১মব্যক্তি। এই বড় বড় সাপমাইরি। ইয়া গোঁদা 
একটা পাহাড়ে চিতি আছে! কাল সন্ধেতে ওই বুড়ো 
সেটাকে গলায় জড়িয়ে বসে ছিল। বেদেরা এসেছে গুনেই 
আমি দেখতে গিয়েছিলাম । 

২য়ব্যক্কি। ওর! সব কামরূপের বিদ্যে জানে । বাঙালী 
ধেদে কি না, ওদের হ'ল কাঁউরের বিচ্যে। কীাঁউরের বিচ্যেই 
হল অেষ্ঠ বিগ্ঠে, ডাকিনী মন্তর | মাহুষ পধ্যন্ত উড়িয়ে দিতে 
পারে। তোমাকে যদি ভেলকি লাগিয়ে দেয়-_তবে সব ভুলে 
যাবে তুমি। 

ওয় ব্যক্তি। গ্যাই-__ছেলে-_-গ্যাই ! 
ছেলের। যাস না--কাছেযাসনা! 

€র্ঘব্যক্তি। মরবি। দেবে সাঁপ ছেড়ে! . 
উপরোক্ক কথাগুলি হইতেছিল প্রায় একসঙ্গেই-_তাহাতে কথাবার্ত প্রায় 
কোলাহলে পরিপত। এই সময়ে বেদে ছুইজনের বাশী ও 
ডুগড়ুগি থামিল। লোকগুলিও স্তন ভূইয়া গেল 
জোয়ান বাঁজিকরের নাম কিষ্টো। ভেলকি বাজী! 
ভেলকি বাজি! ভোজ বিষ্ভার খেল বাবু ! কামরূপের যাছু! 
কথা শেষের দঙ্গে সঙ্গেই বৃদ্ধ ডুগচুগি বাজাইয়৷ দিল-_ূগ-ডুগং_ভুডুগ, 
বেদেনী-রাধিকাঁ। কেলে সাপের লাচন বাবু! কেলে 
সশপের লাঁচন ! | 


বাড় দেখ 





কথা শেষ করিয়াই বেদেনী গান ধরিল। কিষ্টে! বীশীতে সর তুলিল 


হেল্যা ছুল্য! নাচে গ, 
কা-লো৷ নাগিনী আমার হেল্য! ছুল্যা নাচে গ 
মাথায় নাচে কালে! কানাই মোহন বংশী বাজে গ ! 
কালিদহের জল হৈল বিষে কাজল কালো গো-_ 
ফুল্যে ফুল্যে নাচে জল বধূর পরশ যাচে গ-_ 
বাকা বধু নীলকমল নাচে লাগের পারা গ-_ 
কা-লো নাগিনী দিল কালি কুলে লাজে গ-_ 


গ্রামবাসী বৃদ্ধ নবীন বাগী। (সে অক্ষমতা হেতু 
পিছনে পড়িয়া আছে । চোখেও সে ভাল দেখিতে পায় ন!। 
সেকছিল।) যাসন! রে, কাছে যাস না। ওরে ছেলেরা, 
কাছে যাস্‌ না। ভেলকি লাগিয়ে সব ভুলিয়ে দেবে। 
আমার ভাইপো চরণকে বেদের চুরি ক'রে নিয়ে গেছে। 
যাস না। 

বৃদ্ধ বাজিকর। (হি হি করিয়া! হাসিয়া! উঠিল ) হাঁ_ 
-_ষ্টীরে বুঢ়াঃ ভেলকি লাঁগায়ে দিবে। পালারে বুঢ়া পালা । 
ভেলকি লাগায়ে দিবে। 

আবার হাসিল। সঙ্গে দঙ্গে সে জগ-ডুগি বাজাইল, জোয়ান বেদে 
কিন্টো বাশীতে সুর তুলিল। ধীরে ধীরে সে সুর এবং শব্দ পথের 

বাকের মাথায় দুরবর্তী হুইয়। ক্রমশ মিলাইয়া গেল। 
দৃষটান্তর__-পথের ধারেই থান! । থানার বারান্দান্ঈ-_ ইউনিয়ন 
বোর্ডের প্রেসিডেন্ট বিমলবাবু ও দারোগা 

বিমলবাবু। হাহাহা! ভেলকি লাগিয়ে দেবে ! 
ভেলকি লাগিয়ে মানুষকে সব ভুলিয়ে দিতে পারে! কি 
বলছেন দারোগা বাবু? বিংশ শতাব্ীতে ভেলকি ! হা-_ 
হা হা! 

দারোগা । আপনারা ইয়ংম্যান ;--তাজা রক্ত! 
ভেলকি গুনে হাসাই আপনাদের পক্ষে স্বাভাবিক । আমিও 
প্রথম জীবনে বিশ্বাম করতাম না। কিন্ত রিশরছর পুলিশ 
লাইনে চারি করে দেখলাম অনেক। এরা ক্রিমিনান 


স্্রীইব। এদের ভাবতে 'পাছারা দির়েছি--চোখে দেখেছি-_ 


গণ. 


জ্যৈষ্ঠ--১৩৪৮ ] বাতির বন) 


গু 
খই টস ০ --্হ বস স্ব সস 














ক্রাইম করছে। কিন্তু কি যে হয়ে যেত-ব্যস্‌ সব গোলমাল ধিমল। মন্দকি? 
হয়ে গেল! যখন আকেল ফিরত, তখন কাঁজ ওদের শেষ দারোগা । রামখেলান, বোলাঁও উলোক কে । 
হয়ে গেছে । তম তন্ন ক'রে তাবু সার্চ করেছি, কিছু পাই বাণী ও ডূগ-ডুগি বাজাইয়া আসিয়া উপস্থিত হইল 
নি। দশ-বারোটা ভেল্কির কেসই করেছি আমি। এরা বাজিকরের দল। , পিছনে জনত| 
ছোট ছেলে মেয়ে চুরি করে। দশ-বাঁরোটার ভেতর তিনটে  কিছ্টো। ভেলকি বাঁজি! ভেলকি বাজি! ভোজ- 
ছেলে আমি বের করেছিলাঁম। কিন্তু আশ্র্ধ্য কি জানেন ? বিদ্তার থেল্‌ বাঁবু। কানরূপের যাছ ! 
সাঁত দিন আট দিন_-এরই মধ্যে ছেলের! বাঁপ-মাকে চিনতে 
পারে নি। বাড়ী চিনতে পারেনি ! 
বিমলবাবু। বলেন কি? 


ডুগড়ুগি বাজাইয়া দিল 
রাধিকা । বাজি দেখেন হুজুর! সাপের লাঁচন! 


হীরেমনের খেল । শাউডী বউয়ের কৌদল ! 
দারোগা । এক বর্ণও মিথ্যে বলিনি আমি । এখান- ॥ শাউড়ী কৌদল 
বুদ্ধ বাজিকর। সেলাম হুজুর ! 


কাঁরই একটা খবর, বোধ হয় জানেন না। কাল বেদের রর 
দারোগা । কি বাজি দেখাবি? 


তাঁবু ফেলেছে গুনেই পুরনে। ডাইরী খুলে দেখলাম । ূ 
রে টি রর রা রে চির কিষ্টো। সীপের খেলা, বদরের খেলা, ভোজবিষ্যার খেলা 
ও _. হুজুর! দড়ির ওপর বেদিনী লাচবে। আমি হাতের ওপর 


বাগীীদের ছেলে চুরি করেছিল বেদেরা। আবছা! মনে ূ বে হুজু 

ছে; উঃ সে আমাদের ! কাল মীর সেই 8৯788 ৯9 
আছে; উঃসেকিভয় র! কা? টি ভ ড়া 

ছ সে দারোগা । ভাগ বেটা! এই বুড়োয়া ! 


ছেলেটার বোন-__পাঁচী বাগ্দিনী--এসেছিল আমার কাছে। ৃধ। হুর! 
[| হ্যা-ই নামও রয়ে টু 
দারোগা । হাহ্যা। পাচী বাগ্দিনীর মিও রয়েছে দারোগা । বাঁণের খেলা দেখাতে পারিস? 
রিপোর্টে। ওই মেয়েটাও সঙ্গে ছিল ছেলেটার । ভাই-বোনে রি 
বুদ্ধ। না! হুজুর, আমরা জানি না) হুজুর- মা-বাপ! 
গিয়েছিল বেদেদের তাঁবু দেখতে । তাঁরপর বোনটা ফিরে 
ৰ দারোগা । তবে আর জানিস কি? ভেলকি লাগিয়ে 
এল--ভাইটাকে আর পাওয়া গেল না। থানার রিপোর্টে টানার 
মানুষ ভোলাতে পারিস? এই বাবুকে ভেম্বী ল'খাঁতে 
দারোগ! কি লিখেছেন দেখবেন? এই দেখুন। আঠারো পারিস? 
বছর আগের ঘটনা__আ1পনার ১৯২২ দারোগ|। লিখেছেন | 
ফেঃ মেয়েটা যখন ফিরল--তখন তাঁর বিহবলের মত 
অবস্থা । নাঁম ধরে ডাকলে পর্য্যন্ত সাঁড়া দেয় না। কাউকে হাসছিদ যে? পারিস? 
চিনতে পারে না। তারপর দারোগ! লিখেছেন__বেদেদের রাধিকা । পারি বই কি হুছুর! কিন্তৃক-_বাবুকে যে 
তবু সার্চ করা হ'ল। কিন্তু ছেলে পাওয়া গেল না। ত: হ'লে আমাদের সাথে যেতে হবে। 
ক্রিমিম্তাল ট্রাইবের হিষ্টরিতে আছে যে, এরা না কি মাষকে দারোগা । তাই যাবে বাবু। 
অজ্ঞান ক'রে অস্থাবরের মত লুকিয়ে রাঁথতে পাঁরে। রাধিকা। ওরে বাপরে! তাই হয়! আর বেদে: 
দূরে বাদ ডুগ-ডুগির শব বাজি উঠিল আমরা, বাঁবুকে লিয়ে যে আমরা দায়ে পড়ব হুজুর! চা 
রুপ টিক সম্বন্ধে কত অনুসন্ধান চলছে। ইউরোপ কোথাকে পাব -সাঁঝ-বিহানে। 
এ্যামেরিকাঁয় পর্যন্ত সাড়া পড়ে গেছে। কত টাকা রাখিক! আবার হাদিল 
রিওয়ার্ড দিতে চায়। রপ. টিক যদি থাঁকে তবে এমনি দারোগা । দূর! দূর! তোদের ও বাজে খেলা কে 
কোন বেদেদের মধ্যেই আছে জানবেন। মুস্কিল কি দেখবে? বাঁণ কাটাকাটি *জানিসনে তোরা, ভেলকি : 
জানেন ?_ আমাদের ভয়ে কিছুতেই স্বীকার করে না। জানিস নে _-তবে আঁর তোরা কিসের বেদে ? 
বাশী ডুগ-ডুগির শন নিকটে আদিল কিষ্টো। (দস্ততরে ) হুজুর_হ্ৃকুম করেন, দেখাই ।. 
বাজি দেখবেন? : বিমল। বাণ কাটাকাটি ? সত্যিই জান.তোমর!? 


বেদেনী রাধিক!। খিল খিল করিয়। হাসিয় উঠিল 


৭০৮ 


ম্বাধিকা। বেদের জাত-_বিষ্কে জানি বই-কি 'বাবু। 


তবে হুম্ছুরদের কাছে কিছু জানি না। দরোগাবাবু 


হাজতে পুরে দিবেন যে! 
দারোগা! । আচ্ছা আচ্ছা! কোন ভয় নেই! দেখা 
তোদের খেলা ! 
বৃদ্ধ বেদে। সত্যি কথা__বলছেন হুজুর ? 
দারোগা । আরস্ত কর তোদের খেলা । কোন ভয় নেই ! 
'বৃদ্ধবেদে। (ভুগ-ভুগি বাজাইয়া হীক মারিয়া উঠিল। 
আ'-_কামরূপের কামাখ্যা মাঈ কি জয়! 
_.. কিষ্টোবরাধিক! ॥ ( একসঙে ) জয় ! 
কি্টে। বাশী বাজাইল 
বৃদ্ধবেদে। আ- লাগ- লাগ- লাগ লাগত ভেলকি 
লাগ. । লাগ, বুললে লাগবি, ভাগ বুললে ভাগবি। (ডুগ- 
ডুগি বাঁজাইল ) কার দোহাই? 
কিষ্টো-রাধিকা। ( একসঙ্গে ) 
(ভূগন্ডুগি ) 
বৃদ্ধ। 


ওস্তাদের দোহাই! 


আরে বেদে! 
কিছ্টো। হা ওস্তাদ! 
বৃদ্ধ। আরে বেদেনী ! 
রাধিকা | হা- হা _ওন্তাদ ! 
বৃদধ। বাজাও তো বাশী! লাগাও তো গান ! 
বাশী বাজিল-_তরুণী গাহিল ; বাণীর সহিত গানের কোন সদ্বন্ধ নাই । 
তুমড়ি বাণী কেবল একই পর্দায় বাজিয়। চলিল ; তরুণী গাহিল 
মহামায়ার মায়! গ- 
নম নম মহাদেবী_ মহাদেবের জায়। গ-_ 
কাউরের চণ্ডী আসে আকাশে আকাশে গ__! 
ডাকিনী ইকিনী আসে- খলখলিয়ে হাসে গ ! 
যেমন বাবুর চাদ মুখ-_তেসনি ইলাম পাব গ ! 
বাণারসী সাড়ী পর্যা-_হেথা হতে যাব গ! 
গানের মধ্যেই হঠা? উচ্ছ.সিত স্বরে নবীন বাগ্দীর ভাইঝি 
পাঁচি চীৎকার করিয়! উঠিল 
'পাচি।' হ্্যা-্্যা! ওই তো, গালে সেই আাচিল! 
, ওই তো, ওই আমাদের চরণ & ওই সেই বুড়ো বেদে! হ্্যা__ 
ওই সেই বেদে! 
- সঙ্গে সঙ্গে সব স্তন্ধ হইয়। গেল 


চরণ ! চরণ! 


শ্ডান্সভন্ব্ধ 


[ ২৮শ বর্ষ--২য খণ্ড--বষঠ সংখ্যা 


মেয়েটী আসিয়! তরুণ বেদে কিষ্টোর হাত চাপিয়৷ ধরিল 
রাধিকা । কে তু? কে তু? কেনে উয়ার হাত 
চেপে ধরেছিস? 
পাচি। আমার ভাই! আমার ভাই! দারোগাবাবু, 
এই আমার হারানো ভাই! কাকা! দেখ তুমি 
দেখ। তোমরা সব দেখ! সেই গালে আঁচিল! 
ওগো- তোমরা! 
রাধিকা । (মাঁঝখাঁনে পড়িয়া) ছাড়! ছাড়! হাত 
ছাঁড়! আমার সোয়ামী! ছাড় বুলছি! 
পাচি। না । আমার ভাই-_-চরণ। একতৃষ্টে আমাকে 
দেখছিস চরণ, আমাকে চিনতে পারছিস? আমি তোর 
দিদি__পঞ্চু দাসী, পাঁচি দিদি! চিনতে পারছিল? 
রাধিকা। তকে আমি খুন করে ফেলাব। 
বৃদ্ধ প্রথমটা যেন স্তস্ভিত হইয়। গিয়াছিল, তারপর সহসা সে অতিমাত্রায় 
চঞ্চল হইয়! উঠিল--চোখ দুইটা জ্বলিয়। উঠিল__সে 
সম্তর্পণে বাহির করিল-_একটা ছোরা 
দারোগা । রামখেলান রামখেলান, পাকড়ে বুড়াকো ! 
ছোকরা নিকাঁলতা বুড়া! হা--জলদি+ জলদি |: 
রামখেলান ছুটিয়। গিয়! বৃদ্ধকে ধরিল 


আচ্ছা! 

বুদ্ধ বেদে। হুজুর! ও আমার ভাইয়ের বেটা, 
আমার জামাই। বেদের ছেলের গায়ে হাত দিলে তাকে 
আমরা খুন করি হুজুর । 


দারোগা । এই মেয়ে-_-এই পাঁচি, ছাড়, তুই ওকে 


ছেড়ে দে! এই বেদেনী-সরে আয় তুই! এই 
ছোকরা ! এই! দাঁড়িয়ে আছিস যে হতভদ্বের মত! এই 
বেদিয়৷ ছোকরা ! 

কি্টো। (স্থৃপ্তোখিতের মত ) ৷! 


দারোগা । এ-ধারে আয়! শোন্। তুই পাঁচিকে-__ 
ওই মেয়েটাকে চিনতে পারছিস? বেদেনীর দিকে চাইছিস 
কি? বেদেনী নয়-_ওই মেয়ে-ওই যে! হ্যা! 

কিষ্টে। ( অত্যান্ত ধীরে ধীরে উচ্চারণ করিল ) না! 

পাঁচি। না-_না--ওই আমার চরণ! দারোগাবাবু, 
ওই আমার ভাই। ছেলেবেলায় এই বেদের তাবু দেখতে 
গিয়েছিলাম__-আমরা ভাই-বোনে ;) ওই বেদে আমাদিগে 
ডাকলে-_ এখন ও বুড়ে৷ হয়েছে! তারপর কি করে 


জ্যোষ্ঠ--১৩৪৮ ] 


দিলে- আর মনে নাই, আমি পথ হারিয়ে গেলাম! 
চরণকেও ভূলে গেলাম । ওরা চরণকে ভেলকি লাগিয়ে 
চুরি করেছে দারোগাবাবু! 
রাধিকা । কিছ্টো! কিষ্টো! 
কিষ্টো। আ! 
রাধিকা । তাঁড়ায়ে দে! তু উয়াকে তাড়ায়ে দে! 
দেখ তু রাধি কাঁদছে, দেখ. !__ 
বিমল। বাঃ ওর নাম কি্টো-ওর নাম রাঁধি! 
দারোগাঁবাবু মিলটা তো! আশ্চর্য্য ! একটা যোৌগ-সাজশের 
গন্ধ পাচ্ছেন না? 
দারোগ!। হ্্যা। আরে বুড়োয়াঃ এর নাঁম কি্টো_ 
ওর নাম রাধি! এমন মিল ক'রে নাম কি করে হল রে? 
কি চুপ করে আছিস যে? 
বৃদ্ধ বেদে। হাঁ! ভাইয়ের ছেলেটা আগে হ'ল বাবুঃ 
নাঁম হ'ল কিষ্টো। পরে হ'ল আমার বেটা । তখুন-_সাদীর 
সম্বন্ধ ক'রে নাম রাখলাম- বাঁধি! 
বিমল। সন্তোষজনক কৈফিয়ৎ ! 
পাচী। দারোগাবাবু! আমার ভাইকে ফিরে দেন 
ভুজুর ! 
রাধিকা । আমার সৌঁয়ামী, দারোগাবাবু-_আমার 
সৌয়ামী ! 
দারোগা । কি হে, তোমরা গাঁয়ের লোক কেউ 
চিনতে পার একে? আঠারো বছর আগে এই মেয়েটার 
ভাই চুরি হয়ে গিয়েছিল । বেদের নাঁকি চুরি করেছিল। 
পাঁচি বলছে-_-এই তার ভাই। তোমরা চিনতে পার? 
কি; সব চুপ করে রইলে যে? 
গ্রামের লোৌক-_ 
--তা কি ক'রে বলব মাঁশায়? 
- তাঁকে জানে স্যার! চরণ কেমন ছিল_-কার 
মনে আছে স্যার ! 
__-ওই যে পাঁচী বলছে-_গালে আচিল রয়েছে ! 
পাচি। ঠিক, সেই আ্মীচিল দারোগাবাবু; ঠিক তেমনি ! 
তেমনি মুখ, তেমনি নাক! 
দারোগা । কিস্ত আর তো কেউ চিনতে পারছে না 
বাপু! তা ছাড়া__আাচিল এক রকম অনেকের থাকে। 
 বিমলবাবুঃ কি বলের? 





্াভিককিন্তর 





পিএ উ২ 





বিমল । কি বলব বলুম। জটিল রহন্য! 

দারোগা । আর একটা কথা, এ মেয়েটাও তখন খুব 
ছে1ট ছিল, তাঁর স্বতির ওপর নির্ভর করা চলে না! 

বিমল। তা বটে! 

দারোগা! । পাঁচি তুমি বাড়ী যাও তোমার ভুল হয়েছে! 


রাধিকা । তোমার রাঁডা থোকা হক দারোগাঁবাকু! - 
রাজা হও তুমি! 
নবীন। কীদিস নে পাঁচি; বাড়ী চল্‌। কাঁদিস নে। 


পাঁচি। নানা, ওই আমার চরণ! কাকা, ওই 
আমার চরণ! ওই দেখ, এখনও একদৃষ্টে আমার দিকে 
চেয়ে আছে! 
দারোগা । যাও যাও, তোমরা বাড়ী যাও! বাড়ী যাও! 
বুদ্ধ বেদে। হুজুর, আজ আমাদের ছুটি হোক হুজুর ! 
রাধিকা । না! না! খেলা কর বুড়া! আচ্ছা থেল! 
দেখা দারোগাবাবুকে ! কিষ্টো_কিষ্টো ! বাজা--বাশী বাজা। 
দারোগা । না। আজ থাক। কাল বরং আসবি 
তোরা । সন্ধ্যে হয়ে এল! যাঁও--সব যাও । কদল--কাল 
বাজী হবে। যাঁও সব। এই বেদেরা তোর! সির যা। 
এখুনি সিপাহী যাঁবে খোঁজে । যাঁও। 
গ্রামের লোক-- 
--চলরে সব, চল । 
_ আরে আমাদের মণ্টে গেল কোথা? মণ্টে-। 
এই যে। 
_গোঁবিন্দে। অ গোবিন্দ! 
-_লোঁকটাঁর আঁচিলটা কিন্তু ঠিক চরণের মত। 
ধীরে ধীরে সব মিলাইয়া গেল 
বিমল। বিচাঁরটা কিন্ত মোটেই হুক হ'ল না দারোগা" 
বাঁবু। ওই লোকটাই চরণ হতে পারে। 
দারোগা । অসম্ভব নয়। তবে কি জানেন) হারিয়ে 
গেছে-গেছে। মাঁ-বাপ নেই যাদের অমীম দুঃখ । আঁর 
এখন সে ফ্যাসাদ করতে গেলে বিশ্রী কাণ্ড হয়ে যাষে। 
দেখেছেন তো-ছোরা বের করেছিল! খুন ক'রে দিত। 


দৃষ্ঠান্তর-_সন্ধ্যার ম্লান আলোক অন্ধকার হইয়। আসিতেছে। প্রান্তরে 

বেদিয়াদের আট-দশটা তাবু । একটা ভাবুর সম্থুথে ঠিক সেই সময়ে 

রাধিকাও এই কথাই বলিতেছিল। সপ্থাবিপদ মুক্তিতে দে উৎুল্প-উজ্দ্বল 
* কিন্তু কিষ্টো যেন স্প্রীচ্ছন্-নির্ব্বাক ; বৃদ্ধ েদিযাও,স্ত্ষ " 


ঞ্)০ 


রাধিকা । উটাকে আমি খুন ক'রে দিতম কিন্তুক। 
বুঝলি কিট] । 
কিষ্টো। হুঁ । 
রাধিকা । কাল কিস্তৃক আচ্ছ! খেল্‌ দেখাতে হ'বেক 
দারোগাবাবুকে! ও বাবা! 
* * বুগ্ধ। | 
* রাধিকা । তুরা এমন চুপ ক'রে রইছিস কেনে? ও 
বাবা! ও কিষ্টো! 
বুদ্ধ। ভাঁ-ছঁ। তুথামবাধি! 
কিষ্টো। (রূঢ়ভাবে ) বুড়া ! 
বৃদ্ধ। আমি চল্লম রে রাধি-_সাঙাতের তাবুতে। 
কিষ্টো। (খপ. করিয়! তাহার হাত চাঁপিয়! ধরিল)ন1 ! 
বৃদ্ধ। আরে বাপ রে-_বাঁপ রে। হাত ধরছিস কেনে 
রে? ছাড়-_-ছাড়। 
কিষ্টো। না। সত্যি বুল আমাকে, উ মেয়েটা আমার 
বহিন কি-না! 
বৃদ্ধ। (হাহা করিয়া হাসিয়া উঠিল) আরে__ আরে, 
বুলছিস্‌ কি তু? আঁ-গো রাধি, ওই মেয়েটা কিষ্টোকে 
ভেলকি লাগায়ে দিল রে । 
্ হা হা করিয়া আবার হাসিল 
রাঁধিক। | ( কাতর ব্যগ্রতাঁয় ডাকিয় উঠিল ) কিন্টো ! 
কি্টে! ! 
কিষ্টো। না! না! "আমি চরণ। মনে পড়েছে 
আমার ;_ ছোট মেয়ে আমার বহিন পাঁচি-__ আমার দিদি ! 
এমনি সারি সাৰি'তাবু! বল্‌ বুঢ়া--সত্যি বল্‌! 
বৃদ্ধ। তু বেইমান রে, কিষ্টো__তু বেইমান। 
কিষ্টো। তু চোর--চোট্টা। আমাকে চুরি করলি.তু! 
বৃদ্ধ । না। 
কিঞ্টো। হ্যা! 
রাধিকা। কিষ্টো! কিষ্টো! কি--ষ্টো! 
কিষ্টো। চুপ । বল? বুড়া বল্‌। 
বৃদ্ধ। বেইমান হারামি! ছাড় হাত ! 
বলপ্রয়োগে হাত ছাড়াইবার চেষ্ট। করিল। ' কিষ্টো ধাক্কা দিয়] 
বৃদ্ধকে ফেলিয়া! দিয়া__তাহার বুকের উপর চাঁপিয়৷ 'বসিল। 
' তারপর গল! টিপিয়া ধরিয়া বলিল 


বল্‌-বুড়া- চোটা-ব্ল্‌! 


ভ্গান্ভ-্বখ 


[ ২৮শ বর্ষ-_২য় খ্ড-বঠ সংখ্যা 


রাধিকা । বাবাকে ফেলে দিয়ে তু বুকে চেপে বসলি? 

পাঁচি তুর আপন ? বেইমান হারামি 
ছোর! বাহির করিল 

বুদ্ধ। (ব্যগ্র রুদ্ধ স্বরে বলিয়া উঠিল) হাহা 
চত্তীমায়ের কসম রাধি! মারিস না_ ছুরি মারিস না। 
বেটা-_কিষ্টো তোর সোঁয়ামীরে 

বেদেনী। না। উবলছে-_-চরণ! 

বৃদ্ধ। ছাড়; কিষ্টো-_ছাড়। বুলছি- আমি বুলছি ! 

কিষ্টো ছাড়িয়! দিল, বৃদ্ধ উঠিয়া! হাপাইতে লাগিল। তারপর বলিল 


ইা কিষ্টো, তুই চরণ । ইথান থেকে তুকে চুরি করেছিলম। 
ছাঁওয়াঁল ছিল না আমার । তারপরে রাঁধি হ'ল, তথুন সাদী 
দিলম তুর সাথে ।--হ তু চরণ । 

রাধিকা । নানা! কিছ্র]--কি্টো ! 

বুদ্দ। বহু দিনের পর। গাঁওট! চিনলম না । লইলে 
তাবু ফেলতম না রে! 

রাধিক! । কিষ্টো_কিষ্টো! কথা বল্‌। কিছ্টো! 

কিষ্টো। আমি চললম ! 

রাধিকা । কিছ! 

কিষ্টো। আমার বাড়ী। আমার দিদির কাছকে। 

দ্রুতপদে ছুটিয়া সন্ধ্যার অন্ধকারে মিলাইয়৷ গেল 
রাধিকা । (আর্তন্বরে ডাকিয়! উঠিল) কিষ্টো_কিন্টো ! 


বৃদ্ধ স্তব্ধ হইয়! পাথরের মুষ্তির মত দ্াড়াইয়৷ রহিল। রাধিকা ধীরে 
ধীরে উঠিয়া বসিল। তারপর আচলে চোখ মুছিয়া হইয়া উঠিল 
হিং সে উঠিয়া কিষ্টো ষে পথে গিয়াছে সেই পথে 
চলিতে চলিতে ফিরিয়া দীড়াইয়া বলিল 


বেইমানের জান লিব আমি! আঁকামা সাপাটা আর 
ছুরিটো_ 
সে আবার ফিরিয়া আসিল। বুদ্ধ এতক্ষণে বলিল-_নিয্প কঠিন স্বরে 
বৃদ্ধ। সাথেযাবতুর? 
রাধিকা । (দৃঢন্বরে ) না! 


ৃষ্ান্তর-_রাত্রি প্রথম প্রহর পার হইয়া গিয়াছে। বাগ্দীপাড়ায় সবই 
প্রায় নিধুতি। নবীন বাগ্দীর দাওয়ায় পাঁচি কেবল কাদিতেছিল। আর 
নবীন উপু হইয়া বসিয়া তামাক খাইতেছিল 


পাঁচি। চরণ-_-চরণ! কাকা, এ আমাদের চরণ ! 


জ্যো্*-_-১৩৪৮ ] 


খ স্থ্হতির বন বব “ব্রা বহার... বস স্ব _স্হ 





কেমন করে আমার দিকে তাকিয়ে রইল দেখলে না? 
চরণ-_চরণ ! 
পল্লীর অনতিদুরে কি্টো৷ বেদে চকিতভাবে চাহিতে চাহিতে প্রবেশ করিয়া 
--যেন অন্ধকার পল্লীকেই উদ্দেশ করিয়া প্রশ্ন করিল 
কিঞ্টো। আ-গো। পাঁচির বাড়ী কোথাঁকে গো? 
পাঁচি-_ আমার দিদি !_ 
পাচি। কে? কে? চরণ! চরণ! ভাই! 
কিষ্টো। দিদি! মনে পড়ল! চিনলম 
আমি এলম। 
পাঁচি। আয়, আয় ভাই! আয়! দেখ কাঁকা, সেই 
মুখ_সেই আচিল। আলো ধরেছি আমি-_দেখ তুমি । 
নবীন। আরে, আরে, ছু"য়ে দিঘনে। করছিস কি? 
পাঁচি। চরণ, কাকা, ও যে চরণ! 
নবীন। হ'ল তো কি হল? তা ঝলে জাতধরম 
ভাসিয়ে দিতে হবে নাকি? বেদের ঘরে মাচুষ_ঠাকুরদের 
বিধি নিয়ে পেরাচিতি করে ওসব করিস। তাছাড়া কে 
জানে চরণ কি না। হাজার চালাকি আছে বেদেদের। 
পাচি। আয় চরণ, উঠে আয় ভাই। নিজেদের বাড়ী 
_-মনে পড়ে তোর সেই কুলগাছ__পুব-দুয়ারী ঘর ? 


তোকে । 


পাশের বাড়ীতেই উভয়ে আসিয়া উঠিল 


দাড়া আলে! জালি। আয় ভাই--ঘরে আয়। শীতের 
দিন। ওই দেখ সেই কুলুজী চরণ আমরা বাতাস! চুরি 
করতাম! কুলের আচার 

কিষ্টো। ( অকন্মাঁৎথ বলিয়! উঠিল ) বাপরে! বাপরে ! 
দুয়ার খুলে দে-_দুয়ার খুলে দেরে দির্দি। দম আমার বন্ধ 
হয়ে গেল রে! 

পাঁচি। খোলা জায়গায় থেকেছিস ভাই এতদিন ! 
এই নে দোর খুলে দিচ্ছি। 

ছুয়ার খুলিয়া দিল 

কিষ্টো। আঃ! (পাঁচি হাসিল) দির্দি! তোর বর 
কিছু বুলবে না তো ওই বুড়ার মতন? 

পাঁচি। সেনাই চরণ। সেনাঁই। থাকলেও কিছু 
বলত না রে। কত আদর করত তোকে । আমি বড় 
হুতভাগী ভাই! পৃথিবীতে আমি একা ! 

কিট্টো। কাঁদছিস রে দিদি? 


নাভি 


"স্্হ্া- -্হ স্যর -স্ 


2৮৮৯, 





স্ব” 





পাঁচি। দে আমাকে বড় যত্ব করত ভাই। বড় 
ভাঁলবাসত। আমার পোড়াকপালে__হঠাৎ মরে গেল। 
তা-ছাড়া_ মেয়েদের স্বামীর বাঁড়া কি সম্পদ আছে বল্‌? 

কথার মধস্থলেই ফোস*ফোস শব্ধ উঠিল 

কিষ্টো। দিদি রাঁধি কাঁদছে! ফুলে ফুলে কাদছে ! 

পাচি। না! হ্যা! তাইতো! ওকি ফোস ফোঁস, 
করছে? সাপনাকি? এ 

কিষ্টো। (স্চকিত হইয়! উঠিল, যেন একট কথা 
তাহার মনে পড়িয়া গেছে) সাপ! হাহা! রাঁধি লয় 
সীপ! ঠিক বুলেছিস দিদি! আলোটা ধরতো! গো দিদি ! 
বুড়া ছাড়লে সঁপ। বুড়ার কাঁম বটে! হাঁ হা! 
পাচি সয়ে সন্তর্পণে আলোটা তুলিয়। ধরিল ; কিছ্টো সতর্ক দৃষ্টিতে 

চারিদিক দেখিতে দেখিতে বাহিরে আসিয়া দীড়াইল। পিছনে 

পিছনে পাঁচিও আলো৷ লইয়! আসিল । কিন্তু কোথাও 


কিছু নাই; আলোকিত অঙ্গন পরিষ্কার দেখ! 
যাইতেছে । আর শবাও শোনা যায় না 


্ 


কইরে দিদি? কিছুই তে নাই রে! 
পাঁচি। তবে ও কিছু নয় চরণ! গুনতেই ভূল হয়েছে 
আমাদের । বেদে বেদে করে- সাপ-সাপ বাতিক হয়েছে। 
কি্টে। ও পাচি আবার আসিয়া ঘরে বসিল 


২কিছ্টো। রাধি কিন্তুক ঠিক কাঁদছে দিদি! ফুল্য! 
ফুল্যা কাদছে। তু যেমন কাদিস বরের লেগ্যা । 
পাঁচি স্তব্ধ হইয়! কিষ্টোর মুখের দিকে চাহিয়া রহিল। সঙ্গে 
সঙ্গে আবার শব্ধ হইল-_-ফোন্‌--ফোস্‌ 
কিঞ্টো। ( চকিত হইয়া) দিদি শুনছিস? 
_পাচি। সাপ! চরণ, নিশ্চয় সাপ! 
কিষ্টো। ধর, ফেযু, আলোটা ধর দিদি! দেখি তো 
কুথাকে গর্জাইছে 1 
পাচি আলে ধরিল- কিষ্টো৷ বাহির হইয়া আসিল। অকল্পাৎ ঘরের 
আড়াল হইতে ঝড়ের মত ছুটিয়া আসিয়। কে কিষ্টোকে জড়াইয়া 
ধরিল। তাহারই অঞ্চল তাড়িত বাতাসে আলোটা 
দপ করিয়া নিভিয়৪গেল। সে তখনও 
ফেোপাইয়। ফোপাইয়া কাদিতেছে 


পাচি। (সভয়ে বলিয়া! উঠিল) কে? কে? ও.কে 
চরণ? আলে! নিভে গেল যে! চরণ! চরণ! 


২২, 


রাধিকা । : (যে আসিয়াছে-সে রাধিকা) না! না! 
চরণ লয়। আমার কিষ্টো! আমার কিষ্টো! 

কিষ্টো। (অন্ধকারের মধ্যেই সন্গেহে রাধিকার রুক্ষ 
চুলে হাত বুলাইয়! দিল, বলিল ) রাঁধি! রাঁধি ! 
ৃ রাধিকা । না। তুর সাথে কথা বুলব না আমি! 
তুবেইমান! তু আমাকে ফেল্যা চল্যে এলি। মাটিতে 
পড়ে কীদলে তুর রাঁধি, তু দেখলি না! এসেছিলম তুকে 
মারতে; সাপ আনলম-গামছাতে বেঁধে, ঘরে ছেড়ে দিব 
বল্যে ; তা লার্লম্। ঘরের পিছাড়ে ঠেসাঁন দিয়ে ফু'পায়ে 
ফু'পায়ে কীদলম কেবল । তুকে ছেড়ে আমি থাকতে লারব, 
আমি লারব। তু আয়--ফিরে আয়! কি্টো! কিষ্টো! 
: কিষ্টো স্তন্ধ হইয়া ধাড়াইয়া রহিল ; সে যেন দিশেহারা হইয়! গিয়াছে ; 

তাহার গললগ্র হইয়া রাধিকা ফুলিয়৷ ফুলিয়। কীদিয়া 
চলিয়াছিল ; পাঁচিও নিস্তদব 

কিষ্টো। ( অকন্মাৎ বলিয়! উঠিল প্রচণ্ড আবেগভরে ) 
দিদি! লারব! আমি তুর কাছে থাকতে লারব রে 
দিদি! আমার রাঁধিকে ছেড়ে আমি থাকতে লারব ! 
রাধিকা কান্নার মধ্যেও আবেগে সোহাগে অধীর হইয়া কিষ্টোকে বারবার 

চুদ্বন করিয়া হাসিয়া উঠিল বিচিত্র হাসি। অন্ধকারের মধোও 

পাঁচি সমস্ত দেখিতেছিল, অকম্মাৎ তাহার চোখ 


সজল হইয়া উঠিল, দে অতিকষ্টে 
আত্মসম্বরণ করিয়া ডাকিল 


পচি। চরণ! প্র 

রাধিকা । (কিষ্টোর বুকের মধ্যেই ঘাড় নাড়িয়! 
মুহূর্তে প্রতিবাদ করিয়া উঠিল) না-না! চরণ লয়- 
কিষ্টো; কিষ্টো, উ আমার কিছ্টো ! 

পাচি। হ্থ্যা-তোর কিষ্টো! আমার চরণ। তোর 
কিষ্টোর মধ্যেই আমার চরণ বেঁচে থাক । ও তোর। চরণ, 
যা! তুই বউয়ের সঙ্গেই যা। নইলে ও বীচবে না। তুইও 
বাঁচবি না। (তারপর দীর্ঘনিশ্বীস ফেলিয়া বলিল ) তোকে 
জতেও নেবে না। ছুঃখ কষ্টেরও তোর শেষ থাকবে না ! 

সঙ্গে সঙ্গে উপ টপ করিয্না কয় ফণা জল চোখ 
হইতে বরিয়া পড়িল 

কিছ্টো। কিন্তুক তুর যে কেউ নাইরে দিদি! 

পাচী। তোরাই রইলি আমার । যেখানেই থাঁকিস 
জানব তোঁরা আছিস। একবার করে বছর বছর 
আসবি, দেখা দিবি! একমন ? 


ভ্ঞান্রজন্যঞ্য 


[ ২৮শ বর্--২য় খণ্ড--ষষ্ঠ সংখ্যা 


রাধিকা । (আনন্দে অধীর হইয়া উঠিল, বলিল) 
গুনলি, কিছ্টো৷ গশুনলি? দিদি বুললে। বুললে, ব্উয়ের 
সাথে যা। তুর রাধির সাথে! শুনলি? 
পাঁচি। ( এবার সে সন্গেছে হাসিল ) চল্‌ তোদের-_ 
এগিয়ে দি। ভোরও হয়ে এসেছে। 
পাখী ডাকিয়া উঠিল। তাহারা দাওয়! হইতে নামিয়া পথ ধরিল। 
কিছুদূর আসিয়া প্রান্তর পাওয়া গেল। প্রাস্তরের মধ্যে 
দূরে বেদেদের তাবু আবছ। অন্ধকারের মধ্যে দেখা 
যাইতেছে । সেখানে তখন বাঁশী ও 
ডূগড়ুগির শব্দ উঠিতেছে 
রাধিকা । আজ সব রওনা হবে কিষ্টো! তাবু 
তুলবে । জলদি চল্‌ রে কিন্টো! 
বাশী ও ডুগড়ুগি বাজিয়াই চলিয়াছে 
কিষ্টো। দিদি দাড়িয়ে কাদছে ! 
রাধিকা । (পিছন ফিরিয়া) হর বছর আমরা 
আসব দিদি! কেঁদনা। ফি বছর আমরা আসব- তুমার 
কাছে। হোক। 
কিষ্টে। দিদির আমার কেউ নাই রে! 
রাধিকা । (অকারণে হাসিয়া কিষ্টোর গায়ে চলিয়া 
পড়িল, বলিল ) আরে--আরে ! সীপটা গর্জাইছে দেখ 
দেখ! (তারপর সহসা শাসন করিয়া কহিল) চুপ, 
বলছি চুপ। দীড়া; তবে ভেলকির গান শুনায়ে দি তুকে। 
সঙ্গে সঙ্গে সে গাহিয়া৷ উঠিল 
ও মায়ার ফীদ-_ 
লাগ ভেলকি লাগ রে; আমার মায়ার ফাদ 
, কালো জলে ফাদ পেত্যা আনব ধর! চাদ। 
সোনার হরিণ ধর্য। দিব চোখের দিকে চাও। 
চোখে তুমার জল কেনে- কাজল পর্যা লাও। 
সোনার হরিণ রূপার চাদে ছাদে ছাদে বাধ। 
হিজল কাঠের নাও রে আমার মন পবনের দাড় 
চল্‌ রে লয়্যা সোনার চাদে কামরূপের ধার-- 
পড়া মরুক পিছ্য| ডেকে সাধবে যে মোর ধাদ। 


ছুইজনে ভোরের আবছায়ার মধ্যে তাবুর দিকে অগ্রসর হইয়া রহন্তের মত 
মিলাইয়। গেল। নঙ্গে সঙ্গে গানের সুর- বানী ডূগড়ুগি খামিয়া 
আসিল। পাঁচি কেব্র স্তদ্ধ হইয়া দীড়াইয় রহিল 
পাথরের বুষ্তির মত। হ্বনিক! তাহাকে . 
ধীরে ধীরে আবৃত করিয়া দিল 


চলতি ইতিহাস 
প্ীতিনকড়ি চট্টোপাধ্যায় 


বিগত একমাসে ইয়োরোপের রাজনীতিক্ষেত্রে যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন অবস্থান করে নাই, আধুনিক যগ্্রসঙ্জার সঙ্জিত জার্ান-বাহিনীর 
ঘটয়াছে। হৃষ্যোদয়ের দেশ নিগ্নন হইতে আরম্ভ করিয়া নুদুর বেন্ঘাজি দখলে তাহ! সবিশেষ স্পষ্ট হইয়া উঠিয়াছে। 

আগ্মেরিকার পূর্ববপ্রান্ত পর্য্যন্ত বিস্তীর্ঘ ভূভাগ ও বিশাল বারিধি রুদ্র বেন্যাজি অধিকারের পর জার্নান-বাহিনী ডের্ন। অধিকার করিয়া 
রণদেবতার মলিন বিষাক্ত নিশ্বাসে ভারান্রান্ত। অতকিত আক্রমণ, 
অপ্রাধিত পরাজয়, মুবিধাস্বেধী চুক্তি প্রন্ৃতি গত একমান আন্তর্জাতিক 
রাজনীতিক্ষেত্রে যথেষ্ট জর্টিলত! আনয়ন করিয়া রণরক্গমঞ্চে এক নুতন 
অঙ্কের অভিনয়ারস্ত হুচিত করিতেছে। 


আফ্রিকার যুদ্ধ 
গত ৩র| এপ্রিল সহস| রয়টারের সংবাদে প্রকাশ পায় যে, পৃবব- 


লিবিয়ার শহর ও বন্দর বেন্ঘাজি বুটিশবাহিনী কর্তৃক পরিত্যন্ত 
হইয়াছে । নিদিবারানি হইতে ইটালীয় সৈশ্যদিগকে বিতাড়িত করিয়া 





বুটাশ সাপ্রাজ্যের সাধারণ সেনার কর্তী-_সার জন ডিল ্‌ 
বিদ্যুৎগতিতে বার্দিয়া পথ্যস্ত অগ্রসর হইয়াছে। ডের্না ও বার্দিয়ার মধ্যে 
তক্রক ঘাঁটি অবস্থিত। তক্রকের বৃটিশ সৈন্য পরাজিত হইবার পূর্বেই 
একদল জীঙান সৈন্য বারদিয়ায় পৌছিয়াছে। তক্রকে বুটিশ সৈশ্গণকে 
বন্দী করিয়াছে বলিয়। জারগানরা ঘোদণা করিলেও বৃটিশ সৈল্য এখনও 
তক্তকে আত্মরক্ষ/। করিতেছে। অথচ বার্দিয়। জান্মান-বাহিনীর 
হস্তগত। বর্তমানে সাল্লামে ঘোরতর যুদ্ধ চলিয়াছে। এদিকে এডোয়। 





তূমধ্য-দীগরের প্রধান সেনীপতি সার এগুরু ব্রাউন কানিংহাঁম 


খাল্লাম, বার্দিয়া, তক্রক ও ডের্ম! অধিকারের পর বুটিশবাহিনী গত ৬ই 
ফেব্রুয়ারি বেনঘাজি দখল করিয়াছিল। পূর্ব লিবিয়ায় বেনঘাজি ছিল 
ইটালীয়দের গুরুত্বপূর্ণ ঘাটি। কিন্তু বেনঘাজি অধিকারের পর পূর্ণ ছুই 
মাস অতিবাহিত হইবার পূর্বেই জার্মান ও ইটালীয় ট্যাস্ক-বাহিনীর সহিত 
প্রচণ্ড সংঘর্ষের ফলে বুটিশ সৈচ্যদের বেনঘাজি পরিত্যাগ করিতে হয়। 
জাপানী যে সময় সিসিলিতে আসিরা ঘাঁটি স্থাপন করে, সেই সময়েই 
আমর! তাহার গুরুত্বের কথ! উল্লেখ করিয়াছিলাম। আফ্রিকার যুদ্ধে 
সাফল্য লাভ ও ভূমধ্যসাগর-পথে আফ্রিকার সহিত ইটালীর সংযোগ রক্ষা 
এবং সিসিলি ও প্যাণ্টালেরিয়ার মধ্যবর্তী সন্বীর্ণ পথ দিয়া গ্রীদ অভিমুখে 
গমনোদ্ত বৃটিশ নৌবাহিনীকে বাধা প্রদানই যে ইহার উদ্দেন্ঠ দে কথা  বৃটাশ বিমান বিভাগের নবনিযুক্ত চি, মাশীল সার চার্লদ পোর্টাল 

আমরা বছ পূর্ব্বেই বলিয়াছি। জারানীর কার্ধ্যপ্রণালী সম্বন্ধে সম্পূর্ণ অধিকারের পর বুটিশবাহিনী আদ্দিস্‌ আবাবায় প্রবেশ করিয়াছে। 
সংবাদ আমরা না পাইলেও সিসিলিস্িত জার্গান দৈল্স যে নির্া হইয়া উত্তর আফ্রিকায় জার্গান সৈস্দের প্রবল প্রতিরোধের জন্য বুটেন 

৭৮৩ 





শি ভি 


আগ্নোজনের ক্রটি করে নাই। সম্প্রতি কর্মেল পপফের কথায় প্রকাশ 
ঘে, তক, দিডিয়া মরগ্যান অথবা আধ্যামাদ্র হইতে বুটিশ সৈশ্যগণ 
সম্ভবত জাঞঙানবাহিনীকে প্রচণ্ড বাধাদানের চেষ্ট। করিবে। 





গ্রেট বৃটেনের সেনাবিভ।গের প্রধান কর্ম কর্ত। সার এলান রুক 


যুগোঙ্লাভিয়া ও গ্রীস 


ধুগোষ্নাভিয়া সম্বন্ধে আমর! যাহ! অনুমান করিয়াছিলাম, অন্ঠান্য বহু 
সঠিক অনুমানের ন্যায় তাহাও মিথ্যা! প্রতিপন্ন হয় নাই। আমর! গত 
সংখ্যায়ই বলিয়াছিলাম যে, তুরস্ক সন্বপ্ধে জা্নানী বিশেষ অবহিত হইলেও 
যুগোষ্লাভিয! সন্বন্ধে হিটলার ততটা গ্রাহ্ করেন না। কূটনৈতিক চাল 
ব্যর্থ হইলে জানান আক্রমণ অসম্ভব নয়, এবং যুগোষ্লাভিয়ার ন্যায় শুর 
রাষ্ট্রের অনমনীয় দৃঢ়তার মূলাও গত এক বৎসরের ইতিহাসেই বহুবার 
পাওয়া গিয়াছে। বস্তুত, ঘুগোন্লাভিয়ার মন্ত্রীর! ভিয়েনায় ত্রিশক্তি চুক্তিতে 
স্বাক্ষর করার পর দিন হঠাৎ যুগোল্নাতিয়ায় এক রক্তপাতহীন বিপ্লব হয়। 
১৮ বৎমর বয়স্ক তরুণ রাজ! পিটার শাসনভার শ্বহস্তে গ্রহণ করেন। 
জেনারেল সিষোভিচ, যুগোশ্লাভিয্ার প্রধান মন্ত্রী বলিয়া ঘোযিত হন। 
রাজপ্রতিনিধি প্রিন্স পলকে মন্ত্রীক যুগোপ্লাভিয়া পরিত্যাগ করিতে হয়। 
আপোব-তরণী এইভাবে তীরে আসিয়া নিমজ্জিত হওয়া হিটলারের 
ক্রোধবন্ছি প্রচ্ছলত হওয়! স্বাভাবিক নিজ স্বধীনত! রক্ষায় বদ্ধপরিকর 
ই কষত্র রাষ্ট্রটকে বুটেনও সাহাধ্য করিতে অগ্রসর হয়। ফলে বন্কানে 
এক নুতন রণক্ষেত্রের স্ষ্টি অপরিহাধ্য' হইয়। ওঠে। বুলগোরয়ায় ২২ 
ডিভিসন জানান বাহিনী অবস্থান করিতেছিল। ৬ই এপ্রল প্রভাতে 
ঘুগাঙ্নাভিয়! ও গ্রীন একসঙ্গে আক্রান্ত হয় । 
ুদ্ধারস্তের পূর্ব্বে শ্লাতগণ সময়াভাবের জন্য বিশেবরূপে প্রস্তুত হইবার 
অবপর পায় নাই, বৃটিশ সমরনেতৃবর্গের সহিত যুদ্ধ পরিচালন! সম্পর্কে 
আলাপ আলোচন। করাও সম্ভব হয় নাই তাহ! হইলেও যুগোষ্লাভিয়া 
আশ! করিয়াছিল যে, কয়েক দিন জাপ্নানবাহিনীর আক্রমণ প্রতিরোধ 
করিতে পারিলে, মিত্রশক্তির সাহাব্য আসিয়৷ পৌছিবে এবং বৃটিশ ও 
গ্রীসের সম্মিলিত শক্তির সাহায্যে যুদ্ধ পরিচালন সহজনাধ্য হুইয়। উঠিবে। 
কিন্ত, ্লাভদের. সে আশ পূর্ণ হয় নাই। জামানবাহিনী প্রথম হইতেই 


ভাব্রভ্ল্স্য 


[ ২৮শ বর্ষ-_২য় থণ্ড--যষ্ঠ সংখ্যা 


গ্রীক ও শ্লাত চৈম্দের পৃথক ও বিচ্ছিন্ন রাখিতে সচেষ্ট ছিল। যুদ্ধ 
আরম্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাহার! শ্ালোনিক! অধিকার করে, এবং 
মনা্টির গিরিবস্স দখল করিয়৷ গ্রীস ও যুগোগীভিয়ার শেষ সংযোগ- 
ব্যবস্থাও নষ্ট করিয়! দেয়। ফলে, আধুনিক যন্্রজ্জায় সজ্জিত সংখা- 
গরিষ্ঠ জার্গানবাহিনীর সম্মুখে বিচ্ছিন্ন শ্লাভগণ অধিকক্ষণ দীড়াইতে 
পারে নাই। সন্ুখ প্রতিরোধ অসম্ভব বোধ হইলে বীর শ্লাভগণ গরিলা 
যুদ্ধ চালাইয়! একেবারে শেষ মুহূর্তে আশ্মদমর্পণ করিয়াছে । নিজ 
স্বাধীনত| রক্ষার জন্য শেষ মুহুর্ত পধ্যন্ত এই আপ্রাণ চেষ্টার মূলা যতই 
হউক না কেন, আজ সমগ্র ইয়োরোপ যখন পশুশক্তির পরীক্ষাক্ষেত্রে 
পরিণত হইয়াছে, তখন এই পরাজয়ের জন্ত ছুঃখিত হওয়া বাতীত 
উপায় কি? 

গ্রীসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জীমানবাহিনী ক্ষতিগ্রস্ত ও বাধাপ্রাপ্ত হইলেও 
অগ্রগমনে অক্ষম হয় নাই। বুটিশ সৈশ্ঠ গ্রামে পৌচিবার পূর্বেই বৃটিশ 
সমরনায়কগণ বৃটিশ সরকারকে জানাইয়াছিলেন যে, সুচিন্তিত পরিকল্পন 
অন্ুযারী যুদ্ধ পরিচালন! করিলে গ্রীসে বুটিশের সাফলা লাভ কর| সন্তব। 
পৃবব পরিক্গন! অনুযায়ী যুদ্ধ পরিচালন। করা! কতখানি সম্ভব হয়ছে 
তাহা আমর। জানি না, তবে, করিৎস|, কালাবাকা, এবং অলিম্পণ্‌ 
হইতে আলবানিয়ার চিমার। অঞ্চল পযাস্ত দেড়শত মাইল রণন্গেত্রে জাঞান- 
বাহিনী মিত্রশক্তির উপর ভীষণ চাপ দিতেছে। যুগোষ্াভিয়ার পতন 
অতি শীঘ্র সাধিত হইলেও গ্রীস আরও কিছুদিন শক্রসৈন্তকে বাধ! দিতে 
সক্ষম হুইবে বলিয়। অনেকে ধারণ! করিতেছেন। ট্াহার। বলেন যে, 





ভিচি মন্ত্রিসভায় মসিয়ে লাভালের স্থানে নবনিযুক্ত 
পররাষ্ট্র সচিব--মসিয়ে ফ্রাদা 
গ্রীস পর্ববতস্কুল হওয়ায় জার্ম্মান-বাহিনীর ক্রুত অগ্রগতি প্রতিপদে বাধা 
প্রাপ্ত হইবে। কিন্তু নরওয়ের যুদ্ধ এখনও এত পুরাতন হয় নাই যে, 


ত্যোষ্ট--১৩৪৮ ] 


চনসথাচ্ড কইন্জিহাতল 


এ 





কষ্ট করিয়া! আমাদিগকে তাহা মরণ করিতে হইবে । নরওয়ে পার্বত্য 
প্রদেশ হইলেও সেখানে শক্র সৈচ্ের বিজয় লাভে অধিক বিলম্ব হয় নাই। 
ধুগোগ্নাভিয়ার পরাজয় সম্বন্ধে যুগোল্লাভ প্রধান মগ্তী জেনারেল দিমোতিচ 





মমিয়ে লাভাল 


বলেন যে, যুদ্ধ হইয়াছে ছুই অসমান শক্তির মধ্যে । যুদ্ধের চরম পরিণতি 
সপ্ঘদ্ধে লাভ জনসাধারণের মনে কোন প্রকার মোহ ছিল ন।। এইরাপ 
প্রবল প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে জয়লাভ কর! ঘে অসম্ভব তাহ। শ্লাভগণের 
অজ্ঞাত ছিল না। তবে যেখানে স্বাধীনতার প্রশ্ম ওঠে, দেখানে সমরকেই 
বরণ করিয্প! লইতে হয়। গ্রীস সম্বন্ধে অবশ্ঠ এতখানি নিরাশ হইয়! যুদ্ধ 
করিবার ফোৰ ফারণ নাই। কিন্তু আজ রয়টারের সংবাদে প্রকাশ, 
লণ্ডনে সরকারীভাবে ঘোধণ। কর! হইয়াছে যে, গ্রীক ও সাস্্রাজাবাহিনী 
পশ্চাদবন্তী সৈম্াদের আড়াল করিয়! আসিতেছে | এদিকে গ্রীসের প্রধান 
মন্ত্রী মিঃ করিৎজিদ্‌ আত্মহত্যা করিয়াছেন। সংবাদ ছুইটি নিতান্ত 
ছুঃখের হইলেও একথা অস্বীকার করিয়া! লাভ নাই যে, মিত্রবাহিনীর 
গ্রীস রণাঙ্গন পরিত্যাগ করার অর্থ জান্নানীর বিজয় লাভ। ভূমধ্য- 
সাগরে ও পশ্চিম-এশিয়ায় পূর্ব-ভূমধ্য সাগরের উত্তর ও দক্ষিণ তীরে 
বিজয় লাভের. জল্ত ' জাানী এত উদ্ত্রীব ও আগ্রহাম্বিত কেন একথ। 
বহুবার উল্লেখ কর! হইয়াছে। জার্জানীর বিজয় লাভের জন্য বৃটিশ 
স্বীপপুল্জে প্রত্যক্ষ আক্রমণ যেরূপ অপরিহার্য, পূর্ধব-ভূমধ্য সাগরের 
উত্তর ও দক্ষিণ জঞ্চলে বিজয় লাভও তাহার সেইরূপ একাস্ত আবষ্তক। 
বৃটেনকে বিশেষরপে ক্ষতিগ্রস্ত করিতে হইলে তাহার সামুদ্রিক বাণিজ্য 
ধ্বংস কর! প্রয়োজন বলিয়াই জার্নানী আজ অর্থনীতিক অবরোধে যেরূপ 
তৎপর হুইয়৷ উঠিয়াছে, তেমনই নুয়েজ অধিকার করিতে পারিলে সমস্ত 
প্রাচ্যের সহিত মে যে বৃটেনের বিচ্ছেদ ঘটাইতে প|রিবে একথাও দে 
জানে। তবে ইহ! হিটলারের অজ্ঞাত নহে যে, ভূমধ্য সাগরে হ্বীয় 
৯৯ 


প্রাধান্ঠ "বিস্তার করিতে হইলে তাহাকে বৃটেনের ছূর্জর নৌবাহিনীর 
সশুখীন হইতে হইবে । আমর! ভারতবর্ষে পুর্রেই একথা বর্সিাছি ই 
আফ্রিকার যুদ্ধে ইটালী-সাজজাজোর সহিত আক্রিকাস্ছিত বাহিনীর সংযোগ 
বিচ্ছিন্ন হইলেও মুসোলিনী তাহার নৌশত্তি ব্যবহার করেন নাই। এমন 
কি, ইটালীয় যুদ্ধজাহাজ আত্রাস্ত- হইবার উপক্রম-হইলে আমর! তাহাকে 
যুদ্ধে প্রবৃত্ত হইতে না দেখিয়! আব্রক্ষার্থে পলায়ন করিতেই দেখিয়াছি । 
কিন্তু ইটালীয় নৌশক্তিকে অক্ষত রাখিয়া ক্লোন এক বিশেষ মুহূর্ত 
তাহাকে ব্যবহারের উদ্দেষ্তে হিটলার যে মুসোলিনীকে আগেই কিছু" 
জানাইয়া র।খেন নাই, একথাও আমর! নিঃসন্দেহে অস্বীকার কন্সিতে 
পারি না। এহদ্বযতীত এই নৌধুদ্ধে হিটলার. স্পেন ও ফ্রান্সের সাহায্য 
গ্রহণ করেন কি-না তাহাও লক্ষ্য করিবার বিষয়। দ্পেন সহদ্ধে 
নিঃসন্দেহে অভিমত প্রকাশ করিবার দিন এখনও আসে নাই। সম্প্রতি 
সামরিক বিস্তালয়ের তরুণদিগকে উদ্দেশ করিয়া! জেনারেল ফ্রাঙ্কো 
ট্রাহার বক্তৃতায় শাস্তির যে সংজ্ঞ! নির্দেশ করিয়াছেন এবং স্পেনকে 
বিশাল সাজাজো পরিণত কর! সন্বন্ধে তিনি যে আশ! ও অন্ডিমত 
প্রকাশ করিয়াছেন, তাহাতে মিত্রশক্তির বিপক্ষে তাহার সহানুভূতির ক্ষীণ 
আভাষও কি অসতর্ক মুহূর্তে প্রকাশ পায় নাই ? হয়ত হিটলারের নির্দেশেই 
স্পেন আজ নীরব। শেষ মুহুর্তে যি সে জিক্রাণ্টার প্রণালী অবরোধ 
করিয়। বসে তাহাতে বিশেষ বিশ্মিত হইবার কোন কারণ নাই। ভিসি 
সরক।র স্বত্বেও সন্দেহের অবকাশ আছে। মাশ।ল পেত্যা অবস্ঠ 
ঘোষণ। করিয়াছেন যে, পূর্বতন মিত্রের বিরুদ্ধে ফ্রান্স অস্ত্র ধারণ করিবে 
না। কিন্তু এ সম্বদ্ধে নিঃসনেহ হওয়া যায় কেমন করিয়।? এঞ্সিলের 
দ্বিতীয় সপ্তাহে মি; চার্চিল ফরাসী নৌবহর হস্তাস্তরিত হইবার আশঙ্কা 
প্রকাশ করিয়াছিলেন। বিশেষ, ভিসি সরকার রাষ্ট্রঞ্ঘ পরিত্যাগ 
করিয্নাছেন বলিয়। গত ১৮ই এপ্রিল এড্মিরাদ দারল যে স্লোধণ। 
করিয়াছেন, জাগ্নানীর প্রতি ভিসি সরকারের আনুগত্যের ইহ! আর একটি 
প্রমাণ। কাজেই যথাসময়ে 
ফরাসী নৌবহরের সাহাষা 
লাভ কর! জাপ্নানীর পক্ষে 
হয়ত অসম্ভব নহে । 

এত ম্বযতীত জাপ্নানী ষদি 
হয়েজ দখলে সক্ষম হয় তাহ! 
হইলে প শ্চি ম-এ শিয়া র 
তৈলভাগার হস্তগত করি- 
বার চেষ্টা কর!তাহার পক্ষে 
খুব স্বাভাবিক । কয়েক দিম 
পূর্বে এইরাপ সংবাদ রটিয়া- 
ছিল যে, ইরাকের নূতন 
গবর্পমেন্ট জাপানীর পক্গ- 





মধ্য-প্রাচীতে বৃটাশ সৈন্তের অধ্যক্ষ 
সার আচিবজ্ড ওয়াডেল 


পাতী। কিন্তু সম্প্রতি লগ্নে মরকারীভাবে ঘোষিত হইন্লাছে থে, ইরাক্ষের 
মধ্য দিয়! যানবাহন চলাচল ও সংবাদ আদানগ্রদানের আক সাীওারানিী 


৬০ 


বমরায় আসিক্প। পৌছিগাছে এবং ইরাকের নুতন গবর্পমেন্ট সৈশ্যদের সম্পূর্ণ 
' খুযোগ হুবিধা প্রদান করিয়াছেন। ইহা বিশেষ আশার কথা সন্দেহ না । 
কারণ এই বুদ্ধ পশ্চিম-এশিয়ায় বিশ্বৃত হইবার আশঙ্কা সমধিক । ইরাক 
ও ইরাণের তৈলখনি পৃথিবীর বিশেষ সম্পদ এবং হাইফ! ও বাহেরিন দ্বীপে 
ইহা সঞ্চিত হয়। কুতরাং এর" অঞ্চলে যুদ্ধ বিস্তৃত হওয়া! আদৌ বিন্ময়ের 
বিষয় নহে। নুয়েজ অধিকার করিতে পারিলে জার্মানী তুরস্বের সহিত 
চুক্তি অঙ্ষু্জ রাখিয়া পশ্চিম-এশিয়ায় উপস্থিত হইতে সক্ষম হইবে । অনেকে 





বল্কান রাজ্যে যুদ্ধের অবস্থ। 
স্দেহ করেন যে, এই দারুণ গ্রীষ্মে আরবের রুক্ষ মরুডূমে জার্গান সৈন্য 
তাহাদের শ্বাতাবিক ক্ষিপ্রত! ও দক্ষতার সহিত যুদ্ধ চালাইতে পারিবে না। 
কিন্তু যুদ্ধে বত কিছু বিরুদ্ধ শক্তির সন্দুখীন হওয়া যায় জার্গান সৈম্যগণ 
পূর্ব হইতেই নিজেদের তাহার উপযোগী করির! লইয়াছে। উত্তর 
জাফ্রিকার মরুভূমিতে প্রচ গ্রীণ্মে বুদ্ধ চালাইতে সক্ষম হওয়ার জস্থ 
তাহার পূর্ধব হইতেই কৃত্রিম উপায়ে অত্যধিক তণ্ড কাচের ঘরে বাস 


স্ডান্সতব্বঞ্ধ 


১ এ. 





টা ৫৬ 
«6. সয় 
| ক্ুডে ভিপ" 
৫ 





[ ২৮শ বর্-_২য় খণ্ড যষ্ঠ সংখ্য। 


সম্যক দ্বার” -স্ ব্রা সস, ব্-.-্ ব্হ০- স্্ড 





কর! অভ্যাস করিয়াছে । ইহা ছাড়। জামানী নুয়েজ পর্যযস্ত যদি দখল 
করিতে পারে তাহা হইলে তুমধ্যসাগরে ঘাটি স্থাপন করয়৷ সে বৃটিশ 
নৌশক্তির প্রভাব যথেষ্ট কুঞ্জ করিবার প্রয়াস পাইবে । এদিকে নুদুর- 
প্রাচীতে জাঙানীর মিত্র জাপান ঠিক সেই সময়ে নিজের সুবর্ণ সুযোগ 
গ্রহণ করিয়! বৃটেনের প্রাচ্য সাপ্তরাজ্যে আঘাত হানিতে পারে অর্থাৎ পুর্ধ- 
ভূমধ্যসাগরের এই সংগ্রামের গুরুত্ব বর্তমানে যথেষ্ট এবং বৃটেনের উপর 
প্রত্যক্ষ আক্রমণ অপেক্ষা ইহার গুরুত্ব কোন অংশে কম নহে। 
বুটেন ও জার্মানী 
বৃটেনের উপর বিমান আক্রমণের 
তীত্রতাও বিশেষ বৃদ্ধি পাইয়াছে। 
লগ্ুন হইতে হ্কটল্যও পর্য্যন্ত বিস্তীর্ণ 
অঞ্চলে নৈশ বিমান আক্রমণ 
চলিয়াছে। উত্তর-আয়র্লগও আক্রমণ 
হইতে বাদ যায় নাই। লগুনের উপর 
দলে দলে জানান বিমান প্রদোষ 
হইতে প্রত্যুষ পর্য্যস্ত হাজার হাজার 
বোম! নিক্ষেপ করিতেছে। রাজকীয় 
বিমান বাহিনীও বাপিন, কিয়েল, 
ব্রেমার, হাতেন্‌, এম্ডেন্‌ প্রস্তুতি স্থানে 
অগ্রিপ্রজ্জালক বোম! নিক্ষেপ করিয়া 
পাণ্ট৷ জবাব দিতেছে। প্রকান্ঠ 
দিবালোকে রাজকীয় বিমানবাহিনী 
হেলিগোল্যা ও স্বীপে বোম বর্ষণ 
করে। ব্রেষ্টের ডক, বার্কস্মায়ারের 
বিমান খাঁটি প্রতৃতি রাজকীয় বিমান- 
বাহিনীর আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত। 
এদিকে প্রেসিডে ণ্ট রুজভেপ্টের 
নির্দেশক্রমে মাকিন বন্দরে আশ্রয় 
গ্রহণকারী ২৮টি ইটালিয়ান, ২টি 
জানান ও ৪*খানি ডেনিস্‌ জাহাজ 
মাকিন কর্তৃপক্ষ দখল করিয়াছেন। 
ইহাদের মোট ভার বহন ক্ষমতা 
২৯৬,৭১৫ টন। জার্দানী ও ইটালী 
হইতে এই আটকের বিরুদ্ধে প্রতি- 
বাদ করা হইলেও তাহা অগ্রাহ 
করা হইয়াছে। আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ কর! হইয়াছে বলিয়া যে 
অভিযোগ করা হইয়াছিল তাহার উত্তরে মাফিন স্বরাষ্ট্রসচিব মিঃ কর্ডেল 
হাল্‌ জানাইয়াছেন যে মাঞ্চিন বন্দরে আশ্রয় গ্রহণ করিয়! আত্মনিমজ্জনে 
সচেষ্ট হওয়ায় তাহার! স্থানীয় আইন লঙ্ঘন করিয়াছে। হুতরাং তাহাদ্দিগকে 
আটক করার আন্তর্জাতিক আইন তল্গ কর! হয় নাই। উরুগুয়েতেও 
ফয়েকখামি শক্রজাহাজ আটক কর! হইয়াছে এবং প্রতিবাদ গ্রা্থ হয় নাই। 


জ্যৈষ্ট--১৩৪৮ ] 


মাফ্িন যুক্তরাষ্ট্র গ্রীনল্যাণ্ডে নৌধাটি নির্শাণের প্রয়াস পাইয়াছিলেন, কিন্ত 
জার্শান প্রভাবাধীন ডেনিম্‌ গবর্ণষেণ্টের অসম্মতিতে তাহা বিফল হইয়াছে। 
বস্তুত আমেরিকা ম্পইত যুদ্ধ ঘোষণ! ন। করিলেও সে বর্তমানে যুদ্ধে 
লিপ্ত হইয়া পড়িয়াছে বল! চলে। কয়েকদিন আগে নিউইয়র্ক সান্‌ 
পত্রিকায় এক মাকিন লেখক বলিয়াছেন যে, আমেরিকা! এখন যে অবস্থায় 
আসিয়া ধ্াড়াইয়াছে, তাহাতে যে-কোন মুহুর্তে সে যুদ্ধে লিপ্ত হইয়। 
পড়িতে পারে । এখন শুধু যুদ্ধ ঘোধণার নিমিত্ত কোন হল ছুতার 
অপেক্ষা এবং এরূপ ক্ষেত্রে ছলের অভাবও হয় না। কোন একটা 
মাকিন জাহাজ আক্রান্ত হইলে ব! অনুরাপ কোন ঘটন। ঘটিলেই সে যুদ্ধে 
নামিয়! পড়িতে পারে । 
রুশিয়া ও সুদূর-প্রাচী 

জাপ পররাষ্ট্র নচিব মি: মাৎস্থকা যে রোম, বালিন ও মস্ষো অভিমুখে 
যাত্র। করিতেছেন এ সংবাদ গত সংখ্যায় প্রদত্ত হইয়াছে। রোম হইতে 
বালিন যাত্রার প্রার্কালে মিঃ মাৎহুক! বলিয়াছেন যে, ত্রিশক্তি চুক্তি 
শতবর্ষ স্থায়ী হইবে । বিশ্বের নব বিধান প্রবর্তনের আদর্শে এবং উদ্দেষ্ঠেই 
ইহ! রচিত হইয়াছে। তৎপরে বালিন হইয়! মস্কো! পৌঁছিবার পর গত 
১৩ই এপ্রিল সৌভিয়েট ও জাপানের মধ্যে নিরপেক্ষত। চুক্তি স্বাক্ষরিত 
হইয়াছে। এই চুক্তির সর্ত অনুসারে উভয় রাষ্ট্র পারম্পরিক শান্তি ও 
মৈত্রী সম্পর্ক বজায় রাখিবে এবং উভয়ে উভয়ের রাষ্ট্র সীমানা মানিয়া 
চলিবে। শ্বাক্ষরকারী রাষ্রন্বয়ের মধ্যে কোন রাষ্ট্র যদি অপর এক বা 
একাধিক রাষ্ট্রের সহিত যুদ্ধে জড়িত হইয়া পড়ে. তাহ! হইলে যুদ্ধকাল 
পয্য্ত স্বাক্ষরকারী অপর রাষ্ট্র নিরপেক্ষতা মানিয়া চলিবে । 

চুক্তি স্বাক্ষরিত হইবার সঙ্গে সঙ্গে একটি সম্মিলিত ঘোষণাবাণী দ্বারা 
প্রকাশ কর! হইয়াছে যে, জাপান মঙ্গোলিয়! রিপাব্রিকের সীমান। মানিয়। 
চলিবে এবং সোভিয়েটও মাঞ্চকুও সাম্রাজ্যের সীমান! মানিয়া চলিবার 
প্রতিশ্রতি দিয়াছে। 

জাপ-দোভিয়েটের এই চুক্তি অনাক্রমণাত্মক না হইয়া নিরপেক্ষত৷ 
চুক্তি হওয়ায় কেহ কেহ ইহার নূতন নামের জঙ্য ইহাকে সন্দেহের চক্ষে 
দেখিতেছেন। কিন্তু এই চুক্তির নামকরণ যাহাই হউক না কেন এবং 
ইহার ভাবাগত পার্থক্য লইয়! ইহার গুরুত্ব সম্বন্ধে ধষিনি যত সন্দিহানই 
হউক না কেন, এই চুক্তির গুরুত্ব যে যথেষ্ট, তাহা অস্বীকার করিবার 
উপায় নাই। 

জাপানের সহিত নিরপেক্ষত| চুক্তি সংসাধিত হইলেও চীনের প্রতি 
সোভিয়েটের মনোভাবের কোন পরিবর্তন হয় নাই। চীনকে সাহায্য 
প্রদানের মূলনীতি ক্ষু্ধ হইবে না বলিয়। রুশিয়। মার্শাল চিয়াং-কাই- 
শেককে জানাইয়! দিয়াছে । চীনের যুদ্ধ হইতে জাপান একেবারে সরিয়া 
আসিতে না পারিলেও এই নিরপেক্ষতা! চুক্তির ফলে জাপান দক্গিণে 
এবং প্রশান্ত মহাসাগরে মনোনিষেশ করিতে পারে। জাপান এবং 
সোভিয়েট কাহারও ইহা অজ্ঞাত নহে যে, জাপান যদি আজ দক্ষিণে 
বৃটিশের সহিত শক্তি পরীক্ষায় উদ্ভুত হয়, তাহা হইলে চীন ব্রহ্মপথ দিয় 





চ্ুক্রশভ্ডি হভিন্ঞাস্ 


৮৮৭ 


চীনে সাহায্য প্রেরণ একরাপ বাধ! প্রাপ্ত হইবে এবং তখন চীনকে 
বাচাইয়। রাখিতে হইলে একমাত্র সোভিয়েটের উপরই তাহার নিরসন 
ক্বাভাবিক। জাপান জানে, এক্লপ অবস্থায় চীন ম্বভাবতই পূর্ববাপেক্ষা 
যথেষ্ট দুর্বল হইয়| পড়িবে এবং সোভিয়েট সরকারও ইহ| ভুল করিয়াই 
বুঝেন যে ঘরের পাশে জাপানকে সাস্ত্রাজ্য বিস্তার করিতে দিয় তাহাকে 
প্রতিপত্তিশালী করা যেরাপ অযৌক্তিক, চীনের এ দুর্বল মুহুর্তে নিজের 
প্রভাব ও মতবাদ চীনে প্রচার করার পক্ষেও সেইরাপ উহাই হুবর্শসুঘোগ । 
অথচ এদিকে জাপান সৌভিয়েট সম্বদ্ধে নিশ্চিন্ত হইয়া! তাহার মিত্রঙ্গের » 
সাহায্যের জন্য প্রাচ্যে এক সঙ্কটজনক অবস্থার সৃষ্টি করিতে পারে 

হুতয়াং এই চুক্তির ফল যে বহু হুদূর প্রসারী হইবে তাহ! বলাই বাছল্য। 
জাপান ইতিমধ্যেই তাহার কার্য আরম্ভ করিয়! দিয়াছে। সাংহাইয়ের 
উত্তরে স্থংমিট স্বীপে এবং একশত মাইল দক্ষিণ-পর্ধ্বে চুসান দ্বীপে জাপান 
ঘাঁটি স্থাপন করিয়াছে। দক্ষিণ-চীনের সমগ্র উপকূল অবরোধের জঙ্ 





প্রশান্ত মহাসাগরে জাপানের রণক্ষেঅ 


জাপ নৌবহরের আয়োজন চলিয়াছে। বিশটিরও অধিক জাপ সাবমেরিন 


দক্ষিণ-চীন সমূদ্রে আবিডূতি হইয়াছে। একদল জাপ বাহিনী নৌবিভাগের 


ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় ১৯এ এপ্রিল প্রাতে অতফ্কিতে চেকিয়াং প্রদেশের 


উপকূলে নিংপো বন্দরের বহির্ভাগে উপস্থিত হইয়াছে। .সিঙ্গাপুরেও প্রবল 
উদ্ধামে সমরায়োজনের বিরাম নাই। সম্প্রতি আমেরিকান ক্রষ্টার বাফেলো 
মার্ক বহ বিমান সিঙ্গাপুরে আসিয়া পৌঁছিয়াছে। মালয় রাজকীয় বিমা 
বাহিনীর সহিত যোগদান করিয়া একত্র কার্ধ্য চালাইতে ইহার! বন্ধ- 
পরিকর। 


সংক্ষেপে, পূর্বব-এশিয়ার ষ্রাজনীতিক গগনে যে পৃ্লীভূত 
কালে মেঘ স্তরে স্তরে সঞ্চিত হইয়! উঠিতেছে, ইহীকে আসন্ন প্রবল 
ঝটিকার পূর্বাভাস বলা ঘাইতে পারে। 


২৩৪৪১ * 


গণ্পলেখার বিপদ 
শ্রীসরোজকুমার রায়চৌধুরী 


“প্রচ নিদাঘ। নদ-নদী, হদ-বিল-তড়াগ শুধ্প্রায়। 
খররৌদরে দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ ধূ ধু করিতেছে। তরুদল 
বিীর্ঘ। গ্রামপথে তপ্ত ধুলা উড়িতেছে। মধ্যাঙ্নে বাহির 
হয় কাহার সাধ্য! মানুষ ঘন্াক্ত কলেবরে ছটফট 
কন্সিতেছে। হেমনলিনী নিদ্রীর চেষ্টা করিয়াও ব্যর্থমনোরথ 
হইলেন। অবশেষে একরাঁশ তেঁতুল লইয়া বটি দিয়া বীচি 
ছাড়াইতে বসিলেন |” 

এই পর্যন্ত লিখে উদ্দীয়মান লেখক ভবেনজ্রনাথ বিশ্বাস 
একটু দম নিলে। 

হেমনলিনী এর পর কি করতে পারে? সে ধনীর 
গৃহিণী, সুলরী। নিঃসস্তান বলে যৌবন যাই-যাই ক'রেও 
এখনও যেতে পারেনি । পশ্চিম দিগ্বলয়ের প্রান্ত সীমায় 
এসেও হঠাৎ যেন থমকে রয়েছে । এই দুরন্ত গ্রীষ্মে ঘুম 
না এলে বটি দিয়ে তেঁতুল-বীচি ছাড়ানো মন্দ নয়। কিন্ত 
নায়িকা যেখানে ধনীর গৃহিণী সেখানে তঁতুল-বীচিই বা সে 
কতক্ষণ ছাড়াতে পারে? তার স্বামী কৃষ্ণকিশোর অতি 
মচ্চরিত্র ও মিরীহ ব্যক্তি। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে গভীর সম্প্রীতি 
বর্ডঘনান। নুতরাং হেমনলিনী যে সেই বটি গলায় বিয়ে 
একটা লোমহর্ষণ কাণ্ডের সৃষ্টি করবে সে সুযোগও নেই। 
এমন অবস্থায় হেমনলিনীকে নিয়ে ভবেন্ত্র সত্য সত্যই অত্যন্ত 
বিব্রত এবং বিচলিত হয়ে উঠল। 

আমাদের চোখের সম্মুথে যে অসংখ্য নর-নারী-_কেউ 
উদরায়নের চেষ্টায়, কেউবা! পরিপাক শি বুদ্ধির জন্ত বিচরণ 
ক'রে থাকে- কেউ মোরে» কেউ ট্রামেঃ কেউ বা 
পরব্রজে- তাদের অতি অল্প কজনকেই আমর! চিনি। 
যাদের চিনি, তাঁদেরও অতি অল্পই চিনি। এমন অবস্থায় 
এই জনারণ্যের মধ্যে থেকে একটি হেমনলিনীকে কল্পনায় 
আবিষ্কার করে তাকে পাঁচজনের সামনে রংচং দিয়ে উপস্থিত 
কর! চারিটিখানি কথা নয়। 

কলিকাত। মহানগরীর একথানি সুসজ্জিত ঘরে দুপুর 
বেলায় বৈছ্যুতিক পাখার নীচে বসে ভবেক্জ গ্রীষ্মের পল্লীর 
রূপ চিন্তা করতে লাগল। সেই সঙ্গে হেমনলিনীর কথাও। 


নীচের রান্তা দিয়ে শ্রীস্ত শীর্ণ কঠে কুলপি-বরফওয়ালা 
হেকে যাচ্ছে। ধনী এবং স্থন্দরী হলেও পল্লীগ্রামে ঝসে 
হেমনলিনীর উপায় নেই-_-একটু কুলপি-বরফ খেয়ে শরীরটা 
ঠাণ্ড করে। 

সে বটি দিয়ে তেঁতুলের বীচি ছাড়ায়। 

তারপরে? 

তবেন্্র সেই কথাটাই একাগ্রচিত্তে ভাবতে লাগল। 
পল্লীবধূর পক্ষে উপস্ভাঁসের নাঁয়িকা হওয়ার অত্যন্ত অস্থবিধা। 
তার পরিসর এত সন্ধীর্ণ, দৃষ্টি এত কুসংস্কারাচ্ছন্ন এবং 
হৃদয়ের তাপ এত অল্প যে, তাঁকে রেসের ঘোড়ার মতো 
ছুটিয়ে নিয়ে যাওয়া যাঁয় না । এই প্রথম পল্লীর গল্প লিখতে 
বসে এই প্রথম সেই কথাটা! উপলব্ধি ক'রে সে পল্লীসাহিত্যের 
সম্বন্ধে একটা হতাশ বোধ করলে। এদের চরম 
পরিণতি হৃরধ্যমুখী ! 

কিন্তু উদীয়মান লেখক ভবেন্ত্রনাথ সেই পুরাতন 
গতান্গগতিক পথে যেতে পারে না। সে স্থির করেছে, 
পল্লীর কুসংস্কারের শৈবালাচ্ছন্ন বদ্ধ ডোবায় আোঁত না 
থেলিয়ে সে ছাড়বে না। কিন্তু হেমনলিনীর এমনই একটা 
মিষ্টি ্িঞ্চ ছবি তাঁর মনে এসেছে যে, তার থেকে কিছুতেই 
সে নিজেকে মুক্ত করতে পারছে না। হেমনলিনীর ভদ্রধরের 
গৃহিণী হওয়ার যোগ্যতা আছে, কিন্তু উপন্াসের নায়িক। 
হওয়ার একেবারেই সে অনুপযুক্ত । 

এমন সময় ভবেন্দ্রের স্ত্রী সুলতা একহাতে একটি 
শ্বেতপাথরের গেলাসে তরমুজের সরবৎ নিয়ে পর্দা সজিয়ে 
ঘরে এল। 

বললে, বাবাঃ! এই গরমেও লিখতে ইচ্ছে হচ্ছে 
তোমার? ধন্টি মানুষ তুমি! 

ভবেন্ত্র সরবতে একটা চুমুক দিয়ে গন্ভীরভাঁবে বললে-_ 
তুমি কি মনে কর, লেখা আমাদের সথ? 

_-তবে? 

--এ আমাদের জীবনধর্ম । না লিখে আমরা পারি না!। 
আমাদের লিখতেই হবে । " 


দ2৮ 


জৈোষ্ঠ- ১৩৪৮ ] গরকেশহ্ধান্স ন্িষ্পচ্ ১৪ 





স্থলতা একথার আর উত্তর না দিয়ে ভবেন্দ্রের লিখিত 
অংশটা পড়তে লাগল। 

তারপর সকৌতুকে বললে; এবারে হিমু্দিকে নিয়ে 
পড়লে ! বেশ হবে। লেখ, ছাপা হলে তাকে একথানা 
কাগজ পাঠিয়ে দিতে হবে। 

স্থলত। হাতে তালি বাজিয়ে হেসে উঠল। 

ভবেন্দ্র বললে, এ হেমনলিনী তোমার হিমুর্দি নয়, 
এ অন্ত । 

-আহা! আমি যেন কিছুই বুঝতে পারি না! “ধনীর 
গৃহিণী, সুন্দরী । নিঃসস্তান বলে যৌবন যাই-যাই করেও 
যেতে পারেনি । পশ্চিম দিগ্বলয়ের.” এ কে মশায়? 
হিমুদি নয়? শ্বামীর নামটা অবশ্ত মেলেনি । কিন্তু এই 
যে “সচ্চরিত্র ও নিরীহ ব্যক্তি! জামাইবাবু ছাড়া এটি 
কে হতে পারে? আমাকে বোকা পেয়েছ ?” 

ভবেন্দ্র হেসে বললে _না, তোমার বুদ্ধির শেষ নেই। 
কিন্তু সচ্চরিত্র এবং নিরীহ ব্যক্তি হলেই যে তোমার 
জামাইবাবু হতে হবে, তা আমার জান! ছিল ন|। 

সুলতা এ পরিহাস গাঁয়েই মাথলে না। সে ভবেন্দ্রের 
চেয়ারের হাতলে বসে বললে, হিমুদির সন্বন্ধেই যদি লিখতে 
হয়ঃ তাহ'লে তার একট! গল্প তোমাকে বলি। তুমি 
কণদিনই বা তাকে দেখেছ, কি-ই বা তার সম্বন্ধে জান! 
আমার কাছে শোন। 

ভবেন্ত্র সরবৎটা শেষ ক*রে গেলাসটা রাখলে । রুমালে 
মুখ মুছে বললে--বল। দেখি তোমার হিমুদিকে নিয়েই 
একটা গল্প লেখা যায় কি না। 

সুলতা বললে, তোমাদের সবারই ধারণ] জামাইবাবুই 
এক দণ্ড দিদিকে না দেখে থাকতে পারে না। কিন্ত দিদির 
গুণ তো জাননা? 

ভবেন্ত্র নিরীহভাবে ঘাড় নাড়লে। 

স্থলতা হেসে বললে, একবার কি হয়েছিল শোনো । 
জামাইৰাঁবু এমনি একটা গ্রীষ্মকালে জমিদারী দেখতে 
বেরিয়েছিলেন। পালকীতে ক'রে যখন ফিরে এলেন তখন 
তার চোখ লাল। আরযায় কোথায় ! 

- তোমার দিদি ভাবলেন, মধ খেয়ে ? 

স-তা কেন ভাবৰে ? ভাবলে অস্থখ। তখনি ডাক্তারের 
কছে লোক ছুটল) হাত.মুখ ধুয়ে বিশ্রীম কর! দুরে থাক, 





জামাইঘাবুকে তখনই বিছানা নিতে হ'ল। তার গায়ে 
লেপ চাপিয়ে দেওয়া হল, সেই গরমে, বোঝ ।- বাড়ী 
চোখ লাল! ৃ 

--তারপরে ? ডাক্তার কি বললে? 

_ বললে? তাকে কি দিদ্দি বলতে দিলে? ডাক্তার 
যত বলে কিছুই হয়নি, দিদি তত বলে হয়নি তো চোখ লাল” 
কেন? ভাক্তার বলেঃ দুপুরে এসেছেন রোদের বাঁঝে 
ওরকম হতে পারে। দিদি বগলে, হতে পারে তো এই 
যে দেশশুদ্ধ লোক সমস্ত দিন রোদে ঘুরছে ওদের চোখ 
লাল হয় না কেন? উনি তো পালকীতে এসেছেন। 
ডাক্তার বললে, তা হলেও ..। দিদি বললে ও সব আমি, 
বুঝি না। তোমার বিছ্যেয় যদি রোগ ধরতে না পার, আমি 
শহর থেকে বড় ডাক্তার আনাব। 

_ সর্ধনাশ ! আর তোমার জামাইবাবু? 

সুলতা হো হে! ক'রে হেসে উঠল । ৃ 

- জামাইবাবু? তিনি প্রতিবাদে একবার একট! 
কি কথা বলতে যেতেই দিদি একেবারে যেন ঝাপিয়ে উঠল। 
বললে, ফের একটা কথা কয়েছ কি আমি তোমার পায়ে 
মাথা খু'ড়ে মরব। জামাইবাবু ভয়ে আর কথাটি কইলেন 
না। সারারাত ধরে এই পর্ব চলল। সারা রাত্রির "ফচ 
দিয়ে বেচারা ডাক্তারকে পর্য্স্ত ঠায় বসিয়ে রাখ। হল। 

ভবেন্ত্র হাসতে লাগল। 

__-অথচ ব্যাপারটা কিছু নয়? 

_না। অন্ততঃ বিশেষ কিছুই নয়। তারপরে এমন 
হয়েছে যে, জামাইবাঁবুর যদি শক্ত জন্গখও হয়, বাইয়ে 
চুপ ক'রে পড়ে থাকেন, তবু-বাড়ীর ভিতর জানাতে সাহস 
করেন ন|। 

সুলতাও হাঁসতে লাগল । 

বললে, এই নিয়ে একট। গল্প লেখ দেখি। 


রোগশয্যার অনুস্থ স্বামী। তার পাশে রাত্রির পর 
রাত্রি জেগে চলেছে দুটি নর্চনারী। একজন ডাক্তার, 
সে স্পুরুষ, স্থদর্শন এবং যুবক। অপর জনের যৌবন 
যাই-যাই করেও যেতে পারছে না। তুর যৌবনের 
প্রশান্ত মহাসাগরের নীচে জলছে অপত্যু কামনার বাড়বানল। 








8২০ ভ্ডাব্ক্চন্লঞ্থ [ ২৮শ বর্ষ-_২য় খণ্--যঠ সংখ্যা 
স্বামীর রুগ্ন দেহনদীর দুই তীরে ছুটি চখাচথ্থী এমনি' ক'রে _না। ওইটুকুই তফাঁৎ। নইলে... 
রাতের পর রাত জেগে চলেছে । ভবেন্র আর গুনতে পারলে না। 


লেখাটি মাসিকপত্রে প্রকাশিত হওয়া মাত্র আদৃত 
হল।. তার ভক্তের দলে এই নিয়ে রীতিমত একটা কলরব 
. পড়ে গেল। 

ভক্তশিরোমণি আলোক কাগজ বগলে ক'রে 
“কড়া নাড়লে। 

' বললে, অদ্ভুত ! অনবদ্য ! 
ভবেন্ত্র খুশি হয়ে হাসলে । বললে, ভালে! লেগেছে 
তোমাদের ? 

_-ভালেো ?--আলোক চোখ কপালে তুলে বললে-__ 
গুধু ভালোলাগা? /০22101 1 ও তো শুধু গল্প-নয়, 
জীবনের মহাকাব্য । বিশেষ ক'রে আমার কাছে। 

-মানে? 

আলোক সলজ্জভাবে হাসলে । 

বললে, সে একটা ব্যক্তিগত ব্যাপার । কিন্তু আপনাকে 
বলতে দোষ নেই। 

ব'লে সম্মতির অপেক্ষায় ভবেন্দ্ের দিকে সাগ্রহে চাইলে। 
অর্থাৎ গুধু যে তাঁর বলবার ইচ্ছা আছে তাই নয় এই 
কথাটা বলবার জন্তেই সে ট্রাম ভাড়া করে এতটা 
পথ এসেছে। 

ভবেন্ত্র সোঁৎসুকে বললে; তাই নাকি ? 

আলোক মাথা নেড়ে বললে, হ্্টা। আমার মেজদির 

নন্দাইএর যেবার খুব অস্থখ হয়। বাইরে প্রচণ্ড দুর্যোগ, 
ঘরে মুমূর্ রোগী, আর তার দু'পাশে আমরা ছুজন। 
সে ধে কি মনের ভাব আপনার গল্পটি পড়ার আগে পর্য্যস্ত 
আমি নিজেই বুঝতে পারতাম না। আশ্চর্য আপনার 
দৃষ্টি আশ্চর্য. আপনার মনোবিষ্গেষণঠ আর আশ্চর্য্য 
আপনার ভাষা ! 
, রোমান্সের নীলাভ আলোয় যে ক'টি সঞ্চরমান বৃতুক্ষ 
চিত্তের ছবি সে একেছে' দিনের পরিপূর্ণ আলোয় তারই 
এধজনের 'ছবি চোখের সামনে দেখে ভবেন্দ্র যেন হতাশ 
হয়ে গেল। আলোকের স্বতিবাদের সমন্ত আনন্দ এক 
মুহূর্তে বিত্বাদ হয়ে গেল । এত কষ্টে এত ধত্বে এবং এত 
মমতাঁয় সে কি এই ছবি আকল ! 

বললে, কিন্তু তুমি তো ডাক্তার নও? 


এসে 


এর সপ্তাহ কয়েক পরে একটি বুড়ো ভদ্রলোক একটিন 
তার সাক্ষাৎপ্রার্থ হল। শীর্ণ দেহ, মাথার চুল ছোট-ছোট 
ক'রে ছাঁটা, চোখে অত্যস্ত পুরু কাঁচের নিকেলের চশমা । 
ভবেন্দরের অত্যন্ত সঙ্গিকটে চোখ নিয়ে এসে ভদ্রলোক 
কম্পিত কণ্ঠে জিজ্ঞাসা করলে-_ আপনি কি ভবেন্দরবাবু? 

তাঁর আশ্চধ্য কগম্বরে এবং তার স্তিমিত চোখের 
অপাথিব দৃষ্টিতে ভবেন্ত্র যেন শিউরে উঠল। তার মনে 
হ'ল, লোকটি যেন এ পৃথিবীর নয়__যেন একটি ভৌতিক 
গল্পের চরিত্র । 

তার প্রশ্নের উত্তরে ভবেন্ত্র নিঃশবে সন্মতিহ্চক 
ঘাড় নাড়লে। 

ভদ্রভাবে বললে, ঈাড়িয়ে রইলেন কেন? বস্থুন। 

ভদ্রলোক বসলে না। তার মুখের উপর সেই অপাঁথিব 
শীতল দৃষ্টি আর একবার বুলিয়ে পুনরায় কম্পিতকণ্ঠে 
জিজ্ঞাসা করলে, আপনি গল্প লেখেন ? 

_আজ্ে হ্যা। 

তদ্রলোক নিশ্িন্ত মনে এতক্ষণে হাঁফ ছেড়ে বসলে । 

ভবেন্ত্র জিজ্ঞাসা করলে, আপনি কোথেকে আসছেন? 

- হুগলী থেকে । 

-কি দরকার বলুন? 

দরকার? আপনি ভালো করে খবর না নিয়ে 
কেন ওই সব বাজে কথা লেখেন? 

কি রকম বলুন তো? 

রুষ্মভাবে ভদ্রলোক বললে, বলগব বই কি! বলবার 
জন্যেই তো এতটা পথ এসেছি । আমি কৃষ্কিশোর। 

_ কৃষ্ককিশোর ! 

--আজ্ে হ্যা। যার কথা আপনি গল্পে লিথেছেন।, 
যার স্ত্রী মুমূর্ু ম্বামীর বিছানায় বসে সারারাত 
ডাক্তারের সঙ্গে. 

তাড়াতাড়ি ভবেন্ত্র বললে সে আপনি কেন হবেন? 
আপনি তো ধনী বলে মনে হচ্ছে না! আপনাকে তো 
ঝ্ামি চিনিই না। আপনার কথা লিখব কি করে? 
জ্বানবই বা কি ক'রে? 


জ-*১৩৪৮ ] 





গক্শেজান্ল নিশাদ্ছ 





৭৯১ 


সস 





১ 


_জানবার ভাবনা কি? পাড়াগীয়ে আর যতই চলে যেতে পারে না। আমি মর-মর আর আপনি 


অভাব থাক, দলাদলির অভাব নেই । সে খবরও নিয়েছি। 
মুখুয্যেদের ষষ্ঠী এসে আপনাকে খবরটা দিয়ে গেছে। 

_ মুখুযোদের ষণ্ভীকে আমি চিনিই ন|। 

_-বেশ চেনেন। আমি কি খবর না নিয়েই আসছি? 
আপনাঁকে স্পষ্ট কথা বলি শুনুন, আমি উকিল বাড়ী 
থেকে আসছি । আপনার নামে এক নম্বর মানহানির 
মামলা ঠৃকচি। 

_বলেন কি? 

_-আজে হ্্যা। শুধু একবার জানতে এসেছি, ভভ্র- 
লোকের মেয়ে-বৌএর নামে যা-তা লেখেন কেন? 

ভবেন্ত্ সে প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে একটু দম ধরে রইল। 
তারপর বললে, আপনিই যে আমার গল্পের কষ্চকিশোর, 
সে কথা প্রমাণ করবেন কি ক'রে? 

খুব সহজে । আমাঁর নীমও কৃষ্ণকিশোর। আমি 
ধনী নই, জমিদারী দেখতে বেরুইনি, পালকী করেও 
ফিরিনি। কিন্তু সত্যি সত্যি মাসখানেক আগে সদর 
থেকে ফেরবাঁর সময় সর্দি গর্দি হয়েছিল! আমার স্ত্রীর 
রূপের প্রসঙ্গ আপনার সঙ্গে আলোচনা করতে চাই না। 
কিন্ত তিনিও নিঃসন্তান এবং আমার সেই অসুখের সময় 
সত্যি সত্যি ডাক্তারকে সারারাত্রি ডবল ফি দিয়ে আটকে 
রেখেছিলেন। কিন্তু তার জন্কে তার গহনাগুলি সেই যে 
বাধা গড়েছে আজও ছাড়াতে পারিনি। একেবারে 
নিরাভরণ হওয়ার চেয়ে শাখা ছু'গাছি রাখার জন্তে 
তার এই কাঁজ ভালো হয়েছিল কি মন! হয়েছিল, সে 
আপনার স্ত্রীকে জিগ্যেস করবেন। 

ভবেন্ত্র কুষ্টিতভাবে বললে, আপনি ভুল করছেন। 
আপনার স্ত্রী অথবা কারও স্ত্রীর কুৎসা রটনা করা আমার 
উদ্দেশ্ত নয়। স্বিখ্বান করুন, আপনাকে আমি চিনি নাঃ 
মুখুযদের হী সপ্তমী কেউ আমার কাছে কোনোদিন 
আসেনি । তাদের চিনিও না। হুগলী আমি জীবনে 
কখনও যাইনি । এ সমন্তই কল্পনা । 

ভদ্রলোক হা হা করে হেসে উঠলেন। 

বললেন, আশ্চর্য্য আপনাদের কল্পনা মশাই! রোগ হলে 
লোকে ভাতার ডাকে। ম্থামী যখন রোগে ধুঁকছে, সী 
কিছু আর তখন লজ্জা ক'রে তার বিছানা ছেড়ে 


কল্পনা করলেন, আমার স্ত্রী তখন ডাক্তারের সঙ্গে চখাঁচখী 
খেলা করছেন ! বিলক্ষণ! 

ভবেন্ত্র লজ্জিতভাবে বললে-_দেখুনঃ রসের জেত্রে'': 

ভদ্রলোক যেন বারুদের মতো৷ ফেটে পড়লেন। 

--রসের ক্ষেত্র ? রস আপনাদের মাথায় ঢালতে হয়। 
স্বামী মর-মর, স্ত্রী তাঁর শেষ সঙ্গল চুড়ি ক'গাঁছি বন্ধক দিয়ে" 
ডাক্তারের ফি জোগাচ্ছে, এর মধ্যে রসটা কোথায় গুনি 

ভবেন্্র হাত কচলে বললে, কি জানেন:'' | 

-জানি। সে আর মুখে বলবাঁর নয়। আমি চললাম, 
আবার কোর্টে দেখা হবে। 

রাগে ঠক ঠক ক'রে কাপতে কাপতে ভদ্রলোক চলে 
গেলেন। 


কিন্তু বিপত্তির এইখানেই শেষ হ'ন না। 

কণ্টা দিন যেতে না৷ যেতেই হেমনলিনী তার স্বামীকে 
সঙ্গে ক'রে নিয়ে উপস্থিত হ'ল। 

সুলত। বহুকাল পরে দিদিকে দেখে আননে আত্মহারা 
হল। হেমনলিনী তার সহোদর দিদি নয় পিসতৃত দিদি। 
ব্লতে গেলে, সে স্থুলতাদের বাড়ীতেই মানগুষ। কিন্তু 
বিবাহের পর ছুই বোনে দেখ খুব কমই হয়। 

বললে, হিমুর্দি যে! কি ভাগ্যি! 
কোথায়? 

-_গাঁড়ীভাড়া মেটাচ্ছে। 

_€কেমন আছ? জামাইবাবু কেমন আছেন ? 

_ ভালো নয়। কদিন থেকে দাতের গোড়ায় যন্ত্রণা 
হচ্ছে। সেইজন্তেই আসা সেই সঙ্গে ভাবলাম, তোর 
ছাঁগলটাকেও দেখে আমি কোথায় গেল সেটা? 

-কে? ছাগল? ছাগল আবার কোথায় পাব? 

নীচে থেকে জামাইবাবুর কঠ শোনা গেল; কোঞ্ধায় 
গো? কোন দিকে গেলে? 

উপর থেকে সুলতা বললে-_এই যে, এই 'দিকে, “এই 
দিকে। আহা! জামাইবাবুৎ আমার দিদিকে এক মুহুর্ত 
না দেখলে চোখে অন্ধকার দেখেন ! 

_-তা বলতে পার, তা! বলতে পার। 

হ্মষনলিনী পাশের ঘর থেকে বেরিয়ে এল ' 


তোমার বাহন « 


ভান্পব্ন্র্ 


 _ওকি কন্দর্টারটা খুললে কেন? কালফৈ সমস্ত রাজি 
ছটফট করেছ না? 

জামাইবাবু করুণকণ্ঠে বললেন বঙ্ড গরম 'যে ! 

_-ছ'লই বা গরম! দীতে যন্ত্রণা না? 

__ এখন যন্ত্রণা অনেকটা কম মনে হচ্ছে। 
তোমার তো সব সমযেই কম মনে হয! যন্ত্রণার 
তুমি তো সবই বোঝ! 

জামাইবাবু আর কথাটি কইতে সাহস করলেন না। 
এই দুর্দাত্ত গ্ররমে ছেমনলিনী তাঁর মুখ বেশ করে কন্র্টার 
দিয়ে চেকে দিলেন। তখনই পাশের ঘরে তার বিছানা 
হল। হেমনলিনী নিং্জর হাতে তাঁর 'পা! ধুইয়ে তোয়ালে 
দিনে মুছিয়ে সেই বিছানার তাকে শুইযে দিয়ে এল। শান্ত 
ছেলের দতো| জামাইবাঁধু চোঁথ বন্ধ ক'রে গুয়ে পড়লেন। 

তবে হেদনলিনীর আবির্ডাবে ভযে কাঠ হযে গেল। 
তার লক্ষে দ্েখা'করবাঁর তাঁর সাহস নেই। চুপি চুপি এক 
সময়ে তী পাশে গিয়ে বলল । 

স্পকেষন আছিস? 

জার্দাইধাবুচোঁখ' খেলে বললেন, ভালো নয । 

'ধীতের ফ্াণা'ফি খুব বেশী? 

সকিছুমত্সি নাঁ। 'কৈবল এই কন্ফর্টারটার জন্যে "' 
তোধার দিদির সঙ্গে দেখ হয়েছে? ? 

-স্নী। তিনি বাথরুমে 1 

জামাইবাবু ঝেড়ে উঠলেন। বললেন, তাহলে দরজাটা 
বন্ধ ক'রে ঘাঁও, কন্র্টীরটা খুলি। আঁর শোনো, তোমার 
দিদ্ধির সর্জে অহজে দেখা কোরো না। তোমার মাথার ঘোল 
ঢালবে কলে এসেছে । জান তো ওকে? কিফেগল্প লেখ 
তোমরা, জার জামারে নিয়ে...। এই দেখ না, ক্ষিছুই 
নয়। দীতে অন ব্যথা এ বয়সে হয়| তার জন্তে এই 
কলকাতি। পর্যন্ত টানাটানি | - গুনছি, ব্যারি সাহেবকে কল 
দেওয়া হবে। 

তবেন্্র বিরক্তভাবে বললে, গল্পের কথা! যি বললেন "' 
 »সে আমি 'জানি। গল্প গল্পই-.কিন্ত সত্রীপোকে 
ভাই ধর্খধে তবে আর, 

--আজে শুধু শ্রীলোকই-নয়, প্রেতলোকি থেকে একজম 
পুরুষ এসেও শাসিষে গেছে। 


সি এ 4 


[ ২৮শ বর্ষ-_২য খ্-বষঠ সংখ্যা 


_-প্রেতলোঁক থেকে ? কি রকম?” 

--তা আমি কি ক'রে জানব? শীঁসিয়ে গেছে, মান- 
হাঁনির মামলা কররে। তারবিষ্বাম ও গল্পটা তার স্ত্রীকে 
নিযে লেখা । বুঙ্ঠুন বিপদ! 

_বলকি? 

- আজে হ্যা। কিন্তু তার জন্তে ভয পাচ্ছি না। সে 
যাহয হবে। কিন্তু এখানে ফরিযাদী নিজেই যে হাকিম! 
রাষও দেওয়া হযে গিষেছে ! ভয এইখানেই! 

জামাইবাবু হাসলেন। বললেন, ভযের কথা বটে। 
তবে তোমার গল্পটা ঠিক হয়নি। 

তবেন্্র বিরক্তভাঁবে বললে ঠিক হবে কি কবে? ও তো 
আঁপনাদ্দের নিষে লেখা নয। 

--তা বটে। কিন্তু এইবার একটা আমাদের নিষে 
সত্যিকার গল্প লেখ। 

দুই হাত কপালে ঠেকিয়ে ভবেন্ত্ু বললে, আবার! এই 
ধাকাই সামলাই দাড়ান । 

জামাইবাবু হেসে ফেললেন । বললেন, ধাক্কা আমার 
ওপর দিয়ে কম যাঁর না। এক একটা অস্থখ তো নযঃ এক 
একটা ফাড়া। তবু গ্রতিবাঁদ করি না। তাতে ফলও হবে 
না। হত, যর্দি একট! ছেলে কি মেয়ে থাকত। হাসির 
কথা! তোগাকে বলতে লঙ্জাও করে। আসল কথা কি 
জান? আমার উপর দিয়েই তোমার দিদি বাৎসল্য রসও 
মিটিযে নিভে চাঁন। ফলে আমার জীবন ছুর্ববহ হয়ে 
উঠেছে । তোমাকে সত্যি কথা বলছি, এক এক দময় স্ত্রীর 
উৎপাতে আমার আত্মহত্যা করতে ইচ্ছে হয। আবার 
স্ত্রীর মুখ চেয়েই সে ইচ্ছে সাঁসলে মিই। 

জাসাইবাধুর চোখ ছল ছল করে উঠল। একটা 
উচিত জাবেগ তিনি দমন করলেন। 

তারপর বললেন, লিখবে এই নিষে একটা ? 

ভবেন্্র সটান বললে; আজে না। মাপ করবেন । 

ভাই তো ছে।। দেখছি, তোমার দিদিকে একা 
আমিই ভয় পাই না, সবাই পায়। 

তারপরে কশ্ফর্টার়টা আবার জড়িয়ে জামাইবাবু একটা 
দীন ফেলে শধ্যা গ্রহণ করলেন। 

বাইয়ে তখন হেমনলিনী ঘন ঘন কড়া নাড়ছে! 





২ 
ৰ (২ 
| 


গ্রীল ক্রম্বাঞথ লালু ভাঁরতবাসীর তাহা.অবশ্তপাঠ্য ১ প্রত্যেক ইংরেজ তাহা পাঠ 
শত ২৫শে বৈশাখ তারিথে বাঞ্াপার তথা তাঁরতের করিলে এ ছুদ্দিনেও তীহারা লাভবান হুইবেন। বিনি।* 
গৌরব-রবি শ্রীযুত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বয়স.৮* বৎসর পূর্ণ আশীবৎসর ধরিয়া একটা আদর্শকে অবলহ্থন করিয়া জীবন 
হইয়া ৮১ বংসর আরম 
হইয়াছে । এই উপলক্ষে 
আমরা কবি-গুরুকে আমা- 
দেরআতস্তরিক সশ্রদ্ধ অভি- 
বাদন জ্ঞাপন করিতেছি 
এবং শ্রীভগবাঁনের নিকট 
প্রার্থনা করি,তিনি সুদীথ- 
কাল জীবিত থাকিয়া 
আমাদের বাঙ্গীল। ভাষা ও 
সাহিত্যিকে সমৃদ্ধ করুন। 
এই পরিণত বয়সেও 
কবিগুরু নিত্য তাহার 
নৃতন দানে বাঙ্গালা সাহি- 
ত্যকে পুষ্ট করিতেছেন। 
বাঙ্গালী জাতি আজ তাই 
সর্বত্র সমব্তেভাবে তাহায় 
দীর্ঘ কর্মময় জীবনের জন্গ 
প্রার্থনা করিতেছে । 


ক্মন্বন্লতম্থন 
ছবাী-_ 


নববর্ষে র প্রথম দিনে 
শান্তিনিকেতনে র বীন্ত্র- 
নাথের একাধিক-অশীতি- 
তম জন্মোৎসব উপলক্ষে 
কবি যে'ভাবণ দিয়াছেন 
তাহা নানা দিক “দিয়া 
বৈশিষ্টাপুর্ণ এবং -প্রত্যেক্ত ' ইীবীন্রলাখ ঠাকুর 





চা 
অতিবাহিত করিয়া আসিয়াছেন, সাজ জীবন সায়া 
তিনি যদ্দি দেখেন যে তীহার েই আদর্শ বছুধা বিচ্ছিন্ন 
ও চূর্ণবিচূর্ণ হইয়। ধূলিসাৎ হইতে বসিয়াছে তখন তাহার 
চিত্তে যে বেদন! যে ক্ষোভ জন্েঠ.কবির এই ভাষণ তাহার 
আলাময়ী বাণী। প্রায় দুইশত বৎসর ধরিয়া ভারতে বৃটিশ 
শাসনের নির্ভীক, নিরপেক্ষ ও অকুঠ সমালোচনা হিসাবে এই 
'ভাষণটি স্মরণীয় হইয়! থাঁকিবে। একটা! নির্ঘমম আঘাতে গভীর 
শঁন্ধা ভাঙ্গিয়! গেলে যে হতাশা ধবনিত হয়, কবির ভাষণে 
সেই হতাশার স্থুর প্রতিধ্বনিত হইয়া ইহাকে একটি বিশিষ্ট 
রূপ দিয়াছে । উনবিংশ শতকের গোড়ায় ইংরেজী-সাহিত্য ও 
তাহার ভিতর দিয়! ইংরেজ চরিত্রের যে উদারতা, বলিষ্ঠতা ও 
সততার পরিচয় প্রকাশিত হইয়াছিল তাহ! সেই দিনের 
তরুণ চিন্তকে বিস্মিতই শুধু করে নাই, মুগ্ধও .করিয়াছিল। 
সনাতন সমাজের অচলায়তনের মধ্যে সেদিনের তরুণদের 
প্রাণে ইংরেজী সাহিত্য ও সমাজের সার্বজনীনতা একট 
বিরটি বিপ্লবের অক্ষ দিয়াছিল। ইংরেজ শুধু গায়ের জোরে 
দেশের মাঁটিই আঁরত্ত করে নাই, চরিত্রের দৃঢ়তাঁয়। মনের 
উদ্দারতায়, দাক্ষিণ্যে এবং প্রাণপ্রাচুর্য্যে দেশের মনকেও জয় 
করিতে পারির়াছিল। ' এই আবহাওয়ার মধ্যে রবীন্দ্রনাথের 
আৰিষ্ভাহ হয় এবং আশৈশধ ইংরেজের অন্তঃকরণের বিশালতা 
ও মানবসৈত্রীক. পরিচয়ে মুখ হইয়া কবি একাস্তিক শ্রদ্ধার 
সহিষ্ত ইংয়েজ-জাতিকে.অন্তরের উচ্চাসনে বসাইয়াছিলেন। 
আঘাত পাইয়া নিভৃত সাহিত্যচচ্চার আবেষ্টন হইতে 
বাহিরে আসিয়া “ভারতের জনগণের যে নিদারুণ দারিত্য 
গিনি প্রত্যক্ষ . কম্সিলেম তাহা “হদয়বিদারক+ | অন্ধ, বস্ত্র 
পানীয় শিক্ষা, আরোগ্য, মাহুষের শরীর ও মনের যা কিছু 
অত্যবস্তক, তায় এমন নির্তিশয় অভাব বোধ হয় পৃথিবীর 
আধুনিক শালনচালিত কোন দেশেই ঘটে নি। 
খিতে দেখিতে জাপান যন্ত্রশক্তিতে বলীয়ান হইল। 
জাপানের প্রখ্্য এবং নিজের জাতির মধ্যে তাহার সত্য- 
শাঁসনের রূপ তিনি স্বয়ং চাক্ষুষ করিয়া আসিম়্াছেন। আর 
প্রত্যক্ষ করিয়া! আসিয়াছেন-_অধ্যবসায় ও ীকাস্তিক নিষ্ঠার 
জোরে অতবড় বৃহৎ রুশ স!আ্রাজ্য হইতে কত সহজে ও কত 
শীত মূর্খতা, দৈন্য ও আত্মাবমাননা বিলুপ্ত হইতে বসিয়াছে। 
£সেখানকাম, মুসলমানদের সঙ্গে রাষ্ট্র অধিকারের ভাগ- 
বাটোয়ারা নিয়ে অম্জলমানদের কোনও. বিরোধ ঘটেনা, 


ভান্রভিত্র 


[২৮শ বর্ধ-_২য় থণ্ড--ধষ্ঠ সংখ্যা 


তাদের উভয়ের মিলিত স্বার্থ-সম্বদ্ধের ভিতরে রয়েছে শাসন- 
ব্যবস্থার ষথার্থ সত্য ভূমিকা | পারস্য ও আফগানিস্থান 
অতি দ্রুত উন্নতির পথে আগাইয়া চলিয়াছে। কেবল 
“ভারতবর্ষ ইংরেজের সভ্যশাসনের জগন্দল পাথর বুকে নিয়ে 
তলিয়ে পড়ে রইল নিরুপায় নিশ্চলতার মধ্যে ।, 

এদেশের শিক্ষিত-মনে ইংরেজের জন্ত য়ে শ্রদ্ধার আসন 
ছিল তাহ! কেন আজ থাঁকিতে চাছিতেছে না, সে বিষয়ে 
ভারতবাসী ও ইংরেজ উভয়কেই ধীরচিতে ভাবিয়! দেখার 
সময় আসিয়াছে । কবি বলেন, “কেবল এই কথাই ভাবি, 
সাআাজ্যলোলুপত। এত বড়ো জাতির চরিত্রে কেমন করে 
ক্রমশ লঙ্জাকর বিকারে কুৎসিত হয়ে উঠেছিল । এই 
অভিযোগের মধ্যে কবির কে যে সুর ধ্বনিত তাহাতে 
বোনার সথরই বেণী। সব চাইতে তাহার বেশী দুঃখ এই 
যে, «সভ্যশাসনের চালনায় ভারতবর্ষে সকলের চেয়ে যে 
দুর্গতি আজ মাথা তুলে উঠেছে, সে কেখল অন্নবস্ত্র শিক্ষা 
ও আরোগ্যের শোকাবহ অভাবমাত্র নয় সে হচ্ছে 
ভারতবাসীর মধ্যে অতি নৃশংস আত্মবিচ্ছেদ 1? 


আচ্গাম্্র্য শ্রহুভনচতদ্র তলসক্ভী- 


আচাধ্য প্রফুল্লচন্ত্র অশীতি বর্ষে পদার্পন করায় তাহার 
অজন্ন ভক্তশিষ্ত ও গুণমুগ্ধ দেশবাসী নানা স্থানে নানা 
ভাবে জয়ন্তী উৎসব পালন করিতেছেন । এই আঁনন্দোৎসব 
জাতির অকৃত্রিম শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার নিদর্শন মাত্র। 
শিক্ষাদান, রসায়নের নিগুঢ় তত্বান্নুসন্ধান, জাতির নৈসগিক 
আপদে অকপট সেবা, অনাধারণ ত্যাগ, শিশুর মত সরল 
ব্যবহূর ও আধ্যখধির জীবনযাপন প্রভৃতি গুণে তিনি 
দেশবাসীর প্রাতংঃশ্মরণীয় মহাপুরুষ । এসকল গুণের অনেকই 
তাহার তিরোধানের সহিত লোপ পাইবে। কিন্তু বাক্গালা তথ। 
ভারতবর্ধকে তিনি মর্যযা্দাবোধ, শিল্পগঠন ও শ্বাধীন জীবিকা- 
জ্জনের যে পথ নির্দেশ করিতে চেষ্টা করিয়াছেন? ভবিষ্যতের 
দিক দিয়! চিত্ত করিলে মনে হয় তাহাই তাহার শ্রেষ্ঠ দান। 
ভারতের বিজ্ঞান চট্চা পরীক্ষাগারের চতুঃসীমার মধ্যেই 
চিরকাল নিবন্ধ ছিল। যে বিজ্ঞান শিল্পে নিয়োজিত ন 
হয় বা ব্যবহারিক জীবনে কাজে না৷ লাঁগেঃ তাহা প্রকৃতপক্ষে 


অসম্পূর্ণ এমন কি "অসার বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। 


তিনি ইহার মর্শ অন্তরে অন্তরে উপলব্ধি করিয়াছিলেন এবং 


জ্যে্ঠ--১৩৪৮ ] 


ইহাঁর মধ্যে সমতা স্থাপন করিয়! বাঙ্গালীর রসায়ন চচ্চা 
যাহাতে শিল্পে রূপলাভ করিতে পাঁরে আজীবন তাহার চেষ্টা 
করিয়াছেন। এই চেষ্টা তাহাতেই মুণ্তিলাঁভ করিয়াছে বলিয়া 
জাঁতি আজ তাহার দান আনন্দ চিত্তে স্বীকার করিতে চাঁয়। 
জয়ন্তী উপলক্ষে যে সকল উৎসব অঙুঠিত হইয়াছিল তন্মধ্যে 


কলিকাতা কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠিত কমাশিয়াল 
মিউজিয়মের প্রদর্শনী বিশেষ উল্লেখযোগ্য । 
ভারতের সর্বত্র রসায়নের মৌলিক তত্বান্ুসন্ধা- 
নের যে বিরাট প্রতিষ্ঠান চলিতেছে তাহাদেরই 
চষ্টাপ্রস্থত ভ্রব্যাদি এই স্থানে প্রদশিত হইয়া- 
ছিল। বিজ্ঞান ও বাণিজ্য অনুসন্ধান সমিতি 
(130210 0£ 501617110 85 [11005017] 
]২০5০21০]), বাঙ্গালোর বিজ্ঞান মন্দির, 
কলিকাতা বিশ্ববিষ্ভালয়ের বিজ্ঞান কলেজ, 
মাদ্রাজ বিজ্ঞান কলেজ প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান 
প্রদর্শনীতে যৌগ দেওয়ায় বর্তমান রসায়ন 
বিজ্ঞানের ধারা সম্বন্ধে একটী সুস্পষ্ট ধারণা 
করা সম্ভব হইয়াছিল। এই সকল তথ্যের 
উপর নির্ভর করিয়৷ বহু শিল্প গড়িয়া উঠিতে 
পারে। কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞান ও বাণিজ্য 
অনুসন্ধান সমিতি তাঁ হা দের আবিফারগুলি 
যাহাতে সাধারণের কাজে লাগিতে পারে, 
তাহার পূর্ণ স্থযৌগ দিতে প্রস্তুত আছেন। 
বর্তমানে আমাদের দেশে উপযুক্ত যন্ত্রপাতির 
অভাব কারখান! গ্রতিষ্ঠার প্রধান অস্তরায়। 
বাঙ্গালোরের বিজ্ঞানাছসন্ধান সমিতি যে সকল 
দ্রব্য প্রস্তত করিয়াছেন, তাহারা এ সম্পর্কে 
সমস্ত তথ্য এবং যন্ত্রপাতি সরবরাহ করিতে 
পারেন। ইহা বিশেষ আশার কথা সন্দেহ 
নাই। সরকারী ভূতত্বামু সন্ধান অফিস 
( 06501051081] (0156 ০0? 17018) ও 
[00187 11059010এর শিল্প শাখা হইতে 


ভারতে বাণিজ্যের উপযোগী এবং শিল্পের মুলবস্তরূপে 


স্‌ 





বহু প্রন্তর, লতা ও বীজ প্রদর্শনীতে আনিয়াছিলেন। 
প্রত্যেকটার সহিত জন্ম বা! প্রাপ্তিস্থান ও ব্যবহারের সন্কেত' ঢাকার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ফলে উভয়* সম্প্রদায়ের 
থাকায় তাহা বিশেষ হৃদয়গ্রাহী হুইয়াছিল। ইহা সমস্ত বছলোক হতাহত হইয়াছে । নারায়ণগঞ্জের প্রায়, পর্ধাশ- 


সাসঙ্গিক্তী এ 8২৫. 


কাপ 


প্রদর্শনীর সামান্ অংশের পরিচয় । একদিন আচাধ্যদেব . 
স্বয়ং উপস্থিত হইয় সমস্ত প্রদর্শনী বিশেষ করিয়া পরি- 
দর্শন করিয়া যে আনন্দ লাভ করিয়াছেন, তাহাই 
শেষ জীবনে তীহাঁর নিষ্ঠা, ত্যাগ ও সাধনার সাঁমান্ 
পুরস্কার মাত্র। 


পি. শপ জাপীগশা এ পচ 


সাশ্জ্রদ্াজিক্ভ। ও ভ্হীজসহমাভ্ক-- 


১১৬, 


সস দ্য 


খানি গ্রাম ভ্মীভূত হইট্নাছে, অধিবাসীর! ব্রিপুরা 
রাজ্যে আশ্রয় পাইয়াছে। এই অগ্রীতিকর আবহাওয়ার 
মধ্যে এক্য স্থাপন ছুঃসাধ্য হইলেও “নিখিল-বঙ্গ কলেজ ও 
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, এই কার্যে অগ্রসর হইয়াছেন 
দেখিয়া আমরা আশাম্বিত হইলাম। প্রীক্যসাঁবকমিটিতে 
কয়েকজন বিশিষ্ট হিন্দু ও মুসলমান অধ্যাপক আছেন। 
তাঁহারা প্রতিদিন উভয় সম্প্রদায়ের বু ছাত্রের সংস্পর্শে 
আসেন। কাজেই তাহাদের একাস্তিক আগ্রহ এবং শুত 
প্রচেষ্টা যে ছাত্রদের মধ্যেও কিঞিৎ ফলগ্র্থ হইবে তাহাতে 
কোন সন্দেহ নাই। কিন্ত সেই সঙ্গে এই কথাও তাহা- 
দিগকে স্মরণ 'করাইয়া: দেওয়া দরকার যে, কাজটা 
খুব 'সহজসাধ্য : ইইবে না। সাম্প্রদায়িকতার বিষ আজ 
উ্য় সম্প্রদায়ের “ঈজ্জায় মজ্জায় আশ্রয় পাহিয়াছে, 
সুতরাং ছাট সদাজও তাহার আওতার বাহিরে নাই। 
করিতেছে । :: : 
»শীিত ও স্থল বুক্ষান্ উপপা্_ 
বাঙ্গালার .প্রধান মন্ত্রী মৌলবী ফজলুল হক সাহেব 
সম্প্রতি ঢাকা হইতে কলিকাতায় ফিরিয়া আসিয়া 
সাম্প্রদায়িক শাস্তি ও শৃঙ্খলা স্থাপনের জন্য দেশবাসীর 
নিকট এক আবেদন করিয়াছেন। আবেদনে তিনি বলেন, 
অবস্থা বর্তমানে সম্পূর্ণরূপে আয়তাধীন এবং এখন জনগণের 
মনে বিশ্বাস উৎপাঁদন করাই উভয় সম্প্রদায়ের নেতৃবর্গের 
গরধান: কর্তব্য। তিনি কলিকাতাঁর নাগরিকদের নিকট 
বিশেষ করি! আবেদন জানাইয়াছেন যে. ঢাকাঁর ভয়াবহ 
ধ্ংসলীলা যেন সকলে মনে রাখেন এবং শাস্তিরক্ষার জন্য 
সরকারের. সহিত সহযোগিতা করেন। কলিকাতায় 
প্রায়ই সম্প্রনায়িক অশাস্তি সম্পর্কে গুজর রটিতেছে, 
তিনি সেই বিষয়ে সকলকে সতর্ক করিয়৷ দিয়া মাথা ঠাণ্ডা 
রাখিতে সনির্বন্ধ অন্থুরোধ করিয়াছেন। হুক সাহেবের এই 
আবেদনের মহিত আমাদের আস্তরিক সহযোগ্িতা আছে। 
নুতরাং হক সাহেবের সহিত একমত হইয়া আমরা উভয় 
স্ুদায়ের শুভবুদ্ধি ও দেশপ্রেমের নিকট আবেদন করিতেছি 
যে, পরম্পরেয় মধ্যে বিষেষ ও অকল্যাপকে আমর! যেন 
কোনমতেই প্রশ্রয় না দিই। 





জ্ঞাব্প্ন্য্ 


[ ২৮শ বর্--২য় খণড--যষ্ঠ সংখ্যা 


পহীতুলী ও গুল-আত্ জন 


গণ-আন্দোলনে, দেশব্যাগী একটা অশাস্তিয়, সম্ভাবনা 
আছে, তাই মহাত্মাজী তাহাতে সন্ত হন. নাই অথচ 
একদল বিপ্রব-বিলাঁসী বলিয়া! বেড়ান. যে, গান্ধীজি অকারণ 
সময় ন্ট করিতেছেন । মহাত্মাজীর গণ-আন্দোলনে. রাঁজী 
না হওয়ার এই কারণ যে আংশিক সত্য, তাহাতে সন্দেহ 
নাই__তবে ইহা সমগ্র সত্য নহে। কোনি দেশে যুদ্ধের 
সময়ে জনগণের মধ্যে গণ-আন্দোলন ব্যাপকভাবে সাফল্য 
অর্জন করিয়াছে, ইতিহাঁস তাহ! বলে ন1) অপরপক্ষে যুদ্ধ 
চলিতে চলিতে কোন সমর-নায়ক বা শাসফগণের অবিবে- 
চনার ফলে দুর্দশাগ্রস্ত জনগণ শেষ পধ্যন্ত মরিয়া হইয়া 
উঠিয়াছে এই প্রমাণ একাধিক ক্ষেত্রে পাওয়া যায়। গত 
মহাযুদ্ধের শেষেও ইহাই ঘটিয়াছিল। আজিকার বলদৃ 
হিংস্র হীনাহানির গ্রচণ্তা যখন একদিন নিজের শ্শান 
রচনা করিবে, সেইদিন মান্ষের কল্যাণকামী শুভ বুদ্ধি 
উদার শাস্তির মধ্যে নবস্থটটির নির্মাণ সুরু করিবে-_এই 
বিশ্বাসই মহাতআ্মীজী করেন। 


এন্ম্ষ সভ্যাগ্রহ ও মন্াত্সাত্কী-_ 


মহাত্মা গান্ধী যুদ্ধবিরোধী একক সত্যা গ্রহ চাঁলাইতেছেন। 
তারতের বিভিন্ন প্রদেশে অসংখ্য সত্যাগ্রহী কারাঁবরণ 
করিতেছেন। এই সত্যাগ্রহ আন্দোলনের পক্ষে ও 
বিপক্ষে বহু সমালোচক সমালোচন! করিয়াছেন। সম্প্রতি 
বোদ্বাইয়ের “টাইম্‌স অফ ইত্ডিয়া” পত্রে সম্পাদকীয় প্রবন্ধে 
মহাত্রাজীকে অনুরোধ কর! হইয়াছে যে, তিনি অবিলঙ্ছে 
সত্যাগ্রহ আন্দোলন প্রত্যাহার করুন। বিশেষ করিয়া 
“টাইমস অফ ইণ্ডিয়” এবং প্রসঙ্গত বিরোধী সমালোচক. 
দের গান্দীজি এক বিবৃতি দিয়! জানাইয়াছেন যে, 
আন্দোলন প্রত্যাহীর করিতে তিনি সম্মত নহেন। এই 
আন্দোলনের সকল দায়িত্ব শ্বয়ং গান্ধীজী গ্রহণ করিয়াছেন 
এবং ইহাকে কোন ব্যাপক আন্দোলনে পরিণত করিবার 
ইচ্ছাও তাহার নাই। ভারতকে যুদ্ধরত দেশ বলিয়া 
ঘোষণা এবং গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা! সম্পর্কে ভারতের বর্তমান 
ও ভবিষ্তথকে অনিশ্চিত করিয়! রাখিবার বিরুদ্ধে ইহা! এক 
নৈতিক. প্রতিরাদ মাগ্র। অহিংস উপায়ে ভারতের 


জোষ্ঠ--১৩৪৮ ] 


স্বাধীনতা লাভের আকাথার ইহা অভিব্যক্তি মাত্র_যুদ্ধের 
উদ্যোগে বাঁধা দিবার কোঁন পরিকল্পনাই ইহাতে নাই। 
নহাত্মাজীর বিবৃতি ছুর্ব্বোধ্য নে, অভিনবও নহে । তাহার 
মতবাদের দার্শনিক ও নৈতিক ভিত্তির সহিত ধাহাদের 
পরিচয় আছে তীহারা ইহাঁর মধ্যে তাহার অপরিবর্তনীয় 
বিশ্বাসের দৃঢ়তা দেখিতে পাইবেন। 


সাশ্ঞদ্াডিক জক্ষ্যেক্র সখ 


বিহারে কংগ্রেসী সরকায় স্থাপিত হওয়ার পূর্ব্বে মিঃ 
এম্‌ ইউনাস কিছুদিন প্রধাঁন মন্ত্রী ছিলেন। তাহার মক্তব 








সিএ 


প্্সা 


সামক্ষিকী 





৭২১৭ 





ব্ 


বৃটিশ শাসকদেরও অবশ্ঠপাঠ্য বলিয়া আমতা মনে করি। 
তিনি বলেন, হিদু-মুসলমানের অনৈক্যই ভারতের স্বাধীনতা 
লাভের পথে প্রধান কণ্টক-- এরকম বলাই আজকাল রেওয়াজ 
হইয়া ধাড়াইয়াছে। কিন্তু এই.বিরাট দেশের জনসাধারণের 
উপর বাহিরের-প্রাধাস্থ যে সাম্প্রদায়িক এঁক্য স্থাপনের পক্ষে 
প্রধান অন্তরায় এই কথাই কি সত্য নহে? 


ভ্ুযওলগাল্র সাহিিভ্য সঙ্ীতি- 


নদীয়া! জেলার কৃষ্ণনগর এক সময়ে বাঙ্গালার সংস্কৃতির 
অগ্যতৃম প্রধান কেন্ত্র ছিল। সেই কৃষ্ণনগরে এখনও যে 





প্রফুল্ল জয়ন্তী প্রদর্শনীতে আচাধ্য গ্রফুল্লচন্ত্র রায় 


শেষ হইবার পর তিনি একবার মে]সলেম লীগে যোগ দিতে 
চেষ্টা করেন কিন্ত লীগের উদ্দেশ্টের সহিত একমত হইতে না 
পারিয়! দল ত্যাগ করেন। কিছুদিন পূর্যের মি: ইউনাঁস 
বিহার প্রাদেশিক এক্য সশ্মিলনের সভাপতি হিসাবে যে 
অভিভাঁষণ দিয়াছেন, তাহা! কেবল এদেশের লোকদের নহে, 


সাহিত্য চর্চার বিশেষ উদ্যোগ দেখা যায়, তাহাও বিচিত্র 
নহে। গত ৩ৎশে মাচ্চ রবিবার কৃষ্ণনগর টাউন হলে: 
রায় বাহাদুর অধ্যাপক শ্রীধুত থগেন্দ্রনাথ মিত্র মহাশয়ের 
সভাপতিত্বে কৃষ্ণনগর সাহিত্য সঙ্গীতির “দ্বিতীয় বার্ষিক 
উত্সব হইয়া গিয়াছে। স্থানীয় 'খ্যাতনাম! . কবি .্রীযুত 


এ ৯২৬৮ 


নীহাররঞ্জন সিংহ এই উৎসবের প্রধান উদ্তোক্তা। ছিলেন 
এবং সভায় বহু প্রবন্ধ ও কবিতা গঠিত ভ্ইয়াছিল। 
কলিকাতা হইতে শ্রীযুত ফণীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় শ্রীযুত অপূর্ব 
ভষ্টাচাধ্য, শ্রীযুৃত অনিল ভট্টাচার্য; বঙ্গীয় ব্যবস্থা পরিষদের 
' সদস্য শরীয়ত অতুলকৃষ্ণ ঘোঁষ, শ্রীযুত সুরেন্দ্রনাথ নিয়োগী 
প্রভৃতি উৎসবে যোগদান করিয়া ব্তৃতা বা কবিতা! ও প্রবন্ধ 
'পাঠ করিয়াছিলেন। 


নত্টীম্স মুসল্লনান্ন লাহিভ্য সম্সিভি- 


সম্প্রতি কলিকাঁত৷ মুসলিম হলে বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য 
সমিতির রজত জয়ন্তী উৎসব সম্পন্ন হইয়াছে । সভার 
সভাপতিত্ব করিয়াছেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম। অনেক 
দিন পরে তাহাকে মুসলমান সাহিত্য সমিতির রজত জয়ন্তী 
উত্সবে যোগ দিতে দেখিয়া! আমরা অত্যন্ত আনান্দিত 
হইলাম । কারণ বাঙ্গাল। দেশ বর্তমানে সাঁম্ুদায়িকতাঁর 
বিষে 'জর্ভারিত এবং হিন্দু-সাহিত্য ও মুসলিম সাহিত্য__ 
এই দুইভাগে বাঙ্গালা সাহিত্য বিভক্ত হইতে চলিয়াছে। 
বাঙ্গালার এই দুর্দিনে কীঁজী সাহেবের স্থাঁয় একজন শক্তিশালী 
অসাম্প্রদার়িক কবির সাহিত্যক্ষেত্রে পুনরাঁগমন সত্যই 
কল্যাণজনক | তাহার নিকট আমর! অনেক কিছুই প্রত্যাশ! 
করি । তাই বাঙ্গীল! সাহিত্যের এ দুর্দিমে তাঁহাকে ও তাহার 
মতাবলম্বীগণকে আমরা সাহিত্যক্ষেত্রে দেখিতে চাহি । 


নুভিনন্াভডাক্স ভিস্পুলক মম 


কলিকাতা এক সময় বুটিশ-ভারতের রাজধানী ছিল। 
রাঁজধানী স্থানান্তরিত হইলেও তাঁহার নামডাঁক এক ফোটাও 
কমে নাই, তাই অন্তান্ত ভাগ্যাছ্েষীদের সহিত অবাঙ্গীলী 
ভিখারী আসিয়াও এখানে ভিথারীর দল পুষ্ট করিতেছে। 
প্রকাঁশ, কলিকাঁতাঁয় চারি হাজারেরও অধিকসংখ্যক 
ভিখারী আছে এবং ইহাদের এক অংশ কাঁণা, খোঁড়া, 
অন্ধ, কুষ্ঠরোঁগী ও বিকলাজ। আঁর এক অংশ সুস্থ, সবল; 
কর্মক্ষম, যদিচ তাঁহাঁরাও অন্ুস্থতার ভাণ করিয়! 
অর্থোপার্জনের নাঁনা' মতলবে থাকে । কিছুদিন হইতে 
এইসব ভিথারীর জন্য শহরপ্রান্তে একটি আশ্রয়স্থান নির্শীণ 
রুরিয়া নগরের রাঁজপথগুলিকে রুগ্ন ভিখারীদের স্পর্শ 
হইতে রক্ষা করিবার ন্জল্লন! কর্ন! চলিয়৷ আসিতেছে । 


ভ্গন্সতন্বন্য 


[ ২৮শ বর্ষ-_২য় থণ্ড-_ষঠ সংখ) 


আলোচনার ফলে এই সদিচ্ছাটাই আমরা শুনিয়া 
আপিতেছি যে, শিশু ভিথারীদের পড়াশুনার জন্ত বিচ্যালয় 
এবং সক্ষমদের ভন্ত কোন শিল্পপ্রতিষ্ঠান এবং রুগ্ন ও 
বিকলাঙগদের জন্য হাসপাতাল ও আশ্রম গ্রতিষ্ঠা করা 
দরকাঁর। এই কার্যের জন্ত প্রাথমিকভাবে একলক্ষ এবং 
পরে বৎসর বংসর একলক্ষ করিয়! টাকার সাহায্যের ব্যবস্থা 
কর! দরকার। কলিকাতা কর্পোরেশন নাকি অর্ধেক ব্যয় 
দিতে সম্মত আছেন, তাহা ছাড়া পীঁচ শত গৃহহীনকে 
আশ্রয় দেওয়ার মত একটি বাড়ী তৈয়ারি করিতেও তাহারা 
নাকি সম্মত। কিন্তু বর্তমানে এই সম্বন্ধে কোন আন্দোলন 
দেখা ঘাইতেছে না। অথচ অবিলম্বে এ বিষয়ে একটা 
ব্যবস্থার প্রয়োজন । 


ল্বাভ্ললামজ াল্লীন্িগ্রহৃ-_ 


কিছুদ্দিন পূর্বে বাঙ্গালার ব্যবস্থা পরিষদের এক অধিবেশনে 
প্রধানমন্ত্রী নাঁরীনিগ্রহ সম্বন্ধে একটি বিবৃতি প্রদান করেন। 
তাহাতে জানা যাঁয় যে, বাঞঙ্গলাঁদেশে নারীনিগ্রহ দিন দিনই 
বাঁড়িয়া চলিয়াছে। ১৯৩৮ সাঁলে নারী ধর্ষণের সংখ্যা ছিল 
এক হাজার পচাত্তর। পর বৎসর (১৯৩৯) সেই সংখ্য। 
বারশত তেইশে দীড়াইয়াছে এবং ১৯৪০ সালের নবেম্বর মাস 
পধ্যস্ত দেখা যায় এগাঁর শত নিরাঁনব্বই । এই সংখ্যার 
মধ্যে হিন্দু কত, মুসলমানই বা কত-_-আ'র অপরাধীদের 
মধ্যে হিন্দু বেশী কি মুসলমান বেণী তাহার আলোচন৷ 
অপ্রাসঙ্গিক । কেননা, ন!রীনিগ্রহের ব্যাপারটা সাম্প্র- 
দায়িক বিদ্বেষের অনেক উপরের । হিন্দুমুসলমাননিব্বিশেষে 
কেমন করিয়া বাঙ্গালার এই কলঙ্কমোচন করা যায় 
সে সম্বন্ধে উভয় সম্প্রদায়ের শিক্ষিতদের সচেতন হওয়া 
দরকার । 


লিক্ষুশ্রদেস্ণেও শ্রীক্ষ্য শে 


পাঞ্জাবের মন্ত্রিমগুলের অচসরণে সিন্ধু প্রদেশের নূতন 
মন্ত্রিমগুলীও সাম্প্রদায়িক প্রক্য স্থাপনের কতকগুলি কার্যকরী 
উপাঁয় অবলম্বনের সংকল্প গ্রহণ করিয়াছেন। এই উদ্দেশে 
মন্ত্রিসভা পঞ্চাশ হইতে পঁচাত্তর হাজার টাক! ব্যয় বরাদ্দ 
করিয়াছেন। সিম্ধুর অবস্থা যে পাঞ্জাবের তুলায় ঢের বেশী 
উদ্বেগজনক, তাহা বলাই বাহুল্য। সর্বাগ্রে এই অবস্থাটার 


জ্যৈষ্*--১৩৪৮ ] 





সস 





পরিবর্তন আবশ্যক | নৃত্তন প্রধান মন্ত্রী খান বাহাদুর আলা- 
বক্স ও তাহার সহকক্মীর! যে প্রক্য স্থাপনের প্রয়োজনীয়ত। 
স্বীকার করিয়! তদনুষায়ী কার্ধ্য করিতে উদ্যোগী হইয়াছেন, 
তাহা সত্যই প্রশংসার যোগ্য; কিস্তু শেষ পর্য্যন্ত তাহারা অটল 
থাকিলেই মঙ্গল । 


ভকব্লপ্রল্র স্ক্মভি ভর্গপ- 


গত ১৩ই এপ্রিল রবিবার কলিকাতা শ্ঠাঁমবাঁজারে 
আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদক শ্রীযুত প্রফুল্লকুমার সরকার 
মহাশয়ের গৃহে রবিবাসরের অধিবেশনে ভাঁরতবর্ষ-সম্পাদক 


শি 


সামজিক্কী 





১৯২ 


চা 
-্্ 





সহ 





স্ব 


জান1"যায় যে, আলোচ্য বর্ষে বাঙ্গালায় মোট ১১৮-টি 
মিউনিসিপ্যালিটি ছিল। মিউনিসিপ্যালিটিগুলির এলাকায় 
মোঁট অধিবাসীর সংখ্যা ছিল ২৩ লক্ষ ৫১ হাঁজাঁর ৪০৭ 
জন। ইহা! বাঙ্গালার মোট জনসংখ্যার শতকরা ৪.৭ ভাগ । 
উপরোক্ত ২৩ লক্ষ ৫১ হাঁজার ৪০৭ জন অধিবাসীর মধ্যে 
৩ লক্ষ ৮৭ হাঁজার ৭০০ জন মিউনিসিপ্যালিটির করদাতি। ; 
গড়ে প্রতি অধিবাসীর হিসাঁবে মিউনিসিপ্য।লিটিগুলির 
আঁয় হয় ৪1০ টাঁকা ( কলিকাতা শহরে তাহা ২০।%০)। 
অপর দ্বিকে গড়ে প্রতিজনের হিসাবে মিউনিসিপ্যালিটি 
গুলির ট্যাক্স নির্ধারিত আছে ৩1৩১৯ পাঁই। মিউনিসি- 








প্রযুল্প জয়ন্তী প্রদর্শনীর একটি দৃষ্ঠ 


রায় বাহাদুর জলধর সেন মহাশয়ের দ্বিতীয় মৃত্যু সাঞ্ধংসরিক 
উপলক্ষে স্মৃতি পৃজা করা হইয়াছে । রায় বাহাদুর অধ্যাপক 
শ্রযৃত খগেন্দ্রনাথ মিত্র সভাপতির আসন গ্রহণ করিয়াছিলেন 
এবং সভায় জলধরবাঁবুর নান গুণের বর্ণনা করা হইয়াছিল । 
রবিবাঁসরের সদস্যগণ ছাঁড়াও জলধরবাঁবুর বহু অন্্রাগী বন্ধু 
সভায় উপস্থিত ছিলেন। 
নলাজ্গালাল্ল মিউন্নিস্নিশ্যাক্িভি_ 

সম্প্রতি বাঙ্গালার মিউনিসিপ্যালিটিগুলির ১৯৩৮-৩৯ 
সালের রিপোর্ট প্রকাশিত হইয়াছে । এই রিপোর্ট হইতে 


প্যালিটিগুলি তাহাদের, আয়ের শতকর! ৫৬ ভাগ 
প্রাথমিক শিক্ষা বাব? ব্যয় করিয়া থাঁকে। মিউনিসিপ্যাল 
এলাকার প্রত্যেক বিছ্যালয়গামী ( গাথমিক বিদ্যালয় ) 
শিশুর জন্য মিউনিসিপ্যালিটিগুলির গড়ে ২/১ পাই খরচ 
হইয়া থাকে। 
ক্র্গেন্বল্র ভিত লাশিভকয চত্তি- 

্্ম হইতে ভারতবর্ষে ব্সরে আন্দাজ ২৮ কোটা 
টাকার মাল আসে। সে স্থলে বৎসরে ভীরতবর্ষের .২২ 
কোটী টাকার মাল প্রতি বৎসর ক্রদ্ধ ক্রয় করিয়া থাকে) 


৬৮০০5 


সুতরাং ভারত-বাণিজ্যে ব্রন্মদেশ রিশেষ লানরান। এবপ 
ক্ষেত্রে যদি উভয় দেশের মধ্যে কোনও বাণিজ্য চুক্তি 
হয়, তাহাতে ভারতবর্ষের ুবিধানগযায়ী চুক্তি প্রবর্তিত 
করিবার জন্ত সে দাবী করিতে পার়ে.। বাঙ্গাল দেশের 
চাউল ব্যবসায়ীরা _-কলমাঁলিক ও বণিকসমিতির সম্পাদক 
শ্রীর্ণসততোঘ ভট্টাচাধ্যের মাবফত "সরকারের নিকট 
"একটা সুচিস্তভিত. মন্তব্য পেশ করিয়াছেন। তাহাদের 
মতে তাঁরীত-ব্র্ধ বাণিজ্য-চুক্তি পাকা করিবার সময় যেন 
ভারতে আম্দাদী-করা 'চাউলের উপর শুক্ক ধাঁধ্য করা হয়। 
বরক্গের” চাউল ভারতবর্ষে বিনা শুন্বে আসার.ফলে ধানের 
উপযুক্ধ মূল্য পওয়া! যায় না এবং চাঁধীর1 সমধিক ক্ষতিগ্রস্ত 
হয়। এই কথা বিশেষ করিয়া বাঙ্গালা দেশে থাটে। 
এখানকার চাউল নানা স্থানে রগুানী হয় এবং তাহাতে 
বৎসরের খরচে যে ঘাটতি পড়ে, তাহা এবং প্রায় 
এয়োজনাতিরিক্ত চাউল আমদানী হইয়া যাওয়ায় ধান 
চাষের দুল্য উপধুক্ত পাইতে অসুবিধা হয়। এইরূপ 
বাবিদা চুক্তি হুয়া একপ্রকার ভালই বলা চলেঃ কারণ 
দেশের আে: স্বাহাতে কিছু পায় তাহাতে কাহারও 
আপততি-খাফিতে শা না। এই অন্থুরোধ সুবিচার লাভ 
করে নাই। অন্ধের সহিন্ত যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হইয়। বলবৎ 


হইয়াছে। তাহাতে ত্র্ধ কইতে বিনা গুক্কে চাউল ভাঁরতে . 


প্রধেশীযাত্র করিবে! এ ছ্টসর ভারতবর্ষে চাউল খুব 
চড়া কে .বিজীত হইডেছে, তাহাতে এই চুক্তির কুফল 
রঃ প্রা মাইবে না)-কিন্ত অগ্থান্ত বৎগারে চাষীর 

শা চুরির দেখিয়া. কলমালিকগণের এই অনুরোধ 
উপ ্া করক্ষ চীন কার হয় নাই। 


চর! পীত্ভিভত্কেল্ল াহুনসং দ্ীন্ম__ 


টাঁকারি দাাপীড়িতদের -জঙ্ত - সাহায্য ভাণ্ডার খোলা 
হইখাছে' এবং সহ্গদয় (দেশবাসীর. দাহায্যর 'জন্য ষথাসাধ্য 
অগ্রসর হইয়াছেন : দেখিয়! “আমর! আঁনদিত হুইলাম। 
বাঙ্গালার প্রধান মী হিন্দুর সাহায্যের জন্ত একশত টাকা 
হ্যর নৃপেক্্রনাথ সরকার মহাঁশযের/হত্তে দিয়াছেন। “অপর 
পক্ষে-স্যর নৃপেন্্রাথও 'মৌলবী "ফঞ্জধুল হক সাহেবের হস্তে 
যুলমানদের সাহায্যের জন্ত একশত টাকা দাঁন করিয়াছেন। 
ইহাদের এই £নিদর্শন দাল” অর্থবানদের উৎলাহিত, করিলে 


ভ্ান্রসন্বএ 


| ২৮শ বধ--২য় খণ্ড--ষষ্ঠ সংখ্য| 


দুর্দশীগ্রস্ত নরনারীদের অশেষ কল্যাণ সাধিত 'হুইবে। 
এই প্রসঙ্গে ডক্টর শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, নির্মলচন্ত্র 
চট্টোপাধ্যায়, সনৎকুমার রায়চৌধুরী প্রমুখ নেতৃবৃন্দকে 
দেশবাসীর পক্ষ হইতে আমরা ধন্তবাঁদ প্রদান করিতেছি। 
ত্রিপুরার মহারাজার রাজ্যে দাঙ্গাপীড়িত প্রায় আট হাজার 
নরনীরী আশ্রয়লাভ করিয়াছে এবং মহারাজ! তাহাদের 
সুখ স্থুবিধার সকল প্রকার ব্যবস্থা করিয়া দিয়াছেন। 
মহাঁরাভার এই কায হিন্দুমুসলমান সকলে চিরদিন শ্রদ্ধার 
সহিত ম্মরণ করিবে। মুসলমান নেতৃবুন্দও দাক্গাঁয় বিপন্ন 
লোকদ্দিগকে নানাভাবে সাহায্য দান করিতেছেন। ইহা 
দ্বারা অবশ্যই দেশের লোকের মনোভাব পরিবপ্তিত হইবে । 


হ্বাত্ড স্পাসন্ন আউন্স লহক্শোএ্িম- 


প্রবল প্রতিবাদ ও তীব্র আপত্তি সত্বেও স্বায়ত্তশাসন 
আইন সংশোধন বিল আলোচনার প্রস্তাব ভোটের জোরে 
বঙ্গীয় ব্যবস্থা পরিষদে গৃহীত হইয়াছে। সৈয়দ জালাল: 
উদ্দীন হাঁসেমী প্রমুখ কেহ কেহ এঁই বিলটিকে ঢাকার 
সাহাবুদ্দীন আইন বলিয়া অভিহিত করিয়াছেন। বিলটি 
আইনে পরিণত হইবেই তাহাতে কোন সন্দেহ নাই। ইহা 
আইনে পরিণত হইলে জেলা বোর্ড গুভূতির কাঁ্যকলাপের 
উপর দেওয়ানী আদালতের অধিকার থাকিবে না। 
আদালতকে এড়াইয়৷ চলিবার একটা মনোভাব বাঙ্গালায় 
অত্যন্ত প্রবল হইয়া! দেখা দিতেছে । খণসালিশী আইনেও 
আদালতের ক্ষমতা খর্ব করিবার চেষ্টা হইয়াছিল। 
আদালতের বিচার প্রার্থনা করিবার অধিকার খর্ব করিয়া 
বাঙ্গলার মৃস্ত্রীরা দেশকে যে দিকে ধীরে ধীরে টানিয়া লই 
যাইতেছেন তাহ! দেশের গভীর অমঙ্গলের কারণ হইবে । 


আছ্িন্বাী-উউন্সন্ম ভরত. 


ভারতের প্রায় মকল প্রদেশেই কোন না 'কোন শ্রেণীর 
আদিম: অধিবাঁপী বাল -করে। ইহারা তথাকথিত সত্য- 
সমাজের আশে পাশে থাকে, তাহাদের - আচার - অনুষ্ঠান 
অনুসরণ করে-_-অথচ বিধিবদ্ধ কোন সম্প্রদায়ের ' অন্তত 
নহে এবং সভ্যতা. ও-শিক্ষান্ন উত্নত হুইবার মৃবিধা পায়না। 
সমগ্র ভারতবর্ষ ধরিয়। 'হিসাব করিলে ইহাদের সংখ্য! 
নিত্াস্ত কম নয়। অথচ ভায়তবালী কইক্সাও ইহারা ভারতের 





বগসাগরস্থ পুলগেিয়ার প্রধান বনার--বাণ।-- 


মালোনিকার 
মা দিয়। বূলগেরিয়ার মেস্টদল ভূমধ 


ব্লকাশের প্রধান নদা-_দানিউব- 
মাগরে যাঠবার পথ 


দ্গিণ দোবরুজার দা 





পট ও সপ্ষি। 
রি 11১, ১১ 





বুলগেরিয়ার প্রধান ধন্মযাজক সেণ্ট ঈনের বাসস্বান-_ বুলগেরিয়ার প্রধান সহর সোফিয়ার একটি রাজগঁধ-_ 
'. রিলীস্ক মঠ এইস্থানেও বোমা ফেলা হ্য়াছে 


আআ পাক 
প্রাক চি ০ 


2 ইহ তন 
2 


ভু 
ই 





যুদ্ধে এই সকল জামানকে বন্দী করিয়। বড়লাট লড চি“পিএগো দিল্লাতে শিশানবীন ভারতীয় সে্গদের 
লগুনে আনা হইয়াছে ও পরিদশন করিতেছেন 





১0 4 
চট] 
চে 


* শি খু “সি লও 051 ্ 
1 রি শত ৩১ শশী 


ক কেন . 
জ কিক, ৃ পরত? 2 ৯ ৫ ০ 
ধর নি - 


রি ঘর» 











নে নে 
*প কে এ & ঠা 
া টি রতি ১, ০: নত এ 
ঠা 7 বত ০ পি তক ৯২ 
7. ৪০ শি 
" * রি গা 
১০৫ গজ জজ রে চে 
ভি সহ টা 
৪ 
চা রি শক শত 
নত রি । এ 


সাহার ও লিবিয়ার মরুভূমিতে প্রহরী দল-_ইহারাই শক্রুদিগকে বিপন্ন করিয়াছে" 


জৈোষ্ঠ--১৩৪৮ ] 


সহ স্্ট 








সামজিক্ী 


৮৮০: 





জীবন ও সংস্কৃতির ধারা, হইতে বিচ্ছিন্ন এবং অনগ্রদর করিয়াছেন) আরও ৫ হাজার টাকা দিবেন এবং 


সম্প্রদায় বলিয়া চিরস্থায়ীভাবে একান্তে পরিত্যস্ত। এই মাসিক আড়াই শত টাকা 


বৃহৎ জনসংখ্যাকে যাহাতে 
তথাকথিত সভ্যসমাঁজের মধ্যে 
টানিয়া লওয়া যায় এবং 
ক্রমোন্নতির পথে চালিত করা 
সম্ভব হয় তজ্জন্ত সম্প্রতি 
নিখিল ভারত হরিজন সেবক 
সংঘ বিশেষ মনোষোগী 
হইয়াছেন । আমরা সর্ধবান্তঃ- 
করণে তাহাদের এই সাঁধু 
প্রচেষ্টার সা ফণ্ল্য 'কামন৷ 
করি। 


ন্কিল্রশম্পম্পী 
০নলাকভ্্ম- 


উত্তর কলিকাঁতার দরিদ্র- 
বান্ধবভাগাঁর নামক প্রতি- 
ঠানটি গত প্রায় ২০ বৎসর ধরিয়া এই অঞ্চলের 
নানাপ্রকার দুঃখ দুর্দশ! দূর করিবার জন্য বিশেষ চেষ্টা 
করিতেছেন। তাহাদের হালসিবাগান রাজ 
দীনেন্্র ্ীটস্থ বাটাতে সম্প্রতি দরিদ্র ধঙ্সা-রোঁগীদিগের 
রঞ্জনরশ্মি দ্বারা বিনামূল্যে চিকিৎসাঁর যে ব্যবস্থা হইল, 


১০৫১ 


ব্যয়ভার বহন করিবেন। 





জিতেন্্রনারায়ণ রায় শিশু বিদ্যালয়ে লেডী লিংলিথগে। 


ভাগার এজন্য তিন হাঁজার টাঁকা ব্যয়ে গৃহ নির্মীণ 
করিয়াছেন ও ৫ হাঁজার টাকার যন্ত্রপাতি খরিদ 
করিয়াছেন। সাঁর নৃপেন্ত্রনাথ সরকার গত €৫ই এপ্রিল 
এই সেবায়তনের উদ্বোধন করিয়াছেন। কলিকাতায় 
এইরূপ বহু প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন আছে। ধরিদ্র 





ঝাঁড়গ্রামে বিষ্ঠাসাগর বাণী ভবনে লেডী রীড পাঠাগার উদ্বোধন 
তাহা মধ্যবিত্ত সাধারণ গৃহস্থদের পক্ষে বিশেষ উপকারে .যান্ধব ভাঁস্তারের কর্ীরা যে প্রতিষ্ঠান স্থাপন 
লাগিবে। আ্ীযূত ুধীরচন্ত্র নাঁন তাহার পরলোকগতা-, করিলেন, তাহা - সর্বত্র অনুকৃত হইলে দেশকীসী উপকৃত 
পত্ধী কিরণশশীর নামে শুক্র ২৫শত টাকা দান হইবে। 


৬০২, 


শুক লীগে নীল 

বিহার সরকারের পুলিশ বিভাগের রিপোর্টে স্পষ্ট 
বঙ্গিষাই বলা হইয়াছে যে, বিশেষ চেষ্টা করিয়াও মুসলিম 
লীগ বিহারের মোমিন সম্প্রদায়কে লীগের দলে ভিড়াইতে 
পাকেন নাই। ,িগেষ বিশিষ্ট নেতাদের বিরুদ্ধে মোমিন 
সম্পরদায়ের মনের ভাব অত্যন্ত উগ্র। যুক্তপ্রদেশের সরকার 
যে ১৯৩৯ সালের শাঁসন-বিবরণী গ্রকাশ করিয়াছেন তাহাও 
এই গ্রসঙ্গে উল্লেখ কর! যাইতে পারে । এই বিবরণীতে 
সিথনাহন্লিদের মধ্যে যে বিরোধ আছে তাহাও বিশেষ 
করিয়াই উল্লিখিত হইয়াছে। এইসব বিরোধ যে হিল্দু- 
মুমলমাঁন বিরোধেরই মত, তাহাঁও রিপোর্টে স্পষ্ট করিয়াই 
দ্বীকত হইগলাছে। বল! বানুপ্, এইসব রিপোর্ট যখন 
লিখিত হয়ঃ তখন কংগ্রেসী মন্ত্রিসভার আমল ছিল না 
বরং খাস গভর্ণরের শাসন কালেই উহা হইয়াছে । ইহা 
হইতে এই সত্যই প্রমাপিত হয় যে, মুসলিম লীগের দাবীর 
মধ্যে ফোন যুক্তি দাই! ভারতের মুসলমানগণ সকলেই 
এক জাতি, তাহাদের মধ্যে কোন বিরোধ নাই-_লীগ 
নলের এইসব প্রচার যে নিছক ভূয়! কথা, এই রিপোর্টগুলি 
কি তাহাই প্রমাণিত করে না? 


ভ্ডান্সরত্ডে চ্গোউন্লেল্রস ভভ্ভানল-_ 


ভারতের বিভিন্ন গ্রদেশে চাঁউলের অভাব দেখ! যাইতেছে 
বলিয়৷ ভারত সরকারের নিকট অভিযোগ আসিতেছে । ব্রহ্ম 
হইতে চাউল আমদানির জন্ত উপযুক্তসংখ্যক জাহাজের অভাব 
হওয়াঁতেই এদেশে চাউ€লর অভাব দেখা যাইতেছে বলয়! 
অনেকে বলিতেছেন। উক্ত বিষয়ে কি প্রতিকার করা যায় 
ভারত-সরকার সম্প্রতি সেই সম্পর্কে বিবেচনা করিতেছেন । 


আসামে া-ম্পিক্স- 


গত ১৯৩৯ সালের শেয়ে আসামে চা বাগিচার সংখ্যা 
ছিব ১১২৬) । পূর্ব বংসর-তাহা ছিল ১১২০টি। ১১২৬টি 
চা বাগানের মধ্যে ৩৯টি মাত্র দেশীয় মালিকের । গত ১৯৩৮ 
সালে আসামে মোট ৪+৩৯,১ ৩৪ একর জমিতে চায়ের আবাদ 
হইয়াছিল । ১৯৩৯ সাঁলে সেই স্থলে ৪৩৮,২৫১ একর জমিতে 
চাঁয়ের ' আবাদ হইয়াছে। উবংসর আসাদের চা-বাগান- 


ক্ডাব্রস্ড অর্থ 


[ ২৮শ বধ-_২য় খণ্ড _যষ্ঠ সংখ্যা 


গুলিতে কর্মরত শ্রমিকের দৈনিক সংখ্যা ছিল ৫১৩৮১২৯৪। 
পুর্ব বৎসর ৫,২০৯৩২ ছিল। ১৯৩৯ সালে আসামের 
চা-বাঁগানগুলিতে মোট ২৫১২৩/৪৭,৩৫৮ পাউণ্ড চা উৎপন্ন 


হইয়াছে। 
ভাল্পভে ব্বিচ্পাপোৌভ ক্কালঙ্খানা_ 


ভাঁরতে বিমানপোত নিম্মাণের জন্য যে হিন্দস্থান 
এয়ারক্রাফট কোম্পানি স্থাপিত হইয়াছে, ভারত সরকার 
বর্তমানে তাহার সহিত বিশেষভাবে সহযোগিতা করিতেছেন। 
প্রথমে কোম্পানির মূলধন ছিল চষ্লিশ লক্ষ টাঁকা। বর্তমানে 
তাহা পঁচাত্তর লক্ষ টাক! পর্য্স্ত বৃদ্ধি করা হইয়াছে । প্রথমে 
শ্রীযুক্ত বালটাদ হীরা্টাদ ও মহীশুর রাঁজসরকারই 
কোম্পানির অংশীদার ছিলেন। সম্প্রতি ভারত সরকারও 
কোম্পানীর অংশ কিনিয়! ইহার অংশীদার হইবেন বলিয়া 
স্থির হইয়াছে । ভারত সরকারের পক্ষে তিন জন শ্বেতাঙ্গ 
এই কোম্পানির পরিচালক সঙ্ঘে মনোনীত হইয়াছেন। 
কোম্পানির কারখানা নির্শাণের কাজ দ্রুত অগ্রসর 
হইয়াছে । যন্ত্রপাতিও শীঘ্র আসিয়া পৌছিবার কথা। 
বিলঙ্ছে হইলেও শেষ পর্যন্ত যে কারখানা স্থাপিত হুইল 
ইহাই সুখের কথা। 


মি ভিকল্কাল্র নিপা 


মহাকবি হোমারের মতে প্রত্যেক মিশরবাসীই 
চিকিৎসক এবং সকল ফীনিনীয়ই চোর । আমদের মিঃ মহম্মদ 
আলী জিন্নাও সেইরূপ মনে করেন যে-_ প্রত্যেক মুসলমানই 
অ-ভারতীয়, আর সকল হিন্দুই মুসলমানবিদ্বেধী। কোন 
রাজনীতিবিদের মত যে এরূপ হইতে আরে তাহা আমাদের 
জান! ছিল না। সম্প্রতি মাদ্রাজ প্রদেশের মুসলিম লীগের 
যে অধিবেশন হইয়াছে তাহাঁতেও ভিন্ন সাহেব তাহার সেই 
পাকিস্থান স্বপ্নই আওড়াইয়াছেন। হিন্দু-মুসলমানে এক্য 
নাই এই কথা তিনি বলেন ন| বটে, কিন্ত তিনি যাঁহা বলিতে 
চাঁছেন তাহা আরও বিচিত্র । তিনি বলেন- হিন্দু-মুসলমানে 
মিল থাঁকাঁটা উচিত নহে । ভারতের ইতিহান কি বলেসে 
কথা ভাবিবার ফুরসৎ তাহার নাই; হয়ত বা সুবিধামত 
তিনি ভুলিয়াও বসিয়াছেন যে এই সেদিনও হিন্দু মুসলমানে 
মিলন ছিল এবং ভবিষ্ততেও মিলন থাকিবে। 


জ্যৈষ্ঠ-_১৩৪৮ ] 


ল্রাহমও্রসাদ্ষ স্মঘরত্ভি উত্তর 
গত ২*শে এপ্রিল রবিবার অপরাহ্কে ২৪পরগণ! 
জেলার হাঁপিসহর গ্রামে স্থানীয় সাহিত্যিকবুন্দের উদ্যোগে 





সাসজিজ্তী 





৮০২৩. 











ব্হ স্হ ব্ 


১১ই এপ্রিল শুক্রবার তাহার চিত্র প্রতিষ্ঠা উপলক্ষে তথায় 
শুক্রবার ও শনিবার পল্লী সাঁহিতা সম্মিলন হইয়! গিয়াছে । 
প্রথম দিনে ( শুক্রবার ) শ্রীযুত কুমুদরঞ্জন মল্লিক মহাশয়ের 





হালিমহরে রামপ্রসাদ সাহিত্যসম্মিলন 


ও চেষ্টায় ভক্তকবি রামগ্রসাদ সেনের ভিটাঁয় তাহার এক 
শ্বৃতি উতমব অনুষ্ঠিত হইয়াছিল। শ্রীযুত হেমেন্্রপ্রসাদ 
ঘোষ মহাঁশয় এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং শ্রীমূত 
ফণীন্রনাথ মুখোপাধ্যায় উৎসবের উদ্বোধন করেন। হালি- 
সহরবাসী রায় সাহেব বেণীমাধব ভট্টাচার্য্য মহাশয় অভ্যর্থনা 
সমিতির সভাপতিরপে এক অভিভাষণে হালিসহরের 
অতীত ইতিহাঁন বিকৃত করেন। কলিকাতা হইতে শ্রীযৃত 
মন্মথনাঁথ ঘোব, শ্রীযুত বঙ্কিমচন্দ্র সেন, শ্রীযুত অপূর্ব ভট্ট চারধ্য, 
শ্রীযুত অনিল ভট্টাচার্য, শ্রীযুত মনুজ সর্বাধিকাঁরী, শ্রীযুত 
বিপিনবিহা'রী গাঙ্গুলী প্রভৃতি বহু সাহিত্যিক ও খ্যাতনামা 
ব্যক্তি উৎমবে যোগদান করিয়া বক্তৃতা এবং প্রবন্ধ ও কবিতা! 
পাঠ করিয়াছিলেন। সভায় স্থির হইয়াছে যে রামপ্রসাদের 
কাব্যের একটি সর্ধঙগহন্দর সংস্করণ প্রকাশের জন্য চেষ্টা 
করা হইবে । 


ক্ন্মান্সে সজ্ীসাহিভ্য ন্ভিযিজ্নম্ম-_ 


প্রসিদ্ধ নাট্যকার ্বর্গত ভোলানাথ কাব্যশান্ত্রী মহাশয়ের 


জয্মতৃমি বর্ধমীন সহরের ৪ ঝঁইল দূরবর্থী রায়ান গ্রামে গত 


ফটেো-_গোপাল নলায় 
সভাপতিত্বে এক বিরাঁট জনসভায় উক্ত কাব্যশান্ত্রী মহাশয়ের 
চিত্রের আরণ উন্মোচন করা হয়। পরদিন সকালে শ্রীধুক্তা 
প্রভাতী দেবী সরশ্বতী সভাপতিত্বে এক সভা হয় এবং 
শ্রীধৃত সৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায় মহাশয় উক্ত সভার 





বরদমমান রায়ানে পল্লীসাহিতা সম্মিলনে 
সমবেত সাহিত্যিকবৃন্দ. ফটো--অমরেজা তা 


উদ্বোধন রুবেন। শনিবার স্অপরাঁহ্কে বর্ধমানের ঢারণ-, 
কবি শ্রীযুত কনকভৃষণ মুখোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে পল্লী 


৮০৩ 


| 


সাহিত্য সম্মিলনের কাঁব্যশীখাঁয় অধিবেশন হইয়াছিল। 





জান্লভজ্হ্য 





[ ২৮শ বর্ব-_২য় ধ্ড--যষ্ঠ সংখ্য। 


“স্যর সদ 


৫৭ লক্ষ টাকা, রপানি বাবদ ৩ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা 





_ মফঃস্বলের গ্রামে এইরূপ বিরাটভাবে সাহিত্য সম্মিলন প্রায়ই অন্কান্ বাবদ ৪৪ লক্ষ টাকা ও কেন্দ্রীয় উৎপাদন শুনব 


দেখা যাঁয় 211 


. এইচ্ন্নিক ল্গুমভী” ও আা্ষালা। 
ৃ সন্লক্ষান্্- 
গত ৯ই চেত্র তারিখে প্রকাশিত এক সংবাদের জন্য 
বাঙ্গাল! সরকার ভারত-রক্ষ। আইনের বলে এক আদেশ জারি 
করিয়া তিন সপ্তাহ কাল “দৈনিক বন্থমতী”র প্রকাশ বন্ধ 
রাখেন এবং উক্ত তাঁরিথের কাঁগজও বাজেয়াপ্ত হয়| বস্থুমতীর 
বিরুদ্ধে সরকারী শান্তি সম্পর্কে বঙ্গীয় ব্যবস্থা পরিষদে একটি 
. মুলতৃবী প্রস্তাব পেশ করা হয়। কিন্তু প্রতিবাদী পক্ষের 
যত যুক্তিই থাকুক না কেন, আঁইন-সভায় অধিকাংশের 
ভোটের জোরে মুলতুবী প্রস্তাব অগ্রাহ্য হয়। ভারতের 
জাতীয়তাবাদী সাময়িকপত্রগুলি একযোগে সরকারের 
কাধ্যের নিন্দা করেন। প্রবন্ধটির মধ্যে যুদ্ধ সম্পর্কে কিছুই 
ছিল হাঁ এবং সরকার পক্ষ তাহা বলিতে পারেন নাই। 
সরকার পক্ষের বক্তব্য এই যে, বস্থমতীর প্রবন্ধটি বাঙ্গালীর 
বিভিষ্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিদ্বেষ হৃষ্টিতে সাহায্য করিবে। 
কিন্তু আজাদ ও স্টার অফ ইও্ডয়া/র বিরুদ্ধেও অনুরূপ 
শাস্তির ব্যবস্থা হইল না কেন? তাহারাও ত প্রায়ই এরূপ 
অপরাধ করিয়া থাকেন। সে যাহাই হোক, দৈনিক 
বন্থমতীর স্বত্বাধিকারী ও সম্পাদক মহাশয়দ্বয় এই সময় 
“দৈনিক বন্থমতী” বন্ধ থাকায় টেলীগ্রাফ বন্থমতী” নামে 
আর একখানি নৃতন সংবাদপত্র প্রকাঁশ করিয়াছিলেন। 
বন্ুমতীর দেশগ্রীতি অক্ষুধ থাকুক ইহাই কামন! করি। 


শুক্ষ, ব্রিক্ডাগ্েল্স আল 


গত মার্চ মামে ভীরত সরকারের আমদানি ও বধানি 
কর হইতে ৩ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা ও উৎপাদন কর হইতে 


বাবদ ৯ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা আদায় হইয়াছে। 

আগের বখসরের সহিত তুলনা করিলে এই বৎসর চিনি, 
রৌপ্য, রৌপ্যনিশ্মিত দ্রব্য কাপড়, কেরোসিনঃ মোটর- 
গাড়ী, যন্ত্রপাতি, স্পিরিট, রবারনিশ্মিত ভ্রব্যঃ সুতা, 
খেলনা, কাঁগজ, রেশম, বেতারের সরঞ্জাম প্রভৃতির উপর 
আমদানি কর হইতে আয়ের পরিমাণ কমিয়াছে। অপর 
পক্ষে কৃত্রিম রেশমবন্ত্র, কার্পাস, লৌহ, ইস্পাত ও ধাতু- 
নি্মিত দ্রব্য ইত্যার্দির আমদানি কর হইতে এবং দেশলাই, 
স্পিরিট; তামাক, চিনি, কেরোসিন ইত্যাদির উৎপাদন কর 
হইতে আয় বাড়িয়াছে। 


ন্ক্িভঙ্তক্র হোলো 


কনিকাঁত৷ বস্বাজার ৫২ বাঞ্ছারাঁম অক্ররুর লেননিবাসী 
ক্ষেত্রচন্ত্র ঘোঁষ মহাশয় গত ৩১শে মার্চ ৯৯ বৎসর বয়সে 
পরলোকগমন করিয়াছেন। তিনি সংস্কৃত কলেজে বি-এ 
পর্য্যস্ত পড়িয়া রেলওয়ে বোর্ডে চাকরী করিতেন এবং 
১৯০১ খুষ্টাব্দে চাকরী হইতে অবসর গ্রহণ করিয়াছিলেন 
তিনি পল্লীর একজন সর্বজনসমাদূত ব্যক্তি ছিলেন এবং 
পল্লীর উন্নতি-বিধানে বিশেষ চেষ্টা করিতেন। তাহার 
জীবিতকালে তাহার ছুই পুত্র সলিসিটার শরৎচন্দ্র ঘোষ 
ও গগনচন্ত্র ঘোষ এবং ৫ কন্তা পরলোকগমন করেন। 
মৃত্যুকালে তিনি দুই পুত্র পূর্ণচন্ত্র ঘোষ ও সতীশচন্ত্র ঘোষ 
এবং দুই কন্তা ও বহু পৌন্রদৌহিভ্রাদি রাখিয়। গিয়াছেন। 
ভাহার পৌ্রদের মধ্যে শটীন্্কুমার ও যতীন্রকুমার 
সলিসিটার এবং ধীরেন্দ্রকুমীর ব্যারিষ্টার | 


লপপুল্রে সাহিভ্য সম্মিিলন্ম_- 
গত ২২শে ও ২৩শে চৈত্র শনি ও রবিবার আঁদানসোলের 


৯৮ লক্ষ টাকা আয় হইয়াছে । ১৯৪০ সালের মার্চ মাসে নিকটস্থ বার্ণপুরে স্থানীয় আঁগমনী সাহিত্য সংঘের চতুর্থ 
উভয় কর হইতে যথাক্রমে ৩ কোটি ৯* লক্ষ টাকা ও ১ বাধিক সাহিত্যদম্মিলন হইয়া গিয়াছে। প্রথম রে 

. কোটি ২৬ লক্ষ টাঁকা আঁয় হইয়াছিল । ১৯৪০-৪১ সালে ্রীূত বিভৃতিভূষ্ণ বন্দোপাধ্যায় ও দ্বিতীয় দিনে রে 
ভীরত সরকারের শুন্ধ বিভাগের আয় বসরে €? 'কুমুদরঞ্জন মল্লিক মহাশয় সন্মিলনে বা রঃ 
ফোটি.২২ লক্ষ টাকায় স্থলে ৫০"কোঁটি ৭* লক্ষ টাকায় ছিলেন। উভয় দিনই হানিনে রে টা 
ধাড়ীইয়াছে।, তাঁহার মধ্যে আমধানি বাবদ ৩" কোটি- পঠিত হইয়াছিল এবং বার্পপুরের মত ক 


জ্ষ্ঠ--১৩৪৮ ] 


সামজ্সিক্ষী 


26 


বহু লৌকপমাগম হইয়াছিল। বর্ধমান, রাজমহল, পুরুলিয়া করিয়াছেন। শিক্ষকরূপে তিনি কর্জীবন আরম্ভ করেন 


প্রভৃতি স্থান হইতেও কয়েকজন সাহিত্যিক এই সম্মিলনে 


৮ অনরগবদেন ভোরে 28, ঘা 


৮. দাস 


রব 


৮৯৬০ ৮ টিবন্্ন্র 7:75 
রর ৬) -্ ক ০ 
- ট ণ ন্‌ ০ ৰং 
| ৮ ইত 
্ ক্ষ পিএ আর 
গজ ০ ্ চাপ শি, শি 


জু 


যোগদান করিয়াছিলেন । আগমনী সাহিত্য সংঘের সম্পাদক 
শ্রীযুক্ত অনাদিনাথ মুখোঁপাধ্য1য় মহাশয়ের অক্লান্ত পরিশ্রম, 
যত্ব ও চেষ্টায় এই সম্মিলনী সাঁফল্যমণ্ডিত হইয়াছে । 


সাহাছিক্কেল্র পল্রলোকগম্ম 
“অমুতবাঁজাঁর পত্রিকার নৈশ সম্পাদক কালীরঞ্জন 
মাত্র ধিয়াল্লিশ বৎসর বয়সে .পরলোকগমন 


আচার্য 








বাণপুরে আগমনী সাহিত্যনংঘের সাহিত্য সম্মিলন 


এবং ১৯২৮ সাঁলে অমৃতবাজীর পত্রিকায় যোগদান করেন। 


৮. পুলা ডি ও ৭ স্রারারা রারাারা গা ১ শা সঃ 
? ০ ও ূ জী” ৯: রগ 1? দি. রং ৭ 
১০ ইত তত আক তর) 


২ নু নুর চারি, ও 
চারের এর ০ 
8550 ০৮. 
এজ 





১৯৩২ সাল পধ্যস্ত তিনি নৈশসম্পাদকের কাজ সু্টুভাবে 
সম্পন্ন করিয়াছেন। পরে ১৯৩৯ সালে তিন্িস্ংবাদপত্র 
ত্যাগ করিয়া ইস্টার্ণ সেটুস্‌ এজেক্সীর প্রচার বিভাগেক্ন 
ডিরেক্টর নিুক্ত হন এবং উক্ত এজেন্দীর দেশীয়রাজ্যসমূহের 
প্রচার বিভাগের সংগঠন করেন। প্রায় এক বৎসর আগে 
তিনি পুনরায় অমৃতবাঁজারে যোগদান করেন। আমরা এই 


৮০৩৬ 


কৃতী সাংবাদিকের অকালবিয়োগে আন্তরিক সমবেদনা 
জ্ঞাপন করিতেছি । 


উক্েম্পত্ক্র শন্ক্যোাপ্ব্যাস- 


কলিকাতা! ১৩৬ অখিল মিষ্রী লেন নিবাসী প্রসিদ্ধ 
কয়লা ব্যবসায়ী উমেশচনতর বন্যোপাঁধ্যায় মহাশত গত ২৭শে 
চৈত্র ৬৭ বৎসর বয়সে পরলোকগমন করিয়াছেন। তিনি 
অভি সামান্য অবস্থা হইতে নিজের বুদ্ধি ও কর্দশক্তির দ্বারা 
প্রভূত ধন উপাঞ্জন করিয়াছিলেন এবং জীবনে তাঁহার সম্ধ্যব- 
হার করিয়! গিয়াছেন। তীাহারই অর্থসাহায্যে তাহার স্ব গ্রাম 
খড়দহে একটি উচ্চ ইংরাজি বিস্যালয় প্রতিঠিত হইয়াছিল । 


ক্লুইননাইন্নেল্র মুল্য ম্বঞ্গিদি_ 

বাঙ্গালা দেশে কুইনাইনের মূলা দ্বিগুণের9 বেশী বৃদ্ধি 
পাঁইয়াছে বলিলে বেশী বল! হইবে না। বাঙ্গালা সরকারের 
অধীন সিক্কোনার বাগানে যে কুইনাইম উৎপাদন করিতে 
প্রতি পাউওে ছয় টাকা হইতে, আট টাঁকার বেশী ব্যয় 
পড়ে নাঃ সেই কুইনাইনের মূলাই সরকার আঠার টাকা 
ধার্ধ্য করিয়া রাখিয়াছেন। ফ্যালেরিয়াপ্রগীড়িত বাঙ্গালার 
নরনারীর প্রতি কর্তব্যের এক চমৎকার নিদর্শন! কিন্ত 
এখন জাঠার টাকাও এক পাউ কুইনাইন পাওয়া যায় 
না। ই তিমধ্যেই চৌত্রিশ টাকা পথ্যস্ত তাহার মূল্য উঠিয়াছে। 
ইহার পর আরশ দাম বাড়িবে কি না কে জানে? 
ম্যালেরিয়া দূর করিবার দায় সরকারের, সে দায় সরকার 
কতট।: পালন, করেন তাহ! দেশধাসীর জানা আছে। 
কুইনাইনের মারফতেও যে রোগক্িষট দুস্থদের কিঞ্চিৎ সুবিধা 
করিয়া! দওয়া ফাইতে পারে--সরকাঁর সেই দিকেও নারাজ ! 


উদ্ভিছ হই ল্লৎ শঞাচক্ন__ 


বোছাই সরকারের শিল্প বিভাগ নানাপ্রকার উদ্তিজ্জের 
ফল, মূল ও রধল হুইতে বস্ত্র রঞ্জনের উপযোগী রং উৎপাদনের 
চেষ্টায় নিযুক্ত হইয়াছেন। ভিক্টোরিয়া ভুবিলী টেকনিক্যাল 
ইনস্টিটিউট পলাশফুল ও  বেলফুল লইয়া পরীক্ষা 
করিতেছেন পলাশ ফু হইতে এ পর্যাস্ত যে সকল 
উপাদান পাওয়া গিয়াছে তাহা রং উৎপাদনে ব্যবন্ধত হইতে 
পারে। * থয়ের-ও কমলালেবু লইয়াও অনুরূপ পরীক্ষা 
চলিতেছে । উক্ত শিল্পবিভাগ শ্বেতসার সম্পর্কেও গবেষণা 


ভ্ঞান্স্চন্্ধ 


[ ২৮শ বর্ষ-_২য় খণ্ড সংখা! 


করিতেছেন । ভারতের সর্বত্র এমন অনেক উত্তিজ্জ আছে 
যাহা হইতে নানা প্রকার শিল্পবিষয়ক দ্রব্যসম্তার প্রস্তত 
হইয়া ভারতকে স্বাবলম্বী হইবার অধিকার দিতে পারে। 
এতদিন আমাদের বৈজ্ঞানিকদের এদিকে নজর ছিল না) 
আজ যদি সতা সতাই দৃষ্টি ফিরিয়া থাকে, সুফল যে 
ফলিবেই তাহাতে কোন সন্দেহ নাই। আমরা সাগ্রহে 
সেদিনের প্রতীক্ষা! করি। 


ভ্িলাহু্লে ে্রতেলক্র জাহাজ ভরা 


জগত-জোড়া অর্থসঙ্কটের ফলে চারিদিকেই ব্যয় 
সঙ্কোচের চেষ্টা চলিয়াছে। সম্প্রতি ত্রিবাঙ্কুর সরকার 
পেট্টলের বদলে কয়লার গ্যাসের সাহায্যে মোটর 
পরিচালনায় বিশেষ উতৎ্নাহিত হইয়া শতকরা পচানব্বইটি 
সরকারী মোটর বাস কয়লার গ্যাস দ্বারা চালানোর 
পরিকল্পনা করিতেছেন। ত্রিবান্কুর রাজ্যের সমুদয় মোটর- 
বাম-সমূছের জন্য পেট্রলের পরিবর্তে কয়লার ব্যবহার হইলে 
ইন্ধন বাব্দ ব্যয় শতকরা প্রায় পচিশ টাক! হাঁস পাইবে 
বলিয়া প্রকাশ। ব্যাপকভাবে এই চেষ্টা হইলে কয়লা 
শিল্পেরও উন্নতি অবশ্যম্ভাবী | 


আমেন্লিকাক্স সমন সম্ভান্প 


ওএভ্ভতভিন্ল ক্ান্সহখান্ন 

আমেরিকাঁর যুক্তরাজ্যে সমর সম্ভার প্রস্ততের জন্য 

বর্তমানে ৭৮৪টি কারথানায় কাজ হইতেছে । ইহা ছাড়াও 

সরকারী ও বেসরকারী কর্তৃত্বে আরও প্রায় আটশত 
কারখানা স্থাপনের আয়োজন চলিতেছে । 


হবীল্লেত্ক্রমা হ্যা 


খ্যাতনাম! সাংবাদিক, “ভারতবর্ষে” ভূতপূর্ব্ব সহকারী 
সম্পাদক বীরেন্ত্রনাথ ঘোঁষ মহাশয় গত ২২শে বৈশাখ ৬৬ 
বর বয়মে পরলোকগমন করিয়াছেন। বীরেন্দ্রবাবু 
ধনী ও সম্ান্তবংশে জন্মগ্রহণ করিলেও শেষ জীবনে তাহাকে 
বিশেষ কষ্ট পাইতে হইয়াছিল। তিনি বহুদিন পূর্বের 
শ্রবণশক্তি হারাইয়াছিলেন_-তাঁছার উপর গত ৬ বংসরকাল 
দৃষ্টিশক্তিহীন হইয়া জীবিত ছিলেন। তিনি কলিকাতার 
বহু'দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক পত্রে কাজ করিয়াছিলেন 


: এবং বহু পুস্তক রচনা করিয়াছিলেন 


জ্যোষ্ঠ--১৩৪৮ ] 


ন্িচ্গ সাঙ্গ কজ্নেজেকল্ মুভ্ডন্ন 
জিিশ্সিশাজ-শ 


আমর! জানিয়া আনন্দিত হইলাম, বিষ্াসাগর কলেজের 
ইতিহাস বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শ্রীযুত যতীন্ত্রকিশোর 
চৌধুরী মহাশয় বিদ্যাসাগর কলেজের নূতন প্রিশ্িপাঁল 
নিযুক্ত হইয়াছেন। ১৯১৩ খুষ্টাব্ধে এম-এ পাশ করিয়া 
চৌধুরী মহাশয় কয়েকমাস স্কটীশ চার্চ কলেজে অধ্যাপনা 
পর ১৯১৪ সালে মেট্রপলিটন ইনিষ্টিটিউসনে ( বর্তমান 
বিদ্যাসাগর কলেজ ) যোগদান করেন ও তদবধি এখানে 
স্থনামের সহিত অধ্যাপকের কার্য্য করিতেছেন। বহুকাল 
তিনি কলেজু হোস্টেলের স্থপাঁরিট্টেণ্ডেট ছিলেন এবং 





্ীযতীক্রকিশোর চৌধুরী 


কলেজের খেল! বিভাগের প্রতি তাহার বিশেষ অনুরাগ 
আছে। চৌধুরী মহাশয় শুধু অধ্যাপক নহেন__সাংবাদিক। 
তিনি ল্যাগুহোল্ডার্স জার্নালের সম্পাদক। আমাদের 
বিশ্বাস, তাহার অধ্যক্ষতায় কলেজ আরও অধিক উন্নতি 
লাভ করিবে। 


কতিনকাভাজ এসস্সল্র নির্খ্রাল্ষন_ 


এবারে কধিকাত| কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচনে , 


কোনরূপ প্রতিযোগিতা! চলে নাই। সর্বসম্মতিক্রমে শ্রীযুক্ত 
ফণীন্রনাথ ব্রহ্ম মেয়র ও মিঃ ইস্পাহানি ডেপুটি মেয়র 


সাসস্ষিগী 


৮০ 


নির্ধাচিত হইয়াছেন। আমর] উভয়কেই অভিননন 
জানাইতেছি। শ্রীযুক্ত ব্র্ম বহু বৎসর ধরিয়া কলিকাতা" 





মেয়র- শ্রীযুক্ত ফণীত্রানাথ বরশ্ধা 





ডেপুটি মেয়র_-এম, এ, এইচ, ইম্পাহানি 


৮০৮ 





কর্পোরেশনের কাউদ্সিলররূপে করদাতাদের সেবা করিয়া 
আসিতেছেন। নির্ভীক, নিরপেক্ষ ও স্যায়পর্য়ণ বলিয়া 
তাহার খ্যাতি আছে। কংগ্রেসের আদশের প্রতিও 
তাহার যথেষ্ট শ্রদ্ধা এবং গভীর নিষ্ঠা আছে। স্বতরাং 
মেয়রের পদে নির্বাচিত হইয়া কংগ্নেসের আদর্শই যে তিনি 
অনুনরণ করিবেন, তাহাতে কোন সন্দেহ নাঁই। 
রুর্পোরেশনের সম্মুথে যেসব জটিল সমন্যা দেখা দিয়াছে 
আমাদের বিশ্বাস তৎসম্পর্কে দেশবন্ধুর আদর্শ-অন্ভসরণ করিয়া 
শ্রীযুক্ত ব্রদ্ধ নগরীর মর্ধ্যাদা রক্ষা করিবেন। 


আআন্সুর্থ্ে ভিন্কিক্ক মহা-সল্সিিিম্ন_ 


গত ২২শে ও ২৩শে চৈত্র শনি ও রবিবার নিখিল 
ব্লীয় আয়ুর্বেদ চিকিৎসক মহাপরিষদের উদ্যোগে বর্ধমান 
জেলার শ্ট্রীথণ্ড গ্রামে বঙ্গীয় আনুর্ধেদ চিকিৎসক মহা- 
সম্মিলনের অধিবেশন হইয়া গিয়াছে। কবিরাজ শ্রীহুত 
দ্বারফরনাঁথ সেন তর্কতীর্ঘ সম্সিলনে মূল সভাপতির আঁসন 
গ্রহণ করিয়াছিলেন এবং কবিরাজ শ্রীযুত অমিয়ানন্দ 








. কবিষাজ প্রীক্ারিকানাণ দেন তর্কতীর্থ 
ঠাকুর অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতিরূপে সকলকে সাদর 
অভ্যর্থনা করিয়াছিলেন। অমৃতবাঁজার পত্রিকার সম্পাদক 


11111111189, 
5৮7 
ক রা ঃ 


ভ্ঞান্রজন্বঞ্ 





[ ২৮শ বর্ষ_২য় খও্--ষষ্ঠ সংখ্যা 





শ্রীযুত তুষারকাস্তি ঘোষ -শ্রীথগ্ডে- গিয়া! আযুর্বেদ প্রদর্শনীর 
উদ্বোধন, করেন ও কবিরাঁজ শ্রীযুত প্রস্থতিপ্রসন্ন সেন 





চপ 





কবিরাজ গ্রীমমিয়ানন্দ ঠাকুর 
প্রদর্শনী সভাপতিরূপে প্রদর্শনীটি সাফল্যমণ্ডতত করিতে 
চেষ্টার ক্রটি করেন নাই। কলিকাতা কর্পোরেশনের 
কাউন্সিলর কবিরাজ শ্রীসত্যব্রত সেন ধপ্বস্তরি পতাকা 
উত্তোলন করেন ও নানা বিভাগের মধ্যে কবিরাজ শ্রীযুত 
শৈলেন্দ্রনাথ তর্কতীর্থ আঘুর্ষেদ-দর্শন বিভাগে সভাপতিত্্‌ 
করিয়াছিলেন। এবারের সম্মিলপনের বিশেষত্ব এই যে, ৯টি 
বিভিন্ন বিভাগে আলোচনার ব্যবস্থা হইয়াছিল এবং পূর্ণাঙ্গ 
আতুর্ষের্দের পূর্ণ বিকাশের জন্য সকল প্রকাঁর চেষ্টাই 
হইয়াছিল । কলিকাত! ও বাঙ্গীলাঁর বিভিন্ন জেল! হইতে 
বহু কবিরাজ এই সম্মিলনে যোগদান করায় সম্মিলন এবার 
সর্ধ-প্রকার সাঁফল্যমণ্ডিত হইয়াছে । 


ত্লাপান্মসেন্স জোন্সহখ্্যা 


গত ১৯৪০ সালের অক্টোবর মাঁসে যে লোঁক 'গণনা'র 
কাধ্য সম্পন্ন করা হয় তাহার ফলে জাপান সাআাজ্যের 
মোট লোকসংখ্যা ১০ কোটি ৫০ লক্ষ নির্ধারিত হইয়াছে ! 
ইহাঁর মধো পুরুষ ও নারীর সংখ্যা প্রায় সমান। গত 
১৯৩৫ সালের তুলনায় ১৯৪০ সালে মোট লোকসংখ্যা 
৬২ লক্ষ ৫০ হাজার পরিমাণ বাঁড়িয়াছে। 





ঢাকা জেল! হঠতে দাঙ্গার জন্য পলায়নকারা মহিলারা আগরতলার দুগাবাড়ীতে আশ্রয় লহয়াছে 





গাগরতলায় বালিকা বিদ্যালয়ে আর এক ধল মভিল। আশয় লাগ করিয়াছে 


4 ভন বদি 


1 .. * ৮৯১ রা 
রও গ্ 
7 দানা: খাপ 
হা ছলে যে 878 


+ 
ঘ 
% এ এনা 
নদ 





ঢাক' দাঙ্গার ভয়ে গ্রামের লোকজন পলাইয়। আগরতলায় শাসন-বিভাগের প্রাসাদে হা শ্রয লইয়ীন্ছে 





৬ 
১] 
-4 
সি 
এম 
১ 
খ্ 
শাসি 
| 
সি 
কী 
্ঠী 
নব 
বট 
পে 
চন 
নি 
রী 
1 
শ্ 
1৭ 
ঃ 
এ 
তি 
টা] 
এ 
- 
সা 
ও 
৬ 
৮১০ 


রামগড়ে ভঢালায় যুদ্ধাবন্দারা কাজ করিতে 


সর শপে সস পপি আস 
॥ 





রামগড়ে বন্দীদের জন্য হানলপাচাল__একজন উতরাজ ঢাক্তার একজন ইটালীয় বন্দী-রোগীকে দেখিতেছেন 





শ্রীক্ষেত্রনাথ রায় ৃ 


হন্কি ৪ 
কি খেলার ইতিহীন বহুদিনের পুরাম। বর্তমানে 


যেরূপ উচ্চ শ্রেণীব হকি খেলার সঙ্গে হাদেব পরবিচয 
বষেছে তা প্রাচীন যুগেব মধ্যে ছিল না। প্রাচীন ফুগেব 
হকি থেলো যাঁডব দৈহিক বলে অটুট স্থাস্থে।বধিকীরী হযেও 
এব" অপূর্ব ক্রীডাচাতুধ্যে পাঁবদর্শীত৷ লা বলেও খেলার 
মধো বোধহয এতখাঁনি মাঞ্জিত পরিচষ পা যেতনা এব 
মাঠে এরূপ আইন কাঁনুনের বাধ্য বাধ্যকর মধ্যে তা 





রোমানদের হুকি থেলায ম! নকছু স্থনাধ ১ রে 
গ্রীসেবও যথেষ্ট দান ছিলি। এথেক্পে ১নৎং মির 
এক আবিষ্কারের ফলে রতিহাসিকেরা নিঃসনেছে ই' 
প্রমাণ স্বীকার করেন যে, হকি খেলাব প্রবর্তক প্রতীচাধানী | 
এব” সেখান থেকেই ক্রমশ ভূকি খেগায চিলদ গুহা 

অন্ত অন্ত সত্য দেশের মধো যে অনপ্িয়। . লা নি 
সে সহন্ধে তারা নিঃসনেহ। আঁবিিযিরিন ভীত 
ছযজন বঙ্লিষ্ঠ যুরক যে খেনাঘ যোগদাঝ করছিল সী বদ 





ভূপাল ওযাগ্ডারাস ৭ রব বাহন কাপ ফাহনা ল ডাবন্ত কলার সাজ প্রতিস্বশ্থিঠা 
বৰ পলাটি অমীমা সিত ভাব শেষ হায়াছ 


খেলতে ভামতেন না। গ্রাটীন পাঃস্যবদরই হকি 
খেলার প্রথম প্রবর্তক বল! যেতে পারে। প্র যুগে তারা 
যে, পঞ্টক-গ্রেম খেলত সেট! সঠিক হকি নূলও হকি 
খেলায় সঙ্গে তাঁর যথেষ্ট সখসাদৃণ্ত ছিল। !দবা তাদেহ 
কাছ থেকেই হকি খেলায পাঁরদর্শীতা লাভ । আর 


প্রতিহাসিকদের মতে বর্তধাদি হকি খেখার যথেই্ 
মৌসাদৃগ্ত আছে। যুৰকদেব চিত্র েভাচব পারের উদার 
খোঁদাই কর! হয়েছিল তাতে মনে হয় তাঝ$ বর্ধমান হকি 
খেলার নিয় অন্থঘাধী 'বুলি'র "জন্য প্রস্তত হয়ে 'রয়েছে। 
ছবিতে হকি স্টিক উপরে দিকে না রেস্ে নীচের দিকে 


৮০৯ 


ঞ 


৮৮৯০ 


ভা ল্সব্ডব্্ধ [ ২৮শ বধ-_২য় খণ্ডঁ_-য্ঠ সংখ) 


খোদাই করা হয়েছে। এতিহাসিকগণ পরীক্ষা করে এ্রতিহাসিকগণ এবারে অস্বীকার করেন নাঁ। অনেকের 
টাকা অব রর নিপুণ শিল্পীর মতে প্রাচীনকানে পলে! খেলার প্রচলন ছিল সন্তাস্ত 


শিল্পচাতৃধ্যে চিত্রটি একদিন 
জীবন্ত হয়ে উঠেছিল । গ্রীসের 
আবিষ্কৃত প্রা চীন ধাতু ও 
 মুত্তিকা পাত্রে হকি খেলার 
কহ বিভিন্ন চিত্র উৎকীর্ণ হয়ে 
রয়েছে। বর্তমান যন্ত্র সভ্যতার 
এত থাঁনি প্রবার সে মময় 
ছিল নাঃক্রীড়ামোদিরা প্রাচীর 
গাঁত্রে উৎকীর্ণ চিত্রগুপির 
' "মধ্যে খেলোয়াড়দের ভিন্ন ভিন্ন 
ভঙ্গিমা অবলোকন করে 
আনন্দ লাড করত । সংবাঁদ- 
পত্রের কৃপায় আমাদের কষ্ট 
বর্তমানে যথেষ্ট লাঘব হায়েছে। 


কেবল স্থানীয় নয় পৃথিবীর যে কোন দেশের বিভিন্ন খেলার রাঁজন্ত পরিব 





পুলিন__ এ বৎসরের প্রথম রা হকি লীগ বিজয়ী ফটে। £ জে, কে, সান্ঠাল 
মধ্যে আর জনসাধারণ ঘোড়ার অভাবে 


ছবির আমর! পরিচয় পেতে পারি। হকি খেলাকে জীবন্ত হকির মতনই এটা “স্টক্‌ গেমে”র প্রচলন দেশের মধ্যে 
রাঁখতে গিয়ে ভাস্কর্য শিল্পকে শিল্পীরা যথেই্ সমৃদ্ধ করে চালিয়েছিল। ধর্টিাসিকদের যুক্তি একেবারে উপেক্ষার নয়। 


তুলেছিলেন ৷ কেবল প্রাচীর 
গাত্রেই নয় সৌখিন আসবাব 


পত্রে হকি খেলার চিত্র অস্কিত 


হয়েছিল। .১৩৩০' সালের 
আবিষ্কৃত গ্রী থেকে কোপেন 
হেগেনে যে খ্রকটি ডিস আনা 
হয়েছিল তাঁতেও হকি খেলার 
একটি দৃশ্ত অঙ্কিত ছিল! 
ছবিতে দুইজন হকি গেলো, 
'ফাড় বুলি দেখান 
হয়েছে? প্রাচান হকি খেলার 
| সঙ্গ াতর্ষের সর্ববাপেক্গ। 
পুরাতন পল! খেলর অনেক- 
নিকট ম্পর্ক ছিল। 








' এ্রলাহাবাদ এইচ এ__বাইটন কাঁপের তৃতীয় রাউণ্ডে ৩-২ গোলে 
দিল্লী ইয়ংদ দলের নিকট পরাজিত হয়েছে ফটো £ বি, বি, মৈত্র 


'জ্যৈষ্ট--১৩৪৮ ] শেলাশুব্লা ৯৮৮৯৯২০ 


















আমেরিকাঁতেও স্টিক গেমের বে একটা চলন ছিল। সালে “একটি *ইণ্টার স্াঁসনাঁল কমিটির, প্রয়োজন অনুভব 
এবং এই থেলাটা £১215০ [2ণরাই দেশের মধ্যে করা হম। হকি এসোসিয়েশন থেকে আরারল্যা্ 


চালিয়েছিল । আমেরিকাতে গ্রাঁ সহশ্র বৎসর ধরে এবং ওয়েলসের গভর্জিং বডি তাদের প্রত্যেকের ছুজন ক্করে 
প্রাচীন অধিবাঁসীর! সকলে না . 


হলেও বেশীর ভাগই যে ৭ষ্টিক 
গেম'-এর চচ্চা করত তার 
নিভরযোগ্য প্রমাণ পাওয়। 
গেছে। 

বর্তমানে আমর! যে হকি 
খেলার চচ্চা করছি. সেটার 
“জন্ম বলতে- প্রায়, ১৮৭৫ 
সালে। প্রসময় থেকেই প্রাচীন 
হকি খেলার মধ্যে যে সব 
দৌঁষ ক্রুটী ছিল তা সংশোধন 
করে বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে 
হকি খেলাকে উন্নত করতে 
দেশের উৎসাহী খেলোয়াঁড়- 
দের প্রেরণা এসেছিল। 
খেলার ধরণের মধো একটা 
নৃতনত্ব প্রথম এনেছিল 
বিখ্যাত উইন্থলভন ক্লাব ১৮৮৩ 
সালে। রবের খেলোয়াড়রা কি রি র 
প্রথম 20103 বল এবং ছি ৈ রা 
ফিকে ছাই রংয়ের হকি স্টিক্‌ নি ও ক ; পে 
ব্যবহার আরম্ভ করে । দেখতে 
দেখতে ইংলগ্ডের প্রায় চারি 
পাঁশে ই অনেকগুলি হকি 
ক্লাবের প্রতিষ্ঠা হল। তবে 
বর্তমানের হকি খেলার প্রকৃত 
জন্মদিন হল ১৮৮৬ সালের 
১৮ই জানুয়ারী । প্ঁ দ্িন 
হকি এসোসিয়েশনে”র প্রথম | 
আন্তর্জাতিক হকি খেলা হয় ০ টা রি 
ইংলওগ বনাম! আয়ারল্যাণ্ডের সঙ্গে । লণগ্ড সে খেলায় প্রতিনিধি প্রেরণের জন্ত আমন্ত্রিত হয়েছিল। পরে এ 
৫-০ গোলে জয়লাভ করে। হকি পীর নিয়মকান্নন প্রতিষ্ঠান “ইন্টার ন্তাশনাল হকি বোর্ড, নামে অভিহিত হয় | 

শোধন করা এবং নূতনভাবে গঠনীবার জন্ত ১৯০*  বর্তশীনে পৃথিবীর প্রায় সর্বত্রই, হকি" খেল প্রচলন 





২, 


'হয়েছে। তবে ইউরোপের দেশগুলিতে ফুটবল্মধতখাঁনি 
জনপ্রিয়তা অর্জন "করেছে হকি ততখানি পারেনি । 
'বিংশ শতাব্দীর গ্রারস্ত থেকে হকি থেলাব আদর বেড়েছে। 
ভারতবর্ষে হকি খেলার জনপ্রিয়তা যতখানি ততথানি 
অন্ত কোন দেশে নেই। হকি খেলা যেন ভারতবানীর 
জাতীয় খেল! ।”" আর হকিতে ভারতবর্দ যতখানি পারদর্শী 
লাভ ক'রে পৃথিবীর অলিম্পিক. . প্রতিযোগ্সিতায় ত্রীড়া- 
চাতুর্য্ের পরিচয় দিয়েছে তা বটমানের হক্ষি খেলার 
হতিহাসকেই কল সমুজ্জল করে নি-স্বঙছু সশ্র বৎসর 
পরেও তিহাধিকগণ মখন স্ৃতীত পূর্বপুরুষদের গৌরবময 
কীর্তির সন্ধান পেয়ে গবেষণ! কায মগ্ন থাকবেন সে সময 
তাদের মধ্যে বদি কেহ সন্তান হ'ন তাহলে 
নিশ্চা সেই অরাদীর্ণ প্রমাণ ফ্রীপির এতিহাসিক তথ্য 
স্বাবিক্ষার .করে গৌরবান্থি হযে  উঠঝে। ভারতবর্ষে 
পাঞ্জাব তৃপাল, মানাভাদার প্রভৃতি স্থানের +ঞধিবাসীর! 
হকি খেলার চর্চা বিশেষ ভাষে করে থাকে। এ সব 
অঞ্চলের তুলনাঁয হকি খেলায জনপ্রিয়তা এবং চচ্চা বালা 
দেশে কম। তবে হকি খেলাকে বাজল! দেশ সম্মান দিয়েছে । 
ভাঁরতবর্ষের হকি খেলার প্রধান আকর্ষণ ধাইটন কাঁপ। 
প্রতিযোগিতায় যোগদান ক্ষয়ে ভারতবর্ষের বহু শক্তিশালী দল 
কলিকাতীতর হকি মববন্ুমের আকর্ষণ বুদ্ধি করে। বাজলার 
কংক্সকজন হকি খেলোয়াড় 'অল্ইপ্ডিয়া হকি টীমে যোগদান 


কদ্ধে ভারতবর্ষের সম্মান “একদিন, অনু ফেখেডিজি। 


টি প্র্ো্গনে বযজপা: লেপের কি কলের ভর 
তুর্কি গাহ্খনি পলাখতে শর্দরবে বলে বহলোক্ষের বিশাল ৭ 
আমাদের বাবা! দেঙের হকি খেলার বর্তমান ইতিহাস 
এন্খানি গৌরবময় দেখেও এদেশের প্রকৃত হিতাকাম্মীর 
দল কিন্তু গৌরব বোৌধ কবে না । আঁজণপ্ছকি খেলায় 
বাঙলার যে স্থান সে স্থান বার্কানী হকি খেলোযাড় দিয়ে 
পুষ্ট হয়নি । অবাঙ্জালী হকি খেলোয়াড়রাই আজ বাজলান 
হকি ঠেলায় ইতিহাসফে গৌরবযুক্ত করেছে, সেখানে 
প্রকৃত বাঙ্গালী খেলোয়াড়ের স্থান নেই--তাদের অক্ষমত৷ 
আমাদের বার বার লঙ্জার কারণ হযেছে। বাঙ্গালী 
খেলোযাড়দের অনুশীলনের আগ্রহ নেই; 
. অবাঙ্গালী' থেলোয়াড়দের জ্রীড়াচাতুধ্য লক্ষ্য করে করতালি 
দিয়ে, লদ্ফে ঝম্পে বর্যাতি উড়িয়ে তাদের খেলাষ উৎসাহ 


আোনলতন্যঞ্য 


“নৈগৃন্ো কথা '+ 


খেলার মাঠে . 


| ২৮শ বর্ষ-_-২র খণ্ড _যঠ সংখ্যা 


দেয়'__ আর তর্কে, আশ্কালনে+ গর্ধেধে ময়দা মাতিয়ে 
খেলোয়াড় সুলভ মনোভাব জিইয়ে রাখে । যে সময 
অবাঙ্গাদী হকি খেলোযাড়রা ময়দান থেকে সকালৈন 
প্রাকৃটিস ম্যাচ” (লে মাথা ফাটিয়ে বাড়ী ফেরে আমাদের 
বাঙ্গালী খেলো রা সে সময চাষের পেখালাষ চুমুক দিয়ে 
হয়ত গ্ররের কাজের পৃষ্ঠায় ধ্যানঠাদের অপূর্ব ক্রীড়া- 
ড বিস্ময়ে পুলকিত হয়ে উঠেন নতুবা 
অলস শব্যার উপ্পী সাত সমুদ্রের পারে ব্রাভম্যানের বিভিন্ন 
বল মার্র স্বপ্ন, পেরিটির মারাত্মক বোলিং মোহনবাগানের 
৫৮5১ ১8881৮2১৯845 
না ফোঁম সমযে ন্বপ্রজাল থেকে নিষ্কৃতি_ লাভ _করেনু। 
এব পরু কাহারও ল-কলেজ কাহারও বা আঁফস। যাদের 
এমবের বালাই নেই তাঁদের সময় প্রচুর, সময় কাটাবাব 
উপকবণও বনু। ৰ 

২৯শে এপ্রিল ১৯৩৭ সালের কথা । হকি থেলাব যাঁতুক্ব 
ধ্ানঠাদের সঙ্গে বতক্ষণ আলাপ করবাব স্থযোগ হযেছিল। 
প্রস্গক্রমে তাঁকে বাঙ্গালী হকি খেলোযাঁড়দের খেলার ষ্ট্যাপ্ডার্ড 
সম্বন্ধে তীর ব্যক্তিগত মত জিজ্ঞাসা করি। উত্তবে, 
অবাঙ্গীলী খেলোধাড়দের প্রভাবে হকি খেলায় প্রকৃত 
বাঙ্গালী খেলোধাড়দের অবস্থা সম্বন্ধে যে মত দিয়েছিলেন 
তা খুব আশাগ্রদ নয। তিনি একথাও 'বলেছিলেন, বর্তমান 
পারিপার্বিক অবস্থাঁয বাঙ্গল! দেশের খেলাধূল! এমন একটা 
পরিস্থিতির মধ্যে এসে পড়েছে যাতে করে বাঙ্গালী ফুটবল 
এখলায ক্ডারতের যে-গৌরব অর্জন করেছিল তা অচিরেই 
রাতে পারে। অবাঙ্গাপী ফুটবল থেলোধাড়দের প্রভাব 
দি্গ দিন বেড়ে যাচ্ছে, প্রকৃত বাঙ্গালী খেলোয়াড়দের আর 
সুষোগ পরে মিলবে না। হকির মততনই তখন বাঙলা দেশের 
ফুর্টকুলর ট্ট্যা্ডার্ড অবাঙ্গালী থেলোয়াড় দিয়ে বজায় 
রাত হবে। 

ধ্যানাদ পুগিবীর একভ্ন সর্বশ্রেষ্ঠ হকি খেলোনাড়, 
তার মতেরও য্াথষ্ট মূল্য আছে। আমরা এখন থেকে যদি 
নিজেদের কথা' চিন্তা না করি তাহলে অদূর ভবিষ্যতে 
আমাদের অবস্থা কিরূপ দ্রাড়াবে তা সহজেই অনুমেয় । 
তরুণ থেলোযাড়দেব আজ এ বিষযে দৃষ্টি ৫দবার প্রয়োজন 
সর্ববাপেক্ষ। বেশী গ্ুযেছে। আশা! করি বাঙ্গালীর স্থনাম 
তারাই একদিন অর্জন করবে। 


জ্যৈষ্ঠ-_১৩৪৮] ঞ্থেকর্শা একলা ৬৯ 


ন্বাইটিন্ন ক্াস্প আ্টাইম্নীতল,৪ 

ফাইনাল খেলা অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়েছে । ভগবস্ত 
রব এবং তৃপাল ওয়াগারাস” দুইটি দলই একটি ক'রে 
গোঁল করায় অতিরিক্ত সময় খেলান হয়। কিন্তু এই সময়ে 
কোন পক্ষই গোল দিতে সক্ষম না হওয়ায় বি এইচ এর 
নৃতন আইন অগ্যায়ী ফাই 
নালের উভয় দলকেই বিজধী 
বলে ঘোষণা করা হ্ায। 
কাঁপটি দুই দলই ছ” মাস হরে 
রেখে ফাইনাল বিজম্মর 
গৌরব লাভ করবে। টসে 
ভগবন্ত ক্লাব দপ জরী হওয়াও 
প্রথম ছ” মীস তারই বাপটি 
রাখবে । বাইটন কাপ প্রতি- 
যোগিতাঁর ইতিহাসে 'দ্নূপ 


থেফে তাড়িয়ে দেন। কিন্ত তাঁর খেলার উগ্র গ্রেরণাকে কেহ 
কোন রকমে বাধা দিতে পারেনি । সমস্ত মানসন্রম উপেন্গ। করে 
অতিরিক্ত সময়ের খেলাতে একরফম জোর করেই যোগদান 
করেছিল । খেলার মাঠে এ মজ! উপভোগ্য হলেও উপেন্গ বীয় 
নয়--মাঁশ! করি এবতসরের ঘটনা যেন পুনরায় আঁর না ঘটে 





ব্যবস্থা এই প্রথম । বাঙ্গলা নববধ উৎসবে বাওবাছা দলের কুচকাওয়াজ 


এ বৎসর বাইট; বাপ প্রতিযোগিতার কোন কোন 
খেলায় খেলোয়াড়দে: ভ্বুখেলোয়াড়ী মনোভাবের পরিচয় 
পাওয়া গেছে । ফায়ার খেলায় ভূপাল দলের জাহুরের 
আচরণ সর্বাপেক্ষা নর্গীনীয়। বিপক্ষ দলের ভূতলশায়ী 
গোলরক্ষকের উপধপ্রী্িয় আক্রমণ সকলেরই বিরুদ্ধ 







মনোভাবের ও এরূপ ঘটনার সঙ্গে ক্রীড়ামোদিদের 
পরিচয় খুবই কা, স্পায়ের নির্দেশক্রমে মাঠ থেকে বহি- 
ফ্ৃত হয়েও [৷ অনুমতিতে থেলায় 'যোগদান করে 
কিন্তু বাস্নিও চ্যতাকে একরকম জোর করেই মাঠ 


আগা খা হক্কি স্কাউন্াজ্ন £ 

টিকমগড়ের ভগবন্ত ক্লাব আগা খা হকি খেলার ফাইনাে 
২-১ গোলে সেন্ট জেভিয়ান” কলেজকে পরাজিত ক'রে 
দ্বিতীয়বার কাপ বিজপ্লের সন্মান লাভ করেছে । ১৯৩৮ 
সালে তগবন্ত ক্লাব প্রথমবার ফাইনালে বিজয়ী হয়েছিল । 


বাঙ্গল। নববর্ষ উৎসবে বালরু বালিকাদের ব্যায়াম চ্চার একটি দৃষ্ঠ 


১৯৩৯ সালের আগা খাঁ ফাইনালে এবং ১৯৪* সালের বাইটন 
কাপ ফাইনালেও তার! একবার উঠেছিল । * সম্প্রতি তারা 


, দিল্লীর যাদবেন্্র হকি প্রতিযোগিতার ফাইনালে বিজয়ী 


হয়েছে। 


ভ্ঞান্মস্চন্ঞ্ 





কলেজ দল পরাজিত হলেও বিপক্ষদলের সঙ্গে পুরাঁদমে 
প্রতিঘন্থিতত! চালিয়েছিল । সেমিফাইনাল খেলায শক্তিশালী 
মানাতাদার দলকে ২০ গোলে তার! পরাজিত করে। 
অনেকের মতে মানাঁভাদারের এ পরাজয অনেকখানি 
ভাঁগ্যবিপধয়ের ফলেই হয়েছিল। খেলার ফলাফলে 
ক্রীড়ামোদিরাও বিস্মিত হযেছিল। অপেক্ষাকৃত দুর্বল দলের 
কাছে শক্তিশালী দলও পরাজয় শ্বীকার করে। এবং তা 
বাস্তবক্ষেত্রে সম্ভৰ হলেও খেলার পূর্ধ পর্যাস্ত এ সম্ভাবনার 
কথ! কেহ ভাবে নি। ফাইনালে কলেজগল দ্বিতীধার্দে 
অগ্রগামী থেকে এবং গোল করবাব বহু স্থযোগ নষ্ট ক'রে 
তাঁরা সম্মানিত ভাবে বিপক্ষদলের নিকট পরাজিত হযেছে। 
'এ পরাজয়ে তাঁদের অসগ্মানের কিছু নেই। ভগবন্ত ক্লাবের 
দলবন্ধ ভাঁবে তীত্র আক্রমণ এবং আত্মরক্ষার ক্ষিগ্রতা 
তান্দের জয়লাভের লগাধতা করেছে । সর্ধ্বোপরি খেলায় 
বহদ্দিনের অভিজ্ঞত তাদিকে কোন সময়েই বিশ্বাস- 
ঘাতকত! করেনি-ববং বিজযের পথে অনেকথানি 
শক্তিসঞ্চার করেছে । খেলা শেষ হবাব ছ” মিনিট পূর্বে 
“জয়ী দলের ভুটসি বিজয়স্থচক গোলটি করেন। 


ব্রেত্ছজন চ্যাকেনও9 স্ীজ্ভ £ 

কাপীধাট ক্লাব ২-১ গোলে মেসারার্স ক্লাবকে পরাজিত 
করে দুনিয়ার হকি টুর্ণামেন্টের বেঙ্গল চ্যালেঞ্জ শীন্ভ বিজয়ী 
হয়েছে। বিজয়ী দলের জ্যাকধ ২টি গোলই দিয়েছিলেদ। 


সঙগাইইভ্ডরব সবচাম্প হকরাউইন্মাকস ৪ 

১০৯ গোলে ৯৯৩৮ 'াঙ্গেত্ব চ্যাম্পিয়ান 
কলেজিয়ান্দ দলকে হচ্ছি বেলায় পরাজিত ক'রে এবার 
সর্বপ্রথম কাপ বিজয়ী হয়েছে । হে দলের বিজয়হ্চক 
গোলটি দেন। 


ভিজ রী 
কণিকাভাগ্প মহামেডান ম্পোটিং দল ৩-* গোলে *দিলীব 
চাটপয়ান: ইঈউনিয়ান এফ সিকে পরাজিত করে উল্ত 
শীন্ড বিজয়ী হযেছে। উভয়'লের থেলোবাড়রা বল প্রয়োগে 
নিজেঙ্গেক্স গ্রীধাপ্তি বজায় রাঁথতে গিয়ে রেফারী কর্তৃক 
সতকিত ১ হর্ন দলের আক্রমণ তাগের, খেল! 
..' ুপেক্ষা বছ অংশে উন্নত 'ছিল। বিপক্ষদলের 


[ ২৮শ বর্ষ--২য় খ্--বষঠ 


গোলরক্ষক কয়েকটি অবধারিত গোঁল রক্ষা কদে 
নৈপুণে)র পরিচয় দেয়। 


হাউ ত্কাশ্পে প্ুথিহীল্ ্লেকর্ড £ 


ওরিগণ ইউনিভাসিটির ল! ট্রাটস্‌ আউট € 
জাম্পে ৬ ফিট ১০৪১ ইঞ্চি উচ্চতা অতিক্রম " 
রেকর্ড করেছেন ।, ূর্ের বেকর্ড ছিল ৬ ফিট ৯ 
১৯৩৬ সালের ক্ষালিস্পিক ট্রাযালে সি জন 
ডি এলব্রিটন একব্রযোঁগে উক্ত উচ্চতা লঙ্ঘন করে 
রেকর্ড করেছিলেন । 


তোল্রহ্খি রাশ্ডও 


মিসেস লিটল (পূর্বে মিস ডোঁরথি বাঁউণ্, উ 
চ্যাম্পিয়ান) সম্প্রতি পেশাদার টেনিস থেলোয 
যৌগ দিয়েছেন । গ্রীক্মাবকাশে তিনি সিনিয়োরী 
ক্লাবে অনুশীলন আরম্ত কববেন। যুদ্ধের দকণ পুত্র' 
বর্তমানে কেনাডায় অবস্থান করছেন। 


ভ্াল্রভীম্ম নিম্পিষ ক্েন্সিসি 
তেক্লোজাডরক্েল্ জমা আরা 


বিহার লন টেলিস এসোসিয়েশন « 
গ্রতিযোগিত। থেকে হঠাৎ ভারতীয বিশি 
খেলোয়াড় গাউস মহম্মদ, ইফতিকাঁর আমেদ? যুধি 
সোহনলাল আনওয়ার হোঁসেন প্রভৃতি অবসর ও 
দর্শক এবং এসোঁসিযেশনের পৰিচালক্দের ম 
অগ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছিপ্ল। বিশিষ্ট খেলোয়াড়দে 
আচরণের ফলে এসোসিয়েশন নিথিল ভারত 
সঙ্ঘের নিকট অভিযোগ জানান । অভিযোগ 
ওঁ সকল খেলোয়াড় নিখিল ভারত টেনিস 
পরিচালিত কোন গ্রতিযোগিতায় 7 যোগদা, 
পারবেন না ভা সঙ্ব““*ক রেশ! ৬.। আঃ 
পেযে সুখী হলাম সঙ্ফেব নির্দে0 নক সর্ত 
গাউস মহম্মদ; ইফতিকর আমেদ সিহজে ওয়া 
ক্ষমা প্রার্থনা করে এক আবেদন 'ন। 
বঞ্তিতার সম্মান রক্ষা করা খের্লে 
পরিচয় । ধীরা সে সন্মান দিতে অ 


ক্ট--১৩৪৮ ] ্েকপা্ুভশ। . ৬৯৫ 


স্যর 
আড় হয়েও জনসাধারণের অশদ্ধাভাজন হ'ন। এই 


ক্রুন ছাড়া বাকি খেলোধাড়গণ ক্ষমা প্রার্থনা করেন নি। 
টর সিং আবার সজ্ঘের এই নির্দেশের প্রতিবাদ কয়ে 





শমল। বিএস" কুস্তি প্রতিযোগিতায _ভেভী ওয়েট বিজধী মাণিকগুহ 
( বামদিকে ) ১০ স্টোন বিজযী সুশীল ঘাষ (দর্সিণে ) 

ছন, সথেব খেলোধাঁড় হিসাবে তাঁব! ইচ্ছামত প্রতি- 
গতা থেকে অবসর গ্রহণ করতে পারেন। যদি পেশাদার 
ধাঁড় হ'তেন তাঁহলে তাদের উপব নাকি নিষমান্রবন্তিতার 
থেকে শান্তিব বিধ।ন দেওয! চলত+। টেনিস মহলে যুধিষ্ঠিব 
ক আমরা একজন বিশিষ্ট খেলোধাড় হিসাবেই এতর্দিন 
4 এসেছি। আজ আমরা তার খেলোধাড়াচিত 
ভাবের যথার্থ পবিচয পেলাম । সে পবিচধ তাঁব মত 
্ খেলোধাডের স্ুমাঁম রক্ষা কবেনি। 


জ্ঞ৪৩্রাছেকম্পিনচ হুউনক্ল টুর্পাসেপ্টি ৪ 
মে মাসেব মাঝামাঝি মমঘ থেকে আস্তঃপ্রাদেশিক 
ল টুর্ণ'মেণ্টের খেল আরম্ভ হবে। নিম়পিখিত- দশটি 
শি প্রতিযোগিতায় যোগদান কবেছে। 

জোন--'এ- উত্তর-পশ্চিম ভারত ফুলবল এসো: 
জোন-_ দিল্লী ফুটবল এসোঃ, মধ্যপ্রদেশ এবং 
খুতানা ফুটবল এসোঃ | 


জোঁন-_-ণসি”__-তাঁক্তীব ফুটবল এসোঃ ঢাকা! স্পোর্টিং 
এসো: ও বিহার লিম্পিক এসোঃ । 

জোন-_ণডি+-মাদ্রাজ ফুটবল এসো: মহীশুর রর 
এসোঁঃ এবং পশ্চিম ভারত ফুটবল এসে: | 

যুদ্ধের বর্তমান পরিস্থিতি দরুণ আম্মি পো 
কণ্ট্োোল প্রতিযোগিতায় যোগদান করবে ন1। উতত- 
পশ্চিম প্রদেশ এবং সিন্ধু যৌগদান করবে না বলেই “স্থির 
কবেছে। 
ভ্িক্কেকে & 


_ ভারতীয় অবশিষ্ট দল--:9৮৭ ও ১১৯ (১ উইকেট) 
মহারাষ্ট্র দল- ৩০৮ ও ২৯৫ 
ভাঁবতীয অবশিষ্ট দল “ফেস্টিভ্যাল ম্যাঁচে' খোঙ্ধ * 
উইকেটে মহাবাষ্ট্র দলকে পরাজিত করেছে । 
তাবতীয অবশিষ্ট দলের প্রথম ইনিংসে কে এন 
বঙ্গনেকাঁব ১৩৫, ভিন মান্কাঁদ ১০৫, মান্তাক আছিস্মং 
এব* অমবনাথ ৫০ বাঁন কবেন। হাজারী ১১৯ রান জয়ে 
৪টে উইকেট পান। পর পর ছুবার বল দিষে উপধূর্টপন্থি 
২ উইকেট পেয়ে হাজাবী মাঠের মধ্যে চাঞ্চল্য কৃষ্টি করেন। 





কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়-_বালী কুস্তি প্রতিযোগিতার 
১* ষ্টোন বিভাগে যাম্পি্ান 


মহাবান্ট্রের প্রথম ইনিংসে এস এম সোহনী *১ রান: 


দিয়েছিলেন । সি ৫২ রান ৪ হাজারীর ৪০ রানও 
উর্লেখযোগ্য । অমরনাথের পঞ্চম বল দৈরে প্রফেলার 
দেওধর সর্ট রান নিতে গেলে মান্তাক আঁলি কভার 
পেন্ট থেকে ষ্টাপে বল মেরে সোনীকে রাঁন আউট 
করেন। সোছনীর আউট হবার পর খেলার গতি 
একেবারে ঘুরে যায়। পনের মিনিটেরও কম সমঘ্বের 
মধ মারা দল ৮" রানে ৩টে ভাঙল ভাল উইকেট 
হারায় এস ব্যানাঞ্জির বোলিং এভারেদ্ধ ছিল_-২২ 
ওভার মেডেন ৬, রান ৭৩, উইকেট ৪। ফলোঅন্‌ 


করে হারা দলের দ্বিতীয় ইনিংসে রাম 
নিষ্বপনকার এবং দেওধর যথাক্রমে ৭৮ 
করলেন। এই ইনিংসের খেলাতেও ব্য 
মারাত্বক হয়েছিল। এভারেজ ছিল-$২ 
মেডেন ৫, রান ৬৯ উইকেট ৬। 
দ্বিতীয় ইনিংস আরম্ভ হ'ল। ১ ই 
রান উঠল ১১৯। মান্তাক আলী ৫৪ রান € 
থাকেন । ৩০ মিনিটে তার ৫* রান উঠে। ? 
৫৩ রান করে নট আউট রয়ে যান। 





সাহিত্য-তবাদ 


নিশ্যপ্রায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধীত কৌতুক-নাটিক! 
“দৈবাৎ”--।০ 

বষ্টকৃষণ রার প্রীত একাক্ক নাটিক 'পঞ্চমা ”--॥০ 

শঈধর দত্ত প্রণীত “রমার বিয়ে" ২২, "মোহন ও রম।”- ২. 

পূর্ণশশী দেবী প্রীত 'পথে বিপথে”_-১%* 

বসস্থরুমার চটোপাধ্যার প্রণীত নাটিক। ারিটি নো" ॥৭ 

বিভুরন মন্ুমদার প্রণীত উপচ্গাস “+১৯৫*৮--৯, , 

জ.ধ্যকুমার সেন কণীত “অভিপেতা। ২২ 

জ্যোততরী দেখ প্রণীত “রাজযোটক”_২ 


নমল প্রক্ষাম্পিভ্ড পুভ্কানল্লী 


অসীম দত্ত ও রমাপ্রসাদ মিত্র সম্পাদিত “হাল্‌ খাতা”-- 
মণিলাল বন্যোপাধ্যায় প্রণীত “ছোট থেকে"বড়'৮-%* 
অন্নদামে।হন বাগচী প্রণীত “গরমত্ত পৃথিবী”__১২ 
নৃপেন্দকৃ্ণ চটোপাধ্যায় প্রণীত “ন| জানলে চলে না”. 
নিখিলেশ সেন প্রণীত “রোমাঞ্চকর কাহিনী” * 
নারন্মনাথ চক্রবর্তী প্রণীত “লঙ্ষা-ভেদ”-_১।* * 
গৌরাঙ্গপ্রমাদ বনু সম্পাদিত “অন্তুত যত ভূতের গল্প” 
্রঙ্গাচারী পরিমলবন্ধু দাস সন্কলিত “প্র ্লীবন্ধুবেদ বাণী”, 


অন্নদাশন্কর রায় প্রীত “জীবন শিল্পী”--১২ 


আগামী আষাঢ মাসে ভারতবর্ষের উনত্রিংশ বর্ষ আরন্ত হইহে 
সুদীর্ঘ অষ্টাবিংশ বর্ষকাল “ভ্ডাল্রভলরশ্রঁ কিরূপ নিষ্ঠার সহিত বাঙ্গলা স।হিত্যের সেবা করিয়া 
 বাঙ্গাপী জাতি এবং বাঙ্গাল! ভাষার সহিত পরিচিত প্রত্যেক ব্যক্তিই তাহা অবগত আছেন। বর্তমা; 
মহাযুদ্ধজনিত দারুণ সন্কটাপন়্ অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াও আমরা ভারতবর্ষের চাঁদা বা বিজ্ঞাপনের হার' 
নাই। আমরা নির্ভর করিগ্াছি--ভারতবর্ষের গুণগ্রাহী গ্রাহক পাঠক ও অন্ধ গ্রাহকগণের শ্রীতিপূর্ণ নিরব 
এবং ভারতবর্ষের সুনির্দিষ্ট নিরপ্রেক্ষ নীতিতে আস্থাবান বিশিষ্ট বিজাঁপনদাতার্দিগের সহযোগিতার উ* 
দুঢ় বিশ্বাস যে, আগামী বর্ষেও তাহার! ত|রতবর্ষের সহিত যোগস্ত্র অক্ষুঞ্র রাখিয়! আমাদের উৎসাহ 
আগামী বর্ষের ভাঁরতবর্ধকে সকল প্রকারে অলন্কৃত করিতে আমাদের পক্ষ হইতে আয়োজনের ক্ররটি হইবে ন 
ভাব্সভবশ্বেল্র মুত্যা্চি ও ভাহ পালা ইব্বাল্র বিশ্থি-্যবস্থ! 
গ্রাহুক্কগণৌল্র শঁভি ন্িন্ে ্ষম্ম-ভারতবর্ষের মূল্য মনিমর্ডারে বাধিক ৬%০ আনা, দি 
ষাগ্ানিক ৩০০ আনা, ভি, পিতে ৩।০। “কিন্তু ভি, পি-তে তাঁরতবর্ধ লওয়া অশেক্ষা সক্সিজ্স 
তণ কল্লাউ পলিপ । ভি, পি-র টাকা বিলম্বে পাওয়া যাঁয়, সুতরাং পরবর্তী 
পাইতে বিলঙ্ছ হইবার “সম্ভাবনা । গ্রাহক্কগশেল্র উাক্ষা ২০স্ণে 2ভ্্যজেল্প মন্খ্যে 
গেলে আমাভ সহখ্যা। ভি ম্পিঃ করা হইন্বে£ পুরাতন ও নূতন গ্রাহকগণ £ 
কাগজ পাঠাইবার পূর্ণ ঠিকানা স্পষ্ট করিয়া লিখিবেন। পুরাতন গ্রাহকগণ কুপনে প্রাহৃন্ষ 5" 
বুতন গ্রাহকগণ ন্ুক্ন্ম বলিয়া উল্লেখ করিবেন, নতুবা টাকা জম৷ করিবার বিশেষ অন্ুুবিধা হয়. 
” ভারত ও ব্রন্ধদেশের এধ্যে ডাক মাশ্তলাদির হার পুনরায় পরিবর্তিত ও বর্ধিত হইয়াছে ৷ সেজন্ত ত্র. 
গণের জন্ত ভারতবর্ষের বাধিক মূল্য ৭২ নি টাকা) এবং ষাগ্লাসিক মূল্য ৩।* (তিন টাকা আট. আনা) : 
. ৬ মনিঅর্ডার পাঠাইবাঁর ঠিকানা £__ 
, খনিজ চতট্রাশাপ্যানস ঞগুও স্নম্গ ২৯৩১১ কর্ণওয়ালিম ইট, কলিকাত ৃ